মুয়াত্তা ইমাম মালিক মানত ও কসম সম্পর্কিত অধ্যায়
পরিচ্ছেদ
১
কোথাও হেঁটে যাওয়ার
মানত করা
১০০২
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ سَعْدَ بْنَ
عُبَادَةَ اسْتَفْتَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ
إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا نَذْرٌ وَلَمْ تَقْضِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اقْضِهِ عَنْهَا.
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ
ইবনু উবাদা (রা) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জিজ্ঞেস করলেন,
আমার মাতার ইন্তেকাল হয়ে গিয়েছে। তিনি একটা মানত করেছিলেন, কিন্তু পূর্ণ করে যেতে
পারেননি। এখন কি করা যায়? রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাঁর
তরফ হতে তুমিই উহা আদায় করে দাও। (বুখারী ২৭৬১, মুসলিম ১৬৩৮)
১০০৩
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ عَنْ عَمَّتِهِ
أَنَّهَا حَدَّثَتْهُ عَنْ جَدَّتِهِ أَنَّهَا كَانَتْ جَعَلَتْ عَلَى نَفْسِهَا
مَشْيًا إِلَى مَسْجِدِ قُبَاءٍ فَمَاتَتْ وَلَمْ تَقْضِهِ فَأَفْتَى عَبْدُ اللهِ
بْنُ عَبَّاسٍ ابْنَتَهَا أَنْ تَمْشِيَ عَنْهَا ১৭১২-قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ لَا
يَمْشِي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ.
আবদুল্লাহ্ ইবনু
আবূ বাকর (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তার ফুফু বর্ণনা করেছেন, তাঁর
দাদী মসজিদ-ই কোবায় হেঁটে যাওয়ার মানত করেছিলেন, কিন্তু ইহা পূরণ করার পূর্বেই
তাঁর ইন্তেকাল হয়ে যায়। তখন আবদুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস (রা) ঐ মানত [১] আদায় করে
দেওয়ার জন্য তাঁর কন্যাকে নির্দেশ দেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, কারো তরফ হতে হেঁটে যাওয়ার মানত পূরণ করা জরুরী নয়।
[১] মসজিদ-ই কোবা মদীনা হতে তিন মাইল দূরে অবস্থিত। রসূলুল্লাহ্
(সা) পদব্রজে ও আরোহী অবস্থায় সেখানে গমন করতেন। আবদুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস (রা) এ দিকে
লক্ষ্য করে মানত পুরা করার নির্দেশ দিয়াছিলেন।
১০০৪
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي حَبِيبَةَ قَالَ: قُلْتُ
لِرَجُلٍ وَأَنَا حَدِيثُ السِّنِّ مَا عَلَى الرَّجُلِ أَنْ يَقُولَ عَلَيَّ
مَشْيٌ إِلَى بَيْتِ اللهِ وَلَمْ يَقُلْ عَلَيَّ نَذْرُ مَشْيٍ فَقَالَ لِي
رَجُلٌ هَلْ لَكَ أَنْ أُعْطِيَكَ هَذَا الْجِرْوَ لِجِرْوِ قِثَّاءٍ فِي يَدِهِ
وَتَقُولُ عَلَيَّ مَشْيٌ إِلَى بَيْتِ اللهِ قَالَ فَقُلْتُ نَعَمْ فَقُلْتُهُ
وَأَنَا يَوْمَئِذٍ حَدِيثُ السِّنِّ ثُمَّ مَكَثْتُ حَتَّى عَقَلْتُ فَقِيلَ لِي
إِنَّ عَلَيْكَ مَشْيًا فَجِئْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ فَسَأَلْتُهُ عَنْ
ذَلِكَ فَقَالَ لِي عَلَيْكَ مَشْيٌ فَمَشَيْتُ قَالَ مَالِك وَهَذَا الْأَمْرُ
عِنْدَنَا.
আবদুল্লাহ্ ইবনু
আবূ হাবীবা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আমার বয়স তখন অল্প। এক ব্যক্তিকে
বললাম : “বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার নযর বা মানত করলাম” কোন ব্যক্তি এই কথা
না বলে “বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া আমার উপর ওয়াজিব” এইরূপ বললে এতে কোন দোষ
নেই। ঐ ব্যক্তি আমাকে তখন বলল, আমার হাতে এই শসাটি তুমি নিয়ে যাও, আর এইটুকু বল
দেখি, “বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া আমার উপর ওয়াজিব।” আমি বললাম। হ্যাঁ,
বলতেছি এবং ঐ কথা বলে দিলাম। তখন আমি অল্প বয়ষ্ক ছিলাম। তাই প্রথমে কিছু চিন্তা
করিনি। কিন্তু পরে বুঝ হওয়ার পর চিন্তা হল। অন্য লোকেরা বলতে লাগল : এখন তোমার উপর
বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া ওয়াজিব হয়েছে। শেষে সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রা)-কে
আমি এই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও আমাকে বললেন, হ্যাঁ, বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত
তোমাকে হেঁটে যেতে হবে। শেষ পর্যন্ত আমি বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত হেঁটে যেয়ে এই নযর
পুরা করলাম। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমার মতেও হুকুম এটাই।
২২ - بَاب مَا جَاءَ فِيمَنْ نَذَرَ مَشْيًا إِلَى بَيْتِ اللهِ فَعَجَزَ
পরিচ্ছেদ
২
বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত
হেঁটে যাওয়ার মানত করা এবং পরে অক্ষম হওয়া
