সহিহ মুসলিম অধ্যায় "দাসমুক্তি" হাদিস নং -৩৬৬২ থেকে ৩৬৯২
১. অধ্যায়ঃ
দাসের
প্রয়োজন পূরণের বর্ণনা
৩৬৬২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قُلْتُ لِمَالِكٍ حَدَّثَكَ نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَعْتَقَ شِرْكًا لَهُ
فِي عَبْدٍ فَكَانَ لَهُ مَالٌ يَبْلُغُ ثَمَنَ الْعَبْدِ قُوِّمَ عَلَيْهِ قِيمَةَ
الْعَدْلِ فَأُعْطِيَ شُرَكَاؤُهُ حِصَصَهُمْ وَعَتَقَ عَلَيْهِ الْعَبْدُ
وَإِلاَّ فَقَدْ عَتَقَ مِنْهُ مَا عَتَقَ" .
ইবনু ‘উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি শরীক (যৌথ
মালিকানাধীন) ক্রীতদাসের বেলায় তার নিজের অংশটুকু মুক্ত করে দেয় এবং তার
(মুক্তিদাতার) কাছে এ পরিমাণ ধন-সম্পদ থাকে যা উক্ত ক্রীতদাসের মুল্য সমান হয়- তবে
ন্যায় সঙ্গতভাবে মূল্য নিরূপণ করবে এবং বাকী অংশীদারদের অংশের মূল্যও তাকে পরিশোধ
করতে হবে। আর ক্রীতদাসটি পুরোপুরি ভাবে তার পক্ষ থেকেই মুক্ত করা হবে। তবে যদি সে
( পুরো অংশের মূল্য পরিশোধে ) সক্ষম না হয় তাহলে সে যতটুকু অংশ মুক্ত করেছে ততটুকু
মুক্ত হয়ে যাবে। (ই.ফা. ৩৬২৮, ই.সে. ৩৬২৮)
৩৬৬৩
وَحَدَّثَنَاهُ قُتَيْبَةُ بْنُ
سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، جَمِيعًا عَنِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ، ح
وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، ح
وَحَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ، وَأَبُو كَامِلٍ قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا
أَيُّوبُ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ
اللَّهِ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ، الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَهَّابِ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ
مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي
إِسْمَاعِيلُ بْنُ أُمَيَّةَ، ح وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ، الأَيْلِيُّ
حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
رَافِعٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، كُلُّ
هَؤُلاَءِ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، بِمَعْنَى حَدِيثِ مَالِكٍ عَنْ
نَافِعٍ.
ইবনু ‘উমার (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
কুতাইবাহ্ ইবনু সা’ঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুম্হ্ শাইবাহ ইবনু ফার্রূখ,
আবূ রাবী’ , আবূ কামিল, ইবনু নুমায়র, মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না, ইসহাক্ ইবনু
মানসূর, হারূন ইবনে সা’ঈদ আইলী ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ)... ইবনু ‘উমার (রাঃ)
হতে বর্ণিত। মালিক (রহঃ) নাফি’( রহঃ) হতে বর্ণিত হাদীসের অর্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
(ই.ফা. ৩৬২৯, ই.সে. ৩৬২৯)
৩৬৬৪
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى - قَالاَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ
النَّضْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِي الْمَمْلُوكِ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ
فَيُعْتِقُ أَحَدُهُمَا قَالَ " يَضْمَنُ" .
আবু হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ক্রীতদাসটি
দু'জনের মালিকানাধীন তার একজন নিজের অংশ মুক্ত করে দিলে অপরজনের অংশেরও সে
যিম্মাদার হবে (যদি সে বিত্তবান হয়)। (ই.ফা. ৩৬৩০,ই.সে ৩৬৩০)
৩৬৬৫
وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو
النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ ابْنِ أَبِي
عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ النَّضْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ بَشِيرِ بْنِ
نَهِيكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَنْ أَعْتَقَ شِقْصًا لَهُ فِي عَبْدٍ فَخَلاَصُهُ فِي مَالِهِ إِنْ
كَانَ لَهُ مَالٌ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ اسْتُسْعِيَ الْعَبْدُ غَيْرَ
مَشْقُوقٍ عَلَيْهِ " .
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যৌথ মালিকানাধীন
ক্রীতদাসের বেলায় নিজের অংশ মুক্ত করে দিবে বাকী অংশ তার সম্পদ দ্বারাই মুক্ত
করবে। আর যদি সে বিত্তশালী না হয় তাহলে সে ক্রীতদাসকে উপার্জনের মাধ্যমে মুক্ত
হওয়ার চেষ্টায় নিযুক্ত করতে হবে। তবে তার উপর তার সামর্থ্যের বাইরে বোঝা চাপানো
যাবে না। ( ই.ফা. ৩৬৩১, ই.সে. ৩৬৩১)
৩৬৬৬
وَحَدَّثَنَاهُ عَلِيُّ بْنُ
خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، - يَعْنِي ابْنَ يُونُسَ - عَنْ سَعِيدِ بْنِ،
أَبِي عَرُوبَةَ بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ " إِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ
مَالٌ قُوِّمَ عَلَيْهِ الْعَبْدُ قِيمَةَ عَدْلٍ ثُمَّ يُسْتَسْعَى فِي نَصِيبِ
الَّذِي لَمْ يُعْتِقْ غَيْرَ مَشْقُوقٍ عَلَيْهِ " .
