মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় "ওসীয়্যত সম্পর্কিত"
পরিচ্ছেদঃ
১
ওসীয়্যতের নির্দেশ
১৪৫১
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا حَقُّ
امْرِئٍ مُسْلِمٍ لَهُ شَيْءٌ يُوصَى فِيهِ يَبِيتُ لَيْلَتَيْنِ إِلَّا
وَوَصِيَّتُهُ عِنْدَهُ مَكْتُوبَةٌ.
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا أَنَّ الْمُوصِيَ إِذَا
أَوْصَى فِي صِحَّتِهِ أَوْ مَرَضِهِ بِوَصِيَّةٍ فِيهَا عَتَاقَةُ رَقِيْقٍ مِنْ
رَقِيقِهِ أَوْ غَيْرُ ذَلِكَ فَإِنَّهُ يُغَيِّرُ مِنْ ذَلِكَ مَا بَدَا لَهُ
وَيَصْنَعُ مِنْ ذَلِكَ مَا شَاءَ حَتَّى يَمُوْتَ.
وَإِنْ أَحَبَّ أَنْ يَطْرَحَ تِلْكَ الْوَصِيَّةَ وَيُبْدِلَهَا فَعَلَ إِلَّا
أَنْ يُدَبِّرَ مَمْلُوكًا فَإِنْ دَبَّرَ فَلَا سَبِيلَ إِلَى تَغْيِيرِ مَا
دَبَّرَ وَذَلِكَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا
حَقُّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ لَهُ شَيْءٌ يُوصَى فِيهِ يَبِيتُ لَيْلَتَيْنِ إِلَّا
وَوَصِيَّتُهُ عِنْدَهُ مَكْتُوبَةٌ قَالَ مَالِك فَلَوْ كَانَ الْمُوصِي لَا
يَقْدِرُ عَلَى تَغْيِيرِ وَصِيَّتِهِ وَلَا مَا ذُكِرَ فِيهَا مِنْ الْعَتَاقَةِ
كَانَ كُلُّ مُوصٍ قَدْ حَبَسَ مَالَهُ الَّذِي أَوْصَى فِيهِ مِنْ الْعَتَاقَةِ
وَغَيْرِهَا وَقَدْ يُوصِي الرَّجُلُ فِي صِحَّتِهِ وَعِنْدَ سَفَرِهِ قَالَ
مَالِك فَالْأَمْرُ عِنْدَنَا الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ أَنَّهُ يُغَيِّرُ
مِنْ ذَلِكَ مَا شَاءَ غَيْرَ التَّدْبِيْرِ.
আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মুসলমানের নিকট কিছু সম্পদ থাকলে যার সম্বন্ধে ওসীয়্যত করা
তার কর্তব্য, তবে সেই ক্ষেত্রে ওসীয়্যতের বিষয় না লিখে তার জন্য দুই রাত্রিও
অতিবাহিত করা উচিত নায় (কেননা মৃত্যু আসার আশংকা রয়েছে)। (বুখারী ২৭৩৮, মুসলিম
১৬২৭)
মালিক (র) বলেন ইহা আমাদের নিকট সর্বসম্মত বিষয় যে, যদি কোন মুসলমান সুস্থ অথবা
অসুস্থ অবস্থায় কোন ওসীয়্যত করে যায় যেমন গোলাম আযাদ করা কিংবা অন্যান্য বিষয়, তবে
সে মারা যাওয়ার পূর্বে তার মধ্যে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারবে এবং ওসীয়্যতকে
স্থগিতও করতে পারবে। অন্য কোন ওসীয়্যতও করতে পারবে। কিন্তু কোন গোলামকে যদি
মুদাব্বার করে থাকে তবে তাতে আর কোন পরিবর্তন করতে পারবে না, কেননা রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মুসলমানের এমন কিছু থাকলে যা ওসীয়্যত
করা কর্তব্য, তবে ওসীয়্যত করা ব্যতীত দুই রাত অতিবাহিত করা তার উচিত নয়।
মালিক (র) বলেন যদি ওসীয়্যতকারীর নিজ ওসীয়্যতে পরিবর্তন করার ক্ষমতা না থাকত তবে
তার ইখতিয়ার হতে বের হয়ে আটক থাকত। যেমন গোলাম আযাদের কথা অথচ মানুষ কোন সময়
ভ্রমণে যাওয়ার সময় ওসীয়্যত করে আবার সুস্থ থাকাকালীন ওসীয়্যত করে।
মালিক (র) বলেন আমাদের নিকট প্রত্যেক ওসীয়্যতই বদলানো যায় কিন্তু গোলামকে
মুদাব্বার করা হলে তা পরিবর্তনের ইখতিয়ার নাই।
পরিচ্ছেদঃ
২
দুর্বল, বালক, পাগল ও
নির্বোধের ওসীয়্যত বৈধ
১৪৫২
حَدَّثَنِي
مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ
عَمْرَو بْنَ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيَّ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ قِيلَ لِعُمَرَ بْنِ
الْخَطَّابِ إِنَّ هَاهُنَا غُلَامًا يَفَاعًا لَمْ يَحْتَلِمْ مِنْ غَسَّانَ
وَوَارِثُهُ بِالشَّامِ وَهُوَ ذُو مَالٍ وَلَيْسَ لَهُ هَاهُنَا إِلَّا ابْنَةُ
عَمٍّ لَهُ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَلْيُوصِ لَهَا قَالَ فَأَوْصَى لَهَا
بِمَالٍ يُقَالُ لَهُ بِئْرُ جُشَمٍ قَالَ عَمْرُو بْنُ سُلَيْمٍ فَبِيعَ ذَلِكَ
الْمَالُ بِثَلَاثِينَ أَلْفَ دِرْهَمٍ وَابْنَةُ عَمِّهِ الَّتِي أَوْصَى لَهَا
هِيَ أُمُّ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ.
আবূ বাকর ইব্নু
হাযম (র) থেকে বর্ণিতঃ
আমর
ইব্নু সুলায়ম যুরাকী বলেছেন, উমার (রা)-কে বলা হল, এখানে গাস্সান গোত্রের একটি
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে আছে, তার ওয়ারিস সিরিয়াতে এবং তার সম্পত্তিও আছে মদীনাতে,
এখানে তার এক চাচাতো বোন ব্যতীত আর কোন ওয়ারিস নেই। উমার (রা) বললেন, তার জন্যই
ওসীয়্যত করা চাই। অবশেষে ঐ ছেলে নিজ মালের ওসীয়্যত চাচাতো বোনের জন্য করেছিল। তার
সম্পত্তির নাম ছিল বীরে জুশাম। আমর (রা) বলেন যে, ঐ সম্পত্তি ত্রিশ হাজার দিরহামে বিক্রয়
হয়েছিল। আর তার চাচাতো বোনের নাম ছিল উম্মে আমর ইব্নু সুলাইম যুরাকী ছিল। (হাদীসটি
ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৪৫৩
و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ
أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ أَنَّ غُلَامًا مِنْ غَسَّانَ حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُ
بِالْمَدِينَةِ وَوَارِثُهُ بِالشَّامِ فَذُكِرَ ذَلِكَ لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ
فَقِيلَ لَهُ إِنَّ فُلَانًا يَمُوتُ أَفَيُوصِي قَالَ فَلْيُوصِ قَالَ يَحْيَى
بْنُ سَعِيدٍ قَالَ أَبُو بَكْرٍ وَكَانَ الْغُلَامُ ابْنَ عَشْرِ سِنِينَ أَوْ
اثْنَتَيْ عَشَرَةَ سَنَةً قَالَ فَأَوْصَى بِبِئْرِ جُشَمٍ فَبَاعَهَا أَهْلُهَا
بِثَلَاثِينَ أَلْفَ دِرْهَمٍ.
