মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় জিহাদ সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদ
১
জিহাদের জন্য উৎসাহ প্রদান
وَاَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُوْنَ.
৯৫১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَثَلُ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللهِ كَمَثَلِ
الصَّائِمِ الْقَائِمِ الدَّائِمِ الَّذِي لَا يَفْتُرُ مِنْ صَلَاةٍ وَلَا
صِيَامٍ حَتَّى يَرْجِعَ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহর পথে জিহাদরত ব্যক্তি যতদিন বাড়ি
ফিরে না আসে ততদিন তার উদাহরণ হল এমন এক ব্যক্তি, যে ক্লান্তিহীনভাবে অনবতর রোযা
রাখে এবং নামায পড়ে। (বুখারী ২৭৮৭, মুসলিম ১৮৭৫)
৯৫২
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ تَكَفَّلَ اللهُ لِمَنْ جَاهَدَ فِي سَبِيْلِهِ
لَا يُخْرِجُهُ مِنْ بَيْتِهِ إِلَّا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِهِ وَتَصْدِيقُ
كَلِمَاتِهِ أَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ أَوْ يَرُدَّهُ إِلَى مَسْكَنِهِ الَّذِي
خَرَجَ مِنْهُ مَعَ مَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيْمَةٍ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন : যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করে আর
শুধুমাত্র জিহাদ এবং আল্লাহর কথার উপর অপরিসীম আস্থাই তাকে বাড়ি হতে বের করে নিয়ে
আসে, আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তির জিম্মাদার হয়ে যান। হয় তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ
করাবেন অথবা সওয়াব ও গনীমতের সম্পদসহ তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনবেন। (বুখারী ২৭৮৭,
মুসলিম ১৮৭৬)
৯৫৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ
أَسْلَمَ عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الْخَيْلُ لِرَجُلٍ أَجْرٌ
وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ وَعَلَى رَجُلٍ وِزْرٌ فَأَمَّا الَّذِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ
فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبِيلِ اللهِ فَأَطَالَ لَهَا فِي مَرْجٍ أَوْ رَوْضَةٍ
فَمَا أَصَابَتْ فِي طِيَلِهَا ذَلِكَ مِنْ الْمَرْجِ أَوْ الرَّوْضَةِ كَانَ لَهُ
حَسَنَاتٌ وَلَوْ أَنَّهَا قُطِعَتْ طِيَلَهَا ذَلِكَ فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ
شَرَفَيْنِ كَانَتْ آثَارُهَا وَأَرْوَاثُهَا حَسَنَاتٍ لَهُ وَلَوْ أَنَّهَا
مَرَّتْ بِنَهَرٍ فَشَرِبَتْ مِنْهُ وَلَمْ يُرِدْ أَنْ يَسْقِيَ بِهِ كَانَ
ذَلِكَ لَهُ حَسَنَاتٍ فَهِيَ لَهُ أَجْرٌ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا تَغَنِّيًا
وَتَعَفُّفًا وَلَمْ يَنْسَ حَقَّ اللهِ فِي رِقَابِهَا وَلَا فِي ظُهُورِهَا
فَهِيَ لِذَلِكَ سِتْرٌ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا فَخْرًا وَرِيَاءً وَنِوَاءً لِأَهْلِ
الْإِسْلَامِ فَهِيَ عَلَى ذَلِكَ وِزْرٌ وَسُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ الْحُمُرِ فَقَالَ لَمْ يُنْزَلْ عَلَيَّ فِيهَا شَيْءٌ
إِلَّا هَذِهِ الْآيَةُ الْجَامِعَةُ الْفَاذَّةُ { فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ
ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন : ঘোড়া তিন ধরনের। একজনের জন্য এটা
সওয়াবের, আর একজনের জন্য এটা ঢালস্বরূপ এবং একজনের জন্য এটা গুনাহর কারণ হয়ে থাকে।
এটা সওয়াবের কারণ হয় ঐ ব্যক্তির জন্য, যে ব্যক্তি এটাকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের
নিয়তে লালন-পালন করে। কোন চারণক্ষেত্রে বা বাগানে এটাকে দীর্ঘ রজ্জুর সাহায্যে
খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে। যতদূর পর্যন্ত এই ঘোড়াটি ঘাস খাবে তার আমলনামায় সওয়াব
লেখা হবে। কোন নদীর কাছে গিয়ে যদি এটা পানি পান করে, তবে মালিক ইচ্ছা করে পানি পান
না করানো সত্ত্বেও এর সওয়াব লেখা হবে। আর এটা ঢালস্বরূপ হল ঐ ব্যক্তির জন্য, যে
ব্যক্তি এটাকে উপার্জনের এবং পরমুখাপেক্ষী না হওয়ার উদ্দেশ্যে লালন-পালন করে এবং
এর যাকাত আদায় করে। আর পাপের কারণ হল ঐ ব্যক্তির জন্য, যে অহংকার ও রিয়াকারী এবং
মুসলমানদের সহিত শত্রুতা করার উদ্দেশ্যে এটাকে লালন-পালন করে। গাধা সম্পর্কে
রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন : এই
সম্পর্কে আমার উপর নিম্নের এই স্বয়ংসম্পূর্ণ আয়াতটি ব্যতীত অন্য কোন হুকুম অবতীর্ণ
হয়নি। আয়াতটি হল এই
فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ .
অর্থ : সামান্য পরিমাণ নেক আমল করলে তাতেও সে দেখতে পাবে আর সামান্য পরিমাণ মন্দ
আমল করলে তাও সে দেখতে পাবে। (আল-কুরআন ৯৯ : ৭-৮) (বুখারী ২৩৭১, মুসলিম ৯৮৭)
৯৫৪
و حَدَّثَنِي عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَعْمَرٍ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ
أَنَّهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلَا
أُخْبِرُكُمْ بِخَيْرِ النَّاسِ مَنْزِلًا رَجُلٌ آخِذٌ بِعِنَانِ فَرَسِهِ
يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللهِ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِخَيْرِ النَّاسِ مَنْزِلًا
بَعْدَهُ رَجُلٌ مُعْتَزِلٌ فِي غُنَيْمَتِهِ يُقِيمُ الصَّلَاةَ وَيُؤْتِي
الزَّكَاةَ وَيَعْبُدُ اللهَ لَا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا.
আতা ইবনু ইয়াসার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন : সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তির
কথা তোমাদেরকে বলব কি? যে ব্যক্তি স্বীয় ঘোড়ার লাগাম হাতে নিয়ে আল্লাহর রাহে
জিহাদে লিপ্ত থাকে, সেই ব্যক্তি হল সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। অতঃপর
সর্বোচ্চ মর্যাদা হল ঐ ব্যক্তির যে ব্যক্তি বকরীর এক পাল নিয়ে এক কোণে পড়ে থাকে,
নামায পড়ে, যাকাত দেয়, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইবাদতে লিপ্ত হয়ে থাকে আর কাউকেও
তাঁর শরীক করেনি। (সহীহ, তিরমীযী ১৬৫২, নাসাঈ ২৫৬৯, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন,
সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব ১২৯৮, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
৯৫৫
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَادَةُ بْنُ الْوَلِيدِ بْنِ عُبَادَةَ بْنِ
الصَّامِتِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ بَايَعْنَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِي الْيُسْرِ وَالْعُسْرِ
وَالْمَنْشَطِ وَالْمَكْرَهِ وَأَنْ لَا نُنَازِعَ الْأَمْرَ أَهْلَهُ وَأَنْ
نَقُولَ أَوْ نَقُومَ بِالْحَقِّ حَيْثُمَا كُنَّا لَا نَخَافُ فِي اللهِ لَوْمَةَ
لَائِمٍ.
উবাদা ইবনু সামিত (রা) থেকে বর্ণিতঃ
সচ্ছল ও অসচ্ছল
সকল অবস্থায় এবং সুখে ও দুঃখে কথা শোনার, আনুগত্য প্রদর্শন করার, উপযুক্ত মুসলিম
প্রশাসকদের সাথে বিবাদ না করার, সকল স্থানে সত্য বলার এবং আল্লাহর কাজে নিন্দুকের
নিন্দা গ্রাহ্য না করার উপরে রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর হাতে
আমরা বায়’আত করিয়াছি। (বুখারী ৭১৯৯, মুসলিম ১৭০৯)
৯৫৬
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ
أَسْلَمَ قَالَ كَتَبَ أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ إِلَى عُمَرَ بْنِ
الْخَطَّابِ يَذْكُرُ لَهُ جُمُوعًا مِنْ الرُّومِ وَمَا يَتَخَوَّفُ مِنْهُمْ
فَكَتَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ مَهْمَا
يَنْزِلْ بِعَبْدٍ مُؤْمِنٍ مِنْ مُنْزَلِ شِدَّةٍ يَجْعَلْ اللهُ بَعْدَهُ
فَرَجًا وَإِنَّهُ لَنْ يَغْلِبَ عُسْرٌ يُسْرَيْنِ وَأَنَّ اللهَ تَعَالَى
يَقُولُ فِي كِتَابِهِ { يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا
وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ }.
যাইদ ইবনু আসলাম (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
উবায়দা ইবনুল জার্রাহ (রা) রোমক বাহিনীর শক্তিমত্তা ও নিজেদের আশংকাজনক অবস্থার
কথা উল্লেখ করে উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর কাছে চিঠি লিখলে উমার (রা) উত্তরে
লিখেছিলেন, হামদ ও সালাতের পর। জেনে রাখুন, মু’মিনের উপর যখনই কোন বিপদ আসুক না
কেন আল্লাহ তা দূরীভূত করে দেন। মনে রাখবেন, একবারের কষ্ট কখনো দুইবারের সুখ ও
আরামের উপর প্রাধান্য লাভ করতে পারে না। আল্লাহ তা’আলা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا
وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ.
ওহে মু’মিনগণ, তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, ধৈর্যে প্রতিযোগিতা কর এবং প্রতিরক্ষায় দৃঢ়
হয়ে থাক, আর আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদ
২
শত্রুর দেশে কুরআনুল কারীম নিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ
৯৫৭
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُسَافَرَ بِالْقُرْآنِ إِلَى أَرْضِ الْعَدُوِّ.
قَالَ مَالِك وَإِنَّمَا ذَلِكَ مَخَافَةَ أَنْ يَنَالَهُ الْعَدُوُّ.
নাফি (র) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রা) বলেছেন, শত্রুর দেশে কুরআন নিয়ে যেতে রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিষেধ করেছেন। (বুখারী ২৯৯০, মুসলিম ১৮৬৯)
মালিক (রা) বলেন : এই নিষেধাজ্ঞার কারণ হল, শত্রুরা যেন কুরআন শরীফের অবমাননা করার
সুযোগ না পায়।
পরিচ্ছেদ
৩
যুদ্ধে নারী ও শিশু হত্যার উপর নিষেধাজ্ঞা
৯৫৮
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ عَنْ ابْنٍ لِكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبٍ أَنَّهُ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِينَ قَتَلُوا ابْنَ أَبِي الْحُقَيْقِ عَنْ قَتْلِ
النِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ قَالَ فَكَانَ رَجُلٌ مِنْهُمْ يَقُولُ بَرَّحَتْ بِنَا
امْرَأَةُ ابْنِ أَبِي الْحُقَيْقِ بِالصِّيَاحِ فَأَرْفَعُ السَّيْفَ عَلَيْهَا
ثُمَّ أَذْكُرُ نَهْيَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَكُفُّ
وَلَوْلَا ذَلِكَ اسْتَرَحْنَا مِنْهَا .
আবদুর রহমান ইবনু কা’ব (রা) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আবুল
হুকাইককে যারা হত্যা করতে গিয়েছিলেন, রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
তাদেরকে নারী ও শিশু হত্যা করতে নিষেধ করে দিয়েছিলেন। ইবনু কা’ব বলেন: ঐ কার্যে নিয়োজিতদের
একজন বলেছেন : ইবনু আবুল হুকাইকের স্ত্রী চিৎকার করে আমাদের তৎপরতা ফাঁস করে
দিয়েছিল। আমি তাকে হত্যা করার জন্য তলোয়ার উঠিয়েছিলাম। কিন্তু রসূলুল্লাহ্
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিষেধাজ্ঞা মনে পড়তেই আবার নামিয়ে ফেলেছিলাম।
আর তা না হলে তাকেও সেখানে শেষ করে আসতাম! [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
[১] ইবনু আবুল হুকাইক খায়ববের এক ইহুদী। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তাকে হত্যা করার জন্য রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ সদস্যের একটি কমান্ডো দল প্রেরণ করেছিলেন। এর বিস্তারিত
বর্ণনা বুখারী শরীফে রয়েছে।
৯৫৯
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ
عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى فِي
بَعْضِ مَغَازِيهِ امْرَأَةً مَقْتُولَةً فَأَنْكَرَ ذَلِكَ وَنَهَى عَنْ قَتْلِ
النِّسَاءِ وَالصِّبْيَانِ.
ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন এক যুদ্ধে একজন স্ত্রীলোককে নিহত অবস্থায় পড়ে
থাকতে দেখতে পেয়ে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেন এবং যুদ্ধে নারী ও শিশুহত্যা
নিষিদ্ধ করেন। (বুখারী ৩০১৫, মুসলিম ১৭৪৪)
৯৬০
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ بَعَثَ جُيُوشًا إِلَى الشَّامِ
فَخَرَجَ يَمْشِي مَعَ يَزِيدَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ وَكَانَ أَمِيرَ رُبْعٍ مِنْ
تِلْكَ الْأَرْبَاعِ فَزَعَمُوا أَنَّ يَزِيدَ قَالَ لِأَبِي بَكْرٍ إِمَّا أَنْ
تَرْكَبَ وَإِمَّا أَنْ أَنْزِلَ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ مَا أَنْتَ بِنَازِلٍ وَمَا
أَنَا بِرَاكِبٍ إِنِّي أَحْتَسِبُ خُطَايَ هَذِهِ فِي سَبِيلِ اللهِ ثُمَّ قَالَ
لَهُ إِنَّكَ سَتَجِدُ قَوْمًا زَعَمُوا أَنَّهُمْ حَبَّسُوا أَنْفُسَهُمْ لِلَّهِ
فَذَرْهُمْ وَمَا زَعَمُوا أَنَّهُمْ حَبَّسُوا أَنْفُسَهُمْ لَهُ وَسَتَجِدُ
قَوْمًا فَحَصُوا عَنْ أَوْسَاطِ رُءُوسِهِمْ مِنْ الشَّعَرِ فَاضْرِبْ مَا
فَحَصُوا عَنْهُ بِالسَّيْفِ وَإِنِّي مُوصِيكَ بِعَشْرٍ لَا تَقْتُلَنَّ
امْرَأَةً وَلَا صَبِيًّا وَلَا كَبِيرًا هَرِمًا وَلَا تَقْطَعَنَّ شَجَرًا
مُثْمِرًا وَلَا تُخَرِّبَنَّ عَامِرًا وَلَا تَعْقِرَنَّ شَاةً وَلَا بَعِيرًا
إِلَّا لِمَأْكَلَةٍ وَلَا تَحْرِقَنَّ نَحْلًا وَلَا تُغَرِّقَنَّهُ وَلَا
تَغْلُلْ وَلَا تَجْبُنْ.
