সুনানে আবু দাউদ - অধ্যায় "সুন্নাহ" হাদিস ৪৫৯৬-৪৭৭২
অধ্যায় "সুন্নাহ"
অনুচ্ছেদ-১
সুন্নাতের ব্যাখ্যা
সম্পর্কে
৪৫৯৬
حَدَّثَنَا
وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" افْتَرَقَتِ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى أَوْ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ
فِرْقَةً وَتَفَرَّقَتِ النَّصَارَى عَلَى إِحْدَى أَوْ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ
فِرْقَةً وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়াহুদীরা একাত্তর অথবা বাহাত্তর দল-উপদলে বিভক্ত হয়েছে এবং
খৃস্টানরাও একাত্তর অথবা বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে, আর আমার উম্মাত হবে তিয়াত্তর
দলে বিভক্ত।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৪৫৯৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو
الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ، ح وَحَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ،
حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، قَالَ حَدَّثَنِي صَفْوَانُ، نَحْوَهُ قَالَ حَدَّثَنِي
أَزْهَرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْحَرَازِيُّ، عَنْ أَبِي عَامِرٍ الْهَوْزَنِيِّ،
عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، أَنَّهُ قَامَ فِينَا فَقَالَ أَلاَ إِنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَامَ فِينَا فَقَالَ " أَلاَ إِنَّ
مَنْ قَبْلَكُمْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ افْتَرَقُوا عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ
مِلَّةً وَإِنَّ هَذِهِ الْمِلَّةَ سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ
ثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ وَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَهِيَ
الْجَمَاعَةُ " . زَادَ ابْنُ يَحْيَى وَعَمْرٌو فِي حَدِيثَيْهِمَا "
وَإِنَّهُ سَيَخْرُجُ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ تَجَارَى بِهِمْ تِلْكَ الأَهْوَاءُ
كَمَا يَتَجَارَى الْكَلْبُ لِصَاحِبِهِ " . وَقَالَ عَمْرٌو "
الْكَلْبُ بِصَاحِبِهِ لاَ يَبْقَى مِنْهُ عِرْقٌ وَلاَ مَفْصِلٌ إِلاَّ دَخَلَهُ
" .
মু’আবিয়াহ ইবনু আবূ
সুফিয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, জেনে রাখো! রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে বললেন, জেনে রাখো!
তোমাদের পূর্ববর্তী আহলে কিতাব বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে এবং এ উম্মাত অদূর
ভবিষ্যতে তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। এর মধ্যে বাহাত্তর দল জাহান্নামে যাবে এবং একটি
জান্নাতে যাবে। আর সে দল হচ্ছে আল-জামা’আত। ইবনু ইয়াহ্ইয়া ও ‘আমর (রহঃ) বলেনঃ
“বিষয়টি হল, আমার উম্মাতের মধ্যে এমন এমন দলের আবির্ভাব ঘটবে যাদের সর্বশরীরে
(বিদ’আতের) প্রবৃত্তি এমনভাবে অনুপ্রবেশ করবে যেমন পাগলা কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক
রোগীর সর্বশরীরে সঞ্চারিত হয়।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২
কুরআন নিয়ে ঝগড়া
পরিহার এবং অস্পষ্ট আয়াতের অনুসরণ নিষিদ্ধ
৪৫৯৮
حَدَّثَنَا
الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ التُّسْتَرِيُّ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ
عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
هَذِهِ الآيَةَ { هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ
مُحْكَمَاتٌ } إِلَى { أُولُو الأَلْبَابِ } قَالَتْ فَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فَإِذَا رَأَيْتُمُ الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ
مَا تَشَابَهَ مِنْهُ فَأُولَئِكَ الَّذِينَ سَمَّى اللَّهُ فَاحْذَرُوهُمْ
" .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পড়লেনঃ “তিনিই আপনার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, যার কিছু সংখ্যক
আয়াত মুহকাম... হতে কিন্তু “জ্ঞানী ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহন করে না” (৩-৭ পর্যন্ত)।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যখন তোমরা
দেখবে সেসব লোককে যারা মুতাশাবিহ আয়াতের অনুসরণ করছে, তখন মনে করবে, এরাই সেসব লোক
আল্লাহ যাদের নাম নিয়েছেন। সুতরাং, তোমরা তাদের থেকে সতর্ক থাকবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩
কুপ্রবৃত্তির
অনুসারীদের থেকে দূরে থাকা ও তাদেরকে ঘৃণা করা
৪৫৯৯
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ
أَبِي زِيَادٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَفْضَلُ الأَعْمَالِ الْحُبُّ فِي
اللَّهِ وَالْبُغْضُ فِي اللَّهِ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য
কাউকে ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্যই বিদ্বেষ পোষণ করা অতি উত্তম কাজ। [৪৫৯৮]
দুর্বলঃ যঈফাহ হা/১৩১০।
[৪৫৯৮]
আহমাদ। হাদীসের সনদে নাম উল্লেখহীন অজ্ঞাত ব্যক্তি রয়েছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৬০০
حَدَّثَنَا
ابْنُ السَّرْحِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ فَأَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ كَعْبٍ، - وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ
مِنْ بَنِيهِ حِينَ عَمِيَ - قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ، - وَذَكَرَ
ابْنُ السَّرْحِ قِصَّةَ تَخَلُّفِهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
غَزْوَةِ تَبُوكَ - قَالَ وَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
الْمُسْلِمِينَ عَنْ كَلاَمِنَا أَيُّهَا الثَّلاَثَةُ حَتَّى إِذَا طَالَ عَلَىَّ
تَسَوَّرْتُ جِدَارَ حَائِطِ أَبِي قَتَادَةَ وَهُوَ ابْنُ عَمِّي فَسَلَّمْتُ
عَلَيْهِ فَوَاللَّهِ مَا رَدَّ عَلَىَّ السَّلاَمَ . ثُمَّ سَاقَ خَبَرَ
تَنْزِيلِ تَوْبَتِهِ .
ইবনু শিহাব (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে ‘আব্দুর রহমান ইবনু
‘আব্দুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক জানিয়েছে যে, কা’ব ইবনু মালিক (রহঃ) -এর পুত্র
‘আব্দুল্লাহ (রহঃ) যিনি তার পিতার অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পুত্রদের মধ্যে হতে তার
ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি বলেন, আমি আমার পিতা কা’ব ইবনু মালিক (রহঃ) হতে
শুনেছি এবং বর্ণনাকারী ইবনুস সার্হ তার তাবূকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে অংশগ্রহণ না করে পিছনে থেকে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ
করেন। কা’ব (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ঐ
তিনজনদের সঙ্গে কথা বলতে মুসলিমদেরকে বারণ করলেন। এ অবস্থায় অনেক দিন অতিবাহিত
হওয়ার পর আমি আমার চাচাতো ভাই আবূ ক্বাতাদাহ (রহঃ) -এর বাগানের দেয়ালে উঠে তাকে
সালাম দিলাম। কিন্তু আল্লাহর কসম! তিনি আমার সালামের জবাব দেননি। অতঃপর বর্ণনাকারী
তার তাওবাহ কবুল হওয়া সম্পর্কে আয়াত নাযিল হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪
কুপ্রবৃত্তির
অনুসারীদেরকে সালাম দেয়া
৪৬০১
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، أَخْبَرَنَا عَطَاءٌ
الْخُرَاسَانِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ، قَالَ
قَدِمْتُ عَلَى أَهْلِي وَقَدْ تَشَقَّقَتْ يَدَاىَ فَخَلَّقُونِي بِزَعْفَرَانٍ
فَغَدَوْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَلَمْ
يَرُدَّ عَلَىَّ وَقَالَ " اذْهَبْ فَاغْسِلْ هَذَا عَنْكَ " .
