মুয়াত্তা ইমাম মালিক অধ্যায় ই’তিকাফ
পরিচ্ছেদঃ
১
ই’তিকাফের বর্ণনা
৬৭৭
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ
عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اعْتَكَفَ يُدْنِي إِلَيَّ رَأْسَهُ فَأُرَجِّلُهُ
وَكَانَ لَا يَدْخُلُ الْبَيْتَ إِلَّا لِحَاجَةِ الْإِنْسَانِ.
নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ই’তিকাফে থাকা অবস্থায় তাঁর
শির আমার দিকে ঝুঁকিয়ে দিতেন, আমি তাঁর চুল চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে দিতাম। আর তিনি
হাজতে-ইনসানী (পায়খানা-প্রস্রাবের আবশ্যক) ব্যতীত গৃহে প্রবেশ করতেন না। (বুখারী
২০২৯, মুসলিম ২৯৭)
৬৭৮
و
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ أَنَّ عَائِشَةَ كَانَتْ إِذَا اعْتَكَفَتْ لَا تَسْأَلُ عَنْ
الْمَرِيضِ إِلَّا وَهِيَ تَمْشِي لَا تَقِفُ ১১১قَالَ مَالِك لَا يَأْتِي الْمُعْتَكِفُ حَاجَتَهُ وَلَا
يَخْرُجُ لَهَا وَلَا يُعِينُ أَحَدًا إِلَّا أَنْ يَخْرُجَ لِحَاجَةِ
الْإِنْسَانِ وَلَوْ كَانَ خَارِجًا لِحَاجَةِ أَحَدٍ لَكَانَ أَحَقَّ مَا
يُخْرَجُ إِلَيْهِ عِيَادَةُ الْمَرِيضِ وَالصَّلَاةُ عَلَى الْجَنَائِزِ
وَاتِّبَاعُهَا قَالَ مَالِك لَا يَكُونُ الْمُعْتَكِفُ مُعْتَكِفًا حَتَّى
يَجْتَنِبَ مَا يَجْتَنِبُ الْمُعْتَكِفُ مِنْ عِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَالصَّلَاةِ
عَلَى الْجَنَائِزِ وَدُخُولِ الْبَيْتِ إِلَّا لِحَاجَةِ الْإِنْسَانِ.
‘আমরা বিন্ত আবদুর
রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রা) যখন ই’তিকাফ করতেন,
তখন তিনি রোগীর অবস্থা জিজ্ঞাসা করতে গমন করতেন না। কিন্তু চলার পথে না দাঁড়িয়ে
জিজ্ঞেস করে নিতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহ্ইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, ই’তিকাফকারী কোন প্রয়োজনে মসজিদের বাহিরে
যাবে না এবং কোন কারণে বাহিরও হবে না। আর কাউকে সাহায্যও করবে না। কিন্তু যদি
হাজতে-ইনসানীর (প্রস্রাব-পায়খানা) জন্য বাহির হয় তা বৈধ হবে। আর যদি কারো আবশ্যকের
জন্য বের হওয়া জায়েয হত তবে রোগীর অবস্থা দেখা, জানাযার নামায পড়া ও উহার অনুগমন
তার জন্য সর্বাগ্রে বৈধ হত (কিন্তু সেগুলোর জন্যও বের হওয়া নিষেধ)।
ইয়াহ্ইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, ই’তিকাফকারী (প্রকৃত) ই’তিকাফকারী হবে না
যতক্ষণ যেসব বস্তু হতে তার পরহেয করতে হয় সেসব হতে সে পরহেয না করবে (যথা রোগী
দেখতে যাওয়া, জানাযার নামায পড়া, হাজতে-ইনসানী ব্যতীত গৃহে প্রবেশ করা)।
৬৭৯
و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَأَلَ ابْنَ شِهَابٍ
عَنْ الرَّجُلِ يَعْتَكِفُ هَلْ يَدْخُلُ لِحَاجَتِهِ تَحْتَ سَقْفٍ فَقَالَ
نَعَمْ لَا بَأْسَ بِذَلِكَ ১১১৩-قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا الَّذِي لَا
اخْتِلَافَ فِيهِ أَنَّهُ لَا يُكْرَهُ الْاعْتِكَافُ فِي كُلِّ مَسْجِدٍ
يُجَمَّعُ فِيهِ وَلَا أُرَاهُ كُرِهَ الْاعْتِكَافُ فِي الْمَسَاجِدِ الَّتِي لَا
يُجَمَّعُ فِيهَا إِلَّا كَرَاهِيَةَ أَنْ يَخْرُجَ الْمُعْتَكِفُ مِنْ مَسْجِدِهِ
الَّذِي اعْتَكَفَ فِيهِ إِلَى الْجُمُعَةِ أَوْ يَدَعَهَا فَإِنْ كَانَ مَسْجِدًا
لَا يُجَمَّعُ فِيهِ الْجُمُعَةُ وَلَا يَجِبُ عَلَى صَاحِبِهِ إِتْيَانُ
الْجُمُعَةِ فِي مَسْجِدٍ سِوَاهُ فَإِنِّي لَا أَرَى بَأْسًا بِالْاعْتِكَافِ