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বক্র
সিদ্দীক (রা) সিরিয়ায় এক সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেছিলেন। উক্ত বাহিনীর এক-চতুর্থাংশের
অধিনায়ক ছিলেন ইয়াযিদ ইবনু আবূ সুফিয়ান (রা)। বিদায়ের সময় তিনি তাঁর সঙ্গে কিছুদূর
পায়ে হেটে যান। তখন ইয়াযিদ (রা) বললেন : আমীরুল মু’মিনীন! হয় আপনি সওয়ারীতে আরোহণ
করে চলুন, না হয় আমি নেমে পড়ি এবং আমিও হেঁটে চলি। আবূ বক্র সিদ্দীক (রা) বললেন :
তুমিও হেঁটে চলতে পার না আর আমিও সওয়ার হতে পারব না। আমার এই হাঁটাকে আমি আল্লাহর
পথে কদম ফেলা বলে বিশ্বাস করি। অতঃপর তিনি আরো বললেন : সেখানে কিছু এমন ধরনের লোক
তুমি দেখবে যারা নিজেদেরকে আল্লাহর ধ্যানে নিবেদিত বলে মনে করে (অর্থাৎ খৃস্টান
পাদ্রী)। তাদেরকে তাদের অবস্থায় ছেড়ে দিও। কিন্তু এমন লোক দেখবে যারা মধ্যভাগে
মাথা মুন্ডন করে (তৎকালে অগ্নি উপাসকদের এই রীতি ছিল।) তাদেরকে সেখানেই তালোয়ার
দিয়ে উড়িয়ে দিবে। দশটি বিষয়ে তোমাকে আমি বিশেষ উপদেশ দিচ্ছি। উহার প্রতি লক্ষ্য
রেখ। নারী, শিশু ও বৃদ্ধদেরকে হত্যা করবে না। ফলন্ত বৃক্ষ কেটো না, আবাদ ভূমিকে
ধ্বংস করো না, খাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিন্ন বকরী বা উট হত্যা করো না, মৌমাছির মৌচাক
পোড়ায়ে দিও না অথবা পানিতে ডুবিয়ে দিও না, গনীমত বা যুদ্ধলদ্ধ মাল হতে কিছু চুরি
করো না, হতোদ্যম বা ভীরু হইও না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
৯৬১
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ
أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ كَتَبَ إِلَى عَامِلٍ مِنْ عُمَّالِهِ
أَنَّهُ بَلَغَنَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ
إِذَا بَعَثَ سَرِيَّةً يَقُولُ لَهُمْ اغْزُوا بِاسْمِ اللهِ فِي سَبِيلِ اللهِ
تُقَاتِلُونَ مَنْ كَفَرَ بِاللهِ لَا تَغُلُّوا وَلَا تَغْدِرُوا وَلَا
تُمَثِّلُوا وَلَا تَقْتُلُوا وَلِيدًا وَقُلْ ذَلِكَ لِجُيُوشِكَ وَسَرَايَاكَ
إِنْ شَاءَ اللهُ وَالسَّلَامُ عَلَيْكَ.
মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু আবদুল
আযীয (রা) তাঁর জনৈক শাসনকর্তাকে লিখেছিলেন : আমি জানতে পেরেছি রসূলুল্লাহ্
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোন দিকে সৈন্যদল প্রেরণ করতেন তখন তাদেরকে
উপদেশ দিয়ে বলতেন : তোমরা আল্লাহর নামে আল্লাহরই পথে জিহাদ করে যাও। যারা আল্লাহকে
অস্বীকার করেছে, কুফরী করেছে, তাদের বিরুদ্ধেই তোমরা এই জিহাদ করতেছ। খেয়ানত করো
না, ওয়াদা ভঙ্গ করো না, কারো নাক-কান কেটে বিকৃত করো না, শিশু ও নারীদেরকে হত্যা
করো না। অন্য সেনাদল ও বাহিনীকেও এই কথাগুলো শুনিয়ে দিও। আল্লাহ তোমাদের উপর
শাস্তি বর্ষণ করুন, তোমাদেরকে নিরাপদে রাখুন। (সহীহ, ইমাম মুসলিম মুত্তাসিল সনদে
বর্ণনা করেছেন, ১৮৩১)
পরিচ্ছেদ
৪
নিরাপত্তা চুক্তি
৯৬২
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ
الْخَطَّابِ كَتَبَ إِلَى عَامِلِ جَيْشٍ كَانَ بَعَثَهُ إِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ
رِجَالًا مِنْكُمْ يَطْلُبُونَ الْعِلْجَ حَتَّى إِذَا أَسْنَدَ فِي الْجَبَلِ
وَامْتَنَعَ قَالَ رَجُلٌ مَطْرَسْ يَقُولُ لَا تَخَفْ فَإِذَا أَدْرَكَهُ
قَتَلَهُ وَإِنِّي وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا أَعْلَمُ مَكَانَ وَاحِدٍ
فَعَلَ ذَلِكَ إِلَّا ضَرَبْتُ عُنُقَهُ قَالَ يَحْيَى سَمِعْت قَوْله تَعَالَى
يَقُولُ لَيْسَ هَذَا الْحَدِيثُ بِالْمُجْتَمَعِ عَلَيْهِ وَلَيْسَ عَلَيْهِ
الْعَمَلُ
১৬৩১-و سُئِلَ مَالِك
عَنْ الْإِشَارَةِ بِالْأَمَانِ أَهِيَ بِمَنْزِلَةِ الْكَلَامِ فَقَالَ نَعَمْ
وَإِنِّي أَرَى أَنْ يُتَقَدَّمَ إِلَى الْجُيُوشِ أَنْ لَا تَقْتُلُوا أَحَدًا
أَشَارُوا إِلَيْهِ بِالْأَمَانِ لِأَنَّ الْإِشَارَةَ عِنْدِي بِمَنْزِلَةِ
الْكَلَامِ وَإِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ قَالَ مَا
خَتَرَ قَوْمٌ بِالْعَهْدِ إِلَّا سَلَّطَ اللهُ عَلَيْهِمْ الْعَدُوَّ
মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ
কুফার
জনৈক ব্যক্তি হতে বর্ণনা করেন উমার ইবনু খাত্তাব (রা) জনৈক সেনাধ্যক্ষকে লিখেছিলেন
: জানতে পারলাম, আনারব কাফেরদের মধ্যে কেউ যুদ্ধ বন্ধ করে পাহাড়ে আশ্রয় নিলে
তোমাদের কেউ তাকে ডেকে বলে, “তোমাদের কোন ভয় নেই”, পরে হাতের মুঠোয় পেয়ে আবার তাকে
হত্যা করে ফেলে। যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, সত্যই যদি কাউকেও আমি কোনদিন এমন
(ওয়াদা ভঙ্গ) করতে দেখতে পাই, তবে তার গর্দান উড়িয়ে দেব। (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন: এই হাদীসটি সম্পর্কে আলিমগণ একমত নন এবং এর উপর আমল নাই। [১]
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ইশারা ইঙ্গিতে যদি কেউ কাউকে আমান বা নিরাপত্তা
প্রদান করে, তবে কি তা গ্রহণযোগ্য হবে? তিনি বললেন; হ্যাঁ, আমি মনে করি সৈন্যদেরকে
যেন বলে দেওয়া হয় যে, ইশারা করে যাকে নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে তাকে যেন হত্যা
না করে। কারণ আমার মতে ইশারাও ভাষার মতোই্। আমার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে,
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) বলেছেন: যে জাতি চুক্তি ভঙ্গ করে, সেই জাতির উপর
আল্লাহ তায়ালা শত্রু চাপিয়ে দেন।
[১] কাজটি হারাম বটে, কিন্তু কাফেরের বদলায় মুসলমানকে হত্যা
করা অন্য একটি সহীহ হাদীসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পরিচ্ছেদ
৫
যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে দান করল তার কি হুকুম
৯৬৩
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَعْطَى شَيْئًا فِي
سَبِيلِ اللهِ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ إِذَا بَلَغْتَ وَادِيَ الْقُرَى فَشَأْنَكَ
بِهِ.
নাফি’ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ্ ইবনু
উমার (রা) জিহাদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু দিতেন, তবে বলতেন: ওয়াদি কুরায় যখন পৌঁছাবে
তখন এটা তোমার। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] ওয়াদি-এ কুরা খায়বরের নিকটবর্তী একটি স্থান। সেখানেই তৎকালীন
সেনা শিবির ছিল। সেখানে গেলে বুঝা যেত যে, সত্যই জিহাদ তার উদ্দেশ্য।
৯৬৪
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ كَانَ يَقُولُ إِذَا أُعْطِيَ
الرَّجُلُ الشَّيْءَ فِي الْغَزْوِ فَيَبْلُغُ بِهِ رَأْسَ مَغْزَاتِهِ فَهُوَ
لَهُ وَسُئِلَ مَالِك عَنْ رَجُلٍ أَوْجَبَ عَلَىٰ نَفْسِهِ الْغَرْوَ فَتَجَهَّرَ
حَتَّىٰ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَحْرُجَ مَنَعَهُ أَبَوَاهُ أَوْ أَحَدُهُمَا
فَقَالَ: لاَ يُكَاتِرْ هُمَا وَلَكِنْ يُؤَخِّرُ ذَلِكَ إِلَىٰ عَامٍ آخَرَ
فَأَمَّا الْجِهَازُ فَإِنَّي أَرَىٰ أَنْ يَرْفَعَهُ حَتَّىٰ يَخْرُجَ بِهِ
فَإِنْ خَرَجَ فَلْيَصْنَعْ بِجِهَازِهِ مَا شَاء.
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
সাঈদ
ইবনু মুসায়্যাব (রা) বলতেন, কাউকেও যদি জিহাদের উদ্দেশ্যে কোন কিছু দেয়া হয় আর ঐ
ব্যক্তি জিহাদের স্থানে পৌঁছে যায়, তবে উহা তার হয়ে যাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (রা)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কেউ যদি জিহাদ করার মানত করে আর তার পিতামাতা বা
তাদের কোন একজন যদি তাকে জিহাদে যেতে নিষেধ করে তবে সে কি করবে? তিনি বলেন, আমার
মতে মাতাপিতার অবাধ্যতা করা উচিত নয় এবং আপাতত জিহাদ আরেক বৎসর পর্যন্ত মওকুফ করে
রাখবে, জিহাদের উপকরণসমূহও হেফাজত করে রাখবে।
নষ্ট হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিলে সে এগুলো বিক্রি করে মূল্য সংরক্ষণ করে রাখবে, যাতে
সে আগামী বৎসর এটা দ্বারা পুনরায় অস্ত্র ক্রয় করতে পারে। তবে সে যদি সম্পদশালী হয়
এবং ইচ্ছা মত অস্ত্র ক্রয় করার শক্তি যদি তার থাকে তা হলে ঐ অস্ত্র যা ইচ্ছা তাই
করতে পারে।
পরিচ্ছেদ
৬
যুদ্ধে প্রাপ্ত নফল
৯৬৫
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ بَعَثَ سَرِيَّةً فِيهَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ قِبَلَ نَجْدٍ
فَغَنِمُوا إِبِلًا كَثِيرَةً فَكَانَ سُهْمَانُهُمْ اثْنَيْ عَشَرَ بَعِيرًا أَوْ
أَحَدَ عَشَرَ بَعِيرًا وَنُفِّلُوا بَعِيرًا بَعِيْرًا.
নাফি’ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু
উমার (রা) হতে বর্ণনা করেন, নজদ এলাকার দিকে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) একটি সেনাদল প্রেরণ করেছিলেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা)-ও এতে শরীক
ছিলেন। গনীমত হিসেবে অনেক উট ধরা পড়ে। প্রত্যেকেই বারটি বা এগারটি করে উট প্রাপ্ত
হন এবং প্রত্যেককেই আরো একটি করে নফল (হিস্যাতিরিক্ত) দেয়া হয়। [১] (বুখারী ৩১৩৪,
মুসলিম ১৭৪৯)
[১] গনীমতের সাকুল্য সম্পদ পাঁচ ভাগে বণ্টন করা হয়। এক ভাগ সরকারী
তহবিলে সংরক্ষিত হয়। আর চার ভাগ মুজাহিদগণের মধ্যে বণ্টন করা হয়।
৯৬৬
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُولُ كَانَ النَّاسُ
فِي الْغَزْوِ إِذَا اقْتَسَمُوا غَنَائِمَهُمْ يَعْدِلُونَ الْبَعِيرَ بِعَشْرِ
شِيَاهٍ ১৬৩৯-قَالَ
مَالِك فِي الْأَجِيرِ فِي الْغَزْوِ إِنَّهُ إِنْ كَانَ شَهِدَ الْقِتَالَ
وَكَانَ مَعَ النَّاسِ عِنْدَ الْقِتَالِ وَكَانَ حُرًّا فَلَهُ سَهْمُهُ وَإِنْ
لَمْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَا سَهْمَ لَهُ وَأَرَى أَنْ لَا يُقْسَمَ إِلَّا لِمَنْ
شَهِدَ الْقِتَالَ مِنْ الْأَحْرَارِ.