১০০৫
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عُرْوَةَ بْنِ
أُذَيْنَةَ اللَّيْثِيِّ أَنَّهُ قَالَ: خَرَجْتُ مَعَ جَدَّةٍ لِي عَلَيْهَا
مَشْيٌ إِلَى بَيْتِ اللهِ حَتَّى إِذَا كُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيقِ عَجَزَتْ
فَأَرْسَلَتْ مَوْلًى لَهَا يَسْأَلُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ فَخَرَجْتُ مَعَهُ
فَسَأَلَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ مُرْهَا
فَلْتَرْكَبْ ثُمَّ لْتَمْشِ مِنْ حَيْثُ عَجَزَتْ، قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت
قَوْله تَعَالَى يَقُولُ وَنَرَى عَلَيْهَا مَعَ ذَلِكَ الْهَدْيَ.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ
وَأَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ كَانَا يَقُولَانِ مِثْلَ قَوْلِ عَبْدِ
اللهِ بْنِ عُمَرَ
উরওয়াহ্ ইবনু
‘উযাইনী লাইসী (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আমার দাদী বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত
হেঁটে যাওয়ার মানত করেছিলেন। তিনি যখন মানত পূরণ করতে যাত্রা করেন আমিও তাঁর সাথে
চললাম। শেষে হাঁটতে হাঁটতে অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি স্বীয় গোলামকে
আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-এর নিকট এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে প্রেরণ করেন। আমিও
তার সাথে গেলাম। আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) জবাবে বললেন, এখন সে কিছুতে আরোহণ করে
যাক। পরে যে স্থান হতে আরোহণ করেছিল সেই স্থান হতে পুনরায় তাঁকে হেঁটে যেতে হবে।
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, এই ধরনের ব্যক্তিকে এর সাথে একটি কুরবানীও করতে হবে।
মালিক (র) জ্ঞাত হয়েছেন, সা’ঈদ ইবনুল মুসায়্যাব (রা) এবং আবূ সালমা ইবনু আবদুর
রহমানও এই বিষয়ে আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-এর মতো অভিমত ব্যক্ত করেন। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১০০৬
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
أَنَّهُ قَالَ: كَانَ عَلَيَّ مَشْيٌ فَأَصَابَتْنِي خَاصِرَةٌ فَرَكِبْتُ حَتَّى
أَتَيْتُ مَكَّةَ فَسَأَلْتُ عَطَاءَ بْنَ أَبِي رَبَاحٍ وَغَيْرَهُ فَقَالُوا
عَلَيْكَ هَدْيٌ فَلَمَّا قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ سَأَلْتُ عُلَمَاءَهَا
فَأَمَرُونِي أَنْ أَمْشِيَ مَرَّةً أُخْرَى مِنْ حَيْثُ عَجَزْتُ فَمَشَيْتُ ১৭১৭-قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت قَوْله تَعَالَى
يَقُولُ فَالْأَمْرُ عِنْدَنَا فِيمَنْ يَقُولُ عَلَيَّ مَشْيٌ إِلَى بَيْتِ اللهِ
أَنَّهُ إِذَا عَجَزَ رَكِبَ ثُمَّ عَادَ فَمَشَى مِنْ حَيْثُ عَجَزَ فَإِنْ كَانَ
لَا يَسْتَطِيعُ الْمَشْيَ فَلْيَمْشِ مَا قَدَرَ عَلَيْهِ ثُمَّ لْيَرْكَبْ
وَعَلَيْهِ هَدْيُ بَدَنَةٍ أَوْ بَقَرَةٍ أَوْ شَاةٍ إِنْ لَمْ يَجِدْ إِلَّا
هِيَ ১৭১৮-و
سُئِلَ مَالِك عَنْ الرَّجُلِ يَقُولُ لِلرَّجُلِ أَنَا أَحْمِلُكَ إِلَى بَيْتِ
اللهِ فَقَالَ مَالِك إِنْ نَوَى أَنْ يَحْمِلَهُ عَلَى رَقَبَتِهِ يُرِيدُ
بِذَلِكَ الْمَشَقَّةَ وَتَعَبَ نَفْسِهِ فَلَيْسَ ذَلِكَ عَلَيْهِ وَلْيَمْشِ
عَلَى رِجْلَيْهِ وَلْيُهْدِ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ نَوَى شَيْئًا فَلْيَحْجُجْ
وَلْيَرْكَبْ وَلْيَحْجُجْ بِذَلِكَ الرَّجُلِ مَعَهُ وَذَلِكَ أَنَّهُ قَالَ
أَنَا أَحْمِلُكَ إِلَى بَيْتِ اللهِ فَإِنْ أَبَى أَنْ يَحُجَّ مَعَهُ فَلَيْسَ
عَلَيْهِ شَيْءٌ وَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ.
১৭১৯-قَالَ يَحْيَى
سُئِلَ مَالِك عَنْ الرَّجُلِ يَحْلِفُ بِنُذُورٍ مُسَمَّاةٍ مَشْيًا إِلَى بَيْتِ
اللهِ أَنْ لَا يُكَلِّمَ أَخَاهُ أَوْ أَبَاهُ بِكَذَا وَكَذَا نَذْرًا لِشَيْءٍ
لَا يَقْوَى عَلَيْهِ وَلَوْ تَكَلَّفَ ذَلِكَ كُلَّ عَامٍ لَعُرِفَ أَنَّهُ لَا
يَبْلُغُ عُمْرُهُ مَا جَعَلَ عَلَى نَفْسِهِ مِنْ ذَلِكَ فَقِيلَ لَهُ هَلْ
يُجْزِيهِ مِنْ ذَلِكَ نَذْرٌ وَاحِدٌ أَوْ نُذُورٌ مُسَمَّاةٌ فَقَالَ مَالِك مَا
أَعْلَمُهُ يُجْزِئُهُ مِنْ ذَلِكَ إِلَّا الْوَفَاءُ بِمَا جَعَلَ عَلَى نَفْسِهِ
فَلْيَمْشِ مَا قَدَرَ عَلَيْهِ مِنْ الزَّمَانِ وَلْيَتَقَرَّبْ إِلَى اللهِ
تَعَالَى بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ الْخَيْرِ.
ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
আমি বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত হেঁটে
যাওয়ার মানত করেছিলাম, কিন্তু কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে পড়ি। তাই বাহনে চড়ে
আমাকে মক্কায় আসতে হল। আতা ইবনু আবূ রাবাহ (র) অন্যদেরকে এই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে
তাঁরা বললেন, তোমাকে একটা কুরবানী দিতে হবে। মদীনায় এসে সেখানকার আলিমদের নিকটও এই
বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তাঁরা বললেন, যে স্থান হতে সওয়ার হয়েছিলে সেই স্থান হতে
তোমাকে আবার হেঁটে যেতে হবে। শেষে আমি তাই করলাম। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাওয়া আমার ওপর ওয়াজিব। এই কথা
বলে যদি কেউ হেঁটে যাত্রা শুরু করে এবং পরে অপারগ হয়ে যায় তবে সে সওয়ার হয়ে যাবে
এবং পরবর্তী সময়ে যে স্থান হতে সে অপারগ হয়েছিল সেই স্থান হতে পুনরায় হেঁটে যাবে।
হেঁটে না পারলে যতদূর সামর্থ্যে কুলায় হেঁটে যাবে আর বাকীটুকু সওয়ার হয়ে যাবে এবং
একটি উট বা গরু কুরবানী করবে। সম্ভব না হলে একটি বকরী কুরবানী করবে।
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যদি কেউ অন্য একজনকে বলে : তোমাকে আমি বায়তুল্লাহ্
পর্যন্ত বহন করে নিয়ে যাব, তবে কি হুকুম হবে? তিনি বললেন, যদি এই কথা বলার সময়
কথকের এই নিয়্যত হয়ে থাকে যে, তার ঘাড়ে উঠিয়ে নিয়ে যাবে এবং এভাবে নিজেকে কষ্টে
ফেলে তার উদ্দেশ্য হয়, তবে তার উপর কিছুই ওয়াজিব হবে না বরং সে পায়ে হেঁটে যাবে
এবং একটি কুরবানী দিবে। আর বলার সময় যদি তার কিছু নিয়্যত না থাকে, তবে সে সওয়ার
হয়ে যাবে এবং ঐ ব্যক্তিকেও সঙ্গে নিয়ে যাবে। কারণ সে তাকে বহন করে নিয়ে যাওয়ার
অঙ্গীকার করেছিল। ঐ ব্যক্তি যদি সঙ্গে যেতে না চায় তবে তার উপর কিছুই ওয়াজিব হবে
না। কেননা সে আপন অঙ্গীকার রক্ষা করেছে।
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- কেউ যদি নির্দিষ্ট কতিপয় মানতের শপথ করে যা
প্রতি বৎসর চেষ্টা করলেও সারা জীবনে পূরণ করা অসম্ভব, যেমন সে বলল, পায়ে হেঁটে
বায়তুল্লাহ্ যাব বা এক হাজার বার হজ্জ করব, ভাই অথবা পিতার সাথে কথা বলব না
ইত্যাদি। সে কি একটি মানতই পূরণ করবে না সবগুলোই তাকে পূরণ করতে হবে?
মালিক (র) বললেন, আমার মতে সবগুলোই তাকে পূরণ করতে হবে, যতদিন এবং যতদূর পর্যন্ত
সম্ভব হয় সে উহা পূরণ করতে থাকবে এবং নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের
চেষ্টা করে যাবে।
পরিচ্ছেদ
৩
পায়ে হেঁটে কা’বা
শরীফে যাওয়ার অঙ্গীকার করা
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّ أَحْسَنَ مَا سَمِعْتُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الرَّجُلِ يَحْلِفُ بِالْمَشْيِ إِلَى بَيْتِ اللهِ أَوْ الْمَرْأَةِ فَيَحْنَثُ أَوْ تَحْنَثُ أَنَّهُ إِنْ مَشَى الْحَالِفُ مِنْهُمَا فِي عُمْرَةٍ فَإِنَّهُ يَمْشِي حَتَّى يَسْعَى بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَإِذَا سَعَى فَقَدْ فَرَغَ وَأَنَّهُ إِنْ جَعَلَ عَلَى نَفْسِهِ مَشْيًا فِي الْحَجِّ فَإِنَّهُ يَمْشِي حَتَّى يَأْتِيَ مَكَّةَ ثُمَّ يَمْشِي حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ الْمَنَاسِكِ كُلِّهَا وَلَا يَزَالُ مَاشِيًا حَتَّى يُفِيضَ قَالَ مَالِك وَلَا يَكُونُ مَشْيٌ إِلَّا فِي حَجٍّ أَوْ عُمْرَةٍ.