فِيهِ لِأَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ { وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي
الْمَسَاجِدِ } فَعَمَّ اللهُ الْمَسَاجِدَ كُلَّهَا وَلَمْ يَخُصَّ شَيْئًا
مِنْهَا ১১১৪-قَالَ
مَالِك فَمِنْ هُنَالِكَ جَازَ لَهُ أَنْ يَعْتَكِفَ فِي الْمَسَاجِدِ الَّتِي لَا
يُجَمَّعُ فِيهَا الْجُمُعَةُ إِذَا كَانَ لَا يَجِبُ عَلَيْهِ أَنْ يَخْرُجَ
مِنْهُ إِلَى الْمَسْجِدِ الَّذِي تُجَمَّعُ فِيهِ الْجُمُعَةُ
১১১৫-قَالَ مَالِك وَلَا
يَبِيتُ الْمُعْتَكِفُ إِلَّا فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي اعْتَكَفَ فِيهِ إِلَّا
أَنْ يَكُونَ خِبَاؤُهُ فِي رَحَبَةٍ مِنْ رِحَابِ الْمَسْجِدِ وَلَمْ أَسْمَعْ
أَنَّ الْمُعْتَكِفَ يَضْرِبُ بِنَاءً يَبِيتُ فِيهِ إِلَّا فِي الْمَسْجِدِ أَوْ
فِي رَحَبَةٍ مِنْ رِحَابِ الْمَسْجِدِ وَمِمَّا يَدُلُّ عَلَى أَنَّهُ لَا
يَبِيتُ إِلَّا فِي الْمَسْجِدِ قَوْلُ عَائِشَةَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اعْتَكَفَ لَا يَدْخُلُ الْبَيْتَ إِلَّا
لِحَاجَةِ الْإِنْسَانِ وَلَا يَعْتَكِفُ فَوْقَ ظَهْرِ الْمَسْجِدِ وَلَا فِي
الْمَنَارِ يَعْنِي الصَّوْمَعَةَ
১১১৬-و قَالَ مَالِك
يَدْخُلُ الْمُعْتَكِفُ الْمَكَانَ الَّذِي يُرِيدُ أَنْ يَعْتَكِفَ فِيهِ قَبْلَ
غُرُوبِ الشَّمْسِ مِنْ اللَّيْلَةِ الَّتِي يُرِيدُ أَنْ يَعْتَكِفَ فِيهَا
حَتَّى يَسْتَقْبِلَ بِاعْتِكَافِهِ أَوَّلَ اللَّيْلَةِ الَّتِي يُرِيدُ أَنْ
يَعْتَكِفَ فِيهَا ১১১৭-وَالْمُعْتَكِفُ
مُشْتَغِلٌ بِاعْتِكَافِهِ لَا يَعْرِضُ لِغَيْرِهِ مِمَّا يَشْتَغِلُ بِهِ مِنْ
التِّجَارَاتِ أَوْ غَيْرِهَا وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يَأْمُرَ الْمُعْتَكِفُ
بِضَيْعَتِهِ وَمَصْلَحَةِ أَهْلِهِ وَأَنْ يَأْمُرَ بِبَيْعِ مَالِهِ أَوْ
بِشَيْءٍ لَا يَشْغَلُهُ فِي نَفْسِهِ فَلَا بَأْسَ بِذَلِكَ إِذَا كَانَ خَفِيفًا
أَنْ يَأْمُرَ بِذَلِكَ مَنْ يَكْفِيهِ إِيَّاهُ
১১১৮- قَالَ مَالِك لَمْ
أَسْمَعْ أَحَدًا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يَذْكُرُ فِي الْاعْتِكَافِ شَرْطًا
وَإِنَّمَا الْاعْتِكَافُ عَمَلٌ مِنْ الْأَعْمَالِ مِثْلُ الصَّلَاةِ
وَالصِّيَامِ وَالْحَجِّ وَمَا أَشْبَهَ ذَلِكَ مِنْ الْأَعْمَالِ مَا كَانَ مِنْ
ذَلِكَ فَرِيضَةً أَوْ نَافِلَةً فَمَنْ دَخَلَ فِي شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ فَإِنَّمَا
يَعْمَلُ بِمَا مَضَى مِنْ السُّنَّةِ وَلَيْسَ لَهُ أَنْ يُحْدِثَ فِي ذَلِكَ
غَيْرَ مَا مَضَى عَلَيْهِ الْمُسْلِمُونَ لَا مِنْ شَرْطٍ يَشْتَرِطُهُ وَلَا
يَبْتَدِعُهُ وَقَدْ اعْتَكَفَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَعَرَفَ الْمُسْلِمُونَ سُنَّةَ الْاعْتِكَافِ، ১১১৯-قَالَ مَالِك وَالْاعْتِكَافُ وَالْجِوَارُ سَوَاءٌ
وَالْاعْتِكَافُ لِلْقَرَوِيِّ وَالْبَدَوِيِّ سَوَاءٌ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি ইবনু শিহাব (র)-কে প্রশ্ন
করলেন, এক ব্যক্তি সম্পর্কে যে ই’তিকাফ করতেছে, সে কি তার প্রস্রাব-পায়খানার
প্রয়োজনে (গৃহের) ছাদের নিচে প্রবেশ করতে পারবে ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, এতে কোন
ক্ষতি নেই। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