সা’ঈদ ইবনু আবূ
‘আরূবাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’ঈদ ইবনু আবূ ‘আরূবাহ্ (রহঃ) হতে সানাদে বর্ণিত। তবে তিনি তার
বর্ণনায় এতটুকু বেশী উল্লেখ করেছেন যে, "যদি সে মুক্তিদাতা বিত্তবান না হয়
তখন ঐ ক্রীতদাসের প্রচলিত মূল্য স্থির করতে হবে। এরপর সে (দাস) তার অবশিষ্টাংশ
মুক্ত করার লক্ষ্যে উপার্জনে নিয়োজিত হবে। তবে এ ব্যাপারে তাকে (মুক্তিদাতাকে)
সাধ্যাতীত কষ্টে ফেলা যাবে না। (ই.ফা. ৩৬৩২,ই.সে. ৩৬৩২)
৩৬৬৭
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ
قَتَادَةَ، يُحَدِّثُ بِهَذَا الإِسْنَادِ بِمَعْنَى حَدِيثِ ابْنِ أَبِي
عَرُوبَةَ وَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قُوِّمَ عَلَيْهِ قِيمَةَ عَدْلٍ
ওয়াহ্ব ইবনু জারীর
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি কাতাদাহ্ (রহঃ)- কে এ সানাদে ইবনু আবূ আরূবাহ্- এর
হাদীসের মর্মানুযায়ী হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি তার বর্ণনায় উল্লেখ করেন,
“ক্রীতদাসের ন্যায্য মূল্য নিরূপণ করতে হবে।“ (ই.ফা. ৩৬৩৩, ই.সে. ৩৬৩৩)
২.অধ্যায়ঃ
প্রকৃতপক্ষে
মুক্তিদাতা পাবে মুক্তদাসের ওয়ালা পরিত্যক্ত সম্পদ
৩৬৬৮
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ
عَائِشَةَ، أَنَّهَا أَرَادَتْ أَنْ تَشْتَرِيَ، جَارِيَةً تُعْتِقُهَا فَقَالَ
أَهْلُهَا نَبِيعُكِهَا عَلَى أَنَّ وَلاَءَهَا لَنَا . فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " لاَ يَمْنَعُكِ ذَلِكَ فَإِنَّمَا
الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ ".
'আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি একবার একটি ক্রীতদাসী ক্রয় করে তাকে মুক্ত করে দিবেন
বলে ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। তখন সে ক্রীতদাসীর মনিবেরা তাকে জানালেন যে, আমরা আপনার
এ শর্তে ক্রীতদাসটি বিক্রয় করতে পারি যে, আমরাই হব তার ওয়ালা’র [৬] অধিকারী। তিনি
বলেনঃ এরপর বিষয়টি আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে
উপস্থিত করলাম। তিনি বললেনঃ এ শর্ত তোমাকে ‘ওয়ালা’ থেকে বঞ্চিত করবে না। কেননা
প্রকৃতপক্ষে মুক্তিদাতার জন্যই ‘ওয়ালার হক্ব’ নির্ধারিত। (ই.ফা. ৩৬৩৪, ই.সে. ৩৬৩৪)
[৬] (.........) আরবী শব্দ।
এর অর্থ অধিকারী হওয়া ,স্বত্ববান হওয়া ইত্যাদি। ইসলামী বিধানের পরিভাষায় ক্রীতদাস-দাসীর
অর্জিত সম্পদ ইত্যাদির অভিভাবকত্বকে ‘ওয়ালা’ বলা হয়। ক্রীতদাস-দাসীর মৃত্যুর পর তার
মনিব তার ‘ওয়ালা’- এর উত্তরাধিকারী । আর আযাদকৃত দাসের ‘ওয়ালা’-এর অধিকারী হয় মুক্তিদাতা।
৩৬৬৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ
سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ،
أَخْبَرَتْهُ أَنَّ بَرِيرَةَ جَاءَتْ عَائِشَةَ تَسْتَعِينُهَا فِي كِتَابَتِهَا
وَلَمْ تَكُنْ قَضَتْ مِنْ كِتَابَتِهَا شَيْئًا فَقَالَتْ لَهَا عَائِشَةُ
ارْجِعِي إِلَى أَهْلِكِ فَإِنْ أَحَبُّوا أَنْ أَقْضِيَ عَنْكِ كِتَابَتَكِ
وَيَكُونَ وَلاَؤُكِ لِي . فَعَلْتُ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ بَرِيرَةُ لأَهْلِهَا
فَأَبَوْا وَقَالُوا إِنْ شَاءَتْ أَنْ تَحْتَسِبَ عَلَيْكِ فَلْتَفْعَلْ
وَيَكُونَ لَنَا وَلاَؤُكِ . فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ابْتَاعِي
فَأَعْتِقِي . فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ " . ثُمَّ قَامَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " مَا بَالُ أُنَاسٍ
يَشْتَرِطُونَ شُرُوطًا لَيْسَتْ فِي كِتَابِ اللَّهِ مَنِ اشْتَرَطَ شَرْطًا
لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَلَيْسَ لَهُ وَإِنْ شَرَطَ مِائَةَ مَرَّةٍ شَرْطُ
اللَّهِ أَحَقُّ وَأَوْثَقُ " .
'আয়িশাহ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বারীরাহ্ (রাঃ) তার লিখিত মুক্তিপণ পরিশোধের ব্যাপারে
সাহায্যের জন্যে ‘আয়িশা (রাঃ)- এর কাছে এল। সে তার লিখিত মুক্তিপণের কিছুই আদায়
করেনি। তখন ‘আয়িশা (রাঃ) তাকে বললেনঃ তুমি তোমার মুনিবের কাছে ফিরে যাও। যদি তারা
এ শর্তে রাজি হয় যে, আমি তোমার লিখিত মুক্তিপণের যাবতীয় পাওনা আদায় করলে তোমার
ওয়ালা আমার প্রাপ্য হবে, তবে তা আমি করতে পারি। বারীরা তার মনিবের কাছে বিষয়টি
উত্থাপন করল। কিন্তু তারা সে প্রস্তাব মেনে নিল না এবং বলে দিল, যদি তিনি সাওয়াবের
আশায় তোমার লিখিত মুক্তিপণ আদায়ের দায়িত্ব নেন তাহলে নিতে পারেন, তবে তোমার
‘ওয়ালা” আমাদের জন্যই থাকবে। এরপর তিনি ['আয়িশাহ (রাঃ)] বিষয়টি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে উঠালেন। তখন তিনি তাকে বললেনঃ তাকে
খরিদ করে মুক্ত করে দিতে পার, কেননা ‘ওয়ালা’ মুক্তিদাতারই প্রাপ্য। এরপর
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেনঃ লোকদের
কী হয়েছে তারা এমন কিছু শর্তারোপ করে যা আল্লাহর কিতাবে নেই। যে ব্যক্তি এমন
শর্তারোপ করবে যা আল্লাহর কিতাবে নেই- সে শর্তের কোন মূল্য নেই যদিও সে একশো বার
শর্তারোপ করে। আল্লাহর শর্তই কেবল সঠিক ও নির্ভরযোগ্য। (ই.ফা. ৩৬৩৫, ই.সে. ৩৬৩৫)
৩৬৭০
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ،
أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ
عُرْوَةَ، بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْ بَرِيرَةُ إِلَىَّ فَقَالَتْ يَا عَائِشَةُ إِنِّي
كَاتَبْتُ أَهْلِي عَلَى تِسْعِ أَوَاقٍ فِي كُلِّ عَامٍ أُوقِيَّةٌ . بِمَعْنَى
حَدِيثِ اللَّيْثِ وَزَادَ فَقَالَ " لاَ يَمْنَعُكِ ذَلِكِ مِنْهَا
ابْتَاعِي وَأَعْتِقِي " . وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ ثُمَّ قَامَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّاسِ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ
ثُمَّ قَالَ " أَمَّا بَعْدُ " .
