মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় রোযা

রোযা

পরিচ্ছেদঃ

রোযার চাঁদ দেখা ও রমযানের রোযা খোলার বর্ণনা

৬১৭

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَكَرَ رَمَضَانَ فَقَالَ لَا تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْا الْهِلَالَ وَلَا تُفْطِرُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاقْدُرُوْا لَهُ.

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রোযার উল্লেখ করে বলেছেন, তোমরা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোযা রেখো না। আর চাঁদ না দেখে রোযা খুলো না। যদি তোমাদের উপর (আকাশ) মেঘাচ্ছন্ন হয়, তবে রোযা খোলার জন্য অন্য দিন হিসাব করো নিও। (বুখারী ১৭০৬, মুসলিম ১০৮০)

৬১৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ فَلَا تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْا الْهِلَالَ وَلَا تُفْطِرُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاقْدُرُوا لَهُ.

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মাস উনত্রিশ দিনেরও হয়, যদি (আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হওয়ার কারণে) তোমাদের উপর চাঁদ পর্দাবৃত করা হয়, তবে তার জন্য দিন গণনা করো। (বুখারী ১৯০৭, মুসলিম ১০৮০)

৬১৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ الدِّيلِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَكَرَ رَمَضَانَ فَقَالَ لَا تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْا الْهِلَالَ وَلَا تُفْطِرُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا الْعِدَّةَ ثَلَاثِيْنَ.

আবদুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমযানের উল্লেখ করলেন। (এই প্রসঙ্গে) তিনি বললেন, তোমরা চাঁদ না দেখে রোযা রেখো না। এবং চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোযা খুলো না। আর যদি আকাশ তোমাদের উপর মেঘাচ্ছাদিত হয়, তবে সংখ্যা ত্রিশ পূর্ণ করো। (সহীহ, আবূ দাঊদ ২৩২৭, তিরমিযী ৬৮৮, নাসাঈ ২১২৪, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ আল-জামে’ ১৭৯০] তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে)

৬২০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ الْهِلَالَ رُئِيَ فِي زَمَانِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ بِعَشِيٍّ فَلَمْ يُفْطِرْ عُثْمَانُ حَتَّى أَمْسَى وَغَابَتْ الشَّمْسُ
قَالَ يَحْيَى سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ فِي الَّذِي يَرَى هِلَالَ رَمَضَانَ وَحْدَهُ أَنَّهُ يَصُومُ لَا يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يُفْطِرَ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّ ذَلِكَ الْيَوْمَ مِنْ رَمَضَانَ قَالَ وَمَنْ رَأَى هِلَالَ شَوَّالٍ وَحْدَهُ فَإِنَّهُ لَا يُفْطِرُ لِأَنَّ النَّاسَ يَتَّهِمُونَ عَلَى أَنْ يُفْطِرَ مِنْهُمْ مَنْ لَيْسَ مَأْمُونًا وَيَقُولُ أُولَئِكَ إِذَا ظَهَرَ عَلَيْهِمْ قَدْ رَأَيْنَا الْهِلَالَ وَمَنْ رَأَى هِلَالَ شَوَّالٍ نَهَارًا فَلَا يُفْطِرْ وَيُتِمُّ صِيَامَ يَوْمِهِ ذَلِكَ فَإِنَّمَا هُوَ هِلَالُ اللَّيْلَةِ الَّتِي تَأْتِي
قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ إِذَا صَامَ النَّاسُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَهُمْ يَظُنُّونَ أَنَّهُ مِنْ رَمَضَانَ فَجَاءَهُمْ ثَبْتٌ أَنَّ هِلَالَ رَمَضَانَ قَدْ رُئِيَ قَبْلَ أَنْ يَصُومُوا بِيَوْمٍ وَأَنَّ يَوْمَهُمْ ذَلِكَ أَحَدٌ وَثَلَاثُونَ فَإِنَّهُمْ يُفْطِرُونَ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ أَيَّةَ سَاعَةٍ جَاءَهُمْ الْخَبَرُ غَيْرَ أَنَّهُمْ لَا يُصَلُّونَ صَلَاةَ الْعِيدِ إِنْ كَانَ ذَلِكَ جَاءَهُمْ بَعْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ

মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর কাছে খবর পৌঁছেছে যে, উসমান ইবনু আফফান (রা)-এর আমলে বিকালে চাঁদ দৃষ্ট হয়। কিন্তু উসমান (রা) সন্ধ্যা হওয়া ও সূর্য অস্ত না যাওয়া পর্যন্ত ইফতার করেননি।
ইয়াহ্ইয়া (র) বলেন, আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমযানের চাঁদ একাই দেখেছে সে নিজে রোযা রাখবে, তার জন্য রোযা ভঙ্গ করা সমীচীন নয় । কারণ সে জানে যে, উহা রমযান মাস। আর যে শাওয়ালের চাঁদ একা দেখেছে. সে রোযা ভঙ্গ করবে না, কারণ লোকে (এ বলে) অপবাদ দিবে যে, আমাদের একজন রোযা রাখেনি। পক্ষান্তরে যারা নির্ভরযোগ্য নয় তেমন ব্যক্তিদের খেয়াল হলে তবে তারা বলবে, ‘আমরা অবশ্য চাঁদ দেখেছি’। আর যে ব্যক্তি দিনে শাওয়ালের চাঁদ দেখতে পায়, সে রোযা ইফতার করবে না বরং সে দিনের রোযা পূর্ণ করবে, কারণ তা আগামী রাতের চাঁদ।
ইয়াহইয়া (র) বলেন, আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি, যদি লোকে ঈদের দিন রোযা রাখে এবং তারা উহাকে রোযার দিন বলে মনে করে, তৎপর একজন বিশ্বস্ত লোক এসে তাদেরকে বলে, রমযানের চাঁদ তাদের রোযার একদিন পূর্বে দেখা গিয়েছে, আর তাদের এ দিবস হচ্ছে একত্রিশের, তবে যে মুহূর্তে তাদের কাছে খবর পৌঁছে সে মুহূর্তেই তারা রোযা ভেঙে ফেলবে। অবশ্য তারা সে খবর সূর্য হেলিবার পর হলে সে দিন তারা ঈদের নামায আদায় করবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ

ফজরের পূর্বে যে রোযার নিয়ত করেছে

৬২১

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ لَا يَصُومُ إِلَّا مَنْ أَجْمَعَ الصِّيَامَ قَبْلَ الْفَجْرِ و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَائِشَةَ وَحَفْصَةَ زَوْجَيْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِثْلِ ذَلِكَ.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) বলতেন, যে ফজরের পূর্বে নিয়ত করেনি, সে রোযা রাখবে না। (সহীহ, আবূ দাঊদ ২৪৫৪, তিরমিযী ৭৩০, নাসাঈ ২৩৪১, ইবনু মাজাহ ১৭০, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ আল-জামে’ ৬৫৩৮])
ইবনু শিহাব (র) কর্তৃক নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) ও হাফসা (রা) হতে অনুরূপ (মত) বর্ণনা করা হয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ

বিলম্ব না করে ইফতার করা

৬২২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي حَازِمِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ.

সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সর্বদা লোক মঙ্গলের উপর থাকবে যতদিন ইফতার সত্বর করবে। (বুখারী ১৯৫৭, মুসলিম ১০৯৮)

৬২৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَرْمَلَةَ الْأَسْلَمِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ.

সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মানুষ সর্বদা মঙ্গলের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে যতদিন ইফতার সত্বর করবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬২৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ وَعُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ كَانَا يُصَلِّيَانِ الْمَغْرِبَ حِينَ يَنْظُرَانِ إِلَى اللَّيْلِ الْأَسْوَدِ قَبْلَ أَنْ يُفْطِرَا ثُمَّ يُفْطِرَانِ بَعْدَ الصَّلَاةِ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ.

হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ

উমার ইবনু খাত্তাব (রা) এবং উসমান ইবনু আফফান (রা) দু’জনে মাগরিবের নামায আদায় করতেন, এমন সময় তখন তাঁরা রাত্রির অন্ধকার দেখতে পেতেন। (আর এটা হত) ইফতার করার পূর্বে। অতঃপর তাঁরা (দু’জনে) ইফতার করতেন। আর এটা হতো রমযান মাসে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ

যে ব্যক্তির জানাবত (গোসল ফরয হওয়া) অবস্থায় ফজর হয় সে ব্যক্তির রোযা

৬২৫

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَعْمَرٍ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ أَبِي يُونُسَ مَوْلَى عَائِشَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ وَاقِفٌ عَلَى الْبَابِ وَأَنَا أَسْمَعُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي أُصْبِحُ جُنُبًا وَأَنَا أُرِيدُ الصِّيَامَ فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا أُصْبِحُ جُنُبًا وَأَنَا أُرِيدُ الصِّيَامَ فَأَغْتَسِلُ وَأَصُومُ فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّكَ لَسْتَ مِثْلَنَا قَدْ غَفَرَ اللهُ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ فَغَضِبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ وَاللهِ إِنِّي لَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَخْشَاكُمْ لِلَّهِ وَأَعْلَمَكُمْ بِمَا أَتَّقِي.

আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, তখন তিনি দরজায় দণ্ডায়মান ছিলেন, আর আমি শুনতেছিলাম, ইয়া রসূলুল্লাহ্! জানাবত অবস্থায় আমার ফজর হয় অথচ আমি রোযা রাখতে ইচ্ছা করি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমারও জানাবত অবস্থায় ফজর হয়, অথচ আমি রোযা রাখবার ইচ্ছা করি। তাই আমি গোসল করি এবং রোযা রাখি! তখন লোকটি তাঁর নিকট আরয করল, ইয়া রসূলাল্লাহ্! আপনি অবশ্য আমাদের মত নন। আল্লাহ্ আপনার অতীত ও ভবিষ্যত ত্রুটিসমূহ মার্জনা করেছেন। এতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাগান্বিত হলেন এবং বললেন, আল্লাহর কসম, আমি তোমাদের তুলনায় আল্লাহকে অধিক ভয় করি আর আমি তাক্ওয়ার বিষয়ে তোমাদের অপেক্ষা অধিক জ্ঞাত। (সহীহ, মুসলিম ১১১০)

৬২৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ عَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ زَوْجَيْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُمَا قَالَتَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصْبِحُ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ غَيْرِ احْتِلَامٍ فِي رَمَضَانَ ثُمَّ يَصُومُ.

নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা ও উম্মে সালমা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বপ্নদোষে নয় স্ত্রী সহবাসের কারণে রমযানে জানাবত অবস্থায় ফজর হত, অতঃপর তিনি রোযা রাখতেন। (বুখারী ১৯২৬, ১৯৩০, মুসলিম ১১০৯)

৬২৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ يَقُولُ كُنْتُ أَنَا وَأَبِي عِنْدَ مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ وَهُوَ أَمِيرُ الْمَدِينَةِ فَذُكِرَ لَهُ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ مَنْ أَصْبَحَ جُنُبًا أَفْطَرَ ذَلِكَ الْيَوْمَ فَقَالَ مَرْوَانُ أَقْسَمْتُ عَلَيْكَ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ لَتَذْهَبَنَّ إِلَى أُمَّيْ الْمُؤْمِنِينَ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ فَلْتَسْأَلَنَّهُمَا عَنْ ذَلِكَ فَذَهَبَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَذَهَبْتُ مَعَهُ حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ فَسَلَّمَ عَلَيْهَا ثُمَّ قَالَ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّا كُنَّا عِنْدَ مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ فَذُكِرَ لَهُ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ مَنْ أَصْبَحَ جُنُبًا أَفْطَرَ ذَلِكَ الْيَوْمَ قَالَتْ عَائِشَةُ لَيْسَ كَمَا قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ أَتَرْغَبُ عَمَّا كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ لَا وَاللهِ قَالَتْ عَائِشَةُ فَأَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يُصْبِحُ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ غَيْرِ احْتِلَامٍ ثُمَّ يَصُومُ ذَلِكَ الْيَوْمَ قَالَ ثُمَّ خَرَجْنَا حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ فَسَأَلَهَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَتْ مِثْلَ مَا قَالَتْ عَائِشَةُ قَالَ فَخَرَجْنَا حَتَّى جِئْنَا مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ فَذَكَرَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ مَا قَالَتَا فَقَالَ مَرْوَانُ أَقْسَمْتُ عَلَيْكَ يَا أَبَا مُحَمَّدٍ لَتَرْكَبَنَّ دَابَّتِي فَإِنَّهَا بِالْبَابِ فَلْتَذْهَبَنَّ إِلَى أَبِي هُرَيْرَةَ فَإِنَّهُ بِأَرْضِهِ بِالْعَقِيقِ فَلْتُخْبِرَنَّهُ ذَلِكَ فَرَكِبَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَرَكِبْتُ مَعَهُ حَتَّى أَتَيْنَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَتَحَدَّثَ مَعَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ سَاعَةً ثُمَّ ذَكَرَ لَهُ ذَلِكَ فَقَالَ لَهُ أَبُو هُرَيْرَةَ لَا عِلْمَ لِي بِذَاكَ إِنَّمَا أَخْبَرَنِيهِ مُخْبِرٌ.