ইয়াহ্ইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, আমাদের নিকট যাতে কোন ইখতিলাফ নেই তা এই যে,
যে সকল মসজিদে জুম’আর নামায পড়া হয়, সেই সকল মসজিদে ই’তিকাফ করা মাকরূহ নয়। আর আমি
মনে করি না যে, যে সকল মসজিদে জুম’আর নামায পড়া হয় না, সে সকল মসজিদে ই’তিকাফকে
তিনি (মালিক র.) মাকরূহ বলেছেন। ব্যাপার হল এই যে, ই’তিকাফকারী যে মসজিদে ই’তিকাফ
করতেছে উহা হতে বের হবে অথবা জুম’আ ছেড়ে দিবে, সে জন্য তিনি মাকরূহ বলেছেন। তাঁর
মতে, যদি এরূপ মসজিদ হয় যাতে জুম’আ পড়া হয় না এবং ই’তিকাফকারীর উপর সেই মসজিদ ছাড়া
অন্য কোন মসজিদে জুম’আতে যাওয়া ওয়াজিব না হয় তবে সেই মসজিদে ই’তিকাফ করতে কোন দোষ
নেই। কারণ আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন, [১] وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ এতে সাধারণভাবে সকল মসজিদকে
উদ্দেশ্য করা হয়েছে এবং কোন মসজিদকে আল্লাহ্ নির্দিষ্ট করে দেননি।
মালিক (র) বলেন, এজন্যই ই’তিকাফকারীর পক্ষে জুম’আ অনুষ্ঠিত হয় না সেইরূপ মসজিদে
ই’তিকাফ করা জায়েয হবে, যদি মসজিদ হতে বের হয়ে জুম’আ মসজিদে যাওয়া তার উপর ওয়াজিব
না হয়।
মালিক (র) বলেন, যে মসজিদে ই’তিকাফ করেছে (ই’তিকাফকারী) সেই মসজিদেই রাত্রি যাপন
করবে, তবে যদি তাঁর তাঁবু মসজিদের চত্বরের কোন চত্বরে হয়।
মালিক (র) বলেন, আমি শুনি নাই, ই’তিকাফকারী রাত্রি যাপন করার জন্য কোন কিছু
নির্মাণ করবে কিন্তু তার রাত্রি যাপন হবে মসজিদে অথবা মসজিদের চত্বরে। মসজিদ
ব্যতীত অন্যত্র রাত্রি যাপন সে করবে না, এর প্রমাণ হল আয়েশা (রা)-এর উক্তি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন ই’তিকাফ করতেন তখন হাজতে-ইনসানী
ছাড়া গৃহে প্রবেশ করতেন না।
মালিক (র) বলেন, কেউ মসজিদের ছাদের উপর ই’তিকাফ করবে না এবং সাওমাআতেও (মিনার) না।
মালিক (র) বলেন, ই’তিকাফকারী যেই রাত্রে ই’তিকাফের ইচ্ছা করেছে, সেই রাত্রের
সূর্যাস্তের পূর্বে ই’তিকাফের স্থানে প্রবেশ করবে যাতে যে রাত্রে ই’তিকাফ করবে, সে
রাত্রের প্রথম অংশকে সে ই’তিকাফ দ্বারা মুবারকবাদ জানাতে পারে।
মালিক (র) বলেন, ই’তিকাফকারী নিজের ই’তিকাফে মশগুল থাকবে ই’তিকাফ ভিন্ন তিজারত বা
অন্যকিছুর দিকে যে সবের প্রতি মশগুল হওয়া যায় সেদিকে মনোযোগী হবে না। ই’তিকাফকারীর
পক্ষে তার কোন আসবাব অথবা পরিবারের উপকারী ও উপযোগী কোন কাজ, তার মাল বিক্রয় অথবা
অন্য কোন কাজ যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে না (এই জাতীয়) নিজের কোন আবশ্যকে নির্দেশ
দেয়াতে কোন ক্ষতি নেই। এতে কোন দোষ নেই, যদি তিনি ছোটখাট কাজের জন্য কোন ব্যক্তিকে
সেই কার্য সমাধা করতে নির্দেশ দেন।
মালিক (র) বলেন, কোন আহলে ইলম কর্তৃক ই’তিকাফে কোন শর্ত আরোপ করতে আমি শুনিনি।
ই’তিকাফ অন্যান্য আমলের মত একটি আমল; যথা নামায, রোযা, হজ্জ এবং অন্যান্য যা এ সকল
আমলের অনুরূপ এবং যা উহাদের মধ্যে ফরয অথবা নফল। (শরীয়তের) এই সকল আমলের মত
ই’তিকাফও একটি আমল। যে ব্যক্তি এর কোন আমলে প্রবেশ করবে, সে প্রতিষ্ঠিত সুন্নত
মুতাবিক আমল করবে। মুসলমানগণ যে তরীকায় চলেছেন সে তরীকা ছাড়া এতে নূতন কোন পন্থা
আবিষ্কার করার অধিকার তার নেই। না কোন শর্ত আরোপ করবে, না কোন বিদ’আত সৃষ্টি করবে।
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ই’তিকাফ করেছেন, উহা হতে মুসলমানরা
ই’তিকাফের সুন্নত অবগত হয়েছেন।
ইয়াহ্ইয়া (রা) বলেন, মালিক (র) বলেছেন, ই’তিকাফ এবং মসজিদে অবস্থান এক সমান। আর
গ্রাম ও শহরের লোকের ই’তিকাফ এক সমান (আহকামের ব্যাপারে)।
