জামে' আত-তিরমিজি - অধ্যায় "তাফসীরুল কুরআন" হাদিস নং- ২৯৫০-৩৩৬৯
তাফসীরুল কুরআন
অনুচ্ছেদ-১
কুরআন মাজীদের ব্যক্তিগত রায় ভিত্তিক তাফসীর (তাফসীর বির-রায়) প্রসঙ্গে
২৯৫০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" مَنْ قَالَ فِي الْقُرْآنِ بِغَيْرِ عِلْمٍ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ
مِنَ النَّارِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সঠিক ইলম ব্যতীত কুরআন
প্রসঙ্গে কোন কথা বলে, সে যেন জাহান্নামকে নিজের জন্য বাসস্থান বানিয়ে নিল।
যঈফ, মিশকাত (২৩৪) নাকদুত তাজ
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৯৫১
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ عَمْرٍو
الْكَلْبِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدِ
بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" اتَّقُوا الْحَدِيثَ عَنِّي إِلاَّ مَا عَلِمْتُمْ فَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ
مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ وَمَنْ قَالَ فِي
الْقُرْآنِ بِرَأْيِهِ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ নিশ্চিতভাবে যা তোমাদের জানা আছে তা
ব্যতীত আমার নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করা থেকে তোমরা নিবৃত্ত থাকবে। কারণ যে ব্যক্তি
ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে সে যেন জাহান্নামকে নিজের আবাস বানিয়ে
নিল। আর যে ব্যক্তি নিজের খেয়াল মর্জিমত কুরআন প্রসঙ্গে কথা বলে সেও যেন
জাহান্নামকে নিজের গৃহ বানিয়ে নিল।
যঈফ, মিশকাত (২৩৫), নাকদুত তাজ, যঈফা (১৭৮৩), সিফাতুস সালাত
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৯৫২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا حَبَّانُ بْنُ هِلاَلٍ،
حَدَّثَنَا سُهَيْلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَهُوَ ابْنُ أَبِي حَزْمٍ أَخُو حَزْمٍ
الْقُطَعِيِّ حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ، عَنْ جُنْدُبِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَالَ
فِي الْقُرْآنِ بِرَأْيِهِ فَأَصَابَ فَقَدْ أَخْطَأَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي
سُهَيْلِ بْنِ أَبِي حَزْمٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رُوِيَ عَنْ بَعْضِ
أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ
أَنَّهُمْ شَدَّدُوا فِي هَذَا فِي أَنْ يُفَسَّرَ الْقُرْآنُ بِغَيْرِ عِلْمٍ .
وَأَمَّا الَّذِي رُوِيَ عَنْ مُجَاهِدٍ وَقَتَادَةَ وَغَيْرِهِمَا مِنْ أَهْلِ
الْعِلْمِ أَنَّهُمْ فَسَّرُوا الْقُرْآنَ فَلَيْسَ الظَّنُّ بِهِمْ أَنَّهُمْ
قَالُوا فِي الْقُرْآنِ أَوْ فَسَّرُوهُ بِغَيْرِ عِلْمٍ أَوْ مِنْ قِبَلِ
أَنْفُسِهِمْ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُمْ مَا يَدُلُّ عَلَى مَا قُلْنَا أَنَّهُمْ
لَمْ يَقُولُوا مِنْ قِبَلِ أَنْفُسِهِمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ .
জুনদুব
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের মত অনুযায়ী কুরআন
প্রসঙ্গে কথা বলে, সে সঠিক বললেও অপরাধ করলো (এবং সঠিক ব্যাখ্যা করলো-সেও ভুল
করলো)।
যঈফ : মিশকাত (২৩৫), নাক্বদুত্ তাজ।
আবু ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। কোন কোন হাদীস বিশারদ
এ হাদীসের রাবী সুহাইল ইবনু আবু হাযমের সমালোচনা করেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্যদের সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তারা
(উক্ত বিষয়ের) জ্ঞান ব্যতীত কুরআনের তাফসীর করার ব্যাপারে খুবই কঠোর মত ব্যক্ত করেছেন।
মুজাহিদ, ক্বাতাদাহ (রহঃ) প্রমুখ বিশেষজ্ঞ আলিম প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তারাও কুরআনের
তাফসীর করেছেন। তাদের প্রসঙ্গে অবশ্য এ ধারণা করার সুযোগ নেই যে, তারা কুরআন প্রসঙ্গে
মনগড়া কিছু বলেছেন বা জ্ঞান ছাড়া কুরআনের তাফসীর করেছেন অথবা নিজেদের থেকে কুরআন
ব্যাখ্যায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তাদের প্রসঙ্গে আমরা যে মন্তব্য করেছি যে, তারা জ্ঞান
ছাড়া কুরআন প্রসঙ্গে কিছু বলেননি, তাদের বক্তব্য হতেও তার সমর্থন পাওয়া যায়। হুসাইন
ইবনু মাহদী আল-বাসরী, ‘আবদুর রাযযাক্ব হতে, তিনি মা’মার হতে, তিনি ক্বাতাদাহ (রহঃ)
হতে বর্ণনা করেন যে, কাতাদাহ (রহঃ) বলেন, কুরআনের এমন কোন আয়াত নেই যার (ব্যাখ্যা)
প্রসঙ্গে আমি কিছু শুনিনি। সানাদ সহীহ : মাক্বতূ’।
ইবনু আবী ‘উমার-সুফইয়ান ইবনু উয়াইনাহ্ হতে, তিনি আ’মাশ (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে,
মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, আমি যদি ইবনু মাস’উদ (রাঃ)-এর ক্বিরাআতের অনুসরণ করতাম, তাহলে
কুরআনের এমন অনেক বিষয় যে প্রসঙ্গে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করেছি সেগুলো প্রসঙ্গে
আমি তাকে প্রশ্ন করার প্রয়োজনবোধ করতাম না। সানাদ সহীহ : মাক্বতূ’।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২
সূরা
আল-ফাতিহা
২৯৫৩
আবু
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক নামায আদায় করলো, অথচ তাতে
উন্মুল কুরআন (সূরা আল-ফাতিহা) পাঠ করলো না, তা (নামায) ক্ৰটিযুক্ত, তা
ক্ৰটিযুক্ত, তা অসম্পূর্ণ। বর্ণনাকারী (‘আবদুর রাহমান) বলেন, আমি বললাম, হে আবূ
হুরায়রা্! আমি তো অনেক সময় ইমামের পিছনে নামায আদায় করি। তিনি বললেন, হে পারস্য
সন্তান! তুমি তা নীরবে পাঠ করবে। কারণ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তা'আলা বলেন, আমি আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে
নামাযকে আধাআধি ভাগ করে নিয়েছি। নামাযের অর্ধেক আমার এবং অর্ধেক আমার বান্দার। আর
বান্দা আমার নিকট যা চায় তা-ই তাকে দেয়া হয়। বান্দা যখন (নামাযে দণ্ডায়মান
হয়ে) বলে, আলহামদু লিল্লাহ রব্বিল ‘আলামীন (সমস্ত প্রশংসা সারা পৃথিবীর প্রভু
আল্লাহ তা'আলার জন্য), তখন কল্যাণের আধার আল্লাহ তা'আলা বলেন, আমার বান্দা আমার
প্রশংসা করেছে। যখন বান্দা বলে, আর-রাহমানির রাহীম (তিনি দয়াময় পরম দয়ালু), তখন
আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণগান করেছে। যখন বান্দা বলে, মালিকি ইয়াওমিদ্দীন
(প্রতিফল দিবসের মালিক), তখন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা
করেছে। এটা হচ্ছে আমার জন্য। আর আমার ও আমার বান্দার জন্য যোগসূত্র হচ্ছেঃ ইয়্যাকা
না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতা’ঈন (আমরা শুধু তোমারই ‘ইবাদাত করি এবং তোমারই নিকট
সাহায্য চাই), সূরার শেষ পর্যন্ত আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য তাই যা সে
প্রার্থনা করে। বান্দা বলে, “ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম। সিরাতাল্লাযীনা আন'আমতা
‘আলাইহিম। গাইরিল মাগযুবি 'আলাইহিম ওয়ালায্ য-ল্লীন" আমাদেরকে সরল ও মযবুত
পথ দেখাও। ঐ মানুষদের পথ যাদের তুমি নিয়ামাত দান করেছ। যারা অভিশপ্ত হয়নি, যারা
পথহারা হয়নি।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৮৩৮), মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। শু'বাহ, ইসমাঈল ইবনু
জা’ফার প্রমুখ ‘আলা ইবনু ‘আবদুর রাহমান হতে, তিনি তার বাবা হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ্
(রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা
করেছেন। ইবনু জুরাইজ ও মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) 'আলা ইবনু ‘আবদুর রাহমান হতে, তিনি হিশাম
ইবনু আবূ যাহরার মুক্তদাস আবুস সায়িব হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রেও একই রকম বর্ণনা করেছেন। ইবনু আবূ
উয়াইস-তার বাবা হতে, তিনি 'আলা ইবনু ‘আবদুর রাহমান হতে, তিনি তার পিতা ও আবুস সাইব
হতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন।
আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
যে লোক নামায আদায় করেছে অথচ তাতে ‘উন্মুল কুরআন’ (সূরা আল-ফাতিহা) তিলাওয়াত করেনি,
তার নামায ত্রুটিযুক্ত অপূর্ণাঙ্গ।
সহীহ দেখুন পূর্বের হাদীস।
ইসমাঈল ইবনু আবূ উয়াইসের হাদীসে এর বেশি কিছু নেই। আমি এ হাদীস বিষয়ে আবূ যুর'আকে
প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, দু'টি হাদীসই সহীহ। তিনি ইবনু আবী উয়াইস কর্তৃক তার বাবা
হতে, তিনি ‘আলা (রহঃ) হতে এই সূত্রে বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেন।
‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসলাম। তখন তিনি মাসজিদে বসা ছিলেন। লোকেরা বলল, এই তো ‘আদী ইবনু
হাতিম (রাঃ) । আর আমি কোনরূপ নিরাপত্তা লাভ বা লিখিত চুক্তিপত্র করা ছাড়াই এসেছিলাম।
আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সমীপে হাযির করা হলে তিনি
আমার হাত ধরলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিপূর্বে বলেছিলেন,
আমি অবশ্যই আশা করি আল্লাহ তা'আলা আমার হাতে তার হাত স্থাপন করবেন। ‘আদী (রাঃ) বলেন,
তিনি আমাকে সাথে নিয়ে উঠে চললেন। রাস্তায় এক মহিলা একটি বালকসহ তাঁর সাথে দেখা করে।
তারা উভয়ে বলে, আপনার নিকট আমাদের একটি প্রয়োজন ছিল। তাদের প্রয়োজন পূরণ না হওয়া
পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে দঁাড়িয়ে থাকলেন।
তারপর তিনি আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে তাঁর ঘরে এলেন। একটি বালিকা তাকে একটি গদি পেতে
দিল । তিনি তাতে বসলেন। আমি তার সামনাসামনি বসলাম। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও তার
গুনগান করলেন, তারপর বললেনঃ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" (আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত আর কোন
প্ৰভু নেই)-এর স্বীকৃতি দান হতে তোমাকে কিসে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য করেছে? এক আল্লাহ
তা'আলা ব্যতীত আরো কোন প্রভু আছে বলে কি তোমার জানা আছে? আমি বললাম, না। ‘আদী (রাঃ)
বলেন, আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহু আকবার (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ)
বলা হতে পালাচ্ছ। আল্লাহ তা'আলার চাইতে শ্রেষ্ঠতর কিছু আছে বলে তোমার জানা আছে কি?
আমি বললাম, না। তিনি বললেনঃ ইয়াহুদীরা অভিশপ্ত এবং নাসারাগণ পথভ্রষ্ট। আমি বললাম,
আমি যে একজন একনিষ্ঠ মুসলিম (আত্মমর্পণকারী) হয়েই আগমন করেছি। আমি দেখলাম, তার চেহারা
আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। তারপর তার নির্দেশক্রমে এক আনসার সাহাবীর বাড়িতে আমাকে
মেহমান হিসেবে রাখা হয়। আমি দিনের দুই প্রান্তে তার নিকট হাযিরা দিতাম, একদা বিকেলে
আমি তার নিকট হাযির ছিলাম। তখন তার নিকট মেহমান হিসেবে রাখা হয়। আমি দিনের দুই প্রান্তে
তার নিকট হাযিরা দিতাম, একদা বিকেলে আমি তার নিকট হাযির ছিলাম। তখন তার নিকট একদল লোক
আসলো। তারা সাদা-কালো ডোরাযুক্ত পশমী কাপড় পরিহিত ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (তাদের নিয়ে) নামায আদায় করলেন। তিনি নামায শেষে দাঁড়িয়ে এদেরকে
সাহায্যের উদ্দেশ্যে লোকদের উদ্বুদ্ধ করে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেনঃ তোমরা এক সা, অর্ধ
সা, এক মুঠো, এক মুঠোর অংশবিশেষ, একটি খেজুর বা খেজুরের অংশবিশেষ দান করে হলেও জাহান্নামের
তাপ (আগুন) হতে আত্মরক্ষা কর। কারণ আল্লাহ তা'আলার সাথে তোমাদের সকলেরই সাক্ষাৎ হবে।
তখন তিনি তোমাদেরকে তাই বলবেন যা আমি (এখন) তোমাদের বলছি। তিনি বলবেনঃ আমি কি তোমাকে
শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি দান করিনি? সে বলবে, হ্যাঁ। আল্লাহ বলবেনঃ আমি কি তোমাকে
ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করিনি? সে বলবে, হ্যাঁ। আল্লাহ বলবেনঃ তুমি নিজের জন্য
কি অগ্রিম পাঠিয়েছিলে? তখন সে তার সামনে, পেছনে, ডানে ও বামে তাকাবে, কিন্তু সে জাহান্নামের
তাপ হতে বাঁচানোর মত কিছুই পাবে না। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকে যেন নিজেকে একটি খেজুরের
অংশবিশেষ দান করে হলেও জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করে। কোন ব্যক্তির যদি এই সামর্থ্যও
না থাকে, তবে সে যেন অন্তত ভালো কথা বলে (তা হতে আত্মরক্ষা করে)। আমি তোমাদের ব্যাপারে
দুর্ভিক্ষের আশংকা করি না। কারণ আল্লাহ তা'আলা তোমাদের সাহায্যকারী ও দানকারী। এমনকি
উষ্ট্রারোহিণী কোন মহিলা ইয়াসরিব (মাদীনা) হতে হীরা বা ততোধিক দূরত্বের সফর করবে এবং
তার জন্তুযানের কিছু চুরি যাওয়ার ভয় থাকবে না। আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) বলেন, আমি মনে
মনে বললাম, তাহলে তাঈ কবীলার চোরগুলো কোথায় যাবে?
হাসান।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারিব। আমরা সিমাক ইবনু হারব ব্যতীত আর কারো নিকট হতে
এটা অবহিত নই। হাদীসটি দীর্ঘভাবে শু’বাহ-সিমাক ইবনু হারব হতে, তিনি আব্বাদ ইবনু হুবাইশ
হতে, তিনি ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَبُنْدَارٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ
عَبَّادِ بْنِ حُبَيْشٍ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " الْيَهُودُ مَغْضُوبٌ عَلَيْهِمْ وَالنَّصَارَى
ضُلاَّلٌ " . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ .
আদি
ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়াহুদীরা অভিশপ্ত এবং নাসারাগণ পথভ্রষ্ট....তারপর
পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন।
সহীহ : তাখরীজু শারহিল আক্বীদাতিত তাহাবীয়া (৫৩১), সহীহাহ্ (৩২৬৩)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩
সূরা
আল-বাক্বারাহ
২৯৫৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، وَعَبْدُ الْوَهَّابِ، قَالُوا
حَدَّثَنَا عَوْفُ بْنُ أَبِي جَمِيلَةَ الأَعْرَابِيِّ، عَنْ قَسَامَةَ بْنِ
زُهَيْرٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى خَلَقَ آدَمَ مِنْ قَبْضَةٍ قَبَضَهَا
مِنْ جَمِيعِ الأَرْضِ فَجَاءَ بَنُو آدَمَ عَلَى قَدْرِ الأَرْضِ فَجَاءَ
مِنْهُمُ الأَحْمَرُ وَالأَبْيَضُ وَالأَسْوَدُ وَبَيْنَ ذَلِكَ وَالسَّهْلُ
وَالْحَزْنُ وَالْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
মূসা আল-আশ'আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলা পৃথিবীর সর্বত্র হতে এক
মুঠো মাটি নিয়ে আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করেছেন। তাই আদম-সন্তানরা মাটির বৈশিষ্ট্য
প্রাপ্ত হয়েছে। যেমন তাদের কেউ লাল, কেউ সাদা, কেউ কালো বর্ণের আবার কেউ বা এসবের
মাঝামাঝি, কেউ বা নরম ও কোমল প্রকৃতির। আবার কেউ কঠোর প্রকৃতির, কেউ মন্দ
স্বভাবের, আবার কেউ বা ভালো চরিত্রের।
সহীহ : মিশকাত (১০০), সহীহাহ (১৬৩০)।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৫৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : (ادْخُلُوا الْبَابَ
سُجَّدًا ) قَالَ " دَخَلُوا مُتَزَحِّفِينَ عَلَى أَوْرَاكِهِمْ
" .
আবু
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ
তা'আলার বাণী “তোমরা সিজদাবনত শিরে প্রবেশ করো"- (সূরা বাকারাহ ৫৮)-এর
ব্যাখ্যায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তারা (বানী
ইসরাঈল) তাদের নিতম্বে ভর করে দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিল। একই সনদে “কিন্তু যারা
অন্যায় করেছিল, তারা তাদের যা বলা হয়েছিল তার পরিবর্তে অন্য কথা বলল’- (সূরা
আল-বাক্বারাহ ৫৯) এ আয়াত প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ তারা (হিত্তাতুন-এর পরিবর্তে) বলেছিল, “হাব্বাতুন ফী শা’রাতিন”
যবের মধ্যকার শস্যদানা"।
সহীহ : বুখারী (৪৪৭৯), মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৫৭
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا
أَشْعَثُ السَّمَّانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فِي سَفَرِهِ فِي لَيْلَةٍ مُظْلِمَةٍ فَلَمْ نَدْرِ أَيْنَ
الْقِبْلَةُ فَصَلَّى كُلُّ رَجُلٍ مِنَّا عَلَى حِيَالِهِ فَلَمَّا أَصْبَحْنَا
ذَكَرْنَا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَتْ : (أَيْنَمَا
تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَشْعَثَ السَّمَّانِ أَبِي
الرَّبِيعِ عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ . وَأَشْعَثُ يُضَعَّفُ فِي
الْحَدِيثِ .
আব্দুল্লাহ
ইবনু ‘আমির ইবনু রাবী’আহ (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক অন্ধকার
রাতে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে সফরে ছিলাম। আমরা ধারণা
করতে পারছিলাম না ক্বিবলাহ কোন দিকে হবে। কাজেই আমাদের সকলেই নিজ নিজ ধারণা
মোতাবিক ক্বিবলার দিক নির্ধারণ করে নামায আদায় করে। আমরা বিষয়টি সকাল বেলা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উত্থাপন করলাম। তখন নাযিল হয়ঃ “তোমরা
যে দিকেই মুখ ফিরাও সেদিকই আল্লাহ তা’আলার চেহারা” – (সূরা বাক্বারাহঃ ১১৫)।
হাসান : ইবনু মা-জাহ (১০২০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা আশ’আস - আসসাম্মান-আবুর
রাবী’ বর্ণনাকারী কর্তৃক আসিম ইবনু ‘উবাইদুল্লাহার হাদীস ব্যতীত আর কারো নিকট হতে এটিকে
অবহিত নই। আর আশ’আসকে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলে অভিহিত করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৯৫৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ
بْنَ جُبَيْرٍ، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ تَطَوُّعًا حَيْثُمَا تَوَجَّهَتْ بِهِ
وَهُوَ جَاءٍ مِنْ مَكَّةَ إِلَى الْمَدِينَةِ ثُمَّ قَرَأَ ابْنُ عُمَرَ هَذِهِ
الآيَةَ : (وَلِلَّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ ) الآيَةَ . قَالَ ابْنُ
عُمَرَ فَفِي هَذَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা হতে মাদীনায় ফেরার পথে তাঁর সাওয়ারী
তাঁকে নিয়ে যে অভিমুখে অগ্রসর হত তিনি সেদিকে ফিরেই নফল নামায আদায় করতেন। তারপর
ইবনু ‘উমার (রাঃ) এই আয়াত পাঠ করেনঃ ‘পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ তা’আলারই। অতএব, তোমরা
যেদিকেই মুখ ফিরাও সেদিকই আল্লাহ তা’আলার চেহারা” – (সূরা আল - বাক্বারাহ ১১৫)।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, এ প্রসঙ্গেই উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়।
সহীহ : সিফাতুস সালাত, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ক্বাতাদাহ (রহঃ)
হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেন যে, এর নির্দেশ রহিত (মানসূখ) হয়ে গেছে।
রহিতকারী (নাসিখ) আয়াতটি হল : “অতএব তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে তোমার মুখ ফিরাও”
– (সূরা আল – বাক্বারাহ ১৪৪) । ‘শাতরাল মাসজিদিল হারাম” অর্থাৎ “কা’বার দিকে”। তার
এই মত নিম্নোক্ত সূত্রে বর্ণিত হয়েছে : মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল মালিক ইবনু আবুশ শাওয়ারিব-ইয়াযীদ
ইবনু যুরাইহ হতে, তিনি সা’ঈদ হতে, তিনি ক্বাতাদাহ (রহঃ) হতে। মুজাহিদ (রহঃ) হতে বর্ণিত
আছে যে, তিনি “ফাছাম্মা ওয়াজহুল্লাহ” অর্থ করেছেন, “ফাসাম্মা ক্বিবলাতুল্লাহ” (সেদিকেই
আল্লাহ তা’আলার ক্বিবলাহ রয়েছে)। তার এই মত নিম্নোক্ত সূত্রে বর্ণিতঃ আবূ কুরাইব মুহাম্মদ
ইবনুল ‘আলা-ওয়াকী হতে, তিনি নাযর ইবনু ‘আরাবী হতে, তিনি মুজাহিদ (রহঃ) হতে।
সানাদ সহীহ, মাকতূ’ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ
مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ
عُمَرَ، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ صَلَّيْنَا خَلْفَ الْمَقَامِ فَنَزَلَتْ
: (وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা যদি মাক্বামে ইবরাহীমের পেছনে নামায আদায় করতাম
(তাহলে ভালো হত)। এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয় : “তোমরা মাক্বামে ইবরাহীমকে (ইবরাহীমের
দাঁড়াবার স্থানকে) নামাযের জায়গা হিসেবে গ্রহণ কর”- (সূরা আল –বাক্বারাহঃ ১২৫)
সহীহ : বুখারী (৪৪৮৩), মুসলিম।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا
حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ قُلْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَوِ اتَّخَذْتَ مِنْ
مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى فَنَزَلَتْ : (وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ
إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার ইবনুল
খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি মাক্বামে ইবরাহীমকে যদি
নামাযের জায়গা হিসেবে গ্রহণ করতেন! এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয়ঃ “ওয়াত্তাখিযূ মিম
মাক্বামি ইবরাহীমা মুসাল্লা”। তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের জায়গা
বানিয়ে নাও।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু ‘উমার (রাঃ)
হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : (كََذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا
) قَالَ " عَدْلاً " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ
সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বাণী “এভাবে আমি তোমাদেরকে এক ন্যায়নিষ্ঠ
জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি” (সূরা বাক্বারাহঃ ১৪৩) প্রসঙ্গে বলেছেনঃ ওয়াসাতান অর্থ
আদলান (ন্যায়নিষ্ঠ)।
সহীহ : বুখারী (৪৪৮৭), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ (ক্বিয়ামাত দিবসে) নূহ (আঃ)-কে ডেকে বলা হবে, তুমি কি (তোমার সম্প্রদায়কে আল্লাহ
তা’আলার বাণী) পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেনঃ হ্যাঁ। তারপর তাঁর সম্প্রদায়কে ডেকে প্রশ্ন
করা হবে : তিনি কি তোমাদের নিকট (আল্লাহ তা’আলার বাণী) পৌছিয়েছিলেন? তিনি কি তোমাদের
নিকট (আল্লাহ তা’আলার বাণী) পৌছিয়েছিলেন? তারা বলবে, আমাদের নিকট কোন সতর্ককারী আসেনি।
আমাদের নিকট কেউই আসেনি। তখন তাঁকে বলা হবে, আপনার সাক্ষী কারা? তিনি বলবেন : মুহাম্মদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাতগণ। তারপর তোমাদেরকে ডেকে আনা হবে।
তোমরা সাক্ষ্য দিবে যে, নিশ্চয়ই তিনি (দা’ওয়াত) পৌছে দিয়েছিলেন। তার প্রামাণ হচ্ছে
বারাকাতময় আল্লাহ তা’আলার বাণী : “এভাবে আমি তোমাদেরকে এক ন্যায়নিষ্ঠ জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত
করেছি। যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ এবং রাসূল তোমাদের সাক্ষীস্বরূপ হবে”
– (সূরা আল –বাক্বারাহ ১৪৩) ।
সহীহ : বুখারী (৪৪৮৭) ।
মুহাম্মদ ইবনু বাশশার-জা’ফার ইবনু ‘আওন হতে, তিনি আ’মাশ (রহঃ) হতে এই সূত্রেও একই রকম
বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬২
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ صَلَّى نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ سِتَّةَ أَوْ
سَبْعَةَ عَشَرَ شَهْرًا وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ أَنْ
يُوَجَّهَ إِلَى الْكَعْبَةِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ: ( قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ
وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ
شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ) فَوَجَّهَ نَحْوَ الْكَعْبَةِ وَكَانَ يُحِبُّ
ذَلِكَ فَصَلَّى رَجُلٌ مَعَهُ الْعَصْرَ قَالَ ثُمَّ مَرَّ عَلَى قَوْمٍ مِنَ
الأَنْصَارِ وَهُمْ رُكُوعٌ فِي صَلاَةِ الْعَصْرِ نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ
فَقَالَ هُوَ يَشْهَدُ أَنَّهُ صَلَّى مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَّهُ
قَدْ وُجِّهَ إِلَى الْكَعْبَةِ قَالَ فَانْحَرَفُوا وَهُمْ رُكُوعٌ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ
عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ .
আল
–বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় পদার্পণ করে ষোল বা সতের মাস পর্যন্ত
বাইতুল মাকদিসের দিকে (ফিরে) নামায আদায় করেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’বার দিকে (মুখ করে) নামায আদায় করার আগ্রহ পোষণ করতেন। এ
প্রেক্ষিতেই আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানোকে আমি
অবশ্যই লক্ষ্য করেছি। কাজেই আমি তোমাকে অবশ্যই এমন ক্বিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি যা
তুমি পছন্দ কর। অতএব তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে তোমার মুখ ফিরাও” – (সূরা আল
–বাক্বারাহঃ ১৪৫)। ফলে কা’বার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হলো। আর তিনি এটাই পছন্দ
করতেন। এক লোক তাঁর সাথে ‘আসরের নামায আদায় করে একদল আনসারীর সামনে দিয়ে
যাচ্ছিলেন। তারা তখন বাইতুল মাকদিসের দিকে (মুখ করে) আসরের নামাযের রুকূতে ছিল।
তিনি বললেন, এই লোকটি সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর সাথে নামায আদায় করে এসেছে। আর প্রকৃত অবস্থা এই যে, (নামাযে) কা’বার
দিকে মুখ ফিরানো হয়েছে। তারাও তৎক্ষণাৎ রুকূ’ অবস্থায়ই (কা’বার দিকে) ঘুরে যান।
সহীহ : সিফাতুস সালাত, বুখারী (৪৪৯২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সুফইয়ান সাওরীও
এটি আবূ ইসহাক হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانُوا رُكُوعًا فِي صَلاَةِ
الْفَجْرِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ الْمُزَنِيِّ وَابْنِ
عُمَرَ وَعُمَارَةَ بْنِ أَوْسٍ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى
حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তারা
(কুবা মাসজিদে) ফজরের নামাযে রুকূ অবস্থায় ছিলেন।
সহীহঃ প্রাগুক্ত, ইরওয়াহ (২৯০), বুখারী (৪৪৮৮), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে ‘আমর ইবনু ‘আওফ আল –মুযানী, ইবনু ‘উমার,
‘উমারাহ ইবনু আওস ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘‘ঈসা বলেন,
ইবনু ‘উমার (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬৪
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَأَبُو عَمَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ
إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا
وُجِّهَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْكَعْبَةِ قَالُوا يَا رَسُولَ
اللَّهِ كَيْفَ بِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ مَاتُوا وَهُمْ يُصَلُّونَ إِلَى بَيْتِ
الْمَقْدِسِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ: (وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ
) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে কা’বার দিকে ফিরিয়ে দেয়া হলে সাহাবীগণ
তাঁকে প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের যেসব ভাই বাইতুল মাকদিসের দিকে
(ফিরে) নামায আদায় করা অবস্থায় মারা গেছেন তাদের কি হবে? আল্লাহ তা’আলা তখন
নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “আল্লাহ তা’আলা তোমাদের ঈমানকে বিনষ্ট
করেন না”- (সূরা আল –বাক্বারাহ : ১৪৩)
সহীহ লিগাইরিহী : তা’লীকাতু হাসসান (১৭১৪), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَمِعْتُ
الزُّهْرِيَّ، يُحَدِّثُ عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ مَا أَرَى عَلَى
أَحَدٍ لَمْ يَطُفْ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ شَيْئًا وَمَا أُبَالِي أَنْ
لاَ أَطَّوَّفَ بَيْنَهُمَا . فَقَالَتْ بِئْسَمَا قُلْتَ يَا ابْنَ أُخْتِي
طَافَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَطَافَ الْمُسْلِمُونَ وَإِنَّمَا
كَانَ مَنْ أَهَلَّ لِمَنَاةَ الطَّاغِيَةِ الَّتِي بِالْمُشَلَّلِ لاَ يَطُوفُونَ
بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ
أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا ) وَلَوْ
كَانَتْ كَمَا تَقُولُ لَكَانَتْ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَطَّوَّفَ
بِهِمَا قَالَ الزُّهْرِيُّ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لأَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ فَأَعْجَبَهُ ذَلِكَ وَقَالَ إِنَّ
هَذَا لَعِلْمٌ وَلَقَدْ سَمِعْتُ رِجَالاً مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يَقُولُونَ
إِنَّمَا كَانَ مَنْ لاَ يَطَّوَّفُ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ مِنَ الْعَرَبِ
يَقُولُونَ إِنَّ طَوَافَنَا بَيْنَ هَذَيْنِ الْحَجَرَيْنِ مِنْ أَمْرِ
الْجَاهِلِيَّةِ وَقَالَ آخَرُونَ مِنَ الأَنْصَارِ إِنَّمَا أُمِرْنَا
بِالطَّوَافِ بِالْبَيْتِ وَلَمْ نُؤْمَرْ بِهِ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ
فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ
) قَالَ أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَأُرَاهَا قَدْ نَزَلَتْ فِي
هَؤُلاَءِ وَهَؤُلاَءِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উরওয়া
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ
(রাঃ)-কে বললাম, যে ব্যক্তি সাফা ও মারওয়ার তাওয়াফ (সাঈ) করেনি আমি তাতে সমস্যা
মনে করি না। আমি নিজেও এ দুই পাহাড়ের মাঝে তাওয়াফ না করতে কোন পরোয়া করি না।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, হে আমার বোন পুত্র! তুমি যা বললে তা খুবই অন্যায় কথা।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে এই দুই পাহাড়ের মাঝে তাওয়াফ
করেছেন, মুসলিমরাও এর তাওয়াফ করেছেন। তবে ‘মুশাল্লাল’ নামক স্থানে স্থাপিত মানাত
নামক প্রতিমার নামে যেসব কাফির ইহরাম বাঁধতো তারা সাফা ও মারওয়ার তাওয়াফ করত না।
অতঃপর বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “যে লোক বাইতুল্লাহর হাজ্জ করে বা
উমরা করে এই পাহাড়দ্বয়ের মাঝে তাওয়াফ করায় তার কোন সমস্যা নেই”- (সূরা আল
–বাক্বারাহঃ ১৫৮)। তোমাদের কথাই যদি সঠিক হত, তাহলে এভাবে বলা হতঃ “ফালা জুনাহা
‘আলাইহি আল –লা ইয়াত্তাওয়াফা বিহিমা” (এই পাহাড়দ্বয়ের মাঝে তাওয়াফ না করাতে কোন
সমস্যা নেই)। যুহরী (রহঃ) বলেন, আমি আবূ বাকর ইবনু ‘আবদুর রাহমান ইবনুল হারিস ইবনু
হিশামের নিকট এটি বর্ণনা করলে তিনি খুবই আনন্দিত হন এবং বলেন, এটা তো হল ইল্মের
(জ্ঞানের) কথা! আমি বহু আলিমকে বলতে শুনেছি, যেসব আরববাসী সাফা-মারওয়ার তাওয়াফ করে
না তারা বলে, এ দু’টি পাহাড়ের মাঝে তাওয়াফ করা জাহিলী যুগের প্রথা। অপর দিকে কিছু সংখ্যক
আনসারী বলত, আমাদেরকে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করার আদেশ করা হয়েছে এবং সাফা-মারওয়ার
মাঝে তাওয়াফের আদেশ দেয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করলেনঃ “নিশ্চয়ই
সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’আলার নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভূক্ত” – (সূরা আল –বাক্বারাহ
১৫৮)। আবূ বাকর ইবনু ‘আব্দুর রাহমান বলেন, আমার মতে উপরোক্ত উভয় দলের প্রসঙ্গেই এ
আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (২৯৮৬), বুখারী (৪৪৯৫), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي
حَكِيمٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ
مَالِكٍ عَنِ الصَّفَا، وَالْمَرْوَةِ، فَقَالَ كَانَا مِنْ شَعَائِرِ
الْجَاهِلِيَّةِ فَلَمَّا كَانَ الإِسْلاَمُ أَمْسَكْنَا عَنْهُمَا فَأَنْزَلَ
اللَّهُ : ( إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ فَمَنْ
حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا
) قَالَ هُمَا تَطَوُّعٌ (فَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ
عَلِيمٌ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আসিম
আল –আওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ)-কে সাফা ও মারওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, এ দু’টি
(পাহাড়) ছিল জাহিলিয়াতের নিদর্শন। ইসলামের আবির্ভাব হলে আমরা এতদুভয়ের মাঝে সাঈ
করা হতে বিরত থাকলাম। তখন বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “সাফা ও মারওয়া হল
আল্লাহ তা’আলার নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভূক্ত। অতএব বাইতুল্লাহর হাজ্জকারী বা
উমরাকারী ব্যক্তির জন্য এতদুভয়ের মাঝে তাওয়াফ করাতে কোন সমস্যা নেই”- (সূরা আল –বাক্বারাহঃ
১৫৮)। আনাস (রাঃ) বলেন, এটা হল নফল ইবাদাত। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “কেউ
স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করলে আল্লাহ তা’আলা তো গুণগ্রাহী ও সর্বজ্ঞ”- (সূরা আল
–বাক্বারাহ : ১৫৮)।
সহীহ : বুখারী (৪৪৯৬), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَدِمَ مَكَّةَ طَافَ
بِالْبَيْتِ سَبْعًا فَقَرَأَ : (وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ
مُصَلًّى ) فَصَلَّى خَلْفَ الْمَقَامِ ثُمَّ أَتَى الْحَجَرَ فَاسْتَلَمَهُ
ثُمَّ قَالَ " نَبْدَأُ بِمَا بَدَأَ اللَّهُ بِهِ " . وَقَرَأَ
: (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মক্কায় এলেন, তখন সাতবার বাইতুল্লাহর
তাওয়াফ করলেন। তখন আমি তাঁকে এ আয়াত পাঠ করতে শুনলাম (অনুবাদ) : “তোমরা ইবরাহীমের
দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ কর”- (সূরা আল –বাক্বারাহ : ১২৫)। তারপর
তিনি মাক্বামে ইবরাহীমের পিছনে নামায আদায় করলেন, তারপর হাজরে আসওয়াদের নিকট এসে
তাতে চুমু দিলেন, তারপর বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা প্রথমে যা উল্লেখ করেছেন আমরা তা হতে
শুরু করব। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করলেন : “সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’আলার
নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভূক্ত”- (সূরা আল –বাক্বারাহ : ১৫৮)।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (২৯৬০), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ بْنِ يُونُسَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ،
قَالَ كَانَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ الرَّجُلُ
صَائِمًا فَحَضَرَ الإِفْطَارُ فَنَامَ قَبْلَ أَنْ يُفْطِرَ لَمْ يَأْكُلْ
لَيْلَتَهُ وَلاَ يَوْمَهُ حَتَّى يُمْسِيَ وَإِنَّ قَيْسَ بْنَ صِرْمَةَ
الأَنْصَارِيَّ كَانَ صَائِمًا فَلَمَّا حَضَرَهُ الإِفْطَارُ أَتَى امْرَأَتَهُ
فَقَالَ هَلْ عِنْدَكِ طَعَامٌ قَالَتْ لاَ وَلَكِنْ أَنْطَلِقُ فَأَطْلُبُ لَكَ
. وَكَانَ يَوْمَهُ يَعْمَلُ فَغَلَبَتْهُ عَيْنُهُ وَجَاءَتْهُ امْرَأَتُهُ
فَلَمَّا رَأَتْهُ قَالَتْ خَيْبَةً لَكَ . فَلَمَّا انْتَصَفَ النَّهَارُ
غُشِيَ عَلَيْهِ فَذَكَرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَتْ
هَذِهِ الآيَةُ : ( أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى
نِسَائِكُمْ ) فَفَرِحُوا بِهَا فَرَحًا شَدِيدًا : (فَكُلُوا وَاشْرَبُوا
حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ
الْفَجْرِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আল
–বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণের এ নিয়ম ছিল যে, কোন রোযাদার
ইফতারের পূর্বে ঘুমিয়ে পড়লে তিনি সেই রাত ও পরবর্তী দিনে কিছু খেতেন না, এভাবে
পরবর্তী সন্ধ্যা পর্যন্ত অভুক্ত থাকতেন। একবার ক্বাইস ইবনু সিরমাহ আল –আনসারী
(রাঃ) রোযা অবস্থায় ছিলেন। ইফতারের সময় উপস্থিত হলে তিনি তার স্ত্রীর নিকট এসে
বললেন, কোন খাবার আছে কি? তাঁর স্ত্রী বললেন, না। তবে আমি আপনার জন্য কিছু খুঁজে
আনতে যাচ্ছি। কাইস (রাঃ) ঐ দিন কায়িক পরিশ্রম করেছিলেন। তাই তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন।
তার স্ত্রী এসে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে বললেন, আপনার জন্য আফসোস! পরবর্তী
দিন দুপুর হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ ঘটনা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট বর্ণনা করা হলে তখন নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ): “রোযার
রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সম্ভোগ হালাল করা হল” (সূরাঃ আল –বাক্বারাহঃ ১৮৭)। এতে
তারা অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। আয়াতের শেষাংশ নিম্নরূপ (অনুবাদ) : “রাতের কালো রেখা
হতে ভোরের সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা
পানাহার কর” – (সূরা আল –বাক্বারাহ : ১৮৭)
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৬৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ ذَرٍّ، عَنْ يُسَيْعٍ الْكِنْدِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : (وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي
أَسْتَجِبْ لَكُمْ ) قَالَ " الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ " .
وَقَرَأَ :( وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ) إِلَى
قَوْلِهِ ( دَاخِرِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
নু’মান
ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বাণী “তোমাদের প্রভু বলেন,
তোমরা আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সারা দিব”- (সূরা মু’মিন ৬০) প্রসঙ্গে বলেছেনঃ
দু’আও একটি ‘ইবাদাত। তারপর তিনি পাঠ করলেন : “তোমাদের প্রভু বলেন, তোমরা আমাকে
ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। যারা অহংকারবশে আমার ‘ইবাদাতে বিমুখ, তারা
লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে” (সূরা মু’মিনঃ ৬০)।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৩৮২৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا
حُصَيْنٌ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، أَخْبَرَنَا عَدِيُّ بْنُ حَاتِمٍ، قَالَ لَمَّا
نَزَلَتْ : ( حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ
الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ) قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم "
إِنَّمَا ذَاكَ بَيَاضُ النَّهَارِ مِنْ سَوَادِ اللَّيْلِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আদী
ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘হাত্তা
ইয়াতাবাইয়্যানা লাকুমুল খাইতুল-আবইয়াযু মিনাল-খাইতিল আসওয়াদি মিনাল-ফাজরি” – (সূরা
বাক্বারাহঃ ১৮৭) আয়াত অবতীর্ণ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে
বললেনঃ এখানে খাইতুল আবইয়াযি মিনাল খাইতিল আসওয়াদি বলতে “রাতের অন্ধকার ও দিনের
আলো” বুঝানো হয়েছে।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (২০৩৪), বুখারী (৪৫১০), মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আহমাদ ইবনু মানী-হুশাইম
হতে, তিনি মুজালিদ হতে, তিনি শা’বী হতে, তিনি ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) হতে, তিনি নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُجَالِدٍ،
عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّوْمِ فَقَالَ : ( حَتََّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ
الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ ) قَالَ فَأَخَذْتُ عِقَالَيْنِ
أَحَدُهُمَا أَبْيَضُ وَالآخَرُ أَسْوَدُ فَجَعَلْتُ أَنْظُرُ إِلَيْهِمَا فَقَالَ
لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا لَمْ يَحْفَظْهُ سُفْيَانُ قَالَ
" إِنَّمَا هُوَ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আদী
ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রোযা
বিষয়ে (সাহরীর সময়সীমা প্রসঙ্গে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ ‘কালো সুতা হতে সাদা সুতা যে পর্যন্ত না স্পষ্ট
প্রতিভাত হয়”- (সূরা আল –বাক্বারাহ ১৮৭)। ‘আদী (রাঃ) বলেন, আমি সাদা ও কালো দুটি
রশি নিলাম, (শেষ রাতে) আমি উভয়টি দেখতে লাগলাম (এবং সাদা-কালোর পার্থক্য নিরূপণের
চেষ্টা করলাম)। (এ ঘটনা শুনে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাকে কিছু বলেন। কি বলেছিলেন তা বর্ণনাকারী সুফইয়ান মনে রাখতে পারেননি। এরপর
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এর অর্থ হল রাত ও দিন।
সহীহ : প্রাগুক্ত, বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ
أَبُو عَاصِمٍ النَّبِيلُ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي
حَبِيبٍ، عَنْ أَسْلَمَ أَبِي عِمْرَانَ التُّجِيبِيِّ، قَالَ كُنَّا بِمَدِينَةِ
الرُّومِ فَأَخْرَجُوا إِلَيْنَا صَفًّا عَظِيمًا مِنَ الرُّومِ فَخَرَجَ
إِلَيْهِمْ مِنَ الْمُسْلِمِينَ مِثْلُهُمْ أَوْ أَكْثَرُ وَعَلَى أَهْلِ مِصْرَ
عُقْبَةُ بْنُ عَامِرٍ وَعَلَى الْجَمَاعَةِ فَضَالَةُ بْنُ عُبَيْدٍ فَحَمَلَ رَجُلٌ
مِنَ الْمُسْلِمِينَ عَلَى صَفِّ الرُّومِ حَتَّى دَخَلَ فِيهِمْ فَصَاحَ النَّاسُ
وَقَالُوا سُبْحَانَ اللَّهِ يُلْقِي بِيَدَيْهِ إِلَى التَّهْلُكَةِ فَقَامَ
أَبُو أَيُّوبَ الأَنْصَارِيُّ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ
تَتَأَوَّلُونَ هَذِهِ الآيَةَ هَذَا التَّأْوِيلَ وَإِنَّمَا نَزَلَتْ هَذِهِ
الآيَةُ فِينَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ لَمَّا أَعَزَّ اللَّهُ الإِسْلاَمَ وَكَثُرَ
نَاصِرُوهُ فَقَالَ بَعْضُنَا لِبَعْضٍ سِرًّا دُونَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم إِنَّ أَمْوَالَنَا قَدْ ضَاعَتْ وَإِنَّ اللَّهَ قَدْ أَعَزَّ
الإِسْلاَمَ وَكَثُرَ نَاصِرُوهُ فَلَوْ أَقَمْنَا فِي أَمْوَالِنَا فَأَصْلَحْنَا
مَا ضَاعَ مِنْهَا . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم
يَرُدُّ عَلَيْنَا مَا قُلْنَا: (وَأَنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلاَ تُلْقُوا
بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ) فَكَانَتِ التَّهْلُكَةُ الإِقَامَةَ عَلَى
الأَمْوَالِ وَإِصْلاَحَهَا وَتَرَكْنَا الْغَزْوَ فَمَا زَالَ أَبُو أَيُّوبَ
شَاخِصًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَتَّى دُفِنَ بِأَرْضِ الرُّومِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আসলাম
আবূ ‘ইমরান আত –তুজীবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রোম
সাম্রাজ্যের কোন এক শহরে অবস্থানরত ছিলাম। তখন আমাদেরকে মুকাবিলা করার উদ্দেশে
রোমের এক বিশাল বাহিনী যাত্রা শুরু করল। মুসলিমদের পক্ষ হতেও একই রকম বা আরো বিশাল
একটি বাহিনী যাত্রা শুরু করল। তখন মিসরবাসীর শাসক ছিলেন ‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ)
এবং বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন ফাযালাহ ইবনু ‘উবাইদ (রাঃ)। একজন মুসলিম সেনা রোমীয়দের
উপর প্রচন্ড আক্রমণ করেন। এমনকি বুহ্য ভেদ করে তিনি তাদের ভেতরে ঢুকে পড়েন। তখন
মুসলিমগণ সশব্দে চিৎকার করেন এবং বলেন, সুবহানাল্লাহ! লোকটি নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে
নিক্ষেপ করেছে। তখন আবূ আইয়ূব আল –আনসারী (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে জনমন্ডলী! তোমরা
এ আয়াতের এরূপ ব্যাখ্যা করছ? অথচ এ আয়াতটি আমাদের তথা আনসারদের ব্যাপারে অবতীর্ণ
হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা যখন ইসলামকে বিজয় দান করলেন এবং ইসলামের বিপুল সংখ্যক
সাহায্যকারী হয়ে গেল, তখন আমাদের মধ্যে কেউ কেউ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কে না শুনিয়ে চুপে চুপে বলল, আমাদের মাল-সম্পদ তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আল্লাহ তা’আলা ইসলামকে এখন শক্তিশালী করেছেন। তার সাহায্যকারীর সংখ্যাও অনেক
বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন যদি আমরা আমাদের মাল-সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অবস্থান করতে
এবং বিনষ্ট হয়ে যাওয়া সম্পদের পুনর্গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করতাম (তাহলে ভাল হতো)। এ
প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা আমাদের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন : “তোমরা আল্লাহ
তা’আলার পথে ব্যয় কর এবং নিজেদের হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না”
(সূরা আল –বাক্বারাহ ১৯৫)। কাজেই মাল-সম্পদের তত্ত্বাবধান ও তার পুনর্গঠনে
আত্মনিয়োগ করা এবং জিহাদ ত্যাগ করাই হচ্ছে ধ্বংস। অতএব আবূ আইয়ূব আল –আনসারী (রাঃ)
বাড়িঘর ছেড়ে সব সময় আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় জিহাদে ব্যাপৃত থাকতেন। অবশেষে তিনি
রোমে (তৎকালীন এশিয়া মাইনর, বর্তমানে তুরস্ক) ইন্তিকাল করেন এবং সেখানেই তাঁকে
দাফর করা হয়।
সহীহ : সহীহাহ (১৩)।
আবী ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا
مُغِيرَةُ، عَنْ مُجَاهِدٍ، قَالَ قَالَ كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ وَالَّذِي نَفْسِي
بِيَدِهِ لَفِيَّ أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ وَإِيَّاىَ عَنَى بِهَا : (فَمَنْ
كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ بِهِ أَذًى مِنْ رَأْسِهِ فَفِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ
أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ ) قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِالْحُدَيْبِيَةِ وَنَحْنُ مُحْرِمُونَ وَقَدْ حَصَرَنَا الْمُشْرِكُونَ
وَكَانَتْ لِي وَفْرَةٌ فَجَعَلَتِ الْهَوَامُّ تَسَاقَطُ عَلَى وَجْهِي فَمَرَّ
بِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " كَأَنَّ هَوَامَّ رَأْسِكَ
تُؤْذِيكَ " . قَالَ قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ " فَاحْلِقْ
" . وَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ . قَالَ مُجَاهِدٌ الصِّيَامُ ثَلاَثَةُ
أَيَّامٍ وَالطَّعَامُ سِتَّةُ مَسَاكِينَ وَالنُّسُكُ شَاةٌ فَصَاعِدًا .
কা’ব
ইবনু উজরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে মহান
সত্তার হাতে আমার প্রাণ নিবদ্ধ তাঁর শপথ! আমার সম্পর্কেই নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ
হয়েছে এবং তাতে আমার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে : “তোমাদের মধ্যে যদি কেউ পীড়িত হয়,
বা মাথায় ক্লেশ থাকে, তবে রোযা অথবা দান-খাইরাত অথবা কুরবানীর দ্বারা তারা ফিদিয়া
দিবে” (সূরা আল –বাক্বারাহ ১৯৬)। কা’ব ইবনু উজরাহ (রাঃ) বলেন, আমরা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে হুদাইবিয়াতে ইহ্রাম অবস্থায় ছিলাম।
মুশরিকরা আমাদেরকে (হাজ্জ বা উমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় যেতে) বাধা দিল। আমার মাথায়
বাবরী চুল ছিল। উকুন আমার মুখমন্ডলে পতিত হচ্ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেনঃ তোমার মাথার কীটগুলো কি তোমাকে
কষ্ট দিচ্ছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তুমি তোমার মাথার চুল মুন্ডন করে ফেল। এ প্রসঙ্গেই এ আয়াত অবতীর্ণ হয়।
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, এক্ষেত্রে তিনটি রোযা রাখতে হবে অথবা খাদ্য দান করতে হবে ছয়জন
মিসকীনকে অথবা এক বা একাধিক ছাগল যবেহ করতে হবে।
সহীহ : বুখারী (৪৫১৭), মুসলিম, অনুরূপ হাদীস পূর্বে (৯৫৩) নং উল্লেখ হয়েছে।
‘আলী ইবনু হুজর-হুশাইম হতে, তিনি আশ’আস ইবনু সাওওয়ার হতে,
তিনি শা’বী হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মা’কিল হতে, তিনি কা’ব ইবনু উজরাহ (রাঃ) হতে,
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম
বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘আবদুর রহমান ইবনুল আসবাহানী
(রহঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফালের সূত্রে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي
لَيْلَى، عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ، قَالَ أَتَى عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم وَأَنَا أُوقِدُ تَحْتَ قِدْرٍ وَالْقَمْلُ تَتَنَاثَرُ عَلَى
جَبْهَتِي أَوْ قَالَ حَاجِبِي فَقَالَ " أَتُؤْذِيكَ هَوَامُّ رَأْسِكَ
" . قَالَ قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ " فَاحْلِقْ رَأْسَكَ
وَانْسُكْ نَسِيكَةً أَوْ صُمْ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ أَوْ أَطَعِمْ سِتَّةَ
مَسَاكِينَ " . قَالَ أَيُّوبُ لاَ أَدْرِي بِأَيَّتِهِنَّ بَدَأَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
কা’ব
ইবনু উজরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট আসলেন। আমি তখন ডেকচির নিচে আগুন
জ্বালাচ্ছিলাম। তখন আমার কপালের উপর অথবা বলেছেন আমার চোখের ভ্রুর উপর দিয়ে উকুন
ঝরে পড়ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার কীটগুলো
কি তোমাকে কষ্ট দিচ্ছে? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার মাথা কামিয়ে ফেল
এবং তার পরিবর্তে একটি পশু যবেহ কর অথবা তিন দিন রোযা রাখ অথবা ছয়জন মিসকীনকে আহার
করাও। বর্ণনাকারী আইয়ূব বলেন, তিনি কোন বিষয়টি প্রথমে বলেছেন তা আমি অবগত নই।
সহীহ : দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ يَعْمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" الْحَجُّ عَرَفَاتٌ الْحَجُّ عَرَفَاتٌ الْحَجُّ عَرَفَاتٌ أَيَّامُ
مِنًى ثَلاَثٌ : (فَمَنْ تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ
وَمَنْ تَأَخَّرَ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ ) وَمَنْ أَدْرَكَ عَرَفَةَ قَبْلَ أَنْ
يَطْلُعَ الْفَجْرُ فَقَدْ أَدْرَكَ الْحَجَّ " . قَالَ ابْنُ أَبِي
عُمَرَ قَالَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ وَهَذَا أَجْوَدُ حَدِيثٍ رَوَاهُ
الثَّوْرِيُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرَوَاهُ
شُعْبَةُ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَطَاءٍ وَلاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ
بُكَيْرِ بْنِ عَطَاءٍ .
আবদুর
রাহমান ইবনু ইয়া’মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হাজ্জ হচ্ছে আরাফাতে অবস্থান, হাজ্জ
হচ্ছে আরাফাতে অবস্থান, হাজ্জ হচ্ছে আরাফাতে অবস্থান। মিনার জন্য নির্ধারিত আছে
তিন দিন। “কোন ব্যক্তি যদি দুই দিন থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসে তবে তার কোন গুনাহ হবে
না। আর যদি কোন ব্যক্তি বিলম্ব করে, তারও কোন গুনাহ হবে না” –(সূরা আল –বাক্বারাহ
২০৩)। ফজর উদয়ের পূর্বেই যে ব্যক্তি ‘আরাফাতে পৌছে যায়, সে হাজ্জ পেয়ে গেল।
সহীহ : (৮৮৯) নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
ইবনু আবী ‘উমার বলেন, সুফইয়ান ইবনু উয়াইনা বলেছেন : সুফইয়ান
সাওরীর বর্ণিত হাদীসগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে উৎকৃষ্ট। আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান
সহীহ। এটি শু’বাহ (রহঃ) বুকাইর ইবনু আতা হতে বর্ণনা করেছেন। বুকাইর ইবনু আতার সূত্র
ব্যতীত এটি সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ
جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَبْغَضُ الرِّجَالِ إِلَى اللَّهِ
الأَلَدُّ الْخَصِمُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভীষণ কলহপ্রিয় লোক আল্লাহ তা’আলার
নিকট সবচাইতে ঘৃণ্য।
সহীহ : বুখারী (৪৫২৩), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَتِ
الْيَهُودُ إِذَا حَاضَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُمْ لَمْ يُوَاكِلُوهَا وَلَمْ
يُشَارِبُوهَا وَلَمْ يُجَامِعُوهَا فِي الْبُيُوتِ فَسُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : (يَسْأَلُونَكَ عَنِ
الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى ) فَأَمَرَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
أَنْ يُوَاكِلُوهُنَّ وَيُشَارِبُوهُنَّ وَأَنْ يَكُونُوا مَعَهُنَّ فِي
الْبُيُوتِ وَأَنْ يَفْعَلُوا كُلَّ شَيْءٍ مَا خَلاَ النِّكَاحَ فَقَالَتِ
الْيَهُودُ مَا يُرِيدُ أَنْ يَدَعَ شَيْئًا مِنْ أَمْرِنَا إِلاَّ خَالَفَنَا
فِيهِ . قَالَ فَجَاءَ عَبَّادُ بْنُ بِشْرٍ وَأُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ إِلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَاهُ بِذَلِكَ وَقَالاَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ أَفَلاَ نَنْكِحُهُنَّ فِي الْمَحِيضِ فَتَمَعَّرَ وَجْهُ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ قَدْ غَضِبَ عَلَيْهِمَا فَقَامَا
فَاسْتَقْبَلَتْهُمَا هَدِيَّةٌ مِنْ لَبَنٍ فَأَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فِي آثَارِهِمَا فَسَقَاهُمَا فَعَلِمْنَا أَنَّهُ لَمْ يَغْضَبْ
عَلَيْهِمَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়াহূদীদের
এই নিয়ম ছিল যে, তাদের কোন নারীর মাসিক ঋতুস্রাব হলে তারা তার সাথে একত্রে
পানাহারও করত না এবং একই ঘরে একত্রে বসবাসও করত না। এ বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “লোকেরা
আপনাকে হায়িয প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে। বলুন, তা অশুচি” –(সূরা আল –বাক্বারাহ ২২২)।
তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে যথারীতি একত্রে
পানাহারের ও ঘরে একসাথে বসবাসের নির্দেশ দেন, শুধু সহবাস প্রসঙ্গ ব্যতীত। এতে
ইয়াহূদীরা বলল, এ লোকটি আমাদের কোন একটি বিষয়েরও বিরোধিতা না করে ছাড়ছে না।
বর্ণনাকারী বলেন, আব্বাদ ইবনু বিশর ও উসাইদ ইবনু হুযাইর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসেন এবং বিষয়টি তাঁকে জানান। তারা
বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি ঋতুস্রাব চলাকালে স্ত্রী-সহবাস করব না? এতে
রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চেহারা রক্তিম বর্ণ হয়ে গেল।
আমরা অনুমান করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উভয়ের
প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তারা দুজনে উঠে রাওনা করলেন। তাদের সামনে দিয়েই
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্যে দুধ হাদিয়া এলো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ডেকে পাঠান এবং তাদেরকে
দুধ পান করান। এতে তারা বুঝতে পারল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হননি।
সহীহ : আদাবুয, যিফাফ (৪৪), সহীহ আবূ দাঊদ (২৫০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। মুহাম্মদ ইবনু
‘আবদুল ‘আলা-‘আবদুর রাহমান ইবনু মাহদী হতে, তিনি হাম্মাদ ইবনু সালামা হতে, তিনি সাবিত
হতে, তিনি আনাস (রাঃ) হতে অনুরূপ অর্থবোধক হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ
الْمُنْكَدِرِ، سَمِعَ جَابِرًا، يَقُولُ كَانَتِ الْيَهُودُ تَقُولُ مَنْ أَتَى
امْرَأَتَهُ فِي قُبُلِهَا مِنْ دُبُرِهَا كَانَ الْوَلَدُ أَحْوَلَ فَنَزَلَتْ
: (نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ ) .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনুল
মুনকাদির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জাবির (রাঃ)-কে
বলতে শুনেছেনঃ ইয়াহূদীরা বলত, কোন ব্যক্তি স্ত্রীর পেছন দিক হতে তার জননেন্দ্রিয়ে
সহবাস করলে সন্তন হয় টেরা চোখবিশিষ্ট। এ প্রসঙ্গেই এ আয়াত অবতীর্ণ হয় : “তোমাদের
স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র। কাজেই তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা
যেতে পার” – (সূরা আল –বাক্বারাহ ২২৩)।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৯২৫), বুখারী (৪৫২৮), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ خُثَيْمٍ، عَنِ ابْنِ سَابِطٍ، عَنْ
حَفْصَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : (نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا
حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ ) يَعْنِي صِمَامًا وَاحِدًا . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَابْنُ خُثَيْمٍ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُثْمَانَ
وَابْنُ سَابِطٍ هُوَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَابِطٍ
الْجُمَحِيُّ الْمَكِّيُّ وَحَفْصَةُ هِيَ بِنْتُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي
بَكْرٍ الصِّدِّيقِ وَيُرْوَى فِي سِمَامٍ وَاحِدٍ .
উম্মু
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “তোমাদের
স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র স্বরূপ। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে
ইচ্ছা যেতে পার”- (সূরা আল –বাক্বারাহ ২২৩), এ আয়াত প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অর্থাৎ একই রাস্তায় (জননেন্দ্রিয়ে) সহবাস করবে।
সহীহ : আদাবুয যিফাফ (২৭-২৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু খুসাইম হচ্ছেন
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উসমান ইবনু খুসাইম। ইবনু সাবিত হচ্ছেন ‘আবদুর রাহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ
ইবনু সাবিত আল –জুমাহী আল –মাক্কী। আর হাফসা (রাঃ) হচ্ছেন, ‘আবদুর রাহমান ইবনু আবূ
বাকর আস –সিদ্দীক-এর কন্যা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى،
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَشْعَرِيُّ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ
أَبِي الْمُغِيرَةِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ
جَاءَ عُمَرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ هَلَكْتُ قَالَ " وَمَا أَهْلَكَكَ " . قَالَ حَوَّلْتُ
رَحْلِي اللَّيْلَةَ . قَالَ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم شَيْئًا قَالَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم هَذِهِ الآيَةَ : (نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى
شِئْتُمْ ) أَقْبِلْ وَأَدْبِرْ وَاتَّقِ الدُّبُرَ وَالْحِيضَةَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَيَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
الأَشْعَرِيُّ هُوَ يَعْقُوبُ الْقُمِّيُّ .
ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “উমার (রাঃ)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর
রাসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? ‘উমার (রাঃ)
বললেনঃ রাতে আমার বাহনটি উল্টা করে ব্যবহার করেছি (পেছনের দিক হতে সহবাস করেছি)।
বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি
নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হল : “তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র। অতএব তোমরা
তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা যেতে পার”- (সূরা আল –বাক্বারাহঃ ২২৩)। সামনের
দিক হতেও বা পেছনের দিক হতেও (জননেন্দ্রিয়ে) সঙ্গত হতে পারে, তবে মলদ্বারে অথবা
হায়িয অবস্থায় (সহবাস হতে) বিরত থাক।
হাসান : আদাবুয যিফাফ (২৮-২৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইয়াকূব ইবনু ‘আবদুল্লাহ
আল-আশ’’আরী হচ্ছেন ইয়াকুব আল –কুম্মী।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৯৮১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ الْقَاسِمِ،
عَنِ الْمُبَارَكِ بْنِ فَضَالَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ،
أَنَّهُ زَوَّجَ أُخْتَهُ رَجُلاً مِنَ الْمُسْلِمِينَ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكَانَتْ عِنْدَهُ مَا كَانَتْ ثُمَّ طَلَّقَهَا
تَطْلِيقَةً لَمْ يُرَاجِعْهَا حَتَّى انْقَضَتِ الْعِدَّةُ فَهَوِيَهَا
وَهَوِيَتْهُ ثُمَّ خَطَبَهَا مَعَ الْخُطَّابِ فَقَالَ لَهُ يَا لُكَعُ
أَكْرَمْتُكَ بِهَا وَزَوَّجْتُكَهَا فَطَلَّقْتَهَا وَاللَّهِ لاَ تَرْجِعُ إِلَيْكَ
أَبَدًا آخِرُ مَا عَلَيْكَ قَالَ فَعَلِمَ اللَّهُ حَاجَتَهُ إِلَيْهَا
وَحَاجَتَهَا إِلَى بَعْلِهَا فَأَنْزَلَ اللَّهُ ( وَإِذَا طَلَّقْتُمُ
النِّسَاءَ فَبَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ ) إِلَى قَوْلِهِ :( وَأَنْتُمْ لاَ
تَعْلَمُونَ ) فَلَمَّا سَمِعَهَا مَعْقِلٌ قَالَ سَمْعًا لِرَبِّي وَطَاعَةً
ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ أُزَوِّجُكَ وَأُكْرِمُكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الْحَسَنِ .
وَفِي هَذَا الْحَدِيثِ دَلاَلَةٌ عَلَى أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ النِّكَاحُ بِغَيْرِ
وَلِيٍّ لأَنَّ أُخْتَ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ كَانَتْ ثَيِّبًا فَلَوْ كَانَ
الأَمْرُ إِلَيْهَا دُونَ وَلِيِّهَا لَزَوَّجَتْ نَفْسَهَا وَلَمْ تَحْتَجْ إِلَى
وَلِيِّهَا مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ وَإِنَّمَا خَاطَبَ اللَّهُ فِي الآيَةِ الأَوْلِيَاءَ
فَقَالَ : (ولَا تَعْضُلُوهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ ) فَفِي
هَذِهِ الآيَةِ دَلاَلَةٌ عَلَى أَنَّ الأَمْرَ إِلَى الأَوْلِيَاءِ فِي
التَّزْوِيجِ مَعَ رِضَاهُنَّ .
মা’ক্বিল
ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যামানায় তার বোনকে এক মুসলিমের নিকট বিবাহ
দেন। এ মহিলা তার নিকট যত দিন জীবন অতিবাহিত করার করলো। তারপর তার স্বামী তাকে এক
তালাক দেয়। ‘ইদ্দাত শেষ হয়ে যাওয়ার পূর্বে সে তাকে আবার স্ত্রীত্বে ফিরিয়ে আনার
ব্যবস্থা করেনি। এমতাবস্থায় ‘ইদ্দাত শেষ হয়ে যাওয়ার পর লোকটি তার স্ত্রীর প্রতি
এবং স্ত্রী স্বামীর প্রতি আকৃষ্ট হল। তাই সেও এক প্রস্তাবকের মাধ্যমে তাকে
পুনর্বিবাহের প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু তার ভাই (মা’ক্বিল) বলেন, হে ইতর প্রাণী! আমি
তোমার সাথে আমার বোনের বিবাহ দিয়ে তোমাকে সম্মানিত করেছিলাম, কিন্তু তুমি তাকে
তালাক দিয়েছ। আল্লাহর কসম! সে আর কখনো তোমার নিকট ফিরে যাবে না। এই তোমার সাথে শেষ
কথা। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহ তা’আলা জানতেন ঐ নারীর প্রতি লোকটির আকর্ষণ এবং
লোকটির প্রতি নারীর আকর্ষণের কথা। তখন বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ
“তোমরা যখন স্ত্রীদের তালাক দাও এবং তারা তাদের ‘ইদ্দাত কাল পূর্ণ করে, তখন তারা
যদি বিধিমত পরস্পর সম্মত হয় তবে স্ত্রীরা নিজেদের স্বামীদের বিবাহ করতে চাইলে
তোমরা তাদের বাধা দিও না। তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ তা’আলা ও পরকালে বিশ্বাস
করে, তাকে এর দ্বারা উপদেশ দেয়া হচ্ছে। এটা তোমাদের জন্য শুদ্ধতম ও পবিত্রতম।
আল্লাহ তা’আলা জানেন, তোমরা জান না”- (সূরা আল –বাক্বারাহ ২৩২)। বর্ণনাকারী বলেন,
মা’ক্বিল (রাঃ) এ আয়াত শোনার পর বললেন, আমার প্রভুর আদেশ সর্বোপরি শিরোধার্য। আমি
শুনলাম এবং আনুগত্যের শির অবনত করলাম। তিনি ঐ লোককে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, (চলো)
তোমার সাথে তাকে বিবাহ দিয়ে দিচ্ছি এবং তোমার খাতির সম্মান বহাল করছি।
সহীহ : ইরওয়াহ (১৮৪৩), সহীহ আবূ দাঊদ (১৮২০), বুখারী (৪৫২৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। হাসান (রহঃ) হতে
এটি অন্যান্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। হাসান (রহঃ) সূত্রে হাদীসটি গারীব। এ হাদীস হতে
জানা গেল যে, ওয়ালী অর্থাৎ অভিভাবক ব্যতীত বিবাহ বৈধ হয় না। কারণ মা’ক্বিল ইবনু ইয়াসার
(রাঃ)-এর বোন প্রাপ্তবয়স্কা তালাক্বপ্রাপ্তা ছিলেন। ওয়ালী ব্যতীত নিজের বিবাহ করার
এখতিয়ার থাকলে তিনি নিজেই বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হয়ে যেতে পারতেন এবং তার ওয়ালী মা’ক্বিল
ইবনু ইয়াসার (রাঃ) এর প্রয়োজন বোধ করতেন না। আল্লাহ তা’আলাও এ আয়াতে ওয়ালী অর্থাৎ অভিভাবকদেরই
সম্বোধন করেছেন। যেমন তিনি বলেছেনঃ “তারা যদি বিধিমত পরস্পর সম্মত হয় তবে স্ত্রীগণ
নিজেদের স্বামীদের বিবাহ করতে চাইলে তোমরা তাদের বাধা দিও না”। এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত
হয় যে, বিবাহের ব্যাপারটি নারীদের সম্মতি সাপেক্ষে ওয়ালীর উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ
أَسْلَمَ، عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي يُونُسَ، مَوْلَى عَائِشَةَ
قَالَ أَمَرَتْنِي عَائِشَةُ رضى الله عنها أَنْ أَكْتُبَ لَهَا مُصْحَفًا
فَقَالَتْ إِذَا بَلَغْتَ هَذِهِ الآيَةَ فَآذِنِّي : (حَافِظُوا عَلَى
الصَّلَوَاتِ وَالصَّلاَةِ الْوُسْطَى ) فَلَمَّا بَلَغْتُهَا آذَنْتُهَا
فَأَمْلَتْ عَلَىَّ حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلاَةِ الْوُسْطَى وَصَلاَةِ
الْعَصْرِ وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ وَقَالَتْ سَمِعْتُهَا مِنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَفِي الْبَابِ عَنْ حَفْصَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ
(রাঃ) এর মুক্ত দাস আবূ ইউনুস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আয়িশাহ
(রাঃ) আমাকে তার জন্য কুরআনের একটি কপি লিখে দেয়ার আদেশ দিয়ে বলেনঃ “তোমরা
নামাযসমূহের প্রতি যত্নবান হবে, বিশেষত মধ্যবর্তী নামাযের প্রতি” (সূরা বাক্বারাহ
২৩৮) আয়াতে পৌছে আমাকে জানাবে। আবূ ইউনুস (রহঃ) বলেন, আমি উক্ত আয়াতে পৌছে ‘আয়িশাহ
(রাঃ) কে জানালাম। তিনি আমাকে এভাবে লেখার আদেশ দিলেনঃ “তোমরা নামাযসমূহের প্রতি
যত্নবান হবে, বিশেষত মধ্যবর্তী নামাযের তথা আসর নামাযের প্রতি এবং আল্লাহ তা’আলার
উদ্দেশে বিনীতভাবে দাঁড়াবে”। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি তা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট শুনেছি।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (৪৩৭), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে হাফসাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮৩
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ،
عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ
جُنْدَبٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلاَةُ
الْوُسْطَى صَلاَةُ الْعَصْرِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সামুরাহ
ইবনু জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতুল উসতা (মধ্যবর্তী নামায) হল
‘আসরের নামায।
সহীহ : মিশকাত (৬৩৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮৪
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي
عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي حَسَّانَ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبِيدَةَ
السَّلْمَانِيِّ، أَنَّ عَلِيًّا، حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ يَوْمَ الأَحْزَابِ " اللَّهُمَّ امْلأْ قُبُورَهُمْ وَبُيُوتَهُمْ
نَارًا كَمَا شَغَلُونَا عَنْ صَلاَةِ الْوُسْطَى حَتَّى غَابَتِ الشَّمْسُ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ
غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبُو حَسَّانَ الأَعْرَجُ اسْمُهُ مُسْلِمٌ .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহযাবে যুদ্ধের দিন (এই) দু’আ করেনঃ “হে
আল্লাহ! তুমি এদের (কাফিরদের) ক্ববরসমূহ ও ঘরসমূহকে আগুন দিয়ে ভর্তি করে দাও, যেমন
তারা আমাদেরকে মধ্যবর্তী নামায হতে বিরত রেখেছে, এমনকি সূর্য ডুবে গেছে।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (৪৩৬), বুখারী (৪৫৩৩), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘আলী (রাঃ) হতে
এটি অন্যান্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবূ হাসসান আল –আ’রাজের নাম মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ،
وَأَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ،
عَنْ زُبَيْدٍ، عَنْ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " صَلاَةُ الْوُسْطَى صَلاَةُ
الْعَصْرِ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَأَبِي هَاشِمِ
بْنِ عُتْبَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতুল উসতা (মধ্যবর্তী নামায) হল
আসরের নামায।
সহীহ : মিশকাত (৬৩৪)।
যাইদ ইবনু সাবিত, আবু হাশিম ইবনু ‘উতবাহ ও আবূ হুরাইরাহ্
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ
مُعَاوِيَةَ، وَيَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ
إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ، عَنْ أَبِي
عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ كُنَّا نَتَكَلَّمُ
عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلاَةِ فَنَزَلَتْ :
(وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ ) فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوتِ .
যাইদ
ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যামানায় আমরা নামাযের মধ্যে কথাবার্তা
বলতাম। এ প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়ঃ “তোমরা আল্লাহ তা’আলার উদ্দেশে অনুগত সেবকের মত
দাঁড়াও” – (সূরা আল –বাক্বারাহঃ ২৩৮)। এতদ্বারা আমাদেরকে (নামাযে) চুপ থাকার
নির্দেশ দেয়া হল।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (৮৭৫)।
আহমাদ ইবনু মানী-হুশাইম হতে, তিনি ইসমাঈল ইবনু আবূ খালিদ
(রহঃ) হতে এই সূত্রেও একই রকম বর্ণনা করেছেন। তবে তাতে আরও আছে : ‘ওয়া নুহীনা আনিল
কালাম’ (আমাদেরকে কথা বলতে নিষেধ করে দেয়া হয়)।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (৮৭৫), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ আমর আশ-শাইবানীর নাম সা’দ ইবনু ইয়াস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَبِي
مَالِكٍ، عَنِ الْبَرَاءِ: (وَلاَ تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ
) قَالَ نَزَلَتْ فِينَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ كُنَّا أَصْحَابَ نَخْلٍ فَكَانَ
الرَّجُلُ يَأْتِي مِنْ نَخْلِهِ عَلَى قَدْرِ كَثْرَتِهِ وَقِلَّتِهِ وَكَانَ
الرَّجُلُ يَأْتِي بِالْقِنْوِ وَالْقِنْوَيْنِ فَيُعَلِّقُهُ فِي الْمَسْجِدِ
وَكَانَ أَهْلُ الصُّفَّةِ لَيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ فَكَانَ أَحَدُهُمْ إِذَا جَاعَ
أَتَى الْقِنْوَ فَضَرَبَهُ بِعَصَاهُ فَيَسْقُطُ مِنَ الْبُسْرِ وَالتَّمْرِ
فَيَأْكُلُ وَكَانَ نَاسٌ مِمَّنْ لاَ يَرْغَبُ فِي الْخَيْرِ يَأْتِي الرَّجُلُ
بِالْقِنْوِ فِيهِ الشِّيصُ وَالْحَشَفُ وَبِالْقِنْوِ قَدِ انْكَسَرَ
فَيُعَلِّقُهُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ
الأَرْضِ وَلاَ تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيهِ
إِلاَّ أَنْ تُغْمِضُوا فِيهِ ) قَالُوا لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أُهْدِيَ
إِلَيْهِ مِثْلُ مَا أَعْطَى لَمْ يَأْخُذْهُ إِلاَّ عَلَى إِغْمَاضٍ وَحَيَاءٍ
قَالَ فَكُنَّا بَعْدَ ذَلِكَ يَأْتِي أَحَدُنَا بِصَالِحِ مَا عِنْدَهُ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ وَأَبُو مَالِكٍ هُوَ
الْغِفَارِيُّ وَيُقَالُ اسْمُهُ غَزْوَانُ وَقَدْ رَوَى سُفْيَانُ عَنِ
السُّدِّيِّ شَيْئًا مِنْ هَذَا .
আল
–বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “তোমরা
নিকৃষ্ট বস্তু দান করার ইচ্ছা করবে না” – (সূরা আল –বাক্বারা ২৬৭) আয়াতটি আমাদের
আানসারদের প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ছিলাম খেজুর বাগানের মালিক।
লোকেরা তাদের খেজুর বাগান হতে বেশী বা স্বল্প পরিমাণ অনুসারে খেজুর নিয়ে আসতো। কেউ
বা এক দুই ছড়া খেজুর এনে মাসজিদে ঝুলিয়ে রাখতো। সুফফাবাসী সাহাবীগণের খাদ্য
সংস্থানের বিশেষ কোন নির্দিষ্ট উৎস ছিল না। তাদের কারো ক্ষুধা পেলে তিনি উক্ত
খেজুরের ছড়ার নিকট এসে তাতে লাঠি দ্বারা আঘাত করতেন। ফলে কাঁচা-পাকা খেজুর ঝরে পড়ত
এবং তিনি তা খেতেন। কিন্তু কিছু সংখ্যক লোকের কল্যাণকর কাজের প্রতি খুব একটা আগ্রহ
ছিল না। তাদের কেউ নিকৃষ্ট ও পচা খেজুরের ছড়াও নিয়ে আসতো, আবার কেউ ভেঙ্গে পড়া
ছড়াও নিয়ে আসতো এবং তা (মাসজিদে) ঝুলিয়ে রাখতো। কল্যাণময় আল্লাহ তা’আলা এ
প্রসঙ্গে আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “হে ঈমানদারগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং
আমি যা জমিন হতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করি, তন্মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর এবং তা
হতে নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করার সংকল্প করো না, অথচ তোমরা তা গ্রহণ করবে যা, যদি না
তোমরা চক্ষু বন্ধ করে থাক” (সূরা আল –বাক্বারাহঃ ২৬৭)। তিনি বলেন, অর্থাৎ দাতা
যেরূপ দান করেছে, অনুরূপই যদি তাকে উপহারস্বরূপ দেয়া হয়, তাহলে সে কখনো তা গ্রহণ
করবে না, চক্ষুর লজ্জায় পড়া বা দৃষ্টি এড়িয়ে রাখা ব্যতীত। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর
হতে আমাদের কেউ কিছু আনলে তার নিকট যা আছে তার মধ্যকার সর্বোৎকৃষ্টগুলো নিয়ে আসতো।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (১৮২২)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। আবূ মালিক
হচ্ছেন আবূ মালিক আল-গিফারী। তার নাম গাযওয়ান বলেও কথিত আছে। সাওরী (রহঃ) সুদ্দীর সূত্রে
উক্ত হাদীসের অংশবিশেষ রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ
السَّائِبِ، عَنْ مُرَّةَ الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ لِلشَّيْطَانِ
لَمَّةً بِابْنِ آدَمَ وَلِلْمَلَكِ لَمَّةً فَأَمَّا لَمَّةُ الشَّيْطَانِ
فَإِيعَادٌ بِالشَّرِّ وَتَكْذِيبٌ بِالْحَقِّ وَأَمَّا لَمَّةُ الْمَلَكِ
فَإِيعَادٌ بِالْخَيْرِ وَتَصْدِيقٌ بِالْحَقِّ فَمَنْ وَجَدَ ذَلِكَ فَلْيَعْلَمْ
أَنَّهُ مِنَ اللَّهِ فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ وَمَنْ وَجَدَ الأُخْرَى فَلْيَتَعَوَّذْ
بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ ثُمَّ قَرَأ : (الشََّيْطَانُ
يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ ) " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَهُوَ حَدِيثُ أَبِي الأَحْوَصِ لاَ
نَعْلَمُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي الأَحْوَصِ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আদম সন্তানের প্রতি শাইতানের এক
স্পর্শ রয়েছে এবং ফেরেশতারও এক স্পর্শ রয়েছে। শাইতানের স্পর্শ হচ্ছে মন্দ কাজের
প্ররোচনাদান ও সত্যকে অস্বীকার করার। ফেরেশতার স্পর্শ হচ্ছে কল্যাণের কাজে উৎসাহিত
করা এবং সত্যকে স্বীকার করা। কাজেই যে ব্যক্তি নিজের মধ্যে এরূপ নেকীর স্পর্শ
অনুভব করে সে যেন জ্ঞাত হয় যে, এটা আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে এবং এজন্য সে যেন
আল্লাহ তা’আলার প্রতি শুকরিয়া আদায় করে। আর কেউ নিজের মধ্যে এর বিপরীত স্পর্শ
উপলব্ধি করলে সে যেন তখন শাইতান হতে আল্লাহ তা’আলার নিকট আশ্রয় চায়। তারপর
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিম্নোক্ত আয়াত তিলাওয়াত করেন
(অনুবাদ) : “শাইতান তোমাদেরকে দারিদ্র্যের ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয়।
আর আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আল্লাহ
তা’আলা প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ” – (সূরা আল –বাক্বারাহ ২৬৮)।
সহীহ : মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৭৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এটি হচ্ছে আবুল
আহওয়াসের রিওয়ায়াত। আমরা আবুল আহওয়াসের সূত্র ব্যতীত এটিকে অন্য কোন সূত্রে মারফূ’
হিসেবে জানতে পারিনি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا
فُضَيْلُ بْنُ مَرْزُوقٍ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا
أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ وَلاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا وَإِنَّ
اللَّهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ فَقَالَ :
(يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي
بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ ) وَقَالَ أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ
طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ ) " . قَالَ وَذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ
السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَهُ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ
وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ
فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ وَإِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ فُضَيْلِ بْنِ مَرْزُوقٍ وَأَبُو
حَازِمٍ هُوَ الأَشْجَعِيُّ اسْمُهُ سَلْمَانُ مَوْلَى عَزَّةَ الأَشْجَعِيَّةِ
.
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে লোক সকল ! আল্লাহ তা’আলা পবিত্র।
তিনি পবিত্র জিনিস ব্যতীত কিছু ক্ববূল করেন না। আল্লাহ তাঁর রাসূলদেরকে যেসব
বিষয়ের হুকুম দিয়েছেন, মু’মিনদেরকেও সেসব বিষয়ের হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ “হে
রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর এবং সৎকাজ কর। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে
আমি সবিশেষ অবগত” – (সূরা আল-মু’মিনূন ৫১)। তিনি আরো বলেনঃ “হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে
আমি যে রিযিক্ব দিয়েছি তা হতে পবিত্র বস্তু আহার কর” – (সূরা আল –বাক্বারাহঃ ১৭২)।
বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তির কথা
উল্লেখ করলেন, দীর্ঘ সফরের ক্লান্তিতে যার মাথার চুল বিক্ষিপ্ত, অবিন্যস্ত এবং
সারা শরীর ধূলি মলিন। সে আসমানের দিকে হাত দরায করে বলে, হে আমার প্রভু! হে আমার
প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য ও পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, তার জীবন জীবিকাও
হারাম। এমতাবস্থায় তার দু’আ কিভাবে ক্ববূল হতে পারে।
হাসান : গাইয়াতুল মারাম (২৭), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এটিকে ফুযাইল
ইবনু মারযূক্বের হাদীস হিসেবে জানি। আবূ হাযিম হচ্ছেন আবূ হাযিম আল –আশজা’ঈ। তার নাম
সালমান, ‘আজ্জা আল –আশজা’ইয়্যার মুক্তদাস।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
২৯৯০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي مَنْ، سَمِعَ
عَلِيًّا، يَقُولُ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (إِنْ تُبْدُوا مَا فِي
أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ فَيَغْفِرُ لِمَنْ
يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ ) الآيَةَ أَحْزَنَتْنَا قَالَ قُلْنَا
يُحَدِّثُ أَحَدُنَا نَفْسَهُ فَيُحَاسَبُ بِهِ لاَ نَدْرِي مَا يُغْفَرُ مِنْهُ
وَلاَ مَا لاَ يُغْفَرُ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ بَعْدَهَا فَنَسَخَتْهَا (
لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا
مَا اكْتَسَبَتْ ).
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আলী (রাঃ) বলেন,
নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হলে আমরা সবাই উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়লামঃ “তোমাদের মনে যা আছে
তা ব্যক্ত কর বা লুকিয়ে রাখ, আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদের নিকট হতে তার হিসাব গ্রহণ
করবেন। তারপর তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করবেন এবং যাকে ইচ্ছা সাজা দিবেন। আল্লাহ্
তা'আলা সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান” (সূরাঃ আল-বাকারা- ২৮৪)। আমরা বললাম, আমাদের কেউ
মনে মনে যা কিছু বলে তারও হিসাব গ্রহণ করা হবে। জানি না, তার মধ্যে কতটুকু ক্ষমা
করা হবে আর কতটুকু ক্ষমা করা হবে না। তখন পূর্বোক্ত আয়াতের হুকুম বাতিল (মানসূখ)
করে নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “আল্লাহ্ তা'আলা কারো উপর তার সাধ্যাতীত
কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না। সে ভালো যা কামাই করে তা তারই এবং মন্দ যা কামাই
করে তাও তারই" (সূরাঃ আল-বাকারা- ২৮৬)।
সনদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৯৯১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى،
وَرَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ،
عَنْ أُمَيَّةَ، أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَةَ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى :
(إِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ
اللَّهُ) وَعَنْ قَوْلِهِ : (مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا يُجْزَ بِهِ )
فَقَالَتْ مَا سَأَلَنِي عَنْهَا أَحَدٌ مُنْذُ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَالَ " هَذِهِ مُعَاتَبَةُ اللَّهِ الْعَبْدَ فِيمَا
يُصِيبُهُ مِنَ الْحُمَّى وَالنَّكْبَةِ حَتَّى الْبِضَاعَةُ يَضَعُهَا فِي كُمِّ
قَمِيصِهِ فَيَفْقِدُهَا فَيَفْزَعُ لَهَا حَتَّى إِنَّ الْعَبْدَ لَيَخْرُجُ مِنْ
ذُنُوبِهِ كَمَا يَخْرُجُ التِّبْرُ الأَحْمَرُ مِنَ الْكِيرِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ عَائِشَةَ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ .
উমাইয়্যা
নাম্নী রাবী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আইশা
(রাঃ)-কে বারকাতময় আল্লাহ্ তা’আলার বাণী “তোমাদের মনে যা আছে তা প্রকাশ কর বা গোপন
রাখ, আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের নিকট হতে তার হিসাব গ্রহণ করবেন” (সূরাঃ আল-বাকারা-
২৮৪) এবং “কেউ খারাপ কাজ করলে তার প্রতিদান সে পাবে” (সূরাঃ আন-নিসা- ১২৩)
প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। আইশা (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করার পর হতে এ পর্যন্ত আর কেউ আমার নিকট এ
প্রসঙ্গে জানতে চায়নি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এর
অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা’আলা জ্বর ও বিভিন্ন বালা মুসিবত দ্বারা বান্দাকে যে সাজা
দেন এটা হল তাই। এমনকি যে সামান্য জিনিসপত্র সে তার জামার হাতার মধ্যে রাখে তা
হারিয়ে গেলে সে যে অস্থির হয় তাও (তাতেও তার গুনাহ মাফ হয়)। অবশেষে লাল সোনা যেমন
হাঁপড় হতে (অগ্নিদগ্ধ হয়ে) নির্মল হয়ে বেরিয়ে আসে তেমনি বান্দাও তার গুনাহসমূহ হতে
(পরিচ্ছন্ন হয়ে) মুক্তা হয়ে যায়।
সনদ দুর্বল। আবূ ঈসা বলেনঃ আইশা (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসেবে এ হাদীসটি হাসান গারীব।
আমরা এটিকে হাম্মাদ ইবনু সালামার সূত্র ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে জানি না।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
২৯৯২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ آدَمَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُْ : (إِنْ تُبْدُوا مَا فِي
أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ ) قَالَ دَخَلَ
قُلُوبَهُمْ مِنْهُ شَيْءٌ لَمْ يَدْخُلْ مِنْ شَيْءٍ فَقَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فَقَالَ " قُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا " .
فَأَلْقَى اللَّهُ الإِيمَانَ فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (آمَنَ
الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ) الآيَةَ
: ( لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ
وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ
أَخْطَأْنَا ) قَالَ " قَدْ فَعَلْتُ " (رَبَّنَا وَلاَ
تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا )
قَالَ " قَدْ فَعَلْتُ " . (رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا
لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ) الآيَةَ
قَالَ " قَدْ فَعَلْتُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
وَآدَمُ بْنُ سُلَيْمَانَ هُوَ وَالِدُ يَحْيَى بْنِ آدَمَ . وَفِي الْبَابِ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন “তোমাদের
মনে যা আছে তা প্রকাশ কর অথবা গোপন রাখ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের নিকট হতে তার হিসাব
গ্রহণ করবেন”- (সূরা বাক্বারাহ ২৮৪) এ আয়াত অবতীর্ণ হয়, তখন মানুষদের অন্তরে এরূপ
একটা জিনিস (আশংকা ও খটকা) সৃষ্টি হয় যা অন্য কিছুতে সৃষ্টি হয়নি। তাই তারা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ ব্যাপারে জানালেন। তিনি বললেনঃ তোমরা বল
“আমরা শুনলাম ও অনুগত্য করলাম”। এতে আল্লাহ তা’আালা তাদের অন্তরে ঈমান ঢেলে দিলেন।
তারপর কল্যাণময় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “রাসূল ঈমান এনেছে তার প্রতি তার
প্রভুর পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুমিনগণও…..” – (সূরা আল –বাক্বারাহ ২৮৫)।
“আল্লাহ তা’আলা কারো উপর তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব্ চাপান না। সে ভালো যা করে তা তারই
এবং মন্দ যা করে তাও তারই। হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা ভুলে যাই বা অন্যায় করে
ফেলি, তবে তুমি আমাদের (অপরাধীরূপে) পাকড়াও করো না” – (সূরা আল –বাক্বারাহ ২৮৬)।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমি তা করলাম। “হে আমাদের প্রভু! আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর
যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছিলে, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না”। আল্লাহ
তা’আলা বলেন, আমি ক্ববূল করলাম। “হে আমাদের প্রভু! আমাদের উপর এমন ভার অর্পণ করো
না, যা বহনের শক্তি আমাদের নেই। আমাদের গুনাহ মোচন কর, আমাদের ক্ষমা কর, আমাদের
প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের জয়যুক্ত
কর” –(সূরা আল –বাক্বারাহঃ ২৮৬)। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি ক্ববূল করলাম।
সহীহ : মুসলিম (১/৮১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) হতে অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। আদম ইবনু সুলাইমান প্রসঙ্গে কথিত আছে যে, তিনি ইয়াহইয়া ইবনু আদমের
বাবা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪
সূরা
আ –লি ‘ইমরান
২৯৯৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، وَهُوَ الْخَزَّازُ وَيَزِيدُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ كِلاَهُمَا عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، قَالَ يَزِيدُ عَنِ ابْنِ
أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، وَلَمْ
يَذْكُرْ أَبُو عَامِرٍ الْقَاسِمَ قَالَتْ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم عَنْ قَوْلِهِ : ( فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْعٌ
فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ
) قَالَ " فَإِذَا رَأَيْتِيهِمْ فَاعْرِفِيهِمْ " . وَقَالَ
يَزِيدُ فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمْ فَاعْرِفُوهُمْ . قَالَهَا مَرَّتَيْنِ أَوْ
ثَلاَثًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে “যাদের অন্তরে সত্য-লঙ্ঘনের
প্রবণতা রয়েছে শুধু তারাই ফিতনা সৃষ্টি ও ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশে মুতাশাবিহাত-এর
অনুসরণ করে” – (সূরা আলি ইমরান ৭) আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি
তাদের দেখলে চিনে রাখবে। অধঃস্তন বর্ণনাকারী ইয়াযীদের বর্ণনায় আছে : তোমরা তাদের
দেখলে চিনে রাখবে। তিনি দুই অথবা তিনবার এ কথা বলেছেন।
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৯৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
مُلَيْكَةَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سُئِلَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : ( هُوَ الَّذِي
أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُحْكَمَاتٌ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ
. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا رَأَيْتُمُ
الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ فَأُولَئِكَ الَّذِينَ سَمَّاهُمُ اللَّهُ
فَاحْذَرُوهُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَرُوِيَ عَنْ أَيُّوبَ عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ هَكَذَا رَوَى
غَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ
وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ وَإِنَّمَا ذَكَرَ
يَزِيدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ التُّسْتَرِيُّ عَنِ الْقَاسِمِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ
. وَابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي مُلَيْكَةَ سَمِعَ مِنْ عَائِشَةَ أَيْضًا .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এ আয়াত বিষয়ে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলঃ “তিনিই তোমাদের
উপর এ কিতাব অবতীর্ণ করেছেন যার কিছু আয়াত মুহকাম, এগুলো কিতাবের মূল এবং অন্যগুলো
মুতাশাবিহাত। যাদের মনে কুটিলতা আছে, তারাই ফিতনা সৃষ্টি এবং ভুল ব্যাখ্যার
উদ্দেশে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে …. শুধু বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরাই শিক্ষা গ্রহণ
করে” – (সূরা আলি ইমরান ৭)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তোমরা কুরআনের মুতাশাবিহ আয়াতসমূহের অনুসারীদের দেখলে অনুধাবন করে নিবে যে,
আল্লাহ তা’আলা এদেরই নামোল্লেখ করেছেন। কাজেই তোমরা তাদের পরিহার করবে।
সহীহ : বুখারী (৪৫৭৪), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি আইয়ূব
(রহঃ) এর বরাতে ইবনু আবূ মুলাইকাহ সূত্রেও আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসটি
ইবনু আবী মুলাইকাহ হতে আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী একই রকম বর্ণনা করেছেন।
তারা তাতে “আল –কাসিম ইবনু মুহাম্মদ হতে’ এ কথাটি উল্লেখ করেননি । ইয়াযীদ ইবনু ইবরাহীমই
এ হাদীসে “আল –কাসিম ইবনু মুহাম্মদ”-এর নাম উল্লেখ করেছেন। ইবনু আবী মুলাইকাহ হলেন
‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাইদুল্লাহ ইবনু আবী মুলাইকাহ। তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর নিকট হতেও হাদীস
শুনেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৯৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ
لِكُلِّ نَبِيٍّ وُلاَةً مِنَ النَّبِيِّينَ وَإِنَّ وَلِيِّيَ أَبِي وَخَلِيلُ
رَبِّي " . ثُمَّ قَرَأَ : (إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِإِبْرَاهِيمَ
لَلَّذِينَ اتَّبَعُوهُ وَهَذَا النَّبِيُّ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاللَّهُ وَلِيُّ
الْمُؤْمِنِينَ ).
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নাবীগণের মধ্য হতে প্রত্যেক নাবীরই
কিছু সংখ্যক বন্ধু থাকেন। আমার বন্ধু হচ্ছেন আমার বাবা ও আমার প্রতিপালকের ঘনিষ্ঠ
বন্ধু [ইবরাহীম (‘আঃ)]। তারপর তিনি পাঠ করলেন : “মানুষের মধ্যে তারাই ইবরাহীমের
ঘনিষ্ঠতর যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নবী ও যারা ঈমান এনেছে তারা। আর আল্লাহ
তা’আলা মু’মিনদের অভিভাবক” – (সূরা আল –ইমরান ৬৮)।
সহীহ : মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৫৭৬৯)।
মাহমূদ-আবূ নু’আইম হতে, তিনি সুফইয়ান হতে, তিনি তার বাবা
হতে, তিনি আবূয যুহা হতে, তিনি আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। তবে তাতে মাসরূক্বের উল্লেখ
নেই। আবূ ‘ঈসা বলেন, এটি আবুয যুহা-মাসরূক্ব সূত্রে বর্ণিত হাদীসের চাইতে অনেক বেশি
সহীহ। আবুয যুহার নাম মুসলিম ইবনু সুবাইহ। আবূ কূরাইব-ওয়াকী হতে, তিনি সুফইয়ান হতে,
তিনি তার বাবা হতে, তিনি আবুয যুহা হতে, তিনি আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে আবূ নু’আইমের হাদীসের একই রকম বর্ণনা
করেছেন। এ সূত্রেও মাসরূক্বের উল্লেখ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৯৬
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ شَقِيقِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ هُوَ فِيهَا فَاجِرٌ
لِيَقْتَطِعَ بِهَا مَالَ امْرِئٍ مُسْلِمٍ لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ عَلَيْهِ
غَضْبَانُ " . فَقَالَ الأَشْعَثُ بْنُ قَيْسٍ فِيَّ وَاللَّهِ كَانَ
ذَلِكَ كَانَ بَيْنِي وَبَيْنَ رَجُلٍ مِنَ الْيَهُودِ أَرْضٌ فَجَحَدَنِي
فَقَدَّمْتُهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " أَلَكَ بَيِّنَةٌ " . فَقُلْتُ لاَ .
فَقَالَ لِلْيَهُودِيِّ " احْلِفْ " . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ
اللَّهِ إِذًا يَحْلِفَ فَيَذْهَبَ بِمَالِي فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَبَارَكَ
وَتَعَالَى: ( إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ
ثَمَنًا قَلِيلاً ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ أَبِي أَوْفَى .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের মাল-সম্পদ
আত্মসাৎ করার জন্য মিথ্যা শপথ করবে, সে আল্লাহ তা’আলার সাথে এরূপ অবস্থায় মিলিত
হবে যে, তিনি তার প্রতি অসন্তুষ্ট। আশ’আস ইবনু কাইস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! এ
হাদীস আমার সাথে সংশ্লিষ্ট। আমার ও এক ইয়াহূদীর এক খন্ড শরীকানা জমি ছিল। সে আমার
মালিকানা অস্বীকার করে বসে। আমি তাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট হাযির করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাকে বললেনঃ তোমার কি কোন সাক্ষী প্রমাণ আছে? আমি বললাম, না। তিনি ইয়াহূদীকে
বললেনঃ তুমি শপথ কর। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে এভাবে (মিথ্যা) শপথ করে তো
আমার মাল নিয়ে যাবে। তখন বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) :
“যারা আল্লাহ তা’আলার সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথসমূহ তুচ্ছ মূল্যে
বিক্রয় করে আখিরাতে তাদের জন্যে কোন অংশ নেই। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা না
তাদের সাথে কথা বলবেন, না তাদের প্রতি তাকাবেন এবং না তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন।
তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি” – (সূরা আ-লি ইমরান ৭৭)।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (২৩২৩), বুখারী (৪৫৫০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু আবী আওফা
(রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৯৭
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
بَكْرٍ السَّهْمِيُّ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ
هَذِهِ الآيَةُ : ( لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا
تُحِبُّونَ ) أَوْ : (مَنْ ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا
) قَالَ أَبُو طَلْحَةَ وَكَانَ لَهُ حِائِطٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ
حَائِطِي لِلَّهِ وَلَوِ اسْتَطَعْتُ أَنْ أُسِرَّهُ لَمْ أُعْلِنْهُ . فَقَالَ
" اجْعَلْهُ فِي قَرَابَتِكَ أَوْ أَقْرَبِيكَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ
إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “তোমরা যা
ভালোবাস তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্যলাভ করবে না” – (সূরা আ-লি
ইমরান ৯২) অথবা “কে সে ব্যক্তি যে আল্লাহ তা’আলাকে উত্তম ঋণ প্রদান করবে? তিনি তার
জন্য তা বহু গুণে বৃদ্ধি করবেন” - (সূরা আল –বাক্বারাহ ২৪৫) আয়াত অবতীর্ণ হলে আবূ
তালহা (রাঃ), যার একটি ফলের বাগান ছিল, বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমার বাগানটি
আল্লাহ তা’আলার পথে দান করে দিলাম। আমি গোপনে এটি দান করতে পারলে এর প্রকাশ্য
ঘোষণা দিতাম না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার
আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে তা বন্টন করে দাও।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (১৪৮২), বুখারী (৪৫৫৪), মুসলিম।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। হাদীসটি মালিক
ইবনু আনাস (রহঃ) ইসহাক্ব ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবী তালহা হতে, তিনি আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৯৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ عَبَّادِ
بْنِ جَعْفَرٍ الْمَخْزُومِيَّ، يُحَدِّثُ عَنِ ابَنِ عُمَرَ، قَالَ قَامَ رَجُلٌ
إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنِ الْحَاجُّ يَا رَسُولَ اللَّهِ
قَالَ " الشَّعِثُ التَّفِلُ " . فَقَامَ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ
أَىُّ الْحَجِّ أَفْضَلُ قَالَ " الْعَجُّ وَالثَّجُّ " . فَقَامَ
رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ مَا السَّبِيلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " الزَّادُ
وَالرَّاحِلَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ
مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ يَزِيدَ
الْخُوزِيِّ الْمَكِّيِّ . وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِي
إِبْرَاهِيمَ بْنِ يَزِيدَ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক লোক
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করল, হে
আল্লাহ্র রাসূল! (উত্তম) হাজ্জী কে? তিনি বলেনঃ যার মাথার চুল অগোছাল ও জামা কাপড়
ধুলি-মলিন হয়েছে। অপর ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! উত্তম হাজ্জ কি?
তিনি বললেনঃ উচ্চস্বরে (তালবিয়া) পাঠ ও রক্ত প্রবাহিত (কুরবানী) করা। অপর ব্যক্তি
দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ‘সাবীল’ (রাস্তা) বলতে কি বুঝায়? তিনি বললেনঃ পাথেয়
ও যানবাহন।
অত্যন্ত দুর্বল, “আল-আজ্জু ওয়াস্সাজ্জু” “উচ্চ স্বরে তালবিয়া পাঠ ও রক্ত প্রবাহিত
করা” এই অংশটুকু সহীহ। ইবনু মাজাহ (২৮৯৬),
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি আমরা শুধু ইবরাহীম ইবনু ইয়াযীদ
আল-খূযী আল-মক্কীর সূত্রে ইবনু উমার হতে জেনেছি। বিশেষজ্ঞ আলিমগণের কেউ কেউ ইবরাহীম
ইবনু ইয়াযীদের স্মৃতিশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
২৯৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ
بُكَيْرِ بْنِ مِسْمَارٍ، هُوَ مَدَنِيٌّ ثِقَةٌ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ
أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ هَذِهِ الآيَةَ :
( نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ ) دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم عَلِيًّا وَفَاطِمَةَ وَحَسَنًا وَحُسَيْنًا فَقَالَ " اللَّهُمَّ
هَؤُلاَءِ أَهْلِي " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
صَحِيحٌ .
সা’দ
ইবনু আবী ওয়াক্বক্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “আসো, আমরা
ডাকি আমাদের পুত্রগণকে ও তোমাদের পুত্রগণকে, আমাদের নারীগণকে ও তোমাদের নারীগণকে,
আমাদেরর নিজেদেরকে ও তোমাদের নিজেদেরকে ….” – (সূরা আ-লি ইমরান ৬১) আয়াত অবতীর্ণ
হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলী, ফাতিমা ও হাসান-হুসাইন (রাঃ)
কে ডাকলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ! এরাই আমার পরিজন।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ
صَبِيحٍ، وَحَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي غَالِبٍ، قَالَ رَأَى أَبُو
أُمَامَةَ رُءُوسًا مَنْصُوبَةً عَلَى دَرَجِ مَسْجِدِ دِمَشْقَ فَقَالَ أَبُو
أُمَامَةَ " كِلاَبُ النَّارِ شَرُّ قَتْلَى تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاءِ
خَيْرُ قَتْلَى مَنْ قَتَلُوهُ " . ثُمَّ قَرَأَ : ( يَوْمَ
تَبْيَضُّ وُجُوهٌ وَتَسْوَدُّ وُجُوهٌ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ قُلْتُ لأَبِي
أُمَامَةَ أَنْتَ سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ
لَمْ أَسْمَعْهُ إِلاَّ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا أَوْ أَرْبَعًا
حَتَّى عَدَّ سَبْعًا مَا حَدَّثْتُكُمُوهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ وَأَبُو غَالِبٍ يُقَالُ اسْمُهُ حَزَوَّرُ وَأَبُو أُمَامَةَ
الْبَاهِلِيُّ اسْمُهُ صُدَىُّ بْنُ عَجْلاَنَ وَهُوَ سَيِّدُ بَاهِلَةَ .
আবূ
গালিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ উমামা
(রাঃ) দামিশকের সিঁড়ির উপর (খারিজীদের) কতগুলো মুন্ড পড়ে থাকতে দেখলেন। আবূ উমামা
(রাঃ) বললেন, এগুলো জাহান্নামের কুকুর এবং আসমানের চামড়ার (ছাদের) নিচে নিকৃষ্টতম
নিহত এরা। আর এরা যাদেরকে হত্যা করেছে তারা উত্তম লোক। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ
করলেন (অনুবাদ) : “সেদিন কিছু মুখ উজ্জল হবে এবং কিছু মুখ কালো হবে। যাদের মুখ
কালো হবে তাদের বলা হবে, তোমরা ঈমান আনার পরও কি কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমরা
শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর”- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১০৬)। আবূ গালিব (রহঃ) বলেন, আমি আবূ
উমামাহ (রাঃ) কে বললাম, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর নিকট এটা শুনেছেন? তিনি বললেন, আমি যদি এটা এক, দুই, তিন, চার, এমনকি সাতবার
পর্যন্ত না শুনতাম, তাহলে তোমাদের নিকট তা বর্ণনা করতাম না।
হাসান সহীহ : ইবনু মাজাহ (১৭৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আবূ গালিবের নাম হাযাওওয়ার
এবং আবূ উমামা আল- বাহিলী (রাঃ) এর নাম সুদাই ইবনু আজলান, তিনি বাহিলা গোত্রের নেতা।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩০০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي قَوْلِهِ : ( كُنْتُمْ خَيْرَ
أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ ) قَالَ " إِنَّكُمْ تُتِمُّونَ سَبْعِينَ
أُمَّةً أَنْتُمْ خَيْرُهَا وَأَكْرَمُهَا عَلَى اللَّهِ " . هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ بَهْزِ
بْنِ حَكِيمٍ نَحْوَ هَذَا وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ ( كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ
أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ ) .
বাহয
ইবনু হাকীম (রহঃ) পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাত, মানবজাতির জন্য
তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে” – (সূরা আল- ইমরান ১১০) আয়াত প্রসঙ্গে বলতে শুনেছেন :
অবশ্যই তোমরাই দুনিয়াতে সত্তর (৭০) সংখ্যা পূর্ণকারী দল। তোমরাই আল্লাহ তা’আলার
নিকট সর্বোত্তম ও মর্যাদা সম্পন্ন।
হাসান : ইবনু মাজাহ (৪২৮৭)।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি একাধিক বর্ণনাকারী বাহ্য ইবনু হাকীম
(রহঃ) হতে একই রকম বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তারা “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাত, মানবজাতির
জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে” আয়াতের উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০০২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا
حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كُسِرَتْ
رَبَاعِيَتُهُ يَوْمَ أُحُدٍ وَشُجَّ وَجْهُهُ شَجَّةً فِي جَبْهَتِهِ حَتَّى
سَالَ الدَّمُ عَلَى وَجْهِهِ فَقَالَ " كَيْفَ يُفْلِحُ قَوْمٌ فَعَلُوا
هَذَا بِنَبِيِّهِمْ وَهُوَ يَدْعُوهُمْ إِلَى اللَّهِ " . فَنَزَلَتْ
: ( لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ
يُعَذِّبَهُمْ ) إِلَى آخِرِهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উহূদের যুদ্ধের দিন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনের মাড়ির দাঁত ভেঙ্গে যায়। তাঁর চেহারা
যখম হয়, এমনকি কপালে যখম হওয়ার কারণে মুখমন্ডলে রক্ত ঝড়ে পড়ে। তখন তিনি বললেনঃ
কিভাবে ঐ জাতি সফলকাম হবে, যারা তাদের নাবীর সাথে এহেন আচরণ করেছে, অথচ তিনি
তাদেরকে আল্লাহ তা’আলার পথে আহবান করেছেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় : “তিনি তাদের
প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছু নেই।
কারণ তারা যালিম” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১২৮)।
সহীহ : মুসলিম (৫/১৭৯), বুখারী মু’আল্লাকরূপে (৭/৩৬৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شُجَّ فِي وَجْهِهِ وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ
وَرُمِيَ رَمْيَةً عَلَى كَتِفِهِ فَجَعَلَ الدَّمُ يَسِيلُ عَلَى وَجْهِهِ وَهُوَ
يَمْسَحُهُ وَيَقُولُ " كَيْفَ تُفْلِحُ أُمَّةٌ فَعَلُوا هَذَا
بِنَبِيِّهِمْ وَهُوَ يَدْعُوهُمْ إِلَى اللَّهِ " . فَأَنْزَلَ اللَّهُ
تَعَالَى : (لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ
يُعَذِّبَهُمْ فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ ) . سَمِعْتُ عَبْدَ بْنَ حُمَيْدٍ
يَقُولُ غَلِطَ يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ فِي هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(উহূদের দিন)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুখমন্ডল আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং
তাঁর সামনের মাড়ির দাঁত ভেঙ্গে যায়। তাঁর কাঁধের উপর একটি তীর নিক্ষিপ্ত হয়। ফলে
তাঁর মুখমন্ডল বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকলে তিনি তা মুছে ফেলছিলেন এবং বলছিলেন :
সেই জাতি কিভাবে নাজাত পেতে পারে, যারা তাদের নাবীর সাথে এহেন নির্মম আচরণ করে,
অথচ তিনি তাদেরকে আল্লাহ তা’আলার দিকে আহবান করছেন। তখনি বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা এ
আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে
শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছু নেই। কারণ তারা যালিম” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান
১২৮)।
সহীহ : দেখুন পূর্বের হাদীস।
আমি ‘আবদ ইবনু হুমাইদকে বলতে শুনেছি, এই হাদীস বর্ণনায়
ইয়াযীদ ইবনু হারূন ভুলের শিকার হয়েছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০৪
حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ بْنِ سَلْمٍ
الْكُوفِيُّ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ حَمْزَةَ، عَنْ
سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ " اللَّهُمَّ الْعَنْ أَبَا
سُفْيَانَ اللَّهُمَّ الْعَنِ الْحَارِثَ بْنَ هِشَامٍ اللَّهُمَّ الْعَنْ
صَفْوَانَ بْنَ أُمَيَّةَ " . قَالَ فَنَزَلَتْ : (لَيْسَ لَكَ مِنَ
الأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ ) فَتَابَ اللَّهُ
عَلَيْهِمْ فَأَسْلَمُوا فَحَسُنَ إِسْلاَمُهُمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ يُسْتَغْرَبُ مِنْ حَدِيثِ عُمَرَ بْنِ حَمْزَةَ عَنْ
سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ . وَقَدْ رَوَاهُ الزُّهْرِيُّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ
لَمْ يَعْرِفْهُ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ مِنْ حَدِيثِ عُمَرَ بْنِ حَمْزَةَ
وَعَرَفَهُ مِنْ حَدِيثِ الزُّهْرِيِّ .
সালিম
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহূদের দিন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “হে আল্লাহ! আবূ সুফইয়ানের
প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করুন। হে আল্লাহ! আল –হারিস ইবনু হিশামের প্রতি অভিশাপ বর্ষণ
করুন। হে আল্লাহ! সাফওয়ান ইবনু উমাইয়্যার প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করুন”। বর্ণনাকারী
বলেন, তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় : “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে
শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছু নেই….” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১২৮)। অতঃপর
আল্লাহ তা’আলা তাদের তাওবাহ ক্ববূল করেন এবং তারা ইসলাম গ্রহণ করে উত্তম মুসলিম হন।
সহীহ : বুখারী (৪০৬৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ‘উমার ইবনু হামযা
কর্তৃক সালিম (রহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে বর্ণিত হাদীস হিসেবে এটিকে গারীব গণ্য করা
হয়। যুহরী ও সালিম হতে, তার পিতার সূত্রে এটি বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল
(আল -বুখারী) এটি উমার ইবনু হামযাহ কর্তৃক বর্ণিত হাদীস হিসেবে অবহিত নন। তিনি এটি
যুহরী কর্তৃক বর্ণিত হাদীস হিসেবে অবহিত আছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبِ بْنِ عَرَبِيٍّ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ
نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم كَانَ يَدْعُو عَلَى أَرْبَعَةِ نَفَرٍ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (لَيْسَ
لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ
فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ ) فَهَدَاهُمُ اللَّهُ لِلإِسْلاَمِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ يُسْتَغْرَبُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
مِنْ حَدِيثِ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَرَوَاهُ يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ عَنِ
ابْنِ عَجْلاَنَ .
আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, চারজন
ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদদু’আ করছিলেন। এ
সম্পর্কেই বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন
অথবা তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছু নেই। কারণ তারা যালিম”
– (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১২৮)। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক্ব
দান করেছিলেন।
হাসান সহীহ : বুখারী (৪০৬৯, ৪০৭০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। এটিকে নাফি’
(রহঃ) কর্তৃক ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীস হিসেবে ‘গারীব’ গণ্য করা হয়। এ
হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ূবও ইবনু আজলানের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩০০৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ
الْمُغِيرَةِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ بْنِ الْحَكَمِ
الْفَزَارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا، يَقُولُ إِنِّي كُنْتُ رَجُلاً إِذَا
سَمِعْتُ مِنْ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثًا نَفَعَنِي اللَّهُ
مِنْهُ بِمَا شَاءَ أَنْ يَنْفَعَنِي وَإِذَا حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِهِ
اسْتَحْلَفْتُهُ فَإِذَا حَلَفَ لِي صَدَّقْتُهُ وَإِنَّهُ حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ
وَصَدَقَ أَبُو بَكْرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" مَا مِنْ رَجُلٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا ثُمَّ يَقُومُ فَيَتَطَهَّرُ ثُمَّ
يُصَلِّي ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللَّهَ إِلاَّ غَفَرَ لَهُ " . ثُمَّ
قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ : (وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا
أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ قَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ
عُثْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ فَرَفَعُوهُ وَرَوَاهُ مِسْعَرٌ وَسُفْيَانُ عَنْ
عُثْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ فَلَمْ يَرْفَعَاهُ وَقَدْ رَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ
مِسْعَرٍ فَأَوْقَفَهُ وَرَفَعَهُ بَعْضُهُمْ وَرَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ فَأَوْقَفَهُ وَلاَ نَعْرِفُ لأَسْمَاءَ بْنِ
الْحَكَمِ حَدِيثًا إِلاَّ هَذَا .
আসমা
ইবনুল হাকাম আল ফাযারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আলী
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছি : আমি এমন লোক ছিলাম যে, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট কোন হাদীস শুনলে আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছায় আমি তার
দ্বারা প্রভূত উপকৃত হতাম। আর আমার নিকট তাঁর কোন সাহাবী হাদীস বর্ণনা করলে আমি
তাকে শপথ করতে বলতাম। আমার কথায় তিনি শপথ করলে, আমি তার সত্যতা স্বীকার করতাম।
অতএব আবূ বাকর (রাঃ) আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেন। বলা বাহুল্য, আবূ বাকর (রাঃ)
সত্য কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কে বলতে শুনেছি : কোন লোক যদি গুনাহ করার পর পবিত্রতা অর্জন করে নামায আদায় করে,
তারপর আল্লাহ তা’আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থণা করে তবে তাকে আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই
ক্ষমা করে দেন। তারপর তিনি এ আয়াত পড়েন (অনুবাদ) : “যাদের অবস্থা এমন যে, তারা
কখনো অশ্লীল কর্ম করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি যুলুম করলে পরে আল্লাহ তা’আলাকে
স্মরণ করে এবং নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করে (তাদেরকে ক্ষমা করা হয়)।
আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কে গুনাহ মাফ করতে পারে? আর তারা যা করে ফেলেছে জ্ঞাতসারে
তার পুনরাবৃত্তি করে না”- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৩৫)।
হাসান : ইবনু মাজাহ (১৩৯৫)।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি ‘উসমান ইবনুল মুগীরাহ (রহঃ)
এর সূত্রে শু’বাহ প্রমুখ বর্ণনাকারীগণ মারফূ’রূপে বর্ণনা করেছেন। মিস’আর ও সুফইয়ানও
‘উসমান ইবনুল মুগীরার সূত্রে এটি রিওয়ায়াত করেছেন, তবে মারফূ হিসেবে নয়। কিছু বর্ণনাকারী
এই হাদীসটি মিস’আর হতে মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, আর কিছু বর্ণনাকারী মারফূ’ হিসেবে
বর্ণনা করেছেন। সুফইয়ান সাওরী তা ‘উসমান ইবনুল মুগীরাহ হতে মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
উক্ত হাদীস ব্যতীত আসমা ইবনুল হাকাম কর্তৃক বর্ণিত আর কোন হাদীস আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০০৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ،
عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي طَلْحَةَ،
قَالَ رَفَعْتُ رَأْسِي يَوْمَ أُحُدٍ فَجَعَلْتُ أَنْظُرُ وَمَا مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ
أَحَدٌ إِلاَّ يَمِيدُ تَحْتَ حَجَفَتِهِ مِنَ النُّعَاسِ فَذَلِكَ قَوْلُهُ عَزَّ
وَجَلََّّ : (فَأَنْزَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ بَعْدِ الْغَمِّ أَمَنَةً نُعَاسًا
) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) হতে আবূ তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহুদের দিন
আমি মাথা তুলে তাকিয়ে দেখলাম, সকলে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে নিজ নিজ ঢালের নিচে ঢলে
পড়েছেন। আল্লাহ তা’আলার নিম্নোক্ত বাণীর তাৎপর্য তাই : “দুঃখ-কষ্টের পর আবার
আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে তন্দ্রারূপে প্রশান্তি দান করলেন”- (সূরা আ-লি ‘ইমরান
১৫৪)।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবদ ইবনু হুমাইদ-রাওহ ইবনু ‘উবাদাহ হতে,
তিনি হাম্মাদ ইবনু সালামাহ হতে, তিনি হিশাম ইবনু ‘উরওয়াহ হতে, তিনি তার বাবা হতে,
তিনি আবুয যুবাইর (রহঃ) হতেও উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি
হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০৮
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ
عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ أَبَا
طَلْحَةَ، قَالَ غُشِينَا وَنَحْنُ فِي مَصَافِّنَا يَوْمَ أُحُدٍ حَدَّثَ أَنَّهُ
كَانَ فِيمَنْ غَشِيَهُ النُّعَاسُ يَوْمَئِذٍ قَالَ فَجَعَلَ سَيْفِي يَسْقُطُ
مِنْ يَدِي وَآخُذُهُ وَيَسْقُطُ مِنْ يَدِي وَآخُذُهُ وَالطَّائِفَةُ الأُخْرَى
الْمُنَافِقُونَ لَيْسَ لَهُمْ هَمٌّ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ أَجْبَنُ قَوْمٍ
وَأَرْعَبُهُ وَأَخْذَلُهُ لِلْحَقِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ তালহা (রাঃ) বলেন,
উহূদের যুদ্ধের দিন যুদ্ধের কাতারে আমরা তন্দ্রাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। তিনি বলেন, আমিও
সেদিন তন্দ্রাচ্ছন্ন লোকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলাম। ফলে বারবার আমার তরবারি আমার হাত
হতে পড়ে যাচ্ছিল আর আমি তা তুলে নিচ্ছিলাম। আবার পড়ে যাচ্ছিল আবার তুলে নিচ্ছিলাম।
অপর দলটি ছিল মুনাফিক্বদের। তাদের নিজ জানের চিন্তা ব্যতীত আর কোন চিন্তাই ছিল না।
এরা ছিল সবচেয়ে কাপুরুষ ও ভীরু এবং সত্যের সাহায্য ত্যাগকারী।
সহীহ : বুখারী (৪০৮৬, ৪৫৬২)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، عَنْ
خُصَيْفٍ، حَدَّثَنَا مِقْسَمٌ، قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ نَزَلَتْ هَذِهِ
الآيَةُ : ( وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَغُلَّ ) فِي قَطِيفَةٍ حَمْرَاءَ
افْتُقِدَتْ يَوْمَ بَدْرٍ . فَقَالَ بَعْضُ النَّاسِ لَعَلَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم أَخَذَهَا فَأَنْزَلَ اللَّهُ كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَغُلَّ
) إِلَى آخِرِ الآيَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ
رَوَى عَبْدُ السَّلاَمِ بْنُ حَرْبٍ عَنْ خُصَيْفٍ نَحْوَ هَذَا وَرَوَى
بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ خُصَيْفٍ عَنْ مِقْسَمٍ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“অন্যায়ভাবে কোন বস্তু
আত্মসাৎ করা কোন নাবীর কাজ হতে পারে না”- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৬১) আয়াত বাদর
যুদ্ধকালে হারিয়ে যাওয়া একটি লাল চাদর প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। কেউ কেউ বলল যে,
হয়ত তা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গেই
বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন “খিয়ানাত (আত্মসাৎ) করা কোন নাবীর কাজ হতে
পারে না। আর যে ব্যক্তি খিয়ানাত করবে, কিয়ামাতের দিন সে তার খিয়ানাতসহ হাযির হবে।
তারপর প্রত্যেক ব্যক্তিই তার কৃতকর্মের পুরাপুরি প্রতিফল লাভ করবে। কারো প্রতি
যুলুম করা হবে না”- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৬১)।
সহীহ : সহীহাহ (২৭৮৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ‘আবদুস সালাম ইবনু
হারব (রহঃ) খুসাইফির সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ খুসাইফ হতে, তিনি মিক্বসাম
হতে এই সূত্রে এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন, কিন্তু তাতে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)- এর উল্লেখ
করেননি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০১০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبِ بْنِ عَرَبِيٍّ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ كَثِيرٍ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ طَلْحَةَ بْنَ خِرَاشٍ،
قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ لَقِيَنِي رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي " يَا جَابِرُ مَا لِي أَرَاكَ مُنْكَسِرًا
" . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ اسْتُشْهِدَ أَبِي قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ
وَتَرَكَ عِيَالاً وَدَيْنًا . قَالَ " أَفَلاَ أُبَشِّرُكَ بِمَا لَقِيَ
اللَّهُ بِهِ أَبَاكَ " . قَالَ قُلْتُ بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ .
قَالَ " مَا كَلَّمَ اللَّهُ أَحَدًا قَطُّ إِلاَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ
وَأَحْيَا أَبَاكَ فَكَلَّمَهُ كِفَاحًا فَقَالَ يَا عَبْدِي تَمَنَّ عَلَىَّ
أُعْطِكَ . قَالَ يَا رَبِّ تُحْيِينِي فَأُقْتَلَ فِيكَ ثَانِيةً . قَالَ
الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ إِنَّهُ قَدْ سَبَقَ مِنِّي أَنَّهُمْ إِلَيْهَا لاَ
يُرْجَعُونَ " . قَالَ وَأُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (وَلَاَ
تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا ) الآيَةَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَلاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُوسَى بْنِ إِبْرَاهِيمَ وَرَوَاهُ عَلِيُّ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمَدِينِيِّ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ كِبَارِ أَهْلِ
الْحَدِيثِ هَكَذَا عَنْ مُوسَى بْنِ إِبْرَاهِيمَ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ عَنْ جَابِرٍ شَيْئًا مِنْ هَذَا .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সাথে সাক্ষাৎ করে আমাকে বললেনঃ হে জাবির
! কি ব্যাপার, আমি তোমাকে ভগ্নহৃদয় দেখছি কেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার
আব্বা (উহূদের যুদ্ধে) শহীদ হয়েছেন এবং অসহায় পরিবার-পরিজন ও কর্জ রেখে গেছেন।
তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা কিভাবে তোমার আব্বার সাথে মিলিত হয়েছেন আমি কি তোমাকে
সেই সুসংবাদ দিব না? আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ আল্লাহ
তা’আলা কখনো কারো সাথে তাঁর পর্দার অন্তরাল ব্যতীত () কথা বলেননি কিন্তু তিনি
তোমার বাবাকে জীবন দান করে তার সাথে কথা
বলেছেন। তাকে তিনি বললেনঃ তুমি আমার নিকট (যা ইচ্ছা) চাও, আমি তোমাকে তা দান করব।
সে বলল, হে প্রভু! আপনি আমাকে জীবনদান করুন, যাতে আমি আবার আপনার রাহে নিহত হতে
পারি। বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ আমার পক্ষ থেকে আগে হতেই এ ব্যাপারে
সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে আছে যে, তারা আবার (দুনিয়ায়) ফিরে যাবে না। এ প্রসঙ্গে
নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয় : “যারা আল্লাহ তা’আলার পথে নিহত হয়েছে, তোমরা তাদেরকে
মৃত মনে করো না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তারা
রিযিকপ্রাপ্ত”- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৬৯)।
হাসান : ইবনু মা-জাহ (১৯০, ২৮০০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উপরোক্ত সনদসূত্রে হাসান গারীব।
‘আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ ইবনু আক্বীল (রহঃ) জাবির (রাঃ) এর সূত্রে এ হাদীসের অংশবিশেষ
বর্ণনা করেছেন। এটিকে আমরা মূসা ইবনু ইবরাহীমের সূত্রে জেনেছি। ‘আলী ইবনু ‘আবদুল্লাহ
আল মাদীনী সহ অপরাপর হাদীসবিদগণ মূসা ইবনু ইবরাহীমের সূত্রে একই রকম রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০১১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مَسْعُودٍ، أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ قَوْلِهِ : (وَلَاَ تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ
قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ
يُرْزَقُونَ ) فَقَالَ أَمَا إِنَّا قَدْ سَأَلْنَا عَنْ ذَلِكَ فَأُخْبِرْنَا
أَنَّ أَرْوَاحَهُمْ فِي طَيْرٍ خُضْرٍ تَسْرَحُ فِي الْجَنَّةِ حَيْثُ شَاءَتْ
وَتَأْوِي إِلَى قَنَادِيلَ مُعَلَّقَةٍ بِالْعَرْشِ فَاطَّلَعَ إِلَيْهِمْ
رَبُّكَ اطِّلاَعَةً فَقَالَ هَلْ تَسْتَزِيدُونَ شَيْئًا فَأَزِيدُكُمْ قَالُوا
رَبَّنَا وَمَا نَسْتَزِيدُ وَنَحْنُ فِي الْجَنَّةِ نَسْرَحُ حَيْثُ شِئْنَا
ثُمَّ اطَّلَعَ إِلَيْهِمُ الثَّانِيَةَ فَقَالَ هَلْ تَسْتَزِيدُونَ شَيْئًا
فَأَزِيدُكُمْ فَلَمَّا رَأَوْا أَنَّهُمْ لَمْ يُتْرَكُوا قَالُوا تُعِيدُ
أَرْوَاحَنَا فِي أَجْسَادِنَا حَتَّى نَرْجِعَ إِلَى الدُّنْيَا فَنُقْتَلَ فِي
سَبِيلِكَ مَرَّةً أُخْرَى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
আবদুল্লাহ
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নিম্নোক্ত আয়াত বিষয়ে
তাকে প্রশ্ন করা হল (অনুবাদ) : “যারা আল্লাহ তা’আলার পথে নিহত হয়েছে তোমরা তাদেরকে
মৃত মনে করো না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে রিযিকপ্রাপ্ত”-
(সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৬৯)। তিনি বললেন, আমরাও অবশ্যি এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেছিলাম। আমাদেরকে
অবহিত করা হয় যে, জান্নাতের মধ্যে তাদের রূহগুলো সবুজ পাখির আকারে যথা ইচ্ছা ঘুরে
বেড়ায়, আরশের সাথে ঝুলানো ঝারবাতিসমূহে (বসে) আরাম করে। একবার তোমার প্রভু তাদের
প্রতি উকি দিয়ে প্রশ্ন করেন : তোমরা আরো কিছু চাও কি? তাহলে আমি তোমাদের আরো
বাড়িয়ে দিব। তারা বলল, হে আমাদের প্রভু! আমরা এর চাইতে বেশি আর কি চাইব। আমরা
জান্নাতের মধ্যে যেখানে ইচ্ছা ঘুরে বেড়াচ্ছি। আল্লাহ তা’আলা আবার উঁকি দিয়ে বলেনঃ
তোমাদের আরো কিছু চাওয়ার আছে কি, তাহলে আমি আরো বাড়িয়ে দিব। যখন তারা দেখলো যে,
কিছু চাওয়া ব্যতীত তাদের রেহাই নেই তখন তারা বলল, আপনি আমাদের দেহে প্রাণ সঞ্চার
করে দিন যাতে আমরা আবার দুনিয়ায় ফিরে যেতে পারি এবং আবার আপনার পথে পুনরায় শহীদ
হতে পারি।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (২৮০১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০১২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ جَامِعٍ،
وَهُوَ ابْنُ أَبِي رَاشِدٍ وَعَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَعْيَنَ عَنْ أَبِي وَائِلٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " مَا مِنْ رَجُلٍ لاَ يُؤَدِّي زَكَاةَ مَالِهِ إِلاَّ جَعَلَ
اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي عُنُقِهِ شُجَاعًا " . ثُمَّ قَرَأَ
عَلَيْنَا مِصْدَاقَهُ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : (وَلَاَ تَحْسَبَنَّ
الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ ) الآيَةَ .
