মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় "পোশাক-পরিচ্ছদ"
পরিচ্ছেদঃ
১
সৌন্দর্যের জন্য কাপড়
পরিধান করা
১৬৩০
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّهُ قَالَ
خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ بَنِي
أَنْمَارٍ قَالَ جَابِرٌ فَبَيْنَا أَنَا نَازِلٌ تَحْتَ شَجَرَةٍ إِذَا رَسُولُ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْبَلَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ
هَلُمَّ إِلَى الظِّلِّ قَالَ فَنَزَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَقُمْتُ إِلَى غِرَارَةٍ لَنَا فَالْتَمَسْتُ فِيهَا شَيْئًا
فَوَجَدْتُ فِيهَا جِرْوَ قِثَّاءٍ فَكَسَرْتُهُ ثُمَّ قَرَّبْتُهُ إِلَى رَسُولِ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ مِنْ أَيْنَ لَكُمْ هَذَا قَالَ
فَقُلْتُ خَرَجْنَا بِهِ يَا رَسُولَ اللهِ مِنْ الْمَدِينَةِ قَالَ جَابِرٌ
وَعِنْدَنَا صَاحِبٌ لَنَا نُجَهِّزُهُ يَذْهَبُ يَرْعَى ظَهْرَنَا قَالَ
فَجَهَّزْتُهُ ثُمَّ أَدْبَرَ يَذْهَبُ فِي الظَّهْرِ وَعَلَيْهِ بُرْدَانِ لَهُ
قَدْ خَلَقَا قَالَ فَنَظَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
إِلَيْهِ فَقَالَ أَمَا لَهُ ثَوْبَانِ غَيْرُ هَذَيْنِ فَقُلْتُ بَلَى يَا
رَسُولَ اللهِ لَهُ ثَوْبَانِ فِي الْعَيْبَةِ كَسَوْتُهُ إِيَّاهُمَا قَالَ
فَادْعُهُ فَمُرْهُ فَلْيَلْبَسْهُمَا قَالَ فَدَعَوْتُهُ فَلَبِسَهُمَا ثُمَّ
وَلَّى يَذْهَبُ قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا
لَهُ ضَرَبَ اللهُ عُنُقَهُ أَلَيْسَ هَذَا خَيْرًا لَهُ قَالَ فَسَمِعَهُ
الرَّجُلُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ فِي سَبِيلِ اللهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَبِيلِ اللهِ قَالَ فَقُتِلَ الرَّجُلُ فِي
سَبِيلِ اللهِ
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ্ আনসারী (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা বনী আনমার যুদ্ধের [১] জন্য রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সাথে রওয়ানা হলাম। জাবির (রা) বলেন, আমরা একটি বৃক্ষের নিচে অবস্থান
করিতেছিলাম। হঠাৎ রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখা গেল। আমি
বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্! ছায়ায় আসুন। তিনি এসে ছায়ায় দাঁড়ালেন। আমি আমার টুকরির
কাছে যেয়ে উহাতে (কিছু খাদ্য) অনুসন্ধান করতে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত উহাতে একটি
কাকড়ি পাওয়া গেল। আমি উহাকে কেটে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
সম্মুখে উপস্থিত করলাম। তিনি বললেন, ইহা কোথা হতে এল ? জাবির বললেন, ইয়া
রসূলাল্লাহ্! আমরা একে মদীনা হতে নিয়ে যাত্রা করেছিলাম। জাবির বলেন, আমাদের সাথে
এক ব্যক্তি ছিল, যার কাছে আমরা সফরের মালপত্র দিয়েছিলাম। সে ব্যক্তি আমাদের
জন্তুগুলো চরাত। যখন সে আমাদের জন্তুগুলো চরাতে যেতে লাগল, তখন তার গায়ের দুটি
পুরান ছেঁড়া চাদর ছিল। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহা দেখে বললেন,
এই ব্যক্তির নিকট কি অন্য কোন কাপড় নেই? জাবির বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তার কাছে এটা ব্যতীত আরও কাপড় রয়েছে, যা সে পুটলি বেঁধে
রেখেছে! উহা আমি তাকে পরতে দিয়েছিলাম। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, তাকে ঐ কাপড় পরিধান করতে বল। আমি তাকে ডেকে উহা পরিধান করতে বললে সে তা বের