[১]
‘তোমরা মসজিদে ই’তিকাফরত অবস্থায় তাদের সাথে (স্ত্রী) মিলিত হইও না। ২ ঃ ১৮৭
পরিচ্ছেদঃ
২
যা ছাড়া ই’তিকাফ হয় না
৬৮০
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ وَنَافِعًا
مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَا لَا اعْتِكَافَ إِلَّا بِصِيَامٍ
بِقَوْلِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي كِتَابِهِ { وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى
يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنْ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنْ
الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ
وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ } فَإِنَّمَا ذَكَرَ اللهُ الْاعْتِكَافَ
مَعَ الصِّيَامِ ১১২২-قَالَ
مَالِك وَعَلَى ذَلِكَ الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّهُ لَا اعْتِكَافَ إِلَّا
بِصِيَامٍ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তাঁর কাছে খবর পৌঁছেছে যে, কাসিম
ইবনু মুহাম্মদ (র) ও আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা)-এর মাওলা নাফি’ (র) বলেছেন,
ই’তিকাফ জায়েয নয় রোযা ব্যতীত, কারণ কুরআনে ইরশাদ হয়েছে
وَكُلُوْا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنْ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنْ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ .
আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণ রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে
তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগমন-পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। তোমরা মসজিদে
ই’তিকাফরত অবস্থায় তাদের সাথে সঙ্গত হইও না। ২ ১৮৭
আল্লাহ তা‘আলা ই‘তিকাফের উল্লেখ করেছেন রোযার সাথে। মালিক (র) বলেন, আমাদের নিকট
মাসআলা অনুরূপ। রোযা ব্যতীত ই‘তিকাফ হয় না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে
বর্ণনা করেছেন)
পরিচ্ছেদঃ
৩
ই’তিকাফকারীর ঈদের
উদ্দেশ্যে গমন
৬৮১
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ زِيَاد بْن عَبْد الرَّحْمَنِ قَالَ حَدَّثَنَا مَالِك عَنْ سُمَيٍّ
مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ اعْتَكَفَ فَكَانَ يَذْهَبُ لِحَاجَتِهِ تَحْتَ سَقِيفَةٍ فِي
حُجْرَةٍ مُغْلَقَةٍ فِي دَارِ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ ثُمَّ لَا يَرْجِعُ حَتَّى
يَشْهَدَ الْعِيدَ مَعَ الْمُسْلِمِيْنَ.
সুমাই (র) থেকে
বর্ণিতঃ
আবূ
বক্র ইবনু আবদুর রহমান (র) ই’তিকাফ করতেন এবং তিনি স্বীয় প্রয়োজনে মালিক ইবনু
ওয়ালিদ (র)-এর গৃহে ছাদওয়ালা একটি হুজরায় গমন করতেন, অতঃপর তিনি ঈদের জামাআতে
মুসলমানদের সাথে উপস্থিত হওয়ার পূর্বে ই’তিকাফ হতে বের হতেন না। (হাদীসটি ইমাম
মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
৬৮২
حَدَّثَنِي
يَحْيَى عَنْ زِيَاد عَنْ مَالِك أَنَّهُ رَأَى بَعْضَ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا
اعْتَكَفُوا الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ لَا يَرْجِعُونَ إِلَى
أَهَالِيهِمْ حَتَّى يَشْهَدُوا الْفِطْرَ مَعَ النَّاسِ ১১২৬-قَالَ زِيَاد قَالَ مَالِك وَبَلَغَنِي
ذَلِكَ عَنْ أَهْلِ الْفَضْلِ الَّذِينَ مَضَوْا وَهَذَا أَحَبُّ مَا سَمِعْتُ
إِلَيَّ فِي ذَلِكَ.