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রা)-কে বলতে শুনেছেন, জিহাদের মালে গনীমত বণ্টন করার সময়
একটি উট দশটি বকরীর সমান বলে গণ্য করা হত। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
মালিক (রা) বলেন: জিহাদে যদি কেউ মজুর হিসেবে শরীক হয় আর অন্য মুজাহিদের সাথে সেও
যদি যুদ্ধে উপস্থিত থাকে ও যুদ্ধ করে, আর সে আযাদ ব্যক্তি হয়, তবে গনীমত হতে তাকেও
হিস্যা প্রদান করা হবে। আর যদি সে যুদ্ধে শরীক না হয় তবে সে হিস্যা পাবে না। মালিক
(রা) বলেন: আমি মনে করি, স্বাধীন ব্যক্তি যারা যুদ্ধে শরীক হয় তারা ব্যতীত অন্য
কারো জন্য গনীমতের অংশ বরাদ্দ হবে না।
পরিচ্ছেদ
৭
যে ধরনের সম্পদে এক-পঞ্চমাংশ আদায় করা ওয়াজিব নয়
পরিচ্ছেদ
৮
এক-পঞ্চমাংশ আলাদা করার পূর্বে গনীমত হতে যে সমস্ত জিনিস
আহার করা যায়
১৬৪৩-قَالَ مَالِك لَا أَرَى بَأْسًا أَنْ يَأْكُلَ الْمُسْلِمُونَ إِذَا دَخَلُوا أَرْضَ الْعَدُوِّ مِنْ طَعَامِهِمْ مَا وَجَدُوا مِنْ ذَلِكَ كُلِّهِ قَبْلَ أَنْ تَقَعَ الْمَقَاسِمُ ১৬৪৪-قَالَ مَالِك وَأَنَا أَرَى الْإِبِلَ وَالْبَقَرَ وَالْغَنَمَ بِمَنْزِلَةِ الطَّعَامِ يَأْكُلُ مِنْهُ الْمُسْلِمُونَ إِذَا دَخَلُوا أَرْضَ الْعَدُوِّ كَمَا يَأْكُلُونَ مِنْ الطَّعَامِ ১৬৪৫-وَلَوْ أَنَّ ذَلِكَ لَا يُؤْكَلُ حَتَّى يَحْضُرَ النَّاسُ الْمَقَاسِمَ وَيُقْسَمَ بَيْنَهُمْ أَضَرَّ ذَلِكَ بِالْجُيُوشِ فَلَا أَرَى بَأْسًا بِمَا أُكِلَ مِنْ ذَلِكَ كُلِّهِ عَلَى وَجْهِ الْمَعْرُوفِ وَلَا أَرَى أَنْ يَدَّخِرَ أَحَدٌ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا يَرْجِعُ بِهِ إِلَى أَهْلِهِ ১৬৪৬- و سُئِلَ مَالِك عَنْ الرَّجُلِ يُصِيبُ الطَّعَامَ فِي أَرْضِ الْعَدُوِّ فَيَأْكُلُ مِنْهُ وَيَتَزَوَّدُ فَيَفْضُلُ مِنْهُ شَيْءٌ أَيَصْلُحُ لَهُ أَنْ يَحْبِسَهُ فَيَأْكُلَهُ فِي أَهْلِهِ أَوْ يَبِيعَهُ قَبْلَ أَنْ يَقْدَمَ بِلَادَهُ فَيَنْتَفِعَ بِثَمَنِهِ قَالَ مَالِك إِنْ بَاعَهُ وَهُوَ فِي الْغَزْوِ فَإِنِّي أَرَى أَنْ يَجْعَلَ ثَمَنَهُ فِي غَنَائِمِ الْمُسْلِمِينَ وَإِنْ بَلَغَ بِهِ بَلَدَهُ فَلَا أَرَى بَأْسًا أَنْ يَأْكُلَهُ وَيَنْتَفِعَ بِهِ إِذَا كَانَ يَسِيرًا تَافِهًا.
মালিক (র) বলেন : মুসলমানগণ
শত্রুর দেশে খাদ্যদ্রব্য পেলে বণ্টনের পূর্বে তা আহার করতে পারে। এতে দোষের কিছু
নেই।
মালিক (র) বলেন : উট, গরু, বকরীকে আমি খাদ্যসামগ্রীর অন্তর্গত মনে করি, দুশমনের
দেশে প্রবেশ করলে মুসলিমগণ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের মতো এই সবও খেতে পারে। এমন
বস্তু যা আহার না করে বণ্টনের জন্য একত্র করলে সেনাদের কষ্ট হয় তা প্রয়োজনানুসারে
ন্যায়নীতির সহিত ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঞ্চয় করে
রাখা জায়েয নয়।
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কেউ যদি কাফেরদের দেশে আহারযোগ্য কিছু পেয়ে তা
খেয়ে ফেলে এবং অবশিষ্ট খাদ্য বাড়ি নিয়ে আসে বা পথে বিক্রয় করে পয়সা নিয়ে নেয় তবে
কি হবে? তিনি বলেন : জিহাদে লিপ্ত থাকা অবস্থায় যদি বিক্রয় করে, তবে তা গনীমতের
মালের সাথে সংযুক্ত হবে। বাড়ি চলে এলে তা খাওয়া বা তার মূল্য স্বীয় কাজে ব্যবহার
করা জায়েয আছে যদি সামান্য এবং মামুলি ধরনের (যেমন গোশত, রুটি ইত্যাদি) জিনিস হয়।
পরিচ্ছেদ
৯
গনীমতের মাল হতে বণ্টনের পূর্বে যা ফিরিয়ে দেওয়া হয়
৯৬৭
-
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَبْدًا لِعَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ أَبَقَ وَأَنَّ فَرَسًا لَهُ عَارَ فَأَصَابَهُمَا الْمُشْرِكُونَ
ثُمَّ غَنِمَهُمَا الْمُسْلِمُونَ فَرُدَّا عَلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ
وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ تُصِيبَهُمَا الْمَقَاسِمُ
১৬৪৯-قَالَ و سَمِعْت قَوْله
تَعَالَى يَقُولُ فِيمَا يُصِيبُ الْعَدُوُّ مِنْ أَمْوَالِ الْمُسْلِمِينَ
إِنَّهُ إِنْ أُدْرِكَ قَبْلَ أَنْ تَقَعَ فِيهِ الْمَقَاسِمُ فَهُوَ رَدٌّ عَلَى
أَهْلِهِ وَأَمَّا مَا وَقَعَتْ فِيهِ الْمَقَاسِمُ فَلَا يُرَدُّ عَلَى أَحَدٍ ১৬৫و سُئِلَ مَالِك عَنْ رَجُلٍ حَازَ
الْمُشْرِكُونَ غُلَامَهُ ثُمَّ غَنِمَهُ الْمُسْلِمُونَ قَالَ مَالِك صَاحِبُهُ
أَوْلَى بِهِ بِغَيْرِ ثَمَنٍ وَلَا قِيمَةٍ وَلَا غُرْمٍ مَا لَمْ تُصِبْهُ
الْمَقَاسِمُ فَإِنْ وَقَعَتْ فِيهِ الْمَقَاسِمُ فَإِنِّي أَرَى أَنْ يَكُونَ
الْغُلَامُ لِسَيِّدِهِ بِالثَّمَنِ إِنْ شَاءَ ১৬৫১-قَالَ مَالِك فِي أُمِّ وَلَدِ رَجُلٍ مِنْ
الْمُسْلِمِينَ حَازَهَا الْمُشْرِكُونَ ثُمَّ غَنِمَهَا الْمُسْلِمُونَ
فَقُسِمَتْ فِي الْمَقَاسِمِ ثُمَّ عَرَفَهَا سَيِّدُهَا بَعْدَ الْقَسْمِ
إِنَّهَا لَا تُسْتَرَقُّ وَأَرَى أَنْ يَفْتَدِيَهَا الْإِمَامُ لِسَيِّدِهَا
فَإِنْ لَمْ يَفْعَلْ فَعَلَى سَيِّدِهَا أَنْ يَفْتَدِيَهَا وَلَا يَدَعُهَا
وَلَا أَرَى لِلَّذِي صَارَتْ لَهُ أَنْ يَسْتَرِقَّهَا وَلَا يَسْتَحِلَّ
فَرْجَهَا وَإِنَّمَا هِيَ بِمَنْزِلَةِ الْحُرَّةِ لِأَنَّ سَيِّدَهَا يُكَلَّفُ
أَنْ يَفْتَدِيَهَا إِذَا جَرَحَتْ فَهَذَا بِمَنْزِلَةِ ذَلِكَ فَلَيْسَ لَهُ
أَنْ يُسَلِّمَ أُمَّ وَلَدِهِ تُسْتَرَقُّ وَيُسْتَحَلُّ فَرْجُهَا ১৬৫২-و سُئِلَ مَالِك عَنْ الرَّجُلِ يَخْرُجُ
إِلَى أَرْضِ الْعَدُوِّ فِي الْمُفَادَاةِ أَوْ لِتِجَارَةٍ فَيَشْتَرِيَ
الْحُرَّ أَوْ الْعَبْدَ أَوْ يُوهَبَانِ لَهُ فَقَالَ أَمَّا الْحُرُّ فَإِنَّ
مَا اشْتَرَاهُ بِهِ دَيْنٌ عَلَيْهِ وَلَا يُسْتَرَقُّ وَإِنْ كَانَ وُهِبَ لَهُ
فَهُوَ حُرٌّ وَلَيْسَ عَلَيْهِ شَيْءٌ إِلَّا أَنْ يَكُونَ الرَّجُلُ أَعْطَى
فِيْهِ شَيْئًا مُكَافَأَةً فَهُوَ دَيْنٌ عَلَى الْحُرِّ بِمَنْزِلَةِ مَا
اشْتُرِيَ بِهِ وَأَمَّا الْعَبْدُ فَإِنَّ سَيِّدَهُ الْأَوَّلَ مُخَيَّرٌ فِيهِ
إِنْ شَاءَ أَنْ يَأْخُذَهُ وَيَدْفَعَ إِلَى الَّذِي اشْتَرَاهُ ثَمَنَهُ
فَذَلِكَ لَهُ وَإِنْ أَحَبَّ أَنْ يُسْلِمَهُ أَسْلَمَهُ وَإِنْ كَانَ وُهِبَ
لَهُ فَسَيِّدُهُ الْأَوَّلُ أَحَقُّ بِهِ وَلَا شَيْءَ عَلَيْهِ إِلَّا أَنْ
يَكُونَ الرَّجُلُ أَعْطَى فِيهِ شَيْئًا مُكَافَأَةً فَيَكُونُ مَا أَعْطَى فِيهِ
غُرْمًا عَلَى سَيِّدِهِ إِنْ أَحَبَّ أَنْ يَفْتَدِيَهُ.
মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রা)-এর একজন গোলাম ঘোড়াসহ পালিয়ে কাফেরদের হাতে পড়ে গিয়েছিল। পরে তা
গনীমতের মাল হিসেবে পুনরায় মুসলমানদের হস্তগত হয়। তখন বণ্টনের পূর্বেই ‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রা)-কে এগুলো ফিরিয়া দেয়া হয়েছিল। (বুখারী ৩০৬৮)
ইয়াহইয়া মালিক (র)-কে বলতে শুনেছেন যে, কাফেরদের হাতে মুসলমানদের কোন কিছু পাওয়া
গেলে বণ্টনের পূর্বে তা পূর্ব মালিকের নিকট প্রত্যার্পণ করা হবে। বণ্টন হয়ে গেলে
আর উহা প্রত্যার্পণ করা হবে না।
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কোনো মুসলমানের উম্মু ওয়ালাদ [১] যদি কাফেররা
নিয়ে যায়, পরে গনীমত হিসেবে যদি পুনরায় উহা মুসলমানদের হস্তগত হয়, তবে কি করা হবে?