وَقَالَ مَرَّةً قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِصْدَاقَهُ :
(سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُوا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ) " وَمَنِ
اقْتَطَعَ مَالَ أَخِيهِ الْمُسْلِمِ بِيَمِينٍ لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ عَلَيْهِ
غَضْبَانُ " . ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
مِصْدَاقَهُ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ : (إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ
اللَّهِ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَمَعْنَى
قَوْلِهِ شُجَاعًا أَقْرَعَ يَعْنِي حَيَّةً .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে লোক তার সম্পদে যাকাত প্রদান করে না, আল্লাহ তা’আলা
ক্বিয়ামাতের দিন তার (মালকে তার) ঘাড়ে বিষধর অজগর সাপরূপে স্থাপন করবেন। তারপর
তিনি এই কথার সত্যতা প্রমাণে আল্লাহ তা’আলার কিতাবের এ আয়াত আমাদেরকে শুনান
(অনুবাদ) : “তাদেরকে আল্লাহ তা’আলা নিজ অনু্গ্রহে যা দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা
করে তারা যেন মনে না করে যে, এটা তাদের পক্ষে কল্যাণকর। না, এটা তাদের পক্ষে
অকল্যাণকর। যাতে তারা কৃপণতা করে ক্বিয়ামাতের দিন তাই তাদের গলার বেড়ি হবে। আসমান
ও যমীনের স্বত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য। তোমরা যা কর আল্লাহ তা’আলা তা
বিশেষভাবে অবহিত” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৮০)। বর্ণনাকারী কখনো বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সমর্থনে এ আয়াতাংশ পাঠ করেন (অনুবাদ) :
“যাতে তারা কৃপণতা করে ক্বিয়ামাতের দিন তা তাদের গলায় বেড়ী হবে”। তিনি আরো বলেনঃ
যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথের মাধ্যমে তার মুসলিম ভাইয়ের মাল আত্মসাৎ করে, সে আল্লাহ
তা’আলার সাথে এরূপ অবস্থায় মিলিত হবে যে, আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট। এর
সত্যতার সমর্থনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার
কিতাবের এ আয়াত পাঠ করেন (অনুবাদ) : “যারা আল্লাহ তা’আলার সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি
এবং নিজেদের শপথসমূহকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রয় করে, পরকালে তাদের জন্য কোন অংশ নেই।
ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা না তাদের সাথে কথা বলবেন, না তাদের প্রতি তাকাবেন,
আর না তাদেরকে পবিত্র করবেন। তাদের জন্য রয়েছে উৎপীড়ক শাস্তি” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান
৭৭)।
সহীহ : মুশকিলাতুল ফাকর (৬০), তালীকুর রাগীব (১/৬৮) হাদীসের ২য় অংশ বুখারী (৭৪৪৫),
মুসলিম (১/৮৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। “শুজা’আন আকরাআ”
অর্থ সাপ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০১৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
وَسَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ
مَوْضِعَ سَوْطٍ فِي الْجَنَّةِ لَخَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا اقْرَءُوا
إِنْ شِئْتُمْ : (فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ
فَازَ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ مَتَاعُ الْغُرُورِ ) " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একটি চাবুক রাখার সমপরিমাণ জান্নাতের
জায়গা সমগ্র পৃথিবী ও তার মধ্যকার সব কিছুর চাইতে উত্তম। তোমরা চাইলে এ আয়াত পাঠ
করতে পারো (অনুবাদ) : “(কিয়ামাতের দিন) যাকে আগুন হতে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে
দাখিল করানো হবে সেই সফলকাম। বস্তুত পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়” – (সূরা
আ-লি ‘ইমরান ১৮৫)
হাসান : সহীহাহ (১৯৮৭), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০১৪
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ، حَدَّثَنَا
الْحَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي
مُلَيْكَةَ، أَنَّ حُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَخْبَرَهُ
أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ قَالَ اذْهَبْ يَا رَافِعُ لِبَوَّابِهِ إِلَى
ابْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْ لَهُ لَئِنْ كَانَ كُلُّ امْرِئٍ فَرِحَ بِمَا أُوتِيَ
وَأَحَبَّ أَنْ يُحْمَدَ بِمَا لَمْ يَفْعَلْ مُعَذَّبًا لَنُعَذَّبَنَّ
أَجْمَعُونَ . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ مَا لَكُمْ وَلِهَذِهِ الآيَةِ إِنَّمَا
أُنْزِلَتْ هَذِهِ فِي أَهْلِ الْكِتَابِ ثُمَّ تَلاَ ابْنُ عَبَّاسٍ : (
وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَتُبَيِّنُنَّهُ
لِلنَّاسِ وَلاَ تَكْتُمُونَهُ ) وَتَلاَ : (لَاَ تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ
يَفْرَحُونَ بِمَا أَتَوْا وَيُحِبُّونَ أَنْ يُحْمَدُوا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوا
) قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ سَأَلَهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ شَيْءٍ
فَكَتَمُوهُ وَأَخْبَرُوهُ بِغَيْرِهِ فَخَرَجُوا وَقَدْ أَرَوْهُ أَنْ قَدْ
أَخْبَرُوهُ بِمَا قَدْ سَأَلَهُمْ عَنْهُ وَاسْتُحْمِدُوا بِذَلِكَ إِلَيْهِ
وَفَرِحُوا بِمَا أُوتُوا مِنْ كِتْمَانِهِمْ وَمَا سَأَلَهُمْ عَنْهُ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
হুমাইদ
ইবনু ‘আবদুর রাহমান ‘ইবনু ‘আওফ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মারওয়ান
ইবনুল হাকাম তার দ্বাররক্ষীকে বললেন, হে আবূ রাফি’! ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর নিকট
যাও এবং তাকে বল, যে লোক তার প্রাপ্তীর জন্য খুশী হয় এবং কোন কাজ না করেও তার জন্য
প্রশংসা কুড়াতে চায় সে শাস্তিযোগ্য হলে তো আমরা সকলেই শাস্তিযোগ্য হব। ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, এ আয়াতের সাথে তোমাদের কি সম্পর্ক, এ আয়াত তো কিতাবধারীদের
প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। এরপর ইবনু ‘‘আব্বাস (রাঃ) তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ),
“যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন :
তোমরা তা মানুষের নিকট স্পষ্টভাবে প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না। এরপরও তারা তা
অগ্রাহ্য করে এবং তুচ্ছ মূল্যে তা বিক্রয় করে। সুতরাং তারা যা ক্রয় করে তা কত
নিকৃষ্ট” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৮৭)। তিনি আরো তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) : “তুমি কখনো
এরূপ ধারণা করো না যে, যেসব লোক স্বয়ং যা করেছে তাতে আনন্দ প্রকাশ করে এবং স্বয়ং
যা করেনি এমন কাজের জন্য প্রশংসিত হতে ভালোবাসে তারা শাস্তি হতে মুক্তি পাবে, বরং
তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১৮৮)। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
বললেন, রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের (আহলে কিতাব) নিকট
কোন বিষয়ে জানতে চাইলে তারা তা গোপন করে তার বিপরীত তথ্য তাঁকে অবহিত করে চলে যায়।
তারা তাকে এ ধারণা দেয় যে, তিনি যে বিষয়ে তাদের নিকট জানতে চেয়েছেন তারা তাই তাঁকে
জানিয়েছেন। বিনিময়ে তারা তাঁর নিকট হতে প্রশংসা কামনা করে এবং তাদের কিতাব হতে
তথ্য প্রদানের বিষয়টি ও তাদের নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর জানতে চাওয়ার বিষয়টিতে সত্য গোপন করে তারা আনন্দ বোধ করে।
সহীহ : বুখারী (৪৫৬৮), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গরীব সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫
সূরা
আন –নিসা
৩০১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ،
حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، قَالَ سَمِعْتُ
جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ مَرِضْتُ فَأَتَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَعُودُنِي وَقَدْ أُغْمِيَ عَلَىَّ فَلَمَّا أَفَقْتُ قُلْتُ
كَيْفَ أَقْضِي فِي مَالِي فَسَكَتَ عَنِّي حَتَّى نَزَلَتْ : ( يُوصِيكُمُ
اللَّهُ فِي أَوْلاَدِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الأُنْثَيَيْنِ ) قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ .
মুহাম্মদ
ইবনুল মুনকাদির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, আমি অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে আসেন। আমি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলাম। আমার চেতনা
ফিরে পাওয়ার পর আমি বললাম, আমি আমার ধন-সম্পদ প্রসঙ্গে কিভাবে সিদ্ধান্ত করব? রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বিষয়ে নীরব থাকলেন। তারপর আয়াত অবতীর্ণ
হয় (অনুবাদ) : “আল্লাহ তা’আলা তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে তোমাদেরকে নির্দেশ
দিচ্ছেনঃ এক পুরুষের (পুত্রের) অংশ দু’জন মহিলার (কন্যার) সমান” – (সূরা আন –নিসা
১১)।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (২৭২৮), বুখারী (৪৫৭৭), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি মুহাম্মদ
ইবনুল মুনকাদির হতে একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন। আল –ফাযল ইবনুস সাব্বাহ আল –বাগদাদী-সুফইয়ান
ইবনু ‘উয়াইনাহ হতে, তিনি মুহাম্মদ ইবনুল মুনকাদির হতে, তিনি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে উপরের হাদীসের
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আল –ফাযল ইবনুস সাব্বাহর হাদীসে এ হাদীসের চেয়ে আরো বেশী বর্ণনা
আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০১৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا حَبَّانُ بْنُ هِلاَلٍ،
حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ،
عَنْ أَبِي عَلْقَمَةَ الْهَاشِمِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ
لَمَّا كَانَ يَوْمُ أَوْطَاسٍ أَصَبْنَا نِسَاءً لَهُنَّ أَزْوَاجٌ فِي
الْمُشْرِكِينَ فَكَرِهَهُنَّ رِجَالٌ مِنْهُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ :
(وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ إِلاَّ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ) .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ
সা’ঈদ আল –খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কয়েকজন মহিলা
আওতাস যুদ্ধের দিন আমাদের হস্তগত হয়, যাদের স্বামীরা মুশরিকদের মধ্যে বর্তমান ছিল।
তাই ঐ সব মহিলাকে আমাদের কিছু সংখ্যক লোক অপছন্দ করল। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা
অবতীর্ণ করেন : “এবং নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত সকল সধবা
তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ” – (সূরা আন –নিসা ২৪)।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (১৮৭১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০১৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا
عُثْمَانُ الْبَتِّيُّ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ،
قَالَ أَصَبْنَا سَبَايَا يَوْمَ أَوْطَاسٍ لَهُنَّ أَزْوَاجٌ فِي قَوْمِهِنَّ
فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَتْ :
(وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ إِلاَّ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ) .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهَكَذَا رَوَى الثَّوْرِيُّ عَنْ
عُثْمَانَ الْبَتِّيِّ عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَلَيْسَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ عَنْ
أَبِي عَلْقَمَةَ وَلاَ أَعْلَمُ أَنَّ أَحَدًا ذَكَرَ أَبَا عَلْقَمَةَ فِي هَذَا
الْحَدِيثِ إِلاَّ مَا ذَكَرَ هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ وَأَبُو الْخَلِيلِ اسْمُهُ
صَالِحُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ .
আবূ
সা’ঈদ আল –খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আওতাস
যুদ্ধের দিন কয়েকজন বন্দী মহিলা আমাদের হাতে আসে যাদের স্বামীরা তাদের সম্প্রদায়ে
বর্তমান ছিল। সাহাবীগণ বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে
অবহিত করেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় : “এবং নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভূক্ত দাসীগণ
ব্যতীত সকল সধবা নারী তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ” - (সূরা আন –নিসা ২৪)।
সহীহ : দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। সুফইয়ান সাওরী (রহঃ)
এভাবে ‘উসমান আল –বাত্তী হতে, তিনি আবুল খালীল হতে, তিনি আবূ সা’ঈদ আল –খুদরী (রাঃ)
হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের
মত বর্ণনা করেছেন। অবশ্য এ হাদীসে আবূ ‘আলক্বামার উল্লেখ নেই। ক্বাতাদাহ (রহঃ) এর সূত্রে
হাম্মাম ব্যতীত অপর কেউ এ হাদীসের সনদে আবূ ‘আলক্বামার উল্লেখ করেছেন বলে আমার জানা
নেই। আবুল খালীলের নাম সালিহ ইবনু আবূ মারইয়াম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০১৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا
خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ شُعْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي
بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
الْكَبَائِرِ قَالَ " الشِّرْكُ بِاللَّهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ
وَقَتْلُ النَّفْسِ وَقَوْلُ الزُّورِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ . وَرَوَاهُ رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ عَنْ
شُعْبَةَ وَقَالَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ وَلاَ يَصِحُّ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাবীরা গুনাহ প্রসঙ্গে বলেনঃ তা হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার সাথে
শারীক করা, বাবা-মার অবাধ্য হওয়া, নরহত্যা করা ও মিথ্যা বলা।
সহীহ : গাইয়াতুল মারাম (২৭৭), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। রাওহ ইবনু
‘উবাদাহ (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ) হতে এটি বর্ণনা করেছেন। তিনি সনদে (বর্ণনাকারীর নাম ‘উবাইদুল্লাহ
ইবনু আবূ বাকর -এর পরিবর্তে) ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বাকর বলেছেন, তা সঠিক নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০১৯
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، - بَصْرِيٌّ - حَدَّثَنَا بِشْرُ
بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا الْجُرَيْرِيُّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَلاَ أُحَدِّثُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ " . قَالُوا بَلَى
يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ وَعُقُوقُ
الْوَالِدَيْنِ " . قَالَ وَجَلَسَ وَكَانَ مُتَّكِئًا قَالَ "
وَشَهَادَةُ الزُّورِ أَوْ قَوْلُ الزُّورِ " . قَالَ فَمَا زَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُهَا حَتَّى قُلْنَا لَيْتَهُ سَكَتَ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ .
আবদুর
রাহমান ইবনু আবূ বাকরাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর বাবার সূত্রে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেলেন : আমি
কি সবচাইতে মারাত্মক কবীরা গুনাহগুলো প্রসঙ্গে তোমাদেরকে অবহিত করবো না? সাহাবীগণ
বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলার সাথে অংশীদার
স্থাপন, বাবা-মার অবাধ্য হওয়া। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি হেলান দেয়া অবস্থায় ছিলেন,
এবার উঠে সোজা হয়ে বসে বললেনঃ মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া, অথবা বলেছেনঃ মিথ্যা কথা বলা।
আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাটি
বারবার বলে যাচ্ছিলেন। এমনকি আমরা বললাম, আহা! তিনি যদি চুপ হতেন।
সহীহ : প্রাগুক্ত, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
زَيْدِ بْنِ مُهَاجِرِ بْنِ قُنْفُذَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ
الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُنَيْسٍ الْجُهَنِيِّ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ مِنْ أَكْبَرِ الْكَبَائِرِ
الشِّرْكُ بِاللَّهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَالْيَمِينُ الْغَمُوسُ وَمَا
حَلَفَ حَالِفٌ بِاللَّهِ يَمِينَ صَبْرٍ فَأَدْخَلَ فِيهَا مِثْلَ جَنَاحِ
بَعُوضَةٍ إِلاَّ جُعِلَتْ نُكْتَةً فِي قَلْبِهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَبُو أُمَامَةَ الأَنْصَارِيُّ هُوَ ابْنُ
ثَعْلَبَةَ وَلاَ نَعْرِفُ اسْمَهُ وَقَدْ رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم أَحَادِيثَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু উনাইস আল –জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মারাত্মক মারাত্মক কাবীরা গুনাহ হল
–আল্লাহ তা’আলার সাথে অংশীদার স্থাপন করা, বাবা-মার নাফারমানী করা এবং মিথ্যা শপথ
করা। কেউ আল্লাহ তা’আলার নামে অপরিবর্তনীয় ও অবশ্যম্ভাবীরূপে প্রযুক্ত হওয়ার মত শপথ
করলে এবং তাতে মশার পাখা বরাবর নগণ্য মিথ্যাও যোগ করলে তা তার অন্তরে ক্বিয়ামাত
পর্যন্ত একটি কলংকময় দাগ হয়ে বিরাজিত থাকবে।
হাসান : মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৩৭৭৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ উমামা আল
–আনসারী (রাঃ) হলেন সা’লাবার ছেলে। তার নাম আমাদের জানা নেই। তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বেশ কিছু হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০২১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ فِرَاسٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
الْكَبَائِرُ الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ أَوْ قَالَ
الْيَمِينُ الْغَمُوسُ " . شَكَّ شُعْبَةُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কাবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ তা’আলার সাথে
অংশীদার স্থাপন করা, বাবা-মায়ের অবাধ্য হওয়া, অথবা বলেছেনঃ মিথ্যা শপথ করা।
বর্ণনাকারী শু’বাহর সন্দেহ যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
শেষোক্ত দু’টি কথার কোনটি বলেছেন।
সহীহ : বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ أَبِي
نَجِيحٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ يَغْزُو
الرِّجَالُ وَلاَ يَغْزُو النِّسَاءُ وَإِنَّمَا لَنَا نِصْفُ الْمِيرَاثِ .
فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (وَلاَ تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ
بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ ) . قَالَ مُجَاهِدٌ فَأُنْزِلَ فِيهَا : ( إِنَّ
الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ ) وَكَانَتْ أُمُّ سَلَمَةَ أَوَّلَ ظَعِينَةٍ
قَدِمَتِ الْمَدِينَةَ مُهَاجِرَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ مُرْسَلٌ
. وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ مُرْسَلٌ أَنَّ
أُمَّ سَلَمَةَ قَالَتْ كَذَا وَكَذَا .
মুজাহিদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু সালামাহ (রাঃ)
বলেন, পুরুষরা জিহাদ করে কিন্তু মহিলারা জিহাদ করে না। মীরাসের (উত্তরাধিকার)
ক্ষেত্রেও মহিলারা (পুরুষের তুলনায়) অর্ধেক পায়। এ প্রসঙ্গেই কল্যাণময় আল্লাহ
তা’আলা অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “আল্লাহ তা’আলা যদ্দারা তোমাদের কাউকে অপর কারো
উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, তোমরা তার লোভ করো না। যা পুরুষ অর্জন করেছে তা তার
প্রাপ্য অংশ আর নারী যা অর্জন করেছেন তা তার প্রাপ্য অংশ। তোমরা আল্লাহ তা’আলার
নিকট তার অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। আল্লাহ তা’আলা নিশ্চয়ই সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ” – (সূরা
আন –নিসা ৩২)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, একই প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত আয়াতও অবতীর্ণ হয়
(অনুবাদ) : “আত্মসমর্পণকারী পুরুষ ও আত্মসমর্পণকারী নারী, মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন
নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল
পুরুষ ও ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, লজ্জাস্থান হিফাযাতকারী পুরুষ
ও লজ্জাস্থান হিফাযাতকারী নারী, আল্লাহ তা’আলাকে বেশী স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহ
তা’আলাকে বেশী স্মরণকারী নারী এদের জন্য আল্লাহ তা’আলা রেখেছেন ক্ষমা ও
মহাপ্রতিদান” – (সূরা আল –আহযাব ৩৫)। উম্মু সালামাহ (রাঃ)-ই ছিলেন মাদীনায়
হিজরতকারিনী প্রথম মহিলা।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি মুরসাল। কেউ কেউ ইবনু আবূ নাজীহ
কর্তৃক মুজাহিদ (রহঃ) সূত্রে এটি মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন যে, উম্ম সালামা (রাঃ)
একই কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ وَلَدِ أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ
يَا رَسُولَ اللَّهِ لاَ أَسْمَعُ اللَّهَ ذَكَرَ النِّسَاءَ فِي الْهِجْرَةِ .
فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : ( إِنِّي لاَ أُضِيعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِنْكُمْ
مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى بَعْضُكُمْ مِنْ بَعْضٍ ) .
উম্মু
সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর
রাসূল! আল্লাহ তা’আলা স্ত্রীলোকদের হিজরাত প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন বলে আমি শুনিনি।
তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “আমি তোমাদের মধ্যে কর্মে নিষ্ঠ
কোন নর বা নারীর কাজকে বিফল করি না। তোমরা একে অপরের অংশ। অতএব যারা হিজরাত করেছে,
নিজেদের আবাস হতে উৎখাৎ হয়েছে, আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে …..” – (সূরা আ-লি ‘ইমরান
১৯৫)।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২৪
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ أَمَرَنِي
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْهِ وَهُوَ عَلَى
الْمِنْبَرِ . فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ مِنْ سُورَةِ النِّسَاءِ حَتَّى إِذَا
بَلَغْتُ: ( فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا
بِكَ عَلَى هَؤُلاَءِ شَهِيدًا ) غَمَزَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
بِيَدِهِ فَنَظَرْتُ إِلَيْهِ وَعَيْنَاهُ تَدْمَعَانِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَكَذَا رَوَى أَبُو الأَحْوَصِ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ
عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ وَإِنَّمَا هُوَ إِبْرَاهِيمُ عَنْ عَبِيدَةَ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে হুকুম দিলেন তাঁকে কুরআন তিলাওয়াত করে
শুনানোর জন্য। তখন তিনি মিম্বরে বসা ছিলেন। আমি তাঁকে সূরা আন –নিসা হতে তিলাওয়াত
করে শুনালাম। আমি যখন এ আয়াত পর্যন্ত পৌছলাম (অনুবাদ) : “আমি যখন প্রত্যেক উম্মাত
হতে একজন করে সাক্ষী হাযির করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত
করব, তখন কি অবস্থা হবে?” (সূরা আন –নিসা ৪১), তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর হাত দিয়ে চাপ দেন। আমি তাঁর প্রতি তাকিয়ে দেখলাম,
তাঁর দু’চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, আবুল আহওয়াস (রহঃ) আ’মাশ হতে, তিনি ইবরাহীম
হতে, তিনি ‘আলক্বামাহ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে এই সূত্রে এরূপই বর্ণনা করেছেন।
মূলত তা হবেঃ ইবরাহীম-‘উবাইহাদ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ
هِشَامٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ،
عَنْ عَبِيدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " اقْرَأْ عَلَىَّ " . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَقْرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ قَالَ " إِنِّي أُحِبُّ أَنْ
أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِي " . فَقَرَأْتُ سُورَةَ النِّسَاءِ حَتَّى إِذَا
بَلَغْتُ : (جِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاَءِ شَهِيدًا ) قَالَ فَرَأَيْتُ
عَيْنَىِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَهْمِلاَنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي الأَحْوَصِ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমাকে কুরআন হতে তিলাওয়াত করে শুনাও।
আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উপরই তো কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, আর আমি আপনাকে
তা তিলাওয়াত করে শুনাব! তিনি বললেনঃ অন্যের তিলাওয়াত শুনতে আমি পছন্দ করি। অতএব
আমি সূরা আন –নিসা তিলাওয়াত করতে শুরু করলাম। আমি পাঠ করতে করতে যখন (অনুবাদ) :
“এবং আমি তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরুপে উপস্থিত করব”, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর দুই চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
সহীহ : বুখারী (৪৫৮২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ রিওয়ায়াতটি আবুল আহওয়াসের হাদীসের তুলনায়
অনেক বেশী সহীহ। সুওয়াইদ ইবনু নাসর-ইবনুল মুবারাক হতে, তিনি সুফইয়ান হতে, তিনি আমাশ
(রহঃ) হতে মু’আবিয়াহ ইবনু হিশামের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
سَعْدٍ، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ الرَّازِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ
أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ
صَنَعَ لَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ طَعَامًا فَدَعَانَا وَسَقَانَا مِنَ
الْخَمْرِ فَأَخَذَتِ الْخَمْرُ مِنَّا وَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَقَدَّمُونِي
فَقَرَأْتُ : ( قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ ) لاَ أَعْبُدُ مَا
تَعْبُدُونَ وَنَحْنُ نَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ . قَالَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ
تَعَالَى : ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَقْرَبُوا الصَّلاَةَ
وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আলী
ইবনু আবী তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ)
আমাদের জন্য খাবারের আয়োজন করলেন এবং আমাদেরকে দাওয়াত করে শরাব পান করান। আমাদেরকে
এই শরাবের নেশায় ধরে। ইতোমধ্যে নামাযের ওয়াক্ত হয়ে যায়। লোকজন আমাকেই ইমামতি করতে
এগিয়ে দেয়। আমি পাঠ করলাম : “কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন। লা আ’বুদু মা তা’বুদূন।
ওয়া নাহনু না’বুদু মা তা’বুদূন”। অর্থাৎ “ওয়ালা নাবুদু” (তোমরা যাদের ‘ইবাদাত কর
আমরা তাদের ইবাদাত করি না)-এর স্থলে আমি “ওয়া নাহনু না’বুদু মা তা’বুদূন” (তোমরা
যাদের ইবাদাত কর, আমরাও তাদের ইবাদাত করি) পড়ে ফেললাম। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ
করেন (অনুবাদ) : “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাযের নিকটেও যেয়ো না,
যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার” (সূরা আন –নিসা ৪৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ
بْنَ الزُّبَيْرِ حَدَّثَهُ أَنَّ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ خَاصَمَ الزُّبَيْرَ
فِي شِرَاجِ الْحَرَّةِ الَّتِي يَسْقُونَ بِهَا النَّخْلَ . فَقَالَ
الأَنْصَارِيُّ سَرِّحِ الْمَاءَ يَمُرُّ فَأَبَى عَلَيْهِ فَاخْتَصَمُوا إِلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لِلزُّبَيْرِ " اسْقِ يَا زُبَيْرُ وَأَرْسِلِ الْمَاءَ إِلَى جَارِكَ
" . فَغَضِبَ الأَنْصَارِيُّ وَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنْ كَانَ
ابْنَ عَمَّتِكَ . فَتَغَيَّرَ وَجْهُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ
قَالَ " يَا زُبَيْرُ اسْقِ وَاحْبِسِ الْمَاءَ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَى الْجَدْرِ
" . فَقَالَ الزُّبَيْرُ وَاللَّهِ إِنِّي لأَحْسِبُ هَذِهِ الآيَةَ
نَزَلَتْ فِي ذَلِك : (فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ
) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ قَدْ رَوَى ابْنُ
وَهْبٍ هَذَا الْحَدِيثِ عَنِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ وَيُونُسَ عَنِ الزُّهْرِيِّ
عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ نَحْوَ هَذَا الْحَدِيثِ .
وَرَوَى شُعَيْبُ بْنُ أَبِي حَمْزَةَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنِ
الزُّبَيْرِ وَلَمْ يَذْكُرْ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ .
আবদুল্লাহ
ইবনুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, কংকরময়
হাররা এলাকার একটি (পানিসেচের) নালা নিয়ে এক আনসারীর সাথে তার ঝগড়া বাধে। উক্ত
নালার মাধ্যমে তারা খেজুর বাগানে পানি দিতেন। আনসারী বললেন, পানি আসতে নালাটি আপনি
ছেড়ে দিন। যুবাইর (রাঃ) তা মানলেন না। দুজনেই বিষয়টি নিয়ে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হলেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবাইর (রাঃ) কে বললেনঃ হে যুবাইর! তোমার
বাগানে পানি দিয়ে তোমার প্রতিবেশীর জন্য পানি ছেড়ে দিও। এতে আনসারী ব্যক্তি
রাগান্বিত হয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইনি আপনার ফুফাতো ভাই বলেই (এরূপ ফাইসালা
করছেন)। এ কথায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চেহারা বিবর্ণ
হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ হে যুবাইর! তুমি তোমার বাগানের পানি প্রবাহিত করে আলগুলো
পর্যন্ত পানি জমা না হওয়া পর্যন্ত নালা অন্যত্র প্রবাহিত হতে দিবে না। যুবাইর
(রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমার মনে হয় এ ঘটনা প্রসঙ্গেই এ আয়াত অবতীর্ণ হয়
(অনুবাদ) : “কিন্তু না, তোমার প্রভুর শপথ! তারা ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ
পর্যন্ত তারা তাদের পারস্পরিক মতভেদের ব্যাপারসমূহের বিচারভার তোমার উপর অর্পন না
করে….” (সূরা আন –নিসা ৬৫)।
সহীহ : বুখারী (৪৫৮৫), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, আমি মুহাম্মদ (বুখারী)- কে বলতে শুনেছি,
ইবনু ওয়াহব (রহঃ) এ হাদীসটি লাইস ইবনু সা’দ হতে এবং ইউনুস (রহঃ) যুহরী হতে, তিনি উরওয়া
হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) হতে, এই সূত্রে উক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা
করেছেন। অপর দিকে শু’আইব ইবনু আবী হামযাহ (রহঃ) যুহরী হতে, তিনি ‘উরওয়াহ হতে, তিনি
যুবাইর (রাঃ) হতে, এই সূত্রে এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন, কিন্তু তাতে আবদুল্লাহ ইবনুয
যুবাইর (রাঃ) এর উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ
اللَّهِ بْنَ يَزِيدَ، يُحَدِّثُ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّهُ قَالَ فِي
هَذِهِ الآيَةِ : ( فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ ) قَالَ
رَجَعَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ
. فَكَانَ النَّاسُ فِيهِمْ فَرِيقَيْنِ فَرِيقٌ يَقُولُ اقْتُلْهُمْ .
وَفَرِيقٌ يَقُولُ لاَ . فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : ( فَمَا لَكُمْ فِي
الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ ) وَقَالَ " إِنَّهَا طِيبَةُ وَقَالَ
إِنَّهَا تَنْفِي الْخَبِيثَ كَمَا تَنْفِي النَّارُ خَبَثَ الْحَدِيدِ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ
يَزِيدَ هُوَ الأَنْصَارِيُّ الْخَطْمِيُّ وَلَهُ صُحْبَةٌ .
যাইদ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তোমাদের কি হল যে,
মুনাফিক্বদের প্রসঙ্গে তোমরা দুই দল হয়ে গেলে…..” – (সূরা আন –নিসা ৮৮) আয়াত
প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উহূদ যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর সাহাবীদের (মুসলিম বাহিনীর) মধ্য হতে কিছু সংখ্যক লোক (যুদ্ধক্ষেত্র
হতে) ফিরে আসে। তাদের প্রসঙ্গে সাহাবীগণ দুই দলে বিভক্ত হয়ে যান। এক দলের বক্তব্য
ছিল, তাদেরকে হত্যা কর। অন্য দলের মত ছিল, তাদেরকে হত্যার প্রয়োজন নেই। এ প্রসঙ্গে
এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “তোমাদের কি হল যে, মুনাফিক্বদের ব্যাপারে তোমরা
দুই দল হয়ে গেলে….” -(সূরা আন –নিসা ৮৮)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ মাদীনা হল তাইবাহ-পবিত্র নগরী। তা ময়লা আবর্জনা (অপবিত্রতা
মুনাফিক্বী) এমনভাবে দূর করে দেয় যেভাবে আগুন লোহার ময়লা দূর করে দেয়।
সহীহ : বুখারী (৪৫৮৯), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবদুল্লাহ ইবনু
ইয়াযীদ হলেন একজন আনসারী আল –খাত্বমী, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর সাহচার্য পেয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০২৯
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ، حَدَّثَنَا
شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَجِيءُ
الْمَقْتُولُ بِالْقَاتِلِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ نَاصِيَتُهُ وَرَأْسُهُ بِيَدِهِ
وَأَوْدَاجُهُ تَشْخُبُ دَمًا يَقُولُ يَا رَبِّ هَذَا قَتَلَنِي حَتَّى
يُدْنِيَهُ مِنَ الْعَرْشِ " . قَالَ فَذَكَرُوا لاِبْنِ عَبَّاسٍ
التَّوْبَةَ فَتَلاَ هَذِهِ الآيَةََ: (وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا
) قَالَ وَمَا نُسِخَتْ هَذِهِ الآيَةُ وَلاَ بُدِّلَتْ وَأَنَّى لَهُ
التَّوْبَةُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رَوَى
بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন নিহত ব্যক্তি নিজ হাতে তার
হত্যাকারীকে তার কপালের চুল ও মাথা ধরে নিয়ে আসবে। তার ঘাড়ের কর্তিত রগসমূহ হতে
রক্ত বের হতে থাকবে। সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! এ লোক আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি
সে তার হত্যাকারীকে নিয়ে আরশের নিকট পৌছে যাবে। ‘আমর ইবনু দীনার বলেন, লোকেরা ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) এর নিকট (হত্যাকারীর) তাওবার বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি এ আয়াত
তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) : “কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিনকে হত্যা করলে তার
শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি রুষ্ট হবেন,
তাকে অভিসম্পাত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত রাখবেন” – (সূরা আন –নিসা
৯৩)। তিনি বলেন, এ আয়াত মানসূখও হয়নি বা তার বিধান পরিবর্তিতও হয়নি। অতএব তার আর
তাওবা কিসের।
সহীহ : মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৩৪৬৫), তালীকুর রাগীব (৩/২০৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান (গারীব)। কেউ কেউ এ হাদীসটি
‘আমর ইবনু দীনার হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন,
কিন্তু তা মারফূ হিসেবে নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ
أَبِي رِزْمَةَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ مَرَّ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سُلَيْمٍ عَلَى نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ غَنَمٌ لَهُ فَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ
قَالُوا مَا سَلَّمَ عَلَيْكُمْ إِلاَّ لِيَتَعَوَّذَ مِنْكُمْ فَقَامُوا
فَقَتَلُوهُ وَأَخَذُوا غَنَمَهُ فَأَتَوْا بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم . فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا
ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلاَ تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَى
إِلَيْكُمُ السَّلاَمَ لَسْتَ مُؤْمِنًا ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুলাইম বংশের
এক লোক তার এক পাল ছাগল নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
এক দল সাহাবীর সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। সে তাদেরকে সালাম দিল। তারা (পরস্পর) বলল, এ
লোক তোমাদের হাত হতে বাঁচার জন্যই তোমাদেরকে সালাম দিয়েছে। এই বলে তারা উঠে গিয়ে
লোকটিতে হত্যা করল এবং তার ছাগলগুলো নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট এসে হাযির হল। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) :
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহ তা’আলার পথে (জিহাদের জন্যে) বের হবে, তখন অবশ্যই
পরীক্ষা করে নিবে এবং কেউ তোমাদের সালাম দিলে (পার্থিব জীবনের সম্পদের আকাঙ্খায়)
তাকে বলবে না যে, তুমি মুমিন নও” – (সূরা আন –নিসা ৯৪)।
হাসান সহীহ : তা’লীক আলাল ইহসান (৭/১২২), বুখারী (২৫৯১) সংক্ষেপে, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। উসামাহ ইবনু যাইদ (রাঃ)
হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩০৩১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ لَمَّا
نَزَلَتْ : (لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ ) جَاءَ
عَمْرُو ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم - قَالَ
وَكَانَ ضَرِيرَ الْبَصَرِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا تَأْمُرُنِي إِنِّي
ضَرِيرُ الْبَصَرِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى هَذِهِ الآيَةَ : ( غَيْرُ
أُولِي الضَّرَرِ ) الآيَةَ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم "
ائْتُونِي بِالْكَتِفِ وَالدَّوَاةِ أَوِ اللَّوْحِ وَالدَّوَاةِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَيُقَالُ عَمْرُو ابْنُ
أُمِّ مَكْتُومٍ وَيُقَالُ عَبْدُ اللَّهِ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ وَهُوَ عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ زَائِدَةَ وَأُمُّ مَكْتُومٍ أُمُّهُ .
আল–বারাআ
ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “মু’মিনদের
মধ্যে যারা ঘরে বসে থাকে তারা সমান নয়” – (সূরা আন –নিসা ৯৫) আয়াত অবতীর্ণ হলে
‘আম্র ইবনু উম্মি মাকতূম (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট
আসলেন। তিনি ছিলেন দৃষ্টিশক্তিহীন (অন্ধ)। তিনি বললেন, হে আল্লাহ রাসূল! আমি তো দৃষ্টিশক্তিহীন।
আমাকে আপনি কি নির্দেশ দেন? তখন আল্লাহ তা’আলা নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন
(অনুবাদ) : “তবে যারা অক্ষম তাদের কথা স্বতন্ত্র” – (সূরা আন –নিসা ৯৫)। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ (আয়াতটি লিপিবদ্ধ করতে) তোমরা আমার
জন্য কাঁধের হাড় ও দোয়াত অথবা (বললেন) তখতি ও দোয়াত নিয়ে এসো।
সহীহ : বুখারী (৪৫৯৩-৪৫৯৪), মুসলিম, ১৬৭০ নং পূর্বে উল্লেখ হয়েছে।
‘আমর ইবনু উম্মি মাকতূম (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু উম্মি মাক্তূম
বলেও কথিত। তিনি হলেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদাহ্ এবং উম্মি মাকতূম তাঁর মা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩২
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ، حَدَّثَنَا
الْحَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْكَرِيمِ،
سَمِعَ مِقْسَمًا، مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ : ( لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ ) عَنْ بَدْرٍ وَالْخَارِجُونَ إِلَى بَدْرٍ لَمَّا
نَزَلَتْ غَزْوَةُ بَدْرٍ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَحْشٍ وَابْنُ أُمِّ
مَكْتُومٍ إِنَّا أَعْمَيَانِ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَهَلْ لَنَا رُخْصَةٌ
فَنَزَلَتْ : ( لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ
أُولِي الضَّرَرِ ) و : (فَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلََى
الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً ) فَهَؤُلاَءِ الْقَاعِدُونَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ
: ( وَفَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا
* دَرَجَاتٍ مِنْهُ ) عَلَى الْقَاعِدِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرِ أُولِي
الضَّرَرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَمِقْسَمٌ يُقَالُ هُوَ مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الْحَارِثِ وَيُقَالُ هُوَ مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَكُنْيَتُهُ
أَبُو الْقَاسِمِ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“মু’মিনদের মধ্যে যারা
অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে” – (সূরা আন –নিসা ৯৫) আয়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা
অক্ষম হয়েও ঘরে বসে ছিল তারা এবং যারা বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে তারা
(মর্যাদায়) এক সমান নয়। এখানে তাদের কথাই বলা হয়েছে। বদর যুদ্ধের নির্দেশ সম্বলিত
আয়াত অবতীর্ণ হলে ‘আবদুল্লাহ ইবনু জাহশ ও ইবনু উম্মি মাকতূম (রাঃ) বললেন, হে
আল্লাহর রাসূল! আমরা তো উভয়েই অন্ধ! এক্ষেত্রে আমাদের দুজনের জন্য কি কোনরূপ সুযোগ
আছে? তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “মু’মিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে
বসে থাকে তারা সমান নয় এবং যারা জিহাদ করে তাদেরকে আল্লাহ তা’আলা মহাপুরষ্কারের
ক্ষেত্রে যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন” – (সূরা আন –নিসা
৯৫)। যারা অক্ষম না হওয়া স্বত্বেও ঘরে বসে থাকে, এখানে তাদের কথা বলা হয়েছে।
সহীহ : বুখারী (৪৫৯৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর হাদীস হিসেবে উক্ত
সূত্রে এই হাদীসটি হাসান সহীহ। মিক্বসাম প্রসঙ্গে বলা হয় যে, ইনি ‘আবদুল্লাহ ইবনুল
হারিসের মুক্তদাস। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর মুক্তদাস বলেও কথিত। তার
উপনাম আবুল কাসিম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، حَدَّثَنِي سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ، قَالَ رَأَيْتُ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ
جَالِسًا فِي الْمَسْجِدِ فَأَقْبَلْتُ حَتَّى جَلَسْتُ إِلَى جَنْبِهِ
فَأَخْبَرَنَا أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم أَمْلَى عَلَيْهِ لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَالَ فَجَاءَهُ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ
وَهُوَ يُمْلِيهَا عَلَىَّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاللَّهِ لَوْ
أَسْتَطِيعُ الْجِهَادَ لَجَاهَدْتُ وَكَانَ رَجُلاً أَعْمَى . فَأَنْزَلَ
اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم وَفَخِذُهُ عَلَى فَخِذِي فَثَقُلَتْ
حَتَّى هَمَّتْ تَرُضُّ فَخِذِي ثُمَّ سُرِّيَ عَنْهُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَيْهِ
: ( غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . هَكَذَا رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ نَحْوَ هَذَا . وَرَوَى مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ ذُؤَيْبٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ . وَفِي هَذَا
الْحَدِيثِ رِوَايَةُ رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْ
رَجُلٍ مِنَ التَّابِعِينَ رَوَاهُ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ الأَنْصَارِيُّ عَنْ
مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ وَمَرْوَانُ لَمْ يَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَهُوَ مِنَ التَّابِعِينَ .
সাহল
ইবনু ‘সাদ আস্ –সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মারওয়ান
ইবনুল হাকামকে মাসজিদে বসা দেখে আমি তাঁর নিকট এগিয়ে গিয়ে তার পাশে বসলাম। তিনি
আমাদের বললেন, যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, নাবী, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার দ্বারা লেখাচ্ছিলেন : “লা ইয়াসতাবিল
কা’ইদূনা মিনাল মু’মিনীনা ওয়াল মুজাহিদূনা ফী সাবীলিল্লাহ”। তখন তাঁর নিকট ইবনু
উম্মি মাকতূম (রাঃ) এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ! আমি যদি জিহাদ করতে
পারতাম, তাহলে অবশ্যই জিহাদ করতাম। তিনি ছিলেন অন্ধ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা
তাঁর রাসূলের উপর ওয়াহী অবতীর্ণ করলেন, তখন তাঁর উরু আমার উরুর উপর ছিল। তা এত ভারী
লাগছিল যে, এতে আমার উরু ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিছুক্ষণ পর তাঁর এ
অবস্থা দূরীভূত হয়। আল্লাহ তা’আলা তাঁর উপর অবতীর্ণ করেন : “গাইরু উলিয যারারি”।
সহীহ : বুখারী (৪৫৯২)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। একাধিক বর্ণনাকারী
এ হাদীসটি যুহরী হতে সাহল ইবনু সা’দের বরাতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। মা’মার এটি বর্ণনা
করেছেন যুহরী হতে, তিনি কাবীসাহ্ ইবনু যুয়াইব হতে, তিনি যাইদ ইবনু সাবিত হতে এই সূত্রে।
তিনি আরো বলেন, এ হাদীসটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একজন
সাহাবী কর্তৃক একজন তাবিঈ হতে বর্ণিত অর্থাৎ সাহল ইবনু সা’দ আস –সাঈদী আল –আনসারী
(রাঃ) রিওয়ায়াত করেছেন মারওয়ান ইবনুল হাকাম হতে। মারওয়ান রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস শুনেননি। তিনি
তাবিঈদের অন্তর্ভূক্ত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ أَبِي عَمَّارٍ، يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَابَاهُ، عَنْ
يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ، قَالَ قُلْتُ لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ إِنَّمَا قَالَ
اللَّهُ : ( أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلاَةِ إِنْ خِفْتُمْ أَنْ يَفْتِنَكُمُ
الَّذِينَ كَفَرُوا ) وَقَدْ أَمِنَ النَّاسُ . فَقَالَ عُمَرُ عَجِبْتُ
مِمَّا عَجِبْتَ مِنْهُ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ " صَدَقَةٌ تَصَدَّقَ اللَّهُ بِهَا عَلَيْكُمْ فَاقْبَلُوا
صَدَقَتَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইয়া’লা
ইবনু উমাইয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উমার
(রাঃ) কে বললাম, আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “তোমরা যখন শত্রুর আশংকা করবে তখন নামায
কসর করবে” – (সূরা আন –নিসা ১০১)। এখন তো মানুষ নিরাপদ ও ভীতিমুক্ত হয়ে গেছে (এখন
নামা কসর করার কি প্রয়োজন)। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তুমি যে বিষয়ে বিস্ময়বোধ করছ, আমিও
একই বিষয়ে বিস্ময়বোধ করেছি এবং বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট উত্থাপন করেছি। তিনি বলেছেনঃ এটা তো তোমাদের জন্য আল্লাহ তা’আলার
পক্ষ হতে সাদাক্বাহ্। অতএব তোমরা তাঁর সাদাক্বাহ্ (অনুগ্রহ) গ্রহণ কর।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (১০৬৫), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ
عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْهُنَائِيُّ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ شَقِيقٍ، حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم نَزَلَ بَيْنَ ضَجْنَانَ وَعُسْفَانَ فَقَالَ الْمُشْرِكُونَ
إِنَّ لِهَؤُلاَءِ صَلاَةً هِيَ أَحَبُّ إِلَيْهِمْ مِنْ آبَائِهِمْ
وَأَبْنَائِهِمْ وَهِيَ الْعَصْرُ فَأَجْمِعُوا أَمْرَكُمْ فَمِيلُوا عَلَيْهِمْ
مَيْلَةً وَاحِدَةً وَإِنَّ جِبْرِيلَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَأَمَرَهُ أَنْ يَقْسِمَ أَصْحَابَهُ شَطْرَيْنِ فَيُصَلِّيَ بِهِمْ وَتَقُومَ
طَائِفَةٌ أُخْرَى وَرَاءَهُمْ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ ثُمَّ
يَأْتِي الآخَرُونَ وَيُصَلُّونَ مَعَهُ رَكْعَةً وَاحِدَةً ثُمَّ يَأْخُذُ
هَؤُلاَءِ حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ فَتَكُونُ لَهُمْ رَكْعَةٌ رَكْعَةٌ
وَلِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكْعَتَانِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ شَقِيقٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مَسْعُودٍ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ وَأَبِي عَيَّاشٍ
الزُّرَقِيِّ وَابْنِ عُمَرَ وَحُذَيْفَةَ وَأَبِي بَكْرَةَ وَسَهْلِ بْنِ أَبِي
حَثْمَةَ وَأَبُو عَيَّاشٍ الزُّرَقِيُّ اسْمُهُ زَيْدُ بْنُ صَامِتٍ .
আবদুল্লাহ
ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা্
(রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যুজনান ও ‘উসফান নামক জায়গার মাঝে যাত্রাবিরতি করলেন। মুশরিকরা বলল,
তাদের নিকট একটি নামায আছে যা তাদের বাপ-দাদা ও সন্তান-সন্ততির চাইতেও বেশি প্রিয়।
সেটি হচ্ছে, ‘আসরের নামায। কাজেই তোমরা নিজেদের যাবতীয় সাজ সরঞ্জাম প্রস্তুত করে
সংকল্পব্ধ হয়ে থাক এবং তাদের উপর (নামাযরত অবস্থায়) ঝটিকা আক্রমণ চালাও। এদিকে
জিবরীল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নির্দেশ দিলেন, আপনার
সংগীদের দু’ভাগে বিভক্ত করুন। এক অংশকে নিয়ে আপনি নামায আদায় করুন। অন্য দল
নামাযরতদের পেছনে তাদের ঢাল ও অস্ত্র নিয়ে সতর্কাবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকবে। এরপর
দ্বিতীয় দল (যারা নামায আদায় করেনি) আসবে। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর সাথে এক রাকআত নামায আদায় করবে। তারপর তারা তাদের অস্ত্রশস্ত্রসহ
সতর্কাবস্থায় থাকবে। ফলে তাদের (উভয় দলের) এক এক রাক’আত হবে। আর রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হবে দুই রাক’আত।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ, আবূ হুরাইরাহ্র
বরাতে ‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্বের হাদীস হিসেবে গারীব। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, যাইদ
ইবনু সাবিত, ইবনু ‘আব্বাস, জাবির, আবূ ‘আইয়্যাশ আয –যুরাকী, ইবনু ‘উমার, হুযাইফাহ,
আবূ বাকরাহ ও সাহল ইবনু আবী হাসমা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘আইয়্যাশ
আয –যুরাকীর নাম যাইদ ইবনু সামিত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩৬
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي شُعَيْبٍ أَبُو مُسْلِمٍ
الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَتَادَةَ بْنِ النُّعْمَانِ قَالَ كَانَ أَهْلُ بَيْتٍ
مِنَّا يُقَالُ لَهُمْ بَنُو أُبَيْرِقٍ بِشْرٌ وَبَشِيرٌ وَمُبَشِّرٌ وَكَانَ
بَشِيرٌ رَجُلاً مُنَافِقًا يَقُولُ الشِّعْرَ يَهْجُو بِهِ أَصْحَابَ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ يَنْحَلُهُ بَعْضَ الْعَرَبِ ثُمَّ يَقُولُ
قَالَ فُلاَنٌ كَذَا وَكَذَا قَالَ فُلاَنٌ كَذَا وَكَذَا فَإِذَا سَمِعَ
أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَلِكَ الشِّعْرَ قَالُوا وَاللَّهِ
مَا يَقُولُ هَذَا الشِّعْرَ إِلاَّ هَذَا الْخَبِيثُ أَوْ كَمَا قَالَ الرَّجُلُ
وَقَالُوا ابْنُ الأُبَيْرِقِ قَالَهَا قَالَ وَكَانَ أَهْلُ بَيْتِ حَاجَةٍ
وَفَاقَةٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَالإِسْلاَمِ وَكَانَ النَّاسُ إِنَّمَا
طَعَامُهُمْ بِالْمَدِينَةِ التَّمْرُ وَالشَّعِيرُ وَكَانَ الرَّجُلُ إِذَا كَانَ
لَهُ يَسَارٌ فَقَدِمَتْ ضَافِطَةٌ مِنَ الشَّامِ مِنَ الدَّرْمَكِ ابْتَاعَ
الرَّجُلُ مِنْهَا فَخَصَّ بِهَا نَفْسَهُ وَأَمَّا الْعِيَالُ فَإِنَّمَا
طَعَامُهُمُ التَّمْرُ وَالشَّعِيرُ فَقَدِمَتْ ضَافِطَةٌ مِنَ الشَّامِ
فَابْتَاعَ عَمِّي رِفَاعَةُ بْنُ زَيْدٍ حِمْلاً مِنَ الدَّرْمَكِ فَجَعَلَهُ فِي
مَشْرَبَةٍ لَهُ وَفِي الْمَشْرَبَةِ سِلاَحٌ وَدِرْعٌ وَسَيْفٌ فَعُدِيَ عَلَيْهِ
مِنْ تَحْتِ الْبَيْتِ فَنُقِبَتِ الْمَشْرَبَةُ وَأُخِذَ الطَّعَامُ وَالسِّلاَحُ
فَلَمَّا أَصْبَحَ أَتَانِي عَمِّي رِفَاعَةُ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي إِنَّهُ
قَدْ عُدِيَ عَلَيْنَا فِي لَيْلَتِنَا هَذِهِ فَنُقِبَتْ مَشْرَبَتُنَا فَذُهِبَ
بِطَعَامِنَا وَسِلاَحِنَا . قَالَ فَتَحَسَّسْنَا فِي الدَّارِ وَسَأَلْنَا
فَقِيلَ لَنَا قَدْ رَأَيْنَا بَنِي أُبَيْرِقٍ اسْتَوْقَدُوا فِي هَذِهِ
اللَّيْلَةِ وَلاَ نُرَى فِيمَا نُرَى إِلاَّ عَلَى بَعْضِ طَعَامِكُمْ . قَالَ
وَكَانَ بَنُو أُبَيْرِقٍ قَالُوا وَنَحْنُ نَسْأَلُ فِي الدَّارِ وَاللَّهِ مَا
نُرَى صَاحِبَكُمْ إِلاَّ لَبِيدَ بْنَ سَهْلٍ رَجُلٌ مِنَّا لَهُ صَلاَحٌ
وَإِسْلاَمٌ فَلَمَّا سَمِعَ لَبِيدٌ اخْتَرَطَ سَيْفَهُ وَقَالَ أَنَا أَسْرِقُ
فَوَاللَّهِ لَيُخَالِطَنَّكُمْ هَذَا السَّيْفُ أَوْ لَتُبَيِّنُنَّ هَذِهِ
السَّرِقَةَ . قَالُوا إِلَيْكَ عَنْهَا أَيُّهَا الرَّجُلُ فَمَا أَنْتَ
بِصَاحِبِهَا . فَسَأَلْنَا فِي الدَّارِ حَتَّى لَمْ نَشُكَّ أَنَّهُمْ
أَصْحَابُهَا فَقَالَ لِي عَمِّي يَا ابْنَ أَخِي لَوْ أَتَيْتَ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتَ ذَلِكَ لَهُ . قَالَ قَتَادَةُ فَأَتَيْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنَّ أَهْلَ بَيْتٍ مِنَّا أَهْلَ
جَفَاءٍ عَمَدُوا إِلَى عَمِّي رِفَاعَةَ بْنِ زَيْدٍ فَنَقَبُوا مَشْرَبَةً لَهُ
وَأَخَذُوا سِلاَحَهُ وَطَعَامَهُ فَلْيَرُدُّوا عَلَيْنَا سِلاَحَنَا فَأَمَّا
الطَّعَامُ فَلاَ حَاجَةَ لَنَا فِيهِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" سَآمُرُ فِي ذَلِكَ " . فَلَمَّا سَمِعَ بَنُو أُبَيْرِقٍ
أَتَوْا رَجُلاً مِنْهُمْ يُقَالُ لَهُ أَسِيرُ بْنُ عُرْوَةَ فَكَلَّمُوهُ فِي
ذَلِكَ فَاجْتَمَعَ فِي ذَلِكَ نَاسٌ مِنْ أَهْلِ الدَّارِ فَقَالُوا يَا رَسُولَ
اللَّهِ إِنَّ قَتَادَةَ بْنَ النُّعْمَانِ وَعَمَّهُ عَمَدَا إِلَى أَهْلِ بَيْتٍ
مِنَّا أَهْلِ إِسْلاَمٍ وَصَلاَحٍ يَرْمُونَهُمْ بِالسَّرِقَةِ مِنْ غَيْرِ
بَيِّنَةٍ وَلاَ ثَبْتٍ . قَالَ قَتَادَةُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَكَلَّمْتُهُ فَقَالَ " عَمَدْتَ إِلَى أَهْلِ بَيْتٍ ذُكِرَ
مِنْهُمْ إِسْلاَمٌ وَصَلاَحٌ تَرْمِيهِمْ بِالسَّرِقَةِ عَلَى غَيْرِ ثَبْتٍ
وَلاَ بَيِّنَةٍ " . قَالَ فَرَجَعْتُ وَلَوَدِدْتُ أَنِّي خَرَجْتُ مِنْ
بَعْضِ مَالِي وَلَمْ أُكَلِّمْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ
فَأَتَانِي عَمِّي رِفَاعَةُ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي مَا صَنَعْتَ فَأَخْبَرْتُهُ
بِمَا قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اللَّهُ
الْمُسْتَعَانُ فَلَمْ يَلْبَثْ أَنْ نَزَلَ الْقُرْآنُ : ( إِنَّا
أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا
أَرَاكَ اللَّهُ وَلاَ تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا ) بَنِي أُبَيْرِقٍ :
( وَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ ) أَىْ مِمَّا قُلْتَ لِقَتَادَةَ : ( إِنَّ
اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا * وَلاَ تُجَادِلْ عَنِ الَّذِينَ يَخْتَانُونَ
أَنْفُسَهُمْ إِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ مَنْ كَانَ خَوَّانًا أَثِيمًا *
يَسْتَخْفُونَ مِنَ النَّاسِ وَلاَ يَسْتَخْفُونَ مِنَ اللَّهِ ) إِلَى قَوْلِهِ
: ( غَفُورًا رَحِيمًا ) أَىْ لَوِ اسْتَغْفَرُوا اللَّهَ لَغَفَرَ لَهُمْ
: ( وَمَنْ يَكْسِبْ إِثْمًا فَإِنَّمَا يَكْسِبُهُ عَلَى نَفْسِهِ ) إِلَى
قَوْلِهِ : ( إِثْمًا مُبِينًا ) قَوْلُهُمْ لِلَبِيدٍ : وَلَوْلاَ فَضْلُ
اللَّهِ عَلَيْكَ وَرَحْمَتُهُ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ
أَجْرًا عَظِيمًا ) فَلَمَّا نَزَلَ الْقُرْآنُ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم بِالسِّلاَحِ فَرَدَّهُ إِلَى رِفَاعَةَ فَقَالَ قَتَادَةُ لَمَّا
أَتَيْتُ عَمِّي بِالسِّلاَحِ وَكَانَ شَيْخًا قَدْ عَسِيَ أَوْ عَشِيَ فِي
الْجَاهِلِيَّةِ وَكُنْتُ أُرَى إِسْلاَمَهُ مَدْخُولاً فَلَمَّا أَتَيْتُهُ
بِالسِّلاَحِ قَالَ يَا ابْنَ أَخِي هُوَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَعَرَفْتُ أَنَّ
إِسْلاَمَهُ كَانَ صَحِيحًا فَلَمَّا نَزَلَ الْقُرْآنُ لَحِقَ بَشِيرٌ
بِالْمُشْرِكِينَ فَنَزَلَ عَلَى سُلاَفَةَ بِنْتِ سَعْدِ ابْنِ سُمَيَّةَ
فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا
تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا
تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا * إِنَّ اللَّهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ
يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ
بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيدًا ) فَلَمَّا نَزَلَ عَلَى سُلاَفَةَ
رَمَاهَا حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ بِأَبْيَاتٍ مِنْ شِعْرِهِ فَأَخَذَتْ رَحْلَهُ
فَوَضَعَتْهُ عَلَى رَأْسِهَا ثُمَّ خَرَجَتْ بِهِ فَرَمَتْ بِهِ فِي الأَبْطَحِ
ثُمَّ قَالَتْ أَهْدَيْتَ لِي شِعْرَ حَسَّانَ مَا كُنْتَ تَأْتِينِي بِخَيْرٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْلَمُ أَحَدًا أَسْنَدَهُ غَيْرَ
مُحَمَّدِ بْنِ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيِّ . وَرَوَى يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ عَنْ عَاصِمِ
بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ مُرْسَلٌ لَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ
جَدِّهِ وَقَتَادَةُ بْنُ النُّعْمَانِ هُوَ أَخُو أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ
لأُمِّهِ وَأَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ اسْمُهُ سَعْدُ بْنُ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ
.
ক্বাতাদাহ্
ইবনুন নু’মান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে
বানূ উবাইরিক্ব নামে একটি পরিবার ছিল। ঐ পরিবারে বিশ্র, বুশাইর ও মুবাশশির নামে
তিনজন লোক ছিল। বুশাইর ছিল মুনাফিক্ব। সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর সঙ্গী সাথীদের কুৎসা বর্ণনামূলক কবিতা রচনা করত, তারপর অপরাপর আরবদের
প্রতি সেগুলো আরোপ করে বলত, অমুকে এরূপ এরূপ কথা বলেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণ যখন তা শুনতেন তখন বলতেন, আল্লাহর শপথ! ঐ
অপদার্থ (খবীস) লোকটি ব্যতীত আর কেউ এ কবিতা রচনা করেনি বা একই রকম কোন মন্তব্য
করতেন। যাই হোক তারা বলতেন, এটা ইবনুল উবাইরক্বেই (বুশাইর) কবিতা। বর্ণনাকারী
বলেন, জাহিলী ও ইসলামী উভয় যুগে এ পরিবারটি ছিল অভাবগ্রস্ত ও দুর্ভিক্ষ পীড়িত। মাদীনায়
লোকদের প্রধান খাদ্য ছিল খেজুর ও আটা। কেউ সম্পদশালী হলে সিরিয়া হতে কোন
খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসায়ী সাদা আটা বা ময়দা নিয়ে এলে সে ঐ (ব্যবসায়ী) কাফিলা হতে
ময়দা কিনে নিয়ে সঞ্চয় করে রাখত নিজের ব্যবহারের জন্য। অবশিষ্ট পরিবার-পরিজনের জন্য
থাকতো খেজুর ও গম।
একবারের ঘটনা, সিরিয়া হতে একটি খাদ্য ব্যবসায়ী কাফিলা এলো। আমার চাচা রিফা’আহ্
ইবনু যাইদ (তাদের হতে) এক বস্তা ময়দা কিনলেন এবং ভাঁড়ার ঘরে রেখে দিলেন। একই
জায়গায় অস্ত্রশস্ত্র, বর্ম ও তলোয়ারও ছিল। এদিকে ঘরের নিচ দিয়ে তার মাল আসবাব চুরি
হয়ে গেল। গোপনে সিঁদ কেটে উক্ত ঘরে রক্ষিত ময়দা ও অস্ত্রশস্ত্র লাপাত্তা হয়ে গেল।
ভোরবেলা আমার চাচা রিফাআহ আমার নিকট আসলেন এবং বললেন, হে ভাতিজা! আমার উপর তো
এরাতে যুলুম হয়ে গেল। আমার ভাঁড়ারের ঘরে সিঁদ কেটে খাবার (ময়দা) ও অস্ত্রশস্ত্র
চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মহল্লায় অনুসন্ধান চালিয়ে দেখলাম ও জিজ্ঞাসাবাদ করলাম।
আমাদের বলা হল, আমরা আজ রাতে বানূ উবাইরিক্বদের ঘরে আলো জ্বালাতে দেখেছি। আমাদের
ধারণা মতে তারা তোমাদের খাদ্যাদির তালাশেই আলো জ্বালিয়েছিল। রিফা’আহ্ বললেন, আমরা
যখন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলাম তখন উবাইরিক্বের লোকেরা বলল, আল্লাহর শপথ!
আমরা মনে করি তোমাদের এই চোর লাবীদ ইবনু সাহল ব্যতীত আর কেউ নয়। আমরা আগেই
মহল্লাবাসীর এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। লাবীদ ছিলেন আমাদেরই মধ্যকার একজন সৎ ও
ভালো মুসলিম। লাবীদ এ কথা শুনামাত্র খাপ হতে তলোয়ার বের করে বললেন, আমি চুরি করি?
আল্লাহর কসম! হয় আমার এ তলোয়ারের সাথে তোমার সাক্ষাত হবে অথবা তোমরা এ চুরির
সাক্ষ্য-প্রমাণ হাযির করবে। তখন লোকেরা বলল, যাও তুমি আমাদের সামনে থেকে সরে
দাঁড়াও। তুমি এ কাজ করোনি। এরপরও আমরা এ ব্যাপারে মহল্লায় জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত
হলাম যে, বানূ উবাইরিক্বই এ কান্ড ঘটিয়েছে। অবশেষে আমার চাচা আমাকে বললেন, হে
ভাতিজা! তুমি ঘটনার বৃত্তান্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
নিকট জানালে ভালো হত। ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে তাঁকে বললাম, আমাদের মহল্লায় একটি যালিম পরিবার
আছে এবং তারা আমার চাচা রিফা’আহ ইবনু যাইদের ভান্ডার কক্ষে সিঁদ কেটে তাঁর
অস্ত্রশস্ত্র ও খাদ্যাদি চুরি করে নিয়ে গেছে। আমাদের অস্ত্রশস্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার
ব্যবস্থা করুন, খাদ্যদ্রব্যাদির প্রয়োজন নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ আমি শীঘ্রই এ ব্যাপারে একটিা ফাইসালা করে দিচ্ছি। বনূ উবাইরিক্ব এ
কথা শুনার পর তাদের নিজেদের এক লোকের নিকট এলো, যার নাম ছিল উসাইর ইবনু উরওয়াহ।
তারা তার সাথে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করল। এ বাড়ির কিছু লোক একত্র হয়ে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ক্বাতাদাহ
ইবনুন নুমান ও তার চাচা আমাদের এক সৎ ও মুসলিম পরিবারের পেছনে লেগেছে এবং কোন
প্রমাণ ব্যতীতই তারা তাদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করছে। ক্বতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে (বিষয়টি নিয়ে) তাঁর সাথে
কথা বললাম। তিনি বললেনঃ তুমি এমন এক পরিবারের বিরুদ্ধে বিনা প্রমাণে চুরির অপবাদ
দিচ্ছ, যাদের সততা ও ইসলাম সম্পর্কে সুনাম আছে। ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি ফিরে
আসলাম। আমি মনে মনে বললাম, আমার এ সামান্য মাল হাতছাড়া হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমি যদি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে এ বিষয়ে আলাপ না করতাম!
এরপর আমার চাচা রিফা’আহ আমার নিকট এসে বললেন, হে ভাতিজা! (আমার ব্যাপারে) কি করেছ?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে যা কিছু বলেছেন, আমি তাকে
তা জানালাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলাই প্রকৃত সাহায্যকারী। এরপর কিছু সময় না
যেতেই কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয় (ব্যাখ্যাসহ অনুবাদ) : “নিশ্চয়ই আমি এ কিতাব সত্য
সহকারে তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যেন আল্লাহ তা’আলা তোমাকে যা জ্ঞাত করেছেন
তদনুসারে লোকদের মধ্যে মীমাংসা করতে পার। তুমি খিয়ানাতকারীদের পক্ষে (যেমন বনূ
উবাইরিক্বের সমর্থনে) বিতর্ককারী হয়ো না। আর তুমি আল্লাহ তা’আলার নিকট ক্ষমা
প্রার্থনা কর (ক্বাতাদাহকে যা বলেছ তার জন্য)। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা বড়ই ক্ষমাশীল
ও দয়াবান। যারা নিজেদেরকে প্রতারিত করে তুমি তাদের সাহায্য করো না। আল্লাহ তা’আলা
খিয়ানাতকারী পাপিষ্ঠদেরকে পছন্দ করেন না। এরা মানুষের হতে লুকাতে পারে, কিন্তু
আল্লাহ তা’আলা হতে গোপন হতে পারে না, কেননা তিনি তাদের সঙ্গেই থাকেন, যখন তারা
রাতের বেলা গোপনে গোপনে তাঁর মর্জি বিরুদ্ধ পরামর্শ করে। এদের সমস্ত কাজই আল্লাহ
তা’আলা জ্ঞাত। আহা! তোমরাই এসব অপরাধীর পক্ষ সমর্থনে পার্থিব জীবনে বিতর্ক করছ,
কিন্তু ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলার সামনে এদের পক্ষে কে ঝগড়া করবে অথবা কে
তাদের উকিল হবে? কেউ কোন পাপকর্ম করলে বা নিজের উপর যুলুম করলে তারপর আল্লাহ
তা’আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থণা করলে সে আল্লাহ তা’আলাকে ক্ষমাকারী ও অনুগ্রহশীল
পাবে (অর্থাৎ তারা আল্লাহ তা’আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থণা করলে আল্লাহ তা’আলা
তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন)। কেউ গুনাহের কাজ করলে সে তা নিজের ক্ষতির জন্যই করে।
আল্লাহ তা’আলা সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। কেউ কোন সমস্যা বা পাপকর্ম করে তারপর তা কোন
নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি আরোপ করলে (যেমন লাবীদ প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য) সে তো
সাংঘাতিক মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। তোমার প্রতি আল্লাহ তা’আলার
অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তাদের একটি দল তোমাকে পথভ্রষ্ট করতে চাইত। কিন্তু তারা
নিজেদের ব্যতীত অন্য কাউকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না এবং তোমার কোন ক্ষতিও করতে পারে
না। আল্লাহ তা’আলা তোমার প্রতি কিতাব ও হিকমাত অবতীর্ণ করেছেন এবং তোমাকে এমন
জ্ঞান জানিয়ে দিয়েছেন যা তুমি জানতে না। তোমার প্রতি আল্লাহ তা’আলার বিরাট অনুগ্রহ
আছে। তাদের বেশির ভাগ গোপন সলা-পরামর্শে কোন কল্যাণ নেই। অবশ্য কেউ কাউকে
দান-খাইরাতের কিংবা কোন ভালো কাজের জন্য অথবা লোকদের মাঝে শান্তি স্থাপনের উপদেশ
দিলে তাতে কল্যাণ আছে। আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে কেউ এরূপ করলে তাকে
অবশ্যই আমি মহাপুরষ্কার দিব”।
(সূরা আন – নিসাঃ ১০৫-১১৪)
কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
নিকট অপহৃত অস্ত্র ফেরত আনা হল। তিনি তা রিফা’আহ (রাঃ) কে ফিরিয়ে দিলেন।
ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) বলেন, আমার চাচা ছিলেন বৃদ্ধ। জাহিলিয়াতের যুগে তার রাতকানা রোগ
হয়েছিল, অথবা বলেছেন, জাহিলিয়াতের আমলেই বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন (আবূ ‘ঈসার সন্দেহ)।
আমার ধারণা ছিল যে, তিনি ইসলামে দাখিল ছিলেন। আমি তার নিকট অস্ত্র ফেরত নিয়ে আসলে
তিনি বললেন, হে ভাতিজা! এটা আমি আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় দান করে দিলাম। এবার আমার
প্রত্যয় জন্মালো যে, নিঃসন্দেহে তিনি একজন খাঁটি মুসলিম। কুরআনের উক্ত আয়াতসমূহ
অবতীর্ণ হওয়ার পর বুশাইর মুশরিকদের সাথে গিয়ে মিলিত হয় এবং সাদ ইবনু সুমাইয়্যার
কন্যা সুলাফার নিকট অবস্থান গ্রহণ করে। তখন আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “কারো
নিকট সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ
ব্যতীত অন্য পথের অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় আমরা সেদিকেই তাকে ফিরিয়ে
দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব। আর তা কত মন্দ আবাস। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা
তাঁর সাথে শারীক করাকে ক্ষমা করেন না, তা ব্যতীত সবকিছু যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং
কেউ আল্লাহ তা’আলার সাথে শারীক করলে সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়”- (সূরা আন –নিসা
১১৫-১১৬)।
বুশাইর যখন সুলাফার নিকট আশ্রয় নিল, তখন হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) কিছু কবিতার চরণ
দ্বারা সুলাফার নিন্দাবাদ করেন। এতে সুলাফা বুশাইরের মালপত্র নিজ মাথায় তুলে নিয়ে
তা আবতাহ নামক স্থানে গিয়ে ফেলে দিল। সে আরো বলল, তুমি আমার জন্য হাসসানের
(নিন্দাসূচক) কবিতা উপহার নিয়ে এলে, আমার জন্য উত্তম কিছু নিয়ে আসতে পারলে না।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। মুহাম্মদ ইবনু সালামাহ্
আল –হাররানী ব্যতীত আর কেউ এটিকে মুসনাদরূপে রিওয়ায়াত করেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
এ হাদীসটি মুহাম্মদ ইবনু ইসহাক্ব – আসিম ইবনু ‘উমার ইবনু ক্বাতাদাহ সূত্রে ইউনুস ইবনু
বুকাইর প্রমুখ মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। তাতে “তাঁর বাবা-তার দাদা” সূত্রের উল্লেখ
নেই। ক্বাতাদাহ ইবনুন নুমান মাতার দিক হতে আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) এর ভাই। আবূ সা’ঈদ
(রাঃ) এর নাম সা’দ ইবনু মালিক ইবনু সিনান।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০৩৭
حَدَّثَنَا خَلاَّدُ بْنُ أَسْلَمَ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا
النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ ثُوَيْرِ بْنِ أَبِي فَاخِتَةَ،
عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ مَا فِي الْقُرْآنِ آيَةٌ
أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ هَذِهِ الآيَةِ : ( إِنَّ اللَّهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ
يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ ) قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو فَاخِتَةَ اسْمُهُ سَعِيدُ بْنُ عِلاَقَةَ
وَثُوَيْرٌ يُكْنَى أَبَا جَهْمٍ وَهُوَ رَجُلٌ كُوفِيٌّ مِنَ التَّابِعِينَ
وَقَدْ سَمِعَ مِنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ الزُّبَيْرِ . وَابْنُ مَهْدِيٍّ كَانَ
يَغْمِزُهُ قَلِيلاً .
আলী
ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমার কাছে কুরআনের এ আয়াত হতে
পছন্দনীয় আয়াত আর কোনটি নেইঃ “নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর সাথে অংশীদার করাকে মাফ করেন
না; তা ছাড়া সব কিছু যাকে ইচ্ছা মাফ করেন”।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ ফাখিতার নাম
সাঈদ ইবনু ইলাকা। সুআইরের উপনাম আবূ জাহম। ইনি কূফার বাসিন্দা তাবেঈ। তিনি ইবনু উমার
(রাঃ), ইবনু যুবাইর (রাঃ) হতে হাদীস শুনেছেন। ইবনু মাহদী তাকে কিছুটা দোষারোপ করতেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي عُمَرَ، وَعَبْدُ اللَّهِ
بْنُ أَبِي زِيَادٍ الْمَعْنَى، وَاحِدٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ، عَنِ ابْنِ مُحَيْصِنٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْْ : (مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا
يُجْزَ بِهِ ) شَقَّ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ فَشَكَوْا ذَلِكَ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " قَارِبُوا وَسَدِّدُوا وَفِي
كُلِّ مَا يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ كَفَّارَةٌ حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا أَوِ
النَّكْبَةِ يُنْكَبُهَا " . ابْنُ مُحَيْصِنٍ هُوَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ مُحَيْصِنٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
.
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “কেউ মন্দ
কাজ করলে তার প্রতিফল সে পাবে”- (সূরা আন –নিসা ১২৩) আয়াত অবতীর্ণ হলে মুসলিমদের
নিকট বিষয়টি খুবই গুরুতর মনে হয়। তাই তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর নিকট এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন। তিনি বললেনঃ তোমরা সত্যের নিকটবর্তী থাক এবং সরল
সোজা পথ তালাশ কর। মু’মিনের প্রতিটি বিপদ-মুসীবত ও কষ্ট-ক্লেশ, এমনকি তার দেহে কোন
কাঁটা বিদ্ধ হলে বা তার উপর কোন আকস্মিক বিপদ এলে তার দ্বারাও তার গুনাহ্র কাফ্ফারা
(ক্ষতিপূরণ) হয়ে যায়।
সহীহ : তাখরীজুত তাহবীয়া (৩৯০), যঈফাহ (২৯২৪) নং হাদীসের অধীনে, মুসলিম।
ইবনু মুহাইসিনের নাম ‘আম্র ইবনু ‘আবদুর রাহমান ইবনু মুহাইসিন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৩৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ
حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ، أَخْبَرَنِي
مَوْلَى ابْنِ سَبَّاعٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يُحَدِّثُ
عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، قَالَ كُنْتُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَأُنْزِلَتْ عَلَيْهِ هَذِهِ الآيَةُ : ( مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا
يُجْزَ بِهِ وَلاَ يَجِدْ لَهُ مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلِيًّا وَلاَ نَصِيرًا )
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا أَبَا بَكْرٍ أَلاَ
أُقْرِئُكَ آيَةً أُنْزِلَتْ عَلَىَّ " . قُلْتُ بَلَى يَا رَسُولَ
اللَّهِ . قَالَ فَأَقْرَأَنِيهَا فَلاَ أَعْلَمُ إِلاَّ أَنِّي قَدْ كُنْتُ
وَجَدْتُ انْقِصَامًا فِي ظَهْرِي فَتَمَطَّأْتُ لَهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " مَا شَأْنُكَ يَا أَبَا بَكْرٍ " . قُلْتُ
يَا رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي وَأَيُّنَا لَمْ يَعْمَلْ سُوءًا
وَإِنَّا لَمَجْزِيُّونَ بِمَا عَمِلْنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " أَمَّا أَنْتَ يَا أَبَا بَكْرٍ وَالْمُؤْمِنُونَ فَتُجْزَوْنَ
بِذَلِكَ فِي الدُّنْيَا حَتَّى تَلْقَوُا اللَّهَ وَلَيْسَ لَكُمْ ذُنُوبٌ
وَأَمَّا الآخَرُونَ فَيُجْمَعُ ذَلِكَ لَهُمْ حَتَّى يُجْزَوْا بِهِ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَفِي
إِسْنَادِهِ مَقَالٌ . مُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ
ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَأَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَمَوْلَى ابْنِ
سَبَّاعٍ مَجْهُولٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا
الْوَجْهِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ وَلَيْسَ لَهُ إِسْنَادٌ صَحِيحٌ أَيْضًا . وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ .
আবূ
বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে হাজির থাকাবস্থায় তাঁর উপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “যে
কেউ খারাপ কাজ করবে সে তার প্রতিফল পাবেই এবং সে নিজের জন্য আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়া
কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না” (সূরাঃ আন-নিসা- ১২৩)। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে আবূ বাক্র! আমি কি আপনাকে ঐ আয়াত
পাঠ করে শুনাব না যা আমার উপর অবতীর্ণ হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল!
অবশ্যই। তিনি আমাকে আয়াতটি পাঠ করে শুনান। আমি আর কিছুই জানি না, তবে তখন আমার মনে
হল যে, আমার শিরদাঁড়া ভেঙ্গে গেছে। তাই আমি পিঠমোড় দিলাম। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেনঃ হে আবূ বাক্র! আপনার কি হল? আমি
বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনার প্রতি আমার পিতামাতা উৎসর্গীত হোক। আমাদের মধ্যে
এমন কে আছে যে খারাপ কাজ করে না? আমাদের প্রতিটি কাজের জন্যই কি প্রতিফল ভোগ করতে
হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ বাক্র! আপনি
এবং মু’মিনগণ এ দুনিয়াতেই তার প্রতিফল পেয়ে যাবেন। অবশেষে আপনারা আল্লাহ্ তা’আলা
এর সাথে পাপমুক্ত অবস্থায় মিলিত হবেন। পক্ষান্তরে অপরাপর লোকদের খারাপ কাজগুলো
তাদের জন্য সঞ্চিত করে রাখা হবে। অবশেষে হাশরের দিন তাদেরকে তার প্রতিফল দেয়া হবে।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। এটির সনদসূত্র সমালোচিত।
এ হাদীসের রাবী মূসা ইবনু উবাইদা হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ ও আহমাদ
ইবনু হাম্বল (রাঃ) তাকে যঈফ বলেছেন। ইবনু সিবার মুক্তগোলাম অখ্যাত ও অজ্ঞাত। হাদীসটি
ভিন্নরূপে আবূ বাক্র (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, এর সনদও সহীহ নয়। এ অনুচ্ছেদে আইশা
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৪০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ مُعَاذٍ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ خَشِيَتْ سَوْدَةُ أَنْ يُطَلِّقَهَا،
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ لاَ تُطَلِّقْنِي وَأَمْسِكْنِي
وَاجْعَلْ يَوْمِي لِعَائِشَةَ فَفَعَلَ فَنَزَلَتْ : ( فَلاَ جُنَاحَ
عَلَيْهِمَا أَنْ يُصْلِحَا بَيْنَهُمَا صُلْحًا وَالصُّلْحُ خَيْرٌ ) . فَمَا
اصْطَلَحَا عَلَيْهِ مِنْ شَيْءٍ فَهُوَ جَائِزٌ كَأَنَّهُ مِنْ قَوْلِ ابْنِ عَبَّاسٍ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাওদা (রাঃ)
এর আশংকা হল যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে তালাক দিবেন। তাই
তিনি বললেন, আপনি আমাকে তালাক না দিয়ে আপনার বিবাহবন্ধনে স্থির রাখুন। আমার জন্য
নির্দ্ধারিত দিনটি আপনি ‘আয়িশাহ্র নিকটই থাকুন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাই করলেন। এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয় : ‘তবে তারা
(স্বামী-স্ত্রী) আপোষ-নিষ্পত্তি করতে চাইলে তাদের কোন গুনাহ নেই এবং
আপোষ-নিষ্পত্তিই শ্রেয়” – (সূরা আন –নিসা ১২৮)। যে বিষয়ের উপর তারা আপোষ করবে তা
জায়িয। শেষের বক্তব্যটুকু ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর।
সহীহ : ইরওয়াহ (২০২০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৪১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا
مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ، عَنْ أَبِي السَّفَرِ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ آخِرُ آيَةٍ
أُنْزِلَتْ أَوْ آخِرُ شَيْءٍ نَزَلَ : ( يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ
يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
وَأَبُو السَّفَرِ اسْمُهُ سَعِيدُ بْنُ أَحْمَدَ الثَّوْرِيُّ وَيُقَالُ ابْنُ
يُحْمِدَ .
আল
–বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (উত্তরাধিকার
প্রসঙ্গে) সবশেষে যে আয়াত অবতীর্ণ হয় তা হল : “লোকেরা তোমার নিকট বিধান জানতে চায়।
বল, পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে বিধান
দিচ্ছেন…..” (সূরা আন –নিসা ১৭৬)।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (২৫৭০), বুখারী (৪৬০৫), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আবুস সাফারের নাম সাঈদ
ইবনু আহমাদ আস্ –সাওরী। তিনি ইবনু ইউহ্মিদ আস –সাওরী বলেও কথিত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ،
عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ : ( يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ )
فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " تُجْزِيكَ آيَةُ الصَّيْفِ
" .
আল
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর
রাসূল! “লোকেরা আপনার নিকট বিধান জানতে চায়। বলুন, পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি
প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের বিধান দিচ্ছেন……” – (সূরা আন্ –নিসা ১৭৬)। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তোমার জন্য এ ব্যাপারে
গ্রীষ্মকালীন ঐ আয়াতটিই (সূরা আন্ –নিসা ১৭৬) যথেষ্ট।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (২৫৭১), মুসলিম ‘উমার (রাঃ) হতে।
ইমাম বাগাবী বলেন, এ আয়াত (সূরা আন্–নিসা ১৭৬) , বিদায়
হাজ্জের সময় গ্রীষ্মকালে অবতীর্ণ হয়, তাই একে গ্রীষ্মকালীন আয়াত বলা হয়। (অনুবাদক)
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬
সূরা
আল –মায়িদাহ্
৩০৪৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مِسْعَرٍ،
وَغَيْرِهِ، عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، قَالَ قَالَ
رَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ
لَوْ عَلَيْنَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : ( الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ
دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا
) لاَتَّخَذْنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ عِيدًا . فَقَالَ لَهُ عُمَرُ بْنُ
الْخَطَّابِ إِنِّي أَعْلَمُ أَىَّ يَوْمٍ أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ أُنْزِلَتْ
يَوْمَ عَرَفَةَ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
তারিক্ব
ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী
‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কে বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন! “আজ আমি তোমাদের জন্য
তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং
ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম” – (সূরা আল –মায়িদাহ্ : ৩) আয়াতটি যদি
আমাদের উপর অবতীর্ণ হত তাহলে আমরা উক্ত দিনকে ঈদের (উৎসবের) দিন হিসেবে নির্দ্ধারণ
করতাম। ‘উমার (রাঃ) বললেন, নিশ্চয়ই আমি জানি কোন দিন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। এটি
(বিদায় হাজ্জে) ‘আরাফার দিন শুক্রবারে অবতীর্ণ হয়েছিল।
সহীহ : বুখারী (৪৬০৬), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৪৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ أَبِي عَمَّارٍ، قَالَ
قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ : ( الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ
وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا )
وَعِنْدَهُ يَهُودِيٌّ فَقَالَ لَوْ أُنْزِلَتْ هَذِهِ عَلَيْنَا لاَتَّخَذْنَا
يَوْمَهَا عِيدًا . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَإِنَّهَا نَزَلَتْ فِي يَوْمِ عِيدٍ
فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ وَيَوْمِ عَرَفَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَهُوَ صَحِيحٌ .
আম্মার
ইবনু আবী ‘আম্মার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করলেন (অনুবাদ) : “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের
জন্য পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে
তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম” – (সূরা আল –মায়িদাহ ৩)। তাঁর নিকট এক ইয়াহূদী উপস্থিত
ছিল। সে বলল, আমাদের উপর এরূপ একটি আয়াত অবতীর্ণ হলে সেই দিনকে আমরা অবশ্যই ‘ঈদের
দিন হিসেবে পালন করতাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এটি তো (আমাদের) ‘ঈদের দিনেই
অবতীর্ণ হয়েছে : জুমুআর দিন ও ‘আরাফার দিন।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর রিওয়ায়াত
হিসেবে হাসান গারীব। হাদীসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৪৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
يَمِينُ الرَّحْمَنِ مَلأَى سَحَّاءُ لاَ يَغِيضُهَا اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ قَالَ
أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُنْذُ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ فَإِنَّهُ لَمْ
يَغِضْ مَا فِي يَمِينِهِ وَعَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَبِيَدِهِ الأُخْرَى
الْمِيزَانُ يَرْفَعُ وَيَخْفِضُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهَذَا الْحَدِيثُ فِي تَفْسِيرِ هَذِهِ الآيَةِ : (
وَقََالَتِ الْيَهُودُ يَدُ اللَّهِ مَغْلُولَةٌ غُلَّتْ أَيْدِيهِمْ وَلُعِنُوا
بِمَا قَالُوا بَلْ يَدَاهُ مَبْسُوطَتَانِ يُنْفِقُ كَيْفَ يَشَاءُ ) وَهَذَا
حَدِيثٌ قَدْ رَوَتْهُ الأَئِمَّةُ نُؤْمِنُ بِهِ كَمَا جَاءَ مِنْ غَيْرِ أَنْ
يُفَسَّرَ أَوْ يُتَوَهَّمَ هَكَذَا قَالَ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الأَئِمَّةِ
مِنْهُمُ الثَّوْرِيُّ وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَابْنُ عُيَيْنَةَ وَابْنُ
الْمُبَارَكِ إِنَّهُ تُرْوَى هَذِهِ الأَشْيَاءُ وَيُؤْمَنُ بِهَا وَلاَ يُقَالُ
كَيْفَ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দয়াময় আল্লাহ তা’আলা ডান হাত পূর্ণ।
সর্বদা তা অনুগ্রহ ঢালছে। রাত দিনের অবিরাম দান তাতে কখনো কমতি ঘটাতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, তোমরা লক্ষ্য করেছ কি যেদিন থেকে তিনি আসমান-যামীন সৃষ্টি করেছেন সেদিন
হতে কত না দান করে আসছেন, অথচ তাঁর ডান হাতে যা আছে তাতে কিছুই কমতি হয়নি।
(সৃষ্টির পূর্বে) তাঁর আরশ ছিল পানির উপর। তাঁর অপর হাতে রয়েছে মীযান
(দাড়ি-পাল্লা)। তিনি তা নীচু করেন ও উত্তোলন করেন (সৃষ্টির রিযিক নির্ধারণ করেন)।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (১৯৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি হল নিম্নোক্ত
আয়াতের ব্যাখ্যাস্বরূপ : “ইয়াহূদীরা বলে, আল্লাহ তা’আলার হাত রুদ্ধ। ওরাই আসলে রুদ্ধহস্ত
এবং ওরা যা বলে তজ্জন্য ওরা অভিশপ্ত। বরং আল্লাহ তা’আলার উভয় হাতই প্রসারিত, যেভাবে
ইচ্ছা তিনি দান করেন” – (সূরা আল –মায়িদাহ : ৬৪) ।
ইমামগণ বলেন, এ হাদীস যেরূপে (আমাদের নিকট) এসেছে, কোনরূপ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও সন্দেহ-সংশয়
ব্যতীতই তার উপর সেভাবেই ঈমান আনতে হবে। একাধিক ইমাম এ কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন
সুফইয়ান সাওরী, মালিক ইবনু আনাস, ইবনু উয়াইনাহ, ইবনুল মুবারাক (রহঃ) প্রমুখ। তাদের
মতে এরূপ বিষয় বর্ণনা করা যাবে, এগুলোর উপর ঈমান রাখতে হবে, কিন্তু তা কেমন এ কথা বলা
যাবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৪৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ،
حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم يُحْرَسُ حَتَّى نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : ( وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ
النَّاسِ ) فَأَخْرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأْسَهُ مِنَ
الْقُبَّةِ فَقَالَ لَهُمْ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ انْصَرِفُوا فَقَدْ
عَصَمَنِي اللَّهُ " .
আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে (নিরাপত্তামূলক) পাহারা দেয়া হত। তারপর আয়াত অবতীর্ণ হল (অনুবাদ) :
“আল্লাহ তা’আলা তোমাকে মানুষ হতে তাঁর রক্ষা করবেন” – (সূরা আল –মায়িদাহ ৬৭)।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের ঘর হতে মাথা বের করে
পাহারাদারগণকে বললেন, হে লোকজন! তোমরা (আমার পাহারা হতে) চলে যাও। কারণ আল্লাহ
তা’আলাই আমার হিফাজাতের দায়িত্ব নিয়েছেন।
নাসর ইবনু ‘আলী মুসলিম ইবনু ইবরাহীম হতে উক্ত সনদ অনুরূপ
বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীসটি কেউ কেউ জুরাইরী হতে ‘আবদুল্লাহ
ইবনু শাক্বীক্বের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কে পাহারা দেয়া হত”। তাতে তারা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) এর উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০৪৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ
بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ بَذِيمَةَ، عَنْ أَبِي
عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " لَمَّا وَقَعَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ فِي الْمَعَاصِي
نَهَتْهُمْ عُلَمَاؤُهُمْ فَلَمْ يَنْتَهُوا فَجَالَسُوهُمْ فِي مَجَالِسِهِمْ
وَوَاكَلُوهُمْ وَشَارَبُوهُمْ فَضَرَبَ اللَّهُ قُلُوبَ بَعْضِهِمْ بِبَعْضٍ
وَلَعَنَهُمْ عَلَى لِسَانِ دَاوُدَ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ذَلِكَ بِمَا عَصَوْا
وَكَانُوا يَعْتَدُونَ " . قَالَ فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم وَكَانَ مُتَّكِئًا فَقَالَ " لاَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ حَتَّى
تَأْطِرُوهُمْ عَلَى الْحَقِّ أَطْرًا " . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ قَالَ يَزِيدُ وَكَانَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ لاَ يَقُولُ فِيهِ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ
رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي الْوَضَّاحِ
عَنْ عَلِيِّ بْنِ بَذِيمَةَ عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَبَعْضُهُمْ يَقُولُ عَنْ أَبِي
عُبَيْدَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বানূ ইসরাঈল গর্হিত কাজে জড়িত হলে
তাদের বিজ্ঞ আলিমগণ তাদেরকে বাধা দেন। কিন্তু তারা (পাপাচার থেকে) ক্ষান্ত হয়নি।
এতদসত্ত্বেও তাদের আলিমগণ তাদের সাথে তাদের সভা সমিতিতে উঠাবসা ঠিক রাখে এবং তাদের
সাথে এক সঙ্গে ভোজসভায় যোগদান করে। ফলে আল্লাহ্ তা’আলা তাদের কারো হৃদয়সমূহ অন্য
কারো (পাপীদের) হৃদয়ের সাথে একাকার করে দিলেন এবং দাঊদ (আঃ) ও ঈসা ইবনু মারইয়াম
(আঃ)-এর যবানীতে তাদেরকে অভিসম্পাত করলেন। কেননা, তারা বিরুদ্ধাচারী হয়ে গিয়েছিল
এবং সীমালংঘন করেছিল। রাবী বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি এবার সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেনঃ কসম সেই সত্তার যাঁর
হাতে আমার জান! ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা মুক্তি পাবে না যতক্ষণ না তোমরা পথভ্রষ্ট
লোকদের (শক্তভাবে) বাধা দিচ্ছ।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪০০৬)
আবূ ঈসা বলেনঃ আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান বলেন, ইয়াযীদ
বলেছেন, সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) উক্ত হাদীসের সনদে আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর উল্লেখ করেননি।
এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনু মুসলিম ইবনু আবুল ওয়ায্যাহ-আলী ইবনু
বাযীমা হতে তিনি আবূ উবাইদা হতে তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এরকমই বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ এ হাদীস আবূ
উবাইদার সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মুরসালরূপে বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৪৮
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ بَذِيمَةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ
لَمَّا وَقَعَ فِيهِمُ النَّقْصُ كَانَ الرَّجُلُ فِيهِمْ يَرَى أَخَاهُ عَلَى
الذَّنْبِ فَيَنْهَاهُ عَنْهُ فَإِذَا كَانَ الْغَدُ لَمْ يَمْنَعْهُ مَا رَأَى
مِنْهُ أَنْ يَكُونَ أَكِيلَهُ وَشَرِيبَهُ وَخَلِيطَهُ فَضَرَبَ اللَّهُ قُلُوبَ
بَعْضِهِمْ بِبَعْضٍ وَنَزَلَ فِيهِمُ الْقُرْآنُ فَقَالَ : ( لُعِِنَ
الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى لِسَانِ دَاوُدَ وَعِيسَى ابْنِ
مَرْيَمَ ذَلِكَ بِمَا عَصَوْا وَكَانُوا يَعْتَدُونَ ) " . فَقَرَأَ
حَتَّى بَلَغَ : (وَلَوْ كَانُوا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالنَّبِيِّ وَمَا
أُنْزِلَ إِلَيْهِ مَا اتَّخَذُوهُمْ أَوْلِيَاءَ وَلَكِنَّ كَثِيرًا مِنْهُمْ
فَاسِقُونَ ) قَالَ وَكَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُتَّكِئًا
فَجَلَسَ فَقَالَ " لاَ حَتَّى تَأْخُذُوا عَلَى يَدَىِ الظَّالِمِ
فَتَأْطِرُوهُ عَلَى الْحَقِّ أَطْرًا " .
আবূ
উবাইদা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বানী ইসরাঈলের মধ্যে যখন দোষ পদ-স্খলন
ছড়িয়ে পড়তে লাগলো তখন তাদের একজন অন্যজনকে পাপে নিমজ্জিত দেখলে তাকে তা থেকে নিষেধ
করত। কিন্তু সে তাকে যা করতে দেখেছে তা পরদিন তাকে তার সাথে পানাহার ও এক সাথে
মাজলিসে উঠাবাসা হতে নিবৃত্ত রাখল না। অবশেষে আল্লাহ্ তা’আলা তাদের হৃদয়সমূহকে
পরস্পর একাকার করে দিলেন। তাদের প্রসঙ্গেই কুরআন অবতীর্ণ হয়। তিনি পাঠ করেনঃ “বানী
ইসরাঈলের মধ্যে যেসব লোক কুফরী করেছিল তাদের প্রতি দাঊদ ও মারইয়ামের পুত্র ঈসার
যবানে অভিশাপ করা হয়েছে। কেননা, তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী”। তিনি তিলাওয়াত
করতে করতে “তারা আল্লাহ্ তা’আলাতে, নবীতে ও তার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ঈমান
আনলে ওদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না, কিন্তু তাদের অনেকেই ফাসিক” (সূরাঃ
আল-মায়িদাহ- ৭৯-৮১) পর্যন্ত পৌঁছলেন। রাবী বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার নবী হেলান দেয়া
অবস্থায় ছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসে বলেনঃ না, তোমরা যালিমের হাত ধরে তাকে সত্যের
উপর প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত রক্ষা পাবে না।
যঈফ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
বুনদার আবূ দাঊদ-আত-তাইয়া লিসী হতে তিনি মুহাম্মদ ইবনু
মুসলিম ইবনু আবুল ওয়ায্যাহ হতে তিনি আলী ইবনু বাযীমা হতে তিনি আবূ উবাইদা হতে তিনি
আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই
রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৪৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ،
عَنْ عُمَرَ بْنِ شُرَحْبِيلَ أَبِي مَيْسَرَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ،
أَنَّهُ قَالَ اللَّهُمَّ بَيِّنْ لَنَا فِي الْخَمْرِ بَيَانَ شِفَاءٍ فَنَزَلَتِ
الَّتِي فِي الْبَقَرَةِ : ( يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ )
الآيَةَ فَدُعِيَ عُمَرُ فَقُرِئَتْ عَلَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ بَيِّنْ لَنَا
فِي الْخَمْرِ بَيَانَ شِفَاءٍ فَنَزَلَتِ الَّتِي فِي النِّسَاءِأَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا لاَ تَقْرَبُوا الصَّلاَةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى ) فَدُعِيَ عُمَرُ
فَقُرِئَتْ عَلَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ بَيِّنْ لَنَا فِي الْخَمْرِ بَيَانَ
شِفَاءٍ فَنَزَلَتِ الَّتِي فِي الْمَائِدَةِ : ( إِنَّمَا يُرِيدُ
الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ
وَالْمَيْسِرِ ) إِلَى قَوْلِهَِلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ ) فَدُعِيَ عُمَرُ
فَقُرِئَتْ عَلَيْهِ فَقَالَ انْتَهَيْنَا انْتَهَيْنَا . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَقَدْ رُوِيَ عَنْ إِسْرَائِيلَ هَذَا الْحَدِيثُ مُرْسَلٌ .
উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহ!
শরাবের ব্যাপারে আমাদের জন্য পরিপূর্ণ ও সুষ্পষ্ট বর্ণনা দিন। এ প্রসঙ্গেই সূরা আল
–বাক্বারার নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “লোকে তোমাকে মদ ও জুয়া প্রসঙ্গে
প্রশ্ন করে। বল, উভয়ের মধ্যে আছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য উপকারও। কিন্তু এগুলোর
পাপ এগুলোর উপকার অপেক্ষা বেশী” (সূরা আল –বাক্বারাহ ২১৯)।
‘উমার (রাঃ) কে ডেকে এনে তাকে উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করে শুনানো হল। তিনি বললেন, হে
আল্লাহ! শরাবের ব্যাপারে আমাদের আরও সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিন। তখন সূরা আন
–নিসার নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত
অবস্থায় নামাযের নিকটেও যেও না, যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার” – (সূরা আন
–নিসা ৪৩)। ‘উমার (রাঃ) কে ডেকে এনে তাকে উক্ত আয়াত পাঠ করে শুনানো হল। ‘উমার
(রাঃ) আবারো বললেন, হে আল্লাহ! শরাবের ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্ট ও পূর্ণ বিবরণ
দিন। তারপর সূরা আল –মাইদার এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “শাইতান তো শরাব ও জুয়ার
মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার
স্মরণে ও নামাযে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?” (সূরা আল –মায়িদাহ
৯১) উমার (রাঃ) কে ডেকে এনে তাকে এ আয়াত পাঠ করে শুনানো হল। তিনি বললেন, আমরা
নিবৃত হলাম, আমরা নিবৃত হলাম।
সহীহ : সহীহাহ (২৩৪৮) ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, ইসরাঈলের সূত্রে এটি মুরসালরূপে বর্ণিত
হয়েছে। মুহাম্মদ ইবনুল আলা –ওয়াকী’ হতে, তিনি ইসরাঈল হতে, তিনি আবূ ইসহাক হতে, তিনি
আবূ মাইসারাহ (রহঃ) হতে এই সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বললেন,
হে আল্লাহ! শরাব ও মাদকদ্রব্য প্রসঙ্গে আমাদের জন্য সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্হ বিবরণ দিন…
তারপর তিনি পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। এটি মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফের হাদীসের
চাইতে অনেক বেশী সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ مَاتَ
رِجَالٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَبْلَ أَنْ تُحَرَّمَ
الْخَمْرُ فَلَمَّا حُرِّمَتِ الْخَمْرُ قَالَ رِجَالٌ كَيْفَ بِأَصْحَابِنَا
وَقَدْ مَاتُوا يَشْرَبُونَ الْخَمْرَ فَنَزَلَتْ : ( لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ
آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا إِذَا مَا اتَّقَوْا
وَآمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আল–বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, শরাব হারাম
হওয়ার পূর্বেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীদের বেশ কয়েকজন
মারা যান। শরাব হারাম হওয়ার পর লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, আমাদের ঐ সকল সাথীদের কি
হবে, যারা শরাব পানে অভ্যস্ত থাকা অবস্থায় মারা গেছেন! তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ)
: “যারা ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে, তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে সেজন্য তাদের
কোনরূপ গুনাহ নেই, যদি তারা সাবধান হয় এবং ঈমান আনে ও উত্তম কাজ করে, সাবধান হয় ও
ঈমান আনে, আবার সাবধান হয় ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ তা’আলা সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন”
– (সূরা আল –মায়িদাহ ৯৩)।
পরবর্তী হাদীসের সহায়তায় সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। শু’বাহ্ (রহঃ)
আবূ ইসহাক (রহঃ) এর বরাতে এটি আল –বারাআ (রাঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন। বুন্দার এটি
আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫১
وَقَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، أَيْضًا
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ، مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ بُنْدَارٌ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، بِهَذَا قَالَ قَالَ
الْبَرَاءُ بْنُ عَازِبٍ مَاتَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم وَهُمْ يَشْرَبُونَ الْخَمْرَ فَلَمَّا نَزَلَ تَحْرِيمُهَا قَالَ نَاسٌ مِنْ
أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَيْفَ بِأَصْحَابِنَا الَّذِينَ
مَاتُوا وَهُمْ يَشْرَبُونَهَا فَنَزَلَتْْ : ( لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ
آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল –বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ)
বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বেশ কিছু সাহাবী শরাব নিষিদ্ধ
হওয়ার পূর্বে মদ্যপানে অভ্যস্ত অবস্থায় মারা যান। শরাব হারাম হওয়া সম্পর্কিত আয়াত
অবতীর্ণ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথীদের কেউ কেউ বলেন,
আমাদের ঐসব সাথীদের কি হবে, যারা শরাব পানে অভ্যস্ত থাকাকালে মারা গেছেন! তখন এ
আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “যারা ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে তারা পূর্বে যা
ভক্ষণ করেছে, সেজন্য তাদের কোন গুনাহ নেই…..” – (সূরা আল –মায়িদাহ ৯৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ
أَبِي رِزْمَةَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ الَّذِينَ مَاتُوا وَهُمْ
يَشْرَبُونَ الْخَمْرَ لَمَّا نَزَلَ تَحْرِيمُ الْخَمْرِ فَنَزَلَتْْ : (
لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا
إِذَا مَا اتَّقَوْا وَآمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদ্যপান
হারাম হওয়ার পর লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল “মদ্যপান হারাম হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত
যারা শরাবপানে অভ্যস্ত থাকাকালে মারা গেছে তাদের সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তখন
নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “যারা ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে তারা
পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে সেজন্য তাদের কোনরূপ গুনাহ নেই, যদি তারা সাবধান হয় এবং
ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে” – (সূরা আল –মায়িদাহ ৯৩)।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫৩
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ،
عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْْ : ( لَيْسَ عَلَى
الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا إِذَا مَا
اتَّقَوْا وَآمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ) قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " أَنْتَ مِنْهُمْ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “যারা ঈমান
এনেছে ও নেক কাজ করেছে তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে সেজন্য তাদের কোন গুনাহ নেই…”
(সূরা আল –মায়িদাহ ৯৩) , এই আয়াত অবতীর্ণ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেন, তুমিও তাদের অন্তর্ভূক্ত।
সহীহ : মুসলিম (১/১৪৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫৪
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ أَبُو حَفْصٍ الْفَلاَّسُ، حَدَّثَنَا
أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَجُلاً، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا
رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي إِذَا أَصَبْتُ اللَّحْمَ انْتَشَرْتُ لِلنِّسَاءِ
وَأَخَذَتْنِي شَهْوَتِي فَحَرَّمْتُ عَلَىَّ اللَّحْمَ . فَأَنْزَلَ اللَّهُ
: ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ
اللَّهُ لَكُمْ وَلاَ تَعْتَدُوا إِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ
وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلاَلاً طَيِّبًا ) قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ سَعْدٍ مُرْسَلاً
لَيْسَ فِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَرَوَاهُ خَالِدٌ الْحَذَّاءُ عَنْ عِكْرِمَةَ
مُرْسَلاً .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ রাসূল! আমি গোশ্ত খেলে স্ত্রীসহবাসের জন্য
অস্থির হয়ে পড়ি এবং যৌনাবেগ আমাকে ব্যাকুল করে তোলে। তাই আমি নিজের জন্য গোশত
খাওয়া হারাম করে নিয়েছি। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ)
: “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য উৎকৃষ্ট ও পবিত্র যেসব বস্তু হালাল
করেছেন, তোমরা সেগুলোকে হারাম করে নিও না এবং সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ
তা’আলা সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে যা কিছু হালাল ও
উৎকৃষ্ট রিযিক দান করেছেন তোমরা তা হতে খাও এবং আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর, যার প্রতি
তোমরা ঈমান এনেছ” – (সূরা আল –মায়িদাহ্ ৮৭, ৮৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ‘উসমান ইবনু সা’দ
হতে কেউ কেউ এটিকে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। তাতে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর উল্লেখ নেই।
খালিদ এ হাদীসটি ইকরিমাহ (রহঃ) হতে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ
وَرْدَانَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي
الْبَخْتَرِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ : ( وَلِِلَّهِ عَلَى
النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً ) قَالُوا يَا
رَسُولَ اللَّهِ فِي كُلِّ عَامٍ فَسَكَتَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي كُلِّ
عَامٍ قَالَ " لاَ وَلَوْ قُلْتُ نَعَمْ لَوَجَبَتْ " .
فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ
أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ عَلِيٍّ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “লোকদের
মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার ক্ষমতা আছে, আল্লাহ্ তা’আলার উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হাজ্জ করা
তার অবশ্য কর্তব্য” (সূরাঃ আলে-ইমরান- ৯৭), এই আয়াত অবতীর্ণ হলে সাহাবীগণ বললেন,
হে আল্লাহ্র রাসূল! প্রতি বছর (কি হাজ্জ করতে হবে)? তিনি নিরব থাকলেন। তারা আবার
বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! প্রতি বছর কি? তিনি বললেন, না। তবে আমি যদি হ্যাঁ বলতাম,
তাহলে তাই ওয়াজিব হত। তখন পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “হে
ঈমানদারগণ! তোমরা এমন কোন বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা তোমাদের জন্য প্রকাশ করা হলে
তোমাদের মন্দ লাগবে” (সূরাঃ আল-মায়িদাহ- ১০১)।
যঈফ, পূর্বেও (৮১১) নং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ আলী (রাঃ)-এর হাদীস হিসেবে এটি হাসান গারীব।
এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৫৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَعْمَرٍ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ
أَنَسٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ
اللَّهِ مَنْ أَبِي قَالَ " أَبُوكَ فُلاَنٌ " . فَنَزَلَتْ :
( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ
لَكُمْ تَسُؤْكُمْ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
صَحِيحٌ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি
বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার বাবা কে? তিনি বললেনঃ তোমার বাবা অমুক। তখন এ আয়াত
অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন কোন বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা
তোমাদের নিকট প্রকাশিত হলে তা তোমাদের কষ্ট দিবে” – (সূরা আল –মায়িদাহ ১০১)।
সহীহ : বুখারী (২৬২১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ،
عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، أَنَّهُ قَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ
تَقْرَءُونَ هَذِهِ الآيَةَ : ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ
أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ ) وَإِنِّي
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ النَّاسَ
إِذَا رَأَوْا ظَالِمًا فَلَمْ يَأْخُذُوا عَلَى يَدَيْهِ أَوْشَكَ أَنْ يَعُمَّهُمُ
اللَّهُ بِعِقَابٍ مِنْهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ
نَحْوَ هَذَا الْحَدِيثِ مَرْفُوعًا وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ إِسْمَاعِيلَ عَنْ
قَيْسٍ عَنْ أَبِي بَكْرٍ قَوْلَهُ وَلَمْ يَرْفَعُوهُ .
আবু
বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে লোকসকল! তোমরা এ আয়াত পাঠ করে
থাক (অনুবাদ) : “হে ইমানদারগণ! তোমাদের দায়িত্ব তোমাদেরই উপর। তোমরা যদি সৎপথে
পরিচালিত হও তবে যে পথভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না’’ (সূরা
আল-মায়িদাহ্ ১০৫)। অথচ আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে
শুনেছি : মানুষ কোন যালিমকে যুলুম ও অত্যাচার করতে দেখেও তার হাত ধরে তাকে নিবৃত্ত
না করলে অচিরেই আলাহ তা’আলা তাদেরকে ব্যপকভাবে শাস্তি দিবেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । ইসমাইল ইবনু আবী
খালিদের সুত্রে অপরাপর বর্ণনাকারীও এটিকে মারফুরুপে একি রকম বর্ণনা করেছেন । কেউ কেউ
ইস্মাঈল হতে কাইস (রহঃ) এর সুত্রে এটিকে আবূ বাকর (রাঃ) এর বক্তব্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন
। তারা এটিকে মারফুরুপে বর্ণনা করেননি ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৫৮
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَعْقُوبَ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا عُتْبَةُ بْنُ أَبِي حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ جَارِيَةَ اللَّخْمِيُّ، عَنْ أَبِي أُمَيَّةَ الشَّعْبَانِيِّ،
قَالَ أَتَيْتُ أَبَا ثَعْلَبَةَ الْخُشَنِيَّ فَقُلْتُ لَهُ كَيْفَ تَصْنَعُ فِي
هَذِهِ الآيَةِ قَالَ أَيَّةُ آيَةٍ قُلْتُ قَوْلُهُ : ( يَا أَيُّهَا
الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا
اهْتَدَيْتُمْ ) قَالَ أَمَا وَاللَّهِ لَقَدْ سَأَلْتَ عَنْهَا خَبِيرًا
سَأَلْتُ عَنْهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " بَلِ
ائْتَمِرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَتَنَاهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ حَتَّى إِذَا رَأَيْتَ
شُحًّا مُطَاعًا وَهَوًى مُتَّبَعًا وَدُنْيَا مُؤْثَرَةً وَإِعْجَابَ كُلِّ ذِي
رَأْىٍ بِرَأْيِهِ فَعَلَيْكَ بِخَاصَّةِ نَفْسِكَ وَدَعِ الْعَوَامَّ فَإِنَّ
مِنْ وَرَائِكُمْ أَيَّامًا الصَّبْرُ فِيهِنَّ مِثْلُ الْقَبْضِ عَلَى الْجَمْرِ
لِلْعَامِلِ فِيهِنَّ مِثْلُ أَجْرِ خَمْسِينَ رَجُلاً يَعْمَلُونَ مِثْلَ
عَمَلِكُمْ " . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ وَزَادَنِي
غَيْرُ عُتْبَةَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَجْرُ خَمْسِينَ رَجُلاً مِنَّا أَوْ
مِنْهُمْ قَالَ " لاَ بَلْ أَجْرُ خَمْسِينَ مِنْكُمْ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ
উমাইয়্যা আশ-শাবানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আবূ
সালাবা আল-খুশানী (রাঃ)-এর নিকট এসে তাকে বললাম, এ আয়াত প্রসঙ্গে আপনি কি করণীয়
বলে ঠিক করেছেন? তিনি বললেনঃ কোন্ আয়াত? আমি বললাম, আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “হে
ঈমানদারগণ! তোমাদের দায়িত্ব তোমাদেরই উপর। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তবে যে
বিপথগামী হয়েছে সে তোমাদের কোন লোকসান করতে পারবে না” (সূরাঃ আল-মায়িদাহ- ১০৫)।
আবূ সালাবা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ্র কসম! তুমি এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ জেনেছে এমন
একজনকে প্রশ্ন করেছ। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ
বিষয়ে প্রশ্ন করেছি। তিনি বলেছেনঃ বরং তোমরা সৎ কাজের আদেশ দিতে থাক এবং খারাপ কাজ
হতে বিরত করতে থাক। অবশেষে যখন দেখবে কৃপণতার বশ্যতী করা হচ্ছে, নাফসের অনুসরণ করা
হচ্ছে, দুনিয়াকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে এবং প্রত্যেকে নিজের মতকে সর্বোত্তম মনে
করছে, তখন তুমি শুধুমাত্র নিজেকে রক্ষায় নিয়োজিত থেকো এবং সাধারণের ভাবনা ছেড়ে
দিও। কারণ তোমাদের পর এমন যুগ আসবে, যখন (দ্বীনের উপর) সবর করে থাকা জ্বলন্ত
অঙ্গার হাতের মুঠোয় ধারণ করে রাখার মত (যন্ত্রণাদায়ক) হবে। ঐ সময় দ্বীনের উপর
আমলকারীর প্রতিদান হবে তোমাদের মত পঞ্চাশজন আমলকারীর প্রতিদানের সমান। আবদুল্লাহ
ইবনুল মুবারাক (রহঃ) বলেনঃ উতবা ছাড়া অপরাপর রাবীর রিওয়ায়াত আরো আছে, প্রশ্ন করা
হল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের মধ্যকার পঞ্চাশজন না তাদের মধ্যকার পঞ্চাশজন
আমলকারীর সমান? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমাদের মধ্যকার পঞ্চাশজনের সমান তার সাওয়াব
হবে।
যঈফ, নাকদুল কাত্তানী (২৭/২৭), মিশকাত (৫১৪৪) কিন্তু হাদীসের কিছু অংশ সহীহ, দেখুন
হাদীস নং (২৩৬১)। সহীহা (৫৯৪),
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৫৯
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي شُعَيْبٍ الْحَرَّانِيُّ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ بَاذَانَ، مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، فِي هَذِهِ الآيَةِ : ( يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ
الْمَوْتُ ) قَالَ بَرِئَ مِنْهَا النَّاسُ غَيْرِي وَغَيْرَ عَدِيِّ بْنِ
بَدَّاءٍ وَكَانَا نَصْرَانِيَّيْنِ يَخْتَلِفَانِ إِلَى الشَّامِ قَبْلَ
الإِسْلاَمِ فَأَتَيَا الشَّامَ لِتِجَارَتِهِمَا وَقَدِمَ عَلَيْهِمَا مَوْلًى
لِبَنِي سَهْمٍ يُقَالُ لَهُ بُدَيْلُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ بِتِجَارَةٍ وَمَعَهُ
جَامٌ مِنْ فِضَّةٍ يُرِيدُ بِهِ الْمَلِكَ وَهُوَ عُظْمُ تِجَارَتِهِ فَمَرِضَ
فَأَوْصَى إِلَيْهِمَا وَأَمَرَهُمَا أَنْ يُبَلِّغَا مَا تَرَكَ أَهْلَهُ قَالَ
تَمِيمٌ فَلَمَّا مَاتَ أَخَذْنَا ذَلِكَ الْجَامَ فَبِعْنَاهُ بِأَلْفِ دِرْهَمٍ
ثُمَّ اقْتَسَمْنَاهُ أَنَا وَعَدِيُّ بْنُ بَدَّاءٍ فَلَمَّا قَدِمْنَا إِلَى
أَهْلِهِ دَفَعْنَا إِلَيْهِمْ مَا كَانَ مَعَنَا وَفَقَدُوا الْجَامَ
فَسَأَلُونَا عَنْهُ فَقُلْنَا مَا تَرَكَ غَيْرَ هَذَا وَمَا دَفَعَ إِلَيْنَا
غَيْرَهُ قَالَ تَمِيمٌ فَلَمَّا أَسْلَمْتُ بَعْدَ قُدُومِ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ تَأَثَّمْتُ مِنْ ذَلِكَ فَأَتَيْتُ أَهْلَهُ فَأَخْبَرْتُهُمُ
الْخَبَرَ وَأَدَّيْتُ إِلَيْهِمْ خَمْسَمِائَةِ دِرْهَمٍ وَأَخْبَرْتُهُمْ أَنَّ
عِنْدَ صَاحِبِي مِثْلَهَا فَأَتَوْا بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَسَأَلَهُمُ الْبَيِّنَةَ فَلَمْ يَجِدُوا فَأَمَرَهُمْ أَنْ يَسْتَحْلِفُوهُ
بِمَا يُعْظَمُ بِهِ عَلَى أَهْلِ دِينِهِ فَحَلَفَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ
الْمَوْتُ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( أَوْ يَخَافُوا أَنْ تُرَدَّ أَيْمَانٌ
بَعْدَ أَيْمَانِهِمْ ) . فَقَامَ عَمْرُو بْنُ الْعَاصِ وَرَجُلٌ آخَرُ
فَحَلَفَا فَنُزِعَتِ الْخَمْسُمِائَةِ دِرْهَمٍ مِنْ عَدِيِّ بْنِ بَدَّاءٍ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ بِصَحِيحٍ .
وَأَبُو النَّضْرِ الَّذِي رَوَى عَنْهُ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ هَذَا الْحَدِيثَ
هُوَ عِنْدِي مُحَمَّدُ بْنُ السَّائِبِ الْكَلْبِيُّ يُكْنَى أَبَا النَّضْرِ
وَقَدْ تَرَكَهُ أَهْلُ الْحَدِيثِ وَهُوَ صَاحِبُ التَّفْسِيرِ سَمِعْتُ
مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ مُحَمَّدُ بْنُ السَّائِبِ الْكَلْبِيُّ
يُكْنَى أَبَا النَّضْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَلاَ نَعْرِفُ لِسَالِمٍ أَبِي
النَّضْرِ الْمَدَنِيِّ رِوَايَةً عَنْ أَبِي صَالِحٍ مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ
وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ شَيْءٌ مِنْ هَذَا عَلَى الاِخْتِصَارِ مِنْ
غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তামীম
আদ-দারী (রাঃ) নিম্নোক্ত আয়াত প্রসঙ্গে বলেছেন, আমি ও আদী ইবনু বাদ্দা ব্যতীত অপর
কারো সাথে তা সম্পর্কিত নয়ঃ “হে ঈমানদারগণ! যখন তোমাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হাযির
হয় তখন ওসিয়াত করার সময় তোমাদের মধ্য হতে ন্যায়নিষ্ঠ দু’জনকে সাক্ষী রাখবে” (সূরাঃ
আল-মাইদা- ১০৬)। তারা দু’জনই ছিলেন নাসারা।
ইসলাম ক্ববূলের পূর্বে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে তাদের সিরিয়ায় আসা যাওয়া ছিল। কোন এক
সময় তারা ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়া যান। বানূ সাহ্মের গোলাম বুদাইল ইবনু আবূ
মারইয়ামও ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে তাদের নিকট আসলো। তার নিকট একটি রূপার পানপাত্র ছিল।
তিনি এটি বাদশার নিকট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে এনেছিলেন। তার ব্যবসায় পণ্যের মধ্যে এটিই
ছিল সর্বোৎকৃষ্ট। হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি তাদের (তামীমুদ দারী ও আদী ইবনু
বাদ্দা) উভয়কে ওসিয়াত করেন যে, (তার মারা যাবার পর) তার রেখে যাওয়া মালামালা যেন তারা
তার পরিজনকে পৌঁছে দেয়। তামীম (রাঃ) বলেনঃ তিনি মারা গেলে আমরা পানপাত্রটি নিয়ে
গিয়ে এক হাজার দিরহামে বিক্রয় করি এবং বিক্রয়লব্ধ টাকা আমি ও আদী ইবনু বাদ্দা
নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেই। আমরা তার পরিবার-পরিজনের নিকট পৌছে, আমাদের নিকট যা
কিছু সঞ্চিত ছিল তা তাদের ফিরিয়ে দিলাম। কিন্তু তারা পানপাত্রটি না পেয়ে আমাদেরকে
সেটি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে। আমরা বললাম, সে তো আমাদের নিকট ইহা ব্যতীত আর কিছু রেখে
যায়নি। তামীম (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মাদীনায় পদাপর্ণের পর যখন আমি ইসলাম ক্ববূল করি, তখন আমি আমার এ অপকর্মের জন্য
নিজেকে দোষী মনে করলাম (এবং এ হতে মুক্ত হতে চাইলাম)। তাই আমি তার পরিজনের নিকট
এসে তাদের আসল ঘটনা খুলে বললাম এবং তাদের পাঁচ শত দিরহাম দিয়ে দিলাম। আমি তাদের এও
বললাম, আমার সংগীর (আদী ইবনু বাদ্দা) নিকটও সমপরিমাণ (দিরহাম) রয়েছে। তারা তখন
বিষয়টি নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এলো। তিনি
তাদের নিকট প্রমাণ চাইলে তারা তা পেশ করতে অক্ষম হয়। তিনি তাদের নির্দেশ দিলেন যে,
তারা আদী ইবনু বাদ্দাকে এমনভাবে কসম করতে বলবে যেভাবে কসম করলে তার ধর্মের
দৃষ্টিতে তা গুরুত্বপূর্ণ হয়। তারপর আদী শপথ করল (নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য)।
তখন আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ ‘হে মু’মিনগণ! তোমাদের কারও যখন মৃত্যু
হাযির হয় তখন ওসিয়াত করার সময় তোমাদের মধ্য হতে দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী
রাখবে… আল্লাহ্ তা’আলা সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না” (সূরাঃ
আল-মায়িদাহ- ১০৬-১০৮)। তারপর আমর ইবনুল আস (রাঃ) ও অপর এক ব্যক্তি সাক্ষ্য দিতে
উঠলেন এবং শপথ করলেন। অবশেষে আদী ইবনু বাদ্দার নিকট হতে পাঁচশত দিরহাম আদায় করা হয়।
সনদ অত্যন্ত দুর্বল,
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। এটির সনদ সহীহ নয়। আর
যে আবুন নাযরের নিকট হতে মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, আমার মতে তিনি
হচ্ছেন মুহাম্মাদ ইবনুস সাইব আল-কালবী। আবুন নাদর হল তার ডাকনাম। মুহাদ্দিসগণ তাকে
বর্জন করেছেন। তিনি একজন তাফসীরকারও। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে বলতে শুনেছি যে,
মুহাম্মাদ ইবনুস সাইব আল-কালবীর ডাকনাম আবুন নাযর। উম্মু হানী (রাঃ)-এর মুক্তগোলাম
আবূ সালিহ হতে সালিম আবুন নাযর আল-মাদীনীর কোন বর্ণনা আছে বলে আমাদের জানা নেই। ইবনু
আব্বাস (রাঃ) হতেও এ বিষয়ে সংক্ষেপিত আকারে ভিন্নরূপে হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
৩০৬০
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنِ
ابْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي الْقَاسِمِ، عَنْ عَبْدِ
الْمَلِكِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ خَرَجَ رَجُلٌ
مِنْ بَنِي سَهْمٍ مَعَ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ وَعَدِيِّ بْنِ بَدَاءٍ فَمَاتَ
السَّهْمِيُّ بِأَرْضٍ لَيْسَ فِيهَا مُسْلِمٌ فَلَمَّا قَدِمَا بِتَرِكَتِهِ
فَقَدُوا جَامًا مِنْ فِضَّةٍ مُخَوَّصًا بِالذَّهَبِ فَأَحْلَفَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم ثُمَّ وُجِدَ الْجَامُ بِمَكَّةَ فَقِيلَ اشْتَرَيْنَاهُ مِنْ
عَدِيٍّ وَتَمِيمٍ فَقَامَ رَجُلاَنِ مِنْ أَوْلِيَاءِ السَّهْمِيِّ فَحَلَفَا
بِاللَّهِ لَشَهَادَتُنَا أَحَقُّ مِنْ شَهَادَتِهِمَا وَأَنَّ الْجَامَ
لِصَاحِبِهِمْ . قَالَ وَفِيهِمْ نَزَلَتْ : ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ ) هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَهُوَ حَدِيثُ
ابْنِ أَبِي زَائِدَةَ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বানু সাহ্মের
এক লোক তামীমুদ দারী (রাঃ) ও ‘আদী ইবনু বাদ্দার সাথে (সফরে) বের হয়। বানু সাহমের
লোকটি এমন এক এলাকায় মারা গেল, যেখানে কোন মুসলিম ছিল না। ঐ দুই ব্যক্তি তার
পরিত্যক্ত সম্পদ নিয়ে তার পরিজনের নিকট ফিরে এলে তারা তার মধ্যে স্বর্নখচিত রুপার পানপাত্রটি
খুঁজে পেল না। রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উভয়কে শপথ
করালেন। তার ওয়ারিশরা পরে মক্কায় ঐ পানপাত্রটি দেখতে পায়। তাদের বলা হয়, আমরা এটি
তামীম ও আদীর নিকট হতে কিনেছি। সাহমীর ওয়ারিশদের মধ্য হতে দুইজন লোক দাবি নিয়ে উঠে
এবং আল্লাহর শপথ করে বলে, আমাদের সাক্ষ্য উক্ত দুইজনের সাক্ষ্যর চাইতে অনেক বেশি
সত্য ও গ্রহণযোগ্য। নিঃসন্দেহে এ পানপাত্রটি তাদের সাথীরই। এদের সম্পর্কেই এ আয়াত
অবতীর্ণ (অনুবাদ) : “ হে মমিনগণ! তোমাদের কারও যখন মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন ওয়াসিয়াত
করার সময় তোমাদের মধ্য হতে দু’জন ন্যায়পরায়ন লোককে সাক্ষী রাখবে...’’ (সূরা
আল-মায়েদাহ্ ১০৬)।
সহীহ : বুখারী (২৭৮০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব । এটি হল ইবনু আবী
বারিদার রিওয়ায়াত ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৬১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ قَزَعَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ حَبِيبٍ،
حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ خِلاَسِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ عَمَّارِ
بْنِ يَاسِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
أُنْزِلَتِ الْمَائِدَةُ مِنَ السَّمَاءِ خُبْزًا وَلَحْمًا وَأُمِرُوا أَنْ لاَ
يَخُونُوا وَلاَ يَدَّخِرُوا لِغَدٍ فَخَانُوا وَادَّخَرُوا وَرَفَعُوا لِغَدٍ
فَمُسِخُوا قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ . قَدْ رَوَاهُ أَبُو عَاصِمٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي
عَرُوبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ خِلاَسٍ عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ مَوْقُوفًا
وَلاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ الْحَسَنِ بْنِ قَزَعَةَ .
আম্মার
ইবনু ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আকাশ হতে (ঈসা (আঃ)-এর উম্মাতের জন্য)
খাঞ্চাভর্তি রুটি ও মাংস পাঠানো হয়। তাদের প্রতি হুকুম ছিল তারা যেন খিয়ানাত না
করে এবং আগামী কালের জন্য তা সঞ্চয় করে না রাখে। কিন্তু তারা এতে খিয়ানাত করল ও তা
থেকে জমা করল এবং আগামীকালের জন্য তুলে রাখল। ফলে তাদেরকে বানর ও শুকরে পরিনত করা
হল।
সনদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৬২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ تَلَقَّى
عِيسَى حُجَّتَهُ وَلَقَّاهُ اللَّهُ فِي قَوْلِهِِ : ( وَإِذْ قَالَ اللَّهُ
يَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ أَأَنْتَ قُلْتَ لِلنَّاسِ اتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ
إِلَهَيْنِ مِنْ دُونِ اللَّهِ ) قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم فَلَقَّاهُ اللَّهُ : ( سُبْحَانَكَ مَا يَكُونُ لِي أَنْ
أَقُولَ مَا لَيْسَ لِي بِحَقٍّ ) الآيَةَ كُلَّهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবু
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘ঈসা (আঃ) কে তাঁর যুক্তি –প্রমান
শিখিয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ তা’আলাই তাঁকে তা শিখিয়ে দেন। যেমন নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ
তা’আলা বলেন (অনুবাদ) : “আল্লাহ তা’আলা যখন বললেনঃ হে ‘‘ঈসা ইবনু মারিয়াম! তুমি কি
লোকদের বলেছিলে, তোমরা আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আমাকে এবং আমার মাকে ইলাহরুপে গ্রহন
কর’’ –(সূরা আল-মায়িদাহ ১১৬)? আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন : তখন আল্লাহ তা’আলাই ‘‘ঈসা (আঃ) কে উত্তর শিক্ষা দিলেন
: “ তিনি বললেন , তুমি মহিহান্বিত! যা বলার অধিকার আমার নেই তা বলা আমার পক্ষে
শোভনীয় নয় ----তবে তুমি তো পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়”—(সূরা আল-মায়েদাহ্ ১১৬-১১৮)।
আবু ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৬৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ
حُيَىٍّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو، قَالَ آخِرُ سُورَةٍ أُنْزِلَتْ سُورَةُ الْمَائِدَةِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ
قَالَ آخِرُ سُورَةٍ أُنْزِلَتْ : (إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ
) .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সর্বশেষ
অবতীর্ণ সূরা হল সূরা আল –মায়িদাহ্।
সনদ হাসান (সহিহ আত-তিরমিযি অনুযায়ী) / সনদ দুর্বল (জয়ীফ আত-তিরমিযি অনুযায়ী)। ,
হাকিম এটিকে সহীহ বলেছেন এবং এর একটি শাহিদ বর্ণনা করেছেন। ইমাম যাহাবী তাকে
সমর্থন করেছেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব । এ ছাড়া ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) হতেও একটি বর্ণনা করেছেন । তাতে তিনি বলেছেন, সবশেষে অবতীর্ণ সূরা হচ্ছে
“ ইয়া জা-য়া নাস্রুল্লাহ –হ’’ —(সূরা নাস্র) ।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-৭
সূরা
আল-আন’আম
৩০৬৪
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ
سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ نَاجِيَةَ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ عَلِيٍّ،
أَنَّ أَبَا جَهْلٍ، قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّا لاَ نُكَذِّبُكَ
وَلَكِنْ نُكَذِّبُ بِمَا جِئْتَ بِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( إِِنَّهُمْ لاَ
يُكَذِّبُونَكَ وَلَكِنَّ الظَّالِمِينَ بِآيَاتِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ ) .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আবূ জাহল
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আমরা তো তোমাকে
মিথ্যাবাদী বলি না, বরং তুমি যে জিনিস নিয়ে এসেছ তাকেই আমরা মিথ্যা মনে করি। এ
প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “কিন্তু তারা তো তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে না,
বরং যালিমরা আল্লাহ্ তা’আলার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে....” (সূরাঃ আল-আনআম- ৩৩)।
সনদ দুর্বল।
ইসহাক ইবনু মানসূর-আবদুর রহমান ইবনু মাহদী হতে তিনি সুফিয়ান
হতে তিনি আবূ ইসহাক এর সূত্রে নাজিয়া (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আবূ জাহল রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল…. এরপর এরকমই বর্ণনা করেন। তবে এই সনদে
আলী (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই এবং এটাই বেশি সহীহ। পূর্বের হাদীসের ন্যায় এটিও দুর্বল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৬৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ
الآيَةُ : (قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا
مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ ) قَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " أَعُوذُ بِوَجْهِكَ " . فَلَمَّا نَزَلَتْْ ( أَوْ
يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ ) قَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " هَاتَانِ أَهْوَنُ - أَوْ - هَاتَانِ أَيْسَرُ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আম্র
ইবনু দীনার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জাবির ইবনু
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল (অনুবাদ) : ‘‘বল তিনি
তোমাদের ঊর্ধ্বদেশ অথবা পাদদেশ হতে তোমাদের উপর শাস্তি প্রেরন করতে সক্ষম”, তখন
নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “(হে আলাহ!) আমি আপনার (মর্যাদাবান)
মুখমণ্ডলের (সত্ত্বার) নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি”। পরে আবার অবতীর্ণ হল (অনুবাদ) :
‘‘অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করতে এবং এক দলকে অপর দলের সংঘর্ষের স্বাদ
আস্বাদন করাতে সক্ষম’’ —(সূরা আল-আন’আম ৬৫)। তখন নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ এ দু’টিই অপেক্ষাকৃত সহজতর।
সহীহ : সহীহ আবূ দাউদ (২০৫৮ ,২০৫৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৬৬
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَرَفَةَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ الْغَسَّانِيِّ، عَنْ رَاشِدِ
بْنِ سَعْدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فِي هَذِهِ الآيَةِ: (قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ
عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ ) فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَمَا إِنَّهَا كَائِنَةٌ وَلَمْ يَأْتِ
تَأْوِيلُهَا بَعْدُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ .
সা’দ
ইবনু আবূ ওয়াক্কাস সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে
বর্ণিতঃ
“বল, তিনি তোমাদের উপর
তোমাদের উপর হতে অথবা তোমাদের পদতল হতে শাস্তি প্রেরণে সক্ষম” (সূরাঃ আল-আনআম-
৬৫), এ আয়াত অবতীর্ণ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ
প্রসঙ্গে বলেনঃ এরূপ সংঘটিত হবেই কিন্তু তার ব্যাখ্যা এখনো বাস্তাব লাভ করেনি।
সনদ দুর্বল।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৬৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ
: لَمَّا نَزَلَتْ: ( الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ
بِظُلْمٍ ) شَقَّ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ
وَأَيُّنَا لاَ يَظْلِمُ نَفْسَهُ . قَالَ " لَيْسَ ذَلِكَ إِنَّمَا هُوَ
الشِّرْكُ أَلَمْ تَسْمَعُوا مَا قَالَ لُقْمَانُ لاِبْنِهِ : ( يَا بُنَيَّ
لاَ تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ ) " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন অবতীর্ণ
হল : “যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমানকে যুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি---’’ (সূরা
আল-আন’আম ৮২) , তখন মুসলিমদের নিকট তা খুবই কঠিন মনে হল। তাই তারা রাসুলুল্লাহ
(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যে কে আছে
যে নিজের উপর যুলুম করেনি? রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
বিষয়টি আসলে তা নয়। এখানে যুলুম অর্থ হল শিরক। তোমরা কি শুনোনি যা লোক্বমান তাঁর
ছেলেকে বলেছিলেন : “হে পুত্র ! আল্লাহ তা’আলার সাথে কাউকে শরীক করবে না। নিশ্চয়
শিরক অতি বড় যুলুম “ –(সূরা লোকমান ১৩)।
সহীহ : বুখারী (৪৬২৯) , মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৬৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ يُوسُفَ
الأَزْرَقُ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ
مَسْرُوقٍ، قَالَ كُنْتُ مُتَّكِئًا عِنْدَ عَائِشَةَ فَقَالَتْ يَا أَبَا
عَائِشَةَ ثَلاَثٌ مَنْ تَكَلَّمَ بِوَاحِدَةٍ مِنْهُنَّ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى
اللَّهِ الْفِرْيَةَ مَنْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا رَأَى رَبَّهُ فَقَدْ أَعْظَمَ
الْفِرْيَةَ عَلَى اللَّهِ وَاللَّهُ يَقُولُ : ( لَا تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ
وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ ) ، ( مَا كَانَ
لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلاَّ وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ )
وَكُنْتُ مُتَّكِئًا فَجَلَسْتُ فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْظِرِينِي
وَلاَ تُعْجِلِينِي أَلَيْسَ يَقُولُ اللَّهُ : ( وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى
)، ( وَلََقَدْ رَآهُ بِالأُفُقِ الْمُبِينِ ) قَالَتْ أَنَا وَاللَّهِ
أَوَّلُ مَنْ سَأَلَ عَنْ هَذَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِنَّمَا ذَاكَ جِبْرِيلُ مَا رَأَيْتُهُ فِي الصُّورَةِ الَّتِي خُلِقَ
فِيهَا غَيْرَ هَاتَيْنِ الْمَرَّتَيْنِ رَأَيْتُهُ مُنْهَبِطًا مِنَ السَّمَاءِ
سَادًّا عِظَمُ خَلْقِهِ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ " . وَمَنْ
زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا كَتَمَ شَيْئًا مِمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَيْهِ فَقَدْ
أَعْظَمَ الْفِرْيَةَ عَلَى اللَّهِ يَقُولُ اللَّهُ : ( يَا أَيُّهَا
الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ ) وَمَنْ زَعَمَ أَنَّهُ
يَعْلَمُ مَا فِي غَدٍ فَقَدْ أَعْظَمَ الْفِرْيَةَ عَلَى اللَّهِ وَاللَّهُ
يَقُولُ : (قُلْ لاَ يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ الْغَيْبَ
إِلاَّ اللَّهُ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَمَسْرُوقُ بْنُ الأَجْدَعِ يُكْنَى أَبَا عَائِشَةَ وَهُوَ مَسْرُوقُ بْنُ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَهَكَذَا كَانَ اسْمُهُ فِي الدِّيوَانِ .
