সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "সালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজ" হাদিস নং -১১৯৮ থেকে ১২২৩
সালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজে
সালাতের মধ্যে হাতের সাহায্য নেয়া।
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
বলেছেন, কোন ব্যক্তি তার সালাতের মধ্যে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা (সালাত
সংশ্লিষ্ট কাজে) সাহায্য নিতে পারে। আবূ ইসহাক (রহঃ) সালাত আদায়রত অবস্থায় তাঁর
টুপী নামিয়ে রেখেছিলেন এবং তা তুলে মাথায় দিয়েছিলেন। ‘আলী (রাঃ) (সালাতে) সাধারণত
তাঁর (ডান হাতের) পাঞ্জা বাম হাতের কব্জির উপরে রাখতেন, তবে কখনো শরীর চুলকাতে হলে
বা কাপড় ঠিক করতে হলে করতেন।
১১৯৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ
كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ مَيْمُونَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ
ـ رضى الله عنها ـ وَهْىَ خَالَتُهُ ـ قَالَ فَاضْطَجَعْتُ عَلَى عَرْضِ
الْوِسَادَةِ، وَاضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِي
طُولِهَا، فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى انْتَصَفَ اللَّيْلُ
أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيلٍ، ثُمَّ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَلَسَ، فَمَسَحَ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ بِيَدِهِ،
ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ آيَاتٍ خَوَاتِيمَ سُورَةِ آلِ عِمْرَانَ، ثُمَّ قَامَ
إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهَا، فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ، ثُمَّ قَامَ
يُصَلِّي. قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ فَقُمْتُ
فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ، ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ، فَوَضَعَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِي، وَأَخَذَ
بِأُذُنِي الْيُمْنَى يَفْتِلُهَا بِيَدِهِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ
رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ
رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أَوْتَرَ، ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ،
فَقَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ، ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.
তিনি বলেন, তিনি তাঁর খালা মু’মিনদের মা
মাইমূনাহ (রাঃ) -এর ঘরে রাত কাটালেন। তিনি বলেন, আমি বালিশের প্রস্থের দিকে শুয়ে
পড়লাম, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সহধর্মিণী
বালিশের দৈর্ঘ্যে শয়ন করলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মধ্যরাত বা তার কিছু আগ বা পর পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলেন। অতঃপর আল্লাহর
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জেগে উঠে বসলেন এবং দু’হাতে মুখমন্ডল
মুছে ঘুমের রেশ দূর করলেন। অতঃপর তিনি সূরা আল ইমরানের শেষ দশ আয়াত তিলাওয়াত
করলেন। পরে একটি ঝুলন্ত মশ্কের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং এর পানি দ্বারা উত্তমরূপে
উযূ করে সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমিও উঠে
পড়লাম এবং তিনি যেমন করেছিলেন, আমিও তেমন করলাম। অতঃপর আমি গিয়ে তাঁর পাশে
দাঁড়ালাম। তখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাত
আমার মাথার উপরে রেখে আমার ডান কানে মোচড়াতে লাগলেন (এবং আমাকে তাঁর পিছন হতে
ঘুরিয়ে এনে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন)। তিনি তখন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন,
অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর
(দু’রাক‘আতের সাথে আর এক রাক‘আত দ্বারা বেজোড় করে) বিত্র আদায় করে শুয়ে পড়লেন।
শেষে (ফজরের জামাআতের জন্য) মুআয্যিন এলেন। তিনি দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত (কিরাআতে)
দু’রাক‘আত (ফজরের সুন্নাত) আদায় করলেন। অতঃপর বেরিয়ে গেলেন এবং ফজরের সালাত আদায়
করলেন।
২১/২. অধ্যায়ঃ
সালাতে কথা বলা নিষিদ্ধ হওয়া।
১১৯৯
حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ،
حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ فَيَرُدُّ عَلَيْنَا،
فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِيِّ سَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ
عَلَيْنَا وَقَالَ " إِنَّ فِي الصَّلاَةِ شُغْلاً ".
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -কে তাঁর সালাতরত অবস্থায় সালাম করতাম; তিনি আমাদের সালামের জওয়াব
দিতেন। পরে যখন আমরা নাজাশীর নিকট হতে ফিরে এলাম, তখন তাঁকে (সালাতে) সালাম করলে
তিনি আমাদের সালামের জবাব দিলেন না এবং পরে ইরশাদ করলেন : সালাতে আছে নিমগ্নতা।
(১২১৬, ৩৮৭৫) (আ.প্র. ১১২১, ই.ফা. ১১২৫)
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
(মুসলিম ৫/৭, হাঃ ৫৩৮, আহমাদ ৩৫৬৩) (ই.ফা. ১১২৬)
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
(মুসলিম ৫/৭, হাঃ ৫৩৮, আহমাদ ৩৫৬৩) (ই.ফা. ১১২৬)
১২০০
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ
مُوسَى، أَخْبَرَنَا عِيسَى ـ هُوَ ابْنُ يُونُسَ ـ عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنِ
الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ، قَالَ قَالَ لِي
زَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ إِنْ كُنَّا لَنَتَكَلَّمُ فِي الصَّلاَةِ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم، يُكَلِّمُ أَحَدُنَا صَاحِبَهُ بِحَاجَتِهِ حَتَّى نَزَلَتْ
{حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ} الآيَةَ، فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوتِ.