আবূ বক্‌র ইবনু আবদুর রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ

আমি ও আমার পিতা মারওয়ানের নিকট ছিলাম, মারওয়ান তখন মদীনার শাসনকর্তা। তাঁর কাছে উল্লেখ করা হয় যে, আবূ হুরায়রা (রা) বলেন, যে ব্যক্তির জানাবত অবস্থায় ফজর হয়, তার সেই দিনের রোযা নষ্ট হয়েছে। মারওয়ান বললেন, হে আবদুর রহমান। আমি তোমাদের কসম দিচ্ছি যে, তুমি অবশ্যই উম্মুল মুমিনীনদ্বয় আয়েশা (রা) ও উম্মে সালমা (রা)-এর কাছে গমন কর এবং এ বিষয়ে উভয়কে প্রশ্ন কর। অতঃপর আবদুর রহমান গেলেন, আমিও সাথে ছিলাম। আবদুর রহমান তাঁকে ‘সালাম’ জানালেন এবং বললেন, হে উম্মুল মুমিনীন! আমরা মারওয়ান ইবনু হাকামের কাছে ছিলাম, তাঁর নিকট আলোচিত হয় যে, আবূ হুরায়রা (রা) বলেছেন যে ব্যক্তির জানাবত অবস্থায় ফজর হয়েছে সে সেই দিনের রোযা ভঙ্গ করেছে। আয়েশা (রা) বললেন, আবূ হুরায়রা যেমন বলেছেন, (মাস’আলা) তেমন নয়। হে আবদুর রহমান! রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা করেছেন তুমি কি তা হতে বিমুখ হতে চাও ? আবদুর রহমান বললেন, না, আল্লাহ্‌র কসম, (তা হয় না)। আয়েশা (রা) বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যাপারে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি স্বপ্নদোষে নয়, সহবাসের কারণে জানাবত অবস্থায় ফজর করতেন। অতঃপর সেই দিনের রোযা রাখতেন। (রাবী) বলেন, তারপর আমরা আয়েশা (রা)-এর নিকট হতে বের হলাম এবং উম্মে সালমা (রা)-এর কাছে গেলাম এবং এ বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলাম। আয়েশা (রা) যেমন বলেছেন তিনিও তেমন বললেন।
অতঃপর আমরা প্রস্থান করলাম এবং মারওয়ান ইবনু হাকামের কাছে উপস্থিত হলাম। তাঁরা দু’জনে যা বর্ণনা করেছেন আবদুর রহমান মারওয়ানের কাছে তা উল্লেখ করলেন। অতঃপর মারওয়ান বললেন, আমি তোমাকে কসম দিচ্ছি, হে আবূ মুহাম্মদ, আমার সওয়ারী দরজায় (উপস্থিত) রয়েছে, তুমি উহার উপর সওয়ার হয়ে অবশ্যই আবূ হুরায়রা (রা)-এর নিকট গমন কর। তিনি তাঁর (নিজস্ব) ভূমিতে আকীক নামক স্থানে অবস্থান করতেছেন। নিশ্চয়ই এ খবরটি তাঁকে পৌঁছিয়ে দাও। আবদুর রহমান সওয়ার হলেন, আমি তাঁর সাথে আরোহণ করলাম।
অতঃপর আমরা আবূ হুরায়রা (রা)-এর কাছে এলাম। আবূ হুরায়রা (রা)-এর সহিত আবদুর রহমান কিছুক্ষণ কথা বললেন। তারপর এই বিষয়ে তাঁর সাথে আলোচনা করলেন। এরপর আবূ হুরায়রা (রা) বললেন, এই বিষয়ে আমার জানা নাই, আমাকে খবরদাতা খবর দিয়েছেন। [১] (সহীহ, মুসলিম ১১০৯)

[১] হয়তো আবূ হুরায়রা (রা)-এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ফজরের পূর্বে গোসল করে নেয়া উত্তম অথবা তাঁর উদ্দেশ্য, সহবাস অবস্থায় ফজর হলে তারা রোযা রাখবে না, অথবা এই মত প্রথমে ছিল পরে তিনি তা প্রত্যাহার করেছেন এবং পূর্ব মত রহিত হয়েছে।

৬২৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ زَوْجَيْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُمَا قَالَتَا إِنْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيُصْبِحُ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ غَيْرِ احْتِلَامٍ ثُمَّ يَصُومُ.

নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়েশা ও উম্মে সালমা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বপ্নদোষ ব্যতীত সহবাসের কারণে জানাবত অবস্থায় ফজর হত, অতঃপর তিনি রোযা রাখতেন। (বুখারী ১৯২৬, ১৯৩০, মুসলিম ১১০৯)

পরিচ্ছেদঃ

রোযাদারের জন্য চুমু খাওয়ার অনুমতি

৬২৯

- حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ رَجُلًا قَبَّلَ امْرَأَتَهُ وَهُوَ صَائِمٌ فِي رَمَضَانَ فَوَجَدَ مِنْ ذَلِكَ وَجْدًا شَدِيدًا فَأَرْسَلَ امْرَأَتَهُ تَسْأَلُ لَهُ عَنْ ذَلِكَ فَدَخَلَتْ عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لَهَا فَأَخْبَرَتْهَا أُمُّ سَلَمَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُ وَهُوَ صَائِمٌ فَرَجَعَتْ فَأَخْبَرَتْ زَوْجَهَا بِذَلِكَ فَزَادَهُ ذَلِكَ شَرًّا وَقَالَ لَسْنَا مِثْلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللهُ يُحِلُّ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا شَاءَ ثُمَّ رَجَعَتْ امْرَأَتُهُ إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ فَوَجَدَتْ عِنْدَهَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا لِهَذِهِ الْمَرْأَةِ فَأَخْبَرَتْهُ أُمُّ سَلَمَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلَا أَخْبَرْتِيهَا أَنِّي أَفْعَلُ ذَلِكَ فَقَالَتْ قَدْ أَخْبَرْتُهَا فَذَهَبَتْ إِلَى زَوْجِهَا فَأَخْبَرَتْهُ فَزَادَهُ ذَلِكَ شَرًّا وَقَالَ لَسْنَا مِثْلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللهُ يُحِلُّ لِرَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا شَاءَ فَغَضِبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ وَاللهِ إِنِّي لَأَتْقَاكُمْ لِلَّهِ وَأَعْلَمُكُمْ بِحُدُودِهِ.

আতা ইবনু ইয়াসার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রমযান মাসে রোযা অবস্থায় তাঁর স্ত্রীকে চুমু খেলেন এবং এতে খুবই অনুতপ্ত হলেন। অতঃপর এই বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য তাঁর স্ত্রীকে পাঠালেন। সে নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী উম্মে সালমা (রা)-এর কাছে গেল এবং সেই বিষয় তাঁর কাছে উল্লেখ করল। উম্মে সালমা (রা) তাকে বললেন, রোযা অবস্থায় রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও চুমা দিয়ে থাকেন। সে তার স্বামীর কাছে ফিরে এসে এই খবর তাকে জানাল। কিন্তু তাঁর পেরেশানী আরো বৃদ্ধি পেল। তিনি বললেন, আমরা রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মত নই। আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের জন্য যা ইচ্ছা হালাল করেন। তারপর তাঁর স্ত্রী পুনরায় উম্মে সালমা (রা)-এর কাছে গেল। (এবার) উম্মে সালমা (রা)-এর নিকট রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পেল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এই স্ত্রীলোকটির ব্যাপার কি ? উম্মে সালমা (রা) তাকে বিষয়টি জানালেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমিও এটা করি, তুমি এই স্ত্রীলোককে এই খবর দাওনি কেন ? উম্মে সালমা (রা) বললেন, আমি তাকে এই খবর দিয়েছি। অতঃপর তার স্বামীর কাছে গিয়ে সেই খবর বলেছে। এতে তাঁর চিন্তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তিনি বলেছেন, আমরা রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মত নই। আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের জন্য ইচছা হালাল করেন। এটা শুনে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাগান্বিত হলেন এবং বললেন, আমি অবশ্য তোমাদের অপেক্ষা আল্লাহকে অধিক ভয় করি এবং তাঁর সীমানাসমূহকে তোমাদের অপেক্ষা অধিক জানি। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৩০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتْ إِنْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيُقَبِّلُ بَعْضَ أَزْوَاجِهِ وَهُوَ صَائِمٌ ثُمَّ ضَحِكَتْ.

উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কোন এক সহধর্মিনীকে চুমু খেতেন, অথচ তিনি রোযাদার। তারপর তিনি হাসলেন। (বুখারী ১৯২৮, মুসলিম ১১০৬)

৬৩১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ عَاتِكَةَ ابْنَةَ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ امْرَأَةَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ كَانَتْ تُقَبِّلُ رَأْسَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَهُوَ صَائِمٌ فَلَا يَنْهَاهَا.

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর স্ত্রী আতিকা বিনত সাঈদ (রা) উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর মাথায় চুমু খেতেন, অথচ তিনি রোযাদার। তবুও তিনি তাঁকে নিষেধ করতেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৩২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ أَنَّ عَائِشَةَ بِنْتَ طَلْحَةَ أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا كَانَتْ عِنْدَ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَخَلَ عَلَيْهَا زَوْجُهَا هُنَالِكَ وَهُوَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ وَهُوَ صَائِمٌ فَقَالَتْ لَهُ عَائِشَةُ مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَدْنُوَ مِنْ أَهْلِكَ فَتُقَبِّلَهَا وَتُلَاعِبَهَا فَقَالَ أُقَبِّلُهَا وَأَنَا صَائِمٌ قَالَتْ نَعَمْ.

আয়েশা বিন্ত তালহা (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা)-এর নিকট ছিলেন। সেখানে তাঁর স্বামী প্রবেশ করলেন। তিনি হলেন আবদুল্লাহ্ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রা)। তিনি রোযাদার ছিলেন। আয়েশা (রা) তাঁকে বললেন, তোমাকে তোমার পরিবারের কাছে যেতে এবং তাকে চুমু খেতে ও তার সাথে খেল-তামাশা করতে কিসে বাধা দিয়েছে ? তিনি বললেন, আমি তাঁকে চুমু খাই কিভাবে, আমি যে রোযাদার! তিনি (আয়েশা রা.) বলেন, হ্যাঁ (রোযাদার হয়েও তা করতে পার)। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৩৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ وَسَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ كَانَا يُرَخِّصَانِ فِي الْقُبْلَةِ لِلصَّائِمِ.