আম্মার ইবনু ইয়াসির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমার দুই হাত ফেটে গেলে আমি
আমার পরিবার–পরিজনের নিকটে আসি। তারা আমাকে (হাতকে) জাফরান দ্বারা রাঙিয়ে দিলো।
পরবর্তী দিন আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে তাঁকে সালাম
করলাম। কিন্তু তিনি আমার সালামের জবাব না দিয়ে বললেনঃ তুমি ফিরে গিয়ে তোমার হাতের
রং ধুয়ে ফেলো।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৬০২
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ
سُمَيَّةَ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَنَّهُ اعْتَلَّ بَعِيرٌ لِصَفِيَّةَ
بِنْتِ حُيَىٍّ وَعِنْدَ زَيْنَبَ فَضْلُ ظَهْرٍ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم لِزَيْنَبَ " أَعْطِيهَا بَعِيرًا " . فَقَالَتْ أَنَا
أُعْطِي تِلْكَ الْيَهُودِيَّةَ فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَهَجَرَهَا ذَا الْحِجَّةَ وَالْمُحَرَّمَ وَبَعْضَ صَفَرٍ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
সাফিয়্যাহ বিনতু
হুয়াই (রাঃ)-এর উট রোগাক্রান্ত হলো এবং যাইনাব (রাঃ) -এর নিকট তার অতিরিক্ত বাহন
ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাইনাব (রাঃ) –কে তার বাহনটি
সাফিয়্যাহ (রাঃ) -কে দিতে বললেন, যাইনাব (রাঃ) বললেন, আমি কি ঐ ইয়াহুদীনীকে দিবো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাতে নারাজ হলেন এবং যিলহাজ্জ,
মুহাররম ও সফর মাসের কিছু দিন তার সংশ্রব পরিহার করলেন। [৪৬০১]
দুর্বলঃ গায়াতুল মারাম হা/৪১০।
[৪৬০১]
মিশকাত হা/১৪০৩।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫
কুরআন নিয়ে বিতর্ক
করা নিষেধ
৪৬০৩
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ هَارُونَ -
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمِرَاءُ فِي الْقُرْآنِ
كُفْرٌ " .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
কুরআন সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ কুফরী।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৬
সুন্নাতের অনুসরণ
আবশ্যক
৪৬০৪
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ نَجْدَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرِو بْنُ كَثِيرِ بْنِ
دِينَارٍ، عَنْ حَرِيزِ بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي
عَوْفٍ، عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " أَلاَ إِنِّي أُوتِيتُ الْكِتَابَ وَمِثْلَهُ
مَعَهُ أَلاَ يُوشِكُ رَجُلٌ شَبْعَانُ عَلَى أَرِيكَتِهِ يَقُولُ عَلَيْكُمْ
بِهَذَا الْقُرْآنِ فَمَا وَجَدْتُمْ فِيهِ مِنْ حَلاَلٍ فَأَحِلُّوهُ وَمَا
وَجَدْتُمْ فِيهِ مِنْ حَرَامٍ فَحَرِّمُوهُ أَلاَ لاَ يَحِلُّ لَكُمْ لَحْمُ
الْحِمَارِ الأَهْلِيِّ وَلاَ كُلُّ ذِي نَابٍ مِنَ السَّبُعِ وَلاَ لُقَطَةُ
مُعَاهِدٍ إِلاَّ أَنْ يَسْتَغْنِيَ عَنْهَا صَاحِبُهَا وَمَنْ نَزَلَ بِقَوْمٍ
فَعَلَيْهِمْ أَنْ يَقْرُوهُ فَإِنْ لَمْ يَقْرُوهُ فَلَهُ أَنْ يُعْقِبَهُمْ
بِمِثْلِ قِرَاهُ " .
আল-মিক্বদাম ইবনু
মা’দীকারিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ জেনে রাখো! আমাকে কিতাব এবং তার সঙ্গে অনুরূপ কিছু দেয়া হয়েছে।
জেনে রাখো! এমন এক সময় আসবে যখন কোন প্রাচুর্যবান লোক তার আসনে বসে বলবে, তোমরা
শুধু এ কুরআনকেই গ্রহণ করো, তাতে যা হালাল পাবে তা হালাল এবং যা হারাম পাবে তা
হারাম মেনে নিবে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, জেনে রাখো!