যায়দ
ইব্নু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর সময়ে সালাতের মধ্যে কথা বলতাম। আমাদের যে কেউ তার সঙ্গীর সাথে
নিজ দরকারী বিষয়ে কথা বলত। অবশেষে এ আয়াত নাযিল হল –حا فِظوا عَلى الصَّلَواتِ الاية
“তোমরা তোমাদের সালাত সমূহের সংরক্ষণ কর ও নিয়মানুবর্তিতা রক্ষা কর; বিশেষ
মধ্যবর্তী (‘আসর) সালাতে, আর তোমরা (সালাতে) আল্লাহ্র উদ্দেশে একাগ্রচিত্ত হও”-
(সূরা আল-বাকারা ২/২৩৮)। অতঃপর আমরা সালাতে নীরব থাকতে আদেশপ্রাপ্ত হলাম।
২১/৩. অধ্যায়ঃ
সালাতে পুরুষদের জন্য যে ‘তাসবীহ্’ ও ‘তাহ্মীদ’ জায়িয।
১২০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ،
عَنْ سَهْلٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُصْلِحُ بَيْنَ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ، وَحَانَتِ الصَّلاَةُ، فَجَاءَ بِلاَلٌ
أَبَا بَكْرٍ ـ رضى الله عنهما ـ فَقَالَ حُبِسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَتَؤُمُّ النَّاسَ قَالَ نَعَمْ إِنْ شِئْتُمْ. فَأَقَامَ بِلاَلٌ الصَّلاَةَ،
فَتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ فَصَلَّى، فَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم يَمْشِي فِي الصُّفُوفِ يَشُقُّهَا شَقًّا حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ
الأَوَّلِ، فَأَخَذَ النَّاسُ بِالتَّصْفِيحِ. قَالَ سَهْلٌ هَلْ تَدْرُونَ مَا
التَّصْفِيحُ هُوَ التَّصْفِيقُ. وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ لاَ
يَلْتَفِتُ فِي صَلاَتِهِ، فَلَمَّا أَكْثَرُوا الْتَفَتَ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم فِي الصَّفِّ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ مَكَانَكَ. فَرَفَعَ أَبُو
بَكْرٍ يَدَيْهِ، فَحَمِدَ اللَّهَ، ثُمَّ رَجَعَ الْقَهْقَرَى وَرَاءَهُ
وَتَقَدَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى.
সাহ্ল
ইব্নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বনূ আমর ইব্নু আওফের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়ার উদ্দেশে বের হলেন,
ইতোমধ্যে সালাতের সময় উপস্থিত হল। তখন বিলাল (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) -এর নিকট এসে
বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আপনি
লোকদের সালাতে ইমামতি করবেন? তিনি বললেন, হাঁ, যদি তোমরা চাও। তখন বিলাল (রাঃ)
সালাতের ইক্বামাত বললেন, আবূ বকর (রাঃ) সামনে এগিয়ে গিয়ে সালাত শুরু করলেন।
ইতোমধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে
এগিয়ে গিয়ে প্রথম কাতারে দাঁড়ালেন। মুসল্লীগণ ‘তাসফীহ্’ করতে লাগলেন। সাহ্ল
(রাঃ) বললেন, তাসফীহ্ কী তা তোমরা জান? তা হল ‘তাস্ফীক’ [১] (তালি বাজান) আবূ
বকর (রাঃ) সালাতে এদিক সেদিক লক্ষ্য করতেন না। মুসল্লীগণ অধিক তালি বাজালে তিনি সে
দিকে লক্ষ্য করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কাতারে দেখতে পেলেন।
তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ইঙ্গিত করলেন- যথাস্থানে থাক।
আবূ বকর (রাঃ) তখন দু’হাত তুলে আল্লাহ্ তা‘আলার হাম্দ বর্ণনা করলেন এবং পিছু
হেঁটে চলে এলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনে এগিয়ে গিয়ে সালাত
আদায় করলেন।
২১/৪. অধ্যায়ঃ
সালাতে যে ব্যক্তি প্রত্যক্ষভাবে কারো নাম নিলো অথবা কাউকে সালাম করল
অথচ সে তা অবগতও নয়।
১২০২
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ
عِيسَى، حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ الصَّمَدِ عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ
الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا حُصَيْنُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نَقُولُ
التَّحِيَّةُ فِي الصَّلاَةِ وَنُسَمِّي، وَيُسَلِّمُ بَعْضُنَا عَلَى بَعْضٍ،
فَسَمِعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " قُولُوا
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ
أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا
وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، فَإِنَّكُمْ إِذَا فَعَلْتُمْ
ذَلِكَ فَقَدْ سَلَّمْتُمْ عَلَى كُلِّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ
وَالأَرْضِ ".