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা ও সা’দ আবি ওয়াক্কাস (রা) রোযাদারের জন্য চুমু খাওয়ার অনুমতি দিতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ

রোযাদারের চুমু খাওয়ার ব্যাপারে কঠোরতা

৬৩৪

- ৬৪৭-حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَتْ إِذَا ذَكَرَتْ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُ وَهُوَ صَائِمٌ تَقُولُ وَأَيُّكُمْ أَمْلَكُ لِنَفْسِهِ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

মালিক (র)-এর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) যখন উল্লেখ করতেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চুমু খেতেন, তখন (তিনি আয়েশা রা.) বলতেন, তোমাদের চাইতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অধিক ক্ষমতা রাখেন নিজের নফসের উপর। [১] (বুখারী ১৯২৭, মুসলিম ১১০৬, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের সনদে انقطاع তথা বিচ্ছিন্নতা রয়েছে)
১৭
قَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك قَالَ هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ قَالَ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْر لَمْ أَرَ الْقُبْلَةَ لِلصَّائِمِ تَدْعُو إِلَى خَيْرٍ.
উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (র) বলেন, রোযাদারের জন্য চুমু খাওয়া কোন মঙ্গলের দিকে আহ্বান করে বলে আমি মনে করি না।

[১] নিজের নফস ও প্রবৃত্তির উপর তিনি সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাবান ব্যক্তি।

৬৩৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ سُئِلَ عَنْ الْقُبْلَةِ لِلصَّائِمِ فَأَرْخَصَ فِيهَا لِلشَّيْخِ وَكَرِهَهَا لِلشَّابِّ.

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস (রা)-কে রোযাদারের চুমু খাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বৃদ্ধের জন্য অনুমতি দেন। আর যুবকের জন্য মাকরূহ বলেন। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] এতে বিপদের আশংকাই বেশি, এই সময় এমন কাজও করে বসতে পারে যাতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং কাফফারাও দিতে হয়।

৬৩৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَنْهَى عَنِ الْقُبْلَةِ وَالْمُبَاشَرَةِ لِلصَّائِمِ.

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) রোযাদারের জন্য চুমু খাওয়া এবং স্ত্রীর সাথে মিলিত হওয়াকে নিষেধ করতেন। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

[১] মিলিত হওয়ার অর্থ সঙ্গমে যেভাবে মিলিত হয় সেভাবে মিলিত হওয়া, সঙ্গম হোক বা না হোক।

পরিচ্ছেদঃ

প্রবাসে রোযা রাখা

৬৩৭

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ إِلَى مَكَّةَ عَامَ الْفَتْحِ فِي رَمَضَانَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ الْكَدِيدَ ثُمَّ أَفْطَرَ فَأَفْطَرَ النَّاسُ وَكَانُوا يَأْخُذُونَ بِالْأَحْدَثِ فَالْأَحْدَثِ مِنْ أَمْرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

আবদুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কা বিজয় বৎসরে রমযান মাসে মক্কার দিকে সফরে বের হলেন এবং রোযা রাখলেন। কাদীদ নামক স্থানে পৌঁছালে পর তিনি রোযা ভঙ্গ করলেন এবং তাঁর সাথে অন্যরাও রোযা ভঙ্গ করলেন। আর তাঁরা রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হুকুম হতে যা সদ্য অতঃপর যা অতি সদ্য তা গ্রহণ করতেন। (অর্থাৎ যে কোন নূতন হুকুম পাওয়া বা শোনামাত্রই গ্রহণ করতেন)। (বুখারী ১৯৪৪, মুসলিম ১১৩)

৬৩৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ النَّاسَ فِي سَفَرِهِ عَامَ الْفَتْحِ بِالْفِطْرِ وَقَالَ تَقَوَّوْا لِعَدُوِّكُمْ وَصَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ قَالَ الَّذِي حَدَّثَنِي لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْعَرْجِ يَصُبُّ الْمَاءَ عَلَى رَأْسِهِ مِنْ الْعَطَشِ أَوْ مِنْ الْحَرِّ ثُمَّ قِيلَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ طَائِفَةً مِنْ النَّاسِ قَدْ صَامُوا حِينَ صُمْتَ قَالَ فَلَمَّا كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْكَدِيدِ دَعَا بِقَدَحٍ فَشَرِبَ فَأَفْطَرَ النَّاسُ.

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিজয় বৎসর তাঁর সফরে সাহাবীগণকে রোযা খুলতে নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, তোমরা তোমাদের শত্রুদের জন্য শক্তি সঞ্চয় কর, আর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে রোযা রাখলেন। আবূ বক্‌র ইবনু আবদুর রহমান (র) বলেন, যে ব্যক্তি আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন তিনি বলেছেন, আমি ‘আরজ’ নামক স্থানে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিজের মাথায় পানি ঢালতে দেখেছি, পিপাসায় অথবা প্রচণ্ড গরমের কারণে।
অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলা হল, আপনি রোযা রেখেছেন বলে একদল লোক (এখনও) রোযা রেখেছে। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কাদীদে পৌঁছালেন, তখন তিনি পেয়ালা চাইলেন এবং (পানি অথবা দুধ) পান করলেন, তারপর সাহাবীগণ রোযা ভঙ্গ করলেন। (সহীহ, আবূ দাঊদ ২৩৬৫, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ, সুনানে আবূ দাঊদ])

৬৩৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ قَالَ، سَافَرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَمَضَانَ فَلَمْ يَعِبْ الصَّائِمُ عَلَى الْمُفْطِرِ وَلَا الْمُفْطِرُ عَلَى الصَّائِمِ.

আনাস ইবনু মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা রমযানে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সফর করেছি। অতঃপর কোন রোযাদার রোযাভঙ্গকারীর উপর দোষারোপ করেননি এবং কোন রোযাভঙ্গকারীও কোন রোযাদারের উপর দোষারোপ করেননি। (বুখারী ১৯৪৭, মুসলিম ১১১৮)

৬৪০

- و حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الْأَسْلَمِيَّ قَالَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي رَجُلٌ أَصُومُ أَفَأَصُومُ فِي السَّفَرِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنْ شِئْتَ فَصُمْ وَإِنْ شِئْتَ فَأَفْطِرْ.

হামযা ইবনু ‘আমর আসলামী (রা) থেকে বর্ণিতঃ

হামযা ইবনু ‘আমর আসলামী (রা) রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ্ ! আমি প্রায়ই রোযা রাখি। আমি কি সফরে রোযা রাখব ? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে রোযা রাখ, আর ইচ্ছা করলে রোযা ছাড়। (বুখারী ১৯৪৩, মুসলিম ১১২১, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের সনদ মুরসাল)

৬৪১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ لَا يَصُومُ فِي السَّفَرِ.

নাফি’ (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) রমযানে সফরে রোযা রাখতেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৪২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ كَانَ يُسَافِرُ فِي رَمَضَانَ وَنُسَافِرُ مَعَهُ فَيَصُومُ عُرْوَةُ وَنُفْطِرُ نَحْنُ فَلَا يَأْمُرُنَا بِالصِّيَامِ.

হিশাম ইবনু উরওয়াহ্ (র) থেকে বর্ণিতঃ

উরওয়াহ্ (র) রমযানে সফর করতেন, আমরাও তাঁর সাথে সফর করতাম। অতঃপর উরওয়াহ্ (র) রোযা রাখতেন কিন্তু আমরা রোযা রাখতাম না, তিনি আমাদেরকে রোযা রাখতে বলতেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ

যে ব্যক্তি রমযানে সফর হতে প্রত্যাবর্তন করে অথবা রমযানে সফরের ইচ্ছা করে সে কি করবে?

৬৪৩

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ إِذَا كَانَ فِي سَفَرٍ فِي رَمَضَانَ فَعَلِمَ أَنَّهُ دَاخِلٌ الْمَدِينَةَ مِنْ أَوَّلِ يَوْمِهِ دَخَلَ وَهُوَ صَائِمٌ قَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك مَنْ كَانَ فِي سَفَرٍ فَعَلِمَ أَنَّهُ دَاخِلٌ عَلَى أَهْلِهِ مِنْ أَوَّلِ يَوْمِهِ وَطَلَعَ لَهُ الْفَجْرُ قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ دَخَلَ وَهُوَ صَائِمٌ قَالَ مَالِك وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ فِي رَمَضَانَ فَطَلَعَ لَهُ الْفَجْرُ وَهُوَ بِأَرْضِهِ قَبْلَ أَنْ يَخْرُجَ فَإِنَّهُ يَصُومُ ذَلِكَ الْيَوْمَ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقْدَمُ مِنْ سَفَرِهِ وَهُوَ مُفْطِرٌ وَامْرَأَتُهُ مُفْطِرَةٌ حِينَ طَهُرَتْ مِنْ حَيْضِهَا فِي رَمَضَانَ أَنَّ لِزَوْجِهَا أَنْ يُصِيبَهَا إِنْ شَاءَ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) রমযানে যদি সফরে থাকতেন, তবে তিনি যদি জানতেন যে, তিনি মদীনায় দিনের প্রথম দিকে প্রবেশ করবেন তবে তিনি রোযা অবস্থায় (মদীনায়) প্রবেশ করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, যে ব্যক্তি রমযানে সফরে থাকে অতঃপর জানতে পারে যে, সে নিজের পরিবার পরিজনের মধ্যে দিনের প্রথমদিকে প্রবেশ করবে এবং প্রবেশের পূর্বে ফজর হয়, তবে সে রোযা অবস্থায় প্রবেশ করবে।
মালিক (র) বলেন, আর যে ব্যক্তি রমযানে সফরে বের হতে ইচ্ছা করে এবং স্বীয় (আবাস) ভূমিতে থাকতেই ফজর হয়, তার বের হওয়ার পূর্বে সেই দিনের রোযা রাখবে।
মালিক (র) বলেন, যে ব্যক্তি রোযা না রাখা অবস্থায় সফর হতে ফিরেছে, আর তার স্ত্রীও রোযা রাখেনি (ঋতুমতী বলে), এখন রমযানের মধ্যে ঋতু হতে পাক হয়েছে, তবে তার স্বামী ইচ্ছা করলে (রোযার দিনে) তার সাথে সহবাস করতে পারে (কারণ দু’জনে রোযা অবস্থায় নয়)।

পরিচ্ছেদঃ

রমযানের রোযা ভঙ্গ করার কাফ্ফারা

৬৪৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلًا أَفْطَرَ فِي رَمَضَانَ فَأَمَرَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُكَفِّرَ بِعِتْقِ رَقَبَةٍ أَوْ صِيَامِ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ أَوْ إِطْعَامِ سِتِّينَ مِسْكِينًا فَقَالَ لَا أَجِدُ فَأُتِيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقِ تَمْرٍ فَقَالَ خُذْ هَذَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ مَا أَجِدُ أَحْوَجَ مِنِّي فَضَحِكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ثُمَّ قَالَ كُلْهُ.

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রমযানের রোযা ভঙ্গ করেছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে একটি ক্রীতদাস আযাদ করার নির্দেশ দিলেন অথবা একনাগাড়ে দুই মাস রোযা রাখার অথবা ষাটজন মিসকিনকে আহার দেয়ার জন্য বললেন। লোকটি বলল, আমি সামর্থ্য রাখি না। তারপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক টুকরি খেজুর আনা হয়। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা গ্রহণ কর এবং সদকা কর। লোকটি বলল, ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমার হতে অধিক মুহতাজ আমি পাইনি। (এই কথা শুনে) হাসলেন. এমনকি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনের দন্ত মুবারক প্রকাশিত হল। অতঃপর বললেন। এটা তুমি খাও। (বুখারী ১৯৩৬, মুসলিম ১১১১)

৬৪৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَطَاءِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْخُرَاسَانِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضْرِبُ نَحْرَهُ وَيَنْتِفُ شَعْرَهُ وَيَقُولُ هَلَكَ الْأَبْعَدُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا ذَاكَ فَقَالَ أَصَبْتُ أَهْلِي وَأَنَا صَائِمٌ فِي رَمَضَانَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُعْتِقَ رَقَبَةً فَقَالَ لَا فَقَالَ هَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُهْدِيَ بَدَنَةً قَالَ لَا قَالَ فَاجْلِسْ فَأُتِيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقِ تَمْرٍ فَقَالَ خُذْ هَذَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ مَا أَحَدٌ أَحْوَجَ مِنِّي فَقَالَ كُلْهُ وَصُمْ يَوْمًا مَكَانَ مَا أَصَبْتَ -قَالَ مَالِك قَالَ عَطَاءٌ فَسَأَلْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ كَمْ فِي ذَلِكَ الْعَرَقِ مِنْ التَّمْرِ فَقَالَ مَا بَيْنَ خَمْسَةَ عَشَرَ صَاعًا إِلَى عِشْرِيْنَ.
قَالَ مَالِك سَمِعْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ يَقُولُونَ لَيْسَ عَلَى مَنْ أَفْطَرَ يَوْمًا فِي قَضَاءِ رَمَضَانَ بِإِصَابَةِ أَهْلِهِ نَهَارًا أَوْ غَيْرِ ذَلِكَ الْكَفَّارَةُ الَّتِي تُذْكَرُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَنْ أَصَابَ أَهْلَهُ نَهَارًا فِي رَمَضَانَ وَإِنَّمَا عَلَيْهِ قَضَاءُ ذَلِكَ الْيَوْمِ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحَبُّ مَا سَمِعْتُ فِيهِ إِلَيَّ.

সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

জনৈক বেদুঈন বুক চাপড়াতে চাপড়াতে এবং চুল টানতে টানতে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এল। সে বলতেছিল (পূণ্য হতে) দূরবর্তী ধ্বংস হয়েছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে কি ? সে বলল, আমি স্ত্রীর সাথে রমযানে সহবাস করেছি অথচ আমি রোযাদার। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (এটা শুনে) বললেন, তুমি একটি গোলাম আযাদ করার শক্তি রাখ কি ? সে বলল, না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, একটি উট হাদয়ি স্বরূপ পাঠাইবার সামর্থ্য রাখ কি ? সে বলল, না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি বস। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক টুকরি খেজুর আনা হল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা নাও এবং সদকা কর। লোকটি বলল, ইয়া রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার অপেক্ষা অধিক মুহতাজ কাউকেও আমি পাইনি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা তুমি খাও এবং স্ত্রী সহবাসের কাফফারাস্বরূপ একদিন রোযা রাখ। (বাইহাকী বর্ণনা করেন [সুনানে কুবরা ৪/২২৭]
মালিক (র) বলেন, আতা খোরাসানী (র) বলেছেন, আমি সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-কে প্রশ্ন করলাম, সেই টুকরিতে কত খেজুর ছিল ? তিনি বললেন, পনের
صَاعًا হতে বিশ صَاعًا পর্যন্ত। [১]
ইয়াহইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, আমি আহলে ইলমকে (বিজ্ঞ উলামা) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমযানের কাযা (করতে গিয়ে) দিনে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস অথবা অন্য কারণে রোযা ভঙ্গ করে ফেলে, তার উপর কাফফারা (ওয়াজিব) হবে না। যে কাফফারার কথা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে, তা সেই ব্যক্তি সম্বন্ধে যে ব্যক্তি রমযান মাসে আপন স্ত্রীর সাথে দিনে সহবাস করেছে। অবশ্য সেই ব্যক্তির উপর সেই দিনের কাযা (ওয়াজিব) হবে। মালিক (র) বলেন, এটাই সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় যা আমি এই ব্যাপারে শুনেছি।

[১] صَاعًا ছা’- খাদ্যশস্যের একটি পরিমাণ, প্রায় তিন সের ওজনের।

পরিচ্ছেদঃ ১০

রোযাদারের শিঙ্গা লাগানো

৬৪৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَحْتَجِمُ وَهُوَ صَائِمٌ قَالَ ثُمَّ تَرَكَ ذَلِكَ بَعْدُ فَكَانَ إِذَا صَامَ لَمْ يَحْتَجِمْ حَتَّى يُفْطِرَ.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) শিঙ্গা লাগাতেন অথচ তিনি রোযাদার । তিনি বলেন, অতঃপর তিনি তা ছেড়ে দেন। তৎপর তিনি যখন রোযা রাখতেন, ইফতার না করা পর্যন্ত শিঙ্গা লাগাতেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৪৭

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَا يَحْتَجِمَانِ وَهُمَا صَائِمَانِ.

ইবনু শিহাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস ও আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) দু’জনে শিঙ্গা লাগাতেন অথচ তাঁরা রোযাদার। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৪৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ كَانَ يَحْتَجِمُ وَهُوَ صَائِمٌ ثُمَّ لَا يُفْطِرُ قَالَ وَمَا رَأَيْتُهُ احْتَجَمَ قَطُّ إِلَّا وَهُوَ صَائِمٌ قَالَ مَالِك لَا تُكْرَهُ الْحِجَامَةُ لِلصَّائِمِ إِلَّا خَشْيَةً مِنْ أَنْ يَضْعُفَ وَلَوْلَا ذَلِكَ لَمْ تُكْرَهْ وَلَوْ أَنَّ رَجُلًا احْتَجَمَ فِي رَمَضَانَ ثُمَّ سَلِمَ مِنْ أَنْ يُفْطِرَ لَمْ أَرَ عَلَيْهِ شَيْئًا وَلَمْ آمُرْهُ بِالْقَضَاءِ لِذَلِكَ الْيَوْمِ الَّذِي احْتَجَمَ فِيهِ لِأَنَّ الْحِجَامَةَ إِنَّمَا تُكْرَهُ لِلصَّائِمِ لِمَوْضِعِ التَّغْرِيرِ بِالصِّيَامِ فَمَنْ احْتَجَمَ وَسَلِمَ مِنْ أَنْ يُفْطِرَ حَتَّى يُمْسِيَ فَلَا أَرَى عَلَيْهِ شَيْئًا وَلَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءُ ذَلِكَ الْيَوْمِ.

হিশাম ইবনু উরওয়াহ্ (র) থেকে বর্ণিতঃ

হিশাম ইবনু উরওয়াহ্ (র) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি শিঙ্গা লাগাতেন অথচ তিনি রোযাদার। অতঃপর এই কারণে রোযা ভঙ্গ করতেন না। হিশাম বলেন, আমি তাঁকে রোযাদার অবস্থা ছাড়া কখনো শিঙ্গা লাগাতে দেখিনি। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, রোযাদারের শিঙ্গা লাগানো মাকরূহ নয় কিন্তু দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় হলে মাকরূহ, দুর্বল না হলে এটা মাকরূহ হবে না। আর যদি কোন ব্যক্তি রমযানে শিঙ্গা লাগায়, অতঃপর রোযা ভঙ্গ করা হতে বিরত থাকে, আমি তার জন্য কোন কিছু (লাগবে বলে) মনে করি না এবং যেদিন শিঙ্গা লাগিয়েছে সেই দিনের রোযা কাযা করার হুকুমও করি না। কেননা রোযার ক্ষতির আশংকায় রোযাদারের জন্য শিঙ্গা লাগানো মাকরূহ করা হয়েছে। ফলে যে ব্যক্তি লাগিয়েছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত রোযা ইফতার করা হতে বিরত রয়েছে আমি তার জন্য কোন দোষ মনে করি না এবং তার উপর সেই দিনের (রোযার) কাযাও প্রয়োজন হবে না।

পরিচ্ছেদঃ ১১

আশুরা দিবসে রোযা

৬৪৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ يَوْمًا تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُهُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَلَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ كَانَ هُوَ الْفَرِيضَةَ وَتُرِكَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ.

নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আশুরা দিবস এমন একটি দিবস ছিল, যে দিবসে জাহিলিয়া যুগে কুরাইশগণ রোযা রাখত। জাহিলিয়া যুগে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও সে দিবসে রোযা রাখতেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মদীনায় এলে পরে তিনি সেই রোযা রাখলেন এবং লোকদেরকেও সেই দিনের রোযা রাখতে হুকুম করলেন। অতঃপর যখন রমযানের রোযা ফরয হল, উহাই ফরয হিসেবে রইল। আশুরা দিবসের রোযা ছেড়ে দেয়া হল। অতঃপর যে ইচ্ছা করত ঐ দিবসে রোযা রাখত, আর যে ইচ্ছা করত না সে তা ছেড়ে দিত। (বুখারী ২০০২, মুসলিম ১১২৫)

৬৫০

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ عَامَ حَجَّ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ يَا أَهْلَ الْمَدِينَةِ أَيْنَ عُلَمَاؤُكُمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لِهَذَا الْيَوْمِ هَذَا يَوْمُ عَاشُورَاءَ وَلَمْ يُكْتَبْ عَلَيْكُمْ صِيَامُهُ وَأَنَا صَائِمٌ فَمَنْ شَاءَ فَلْيَصُمْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيُفْطِرْ.

হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আউফ (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি হজ্জের সালে [১] আশুরা দিবসে মুয়াবিয়া ইবনু আবূ সুফইয়ান (রা)-কে মিম্বরের উপর বলতে শুনেছেন, হে মদীনাবাসী! তোমাদের আলেমগণ কোথায় ? আমি এই দিবস সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি এটা আশুরা দিবস; তোমাদের উপর এই (দিবসের) রোযা ফরয করা হয়নি। আমি রোযা রেখেছি, তোমরা যে ইচ্ছা কর রোযা রাখতে পার, আর যার ইচছা রোযা ছেড়ে দাও। (বুখারী ২০০৩, মুসলিম ১১২৯)

[১] হজ্জের সাল- ৪৪ হিজরীতে আমীর মুয়াবিয়া তাঁর শাসনামলে প্রথমবার যে হজ্জ করেন উহাকে হজ্জের সাল বলা হয়েছে।

৬৫১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَرْسَلَ إِلَى الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ غَدًا يَوْمُ عَاشُورَاءَ فَصُمْ وَأْمُرْ أَهْلَكَ أَنْ يَصُومُوا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) হারিস ইবনু হিশাম (রা)-এর নিকট খবর পাঠিয়েছেন, কাল আশুরা দিবস, তুমি নিজেও রোযা রাখ এবং পরিবার-পরিজনকেও রোযা রাখতে বল। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ ১২

ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা দিবসে এবং সারা বৎসর রোযা রাখা

৬৫২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ صِيَامِ يَوْمَيْنِ يَوْمِ الْفِطْرِ وَيَوْمِ الْأَضْحَى.

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুই দিবসে রোযা নিষেধ করেছেন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন। (সহীহ, মুসলিম ১১৩৮)

৬৫৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ أَهْلَ الْعِلْمِ يَقُولُونَ لَا بَأْسَ بِصِيَامِ الدَّهْرِ إِذَا أَفْطَرَ الْأَيَّامَ الَّتِي نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صِيَامِهَا وَهِيَ أَيَّامُ مِنًى وَيَوْمُ الْأَضْحَى وَيَوْمُ الْفِطْرِ فِيمَا بَلَغَنَا قَالَ وَذَلِكَ أَحَبُّ مَا سَمِعْتُ إِلَيَّ فِي ذَلِكَ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আহলে ইলমকে (বিজ্ঞ উলামা) বলতে শুনেছেন, সর্বদা রোযা রাখতে কোন দোষ নেই, যদি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে দিবসে রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন সেই সব দিবসে রোযা রাখা হতে বিরত থাকে। সেই সব দিবস হল মিনা-এর দিনগুলো, ফিতর ও আযহা দিবস। আমাদের কাছে এই বিষয়ে যা পৌঁছেছে এবং এই ব্যাপারে আমি যা শুনেছি তন্মধ্যে এটা হচ্ছে সর্বাপেক্ষা আমার পছন্দনীয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ ১৩

অনবরত রোযা রাখার (সওমে বেসাল) প্রতি নিষেধাজ্ঞা

৬৫৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ الْوِصَالِ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ فَإِنَّكَ تُوَاصِلُ فَقَالَ إِنِّـي لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ إِنِّي أُطْعَمُ وَأُسْقَـى.