‘আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ বারীরা (রাঃ) আমার কাছে এল। এরপর সে বলল, হে ‘আয়িশাহ্!
আমি আমার মুনিবের কাছে লিখিত চুক্তি করেছি যে, বছরে এক ঊকিয়া (চল্লিশ দিরহামে এক
উকিয়া) করে নয় বছরে সর্বমোট নয় উকিয়া পরিশোধ করব। এরপর লায়স (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের
অনুরূপ। তবে এ বর্ণনায় এতটুকু বেশি উল্লেখ আছেঃ “তিনি (রসূলুল্লাহ সাঃ) বললেন,
তাদের এ শর্ত করা তোমাকে ‘ওয়ালা’ প্রাপ্তি হতে বাধা দিবে না। তুমি তাকে খরিদ করে
মুক্ত করে দিতে পার। ‘উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র (রহঃ) এ হাদীসে উল্লেখ করেন, তখন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে যান এবং
আল্লাহর প্রশংসা ও তার মহিমা বর্ণনা করেন। (ই.সে. ৩৬৩৬,ই.সে ৩৬৩৬)
৩৬৭১
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ،
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ،
حَدَّثَنَا هِشَامُ، بْنُ عُرْوَةَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ
دَخَلَتْ عَلَىَّ بَرِيرَةُ فَقَالَتْ إِنَّ أَهْلِي كَاتَبُونِي عَلَى تِسْعِ أَوَاقٍ
فِي تِسْعِ سِنِينَ فِي كُلِّ سَنَةٍ أُوقِيَّةٌ . فَأَعِينِينِي . فَقُلْتُ
لَهَا إِنْ شَاءَ أَهْلُكِ أَنْ أَعُدَّهَا لَهُمْ عَدَّةً وَاحِدَةً وَأُعْتِقَكِ
وَيَكُونَ الْوَلاَءُ لِي فَعَلْتُ . فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لأَهْلِهَا فَأَبَوْا
إِلاَّ أَنْ يَكُونَ الْوَلاَءُ لَهُمْ فَأَتَتْنِي فَذَكَرَتْ ذَلِكَ قَالَتْ
فَانْتَهَرْتُهَا فَقَالَتْ لاَهَا اللَّهِ إِذَا قَالَتْ . فَسَمِعَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَنِي فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ "
اشْتَرِيهَا وَأَعْتِقِيهَا وَاشْتَرِطِي لَهُمُ الْوَلاَءَ فَإِنَّ الْوَلاَءَ
لِمَنْ أَعْتَقَ " . فَفَعَلْتُ - قَالَتْ - ثُمَّ خَطَبَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَشِيَّةً فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ بِمَا
هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ " أَمَّا بَعْدُ فَمَا بَالُ أَقْوَامٍ يَشْتَرِطُونَ
شُرُوطًا لَيْسَتْ فِي كِتَابِ اللَّهِ مَا كَانَ مِنْ شَرْطٍ لَيْسَ فِي كِتَابِ
اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فَهُوَ بَاطِلٌ وَإِنْ كَانَ مِائَةَ شَرْطٍ كِتَابُ
اللَّهِ أَحَقُّ وَشَرْطُ اللَّهِ أَوْثَقُ مَا بَالُ رِجَالٍ مِنْكُمْ يَقُولُ
أَحَدُهُمْ أَعْتِقْ فُلاَنًا وَالْوَلاَءُ لِي إِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ
أَعْتَقَ " .
