মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় "সৎস্বভাব বিষয়ক"

সৎস্বভাব বিষয়ক অধ্যায়

পরিচ্ছেদঃ

সৎস্বভাব প্রসঙ্গ

১৬১২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ قَالَ آخِرُ مَا أَوْصَانِي بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ وَضَعْتُ رِجْلِي فِي الْغَرْزِ أَنْ قَالَ أَحْسِنْ خُلُقَكَ لِلنَّاسِ يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ

মু‘আয ইব্নু জাবাল (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সর্বশেষ ওসীয়্যত নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে করেছেন যখন আমি ঘোড়ার রেকাবে পা রাখছিলাম। তা এই যে, হে মু‘আয! মানুষের সাথে সৎ ব্যবহার করবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১৬১৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ

مَا خُيِّرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَمْرَيْنِ قَطُّ إِلَّا أَخَذَ أَيْسَرَهُمَا مَا لَمْ يَكُنْ إِثْمًا فَإِنْ كَانَ إِثْمًا كَانَ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنْهُ وَمَا انْتَقَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِنَفْسِهِ إِلَّا أَنْ تُنْتَهَكَ حُرْمَةُ اللهِ فَيَنْتَقِمُ لِلَّهِ بِهَا

উম্মুল মু‘মিনীন আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, যখনই রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দুইটি কাজের মধ্যে একটি গ্রহণের অনুমতি দেয়া হত তিনি সহজটি গ্রহণ করতেন, যদি উহা গুনাহর কাজ না হত। যদি উহা গুনাহর কাজ হত, তবে তিনিই সর্বাধিক উহা বর্জন করে চলতেন। তিনি নিজের জন্য কারো উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। কিন্তু যখন আল্লাহ্‌র হারামের মর্যাদা বিনষ্ট করা হত তখন তিনি প্রতিশোধ নিতেন। (বুখারী ৩৫৬০, মুসলিম ২৩২৭)

১৬১৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ

أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ

আলী ইব্নু হুসাইন থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসলামের সৌন্দর্যের মধ্যে এটাও রয়েছে যে, মানুষ অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজ ত্যাগ করবে। (সহীহ, তিরমিযী ২৩১৭, ২৩১৮, ইবনু মাজাহ ৩৯৭৬, আবূ হুরায়রা (রা) থেকে মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেন, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন [সহীহ আল-জামে] ৫৯১১, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)

১৬১৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَ رَجُلٌ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ عَائِشَةُ وَأَنَا مَعَهُ فِي

الْبَيْتِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِئْسَ ابْنُ الْعَشِيرَةِ ثُمَّ أَذِنَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ عَائِشَةُ فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ سَمِعْتُ ضَحِكَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهُ فَلَمَّا خَرَجَ الرَّجُلُ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ قُلْتَ فِيهِ مَا قُلْتَ ثُمَّ لَمْ تَنْشَبْ أَنْ ضَحِكْتَ مَعَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ مِنْ شَرِّ النَّاسِ مَنْ اتَّقَاهُ النَّاسُ لِشَرِّهِ

উম্মুল মু‘মিনীন আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

কেউ রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সাক্ষাৎ করতে অনুমতি চাইল। আমি তখন রসূলুল্লাহ্র ঘরে ছিলাম। তিনি বললেন, এই লোকটি মন্দ। অতঃপর তিনি তাকে আসতে অনুমতি দান করলেন। আয়িশা (রা) বলেন, বেশিক্ষণ না যেতেই আমি ঐ লোকটির সাথে রসূলুল্লাহ্কে হাসতে শুনতে পেলাম। তার প্রস্থানের পর আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! এইমাত্র আপনি তাকে মন্দ বললেন, আর এখনই আপনি তার সাথে হাসতেছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সকলের চাইতে মন্দ ঐ ব্যক্তি, যার অনিষ্টকারিতার জন্য লোকে তাকে ভয় করে। [১] (বুখারী ৬০৩২, ইমাম মুসলিম মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেছেন ২৫৯১, আর ইমাম মালিকের নিকট হাদীসটি পৌছেছে মর্মে বর্ণনা করেছেন)

[১] অর্থাৎ লোকেরা এই ভয়ে থাকে যে, সে যে কোন সময় কষ্ট দিতে পারে। লোকটি সম্পর্কে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মন্তব্য গীবত ছিল না, বরং এক ব্যক্তির অবস্থা বর্ণনা করার উদ্দেশ্য ছিল যাতে লোকেরা তার সম্পর্কে সতর্ক হয়ে যায়।

১৬১৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَمِّهِ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ كَعْبِ الْأَحْبَارِ أَنَّهُ قَالَ إِذَا أَحْبَبْتُمْ أَنْ تَعْلَمُوا مَا لِلْعَبْدِ عِنْدَ رَبِّهِ فَانْظُرُوا مَاذَا يَتْبَعُهُ مِنْ حُسْنِ الثَّنَاءِ