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনবরত রাত্রেও কিছু না খেয়ে রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ্! আপনি যে অনবরত রোযা রাখেন! রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি অবশ্য তোমাদের মত নয়। আমাকে আহার ও পানীয় দেওয়া হয়। (বুখারী ১৯৬২, মুসলিম ১১০২)

৬৫৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِيَّاكُمْ وَالْوِصَالَ إِيَّاكُمْ وَالْوِصَالَ قَالُوا فَإِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ إِنِّي لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِي.

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা অনবরত রোযা রাখা হতে নিজেদেরকে বাঁচাও। তোমরা অনবরত রোযা রাখা হতে নিজেদেরকে বাঁচাও। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! তবে আপনি যে অনবরত রোযা রাখেন ? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি তোমাদের মত নই। আমি রাত্রি যাপন করি (এই অবস্থায়) যে, আমার প্রভু আমাকে আহার দান করেন এবং পানীয় দান করেন। (বুখারী ১৯৬৬, মুসলিম ১১০৩)

পরিচ্ছেদঃ ১৪

ভুলে হত্যা ও যিহার [১] -এর রোযা

৬৫৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِيمَنْ وَجَبَ عَلَيْهِ صِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ فِي قَتْلِ خَطَأٍ أَوْ تَظَاهُرٍ فَعَرَضَ لَهُ مَرَضٌ يَغْلِبُهُ وَيَقْطَعُ عَلَيْهِ صِيَامَهُ أَنَّهُ إِنْ صَحَّ مِنْ مَرَضِهِ وَقَوِيَ عَلَى الصِّيَامِ فَلَيْسَ لَهُ أَنْ يُؤَخِّرَ ذَلِكَ وَهُوَ يَبْنِي عَلَى مَا قَدْ مَضَى مِنْ صِيَامِهِ وَكَذَلِكَ الْمَرْأَةُ الَّتِي يَجِبُ عَلَيْهَا الصِّيَامُ فِي قَتْلِ النَّفْسِ خَطَأً إِذَا حَاضَتْ بَيْنَ ظَهْرَيْ صِيَامِهَا أَنَّهَا إِذَا طَهُرَتْ لَا تُؤَخِّرُ الصِّيَامَ وَهِيَ تَبْنِي عَلَى مَا قَدْ صَامَتْ وَلَيْسَ لِأَحَدٍ وَجَبَ عَلَيْهِ صِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ فِي كِتَابِ اللهِ أَنْ يُفْطِرَ إِلَّا مِنْ عِلَّةٍ مَرَضٍ أَوْ حَيْضَةٍ وَلَيْسَ لَهُ أَنْ يُسَافِرَ فَيُفْطِرَ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ.

ইয়াহইয়া (র) থেকে বর্ণিতঃ

আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি, সেই ব্যক্তি সম্পর্কে যে ব্যক্তির উপর ধারাবাহিকভাবে দুই মাসের রোযা ফরয হয়েছে ভুলে হত্যা অথবা যিহার করা বাবদ। অতঃপর তার কোন কঠিন পীড়া হয়েছে যদ্দরুন রোযা ভাঙতে হয়েছে। সে যদি আরোগ্য লাভ করে এবং রোযা রাখতে সক্ষম হয়, তবে আমি (এই ব্যাপারে) যা শুনেয়ছ, তন্মধ্যে উত্তম হল সেই ব্যক্তির জন্য এতে বিলম্ব করা জায়েয নয়। তার যে রোযা পূর্বে গত হয়েছে, উহার ভিত্তি করে সে অবশিষ্ট রোযা রাখবে।
তদ্রূপ ভুলে হত্যার কারণে যে নারীর উপর রোযা ওয়াজিব হয়েছে, সে তার রোযার মাঝখানে ঋতুমতী হলে রোযা রাখবে না। তবে পাক হলে পর সে রোযা রাখতে বিলম্ব করবে না এবং যে রোযা পূর্বে রেখেছে তার উপর ভিত্তি করে অবশিষ্ট রোযা রাখবে। আল্লাহর কিতাবের বিধান মুতাবিক যার উপর দুই মাসের রোযা ধারাবাহিকভাবে রাখা ওয়াজিব হয়েছে, তার জন্য পীড়াজনিত ব্যাপার ও ঋতুস্রাব ব্যতীত রোযা ভঙ্গ করা জায়েয নয়। এইরূপ ব্যক্তির জন্য সফর আরম্ভ করে রোযা ভঙ্গ করারও অনুমতি নেই। যেরূপ কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি রুগ্ন থাকে কিংবা সফরে থাকে, তবে সে অন্য দিন রোযা রাখবে।’
ইয়াহইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, এই ব্যাপারে যা শুনেছি, তার মধ্যে এটাই আমার কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম।

[১] যিহাব: নিজের স্ত্রীকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করে সম্বোধন করা।

পরিচ্ছেদঃ ১৫

রোযার রুগ্ন ব্যক্তির করণীয়

৬৫৭

قَالَ يَحْيَى سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ الْأَمْرُ الَّذِي سَمِعْتُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ الْمَرِيضَ إِذَا أَصَابَهُ الْمَرَضُ الَّذِي يَشُقُّ عَلَيْهِ الصِّيَامُ مَعَهُ وَيُتْعِبُهُ وَيَبْلُغُ ذَلِكَ مِنْهُ فَإِنَّ لَهُ أَنْ يُفْطِرَ وَكَذَلِكَ الْمَرِيضُ الَّذِي اشْتَدَّ عَلَيْهِ الْقِيَامُ فِي الصَّلَاةِ وَبَلَغَ مِنْهُ وَمَا اللهُ أَعْلَمُ بِعُذْرِ ذَلِكَ مِنْ الْعَبْدِ وَمِنْ ذَلِكَ مَا لَا تَبْلُغُ صِفَتُهُ فَإِذَا بَلَغَ ذَلِكَ صَلَّى وَهُوَ جَالِسٌ وَدِينُ اللهِ يُسْرٌ وَقَدْ أَرْخَصَ اللهُ لِلْمُسَافِرِ فِي الْفِطْرِ فِي السَّفَرِ وَهُوَ أَقْوَى عَلَى الصِّيَامِ مِنْ الْمَرِيضِ قَالَ اللهُ تَعَالَى فِي كِتَابِهِ { فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ } فَأَرْخَصَ اللهُ لِلْمُسَافِرِ فِي الْفِطْرِ فِي السَّفَرِ وَهُوَ أَقْوَى عَلَى الصَّوْمِ مِنْ الْمَرِيض فَهَذَا أَحَبُّ مَا سَمِعْتُ إِلَيَّ وَهُوَ الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ.

ইয়াহইয়া (র) থেকে বর্ণিতঃ

আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি, আমি আহলে ইলম-এর কাছে যা শুনেছি তা হচ্ছে এই পীড়িত ব্যক্তির যদি এমন রোগ হয় যাতে রোযা রাখা তার জন্য দুষ্কর এবং কষ্টদায়ক হয়, যখন রোগ এই স্তরে পৌঁছে তখন তার জন্য রোযা ইফতার (রাখিয়া ভাঙিয়া ফেলা বা শুরুতেই না রাখা) করা জায়েয আছে। তদ্রূপ পীড়িত ব্যক্তির যদি নামাযে দাঁড়াতে মুশকিল হয় অর্থাৎ পীড়ার কারণে তার ওযর (অপারগতা) সেই দরজায় পৌঁছায়, আল্লাহ্ তা’আলা বান্দার ওযর সম্পর্কে বান্দা অপেক্ষা অধিক জ্ঞাত। আবার কোন কোন রোগ সেই দরজার হয় না, যখন ওযর এই স্তরে পৌঁছে, তখন সে বসে নামায আদায় করবে। আর আল্লাহর দ্বীন সহজ। তিনি মুসাফিরের জন্য সফরে রোযা ভাঙার অনুমতি দিয়েছেন। অথচ মুসাফির পীড়িত ব্যক্তির তুলনায় রোযা রাখতে অধিক সক্ষম।
আল্লাহ্ তা’আলা কিতাবে বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি রুগ্ন থাকে অথবা সফরে থাকে, সে অন্যদিন রোযা করবে।’ আল্লাহ্ তা’আলা (এই আয়াতে) মুসাফিরের জন্য সফরে রোযা না রাখার অনুমতি দিয়েছেন। অথচ সে রোযার উপর পীড়িতের তুলনায় অধিক শক্তিশালী। এই ব্যাপারে যা শুনেছি তন্মধ্যে এটাই আমার কাছে পছন্দনীয়। আমাদের নিকট এটাই ঐকমত্যে গৃহীত।

পরিচ্ছেদঃ ১৬

রোযার মানত করা এবং মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে রোযা রাখা

৬৫৮

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ نَذَرَ صِيَامَ شَهْرٍ هَلْ لَهُ أَنْ يَتَطَوَّعَ فَقَالَ سَعِيدٌ لِيَبْدَأْ بِالنَّذْرِ قَبْلَ أَنْ يَتَطَوَّعَ ৩৭قَالَ مَالِك وَبَلَغَنِي عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ مِثْلُ ذَلِكَ -قَالَ مَالِك مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ نَذْرٌ مِنْ رَقَبَةٍ يُعْتِقُهَا أَوْ صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ بَدَنَةٍ فَأَوْصَى بِأَنْ يُوَفَّى ذَلِكَ عَنْهُ مِنْ مَالِهِ فَإِنَّ الصَّدَقَةَ وَالْبَدَنَةَ فِي ثُلُثِهِ وَهُوَ يُبَدَّى عَلَى مَا سِوَاهُ مِنْ الْوَصَايَا إِلَّا مَا كَانَ مِثْلَهُ وَذَلِكَ أَنَّهُ لَيْسَ الْوَاجِبُ عَلَيْهِ مِنْ النُّذُورِ وَغَيْرِهَا كَهَيْئَةِ مَا يَتَطَوَّعُ بِهِ مِمَّا لَيْسَ بِوَاجِبٍ وَإِنَّمَا يُجْعَلُ ذَلِكَ فِي ثُلُثِهِ خَاصَّةً دُونَ رَأْسِ مَالِهِ لِأَنَّهُ لَوْ جَازَ لَهُ ذَلِكَ فِي رَأْسِ مَالِهِ لَأَخَّرَ الْمُتَوَفَّى مِثْلَ ذَلِكَ مِنْ الْأُمُورِ الْوَاجِبَةِ عَلَيْهِ حَتَّى إِذَا حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُ وَصَارَ الْمَالُ لِوَرَثَتِهِ سَمَّى مِثْلَ هَذِهِ الْأَشْيَاءِ الَّتِي لَمْ يَكُنْ يَتَقَاضَاهَا مِنْهُ مُتَقَاضٍ فَلَوْ كَانَ ذَلِكَ جَائِزًا لَهُ أَخَّرَ هَذِهِ الْأَشْيَاءَ حَتَّى إِذَا كَانَ عِنْدَ مَوْتِهِ سَمَّاهَا وَعَسَى أَنْ يُحِيطَ بِجَمِيعِ مَالِهِ فَلَيْسَ ذَلِكَ لَهُ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-কে জিজ্ঞেস করা হল সেই ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি মাসের রোযার মানত করেছে, তার জন্য নফল রোযা রাখা জায়েয কিনা? সাঈদ (র) বললেন, নফলের পূর্বে মানতের (রোযা) আরম্ভ করবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) হতেও আমার নিকট এইরূপ রেওয়ায়ত পৌঁছেছে।
ইয়াহইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে অথচ তার উপর মানত রয়েছে গোলাম আযাদ করার অথবা সদকা প্রদানের অথবা কুরবানী করার। ফলে সে তার সম্পদ হতে সেই মানত পূর্ণ করার অসিয়ত করেছে। তবে সদকা এবং কুরবানী তার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ হতে পূর্ণ করা হবে।

মানতকে অন্যান্য নফল অসিয়তের উপর অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। তবে যদি অন্য অসিয়ত ও মানতের মত (ওয়াজিব) হয়। কারণ নফল কাজ বা নফল কাজের অসিয়ত ওয়াজিব অসিয়ত ও মানতের সমতুল্য নয়। মানত ইত্যাদি মৃত ব্যক্তির সকল সম্পদ হতে আদায় না করে এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ হতে আদায় করা হবে। যদি তাঁর জন্য এটা বৈধ হয়, তবে মুতাওয়াফ্ফী (মৃত্যুর সন্নিকটে পৌঁছেছে এমন ব্যক্তি) তার উপর ওয়াজিব বিষয়গুলোকে পিছিয়ে রাখবে। এমতাবস্থায় যখন তার মৃত্যু উপস্থিত হবে, তখন তার সম্পদের মালিক হবে তার ওয়ারিসগণ, বিশেষত ঐ সকল বিষয় যেসব বিষয়ে তার পক্ষ হতে তাকীদ করবার জন্য তেমন কোন ব্যক্তি না থাকে। (স্বভাবতই ওয়ারিসগণ ঐসব মানত বা অসিয়ত পূর্ণ করতে আগ্রহী হবে না)। সকল সম্পদ হতে ঐসব আদায় করা তার জন্য জায়েয হলে সে এই সকল ব্যাপারে বিলম্ব করবে। যখন মৃত্যুর সময় উপস্থিত হবে তখন সে উহা প্রকাশ করবে। হয়তো ঐ সকল (প্রকাশিত দাবি-দাওয়া) পূরণে তার সমস্ত সম্পত্তিই নিঃশেষ হয়ে যাবে, তার জন্য এটা জায়েয নয়।

৬৫৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يُسْأَلُ هَلْ يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ أَوْ يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ فَيَقُولُ لَا يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ وَلَا يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ.