‘আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন বারীরা (রাঃ) আমার কাছে এল। এরপর সে বলল, আমার মনিব
আমাকে প্রতি বছর একটি করে নয় বছরে নয়টি ঊকীয়্যাহ্ (চল্লিশ দিরহামে এক ঊকীয়্যাহ্)
আদায় করার শর্তে আমাকে মুক্তি দানের ব্যাপারে লিখিত চুক্তি করেছে। আপনি আমাকে
সাহায্য করুন। আমি ['আয়িশাহ্ (রাঃ)] তাকে বললাম, তোমার মনিব যদি এ শর্তে রাজী হয়
যে তোমার মুক্তিপণ এক সঙ্গে আদায় করে দিলে তোমার ‘ওয়ালা’ আমি পাব তাহলে আমি তোমাকে
মুক্তির ব্যাপারে সাহায্য করতে চাই। তখন বারীরাহ্ (রাঃ) এ বিষয়টি তার মুনিবের
কাছে উঠালে তাদের জন্য ‘ওয়ালা’ ব্যতিরেকে তারা তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল।
এরপর সে আমার ['আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর] কাছে এসে তাদের কথা বলল। তিনি বলেন, আমি তাকে
ধমক দিয়ে বললামঃ তাহলে আল্লাহর কসম ! আমি রাজী নই। 'আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেনঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিষয়টি শুনলেন এবং আমাকে জিজ্ঞেস
করলেন। তাঁর কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। এরপর তিনি বললেনঃ হে 'আয়িশাহ্! তুমি
তাকে খরিদ করে মুক্ত করে দাও এবং তাদের জন্যে ওয়ালা’র শর্ত করে দাও। তবে নিশ্চয়ই
‘ওয়ালা’ সে পাবে যে মুক্তি দান করে। আমি ('আয়িশাহ্) তাই করলাম। রাবী বলেনঃ এরপর
সন্ধ্যা বেলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিলেন। তিনি
আল্লাহর যথাযথ প্রশংসা ও তাঁর মহিমা ঘোষণা করলেন। এরপর বললেনঃ লোকের অবস্থা কেমন
অবস্থায় পৌঁছেছে যে, তারা এমন সব শর্ত দেয় যা আল্লাহর কিতাবে নেই। স্মরণ রাখ, যে
শর্ত আল্লাহর কিতাবে নেই, তা বাতিল বলে গণ্য, যদিও একশতবার শর্তারোপ করা হয়।
আল্লাহর কিতাবের শর্তই যথার্থ সঠিক, আল্লাহর শর্তই সর্বাধিক সুদৃঢ়। তোমাদের মধ্যে
কতক লোকের কী হয়েছে যে, তারা অপরকে বলে অমুককে মুক্ত করে দাও আর ‘ওয়ালা’ গ্রহন করব
আমরা? অথচ ‘ওয়ালা’ তো আসলে তারই পাওনা যে মুক্ত করে। (ই.ফা. ৩৬৩৭ , ই.সে. ৩৬৩৭)
৩৬৭২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، ح
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ
حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامِ
بْنِ عُرْوَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . نَحْوَ حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ غَيْرَ
أَنَّ فِي، حَدِيثِ جَرِيرٍ قَالَ وَكَانَ زَوْجُهَا عَبْدًا فَخَيَّرَهَا رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاخْتَارَتْ نَفْسَهَا وَلَوْ كَانَ حُرًّا لَمْ
يُخَيِّرْهَا . وَلَيْسَ فِي حَدِيثِهِمْ " أَمَّا بَعْدُ " .
হিশাম ইবনু
‘উরওয়াহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ একই সনাদে বর্ণিত আছে। তবে জারীর বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ আছে-
"তিনি বলেন, তার (বারীরার) স্বামী ছিল ক্রীতদাস। সে কারণে রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ইচ্ছার স্বাধীনতা দান করেছিলেন। (যখন সে
মুক্ত হবে তখন ক্রীতদাস স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রাখতে কিংবা তা নাকচ
করে দিতে পারবে- এ ইখ্তিয়ার তাকে দেয়া হয়েছিল)। সে নিজের স্বার্থটাকেই সমর্থন করল
(ক্রীতদাস স্বামীকে পছন্দ করল না)। যদি সে স্বাধীন হত তাহলে তিনি (রসূলুল্লাহ সাঃ)
তাকে (বারীরাকে) ইখতিয়ার দিতেন না।” আর তাদের বর্ণিত হাদীসে (আরবি) (অতঃপর)
শব্দটির উল্লেখ নেই। (ই.ফা ৩৬৩৮, ই.সে. ৩৬৩৮)
৩৬৭৩
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ
حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ - قَالاَ
حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ فِي
بَرِيرَةَ ثَلاَثُ قَضِيَّاتٍ أَرَادَ أَهْلُهَا أَنْ يَبِيعُوهَا وَيَشْتَرِطُوا
وَلاَءَهَا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ "
اشْتَرِيهَا وَأَعْتِقِيهَا فَإِنَّ الْوَلاَءَ لِمَنْ أَعْتَقَ " .
قَالَتْ وَعَتَقَتْ فَخَيَّرَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاخْتَارَتْ
نَفْسَهَا . قَالَتْ وَكَانَ النَّاسُ يَتَصَدَّقُونَ عَلَيْهَا وَتُهْدِي لَنَا
. فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " هُوَ
عَلَيْهَا صَدَقَةٌ وَهُوَ لَكُمْ هَدِيَّةٌ فَكُلُوهُ " .
'আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বারীরার
কল্যাণে তিনটি শরী’আতী বিধান পাওয়া গিয়েছিল-
১.তার মুনিবেরা তাকে বিক্রি করতে চেয়েছিল এবং তার ‘ওয়ালা’র উপর তাদের অধিকার লাভের
শর্তারোপ করেছিল। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে বিষয়টি
উঠালাম। তিনি আমাকে বললেন, তাকে ক্রয় করে মুক্ত করে দাও। কেননা ‘ওয়ালা’- সেই পাবে
যে আযাদ করে।
২.যখন তাকে (বারীরাকে) মুক্ত করে দেয়া হল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাকে (তার ক্রীতদাস স্বামীকে রাখা, না রাখার) ইখ্তিয়ার দিয়েছিলেন।
এরপর সে নিজের স্বার্থটাকেই সমর্থন করল। (তাঁর ক্রীতদাস স্বামীকে প্রত্যাখ্যান
করল।)
৩.তিনি (‘'আয়িশাহ্ (রাঃ)) বলেন, লোকেরা বারীরাকে সদাকাহ্ খয়রাত করত এবং সে তা
(সদাকাহ্কৃত জিনিস) থেকে আমাদেরকে কিছু হাদিয়া হিসেবে দিত। এরপর আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে বিষয়টি পেশ করলাম। তিনি বললেন, “তা
তাঁর জন্য সদাকাহ্ এবং তোমাদের জন্য হাদিয়া। সুতরাং তোমরা তা খাও।” (ই.ফা. ৩৬৩৯,
ই.সে. ৩৬৩৯)
৩৬৭৪
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ سِمَاكٍ،
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، .