তিনি বললেন: বণ্টনের পূর্বে উহাকে কোনরূপে বিনিময় ব্যতিরেকে পূর্ব মালিকের নিকট
ফিরিয়ে দেয়া হবে। আমার মতে বণ্টনের পর মালিক ইচ্ছা করলে মূল্য দিয়ে উহাকে নিয়ে
যেতে পারবে।
মালিক (র) বলেন : কোনো মুসলমানের উম্মে ওয়ালাদ দাসীকেও যদি কাফেরগণ ছিনিয়ে নিয়ে
যায়, পরে সে গনীমতের মাল হিসেবে হস্তগত হয়, আর বণ্টন হয়ে যাওয়ার পরে যদি মালিক
তাকে চিনতে পারে, তবুও তাকে দাসী বানান যাবে না। আমি মনে করি, তখন সরকারের কর্তব্য
হবে তার ফিদ্আ আদায় করে তার মালিকের নিকট প্রত্যার্পণ করা। মালিক (র) বলেন : সরকার
যদি এরূপ না করে তবে পূর্ব মালিক তার ফিদ্আ আদায় করে তাকে মুক্ত করে নিয়ে যাবে।
বণ্টনের পর যার ভাগে সে পড়েছিল তার জন্য তাকে দাসী বানান বা তার সাথে যৌন মিলন
জায়েয নয়। উম্মে ওয়ালাদ আযাদ দাসীর মতো। উম্মে ওয়ালাদ যদি কাউকেও আঘাত করে যখমী
করে ফেলে তবে মালিকের উপর ফিদয়া আদায় করে তাকে মুক্ত করে দেয়া মালিকের উপর জরুরী।
তাকে মুক্ত না করে ঐ অবস্থায় রেখে দেয়া এবং তাকে পুনরায় দাসী বানান ও তার সাথে যৌন
সম্ভোগ কোনক্রমেই জায়েয হবে না।
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কেউ কোন মুসলমানকে মুক্ত করে আনার উদ্দেশ্যে বা
ব্যবসা করতে কাফেরদের অঞ্চলে গেল আর সেখানে আযাদ ও ক্রীতদাস উভয় ধরনের মানুষ ক্রয়
করে নিয়ে এল বা কাফেরগণ তাকে হেবা হিসেবে দান করল। এখন এ ব্যক্তির বিষয়ে কি হুকুম
হবে? তিনি বললেন : আযাদ ব্যক্তিকে ক্রয় করে নিয়ে এলে তাকে ক্রীতদাস বানান যাবে না।
আর তার মূল্য তখন ঋণ হিসেবে ধরা হবে। হেবা হিসেবে নিয়ে এসে থাকলে ঐ ব্যক্তি আযাদ
হিসেবেই বহাল থাকবে আর আনয়নকারী ব্যক্তি কিছুই পাবে না। তবে হিবার বিনিময়ে সে
সেখানে কোন কিছু আদায় করে থাকলে তৎপরিমাণ টাকা দিয়ে তাকে ক্রয় করে আনল। আর ঐ
ব্যক্তি যদি কোন দাস ক্রয় করে আনে, তবে পূর্ব মালিকের ইখতিয়ার থাকবে। ইচ্ছা করলে
মূল্য আদায় করে তাকে সে নিয়ে যেতে পারবে আর ইচ্ছা করলে তাকে ঐ ব্যক্তির কাছে ছেড়ে
দিতে পারবে।
হিবা হিসেবে পেয়ে থাকলে পূর্ব মালিক তাকে এমনিই নিয়ে যেতে পারবে। হিবার বিনিময়ে
কিছু ব্যয় করে থাকলে তৎপরিমাণ টাকা আদায় করে তবে পূর্ব মালিক তাকে নিতে পারবে।
[১] যে দাসীর গর্ভে মালিকের ঔরসজাত সন্তানের জন্ম হয়েছে সে দাসীকে
উম্মে ওয়ালাদ বলা হয়।
পরিচ্ছেদ
১০
নফল হিসেবে কোন সৈনিককে অস্ত্রশস্ত্র প্রদান করা
৯৬৮
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ عَنْ أَبِي
مُحَمَّدٍ مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِي قَتَادَةَ بْنِ رِبْعِيٍّ أَنَّهُ
قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ
حُنَيْنٍ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا كَانَتْ لِلْمُسْلِمِينَ جَوْلَةٌ قَالَ
فَرَأَيْتُ رَجُلًا مِنْ الْمُشْرِكِينَ قَدْ عَلَا رَجُلًا مِنْ الْمُسْلِمِينَ
قَالَ فَاسْتَدَرْتُ لَهُ حَتَّى أَتَيْتُهُ مِنْ وَرَائِهِ فَضَرَبْتُهُ
بِالسَّيْفِ عَلَى حَبْلِ عَاتِقِهِ فَأَقْبَلَ عَلَيَّ فَضَمَّنِي ضَمَّةً
وَجَدْتُ مِنْهَا رِيحَ الْمَوْتِ ثُمَّ أَدْرَكَهُ الْمَوْتُ فَأَرْسَلَنِي قَالَ
فَلَقِيتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فَقُلْتُ مَا بَالُ النَّاسِ فَقَالَ أَمْرُ
اللهِ ثُمَّ إِنَّ النَّاسَ رَجَعُوا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ مَنْ قَتَلَ قَتِيلًا لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ قَالَ
فَقُمْتُ ثُمَّ قُلْتُ مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ مَنْ قَتَلَ
قَتِيلًا لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ قَالَ فَقُمْتُ ثُمَّ قُلْتُ
مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ ذَلِكَ الثَّالِثَةَ فَقُمْتُ
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا لَكَ يَا أَبَا
قَتَادَةَ قَالَ فَاقْتَصَصْتُ عَلَيْهِ الْقِصَّةَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ
صَدَقَ يَا رَسُولَ اللهِ وَسَلَبُ ذَلِكَ الْقَتِيلِ عِنْدِي فَأَرْضِهِ عَنْهُ
يَا رَسُولَ اللهِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ لَا هَاءَ اللهِ إِذًا لَا يَعْمِدُ إِلَى
أَسَدٍ مِنْ أُسْدِ اللهِ يُقَاتِلُ عَنْ اللهِ وَرَسُولِهِ فَيُعْطِيكَ سَلَبَهُ
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَدَقَ فَأَعْطِهِ
إِيَّاهُ فَأَعْطَانِيهِ فَبِعْتُ الدِّرْعَ فَاشْتَرَيْتُ بِهِ مَخْرَفًا فِي
بَنِي سَلِمَةَ فَإِنَّهُ لَأَوَّلُ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ فِي الْإِسْلَامِ.
আবূ কাতাদা ইবনু রিব্য়ী (রা) থেকে বর্ণিতঃ
হুনায়ন
যুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে আমরা বের হলাম।
প্রচণ্ড চাপে মুসলমানগণ হেঁটে আসেন। কোন এক কাফের সৈন্যকে তখন জনৈক মুসলিম সৈন্যের
উপর জয়ী হয়ে যাচ্ছে দেখে পিছন হতে আমি ঐ কাফের সৈন্যটির ঘাড়ে তলওয়ারের এক কোপ
বসালাম। সে তখন দৌঁড়ে আমাকে ধরে এমন চাপ দিল যে, আমার মৃত্যুর স্বাদ অনুভূত হতে
লাগল। শেষে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। পরে উমার (রা) ইবনু খাত্তাবের সাথে আমার
সাক্ষাত হল। আমি বললাম; মানুষের একি হল! তিনি বললেন : আল্লাহর হুকুম। শেষে মুসলিম
সৈন্যগণ আবার ময়দানে ফিরে এলেন। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সে
সময় ঘোষণা করলেন : সাক্ষী পেশ করতে পারলে যে তাকে হত্যা করেছেন তার আসবাবপত্র সে-ই
পাবে।
আবূ কাতাদা বলেন : এই ঘোষণা শুনে আমি দাঁড়ালাম এবং বললাম : আমার জন্য কে সাক্ষ্য
দেবে? এ কথা বলে আমি বসে পড়লাম। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
পুনরায় ঐ কথা ঘোষণা করলেন।
আমি আবার দাঁড়ালাম এবং বললাম : আমার জন্য কে সাক্ষ্য দেবে? এ কথা বলে আমি বসে
পড়লাম। তৃতীয়বার রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথা ঘোষণা করলেন।
আমিও উঠে দাঁড়ালাম। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন : আবূ
কাতাদা, তোমার কি হল? সমস্ত ঘটনা তখন আমি তাঁকে বিবৃত করলাম। তখন এক ব্যক্তি উঠে
বললেন : হে আল্লাহর রসূল, ইনি সত্যিই বলেছেন। ঐ নিহত কাফেরটির আসবাবপত্র আমার কাছে
আছে। আপনি তাকে রাজী করিয়ে ঐ আসবাবপত্র আমাকে দেয়ার ব্যবস্থা করুন। আবূ বক্র (রা)
তখন বললেন : আল্লাহ্র কসম, কখনো নয়।
আপনি এমন কাজ করার ইচ্ছা করবেন না। আল্লাহর ব্যাঘ্রসমূহ হতে কোন এক ব্যাঘ্র
আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পক্ষে লড়াই করবে আর তুমি আসবাবপত্র নিয়ে যাবে, তা হতে পারে
না। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন বললেন; আবূ বক্র যথার্থই
বলেছেন। আবূ কাতাদাকে ঐ আসবাবপত্র দিয়ে দাও। শেষে ঐ ব্যক্তি উহা আমাকে দিয়ে দিলেন।
উহা হতে একটি বর্ম বিক্রয় করে বনু সালিমা মহল্লায় একটা বাগান ক্রয় করে ফেললাম।
ইসলাম গ্রহণ করার পর এ সম্পত্তিটুকু আমি লাভ করতে পেরেছিলাম। (বুখারী ৩১৪২, মুসলিম
১৭৫১)
৯৬৯
و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ
عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ رَجُلًا يَسْأَلُ عَبْدَ
اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ عَنْ الْأَنْفَالِ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الْفَرَسُ مِنْ
النَّفَلِ وَالسَّلَبُ مِنْ النَّفَلِ قَالَ ثُمَّ عَادَ الرَّجُلُ لِمَسْأَلَتِهِ
فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ ذَلِكَ أَيْضًا ثُمَّ قَالَ الرَّجُلُ الْأَنْفَالُ
الَّتِي قَالَ اللهُ فِي كِتَابِهِ مَا هِيَ قَالَ الْقَاسِمُ فَلَمْ يَزَلْ
يَسْأَلُهُ حَتَّى كَادَ أَنْ يُحْرِجَهُ ثُمَّ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَتَدْرُونَ
مَا مَثَلُ هَذَا مَثَلُ صَبِيغٍ الَّذِي ضَرَبَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ ১৬৫৬-قَالَ و سُئِلَ مَالِك عَمَّنْ قَتَلَ قَتِيلًا
مِنْ الْعَدُوِّ أَيَكُونُ لَهُ سَلَبُهُ بِغَيْرِ إِذْنِ الْإِمَامِ قَالَ لَا
يَكُونُ ذَلِكَ لِأَحَدٍ بِغَيْرِ إِذْنِ الْإِمَامِ وَلَا يَكُونُ ذَلِكَ مِنْ
الْإِمَامِ إِلَّا عَلَى وَجْهِ الْاجْتِهَادِ وَلَمْ يَبْلُغْنِي أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ قَتَلَ قَتِيلًا فَلَهُ
سَلَبُهُ إِلَّا يَوْمَ حُنَيْنٍ.
কাশিম ইবনু মুহাম্মদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ্
ইবনু আব্বাস (রা)-এর কাছে আনফাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এক ব্যক্তিকে শুনেছিলাম।
ইবনু আব্বাস (রা) তখন উত্তরে বলেছিলেন : ঘোড়া এবং অস্ত্রশস্ত্র আনফালের মধ্যে
শামিল । ঐ ব্যক্তি ঐ প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করলে ইবনু আব্বাস (রা) পুনরায় ঐ উত্তর
প্রদান করেন। তখন ঐ ব্যক্তি বলল : কুরআনুল কারীমে যে আনফালের আলোচনা করা হয়েছে, সে
আনফাল সম্পর্কে আপনার কাছে জানতে চাচ্ছি। কাশিম (র) বলেন : ঐ ব্যক্তি বার বার একই
কথা বলতে লাগল। শেষে ইবনু আব্বাস (রা) বিরক্ত হয়ে বললেন; এই ব্যক্তি সবীগের মতো
যাকে উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বেত্রদণ্ড দিয়েছিলেন। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল মুসলিমদের কোন শত্রুকে হত্যা করতে পারলে মুসলিম
রাষ্ট্রনায়কের অনুমতি ব্যতিরেকে তার আসবাবপত্র নিহতকারী পেতে পারে কি? তিনি বললেন
: না। ইমাম বা রাষ্ট্রপ্রধান মুনাসিব মনে করলে এ ধরনের হুকুম জারি করতে পারেন।
হুনায়ন যুদ্ধ ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
ঐ ধরনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আমরা জ্ঞাত হইনি।
[১] ইরাকের বাসিন্দা এক ব্যক্তি উমার (রা)-এর আমলে মদীনায় এসে
আল-কুরআনের আয়াতসমূহ নিয়ে নানা ধরনের উদ্ভট আলোচনার অবতারণা করে দেয়। উমার (রা) তখন
তাকে বেত্রদণ্ড দেন এবং তার কাছে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
পরিচ্ছেদ
১১
খুমুস হতে নফল প্রদান করা
৯৭০
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ
أَنَّهُ قَالَ كَانَ النَّاسُ يُعْطَوْنَ النَّفَلَ مِنْ الْخُمُسِ قَالَ مَالِك
وَذَلِكَ أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ إِلَيَّ فِي ذَلِكَ ১৬৫৯-و سُئِلَ مَالِك عَنْ النَّفَلِ هَلْ
يَكُونُ فِي أَوَّلِ مَغْنَمٍ قَالَ ذَلِكَ عَلَى وَجْهِ الْاجْتِهَادِ مِنْ
الْإِمَامِ وَلَيْسَ عِنْدَنَا فِي ذَلِكَ أَمْرٌ مَعْرُوفٌ مَوْقُوفٌ إِلَّا
اجْتِهَادُ السُّلْطَانِ وَلَمْ يَبْلُغْنِي أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَفَّلَ فِي مَغَازِيهِ كُلِّهَ.
وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّهُ نَفَّلَ فِي بَعْضِهَا يَوْمَ حُنَيْنٍ وَإِنَّمَا
ذَلِكَ عَلَى وَجْهِ الْاجْتِهَادِ مِنْ الْإِمَامِ فِي أَوَّلِ مَغْنَمٍ وَفِيمَا
بَعْدَهُ اااا
সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র) থেকে বর্ণিতঃ
মালে
গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ হতে (সাহাবা যুগের) লোকগণ ‘নফল দিতেন। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, এই বর্ণনাটি আমার কাছে উত্তম।
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল গনীমতের প্রথম ভাগ হতেই কি নফল দিতে হবে? তিনি
বললেন, এটা রাষ্ট্রপ্রধানের বিবেচনার উপর নির্ভর করে। আমাদের নিকট এর নির্দিষ্ট
রীতি নেই। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক জিহাদেই নফল
দিয়েছেন বলে কোন রেওয়ায়ত আমাদের নিকট পৌঁছেনি বরং কতক সময় তা দিয়েছেন, তন্মধ্যে
হুনায়ন একটি। এটা ইমামের ইচ্ছাধীন।
[১] যুদ্ধলব্ধ মাল হতে হিস্যার অতিরিক্ত কিছু সাহসিকতার স্বকৃতি
বা উৎসাহ প্রদানের জন্য প্রদান করাকে ফিকহর পরিভাষায় ‘নফল’ বলা হয়। তবে তা দিতে হলে
সেনাপতিকে পূর্বে ঘোষণা করতে হবে।
পরিচ্ছেদ
১২
জিহাদে ঘোড়ার অংশ
৯৭১
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ
قَالَ بَلَغَنِي أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ كَانَ يَقُولُ لِلْفَرَسِ
سَهْمَانِ وَلِلرَّجُلِ سَهْمٌ قَالَ مَالِك وَلَمْ أَزَلْ أَسْمَعُ ذَلِكَ ১৬৬৩- و سُئِلَ مَالِك عَنْ رَجُلٍ يَحْضُرُ
بِأَفْرَاسٍ كَثِيرَةٍ فَهَلْ يُقْسَمُ لَهَا كُلِّهَا فَقَالَ لَمْ أَسْمَعْ
بِذَلِكَ وَلَا أَرَى أَنْ يُقْسَمَ إِلَّا لِفَرَسٍ وَاحِدٍ الَّذِي يُقَاتِلُ
عَلَيْهِ ১৬৬৪-قَالَ
مَالِك لَا أَرَى الْبَرَاذِينَ وَالْهُجُنَ إِلَّا مِنْ الْخَيْلِ لِأَنَّ اللهَ
تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ فِي كِتَابِهِ { وَالْخَيْلَ وَالْبِغَالَ
وَالْحَمِيرَ لِتَرْكَبُوهَا وَزِينَةً } وَقَالَ عَزَّ وَجَلَّ { وَأَعِدُّوا
لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ
عَدُوَّ اللهِ وَعَدُوَّكُمْ } فَأَنَا أَرَى الْبَرَاذِينَ وَالْهُجُنَ مِنْ
الْخَيْلِ إِذَا أَجَازَهَا الْوَالِي وَقَدْ قَالَ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيِّبِ
وَسُئِلَ عَنْ الْبَرَاذِينِ هَلْ فِيهَا مِنْ صَدَقَةٍ فَقَالَ وَهَلْ فِي
الْخَيْلِ مِنْ صَدَقَةٍاااا
মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ
আমার
নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, উমার ইবনু আবদুল আযীয (র) বলেছেন, গনীমতের মধ্যে ঘোড়ার
দুই অংশ এবং অশ্বারোহীর এক অংশ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন, তবে
ইবনু মুসাইয্যের এর মন্তব্যটুকু ইমাম বুখারী বর্ণনা করেছেন ২৮৬৩, মুসলিম ১৭৬২)
মালিক (র) বলেন, আমি উক্ত ধরনের অভিমতই শুনে এসেছি।
মালিক (র)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল একজন যদি কয়েকটি ঘোড়া জিহাদে নিয়ে আসে তবে সে
প্রত্যেকটিরই কি আলাদা অংশ পাবে? তিনি বললেন, না, আমি এরূপ শুনিনি, যে ঘোড়াটির উপর
আহরণ করে যুদ্ধ করেছে সেটির হিস্যাই কেবল সে পাবে।
মালিক (র) বলেন, আমার মতে তুর্কী ঘোড়া এবং সংকর জাতীয় ঘোড়াও সাধারণ ঘোড়ার হুকুমের
অন্তর্ভুক্ত হবে। কেননা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে : “ঘোড়া, গাধা ও খচ্চর তোমাদের
আরোহণের জন্য আমি সৃষ্টি করেছি।” [১] আল্লাহ্ তা’আলা আরো ইরশাদ করেন, “কাফেরদের
মুকাবিলায় যথাশক্তি যুদ্ধাস্ত্র এবং ঘোড়া তৈরি রাখ যাতে এদের দ্বারা আল্লাহর শত্রু
এবং তোমাদের শত্রুকে সন্ত্রস্ত রাখতে পার। “সুতরাং সরকার যখন গ্রহণ করে নেন তখন
আমার মতে তুর্কী ও সংকর জাতীয় ঘোড়াও সাধারণ ঘোড়ার অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।
মালিক (র) বলেন, সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-কে কেউ জিজ্ঞেস করেছিল : তুর্কী ঘোড়ারও
কি যাকাত দিতে হবে? উত্তরে তিনি বলেছেন, ঘোড়ারও আবার যাকাত ওয়াজিব হয় নাকি?