কা‘ব আহবার (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, কোন বান্দার মর্যাদা তার প্রভুর কাছে কিরূপ তা জানতে ইচ্ছা করলে দেখ, অন্যান্য লোক তার সম্বন্ধে কি ধারণা পোষণ করে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১৬১৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ قَالَ بَلَغَنِي أَنَّ الْمَرْءَ لَيُدْرِكُ بِحُسْنِ خُلُقِهِ دَرَجَةَ الْقَائِمِ بِاللَّيْلِ الظَّامِي بِالْهَوَاجِرِ

ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমার কাছে এই রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, মানুষ তার সৎ চরিত্রের জন্য সারা রাত্রি ইবাদতকারী ও সর্বদা রোযা রাখে, এমন ব্যক্তির মর্যাদা লাভ করে থাকে। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] অর্থাৎ যদি লোকে তার প্রশংসা করে তবে বুঝবে যে, এই ব্যক্তি আল্লাহ্‌র কাছেও ভাল, আর যদি লোকে তাকে মন্দ ধারণা করে থাকে, তবে বুঝবে আল্লাহ্‌র কাছেও এই ব্যক্তি মন্দ।

১৬১৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُولُ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِخَيْرٍ مِنْ كَثِيرٍ مِنْ الصَّلَاةِ وَالصَّدَقَةِ قَالُوا بَلَى قَالَ إِصْلَاحُ ذَاتِ الْبَيْنِ وَإِيَّاكُمْ وَالْبِغْضَةَ فَإِنَّهَا هِيَ الْحَالِقَةُ

সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বয়েছেন, আমি কি তোমাদের এমন কাজের সন্ধান দিব, যা বহু নামায ও অনেক সাদকা হতেও উৎকৃষ্ট ? লোকেরা বলল, নিশ্চয়ই, বলুন। তিনি বললেন, পরস্পর আপস করিয়ে দেয়া। আর তোমরা শত্রুতা ও দুশমনী হতে দূরে থাক। কারণ এই স্বভাব নেকীকে বিনষ্ট করে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১৬১৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ قَدْ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بُعِثْتُ لِأُتَمِّمَ حُسْنَ الْأَخْلَاقِ

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর কাছে এই খবর পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি নৈতিকতাকে পূর্ণতা দান করবার জন্য নবী হয়ে আগমন করেছি। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] এই হাদীসটি আহমাদ, হাকিম ও তিবরানী আবূ হুরায়রা (রা) হতে বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ

শরম ও লজ্জা সম্বন্ধীয় বর্ণনা

১৬২০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ سَلَمَةَ بْنِ صَفْوَانَ بْنِ سَلَمَةَ الزُّرَقِيِّ عَنْ زَيْدِ بْنِ طَلْحَةَ بْنِ رُكَانَةَ يَرْفَعُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ

قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِكُلِّ دِينٍ خُلُقٌ وَخُلُقُ الْإِسْلَامِ الْحَيَاءُ

যায়েদ ইব্নু তালহা ইব্নু রুকানা (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতিটি ধর্মেরই একটা স্বভাব রয়েছে, আর ইসলামের স্বভাব হল লজ্জা। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১৬২১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى رَجُلٍ وَهُوَ يَعِظُ أَخَاهُ فِي الْحَيَاءِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعْهُ فَإِنَّ الْحَيَاءَ مِنْ الْإِيمَانِ

আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তার ভাইকে বেশি লজ্জা না করার জন্য নসীহত করছিল। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই বিষয়ে তাকে নসীহত করা হতে বিরত থাক। কেননা এই লজ্জা ঈমানের অঙ্গস্বরূপ। [১] (বুখারী ২৪, মুসলিম ৩৬)

[১] যাকে নসীহত করা হচ্ছিল, সে ব্যক্তি ছিল খুবই লাজুক। ঐ ব্যক্তি তাকে তার লজ্জার জন্য তিরস্কার করছিল। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এইরূপ নসীহত বন্ধ কর। তুমি তাকে লজ্জা হতে বিরত থাকতে বলছ, অথচ উহা ঈমানের অঙ্গস্বরূপ।

পরিচ্ছেদঃ

ক্রোধ প্রসঙ্গ

১৬২২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّ رَجُلًا أَتَى إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ عَلِّمْنِي كَلِمَاتٍ أَعِيشُ بِهِنَّ وَلَا تُكْثِرْ عَلَيَّ فَأَنْسَى فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَغْضَبْ

হুমাইদ ইব্নু আবদুর রহমান ইব্নু আউফ (রা) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ্! আমাকে এমন কয়েকটি কথা শিখিয়ে দিন, যা দ্বারা উপকার লাভ করতে পারি। আর অনেক কথা বলবেন না, আমি ভুলে যাব। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রাগ করো না। (সহীহ, ইমাম বুখারী ৬১১১৬, আবূ সালেহ আবূ হুরায়রা (রা) থেকে মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেন, আর ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)

১৬২৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঐ ব্যক্তি বীর নয় যে অন্যকে ধরাশায়ী করে দেয়, বরং বীর ঐ ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। (বুখারী ৬১১৪, মুসলিম ২৬০৯)