করে পরিধান করল। যখন সে আবার যাচ্ছিল তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তার কি হয়েছিল যে, কাপড় থাকতে সে তা পরিধান করল না ? আল্লাহ্
তার গর্দান মারুক! এখন কি তাকে আগের চাইতে ভাল দেখায় না ? সে ব্যক্তি এটা শুনতে
পেয়ে বলল, ইয়া রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ্র রাস্তায় কি
আমার গর্দান মারা যাবে? রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ,
আল্লাহ্র রাস্তায়। পরে ঐ ব্যক্তি আল্লাহ্র রাস্তায় শহীদ হয়ে গেল। (হাদীসটি ইমাম
মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] বনী আনমারের যুদ্ধ হিজরী তৃতীয় সনে সংঘটিত হয়েছিল।
১৬৩১
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ
إِنِّي لَأُحِبُّ أَنْ أَنْظُرَ إِلَى الْقَارِئِ أَبْيَضَ الثِّيَابِ
উমার (রা) থেকে
বর্ণিতঃ
আমি
ক্কারীগণকে (কুরআনের আলিমগণ) শুভ্র পোশাকে দেখতে পছন্দ করি। (হাদীসটি ইমাম মালিক
এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৬৩২
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَيُّوبَ بْنِ أَبِي تَمِيمَةَ عَنْ ابْنِ سِيرِينَ
قَالَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ إِذَا أَوْسَعَ اللهُ عَلَيْكُمْ
فَأَوْسِعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ جَمَعَ رَجُلٌ عَلَيْهِ ثِيَابَهُ
উমার (রা) থেকে
বর্ণিতঃ
যখন
তোমাদেরকে আল্লাহ্ সচ্ছলতা দান করবেন, তখন তোমরাও নিজের উপর সচ্ছলতার নিদর্শন
দেখাও। নিজেদের পোশাক তৈরি করে নাও। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
২
রঙিন কাপড় ও স্বর্ণ
ব্যবহার প্রসঙ্গ
১৬৩৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ
اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَلْبَسُ الثَّوْبَ الْمَصْبُوغَ بِالْمِشْقِ
وَالْمَصْبُوغَ بِالزَّعْفَرَانِ
قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ وَأَنَا أَكْرَهُ أَنْ يَلْبَسَ
الْغِلْمَانُ شَيْئًا مِنْ الذَّهَبِ لِأَنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ رَسُولَ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ تَخَتُّمِ الذَّهَبِ فَأَنَا
أَكْرَهُهُ لِلرِّجَالِ الْكَبِيرِ مِنْهُمْ وَالصَّغِيرِ
قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الْمَلَاحِفِ الْمُعَصْفَرَةِ فِي
الْبُيُوتِ لِلرِّجَالِ وَفِي الْأَفْنِيَةِ قَالَ لَا أَعْلَمُ مِنْ ذَلِكَ
شَيْئًا حَرَامًا وَغَيْرُ ذَلِكَ مِنْ اللِّبَاسِ أَحَبُّ إِلَيَّ
নাফি’ (রা) থেকে
বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রা)
গেরুয়া ও যাফরানী রঙে রঞ্জিত কাপড় পরিধান করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমার মতে শিশুদেরকে স্বর্ণ পরানো মাকরূহ্। কেননা রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমার কাছে এই খবর পৌঁছেছে যে, তিনি সোনার আংটি
পরতে নিষেধ করেছেন। পুরুষ ও ছেলের জন্য সোনা ব্যবহার করা মাকরূহ্ মনে করি। যুরকানী
বলেন, বড়দের জন্য সোনা ব্যবহার করা মাকরূহ্ তাহরীমী এবং ছোটদের জন্য মাকরূহ্
তানযীহী। বাচ্চাদেরকে রৌপ্যের অলঙ্কার পরানোও অনেকের মতে মাকরূহ্, আবার কারো মতে
বৈধ।
মালিক (র) বলেন, আমি পুরুষদের জন্য ঘরে ও ঘরের আশেপাশে কুসুম রঙের রঞ্জিত চাদর
গায়ে দেয়া হারাম মনে করি না। কিন্তু আমার মতে না পরাই ভাল, ইহা ব্যতীত অন্য পোশাক
পরিধান করাই পছন্দনীয়।
পরিচ্ছেদঃ