গৃহপালিত গাধা তোমাদের জন্য হালাল নয় এবং ছেদন দাঁতবিশিষ্ট হিংস্র পশুও নয়। অনুরূপ
সন্ধিবদ্ধ অমুসলিম গোত্রের হারানো বস্তু তোমাদের জন্য হালাল নয়, অবশ্য যদি সে এর
মুখাপেক্ষী না হয়। আর যখন কোন লোক কোন সম্প্রদায়ের নিকট আগন্তুক হিসাবে পৌঁছে তখন
তাদের উচিত তার মেহমানদারী করা। যদি তারা তা না করে, তাহলে তাদেরকে কষ্ট দিয়ে হলেও
তার মেহমানদারীর পরিমাণ জিনিস আদায় করার অধিকার তার আছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬০৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَنْبَلٍ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ
النُّفَيْلِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ
عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ " لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ مُتَّكِئًا عَلَى
أَرِيكَتِهِ يَأْتِيهِ الأَمْرُ مِنْ أَمْرِي مِمَّا أَمَرْتُ بِهِ أَوْ نَهَيْتُ
عَنْهُ فَيَقُولُ لاَ نَدْرِي مَا وَجَدْنَا فِي كِتَابِ اللَّهِ اتَّبَعْنَاهُ
" .
উবাইদুল্লাহ ইবনু
আবূ রাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
অচিরেই তোমাদের মধ্যকার কোন ব্যক্তি তার গদি আঁটা আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকাবস্থায়
তার নিকট আমার নির্দেশিত কোন কর্তব্য বা নিষেধাজ্ঞা পৌঁছাবে, তখন সে বলবে, আমি
অবহিত নই। আমরা যা আল্লাহ্র কিতাবে পাবো শুধু তারই অনুসরণ করবো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬০৬
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّازُ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، ح
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ
الْمَخْرَمِيُّ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ
الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا
لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ " . قَالَ ابْنُ عِيسَى قَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم " مَنْ صَنَعَ أَمْرًا عَلَى غَيْرِ أَمْرِنَا فَهُوَ رَدٌّ
" .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু প্রবর্তন করবে
যা তাতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। ইবনু ঈসা (রহঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি আমাদের আচার–অনুষ্ঠানের বিপরীত কিছু প্রবর্তন
করলে তা বর্জনীয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬০৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا ثَوْرُ
بْنُ يَزِيدَ، قَالَ حَدَّثَنِي خَالِدُ بْنُ مَعْدَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ عَمْرٍو السُّلَمِيُّ، وَحُجْرُ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ أَتَيْنَا
الْعِرْبَاضَ بْنَ سَارِيَةَ وَهُوَ مِمَّنْ نَزَلَ فِيهِ { وَلاَ عَلَى
الَّذِينَ إِذَا مَا أَتَوْكَ لِتَحْمِلَهُمْ قُلْتَ لاَ أَجِدُ مَا أَحْمِلُكُمْ
عَلَيْهِ } فَسَلَّمْنَا وَقُلْنَا أَتَيْنَاكَ زَائِرِينَ وَعَائِدِينَ
وَمُقْتَبِسِينَ . فَقَالَ الْعِرْبَاضُ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا فَوَعَظَنَا مَوْعِظَةً
بَلِيغَةً ذَرَفَتْ مِنْهَا الْعُيُونُ وَوَجِلَتْ مِنْهَا الْقُلُوبُ فَقَالَ
قَائِلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَأَنَّ هَذِهِ مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ فَمَاذَا
تَعْهَدُ إِلَيْنَا فَقَالَ " أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالسَّمْعِ
وَالطَّاعَةِ وَإِنْ عَبْدًا حَبَشِيًّا فَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ بَعْدِي
فَسَيَرَى اخْتِلاَفًا كَثِيرًا فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ
الْمَهْدِيِّينَ الرَّاشِدِينَ تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا
بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ
بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ " .
‘আবদুর রহমান ইবনু
‘আমর আস-সুলামী ও হুজর ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আমরা আল-ইরবাদ ইবনু সারিয়াহ (রাঃ)-এর নিকট
আসলাম। যাদের সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয়েছে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত : “তাদেরও কোন
অপরাধ নেই যারা তোমার নিকট বাহনের জন্য এলে তুমি বলেছিলে : আমি তোমাদের জন্য কোন
বাহনের ব্যবস্থা করতে পারছি না” (সূরাহ আত-তাওবাহ : ৯২)। আমরা সালাম দিয়ে বললাম, আমরা
আপনাকে দেখতে, আপনার অসুস্থতার খবর নিতে এবং আপনার কাছ থেকে কিছু অর্জন করতে
এসেছি। আল-ইরবাদ (রাঃ) বললেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সলাত আদায় করলেন, অতঃপর আমাদের দিকে ফিরে আমাদের
উদ্দেশ্যে জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন, তাতে চোখগুলো অশ্রুসিক্ত হলো এবং অন্তরগুলো
বিগলিত হলো। তখন এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! এ যেন কারো বিদায়ী ভাষণ!
অতএব আপনি আমাদেরকে কি নির্দেশ দেন? তিনি বলেনঃ আমি তোমাদেরকে আল্লাহ্ভীতির, শ্রবণ
ও আনুগত্যের উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে (আমীর) একজন হাবশী গোলাম হয়। কারণ তোমাদের
মধ্যে যারা আমার পরে জীবিত থাকবে তারা অচিরেই প্রচুর মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমরা
অবশ্যই আমার সুন্নাত এবং আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাহ্গণের সুন্নাত অনুসরণ করবে, তা
দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে। সাবধান! (ধর্মে) প্রতিটি নবাবিষ্কার সম্পর্কে! কারণ
প্রতিটি নবাবিষ্কার হলো বিদ’আত এবং প্রতিটি বিদ’আত হলো ভ্রষ্টতা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬০৮
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ حَدَّثَنِي
سُلَيْمَانُ، - يَعْنِي ابْنَ عَتِيقٍ - عَنْ طَلْقِ بْنِ حَبِيبٍ، عَنِ
الأَحْنَفِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " أَلاَ هَلَكَ الْمُتَنَطِّعُونَ " .
ثَلاَثَ مَرَّاتٍ .
আবদুল্লাহ ইবনে
মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
সাবধান! চরমপন্থীরা ধ্বংস হয়েছে, তিনি এ কথা তিনবার বললেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭
সুন্নাত অনুসরণের
আহবান
৪৬০৯
حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ -
قَالَ أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، - يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ - عَنْ
أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ
تَبِعَهُ لاَ يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ دَعَا إِلَى
ضَلاَلَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لاَ يَنْقُصُ
ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে ডাকবে সে তার অনুসারীর সমান সওয়াব পাবে,
অথচ অনুসরণকারীর সওয়াব কমানো হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে ডাকবে সে
তার অনুসারীর সমান পাপে জর্জরিত হবে, তার অনুসারীর পাপ মোটেও কমানো হবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬১০
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ
عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " إِنَّ أَعْظَمَ الْمُسْلِمِينَ فِي الْمُسْلِمِينَ جُرْمًا مَنْ
سَأَلَ عَنْ أَمْرٍ لَمْ يُحَرَّمْ فَحُرِّمَ عَلَى النَّاسِ مِنْ أَجْلِ
مَسْأَلَتِهِ " .