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সালাতের (বৈঠকে) আত্তাহিয়্যাতু......বলতাম,
তখন আমাদের একে অপরকে সালামও করতাম। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তা শুনে ইরশাদ করলেন : তোমরা বলবে- التَّحيّاتُ لله
“যাবতীয় মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ্রই জন্য। হে (মহান) নবী! আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহ্র রহমত ও বরকত (বর্ষিত)- হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহ্র সালিহ্ বান্দাদের প্রতি; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন প্রকৃত ইলাহ্ নেই। এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রাসূল।”
কেননা, তোমরা এরূপ করলে আসমান ও যমীনে আল্লাহ্র সকল নেক বান্দাকে তোমরা যেন সালাম করলে।
“যাবতীয় মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ্রই জন্য। হে (মহান) নবী! আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহ্র রহমত ও বরকত (বর্ষিত)- হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহ্র সালিহ্ বান্দাদের প্রতি; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন প্রকৃত ইলাহ্ নেই। এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রাসূল।”
কেননা, তোমরা এরূপ করলে আসমান ও যমীনে আল্লাহ্র সকল নেক বান্দাকে তোমরা যেন সালাম করলে।
২১/৫. অধ্যায়ঃ
সালাতে মহিলাদের ‘তাসফীক’ (হাত তালি দেয়া)।
১২০৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " التَّسْبِيحُ لِلرِّجَالِ وَالتَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ
করেছেনঃ (ইমামের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য) পুরুষদের বেলায় তাস্বীহ্-সুবহানাল্লাহ্
বলা। তবে মহিলাদের বেলায় ‘তাসফীক’ (এক হাতের তালু দিয়ে অন্য হাতের তালুতে মারা)।
১২০৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى،
أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم "
التَّسْبِيحُ لِلرِّجَالِ وَالتَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ "
সাহ্ল
ইব্নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতে (লোকমা দেয়ার জন্য) পুরুষদের জন্য ‘তাস্বীহ্’ আর
মহিলাদের জন্য তাসফীক।
২১/৬. অধ্যায়ঃ
উদ্ভূত কোন কারণে সালাতে থাকা অবস্থায় পিছনে চলে আসা অথবা সামনে
অগ্রসর হওয়া।
এ বিষয়ে সাহল ইব্নু সা‘দ
(রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে রিওয়ায়াত করেছেন।
১২০৫
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ
مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ يُونُسُ قَالَ الزُّهْرِيُّ
أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ الْمُسْلِمِينَ، بَيْنَا هُمْ فِي
الْفَجْرِ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ، وَأَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ يُصَلِّي بِهِمْ
فَفَجَأَهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَدْ كَشَفَ سِتْرَ حُجْرَةِ
عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ فَنَظَرَ إِلَيْهِمْ، وَهُمْ صُفُوفٌ، فَتَبَسَّمَ
يَضْحَكُ، فَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ عَلَى عَقِبَيْهِ، وَظَنَّ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيدُ أَنْ يَخْرُجَ إِلَى
الصَّلاَةِ، وَهَمَّ الْمُسْلِمُونَ أَنْ يَفْتَتِنُوا فِي صَلاَتِهِمْ فَرَحًا
بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حِينَ رَأَوْهُ، فَأَشَارَ بِيَدِهِ أَنْ
أَتِمُّوا، ثُمَّ دَخَلَ الْحُجْرَةَ وَأَرْخَى السِّتْرَ، وَتُوُفِّيَ ذَلِكَ
الْيَوْمَ.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মুসলিমগণ সোমবার (রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ওফাতের দিন) ফজরের সালাতে ছিলেন, আবূ বকর (রাঃ) তাঁদের
নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)
-এর হুজরার পর্দা সরিয়ে তাঁদের দিকে তাকালেন। তখন তাঁরা সারিবদ্ধ ছিলেন। তা দেখে
তিনি মৃদু হাসলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) তাঁর গোড়ালির উপর ভর দিয়ে পিছে সরে আসলেন।
তিনি ধারণা করলেন যে, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতের
জন্য আসার ইচ্ছা করছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখার আনন্দে মুসলিমগণের
সালাত ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখন তিনি সালাত সুসম্পন্ন করার জন্য তাদের
দিকে হাতে ইঙ্গিত করলেন। অতঃপর তিনি হুজরায় প্রবেশ করেন এবং পর্দা ছেড়ে দেন আর সে
দিনই তাঁর মৃত্যু হয়।
২১/৭. অধ্যায়ঃ
মা তার সালাত রত সন্তানকে ডাকলে।
১২০৬
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي
جَعْفَرٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ
رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَادَتِ
امْرَأَةٌ ابْنَهَا، وَهْوَ فِي صَوْمَعَةٍ قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ
اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي
وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي.
قَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ يَمُوتُ جُرَيْجٌ حَتَّى يَنْظُرَ فِي وَجْهِ
الْمَيَامِيسِ. وَكَانَتْ تَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ رَاعِيَةٌ تَرْعَى
الْغَنَمَ فَوَلَدَتْ فَقِيلَ لَهَا مِمَّنْ هَذَا الْوَلَدُ قَالَتْ مِنْ
جُرَيْجٍ نَزَلَ مِنْ صَوْمَعَتِهِ. قَالَ جُرَيْجٌ أَيْنَ هَذِهِ الَّتِي
تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا لِي قَالَ يَا بَابُوسُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ رَاعِي
الْغَنَمِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায়
ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ্! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক)
আর (অন্য দিকে) আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্!
আমার মা আর আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরায়জ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার
মা ও আমার সালাত! মা বললেন, হে আল্লাহ্! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত
যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বক্রী চরাতো, সে জুরায়জের গীর্জায় আসা
যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল- এ সন্তান কার ঔরসজাত?
সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের। জুরায়জ তাঁর গীর্জা হতে নেমে এসে জিজ্ঞেস করলো,
কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা
হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবূস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বক্রীর অমুক রাখাল।
২১/৮. অধ্যায়ঃ
সালাতের মধ্যে কংকর সরানো।
১২০৭
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ،
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي
مُعَيْقِيبٌ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِي الرَّجُلِ يُسَوِّي
التُّرَابَ حَيْثُ يَسْجُدُ قَالَ " إِنْ كُنْتَ فَاعِلاً فَوَاحِدَةً
".
মু’আইকিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে
ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছেন, যে সিজদার স্থান হতে মাটি সমান করে। তিনি বলেন, যদি
তোমার একান্তই করতে হয়, তবে একবার।
২১/৯. অধ্যায়ঃ
সালাতে সিজদার জন্য কাপড় বিছানো।
১২০৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ،
حَدَّثَنَا بِشْرٌ، حَدَّثَنَا غَالِبٌ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فِي شِدَّةِ الْحَرِّ، فَإِذَا لَمْ يَسْتَطِعْ أَحَدُنَا أَنْ
يُمَكِّنَ وَجْهَهُ مِنَ الأَرْضِ بَسَطَ ثَوْبَهُ فَسَجَدَ عَلَيْهِ.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আমরা আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে সালাত আদায় করতাম। আমাদের কেউ
মাটিতে তার চেহারা (কপাল) স্থির রাখতে সক্ষম না হলে সে তার কাপড় বিছিয়ে তার উপর
সিজদা করত।
২১/১০. অধ্যায়ঃ
সালাতে যে কাজ বৈধ।
১২০৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ،
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كُنْتُ أَمُدُّ رِجْلِي فِي قِبْلَةِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُصَلِّي، فَإِذَا سَجَدَ غَمَزَنِي فَرَفَعْتُهَا،
فَإِذَا قَامَ مَدَدْتُهَا.