পরিচ্ছেদঃ

কাউকে ত্যাগ করা প্রসঙ্গে

১৬২৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يُهَاجِرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا وَيُعْرِضُ هَذَا وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ

আবূ আয়্যুব আনসারী (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মুসলমানের পক্ষে তার ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক তিন দিনের বেশি ত্যাগ করা বৈধ নয়। এটা এইরূপে যে, তাদের একজন মিলতে আসে, তো অন্যজন তাকিয়ে দেখে না বা একজন মিলতে আসে তো অন্যজন লক্ষ্য করে না; এই উভয়ের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই উত্তম, যে প্রথমে সালাম করে। (বুখারী ৬০৭৭, মুসলিম ২৫৬০)

১৬২৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ

أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا تَبَاغَضُوا وَلَا تَحَاسَدُوا وَلَا تَدَابَرُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَانًا وَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يُهَاجِرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ قَالَ مَالِك لَا أَحْسِبُ التَّدَابُرَ إِلَّا الْإِعْرَاضَ عَنْ أَخِيكَ الْمُسْلِمِ فَتُدْبِرَ عَنْهُ بِوَجْهِكَ

আনাস ইবনু মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ করো না এবং একে অন্যের দিকে পিঠ ফিরাইয়া থেক না, বরং তোমরা আল্লাহ্‌র বান্দা ভাই ভাই হয়ে থাক; কোন মুসলমানের জন্য তার কোন মুসলমান ভাইকে তিন রাতের অধিক ত্যাগ করা বৈধ নয়। মালিক (র) বলেন, মুসলিম ভাই হতে মুখ ফিরায়ে নেওয়াকেই তাদাবুর বলা হয়। (বুখারী ৬০৭৬, মুসিলম ২৫৫৯)

১৬২৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ

أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا تَحَسَّسُوا وَلَا تَنَافَسُوا وَلَا تَحَاسَدُوا وَلَا تَبَاغَضُوا وَلَا تَدَابَرُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَانًا

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা অনুমান করা হতে বেঁচে থাকে। নিশ্চয়ই অনুমান বড় মিথ্যা। কারো ছিদ্রান্বেষণ করো না, কারো সম্বন্ধে অনুমানভিত্তিক কথা বলো না। দুনিয়ার জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতা করো না। একে অন্যের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করো না এবং অন্যের প্রতি পিঠ ফিরিয়ে থেকো না। আল্লাহ্‌র বান্দা সকলে ভাই ভাই হয়ে যাও। (বুখারী ৬০৬৬, মুসলিম ২৫৬৩)

১৬২৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي مُسْلِمٍ عَبْدِ اللهِ الْخُرَاسَانِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَصَافَحُوا يَذْهَبْ الْغِلُّ وَتَهَادَوْا تَحَابُّوا وَتَذْهَبْ الشَّحْنَاءُ

আতা ইবনু আবদুল্লাহ্ খুরাসানী (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা পরস্পর মুসাফাহা (কর মর্দন) কর, তা হলে তোমাদের মধ্যকার শত্রুতা দূর হয়ে যাবে। পরস্পর হাদিয়া তোহ্ফা আদান-প্রদান কর, তা হলে পরস্পর ভালবাসা সৃষ্টি হবে এবং বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

১৬২৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ تُفْتَحُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْاثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ مُسْلِمٍ لَا يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا إِلَّا رَجُلًا كَانَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ فَيُقَالُ أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার বেহেশতের দ্বার খুলে দেয়া হয় এবং যে মুসলমান বান্দা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে না, তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়, তবে এ ব্যক্তি ব্যতীত, যে নিজ ভাইয়ের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করে। বলা হতে থাকে, তাদের পরস্পর মেলামেশা না হওয়ার পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে অপেক্ষা কর অর্থাৎ যতক্ষণ তারা আপস না করে তাদেরকে ক্ষমা করা হবে না। (সহীহ, মুসলিম ২৫৬৫)

১৬২৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُ قَالَ تُعْرَضُ أَعْمَالُ النَّاسِ كُلَّ جُمُعَةٍ مَرَّتَيْنِ يَوْمَ الْاثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ مُؤْمِنٍ إِلَّا عَبْدًا كَانَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ فَيُقَالُ اتْرُكُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَفِيئَا أَوِ ارْكُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَفِيئَا

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বললেন, সপ্তাহে দুইবার অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ও সোমবার বান্দাদের আমল লেখা হয়ে থাকে। তখন প্রত্যেক মু‘মিন বান্দাকে ক্ষমা করা হয়ে থাকে ঐ ব্যক্তি ব্যতীত, যে স্বীয় ভাই-এর সাথে শত্রুতা পোষণ করে। বলা হয়, এই উভয়কে তাদের আপস না হওয়া পর্যন্ত ত্যাগ কর (ক্ষমা করো না)। (সহীহ, মুসলিম ২৫৬৫)


No comments

Powered by Blogger.