৩
পশমী ও রেশমী কাপড়
প্রসঙ্গ
১৬৩৪
و
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ
النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا كَسَتْ عَبْدَ اللهِ بْنَ
الزُّبَيْرِ مِطْرَفَ خَزٍّ كَانَتْ عَائِشَةُ تَلْبَسُهُ
উম্মুল মু‘মিনীন
আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ্
ইব্নু যুবাইর (রা)-কে একটি কাপড় পরিয়েছেন, যা নিজেও পরিধান করতেন, তার কিনারাতে
রেশম ছিল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
৪
মহিলাদের জন্য কোন্
কোন্ কাপড় নিষেধ
১৬৩৫
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ أَبِي عَلْقَمَةَ عَنْ أُمِّهِ
أَنَّهَا قَالَتْ دَخَلَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَلَى عَائِشَةَ
زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَى حَفْصَةَ خِمَارٌ
رَقِيقٌ فَشَقَّتْهُ عَائِشَةُ وَكَسَتْهَا خِمَارًا كَثِيفًا
আলকামা ইব্নু আবি
আলকামা (র)-এর জননী (মারজানা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, হাফসা বিন্তে আবদুর রহমান (রা) একটি মিহিন ওড়না পরে উম্মুল মু‘মিনীন আয়িশা
(রা)-এর কাছে গেলে আয়িশা (রা) তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং মোটা কাপড়ের একটি ওড়না তাঁকে
পরিয়ে দিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৬৩৬
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ عَنْ أَبِي صَالِحٍ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُ قَالَ نِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مَائِلَاتٌ
مُمِيلَاتٌ لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا وَرِيحُهَا يُوجَدُ
مِنْ مَسِيرَةِ خَمْسِ مِائَةِ عَامٍ
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, কাপড় পরিহিতা উলঙ্গিনী [১] এবং পুরুষদেরকে নিজের প্রতি আকৃষ্টকারিনী
স্ত্রীলোকগণ বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না, বরং তারা বেহেশতের সুগন্ধও পাবে না।
অথচ ঐ সুগন্ধ পাঁচশত বৎসরের দূরত্ব হতে অনুভূত হয়। (সহীহ মারফু, মুসলিম ২১২৮)
১৬৩৭
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ
ابْنِ شِهَابٍ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ مِنْ اللَّيْلِ
فَنَظَرَ فِي أُفُقِ السَّمَاءِ فَقَالَ مَاذَا فُتِحَ اللَّيْلَةَ مِنْ
الْخَزَائِنِ وَمَاذَا وَقَعَ مِنْ الْفِتَنِ كَمْ مِنْ كَاسِيَةٍ فِي الدُّنْيَا
عَارِيَةٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْقِظُوا صَوَاحِبَ الْحُجَرِ
ইবনু শিহাব (র)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাত্রে জাগরিত হলেন এবং আকাশের প্রতি দৃষ্টি
নিক্ষেপ করে বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা এই রাত্রে কত ধনাগার খুলে দিয়েছেন এবং কত ফিতনা
অবতীর্ণ করেছেন। পৃথিবীতে অনেক কাপড় পরিধানকারিণী স্ত্রীলোক পরকালে উলঙ্গ অবস্থায়
উঠবে। [১] যারা কক্ষে রয়েছে তাদেরকে জাগিয়ে দাও (অর্থাৎ ইবাদতের জন্য)। (সহীহ,
ইমাম বুখারী উম্মে সালামাহ হতে বর্ণনা করেন ১১৫, তবে ইমাম মালিক একক ভাবে বর্ণনা
করেছেন)
[১] অর্থাৎ আমার উম্মতদের জন্য ধনাগাব খুলে দেয়া হয়েছে, সাথে
সাথে ফিতনা-ফাসাদও অবতীর্ণ হয়েছে। যে সকল নারী অতি পাতলা কাপড় পরে সৌন্দর্য প্রদর্শন
করে তারা আখেতে উলঙ্গ থাকবে।
পরিচ্ছেদঃ
৫
পুরুষদের পরিধেয় কাপড়
পায়ের টাকনুর নিচে ঝোলানো প্রসঙ্গে
১৬৩৮
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الَّذِي