‘আমির ইবনু সা’দ
(রাঃ) হতে তার পিতার সুত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে বস্তু হারাম না হওয়া সত্ত্বেও কোন মুসলিম ব্যক্তির প্রশ্ন
করার কারণে হারাম হয়েছে, সে মুসলিমদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অপরাধী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬১১
حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ الْهَمْدَانِيُّ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ أَبَا إِدْرِيسَ
الْخَوْلاَنِيَّ، عَائِذَ اللَّهِ أَخْبَرَهُ أَنَّ يَزِيدَ بْنَ عُمَيْرَةَ
وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ أَخْبَرَهُ قَالَ كَانَ لاَ يَجْلِسُ
مَجْلِسًا لِلذِّكْرِ حِينَ يَجْلِسُ إِلاَّ قَالَ اللَّهُ حَكَمٌ قِسْطٌ هَلَكَ
الْمُرْتَابُونَ فَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ يَوْمًا إِنَّ مِنْ وَرَائِكُمْ
فِتَنًا يَكْثُرُ فِيهَا الْمَالُ وَيُفْتَحُ فِيهَا الْقُرْآنُ حَتَّى يَأْخُذَهُ
الْمُؤْمِنُ وَالْمُنَافِقُ وَالرَّجُلُ وَالْمَرْأَةُ وَالصَّغِيرُ وَالْكَبِيرُ
وَالْعَبْدُ وَالْحُرُّ فَيُوشِكُ قَائِلٌ أَنْ يَقُولَ مَا لِلنَّاسِ لاَ
يَتَّبِعُونِي وَقَدْ قَرَأْتُ الْقُرْآنَ مَا هُمْ بِمُتَّبِعِيَّ حَتَّى
أَبْتَدِعَ لَهُمْ غَيْرَهُ فَإِيَّاكُمْ وَمَا ابْتُدِعَ فَإِنَّ مَا ابْتُدِعَ
ضَلاَلَةٌ وَأُحَذِّرُكُمْ زَيْغَةَ الْحَكِيمِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ يَقُولُ
كَلِمَةَ الضَّلاَلَةِ عَلَى لِسَانِ الْحَكِيمِ وَقَدْ يَقُولُ الْمُنَافِقُ
كَلِمَةَ الْحَقِّ . قَالَ قُلْتُ لِمُعَاذٍ مَا يُدْرِينِي رَحِمَكَ اللَّهُ
أَنَّ الْحَكِيمَ قَدْ يَقُولُ كَلِمَةَ الضَّلاَلَةِ وَأَنَّ الْمُنَافِقَ قَدْ
يَقُولُ كَلِمَةَ الْحَقِّ قَالَ بَلَى اجْتَنِبْ مِنْ كَلاَمِ الْحَكِيمِ
الْمُشْتَهِرَاتِ الَّتِي يُقَالُ لَهَا مَا هَذِهِ وَلاَ يُثْنِيَنَّكَ ذَلِكَ
عَنْهُ فَإِنَّهُ لَعَلَّهُ أَنْ يُرَاجِعَ وَتَلَقَّ الْحَقَّ إِذَا سَمِعْتَهُ
فَإِنَّ عَلَى الْحَقِّ نُورًا . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ مَعْمَرٌ عَنِ
الزُّهْرِيِّ فِي هَذَا وَلاَ يُنْئِيَنَّكَ ذَلِكَ عَنْهُ مَكَانَ يُثْنِيَنَّكَ
. وَقَالَ صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ عَنِ الزُّهْرِيِّ فِي هَذَا الْمُشَبَّهَاتِ
مَكَانَ الْمُشْتَهِرَاتِ وَقَالَ لاَ يُثْنِيَنَّكَ كَمَا قَالَ عُقَيْلٌ .
وَقَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ عَنِ الزُّهْرِيِّ قَالَ بَلَى مَا تَشَابَهَ عَلَيْكَ
مِنْ قَوْلِ الْحَكِيمِ حَتَّى تَقُولَ مَا أَرَادَ بِهَذِهِ الْكَلِمَةِ .