أَنَّهَا اشْتَرَتْ بَرِيرَةَ مِنْ أُنَاسٍ مِنَ الأَنْصَارِ . وَاشْتَرَطُوا
الْوَلاَءَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْوَلاَءُ
لِمَنْ وَلِيَ النِّعْمَةَ " . وَخَيَّرَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم وَكَانَ زَوْجُهَا عَبْدًا وَأَهْدَتْ لِعَائِشَةَ لَحْمًا فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْ صَنَعْتُمْ لَنَا مِنْ هَذَا
اللَّحْمِ " . قَالَتْ عَائِشَةُ تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى بَرِيرَةَ .
فَقَالَ " هُوَ لَهَا صَدَقَةٌ وَلَنَا هَدِيَّةٌ " .
'আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি কিছু সংখ্যক আনসার মনিবদের কাছে থেকে বারীরাকে খরিদ করলেন। তবে
তারা (সে সময়) ‘ওয়ালা’র শর্ত দিয়েছিল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ প্রকৃত পক্ষে ‘ওয়ালা’ তারই প্রাপ্য যে নি’আমাতের অধিকারী
(মুক্তিদাতা)। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ইখ্তিয়ার
প্রদান করেছিলেন। তাঁর স্বামী ছিল ক্রীতদাস। একবার সে (বারীরাহ্) ‘আয়িশা (রাঃ)-
এর কাছে কিছু পরিমান গোশ্ত হাদিয়া পাঠাল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা যদি এই গোশ্ত থেকে আমার জন্যে কিছুটা রান্না করে
আনতে......। তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেনঃ এতো বারীরার জন্যে সদাকাহ্ হিসেবে এসেছে
(আর আপনার জন্য সদাকাহ্ হারাম)। তিনি বললেনঃ তা তার জন্য সদাকাহ্ এবং আমার জন্যে
হাদিয়া। (ই.ফা. ৩৬৪০, ই.সে. ৩৬৪০)
৩৬৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ
سَمِعْتُ عَبْدَ، الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ قَالَ سَمِعْتُ الْقَاسِمَ،
يُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا أَرَادَتْ أَنْ تَشْتَرِيَ، بَرِيرَةَ
لِلْعِتْقِ فَاشْتَرَطُوا وَلاَءَهَا فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم فَقَالَ " اشْتَرِيهَا وَأَعْتِقِيهَا فَإِنَّ الْوَلاَءَ
لِمَنْ أَعْتَقَ " . وَأُهْدِيَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لَحْمٌ فَقَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى
بَرِيرَةَ . فَقَالَ " هُوَ لَهَا صَدَقَةٌ وَهُوَ لَنَا هَدِيَّةٌ
" . وَخُيِّرَتْ . فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَكَانَ زَوْجُهَا
حُرًّا . قَالَ شُعْبَةُ ثُمَّ سَأَلْتُهُ عَنْ زَوْجِهَا فَقَالَ لاَ أَدْرِي
.
‘'আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মুক্ত করে দেয়ার উদ্দেশে বারীরাকে খরিদ করার ইচ্ছা করলেন।
কিন্তু তারা (বারীরার মুনিবেরা) তার ‘ওয়ালা’ পাওয়ার শর্তারোপ করে বসল। তখন তিনি
বিষয়টি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে উঠালেন। তিনি
বললেনঃ তুমি তাকে খরিদ করে মুক্ত করে দাও। মূলত ‘ওয়ালা’ সে পাবে যে মুক্ত করে দেয়।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর জন্য কিছু গোশ্ত হাদিয়া রূপে
পেশ করা হল। তখন তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বললেনঃ এ গোশ্ত
বারীরাকে সদাকাহ্ হিসেবে দেয়া হয়েছে। তিনি বললেনঃ এতো তার জন্য সদাকাহ্ এবং
আমাদের জন্যে হাদিয়া। তাকে (বারীরাকে) তার (ক্রীতদাস) স্বামীর বিষয়ে স্বাধীনতা
দেয়া হয়েছিল। আবদুর রহমান বললেন, তার স্বামী স্বাধীন ছিল। শু’বাহ্ (রহঃ) বলেনঃ
আমি পুনরায় তাকে (‘আবদুর রহমানকে) তার (বারীরাহ) স্বামী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম।
তিনি বললেন, আমার জানা নেই ( ই.ফা. ৩৬৪১, ই.সে. ৩৬৪১)
৩৬৭৬
وَحَدَّثَنَاهُ أَحْمَدُ بْنُ
عُثْمَانَ النَّوْفَلِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ .
শু’বাহ (রহঃ)- এর
সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
শু’বাহ (রহঃ)- এর সূত্রে এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা ৩৬৪২,
ই.সে ৩৬৪২)
৩৬৭৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ جَمِيعًا عَنْ أَبِي هِشَامٍ، قَالَ ابْنُ
الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُغِيرَةُ بْنُ سَلَمَةَ الْمَخْزُومِيُّ، وَأَبُو هِشَامٍ
حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ رُومَانَ،
عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ زَوْجُ بَرِيرَةَ عَبْدًا .
‘আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, বারীরার স্বামী ক্রীতদাস ছিল। (ই.ফা. ৩৬৪৩, ই.সে.
৩৬৪৩)
৩৬৭৮
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ،
حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ
أَبِي، عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ،
زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ فِي بَرِيرَةَ
ثَلاَثُ سُنَنٍ خُيِّرَتْ عَلَى زَوْجِهَا حِينَ عَتَقَتْ وَأُهْدِيَ لَهَا لَحْمٌ
فَدَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالْبُرْمَةُ عَلَى
النَّارِ فَدَعَا بِطَعَامٍ فَأُتِيَ بِخُبْزٍ وَأُدُمٍ مِنْ أُدُمِ الْبَيْتِ
فَقَالَ " أَلَمْ أَرَ بُرْمَةً عَلَى النَّارِ فِيهَا لَحْمٌ " .
فَقَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَلِكَ لَحْمٌ تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى
بَرِيرَةَ فَكَرِهْنَا أَنْ نُطْعِمَكَ مِنْهُ . فَقَالَ " هُوَ
عَلَيْهَا صَدَقَةٌ وَهُوَ مِنْهَا لَنَا هَدِيَّةٌ " . وَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيهَا " إِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ
أَعْتَقَ " .