يَجُرُّ ثَوْبَهُ خُيَلَاءَ لَا يَنْظُرُ اللهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু
উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি গর্বভরে স্বীয় কাপড় টাখনুর নিচে
লটকায়, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে রহমতের দৃষ্টিতে দেখবেন না। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৬৩৯
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا
يَنْظُرُ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى مَنْ يَجُرُّ
إِزَارَهُ بَطَرًا
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির
প্রতি রহমতের দৃষ্টি করবেন না, যে ব্যক্তি অহঙ্কার করে নিজের কাপড় লটকায়। (সহীহ,
মুসলিম ৫৭৮৮)
১৬৪০
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ وَعَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ وَزَيْدِ بْنِ
أَسْلَمَ كُلُّهُمْ يُخْبِرُهُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَنْظُرُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
إِلَى مَنْ يَجُرُّ ثَوْبَهُ خُيَلَاءَ
ইবনু উমার (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির
প্রতি রহমতের দৃষ্টি করবেন না, যে অহঙ্কার করে নিজের কাপড় নিচের দিকে লটকে দেয়।
(বুখারী ৫৭৮৩, মুসলিম ২০৮৫)
১৬৪১
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيهِ
أَنَّهُ قَالَ سَأَلْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ عَنْ الْإِزَارِ فَقَالَ أَنَا
أُخْبِرُكَ بِعِلْمٍ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
يَقُولُ إِزْرَةُ الْمُؤْمِنِ إِلَى أَنْصَافِ سَاقَيْهِ لَا جُنَاحَ عَلَيْهِ
فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْكَعْبَيْنِ مَا أَسْفَلَ مِنْ ذَلِكَ فَفِي النَّارِ
مَا أَسْفَلَ مِنْ ذَلِكَ فَفِي النَّارِ لَا يَنْظُرُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
إِلَى مَنْ جَرَّ إِزَارَهُ بَطَرًا
আবদুর রহমান ইব্নু
ইয়াকুব (র) থেকে বর্ণিতঃ
আমি
আবূ সাঈদ খুদরী (রা)-কে লুঙ্গির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেন, আমার
জানা আছে, আমি বলিতেছি। আমি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে
শুনেছি, মু‘মিনের লুঙ্গি তার পায়ের নলার মাঝ বরাবর থাকবে, তবে তা টাখনু এবং পায়ের
নলার মাঝামাঝির মধ্যে থাকলে কোন ক্ষতি নেই টাখনু ঢেকে পরলে ঐ ব্যক্তির প্রতি
কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা রহমতের দৃষ্টি করবেন না। (সহীহ, আবূ দাঊদ ৪০৯৩, ইবনু
মাজাহ ৩৫৭৩, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, মিশকাত ৪৩৩১)
পরিচ্ছেদঃ
৬
স্ত্রীলোকের কাপড়
লটকান প্রসঙ্গ
১৬৪২
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ نَافِعٍ عَنْ أَبِيهِ نَافِعٍ
مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا
قَالَتْ حِينَ ذُكِرَ الْإِزَارُ فَالْمَرْأَةُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ تُرْخِيهِ
شِبْرًا قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ إِذًا يَنْكَشِفُ عَنْهَا قَالَ فَذِرَاعًا لَا
تَزِيدُ عَلَيْهِ
বর্ণণাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
উম্মুল
মু‘মিনীন উম্মু সালমা (রা) যখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে
লুঙ্গি লটকানোর কথা জিজ্ঞেস করতে যেয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! নারীগণ কিরূপে কাপড়