[১] তুর্কী এবং সংকর জাতীয় ঘোড়ায়ও মানুষ আরোহণ করে থাকে। এটা
নিঃসন্দেহে গাধা বা খচ্চরের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং ঘোড়ার অন্তর্ভুক্ত হবে।
পরিচ্ছেদ
১৩
গনীমতের সম্পদ হতে চুরি করা
৯৭২
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ صَدَرَ مِنْ حُنَيْنٍ وَهُوَ يُرِيدُ
الْجِعِرَّانَةَ سَأَلَهُ النَّاسُ حَتَّى دَنَتْ بِهِ نَاقَتُهُ مِنْ شَجَرَةٍ
فَتَشَبَّكَتْ بِرِدَائِهِ حَتَّى نَزَعَتْهُ عَنْ ظَهْرِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رُدُّوا عَلَيَّ رِدَائِي أَتَخَافُونَ أَنْ لَا
أَقْسِمَ بَيْنَكُمْ مَا أَفَاءَ اللهُ عَلَيْكُمْ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ
لَوْ أَفَاءَ اللهُ عَلَيْكُمْ مِثْلَ سَمُرِ تِهَامَةَ نَعَمًا لَقَسَمْتُهُ
بَيْنَكُمْ ثُمَّ لَا تَجِدُونِي بَخِيلًا وَلَا جَبَانًا وَلَا كَذَّابًا
فَلَمَّا نَزَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ فِي
النَّاسِ فَقَالَ أَدُّوا الْخِيَاطَ وَالْمِخْيَطَ فَإِنَّ الْغُلُولَ عَارٌ
وَنَارٌ وَشَنَارٌ عَلَى أَهْلِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ ثُمَّ تَنَاوَلَ مِنْ
الْأَرْضِ وَبَرَةً مِنْ بَعِيرٍ أَوْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ: وَالَّذِيْ نَفْسِيْ
بِيَدِهِ مَا لِي مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَيْكُمْ وَلَا مِثْلُ هَذِهِ إِلَّا
الْخُمُسُ وَالْخُمُسُ مَرْدُودٌ عَلَيْكُمْ.
আমর ইবনু শুয়াইব (র) থেকে বর্ণিতঃ
হুনায়নের জিহাদ
হতে যখন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রত্যাবর্তন করে জিয়িরানা
নামক স্থানের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর কাছে এসে লোকের গনীমতের হিস্যা চাইতে
লাগল, এমনকি লোকের চাপে তাঁরা উট বৃক্ষের নিকট চলে গেল এবং তাঁর চাদর কাঁটায় আটকে
পিঠ হতে পড়ে গেল। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমার চাদর
আমাকে দাও। তোমরা কি মনে কর, যে জিনিস আল্লাহ্ তোমাদেরকে দিয়েছেন তা তোমাদেরকে আমি
বেঁচে দেব না? যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, তিহামা প্রান্তরের বাবলা গাছের মতো
এত অধিক সংখ্যক পশুও যদি আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে দান করেন তাও তোমাদের মাঝে আমি
বণ্টন করে দেব। তোমরা আমাকে কৃপণ, ভীরু ও মিথ্যাবাদী হিসেবে দেখতে পাবে না।
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উট হতে অবতরণ করে লোকের সামনে
দাঁড়ালেন। অতঃপর বললেন, কেউ যদি একটি সুতা বা সুঁচ নিয়ে যায় তবে তাও দিয়ে দাও।
গনীমত হতে কিছু চুরি করা লজ্জা ও জাহান্নামের কারণ হয় এবং কিয়ামতের দিনও ইহা লজ্জা
এবং মহাদোষের কারণ হবে। অতঃপর তিনি মাটি হতে বকরী বা উটের একটা পশম হাতে নিয়ে
বললেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ সে সত্তার কসম, আল্লাহ্ তা’আল্লা তোমাদেরকে যে সম্পদ
দিয়েছেন তাতে এতটুকু হিস্যাও আমার নেই। হ্যাঁ, গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ আমি পাই। উহা
তোমাদের নিকটই প্রত্যাবর্তিত হয়। (সহীহ, ইমাম নাসাঈ মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেন
৪১৩৮, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেন [ইরওয়া] ১২৪০, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত
হাদীসটি মুরসাল)
৯৭৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ أَنَّ زَيْدَ بْنَ خَالِدٍ
الْجُهَنِيَّ قَالَ: تُوُفِّيَ رَجُلٌ يَوْمَ حُنَيْنٍ وَإِنَّهُمْ ذَكَرُوهُ
لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَزَعَمَ زَيْدٌ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ
فَتَغَيَّرَتْ وُجُوهُ النَّاسِ لِذَلِكَ فَزَعَمَ زَيْدٌ أَنَّ رَسُولَ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ صَاحِبَكُمْ قَدْ غَلَّ فِي سَبِيلِ
اللهِ قَالَ فَفَتَحْنَا مَتَاعَهُ فَوَجَدْنَا خَرَزَاتٍ مِنْ خَرَزِ يَهُودَ مَا
تُسَاوِينَ دِرْهَمَيْنِ.
যাইদ ইবনু খালিদ জুহানী (র) থেকে বর্ণিতঃ
হুনায়নের জিহাদে
এক ব্যক্তি মারা যায়। অন্যরা রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে এসে এ
সংবাদ জানালে তিনি বললেন, তোমরা তোমাদের এই সঙ্গীর জানাযা পড়ে নাও। এ কথা শুনে
সকলের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। [কারণ মৃত ব্যক্তির কোন দোষের কারণেই হয়ত রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামায পড়াতে অস্বীকার করতেছেন।] যাইদ (রা) বলেন,
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন বলেছিলেন : এ ব্যক্তি গনীমত হতে
চুরি করে কিছু নিয়ে গিয়েছিল। যাঈদ (রা) বলেন, আমরা ঐ ব্যক্তির আসবাবপত্র খুলে তাতে
ইহুদীদের পুতি হতে সামান্য কয়েকটি পুতি পেলাম, দুই দিরহাম পরিমাণ যার মূল্য হবে।
(যয়ীফ, আবূ দাঊদ ২৭১০, নাসাঈ ১৯৫৮, ইবনু মাজাহ ২৮৪৮, আলবানী হাদীসটিকে যয়ীফ বলেছেন
[যয়ীফ আল-আনজামে] ৩৪৮১)
৯৭৪
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ
الْكِنَانِيِّ أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ أَتَى النَّاسَ فِي قَبَائِلِهِمْ يَدْعُو لَهُمْ وَأَنَّهُ تَرَكَ قَبِيلَةً
مِنْ الْقَبَائِلِ قَالَ وَإِنَّ الْقَبِيلَةَ وَجَدُوا فِي بَرْدَعَةِ رَجُلٍ
مِنْهُمْ عِقْدَ جَزْعٍ غُلُولًا فَأَتَاهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَكَبَّرَ عَلَيْهِمْ كَمَا يُكَبِّرُ عَلَى الْمَيِّتِ.
আবদুল্লাহ্ ইবনু মুগীরা ইবনু আবূ বুরদা কেনানী (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তাঁর কাছে
রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের সকল
কবীলার লোকদের কাছে এসে তাদের জন্য দোয়া করেছিলেন। কিন্তু একটি কবীলার জন্য দোয়া
করেননি। এই কবীলার একটি লোকের বিছানার নিচে আকীক পাথরের তৈরি একটি চুরি করা হার
পাওয়া গিয়েছিল। এই কবীলার নিকট এসে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
মুর্দাদের বেলায় যেমন তাকবীর পড়া হয় তদ্রূপ তাকবীর পাঠ করেছিলেন। [১] (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] গনীমতের মাল চুরি করা জঘন্য অপরাধ এবং যারা এ কাজ করে তারা
মৃত ব্যক্তির সমতুল্য। হয়ত ইহা বুঝাবার জন্য রসূলুল্লাহ্ (সা) তাকবীর পড়েছিলেন।
৯৭৫
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ثَوْرِ بْنِ
زَيْدٍ الدِّيلِيِّ عَنْ أَبِي الْغَيْثِ سَالِمٍ مَوْلَى ابْنِ مُطِيعٍ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ عَامَ خَيْبَرَ فَلَمْ نَغْنَمْ ذَهَبًا وَلَا وَرِقًا إِلَّا
الْأَمْوَالَ الثِّيَابَ وَالْمَتَاعَ قَالَ فَأَهْدَى رِفَاعَةُ بْنُ زَيْدٍ لِرَسُولِ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غُلَامًا أَسْوَدَ يُقَالُ لَهُ مِدْعَمٌ
فَوَجَّهَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى وَادِي الْقُرَى
حَتَّى إِذَا كُنَّا بِوَادِي الْقُرَى بَيْنَمَا مِدْعَمٌ يَحُطُّ رَحْلَ رَسُولِ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَهُ سَهْمٌ عَائِرٌ فَأَصَابَهُ
فَقَتَلَهُ فَقَالَ النَّاسُ هَنِيئًا لَهُ الْجَنَّةُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَلَّا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّ
الشَّمْلَةَ الَّتِي أَخَذَ يَوْمَ خَيْبَرَ مِنْ الْمَغَانِمِ لَمْ تُصِبْهَا
الْمَقَاسِمُ لَتَشْتَعِلُ عَلَيْهِ نَارًا قَالَ فَلَمَّا سَمِعَ النَّاسُ ذَلِكَ
جَاءَ رَجُلٌ بِشِرَاكٍ أَوْ شِرَاكَيْنِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شِرَاكٌ
أَوْ شِرَاكَانِ مِنْ نَارٍ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, খায়বরের বৎসর রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে আমরা
রওয়ানা হয়েছিলাম। এ যুদ্ধে আমরা সোনা-রূপা হস্তগত করতে পারিনি, তবে অনেক আসবাবপত্র
ও কাপড় আমাদের হস্তগত হয়েছিল।
রিফা’আ ইবনু যাইদ (রা) মিদ’আম নামের একজন দাস রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)কে হাদিয়া দিয়েছিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ওয়াদি-এ কুরার দিকে যাত্রা করেন। সেখানে পৌঁছার পর মিদ’আম রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উটের হাওদা নামাচ্ছিল এমন সময় কোথা হতে একটি
তীর এসে তাঁর শরীরে বিদ্ধ হয় এবং সে মারা যায়। লোকেরা তখন বলাবলি করতে লাগল :
মিদ’আমের জন্য জান্নাত মুবারক হোক। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, কখনো নয়। যাঁর হাতে আমার প্রাণ সেই সত্তার কসম, খায়বরের যুদ্ধে গনীমতের মাল
বণ্টনের পূর্বে যে চাদর সে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল তা এখন তার গায়ে আগুন হয়ে
জ্বলছে। এ কথা শুনে এক ব্যক্তি একটা কি দুটা ফিতা এনে হাযির করল। রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন বললেন, এই একটি বা দুটি ফিতাও আগুনের ছিল।
(বুখারী ৪২৩৪, মুসলিম ১১৫)
৯৭৬
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ قَالَ:
مَا ظَهَرَ الْغُلُولُ فِي قَوْمٍ قَطُّ إِلَّا أُلْقِيَ فِي قُلُوبِهِمْ
الرُّعْبُ وَلَا فَشَا الزِّنَا فِي قَوْمٍ قَطُّ إِلَّا كَثُرَ فِيهِمْ الْمَوْتُ
وَلَا نَقَصَ قَوْمٌ الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ إِلَّا قُطِعَ عَنْهُمْ الرِّزْقُ
وَلَا حَكَمَ قَوْمٌ بِغَيْرِ الْحَقِّ إِلَّا فَشَا فِيهِمْ الدَّمُ وَلَا خَتَرَ
قَوْمٌ بِالْعَهْدِ إِلَّا سَلَّطَ اللهُ عَلَيْهِمْ الْعَدُوَّ.