‘আয়িশাহ্ (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ বারীরার
ঘটনায় তিনটি বিধান জারী হয়েছেঃ
১. যখন সে মুক্তি লাভ করেছিল তখন স্বামীর (বৈবাহিক সূত্র বহাল রাখা, না রাখার )
ব্যাপারে তাকে ইখ্তিয়ার প্রদান করা হয়েছিল।
২. তাকে গোশ্ত সদাকাহ্ করা হয়েছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাদের (‘আয়িশাহ্র) কাছে এলেন। তখন গোশতের হাঁড়ি চুলার উপর টগবগ করছিল।
তিনি খাবার চাইলেন। তখন তাঁর সামনে রুটি এবং ঘর থেকে তরকারী পরিবেশন করা হল। তিনি
বললেনঃ আমি কি লক্ষ্য করিনি যে, চুলার উপর হাঁড়ি আছে যার মধ্যে গোশ্ত রয়েছে। তারা
বললেনঃ জ্বি হ্যাঁ, আল্লাহ্র রসূল! ওটা তো বারীরাকে সদাকাহ্ দেয়া গোশ্ত। আমরা
তা থেকে আপনাকে খাওয়ানো পছন্দ করিনা। তখন তিনি বললেনঃ এতো তার জন্য সদাকাহ্ এবং
তার পক্ষ থেকে তা আমাদের জন্য হাদিয়া।
৩. নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার (বারীরার) মুক্তির ব্যাপারে বললেনঃ
আসলে ‘ওয়ালা’ সে-ই পাবে যে আযাদ করে। (ই.ফা. ৩৬৪৪, ই.সে. ৩৬৪৪)
৩৬৭৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ
بِلاَلٍ، حَدَّثَنِي سُهَيْلُ بْنُ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ أَرَادَتْ عَائِشَةُ أَنْ تَشْتَرِيَ، جَارِيَةً تُعْتِقُهَا فَأَبَى
أَهْلُهَا إِلاَّ أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْوَلاَءُ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " لاَ يَمْنَعُكِ ذَلِكِ فَإِنَّمَا
الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ " .
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার ‘আয়িশা (রাঃ) একটি ক্রীতদাসী খরিদ করে আযাদ করে
দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তার মুনিবেরা তাদের জন্য তার ‘ওয়ালা’ ব্যতিরেকে
প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল। তিনি এ বিষয়টি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)- এর কাছে উঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তাকে খরিদ করে মুক্তি দিয়ে দাও।
তার (মুক্তি দেয়া) তোমাকে ‘ওয়ালা’ থেকে বাধাপ্রাপ্ত করবে না। কেননা ‘ওয়ালা’ তারই
প্রাপ্য যে মুক্তি দান করে। (ই.ফা. ৩৬৪৫, ই.সে. ৩৬৪৫)
৩. অধ্যায়ঃ
ওয়ালা
(আযাদ করা দাসের স্বত্বাধিকার) বিক্রি কিংবা হেবা করা নিষিদ্ধ
৩৬৮০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى
التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى
عَنْ بَيْعِ الْوَلاَءِ وَعَنْ هِبَتِهِ . قَالَ مُسْلِمٌ النَّاسُ كُلُّهُمْ
عِيَالٌ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ فِي هَذَا الْحَدِيثِ .
ইবনু ‘উমার (রাযিঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
যে, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ওয়ালা’ বিক্রি করা এবং তা হেবা (দান বা will)
করা নিষিদ্ধ করেছেন।
ইব্রাহীম (রহঃ) বলেছেন, আমি মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ (রহঃ)- কে বলতে শুনেছি যে, এ
হাদীসের ব্যাপারে সকল মানুষ ‘আবদুল্লাহ ইবনু দীনারের পৌষ্য।” (ই.ফা. ৩৬৪৬, ই.সে.
৩৬৪৬)
৩৬৮১
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، ح
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح
وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
فُدَيْكٍ، أَخْبَرَنَا الضَّحَّاكُ، - يَعْنِي ابْنَ عُثْمَانَ - كُلُّ هَؤُلاَءِ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ، دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم . بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّ الثَّقَفِيَّ لَيْسَ فِي حَدِيثِهِ عَنْ
عُبَيْدِ اللَّهِ إِلاَّ الْبَيْعُ وَلَمْ يَذْكُرِ الْهِبَةَ .
ইবনু ‘উমার
(রাযিঃ)- এর সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে সাকাফী (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে ‘উবাইদুল্লাহ
সূত্রে উল্লেখ নেই। এ বর্ণনায় বিক্রির কথা রয়েছে। তবে তিনি হেবার কথা উল্লেখ
করেননি। (ই.ফা. ৩৬৪৭, ই.সে. ৩৬৪৭)
৪. অধ্যায়ঃ
মুক্তদাসের
জন্য তার মুক্তিদাতা ব্যতীত অন্য কাউকে ওয়ালার মালিক বানানো হারাম
৩৬৮২
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ
رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي
أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ كَتَبَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى كُلِّ بَطْنٍ عُقُولَهُ ثُمَّ كَتَبَ
" أَنَّهُ لاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَتَوَالَى مَوْلَى رَجُلٍ مُسْلِمٍ
بِغَيْرِ إِذْنِهِ " . ثُمَّ أُخْبِرْتُ أَنَّهُ لَعَنَ فِي صَحِيفَتِهِ
مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ .
জাবির ইবনু
‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লিখিত ফরমান জারি করলেন যে,
প্রত্যেক গোত্রের উপর তার দ্বারা হত্যাকান্ডের ক্ষতিপূরণ ওয়াজিব হবে। এরপর তিনি
লিখলেন, মুক্তদাসের অনুমতি ব্যতীত কোন মুসলিমের পক্ষে অপর মুসলিমের ক্রীতদাসের
ওয়ালী হওয়া হালাল নয়। এরপর আমি জানতে পারলাম যে, তিনি তার লিখিত ফরমানে তাকে
লা’নাত করেছেন যে ব্যক্তি এরূপ কাজ করবে। (ই.ফা. ৩৬৪৮, ই.সে. ৩৬৪৮)
৩৬৮৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ
سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيَّ -
عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ تَوَلَّى قَوْمًا بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهِ
فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ لاَ يُقْبَلُ مِنْهُ عَدْلٌ وَلاَ
صَرْفٌ " .