মাসরুক
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা
(রাঃ) এর নিকটে হেলান দিয়ে বসা ছিলাম। তিনি বললেন, হে আবূ ‘আয়িশাহ্! তিনটি বিষয়
এমন যে, কোন ব্যক্তি এগুলার কোনটি বললে সে আল্লাহ তা’আলার উপর ভীষণ (মিথ্যা) অপবাদ
চাপালো। যে ব্যক্তি এ ধারনা পোষণ করে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আআলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর প্রভুকে দেখেছেন, সে আল্লাহ তা’আলার উপর ভীষণ অপবাদ আরোপ করল। কেননা
আল্লাহ তা’লা বলেনঃ “ দৃষ্টিসমূহ তাঁকে প্রত্যক্ষ করতে পারে না, কিন্তু তিনি
দৃষ্টিসমূহকে অনুধাবন করেন। তিনি অতিশয় সূক্ষদর্শী, সম্যক ওয়াকিফহাল “— (সূরা
আল-আন’আম ১০৩); “কোন মানুষের এমন মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তা’আলা তার সাথে কথা
বলবেন ওয়াহীর মাধ্যম ব্যতীত অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতীত “— (সূরা আশ-শুরা ৫১)। আমি
হেলান দেয়া অবস্থায় ছিলাম। আমি উঠে সোজা হয়ে বসে বললাম, হে উম্মুল মু’মিনীন!
থামুন, আমাকে বলার সুযোগ দিন। তাড়াহুড়া করবেন না। আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি? “
নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল“ – (সূরা আন্-নাজ্ম ১৩)। ‘সে তো তাকে উজ্জ্বল
দিগন্তে দেখেছে”- (সূরা আত্-তাকবীর ২৩)।
‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আলাহ্র শপথ! রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে
আমিই সর্বপ্রথম এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছি। তিনি বলেছেনঃ সে তো জিবরীল। আমি তাকে তার
আসল আকৃতিতে এ দু’বারি দেখেছি। আমি তাকে আসমান হতে অবতরন করতে দেখেছি। তার দেহাবয়ব
এতো প্রকাণ্ড যে, তা আসমান ও যামীনের মাঝখানের সবটুকু স্হান ঢেকে ফেলেছিল।
(দুই) যে ব্যক্তি এ ধারনা করে যে, আল্লাহ তা’আলা রাসুলুল্লাহ (সাল্লালহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর উপর যা অবতীর্ণ করেছেন, তিনি তার কিছুটা গোপন করেছেন, সেও আল্লাহ
তা’আলার উপর ভীষণ অপবাদ আরোপ করল। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “ হে রাসুল! তোমার
প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমার উপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা (লোকদের নিকট) পৌঁছে
দাও...“ (সূরা আল-মায়িদাহ্ ৬৭)।
(তিন) যে ব্যক্তি ধারনা করে যে, আগামী কাল কি ঘটবে তিনি (মুহাম্মাদ) তা জানেন, সেও
আল্লাহ তা’আলার উপর ভীষণ মিথ্যারোপ করল। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “ ব , আল্লাহ
তা’আলা ব্যতীত আসমান-যামীনে কেউই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না’’ —(আন-নাম্ল ৬৫)।
সহীহ : বুখারী , মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। মাসরুক ইবনুল আজদা’র
ডাকনাম আবূ ‘আয়িশাহ্! তিনি হলেন মাসরুক ইবনু ‘আবদুর রহমান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى الْبَصْرِيُّ الْحَرَشِيُّ، حَدَّثَنَا
زِيَادُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَكَّائِيُّ، حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ السَّائِبِ،
عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَتَى
أُنَاسٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَأْكُلُ
مَا نَقْتُلُ وَلاَ نَأْكُلُ مَا يَقْتُلُ اللَّهُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ (
فَكُلُوا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كُنْتُمْ بِآيَاتِهِ
مُؤْمِنِينَ ) إِلَى قَوْلِهِ : (وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ
لَمُشْرِكُونَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
أَيْضًا وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً .
আবদুল্লাহ
ইবনু ‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট কয়েকজন লোক এসে বলল : হে আল্লাহর রাসুল!
আমরা যা হত্যা করি তা খাবো আর আল্লাহ তা’আলা যা হত্যা করেন তা খাবো না? তখন আল্লাহ
তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করনে (অনুবাদ) : ‘তোমরা তাঁর নিদর্শনসমূহে বিশ্বাসী হলে যার
উপর আল্লাহ তা’আলার নাম নেয়া হয়েছে তা হতে খাও.... তোমরা যদি তাদের কথামত চল তবে
অবশ্যই তোমরা মুশরিক হয়ে যাবে” (সূরা আল-আন’আম ১১৮-১২১)।
সহীহ : সহীহ আবূ দাউদ (২০৫৮, ২০৫৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। এ হাদিসটি ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ)) হতে অন্যভাবেও বর্ণিত হয়েছে। কেউ কেউ এটিকে আতা ইবনুস সায়িব হতে, তিনি
সা’ঈদ ইবনু যুবাইর হতে, তিনি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে মুরসালরুপে
বর্ণনা করেছেন ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৭০
حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ دَاوُدَ الأَوْدِيِّ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ
عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى
الصَّحِيفَةِ الَّتِي عَلَيْهَا خَاتَمُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم
فَلْيَقْرَأْ هَذِهِ الآيَاتِ : ( قُلْ تَعَالَوْا أَتْلُ مَا حَرَّمَ
رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ ) الآيَةَ إِلَى قَوْلِهِ : ( لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে সহীফার
(ক্ষুদ্র পুস্তিকা) উপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মোহরাংকিত রয়েছে তার দেখা যাকে আনন্দ দেয় সে যেন এ আয়াতগুলো পাঠ করেঃ “বল! এসো,
পড়ে শুনাই তোমাদের জন্য রব যা হারাম করেছেন তা। এভাবে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে নির্দেশ
দিলেন যেন তোমরা সতর্ক হও” (সূরাঃ আল-আনআম- ১৫১-১৫৩)।
সনদ দুর্বল।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৭১
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ أَبِي
لَيْلَى، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّْ : (أَوْ يَأْتِيَ بَعْضُ آيَاتِ رَبِّكَ
) قَالَ طُلُوعُ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
আবূ
সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বানী “ অথবা তোমার প্রতিপালকের
কোন নিদর্শন আসবে’’ (সূরা আন’আম ১৫৮) প্রসঙ্গে বলেন, তা হচ্ছে পশ্চিম দিগন্ত হতে
সূর্যোদয়।
সহীহ : মুসলিম (১/৯৫), আবূ হুরায়রা্ হতে আরো পূর্ণাঙ্গ রুপে।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব । কেউ কেউ এটিকে
বর্ণনা করেছেন তবে তা মারফু’ হিসাবে নয় ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৭২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ،
عَنْ فُضَيْلِ بْنِ غَزْوَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " ثَلاَثٌ إِذَا خَرَجْنَ :
(لَمْ يَنْفَعْ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ )
الآيَةَ الدَّجَّالُ وَالدَّابَّةُ وَطُلُوعُ الشَّمْسِ مِنَ الْمَغْرِبِ أَوْ
مِنْ مَغْرِبِهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
. وَأَبُو حَازِمٍ هُوَ الأَشْجَعِيُّ الْكُوفِيُّ وَاسْمُهُ سَلْمَانُ مَوْلَى
عَزَّةَ الأَشْجَعِيَّةِ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি নিদর্শন যখন প্রকাশিত হবে “তখন কারো ঈমান আনয়নে কোন
উপকারে আসবে না - যারা ইতিপূর্বে ঈমান আনেনি বা যারা নিজেদের ঈমান মতো নেক ‘আমাল
করেনি” (সূরা আন’আম ১৫৮)। সেই তিনটি নিদর্শন হল দাজ্জাল, দাব্বাতুল আরয ও পশ্চিম
দিগন্ত হতে সূর্যোদয়।
সহীহ : মুসলিম (১/৯৫-৯৬)।
আবূ,‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। আবূ হাযিম, তিনি
হলেন আল-আশযা’ঈ আল-কুফী তাঁর নাম সালমান, তিনি ‘আযযাহ্ আল-আশ জাঈয়্যার মুক্তদাস ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৭৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَقَوْلُهُ الْحَقُّ
إِذَا هَمَّ عَبْدِي بِحَسَنَةٍ فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً فَإِنْ عَمِلَهَا
فَاكْتُبُوهَا لَهُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا وَإِذَا هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلاَ
تَكْتُبُوهَا فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا بِمِثْلِهَا فَإِنْ تَرَكَهَا
وَرُبَّمَا قَالَ لَمْ يَعْمَلْ بِهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً ثُمَّ قَرَأَ
: ( مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا ) " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বারাকাতময় আল্লাহ তা’আলা বলেন, আর তাঁর
বাণী সম্পূর্ণ সত্য : আমার কোনো বান্দা যখন কোন ভালো কাজের ইচ্ছা পোষণ করে তখনি
(বলেন) হে ফেরেশতাগণ! তোমরা তার জন্য একটি নেকি লিখো এবং সে যখন কাজটি করে তখন তার
দশ গুন নেকি তার জন্য লিখো। পক্ষান্তরে সে কোন মন্দ কাজের ইচ্ছা পোষণ করলে তবে
তোমরা তার কোন গুনাহ লিখো না, যদি সে তা করে তবে একটি মাত্র গুনাহই লিখো এবং যদি
সে তা বর্জন করে বা কার্যকর না করে তার জন্য একটি নেকি লিখো। তারপর তিনি এ আয়াত
পাঠ করেন (অনুবাদ) : “কেউ কোন সৎকাজ করলে সে তার দশ গুন পাবে এবং কেউ কোন অসৎ কাজ
করলে তাকে শুধু এর প্রতিফল দেয়া হবে’’ —(সূরা আন’আম ১৬০)।
সহীহ : রাওযুন নাযীর (২/ ৭৪২)। বুখারী , মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮
সূরা
আল-আ’রাফ
৩০৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ
أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ : (
فَلََمَّا تَجَلَّى رَبُّهُ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُ دَكًّا ) قَالَ حَمَّادٌ
هَكَذَا وَأَمْسَكَ سُلَيْمَانُ بِطَرَفِ إِبْهَامِهِ عَلَى أَنْمُلَةِ إِصْبَعِهِ
الْيُمْنَى قَالَ فَسَاخَ الْجَبَلُ ( وخَرَّ مُوسَى صَعِقًا ) . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন (অনুবাদ) : “যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ের উপর জ্যোতি
প্রকাশ করলেন তখন তা একে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল’’ —(সূরা আল-আ’রাফ ১৪৩)। হাম্মাদ
(রহঃ) তাজাল্লীর ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেন এবং সুলাইমান বৃদ্ধাঙ্গুলির কিনারা দিয়ে
ডান হাতের আঙ্গুলগুলোর মাথা স্পর্শ করেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, এই জ্যোতিতে পাহাড় ধ্বসে গেল এবং মূসা (আঃ) চেতনা হারিয়ে ফেললেন।
সহীহ : যিলা-লুল জান্নাত (৪৮০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ গারীব । হাম্মাদ
ইবনু সালামার রিওয়ায়াত ব্যতীত অন্য কোনোভাবে আমরা এটিকে জানতে পারিনি । ‘আবদুল ওয়াহ্হাব
আল-ওয়াররাক আল-বাগদাদী- মু’আয ইবনু মু’আয হতে, তিনি হাম্মাদ ইবনু সালামাহ্ হতে, তিনি
সাবিত হতে, তিনি আনাস (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই
সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, এই সনদে বর্ণিত হাদিসটি হাসান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৭৫
حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ
أَنَسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ
الْجُهَنِيِّ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، سُئِلَ عَنْ هَذِهِ الآيَةِِ (
وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ
وَأَشْهَدَهُمْ عَلَى أَنْفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُوا بَلَى شَهِدْنَا
أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ )
قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
سُئِلُ عَنْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ
اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ بِيَمِينِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ
ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ لِلْجَنَّةِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ
يَعْمَلُونَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ
خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ لِلنَّارِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ يَعْمَلُونَ "
. فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَفِيمَ الْعَمَلُ قَالَ فَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ إِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ
لِلْجَنَّةِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى
عَمَلٍ مِنْ أَعْمَالِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيُدْخِلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ وَإِذَا
خَلَقَ الْعَبْدَ لِلنَّارِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى
يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ أَعْمَالِ أَهْلِ النَّارِ فَيُدْخِلَهُ اللَّهُ
النَّارَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَمُسْلِمُ
بْنُ يَسَارٍ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ عُمَرَ وَقَدْ ذَكَرَ بَعْضُهُمْ فِي هَذَا
الإِسْنَادِ بَيْنَ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ وَبَيْنَ عُمَرَ رَجُلاً مَجْهُولاً .
মুসলিম
ইবনু ইয়াসার আল-জুহানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ উমার ইবনুল
খাত্তাব (রাঃ)-কে এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ “যখন তোমার রব আদম সন্তানের
পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরদের বের করলেন এবং তাদের নিজেদের সম্পর্কে স্বীকারোক্তি
করে প্রশ্ন করেনঃ ‘আমি কি তোমাদের রব নই!’ তারা বললঃ হ্যাঁ নিশ্চয়ই, আমরা সাক্ষী
রইলাম। তা এজন্য যে, তোমরা কিয়ামাতের দিন যেন না বল, আমরা তো এ ব্যাপারে বেখবর
ছিলাম” (সূরাঃ আল- আ’রাফ- ১৭২)। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটও আমি এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতে
শুনেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা আদম
আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তারপর আপন ডান হাত তাঁর পিঠে বুলালেন এবং তা থেকে
তাঁর একদল (ভাবী) সন্তান বের করলেন। তিনি বললেন, এদের আমি জান্নাতের জন্য এবং
জান্নাতীদের কাজ করতে সৃষ্টি করেছি। সুতরাং এরা জান্নাতীদের আমলই করবে। তিনি
পুনরায় আদমের পিঠে হাত বুলালেন এবং সেখান থেকে তাঁর (অপর) একদল সন্তান বের করলেন।
তিনি বললেন, এদের আমি জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। জাহান্নামীদের মত কাজই তারা
করবে। একজন বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! তাহলে তদবির আর কিসের জন্য? রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা যখন কোন বান্দাকে
জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেন, তখন তার দ্বারা জান্নাতীদের কাজই করিয়ে নেন। সে
জান্নাতীদের যোগ্য কাজ করে ইন্তেকাল করে এবং আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জান্নাতে পেশ
করেন। অপরদিকে যখন আল্লাহ্ তা’আলা কোন বান্দাকে জাহান্নামের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি
করেন, তার দ্বারা জাহান্নামীদের কাজ করিয়ে নেন। সে জাহান্নামীদের কাজ করেই
মৃত্যুবরণ করে। শেষে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জাহান্নামে পেশ করেন।
দুর্বল, আয্ যিলাল (১৯৬), যঈফা (৩০৭১)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। মুসলিম ইবনু ইয়াসার (রহঃ)
উমার (রাঃ) হতে (হাদীস) শুনেননি। কেউ কেউ এ হাদীসের সনদে মুসলিম ইবনু ইয়াসার ও উমার
(রাঃ)-এর মাঝখানে আরেকজন অপরিচিত রাবীর উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৭৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَمَّا
خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ مَسَحَ ظَهْرَهُ فَسَقَطَ مِنْ ظَهْرِهِ كُلُّ نَسَمَةٍ هُوَ
خَالِقُهَا مِنْ ذُرِّيَّتِهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَجَعَلَ بَيْنَ عَيْنَىْ
كُلِّ إِنْسَانٍ مِنْهُمْ وَبِيصًا مِنْ نُورٍ ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى آدَمَ
فَقَالَ أَىْ رَبِّ مَنْ هَؤُلاَءِ قَالَ هَؤُلاَءِ ذُرِّيَّتُكَ فَرَأَى رَجُلاً
مِنْهُمْ فَأَعْجَبَهُ وَبِيصُ مَا بَيْنَ عَيْنَيْهِ فَقَالَ أَىْ رَبِّ مَنْ
هَذَا فَقَالَ هَذَا رَجُلٌ مِنْ آخِرِ الأُمَمِ مِنْ ذُرِّيَّتِكَ يُقَالُ لَهُ
دَاوُدُ . فَقَالَ رَبِّ كَمْ جَعَلْتَ عُمْرَهُ قَالَ سِتِّينَ سَنَةً قَالَ
أَىْ رَبِّ زِدْهُ مِنْ عُمْرِي أَرْبَعِينَ سَنَةً . فَلَمَّا انْقَضَى عُمْرُ
آدَمَ جَاءَهُ مَلَكُ الْمَوْتِ فَقَالَ أَوَلَمْ يَبْقَ مِنْ عُمْرِي أَرْبَعُونَ
سَنَةً قَالَ أَوَلَمْ تُعْطِهَا ابْنَكَ دَاوُدَ قَالَ فَجَحَدَ آدَمُ فَجَحَدَتْ
ذُرِّيَّتُهُ وَنَسِيَ آدَمُ فَنَسِيَتْ ذُرِّيَّتُهُ وَخَطِئَ آدَمُ فَخَطِئَتْ
ذُرِّيَّتُهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ) কে সৃষ্টি
করলেন তখন তিনি তার পিঠ মাসেহ করলেন। এতে তাঁর পিঠ থেকে তাঁর সমস্ত সন্তান বের
হলো, যাদের তিনি ক্বিয়ামাত পর্যন্ত সৃষ্টি করবেন। তিনি তাদের প্রত্যেকের দুই চোখের
মাঝখানে নূরের ঔজ্জল্য সৃষ্টি করলেন, অতঃপর তাদেরকে আদম (আঃ) এর সামনে পেশ করলেন।
আদম (আঃ) বললেনঃ হে প্রভু! এরা কারা? আল্লাহ বললেন, এরা তোমার সন্তান। আদমের
দৃষ্টি তার সন্তানদের একজনের উপর পড়লো যাঁর দুই চোখের মাঝখানের ঔজ্জল্যে তিনি বিস্মিত
হলেন। তিনি বললেন, হে আমার প্রভু! ইনি কে? আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ শেষ যামানার
উম্মাতের অন্তর্গত তোমার সন্তানদের একজন। তার নাম দাউদ (‘আঃ)। আদম (‘আঃ) বললেনঃ হে
আমার রব! আপনি তাঁর বয়স কত নির্ধারণ করেছেন? আল্লাহ বললেনঃ ৬০ বছর। আদম (‘আঃ)
বললেনঃ পরোয়ারদিগার! আমার বয়স থেকে ৪০ বছর (কেটে) তাকে দিন। আদম (‘আঃ) এর বয়স শেষ
হয়ে গেলে তাঁর নিকট মালাকুত মউত _ আযরাইল) এসে হাযির হন। আদম (‘আঃ) বললেনঃ আমার
বয়সের কি আরো ৪০ বছর অবশিষ্ট নেই? তিনি বললেনঃ আপনি কি আপনার সন্তান দাউদকে দান
করেননি? রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আদম (‘আঃ) অস্বীকার
করলেন, তাই তার সন্তানরাও অস্বীকার করে থাকে। আদম (‘আঃ) ভুলে গিয়েছিলেন, তাই তাঁর
সন্তানদেরও ত্রুটি বিচ্যুতি হয়ে থাকে।
সহীহ : আয যিলাল (২০৬), তাখরীজুত্ তাহাবীয়াহ (২২০ ,২২১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। আবূ হুরাইরাহ্
(রাঃ) এর বরাতে নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অন্যভাবেও এটি বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৭৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ
بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " لَمَّا حَمَلَتْ حَوَّاءُ طَافَ بِهَا إِبْلِيسُ وَكَانَ لاَ
يَعِيشُ لَهَا وَلَدٌ فَقَالَ سَمِّيهِ عَبْدَ الْحَارِثِ . فَسَمَّتْهُ عَبْدَ
الْحَارِثِ فَعَاشَ وَكَانَ ذَلِكَ مِنْ وَحْىِ الشَّيْطَانِ وَأَمْرِهِ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عُمَرَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ قَتَادَةَ . وَرَوَاهُ
بَعْضُهُمْ عَنْ عَبْدِ الصَّمَدِ وَلَمْ يَرْفَعْهُ عُمَرُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
شَيْخٌ بَصْرِيٌّ .
সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হাওয়া আলাইহিস সালাম গর্ভবতী হলে তাঁর
নিকট শাইতান এলো। তাঁর সন্তান জীবিত থাকত না। শাইতান বলল, এর নাম আবদুল হারিস
রাখুন। তিনি তার নাম আবদুল হারিস রাখলেন। এ সন্তান জীবিত রইল। আর এটা ছিল শাইতানের
কুমন্ত্রণা।
যঈফ, যঈফা (৩৪২)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। কাতাদার মাধ্যমে
উমার ইবনু ইবরাহীমের বর্ণনা ছাড়া আমরা এটিকে জানি না। কেউ কেউ আবদুস সামাদ হতে এটি
বর্ণনা করেছেন, তবে মারফূ হিসেবে নয়। উমার ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) বসরার শাইখ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৭৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا
هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَمَّا خُلِقَ
آدَمُ " . الْحَدِيثَ .
‘আবদ
ইবনু হুমাইদ থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদ ইবনু হুমাইদ আবূ নু’আইম হতে, তিনি হিশাম
ইবনু সা’দ হতে, তিনি যাইদ ইবনু আসলাম হতে, তিনি আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ হুরায়রা্
হতে বর্ণণা করেন যে, আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন আদম (‘আঃ) কে সৃষ্টি করা হল...পূর্বে বর্ণিত হাদীসের
অনুরূপ।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-৯
সুরা
আনফাল
৩০৭৯
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ
عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا
كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ جِئْتُ بِسَيْفٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ
قَدْ شَفَى صَدْرِي مِنَ الْمُشْرِكِينَ أَوْ نَحْوَ هَذَا هَبْ لِي هَذَا
السَّيْفَ . فَقَالَ " هَذَا لَيْسَ لِي وَلاَ لَكَ " . فَقُلْتُ
عَسَى أَنْ يُعْطَى هَذَا مَنْ لاَ يُبْلِي بَلاَئِي فَجَاءَنِي الرَّسُولُ
فَقَالَ " إِنَّكَ سَأَلْتَنِي وَلَيْسَ لِي وَقَدْ صَارَ لِي وَهُوَ لَكَ
" . قَالَ فَنَزَلَتْ : ( يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأَنْفَالِ )
الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ
سِمَاكُ بْنُ حَرْبٍ عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ أَيْضًا . وَفِي الْبَابِ عَنْ
عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ .
মুস’আব
ইবনু সা’দ (রহঃ), তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদরের
যুদ্ধের দিন আমি একটি তলোয়ার নিয়ে আসলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ
তা’আলা আমার হৃদয়কে মুশরিকদের পরাজিত করে প্রশান্তি দান করবেন, অথবা অনুরূপ
বলেছেন। আপনি আমাকে এ তলোয়ারটি দিন। তিনি বললেনঃ এটা তো আমারও নয়, তোমারও নয়। আমি
(মনে মনে) বললাম, তলোয়ারটি হয়তো এমন কাউকে দেয়া হবে যে আমার মত পরীক্ষার মুখোমুখী হতে
পারবে না। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট এসে
বললেনঃ তুমি আমার নিকট এ তলোয়ারটি চেয়েছিলে। তখন এটি আমার ছিল না, কিন্তু এখন তা
আমার হয়েছে। অতএব এটি তোমাকে দিলাম। বর্ণণাকারী বলেম, এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হল
(অনুবাদ) : “লোকেরা তোমার নিকট যুদ্ধলব্ধ মাল প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে। বল, যুদ্ধলব্ধ
মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের...” – (সুরা আল-আনফাল ১)।
হাসান সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (২৭৪৭), মুসলিম।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সিমাক ইবনু হারব
(রহঃ) এ হাদীস মুস’আব ইবনু সা’দ (রহঃ) হতে বর্ণণা করেছেন। ‘উবাদাহ্ ইবনুস সামিত (রাঃ)
হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩০৮০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا
فَرَغَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ بَدْرٍ قِيلَ لَهُ عَلَيْكَ
الْعِيرَ لَيْسَ دُونَهَا شَيْءٌ قَالَ فَنَادَاهُ الْعَبَّاسُ وَهُوَ فِي
وَثَاقِهِ لاَ يَصْلُحُ وَقَالَ لأَنَّ اللَّهَ وَعَدَكَ إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ
وَقَدْ أَعْطَاكَ مَا وَعَدَكَ قَالَ " صَدَقْتَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদর যুদ্ধ হতে ফুরসত হলে তাঁকে বলা হল, আপনি
কাফিলার উপর হামলা করুন। কারণ তাদেরকে রক্ষাকারী কেউ নেই। রাবী বলেন, আব্বাস (রাঃ)
তখন কাফির কয়েদীদের সাথে আটক থাকা অবস্থায় বলেন, এটা উচিত নয়। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা
আপনার সাথে দুই দলের মধ্যে যে কোন একটির উপর বিজয়দানের প্রতিশ্রুতি করেছেন।
আল্লাহ্ তা’আলা আপনার সাথে যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন তা তো তিনি আপনাকে দান করেছেন।
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আপনি সঠিক বলেছেন।
সনদ দুর্বল,
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৮১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ
الْيَمَامِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو زُمَيْلٍ،
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ،
قَالَ نَظَرَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْمُشْرِكِينَ وَهُمْ
أَلْفٌ وَأَصْحَابُهُ ثَلاَثُمِائَةٍ وَبِضْعَةَ عَشَرَ رَجُلاً فَاسْتَقْبَلَ
نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْقِبْلَةَ ثُمَّ مَدَّ يَدَيْهِ وَجَعَلَ
يَهْتِفُ بِرَبِّهِ " اللَّهُمَّ أَنْجِزْ لِي مَا وَعَدْتَنِي اللَّهُمَّ
آتِنِي مَا وَعَدْتَنِي اللَّهُمَّ إِنْ تُهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةَ مِنْ أَهْلِ
الإِسْلاَمِ لاَ تُعْبَدُ فِي الأَرْضِ " . فَمَا زَالَ يَهْتِفُ
بِرَبِّهِ مَادًّا يَدَيْهِ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ حَتَّى سَقَطَ رِدَاؤُهُ
مِنْ مَنْكِبَيْهِ فَأَتَاهُ أَبُو بَكْرٍ فَأَخَذَ رِدَاءَهُ فَأَلْقَاهُ عَلَى
مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ الْتَزَمَهُ مِنْ وَرَائِهِ فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ
كَفَاكَ مُنَاشَدَتُكَ رَبَّكَ فَإِنَّهُ سَيُنْجِزُ لَكَ مَا وَعَدَكَ فَأَنْزَلَ
اللَّهُ : (إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي
مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ مُرْدِفِينَ ) فَأَمَدَّهُمُ اللَّهُ
بِالْمَلاَئِكَةِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ
مِنْ حَدِيثِ عُمَرَ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عِكْرِمَةَ بْنِ عَمَّارٍ عَنْ أَبِي
زُمَيْلٍ وَأَبُو زُمَيْلٍ اسْمُهُ سِمَاكٌ الْحَنَفِيُّ وَإِنَّمَا كَانَ هَذَا
يَوْمَ بَدْرٍ
উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (বদর যুদ্ধের
দিন) মুশরিকদের উপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দৃষ্টিপাত করলেন। তারা
(সংখ্যায়) ছিল এক হাজার। আর তাঁর সাথীরা ছিলেন তিন শত দশজনের কিছু বেশি। আল্লাহর
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিবলার দিকে মুখ করে দুই হাত তুলে তাঁর
প্রভুর নিকট দু’আ করতে লাগলেন : “হে আল্লাহ! তুমি আমার সাথে যে ওয়া’দাহ করেছিলে তা
পূর্ণ কর। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তা দান কর যার ওয়া’দাহ তুমি করেছ। হে আল্লাহ! যদি
কতিপয় মুসলিমের এ ক্ষুদ্র দলটি ধ্বংস করে দাও তাহলে যমিনে তোমার ‘ইবাদাত অনুষ্ঠিত
হবে না”। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিবলামুখী হয়ে দুই হাত
তুলে এমনভাবে তাঁর প্রভুর নিকট ফারিয়াদ করেন, তাঁর উভয় কাঁধ হতে তাঁর চাদর গড়িয়ে
পড়ে গেল। তখন আবূ বকর (রাঃ) তাঁর কাছে এসে চাদরটি উঠিয়ে তাঁর কাঁধে তুলে দিলেন এবং
তাঁর পেছন দিক হতে তাঁকে চেপে ধরে বললেন, হে আল্লাহর নাবী! আপনার প্রভুর সমীপে
আপনার যথেষ্ট পরিমাণ ফরিয়াদ করা হয়েছে। আপনার সাথে আল্লাহ তা’আলা যে ওয়া’দাহ্
করেছেন তা অবশ্যই তিনি পূর্ণ করবেন। এ প্রসঙ্গে বারাকাত্ময় আল্লাহ তা’আলা
নিম্মোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “স্মরণ কর যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের
নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছিলে তখন তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিলেন, আমি তোমাদেরকে
পর্যায়ক্রমে এক হাজার ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করব” (সূরা আল-আনফাল ৯)। অতএব আল্লাহ
তা’আলা ফেরেশতাদের পাঠিয়ে তাদেরকে সাহায্য করেন।
হাসান : মুসলিম (৫/১৫৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। ‘উমার (রাঃ)
এর হাদীস বিষয়ে ইবনু আম্মার-আবূ যুমাইল (রহঃ) সূত্র ব্যতীত আমাদের কিছু জানা নেই। আবূ
যুমাইলের নাম সিমাক আল-হানাফী। বর্ণণাকারী (তিরমিযী) বলেন, এটা বদর যুদ্ধের সময়কার
ঘটনা।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০৮২
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ
إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُهَاجِرٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ يُوسُفَ، عَنْ
أَبِي بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَىَّ أَمَانَيْنِ لأُمَّتِي : (
وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ ) ( وَمَا كَانَ
اللَّهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ ) إِذَا مَضَيْتُ تَرَكْتُ
فِيهِمْ الاِسْتِغْفَارَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ " . هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ . وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُهَاجِرٍ يُضَعَّفُ فِي
الْحَدِيثِ .
আবূ
বুরদা ইবনু আবূ মূসা (রাঃ), তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা আমার উম্মাতের জন্য
আমার উপর দু’টি আমান বা সুরক্ষার উপায় অবতীর্ণ করেছেনঃ “আল্লাহ্ তা’আলা এমন নন যে,
তুমি তাদের মধ্যে হাযির থাকা অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন এবং আল্লাহ্ তা’আলা
এমনও নন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থণারত অবস্থায় তিনি তাদের শাস্তি দিবেন” (সূরাঃ
আল-আনফাল- ৩৩)। আমি যখন চলে যাব তখন কিয়ামাত পর্যন্ত তাদের মধ্যে ক্ষমা প্রার্থণার
উপায়টি রেখে যাব।
সনদ দুর্বল।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীমকে
হাদীস শাস্ত্রে ‘যঈফ’ বলা হয়।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৮৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أُسَامَةَ
بْنِ زَيْدٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ رَجُلٍ، لَمْ يُسَمِّهِ عَنْ
عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ هَذِهِ
الآيَةَ عَلَى الْمِنْبَرِ : ( وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ
قُوَّةٍ ) قَالَ " أَلاَ إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ
أَلاَ إِنَّ اللَّهَ سَيَفْتَحُ لَكُمُ الأَرْضَ وَسَتُكْفَوْنَ الْمُؤْنَةَ فَلاَ
يَعْجِزَنَّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَلْهُوَ بِأَسْهُمِهِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ عَنْ
صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رَوَاهُ أَبُو أُسَامَةَ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ وَحَدِيثُ وَكِيعٍ أَصَحُّ . وَصَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ لَمْ
يُدْرِكْ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ وَقَدْ أَدْرَكَ ابْنَ عُمَرَ .
উক্ববাহ
ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে দাঁড়িয়ে এ আয়াত পাঠ করেন (অনুবাদ) :
“তোমরা যথাসাধ্য তাদের মুকাবিলার জন্য শক্তি ও অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে...”
–(সূরা আল-আনফাল ৬০) তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
জেনে রেখ, শক্তি হল তীর নিক্ষেপ। তিনি তিন তিনবার এ কথা বললেন। তিনি আরো বললেনঃ
জেনে রেখ, আল্লাহ তা’আলা খুব শীঘ্রই দুনিয়াতে তোমাদেরকে বিজয় দান করবেন এবং
তোমাদেরকে নিজেদের ব্যয়ভার সংকুলানের চিন্তা হতে মুক্ত করে দেয়া হবে। সুতরাং
তীরন্দাজির অনুশীলন হতে তোমাদের কেউ যেন কাতর হয়ে না পড়ে।
হাসান সহীহ : ইবনু মা-জাহ (২৮১৩), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উসামা ইবনু যাইদ আল-লাইসী হতে
সালিহ ইবনু কাইসান সূত্রে কোন কোন বর্ণণাকারী বর্ণণা করেছেন। ‘উক্ববাহ্ ইবনু ‘আমির
হতে আবূ উসামা এবং আরো অনেকে এ হাদীসটি বর্ণণা করেছেন। তবে ওয়াকী’র রিওয়ায়াতটি অনেক
বেশি সহীহ। সালিহ ইবনু কাইসান (রহঃ) ‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ)- এর সাক্ষাত পাননি।
তবে তিনি ইবনু ‘উমার (রহঃ) এর সাক্ষাত পেয়েছেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩০৮৪
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ وَجِيءَ
بِالأُسَارَى قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا تَقُولُونَ
فِي هَؤُلاَءِ الأُسَارَى " . فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَنْفَلِتَنَّ مِنْهُمْ أَحَدٌ
إِلاَّ بِفِدَاءٍ أَوْ ضَرْبِ عُنُقٍ " . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
مَسْعُودٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِلاَّ سُهَيْلَ بْنَ بَيْضَاءَ فَإِنِّي
قَدْ سَمِعْتُهُ يَذْكُرُ الإِسْلاَمَ . قَالَ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ فَمَا رَأَيْتُنِي فِي يَوْمٍ أَخْوَفَ أَنْ تَقَعَ عَلَىَّ
حِجَارَةٌ مِنَ السَّمَاءِ مِنِّي فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ قَالَ حَتَّى قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِلاَّ سُهَيْلَ ابْنَ بَيْضَاءَ
" . قَالَ وَنَزَلَ الْقُرْآنُ بِقَوْلِ عُمَرَ : ( وَمَا كَانَ
لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّى يُثْخِنَ فِي الأَرْضِ ) إِلَى آخِرِ
الآيَاتِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَأَبُو عُبَيْدَةَ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِيهِ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদরের
যুদ্ধের দিন যুদ্ধবন্দীদের আনা হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ এই যুদ্ধবন্দীদের বিষয়ে তোমাদের কি মত? তারপর রাবী এ হাদীসে একটি
বিরাট ঘটনা বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
মুক্তিপণ আদায় বা শিরচ্ছেদ করা ছাড়া এদের মুক্তির বিকল্প কোন পথ নেই। আবদুল্লাহ
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তবে সুহাইল ইবনু বাইযা
ব্যতীত। যেহেতু আমি তাকে ইসলাম প্রসঙ্গে আলোচনা করতে শুনেছি। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথায় নীরব থাকলেন।
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, ঐ দিনের মত এরকম মারত্মক অবস্থা আমার আর কোন দিন
ছিল না। ঐ দিন প্রতি মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছিল, আমার মাথার উপর বুঝি আকাশ হতে পাথর
বর্ষিত হবে। অবশেষে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সুহাইল
ইবনু বাইযা ব্যতীত। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, এদিকে উমার (রাঃ)-এর উক্তি মোতাবেক
কুরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “কোন নবীর জন্য উচিত নয় দেশে ব্যাপক হারে প্রতিপক্ষকে
পরাজিত না করা পর্যন্ত আটক রাখা…….” (সূরাঃ আল-আনফাল- ৬৭)।
যঈফ, ১৭৬৭ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আবূ উবাইদা ইবনু আবদুল্লাহ
তার পিতা হতে হাদীস শুনেননি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৮৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو،
عَنْ زَائِدَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَمْ تَحِلَّ الْغَنَائِمُ
لأَحَدٍ سُودِ الرُّءُوسِ مِنْ قَبْلِكُمْ كَانَتْ تَنْزِلُ نَارٌ مِنَ السَّمَاءِ
فَتَأْكُلُهَا " . قَالَ سُلَيْمَانُ الأَعْمَشُ فَمَنْ يَقُولُ هَذَا
إِلاَّ أَبُو هُرَيْرَةَ الآنَ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ وَقَعُوا فِي
الْغَنَائِمِ قَبْلَ أَنْ تَحِلَّ لَهُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى :
(لَوْلاَ كِتَابٌ مِنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ عَذَابٌ
عَظِيمٌ ) قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ
حَدِيثِ الأَعْمَشِ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী কোন উম্মাতের লোকদের জন্য
গানীমাতের সম্পদ বৈধ ছিল না। আকাশ হতে আগুন অবতীর্ণ হত এবং তা পুড়িয়ে ফেলত।
বর্ণণাকারী সুলাইমান আল-আ’মাশ বলেন, আজকের দিনে এ হাদীস আবূ হুরায়রা্ (রাঃ)
ব্যতীত আর কে বলতে পারে? বদর যুদ্ধ সংঘটিত হলে লোকেরা গানীমাতের মাল ব্যবহারে
লিপ্ত হন, অথচ গানীমাতের মাল তখন পর্যন্ত তাদের জন্য বৈধ ঘোষিত হয়নি। তখন আল্লাহ
তা’আলা এ প্রসঙ্গে এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “আল্লাহ তা’আলার পূর্ব বিধান না
থাকলে তোমরা যা গ্রহণ করেছ তজ্জন্য তোমাদের উপর মহাশাস্তি আপতিত হত” – (সূরা আনফাল
৬৮)।
সহীহ : সহীহাহ্ (২১৫৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আ’মাশের হাদীস হিসেবে
গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০
সূরা
আত-তাওবাহ্
৩০৮৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَسَهْلُ بْنُ يُوسُفَ،
قَالُوا حَدَّثَنَا عَوْفُ بْنُ أَبِي جَمِيلَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ
الْفَارِسِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ قُلْتُ لِعُثْمَانَ بْنِ
عَفَّانَ مَا حَمَلَكُمْ أَنْ عَمَدْتُمْ، إِلَى الأَنْفَالِ وَهِيَ مِنَ
الْمَثَانِي وَإِلَى بَرَاءَةَ وَهِيَ مِنَ الْمِئِينَ فَقَرَنْتُمْ بَيْنَهُمَا
وَلَمْ تَكْتُبُوا بَيْنَهُمَا سَطْرَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
وَوَضَعْتُمُوهُمَا فِي السَّبْعِ الطُّوَلِ مَا حَمَلَكُمْ عَلَى ذَلِكَ فَقَالَ
عُثْمَانُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا يَأْتِي عَلَيْهِ
الزَّمَانُ وَهُوَ تَنْزِلُ عَلَيْهِ السُّوَرُ ذَوَاتُ الْعَدَدِ فَكَانَ إِذَا
نَزَلَ عَلَيْهِ الشَّىْءُ دَعَا بَعْضَ مَنْ كَانَ يَكْتُبُ فَيَقُولُ ضَعُوا
هَؤُلاَءِ الآيَاتِ فِي السُّورَةِ الَّتِي يُذْكَرُ فِيهَا كَذَا وَكَذَا وَإِذَا
نَزَلَتْ عَلَيْهِ الآيَةُ فَيَقُولُ ضَعُوا هَذِهِ الآيَةَ فِي السُّورَةِ
الَّتِي يُذْكَرُ فِيهَا كَذَا وَكَذَا وَكَانَتِ الأَنْفَالُ مِنْ أَوَائِلِ مَا
أُنْزِلَتْ بِالْمَدِينَةِ وَكَانَتْ بَرَاءَةُ مِنْ آخِرِ الْقُرْآنِ وَكَانَتْ
قِصَّتُهَا شَبِيهَةً بِقِصَّتِهَا فَظَنَنْتُ أَنَّهَا مِنْهَا فَقُبِضَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يُبَيِّنْ لَنَا أَنَّهَا مِنْهَا فَمِنْ أَجْلِ
ذَلِكَ قَرَنْتُ بَيْنَهُمَا وَلَمْ أَكْتُبْ بَيْنَهُمَا سَطْرَ بِسْمِ اللَّهِ
الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ فَوَضَعْتُهَا فِي السَّبْعِ الطُّوَلِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَوْفٍ عَنْ
يَزِيدَ الْفَارِسِيِّ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَيَزِيدُ الْفَارِسِيُّ قَدْ
رَوَى عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ غَيْرَ حَدِيثٍ وَيُقَالُ هُوَ يَزِيدُ بْنُ هُرْمُزَ
وَيَزِيدُ الرَّقَاشِيُّ هُوَ يَزِيدُ بْنُ أَبَانَ الرَّقَاشِيُّ وَلَمْ يُدْرِكِ
ابْنَ عَبَّاسٍ إِنَّمَا رَوَى عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَكِلاَهُمَا مِنَ
التَّابِعِينَ مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ وَيَزِيدُ الْفَارِسِيُّ أَقْدَمُ مِنْ
يَزِيدَ الرَّقَاشِيِّ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) কে
বললাম, শত আয়াতের চাইতে ক্ষুদ্রতম সূরা আল-আনফালকে শত আয়াত সম্বলিত সূরা বারাআতের
পূর্বে স্থাপন করতে কিসে আপনাদেরকে উদ্দ্বুদ্ধ করল? যার ফলে আপনারা এই দু’টি
সুরাকে একত্রে মিলিয়ে দিলেন, অথচ উভয়ের মাঝখানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’
বাক্যটি লিখেননি এবং এটিকে সপ্ত দীর্ঘ সূরার মধ্যে রেখে দিয়েছেন। আপনাদের এরুপ করার
কারণ কি? ‘উসমান (রাঃ) বললেন, একই সময়কালে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর উপর অনেকগুলো সূরা অবতীর্ণ হত। অতএব তাঁর উপর কোন আয়াত অবতীর্ণ হলে
তিনি লেখকদের কাউকে ডেকে বলতেন, এ আয়াতগুলো অমুক সূরায় যোগ কর যাতে এই বিষয়ের
বর্ণনা রয়েছে। অতএব তার উপর আয়াত অবতীর্ণ হলে তিনি বলতেন, ঐ সূরাতে এ আয়াতটি শামিল
কর যাতে এই এই বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। সূরা আল-আনফাল ছিল মাদীনায় অবতীর্ণ প্রাথমিক
সূরাসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর বারাআত ছিল (নাযিলের দিক হতে) কুরআনের শেষ দিকের সূরা।
সূরা বারাআতের আলোচ্য বিষয় সূরা আল-আনফালের আলোচ্য বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল।
তাই আমার ধারণা হল, এটি (বারাআত) তার অন্তর্ভুক্ত। এদিকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুবরণ করেন। অথচ তিনি আমাদের স্পষ্ট করে
বলে যাননি যে, এ সূরা (বারাআত) আনফালের অন্তর্ভুক্ত কি না। তাই আমি উভয় সূরাকে
একত্রে মিলিয়ে দিয়েছি এবং সূরা দুটোর মাঝখানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম বাক্যও
লিখিনি, আর এটিকে সপ্ত দীর্ঘ সূরাসমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছি।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমরা এ হাদীস শুধু ‘আওফ
হতে, তিনি ইয়াযীদ আল-ফারিসী হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে এই সূত্রেই জেনেছি। ইয়াযীদ
আল-ফারেসী বসরাবাসী তাবিঈগণের অন্তর্ভুক্ত। আর ইয়াযীদ ইবনু আবান আর-রাকাশীও বাসরাবাসী
তাবিঈগণের অন্তর্ভুক্ত। তবে তিনি পূর্বোক্ত জনের চাইতে কনিষ্ঠ। ইয়াযীদ আর-রাকাশী (রহঃ)
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণণা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০৮৭
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْجُعْفِيُّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ غَرْقَدَةَ، عَنْ
سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، حَدَّثَنَا أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ
حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ
وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ ثُمَّ قَالَ " أَىُّ يَوْمٍ
أَحْرَمُ أَىُّ يَوْمٍ أَحْرَمُ أَىُّ يَوْمٍ أَحْرَمُ " . قَالَ فَقَالَ
النَّاسُ يَوْمُ الْحَجِّ الأَكْبَرِ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " فَإِنَّ
دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ
يَوْمِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا أَلاَ لاَ يَجْنِي
جَانٍ إِلاَّ عَلَى نَفْسِهِ وَلاَ يَجْنِي وَالِدٌ عَلَى وَلَدِهِ وَلاَ وَلَدٌ
عَلَى وَالِدِهِ أَلاَ إِنَّ الْمُسْلِمَ أَخُو الْمُسْلِمِ فَلَيْسَ يَحِلُّ
لِمُسْلِمٍ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ إِلاَّ مَا أَحَلَّ مِنْ نَفْسِهِ أَلاَ وَإِنَّ
كُلَّ رِبًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ لَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَالِكُمْ لاَ
تَظْلِمُونَ وَلاَ تُظْلَمُونَ غَيْرَ رِبَا الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ
فَإِنَّهُ مَوْضُوعٌ كُلُّهُ أَلاَ وَإِنَّ كُلَّ دَمٍ كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ
مَوْضُوعٌ وَأَوَّلُ دَمٍ أَضَعُ مِنْ دِمَاءِ الْجَاهِلِيَّةِ دَمُ الْحَارِثِ
بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ كَانَ مُسْتَرْضِعًا فِي بَنِي لَيْثٍ فَقَتَلَتْهُ
هُذَيْلٌ أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا فَإِنَّمَا هُنَّ عَوَانٌ
عِنْدَكُمْ لَيْسَ تَمْلِكُونَ مِنْهُنَّ شَيْئًا غَيْرَ ذَلِكَ إِلاَّ أَنْ
يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ فَإِنْ فَعَلْنَ فَاهْجُرُوهُنَّ فِي
الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلاَ
تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلاً أَلاَ إِنَّ لَكُمْ عَلَى نِسَائِكُمْ حَقًّا
وَلِنِسَائِكُمْ عَلَيْكُمْ حَقًّا فَأَمَّا حَقُّكُمْ عَلَى نِسَائِكُمْ فَلاَ
يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ مَنْ تَكْرَهُونَ وَلاَ يَأْذَنَّ فِي بُيُوتِكُمْ مَنْ
تَكْرَهُونَ أَلاَ وَإِنَّ حَقَّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي
كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ أَبُو الأَحْوَصِ عَنْ شَبِيبِ بْنِ غَرْقَدَةَ .
সুলাইমান
ইবনু 'আম্র ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বাবা
আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বিদায় হাজ্জে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও তাঁর গুণগান বর্ণনা করলেন, ওয়াজ-নাসীহাত করলেন ও উপদেশ
দিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি কোন দিনটির মর্যাদা বর্ণনা করছি, আমি কোন দিনটির
মর্যাদা ঘোষণা করছি? বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! হাজ্জের মহান
দিনের।তিনি বললেনঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-মাল, তোমাদের ইজ্জত-সম্মানে হস্তক্ষেপ
তোমাদের উপর হারাম, যেরূপ তোমাদের এ দিনে এ শহরে ও এ মাসে হারাম। জেনে রেখ!
অপরাধীই অপরাধ কর্মের জন্য দায়ী ও দোষী। ছেলের অপরাধের জন্য বাবা এবং বাবার
অপরাধের জন্য ছেলে অপরাধী নয়। জেনে রেখ! এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। কাজেই এক
মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের ঐ জিনিসই হালাল যা সে স্বেচ্ছায় তার জন্য হালাল করে (দান
করে)। জেনে রেখ! জাহেলী যুগের প্রাপ্য সকল প্রকার সুদ বাতিল ঘোষণা করা হল। তবে
তোমাদের মূলধন ফেরত পাবে। তোমরা কারো প্রতি যুলুম করবে না এবং তোমাদের প্রতিও
যুলুম করা হবে না। ‘আব্বাস ইবনু 'আবদুল মুত্তালিবের সুদের সকল পাওনা বাতিল ঘোষণা
করা হল। জেনে রেখ! জাহিলিয়াতের সকল প্রকার রক্তের দাবি বাতিল করা হল। জাহিলিয়াতের
সর্বপ্রথম যার রক্ত আমি বাতিল ঘোষণা করছি সে হচ্ছে হারিস ইবনু 'আবদুল মুত্তালিবের
রক্ত। সে শিশু অবস্থায় বনূ লাইস গোত্রে দুধ পানরত অবস্থায় হুযাইল গোত্র তাকে হত্যা
করেছিল। শোন! আমি তোমাদেরকে নারীদের সাথে ভালো ব্যবহারের উপদেশ দিচ্ছি। তারা
তোমাদের নিকট বন্দীর মত যুক্ত। তাদের উপর তোমাদের কোন কর্তৃত্ব নেই, যদি না তারা
কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। যদি তারা তাই করে তাহলে তোমরা তাদের বিছানা পৃথক
করে দাও এবং একান্ত প্রয়োজন হলে হালকাভাবে আঘাত কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়ে
যায়, তবে তাদের প্রতি বাড়াবাড়ির পথ অন্বেষণ কর না। জেনে রেখ! তোমাদের যেরূপ অধিকার
রয়েছে তোমাদের স্ত্রীদের উপর, তোমাদের স্ত্রীদেরও তদ্রুপ অধিকার রয়েছে তোমাদের উপর
(কাজেই উভয়ের প্রতি উভয়ের অধিকার আদায় করা কর্তব্য)। তোমাদের স্ত্রীদের উপর
তোমাদের অধিকার এই যে, তারা তোমাদের অপছন্দনীয় লোককে তোমাদের বিছানায় স্থান দিবে
না এবং তোমাদের অপছন্দনীয় লোককে তোমাদের ঘরে যাতায়াতের অনুমতি দিবে না। আর তোমাদের
উপর তাদের অধিকার এই যে, তোমরা (যথাসম্ভব) তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও আহারের
সুব্যবস্থা করবে।
হাসান : ইবনু মা-জাহ (১৮৫১)।
আবূ '‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এটি শাবীব ইবনু
গারক্বাদাহ্ হতে আবুল আহ্ওয়াস (রহঃ) বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০৮৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ
الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ
أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم عَنْ يَوْمِ الْحَجِّ الأَكْبَرِ فَقَالَ " يَوْمُ
النَّحْرِ " .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাজ্জের মহান
দিন প্রসঙ্গে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস
করলাম। তিনি বললেনঃ কুরবানীর দিন।
সহীহ : (৯৫৭) নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৮৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ يَوْمُ الْحَجِّ الأَكْبَرِ
يَوْمُ النَّحْرِ . قَالَ هَذَا الْحَدِيثُ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ لأَنَّهُ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ عَنِ الْحَارِثِ عَنْ عَلِيٍّ مَوْقُوفًا وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا
رَفَعَهُ إِلاَّ مَا رُوِيَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ عَنِ
الْحَارِثِ عَنْ عَلِيٍّ مَوْقُوفًا .
আলী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাজ্জের মহান
দিন হচ্ছে কুরবানীর দিন।
সহীহ : দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ‘ঈসা বলেন, মুহাম্মাদ আবূ ইসহাকের হাদিসের চাইতে এটি
অনেক বেশি সহীহ। কেননা এ হাদীস বিভিন্ন সূত্রে আবূ ইসহাক আল-হারিস হতে, তিনি 'আলী
(রাঃ) হতে এই সূত্রে মাওকূফভাবে বর্ণিত হয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাকের সূত্র ব্যতীত
অন্য কেউ এটিকে মারফূভাবে বর্ণনা করেছেন বলে আমার জানা নেই। শু'বাহ্ এ হাদীসটি আবূ
ইসহাক হতে, তিনি 'আবদুল্লাহ্ ইবনু মুররাহ্ হতে, তিনি আল-হারিস হতে, তিনি 'আলী হতে
মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ،
وَعَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ
سَلَمَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ بَعَثَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِبَرَاءَةَ مَعَ أَبِي بَكْرٍ ثُمَّ دَعَاهُ
فَقَالَ " لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ أَنْ يُبَلِّغَ هَذَا إِلاَّ رَجُلٌ مِنْ
أَهْلِي " . فَدَعَا عَلِيًّا فَأَعْطَاهُ إِيَّاهَا . قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আবূ বাকর (রাঃ)-কে সূরা বারাআতের প্রাথমিক আয়াতগুলো সহকারে মক্কা
মুআজ্জামায় পাঠান। তারপর তাকে ফেরত ডেকে এনে বললেনঃ আমার পরিবারের কোন সদস্য
ব্যতীত অন্য কাউকে দিয়ে এটা পাঠানো উচিত নয়। এরপর তিনি 'আলী (রাঃ)-কে ডাকলেন এবং
তাকেই এটি দিলেন।
আবূ '‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান; আনাস (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত
হিসেবে গরীব।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ
سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
حُسَيْنٍ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ عُتَيْبَةَ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَبَا بَكْرٍ وَأَمَرَهُ أَنْ
يُنَادِيَ بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ ثُمَّ أَتْبَعَهُ عَلِيًّا فَبَيْنَا أَبُو
بَكْرٍ فِي بَعْضِ الطَّرِيقِ إِذْ سَمِعَ رُغَاءَ نَاقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم الْقَصْوَاءَ فَخَرَجَ أَبُو بَكْرٍ فَزِعًا فَظَنَّ أَنَّهُ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ عَلِيٌّ فَدَفَعَ إِلَيْهِ
كِتَابَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَ عَلِيًّا أَنْ يُنَادِيَ
بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ فَانْطَلَقَا فَحَجَّا فَقَامَ عَلِيٌّ أَيَّامَ
التَّشْرِيقِ فَنَادَى ذِمَّةُ اللَّهِ وَرَسُولِهِ بَرِيئَةٌ مِنْ كُلِّ مُشْرِكٍ
فَسِيحُوا فِي الأَرْضِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَلاَ يَحُجَّنَّ بَعْدَ الْعَامِ
مُشْرِكٌ وَلاَ يَطُوفَنَّ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ وَلاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ
إِلاَّ مُؤْمِنٌ وَكَانَ عَلِيٌّ يُنَادِي فَإِذَا عَيِيَ قَامَ أَبُو بَكْرٍ
فَنَادَى بِهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আবূ বাকর (রাঃ)-কে (আমীরুল হাজ্জ নিয়োগ করে) পাঠান এবং এই বাক্যগুলো
ঘোষণার জন্যে তাকে নির্দেশ দেন। তারপর তিনি 'আলী (রাঃ)-কে পাঠান। আবূ বাকর (রাঃ)
পথিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উটনী কাস্ওয়ার শব্দ
শুনতে পান। আবূ বাকর (রাঃ) সন্ত্রস্ত হয়ে বের হলেন। তিনি ভেবেছিলেন হয়ত
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসেছেন। কিন্তু তিনি ছিলেন 'আলী
(রাঃ)। 'আলী (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর লেখা ফরমানটি দিলেন এবং তাতে তাকে এসব বিষয় ঘোষণা দেয়ার জন্য নির্দেশ
দেন। তারা দু'জনেই গন্তব্যের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং হাজ্জ সম্পন্ন করলেন। 'আলী
(রাঃ) আইয়্যামে তাশরিক্বে (কুরবানীর দিন) দাঁড়িয়ে বললেনঃ প্রত্যেক মুশরিকের সাথে
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয়া হল। অতএব তোমরা আর চার মাস দেশে
চলাফেরা কর। এ বছরের পর আর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। নগ্ন অবস্থায় কেউ
বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করবে না। শুধু মু'মিন ব্যতীত আর কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
'আলী (রাঃ) এভাবে ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লে আবূ বাকর (রাঃ)
দাঁড়িয়ে একই রকম ঘোষণা দিতে থাকেন।
আবূ '‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত
হিসেবে এই সুত্রে হাসান গরীব ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ يُثَيْعٍ، قَالَ سَأَلْنَا عَلِيًّا بِأَىِّ شَيْءٍ
بُعِثْتَ فِي الْحَجَّةِ قَالَ بُعِثْتُ بِأَرْبَعٍ أَنْ لاَ يَطُوفَ بِالْبَيْتِ
عُرْيَانٌ وَمَنْ كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَهْدٌ
فَهُوَ إِلَى مُدَّتِهِ وَمَنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ عَهْدٌ فَأَجَلُهُ أَرْبَعَةُ
أَشْهُرٍ وَلاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ نَفْسٌ مُؤْمِنَةٌ وَلاَ يَجْتَمِعُ
الْمُشْرِكُونَ وَالْمُسْلِمُونَ بَعْدَ عَامِهِمْ هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ وَهُوَ حَدِيثُ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ وَرَوَاهُ الثَّوْرِيُّ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِهِ
عَنْ عَلِيٍّ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
যাইদ
ইবনু ইউসাই (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা 'আলী
(রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, আপনাকে হাজ্জ উপলক্ষ্যে কোন জিনিস সহকারে পাঠানো হয়েছিল।
তিনি বললেন, আমাকে (হাজ্জে) চারটি বিষয় সহকারে পাঠানো হয়েছিল : (১) কোন উলঙ্গ
ব্যক্তি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করতে পারবে না; (২) যাদের সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চুক্তি আছে তা তার নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত কার্যকর
থাকবে আর যাদের সাথে তাঁর কোন চুক্তি নেই তারা চার মাসের অবকাশ পাবে (নিরাপত্তা
সহকারে বিচরণ করার); (৩) মু'মিন ব্যতীত কোন ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবে না; (৪) এ
বছরের পর মুসলিমগণ ও মুশরিকরা (হাজ্জে) একত্র হতে পারবে না (এরপর হতে মুশরিকদের
জন্য হাজ্জে যোগদান চিরতরে নিষিদ্ধ)।
সহীহ : (৮৭১) নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এটি আবূ ইসহাক হতে
আবূ 'উয়াইনার বর্ণিত হাদীস। সুফ্ইইয়ান সাওরীও এটি আবূ ইসহাক হতে, তিনি তার কোন সহযোগী
হতে, তিনি 'আলী (রাঃ) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে
হাদীস বর্ণিত আছে। নাসর ইবনু 'আলী প্রমুখ- সুফ্ইয়ান ইবনু 'উয়াইনাহ্ হতে, তিনি আবূ
ইসহাক হতে, তিনি যাইদ ইবনু ইউসাই হতে, তিনি 'আলী (রাঃ) সূত্রে পূবোর্ক্ত হাদীসের মত
বর্ণনা করেছেন। 'আলী ইবনু খাশরাম- সুফ্ইয়ান ইবনু 'উয়াইনাহ্ হতে, তিনি আবূ ইসহাক হতে,
তিনি যাইদ ইবনু উসাই হতে, তিনি 'আলী (রাঃ) হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। আবূ
‘ঈসা বলেন, ইবনু 'উয়াইনাহ্ উভয় রিওয়ায়াত ইবনু উসাই ও ইবনু ইউসাই উভয়ের সূত্রে বর্ণনা
করেছেন। সঠিক হল যাইদ ইবনু উসাই। শুবাহ্ (রহঃ) উক্ত হাদীস ব্যতীত অন্য হাদীস আবূ ইসহাকের
সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং তাতে সন্দেহে পতিত হয়েছেন এবং যাইদ ইবনু উসাইল নাম বলেছেন;
কিন্তু এ ক্ষেত্রে শু'বাহ্র অনুসরণ করা হয়নি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا
رَأَيْتُمُ الرَّجُلَ يَعْتَادُ الْمَسْجِدَ فَاشْهَدُوا لَهُ بِالإِيمَانِ .
قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : ( إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ
بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ) . "
আবূ
সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কোন ব্যক্তিকে মাসজিদে যাতায়াতে
অভ্যস্ত দেখলে তার ঈমানের সাক্ষী দিও। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ “আল্লাহ্ তা’আলার
মাসজিদসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ তো তারাই করে যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে……”
(সূরাঃ আত-তাওবা- ১৮)।
দুর্বল, ২৭৫০নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে
ইবনু আবূ উমার-আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহ্ব হতে তিনি আমর ইবনুল
হারিস হতে তিনি দাররাজ হতে তিনি আবুল হাইসাম হতে তিনি আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) এর সূত্রেও
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরের হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন।
তবে তাতে “তোমরা যাকে মাসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করতে দেখ” এরূপ বর্ণিত আছে। দুর্বল, দেখুন
পূর্বের হাদীস, আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবুল হাইসামের নাম সুলাইমান ইবনু
আমর ইবনু আবদুল উতওয়ারী। তিনি ইয়াতীম ছিলেন এবং আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ)-এর পরিবারে
লালিত-পালিত হন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩০৯৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ،
عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ : ( وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ
وَالْفِضَّةَ ) قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْضِ
أَسْفَارِهِ فَقَالَ بَعْضُ أَصْحَابِهِ أُنْزِلَ فِي الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ مَا
أُنْزِلَ . لَوْ عَلِمْنَا أَىُّ الْمَالِ خَيْرٌ فَنَتَّخِذَهُ فَقَالَ
" أَفْضَلُهُ لِسَانٌ ذَاكِرٌ وَقَلْبٌ شَاكِرٌ وَزَوْجَةٌ مُؤْمِنَةٌ
تُعِينُهُ عَلَى إِيمَانِهِ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . سَأَلْتُ
مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ فَقُلْتَ لَهُ سَالِمُ بْنُ أَبِي الْجَعْدِ سَمِعَ
مِنْ ثَوْبَانَ فَقَالَ لاَ . فَقُلْتُ لَهُ مِمَّنْ سَمِعَ مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ سَمِعَ مِنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَذَكَرَ غَيْرَ وَاحِدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم .
সাওবান
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, "যারা
সোনা ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে পীড়াদায়ক আযাবের
সুসংবাদ দাও’ - (সূরা আত্-তাওবাহ্ : ৩৪), এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সময় আমরা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ভ্রমণে ছিলাম। কোন কোন সাহাবী বলেন,
এ আয়াতটি সোনা ও রূপার সমালোচনায় অবতীর্ণ হয়েছে। কোন্ সম্পদ উৎকৃষ্ট আমরা তা
জানতে পারলে তা জমা করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন উৎকৃষ্ট সম্পদ হল (আল্লাহ তা'আলার) যিক্রকারী জিহ্বা, কৃতজ্ঞ অন্তর ও
ঈমানদার স্ত্রী, যে স্বামীকে দীনদারির ব্যাপারে সহযোগিতা করে।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৮৫৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান । আমি মুহাম্মাদ ইবনু
ইসমাঈলকে প্রশ্ন করে বললাম, সালিম ইবনু আবুল জা'দ (রহঃ) সাওবান (রাঃ) হতে হাদীস শুনেছেন
কি? তিনি বললেন, না। আমি তাকে বললাম, তাহলে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-এর সাহাবীগণের মধ্যে কার নিকটে শুনেছেন? তিনি বললেন, তিনি জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ ও
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর নিকট শুনেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
-এর আরো কয়েকজন সাহাবীর নামও তিনি উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ يَزِيدَ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
السَّلاَمِ بْنُ حَرْبٍ، عَنْ غُطَيْفِ بْنِ أَعْيَنَ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ،
عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَفِي
عُنُقِي صَلِيبٌ مِنْ ذَهَبٍ . فَقَالَ " يَا عَدِيُّ اطْرَحْ عَنْكَ
هَذَا الْوَثَنَ " . وَسَمِعْتُهُ يَقْرَأُ فِي سُورَةِ بَرَاءَةََ :
( اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ )
قَالَ " أَمَا إِنَّهُمْ لَمْ يَكُونُوا يَعْبُدُونَهُمْ وَلَكِنَّهُمْ
كَانُوا إِذَا أَحَلُّوا لَهُمْ شَيْئًا اسْتَحَلُّوهُ وَإِذَا حَرَّمُوا
عَلَيْهِمْ شَيْئًا حَرَّمُوهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ السَّلاَمِ بْنِ حَرْبٍ .
وَغُطَيْفُ بْنُ أَعْيَنَ لَيْسَ بِمَعْرُوفٍ فِي الْحَدِيثِ .
আদী
ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি গলায় স্বর্ণের ক্রুশ পরে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে এলাম। তিনি বললেনঃ হে 'আদী! তোমার
গলা হতে এই প্রতীমা সরিয়ে ফেল। এই বলে আমি তাঁকে সূরা বারাআতের নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ
করতে শুনলাম (অনুবাদ) : "তারা আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত তাদের পণ্ডিতগণকে ও
সংসারবিরাগীগণকে তাদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছে" (সূরা আত্-তাওবাহ্ ৩১)। তারপর
তিনি বললেনঃ তারা অবশ্য তাদের পূজা করত না। তবে তারা কোন জিনিসকে যখন তাদের জন্য
হালাল বলত তখন সেটাকে তারা হালাল বলে মেনে নিত। আবার তারা কোন জিনিসকে যখন তাদের
জন্য হারাম বলত তখন নিজেদের জন্য উহাকে হারাম বলে মেনে নিত।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গরীব। আমরা এ হাদীস শুধু 'আবদুস
সালাম ইবনু হারবের সূত্রে জেনেছি। হাদীস শাস্ত্রে গুতাইফ ইবনু আই'য়ান খুব একটা প্রসিদ্ধ
নন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩০৯৬
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ
بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ
أَبَا بَكْرٍ، حَدَّثَهُ قَالَ قُلْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ
فِي الْغَارِ لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ يَنْظُرُ إِلَى قَدَمَيْهِ لأَبْصَرَنَا
تَحْتَ قَدَمَيْهِ . فَقَالَ " يَا أَبَا بَكْرٍ مَا ظَنُّكَ
بِاثْنَيْنِ اللَّهُ ثَالِثُهُمَا " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا يُعْرَفُ مِنْ حَدِيثِ هَمَّامٍ تَفَرَّدَ بِهِ .
وَقَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ حَبَّانُ بْنُ هِلاَلٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ
هَمَّامٍ نَحْوَ هَذَا .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বাকর (রাঃ) তাকে
বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে (সাওর) গিরিগুহায় অবস্থান
কালে বললাম, যদি কাফিরদের কেউ তার পদদ্বয়ের দিকে (নিচের দিকে) তাকায় তাহলে সে
নিশ্চিত আমাদেরকে তার পায়ের নিচেই দেখবে। তিনি বললেনঃ হে আবূ বাকর! যে দু'জনের সাথে
তৃতীয়জন হিসেবে আল্লাহ তা'আলা আছেন সে দু'জনের ব্যাপারে আপনার কি ধারণা?
সহীহ : তাখরীজু ফিক্বহিস্ সীরাহ্ (১৭৩), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব। এ হাদীসটি
হাম্মামের সূত্রেই বর্ণিত আছে। একমাত্র তিনিই এটি বর্ণনা করেছেন। হাব্বান ইবনু হিলাল
প্রমুখও হাম্মামের সূত্রে এ হাদীস একই রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ لَمَّا
تُوُفِّيَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ دُعِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لِلصَّلاَةِ عَلَيْهِ فَقَامَ إِلَيْهِ فَلَمَّا وَقَفَ عَلَيْهِ يُرِيدُ
الصَّلاَةَ تَحَوَّلْتُ حَتَّى قُمْتُ فِي صَدْرِهِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَعَلَى عَدُوِّ اللَّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَىٍّ الْقَائِلِ يَوْمَ كَذَا
كَذَا وَكَذَا يَعُدُّ أَيَّامَهُ . قَالَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَتَبَسَّمُ حَتَّى إِذَا أَكْثَرْتُ عَلَيْهِ قَالَ " أَخِّرْ عَنِّي يَا
عُمَرُ . إِنِّي خُيِّرْتُ فَاخْتَرْتُ قَدْ قِيلَ لِي : ( اسْتَغْفِرْ
لَهُمْ أَوْ لاَ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً
فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ) لَوْ أَعْلَمُ أَنِّي لَوْ زِدْتُ عَلَى
السَّبْعِينَ غُفِرَ لَهُ لَزِدْتُ " . قَالَ ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهِ
وَمَشَى مَعَهُ فَقَامَ عَلَى قَبْرِهِ حَتَّى فُرِغَ مِنْهُ قَالَ فَعَجَبٌ لِي
وَجُرْأَتِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَاللَّهُ وَرَسُولُهُ
أَعْلَمُ فَوَاللَّهِ مَا كَانَ إِلاَّ يَسِيرًا حَتَّى نَزَلَتْ هَاتَانِ
الآيَتَانِ : (وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلاَ
تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ قَالَ فَمَا صَلَّى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَهُ عَلَى مُنَافِقٍ وَلاَ قَامَ عَلَى قَبْرِهِ
حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
غَرِيبٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, 'উমার ইবনুল
খাত্তাব (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি : 'আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেলে তার জানাযা
আদায়ের জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আবেদন করা
হয়। তিনি সেখানে যেতে শুরু করলেন। তিনি জানাযার উদ্দেশ্যে দাঁড়ালে আমি ঘুরে গিয়ে তাঁর
বুক বরাবর সামনে দাঁড়িয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা'আলার দুশমন ইবনু
উবাইর জানাযা কি আপনি আদায় করবেন, যে অমুক দিন এই কথা বলেছে, অমুক দিন এই কথা
বলেছে? এভাবে নির্দিষ্ট দিন তারিখ উল্লেখ করে 'উমার (রাঃ) বলতে লাগলেন এবং
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসি দিতে থাকলেন। এমনকি
আমি যখন তাঁকে অনেক কিছু বললাম, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ হে 'উমার! আমার সামনে হতে সরে যাও। আমাকে এখতিয়ার দেয়া হয়েছে।
কাজেই আমি (জানাযা আদায়ের) এখতিয়ার গ্রহণ করেছি। আমাকে বলা হয়েছে (আয়াতের অর্থ) :
"তুমি এদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর বা না কর, এমনকি তুমি যদি সত্তর বারও
তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, তবুও আল্লাহ তা'আলা তাদের কখনো ক্ষমা করবেন
না"-(সূরা আত্-তাওবাহ্ ৮০)। আমি যদি জানতাম তাদের জন্য সত্তর বারের বেশি
ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা'আলা তাদের ক্ষমা করে দিবেন, তাহলে আমি তাই করতাম।
'উমার (রাঃ) বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার
জানাযা আদায় করলেন এবং তার জানাযার সাথে গেলেন। তিনি তার ক্ববরের সামনে দাঁড়ান এবং
সকল কাজ শেষ করেন। 'উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর সামনে আমার দুঃসাহসিকতায় আশ্চর্যবোধ হল। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো
জানেন। আল্লাহর শপথ! কিছুক্ষণ পরেই এ দু'টি আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) :
"তাদের কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তুমি কখনো তাদের জানাযা আদায় করবে না এবং
তার ক্ববরের পাশে কখনো দাঁড়াবে না। কেননা তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার
করেছে এবং পাপাচারী অবস্থায় এদের মৃত্যু হয়েছে’ (সূরা আত-তাওবাহ্ ৮৪)। 'উমার
(রাঃ) বলেনঃ এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুর পূর্ব
পর্যন্ত আর কোন মুনাফিক্বের জানাযা আদায় করেননি এবং এদের ক্ববরের পাশেও দাঁড়াননি।
সহীহ : আহকা-মুল জানা-য়িয (৯৩, ৯৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ
جَاءَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَىٍّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم حِينَ مَاتَ أَبُوهُ فَقَالَ أَعْطِنِي قَمِيصَكَ أُكَفِّنْهُ فِيهِ وَصَلِّ
عَلَيْهِ وَاسْتَغْفِرْ لَهُ . فَأَعْطَاهُ قَمِيصَهُ وَقَالَ " إِذَا
فَرَغْتُمْ فَآذِنُونِي " . فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يُصَلِّيَ جَذَبَهُ
عُمَرُ وَقَالَ أَلَيْسَ قَدْ نَهَى اللَّهُ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَى الْمُنَافِقِينَ
فَقَالَ " أَنَا بَيْنَ خِيرَتَيْنِ : (اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لاَ
تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ ) " . فَصَلَّى عَلَيْهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ:
(وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلاَ تَقُمْ عَلَى
قَبْرِهِ ) فَتَرَكَ الصَّلاَةَ عَلَيْهِمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, 'আবদুল্লাহ্
(রাঃ)-এর বাবা 'আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেলে 'আবদুল্লাহ্ (রাঃ) নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে এসে বলেন, আপনার জামাটি আমাকে দিন,
তা দিয়ে তাকে (বাবাকে) কাফন দিব এবং আপনি তার জানাযা আদায় করুন, তার জন্য ক্ষমা
প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে তাঁর জামা
দিলেন এবং বললেনঃ তোমরা (গোসল, কাফন ইত্যাদি হতে) অবসর হলে আমাকে খবর দিও। তিনি
নামায আদায়ের প্রস্তুতি নিলে 'উমার (রাঃ) তাঁকে টেনে ধরে বললেন, আল্লাহ তা'আলা কি
আপনাকে মুনাফিক্বদের জানাযা আদায় করতে নিষেধ করেন নি? তিনি বললেনঃ আমাকে দুটো
ব্যাপারেই স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে- "তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর বা না
কর’। যাই হোক তিনি তার জানাযা আদায় করলেন। আল্লাহ তা'আলা তখন এ আয়াত অবতীর্ণ করেন
(অনুবাদ) : "তাদের কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তুমি কখনো তার জানাযা আদায়
করবে না এবং তার ক্ববরের পাশে কখনো দাঁড়াবে না...’ (সূরা আত-তাওবাহ্ ৮৪)। এরপর
তিনি তাদের জানাযা আদায় করা ছেড়ে দেন।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৫২৩), বুখারী (৪৬৭০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ أَبِي
أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ قَالَ تَمَارَى رَجُلاَنِ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي أُسِّسَ
عَلَى التَّقْوَى مِنْ أَوَّلِ يَوْمٍ فَقَالَ رَجُلٌ هُوَ مَسْجِدُ قُبَاءَ
وَقَالَ الآخَرُ هُوَ مَسْجِدُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هُوَ مَسْجِدِي هَذَا " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ عِمْرَانَ
بْنِ أَبِي أَنَسٍ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا عَنْ أَبِي سَعِيدٍ مِنْ غَيْرِ هَذَا
الْوَجْهِ رَوَاهُ أُنَيْسُ بْنُ أَبِي يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
رضى الله عنه .
আবূ
সা'ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, "যে
মাসজিদ প্রথম দিন হতেই তাক্বওয়ার ভিত্তির উপর নির্মিত হয়েছে’ (সূরা আত্-তাওবাহ্
১০৮), সেই মাসজিদ প্রসঙ্গে দুই ব্যক্তি বিতর্কে লিপ্ত হয়। একজন বলল, তা হচ্ছে
মাসজিদে কুবা। অন্যজন বলল, তা হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর মাসজিদ (মাসজিদে নাববী)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ তা আমার এই মাসজিদ।
সহীহ : মুসলিম, এর চেয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে (৩২৩) নং হাদীসে পূর্বে উল্লেখ হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। 'ইমরান ইবনু আবী
আনাসের হাদীস হিসেবে গরীব। আবূ সা'ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে এটি অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।
হাদীসটি উনাইস ইবনু আবী ইয়াহ্ইয়া তার পিতা হতে, তিনি ‘আবূ সা'ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا
مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ
بْنِ أَبِي مَيْمُونٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِي أَهْلِ
قُبَاء : (فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ
الْمُطَّهِّرِينَ ) " . قَالَ كَانُوا يَسْتَنْجُونَ بِالْمَاءِ
فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِيهِمْ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
. قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَمُحَمَّدِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুবাবাসীর সম্পর্কেই এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে (অনুবাদ)
: "তথায় এমন লোক আছে যারা পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে এবং পবিত্রতা
অর্জনকারীদেরকে আল্লাহ তা'আলা ভালোবাসেন’- (সূরা আত্-তাওবাহ্ : ১০৮)। আবূ
হুরায়রা্ (রাঃ) বলেন, এসব লোক পানি দিয়ে ইস্তিনজা করত। তাই তাদের ব্যাপারে উক্ত
আয়াত অবতীর্ণ হয়।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৩৫৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ সূত্রে হাদীসটি গরীব। আবূ আইয়ূব, আনাস
ইবনু মালিক ও মুহাম্মাদ ইবনু 'আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، كُوفِيٌّ عَنْ عَلِيٍّ،
قَالَ سَمِعْتُ رَجُلاً، يَسْتَغْفِرُ لأَبَوَيْهِ وَهُمَا مُشْرِكَانِ فَقُلْتُ
لَهُ أَتَسْتَغْفِرُ لأَبَوَيْكَ وَهُمَا مُشْرِكَانِ . فَقَالَ أَوَلَيْسَ
اسْتَغْفَرَ إِبْرَاهِيمُ لأَبِيهِ وَهُوَ مُشْرِكٌ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَتْ : ( مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا
أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيهِ .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক
ব্যক্তিকে তার (মৃত) মুশরিক পিতা-মাতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে শুনলাম। আমি
তাকে বললাম, তোমার মৃত পিতা-মাতার জন্য কি তুমি ক্ষমা প্রার্থনার দু'আ করছ, অথচ
তারা ছিল মুশরিক? সে বলল, ইবরাহীম (আঃ) কি তাঁর বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা
করেননি, অথচ তাঁর বাবা ছিল মুশরিক? আমি বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর নিকট উল্লেখ করলাম। তখন নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) :
"নাবী ও ঈমানদার লোকদের পক্ষে শোভনীয় নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা
প্রার্থনা করবে, তারা তাদের আত্নীয়-স্বজনই হোক না কেন.....’ - (সূরা আত্-তাওবাহ্
: ১১৩)।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৫২৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। সা'ঈদ ইবনুল মুসইয়্যাব
(রহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ
بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا حَتَّى كَانَتْ غَزْوَةُ تَبُوكَ إِلاَّ
بَدْرًا وَلَمْ يُعَاتِبِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَحَدًا تَخَلَّفَ عَنْ
بَدْرٍ إِنَّمَا خَرَجَ يُرِيدُ الْعِيرَ فَخَرَجَتْ قُرَيْشٌ مُغْوِثِينَ
لِعِيرِهِمْ فَالْتَقَوْا عَنْ غَيْرِ مَوْعِدٍ كَمَا قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ
وَلَعَمْرِي إِنَّ أَشْرَفَ مَشَاهِدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
النَّاسِ لَبَدْرٌ وَمَا أُحِبُّ أَنِّي كُنْتُ شَهِدْتُهَا مَكَانَ بَيْعَتِي
لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ حَيْثُ تَوَاثَقْنَا عَلَى الإِسْلاَمِ ثُمَّ لَمْ أَتَخَلَّفْ
بَعْدُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى كَانَتْ غَزْوَةُ تَبُوكَ
وَهِيَ آخِرُ غَزْوَةٍ غَزَاهَا وَآذَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
بِالرَّحِيلِ . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ قَالَ فَانْطَلَقْتُ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ وَحَوْلَهُ
الْمُسْلِمُونَ وَهُوَ يَسْتَنِيرُ كَاسْتِنَارَةِ الْقَمَرِ وَكَانَ إِذَا سُرَّ
بِالأَمْرِ اسْتَنَارَ فَجِئْتُ فَجَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ "
أَبْشِرْ يَا كَعْبُ بْنَ مَالِكٍ بِخَيْرِ يَوْمٍ أَتَى عَلَيْكَ مُنْذُ
وَلَدَتْكَ أُمُّكَ " . فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَمِنْ عِنْدِ
اللَّهِ أَمْ مِنْ عِنْدِكَ قَالَ " بَلْ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ " .
ثُمَّ تَلاَ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ : ( لَقََدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ
وَالْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ
) حَتَّى بَلَغََّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ) قَالَ وَفِينَا
أُنْزِلَتْ أَيْضًا : ( اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ )
قَالَ قُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ لاَ أُحَدِّثَ إِلاَّ
صِدْقًا وَأَنْ أَنْخَلِعَ مِنْ مَالِي كُلِّهِ صَدَقَةً إِلَى اللَّهِ وَإِلَى
رَسُولِهِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَمْسِكْ عَلَيْكَ
بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ " . فَقُلْتُ فَإِنِّي أُمْسِكُ
سَهْمِي الَّذِي بِخَيْبَرَ قَالَ فَمَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَىَّ نِعْمَةً بَعْدَ
الإِسْلاَمِ أَعْظَمَ فِي نَفْسِي مِنْ صِدْقِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم حِينَ صَدَقْتُهُ أَنَا وَصَاحِبَاىَ لاَ نَكُونُ كَذَبْنَا فَهَلَكْنَا
كَمَا هَلَكُوا وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ لاَ يَكُونَ اللَّهُ أَبْلَى أَحَدًا فِي
الصِّدْقِ مِثْلَ الَّذِي أَبْلاَنِي مَا تَعَمَّدْتُ لِكَذِبَةٍ بَعْدُ وَإِنِّي
لأَرْجُو أَنْ يَحْفَظَنِي اللَّهُ فِيمَا بَقِيَ . قَالَ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ
الزُّهْرِيِّ هَذَا الْحَدِيثُ بِخِلاَفِ هَذَا الإِسْنَادِ وَقَدْ قِيلَ عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ عَمِّهِ
عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ كَعْبٍ وَقَدْ قِيلَ غَيْرُ هَذَا وَرَوَى يُونُسُ بْنُ
يَزِيدَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ عَنْ كَعْبِ بْنِ
مَالِكٍ .
কা'ব
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যতগুলো যুদ্ধ করেছেন, একমাত্র বদরের যুদ্ধ
ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধেই আমি অনুপস্থিত ছিলাম না। এভাবে তাবূকের যুদ্ধ সমুপস্থিত
হয়। যারা বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের
কোনরূপ ভর্ৎসনা করেননি। কারণ তিনি বের হয়েছিলেন কাফিলা অবরোধের উদ্দেশ্যেই। ওদিকে
কুরাইশরাও তাদের কাফিলার সাহায্যার্থে বের হয়েছিল। প্রতিশ্রুত স্থান ব্যতীত উভয়
পক্ষ পরস্পর মুকাবিলায় অবতীর্ণ হয়, যেমন আল্লাহ তা'আল বলেছেন। আমার জীবনের শপথ!
মানুষদের দৃষ্টিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপস্থিতির
সর্বোৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে বদরই কিন্তু আমি 'আক্বাবার রাতে আমার বাই'আতের উপর
মর্যাদা দিয়ে তাতে (বদরে) অংশগ্রহণ করাকে পছন্দ করিনি। কারণ সেই লাইলাতুল
'আক্বাবাতেই আমি বাই'আত করেছি এবং আমরা এখানেই ইসলামের উপর সুদৃঢ হয়ে গিয়েছি।
অতঃপর আমি কখনো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে কোন
অভিযান হতে পেছনে ছিলাম না। এভাবে তাবূকের যুদ্ধের পালা আসে। আর তাবূক যুদ্ধই ছিল
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নেতৃত্বে পরিচালিত সর্বশেষ যুদ্ধ।
যোদ্ধাদের যাত্রা শুরুর জন্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ
দিলেন। তারপর বর্ণনাকারী দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন।
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট গেলাম। তিনি তখন মাসজিদে বসা
ছিলেন। তাঁর আশেপাশে মুসলিমগণ সমবেত ছিল। তাঁর মুখমণ্ডল চাঁদের ন্যায় চমকাচ্ছিল।
তিনি কোন বিষয়ে আনন্দিত হলে তাঁর চেহারা মুবারাক দীপ্তিমান হয়ে উঠত। আমি উপস্থিত
হয়ে তাঁর সামনে বসে পড়লাম। তিনি বললেনঃ "হে কা'ব ইবনু মালিক! তোমার মা তোমাকে
প্রসব করার পর হতে যতগুলো দিন তোমার কাছে এসেছে তার মধ্যে একটি সর্বোৎকৃষ্ট দিনের
সুসংবাদ তোমার জন্য। আমি বললাম, হে আল্লাহর নাবী! আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে না
আপনার পক্ষ হতে? তিনি বললেনঃ বরং আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে। তারপর তিনি এ আয়াতগুলো
তিলাওয়াত করলেন (অনুবাদ) : "আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবীর
প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা বড় দুঃসময়ে তার অনুসরণ করেছিল, এমনকি
যখন তাদের মধ্যকার একদলের হৃদয় বক্র হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তারপর আল্লাহ তা'আলা
তাদের মাফ করলেন। তিনি তো তাদের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু এবং অপর তিনজনকে
যাদেরকে পিছনে রাখা হয়েছিল, যখন পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সংকুচিত
হয়ে গেল এবং তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠল, তারা বুঝতে পারলো যে আল্লাহ ব্যতীত আর
কোন আশ্রয়স্থল নেই, অতঃপর তিনি তাদের প্রতি সদয় হলেন যাতে তারা ফিরে আসে। অবশ্যই
আল্লাহ তাওবাহ্ ক্ববুলকারী দয়াময়। (সূরা আত্-তাওবাহ্ ১১৭-১১৮)।
বর্ণাকারী বলেন, এ আয়াতগুলোও আমাদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছে (অনুবাদ) : "হে
ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহ তা'আলাকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও’-(সূরা আত্-তাওবাহ্
১১৯)। কা’ব (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র নাবী! আমার তাওবার মধ্যে এও
অন্তর্ভুক্ত যে, আমি সর্বদা সত্য কথাই বলব এবং আমি আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর
রাসুলের উদ্দেশে দান করে দিব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
তোমার কিছু মাল তোমার নিজের জন্য রাখ। এটাই তোমার জন্য ভালো। আমি বললাম, আমি আমার
নিজের জন্য খাইবারের অংশটুকু রেখে দিচ্ছি। কা'ব (রাঃ) বলেন, ইসলাম ক্ববুল করার পর
হতে আল্লাহ তা'আলা আমাকে যত নি'আমাতে ধন্য করেছেন আমার মতে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ
নি'আমাত হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আমার ও
আমার সঙ্গীদ্বয়ের সত্য কথা বলা এবং আমাদের মিথ্যাবাদী না হওয়া। অন্যথায় তারা যেভাবে
ধ্বংস হয়েছে আমরাও তদ্রুপ ধ্বংস হতাম। আমি আশা করি সত্য বলার ব্যাপারে আল্লাহ
তা'আলা যেন আমার ন্যায় এতো বড় পরীক্ষায় আর কাউকে না ফেলেন। আমি আর কখনো মিথ্যা
বলিনি। আমি আরো আশা করি অবশিষ্ট দিনগুলোও যেন আল্লাহ তা'আলা আমাকে হিফাযাত করেন।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (১৯১২), বুখারী (৪৬৭৬), মুসলিম।
এ হাদীস উপরোক্ত সনদের বিপরীত সনদে যুহরী (রহঃ) হতে বর্ণিত
হয়েছে। কথিত আছে যে, সনদটি 'আবদুর রাহমান ইবনু 'আবদুল্লাহ ইবনু কা'ব ইবনু মালিক- তার
চাচা 'উবাইদুল্লাহ হতে, তিনি কা'ব (রাঃ) হতে। আবার কেউ কেউ এ ব্যতীত অন্য সূত্রেও বর্ণনা
করেছেন। অনন্তর এ হাদীস যুহরী হতে, তিনি 'আবদুর রাহমান ইবনু 'আবদুল্লাহ ইবনু কা'ব ইবনু
মালিক হতে, তিনি তার বাবা হতে, তিনি কা'ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে এই সূত্রে ইউনুস ইবনু
ইযাযীদ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
عُبَيْدِ بْنِ السَّبَّاقِ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ، حَدَّثَهُ قَالَ بَعَثَ
إِلَىَّ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ مَقْتَلَ أَهْلِ الْيَمَامَةِ فَإِذَا عُمَرُ
بْنُ الْخَطَّابِ عِنْدَهُ فَقَالَ إِنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَدْ أَتَانِي
فَقَالَ إِنَّ الْقَتْلَ قَدِ اسْتَحَرَّ بِقُرَّاءِ الْقُرْآنِ يَوْمَ
الْيَمَامَةِ وَإِنِّي لأَخْشَى أَنْ يَسْتَحِرَّ الْقَتْلُ بِالْقُرَّاءِ فِي
الْمَوَاطِنِ كُلِّهَا فَيَذْهَبَ قُرْآنٌ كَثِيرٌ وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَأْمُرَ
بِجَمْعِ الْقُرْآنِ . قَالَ أَبُو بَكْرٍ لِعُمَرَ كَيْفَ أَفْعَلُ شَيْئًا
لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عُمَرُ هُوَ وَاللَّهِ
خَيْرٌ فَلَمْ يَزَلْ يُرَاجِعُنِي فِي ذَلِكَ حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي
لِلَّذِي شَرَحَ لَهُ صَدْرَ عُمَرَ وَرَأَيْتُ فِيهِ الَّذِي رَأَى قَالَ زَيْدٌ
قَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنَّكَ شَابٌّ عَاقِلٌ لاَ نَتَّهِمُكَ قَدْ كُنْتَ تَكْتُبُ
لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْوَحْىَ فَتَتَبَّعِ الْقُرْآنَ . قَالَ
فَوَاللَّهِ لَوْ كَلَّفُونِي نَقْلَ جَبَلٍ مِنَ الْجِبَالِ مَا كَانَ أَثْقَلَ
عَلَىَّ مِنْ ذَلِكَ قَالَ قُلْتُ كَيْفَ تَفْعَلُونَ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ
. فَلَمْ يَزَلْ يُرَاجِعُنِي فِي ذَلِكَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ حَتَّى شَرَحَ
اللَّهُ صَدْرِي لِلَّذِي شَرَحَ صَدْرَهُمَا صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ
فَتَتَبَّعْتُ الْقُرْآنَ أَجْمَعُهُ مِنَ الرِّقَاعِ وَالْعُسُبِ وَاللِّخَافِ
يَعْنِي الْحِجَارَةَ الرِّقَاقَ وَصُدُورِ الرِّجَالِ فَوَجَدْتُ آخِرَ سُورَةِ
بَرَاءَةَ مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ : ( قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ
أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ
رَءُوفٌ رَحِيمٌ * فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ
هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়ামামার
যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের শাহাদাতের যমানায় আবূ বাক্র সিদ্দীক্ব (রাঃ) আমায় ডেকে
পাঠান। আমি গিয়ে দেখলাম, 'উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-ও তার নিকট উপস্থিত। আবূ বকর
(রাঃ) বললেন, 'উমার আমার নিকট এসে বললেন, অসংখ্য কুরআনের ক্বারী (হাফিয) ইয়ামামার
যুদ্ধের দিন শহীদ হয়েছেন। আমার আশংকা হচ্ছে, সর্বত্র এভাবে ক্বারীগণ শাহীদ হয়ে
গেলে কুরআনের অনেক অংশই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। আমি মনে করি আপনি কুরআন সংকলনের
নির্দেশ দিন। আবূ বকর (রাঃ) 'উমার (রাঃ)-কে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে যে কাজ করে যাননি আমি কিভাবে তা করতে পারি? 'উমার (রাঃ)
বললেন, আল্লাহর শপথ! এটা খুবই ভালো কাজ। তিনি আমার নিকট বারবার তার কথার
পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন। অবশেষে সেই কাজের জন্য আল্লাহ তা'আলা আমার বক্ষও
উন্মুক্ত করে দিলেন, যার জন্য তিনি (আগেই) 'উমারের বক্ষ উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন।
আমিও উক্ত কাজে সেই কল্যাণ লক্ষ্য করলাম যা তিনি (আমার আগেই) লক্ষ্য করেছিলেন।
যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তুমি একজন জ্ঞানবান যুবক। আমি
তোমাকে কোন বিষয়ে দোষারোপ করিনি। আর তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর জীবদ্দশায় কুরআন লিপিবদ্ধ করতে। অতএব তুমি কুরআনের (বিভিন্ন অংশ)
অনুসন্ধানে লেগে যাও। যাইদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! তারা যদি আমাকে পর্বতমালার
মধ্য হতে কোন পাহাড় স্থানান্তরের কষ্টে নিক্ষেপ করতেন তাও আমার জন্য এ মহা
দায়িত্বের তুলনায় এত বেশি ভারবহ হত না। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে যে কাজ করেননি আপনারা তা কিভাবে করতে পারেন? আবূ বকর
(রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! এটা খুবই ভালো কাজ। আবু বাক্র ও 'উমার (রাঃ) উভয়ে ঐ
কথার পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন। অবশেষে আল্লাহ তা'আলা আবূ বাক্র ও 'উমারের ন্যায়
আমার বক্ষও উন্মুক্ত করে দিলেন। অতএব আমি চামড়ার টুকরাসমূহ, খেজুর পত্র, মসৃণ পাথর
ও লোকদের অন্তকরণ হতে খুঁজে খুঁজে সম্পূর্ণ কুরআন একত্র করলাম। সূরা বারাআতের শেষ
অংশটুকু আমি খুযাইমাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর নিকট পেলাম। তা হল (অনুবাদ) :
"অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন। তোমাদেরকে যা
বিপন্ন করে তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের কল্যাণকামী এবং মু'মিনদের প্রতি
দয়ার্দ্র ও অত্যন্ত করুণাসক্ত। এতদসত্ত্বেও তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বল :
আল্লাহ তা'আলাই আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। আমি তার উপরই
নির্ভর করি এবং তিনিই মহান আরশের মালিক’ -(সূরা আত্-তাওবাহ্ ১২৮, ১২৯)।
সহীহ বুখারী (৪৬৭৯), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ،
أَنَّ حُذَيْفَةَ، قَدِمَ عَلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ وَكَانَ يُغَازِي أَهْلَ
الشَّامِ فِي فَتْحِ أَرْمِينِيَّةَ وَأَذْرَبِيجَانَ مَعَ أَهْلِ الْعِرَاقِ
فَرَأَى حُذَيْفَةُ اخْتِلاَفَهُمْ فِي الْقُرْآنِ فَقَالَ لِعُثْمَانَ بْنِ
عَفَّانَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَدْرِكْ هَذِهِ الأُمَّةَ قَبْلَ أَنْ
يَخْتَلِفُوا فِي الْكِتَابِ كَمَا اخْتَلَفَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى
فَأَرْسَلَ إِلَى حَفْصَةَ أَنْ أَرْسِلِي إِلَيْنَا بِالصُّحُفِ نَنْسَخُهَا فِي
الْمَصَاحِفِ ثُمَّ نَرُدُّهَا إِلَيْكِ فَأَرْسَلَتْ حَفْصَةُ إِلَى عُثْمَانَ
بِالصُّحُفِ فَأَرْسَلَ عُثْمَانُ إِلَى زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَسَعِيدِ بْنِ
الْعَاصِي وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ وَعَبْدِ اللَّهِ
بْنِ الزُّبَيْرِ أَنِ انْسَخُوا الصُّحُفَ فِي الْمَصَاحِفِ وَقَالَ لِلرَّهْطِ
الْقُرَشِيِّينَ الثَّلاَثَةِ مَا اخْتَلَفْتُمْ فِيهِ أَنْتُمْ وَزَيْدُ بْنُ
ثَابِتٍ فَاكْتُبُوهُ بِلِسَانِ قُرَيْشٍ فَإِنَّمَا نَزَلَ بِلِسَانِهِمْ .
حَتَّى نَسَخُوا الصُّحُفَ فِي الْمَصَاحِفِ بَعَثَ عُثْمَانُ إِلَى كُلِّ أُفُقٍ
بِمُصْحَفٍ مِنْ تِلْكَ الْمَصَاحِفِ الَّتِي نَسَخُوا . قَالَ الزُّهْرِيُّ
وَحَدَّثَنِي خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ قَالَ
فَقَدْتُ آيَةً مِنْ سُورَةِ الأَحْزَابِ كُنْتُ أَسْمَعُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقْرَؤُهَا : ( مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا
عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ ) فَالْتَمَسْتُهَا
فَوَجَدْتُهَا مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ أَوْ أَبِي خُزَيْمَةَ
فَأَلْحَقْتُهَا فِي سُورَتِهَا . قَالَ الزُّهْرِيُّ فَاخْتَلَفُوا يَوْمَئِذٍ
فِي التَّابُوتِ وَالتَّابُوهِ فَقَالَ الْقُرَشِيُّونَ التَّابُوتُ . وَقَالَ
زَيْدٌ التَّابُوهُ . فَرُفِعَ اخْتِلاَفُهُمْ إِلَى عُثْمَانَ فَقَالَ
اكْتُبُوهُ التَّابُوتُ فَإِنَّهُ نَزَلَ بِلِسَانِ قُرَيْشٍ . قَالَ
الزُّهْرِيُّ فَأَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ
أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ كَرِهَ لِزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ نَسْخَ الْمَصَاحِفِ
وَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ أُعْزَلُ عَنْ نَسْخِ كِتَابَةِ الْمُصْحَفِ
وَيَتَوَلاَّهَا رَجُلٌ وَاللَّهِ لَقَدْ أَسْلَمْتُ وَإِنَّهُ لَفِي صُلْبِ
رَجُلٍ كَافِرٍ يُرِيدُ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ وَلِذَلِكَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
مَسْعُودٍ يَا أَهْلَ الْعِرَاقِ اكْتُمُوا الْمَصَاحِفَ الَّتِي عِنْدَكُمْ
وَغُلُّوهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ : ( وَمَنْ يَغْلُلْ يَأْتِ بِمَا غَلَّ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ ) فَالْقُوا اللَّهَ بِالْمَصَاحِفِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ
فَبَلَغَنِي أَنَّ ذَلِكَ كَرِهَهُ مِنْ مَقَالَةِ ابْنِ مَسْعُودٍ رِجَالٌ مِنْ
أَفَاضِلِ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ حَدِيثُ الزُّهْرِيِّ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِهِ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফাহ্
(রাঃ) 'উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-এর নিকট এসে উপস্থিত হলেন। হুযাইফা (রাঃ) আর্মেনিয়া
ও আযারবাইযান অভিযানে ইরাকীদের সঙ্গী হয়ে সিরীয়দের বিরুদ্ধে জিহাদ করছিলেন। তখন
হুযাইফাহ্ (রাঃ) তাদের মধ্যে কুরআন নিয়ে মতের অমিল লক্ষ্য করেন। তিনি (ফিরে এসে) 'উসমান
ইবনু আফফান (রাঃ)-কে বললেন, হে আমিরুল মু'মিনীন! যেভাবে ইয়াহূদী-নাসারাগণ তাদের
কিতাব নিয়ে মতভেদে লিপ্ত হয়েছিল, সেরূপ এই উম্মাতের লোকদের নিজেদের কিতাব নিয়ে
মতভেদে লিপ্ত হওয়ার পূর্বে তাদের খবর নিন। এরপর 'উসমান (রাঃ) এই কথা বলে হাফসাহ্
(রাঃ)-এর নিকট লোক পাঠান যে, আপনার নিকট রক্ষিত কুরআনের সহীফাখানি আমাদের কাছে
পাঠিয়ে দিন। আমরা সেটি হতে কপি করার পর তা আপনাকে আবার ফেরত দেব। উম্মুল মু'মিনীন
হাফসাহ্ (রাঃ) তার কপি 'উসমান ইবনু 'আফ্ফান (রাঃ)-এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। 'উসমান
(রাঃ) যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ), সা'ঈদ ইবনুল 'আস (রাঃ), 'আবদুর রাহমান ইবনুল হারিস
ইবনু হিশাম (রাঃ), 'আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) প্রমুখের নিকট উক্ত সহীফাখানি
পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, আপনারা এ সহীফাখানি হতে অনেকগুলো কপি করে নিন। তিনি উক্ত
কমিটির তিন কুরাইশ সদস্যকে বললেন, কোন ক্ষেত্রে তোমাদের ও যাইদ ইবনু সাবিতের মধ্যে
মতের অমিল হলে তা তোমরা কুরাইশের বাকরীতি মতো লিখবে। কেননা কুরআন তাদের বাকরীতিতে
অবতীর্ণ হয়েছে। অবশেষে তারা পূর্ণ কুরআনের কয়েকটি কপি করেন। 'উসমান (রাঃ) সেগুলোর
এক একটি কপি রাজ্যের এক এক এলাকায় পাঠিয়ে দিলেন।
যুহরী (রহঃ) বলেন, খারিজা ইবনু যাইদ (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন; যাইদ ইবনু
সাবিত (রাঃ) বলেছেন, আমি সূরা আল-আহ্যাবের একটি আয়াত পেলাম না, যেটি আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তিলাওয়াত করতে শুনতাম। আয়াতটী
এই (অনুবাদ) : "মু'মিনদের মধ্যে কিছু লোক আল্লাহ তা'আলার সাথে তাদের কৃত
অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদাত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায়
রয়েছে। তারা নিজেদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করেনি" (সূরা আল-আহ্যাব ২৩)।
আমি আয়াতটির খোঁজ করছিলাম। অবশেষে তা খুযাইমাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ) বা আবূ
খুযাইমাহ্ (রাঃ)-এর নিকট পেলাম। আমি সূরার যথাস্থানে আয়াতটি স্থাপন করলাম। যুহরী
(রহঃ) বলেন, তারা ঐ দিন তাবূত ও তাবূহ শবদ নিয়ে মতের অমিল করেন। কুরাইশীরা বলেন,
তাবূত, আর যাইদ (রাঃ) বলেন, তাবূহ। তাদের মতের অমিলের বিষয়টি 'উসমান (রাঃ)-এর নিকট
উত্থাপন করা হলে তিনি বললেন, তোমরা তাবূত লিখ। কেননা কুরআন কুরাইশদের ভাষায়
অবতীর্ণ হয়েছে।
যুহরী (রহঃ) বলেন, আমাকে 'উবাইদুল্লাহ ইবনু 'আবদুল্লাহ ইবনু উত্বাহ্ খবর দিয়েছেন
যে, যাইদ ইবনু সাবিতের কুরআন লিপিবদ্ধ করাকে 'আবদুল্লাহ ইবনু মাস'উদ (রাঃ) অপছন্দ
করেছেন এবং বলেছেন, হে মুসলিমগণ! কুরআন লিপিবদ্ধ করা হতে আমি বরখাস্ত হবো এবং আর
তার দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে এমন ব্যক্তি, যে আমার ইসলাম গ্রহণের সময় এক কাফির
পৃষ্ঠদেশে অন্তর্নিহিত ছিল। এ কথা দ্বারা তিনি যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর প্রতি
ইঙ্গিত করেছেন। তাই 'আবদুল্লাহ ইবনু মাস'উদ (রাঃ) বলেনঃ হে ইরাকবাসী! তোমাদের নিকট
রক্ষিত কুরআনের লিপিবদ্ধ সংকলন লুকিয়ে রাখ এবং তালাবদ্ধ করে রাখ। কারণ আল্লাহ
তা'আলা বলেন, (অনুবাদ) : "এবং কেউ অন্যায়ভাবে কিছু আত্নসাৎ করলে, যা সে
অন্যায়ভাবে আত্নসাৎ করেছে ক্বিয়ামাতের দিন সে তা নিয়ে উপস্থিত হবে" - (সূরা
আল-'ইমরান ১৬১)। অতএব তোমরা তোমাদের সংকলনগুলোসহ আল্লাহ তা'আলার সাথে মিলিত হবে।
যুহরী (রাঃ) বলেন, আমি জেনেছি যে, ইবনু মাস'উদ (রাঃ)-এর এ উক্তিকে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বহু প্রবীণ সাহাবী অপছন্দ করেছেন।
সহীহ : বুখারী (৪৯৮৭, ৪৯৮৮) সহীহ মাকতূ'।
আবূ '‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । এটি যুহরীর রিওয়ায়াত
। আমরা এ হাদীস শুধু তার সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১
সুরা
ইউনুস
৩১০৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ صُهَيْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّّ : (لِلََّذِينَ أَحْسَنُوا
الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ ) قَالَ " إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ
الْجَنَّةَ نَادَى مُنَادٍ إِنَّ لَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ مَوْعِدًا يُرِيدُ أَنْ
يُنْجِزَكُمُوهُ قَالُوا أَلَمْ تُبَيِّضْ وُجُوهَنَا وَتُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ
وَتُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ قَالَ فَيُكْشَفُ الْحِجَابُ . قَالَ فَوَاللَّهِ مَا
أَعْطَاهُمُ اللَّهُ شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَيْهِ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ هَكَذَا رَوَى غَيْرُ
وَاحِدٍ عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ مَرْفُوعًا . وَرَوَى سُلَيْمَانُ بْنُ
الْمُغِيرَةِ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي
لَيْلَى قَوْلَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ صُهَيْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم .
সুহাইব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বানী “ যারা উত্তম কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে
কল্যাণ এবং আরও বেশি’’ (সুরা ইউনুস ২৬) প্রসঙ্গে বলেনঃ জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ
করার পর একজন আহবানকারী ডেকে বলবে, আল্লাহ তা’আলার কাছে তোমাদের জন্য একটি প্রতিশ্রুতি
রয়েছে এবং তিনি সেটা পূর্ণ করতে চান। তারা বলবে, আল্লাহ তা’আলা কি আমাদের মুখ
উজ্জল করেননি এবং আমাদেরকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে দাখিল করেননি?
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এমন সময় পর্দা উন্মোচিত হবে
(এবং তারা আল্লাহ তা’আলাকে দেখতে পাবে)। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহর শপথ! আল্লাহ তা’আলার দর্শন লাভের চাইতে বেশী প্রিয় ও
কাঙ্ক্ষিত কোন বস্তুই তিনি তাদেরকে দান করেননি।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৮৭) , মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এটি হাম্মাদ ইবনু সালামার হাদীস। একাধিক
বর্ণনাকারী এটি হাম্মাদ ইবনু সালামাহ (রহঃ) হতে ‘মারফু’ ভাবে একই রকম বর্ণনা করেছেন।
সুলাইমান ইবনুল মুগীরাহ এ হাদীস সাবিত আল-বুনানী হতে, তিনি ‘আবদুর রাহমান ইবনু আবী
লাইলা হতে তার বক্তব্যরুপে বর্ণনা করেছেন এবং তাতে সুহাইব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ রকম উল্লেখ নেই ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ
الْمُنْكَدِرِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَهْلِ مِصْرَ قَالَ
سَأَلْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : ( لَهُمُ الْبُشْرَى، فِي
الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ) قَالَ مَا سَأَلَنِي عَنْهَا أَحَدٌ مُنْذُ سَأَلْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْهَا فَقَالَ " مَا سَأَلَنِي
عَنْهَا أَحَدٌ غَيْرُكَ مُنْذُ أُنْزِلَتْ فَهِيَ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ
يَرَاهَا الْمُسْلِمُ أَوْ تُرَى لَهُ " .
আতা
ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জৈনেক মিসরবাসীর সুত্রে
বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবুদ দারদা (রাঃ)–কে আল্লাহ তা’আলার বানী “পার্থিব জীবনে
তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ’’ –(সুরা ইউনুস ৬৪) প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেন,
আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন
করার পর হতে আজ পর্যন্ত আর কেউ এ প্রসঙ্গে আমার নিকট জানতে চায়নি। আমিও এ প্রসঙ্গে
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছিলেন : এ
আয়াত অবতীর্ণ হওয়া অবধি তুমি ব্যতীত আর কেউ আমাকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেনি। এটা
(বুশরা) হচ্ছে সত্য স্বপ্ন, যা মুসলিম ব্যক্তি দেখে বা তাকে দেখানো হয়।
সহীহ : মুসলিম।
ইবনু আবী ‘উমার-সুফইয়ান হতে, তিনি ‘আবদুল আযীয ইবনু রুফাই
হতে, তিনি আবু সালিহ আল সান্মান হতে, তিনি আতা ইবনু ইয়াসার হতে, তিনি মিসরীয় ব্যক্তি
হতে, তিনি আবুদ দারদা (রাঃ) হতে এই সুত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন
। আহমাদ ইবনু ‘আবদাহ আয-যাব্বী –হান্মাদ ইবনু যাইদ হতে, তিনি ‘আসিম ইবনু বাহদালাহ হতে,
তিনি আবু সালিহ হতে, তিনি আবুল দারদা (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে এই সুত্রেও পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। অবশ্য তাতে আতা
ইবনু ইয়াসার –এর উল্লেখ নেই। ‘উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত
আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ
مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ
يُوسُفَ بْنِ مِهْرَانَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " لَمَّا أَغْرَقَ اللَّهُ فِرْعَوْنَ قَالَ آمَنْتُ أَنَّهُ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ الَّذِي آمَنَتْ بِهِ بَنُو إِسْرَائِيلَ فَقَالَ جِبْرِيلُ يَا
مُحَمَّدُ فَلَوْ رَأَيْتَنِي وَأَنَا آخُذُ مِنْ حَالِ الْبَحْرِ فَأَدُسُّهُ فِي
فِيهِ مَخَافَةَ أَنْ تُدْرِكَهُ الرَّحْمَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ফির’আউনকে যখন পানিতে ডুবিয়ে দিলেন
তখন সে বললো, ‘‘আমি ঈমান আনলাম বানী ইসরাঈল যার উপর ঈমান এনেছে তার প্রতি। নিশ্চয়
তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই’’ –(সুরা ইউনুস ৯০)। জিবরীল (‘আঃ) বললেন, হে
মুহাম্মাদ! আপনি যদি আমাকে ঐ সময় দেখতেন যখন আমি সমুদ্র হতে কালো কাদামাটি তুলে
তার মুখে ঢাকছিলাম যাতে আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ তাকে পরিবেষ্টন না করে।
সহীহ : পরবর্তী হাদীসের সহায়তায়।
আবূ ‘ঈসা বলেন , এ হাদীসটি হাসান ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا
خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي عَدِيُّ بْنُ
ثَابِتٍ، وَعَطَاءُ بْنُ السَّائِبِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، ذَكَرَ أَحَدُهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ ذَكَرَ
" أَنَّ جِبْرِيلَ صلى الله عليه وسلم جَعَلَ يَدُسُّ فِي فِي فِرْعَوْنَ
الطِّينَ خَشْيَةَ أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَيَرْحَمَهُ اللَّهُ
أَوْ خَشْيَةَ أَنْ يَرْحَمَهُ اللَّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উল্লেখ করেন যে, জিবরীল (‘আঃ) এই আশংকায় ফির’আউনের মুখে
কাদামাটি ঠেলে দিচ্ছিল যে, সে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’’ বলবে ফলে আল্লাহ তা’আলা তার
প্রতি অনুগ্রহ করবেন। অথবা তিনি বলেছেন, ”এই আশংকায় যে, আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ
করবেন’’।
সনদ সহীহ।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহী , অত্র সুত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২
সুরা
হূদ
৩১০৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ وَكِيعِ
بْنِ حُدُسٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي رَزِينٍ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَيْنَ كَانَ رَبُّنَا قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ خَلْقَهُ قَالَ " كَانَ فِي
عَمَاءٍ مَا تَحْتَهُ هَوَاءٌ وَمَا فَوْقَهُ هَوَاءٌ وَخَلَقَ عَرْشَهُ عَلَى
الْمَاءِ " . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ قَالَ يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ
الْعَمَاءُ أَىْ لَيْسَ مَعَهُ شَيْءٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رَوَى
حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ وَكِيعُ بْنُ حُدُسٍ وَيَقُولُ شُعْبَةُ وَأَبُو عَوَانَةَ
وَهُشَيْمٌ وَكِيعُ بْنُ عُدُسٍ وَهُوَ أَصَحُّ وَأَبُو رَزِينٍ اسْمُهُ لَقِيطُ
بْنُ عَامِرٍ قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ
রাযীন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি বললাম,
হে আল্লাহ্র রাসূল! জীব সৃষ্টি করার আগে আমাদের প্রতিপালক কোথায় ছিলেন? তিনি
বলেনঃ তিনি আমা’ (হালকা মেঘমালা)-এর মধ্যে ছিলেন। এর নিচেও বাতাস ছিল না এবং উপরেও
বাতাস ছিল না। তিনি পানির উপর তার আরশ তৈরী করেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৭১),
আহমাদ (রহঃ) বলেনঃ ইয়াযীদ (রাঃ) বলেছেন, ‘আমা’ শব্দের
অর্থ, ‘তাঁর সাথে কিছুই ছিল না’ হাম্মাদ ইবনু সালামা ও ওয়াকী ইবনু হুদুস এরকমই বলেন।
শুবা, আবূ আওয়ানা ও হুশাইম (রাবীর নামের উচ্চারণ) ওয়াকী ইবনু উদুস বলেছেন। আবূ রাযীন
এর নাম লাকীত ইবনু আমির। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১১০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ بُرَيْدِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى
يُمْلِي وَرُبَّمَا قَالَ يُمْهِلُ لِلظَّالِمِ حَتَّى إِذَا أَخَذَهُ لَمْ
يُفْلِتْهُ " . ثُمَّ قَرَأَ : ( كَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا
أَخَذَ الْقُرَى ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
غَرِيبٌ وَقَدْ رَوَاهُ أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ نَحْوَهُ وَقَالَ يُمْلِي
.
আবু
মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা
যালিম-অত্যাচারীকে অবকাশ দেন অথবা সুযোগ দেন। অবশেষে তিনি যখন তাকে পাকড়াও করেন
তখন আর রেহাই দেন না। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তিলাওয়াত করলেন : (অনুবাদ) “ এরূপই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি। তিনি জনপদসমুহকে
শাস্তি দান করেন যখন তারা সীমা লঙ্ঘন করে। নিশ্চয় তার শাস্তি মর্মন্তুদ , কঠিন’’
-(সূরা হূদ ১০২)।
সহীহ : বুখারী (৪৬৮৬) , মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। আবু উসামাও
বুরাইদ হতে একই রকম বর্ণনা করেছেন এবং তাতে ‘ইউমলী’ শব্দ বলেছেন। ইবরাহীম ইবনু সা’ঈদ
আল-জাওহারী –আবু-উসামাহ হতে, তিনি বুরাইদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ হতে, তিনি তার দাদা আবু বুরাদাহ
হতে, তিনি আবু মূসা (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই
সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন । এতে সন্দেহমুক্তভাবে ‘ইউমলী’ শব্দ উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১১১
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ
الْعَقَدِيُّ، هُوَ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ
سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ
بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : ( مِِنْهُمْ
شَقِيٌّ وَسَعِيدٌ ) سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا
نَبِيَّ اللَّهِ فَعَلَى مَا نَعْمَلُ عَلَى شَيْءٍ قَدْ فُرِغَ مِنْهُ أَوْ عَلَى
شَيْءٍ لَمْ يُفْرَغْ مِنْهُ قَالَ " بَلْ عَلَى شَيْءٍ قَدْ فُرِغَ مِنْهُ
وَجَرَتْ بِهِ الأَقْلاَمُ يَا عُمَرُ وَلَكِنْ كُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ
" . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عَمْرٍو .
উমর
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘‘তাদের
মধ্যে কেউ হবে হতভাগ্য এবং কেউ হবে ভাগ্যবান’’ (সুরা হূদ ১০৫), এ আয়াত অবতীর্ণ
হওয়ার পর আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করলাম, হে
আল্লাহর নবী! তাহলে আমরা কিসের উপর ‘আমল করব, এমন জিনিসের উপর যে প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত
চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে অথবা এমন কোন জিনিষের উপর যে প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইনি?
তিনি বলেনঃ হে ‘উমর! না, বরং এমন জিনিষের উপর যা পূর্বেই চূড়ান্ত হয়ে আছে এবং যার
সাথে কলম জারী হয়ে গিয়েছে। তবে প্রত্যেকের করনীয় বিষয় সহজসাধ্য করে রাখা হয়েছে,
যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
সহীহ : আযযিলাল (১৬১ , ১৬৬)।
আবু ‘‘ঈসা বলেন , এ হাদীসটি এ সুত্রে হাসান গারীব। আমরা
এ হাদীস শুধু ‘আবদুল মালিক হতে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১১২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ
حَرْبٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّي عَالَجْتُ
امْرَأَةً فِي أَقْصَى الْمَدِينَةِ وَإِنِّي أَصَبْتُ مِنْهَا مَا دُونَ أَنْ
أَمَسَّهَا وَأَنَا هَذَا فَاقْضِ فِيَّ مَا شِئْتَ . فَقَالَ لَهُ عُمَرُ
لَقَدْ سَتَرَكَ اللَّهُ لَوْ سَتَرْتَ عَلَى نَفْسِكَ . فَلَمْ يَرُدَّ
عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا فَانْطَلَقَ الرَّجُلُ
فَأَتْبَعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً فَدَعَاهُ فَتَلاَ
عَلَيْهِِمِ : ( أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ
اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى
لِلذَّاكِرِينَ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ هَذَا لَهُ
خَاصَّةً قَالَ " لاَ بَلْ لِلنَّاسِ كَافَّةً " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَهَكَذَا رَوَى إِسْرَائِيلُ عَنْ سِمَاكٍ
عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ وَالأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَرَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ
سِمَاكٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ وَرِوَايَةُ هَؤُلاَءِ
أَصَحُّ مِنْ رِوَايَةِ الثَّوْرِيِّ وَرَوَى شُعْبَةُ عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ
عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم نَحْوَهُ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি মাদীনার শেষ
প্রান্তে এক মহিলাকে স্পর্শ করেছি এবং আমি তার সাথে সহবাস ব্যতীত সবই করেছি। আমি
এখন আপনার নিকট এসেছি। আপনি যা ইচ্ছা আমার ব্যাপারে ফাইসালা করেন। ‘উমার(রাঃ) তাকে
বললেন, আল্লাহ তা’আলা তোমার অপরাধ গোপন রেখেছেন, এখন তুমিও যদি তা গোপন রাখতে।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কারো কথায় প্রতিউত্তর করলেন না।
লোকটি উঠে চলে যাওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক
ব্যক্তিকে পাঠিয়ে তাকে ডেকে আনেন এবং এই আয়াত পাঠ করে শুনান (অনুবাদ) : “তুমি
নামায কায়েম কর দিনের দুই প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। সৎকাজসমুহ অন্যায়
কাজসমূহকে দূর করে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে তাদের জন্য এটা এক উপদেশ’’ (সুরা হূদ
১১৪)। উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন বলল, এটা কি শুধু তার বেলায় প্রযোজ্য?
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না, বরং সকলের জন্য।
হাসান সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৩৯৮), মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটী হাসান সহীহ। এভাবেই ইসরাঈল সিমাক
হতে, তিনি ইব্রাহীমে হতে, তিনি আলকামাহ ও আসওয়াদ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। সুফিইয়ান
সাওরী (রহঃ) সিমাক হতে, তিনি ইব্রাহীম হতে, তিনি ‘আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ হতে , তিনি
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে
একই রকম বর্ণনা করেছেন। সাওরীর রিওয়ায়াত অপেক্ষা এদের রিওয়ায়াত অনেক বেশি সহীহ। এটিকে
সিমাক ইবনু হারব-ইব্রাহীম হতে, তিনি আসওয়াদ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে শু’বাহও একই রকম বর্ণনা করেছেন।
মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াইহিয়া নায়সাবুরী –মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ হতে, তিনি সুফইয়ান সাওরী
হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি সিমাক হতে, তিনি ইব্রাহিম হতে, তিনি ’আবদুর রাহমান ইবনু
ইয়াযীদ হতে, তিনি আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে এই সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। মাসউদ ইবনু গাইলান –আল –ফাযল ইবনু মুসা হতে,
তিনি সুফইয়ান হতে, তিনি সিমাক হতে, তিনি ইব্রাহিম হতে, তিনি ‘আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ
হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে এই সুত্রেও একই মর্মে একই রকম বর্ণনা করেছেন। উক্ত বর্ণনায় অবশ্য আ’মাশের উল্লেখ
নেই। এ হাদীস সুলাইমান আত-তাইমী (রহঃ) আবু ‘উস্মান আন-নাহদী হতে, তিনি ইবনু মাস-উদ
(রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩১১৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْجُعْفِيُّ،
عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ رَجُلاً لَقِيَ
امْرَأَةً وَلَيْسَ بَيْنَهُمَا مَعْرِفَةٌ فَلَيْسَ يَأْتِي الرَّجُلُ شَيْئًا
إِلَى امْرَأَتِهِ إِلاَّ قَدْ أَتَى هُوَ إِلَيْهَا إِلاَّ أَنَّهُ لَمْ
يُجَامِعْهَا . قَالَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ
النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ
ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ ) فَأَمَرَهُ أَنْ يَتَوَضَّأَ وَيُصَلِّيَ .
قَالَ مُعَاذٌ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَهِيَ لَهُ خَاصَّةً أَمْ
لِلْمُؤْمِنِينَ عَامَّةً قَالَ " بَلْ لِلْمُؤْمِنِينَ عَامَّةً "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي لَيْلَى لَمْ يَسْمَعْ مِنْ مُعَاذٍ وَمُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ
مَاتَ فِي خِلاَفَةِ عُمَرَ وَقُتِلَ عُمَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي
لَيْلَى غُلاَمٌ صَغِيرٌ ابْنُ سِتِّ سِنِينَ وَقَدْ رَوَى عَنْ عُمَرَ وَرَآهُ
. وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلٌ
.
মুআয
ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র
রাসূল! এক ব্যক্তি এক বেগানা নারীর সাথে যৌন মিলন ছাড়া আর সবই করেছে, তার প্রসঙ্গে
আপনার কি মত? তখন আল্লাহ্ তা'আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ "তুমি নামায কায়িম কর
দিনের দুই প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। সৎ কর্মসমূহ অবশ্যই অসৎ কর্মসমূহ দূর
করে দেয়। যারা হিদায়াত গ্রহণ করে তাদের জন্য এটা হিদায়াত"(সূরাঃ হূদ- ১১৪)।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ওযূ করে এসে নামায আদায়ের
হুকুম দেন। মুআয (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! এই সুযোগ কি শুধু তার
জন্যই না সাধারণভাবে সকল মু'মিনের জন্য? তিনি বললেনঃ বরং সাধারণভাবে সকল মু'মিনদের
জন্য।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসের সনদসূত্র মুত্তাসিল (পরস্পর সংযুক্ত)
নয়। আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে কিছু শুনেননি। মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) উমার (রাঃ)-এর
খিলাফাত কালে ইন্তেকাল করেন। উমর (রাঃ) যখন ইন্তেকাল করেন তখন আবদুর রহমান ইবনু আবূ
লাইলা ছয় বছরের বালক। তিনি উমার (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন এবং তিনি তাকে দেখেছেন।
শুবা (রহঃ) এ হাদীসটি আবদুল মালিক ইবনু উমাইর হতে আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা-এর সূত্রে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ،
أَنَّ رَجُلاً، أَصَابَ مِنَ امْرَأَةٍ قُبْلَةَ حَرَامٍ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ عَنْ كَفَّارَتِهَا فَنَزَلَتْ : ( أَقِمِ
الصَّلاَةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ
يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ) فَقَالَ الرَّجُلُ أَلِيَ هَذِهِ يَا رَسُولَ
اللَّهِ فَقَالَ " لَكَ وَلِمَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ أُمَّتِي " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক এক বেগানা মহিলাকে চুমা
দিল, যা তার জন্য হারাম ছিল। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট
উপস্থিত হয়ে এর কাফফারা প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করলো। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়
(অনুবাদ) : “ তুমি নামায কায়েম কর দিনের দুই প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে।
ন্যায় কাজসমুহ অন্যায় কাজসমূহকে দূর করে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে তাদের জন্য এটা
উপদেশ’’ (সুরা হূদ ১১৪)। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এই সুযোগ কি শুধু আমার
জন্য? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার জন্যও এবং
আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি এরুপ কাজ করে বসে তার জন্যও।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ
بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا قَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي الْيَسَرِ، قَالَ
أَتَتْنِي امْرَأَةٌ تَبْتَاعُ تَمْرًا فَقُلْتُ إِنَّ فِي الْبَيْتِ تَمْرًا
أَطْيَبَ مِنْهُ . فَدَخَلَتْ مَعِي فِي الْبَيْتِ فَأَهْوَيْتُ إِلَيْهَا
فَقَبَّلْتُهَا فَأَتَيْتُ أَبَا بَكْرٍ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ قَالَ اسْتُرْ
عَلَى نَفْسِكَ وَتُبْ وَلاَ تُخْبِرْ أَحَدًا . فَلَمْ أَصْبِرْ فَأَتَيْتُ
عُمَرَ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ اسْتُرْ عَلَى نَفْسِكَ وَتُبْ وَلاَ
تُخْبِرْ أَحَدًا . فَلَمْ أَصْبِرْ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ . فَقَالَ لَهُ " أَخَلَفْتَ غَازِيًا فِي
سَبِيلِ اللَّهِ فِي أَهْلِهِ بِمِثْلِ هَذَا " . حَتَّى تَمَنَّى
أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ أَسْلَمَ إِلاَّ تِلْكَ السَّاعَةَ حَتَّى ظَنَّ أَنَّهُ مِنْ
أَهْلِ النَّارِ . قَالَ وَأَطْرَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
طَوِيلاً حَتَّى أَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ : (أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ
النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ ) إِلَى قَوْلِهِ : (ذِكْرَى
لِلذَّاكِرِينَ ) . قَالَ أَبُو الْيَسَرِ فَأَتَيْتُهُ فَقَرَأَهَا عَلَىَّ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَصْحَابُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلِهَذَا
خَاصَّةً أَمْ لِلنَّاسِ عَامَّةً قَالَ " بَلْ لِلنَّاسِ عَامَّةً
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
وَقَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ ضَعَّفَهُ وَكِيعٌ وَغَيْرُهُ وَأَبُو الْيَسَرِ هُوَ
كَعْبُ بْنُ عَمْرٍو . قَالَ وَرَوَى شَرِيكٌ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ هَذَا الْحَدِيثَ مِثْلَ رِوَايَةِ قَيْسِ بْنِ الرَّبِيعِ . قَالَ
وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ وَوَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ وَأَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ .
আবুল
ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা খেজুর ক্রয়ের জন্য আমার
নিকট এলে আমি বললাম, ঘরের ভেতর এর চাইতে ভাল খেজুর আছে। অতএব সে আমার সাথে ঘরে
প্রবেশ করে। আমি তার প্রতি আকৃষ্ট হলাম এবং তাকে চুমা দিলাম। অতঃপর আমি আবু বকর
(রাঃ) এর নিকট এসে ঘটনা তাকে জানালাম। তিনি বললেন , এটা নিজের কাছেই গোপন রাখ, এবং
আল্লাহ তা’আলার নিকট তাওবা কর এবং আর কাওকে বল না। কিন্তু আমি ধৈর্য্য ধারন করতে
পারলাম না। তাই আমি উমা র (রাঃ) এর নিকট এসে বিষয়টি তার জানালাম। তিনি বললেন, এটা
নিজের কাছেই গোপন রাখ, এবং আল্লাহ তা’আলার নিকট তাওবা কর এবং এটা আর কারো নিকট বল
না। কিন্তু আমি ধৈর্য্য ধরতে পারলাম না। তাই আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে তার নিকট বিষয়টি প্রকাশ করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি
কি আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় জিহাদে গমনকারী ব্যক্তির অনুপস্হিতিতে তার পরিবারের
সাথে এই অপকর্ম করেছ? এ কথায় অনুতপ্ত হয়ে আবুল ইয়াসার আক্ষেপ করে বলেন যে, তিনি
যদি ইতিপূর্বে ইসলাম গ্রহন না করে এই মুহূর্তে গ্রহন করতেন। এমনকি তিনি নিজেকে
জাহান্নামী বলে ভাবলেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীর্ঘক্ষণ
নীরবে দৃষ্টি অবনমিত করে রইলেন। অবশেষে তার প্রতি ওহী অবতীর্ণ হল : “ তুমি নামায
কায়েম কর দিনের দু প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। সৎ কর্মগুলো অসং কর্মগুলো দূর
করে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে এটা তাদের জন্য উপদেশ “-(সূরা হূদ -১১৪)। আবুল
ইয়াসার (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট
এলে তিনি আমাকে উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করে শুনান। তখন তাঁর সাহাবীগণ বললেন, হে
আল্লাহর রাসুল! এটা কি তার জন্যই নির্দিষ্ট না সাধারনভাবে সকলের জন্য? তিনি বললেনঃ
বরং সাধারণভাবে সকলের জন্য।
আবু ‘ঈসা বলেন এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। ক্বাইস ইবনুর
রাবী-কে ওয়াকী প্রমুখ হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল বলেছেন। আবুল ইয়াসারের নাম কা’ব ইবনু ‘আমর।
শারীক (রহঃ) ’উসমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) হতে এ হাদীস ক্বাইস ইবনুর রাবী-র মতই বর্ণনা
করেছেন। আবু উমামা, ওয়াসিলা ইবনুল আসক্বা’ ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদ
হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৩
সুরা
ইউসুফ
৩১১৬
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْخُزَاعِيُّ الْمَرْوَزِيُّ،
حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ الْكَرِيمَ بْنَ الْكَرِيمِ بْنِ الْكَرِيمِ بْنِ الْكَرِيمِ
يُوسُفُ بْنُ يَعْقُوبَ بْنِ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ قَالَ وَلَوْ لَبِثْتُ
فِي السِّجْنِ مَا لَبِثَ ثُمَّ جَاءَنِي الرَّسُولُ أَجَبْتُ . ثُمَّ قَرَأََ
: ( فَلَمَّا جَاءَهُ الرَّسُولُ قَالَ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ مَا
بَالُ النِّسْوَةِ اللاَّتِي قَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّ ) قَالَ : وَرَحْمَةُ
اللَّهِ عَلَى لُوطٍ إِنْ كَانَ لَيَأْوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ إِذْ قَالَ :
( لَوْ أَنَّ لِي بِكُمْ قُوَّةً أَوْ آوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ ) فَمَا
بَعَثَ اللَّهُ مِنْ بَعْدِهِ نَبِيًّا إِلاَّ فِي ذِرْوَةٍ مِنْ قَوْمِهِ
" .