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-কে প্রশ্ন করা হল একজন আর একজনের পক্ষে রোযা রাখবে কি ? অথবা একজন অন্যজনের পক্ষে নামায আদায় করবে কি ? তিনি উত্তরে বললেন, একজন আর একজনের পক্ষে রোযা রাখবে না এবং অপরের পক্ষে নামাযও আদায় করবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

পরিচ্ছেদঃ ১৭

রমযানের কাযা ও কাফ্ফারা

৬৬০

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَخِيهِ خَالِدِ بْنِ أَسْلَمَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَفْطَرَ ذَاتَ يَوْمٍ فِي رَمَضَانَ فِي يَوْمٍ ذِي غَيْمٍ وَرَأَى أَنَّهُ قَدْ أَمْسَى وَغَابَتْ الشَّمْسُ فَجَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ طَلَعَتْ الشَّمْسُ فَقَالَ عُمَرُ الْخَطْبُ يَسِيرٌ وَقَدْ اجْتَهَدْنَا قَالَ مَالِك يُرِيدُ بِقَوْلِهِ الْخَطْبُ يَسِيرٌ الْقَضَاءَ فِيمَا نُرَى وَاللهُ أَعْلَمُ وَخِفَّةَ مَؤُونَتِهِ وَيَسَارَتِهِ يَقُولُ نَصُومُ يَوْمًا مَكَانَهُ.

খালিদ ইবনু আসলাম (র) থেকে বর্ণিতঃ

খালিদ ইবনু আসলাম (র) বর্ণনা করেন উমার ইবনু খাত্তাব (রা) রমযান মাসে মেঘাচ্ছন্ন এক দিনে ইফতার করলেন। তিনি মনে করলেন যে, সন্ধ্যা হয়েছে এবং সূর্য ডুবেছে। অতঃপর এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আমিরুল মুমিনীন! সূর্য উদিত হয়েছে। উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বললেন, বিষয়টির সমাধান হচ্ছে, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, উমার (রা) এটার দ্বারা আমাদের মতে কাযা মুরাদ নিয়েছেন। (আল্লাহ্ সর্বজ্ঞানী) তার উক্তি ‘বিষয়টির সমাধান সহজ’ এতে মেহনতের স্বল্পতা ও এটা সহজ হওয়াই তিনি বুঝাতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, এর পরিবর্তে আর একদিন রোযা রাখব।

৬৬১

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُوْلُ، يَصُومُ قَضَاءَ رَمَضَانَ مُتَتَابِعًا مَنْ أَفْطَرَهُ مِنْ مَرَضٍ أَوْ فِي سَفَرٍ.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) বলতেন, যে ব্যক্তি সফর অথবা পীড়ার কারণে রোযা রাখেনি, সে রমযানের রোযা রাখবে একাধারে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৬২

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ وَأَبَا هُرَيْرَةَ اخْتَلَفَا فِي قَضَاءِ رَمَضَانَ فَقَالَ أَحَدُهُمَا يُفَرِّقُ بَيْنَهُ وَقَالَ الْآخَرُ لَا يُفَرِّقُ بَيْنَهُ لَا أَدْرِي أَيَّهُمَا قَالَ يُفَرِّقُ بَيْنَهُ.

ইবনু শিহাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ও আবূ হুরায়রা (রা) তাঁরা দু’জনে রমযানের কাযা সম্পর্কে ইখতিলাফ (মতপার্থক্য) করেছেন। একজন বলেছেন, কাযা রোযা পৃথক পৃথক রাখা হবে। আর একজন বলেছেন, পৃথক পৃথক রাখা যাবে না (অর্থাৎ একাধারে রাখতে হবে)। তাঁদের দু’জনের মধ্যে কে বলেছেন পৃথক করা যাবে, কে বলেছেন পৃথক করা যাবে না, তা আমার (নির্দিষ্ট) জানা নাই। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৬৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ مَنْ اسْتَقَاءَ وَهُوَ صَائِمٌ فَعَلَيْهِ الْقَضَاءُ وَمَنْ ذَرَعَهُ الْقَيْءُ فَلَيْسَ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ.

নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন, যে রোযা অবস্থায় স্বেচ্ছায় বমি করে, তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে। আর যার অনিচ্ছাকৃত বমি হয়, তাকে করতে হবে না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

৬৬৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يُسْأَلُ عَنْ قَضَاءِ رَمَضَانَ فَقَالَ سَعِيدٌ أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ لَا يُفَرَّقَ قَضَاءُ رَمَضَانَ وَأَنْ يُوَاتَرَ قَالَ يَحْيَى سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ فِيمَنْ فَرَّقَ قَضَاء رَمَضَانَ فَلَيْسَ عَلَيْهِ إِعَادَةٌ وَذَلِكَ مُجْزِئٌ عَنْهُ وَأَحَبُّ ذَلِكَ إِلَيَّ أَنْ يُتَابِعَهُ قَالَ مَالِك مَنْ أَكَلَ أَوْ شَرِبَ فِي رَمَضَانَ سَاهِيًا أَوْ نَاسِيًا أَوْ مَا كَانَ مِنْ صِيَامٍ وَاجِبٍ عَلَيْهِ أَنَّ عَلَيْهِ قَضَاءَ يَوْمٍ مَكَانَهُ.

ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (র) শুনেছেন সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-কে রমযানের কাযা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলতেন, আমার কাছে পছন্দনীয় হচ্ছে রমযানের কাযাকে পৃথক না করে একাধারে রাখা। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহইয়া (র) বলেন, মালিক (র)-কে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমযানের কাযা পৃথক পৃথক করে রেখেছে সেই ব্যক্তিকে রোযা পুনরায় রাখতে হবে না। সে রোযাই তার পক্ষে যথেষ্ট হবে। কিন্তু আমার নিকট একাধারে রাখাই পছন্দনীয়।
ইয়াহইয়া (র) বলেন, আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমযানের রোযা অথবা অন্য কোন ওয়াজিব রোযায় ভুলবসত আহার করে অথবা পান করে তাকে সে দিনের পরিবর্তে অন্য একদিন কাযা করতে হবে।

৬৬৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدِ بْنِ قَيْسٍ الْمَكِّيِّ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ مُجَاهِدٍ وَهُوَ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ فَجَاءَهُ إِنْسَانٌ فَسَأَلَهُ عَنْ صِيَامِ أَيَّامِ الْكَفَّارَةِ أَمُتَتَابِعَاتٍ أَمْ يَقْطَعُهَا قَالَ حُمَيْدٌ فَقُلْتُ لَهُ نَعَمْ يَقْطَعُهَا إِنْ شَاءَ قَالَ مُجَاهِدٌ لَا يَقْطَعُهَا فَإِنَّهَا فِي قِرَاءَةِ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مُتَتَابِعَاتٍََََ قَالَ مَالِك وَأَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يَكُونَ مَا سَمَّى اللهُ فِي الْقُرْآنِ يُصَامُ مُتَتَابِعًا و سُئِلَ مَالِك عَنْ الْمَرْأَةِ تُصْبِحُ صَائِمَةً فِي رَمَضَانَ فَتَدْفَعُ دَفْعَةً مِنْ دَمٍ عَبِيطٍ فِي غَيْرِ أَوَانِ حَيْضِهَا ثُمَّ تَنْتَظِرُ حَتَّى تُمْسِيَ أَنْ تَرَى مِثْلَ ذَلِكَ فَلَا تَرَى شَيْئًا ثُمَّ تُصْبِحُ يَوْمًا آخَرَ فَتَدْفَعُ دَفْعَةً أُخْرَى وَهِيَ دُونَ الْأُولَى ثُمَّ يَنْقَطِعُ ذَلِكَ عَنْهَا قَبْلَ حَيْضَتِهَا بِأَيَّامٍ فَسُئِلَ مَالِك كَيْفَ تَصْنَعُ فِي صِيَامِهَا وَصَلَاتِهَا قَالَ مَالِك ذَلِكَ الدَّمُ مِنْ الْحَيْضَةِ فَإِذَا رَأَتْهُ فَلْتُفْطِرْ وَلْتَقْضِ مَا أَفْطَرَتْ فَإِذَا ذَهَبَ عَنْهَا الدَّمُ فَلْتَغْتَسِلْ وَتَصُومُ و سُئِلَ عَمَّنْ أَسْلَمَ فِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ رَمَضَانَ هَلْ عَلَيْهِ قَضَاءُ رَمَضَانَ كُلِّهِ أَوْ يَجِبُ عَلَيْهِ قَضَاءُ الْيَوْمِ الَّذِي أَسْلَمَ فِيه فَقَالَ لَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءُ مَا مَضَى وَإِنَّمَا يَسْتَأْنِفُ الصِّيَامَ فِيمَا يُسْتَقْبَلُ وَأَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يَقْضِيَ الْيَوْمَ الَّذِي أَسْلَمَ فِيْهِ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

হুমায়দ ইবনু কায়েস মক্কী (র) বলেছেন যে, আমি মুজাহিদ (র)-এর সাথে ছিলাম। তিনি বায়তুল্লাহ্ তওয়াফ করতেছিলেন। এমন সময় তাঁর কাছে একজন লোক এল এবং কাফফারার রোযা সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করল। উহা একাধারে রাখতে হবে, না আলাদা আলাদা রাখতে পারবে। মুজাহিদ (র) বললেন, আলাদা আলাদা রাখবে না, কারণ উবাই ইবনু কা’ব (রা)-এর কিরাআতে রয়েছে
ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مُتَتَابِعَاتٍََََ [১]
(হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, আমার নিকট পছন্দনীয় হল, আল্লাহ্ তা’আলা কুরআনে যেরূপ নির্ধারিত করেছেন সেরূপ একাধারে রোযা রাখ।
ইয়াহইয়া (র) বলেন, মালিক (র)-কে প্রশ্ন করা হল এমন এক স্ত্রীলোক সম্পর্কে, যে স্ত্রীলোকের রমযানে ফজর হয়েছে রোযাবস্থায়। হঠাৎ তার তাজা রক্ত বের হল, ঋতুর নির্দিষ্ট সময় ছাড়া। অতঃপর সে লক্ষ্য রাখবে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেরূপ রক্ত দেখার জন্য কিন্তু কিছুই দেখল না। অন্য একদিন ফজরে হঠাৎ আর এক দফা রক্ত বের হল কিন্তু এটা পূর্বের তুলনায় কম। অতঃপর কয়েক দিন তার হায়েযের পূর্ব পর্যন্ত তা বন্ধ রইল। সেই স্ত্রীলোক নিজের নামায ও রোযার বিষয়ে কি করবে ? এর উত্তরে মালিক (র) বলেন, সেই রক্ত হায়েযে গণ্য হবে। যখন তা দেখবে রোযা ছেড়ে দিবে এবং সেই রোযা পরে কাযা করবে। তার রক্ত বন্ধ হয়ে গেলে সে গোসল করবে এবং রোযা রাখবে।
মালিক (র)-এর নিকট প্রশ্ন করা হল এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি রমযানের শেষ দিন মুসলমান হল, তাকে রমযানের সকল রোযা করতে হবে কি ? এবং যেদিন মুসলমান হয়েছে সে দিনের (রোযার) কাযা তার উপর ওয়াজিব হবে কি ? মালিক (র) প্রশ্নের উত্তরে বললেন, তাকে বিগত রোযা কাযা করতে হবে না। সে আগামীতে রোযা আরম্ভ করবে, যেদিন মুসলমান হয়েছে সে দিনের রোযা রাখাটা আমার কাছে পছন্দনীয়।