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি
(ক্রীতদাস) তার মুনিবের অনুমতি ছাড়া অন্য কাউকে মনিব বানাবে তার উপর আল্লাহর
লা’নাত এবং তাঁর ফেরেশ্তাদেরও লা’নাত। তার ফরয কিংবা নফল কিছুই (আল্লাহর কাছে)
ক্ববূল হবে না। (ই.ফা. ৩৬৪৯, ই.সে. ৩৬৪৯)
৩৬৮৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ الْجُعْفِيُّ، عَنْ زَائِدَةَ،
عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ تَوَلَّى قَوْمًا بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهِ
فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ لاَ
يُقْبَلُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَدْلٌ وَلاَ صَرْفٌ "
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি তার মুনিবের অনুমতি ছাড়া অন্য কাউকে মাওলা বানাবে
তার উপর আল্লাহর লা’নাত, ফেরেশ্তা ও সমগ্র মানব জাতির লা’নাত বর্ষিত হবে।
কিয়ামাতের দিন তার কোন ফরয কিংবা নফল আল্লাহর নিকট কবূল হবে না। (ই.ফা. ৩৬৫০,
ই.সে. ৩৬৫০)
৩৬৮৫
وَحَدَّثَنِيهِ إِبْرَاهِيمُ
بْنُ دِينَارٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ،
عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ " وَمَنْ
وَالَى غَيْرَ مَوَالِيهِ بِغَيْرِ إِذْنِهِمْ "
আ’মাশ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আ’মাশ (রহঃ) হতে এ সানাদে বর্ণিত- তবে তিনি এতে বলেছেনঃ “কোন লোক তার
মুনীবের অনুমতি ব্যতিরেকে অন্যকে মাওলা বানাবে ...।” (ই.ফা. ৩৬৫১, ই.সে. ৩৬৫১)
৩৬৮৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ،
حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ
التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَطَبَنَا عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ
مَنْ زَعَمَ أَنَّ عِنْدَنَا، شَيْئًا نَقْرَأُهُ إِلاَّ كِتَابَ اللَّهِ وَهَذِهِ
الصَّحِيفَةَ - قَالَ وَصَحِيفَةٌ مُعَلَّقَةٌ فِي قِرَابِ سَيْفِهِ - فَقَدْ
كَذَبَ . فِيهَا أَسْنَانُ الإِبِلِ وَأَشْيَاءُ مِنَ الْجِرَاحَاتِ وَفِيهَا
قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " الْمَدِينَةُ حَرَمٌ مَا بَيْنَ
عَيْرٍ إِلَى ثَوْرٍ فَمَنْ أَحْدَثَ فِيهَا حَدَثًا أَوْ آوَى مُحْدِثًا
فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ لاَ
يَقْبَلُ اللَّهُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاً وَذِمَّةُ
الْمُسْلِمِينَ وَاحِدَةٌ يَسْعَى بِهَا أَدْنَاهُمْ وَمَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ
أَبِيهِ أَوِ انْتَمَى إِلَى غَيْرِ مَوَالِيهِ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ
وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ مِنْهُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاً " .
ইব্রাহীম তাইমী
(রাযিঃ) তাঁর পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) আমাদের সামনে বক্তৃতা
দিচ্ছিলেন। তিনি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, যে ব্যক্তি মনে করে যে, এ পুস্তিকা ও আল্লাহর
কিতাব ব্যতীত আমাদের কাছে এমন কিছু আছে যাকে আমরা অধ্যয়ন করি সে মিথ্যা বলছে। সে
(বর্ণনাকারী) বললঃ সে সময় তার [‘আলী (রাঃ)] তরবারির খাপের মধ্যে একখানা পুস্তক
ঝুলানো ছিল। এ পুস্তিকায় উটের দাঁতের বিবরণ ছিল এবং যখমের দিয়াত (ক্ষতিপূরণ)
সম্পর্কে বিধান ছিল। এতে আরও উল্লেখ ছিল যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মাদীনার ‘আয়র’ থেকে ‘সাওর’ পর্বত পর্যন্ত এলাকা হারাম (সংরক্ষিত
স্থান)। যে ব্যক্তি এ এলাকায় বিদ’আত করবে অথবা কোন বিদ’আতীকে আশ্রয় দিবে তার উপর
আল্লাহর লা’নাত, তাঁর ফেরেশ্তাদের ও সমগ্র মানব জাতির লা’নাত বর্ষিত হবে। কিয়ামাত
দিবসে আল্লাহ তার কোন ফরয কিংবা নফল ক্ববূল করবেন না। সকল মুসলিমের দায়িত্ব
অভিন্ন। একজন সাধারণ মুসলিমও এ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবে। যে ব্যক্তি তার পিতাকে
বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পিতা বলে দাবী করবে অথবা যে ক্রীতদাস তার মনিবকে বাদ দিয়ে
অন্য কাউকে মাওলা বানায় তার উপর আল্লাহর লা’নাত, ফেরেশ্তা ও সমগ্র মানব জাতির
লা’নাত বর্ষিত হবে। কিয়ামাত দিবসে আল্লাহ তার কোন ফরয কিংবা নফল (‘ইবাদাত) ক্ববূল
করবেন না। (ই.ফা. ৩৬৫২, ই.সে. ৩৬৫২)
৫. অধ্যায়ঃ
ক্রীতদাস
আযাদ করার ফাযীলাত
৩৬৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ سَعِيدٍ، - وَهُوَ ابْنُ أَبِي هِنْدٍ - حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي
حَكِيمٍ، عَنْ سَعِيدِ ابْنِ مَرْجَانَةَ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُؤْمِنَةً أَعْتَقَ
اللَّهُ بِكُلِّ إِرْبٍ مِنْهَا إِرْبًا مِنْهُ مِنَ النَّارِ " .
