মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় "বদনজর সংক্রান্ত অধ্যায়"
পরিচ্ছেদঃ
১
বদ নজরের প্রভাব হইতে
মুক্তির জন্য ওযূ করা প্রসঙ্গে
১৬৮৮
و
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ
بْنِ حُنَيْفٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَاهُ يَقُولُ اغْتَسَلَ أَبِي سَهْلُ بْنُ
حُنَيْفٍ بِالْخَرَّارِ فَنَزَعَ جُبَّةً كَانَتْ عَلَيْهِ وَعَامِرُ بْنُ
رَبِيعَةَ يَنْظُرُ قَالَ وَكَانَ سَهْلٌ رَجُلًا أَبْيَضَ حَسَنَ الْجِلْدِ قَالَ
فَقَالَ لَهُ عَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ وَلَا جِلْدَ
عَذْرَاءَ قَالَ فَوُعِكَ سَهْلٌ مَكَانَهُ وَاشْتَدَّ وَعْكُهُ فَأُتِيَ رَسُولُ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأُخْبِرَ أَنَّ سَهْلًا وُعِكَ وَأَنَّهُ
غَيْرُ رَائِحٍ مَعَكَ يَا رَسُولَ اللهِ فَأَتَاهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ سَهْلٌ بِالَّذِي كَانَ مِنْ أَمْرِ عَامِرٍ
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَامَ يَقْتُلُ أَحَدُكُمْ
أَخَاهُ أَلَّا بَرَّكْتَ إِنَّ الْعَيْنَ حَقٌّ تَوَضَّأْ لَهُ فَتَوَضَّأَ لَهُ
عَامِرٌ فَرَاحَ سَهْلٌ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
لَيْسَ بِهِ بَأْسٌ
আবূ উমামা ইবনু সহল ইব্নু হুনাইফ (র) থেকে বর্ণিতঃ
(জুহফার
নিকটবর্তী) খাব্বার নামক স্থানে আমার পিতা আবূ সহল (ইব্নু হানীফ) গোসল করার মনস্থ
করে জুব্বা খুলে ফেললেন। আমির ইব্নু রবীয়া দেখতেছিলেন। আমার পিতা সহল সুন্দর ও
সুদর্শন লোক ছিলেন। আমির বললেন, আজকের মতো আর কোনদিন আমি এত সুন্দর মানুষ দেখিনি,
এমন কি এত সুন্দর দেহবিশিষ্ট কোন যুবতীও দেখিনি। (আমিরের এই কথা বলার সঙ্গে
সঙ্গেই) তৎক্ষণাৎ সহলের গায়ে জ্বর এল এবং জ্বরের বেগ ভীষণ হল। অতঃপর এক ব্যক্তি
এসে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বলল, সহলের জ্বর এসেছে এবং
সে আপনার সাথে যেতে পারবে না। তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সহলের কাছে এলেন, সহল আমিরের সেই কথা নকল করে শোনালেন। এটা শুনে রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন মুসলমান নিজের ভাইকে কেন হত্যা করে ?