قَالَ يَحْيَى سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ
عِنْدَنَا أَنَّ الضَّعِيفَ فِي عَقْلِهِ وَالسَّفِيهَ وَالْمُصَابَ الَّذِي
يُفِيقُ أَحْيَانًا تَجُوزُ وَصَايَاهُمْ إِذَا كَانَ مَعَهُمْ مِنْ عُقُولِهِمْ
مَا يَعْرِفُونَ مَا يُوصُونَ بِهِ فَأَمَّا مَنْ لَيْسَ مَعَهُ مِنْ عَقْلِهِ مَا
يَعْرِفُ بِذَلِكَ مَا يُوصِي بِهِ وَكَانَ مَغْلُوبًا عَلَى عَقْلِهِ فَلَا
وَصِيَّةَ لَهُ.
আবূ বাকর ইব্নু
হাযম (র) থেকে বর্ণিতঃ
মাদীনাতে গাসসান বংশের একটি ছেলের
মৃত্যুর সময় উপস্থিত হল, আর তার ওয়ারিস ছিল সিরিয়াতে । তার কথা উমার (রা)-এর কাছে
বলা হল এবং জিজ্ঞেস করা হল যে, সে ওসীয়্যত করবে কি? তিনি বললেন হ্যাঁ, সে যেন
ওসীয়্যত করে। আবূ বাকর বলেন, ঐ ছেলের বয়স দশ অথবা বার বৎসর ছিল। অতঃপর সে তার বীরে
জুশাম নামক সম্পত্তি ওসীয়্যত করে গেল, যার বিক্রয়মূল্য বাবদ প্রাপ্ত হয়েছিল ত্রিশ
হাজার দিরহাম। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন এটা আমাদের নিকট সর্বসম্মত বিষয় যে, দুর্বল বুদ্ধির লোক, নির্বোধ,
পাগল যার মাঝে মাঝে হুশ ফিরে আসে এমন লোকদের ওসীয়্যত শুদ্ধ হবে যখন তার এতদূর আকল
থাকে যে, সে যা কিছু ওসীয়্যত করছে তা সে বুঝে। আর যদি এতদুর আকলও না থাকে যে, সে
কি ওসীয়্যত করল তা বুঝতে পারে না। তবে তার ওসীয়্যত শুদ্ধ হবে না।
পরিচ্ছেদঃ
৩
এক-তৃতীয়াংশের অধিক
ওসীয়াতের ফয়সালা
১৪৫৪
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ
سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ قَالَ جَاءَنِي رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُنِي عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ وَجَعٍ
اشْتَدَّ بِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ قَدْ بَلَغَ بِي مِنْ الْوَجَعِ مَا
تَرَى وَأَنَا ذُو مَالٍ وَلَا يَرِثُنِي إِلَّا ابْنَةٌ لِي أَفَأَتَصَدَّقُ
بِثُلُثَيْ مَالِي قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا
فَقُلْتُ فَالشَّطْرُ قَالَ لَا ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ الثُّلُثُ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ
أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ
وَإِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا أُجِرْتَ
حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِي فِي امْرَأَتِكَ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ
أَأُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِي فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلًا صَالِحًا إِلَّا ازْدَدْتَ
بِهِ دَرَجَةً وَرِفْعَةً وَلَعَلَّكَ أَنْ تُخَلَّفَ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ
أَقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُونَ اللهُمَّ أَمْضِ لِأَصْحَابِي هِجْرَتَهُمْ
وَلَا تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ لَكِنْ الْبَائِسُ سَعْدُ بْنُ خَوْلَةَ
يَرْثِي لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ مَاتَ بِمَكَّةَ.
قَالَ يَحْيَى سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يُوصِي بِثُلُثِ مَالِهِ
لِرَجُلٍ وَيَقُولُ غُلَامِي يَخْدُمُ فُلَانًا مَا عَاشَ ثُمَّ هُوَ حُرٌّ
فَيُنْظَرُ فِي ذَلِكَ فَيُوجَدُ الْعَبْدُ ثُلُثَ مَالِ الْمَيِّتِ قَالَ فَإِنَّ
خِدْمَةَ الْعَبْدِ تُقَوَّمُ ثُمَّ يَتَحَاصَّانِ يُحَاصُّ الَّذِي أُوصِيَ لَهُ
بِالثُّلُثِ بِثُلُثِهِ وَيُحَاصُّ الَّذِي أُوصِيَ لَهُ بِخِدْمَةِ الْعَبْدِ
بِمَا قُوِّمَ لَهُ مِنْ خِدْمَةِ الْعَبْدِ فَيَأْخُذُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا
مِنْ خِدْمَةِ الْعَبْدِ أَوْ مِنْ إِجَارَتِهِ إِنْ كَانَتْ لَهُ إِجَارَةٌ
بِقَدْرِ حِصَّتِهِ فَإِذَا مَاتَ الَّذِي جُعِلَتْ لَهُ خِدْمَةُ الْعَبْدِ مَا
عَاشَ عَتَقَ الْعَبْدُ.
قَالَ و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الَّذِي يُوصِي فِي ثُلُثِهِ فَيَقُولُ
لِفُلَانٍ كَذَا وَكَذَا وَلِفُلَانٍ كَذَا وَكَذَا يُسَمِّي مَالًا مِنْ مَالِهِ
فَيَقُولُ وَرَثَتُهُ قَدْ زَادَ عَلَى ثُلُثِهِ فَإِنَّ الْوَرَثَةَ يُخَيَّرُونَ
بَيْنَ أَنْ يُعْطُوا أَهْلَ الْوَصَايَا وَصَايَاهُمْ وَيَأْخُذُوا جَمِيعَ مَالِ
الْمَيِّتِ وَبَيْنَ أَنْ يَقْسِمُوا لِأَهْلِ الْوَصَايَا ثُلُثَ مَالِ الْمَيِّتِ
فَيُسَلِّمُوا إِلَيْهِمْ ثُلُثَهُ فَتَكُونُ حُقُوقُهُمْ فِيهِ إِنْ أَرَادُوا
بَالِغًا مَا بَلَغَ.