আবু
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মর্যাদাবানের পুত্র মর্যাদাবানের
পুত্র মর্যাদাবানের পুত্র মর্যাদাবান ইউসুফ ইবনু ইয়াকুব ইবনি ইসহাক্ব ইবনি ইবরাহীম
‘আলাইহিমুস সালাম। তিনি বলেনঃ ইউসুফ (‘আঃ) যত কাল কারাগারে ছিলেন আমি যদি তত কাল কারাগারে
থাকতাম এবং অতঃপর রাজদুত আমার নিকট এসে আহবান জানাতো তাহলে আমি তার (তার আহবানে)
সাড়া দিতাম। তারপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পরেন (অনুবাদ) : “রাজদুত যখন তার নিকট
উপস্থিত হল, তখন সে বলল, তুমি তোমার মনিবের নিকট ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস কর –যে
নারীরা নিজেদের হাত কেটেছিল তাদের অবস্হা কি’’ (সূরা ইউসুফ ৫০)? রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ লুত (‘আঃ) –এর উপর আল্লাহ্র রহমত
বর্ষিত হোক। তিনি মজবুত দুর্গে আশ্রয় গ্রহনের আকাংখা করতেন। “সে বলল, তোমাদের উপর
যদি আমার জোর খাটত অথবা যদি আমি কোন সুদৃঢ় দুর্গে আশ্রয় নিতে পারতাম’’।-(সূরা হূদ
৮০)। তাঁর পরে আল্লাহ ঐ জাতির মর্যাদাবান গোষ্ঠীর মধ্য থেকেই নবীগণকে পাঠিয়েছেন।
যিরওয়াহ , শব্দের পরিবর্তে “সারওয়াহ “ শব্দে বর্ণিত হাদীসটি হাসান : সহীহাহ (১৬১৭,
১৮৬৭) , বুখারী ,মুসলিম।
আবু কুরাইব (রহঃ) ‘আবদাহ ও ‘আবদুর রহীম হতে, তিনি মুহাম্মাদ
ইবনু ‘আমর (রাঃ) সুত্রে আল-ফাযল ইবনু মুসার হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে এই বর্ণনায়
(যিরওয়াতুন –এর স্হলে) ‘সারওয়াতুন ‘শব্দ উল্লেখ আছে (অর্থ অভিন্ন) । মুহামাদ ইবনু
‘আমর (রাঃ) বলেন, “আস-সারওয়াতু” অর্থ প্রচুর, প্রাচুর্য, প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা। এটি
আল-ফাযল ইবনু মুসার রিওয়াত অপেক্ষা অধিকতর সহীহ। আবু ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
অনুচ্ছেদ-১৪
সূরা
আর-রা’দ
৩১১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو
نُعَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْوَلِيدِ، وَكَانَ، يَكُونُ فِي بَنِي
عِجْلٍ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ أَقْبَلَتْ يَهُودُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالُوا يَا أَبَا الْقَاسِمِ أَخْبِرْنَا عَنِ الرَّعْدِ مَا هُوَ قَالَ
" مَلَكٌ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ مُوَكَّلٌ بِالسَّحَابِ مَعَهُ مَخَارِيقُ
مِنْ نَارٍ يَسُوقُ بِهَا السَّحَابَ حَيْثُ شَاءَ اللَّهُ " . فَقَالُوا
فَمَا هَذَا الصَّوْتُ الَّذِي نَسْمَعُ قَالَ " زَجْرُهُ بِالسَّحَابِ
إِذَا زَجَرَهُ حَتَّى يَنْتَهِيَ إِلَى حَيْثُ أُمِرَ " . قَالُوا
صَدَقْتَ فَأَخْبِرْنَا عَمَّا حَرَّمَ إِسْرَائِيلُ عَلَى نَفْسِهِ قَالَ
" اشْتَكَى عِرْقَ النَّسَا فَلَمْ يَجِدْ شَيْئًا يُلاَئِمُهُ إِلاَّ
لُحُومَ الإِبِلِ وَأَلْبَانَهَا فَلِذَلِكَ حَرَّمَهَا " . قَالُوا
صَدَقْتَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়াহুদীরা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আবুল কাসিম! আমাদেরকে
রা’দ (মেঘের গর্জন) প্রসঙ্গে বলুন, এটা কি? তিনি বললেনঃ মেঘমালাকে হাঁকিয়ে নেয়ার
জন্য ফেরেশতাদের একজন নিয়োজিত আছে। তার সাথে রয়েছে আগুনের চাবুক। এর সাহায্যে সে
মেঘমালাকে সেদিকে পরিচালনা করেন, যেদিকে আল্লাহ তা’আলা চান। তারা বলল, আমরা যে
আওয়াজ শুনতে পাই তার তাৎপর্য কি? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ এটা হচ্ছে ফেরেশতার হাঁকডাক। এভাবে হাঁকডাক দিয়ে সে মেঘমালাকে তার
নির্দেশিত স্হানে নিয়ে যায়। তারা বলল, আপনি সত্য বলেছেন। তারা আবার বলল, আপনি
আমাদের বলুন, ইসরাঈল [ইয়াকুব (‘‘আঃ)] কোন জিনিষ নিজের জন্য হারাম করেছিলেন?
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তিনি ইরকুন নিসা
(স্যায়াটিকা) রোগে আক্রান্ত ছিলেন কিন্তু উটের গোশত ও এর দুধ ছাড়া তার উপযোগী
খাদ্য ছিল না। তাই তিনি তা হারাম করে নিয়েছিলেন। তারা বলল, আপনি সত্য বলেছেন।
সহীহ : সহীহাহ (১৮৭২)।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১১৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خِدَاشٍ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا سَيْفُ
بْنُ مُحَمَّدٍ الثَّوْرِيُّ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( وَنُفَضِّلُ
بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ فِي الأُكُلِ ) قَالَ " الدَّقَلُ
وَالْفَارِسِيُّ وَالْحُلْوُ وَالْحَامِضُ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رَوَاهُ زَيْدُ بْنُ أَبِي أُنَيْسَةَ عَنِ الأَعْمَشِ
نَحْوَ هَذَا . وَسَيْفُ بْنُ مُحَمَّدٍ هُوَ أَخُو عَمَّارِ بْنِ مُحَمَّدٍ
وَعَمَّارٌ أَثْبَتُ مِنْهُ وَهُوَ ابْنُ أُخْتِ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ .
আবু
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বানী “এদের কতককে কতকের উপর আমি শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি’’
(সূরা রা’দ ৪) প্রসঙ্গে বলেনঃ যেমন নিকৃস্ট খেজুর ও উত্তম খেজুরে এবং মিস্তি ও
টকের মধ্যে পার্থক্য।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। যাইদ ইবনু আবী
উনাইসাহ (রহঃ) আল-আ’মাশের সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। সাইফ ইবনু
মুহাম্মাদ (রহঃ) আম্মার ইবনু মুহাম্মাদের ভাই। তার তুলনায় আম্মার অধিক শক্তিশালী বর্ণনাকারী।
ইনি সুফইয়ান সাওরীর বোনপুত্র।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৫
সুরা
ইবরাহীম
৩১১৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ شُعَيْبِ بْنِ الْحَبْحَابِ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، قَالَ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقِنَاعٍ
عَلَيْهِ رُطَبٌ فَقَالَ " مَثَلُ كَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ كَشَجَرَةٍ طَيِّبَةٍ
أَصْلُهَا ثَابِتٌ وَفَرْعُهَا فِي السَّمَاءِ تُؤْتِي أُكُلَهَا كُلَّ حِينٍ
بِإِذْنِ رَبِّهَا قَالَ هِيَ النَّخْلَةُ : ( مَثَلُ كَلِمَةٍ خَبِيثَةٍ
كَشَجَرَةٍ خَبِيثَةٍ اجْتُثَّتْ مِنْ فَوْقِ الأَرْضِ مَا لَهَا مِنْ قَرَارٍ )
قَالَ هِيَ الْحَنْظَلُ " . قَالَ فَأَخْبَرْتُ بِذَلِكَ أَبَا
الْعَالِيَةِ فَقَالَ صَدَقَ وَأَحْسَنَ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে টাটকা খেজুরের ছড়া বিতরণ করা হলে
তিনি বলেনঃ "সৎ বাক্যের তুলনা তা একটি পবিত্র বৃক্ষের ন্যায় যার শিকড় সুদৃঢ়
এবং যার শাখা প্রশাখা উর্দ্ধে উত্থিত। যে বৃক্ষ স্বীয় রবের আদেশে প্রত্যেক মওসুমে
তার ফলদান করে। (সূরাঃ ইব্রাহীম- ২৪, ২৫)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ তা হল খেজুর গাছ। "আর নাপাক বাক্যের দৃষ্টান্ত হল একটি মন্দ
বৃক্ষ, যার মূল ভূপৃষ্ঠ হতে আলাদা, যার কোন স্থায়িত্ব নেই" (সূরাঃ ইব্রাহীম-
২৬)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তা হল (তিক্ত) মাকাল
ফলের গাছ। রাবী বলেন, আমি এ প্রসঙ্গে আবুল আলিয়াকে জানালে তিনি বলেন, (তোমার
উস্তাদ) সত্য বলেছেন এবং যথার্থ বলেছেন।
মারফু বর্ণনাটি দুর্বল
কুতাইবা-আবূ বাকর ইবনু শুআইব হতে তিনি তার পিতা হতে তিনি
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে উক্ত মর্মে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি এটি মারফূরূপে
বর্ণনা করেননি এবং তিনি আবুল আলিয়ার বক্তব্যও উল্লেখ করেননি। হাম্মাদ ইবনু সালামার
হাদীসের তুলনায় এটি অনেক বেশি সহীহ। একাধিক রাবী একই রকম মাওকূফ (আনাসের কথা) হিসেবে
বর্ণনা করেছেন। হাম্মাদ ইবনু সালামা ছাড়া আর কেউ এটি মারফূরূপে বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের
জানা নেই। মামার, হাম্মাদ ইবনু যাইদ (রহঃ) প্রমুখ এটি বর্ণনা করেছেন কিন্তু তাদের কেউ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত এর সনদ পোঁছাননি। মাওকুফ বর্ণনার
সনদ সহীহ। আহ্মাদ ইবনু আবদা (রহঃ) হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতে তিনি শুআইব ইবনুল হাবহাব হতে
তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে কুতাইবার হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন এবং তিনিও মারফূরূপে
বর্ণনা করেননি। মাওকুফ বর্ণনাটি সহীহ।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
৩১২০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي عَلْقَمَةُ بْنُ مَرْثِدٍ، قَالَ سَمِعْتُ
سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ، يُحَدِّثُ عَنِ الْبَرَاءِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم فِي قَوْلِ اللَّهِ : ( يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا
بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ ) قَالَ
" فِي الْقَبْرِ إِذَا قِيلَ لَهُ مَنْ رَبُّكَ وَمَا دِينُكَ وَمَنْ
نَبِيُّكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আল-বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বাণী “যারা ইমান আনে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে
পার্থিব জীবনে ও আখিরাতে শাশ্বত বানীতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন’’ -(সূরা ইবরাহীম ২৭)
প্রসঙ্গে বলেনঃ কবরে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখা হবে- যখন তাকে বলা হবে, তোমার প্রভু কে,
তোমার দ্বীন কি এবং তোমার নবী কে।
সহীহ : বুখারী (৪৬৯৯) ,মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন , হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১২১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ
أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ تَلَتْ عَائِشَةُ هَذِهِ
الآيَةَ : ( يَوْمَ تُبَدَّلُ الأَرْضُ غَيْرَ الأَرْضِ ) قَالَتْ يَا
رَسُولَ اللَّهِ فَأَيْنَ يَكُونُ النَّاسُ قَالَ " عَلَى الصِّرَاطِ
" . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ
هَذَا الْوَجْهِ عَنْ عَائِشَةَ .
মাসরুক্ব
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আয়িশাহ
(রাঃ) এ আয়াতে তিলাওয়াত করলেন (অনুবাদ) : “যে দিন পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে্ অন্য
পৃথিবী হবে—’’ - (সূরা ইবরাহীম ৪৮)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে সময়
মানুষ কোথায় থাকবে? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
পুলসিরাতের উপর।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪২৭৯) , মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এটি অন্য সুত্রেও
‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৬
সূরা
আল-হিজর
৩১২২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا نُوحُ بْنُ قَيْسٍ الْحُدَّانِيُّ،
عَنْ عَمْرِو بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ
كَانَتِ امْرَأَةٌ تُصَلِّي خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم -
حَسْنَاءُ مِنْ أَحْسَنِ النَّاسِ فَكَانَ بَعْضُ الْقَوْمِ يَتَقَدَّمُ حَتَّى
يَكُونَ فِي الصَّفِّ الأَوَّلِ لِئَلاَّ يَرَاهَا وَيَسْتَأْخِرُ بَعْضُهُمْ
حَتَّى يَكُونَ فِي الصَّفِّ الْمُؤَخَّرِ فَإِذَا رَكَعَ نَظَرَ مِنْ تَحْتِ
إِبْطَيْهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ
مِنْكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَأْخِرِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى
وَرَوَى جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَالِكٍ
عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَهَذَا
أَشْبَهُ أَنْ يَكُونَ أَصَحَّ مِنْ حَدِيثِ نُوحٍ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক পরমা
সুন্দরী মহিলা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পেছনে (মহিলাদের
কাতারে) নামায আদায় করত। কিছু লোক প্রথম কাতারে এগিয়ে আসতো, যাতে উক্ত মহিলা
দৃষ্টিগোচর না হয়। আবার কিছু লোক পেছনে সরে গিয়ে (মহিলাদের নিকটবর্তী) পেছনের
কাতারে দাঁড়াত এবং রুকুতে গিয়ে বগলের নীচ দিয়ে (উক্ত মহিলার প্রতি) তাকাতো। এ
প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “ তোমাদের মধ্যকার সামনে অগ্রসর হয়ে যাওয়া
লোকদেরও আমি জানি এবং পেছনে পিছিয়ে যাওয়া লোকদেরও আমি জানি “ (সূরা আল-হিজর ২৪)।
সহীহ : সহীহাহ (২৪৭২), আস সামার আল-মুস্তাত্বা-ব।
আবু ‘ঈসা বলেন : জা’ফার ইবনু সুলাইমানও এ হাদীস ‘আমর ইবনু
মালিক হতে, তিনি আবুল জাওয়ার সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন এবং তাতে বনু ‘আব্বাস (রাঃ)
এর উল্লেখ করেননি। আর এটি নূহ –এর রিওয়াত অপেক্ষা সহীহ হওয়ার অনেক বেশী সামঞ্জস্য।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১২৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ،
عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، عَنْ جُنَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " لِجَهَنَّمَ سَبْعَةُ أَبْوَابٍ بَابٌ مِنْهَا
لِمَنْ سَلَّ السَّيْفَ عَلَى أُمَّتِي أَوْ قَالَ عَلَى أُمَّةِ مُحَمَّدٍ صلى
الله عليه وسلم - " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নামের সাতটি দরজা আছে (১৫:৪৪
আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত)। তার মধ্যে একটি দরজা সেইসব লোকদের জন্য যারা আমার উম্মতের
বিরুদ্ধে অথবা বলেছেনঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উম্মতের
বিপক্ষে তলোয়ার চালিয়েছে।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৩৫৩০)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র মালিক
ইবনু মিগওয়ালের সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১২৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَلِيٍّ
الْحَنَفِيُّ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْحَمْدُ
لِلَّهِ أُمُّ الْقُرْآنِ وَأُمُّ الْكِتَابِ وَالسَّبْعُ الْمَثَانِي "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবু
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আলহামদু লিল্লাহ’’ অর্থাৎ সূরা
ফাতিহা হচ্ছে উম্মুল কুরআন (কুরআনের মূল), উম্মুল কিতাব (কিতাবের মূল) ও সাব’উল
মাসানী (বারবার পাঠিত সপ্তক)।
সহীহ : সহীহ আবু দাউদ (১৩১) ,বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১২৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ
مُوسَى، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ،
قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فِي
التَّوْرَاةِ وَلاَ فِي الإِنْجِيلِ مِثْلَ أُمِّ الْقُرْآنِ وَهِيَ السَّبْعُ
الْمَثَانِي وَهِيَ مَقْسُومَةٌ بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ
" .
উবাই
ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাওরাত ও ইনজীলে আল্লাহ তা’আলা উম্মুল
কুরআনের সমতুল্য কিছু অবতীর্ণ করেননি। আর তা হচ্ছে সাব’উল মাসানী (বারবার পঠিত
সপ্তক : সূরা আ-ইজর ৮৭ আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত)। (আল্লাহ তা’আলা বলেন) তা আমার ও আমার
বান্দার মধ্যে বন্টিত। আমার বান্দার জন্য তা-ই রয়েছে যা সে চেয়েছে।
সহীহ : তা’লীকুর রাগীব (২/২১৬) , সিফাতুস সালাত।
কুতাইবাহ –“আবদুল ‘আযীয ইবনু মুহাম্মাদ হতে, তিনি ‘আলা
ইবনু ‘আবদুর রাহমান হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে এই সুত্রে
বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উবাই (রাঃ) এর নিকট বের হয়ে এলেন।
তখন তিনি নামাযরত ছিলেন...... পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ। আবূ ঈসা বলেন : ‘আব্দুল আযীয
ইবনু মুহাম্মাদের হাদীস অনেক বেশী দীর্ঘ ও পুর্ণাঙ্গ এনং এটি ‘আবদুল ‘আবদুল হামীদ ইবনু
জাফারের হাদীস অপেক্ষা অনেক বেশি সহীহ। একাধিক বর্ণনাকারী ‘আলা ইবনু ‘আবদুর রাহমান
(রহঃ) হতে একই রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১২৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ
بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ لَيْثِ بْنِ أَبِي سُلَيْمٍ، عَنْ بِشْرٍ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ :
(ولَنَسْأَلَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ * عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ ) قَالَ
" عَنْ قَوْلِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ لَيْثِ بْنِ أَبِي
سُلَيْمٍ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ عَنْ لَيْثِ بْنِ أَبِي
سُلَيْمٍ عَنْ بِشْرٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্ তা'আলার বাণী "আমি অবশ্যই তাদের
সবাইকে প্রশ্ন করব তারা যা করে সে বিষয়ে" (সূরাঃ হিজ্র- ৯২-৯৩) প্রসঙ্গে
বলেনঃ অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা প্রসঙ্গে।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র লাইস ইবনু
আবূ সুলাইমের সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীসও এ হাদীস লাইস ইবনু আবূ
সুলাইম হতে তিনি বিশ্র হতে তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন
তবে মারফূরূপে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১২৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي
الطَّيِّبِ، حَدَّثَنَا مُصْعَبُ بْنُ سَلاَّمٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ، عَنْ
عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " اتَّقُوا فِرَاسَةَ الْمُؤْمِنِ فَإِنَّهُ يَنْظُرُ
بِنُورِ اللَّهِ " . ثُمَّ قَرَأَ : ( إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ
لِلْمُتَوَسِّمِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا
نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي
تَفْسِيرِ هَذِهِ الآيَةِ : ( إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِلْمُتَوَسِّمِينَ
) قَالَ لِلْمُتَفَرِّسِينَ .
আবূ
সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা মু'মিনের দূরদৃষ্টি সম্পর্কে সজাগ
থাক। কারণ সে আল্লাহ্ তা'আলার নূরের সাহায্যে দেখে। তারপর তিনি পাঠ করেনঃ
"নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন লোকদের জন্য" (সূরাঃ
আল-হিজর- ৭৫)
যঈফ, যঈফা (১৮২১)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত
সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। কোন কোন তাফসীরকার আয়াতে উদ্ধৃত "মুতাওয়াসসিমীন"
শব্দের অর্থ করেছেন "মুতাফাররিসীন" (দূরদৃষ্টি বা অন্তরদৃষ্টি সম্পন্ন লোক)।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৭
সুরা
আন-নাহল
৩১২৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَاصِمٍ، عَنْ
يَحْيَى الْبَكَّاءِ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ
عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَرْبَعٌ قَبْلَ الظُّهْرِ بَعْدَ الزَّوَالِ تُحْسَبُ بِمِثْلِهِنَّ فِي
صَلاَةِ السَّحَرِ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" وَلَيْسَ مِنْ شَيْءٍ إِلاَّ وَهُوَ يُسَبِّحُ اللَّهَ تِلْكَ السَّاعَةَ
" . ثُمَّ قَرَأَ : ( يَتَفَيَّأُ ظِلاَلُهُ عَنِ الْيَمِينِ
وَالشَّمَائِلِ سُجَّدًا لِلَّهِ ) الآيَةَ كُلَّهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَلِيِّ بْنِ عَاصِمٍ
.
আবদুল্লাহ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ যুহরের (ফরযের) পূর্বে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর যে চার রাক'আত নামায
(আদায় করা হয়, সাওয়াবের দিক হতে) তা শেষ রাতের চার রাক'আত নামাযের মত। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এমন কোন জিনিষ নেই যা ঐ সময় আল্লাহ্
তা'আলার গুণগান করে না। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করেনঃ "এর ছায়া ডানে ও বাঁয়ে
ঢলে পড়ে আল্লাহ্ তা'আলার প্রতি বিনীতভাবে সিজদাবনত হয়...." (সূরাঃ আন-নাহল-
৪৮-৫০) .... আয়াতের শেষ পর্যন্ত।
যঈফ, সহীহা (১৪৩১) নং হাদীসের অধীনে
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আলী ইবনু আসিমের সূত্র
ব্যতীত এটি প্রসঙ্গে আমরা কিছু জানি না।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১২৯
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا
الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ عِيسَى بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ،
عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، قَالَ حَدَّثَنِي أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، قَالَ لَمَّا
كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ أُصِيبَ مِنَ الأَنْصَارِ أَرْبَعَةٌ وَسِتُّونَ رَجُلاً
وَمِنَ الْمُهَاجِرِينَ سِتَّةٌ فِيهِمْ حَمْزَةُ فَمَثَّلُوا بِهِمْ فَقَالَتِ
الأَنْصَارُ لَئِنْ أَصَبْنَا مِنْهُمْ يَوْمًا مِثْلَ هَذَا لَنُرْبِيَنَّ
عَلَيْهِمْ قَالَ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ فَتْحِ مَكَّةَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ (
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُمْ بِهِ وَلَئِنْ
صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِلصَّابِرِينَ ) فَقَالَ رَجُلٌ لاَ قُرَيْشَ بَعْدَ
الْيَوْمِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كُفُّوا عَنِ
الْقَوْمِ إِلاَّ أَرْبَعَةً " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
مِنْ حَدِيثِ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ .
উবাই
ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহুদের
যুদ্ধে চৌষট্টিজন আনসার ও ছয়জন মুহাজির শাহাদাত বরণ করেন। তাদের মধ্যে হামযাহ্
(রাঃ)-ও ছিলেন। কাফিররা তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন করে লাশ বিকৃত করেছিল। আনসারগণ
বলেন, আমরা যদি এসব কাফিরকে কোনদিন কাবু করতে পারি তাহলে তাদের উপর এর দ্বিগুণ
বদলা নেব। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর যখন মক্কা বিজয়ের দিন আসলো তখন আল্লাহ তা‘আলা
অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “যদি তোমরা শাস্তি দাওই তবে ঠিক ততখানি শাস্তি দিবে
যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর তবে
ধৈর্যশীলদের জন্য তাইতো উত্তম”- (সূরা আন্-নাহ্ল ১২৬)। তখন এক ব্যক্তি বলল, আজকের
পর হতে কুরাইশদের নাম থাকবে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ চার ব্যক্তি ব্যতীত অন্য লোকদের হত্যা করা হতে তোমরা বিরত থাক।
সনদ: হাসান সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর
রিওয়ায়াত হিসেবে গারীব।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-১৮
সূরা
বানী ইসরাঈল
৩১৩০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
حِينَ أُسْرِيَ بِي لَقِيتُ مُوسَى . قَالَ فَنَعَتُّهُ فَإِذَا رَجُلٌ
حَسِبْتُهُ قَالَ مُضْطَرِبٌ رَجِلُ الرَّأْسِ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شُنُوءَةَ
قَالَ وَلَقِيتُ عِيسَى . قَالَ فَنَعَتُّهُ قَالَ رَبْعَةٌ أَحْمَرُ كَأَنَّمَا
خَرَجَ مِنْ دِيمَاسٍ يَعْنِي الْحَمَّامَ وَرَأَيْتُ إِبْرَاهِيمَ . قَالَ
وَأَنَا أَشْبَهُ وَلَدِهِ بِهِ قَالَ وَأُتِيتُ بِإِنَاءَيْنِ أَحَدُهُمَا لَبَنٌ
وَالآخَرُ خَمْرٌ فَقِيلَ لِي خُذْ أَيَّهُمَا شِئْتَ . فَأَخَذْتُ اللَّبَنَ
فَشَرِبْتُهُ فَقِيلَ لِيَ هُدِيتَ الْفِطْرَةَ أَوْ أَصَبْتَ الْفِطْرَةَ أَمَا
إِنَّكَ لَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে রাতে আমাকে (ঊর্ধ্বজগতে) ভ্রমণ
করানো হয় সে রাতে আমি মূসা (‘‘আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করি। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূসা (‘আঃ)-এর দৈহিক গঠনাকৃতির বর্ণনা
দেন। (তিনি বলেনঃ ) তিনি এমন এক ব্যক্তি যাঁর দেহ মধ্যমাকৃতির, তাঁর চুল মধ্যম
গোছেন, খুব কোঁকড়ানোও নয়, আবার একেবারে সোজাও নয়। মনে হয় তিনি শানূআহ বংশের লোক।
তিনি আরো বলেনঃ ‘ঈসা (‘আঃ)-এর সাথেও আমি সাক্ষাৎ করলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর
চেহারারও বর্ণনা দিলেন তিনি। তাঁর দেহের গড়ন মধ্যম, শরীরের রং লাল এবং মনে হয় তিনি
এইমাত্র গোসলখানা হতে বের হয়েছেন। ইব্রাহীম (‘আঃ)-কেও আমি দেখেছি। তাঁর বংশধরের
মধ্যে আমিই তাঁর দৈহিক আকৃতিতে সর্বাধিক সদৃশ। আমার সামনে দু’টি পানপাত্র পেশ করা
হয় : একটি দুধের এবং অন্যটি মদের। আমাকে বলা হল, আপনি এ দু’টির মধ্যে যেটা পান
করতে চান সেটা নিন। আমি দুধের পাত্রটি নিয়ে তা পান করলাম। তারপর আমাকে বলা হল,
আপনাকে ফিতরাতের (ইসলামের) পথ দেখানো হয়েছে বা আপনি ফিতরাতকে পেয়ে গেছেন। আপনি যদি
মদের পাত্র নিতেন তবে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত।
সহীহ : বুখারী (৪৭০৯), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم أُتِيَ بِالْبُرَاقِ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ مُلْجَمًا مُسْرَجًا
فَاسْتَصْعَبَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ جِبْرِيلُ أَبِمُحَمَّدٍ تَفْعَلُ هَذَا
فَمَا رَكِبَكَ أَحَدٌ أَكْرَمُ عَلَى اللَّهِ مِنْهُ قَالَ " فَارْفَضَّ
عَرَقًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَلاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّزَّاقِ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -কে (মিরাজে) ভ্রমণ করানো হয় সে রাতে তাঁর সামনে জিনপোষ আঁটা ও লাগাম
বাঁধা একটি বোরাক আনা হয়। বোরাক তার পিঠে সাওয়ার হওয়াটা তাঁর জন্য অসম্ভব করে
তুললে জিবরীল (‘আঃ) তাকে বললেন, তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -এর সাথে কেন এ রকম আচরণ করছ? অথচ আল্লাহ তা‘আলার সমীপে তাঁর চেয়ে বেশি
সম্মানিত কেউ তোমর পিঠে সওয়ার হয়নি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ এতে বোরাক ঘর্মাক্ত হয়ে যায়।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এটিকে আমরা শুধুমাত্র
‘আবদুর রাজ্জাকের বর্ণিত হাদীস হিসেবেই জানি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩২
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا
أَبُو تُمَيْلَةَ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ جُنَادَةَ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ
أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَمَّا
انْتَهَيْنَا إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَالَ جِبْرِيلُ بِإِصْبَعِهِ فَخَرَقَ
بِهِ الْحَجَرَ وَشَدَّ بِهِ الْبُرَاقَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু বুরাইদাহ্ (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা যখন বাইতুল মাক্বদিসে পৌঁছলাম, তখন জিবরীল (‘আঃ) তাঁর
আঙ্গুল দিয়ে পাথর ফাটান এবং তার সাথে বোরাক বাঁধেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَمَّا كَذَّبَتْنِي قُرَيْشٌ
قُمْتُ فِي الْحِجْرِ فَجَلاَ اللَّهُ لِي بَيْتَ الْمَقْدِسِ فَطَفِقْتُ
أُخْبِرُهُمْ عَنْ آيَاتِهِ وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَيْهِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ مَالِكِ بْنِ
صَعْصَعَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي ذَرٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ .
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুরাইশরা যখন আমাকে মিথ্যা মনে করল
(এবং বলল, আপনার মিরাজে যাওয়ার দাবি সত্য হলে বাইতুল মাক্বদিসের একটি বর্ণনা দিন)।
আমি হাজারে (হাতীমে) দাঁড়ালাম এবং আল্লাহ তা‘আলা আমার সামনে বাইতুল মাক্বদিসের প্রতিচ্ছবি
তুলে ধরলেন। আমি তাদের সামনে এর নিদর্শনসমূহের বর্ননা দিলাম। মনে হল আমি যেন
বাইতুল মাক্বদিসকেই দেখছি।
সহীহ : তাখরীজু ফিকহিস্ সীরাহ্ (১৪৫), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। মালিক ইবনু সা’সাহ্,
আবূ সা‘ঈদ ও ইবনু ‘‘আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩৪
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِهِ: ( ومَا
جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إِلاَّ فِتْنَةً لِلنَّاسِ ) قَالَ
هِيَ رُؤْيَا عَيْنٍ أُرِيَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ
بِهِ إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ . قَالَ : (وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُونَةَ فِي
الْقُرْآنِ ) هِيَ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলার বানী :
“তোমাকে আমরা চাক্ষুষভাবে যা দেখালাম তা এই লোকদের জন্য একটি পরীক্ষার বস্তু
বানিয়ে রেখেছি”- (সূরা বানী ইসরাঈল ৬০)। আয়াতে উল্লেখিত “রুইয়া” প্রসঙ্গে ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এটা ছিল চাক্ষুস দর্শন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে রাতের বেলা (মিরাজের সময়) বাইতুল মাক্বদিসে নিয়ে গিয়ে তা (যাবতীয়
নিদর্শন) দেখানো হয়েছিল। বর্ণনাকারী বলেন, “কুরআনে উল্লেখিত অভিশপ্ত গাছটি”- (সূরা
বানী ইসরাঈল ৬০) হল যাক্কুম গাছ।
সহীহ : বুখারী (৪৭১০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩৫
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ أَسْبَاطِ بْنِ مُحَمَّدٍ، - قُرَشِيٌّ
كُوفِيٌّ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( وَقُرْآنَ
الْفَجْرِ إِنَّ قُرْآنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا ) قَالَ "
تَشْهَدُهُ مَلاَئِكَةُ اللَّيْلِ وَمَلاَئِكَةُ النَّهَارِ " . قَالَ
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলার বানী : ‘আর ফজরে কুরআন পাঠের
স্থায়ী নীতি অবলম্বন কর। কেননা ফজরের কুরআন পাঠে উপস্থিত থাকা হয়”- (সূরা বানী
ইসরাঈল ৭৮)। এ আয়াত প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ সময়
রাতের ফেরেশতারা এবং দিনের ফেরেশতারা উপস্থিত হয়।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীরটি ‘আলী
ইবনু মুসহির আ’মাশ হতে, তিনি আবূ সালিহ হতে তিনি আবূ হুরাইরাহ্ ও আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতে
তারা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এটি ‘আলী
ইবনু হুজ্র ‘আলী ইবনু মুস্হির হতে, তিনি আ‘মাশ হতে …… অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِ
اللَّهِ : ( يَوْمَ نَدْعُو كُلَّ أُنَاسٍ بِإِمَامِهِمْ ) قَالَ "
يُدْعَى أَحَدُهُمْ فَيُعْطَى كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ وَيُمَدُّ لَهُ فِي جِسْمِهِ
سِتُّونَ ذِرَاعًا وَيُبَيَّضُ وَجْهُهُ وَيُجْعَلُ عَلَى رَأْسِهِ تَاجٌ مِنْ
لُؤْلُؤٍ يَتَلأْلأُ فَيَنْطَلِقُ إِلَى أَصْحَابِهِ فَيَرَوْنَهُ مِنْ بَعِيدٍ
فَيَقُولُونَ اللَّهُمَّ ائْتِنَا بِهَذَا وَبَارِكْ لَنَا فِي هَذَا حَتَّى
يَأْتِيَهُمْ فَيَقُولُ أَبْشِرُوا لِكُلِّ رَجُلٍ مِنْكُمْ مِثْلُ هَذَا .
قَالَ وَأَمَّا الْكَافِرُ فَيُسَوَّدُ وَجْهُهُ وَيُمَدُّ لَهُ فِي جِسْمِهِ
سِتُّونَ ذِرَاعًا عَلَى صُورَةِ آدَمَ فَيُلْبَسُ تَاجًا فَيَرَاهُ أَصْحَابُهُ
فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّ هَذَا اللَّهُمَّ لاَ تَأْتِنَا
بِهَذَا . قَالَ فَيَأْتِيهِمْ فَيَقُولُونَ اللَّهُمَّ اخْزِهِ . فَيَقُولُ
أَبْعَدَكُمُ اللَّهُ فَإِنَّ لِكُلِّ رَجُلٍ مِنْكُمْ مِثْلَ هَذَا " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالسُّدِّيُّ اسْمُهُ
إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
“সেদিন আমরা সব মানুষকে তাদের নেতাসহ আহ্বান করব” (সূরাঃ বাণী ইসরাঈল- ৭১), এ আয়াত
প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ (মুসলিম নেতাদের)
একজনকে ডাকা হবে। তার কিতাব (আমলনামা বা কার্যবিবরণী) তার ডান হাতে দেয়া হবে। তার
দেহ ষাট গজ লম্বা করা হবে। তার মুখমন্ডল সাদা (আকর্ষণীয়) করা হবে। তার মাথায়
মণিমুক্তার টুপি পরানো হবে এবং তা ঝিলকাতে থাকবে। সে তার সঙ্গীদের কাছে আসবে। তারা
দূর হতেই তাকে দেখতে পাবে। তারা বলবে, “হে আল্লাহ্! আমাদেরকেও এরূপ দান কর এবং এর
মাধ্যমে বারকাত দান কর।” ইতিমধ্যে সে তাদের নিকটে পৌঁছে যাবে এবং তাদেরকে বলবে,
তোমাদের জন্য সুসংবাদ। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য এরূপ পুরস্কার আছে। অপর দিকে
কাফিরদের নেতার শরীরের রং কালো হবে। তার দেহ আদম আলাইহিস সালাম-এর মতই ষাট গজ
লম্বা করা হবে। তাকেও একটি টুপি পরানো হবে। তার সঙ্গীরা দূর হতে তাকে দেখে বলবে,
“আমরা এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের
নিকট ফিরিয়ে দিও না। এমতাবস্থায় সে তাদের নিকট এসে যাবে, আর তারা বলতে থাকবে, তুমি
তাকে লাঞ্ছিত কর।” তারপর সে বলবে, আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে অপমান করুন। কেননা
তোমাদের প্রত্যেককে এভাবেই লাঞ্ছিত করা হবে।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। সুদ্দীর নাম ইসমাঈল
ইবনু আবদুর রহমান।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৩৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ
يَزِيدَ الزَّعَافِرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ
رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا ) سُئِلَ عَنْهَا قَالَ " هِيَ الشَّفَاعَةُ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَدَاوُدُ
الزَّعَافِرِيُّ هُوَ دَاوُدُ الأَوْدِيُّ ابْنُ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
وَهُوَ عَمُّ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ إِدْرِيسَ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আল্লাহ তা‘আলার বানী (অনুবাদ) “আশা করা
যায় যে, তোমার প্রতিপালন কোমাকে মাক্বামে মাহমূদে পৌঁছে দিবেন”- (সূরা বানী ইসরাঈল
৭৯) প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হল। তিনি বললেনঃ এটা শাফা‘আত।
সহীহ : সহীহাহ্ (২৬৩৯, ২৩৭০), আয্ যিলা-ল (৭৮৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। দাঊদ আয-যা‘আফিরী হলেন
দাঊদ আল-আওদী, ইবনু ইয়াযীদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীসের চাচা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ أَبِي
نَجِيحٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ
دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ عَامَ الْفَتْحِ وَحَوْلَ
الْكَعْبَةِ ثَلاَثُمِائَةٍ وَسِتُّونَ نُصُبًا فَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم يَطْعَنُهَا بِمِخْصَرَةٍ فِي يَدِهِ وَرُبَّمَا قَالَ بِعُودٍ وَيَقُولُ :
(جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا ) :
(جَاءَ الْحَقُّ وَمَا يُبْدِئُ الْبَاطِلُ وَمَا يُعِيدُ ) . قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَفِيهِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
ইবনু
মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের বছর মক্কায় প্রবেশ করলেন। তখন
কা‘বার চারপশে তিন শত ষাটটি মূর্তি স্থাপিত ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর হাতের লাঠি বা কাঠ দিয়ে মূতিগুলোর গায়ে আঘাত করে সেগুলোকে ভূপাতিত করছিলেন
আর বলছিলেন : ‘সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত। আর বাতিলের বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী”- (সূরা
বানী ইসরাঈল ৮১)। “সত্য সমাগত এবং অসত্য কিছুই সৃজন করতে পারে না এবং তা
পুনরাবৃত্তিও করতে পারে না”- (সূরা সাবা ৪৯)।
সহীহ : বুখারী (৪৭২০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু ‘উমার (রাঃ)
হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৩৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ قَابُوسِ
بْنِ أَبِي ظَبْيَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم بِمَكَّةَ ثُمَّ أُمِرَ بِالْهِجْرَةِ فَنَزَلَتْ عَلَيْهِ :
( قُلْ رَبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ
وَاجْعَلْ لِي مِنْ لَدُنْكَ سُلْطَانًا نَصِيرًا ) . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় অবস্থান করছিলেন। তারপর তাঁকে
(মাদীনায়) হিজরাতের হুকুম দেয়া হয়। তখন তাঁর উপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “আর বলুনঃ হে
আমার রব! আমাকে দাখিল করাও কল্যাণের সাথে এবং আমাকে বের করাও কল্যাণের সাথে এবং
তোমার পক্ষ হতে আমাকে দান কর সাহায্যকারী শক্তি” (সূরাঃ বাণী ইসরাঈল- ৮০)।
সনদ দুর্বল।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৪০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي
زَائِدَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ قُرَيْشٌ لِيَهُودَ اعْطُونَا شَيْئًا نَسْأَلُ عَنْهُ
هَذَا الرَّجُلَ فَقَالَ سَلُوهُ عَنِ الرُّوحِ قَالَ فَسَأَلُوهُ عَنِ الرُّوحِ
فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( يَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ قُلِ الرُّوحُ مِنْ
أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً ) قَالُوا
أُوتِينَا عِلْمًا كَثِيرًا التَّوْرَاةُ وَمَنْ أُوتِيَ التَّوْرَاةَ فَقَدْ
أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا فَأُنْزِلَتْْ: ( قُلْ لَوْ كَانَ الْبَحْرُ
مِدَادًا لِكَلِمَاتِ رَبِّي لَنَفِدَ الْبَحْرُ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ قَالَ
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরাইশরা
ইয়াহূদীদের বলল, তোমরা আমাদেরকে এমন কিছু শিখিয়ে দাও যে প্রসঙ্গে আমরা এই
ব্যক্তিকে (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে) প্রশ্ন করতে
পারি। ইয়াহূদীরা বলল, তোমরা ‘রূহ’ প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন কর। বর্ণনাকারী বলেনঃ
তারা রূহ (বা প্রাণ) বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করল। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ
করেন : “লোকেরা রূহ প্রসঙ্গে তোমরা নিকট প্রশ্ন করে। বল, রূহ আমার প্রতিপালকের
আদেশ ঘটিত। জ্ঞানের খুব সামান্যই তোমাদেরকে প্রদান করা হয়েছে”- (সূরা বানী ইসরাঈল
৮৫)। ইয়াহূদীরা বলল, ‘আমাদের বিরাট বা প্রচুর জ্ঞান দান করা হয়েছে। আমাদেরকে
তাওরাত কিতাব দেয়া হয়েছে। আর যাদেরকে তাওরাত গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদেরকে প্রভূত
কল্যাণ দেয়া হয়েছে। এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “বল, আমার
প্রতিপালকের কথাগুলো লেখার জন্য সমুদ্রের সমস্তু পানি যদি কালি হয়ে যায় তবুও তা
আমার প্রভুর কথাগুলো লিখে শেষ করার পূর্বেই নিঃশেষ হয়ে যাবে। আমরা যদি আবার একই
রকম কালি নিয়ে আসি তবুও তা যথেষ্ট হবে না”- (সূরা বানী ইসরাঈল ১০৯)।
সহীহ : আত্তা’লীকাত আস-হাস্সান (৯৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি হাসান সহীহ
গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৪১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ،
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ
كُنْتُ أَمْشِي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي حَرْثٍ بِالْمَدِينَةِ
وَهُوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى عَسِيبٍ فَمَرَّ بِنَفَرٍ مِنَ الْيَهُودِ فَقَالَ
بَعْضُهُمْ لَوْ سَأَلْتُمُوهُ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ تَسْأَلُوهُ فَإِنَّهُ
يُسْمِعُكُمْ مَا تَكْرَهُونَ . فَقَالُوا لَهُ يَا أَبَا الْقَاسِمِ حَدِّثْنَا
عَنِ الرُّوحِ . فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاعَةً وَرَفَعَ
رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ يُوحَى إِلَيْهِ حَتَّى صَعِدَ
الْوَحْىُ ثُمَّ قَالَ : (الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ
الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে মাদীনায় একটি কৃষি খামারে যাচ্ছিলাম।
তিনি খেজুর গাছের ডালে ভর দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে তিনি একদল ইয়াহূদীদেরকে অতিক্রম
করলেন। তাদের কিছু লোক বলল, তোমরা যদি তাঁকে প্রশ্ন করতে? তাদের অপর কতক বলল, তাঁকে
প্রশ্ন করো না। অন্যথায় তিনি এমন কিছু শুনিয়ে দিবেন যা তোমাদের মনোপূত হবে না।
তারা বলল, হে আবুল কাসিম! আমাদেরকে রূহ (প্রাণ) প্রসঙ্গে বলুন। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন। তিনি তাঁর মাথা আসমানের দিকে উঠালেন। আমি
বুঝে ফেললাম যে, তাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছে। ওয়াহী অবতরণ শেষে তিনি বললেনঃ “রূহ
আমার প্রতিপালকের হুকুম মাত্র। তোমাদেরকে জ্ঞানের খুব অল্পই প্রদান করা হয়েছে”।
সহীহ : বুখারী (৪৭২১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى،
وَسُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ
عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَوْسِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ ثَلاَثَةَ أَصْنَافٍ صِنْفًا مُشَاةً وَصِنْفًا رُكْبَانًا وَصِنْفًا
عَلَى وُجُوهِهِمْ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ يَمْشُونَ
عَلَى وُجُوهِهِمْ قَالَ " إِنَّ الَّذِي أَمْشَاهُمْ عَلَى أَقْدَامِهِمْ
قَادِرٌ عَلَى أَنْ يُمْشِيَهُمْ عَلَى وُجُوهِهِمْ أَمَا إِنَّهُمْ يَتَّقُونَ
بِوُجُوهِهِمْ كُلَّ حَدَبٍ وَشَوْكٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى وُهَيْبٌ عَنِ ابْنِ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا مِنْ هَذَا .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন লোকদেরকে তিন শ্রেণীতে
ভাগ করে উঠানো হবে। একদল লোক পায়ে হেঁটে, দ্বিতীয় দল সাওয়ারী অবস্থায় এবং তৃতীয় দল
অধঃমুখে (এবং পা উপরে তুলে) হাযির হবে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহ্র রাসূল! এরা
মুখমন্ডলে ভর করে চলবে কিভাবে? তিনি বললেনঃ যে মহান সত্তা তাদেরকে পায়ের সাহায্যে
হাঁটিয়ে ছিলেন, তিনি তাদেরকে মুখমন্ডলে ভর করে হাঁটাতেও সক্ষম। এরা নিজেদের মুখের
দ্বারা প্রতিটি উচু-নীচু ও কাটা উপেক্ষা করে রাস্তা পার হবে।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫৫৪৬), তা’লীকুর রাগীব (৪/১৯৪),
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। উহাইব (রহঃ) ইবনু তাঊসের
সূত্রে, তিনি তার পিতা হতে আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
أَخْبَرَنَا بَهْزُ بْنُ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّكُمْ مَحْشُورُونَ رِجَالاً
وَرُكْبَانًا وَيُجَرُّونَ عَلَى وُجُوهِهِمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
বাহ্য
ইবনু হাকীম (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (দাদা) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত দিবসে
তোমাদেরকে পদব্রজে ও সওয়ারী অবস্থায় সমবেত করা হবে এবং কতককে মুখের উপর (উপুড় করে)
হেঁচড়িয়ে হাযির করা হবে।
হাসান : আ‘লীকুর রাগীব।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩১৪৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ،
وَيَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، وَأَبُو الْوَلِيدِ، وَاللَّفْظُ، لَفْظُ يَزِيدَ
وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ سَلِمَةَ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ الْمُرَادِيِّ، أَنَّ
يَهُودِيَّيْنِ، قَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ اذْهَبْ بِنَا إِلَى هَذَا
النَّبِيِّ نَسْأَلُهُ فَقَالَ لاَ تَقُلْ لَهُ نَبِيٌّ فَإِنَّهُ إِنْ سَمِعَنَا
نَقُولُ نَبِيٌّ كَانَتْ لَهُ أَرْبَعَةُ أَعْيُنٍ فَأَتَيَا النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم فَسَأَلاَهُ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : ( وَلَقَدْ
آتَيْنَا مُوسَى تِسْعَ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ ) فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " لاَ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ شَيْئًا وَلاَ تَزْنُوا وَلاَ
تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ تَسْرِقُوا
وَلاَ تَسْحَرُوا وَلاَ تَمْشُوا بِبَرِيءٍ إِلَى سُلْطَانٍ فَيَقْتُلَهُ وَلاَ
تَأْكُلُوا الرِّبَا وَلاَ تَقْذِفُوا مُحْصَنَةً وَلاَ تَفِرُّوا مِنَ الزَّحْفِ
شَكَّ شُعْبَةُ وَعَلَيْكُمُ الْيَهُودَ خَاصَّةً أَنْ لاَ تَعْدُوا فِي السَّبْتِ
" . فَقَبَّلاَ يَدَيْهِ وَرِجْلَيْهِ وَقَالاَ نَشْهَدُ أَنَّكَ نَبِيٌّ
. قَالَ " فَمَا يَمْنَعُكُمَا أَنْ تُسْلِمَا " . قَالاَ إِنَّ
دَاوُدَ دَعَا اللَّهَ أَنْ لاَ يَزَالَ فِي ذُرِّيَّتِهِ نَبِيٌّ وَإِنَّا
نَخَافُ إِنْ أَسْلَمْنَا أَنْ تَقْتُلَنَا الْيَهُودُ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সাফওয়ান
ইবনু আসসাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কোন এক সময়
দুই ইয়াহূদীর একজন অপরজনকে বলল, চল আমরা এই নবীর কাছে গিয়ে তাঁকে কিছু প্রশ্ন করি।
অপরজন বললঃ তাঁকে নবী বল না। কেননা সে যদি এটা শুনে ফেলে যে, তুমি (ইয়াহূদীরাও)
তাঁকে নবী বলছ, তার চার চোখ হয়ে যাবে। তারা উভয়ে তাঁর নিকটে এসে তাঁকে আল্লাহ্ তা’আলার
নিম্নোক্ত বাণী প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেঃ “আমরা মূসাকে নয়টি নিদর্শন দান করেছিলাম”
(সূরাঃ বাণী ইসরাঈল- ১০১)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
সেই নয়টি নিদর্শন (নির্দেশ) হচ্ছেঃ (১) তোমরা আল্লাহ্ তা’আলার সাথে কোন কিছু
অংশীদার করো না, (২) যেনা-ব্যভিচার করো না, (৩) যাকে হত্যা করা আল্লাহ্ তা’আলা
নিষিদ্ধ করেছেন ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া তার জীবন সংহার করো না, (৪) চুরি করো না, (৫)
যাদুটোনা করো না, (৬) কোন নিরপরাধ লোককে সরকারের কাছে অপরাধী বানিয়ে খুন করতে নিয়ে
যেও না, (৭) সুদ খেও না, (৮)কোন সতী-সাধ্বী মহিলার বিরুদ্ধে যেনার মিথ্যা অপবাদ
দিও না এবং (৯) যুদ্ধক্ষেত্র হতে পালিয়ে যেও না। হে ইয়াহূদী সম্প্রদায়! বিশেষ করে
তোমরা শনিবারের বাধ্যবাধকতা অতিক্রম করো না। তারপর ইয়াহূদী শ্রোতা দু’জন তাঁর পা
দুটিতে ও হাত দুটিতে চুমা দিয়ে বললঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিঃসন্দেহে আপনি নবী।
তিনি বললেনঃ তাহলে তোমাদের দু’জনকে ইসলাম গ্রহনে কিসে বাধা দিচ্ছে? তারা উভয়ে বললঃ
দাঊদ আলাইহিস সালাম আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে দু’আ করেছিলেন তিনি যেন বারবার তাঁর
বংশধরদের মধ্য হতেই নবী পাঠান। অনন্তর আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, আমরা যদি ইসলাম ক্ববূল
করি তাহলে ইয়াহূদীরা আমাদেরকে মেরে ফেলবে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৭০৫)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৪৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ،
عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، وَلَمْ يَذْكُرْ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَهُشَيْمٍ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ : (وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ ) قَالَ نَزَلَتْ
بِمَكَّةَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ صَوْتَهُ
بِالْقُرْآنِ سَبَّهُ الْمُشْرِكُونَ وَمَنْ أَنْزَلَهُ وَمَنْ جَاءَ بِهِ
فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ ) فَيَسُبُّوا الْقُرْآنَ
وَمَنْ أَنْزَلَهُ وَمَنْ جَاءَ بِهِ : (وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا ) عَنْ
أَصْحَابِكَ بِأَنْ تُسْمِعَهُمْ حَتَّى يَأْخُذُوا عَنْكَ الْقُرْآنَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ
তা‘আলার বাণী : “তোমরা নামাযে স্বর (ক্বিরাআত) উচ্চ করো না এবং অতিশয় ক্ষীণও করো
না”- (সূরা বানী ইসরাঈল ১১০) মক্কায় অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্রাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উচ্চ স্বরে কুরআন তিলাওয়াত করলে মুশরিকরা কুরআনকে গালি দিত
এবং এর অবতীর্ণকারী (আল্লাহ তা‘আলা) ও এর বাহককেও (জিবরীলকে) গালি দিত। তারপর
আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন : “তোমরা নামাযের ক্বিরাআত উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করো না”
অর্থাৎ আপনি উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করবেন না, অন্যথায় কুরআন, এর অবতরণকারী ও এর
বাহককে গালি দেয়া হবে। “এবং তা ক্ষীণস্বরেও পড়বে না”, তাহলে আপনার সাথীরা শুনতে
পাবে না, (বরং মধ্যম আওয়াজে তা পাঠ করুন) যাতে তারা আপনার নিকট হতে কুরআন শিখতে
পারে।
সহীহ : বুখারী (৪৭২২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৪৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، حَدَّثَنَا
أَبُو بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِهِ :
(وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ
سَبِيلاً ) قَالَ نَزَلَتْ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُخْتَفٍ
بِمَكَّةَ وَكَانَ إِذَا صَلَّى بِأَصْحَابِهِ رَفَعَ صَوْتَهُ بِالْقُرْآنِ
فَكَانَ الْمُشْرِكُونَ إِذَا سَمِعُوهُ شَتَمُوا الْقُرْآنَ وَمَنْ أَنْزَلَهُ
وَمَنْ جَاءَ بِهِ فَقَالَ اللَّهُ لِنَبِيِّهِ : (وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ
) أَىْ بِقِرَاءَتِكَ فَيَسْمَعَ الْمُشْرِكُونَ فَيَسُبُّوا الْقُرْآنَ :
(وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا ) عَنْ أَصْحَابِكَ : ( وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ
سَبِيلاً ) . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ
তা‘আলার বাণী : “তোমার নামাযের ক্বিরাআত না উচ্চৈঃস্বরে পড়বে, আন না নিম্ন স্বরে,
এ দুইয়ের মধ্যবর্তী মাত্রার আওয়াজ অবলম্বন কর”- (সূরা বানী ইসরাঈল ১১০) অবতীর্ণ
হওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্বায় আত্মগোপন করে
ছিলেন। তিনি তার সাহাবীদের নিয়ে নামায আদায়ের সময় উচ্চস্বরে কিরা‘আত পাঠ করতেন।
মুশরিকরা তা শুনতে পেয়ে কুরআনকে এর অবতরণকারীকে এবং এর বাহককে গালি দিত। অতএব
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবীকে বললেনঃ “তোমারা নামাযে উচ্চৈঃস্বরে ক্বিরাআত পাঠ করো
না”, কারণ মুশরিকরা তা শুন কুরআনকে গালি দেয়। “আবার এত নীচু স্বরেও পড়বে না”, যাতে
তোমরা সাহাবীদেরকে শুনতে অসুবিধা হয় বরং “এই দুইয়ের মদ্যবর্তী মাত্রার আওয়ারজ
অবলম্বন কর”।
সহীহ : বুখারী (৪৭২২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৪৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مِسْعَرٍ،
عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، قَالَ قُلْتُ
لِحُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ أَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي
بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَالَ لاَ . قُلْتُ بَلَى . قَالَ أَنْتَ تَقُولُ ذَاكَ
يَا أَصْلَعُ بِمَا تَقُولُ ذَلِكَ قُلْتُ بِالْقُرْآنِ بَيْنِي وَبَيْنَكَ
الْقُرْآنُ . فَقَالَ حُذَيْفَةُ مَنِ احْتَجَّ بِالْقُرْآنِ فَقَدْ أَفْلَحَ
قَالَ سُفْيَانُ يَقُولُ فَقَدِ احْتَجَّ . وَرُبَّمَا قَالَ قَدْ فَلَجَ
فَقَالَ : (سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلاً مِنَ الْمَسْجِدِ
الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الأَقْصَى ) قَالَ أَفَتَرَاهُ صَلَّى فِيهِ
قُلْتُ لاَ . قَالَ لَوْ صَلَّى فِيهِ لَكُتِبَ عَلَيْكُمْ فِيهِ الصَّلاَةُ
كَمَا كُتِبَتِ الصَّلاَةُ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ قَالَ حُذَيْفَةُ قَدْ
أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِدَابَّةٍ طَوِيلَةِ الظَّهْرِ
مَمْدُودَةٍ هَكَذَا خَطْوُهُ مَدُّ بَصَرِهِ فَمَا زَايَلاَ ظَهْرَ الْبُرَاقِ
حَتَّى رَأَيَا الْجَنَّةَ وَالنَّارَ وَوَعْدَ الآخِرَةِ أَجْمَعَ ثُمَّ رَجَعَا
عَوْدَهُمَا عَلَى بَدْئِهِمَا قَالَ وَيَتَحَدَّثُونَ أَنَّهُ رَبَطَهُ لِمَ
أَيَفِرُّ مِنْهُ وَإِنَّمَا سَخَّرَهُ لَهُ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যির
ইবনু হুবাইশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ)-
কে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বাইতুল
মাক্বদিসে নামায আদায় করেছেন? তিনি বলেলেন, না। আমি বললাম, হ্যাঁ তিনি নামায আদায়
করেছেন। তিনি বললেন, হে টেকো! তুমি এ ধরনের কথা বলছ, তা কিসের ভিত্তিতে বলছ? আমি
বললাম, কুরআনের ভিত্তিতে। কুরআন আমার ও আপনার মাঝে ফাইসালা করবে। হুজাইফা (রাঃ)
বললেন, কুরআন হতে যে ব্যক্তি দলীল গ্রহণ করল যে কৃতকার্য হল। সুফইয়ান (রহঃ) বলেন,
তিনি (মিসআর) কখনো “কাদ ইহতাজ্জা” আবার কখনো “কাদ ফালাজা” বলেছেন। তারপর তিনি
(যির) এই আয়াত তিলাওয়াত করেন : “পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি এক রাতে তাঁর
বান্দাকে মাসজিদুল হারাম হতে দূরবর্তী মাসজিদে নিয়ে গেলেন”- (বানী ইসরাঈল ১)।
হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, এ আয়াতের মাধ্যমে কি তুমি প্রমাণ করতে চাও, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে নামায আদায় করেছেন? আমি বললাম, না।
তিনি বললেন, সেখানে যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায
আদায় করতেন, তাহলে তোমাদের উপরও সেখানে নামায আদায় করা বাধ্যতামূলক হত, যেমন
মাসজিদুল হারামে নামায আদায় করা তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হুজাইফাহ
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট একটি পশু
আনা হল। এর পিঠ ছিল দীর্ঘ এবং (চলার সময়) এর পা দৃষ্টির সীমায় পতিত হয়। তাঁরা
দু’জন (মহানাবী ও জিবরীল) জান্নাত, জাহান্নাম এবং আখিরাতের প্রতিশ্রুত বিষয়সমূহ
দেখার পূর্ব পর্যন্ত বোরাকের পিঠ হতে নামেননি। তারপর তাঁরা দু’জন প্রত্যাবর্তন
করেন। তারা যেভাবে গিয়েছিলেন অনুরূপভাবেই ফিরে আসেন (অর্থাৎ সওয়ারী অবস্থায়ই ফিরে
আসেন)। হুজাইফাহ (রাঃ) বলেন, লোকেরা বলাবলি করে, তিনি বোরাককে বেঁধেছিলেন। কেন এটি
তার নিকট হতে পালিয়ে যাবে। অথচ গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছু জানার মালিক (আল্লাহ
তা‘আলা) বোরাককে তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন করে দিয়েছিলেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩১৪৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ وَلاَ فَخْرَ وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ وَلاَ فَخْرَ وَمَا مِنْ
نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلاَّ تَحْتَ لِوَائِي وَأَنَا أَوَّلُ
مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الأَرْضُ وَلاَ فَخْرَ قَالَ فَيَفْزَعُ النَّاسُ ثَلاَثَ
فَزَعَاتٍ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ أَنْتَ أَبُونَا آدَمُ فَاشْفَعْ لَنَا
إِلَى رَبِّكَ . فَيَقُولُ إِنِّي أَذْنَبْتُ ذَنْبًا أُهْبِطْتُ مِنْهُ إِلَى
الأَرْضِ وَلَكِنِ ائْتُوا نُوحًا . فَيَأْتُونَ نُوحًا فَيَقُولُ إِنِّي
دَعَوْتُ عَلَى أَهْلِ الأَرْضِ دَعْوَةً فَأُهْلِكُوا وَلَكِنِ اذْهَبُوا إِلَى
إِبْرَاهِيمَ . فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُ إِنِّي كَذَبْتُ ثَلاَثَ
كَذَبَاتٍ " . ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
مَا مِنْهَا كَذْبَةٌ إِلاَّ مَاحَلَ بِهَا عَنْ دِينِ اللَّهِ وَلَكِنِ ائْتُوا
مُوسَى . فَيَأْتُونَ مُوسَى فَيَقُولُ إِنِّي قَدْ قَتَلْتُ نَفْسًا وَلَكِنِ ائْتُوا
عِيسَى . فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُ إِنِّي عُبِدْتُ مِنْ دُونِ اللَّهِ
وَلَكِنِ ائْتُوا مُحَمَّدًا قَالَ فَيَأْتُونَنِي فَأَنْطَلِقُ مَعَهُمْ "
. قَالَ ابْنُ جُدْعَانَ قَالَ أَنَسٌ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " فَآخُذُ بِحَلْقَةِ بَابِ الْجَنَّةِ
فَأُقَعْقِعُهَا فَيُقَالُ مَنْ هَذَا فَيُقَالُ مُحَمَّدٌ . فَيَفْتَحُونَ لِي
وَيُرَحِّبُونَ فَيَقُولُونَ مَرْحَبًا فَأَخِرُّ سَاجِدًا فَيُلْهِمُنِي اللَّهُ
مِنَ الثَّنَاءِ وَالْحَمْدِ فَيُقَالُ لِي ارْفَعْ رَأْسَكَ سَلْ تُعْطَ
وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ وَقُلْ يُسْمَعْ لِقَوْلِكَ وَهُوَ الْمَقَامُ الْمَحْمُودُ
الَّذِي قَالَ اللَّهُ : ( عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا
) " . قَالَ سُفْيَانُ لَيْسَ عَنْ أَنَسٍ إِلاَّ هَذِهِ الْكَلِمَةُ
" فَآخُذُ بِحَلْقَةِ بَابِ الْجَنَّةِ فَأُقَعْقِعُهَا " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ
عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ .
আবূ
সা‘ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আহাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ক্বিয়ামাতের দিবসে সকল আদম
সন্তানের নেতা হব। এতে গর্বের কিছু নেই। আমার হাতেই হামদের (প্রশংসার) পতাকা
থাকবে। এতেও গর্বের কিছু নেই। সেদিন আমার পতাকার নিচেই আদম (‘আঃ) এবং অন্য সকল নবী
একত্রিত হবেন। আমিই প্রথম ব্যক্তি যার জন্য যামীন বিদীর্ণ করা হবে (অর্থাৎ আমাকেই
সর্বপ্রথম উত্থিত করা হবে)। এতেও গর্বের কিছু নেই। লোকেরা তিনবার ভীতসন্ত্রস্ত
হবে। তারপর আদম (‘আঃ)- এর নিকট এসে তারা বলবে, আপনি আমাদের পিতা আদম। আমাদের জন্য
আপনার প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করুন। তিনি বলবেন, আমি এমন এক অপরাধ করেছিলাম যার
পরিণতিতে আমাকে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তোমরা বরং নূহ (‘আঃ)- নিকট যাও। তারা
নূহ (‘আঃ)- নিকট এলে তিনি বলবেন, পৃথিবীর অধিবাসীদেরকে আমি এমন বদ দু‘আ করেছিলাম,
যার কারণে তারা ধ্বংস হয়েছে (আমি এর কারণে লজ্জিত)। অতএব তোমরা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর
নিকট যাও। তারা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট এলে তিনি বলবেন, আমি তিনটি মিথ্যা বলেছিলাম।
(বর্ণনাকারী বলেন) তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
তিনি প্রতিটি মিথ্যাকে কৌশল হিসেবে গ্রহণ করে আল্লাহ তা‘আলার দীনকে হিফাজাত
করেছেন। [ইবরাহীম (‘‘আঃ) বলবেন] তোমরা বরং মূসা (‘আঃ)-এর নিকট যাও। তারা মূসা
(‘আঃ)- এর নিকট এলে তিনি বলবেন, আমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছি। অতএব তোমরা ‘ঈসা
(‘আঃ)- এর নিকট যাও। তারা ‘ঈসা (‘আঃ)- এর নিকট এলে তিনি বলবেন, আল্লাহ তা‘আলাকে
বাদ দিয়ে আমার ‘ইবাদাত করা হয়েছে। আমাকে মা’বূদ বানানো হয়েছে। তোমরা মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারা আমার নিকট আসবে এবং আমি তাদের সাথে যাব। ইবনু
জুদ‘আন বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর প্রতি তাকিয়ে আছি, আর তিনি বলেছেনঃ আমি জান্নাতের দরজার শিকল ধরে তাতে
খটখট আওয়াজ করব। ভেতর হতে বলা হবে, কে? বলা হবে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)। ভেতরের অধিবাসীরা সাথে সাথে আমার সৌজন্যে দরজা খুলে দিবে এবং আমাকে
মারহাবা মারহাবা বলে অভিনন্দন জানাবে। তখন আমি সিজদায় পতিত হব। এ অবস্থায় আল্লাহ
তা‘আলা আমার প্রতি বিশেষ হামদ ও সানা (প্রশংসা ও স্তুতিবাক্য) ইলহাম করবেন (গোপনে
শিখিয়ে দিবেন এবং আমি তা পাঠ করতে থাকব)। আমাকে বলা হবে, মাথা তোল, প্রার্থনা কর
দেয়া হবে, সুপারিশ কর ক্ববূল করা হবে এবং বল, তোমার কথা শুনা হবে। (রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন) এটাই হল সেই ‘মাক্বামে মাহমূদ’ (উচ্চ
প্রশংসিত মর্যাদা), যার কথা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ “আশা করা যায় তোমার প্রভূ
তোমাকে মাক্বামে মাহমূদে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন’- (সূরা বানী ইসরাঈল ৭৯)। সুফইয়ান
(রহঃ) বলেন, শুধু মাত্র এই কথাটুকুই আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করা হয়েছে : “আমি
জান্নাতের দরজার শিকল ধরে খটখট আওয়াজ করব”।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪৩০৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি কয়েকজন বর্ণনাকারী
আবূ নাযরাহ হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে এই সূত্রে দীর্ঘাকারে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯
সূরা
আল-কাহফ
৩১৪৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ إِنَّ
نَوْفًا الْبِكَالِيَّ يَزْعُمُ أَنَّ مُوسَى صَاحِبَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَيْسَ
بِمُوسَى صَاحِبِ الْخَضِرِ قَالَ كَذَبَ عَدُوُّ اللَّهِ سَمِعْتُ أُبَىَّ بْنَ
كَعْبٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
قَامَ مُوسَى خَطِيبًا فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ فَسُئِلَ أَىُّ النَّاسِ أَعْلَمُ
فَقَالَ أَنَا أَعْلَمُ . فَعَتَبَ اللَّهُ عَلَيْهِ إِذْ لَمْ يَرُدَّ
الْعِلْمَ إِلَيْهِ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ أَنَّ عَبْدًا مِنْ عِبَادِي
بِمَجْمَعِ الْبَحْرَيْنِ هُوَ أَعْلَمُ مِنْكَ قَالَ مُوسَى أَىْ رَبِّ فَكَيْفَ
لِي بِهِ فَقَالَ لَهُ احْمِلْ حُوتًا فِي مِكْتَلٍ فَحَيْثُ تَفْقِدُ الْحُوتَ
فَهُوَ ثَمَّ فَانْطَلَقَ وَانْطَلَقَ مَعَهُ فَتَاهُ وَهُوَ يُوشَعُ بْنُ نُونٍ
وَيُقَالُ يُوسَعُ فَحَمَلَ مُوسَى حُوتًا فِي مِكْتَلٍ فَانْطَلَقَ هُوَ
وَفَتَاهُ يَمْشِيَانِ حَتَّى إِذَا أَتَيَا الصَّخْرَةَ فَرَقَدَ مُوسَى
وَفَتَاهُ فَاضْطَرَبَ الْحُوتُ فِي الْمِكْتَلِ حَتَّى خَرَجَ مِنَ الْمِكْتَلِ
فَسَقَطَ فِي الْبَحْرِ قَالَ وَأَمْسَكَ اللَّهُ عَنْهُ جِرْيَةَ الْمَاءِ حَتَّى
كَانَ مِثْلَ الطَّاقِ وَكَانَ لِلْحُوتِ سَرَبًا وَكَانَ لِمُوسَى وَلِفَتَاهُ
عَجَبًا فَاَنْطَلَقَا بَقِيَّةَ يَوْمِهِمَا وَلَيْلَتِهِمَا وَنُسِّيَ صَاحِبُ
مُوسَى أَنْ يُخْبِرَهُ فَلَمَّا أَصْبَحَ مُوسَى قَالَ لِفَتَاهُ: (آتِنَا
غَدَاءَنَا لَقَدْ لَقِينَا مِنْ سَفَرِنَا هَذَا نَصَبًا ) قَالَ وَلَمْ
يَنْصَبْ حَتَّى جَاوَزَ الْمَكَانَ الَّذِي أُمِرَ بِهِ : (قَالَ أَرَأَيْتَ
إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ وَمَا أَنْسَانِيهُ
إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ وَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ عَجَبًا
) قَالَ مُوسَى : ( ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِ فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا
قَصَصًا ) قَالَ فَكَانَا يَقُصَّانِ آثَارَهُمَا . قَالَ سُفْيَانُ يَزْعُمُ
نَاسٌ أَنَّ تِلْكَ الصَّخْرَةَ عِنْدَهَا عَيْنُ الْحَيَاةِ وَلاَ يُصِيبُ
مَاؤُهَا مَيِّتًا إِلاَّ عَاشَ . قَالَ وَكَانَ الْحُوتُ قَدْ أُكِلَ مِنْهُ
فَلَمَّا قَطَرَ عَلَيْهِ الْمَاءُ عَاشَ . قَالَ فَقَصَّا آثَارَهُمَا حَتَّى
أَتَيَا الصَّخْرَةَ فَرَأَى رَجُلاً مُسَجًّى عَلَيْهِ بِثَوْبٍ فَسَلَّمَ
عَلَيْهِ مُوسَى فَقَالَ أَنَّى بِأَرْضِكَ السَّلاَمُ قَالَ أَنَا مُوسَى .
قَالَ مُوسَى بَنِي إِسْرَائِيلَ قَالَ نَعَمْ . قَالَ يَا مُوسَى إِنَّكَ عَلَى
عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ عَلَّمَكَهُ اللَّهُ لاَ أَعْلَمُهُ وَأَنَا عَلَى
عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ عَلَّمَنِيهِ لاَ تَعْلَمُهُ فَقَالَ مُوسَى : (
هَلْ أَتَّبِعُكَ عَلَى أَنْ تُعَلِّمَنِي مِمَّا عُلِّمْتَ رُشْدًا * قَالَ
إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا * وَكَيْفَ تَصْبِرُ عَلَى مَا لَمْ
تُحِطْ بِهِ خُبْرًا * قَالَ سَتَجِدُنِي إِنْ شَاءَ اللَّهُ صَابِرًا وَلاَ
أَعْصِي لَكَ أَمْرًا ) قَالَ لَهُ الْخَضِرُ : (فَإِنِ اتَّبَعْتَنِي فَلاَ
تَسْأَلْنِي عَنْ شَيْءٍ حَتَّى أُحْدِثَ لَكَ مِنْهُ ذِكْرًا ) قَالَ نَعَمْ
فَانْطَلَقَ الْخَضِرُ وَمُوسَى يَمْشِيَانِ عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ فَمَرَّتْ
بِهِمَا سَفِينَةٌ فَكَلَّمَاهُ أَنْ يَحْمِلُوهُمَا فَعَرَفُوا الْخَضِرَ
فَحَمَلُوهُمَا بِغَيْرِ نَوْلٍ فَعَمَدَ الْخَضِرُ إِلَى لَوْحٍ مِنْ أَلْوَاحِ
السَّفِينَةِ فَنَزَعَهُ فَقَالَ لَهُ مُوسَى قَوْمٌ حَمَلُونَا بِغَيْرِ نَوْلٍ
عَمَدْتَ إِلَى سَفِينَتِهِمْ فَخَرَقْتَهَا : ( لِتُغْرِقَ أَهْلَهَا لَقَدْ
جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا * قَالَ أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ
صَبْرًا * قَالَ لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلاَ تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي
عُسْرًا ) ثُمَّ خَرَجَا مِنَ السَّفِينَةِ فَبَيْنَمَا هُمَا يَمْشِيَانِ عَلَى
السَّاحِلِ وَإِذَا غُلاَمٌ يَلْعَبُ مَعَ الْغِلْمَانِ فَأَخَذَ الْخَضِرُ
بِرَأْسِهِ فَاقْتَلَعَهُ بِيَدِهِ فَقَتَلَهُ فَقَالَ لَهُ مُوسَى : (
أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً بِغَيْرِ نَفْسٍ لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا نُكْرًا *
قَالَ أَلَمْ أَقُلْ لَكَ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا ) قَالَ
وَهَذِهِ أَشَدُّ مِنَ الأُولَى : ( قَالَ إِنْ سَأَلْتُكَ عَنْ شَيْءٍ
بَعْدَهَا فَلاَ تُصَاحِبْنِي قَدْ بَلَغْتَ مِنْ لَدُنِّي عُذْرًا * فَانْطَلَقَا
حَتَّى إِذَا أَتَيَا أَهْلَ قَرْيَةٍ اسْتَطْعَمَا أَهْلَهَا فَأَبَوْا أَنْ
يُضَيِّفُوهُمَا فَوَجَدَا فِيهَا جِدَارًا يُرِيدُ أَنْ يَنْقَضَّ ) يَقُولُ
مَائِلٌ فَقَالَ الْخَضِرُ بِيَدِهِ هَكَذَا : ( فَأَقَامَهُ ) فَقَالَ لَهُ
مُوسَى قَوْمٌ أَتَيْنَاهُمْ فَلَمْ يُضَيِّفُونَا وَلَمْ يُطْعِمُونَا : (
إِنْ شِئْتَ لاَتَّخَذْتَ عَلَيْهِ أَجْرًا * قَالَ هَذَا فِرَاقُ بَيْنِي
وَبَيْنِكَ سَأُنَبِّئُكَ بِتَأْوِيلِ مَا لَمْ تَسْتَطِعْ عَلَيْهِ صَبْرًا ) قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَرْحَمُ اللَّهُ مُوسَى لَوَدِدْنَا
أَنَّهُ كَانَ صَبَرَ حَتَّى يَقُصَّ عَلَيْنَا مِنْ أَخْبَارِهِمَا " .
قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الأُولَى كَانَتْ مِنْ
مُوسَى نِسْيَانٌ - قَالَ وَجَاءَ عُصْفُورٌ حَتَّى وَقَعَ عَلَى حَرْفِ
السَّفِينَةِ ثُمَّ نَقَرَ فِي الْبَحْرِ فَقَالَ لَهُ الْخَضِرُ مَا نَقَصَ
عِلْمِي وَعِلْمُكَ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ إِلاَّ مِثْلَ مَا نَقَصَ هَذَا
الْعُصْفُورُ مِنَ الْبَحْرِ " . قَالَ سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ وَكَانَ
يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ يَقْرَأُ وَكَانَ أَمَامَهُمْ مَلِكٌ يَأْخُذُ كُلَّ
سَفِينَةٍ صَالِحَةٍ غَصْبًا وَكَانَ يَقْرَأُ وَأَمَّا الْغُلاَمُ فَكَانَ
كَافِرًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرَوَاهُ
الزُّهْرِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ
رَوَاهُ أَبُو إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ
أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ أَبَا مُزَاحِمٍ السَّمَرْقَنْدِيَّ يَقُولُ سَمِعْتُ
عَلِيَّ بْنَ الْمَدِينِيِّ يَقُولُ حَجَجْتُ حَجَّةً وَلَيْسَ لِي هِمَّةٌ إِلاَّ
أَنْ أَسْمَعَ مِنْ سُفْيَانَ يَذْكُرُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ الْخَبَرَ حَتَّى سَمِعْتُهُ
يَقُولُ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ وَقَدْ كُنْتُ سَمِعْتُ هَذَا مِنْ
سُفْيَانَ مِنْ قَبْلِ ذَلِكَ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ الْخَبَرَ .
সা‘ঈদ
ইবনু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ)- কে বললাম, নাওফ আল-বিকালী মনে করেন যে, খাযিরের সাথে যে মূসার
সাক্ষাৎ হয়েছিল, তিনি বানী ইসরাঈলের নবী মূসা (‘আঃ) নন (এরা দু’জন ভিন্ন ব্যক্তি)।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর দুশমন মিথ্যা বলছে। উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-কে আমি
বলতে শুনেছি, তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে
বলতে শুনেছি : বানী ইসরাঈলের জনগণের সামনে মূসা (‘আঃ) বক্তৃতা দিতে দাঁড়ান। তাঁকে
প্রশ্ন করা হয় যে, কে সবচেয়ে বড় জ্ঞানী? তিনি বলেন, আমি সবচেয়ে বড় জ্ঞানী। এতে
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর উপর অসন্তুষ্ট হন। কেননা তিনি আল্লাহ তা‘আলার সাথে জ্ঞানকে
সম্পৃক্ত করেননি (অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা সবচাইতে বড় জ্ঞানী এ কথা বলেননি)। আল্লাহ
তা‘আলা তাঁর নিকট ওয়াহী পাঠান, আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত এক বান্দা দুই সমুদ্রের
সংগমস্থলে আছে। সে তোমার চাইতে বেশি জ্ঞানী। মূসা (‘আঃ) বললেনঃ হে আমার প্রতিপালক!
আমি কি উপায়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করব? আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ তুমি থলেতে একটি মাছ লও।
মাছটি যেখানে হারিয়ে ফেলবে, সেখানেই সে আছে। অতএব তিনি রওয়ানা হলেন এবং ইউশা ইবনু
নূন নামক তাঁর যুবক শাগরিদও তাঁর সফরসঙ্গী হলেন। মূসা (‘আঃ) থলের মধ্যে একটি মাছ
ভরে নিলেন। তাঁরা দু’জনে পায়ে হেঁটে চলতে চলতে একটি প্রকান্ড পাথরের নিকট
(সমুদ্রের তীরে) এসে পৌঁছেন। এখানে দু’জনই শুয়ে বিশ্রাম নিলেন। থলের মধ্যকার মাছটি
নড়াচড়া করতে করতে তা হয়ে সমুদ্রে পতিত হল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা মাছটি দিয়ে পানির স্রোতধারা বন্ধ করে দিলেন। ফলে তা প্রাচীরবৎ
হয়ে গেল এবং মাছটির জন্য এভাবে একটি পথের ব্যবস্থা হল। মূসা (‘আঃ) ও তাঁর যুবক
সঙ্গীর নিকট এটা খুবই আশ্চর্যজনক মনে হচ্ছিল। তাঁরা দিনের অবশিষ্ট সময় ও রাতে
অগ্রসর হতে থাকলেন। তাঁর সঙ্গী মাছের অবস্থা সম্পর্কে তাঁকে জানাতে ভুলে গেল। ভোর
হলে মূসা (‘আঃ) তাঁর সঙ্গীকে বললেন, “আমাদের সকালের নাশতা নাও। আজকের সফরে আমরা
অত্যধিক ক্লান্ত হয়ে পড়েছি”-(সূরা কাহফ ৬২)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাদেরকে যে স্থানে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, সেখান পর্যন্ত
পৌঁছতে তাঁরা ক্লান্ত হননি। কিন্তু নির্দেশিত স্থান পার হওয়ার পরই তাঁদেরকে
ক্লান্তিতে পেয়ে বসে। “যুবক বলল, আমরা যখন সেই প্রস্তরময় প্রান্তরে আশ্রয়
নিয়েছিলাম, তখন কি ঘটনা ঘটেছে তা কি আপনি লক্ষ্য করেননি? মাছের প্রতি আমার কোন
আমার কোন লক্ষ্য ছিল না। আর শাইতান আমাকে এমনভাবে ভুলিয়ে দিয়েছে যে, আমি আপনার
নিকট তা উল্লেখ করতেও ভুলে গেছি। মাছ তো আশ্চর্য রকমভাবে বের হয়ে সমুদ্রে চলে
গেছে। মূসা বললেন, আমরা তো এটাই চেয়েছিলাম”- (সূরা কাহাফ ৬৪)। তাঁরা দু’জনেই
তাঁদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে এলেন।
সুফইয়ান সাওরী (রহঃ) বলেন, কিছু লোকের ধারণা যে, এই প্রস্তরময় ময়দানে (বা সমুদ্র
তীরেই) আবে হায়াতের ঝর্ণা রয়েছে। এই পানি মৃত ব্যাক্তির উপর ছিটিয়ে দিলে সে জীবিত
হয়ে উঠে। এই মাছের কিছু অংশ খাওয়াও হয়েছিল। ঐ ঝর্ণার পানির ফোঁটা মাছের গায়ে পড়লে
সাথে সাথে মাছটি জীবিত হয়ে গেল।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাঁরা উভয়ে তাদের পায়ের
চিহ্ন ধরে অগ্রসর হতে হতে পূর্বের সেই প্রান্তরে এসে পৌছালেন। তাঁরা দেখতে পেলেন,
এক ব্যক্তি চাদর লম্বা করে গায়ে দিয়ে মুখ ঢেকে শুয়ে আছেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে সালাম
দিলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, তোমাদের এ জায়গায় তো সালামের প্রচলন নেই
(তুমি মনে হয় একজন আগন্তুক)? তিনি বললেন, আমি মূসা (‘আঃ)। তিনি প্রশ্ন করলেন, বানী
ইসরাঈলের মূসা? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আপনার নিকট আল্লাহ তা‘আলার দানকৃত
এক বিশেষ জ্ঞান আছে। আমি তা জানি না। আর আল্লাহ তা‘আলা আমাকেও এক বিশেষ জ্ঞান
দিয়েছেন যা আপনি জানেন না। মূসা (‘আঃ) বললেনঃ “আপনাকে যে জ্ঞান শিক্ষা দেয়া হয়েছে,
তা শিখার উদ্দেশে কি আমি আপনার সাথে থাকতে পারি? তিনি বললেনঃ আপনি আমার সাথে ধৈর্য
ধরে থাকতে পারবেন না। আর যে বিষয়ে আপনার কিছুই জানা নেই, সে বিষয়ে আপনি কেমন করেই
বা ধৈর্য ধারণ করতে পারেন? তিনি বললেন, ইনশা আল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন।
কোন ব্যপারেই আমি আপনার নির্দেশের বিরোধিতা করব না”।– (সূরা কাহফ ৬৬-৬৯)। খাযির
(‘আঃ) তাকে বললেন, “ঠিক আছে, আপনি যদি আমার সাথে চলতে থাকেন, তাহলে আপনি আমার নিকট
কোন বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন না, যতক্ষণ আমি আপনাকে তা না বলি”- (সূরা কাহফ ৭০)।
তিনি (মূসা) বললেন, হ্যাঁ ঠিক আছে। খাযির ও মূসা (‘আঃ) সমুদ্রের তীর ধরে পায়ে
হেঁটে চলতে থাকলেন। তাদের সামনে দিয়ে একটি নৌকা অতিক্রম করছিল। তাঁরা উভয়ে তাদের
সাথে কথা বললেন এবং তাঁদেরকে নৌকায় তুলে নেয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। তারা খাযিরকে
চিনে ফেলল এবং কোন ভাড়া ছাড়াই তাদের দু’জনকে নৌকায় তুলে নিল। খাযির নৌকার একটি
তক্তা খুলে নিলেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে বললেন, লোকেরা আমাদেরকে ভাড়া ছাড়াই নৌকায় তুলে
নিল, আর আপনি নৌকাটির ক্ষতি সাধন করলেন! আপনি কি তাদের ডুবিয়ে দিতে চান? “আপনার এ
কাজটি খুবই আপত্তিকর। খাযির বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি যে, তুমি আমার সাথে ধৈর্য
ধরে থাকতে পারবে না? মূসা বললেন, আমার ভুলের জন্য আপনি আমাকে পাকড়াও করবেন না।
আমার ব্যাপারে আপনি অতটা কড়াকড়ি করবেন না”- (সূরা কাহফ ৭১-৭৩)। তারা নৌকা হতে নেমে
সমুদ্রের তীর ধরে এগিয়ে যেতে থাকেন। পথিমধ্যে দেখা গেল, একটি বালক অপর কয়েকটি
বালকের সাথে খেলাধূলা করছে। খাযির (‘আঃ) নিজের হাতে ছেলেটির মাথা ধরে তা ঘাড় হতে
বিচ্ছিন্ন করে দিলেন এবং এভাবে তাকে হত্যা করেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে বললেন, “একটা
নিষ্পাপ বালককে আপনি মেরে ফেললেন! অথচ সে তো কাউকে হত্যা করেনি? আপনি তো একটা বড়
অন্যায় করে ফেলেছেন। খাযির বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি, তুমি আমার সাথে ধৈর্য ধরে
চলতে পারবে না” – (সূরা কাহফ ৭৪-৭৫)? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ পূর্বের কথার চেয়ে এ কথাটা বেশি শক্ত ছিল। মূসা (‘আঃ) বললেন,
“অতঃপর আমি যদি আপনার নিকট কোন প্রশ্ন করি, তাহলে আপনি আমাকে আর সঙ্গে রাখবেন না।
আমাকে প্রত্যাখ্যান করার মত ত্রুটি আপনি আমার মধ্যে পেয়েছেন। পুনরায় তাঁরা দু’জনে
সামনে এগিয়ে গেলেন এবং যেতে যেতে একটি জনপদে এসে পৌঁছলেন এবং সেখানকার মানুষদের
নিকট খাবার চাইলেন। কিন্তু তারা মেহমান হিসেবে তাদের মেনে নিতে রাজী হয়নি। তাঁরা
সেখানে একটি দেয়াল দেখতে পেলেন, যা পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল”- (সূরা কাহফ ৭৬-৭৭)।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ দেয়ালটি ঝুঁকে পড়েছিল।
খাযির তাঁর হাত দিয়ে দেয়ালটি ঠিক করে দিলেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে বললেনঃ আমরা এমন এক সম্প্রদায়ের
নিকট আসলাম, যারা আমাদেরকে মেহমান হিসেবেও গ্রহণ করেনি বা আহারও করায়নি। “আপনি
ইচ্ছা করলে এই কাজের জন্য মজুরী নিতে পারতেন। খাযির বললেন, বাস! এখানেই তোমার ও
আমার একত্রে ভ্রমন শেষ। তুমি যেসব বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করতে পারনি, এখন আমি তোমাকে
সেসব বিষয়ের তাৎপর্য বলে দিব”- (সূরা কাহফ ৭৭-৭৮)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা মূসা (‘আঃ)- এর উপর রাহমাত অবতীর্ণ
করুন। আমাদের আশা ছিল যে, তিনি যদি ধৈর্য ধারণ করতেন তাহলে আমাদেরকে তাদের এসব
বিষয়ের তথ্য জানানো হত! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
মূসা (‘আঃ) শর্তের কথা ভুলে যাওয়ার কারণেই প্রথম প্রশ্নটি করেছেন। তিনি আরো বলেনঃ
একটি চড়ুই পাখি এসে তাদের নৌকার কিনারে বসে, তারপর তা সমুদ্রে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে
দেয়। খাযির তাঁকে বললেন, এই চড়ুই পাখি সমুদ্রের পানি যতটুকু কমিয়েছে, আমার ও আপনার
জ্ঞান আল্লাহ তা‘আলার জ্ঞানভান্ডার হতে ঠিক ততটুকুই কমিয়েছে।
সাঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) পাঠ করতেন : “তাদের সামনে ছিল এক
বাদশাহ যে প্রতিটি নিখুঁত নৌকা জোরপূর্বক কেড়ে নিত”। তিনি আরো পাঠ করতেন : “আর
বালকটি ছিল কাফির”।
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। যুহরী (রহঃ) এ হাদীস
উবাইদুল্লাহ ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনু ‘উতবাহ ইবনু ‘আব্বাস হতে, তিনি উবাই ইবনু কা’ব হতে,
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি
আবূ ইসহাক্ব আল-হামদানী (রহঃ) সা‘ঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস হতে, তিনি
উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই সূত্রে
বর্ণনা করেছেন। আবূ মুযাহিম আস-সামারকান্দী বলেন, ‘আলী ইবনুল মাদানী বলেছেন, আমি হাজ্জে
গিয়েছিলাম। আমার হাজ্জের সফরের উদ্দেশ্যই ছিল সুফইয়ান সাওরীকে এ হাদীস বর্ণনা করতে
শুনব। তিনি এ হাদীসে একটি বিষয় বর্ণনা করতেন। সুতরাং আমি তাকে বলতে শুনেছি, এ হাদীস
‘আমর ইবনু দীনার আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন। ইতোপূর্বে আমি এ হাদীস সুফইয়ানকে বর্ণনা
করতে শুনেছি, কিন্তু তিনি উক্ত বিষয় এতে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫০
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُو
قُتَيْبَةَ، سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْجَبَّارِ بْنُ
الْعَبَّاسِ الْهَمْدَانِيُّ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " الْغُلاَمُ الَّذِي قَتَلَهُ الْخَضِرُ طُبِعَ يَوْمَ طُبِعَ
كَافِرًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
.
উবাই
ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ছেলেটিকে খাযির (‘আঃ) হত্যা করেন, সে আল্লাহ
তা‘আলার নির্ধারিত তাক্বদীর মতো (সৃষ্টির সূচনাতেই) কাফির ছিল।
সহীহ : যিলা-লুল জান্নাত (১৯৪,১৯৫), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّمَا سُمِّيَ
الْخَضِرَ لأَنَّهُ جَلَسَ عَلَى فَرْوَةٍ بَيْضَاءَ فَاهْتَزَّتْ تَحْتَهُ
خَضْرَاءَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
.
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খাযিরের নাম এজন্যই খাযির (সবুজ) রাখা
হয়েছে যে, একদা তিনি শুকনা সাদা মাটির উপর বসলে তাঁর নীচের মাটিতে সবুজ,
শ্যামলিমার উদগম হয়।
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫২
حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ فُضَيْلٍ الْجَزَرِيُّ،
وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا
الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ يُوسُفَ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ
مَكْحُولٍ، عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( وَكَانَ تَحْتَهُ كَنْزٌ لَهُمَا )
قَالَ " ذَهَبٌ وَفِضَّةٌ " .
আবুদ
দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্
তা’আলার বাণী, “এই প্রাচীরের নীচে এই ছেলে দু’টির জন্য একটি সম্পদ রক্ষিত আছে”
(সূরাঃ আল-কাহফ- ৮২)। এই আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এখানে ‘কান্য’ অর্থ সোনা-রূপা।
অত্যন্ত দুর্বল, আর রাওযুন নাযীর (৯৪০), হাসান ইবনু আলী আল-খাল্লাল-সাফওয়ান ইবনু
সালিহ-ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম-ইয়াযীদ ইবনু ইউসুফ আস-সানআনী-ইয়াযীদ ইবনু জাবীর-মাকহূল
(রহঃ) হতে এই সনদে উপরের হাদীসের মতই বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
৩১৫৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، - الْمَعْنَى
وَاحِدٌ وَاللَّفْظُ لاِبْنِ بَشَّارٍ قَالُوا حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَبْدِ
الْمَلِكِ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَبِي رَافِعٍ عَنْ
حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي السَّدِّ قَالَ
" يَحْفِرُونَهُ كُلَّ يَوْمٍ حَتَّى إِذَا كَادُوا يَخْرِقُونَهُ قَالَ
الَّذِي عَلَيْهِمُ ارْجِعُوا فَسَتَخْرِقُونَهُ غَدًا فَيُعِيدُهُ اللَّهُ
كَأَمْثَلِ مَا كَانَ حَتَّى إِذَا بَلَغَ مُدَّتَهُمْ وَأَرَادَ اللَّهُ أَنْ
يَبْعَثَهُمْ عَلَى النَّاسِ قَالَ الَّذِي عَلَيْهِمُ ارْجِعُوا
فَسَتَخْرِقُونَهُ غَدًا إِنْ شَاءَ اللَّهُ وَاسْتَثْنَى . قَالَ فَيَرْجِعُونَ
فَيَجِدُونَهُ كَهَيْئَتِهِ حِينَ تَرَكُوهُ فَيَخْرِقُونَهُ فَيَخْرُجُونَ عَلَى
النَّاسِ فَيَسْتَقُونَ الْمِيَاهَ وَيَفِرُّ النَّاسُ مِنْهُمْ فَيَرْمُونَ
بِسِهَامِهِمْ فِي السَّمَاءِ فَتَرْجِعُ مُخَضَّبَةً بِالدِّمَاءِ فَيَقُولُونَ
قَهَرْنَا مَنْ فِي الأَرْضِ وَعَلَوْنَا مَنْ فِي السَّمَاءِ قَسْوَةً وَعُلُوًّا
. فَيَبْعَثُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ نَغَفًا فِي أَقْفَائِهِمْ فَيَهْلِكُونَ قَالَ
فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّ دَوَابَّ الأَرْضِ تَسْمَنُ
وَتَبْطَرُ وَتَشْكَرُ شَكْرًا مِنْ لُحُومِهِمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِثْلَ
هَذَا .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ইয়াজূয-মাজূযের) প্রাচীর প্রসঙ্গে বলেনঃ এরা
প্রত্যেকদিন বাঁধার প্রাচীর খনন করতে থাকে। যখন তারা এটাকে চৌচির করে ভেদ করার
কাছাকাছি এসে যায়, তখন তাদের সরদার বলে, ফিরে চলো, কাল সকালে এটাকে সম্পূর্ণরূপে
ভেঙ্গে ফেলব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা
প্রাচীরটিকে পূর্বের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ করে দেন। তারা প্রতিদিন এভাবে এই প্রাচীর
খুঁড়তে থাকে। অবশেষে যখন তাদের বন্দীত্বের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং আল্লাহ তা‘আলা
তাদেরকে জনবসতিতে পাঠানোর ইচ্ছা করবেন তখন ইয়াজূয-মাজূযদের সরদার বলবে, আজ চলো।
আল্লাহ তা‘আলা চাইলে আগামী কাল সকালে আমরা এই দেয়াল ভেঙ্গে ফেলব। সে তার কথার সাথে
‘ইনশাআল্লাহ’ বলবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারা
ফিরে যাবে। গতকাল দেয়ালটিকে তারা যে অবস্থায় ছেড়ে গিয়েছিল, এবার ফিরে এসে ঠিক সেই
অবস্থায়ই পাবে। এরা দেয়াল ভেদ করে জনপদে ছড়িয়ে পড়বে এবং সমস্ত পানি পান করে শেষ
করে ফেলবে। মানুষজন এদের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পালিয়ে যাবে। এরা আকাশের দিকে
নিজেদের তীর ছুঁড়বে। তাদের তীরগুলোকে রক্ত-রঞ্জিত করে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এরা বলবে,
পৃথিবীর বাসিন্দাদের উপর আমরা প্রতিশোধ নিয়েছি এবং আকাশবাসীদের উপরও আধিপত্য
বিস্তার করে তাদের অধীনস্ত করে নিয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা এদের গলদেশে কীট সৃষ্টি
করবেন। ফলে এরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! যমীনের কীট-পতঙ্গ ও জীব-জন্তু
এদের গোশত খেয়ে খুব মোটাতাজা হবে, খুব পরিতৃপ্ত হবে এবং এগুলোর দেহে বেশ চর্বি
জমবে।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪০৮০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীসটি
শুধু উপর্যুক্ত সনদেই অনুরূপভাবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ الْبُرْسَانِيُّ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ
جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنِ ابْنِ مِينَاءَ، عَنْ أَبِي سَعْدِ بْنِ أَبِي
فَضَالَةَ الأَنْصَارِيِّ، وَكَانَ، مِنَ الصَّحَابَةِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا جَمَعَ اللَّهُ النَّاسَ
لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ لِيَوْمٍ لاَ رَيْبَ فِيهِ نَادَى مُنَادٍ مَنْ كَانَ
أَشْرَكَ فِي عَمَلٍ عَمِلَهُ لِلَّهِ أَحَدًا فَلْيَطْلُبْ ثَوَابَهُ مِنْ عِنْدِ
غَيْرِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ بَكْرٍ .
আবূ
সা‘ঈদ ইবনু আবী ফাযালাহ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি সাহাবীদের
অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি : আল্লাহ তা‘আলা যখন ক্বিয়ামত দিবসে, যে দিনের আগমন
প্রসঙ্গে কোন সন্দেহ নেই, মানুষদেরকে একত্র করবেন, তখন একজন ঘোষক ঘোষণা করবে :
আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি কাজ করতে এর মধ্যে কাউকে শারীক
করেছে, সে যেন গাইরুল্লাহর নিকট নিজের সাওয়াব চেয়ে নেয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা
শারীকদের শিরক হতে সম্পূর্ণ মুক্ত।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪২০৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীস শুধু
মুহাম্মাদ ইবনু বাকর-এর সূত্রে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২০
সূরা
মারইয়াম
৩১৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، وَأَبُو مُوسَى مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ
حَرْبٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ
بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى نَجْرَانَ فَقَالُوا لِي
أَلَسْتُمْ تَقْرَءُونَ : ( يَا أُخْتَ هَارُونَ ) وَقَدْ كَانَ بَيْنَ
عِيسَى وَمُوسَى مَا كَانَ فَلَمْ أَدْرِ مَا أُجِيبُهُمْ . فَرَجَعْتُ إِلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ " أَلاَّ
أَخْبَرْتَهُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا يُسَمُّونَ بِأَنْبِيَائِهِمْ وَالصَّالِحِينَ
قَبْلَهُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ إِدْرِيسَ .
মুগীরাহ
ইবনু শু‘বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে নাজরান নামক জায়গায় পাঠালেন। সে অঞ্চলের
(খৃষ্টান) অধিবাসীরা আমাকে বললো, তোমরা কি পাঠ কর না : “হে হারূনের বোন”- (সূরা
মারইয়াম ২৮)? অথচ মূসা ও ‘‘ঈসা (‘আঃ)- এর মাঝখানে সময়ের যে ব্যবধান ছিল তাতো জানা
কথা। তাদের এ প্রশ্নের কি জবাব যে আমি দিতে পারি তা আমি বুঝতে পারিনি। আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট ফিরে এসে তাঁকে এ বিষয়ে
জানালাম। তিনি বললেনঃ তুমি তাদেরকে এতটুকুও কি জানাতে পারলে না যে, তারা (বানী
ইসরাঈল) নিজেদের নাম রাখতো তাদের পূর্ববর্তী নাবী-রাসূল ও মহান ব্যক্তিদের
নামানুসারে।
হাসান : মুখতাসার তুহফাতুল ওয়াদুদ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। আমরা এ হাদীস
শুধু ইবনু ইদরীসের সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩১৫৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ
إِسْمَاعِيلَ أَبُو الْمُغِيرَةِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ
أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، رضى الله عنه قَالَ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلمَ : ( وَأَنْذِرْهُمْ يَوْمَ الْحَسْرَةِ ) قَالَ " يُؤْتَى
بِالْمَوْتِ كَأَنَّهُ كَبْشٌ أَمْلَحُ حَتَّى يُوقَفَ عَلَى السُّورِ بَيْنَ
الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَيُقَالُ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ . فَيَشْرَئِبُّونَ .
وَيُقَالُ يَا أَهْلَ النَّارِ . فَيَشْرَئِبُّونَ . فَيُقَالُ هَلْ
تَعْرِفُونَ هَذَا فَيَقُولُونَ نَعَمْ هَذَا الْمَوْتُ . فَيُضْجَعُ فَيُذْبَحُ
فَلَوْلاَ أَنَّ اللَّهَ قَضَى لأَهْلِ الْجَنَّةِ الْحَيَاةَ فِيهَا وَالْبَقَاءَ
لَمَاتُوا فَرَحًا وَلَوْلاَ أَنَّ اللَّهَ قَضَى لأَهْلِ النَّارِ الْحَيَاةَ
فِيهَا وَالْبَقَاءَ لَمَاتُوا تَرَحًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
সা‘ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঠ করলেন : “তাদেরকে সেদিনের ভয় দেখাও, যেদিন
চূড়ান্ত ফায়সালা করা হবে এবং পরিতাপ করা ব্যতীত আর কোন বিকল্প থাকবে না”- (সূরা
মারইয়াম ৩৯)। তিনি বললেনঃ (কিয়ামাত্বের দিন লোকদের সামনে) মৃত্যুকে হাযির করা হবে,
যেন তা সাদা ও কালো মিশ্রিত বর্ণের একটি মেষ। এটাকে জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝের
প্রাচীরের সাথে দাঁড় করিয়ে বলা হবে, হে জান্নাতের অধিবাসীগণ, শোন। তারা মাথা
তুলবে। তারপর বলা হবে, হে জাহান্নামের বাসিন্দারা শোন। তারাও মাথা তুলবে। তারপর
বলা হবে, তোমরা কি এটাকে চিনতে পেরেছ? তারা বলবে, হ্যাঁ, এটা মৃত্যু। তারপর এটাকে
শুইয়ে যবেহ করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা যদি জান্নাতবাসীদের সেখানে চিরস্থায়ী জীবনের
মীমাংসা না করতেন, তাহলে তারা (এ দৃশ্য দেখে) আনন্দের আতিশয্যে মারা যেত। আল্লাহ
তা‘আলা যদি জাহান্নামীদের সেখানে চিরস্থায়ী জীবনের মীমাংসা না করতেন, তাহলে তারাও
(এ দৃশ্য দেখে) অনুশোচনা ও অনুতাপ করতে করতে মারা যেত।
“আল্লাহ তা‘আলা যদি জান্নাতীদের সেখানে চিরস্থায়ী জীবনের ফায়সালা না করতেন...” অংশ
ব্যতীত হাদীসটি সহীহ। বুখারী, মুসলিম, দেখুন ২৫৫৮ নং হাদীস।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ
مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ قَتَادَةَ، فِي قَوْلِهِ :
(ورَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا ) قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ،
أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَمَّا عُرِجَ بِي
رَأَيْتُ إِدْرِيسَ فِي السَّمَاءِ الرَّابِعَةِ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ
وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ
وَهَمَّامٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ مَالِكِ بْنِ
صَعْصَعَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَدِيثَ الْمِعْرَاجِ بِطُولِهِ
وَهَذَا عِنْدَنَا مُخْتَصَرٌ مِنْ ذَاكَ .
ক্বাতাদাহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
“আর আমরা তাকে উচ্চতর স্থানে উন্নীত করেছি”- (সূরা মারইয়াম ৫৭) প্রসঙ্গে তিনি
(কাত্বাদাহ) বলেন, আমাদের নিকট আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে যখন মি‘রাজে নিয়ে যাওয়া হয় আমি
তখন ইদরীস (‘আঃ)- চতুর্থ আসমানে দেখেছি।
সহীহ : মুসলিম (১/১০০), দীর্ঘ বর্ণনা।
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ
‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সা‘ঈদ ইবনু আবী ‘আরূবা- হাম্মাম প্রমুখ-ক্বাতাদাহ
হতে, তিনি আনাস হতে, তিনি মালিক ইবনু সা‘সা‘আহ (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মি‘রাজের হাদীসটি দীর্ঘ আকারে বর্ণনা করেছেন। আমার মতে এটি
তারই সংক্ষিপ্তরূপ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ،
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ ذَرٍّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِجِبْرِيلَ
" مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَزُورَنَا أَكْثَرَ مِمَّا تَزُورُنَا " .
قَالَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (ومَا نَتَنَزَّلُ إِلاَّ بِأَمْرِ رَبِّكَ
) إِلَى آخِرِ الآيَةِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জিবরীল
(‘আঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আপনি যে কতবার
আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন তার বেশি সাক্ষাৎ করতে কিসে আপনাকে বাধা দেয়?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে এ
আয়াতটি অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “আপনার রবের নির্দেশ ব্যতীত আমরা অবতীর্ণ হই না।
আমাদের যা কিছু সম্মুখে আছে, আমাদের পিছনে যা কিছু আছে এবং এ দুয়ের মাঝখানে যা
কিছু আছে, সে সবের প্রভু তিনিই। আপনার প্রতিপালক কখনো ভুলে যান না” (সূরা মারইয়াম
৬৪)।
সহীহ : বুখারী (৪৭৩১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। হুসাইন ইবনু হুরাইস
ওয়াকী‘ হতে তিনি ‘আমর ইবনু যার হতে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، قَالَ سَأَلْتُ مُرَّةَ
الْهَمْدَانِيَّ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ، عَزَّ وَجَلَّ : ( وإِنْ مِنْكُمْ
إِلاَّ وَارِدُهَا ) فَحَدَّثَنِي أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ
حَدَّثَهُمْ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَرِدُ
النَّاسُ النَّارَ ثُمَّ يَصْدُرُونَ مِنْهَا بِأَعْمَالِهِمْ فَأَوَّلُهُمْ
كَلَمْحِ الْبَرْقِ ثُمَّ كَالرِّيحِ ثُمَّ كَحُضْرِ الْفَرَسِ ثُمَّ كَالرَّاكِبِ
فِي رَحْلِهِ ثُمَّ كَشَدِّ الرَّجُلِ ثُمَّ كَمَشْيِهِ " . قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَرَوَاهُ شُعْبَةُ عَنِ السُّدِّيِّ فَلَمْ يَرْفَعْهُ .
সুদ্দী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুররা
আল-হামদানীকে আমি প্রশ্ন করলাম, আল্লাহ তা‘আলার এ বাণী প্রসঙ্গে : “তোমাদের মাঝে
এমন কোন ব্যক্তি নেই যে জাহান্নামের উপর দিয়ে অতিক্রম করবে না”- (সূরা মারইয়াম
৭১)। তিনি আমাকে হাদীস বর্ণনা করে শুনান যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) তাদেরকে
হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ আগুনের উপর দিয়ে লোকজন অতিক্রম করবে এবং যার যার কৃতকর্ম মোতাবেক তা
অতিক্রম করতে থাকবে। বিজলি চমকানোর মতো তাদের প্রথম দল দ্রুত অতিক্রম করে যাবে।
পরবর্তী দলটি বাতাসের বেগে, তারপর দ্রুতগামী ঘোড়ার বেগে, তারপর উষ্ট্রারোহীর বেগে,
তারপর মানুষের দৌড়ের গতিতে, তারপর হেটে চলার গতিতে অতিক্রম করবে।
সহীহ : সহীহাহ (৩১১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীস সুদ্দীর সূত্রে
শু‘বাহ (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, কিন্তু এটাকে তিনি মারফূ‘রূপে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مَسْعُودٍِ : (وإنْ مِنْكُمْ إِلاَّ وَارِدُهَا ) قَالَ يَرِدُونَهَا ثُمَّ
يَصْدُرُونَ بِأَعْمَالِهِمْ .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
“তোমাদের সকলকেই তার উপর দিয়ে পার হতে হবে”- (সূরা মারইয়াম ৭১) প্রসঙ্গে তিনি
বলেন, লোকেরা ক্বিয়ামাত দিবসে তার (পুলসিরাত) উপর দিয়ে পার হবে। তারা এটা পার হবে
নিজ নিজ কৃতকর্ম মোতাবেগ (বিভিন্ন গতিবেগে)।
সহীহ : মাওকূফ তবে মারফূ এর মতই তার হুকুম।
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার-‘আবদুর রহমান ইবনু মাহদী হতে, তিনি
শু‘বাহ হতে, তিনি সুদ্দী (রহঃ) হতে উপরের হাদীসের মতো বর্ণনা করেছেন। ‘আবদুর রহমান
বলেন, আমি শু‘বাহকে বললাম, উল্লিখিত হাদীসটি ইসরাঈল আমাকে সুদ্দীর সূত্রে, তিনি মুররার
সূত্রে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর সূত্রে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। শু‘বাহ (রহঃ) বলেন, আমি এ হাদীস সুদ্দীর নিকট মারফূভাবেই
শুনেছি। কিন্তু আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই (মারফূ হিসেবে বর্ণনা করা) ত্যাগ করেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৬১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ،
عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَحَبَّ اللَّهُ عَبْدًا
نَادَى جِبْرِيلَ إِنِّي قَدْ أَحْبَبْتُ فُلاَنًا فَأَحِبَّهُ قَالَ فَيُنَادِي
فِي السَّمَاءِ ثُمَّ تَنْزِلُ لَهُ الْمَحَبَّةُ فِي أَهْلِ الأَرْضِ فَذَلِكَ
قَوْلُ اللَّهِ : ( إنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ
سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَنُ وُدًّا ) وَإِذَا أَبْغَضَ اللَّهُ عَبْدًا
نَادَى جِبْرِيلَ إِنِّي قَدْ أَبْغَضْتُ فُلاَنًا فَيُنَادِي فِي السَّمَاءِ
ثُمَّ تَنْزِلُ لَهُ الْبَغْضَاءُ فِي الأَرْضِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দাকে যখন আল্লাহ তা‘আলা
ভালোবাসেন তখন জিবরীলকে ডেকে বলেনঃ আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালবাসি। অতএব তুমিও তাকে
ভালবাস। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আসমানবাসীদের মধ্যে
জিবরীল তখন (এ কথা) ঘোষণা করেন। তারপর যমীনবাসীদের অন্তরে তার জন্য ভালবাসা
অবতীর্ণ হয়। এটাই আল্লাহ তা‘আলার বাণীর মধ্যে ফুটে উঠেছেঃ “যারা ঈমান আনায়ন করেছে
এবং উত্তম কার্য সম্পাদন করেছে খুব শীঘ্রই দয়াময় রহমান (লোকদের অন্তরে তাদের
প্রতি) ভালবাসার উদ্রেক করবেন”।–(সূরা মারইয়াম ৯৬)। অপর দিকে যখন আল্লাহ তা‘আলা
কাউকে ঘৃণা করেন তখন জিবরীলকে ডেকে বলেনঃ আমি অমুককে ঘৃণা করি। জিবরীল তখন
আসমানবাসীদের মধ্যে এটা ঘোষণা করেন। তারপর যমীনের অধিবাসীদের মনে তার জন্যে ঘৃণা
অবতীর্ণ হতে থাকে।
সহীহঃ যঈফাহ (২২০৭) নং হাদীসের অধীনে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি ‘আবদুর
রহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু দীনার (রহঃ) তার বাবা হতে, তিনি আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে একই
রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৬২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ سَمِعْتُ خَبَّابَ بْنَ الأَرَتِّ،
يَقُولُ جِئْتُ الْعَاصِيَ بْنَ وَائِلٍ السَّهْمِيَّ أَتَقَاضَاهُ حَقًّا لِي
عِنْدَهُ فَقَالَ لاَ أُعْطِيكَ حَتَّى تَكْفُرَ بِمُحَمَّدٍ . فَقُلْتُ لاَ
حَتَّى تَمُوتَ ثُمَّ تُبْعَثَ . قَالَ وَإِنِّي لَمَيِّتٌ ثُمَّ مَبْعُوثٌ
فَقُلْتُ نَعَمْ . فَقَالَ إِنَّ لِي هُنَاكَ مَالاً وَوَلَدًا فَأَقْضِيكَ .
فَنَزَلَتْ : ( أَرَأَيْتَ الَّذِي كَفَرَ بِآيَاتِنَا وَقَالَ لأُوتَيَنَّ
مَالاً وَوَلَدًا ) الآيَةَ .
মাসরূক
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাব্বার
ইবনুল আরাত্তি (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ আমার একটি স্বত্ত্ব ‘আস ইবনু ওয়ায়িল
আস-সাহমীর যিম্মায় ছিল। এ ব্যাপারে তাগাদা দেয়ার উদ্দেশ্যে আমি তার নিকট আসলাম। সে
বলল, যে পর্যন্ত তুমি মুহাম্মাদের নবুওয়াত অস্বীকার না করবে, সে পর্যন্ত আমি তোমার
স্বত্ত্ব ফিরিয়ে দিব না। আমি বললাম, তুমি মৃত্যুর পর ক্বিয়ামত দিবসে আবার জীবিত
হয়ে না উঠা পর্যন্ত তা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সে বলল, আমি মৃত্যুবরণ করব এবং আবার
জীবিত হব? আমি বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, তাহলে আমার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিও সেখানে
থাকবে আর সেখানে তোমার পাওনাটা ফিরিয়ে দিব। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়ঃ
“তুমি কি সেই লোককে দেখেছ, যে আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে এবং সে বলেছে, আমাকে
তো ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে ধন্য করা হবে”-(সূরা মারইয়াম ৭৭)।
সহীহঃ বুখারী (৪৭৩২), মুসলিম।
হান্নাদ-আবূ মু‘আবিয়াহ হতে, তিনি আ‘মাশ (রহঃ) হতে উপরের
হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২১
সূরা
ত্ব-হা
৩১৬৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ
شُمَيْلٍ، أَخْبَرَنَا صَالِحُ بْنُ أَبِي الأَخْضَرِ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا قَفَلَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ خَيْبَرَ أَسْرَى لَيْلَةً حَتَّى أَدْرَكَهُ
الْكَرَى أَنَاخَ فَعَرَّسَ ثُمَّ قَالَ " يَا بِلاَلُ اكْلأْ لَنَا
اللَّيْلَةَ " . قَالَ فَصَلَّى بِلاَلٌ ثُمَّ تَسَانَدَ إِلَى
رَاحِلَتِهِ مُسْتَقْبَلَ الْفَجْرِ فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ فَنَامَ فَلَمْ يَسْتَيْقِظْ
أَحَدٌ مِنْهُمْ وَكَانَ أَوَّلَهُمُ اسْتِيقَاظًا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
. فَقَالَ " أَىْ بِلاَلُ " . فَقَالَ بِلاَلٌ بِأَبِي أَنْتَ
يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ بِنَفْسِكَ . فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اقْتَادُوا " . ثُمَّ
أَنَاخَ فَتَوَضَّأَ فَأَقَامَ الصَّلاَةَ ثُمَّ صَلَّى مِثْلَ صَلاَتِهِ
لِلْوَقْتِ فِي تَمَكُّثٍ ثُمَّ قَالَ : (وأقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي ) .
قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَيْرُ مَحْفُوظٍ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الْحُفَّاظِ
عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَصَالِحُ بْنُ أَبِي
الأَخْضَرِ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ
وَغَيْرُهُ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন খাইবার
যুদ্ধ হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে আসছিলেন এবং রাতে
চলতে চলতে তাঁর খুব ঘুম পেল, তখন তিনি তার উট বসিয়ে তা হতে নেমে পড়লেন, তারপর
বললেনঃ হে বিলাল! আজ রাতে তুমি আমাদের পাহারা দাও। বর্ণনাকারী বলেন, বিলাল (রাঃ)
নামায আদায় করলেন, তারপর সূর্যোদয়ের দিকে মুখ ফিরিয়ে হাওদার সাথে হেলান দিয়ে বসে
রইলেন। তার চোখ ঘুমের তীব্রতায় বন্ধ হয়ে গেল। কেউই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে পারলেন
না। সর্বপ্রথম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাগ্রত হলেন। তিনি ডাকলেনঃ
হে বিলাল! বিলাল (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার বাবা আপনার জন্য কুরবান হোক।
আপনার জীবন যিনি নিয়েছিলেন, আমার জীবনও তিনিই নিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ উটের পিঠে হাওদা বাঁধো এবং দ্রুত সফর কর।
তারপর তিনি আরেক স্থানে পৌছে উট বসালেন এবং উযূ করলেন। নামাযের উদ্দেশ্যে ইক্বামাত
বলা হল। তিনি যেভাবে ওয়াক্তিয়া নামাযগুলো পড়েন, ঠিক সেভাবে ধীরে সুস্থে এই (কাযা)
নামায পড়লেন। তারপর তিনি আয়াত পাঠ করলেনঃ “আমার স্মরণে নামায ক্বায়িম কর”- (সূরা
ত্ব-হা- ১৪)
সহীহঃ সহীহ আবূ দাঊদ (৪৬১, ৪৬৩), ইরওয়া (২৬৩), মুসলিম অনুরূপ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসের সনদ সুরক্ষিত নয়। একাধিক হাফিয
যুহরীর সূত্রে এবং তিনি সা‘ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাবের সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নাম উল্লেখ করে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তারা নিজ নিজ সনদে আবূ হুরাইরাহর
উল্লেখ করেননি। তাছাড়া হাদীস শাস্ত্রে সালিহ ইবনু আবী আখযার দুর্বল। ইয়াহইয়া ইবনু সা‘ঈদ
আল-কাত্তান প্রমুখ তাকে স্মরণ শক্তির দিক হতে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৬৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى
الأَشْيَبُ، بَغْدَادِيٌّ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي
الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" الْوَيْلُ وَادٍ فِي جَهَنَّمَ يَهْوِي فِيهِ الْكَافِرُ أَرْبَعِينَ
خَرِيفًا قَبْلَ أَنْ يَبْلُغَ قَعْرَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ لَهِيعَةَ
.
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ওয়াইল হচ্ছে জাহান্নামের একটি ময়দানের
নাম। এটা এতই গভীর যে, এর তলদেশে পৌঁছা পর্যন্ত কাফির ব্যক্তি চল্লিশ বছর ধরে
নীচের দিকে পড়তে থাকবে।
যঈফ, তা’লীকুর রাগীব (৪/২২৯)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু ইবনু লাহীআর
সূত্রেই এটি মারফূ হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২২
সূরা
আল-আম্বিয়া
৩১৬৫
حَدَّثَنَا مُجَاهِدُ بْنُ مُوسَى، - بَغْدَادِيٌّ - وَالْفَضْلُ بْنُ
سَهْلٍ الأَعْرَجُ بَغْدَادِيٌّ وَغَيْرُ وَاحِدٍ قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ غَزْوَانَ أَبُو نُوحٍ، حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ
مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ
رَجُلاً، قَعَدَ بَيْنَ يَدَىِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ
اللَّهِ إِنَّ لِي مَمْلُوكَيْنِ يُكْذِبُونَنِي وَيَخُونُونَنِي وَيَعْصُونَنِي
وَأَشْتُمُهُمْ وَأَضْرِبُهُمْ فَكَيْفَ أَنَا مِنْهُمْ قَالَ " يُحْسَبُ
مَا خَانُوكَ وَعَصَوْكَ وَكَذَبُوكَ وَعِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَإِنْ كَانَ
عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ بِقَدْرِ ذُنُوبِهِمْ كَانَ كَفَافًا لاَ لَكَ وَلاَ
عَلَيْكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ دُونَ ذُنُوبِهِمْ كَانَ فَضْلاً لَكَ
وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَوْقَ ذُنُوبِهِمُ اقْتُصَّ لَهُمْ مِنْكَ
الْفَضْلُ " . قَالَ فَتَنَحَّى الرَّجُلُ فَجَعَلَ يَبْكِي وَيَهْتِفُ
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَا تَقْرَأُ كِتَابَ
اللَّهِ : ( ونَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلاَ
تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ ) الآيَةَ . فَقَالَ
الرَّجُلُ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَجِدُ لِي وَلِهَؤُلاَءِ شَيْئًا
خَيْرًا مِنْ مُفَارَقَتِهِمْ أُشْهِدُكُمْ أَنَّهُمْ أَحْرَارٌ كُلَّهُمْ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ
مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ غَزْوَانَ وَقَدْ رَوَى أَحْمَدُ بْنُ
حَنْبَلٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ غَزْوَانَ هَذَا الْحَدِيثَ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সম্মুখে বসে এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কয়েকটি গোলাম আছে। আমার নিকট এরা
মিথ্যা কথা বলে, আমার সম্পদে ক্ষতিসাধন (খিয়ানাত) করে এবং আমার অবাধ্যতা করে। এ
কারণে তাদেরকে আমি বকাবকি ও মারধর করি। তাদের সাথে এমন ব্যবহারে আমার অবস্থা কি
হবে? তিনি বললেনঃ তারা যে তোমার সাথে খিয়ানাত করে, তোমার অবাধ্যতা করে এবং তোমার
নিকট মিথ্যা বলে, আর এ কারণে তাদের সাথে তুমি যেমন আচরণ কর- এ সবেরই হিসাব-নিকাশ
হবে। যদি তোমার দেয়া শাস্তি তাদের অপরাধের সমান হয় তবে ঠিক আছে। তোমারও কোন অসুবিধা
হবে না তাদেরও কোন অসুবিধা হবে না। যদি তোমার দেয়া শাস্তি তাদের অপরাধের তুলনায় কম
হয় তাহলে তোমার জন্য অতিরিক্ত (সাওয়াব) রয়ে গেল। তোমার প্রদত্ত শাস্তি যদি তাদের
অপরাধের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে অতিরিক্ত অংশের জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।
বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে লোকটি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে আলাদা হয়ে গেল।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে
তুমি কি এ কথা পড় না (অনুবাদ)- “আমরা ক্বিয়ামাতের দিন ন্যায়বিচারের দাঁড়িপাল্লা
স্থাপন করব। সুতরাং কোন লোকের উপর কোন যুলুম করা হবে না। কারো বিন্দু পরিমাণও কিছু
কৃতকর্ম থাকলে আমরা তাও হাযির করব। আর হিসাব সম্পন্ন করার জন্য আমরাই যথেষ্ট”-
(সূরা আম্বিয়া ৪৭)। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর ক্বসম! তাদের মাঝে এবং
আমার মাঝে বিচ্ছিন্নতা ছাড়া আমার ও তাদের কল্যাণের আর কোন পথ দেখছি না। আপনাকে আমি
সাক্ষী রেখে বলছি, তাদের সবাই এখন হতে মুক্ত।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। ‘আবদুর রহমান ইবনু গাযওয়ানের
সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীস জেনেছি। ইমাম আহমাদও এ হাদীস ‘আবদুর রহমান ইবনু গাযওয়ানের
সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৬৬
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنِي
أَبِي، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " لَمْ يَكْذِبْ إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ فِي
شَيْءٍ قَطُّ إِلاَّ فِي ثَلاَثٍ قَوْلُهُ : (إنِّي سَقِيمٌ ) وَلَمْ يَكُنْ
سَقِيمًا وَقَوْلُهُ لِسَارَةَ أُخْتِي وَقَوْلُهُ : ( بلْ فَعَلَهُ
كَبِيرُهُمْ هَذَا ) " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইবরাহীম (‘আঃ) তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া কোন
ব্যাপারে কখনো মিথ্যা বলেননি। যেমন তাঁর কথা “আমি অসুস্থ”- (সূরাঃ আস-সাফফাত ৮৯),
অথচ তিনি অসুস্থ ছিলেন না, নিজের বিবি ‘সারা’-কে তার বোন বলা এবং তাঁর কথা “বরং
এগুলোর ভিতর সর্বাধিক বড়টি এ কাজ করেছে”- (সূরা আম্বিয়া ৬৩)।
সহীহঃ সহীহ আবূ দাঊদ (১৯১৬), বুখারী, মুসলিম।
হাদীসটি একাধিক সূত্রে আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)- এর বরাতে নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে। ইবনু ইসহাক্ব হতে আবুয যান্নাদ
সূত্রে বর্ণিত হাদিসটি গারীব। আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৬৭
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَوَهْبُ بْنُ
جَرِيرٍ، وَأَبُو دَاوُدَ قَالُوا حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ
النُّعْمَانِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَامَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْمَوْعِظَةِ فَقَالَ " يَا
أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ مَحْشُورُونَ إِلَى اللَّهِ عُرَاةً غُرْلاً "
. ثُمَّ قَرَأََ : ( كما بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا
عَلَيْنَا ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ قَالَ " أَوَّلُ مَنْ يُكْسَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ
إِبْرَاهِيمُ وَإِنَّهُ سَيُؤْتَى بِرِجَالٍ مِنْ أُمَّتِي فَيُؤْخَذُ بِهِمْ
ذَاتَ الشِّمَالِ فَأَقُولُ رَبِّ أَصْحَابِي . فَيُقَالُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِي
مَا أَحْدَثُوا بَعْدَكَ . فَأَقُولُ كَمَا قَالَ الْعَبْدُ الصَّالِحُ (
وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ
أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ * إِنْ
تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ
الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ) فَيُقَالُ هَؤُلاَءِ لَمْ يَزَالُوا مُرْتَدِّينَ عَلَى
أَعْقَابِهِمْ مُنْذُ فَارَقْتَهُمْ " .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়াজ-নসীহত করতে দাঁড়িয়ে বললেনঃ "হে
লোকেরা! কিয়ামাতের দিন তোমারা নগ্ন ও খতনাহীন অবস্থায় আল্লাহ্র নিকট সমবেত হবে।
(বর্ণনাকারী বলেন,) তারপর তিনি পড়লেনঃ "যেভাবে প্রথম আমরা সৃষ্টির সূচনা
করেছিলাম, সেভাবেই তার পুনরাবৃত্তি করবো। এটা একটা ওয়াদাহ। যা পূরণ করার দায়িত্ব
আমার। আর এ কাজ আমি অবশ্যই করবো"- (সূরা আম্বিয়া ১০৪)। রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন "কিয়ামাতের দিন সর্বপ্রথম
যাকে কাপড় পরানো হবে তিনি হচ্ছেন ইব্রাহীম (আঃ)। আমার উম্মতের কিছু সংখ্যক
ব্যাক্তিকে নিয়ে আসা হবে এবং তাদের কে ধরে বাঁ দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি তখন বলবোঃ
হে আমার সৃষ্টিকর্তা! এরা আমার অনুসারি। তখন বলা হবে, আপনি জানেন না, এরা আপনার
বিদায়ের পর কি ধরনের বিদ'আত এর উদ্ভব ঘটিয়েছিল। আমি সে সময় একজন সৎকর্মশীল বান্দার
[(ঈসা (আঃ)] মত বলবো (কুরআনের ভাষায়) "আমি যতক্ষন পর্যন্ত তাদের মধ্যে ছিলাম,
ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের পরিচালক ছিলাম। কিন্তু আপনি যখন আমাকে তুলে নিলেন, তখন আপনিই
ছিলেন তাদের তত্ত্বাবধায়ক। আর আপনি তো সকল বিষয়ের সাক্ষী। আপনি যদি তাদের আযাব দেন
তবে তারা তো আপনারই বান্দা, আর যদি ক্ষমা করে দেন তাহলে আপনি তো পরাক্রমশালী ও
প্রজ্ঞাময় "-(সূরা আল-মায়িদাহ ১১৭-১১৮)। তখন বলা হবে, আপনি যখন তাদের কে রেখে
এসেছেন তখন হতে এরা অনবরত মন্দ পথেই চলেছে।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম। এটি (২৪২৩) নং হাদীসের পুনরুক্তি।
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার-মুহাম্মাদ ইবনু জা'ফর হতে, তিনি
শু'বাহ হতে, তিনি মুগীরাহ ইবনু নু'মান হতে এই সনদে উপরের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
এ হাদীস টি হাসান সহীহ। সুফ'ইয়ান সাওরীও এ হাদীস টি মুগীরাহ ইবনু নু'মানের সুত্রে অনুরুপ
বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেনঃ সুফ'ইয়ান সাওরী এই হাদীসের মর্মার্থ দ্বারা মুরতাদ দের
কে বুঝিয়েছেন যারা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইন্তিকালের পর
মুরতাদ হয়ে গিয়েছিলো ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৩
সূরা
আল-হাজ্জ
৩১৬৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنِ ابْنِ جُدْعَانَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمَّا نَزَلَتْ : ( يا أَيُّهَا النَّاسُ
اتَّقُوا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ ) إِلَى
قَوْلِهِ : (ولَكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ ) قَالَ أُنْزِلَتْ عَلَيْهِ
هَذِهِ وَهُوَ فِي سَفَرٍ فَقَالَ " أَتَدْرُونَ أَىُّ يَوْمٍ ذَلِكَ
" . فَقَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " ذَلِكَ
يَوْمَ يَقُولُ اللَّهُ لآدَمَ ابْعَثْ بَعْثَ النَّارِ فَقَالَ يَا رَبِّ وَمَا
بَعْثُ النَّارِ قَالَ تِسْعُمِائَةٍ وَتِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ إِلَى النَّارِ
وَوَاحِدٌ إِلَى الْجَنَّةِ " . قَالَ فَأَنْشَأَ الْمُسْلِمُونَ
يَبْكُونَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " قَارِبُوا
وَسَدِّدُوا فَإِنَّهَا لَمْ تَكُنْ نُبُوَّةٌ قَطُّ إِلاَّ كَانَ بَيْنَ
يَدَيْهَا جَاهِلِيَّةٌ قَالَ فَيُؤْخَذُ الْعَدَدُ مِنَ الْجَاهِلِيَّةِ فَإِنْ
تَمَّتْ وَإِلاَّ كَمُلَتْ مِنَ الْمُنَافِقِينَ وَمَا مَثَلُكُمْ وَالأُمَمِ إِلاَّ
كَمَثَلِ الرَّقْمَةِ فِي ذِرَاعِ الدَّابَّةِ أَوْ كَالشَّامَةِ فِي جَنْبِ
الْبَعِيرِ ثُمَّ قَالَ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ
" . فَكَبَّرُوا ثُمَّ قَالَ " إِنِّي لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا
ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ " . فَكَبَّرُوا ثُمَّ قَالَ " إِنِّي
لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا نِصْفَ أَهْلِ الْجَنَّةِ " . فَكَبَّرُوا قَالَ
وَلاَ أَدْرِي قَالَ الثُّلُثَيْنِ أَمْ لاَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم .
ইমরান
ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“হে লোকেরা! তোমাদের
প্রভুর গযব হতে নিজকে রক্ষা কর। কিয়ামাতের কম্পন বড়ই ভয়াবহ ব্যপার। যেদিন তোমরা তা
দেখতে পাবে সেদিনের অবস্থা এমন হবে যে, প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী নিজের দুধের শিশুকে
দুধ পান করাতে ভুলে যাবে। প্রত্যেক গর্ভবতী গর্ভপাত করবে এবং লোকদেরকে তোমরা
মাতালের মতো দেখতে পাবে, অথচ তারা নেশাগ্রস্থ নয়। বরং আল্লাহ্ তা’আলার শাস্তিই
এতদূর কঠোর হবে” (সূরাঃ আল-হাজ্জ- ১-২)। রাবী বলেন, এ আয়াত যখন অবতীর্ণ হয়, তখন
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে ছিলেন। তিনি বললেনঃ তোমরা
কি জান এটা কোন দিন? সাহাবীগন বললেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা ও তাঁর রাসূলই সবচাইতে ভাল
জানেন। তিনি বললেনঃ এটা সেই দিন, যখন আল্লাহ্ তা’আলা আদম (আঃ)-কে বলবেনঃ
জাহান্নামের বাহিনী প্রস্তুত কর। আদম (আঃ) বলবেনঃ হে প্রভু! জাহান্নামের বাহিনীর
সংখ্যা কত? তিনি বলবেনঃ (হাজারকে) নয় শত নিরানব্বই জন জাহান্নামের এবং একজন
জান্নাতের বাহিনী। একথা শুনে মুসলমানরা কান্নায় ভেংগে পড়েন। রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সমতল পথে চলো, আল্লাহ্ তা’আলার নৈকট্য
খোঁজ কর, সোজা পথ ধর। প্রত্যেক নাবূয়্যাতের পূর্বেই রয়েছে জাহিলিয়াত। তিনি আরো
বলেনঃ জাহিলিয়াত হতেই বেশি সংখ্যক নেয়া হবে। যদি এতে সংখ্যা পূর্ণ হয় তো ভালো,
অন্যথায় মুনাফিকদের দিয়ে সংখ্যা পূর্ণ করা হবে। অপরাপর উম্মাতের ও তোমাদের উদাহরণ
হচ্ছে, যেমন পশুর বাহুর দাগ অথবা উটের পার্শ্বদেশের তিলক (অর্থাৎ তোমাদের সংখ্যা
বেশি হবে)। তিনি আবার বললেনঃ আমি আশা করি তোমরাই হবে জান্নাতের এক-চতুর্থাংশ
অধিবাসী। একথা শুনে তারা তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি আশা
করি তোমরাই হবে জান্নাতের এক-তৃতীয়াংশ অধিবাসী। একথা শুনে তারা তাকবীর ধ্বনি দেন।
তিনি আবার বললেনঃ আমি আশা করি তোমরাই হবে জান্নাতের অর্ধেক অধিবাসী। তারা এবারও
তাকবীর ধ্বনি দেন। রাবী বলেন, তিনি দুই-তৃতীয়াংশের কথা বলেছেন কি-না তা আমার মনে
নেই।
সনদ দুর্বল, তা’লীকুম রাগীব (৪/২২৯)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ،
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فِي سَفَرٍ فَتَفَاوَتَ بَيْنَ أَصْحَابِهِ فِي السَّيْرِ فَرَفَعَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَوْتَهُ بِهَاتَيْنِ الآيَتَيْنِ أَيُّهَا النَّاسُ
اتَّقُوا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ ) إِلَى
قَوْلِهِ : ( إن عذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ ) فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ
أَصْحَابُهُ حَثُّوا الْمَطِيَّ وَعَرَفُوا أَنَّهُ عِنْدَ قَوْلٍ يَقُولُهُ
فَقَالَ " هَلْ تَدْرُونَ أَىُّ يَوْمٍ ذَلِكَ " . قَالُوا
اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " ذَاكَ يَوْمٌ يُنَادِي اللَّهُ
فِيهِ آدَمَ فَيُنَادِيهِ رَبُّهُ فَيَقُولُ يَا آدَمُ ابْعَثْ بَعْثَ النَّارِ
. فَيَقُولُ يَا رَبِّ وَمَا بَعْثُ النَّارِ فَيَقُولُ مِنْ كُلِّ أَلْفٍ
تِسْعُمِائَةٍ وَتِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ إِلَى النَّارِ وَوَاحِدٌ فِي الْجَنَّةِ
" . فَيَئِسَ الْقَوْمُ حَتَّى مَا أَبْدَوْا بِضَاحِكَةٍ فَلَمَّا رَأَى
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي بِأَصْحَابِهِ قَالَ "
اعْمَلُوا وَأَبْشِرُوا فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّكُمْ لَمَعَ
خَلِيقَتَيْنِ مَا كَانَتَا مَعَ شَيْءٍ إِلاَّ كَثَّرَتَاهُ يَأْجُوجُ
وَمَأْجُوجُ وَمَنْ مَاتَ مِنْ بَنِي آدَمَ وَبَنِي إِبْلِيسَ " . قَالَ
فَسُرِّيَ عَنِ الْقَوْمِ بَعْضُ الَّذِي يَجِدُونَ . فَقَالَ "
اعْمَلُوا وَأَبْشِرُوا فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ مَا أَنْتُمْ فِي
النَّاسِ إِلاَّ كَالشَّامَةِ فِي جَنْبِ الْبَعِيرِ أَوْ كَالرَّقْمَةِ فِي
ذِرَاعِ الدَّابَّةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
ইমরান
ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এক সফরে
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। চলার পথে তিনি ও
তাঁর সাহাবিগণ আগে পিছে হয়ে গেলেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সূরা হাজ্জ এর প্রথম এ দুটি আয়াতের মাধ্যমে নিজের আওয়াজ বড় করলেনঃ
"হে মানুষ! তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। কিয়ামাতের প্রকম্পন এক ভয়াবহ ব্যাপার
... বস্তুত আল্লাহ্ তা'আলার শাস্তি বড় কঠিন"-(সূরা হাজ্জ ১-২)। তাঁর
সাহাবীগন এই ডাক শুনতে পেয়ে নিজেদের জন্তু্যানের গতি দ্রুত করলেন এবং জেনে নিলেন
যে, তিনি কিছু বলবেন। (সাহাবীগন তাঁর নিকট পৌঁছালে) তিনি বললেনঃ তোমরা কি জানো সেই
দিন কোনটি? তারা বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলই বেশী ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ এটা
সেই দিন যেদিন আল্লাহ্ তা'আলা আদম (আঃ) কে ডেকে বলবেন- "হে আদম দোজখের ফৌজ
তৈরি কর। তিনি বলবেনঃ হে আমার প্রতিপালক, দোজখের ফৌজ কারা এবং তাদের সংখ্যা কত?