[১] তিন দিন একাধারে।

পরিচ্ছেদঃ ১৮

নফল রোযার কাযা

৬৬৬

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ عَائِشَةَ وَحَفْصَةَ زَوْجَيْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصْبَحَتَا صَائِمَتَيْنِ مُتَطَوِّعَتَيْنِ فَأُهْدِيَ لَهُمَا طَعَامٌ فَأَفْطَرَتَا عَلَيْهِ فَدَخَلَ عَلَيْهِمَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقَالَتْ حَفْصَةُ وَبَدَرَتْنِي بِالْكَلَامِ وَكَانَتْ بِنْتَ أَبِيهَا يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي أَصْبَحْتُ أَنَا وَعَائِشَةُ صَائِمَتَيْنِ مُتَطَوِّعَتَيْنِ فَأُهْدِيَ إِلَيْنَا طَعَامٌ فَأَفْطَرْنَا عَلَيْهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اقْضِيَا مَكَانَهُ يَوْمًا آخَرَ.
قَالَ يَحْيَى سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ مَنْ أَكَلَ أَوْ شَرِبَ سَاهِيًا أَوْ نَاسِيًا فِي صِيَامِ تَطَوُّعٍ فَلَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءٌ وَلْيُتِمَّ يَوْمَهُ الَّذِي أَكَلَ فِيهِ أَوْ شَرِبَ وَهُوَ مُتَطَوِّعٌ وَلَا يُفْطِرْهُ وَلَيْسَ عَلَى مَنْ أَصَابَهُ أَمْرٌ يَقْطَعُ صِيَامَهُ وَهُوَ مُتَطَوِّعٌ قَضَاءٌ إِذَا كَانَ إِنَّمَا أَفْطَرَ مِنْ عُذْرٍ غَيْرَ مُتَعَمِّدٍ لِلْفِطْرِ وَلَا أَرَى عَلَيْهِ قَضَاءَ صَلَاةِ نَافِلَةٍ إِذَا هُوَ قَطَعَهَا مِنْ حَدَثٍ لَا يَسْتَطِيعُ حَبْسَهُ مِمَّا يَحْتَاجُ فِيهِ إِلَى الْوُضُوءِ قَالَ مَالِك وَلَا يَنْبَغِي أَنْ يَدْخُلَ الرَّجُلُ فِي شَيْءٍ مِنْ الْأَعْمَالِ الصَّالِحَةِ الصَّلَاةِ وَالصِّيَامِ وَالْحَجِّ وَمَا أَشْبَهَ هَذَا مِنْ الْأَعْمَالِ الصَّالِحَةِ الَّتِي يَتَطَوَّعُ بِهَا النَّاسُ فَيَقْطَعَهُ حَتَّى يُتِمَّهُ عَلَى سُنَّتِهِ إِذَا كَبَّرَ لَمْ يَنْصَرِفْ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ وَإِذَا صَامَ لَمْ يُفْطِرْ حَتَّى يُتِمَّ صَوْمَ يَوْمِهِ وَإِذَا أَهَلَّ لَمْ يَرْجِعْ حَتَّى يُتِمَّ حَجَّهُ وَإِذَا دَخَلَ فِي الطَّوَافِ لَمْ يَقْطَعْهُ حَتَّى يُتِمَّ سُبُوعَهُ وَلَا يَنْبَغِي أَنْ يَتْرُكَ شَيْئًا مِنْ هَذَا إِذَا دَخَلَ فِيهِ حَتَّى يَقْضِيَهُ إِلَّا مِنْ أَمْرٍ يَعْرِضُ لَهُ مِمَّا يَعْرِضُ لِلنَّاسِ مِنْ الْأَسْقَامِ الَّتِي يُعْذَرُونَ بِهَا وَالْأُمُورِ الَّتِي يُعْذَرُونَ بِهَا وَذَلِكَ أَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ فِي كِتَابِهِ { وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنْ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنْ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ } فَعَلَيْهِ إِتْمَامُ الصِّيَامِ كَمَا قَالَ اللهُ وَقَالَ اللهُ تَعَالَى { وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ } فَلَوْ أَنَّ رَجُلًا أَهَلَّ بِالْحَجِّ تَطَوُّعًا وَقَدْ قَضَى الْفَرِيضَةَ لَمْ يَكُنْ لَهُ أَنْ يَتْرُكَ الْحَجَّ بَعْدَ أَنْ دَخَلَ فِيهِ وَيَرْجِعَ حَلَالًا مِنْ الطَّرِيقِ وَكُلُّ أَحَدٍ دَخَلَ فِي نَافِلَةٍ فَعَلَيْهِ إِتْمَامُهَا إِذَا دَخَلَ فِيهَا كَمَا يُتِمُّ الْفَرِيضَةَ وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ.

ইবনু শিহাব (র) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধমির্ণী আয়েশা ও হাফসা (রা)-এর নফল রোযার নিয়তে ফজর হল এবং তাঁদের দু’জনের জন্য খাদ্যদ্রব্য হাদিয়াস্বরূপ প্রেরণ করা হয়। তাঁরা উহা দ্বারা রোযা ভেঙে ফেলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রবেশ করলেন। ইবনু শিহাব (র) বলেন, আয়েশা (রা) বলেছেন, হাফসা (রা) ছিলেন পিতার মত সাহসী। আর তিনি আমার আগে কথা বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমি এবং আয়েশা আমরা উভয়ের নফল রোযা অবস্থায় ফজর হল। অতঃপর আমাদের উদ্দেশ্যে খাদ্যদ্রব্য হাদিয়ারূপে প্রেরণ করা হয়। আমরা তা দ্বারা রোযা ভেঙে ফেলি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বক্তব্য শোনার পর বললেন, তোমরা এই রোযার পরিবর্তে অন্য একদিন (রোযা) কাযা করবে। (যয়ীফ, আবূ দাঊদ ২৪৫৭, তিরমিযী ৭৩৫, আলবানী হাদীসটিকে যয়ীফ বলেছেন, [যয়ীফ আল-জামে’ ৬৩০৩] তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
ইয়াহইয়া (রা) বলেন, আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছে, যে ভুলবশত নফল রোযা অবস্থায় আহার অথবা পান করে, তার উপর কাযা ওয়াজিব নয়। নফল রোযা অবস্থায় যেই দিন আহার বা পান করেছে সেই দিনের রোযা পূর্ণ করবে এবং রোযা ভঙ্গ করবে না। আর নফল রোযাদার যদি এমন কোন অসুবিধার সম্মুখীন হয়, যার কারণে রোযা ভাঙতে হয়, তবে তাকে কাযা করতে হবে না, যদি কোন ওযরবশত রোযা ভেঙে থাকে এবং ইচ্ছা করে রোযা ভঙ্গ না করে। আর আমি সেই ব্যক্তির জন্য নফল নামাযের কাযা জরুরী মনে করি না, যে ব্যক্তি এমন কোন হাদাস্-এর (পেশাব-পায়খানার আবেগ, বায়ু নির্গত হওয়ার আবেগ) কারণে নামায ভেঙেছে, যাকে বাধা দিয়ে রাখা যায় না, যাতে ওযূর প্রয়োজন হয়।
ইয়াহইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, কোন ব্যক্তি নেক আমলসমূহের মধ্যে কোন নেক আমলে প্রবৃত্ত হলে (নেক আমল বলতে) যথা নামায, রোযা, হজ্জ বা অনুরূপ কোন নেক আমল, যা লোকে নফলস্বরূপ করে থাকে, সেই ব্যক্তির জন্য উহা ছেড়ে দেওয়া সমীচীন নয়, যতক্ষণ উহা সুন্নত মুতাবিক পূর্ণ না করে। যদি নামাযের নিয়তে তকবীর বলে তবে দুই রাক’আত না পড়া পর্যন্ত উহা ছাড়বে না। রোযা রাখলে সেই দিনের রোযা পূর্ণ না করা পর্যন্ত ইফতার করবে না। ইহরাম বাঁধলে তার হজ্জ পূর্ণ না করা পর্যন্ত ইহরাম ছাড়বে না। যখন তাওয়াফে প্রবেশ করবে সাত তাওয়াফ পূর্ণ না করা পর্যন্ত উহা ছাড়বে না।
এই সকলের মধ্যে কোন ইবাদতই আরম্ভ করে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, যতক্ষণ উহা পূর্ণ না করে। তবে কোন ওযরবশত যা তার জন্য প্রকাশ পায়, যেরূপ লোকের ওযর প্রকাশ পেয়ে থাকে, যেমন পীড়াসমূহ যার কারণে মাযূর (অক্ষম) হয়ে যায় অথবা অন্য কোন কারণে অক্ষম বলে গণ্য হয়। এটা এজন্য যে, আল্লাহ্ তা’আলা কিতাবে ইরশাদ করেছেন ‘পানাহার করতে থাক, যতক্ষণ পর্যন্ত সাদা বর্ণের সুতা (সুবহে সাদিক) কালবর্ণের সুতা (সুবহে কাযিব) হতে প্রকাশিত না হয়। অতঃপর রাত্রি পর্যন্ত রোযা পূর্ণ কর।’ ফলে তার উপর রোযা পূর্ণ করা ওয়াজিব।
যেমন আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা আল্লাহ্‌র জন্য হজ্জ ও উমরাহ্ পূর্ণ কর।’ অতঃপর যদি কোন ব্যক্তি নফল হজ্জের ইহরাম বাঁধে যে ইতিপূর্বে ফরয হজ্জ আদায় করেছে, সেই ব্যক্তির জন্য হজ্জ আরম্ভ করার পর তা ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি নেই। মাঝপথে ইহরাম ছেড়ে দিয়ে হালাল হওয়া চলবে না। যদি কোন ব্যক্তি কোন নফল কাজে প্রবৃত্ত হয়, তার জন্য উহা পূর্ণ করা ওয়াজিব, যেমন ফরযকে পূর্ণ করা হয়। আমি যা শুনেছি তন্মধ্যে এটা অতি উত্তম।

পরিচ্ছেদঃ ১৯

ওযরের কারণে রমযানের রোযা ভঙ্গের ফিদইয়া

৬৬৭

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ كَبِرَ حَتَّى كَانَ لَا يَقْدِرُ عَلَى الصِّيَامِ فَكَانَ يَفْتَدِي قَالَ مَالِك وَلَا أَرَى ذَلِكَ وَاجِبًا وَأَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يَفْعَلَهُ إِذَا كَانَ قَوِيًّا عَلَيْهِ فَمَنْ فَدَى فَإِنَّمَا يُطْعِمُ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مُدًّا بِمُدِّ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি জানতে পেরেছেন যে, আনাস ইবনু মালিক (রা) যখন অতি বৃদ্ধ হন, তখন তিনি রোযা রাখতে পারতেন না, তাই তিনি ফিদইয়া দিতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমি ফিদইয়া দেওয়াকে জরুরী মনে করি না। তবে দেওয়া আমার মতে উত্তম, যদি সামর্থ্য থাকে। যে ব্যক্তি ফিদইয়া দিবে সে প্রতিদিনের পরিবর্তে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুদ-এর (এক সের পরিমাণ ওজনের একটি পরিমাপ) সমপরিমাণ এক মুদ আহার করাবে।

৬৬৮

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ سُئِلَ عَنْ الْمَرْأَةِ الْحَامِلِ إِذَا خَافَتْ عَلَى وَلَدِهَا وَاشْتَدَّ عَلَيْهَا الصِّيَامُ قَالَ تُفْطِرُ وَتُطْعِمُ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا مُدًّا مِنْ حِنْطَةٍ بِمُدِّ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ مَالِك وَأَهْلُ الْعِلْمِ يَرَوْنَ عَلَيْهَا الْقَضَاءَ كَمَا قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ { فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ } وَيَرَوْنَ ذَلِكَ مَرَضًا مِنْ الْأَمْرَاضِ مَعَ الْخَوْفِ عَلَى وَلَدِهَا .