সা‘আদ ইব্নু আবি
ওয়াক্কাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের বৎসর রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার অসুখের সময় আমাকে দেখতে আসেন, আমার অসুখ খুব
কঠিন ছিল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি দেখতেছেন যে, আমার অবস্থা কি এবং আমি
খুব সম্পদশালী, আমার কোন ওয়ারিস নেই এক মেয়ে ব্যতীত। এখন আমি আমার সম্পদের
দুই-তৃতীয়াংশ সাদাকাহ্ করে দিতে পারব কি? রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘না’। আমি বললাম, তা হলে অর্ধেক দান করে দেই? রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, না। অতঃপর তিনি নিজেই বললেন এক-তৃতীয়াংশ দান
কর। যদিও এটাও অনেক। মনে রেখ, তুমি তোমার ওয়ারিসদেরকে ধনী রেখে যাওয়া উত্তম
তাদেরকে দরিদ্র এবং লোকের কাছে ভিক্ষা করুক এমন অবস্থায় রেখে যাওয়ার চাইতে। তুমি
যা কিছু আল্লাহ্ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য খরচ করবে তার বিনিময় পাবে, চাই নিজ
স্ত্রীর মুখে লোকমা উঠিয়ে দাও না কেন। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি কি আমার সঙ্গীদের পিছনে থেকে যাব? রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তুমি তাদের পেছনে থেকে যাও এবং সাওয়াবের
কাজ করতে থাক তবে তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। এমনও হতে পারে যে, তুমি জীবিত থাকবে
এবং তোমার দ্বারা আল্লাহ্ তা‘আলা বহু লোককে উপকৃত করবেন, আর এক দল তোমার দ্বারা
ক্ষতিগ্রস্থ হবে। (বুখারী ১২৯৬, মুসলিম ১৬২৮)
হে আল্লাহ্! আমার সাহাবীগণের হিজরত পূর্ণ কর এবং তাদেরকে পশ্চাদপসরণ করো না।
কিন্তু বেচারা সা‘আদ ইব্নু খাওলা যার জন্য রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর অন্তর ব্যথিত হয়েছিল, কেননা তিনি মক্কায় ইন্তিকাল করেছিলেন।
মালিক (র) বলেন যদি কেউ কারো জন্য এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তির ওসীয়্যত করে যায় এবং এটাও
বলে যে, আমার অমুক গোলাম আজীবন অমুকের খেদমত করবে, অতঃপর সে আযাদ। তার পর যদি
গোলামের মূল্য সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ হয় তবে গোলামের খেদমত গ্রহণ করা হবে এবং
গোলামের ভাগ বন্টন করা হবে; যার জন্য সম্পদের ওসীয়্যত করা হয়েছে তার হিস্যা হবে
এবং যার জন্য খেদমত করার ওসীয়্যত করা হয়েছে তারও হিস্যা খেদমতের মূল্য অনুযায়ী হবে
এবং এই দুইজন লোকই ঐ গোলামের কামাই ও খেদমত হতে নিজ হিস্যা প্রাপ্ত হবে। যখন ঐ
ব্যক্তি মারা যাবে যার খেদমতের কথা বলা হয়েছে, তখন গোলাম আযাদ হয়ে যাবে।
মালিক (র) বলেন যদি কেউ কয়েক ব্যক্তির নাম নিয়ে বলে যে, অমুককে এত ‘অমুককে এত
দিনার ওসীয়্যত করলাম; অতঃপর তার ওয়ারিসগণ বলে যে, ওসীয়্যত এক-তৃতীয়াংশের চাইতে
অধিক হয়েছে তবে ওয়ারিসগণের ইখতিয়ার থাকবে, হয় তারা যাদের জন্য ওসীয়্যত করা হয়েছে
তাদের প্রত্যেককেই ঐ পরিমাণ বিনিময় দেবে এবং পূর্ণ সম্পদ নিজেরা নিয়ে নিবে অথবা
তাদেরকে এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ দিয়ে দেবে যেন তারা বন্টন করে নিতে পারে।
পরিচ্ছেদঃ
৪
গর্ভবতী, রোগী ও
মুজাহিদ সম্পর্কে হুকুম কতটুকু ওসীয়্যত করতে পারবে
১
قَالَ يَحْيَى سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ أَحْسَنُ مَا
سَمِعْتُ فِي وَصِيَّةِ الْحَامِلِ وَفِي قَضَايَاهَا فِي مَالِهَا وَمَا يَجُوزُ
لَهَا أَنَّ الْحَامِلَ كَالْمَرِيضِ فَإِذَا كَانَ الْمَرَضُ الْخَفِيفُ غَيْرُ
الْمَخُوفِ عَلَى صَاحِبِهِ فَإِنَّ صَاحِبَهُ يَصْنَعُ فِي مَالِهِ مَا يَشَاءُ
وَإِذَا كَانَ الْمَرَضُ الْمَخُوفُ عَلَيْهِ لَمْ يَجُزْ لِصَاحِبِهِ شَيْءٌ
إِلَّا فِي ثُلُثِهِ.
قَالَ وَكَذَلِكَ الْمَرْأَةُ الْحَامِلُ أَوَّلُ حَمْلِهَا بِشْرٌ وَسُرُورٌ
وَلَيْسَ بِمَرَضٍ وَلَا خَوْفٍ لِأَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ فِي
كِتَابِهِ { فَبَشَّرْنَاهَا بِإِسْحَقَ وَمِنْ وَرَاءِ إِسْحَقَ يَعْقُوبَ }
وَقَالَ { حَمَلَتْ حَمْلًا خَفِيفًا فَمَرَّتْ بِهِ فَلَمَّا أَثْقَلَتْ دَعَوَا
اللهَ رَبَّهُمَا لَئِنْ آتَيْتَنَا صَالِحًا لَنَكُونَنَّ مِنْ الشَّاكِرِيْنَ }
فَالْمَرْأَةُ الْحَامِلُ إِذَا أَثْقَلَتْ لَمْ يَجُزْ لَهَا قَضَاءٌ إِلَّا فِي
ثُلُثِهَا فَأَوَّلُ الْإِتْمَامِ سِتَّةُ أَشْهُرٍ قَالَ اللهُ تَبَارَكَ
وَتَعَالَى فِي كِتَابِهِ { وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ
كَامِلَيْنِ }. وَقَالَ { وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا }
فَإِذَا مَضَتْ لِلْحَامِلِ سِتَّةُ أَشْهُرٍ مِنْ يَوْمَ حَمَلَتْ لَمْ يَجُزْ
لَهَا قَضَاءٌ فِي مَالِهَا إِلَّا فِي الثُّلُثِ ২৮৩قَالَ و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الرَّجُلِ
يَحْضُرُ الْقِتَالَ إِنَّهُ إِذَا زَحَفَ فِي الصَّفِّ لِلْقِتَالِ لَمْ يَجُزْ
لَهُ أَنْ يَقْضِيَ فِي مَالِهِ شَيْئًا إِلَّا فِي الثُّلُثِ وَإِنَّهُ
بِمَنْزِلَةِ الْحَامِلِ وَالْمَرِيضِ الْمَخُوفِ عَلَيْهِ مَا كَانَ بِتِلْكَ
الْحَالِ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
গর্ভবতীর হুকুম ও অসুস্থ মানুষের হুকুম
একই। যখন সাধারণ অসুখ হয়, মৃত্যুর ভয় না থাকে তখন রোগী তার সম্পত্তির মধ্যে যা
খুশী তাই করতে পারে। আর যদি অসুখ সাংঘাতিক ধরনের হয়, যার বাঁচবার আশা খুব কম, তবে
সম্পত্তির মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের বেশি বিক্রয় করতে পারবে না। গর্ভবতীর হুকুমও
অনুরূপ। গর্ভবতীর প্রথমাবস্থায় যখন সে খুব আনন্দে থাকে তখন তার সম্পত্তিতে যা
ইচ্ছা সে তাই করতে পারে, কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, “আমি তাকে (বিবি সারাকে)
ইসহাকের সুসংবাদ দিলাম, আর ইসহাকের পরে ইয়া‘কুবের সুসংবাদ দিলাম। আল্লাহ্ তা‘আলা
আরো বলেন যে, “যখন আদম হাওয়ার সাথে সহবাস করল তখন হাওয়ার সামান্য গর্ভের সঞ্চার হল
এবং চলাফেরা করতে লাগল। অতঃপর যখন গর্ভ অধিক ভারী হয়ে গেল তখন দুইজনেই আল্লাহ্
তা‘আলার নিকট দু‘আ করলেন যে, যদি আমাদেরকে নেক সন্তান দেন তবে আপনার কৃতজ্ঞ
বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।” সুতরাং যখন গর্ভবতীর গর্ভ বেশি ভারী হয়ে যায় তখন
সে তার সম্পদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের বেশির মধ্যে কিছুই করতে পারবে না। এই অবস্থা
ছয়মাস পরে হয়। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা নিজ কিতাবে বলেছেন যে, মাতাগণ সন্তানদেরকে
পূর্ণ দুই বৎসরে দুগ্ধ পান করাবে। যে ব্যক্তি দুগ্ধপানকে পূর্ণ করাতে চায়। পুনরায়
বলেন যে, গর্ভ ধারণ ও দুধ ছাড়ানো ত্রিশ মাস। সুতরাং যখন গর্ভবতী ছয়মাস অতিবাহিত
হয়ে যায় গর্ভ সঞ্চারের দিন হতে, তখন সে তার সম্পত্তিতে এক-তৃতীয়াংশের বেশিতে কিছুই
করতে পারবে না।
মালিক (র) বলেন যে ব্যক্তি লড়াইয়ের ময়দানে (যোদ্ধাদের) কাতারের মধ্যে থাকে সেও তার
মালের এক-তৃতীয়াংশের বেশি কিছু করতে পারবে না। তার হুকুমও গর্ভবতী এবং রোগীর
হুকুমের মতো।
পরিচ্ছেদঃ
৫
ওয়ারিসদের জন্য
ওসীয়্যত এবং সঞ্চয় করার হুকুম
১
قَالَ يَحْيَى سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي هَذِهِ
الْآيَةِ إِنَّهَا مَنْسُوخَةٌ قَوْلُ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى { إِنْ تَرَكَ
خَيْرًا الْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِينَ } نَسَخَهَا مَا نَزَلَ
مِنْ قِسْمَةِ الْفَرَائِضِ فِي كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ.