অতঃপর আমিরকে বললেন, তুমি (বারাকাল্লাহ) বললে না কেন? বদ নজর (কুদৃষ্টি) সত্য।
সহলের জন্য ওযূ কর, তাকেও ওযুর পানি দাও। আমির সহলের জন্য ওযূ করলেন এবং ওযুর পানি
তাকে দিলেন। অতঃপর সহল ভাল হয়ে গেলেন এবং রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে গেলেন, আর তাঁর কোন অসুবিধা তখন ছিল না। (বুখারী ৫৭৪০, মুসলিম
২১৮৭)
১৬৮৯
و
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ
حُنَيْفٍ أَنَّهُ قَالَ رَأَى عَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ سَهْلَ بْنَ حُنَيْفٍ
يَغْتَسِلُ فَقَالَ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ وَلَا جِلْدَ مُخْبَأَةٍ فَلُبِطَ
سَهْلٌ فَأُتِيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقِيلَ يَا
رَسُولَ اللهِ هَلْ لَكَ فِي سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ وَاللهِ مَا يَرْفَعُ رَأْسَهُ
فَقَالَ هَلْ تَتَّهِمُونَ لَهُ أَحَدًا قَالُوا نَتَّهِمُ عَامِرَ بْنَ رَبِيعَةَ
قَالَ فَدَعَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامِرًا
فَتَغَيَّظَ عَلَيْهِ وَقَالَ عَلَامَ يَقْتُلُ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ أَلَّا
بَرَّكْتَ اغْتَسِلْ لَهُ فَغَسَلَ عَامِرٌ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ وَمِرْفَقَيْهِ
وَرُكْبَتَيْهِ وَأَطْرَافَ رِجْلَيْهِ وَدَاخِلَةَ إِزَارِهِ فِي قَدَحٍ ثُمَّ
صُبَّ عَلَيْهِ فَرَاحَ سَهْلٌ مَعَ النَّاسِ لَيْسَ بِهِ بَأْسٌ
আবূ উমামা ইবনু সহল
(র) থেকে বর্ণিতঃ
‘আমির
ইব্নু রবী‘আ সহল ইব্নু হানীফকে গোসল করতে দেখে বললেন, আজ আমি যেই সুন্দর মানুষ
দেখলাম, এই রকম কাউকেও দেখিনি, এমন কি সুন্দরী যুবতীও এত সুন্দর দেহবিশিষ্ট
দেখিনি। (‘আমিরের) এই কথা বলার সাথে সাথে সহল সেখানে লুটাইয়া পড়ল। এক ব্যক্তি
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে হাযির হয়ে আরয করল, ইয়া
রসূলাল্লাহ! আপনি সহল ইব্নু হুনাইপ (বা হানীফ)-এর কিছু খবর রাখেন কি ? আল্লাহর
কসম! সে মস্তক উত্তোলন করতে পারছে না। তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি মনে করছ যে, তাকে কেউ বদনজর দিয়েছে ? লোকটি বলল, হ্যাঁ
আমর ইব্নু রবী‘আ (বদনজর দিয়েছে)। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আমির ইব্নু রবী‘আকে ডেকে ক্রোধান্বিত হয়ে তাঁকে বললেন, তোমাদের কেউ নিজের মুসলমান
ভাইকে কেন হত্যা করছ ? তুমি بارك الله কেন
বললে না ? এইবার তুমি তার জন্য গোসল কর। অতএব ‘আমির হাত মুখ, হাতের কনুই, হাঁটু,
পায়ের আশেপাশের স্থান এবং লুঙ্গির নিচের আবৃত দেহাংশ ধৌত করে ঐ পানি একটি পাত্রে
জমা করল। সেই পানি সহলের দেহে ঢেলে দেয়া হল। অতঃপর সহল সুস্থ হয়ে গেল এবং সকলের
সাথে রওয়ানা হল। (সহীহ, ইবনু মাজাহ ৩৫০৯, আহমাদ ১৬০২৩, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন
[মিশকাত- ৪৫৬২])
পরিচ্ছেদঃ
২
বদ নজরের জন্য ঝাড়ফুঁক
করা প্রসঙ্গে
১৬৯০
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدِ بْنِ قَيْسٍ
الْمَكِّيِّ أَنَّهُ قَالَ
دُخِلَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِابْنَيْ جَعْفَرِ
بْنِ أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ لِحَاضِنَتِهِمَا مَا لِي أَرَاهُمَا ضَارِعَيْنِ