আবূ হুরাইরাহ্
(রহঃ) (রাযিঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ক্রীতদাসকে আযাদ করবে আল্লাহ তার
প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বদলে আযাদকারীর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জাহান্নাম
থেকে বাঁচাবেন। (ই.ফা. ৩৬৫৩, ই.সে. ৩৬৫৩)
৩৬৮৮
وَحَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ
رُشَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مُطَرِّفٍ
أَبِي غَسَّانَ، الْمَدَنِيِّ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
حُسَيْنٍ، عَنْ سَعِيدِ ابْنِ مَرْجَانَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً أَعْتَقَ
اللَّهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهَا عُضْوًا مِنْ أَعْضَائِهِ مِنَ النَّارِ حَتَّى
فَرْجَهُ بِفَرْجِهِ " .
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ)- এর সূত্রে রসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন ঈমানদার ক্রীতদাসকে আযাদ করে দিবে আল্লাহ
তার প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বদলে মুক্তিদাতার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন- এমন কি তার লজ্জাস্থানের বিনিময়ে তার
লজ্জাস্থানও। (ই.ফা. ৩৬৫৪, ই.সে. ৩৬৫৪)
৩৬৮৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ
سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ عُمَرَ بْنِ عَلِيِّ بْنِ
حُسَيْنٍ، عَنْ سَعِيدِ ابْنِ مَرْجَانَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً
مُؤْمِنَةً أَعْتَقَ اللَّهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ عُضْوًا مِنَ النَّارِ حَتَّى
يُعْتِقَ فَرْجَهُ بِفَرْجِهِ" .
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-
কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন ঈমানদার ক্রীতদাস মুক্ত করবে আল্লাহ তার (শরীরের)
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বদলে তার (শরীরের) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন-
এমন কি তিনি তার(মুক্তদাসের) গুপ্তস্থানের পরিবর্তে তার (মুক্তিকারীর) গুপ্তস্থানও
রক্ষা করবেন। (ই.ফা. ৩৬৫৫, ই.সে. ৩৬৫৫)
৩৬৯০
وَحَدَّثَنِي حُمَيْدُ بْنُ
مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، - وَهُوَ
ابْنُ مُحَمَّدٍ الْعُمَرِيُّ - حَدَّثَنَا وَاقِدٌ، - يَعْنِي أَخَاهُ -
حَدَّثَنِي سَعِيدُ ابْنُ مَرْجَانَةَ، - صَاحِبُ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ - قَالَ سَمِعْتُ
أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
أَيُّمَا امْرِئٍ مُسْلِمٍ أَعْتَقَ امْرَأً مُسْلِمًا اسْتَنْقَذَ اللَّهُ
بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ عُضْوًا مِنْهُ مِنَ النَّارِ " . قَالَ
فَانْطَلَقْتُ حِينَ سَمِعْتُ الْحَدِيثَ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ فَذَكَرْتُهُ
لِعَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ فَأَعْتَقَ عَبْدًا لَهُ قَدْ أَعْطَاهُ بِهِ ابْنُ
جَعْفَرٍ عَشْرَةَ آلاَفِ دِرْهَمٍ أَوْ أَلْفَ دِينَارٍ .
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন মুসলিম
অপর কোন মুসলিম ক্রীতদাসকে মুক্ত করলে আল্লাহ তার (মুক্ত দাসের) প্রত্যেকটি
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বদলে তার (মুক্তিদাতার) প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জাহান্নামের
আগুন থেকে বাঁচাবেন। তিনি [বর্ণনাকারী সা’ঈদ ইবনু মারজানাহ্ (রহঃ)] বললেনঃ আবূ
হুরায়রা্ (রাঃ) থেকে এ হাদীস শোনার পরপরই ‘আলী ইবনু হুসায়ন (রাঃ)- এর কাছে গেলাম
এবং তাঁর কাছে হাদীসটি পেশ করলাম। তখনই তিনি তাঁর একটি গোলাম (ক্রীতদাস) মুক্ত করে
দিলেন যার বিনিময় মূল্য হিসেবে তিনি ইবনু জা’ফারকে দশ হাজার দিরহাম অথবা এক হাজার
দীনার পরিশোধ করেছিলেন। (ই.ফা. ৩৬৫৬, ই.সে. ৩৬৫৬)
৬. অধ্যায়ঃ
পিতাকে
আযাদ করার ফাযীলাত
৩৬৯১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ
سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " لاَ يَجْزِي وَلَدٌ وَالِدًا إِلاَّ أَنْ يَجِدَهُ مَمْلُوكًا
فَيَشْتَرِيَهُ فَيُعْتِقَهُ " . وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ أَبِي شَيْبَةَ
" وَلَدٌ وَالِدَهُ " .
আবূ হুরাইরাহ্
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন সন্তান তার পিতার ঋণ
(হক্ব) পরিশোধ করতে পারে না। তবে হ্যাঁ, সে যদি তার পিতাকে ক্রীতদাস হিসেবে দেখতে
পায় এবং তখনি তাকে ক্রয় করে নিয়ে আযাদ করে দেয় (তাহলে ভিন্ন কথা)।
ইবনু আবী শাইবাহ্ (রহঃ)- এর বর্ণনায় (আরবী) ‘সন্তান তার পিতাকে’ শব্দটির উল্লেখ
আছে। (ই.ফা. ৩৬৫৭, ই.সে. ৩৬৫৭)
৩৬৯২
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ،
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح،
وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ،
كُلُّهُمْ عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سُهَيْلٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ وَقَالُوا
" وَلَدٌ وَالِدَهُ " .
সুহায়ল (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
সুহায়ল (রহঃ) হতে এ সানাদে অনুরূপ বর্ণিত আছে। তারা তাদের বর্ণনায় (আরবী) ‘সন্তান তার পিতাকে’ কথাটি বলেছেন। (ই.ফা. ৩৬৫৮, ই.সে. ৩৬৫৮)
No comments