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সালাত আদায়কালে আমি তাঁর কিব্লার দিকে পা ছড়িয়ে রাখতাম; তিনি সিজদার
করার সময় আমাকে খোঁচা দিলে আমি পা সরিয়ে নিতাম; তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আবার পা ছড়িয়ে
দিতাম।
১২১০
حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ،
حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ
صَلَّى صَلاَةً قَالَ " إِنَّ الشَّيْطَانَ عَرَضَ لِي، فَشَدَّ عَلَىَّ لِيَقْطَعَ
الصَّلاَةَ عَلَىَّ، فَأَمْكَنَنِي اللَّهُ مِنْهُ، فَذَعَتُّهُ، وَلَقَدْ
هَمَمْتُ أَنْ أُوثِقَهُ إِلَى سَارِيَةٍ حَتَّى تُصْبِحُوا فَتَنْظُرُوا إِلَيْهِ
فَذَكَرْتُ قَوْلَ سُلَيْمَانَ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ رَبِّ هَبْ لِي مُلْكًا
لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي. فَرَدَّهُ اللَّهُ خَاسِيًا ".
ثُمَّ قَالَ النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ فَذَعَتُّهُ بِالذَّالِ أَىْ خَنَقْتُهُ
وَفَدَعَّتُّهُ مِنْ قَوْلِ اللَّهِ {يَوْمَ يُدَعُّونَ} أَىْ يُدْفَعُونَ
وَالصَّوَابُ، فَدَعَتُّهُ إِلاَّ أَنَّهُ كَذَا قَالَ بِتَشْدِيدِ الْعَيْنِ
وَالتَّاءِ.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার
সালাত আদায় করার পর বললেনঃ শয়তান আমার সামনে এসে আমার সালাত বিনষ্ট করার জন্য আমার
উপর আক্রমণ করল। তখন আল্লাহ্ আমাকে তার উপর ক্ষমতা দান করলেন, আমি তাকে ধাক্কা
দিয়ে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরলাম। আমার ইচ্ছা হয়েছিল, তাকে কোন স্তম্ভের সাথে
বেঁধে রাখি। যাতে তোমরা সকাল বেলা উঠে তাকে দেখতে পাও। তখন সুলাইমান ‘আলাইহিস
সালাম -এর এ দু’আ আমার মনে পড়ে গেল, رَبِّ هَب لي مُلكاً
“হে রব! আমাকে এমন এক রাজ্য দান করুন যার অধিকারী আমার পরে আর কেউ না হয়”। তখন
আল্লাহ্ তাকে (শয়তানকে) অপমানিত করে দূর করে দিলেন। (আ.প্র. ১১৩১)
নায্র ইব্নু শুমায়ল (রহঃ) বলেন, فَذَ عَتُّهُ শব্দটি ذال সহ অর্থাৎ তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরলাম এবং فَدَ عتُّهُ আল্লাহ্র কালাম يَومَ يُدَ عُّونَ থেকে অর্থাৎ তাদেরকে ধাক্কা মেরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সঠিক হল তবে فَدَ عَّتُّهُ তবে ع ও ت অক্ষর দুটি তাশদীদ সহ পাঠ করেছেন।
নায্র ইব্নু শুমায়ল (রহঃ) বলেন, فَذَ عَتُّهُ শব্দটি ذال সহ অর্থাৎ তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরলাম এবং فَدَ عتُّهُ আল্লাহ্র কালাম يَومَ يُدَ عُّونَ থেকে অর্থাৎ তাদেরকে ধাক্কা মেরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সঠিক হল তবে فَدَ عَّتُّهُ তবে ع ও ت অক্ষর দুটি তাশদীদ সহ পাঠ করেছেন।
২১/১১. অধ্যায়ঃ
সালাতে থাকাকালে পশু ছুটে পালালে।
ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, কাপড়
যদি (চুরি করে) নিয়ে যাওয়া হয়, তবে সালাত ছেড়ে দিয়ে চোরকে অনুসরন করবে।
১২১১
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا الأَزْرَقُ بْنُ قَيْسٍ، قَالَ كُنَّا بِالأَهْوَازِ
نُقَاتِلُ الْحَرُورِيَّةَ، فَبَيْنَا أَنَا عَلَى جُرُفِ نَهَرٍ إِذَا رَجُلٌ
يُصَلِّي، وَإِذَا لِجَامُ دَابَّتِهِ بِيَدِهِ فَجَعَلَتِ الدَّابَّةُ تُنَازِعُهُ،
وَجَعَلَ يَتْبَعُهَا ـ قَالَ شُعْبَةُ ـ هُوَ أَبُو بَرْزَةَ الأَسْلَمِيُّ ـ
فَجَعَلَ رَجُلٌ مِنَ الْخَوَارِجِ يَقُولُ اللَّهُمَّ افْعَلْ بِهَذَا
الشَّيْخِ. فَلَمَّا انْصَرَفَ الشَّيْخُ قَالَ إِنِّي سَمِعْتُ قَوْلَكُمْ،
وَإِنِّي غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِتَّ غَزَوَاتٍ أَوْ
سَبْعَ غَزَوَاتٍ وَثَمَانِيًا، وَشَهِدْتُ تَيْسِيرَهُ، وَإِنِّي أَنْ كُنْتُ
أَنْ أُرَاجِعَ مَعَ دَابَّتِي أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أَدَعَهَا تَرْجِعُ
إِلَى مَأْلَفِهَا فَيَشُقَّ عَلَىَّ.