قَالَ و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ السُّنَّةُ الثَّابِتَةُ عِنْدَنَا الَّتِي لَا
اخْتِلَافَ فِيهَا أَنَّهُ لَا تَجُوزُ وَصِيَّةٌ لِوَارِثٍ إِلَّا أَنْ يُجِيزَ
لَهُ ذَلِكَ وَرَثَةُ الْمَيِّتِ وَأَنَّهُ إِنْ أَجَازَ لَهُ بَعْضُهُمْ وَأَبَى
بَعْضٌ جَازَ لَهُ حَقُّ مَنْ أَجَازَ مِنْهُمْ وَمَنْ أَبَى أَخَذَ حَقَّهُ مِنْ
ذَلِكَ.
قَالَ و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الْمَرِيضِ الَّذِي يُوصِي فَيَسْتَأْذِنُ
وَرَثَتَهُ فِي وَصِيَّتِهِ وَهُوَ مَرِيضٌ لَيْسَ لَهُ مِنْ مَالِهِ إِلَّا
ثُلُثُهُ فَيَأْذَنُونَ لَهُ أَنْ يُوصِيَ لِبَعْضِ وَرَثَتِهِ بِأَكْثَرَ مِنْ
ثُلُثِهِ إِنَّهُ لَيْسَ لَهُمْ أَنْ يَرْجِعُوا فِي ذَلِكَ وَلَوْ جَازَ ذَلِكَ
لَهُمْ صَنَعَ كُلُّ وَارِثٍ ذَلِكَ فَإِذَا هَلَكَ الْمُوصِي أَخَذُوا ذَلِكَ
لِأَنْفُسِهِمْ وَمَنَعُوهُ الْوَصِيَّةَ فِي ثُلُثِهِ وَمَا أُذِنَ لَهُ بِهِ فِي
مَالِهِ.
قَالَ فَأَمَّا أَنْ يَسْتَأْذِنَ وَرَثَتَهُ فِي وَصِيَّةٍ يُوصِي بِهَا
لِوَارِثٍ فِي صِحَّتِهِ فَيَأْذَنُونَ لَهُ فَإِنَّ ذَلِكَ لَا يَلْزَمُهُمْ
وَلِوَرَثَتِهِ أَنْ يَرُدُّوا ذَلِكَ إِنْ شَاءُوا وَذَلِكَ أَنَّ الرَّجُلَ
إِذَا كَانَ صَحِيحًا كَانَ أَحَقَّ بِجَمِيعِ مَالِهِ يَصْنَعُ فِيهِ مَا شَاءَ
إِنْ شَاءَ أَنْ يَخْرُجَ مِنْ جَمِيعِهِ خَرَجَ فَيَتَصَدَّقُ بِهِ أَوْ
يُعْطِيهِ مَنْ شَاءَ وَإِنَّمَا يَكُونُ اسْتِئْذَانُهُ وَرَثَتَهُ جَائِزًا
عَلَى الْوَرَثَةِ إِذَا أَذِنُوا لَهُ حِينَ يُحْجَبُ عَنْهُ مَالُهُ وَلَا
يَجُوزُ لَهُ شَيْءٌ إِلَّا فِي ثُلُثِهِ وَحِينَ هُمْ أَحَقُّ بِثُلُثَيْ مَالِهِ
مِنْهُ فَذَلِكَ حِينَ يَجُوزُ عَلَيْهِمْ أَمْرُهُمْ وَمَا أَذِنُوا لَهُ بِهِ
فَإِنْ سَأَلَ بَعْضُ وَرَثَتِهِ أَنْ يَهَبَ لَهُ مِيرَاثَهُ حِينَ تَحْضُرُهُ
الْوَفَاةُ فَيَفْعَلُ ثُمَّ لَا يَقْضِي فِيهِ الْهَالِكُ شَيْئًا فَإِنَّهُ
رَدٌّ عَلَى مَنْ وَهَبَهُ إِلَّا أَنْ يَقُولَ لَهُ الْمَيِّتُ فُلَانٌ لِبَعْضِ
وَرَثَتِهِ ضَعِيفٌ وَقَدْ أَحْبَبْتُ أَنْ تَهَبَ لَهُ مِيرَاثَكَ فَأَعْطَاهُ
إِيَّاهُ فَإِنَّ ذَلِكَ جَائِزٌ إِذَا سَمَّاهُ الْمَيِّتُ لَهُ قَالَ وَإِنْ
وَهَبَ لَهُ مِيرَاثَهُ ثُمَّ أَنْفَذَ الْهَالِكُ بَعْضَهُ وَبَقِيَ بَعْضٌ
فَهُوَ رَدٌّ عَلَى الَّذِي وَهَبَ يَرْجِعُ إِلَيْهِ مَا بَقِيَ بَعْدَ وَفَاةِ
الَّذِي أُعْطِيَهُ.