যিয়াদ (র) থেকে
বর্ণিতঃ
মালিক (র) হতে যিয়াদ (র) বর্ণনা
করেন তিনি কিন্তু আহলে ইলমকে দেখেছেন, তাঁরা রমযানের শেষ দশ দিন যখন ই’তিকাফ করতেন
তখন মুসলমানদের সাথে ঈদুল ফিতরে হাজির না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের পরিজনের নিকট ফিরতেন
না।
মালিক (র) বলেন, জ্ঞান ও গুণের আধিকারী আমার পূর্ববর্তী মনীষিগণের নিকট হতে আমার
নিকট এটা পৌঁছেছে যে, যখন তাঁরা ই’তিকাফ করতেন তখন অনুরূপ করতেন। এই ব্যাপারে আমি
যা শুনেছি তন্মধ্যে এটা আমার কছে পছন্দনীয়।
পরিচ্ছেদঃ
৪
ই’তিকাফ কাযা করা
৬৮৩
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ
عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ فَلَمَّا انْصَرَفَ إِلَى
الْمَكَانِ الَّذِي أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ فِيهِ وَجَدَ أَخْبِيَةً خِبَاءَ
عَائِشَةَ وَخِبَاءَ حَفْصَةَ وَخِبَاءَ زَيْنَبَ فَلَمَّا رَآهَا سَأَلَ عَنْهَا
فَقِيلَ لَهُ هَذَا خِبَاءُ عَائِشَةَ وَحَفْصَةَ
وَزَيْنَبَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آلْبِرَّ
تَقُولُونَ بِهِنَّ ثُمَّ انْصَرَفَ فَلَمْ يَعْتَكِفْ حَتَّى اعْتَكَفَ عَشْرًا
مِنْ شَوَّالٍ ১১২৯و
سُئِلَ مَالِك عَنْ رَجُلٍ دَخَلَ الْمَسْجِدَ لِعُكُوفٍ فِي الْعَشْرِ
الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ فَأَقَامَ يَوْمًا أَوْ يَوْمَيْنِ ثُمَّ مَرِضَ
فَخَرَجَ مِنْ الْمَسْجِدِ أَيَجِبُ عَلَيْهِ أَنْ يَعْتَكِفَ مَا بَقِيَ مِنْ
الْعَشْرِ إِذَا صَحَّ أَمْ لَا يَجِبُ ذَلِكَ عَلَيْهِ وَفِي أَيِّ شَهْرٍ
يَعْتَكِفُ إِنْ وَجَبَ عَلَيْهِ ذَلِكَ فَقَالَ مَالِك يَقْضِي مَا وَجَبَ
عَلَيْهِ مِنْ عُكُوفٍ إِذَا صَحَّ فِي رَمَضَانَ أَوْ غَيْرِهِ وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّ
رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرَادَ الْعُكُوفَ فِي رَمَضَانَ
ثُمَّ رَجَعَ فَلَمْ يَعْتَكِفْ حَتَّى إِذَا ذَهَبَ رَمَضَانُ اعْتَكَفَ عَشْرًا
مِنْ شَوَّالٍ ১১৩وَالْمُتَطَوِّعُ
فِي الْاعْتِكَافِ فِي رَمَضَانَ وَالَّذِي عَلَيْهِ الْاعْتِكَافُ أَمْرُهُمَا
وَاحِدٌ فِيمَا يَحِلُّ لَهُمَا وَيَحْرُمُ عَلَيْهِمَا وَلَمْ يَبْلُغْنِي أَنَّ
رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ اعْتِكَافُهُ إِلَّا
تَطَوُّعًا.
১১৩১قَالَ مَالِك فِي
الْمَرْأَةِ إِنَّهَا إِذَا اعْتَكَفَتْ ثُمَّ حَاضَتْ فِي اعْتِكَافِهَا إِنَّهَا
تَرْجِعُ إِلَى بَيْتِهَا فَإِذَا طَهُرَتْ رَجَعَتْ إِلَى الْمَسْجِدِ أَيَّةَ
سَاعَةٍ طَهُرَتْ ثُمَّ تَبْنِي عَلَى مَا مَضَى مِنَ اعْتِكَافِهَا وَمِثْلُ
ذَلِكَ الْمَرْأَةُ يَجِبُ عَلَيْهَا صِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ فَتَحِيضُ
ثُمَّ تَطْهُرُ فَتَبْنِي عَلَى مَا مَضَى مِنْ صِيَامِهَا وَلَا تُؤَخِّرُ
ذَلِكَ.
‘আমরাহ্ বিন্ত
আবদুর রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ই’তিকাফ করতে মনস্থ করলেন। অতঃপর যে স্থানে তিনি ই’তিকাফ করবার মনস্থ
করেছিলেন সে স্থানে গমন করলে (সেখানে) কয়েকটি তাঁবু দেখতে পেলেন। (এটা) আয়েশা
(রা)-এর তাঁবু, এটা হাফসা (রা)-এর তাঁবু এবং এটা যায়নব (রা)-এর তাঁবু। তিনি তাঁবু
সম্পর্কে জেনে তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। তাঁকে বলা হল, এটা আয়েশা, এটা হাফসা
এবং যায়নব (রা)-এর তাঁবু। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, এই সকলের দ্বারা তাঁরা কি পূণ্যের নিয়ত করিয়াছেন?
অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন এবং ই’তিকাফ করলেন না। পরে তিনি শাওয়াল মাসের দশ দিন
ই’তিকাফ করলেন। (বুখারী ২০৩৪, মুসলিম ১১৭৩)
যিয়াদ (র) বলেন, মালিক (র)-কে প্রশ্ন করা হল সে ব্যক্তি সম্পর্কে যে রমযানের শেষের
দশদিনে ই’তিকাফের উদ্দেশ্যে মসজিদে প্রবেশ করেছে, অতঃপর একদিন অথবা দুইদিন অবস্থান
করার পর পীড়িত হয়ে পড়ে এবং মসজিদ হতে বের হয়, সে সুস্থ হলে অবশিষ্ট দিনের ই’তিকাফ
করা তার উপর ওয়াজিব হবে কি ? কিংবা উহার কাযা তার উপর আদৌ ওয়াজিব হবে না? ইহা তার
উপর ওয়াজিব হলে কোন মাসে সে ই’তিকাফ করবে ? উত্তরে মালিক (র) বলেন, সুস্থ হয়ে গেলে
রমযান বা পর-রমযানে তার উপর যে ই’তিকাফ ওয়াজিব হয়েছে তা কাযা করবে।
আমার নিকট খবর পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একবার
রমযানে ই’তিকাফ করার মনস্থ করলেন। পরে তিনি মত পাল্টালেন এবং ই‘তিকাফ করলেন না।
অতঃপর রমযান অতিবাহিত হলে শাওয়াল মাসে দশ দিন ই‘তিকাফ করলেন।
নফল ই’তিকাফকারী ও যার উপর ই’তিকাফ ওয়াজিব হালাল ও হারামের বিষয়ে দু’জনের হুকুম এক
অর্থাৎ যা হালাল দু’জনের জন্য হালাল এবং যা হারাম দু’জনের জন্য হারাম। রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ই’তিকাফ ছিল নফল ই’তিকাফ এইরূপই আমার নিকট
রেওয়ায়ত পৌঁছেছে।
মালিক (র) বলেন, যে স্ত্রীলোক ই’তিকাফ করে এবং ই’তিকাফ থাকতে তার হায়েয (ঋতুস্রাব)
হয়, সে স্ত্রীলোক নিজ ঘরে ফিরে যাবে। তারপর যখন পাক হবে সে মুহূর্তে মসজিদে
উপস্থিত হবে। এতে বিলম্ব করবে না। অতঃপর তার ই’তিকাফের যে কয়দিন পূর্বে অতিবাহিত
হয়েছে উহা বাদ দিয়ে বাকি দিনগুলো ই’তিকাফ করবে।
মালিক (র) বলেন, অনুরূপ যে স্ত্রীলোকের উপর একাধারে দুই মাসের রোযা ওয়াজিব তার যদি
ঋতুস্রাব হয়, তৎপর পাক হয়, তবে সে যে রোযা পূর্বে রেখেছিল তার উপর ভিত্তি করে বাকি
রোযা রাখবে। উহাতে বিলম্ব করবে না।
৬৮৪
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَذْهَبُ لِحَاجَةِ الْإِنْسَانِ فِي الْبُيُوْتِ ১১৩৩-قَالَ مَالِك لَا يَخْرُجُ الْمُعْتَكِفُ
مَعَ جَنَازَةِ أَبَوَيْهِ وَلَا مَعَ غَيْرِهَا.
ইবনু শিহাব (র)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ই’তিকাফের অবস্থায় হাজতে ইনসানীর জন্য গৃহে প্রবেশ করতেন। (এমনটি ইমাম
বুখারী বর্ণনা করেছেন ২০২৯, মুসলিম ৭১১, তবে, ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি
মুরসাল)
মালিক (র) বলেন, ই’তিকাফকারী মাতাপিতার জানাযা এবং তাঁরা ব্যতীত অন্য কারো জানাযায়
শরীক হওয়ার জন্য বের হবে না।
পরিচ্ছেদঃ
৫
ই’তিকাফ অবস্থায় বিবাহ
করা
মালিক
(র) বলেন, ই’তিকাফকারীর পক্ষে নিকাহ (অর্থাৎ) আক্দ করাতে কোন ক্ষতি নেই যাতে সহবাস
করা না হয়। ই’তিকাফকারী মহিলাকেও বিবাহ করা যায় সহবাস ব্যতীত কেবল খিতবার
(প্রস্তাবের) মাধ্যমে। মালিক (র) বলেন, ই’তিকাফকারীর জন্য তার স্ত্রীদের সহিত দিনে
যা হারাম রাতেও তা হারাম।
মালিক (র) বলেন, কোন ব্যক্তির জন্য ই’তিকাফে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রীকে স্পর্শ
(সহবাস) করা হালাল নয় এবং চুমু খাওয়া ইত্যাদি দ্বারা স্ত্রীকে উপভোগ করবে না।
মালিক (র) বলেন, ই’তিকাফকারী পুরুষ ও স্ত্রীলোক দু’জনের জন্য ই’তিকাফ অবস্থায়
নিকাহ্ করা মাকরূহ বলতে আমি কাউকেও শুনিনি যতক্ষণ সহবাস না হয়। আর রোযাদারের জন্য
রোযা অবস্থায় বিবাহ করা মাকরূহ নয়। ই’তিকাফকারীর বিবাহ করা এবং মুহরিম-এর (যিনি
হজ্জ উমরার উদ্দেশ্যে ইহরাম করেছেন) বিবাহ করার মধ্যে পার্থক্য এই যে, মুহরিম