فَقَالَتْ حَاضِنَتُهُمَا يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّهُ تَسْرَعُ إِلَيْهِمَا
الْعَيْنُ وَلَمْ يَمْنَعْنَا أَنْ نَسْتَرْقِيَ لَهُمَا إِلَّا أَنَّا لَا
نَدْرِي مَا يُوَافِقُكَ مِنْ ذَلِكَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ اسْتَرْقُوا لَهُمَا فَإِنَّهُ لَوْ سَبَقَ شَيْءٌ الْقَدَرَ
لَسَبَقَتْهُ الْعَيْنُ
হুমাইদ ইবনু কাইস
মক্কী (র) থেকে বর্ণিতঃ
জা‘ফর
ইব্নু আবী তালিব (রা)-এর দুইটি ছেলেকে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে আসা হল। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাদের আয়া (মহিলা খাদেম)-এর কাছে জিজ্ঞেস করলেন, এই ছেলেরা এত জীর্ণশীর্ণ (দুর্বল)
কেন ? আয়া উত্তর দিল, ইয়া রসূলাল্লাহ! তাদের উপর খুব তাড়াতাড়ি (খুব সহজেই) বদ নজর
লেগে যায়। আর তাদেরকে কোন রকম ঝাড়ফুঁক করাইনি। কারণ হয়ত বা আপনি উহা পছন্দ করেন
না। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এদের জন্য ঝাড়ফুঁকের
ব্যবস্থা কর। কেননা যদি কোন বস্তু তকদীরের (কপালের লেখার) অগ্রে কোন কর্ম সম্পন্ন
করতে পারত, তবে উহা বদনজর। [১] (সহীহ, তিরমিযী ২০৫৯, ইবনু মাজাহ ৩৫১০, আলবানী
হাদীসটি সহীহ বলেছেন [সিলসিলা সহীহা ১২৫২] এবং ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি
মুরসাল)
[১] তকদীরে যা লেখা আছে তাই হয়। বদ নজরও তাকদীরের অন্তর্ভূক্ত।
তাবীয-দু‘আ ও ঝাড়ফুঁক ইত্যাদিতে যদি শরীআত-বিরুদ্ধ কোন শব্দ বা বাক্য না থাকে, তবে
ঐসব তাবীয-দু‘আ ঝড়ফুঁক করানোতে ক্ষতির কিছু নেই।
১৬৯১
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ
أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ حَدَّثَهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ بَيْتَ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي الْبَيْتِ صَبِيٌّ يَبْكِي فَذَكَرُوا لَهُ أَنَّ بِهِ
الْعَيْنَ قَالَ عُرْوَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
أَلَا تَسْتَرْقُونَ لَهُ مِنْ الْعَيْنِ
উরওয়া ইবনু যুবাইর
(র) থেকে বর্ণিতঃ
নবী-পত্নী
উম্মে সালমা (রা)-এর ঘরে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন।
তখন ঘরে একটি বাচ্চা ক্রন্দন করিতেছিল। লোকেরা আরয করল, বাচ্চাটির উপর বদনজর
লেগেছে। তখন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বদনজরের জন্য
ঝাড়ফুঁক করাচ্ছো না কেন ? (বুখারী ৫৭৪৯, মুসলিম ২১৯৭, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক
বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
পরিচ্ছেদঃ
৩
রুগ্ন ব্যক্তির
সওয়াবের আশা করা প্রসঙ্গে
১৬৯২
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ
عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا مَرِضَ
الْعَبْدُ بَعَثَ اللهُ تَعَالَى إِلَيْهِ مَلَكَيْنِ فَقَالَ انْظُرَا مَاذَا
يَقُولُ لِعُوَّادِهِ فَإِنْ هُوَ إِذَا جَاءُوهُ حَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ
رَفَعَا ذَلِكَ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَهُوَ أَعْلَمُ فَيَقُولُ لِعَبْدِي
عَلَيَّ إِنْ تَوَفَّيْتُهُ أَنْ أُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ وَإِنْ أَنَا شَفَيْتُهُ
أَنْ أُبْدِلَ لَهُ لَحْمًا خَيْرًا مِنْ لَحْمِهِ وَدَمًا خَيْرًا مِنْ دَمِهِ
وَأَنْ أُكَفِّرَ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ
আতা ইবনু ইয়াসার (র)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন (আল্লাহর) বান্দা রোগাক্রান্ত হয়
তখন আল্লাহ্ তা‘আলা তার কাছে দুইজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন এবং বলেন, রোগাক্রান্ত
ব্যক্তিকে যারা তাকে দেখতে আসে, সেই সমস্ত লোককে রোগী কি বলে, দেখ। যদি সে আগন্তুকদের
কাছে আল্লাহর প্রশংসা করে, তখন উক্ত দুইজন ফেরেশতা সেই প্রশংসা নিয়ে আল্লাহর
দরবারে হাজির হয়। (অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা সেই ফেরেশতাদ্বয়ের কাছে জিজ্ঞেস করেন, সে
কি বলেছে) অথচ তিনি উহা সবচাইতে বেশি অবগত আছেন। অতঃপর (ফেরেশতা যখন সেই প্রশংসার
কথা বলেন তখন) আল্লাহ্ বলেন, যদি আমি আমার সেই (রুগ্ন) বান্দাকে (এই রোগের
মাধ্যমে) ওফাত দান করি, তবে আমি তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাব। আর যদি সুস্থ করে দেই,
তবে আগের চাইতে অধিক গোশত ও রক্ত দান করব (অর্থাৎ ভাল স্বাস্থ্য দান করব) এবং তার
গুনাহ মাফ করে দিব। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
[১] সুতরাং যার উপর কোন মুসিবত আসে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি
প্রকৃত ঈমানদার হয়, তবে বুঝতে হবে যে, এই মুসিবত তার জন্য মঙ্গলময় হবে।
১৬৯৩
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُصَيْفَةَ
عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ زَوْجَ
النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَقُولُ
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ مِنْ
مُصِيبَةٍ حَتَّى الشَّوْكَةُ إِلَّا قُصَّ بِهَا أَوْ كُفِّرَ بِهَا مِنْ
خَطَايَاهُ لَا يَدْرِي يَزِيدُ أَيُّهُمَا قَالَ عُرْوَةُ
নবী-পত্নী আয়িশা
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, মু’মিন যদি কোন মুসিবতে পতিত হয়, এমন কি
যদি (সামান্য) একটি কাঁটাও বিঁধে, তবে তার গুনাহ মাফ করা হয়। (সহীহ, মুসলিম ২৫৭২)
১৬৯৪
و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ
بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْحُبَابِ سَعِيدَ بْنَ
يَسَارٍ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يُرِدْ اللهُ بِهِ
خَيْرًا يُصِبْ مِنْهُ
আবূ হুরায়রা (রা)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা যার মঙ্গল চাহেন তার উপর
মুসিবত ঢেলে দেন। (সহীহ, বুখারী ৫৬৪৫)
১৬৯৫
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ
أَنَّ رَجُلًا جَاءَهُ الْمَوْتُ فِي زَمَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَقَالَ رَجُلٌ هَنِيئًا لَهُ مَاتَ وَلَمْ يُبْتَلَ بِمَرَضٍ فَقَالَ
رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيْحَكَ وَمَا يُدْرِيكَ لَوْ
أَنَّ اللهَ ابْتَلَاهُ بِمَرَضٍ يُكَفِّرُ بِهِ عَنْهُ مِنْ سَيِّئَاتِهِ
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ
(র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এক ব্যক্তি মারা গেল, তখন অপর এক ব্যক্তি
বলল, বাহ্! কী চমৎকার মৃত্যুবরণ করল! কোন রকম রোগে আক্রান্তও হল না! রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হতভাগা তুমি ইহা কি বলিতেছ ? তুমি কি জান,
আল্লাহ্ তা‘আলা যদি তাকে কোন রোগে আক্রান্ত করতেন, তবে তার গুনাহ মাফ হয়ে যেত ?
(হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
৪
রোগমুক্তির জন্য
তা‘বীয বা ঝাড়ফুঁক করা প্রসঙ্গে
১৬৯৬
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُصَيْفَةَ
أَنَّ عَمْرَو بْنَ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبٍ السَّلَمِيَّ أَخْبَرَهُ أَنَّ
نَافِعَ بْنَ جُبَيْرٍ أَخْبَرَهُ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ
أَنَّهُ أَتَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ عُثْمَانُ
وَبِي وَجَعٌ قَدْ كَادَ يُهْلِكُنِي قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ امْسَحْهُ بِيَمِينِكَ سَبْعَ مَرَّاتٍ وَقُلْ أَعُوذُ
بِعِزَّةِ اللهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ قَالَ فَقُلْتُ ذَلِكَ
فَأَذْهَبَ اللهُ مَا كَانَ بِي فَلَمْ أَزَلْ آمُرُ بِهَا أَهْلِي وَغَيْرَهُمْ
উসমান ইবনু আবিল আস
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গিয়েছিলাম, আর (তখন) আমার এমন ব্যথা হচ্ছিল যে, আমি যেন
মারা যাব! অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার
(হৃদযন্ত্রের উপর) ডান হাত রেখে সাতবার এই দু‘আ পড়ে মালিশ কর
أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ
আমি যা অকল্যাণ অনুভব করছি, উহার ক্ষতি হতে আল্লাহর ই্জ্জত ও কুদরতের আশ্রয়
প্রার্থনা করছি। (উসমান বলেন) আমি তাই করলাম। আল্লাহ্ তা‘আলা আমার ব্যাথা দূর করে
দিলেন। অতঃপর আমি সর্বদা পরিবারের সকলকে এবং অপরাপর মানুষকে সেইরূপ করার নির্দেশ
দিতাম। [১] (সহীহ, মুসলিম ২২০২)
[১] উসমান ইবনু আবিল আস-এর হৃদযন্ত্রে ব্যথা ছিল বিধায় উহার
উপর হাত রেখে মালিশ করার নির্দেশ দান করা হয়েছে। তাই বোঝা গেল যে, শরীরের যেই স্থানে
ব্যথা হয় সেই স্থানে ডান হাত দ্বারা উক্ত আমল করলে নিশ্চয়ই ব্যথার উপশম হবে ইন্শাআল্লাহ্।
১৬৯৭
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ
عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا
اشْتَكَى يَقْرَأُ عَلَى نَفْسِهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ وَيَنْفِثُ قَالَتْ فَلَمَّا
اشْتَدَّ وَجَعُهُ كُنْتُ أَنَا أَقْرَأُ عَلَيْهِ وَأَمْسَحُ عَلَيْهِ
بِيَمِينِهِ رَجَاءَ بَرَكَتِهَا
আয়িশা (রা) থেকে
বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই অসুস্থ হতেন, তখন সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে
(নিজের উপর) ঝাড়ফুঁক করতেন। আয়িশা (রা) বলেন, (মৃত্যুর পূর্বে) যখন রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যথা অধিক হত, তখন আমি নিজে সেই সূরাদ্বয় পড়ে
বরকতের জন্য তাঁর (প্রিয় নবীর) ডান হাত দিয়ে মালিশ করে দিতাম। (বুখারী ৫০১৬,
মুসলিম ২১৯২)
১৬৯৮
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ وَهِيَ
تَشْتَكِي وَيَهُودِيَّةٌ تَرْقِيهَا فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ ارْقِيهَا بِكِتَابِ
اللهِ
‘আমরাহ্ বিনতে
আবদুর রহমান (রা) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
বাকর সিদ্দীক (রা) আয়িশা (রা)-এর কাছে গেলেন। তখন তিনি (আয়িশা) অসুস্থ ছিলেন এবং
জনৈক ইহুদী মহিলা (কিছু) পাঠ করে তাঁর উপর দম করিতেছিলেন। আবূ বাকর (রা) বললেন,
কালামুল্লাহ্ (তাওরাত বা কুরআন) পড়ে দম কর। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
৫
রোগীর চিকিৎসা
সম্বন্ধে
১৬৯৯
حَدَّثَنِي
عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ أَنَّ رَجُلًا فِي زَمَانِ رَسُولِ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصَابَهُ جُرْحٌ فَاحْتَقَنَ الْجُرْحُ الدَّمَ