মালিক (র) বলেন,
পুরুষ বা মহিলা যদি পায়ে হেঁটে হজ্জ বা উমরা করার কসম করে, তবে ঐ পুরুষ বা মহিলার
কসম ভেঙ্গে ফেলবে। কসম ভঙ্গ করার পর, উমরার বেলায় সায়ী করা পর্যন্ত এবং হজ্জের
বেলায় তাওয়াফে যিয়ারত করা পর্যন্ত সে পায়ে হেঁটে চলবে। মালিক (র) বলেন, হজ্জ অথবা
উমরা ব্যতীত অন্য কিছুর জন্য এই ধরনের মানতে হাঁটতে হবে না।
আমি এই বিষয়ে যা শুনেছি তন্মধ্যে এটাই উত্তম।
পরিচ্ছেদ
৪
পাপকার্যে মানত বৈধ নয়
১০০৭
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدِ بْنِ قَيْسٍ وَثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ الدِّيلِيِّ
أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَأَحَدُهُمَا يَزِيدُ فِي الْحَدِيثِ عَلَى صَاحِبِهِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَجُلًا قَائِمًا فِي الشَّمْسِ فَقَالَ مَا بَالُ
هَذَا فَقَالُوا نَذَرَ أَنْ لَا يَتَكَلَّمَ وَلَا يَسْتَظِلَّ مِنْ الشَّمْسِ
وَلَا يَجْلِسَ وَيَصُومَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مُرُوهُ فَلْيَتَكَلَّمْ وَلْيَسْتَظِلَّ وَلْيَجْلِسْ وَلْيُتِمَّ صِيَامَهُ ১৭২৪-قَالَ مَالِك وَلَمْ أَسْمَعْ أَنَّ
رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَهُ بِكَفَّارَةٍ وَقَدْ
أَمَرَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُتِمَّ مَا كَانَ
لِلَّهِ طَاعَةً وَيَتْرُكَ مَا كَانَ لِلَّهِ مَعْصِيَةً.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
হুমায়দ ইবনু কায়স (রা) এবং সাউর
ইবন দীলী (রা) তাঁরা দু’জনে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে তাঁর
নিকট রেওয়ায়ত বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
ব্যক্তিকে একবার রৌদ্রে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পেলেন। তিনি বললেন, এই ব্যক্তির কি
হয়েছে? তাঁরা বললেন, এই ব্যক্তি মানত করেছে যে, সে কারো সাথে কথা বলবে না, ছায়ায়
দাঁড়াবে না, কোথাও বসবে না এবং সর্বদাই সে রোযা রাখবে। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, তাঁকে বলে দাও, সে যেন কথা বলে, ছায়ায় দাঁড়ায় ও বসে,
আর যেন রোযা পুরা করে নেয়। (সহীহ, ইমাম বুখারী ইবনু আব্বাস থেকে মুত্তাসিল সনদে
বর্ণনা করেন, বুখারী ৬৭০৪, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মরসাল)
মালিক (র) বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত ব্যক্তিকে কোন
কাফ্ফারার নির্দেশ দিয়েছেন বলে আমি শুনিনি। তিনি তাঁকে যা ইবাদত তা পূরণ করা এবং
যা নাফরমানী তা বর্জন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
১০০৮
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ
أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ أَتَتْ امْرَأَةٌ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ
فَقَالَتْ إِنِّي نَذَرْتُ أَنْ أَنْحَرَ ابْنِي فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَا
تَنْحَرِي ابْنَكِ وَكَفِّرِي عَنْ يَمِينِكِ فَقَالَ شَيْخٌ عِنْدَ ابْنِ
عَبَّاسٍ وَكَيْفَ يَكُونُ فِي هَذَا كَفَّارَةٌ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ إِنَّ
اللهَ تَعَالَى قَالَ { وَالَّذِينَ يُظَاهِرُونَ } مِنْكُمْ { مِنْ نِسَائِهِمْ }
ثُمَّ جَعَلَ فِيهِ مِنْ الْكَفَّارَةِ مَا قَدْ رَأَيْتَ.
ইয়াহইয়া ইবনু সাইদ
(র) থেকে বর্ণিতঃ
কাসিম
ইবনু মুহাম্মদ (র)-কে বলতে শুনেছেন ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস (র)-এর নিকট একজন
মহিলা এসে বলল, আমার পুত্রকে কুরবানী দেওয়ার মানত করেছি। তিনি বললেন, পুত্রকে জবাই
করো না এবং তোমার কসমের কাফ্ফারা দিয়ে দাও। এক ব্যক্তি তখন বলে উঠল : কাফ্ফারা কি
করে হতে পারে? ইবনু ‘আব্বাস বললেন, স্ত্রীর সাথে যিহার করাও গুনাহ। উহাতেও আল্লাহ্
তা’আলা কাফ্ফারার বিধান রেখেছেন। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালিক (র)-এর মতে এইখানে কাফ্ফারা
অর্থ কোন বকরী ইত্যাদি ফিদয়া দেওয়া। ইমাম আবূ ইউসুফ ও শাফিঈ (র)-এর মতে ইহা মানত হবে
না। কেননা গুনাহ্র কাজে মানত করা ধর্তব্য নয়। সুতরাং এর কাফ্ফারাও ওয়াজিব হবে না।
১০০৯
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ الْأَيْلِيِّ عَنْ
الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ ابْنِ الصِّدِّيقِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيعَ اللهَ
فَلْيُطِعْهُ وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِيَ اللهَ فَلَا يَعْصِهِ ১৭২৭-قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت قَوْله تَعَالَى
يَقُولُ مَعْنَى قَوْلِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ
نَذَرَ أَنْ يَعْصِيَ اللهَ فَلَا يَعْصِهِ أَنْ يَنْذِرَ الرَّجُلُ أَنْ يَمْشِيَ
إِلَى الشَّامِ أَوْ إِلَى مِصْرَ أَوْ إِلَى الرَّبَذَةِ أَوْ مَا أَشْبَهَ
ذَلِكَ مِمَّا لَيْسَ لِلَّهِ بِطَاعَةٍ إِنْ كَلَّمَ فُلَانًا أَوْ مَا أَشْبَهَ
ذَلِكَ فَلَيْسَ عَلَيْهِ فِي شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ إِنْ هُوَ كَلَّمَهُ أَوْ
حَنِثَ بِمَا حَلَفَ عَلَيْهِ لِأَنَّهُ لَيْسَ لِلَّهِ فِي هَذِهِ الْأَشْيَاءِ
طَاعَةٌ وَإِنَّمَا يُوَفَّى لِلَّهِ بِمَا لَهُ فِيهِ طَاعَةٌ.