আযরাক্ব
ইব্নু ক্বায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আহওয়ায শহরে হারুরী (খারিজী)
সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ছিলাম। যখন আমরা নহরের তীরে ছিলাম তখন সেখানে এক
ব্যক্তি এসে সালাত আদায় করতে লাগল আর তার বাহনের লাগাম তার হাতে আছে। বাহনটি (ছূটে
যাওয়ার জন্য) টানাটানি করতে লাগল, তিনিও তার অনুসরন করতে লাগলেন। রাবী শু‘বাহ
(রহঃ) বলেন, তিনি ছিলেন আবূ বারযাহ আসলামী (রাঃ)। এ অবস্থা দেখে এক খারিজী বলে
উঠলো, ইয়া আল্লাহ্! এ বৃদ্ধকে কিছু করুন। বৃদ্ধ সালাত শেষ করে বললেন- আমি তোমাদের
কথা শুনেছি। আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে
ছয়, সাত কিংবা আট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি এবং আমি তাঁর সহজীকরণ লক্ষ্য করেছি। আমার
বাহনটির সাথে আগপিছ হওয়া বাহনটিকে তার চারণ ভূমিতে ছেড়ে দেয়ার চেয়ে আমার নিকট অধিক
প্রিয়। কেননা, তা আমার জন্য কষ্টদায়ক হবে।
১২১২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،
عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ خَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَقَامَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَ سُورَةً طَوِيلَةً، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ، ثُمَّ
رَفَعَ رَأْسَهُ، ثُمَّ اسْتَفْتَحَ بِسُورَةٍ أُخْرَى، ثُمَّ رَكَعَ حَتَّى
قَضَاهَا وَسَجَدَ، ثُمَّ فَعَلَ ذَلِكَ فِي الثَّانِيَةِ، ثُمَّ قَالَ "
إِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَصَلُّوا
حَتَّى يُفْرَجَ عَنْكُمْ، لَقَدْ رَأَيْتُ فِي مَقَامِي هَذَا كُلَّ شَىْءٍ
وُعِدْتُهُ، حَتَّى لَقَدْ رَأَيْتُنِي أُرِيدُ أَنْ آخُذَ قِطْفًا مِنَ
الْجَنَّةِ حِينَ رَأَيْتُمُونِي جَعَلْتُ أَتَقَدَّمُ، وَلَقَدْ رَأَيْتُ
جَهَنَّمَ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا حِينَ رَأَيْتُمُونِي تَأَخَّرْتُ،
وَرَأَيْتُ فِيهَا عَمْرَو بْنَ لُحَىٍّ وَهُوَ الَّذِي سَيَّبَ السَّوَائِبَ
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার সুর্যগ্রহণ হলো। আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সালাতে) দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ সূরা পাঠ
করলেন, অতঃপর রুকূ’ করলেন, আর তা দীর্ঘ করলেন। অতঃপর রুকূ’ হতে মাথা তুলেন এবং
অন্য একটি সূরা পাঠ করতে শুরু করলেন। পরে রুকূ‘ সমাপ্ত করে সিজদা করলেন। দ্বিতীয়
রাকা‘আতেও এরূপ করলেন। অতঃপর বললেনঃ এ দু’টি (চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ) আল্লাহ্র
নিদর্শনসমূহের অন্যতম। তোমরা তা দেখলে গ্রহণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায়
করবে। আমি আমার এ স্থানে দাঁড়িয়ে, আমাকে যা ওয়াদা করা হয়েছে তা সবই দেখতে পেয়েছি।
এমনকি যখন তোমরা আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে দেখেছিলে তখন আমি দেখলাম যে, জান্নাতের
একটি (আঙ্গুর) গুচ্ছ নেয়ার ইচ্ছা করছি এবং জাহান্নামে দেখতে পেলাম যে, তার একাংশ
অন্য অংশকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলছে। আর যখন তোমরা আমাকে পিছনে সরে আসতে দেখেছিলে
আমি দেখলাম সেখানে আম্র ইব্নু লুহাইকে যে সায়িবাহ [১] প্রথা প্রবর্তন করেছিল।
[১] السَوائِبَ বহুবচন, السائِبَة একবচনে - অর্থ বিমুক্ত,
পরিত্যক্ত, বাঁধনমুক্ত । জাহিলী যুগে দেব-দেবীর নামে উট ছেড়ে দেওয়ার কু-প্রথা ছিল ।
এসব উটের দুধ পান করা এবং তাকে বাহনরূপে ব্যবহার করা অবৈধ মনে করা হত ।
২১/১২. অধ্যায়ঃ
সালাতে থাকাবস্থায় থু থু নিক্ষেপ করা ও ফুঁ দেয়া।
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উম্র (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য
গ্রহণের সালাতের সিজদার সময় ফুঁ দিয়েছিলেন।
১২১৩
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ
حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ
رضى الله عنهما ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى نُخَامَةً فِي
قِبْلَةِ الْمَسْجِدِ، فَتَغَيَّظَ عَلَى أَهْلِ الْمَسْجِدِ وَقَالَ "
إِنَّ اللَّهَ قِبَلَ أَحَدِكُمْ، فَإِذَا كَانَ فِي صَلاَتِهِ، فَلاَ يَبْزُقَنَّ
ـ أَوْ قَالَ ـ لاَ يَتَنَخَّمَنَّ ". ثُمَّ نَزَلَ فَحَتَّهَا
بِيَدِهِ. وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ إِذَا بَزَقَ أَحَدُكُمْ
فَلْيَبْزُقْ عَلَى يَسَارِهِ.