وَأَنَّ الرَّجُلَ دَعَا رَجُلَيْنِ مِنْ بَنِي أَنْمَارٍ فَنَظَرَا إِلَيْهِ
فَزَعَمَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُمَا
أَيُّكُمَا أَطَبُّ فَقَالَا أَوَ فِي الطِّبِّ خَيْرٌ يَا رَسُولَ اللهِ فَزَعَمَ
زَيْدٌ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَنْزَلَ
الدَّوَاءَ الَّذِي أَنْزَلَ الْأَدْوَاءَ
যায়দ ইবনু আসলাম
(র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এক ব্যক্তির (শরীর) যখম হয়েছিল। সেই যখমে
রক্ত জমে গিয়েছিল। অতঃপর লোকটি বনী আনমার গোত্রের দুই ব্যক্তিকে (উহার চিকিৎসার
জন্য) ডেকে আনল। তারা এসে (যখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে) দেখল। রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের উভয়ের মধ্যে কে
চিকিৎসায় অধিক অভিজ্ঞ ? তারা বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ্! চিকিৎসায় বিজ্ঞানে কোন উপকার
আছে কি ? রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঔষধ তো তিনিই নাযিল
করেছেন, যিনি রোগ নাযিল করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
১৭০০
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ بَلَغَنِي أَنَّ سَعْدَ
بْنَ زُرَارَةَ اكْتَوَى فِي زَمَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ مِنْ الذُّبْحَةِ فَمَاتَ
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ
(র) থেকে বর্ণিতঃ
আমার
কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে
সা‘দ ইব্নু যুরারা (রা) গলার ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা হিসাবে লোহা পুড়িয়ে
লাগিয়ে ছিলেন। কিন্তু তিনি মারা যান। (হাসান, ইবনু মাজাহ ৩৪৯২. আলবানী হাদীসটি
হাসান বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে ইবনু মাজাহ] আর ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত
হাদীসটি মুরসাল)
১৭০১
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ اكْتَوَى
مِنْ اللَّقْوَةِ وَرُقِيَ مِنْ الْعَقْرَبِ
নাফি‘ (র) থেকে
বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রা)
লকওয়া-এর জন্য লোহা পুড়িয়ে দাগ লাগিয়েছিলেন এবং বিচ্ছুর (দংশনের) জন্য ঝাড়ফুঁক
করেছিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
লকওয়া এক ধরনের জটিল রোগ, যা সাধারণত মুখমণ্ডল আক্রমণ করে। ফলে মুখমণ্ডল বাঁকা হয়ে
যায়। সাধারণত ইহা প্যারালাইসিস রোগের মতো হয়, বরং প্যারালাইসিসের সঙ্গে এই রোগও
আক্রমণ করে। তখন রোগ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে।
পরিচ্ছেদঃ
৬
জ্বরে গোসল করা
প্রসঙ্গে
১৭০২
حَدَّثَنِي
عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ الْمُنْذِرِ أَنَّ
أَسْمَاءَ بِنْتَ أَبِي بَكْرٍ كَانَتْ إِذَا أُتِيَتْ بِالْمَرْأَةِ وَقَدْ
حُمَّتْ تَدْعُو لَهَا أَخَذَتْ الْمَاءَ فَصَبَّتْهُ بَيْنَهَا وَبَيْنَ
جَيْبِهَا وَقَالَتْ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ
يَأْمُرُنَا أَنْ نُبْرِدَهَا بِالْمَاءِ
ফাতিমা বিনত মুনযির
থেকে বর্ণিতঃ
আসমা
বিনতে আবূ বাকর (রা)-এর কাছে যখনই কোন জ্বরাক্রান্ত স্ত্রীলোককে নিয়ে আসা হত, তিনি
পানি এনে তার বুকের উপর ঢেলে দিতেন এবং বলতেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম জ্বরকে পানি দ্বারা ঠাণ্ডা করবার নির্দেশ দিতেন। (বুখারী ৫৭২৪, মুসলিম
২২১১)
১৭০৩
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ الْحُمَّى مِنْ فَيْحِ
جَهَنَّمَ فَابْرُدُوهَا بِالْمَاءِ
উরওয়া ইবনু যুবাইর
(র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জ্বর হল জাহান্নামের উদ্গিরণ। অতএব উহাকে পানি দ্বারা ঠাণ্ডা