আয়িশা (রা) থেকে
বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য করার মানত করে সে অবশ্যই তাঁর
আনুগত্য করবে আর যে আল্লাহর নাফরমানী করবে সে তার নাফরমানী করবে না। (সহীহ, বুখারী
৬৬৯৬, ৬৭০০)
মালিক (র) বলেন : গুনাহর কাজ করার মানত যদি কেউ করে তবে সে যেন ঐ গুনাহ না করে।
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই কথার মর্ম হল, যে সমস্ত কাজের সওয়াব
নাই তেমন কাজে মানত করিয়া উহা ভাঙ্গিয়া ফেলিলে তবে তার উপর কিছুই ওয়াজিব হবে না।
যেমন কেউ শাম বা মিসর বা রাবাযা যাওয়ার মানত করিল। তদ্রুপ কাহারও সঙ্গে কথা না
বলার মানত করিল অথবা মন্দ কাজ করার কসম করিল, যেহেতু এইসব কাজে আল্লাহর
ফরমানবরদারী নাই। এইগুলি পুরণ না করিলে কিছুই ওয়াজিব হবে না। যে কাজে আল্লাহর
আনুগত্য রয়েছে সেই ধরনের কাজে মানত করিলে ইহা পুরণ করা জরুরী হয়।
পরিচ্ছেদ
৫
নিরর্থক কসমের বিবরণ
১০১০
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ
أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا كَانَتْ تَقُولُ لَغْوُ الْيَمِينِ قَوْلُ
الْإِنْسَانِ لَا وَاللهِ لَا وَاللهِ ১৭৩০-قَالَ مَالِك أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي هَذَا أَنَّ
اللَّغْوَ حَلِفُ الْإِنْسَانِ عَلَى الشَّيْءِ يَسْتَيْقِنُ أَنَّهُ كَذَلِكَ
ثُمَّ يُوجَدُ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ فَهُوَ اللَّغْوُ ১৭৩১-قَالَ مَالِك وَعَقْدُ الْيَمِينِ أَنْ
يَحْلِفَ الرَّجُلُ أَنْ لَا يَبِيعَ ثَوْبَهُ بِعَشَرَةِ دَنَانِيرَ ثُمَّ
يَبِيعَهُ بِذَلِكَ أَوْ يَحْلِفَ لَيَضْرِبَنَّ غُلَامَهُ ثُمَّ لَا يَضْرِبُهُ
وَنَحْوَ هَذَا فَهَذَا الَّذِي يُكَفِّرُ صَاحِبُهُ عَنْ يَمِينِهِ وَلَيْسَ فِي
اللَّغْوِ كَفَّارَةٌ ১৭৩২-قَالَ
مَالِك فَأَمَّا الَّذِي يَحْلِفُ عَلَى الشَّيْءِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ آثِمٌ
وَيَحْلِفُ عَلَى الْكَذِبِ وَهُوَ يَعْلَمُ لِيُرْضِيَ بِهِ أَحَدًا أَوْ
لِيَعْتَذِرَ بِهِ إِلَى مُعْتَذَرٍ إِلَيْهِ أَوْ لِيَقْطَعَ بِهِ مَالًا فَهَذَا
أَعْظَمُ مِنْ أَنْ تَكُونَ فِيهِ كَفَّارَةٌ.
হিশাম ইবনু উরওয়াহ
(র) থেকে বর্ণিতঃ
যে, উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রা)
বলতেন : কথায় কথায় লা ওয়াল্লাহি, বালা ওয়াল্লাহি (না, আল্লাহর কসম, হ্যাঁ আল্লাহর
কসম) ধরনের কসম করা য়ামীন লাগব হবে (অর্থাৎ শরীয়তের দৃষ্টিতে উহা কসম বলে ধর্তব্য
হবে না)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : য়ামীনে লাগব হল সত্য মনে কয়ে কোন বিষয়ে কসম করা অথচ পরে তা
বিপরীত বলে সাব্যস্ত হয়। এই বিষয়ে এটাই উত্তম যা আমি শুনেছি।
মালিক (র) বলেন : ভবিষ্যতে কোন কাজ করা না করা সম্পর্কে কসম করা হলে তা পূরণ করা
বাধ্যতামূলক, যেমন কেউ বলল : আল্লাহর কসম, এই কাপড়টি আমি দশ দীনারে বিক্রয় করব না।
কিন্তু পরে দশ দীনারে তা বিক্রয় করে দিল বা কেউ বলল : আল্লাহর কসম, এই ব্যক্তির
গোলামকে আমি মারব, পরে মারল না ইত্যাদি। এই ধরনের কসমের কাফ্ফারা ওয়াজিব হয়। আর
য়ামীনে লাগব-এর জন্য কাফ্ফারা নেই।
পরিচ্ছেদ
৬
যে ধরনের কসমে
কাফ্ফারা ওয়াজিব হয় না
১০১১
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ
يَقُولُ مَنْ قَالَ وَاللهِ ثُمَّ قَالَ إِنْ شَاءَ اللهُ ثُمَّ لَمْ يَفْعَلْ
الَّذِي حَلَفَ عَلَيْهِ لَمْ يَحْنَثْ ১৭৩৫-قَالَ مَالِك أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي الثُّنْيَا
أَنَّهَا لِصَاحِبِهَا مَا لَمْ يَقْطَعْ كَلَامَهُ وَمَا كَانَ مِنْ ذَلِكَ
نَسَقًا يَتْبَعُ بَعْضُهُ بَعْضًا قَبْلَ أَنْ يَسْكُتَ فَإِذَا سَكَتَ وَقَطَعَ
كَلَامَهُ فَلَا ثُنْيَا لَهُ ১৭৩৬-قَالَ يَحْيَى و قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ
كَفَرَ بِاللهِ أَوْ أَشْرَكَ بِاللهِ ثُمَّ يَحْنَثُ إِنَّهُ لَيْسَ عَلَيْهِ
كَفَّارَةٌ وَلَيْسَ بِكَافِرٍ وَلَا مُشْرِكٍ حَتَّى يَكُونَ قَلْبُهُ مُضْمِرًا
عَلَى الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ وَلْيَسْتَغْفِرْ اللهَ وَلَا يَعُدْ إِلَى شَيْءٍ
مِنْ ذَلِكَ وَبِئْسَ مَا صَنَعَ.