قَالَ و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِيمَنْ أَوْصَى بِوَصِيَّةٍ فَذَكَرَ أَنَّهُ
قَدْ كَانَ أَعْطَى بَعْضَ وَرَثَتِهِ شَيْئًا لَمْ يَقْبِضْهُ فَأَبَى
الْوَرَثَةُ أَنْ يُجِيزُوا ذَلِكَ فَإِنَّ ذَلِكَ يَرْجِعُ إِلَى الْوَرَثَةِ
مِيرَاثًا عَلَى كِتَابِ اللهِ لِأَنَّ الْمَيِّتَ لَمْ يُرِدْ أَنْ يَقَعَ شَيْءٌ
مِنْ ذَلِكَ فِي ثُلُثِهِ وَلَا يُحَاصُّ أَهْلُ الْوَصَايَا فِي ثُلُثِهِ
بِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
ওসীয়্যতের এই আয়াতটি ফারাইযের
আয়াত দ্বারা মন্সুখ (রহিত) হয়ে গিয়েছে, আয়াতটি এই-
إِنْ تَرَكَ خَيْرًا الْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِيْنَ
মালিক (র) বলেন আমাদের কাছে এই নিয়ম (সুন্নাত) প্রমাণিত। তাতে কোন মতভেদ নেই,
ওয়ারিসদের অনুমতি ব্যতীত ওসীয়্যত জায়েয নেই। যদি কোন ওয়ারিস অনুমতি দেয় আর কেউ
অনুমতি না দেয় তবে যারা অনুমতি দিয়েছে তাদের মীরাস হতে তা আদায় করা হবে।
মালিক (র) বলেন যদি কেউ অসুস্থ হয় এবং সে ওসীয়্যত করতে চায় এবং ওয়ারিসগণ হতে
অনুমতি চায় তবে এই অসুস্থ অবস্থায় তার জন্য এক-তৃতীয়াংশের বেশি সম্পত্তিতে ওসীয়্যত
জায়েয হবে না। হ্যাঁ, যদি তারা এক-তৃতীয়াংশের চাইতে বেশি ওসীয়্যতের অনুমতি দেয় তবে
তাদের এই কথা হতে ফিরে যাওয়া জায়েয নেই। যদি তা জায়েয হত তবে প্রত্যেক ওয়ারিসই নিজ
অংশ ফিরিয়ে নিত, যদি ওসীয়্যতকারী মারা যেত তবে ওসীয়্যতকৃত সম্পদ নিয়ে লইত। আর
ওসীয়্যত এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে বন্ধ করে দিত, কিন্তু যদি কেউ সুস্থ থাকা অবস্থায়
ওয়ারিসগণের নিকট কোন ওয়ারিসের জন্য ওসীয়্যতের অনুমতি চায় এবং তারা অনুমতি দিয়ে দেয়
তবে তা হতে ফিরে যেতে পারে এবং তা কার্যকর নাও হতে দিতে পারে। কেননা সে সুস্থ
অবস্থায় তার পূর্ণ সম্পদের উপরই এদিক-সেদিক করবার ক্ষমতা রাখে। তার ইখতিয়ার আছে,
সে সমস্তই ওসীয়্যত করে দিতে পারে অথবা সমস্তই কাউকেও দিতে পারে তখন মালিকের অনুমতি
চাওয়া ও ওয়ারিসদের অনুমতি দেয়া অনর্থক। আর যদি রোগী ওয়ারিসদেরকে তার মৃত্যুর সময়
বলে যে, তোমাদের মীরাস আমাকে হেবা (দান) করে দাও, সে হেবাকারীদের প্রদত্ত সম্পদে
কিন্তু রোগী কোন পরিবর্তন করেনি এবং মারা গিয়েছে তবে ঐ সকল অংশ ওয়ারিসগণ পাবে।
কিন্তু যদি রোগী বলে যে, ঐ ওয়ারিস বড়ই দুর্বল। আমি ভাল মনে করি যে, তুমি তোমার অংশ
তাকে হেবা করে দাও। যদি সে হেবা করে দেয়, তবে তা জায়েয হবে।
যদি ওয়ারিস নিজ হিস্যা মৃত ব্যক্তিকে দান করে দেয় এবং মৃত ব্যক্তি সেখান হতে
কাউকেও কিছু দেয় আর কিছু বাকী থাকে, ঐ বাকী অংশ ঐ ওয়ারিসই পাবে।
মালিক (র) বলেন যদি কোন ব্যক্তি (ওয়ারিসের জন্য) ওসীয়্যতের পরে জানতে পারল যে, সে
ওয়ারিসকে যা দিয়েছিল তা সে গ্রহণ করেনি এবং অন্য ওয়ারিসগণও তার অনুমতি দেয়নি তবে
তা ওয়ারিসগণেরই হক, আল্লাহ্র নির্দেশ অনুযায়ী বন্টন হবে। কেননা মৃত ব্যক্তি এখানে
এক তৃতীয়াংশের মধ্য থেকে কিছু দিতে চায়নি।
পরিচ্ছেদঃ
৬
যে পুরুষ নপুংসক তার
এবং বাচ্চার মালিক কে হবে?
১৪৫৫
حَدَّثَنِي
مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ مُخَنَّثًا كَانَ عِنْدَ
أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ
لِعَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَسْمَعُ يَا عَبْدَ اللهِ إِنْ فَتَحَ اللهُ عَلَيْكُمْ الطَّائِفَ
غَدًا فَأَنَا أَدُلُّكَ عَلَى ابْنَةِ غَيْلَانَ فَإِنَّهَا تُقْبِلُ بِأَرْبَعٍ
وَتُدْبِرُ بِثَمَانٍ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا
يَدْخُلَنَّ هَؤُلَاءِ عَلَيْكُمْ.
হিশাম ইব্নু উরওয়া
(র) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
এক
নপুংসক (হিজরা) ব্যক্তি উম্মুল মু‘মিনীন উম্মু সালমার নিকট বসা ছিল। সে আবদুল্লাহ্
ইব্নু আবূ উমাইয়াকে বলিতেছিল, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর
কথা শুনিতে ছিলেন যদি আল্লাহ্ তা‘আলা তায়েফে তোমাদেরকে আগামীকাল বিজয়ী করেন, তবে
তুমি গাইলানের মেয়েকে নিশ্চয় গ্রহণ করবে। কারণ যখন সে সম্মুখ দিয়ে আসে তখন তার
পেটে চারটি (ভাঁজ) থাকে আর যখন প্রস্থান করে তখন আটটি ভাঁজ নিয়ে প্রস্থান করে।
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (শুনে) বললেন এই সকল লোক যেন তোমাদের
নিকট আর না আসে। (বুখারী ৪৩২৪, ইমাম মুসলিম মুত্তাসিল সনদে ২১৮০, তবে ইমাম মালিক
কর্তৃক বর্ণিত সনদটি মুরসাল)
১৪৫৬
و
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ الْقَاسِمَ
بْنَ مُحَمَّدٍ يَقُوْلُ: كَانَتْ عِنْدَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ امْرَأَةٌ مِنْ
الْأَنْصَارِ فَوَلَدَتْ لَهُ عَاصِمَ بْنَ عُمَرَ ثُمَّ إِنَّهُ فَارَقَهَا
فَجَاءَ عُمَرُ قُبَاءً فَوَجَدَ ابْنَهُ عَاصِمًا يَلْعَبُ بِفِنَاءِ الْمَسْجِدِ
فَأَخَذَ بِعَضُدِهِ فَوَضَعَهُ بَيْنَ يَدَيْهِ عَلَى الدَّابَّةِ فَأَدْرَكَتْهُ
جَدَّةُ الْغُلَامِ فَنَازَعَتْهُ إِيَّاهُ حَتَّى أَتَيَا أَبَا بَكْرٍ
الصِّدِّيقَ فَقَالَ عُمَرُ ابْنِي وَقَالَتْ الْمَرْأَةُ ابْنِي فَقَالَ أَبُو
بَكْرٍ خَلِّ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُ قَالَ فَمَا رَاجَعَهُ عُمَرُ الْكَلَامَ قَالَ
و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ وَهَذَا الْأَمْرُ الَّذِي آخُذُ بِهِ فِي ذَلِكَ.