কর। (বুখারী ৩২৬৩, ইমাম মুসলিম ২২১০, আয়িশা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, আর ইমাম মালিক
কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
১৭و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الْحُمَّى مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ فَأَطْفِئُوهَا
بِالْمَاءِ
নাফি‘ (র) হতে ইব্নু উমার (রা) সূত্রে বর্ণিত; রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জ্বর হল জাহান্নামের উদগিরণ। অতএব উহাকে পানি দ্বারা ঠাণ্ডা
কর। (বুখারী ৫৭২৩, মুসলিম ২২০৯)
পরিচ্ছেদঃ
৭
রোগী দেখতে যাওয়া ও
অশুভ লক্ষণ প্রসঙ্গ
১৭০৪
حَدَّثَنِي
عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا عَادَ الرَّجُلُ الْمَرِيضَ خَاضَ
الرَّحْمَةَ حَتَّى إِذَا قَعَدَ عِنْدَهُ قَرَّتْ فِيهِ أَوْ نَحْوَ هَذَا
জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ্ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যখন কেউ রোগী দেখতে যায়, তখন
সে আল্লাহর রহমতের মধ্যে ঢুকে পড়ে। অতঃপর যখন সে সেখানে বসে, তখন সেই রহমত তার
ভিতরে অবস্থান করে কিংবা এই রকমই কিছু তিনি বলেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে
বর্ণনা করেছেন)
১৭০৫
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ
الْأَشَجِّ عَنْ ابْنِ عَطِيَّةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قَالَ لَا عَدْوَى وَلَا هَامَ وَلَا صَفَرَ وَلَا يَحُلَّ الْمُمْرِضُ
عَلَى الْمُصِحِّ وَلْيَحْلُلْ الْمُصِحُّ حَيْثُ شَاءَ فَقَالُوا يَا رَسُولَ
اللهِ وَمَا ذَاكَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ
أَذًى
ইব্নু আতিয়া (র)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রোগের ছোঁয়াচ বা সংক্রমণ বলে কিছুই নেই।
পেঁচা অশুভ পাখি এবং সফর মাসে অমঙ্গলজনক কিছুই নেই। তবে রোগা উটকে সুস্থ উটের সাথে
রেখ না (বা বাঁধিও না)। অবশ্য সুস্থ উটকে যেখানে ইচ্ছা রাখতে পার। অতঃপর সাহাবীগণ
জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! এই রকম কেন? রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রোগ একটি কষ্ট বিশেষ। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা
করেছেন)
[১] আরবে, বিশেষত অন্ধকার যুগে সাধারণ মানুষ বিশেষ বস্তু দেখলে উহাকে অশুভ বলে বিশ্বাস করত। যেমন পেঁচা দেখে তারা ধারণা করত যে, আজ অমঙ্গলজনক কিছু ঘটবে। পেঁচা ঘরের ছাঁদে বসলে মনে করত যে, এই ঘর বিরান হয়ে যাবে অথবা এই ঘরে অচিরেই কেউ মারা যাবে। এইগুলোকে এতদ্ব্যতীত অন্ধকার যুগের আরবরা সফর চাঁদকেও অমঙ্গলজনক বলে ধারণা পোষণ করত, অথচ শরীয়তে এই সবের কোনই স্থান নেই। আরবের কাফিরদের বিশ্বাস ছিল, রোগের মধ্যে এমন ক্ষমতা আছে যে, সে ইচ্ছা করলে যে কোন মানুষের দেহে প্রবেশ করে তাকে মেরে ফেলতে পারে। অথচ এটাও ভুল। আমাদের দেশেও এই জাতীয় অনেক রকমের কুধারণা সাধারণ মানুষের অন্তরে বিরাজ করছে। শরীয়তে এই সমস্তের কোনই অস্তিত্ব নেই, বরং এইগুলোকে খারাপ আকীদা বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন উক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে। অবশ্য এই হাদীসে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগা উটকে সুস্থ উটের সাথে বাঁধতে এইজন্য নিষেধ করেছেন যে, একটির রোগ অপরটির জন্য কষ্টের কারণ হয় কিংবা দেখতে বিশ্রী দেখায় বলে ঘৃণার উদ্রেক হয়। যেমন যখমে পচন ধরলে দুর্গন্ধ বের হয়। ফলে সুস্থ উটের জন্য ইহা কষ্টের কারণ হয়। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই উদ্দেশ্যে বলেননি যে, একটির রোগ আর একটির মধ্যে প্রবেশ করবে।
No comments