পরিধান করবে ? রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা টাখনু হতে এক
বিঘত নিচু রেখে পারবে। উম্মু সালমা বললেন, এতে তো খুলে যাবে। তখন রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে এক হাত নিচু রাখবে, এর অতিরিক্ত নয়।
(সহীহ, আবূ দাঊদ ৪১১৭, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে আবূ দাঊদ])
পরিচ্ছেদঃ
৭
জুতা পরিধান করা
প্রসঙ্গ
১৬৪৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ
الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَمْشِيَنَّ
أَحَدُكُمْ فِي نَعْلٍ وَاحِدَةٍ لِيُنْعِلْهُمَا جَمِيعًا أَوْ لِيُحْفِهِمَا
جَمِيعًا
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মুসলমান যেন একটি জুতা পরিধান করে না
হাঁটে। হয় উভয় জুতা পরিধান করবে, না হয় উভয় জুতা খুলে রাখবে। (বুখারী ৫৮৫৫, মুসলিম
২০৯৭)
১৬৪৪
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ
الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا انْتَعَلَ
أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِالْيَمِينِ وَإِذَا نَزَعَ فَلْيَبْدَأْ بِالشِّمَالِ
وَلْتَكُنْ الْيُمْنَى أَوَّلَهُمَا تُنْعَلُ وَآخِرَهُمَا تُنْزَعُ
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন মুসলমান জুতা পরতে ইচ্ছা করে, তখন
যেন সে ডান পা প্রথমে পরিধান করে। আর যখন জুতা খোলে, তখন যেন বাম পা হতে খোলে।
জুতা পরিধান করতে ডান পা প্রথমে হবে, আর জুতা খুলতে ডান পা শেষে হবে। (সহীহ,
বুখারী ৫৮৫৬)
১৬৪৫
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَمِّهِ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيهِ
عَنْ كَعْبِ الْأَحْبَارِ أَنَّ رَجُلًا نَزَعَ نَعْلَيْهِ فَقَالَ لِمَ خَلَعْتَ
نَعْلَيْكَ لَعَلَّكَ تَأَوَّلْتَ هَذِهِ الْآيَةَ { فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ إِنَّكَ
بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى } قَالَ ثُمَّ قَالَ كَعْبٌ لِلرَّجُلِ أَتَدْرِي
مَا كَانَتْ نَعْلَا مُوسَى قَالَ مَالِك لَا أَدْرِي مَا أَجَابَهُ الرَّجُلُ
فَقَالَ كَعْبٌ كَانَتَا مِنْ جِلْدِ حِمَارٍ مَيِّتٍ
কা‘ব আহবার (র)
থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নিজের জুতা খুলল। কা‘ব
তাকে বলল, তুমি তোমার জুতা কেন খুলে ফেলেছ ? হয়ত তুমি,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ إِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى
“আমি তোমার প্রভু। তুমি তোমার জুতা খুলে ফেল। কেননা তুমি ‘তুয়া’ নামক পবিত্র
ভূমিতে আছ।” এই আয়াত দেখে জুতা খুলেছ। অতঃপর কা’ব বললেন, তোমার জানা আছে কি মূসা
(আ)-এর জুতা কিসের ছিল ? মালিক (র) বললেন, আমার জানা নেই, ঐ ব্যক্তি কি উত্তর
দিয়েছিল। অতঃপর কা‘ব বললেন, উহা মৃত গাধার চামড়া দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছিল।
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন, হাদীসটিতে ইসরাঈলী বর্ণনা রয়েছে)
পরিচ্ছেদঃ
৮
কাপড় পরিধান প্রসঙ্গ
১৬৪৬
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ أَنَّهُ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
عَنْ لِبْسَتَيْنِ وَعَنْ بَيْعَتَيْنِ عَنْ الْمُلَامَسَةِ وَعَنْ الْمُنَابَذَةِ
وَعَنْ أَنْ يَحْتَبِيَ الرَّجُلُ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ لَيْسَ عَلَى فَرْجِهِ
مِنْهُ شَيْءٌ وَعَنْ أَنْ يَشْتَمِلَ الرَّجُلُ بِالثَّوْبِ الْوَاحِدِ عَلَى