পানাহার করতে পারবে না। আর ই’তিকাফকারীর পুরুষ ও স্ত্রীলোক তারা দু’জনে তৈল
ব্যবহার করতে পারবে, খোশবু ব্যবহার করতে পারবে। তারা প্রত্যেকে চুল কাটতে পারবে
কিন্তু জানাযায় শরীক হতে পারবে না। জানাযা নামায পড়িতে পারবে না। আর তাঁরা রোগী
দেখতে যেতে পারবে না। তাই বিবাহের ব্যাপারে দু’জনের (মুহরিম ও ই’তিকাফকারী) হুকুম
ভিন্ন ভিন্ন।
মালিক (র) বলেন, মুহরিম, ই’তিকাফকারী এবং রোযাদারের বিবাহের ব্যাপারে এটা
পূর্ববর্তীদের নীতি ছিল।
পরিচ্ছেদঃ
৬
লাইলাতুল ক্বদর-এর
বর্ণনা
৬৮৫
حَدَّثَنِي
زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْهَادِ عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ التَّيْمِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الْوُسُطَ مِنْ رَمَضَانَ
فَاعْتَكَفَ عَامًا حَتَّى إِذَا كَانَ لَيْلَةَ إِحْدَى وَعِشْرِينَ وَهِيَ
اللَّيْلَةُ الَّتِي يَخْرُجُ فِيهَا مِنْ صُبْحِهَا مِنْ اعْتِكَافِهِ قَالَ مَنْ
اعْتَكَفَ مَعِيَ فَلْيَعْتَكِفْ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ وَقَدْ رَأَيْتُ هَذِهِ
اللَّيْلَةَ ثُمَّ أُنْسِيتُهَا وَقَدْ رَأَيْتُنِي أَسْجُدُ مِنْ صُبْحِهَا فِي
مَاءٍ وَطِينٍ فَالْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ وَالْتَمِسُوهَا فِي
كُلِّ وِتْرٍ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَأُمْطِرَتْ السَّمَاءُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ
وَكَانَ الْمَسْجِدُ عَلَى عَرِيشٍ فَوَكَفَ الْمَسْجِدُ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ
فَأَبْصَرَتْ عَيْنَايَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْصَرَفَ
وَعَلَى جَبْهَتِهِ وَأَنْفِهِ أَثَرُ الْمَاءِ وَالطِّينِ مِنْ صُبْحِ لَيْلَةِ
إِحْدَى وَعِشْرِيْنَ.
আবূ সাঈদ খুদরী
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমযানের মাঝের দশদিন ই’তিকাফ করতেন। তাঁর
ই’তিকাফের বর্ণনা এই এক বৎসর তিনি ই’তিকাফ করলেন, অতঃপর যখন একুশের রাত্রি উপস্থিত
হল, সে রাত্রির ফজরে ই’তিকাফ হতে বের হলেন। তিনি ফরমালেন যে ব্যক্তি আমার সাথে
ই’তিকাফ করেছে, সে যেন শেষের দশ দিনও ই’তিকাফ করে। আমি এই রাত্রিতে শবে-ক্বদর
মালুম করেছি। তারপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি সে রাত্রির ভোরবেলা আমাকে
পানি ও কাদামাটিতে সিজ্দা করতে অনুভব করেছি। তাই তোমরা উহা তালাশ কর শেষের দশদিনে
এবং উহার সন্ধান কর প্রতি বিজোড় রাত্রে। (বুখারী ২০২৭, মুসলিম ১১৬৭)
আবূ সাঈদ (রা) বলেন, সেই রাত্রিতে বৃষ্টিপাত হয়, আর মসজিদ (তখন) খেজুরের ডালের।
তাই বৃষ্টির পানি চুয়াইয়া মেঝেতে পড়েছিল। আবূ সাঈদ (রা) বলেন, আমার দুই নয়ন
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছে। তিনি একুশে রাত্রির ফজরের
নামায পড়ে ফিরলেন (এই অবস্থায় যে) তাঁর ললাট ও নাকে পানি ও কাদামাটির নিশান রয়েছে।
৬৮৬
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ
رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ تَحَرَّوْا لَيْلَةَ
الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ.
উরওয়াহ্ ইবনু
যুবায়র (র) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, রমযানের শেষ দশদিনে তোমরা শবে-ক্বদরের
সন্ধান কর। (বুখারী ২০২০, ইমাম মুসলিম আয়েশা (রা) থেকে বর্ণনা করেন মুসলিম ১১৬৯,
আর ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)
৬৮৭
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ
تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ.