ইব্নু
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মসজিদের কিব্লার দিকে নাকের শ্লেষ্মা দেখতে পেয়ে মসজিদের লোকদের উপর রাগান্বিত
হলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ্ তোমাদের প্রত্যেকের সামনে রয়েছেন, কাজেই তোমাদের কেউ
সালাতে থাকাকালে থু থু ফেলবে না বা বর্ণনাকারী বলেছেন, নাক ঝাড়বে না। এ কথা বলার
পর তিনি (মিম্বার হতে) নেমে এসে নিজের হাতে তা ঘষে ঘষে পরিষ্কার করলেন এবং ইব্নু
‘উমর (রাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন থুথু ফেলে তখন সে যেন তার বাঁ দিকে ফেলে।
১২১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ،
حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ
ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا كَانَ
فِي الصَّلاَةِ فَإِنَّهُ يُنَاجِي رَبَّهُ، فَلاَ يَبْزُقَنَّ بَيْنَ يَدَيْهِ وَلاَ
عَنْ يَمِينِهِ، وَلَكِنْ عَنْ شِمَالِهِ تَحْتَ قَدَمِهِ الْيُسْرَى ".
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তখন তো সে তার রবের সাথে নিবিড় আলাপে মশগুল
থাকে। কাজেই সে যেন তার সামনে বা ডানে থু থু না ফেলে; তবে (প্রয়োজনে) বাঁ দিকে বা
পায়ের নীচে ফেলবে।
২১/১৩. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি অজান্তে সালাতে হাততালি দেয় তার সালাত বিনষ্ট হয় না।
এ বিষয়ে সাহ্ল ইব্নু সা‘দ
(রাঃ) সুত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
২১/১৪.
অধ্যায়ঃ
মুসল্লীকে সম্মুখে এগুতে অথবা অপেক্ষা করতে বলা হলে সে যদি অপেক্ষা
করে তবে এতে গুনাহ নেই।
১২১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ـ
رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّاسُ يُصَلُّونَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَهُمْ عَاقِدُو أُزْرِهِمْ مِنَ الصِّغَرِ عَلَى رِقَابِهِمْ، فَقِيلَ لِلنِّسَاءِ
" لاَ تَرْفَعْنَ رُءُوسَكُنَّ حَتَّى يَسْتَوِيَ الرِّجَالُ جُلُوسًا
".
সাহ্ল
ইব্নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাহাবীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন এবং তাঁরা তাদের লুঙ্গি ছোট হবার
কারনে ঘাড়ের সাথে বেঁধে রাখতেন। তাই মহিলাগণকে বলা হল, পুরুষগণ সোজা হয়ে না বসা
পর্যন্ত তোমরা (সিজদার হতে) মাথা তুলবে না।
২১/১৫. অধ্যায়ঃ
সালাতে সালামের উত্তর দিবে না।
১২১৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنْتُ أُسَلِّمُ
عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ فَيَرُدُّ عَلَىَّ،
فَلَمَّا رَجَعْنَا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَىَّ وَقَالَ "
إِنَّ فِي الصَّلاَةِ شُغْلاً ".
‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -কে তাঁর সালাতে সালাম করতাম। তিনি আমাকে সালামের জবাব দিতেন। আমরা (আবিসিনিয়া
হতে) ফিরে এসে তাঁকে (সালাতে) সালাম করলাম। তিনি জওয়াব দিলেন না এবং পরে বললেনঃ
সালাতে আছে নিমগ্নতা।
১২১৭
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ شِنْظِيرٍ، عَنْ عَطَاءِ
بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ
بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَاجَةٍ لَهُ فَانْطَلَقْتُ،
ثُمَّ رَجَعْتُ وَقَدْ قَضَيْتُهَا، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَلَمْ يَرُدَّ عَلَىَّ، فَوَقَعَ فِي قَلْبِي مَا اللَّهُ
أَعْلَمُ بِهِ فَقُلْتُ فِي نَفْسِي لَعَلَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَجَدَ عَلَىَّ أَنِّي أَبْطَأْتُ عَلَيْهِ، ثُمَّ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَلَمْ
يَرُدَّ عَلَىَّ، فَوَقَعَ فِي قَلْبِي أَشَدُّ مِنَ الْمَرَّةِ الأُولَى، ثُمَّ
سَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ عَلَىَّ فَقَالَ " إِنَّمَا مَنَعَنِي أَنْ
أَرُدَّ عَلَيْكَ أَنِّي كُنْتُ أُصَلِّي ". وَكَانَ عَلَى رَاحِلَتِهِ
مُتَوَجِّهًا إِلَى غَيْرِ الْقِبْلَةِ.