নাফি’ (র) থেকে
বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন :
যদি কেউ কসম করে ইনশাআল্লাহ (যদি আল্লাহ চাহেন) বলে তবে কসমকৃত কাজটি না করলে এই
কসম ভঙ্গ হবে না। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : ‘ইনশাআল্লাহ’ কসমের সঙ্গে সঙ্গে এবং কথার ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে
বলতে হবে। কেউ কসম করে কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর যদি ‘ইনশাআল্লাহ’ বলে তবে আর উহা
ধর্তব্য হবে না।
মালিক (র) বলেন : কেউ বলল, আমি যদি এই কাজ করি তবে আমি কাফের বা মুশরিক। পরে যদি ঐ
ব্যক্তি কাজটি করে ফেলে তবে তার কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে। কিন্তু অন্তরে শিরক কুফরীর
আকীদা না হলে এতে কাফের বা মুশরিক হয়ে যাবে না। তবে গুনাহগার হবে। ভবিষ্যতে এই
ধরনের কিছু করবে না বলে তাকে তাওবা করতে হবে। এই ধরনের কসম অতি নিন্দনীয়।
[১] তা কসম বলে গণ্য হয় না এবং এতে কাফফারাও ওয়াজিব হয় না।
পরিচ্ছেদ
৭
যে ধরনের কসমে
কাফ্ফারা ওয়াজিব হয়
১০১২
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي
صَالِحٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ حَلَفَ بِيَمِينٍ فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْرًا
مِنْهَا فَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ وَلْيَفْعَلْ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ ১৭৩৯-قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت قَوْله تَعَالَى
يَقُولُ مَنْ قَالَ عَلَيَّ نَذْرٌ وَلَمْ يُسَمِّ شَيْئًا إِنَّ عَلَيْهِ
كَفَّارَةَ يَمِينٍ
قَالَ مَالِك فَأَمَّا التَّوْكِيدُ فَهُوَ حَلِفُ الْإِنْسَانِ فِي الشَّيْءِ
الْوَاحِدِ مِرَارًا يُرَدِّدُ فِيهِ الْأَيْمَانَ يَمِينًا بَعْدَ يَمِينٍ
كَقَوْلِهِ وَاللهِ لَا أَنْقُصُهُ مِنْ كَذَا وَكَذَا يَحْلِفُ بِذَلِكَ مِرَارًا
ثَلَاثًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ قَالَ فَكَفَّارَةُ ذَلِكَ كَفَّارَةٌ
وَاحِدَةٌ مِثْلُ كَفَّارَةِ الْيَمِيْنِ ১৭৪১-فَإِنْ حَلَفَ رَجُلٌ مَثَلًا فَقَالَ وَاللهِ لَا آكُلُ
هَذَا الطَّعَامَ وَلَا أَلْبَسُ هَذَا الثَّوْبَ وَلَا أَدْخُلُ هَذَا الْبَيْتَ
فَكَانَ هَذَا فِي يَمِينٍ وَاحِدَةٍ فَإِنَّمَا عَلَيْهِ كَفَّارَةٌ وَاحِدَةٌ
وَإِنَّمَا ذَلِكَ كَقَوْلِ الرَّجُلِ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ الطَّلَاقُ إِنْ
كَسَوْتُكِ هَذَا الثَّوْبَ وَأَذِنْتُ لَكِ إِلَى الْمَسْجِدِ يَكُونُ ذَلِكَ
نَسَقًا مُتَتَابِعًا فِي كَلَامٍ وَاحِدٍ فَإِنْ حَنِثَ فِي شَيْءٍ وَاحِدٍ مِنْ
ذَلِكَ فَقَدْ وَجَبَ عَلَيْهِ الطَّلَاقُ وَلَيْسَ عَلَيْهِ فِيمَا فَعَلَ بَعْدَ
ذَلِكَ حِنْثٌ إِنَّمَا الْحِنْثُ فِي ذَلِكَ حِنْثٌ وَاحِدٌ ১৭৪২- قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا فِي
نَذْرِ الْمَرْأَةِ إِنَّهُ جَائِزٌ بِغَيْرِ إِذْنِ زَوْجِهَا يَجِبُ عَلَيْهَا
ذَلِكَ وَيَثْبُتُ إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي جَسَدِهَا وَكَانَ ذَلِكَ لَا يَضُرُّ بِزَوْجِهَا
وَإِنْ كَانَ ذَلِكَ يَضُرُّ بِزَوْجِهَا فَلَهُ مَنْعُهَا مِنْهُ وَكَانَ ذَلِكَ
عَلَيْهَا حَتَّى تَقْضِيَهُ.