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু
সা‘ঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
একজন
আনসারী মেয়েলোক উমার ইব্নু খাত্তাব (রা)-এর স্ত্রী ছিলেন। তাঁর গর্ভে একটি ছেলে
সন্তান জন্মাল। তার নাম আসিম রাখা হয়েছিল। ইত্যবসরে উমার (রা) ঐ স্ত্রীকে তালাক
দিলেন। একদা উমার (রা) মসজিদে কুবার বারান্দায় এ সন্তানকে অন্যান্য ছেলের সাথে
খেলাধুলা করতে দেখতে পেলেন তিনি তার বাহুতে ধরে তাকে স্বীয় সাওয়ারীতে বসিয়ে নিলেন।
আসিমের মাতামহী (নানী) তা দেখে উমারকে বাধা দিলেন এবং তার সাথে ঝগড়া করতে লাগলেন।
অতঃপর উভয়ে আবূ বাকর সিদ্দীক (রা)-এর নিকট এসে সন্তানের দাবি জানালেন। আবূ বাকর
সিদ্দীক (রা) বললেন সন্তানটিকে উভয়ের মধ্যে ছেড়ে দাও (সে যাকে গ্রহণ করে তারই
হবে)। উমার (রা) এতে চুপ হয়ে গেলেন। মালিক (র) বলেন, এ ক্ষেত্রে আমিও এই অভিমত
পোষণ করি। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
৭
মাল বিক্রয়ের পর তাতে
ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে ভর্তুকী কে দিবে?
১
قَالَ يَحْيَى سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الرَّجُلِ
يَبْتَاعُ السِّلْعَةَ مِنْ الْحَيَوَانِ أَوْ الثِّيَابِ أَوْ الْعُرُوضِ
فَيُوجَدُ ذَلِكَ الْبَيْعُ غَيْرَ جَائِزٍ فَيُرَدُّ وَيُؤْمَرُ الَّذِي قَبَضَ
السِّلْعَةَ أَنْ يَرُدَّ إِلَى صَاحِبِهِ سِلْعَتَهُ قَالَ مَالِك فَلَيْسَ
لِصَاحِبِ السِّلْعَةِ إِلَّا قِيمَتُهَا يَوْمَ قُبِضَتْ مِنْهُ وَلَيْسَ يَوْمَ
يَرُدُّ ذَلِكَ إِلَيْهِ وَذَلِكَ أَنَّهُ ضَمِنَهَا مِنْ يَوْمَ قَبَضَهَا فَمَا
كَانَ فِيهَا مِنْ
نُقْصَانٍ بَعْدَ ذَلِكَ كَانَ عَلَيْهِ فَبِذَلِكَ كَانَ نِمَاؤُهَا
وَزِيَادَتُهَا لَهُ وَإِنَّ الرَّجُلَ يَقْبِضُ السِّلْعَةَ فِي زَمَانٍ هِيَ
فِيهِ نَافِقَةٌ مَرْغُوبٌ فِيهَا ثُمَّ يَرُدُّهَا فِي زَمَانٍ هِيَ فِيهِ
سَاقِطَةٌ لَا يُرِيدُهَا أَحَدٌ فَيَقْبِضُ الرَّجُلُ السِّلْعَةَ مِنْ الرَّجُلِ
فَيَبِيعُهَا بِعَشَرَةِ دَنَانِيرَ وَيُمْسِكُهَا وَثَمَنُهَا ذَلِكَ ثُمَّ
يَرُدُّهَا وَإِنَّمَا ثَمَنُهَا دِينَارٌ فَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَذْهَبَ مِنْ مَالِ
الرَّجُلِ بِتِسْعَةِ دَنَانِيرَ أَوْ يَقْبِضُهَا مِنْهُ الرَّجُلُ فَيَبِيعُهَا
بِدِينَارٍ أَوْ يُمْسِكُهَا وَإِنَّمَا ثَمَنُهَا دِينَارٌ ثُمَّ يَرُدُّهَا
وَقِيمَتُهَا يَوْمَ يَرُدُّهَا عَشَرَةُ دَنَانِيرَ فَلَيْسَ عَلَى الَّذِي
قَبَضَهَا أَنْ يَغْرَمَ لِصَاحِبِهَا مِنْ مَالِهِ تِسْعَةَ دَنَانِيرَ إِنَّمَا
عَلَيْهِ قِيمَةُ مَا قَبَضَ يَوْمَ قَبْضِهِ قَالَ وَمِمَّا يُبَيِّنُ ذَلِكَ
أَنَّ السَّارِقَ إِذَا سَرَقَ السِّلْعَةَ فَإِنَّمَا يُنْظَرُ إِلَى ثَمَنِهَا
يَوْمَ يَسْرِقُهَا فَإِنْ كَانَ يَجِبُ فِيهِ الْقَطْعُ كَانَ ذَلِكَ عَلَيْهِ
وَإِنْ اسْتَأْخَرَ قَطْعُهُ إِمَّا فِي سِجْنٍ يُحْبَسُ فِيهِ حَتَّى يُنْظَرَ
فِي شَأْنِهِ وَإِمَّا أَنْ يَهْرُبَ السَّارِقُ ثُمَّ يُؤْخَذَ بَعْدَ ذَلِكَ
فَلَيْسَ اسْتِئْخَارُ قَطْعِهِ بِالَّذِي يَضَعُ عَنْهُ حَدًّا قَدْ وَجَبَ
عَلَيْهِ يَوْمَ سَرَقَ وَإِنْ رَخُصَتْ تِلْكَ السِّلْعَةُ بَعْدَ ذَلِكَ وَلَا
بِالَّذِي يُوجِبُ عَلَيْهِ قَطْعًا لَمْ يَكُنْ وَجَبَ عَلَيْهِ يَوْمَ أَخَذَهَا
إِنْ غَلَتْ تِلْكَ السِّلْعَةُ بَعْدَ ذَلِكَ
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
কেউ
যদি কোন জীব কিংবা কাপড় কিংবা অন্য কোন বস্তু খরিদ করল, অতঃপর তাতে ত্রুটি লক্ষ্য
করা গেল যাতে বিক্রয় নাজায়েয সাব্যস্ত হল, তখন ক্রেতাকে বলা হবে, দোষী মাল
বিক্রেতাকে ফিরিয়ে দাও। মালিক (র) বলেন, বিক্রেতার দোষী মালের ঐ দিনের মূল্য
পাওয়ার অধিকার ছিল, যেই দিন তা বিক্রয় করা হয়েছিল, ফেরত দেয়ার দিনের মূল্য নয়। যেই
দিন ক্রেতা তা ক্রয় করেছিল, সেই দিন হতে তা ক্রেতার অধীনে ছিল এবং বর্তমানে মাল
দোষী সাব্যস্ত হলে তা ক্রেতার উপরই বর্তিবে। মালের মূল্য বৃদ্ধি হলেও ক্রেতাই
মালিক হবে, কোন সময় এইরূপও হয় যে, মাল ক্রয় করার সময় বাজারে মালের খুবই চাহিদা
থাকে অথচ মাল দোষী বলে ফেরত দেয়ার সময় উহার চাহিদা কমে যায়। বাজারে উহার চাহিদা
থাকাকালে এক ব্যক্তি দশ দীনার দ্বারা কোন বস্তু ক্রয় করল এবং কিছু দিন তা আটকে
রাখার পর যখন বাজারে চাহিদা কমে গেল এবং উহার মূল্য মাত্র এক দীনারে উপনীত হল তখন
তা ফেরত দেয়ায় বিক্রেতার নয় দীনার ক্ষতি হল। তা হওয়া উচিত নয় বরং যেই দিন মাল
বিক্রয় করেছিল সেই দিনের মূল্য বিক্রেতা পাবে। অর্থাৎ দশ দীনার।
পরিচ্ছেদঃ
৮
প্রশাসন ও বিচার
সম্পর্কীয় বিবিধ আহকাম এবং বিচারকের দায়িত্ব গ্রহণকে অপছন্দ করা
১৪৫৭
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ أَبَا
الدَّرْدَاءِ كَتَبَ إِلَى سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ أَنْ هَلُمَّ إِلَى الْأَرْضِ
الْمُقَدَّسَةِ فَكَتَبَ إِلَيْهِ سَلْمَانُ إِنَّ الْأَرْضَ لَا تُقَدِّسُ
أَحَدًا وَإِنَّمَا يُقَدِّسُ الْإِنْسَانَ عَمَلُهُ وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّكَ
جُعِلْتَ طَبِيبًا تُدَاوِي فَإِنْ كُنْتَ تُبْرِئُ فَنَعِمَّا لَكَ وَإِنْ كُنْتَ
مُتَطَبِّبًا فَاحْذَرْ أَنْ تَقْتُلَ إِنْسَانًا فَتَدْخُلَ النَّارَ فَكَانَ
أَبُو الدَّرْدَاءِ إِذَا قَضَى بَيْنَ اثْنَيْنِ ثُمَّ أَدْبَرَا عَنْهُ نَظَرَ
إِلَيْهِمَا وَقَالَ ارْجِعَا إِلَيَّ أَعِيدَا عَلَيَّ قِصَّتَكُمَا مُتَطَبِّبٌ
وَاللهِ.