জাবির
ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর একটি কাজে পাঠালেন, আমি গেলাম এবং কাজটি সেরে
ফিরে এলাম। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সালাম করলাম। তিনি
জওয়াব দিলেন না। এতে আমার মনে এমন খটকা লাগল যা আল্লাহ্ই ভাল জানেন। আমি মনে মনে
বললাম, সম্ভবত আমি বিলম্বে আসার কারণে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন। আবার আমি তাঁকে সালাম করলাম; তিনি জওয়াব দিলেন না। ফলে
আমার মনে প্রথম বারের চেয়েও অধিক খটকা লাগল। (সালাত শেষে) আবার আমি তাঁকে সালাম
করলাম এবার তিনি সালামের জওয়াব দিলেন এবং বললেনঃ সালাতে ছিলাম বলে তোমার সালামের
জওয়াব দিতে পারিনি। তিনি তখন তাঁর বাহনের পিঠে কিব্লা হতে অন্যমুখে ছিলেন।
২১/১৬. অধ্যায়ঃ
কিছু ঘটলে সালাতে হাত উত্তোলন করা।
১২১৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ـ رضى
الله عنه ـ قَالَ بَلَغَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ بَنِي عَمْرِو
بْنِ عَوْفٍ بِقُبَاءٍ كَانَ بَيْنَهُمْ شَىْءٌ، فَخَرَجَ يُصْلِحُ بَيْنَهُمْ فِي
أُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَحُبِسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَحَانَتِ
الصَّلاَةُ، فَجَاءَ بِلاَلٌ إِلَى أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنهما ـ فَقَالَ يَا
أَبَا بَكْرٍ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ حُبِسَ وَقَدْ
حَانَتِ الصَّلاَةُ، فَهَلْ لَكَ أَنْ تَؤُمَّ النَّاسَ قَالَ نَعَمْ إِنْ
شِئْتَ. فَأَقَامَ بِلاَلٌ الصَّلاَةَ، وَتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه
ـ فَكَبَّرَ لِلنَّاسِ، وَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمْشِي فِي
الصُّفُوفِ يَشُقُّهَا شَقًّا، حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ، فَأَخَذَ النَّاسُ فِي
التَّصْفِيحِ. قَالَ سَهْلٌ التَّصْفِيحُ هُوَ التَّصْفِيقُ. قَالَ وَكَانَ
أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ لاَ يَلْتَفِتُ فِي صَلاَتِهِ، فَلَمَّا أَكْثَرَ
النَّاسُ الْتَفَتَ فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَشَارَ
إِلَيْهِ، يَأْمُرُهُ أَنْ يُصَلِّيَ، فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ
يَدَهُ، فَحَمِدَ اللَّهَ، ثُمَّ رَجَعَ الْقَهْقَرَى وَرَاءَهُ حَتَّى قَامَ فِي
الصَّفِّ، وَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى لِلنَّاسِ،
فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ
مَا لَكُمْ حِينَ نَابَكُمْ شَىْءٌ فِي الصَّلاَةِ أَخَذْتُمْ بِالتَّصْفِيحِ
إِنَّمَا التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ، مَنْ نَابَهُ شَىْءٌ فِي صَلاَتِهِ فَلْيَقُلْ
سُبْحَانَ اللَّهِ ". ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنه
ـ فَقَالَ " يَا أَبَا بَكْرٍ، مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ لِلنَّاسِ
حِينَ أَشَرْتُ إِلَيْكَ ". قَالَ أَبُو بَكْرٍ مَا كَانَ يَنْبَغِي
لاِبْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم.
সাহ্ল
ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছল যে, কুবায় বনূ আমর ইব্নু আওফ গোত্রে
কোন ব্যাপার ঘটেছে। তাদের মধ্যে মীমাংসার উদ্দেশে তিনি কয়েকজন সাহাবীসহ বেরিয়ে
গেলেন। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে কর্মব্যস্ত হয়ে
পড়েন। ইতোমধ্যে সালাতের সময় হয়ে গেল। বিলাল (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) -এর নিকট এসে
বললেন, হে আবূ বকর (রাঃ)! আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কর্মব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে সালাতের সময় উপস্থিত। আপনি কি লোকদের ইমামতি করবেন? তিনি
বললেন, হাঁ, যদি তুমি চাও। তখন বিলাল (রাঃ) সালাতের ইক্বামাত বললেন এবং আবূ বকর
(রাঃ) এগিয়ে গেলেন এবং তাক্বীর বললেন। তখন আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আসলেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে এগিয়ে গিয়ে কাতারে দাঁড়ালেন।
মুসল্লীগণ তখন তাস্ফীহ্ করতে লাগলেন। সাহ্ল (রাঃ) বলেন, তাস্ফীহ্ মানে তাস্ফীক
(হাতে তালি দেয়া) তিনি আরো বললেন, আবূ বকর (রাঃ) সালাতে এদিক সেদিক তাকাতেন না।
মুসল্লীগণ অধিক (তালি দেয়া) করবে, তিনি লক্ষ্য করে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেলেন। তিনি তাঁকে ইঙ্গিতে সালাত আদায় করার আদেশ
দিলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) তাঁর দু’হাত তুললেন এবং আল্লাহ্র হাম্দ বর্ণনা করলেন।
অতঃপর পিছু হেঁটে পিছনে চলে এসে কাতারে দাঁড়ালেন। আর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) সামনে এগিয়ে গেলেন এবং মুসল্লীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষ
করে তিনি মুসল্লীগণের দিকে মুখ করে বললেনঃ হে লোক সকল! তোমাদের কি হয়েছে? সালাতে
কোন ব্যাপার ঘটলে তোমরা হাত চাপড়াতে শুরু কর কেন? হাত চাপড়ানো তো মেয়েদের জন্য।
সালাতে আদায়রত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে পুরুষরা সুব্হানাল্লাহ্ বলবে। অতপর তিনি
আবূ বকর (রাঃ) -এর দিকে লক্ষ্য করে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ বক্র! তোমাকে আমি
ইঙ্গিত করা সত্ত্বেও কিসে তোমাকে সালাত আদায়ে বাধা দিল? আবূ বকর (রাঃ) বললেন,
আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায়
করা ইব্নু আবূ কুহাফার [১] জন্য সমীচীন নয়।
[১] আবূ কূহাফাহ, আবু বক্র (রাঃ)
-এর পিতা।
২১/১৭. অধ্যায়ঃ
সালাতে কোমরে হাত রাখা।
১২১৯
حَدَّثَنَا أَبُو
النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ نُهِيَ عَنِ الْخَصْرِ، فِي الصَّلاَةِ.