তিনি বলবেন, প্রতি হাজারে নয়শ নিরানব্বই জন দোজখে যাবে এবং একজন জান্নাতে
যাবে"। সাহাবীগণ এই কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন। তখন কারো মুখে হাসি ছিলনা।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই অবস্থা দেখে বললেনঃ কাজ করতে
থাকো এবং সুসংবাদ গ্রহণ কর। সেই সত্তার শপথ যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন! তোমরা দুটি
জীবের সাক্ষাৎ পাবে। তাদের সাথে যাদের সাক্ষাৎ হবে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হবে। এ
দুটি জীব হল ইয়া'যুজ ও মা'যুজ এবং আদম সন্তান ও ইবলিশের সন্তানদের মধ্যে যারা মারা
গেছে তারা। বর্ণনাকারী বলেন, এতে লোকদের চিন্তা ও বিষণ্ণতা কিছুটা দূর হয়ে গেলো।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কাজ কর এবং সুসংবাদ
গ্রহণ কর। সেই সত্তার শপথ যার হাতে মুহাম্মাদের প্রান! (অন্যান্য জাতীর তুলনায়)
তোমাদের দৃষ্টান্ত হল, উটের পার্শ্বদেশের তিলক অথবা চতুষ্পদ জন্তুর বাহুর দাগের মত।
সহীহ বুখারী (৪৭৪১), মুসলিম (১/১৩৯)
আবূ ঈসা বলেন, হাদিস টি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عُرْوَةَ بْنِ
الزُّبَيْرِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " إِنَّمَا سُمِّيَ الْبَيْتُ الْعَتِيقَ لأَنَّهُ
لَمْ يَظْهَرْ عَلَيْهِ جَبَّارٌ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً .
আবদুল্লাহ
ইবনুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (বাইতুল্লাহ্র) বাইতুল আতীক নাম
এজন্য হয়েছে যে, কোন স্বেচ্ছাচারীই এর উপর কর্তৃত্ব প্রসার করতে সমর্থ হয়নি।
যঈফ, যঈফা (৩২২২)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। অন্য এক সূত্রে
যুহরী হতে এ হাদীস মুরসাল হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। কুতাইবা হতে তিনি লাইস হতে তিনি আকীল
হতে তিনি যুহরী (রহঃ) হতে এই সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরের
হাদীসের মতই বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৭১
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَإِسْحَاقُ بْنُ
يُوسُفَ الأَزْرَقُ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُسْلِمٍ
الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا
أُخْرِجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَكَّةَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ
أَخْرَجُوا نَبِيَّهُمْ لَيَهْلِكُنَّ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (أُذِنَ
لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا وَإِنَّ اللَّهَ عَلَى نَصْرِهِمْ
لَقَدِيرٌ ) الآيَةَ . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ لَقَدْ عَلِمْتُ أَنَّهُ
سَيَكُونُ قِتَالٌ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَاهُ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ وَغَيْرُهُ عَنْ سُفْيَانَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ
مُسْلِمٍ الْبَطِينِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ مُرْسَلاً لَيْسَ فِيهِ عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যখন মক্কাবাসীরা মক্কা হতে নির্বাসিত করে,
তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, এই লোকেরা তাদের নবীকে বের করে দিয়েছে। এদের নিঃসন্দেহে
অনিষ্ট হবে। এ কথার পটভূমিকায় আল্লাহ্ তা’আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “যাদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করা হচ্ছে তাদেরকে অনুমতি দেয়া হল। কেননা তাদের প্রতি যুলুম করা হয়েছে।
আল্লাহ্ তা’আলা অবশ্যই তাদের সাহায্য করতে সক্ষম। এরা সেই লোক, যাদেরকে
অন্যায়ভাবে নিজেদের ঘর-বাড়ী হতে বহিষ্কৃত করা হয়েছে। তাদের দোষ ছিল এই যে, তারা
বলতঃ আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের রব” (সূরাঃ আল-হাজ্জ- ৩৯-৪০)। আবূ বাকর (রাঃ) বললেনঃ
আমি বুঝে গেলাম, শীঘ্রই লড়াই বেধে যাবে।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আবদুর রহমান ইবনু মাহদী
প্রমুখ-সুফিয়ান হতে তিনি আমাশ হতে তিনি মুসলিম আল-বাতীন হতে তিনি সাঈদ ইবনু যুবাইর-এর
সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ হাদীসটি মুরসালরূপে
বর্ণনা করেছেন। তাতে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার, আবূ আহমাদ
আয-যুবাইরী সুফইয়ানের সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন,
তাতে ইবনু আব্বাসের উল্লেখ আছে। একাধিক রাবী-সুফিয়ান হতে তিনি আমাশ হতে তিনি মুসলিম
আল-বাতীন হতে তিনি সাঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) সূত্রে উক্ত হাদীস মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন
এবং তাতে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৭২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ
الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُسْلِمٍ
الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ لَمَّا أُخْرِجَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم مِنْ مَكَّةَ قَالَ رَجُلٌ أَخْرَجُوا نَبِيَّهُمْ فَنَزَلَتْ :
( أذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا وَإِنَّ اللَّهَ عَلَى
نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ * الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ )
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ .
সাঈদ
ইবনু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মক্কা হতে বের করা হলে এক ব্যক্তি বলেন, তারা তাদের নবীকে
বের করে দিয়েছে। তখন অবতীর্ণ হয়ঃ “যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যাদের সাথে
যুদ্ধ করা হয়, কেননা তাদের প্রতি যুলুম করা হয়েছে; আর আল্লাহ্ তাদেরকে সাহায্য
করতে অবশ্যই সক্ষম; যারা বহিষ্কৃত হয়েছে অন্যায়ভাবে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে” (সূরাঃ
আল-হাজ্জ- ৩৯-৪০) অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর
সাহাবীগণকে।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-২৪
সূরা
আল-মু’মিনূন
৩১৭৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَغَيْرُ،
وَاحِدٍ الْمَعْنَى، وَاحِدٌ، قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
يُونُسَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدٍ الْقَارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ
الْخَطَّابِ، رضى الله عنه يَقُولُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا
نَزَلَ عَلَيْهِ الْوَحْىُ سُمِعَ عِنْدَ وَجْهِهِ كَدَوِيِّ النَّحْلِ فَأُنْزِلَ
عَلَيْهِ يَوْمًا فَمَكَثْنَا سَاعَةً فَسُرِّيَ عَنْهُ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ
وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَقَالَ " اللَّهُمَّ زِدْنَا وَلاَ تَنْقُصْنَا
وَأَكْرِمْنَا وَلاَ تُهِنَّا وَأَعْطِنَا وَلاَ تَحْرِمْنَا وَآثِرْنَا وَلاَ
تُؤْثِرْ عَلَيْنَا وَأَرْضِنَا وَارْضَ عَنَّا " . ثُمَّ قَالَ صلى الله
عليه وسلم " أُنْزِلَ عَلَىَّ عَشْرُ آيَاتٍ مَنْ أَقَامَهُنَّ دَخَلَ
الْجَنَّةَ " . ثُمَّ قَرَأَ : ( قدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ )
حَتَّى خَتَمَ عَشْرَ آيَاتٍ .
আবদুর
রহমান ইবনু আবদুল কারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর উপর যখন ওয়াহী অবতীর্ণ হত সে সময় তাঁর মুখমণ্ডলের নিকট হতে মৌমাছির
আওয়াজের মত গুনগুন আওয়াজ শোনা যেত। একদিন তাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হল। আমি কিছুক্ষন
প্রতীক্ষা করলাম। তাঁর উপর হতে ওয়াহীর বিশেষ অবস্থা সরে গেলে তিনি কিবলামুখী হয়ে
তাঁর দুই হাত তুলে দু’আ করলেনঃ “হে আল্লাহ্! আমাদেরকে বেশি দান কর, আমাদেরকে কম
দিও না, আমাদেরকে সম্মান ও মর্যাদা দাও, আমাদেরকে লাঞ্ছিত করো না, আমাদেরকে দান
কর, বঞ্চিত করো না, আমাদেরকে অগ্রগামী কর, আমাদের উপর অন্য কাউকে অগ্রগামী করো না,
আমাদেরকে সুপ্রসন্ন কর এবং আমাদের উপর সুপ্রসন্ন থাক।” তারপর তিনি বললেনঃ আমার উপর
এমন দশটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, যার মানদণ্ডে কেউ কৃতকার্য হলে সে জান্নাতে যাবে।
তারপর তিনি “কাদ আফলাহাল মু’মিনূন” হতে শুরু করে দশটি আয়াত তিলাওয়াত করেন।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (২৪৯৪)
মুহাম্মাদ ইবনু আবান-আবদুর রাযযাক হতে তিনি ইউনুস ইবনু
সুলাইম হতে তিনি ইউনুস ইবনু ইয়াযীদ হতে তিনি যুহরী (রহঃ) হতে এই সূত্রে উক্ত মর্মে
একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেনঃ পূর্ববর্তী সূত্রের তুলনায় এই সনদসূত্রটি
অনেক বেশি সহীহ। আমি ইসহাক ইবনু মানসূরকে বলতে শুনেছি, আহমাদ ইবনু হাম্বল, আলী ইবনুল
মাদীনী ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম-আবদুর রাযযাক হতে তিনি ইউনুস ইবনু সুলাইম হতে তিনি ইউনুস
ইবনু ইয়াযীদ হতে তিনি যুহরী (রহঃ) সূত্রে এই হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। যিনি প্রথমে আবদুর
রাযযাকের নিকট এ হাদীস শুনেছেন তিনি ইউনুস ইবনু সুলাইম-এর পরে ইউনুস ইবনু ইয়াযীদের
উল্লেখ করেছেন এবং কিছু রাবী ইউনুস ইবনু ইয়াযীদের উল্লেখ করেননি। সুতরাং যারা ইউনুস
ইবনু ইয়াযীদের উল্লেখ করেছেন তাদের রিওয়ায়াতই অনেক বেশি সহীহ। আর আবদুর রাযযাক কখনও
তার উল্লেখ করেছেন এবং কখনও করেননি। হাদীসটি মুরসাল। পূর্বের অনুরূপ দুর্বল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ،
عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، رضى الله عنه أَنَّ
الرُّبَيِّعَ بِنْتَ النَّضْرِ، أَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ
ابْنُهَا حَارِثَةُ بْنُ سُرَاقَةَ أُصِيبَ يَوْمَ بَدْرٍ أَصَابَهُ سَهْمٌ غَرَبٌ
فَأَتَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ أَخْبِرْنِي عَنْ
حَارِثَةَ لَئِنْ كَانَ أَصَابَ خَيْرًا احْتَسَبْتُ وَصَبَرْتُ وَإِنْ لَمْ
يُصِبِ الْخَيْرَ اجْتَهَدْتُ فِي الدُّعَاءِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " يَا أُمَّ حَارِثَةَ إِنَّهَا جِنَانٌ فِي جَنَّةٍ وَإِنَّ
ابْنَكِ أَصَابَ الْفِرْدَوْسَ الأَعْلَى وَالْفِرْدَوْسُ رَبْوَةُ الْجَنَّةِ
وَأَوْسَطُهَا وَأَفْضَلُهَا " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাযর এর মেয়ে রুবাই
(রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে উপস্থিত হলেন। উক্ত মহিলার
পুত্র হারিসাহ ইবনু সুরাকাহ বদরের যুদ্ধে অদৃশ্য তীরের আঘাতে শহীদ হন। তিনি
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললেন, আমাকে হারিসাহ
এর অবস্থা সম্পর্কে বলুন। সে যদি কল্যানের অধিকারী হয়ে থাকে তবে আমি পুন্যের
আশাবাদী থাকব এবং ধৈর্য ধারন করবো। আর সে যদি কল্যাণ লাভ না করে থাকে তবে আমি তাঁর
জন্য দু'আ করতে আপ্রান চেষ্টা করবো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ হে হারিসাহর মা! জান্নাতের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর উদ্যান রয়েছে। তোমার ছেলে
সু উচ্চ উদ্যান জান্নাতুল ফেরদাউদ লাভ করেছে। ফিরদাউস হল জান্নাতের উচ্চ ভুমি,
জান্নাতের কেন্দ্রভূমি এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উদ্যান।
সহীহঃ সহীহাহ (১৮১১, ২০০৩), মুখতাসারুল 'উলুবি (৭৬), বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৭৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا
مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ وَهْبٍ
الْهَمْدَانِيِّ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ
سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : (
والَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ ) قَالَتْ عَائِشَةُ
أَهُمُ الَّذِينَ يَشْرَبُونَ الْخَمْرَ وَيَسْرِقُونَ قَالَ " لاَ يَا
بِنْتَ الصِّدِّيقِ وَلَكِنَّهُمُ الَّذِينَ يَصُومُونَ وَيُصَلُّونَ وَيَتَصَدَّقُونَ
وَهُمْ يَخَافُونَ أَنْ لاَ يُقْبَلَ مِنْهُمْ أُولَئِكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ
فِي الْخَيْرَاتِ وَهُمْ لَهَا سَابِقُونَ " . قَالَ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا
الْحَدِيثُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا .
রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এই আয়াত প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলামঃ
"তারা যা কিছুই দান করে তাতে তাদের অন্তর প্রকম্পিত থাকে"-(সূরা
মূ'মিনূন ৬০)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরা কি মদখোর ও চোর? তিনি বললেনঃ হে সিদ্দীকের
মেয়ে! না এরা তা নয়, যারা নামাজ আদায় করে, রোযা রাখে, দান-খয়রাত করে এবং মনে মনে
এই ভয় পোষণ করে যে, তাদের পক্ষ হতে এগুলো কবুল করা হল কি না? এরাই "কল্যাণের
কাজ দ্রুত শেষ করে এবং তাতে অগ্রগামী হয় "- (সূরা মূ'মিনূন ৬১)।
সহীহঃ ইবনু মা-যাহ (৪১৯৮)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি আব্দুর রহমান ইবনু সা'ঈদ- আবূ
হাযিম হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে এই সূত্রেও একই রকম বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৭৬
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ أَبِي شُجَاعٍ، عَنْ أَبِي السَّمْحِ،
عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ : (وهُمْ فِيهَا كَالِحُونَ ) قَالَ "
تَشْوِيهِ النَّارُ فَتَقَلَّصُ شَفَتُهُ الْعُلْيَا حَتَّى تَبْلُغَ وَسَطَ
رَأْسِهِ وَتَسْتَرْخِي شَفَتُهُ السُّفْلَى حَتَّى تَضْرِبَ سُرَّتَهُ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আবূ
সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) "তারা জাহান্নামে থাকবে বীভৎস
চেহারায়" (সূরাঃ আল-মু'মিনুন- ১০৪) আয়াত প্রসঙ্গে বলেনঃ আগুন তাদেরকে
জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ঝলসিয়ে দিবে। ফলে তাদের উপরের ঠোঁট কুঞ্চিত হয়ে মাথার মাঝখানে
পৌঁছে যাবে। আর নীচের ঠোঁট এত ঢিলা হয়ে যাবে যে, তা নাভী পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।
যঈফ, ২৭১৩ নং হাদীস পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৫
সূরা
আন-নূর
৩১৭৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ،
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ الأَخْنَسِ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ كَانَ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ مَرْثَدُ بْنُ أَبِي
مَرْثَدٍ وَكَانَ رَجُلاً يَحْمِلُ الأَسْرَى مِنْ مَكَّةَ حَتَّى يَأْتِيَ بِهِمُ
الْمَدِينَةَ قَالَ وَكَانَتِ امْرَأَةٌ بَغِيٌّ بِمَكَّةَ يُقَالُ لَهَا عَنَاقُ
وَكَانَتْ صَدِيقَةً لَهُ وَإِنَّهُ كَانَ وَعَدَ رَجُلاً مِنْ أُسَارَى مَكَّةَ
يَحْمِلُهُ قَالَ فَجِئْتُ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى ظِلِّ حَائِطٍ مِنْ حَوَائِطِ
مَكَّةَ فِي لَيْلَةٍ مُقْمِرَةٍ . قَالَ فَجَاءَتْ عَنَاقُ فَأَبْصَرَتْ
سَوَادَ ظِلِّي بِجَنْبِ الْحَائِطِ فَلَمَّا انْتَهَتْ إِلَىَّ عَرَفَتْهُ
فَقَالَتْ مَرْثَدُ فَقُلْتُ مَرْثَدُ . فَقَالَتْ مَرْحَبًا وَأَهْلاً هَلُمَّ
فَبِتْ عِنْدَنَا اللَّيْلَةَ . قَالَ قُلْتُ يَا عَنَاقُ حَرَّمَ اللَّهُ
الزِّنَا . قَالَتْ يَا أَهْلَ الْخِيَامِ هَذَا الرَّجُلُ يَحْمِلُ أَسْرَاكُمْ
. قَالَ فَتَبِعَنِي ثَمَانِيَةٌ وَسَلَكْتُ الْخَنْدَمَةَ فَانْتَهَيْتُ إِلَى
كَهْفٍ أَوْ غَارٍ فَدَخَلْتُ فَجَاءُوا حَتَّى قَامُوا عَلَى رَأْسِي فَبَالُوا
فَطَلَّ بَوْلُهُمْ عَلَى رَأْسِي وَأَعْمَاهُمُ اللَّهُ عَنِّي . قَالَ ثُمَّ
رَجَعُوا وَرَجَعْتُ إِلَى صَاحِبِي فَحَمَلْتُهُ وَكَانَ رَجُلاً ثَقِيلاً حَتَّى
انْتَهَيْتُ إِلَى الإِذْخِرِ فَفَكَكْتُ عَنْهُ كَبْلَهُ فَجَعَلْتُ أَحْمِلُهُ
وَيُعِينُنِي حَتَّى قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنْكِحُ عَنَاقًا مَرَّتَيْنِ فَأَمْسَكَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَرُدَّ عَلَىَّ شَيْئًا حَتَّى
نَزَلَتِ : (الزَّانِي لاَ يَنْكِحُ إِلاَّ زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً
وَالزَّانِيَةُ لاَ يَنْكِحُهَا إِلاَّ زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ وَحُرِّمَ ذَلِكَ
عَلَى الْمُؤْمِنِينَ ) فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
يَا مَرْثَدُ الزَّانِي لاَ يَنْكِحُ إِلاَّ زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً
وَالزَّانِيَةُ لاَ يَنْكِحُهَا إِلاَّ زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ فَلاَ تَنْكِحْهَا
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আমর
ইবনু শু'আইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবার ও তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ
মারসাদ ইবনু আবী মারসাদ
নামক এক লোক যুদ্ধবন্দীদেরকে মক্কা হতে মদিনায় নিয়ে যেতেন। বর্ণনাকারী বলেন,
আনাক্ব নামে মক্কার এক দুশ্চরিত্রা নারী এই মারসাদের প্রেমিকা ছিল। সে (আবু
মারসাদ) মক্কার এক বন্দি কে কথা দিয়েছিল যে, সে তাকে মদিনায় নিয়ে যাবে। মারসাদ
বলেন, আমি এই উদ্দেশে রওনা হয়ে এক পূর্ণিমা রাতে মক্কার এক প্রাচীরের ছায়ায়
পৌঁছলাম। আনাক্ব ও এলো। সে প্রাচীর গাত্রে আমার কাল ছায়া দেখতে পেলো। সে আমার নিকট
পৌঁছে আমাকে চিনে ফেলল। সে প্রশ্ন করলোঃ মারসাদ নাকি? আমি বললাম, মারসাদ। সে আমাকে
অভ্যর্থনা জানায় এবং বলে, এসো এ রাতটা আমার সাথে কাটাও। আমি বললাম, হে আনাক্ব!
আল্লাহ্ তা'আলা যিনা হারাম করে দিয়েছেন। সে (নিজেদের তাবুতে ফিরে গিয়ে)বলল, হে
তাবুর অধিবাসীরা! এই ব্যক্তি তোমাদের বন্দীদের নিয়ে যাচ্ছে। এ কথা শোনা মাত্র আটজন
আমার পিছু নিলো। আমি চলতে চলতে খানদামা পাহাড়ে গিয়ে একটি গুহা পেয়ে তাতে ঢুকে
পড়লাম। লোকগুলিও আমার পিছে পিছে আসলো। তারা গুহাটিকে খালি মনে করে আমার মাথায়
পেশাব করে দিলো। তাদের পেশাব আমার মাথায় এসে পড়লো। আল্লাহ্ তা'আলা এই লোকগুলিকে
আমাকে দেখার ব্যাপারে অন্ধ করে দিলেন (তারা আমাকে দেখতে পেলো না)। তারা ফিরে গেলো,
আমিও যাকে আনতে গিয়েছিলাম তার নিকট ফিরে এলাম। আমি তাকে তুলে নিলাম। তার দেহের ওজন
খুব বেশি ছিল। আমি তাকে নিয়ে ইযখির নামক স্থানে পৌঁছে তার জিঞ্জীর খুলে দিলাম। আমি
তাকে পিঠে তুলে নিলাম। তাকে বহন করা আমার জন্য কষ্টদায়ক হয়ে পড়ল। অবশেষে আমি
মদিনায় পৌঁছে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললাম,
হে আল্লাহ্র রাসুল! আনাক্বকে আমি বিয়ে করতে পারি? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নীরব থাকলেন এবং আমার কথার কোন উত্তর দিলেন না। অবশেষে এই
আয়াত অবতীর্ণ হলঃ "যিনাকারী পুরুষ যিনাকারিনী নারী বা মুশরিক নারীকেই কে
বিবাহ করবে, আর যিনাকারিনী নারীকে শুধু যিনাকারী অথবা মুশরিক পুরুষরাই বিবাহ করবে
আর মুমিনদের জন্য তা হারাম করা হয়েছে"- (সূরা আন-নূর ৩)। রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে মারসাদ, ব্যাভিচারী পুরুষ শুধু
ব্যাভিচারী নারীকে বা মুশরিক নারীকেই বিয়ে করবে। আর ব্যাভিচারিনীকে শুধু
ব্যাভিচারী পুরুষ অথবা মুশরিক লোকই বিবাহ করবে। অতএব তুমি তাকে বিয়ে করোনা।
সনদ হাসান।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। শুধু উল্লেখিত সনদেই
আমরা হাদিসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩১৭৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ
الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ سُئِلْتُ
عَنِ الْمُتَلاَعِنَيْنِ، فِي إِمَارَةِ مُصْعَبِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَيُفَرَّقُ
بَيْنَهُمَا فَمَا دَرَيْتُ مَا أَقُولُ فَقُمْتُ مِنْ مَكَانِي إِلَى مَنْزِلِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ فَاسْتَأْذَنْتُ عَلَيْهِ فَقِيلَ لِي إِنَّهُ قَائِلٌ
فَسَمِعَ كَلاَمِي فَقَالَ لِي ابْنَ جُبَيْرٍ ادْخُلْ مَا جَاءَ بِكَ إِلاَّ
حَاجَةٌ قَالَ فَدَخَلْتُ فَإِذَا هُوَ مُفْتَرِشٌ بَرْدَعَةَ رَحْلٍ لَهُ
فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُتَلاَعِنَانِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا
فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ نَعَمْ إِنَّ أَوَّلَ مَنْ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ فُلاَنُ
بْنُ فُلاَنٍ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ أَحَدَنَا رَأَى امْرَأَتَهُ عَلَى فَاحِشَةٍ كَيْفَ
يَصْنَعُ إِنْ تَكَلَّمَ تَكَلَّمَ بِأَمْرٍ عَظِيمٍ وَإِنْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى
أَمْرٍ عَظِيمٍ قَالَ فَسَكَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُجِبْهُ
فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ
الَّذِي سَأَلْتُكَ عَنْهُ قَدِ ابْتُلِيتُ بِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ هَذِهِ
الآيَاتِ فِي سُورَةِ النُّورِ : (والَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ
يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ ) حَتَّى خَتَمَ الآيَاتِ قَالَ
فَدَعَا الرَّجُلَ فَتَلاَهُنَّ عَلَيْهِ وَوَعَظَهُ وَذَكَّرَهُ وَأَخْبَرَهُ
أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ فَقَالَ لاَ وَالَّذِي
بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا كَذَبْتُ عَلَيْهَا . ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ
وَوَعَظَهَا وَذَكَّرَهَا وَأَخْبَرَهَا أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ
عَذَابِ الآخِرَةِ فَقَالَتْ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا صَدَقَ .
فَبَدَأَ بِالرَّجُلِ فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ
الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ
الْكَاذِبِينَ ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ
بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ
عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ ثُمَّ فَرَّقَ بَيْنَهُمَا . وَفِي
الْبَابِ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সা'ঈদ
ইবনু জুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুস'আব ইবনুয
যুবাইরের শাসনামলে আমাকে লি'আনকারী দম্পতি প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলঃ তাদের কে
পৃথক করে দিতে হবে কিনা? আমি এর কি উত্তর দিবো তা বুঝতে পারছিলাম না। আমি আমার ঘর
হতে উঠে আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) এর ঘরের দিকে রওনা হলাম। আমি তার নিকট প্রবেশ
করার অনুমতি চাইলাম। আমাকে বলা হল, তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন। তিনি আমার আওয়াজ শুনতে
পেয়ে বললেন, ইবনু জুবাইর! ভিতরে এসো। নিশ্চয়ই তুমি কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ে
এসেছ। তিনি বলেন, আমি ভিতরে ঢুকলাম। তিনি তার হাওদার চাটাই বিছিয়ে উহার উপর শুয়ে
ছিলেন। আমি বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান! লি'আনকারী স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শেষ করে
দিতে হবে কি? তিনি বললেন, সুবহানআল্লাহ! হ্যাঁ। অমুকের ছেলে অমুকই প্রথম এই প্রশ্ন
করেছিল। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র
রাসুল! আপনার কি মত, যদি আমাদের কোন লোক তার স্ত্রী কে অশ্লীল কাজে (ব্যাভিচার)
লিপ্ত দেখে তখন সে কি করবে? সে যদি মুখে তা বলে, তবে সে একটা মারাত্মক বিষয়ে
(যিনার অপবাদে) মুখ খুলল। আর যদি সে চুপ থাকে তাহলেও সে একটা চরম গর্হিত বিষয়ে মুখ
বন্ধ রাখলো। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ
থাকলেন এবং তাকে কিছুই বললেন না। লোকটি আবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, ইতোপূর্বে যে বিষয়ে আপনার নিকট জিজ্ঞেস করেছিলাম, এখন
আমি নিজেই সে পরীক্ষার সম্মুক্ষীন হয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা'আলা সূরা
আন-নূর এর আয়াত অবতীর্ণ করেন। (অনুবাদ)ঃ "আর যারা নিজেদের স্ত্রীর বিরুদ্ধে
যিনার অভিযোগ উত্থাপন করে, অথচ তাদের দলে তারা নিজেরা ব্যতিত আর কোন প্রমান নেই,
তাদের প্রত্যেক এর কথা হবে যে, সে চারবার আল্লাহ্ তা'আলার নামে শপথ করে বলবে, সে
যদি মিথ্যাবাদী হয় তবে তার উপর আল্লাহ্ তা'আলার আযাব পতিত হোক"। (সূরা
আন-নূর ৬-৭)। তিনি আয়াতের শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি
লোকটিকে ডেকে এই আয়াত গুলো পড়ে শুনান। তাকে ওয়াজ-নসিহত করে বুঝান এবং তাকে আরও
অবহিত করেন যে, আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার শাস্তি অনেক হাল্কা ও সহজ। সে বলল, না,
সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন সহকারে পাঠিয়েছেন! আমি তার ব্যাপারে মিথ্যা
অপবাদ আনিনি। তারপর তিনি স্ত্রীলোকটিকে ডাকেন, তাকে ওয়াজ-নসিহত করে বুঝান এবং তাকে
আরও অবহিত করেন যে, আখিরাতের কষ্টের তুলনায় দুনিয়ার কষ্ট খুবই হালকা। স্ত্রীলোকটি
বলল, না, সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন সহকারে পাঠিয়েছেন! সে সত্য কথা
বলেনি। তারপর তিনি পুরুষ লোকটিকে ডাকলেন। সে আল্লাহ্ তা'আলার নামে শপথ করে চারবার
সাক্ষ্য দিলো যে, সে সত্যবাদিদের অন্তর্ভুক্ত এবং পঞ্চম বারে বলল, সে যদি
মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে তার উপর আল্লাহ্ তা'আলার অভিশাপ পতিত হোক।
তিনি স্ত্রীলোকটিকেও এভাবে শপথ করান। সে আল্লাহ্ তা'আলার নামে শপথ করে চারবার
বলল, সে (স্বামী) যদি সত্যবাদিদের অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে তার (স্ত্রীর) উপর আল্লাহ্
তা'আলার গজব পতিত হোক। তারপর তিনি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক শেষ করে দিলেন।
সহীহঃ মুসলিম (২০৬, ২০৭)
এ অনুচ্ছেদে সাহল ইবনু সা'দ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي
عَدِيٍّ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنِي عِكْرِمَةُ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، أَنَّ هِلاَلَ بْنَ أُمَيَّةَ، قَذَفَ امْرَأَتَهُ عِنْدَ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم بِشَرِيكِ بْنِ السَّحْمَاءِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " الْبِيِّنَةَ وَإِلاَّ حَدٌّ فِي ظَهْرِكَ " . قَالَ
فَقَالَ هِلاَلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَا رَأَى أَحَدُنَا رَجُلاً عَلَى
امْرَأَتِهِ أَيَلْتَمِسُ الْبَيِّنَةَ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ " الْبَيِّنَةَ وَإِلاَّ حَدٌّ فِي ظَهْرِكَ " .
قَالَ فَقَالَ هِلاَلٌ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنِّي لَصَادِقٌ
وَلَيَنْزِلَنَّ فِي أَمْرِي مَا يُبَرِّئُ ظَهْرِي مِنَ الْحَدِّ فَنَزَلَ :
(والَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ
أَنْفُسُهُمْ ) فَقَرَأَ حَتَّى بَلَغَ : ( والْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ
اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ ) قَالَ فَانْصَرَفَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ إِلَيْهِمَا فَجَاءَا فَقَامَ هِلاَلُ
بْنُ أُمَيَّةَ فَشَهِدَ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ
اللَّهَ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ "
. ثُمَّ قَامَتْ فَشَهِدَتْ فَلَمَّا كَانَتْ عِنْدَ الْخَامِسَةِ : ( أنَّ
غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ ) قَالُوا لَهَا
إِنَّهَا مُوجِبَةٌ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَتَلَكَّأَتْ وَنَكَسَتْ حَتَّى
ظَنَنَّا أَنْ سَتَرْجِعُ فَقَالَتْ لاَ أَفْضَحُ قَوْمِي سَائِرَ الْيَوْمِ .
فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَبْصِرُوهَا فَإِنْ جَاءَتْ بِهِ
أَكْحَلَ الْعَيْنَيْنِ سَابِغَ الأَلْيَتَيْنِ خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ فَهُوَ
لِشَرِيكِ بْنِ السَّحْمَاءِ " . فَجَاءَتْ بِهِ كَذَلِكَ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لَوْلاَ مَا مَضَى مِنْ كِتَابِ اللَّهِ
عَزَّ وَجَلَّ لَكَانَ لَنَا وَلَهَا شَأْنٌ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ هِشَامِ بْنِ
حَسَّانَ وَهَكَذَا رَوَى عَبَّادُ بْنُ مَنْصُورٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ
عِكْرِمَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَاهُ
أَيُّوبُ عَنْ عِكْرِمَةَ مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
.
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হিলাল ইবনে
উমাইয়াহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট ইবনু সাহমার সাথে
তার স্ত্রীর যিনার অভিযোগ দায়ের করেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, প্রমান হাজির কর, অন্যথায় তোমার পিঠে চাবুক পড়বে। বর্ণনাকারী
বলেনঃ হিলাল (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রাসুল! আমাদের মাঝে কেউ যদি তার স্ত্রীর
সাথে কোন পুরুষ লোককে গর্হিত কাজে লিপ্ত দেখে তখন সে কি সাক্ষী খুঁজে বেড়াবে?
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে থাকেন, প্রমান দাও, অন্যথায়
তোমার পিঠে শাস্তির চাবুক পড়বে। বর্ণনাকারী বলেন, হিলাল (রাঃ) বললেন, সেই সত্তার
কসম যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন সহ পাঠিয়েছেন! অবশ্যই আমি সত্যবাদী। আমার দৃঢ় বিশ্বাস
আমার বিষয়ে ওয়াহী অবতীর্ণ হবে যা আমার পিঠ কে কষ্ট থেকে রেহাই দিবে। অতঃপর অবতীর্ণ
হল- "আর যারা নিজেদের স্ত্রীর বিরুদ্ধে যিনার অভিযোগ উত্থাপন করে, অথচ তাদের
দলে তারা নিজেরা ব্যতিত আর কোন সাক্ষী নেই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হবে যে,
সে চারবার আল্লাহ্ তা'আলার নামে কসম করে সাক্ষ্য দিবে যে, সে (তার আনীত অভিযোগ)
অবশ্যই সত্যবাদী এবং পঞ্চম বারে বলবে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর আল্লাহ্ তা'আলার
অভিসম্পাত হোক। আর স্ত্রীলোকটির কষ্ট রহিত হবে যদি সে চারবার আল্লাহ্ তা'আলার
নামে কসম করে সাক্ষ্য দেয় যে, এ লোক (তার উত্থাপিত অভিযোগ) মিথ্যাবাদী। পঞ্চম বারে
বলবে, সে (অভিযোগকারী স্বামী) সত্যবাদী হলে তার (স্ত্রীর) উপর আল্লাহ্ তা'আলার
গযব পতিত হোক"- (সূরা- আন নূর ৬-৯)। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবসর হয়ে তাদের (স্বামী-স্ত্রী) উভয় কে ডেকে
পাঠান। তাদেরর উভয়ে হাজির হলে হিলাল (রাঃ) দাঁড়িয়ে সাক্ষী দিলেন। এ সময়
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে থাকেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্
অবগত আছেন যে তোমাদের একজন মিথ্যাবাদী, তোমাদের মধ্যে কে তওবা করতে প্রস্তুত?
তারপর মেয়ে লোকটি দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিলো। সে যখন পঞ্চম বারে বলতে যাচ্ছিল যে, সে
(স্বামী) যদি সত্যবাদী হয় তাহলে তার (স্ত্রীর) উপর আল্লাহ্র গজব নিপতিত হোক, তখন
লোকেরা তাকে বলল, এ কথা (শাস্তিকে) অবশ্যম্ভাবী করে তুলবে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)
বলেন, এ কথা শুনে সে থেমে গেলো এবং পিছনে সরে আসলো। আমরা ধারনা করলাম যে সে তার
কথা থেকে ফিরে আসবে। অতঃপর মেয়েলোকটি বলল, আমি চিরকালের জন্য আমার গোত্রে কালিমা
লেপন করতে পারিনা। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা
এই মেয়েলোকটির উপর নজর রেখো। সে যদি কাজল বর্ণের চোখ, প্রশস্ত নিতম্ব ও পায়ের মাংস
গোছাযুক্ত সন্তান প্রসব করে তবে সে সন্তান ইবনু সাহমারই। পরবর্তীতে মহিলাটি ঐরূপ
সন্তানই প্রসব করলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যদি
আগেই আল্লাহ্ তা'আলার হুকুম (লি'আনের বিধান) না এসে যেত, তাহলে আমাদের এবং তার
মধ্যে একটা বিরাট কিছু ঘটে যেত (তাকে শাস্তি দেওয়া হতো)।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ, (২০৬৭) বুখারী (৪৭৪৭)।
আবূ ঈসা বলেন, হিশাম ইবনু হাসসানের বর্ণনা হিসেবে হাদিসটি
হাসান গারীব। আব্বাদ ইবনু মানসূর-ইকরিমাহ হতে, তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে, তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদে পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা
করেছেন। আইয়ুব এ হাদীস ইকরিমার সনদে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং তাতে ইবনু আব্বাসের
উল্লেখ করেননি ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৮০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ
هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا ذُكِرَ
مِنْ شَأْنِي الَّذِي ذُكِرَ وَمَا عَلِمْتُ بِهِ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فِيَّ خَطِيبًا فَتَشَهَّدَ وَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ بِمَا
هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ " أَمَّا بَعْدُ أَشِيرُوا عَلَىَّ فِي أُنَاسٍ
أَبَنُوا أَهْلِي وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِي مِنْ سُوءٍ قَطُّ
وَأَبَنُوا بِمَنْ وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ مِنْ سُوءٍ قَطُّ وَلاَ دَخَلَ
بَيْتِي قَطُّ إِلاَّ وَأَنَا حَاضِرٌ وَلاَ غِبْتُ فِي سَفَرٍ إِلاَّ غَابَ مَعِي
فَقَامَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَالَ ائْذَنْ لِي يَا
رَسُولَ اللَّهِ أَنْ أَضْرِبَ أَعْنَاقَهُمْ . وَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الْخَزْرَجِ
وَكَانَتْ أُمُّ حَسَّانَ بْنِ ثَابِتٍ مِنْ رَهْطِ ذَلِكَ الرَّجُلِ فَقَالَ
كَذَبْتَ أَمَا وَاللَّهِ أَنْ لَوْ كَانُوا مِنَ الأَوْسِ مَا أَحْبَبْتَ أَنْ
تُضْرَبَ أَعْنَاقُهُمْ حَتَّى كَادَ أَنْ يَكُونَ بَيْنَ الأَوْسِ وَالْخَزْرَجِ
شَرٌّ فِي الْمَسْجِدِ وَمَا عَلِمْتُ بِهِ فَلَمَّا كَانَ مَسَاءُ ذَلِكَ
الْيَوْمِ خَرَجْتُ لِبَعْضِ حَاجَتِي وَمَعِي أُمُّ مِسْطَحٍ فَعَثَرَتْ
فَقَالَتْ تَعِسَ مِسْطَحٌ فَقُلْتُ لَهَا أَىْ أَمَّ تَسُبِّينَ ابْنَكِ
فَسَكَتَتْ ثُمَّ عَثَرَتِ الثَّانِيَةَ فَقَالَتْ تَعِسَ مِسْطَحٌ فَقُلْتُ لَهَا
أَىْ أَمَّ تَسُبِّينَ ابْنَكِ فَسَكَتَتْ ثُمَّ عَثَرَتِ الثَّالِثَةَ فَقَالَتْ
تَعِسَ مِسْطَحٌ فَانْتَهَرْتُهَا فَقُلْتُ لَهَا أَىْ أُمَّ تَسُبِّينَ ابْنَكِ
فَقَالَتْ وَاللَّهِ مَا أَسُبُّهُ إِلاَّ فِيكِ . فَقُلْتُ فِي أَىِّ شَيْءٍ
قَالَتْ فَبَقَرَتْ إِلَىَّ الْحَدِيثَ قُلْتُ وَقَدْ كَانَ هَذَا قَالَتْ نَعَمْ
. وَاللَّهِ لَقَدْ رَجَعْتُ إِلَى بَيْتِي وَكَأَنَّ الَّذِي خَرَجْتُ لَهُ
لَمْ أَخْرُجْ لاَ أَجِدُ مِنْهُ قَلِيلاً وَلاَ كَثِيرًا وَوُعِكْتُ فَقُلْتُ
لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرْسِلْنِي إِلَى بَيْتِ أَبِي فَأَرْسَلَ
مَعِي الْغُلاَمَ فَدَخَلْتُ الدَّارَ فَوَجَدْتُ أُمَّ رُومَانَ فِي السُّفْلِ
وَأَبُو بَكْرٍ فَوْقَ الْبَيْتِ يَقْرَأُ فَقَالَتْ أُمِّي مَا جَاءَ بِكِ يَا
بُنَيَّةُ قَالَتْ فَأَخْبَرْتُهَا وَذَكَرْتُ لَهَا الْحَدِيثَ فَإِذَا هُوَ لَمْ
يَبْلُغْ مِنْهَا مَا بَلَغَ مِنِّي قَالَتْ يَا بُنَيَّةُ خَفِّفِي عَلَيْكِ
الشَّأْنَ فَإِنَّهُ وَاللَّهِ لَقَلَّمَا كَانَتِ امْرَأَةٌ حَسْنَاءُ عِنْدَ
رَجُلٍ يُحِبُّهَا لَهَا ضَرَائِرُ إِلاَّ حَسَدْنَهَا وَقِيلَ فِيهَا فَإِذَا
هِيَ لَمْ يَبْلُغْ مِنْهَا مَا بَلَغَ مِنِّي قَالَتْ قُلْتُ وَقَدْ عَلِمَ بِهِ
أَبِي قَالَتْ نَعَمْ . قُلْتُ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ
نَعَمْ . وَاسْتَعْبَرْتُ وَبَكَيْتُ فَسَمِعَ أَبُو بَكْرٍ صَوْتِي وَهُوَ
فَوْقَ الْبَيْتِ يَقْرَأُ فَنَزَلَ فَقَالَ لأُمِّي مَا شَأْنُهَا قَالَتْ
بَلَغَهَا الَّذِي ذُكِرَ مِنْ شَأْنِهَا . فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ فَقَالَ
أَقْسَمْتُ عَلَيْكِ يَا بُنَيَّةُ إِلاَّ رَجَعْتِ إِلَى بَيْتِكِ . فَرَجَعْتُ
وَلَقَدْ جَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْتِي فَسَأَلَ عَنِّي
خَادِمَتِي فَقَالَتْ لاَ وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهَا عَيْبًا إِلاَّ
أَنَّهَا كَانَتْ تَرْقُدُ حَتَّى تَدْخُلَ الشَّاةُ فَتَأْكُلَ خَمِيرَتَهَا أَوْ
عَجِينَتَهَا وَانْتَهَرَهَا بَعْضُ أَصْحَابِهِ فَقَالَ أَصْدِقِي رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَسْقَطُوا لَهَا بِهِ فَقَالَتْ سُبْحَانَ
اللَّهِ وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهَا إِلاَّ مَا يَعْلَمُ الصَّائِغُ عَلَى
تِبْرِ الذَّهَبِ الأَحْمَرِ فَبَلَغَ الأَمْرُ ذَلِكَ الرَّجُلَ الَّذِي قِيلَ
لَهُ فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَاللَّهِ مَا كَشَفْتُ كَنَفَ أُنْثَى قَطُّ
قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُتِلَ شَهِيدًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَالَتْ وَأَصْبَحَ
أَبَوَاىَ عِنْدِي فَلَمْ يَزَالاَ عِنْدِي حَتَّى دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم وَقَدْ صَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ دَخَلَ وَقَدِ اكْتَنَفَنِي
أَبَوَاىَ عَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي فَتَشَهَّدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ
" أَمَّا بَعْدُ يَا عَائِشَةُ إِنْ كُنْتِ قَارَفْتِ سُوءًا أَوْ ظَلَمْتِ
فَتُوبِي إِلَى اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ
" . قَالَتْ وَقَدْ جَاءَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَهِيَ جَالِسَةٌ
بِالْبَابِ فَقُلْتُ أَلاَ تَسْتَحِي مِنْ هَذِهِ الْمَرْأَةِ أَنْ تَذْكُرَ
شَيْئًا . فَوَعَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَالْتَفَتُّ إِلَى
أَبِي فَقُلْتُ أَجِبْهُ . قَالَ فَمَاذَا أَقُولُ فَالْتَفَتُّ إِلَى أُمِّي
فَقُلْتُ أَجِيبِيهِ . قَالَتْ أَقُولُ مَاذَا قَالَتْ فَلَمَّا لَمْ يُجِيبَا
تَشَهَّدْتُ فَحَمِدْتُ اللَّهَ وَأَثْنَيْتُ عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ
قُلْتُ أَمَا وَاللَّهِ لَئِنْ قُلْتُ لَكُمْ إِنِّي لَمْ أَفْعَلْ وَاللَّهُ
يَشْهَدُ إِنِّي لَصَادِقَةٌ مَا ذَاكَ بِنَافِعِي عِنْدَكُمْ لِي لَقَدْ
تَكَلَّمْتُمْ وَأُشْرِبَتْ قُلُوبُكُمْ وَلَئِنْ قُلْتُ إِنِّي قَدْ فَعَلْتُ
وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَنِّي لَمْ أَفْعَلْ لَتَقُولُنَّ إِنَّهَا قَدْ بَاءَتْ بِهِ
عَلَى نَفْسِهَا وَإِنِّي وَاللَّهِ مَا أَجِدُ لِي وَلَكُمْ مَثَلاً قَالَتْ
وَالْتَمَسْتُ اسْمَ يَعْقُوبَ فَلَمْ أَقْدِرْ عَلَيْهِ إِلاَّ أَبَا يُوسُفَ
حِينَ قَالََ : (فصبْرٌ جَمِيلٌ وَاللَّهُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ
) قَالَتْ وَأُنْزِلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ سَاعَتِهِ
فَسَكَتْنَا فَرُفِعَ عَنْهُ وَإِنِّي لأَتَبَيَّنُ السُّرُورَ فِي وَجْهِهِ
وَهُوَ يَمْسَحُ جَبِينَهُ وَيَقُولُ " الْبُشْرَى يَا عَائِشَةُ فَقَدْ
أَنْزَلَ اللَّهُ بَرَاءَتَكِ " . قَالَتْ وَكُنْتُ أَشَدَّ مَا كُنْتُ
غَضَبًا فَقَالَ لِي أَبَوَاىَ قُومِي إِلَيْهِ . فَقُلْتُ لاَ وَاللَّهِ لاَ
أَقُومُ إِلَيْهِ وَلاَ أَحْمَدُهُ وَلاَ أَحْمَدُكُمَا وَلَكِنْ أَحْمَدُ اللَّهَ
الَّذِي أَنْزَلَ بَرَاءَتِي لَقَدْ سَمِعْتُمُوهُ فَمَا أَنْكَرْتُمُوهُ وَلاَ
غَيَّرْتُمُوهُ وَكَانَتْ عَائِشَةُ تَقُولُ أَمَّا زَيْنَبُ بِنْتُ جَحْشٍ
فَعَصَمَهَا اللَّهُ بِدِينِهَا فَلَمْ تَقُلْ إِلاَّ خَيْرًا وَأَمَّا أُخْتُهَا
حَمْنَةُ فَهَلَكَتْ فِيمَنْ هَلَكَ وَكَانَ الَّذِي يَتَكَلَّمُ فِيهِ مِسْطَحٌ
وَحَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ وَالْمُنَافِقُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ابْنُ
سَلُولَ وَهُوَ الَّذِي كَانَ يَسُوسُهُ وَيَجْمَعُهُ وَهُوَ الَّذِي تَوَلَّى
كِبْرَهُ مِنْهُمْ هُوَ وَحَمْنَةُ قَالَتْ فَحَلَفَ أَبُو بَكْرٍ أَنْ لاَ
يَنْفَعَ مِسْطَحًا بِنَافِعَةٍ أَبَدًا فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى هَذِهِ
الآيَةَ : (ولاَ يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ ) إِلَى
آخِرِ الآيَةِ يَعْنِي أَبَا بَكْرٍ : (أنْ يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَى
وَالْمَسَاكِينَ وَالْمُهَاجِرِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ) يَعْنِي مِسْطَحًا
إِلَى قَوْلِهِ : (ألاَ تُحِبُّونَ أَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَكُمْ وَاللَّهُ
غَفُورٌ رَحِيمٌ ) قَالَ أَبُو بَكْرٍ بَلَى وَاللَّهِ يَا رَبَّنَا إِنَّا
لَنُحِبُّ أَنْ تَغْفِرَ لَنَا وَعَادَ لَهُ بِمَا كَانَ يَصْنَعُ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ
. وَقَدْ رَوَاهُ يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ وَمَعْمَرٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ وَسَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ
وَعَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ اللَّيْثِيِّ وَعُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
عَنْ عَائِشَةَ هَذَا الْحَدِيثَ أَطْوَلَ مِنْ حَدِيثِ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ
وَأَتَمَّ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আমার
বিষয়ে চর্চা হচ্ছিল যে বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না, তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার প্রসঙ্গে বক্তব্য দিতে দাঁড়ালেন। তিনি তাশাহহূদ পড়ে
আল্লাহ্ তা'আলার যথোপযুক্ত সুনাম ও গুনাগুন করার পর বলেনঃ তারপর তোমরা আমাকে ওইসব
ব্যক্তির বিষয়ে বুদ্ধি দাও, যারা আমার সহধর্মিণীর ব্যাপারে অপবাদ দিয়েছে। আল্লাহ্র
কসম! আমি আমার পরিবারের (স্ত্রীর) মধ্যে কখনো কোন দোষ দেখিনি। এসব ব্যাক্তি যার
ব্যাপারে বদনাম রটিয়ে বেড়াচ্ছে, আল্লাহ্র কসম আমি এ ধরনের দুষ্কর্ম তার মধ্যে
কখনও দেখিনি। সে (সাফওয়ান) আমার অনুপস্থিতিতে কখনও আমার ঘরে ঢুকেনি, আমি যখন
উপস্থিত থাকতাম তখনই সে আমার ঘরে ঢুকত। আমি যখন সফরের কারনে ঘরে অনুপস্থিত থাকতাম
তখন সেও আমার সঙ্গেই থাকতো।
সা'দ ইবনু মু'আয (রাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহ্র রাসুল! আমাকে অনুমতি দিন,
আমি এদের ঘাড় উড়িয়ে দেই। তখন খাযরাজ বংশের এক লোক উঠে দাঁড়ালো। হাসসান ইবনু
সাবিতের মা এই বংশের সন্তান। লোকটি বলল তুমি মিথ্যাবাদী। আল্লাহ্র কসম, এরা যদি
আওস গোত্রের লোক হত, তাহলে তুমি তাদের ঘাড় উড়িয়ে দেওয়া কখনও পছন্দ করতে না।
তর্ক-বিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেলো যে, আওস ও খাজরায বংশদ্বয়ের মধ্যে মসজিদের
ভেতরেই মারামারি লেগে যাওয়ার উপক্রম হল। অথচ এ (অপবাদ) বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না।
ওইদিন সন্ধারাতে আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গেলাম। আমার সাথে মিসতাহর মাও ছিল।
সে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে বলল, মিসতাহ শেষ হোক। আমি বললাম, হে! তুমি মা হয়ে ছেলের
অমঙ্গল কামনা করছো? সে চুপ হয়ে গেলো। সে আবার হোঁচট খেলো এবং বলল, মিসতাহ শেষ হোক।
আমি তাকে তিরস্কার করে বললাম, হে! তুমি কেমন মা, নিজের ছেলের অমঙ্গল ডাকছ? সে চুপ
হয়ে গেলো। সে তৃতীয় বার হোঁচট খেলো এবং বলল, মিসতাহর সর্বনাশ হোক। আমি তাকে
কঠোরভাবে বললাম, তুমি কেমন মা, নিজের ছেলের অমঙ্গল চাচ্ছ? সে বলল, আল্লাহ্র কসম
আমি তোমার জন্যই তাকে গালমন্দ করছি। আমি প্রশ্ন করলাম আমার জন্য কিভাবে? ‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলেন, সে আমার নিকট সমস্ত ব্যাপার বর্ণনা করলো। আমি (তা শুনে) বললাম, এইসব
কথা রটেছে নাকি? সে বলল হ্যাঁ। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি বাড়ি ফিরে আসলাম। আল্লাহর
কসম! আমার এমন অবস্থা হল যে, যে জন্য এসেছিলাম সে প্রয়োজনের কথা ভুলেই গেলাম। আমার
গায়ে জ্বর এসে গেলো। আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে
বললাম, আমাকে আমার বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিন। তিনি আমার সাথে একটি বালককে দিয়ে আমাকে
পাঠিয়ে দিলেন। আমি ঘরে ঢুকে উম্মু রুমানকে (মাকে) ঘরের নিচের অংশে দেখতে পেলাম। আর
আবূ বকর (রাঃ) ঘরের উপরি তলে কুরআন পড়ছিলেন। মা প্রশ্ন করলেন, কন্যা তুমি কেন
এসেছো? ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি মাকে সম্পূর্ণ বিষয়টি খুলে বললাম। কিন্তু আমি
যেভাবে ভেঙ্গে পড়েছি তিনি ততটা ভারাক্রান্ত নন। তিনি বললেন, “কন্যা! ব্যাপারটাকে
হাল্কা ভাবে নাও। আল্লাহর কসম! কোন পুরুষের সুন্দরী স্ত্রী থাকলে, সে তাঁর
প্রিয়পাত্রী হলে এবং তাঁর সতীন থাকলে তারা তাঁর সাথে হিংসা করবে না, তার বিষয়ে
কিছু রটাবে না এরুপ কমই হয়ে থাকে।
মোটকথা আমি যতটা দুঃখ পেলাম মা ততটা পেলেন না। আমি মাকে প্রশ্ন করলাম, আব্বাও কি
ব্যাপারটা জানেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি ভারাক্রান্ত হয়ে
কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম। আবু বকর (রাঃ) আমার কান্নার শব্দ শুনতে পেলেন। তিনি ঘরের
উপরিতলে কুরআন পাঠ করছিলেন। তিনি নেমে এসে মাকে বললেন, ওর কি হয়েছে? মা বললেন, ওর
বিষয়ে যে সব মিথ্যা বলা হচ্ছে, এ সংবাদ সে শুনে ফেলেছে। এ কথা শুনে বাবার দু চোখে
পানি এলো। তিনি বললেন, কন্যা! তোমাকে আল্লাহ তা’আলার নামে কসম করে বলছি, তুমি
তোমার ঘরে ফিরে যাও। আমি ঘরে ফিরে এলাম।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ঘরে এসে আমার কাজের মেয়েকে
আমার বিষয়ে প্রশ্ন করলেন। সে বলল, আল্লাহর কসম! আমি তার মধ্যে কোন দোষ দেখিনি। তবে
এতটুকু যে, সে ঘুমিয়ে পড়ত, আর বকরি এসে তার পেষা আটা খেয়ে যেত। তাঁর কিছু সাহাবী
মেয়েটিকে ধমক দিয়ে বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট
সত্য কথা বল। তারা তাকে অনেক দাবালেন ও ধমকালেন। সে বলল, সুবহানআল্লাহ! আল্লাহর
কসম! আমি তাঁর ব্যাপারে তাই জানি স্বর্ণকার খাঁটি রঙ্গিন সোনা প্রসঙ্গে যা জানে।
যে ব্যক্তিকে এই অপবাদের সাথে জড়ান হয়েছিল তাঁর কানেও এ খবর পৌঁছল। সে বলল, সুবহানআল্লাহ!
আল্লাহ্র কসম! আমি কখনও কোন নারীর সতর খুলিনি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সে আল্লাহ্
তা'আলার রাস্তায় শহীদ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে।
তিনি বলেন, আমার পিতা মাতা খুব ভোরে আমার নিকট এলেন। তারা আমার নিকট থাকতেই
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের নামাজ আদায় করে আমার ঘরে
এলেন। আমার পিতা মাতা আমার ডান দিক বাঁ দিক হতে আমাকে ঘিরে বসেছিলেন। রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কালিমা শাহাদাত পাঠ করলেন, আল্লাহ্ তা'আলার
যথোপযুক্ত সম্মান ও গুনাগুন করলেন, তারপর বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ, তুমি যদি কোন মন্দ
কাজ করে থাকো অথবা নিজের উপর জুলুম করে থাকো, তবে আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা চাও। কেননা
আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ সময় আনসার
বংশের একজন স্ত্রীলোক আসে। সে দরজার নিকট বসে ছিল। আমি বললাম, আপনি কি এ মহিলাটির
সামনে এ কথা বলতে লজ্জা বোধ করছেন না? মোটকথা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ওয়াজ-নসীহত করলেন। আমি আমার পিতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললাম, আপনি
তাঁর কথার উত্তর দিন। তিনি বললেন, আমি তাঁকে কি উত্তর দিবো? আমি আমার মা এর দৃষ্টি
আকর্ষণ করে বললাম, আপনি তাঁকে এর উত্তর দিন। তিনিও বললেন, আমি তাঁকে কি বলবো?
তাদের কেউই যখন উত্তর দেননি, তখন আমি কালেমা শাহাদাত তিলাওয়াত করলাম, আল্লাহ্
তা'আলার যথোপযুক্ত সুনাম ও প্রশংসা করলাম, তারপর বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি যদি
আপনাদের বলি, আমি কখনও তা করিনি এবং আল্লাহ্ তা'আলা সাক্ষী আছেন, আমি সত্যবাদিনী,
তা আপনাদের নিকট আমার কোন উপকারে আসবেনা। কেননা আপনারা তা আলোচনা করেছেন এবং তাতে
আপনাদের মন রঞ্জিত হয়েছে। আর আমি যদি বলি, আমি করেছি এবং আল্লাহ্ তা'আলা জানেন
আমি তা করিনি, তখন আপনারা বলবেন, সে নিজেই নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে। আল্লাহ্র
কসম! আমি আপনাদের এবং আমার জন্য কোন উদাহরন খুঁজে পাচ্ছি না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন,
আমি ইয়াকুব (আঃ) এর নাম স্মরণ করতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। শুধু “ইউসুফ এর
বাবা” স্মরনে আসছিলো। তিনি যখন বলেছিলেনঃ "পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ
সে প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা'আলা আমার সাহায্যস্থল"- (সুরা-ইউসুফ ১৮)। ‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলেন, ঠিক সে সময় রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট
ওয়াহি অবতীর্ণ হতে লাগলো। আমরা চুপ থাকলাম। তাঁর উপর হতে ওয়াহীর অবস্থা দূর হলে
আমি তাঁর মুখমন্ডলে আনন্দের ছাপ দেখতে পেলাম। তিনি তাঁর মুখমণ্ডলের ঘাম মুছছেন আর
বলছেনঃ হে ‘আয়িশাহ, তোমার জন্য সুসংবাদ। আল্লাহ্ তা'আলা তোমাকে নির্দোষ ঘোষণা
করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তখন উত্তেজিত অবস্থায় ছিলাম। আমার পিতা মাতা আমাকে
বললেনঃ উঠে তাঁর নিকট যাও। আমি বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি তাঁর নিকট উঠে যাব না,
তাঁর সুনাম ও করব না এবং আপনাদের প্রশংসাও করব না। বরং আমি সে আল্লাহ্ তা’আলার
সুনাম করবো যিনি আমার নির্দোষিতার ওয়াহী অবতীর্ণ করেছেন। আপনারা এ অপবাদ শুনেছেন,
কিন্তু প্রত্যাখ্যান বা প্রতিহত করেন নি।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, জাহাশ-কন্যা যাইনাবের দীনদারীর জন্য আল্লাহ্ তা'আলা তাকে
হিফাজাত করেছেন। সে ভালো ব্যতিত কখনও অন্য কিছু বলেনি। কিন্তু তাঁর বোন হামনা
ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যারা এ অপবাদ রটায় তাদের মধ্যে ছিলঃ
মিসতাহ, হাসান ইবনু সাবিত ও মুনাফিক সরদার আবদুল্লাহ ইবনু উবাই। সে অপবাদ রটাত এবং
তা ছড়িয়ে বেড়াত। সে ও হামনা ছিল এই আপত্তিকর অপবাদ ছড়ানোর বড় হোতা। ‘আয়িশাহ (রাঃ)
বলেন, আবু বকর (রাঃ) কসম করেন যে, তিনি আর কখনও মিসতাহর কোনভাবে উপকার করবেন না
(ভরন পোষণ বহন করবেন না)। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা'আলা আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ
"তোমাদের মধ্যে যারা (আবু বকর কে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে) ঐশ্বর্য ও
প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন কসম না করে যে, তারা আত্মীয়, গরীব ও আল্লাহ্
তা'আলার পথে মুহাজিরদের (মিসতাহ কে লক্ষ করে বলা হচ্ছে) কিছুই দেবে না ... তোমরা
কি চাও না যে, আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদের কে মাফ করুন?" আল্লাহ্ তালা বড়ই
ক্ষমাশীল, পরম করুনাময়" -(সূরা আন-নূর ২২)। আবু বকর (রাঃ) বলেন, হে আমাদের
প্রতিপালক! হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই আপনার ক্ষমাপ্রার্থী। তিনি আগের মত মিসতাহর
ভরণপোষণের ভার বহন করেন।
সহীহঃ বুখারী (৪৭৫৭), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান। সহীহ হিশাম ইবনু উরওয়াহর
রিওয়াওয়াত হিসেবে গারীব। ইয়ুনুস ইবনে ইয়াজিদ, মা'মার যুহরী হতে, তিনি উরওয়াহ ইবনুয
যুবাইর হতে, তিনি সা'ঈদ ইবনুল মুসাইয়াব হতে, তিনি আলকামার ইবনূ ওয়াক্কাস আল লাইসি ও
উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ হতে, তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে এই সুত্রে উপর্যুক্ত হাদীসের
বর্ণনা করেছেন। হিশাম ইবনু উরওয়াহর রিওয়াতের তুলনায় এই রিওয়াতটি পুরনাঙ্গ ও দীর্ঘতর
।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৮১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ
عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا نَزَلَ عُذْرِي قَامَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمِنْبَرِ فَذَكَرَ ذَلِكَ وَتَلاَ الْقُرْآنَ
فَلَمَّا نَزَلَ أَمَرَ بِرَجُلَيْنِ وَامْرَأَةٍ فَضُرِبُوا حَدَّهُمْ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ
مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার
নির্দোষিতার বর্ণনা করে আয়াত অবতীর্ণ হলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মিম্বারে উঠে তা বর্ণনা করেন। তারপর কুরআন তিলাওয়াত করেন। মিম্বর হতে
অবতরন করে তিনি দুইজন পুরুষ ও একজন মহিলাকে বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দিলেন এবং
তদানুযায়ী তাদেরকে (অপবাদ রতনাকারীদেরকে) হাদ্দের আওতায় শাস্তি দেওয়া হয়।
হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (২৫৬৭)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু মুহাম্মাদ
ইবনু ইশাকের সনদে এই হাদিসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৬
সূরা
আল-ফুরক্বান
৩১৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ وَاصِلٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَمْرِو
بْنِ شُرَحْبِيلَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ
الذَّنْبِ أَعْظَمُ قَالَ " أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ
" . قَالَ قُلْتُ ثُمَّ مَاذَا قَالَ " أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ
خَشْيَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ " . قَالَ قُلْتُ ثُمَّ مَاذَا قَالَ
" أَنْ تَزْنِيَ بِحَلِيلَةِ جَارِكَ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম,
হে আল্লাহর রাসুল! সবচেয়ে মারাত্মক গুনাহ কি? তিনি বলেনঃ তুমি কাউকে আল্লাহ তা’লার
শারিক বা সমকক্ষ বানালে, অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন, আমি বললাম,
তারপর কোনটি? তিনি বলেনঃ তোমার সন্তানরা তোমার খাদ্যে ভাগ বসাবে এই ভয়ে তাদের কে
হত্যা করা। তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলেনঃ তোমার
প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে তোমার জিনায় লিপ্ত হওয়া।
সহীহঃ ইরওয়াহ (২৩৩৭), সহীহ আবূ দাউদ (২০০০), বুখারী (৪৭৬১), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিস টি হাসান গারীব। বুনদার আব্দুর
রহমান ইবনু মাহদী হতে, তিনি সুফিয়ান হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি আবূ ওয়ায়িল হতে, তিনি
আবু ইবনু শুরাহবীল হতে, তিনি আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদেও উপরের হাদিসের একই রকম বর্ণনা পেয়েছেন।
আবূ ঈসা বলেন, এই সনদে বর্ণিত হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৮৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ
أَبُو زَيْدٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ وَاصِلٍ الأَحْدَبِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ
الذَّنْبِ أَعْظَمُ قَالَ " أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ
وَأَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ مِنْ أَجْلِ أَنْ يَأْكُلَ مَعَكَ أَوْ مِنْ طَعَامِكَ
وَأَنْ تَزْنِيَ بِحَلِيلَةِ جَارِكَ " . قَالَ وَتَلاَ هَذِهِ الآيَةَ
: (والَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ
النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ
يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا * يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا ) . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سُفْيَانَ عَنْ
مَنْصُورٍ وَالأَعْمَشِ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ شُعْبَةَ عَنْ وَاصِلٍ لأَنَّهُ
زَادَ فِي إِسْنَادِهِ رَجُلاً .
আবদুল্লাহ
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করলাম, সবচেয়ে মারাত্মক
গুনাহ কোনটি? তিনি বলেনঃ (১) আল্লাহ তা’আলার সাথে কাউকে তোমার শরীক বানানো অথচ
তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন; (২) তোমার সন্তানেরা তোমার সাথে আহার করবে বা তোমার
খাদ্যে ভাগ বসাবে এই ভয়ে তাদের কে হত্যা করা; (৩) তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে
তোমার যিনা করা। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন (অনুবাদ)ঃ “যারা
আল্লাহ তা’আলার সাথে কোন মা’বূদকে ডাকেনা, আল্লাহ তা’আলা যাকে হত্যা নিষিদ্ধ
করেছেন তাকে হত্যা করেনা এবং ব্যাভিচারেও জড়িত হয়না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ
করবে। কিয়ামাতের দিন তার আযাব দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে অনন্তকাল লাঞ্ছিত
অবস্থায় থাকবে।”- (সুরা আল-ফুরকান ৬৮-৬৯)।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম, প্রাগুপ্ত।
আবূ ঈসা বলেন, মানসুর ও আ’মাশ এর সনদে বর্ণিত সুফইয়ানের
হাদীসটি ওয়াসিলের সনদে বর্ণিত হাদীসের তুলনায় অনেক বেশী সহীহ। কেননা তিনি (ওয়াসিল)
টার সনদে আরো একজন বর্ণনাকারীর উল্লেখ করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না-মুহাম্মাদ ইবনু
জা’ফার হতে,তিনি শু’বাহ হতে, তিনি ওয়াসিল হতে, তিনি আবূ ওয়াইয়িল হতে,তিনি আবদুল্লাহ
(রাঃ) হতে, তিনি নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে, এ সুত্রে উপরের হাদিসের
মত বর্ণনা করেছেন। এই সনদে আম্র ইবনু শুরাহবীলের উল্লেখ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৭
সূরা
আশ-শু’আরা
৩১৮৪
حَدَّثَنَا أَبُو الأَشْعَثِ، أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ الْعِجْلِيُّ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الطُّفَاوِيُّ، حَدَّثَنَا هِشَامُ
بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ
الآيَةُ : (وأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ ) قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " يَا صَفِيَّةُ بِنْتَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ يَا
فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ إِنِّي لاَ أَمْلِكُ
لَكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا سَلُونِي مِنْ مَالِي مَا شِئْتُمْ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَهَكَذَا رَوَى وَكِيعٌ
وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ
عَائِشَةَ نَحْوَ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الطُّفَاوِيِّ .
رَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ عَائِشَةَ . وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন “তোমরা নিকট
আত্মীয়-স্বজনদের সতর্ক কর”- (সুরা শু’আরা ২১৪)। এ আয়াত অবতীর্ণ হলে রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “হে আব্দুল মুত্তালিবের কন্যা সাফিয়াহ,
হে মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমাহ, হে আব্দুল মুত্তালিবের গোত্রের লোকেরা! তোমাদেরকে
আল্লাহ তা’আলার পাকড়াও থেকে রক্ষা করার কোন ক্ষমতা আমার নেই। আমার সম্পদ হতে যত
ইচ্ছা তোমরা চেয়ে নিতে পার।”
সহীহঃ মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। ওয়াকী প্রমুখ-হিশাম
ইবনু উরওয়াহ হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে এ হাদীস মুহাম্মাদ
ইবনু আব্দুর রাহমান আত-তুফাবারী রিওয়াতের একই রকম বর্ণনা শুনেছেন। কোন কোন বর্ণনাকারী
এ হাদিসটি হিশাম ইবনু উরওয়াহ হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে এ হাদিস মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘আয়িশাহ (রাঃ)
এর উল্লেখ করেননি। এ অনুচ্ছেদে আলী ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৮৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا بْنُ عَدِيٍّ،
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو الرَّقِّيُّ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ
بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا
نَزَلَتْ : ( وأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ ) جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قُرَيْشًا فَخَصَّ وَعَمَّ فَقَالَ " يَا مَعْشَرَ
قُرَيْشٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ فَإِنِّي لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ
مِنَ اللَّهِ ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا يَا مَعْشَرَ بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ أَنْقِذُوا
أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ فَإِنِّي لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللَّهِ ضَرًّا
وَلاَ نَفْعًا يَا مَعْشَرَ بَنِي قُصَىٍّ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ
فَإِنِّي لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا يَا مَعْشَرَ بَنِي عَبْدِ
الْمُطَّلِبِ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ فَإِنِّي لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ
ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ أَنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ
النَّارِ فَإِنِّي لاَ أَمْلِكُ لَكِ ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا إِنَّ لَكِ رَحِمًا
سَأَبُلُّهَا بِبِلاَلِهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ يُعْرَفُ مِنْ حَدِيثِ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ
.
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “ওয়া আনযির
আশীরাতাকাল আক্বরাবীন”- (সুরা শু’আরা ২১৪) আয়াত অবতীর্ণ হলে রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরাইশ গোত্রের সাধারন-বিশেষ সকলকে ডেকে একত্র
করে বলেনঃ হে কুরাইশ গোত্রের লোকেরা! তোমরা নিজেদেরকে আগুন হতে রক্ষা কর। আল্লাহ
তা’আলার দরবারে তোমাদের উপকার বা অপকার করার কোন ক্ষমতা আমার নাই। হে আবদে মানাফ
বংশের লোকেরা! তোমরা নিজেদের কে আগুন হতে রক্ষা কর। আল্লাহ তা’আলার দরবারে তোমাদের
কোন উপকার বা অপকার করার করার ক্ষমতা আমার নাই। হে কুসাই বংশের লোকেরা! তোমরা
নিজেদেরকে আগুন হতে রক্ষা কর। আল্লাহ তা’আলার দরবারে তোমাদের কোন উপকার বা অপকার
করার করার ক্ষমতা আমার নাই। হে আব্দুল মুত্তালিব বংশের ব্যক্তিরা! তোমরা নিজেদেরকে
আগুন হতে রক্ষা কর। আল্লাহ তা’আলার দরবারে তোমাদের কোন উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা
আমার নাই। হে মুহাম্মাদের মেয়ে ফাতিমা! নিজেকে আগুন হতে রক্ষা কর। কেননা তোমার কোন
উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা আমার নেই। অবশ্য তোমার সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক
রয়েছে। আমি এই সম্পর্কের অধিকার সজীব রাখার চেষ্টা করব।
সহীহঃ মুসলিম (১/১৩৩), বুখারী (৪৭৭১) সংক্ষেপিত।
আবূ ঈসা বলেন, উল্লেখিত সনদ সুত্রে এ হাদিসটি হাসান সহীহ
গারীব। এটি শুধুমাত্র মুসা ইবনু তালহা সুত্রেই জানা যায়। আলী ইবনু হুজুর শু’আইব ইবনু
সাফওয়ান হতে, তিনি আব্দুল মালিক ইবনু উমাইর হতে, তিনি মূসা ইবনু তালহা হতে, তিনি আবু
হুরায়রা (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদে উক্ত
মর্মে একই রকম হাদিস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৮৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ، حَدَّثَنَا أَبُو زَيْدٍ،
عَنْ عَوْفٍ، عَنْ قَسَامَةَ بْنِ زُهَيْرٍ، حَدَّثَنَا الأَشْعَرِيُّ، قَالَ
لَمَّا نَزَلََ : (وأنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ ) وَضَعَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَصْبُعَيْهِ فِي أُذُنَيْهِ فَرَفَعَ مِنْ صَوْتِهِ
فَقَالَ " يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ يَا صَبَاحَاهُ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ أَبِي
مُوسَى . وَقَدْ رَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ عَوْفٍ عَنْ قَسَامَةَ بْنِ زُهَيْرٍ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِي
مُوسَى وَهُوَ أَصَحُّ ذَاكَرْتُ بِهِ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ فَلَمْ
يَعْرِفْهُ مِنْ حَدِيثِ أَبِي مُوسَى .
আবু
মুসা আল আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“ওয়া আনযির আশীরাতাকাল
আক্বরাবীন”- (সুরা শু’আরা ২১৪) আয়াত অবতীর্ণ হলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দুই হাতের দুই আঙ্গুল তাঁর দুই কানের মধ্যে স্থাপন করে
উচ্চ কণ্ঠে বলেন, হে আবদে মানাফ বংশের লোকেরা! ইয়া সাবাহ (হে প্রভাতকালের বিপদ)”।
হাসান সহীহঃ (বুখারী ৪৮০১)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ মুসার হাদীস হিসেবে উল্লেখিত সনদ সুত্রে
এ হাদিস টি গারীব। কিছু বর্ণনাকারী আওফ হতে, তিনি কাসামাহ ইবনু যুহাইর হতে, তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদে এ হাদিস মুরসাল রুপে বর্ণনা করেছেন
এবং এ সনদে আবূ মুসা আল- আশ’আরী (রাঃ) ের উল্লেখ নেই এবং এ সুত্র টি অনেক বেশি সহীহ।
আমি (তিরমিযী) হাদিসটি মুহাম্মাদ ইবনু ইমাঈলের নিকট উল্লেখ করলাম কিন্তু তিনি এটিকে
আবূ মুসার হাদিস রুপে চিনতে পারেন নি।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-২৮
সুরা
আন-নামল
৩১৮৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ،
عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَوْسِ بْنِ
خَالِدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" تَخْرُجُ الدَّابَّةُ مَعَهَا خَاتَمُ سُلَيْمَانَ وَعَصَا مُوسَى
فَتَجْلُو وَجْهَ الْمُؤْمِنِ وَتَخْتِمُ أَنْفَ الْكَافِرِ بِالْخَاتَمِ حَتَّى
إِنَّ أَهْلَ الْخِوَانِ لَيَجْتَمِعُونَ فَيَقُولُ هَاهَا يَا مُؤْمِنُ وَيُقَالُ
هَاهَا يَا كَافِرُ وَيَقُولُ هَذَا يَا كَافِرُ وَهَذَا يَا مُؤْمِنُ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَيْرِ هَذَا
الْوَجْهِ فِي دَابَّةِ الأَرْضِ . وَفِيهِ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ وَحُذَيْفَةَ
بْنِ أُسَيْدٍ .
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ একটি জানোয়ার বের হয়ে আসবে এবং তার সাথে
সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর আংটি ও মূসা আলাইহিস সালাম-এর লাঠি থাকবে। সে (লাঠি
দিয়ে) মু'মিনদের চেহারা সাফ ও দীপ্তিমান করবে এবং আংটি দিয়ে কাফিরদের নাকে মোহর
মেরে দিবে। পরিশেষে তারা একই ভোজসভায় একত্রে মিলিত হবে এবং সেই জানোয়ারটি ডেকে
বলবে, এই যে মু'মিন, এই যে কাফির। অতঃপর সে বলবে হে মু'মিন, আর সে বলবে হে কাফির।
যঈফ, যঈফা (১১০৮)।
আবূ ঈসা বলেন এই হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদীসটি অন্য
সূত্রে আবু হুরাইরা হতেও বর্ণিত আছে, এ অনুচ্ছেদে আবূ ওমামা এবং হুযাইফা ইবনু উসাইদ
হতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯
সূরা
আল-কাসাস
৩১৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
عَنْ يَزِيدَ بْنِ كَيْسَانَ، حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ الأَشْجَعِيُّ، هُوَ
كُوفِيٌّ اسْمُهُ سَلْمَانُ مَوْلَى عَزَّةَ الأَشْجَعِيَّةِ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
لِعَمِّهِ " قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدْ لَكَ بِهَا يَوْمَ
الْقِيَامَةِ " . فَقَالَ لَوْلاَ أَنْ تُعَيِّرَنِي بِهَا قُرَيْشٌ
أَنَّمَا يَحْمِلُهُ عَلَيْهِ الْجَزَعُ لأَقْرَرْتُ بِهَا عَيْنَكَ فَأَنْزَلَ
اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ : (إنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكِنَّ
اللَّهَ يَهْدِي مَنْ يَشَاءُ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ يَزِيدَ بْنِ كَيْسَانَ .
আবু
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাচাকে বললেনঃ আপনি "লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ" বলুন, আমি কিয়ামাতের দিন এই কালেমার সাহায্যে আপনার পক্ষে
সাক্ষ্য দিব। আবু ত্বালিব বললেন, আমি এরূপ করলে কুরাইশরা আমাকে তিরস্কার করবে এই
বলে যে, সে মৃত্যুর ভয়ে এই কালেমা পাঠ করেছে (এবং পূর্বপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করে
ইসলাম গ্রহণ করেছে)। এভাবে দোষারোপ করার আশংকা না থাকলে আমি তা স্বীকার করে তোমার
আঁখি শীতল করতাম। এই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা'আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ)ঃ
“তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে হিদায়াত করতে পারবে না, তবে আল্লাহ তা'আলা
যাকে ইচ্ছা তাকে হিদায়াত দান করেন"- (সূরা কাসাস ৫৬)।
সহীহঃ মুসলিম (১/৪১)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইয়াযীদ ইবনু কাইসানের
সনদেই শুধু আমরা এ হাদীসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩০
সূরা
আল-‘আনকাবৃত
৩১৮৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى،
قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ
بْنِ حَرْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ مُصْعَبَ بْنَ سَعْدٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ،
سَعْدٍ قَالَ أُنْزِلَتْ فِيَّ أَرْبَعُ آيَاتٍ . فَذَكَرَ قِصَّةً فَقَالَتْ
أُمُّ سَعْدٍ أَلَيْسَ قَدْ أَمَرَ اللَّهُ بِالْبِرِّ وَاللَّهِ لاَ أَطْعَمُ
طَعَامًا وَلاَ أَشْرَبُ شَرَابًا حَتَّى أَمُوتَ أَوْ تَكْفُرَ قَالَ فَكَانُوا
إِذَا أَرَادُوا أَنْ يُطْعِمُوهَا شَجَرُوا فَاهَا فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ :
(ووَصَّيْنَا الإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সা'দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার
প্রসঙ্গে চারটি আয়াত অবতীর্ণ হয়। তারপর তিনি একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। সা'দ
(রাঃ)-এর মা বলল, আল্লাহ তা'আলা কি (পিতা-মাতার) সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দেননি?
আল্লাহর কসম! যতক্ষণ পর্যন্ত আমি না মরব অথবা তুমি কুফরীতে প্রত্যাবর্তন না করবে
(ইসলাম ত্যাগ না করবে) ততক্ষণ পর্যন্ত আমি পানাহার করব না। বর্ণনাকারী বলেন,
লোকেরা তাকে আহার করাতে চাইলে কাঠ দিয়ে তার মুখ ফাক করে তাকে আহার করাতো। এ ঘটনার
পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ)ঃ “আমি মানুষকে তাদের বাবা-মার সাথে
ভাল ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছি। কিন্তু তারা যদি আমার সাথে এমন কিছু শারীক করার
জন্য তোমার উপর চাপ সৃষ্টি করে, যে প্রসঙ্গে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তুমি তাদের
আনুগত্য করো না। আমার নিকটই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। পার্থিব জীবনে তোমরা যা করছিলে,
তখন আমি তোমাদের তা জানিয়ে দিব”— (সূরা আল-আনকাবূত ৮)।
সহীহঃ মুসলিম (৭/১২৫, ১২৬)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৯০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ،
وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَكْرٍ السَّهْمِيُّ، عَنْ حَاتِمِ بْنِ أَبِي صَغِيرَةَ،
عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أُمِّ هَانِئٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ تَعَالَى : (أتَأْتُونَ فِي
نَادِيكُمُ الْمُنْكَرَ ) قَالَ " كَانُوا يَخْذِفُونَ أَهْلَ الأَرْضِ
وَيَسْخَرُونَ مِنْهُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ حَاتِمِ بْنِ أَبِي صَغِيرَةَ عَنْ سِمَاكٍ .
উম্মু
হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্ তা'আলার বানীঃ
"তোমরাই তো নিজেদের মাজলিসসমুহে প্রকাশ্যে গর্হিত কাজ কর"। রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এই লোকেরা (কাওমে লূত) দুনিয়াবাসীদের উপর
কাঁকর ছুঁড়ে মারতো এবং তাদের সাথে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করত।
সনদ অত্যন্ত দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আমরা শুধুমাত্র হাতিম
ইবনু আবূ সাগীরার সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি এবং তিনি সিমাকের বরাতে এ হাদীস রিওয়ায়াত
করেছেন। আহমাদ ইবনু আবদাহ সুলাইম ইবনু আখযার হাতিম ইবনু আবূ সাগীরা এই সূত্রে অনুরূপ
বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
অনুচ্ছেদ-৩১
সূরা
আর-রূম
৩১৯১
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ عَثْمَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ الْجُمَحِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ الزُّهْرِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لأَبِي بَكْرٍ فِي مُنَاحَبَةٍ : ( الم*
غُلِبَتِ الرُّومُ ) " أَلاَّ احْتَطْتَ يَا أَبَا بَكْرٍ فَإِنَّ
الْبِضْعَ مَا بَيْنَ الثَّلاَثِ إِلَى التِّسْعِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) "আলিফ, লাম, মীম, গুলিবাতির রূম"
শীর্ষক আয়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট আবূ বকর (রাঃ)-এর বাজি প্রসঙ্গে বলেছেনঃ আবূ বাক্র!
তুমি সাবধানতা গ্রহণ করলে না কেন? কেননা .... শব্দটি তো তিন হতে নয় পর্যন্ত সংখ্যা
বুঝাতে ব্যবহৃত হয়।
যঈফ, যঈফা (৩৩৫৪)
আবূ ঈসা বলেনঃ উল্লেখিত সনদসূত্রে অর্থাৎ যুহরীর সনদে
এ হাদীস হাসান ও গারীব। তিনি উবাইদুল্লাহ হতে, তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে তা বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩১৯২
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا
الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سُلَيْمَانَ الأَعْمَشِ، عَنْ
عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ ظَهَرَتِ
الرُّومُ عَلَى فَارِسَ فَأَعْجَبَ ذَلِكَ الْمُؤْمِنِينَ فَنَزَلَتْ : ( الم
*غَلَبَتِ الرُّومُ ) إِلَى قَوْلِهِ : (يفْرَحُ الْمُؤْمِنُونَ بِنَصْرِ
اللَّهِ ) قَالَ فَفَرِحَ الْمُؤْمِنُونَ بِظُهُورِ الرُّومِ عَلَى فَارِسَ .
قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ كَذَا قَرَأَ نَصْرُ
بْنُ عَلِيٍّ : (غَلَبَتِ الرُّومُ ) .
আবু
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন বদর
যুদ্ধ সংঘটিত হয়, ঠিক এই সময়ে রূমের এশিয়া মাইনরে খৃষ্টান বাহিনী পারস্যের
বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করে। এ বিষয়টি মুসলিমদেরকে খুবই আনন্দিত করে। এ
প্রেক্ষিতে আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ)ঃ “আলিফ, লাম, মীম। রোমকগণ নিকটবর্তী
ভূখণ্ডে পরাজিত হয়েছে। তাদের এই পরাজয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই তারা আবার বিজয়ী
হবে। আগের ও পরের ফাইসালা আল্লাহ তা'আলারই। সেদিন আল্লাহ তা'আলার সাহায্যে
মু’মিনগণ আনন্দিত হবে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন। তিনি মহা পরাক্রমশালী, পরম
দয়ালু"- (সূরা আর-রূম ১-৫)। বর্ণনাকারী বলেন, পারস্য শক্তির বিরুদ্ধে রোমান
শক্তির জয়ে মুসলিমরা আনন্দিত হয়েছিলেন।
পরবর্তী হাদীসের সহায়তায় এ হাদীসটি সহীহ।
আবু ঈসা বলেন, উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি হাসান গারীব।
নাসর ইবনু আলী (গলাবাতির রূম) পাঠ করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৯৩
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ
عَمْرٍو، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ الْفَزَارِيِّ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ
حَبِيبِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي
قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى : ( الم * غُلِبَتِ الرُّومُ * فِي أَدْنَى الأَرْضِ
) قَالَ غُلِبَتْ وَغَلَبَتْ كَانَ الْمُشْرِكُونَ يُحِبُّونَ أَنْ يَظْهَرَ
أَهْلُ فَارِسَ عَلَى الرُّومِ لأَنَّهُمْ وَإِيَّاهُمْ أَهْلُ أَوْثَانٍ وَكَانَ
الْمُسْلِمُونَ يُحِبُّونَ أَنْ يَظْهَرَ الرُّومُ عَلَى فَارِسَ لأَنَّهُمْ
أَهْلُ كِتَابٍ فَذَكَرُوهُ لأَبِي بَكْرٍ فَذَكَرَهُ أَبُو بَكْرٍ لِرَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَمَا إِنَّهُمْ سَيَغْلِبُونَ
" . فَذَكَرَهُ أَبُو بَكْرٍ لَهُمْ فَقَالُوا اجْعَلْ بَيْنَنَا
وَبَيْنَكَ أَجَلاً فَإِنْ ظَهَرْنَا كَانَ لَنَا كَذَا وَكَذَا وَإِنْ ظَهَرْتُمْ
كَانَ لَكُمْ كَذَا وَكَذَا فَجَعَلَ أَجَلَ خَمْسِ سِنِينَ فَلَمْ يَظْهَرُوا
فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَلاَ
جَعَلْتَهُ إِلَى دُونِ - قَالَ أُرَاهُ الْعَشْرِ " . قَالَ سَعِيدٌ
وَالْبِضْعُ مَا دُونَ الْعَشْرِ قَالَ ثُمَّ ظَهَرَتِ الرُّومُ بَعْدُ . قَالَ
فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى : ( الم * غُلِبَتِ الرُّومُ ) إِلَى قَوْلِهِ
: (يفْرَحُ الْمُؤْمِنُونَ * بِنَصْرِ اللَّهِ يَنْصُرُ مَنْ يَشَاءُ )
قَالَ سُفْيَانُ سَمِعْتُ أَنَّهُمْ ظَهَرُوا عَلَيْهِمْ يَوْمَ بَدْرٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ
حَدِيثِ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ
(অনুবাদ) আলিফ, লাম, মীম। রোমকগণ নিকটবর্তী ভূখণ্ডে পরাজিত হয়েছে” এ আয়াত
প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এতে দুই রকমের ক্বিরাআত আছে, “গুলিবাত” (পরাজিত হল) এবং
“গালাবাত” (বিজয়ী হল)। তিনি আরো বলেন, মুশরিকরা চাইত যে, পারস্য শক্তি রোমান
শক্তির উপরে জয়ী হোক। কেননা (মক্কার) মুশরিকরা এবং পারস্যের অধিবাসীরা উভয়ে ছিল
পৌত্তলিক। আর মুসলিমরা আকাঙ্ক্ষা করত যে, রোমান শক্তি পারস্য শক্তির বিরুদ্ধে
বিজয়ী হোক। কেননা তারা ছিল আহলে কিতাব। তারা ব্যাপারটি আবু বাকর (রাঃ)-এর সামনে
উল্লেখ করলে তিনি তা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান।
তিনি বললেনঃ অচিরেই রোমান শক্তি পারস্য শক্তির উপরে বিজয়ী হবে। আবু বাকর (রাঃ) এ
কথা তাদের নিকট উল্লেখ করলে তারা বলল, আপনি আমাদের ও আপনার মাঝে এর একটি সময়সীমা
নির্দিষ্ট করুন। এ সময়সীমার মধ্যে আমরা যদি বিজয়ী হই তবে (এত এত মাল আমাদেরকে)
দিতে হবে। আর যদি আপনারা বিজয়ী হন তবে আমরা আপনাদেরকে এই এই (পরিমাণ মাল) দিব।
তিনি পাঁচ বছরের সময়সীমা নির্দিষ্ট করেন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কোন বিজয় সূচিত
হল না। লোকেরা তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উল্লেখ করলে তিনি
বললেনঃ (হে আবূ বাকর!), তুমি কেন আর কিছু বেশি সময়সীমা ধার্য করলে না? বর্ণনাকারী
বলেন, আমার মনে হয় তিনি দশ বছরের কাছাকাছি সময়ের কথা বলেছেন।
সাঈদ (রহঃ) বলেন, ‘বিযউ’ শব্দের অর্থ দশের চেয়ে কম। বর্ণনাকারী বলেন, পরবর্তীকালে
রোমান শক্তি বিজয়ী হল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
এটাই আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ “আলিফ, লাম, মীম...ইয়াফরাহুল মুমিনুন
বিনাসরিল্লাহ" এর তাৎপর্য। সুফইয়ান বলেন, আমি শুনেছি, রোমান শক্তি ঠিক বদরের
যুদ্ধের দিন পারস্য শক্তির উপরে বিজয়ী হয়।
সহীহঃ যঈফাহ (২২৫৪) নং হাদীসের অধীনে।
আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। আমরা শুধু
সুফইয়ানের রিওয়ায়াত হিসেবে এ হাদীস জেনেছি। তিনি হাবীব ইবনু আবী ‘আমরা’র সনদে এ
হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৯৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
أَبِي أُوَيْسٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ
عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ نِيَارِ بْنِ مُكْرَمٍ الأَسْلَمِيِّ، قَالَ
لَمَّا نَزَلَتْ : ( الم * غُلِبَتِ الرُّومُ * فِي أَدْنَى الأَرْضِ وَهُمْ
مِنْ بَعْدِ غَلَبِهِمْ سَيَغْلِبُونَ * فِي بِضْعِ سِنِينَ ) فَكَانَتْ فَارِسُ
يَوْمَ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ قَاهِرِينَ لِلرُّومِ وَكَانَ الْمُسْلِمُونَ
يُحِبُّونَ ظُهُورَ الرُّومِ عَلَيْهِمْ لأَنَّهُمْ وَإِيَّاهُمْ أَهْلُ كِتَابٍ
وَفِي ذَلِكَ قَوْلُ اللَّهِ تَعَالَى : (يوْمَئِذٍ يَفْرَحُ الْمُؤْمِنُونَ *
بِنَصْرِ اللَّهِ يَنْصُرُ مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ )
فَكَانَتْ قُرَيْشٌ تُحِبُّ ظُهُورَ فَارِسَ لأَنَّهُمْ وَإِيَّاهُمْ لَيْسُوا
بِأَهْلِ كِتَابٍ وَلاَ إِيمَانٍ بِبَعْثٍ فَلَمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى
هَذِهِ الآيَةَ خَرَجَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ رضى الله عنه يَصِيحُ فِي
نَوَاحِي مَكَّةَ : ( الم * غُلِبَتِ الرُّومُ * فِي أَدْنَى الأَرْضِ وَهُمْ
مِنْ بَعْدِ غَلَبِهِمْ سَيَغْلِبُونَ * فِي بِضْعِ سِنِينَ ) قَالَ نَاسٌ مِنْ
قُرَيْشٍ لأَبِي بَكْرٍ فَذَلِكَ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ زَعَمَ صَاحِبُكُمْ أَنَّ
الرُّومَ سَتَغْلِبُ فَارِسًا فِي بِضْعِ سِنِينَ أَفَلاَ نُرَاهِنُكَ عَلَى
ذَلِكَ قَالَ بَلَى . وَذَلِكَ قَبْلَ تَحْرِيمِ الرِّهَانِ فَارْتَهَنَ أَبُو
بَكْرٍ وَالْمُشْرِكُونَ وَتَوَاضَعُوا الرِّهَانَ وَقَالُوا لأَبِي بَكْرٍ كَمْ
تَجْعَلُ الْبِضْعُ ثَلاَثُ سِنِينَ إِلَى تِسْعِ سِنِينَ فَسَمِّ بَيْنَنَا
وَبَيْنَكَ وَسَطًا تَنْتَهِي إِلَيْهِ . قَالَ فَسَمَّوْا بَيْنَهُمْ سِتَّ
سِنِينَ قَالَ فَمَضَتِ السِّتُّ سِنِينَ قَبْلَ أَنْ يَظْهَرُوا فَأَخَذَ
الْمُشْرِكُونَ رَهْنَ أَبِي بَكْرٍ فَلَمَّا دَخَلَتِ السَّنَةُ السَّابِعَةُ
ظَهَرَتِ الرُّومُ عَلَى فَارِسَ فَعَابَ الْمُسْلِمُونَ عَلَى أَبِي بَكْرٍ
تَسْمِيَةَ سِتِّ سِنِينَ لأَنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَالَ : (في بِضْعِ سِنِينَ
) قَالَ وَأَسْلَمَ عِنْدَ ذَلِكَ نَاسٌ كَثِيرٌ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
صَحِيحٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ نِيَارِ بْنِ مُكْرَمٍ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ
مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي الزِّنَادِ .
নিয়ার
ইবনু মুকরাম আল-আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন অবতীর্ণ
হলঃ (অনুবাদ) “আলিফ, লাম, মীম; রোমকরা নিকটবর্তী ভূখণ্ডে পরাজিত হয়েছে; তাদের এই
পরাজয়ের পর অচিরেই কয়েক বছরের মধ্যে তারা বিজয়ী হবে", তখন পারস্য শক্তি
রোমকদের উপর প্রভুত্ব করছিল। মুসলিমরা আকাঙ্ক্ষা করত যে, রোমক শক্তি পারস্য শক্তির
বিরুদ্ধে বিজয়ী হোক। কেননা মুসলিমরা ছিল আহ্লে কিতাব এবং রোমান খৃষ্টানরাও ছিল
আহলে কিতাব। এ বিষয়ে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “সেদিন আল্লাহ্র দেয়া বিজয়ে মুমিনগণ
আনন্দিত হবে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন। তিনি মহা পরাক্রমশালী পরম দয়াময়।”
কুরাইশরা চাইতো যে, পারস্যশক্তি বিজয়ী হোক। কেননা এ দুই গোত্রের কেউই আহলে কিতাব
ছিল না, তারা আখিরাতের প্রতিও বিশ্বাসী ছিল না। আল্লাহ তা'আলা এ আয়াতগুলো অবতীর্ণ
করলে আবু বাকর সিদ্দীক্ব (রাঃ) মক্কার অলিতে গলিতে ঘুরে ঘুরে উচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা
করেনঃ আলিফ, লা-ম, মী-ম। রোমান শক্তি নিকটবর্তী অঞ্চলে পরাজিত হয়েছে। তাদের এ
পরাজয়ের পর অচিরেই কয়েক বছরের মধ্যে তারা বিজয়ী হবে।” কুরাইশদের একদল লোক আবু
বকর (রাঃ)-কে বলল, আমাদের ও তোমাদের মাঝে একটি চুক্তি হোক। তোমার সাথী রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, রোমানরা কয়েক বছরের মধ্যেই পারস্য
শক্তির উপরে বিজয়ী হবে। আমরা এ বিষয়ে তোমাদের সাথে বাজি রেখে মাল বন্ধক রাখি না
কেন? আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, ঠিক আছে। বর্ণনাকারী বলেন, বাজি হারাম ঘোষিত হওয়ার
পূর্বে এই চুক্তি হয়েছিল। আবূ বাকর (রাঃ) এবং মুশরিকরা বাজি ধরে বাজির মাল আলাদা
করে রেখে আবু বাকর (রাঃ)-কে বলল, আপনি বিযউ-কে কত নির্ধারণ করতে চান? এ তো তিন হতে
নয় বছর পর্যন্ত বুঝা যায়। আপনি আমাদের এবং আপনার মধ্যে একটি মধ্যবর্তী সময়
নির্দিষ্ট করুন। আমরা উভয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করব। বর্ণনাকারী বলেন, তারা
নিজেদের মধ্যে ছয় বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করে। বর্ণনাকারী বলেন, ছয় বছর পার হয়ে
গেলেও কিন্তু রোমানরা পারসিকদের উপর বিজয়ী হয়নি। অতএব মুশরিকরা আবু বাকর
(রাঃ)-এর অর্থ নিয়ে নিল। কিন্তু সপ্তম বছরে রোমানরা পারসিকদের বিরুদ্ধে জয়লাভ
করে। মুসলিমরা আবু বকর (রাঃ)-এর ছয় বছর বরাদ্ধ করাটাকে দোষারোপ করল। কেননা আল্লাহ
তা'আলা "কয়েক বছরের মধ্যেই” বলেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এ সময় (ভবিষ্যদ্বাণী
সত্য হলে) অনেক মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে।
হাসানঃ যঈফাহ (৩৩৫৪) নং হাদীসের অধীনে।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ, নিয়ার ইবনু মুকরামের
হাদীস হিসেবে গরীব। আবদুর রহমান ইবনু আবুয ফিনাদের সনদেই শুধু আমরা এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩২
সূরা
লুক্বমান
৩১৯৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنْ عُبَيْدِ
اللَّهِ بْنِ زَحْرٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، وَهُوَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي
أُمَامَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَبِيعُوا
الْقَيْنَاتِ وَلاَ تَشْتَرُوهُنَّ وَلاَ تُعَلِّمُوهُنَّ وَلاَ خَيْرَ فِي
تِجَارَةٍ فِيهِنَّ وَثَمَنُهُنَّ حَرَامٌ " . فِي مِثْلِ ذَلِكَ
أُنْزِلَتْ عَلَيْهِ هَذِهِ الآيَةُ : (ومِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ
الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا يُرْوَى مِنْ حَدِيثِ الْقَاسِمِ
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ . وَالْقَاسِمُ ثِقَةٌ وَعَلِيُّ بْنُ يَزِيدَ يُضَعَّفُ
فِي الْحَدِيثِ قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ الْقَاسِمُ
ثِقَةٌ وَعَلِيُّ بْنُ يَزِيدَ يُضَعَّفُ .
আবূ
উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা গায়িকা নারীদের ক্রয়-বিক্রয়
করো না, তাদেরকে গান-বাজনা শিক্ষা দিও না, তাদের (ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে ব্যবহার
করা) ব্যবসায়ের মধ্যে কোন মঙ্গল নেই এবং এদের মূল্যও হারাম। এ প্রসঙ্গেই এই আয়াত
অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ)ঃ “এমনও কিছু লোক আছে, যারা বাতিল অশ্লীল কাহিনীসমূহ ক্রয়
করে আনে, যেন লোকদেরকে অজ্ঞতাবশত আল্লাহ তা'আলার পথ হতে আলাদা করতে পারে এবং এ
পথকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে পারে। এ ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে অপমানকর আযাব"-
(সূরা লুকমান ৬)।
হাসানঃ (১২৮২) নং হাদীস পূর্বে উল্লেখ হয়েছে।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গরীব। এটি শুধুমাত্র (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবু উমামাহ (রাঃ) সূত্রে কাসিম হতে বর্ণিত হয়েছে। কাসিম নির্ভরযোগ্য
বর্ণনাকারী আলী ইবনু ইয়াযীদ হাদীস শাস্ত্রে যঈফ। আমি মুহাম্মাদকে বলতে শুনেছি আল-কাসিম
নির্ভরযোগ্য এবং আলী ইবনু ইয়াযীদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৩
সূরা
আস-সাজদাহ
৩১৯৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأُوَيْسِيُّ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ،
عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ هَذِهِ الآيَةَ :
( تتَجَافَى، جُنُوبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ، ) نَزَلَتْ فِي انْتِظَارِ
هَذِهِ الصَّلاَةِ الَّتِي تُدْعَى الْعَتَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তাদের দেহপাশ বিছানা
হতে আলগা হয়ে যায়..."— (সূরা সাজদাহ ১৬) আয়াতটি ‘আতামার (ইশার) নামাযের
জন্য অপেক্ষা করার ফাযীলাত প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে।
সহীহ তা’লীকুর রাগীব (১/১৬০)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। আমরা শুধু
উল্লেখিত সনদেই এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৯৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " قَالَ اللَّهُ تَعَالَى أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي
الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلاَ خَطَرَ عَلَى
قَلْبِ بَشَرٍ وَتَصْدِيقُ ذَلِكَ فِي كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : ( فلاَ
تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا
يَعْمَلُونَ ) " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবু
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য
এমন কিছু তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান (এর বর্ণনা) কখনো
শুনেনি এবং মানুষের অন্তর তা কল্পনাও করতে পারবে না। এর সত্যতা আল্লাহ তা'আলার
কিতাবেই বিদ্যমানঃ “তাদের ভাল কাজের ফল স্বরূপ তাদের চক্ষু শীতলকারী কী লুকায়িত
রাখা হয়েছে তা কেউই জানে না"- (সূরা সাজদাহ্ ১৭)।
সহীহঃ রাওযুন নাযীর (১১০৬), বুখারী (৪৭৭৯), মুসলিম।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৯৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُطَرِّفِ
بْنِ طَرِيفٍ، وَعَبْدِ الْمَلِكِ، وَهُوَ ابْنُ أَبْجَرَ سَمِعَا الشَّعْبِيَّ،
يَقُولُ سَمِعْتُ الْمُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ، عَلَى الْمِنْبَرِ يَرْفَعُهُ إِلَى
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ مُوسَى عَلَيْهِ
السَّلاَمُ سَأَلَ رَبَّهُ فَقَالَ أَىْ رَبِّ أَىُّ أَهْلِ الْجَنَّةِ أَدْنَى
مَنْزِلَةً قَالَ رَجُلٌ يَأْتِي بَعْدَ مَا يَدْخُلُ أَهْلُ الْجَنَّةِ
الْجَنَّةَ فَيُقَالُ لَهُ ادْخُلِ الْجَنَّةَ . فَيَقُولُ كَيْفَ أَدْخُلُ
وَقَدْ نَزَلُوا مَنَازِلَهُمْ وَأَخَذُوا أَخَذَاتِهِمْ . قَالَ فَيُقَالُ لَهُ
أَتَرْضَى أَنْ يَكُونَ لَكَ مَا كَانَ لِمَلِكٍ مِنْ مُلُوكِ الدُّنْيَا
فَيَقُولُ نَعَمْ أَىْ رَبِّ قَدْ رَضِيتُ . فَيُقَالُ لَهُ فَإِنَّ لَكَ هَذَا
وَمِثْلَهُ وَمِثْلَهُ وَمِثْلَهُ فَيَقُولُ رَضِيتُ أَىْ رَبِّ . فَيُقَالُ
لَهُ فَإِنَّ لَكَ هَذَا وَعَشْرَةَ أَمْثَالِهِ فَيَقُولُ رَضِيتُ أَىْ رَبِّ .
فَيُقَالُ لَهُ فَإِنَّ لَكَ مَعَ هَذَا مَا اشْتَهَتْ نَفْسُكَ وَلَذَّتْ
عَيْنُكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَرَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنِ الْمُغِيرَةِ وَلَمْ
يَرْفَعْهُ وَالْمَرْفُوعُ أَصَحُّ .
মুগীরাহ
ইবনু শুবাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মিম্বারে দাড়িয়ে বলেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মূসা (আঃ) নিজ সৃষ্টিকর্তার নিকট
আরজ করলেনঃ হে প্রভু! সর্বাপেক্ষা নিম্ন শ্রেণীর জান্নাতী কে? তিনি (আল্লাহ)
বললেনঃ জান্নাতবাসীরা জান্নাতে চলে যাওয়ার পর এক লোক উপস্থিত হবে। তাকে বলা হবে,
প্রবেশ কর। সে বলবে, আমি কি করে জান্নাতে প্রবেশ করব, লোকেরা তো নিজ নিজ স্থানে পৌছে
তা দখল করে নিয়েছে! তখন তাকে বলা হবে, দুনিয়ার বাদশাদের মধ্যে একজন বাদশার যত
বড় রাজত্ব হতে পারে, তোমাকে যদি ততটুকু দেয়া হয় তবে তুমি কি খুশি হবে? সে বলবে,
হে প্ৰভু! হ্যাঁ আমি তাতে খুশি হব। তাকে বলা হবে, তোমাকে এ পরিমাণ এবং এর অতিরিক্ত
তিন গুণ স্থান দেয়া হল। সে বলবে, হে প্ৰভু! আমি এতে খুশি আছি। তাকে বলা হবে,
তোমাকে এই পরিমাণ দেয়া হল এবং তার দশ গুণ দেয়া হল। সে বলবে, হে প্ৰভু! আমি
সন্তুষ্ট হলাম। তাকে বলা হবে, এ ব্যতীতও তোমার আত্মা যা কামনা করবে এবং তোমার চোখ
যা পেয়ে শীতল হবে তাও তোমাকে দেয়া হবে।
সহীহঃ মুসলিম (৬/৪৫-৪৬)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। কিছু বর্ণনাকারী
শা'বী হতে, তিনি মুগীরাহ (রাঃ) হতে, এই সনদে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন, কিন্তু মারফুরূপে
নয়। তবে মারফুরূপে বর্ণিত হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৪
সূরা
আল-আহযাব
৩১৯৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا صَاعِدٌ
الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، أَخْبَرَنَا قَابُوسُ بْنُ أَبِي ظَبْيَانَ،
أَنَّ أَبَاهُ، حَدَّثَهُ قَالَ قُلْنَا لاِبْنِ عَبَّاسٍ أَرَأَيْتَ قَوْلَ
اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : (ما جَعَلَ اللَّهُ لِرَجُلٍ مِنْ قَلْبَيْنِ فِي
جَوْفِهِ ) مَا عَنَى بِذَلِكَ قَالَ قَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَوْمًا يُصَلِّي فَخَطَرَ خَطْرَةً فَقَالَ الْمُنَافِقُونَ الَّذِينَ يُصَلُّونَ
مَعَهُ أَلاَ تَرَى أَنَّ لَهُ قَلْبَيْنِ قَلْبًا مَعَكُمْ وَقَلْبًا مَعَهُمْ
. فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (ما جَعَلَ اللَّهُ لِرَجُلٍ مِنْ قَلْبَيْنِ فِي
جَوْفِهِ ) .
কাবূস
ইবনু আবূ যাব্ইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা তাকে বলেছেন,
আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলামঃ আপনি কি বলেন, আল্লাহ্ তা'আলার বাণী
"আল্লাহ্ তা'আলা কোন ব্যক্তির বক্ষে দুটি হৃদয় তৈরী করেননি" (সুরাঃ
আল-আহযাব- ৪), এর অর্থ কি? তিনি বললেন, একদিন আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলেন। নামাযে তাঁর কিছু (ওয়াসওয়াসা
জাতীয়) ত্রুটি হয়। যেসব মুনাফিক তাঁর সাথে নামায আদায় করে তারা একে অপরকে বলল,
তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ না যে, তাঁর দুটি হৃদয় আছে? একটি হৃদয় তোমাদের সাথে, অন্যটি
হৃদয় তাদের সাথে থাকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা'আলা অবতীর্ণ করেনঃ "কোন
ব্যক্তির বক্ষে আল্লাহ্ তা'আলা দুটি হৃদয় তৈরী করেননি"।
সনদ দুর্বল, আব্দ ইবনু হুমাইদ-আহ্মাদ ইবনু ইউনুস হতে তিনি যুহাইর (রহঃ) সূত্রে
উপরের হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান। এ সনদটিও
দুর্বল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২০০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ
أَنَسٍ، قَالَ قَالَ عَمِّي أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ سُمِّيتُ بِهِ لَمْ يَشْهَدْ
بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكَبُرَ عَلَيْهِ فَقَالَ
أَوَّلُ مَشْهَدٍ شَهِدَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غِبْتُ عَنْهُ
أَمَا وَاللَّهِ لَئِنْ أَرَانِيَ اللَّهُ مَشْهَدًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم لَيَرَيَنَّ اللَّهُ مَا أَصْنَعُ . قَالَ فَهَابَ أَنْ يَقُولَ
غَيْرَهَا فَشَهِدَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ مِنَ
الْعَامِ الْقَابِلِ فَاسْتَقْبَلَهُ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ فَقَالَ يَا أَبَا
عَمْرٍو أَيْنَ قَالَ وَاهًا لِرِيحِ الْجَنَّةِ أَجِدُهَا دُونَ أُحُدٍ فَقَاتَلَ
حَتَّى قُتِلَ فَوُجِدَ فِي جَسَدِهِ بِضْعٌ وَثَمَانُونَ مِنْ بَيْنِ ضَرْبَةٍ
وَطَعْنَةٍ وَرَمْيَةٍ فَقَالَتْ عَمَّتِي الرُّبَيِّعُ بِنْتُ النَّضْرِ فَمَا
عَرَفْتُ أَخِي إِلاَّ بِبَنَانِهِ . وَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةَُ : (رجالٌ
صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ
وَمِنْهُمْ مَنْ يَنْتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلاً ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার চাচা
আনাস ইবনু নাযর- যার নামানুসারে আমার নাম রাখা হয়েছে- বলেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
ব্যাপারটি তার নিকট অসহনীয় লাগছিল। তিনি বলেন, মুশরিকদের সাথে প্রথম যে যুদ্ধে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপস্থিত ছিলেন আমি তাতে অনুপস্থিত
রইলাম। আল্লাহর কসম! যদি তিনি আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাথে কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেন তবে আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই
দেখবেন আমি কি করি। এ কথা বলার সাথে সাথে তার ভয় হল যে, তিনি বিপরীতের কিছু বলেন
কি না। পরবর্তী বছর তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে
উহুদের যুদ্ধে শরীক হন। উহুদে যেতে পথিমধ্যে সা’দ ইবনু মুআয (রাঃ)-এর সাথে তার
দেখা হয়। তিনি প্রশ্ন করেন, হে আবু আমর! কোথায় যাচ্ছ? তিনি বললেন, আহা!
জান্নাতের ঘ্রাণের দিকে। আমি উহুদের দিকে তা অনুভব করছি। (বর্ণনাকারী বলেন), তিনি
যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হন। তার শরীরে আশিরও বেশি জখম ছিল। এর মধ্যে কিছু ছিল
তরবারির আঘাত, কিছু বর্শার আঘাত এবং কিছু তীরের আঘাত। আমার ফুফু রুবাই বিনতু নাযর
(রাঃ) বলেন, জখমের কারণে আমি আমার ভাইকে চিনতে পারছিলাম না। শুধু তার আঙ্গুলের
গোছা দেখেই তাকে চিনতে পেরেছি। তার সম্পর্কেই এ আয়াত অবতীর্ণ হল (অনুবাদ)ঃ
“ঈমানদার ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু লোক আল্লাহ তা'আলার সাথে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ
করেছে, তাদের কেউ কেউ নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করেছে (শহীদ হয়েছে) এবং কেউ অপেক্ষায়
রয়েছে। তারা নিজেদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করেনি"- (সূরা আহ্যাব ২৩)।
সহীহঃ মুসলিম (৬/৪৫-৪৬)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عَمَّهُ، غَابَ
عَنْ قِتَالِ، بَدْرٍ فَقَالَ غِبْتُ عَنْ أَوَّلِ، قِتَالٍ قَاتَلَهُ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمُشْرِكِينَ لَئِنِ اللَّهُ أَشْهَدَنِي قِتَالاً
لِلْمُشْرِكِينَ لَيَرَيَنَّ اللَّهُ كَيْفَ أَصْنَعُ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ
أُحُدٍ انْكَشَفَ الْمُسْلِمُونَ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَبْرَأُ إِلَيْكَ
مِمَّا جَاءَ بِهِ هَؤُلاَءِ . يَعْنِي الْمُشْرِكِينَ وَأَعْتَذِرُ إِلَيْكَ
مِمَّا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ . يَعْنِي أَصْحَابَهُ ثُمَّ تَقَدَّمَ فَلَقِيَهُ
سَعْدٌ فَقَالَ يَا أَخِي مَا فَعَلْتَ أَنَا مَعَكَ فَلَمْ أَسْتَطِعْ أَنْ
أَصْنَعَ مَا صَنَعَ . فَوُجِدَ فِيهِ بِضْعٌ وَثَمَانُونَ مِنْ ضَرْبَةٍ
بِسَيْفٍ وَطَعْنَةٍ بِرُمْحٍ وَرَمْيَةٍ بِسَهْمٍ فَكُنَّا نَقُولُ فِيهِ وَفِي
أَصْحَابِهِ نَزَلَتْ : (فمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَنْ
يَنْتَظِرُ ) . قَالَ يَزِيدُ يَعْنِي هَذِهِ الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَاسْمُ عَمِّهِ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তার চাচা বদরের যুদ্ধে
অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি (চাচা) বলেন, এটাই ছিল প্রথম যুদ্ধ যা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিকদের বিরুদ্ধে পরিচালনা করেন। অথচ এই
প্রথম যুদ্ধেই আমি অংশগ্রহণ করতে পারলাম না। আল্লাহ তা'আলা যদি ভবিষ্যতে মুশরিকদের
বিরুদ্ধে আমাকে কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ দেন, তবে তিনি দেখবেন আমি কি করি।
তারপর উহুদের যুদ্ধে মুসলিমরা পরাজয়ের সম্মুখীন হলে তিনি বলেন, “হে আল্লাহ!
মুশরিকরা যে বিপদ নিয়ে এসেছে আমি তা হতে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর
মুসলিমরা যা করেছে সে প্রসঙ্গে তোমার নিকট ওজরখাহি করছি।" তারপর তিনি সামনে
আগালেন। তার সঙ্গে সা'দ (রাঃ)-এর সাক্ষাৎ হলে তিনি বলেন, হে ভাই! তুমি কি করছ, আমি
তোমার সাথে আছি। (সা’দ বলেন) কিন্তু সে যা করল আমি তা করতে ব্যর্থ হলাম। তার দেহে
আশির বেশি জখম পাওয়া গেল। এর কতগুলো ছিল তরবারির আঘাত, কতগুলো বর্শার আঘাত এবং
কতগুলো তীরের আঘাত। আমরা বলাবলি করতাম যে, তার ও তার বন্ধুদের বিষয়ে এ আয়াত
অবতীর্ণ হয়েছে (অনুবাদ)ঃ “তাদের ভিতর কেউ কেউ ইচ্ছা পূর্ণ করেছে এবং কেউ সময়
আসার অপেক্ষায় রয়েছে"- (সূরা আহযাব ২৩)।
সহীহঃ বুখারী (২৮০৫)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ)-এর চাচার নাম আনাস ইবনু নাযর ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْقُدُّوسِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَطَّارُ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ يَحْيَى بْنِ طَلْحَةَ،
عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى مُعَاوِيَةَ فَقَالَ أَلاَ
أُبَشِّرُكَ قُلْتُ بَلَى . قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ " طَلْحَةُ مِمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثَ مُعَاوِيَةَ إِلاَّ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَإِنَّمَا رُوِيَ عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ عَنْ أَبِيهِ
.
মূসা
ইবনু ত্বালহা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
মু'আবিয়াহ (রাঃ)-এর নিকট প্রবেশ করলে তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে একটি সুসংবাদ
শুনাব না? আমি বললাম, হ্যা অবশ্যই। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যারা নিজেদের ইচ্ছা পূর্ণ করেছে, ত্বালহা
(রাঃ) তাদের দলে।
হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (১২৬)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারব। আমরা শুধু উল্লেখিত সনদসূত্রে
মু'আবিয়াহ (রাঃ) হতে এ হাদীস জেনেছি এবং এটি মূসা ইবনু ত্বালহা হতে তার বাবার সনদে
বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩২০৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ
طَلْحَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنْ مُوسَى، وَعِيسَى، ابْنَىْ طَلْحَةَ عَنْ أَبِيهِمَا،
طَلْحَةَ أَنَّ أَصْحَابَ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالُوا
لأَعْرَابِيٍّ جَاهِلٍ سَلْهُ عَمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ مَنْ هُوَ وَكَانُوا لاَ
يَجْتَرِئُونَ عَلَى مَسْأَلَتِهِ يُوَقِّرُونَهُ وَيَهَابُونَهُ فَسَأَلَهُ
الأَعْرَابِيُّ فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ سَأَلَهُ فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ سَأَلَهُ
فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ إِنِّي اطَّلَعْتُ مِنْ بَابِ الْمَسْجِدِ وَعَلَىَّ
ثِيَابٌ خُضْرٌ فَلَمَّا رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" أَيْنَ السَّائِلُ عَمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ " . قَالَ
الأَعْرَابِيُّ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " هَذَا مِمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ " . قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ يُونُسَ بْنِ بُكَيْرٍ
.
তালহা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ এক মূৰ্খ বেদুঈনকে বলল, তুমি
গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন কর, “যারা
নিজেদের মানৎ পূর্ণ করেছে" দ্বারা কাদের বুঝানো হয়েছে? সাহাবীগণ তার নিকট এ কথা প্রশ্ন করতে সাহস পাননি। তারা
তাঁকে সম্মান ও সমীহ করতেন। বিদুঈন তাঁর নিকট ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করলে তিনি মুখ
ফিরিয়ে নেন। সে আবারো তাকে প্রশ্ন করলে তিনি এবারও মুখ ফিরিয়ে নেন। সে আবারো
তাকে প্রশ্ন করলে তিনি এবারও মুখ ফিরিয়ে নেন। তারপর আমি মাসজিদের দরজা দিয়ে
ভিতরে ঢুকলাম। আমার পরনে ছিল সবুজ কাপড়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাকে দেখে বললেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়, যে ‘মানৎ পূর্ণকারীদের’ বিষয়ে
প্রশ্ন করেছে? বেদুঈন বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এই আমি। রাসূলুল্লাহঃ বললেনঃ যারা
নিজেদের মানৎ পূর্ণ করেছে এ লোক (ত্বালহা) তাদের একজন।
হাসান সহীহঃ সহীহাহ (১/৩৬)
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু ইউনুস
ইবনু বুকাইরের সনদে এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩২০৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ،
عَنْ يُونُسَ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ لَمَّا أُمِرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم بِتَخْيِيرِ أَزْوَاجِهِ بَدَأَ بِي فَقَالَ " يَا عَائِشَةُ إِنِّي
ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا فَلاَ عَلَيْكِ أَنْ لاَ تَسْتَعْجِلِي حَتَّى تَسْتَأْمِرِي
أَبَوَيْكِ " . قَالَتْ وَقَدْ عَلِمَ أَنَّ أَبَوَاىَ لَمْ يَكُونَا
لِيَأْمُرَانِي بِفِرَاقِهِ قَالَتْ ثُمَّ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى
يَقُولُ: ( يا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ
الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ ) حَتَّى بَلَغَ : (
للْمُحْسِنَاتِ مِنْكُنَّ أَجْرًا عَظِيمًا ) فَقُلْتُ فِي أَىِّ هَذَا
أَسْتَأْمِرُ أَبَوَىَّ فَإِنِّي أُرِيدُ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالدَّارَ
الآخِرَةَ وَفَعَلَ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ مَا فَعَلْتُ
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا
أَيْضًا عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তার সহধর্মিণীগনকে (তার স্ত্রীত্বে থাকার
বা পার্থিব ভোগবিলাস প্রহন করার) এখতিয়ার দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলে তিনি প্রথমে
আমাকেই প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, হে আয়িশাহ! তোমাকে একটি কথা বলতে চাচ্ছি। তুমি
ধীরস্থীরভাবে উত্তর দিবে, তাড়াহুড়া করবে না এবং প্রয়োজনে তোমার বাবা মার সাথেও শলা
পরামর্শ করবে। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি ভালো করেই জানতেন যে, আমার পিতামাতা কখনো
আমাকে তাঁর হতে পৃথক হওয়ার অনুমতি দিবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তারপর তিনি বললেন
যে, আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “হে নবী! তোমার স্ত্রীদের বল, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও
তার চাকচিক্য কামনা কর তবে এসো, আমি তোমাদের কিছু ভোগসামগ্রী দিয়ে ভদ্রভাবে বিদায়
করে দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও আখিরাতের সুখ স্বাচ্ছন্দ লাভ করতে
চাও, তবে তোমাদের ভিতর যারা সৎকর্মশীল তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা মহান পুরস্কার
প্রস্তুত করে রেখেছেন” – (সূরা আহযাব ২৮-২৯)। আমি বললাম, আমি কী বিষয়ে আমার পিতা
মাতার সাথে পরামর্শ করব! আমি তো আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও আখিরাতের জীবনই কামনা করি।
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি যে উত্তর দিয়েছি, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর অপর স্ত্রীগণও একই রকম উত্তর দেন।
সহিহঃ বুখারি (৪৭৮৬), মুসলিম।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সাহিহ । ইমাম জুহরি (রহঃ)
উরয়াহ (রহঃ) হতে এবং তিনি আয়িশা (রহঃ) হতে এই সুত্রেও এ হাদিস বর্ণিত আছে ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২০৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ
الأَصْبَهَانِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ،
عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، رَبِيبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَّ : (
إنمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ
وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ) فِي بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ فَدَعَا فَاطِمَةَ
وَحَسَنًا وَحُسَيْنًا فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ وَعَلِيٌّ خَلْفَ ظَهْرِهِ
فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ ثُمَّ قَالَ " اللَّهُمَّ هَؤُلاَءِ أَهْلُ
بَيْتِي فَأَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا " .
قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ وَأَنَا مَعَهُمْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَالَ "
أَنْتِ عَلَى مَكَانِكِ وَأَنْتِ عَلَى خَيْرٍ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي
سَلَمَةَ .
উমার
ইবনু আবি সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যিনি রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আশ্রয়ে লালিত-পালিত হন। তিনি বলেন, উম্মু
সালামাহ (রাঃ) এর ঘরে রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর যখন এ আয়াত
অবতীর্ণ হল (অনুবাদ) “আল্লাহ তা’আলা তো চান আহ্লে বাইত হতে অপবিত্রতা দূর করতে এবং
তোমাদের কে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে”– (সূরা আহযাবঃ ৩৩), তখন তিনি ফাতিমাহ, হাসান
ও হুসাইন (রাঃ) কে ডাকলেন এবং তাদেরকে একটি কম্বলের ভিতর ঢেকে নিলেন। আলি (রাঃ)
তাঁর পেছনে ছিলেন। তিনি তাকেও কম্বলের ভিতরে নিয়ে নিলেন। তারপর তিনি বলেনঃ “হে
আল্লাহ! এরা আমার ‘আহলে বাইত’ (পরিবার সদস্য)। তুমি তাদের ভিতর হতে অপরিছন্নতা দূর
করে দাও এবং সম্পূর্ণরূপে পরিচ্ছন্ন করে দাও”। উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন, হে
আল্লাহর নবী! আমিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেনঃ তুমি স্ব-স্থানে থাক এবং
তুমি কল্যাণের মধ্যেই আছ।
সহিহঃ রাওযুন নাযির (৯৭৬, ১১৯০), মুসলিম।
আবু ঈসা বলেন, আমর ইবনু আবু সালামাহ হতে আতার রিওয়ায়াত
হিসেবে এ হাদিসটি গারিব ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২০৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَمُرُّ بِبَابِ
فَاطِمَةَ سِتَّةَ أَشْهُرٍ إِذَا خَرَجَ إِلَى صَلاَةِ الْفَجْرِ يَقُولُ
" الصَّلاَةَ يَا أَهْلَ الْبَيْتِ : ( إنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ
لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا )
" . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ إِنَّمَا
نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ
أَبِي الْحَمْرَاءِ وَمَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ وَأُمِّ سَلَمَةَ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছয় মাস পর্যন্ত এই চর্চা ছিল যে, তিনি
ফজরের নামাযের জন্য ফাতিমা (রাঃ)-এর ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বলতেনঃ "হে
আহ্লে বাইত! তোমরা নামায কায়িম কর। আল্লাহ্ তা'আলা ইচ্ছা করেন, তোমাদের নবীর ঘরের
লোকদের মধ্য হতে ময়লা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে"।
যঈফ, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা বলেনঃ উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি হাসান গারীব।
আমরা শুধুমাত্র হাম্মাদ ইবনু সালামার সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। এ অনুচ্ছেদে আবুল হামরাআ,
মাকিল ইবনু ইয়াসার ও উম্মু সালামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২০৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا دَاوُدُ بْنُ
الزِّبْرِقَانِ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ
عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ لَوْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
كَاتِمًا شَيْئًا مِنَ الْوَحْىِ لَكَتَمَ هَذِهِ الآيَةَ : ( إِذْ تَقُولُ
لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ ) يَعْنِي بِالإِسْلاَمِ : (
وأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ ) بِالْعِتْقِ فَأَعْتَقْتَهُ : ( أمْسِكْ عَلَيْكَ
زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى
النَّاسَ وَاللَّهُ أَحَقُّ أَنْ تَخْشَاهُ ) إِلَى قَوْلِهِ : (وكَانَ
أَمْرُ اللَّهِ مَفْعُولاً ) وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا
تَزَوَّجَهَا قَالُوا تَزَوَّجَ حَلِيلَةَ ابْنِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى
: ( ما كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَسُولَ
اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ ) وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
تَبَنَّاهُ وَهُوَ صَغِيرٌ فَلَبِثَ حَتَّى صَارَ رَجُلاً يُقَالُ لَهُ زَيْدُ
بْنُ مُحَمَّدٍ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( ادعُوهُمْ لآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ
عِنْدَ اللَّهِ فَإِنْ لَمْ تَعْلَمُوا آبَاءَهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ
وَمَوَالِيكُمْ ) فُلاَنٌ مَوْلَى فُلاَنٍ وَفُلاَنٌ أَخُو فُلاَنٍ (هُوَ
أَقْسَطُ عِنْدَ اللَّهِ ) يَعْنِي أَعْدَلُ عِنْدَ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আইশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি ওয়াহীর কোন অংশ গোপন করতেন তাহলে এই অংশ
গোপন করতেনঃ “স্মরণ কর, যার প্রতি আল্লাহ্ তা’আলা (ইসলাম গ্রহণ করার) অনুগ্রহ
করেছেন এবং আপনিও যার উপর (দাসত্বমুক্ত করে) অনুগ্রহ করেছেন আপনি তাকে বলেছেন,
তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখ এবং আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর। আপনি আপনার
মনের মধ্যে যে কথা লুকিয়েছেন, তা আল্লাহ্ তা’আলা প্রকাশ করে দিচ্ছেন। আপনি লোকভয়
করছিলেন, অথচ আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় করা আপনার পক্ষে অধিকতর সংগত। পরে যাইদ যখন তার
(যাইনাবের) সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে (যাইনাবকে) আপনার নিকট
বিয়ে দিলাম, যেন মু’মিনদের পালিত ছেলেরা নিজ স্ত্রীর সাথে বিবাহ সূত্র ছিন্ন করলে
সেই সব নারীদের বিবাহ করায় মু’মিন লোকদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহ্ তা’আলার
নির্দেশ কার্যকারী হয়েই থাকে” (সূরাঃ আল-আহযাব- ৩৭)।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তাকে (যাইনাবকে) বিয়ে করলেন
তখন লোকেরা বলতে লাগল, তিনি নিজের ছেলের বিবিকে বিয়ে করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে
আল্লাহ্ তা’আলা আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “মুহাম্মাদ তোমাদের পুরুষ লোকদের মধ্যে কারো
পিতা নন, বরং আল্লাহ্র রাসূল ও সর্বশেষ নবী” (সূরাঃ আল-আহযাব- ৪০)। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে পালিত পুত্র বানিয়েছিলেন। তিনি (যাইদ)
তখন বালক ছিলেন। তিনি তাঁর কাছে থাকলেন এবং ধীরে ধীরে বেড়ে উঠলেন। তাকে যাইদ ইবনু
মুহাম্মাদ বলে ডাকা হত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা’আলা আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ
“পালিত ছেলেদেরকে তোমরা তাদের পিতার সাথে সম্পর্ক সূত্রে ডাকো, এটা আল্লাহ্
তা’আলার নিকটে বেশি ন্যায়সংগত।
আর তোমরা যদি তাদের পিতার পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের দীনী ভাই এবং সাথী”
(সূরাঃ আল-আহযাব- ৫) অর্থাৎ অমুক অমুকের বন্ধু এবং অমুক অমুকের ভাই। এটাই আল্লাহ্
তা’আলার নিকট বেশি ন্যায়সংগত কথা অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে বেশি ন্যায়ানুগ কথা।
সনদ অত্যন্ত দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। অন্য এক সূত্রে এ হাদীস
দাঊদ ইবনু আবূ হিন্দ হতে, তিনি শাবী হতে, তিনি মাসরূক হতে, তিনি আইশা (রাঃ) হতে সংক্ষিপ্ত
আকারে বর্ণনা করেছেন। আইশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যদি ওয়াহীর কোন অংশ গোপন করতেন, তবে এই আয়াত গোপন করতেনঃ ‘যখন তুমি সেই ব্যক্তিকে বলেছিলে,
যার প্রতি আল্লাহ্ তা’আলা এবং তুমি অনুগ্রহ করেছিলে….” আয়াতের শেষ পর্যন্ত। এ সূত্রে
হাদীসটি বিস্তারিত আকারে বর্ণিত হয়নি। এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ইবনু ওয়ায্যাহ
আলকূফী, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু ইদরীস হতে, তিনি দাঊদ ইবনু আবী হিন্দ হতে।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
৩২০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ،
عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ
عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ لَوْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
كَاتِمًا شَيْئًا مِنَ الْوَحْىِ لَكَتَمَ هَذِهِ الآيَةَِ : ( إذْ تَقُولُ
لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ ) الآيَةَ . قَالَ
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি ওয়াহীর কোন অংশ গোপনকারী হতেন, তাহলে
অবশ্যই তিনি এ আয়াত গোপন করতেন (অনুবাদ)ঃ “যখন তুমি সে লোককে বলেছিলে যার প্রতি
আল্লাহ তা‘আলা এবং তুমি দয়া করেছিলে......”- (সূরা আহ্যাব ৩৭) শেষ পর্যন্ত।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২০৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ،
عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ مَا كُنَّا
نَدْعُو زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ إِلاَّ زَيْدَ بْنَ مُحَمَّدٍ حَتَّى نَزَلَ
الْقُرْآنُ : ( ادعُوهُمْ لآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللَّهِ ) .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যাইদ
ইবনু হারিসাহ্ না ডেকে বরং যাইদ ইবনু মুহাম্মাদ ডাকতাম। অবশেষে নাযিল হলঃ “তোমরা
তাদেরকে তাদের পিতার পরিচয়ে ডাকো। এটাই আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট বেশি ন্যায়সঙ্গত”-
(সূরা আহ্যাব ৫)।
সহীহঃ বুখারী (৪৭৮২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২১০
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ قَزَعَةَ، - بَصْرِيٌّ - حَدَّثَنَا
مَسْلَمَةُ بْنُ عَلْقَمَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ عَامِرٍ
الشَّعْبِيِّ، فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : ( ما كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا
أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ ) قَالَ مَا كَانَ لِيَعِيشَ لَهُ فِيكُمْ وَلَدٌ
ذَكَرٌ .