আবদুল্লাহ ইবনু
উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
নিশ্চয়
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা রমযানের শেষের সাত দিনে
শবে-ক্বদরের অনুসন্ধান কর। (বুখারী ২০১৫, মুসলিম ১১৬৫)
৬৮৮
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ
اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُنَيْسٍ الْجُهَنِيَّ قَالَ لِرَسُولِ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي رَجُلٌ شَاسِعُ
الدَّارِ فَمُرْنِي لَيْلَةً أَنْزِلُ لَهَا فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْزِلْ لَيْلَةَ ثَلَاثٍ وَعِشْرِينَ مِنْ رَمَضَانَ.
আবদুল্লাহ্ ইবনু
উনায়স জুহানী (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে আরজ করলেন, আমি এমন এক
ব্যক্তি যার বাড়ি অনেক দূরে অবস্থিত, তাই আমাকে আপনি একটি রাত বলে দিন যে রাত্রে
আমি (ইবাদতের জন্য এই মসজিদে) আগমন করব। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, তুমি রমযানের তেইশে রাত্রে আগমন কর। (সহীহ, মুসলিম ১১৬৮,
ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত সনদে মুনকাতে তথা বিচ্ছিন্নতা রয়েছে)
৬৮৯
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ
أَنَّهُ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فِي رَمَضَانَ فَقَالَ إِنِّي أُرِيتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ فِي رَمَضَانَ حَتَّى
تَلَاحَى رَجُلَانِ فَرُفِعَتْ فَالْتَمِسُوهَا فِي التَّاسِعَةِ وَالسَّابِعَةِ
وَالْخَامِسَةِ.
আনাস ইবনু মালিক
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বের হয়ে আমাদের কাছে এলেন, অতঃপর বললেন, আমাকে
অবশ্য এই রাত্রিটি (শবে-ক্বদর) রমযানে দেখান হয়েছে, হঠাৎ দু’জন লোক বিতর্কে লিপ্ত
হল, ফলে উহা (আমার স্মৃতি হতে) তুলে নেওয়া হয়। অতঃপর তোমরা উহাকে তালাশ কর নবম,
সপ্তম ও পঞ্চম রাত্রে। (সহীহ, বুখারী ৪৯, আনাস (রা) থেকে উবাদা বর্ণনা করেছেন)
৬৯০
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رِجَالًا
مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُرُوا لَيْلَةَ
الْقَدْرِ فِي الْمَنَامِ فِي السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنِّي أَرَى رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأَتْ فِي
السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيَهَا فَلْيَتَحَرَّهَا فِي
السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তাঁর
নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের মধ্যে
কিছু লোককে লাইলাতুল ক্বদর স্বপ্নে দেখানো হয় শেষের সাত রাত্রে। তারপর রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি মনে করি তোমাদের স্বপ্ন শেষের
সাতদিনের ব্যাপারে পরস্পর মুয়াফিক (সামঞ্জস্যপূর্ণ) হয়েছে। অতঃপর যে উহাকে
(লাইলাতুল ক্বদর) তালাশ করে, সে যেন শেষের সাত দিনে উহাকে তালাশ করে। (বুখারী
২০১৫, মুসলিম ১১৬৫)
৬৯১
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ مَنْ يَثِقُ بِهِ مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ يَقُولُ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُرِيَ
أَعْمَارَ النَّاسِ قَبْلَهُ أَوْ مَا شَاءَ اللهُ مِنْ ذَلِكَ فَكَأَنَّهُ
تَقَاصَرَ أَعْمَارَ أُمَّتِهِ أَنْ لَا يَبْلُغُوا مِنْ الْعَمَلِ مِثْلَ الَّذِي
بَلَغَ غَيْرُهُمْ فِي طُولِ الْعُمْرِ فَأَعْطَاهُ اللهُ لَيْلَةَ الْقَدْرِ
خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
নির্ভরযোগ্য আহলে ইলমকে বলতে শুনেছেন রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
তাঁর পূর্ববর্তী লোকদের আয়ু দেখান হয়। অথবা উহাতে যতটুকু আল্লাহ্ চেয়েছেন তা দেখান
হয়। ফলে তিনি যেন তাঁর উম্মতের আয়ুকে সংক্ষিপ্ত মনে করলেন যার কারণে আমলের দিক
দিয়ে তাঁরা পূর্ববর্তী ব্যক্তিদের সমপর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হবে না। অতঃপর আল্লাহ্
তাঁকে হাজার মাস হতে উত্তম লাইলাতুল ক্বদর প্রদান করেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ)
একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
৬৯২
و
حَدَّثَنِي زِيَاد عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ
كَانَ يَقُولُ مَنْ شَهِدَ الْعِشَاءَ مِنْ لَيْلَةِ الْقَدْرِ فَقَدْ أَخَذَ
بِحَظِّهِ مِنْهَا.
মালিক (র) থেকে
বর্ণিতঃ
তাঁর কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র) বলতেন, যে ব্যক্তি শবে-ক্বদরের ইশার নামাযে উপস্থিত হয়েছে, সে উহার (শবে-ক্বদর) অংশ প্রাপ্ত হয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
No comments