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ
যে জাতির মধ্যে
গনীমতের মাল চুরি করার প্রবণতা প্রকাশ পায় আল্লাহ্ তাদের মনে দুশমনের ভয় ঢুকিয়ে
দেন। যে জাতির মধ্যে যিনা বেশি হয়, তাদের মধ্যে মৃত্যুর আধিক্য ঘটে। যে জাতি মাপে
কম দেয় আল্লাহ্ তাদের রিযিক কমিয়ে দেন। যে জাতি ন্যায়বিচার করে না, তাদের মধ্যে
রক্তপাত বেশি হবে। আর যে জাতি চুক্তির খেলাফ করে, আল্লাহ্ তাদের উপর দুশমনকে
চাপিয়ে দেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদ
১৪
আল্লাহর পথের শহীদগণ
৯৭৭
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوَدِدْتُ أَنِّي
أُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللهِ فَأُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا فَأُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا
فَأُقْتَلُ فَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَقُولُ ثَلَاثًا أَشْهَدُ بِاللهِ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, আমি চাই
একবার আল্লাহর পথে শহীদ হই, আবার জীবিত হই; আবার শহীদ হই, আবার জীবিত হই; আবার
শহীদ হই, আবার জীবিত হই। আবূ হুরায়রা (রা) তিনবার এ কথা উল্লেখ করে বলতেন, আমি
সাক্ষী, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই ধরনের কথা বলেছিলেন।
(বুখারী ৭২২৭, মুসলিম ১৮৭৬)
৯৭৮
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَضْحَكُ اللهُ إِلَى رَجُلَيْنِ يَقْتُلُ
أَحَدُهُمَا الْآخَرَ كِلَاهُمَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُ هَذَا فِي سَبِيلِ
اللهِ فَيُقْتَلُ ثُمَّ يَتُوبُ اللهُ عَلَى الْقَاتِلِ فَيُقَاتِلُ
فَيُسْتَشْهَدُ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা’আলা দুই
ব্যক্তিকে দেখে হাসবেন। তাঁরা ছিলেন একজন অন্যজনের হত্যাকারী। তাঁরা দু’জনে
জান্নাতে প্রবেশ করবেন। একজন তো আল্লাহর পথে জিহাদ করতে করতে শহীদ হন। পরে তাঁর
হত্যাকারী ইসলাম গ্রহণ করে তিনিও আল্লাহর পথে জিহাদ করে শাহাদাত বরণ করেন। (বুখারী
২৮২৬, মুসলিম ১৮৯০)
৯৭৯
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يُكْلَمُ أَحَدٌ
فِي سَبِيلِ اللهِ وَاللهُ أَعْلَمُ بِمَنْ يُكْلَمُ فِي سَبِيلِهِ إِلَّا جَاءَ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَجُرْحُهُ يَثْعَبُ دَمًا اللَّوْنُ لَوْنُ دَمٍ وَالرِّيحُ
رِيحُ الْمِسْكِ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, যে
ব্যক্তি আল্লাহর রাহে আহত বা যখমী হবে, আর কে আল্লাহর রাহে আহত হয়েছে তাকে তিনিই
ভাল জানেন, সেই ব্যক্তি কিয়ামতের দিন এমনভাবে উঠবে যে, তখন তার শরীর হতে রক্ত
প্রবাহিত হতে থাকবে। এর রং রক্তের রঙের মতোই হবে, কিন্তু ইহা হতে মেশক আম্বরের মতো
সুগদ্ধ ছড়াতে থাকবে। (বুখারী ২৮০৩, মুসলিম ১৮৭৬)
৯৮০
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ
أَسْلَمَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ يَقُولُ اللهُمَّ لَا تَجْعَلْ
قَتْلِي بِيَدِ رَجُلٍ صَلَّى لَكَ سَجْدَةً وَاحِدَةً يُحَاجُّنِي بِهَا عِنْدَكَ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
যাইদ ইবনু আসলাম (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু
খাত্তাব (রা) বলতেন, হে আল্লাহ্! এমন ব্যক্তির হাতে আমাকে হত্যা করায়ো না যে
ব্যক্তি তোমাকে একটি সিজদাও করেছে। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
[১] কাফেরের হাতে যেন শাহাদত হয়। আল্লাহ্ তা’আলা উমার (রা)-এর
এই দু‘আ কবুল করেছিলেন। শেষে আবূ লুলু নামক এক অগ্নি উপাসকের হাতে তাঁর শাহাদত হয়েছিল।
৯৮১
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ
سَعِيدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنْ قُتِلْتُ فِي
سَبِيلِ اللهِ صَابِرًا مُحْتَسِبًا مُقْبِلًا غَيْرَ مُدْبِرٍ أَيُكَفِّرُ اللهُ
عَنِّي خَطَايَايَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ
فَلَمَّا أَدْبَرَ الرَّجُلُ نَادَاهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ أَوْ أَمَرَ بِهِ فَنُودِيَ لَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَيْفَ قُلْتَ فَأَعَادَ عَلَيْهِ قَوْلَهُ فَقَالَ لَهُ
النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ إِلَّا الدَّيْنَ كَذَلِكَ
قَالَ لِي جِبْرِيلُ.
আবদুল্লাহ্ ইবনু আবূ কাতাদা (র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, এক
ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে আরয করল : হে
আল্লাহর রসূল! সওয়াবের আশায় পলায়ন না করে দুশমনদের মুকাবেলায় ধৈর্যের সঙ্গে লড়তে
লড়তে আল্লাহর রাহে যদি শহীদ হতে পারি তবে আল্লাহ্ আমার গুনাহ মাফ করে দিবেন কি?
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ডেকে আনতে বললেন। সে এলে
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি আমার নিকট কি জিজ্ঞাসা
করিয়াছিলে? ঐ ব্যক্তি তার কথা পুনারায় ব্যক্ত করিলে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, ঋণ ব্যতীত অন্য ধরনের গুনাহসমূহ আল্লাহ্ তা’আলা
মাফ করে দিবেন। জিবরাঈল (আ) এসে এ কথাই আমাকে জানিয়ে গেছেন। (সহীহ, মুসলিম ১৮৮৫)
৯৮২
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي
النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِشُهَدَاءِ أُحُدٍ هَؤُلَاءِ
أَشْهَدُ عَلَيْهِمْ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ أَلَسْنَا يَا رَسُولَ
اللهِ بِإِخْوَانِهِمْ أَسْلَمْنَا كَمَا أَسْلَمُوا وَجَاهَدْنَا كَمَا جَاهَدُوا
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَلَى وَلَكِنْ لَا
أَدْرِي مَا تُحْدِثُونَ بَعْدِي فَبَكَى أَبُو بَكْرٍ ثُمَّ بَكَى ثُمَّ قَالَ
أَئِنَّا لَكَائِنُونَ بَعْدَكَ.
উমর ইবনু উবায়দুল্লাহ্ (র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উহুদের যুদ্ধে শাহাদত বরণকারীদের সম্পর্কে বলেছেন, আমি নিজে
ইহাদের সাক্ষী। আবূ বকর সিদ্দীক (রা) তখন আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি
এদের ভাই নই? আমরাও তাঁদের মতো ইসলাম গ্রহণ করেছি এবং তাঁদের মতো আল্লাহর পথে
জিহাদে রত রয়েছি। আপনি কি আমাদের পক্ষে সাক্ষী হবেন না? রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, কিন্তু জানা নেই আমার মৃত্যুর পর তোমরা কি করতে
শুরু করবে। এ কথা শুনে আবূ বকর (রা) কাঁদতে লাগলেন, তিনি বললেন, আপনার মৃত্যুর পরও
আমরা জীবিত থাকব? (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
৯৮৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
جَالِسًا وَقَبْرٌ يُحْفَرُ بِالْمَدِينَةِ فَاطَّلَعَ رَجُلٌ فِي الْقَبْرِ
فَقَالَ بِئْسَ مَضْجَعُ الْمُؤْمِنِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ بِئْسَ مَا قُلْتَ فَقَالَ الرَّجُلُ إِنِّي لَمْ أُرِدْ هَذَا يَا
رَسُولَ اللهِ إِنَّمَا أَرَدْتُ الْقَتْلَ فِي سَبِيلِ اللهِ فَقَالَ رَسُولُ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا مِثْلَ لِلْقَتْلِ فِي سَبِيلِ اللهِ
مَا عَلَى الْأَرْضِ بُقْعَةٌ هِيَ أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يَكُونَ قَبْرِي بِهَا
مِنْهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ يَعْنِي الْمَدِيْنَةَ.
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক স্থানে উপবিষ্ট ছিলেন। তখন মদীনায়
একটি কবর খোঁড়া হচ্ছিল। এক ব্যক্তি কবরটি দেখে বলল, মুসলমানদের জন্য কত খারাপ এই
জায়গা। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি গর্হিত কথা বলেছ।
ঐ ব্যক্তি বলল, আমার এই কথা বলার উদ্দেশ্য ছিল যে, আল্লাহর রাহে শহীদ হওয়া এই
মৃত্যু হতে অনেক ভাল। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহর
রাহে শহীদ হওয়ার চাইতে উত্তম অন্য কিছু নাই সত্য, কিন্তু মদীনা ব্যতীত এমন কোন
স্থান নাই, যে স্থানে আমার কবর হতে আমি ভালবাসি। এই কথা তিনি তিনবার উচ্চারণ
করলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদ
১৫
শাহাদতের বর্ণনা
৯৮৪
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ يَقُولُ اللهُمَّ
إِنِّي أَسْأَلُكَ شَهَادَةً فِي سَبِيلِكَ وَوَفَاةً بِبَلَدِ رَسُولِكَ.
যাইদ ইবনু আসলাম (র) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু
খাত্তাব (রা) বলতেন, হে আল্লাহ্! তোমার রাহে শাহাদত আর তোমার রাসূলের এই নগরে
(মদীনা শরীফে) আমার মৃত্যু তোমার কাছে আমি প্রার্থনা করি। [১] (সহীহ, বুখারী ১৮৯০,
তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত সনদের ==== তথা বিচ্ছিন্নতা রয়েছে।)
[১] আল্লাহ্ তাঁর এই দু‘আ ক্ববূল করেছিলেন। শহীদও হয়েছিলেন আর
মদীনা শরীফেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। যিলহজ্জ, ২৩ হিজরী সনে তিনি শহীদ হন।
৯৮৫
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ كَرَمُ الْمُؤْمِنِ تَقْوَاهُ
وَدِينُهُ حَسَبُهُ وَمُرُوءَتُهُ خُلُقُهُ وَالْجُرْأَةُ وَالْجُبْنُ غَرَائِزُ
يَضَعُهَا اللهُ حَيْثُ شَاءَ فَالْجَبَانُ يَفِرُّ عَنْ أَبِيهِ وَأُمِّهِ
وَالْجَرِيءُ يُقَاتِلُ عَمَّا لَا يَئُوبُ بِهِ إِلَى رَحْلِهِ وَالْقَتْلُ
حَتْفٌ مِنْ الْحُتُوفِ وَالشَّهِيدُ مَنْ احْتَسَبَ نَفْسَهُ عَلَى اللهِ.
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু
খাত্তাব (রা) বলেন, মু’মিনের সম্মান হল তার তাকওয়া ও পরহেযগারী অর্জনে, আর দ্বীন
হল তাঁর শরাফত ও ভদ্রতা। ভদ্রতা ও চক্ষুলজ্জা হল তার চরিত্র। বাহাদুরী ও ভীরুতা
উভয়ই হল জন্মগত গুণ। যেখানে ইচ্ছা করেন আল্লাহ্ এগুলোর একটি সেখানে রাখেন। ভীরু ও
কাপুরুষ ব্যক্তি মাতাপিতাকে বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে যায় আর বাহাদুর ব্যক্তি এমন
ব্যক্তির সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হয় যার সম্পর্কে সে জানে যে, এই ব্যক্তি তাকে আর বাড়ি
ফিরে যেতে দিবে না (অর্থাৎ মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সে যুদ্ধে লিপ্ত হয়)। মৃত্যুর
বিভিন্ন রূপের মধ্যে নিহত হওয়া একটি। শহীদ হল সেই ব্যক্তি, যে সন্তুষ্টচিত্তে
নিজের প্রাণ আল্লাহর রাস্তায় সপে দেয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদ
১৬
শহীদ ব্যক্তির গোসল
৯৮৬
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ غُسِّلَ وَكُفِّنَ
وَصُلِّيَ عَلَيْهِ وَكَانَ شَهِيْدًا يَرْحَمُهُ اللهُ.
আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু
খাত্তাব (রা)-কে গোসল করান হয়েছিল, কাফন পরান হয়েছিল এবং তাঁর জানাযাও পড়া হয়েছিল
অথচ আল্লাহর মেহেরবানীতে আল্লাহর পথে তিনি শাহাদত বরণ করেছিলেন (আল্লাহ্ তাঁর উপর
রহমত নাযিল করুন)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
৯৮৭
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ
عَنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُمْ كَانُوا يَقُولُونَ الشُّهَدَاءُ فِي سَبِيلِ
اللهِ لَا يُغَسَّلُونَ وَلَا يُصَلَّى عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ وَإِنَّهُمْ
يُدْفَنُونَ فِي الثِّيَابِ الَّتِي قُتِلُوا فِيْهَا ১৬৮৫-قَالَ مَالِك وَتِلْكَ السُّنَّةُ فِيمَنْ
قُتِلَ فِي الْمُعْتَرَكِ فَلَمْ يُدْرَكْ حَتَّى مَاتَ قَالَ وَأَمَّا مَنْ
حُمِلَ مِنْهُمْ فَعَاشَ مَا شَاءَ اللهُ بَعْدَ ذَلِكَ فَإِنَّهُ يُغَسَّلُ
وَيُصَلَّى عَلَيْهِ كَمَا عُمِلَ بِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ.
মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ
আহলে ইল্ম
হতে তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, তাঁরা বলতেন। আল্লাহর রাহের শহীদগণকে গোসল
করান বা তাঁদের করো জানাযা পড়া ঠিক নয়। বরং যে কাপড়ে শহীদ হয়েছেন সেই কাপড়েই
তাঁদেরকে দাফন করা উচিত।
মালিক (র) বলেন, এটা যুদ্ধের ময়দানে নিহত শহীদগণের হুকুম। আর যুদ্ধের ময়দান হতে
জীবিত আনার পর বাড়ি এসে আল্লাহর ইচ্ছায় কিছুক্ষণ বা কিছু কাল পর যাদের মৃত্যু হয়
তাঁদেরকে গোসল দেওয়া হবে এবং তাঁদের জানাযাও পড়া হবে। উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর
বেলায়ও এরূপ করা হয়েছিল।
পরিচ্ছেদ
১৭
আল্লাহর রাহে মুজাহিদের জন্য যা, তা অন্য কোন কিছুর নামে
বণ্টন করা হারাম
৯৮৮
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ يَحْمِلُ فِي الْعَامِ
الْوَاحِدِ عَلَى أَرْبَعِينَ أَلْفِ بَعِيرٍ يَحْمِلُ الرَّجُلَ إِلَى الشَّامِ
عَلَى بَعِيرٍ وَيَحْمِلُ الرَّجُلَيْنِ إِلَى الْعِرَاقِ عَلَى بَعِيرٍ فَجَاءَهُ
رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْعِرَاقِ فَقَالَ احْمِلْنِي وَسُحَيْمًا فَقَالَ لَهُ
عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ نَشَدْتُكَ اللهَ أَسُحَيْمٌ زِقٌّ قَالَ لَهُ نَعَمْ.
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
মুজাহিদগণের
আরোহণের জন্য উমার ইবনু খাত্তাব (রা) প্রতি বৎসর চল্লিশ হাজার উট প্রদান করতেন।
তিনি সিরিয়াগামী সৈন্যদলের প্রতিজনকে একটি করে এবং ইরাকগামীদের প্রতি দু’জনকে একটি
করে উট দিতেন। একদিন জনৈক ইরাকী এসে তাঁকে বলল, আমাকে এবং সুহাইমকে একটি উট দিন।
উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বললেন, তোমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলতেছি, সুহাইম বলতে কি
তুমি তোমারি পানির মশকটিকেই বুঝাচ্ছ? সে বলল, হ্যাঁ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদ
১৮
জিহাদে উৎসাহ প্রদান
৯৮৯
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
إِسْحَقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ:
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا ذَهَبَ إِلَى قُبَاءٍ
يَدْخُلُ عَلَى أُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ فَتُطْعِمُهُ وَكَانَتْ أُمُّ
حَرَامٍ تَحْتَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ فَدَخَلَ عَلَيْهَا رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فَأَطْعَمَتْهُ وَجَلَسَتْ تَفْلِي فِي
رَأْسِهِ فَنَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا ثُمَّ
اسْتَيْقَظَ وَهُوَ يَضْحَكُ قَالَتْ فَقُلْتُ مَا يُضْحِكُكَ يَا رَسُولَ اللهِ
قَالَ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَيَّ غُزَاةً فِي سَبِيلِ اللهِ
يَرْكَبُونَ ثَبَجَ هَذَا الْبَحْرِ مُلُوكًا عَلَى الْأَسِرَّةِ أَوْ مِثْلَ
الْمُلُوكِ عَلَى الْأَسِرَّةِ يَشُكُّ إِسْحَقُ قَالَتْ فَقُلْتُ لَهُ يَا
رَسُولَ اللهِ ادْعُ اللهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ فَدَعَا لَهَا ثُمَّ وَضَعَ
رَأْسَهُ فَنَامَ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ يَضْحَكُ قَالَتْ فَقُلْتُ لَهُ يَا رَسُولَ
اللهِ مَا يُضْحِكُكَ قَالَ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَيَّ غُزَاةً فِي
سَبِيلِ اللهِ مُلُوكًا عَلَى الْأَسِرَّةِ أَوْ مِثْلَ الْمُلُوكِ عَلَى
الْأَسِرَّةِ كَمَا قَالَ فِي الْأُولَى قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ ادْعُ
اللهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ فَقَالَ أَنْتِ مِنْ الْأَوَّلِينَ قَالَ
فَرَكِبَتْ الْبَحْرَ فِي زَمَانِ مُعَاوِيَةَ فَصُرِعَتْ عَنْ دَابَّتِهَا حِينَ
خَرَجَتْ مِنْ الْبَحْرِ فَهَلَكَتْ.
আনাস ইবনু মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোবায় তশরীফ নিয়ে যেতেন তখন উম্মে হারাম বিনত
মিলহান (রা)-এর বাড়িতে যেতেন। উম্মে হারাম (রা) তাঁকে সেখানে আহার করাতেন। উম্মে
হারাম (রা) ছিলেন উবাদা ইবনু সামেত (রা)-এর স্ত্রী। একদিন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বাড়িতে গেলেন। উম্মে হারাম তাঁকে আহার করিয়ে মাথার চুল
বাছতে বসে গেলেন। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়লেন, হঠাৎ
হাসতে হাসতে তিনি জাগ্রত হলেন। উম্মে হারাম (রা) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! হাসছেন
কেন? রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার উম্মতের কিছু সংখ্যক
আমাকে দেখানো হল বাদশাহগণ যেমন সিংহাসনে আসীন হন তদ্রূপ তারা জিহাদ করার জন্য
সমুদ্রের বুকে আরোহণ করতেছে। উম্মে হারাম (রা) তখন আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল!
দু‘আ করে দিন আমাকেও যেন আল্লাহ্ তা’আলা এদের মধ্যে শামিল করে নেন। রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু‘আ করলেন এবং আবার ঘুমিয়ে পড়লেন। পুনরায় তিনি
হেসে জাগ্রত হয়ে উঠলেন। উম্মে হারাম (রা) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! হাসছেন কেন?
তিনি বললেন, আমাকে দেখানো হল আমার উম্মতের কিছু সংখ্যক লোক বাদশাহদের সিংহাসনারোহী
হওয়ার মতো জিহাদের উদ্দেশ্যে সমুদ্রের বুকে বিচরণ করতেছে। উম্মে হারাম (রা) আরয
করলেন, হে আল্লাহর রসূল! দু‘আ করে দিন, আল্লাহ্ যেন আমাকে এদের অন্তুর্ভুক্ত করে
দেন। রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন; তুমি তো প্রথম দলের
অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছ। পরে এই উম্মে হারাম (রা) মু’আবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান (রা)-এর
সাথে জিহাদে সমুদ্রযাত্রায় শরীক হয়েছিলেন। ফিরবার পথে জাহাজ হতে অবতরণ করার পর
সওয়ারী হতে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। (বুখারী ২৭৮৯, ২৮০০, মুসলিম ১৯১২)
৯৯০
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي
لَأَحْبَبْتُ أَنْ لَا أَتَخَلَّفَ عَنْ سَرِيَّةٍ تَخْرُجُ فِي سَبِيلِ اللهِ
وَلَكِنِّي لَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُهُمْ عَلَيْهِ وَلَا يَجِدُونَ مَا يَتَحَمَّلُونَ
عَلَيْهِ فَيَخْرُجُونَ وَيَشُقُّ عَلَيْهِمْ أَنْ يَتَخَلَّفُوا بَعْدِي
فَوَدِدْتُ أَنِّي أُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللهِ فَأُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا
فَأُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا فَأُقْتَلُ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমার উম্মতের জন্য যদি কষ্টকর না হত তবে
আল্লাহর রাহে গমনকারী প্রত্যেকটি সৈন্যদলের সঙ্গে যেতে আমি বিরত হতাম না। আমার
নিকট এত অধিক বাহন নাই যে, প্রত্যেককেই-এক একটা দিতে পারি আর তাদের নিজেদের নিকট
এমন কোন বাহন নাই যাতে আরোহণ করে তারা জিহাদে যেতে পারে। আমি নিজে যদি চলে যাই তবে
তাদের এখানে থাকতে কষ্ট হয়। আমার তো ইচছা হয় আল্লাহর পথে লড়তে যেয়ে আমি শহীদ হই,
আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই। (বুখারী ২৯৭২, মুসলিম
১৮৭৬)
৯৯১
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يَأْتِينِي بِخَبَرِ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ
الْأَنْصَارِيِّ فَقَالَ رَجُلٌ أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ فَذَهَبَ الرَّجُلُ
يَطُوفُ بَيْنَ الْقَتْلَى فَقَالَ لَهُ سَعْدُ بْنُ الرَّبِيعِ مَا شَأْنُكَ
فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ بَعَثَنِي إِلَيْكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ لِآتِيَهُ بِخَبَرِكَ قَالَ فَاذْهَبْ إِلَيْهِ فَاقْرَأْهُ مِنِّي
السَّلَامَ وَأَخْبِرْهُ أَنِّي قَدْ طُعِنْتُ اثْنَتَيْ عَشْرَةَ طَعْنَةً
وَأَنِّي قَدْ أُنْفِذَتْ مَقَاتِلِي وَأَخْبِرْ قَوْمَكَ أَنَّهُ لَا عُذْرَ
لَهُمْ عِنْدَ اللهِ إِنْ قُتِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَوَاحِدٌ مِنْهُمْ حَيٌّ.
ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উহুদ যুদ্ধের দিন
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সা’দ ইবনু রবী ‘আনসারী (রা)-এর
খবর আমাকে কে এনে দিতে পারবে? এক ব্যক্তি উঠে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি পারব।
এই ব্যক্তি সা’দকে পড়ে থাকা লাশগুলোর মধ্যে খুঁজতে লাগলেন। এবং সেই স্থানে গিয়ে
তাঁকে আহত হয়ে পড়ে থাকতে দেখতে পেলেন। সা’দ বললেন : কি ব্যাপার? লোকটি বললেন,
রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তালাশ করে আপনার খবর নিয়ে যেতে আমাকে
পাঠিয়েছেন। সা’দ বললেন, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে আমার সালাম
দিবে। আমার এই শরীরে বারটি আঘাত লেগেছে। প্রত্যেকটি আঘাতই মরাত্মক। তোমার
সম্প্রদায়কে বলবে, তোমাদের একজন জীবিত থাকতেও যদি আল্লাহ্ না করুন রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শহীদ হয়ে যান, তবে আল্লাহর দরবারে তোমাদের কোন
ওযর ও জবাবদিহি কবূল হবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
৯৯২
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَغَّبَ فِي
الْجِهَادِ وَذَكَرَ الْجَنَّةَ وَرَجُلٌ مِنْ الْأَنْصَارِ يَأْكُلُ تَمَرَاتٍ
فِي يَدِهِ فَقَالَ إِنِّي لَحَرِيصٌ عَلَى الدُّنْيَا إِنْ جَلَسْتُ حَتَّى
أَفْرُغَ مِنْهُنَّ فَرَمَى مَا فِي يَدِهِ فَحَمَلَ بِسَيْفِهِ فَقَاتَلَ حَتَّى
قُتِلَ.
ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাহাবীদেরকে জিহাদের উৎসাহ দিতে যেয়ে জান্নাতের
অবস্থা বর্ণনা করেন। এমন সময় জনৈক আনসারী সাহাবী [১] যিনি কয়েকটি খেজুর হাতে নিয়ে
তখন খাচ্ছিলেন, তিনি বলে উঠলেন : এই খেজুরগুলো খেয়েছি শেষ করা পর্যন্ত যদি আমি
অপেক্ষা করি তবে সত্যি আমি দুনিয়া লোভী বলে প্রমাণিত হব। শেষ পর্যন্ত বাকি
খেজুরগুলো দূরে ছুঁড়ে ফেললেন এবং তালোয়ার হাতে নিয়ে লড়াইয়ের ভিড়ে ঢুকে পড়লেন এবং
লড়াই করতে করতে শহীদ হয়ে গেলেন। (ইমাম বুখারী জাবের (রা) মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা
করেন ৪০৪৬, মুসলিম ১৮৯৯, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
[১] উক্ত সাহাবীর নাম ছিল উমাইদ (রা)।
৯৯৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ أَنَّهُ قَالَ الْغَزْوُ غَزْوَانِ فَغَزْوٌ
تُنْفَقُ فِيهِ الْكَرِيمَةُ وَيُيَاسَرُ فِيهِ الشَّرِيكُ وَيُطَاعُ فِيهِ ذُو
الْأَمْرِ وَيُجْتَنَبُ فِيهِ الْفَسَادُ فَذَلِكَ الْغَزْوُ خَيْرٌ كُلُّهُ
وَغَزْوٌ لَا تُنْفَقُ فِيهِ الْكَرِيمَةُ وَلَا يُيَاسَرُ فِيْهِ الشَّرِيْكُ
وَلَا يُطَاعُ فِيْهِ ذُو الْأَمْرِ وَلَا يُجْتَنَبُ فِيْهِ الْفَسَادُ فَذَلِكَ
الْغَزْوُ لَا يَرْجِعُ صَاحِبُهُ كَفَافًا.
মুআয ইবনু জাবাল (রা) থেকে বর্ণিতঃ
জিহাদ দুই
প্রকার। এক হল যাতে একজন সর্বোত্তম সম্পদ ব্যয় করে। সাথীদের সাথে প্রেম-প্রীতির
বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকে। সেনাধ্যক্ষের নির্দেশ পালন করে এবং বিশৃংখলা সৃষ্টি হতে সে
বেঁচে থাকে। এই ধরনের জিহাদ সম্পূর্ণভাবে সওয়াবের। আরেক ধরনের জিহাদ হল যাতে একজন
উত্তম সম্পদ ব্যয় করে না, সঙ্গীদের সাথে প্রীতির সম্পর্ক রাখে না, সেনাধ্যক্ষের
নির্দেশের অবাধ্যতা করে এবং বিশৃংখলা সৃষ্টি করা হতে বিরত থাকে না। এই ধরনের
জিহাদে সওয়াব লাভ হওয়া তো দূরের কথা, গুনাহ না নিয়ে ফিরে আসতে পারাটাই অনেক
মুশকিল। (হাসান মারফু, আবূ দাঊদ ২৫১৫, নাসাঈ ৩১৮৮, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন
[সহীহ আল-জামে ৪১৭৪])
পরিচ্ছেদ
১৯
ঘোড়া, ঘোড়দৌড় এবং জিহাদে ব্যয় করার ফযীলত
৯৯৪
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قَالَ الْخَيْلُ فِي نَوَاصِيهَا الْخَيْرُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ঘোড়ার কপালে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত বরকত
এবং মঙ্গল লিখে দেওয়া হয়েছে। (বুখারী ২৮৪৯, মুসলিম ১৮৭১)
৯৯৫
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ سَابَقَ بَيْنَ الْخَيْلِ الَّتِي قَدْ أُضْمِرَتْ مِنْ الْحَفْيَاءِ
وَكَانَ أَمَدُهَا ثَنِيَّةَ الْوَدَاعِ وَسَابَقَ بَيْنَ الْخَيْلِ الَّتِي لَمْ
تُضَمَّرْ مِنْ الثَّنِيَّةِ إِلَى مَسْجِدِ بَنِي زُرَيْقٍ وَأَنَّ عَبْدَ اللهِ
بْنَ عُمَرَ كَانَ مِمَّنْ سَابَقَ بِهَا.
আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় ‘ইযমার’ [১] কৃত ঘোড়ার জন্য
‘হাফইয়া’ হতে সানিয়া তুলবিদা পর্যন্ত (পাঁচ মাইল) সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। আর
সাধারণ ঘোড়ার জন্য সানিয়াতুল বিদা হতে মসজিদে বনী যুরাইক পর্যন্ত (এক মাইল) সীমা
নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় শরীক
ছিলেন। (বুখারী ৪২১, মুসলিম ১৮৭০)
[১] বিশেষ এক প্রক্রিয়ায় ঘোড়াকে ছিমছাম ও দ্রুতগামী করাকে আরবীতে
‘ইযমার’ বলা হয়।
৯৯৬
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُولُ لَيْسَ بِرِهَانِ
الْخَيْلِ بَأْسٌ إِذَا دَخَلَ فِيهَا مُحَلِّلٌ فَإِنْ سَبَقَ أَخَذَ السَّبَقَ
وَإِنْ سُبِقَ لَمْ يَكُنْ عَلَيْهِ شَيْءٌ.
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
ঘোড়দৌড়ে কোন
কিছুর শর্ত করায় দোষ নেই তবে শর্ত হল, এদের মধ্যে তৃতীয় এক ব্যক্তি হতে হবে। সে
যদি সকলের আগে যেতে পারে শর্তকৃত বস্তু সেই নিয়ে যাবে। আর পেছনে পড়ে গেলে সে কিছুই
পাবে না। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] একজনের তরফ হতে বাজি ধরা বা বাজি ছাড়া ঘোড়দৌড় জায়েয। উভয়
তরফ হতে বাজি ধরা যেমন দুই জনের যে ব্যক্তি হেরে যাবে তাকে বাজির টাকা আদায় করতে হবে
আর যে প্রথম হবে সে ঐ টাকা পাবে- এই ধরনের শর্তযুক্ত বাজি জায়েয নয়।
৯৯৭
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى
بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رُئِيَ وَهُوَ
يَمْسَحُ وَجْهَ فَرَسِهِ بِرِدَائِهِ فَسُئِلَ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ إِنِّي
عُوتِبْتُ اللَّيْلَةَ فِي الْخَيْلِ.
ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে স্বীয় চাদর দ্বারা ঘোড়ার মুখ মুছতে দেখে এর
কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছিলেন : ঘোড়ার দেখাশুনা না করায় কাল রাতে আমাকে
আল্লাহর তরফ হতে সতর্ক করা হয়েছিল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
৯৯৮
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدٍ
الطَّوِيلِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ حِينَ خَرَجَ إِلَى خَيْبَرَ أَتَاهَا لَيْلًا وَكَانَ إِذَا أَتَى
قَوْمًا بِلَيْلٍ لَمْ يُغِرْ حَتَّى يُصْبِحَ فَلَمَّا أَصْبَحَ خَرَجَتْ يَهُودُ
بِمَسَاحِيهِمْ وَمَكَاتِلِهِمْ فَلَمَّا رَأَوْهُ قَالُوا مُحَمَّدٌ وَاللهِ
مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيسُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
اللهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ {
فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ }.
আনাস ইবনু মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ
জিহাদের উদ্দেশ্যে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) যখন খায়বার পৌঁছান তখন রাত হয়ে গিয়েছিল। তাঁর রীতি ছিল, জিহাদের
উদ্দেশ্যে কোথাও রাত্রে গিয়ে পৌঁছালে সকাল পর্যন্ত যুদ্ধের জন্য অপেক্ষা করতেন
(কোন আক্রমণ করতেন না)। ভোরে খায়বরবাসিগণ কোদাল, ঝুঁড়ি ইত্যাদি নিয়ে (কাজের
উদ্দেশ্যে) স্বাভাবিকভাবেই বের হল। তখন হঠাৎ রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)কে স্বসৈন্যে দেখতে পেয়ে চিৎকার করে বলতে লাগল : আরে, আল্লাহর কসম,
মুহাম্মদ এবং তাঁর সহিত পূর্ণ এক বহিনী! রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহু আকবার, খায়বার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এবং তিনি তখন এই আয়াত
পাঠ করলেন إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ
অর্থাৎ যখন আমি কোন জাতির মুকাবিলায় অবতরণ করি তখন ভয় প্রদর্শিত জাতির ভোর বড়
দুঃখজনক হয়। (বুখারী ২৯৪৫, মুসলিম ১৩৬৫)
৯৯৯
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ أَنْفَقَ
زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللهِ نُودِيَ فِي الْجَنَّةِ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا
خَيْرٌ فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلَاةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلَاةِ وَمَنْ
كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الْجِهَادِ وَمَنْ كَانَ مِنْ
أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ
الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ يَا
رَسُولَ اللهِ مَا عَلَى مَنْ يُدْعَى مِنْ هَذِهِ الْأَبْوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ
فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأَبْوَابِ كُلِّهَا قَالَ نَعَمْ وَأَرْجُو
أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ.
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি এক
জোড়া বস্তু আল্লাহর পথে ব্যয় করবে, তবে কিয়ামতের দিন বেহেশতের দরজায় তাকে ডেকে বলা
হবে। হে আল্লাহর বান্দা! তোমার জন্য রয়েছে উত্তম প্রতিদান। অতঃপর নামাযীকে নামাযের
দরজা দিয়ে এবং মুজাহিদকে জিহাদের দরজা দিয়ে, সদকাদাতাকে সদকার দরজা দিয়ে এবং
রোযাদারকে রাইয়্যান নামক দরজা দিয়ে ডাকা হবে। আবূ বক্র সিদ্দীক (রা) তখন বললেন,
যে কোন এক দরজা দিয়ে ডাকলেই আর অন্য দরজা দিয়ে প্রবেশের প্রয়োজন পড়বে না। তবে
এমনকি কেউ হবে যাকে সকল দরজা দিয়েই যাকে ডাকা হবে? রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, আমার আশা আপনি তাঁদের মধ্যে হবেন। (বুখারী ১৮৯৭, মুসলিম
১০২৭)
পরিচ্ছেদ
২০
যিম্মীদের মধ্যে কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে তার ভূসম্পত্তি কি
করা হবে
سُئِلَ مَالِك عَنْ إِمَامٍ قَبِلَ الْجِزْيَةَ مِنْ قَوْمٍ فَكَانُوا يُعْطُونَهَا أَرَأَيْتَ مَنْ أَسْلَمَ مِنْهُمْ أَتَكُونُ لَهُ أَرْضُهُ أَوْ تَكُونُ لِلْمُسْلِمِينَ وَيَكُونُ لَهُمْ مَالُهُ فَقَالَ مَالِك ذَلِكَ يَخْتَلِفُ أَمَّا أَهْلُ الصُّلْحِ فَإِنَّ مَنْ أَسْلَمَ مِنْهُمْ فَهُوَ أَحَقُّ بِأَرْضِهِ وَمَالِهِ وَأَمَّا أَهْلُ الْعَنْوَةِ الَّذِينَ أُخِذُوا عَنْوَةً فَمَنْ أَسْلَمَ مِنْهُمْ فَإِنَّ أَرْضَهُ وَمَالَهُ لِلْمُسْلِمِينَ لِأَنَّ أَهْلَ الْعَنْوَةِ قَدْ غُلِبُوا عَلَى بِلَادِهِمْ وَصَارَتْ فَيْئًا لِلْمُسْلِمِينَ وَأَمَّا أَهْلُ الصُّلْحِ فَإِنَّهُمْ قَدْ مَنَعُوا أَمْوَالَهُمْ وَأَنْفُسَهُمْ حَتَّى صَالَحُوا عَلَيْهَا فَلَيْسَ عَلَيْهِمْ إِلَّا مَا صَالَحُوا عَلَيْهِ.
মালিক (রা)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : মুসলিম প্রশাসক কর্তৃক যদি কোন এলাকার
কাফেরদের উপর জিযিয়া আরোপ করা হয়, আর তখন তাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি ইসলাম গ্রহণ
করে নেয় তখন তার ভূসম্পত্তি তারই থাকবে, না মুসলমানদের মালিকানাভুক্ত হয়ে যাবে?
মালিক (রা) বললেন, এটা দুই ধরনের হতে পারে, প্রথমত কুফরী অবস্থায় কোনরূপ
যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত না হয়ে স্বেচ্ছায় সন্ধিশর্তে আবদ্ধ হয়ে জিযিয়া দিতে রাজী হয়ে
থাকে, তবে ইসলাম গ্রহণের পর তার ভূমি ও সম্পদ তার মালিকানায় রয়ে যাবে। আর
যুদ্ধ-বিগ্রহের পর পরাজিত হয়ে জিযিয়া কবূল করলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবার পরও ঐ
সম্পত্তি মুসলমানদের মালিকানাভুক্ত থাকবে। কারণ তাদের সম্পদ মুসলমানগণ
‘ফাই’-স্বরূপ প্রাপ্ত হয়েছে। আর যাদের সাথে সন্ধি স্থাপিত হয়েছে, সন্ধির
শর্তানুযায়ী তাদের সম্পদ মুসলমানগণ পাবে।
পরিচ্ছেদ
২১
প্রয়োজনে এক করবে একাধিক লাশ দাফন করা এবং আবূ বক্র (রা)
কর্তৃক রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ওয়াদাসমূহ পূরণ করা
১০০০
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَمْرَو بْنَ
الْجَمُوحِ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرٍو الْأَنْصَارِيَّيْنِ ثُمَّ
السَّلَمِيَّيْنِ كَانَا قَدْ حَفَرَ السَّيْلُ قَبْرَهُمَا وَكَانَ قَبْرُهُمَا
مِمَّا يَلِي السَّيْلَ وَكَانَا فِي قَبْرٍ وَاحِدٍ وَهُمَا مِمَّنْ اسْتُشْهِدَ
يَوْمَ أُحُدٍ فَحُفِرَ عَنْهُمَا لِيُغَيَّرَا مِنْ مَكَانِهِمَا فَوُجِدَا لَمْ
يَتَغَيَّرَا كَأَنَّهُمَا مَاتَا بِالْأَمْسِ وَكَانَ أَحَدُهُمَا قَدْ جُرِحَ
فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَى جُرْحِهِ فَدُفِنَ وَهُوَ كَذَلِكَ فَأُمِيطَتْ يَدُهُ عَنْ
جُرْحِهِ ثُمَّ أُرْسِلَتْ فَرَجَعَتْ كَمَا كَانَتْ وَكَانَ بَيْنَ أُحُدٍ
وَبَيْنَ يَوْمَ حُفِرَ عَنْهُمَا سِتٌّ وَأَرْبَعُونَ سَنَةً ১৭قَالَ مَالِك لَا بَأْسَ أَنْ يُدْفَنَ
الرَّجُلَانِ وَالثَّلَاثَةُ فِي قَبْرٍ وَاحِدٍ مِنْ ضَرُورَةٍ وَيُجْعَلَ
الْأَكْبَرُ مِمَّا يَلِي الْقِبْلَةَ.
আবদুর রহমান ইবনু আবূ সা’সা’আ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আমর ইবনু
জামুহ (রা) এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রা) দু’জনেই ছিলেন আনসার ও বনী সালমা
গোত্রের। তাঁরা উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। তাঁদের দুজনকে একটি কবরে সমাধিস্থ
করা হয়েছিল। পানি নামার ঢালের মুখে তাঁদের কবর পড়ে গিয়েছিল। তাই পানির স্রোত ক্রমে
তাঁদের কবর বিনষ্ট করে ফেলেছিল। তাঁদের লাশ স্থানান্তরিত করার উদ্দেশ্যে পরে
তাঁদের কবর খোঁড়ান হলে দেখা গেল তাঁদের লাশ সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। মনে
হচ্ছিল কালকেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের একজন আহত হওয়ার সময় ক্ষত স্থানে হাত
চেপে ধরেছিলেন। দাফন করার সময় তাঁর হাতটা সরিয়ে দিলে হাতটি আবার সেই স্থানেই এসে
লেগে যায়। উহুদ যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার ছিচল্লিশ বৎসর পর তাঁদের লাশ স্থানান্তরিত করার
সময় এই ঘটনা ঘটেছিল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, প্রয়োজনবশত এক কবরে একাধিক লাশ দাফন করলে কোন দোষ নেই। তবে এদের
মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে কিবলার দিকে শোয়াবে।
১০০১
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ رَبِيعَةَ
بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ قَالَ قَدِمَ عَلَى أَبِي بَكْرٍ
الصِّدِّيقِ مَالٌ مِنْ الْبَحْرَيْنِ فَقَالَ: مَنْ كَانَ لَهُ عِنْدَ رَسُولِ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأْيٌ أَوْ عِدَةٌ فَلْيَأْتِنِي
فَجَاءَهُ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ فَحَفَنَ لَهُ ثَلَاثَ حَفَنَاتٍ.
রবী’আ ইবনু ‘আবদুর রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বক্র সিদ্দীক (রা)-এর নিকট বাহরাইন হতে প্রচুর ধন-সম্পদ এসে পৌঁছালে তিনি ঘোষণা করিয়ে দিয়েছিলেন, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবিতকালে কাউকেও কিছু দেওয়ার ওয়াদা করে থাকলে অথবা কেউ তাঁর নিকট কিছু পাওনা থাকলে সে আমার নিকট হতে যেন তা নিয়ে যায়। এই সময় জাবির ইবনু আবদুল্লাহ্ (রা) এগিয়ে এলেন। আবূ বক্র (রা) তাঁকে তখন তিন অঞ্জলি (দিরহাম) দিলেন। (বুখারী ২২৯৬, ইমাম বুখারী হাদীসটি সাহাবী জাবের (রা) বরাত দিয়ে বর্ণনা করেছেন মুসলিম ২৩১৪, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত সনদটিতে ==== তথা বিচ্ছিন্নতা রয়েছে।)
No comments