قَالَ و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ مَنْ اسْتَعَانَ عَبْدًا بِغَيْرِ إِذْنِ
سَيِّدِهِ فِي شَيْءٍ لَهُ بَالٌ وَلِمِثْلِهِ إِجَارَةٌ فَهُوَ ضَامِنٌ لِمَا
أَصَابَ الْعَبْدَ إِنْ أُصِيبَ الْعَبْدُ بِشَيْءٍ وَإِنْ سَلِمَ الْعَبْدُ
فَطَلَبَ سَيِّدُهُ إِجَارَتَهُ لِمَا عَمِلَ فَذَلِكَ لِسَيِّدِهِ وَهُوَ
الْأَمْرُ عِنْدَنَا ২৮৪৪-قَالَ
و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الْعَبْدِ يَكُونُ بَعْضُهُ حُرًّا وَبَعْضُهُ
مُسْتَرَقًّا إِنَّهُ يُوقَفُ مَالُهُ بِيَدِهِ وَلَيْسَ لَهُ أَنْ يُحْدِثَ فِيهِ
شَيْئًا وَلَكِنَّهُ يَأْكُلُ فِيهِ وَيَكْتَسِي بِالْمَعْرُوفِ فَإِذَا هَلَكَ
فَمَالُهُ لِلَّذِي بَقِيَ لَهُ فِيهِ الرِّقُّ.
قَالَ و سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ الْوَالِدَ
يُحَاسِبُ وَلَدَهُ بِمَا أَنْفَقَ عَلَيْهِ مِنْ يَوْمِ يَكُونُ لِلْوَلَدِ مَالٌ
نَاضًّا كَانَ أَوْ عَرْضًا إِنْ أَرَادَ الْوَالِدُ ذَلِكَ.
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু
সা‘ঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ দারদা (রা) সালমান ফারসী
(রা)-এর নিকট লিখেছেন যে, পবিত্র ভূমিতে চলে আস। উত্তরে সালমান লিখলেন, ভূমি
কাউকেও পবিত্র করতে সক্ষম নয়, বরং মানুষকে তার আমলই পবিত্র করে। শুনতে পেলাম,
তোমাকে ডাক্তার (বিচারপতি) নিযুক্ত করা হয়েছে এবং মানুষকে ঔষধপত্র দিয়ে চিকিৎসা
করে থাক, যদি তুমি চিকিৎসাশাস্ত্র শিখে তা করে থাক এবং এতে রোগ নিরাময় হয় তবে তা
উত্তম, আর যদি চিকিৎসা শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ না করে তুমি চিকিৎসক সেজে থাক তবে
সাবধান ও সতর্ক হও- এমন না হয় যে, তোমার ভুল সিদ্ধান্তের দ্বারা মানুষকে মেরে
ফেলবে, ফলে তুমি দোযখে প্রবেশ করবে। অতঃপর তিনি যখন কোন দুই ব্যক্তির মধ্যে ফয়সালা
করতেন এবং উভয়ে চলে যেতে শুরু করলে তখন উভয়কে বলতেন তোমরা পুনরায় তোমাদের ঘটনা
বর্ণনা কর, আমি আবার বিবেচনা করি। কারণ আমি তোমাদের মূল উদ্দেশ্য জানি না, কেবল
শুনে চিকিৎসা করি। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন যদি কেউ অন্যের গোলামকে মালিকের অনুমতি ব্যতীত কোন শুরুত্বপূর্ণ
কাজে নিযুক্ত করে এবং সেই কাজ পারিশ্রমিকযোগ্য, তদ্দারা গোলামের কোন ক্ষতি হলে,
কর্মে নিয়োগকারীকে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর ক্রীতদাস অক্ষত অবস্থায় কর্ম সম্পাদন
করলে এবং তার কর্তা পারিশ্রমিক দাবি করলে তবে পারিশ্রমিক কর্তার প্রাপ্য হবে, এটাই
আমাদের ফয়সালা।
মালিক (র) বলেন গোলামের কিছু অংশ যদি স্বাধীন এবং কিছু অংশ পরাধীন থাকে তবে
গোলামের মাল তার হাতেই থাকবে, তা সে কোন নতুন কাজে ব্যয় করতে পারবে না। কেবল নিজের
ভরণপোষণে নিয়ম মুতাবিক ব্যয় করবে। তার মৃত্যুর পর যা অবশিষ্ট থাকে তা যে মালিক তার
অংশ আযাদ করেনি সে পাবে।
মালিক (র) বলেন আমাদের ফায়সালা হল, যে দিন সন্তান ধনবান হয়ে যায়, পিতা ইচ্ছা করেন
যে, যা তার প্রতি খরচ করা হয়েছে তা ফেরত নিবে, তবে যেদিন হতে তার জন্য খরচ করা
হয়েছে সেদিন হতে হিসাব করে খরচ আদায় করে নিবে, মাল নগদ অর্থই হোক বা অন্য কোন
বস্তু হোক।
[১] এখানে ডাক্তার অর্থ বিচারক। আবূ দারদা দামিশকের কাযী এবং
বিচারক ছিলেন। শরীয়াতের আহকাম সম্বন্ধে পূর্ণ অবগত আছে কিনা সেই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ
করে সালমান তার নিকট পত্র লিখেছিলেন। আবূ দারদা নিজেকে অনুপযুক্ত মনে করে আল্লাহর নিকট
প্রার্থনা করতেন।
১৪৫৮
و
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ دَلَافٍ الْمُزَنِيِّ
عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ رَجُلًا مِنْ جُهَيْنَةَ كَانَ يَسْبِقُ الْحَاجَّ
فَيَشْتَرِي الرَّوَاحِلَ فَيُغْلِي بِهَا ثُمَّ يُسْرِعُ السَّيْرَ فَيَسْبِقُ
الْحَاجَّ فَأَفْلَسَ فَرُفِعَ أَمْرُهُ إِلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَقَالَ
أَمَّا بَعْدُ أَيُّهَا النَّاسُ فَإِنَّ الْأُسَيْفِعَ أُسَيْفِعَ جُهَيْنَةَ
رَضِيَ مِنْ دِينِهِ وَأَمَانَتِهِ بِأَنْ يُقَالَ سَبَقَ الْحَاجَّ أَلَا
وَإِنَّهُ قَدْ دَانَ مُعْرِضًا فَأَصْبَحَ قَدْ رِينَ بِهِ فَمَنْ كَانَ لَهُ
عَلَيْهِ دَيْنٌ فَلْيَأْتِنَا بِالْغَدَاةِ نَقْسِمُ مَالَهُ بَيْنَهُمْ
وَإِيَّاكُمْ وَالدَّيْنَ فَإِنَّ أَوَّلَهُ هَمٌّ وَآخِرَهُ حَرْبٌ.