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : কোন বিষয়ে কসম করার পর তার বিপরীত বিষয় যদি
অধিক ভাল ও মঙ্গলজনক মনে হয়; তবে ঐ কসম ভেঙ্গে তার কাফ্ফারা দেবে এবং মঙ্গলজনক
কাজটি করবে। (সহীহ, মুসলিম ১৬৫০)
মালিক (র) বলেন, কেউ বলল : আমি মানত করলাম। কিন্তু কিসের উপর
মানত করল তা বলল না। তবুও তার উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে।
মালিক (র) বলেন : একই কসম কেউ যদি একাধিকবার করে, যেমন আল্লাহর কসম, আমি ইহা হতে কম
করব না। এই বিষয়ের উপর সে তিনবার বা ততোধিক কসম করল। তবে তার একবারই কাফ্ফারা ওয়াজিব
হবে।
মালিক (র) বলেন : কেউ কসম করল আল্লাহর কসম, আমি এই খাদ্য আহার করব না, এই কাপড়টি পরব
না এবং এ ঘরে প্রবেশ করব না। পরে এ কাজগুলো সে যদি করে ফেলে তবে তার উপর একই কাফ্ফারা
ওয়াজিব হবে। যেমন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলল : তোমাকে যদি এ কাপড়টি পরতে দেই এবং
মসজিদে যেতে অনুমতি দেই তবে তুমি তালাক। উহা সমস্তটা মিলিয়ে একই কথা বলে গণ্য হয় এবং
যে কোন একটি হলে তালাক হয়ে যায় আর পরে অন্যটি সংঘটিত হলে দ্বিতীয়বার তালাক হয় না। এইখানেও
তদ্রূপ একবারই কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে।
মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট মাসআলা এই- স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকেও স্ত্রীর মানত করা
জায়েয আছে। তবে তা একান্ত ব্যক্তিগত হতে হবে। শর্ত হল, স্বামীর কোন ক্ষতি যেন না হয়।
স্বামীর ক্ষতি হলে সে স্ত্রীকে এই ধরনের মানত হতে বিরত করতে পারবে। তবে স্ত্রীর উপর
ঐ মানত ওয়াজিব থেকে যাবে। যখনই স্বামীর অনুমতি লাভ করবে উহা আদায় করবে।
পরিচ্ছেদ
৮
কসমের কাফ্ফারা
১০১৩
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ
يَقُوْلُ: مَنْ حَلَفَ بِيَمِينٍ فَوَكَّدَهَا ثُمَّ حَنِثَ فَعَلَيْهِ عِتْقُ
رَقَبَةٍ أَوْ كِسْوَةُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ وَمَنْ حَلَفَ بِيَمِينٍ فَلَمْ
يُؤَكِّدْهَا ثُمَّ حَنِثَ فَعَلَيْهِ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ لِكُلِّ
مِسْكِينٍ مُدٌّ مِنْ حِنْطَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ.
নাফি’ (র) থেকে
বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রা) বললেন : কেউ যদি কসম করে ও পরে আরও কসম দ্বারা উহাকে জোরালো করে
এবং পরে উহা ভেঙ্গে ফেলে তবে তার উপর একটি গোলাম আযাদ করা অথবা দশজনকে কাপড় দেয়া
জরুরী হবে। আর যদি তাকীদযুক্ত নয় এমন কসম করে ভেঙ্গে ফেলে তবে দশজন মিসকীনের
প্রত্যেককে এক মুদ পরিমাণ গম দিবে আর তা না পারলে তিন দিন রোযা রাখবে। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১০১৪
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يُكَفِّرُ عَنْ يَمِينِهِ بِإِطْعَامِ عَشَرَةِ
مَسَاكِينَ لِكُلِّ مِسْكِينٍ مُدٌّ مِنْ حِنْطَةٍ وَكَانَ يَعْتِقُ الْمِرَارَ
إِذَا وَكَّدَ الْيَمِيْنَ.
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ
يَسَارٍ أَنَّهُ قَالَ أَدْرَكْتُ النَّاسَ وَهُمْ إِذَا أَعْطَوْا فِي كَفَّارَةِ
الْيَمِينِ أَعْطَوْا مُدًّا مِنْ حِنْطَةٍ بِالْمُدِّ الْأَصْغَرِ وَرَأَوْا
ذَلِكَ مُجْزِئًا عَنْهُمْ.
১৭৪৭-قَالَ مَالِك
أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي الَّذِي يُكَفِّرُ عَنْ يَمِينِهِ بِالْكِسْوَةِ
أَنَّهُ إِنْ كَسَا الرِّجَالَ كَسَاهُمْ ثَوْبًا ثَوْبًا وَإِنْ كَسَا النِّسَاءَ
كَسَاهُنَّ ثَوْبَيْنِ ثَوْبَيْنِ دِرْعًا وَخِمَارًا وَذَلِكَ أَدْنَى مَا
يُجْزِئُ كُلًّا فِي صَلَاتِهِ.
নাফি’ (র) থেকে
বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) যখন
স্বীয় কসমের কাফ্ফারা দিতেন তখন দশজন মিসকীনকে আহার করাতেন এবং প্রতিজনকে এক মুদ
পরিমাণ গম দিতেন, আর কসম যত তাকীদযুক্ত করতেন তত সংখ্যক গোলাম আযাদ করতেন।
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ (র) হতে বর্ণিত, সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) বললেন : আমি
লোকদেরকে পেয়েছি তারা যখন কসমের কাফ্ফারা দিতেন তখন প্রত্যেক মিসকীনকে ছোট মুদের
এক মুদ পরিমাণ গম দিতেন এবং উহাই যথেষ্ট বলে মনে করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : কসমের কাফ্ফারা কাপড় দিতে চাইলে পুরুষ মিসকীনকে একটি কাপড় দিলেই
চলবে, আর মিসকীন নারী হলে অন্তত দুটি করে কাপড় দিতে হবে। একটি জামা আরেকটি ওড়না।
কেননা এতটুকুর কমে সালাত হয় না।
পরিচ্ছেদ
৯
কসম সম্পর্কীয় বিবিধ
আহকাম
১০১৫
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَدْرَكَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُ وَهُوَ يَسِيرُ فِي رَكْبٍ وَهُوَ يَحْلِفُ بِأَبِيهِ فَقَالَ
رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ
تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ فَمَنْ كَانَ حَالِفًا فَلْيَحْلِفْ بِاللهِ أَوْ
لِيَصْمُتْ.