আমির
আশ-শাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহ্র বাণীঃ
“মুহাম্মাদ তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন” (সূরাঃ আল-আহ্যাব- ৪০) প্রসঙ্গে
বলেনঃ এ আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছেঃ তোমাদের মাঝে তাঁর কোন ছেলে সন্তান জীবিত থাকবে না।
যঈফ, সনদ বিচ্ছিন্ন
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২১১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنْ حُسَيْنٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ أُمِّ
عُمَارَةَ الأَنْصَارِيَّةِ، أَنَّهَا أَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَتْ مَا أَرَى كُلَّ شَيْءٍ إِلاَّ لِلرِّجَالِ وَمَا أَرَى النِّسَاءَ
يُذْكَرْنَ بِشَيْءٍ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (إن الْمُسْلِمِينَ
وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَإِنَّمَا يُعْرَفُ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ
هَذَا الْوَجْهِ .
উম্মু
‘উমারাহ্ আল-আনসারিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেনঃ আমি (কুরআনে) প্রতিটি প্রসঙ্গ পুরুষদের
জন্যই উল্লেখিত দেখতে পাচ্ছি। অথচ মহিলাদের প্রসঙ্গে কোন বিষয়ে আলোচনা দেখছি না।
তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ)ঃ “নিশ্চয় যেসব পুরুষ ও স্ত্রীলোক মুসলিম, মু’মিন,
আল্লাহ্ তা‘আলার অনুগত, সত্য পথের পথিক, ধৈর্যশীল, আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভয়কারী,
দান-খাইরাতকারী রোযা পালনকারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হিফাযাতকারী এবং বেশি পরিমাণে
আল্লাহ্ তা‘আলাকে মনে করে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের জন্য ক্ষমা ও মহাপুরস্কার
রেখেছেন”- (সূরা আহ্যাব ৩৫)।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। উল্লেখিত সনদেই
শুধু আমরা এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২১২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ :
(وتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى النَّاسَ ) فِي
شَأْنِ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ جَاءَ زَيْدٌ يَشْكُو فَهَمَّ بِطَلاَقِهَا
فَاسْتَأْمَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم " أَمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (অনুবাদ)ঃ
“তুমি (নাবী) নিজের মনে সে কথা লুকিয়ে রেখেছিলে, যা আল্লাহ্ তা‘আলা প্রকাশ
করবেন”- (সূরা আহ্যাব ৩৭), এ আয়াত তখন অবতীর্ণ হয় যাইদ (রাঃ) যখন যাইনাব বিনতু
জাহ্শ (রাঃ) প্রসঙ্গে অভিযোগ করতে এলেন। তিনি যাইনাবকে ত্বালাক্ব দেয়ার ইচ্ছা
ব্যক্ত করেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অনুমতি চান। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “তোমার স্ত্রীকে স্বীয় বিবাহধীনে রাখ
এবং আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর”- (সূরা আহ্যাব ৩৭)।
সহীহঃ বুখারী (৭৪২০)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২১৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ نَزَلَتْ
هَذِهِ الآيَةُ فِي زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ : (فلَمَّا قَضَى زَيْدٌ مِنْهَا
وَطَرًا زَوَّجْنَاكَهَا ) قَالَ فَكَانَتْ تَفْتَخِرُ عَلَى أَزْوَاجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَقُولُ زَوَّجَكُنَّ أَهْلُكُنَّ وَزَوَّجَنِي
اللَّهُ مِنْ فَوْقِ سَبْعِ سَمَوَاتٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যাইনাব বিনতু
জাহশ সম্পর্কে যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল (অনুবাদ)ঃ “তারপর যাইদ যখন তার (যাইনাবের)
সাথে বিয়ের সম্পর্ক শেষ করল তখন আমরা তাকে (যাইনাবকে) তোমার কাছে বিয়ে দিলাম,” তখন
যাইনাব বিনতু জাহ্শ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীদের
সামনে গর্ব ভরে বলতেন, তোমাদেরকে তোমাদের পরিবারের লোকেরা বিয়ে দিয়েছেন, আর আমাকে
বিয়ে দিয়েছেন সাত আসমানের উপর হতে আল্লাহ তা‘আলা।
সহীহঃ মুখাতাসার আল-ঊলুয়ি (৮৪/৬), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২১৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أُمِّ
هَانِئٍ بِنْتِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَتْ خَطَبَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَاعْتَذَرْتُ إِلَيْهِ فَعَذَرَنِي ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى :
(إنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللاَّتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا
مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ
عَمَّاتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَالاَتِكَ اللاَّتِي هَاجَرْنَ مَعَكَ
وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ ) الآيَةَ قَالَتْ
فَلَمْ أَكُنْ أَحِلُّ لَهُ لأَنِّي لَمْ أُهَاجِرْ كُنْتُ مِنَ الطُّلَقَاءِ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ السُّدِّيِّ .
আবূ
তালিব-কন্যা উম্মু হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বিয়ে করার পয়গাম পাঠান। আমি তাঁকে নিজের
অক্ষমতা জানালাম। তিনি আমার আপত্তি গ্রহণ করলেন। তারপর আল্লাহ্ তা’আলা আয়াত
অবতীর্ণ করেনঃ “হে নবী! আমরা তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার সেই স্ত্রীদের, যাদের
মোহরানা তুমি আদায় করেছ এবং সেই মহিলাদেরকেও (বৈধ করেছি), যারা আল্লাহ্ তা’আলার
দেয়া দাসীদের মধ্য হতে তোমার মালিকানাভুক্ত হয়েছে, তোমার সেই চাচাতো, ফুফাতো ও
মামাতো বোনদেরকেও (বৈধ করেছি), যারা তোমার সাথে হিযরাত করে এসেছে, সেই মু’মিন
মহিলাকেও, যে নিজেকে নবীর জন্য হেবা করে, যদি নবী তাকে বিয়ে করতে চায়। এই
সুবিধাদান বিশেষভাবে তোমার জন্য, অন্যান্য ইমানদার লোকদের জন্য নয়” (সূরাঃ আল-আহ্যাব-
৫০)। রাবী (উম্মু হানী) বলেনঃ এ কারণেই আমি তাঁর জন্য বৈধ ছিলাম না। কেননা আমি
তাঁর সাথে হিযরাত করিনি, আমি ছিলাম তুলাকাভুক্ত।
সনদ অত্যন্ত দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আমরা শুধু উল্লেখিত
সূত্রেই সুদ্দীর হাদীস হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃখুবই দুর্বল
৩২১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، عَنْ عَبْدِ
الْحَمِيدِ بْنِ بَهْرَامَ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ
عَبَّاسٍ رضى الله عنهما نُهِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ
أَصْنَافِ النِّسَاءِ إِلاَّ مَا كَانَ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ الْمُهَاجِرَاتِ قَالَ
: ( لا يَحِلُّ لَكَ النِّسَاءُ مِنْ بَعْدُ وَلاَ أَنْ تَبَدَّلَ بِهِنَّ
مِنْ أَزْوَاجٍ وَلَوْ أَعْجَبَكَ حُسْنُهُنَّ إِلاَّ مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ )
فَأَحَلَّ اللَّهُ فَتَيَاتِكُمُ الْمُؤْمِنَاتِ وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ
وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ وَحَرَّمَ كُلَّ ذَاتِ دِينٍ غَيْرَ الإِسْلاَمِ
ثُمَّ قَالَ : (ومَنْ يَكْفُرْ بِالإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ
فِي الآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ ) وَقَالَ : ( يا أَيُّهَا النَّبِيُّ
إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللاَّتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا
مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَيْكَ ) إِلَى قَوْلِهِ : (
خالِصَةً لَكَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ ) وَحَرَّمَ مَا سِوَى ذَلِكَ مِنْ
أَصْنَافِ النِّسَاءِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ إِنَّمَا
نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ بَهْرَامَ . قَالَ سَمِعْتُ
أَحْمَدَ بْنَ الْحَسَنِ يَقُولُ قَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلِ لاَ بَأْسَ
بِحَدِيثِ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ بَهْرَامَ عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হিযরাতকারিনী মু’মিন স্ত্রীলোকদের ছাড়া
অন্য স্ত্রীলোকদেরকে বিয়ে করতে মানা করা হয়েছে। অতএব আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ “এরপর
তোমার জন্য কোন নারী হালাল নয় এবং তোমার স্ত্রীদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ
করারও অনুমতি নেই, যদিও তাদের রূপ সৌন্দর্য তোমাকে মুগ্ধ করে। তবে তোমার
অধিকারভুক্ত দাসীদের ব্যাপার স্বতন্ত্র” (সূরাঃ আল-আহ্যাব- ৫২)। আল্লাহ্ তা’আলা
তোমাদের মু’মিন দাসীদের বৈধ করেছেন। “এবং সেই মু’মিন নারীকেও (বৈধ করা হয়েছে) যে
নিজেকে নবীর জন্য হেবা করে” (সূরাঃ আল-আহ্যাব- ৫০)। মুসলমান স্ত্রীলোক ব্যতীত
অন্যান্য ধর্মের স্ত্রীলোকদের বিয়ে করা তাঁর জন্য অবৈধ করা হয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা
বলেনঃ “কেউ ঈমান অস্বীকার করলে তার সকল কর্মফল নিষ্ফল হবে এবং আখিরাতে সে
ক্ষতিগ্রস্ত হবে” (সূরাঃ আল-মায়িদাহ- ৫)। আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেছেনঃ “হে নবী!
আমরা তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার সেই স্ত্রীদের যাদের মোহরানা তুমি পরিশোধ করেছ,
সেই মহিলাদেরকেও যারা আল্লাহ্ তা’আলার দেয়া দাসীদের মধ্য হতে তোমার মালিকানাভুক্ত
হয়…. এই বিশেষ সুবিধা শুধু তোমাকেই দেয়া হয়েছে, মু’মিনদেরকে নয়” (সূরাঃ আল-আহ্যাব-
৫০)। এ ছাড়া অন্য সব ধরনের মহিলাদের অবৈধ করা হয়েছে।
সনদ দুর্বল,
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আমরা শুধু আব্দুল হামীদ
ইবনু বাহরামির রিওয়ায়াত হিসেবেই এ হাদীস জেনেছি। আমি আহমাদ ইবনুল হাসানকে বলতে শুনেছি,
ইমাম আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) বলেন, শাহ্র ইবনু হাওশাবের সূত্রে আবদুল হামীদ ইবনু বাহরামের
বর্ণিত হাদীসে আপত্তির কিছু নেই।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২১৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عَطَاءٍ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ مَا مَاتَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم حَتَّى أُحِلَّ لَهُ النِّسَاءُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পূর্বেই এ সব স্ত্রীলোক তাঁর
জন্য হালাল করা হয়।
সনদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَشْهَلُ بْنُ
حَاتِمٍ، قَالَ ابْنُ عَوْنٍ حُدِّثْنَاهُ عَنْ عَمْرِو بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَى بَابَ
امْرَأَةٍ عَرَّسَ بِهَا فَإِذَا عِنْدَهَا قَوْمٌ فَانْطَلَقَ فَقَضَى حَاجَتَهُ
فَاحْتَبَسَ ثُمَّ رَجَعَ وَعِنْدَهَا قَوْمٌ فَانْطَلَقَ فَقَضَى حَاجَتَهُ
فَرَجَعَ وَقَدْ خَرَجُوا قَالَ فَدَخَلَ وَأَرْخَى بَيْنِي وَبَيْنَهُ سِتْرًا
قَالَ فَذَكَرْتُهُ لأَبِي طَلْحَةَ قَالَ فَقَالَ لَئِنْ كَانَ كَمَا تَقُولُ
لَيَنْزِلَنَّ فِي هَذَا شَيْءٌ . فَنَزَلَتْ آيَةُ الْحِجَابِ . هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তাঁর সদ্য
বিয়ে করা স্ত্রীর ঘরের দরজায় এসে দেখেন যে, তার ঘরে কিছু সংখ্যক লোক কথাবার্তায়
ব্যস্ত। তিনি ফিরে গেলেন এবং নিজের কিছু কাজ করলেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর তিনি
আবার ফিরে এলেন। তখনো তার ঘরে লোকেরা আলাপে লিপ্ত ছিল। তিনি এবারও ফিরে গেলেন এবং
নিজের কিছু কাজ করলেন। তিনি আবার তার ঘরের দিকে রাওয়ানা হলেন। এ সময়ের মধ্যে তারা
সেখান হতে চলে গেছে। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি ঘরের মধ্যে ঢুকে আমার ও তাঁর মধ্যে
একটি একটি পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এ ঘটনা আবূ ত্বালহা (রাঃ)-এর
নিকট বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, তুমি যা বলেছ তা যদি ঠিক হয়, তবে এ বিষয়ে নিশ্চয়ই
কোন আয়াত অবতীর্ণ হবে। বর্ণনাকারী বলেন, এই প্রেক্ষিতেই পর্দা সম্পর্কিত আয়াত
(সূরা আহ্যাব ৫৩-৫৫) অবতীর্ণ হয়।
সহীহঃ বুখারী (৫১৬৬, ৫৪৬৬, ৬২৩৮) অনুরূপ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি হাসান গারীব
।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২১৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ
سُلَيْمَانَ الضُّبَعِيُّ، عَنِ الْجَعْدِ بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، رضى الله عنه قَالَ تَزَوَّجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَدَخَلَ بِأَهْلِهِ - قَالَ - فَصَنَعَتْ أُمِّي أُمُّ سُلَيْمٍ حَيْسًا
فَجَعَلَتْهُ فِي تَوْرٍ فَقَالَتْ يَا أَنَسُ اذْهَبْ بِهَذَا إِلَى رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْ لَهُ بَعَثَتْ إِلَيْكَ بِهَا أُمِّي وَهِيَ تُقْرِئُكَ
السَّلاَمَ وَتَقُولُ إِنَّ هَذَا لَكَ مِنَّا قَلِيلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ .
قَالَ فَذَهَبْتُ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنَّ
أُمِّي تُقْرِئُكَ السَّلاَمَ وَتَقُولُ إِنَّ هَذَا مِنَّا لَكَ قَلِيلٌ .
فَقَالَ " ضَعْهُ " . ثُمَّ قَالَ " اذْهَبْ فَادْعُ لِي
فُلاَنًا وَفُلاَنًا وَفُلاَنًا وَمَنْ لَقِيتَ " . فَسَمَّى رِجَالاً
قَالَ فَدَعَوْتُ مَنْ سَمَّى وَمَنْ لَقِيتُ قَالَ قُلْتُ لأَنَسٍ عَدَدُكُمْ
كَمْ كَانُوا قَالَ زُهَاءَ ثَلاَثِمِائَةٍ . قَالَ وَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " يَا أَنَسُ هَاتِ التَّوْرَ " . قَالَ
فَدَخَلُوا حَتَّى امْتَلأَتِ الصُّفَّةُ وَالْحُجْرَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " لِيَتَحَلَّقْ عَشَرَةٌ عَشَرَةٌ وَلْيَأْكُلْ كُلُّ
إِنْسَانٍ مِمَّا يَلِيهِ " . قَالَ فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا قَالَ
فَخَرَجَتْ طَائِفَةٌ وَدَخَلَتْ طَائِفَةٌ حَتَّى أَكَلُوا كُلُّهُمْ . قَالَ
فَقَالَ لِي " يَا أَنَسُ ارْفَعْ " . قَالَ فَرَفَعْتُ فَمَا
أَدْرِي حِينَ وَضَعْتُ كَانَ أَكْثَرَ أَمْ حِينَ رَفَعْتُ قَالَ وَجَلَسَ
مِنْهُمْ طَوَائِفُ يَتَحَدَّثُونَ فِي بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ وَزَوْجَتُهُ مُوَلِّيَةٌ وَجْهَهَا
إِلَى الْحَائِطِ فَثَقُلُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَخَرَجَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَى نِسَائِهِ ثُمَّ رَجَعَ
فَلَمَّا رَأَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ رَجَعَ ظَنُّوا
أَنَّهُمْ قَدْ ثَقُلُوا عَلَيْهِ قَالَ فَابْتَدَرُوا الْبَابَ فَخَرَجُوا
كُلُّهُمْ وَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَرْخَى السِّتْرَ
وَدَخَلَ وَأَنَا جَالِسٌ فِي الْحُجْرَةِ فَلَمْ يَلْبَثْ إِلاَّ يَسِيرًا حَتَّى
خَرَجَ عَلَىَّ وَأُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَاتُ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَرَأَهُنَّ عَلَى النَّاسِ : ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلاَّ أَنْ يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ
غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ . قَالَ الْجَعْدُ قَالَ
أَنَسٌ أَنَا أَحْدَثُ النَّاسِ عَهْدًا بِهَذِهِ الآيَاتِ وَحُجِبْنَ نِسَاءُ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَالْجَعْدُ هُوَ ابْنُ عُثْمَانَ وَيُقَالُ هُوَ ابْنُ دِينَارٍ
وَيُكْنَى أَبَا عُثْمَانَ بَصْرِيٌّ وَهُوَ ثِقَةٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ
رَوَى عَنْهُ يُونُسُ بْنُ عُبَيْدٍ وَشُعْبَةُ وَحَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিয়ে করলেন এবং নিজের ঘরে গেলেন। বর্ণনাকারী
বলেন, আমার মা উম্মু সুলাইম (রাঃ) হাইস (খেজুর, ঘি ও ছাতু সহযোগে এক প্রকার
মিষ্টান্ন) বানালেন। তিনি একটি ছোট পাত্রে তা রেখে বললেন, হে আনাস! এটা নিয়ে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। তাঁকে বল, ‘এটা আমার
মা আপনার জন্য পাঠিয়েছেন, আর তিনি আপনাকে সালাম জানিয়েছেন এবং বলেছেন, হে আল্লাহর
রাসূল! এটা আমাদের দিক হতে আপনার জন্য একটি নগণ্য উপহার। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এই
‘হাইস’ নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলাম এবং
বললাম, আমার মা আপনাকে সালাম জানিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন, এটা আমাদের দিক হতে আপনার
জন্য খুব সামান্য উপহার। তিনি বললেনঃ এটা রাখ। তারপর তিনি বললেনঃ তুমি গিয়ে অমুক,
অমুক ও অমুক লোককে এবং পথিমধ্যে যাদের সঙ্গে তোমার কথা হবে তাদেরকেও দা’ওয়াত দিয়ে
নিয়ে আস। তিনি কয়েক লোকের নামও বলে দিলেন।
আনাস (রাঃ) বলেন, তিনি যাদের নাম উল্লেখ করে বলে দিয়েছেন এবং পথিমধ্যে আমার সঙ্গে
যাদের দেখা হয়েছে আমি তাদের সবাইকে দা’ওয়াত করে নিয়ে এলাম। অধঃস্তন বর্ণনাকারী
(জা’দ আবূ ‘উসমান) বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, তাদের মোট সংখ্যা কত
ছিল? তিনি বললেন, প্রায় তিন শত। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ হে আনাস! ছোট পাত্রটি নিয়ে এসো। আনাস (রাঃ)
বলেন, দা’ওয়াতকৃত ব্যক্তিরা এলে তাদের ভীড়ে চত্বর ও হুজরাহ্ ভরে গেল। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দশ দশজন করে গোলাকারে বসে যাও এবং
প্রতিটি লোক যেন নিজের নিকটের দিকে থেকে খায়। বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা পরিতৃপ্তি
সহকারে খেল। একদল খেয়ে চলে গেলে অপর দল খেতে বসত। এভাবে সবাই আহার করল। বর্ণনাকারী
বলেন, তিনি আমাকে বললেনঃ হে আনাস! পাত্রটি তুলে নিয়ে যাও। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি তা
উঠিয়ে নিলাম, কিন্তু বলতে পারব না, যখন আমি হাইসের পাত্র রেখেছিলাম তখন কি তাতে
অনেক হাইস ছিল না যখন তুলে নিলাম তখন বেশী ছিল!
আনাস (রাঃ) বলেন, দা’ওয়াতকৃতদের গল্পে রত কিছু লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘরে বসে আলাপে রত রইল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাদের বিদায় হওয়ার অপেক্ষায় বসে রইলেন। তাঁর স্ত্রী দেয়ালের দিকে মুখ
করে বসে রইলেন। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য একটি
বিরক্তিকর বোঝা হল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে গিয়ে তাঁর
স্ত্রীদের সালাম করলেন, তারপর আবার ফিরে এলেন। তারা যখন দেখল যে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে আসছেন, তখন তারা অনুভব করল যে, তারা তাঁর
জন্য বিরক্তির বিষয় হয়ে পড়েছে। অতএব তারা সকলে উঠে দরজা দিয়ে বের হয়ে গেল।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে পর্দা ছেড়ে দিয়ে হুজরায়
প্রবেশ করলেন। আমি হুজরার মধ্যে (পর্দার এ পাশে) বসে থাকলাম। কিছু সময় পর তিনি বের
হয়ে আমার নিকট এলেন। তখন নিম্নের আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইরে বের হয়ে গিয়ে লোকদের সামনে তা পড়লেন (অনুবাদ)ঃ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা বিনা অনুমতিতে নাবীর ঘরের মধ্যে প্রবেশ করো না এবং আহারের
জন্য এসে অপেক্ষায় বসে থেকো না। যদি তোমাদের আহারের জন্য দা’ওয়াত দেয়া হয় তবে
অবশ্যই আসবে, কিন্তু খাওয়া-দাওয়া শেষ করার সাথে সাথে সরে পড়বে এবং কথাবার্তায়
মাশগুল হবে না। তোমাদের এ ধরনের আচরণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
দুঃখ দেয় কিন্তু সে লজ্জায় কিছুই বলে না। আর আল্লাহ তা’আলা সত্য কথা বলতে লজ্জা
বোধ করেন না। নাবীর স্ত্রীদের নিকট তোমাদের কিছু চাওয়ার প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল
হতেই তাদের নিকট তা চাও। তোমাদের এবং তাদের অন্তরের পবিত্রতা রক্ষার জন্য এটাই ভাল
কাজ। আল্লাহ তা’আলার রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তার ইন্তিকালের পর তার স্ত্রীদের বিয়ে
করা তোমাদের জন্য কখনো জায়িয নয়। এটা আল্লাহ তা’আলার নিকট অতি বড় গুনাহ।”(সূরা আহ্যাব
৫৩)
জা’দ (রহঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমিই সকলের আগে এ আয়াত প্রসঙ্গে অবগত হই এবং
সেদিন হতেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীগণ পর্দা
করেন।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। জা’দ হলেন উসমানের
পুত্র। তাকে দীনারের ছেলেও বলা হয়। তার উপনাম আবূ ‘উসমান আল-বসরী। হাদীস বিশারদদের
মতে তিনি সিক্বাহ বর্ণনাকারী। ইউনুস ইবনু ‘উবাইদ, শু‘বাহ্ ও হাম্মাদ ইবনু যাইদ (রহঃ)
তার সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২১৯
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُجَالِدٍ، حَدَّثَنِي أَبِي،
عَنْ بَيَانٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، رضى الله عنه قَالَ بَنَى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِامْرَأَةٍ مِنْ نِسَائِهِ فَأَرْسَلَنِي فَدَعَوْتُ
قَوْمًا إِلَى الطَّعَامِ فَلَمَّا أَكَلُوا وَخَرَجُوا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم مُنْطَلِقًا قِبَلَ بَيْتِ عَائِشَةَ فَرَأَى رَجُلَيْنِ
جَالِسَيْنِ فَانْصَرَفَ رَاجِعًا فَقَامَ الرَّجُلاَنِ فَخَرَجَا فَأَنْزَلَ
اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ : ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَدْخُلُوا
بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلاَّ أَنْ يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ
إِنَاهُ ) وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ بَيَانٍ . وَرَوَى ثَابِتٌ عَنْ أَنَسٍ هَذَا
الْحَدِيثَ بِطُولِهِ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এক স্ত্রীর সাথে বাসর যাপন করলেন। তিনি
লোকদেরকে বিয়ের অনুষ্ঠানের দা’ওয়াত দেয়ার জন্য আমাকে পাঠান। আমি লোকদের খাবারের
দা’ওয়াত দিলাম। লোকেরা আহার করে বেরিয়ে চলে গেলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)-এর ঘরের দিকে গেলেন। তিনি দুই ব্যক্তিকে বসা
দেখে আবার ফিরে এলেন। তারপর লোক দু’টি উঠে চলে গেল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা আয়াত
অবতীর্ণ করেনঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা বিনা অনুমতিতে নাবীর ঘরে ঢুকো না এবং আহারের
অপেক্ষায়ও বসে থেকো না। তবে তোমাদের খাওয়ার দা’ওয়াত করা হলে তোমরা অবশ্যই আসবে,
কিন্তু আহার শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরে পড়বে এবং কথাবার্তায় মাশগুল হবে না” –
(সূরা আহ্যাব ৫৩)।
সহীহঃ বুখারী (৪৭৯১, ৬২৩৯, ৬২৭১) অনুরূপ।
এ হাদীসে দীর্ঘ ঘটনা রয়েছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, বাইয়ানের রিওয়াওয়াত
হিসেবে এটা হাসান গারীব হাদীস। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) হতে এ হাদীস দীর্ঘাকারে বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২২০
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ،
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمُجْمِرِ،
أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ الأَنْصَارِيَّ، وَعَبْدَ
اللَّهِ بْنَ زَيْدٍ الَّذِي، كَانَ أُرِيَ النِّدَاءَ بِالصَّلاَةِ أَخْبَرَهُ
عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّهُ قَالَ أَتَانَا رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم وَنَحْنُ فِي مَجْلِسِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فَقَالَ لَهُ بَشِيرُ
بْنُ سَعْدٍ أَمَرَنَا اللَّهُ أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ فَكَيْفَ نُصَلِّي
عَلَيْكَ قَالَ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى تَمَنَّيْنَا
أَنَّهُ لَمْ يَسْأَلْهُ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا
صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ
مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ فِي الْعَالَمِينَ إِنَّكَ
حَمِيدٌ مَجِيدٌ وَالسَّلاَمُ كَمَا قَدْ عُلِّمْتُمْ " . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي حُمَيْدٍ وَكَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ وَطَلْحَةَ بْنِ
عُبَيْدِ اللَّهِ وَأَبِي سَعِيدٍ وَزَيْدِ بْنِ خَارِجَةَ وَيُقَالُ ابْنُ
جَارِيَةَ وَبُرَيْدَةَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
মাস‘ঊদ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট আসলেন। আমরা এ সময় সা‘দ ইবনু
‘উবাইদাহ্র মাজলিসে হাযির ছিলাম। বাশীর ইবনু সা‘দ (রাঃ) তাঁকে বললেন, আল্লাহ
তা‘আলা আপনার উপর দরূদ পড়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা কিভাবে আপনার উপর দরূদ
পড়ব? বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিশ্চুপ
রইলেন। এমনকি আমাদের মনে হল, আমরা যদি তাঁকে জিজ্ঞেস না করতাম। তারপর রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা বল- “আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা
মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা সল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীম, ওয়া বারিক
‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইব্রাহীমা ফিল
‘আলামীন। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।” আর সালাম তো সেভাবেই যেভাবে তোমাদেরকে শেখানো
হয়েছে।
সহীহঃ সিফাতুস্ সালাত, সহীহ্ আবূ দাঊদ (৯০১), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে ‘আলী, আবূ হুমাইদ, কা’ব ইবনু ‘উজরাহ্, ত্বালহা
ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ, আবূ সা‘ঈদ, যাইদ ইবনু খারিজাহ্ বা জারিয়াহ্ এবং বুরাইদাহ্ (রাঃ)
হতেও হাদীস বর্ণিত আছে । আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২২১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ،
عَنْ عَوْفٍ، عَنِ الْحَسَنِ، وَمُحَمَّدٍ، وَخِلاَسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " أَنَّ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ
كَانَ رَجُلاً حَيِيًّا سِتِّيرًا مَا يُرَى مِنْ جِلْدِهِ شَيْءٌ اسْتِحْيَاءً
مِنْهُ فَآذَاهُ مَنْ آذَاهُ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ فَقَالُوا مَا يَسْتَتِرُ
هَذَا السِّتْرَ إِلاَّ مِنْ عَيْبٍ بِجِلْدِهِ إِمَّا بَرَصٌ وَإِمَّا أُدْرَةٌ
وَإِمَّا آفَةٌ وَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَرَادَ أَنْ يُبَرِّئَهُ مِمَّا
قَالُوا وَإِنَّ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ خَلاَ يَوْمًا وَحْدَهُ فَوَضَعَ
ثِيَابَهُ عَلَى حَجَرٍ ثُمَّ اغْتَسَلَ فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ إِلَى ثِيَابِهِ
لِيَأْخُذَهَا وَإِنَّ الْحَجَرَ عَدَا بِثَوْبِهِ فَأَخَذَ مُوسَى عَصَاهُ
فَطَلَبَ الْحَجَرَ فَجَعَلَ يَقُولُ ثَوْبِي حَجَرُ ثَوْبِي حَجَرُ حَتَّى
انْتَهَى إِلَى مَلإٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ فَرَأَوْهُ عُرْيَانًا أَحْسَنَ
النَّاسِ خَلْقًا وَأَبْرَأَهُ مِمَّا كَانُوا يَقُولُونَ قَالَ وَقَامَ الْحَجَرُ
فَأَخَذَ ثَوْبَهُ وَلَبِسَهُ وَطَفِقَ بِالْحَجَرِ ضَرْبًا بِعَصَاهُ فَوَاللَّهِ
إِنَّ بِالْحَجَرِ لَنَدَبًا مِنْ أَثَرِ عَصَاهُ ثَلاَثًا أَوْ أَرْبَعًا أَوْ
خَمْسًا فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى : ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ
تَكُونُوا كَالَّذِينَ آذَوْا مُوسَى فَبَرَّأَهُ اللَّهُ مِمَّا قَالُوا وَكَانَ
عِنْدَ اللَّهِ وَجِيهًا ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم وَفِيهِ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেনঃ মূসা (‘আঃ) খুবই লজ্জাশীল লোক ছিলেন। তিনি
নিজের শরীর ভালভাবেই ঢেকে রাখতেন। লজ্জার কারণে তাঁর গায়ের কোন অংশই প্রকাশ পেত
না। বানী ইসরাঈলের মন্দ প্রকৃতির কয়েক লোক তাকে বিভিন্নভাবে দুঃখ দিত। এরা বলত,
তাঁর এভাবে দেহ ঢেকে রাখার কারণ তাঁর গায়ের কোন সমস্যা আছে অথবা তাঁর গায়ে ধবল রোগ
আছে অথবা তাঁর অণ্ডকোষ খুব বড় অথবা অন্য কোন সমস্যা আছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের এসব
অপবাদ হতে তাঁকে মুক্ত করার ইচ্ছা করলেন। মূসা (‘আঃ) এক দিন একাকী নিজের পোশাক
খুলে তা একটি পাথরের উপর রেখে গোসল করতে নামলেন। গোসল শেষে তিনি কাপড় নেয়ার জন্য
উঠে এলে পাথরটি তাঁর কাপড়সহ দৌড়াতে থাকে। মূসা (‘আঃ) নিজের লাঠি তুলে নিয়ে পাথরের
পিছে পিছে ছোটেন এবং বলতে থাকেনঃ হে পাথর! আমার কাপড় (ফিরিয়ে দাও), হে পাথর! আমার
কাপড় (ফিরিয়ে দাও)। এই বলে পাথরের পিছু ধাওয়া করতে করতে তিনি বানী ইসরাঈলের একটি
দলের নিকট পৌছে গেলেন। তারা তাঁকে বস্ত্রহীন অবস্থায় দেখতে পেল। তারা তাঁর সমস্ত
অঙ্গ-প্রতঙ্গ সুষ্ঠ সুন্দর দেখল। আল্লাহ তাকে তাদের অপবাদ হতে সম্পূর্ণ মুক্ত
করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ পাথর থেমে গেল এবং
তিনি তাঁর বস্ত্র নিয়ে পরিধান করলেন। তিনি নিজের লাঠি দিয়ে পাথরটিকে আঘাত করতে
লাগলেন। আল্লাহর ক্বসম! পাথরের উপর তাঁর লাঠির আঘাতের তিন, চার অথবা পাঁচটি দাগ
পড়ে গেল। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা‘আলা ফরমানঃ “হে ঈমানদারগণ! যেসব ব্যক্তি মূসাকে
দুঃখ দিয়েছিল তোমরা তাদের মত হয়ো না। আল্লাহ তা‘আলা তাদের বানানো কথাবার্তা হতে
তার নির্দোষিতা প্রমাণ করেছেন। তিনি আল্লাহ তা‘আলার নিকট সম্মানের পাত্র ছিলেন” –
(সূরা আহ্যাব ৬৯)।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি আবূ হুরাইরাহ
(রাঃ)-এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একাধিক সূত্রে
বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৫
সূরা
সাবা
৩২২২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ،
قَالُوا أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ الْحَكَمِ
النَّخَعِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو سَبْرَةَ النَّخَعِيُّ، عَنْ فَرْوَةَ بْنِ
مُسَيْكٍ الْمُرَادِيِّ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ
يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ أُقَاتِلُ مَنْ أَدْبَرَ مِنْ قَوْمِي بِمَنْ أَقْبَلَ
مِنْهُمْ فَأَذِنَ لِي فِي قِتَالِهِمْ وَأَمَّرَنِي فَلَمَّا خَرَجْتُ مِنْ
عِنْدِهِ سَأَلَ عَنِّي مَا فَعَلَ الْغُطَيْفِيُّ فَأُخْبِرَ أَنِّي قَدْ سِرْتُ
قَالَ فَأَرْسَلَ فِي أَثَرِي فَرَدَّنِي فَأَتَيْتُهُ وَهُوَ فِي نَفَرٍ مِنْ
أَصْحَابِهِ فَقَالَ " ادْعُ الْقَوْمَ فَمَنْ أَسْلَمَ مِنْهُمْ فَاقْبَلْ
مِنْهُ وَمَنْ لَمْ يُسْلِمْ فَلاَ تَعْجَلْ حَتَّى أُحْدِثَ إِلَيْكَ "
. قَالَ وَأُنْزِلَ فِي سَبَإٍ مَا أُنْزِلَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ
وَمَا سَبَأٌ أَرْضٌ أَوِ امْرَأَةٌ قَالَ " لَيْسَ بِأَرْضٍ وَلاَ
امْرَأَةٍ وَلَكِنَّهُ رَجُلٌ وَلَدَ عَشَرَةً مِنَ الْعَرَبِ فَتَيَامَنَ
مِنْهُمْ سِتَّةٌ وَتَشَاءَمَ مِنْهُمْ أَرْبَعَةٌ فَأَمَّا الَّذِينَ تَشَاءَمُوا
فَلَخْمٌ وَجُذَامٌ وَغَسَّانُ وَعَامِلَةٌ وَأَمَّا الَّذِينَ تَيَامَنُوا
فَالأَزْدُ وَالأَشْعَرِيُّونَ وَحِمْيَرُ وَمَذْحِجٌ وَأَنْمَارُ وَكِنْدَةُ
" . فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا أَنْمَارُ قَالَ "
الَّذِينَ مِنْهُمْ خَثْعَمُ وَبَجِيلَةُ " . وَرُوِيَ هَذَا عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
ফারওয়াহ্
ইবনু মুসাইক আল-মুরাদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার
গোত্রের যেসব ব্যক্তি অগ্রসর হয়েছে (ইসলাম গ্রহণ করেছে) তাদেরকে নিয়ে আমি কি আমার
গোত্রের পিছে পড়া ব্যক্তিদের (ইসলাম প্রত্যাখ্যানকারীদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? বর্ণনাকারী
বলেন, তিনি আমাকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি দিলেন এবং আমাকেই আমীর নিযুক্ত
করলেন। আমি তাঁর নিকট হতে বিদায় নিয়ে আসার পর তিনি আমার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেনঃ
গুতাইফী কোথায়? তাঁকে জানানো হল যে, আমি চলে গেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমার
পিছে পিছে এক লোক পাঠিয়ে আমাকে আবার ফিরিয়ে আনলেন। আমি যখন ফিরে আসি তখন তিনি তাঁর
সাহাবা পরিবেষ্টিত অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার গোত্রের লোকদের প্রথমে
ইসলামের দা’ওয়াত দিবে। তাদের মধ্যে কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে তা তুমি অনুমোদন করবে। আর
যে লোক ইসলাম গ্রহণ করবে না, আমার পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে
অস্ত্র ধারণ করার বিষয়ে ধৈর্যহারা হবে না।
রাবী বলেন, তারপর সাবা প্রসঙ্গে যা অবতীর্ণ হওয়ার ছিল তা নাযিল হল। এক লোক বলল, হে
আল্লাহর রাসূল! সাবা কি? কোন এলাকার নাম না কোন স্ত্রীলোকের নাম? তিনি বললেনঃ কোন
এলাকারও নাম নয় বা কোন স্ত্রীলোকেরও নাম নয়, বরং একজন পুরুষ ব্যক্তির নাম। তার
ঔরসে আরবের দশজন লোক জন্মগ্রহণ করে। তাদের ছয়জন ইয়ামানে (দক্ষিণ দিকে) এবং চারজন
সিরিয়ায় (বাঁ দিকে) বসতি স্থাপন করে। বাঁ দিকের ব্যক্তিদের নাম হলঃ লাখম, জুযাম,
গাসসান ও আমিলা (গোত্র)। আর ডান দিকে গড়ে উঠা বংশের নাম হলঃ আয্দ, আশ‘আরী,
হিমইয়ার, কিনদাহ্, মাযহিজ ও আনমার। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আনমার
কওমের ব্যক্তি কারা? তিনি বললেনঃ খাস‘আম ও বাজীলাহ্ বংশের লোকেরা এদের দলে।
হাদীসটি ইবনু ‘আব্বাসের বরাতেও নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩২২৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " إِذَا قَضَى اللَّهُ فِي السَّمَاءِ أَمْرًا ضَرَبَتِ
الْمَلاَئِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا خُضْعَانًا لِقَوْلِهِ كَأَنَّهَا سِلْسِلَةٌ
عَلَى صَفْوَانٍ فَإِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ قَالُوا مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ
قَالُوا الْحَقَّ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ قَالَ وَالشَّيَاطِينُ بَعْضُهُمْ
فَوْقَ بَعْضٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা যখন আসমানে কোন নির্দেশ ঘোষণা করেন,
তখন ফেরেশতারা এই আদেশের উপর আনুগত্য প্রদর্শনার্থে ভয় ও বিনম্রতার সাথে নিজেদের
পাখায় শব্দ করেন। মনে হয় যেন পাখাগুলো শিকলের মতো মসৃণ পাথরের উপর আঘাত করছে।
তাদের মন হতে ভয়ের ভাব কেটে গেলে তারা একে অপরকে প্রশ্ন করেনঃ “তোমাদের প্রতিপালক
কি বললেন? তারা বলেন, তিনি সঠিক বলেছেন। তিনি তো অতীব মহান ও শ্রেষ্ঠ” – (সূরা
সাবা ২৩)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শাইতানেরা তখন
একে অপরের কাছে সমবেত হয় (ঊর্ধ্ব জগতের কথা শুনার জন্য)।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৯৪), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২২৪
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
الأَعْلَى، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ
فِي نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِهِ إِذْ رُمِيَ بِنَجْمٍ فَاسْتَنَارَ فَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا كُنْتُمْ تَقُولُونَ لِمِثْلِ هَذَا فِي
الْجَاهِلِيَّةِ إِذَا رَأَيْتُمُوهُ " . قَالُوا كُنَّا نَقُولُ يَمُوتُ
عَظِيمٌ أَوْ يُولَدُ عَظِيمٌ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" فَإِنَّهُ لاَ يُرْمَى بِهِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ وَلَكِنَّ
رَبَّنَا عَزَّ وَجَلَّ إِذَا قَضَى أَمْرًا سَبَّحَ لَهُ حَمَلَةُ الْعَرْشِ
ثُمَّ سَبَّحَ أَهْلُ السَّمَاءِ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ
يَلُونَهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ التَّسْبِيحُ إِلَى هَذِهِ السَّمَاءِ ثُمَّ سَأَلَ
أَهْلُ السَّمَاءِ السَّادِسَةِ أَهْلَ السَّمَاءِ السَّابِعَةِ مَاذَا قَالَ
رَبُّكُمْ قَالَ فَيُخْبِرُونَهُمْ ثُمَّ يَسْتَخْبِرُ أَهْلُ كُلِّ سَمَاءٍ
حَتَّى يَبْلُغَ الْخَبَرُ أَهْلَ السَّمَاءِ الدُّنْيَا وَتَخْتَطِفُ
الشَّيَاطِينُ السَّمْعَ فَيُرْمَوْنَ فَيَقْذِفُونَهَا إِلَى أَوْلِيَائِهِمْ
فَمَا جَاءُوا بِهِ عَلَى وَجْهِهِ فَهُوَ حَقٌّ وَلَكِنَّهُمْ يُحَرِّفُونَ
وَيَزِيدُونَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এক দল সাহাবীর সঙ্গে বসা ছিলেন। এমন সময়
একটি উল্কা পতিত হল এবং আলোকিত হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ এরূপ উলকাপাত হতে দেখলে তোমরা জাহিলী যুগে কি বলতে? তারা বলল, আমরা
বলতাম, কোন মহান লোকের মৃত্যু হবে অথবা কোন মহান লোকের জন্ম হবে (এটা তারই
আলামাত)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কোন লোকের মৃত্যু
অথবা জন্মগ্রহণের আলামাত হিসেবে এটা পতিত হয় না, বরং মহা বারাকাতময় ও মহিমান্বিত
নামের অধিকারী আমাদের প্রতিপালক যখন কোন আদেশ জারী করেন তখন আরশ বহনকারী ফেরেশতারা
তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করেন। তারপর তাদের নিকটতম আসমানের অধিবাসীরা তাসবীহ
পড়তে থাকে, তারপর তাদের নিকটতম আসমানের অধিবাসীরা তাসবীহ পড়তে থাকে। এভাবে তাসবীহ
ও মহিমা ঘোষণার ধারা এই নিম্নবর্তী আসমানে এসে পৌঁছে যায়। তারপর ষষ্ঠ আসমানের
অধিবাসীরা সপ্তম আসমানের অধিবাসীদের প্রশ্ন করেন, তোমাদের প্রতিপালক কি বলেছেন?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারা তাদেরকে ব্যাপারটি
জানান। এভাবে প্রত্যেক আসমানের অধিবাসীরা তাদের উপরের আসমানের অধিবাসীদের একইভাবে
প্রশ্ন করেন। এভাবে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে এ খবর পৌঁছে যায়। শাইতানেরা এ তথ্য
শুনবার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। তখন এদের উপর উলকা ছুঁড়ে মারা হয়। এরা কিছু তথ্য এদের
সহগামীদের নিকট পাচার করে। এরা যা সংগ্রহ করে তা তো সত্য, কিন্তু তারা এতে কিছু
পরিবর্তন ও কিছু বৃদ্ধি ঘটায়।
সহীহঃ মুসলিম (৭/৩৬-৩৭)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। ইমাম যুহরী (রহঃ)
এ হাদীস ‘আলী ইবনু হুসাইনের সূত্রে ইবনু ‘আব্বাস হতে তিনি একদল আনসার সাহাবীর সনদে
বর্ণনা করেছেন। তারা বলেছেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট উপস্থিত ছিলাম... হাদীসের শেষ অবধি। এটি আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন আল-হুসাইন
ইবনু হুরাইস-ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম হতে, তিনি আওযা‘ঈ হতে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৬
সূরা
আল-মালায়িকাহ্ (আল-ফাত্বির)
৩২২৫
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى وَمُحَمَّدُ بْنُ
بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ
الْوَلِيدِ بْنِ عَيْزَارٍ، أَنَّهُ سَمِعَ رَجُلاً، مِنْ ثَقِيفٍ يُحَدِّثُ عَنْ
رَجُلٍ، مِنْ كِنَانَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ فِي هَذِهِ الآيَةِ : (ثمَّ أَوْرَثْنَا
الْكِتَابَ الَّذِينَ اصْطَفَيْنَا مِنْ عِبَادِنَا فَمِنْهُمْ ظَالِمٌ لِنَفْسِهِ
وَمِنْهُمْ مُقْتَصِدٌ وَمِنْهُمْ سَابِقٌ بِالْخَيْرَاتِ ) قَالَ "
هَؤُلاَءِ كُلُّهُمْ بِمَنْزِلَةٍ وَاحِدَةٍ وَكُلُّهُمْ فِي الْجَنَّةِ "
. قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ .
আবূ
সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ (অনুবাদ) “তারপর আমাদের
বান্দাদের ভিতর হতে বাছাই করা ব্যক্তিদেরকে আমরা এ কিতাবের উত্তরাধিকারী বানিয়েছি।
তাদের কেউ নিজেদের উপরই যুল্মকারী হয়েছে, কেউ মধ্যম পন্থা অবলম্বন করেছে এবং কেউ
আল্লাহ তা‘আলার অনুমতিক্রমে নেক কাজসমুহে অগ্রগামী হয়েছে” – (সূরা ফাত্বির ৩২)। এ
প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ আয়াতে বর্ণিত তিন
শ্রেণীর ব্যক্তিরা একই মর্যাদা সম্পন্ন (মু’মিন) এবং এরা সকলেই জান্নাতবাসী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব হাসান। আমরা এ হাদিসটি
শুধুমাত্র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উক্ত সনদেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৭
সূরা
ইয়াসীন
৩২২৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ وَزِيرٍ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ يُوسُفَ الأَزْرَقُ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ،
عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كَانَتْ بَنُو
سَلِمَةَ فِي نَاحِيَةِ الْمَدِينَةِ فَأَرَادُوا النُّقْلَةَ إِلَى قُرْبِ
الْمَسْجِدِ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (إنَّا نَحْنُ نُحْيِي الْمَوْتَى
وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ ) فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " إِنَّ آثَارَكُمْ تُكْتَبُ " . فَلَمْ يَنْتَقِلُوا .
قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ الثَّوْرِيِّ وَأَبُو سُفْيَانَ
هُوَ طَرِيفٌ السَّعْدِيُّ .
আবূ
সা‘ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বানূ
সালিমাহ্ বংশের বসতি মাদীনার এক পাশে ছিল। তারা সেখান হতে তাদের বসতি তুলে
মাসজিদে নাবাবীর নিকট চলে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। এই কারণে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়
(অনুবাদ)ঃ “আমরা নিশ্চয়ই মৃতকে জীবিত করি এবং তারা যা আগে পাঠায় আর যা পিছনে রেখে
যায় আমরা তা লিখে রাখি” – (সূরা ইয়াসীন ১২)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের পদচিহ্ন লেখা হবে। অতএব তোমরা বসতি স্থানান্তর করো না।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৭৮৫)
আবূ ‘ঈসা বলেন, সাওরী (রহঃ)-এর বর্ণনা হিসেবে এ হাদিসটি
হাসান গারীব। আবূ সুফ্ইয়ানের নাম ত্বরীফ আস-সা‘দী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২২৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ دَخَلْتُ
الْمَسْجِدَ حِينَ غَابَتِ الشَّمْسُ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ
فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَتَدْرِي يَا أَبَا ذَرٍّ أَيْنَ
تَذْهَبُ هَذِهِ " . قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ .
قَالَ " فَإِنَّهَا تَذْهَبُ فَتَسْتَأْذِنُ فِي السُّجُودِ فَيُؤْذَنُ
لَهَا وَكَأَنَّهَا قَدْ قِيلَ لَهَا اطْلَعِي مِنْ حَيْثُ جِئْتِ فَتَطْلُعُ مِنْ
مَغْرِبِهَا " . قَالَ ثُمَّ قَرَأَ : (وذلكَ مُسْتَقَرٌّ لَهَا )
قَالَ وَذَلِكَ قِرَاءَةُ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূর্য ডুবার
সময় আমি মাসজিদে ঢুকলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন (মাসজিদে)
বসা ছিলেন। তিনি বললেনঃ হে আবূ যার! তুমি কি জান, এটা (সূর্য) কোথায় যায়?
বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ এটা
গিয়ে সাজদাহ্র অনুমতি প্রার্থনা করে। তাকে সাজদাহ্র অনুমতি দেয়া হয়। এমন এক দিন
আসবে যখন তাকে বলা হবে, তুমি যেখানে এসেছ সেখান হতে উদিত হও। অতএব তা অস্ত যাওয়ার
স্থান হতে উদিত হবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি পড়েনঃ “এটাই তার একমাত্র
আশ্রয়স্থল” – (সূরা ইয়াসীন ৩৮)। বর্ণনাকারী বলেন, এটা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদের
ক্বিরাআত।
সহীহঃ বুখারী, এটি (২১৮৬) নং হাদীসের পুনরাবৃত্তি।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৮
সূরা
আস-সাফ্ফাত
৩২২৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ
بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ أَبِي سُلَيْمٍ، عَنْ بِشْرٍ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
مَا مِنْ دَاعٍ دَعَا إِلَى شَيْءٍ إِلاَّ كَانَ مَوْقُوفًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ
لاَزِمًا لَهُ لاَ يُفَارِقُهُ وَإِنْ دَعَا رَجُلٌ رَجُلاً " . ثُمَّ
قَرَأَ قَوْلَ اللَّهِ : ( وقِفُوهُمْ إِنَّهُمْ مَسْئُولُونَ * مَا لَكُمْ
لاَ تَنَاصَرُونَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন লোককে কোন মতবাদের
দিকে ডেকেছে, তাকে কিয়ামাতের দিন থামানো হবে, সে মাত্র এক ব্যক্তিকে সেদিকে ডেকে
থাকলেও। তাকে তার আহ্বানের পরিণতি ভোগ না করিয়ে রেহাই দেয়া হবে না। তারপর তিনি
আল্লাহ্ তা’আলার কিতাবের এই আয়াত পাঠ করেনঃ “এই লোকদের একটু থামাও, এদের নিকট কিছু
প্রশ্ন করার আছে। তোমাদের কি হল, তোমারা এখন পরস্পরের সাহায্যে এগিয়ে আস না কেন?”
(সূরাঃ আস-সাফ্ফাত- ২৪-২৫)
যঈফ, তা’লীকুর রাগীব (১/৫০), যিলালুল জুন্নাহ্(১১২)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২২৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ،
عَنْ زُهَيْرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنْ
أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ
قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى : ( وأَرْسَلْنَاهُ إِلَى مِائَةِ أَلْفٍ أَوْ
يَزِيدُونَ ) قَالَ " عِشْرُونَ أَلْفًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
উবাই
ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
“আমরা তাকে (ইউনুস) এক লাখ বা ততোধিক লোকের নিকটে পাঠালাম”( সূরাঃ আস-সাফ্ফাত-
১৪৭) প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেনঃ (এক লাখ) বিশ হাজার।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৩০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
خَالِدِ بْنِ عَثْمَةَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ
الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
قَوْلِ اللَّهِ : ( وجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُ هُمُ الْبَاقِينَ ) قَالَ
" حَامٌ وَسَامٌ وَيَافِثُ " . كَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى
يُقَالُ يَافِتُ وَيَافِثُ بِالتَّاءِ وَالثَّاءِ وَيُقَالُ يَفِثُ . قَالَ
وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سَعِيدِ بْنِ
بَشِيرٍ .
সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
“আমরা তার (নূহের) বংশধরদের বাঁচিয়ে রাখলাম বংশপরম্পরায়” (সূরাঃ আস-সাফ্ফাত- ৭৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ এরা হল
হাম, সাম ও ইয়াফিস।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ ‘তা’ অথবা ‘সা’ অক্ষর সহযোগে ইয়াফিত-ও বলা
হয় এবং ইয়াফিস-ও বলা হয়, ইয়াফুসও বলা হয়। এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র সাঈদ
ইবনু বাশীরের সূত্রেই হাদীসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৩১
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْعَقَدِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ
زُرَيْعٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ،
عَنْ سَمُرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " سَامٌ أَبُو
الْعَرَبِ وَحَامٌ أَبُو الْحَبَشِ وَيَافِثُ أَبُو الرُّومِ " .
সামুরা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আরবদের আদি পিতা সাম, হাবশীদের
(আবিসিনীয়াদের) আদি পিতা হাম এবং রূমীয়দের (বাইজানটাইনদের) আদি পিতা ইয়াফিস।
যঈফ, যঈফা (৩৬৮৩)
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৯
সূরা
সা-দ
৩২৩২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، -
الْمَعْنَى وَاحِدٌ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ يَحْيَى، قَالَ عَبْدٌ هُوَ ابْنُ عَبَّادٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ مَرِضَ أَبُو طَالِبٍ فَجَاءَتْهُ قُرَيْشٌ
وَجَاءَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَ أَبِي طَالِبٍ مَجْلِسُ رَجُلٍ
فَقَامَ أَبُو جَهْلٍ كَىْ يَمْنَعَهُ وَشَكَوْهُ إِلَى أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ يَا
ابْنَ أَخِي مَا تُرِيدُ مِنْ قَوْمِكَ قَالَ " إِنِّي أُرِيدُ مِنْهُمْ
كَلِمَةً وَاحِدَةً تَدِينُ لَهُمْ بِهَا الْعَرَبُ وَتُؤَدِّي إِلَيْهِمُ
الْعَجَمُ الْجِزْيَةَ " . قَالَ كَلِمَةً وَاحِدَةً قَالَ "
كَلِمَةً وَاحِدَةً " . قَالَ " يَا عَمِّ قُولُوا لاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللَّهُ " . فَقَالُوا: إِلَهًا وَاحِدًا؟ ( ما سَمِعْنَا
بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الآخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلاَّ اخْتِلاَقٌ ) قَالَ
فَنَزَلَ فِيهِمُ الْقُرْآنُ : (ص* وَالْقُرْآنِ ذِي الذِّكْرِ * بَلِ
الَّذِينَ كَفَرُوا فِي عِزَّةٍ وَشِقَاقٍ ) إِلَى قَوْلِهِ : (ما سَمِعْنَا
بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الآخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلاَّ اخْتِلاَقٌ ) . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আবূ তালিব
রোগাক্রান্ত হলে কুরাইশরা তার নিকটে আসে এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)ও আসেন। আবূ তালিবের নিকট এক ব্যক্তির বসার মত স্থান ছিল। আবূ জাহল
তাকে মানা করতে উঠে। রাবী বলেনঃ এসব লোক আবূ তালিবের নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে। আবূ তালিব বলেন, হে ভাতিজা! তুমি
তোমার জাতির নিকটে কি চাও? তিনি বললেনঃ আমি তাদের কাছে একটি বাক্য মেনে নেয়ার
ইচ্ছা করছি। তারা এটা মেনে নিলে আরবরা তাদের মতানুবর্তী হবে এবং অনারবরা তাদেরকে
জিযিয়া দিবে। আবূ তালিব বললেন, একটি বাক্য? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, একটি বাক্য। তিনি
আবার বললেনঃ হে চাচা! আপনারা বলুন, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। তারা বলল, শুধু মাত্র
একজন মা’বূদ? “এধরণের কথা তো আমরা নিকট অতীতের জাতিসমূহের নিকটে শুনিনি? এটা একটা
অলীক উক্তিমাত্র” (সূরা: সা’দ—৭)। রাবী বলেনঃ তাদের প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ
হয় : “সা’দ। উপদেশে পূর্ণ কুরআনের শপথ! বরং এই সত্য প্রত্যাখানকারী লোকেরাই চরম
অহংকার ও হঠকারিতায় ডুবে আছে। এদের পূর্বে আমরা এমন কত জাতিকেই না ধ্বংস করেছি।
তখন তারা চিৎকার করে উঠেছে। কিন্তু তখন আর মুক্তি পাওয়ার উপায় ছিল না।
..........এমন কথা তো আমরা নিকট অতীতের জাতিসমূহের নিকটে শুনিনি! এটা একটা অলীক
কথামাত্র” (সূরা: সা’দ – ১-৭)।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেন ; এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ
সুফইয়ান আ’মাশের সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৩৩
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي
قِلاَبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَتَانِي اللَّيْلَةَ رَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ
قَالَ أَحْسَبُهُ قَالَ فِي الْمَنَامِ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ هَلْ تَدْرِي فِيمَ
يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ
كَتِفَىَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَىَّ أَوْ قَالَ فِي نَحْرِي
فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ هَلْ
تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ فِي
الْكَفَّارَاتِ . وَالْكَفَّارَاتُ الْمُكْثُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ
الصَّلَوَاتِ وَالْمَشْىُ عَلَى الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغُ
الْوُضُوءِ فِي الْمَكَارِهِ وَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ
بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ وَقَالَ يَا
مُحَمَّدُ إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ
الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ
بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ قَالَ
وَالدَّرَجَاتُ إِفْشَاءُ السَّلاَمِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ وَالصَّلاَةُ
بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ " .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আজ রাতে আমার মহান ও বারাকাতময় প্রভু
সবচেয়ে সুন্দর চেহারায় আমার নিকট এসেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মতে তিনি বলেছেনঃ
ঘুমের মধ্যে স্বপ্নযোগে। তারপর তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জান, এ সময় উচ্চতর
জগতের অধিবাসীরা কি নিয়ে বিবাদ করছে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ আমি বললাম, না। তিনি তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মধ্যখানে রাখলেন।
এমনকি আমি আমার দুই স্তনের বা বুকের মাঝে এর শীতলতা অনুভব করলাম। আসমান-যামীনে যা
কিছু আছে আমি তা অবগত হলাম। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জান, এ সময় উচ্চতর
জগতের অধিবাসীরা কি নিয়ে বিবাদ করছে? আমি বললামঃ হ্যাঁ, কাফফারাত নিয়ে বিবাদ করছে।
কাফফারাত অর্থ “নামাযের পর মাসজিদে বসে থাকা, নামাযের জামা‘আতে উপস্থিতির জন্য
হেঁটে যাওয়া এবং কষ্ঠকর সময়েও সুষ্ঠুভাবে উযু করা”। যে লোক এসব কাজ করবে সে
কল্যাণের মধ্যে বেঁচে থাকবে, কল্যাণের সাথে মরবে এবং তার জন্ম দিনের মত গুনাহ হতে
পবিত্র হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা আরো বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! তুমি যখন সালাত আদায়
করবে তখন এই দু’আ পড়বেঃ
“আল্লাহুম্মা ইন্নী আসাআলুকা ফি’লাল খাইরাতি ওয়া তারকাল মুনকারাতি ওয়া হুব্বাল
মাসাকীনি ওয়া ইযা আরাদতা বি-‘ইবাদিকা ফিতনাতান ফাক্বিযনী ইলাইকা গাইরা মাফতূনিন!”
(হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ভাল কাজ করার, খারাপ কাজ ত্যাগ করার এবং
গ’রীব-নিঃস্বদের ভালবাসার মনোষ্কামনা চাই। তুমি যখন তোমার বান্দাদের কঠিন পরীক্ষায়
নিক্ষেপ করার ইচ্ছা কর, তখন আমাকে এ ফিতনায় জড়িয়ে পড়ার আগেই তোমার নিকট উঠিয়ে নাও)।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ দারাজাত ও মর্যাদার
স্তর বলতে বুঝায়ঃ সালামের প্রচার প্রসার ঘটানো, মানুষকে খাওয়ানো এবং রাতের
অন্ধকারে মানুষ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে তখন (তাহাজ্জুদ) নামায আদায় করা।
সহীহঃ আয্ যিলা-ল (৩৮৮), তা’লীকুর রাগীব (১/৯৮, ১২৬/১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, বর্ণনাকারীগণ আবূ ক্বিলাবাহ্ ও ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ)-এর মধ্যখানে আরোও একজন বর্ণনাকারীর উল্লেখ করেছেন। ক্বাতাদাহ্ এ হাদীস
আবূ ক্বিলাবাহ্ হতে, তিনি খালিদ ইবনুল লাজলাজ হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে, এই
সনদে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৩৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ،
حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ
اللَّجْلاَجِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" أَتَانِي رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ
لَبَّيْكَ رَبِّي وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ
رَبِّي لاَ أَدْرِي فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ
ثَدْيَىَّ فَعَلِمْتُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ
. فَقُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ
الأَعْلَى قُلْتُ فِي الدَّرَجَاتِ وَالْكَفَّارَاتِ وَفِي نَقْلِ الأَقْدَامِ
إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغِ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ وَانْتِظَارِ
الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ وَمَنْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ
وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ "
. قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার প্রতিপালক প্রভু সর্বোত্তম
চেহারায় আমার নিকট আসলেন। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, হে আমার রব! আমি
উপস্থিত, আমি হাযির। তিনি প্রশ্ন করেনঃ ঊর্ধ জগতের অধিবাসীরা কি নিয়ে বিবাদ করছে?
আমি উত্তর দিলাম, প্রভু! আমি জানি না। তিনি তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মধ্যখানে
রাখলেন। এমনকি আমি এর শীতলতা আমার উভয় স্তনের মধ্যখানে (বুকে) অনুভব করলাম।
পূর্ব-পশ্চিমের মাঝে যা কিছু আছে তা আমি জেনে নিলাম। অতঃপর তিনি বললেন, হে
মুহাম্মাদ! আমি বললাম, হে আমার রব! আমি আপনার সামনে উপস্থিত আছি। তিনি আবার প্রশ্ন
করলেন, ঊর্ধলোকের অধিবাসীরা কি নিয়ে বিতর্ক করছে? আমি জবাব দিলাম, মর্যাদা বৃদ্ধি,
কাফ্ফারাত লাভ, পদব্রজে জামা‘আতে যোগদান, কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে উযূ করা এবং
এক ওয়াক্তের নামায আদায় করার পর পরের ওয়াক্তের নামাযের অপেক্ষায় থাকা ইত্যাদি
বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে (একে অপরকে অতিক্রম করার চেষ্টা করছে)। যে লোক এগুলোর
হিফাযাত করবে সে কল্যাণের মধ্যে বেঁচে থাকবে, কল্যাণময় মৃত্যুবরণ করবে এবং তার
জননী তাকে প্রসব করার সময়ের মত গুনাহ মুক্ত হয়ে যাবে।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান এবং উল্লেখিত সনদসূত্রে
গারীব। মু‘আয ইবনু জাবাল ও ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আয়িশ –এর বরাতেও নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীস মু‘আয ইবনু জাবাল
(রাঃ)-এর বরাতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনেক দীর্ঘাকারে বর্ণিত
রয়েছে। তাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তন্দ্রায়
আচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। ফলে আমার গভীর ঘুম এসে গেল। ঘুমের ভিতর আমি আমার প্রতিপালককে সুন্দরতম
চেহারায় দেখতে পেলাম। তিনি প্রশ্ন করলেন, ঊর্ধজগতের অধিবাসীরা কি বিষয়ে বিবাদ করছে...
শেষ পর্যন্ত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৩৫
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِطُولِهِ وَقَالَ " إِنِّي نَعَسْتُ
فَاسْتَثْقَلْتُ نَوْمًا فَرَأَيْتُ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ فِيمَ
يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى " . حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ
حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هَانِئٍ أَبُو هَانِئٍ الْيَشْكُرِيُّ حَدَّثَنَا
جَهْضَمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ
سَلاَّمِ عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ
الْحَضْرَمِيِّ أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَنْ مَالِكِ بْنِ يُخَامِرَ السَّكْسَكِيِّ
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله عنه قَالَ احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم ذَاتَ غَدَاةٍ عَنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى
عَيْنَ الشَّمْسِ فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلاَةِ فَصَلَّى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَجَوَّزَ فِي صَلاَتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا
بِصَوْتِهِ قَالَ لَنَا " عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ " .
ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ " أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا
حَبَسَنِي عَنْكُمُ الْغَدَاةَ إِنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ
وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلاَتِي حَتَّى اسْتَثْقَلْتُ
فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا
مُحَمَّدُ . قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ . قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ
الأَعْلَى قُلْتُ لاَ أَدْرِي . قَالَهَا ثَلاَثًا قَالَ فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ
كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَىَّ
فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ . قُلْتُ
لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ فِي
الْكَفَّارَاتِ قَالَ مَا هُنَّ قُلْتُ مَشْىُ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ
وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي
الْمَكْرُوهَاتِ . قَالَ فِيمَ قُلْتُ إِطْعَامُ الطَّعَامِ وَلِينُ الْكَلاَمِ
وَالصَّلاَةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ . قَالَ سَلْ . قُلْتُ اللَّهُمَّ
إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ
الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ
قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ
وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . سَأَلْتُ
مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَقَالَ هَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ الْوَلِيدِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ . قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ
اللَّجْلاَجِ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَائِشٍ الْحَضْرَمِيُّ قَالَ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيثَ وَهَذَا غَيْرُ
مَحْفُوظٍ . هَكَذَا ذَكَرَ الْوَلِيدُ فِي حَدِيثِهِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ عَائِشٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَى
بِشْرُ بْنُ بَكْرٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ هَذَا
الْحَدِيثَ بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا أَصَحُّ . وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
عَائِشٍ لَمْ يَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
মু‘আয
ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন
প্রত্যুষে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাথে ফজরের
নামায আদায় করতে আসতে বাধাপ্রাপ্ত হন। এমনকি আমরা সূর্য উদিত হয়ে যাওয়ার আশংকা
করলাম। তিনি তাড়াতাড়ি বের হয়ে এলে সালাতের জন্য ইক্বামাত দেয়া হল। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংক্ষেপে সালাত আদায় করলেন। তিনি সালাম
ফিরানোর পর উচ্চৈঃস্বরে আমাদেরকে ডেকে বললেনঃ তোমরা যেভাবে সারিবদ্ধ অবস্থায় আছ
সেভাবেই থাক। তারপর তিনি আমাদের দিকে ফিরে বসলেন অতঃপর বললেনঃ সকালে তোমাদের নিকট
আসতে আমাকে কিসে বাধাগ্রস্ত করেছে তা এখনই তোমাদেরকে বলছি। আমি রাত্রে উঠে উযূ
করলাম এবং সামর্থ্যমত নামায পড়লাম। নামাযের মধ্যে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পরলাম।
অতঃপর আমি ঘুমিয়ে পরলাম, এমন সময় আমি আমার বারাকাতময় প্রভুকে খুব সুন্দর অবস্থায়
(স্বপ্নে) দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললামঃ প্রভু! আমি উপস্থিত।
তিনি বললেন, ঊর্ধজগতের অধিবাসীগণ (শীর্ষস্থানীয় ফেরেশতাগণ) কি ব্যাপারে বিতর্ক
করছে? আমি বললামঃ প্রভু! আমি জানি না। আল্লাহ তা‘আলা এ কথা তিনবার বললেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি তাঁকে দেখলাম যে, তিনি
তাঁর হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। আমি আমার বক্ষস্থলে তাঁর হাতের
আঙ্গুলের শীতলতা অনুভব করলাম। ফলে প্রতিটি জিনিস আমার নিকট আলোকোদ্ভাসিত হয়ে উঠল
এবং আমি তা জানতে পারলাম। আল্লাহ তা‘আলা বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি বললামঃ প্রভু!
আমি আপনার নিকট হাযির। তিনি বললেন, ঊর্ধজগতের বাসিন্দাগণ কি ব্যাপারে বিতর্ক করছে?
আমি বললামঃ কাফফারাত প্রসঙ্গে (তারা বিতর্ক করছে)। তিনি বলেন, সেগুলো কি? আমি
বললামঃ হেঁটে সালাতের জামা‘আতসমূহে হাযির হওয়া, নামাযের পর মাসজিদে বসে থাকা এবং
কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে উযূ করা। তিনি বললেন, তারপর কি ব্যাপারে (তারা বিতর্ক
করছে)? আমি বললামঃ খাদ্যপ্রার্থীকে আহার্য দান, নম্রতার সাথে কথা বলা এবং রাতে
মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে সেই সময় সালাত আদায় করা প্রসঙ্গে। আল্লাহ তা‘আলা বললেন, তুমি
কিছু চাও, বলঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ভাল ও কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের, মন্দ
কাজসমূহ বর্জনের, দরিদ্রজনদের ভালবাসার তাওফীক চাই, তুমি আমায় ক্ষমা কর ও দয়া কর।
তুমি যখন কোন গোত্রকে বিপদে ফেলার ইচ্ছা কর তখন তুমি আমাকে বিপদমুক্ত রেখে তোমার
কাছে তুলে নিও। আমি প্রার্থনা করি তোমার ভালবাসা, যে তোমায় ভালবাসে তার ভালবাসা
এবং এমন কাজের ভালবাসা যা তোমার ভালবাসার নিকটবর্তী করে দেয়।” রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্বপ্নটি অবশ্যই সত্য। অতএব তা পড়,
তারপর তা শিখে নাও।
সহীহঃ মুখতাসার আল উলুব্বি (১১৯/৮০), আয্-যিলা-ল (৩৮৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। আমি মুহাম্মাদ ইবনু
ইসমাঈলকে এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, এ হাদীস হাসান সহীহ। তিনি আরো বললেন,
‘আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ ইবনু জাবির হতে ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম বর্ণিত হাদীসের তুলনায়
উক্ত হাদীস অনেক বেশী সহীহ। খালিদ ইবনুল লাজলাজ-‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আয়িশ আল-হাযরামী
(রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি...। এ হাদিসটি সংরক্ষিত নয়। ওয়ালীদ তার হাদীসে একই রকম উল্লেখ
করেছেন-‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আয়িশ (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছি। বিশর ইবনু বাক্র এ হাদীস বর্ণনা করেছেন, ‘আবদুর রহমান ইবনু
ইয়াযীদ ইবনু জাবির এই সনদে ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আয়িশ (রাঃ)-এর বরাতে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। এটি অনেক বেশী সহীহ। ‘আবদূর রহমান ইবনু ‘আয়িশ (রাঃ) নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে কিছু শুনেননি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪০
পরিচ্ছেদ
নাই।
অনুচ্ছেদ-৪১
সূরা
আয্-যুমার
৩২৩৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ عَمْرِو بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
حَاطِبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا
نَزَلَتْ : (ثمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عِنْدَ رَبِّكُمْ
تَخْتَصِمُونَ ) قَالَ الزُّبَيْرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتُكَرَّرُ عَلَيْنَا
الْخُصُومَةُ بَعْدَ الَّذِي كَانَ بَيْنَنَا فِي الدُّنْيَا قَالَ "
نَعَمْ " . فَقَالَ إِنَّ الأَمْرَ إِذًا لَشَدِيدٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনুয যুবাইর (রাঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ আয়াত
অবতীর্ণ হল (অনুবাদ)ঃ “তারপর ক্বিয়ামাতের দিন নিশ্চয় তোমরা নিজেদের প্রভুর সামনে
পরস্পর বাক-বিতণ্ডায় জড়িত হবে” - (সূরা যুমারঃ ৩১), তখন যুবাইর (রাঃ) বললেন, হে
আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! পার্থিব জীবনে আমাদের মধ্যে যে
ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে তার মীমাংসা হওয়ার পর কি তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে? তিনি বললেনঃ
হ্যাঁ। যুবাইর (রাঃ) বললেন, তাহলে বিষয়টি তো খুবই কঠিন।
হাসানঃ সহীহাহ (৩৪০)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩২৩৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا حَبَّانُ بْنُ هِلاَلٍ،
وَسُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، وَحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا
حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَسْمَاءَ
بِنْتِ يَزِيدَ، قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ
: (يا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لاَ تَقْنَطُوا مِنْ
رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ) وَلاَ يُبَالِي
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِ ثَابِتٍ عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ . قَالَ وَشَهْرُ بْنُ حَوْشَبٍ
يَرْوِي عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ الأَنْصَارِيَّةِ وَأُمُّ سَلَمَةَ الأَنْصَارِيَّةُ
هِيَ أَسْمَاءُ بِنْتُ يَزِيدَ .
আসমা
বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ আয়াত পাঠ করতে শুনেছি : “হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা
নিজেদের উপর যুলুম করেছ, আল্লাহ তা’আলার রাহমাত হতে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ
তা’আলা সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন”। (সূরা: আয-যুমার -৫৩)। তিনি ( এ ব্যাপারে ) কারো
ভয় করেন না।
আবূ ঈসা বলেন : এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা হাওশাবের
সূত্রে শুধুমাত্র সাবিত হতেই এ হাদীসটি জানতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, শাহর ইবনু হাওশাব
উম্মু সালমা আনসারিয়া হতে হাদীস বর্ণনা করেন। উম্মু সালামা আনসারিয়ার নাম আসমা বিনতু
ইয়াযীদ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنِي مَنْصُورٌ، وَسُلَيْمَانُ الأَعْمَشُ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبِيدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ جَاءَ يَهُودِيٌّ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ
السَّمَوَاتِ عَلَى إِصْبَعٍ وَالأَرَضِينَ عَلَى إِصْبَعٍ وَالْجِبَالَ عَلَى
إِصْبَعٍ وَالْخَلاَئِقَ عَلَى إِصْبَعٍ ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ . قَالَ
فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ قَالَ :
(ومَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ ) . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন , জনৈক
ইয়াহুদী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মাদ !
আল্লাহ তা’আলা আসমানসমূহ এক আঙ্গুলে, পাহাড়গুলা এক আঙ্গুলে , যামীনসমূহ এক আঙ্গুলে
এবং অপরাপর সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলে ধারন করে বলবেনঃ আমিই রাজাধিরাজ। বর্ণনাকারী বলেন,
তার এ কথায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে দিলেন, এমনকি তাঁর সামনের
মাড়ির দাঁতগুলা প্রকাশ হয়ে পড়ল। তিনি বলেনঃ “ এই লোকেরা আল্লাহ তা’আলার যথোপযুক্ত
কদর করল না। ক্বিয়ামাতের দিন গোটা পৃথিবী তাঁর মুঠোর মধ্যে আবদ্ধ থাকবে এবং
আকাশমণ্ডলী তাঁর ডান হাতে ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে “—(সূরা যুমার ৬৭)।
সহীহঃ আয যিলা-ল (৫৪১, ৫৪৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ
عَبِيدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
تَعَجُّبًا وَتَصْدِيقًا . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ইয়াহুদীর কথায়) আশ্চর্য হয়ে এবং এর সমর্থন
করে হেসে দিলেন।
সহীহঃ প্রাগুক্ত।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৪০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ، حَدَّثَنَا أَبُو كُدَيْنَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ
السَّائِبِ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ مَرَّ يَهُودِيٌّ
بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" يَا يَهُودِيُّ حَدِّثْنَا " . فَقَالَ كَيْفَ تَقُولُ يَا
أَبَا الْقَاسِمِ إِذَا وَضَعَ اللَّهُ السَّمَوَاتِ عَلَى ذِهْ وَالأَرَضِينَ
عَلَى ذِهْ وَالْمَاءَ عَلَى ذِهْ وَالْجِبَالَ عَلَى ذِهْ وَسَائِرَ الْخَلْقِ
عَلَى ذِهْ . وَأَشَارَ أَبُو جَعْفَرٍ مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ بِخِنْصَرِهِ
أَوَّلاً ثُمَّ تَابَعَ حَتَّى بَلَغَ الإِبْهَامَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (وما
قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ إِلاَّ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ . وَأَبُو كُدَيْنَةَ اسْمُهُ يَحْيَى بْنُ الْمُهَلَّبِ قَالَ
رَأَيْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الْحَسَنِ بْنِ
شُجَاعٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الصَّلْتِ .
ইবনু
আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক ইয়াহূদী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ হে ইয়াহুদী! কিছু শুনাও। সে বলল,
হে আবুল কাসিম! যখন আল্লাহ তা’আলা আকাশসমূহ এক আঙ্গুলে, যমিনসমূহ এক আঙ্গুলে, পানি
এক আঙ্গুলে, পাহাড়গুলো এক আঙ্গুলে এবং আর সকল সৃষ্টি এক আঙ্গুলে ধারণ করবেন এ
প্রসঙ্গে আপনি কি বলেন? রাবী আবূ জাফর মুহাম্মাদ ইবনুস সালত তার হাত মুষ্টিবদ্ধ
করে কনিষ্ঠা হতে বৃদ্ধা আঙ্গুলী পর্যন্ত ইঙ্গিত করে দেখালেন। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ
তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন : “এই লোকেরা আল্লাহর প্রতি যতটুকু মর্যাদা দেয়া উচিত,
তারা তাঁকে তা দেয়নি”। (সূরা আয-যুমার --৬৭)।
যইফ, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা বলেন : এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। এটা শুধু
উল্লেখিত সনদসূত্রেই আমরা জেনেছি। আবূ কুদাইনার নাম ইয়াহইয়া ইবনুল মুহাল্লাব। মুহাম্মাদ
ইবন ইসমাঈল এ হাদীস হাসান ইবনু শুজার সূত্রে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনুস সালতের সূত্রে বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৪১
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ،
عَنْ مُجَاهِدٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَتَدْرِي مَا سَعَةُ جَهَنَّمَ
قُلْتُ لاَ . قَالَ أَجَلْ وَاللَّهِ مَا تَدْرِي . حَدَّثَتْنِي عَائِشَةُ
أَنَّهَا سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ قَوْلِهِ :
(والأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَوَاتُ
مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ ) قَالَتْ قُلْتُ فَأَيْنَ النَّاسُ يَوْمَئِذٍ يَا
رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " عَلَى جِسْرِ جَهَنَّمَ " . وَفِي
الْحَدِيثِ قِصَّةٌ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ .
মুজাহিদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) (আমাকে) প্রশ্ন
করেন, তুমি কি জান জাহান্নাম কত প্রশস্ত? আমি বললাম, না। তিনি বলেন, হাঁ! আল্লাহর
শপথ! তুমি জান না। “‘আয়িশাহ (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে , তিনি রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নিম্নের আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেছিলেন
(অনুবাদ)ঃ “ক্বিয়ামাতের দিন সমস্ত পৃথিবী তাঁর কব্জার ভিতর থাকবে এবং আকাশমণ্ডলী
তাঁর ডান হাতে গুটানো থাকবে” (সূরা যুমার ৬৭)। ‘‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন
করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! সেদিন লোকেরা কোথায় থাকবে? তিনি বললেনঃ জাহান্নামের
উপরকার পুলসিরাতের উপর।
এ হাদীসে একটি ঘটনা আছে। আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান
সহীহ, উল্লেখিত সনদসুত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৪২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ
أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا
قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ : (والأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ وَالسَّمَوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ ) فَأَيْنَ
الْمُؤْمِنُونَ يَوْمَئِذٍ قَالَ " عَلَى الصِّرَاطِ يَا عَائِشَةُ
" . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর
রাসূল! “ক্বিয়ামাতের দিন সমস্ত পৃথিবী তাঁর হাতের মুষ্টিতে এবং আকাশমণ্ডলী থাকবে
তাঁর ডান হাতে ভাঁজ করা অবস্থায়”– (সূরা যুমার ৬৭), সেদিন মুমিনগণ কোথায় থাকবে?
তিনি বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ! পুলসিরাতের উপর।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৪৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُطَرِّفٍ،
عَنْ عَطِيَّةَ الْعَوْفِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كَيْفَ أَنْعَمُ وَقَدِ الْتَقَمَ
صَاحِبُ الْقَرْنِ الْقَرْنَ وَحَنَى جَبْهَتَهُ وَأَصْغَى سَمْعَهُ يَنْتَظِرُ
أَنْ يُؤْمَرَ أَنْ يَنْفُخَ فَيَنْفُخَ " . قَالَ الْمُسْلِمُونَ
فَكَيْفَ نَقُولُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " قُولُوا حَسْبُنَا اللَّهُ
وَنِعْمَ الْوَكِيلُ تَوَكَّلْنَا عَلَى اللَّهِ رَبِّنَا " . وَرُبَّمَا
قَالَ سُفْيَانُ عَلَى اللَّهِ تَوَكَّلْنَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَاهُ الأَعْمَشُ أَيْضًا عَنْ عَطِيَّةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
.
আবু
সা’ঈদ আল–খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শিঙ্গা ফুঁৎকারকারী মুখে শিঙ্গা নিয়ে
মাথা ঝুঁকিয়ে কান খাঁড়া করে অপেক্ষায় আছেন, শিঙ্গায় ফুঁ দেয়ার আদেশ পাওয়া মাত্র
তিনি ফুঁ দিবেন, এ অবস্হায় আমি কিভাবে নিশ্চিন্তে আরামে বসে থাকতে পারি? মুসলিমরা
বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কিভাবে দু’আ করব? তিনি বললেনঃ “হাসবুনাল্লাহু ওয়া
নি’মাল ওয়াকীল, তাওয়াককালনা আলাল্লাহি রাব্বিনা” আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট,
তিনিই আমাদের অতি উত্তম অভিভাবক, আমরা আমাদের রব আল্লাহ তা’আলার উপর নির্ভর করি।
সুফইয়ান তার বর্ণনায় কখনো, “তাওয়াককালনা আলাল্লাহ” এর পরিবর্তে “আলাল্লাহি
তাওয়াককালনা” বর্ণনা করেছেন।
সহীহঃ সহীহাহ (১০৭৮, ১০৭৯)
আবু ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আ’মাশ হাদীসটী ‘আতিয়ার
সুত্রে আবু সা’ঈদ হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৪৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَسْلَمَ الْعِجْلِيِّ،
عَنْ بِشْرِ بْنِ شَغَافٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهُمَا قَالَ قَالَ أَعْرَابِيٌّ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الصُّورُ قَالَ
" قَرْنٌ يُنْفَخُ فِيهِ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ إِنَّمَا
نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ .
আবদুল্লাহ
ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক বেদুঈন
বলল, হে আল্লাহর রাসুল! ‘সূর’ কি? তিনি বললেনঃ একটি শিং, তাতে ফুঁ দেয়া হবে।
সহীহঃ সহীহাহ (১০৮০)।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমরা শুধু সুলাইমান আত-তাইমী
কতৃক হাদীসটি সম্পর্কে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৪৫
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ،
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ يَهُودِيٌّ بِسُوقِ الْمَدِينَةِ لاَ وَالَّذِي اصْطَفَى
مُوسَى عَلَى الْبَشَرِ . قَالَ فَرَفَعَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَدَهُ
فَصَكَّ بِهَا وَجْهَهُ قَالَ تَقُولُ هَذَا وَفِينَا نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ( ونُفِخَ فِي
الصُّورِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الأَرْضِ إِلاَّ مَنْ شَاءَ
اللَّهُ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخْرَى فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَنْظُرُونَ )
فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ رَفَعَ رَأْسَهُ فَإِذَا مُوسَى آخِذٌ بِقَائِمَةٍ مِنْ
قَوَائِمِ الْعَرْشِ فَلاَ أَدْرِي أَرَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلِي أَوْ كَانَ مِمَّنِ
اسْتَثْنَى اللَّهُ وَمَنْ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى فَقَدْ
كَذَبَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবু
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ইয়াহুদী
মাদীনার বাজারে উচ্চৈঃস্বরে বললঃ না! সেই সৃষ্টিকর্তার শপথ, যিনি মুসাকে মানবজাতির
উপর মর্যাদা দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এক আনসার লোক এ কথা শুনার সাথে সাথে হাত
তুলে ইয়াহুদীর মুখে থাপ্পর মেরে দেয়। সে বলল, তুমি এ কথা বলছ, অথচ আল্লাহর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মধ্যে বর্তমান আছেন? (উভয়ে মহানবীর
নিকট উপস্থিত হলে) রাসুলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “আর
শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে। তখন আসমান-জমীনের সকলে মূর্ছিত হয়ে পরবে, আল্লাহ তা’আলা
যাকে জ্যান্ত রাখতে চান সে ছাড়া। তারপর আবার শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে। সহসা তারা
দন্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে” (সূরা যুমার ৬৮)। আমিই সবার আগে মাথা তুলে দেখতে পাবো
যে, মুসা (আঃ) আরশের পায়াসমুহের একটি ধরে আছেন। আমি জানি না, তিনি কি আমার আগে
মাথা তুলেছেন, না তিনি ঐ সব লোকের দলে যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা (জ্ঞানশূন্য হওয়া
হতে) মুক্ত রেখেছেন। যে লোক বলে যে, আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা (আঃ) এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ সে
মিথ্যা বলে।
হাসান সহীহঃ তাখরীজুত তাহবিয়াহ (১৬২), বুখারী অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব ।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩২৪৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا الثَّوْرِيُّ، أَخْبَرَنِي أَبُو
إِسْحَاقَ، أَنَّ الأَغَرَّ أَبَا مُسْلِمٍ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ،
وَأَبِي، هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يُنَادِي
مُنَادٍ إِنَّ لَكُمْ أَنْ تَحْيَوْا فَلاَ تَمُوتُوا أَبَدًا وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ
تَصِحُّوا فَلاَ تَسْقَمُوا أَبَدًا وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَشِبُّوا فَلاَ
تَهْرَمُوا أَبَدًا وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَنْعَمُوا فَلاَ تَبْأَسُوا أَبَدًا "
. فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى : (تِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي أُورِثْتُمُوهَا
بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى ابْنُ
الْمُبَارَكِ وَغَيْرُهُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الثَّوْرِيِّ وَلَمْ يَرْفَعُوهُ
.
আবু
সা’ঈদ ও আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ একজন ঘোষক (জান্নাতের মধ্যে) ঘোষণা দিবে, এখন হতে
তোমরা জীবিত থাকবে, আর কখনো মরবে না। তোমরা সুস্থ থাকবে, কখনো অসুস্থ হবে না।
তোমরা যুবক থাকবে, কখনো বৃদ্ধ হবে না। তোমরা অফুরন্ত ভোগবিলাসের ভিতর থাকবে,
অভাব-অনটন কখনো তোমাদের স্পর্শ করবে না। এটাই আল্লাহ তা’আলার নিম্নোক্ত বাণীর
তাৎপর্যঃ “তোমরা পার্থিব জীবনে যেসব কাজ করেছ তার বিনিময়ে এ জান্নাতের
উত্তরাধিকারী হলে” –(সূরা যুখরুফ ৭২)।
সহীহঃ মুসলিম (৮/১৪৮)
আবু ‘ঈসা বলেন, ইবনুল মুবারাক প্রমুখ সুফিয়ান সাওরীর সুত্রে
এ হাদীস বর্ণনা করেছেন, কিন্তু মারফু’রুপে নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪২
সূরা
আল-মু’মিন (গাফির)
৩২৪৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، وَالأَعْمَشِ، عَنْ ذَرٍّ، عَنْ
يُسَيْعٍ الْحَضْرَمِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ " .
ثُمَّ قَرَأَ : ( وقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ
الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
) قَالَ أَبُو عِيسَى . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
নু’মান
ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ দু’আ টাই হল ‘ইবাদাত। তারপর
তিনি পাঠ করেন (অনুবাদ)ঃ “তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো। আমি তোমাদের ডাকে
সাড়া দিব। যারা অহংকারবশতঃ আমার ‘ইবাদাত হতে বিমুখ হয়, নিশ্চিত তারা অচিরেই
লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে যাবে” – (সূরা মু’মিন ৬০)
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৩৮২৮)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৩
৪৩
সূরা হা-মীম আস-সাজদাহ
৩২৪৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ،
عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ اخْتَصَمَ
عِنْدَ الْبَيْتِ ثَلاَثَةُ نَفَرٍ قُرَشِيَّانِ وَثَقَفِيٌّ أَوْ ثَقَفِيَّانِ
وَقُرَشِيٌّ قَلِيلاً فِقْهُ قُلُوبِهِمْ كَثِيرًا شَحْمُ بُطُونِهِمْ فَقَالَ
أَحَدُهُمْ أَتَرَوْنَ أَنَّ اللَّهَ يَسْمَعُ مَا نَقُولُ فَقَالَ الآخَرُ
يَسْمَعُ إِذَا جَهَرْنَا وَلاَ يَسْمَعُ إِذَا أَخْفَيْنَا . وَقَالَ الآخَرُ
إِنْ كَانَ يَسْمَعُ إِذَا جَهَرْنَا فَإِنَّهُ يَسْمَعُ إِذَا أَخْفَيْنَا .
فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( ومَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُونَ أَنْ يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ
سَمْعُكُمْ وَلاَ أَبْصَارُكُمْ وَلاَ جُلُودُكُمْ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তিন লোক
ক্বা’বা ঘরের নিকট বিবাদ করে। তাদের দু’জন ছিল কুরাইশ বংশীয় এবং একজন সাক্বীফ
বংশীয় অথবা দু’জন সাক্বীফ বংশীয় এবং একজন কুরাইশ বংশীয়। তাদের অন্তরে বুদ্ধি ছিল
খুব অল্পই কিন্তু তাদের পেট ছিল মেদবহুল। তাদের একজন বলল, তোমাদের কি মনে হয়, আমরা
যা বলি তা আল্লাহ্ তা’আলা শুনেন? দ্বিতীয় লোক বলল, আমরা জোরে বললে শুনেন, আস্তে
বললে শোনে না, তৃতীয়জন বলল, আমরা জোরে কিছু বললে যদি তিনি তা শুনেন তাহলে আস্তে বা
গোপনে বললেও তা শুনেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) “তোমাদের
কান, চোখও ত্বক তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে না এই বিশ্বাসে তোমরা কিছুই গোপন
করতে না। উপরন্তু তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা করতে তার অনেক কিছুই আল্লাহ্
তা’আলা জানেন না” – (সূরা হা-মীম আস-সাজদাহঃ ২২)।
সহীহঃ বুখারী (৪৮১৬, ৪৮১৭, ৭৫২১), মুসলিম (৮/১২০-১২১)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৪৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ قَالَ
عَبْدُ اللَّهِ كُنْتُ مُسْتَتِرًا بِأَسْتَارِ الْكَعْبَةِ فَجَاءَ ثَلاَثَةُ
نَفَرٍ كَثِيرٌ شَحْمُ بُطُونِهِمْ قَلِيلٌ فِقْهُ قُلُوبِهِمْ قُرَشِيٌّ
وَخَتَنَاهُ ثَقَفِيَّانِ أَوْ ثَقَفِيٌّ وَخَتَنَاهُ قُرَشِيَّانِ فَتَكَلَّمُوا
بِكَلاَمٍ لَمْ أَفْهَمْهُ فَقَالَ أَحَدُهُمْ أَتُرَوْنَ أَنَّ اللَّهَ يَسْمَعُ
كَلاَمَنَا هَذَا فَقَالَ الآخَرُ إِنَّا إِذَا رَفَعْنَا أَصْوَاتَنَا سَمِعَهُ
وَإِذَا لَمْ نَرْفَعْ أَصْوَاتَنَا لَمْ يَسْمَعْهُ فَقَالَ الآخَرُ إِنْ سَمِعَ
مِنْهُ شَيْئًا سَمِعَهُ كُلَّهُ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ
لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( ومَا كُنْتُمْ
تَسْتَتِرُونَ أَنْ يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلاَ أَبْصَارُكُمْ وَلاَ
جُلُودُكُمْ ) إِلَى قَوْلِهِ : (أَصْبَحْتُمْ مِنَ الْخَاسِرِينَ ) .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবদূর
রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহ
(রাঃ) বলেছেনঃ আমি ক্বা’বার পর্দার আড়ালে লুকিয়েছিলাম। তখন তিনজন লোক সেখানে আসে।
তাদের পেট ছিল মেদবহুল এবং অন্তর ছিল কম বুদ্ধিসম্পন্ন। তাদের একজন ছিল কুরাইশ
বংশীয় এবং অপর দু’জন ছিল তার জামাতা, সাক্বীফ বংশীয় কিংবা একজন ছিল সাক্বীফ বংশীয়
এবং অপর দু’জন ছিল তার জামাতা, কুরাইশ বংশীয়। তারা এমন কথাবার্তা বলতে লাগলো যা
আমি বুঝিনি। তারপর তাদের একজন বলল, তোমরা কি মনে কর, আমাদের এসব আলাপ আল্লাহ্
তা’আলা শুনেন? দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, আমরা প্রকাশ্যে (জোরে) কিছু বললে তিনি তা
শুনেন এবং উচ্চৈঃস্বরে না বললে শুনেন না। তৃতীয়জন বলল, তিনি যদি কোন কথা শুনেন
তাহলে সব কথাই শুনেন। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলাম। তখন আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত
অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ)ঃ “তোমাদের কান, চোখ ও ত্বক তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে
না এই বিশ্বাসে তোমরা কিছুই গোপন করতে না। উপরন্তু তোমরা মনে কর যে, তোমরা যা করতে
তার অনেক কিছুই আল্লাহ্ তা’আলা জানেন না। তোমাদের রবের ব্যাপারে তোমাদের এ ধারণাই
তোমাদের ধংস এনেছে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ” – (সূরা হা-মিম আস-সাজদাহ ২২-২৩)।
সহীহঃ মুসলিম (৮/১২১)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। মাহমুদ ইবনু গাইলান-ওয়াকী
হতে, তিনি সুফইয়ান হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি ‘উমারাহ ইবনু ‘উমাইর হতে, তিনি ওয়াহব-ইবনু
রাবী’আহ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৫০
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ الْفَلاَّسُ حَدَّثَنَا
أَبُو قُتَيْبَةَ، سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنَا سُهَيْلُ بْنُ أَبِي حَزْمٍ
الْقُطَعِيُّ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ : (إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا
رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا ) قَالَ " قَدْ قَالَ النَّاسُ
ثُمَّ كَفَرَ أَكْثَرُهُمْ فَمَنْ مَاتَ عَلَيْهَا فَهُوَ مِمَّنِ اسْتَقَامَ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ يَقُولُ رَوَى عَفَّانُ عَنْ
عَمْرِو بْنِ عَلِيٍّ حَدِيثًا وَيُرْوَى فِي هَذِهِ الآيَةِ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رضى الله عنهما مَعْنَى اسْتَقَامُوا .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন : “যারা বলে, আমাদের রব
আল্লাহ, তারপর তাতেই অবিচল থাকে” (সূরা :হা-মীম আস-সাজদাহ - ৩০)। তিনি বলেনঃ অনেক
লোক এ কথা বলার পর কাফির হয়ে যায়। অতএব যে ব্যক্তি উল্লেখিত কথার উপর মারা যায়
সে-ই অবিচলদের অন্তর্ভূক্ত।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেন : এ হাদীসিট হাসান গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত
সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। আমি আবূ যুরআকে বলতে শুনেছি যে, আফফান (রহঃ) আমর ইবনু আলীর
সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ আয়াত প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও উমার (রাঃ) হতে “ইসতাকামূ” (অবিচল থাকে)-এর তাত্পর্য
বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৪
সূরা
আশ-শূরা (হা-মীম-‘আইন সীন ক্বাফ)
৩২৫১
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَيْسَرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ طَاوُسًا، قَالَ
سُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : (قل لاَ أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ
أَجْرًا إِلاَّ الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى ) فَقَالَ سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ
قُرْبَى آلِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَعَلِمْتَ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ بَطْنٌ مِنْ قُرَيْشٍ
إِلاَّ كَانَ لَهُ فِيهِمْ قَرَابَةٌ فَقَالَ إِلاَّ أَنْ تَصِلُوا مَا بَيْنِي
وَبَيْنَكُمْ مِنَ الْقَرَابَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
তাউস
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে এ
আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হল (অনুবাদ)ঃ “বলুন, আমি এর (দা’ওয়াতের) বিনিময়ে তোমাদের
নিকট হতে স্বজনদের সৌহার্দ্য ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান চাই না” –(সূরা শূরা ২৩) এ
প্রসঙ্গে সা’ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) বলেন, ‘কুরবা’ (আত্মীয়) অর্থ মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারের লোক ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন,
তুমি কি জান না কুরাইশ বংশের যত শাখা-প্রশাখা আছে, তাদের সকলের সঙ্গে তাঁর
আত্মীয়তার সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল? তাই তিনি বলেছেন, তবে আমার ও তোমাদের মাঝে যে
সম্পর্ক আছে তার কারণে আমার সাথে ভাল ব্যবহার কর।
সহীহঃ বুখারী (৪৮১৮)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আরো কয়েকটি সনদসূত্রে
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে এ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৫২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ،
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ الْوَازِعِ، حَدَّثَنِي شَيْخٌ، مِنْ بَنِي
مُرَّةَ قَالَ قَدِمْتُ الْكُوفَةَ فَأُخْبِرْتُ عَنْ بِلاَلِ بْنِ أَبِي
بُرْدَةَ، فَقُلْتُ إِنَّ فِيهِ لَمُعْتَبَرًا فَأَتَيْتُهُ وَهُوَ مَحْبُوسٌ فِي
دَارِهِ الَّتِي قَدْ كَانَ بَنَى قَالَ وَإِذَا كُلُّ شَيْءٍ مِنْهُ قَدْ
تَغَيَّرَ مِنَ الْعَذَابِ وَالضَّرْبِ وَإِذَا هُوَ فِي قُشَاشٍ فَقُلْتُ
الْحَمْدُ لِلَّهِ يَا بِلاَلُ لَقَدْ رَأَيْتُكَ وَأَنْتَ تَمُرُّ بِنَا تُمْسِكُ
بِأَنْفِكَ مِنْ غَيْرِ غُبَارٍ وَأَنْتَ فِي حَالِكَ هَذَا الْيَوْمَ فَقَالَ
مِمَّنْ أَنْتَ فَقُلْتُ مِنْ بَنِي مُرَّةَ بْنِ عَبَّادٍ . فَقَالَ أَلاَ
أُحَدِّثُكَ حَدِيثًا عَسَى اللَّهُ أَنْ يَنْفَعَكَ بِهِ قُلْتُ هَاتِ . قَالَ
حَدَّثَنِي أَبِي أَبُو بُرْدَةَ عَنْ أَبِيهِ أَبِي مُوسَى أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يُصِيبُ عَبْدًا نَكْبَةٌ فَمَا فَوْقَهَا
أَوْ دُونَهَا إِلاَّ بِذَنْبٍ وَمَا يَعْفُو اللَّهُ عَنْهُ أَكْثَرُ "
. قَالَ وَقَرَأََ : (وما أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ
أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَنْ كَثِيرٍ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
মুররা
গোত্রের কোন এক লোক থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা আমি
কূফায় পৌঁছে বিলাল ইবনু আবু বুরদা প্রসঙ্গে অবহিত হলাম। আমি বললাম, তাঁর এ শোকাভূত
অবস্থাতে অবশ্যই কোন শিক্ষণীয় বিষয় আছে। তারপর আমি তাঁর নিকটে আসলাম এবং তিনি
ছিলেন তাঁর নিজ তৈরী ঘরে বন্দি। তাঁর সমস্ত মালসামান মারপিট ও নির্যাতনের ফলে
পরিবর্তিত (উলোট-পালোট) হয়ে আছে। তাঁর পরনের পোশাক ছিল ছিন্নভিন্ন। আমি বললাম,
‘আলহামদু লিল্লাহ’, হে বিলাল! আমি তোমাকে দেখেছি যে, তুমি আমাদের সামনে দিয়ে
ধুলোবালি না থাকা সত্ত্বেও নাক চেপে চলে যেতে। আর আজ তোমার এ অসহায় অবস্থা! সে
বলল, আপনি কোন গোত্রের লোক? আমি বললাম মুররা ইবনু আব্বাদ গোত্রের। এবার তিনি
বললেন, আমি কি আপনার নিকট একটি হাদীস বর্ণনা করব না, যার দ্বারা আশা করা যায়
আল্লাহ তা’আলা আপনাকে উপকৃত করবেন? আমি বললাম, হ্যাঁ শুনাও সে হাদীস। তিনি বললেন,
আবূ বুরদা তাঁর পিতা আবূ মূসা (রাঃ)-এর সূত্রে এ হাদীস আমার নিকটে বর্ণনা করেছেন।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন বান্দার উপর ছোট-বড় যে
কোন মুসিবতই আসে তা তার পাপের জন্যই আসে। আর আল্লাহ তা’আলা অনেক পাপই মাফ করে দেন।
তিনি বললেন, তারপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ
করেনঃ “আর যেসব বিপদ-আপদ তোমাদের উপর আপতিত হয়, তা তো তোমাদের স্বহস্তার্জিত
কর্মেরই কারণে এবং অনেক পাপ তো তিনি ক্ষমা করে দেন।”(সূরাঃ আশ-শূরা–৩০)
সনদ দুর্বল, আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সনদসূত্রেই এ হাদীস
জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৫
সূরা
আয-যুখরুফ
৩২৫৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ،
وَيَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ حَجَّاجِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي غَالِبٍ، عَنْ
أَبِي أُمَامَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا
ضَلَّ قَوْمٌ بَعْدَ هُدًى كَانُوا عَلَيْهِ إِلاَّ أُوتُوا الْجَدَلَ "
. ثُمَّ تَلاَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَذِهِ الآيَةَ : (ما
ضَرَبُوهُ لَكَ إِلاَّ جَدَلاً بَلْ هُمْ قَوْمٌ خَصِمُونَ ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ حَجَّاجِ
بْنِ دِينَارٍ . وَحَجَّاجٌ ثِقَةٌ مُقَارِبُ الْحَدِيثِ وَأَبُو غَالِبٍ
اسْمُهُ حَزَوَّرُ .
আবূ
উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন সম্প্রদায় হিদায়াতের রাস্তা পেয়ে
আবার পথ ভোলা হয়ে থাকলে তা শুধু তাদের বিবাদ ও বাক-বিতণ্ডায় জড়িত হওয়ার কারণেই
হয়েছে। তারপর তিনি এ আয়াত পাথ করেন (অনুবাদ)ঃ “এরা শুধু বাকবিতণ্ডার উদ্দেশেই
আপনাকে এ কথা বলে। বস্তুত এরা তো এক ঝগড়াটে সম্প্রদায়” – (সূরা যুখরুফ ৫৮)।
হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (৪৮)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আমরা শুধু হাজ্জাজ
ইবনু দীনারের সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। তিনি সিক্বাহ বর্ণনাকারী ও মধ্যম ধরনের হাদীস
বিশারদ। আবূ গালিবের নাম হাযাওয়ার।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৬
সূরা
আদ’দুখান
৩২৫৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ الْجُدِّيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، وَمَنْصُورٍ،
سَمِعَا أَبَا الضُّحَى، يُحَدِّثُ عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى
عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ إِنَّ قَاصًّا يَقُصُّ يَقُولُ إِنَّهُ يَخْرُجُ مِنَ
الأَرْضِ الدُّخَانُ فَيَأْخُذُ بِمَسَامِعِ الْكُفَّارِ وَيَأْخُذُ الْمُؤْمِنَ
كَهَيْئَةِ الزُّكَامِ قَالَ فَغَضِبَ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَجَلَسَ ثُمَّ قَالَ
إِذَا سُئِلَ أَحَدُكُمْ عَمَّا يَعْلَمُ فَلْيَقُلْ بِهِ قَالَ مَنْصُورٌ
فَلْيُخْبِرْ بِهِ وَإِذَا سُئِلَ عَمَّا لاَ يَعْلَمُ فَلْيَقُلِ اللَّهُ
أَعْلَمُ فَإِنَّ مِنْ عِلْمِ الرَّجُلِ إِذَا سُئِلَ عَمَّا لاَ يَعْلَمُ أَنْ
يَقُولَ اللَّهُ أَعْلَمُ فَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَالَ لِنَبِيِّهِ : (قلْ
مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ )
" . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا رَأَى قُرَيْشًا
اسْتَعْصَوْا عَلَيْهِ قَالَ " اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَيْهِمْ بِسَبْعٍ
كَسَبْعِ يُوسُفَ " . فَأَخَذَتْهُمْ سَنَةٌ فَأَحْصَتْ كُلَّ شَيْءٍ
حَتَّى أَكَلُوا الْجُلُودَ وَالْمَيْتَةَ وَقَالَ أَحَدُهُمَا الْعِظَامَ قَالَ
وَجَعَلَ يَخْرُجُ مِنَ الأَرْضِ كَهَيْئَةِ الدُّخَانِ قَالَ فَأَتَاهُ أَبُو
سُفْيَانَ قَالَ إِنَّ قَوْمَكَ قَدْ هَلَكُوا فَادْعُ اللَّهَ لَهُمْ . قَالَ
فَهَذَا لِقَوْلِهِ : ( يوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ * يَغْشَى
النَّاسَ هَذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ ) . قَالَ مَنْصُورٌ هَذَا لِقَوْلِهِ (
رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ ) فَهَلْ يُكْشَفُ
عَذَابُ الآخِرَةِ قَالَ مَضَى الْبَطْشَةُ وَاللِّزَامُ الدُّخَانُ وَقَالَ
أَحَدُهُمَا الْقَمَرُ وَقَالَ الآخَرُ الرُّومُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَاللِّزَامُ
يَعْنِي يَوْمَ بَدْرٍ . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
মাসরূক্ব
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক
‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, কোন এক বক্তা বলেছে যে, যামীন হতে একটি ধোঁয়া
বের হবে। তা কাফিরদের কান বধির করে দিবে এবং মু’মিনদের সর্দিতে আক্রান্ত করবে।
মাসরূক্ব (রহঃ) বলেন, এতে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) রাগান্বিত হন। তিনি হেলান দিয়ে বসা
ছিলেন, এবার সোজা হয়ে বসলেন, তারপর বললেন, তোমাদের কাউকে তার জ্ঞাত (বিষয়)
সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সে যেন তার উত্তর দেয় বা সেই প্রসঙ্গে অবহিত করে। আর তাকে
তা না জানা বিষয় প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সে যেন বলে, আল্লাহ্ তা’আলাই ভাল জানেন।
কেননা এটাও লোকের জ্ঞানের কথা যে, তাকে এমন কোন ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলো যা সে
জানে না, সে বলবে আল্লাহ্ তা’আলাই ভাল জানেন। কেননা আল্লাহ্ তা’আলা তার নাবীকে
বলেছেনঃ “আপনি বলুন, আমি তোমাদের নিকট এর জন্য (হিদায়াতের বিনিময়ে) কোন পরিশ্রমিক
চাই না এবং আমি কৃত্রিমতা প্রদর্শনকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই” – (সূরা দুখান ৮৬)।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন দেখতে পেলেন যে, কুরাইশরা
তাঁর অবাধ্যতা ও বিরোধিতায় চরম পরাকাষ্ঠা দেখাচ্ছে তখন তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ্!
ইউসুফ (আঃ)-এর সময়কার সাত বছরের দুর্ভিক্ষের মত এদেরকেও সাত বছর দুর্ভিক্ষে
নিক্ষেপ করে আমাকে সাহায্য করুন। তারপর তাদের উপরে দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টি নেমে এলো
এবং সবকিছু নিঃশেষ হয়ে গেল। এমনকি তারা চামড়া, হাড় ও মৃত জীব ভক্ষণ করতে লাগল। ‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) বলেন, এ সময় মাটি হতে ধোঁয়ার মত এক পদার্থ বের হতে লাগল। বর্ণনাকারী বলেন,
তখন আবূ সুফইয়ান রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে
বলেন, আপনার জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং তাদের জন্য আল্লাহ্ তা’আলার দরবারে
দু’আ করুন। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, এটাই আল্লাহ্ তা’আলার এই বাণীর “যেদিন স্পষ্টই
ধোয়াচ্ছন্ন হবে এবং তা মানবজাতিকে গ্রাস করে ফেলবে, এটা হবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি”
তাতপর্য – (সুরা দুখান ১০-১১)। মানসুর (রহঃ) বলেন, এটাই নিম্নোক্ত আয়াতের তাৎপর্যঃ
“হে আমাদের রব! আমাদের উপর হতে শাস্তি দূরীভূত কর নিশ্চয় আমরা মু’মিন”- (সূরা
দুখান ১২)। আখিরাতের শাস্তি দূরীভূত করা হবে কি? ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ধরপাকড়,
কঠিন বিপদ ও ধোঁয়া সবই অতিবাহিত হয়েছে। আ’মাশ ও মানসুরের মধ্যে একজন বলেন, চন্দ্র
বিদীর্ণ হওয়ার ঘটনা অতিক্রান্ত হয়েছে এবং অপরজন বলেন, রোম বিজয়ের ঘটনা (অতিবাহিত
হয়েছে)।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম
আবূ ‘ঈসা (রহঃ) বলেন, লিযাম বলতে সেই হত্যা বুঝানো হয়েছে
যা বদরের দিন সংঘটিত হয়েছে । এই হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৫৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُوسَى
بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبَانَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ مُؤْمِنٍ إِلاَّ
وَلَهُ بَابَانِ بَابٌ يَصْعَدُ مِنْهُ عَمَلُهُ وَبَابٌ يَنْزِلُ مِنْهُ رِزْقُهُ
فَإِذَا مَاتَ بَكَيَا عَلَيْهِ فَذَلِكَ قَوْلُهُ عَزَّ وَجَلَّ ( فَمَا بَكَتْ
عَلَيْهِمُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ وَمَا كَانُوا مُنْظَرِينَ ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ . وَمُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ وَيَزِيدُ بْنُ أَبَانَ الرَّقَاشِيُّ
يُضَعَّفَانِ فِي الْحَدِيثِ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক মু’মিনের জন্যই ঊর্ধ্ব জগতে
দু’টি দরজা আছে। একটি দরজা দিয়ে তার আমল উপরে উঠে যায় এবং অপরটি দিয়ে তার রিযিক
নেমে আসে। তারপর সে যখন মারা যায় তখন দরজা দু’টি তাঁর জন্য কাঁদে। এই পর্যায়ে
আল্লাহ বলেনঃ “আসমান-যমিনে কেউ তাদের জন্য কাঁদেনি এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হয়নি”
( সূরাঃ আদ-দুখান-২৯)।
যঈফ, যঈফা (৪৪৯১)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সনদেই
এই হাদীস মারফূ হিসাবে জেনেছি। মূসা ইবনু উবাইদা ও ইয়াযীদ ইবনু আবান আর-রাকাশী হাদীস
শাস্ত্রে দুর্বল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৭
সূরা
আল-আহক্বাফ
৩২৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ أَبُو عَمْرٍو
الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ
عَطَاءٍ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم إِذَا رَأَى مَخِيلَةً أَقْبَلَ وَأَدْبَرَ فَإِذَا مَطَرَتْ سُرِّيَ عَنْهُ
. قَالَتْ فَقُلْتُ لَهُ . فَقَالَ " وَمَا أَدْرِي لَعَلَّهُ كَمَا
قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : (فلمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُسْتَقْبِلَ
أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَذَا عَارِضٌ مُمْطِرُنَا ) " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন দেখতেন তখন (অস্থির হয়ে)
একবার সামনে যেতেন আবার পেছনে যেতেন। তারপর বৃষ্টি বর্ষিত হলে তাঁর অস্থিরতা দূর
হত। তিনি (‘আয়িশাহ) বলেন, আমি তাকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ আমি জানি
না, এটা সেই আযাব কিনা যে প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ “তারপর তারা যখন তাদের
উপত্যকার দিকে মেঘ আসতে দেখল তখন বলতে লাগল, এ তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করবে”-
(সূরা আহক্বাফ ২৪)
সহীহঃ সহীহাহ (২৭৫৭) বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৫৮
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
إِبْرَاهِيمَ، عَنْ دَاوُدَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ قُلْتُ
لاِبْنِ مَسْعُودٍ رضى الله عنه هَلْ صَحِبَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
لَيْلَةَ الْجِنِّ مِنْكُمْ أَحَدٌ قَالَ مَا صَحِبَهُ مِنَّا أَحَدٌ وَلَكِنْ
قَدِ افْتَقَدْنَاهُ ذَاتَ لَيْلَةٍ وَهُوَ بِمَكَّةَ فَقُلْنَا اغْتِيلَ أَوِ
اسْتُطِيرَ مَا فُعِلَ بِهِ فَبِتْنَا بِشَرِّ لَيْلَةٍ بَاتَ بِهَا قَوْمٌ حَتَّى
إِذَا أَصْبَحْنَا أَوْ كَانَ فِي وَجْهِ الصُّبْحِ إِذَا نَحْنُ بِهِ يَجِيءُ
مِنْ قِبَلِ حِرَاءَ قَالَ فَذَكَرُوا لَهُ الَّذِي كَانُوا فِيهِ فَقَالَ
" أَتَانِي دَاعِيَ الْجِنِّ فَأَتَيْتُهُمْ فَقَرَأْتُ عَلَيْهِمْ
" . فَانْطَلَقَ فَأَرَانَا آثَارَهُمْ وَآثَارَ نِيرَانِهِمْ . قَالَ
الشَّعْبِيُّ وَسَأَلُوهُ الزَّادَ وَكَانُوا مِنْ جِنِّ الْجَزِيرَةِ فَقَالَ
" كُلُّ عَظْمٍ لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ يَقَعُ فِي
أَيْدِيكُمْ أَوْفَرَ مَا كَانَ لَحْمًا وَكُلُّ بَعْرَةٍ أَوْ رَوْثَةٍ عَلَفٌ
لِدَوَابِّكُمْ " . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
فَلاَ تَسْتَنْجُوا بِهِمَا فَإِنَّهُمَا زَادُ إِخْوَانِكُمْ مِنَ الْجِنِّ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আলক্বামাহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি ইবনু
মাস’উদ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, জিনের রাতে আপনাদের কেউ কি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথী ছিলেন? তিনি বললেন, আমাদের কেউ তাঁর
সঙ্গে ছিল না। তবে তিনি মক্কাতে থাকার সময় এক রাতে আমাদের হতে হারিয়ে গেলেন। আমরা
বলাবলি করলাম, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে অথবা অপহরণ করা হয়েছে, এরকম কিছু করা হয়েছে।
আমরা খুবই অশান্তিতে রাত কাটালাম। তারপর খুব ভোরে হঠাৎ দেখলাম তিনি হেরা পর্বতের
দিক হতে আসছেন। রাবী বলেনঃ তাঁর নিকটে সকলে বিগত রাতের অস্থিরতার কথা বর্ণনা করলে
তিনি বললেনঃ আমার নিকট জিনদের এক প্রতিনিধি এসেছিল। আমি তাদের কাছে গিয়ে কুরআন পাঠ
করেছি। তারপর তিনি এগিয়ে গিয়ে তাদের বিভিন্ন প্রমাণ ও আগুনের চিহ্ন দেখান। শা’বী
(রহঃ) বলেনঃ জিনেরা তার নিকটে তাদের খাবার চাইল। তারা ছিল কোন এক উপদ্বীপের
অধিবাসী। তিনি তাদের বলেন, যে সব হাড়ে আল্লাহ্ তা’আলার নাম নেয়া হয়েছে সেগুলো
তোমাদের হাতে আসার সাথে সাথে গোশত পূর্ণ হয়ে যাবে, যেমন পূর্বে তা গোশতে পূর্ণ
ছিল। আর সব রকমের বিষ্ঠা ও গোবর তোমাদের পশুর খাদ্য। তারপর রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আমাদেরকে) বললেনঃ তোমরা এগুলো ঢিলা হিসেবে
ব্যবহার করবে না। কেননা এগুলো তোমাদের ভাই জিনদের খাদ্য।
যে হাড়ে “আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে” এবং “তোমাদের পশুর খাদ্য” এই শব্দ ব্যতীত
হাদীসটি সহীহ। যঈফাহ (১০৩৮)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৮
সূরা
মুহাম্মাদ
৩২৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه : (واسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ
وَالْمُؤْمِنَاتِ ) فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنِّي
لأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ فِي الْيَوْمِ سَبْعِينَ مَرَّةً " . قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . - وَيُرْوَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَيْضًا عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ فِي
الْيَوْمِ مِائَةَ مَرَّةٍ " . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ فِي
الْيَوْمِ مِائَةَ مَرَّةٍ " . وَرَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তোমার দোষের জন্য এবং
ঈমানদার নারী-পুরুষদের জন্য তুমি ক্ষমা চাও” – (সূরা মুহাম্মাদ ১৯)। উক্ত আয়াত
প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট
প্রতিদিন সত্তরবার ক্ষমা প্রার্থনা করি।
সহীহঃ বুখারী (৬৩০৭), তাতে আছে সত্তর বারেরও বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করি
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবু হুরাইরাহ (রাঃ)-এর
সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অপর একটি হাদীসে বর্ণিত আছে যে,
তিনি বলেনঃ ........... আমি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দৈনিক এক শতবার ক্ষমা প্রার্থনা
করি”। একাধিক সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছেঃ “নিশ্চয়
আমি দৈনিক এক শতবার আল্লাহ্ তা’আলার কাছে ক্ষমা চাই”। এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনু ‘আম্র-আবূ
সালামাহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
أَخْبَرَنَا شَيْخٌ، مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ تَلاَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم يَوْمًا هَذِهِ الآيَة : (وإِنْ تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ
قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لاَ يَكُونُوا أَمْثَالَكُمْ ) قَالُوا وَمَنْ
يُسْتَبْدَلُ بِنَا قَالَ فَضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى
مَنْكِبِ سَلْمَانَ ثُمَّ قَالَ " هَذَا وَقَوْمُهُ هَذَا وَقَوْمُهُ "
. قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ فِي إِسْنَادِهِ مَقَالٌ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ أَيْضًا هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ)
“যদি তোমরা বিমুখ হও, তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন। তারপর তারা
তোমাদের মত হবে না” – (সূরা মুহাম্মাদ ৩৮)। উপস্থিত সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, কোন
লোকদেরকে আমাদের স্থলবর্তী করা হবে? বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান (রাঃ) –এর কাঁধে ঝাঁকুনি দিয়ে বলেনঃ এ লোক ও তার
জাতি, এ লোক ও তার জাতি।
সহীহঃ সহীহাহ ২য় সংস্করণ (১০১৭)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এর সনদসূত্র প্রসঙ্গে
বিরূপ মন্তব্য রয়েছে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফারও হাদীস ‘আলা ইবনু ‘আব্দুর রহমান হতে বর্ণনা
করেছেন ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَنْبَأَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ نَجِيحٍ، عَنِ الْعَلاَءِ
بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ
قَالَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ
اللَّهِ مَنْ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ ذَكَرَ اللَّهُ إِنْ تَوَلَّيْنَا اسْتُبْدِلُوا
بِنَا ثُمَّ لَمْ يَكُونُوا أَمْثَالَنَا قَالَ وَكَانَ سَلْمَانُ بِجَنْبِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَخِذَ سَلْمَانَ قَالَ " هَذَا وَأَصْحَابُهُ وَالَّذِي نَفْسِي
بِيَدِهِ لَوْ كَانَ الإِيمَانُ مَنُوطًا بِالثُّرَيَّا لَتَنَاوَلَهُ رِجَالٌ
مِنْ فَارِسَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرِ
بْنِ نَجِيحٍ هُوَ وَالِدُ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ وَقَدْ رَوَى عَلِيُّ بْنُ
حُجْرٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ الْكَثِيرَ . وَحَدَّثَنَا عَلِيٌّ
بِهَذَا الْحَدِيثِ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
جَعْفَرٍ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কয়েকজন সাহাবী প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর
রাসূল! আল্লাহ্ তা’আলা যে বলেছেন, যদি আমরা বিমুখ হই তবে আমাদের বাদে অন্যদেরকে
প্রতিষ্ঠিত করা হবে, তারপর তারা আমাদের ন্যায় হবে না, সেসব ব্যক্তি কারা?
বর্ণনাকারী বলেন, সালমান ফারসী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকটেই ছিলেন। সালমান (রাঃ) এর উরুতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃদু আঘাত করে বলেন, ইনি ও তার সাথীরা। সেই সত্তার ক্বসম,
যার হাতে আমার প্রাণ! ঈমান যদি সুরাইয়াহ নক্ষত্রের সাথেও ঝুলন্ত থাকত, তবুও
পারস্যের কিছু ব্যক্তি তা নিয়ে আসত।
সহীহঃ প্রাগুপ্ত, বুখারী ও মুসলিমে হাদীসের শেষ অংশ বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফার ইবনু নাজীহ হলেন
‘আলী ইবনু মাদীনীর পিতা। ‘আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফারের সূত্রে অনেক
কিছু বর্ণনা করেছেন। আমার নিকট এ হাদীস বর্ণনা করেছেন ‘আলী (রহঃ)-ইসমাঈল ইবনু জা’ফার
ইবনু নাজীহ সূত্রে ‘আবদুল্লাহ ইবনু জ্জা’ফার হতে। বিশর ইবনু মি’আয ‘আবদুল্লাহ ইবনু
জা’ফার হতে, তিনি আলা-‘আলা হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন তবে তাতে ‘মানুতান শব্দের
পরিবর্তে’ মু’আল্লাকান শব্দ আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৯
সূরা
আল-ফাতহ
৩২৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدِ
بْنِ عَثْمَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ
أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، رضى الله عنه يَقُولُ كُنَّا
مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فَكَلَّمْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَكَتَ ثُمَّ كَلَّمْتُهُ فَسَكَتَ ثُمَّ
كَلَّمْتُهُ فَسَكَتَ فَحَرَّكْتُ رَاحِلَتِي فَتَنَحَّيْتُ وَقُلْتُ ثَكِلَتْكَ
أُمُّكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ نَزَرْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
ثَلاَثَ مَرَّاتٍ كُلُّ ذَلِكَ لاَ يُكَلِّمُكَ مَا أَخْلَقَكَ أَنْ يَنْزِلَ
فِيكَ قُرْآنٌ قَالَ فَمَا نَشِبْتُ أَنْ سَمِعْتُ صَارِخًا يَصْرُخُ بِي قَالَ
فَجِئْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " يَا ابْنَ
الْخَطَّابِ لَقَدْ أُنْزِلَ عَلَىَّ هَذِهِ اللَّيْلَةَ سُورَةٌ مَا أُحِبُّ
أَنَّ لِي بِهَا مَا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ : (إنَّا فَتَحْنَا لَكَ
فَتْحًا مُبِينًا ) " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ مَالِكٍ مُرْسَلاً .
‘উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক সফরে আমরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু বললে তিনি নির্বাক থাকেন। আমি
আমার কথার পুনরাবৃত্তি করলে তিনি এবারও নীরব রইলেন। আমি আমার কথা পুনর্ব্যক্ত করলে
তিনি এবারও নীরব থাকেন। অতএব আমি আমার জন্তুজান হাঁকিয়ে একপাশে চলে গেলাম এবং মনে
মনে বললেম, হে খাত্তাবের পুত্র! তোমার মা তোমাকে হারাক। তুমি তিন তিনবার
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করে বিরক্ত করলে, অথচ
একবারও তিনি কথা বলেননি। এখন তোমার প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার উপক্রম
হয়েছে। তিনি বলেন, মুহূর্তকাল অতিবাহিত না হতেই আমি শুনতে পেলাম, কে যেন চিৎকার
করে আমাকে ডাকছে। অতএব আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ হে ইবনুল খাত্তাব! আজ রাতে আমার উপর এমন একটি সূরা অবতীর্ণ
হয়েছে, যার পরিবর্তে সারা জগতের সকল কিছু আমাকে দেয়া হলেও আমি তা পছন্দ করব না।
সেই সূরাটি হল (অনুবাদ) “নিশ্চয়ই আমি তোমাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়” – (সূরা ফাতহ ১)
সনদ সহীহ, বুখারী (৪৮৩৭)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। কোন কোন বর্ণনাকারী
হাদিসটি মালিক হতে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، رضى الله عنه قَالَ أُنْزِلَتْ عَلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَ : (ليغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ
ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ ) مَرْجِعَهُ مِنَ الْحُدَيْبِيَةِ فَقَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " لَقَدْ أُنْزِلَتْ عَلَىَّ آيَةٌ أَحَبُّ إِلَىَّ
مِمَّا عَلَى الأَرْضِ ثُمَّ قَرَأَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ
فَقَالُوا هَنِيئًا مَرِيئًا يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَدْ بَيَّنَ اللَّهُ لَكَ
مَاذَا يُفْعَلُ بِكَ فَمَاذَا يُفْعَلُ بِنَا فَنَزَلَتْ عَلَيْهِ : (
ليُدْخِلَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا
الأَنْهَارُ ) حَتَّى بَلَغَ : (فوزًا عَظِيمًا ) قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ وَفِيهِ عَنْ مُجَمِّعِ بْنِ جَارِيَةَ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুদাইবিয়া
হতে প্রত্যাবর্তনের সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর উপর
আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “যেন আল্লাহ্ তা’আলা তোমার অতীত ও ভবিষ্যৎ ভুলসমূহ মাফ করেন” –
(সূরা আল ফাতহ, ২), তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
আমার উপর এমন একটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যা আমার নিকটে দুনিয়ার সবকিছু হতে প্রিয়।
তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীগণের সামনে আয়াতটি
তিলাওয়াত করলেন। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুবারাকবাদ! এটি আপনার জন্য
অভিনন্দন। আপনার সাথে কেমন আচরণ করা হবে, তাতো আল্লাহ্ তা’আলা স্পষ্ট করে
দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের সাথে কেমন ব্যবহার করা হবে? তখন তার উপর এ আয়াত অবতীর্ণ
হয়ঃ “তা এজন্য যে, তিনি ঈমানদার পুরুষ ও মহিলাদের জান্নাতে দাখিল করাবেন, যার
নিম্নদেশে প্রবাহিত হয় নহরসমূহ। সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে এবং তিনি তাদের
পাপসমূহ মার্জনা করবেন। এটাই আল্লাহ্ তা’আলার সমীপে মহা সাফল্য।” (সূরা আল-ফাতহ ২)
সনদ সহীহ, বুখারী (৪৭১২) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
মুবারাকবাদ .... এই অংশটুকু মুরসাল, মুসলিম (৫/১৭৬) আনাস হতে ঐ অতিরিক্ত অংশ
ব্যতীত, তা শাজ।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদের মুজাম্মি’
ইবনু জারিয়াহ (রাযিঃ) হতেও হাদিস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
৩২৬৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ،
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ ثَمَانِينَ،
هَبَطُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابِهِ مِنْ جَبَلِ
التَّنْعِيمِ عِنْدَ صَلاَةِ الصُّبْحِ وَهُمْ يُرِيدُونَ أَنْ يَقْتُلُوهُ
فَأُخِذُوا أَخْذًا فَأَعْتَقَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ
اللَّهُ : ( هُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ
عَنْهُمْ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আশিজন কাফির ফাজরের
সময় ‘তান’ঈম পাহাড় হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর
সাহাবীগণকে হত্যা করার উদ্দেশে নেমে আসে। তারা সকলেই গ্রেপ্তার হয়। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ছেড়ে দিলেন। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত
অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) “তিনি সেই সত্তা যিনি (মক্কা উপত্যকায় তাদের উপর তোমাদেরকে
বিজয়ী করার পর) তাদের হাত তোমাদের হতে এবং তোমাদের হাত তাদের হতে নিবারিত করেছেন।
তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ্ তা’আলা তা দেখেন” –(সূরা ফাতহ ২৪)
সহীহঃ সহীহ আবু দাঊদ (২৪০৮), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬৫
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ قَزْعَةَ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
بْنُ حَبِيبٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ الطُّفَيْلِ بْنِ
أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَ : (
وألْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَى ) قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . قَالَ
هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ الْحَسَنِ
بْنِ قَزْعَةَ قَالَ وَسَأَلْتُ أَبَا زُرْعَةَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَلَمْ
يَعْرِفْهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
উবাই
ইবনু ক্বা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আল্লাহ্ তা’আলার বাণী (অনুবাদ) “তিনি তাদেরকে তাক্বওয়ার বাক্যে সুদৃঢ় করলেন” –
(সূরা ফাতহ ২৬) প্রসঙ্গে বলেনঃ এ বাক্যের অর্থ হল, কালিমা “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ”।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু হাসান ইবনু
কাযা’আর সনদে এ হাদীস মারফু’রূপে জেনেছি। এ হাদীস প্রসঙ্গে আমি আবূ যুর’আকে প্রশ্ন
করলে তিনি উপর্যুক্ত সুত্র ব্যতীত এটিকে মারফু’রূপে রিওয়ায়াত হওয়া প্রসঙ্গে অজ্ঞতা
প্রকাশ করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫০
সূরা
আল-হুজুরাত
৩২৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُؤَمِّلُ بْنُ
إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ عُمَرَ بْنِ جَمِيلٍ الْجُمَحِيُّ،
حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ،
أَنَّ الأَقْرَعَ بْنَ حَابِسٍ، قَدِمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ اسْتَعْمِلْهُ عَلَى قَوْمِهِ .
فَقَالَ عُمَرُ لاَ تَسْتَعْمِلْهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَتَكَلَّمَا عِنْدَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى ارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُهُمَا فَقَالَ أَبُو
بَكْرٍ لِعُمَرَ مَا أَرَدْتَ إِلاَّ خِلاَفِي . فَقَالَ عُمَرُ مَا أَرَدْتُ
خِلاَفَكَ قَالَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لاَ تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ ) فَكَانَ عُمَرُ بْنُ
الْخَطَّابِ بَعْدَ ذَلِكَ إِذَا تَكَلَّمَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
لَمْ يُسْمِعْ كَلاَمَهُ حَتَّى يَسْتَفْهِمَهُ . قَالَ وَمَا ذَكَرَ ابْنُ
الزُّبَيْرِ جَدَّهُ يَعْنِي أَبَا بَكْرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ مُرْسَلٌ
وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ .
আবদুল্লাহ
ইবনুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল-আক্বরা ইবনু হাবিস
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এলে আবূ বাকর (রাঃ) বলেন,
হে আল্লাহর রাসূল! তাঁকে তার গোত্রের কর্মকর্তা নিয়োগ করুন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, হে
আল্লাহর রাসূল! তাকে কর্মচারীর পদে নিয়োগ করবেন না। তারা পরস্পরে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হন এবং
তাদের কন্ঠস্বর চরমে পৌঁছে। আবূ বাকর (রাঃ) ‘উমার (রাঃ)–কে বললেন, আমার বিরোধিতা
করাই আপনার একমাত্র লক্ষ্য। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমার লক্ষ্য আপনার বিরোধিতা করা নয়।
বর্ণনাকারী বলেন, এ আয়াতটি তখন অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) “হে ঈমানদারগণ! নাবীর
কণ্ঠস্বরের উপর তোমরা নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না” –(সূরা হুজুরাত ২)।
বর্ণনাকারী বলেন, তারপর হতে ‘উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাথে কথা বললে তার কথা শুনা যেত না, এমনকি তা বুঝার জন্য আবার
ব্যাখ্যা চাওয়ার প্রয়োজন হত।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৮৪৫, ৪৮৪৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, ইবনুয যুবাইর তার নানা আবু বাকর (রাযি)-এর
প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি। আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীসটি কিছু বর্ণনাকারী
ইবনু আ’বী মুলাইকাহর সূত্রে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন এবং তাতে ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর
(রাযিঃ০-এর উল্লেখ করেননি ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬৭
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا
الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنِ الْحُسَيْنِ بْنِ وَاقِدٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ،
عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، فِي قَوْلِهِ : ( إنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ
مِنْ وَرَاءِ الْحُجُرَاتِ أَكْثَرُهُمْ لاَ يَعْقِلُونَ ) قَالَ فَقَامَ رَجُلٌ
فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ حَمْدِي زَيْنٌ وَإِنَّ ذَمِّي شَيْنٌ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " ذَاكَ اللَّهُ تَعَالَى " .
قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আল-বারাআ
ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“যারা আপনাকে উচ্চস্বরে ঘরের বাইরে হতে ডাকে,
তাদের বেশির ভাগই নির্বোধ”-(সুরা ফাতহ)। বর্ণনাকারী বলেন, জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে
বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার প্রসঙ্গে প্রশংসা হল সৌন্দর্য এবং আমার প্রসঙ্গে
নিন্দা হল অপমান। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ মর্যাদা
শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তা’আলার।
আবূ ঈসা বুলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِسْحَاقَ الْجَوْهَرِيُّ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا أَبُو زَيْدٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، قَالَ
سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي جَبِيرَةَ بْنِ الضَّحَّاكِ، قَالَ
كَانَ الرَّجُلُ مِنَّا يَكُونُ لَهُ الاِسْمَيْنِ وَالثَّلاَثَةَ فَيُدْعَى
بِبَعْضِهَا فَعَسَى أَنْ يَكْرَهَ قَالَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ( وَلاَ
تَنَابَزُوا بِالأَلْقَابِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . أَبُو جَبِيرَةَ هُوَ أَخُو ثَابِتِ بْنِ الضَّحَّاكِ بْنِ خَلِيفَةَ
أَنْصَارِيٌّ وَأَبُو زَيْدٍ سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ صَاحِبُ الْهَرَوِيِّ
بَصْرِيٌّ ثِقَةٌ .
আবূ
জুবাইরাহ ইবনুয যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কারো
কারো দু’তিনটি নাম থাকতো। কোন কোন নামে সম্বোধন করা তাদের কাছে মন্দ লাগত। এ প্রসঙ্গেই
এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ)ঃ “তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে সম্বোধন করো না
......”-( সুরা ফাতহ)।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (৩৭৪১)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস। আবূ জুবাইরাহ ইবনুয
যাহহাক (রাঃ) হলেন সাবিত ইবনুয যাহহাক আল-আনসারী (রাঃ) এর সহোদর ভাই। আল-হারাভীর সংগী
আবূ যাইদের নাম সা’ঈদ ইবনুর রাবী বাসরার অধিবাসি নির্ভরযোগ্য রাবী। আবূ সালামাহ ইয়াহইয়া
ইবনু’ খালাফ-বিশর ইবনুল মুফাযযাল হতে, তিনি দাউদ ইবনু আবূ হিন্দ হতে, তিনি শা’বী হতে,
তিনি আবূ জুবাইরাহ ইবনুয যাহহাক (রাঃ) হতে উপরের হাদিসের একই রকম বর্ণনা করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৬৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ،
عَنِ الْمُسْتَمِرِّ بْنِ الرَّيَّانِ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، قَالَ قَرَأَ أَبُو
سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ : ( واعْلَمُوا أَنَّ فِيكُمْ، رَسُولَ اللَّهِ لَوْ
يُطِيعُكُمْ فِي كَثِيرٍ مِنَ الأَمْرِ لَعَنِتُّمْ ) قَالَ هَذَا نَبِيُّكُمْ
صلى الله عليه وسلم يُوحَى إِلَيْهِ وَخِيَارُ أَئِمَّتِكُمْ لَوْ أَطَاعَهُمْ فِي
كَثِيرٍ مِنَ الأَمْرِ لَعَنِتُوا فَكَيْفَ بِكُمُ الْيَوْمَ قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . قَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ
سَأَلْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ الْقَطَّانَ عَنِ الْمُسْتَمِرِّ بْنِ الرَّيَّانِ
فَقَالَ ثِقَةٌ .
আবূ
নাযরাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ সা’ঈদ
আল-খুদরী (রাঃ) তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) : “তোমরা জেনে রাখ যে, আল্লাহর রাসুল
তোমাদের মাঝে আছেন। তিনি অনেক বিষয়ে তোমাদের কথা শুনলে তোমরাই ব্যথিত হতে, কিন্তু
তোমাদের কাছে আল্লাহ তা’আলা ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং তাঁকে তোমাদের হৃদয়গ্রাহী
করেছেন......... ” –(সূরা ফাতহ ৭)। তারপর তিনি বলেন, ইনিই তোমাদের নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর কাছে ওহী পাঠানো হয় এবং তিনি হচ্ছেন
তোমাদের সবচেয়ে উত্তম নেতা। রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বহু বিষয়ে
তাদের কথা শুনলে তারাই সমস্যায় পড়ে যেতেন। অতএব যদি আজকাল তোমাদের কথা শুনা হয়
তাহলে কি পরিস্থিতি হবে!
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ গারীব। আলী ইবনুল
মাদীনী বলেন, আমি ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ আল-কাত্তানের কাছে মুসতামির ইবনু রাইয়্যানের অবস্থা
প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যে, তিনি নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৭০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ النَّاسَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ
فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَذْهَبَ عَنْكُمْ
عُبِّيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ وَتَعَاظُمَهَا بِآبَائِهَا فَالنَّاسُ رَجُلاَنِ
رَجُلٌ بَرٌّ تَقِيٌّ كَرِيمٌ عَلَى اللَّهِ وَفَاجِرٌ شَقِيٌّ هَيِّنٌ عَلَى
اللَّهِ وَالنَّاسُ بَنُو آدَمَ وَخَلَقَ اللَّهُ آدَمَ مِنْ تُرَابٍ " .
قَالَ اللَّهُ : ( يا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ
وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ
عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَعَبْدُ اللَّهِ
بْنُ جَعْفَرٍ يُضَعَّفُ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ وَغَيْرُهُ وَعَبْدُ
اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ وَالِدُ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ . قَالَ وَفِي
الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মক্কা বিজয়ের দিন
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন
এবং বলেনঃ হে জনমন্ডলী! তোমাদের হতে আল্লাহ তা’আলা জাহিলিয়াত যুগের দম্ভ ও অহংকার
এবং পূর্বপুরুষের গৌরবগাথা বাতিল করেছেন। এখন মানুষ দুই অংশে বিভক্তঃ এক দল মানুষ
নেককার, পরহেজগার, আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রিয় ও সম্মানিত এবং অন্য দল পাপিষ্ঠ,
দুর্ভাগা, আল্লাহ তা’আলার নিকট অত্যন্ত নিকৃষ্ট, নিচু ও ঘৃণিত। সকল মানুষই আদমের
সন্তান। আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)- কে মাটি দিয়ে তৈরী করেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা
বলেছেনঃ “হে লোক সকল! তোমাদেরকে আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী হতে তৈরী করেছি, তারপর
বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি, তোমরা যাতে একে অন্যকে চিনতে পার।
যে লোক তোমাদের মাঝে বেশি পরহেজগার সেই আল্লাহ তা’আলার নিকট বেশি মর্যাদার
অধিকারী। আল্লাহ তা’আলা সবকিছু সম্পর্কে জ্ঞাত, সব খবর রাখেন”-(সুরা ফাতহ ১৩)।
সহীহঃ সহীহাহ (হাঃ ২৭০০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব। এ হাদিসটি আমরা শুধুমাত্র
আবদুল্লাহ ইবনু দীনার হতে, তিনি ইবনু উমার(রাঃ) হতে, এ সনদেই জেনেছি। আবদুল্লাহ ইবনু
জা’ফর হাদীস শাস্ত্রে অত্যন্ত দুর্বল। তাঁকে ইয়াহইয়া ইবনু মা’ঈন প্রমুখ দুর্বল বলে
আখ্যায়িত করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফর হলেন আলী ইবনু মাদীনীর বাবা।এ অনুচ্ছেদে আবূ
হুরাইরাহ ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস উল্লেখিত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৭১
حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ الأَعْرَجُ الْبَغْدَادِيُّ، وَغَيْرُ،
وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سَلاَّمِ بْنِ أَبِي
مُطِيعٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْحَسَبُ الْمَالُ وَالْكَرَمُ
التَّقْوَى " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
مِنْ حَدِيثِ سَمُرَةَ . لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ
حَدِيثِ سَلاَّمِ بْنِ أَبِي مُطِيعٍ وَهُوَ ثِقَةٌ .
সামুরাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ধন-সম্পদ হল আভিজাত্যের প্রতীক এবং পরহেজগারী হল
সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক।
সহীহঃ ইরওয়াহ (হাঃ ১৮৭০)।
আবূ ইসা বলেন, এ হাদিসটি সামুরাহ (রাঃ)-এর উদ্ধৃত হিসেবে
হাসান, সহীহ গারীব। এ হাদীস আমরা শুধুমা(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাল্লাম
ইবনু আবী মুত্বী –এর সনদে জেনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫১
সূরা
ক্বাফ
৩২৭২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ،
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ
نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَزَالُ جَهَنَّمُ
تَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ حَتَّى يَضَعَ فِيهَا رَبُّ الْعِزَّةِ قَدَمَهُ
فَتَقُولُ قَطْ قَطْ وَعِزَّتِكَ وَيُزْوَى بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
. وَفِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “অবিরত জাহান্নাম বলতে থাকবে, আরো আছে কি?” (সূরা
ক্বাফ ৩০)। অবশেষে জাহান্নামের উপর মহামহিম আল্লাহ তা’আলা তাঁর পা রাখবেন। তখন সে
বলবে যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে, আপনার ইজ্জতের ক্বসম। তারপর তাঁর এক ভাগ অপর
ভাগের সংগে কুঞ্চিত হয়ে যাবে।
সহীহঃ জিলালুল জান্নাত (হাঃ ৫৩১, ৫৩৪), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ এবং উপর্যক্ত সূত্রে
গারীব। এ অধ্যায়ে আবূ হুরাইরাহ(রাযীঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫২
সূরা
আয-যারিয়াত
৩২৭৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ سَلاَّمٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ
رَجُلٍ، مِنْ رَبِيعَةَ قَالَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذُكِرْتُ عِنْدَهُ وَافِدَ عَادٍ فَقُلْتُ أَعُوذُ
بِاللَّهِ أَنْ أَكُونَ مِثْلَ وَافِدِ عَادٍ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " وَمَا وَافِدُ عَادٍ " . قَالَ فَقُلْتُ عَلَى
الْخَبِيرِ سَقَطْتَ إِنَّ عَادًا لَمَّا أُقْحِطَتْ بَعَثَتْ قَيْلاً فَنَزَلَ
عَلَى بَكْرِ بْنِ مُعَاوِيَةَ فَسَقَاهُ الْخَمْرَ وَغَنَّتْهُ الْجَرَادَتَانِ
ثُمَّ خَرَجَ يُرِيدُ جِبَالَ مَهْرَةَ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنِّي لَمْ آتِكَ
لِمَرِيضٍ فَأُدَاوِيَهِ وَلاَ لأَسِيرٍ فَأُفَادِيَهُ فَاسْقِ عَبْدَكَ مَا
كُنْتَ مُسْقِيَهُ وَاسْقِ مَعَهُ بَكْرَ بْنَ مُعَاوِيَةَ . يَشْكُرْ لَهُ
الْخَمْرَ الَّذِي سَقَاهُ فَرُفِعَ لَهُ سَحَابَاتٌ فَقِيلَ لَهُ اخْتَرْ
إِحْدَاهُنَّ فَاخْتَارَ السَّوْدَاءَ مِنْهُنَّ فَقِيلَ لَهُ خُذْهَا رَمَادًا
رَمْدَدًا لاَ تَذَرُ مِنْ عَادٍ أَحَدًا وَذُكِرَ أَنَّهُ لَمْ يُرْسَلْ
عَلَيْهِمْ مِنَ الرِّيحِ إِلاَّ قَدْرُ هَذِهِ الْحَلْقَةِ يَعْنِي حَلْقَةَ
الْخَاتَمِ . ثُمَّ قَرَأَ : (إذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الرِّيحَ
الْعَقِيمَ * مَا تَذَرُ مِنْ شَيْءٍ أَتَتْ عَلَيْهِ إِلاَّ جَعَلَتْهُ
كَالرَّمِيمِ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ
هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سَلاَّمٍ أَبِي الْمُنْذِرِ عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي
النَّجُودِ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ حَسَّانَ وَيُقَالُ لَهُ
الْحَارِثُ بْنُ يَزِيدَ .
আবূ
ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাবী’আহ
গোত্রের এক লোক বলেন, আমি মাদীনায় পৌঁছে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হলাম। তার নিকট আমি আদ জাতির দূত প্রসঙ্গে বললাম, আমি আদ
জাতির দূতের মত হওয়া হতে আল্লাহ তা’আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন করেনঃ আদ জাতির দূতের কি হয়েছিল? আমি বললাম, আপনি
ওয়াকিফহাল ব্যক্তিরই সাক্ষাৎ পেয়েছেন। আদ জাতি দুর্ভিক্ষে পতিত হলে তারা ক্বায়ল
নামক এক লোককে প্রেরণ করে এবং সে (মক্কার কাছাকাছি) বাকর ইবনু মু’আবিয়াহর বাড়িতে
উপস্থিত হয়। বাকর তাকে মদ পান করায় এবং তার সম্মূখে দু’টি গায়িকা বাদী গান পরিবেশন
করে। তারপর সে মাহারা (গোত্রের) অঞ্চলের পর্বতমালায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু
করে। সে এ বলে প্রার্থনা করেঃ হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি কোন অসুখ হতে নিরাময়
পাওয়ার জন্য আসিনি এবং কোন বন্দিকে মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত করার জন্যও আসিনি। অতএব
আপনার এ বান্দাকে আপনি যত পারেন বৃষ্টিতে সিক্ত করুন এবং এর সংগে বাকর ইবনু
মু’আবিয়াহকেও সিক্ত করুন। বাকর তাকে যে মদ পান করায়, সে তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন
করছিল। অতএব তার জন্য মেঘমালা উত্থিত হল এবং তাকে বলা হল, তুমি এগুলোর মাঝে যে কোন
একটি মেঘখন্ড বেছে নাও। সে মেঘমালার মাঝ হতে একখন্ড কালো মেঘ বেছে নিল। তাকে বলা
হল, ক্ববুল কর, এটা জ্বলে পুড়ে ছাইয়ের ন্যায় করে ফেলবে, যা আদ জাতির কাউকে
পরিত্রাণ দিবে না। উল্লেখ্য যে, একটি আংটির বৃত্তের পরিমাণ বাতাসের ঝাপটা তাদের
উপর পাঠানো হয়েছিল মাত্র। তারপর এ আয়াতটি তিনি পাঠ করেন (অনুবাদ)ঃ “তাদের উপর যখন
আমি বিধ্বংসী বায়ু পাঠিয়ে ছিলাম তা যখন যা কিছুর উপর বয়ে গিয়েছিল সমস্ত কিছু
চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছিল”-(সূরা যারিয়াত ৪১-৪২)
হাসানঃ জঈফ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১২২৮)-এর অংশ।
আবূ ঈসা বলেন, একাধিক বর্ণনাকারি এ হাদিসটি আবুল মুনযির
সাল্লাম (রহঃ)- এর সূত্রে তিনি আসিম ইবনু আবী নাজুদ হতে, তিনি আবূ ওয়ায়িল হতে, তিনি
হারিস ইবনু হাসসান হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই আল-হারিসকে ইবনু ইয়াজিদও বলা হয়।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩২৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ،
حَدَّثَنَا سَلاَّمُ بْنُ سُلَيْمَانَ النَّحْوِيُّ أَبُو الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا
عَاصِمُ بْنُ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ يَزِيدَ
الْبَكْرِيِّ، قَالَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَدَخَلْتُ الْمَسْجِدَ فَإِذَا هُوَ
غَاصٌّ بِالنَّاسِ وَإِذَا رَايَاتٌ سُودٌ تَخْفُقُ وَإِذَا بِلاَلٌ مُتَقَلِّدٌ
السَّيْفَ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ مَا شَأْنُ
النَّاسِ قَالُوا يُرِيدُ أَنْ يَبْعَثَ عَمْرَو بْنَ الْعَاصِ وَجْهًا فَذَكَرَ
الْحَدِيثَ بِطُولِهِ نَحْوًا مِنْ حَدِيثِ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ بِمَعْنَاهُ
. قَالَ وَيُقَالُ لَهُ الْحَارِثُ بْنُ حَسَّانَ أَيْضًا .
আল-হারিস
ইবনু ইয়াযিদ আল-বাকরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদীনায় পৌছে
আমি মাসজিদে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম যে, তা লোকে পরিপূর্ণ। আর কালো পতাকাগুলো
আওয়াজ সৃষ্টি করে উড়ছে এবং বিলাল (রাঃ) তার গলায় তরবারি ঝুলিয়ে রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্মুখে উপস্থিত। আমি প্রশ্ন করলাম, এতো
লোকজন জড়ো হওয়ার কারণ কি? তারা বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমর ইবনুল আস (রাঃ) কে জিহাদের লক্ষে কোথাও পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন।
তারপর বর্ণনাকারী সুফইয়ান ইবনু উয়াইনাহর হাদীসের ন্যায় দীর্ঘ হাদীস রিওয়ায়াত করেন।
হাসানঃ দেখুন পূর্বের হাদিস।
আবূ ঈসা বলেন, আল হারিস ইবনু ইয়াযীদ আল-বাকরীকে আল-হারিস
ইবনু ইবনু হাসসানও বলা হয়।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৩
সূরা
আত-তূর
৩২৭৫
حَدَّثَنَا أَبُو هِشَامٍ الرِّفَاعِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
فُضَيْلٍ، عَنْ رِشْدِينَ بْنِ كُرَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِدْبَارُ النُّجُومِ
الرَّكْعَتَانِ قَبْلَ الْفَجْرِ وَإِدْبَارُ السُّجُودِ الرَّكْعَتَانِ بَعْدَ
الْمَغْرِبِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ
نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ
فُضَيْلٍ عَنْ رِشْدِينَ بْنِ كُرَيْبٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَأَلْتُ مُحَمَّدَ
بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَرِشْدِينَ ابْنَىْ كُرَيْبٍ أَيُّهُمَا
أَوْثَقُ قَالَ مَا أَقْرَبَهُمَا وَمُحَمَّدٌ عِنْدِي أَرْجَحُ . قَالَ
وَسَأَلْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ هَذَا فَقَالَ مَا
أَقْرَبَهُمَا عِنْدِي وَرِشْدِينُ بْنُ كُرَيْبٍ أَرْجَحُهُمَا عِنْدِي . قَالَ
وَالْقَوْلُ عِنْدِي مَا قَالَ أَبُو مُحَمَّدٍ وَرِشْدِينُ أَرْجَحُ مِنْ
مُحَمَّدٍ وَأَقْدَمُ وَقَدْ أَدْرَكَ رِشْدِينُ ابْنَ عَبَّاسٍ وَرَآهُ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “নক্ষত্রের অস্তগমন” (সূরাঃ
আত-তূর-৪০) অর্থ ফজরের ফরয নামাযের আগেকার দুই রাক‘আত এবং “নামাযের পর” (সূরাঃ
ক্বাফ-৪০) অর্থ মাগরিবের ফরযের পর দুই রাক‘আত সুন্নাত নামায।
যঈফ, যঈফা (২১৭৭)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু মুহাম্মাদ ইবনু
ফুযাইল হতে রিশদীন ইবনু কুরাইব (রহঃ) সূত্রে এ হাদীস মারফূ হিসেবে জেনেছি। আমি মুহাম্মাদ
ইবনু ইসমাঈলের নিকট মুহাম্মাদ ও রিশদীন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম যে, তাদের মধ্যে কে বেশি
নির্ভরযোগ্য? তিনি বলেনঃ তারা দু’জনই সমান, তবে আমার নিকট মুহাম্মাদ শ্রেষ্ঠ। আবদুল্লাহ
ইবনু আবদুর রহমানের নিকট আমি একথাটি জানতে চাইলে তিনি বলেনঃ তারা উভয়ে সমান, তবে আমার
মতে রিশদীন উল্লেখযোগ্য। রিশদীন ইবনু আব্বাসের সাক্ষাৎ পেয়েছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৪
সূরা
আন-নাজম
৩২৭৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَالِكِ بْنِ
مِغْوَلٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ لَمَّا بَلَغَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِدْرَةَ الْمُنْتَهَى
قَالَ " انْتَهَى إِلَيْهَا مَا يَعْرُجُ مِنَ الأَرْضِ وَمَا يَنْزِلُ
مِنْ فَوْقَ . قَالَ فَأَعْطَاهُ اللَّهُ عِنْدَهَا ثَلاَثًا لَمْ يُعْطِهِنَّ
نَبِيًّا كَانَ قَبْلَهُ فُرِضَتْ عَلَيْهِ الصَّلاَةُ خَمْسًا وَأُعْطِيَ
خَوَاتِمَ سُورَةِ الْبَقَرَةِ وَغُفِرَ لأُمَّتِهِ الْمُقْحِمَاتُ مَا لَمْ
يُشْرِكُوا بِاللَّهِ شَيْئًا " . قَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ : ( إذْ
يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَى ) قَالَ السِّدْرَةُ فِي السَّمَاءِ
السَّادِسَةِ . قَالَ سُفْيَانُ فَرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ وَأَشَارَ سُفْيَانُ
بِيَدِهِ فَأَرْعَدَهَا وَقَالَ غَيْرُ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ إِلَيْهَا يَنْتَهِي
عِلْمُ الْخَلْقِ لاَ عِلْمَ لَهُمْ بِمَا فَوْقَ ذَلِكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আব্দুল্লাহ
ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মি’রাজের রাতে) যখন সিদরাতুল মুন্তাহায়
পৌছালেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, সিদরাতুল মুন্তাহা হল একটি কেন্দ্র যেই পর্যন্ত
পৃথিবীর যা কিছু উপরে চলে যায় এবং যেখান হতে নিচের দিকে কোন কিছু অবতরণ হয়ে আসে।
এখানে আল্লাহ তা’আলা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এমন তিনটি
জিনিস উপহার দেন যা তিনি ইতোপূর্বে কোন নাবীকেই দেননি। পাঁচ ওয়াক্ত নামায তাঁর উপর
ফরজ করা হয়, সুরা আল-বাকারার শেষের কয়টি আয়াত তাঁকে দেয়া হয় এবং তাঁর উম্মতের
কাবীরাহ গুনাহসমূহ (তওবার মাধ্যমে) ক্ষমা করা হয়, যদি তারা আল্লাহ তা’আলার সংগে
কোন কিছু অংশীদার না করে থাকে। তারপর এ আয়াতটি ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) পাঠ করেন
(অনুবাদ)ঃ “যখন কুলগাছটি যা দ্বারা আচ্ছাদিত হওয়ার তা দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল”-(সুরা
নাজম ১৬)। তিনি বলেন, ৬ষ্ঠ আকাশে সিদরাতুল মুন্তাহা অবস্থিত। সুফইয়ান (রহঃ) বলেন,
এটি সোনার পাখিসমূহ দ্বারা আচ্ছাদিত, এই বলে তিনি তার হাতের ইশারায় তাদের উড়ন্ত
অবস্থা বুঝালেন। মালিক ইবনু মিগওয়াল ছাড়া অন্যান্য বর্ণনাকারীগণ বলেন, সিদরাতুল
মুন্তাহা পর্যন্ত পৌছালে সৃষ্টির জ্ঞান শেষ হয়ে যায়, এর ঊর্ধ্বজগৎ সম্পর্কে
সৃষ্টির কোন জ্ঞান নেই।
সহিহ মুসলিম (হাঃ ১/১০৯)
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৭৭
أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ
الْعَوَّامِ، حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ سَأَلْتُ زِرَّ بْنَ حُبَيْشٍ
عَنْ قَوْلِهِ : (فكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى ) فَقَالَ
أَخْبَرَنِي ابْنُ مَسْعُودٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى
جِبْرِيلَ وَلَهُ سِتُّمِائَةِ جَنَاحٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ .
আশ-শায়বানি
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি যির ইবনু হুবাইশ
(রাঃ)-এর নিকট আল্লাহ তা’আলার বাণী “তারপর তাদের মাঝে দুই ধনুক অথবা তারও কম
পার্থক্য থাকল”- (সুরা নাজম ৯) প্রসঙ্গে জানতে চাইলাম। তিনি বলেন, ইবনু মাস’ঊদ
(রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল
(আঃ) কে দেখেছেন এবং ছয়শ ডানা ছিল।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ গারীব হাদীস
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৭৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُجَالِدٍ،
عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ لَقِيَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَعْبًا بِعَرَفَةَ فَسَأَلَهُ
عَنْ شَيْءٍ، فَكَبَّرَ حَتَّى جَاوَبَتْهُ الْجِبَالُ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
إِنَّا بَنُو هَاشِمٍ . فَقَالَ كَعْبٌ إِنَّ اللَّهَ قَسَمَ رُؤْيَتَهُ
وَكَلاَمَهُ بَيْنَ مُحَمَّدٍ وَمُوسَى فَكَلَّمَ مُوسَى مَرَّتَيْنِ وَرَآهُ
مُحَمَّدٌ مَرَّتَيْنِ . قَالَ مَسْرُوقٌ فَدَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَقُلْتُ
هَلْ رَأَى مُحَمَّدٌ رَبَّهُ فَقَالَتْ لَقَدْ تَكَلَّمْتَ بِشَيْءٍ قَفَّ لَهُ
شَعْرِي قُلْتُ رُوَيْدًا ثُمَّ قَرَأْتُ : (لقَدْ رَأَى مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ
الْكُبْرَى ) قَالَتْ أَيْنَ يُذْهَبُ بِكَ إِنَّمَا هُوَ جِبْرِيلُ مَنْ
أَخْبَرَكَ أَنَّ مُحَمَّدًا رَأَى رَبَّهُ أَوْ كَتَمَ شَيْئًا مِمَّا أُمِرَ
بِهِ أَوْ يَعْلَمُ الْخَمْسَ الَّتِي قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : ( إنَّ
اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ ) فَقَدْ أَعْظَمَ
الْفِرْيَةَ وَلَكِنَّهُ رَأَى جِبْرِيلَ لَمْ يَرَهُ فِي صُورَتِهِ إِلاَّ
مَرَّتَيْنِ مَرَّةً عِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَى وَمَرَّةً فِي جِيَادٍ لَهُ
سِتُّمِائَةِ جَنَاحٍ قَدْ سَدَّ الأُفُقَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رَوَى
دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا الْحَدِيثِ وَحَدِيثُ دَاوُدَ
أَقْصَرُ مِنْ حَدِيثِ مُجَالِدٍ .
আশ-শাবী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ইবনু আব্বাস
(রাঃ) আরাফাতের ময়দানে কা’ব (রাঃ)-এর সাথে দেখা করে একটি কথা (আল্লাহ তা‘আলার দেখা
প্রসঙ্গে) জিজ্ঞেস করেন। এতে তিনি এত উচ্চ স্বরে তাকবীর ধ্বনি দিলেন যে, পাহাড়
পর্যন্ত উচ্চ গম্ভীর আওয়াজ করে উঠল (প্রতিশব্দ ভেসে এলো)। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ
আমরা হাশিম গোত্রীয়। কা’ব (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীদার (দর্শন) ও কালাম (
সংলাপ) মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মূসা (আঃ)-এর মাঝে
বাটোয়ারা করেছেন। সুতরাং মূসা (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার সাথে দু’বার কথা বলেছেন এবং
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’বার তাঁর দেখা পেয়েছেন। মাসরূক
(রহঃ) বলেনঃ এ কথা শুনে আমি আইশা (রাঃ)-এর নিকটে গিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলাম,
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি আল্লাহ তা‘আলাকে দেখেছেন? তিনি
বললেনঃ তুমি এমন একটি বিষয়ে কথা বললে যার ফলে আমার শরীরের লোম পর্যন্ত খাড়া হয়ে
গেছে। আমি বললাম, একটু অপেক্ষা করুন। তারপর আমি এ আয়াত তিলাওয়াত করলামঃ “তিনি তো
স্বীয় রবের মহান নিদর্শনসমূহ দর্শন করেছেন। (সূরাঃ আন-নাজ্ম-১৮)। তিনি বললেনঃ
তোমার বুদ্ধি তোমাকে কোথায় নিয়ে গেছে! তিনি হলেন জিবরাঈল (যাকে তিনি দেখেছেন)। যে
ব্যক্তি তোমাকে বলেছে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রবকে
দেখেছেন বা এমন কোন বিষয় তিনি লুকায়িত করেছেন যার (প্রচারের) হুকুম তাঁকে দেয়া
হয়েছে অথবা সেই পাঁচটি বিষয়ে তাঁর জ্ঞান আছে, যে প্রসঙ্গে আলাহ তা‘আলা বলেনঃ
“কিয়ামাতের জ্ঞান শুধু আল্লাহ তা‘আলার নিকট আছে, তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন…. “
(সূরাঃ লুকমান-৩৪), তাহলে সে একটি সাংঘাতিক অসত্য রটনা করেছে। বরং তিনি জিবরাঈল
(আঃ)-কে তার আসল চেহারায় দু’বার দেখেছেনঃ একবার সিদরাতুল মুন্তাহার সামনে, আর
একবার জিয়াদ নামক জায়গায় (মক্কার একটি জায়গা)। তাঁর ছয় শত ডানা আকাশের দিগন্ত ঢেকে
ফেলেছিল।
সনদ দুর্বল, হাদীসটি কা’ব ইবনু আব্বাসের ঘটনা ব্যতীত নাসাঈ সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা
করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, দাঊদ ইবনু আবূ হিন্দ (রহঃ) শাবী হতে তিনি
মাসরূক হতে তিনি আইশা (রাঃ) হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে
উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। দাঊদের রিওয়ায়াত মুজালিদের রিওয়ায়াতের তুলনায় সংক্ষিপ্ততর।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ نَبْهَانَ بْنِ صَفْوَانَ
الْبَصْرِيُّ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ كَثِيرٍ الْعَنْبَرِيُّ أَبُو
غَسَّانَ، حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ أَبَانَ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ رَأَى مُحَمَّدٌ رَبَّهُ . قُلْتُ
أَلَيْسَ اللَّهُ يَقُولُ : ( لا تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ
الأَبْصَارَ ) قَالَ وَيْحَكَ ذَاكَ إِذَا تَجَلَّى بِنُورِهِ الَّذِي هُوَ
نُورُهُ وَقَدْ رَأَى مُحَمَّدٌ رَبَّهُ مَرَّتَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইকরিমা
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রবকে দেখেছেন। আমি বললাম,
আল্লাহ কি বলেননি যে, “চোখের দৃষ্টি তাঁকে পরিবেষ্টন করতে পারে না, কিন্তু তিনি
পরিবেষ্টন করেন সকল দৃষ্টি” (সূরাঃ আল-আনআম-১০৩)? তিনি বললেনঃ তোমার জন্য আফসোস!
তা তো সেই অবস্থায় যখন তিনি তাঁর সত্তাগত নূরে আলোকিত হবেন। আর মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রভুকে দু’বার দেখেছেন।
যঈফ, যিলালুল জুন্নাহ্ (১৯০/৪৩৭)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৮০
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنَا
أَبِي، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِ اللَّهِ ( ولَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً * أُخْرَى عِنْدَ
سِدْرَةِ الْمُنْتَهَى ) ( فأوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَى ) (فكَانَ
قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى ) . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَدْ رَآهُ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তা’আলার বাণীঃ “তিনি
নিশ্চয়ই তাকে নিকটবর্তী কুল গাছের কাছে প্রত্যক্ষ করেছেন”-(সূরা নাজম ১৩-১৪)।
“আল্লাহ তা’আলা তখন তাঁর বান্দার জন্য যা ওয়াহী করার তা ওয়াহী করলেন” -(সূরা নাজম
১০) এবং “ফলে তাদের মধ্যে দুই ধনুক পরিমাণ বা তারও কম পার্থক্য রইল” -(সূরা নাজম
৯)। আয়াতসমূহ প্রসঙ্গে ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁকে প্রত্যক্ষ করেছেন।
হাসান সহীহঃ আযযিলাল (হাঃ ১৯১, ৪৩৯), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান হাদীস।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩২৮১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
وَابْنُ أَبِي رِزْمَةَ، وَأَبُو نُعَيْمٍ عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ( ما كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى ) قَالَ
رَآهُ بِقَلْبِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তিনি যা দেখেছেন, তার
মন তা অস্বীকার করতে পারেনি ”- (সূরা নাজম ১১) তিনি এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলাকে তার অন্তরের চোখ
দ্বারা প্রত্যক্ষ করেছেন।
সহীহঃ প্রাগুক্ত, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَيَزِيدُ
بْنُ هَارُونَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ التُّسْتَرِيِّ، عَنْ قَتَادَةَ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لأَبِي ذَرٍّ لَوْ أَدْرَكْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْتُهُ . فَقَالَ عَمَّا كُنْتَ تَسْأَلُهُ
قُلْتُ كُنْتُ أَسْأَلُهُ هَلْ رَأَى مُحَمَّدٌ رَبَّهُ فَقَالَ قَدْ سَأَلْتُهُ
فَقَالَ " نُورٌ أَنَّى أَرَاهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ যার
(রাঃ)-কে বললাম, যদি আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দেখা
পেতাম তাহলে একটি বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করতাম। তিনি বললেন, তুমি তাঁকে কি প্রসঙ্গে
প্রশ্ন করতে? আমি বললাম, আমি প্রশ্ন করতাম যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর রবকে দেখেছেন কি? আবূ যার (রাঃ) বললেন, আমি তাঁকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন
করেছি। তিনি বলেছেন যে, তিনি (আল্লাহ তা’আলা) হলেন নূর, তাকে আমি কিভাবে দেখতে
পারি!
সহীহঃ প্রাগুক্ত (১৯২-৪৪১), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، وَابْنُ أَبِي رِزْمَةَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ (ما كَذَبَ الْفُؤَادُ
مَا رَأَى ) قَالَ رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جِبْرِيلَ فِي
حُلَّةٍ مِنْ رَفْرَفٍ قَدْ مَلأَ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তিনি যা প্রত্যক্ষ
করেছেন, তার মন তা অস্বীকার করেনি”- (সুরা নাজমঃ১১); এ আয়াতটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল (আঃ) কে রেশমী কাপড় পরিহিত
অবস্থায় দেখেছেন। তিনি আকাশ ও মাটির মধ্যে অবস্থিত জায়গা পূর্ণ করে রেখেছিলেন।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৮৫৮) সংক্ষেপিত
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ أَبُو عُثْمَانَ الْبَصْرِيُّ،
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارِ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ : (الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ
كَبَائِرَ الإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلاَّ اللَّمَمَ ) قَالَ قَالَ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم " إِنْ تَغْفِرِ اللَّهُمَّ تَغْفِرْ جَمَّا وَأَىُّ
عَبْدٍ لَكَ لاَ أَلَمَّا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ زَكَرِيَّا بْنِ إِسْحَاقَ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ
“তারা ছোটখাট অন্যায় করলেও গুরুতর পাপ ও খারাপ কাজ হতে বিরত থাকে” – (সুরা নাজম
৩২) এ আয়াতটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
হে আল্লাহ! যদি আপনি মাফই করেন তাহলে সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিন, আর আপনার এমন কোন
বান্দা কি আছে যে অন্যায় করেনি।
সহীহঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (হাঃ ২৩৪৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ গারীব। এ হাদীস আমরা
শুধুমা(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাকারিয়া ইবনু ইসহাক্বের সনদে অবহিত হয়েছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৫
সূরা
আল-ক্বামার
৩২৮৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ،
عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ،
رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم بِمِنًى فَانْشَقَّ الْقَمَرُ فِلْقَتَيْنِ فِلْقَةٌ مِنْ وَرَاءِ الْجَبَلِ
وَفِلْقَةٌ دُونَهُ فَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
اشْهَدُوا " . يَعْنِي : (اقتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانْشَقَّ
الْقَمَرُ ) قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমরা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে মিনায় অবস্থানরত ছিলাম। সে সময়
হঠাৎ চাঁদ বিদীর্ণ হয়ে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেল। এর একটি অংশ পাহাড়ের পিছন দিকে এবং
অন্য অংশ পাহাড়ের সম্মুখে পড়ে গেল। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদের বললেনঃ তোমরা প্রত্যক্ষ কর এবং সাক্ষী থাকঃ “ক্বিয়ামাত নিকটবর্তী হয়েছে এবং
চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে ”-(সূরা ক্বামার ১)
সহিহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ سَأَلَ أَهْلُ مَكَّةَ النَّبِيَّ
صلى الله عليه وسلم آيَةً فَانْشَقَّ الْقَمَرُ بِمَكَّةَ مَرَّتَيْنِ فَنَزَلَت
: (اقتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانْشَقَّ الْقَمَرُ ) إِلَى قَوْلِهِ :
(سحْرٌ مُسْتَمِرٌّ ) يَقُولُ ذَاهِبٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন
মাক্কাবাসীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট একটি নিদর্শন পেশ
করার দাবি করল, সে সময় মক্কাতে চাঁদটি দুইবার বিদীর্ণ হয়। এ সম্পর্কে আয়াত অবতীর্ণ
হয় (অনুবাদ)ঃ “ক্বিয়ামাত নিকটবর্তী হয়েছে এবং চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে। তারা কোন
মু’জিযা (নিদর্শন) প্রত্যক্ষ করলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাচরিত
যাদু”-(সূরা ক্বামার ১-২) যা এ মুহূর্তে শেষ হয়ে যাবে।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৩৬৩৭, ৪৮৬৭, ৪৮৬৮), মুসলিম(হাঃ ৮/১৩৩); তবে এতে “নাযালাত”
(অতঃপর নাযিল হল) শব্দের উল্লেখ নেই। বুখারীর বর্ণনায় “মাররাতাইন” (দুইবার) –এর
স্থলে “ফিরক্বাতাইন” (দুই টুকরা) শব্দের উল্লেখ আছে। “মাররাতাইন” (দুইবার) শব্দ
মুসলিমের বর্ণনায় আছে।
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ أَبِي
نَجِيحٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ
انْشَقَّ الْقَمَرُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " اشْهَدُوا " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে চাঁদ বিদীর্ণ হয়। সে সময় রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাক।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، عَنْ
شُعْبَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ انْفَلَقَ
الْقَمَرُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اشْهَدُوا " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে চাঁদ বিদীর্ণ হল। সে সময় রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাক।
সহীহঃ মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ عَلَى عَهْدِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى صَارَ فِرْقَتَيْنِ عَلَى هَذَا الْجَبَلِ
وَعَلَى هَذَا الْجَبَلِ فَقَالُوا سَحَرَنَا مُحَمَّدٌ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لَئِنْ
كَانَ سَحَرَنَا مَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَسْحَرَ النَّاسَ كُلَّهُمْ . قَالَ أَبُو
عِيسَى وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ جُبَيْرِ
بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ جُبَيْرِ
بْنِ مُطْعِمٍ نَحْوَهُ .
জুবাইর
ইবনু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে চাঁদ বিদীর্ণ হল এবং দ্বিখণ্ডিত হয়ে
গেলে, এক অংশ এই পাহাড়ের উপর এবং অপর অংশ ঐ পাহাড়ের উপর পড়ে গেল। তারা (মাক্কাবাসী
কাফিররা) বলল, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে যাদু করেছেন।
কেউ কেউ বলল, তিনি আমাদের যাদু করে থাকলে সব মানুষকে যাদু করতে পারবেন না।
হাদীসটি সনদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, কোন কোন বর্ণনাকারী এ হাদীস হুসাইন হতে,
তিনি জুবাইর ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু জুবাইর ইবনু মুত’ইম হতে। তিনি তার পিতা হতে, তিনি
তার দাদা জুবাইর ইবনু মুত’ইম (রাঃ) হতে, এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৯০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَأَبُو بَكْرٍ بُنْدَارٌ قَالاَ حَدَّثَنَا
وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
عَبَّادِ بْنِ جَعْفَرٍ الْمَخْزُومِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَ
مُشْرِكُو قُرَيْشٍ يُخَاصِمُونَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي الْقَدَرِ
فَنَزَلَتْْ : ( يومَ يُسْحَبُونَ فِي النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ ذُوقُوا مَسَّ
سَقَرَ * إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন কুরাইশ
মুশরিকরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ নিকট আসে। তারা ভাগ্য প্রসঙ্গে
বাদানুবাদ করছিল। সে সময় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ)ঃ “যেদিন তাদেরকে উপুড় করে
জাহান্নামের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে (আর বলা হবে), জাহান্নামের যন্ত্রণার স্বাদ
গ্রহন কর। প্রতিটি জিনিস আমরা নির্ধারিত পরিমানে সৃষ্টি করেছি”- (সূরা ক্বামার
৪৮-৪৯)।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ৮৩), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৬
সূরা
আর-রহমান
৩২৯১
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ وَاقِدٍ أَبُو مُسْلِمٍ
السَّعْدِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ زُهَيْرِ بْنِ
مُحَمَّدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرٍ، رضى الله عنه قَالَ
خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى أَصْحَابِهِ فَقَرَأَ عَلَيْهِمْ
سُورَةَ الرَّحْمَنِ مِنْ أَوَّلِهَا إِلَى آخِرِهَا فَسَكَتُوا فَقَالَ "
لَقَدْ قَرَأْتُهَا عَلَى الْجِنِّ لَيْلَةَ الْجِنِّ فَكَانُوا أَحْسَنَ
مَرْدُودًا مِنْكُمْ كُنْتُ كُلَّمَا أَتَيْتُ عَلَى قَوْلِهِِ : ( فبأَىِّ آلاَءِ
رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ) قَالُوا لاَ بِشَيْءٍ مِنْ نِعَمِكَ رَبَّنَا
نُكَذِّبُ فَلَكَ الْحَمْدُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ الْوَلِيدِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ
زُهَيْرِ بْنِ مُحَمَّدٍ . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ كَأَنَّ زُهَيْرَ بْنَ
مُحَمَّدٍ الَّذِي وَقَعَ بِالشَّامِ لَيْسَ هُوَ الَّذِي يُرْوَى عَنْهُ
بِالْعِرَاقِ كَأَنَّهُ رَجُلٌ آخَرُ قَلَبُوا اسْمَهُ يَعْنِي لِمَا يَرْوُونَ
عَنْهُ مِنَ الْمَنَاكِيرِ . وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ
الْبُخَارِيَّ يَقُولُ أَهْلُ الشَّامِ يَرْوُونَ عَنْ زُهَيْرِ بْنِ مُحَمَّدٍ
مَنَاكِيرَ وَأَهْلُ الْعِرَاقِ يَرْوُونَ عَنْهُ أَحَادِيثَ مُقَارِبَةً .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সাহাবীদের উদ্দেশে বের হলেন। তিনি তাদের
সম্মুখে শুরু হতে শেষ পর্যন্ত সূরা আর-রহমান পাঠ করলেন কিন্তু তারা নিশ্চুপ রইলেন।
তিনি বলেনঃ এ সূরাটি আমি জিনদের সঙ্গে সাক্ষাতের রাতে তাদের সম্মুখে পাঠ করেছি।
তোমাদের তুলনায় তারা ভাল উত্তর দিয়েছে। যখনই আমি তিলাওয়াত করেছি, “তোমরা জিন ও
মানুষ নিজেদের প্রভুর কোন নিয়ামাতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে” তখনই তারা বলেছে, “হে
আমাদের রব! আমরা আপনার কোন নি’আমাতই অস্বীকার করছি না, আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা”।
হাসানঃ সহীহাহ (হাঃ২১৫০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীস আমরা শুধুমাত্র
ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম হতে, যুহাইর ইবনু মুহাম্মাদ-এর সূত্রে জেনেছি। আহমাদ ইবনু হাম্বাল
(রহঃ) বলেন, যে যুহাইর ইবনু মুহাম্মাদ সিরিয়া চলে গেছেন তিনি সে লোক নন যার মাধ্যমে
ইরাকবাসী হাদীস রিওয়ায়াত করেন। মনে হয় তিনি স্বতন্ত্র লোক, লোকজন তার নামে বিভ্রাট
করেছে, তার হতে লোকেরা মুনকার হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে
বলতে শুনেছি, সিরিয়াবাসী যুহাইর ইবনু মুহাম্মাদ হতে মুনকার হাদীস রিওয়ায়াত করেন এবং
ইরাকবাসী তার মাধ্যমে সহীহ হাদীসের পর্যায়ের হাদীস রিওয়ায়াত করেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৭
সূরা
আল-ওয়াক্বি’আহ
৩২৯২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ،
وَعَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا
أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " يَقُولُ اللَّهُ أَعْدَدْتُ لِعِبَادِيَ الصَّالِحِينَ مَا لاَ
عَيْنٌ رَأَتْ وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ
وَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ : ( وما تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ
قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ) وَفِي الْجَنَّةِ
شَجَرَةٌ يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا مِائَةَ عَامٍ لاَ يَقْطَعُهَا
وَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ : ( وظِلٍّ مَمْدُودٍ ) وَمَوْضِعُ سَوْطٍ فِي
الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا وَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ :
( فمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ وَمَا
الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ مَتَاعُ الْغُرُورِ ) " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার নেক
বান্দাদের জন্য আমি এমন কিছু তৈরি করে রেখেছি যা কোন চোখ কখনও প্রত্যক্ষ করেনি,
কোন কান কখনও (তার বর্ণনা) শ্রবণ করেনি এবং মানুষের মন তার ধারণাও করতে পারে না। এ
আয়াতটি তোমরা ইচ্ছা করলে পাঠ করতে পার (অনুবাদ)ঃ “তাদের জন্য নয়নমুগ্ধকর কি জিনিস
লুকিয়ে রাখা হয়েছে তাদের কৃতকর্মের পুরস্কার স্বরূপ তা সবারই অজানা ”-(সূরা সাজদাহ
১৭)। আর জান্নাতে এরূপ একটি গাছ আছে যার ছায়াতলে কোন আরোহী এক শত বছর চলতে থাকবে
কিন্তু তা পার হতে পারবে না। তোমরা চাইলে পাঠ করতে পারঃ “আর সম্প্রসারিত ছায়া”-
(সূরা ওয়াকি’আহ ৩০)। জান্নাতের এক চাবুক পরিমান জায়গা পৃথিবী ও তার মাঝখানে সব
কিছুর চাইতে উত্তম। তোমরা চাইলে পাঠ করতে পারঃ “জাহান্নাম হতে যাকে দূরে রাখা হবে
এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ছাড়া আর
কিছুই নয়”- (সূরা ‘ইমরান ১৮৫)
হাসান সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১৯৭৮), বুখারী “ইকরাঊ” (তোমরা পাঠ কর) শব্দ
ব্যতীত বর্ণনা করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩২৯৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَشَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا
مِائَةَ عَامٍ لاَ يَقْطَعُهَا وَإِنْ شِئْتُمْ فَاقْرَءُوا : ( وَظِلٍّ
مَمْدُودٍ * وَمَاءٍ مَسْكُوبٍ ) " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে এমন একটি গাছ রয়েছে কোন আরোহী যার ছায়াতলে
শত বছর ধরে চলতে থাকলেও তা অতিক্রম করতে পারবে না। তোমরা চাইলে পাঠ করতে পারঃ
“সম্প্রসারিত ছায়া ও প্রবাহিত পানি” – (সূরা ওয়াক্বি’আহ ৩০-৩১)।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৮৮১)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আবূ
সা’ঈদ (রাঃ) হতেও হাদীস উদ্ধৃত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
قَوْلِهِ : ( وفُرُشٍ مَرْفُوعَةٍ ) قَالَ " ارْتِفَاعُهَا كَمَا
بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ وَمَسِيرَةُ مَا بَيْنَهُمَا خَمْسُمِائَةِ عَامٍ
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ
إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ رِشْدِينَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ وَارْتِفَاعُهَا
كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ . قَالَ ارْتِفَاعُ الْفُرُشِ
الْمَرْفُوعَةِ فِي الدَّرَجَاتِ وَالدَّرَجَاتُ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ
كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ .
আবূ
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বাণী “ উঁচু উঁচু বিছানা” (সূরাঃ আল-
ওয়াক্বিয়াহ- ৩৪) প্রসঙ্গে বলেনঃ এই বিছানার উচ্চতা আসমান-যমীনের মাঝের উচ্চতার
সমান এবং এতদুভয়ের মাঝের দূরত্ব পাঁচ শত বছর চলার রাস্তার সমান।
যঈফ, তা’লীকুর রাগীব(৪/২৬২)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু রিশদ্বীনের
রিওয়ায়াত হিসেবে–এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৯৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ
مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ أَبِي عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ عَلِيٍّ، رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " : (أتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ )
قَالَ شُكْرُكُمْ تَقُولُونَ مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا وَبِنَجْمِ كَذَا
وَكَذَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ
لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ إِسْرَائِيلَ .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর এ বাণী : “ আর তোমরা মিথ্যা বলাকে
তোমাদের উপজীব্য করে নিয়েছ” (সূরাঃ আল- ওয়াক্বিয়াহ-৮২) প্রসঙ্গে বলেনঃ তোমাদের
কৃতজ্ঞতা হল এই যে , তোমরা বলে থাক : অমুক অমুক তারকার উসীলায় আমাদের উপর বৃষ্টি
বর্ষিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেন : এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমারা শুধুমাত্র
ইসরাঈলের সূত্রেই এ হাদীসটি মারফূরূপে জেনেছি। সুফিয়ান এ হাদীস আবদুল আলা হতে উপরোক্ত
সনদে বর্ণনা করেছেন , কিন্তু মারফূ হিসেবে নয়।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৯৬
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْخُزَاعِيُّ
الْمَرْوَزِيُّ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ يَزِيدَ
بْنِ أَبَانَ، عَنْ أَنَسٍ، رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلمَّ : (إنا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً ) قَالَ " إِنَّ مِنَ
الْمُنْشَآتِ اللاَّئِي كُنَّ فِي الدُّنْيَا عَجَائِزَ عُمْشًا رُمْصًا "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ
مِنْ حَدِيثِ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ وَمُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ وَيَزِيدُ بْنُ
أَبَانَ الرَّقَاشِيُّ يُضَعَّفَانِ فِي الْحَدِيثِ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বাণী, “আমি তাদের
বিশেষভাবে সৃষ্টি করেছি “ (সূরাঃ আল- ওয়াক্বিয়াহ-৩৫) প্রসঙ্গে বলেনঃ যে সব নারী
পৃথিবীতে বৃদ্ধা, ছানি পড়া চোখ বা দুর্বল দৃষ্টিসম্পন্ন তারা (জান্নাতে) বাড়ন্ত
বয়সের তরুণীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেন : এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমারা শুধু মূসা
ইবনু উবাইদার রিওয়ায়াত হিসেবে এ হাদীস মারফু হিসেবে জেনেছি। মূসা ইবনু উবাইদা ও ইয়াযীদ
ইবনু আবান আর-রাকাশী উভয়ে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলে সমালোচিত।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩২৯৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ
شَيْبَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ
قَالَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ شِبْتَ . قَالَ
" شَيَّبَتْنِي هُودٌ وَالْوَاقِعَةُ وَالْمُرْسَلاَتُ وَ عمَّ
يَتَسَاءَلُونَ وَإذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ إِلاَّ مِنْ
هَذَا الْوَجْهِ . وَرَوَى عَلِيُّ بْنُ صَالِحٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ نَحْوَ هَذَا . وَرُوِيَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ
عَنْ أَبِي مَيْسَرَةَ شَيْءٌ مِنْ هَذَا مُرْسَلاً .
ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ বকর
(রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তো বৃদ্ধ হয়ে গেলেন। তিনি জবাবে বলেনঃ সূরা
হূদ, ওয়াক্বি'আহ্, ওয়াল মুরসালাত, আম্মা ইয়াতাসাআলুন ও ওয়াইযাশ-শামসু কুব্বিরাত
আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে।
সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ৯৫৫)।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীস আমরা শুধু
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে উপর্যুক্ত সূত্রে অবগত হয়েছি। এ হাদীস
'আলী ইবনু সালিহ (রহঃ) আবূ ইসহাক্ব হতে, তিনি আবূ জুহাইফাহ্ (রাঃ) হতে এই সূত্রে একই
রকম রিওয়ায়াত করেছেন। এ হাদীসের অংশবিশেষ আবূ ইসহাক্ব হতে, তিনি আবূ মাইসারাহ্ হতে
এই সূত্রে মুরসালরূপে বর্ণিত আছে। আর আবূ বাক্র ইবনু 'আইয়্যাশ আবূ ইসহাক্ব হতে, তিনি
ইকরিমাহ্ হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে শাইবানের
হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এ সনদে ইবনু 'আব্বাস-এর উল্লেখ নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৮
সূরা
আল-হাদীদ
৩২৯৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، - الْمَعْنَى
وَاحِدٌ قَالُوا حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ بَيْنَمَا نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ
وَأَصْحَابُهُ إِذْ أَتَى عَلَيْهِمْ سَحَابٌ فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " هَلْ تَدْرُونَ مَا هَذَا " . فَقَالُوا اللَّهُ
وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " هَذَا الْعَنَانُ هَذِهِ رَوَايَا الأَرْضِ
يَسُوقُهُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِلَى قَوْمٍ لاَ يَشْكُرُونَهُ وَلاَ
يَدْعُونَهُ " . ثُمَّ قَالَ " هَلْ تَدْرُونَ مَا فَوْقَكُمْ
" . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّهَا
الرَّقِيعُ سَقْفٌ مَحْفُوظٌ وَمَوْجٌ مَكْفُوفٌ " . ثُمَّ قَالَ
" هَلْ تَدْرُونَ كَمْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهَا " . قَالُوا
اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهَا
مَسِيرَةُ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ " . ثُمَّ قَالَ " هَلْ تَدْرُونَ
مَا فَوْقَ ذَلِكَ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ
" فَإِنَّ فَوْقَ ذَلِكَ سَمَاءَيْنِ وَمَا بَيْنَهُمَا مَسِيرَةُ
خَمْسِمِائَةِ عَامٍ " . حَتَّى عَدَّ سَبْعَ سَمَوَاتٍ مَا بَيْنَ كُلِّ
سَمَاءَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ . ثُمَّ قَالَ " هَلْ
تَدْرُونَ مَا فَوْقَ ذَلِكَ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ
. قَالَ " فَإِنَّ فَوْقَ ذَلِكَ الْعَرْشَ وَبَيْنَهُ وَبَيْنَ
السَّمَاءِ بُعْدُ مَا بَيْنَ السَّمَاءَيْنِ " . ثُمَّ قَالَ "
هَلْ تَدْرُونَ مَا الَّذِي تَحْتَكُمْ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ
أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّهَا الأَرْضُ " . ثُمَّ قَالَ
" هَلْ تَدْرُونَ مَا الَّذِي تَحْتَ ذَلِكَ " . قَالُوا اللَّهُ
وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّ تَحْتَهَا الأَرْضَ الأُخْرَى
بَيْنَهُمَا مَسِيرَةُ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ " . حَتَّى عَدَّ سَبْعَ
أَرَضِينَ بَيْنَ كُلِّ أَرْضَيْنِ مَسِيرَةُ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ ثُمَّ قَالَ
" وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ أَنَّكُمْ دَلَّيْتُمْ رَجُلاً
بِحَبْلٍ إِلَى الأَرْضِ السُّفْلَى لَهَبَطَ عَلَى اللَّهِ " . ثُمَّ
قَرَأََ ( هو الأَوَّلُ وَالآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ
شَيْءٍ عَلِيمٌ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا
الْوَجْهِ . قَالَ وَيُرْوَى عَنْ أَيُّوبَ وَيُونُسَ بْنِ عُبَيْدٍ وَعَلِيِّ
بْنِ زَيْدٍ قَالُوا لَمْ يَسْمَعِ الْحَسَنُ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَفَسَّرَ
بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذَا الْحَدِيثَ فَقَالُوا إِنَّمَا هَبَطَ عَلَى عِلْمِ
اللَّهِ وَقُدْرَتِهِ وَسُلْطَانِهِ . عِلْمُ اللَّهِ وَقُدْرَتُهُ
وَسُلْطَانُهُ فِي كُلِّ مَكَانٍ وَهُوَ عَلَى الْعَرْشِ كَمَا وَصَفَ فِي
كِتَابِهِ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কোন এক সময়
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ এক সাথে বসা
ছিলেন। হঠাৎ তাদের উপর মেঘরাশি প্রকাশিত হল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁদের প্রশ্ন করেন : তোমরা জান এটা কি? তারা বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা ও
তাঁর রাসূলই বেশি ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ এটা হল যমিনের পানিবাহী উট। আল্লাহ
তা’আলা একে এমন জাতির দিকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন যারা তাঁর কৃতজ্ঞতাও আদায় করে না
এবং তাঁর কাছে মুনাজাতও করে না। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন : তোমাদের উপরে কি আছে তা
জান? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলই বেশি ভালো জানেন। তিনি বলেনঃ এটা
হল সুউচ্চ আকাশ , সুরক্ষিত ছাদ এবং আটকানো তরঙ্গ। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন :
তোমাদের এবং এর মাঝে কতটুকু ব্যবধান তা তোমাদের জানা আছে কি? তারা বললেন, আল্লাহ
তা’আলা ও তাঁর রাসূলই বেশি ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ তোমাদের ও এর মাঝে পাঁচ শত
বছরের পথের ব্যবধান। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন : এর উপরে কি আছে তা তোমরা জান কি?
তাঁরা বললেন , আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই বেশি ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ এর উপরে দুইটি
আকাশ আছে যার মাঝে পাঁচ শত বছরের দূরত্ব, এমনকি তিনি সাতটি আকাশ গণনা করেন এবং
বলেনঃ প্রতি দু’টি আকাশের মাঝে পার্থক্য আকাশ ও যমিনের ব্যবধানের সমপরিমাণ। তিনি
আবার প্রশ্ন করলেন : এর উপরে কি আছে তা কি তোমরা জান? তাঁরা বললেন আল্লাহ তা’আলা ও
তাঁর রাসূলই বেশি ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ এগুলোর উপরে আছে ( আল্লাহর ) আরশ। আরশ ও
আকাশের মাঝের পার্থক্য দুই আকাশের মধ্যকার দূরত্বের সমান। তিনি আবার বললেনঃ তোমরা
কি জান তোমাদের নিচে কি আছে? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই বেশি ভালো জানেন।
তিনি বললেনঃ উহা হল যমিন , তারপর আবার বললেন, তোমরা কি জান এর নিচে কি আছে? তাঁরা
বললেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ এর নিচে আরো এক ধাপ যমিন আছে
এবং এতদুভয়ের মধ্যে পাঁচ শত বছরের দূরত্ব। তারপর সাত স্তর যমিন গুণে বলেনঃ প্রতি
দুই স্তরের মাঝে পাঁচ শত বছরের দূরত্ব বর্তমান। তিনি আবার বললেনঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর
হাতে মুহাম্মাদের জীবন! তোমরা যদি একটি রশি নিম্নতম যমিনের দিকে ছেড়ে দাও তাহলে তা
আল্লাহ তা’আলা পর্যন্ত গিয়ে পৌছবে। তারপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন : “ তিনিই
প্রথম, তিনিই সর্বশেষ তিনিই প্রকাশ্য এবং তিনিই গুপ্ত। তিনিই সর্ববিষয়ে সর্বশেষ
পরিজ্ঞাত “ ( সূরাঃ আল-হাদীদ-৩)।
যইফ , যিলালুল জুন্নাহ্, (৫৭৮)
আবূ ঈসা বলেন : উপরোক্ত সূত্রে এ হাদীসটি গারীব। আইউব,
ইউনুস ইবনু উবাইদ ও আলী ইবনু যাইদ হতে বর্ণিত আছে যে, তাঁরা বলেছেন, আল-হাসান আল-বাসরী
(রহঃ) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে কিছু শুনেননি।
কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম উক্ত হাদীসের ( আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে ) ব্যাখ্যায় বলেন : উক্ত রশি
আল্লাহ তা’আলার জ্ঞান, তাঁর নিদর্শনাবলী ও তাঁর সার্বভৌম ক্ষমতা সর্বত্র বিস্তৃত। তিনি
তাঁর আরশে উপবিষ্ট , যেমন তিনি তাঁর পাক কালামে বলেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৯
সূরা
আল-মুজাদালাহ্
৩২৯৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ
الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ
يَسَارٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ صَخْرٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ كُنْتُ رَجُلاً قَدْ
أُوتِيتُ مِنْ جِمَاعِ النِّسَاءِ مَا لَمْ يُؤْتَ غَيْرِي فَلَمَّا دَخَلَ
رَمَضَانُ تَظَاهَرْتُ مِنَ امْرَأَتِي حَتَّى يَنْسَلِخَ رَمَضَانُ فَرَقًا مِنْ
أَنْ أُصِيبَ مِنْهَا فِي لَيْلَتِي فَأَتَتَابَعَ فِي ذَلِكَ إِلَى أَنْ يُدْرِكَنِي
النَّهَارُ وَأَنَا لاَ أَقْدِرُ أَنْ أَنْزِعَ فَبَيْنَمَا هِيَ تَخْدُمُنِي
ذَاتَ لَيْلَةٍ إِذْ تَكَشَّفَ لِي مِنْهَا شَيْءٌ فَوَثَبْتُ عَلَيْهَا فَلَمَّا
أَصْبَحْتُ غَدَوْتُ عَلَى قَوْمِي فَأَخْبَرْتُهُمْ خَبَرِي فَقُلْتُ انْطَلِقُوا
مَعِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأُخْبِرُهُ بِأَمْرِي .
فَقَالُوا لاَ وَاللَّهِ لاَ نَفْعَلُ نَتَخَوَّفُ أَنْ يَنْزِلَ فِينَا قُرْآنٌ
أَوْ يَقُولَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَقَالَةً يَبْقَى
عَلَيْنَا عَارُهَا وَلَكِنِ اذْهَبْ أَنْتَ فَاصْنَعْ مَا بَدَا لَكَ . قَالَ
فَخَرَجْتُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ خَبَرِي
. فَقَالَ " أَنْتَ بِذَاكَ " . قُلْتُ أَنَا بِذَاكَ . قَالَ
" أَنْتَ بِذَاكَ " . قُلْتُ أَنَا بِذَاكَ . قَالَ "
أَنْتَ بِذَاكَ " . قُلْتُ أَنَا بِذَاكَ وَهَا أَنَا ذَا فَأَمْضِ فِيَّ
حُكْمَ اللَّهِ فَإِنِّي صَابِرٌ لِذَلِكَ . قَالَ " أَعْتِقْ رَقَبَةً
" . قَالَ فَضَرَبْتُ صَفْحَةَ عُنُقِي بِيَدِي فَقُلْتُ لاَ وَالَّذِي
بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أَصْبَحْتُ أَمْلِكُ غَيْرَهَا . قَالَ " صُمْ
شَهْرَيْنِ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَهَلْ أَصَابَنِي مَا
أَصَابَنِي إِلاَّ فِي الصِّيَامِ . قَالَ " فَأَطْعِمْ سِتِّينَ
مِسْكِينًا " . قُلْتُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَقَدْ بِتْنَا
لَيْلَتَنَا هَذِهِ وَحْشَى مَا لَنَا عَشَاءٌ . قَالَ " اذْهَبْ إِلَى
صَاحِبِ صَدَقَةِ بَنِي زُرَيْقٍ فَقُلْ لَهُ فَلْيَدْفَعْهَا إِلَيْكَ فَأَطْعِمْ
عَنْكَ مِنْهَا وَسْقًا سِتِّينَ مِسْكِينًا ثُمَّ اسْتَعِنْ بِسَائِرِهِ عَلَيْكَ
وَعَلَى عِيَالِكَ " . قَالَ فَرَجَعْتُ إِلَى قَوْمِي فَقُلْتُ وَجَدْتُ
عِنْدَكُمُ الضِّيقَ وَسُوءَ الرَّأْىِ وَوَجَدْتُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم السَّعَةَ وَالْبَرَكَةَ أَمَرَ لِي بِصَدَقَتِكُمْ فَادْفَعُوهَا
إِلَىَّ فَدَفَعُوهَا إِلَىَّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
قَالَ مُحَمَّدٌ سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ لَمْ يَسْمَعْ عِنْدِي مِنْ سَلَمَةَ
بْنِ صَخْرٍ . قَالَ وَيُقَالُ سَلَمَةُ بْنُ صَخْرٍ وَسَلْمَانُ بْنُ صَخْرٍ
. وَفِي الْبَابِ عَنْ خَوْلَةَ بِنْتِ ثَعْلَبَةَ وَهِيَ امْرَأَةُ أَوْسِ بْنِ
الصَّامِتِ .
সালামাহ্
ইবনু সাখ্র আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এমন এক
পুরুষ, যাকে এত যৌনশক্তি দেয়া হয়েছে যা অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। রমাযান মাস এলে আমি
আমার স্ত্রীর সঙ্গে যিহার করি, যাতে রমাযান মাসটা অতিক্রম হয়ে যায় এবং রাতে
সহবাসের আশংকা হতে বেঁচে থাকতে পারি। একই ধারাবাহিকতায় আমার দিনগুলো (সঙ্গমহীন)
অতিক্রম হবে এবং তাকে আমি ত্যাগও করতে পারি না। এ পরিপ্রেক্ষিতে একদিন সে রাতের
বেলা আমার সেবা করছিল, হঠাৎ তার কোন জিনিস আমার সম্মুখে উন্মুক্ত হয়ে গেলে আমি তার
উপর ঝাপিয়ে পড়ি (সঙ্গম করি)। সকালে উপনিত হয়ে আমি আমার গোত্রের লোকের কাছে উপস্থিত
হয়ে তাদেরকে আমার বিষয়টি জানাই। আমি বললাম, আমাকে নিয়ে তোমরা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে চলো এবং আমার বিষয়টি তাঁকে জানাই।
তারা বলল, না আল্লাহ্র ক্বসম! আমরা তা করতে অপারগ। আমাদের মনে হচ্ছে যে, আমাদের
প্রসঙ্গে কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ হবে কিংবা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাদের প্রসঙ্গে এরূপ মন্তব্য করবেন আমাদের আমাদের জন্য যা লজ্জার বিষয়
হয়ে থাকবে। বরং তুমি একাই যাও এবং যা তোমার উপযুক্ত মনে হয় তাই কর। বর্ণনাকারী
বলেন, আমি রওয়ানা হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গিয়ে
উপস্থিত হলাম এবং তাঁকে আমার বিষয়টি জানালাম। তিনি বললেনঃ এ কাজ তুমি করেছ! আমি
বললাম, এমন কাজ আমি করেছি। তিনি আবার বললেনঃ এ কাজ তুমি করেছ! আমি বললাম, এমন কাজ
আমি করেছি। তিনি বললেনঃ এ কাজ তুমি করেছ! আমি বললাম, এমন কাজ আমি করেছি। আমি
উপস্থিত। অতএব আল্লাহ্র বিধান আমার উপর কার্যকর করুন, আমি ধৈর্য ধারণ করব। তিনি
বললেনঃ একটি দাসী মুক্ত কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আমার ঘাড়ের উপরাংশে আমার হাত
দিয়ে আঘাত করে বললাম, না সেই সত্তার ক্বসম, আপনাকে যিনি সত্যসহ প্রেরণ করেছেন!
তাকে ছাড়া আমি আর কিছুর মালিক নই। তিনি বললেনঃ তাহলে ধারাবাহিকভাবে দুই মাস রোযা
রাখ। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! যে বিপদ আমার উপর এসেছে তা তো এ রোযার
কারণেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ষাটজন দরিদ্রকে আহার করাও। আমি বললাম, সেই সত্তার
ক্বসম, আপনাকে সত্যসহ যিনি পাঠিয়েছেন! আজ রাতে আমরাই অভুক্ত ছিলাম, আমাদের কাছে
রাতের খাবার ছিল না। তিনি বললেনঃ যে লোক যুরাইক্ব গোত্রের যাকাত আদায় করে, তার
কাছে তুমি যাও এবং তাকে বল, তাহলে তোমাকে সে কিছু দিবে। তার এক ওয়াসাক এর মাধ্যমে
তুমি ষাটজন মিসকীনকে আহার করাবে এবং বাকি যা থাকে তা তুমি ও তোমার পরিজনের জন্য
খরচ করবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আমি আমার গোত্রের কাছে প্রত্যাবর্তন করলাম এবং
তাদেরকে বললাম, তোমাদের কাছে আমি পেয়েছি সংকীর্ণতা ও কুপরামর্শ, আর রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পেয়েছি প্রশস্ততা ও প্রাচুর্য। তিনি
তোমাদের যাকাত আমাকে দান করার আদেশ দিয়েছেন। অতএব তা আমার কাছে তোমরা অর্পন কর।
অতএব তারা আমার কাছে তা অর্পণ করে।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ২০৬২)।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। মুহাম্মাদ বলেন, আমার
মতে সুলাইমান ইবনু ইয়াসার সালামাহ্ ইবনু সাখ্র-এর কোন বর্ণনা শুনেননি। তিনি আরো বলেন,
তার নাম সালামাহ্ ইবনু সাখ্র, তবে সালমান ইবনু সাখ্র নামেও পরিচিত। এ অনুচ্ছেদে
সা'লাবাহ্ (রাঃ)-এর কন্যা ও আওস ইবনুস সামিত (রাঃ)-এর সহধর্মিণী খাওলাহ্ (রাঃ) হতেও
হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩০০
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ،
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ الأَشْجَعِيُّ، عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ عُثْمَانَ
بْنِ الْمُغِيرَةِ الثَّقَفِيِّ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ عَلِيِّ
بْنِ عَلْقَمَةَ الأَنْمَارِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ لَمَّا
نَزَلَتْ : (يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نَاجَيْتُمُ الرَّسُولَ
فَقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَىْ نَجْوَاكُمْ صَدَقَةً ) . قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " مَا تَرَى دِينَارًا " . قُلْتُ لاَ يُطِيقُونَهُ
. قَالَ " فَنِصْفُ دِينَارٍ " . قُلْتُ لاَ يُطِيقُونَهُ .
قَالَ " فَكَمْ " . قُلْتُ شَعِيرَةٌ . قَالَ " إِنَّكَ
لَزَهِيدٌ " . قَالَ فَنَزَلَتْ : (أأَشْفَقْتُمْ أَنْ تُقَدِّمُوا
بَيْنَ يَدَىْ نَجْوَاكُمْ صَدَقَاتٍ ) الآيَةَ . قَالَ فَبِي خَفَّفَ اللَّهُ
عَنْ هَذِهِ الأُمَّةِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا
نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ شَعِيرَةٌ يَعْنِي وَزْنَ
شَعِيرَةٍ مِنْ ذَهَبٍ وَأَبُو الْجَعْدِ اسْمُهُ رَافِعٌ .
আলী
ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যখন এ আয়াত
অবতীর্ণ হল : “ হে ঈমানদারগণ! তোমরা রাসূলের সাথে চুপি চুপি কথা বলার ইচ্ছা করলে
তার পূর্বে সদাকা দেবে” (সূরা : আল-মুজাদালাহ-১২) , তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ এক দীনার নির্ধারণের ব্যাপারে তোমার কি মত? আমি
বললাম , লোকদের সামর্থ্যে কুলাবে না। তিনি বললেনঃ তাহলে অর্ধ দীনার? আমি বললাম ,
তাও তাদের সামর্থ্যে কুলাবে না। তিনি বললেনঃ তাহলে কত নির্ধারণ করা যায়? আমি বললাম
, এক বার্লির দানা পরিমাণ (সোনা)। তিনি বললেনঃ তুমি খুব কম নির্ধারণকারী। রাবী
বলেন , তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় : “ তোমরা কি চুপে চুপে কথা বলার পূর্বে সদাকা
প্রদানকে কষ্টকর মনে কর?” (সূরা : আল-মুজাদালাহ-১৩) আলী (রাঃ) বলেন , আমার কারণে
আল্লাহ তা’আলা এই উম্মতের জন্য বিধানটি হালকা (বাতিল) করেন।
সনদ দুর্বল
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৩০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنْ شَيْبَانَ،
عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ يَهُودِيًّا، أَتَى عَلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابِهِ فَقَالَ السَّامُ عَلَيْكُمْ فَرَدَّ
عَلَيْهِ الْقَوْمُ فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَلْ
تَدْرُونَ مَا قَالَ هَذَا " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ
سَلَّمَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ . قَالَ " لاَ وَلَكِنَّهُ قَالَ كَذَا
وَكَذَا رُدُّوهُ عَلَىَّ " . فَرَدُّوهُ قَالَ " قُلْتَ السَّامُ
عَلَيْكُمْ " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم عِنْدَ ذَلِكَ " إِذَا سَلَّمَ عَلَيْكُمْ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ
الْكِتَابِ فَقُولُوا عَلَيْكَ " . قَالَ " عَلَيْكَ مَا قُلْتَ
" . قَالَ : (وإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ
اللَّهُ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ইয়াহূদী নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণের কাছে এসে বলল, “আস-সামু
আলাইকুম" (তোমাদের মরণ হোক)। লোকেরা তার উত্তর দিল। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে কী বলেছে তোমরা কি তা বুঝতে পেরেছ? তারা বলেন,
আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রাসূল ভালো জানেন। হে আল্লাহ্র নাবী! সে সালাম দিয়েছে। তিনি
বললেনঃ না, অথচ সে এই এই কথা বলেছে। আমার কাছে তাকে তোমরা ফিরিয়ে নিয়ে আস। অতঃপর
তারা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসলে তিনি বললেনঃ তুমি কি বলেছ আস-সামু আলাইকুম? সে বলল,
হ্যাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে সময় বললেনঃ তোমাদেরকে আহলে
কিতাবের কেউ সালাম করলে তোমরা বলবে, “আলাইকা মা কুলতা" (যা তুমি বলেছ তোমার
উপর তা-ই বর্ষিত হোক)। তারপর এ আয়াত তিনি পাঠ করেন(অনুবাদ)-ঃ “যখন এরা তোমার কাছে
আসে তখন তোমাকে এরূপ কথা দ্বারা অভিবাদন করে যার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা তোমাকে
অভিবাদন করেননি"-(সুরা মুজাদালাহ্ ৮)।
সহীহঃ ইরওয়া (হাঃ ৫/১১৭), মুসলিম আয়াতের উল্লেখ ব্যতীত।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬০
সূরা
আল-হাশ্র
৩৩০২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، رضى الله عنهما قَالَ حَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَخْلَ
بَنِي النَّضِيرِ وَقَطَّعَ وَهِيَ الْبُوَيْرَةُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (ما
قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا
فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيُخْزِيَ الْفَاسِقِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানূ নাযীরের আল-বুওয়াইরা নামক খেজুর বাগানটি
অগ্নিসংযোগ করে পুড়ে ফেলেন এবং কেটে ফেলেন। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা অবতীর্ণ করেনঃ
"যে খেজুর গাছগুলো তোমরা কেটেছ এবং যেগুলো তাদের কাণ্ডের উপর স্থির রেখে দিয়েছ
তা তো আল্লাহ তা'আলার আদেশানুসারেই এবং এ কারণে যে, তিনি পাপাচারী ও
অন্যায়কারীদেরকে লাঞ্ছিত করবেন"-(সূরা হাশ্র ৫)।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ২৮৪৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩০৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ، حَدَّثَنَا
عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ
أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِ
اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : (ما قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا
قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا ) . قَالَ اللِّينَةُ النَّخْلَةُِيُخْزِيَ
الْفَاسِقِينَ ) قَالَ اسْتَنْزَلُوهُمْ مِنْ حُصُونِهِمْ قَالَ وَأَمَرُوا
بِقَطْعِ النَّخْلِ فَحَكَّ فِي صُدُورِهِمْ . فَقَالَ الْمُسْلِمُونَ قَدْ
قَطَعْنَا بَعْضًا وَتَرَكْنَا بَعْضًا فَلَنَسْأَلَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم هَلْ لَنَا فِيمَا قَطَعْنَا مِنْ أَجْرٍ وَهَلْ عَلَيْنَا فِيمَا
تَرَكْنَا مِنْ وِزْرٍ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : (ما قَطَعْتُمْ مِنْ
لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا ) . الآيَةَ .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ
"যে খেজুর গাছগুলো তোমরা কেটেছ এবং তার কাণ্ডের উপর যেগুলো স্থির রেখে
দিয়েছ" এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল-লীনাহ অর্থঃ খেজুর গাছ। "এবং এ কারণে
যে, তিনি পাপাচারী ও অন্যায়কারীদেরকে লাঞ্ছিত করবেন" আয়াতটি প্রসঙ্গে তিনি
বলেন, অর্থাৎ মুসলমানরা তাদেরকে তাদের দুর্গগুলো হতে বহিষ্কার করে দেয়। ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) আরো বলেন, যখন তাদেরকে খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলার আদেশ দেয়া হয় সে
সময় তাদের মনে ধারণা (সন্দেহ) হয়। মুসলমানরা বলেন, আমরা কিছু বৃক্ষ কেটে ফেলেছি
এবং কিছু বৃক্ষ বহাল রেখেছি। এ বিষয়ে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে আমরা প্রশ্ন করবো যে, যে গাছগুলো আমরা কেটেছি তার কারণে আমাদেরকে
সাওয়াব প্রদান করা হবে কি এবং যে বৃক্ষগুলো বহাল রেখেছি তার জন্য আমাদের কোন গুনাহ
হবে কি? তখন আল্লাহ তা'আলা অবতীর্ণ করেনঃ "যে খেজুর গাছগুলো তোমরা কেটেছ এবং
তাদের কাণ্ডের উপর যেগুলো স্থির রেখে দিয়েছ তা তো আল্লাহ তা'আলার
অনুমতিক্রমেই"- (সূরা হাশ্র ৫)।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটির হাসান গারীব। এ হাদীসটি কিছু
বর্ণনাকারী হাফ্স ইবনু গিয়াস হতে, তিনি হাবীব ইবনু আবী 'আমরাহ্ হতে, তিনি সা'ঈদ ইবনু
জুবাইর (রহঃ) হতে এই সূত্রে মুরসালরূপে রিওয়ায়াত করেছেন এবং তার মধ্যে ইবনু 'আব্বাস
(রাঃ)-এর উল্লেখ করেননি। 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আবদুর রহমান-হারূন ইবনু মু'আবিয়াহ্ হতে,
তিনি হাফ্স ইবনু গিয়াস হতে, তিনি হাবীব ইবনু আবী 'আমরাহ্ হতে, তিনি সা'ঈদ ইবনু জুবাইর
(রহঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে মুরসালরূপে
উক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আমার কাছে
শুনেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩০৪
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ
غَزْوَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ
الأَنْصَارِ بَاتَ بِهِ ضَيْفٌ فَلَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ إِلاَّ قُوتُهُ وَقُوتُ
صِبْيَانِهِ فَقَالَ لاِمْرَأَتِهِ نَوِّمِي الصِّبْيَةَ وَأَطْفِئِي السِّرَاجَ
وَقَرِّبِي لِلضَّيْفِ مَا عِنْدَكِ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُُ : (
ويؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ) هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক রাতে আনসার লোকের
এখানে একজন মেহমান আসে। তার কাছে তার ও তার সন্তানদের খাবার ছাড়া অতিরিক্ত খাবার
ছিল না। তার সহধর্মিণীকে তিনি বলেন, বাচ্চাদের ঘুম পারিয়ে দাও, আলো নিভিয়ে ফেল এবং
তোমার কাছে যে খাবার রয়েছে তা মেহমানের সম্মুখে পরিবেশন কর। এই পরিপ্রেক্ষিতে অবতীর্ণ
হয়ঃ "আর নিজেদের উপর অন্যকে তারা অগ্রাধিকার দেয়, নিজেরা অভাবপীড়িত
হয়েও"- (সূরা হাশ্র ৯)।
সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ৩২৭২), বুখারী ও মুসলিম আরও পূর্ণাঙ্গরূপে বর্ণনা
করেছেন।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬১
সূরা
আল-মুমতাহিনাহ
৩৩০৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ مُحَمَّدٍ، هُوَ ابْنُ الْحَنَفِيَّةِ عَنْ
عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ،
يَقُولُ بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَالزُّبَيْرَ
وَالْمِقْدَادَ بْنَ الأَسْوَدِ فَقَالَ " انْطَلِقُوا حَتَّى تَأْتُوا
رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا ظَعِينَةً مَعَهَا كِتَابٌ فَخُذُوهُ مِنْهَا
فَائْتُونِي بِهِ " . فَخَرَجْنَا تَتَعَادَى بِنَا خَيْلُنَا حَتَّى أَتَيْنَا
الرَّوْضَةَ فَإِذَا نَحْنُ بِالظَّعِينَةِ فَقُلْنَا أَخْرِجِي الْكِتَابَ .
فَقَالَتْ مَا مَعِي مِنْ كِتَابٍ . فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ
لَتُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ . قَالَ فَأَخْرَجَتْهُ مِنْ عِقَاصِهَا . قَالَ
فَأَتَيْنَا بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ مِنْ حَاطِبِ
بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ إِلَى نَاسٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ بِمَكَّةَ يُخْبِرُهُمْ
بِبَعْضِ أَمْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " مَا هَذَا يَا
حَاطِبُ " . قَالَ لاَ تَعْجَلْ عَلَىَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي
كُنْتُ امْرَأً مُلْصَقًا فِي قُرَيْشٍ وَلَمْ أَكُنْ مِنْ أَنْفُسِهَا وَكَانَ
مَنْ مَعَكَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ لَهُمْ قَرَابَاتٌ يَحْمُونَ بِهَا أَهْلِيهِمْ
وَأَمْوَالَهُمْ بِمَكَّةَ فَأَحْبَبْتُ إِذْ فَاتَنِي ذَلِكَ مِنْ نَسَبٍ فِيهِمْ
أَنْ أَتَّخِذَ فِيهِمْ يَدًا يَحْمُونَ بِهَا قَرَابَتِي وَمَا فَعَلْتُ ذَلِكَ
كُفْرًا وَلاَ ارْتِدَادًا عَنْ دِينِي وَلاَ رِضًا بِالْكُفْرِ بَعْدَ
الإِسْلاَمِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " صَدَقَ "
. فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّهُ قَدْ شَهِدَ بَدْرًا فَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ اللَّهَ اطَّلَعَ
عَلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ
" . قَالَ وَفِيهِ أُنْزِلَتْ هَذِهِ السُّورَةُ : (يا أَيُّهَا
الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ )
السُّورَةَ . قَالَ عَمْرُو وَقَدْ رَأَيْتُ ابْنَ أَبِي رَافِعٍ وَكَانَ
كَاتِبًا لِعَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِيهِ عَنْ عُمَرَ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ .
وَرَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ هَذَا الْحَدِيثَ نَحْوَ
هَذَا وَذَكَرُوا هَذَا الْحَرْفَ فَقَالُوا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ
لَتُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ . وَقَدْ رُوِيَ أَيْضًا عَنْ أَبِي عَبْدِ
الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ نَحْوُ هَذَا الْحَدِيثِ . وَذَكَرَ
بَعْضُهُمْ فِيهِ فَقَالَ لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَنُجَرِّدَنَّكِ .
'উবাইদুল্লাহ
ইবনু আবূ রাফি' (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ
ত্বালিব-এর পুত্র 'আলী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে অর্থাৎ আমাকে, যুবাইরকে ও মিক্বদাদ ইবনুল আসওয়াদকে (চিঠি
উদ্ধারের জন্য) পাঠিয়ে বললেনঃ তোমরা রাওনা হয়ে 'রাওযা খাখ" নামক জায়গায় পৌঁছে
যাও, সেখানে (মাক্কার লক্ষ্যে) গমনরত এক নারীকে পাওয়া যাবে। তার নিকট একটি পত্র
আছে। তোমরা তার নিকট হতে সেই পত্র উদ্ধার করে তা আমার নিকট নিয়ে আসবে। অতঃপর আমরা রাওনা হয়ে
গেলাম। আমাদেরকে নিয়ে আমাদের ঘোড়া অতীব দ্রুত গতিতে এগিয়ে গেল এবং আমরা সেই 'রাওযা
খাখ' নামক জায়গায় গিয়ে পৌঁছলাম। আমরা সেই নারীকে সেখানে পেয়ে গেলাম। আমরা তাকে
বললাম, পত্রটি বের করে দাও। সে বলল, আমার সঙ্গে কোন পত্র নেই। আমরা বললাম, অবশ্যই
তুমি পত্রটি বের করে দাও, তা না হলে তোমার পরিধেয় পোশাক ত্যাগ কর। 'আলী (রাঃ)
বলেন, সে তার চুলের খোঁপা হতে অবশেষে পত্রটি বের করে দিল এবং তা নিয়ে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আমরা হাযির হলাম। দেখা গেল যে, এটি
মক্কার কিছু সংখ্যক মুশরিকের লক্ষ্যে লিখিত হাতিব ইবনু আবী বালতা'আর পত্র। তিনি এই
পত্রের মাধ্যমে তাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু
পদক্ষেপ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে
হাতিব! এ কি? হাতিব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সম্পর্কে তাড়াতাড়ি করে
কোন পদক্ষেপ নিবেন না। আমি কুরাইশদের সঙ্গে বসবাস করতাম, কিন্তু আমি তাদের
সম্প্রদায়ের লোক নই। যে সকল মুহাজির আপনার সঙ্গে রয়েছেন মক্কায় তাদের আত্বীয়-স্বজন
রয়েছে, যাদের সহযোগীতায় তারা তাদের মক্কাস্থ পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদের
রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। আমি চিন্তা করলাম, মক্কায় আমার কোন আত্বীয়-স্বজন নেই। যদি
আমি তাদের প্রতি কোন রকম উপকার করতে পারি তবে তার বিনিময়ে তারা আমার
আত্বীয়-স্বজনকে সাহায্য-সহযোগীতা করবে। আমি কাফির হয়ে কিংবা আমার ধর্ম ছেড়ে দিয়ে
বা কুফরীর প্রতি খুশী হয়ে এ কাজ করিনি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ সে সত্য কথা বলেছে। 'উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল!
আমাকে অনুমতি দিন, আমি এ মুনাফিক্বের ঘাড় উড়িয়ে দেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে বদ্রের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তুমি কি জান! নিশ্চয়ই
আল্লাহ তা'আলা বদ্রের মুজাহিদদের প্রতি উঁকি মেরেছেন এবং বলেছেনঃ "তোমরা যা চাও
কর, আমি তোমাদেরকে মাফ করে দিয়েছি"। 'আলী (রাঃ) বলেন, উক্ত বিষয়েই এই সূরা
অবতীর্ণ হয়েছেঃ "হে মু'মিনগণ! তোমরা আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুর মতো
করে গ্রহণ করো না। তোমরা তাদের নিকট বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও; অথচ তারা তোমাদের
নিকট যে সত্য এসেছে তা স্বীকার করেনি......”। 'আম্র (রহঃ) বলেন, আমি 'উবাইদুল্লাহ
ইবনু আবী রাফী'কে দেখেছি। তিনি 'আলী (রাঃ)-এর সচিব ছিলেন।
সহীহঃ সহীহ আবূ দাঊদ (হাঃ ২৩৮১), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে 'উমার
ও জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ্ হতেও
একাধিক বর্ণনাকারী একই অর্থে হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। তাতে এ কথা রয়েছেঃ "তোমাকে
পত্র বের করে দিতে হবে, তা না হলে তোমার বস্ত্র ত্যাগ করতে হবে"। এ হাদীসটি 'আবদুর
রাহ্মান আস-সুলামীর সূত্রে 'আলী (রাঃ) হতে একই রকম বর্ণিত হয়েছে। কেউ কেউ এ কথাগুলো
উল্লেখ করেছেনঃ "তোমাকে অবশ্যই পত্রটি বের করে দিতে হবে, নতুবা তোমাকে আমরা উলঙ্গ
করব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩০৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمْتَحِنُ إِلاَّ بِالآيَةِ الَّتِي قَالَ
اللَّهُ : (إذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ ) الآيَةَ .
আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয়াতটির জন্য লোকদের পরীক্ষা করতেন (অনুবাদ)ঃ
“হে নাবী! মু'মিন মহিলারা তোমার নিকট এসে এই মর্মে যদি বাই'আত করে যে, তারা আল্লাহ
তা'আলার সঙ্গে কোন শরীক স্থির করবে না, চুরি করবে না, যিনা করবে না.....”-(সূরা
মুমতাহিনাহ্ ১২)। মা'মার (রহঃ) বলেন, ইবনু তাঊস তার বাবার সূত্রে আমার কাছে
রিওয়ায়াত করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাত
নিজস্ব মালিকানাধীন স্ত্রীলোক ব্যতীত অপর কারো হাত স্পর্শ করেনি।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৮৯১), মুসলিম (হাঃ ৬/২৯)।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩০৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ شَهْرَ بْنَ
حَوْشَبٍ، قَالَ حَدَّثَتْنَا أُمُّ سَلَمَةَ الأَنْصَارِيَّةُ، قَالَتْ قَالَتِ
امْرَأَةٌ مِنَ النِّسْوَةِ مَا هَذَا الْمَعْرُوفُ الَّذِي لاَ يَنْبَغِي لَنَا
أَنْ نَعْصِيَكَ فِيهِ قَالَ " لاَ تَنُحْنَ " . قُلْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ بَنِي فُلاَنٍ قَدْ أَسْعَدُونِي عَلَى عَمِّي وَلاَ بُدَّ
لِي مِنْ قَضَائِهِنَّ فَأَبَى عَلَىَّ فَعَاتَبْتُهُ مِرَارًا فَأَذِنَ لِي فِي
قَضَائِهِنَّ فَلَمْ أَنُحْ بَعْدُ عَلَى قَضَائِهِنَّ وَلاَ غَيْرِهِ حَتَّى
السَّاعَةِ وَلَمْ يَبْقَ مِنَ النِّسْوَةِ امْرَأَةٌ إِلاَّ وَقَدْ نَاحَتْ
غَيْرِي . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَفِيهِ عَنْ
أُمِّ عَطِيَّةَ رضى الله عنها . قَالَ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ أُمُّ سَلَمَةَ
الأَنْصَارِيَّةُ هِيَ أَسْمَاءُ بِنْتُ يَزِيدَ بْنِ السَّكَنِ .
উম্মু
সালামাহ্ আল-আনসারিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মহিলাদের মধ্য থেকে একজন
প্রশ্ন করল, 'মা'রূফ' বলতে কি বুঝায়, যাতে আপনার নাফরমানী করা আমাদের জন্য বৈধ নয়?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা বিলাপ করো না। আমি
বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! অমুক সম্প্রদায়ের নারীরা আমার চাচার বিলাপে আমাকে
সাহায্য করেছে। কাজেই তাদের প্রতিদান দেয়া আমারও কর্তব্য। আমার কথায় রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একমত হলেন না। অতঃপর আমি পর্যায়ক্রমে তার নিকট
অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে তাদের প্রতিদান দেয়ার অনুমতি দিলেন। আমি তাদের বিলাপের
প্রতিদান দেয়ার পর ক্বিয়ামাত পর্যন্ত আর কোন দিন বিলাপ করব না। কিন্তু আমি ব্যতীত
অপর সব মহিলাই পরবর্তীতে বিলাপ করেছে।
হাসানঃ তা'লীক আ'লা ইবনু মাজাহ।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব। এ আয়াতের ব্যাখ্যায়
উম্মু 'আতিয়াহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। 'আব্দ ইবনু হুমাইদ (রহঃ) বলেন, উম্মু
সালামাহ্ আল-আনসারিয়্যাহ্ (রাঃ)-এর নাম আসমা বিনতু ইয়াযীদ ইবনুস সাকান।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৩০৮
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ
الْفِرْيَابِيُّ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنِ الأَغَرِّ بْنِ
الصَّبَّاحِ، عَنْ خَلِيفَةَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي نَصْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِهِ تَعَالَى : ( إذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ
مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ ) قَالَ كَانَتِ الْمَرْأَةُ إِذَا جَاءَتِ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لِتُسْلِمَ حَلَّفَهَا بِاللَّهِ مَا خَرَجْتُ مِنْ
بُغْضِ زَوْجِي مَا خَرَجْتُ إِلاَّ حُبًّا لِلَّهِ وَلِرَسُولِهِ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তোমাদের নিকট মু’মিন
নারীরা হিযরাত করে এলে তোমরা তাদের পরীক্ষা কর” ( সূরাঃ আল-মুমতাহানাহ-১০) শীর্ষক
আল্লাহর বাণী প্রসঙ্গে তিনি বলেনঃ কোন স্ত্রীলোক ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাযির হলে তিনি তাকে
আল্লাহ্ তা’আলার নামে শপথ করাতেনঃ আমি আমার স্বামীর প্রতি বিরাগভাজন হয়ে চলে
আসিনি, আমি শুধু আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালোবাসায় জাগ্রত হয়েই চলে
এসেছি।
যঈফ, বিচ্ছিন্ন , ইতহাফুল খাইরাহ আল মাহরাহ্ (৮/১৭৪)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬২
সূরা
আস্-সাফ্
৩৩০৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ،
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ، قَالَ قَعَدْنَا نَفَرٌ
مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَذَاكَرْنَا فَقُلْنَا لَوْ
نَعْلَمُ أَىَّ الأَعْمَالِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ لَعَمِلْنَاهُ فَأَنْزَلَ
اللَّهُ تَعَالَى : ( سبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ
وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ * يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ
مَا لاَ تَفْعَلُونَ ) قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو سَلَمَةَ فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا
ابْنُ سَلاَمٍ . قَالَ يَحْيَى فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا أَبُو سَلَمَةَ . قَالَ
ابْنُ كَثِيرٍ فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا الأَوْزَاعِيُّ . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ
فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا ابْنُ كَثِيرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ خُولِفَ
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ فِي إِسْنَادِ هَذَا الْحَدِيثِ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ .
وَرَوَى ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ
عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ أَوْ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ
. وَرَوَى الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ
نَحْوَ رِوَايَةِ مُحَمَّدِ بْنِ كَثِيرٍ .
আবদুল্লাহ
ইবনু সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কতক সংখ্যক সাহাবী একসাথে বসে নিজেদের মাঝে আলোচনা করতে
গিয়ে বললাম যে, আল্লাহ তা'আলার নিকট কোন কাজ সবচেয়ে প্রিয় তা জানতে পারলে সেই
কাজটি করতে আমরা ব্রতী হতাম। সে সময় আল্লাহ তা'আলা এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ)
ঃ “আকাশ ও যমীনে বিদ্যমান সমস্ত কিছুই আল্লাহ তা'আলার পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা
করে, তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। হে ঈমানদারগণ! তোমরা এরূপ কথা কেন বল যা
কার্যকর করো না"- (সূরা সাফ্ ১-২)? 'আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বলেছেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াতটি পাঠ করে আমাদেরকে শুনান।
আবূ সালামাহ্ (রহঃ) বলেনঃ এ আয়াত 'আবদুল্লাহ ইবনু সালাম
(রাঃ) আমাদেরকে পাঠ করে শুনান। ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেন, এ আয়াত আবূ সালামাহ্ (রহঃ) আমাদেরকে
পাঠ করে শুনান। ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন, এ আয়াত আমাদেরকে আওযা'ঈ (রহঃ) পাঠ করে শুনান।
'আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইবনু কাসীর (রহঃ) আমাদেরকে এ আয়াতটি পাঠ করে শুনান।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীস মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর কর্তৃক আওযা'ঈর সূত্রে রিওয়ায়াতের প্রসঙ্গে
মতের অমিল আছে। 'আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) আওযা'ঈ হতে, তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবী
কাসীর হতে, তিনি হিলাল ইবনু আবী মাইমূনাহ্ হতে, তিনি 'আতা ইবনু ইয়াসার হতে, তিনি 'আবদুল্লাহ
ইবনু সালাম (রাঃ) কিংবা আবূ সালামাহ্ হতে, তিনি 'আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) হতে এই
সূত্রে এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। আর ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম এ হাদীসটি আওযাঈর সূত্রে মুহাম্মাদ
ইবনু কাসীর বর্ণিত হাদীসের একই রকম রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৩
সূরা
আল-জুমু'আহ্
৩৩১০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنِ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
جَعْفَرٍ، حَدَّثَنِي ثَوْرُ بْنُ زَيْدٍ الدِّيلِيُّ، عَنْ أَبِي الْغَيْثِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ
أُنْزِلَتْ سُورَةُ الْجُمُعَةِ فَتَلاَهَا فَلَمَّا بَلَغَ : ( وآخَرِينَ
مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ ) قَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ
مَنْ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ لَمْ يَلْحَقُوا بِنَا فَلَمْ يُكَلِّمْهُ قَالَ
وَسَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ فِينَا قَالَ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَدَهُ عَلَى سَلْمَانَ فَقَالَ " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ
كَانَ الإِيمَانُ بِالثُّرَيَّا لَتَنَاوَلَهُ رِجَالٌ مِنْ هَؤُلاَءِ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ .
وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ وَالِدُ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ
ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ . ثَوْرُ بْنُ زَيْدٍ مَدَنِيٌّ وَثَوْرُ بْنُ
يَزِيدَ شَامِيٌّ وَأَبُو الْغَيْثِ اسْمُهُ سَالِمٌ مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
مُطِيعٍ مَدَنِيٌّ ثِقَةٌ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ সূরা
আল-জুমু'আহ্ অবতীর্ণ হওয়াকালে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকটেই ছিলাম। তিনি তা পাঠ করলেন। "আর তিনি তাদের জন্যও (রাসূল)
যারা এখনো তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি"- (সূরা জুমু'আহ্ ৩) পর্যন্ত পৌঁছলে এক লোক
তাঁকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এখনো যারা আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি তারা কারা?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কথায় জবাব দিলেন না।
বর্ণনাকারী বলেন, তখন সালমান (রাঃ) আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান (রাঃ)-এর উপর তাঁর হাত রেখে বললেনঃ সেই
মহান সত্তার ক্বসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! যদি ঈমান সুরাইয়্যাহ্ নক্ষত্রেও থাকে
তবুও তাদের মাঝের কিছু লোক তা নিয়ে আসবে।
সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১০১৭), বুখারী ও মুসলিম।
সাওর ইবনু যাইদ হলেন মাদানী ও সাওর ইবনু ইয়াযীদ হলেন শামী
(সিরীয়)। আবুল গাইসের নাম সালিম, 'আবদুল্লাহ ইবনু মুতী'র মুক্তদাস। তিনি মাদীনার অধিবাসী
একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। 'আবদুল্লাহ ইবনু জা'ফার
হলেন 'আলী ইবনুল মাদীনীর বাবা, ইয়াহ্ইয়া ইবনু মা'ঈন তাকে যঈফ বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩১১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا
حُصَيْنٌ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ بَيْنَمَا النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ قَائِمًا إِذْ قَدِمَتْ عِيرٌ
الْمَدِينَةَ فَابْتَدَرَهَا أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى
لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلاَّ اثْنَا عَشَرَ رَجُلاً فِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ
وَنَزَلَتِ الآيَةُ : ( وإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا
إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا ) . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা
জুমু'আহ্র সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ দিচ্ছিলেন।
সে সময় মাদীনাহর একটি (ব্যবসায়ী) কাফিলা এসে হাযির হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের মাঝ হতে আবূ বাক্র ও 'উমার (রাঃ)-সহ বারজন
ব্যতীত প্রত্যেকেই সেদিকে তাড়াতাড়ি চলে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়ঃ
"যখন তারা দেখল ব্যবসায় বা কৌতুক, সে সময় আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা
সেদিকে ছুটে গেল"- (সূরা জুমু'আহ্ ১১)।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আহ্মাদ ইবনু মানী'
হুশাইম হতে, তিনি হুসাইন হতে, তিনি সালিম ইবনু আবিল জা'দ হতে, তিনি জাবির (রাঃ) হতে,
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে উপর্যুক্ত হাদীসের একই
রকম বর্ণনা করেছেন। আবূ 'ঈসা বলেন, এ বর্ণনাটিও হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৪
সূরা
আল-মুনাফিকুন
৩৩১২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ،
قَالَ كُنْتُ مَعَ عَمِّي فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىِّ ابْنَ سَلُولَ،
يَقُولُ لأَصْحَابِهِ : ( لا تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ
حَتَّى يَنْفَضُّوا ) و (لئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ
الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ ) فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّي فَذَكَرَ ذَلِكَ
عَمِّي لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَحَدَّثْتُهُ فَأَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ أُبَىٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوا مَا قَالُوا فَكَذَّبَنِي رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَصَدَّقَهُ فَأَصَابَنِي شَيْءٌ لَمْ يُصِبْنِي قَطُّ
مِثْلُهُ فَجَلَسْتُ فِي الْبَيْتِ فَقَالَ عَمِّي مَا أَرَدْتَ إِلاَّ أَنْ
كَذَّبَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَقَتَكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ
تَعَالَى : ( إذا جَاءَكَ الْمُنَافِقُونَ ) فَبَعَثَ إِلَىَّ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهَا ثُمَّ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ قَدْ
صَدَّقَكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ
ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার
চাচার সঙ্গে ছিলাম। 'আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূলকে আমি তার সঙ্গীদের উদ্দেশে
বলতে শুনলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গীদের জন্য
তোমরা আর অর্থ খরচ করবে না, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত না (তার হতে) আলাদা হয়ে যায়। আমরা
মাদীনায় ফিরে গেলে তখন অবশ্যই সেখানে প্রবলরা হীনদেরকে বহিষ্কার করবে। এ কথা আমি
আমার চাচাকে জানালে তা তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান।
আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডাকেন এবং তাঁর নিকট আমি ঘটনাটি
ব্যক্ত করি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'আবদুল্লাহ
ইবনু উবাই ও তার সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠান। শপথ করে তারা বলে যে, তারা (এ কথা) বলেনি।
সে সময় রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে মিথ্যাবাদী ও তাকে
সত্যবাদী ধারণা করলেন। এতে আমার এত কষ্ট লাগল যে, আগে কখনও এ রকম কষ্ট হয়নি। আমি
ভারাক্রান্ত মনে ঘরে বসে রইলাম। আমার চাচা বললেন, তুমি এমন ব্যাপারে কেন জড়িত হতে
গেলে যার কারণে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তুমি
মিথ্যাবাদী হলে ও তাঁর অসন্তুষ্টির কারণ হলে? এ পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা'আলা যখন
"মুনাফিক্বরা যখন তোমার নিকট আসে" (অর্থাৎ সূরা আল-মুনাফিকূন) অবতীর্ণ
করেন। তখন আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডেকে পাঠান এবং
তিনি উক্ত সূরা তিলাওয়াত করেন, তারপর বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা তোমার সত্যবাদিতার
সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯০০, ৪৯০৪), মুসলিম (হাঃ৮/১১৯)।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩১৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الأَزْدِيِّ،
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ، قَالَ غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم وَكَانَ مَعَنَا أُنَاسٌ مِنَ الأَعْرَابِ فَكُنَّا نَبْتَدِرُ الْمَاءَ
وَكَانَ الأَعْرَابُ يَسْبِقُونَّا إِلَيْهِ فَسَبَقَ أَعْرَابِيٌّ أَصْحَابَهُ
فَسَبَقَ الأَعْرَابِيُّ فَيَمْلأُ الْحَوْضَ وَيَجْعَلُ حَوْلَهُ حِجَارَةً
وَيَجْعَلُ النَّطْعَ عَلَيْهِ حَتَّى يَجِيءَ أَصْحَابُهُ . قَالَ فَأَتَى
رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ أَعْرَابِيًّا فَأَرْخَى زِمَامَ نَاقَتِهِ لِتَشْرَبَ
فَأَبَى أَنْ يَدَعَهُ فَانْتَزَعَ قِبَاضَ الْمَاءِ فَرَفَعَ الأَعْرَابِيُّ
خَشَبَتَهُ فَضَرَبَ بِهَا رَأْسَ الأَنْصَارِيِّ فَشَجَّهُ فَأَتَى عَبْدَ
اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ رَأْسَ الْمُنَافِقِينَ فَأَخْبَرَهُ وَكَانَ مِنْ
أَصْحَابِهِ فَغَضِبَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ثُمَّ قَالَ : (لا
تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ حَتَّى يَنْفَضُّوا ) مِنْ
حَوْلِهِ . يَعْنِي الأَعْرَابَ وَكَانُوا يَحْضُرُونَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم عِنْدَ الطَّعَامِ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِذَا انْفَضُّوا مِنْ عِنْدِ
مُحَمَّدٍ فَائْتُوا مُحَمَّدًا بِالطَّعَامِ فَلْيَأْكُلْ هُوَ وَمَنْ عِنْدَهُ
ثُمَّ قَالَ لأَصْحَابِهِ لَئِنْ رَجَعْتُمْ إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ
الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ . قَالَ زَيْدٌ وَأَنَا رِدْفُ رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ فَأَخْبَرْتُ عَمِّي
فَانْطَلَقَ فَأَخْبَرَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَلَفَ وَجَحَدَ . قَالَ فَصَدَّقَهُ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَذَّبَنِي قَالَ فَجَاءَ عَمِّي إِلَىَّ
فَقَالَ مَا أَرَدْتَ إِلاَّ أَنْ مَقَتَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَكَذَّبَكَ وَالْمُسْلِمُونَ . قَالَ فَوَقَعَ عَلَىَّ مِنَ الْهَمِّ مَا لَمْ
يَقَعْ عَلَى أَحَدٍ . قَالَ فَبَيْنَمَا أَنَا أَسِيرُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ قَدْ خَفَقْتُ بِرَأْسِي مِنَ الْهَمِّ إِذْ
أَتَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَرَكَ أُذُنِي وَضَحِكَ فِي
وَجْهِي فَمَا كَانَ يَسُرُّنِي أَنَّ لِي بِهَا الْخُلْدَ فِي الدُّنْيَا .
ثُمَّ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ لَحِقَنِي فَقَالَ مَا قَالَ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قُلْتُ مَا قَالَ شَيْئًا إِلاَّ أَنَّهُ عَرَكَ أُذُنِي وَضَحِكَ
فِي وَجْهِي . فَقَالَ أَبْشِرْ . ثُمَّ لَحِقَنِي عُمَرُ فَقُلْتُ لَهُ
مِثْلَ قَوْلِي لأَبِي بَكْرٍ فَلَمَّا أَصْبَحْنَا قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم سُورَةَ الْمُنَافِقِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ
ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যুদ্ধে গেলাম। কিছু সংখ্যক বেদুঈনও
আমাদের সঙ্গে ছিল। আমরা পানির উৎসের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের পূর্বেই
বেদুঈনরা পানির উৎসে গিয়ে পৌঁছায়। এক বেদুঈন তার সঙ্গীদের পূর্বে পৌঁছে। সে হাউয
(চৌবাচ্চা) সম্পূর্ণ করে তার চতুর্দিকে পাথর রেখে দিত এবং তার উপর চামড়া বিছিয়ে
দিয়ে তা ঢেকে দিত, যাতে তার সাথী এসে যায় (এবং অন্যরা পানি নিতে না পারে)। উক্ত
বেদুঈনের কাছে এসে এক আনসারী লোক তার উটকে পানি পান করানোর জন্য এর লাগাম
(নাসারন্দ্রের দড়ি) হালকা করে ছেড়ে দিল, কিন্তু বেদুঈন তার উটকে পানি পান করতে
বাধা দেয়। এতে আনসারী ব্যক্তি (ক্রুদ্ধ হয়ে) পানির উৎসগুলো সরিয়ে ফেলে। সে সময়
একটি কাষ্ঠ খণ্ড তুলে নিয়ে বেদুঈন আনসারীর মাথায় জোড়ে আঘাত করে এবং এর ফলে তার
মাথা ফেটে যায়। উক্ত আনসারী মুনাফিক্ব সরদার 'আবদুল্লাহ ইবনু উবাইর নিকট গিয়ে তাকে
ঘটনা সম্পর্কে জানায়। আনসারী তার দলেরই লোক ছিল। 'আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ক্ষিপ্ত হয়ে
বলে, যে বেদুঈনরা আল্লাহ তা'আলার রাসূলের সঙ্গে রয়েছে তাদেরকে সহায়তাদান বন্ধ করে
দাও। তবেই তাঁর চারপাশ হতে তারা আলাদা হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আহার করার সময় তাঁর নিকট বেদুঈনরা হাযির হত (এবং তাঁর
সঙ্গে আহার করত)। তাই 'আবদুল্লাহ বলল, যে সময় বেদুঈনরা মুহাম্মাদের নিকট হতে
অন্যত্র চলে যাবে তাঁর নিকট তখন খাবার উপস্থিত করবে; যাতে তিনি ও তাঁর নিকট
উপস্থিত (অন্যরা) তা আহার করেন। তারপর 'আবদুল্লাহ তার সাথীদেরকে আরো বলল, আমরা যদি
মাদীনায় ফিরে যেতে পারি তবে সম্মানিতরা তোমাদের মাঝের হীনদেরকে তাড়িয়ে দিবে। যাইদ
ইবনু আরক্বাম (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
পিছনে একই সওয়ারীতে ছিলাম। 'আবদুল্লাহর কথা আমি শুনে ফেললাম এবং আমার চাচাকে
জানালাম। তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গিয়ে তা অবহিত
করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ('আবদুল্লাহ ইবনু
উবাই-কে) ডেকে পাঠান। সে শপথ করে এবং অস্বীকার করে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বিশ্বাস করলেন এবং আমাকে অবিশ্বাস করলেন।
বর্ণনাকারী বলেন, আমার চাচা আমার নিকট এসে বললেন, এটাই তো তুমি চেয়েছিলে যে,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হোন এবং
তিনি ও মুসলমানগণ তোমাকে মিথ্যুক বলে আখ্যায়িত করুন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এতটাই
ভারাক্রান্ত হলাম যতটা কখনো কেউ হয়নি। তিনি আরো বলেন, তারপর আমি ভারাক্রান্ত হয়ে
মাথা নত করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গেই সফর
অব্যাহত রাখলাম। এ পরিস্থিতিতে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমার নিকট এসে আমার কান মললেন এবং আমার সম্মুখে হেসে দিলেন। যদি আমি চিরস্থায়ী
জীবন (বা জান্নাত) লাভ করতাম তবুও এতটা খুশী হতাম না। তারপর আবূ বকর (রাঃ) এসে
আমার সঙ্গে দেখা করে প্রশ্ন করলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তোমাকে কি বলেছেন? আমি বললাম, আমাকে তিনি কিছুই বলেননি; তিনি কেবল আমার
কান মলেছেন এবং আমার দিকে তাকিয়ে হেসেছেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তোমার জন্য সুখবর।
অতঃপর আমার সঙ্গে 'উমার (রাঃ) এসে দেখা করেন। যে কথা আমি আবূ বকর (রাঃ)-কে
বলেছিলাম তাঁকেও তাই বললাম। অতঃপর আমরা ভোরে উপনিত হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা আল-মুনাফিকূন পাঠ করলেন।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ 'ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي
عَدِيٍّ، أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ عُتَيْبَةَ، قَالَ سَمِعْتُ
مُحَمَّدَ بْنَ كَعْبٍ الْقُرَظِيَّ، مُنْذُ أَرْبَعِينَ سَنَةً يُحَدِّثُ عَنْ
زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، رضى الله عنه أَنَّ عَبْدَ، اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ قَالَ فِي
غَزْوَةِ تَبُوكَ : (لئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ
الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ ) قَالَ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَحَلَفَ مَا قَالَهُ فَلاَمَنِي قَوْمِي وَقَالُوا مَا
أَرَدْتَ إِلَى هَذِهِ فَأَتَيْتُ الْبَيْتَ وَنِمْتُ كَئِيبًا حَزِينًا
فَأَتَانِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْ أَتَيْتُهُ فَقَالَ " إِنَّ
اللَّهَ قَدْ صَدَّقَكَ " . قَالَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُُ : ( هم
الَّذِينَ يَقُولُونَ لاَ تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ حَتَّى
يَنْفَضُّوا ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আল-হাকাম
ইবনু 'উতাইবাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ
ইবনু কা'ব আল-কুরাযীকে আমি চল্লিশ বছর আগে যাইদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ)-এর মাধ্যমে
রিওয়ায়াত করতে শুনেছি যে, তাবূক যু্দ্ধ চলাকালীন সময়ে 'আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বলল,
আমরা মাদীনায় ফিরে যেতে পারলে সেখান হতে সম্মানিতরা অবশ্যই হীন লোকদেরকে বের করে দিবে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে
তাঁকে বিষয়টি জানালাম। কিন্তু সে এ কথা বলেনি বলে শপথ করে। এতে আমার গোত্রের
লোকেরা আমাকে দোষারোপ করে এবং বলে, তুমি কি এটাই চেয়েছিলে? আমি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত
অবস্থায় বাড়ীতে ফিরে এসে অসার হয়ে শুয়ে রইলাম। আমার নিকট রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে বলেন বা আমি তাঁর নিকট গেলে তিনি বলেনঃ
আল্লাহ তা'আলা তোমাকে সত্যবাদী ঘোষনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, (এই পরিপ্রেক্ষিতে)
এ আয়াত অবতীর্ণ হয়(অনুবাদ)ঃ “এরা সেই লোক যারা বলে, রাসূলের সঙ্গী-সাথীদের জন্য
তোমরা অর্থব্যয় বন্ধ করে দাও, যার ফলে তারা আলাদা হয়ে যায়"-(সূরা মুনাফিকুন
৭)।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯০২)।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩১৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ كُنَّا فِي غَزَاةٍ قَالَ
سُفْيَانُ يَرَوْنَ أَنَّهَا غَزْوَةُ بَنِي الْمُصْطَلِقِ فَكَسَعَ رَجُلٌ مِنَ
الْمُهَاجِرِينَ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا
لَلْمُهَاجِرِينَ وَقَالَ الأَنْصَارِيُّ يَا لَلأَنْصَارِ فَسَمِعَ ذَلِكَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " مَا بَالُ دَعْوَى
الْجَاهِلِيَّةِ " . قَالُوا رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ كَسَعَ رَجُلاً
مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " دَعُوهَا
فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ " . فَسَمِعَ ذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ
ابْنُ سَلُولَ فَقَالَ أَوَقَدْ فَعَلُوهَا وَاللَّهِ (لئِنْ رَجَعْنَا إِلَى
الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ ) فَقَالَ عُمَرُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ دَعْنِي أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ . فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " دَعْهُ لاَ يَتَحَدَّثُ النَّاسُ أَنَّ
مُحَمَّدًا يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ " . وَقَالَ غَيْرُ عَمْرٍو فَقَالَ
لَهُ ابْنُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَاللَّهِ لاَ تَنْقَلِبُ حَتَّى
تُقِرَّ أَنَّكَ الذَّلِيلُ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْعَزِيزُ .
فَفَعَلَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আম্র
ইবনু দীনার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জাবির ইবনু
'আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, একটি যুদ্ধে আমরা উপস্থিত ছিলাম। সুফ্ইয়ান
বলেন, তা বনী মুসতালিক্বের যুদ্ধ ছিল। এক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করলে
মুহাজির লোক ডাকেন, হে মুহাজির ভাইয়েরা। আনসারী লোকটিও ডাকেন, হে আনসার ভাইয়েরা।
তা শুনতে পেয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জাহিলী যুগের
ডাকাডাকি হচ্ছে কেন? লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে
আঘাত করেছে। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ
ডাকাডাকি বন্ধ কর, কারণ এটা ঘৃনিত ডাক। বিষয়টি 'আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূলের
কানে পৌঁছলে সে বলল, এত বড় সাহস! এ কাজ তারা করেছে? আল্লাহ্র ক্বসম! যদি আমরা
মাদীনায় ফিরে যেতে পারি তাহলে অবশ্যই সেখান হতে সম্মানিতরা হীনদেরকে বিতাড়িত করবে।
'উমার (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাকে অনুমতি দিন, এই মুনাফিক্বের ঘাড় আমি
উড়িয়ে দেই। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাকে এড়িয়ে চল।
লোকেরা যেন বলতে না পারে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার
সঙ্গীদের খুন করেন। 'আম্র ইবনু দীনার (রহঃ) ছাড়া অপর এক বর্ণনাকারী বলেন, 'আবদুল্লাহ
ইবনু উবাইর ছেলে 'আবদুল্লাহ (রাঃ) (তার বাবাকে) বলেন, আল্লাহ্র ক্বসম! আপনি এ কথা
যতক্ষণ স্বীকার না করবেন যে, “আপনিই হীন আর রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হলেন মহাসম্মানিত", ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি মাদীনায় ফিরে যেতে
পারবেন না। তারপর সে তা স্বীকার করে।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩১৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ،
أَخْبَرَنَا أَبُو جَنَابٍ الْكَلْبِيُّ، عَنِ الضَّحَّاكِ بْنِ مُزَاحِمٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ مَنْ كَانَ لَهُ مَالٌ يُبَلِّغُهُ حَجَّ
بَيْتِ رَبِّهِ أَوْ تَجِبُ عَلَيْهِ فِيهِ الزَّكَاةُ فَلَمْ يَفْعَلْ سَأَلَ
الرَّجْعَةَ عِنْدَ الْمَوْتِ . فَقَالَ رَجُلٌ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ اتَّقِ
اللَّهَ إِنَّمَا سَأَلَ الرَّجْعَةَ الْكُفَّارُ قَالَ سَأَتْلُو عَلَيْكَ
بِذَلِكَ قُرْآنًا : ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُلْهِكُمْ
أَمْوَالُكُمْ وَلاَ أَوْلاَدُكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ ) : (وأَنْفِقُوا
مِمَّا رَزَقْنَاكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ ) إِلَى
قَوْلِهِ : ( واللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ ) قَالَ فَمَا يُوجِبُ
الزَّكَاةَ قَالَ إِذَا بَلَغَ الْمَالُ مِائَتَىْ دِرْهَمٍ فَصَاعِدًا . قَالَ
فَمَا يُوجِبُ الْحَجَّ قَالَ الزَّادُ وَالْبَعِيرُ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যার নিকটে তার রবের
(প্রতিপালকের) ঘর (কা’বা) যিয়ারাতের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ আছে অথচ হাজ্জ করে না,
অথবা এতটা সম্পদ আছে যাতে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হয় কিন্তু যাকাত আদায় করে না, সে
মৃত্যুর সময় দুনিয়াতে আবার ফিরে আসার আরজ করবে। তখন এক ব্যক্তি বললেন, হে ইবনু আব্বস!
আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করুন, দুনিয়াতে ফিরে আসার আর্জি তো শুধু কাফিররাই করবে। ইবনু
আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমি এখনই তোমাকে কুরাআন পাঠ করে শুনাচ্ছিঃ “ হে ঈমানদারগণ!
তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি যেন তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার স্মরণ থেকে গাফিল
না করে, যারা গাফিল হবে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি, তা
হতে খরচ কর তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। অন্যথায় (মৃত্যু আসলে) সে বলবে, হে
আমার রব! আমাকে তুমি আরো কিছুকালের জন্য ছাড় দিলে আমি দান-খাইরাত করতাম এবং
সৎকর্মপরায়ণ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। কিন্তু যখন কারো নির্ধারিতকাল (মৃত্যু) চলে
আসবে, তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে কিছুই ছাড় দিবেন না। তোমরা যা কর আল্লাহ তা’আলা সে
প্রসঙ্গে পূর্ণ অবগত’’ ( সূরাঃ আল-মুনাফিকুন-৯-১১)। লোকটি বলল, কি পরিমাণ সম্পদে
যাকাত ওয়াজিব হয়? তিনি বললেন, দুই শত দিরহাম বা ততোধিক মালে। সে বলল, কিসে হাজ্জ
ওয়াজিব হয়? তিনি বললেনঃ পাথেয় ও যানবাহন থাকলে।
সনদ দুর্বল
আবদু ইবনু হুমাইদ- আবদুর রায্যাক হতে তিনি সুফিয়ান সাওরী
হতে তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ হাইয়্যা হতে তিনি দাহ্হাক হতে তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ)
হতে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা
করেছেন। ইবনু উয়াইনা প্রমুখ এ হাদীস আবূ জানাব হতে তিনি দাহ্হাক হতে তিনি ইবনু আব্বাস
(রঃ) সূত্রে তার বিবৃতরূপে একই রকম বর্ণনা করেছেন এবং মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি।
আবদুর রায্যাকের রিওয়ায়াতের তুলনায় এটি ( মাওকূফ বর্ণনাটি) অনেক বেশি সহীহ। আবূ জানাবের
নাম ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ হাইয়্যা এবং তিনি হাদীসশাস্ত্রে তেমন মজবুত নন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৫
সূরা
আত-তাগাবূন
৩৩১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ،
حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، حَدَّثَنَا سِمَاكُ بْنُ حَرْبٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، وَسَأَلَهُ، رَجُلٌ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ، ( يا أَيُّهَا
الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلاَدِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ
فَاحْذَرُوهُمْ ) قَالَ هَؤُلاَءِ رِجَالٌ أَسْلَمُوا مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ
وَأَرَادُوا أَنْ يَأْتُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَبَى أَزْوَاجُهُمْ
وَأَوْلاَدُهُمْ أَنْ يَدَعُوهُمْ أَنْ يَأْتُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَلَمَّا أَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأَوُا النَّاسَ قَدْ
فَقِهُوا فِي الدِّينِ هَمُّوا أَنْ يُعَاقِبُوهُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ
وَجَل َّ: ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ
وَأَوْلاَدِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ فَاحْذَرُوهُمْ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক লোক তাঁর নিকট
নিম্নোক্ত আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে (অনুবাদ) : “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের সহধর্মিণী
ও সন্তান-সন্তুতিদের মাঝে কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে তোমরা
সাবধান থাকবে”- (সূরা তাগাবূন-১৪)। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, এরা হল মাক্কাবাসীদের
মাঝ হতে ইসলাম গ্রহণকারী, এরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
কাছে (হিজরত করে) চলে আসতে চাচ্ছিল, কিন্তু তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা তাদের বাধা
দিচ্ছিল যেন তারা তাদেরকে ছেড়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট চলে না আসে। পরে তারা (হিজরত করে) যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর এখানে (মাদীনায়) চলে এসে প্রত্যক্ষ করেন যে, লোকেরা (তাদের আগে আগত
ব্যক্তিগণ) দ্বীন বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান লাভ করেছে, তখন তারা তাদের স্ত্রীগণ ও
সন্তানদের সাজা দেয়ার প্রতিজ্ঞা করে। আল্লাহ তা’আলা তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন
(অনুবাদ)ঃ “হে মুমিনগণ! তোমাদের সহধর্মিণী ও সন্তানদের মাঝে কেউ কেউ তোমাদের
দুশমন............” (সূরা তাগাবূন ১৪)।
হাদীসটি হাসান।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৬
সূরা
আত-তাহরীম
৩৩১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
أَبِي ثَوْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما يَقُولُ لَمْ أَزَلْ
حَرِيصًا أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ عَنِ الْمَرْأَتَيْنِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم اللَّتَيْنِ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّْ : (إن تَتُوبَا
إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا ) حَتَّى حَجَّ عُمَرُ وَحَجَجْتُ
مَعَهُ فَصَبَبْتُ عَلَيْهِ مِنَ الإِدَاوَةِ فَتَوَضَّأَ فَقُلْتُ يَا أَمِيرَ
الْمُؤْمِنِينَ مَنِ الْمَرْأَتَانِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
اللَّتَانِ قَالَ اللَّهُْ : ( إن تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ
قُلُوبُكُمَا وَإِنْ تَظَاهَرَا عَلَيْهِ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ مَوْلاَهُ )
فَقَالَ لِي وَاعَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ الزُّهْرِيُّ وَكَرِهَ
وَاللَّهِ مَا سَأَلَهُ عَنْهُ وَلَمْ يَكْتُمْهُ فَقَالَ لِي هِيَ عَائِشَةُ
وَحَفْصَةُ قَالَ ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُنِي الْحَدِيثَ فَقَالَ كُنَّا مَعْشَرَ
قُرَيْشٍ نَغْلِبُ النِّسَاءَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَجَدْنَا قَوْمًا
تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَتَعَلَّمْنَ مِنْ نِسَائِهِمْ
فَتَغَضَّبْتُ عَلَى امْرَأَتِي يَوْمًا فَإِذَا هِيَ تُرَاجِعُنِي فَأَنْكَرْتُ
أَنْ تُرَاجِعَنِي فَقَالَتْ مَا تُنْكِرُ مِنْ ذَلِكَ فَوَاللَّهِ إِنَّ
أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيُرَاجِعْنَهُ وَتَهْجُرُهُ
إِحْدَاهُنَّ الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ . قَالَ قُلْتُ فِي نَفْسِي قَدْ
خَابَتْ مَنْ فَعَلَتْ ذَلِكَ مِنْهُنَّ وَخَسِرَتْ . قَالَ وَكَانَ مَنْزِلِي بِالْعَوَالِي
فِي بَنِي أُمَيَّةَ وَكَانَ لِي جَارٌ مِنَ الأَنْصَارِ كُنَّا نَتَنَاوَبُ
النُّزُولَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَيَنْزِلُ يَوْمًا
فَيَأْتِينِي بِخَبَرِ الْوَحْىِ وَغَيْرِهِ وَأَنْزِلُ يَوْمًا فَآتِيهِ بِمِثْلِ
ذَلِكَ . قَالَ وَكُنَّا نُحَدِّثُ أَنَّ غَسَّانَ تُنْعِلُ الْخَيْلَ
لِتَغْزُوَنَا . قَالَ فَجَاءَنِي يَوْمًا عِشَاءً فَضَرَبَ عَلَىَّ الْبَابَ
فَخَرَجْتُ إِلَيْهِ فَقَالَ حَدَثَ أَمْرٌ عَظِيمٌ . قُلْتُ أَجَاءَتْ غَسَّانُ
قَالَ أَعْظَمُ مِنْ ذَلِكَ طَلَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نِسَاءَهُ
. قَالَ قُلْتُ فِي نَفْسِي قَدْ خَابَتْ حَفْصَةُ وَخَسِرَتْ قَدْ كُنْتُ
أَظُنُّ هَذَا كَائِنًا قَالَ فَلَمَّا صَلَّيْتُ الصُّبْحَ شَدَدْتُ عَلَىَّ
ثِيَابِي ثُمَّ انْطَلَقْتُ حَتَّى دَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ فَإِذَا هِيَ تَبْكِي
فَقُلْتُ أَطَلَّقَكُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ لاَ أَدْرِي
هُوَ ذَا مُعْتَزِلٌ فِي هَذِهِ الْمَشْرُبَةِ . قَالَ فَانْطَلَقْتُ فَأَتَيْتُ
غُلاَمًا أَسْوَدَ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . قَالَ فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ
إِلَىَّ . قَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا . قَالَ
فَانْطَلَقْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَإِذَا حَوْلَ الْمِنْبَرِ نَفَرٌ يَبْكُونَ
فَجَلَسْتُ إِلَيْهِمْ ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ فَأَتَيْتُ الْغُلاَمَ فَقُلْتُ
اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَىَّ فَقَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ
لَهُ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا . قَالَ فَانْطَلَقْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ أَيْضًا
فَجَلَسْتُ ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ فَأَتَيْتُ الْغُلاَمَ فَقُلْتُ
اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَىَّ فَقَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ
لَهُ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا . قَالَ فَوَلَّيْتُ مُنْطَلِقًا فَإِذَا الْغُلاَمُ
يَدْعُونِي فَقَالَ ادْخُلْ فَقَدْ أُذِنَ لَكَ فَدَخَلْتُ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم مُتَّكِئٌ عَلَى رَمْلٍ حَصِيرٍ قَدْ رَأَيْتُ أَثَرَهُ فِي
جَنْبِهِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَطَلَّقْتَ نِسَاءَكَ قَالَ لاَ .
قُلْتُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَقَدْ رَأَيْتُنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَنَحْنُ
مَعْشَرَ قُرَيْشٍ نَغْلِبُ النِّسَاءَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَجَدْنَا
قَوْمًا تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَتَعَلَّمْنَ مِنْ
نِسَائِهِمْ فَتَغَضَّبْتُ يَوْمًا عَلَى امْرَأَتِي فَإِذَا هِيَ تُرَاجِعُنِي
فَأَنْكَرْتُ ذَلِكَ فَقَالَتْ مَا تُنْكِرُ فَوَاللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيُرَاجِعْنَهُ وَتَهْجُرُهُ إِحْدَاهُنَّ
الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ . قَالَ فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ أَتُرَاجِعِينَ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ نَعَمْ وَتَهْجُرُهُ إِحْدَانَا الْيَوْمَ
إِلَى اللَّيْلِ . فَقُلْتُ قَدْ خَابَتْ مَنْ فَعَلَتْ ذَلِكَ مِنْكُنَّ
وَخَسِرَتْ أَتَأْمَنُ إِحْدَاكُنَّ أَنْ يَغْضَبَ اللَّهُ عَلَيْهَا لِغَضَبِ
رَسُولِهِ فَإِذَا هِيَ قَدْ هَلَكَتْ فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
. قَالَ فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ لاَ تُرَاجِعِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
وَلاَ تَسْأَلِيهِ شَيْئًا وَسَلِينِي مَا بَدَا لَكِ وَلاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ
كَانَتْ صَاحِبَتُكِ أَوْسَمَ مِنْكِ وَأَحَبَّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم . قَالَ فَتَبَسَّمَ أُخْرَى فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَسْتَأْنِسُ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَمَا
رَأَيْتُ فِي الْبَيْتِ إِلاَّ أَهَبَةً ثَلاَثَةً . قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ
اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يُوَسِّعَ عَلَى أُمَّتِكَ فَقَدْ وَسَّعَ عَلَى
فَارِسَ وَالرُّومِ وَهُمْ لاَ يَعْبُدُونَهُ . فَاسْتَوَى جَالِسًا فَقَالَ
" أَوَفِي شَكٍّ أَنْتَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ أُولَئِكَ قَوْمٌ عُجِّلَتْ
لَهُمْ طَيِّبَاتُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا " . قَالَ وَكَانَ
أَقْسَمَ أَنْ لاَ يَدْخُلَ عَلَى نِسَائِهِ شَهْرًا فَعَاتَبَهُ اللَّهُ فِي
ذَلِكَ وَجَعَلَ لَهُ كَفَّارَةَ الْيَمِينِ .