উমার ইব্নু আবদির
রহমান ইব্নু দালাফ মুযানী (র) থেকে বর্ণিতঃ
জুহাইনা
গোত্রের এক ব্যক্তি (উসাইফা) সকল হাজীর পূর্বে যেয়ে ভাল ভাল উট উচ্চমূল্যে খরিদ
করে নিতে এবং তাড়াতাড়ি মক্কা শরীফ যেয়ে পৌঁছাত। এক সময় সে গরীব হয়ে পড়ল।
পাওনাদারগণ স্বীয় টাকা আদায়ের জন্য উমার (রা) ইব্নু খাত্তাবের নিকট বিচার প্রার্থী
হল। উমার (রা) হামদ ও সালাত পাঠ করার পর সকলকে সম্বোধন করে বললেন! উসাইফা “জুহাইনা
গোত্রের উসাইফা” টাকা কর্জ করেছিল এবং আমানত হস্তক্ষেপ করেছিল। কারণ লোকেরা বলে
থাকে যে, উসাইফা সকলের পূর্বে মক্কা শরীফ পৌঁছে যায়। তোমরা জেনে রাখ, সে কর্জ করে
তা আদায় করার মনোবৃত্তি রাখেনি। বর্তমানে সে দরিদ্র হয়ে পড়েছে, অথচ কর্জ তার সমুদয়
মাল গ্রাস করে ফেলেছে। পাওনাদারগণ আগামীকাল সকালে আমার কাছে উপস্থিত হবে। আমি তার
সকল মাল পাওনাদারকে বন্টন করে দিব। তোমরা কর্জ নিতে হুঁশিয়ার থেক। কেননা, কর্জের
প্রারম্ভ হচ্ছে দুশ্চিন্তা, পরিশেষ হচ্ছে কলহ-বিবাদ। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
৯
গোলাম যদি কারো ক্ষতি
করে কিংবা কাউকেও আঘাত করে, এর হুকুম
১
قَالَ
يَحْيَى سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ السُّنَّةُ عِنْدَنَا فِي جِنَايَةِ الْعَبِيدِ
أَنَّ كُلَّ مَا أَصَابَ الْعَبْدُ مِنْ جُرْحٍ جَرَحَ بِهِ إِنْسَانًا أَوْ
شَيْءٍ اخْتَلَسَهُ أَوْ حَرِيسَةٍ احْتَرَسَهَا أَوْ ثَمَرٍ مُعَلَّقٍ جَذَّهُ
أَوْ أَفْسَدَهُ أَوْ سَرِقَةٍ سَرَقَهَا لَا قَطْعَ عَلَيْهِ فِيهَا إِنَّ ذَلِكَ
فِي رَقَبَةِ الْعَبْدِ لَا يَعْدُو ذَلِكَ الرَّقَبَةَ قَلَّ ذَلِكَ أَوْ كَثُرَ
فَإِنْ شَاءَ سَيِّدُهُ أَنْ يُعْطِيَ قِيمَةَ مَا أَخَذَ غُلَامُهُ أَوْ أَفْسَدَ
أَوْ عَقْلَ مَا جَرَحَ أَعْطَاهُ وَأَمْسَكَ غُلَامَهُ وَإِنْ شَاءَ أَنْ
يُسْلِمَهُ أَسْلَمَهُ وَلَيْسَ عَلَيْهِ شَيْءٌ غَيْرُ ذَلِكَ فَسَيِّدُهُ فِي
ذَلِكَ بِالْخِيَارِ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
গোলাম
অপরাধ করলে আমাদের নিকট স্বীকৃত নিয়ম এই গোলাম যদি কাউকেও আঘাত করে কিংবা কারো কোন
বস্তু গোপনে নিয়ে নেয়, অথবা স্বীয় ঠিকানায় ফিরার পূর্বে চারণ ক্ষেত্র বা পর্বত হতে
মেষ বা বকরী চুরি করে কিংবা কারো বৃক্ষের ফল কেটে আনে বা নষ্ট করে কিংবা অন্য
বস্তু চুরি করে নেয়, এতে তার হাত কর্তন করার হুকুম জারি হবে না। তবে গোলাম এর জন্য
দায়ী হবে। এমতাবস্থায় গোলামের মালিক ইচ্ছা করলে বর্ণিত বস্তুগুলোর মূল্য আদায় করে
কিংবা আঘাতের ক্ষতিপূরণ আদায় করে গোলামকে মুক্ত করে নিজে গোলাম রেখে দিবে কিংবা
উক্ত পণ্যের বিনিময়ে গোলাম তাদেরকে দিয়ে দিবে। কিন্তু গোলামের মূল্য যদি বিনিময়
মূল্যের চাইতে কম হয় তবে বর্ধিত মূল্য দিতে হবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১০
যা সন্তানকে হেবা
(দান) করা জায়েয হবে
১৪৫৯
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ قَالَ مَنْ نَحَلَ وَلَدًا لَهُ
صَغِيرًا لَمْ يَبْلُغْ أَنْ يَحُوزَ نُحْلَهُ فَأَعْلَنَ ذَلِكَ لَهُ وَأَشْهَدَ
عَلَيْهَا فَهِيَ جَائِزَةٌ وَإِنْ وَلِيَهَا أَبُوْهُ
قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ مَنْ نَحَلَ ابْنًا لَهُ صَغِيرًا ذَهَبًا
أَوْ وَرِقًا ثُمَّ هَلَكَ وَهُوَ يَلِيهِ إِنَّهُ لَا شَيْءَ لِلْابْنِ مِنْ
ذَلِكَ إِلَّا أَنْ يَكُونَ الْأَبُ عَزَلَهَا بِعَيْنِهَا أَوْ دَفَعَهَا إِلَى
رَجُلٍ وَضَعَهَا لِابْنِهِ عِنْدَ ذَلِكَ الرَّجُلِ فَإِنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَهُوَ
جَائِزٌ لِلْابْنِ.
সা‘ঈদ ইব্নু
মুসায়্যাব (র) থেকে বর্ণিতঃ
উসমান ইব্নু আফফান (রা) বলেছেন,
যে ব্যক্তি নিজের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানকে কোন বস্তু দান করে, যে সন্তান এখনও উহা
গ্রহণ করার উপযুক্ত হয়নি এবং এই দানের কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করে দেয় এবং তাতে
সাক্ষী নিযুক্ত করে তবে এটা জায়েয হবে যদিও তার অভিভাবক পিতা থাকেন। (হাদীসটি ইমাম
মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন আমাদের নিয়ম মতে যদি কোন ব্যক্তি অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানকে স্বর্ণ
কিংবা রৌপ্য দান করে, অতঃপর তার সন্তান মারা যায় এবং পিতাই অভিভাবক থাকে তবে ঐ মাল
সন্তানের হবে না বরং পিতারই থাকবে। হ্যাঁ, যদি পিতা সেই মাল পৃথক করে দিয়ে থাকে
কিংবা কারো কাছে আমানত রেখে থাকে তবে তা সন্তানের বলে সাব্যস্ত হবে।
No comments