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-কে গর্ভবতী স্ত্রীলোক সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল সে যদি সন্তান সম্বন্ধে আশংকা করে এবং রোযা রাখা তার জন্য দুষ্কর হয় (তবে কি করবে) ? তিনি বললেন, সে রোযা রাখবে না এবং প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে আহার দিবে এক মুদ গম, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুদ পরিমাপে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেছেন, আহলে ইল্ম গর্ভবতীর জন্য রোযার কাযা ওয়াজিব মনে করেন না, যেমন আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেন
فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ [১]
গর্ভবতী অবস্থাকে তাঁরা রোগের মধ্যে একটি রোগ বলে মনে করেন যার সঙ্গে রয়েছে সন্তানের জীবনের আশংকা।

[১] ‘তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূর্ণ করে নিতে হবে। ২ ঃ ১৮৪

৬৬৯

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ مَنْ كَانَ عَلَيْهِ قَضَاءُ رَمَضَانَ فَلَمْ يَقْضِهِ وَهُوَ قَوِيٌّ عَلَى صِيَامِهِ حَتَّى جَاءَ رَمَضَانُ آخَرُ فَإِنَّهُ يُطْعِمُ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا مُدًّا مِنْ حِنْطَةٍ وَعَلَيْهِ مَعَ ذَلِكَ الْقَضَاءُ ৪৯و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ مِثْلُ ذَلِكَ.

আবদুর রহমান ইবনু কাসিম (র) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর পিতা বলতেন, যার উপর রমযানের কাযা রয়েছে, সে রোযা রাখতে সক্ষম, তবু কাযা (রোযা) রাখে নি, এইভাবে পরবর্তী রমযান এসে গিয়েছে, তবে সে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে এক মুদ করে গম দিবে, তদুপরি তার উপর কাযাও জরুরী হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, সাঈদ ইবনু যুবায়র (র) হতেও অনুরূপ বর্ণনা তাঁর কাছে পৌঁছেছে।

পরিচ্ছেদঃ ২০

রোযার কাযা

৬৭০

- حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ سَمِعَ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَقُوْلُ: إِنْ كَانَ لَيَكُونُ عَلَيَّ الصِّيَامُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَصُومُهُ حَتَّى يَأْتِيَ شَعْبَانُ.

নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

আমার জিম্মায় রমযানের রোযা (কাযা) থাকত। আমি তা রাখতে সক্ষম হতাম না, শা’বান মাস না আসা পর্যন্ত। (বুখারী ১৯৫০, মুসলিম ১১৪৬)

পরিচ্ছেদঃ ২১

সন্দেহের দিনে রোযা রাখা

৬৭১

- حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ أَهْلَ الْعِلْمِ يَنْهَوْنَ أَنْ يُصَامَ الْيَوْمُ الَّذِي يُشَكُّ فِيهِ مِنْ شَعْبَانَ إِذَا نَوَى بِهِ صِيَامَ رَمَضَانَ وَيَرَوْنَ أَنَّ عَلَى مَنْ صَامَهُ عَلَى غَيْرِ رُؤْيَةٍ ثُمَّ جَاءَ الثَّبْتُ أَنَّهُ مِنْ رَمَضَانَ أَنَّ عَلَيْهِ قَضَاءَهُ وَلَا يَرَوْنَ بِصِيَامِهِ تَطَوُّعًا بَأْسًا قَالَ مَالِك وَهَذَا الْأَمْرُ عِنْدَنَا وَالَّذِي أَدْرَكْتُ عَلَيْهِ أَهْلَ الْعِلْمِ بِبَلَدِنَا.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আহলে ইলমকে যেই দিনে সন্দেহ হয় সেই দিনে রোযা রাখতে নিষেধ করতে শুনেছেন, যদি উহাতে রমযানের রোযার নিয়ত করা হয়। আর তাঁরা মনে করেন, যে ব্যক্তি এরূপ (সন্দেহের) দিনে রোযা রেখেছে চাঁদ না দেখে, অতঃপর সেই দিন রমযান বলে প্রমাণিত হয়েছে, তার উপর সেই রোযার কাযা ওয়াজিব হবে। তবে (সন্দেহের দিনে) নফল রোযা রাখতে তাঁরা কোন দোষ মনে করেন না।
মালিক (র) বলেন, মাসআলা আমাদের নিকট এইরূপই এবং আমি এর উপর আমাদের শহরের আহলে ইলমকে একমতাবলম্বী পেয়েছি। (ইমাম মালিক (রঃ)-এর উক্তি)

পরিচ্ছেদঃ ২২

রোযার বিবিধ আহকাম

৬৭২

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ لَا يُفْطِرُ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ لَا يَصُومُ وَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ قَطُّ إِلَّا رَمَضَانَ وَمَا رَأَيْتُهُ فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ.

নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রোযা রাখতেন একাধারে, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি আর রোযা ছাড়বেন না, আর যখন তিনি রোযা রাখতেন না, আমরা তখন বলতাম, তিনি আর রোযা রাখবেন না। রমযান ব্যতীত কোন পূর্ণ মাসের রোযা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাখেননি এবং শা’বান মাসের চাইতে বেশি অন্য কোন মাসে রোযা রাখতেও তাঁকে দেখিনি। (বুখারী ১৯৬৯, মুসলিম ১১৫৬)

৬৭৩

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الصِّيَامُ جُنَّةٌ فَإِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ صَائِمًا فَلَا يَرْفُثْ وَلَا يَجْهَلْ فَإِنْ امْرُؤٌ قَاتَلَهُ أَوْ شَاتَمَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي صَائِمٌ إِنِّي صَائِمٌ.

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, রোযা (একটি) ঢাল, কাজেই তোমাদের যে কেউ রোযাদার হও, সে বাজে কথা বলবে না এবং বর্বরতার কাজ করবে না। যদি কোন ব্যক্তি তাকে গালি দেয় অথবা কাটাকাটি-মারামারি করতে আসে, তবে সে যেন বলে, আমি রোযাদার, আমি রোযাদার। (বুখারী ১৮৯৪, মুসলিম ১১৫১)

৬৭৪

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ إِنَّمَا يَذَرُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ وَشَرَابَهُ مِنْ أَجْلِي فَالصِّيَامُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ كُلُّ حَسَنَةٍ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ إِلَّا الصِّيَامَ فَهُوَ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ.

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ নিশ্চয়ই রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মৃগনাভীর ঘ্রাণ হতেও উত্তম; নিঃসন্দেহে রোযাদার তার প্রবৃত্তি ও পানাহারকে ত্যাগ করে আমার জন্য। তাই রোযা আমারই এবং আমি তার প্রতিদান দেব। প্রতিটি নেকীর প্রতিদান দশ হতে সাত শত পর্যন্ত, আর রোযা আমার জন্য, আমিই উহার প্রতিদান দেব। (বুখারী ১৮৯৪, মুসলিম ১১৫১)

৬৭৫

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَمِّهِ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُ قَالَ إِذَا دَخَلَ رَمَضَانُ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ وَصُفِّدَتْ الشَّيَاطِيْنُ.

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ

রমযান মাস যখন প্রবেশ করে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়, আর শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়। (সহীহ মারফু, বুখারী ১৮৯৮)

৬৭৬

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ أَهْلَ الْعِلْمِ لَا يَكْرَهُونَ السِّوَاكَ لِلصَّائِمِ فِي رَمَضَانَ فِي سَاعَةٍ مِنْ سَاعَاتِ النَّهَارِ لَا فِي أَوَّلِهِ وَلَا فِي آخِرِهِ وَلَمْ أَسْمَعْ أَحَدًا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يَكْرَهُ ذَلِكَ وَلَا يَنْهَى عَنْهُ
১১قَالَ يَحْيَى و سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ فِي صِيَامِ سِتَّةِ أَيَّامٍ بَعْدَ الْفِطْرِ مِنْ رَمَضَانَ إِنَّهُ لَمْ يَرَ أَحَدًا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَالْفِقْهِ يَصُومُهَا وَلَمْ يَبْلُغْنِي ذَلِكَ عَنْ أَحَدٍ مِنْ السَّلَفِ وَإِنَّ أَهْلَ الْعِلْمِ يَكْرَهُونَ ذَلِكَ وَيَخَافُونَ بِدْعَتَهُ وَأَنْ يُلْحِقَ بِرَمَضَانَ مَا لَيْسَ مِنْهُ أَهْلُ الْجَهَالَةِ وَالْجَفَاءِ لَوْ رَأَوْا فِي ذَلِكَ رُخْصَةً عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَرَأَوْهُمْ يَعْمَلُونَ ذَلِكَ و قَالَ يَحْيَى سَمِعْت قَوْله تَعَالَى يَقُولُ لَمْ أَسْمَعْ أَحَدًا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَالْفِقْهِ وَمَنْ يُقْتَدَى بِهِ يَنْهَى عَنْ صِيَامِ يَوْمِ الْجُمُعَةِ وَصِيَامُهُ حَسَنٌ وَقَدْ رَأَيْتُ بَعْضَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَصُومُهُ وَأُرَاهُ كَانَ يَتَحَرَّاهُ.

মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আহলে ইলমদের কাছে শুনেছেন যে, তাঁরা দিনের কোন মুহূর্তে রোযাদারের জন্য মেছওয়াক করাকে মাকরূহ জানতেন না দিনের শুরুর দিকে হোক বা শেষভাগে হোক। তিনি বলেন, আমি কাউকেও শুনিনি, উহাকে মাকরূহ জানতে অথবা উহা হতে বারণ করতে।
ইয়াহইয়া (র) বলেন, ঈদুল ফিতরের পর ছয় দিনের রোযা সম্পর্কে মালিক (র)-কে আমি বলতে শুনেছি, তিনি আহলে ইলম এবং আহলে ফিক্হ, কউকেও সেই (ছয় দিনের) রোযা রাখতে দেখেননি এবং তিনি বলেন, প্রাচীনদের কারো নিকট হতে (উহা রাখার ব্যাপারে) আমার কাছে কোন কিছু পৌঁছেনি। আর আহলে ইলম উহাকে মাকরূহ জানতেন এবং উহা বিদআত হওয়ার আশংকা করতেন। আরো ভয় ছিল, অজ্ঞরা সহজকে কঠিন করা যাদের অভ্যাস তারা রমযানের মধ্যে যা গণ্য নয় উহাকে রমযানের সাথে মিলিয়ে দিবে, যদি তারা আহলে ইলমকে উহা রাখতে দেখে এবং তাঁদের নিকট হতে এই ব্যাপারে অনুমতি লাভ করে।
ইয়াহ্ইয়া (র) বলেন, আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি, আহলে ইলম ও আহলে ফিকহ এবং লোকে যাদেরকে স্মরণ করে থাকে, তাঁদের কাউকেও জুম’আ দিবসের রোযা হতে নিষেধ করতে শুনিনি। জুম’আর দিনে রোযা রাখা ভাল। আমি কোন কোন আহলে ইলমকে তা পালন করতে দেখেছি। আর আমি মনে করি, তাঁরা (জুম’আ দিবসের প্রতি) লক্ষ্য রাখতেন (এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে)।

No comments

Powered by Blogger.