أَحَدِ شِقَّيْهِ
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই প্রকার পোশাক এবং দুই প্রকার বিক্রয় হতে নিষেধ
করেছেন। মুলামাসাহ ও মুনাবাযাহ ধরনের বিক্রয় নিষেধ করেছেন। আর মানুষের এমনভাবে
বসা, যাতে তার হাঁটু খাড়া থাকে এবং তার লজ্জাস্থানের উপর কোন কাপড় না থাকে, এই
প্রকার বসা নিষেধ। আর এক কাপড় দ্বারা সমস্ত শরীর ঢাকতে নিষেধ করেছেন যাতে এক অংশ
খোলা থাকে। (সহীহ, বুখারী ৫৮২১)
১৬৪৭
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ
أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَأَى حُلَّةً سِيَرَاءَ تُبَاعُ عِنْدَ بَابِ
الْمَسْجِدِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ اشْتَرَيْتَ هَذِهِ الْحُلَّةَ
فَلَبِسْتَهَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَلِلْوَفْدِ إِذَا قَدِمُوا عَلَيْكَ فَقَالَ
رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لَا
خَلَاقَ لَهُ فِي الْآخِرَةِ ثُمَّ جَاءَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ مِنْهَا حُلَلٌ فَأَعْطَى عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ مِنْهَا حُلَّةً
فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُولَ اللهِ أَكَسَوْتَنِيهَا وَقَدْ قُلْتَ فِي حُلَّةِ
عُطَارِدٍ مَا قُلْتَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ
أَكْسُكَهَا لِتَلْبَسَهَا فَكَسَاهَا عُمَرُ أَخًا لَهُ مُشْرِكًا بِمَكَّةَ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু
উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উমার (রা) একখানা রেশমী কাপড়
মসজিদের সম্মুখে বিক্রি হতে দেখলেন। তিনি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! যদি আপনি এই রেশমী কাপড়খানা খরিদ করে নিতেন,
তা হলে শুক্রবারে উহা পরিধান করতে পারতেন অথবা কোন বৈদেশিক দূত এলে তা পরতে পারতেন।
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইহা ঐ ব্যক্তিই পরিধান করবে,
পরকালে যার কোন অংশ থাকবে না। পরে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
নিকট ঐরূপ আরও কাপড় এলে তিনি তা হতে একখানা কাপড় উমার (রা)-কে দান করলেন।
উমার (রা) বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি আমাকে এ কাপড় দিলেন অথচ ‘উতারদের কাপড়
সম্বন্ধে যা বলেছেন, তা দ্বারা এটাই বুঝা যায় যে, ঐ ধরনের কাপড় পরিধানকারীর জন্য
আখিরাতে কোন অংশ নেই। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি
তোমাকে উহা পরতে দেইনি। অতঃপর উমার (রা) ঐ কাপড় স্বীয় এক কাফির ভাই, যে ছিল
মক্কায়, তাকে দান করে দিলেন। (বুখারী ৮৮৬, মুসলিম ২০৬৮)
১৬৪৮
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ إِسْحَقَ بْنِ عَبْدِ
اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ أَنَّهُ قَالَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَأَيْتُ
عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ وَهُوَ يَوْمَئِذٍ أَمِيرُ الْمَدِينَةِ
وَقَدْ رَقَعَ بَيْنَ كَتِفَيْهِ بِرِقَاعٍ ثَلَاثٍ لَبَّدَ بَعْضَهَا فَوْقَ
بَعْضٍ
আনাস ইবনু মালিক
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
আমি উমার (রা)-কে দেখেছি তখন তিনি মদীনাতে আমীরুল মু‘মিনীন ছিলেন। আর তখন তাঁর জামায় স্কন্ধের মধ্যস্থলে পর পর তিনটি তালি লাগানো ছিল। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
No comments