وَقَالَ هِشَامٌ وَأَبُو هِلاَلٍ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতে কোমরে হাত রাখা নিষেধ করা
হয়েছে। হিশাম ও আবূ হিলাল (রহঃ) ইব্নু সীরীন (রহঃ) -এর মাধ্যমে আবু হুরায়রা (রাঃ)
সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
১২২০
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ
عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه قَالَ نُهِيَ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ
مُخْتَصِرًا.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোমরে হাত রেখে সালাত আদায় করতে
লোকেদের নিষেধ করা হয়েছে।
২১/১৮. অধ্যায়ঃ
সালাতে মুসল্লীর কোন বিষয় কল্পনা করা।
‘উমর (রাঃ) বলেছেন, আমি
সালাতের মধ্যে আমার সেনবাহিনী বিন্যাসের চিন্তা করে থাকি। [১]
[১] জিহাদ এবং আখিরাতের কাজ বিধায় বিশেষ পরিস্থিতিতে উমর (রাঃ) সালাতে এরূপ চিন্তা করেছেন।
[১] জিহাদ এবং আখিরাতের কাজ বিধায় বিশেষ পরিস্থিতিতে উমর (রাঃ) সালাতে এরূপ চিন্তা করেছেন।
১২২১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ
مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا عُمَرُ ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ
أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الْحَارِثِ ـ رضى الله
عنه ـ قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْعَصْرَ، فَلَمَّا
سَلَّمَ قَامَ سَرِيعًا دَخَلَ عَلَى بَعْضِ نِسَائِهِ، ثُمَّ خَرَجَ وَرَأَى مَا
فِي وُجُوهِ الْقَوْمِ مِنْ تَعَجُّبِهِمْ لِسُرْعَتِهِ فَقَالَ "
ذَكَرْتُ وَأَنَا فِي الصَّلاَةِ تِبْرًا عِنْدَنَا، فَكَرِهْتُ أَنْ يُمْسِيَ
أَوْ يَبِيتَ عِنْدَنَا فَأَمَرْتُ بِقِسْمَتِهِ ".
‘ঊকবাহ
ইব্নু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর সঙ্গে ‘আসরের সালাত আদায় করলাম। সালাম করেই তিনি দ্রুত উঠে তাঁর কোন
এক সহধর্মিণীর নিকট গেলেন, অতঃপর বেরিয়ে এলেন। তাঁর দ্রুত যাওয়া আসার ফলে (উপস্থিত)
সাহাবীগণের চেহারায় বিস্ময়ের আভাস দেখে তিনি বললেনঃ সালাতে আমার নিকট রাখা একটি
সোনার টুক্রার কথা আমার মনে পড়ে গেল। সন্ধ্যায় বা রাতে তা আমার নিকট থাকবে আমি
এটা অপছন্দ করলাম। তাই, তা বন্টন করে দেয়ার নির্দেশ দিলাম।
১২২২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ جَعْفَرٍ، عَنِ الأَعْرَجِ، قَالَ قَالَ
أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا أُذِّنَ بِالصَّلاَةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ لَهُ ضُرَاطٌ حَتَّى لاَ
يَسْمَعَ التَّأْذِينَ، فَإِذَا سَكَتَ الْمُؤَذِّنُ أَقْبَلَ، فَإِذَا ثُوِّبَ
أَدْبَرَ فَإِذَا سَكَتَ أَقْبَلَ، فَلاَ يَزَالُ بِالْمَرْءِ يَقُولُ لَهُ
اذْكُرْ مَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ حَتَّى لاَ يَدْرِي كَمْ صَلَّى ".
قَالَ أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِذَا فَعَلَ أَحَدُكُمْ ذَلِكَ
فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ قَاعِدٌ. وَسَمِعَهُ أَبُو سَلَمَةَ مِنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের আযান হলে শয়তান পিঠ ফিরিয়ে পালায় যাতে সে
আযান শুনতে না পায়। তখন তার পশ্চাদ-বায়ু নিঃসরণ হতে থাকে। মুআয্যিন আযান শেষে
নীরব হলে সে আবার এগিয়ে আসে। আবার ইক্বামাত বলা হলে পালিয়ে যায়। মুআয্যিন
(ইক্বামাত) শেষ করলে এগিয়ে আসে। তখন সে মুসল্লীকে বলতে থাকে, (ওটা) স্মরন কর, যে
বিষয় তার স্মরনে ছিল না। শেষ পর্যন্ত কত রাক‘আত সালাত আদায় করল তা মনে করতে পারে
না। আবূ সালামা ইব্নু ‘আবদুর (রহঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ এরূপ অবস্থায় পড়লে (শেষ
বৈঠকে) বসা অবস্থায় যেন দু’টি সিজদা করে। এ কথা আবূ সালামা (রহঃ) আবূ হুরায়রা
(রাঃ) হতে শুনেছেন।
১২২৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي
ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله
عنه ـ يَقُولُ النَّاسُ أَكْثَرَ أَبُو هُرَيْرَةَ، فَلَقِيتُ رَجُلاً فَقُلْتُ
بِمَ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْبَارِحَةَ فِي الْعَتَمَةِ
فَقَالَ لاَ أَدْرِي. فَقُلْتُ لَمْ تَشْهَدْهَا قَالَ بَلَى. قُلْتُ لَكِنْ
أَنَا أَدْرِي، قَرَأَ سُورَةَ كَذَا وَكَذَا.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকে বলে আবূ হুরায়রা (রাঃ) অধিক
হাদীস বর্ণনা করেছে। এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ হলে আমি জিজ্ঞেস করলাম। আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গতরাতে ‘ইশার সালাতে কোন সূরা পড়েছেন?
লোকটি বলল, আমি জানিনা। আমি বললাম, কেন, তুমি কি সে সালাতে উপস্থিত ছিলে না? সে
বলল, হ্যাঁ, ছিলাম। আমি বললাম, আমি কিন্তু জানি তিনি অমুক অমুক সূরা পড়েছেন।
No comments