নাফি’ (র) থেকে
বর্ণিতঃ
উমার
ইবনু খাত্তাব (রা) একবার আরোহী হয়ে যাচ্ছিলেন এবং পিতার নামে কসম খাইতেছিলেন। এমন
সময় রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহিত তাঁর সাক্ষাত হয়। তিনি তখন
বললেন : আল্লাহ তা’আলা পিতার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ কসম করলে আল্লাহর
নামে করো, আর তা না হলে চুপ থেকো। (বুখারী ৬৬৪৬, মুসলিম ১৬৪৬)
১০১৬
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ لَا وَمُقَلِّبِ الْقُلُوبِ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তাঁর
নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন : লা ওয়া
মুকাল্লিবাল কুলূব! এরূপ নয়, মনের গতি পরিবর্তনকারীর কসম। (সহীহ, বুখারী ৬৬২৮,
ইমাম মালেকের নিকট পৌঁছেছে মর্মে তিনি বর্ণনা করেছেন)
১০১৭
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عُثْمَانَ بْنِ حَفْصِ بْنِ عُمَرَ بْنِ خَلْدَةَ
عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ أَبَا لُبَابَةَ بْنَ عَبْدِ
الْمُنْذِرِ حِينَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَهْجُرُ دَارَ
قَوْمِي الَّتِي أَصَبْتُ فِيهَا الذَّنْبَ وَأُجَاوِرُكَ وَأَنْخَلِعُ مِنْ
مَالِي صَدَقَةً إِلَى اللهِ وَإِلَى رَسُولِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُجْزِيكَ مِنْ ذَلِكَ الثُّلُثُ.
ইবনু শিহাব (র)
থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
লুবাবা ইবনু আবদুল মুনজির (রা)-এর তাওবা যখন আল্লাহ তা’আলা কবূল করেন তখন তিনি
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে আরয করলেন : হে আল্লাহর
রসূল! আমার আত্মীয়-স্বজনের সাথে আমি যেখানে বাস করি, আমার যে বাড়িটিতে আমি গুনাহ
করেছিলাম, যেখানে আমার এ গুনাহ হয়েছিল, উহা ত্যাগ করে আপনার নিকট এসে থাকব কি? আর
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওয়াস্তে এই বাড়িটি সাদকা করব কি? রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমার ধন-সম্পদের এক তৃতীয়াংশ সাদকা দিয়ে দিলেই যথেষ্ট
হবে। [১] (সহীহ, আবূ দাঊদ ৩৩১৯, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন [মিশকাত ৩৪৩৯, তবে
ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল])
[১] আবূ লুবাবা (রা) মদীনার ইহুদী বসতি বনূ কুরায়যায় বসবাস করতেন।
এদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ শুরু হলে ইনি মুসলমানদের তরফ হতে আলোচনা করতে যান এবং এদের
সহানুভূতিতে ইশারায় ইহাদের সম্পর্কে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোপন
সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। পরে এই জন্য অত্যন্ত অনুতপ্ত হন এবং মসজিদে নববীর একটি স্তম্ভের
সাথে নিজেকে বেঁধে রাখেন ও বলেন, যতদিন আল্লাহ আমার এই গুনাহ মাফ না করবেন ততদিন এই
অবস্থায়ই আমি থাকব। শুধু প্রশ্রাব-পায়খানার সময় তাঁর স্ত্রী বাঁধন খুলে দিতেন, পরে
আবার বেঁধে রাখতেন। শেষে আল্লাহ তা’আলা তাঁর ক্ষমার ঘোষণা করেন। তখন তিনি আনন্দে সকল
কিছু সদকা করে দিতে চেয়েছিলেন।
১০১৮
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى عَنْ مَنْصُورِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الْحَجَبِيِّ عَنْ أُمِّهِ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا سُئِلَتْ عَنْ رَجُلٍ قَالَ مَالِي فِي رِتَاجِ
الْكَعْبَةِ فَقَالَتْ عَائِشَةُ يُكَفِّرُهُ مَا يُكَفِّرُ الْيَمِيْنَ قَالَ
مَالِك فِي الَّذِي يَقُولُ مَالِي فِي سَبِيلِ اللهِ ثُمَّ يَحْنَثُ قَالَ
يَجْعَلُ ثُلُثَ مَالِهِ فِي سَبِيْلِ اللهِ وَذَلِكَ لِلَّذِي جَاءَ عَنْ رَسُولِ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَمْرِ أَبِي لُبَابَةَ.
উম্মুল মু’মিনীন
আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা
হয়েছিল। সে বলেছিল : আমার ধন-সম্পদ কা’বার দরজায় ওয়াক্ফ করলাম, তবে এর কি হুকুম
হবে? আয়িশা (রা) বললেন : তাকে কসমের কাফ্ফারার মতো কাফ্ফারা দিতে হবে। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ বলে : আমার ধন-সম্পদ আল্লাহর রাহে সদকা করে দিলাম। অতঃপর
সে কসম ভঙ্গ করল; তবে তাকে সমস্ত সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ সদকা করতে হবে। কেননা
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ লুবাবা (রা) সম্পর্কে এ হুকুমটি
দিয়েছিলেন।
No comments