উবাইদুল্লাহ
ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আবী সাওর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে
আমি বলতে শুনেছি, আমি উমার (রাঃ)-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সেই দু’জন সহধর্মিণী প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতে চাচ্ছিলাম যাদের প্রসঙ্গে
আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ “যদি তোমরা দু’জন অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তায়ালার দিকে রুজু হও
তবে তা ভাল, কারণ তোমাদের দু’জনের মন ঝুঁকে পড়েছে”- (সূরা তাহরীম ৪)। অবশেষে উমার
(রাঃ) হাজ্জে গেলেন এবং আমিও তার সঙ্গে হাজ্জে গেলাম। পাত্র হতে আমি পানি ঢেলে
দিলাম এবং তিনি উযূ করলেন। আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সেই দু’জন স্ত্রী কে যাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ
তা’য়ালা বলেছেনঃ “যদি তোমরা দু’জন অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তা’য়ালার দিকে রুজু হও তবে
ভাল, কেননা তোমাদের দু’জনের মন ঝুঁকে পড়েছে”- (সূরা তাহরীম ৪)। উমার (রাঃ) বলেন,
হে ইবনু আব্বাস! আশ্চর্য (তুমি এটুকুও জান না)! যুহরী (রহঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! এ
কথায় প্রশ্ন করা তার নিকট মন্দ লেগেছে, কিন্তু তিনি তা লুকিয়ে রাখেননি। ইবনু
আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি আমাকে বললেন, তারা দু’জন ‘আয়িশাহ ও হাফসাহ।
তারপর তিনি ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিতে আরম্ভ করেন। তিনি বলেন, আমরা কুরাইশগণ মহিলাদের
উপর প্রভাবশালী ছিলাম। কিন্তু মাদীনায় পৌঁছে আমরা দেখলাম, এখানকার পুরুষদের উপর
মহিলাদের প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। সুতরাং আমাদের মহিলারা এখানকার মহিলাদের
অভ্যাস আয়ত্ত করে। একদিন আমি আমার সহধর্মিণীর উপর রাগ করলে সে আমার কথার
প্রত্যুত্তর করে। কিন্তু তার প্রত্যুত্তর করাটাকে আমি অপছন্দ করলাম। সে বলল, এতে
আপনার মন্দ লাগার কি আছে। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সহধর্মিণীগণও তাঁর কথার প্রত্যুত্তর করেন এবং সকাল হতে সন্ধ্যা
পর্যন্ত তাদের কেউ কেউ তো তাঁর সংস্পর্শ থেকে চলে যান। উমার (রাঃ) বলেন, আমি মনে
মনে বললাম, যে তাদের মাঝে তা করে সে তো বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হল। উমার (রাঃ) বলেন,
আমার বসতি ছিল মাদীনার উচ্চভূমিতে বনূ উমাইয়ার এলাকায়। আমার এক আনসারী প্রতিবেশী
ছিল। পর্যায়ক্রমে আমরা দু’জনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মাজলিসে আসা-যাওয়া করতাম। তদনুযায়ী একদিন সে তাঁর মাজলিসে গিয়ে ওয়াহী ও অন্যান্য
বিষয়ের খবর নিয়ে এসে তা আমাকে জানাত এবং একদিন আমি তথায় গিয়ে (ফিরে এসে) তাকে একই
রকম খবর দিতাম। উমার (রাঃ) বলেন, আমাদের মাঝে আলোচনা হচ্ছিল যে, আমাদের বিপক্ষে
গাসসানীরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য তাদের ঘোড়াগুলো তৈরী করছে।
একদা রাতের বেলা সে আমার দরজায় এসে করাঘাত করলে আমি তার নিকটে বেরিয়ে এলাম। সে
বলল, একটি মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। আমি বললাম, গাসসানীরা কি এসে গেছে? সে বলল, তার
তুলনায়ও আরো মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন। উমার (রাঃ) বলেন, আমি মনে মনে বললাম, হাফসা
হতভাগিনী ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি পূর্বেই ভাবছিলাম এমন একটা কিছু ঘটবে। তিনি
বলেন, আমি ফজরের নামাজ আদায় করে কাপড়-চোপড় পরিধান করে রওয়ানা হলাম এবং হাফসার
কক্ষে দিয়ে প্রত্যক্ষ করলাম যে, সে কাঁদছে। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে তালাক দিয়েছেন কি? হাফসা (রাঃ) বলেন, আমি জানি না,
তবে তিনি ঐ উপরের কুঠরিতে নির্জনতা অবলম্বন করেছেন। তিনি বলেন, তারপর ওখান হতে আমি
বের হয়ে এক কৃষ্ণাঙ্গ গোলামের কাছে এসে বললাম, ‘উমারের জন্য ঢোকার অনুমতি চাও।
‘উমার (রাঃ) বলেন, তখন সে ভিতরে ঢুকল, তারপর আমার কাছে ফিরে এসে বলল, তাঁর নিকট
আমি আপনার কথা বলেছি কিন্তু তিনি নিশ্চুপ ছিলেন। উমার (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি
মাসজিদে চলে এলাম। সেখানে আমি মিম্বারের আশেপাশে কিছু সংখ্যক লোককে কান্নারত
দেখলাম। তাদের নিকট আমিও বসলাম, কিন্তু আমার অস্থিরতা বেড়ে গেল। তাই আমি পুনরায় ঐ
দাসের নিকট এসে বললাম, তুমি ‘উমারের জন্য ঢোকার অনুমতি চাও। অতঃপর সে ভিতর বাড়িতে
প্রবেশ করে আবার ফিরে এসে বলল, আপনার কথা আমি তাঁকে বলেছি কিন্তু তিনি কিছুই
বলেননি। আমি পুনরায় মসজিদে ফিরে এলাম এবং বসে পড়লাম, কিন্তু আমাকে একই চিন্তা
চিন্তান্বিত করে তুলল। তাই আমি সেই গোলামের নিকট গিয়ে বললাম, উমারের জন্য ঢোকার
অনুমতি চাও। সে ভিতরে ঢুকে ফিরে এসে বলল, আপনার কথা আমি তাকে বলেছি কিন্তু তিনি
কিছুই বলেননি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি ফিরে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ দাসটি আমাকে ডেকে বলল,
ভিতরে প্রবেশ করুন। তিনি আপনাকে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন।
তারপর ভিতরে প্রবেশ করে আমি প্রত্যক্ষ করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) চাটাইয়ের উপর হেলাম দিয়ে শুয়ে আছেন এবং তাঁর প্রত্যেক বাহুতে
চাটাইয়ের দাগ পড়ে আছে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার স্ত্রীদের তালাক
দিয়েছেন কি? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম, আল্লাহু আকবার (আল্লাহ মহান)। হে আল্লাহর
রাসূল! আপনি দেখুন, আমরা কুরাইশগণ মহিলাদের উপরে প্রভাব বিস্তার করে রাখতাম।
কিন্তু মদীনায় পৌঁছে আমরা দেখলাম যে, একদল ব্যক্তিদের উপর তাদের নারীরাই প্রভাব
বিস্তার করে রেখেছে। আমাদের মহিলারা তাদের নারীগণের এ অভ্যাস আয়ত্ত করে নিয়েছে।
একদিন আমি আমার স্ত্রীর উপর রাগান্বিত হলাম, কিন্তু সে আমার প্রতিটি কথার
প্রত্যুত্তর করল। আমি তার এমন আচরণকে অতীব মন্দ মনে করলাম। সে বলল, কেন এটা আপনি
পছন্দ করছেন না। আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
স্ত্রীগণও তো তাঁর কথার প্রত্যুত্তর করেন, এমনকি তাদের কেউ কেউ সকাল হতে সন্ধ্যা
পর্যন্ত তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করে কাটান। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি হাফসাকে প্রশ্ন করলাম,
তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাথে কি কথা কাটাকাটি
কর? সে বলল, হ্যাঁ, আর আমাদের কেউ কেউ তো সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গ
ত্যাগ করে কাটিয়ে দেয়। আমি বললাম, তোমাদের মাঝে যে এমন করেছে সে তো হতভাগিনী ও
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সম্পর্কে তোমাদের কেউ কি নিরাপদ হয়ে গেছে যে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কারো প্রতি নাখোশ হওয়ার কারণে আল্লাহ
তা’য়ালাও তার উপর নাখোশ হবেন এবং ফলে সে ধ্বংস হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অল্প হাসলেন। উমার (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি হাফসাকে বললাম,
তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ঝগড়া করবেন না এবং
তাঁর নিকট কোন কিছুর বায়না ধরবে না। যা কিছুর তোমার দরকার হয় আমার কাছে চাইবে। আর
তুমি ধোঁকা খেও না, তোমার সতীন তোমার তুলনায় সুন্দরী এবং রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খুব বেশী প্রিয়। উমার (রাঃ) বলেন, (এ কথা
শুনে) তিনি আবার মুচকি হাসি দিলেন। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার
সঙ্গে আরো কিছু সময় কাটাই? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। উমার (রাঃ) বলেন, মাথা তুলে ঘরের
মাঝে তাকিয়ে আমি কেবল তিনটি চামড়া ব্যতীত আর কিছুই দেখিন। তাই আমি বললাম, হে
আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার উম্মাতের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য আল্লাহ তা’আলার নিকট
দু’আ করুন। তিনি তো পারস্য ও রোমের বসবাসকারীদেরকে প্রাচুর্য দান করেছেন, অথচ তারা
আল্লাহ তাআলার ইবাদাত করে না। (এ কথায়) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) উঠে সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেনঃ হে খাত্তাবের ছেলে! তুমি এখনো সন্দেহের
মাঝে আছ কি? এরা তো এরূপ লোক যাদেরকে নিজস্ব সৎকর্মের প্রতিদান পার্থিব জীবনেই
দেয়া হয়েছে। উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
একমাস তাঁর সহধর্মিণীদের সঙ্গে মেলামেশা না করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। এজন্য আল্লাহ
তা’আলা তাঁর উপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের কাফফারার
(ক্ষতিপূরণ) বন্দোবস্ত করেন।
যুহরী (রহঃ) বলেন, উরওয়াহ (রহঃ) আমার নিকট ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর সূত্রে রিওয়ায়াত
করেছেন যে, তিনি বলেছেন, ঊনত্রিশ দিন পার হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) সর্বপ্রথমে আমার নিকট আসেন। তিনি বলেনঃ হে ‘আয়িশাহ! আমি তোমার নিকট
একটি বিষয় উল্লেখ করছি, তোমার পিতা-মাতার সঙ্গে তুমি এ প্রসঙ্গে আলোচনা না করেই
তাড়াহুড়া করে জবাব দিবে না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, অতঃপর এ আয়াতটি তিনি পাঠ করেন
(অনুবাদ)ঃ “হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, যদি তোমরা পার্থিব জীবন ও তার
সৌন্দর্য কামনা কর...” (সূরা আহযাব ২৮)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! তিনি
অবগত যে, আমার পিতা-মাতা আমাকে তাঁর হতে আলাদা হওয়ার অনুমতি দিবেন না। ‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলেন, আমি বললাম, এ প্রসঙ্গে আমার পিতা-মাতার কি পরামর্শ চাইব? আমি তো
আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং আখিরাতের বাসস্থান প্রত্যাশা করি।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
মামার (রহঃ) বলেন, আইউব আমাকে জানান যে, ‘‘আয়িশাহ (রাঃ)
তাঁকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যে আপনাকেই বেছে নিয়েছি তা আপনার অন্যান্য স্ত্রীকে
জানাবেন না। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বললেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা আমাকে
মুবাল্লিগ (প্রচারক) হিসেবে পাঠিয়েছেন, কষ্ট-কাঠিন্যে নিক্ষেপকারী হিসেবে নয়।
হাসানঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১৫১৬), মুসলিম জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। এ হাদীস ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে একাধিক সূত্রে
উল্লেখ রয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৭
সূরা
নূন ওয়াল ক্বালাম
৩৩১৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ سُلَيْمٍ، قَالَ قَدِمْتُ
مَكَّةَ فَلَقِيتُ عَطَاءَ بْنَ أَبِي رَبَاحٍ فَقُلْتُ لَهُ يَا أَبَا مُحَمَّدٍ
إِنَّ أُنَاسًا عِنْدَنَا يَقُولُونَ فِي الْقَدَرِ . فَقَالَ عَطَاءٌ لَقِيتُ
الْوَلِيدَ بْنَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ أَوَّلَ مَا خَلَقَ
اللَّهُ الْقَلَمَ فَقَالَ لَهُ اكْتُبْ فَجَرَى بِمَا هُوَ كَائِنٌ إِلَى
الأَبَدِ " . وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَفِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
আবদুল
ওয়াহিদ ইবনু সুলাইম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আত্বা ইবনু আবী রাবাহ
(রহঃ)-এর সঙ্গে আমি মক্কায় পৌঁছে দেখা করলাম। তাকে আমি বললাম, হে আবূ মুহাম্মাদ!
এখানে আমাদের কিছু লোক তাক্বদীর স্বীকার করে না। আত্বা (রহঃ) বলেন, ওয়ালীদ ইবনু
উবাদাহ ইবনুস সামিত (রহঃ) এর সঙ্গে দেখা করলে তিনি বলেন, আমার বাবা আমার নিকট
রিওয়ায়াত করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে
শুনেছিঃ সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’আলা কলম সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি কলমকে বললেন, লিখ।
তখন কলম লিখতে শুরু করে এবং অনন্তকাল পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে তা লিপিবদ্ধ করে।
সহীহঃ ২১৫৫ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। হাদীসে সংশ্লিষ্ট একটি ঘটনা রয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ গারীব হাদীস। ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) হতেও এ অ্নুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৮
সূরা
আল-হাক্কা
৩৩২০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
سَعْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي قَيْسٍ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عَمِيرَةَ، عَنِ الأَحْنَفِ بْنِ قَيْسٍ، عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ
عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، قَالَ زَعَمَ أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا فِي الْبَطْحَاءِ فِي
عِصَابَةٍ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ فِيهِمْ إِذْ مَرَّتْ
عَلَيْهِمْ سَحَابَةٌ فَنَظَرُوا إِلَيْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " هَلْ تَدْرُونَ مَا اسْمُ هَذِهِ " . قَالُوا نَعَمْ هَذَا
السَّحَابُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَالْمُزْنُ
" . قَالُوا وَالْمُزْنُ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" وَالْعَنَانُ " . قَالُوا وَالْعَنَانُ . ثُمَّ قَالَ لَهُمْ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَلْ تَدْرُونَ كَمْ بُعْدُ مَا
بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ " . فَقَالُوا لاَ وَاللَّهِ مَا نَدْرِي
. قَالَ " فَإِنَّ بُعْدَ مَا بَيْنَهُمَا إِمَّا وَاحِدَةٌ وَإِمَّا
اثْنَتَانِ أَوْ ثَلاَثٌ وَسَبْعُونَ سَنَةً وَالسَّمَاءُ الَّتِي فَوْقَهَا
كَذَلِكَ " . حَتَّى عَدَّدَهُنَّ سَبْعَ سَمَوَاتٍ كَذَلِكَ ثُمَّ قَالَ
" فَوْقَ السَّمَاءِ السَّابِعَةِ بَحْرٌ بَيْنَ أَعْلاَهُ وَأَسْفَلِهِ
كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ إِلَى السَّمَاءِ وَفَوْقَ ذَلِكَ ثَمَانِيَةُ أَوْعَالٍ
بَيْنَ أَظْلاَفِهِنَّ وَرُكَبِهِنَّ مَا بَيْنَ سَمَاءٍ إِلَى سَمَاءٍ ثُمَّ
فَوْقَ ظُهُورِهِنَّ الْعَرْشُ بَيْنَ أَسْفَلِهِ وَأَعْلاَهُ مَا بَيْنَ سَمَاءٍ
إِلَى سَمَاءٍ وَاللَّهُ فَوْقَ ذَلِكَ " . قَالَ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ
سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ مَعِينٍ يَقُولُ أَلاَّ يُرِيدُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
سَعْدٍ أَنْ يَحُجَّ حَتَّى نَسْمَعَ مِنْهُ هَذَا الْحَدِيثَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى الْوَلِيدُ بْنُ أَبِي ثَوْرٍ
عَنْ سِمَاكٍ نَحْوَهُ وَرَفَعَهُ . وَرَوَى شَرِيكٌ عَنْ سِمَاكٍ بَعْضَ هَذَا
الْحَدِيثِ وَأَوْقَفَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ هُوَ ابْنُ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ الرَّازِيُّ .
আল-আব্বাস
ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একদল লোকের সাথে
আল-বাতহা নামক কংকরময় জায়গায় বসা ছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁদের মধ্যে বসা ছিলেন। তখন তাঁদের মাথার উপর দিয়ে এক খন্ড মেঘ উড়ে
যাচ্ছিল। তাঁরা সে দিকে তাকালে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
তোমরা এর নাম জান কি? তারা বললঃ হ্যাঁ, এক খন্ড মেঘ। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল-মুযনু। সাহাবাগণ বললেন, আল-মুযনু? রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, আনান (মেঘ)-ও। তাঁরা বললেনঃ
আল-আনান। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কি
জান, আকাশ ও যমিনের মাঝের ব্যবধান কত? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমরা জানি না।
তিনি বললেনঃ এতদুভয়ের মধ্যে একাত্তর বা বাহাত্তর বা তিয়াত্তর বছরের দূরত্ব। এক
আকাশের উপর অপর যে আকাশ রয়েছে তার ব্যবধানও অনুরূপ। এভাবে তিনি সপ্তম আকাশ পর্যন্ত
দূ্রত্বের বর্ণনা দেন। তারপর তিনি বললেনঃ সপ্তম আকাশের উপর একটি সমুদ্র আছে, যার
উপর ও তলদেশের মধ্যকার দূরত্ব (গভীরতা) এক আকাশ থেকে অপর আকাশের দূরত্বের সমান। আর
এই সমুদ্রের উপর বন্য ছাগল অনুরূপ আটজন ফেরেশতা আছেন, যাদের পদতল ও হাঁটুর
মধ্যবর্তী ব্যবধান এক আকাশ থেকে অপর আকাশের ব্যবধানের সমান। এদের পিঠের উপর
আল্লাহর ‘আরশ’ অবস্হিত, যার উপরিভাগ ও নিম্নভাগের দূরত্ব (উচ্চতা) এক আকাশ হতে অপর
আকাশের দূরত্বের সমান। আল্লাহ তার উপর (উপবিষ্ট)।
যঈফ, ইবনু মাজাহ(১৯৩)
আবদু ইবনু হুমাইদ (রহঃ) বলেন, আমি ইয়াহইয়া ইবনু মাঈনকে
বলতে শুনেছি, আবদুর রহমান কি হাজ্জে যাবেন না (অবশ্য যাবেন), যাতে তাঁর নিকট আমরা এ
হাদীস শুনতে পারি। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। ওয়ালীদ ইবনু আবূ সাওর (রহঃ)
সিমাকের সূত্রে এ হাদীস মারফূরূপে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। শারীক এ হাদীসের অংশবিশেষ
সিমাকের সুত্রে মাওকূফরূপে বর্ণনা করেছেন, মারফূরূপে নয়। রাবী আব্দুর রহমান হলেন, ইবনু
আব্দুল্লাহ ইবনু সা’দ আল-রাবী।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৩২১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ وَالِدِهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
سَعْدٍ، . حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ الرَّازِيُّ، وَهُوَ الدَّشْتَكِيُّ أَنَّ أَبَاهُ،
أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ رَحِمَهُ اللَّهُ أَخْبَرَهُ كَذَا، قَالَ أَخْبَرَهُ
قَالَ رَأَيْتُ رَجُلاً بِبُخَارَى عَلَى بَغْلَةٍ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ
وَيَقُولُ كَسَانِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
ইয়াহইয়া
ইবনু মূসা-আবদুর রহমান ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু সা’দ আর-রাযী থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহইয়া ইবনু মূসা-আবদুর
রহমান ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু সা’দ আর-রাযী-তাঁর পিতা সূত্রে বলেনঃ আমি বুখারায় এক
ব্যক্তিকে কলো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় একটি খচ্চরের পিঠে বসা দেখলাম। তিনি বলছিলেন,
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এ পাগড়ী পরিয়ে দিয়েছেন।
সনদ দুর্বল
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৯
সূরা
সাআলা সাইল (আল-মাআরিজ)
৩৩২২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ دَرَّاجٍ أَبِي السَّمْحِ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ،
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : (
كالْمُهْلِ ) قَالَ " كَعَكَرِ الزَّيْتِ فَإِذَا قَرَّبَهُ إِلَى
وَجْهِهِ سَقَطَتْ فَرْوَةُ وَجْهِهِ فِيهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ رِشْدِينَ .
আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র বাণী “কালমুহ্লি” (বিগলিত ধাতুর
মত)-এর ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ অর্থাৎ (যাইতুন) তেলের গাদের মত হয়ে যাবে। কাফির ব্যক্তি
তা মুখের নিকটে আনামাত্র তার মুখের চামড়া তাতে (গাদের মধ্যে) খসে পড়ে যাবে।
যইফ,পূর্বের ২৭০৭ নং হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু রিশদীন ইবনু
সা’দের রিওয়াত হিসেবে এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭০
সূরা
আল-জিন্ন
৩২২৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنِي أَبُو الْوَلِيدِ،
حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ مَا قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم عَلَى الْجِنِّ وَلاَ رَآهُمُ انْطَلَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فِي طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ وَقَدْ حِيلَ
بَيْنَ الشَّيَاطِينِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمُ
الشُّهُبُ فَرَجَعَتِ الشَّيَاطِينُ إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوا مَا لَكُمْ
قَالُوا حِيلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا
الشُّهُبُ . فَقَالُوا مَا حَالَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلاَّ
مِنْ أَمْرٍ حَدَثَ فَاضْرِبُوا مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا فَانْظُرُوا
مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ قَالَ
فَانْطَلَقُوا يَضْرِبُونَ مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا يَبْتَغُونَ مَا
هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ فَانْصَرَفَ أُولَئِكَ
النَّفَرُ الَّذِينَ تَوَجَّهُوا إِلَى نَحْوِ تِهَامَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم وَهُوَ بِنَخْلَةَ عَامِدًا إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ وَهُوَ
يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ صَلاَةَ الْفَجْرِ فَلَمَّا سَمِعُوا الْقُرْآنَ
اسْتَمَعُوا لَهُ فَقَالُوا هَذَا وَاللَّهِ الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ
خَبَرِ السَّمَاءِ . قَالَ فَهُنَالِكَ رَجَعُوا إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوا يَا
قَوْمَنَا : ( إنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا * يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ
فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا ) فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى
نَبِيِّهِ : ( قلْ أُوحِيَ إِلَىَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ ) وَإِنَّمَا أُوحِيَ
إِلَيْهِ قَوْلُ الْجِنِّ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জিনদেরকে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) না কিছু (কুরআন) পাঠ করে
শুনিয়েছেন আর না তাদেরকে প্রত্যক্ষ করেছেন। (বরং ঘটনা এই যে, একদিন) রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার একদল সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায নামক
বাজারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। ইতোমধ্যে আকাশের সংবাদ শোনার বিষয়ে জিনদের জন্য
বাধা হয়ে দাড়ায় এবং তাদের বিরুদ্ধে উল্কাপিন্ড নিক্ষিপ্ত হয়। অতঃপর শাইতান জিনেরা
নিজেদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসলে তখন তাদের অপরাপর জিনেরা প্রশ্ন করে, কি বিষয়!
তারা বলে, আকাশের সংবাদ সংগ্রহ করতে আমাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হচ্ছে এবং
আমাদের প্রতি উল্কাপিন্ড নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। তারা বলল, অবশ্যই নতুন কিছু ঘটার কারণে
আমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধার সৃষ্টি হয়েছ। পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম
সব জায়গায় তোমরা ঘুরে দেখ, কি ব্যাপার ঘটেছে যার কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদের
মাঝে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং পৃথিবীর পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত তারা তাদের
আকাশের সংবাদের মাঝে বাধার কারণ বের করার জন্য বেরিয়ে পড়ল। যারা তিহামার উদ্দেশে
বেরিয়েছিল তারা “নাখলা” নামক জায়গায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট হাযির হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
উকাযের বাজারে যাওয়ার পথে এখানে অবস্থান করছিলেন। সে সময় সাহাবীদেরকে নিয়ে তিনি ফাজরের
নামায আদায় করছিলেন। জিনদের ঐ দলটি কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত শুনতে পেয়ে গভীর
মনোযোগের সাথে তা শুনে। তারা বলল, আল্লাহর ক্বসম! এইটা সেই জিনিস যা তোমাদের ও
আকাশের খবরের মধ্যে বাধার কারণ ঘটিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, সে সময় তারা তাদের
গোত্রে ফিরে গিয়ে বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি,
আমাদেরকে যা কল্যাণের পথ দেখায়। তাই তার উপর আমরা ঈমান এনেছি। আর কখনো আমরা আমাদের
প্রভুর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করব না। আল্লাহ তাআলা তাঁর নাবীর নিকট আয়াত অবতীর্ণ
করেন (অনুবাদ)ঃ “আপনি বলুন, আমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, জিনদের একদল
মনোযোগ সহকারে (কুরআন) শুনেছে”- (সূরা জিন ১)। এভাবে ওয়াহী দ্বারা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিনদের আলাপচারিতা প্রসঙ্গে জানানো হয়।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯২১), মুসলিম (হাঃ ২/৩৫, ৩৬)।
একই সনদে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে যে, তিনি
বলেনঃ এটাও জিনদের কথা যা তারা তাদের গোত্রকে বলেছিল, “আল্লাহ তা’আলার বান্দা যখন তাঁকে
ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় সে সময় তারা তার নিকট ভিড় জমায়”- (সূরা জিন ১৯)। আর যখন এই জিনেরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নামায আদায় করতে ও তাঁর সাহাবীদেরও
তাঁর সঙ্গে নামায আদায় করতে দেখে সে সময়েই তারা তাঁর প্রতি সাহাবীদের এ আনুগত্যে অবিভূত
হয়। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলে, আল্লাহ তা’আলার বান্দা যখন তাঁকে (আল্লাহ তা’আলাকে)
ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় তখন তারা তার নিকট জড়ো হয়”।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ،
حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ الْجِنُّ يَصْعَدُونَ إِلَى
السَّمَاءِ يَسْتَمِعُونَ الْوَحْىَ فَإِذَا سَمِعُوا الْكَلِمَةَ زَادُوا فِيهَا
تِسْعًا فَأَمَّا الْكَلِمَةُ فَتَكُونُ حَقًّا وَأَمَّا مَا زَادُوهُ فَيَكُونُ
بَاطِلاً فَلَمَّا بُعِثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُنِعُوا
مَقَاعِدَهُمْ فَذَكَرُوا ذَلِكَ لإِبْلِيسَ وَلَمْ تَكُنِ النُّجُومُ يُرْمَى
بِهَا قَبْلَ ذَلِكَ فَقَالَ لَهُمْ إِبْلِيسُ مَا هَذَا إِلاَّ مِنْ أَمْرٍ قَدْ
حَدَثَ فِي الأَرْضِ فَبَعَثَ جُنُودَهُ فَوَجَدُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَائِمًا يُصَلِّي بَيْنَ جَبَلَيْنِ أُرَاهُ قَالَ بِمَكَّةَ فَأَتَوْهُ
فَأَخْبَرُوهُ فَقَالَ هَذَا الَّذِي حَدَثَ فِي الأَرْضِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঊর্ধ্ব জগতে জিনেরা যাতায়াত করত
আকাশের সংবাদ সংগ্রহের জন্য। একটি কথা শুনতে পেলে তার সঙ্গে তারা নিজেদের পক্ষ হতে
আরো নয়টি কথা সংযুক্ত করত। যার কারণে সেই একটি কথা সত্য হত এবং বাকি নয়টি কথা হত
মিথ্যা। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবূওয়াতপ্রাপ্ত হলে
ঊর্ধ্ব জগতে তাদের উপবেশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। সুতরাং (জিনেরা) এ ব্যাপারটি
তারা ইবলিসকে অবহিত করে। আর ইতোপূর্বে কখনো তাদের প্রতি উল্কাপিণ্ড নিক্ষিপ্ত
হয়নি। ইবলিস তাদেরকে বলল, পৃথিবীতে অবশ্যই নতুন কিছু ঘটেছে, যার কারণে এই
প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং ইবলিস তার দলকে প্রেরণ করে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তারা দু’টি পাহাড়ের মাঝামাঝিতে নামায আদায়
করতে দেখে। (ইমাম তিরমিযী বলেন,) আমার ধারণা হয় মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহইয়া বলেছেন,
মাক্কায় (নামায আদায় করতে দেখে)। তারপর তারা ইবলিসের সঙ্গে দেখা করে তাকে
ব্যাপারটি জানায়। সে বলল, সেই নতুন ঘটনা এটাই যা দুনিয়াতে ঘটেছে।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭১
সূরা
আল-মুদ্দাসসির
৩৩২৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ،
حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ، رضى الله عنهما قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْىِ فَقَالَ فِي حَدِيثِهِ "
بَيْنَمَا أَنَا أَمْشِي سَمِعْتُ صَوْتًا مِنَ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ رَأْسِي
فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِي جَاءَنِي بِحِرَاءَ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ
السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَجُثِثْتُ مِنْهُ رُعْبًا فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُونِي
زَمِّلُونِي . فَدَثَّرُونِي فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ : ( يا
أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ * قُمْ فَأَنْذِرْ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( والرُّجْزَ
فَاهْجُرْ ) قَبْلَ أَنْ تُفْرَضَ الصَّلاَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ جَابِرٍ أَبُو سَلَمَةَ اسْمُهُ
عَبْدُ اللَّهِ .
জাবির
ইবনু আবদিল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি সাময়িকভাবে ওয়াহী বন্ধ থাকার বিষয়ের
রিওয়ায়াত প্রসঙ্গে বলতে শুনেছিঃ আমি পথ চলছিলাম। এ সময়ে আমি ঊর্ধ্ব জগত হতে একটি
আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি মাথা তুলতেই প্রত্যক্ষ করলাম, হেরা গুহায় যে ফেরেশতারা
আমার নিকট এসেছিলেন তিনি আকাশ ও যমীনের মধ্যবর্তী জায়গায় একটি চেয়ারে বসে আছেন।
তাকে দেখে আমি খুব ভীত হয়ে গেলাম। (ঘরে) ফিরে এসে আমি বললামঃ আমাকে তোমরা চাদরে
ঢেকে দাও! আমাকে চাদর জড়িয়ে দাও। অতঃপর তারা আমাকে চাদর দিয়ে জড়িয়ে দিল। সে সময়
আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেনঃ “হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠো, আর সাবধান করো .... আর
পৌত্তলিকতা পরিত্যাগ করো”- (সূরা মুদ্দাসসির ১-৫)। এটা নামায ফরয হওয়ার পূর্বেকার
ঘটনা।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। হাদীসটি ইয়াহইয়া
ইবনু আবী কাসীর (রহঃ) আবূ সালামাহ ইবনু আবদুর রহমানের সূত্রে জাবির (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত
করেছেন। আবূ সালামাহর নাম আবদুল্লাহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى،
عَنِ ابْنِ لَهِيعَةَ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الصَّعُودُ
جَبَلٌ مِنْ نَارٍ يَتَصَعَّدُ فِيهِ الْكَافِرُ سَبْعِينَ خَرِيفًا ثُمَّ يَهْوِي
بِهِ كَذَلِكَ فِيهِ أَبَدًا " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا
نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا مِنْ حَدِيثِ ابْنِ لَهِيعَةَ . وَقَدْ رُوِيَ شَيْءٌ
مِنْ هَذَا عَنْ عَطِيَّةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَوْلُهُ مَوْقُوفٌ .
আবূ
সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সাঊদ হল জাহান্নামের একটি পাহাড়।
জাহান্নামীরা সত্তর বছর ধরে তার চূড়ায় আরোহণ করবে এবং তারপর সেখান থেকে সত্তর বছরে
গড়িয়ে পড়বে। এভাবে তারা তাতে চিরকাল ধরে উঠবে ও নামবে।
যঈফ, ২৭০২ নং হাদীসে পূর্বে বর্ণিত হয়েছে
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি গারীব। আমরা শুধু ইবনু লাহীআর
হাদীস হিসেবে এটিকে মারফূ হিসেবে জেনেছি। আর এ হাদীসের মতই আত্যিয়া আবূ সাঈদ (রাঃ)
সূত্রেও মাওকূফ হিসেবে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৩২৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُجَالِدٍ،
عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ نَاسٌ مِنَ
الْيَهُودِ لأُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَلْ يَعْلَمُ
نَبِيُّكُمْ كَمْ عَدَدُ خَزَنَةِ جَهَنَّمَ قَالُوا لاَ نَدْرِي حَتَّى نَسْأَلَ
نَبِيَّنَا . فَجَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا
مُحَمَّدُ غُلِبَ أَصْحَابُكَ الْيَوْمَ . قَالَ " وَبِمَ غُلِبُوا
" . قَالَ سَأَلَهُمْ يَهُودُ هَلْ يَعْلَمُ نَبِيُّكُمْ كَمْ عَدَدُ
خَزَنَةِ جَهَنَّمَ قَالَ " فَمَا قَالُوا " . قَالَ قَالُوا لاَ
نَدْرِي حَتَّى نَسْأَلَ نَبِيَّنَا . قَالَ " أَفَغُلِبَ قَوْمٌ
سُئِلُوا عَمَّا لاَ يَعْلَمُونَ فَقَالُوا لاَ نَعْلَمُ حَتَّى نَسْأَلَ
نَبِيَّنَا لَكِنَّهُمْ قَدْ سَأَلُوا نَبِيَّهُمْ فَقَالُوا أَرِنَا اللَّهَ
جَهْرَةً عَلَىَّ بِأَعْدَاءِ اللَّهِ إِنِّي سَائِلُهُمْ عَنْ تُرْبَةِ
الْجَنَّةِ وَهِيَ الدَّرْمَكُ " . فَلَمَّا جَاءُوا قَالُوا يَا أَبَا
الْقَاسِمِ كَمْ عَدَدُ خَزَنَةِ جَهَنَّمَ قَالَ " هَكَذَا وَهَكَذَا
" . فِي مَرَّةٍ عَشْرَةٌ وَفِي مَرَّةٍ تِسْعٌ . قَالُوا نَعَمْ .
قَالَ لَهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَا تُرْبَةُ الْجَنَّةِ
" . قَالَ فَسَكَتُوا هُنَيْهَةً ثُمَّ قَالُوا خُبْزَةٌ يَا أَبَا
الْقَاسِمِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْخُبْزُ
مِنَ الدَّرْمَكِ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ مُجَالِدٍ .
জাবির
ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কিছু সংখ্যক
ইয়াহূদী রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কয়েকজন সাহাবীর
নিকটে প্রশ্ন করল, জাহান্নামের দারোগার সংখ্যা কত তা কী তোমাদের নবী জানেন? তাঁরা
বললেন, আমরা তা তাঁর নিকটে জিজ্ঞেস না করে বলতে পারি না। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললঃ হে মুহাম্মাদ! আজ আপনার
সঙ্গীরা হেরে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কেন
তারা হেরে গেছে? সে বলল, ইয়াহূদীরা তাদের নিকটে প্রশ্ন করেছিল, তোমাদের রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি জানেন জাহান্নামের দারোগার সংখ্যা কত?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তারা কি জবাব দিয়েছে? সে
বললঃ তারা বলেছে, আমরা আমাদের নাবীকে জিজ্ঞেস না করে বলতে পারি না। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সেই জাতি কি হেরে যায়, যাদের কাছে এমন
ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয় যা তারা জানে না, তারপর তারা বলে, এ ব্যাপারে আমাদের নাবীর
নিকটে জিজ্ঞেস না করে আমরা বলতে পারি না? বরং ইয়াহূদীরা তো তাদের নাবীর কাছে
অযাচিত আবদার ধরেছিল, “আমাদেরকে প্রকাশ্যে আল্লাহ্ তা’আলাকে দেখান”। আল্লাহ্
তা’আলার শত্রুদেরকে আমার নিকট নিয়ে এসো। আমি আল্লাহ্র এই শত্রুদেরকে জান্নাতের
মাটি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করব। আর তা হল ময়দা। তারপর ইয়াহূদীরা এসে বলল, হে আবুল
কাসিম! জাহান্নামের দারোগার সংখ্যা কত? তিনি বললেনঃ এত এতজন (এক হাতের আঙ্গুলের
ইশারায়) দশজন এবং (অপর হাতের ইশারায়) নয়জন। তারা বলল, হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন।
এবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে প্রশ্ন করলেনঃ
জান্নাতের মাটি কিসের? রাবী বলেন, তারা কিছু সময় ছুপ থাকার পর বলল, হে আবুল কাসিম!
তা হল রুটি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ময়দার রুটি।
যঈফ, যঈফা (৩৩৪৮), মুসলিম (৮/১৯১)। আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবনু সাঈদকে বললেনঃ জান্নাতের
মাটি কেমন? তিনি বললেনঃ সাদা ময়দা মিসকের মত সুগন্ধি। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সত্য বলেছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র এই সনদে মুজালিদের
রিওয়ায়াত হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৩২৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّارُ، حَدَّثَنَا زَيْدُ
بْنُ حُبَابٍ، أَخْبَرَنَا سُهَيْلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْقُطَعِيُّ، وَهُوَ
أَخُو حَزْمِ بْنِ أَبِي حَزْمٍ الْقُطَعِيِّ عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ فِي هَذِهِ
الْآيَةَ ( هُوَ أَهْلُ التَّقْوَى وَأَهْلُ الْمَغْفِرَةِ ) قَالَ قَالَ اللَّهُ
عَزَّ وَجَلَّ أَنَا أَهْلٌ أَنْ أُتَّقَى فَمَنْ اتَّقَانِي فَلَمْ يَجْعَلْ
مَعِي إِلَهًا فَأَنَا أَهْلٌ أَنْ أَغْفِرَ لَهُ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَسُهَيْلٌ لَيْسَ بِالْقَوِيِّ فِي الْحَدِيثِ وَقَدْ
تَفَرَّدَ بِهَذَا الْحَدِيثِ عَنْ ثَابِتٍ
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তিনিই সেই সত্তা যাকে ভয় করা উচিত।
আর তিনিই বান্দার পাপ মার্জনা করার অধিকারী” (সূরাঃ আল-মুদ্দাচ্ছির – ৫৬)। এই
আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ আমিই কেবল মাত্র
(বান্দার জন্য) ভয়ের যোগ্য। সুতরাং যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে, আমার সাথে কাউকে
অংশীদার স্থির করে না, তাকে মাফ করার যথার্থ অধিকারী আমিই।
যঈফ, ইবনু মাজাহ ( ৪২৯৯)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। হাদীস শাস্ত্রবিদগণের
দৃষ্টিতে সুহাইল তেমন মজবুত রাবী নন। সাবিত হতে এ হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে তিনি একাকী।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭২
সূরা
আল-ক্বিয়ামাহ
৩৩২৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أُنْزِلَ
عَلَيْهِ الْقُرْآنُ يُحَرِّكُ بِهِ لِسَانَهُ يُرِيدُ أَنْ يَحْفَظَهُ فَأَنْزَلَ
اللَّهُ : ( لا تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ ) قَالَ فَكَانَ
يُحَرِّكُ بِهِ شَفَتَيْهِ وَحَرَّكَ سُفْيَانُ شَفَتَيْهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ عَلِيٌّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ
أَثْنَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَلَى مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ خَيْرًا .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর কুরআন অবতীর্ণ হত তখন তিনি
তা মুখস্থ করে নেয়ার জন্য (ফেরেশতার সঙ্গে সঙ্গে) জিহ্বা নাড়াতেন। এ অবস্থায়
আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “তাড়াতাড়ি ওয়াহী মুখস্থ করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা
সঞ্চালন করো না .........” (সূরা ক্বিয়ামাহ ১৬-২১)। অধঃস্থন বর্ণনাকারী মূসা তার
ঠোট দু’টি নেড়ে দেখাতেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
সুফইয়ানও তার ঠোঁট দু’টো নাড়তেন।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল কাত্তান
বলেছেন, সুফইয়ান আস সাওরী (রহঃ) মূসা ইবনু আবী ‘আয়িশাহর খুব সুনাম করতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৩০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنِي شَبَابَةُ، عَنْ
إِسْرَائِيلَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً
لَمَنْ يَنْظُرُ إِلَى جِنَانِهِ وَأَزْوَاجِهِ وَخَدَمِهِ وَسُرُرِهِ مَسِيرَةَ
أَلْفِ سَنَةٍ وَأَكْرَمَهُمْ عَلَى اللَّهِ مَنْ يَنْظُرُ إِلَى وَجْهِهِ
غُدْوَةً وَعَشِيَّةً " . ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم : (وجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَاضِرَةٌ * إِلَى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ ) . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ قَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ
إِسْرَائِيلَ مِثْلَ هَذَا مَرْفُوعًا . وَرَوَى عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبْجَرَ
عَنْ ثُوَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَوْلَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
সুওয়াইর
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি ইবনু
উমার (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ একজন সাধারণ মর্যাদাসম্পন্ন জান্নাতীর উদ্যানসমূহ, বিবিগণ, চাকরগণ এবং
খাট-পালংকসমূহ কেউ দেখতে চাইলে তা তার জন্য হাজার বছরের রাস্তা। তাদের মধ্যে
আল্লাহ্ তা’আলার নিকট সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর চেহারা
দেখার সৌভাগ্য লাভ করবেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এই আয়াত পাঠ করেনঃ “কিছু মুখমণ্ডল সেদিন উজ্জ্বল হবে এবং তারা তাদের রবের দিকে
তাকিয়ে থাকবে” ( সূরাঃ আল-ক্বিয়ামাহ-২২-২৩)।
যঈফ, যঈফা (১৯৮৫)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। একাধিক বর্ণনাকারী ইসরাঈলের
সূত্রে হাদীসটি একইভাবে মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আবদুল মালিক ইবনু আব্জার (রহঃ)
সুওয়াইর হতে তিনি (মুজাহিদ) ইবনু উমার (রাঃ) সুত্রে এটিকে তার কথা হিসেবে (মাওকূফ হিসেবে)
বর্ণনা করেছেন, মারফূ হিসেবে নয়। আল-আশজাঈ (রহঃ) সুফিয়ান হতে তিনি সুওয়াইর হতে তিনি
মুজাহিদ হতে তিনি ইবনু উমার (রাঃ) সূত্রে তার কথারূপে বর্ণনা করেছেন এবং মারফূরূপে
বর্ণনা করেননি। আবূ ঈসা বলেন, আমাদের জানামতে এ হাদীসের সনদে সুফিয়ান ব্যতীত অন্য কেউ
মুজাহিদের উল্লেখ করেননি। সুওয়াইর-এর ডাকনাম আবূ জাহম। আবূ ফাখি তার নাম সাঈদ ইবনু
ইলাকা।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৩
সূরা
আবাসা
৩৩৩১
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنِي
أَبِي قَالَ، هَذَا مَا عَرَضْنَا عَلَى هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ أُنْزِلَ : ( عبَسَ وَتَوَلَّى ) فِي ابْنِ أُمِّ
مَكْتُومٍ الأَعْمَى أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يَقُولُ
يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرْشِدْنِي وَعِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
رَجُلٌ مِنْ عُظَمَاءِ الْمُشْرِكِينَ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يُعْرِضُ عَنْهُ وَيُقْبِلُ عَلَى الآخَرِ وَيَقُولُ أَتَرَى بِمَا أَقُولُ
بَأْسًا فَيُقَالُ لاَ . فَفِي هَذَا أُنْزِلَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ هِشَامِ
بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ أُنْزِلََ : ( عبَسَ وَتَوَلَّى ) فِي
ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ عَائِشَةَ .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “আবাসা ওয়া
তাওয়াল্লা” সূরাটি অন্ধ সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনু উম্মু মাকতূম (রাঃ) প্রসঙ্গে
অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে তিনি বলতে
লাগলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে দ্বীনের সঠিক পথ বলে দিন। সে সময় রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাজলিসে মুশরিকদের এক নেতৃস্থানীয় লোক
হাযির ছিল। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে এড়িয়ে চলেন
এবং উক্ত নেতার প্রতি মনোযোগ দেন। ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ) বলেন, আপনি কি মনে
করেন-আমি যা বলছি তা মন্দ? তিনি বলতে থাকেনঃ না। এ প্রসঙ্গে সূরাটি অবতীর্ণ হয়।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব। এ হাদীস কিছু বর্ণনাকারী
হিশাম ইবনু উরওয়াহ হতে, তার বাবার সূত্রে রিওয়ায়াত করেছেন। তিনি বলেন, “আবাসাহ ওয়া
তাওয়াল্লা” সূরাটি ইবনু উম্মু মাকতূম (রাঃ) প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি এ সনদে ‘আয়িশাহ
(রাঃ)-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৩২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ،
حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
تُحْشَرُونَ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلاً " . فَقَالَتِ امْرَأَةٌ أَيُبْصِرُ
أَوْ يَرَى بَعْضُنَا عَوْرَةَ بَعْضٍ قَالَ " يَا فُلاَنَةُُ: (لكلِّ
امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ ) " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ قَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَوَاهُ سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ أَيْضًا . وَفِيهِ عَنْ عَائِشَةَ رضى
الله عنها .
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমাদেরকে ক্বিয়ামাতের দিন নগ্নপদে, নগ্নশরীরে ও খাতনাহীন অবস্থায় উঠানো
হবে। এক মহিলা [আয়িশা (রাঃ)] বলেন, তবে কি আমাদের একে অন্যের গুপ্তস্থান দেখতে
পাবে! তিনি বললেন, হে অমুক! “সেদিন তাদের সবার এরূপ গুরুতর পরিনতি হবে যা তাকে
সম্পূর্ণরূপে ব্যতিব্যস্ত রাখবে”- (সূরা আবাসা ৩৭)।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি একাধিক সনদে
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। এটি সাঈদ ইবনু জুবাইরও বর্ণনা করেছেন। এ অনুচ্ছেদে
‘আয়িশাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৭৪
সূরা
আত-তাকবীর
৩৩৩৩
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَحِيرٍ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، وَهُوَ ابْنُ يَزِيدَ الصَّنْعَانِيُّ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ،
يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ سَرَّهُ أَنْ
يَنْظُرَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُ رَأْىُ عَيْنٍ فَلْيَقْرَأْ (
إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ ) و (إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ ) وَ (إذَا
السَّمَاءُ انْشَقَّتْ ) " . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى
هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ وَغَيْرُهُ هَذَا الْحَدِيثَ بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُ رَأْىُ عَيْنٍ
فَلْيَقْرَأْ (إذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ ) وَلَمْ يَذْكُرْ و (إِذَا
السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ ) وَ (إذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ ).
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দৃশ্যাবলী যে লোক
চাক্ষুষভাবে প্রত্যক্ষ করতে উৎসাহী সে যেন “ইযাশ-শামসু কুব্বিরাত”, “ইযাস সামাউন
ফাত্বারাত” ও “ইযাস সামাউন শাক্বক্বাত” এ তিনটি সূরা পাঠ করে।
সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১০৮১)।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব। হিশাম ইবনু ইউসুফ
প্রমুখ বর্ণনাকারীগণ হাদীসটি উক্ত সনদে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যক্ষভাবে
ক্বিয়ামাত দিবস অবলোকন করতে পছন্দ করে সে যেন “ইযাশ শামসু কুববিরাত” পাঠ করে। এ বর্ণনায়
“ইযাস সামাউন ফাতারাত” এবং “ইযাস সামাউন শাক্বক্বাত” উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৫
সূরা
আল-মুতাফফিফীন
৩৩৩৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ،
عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا
أَخْطَأَ خَطِيئَةً نُكِتَتْ فِي قَلْبِهِ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ فَإِذَا هُوَ نَزَعَ
وَاسْتَغْفَرَ وَتَابَ سُقِلَ قَلْبُهُ وَإِنْ عَادَ زِيدَ فِيهَا حَتَّى تَعْلُوَ
قَلْبَهُ وَهُوَ الرَّانُ الَّذِي ذَكَرَ اللَّهُ : ( كلاَّ بَلْ رَانَ عَلَى
قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ ) " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দা যখন একটি গুনাহ করে তখন তার
অন্তরের মধ্যে একটি কালো চিহ্ন পড়ে। অতঃপর যখন সে গুনাহর কাজ পরিহার করে, ক্ষমা
প্রার্থনা করে এবং তাওবা করে তার অন্তর তখন পরিষ্কার ও দাগমুক্ত হয়ে যায়। সে আবার
পাপ করলে তার অন্তরে দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তার পুরো অন্তর এভাবে কালো দাগে
ঢেকে যায়। এটাই সেই মরিচা আল্লাহ তা’আলা যার বর্ণনা করেছেনঃ “কখনো নয়, বরং তাদের
কৃতকর্মই তাদের মনে জং (মরিচা) ধরিয়েছে” – (সূরা মুত্বাফফিফীন ১৪)।
হাসানঃ আত-তা’লীকুর রাগীব (হাঃ ২/২৬৮)।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৩৩৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ دُرُسْتَ، - بَصْرِيٌّ - حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ حَمَّادٌ
هُوَ عِنْدَنَا مَرْفُوعٌ : (يوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
) قَالَ يَقُومُونَ فِي الرَّشْحِ إِلَى أَنْصَافِ آذَانِهِمْ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাম্মাদ (রহঃ) বলেন,
আমাদের মতে এটি মারফূ হাদীস (মহানবীর বানী)। “সকল মানুষ যে দিন রাব্বুল আলামীনের
সামনে দণ্ডায়মান হবে” – (সূরা মুতাফফিফীন ৬) আয়াতের বর্ণনা সম্পর্কে তিনি বলেনঃ
লোকেরা (ক্বিয়ামাতের মায়দানে) সেদিন কানের লতিকা পর্যন্ত ঘামে ডুবন্ত অবস্থায়
দণ্ডায়মান থাকবে।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম, এটি ২৪২২ নং হাদীসের পুনরুল্লেখ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৩৬
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ
عَوْنٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمْ
: ( يومَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ ) قَالَ " يَقُومُ
أَحَدُهُمْ فِي الرَّشْحِ إِلَى أَنْصَافِ أُذُنَيْهِ " . قَالَ هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“সকল মানুষ যেদিন
বিশ্বপ্রভুর সম্মুখে দণ্ডায়মান থাকবে” – (সূরা মুতাফফিফীন ৬) আয়াত প্রসঙ্গে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মানুষ তার কানের লতিকা পর্যন্ত ঘামে
দণ্ডায়মান থাকবে।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরাহ
(রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৬
সূরা
আল-ইনশিক্বাক্ব
৩৩৩৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ
عَائِشَةَ، قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ
نُوقِشَ الْحِسَابَ هَلَكَ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ
يَقُولَُ : (فأمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ ) إِلَى قَوْلِهِ
: ( خبِيرًا ) قَالَ " ذَلِكَ الْعَرْضُ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমি বলতে শুনেছিঃ ক্বিয়ামাতের দিন
নিখুঁতভাবে যার হিসাব নেয়া হবে সে তো বিলিন হয়ে যাবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর
রাসূল! আল্লাহ তা'আলা তো বলেছেনঃ "যাকে তার আমল নামা ডান হাতে দেয়া হবে, তার
হিসাব-নিকাশ অতি সহজেই হবে "-(সূরা আল-ইনশিক্বাক্ব ৭-৮)। তিনি বললেনঃ সে তো
নামমাত্র হাযির করা।
সহীহঃ বুখারি ও মুসলিম, ২৪২৬ নং হাদীস পূর্বেও বর্ণিত হয়েছে।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সুয়াইদ ইবনু নাসর
'আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক হতে, তিনি 'উসমান ইবনু আস্ওয়াদ হতে, উক্ত সনদে অনুরূপ বর্ণিত
করেছেন। মুহাম্মদ ইবনু আবান প্রমুখ-আবদুল ওয়াহ্হাব আস-সাক্বাফী হতে, তিনি আইয়ুব হতে,
তিনি ইবনু আবী মুলাইকাহ্ হতে, তিনি আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম হতে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণান করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ حُوسِبَ عُذِّبَ " . قَالَ
وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ যার হিসাব নেয়া হবে সে তো আযাবপ্রাপ্ত হবে।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু ক্বাতাদাহ্
সূত্রে আনাস (রাঃ) এর বরাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে এই সূত্রে হাদীসটি
আবগত হয়েছি।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৭৭
সূরা
আল-বুরূজ
৩৩৩৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ،
وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ
خَالِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْيَوْمُ الْمَوْعُودُ يَوْمُ
الْقِيَامَةِ وَالْيَوْمُ الْمَشْهُودُ يَوْمُ عَرَفَةَ وَالشَّاهِدُ يَوْمُ
الْجُمُعَةِ وَمَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ وَلاَ غَرَبَتْ عَلَى يَوْمٍ أَفْضَلَ
مِنْهُ فِيهِ سَاعَةٌ لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُؤْمِنٌ يَدْعُو اللَّهَ بِخَيْرٍ
إِلاَّ اسْتَجَابَ اللَّهُ لَهُ وَلاَ يَسْتَعِيذُ مِنْ شَرٍّ إِلاَّ أَعَاذَهُ
اللَّهُ مِنْهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ
نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ . وَمُوسَى بْنُ
عُبَيْدَةَ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَغَيْرُهُ
مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "আল ইয়াউমুল মাও'ঊদ"- (সূরা
বুরূজ ২) অর্থ-ক্বিয়ামাতের দিন; "আল-ইয়াউমুল মাশ্হুদ "-(সূরা হূদ ১০৩)
অর্থ-'আরাফাতে (উপস্থিতির) দিন এবং "আশ্-শাহিদ (সূরা বুরূজ ৩) অর্থ- জুমু'আর
দিন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ যে সমস্ত দিন
সূর্য উদিত হয় ও অস্ত যায় তার মাঝে জুমু'আর দিনের তুলনায় বেশি ভালো কোন দিন নেই। এ
দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, ঠিক সে সময় কোন মু'মিন বান্দা আল্লাহ তা'আলার নিকট
প্রার্থনা করলে তার প্রার্থনা তিনি ক্ববূল করেন এবং যে বস্তু (অনিষ্ট) হতে সে
আশ্রয় প্রার্থনা করে তা হতে তিনি তাকে আশ্রয় দান করেন।
হাসানঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (হাঃ ১৩৬২), সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১৫০২)
'আলী ইবনু হুজর-কুররান ইবনু তাম্মাম আল-আসাদী হতে, তিনি
মূসা ইবনু 'উবাইদাহ্ র সনদে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। মূসা ইবনু 'উবাইদাহ্
আর-রাবাযীর উপনাম আবূ 'আবদুল 'আযীয। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা'ঈদ আল-কাত্তান প্রমুখ তার স্মরনশক্তির
দুর্বলতার সমালোচলা করেছেন। অবশ্য শু'বাহ্, সুফ্ইয়ান আস্- সাওরী প্রমুখ ইমামগন মূসা
ইবনু 'উবাইদাহ্ হতে হাদীস হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
এ হাদীস কেবল মূসা ইবনু 'উবাইদাহ্ র সনদেই আমরা অবগত হয়েছি। হাদীসশাস্ত্রে মূসা ইবনু
'উবাইদাকে দুর্বল আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা'ঈদ প্রমুখ তাকে তার স্মৃতিশক্তির
দিক হতে কমজোড় বলেছেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৩৪০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، -
الْمَعْنَى وَاحِدٌ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ
ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ
صُهَيْبٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى الْعَصْرَ
هَمَسَ - وَالْهَمْسُ فِي قَوْلِ بَعْضِهِمْ تَحَرُّكُ شَفَتَيْهِ كَأَنَّهُ
يَتَكَلَّمُ فَقِيلَ لَهُ إِنَّكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَا صَلَّيْتَ الْعَصْرَ
هَمَسْتَ قَالَ . " إِنَّ نَبِيًّا مِنَ الأَنْبِيَاءِ كَانَ أُعْجِبَ
بِأُمَّتِهِ فَقَالَ مَنْ يَقُولُ لِهَؤُلاَءِ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ أَنْ
خَيِّرْهُمْ بَيْنَ أَنْ أَنْتَقِمَ مِنْهُمْ وَبَيْنَ أَنْ أُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ
عَدُوَّهُمْ فَاخْتَارَ النِّقْمَةَ فَسَلَّطَ عَلَيْهِمُ الْمَوْتَ فَمَاتَ
مِنْهُمْ فِي يَوْمٍ سَبْعُونَ أَلْفًا " . قَالَ وَكَانَ إِذَا حَدَّثَ
بِهَذَا الْحَدِيثِ حَدَّثَ بِهَذَا الْحَدِيثِ الآخَرِ . قَالَ " كَانَ
مَلِكٌ مِنَ الْمُلُوكِ وَكَانَ لِذَلِكَ الْمَلِكِ كَاهِنٌ يَكْهَنُ لَهُ فَقَالَ
الْكَاهِنُ انْظُرُوا لِيَ غُلاَمًا فَهِمًا أَوْ قَالَ فَطِنًا لَقِنًا
فَأُعَلِّمُهُ عِلْمِي هَذَا فَإِنِّي أَخَافُ أَنْ أَمُوتَ فَيَنْقَطِعَ مِنْكُمْ
هَذَا الْعِلْمُ وَلاَ يَكُونُ فِيكُمْ مَنْ يَعْلَمُهُ . قَالَ فَنَظَرُوا لَهُ
عَلَى مَا وَصَفَ فَأَمَرَهُ أَنْ يَحْضُرَ ذَلِكَ الْكَاهِنَ وَأَنْ يَخْتَلِفَ
إِلَيْهِ فَجَعَلَ يَخْتَلِفُ إِلَيْهِ وَكَانَ عَلَى طَرِيقِ الْغُلاَمِ رَاهِبٌ
فِي صَوْمَعَةٍ " . قَالَ مَعْمَرٌ أَحْسِبُ أَنَّ أَصْحَابَ
الصَّوَامِعِ كَانُوا يَوْمَئِذٍ مُسْلِمِينَ قَالَ " فَجَعَلَ الْغُلاَمُ
يَسْأَلُ ذَلِكَ الرَّاهِبَ كُلَّمَا مَرَّ بِهِ فَلَمْ يَزَلْ بِهِ حَتَّى
أَخْبَرَهُ فَقَالَ إِنَّمَا أَعْبُدُ اللَّهَ " . قَالَ "
فَجَعَلَ الْغُلاَمُ يَمْكُثُ عِنْدَ الرَّاهِبِ وَيُبْطِئُ عَلَى الْكَاهِنِ
فَأَرْسَلَ الْكَاهِنُ إِلَى أَهْلِ الْغُلاَمِ إِنَّهُ لاَ يَكَادُ يَحْضُرُنِي
فَأَخْبَرَ الْغُلاَمُ الرَّاهِبَ بِذَلِكَ فَقَالَ لَهُ الرَّاهِبُ إِذَا قَالَ
لَكَ الْكَاهِنُ أَيْنَ كُنْتَ فَقُلْ عِنْدَ أَهْلِي . وَإِذَا قَالَ لَكَ
أَهْلُكَ أَيْنَ كُنْتَ فَأَخِبِرْهُمْ أَنَّكَ كُنْتَ عِنْدَ الْكَاهِنِ "
. قَالَ " فَبَيْنَمَا الْغُلاَمُ عَلَى ذَلِكَ إِذْ مَرَّ بِجَمَاعَةٍ
مِنَ النَّاسِ كَثِيرٍ قَدْ حَبَسَتْهُمْ دَابَّةٌ " . فَقَالَ
بَعْضُهُمْ إِنَّ تِلْكَ الدَّابَّةَ كَانَتْ أَسَدًا قَالَ " فَأَخَذَ
الْغُلاَمُ حَجَرًا قَالَ اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ مَا يَقُولُ الرَّاهِبُ حَقًّا فَأَسْأَلُكَ
أَنْ أَقْتُلَهَا . قَالَ ثُمَّ رَمَى فَقَتَلَ الدَّابَّةَ . فَقَالَ
النَّاسُ مَنْ قَتَلَهَا قَالُوا الْغُلاَمُ فَفَزِعَ النَّاسُ وَقَالُوا لَقَدْ
عَلِمَ هَذَا الْغُلاَمُ عِلْمًا لَمْ يَعْلَمْهُ أَحَدٌ . قَالَ فَسَمِعَ بِهِ
أَعْمَى فَقَالَ لَهُ إِنْ أَنْتَ رَدَدْتَ بَصَرِي فَلَكَ كَذَا وَكَذَا .
قَالَ لَهُ لاَ أُرِيدُ مِنْكَ هَذَا وَلَكِنْ أَرَأَيْتَ إِنْ رَجَعَ إِلَيْكَ
بَصَرُكَ أَتُؤْمِنُ بِالَّذِي رَدَّهُ عَلَيْكَ قَالَ نَعَمْ . قَالَ فَدَعَا
اللَّهَ فَرَدَّ عَلَيْهِ بَصَرَهُ فَآمَنَ الأَعْمَى فَبَلَغَ الْمَلِكَ
أَمْرُهُمْ فَبَعَثَ إِلَيْهِمْ فَأُتِيَ بِهِمْ فَقَالَ لأَقْتُلَنَّ كُلَّ
وَاحِدٍ مِنْكُمْ قِتْلَةً لاَ أَقْتُلُ بِهَا صَاحِبَهُ فَأَمَرَ بِالرَّاهِبِ
وَالرَّجُلِ الَّذِي كَانَ أَعْمَى فَوَضَعَ الْمِنْشَارَ عَلَى مَفْرِقِ أَحَدِهِمَا
فَقَتَلَهُ وَقَتَلَ الآخَرَ بِقِتْلَةٍ أُخْرَى . ثُمَّ أَمَرَ بِالْغُلاَمِ
فَقَالَ انْطَلِقُوا بِهِ إِلَى جَبَلِ كَذَا وَكَذَا فَأَلْقُوهُ مِنْ رَأْسِهِ
فَانْطَلَقُوا بِهِ إِلَى ذَلِكَ الْجَبَلِ فَلَمَّا انْتَهَوْا بِهِ إِلَى ذَلِكَ
الْمَكَانِ الَّذِي أَرَادُوا أَنْ يُلْقُوهُ مِنْهُ جَعَلُوا يَتَهَافَتُونَ مِنْ
ذَلِكَ الْجَبَلِ وَيَتَرَدَّوْنَ حَتَّى لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلاَّ الْغُلاَمُ
" . قَالَ " ثُمَّ رَجَعَ فَأَمَرَ بِهِ الْمَلِكُ أَنْ
يَنْطَلِقُوا بِهِ إِلَى الْبَحْرِ فَيُلْقُونَهُ فِيهِ فَانْطُلِقَ بِهِ إِلَى
الْبَحْرِ فَغَرَّقَ اللَّهُ الَّذِينَ كَانُوا مَعَهُ وَأَنْجَاهُ فَقَالَ
الْغُلاَمُ لِلْمَلِكِ إِنَّكَ لاَ تَقْتُلُنِي حَتَّى تَصْلُبَنِي وَتَرْمِيَنِي
وَتَقُولَ إِذَا رَمَيْتَنِي بِسْمِ اللَّهِ رَبِّ هَذَا الْغُلاَمِ . قَالَ فَأَمَرَ
بِهِ فَصُلِبَ ثُمَّ رَمَاهُ فَقَالَ بِسْمِ اللَّهِ رَبِّ هَذَا الْغُلاَمِ .
قَالَ فَوَضَعَ الْغُلاَمُ يَدَهُ عَلَى صُدْغِهِ حِينَ رُمِيَ ثُمَّ مَاتَ .
فَقَالَ أُنَاسٌ لَقَدْ عَلِمَ هَذَا الْغُلاَمُ عِلْمًا مَا عَلِمَهُ أَحَدٌ
فَإِنَّا نُؤْمِنُ بِرَبِّ هَذَا الْغُلاَمِ . قَالَ فَقِيلَ لِلْمَلِكِ
أَجَزِعْتَ أَنْ خَالَفَكَ ثَلاَثَةٌ فَهَذَا الْعَالَمُ كُلُّهُمْ قَدْ
خَالَفُوكَ . قَالَ فَخَدَّ أُخْدُودًا ثُمَّ أَلْقَى فِيهَا الْحَطَبَ
وَالنَّارَ ثُمَّ جَمَعَ النَّاسَ فَقَالَ مَنْ رَجَعَ عَنْ دِينِهِ تَرَكْنَاهُ
وَمَنْ لَمْ يَرْجِعْ أَلْقَيْنَاهُ فِي هَذِهِ النَّارِ فَجَعَلَ يُلْقِيهِمْ فِي
تِلْكَ الأُخْدُودِ . قَالَ يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى : (قتِلَ أَصْحَابُ
الأُخْدُودِ * النَّارِ ذَاتِ الْوَقُودِ ) حَتَّى بَلَغَ : (العَزِيزِ
الْحَمِيدِ ) " . قَالَ " فَأَمَّا الْغُلاَمُ فَإِنَّهُ دُفِنَ
" . قَالَ فَيُذْكَرُ أَنَّهُ أُخْرِجَ فِي زَمَنِ عُمَرَ بْنِ
الْخَطَّابِ وَأُصْبُعُهُ عَلَى صُدْغِهِ كَمَا وَضَعَهَا حِينَ قُتِلَ . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
সুহাইব
ইবনু সিনান আর-রূমী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'আসরের নামায আদায় করার পর নিঃশব্দে কিছু
তিলাওয়াত করতেন। কারো মতে 'হামস' অর্থ 'ঠোঁট নাড়ানো'। যেন তিনি কথা বলছেন। তাই
তাঁকে প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! আসরের নামায আদায় করার পর আপনি ঠোঁট নেড়ে
থাকেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা'আলার একজন
নবী তাঁর উম্মাতের (সংখ্যাধিক্যের) জন্য অধিক খুশী হন। তাই তিনি মনে মনে বলেন,
কারা তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে! সে সময় আল্লাহ তা'আলা তাঁর নিকট
ওয়াহী পাঠানঃ 'তাদেরকে দু'টি বিষয়ের যে কোন একটি গ্রহণের এখতিয়ার দাওঃ হয় তাদের
উপর আমি প্রতিশোধ নিব কিংবা শত্রুবাহিনীকে তাদের উপর আধিপত্য দান করব। তারা
প্রতিশোধ নেয়াকে এখতিয়ার করল। অতঃপর তাদের উপর আল্লাহ তা'আলা মৃত্যু চাপিয়ে দিলেন,
ফলে এক দিনেই তাদের সত্তর হাজার লোক মারা গেল।
সহীহঃ তাখরীজ আল-কালিমুত্ তাইয়্যিব (হাঃ ১২৫/৮৩)
বর্ণনাকারী বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এ ঘটনা উদ্বৃত করতেন সে সময় এর সঙ্গে তিনি আরো একটি ঘটনা বলতেন। তিনি
বলেনঃ জনৈক বাদশার এক যাদুকর ছিল। বাদশাকে সে ভবিষ্যদ্বাণী শুনাত। যাদুকরটি লোকদেরকে
বলল, আমাকে তোমরা একটি বুদ্ধিমান, সাবধানী ও ধিশক্তি সম্পন্ন বালক এনে দাও। আমি তাকে
আমার জ্ঞান শিখিয়ে দিব। কারন আমার মনে হচ্ছে যে, আমি মারা গেলে আমার এ বিদ্যা হতে তোমরা
বঞ্চিত হবে। তোমাদের মাঝে এই সম্পন্ন আর কেউ থাকবে না। তিনি বলেনঃ লোকেরা (যাদুকরের)
কথামত একটি বুদ্ধিমান ছেলে খুঁজে বের করে এবং তাকে সেই যাদুকরের নিকট প্রত্যহ যাতায়াতের
ও তার সাহচর্য লাভের আদেশ দেয়। ছেলেটি সেই যাদুকরের নিকট যাতায়াত করতে থাকে। ছেলেটির
যাওয়া-আসার পথে একটি গীর্জায় এক পাদরী (রাহেব) অবস্থানরত ছিল। বর্ণনাকারী মা'মার বলেন,
আমার বিশ্বাস সে সময় গীর্জার পাদরীগন তাওহীদের বিশ্বাসী মুসলমান ছিলেন। সে এ পাদরীর
কাছ দিয়ে যাতায়াতকালে তার নিকট (দীন প্রসঙ্গে) প্রশ্ন করত। অবশেষে সে বলল, আমি আল্লাহ
তা'আলার ইবাদত করি। তারপর পাদরীর নিকট ছেলেটি অবস্থান করতে শুরু করে এবং যাদুকরের নিকট
বিলম্বে উপস্থিত হয়। যাদুকর ছেলের অভিভাবকে বলে পাঠায় যে আমার আশঙ্কা হয় সে আমার নিকট
আসবে না। বালক পাদরীকে এ বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তাকে বলেন, তুমি কোথায় ছিলে যাদুকর
তোমাকে এ প্রশ্ন করলে তুমি বলবে, আমি বাড়ীতে ছিলাম। আর তোমাকে অভিভাবকরা প্রশ্ন করলে
তুমি বলবে, আমি যাদুকরের নিকট ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
আরো বলেনঃ এভাবে বেশ কিছু দিন বালকটির কেটে গেল। একদিন সে এক বিরাট সংখ্যক লোকের নিকট
দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের পথে একটি হিংস্র জন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ বললেন, ঐ জন্তুটি
ছিল বাঘ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ বালকটি একটি পাথর তুলে
নিয়ে বলে, হে আল্লাহ! পাদরী যা বলে তা যদি সত্য হয় তাহলে আমি আপনার নিকট চাই যে, এ
জন্তুটিকে আমি হত্যা করি। এ কথা বলে সে পাথরটি ছুড়ে মারল এবং জন্তুটি হত্যা করল। লোকেরা
বলল, জন্তুটি কে হত্যা করেছে? লোকেরা বলল, এ বালকটি। লোকেরা বিমর্ষ হয়ে বলল, এমন জ্ঞান
সে আয়ত্ত করেছে যা আর কারো নিকটে নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেনঃ এক অন্ধ লোক এ ঘটনা শুনতে পেয়ে তাকে বলল, যদি তুমি আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে
পার তবে তোমাকে আমি এই এই পরিমান সম্পদ দিব। বালকটি তাকে বলল, তোমার নিকট আমি তা চাই
না। তবে যদি তোমার দৃষ্টিশক্তি তুমি ফিরিয়ে পাও তাহলে যিনি তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে
দিবে তাঁর উপর কি তুমি ইমান আনবে? অন্ধ বলল, হ্যাঁ। তারপর আল্লাহ তা'আলার নিকট ছেলেটি
দু'আ করল এবং আল্লাহ তা'আলা তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন। অন্ধ ব্যক্তিও ইমান আনল।
বিষয়টি বাদশার কানে গিয়ে পৌঁছলে সে তাদের ডেকে পাঠায়। তার নিকট তাদেরকে হাযির করা হলে
সে বলল, তোমাদের প্রত্যেককে আমি এক এক নতুন পন্থায় হত্যা করব যে পন্থায় তার সঙ্গীকে
হত্যা করব না। সে পাদরী ও অন্ধ লোকটিকে হত্যার হুকুম দিল এবং সে অনুযায়ী এদের একজনের
মাথার উপর করাত চালিয়ে হত্যা করা হয় এবং অন্যজনকে আরেকভাবে হত্যা করা হয়। তারপর বালকটি
প্রসঙ্গে বাদশা বলল, একে ঐ পর্বতে নিয়ে যাও এবং তার চূড়া হতে তাকে ফেলে দাও। অতঃপর
তারা তাকে নিয়ে সেই পর্বতে গেল। যখন তারা পাহাড়ের সেই নির্দিষ্ট জায়গা হতে তাকে ফেলে
দিতে প্রস্তুত হল তখন একে একে তারা সকলে পড়ে মারা গেল এবং বালকটি ব্যতীত কেউই বাকি
থাকল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ সে ফিরে এলে বাদশা তাকে
নিয়ে নদীতে ডুবিয়ে মারার জন্য লোকদেরকে হুকুম দিল। তারপর তাকে নদীতে নিয়ে যাওয়া হল।
আল্লাহ তা'আলা বালকটির সাথী সকলকে ডুবিয়ে হত্যা করলেন এবং তাকে বাঁচিয়ে রাখলেন। পরবর্তীতে
ছেলেটিই বাদশাকে বলল, আমাকে তুমি হত্যা করতে পারবে না। তবে আমাকে তুমি শূলে চড়িয়ে
"এ বালকের প্রতিপালকের নামে "বলে তীর নিক্ষেপ করলেই কেবল আমাকে হত্যা করতে
পারবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ঃতার কথামত বাদশা হুকুম
দিল এবং অতঃপর তাকে শূলে চড়িয়ে "এই বালকের প্রতিপালকের নামে "বলে তীর নিক্ষেপ
করল, ছেলেটি তার হাত তাঁর কান ও মাথার মাঝের জায়গায় স্থাপন করল এবং মারা গেল।
লোকেরা বলল, এমন জ্ঞান বালকটি লাভ করেছে যা আর কেউই লাভ করতে পারেনি। কাজেই এই বালকের
প্রতিপালকের উপর আমরাও ঈমান আনলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
বাদশাকে বলা হল, আপনি তো তিন ব্যক্তির বিরোধিতায় ভয় পেয়ে গেলেন। এখন সারা দুনিয়াই তো
আপনার বিরোধী হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ সে সময়
বাদশা একটি সুদীর্ঘ র্গত খুঁড়ে তাতে কাঠ দিয়ে আগুন ধরায়, তারপর লোকদেরকে একসঙ্গে বলে,
"যে তার র্ধম হতে ফিরে আসবে তাকে ছেড়ে দিব এবং যে র্ধম হতে না ফিরবে তাকে আমি
এ আগুনে নিক্ষেপ করব"। ঈমানদার লোকদেরকে সে আগুনের গর্তে নিপতিত করতে লাগল। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ এ প্রেক্ষিতেই আল্লাহ তা'আলা বলেছেন,
"গর্তের অধিপতিরা ধ্বংস হয়েছে,যে গর্তে আগুন প্রজ্জ্বলিত ছিল। যখন ওরা ঐ গর্তের
পাশে বসা ছিল, আর ওরা ঈমানদারদের সঙ্গে যা করছিল তা প্রত্যক্ষ করছিল। তারা তাদেরকে
যুলম করছিল কেবল এ কারণে যে, তারা মহাশক্তিমান ও প্রশংসিত আল্লাহ তা'আলার প্রতি ঈমান
এনেছিল"- (সূরা বুরূজ ৪-৮)। বর্ণনাকারী বলেন, বালকটিকে দাফন করা হয়েছিল।
রাবী বলেন, উল্লেখিত আছে যে, ঐ বালকের লাশ 'উমার (রাঃ)-এর খিলাফতকালে তোলা হয়েছিল।
মারা যাওয়ার সময় তার হাত যেভাবে তার কান ও মাথার মধ্যবর্তী জায়গায় রাখা ছিল সেভাবেই
তাকে পাওয়া যায়। সহীহঃ মুসলিম (৮/২২৯-২৩১)আয়াতের উল্লেখ ব্যতীত। আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি
হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৮
সূরা
আল-গাশিয়াহ
৩৩৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ
النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَإِذَا قَالُوهَا عَصَمُوا
مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى
اللَّهِ " . ثُمَّ قَرَأَ : ( إنَّمَا أَنْتَ مُذَكِّرٌ * لَسْتَ
عَلَيْهِمْ بِمُسَيْطِرٍ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
.
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমি
প্রেরিত হয়েছি যতক্ষণ না তারা "লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ "(আল্লাহ তা'আলা
ব্যতীত কোন মা'বূদ নেই) বলে। এ কথা তারা মনে-প্রাণে স্বীকার করে নিলে তাদের
জান-মাল আমার হতে নিরাপদ করে নিল। কিন্তু ইসলামের বিধান (অপরাধের জন্য) প্রযোজ্য
থাকবে। আর তাদের চূড়ান্ত হিসাব আল্লাহ তা'আলার উপর অর্পিত। তারপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াত পাঠ করেনঃ (অনুবাদ) "আপনি তো একজন
উপদেশদাতা মাত্র। আপনি তাদের কর্ম নিয়ন্ত্রক নন"- (সূরা গাশিয়াহ্ ২১-২২)।
সহীহ মুতাওয়াতিরঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ৭১)
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৯
সূরা
আল-ফাজর
৩৩৪২
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، وَأَبُو دَاوُدَ قَالاَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ عِصَامٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ
الشَّفْعِ وَالْوَتْرِ فَقَالَ " هِيَ الصَّلاَةُ بَعْضُهَا شَفْعٌ وَبَعْضُهَا
وَتْرٌ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ
حَدِيثِ قَتَادَةَ . وَقَدْ رَوَاهُ خَالِدُ بْنُ قَيْسٍ الْحُدَّانِيُّ عَنْ
قَتَادَةَ أَيْضًا .
ইমরান
ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) “জোড় ও বেজোড়” (সূরাঃ আল- ফাজর-৩) প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেনঃ তা নামায, যার (রাক’আত সংখ্যা) কিছু জোড় এবং কিছু বেজোড়।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু কাতাদার রিওয়ায়াত
হিসেবে এ হাদীস জেনেছি। খালিন ইবনু কাইসও কাতাদা হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮০
সূরা
শামস্
৩৩৪৩
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا
عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
زَمْعَةَ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا يَذْكُرُ
النَّاقَةَ وَالَّذِي عَقَرَهَا فَقَالَ "ِ : (إذ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا
) انْبَعَثَ لَهَا رَجُلٌ عَارِمٌ عَزِيزٌ مَنِيعٌ فِي رَهْطِهِ مِثْلُ أَبِي
زَمْعَةَ " . ثُمَّ سَمِعْتُهُ يَذْكُرُ النِّسَاءَ فَقَالَ "
إِلاَمَ يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ فَيَجْلِدُ امْرَأَتَهُ جَلْدَ الْعَبْدِ وَلَعَلَّهُ
أَنْ يُضَاجِعَهَا مِنْ آخِرِ يَوْمِهِ " . قَالَ ثُمَّ وَعَظَهُمْ فِي
ضَحِكِهِمْ مِنَ الضَّرْطَةِ فَقَالَ " إِلاَمَ يَضْحَكُ أَحَدُكُمْ مِمَّا
يَفْعَلُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু যাম'আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (সামূদ জাতির প্রতি প্রেরিত)
উষ্ট্রী ও তার হত্যাকারী প্রসঙ্গে কথোকথন করতে শুনেছি। তিনি পাঠ করেনঃ "এদের
মাঝে যে সবচেয়ে হতভাগ্য সে যখন তৎপর হল "-(সূরা আশ্-শামস্ ১২)। তারপর তিনি
বলেনঃ উষ্ট্রীকে খুন করতে সেই জাতির সর্বাধিক শক্তিশালী, নিষ্ঠুর, বিদ্রোহী ও
দুর্ভাগা লোক উঠেছিল, সে আবূ যাম'আহ্‘র মত প্রভাবশালী ও শক্তিধর ছিল। বর্ণনাকারী
বলেন, অতঃপর আমি মহিলাদের প্রসঙ্গেও তাঁকে আলোচনা করতে শুনলাম। তিনি বলেনঃ এমন
লোকও তোমাদের মাঝে আছে যে তার সহধর্মিনীকে দাসীর ন্যায় চাবুক মারে কিন্তু আবার ঐ
দিন শেষে রাতের বেলা তার সঙ্গে মিলিত হয়। এটা কতই না মন্দ ও জঘন্য বিষয়! অতঃপর
বায়ু নিঃসরন করে হাসি দেয়া প্রসঙ্গে উপদেশ প্রদান পূর্বক তিনি বলেনঃ নিজেই যে কাজ
করে সে কাজে তোমাদের কারো কি হাসা উচিত?
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ১৯৮৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮১
সূরা
আল-লাইল
৩৩৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ بْنُ قُدَامَةَ، عَنْ مَنْصُورِ بْنِ
الْمُعْتَمِرِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ
السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ، رضى الله عنه قَالَ كُنَّا فِي جَنَازَةٍ فِي
الْبَقِيعِ فَأَتَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَجَلَسَ وَجَلَسْنَا مَعَهُ
وَمَعَهُ عُودٌ يَنْكُتُ بِهِ فِي الأَرْضِ فَرَفَعَ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ
فَقَالَ " مَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوسَةٍ إِلاَّ قَدْ كُتِبَ مَدْخَلُهَا
" . فَقَالَ الْقَوْمُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ نَتَّكِلُ عَلَى
كِتَابِنَا فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَإِنَّهُ يَعْمَلُ
لِلسَّعَادَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَإِنَّهُ يَعْمَلُ
لِلشَّقَاءِ قَالَ " بَلِ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ أَمَّا مَنْ كَانَ
مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَإِنَّهُ يُيَسَّرُ لِعَمَلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا
مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَإِنَّهُ يُيَسَّرُ لِعَمَلِ الشَّقَاءِ
" . ثُمَّ قَرَأَ : (فأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى * وَصَدَّقَ
بِالْحُسْنَى * فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى * وَأَمَّا مَنْ بَخِلَ وَاسْتَغْنَى
* وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَى * فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَى ) . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাক্বী'তে
একটি জানাযার আমার হাযির ছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও এসে
বসলেন এবং তাঁর সঙ্গে আমরাও বসলাম। তাঁর সঙ্গে একটি কাঠ ছিল যা দিয়ে তিনি যমীন
খুঁড়ছিলেন। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মাথা তুলে বলেনঃ কোন সৃষ্টিই এরূপ নেই যার
বাসস্থান লিখিত হয়নি। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তবে আমাদের সেই লেখার উপর
আমরা কি নির্ভর করব না? যে আমাদের মাঝে ভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত সে তো সৌভাগ্যসুলভ
কাজই করবে, আর যে হতভাগ্যদের দলভুক্ত সে তো দুর্ভাগ্যের কর্মই করবে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ বরং তোমরা 'আমাল করতে থাক। কারণ যাকে যে
'আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে সেটাই তার জন্য সহজসুলভ করে দেয়া হয়েছে। যে লোক
ভাগ্যবানদের দলভুক্ত তার জন্য সৌভাগ্যসুলভ 'আমালই সহজতর করা হয়েছে এবং যে লোক
হতভাগ্যদের দলভুক্ত তার জন্য দুর্ভাগ্যজনক কাজই সহজতর করা হয়েছে। অতঃপর তিনি
তিলাওয়াত করেনঃ "সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা ভাল তা সঠিক মনে
করে গ্রহণ করলে তার জন্য আমি সুগম করে দিব সহজ পথ। আর কেউ কৃপণতা করলে ও নিজেকে
স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা ভাল তা অস্বীকার করলে আমি তার জন্য সুগম করে দিব
কঠোর পথ "-(সূরা লাইল ৫-১০)
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম, ২১৩৬ নং হাদীস পূর্বে সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮২
সূরা
আয্-যুহা
৩৩৪৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ جُنْدَبٍ الْبَجَلِيِّ، قَالَ كُنْتُ مَعَ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي غَارٍ فَدَمِيَتْ أُصْبُعُهُ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " هَلْ أَنْتِ إِلاَّ إِصْبَعٌ دَمِيتِ
وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا لَقِيتِ " . قَالَ وَأَبْطَأَ عَلَيْهِ
جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَقَالَ الْمُشْرِكُونَ قَدْ وُدِّعَ مُحَمَّدٌ
فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : ( ما وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَى ) . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ
وَالثَّوْرِيُّ عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ .
জুনদাব
আল-বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে আমি এক গুহার মাঝে ছিলাম। সে সময় নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আঙ্গুল হতে রক্তক্ষরণ হলে তিনি বলেনঃ তুই
একটি আঙ্গুল মাত্র। তোর মাঝ হতে রক্ত বের হল। যা তোর উপর দিয়ে ঘটল তা আল্লাহ
তা'আলার রাস্তাই। বর্ণনাকারী বলেন, জিবরীল ('আঃ) কিছু দিন রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট না এলে মুশরিকরা বলল, মুহাম্মাদ
পরিত্যক্ত হয়েছে। সে সময় আল্লাহ তা'আলা অবতীর্ণ করেনঃ "তোমার প্রভু তোমাকে
ত্যাগও করেননি বা তোমার প্রতি নাখোশও হননি "- (সূরা আয্-যুহা ৩)।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস শু'বাহ্
ও সাওরী (রহঃ)আল-আসওয়াদ ইবনু ক্বাইস হতে রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৩
সূরা
ইন্-শিরাহ
৩৩৪৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ، رَجُلٌ مِنْ
قَوْمِهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " بَيْنَمَا أَنَا
عِنْدَ الْبَيْتِ بَيْنَ النَّائِمِ وَالْيَقْظَانِ إِذْ سَمِعْتُ قَائِلاً
يَقُولُ أَحَدٌ بَيْنَ الثَّلاَثَةِ فَأُتِيتُ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ فِيهَا مَاءُ
زَمْزَمَ فَشَرَحَ صَدْرِي إِلَى كَذَا وَكَذَا " . قَالَ قَتَادَةُ
قُلْتُ يَعْنِي قُلْتُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ مَا يَعْنِي قَالَ " إِلَى
أَسْفَلِ بَطْنِي فَاسْتُخْرِجَ قَلْبِي فَغُسِلَ قَلْبِي بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ
أُعِيدَ مَكَانَهُ ثُمَّ حُشِيَ إِيمَانًا وَحِكْمَةً " . وَفِي
الْحَدِيثِ قِصَّةٌ طَوِيلَةٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ هِشَامٌ الدَّسْتَوَائِيُّ وَهَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ
. وَفِيهِ عَنْ أَبِي ذَرٍّ .
মালিক
ইবনু সা'সা'আহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ একদিন বাইতুল্লাহর নিকট আমি ঘুম ঘুম ভাব অবস্থায়
অবস্থানরত ছিলাম। এমন সময় আমি এক বক্তাকে বলতে শুনলামঃ তিনজনের মধ্যে একজন। তারপর
একখানা সোনার পেয়ালা আমার নিকট আনা হল যার মাঝে যমযমের পানি ছিল। তারপর আমার
বক্ষদেশ তারা এই এই পর্যন্ত উন্মুক্ত বা বিদীর্ণ করে। ক্বাতাদাহ্ (রহঃ) বলেন, আমি
আনাস (রাঃ)-কে বললাম, কোন পর্যন্ত? তিনি বললেনঃ (তিনি বলেছেন) আমার পেটের নিম্নদেশ
পর্যন্ত। অতঃপর আমার অন্তঃকরণ বের করে যমযমের পানি দ্বারা ধুয়ে আবার স্ব-স্থানে
স্থাপন করা হয়। এরপর তা ঈমান ও হিকমত দ্বারা পরিপূর্ণ করা হয়। হাদীসে সুদীর্ঘ ঘটনা
বিদ্যমান।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ 'ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৪
সূরা
আত-তীন
৩৩৪৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ
بْنِ أُمَيَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَجُلاً، بَدَوِيًّا أَعْرَابِيًّا يَقُولُ
سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَرْوِيهِ يَقُولُ مَنْ قَرَأَ : (والتِّينِ
وَالزَّيْتُونِ ) فَقَرَأ : ( ألََيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ
) فَلْيَقُلْ بَلَى وَأَنَا عَلَى ذَلِكَ مِنَ الشَّاهِدِينَ . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ إِنَّمَا يُرْوَى بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنْ هَذَا
الأَعْرَابِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَلاَ يُسَمَّى .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি সূরা
ওয়াত-তীন ওয়ায–যাইতুন পাঠ করে সে যেন “ আলাইসাল্লাহু বিআহ্কামিল হাকীমিন” (আল্লাহ
তা’আলা কি সকল বিচারকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক নন) পাঠের পর বলেঃ “বালা ওয়া আনা আলা
যালিকা মিনাশ-শাহিদীন (হ্যাঁ, অবশ্যই আমিও এ কথার সাক্ষ্যদানকারীদের অন্তর্ভুক্ত)।
যঈফ, যঈফ আবূ দাউদ (১৫৬)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি যে আরব বিদুইন আবূ হুরাইরা (রাঃ)
হতে বর্ণনা করেছেন তার নাম পরিচিত।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৫
সূরা
আল-'আলাক্ব
৩৩৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ الْجَزَرِيِّ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما : ( سنَدْعُ الزَّبَانِيَةَ ) قَالَ قَالَ أَبُو
جَهْلٍ لَئِنْ رَأَيْتُ مُحَمَّدًا يُصَلِّي لأَطَأَنَّ عَلَى عُنُقِهِ .
فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لَوْ فَعَلَ لأَخَذَتْهُ
الْمَلاَئِكَةُ عِيَانًا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
"আমিও শাস্তি
প্রদানকারী ফেরেশতাদের আহ্বান করব "-(সূরা 'আলাক্ব ১৮) আয়াতের বর্ণনা
প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আবূ জাহল বলল, যদি মুহাম্মদকে আমি নামাযরত অবস্থায় পাই তবে
তার ঘাড় পদদলিত করব। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যদি তাই করতে
সে প্রস্তুত হত তাহলে ফেরেশতারা তখনই তাকে আটক করত।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯৫৮)।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৪৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ،
حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّي فَجَاءَ أَبُو جَهْلٍ فَقَالَ أَلَمْ أَنْهَكَ عَنْ هَذَا أَلَمْ
أَنْهَكَ عَنْ هَذَا أَلَمْ أَنْهَكَ عَنْ هَذَا فَانْصَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم فَزَبَرَهُ فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ إِنَّكَ لَتَعْلَمُ مَا بِهَا نَادٍ
أَكْثَرُ مِنِّي فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( فلْيَدْعُ نَادِيَهُ * سَنَدْعُ
الزَّبَانِيَةَ ) فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَوَاللَّهِ لَوْ دَعَا نَادِيَهُ
لأَخَذَتْهُ زَبَانِيَةُ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
غَرِيبٌ صَحِيحٌ . وَفِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه .
ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায আদায় করছিলেন। আবূ জাহল তখন এসে বলল,
আমি কি তোমাকে এ কাজ করতে বারণ করিনি, আমি তোমাকে এ কাজ করতে কি বারণ করিনি, আমি
তোমাকে এ কাজ করতে কি বারণ করিনি? নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায
সমাপ্ত করে তাকে ভর্ৎসনা করলেন। আবূ জাহল বলল, তুমি নিশ্চয়ই জান যে, মক্কায় আমার
তুলনায় বেশি সংখ্যক সমর্থক আর কারো নেই (আমার ডাকে যত লোক সাড়া দেয় তত লোক আর কারো
ডাকে সাড়া দেয় না)। সে সময় আল্লাহ তা'আলা অবর্তীণ করেনঃ "সে তার সহযোগীদের
ডাকুক। আমি ডাকব জাহান্নামের প্রহরীদের "-(সূরা 'আলাক্ব ১৭-১৮)। ইবনু 'আব্বাস
(রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‘র শপথ! যদি আবূ জাহল তার সহযোগীদের ডাকত, তাহলে আল্লাহ
তা'আলার প্রহরীগণ (ফেরেশতাগন) তাকে অবশ্যই গ্রেপ্তার করত।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। এ অনুচ্ছেদে
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৬
সূরা
আল-ক্বাদর
৩৩৫০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ الْفَضْلِ الْحُدَّانِيُّ، عَنْ
يُوسُفَ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ قَامَ رَجُلٌ إِلَى الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ بَعْدَ مَا
بَايَعَ مُعَاوِيَةَ فَقَالَ سَوَّدْتَ وُجُوهَ الْمُؤْمِنِينَ . أَوْ يَا
مُسَوِّدَ وُجُوهِ الْمُؤْمِنِينَ . فَقَالَ لاَ تُؤَنِّبْنِي رَحِمَكَ اللَّهُ
فَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُرِيَ بَنِي أُمَيَّةَ عَلَى مِنْبَرِهِ
فَسَاءَهُ ذَلِكَ فَنَزَلَتْ : ( إنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ ) يَا
مُحَمَّدُ يَعْنِي نَهْرًا فِي الْجَنَّةِ وَنَزَلَتْ : ( إنَّا أَنْزَلْنَاهُ
فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ * وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ * لَيْلَةُ
الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ) يَمْلِكُهَا بَعْدَكَ بَنُو أُمَيَّةَ
يَا مُحَمَّدُ . قَالَ الْقَاسِمُ فَعَدَدْنَاهَا فَإِذَا هِيَ أَلْفُ شَهْرٍ
لاَ يَزِيدُ يَوْمٌ وَلاَ يَنْقُصُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ الْقَاسِمِ بْنِ
الْفَضْلِ . وَقَدْ قِيلَ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ الْفَضْلِ عَنْ يُوسُفَ بْنِ
مَازِنٍ . وَالْقَاسِمُ بْنُ الْفَضْلِ الْحُدَّانِيُّ هُوَ ثِقَةٌ وَثَّقَهُ
يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ وَيُوسُفُ بْنُ سَعْدٍ
رَجُلٌ مَجْهُولٌ وَلاَ نَعْرِفُ هَذَا الْحَدِيثَ عَلَى هَذَا اللَّفْظِ إِلاَّ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইউসুফ
ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন হাসান (রাঃ)
মুআবিয়া (রাঃ)-এর নিকট বাই’আত গ্রহণের পর তাঁর সামনে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেনঃ
আপনি (মুআবিয়ার নিকট বায়’আত গ্রহণ করে) মু’মিনদের চেহারা কলঙ্কিত করেছেন। এতে তিনি
বললেনঃ তুমি আমাকে অভিযুক্ত করো না। আল্লাহ তা’আলা তোমার প্রতি রাহমাত করুন।
যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (স্বপ্নে) উমাইয়্যা
বংশীয়দেরকে তাঁর মিম্বারের উপর দেখানো হয়েছে। বিষয়টি তাঁর নিকট খারাপ লাগে। তখন
অবতীর্ণ হয়ঃ “আমি অবশ্যই তোমাকে কাওসার (ঝরণা) দান করেছি” (সূরাঃ আল-কাওসার-১)
অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ! আমি জান্নাতে তোমাকে কাওসার নামক ঝরণা দান করেছি। আরো
অবতীর্ণ হয়ঃ “নিশ্চয় আমি এ কুরআন মহিমান্বিত রাতে অবতীর্ণ করেছি। আর মহিমান্বিত
রাত প্রসঙ্গে আপনি কি জানেন? মহিমান্বিত রাত হাজার মাস হতেও উত্তম” (সূরাঃ
আল-ক্বাদর-১-৩)। হে মুহাম্মাদ! আপনার পরে বানী উমাইয়্যা অত মাস শাসন করবে। কাসিম
(রহঃ) বলেনঃ আমরা গণনা করে দেখেছি বানী উমাইয়্যাদের শাসনকাল ছিল পূর্ণ ‘এক হাজার
মাস’,এর এক দিন কম বা বেশি নয়।
সনদ দুর্বল ও অস্থির, মতন মুনকার
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু কাসিম ইব্নুল
ফাযলের হাদীস হিসেবে এটি জেনেছি। কথিত আছে যে, কাসিম ইবনুল ফাযল (রহঃ) ইউসুফ ইবনু মাযিনের
সূত্রে বর্ণনা করেছেন।কাসিম ইবনুল ফাযল আল-হুদ্দানী সিকাহ রাবী। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ
ও আব্দুর রহমান ইবনু মাহ্দী তাকে বিশ্বাসযোগ্য বলেছেন। ইউসুফ ইবনু সা’দ অপরিচিত ব্যক্তি,
আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই একই রকম শব্দে এ হাদীস বর্ণিত পেয়েছি।
হাদিসের মানঃঅন্যান্য
৩৩৫১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدَةَ
بْنِ أَبِي لُبَابَةَ، وَعَاصِمٍ، هُوَ ابْنُ بَهْدَلَةَ سَمِعَا زِرَّ بْنَ
حُبَيْشٍ، وَزِرُّ بْنُ حُبَيْشٍ يُكْنَى أَبَا مَرْيَمَ يَقُولُ قُلْتُ لأُبَىِّ
بْنِ كَعْبٍ إِنَّ أَخَاكَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ يَقُولُ مَنْ يَقُمِ
الْحَوْلَ يُصِبْ لَيْلَةَ الْقَدْرِ فَقَالَ يَغْفِرُ اللَّهُ لأَبِي عَبْدِ
الرَّحْمَنِ لَقَدْ عَلِمَ أَنَّهَا فِي الْعَشَرَةِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
وَأَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَلَكِنَّهُ أَرَادَ أَنْ لاَ يَتَّكِلَ
النَّاسُ ثُمَّ حَلَفَ لاَ يَسْتَثْنِي أَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ .
قُلْتُ لَهُ بِأَىِّ شَيْءٍ تَقُولُ ذَلِكَ يَا أَبَا الْمُنْذِرِ قَالَ بِالآيَةِ
الَّتِي أَخْبَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَوْ بِالْعَلاَمَةِ
أَنَّ الشَّمْسَ تَطْلُعُ يَوْمَئِذٍ لاَ شُعَاعَ لَهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى
هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ عَنْ عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ قَالَ كَانَ
أَبُو وَائِلٍ شَقِيقُ بْنُ سَلَمَةَ لاَ يَتَكَلَّمُ مَا دَامَ زِرُّ بْنُ
حُبَيْشٍ جَالِسًا . قَالَ عَاصِمُ بْنُ بَهْدَلَةَ وَكَانَ زِرُّ بْنُ حُبَيْشٍ
رَجُلاً فَصِيحًا وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ يَسْأَلُهُ عَنِ
الْعَرَبِيَّةِ . حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ مِهْرَانَ الْكُوفِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
عَيَّاشٍ عَنْ عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ قَالَ مَرَّ رَجُلٌ عَلَى زِرِّ بْنِ
حُبَيْشٍ وَهُوَ يُؤَذِّنُ فَقَالَ يَا أَبَا مَرْيَمَ أَتُؤَذِّنُ إِنِّي
لأَرْغَبُ بِكَ عَنِ الأَذَانِ . فَقَالَ زِرٌّ أَتَرْغَبُ عَنِ الأَذَانِ
وَاللَّهِ لاَ أُكَلِّمُكَ أَبَدًا .
যির
ইবনু হুবাইশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি উবাই ইবনু কা'ব
(রাঃ) কে বললাম, আপনার ভাই 'আবদুল্লাহ ইবনু মাস'ঊদ (রাঃ) বলেন, সারা বছর যে লোক
রাত জেগে 'ইবাদত করবে সে ক্বাদরের রাত লাভ করবে। উবাই (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা'আলা
আবূ 'আবদুর রহমানকে মাফ করুন! নিশ্চয়ই তিনি জানেন যে, ক্বাদরের রাত রমাযানের শেষ
দশ দিনে এবং তা সাতাশে রামাযানের রাতেই তবু তার এ কথা বলার লক্ষ্য হল লোকেরা যেন
(সাতাশ তারিখের) নির্ভর করে বসে না থাকে। তারপর কোন প্রকার ব্যতিক্রম না করেই উবাই
(রাঃ) ক্বসম করে বলেন, সাতাশের রাত ক্বাদরের রাত। বর্ণনাককারী বলেন, আমি বললাম, হে
আবুল মুনযির! এ কথা আপনি কিসের পরিপ্রক্ষিতে বলছেন? তিনি বললেন, সেই আলামত বা
নিদর্শনের প্রেক্ষিতে যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে
জানিয়েছেন। তা হলঃ ঐ দিন সকালে সূর্য এরূপভাবে উদিত হয় যে, তার মাঝে প্রখর রশ্মি
থাকে না।
হাসান সহীহঃ ৭৮৬ নং হাদীসেও পূর্বে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৮৭
সূরা
বাইয়্যিনাহ্
৩৩৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، قَالَ
سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم يَا خَيْرَ الْبَرِيَّةِ . قَالَ " ذَلِكَ إِبْرَاهِيمُ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এক লোক ইয়া খাইরাল বারিয়্যাহ্ (হে সৃষ্টির সেরা) বলে
ডাকলে তিনি বললেনঃ সৃষ্টির সেরা হলেন ইবরাহীম ('আঃ)।
সহীহঃ মুসলিম (হাঃ ৭/৯৭)।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৮
সূরা
ইযা যুলযিলাত (আয-যিল্যাল)
৩৩৫৩
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي
سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهُ قَالَ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَذِهِ الآيَةَ : ( يوْمَئِذٍ
تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا ) قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا أَخْبَارُهَا "
. قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّ
أَخْبَارَهَا أَنْ تَشْهَدَ عَلَى كُلِّ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ بِمَا عَمِلَ عَلَى
ظَهْرِهَا تَقُولُ عَمِلَ يَوْمَ كَذَا كَذَا وَكَذَا فَهَذِهِ أَخْبَارُهَا
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “সেই দিন দুনিয়া তার যাবতীয়
সংবাদ ব্যক্ত করবে” (সূরাঃ আল-যিলযাল-৪)। তিনি বললেনঃ তোমরা কি জান দুনিয়ার সংবাদ
কি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই বেশি জানেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার সংবাদ হল-তার বুকে প্রত্যেক নর-নারী যা কিছু
করেছে সে তার সাক্ষ্য দিবে। সে (দুনিয়া) বলবে, সে তো অমুক অমুক দিন এই এই কাজ
করেছে। এটাই হল যমীনের সংবাদ।
সনদ দুর্বল, ২৫৪৬ নং হাদীসে পূর্বে বর্ণিত হয়েছে
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৯
সূরা
আত্-তাকাসুর
৩৩৫৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ،
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الشِّخِّيرِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ انْتَهَى إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَهُوَ يَقْرَأُ ( أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ ) قَالَ " يَقُولُ ابْنُ
آدَمَ مَالِي مَالِي وَهَلْ لَكَ مِنْ مَالِكَ إِلاَّ مَا تَصَدَّقْتَ
فَأَمْضَيْتَ أَوْ أَكَلْتَ فَأَفْنَيْتَ أَوْ لَبِسْتَ فَأَبْلَيْتَ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
মুতাররিফ
ইবনু 'আবদুল্লাহ ইবনুশ শিখ্খীর (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলেন। তিনি তখন (সূরা তাকাসুর) "তোমাদেরকে
সম্পদের প্রাচুর্যের মোহ আল্লাহ তা'আলা হতে উদাসীন করে ফেলেছে "-(সূরা
তাকাসুর ১) পাঠ করছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আদম
সন্তান বলে, আমার মাল; আমার সম্পত্তি। কিন্তু যে জিনিস তুমি দান-খাইরাত করেছ
(আল্লাহ তা'আলার খাতায়) তা জমা রেখেছ, যা খেয়ে শেষ করেছ কিংবা যা পরিধান করে
পুরাতন করেছ, এগুলো ব্যতীত তোমার সম্পদ বলতে কিছু নেই।
সহীহঃ মুসলিম, ২৩২৯ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا حَكَّامُ بْنُ سَلْمٍ
الرَّازِيُّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي قَيْسٍ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنِ
الْمِنْهَالِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، عَنْ عَلِيٍّ، رضى الله عنه
قَالَ مَا زِلْنَا نَشُكُّ فِي عَذَابِ الْقَبْرِ حَتَّى نَزَلَتْْ :
(ألهَاكُمُ التَّكَاثُرُ ) قَالَ أَبُو كُرَيْبٍ مَرَّةً عَنْ عَمْرِو بْنِ
أَبِي قَيْسٍ هُوَ رَازِيٌّ وَعَمْرُو بْنُ قَيْسٍ الْمُلاَئِيُّ كُوفِيٌّ عَنِ
ابْنِ أَبِي لَيْلَى عَنِ الْمِنْهَالِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা কবরের
আযাব প্রসঙ্গে সংশয়ে ছিলাম। সেই প্রেক্ষাপটে সূরা আলহাকুমুত-তাকাসুর অবতীর্ণ হয়।
সনদ দুর্বল
আবূ কুরাইব কখনো আমর ইবনু আবূ কাইস হতে তিনি ইবনু আবী
লাইলা হতে তিনি আল-মিনহাল হতে তিনি এভাবে বর্ণনা করেছেন। আমর ইবনু আবূ কাইস হলেন আর-রাযী
এবং আমর ইবনু আবূ কাইস আল-মালাঈ হলেন কূফার বাসিন্দা। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৩৩৫৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ حَاطِبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ بْنِ
الْعَوَّامِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتَّْ : (ثم لَتُسْأَلُنَّ
يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ، ) قَالَ الزُّبَيْرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَأَىُّ
النَّعِيمِ نُسْأَلُ عَنْهُ وَإِنَّمَا هُمَا الأَسْوَدَانِ التَّمْرُ وَالْمَاءُ
. قَالَ " أَمَا إِنَّهُ سَيَكُونُ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু যুবাইর ইবনুল 'আওওয়াম (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন অবতীর্ণ
হলঃ "তারপর তোমাদেরকে সেদিন অবশ্যই নি'আমাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা
হবে"-(সূরা তাকাসুর ৮) সে সময় যুবাইর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‘র রাসূল!
আমাদেরকে কোন্ নি'আমাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? আমাদের নিকট তো শুধুমাত্র
দু'ধরনের জিনিস রয়েছে; খেজুর ও পানি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ সে (সম্পত্তি) তো অদূর ভবিষ্যতে অর্জিত হবে।
হাদীসটির সানাদ হাসান।
আবূ 'ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৩৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ،
عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ :
(ثمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ ) قَالَ النَّاسُ يَا رَسُولَ
اللَّهِ عَنْ أَىِّ النَّعِيمِ نُسْأَلُ وَإِنَّمَا هُمَا الأَسْوَدَانِ
وَالْعَدُوُّ حَاضِرٌ وَسُيُوفُنَا عَلَى عَوَاتِقِنَا . قَالَ " إِنَّ
ذَلِكَ سَيَكُونُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو عِنْدِي أَصَحُّ مِنْ هَذَا . سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ أَحْفَظُ وَأَصَحُّ حَدِيثًا مِنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন “তারপর
তোমাদেরকে সেদিন নি‘আমাত সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে”- (সূরা তাকাসুর ৮)
আয়াত অবতীর্ণ হয় সে সময় লোকেরা বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদেরকে কোন্ সমস্ত
নি‘আমাত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে? আমাদের নিকট তো শুধু দু’টি কালো জিনিস (খেজুর ও
পানি) রয়েছে; আর সর্বদা দুশমন প্রস্তুত রয়েছে এবং আমাদের তরবারিগুলো আমাদের কাঁধে ঝুলন্ত
রয়েছে? তিনি বললেনঃ এটা অদূর ভবিষ্যতে হবে।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় এটি হাসান।
আবূ ‘ঈসা (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের চাইতে মুহাম্মাদ ইবনু
‘আম্রের সূত্রে ইবনু ‘উয়াইনাহ্ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসটি আমার দৃষ্টিতে বেশি বিশুদ্ধ। সুফ্ইয়ান
ইবনু ‘উয়াইনাহ্ (রহঃ) আবূ বাক্র ইবনু আইয়্যাশের চেয়ে বেশি স্মরণশক্তি সম্পন্ন ও অনেক
বিশুদ্ধ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৩৫৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الْعَلاَءِ، عَنِ الضَّحَّاكِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَرْزَمٍ
الأَشْعَرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَوَّلَ مَا يُسْأَلُ عَنْهُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ يَعْنِي الْعَبْدَ مِنَ النَّعِيمِ أَنْ يُقَالَ لَهُ أَلَمْ نُصِحَّ
لَكَ جِسْمَكَ وَنُرْوِيكَ مِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَالضَّحَّاكُ هُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ عَرْزَبٍ وَيُقَالُ ابْنُ عَرْزَمٍ وَابْنُ عَرْزَمٍ أَصَحُّ .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন বান্দার নিকট
সর্বপ্রথম যে নি‘আমাত প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সে প্রসঙ্গে তাকে বলা হবে, আমি
তোমার শরীর কি সুস্থ রাখিনি এবং সুশীতল পানির মাধ্যমে তোমাকে তৃপ্ত করিনি?
সহীহঃ সহীহাহ্ (হাঃ ৫৩৯) মিশকাত (৫১৯৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি গারীব। আয্-যাহ্হাক হলেন ইবনু
‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আরযাব। ইবনু ‘আরযাব-কে ইবনু ‘আরযামও বলা হয়, আর ইবনু ‘আরযামই অনেক
বেশী সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯০
সূরা
আল-কাওসার
৩৩৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ : ( إناَّ، أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ
) أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " هُوَ نَهْرٌ فِي
الْجَنَّةِ " . قَالَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم "
رَأَيْتُ نَهْرًا فِي الْجَنَّةِ حَافَتَاهُ قِبَابُ اللُّؤْلُؤِ قُلْتُ مَا هَذَا
يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي قَدْ أَعْطَاكَهُ اللَّهُ "
. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“অবশ্যই আমি তোমাকে
কাওসার দান করেছি”- (সূরা কাওসার ১) আয়াত প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ কাওসার হল জান্নাতের একটি ঝর্ণা। বর্ণনাকারী বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ জান্নাতে আমি এমন একটি প্রস্রবণ
দেখলাম যার প্রত্যেক তীরে মুক্তার তাঁবু খাটানো রয়েছে। আমি বললামঃ হে জিবরীল! এটা
কি? তিনি বললেনঃ এটা সেই “কাওসারঃ আল্লাহ তা‘আলা যা আপনাকে দান করেছেন।
-সহিহ, বুখারী (হাঃ ৪৯৬৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৬০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ
النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ
أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " بَيْنَا أَنَا
أَسِيرُ فِي الْجَنَّةِ إِذْ عَرَضَ لِي نَهْرٌ حَافَّتَاهُ قِبَابُ اللُّؤْلُؤِ
. قُلْتُ لِلْمَلَكِ مَا هَذَا قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي أَعْطَاكَهُ
اللَّهُ قَالَ ثُمَّ ضَرَبَ بِيَدِهِ إِلَى طِينَةٍ فَاسْتَخْرَجَ مِسْكًا ثُمَّ
رُفِعَتْ لِي سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى فَرَأَيْتُ عِنْدَهَا نُورًا عَظِيمًا
" . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ
مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَنَسٍ .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (মিরাজের রাতে) যখন আমি জান্নাতের
মাঝে ভ্রমণ করতে করতে এক নহরের সম্মুখে পৌঁছে গেলাম, যার প্রত্যেক তীরে মুক্তার
তাঁবু খাটানো রয়েছে, ফেরেশতাকে আমি প্রশ্ন করলাম, এটা কি? তিনি বললেন, এটা সেই
কাওসার যা আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে দান করেছেন। অতঃপর জিবরীল তার হাত দিয়ে এর মাটি
তোলেন। তা ছিল কস্তুরী। অতঃপর আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় তোলা হয়। তার নিকট আমি একটা
বিরাটকায় নূর প্রত্যক্ষ করলাম।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৬৫৮১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস আনাস (রাঃ)
হতে একাধিকভাবে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩৬১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ عَطَاءِ
بْنِ السَّائِبِ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْكَوْثَرُ نَهْرٌ فِي
الْجَنَّةِ حَافَّتَاهُ مِنْ ذَهَبٍ وَمَجْرَاهُ عَلَى الدُّرِّ وَالْيَاقُوتِ
تُرْبَتُهُ أَطْيَبُ مِنَ الْمِسْكِ وَمَاؤُهُ أَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ وَأَبْيَضُ
مِنَ الثَّلْجِ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের একটি প্রস্রবণের নাম
কাওসার, যার প্রত্যেক তীর সোনার এবং যার পানি মুক্তা ও ইয়াকূতের উপর দিয়ে
প্রবাহমান। এর যমীন কস্তুরীর তুলনায় অধিক সুগন্ধসম্পন্ন, এর পানি মধুর তুলনায় অধিক
মিষ্ট এবং বরফের তুলনায় অধিক সাদা।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ৪৩৩৪)
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯১
সূরা
আন্-নাস্র
৩৩৬২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ،
عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ كَانَ عُمَرُ يَسْأَلُنِي مَعَ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ
أَتَسْأَلُهُ وَلَنَا بَنُونَ مِثْلُهُ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ إِنَّهُ مِنْ حَيْثُ
تَعْلَمُ فَسَأَلَهُ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : ( إذا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ
وَالْفَتْحُ ) فَقُلْتُ إِنَّمَا هُوَ أَجَلُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم أَعْلَمَهُ إِيَّاهُ وَقَرَأَ السُّورَةَ إِلَى آخِرِهَا فَقَالَ لَهُ عُمَرُ
وَاللَّهِ مَا أَعْلَمُ مِنْهَا إِلاَّ مَا تَعْلَمُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের উপস্থিতিতে ‘উমার (রাঃ) আমার
নিকট অনেক বিষয় প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেন। তাকে ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেন,
আপনি তার নিকট প্রশ্ন করেন, অথচ আমাদেরও তার ন্যায় সন্তান-সন্ততি আছে। রাবী বলেন,
‘উমার (রাঃ) তাকে বললেন, তার নিকট প্রশ্ন করার কারণ আপনি জানেন। তারপর তিনি তাকে
“যখন আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য ও বিজয় আসবে”- (সূরা নাস্র ১) এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন
করেন। আমি বললাম, এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর
ইন্তিকালের খবর যে বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে অবগত করেছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত
সূরাটি তিলাওয়াত করলেন। তারপর ‘উমার (রাঃ) তাকে বলেন, আল্লাহর শপথ! এর যে ব্যাখ্যা
আপনি জানেন আমিও তাই জানি।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯৬৯, ৪৯৭০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ সনদে মুহাম্মাদ
ইবনু বাশশার-মুহাম্মাদ ইবনু জা‘ফার হতে, তিনি শু‘বাহ্ হতে, তিনি আবূ বিশ্র (রহঃ) হতে
উপরের হাদীসের একই রকশ বর্ণনা করেছেন। তবে এ বর্ণনায় বর্ণনাকারী বলেন, তারপর ‘আবদুর
রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) তাকে বলেন, আপনি এ ছেলের নিকট মাসআলাহ্ প্রশ্ন করেছেন, অথচ আমাদেরও
এমন ছেলে রয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯২
সূরা
লাহাব
৩৩৬৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو
مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ سَعِيدِ
بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَعِدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم ذَاتَ يَوْمٍ عَلَى الصَّفَا فَنَادَى " يَا صَبَاحَاهُ " .
فَاجْتَمَعَتْ إِلَيْهِ قُرَيْشٌ فَقَالَ " إِنِّي نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ
يَدَىْ عَذَابٍ شَدِيدٍ أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنِّي أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ الْعَدُوَّ
مُمَسِّيكُمْ أَوْ مُصَبِّحُكُمْ أَكُنْتُمْ تُصَدِّقُونِي " . فَقَالَ
أَبُو لَهَبٍ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا تَبًّا لَكَ . فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (
تبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন সাফা পাহাড়ের উপর উঠে “ইয়া সাবাহা” (হে
ভোরের বিপদ) বলে উচ্চকণ্ঠে ডাকলেন। ফলে কুরাইশ গোত্রের লোকেরা তাঁর নিকট একত্রিত
হয়। তিনি বললেনঃ তোমাদেরকে আমি এক কঠিন শাস্তির ভয় দেখাচ্ছি। তোমাদের কি মত, যদি
আমি তোমাদেরকে বলি যে, সকাল বা সন্ধ্যায় শত্রু বাহিনী তোমাদেরকে আক্রমণ করার জন্য
আসছে, তাহলে আমাকে কি তোমরা বিশ্বাস করবে? সে সময় আবূ লাহাব বলল, তোমার ধ্বংস হোক!
এজন্য কি তুমি আমাদেরকে একত্রিত করেছ? সে সময় আল্লাহ তা‘আলা “তাব্বাত ইয়াদা আবী
লাহাব” সূরা অবতীর্ণ করেন।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯৭১, ৪৯৭২), মুসলিম (হাঃ ১/১৩৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৩
সূরা
আল-ইখলাস
৩৩৬৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو سَعْدٍ، هُوَ
الصَّغَانِيُّ عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ الرَّازِيِّ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ،
عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ الْمُشْرِكِينَ،
قَالُوا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْسُبْ لَنَا رَبَّكَ .
فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( قلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ * اللَّهُ الصَّمَدُ )
فَالصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ لأَنَّهُ لَيْسَ شَيْءٌ يُولَدُ
إِلاَّ سَيَمُوتُ وَلَيْسَ شَيْءٌ يَمُوتُ إِلاَّ سَيُورَثُ وَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ
وَجَلَّ لاَ يَمُوتُ وَلاَ يُورَثُ : ( لَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ )
قَالَ " لَمْ يَكُنْ لَهُ شَبِيهٌ وَلاَ عِدْلٌ وَلَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ
" .
উবাই
ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মুশরিকরা রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আমাদেরকে আপনার প্রভুর বংশ বৃত্তান্ত
দিন। এরই জবাবে মহান আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেনঃ কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুস্
সামাদ (“আপনি বলুন, তিনিই আল্লাহ” যিনি এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ তা‘আলা কারো
মুখাপেক্ষী নন)। আর সামাদ (অমুখাপেক্ষী) তিনিই, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও
জন্ম দেয়া হয়নি। কেননা যে কারো ঔরসজাত হবে সে মারা যাবে এবং তার উত্তরাধিকারীও
হবে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা মৃত্যুবরণ করবেন না এবং তাঁর উত্তরাধিকারীও কেউ নেই। “এবং
তার সমান কেউ নেই।” রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাঁর
কোন সদৃশ ও সমকক্ষ নেই। “কোন কিছুই তার সদৃশ নয়।” (সূরা শুরা ১)
“আর সামাদ তিনিই" অংশ বাদে হাদীসটি হাসান, যিলালুল জান্নাহ।” (তাহক্বীক্ব
সানী (হাঃ ৬৬৩)
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৩৩৬৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
مُوسَى، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ الرَّازِيِّ، عَنِ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي
الْعَالِيَةِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ آلِهَتَهُمْ فَقَالُوا
انْسُبْ لَنَا رَبَّكَ . قَالَ فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ بِهَذِهِ السُّورَةِ : (
قلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ) . فَذَكَرَ نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ
أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي سَعْدٍ وَأَبُو سَعْدٍ
اسْمُهُ مُحَمَّدُ بْنُ مُيَسَّرٍ وَأَبُو جَعْفَرٍ الرَّازِيُّ اسْمُهُ عِيسَى
وَأَبُو الْعَالِيَةِ اسْمُهُ رُفَيْعٌ وَكَانَ عَبْدًا أَعْتَقَتْهُ امْرَأَةٌ
صَابِئَةٌ .
আবুল
আলিয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিকদের দেবতাদের প্রসঙ্গে আলোচনা করলে তারা
বললঃ আপনি আপনার প্রভুর বংশধারা আমাদেরকে জানিয়ে দিন। তখন জিবরাঈল (আঃ) কুল
হুওয়াল্লাহু আহাদ সূরাটি নিয়ে আসেন...... উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ। এ সনদে উবাই
ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই।
দুর্বল, প্রাগুক্ত
সূত্রটি আবূ সা’দের সনদ হতে বিশুদ্ধতর। আর আবূ সা’দের
নাম মুহাম্মাদ ইবনু মুইয়াস্সার। আবূ জা’ফর-এর নাম ঈসা, আবুল আ’লিয়াহ্-এর নাম রুফাই।
তিনি ক্রীতদাস ছিলেন, একজন সাবিয়াহ মহিলা তাঁকে মুক্ত করেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৪
৯৪
সূরা ফালাক্ব ও নাস (আস-মুআওবিযাতাইন)
৩৩৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ
بْنُ عَمْرٍو الْعَقَدِيُّ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم نَظَرَ إِلَى الْقَمَرِ فَقَالَ " يَا عَائِشَةُ اسْتَعِيذِي
بِاللَّهِ مِنْ شَرِّ هَذَا فَإِنَّ هَذَا الْغَاسِقُ إِذَا وَقَبَ " .
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আছে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ্!
আল্লাহ তা‘আলার নিকট এর ক্ষতি হতে আশ্রয় প্রার্থনা কর। কেননা এটাই হল গাসিক
(অন্ধকার) যখন তা গাঢ় হয়।
হাসান সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ৩৭২), মিশকাত (হাঃ ২৪৭৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩৩৬৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ،
عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، حَدَّثَنِي قَيْسٌ، وَهُوَ ابْنُ أَبِي
حَازِمٍ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " قَدْ أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَىَّ آيَاتٍ لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ
: ( قلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ) إِلَى آخِرِ السُّورَةِ وَ : (قلْ
أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ) إِلَى آخِرِ السُّورَةِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উক্ববাহ্
ইবনু ‘আমির আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার উপর আল্লাহ তা‘আলা এমন কিছু সংখ্যক আয়াত অবতীর্ণ
করেছেন যার মত আর কখনও দেখা যায় না। তা হলঃ “কুল আ‘ঊযু বিরাব্বিন নাস” ও “কুল
আ‘ঊযু বিরাব্বিল ফালাক্ব” সূরাদ্বয়।
সহীহঃ ২৯০২ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৫
[আদাম
(‘আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাঊদ (‘আঃ)-কে প্রদান]
৩৩৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى،
حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي ذُبَابٍ، عَنْ سَعِيدِ
بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ وَنَفَخَ فِيهِ
الرُّوحَ عَطَسَ فَقَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ فَحَمِدَ اللَّهَ بِإِذْنِهِ فَقَالَ
لَهُ رَبُّهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ يَا آدَمُ اذْهَبْ إِلَى أُولَئِكَ الْمَلاَئِكَةِ
إِلَى مَلإٍ مِنْهُمْ جُلُوسٍ فَقُلِ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ . قَالُوا
وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ . ثُمَّ رَجَعَ إِلَى رَبِّهِ فَقَالَ
إِنَّ هَذِهِ تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ بَنِيكَ بَيْنَهُمْ . فَقَالَ اللَّهُ
لَهُ وَيَدَاهُ مَقْبُوضَتَانِ اخْتَرْ أَيَّهُمَا شِئْتَ قَالَ اخْتَرْتُ يَمِينَ
رَبِّي وَكِلْتَا يَدَىْ رَبِّي يَمِينٌ مُبَارَكَةٌ . ثُمَّ بَسَطَهَا فَإِذَا
فِيهَا آدَمُ وَذُرِّيَّتُهُ فَقَالَ أَىْ رَبِّ مَا هَؤُلاَءِ فَقَالَ هَؤُلاَءِ
ذُرِّيَّتُكَ فَإِذَا كُلُّ إِنْسَانٍ مَكْتُوبٌ عُمْرُهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ
فَإِذَا فِيهِمْ رَجُلٌ أَضْوَؤُهُمْ أَوْ مِنْ أَضْوَئِهِمْ . قَالَ يَا رَبِّ
مَنْ هَذَا قَالَ هَذَا ابْنُكَ دَاوُدُ قَدْ كَتَبْتُ لَهُ عُمْرَ أَرْبَعِينَ
سَنَةً . قَالَ يَا رَبِّ زِدْهُ فِي عُمْرِهِ . قَالَ ذَاكَ الَّذِي كَتَبْتُ
لَهُ . قَالَ أَىْ رَبِّ فَإِنِّي قَدْ جَعَلْتُ لَهُ مِنْ عُمْرِي سِتِّينَ
سَنَةً قَالَ أَنْتَ وَذَاكَ . قَالَ ثُمَّ أُسْكِنَ الْجَنَّةَ مَا شَاءَ
اللَّهُ ثُمَّ أُهْبِطَ مِنْهَا فَكَانَ آدَمُ يَعُدُّ لِنَفْسِهِ . قَالَ
فَأَتَاهُ مَلَكُ الْمَوْتِ فَقَالَ لَهُ آدَمُ قَدْ عَجِلْتَ قَدْ كُتِبَ لِي
أَلْفُ سَنَةٍ . قَالَ بَلَى وَلَكِنَّكَ جَعَلْتَ لاِبْنِكَ دَاوُدَ سِتِّينَ
سَنَةً فَجَحَدَ فَجَحَدَتْ ذُرِّيَّتُهُ وَنَسِيَ فَنَسِيَتْ ذُرِّيَّتُهُ .
قَالَ فَمِنْ يَوْمِئِذٍ أُمِرَ بِالْكِتَابِ وَالشُّهُودِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ
رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم مِنْ رِوَايَةِ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ
হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা‘আলা আদম (‘আঃ)-কে
সৃষ্টি করে তাঁর মাঝে রূহ (আত্মা) সঞ্চার করেন সে সময় তাঁর হাঁচি আসে এবং তিনি
‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলেন। তিনি আল্লাহ তা‘আলার অনুমতি নিয়েই তাঁর প্রশংসা করেন।
তারপর তাঁর উদ্দেশে আল্লাহ তা‘আলা “ইয়ারহামুকাল্লাহ” (তোমার উপর আল্লাহ তা‘আলায়
সদয় হোন) বলেন এবং আরো বলেনঃ হে আদম! তুমি ঐসব ফেরেশতার নিকট যাও যারা সমবেত
অবস্থায় ওখানে বসে আছে। অতঃপর তিনি গিয়ে ‘আস-সালামু আলাইকুম’ বললেন। ফেরেশতাগণ
জবাবে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বললেন। তারপর তিনি তাঁর প্রভুর নিকট
এলে তিনি বললেনঃ এটাই তোমার ও তোমার সন্তানদের পারস্পরিক অভিবাদন। এবার আল্লাহ
তা‘আলা তাঁর দু’টি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তাঁকে বললেনঃ দু’টি হাতের মাঝে যেটি ইচ্ছা
বেছে নাও। তিনি বললেনঃ আমার রবের ডান হাত আমি বেছে নিলাম। আর আমার রবের প্রত্যেক
হাতই ডান হাত এবং বারাকাতময়, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মুষ্টিবদ্ধ হাত খুললে দেখা
গেল যে, তাতে আদম (‘আঃ) এবং তাঁর সন্তানরা রয়েছে। আদম (‘আঃ) বললেনঃ হে আমার
পালনকর্তা! এরা কারা? আল্লাহ তা‘আলা বললেনঃ এরা তোমার বংশধর। তাদের সকলের দুই
চক্ষুর মধ্যখানে তাদের আয়ুষ্কাল লেখা ছিল। তাদের মাঝে একজন অত্যুজ্জ্বল চেহারার
ছিল। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! কে এই লোক? তিনি বলেনঃ সে তোমার সন্তান দাঊদ (‘আঃ)।
আমি তার চল্লিশ বছর বয়স নির্ধারণ করেছি। আদম (‘আঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! তার আয়ুষ্কাল
আপনি আরো বাড়িয়ে দিন। তিনি বললেনঃ আমি তার আয়ুষ্কাল এটাই নির্ধারণ করেছি। আদম
(‘আঃ) বললেনঃ হে প্রভু! আমার আয়ুষ্কাল হতে ষাট বছর আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ
তা‘আলা বললেনঃ এটা তার প্রতি তোমার বদান্যতা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা যত দিন চাইলেন তিনি জান্নাতে থাকলেন,
তারপর তাঁকে সেখান হতে (পৃথিবীতে) নামানো হল। আদম (‘আঃ) নিজের বয়সের গণনা করতে
থাকলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আদম (‘আঃ)-এর নিকট
মালাকুল মাউত (মুত্যুদূত) এসে হাযির হলে তিনি তাকে বললেনঃ আমার জন্য ধার্যকৃত বয়স
তো হাজার বছর, যথাসময়ের আগেই তুমি এসেছ। মৃত্যুদূত বললেন, হ্যাঁ, তবে আপনি আপনার
বয়স হতে ষাট বছর আপনার বংশধর দাঊদ (‘আঃ)-কে দান করেছেন। আদম (‘আঃ) তা (ভুলে গিয়ে)
অস্বীকার করলেন। এজন্য তার সন্তানরাও অস্বীকার করে থাকে। আর তিনি ভুলে গিয়েছিলেন
তার তার সন্তানরাও ভুলে যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ সেদিন হতেই লিখে রাখা ও সাক্ষী রাখার হুকুম দেয়া হয়।
হাসান সহীহঃ মিশকাত (হাঃ ৪৬৬২), যিলালুল জান্নাহ (হাঃ ২০৪-২০৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব।
এ হাদীস আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর বরাতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে
অন্যসূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আর ঐ সূত্রে যাইদ ইবনু আসলাম আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ্
(রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এভাবে উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৩৩৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ،
حَدَّثَنَا الْعَوَّامُ بْنُ حَوْشَبٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الأَرْضَ جَعَلَتْ تَمِيدُ فَخَلَقَ الْجِبَالَ فَعَادَ
بِهَا عَلَيْهَا فَاسْتَقَرَّتْ فَعَجِبَتِ الْمَلاَئِكَةُ مِنْ شِدَّةِ
الْجِبَالِ قَالُوا يَا رَبِّ هَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ الْجِبَالِ
قَالَ نَعَمِ الْحَدِيدُ . قَالُوا يَا رَبِّ فَهَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ
أَشَدُّ مِنَ الْحَدِيدِ قَالَ نَعَمِ النَّارُ . فَقَالُوا يَا رَبِّ فَهَلْ
مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ النَّارِ قَالَ نَعَمِ الْمَاءُ . قَالُوا
يَا رَبِّ فَهَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ الْمَاءِ قَالَ نَعَمْ
الرِّيحُ قَالُوا يَا رَبِّ فَهَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ الرِّيحِ
قَالَ نَعَمِ ابْنُ آدَمَ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ بِيَمِينِهِ يُخْفِيهَا مِنْ
شِمَالِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ
مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা যখন দুনিয়া সৃষ্টি
করেন তখন তা দুলতে থাকে। তাই তিনি পর্বতমালা সৃষ্টি করে তাকে দুনিয়ার উপর স্থাপন
করেন। ফলে দুনিয়া শান্ত হয়। পর্বতমালার শক্ত কাঠামোতে ফেরেশতাগণ বিস্মিত হয়ে বলেনঃ
হে প্রতিপালক! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পর্বতমালা হতেও কঠিন কোন কিছু আছে কি? আল্লাহ
তা’আলা বলেনঃ হ্যাঁ, লোহা। তাঁরা বললেনঃ হে রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে লোহা হতেও
শক্ত ও মজবুত কোন কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আগুন।তারা বললেনঃ হে প্রতিপালক!
“আগুন হতেও আপনার সৃষ্টির মধ্যে শক্তিমান ও কঠিন অন্য কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ
হ্যাঁ, পানি। তাঁরা বললেনঃ প্রভু হে! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পানি হতেও শক্তিশালী
কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, বায়ু। অবশেষে ফেরেশতাগণ বললেনঃ হে প্রতিপালক!
বায়ু হতেও বেশি কঠিন ও শক্তিশালী আপনার সৃষ্টির মধ্যে কিছু আছে কি? আল্লাহ তা’আলা
বললেনঃ হ্যাঁ, সেই আদম সন্তান, যে ডান হাতে দান-খাইরাত করলে তার বাম হাতের কাছে
অজানা থাকে।
যইফ, মিশকাত (১৯২৩), তা’লীকুর রাগীব (২/৩১)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রে
এ হাদীস মারফু হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
No comments