ইবনু শিহাব (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আবূ ইদরীস আল-খাওলানী ‘আয়িযুল্লাহ (রহঃ) তাকে
জানিয়েছে, মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-এর সহচর ইয়াযীদ ইবনু ‘আমীরাহ তাকে জানিয়েছে,
তিনি বলেন মু’আয (রাঃ) কোন ওয়াজে বসলেই বলতেন, আল্লাহ্ মহা ন্যায়বিচারক,
সন্দেহকারীরা ধ্বংস হয়েছে। অতঃপর মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) একদিন বলেন, তোমাদের
পরবর্তী যুগে ফিত্বনাহ্ সৃষ্টি হবে, তখন প্রচুর সম্পদ থাকবে। মু’মিন, মুনাফিক,
পুরুষ-নারী, ছোট-বুড়ো, স্বাধীন-গোলাম সকলে কুরআন খুলে পাঠ করবে (কিন্তু অর্থ বুঝবে
না)। অচিরেই কেউ বলবে, “লোকদের কি হলো, তারা কেন আমার অনুসরণ করবে না যতক্ষণ না
আমি তাদের জন্য এছাড়া নতুন কিছু প্রবর্তন করতে পারি”। অতএব তোমরা তার এ বিদ’আত হতে
বেঁচে থাকবে। কারণ দ্বীনের মধ্যে যা নতুন প্রবর্তন করা হয় তা গোমরাহী। আমি
তোমাদেরকে জ্ঞানী ব্যক্তিদের পথভ্রষ্টতা সম্পর্কে সতর্ক করছি। কেননা শয়তান
পন্ডিতদের মুখ দিয়ে গোমরাহী কথা বলায়। আবার মুনাফিকরাও মাঝে মাঝে হক কথা বলে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি মু’আয (রাঃ)-কে বললাম, আল্লাহ্ আপনার উপর সদয় হোন, জ্ঞানী
ব্যক্তি যে পথভ্রষ্টতাপূর্ণ কথা বলে আর মুনাফিক সত্য কথা বলে এটা আমি কিভাবে
বুঝবো? তিনি বললেন, হ্যাঁ, জ্ঞানী ব্যক্তিদের সেসব ভ্রান্তিপূর্ণ কথা বর্জন করবে
যা লোকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করবে এবং বলবে, এ আবার কেমন কথা। তবে এসব কথায় তোমরা
জ্ঞানীদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করবে না। কেননা হয়ত জ্ঞানী ব্যক্তি এসব
ভ্রান্তিপূর্ণ কথা থেকে ফিরে আসবে। আর তুমি হক কথা শুনামাত্র তা গ্রহণ করো, কেননা
হকের মধ্যে নূর আছে। ইবনু ইসহাক্ব (রহঃ) যুহরী (রহঃ) সূত্রে বলেন, মু’আয ইবনু
জাবাল (রাঃ) বলেন, হ্যাঁ, তুমি যদি জ্ঞানী ব্যক্তির বক্তব্যে সন্দেহ করো, যতক্ষণ
না বলো, তিনি এর দ্বারা কি বুঝাচ্ছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ মাওকুফ
৪৬১২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ كَتَبَ رَجُلٌ إِلَى
عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ يَسْأَلُهُ عَنِ الْقَدَرِ، ح وَحَدَّثَنَا
الرَّبِيعُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْمُؤَذِّنُ، قَالَ حَدَّثَنَا أَسَدُ بْنُ مُوسَى،
قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ دُلَيْلٍ، قَالَ سَمِعْتُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيَّ،
يُحَدِّثُنَا عَنِ النَّضْرِ، ح وَحَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ
قَبِيصَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ، عَنْ أَبِي الصَّلْتِ، - وَهَذَا
لَفْظُ حَدِيثِ ابْنِ كَثِيرٍ وَمَعْنَاهُمْ - قَالَ كَتَبَ رَجُلٌ إِلَى عُمَرَ
بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ يَسْأَلُهُ عَنِ الْقَدَرِ فَكَتَبَ أَمَّا بَعْدُ
أُوصِيكَ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالاِقْتِصَادِ فِي أَمْرِهِ وَاتِّبَاعِ سُنَّةِ
نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَرْكِ مَا أَحْدَثَ الْمُحْدِثُونَ بَعْدَ مَا
جَرَتْ بِهِ سُنَّتُهُ وَكُفُوا مُؤْنَتَهُ فَعَلَيْكَ بِلُزُومِ السُّنَّةِ
فَإِنَّهَا لَكَ بِإِذْنِ اللَّهِ عِصْمَةٌ ثُمَّ اعْلَمْ أَنَّهُ لَمْ يَبْتَدِعِ
النَّاسُ بِدْعَةً إِلاَّ قَدْ مَضَى قَبْلَهَا مَا هُوَ دَلِيلٌ عَلَيْهَا أَوْ
عِبْرَةٌ فِيهَا فَإِنَّ السُّنَّةَ إِنَّمَا سَنَّهَا مَنْ قَدْ عَلِمَ مَا فِي
خِلاَفِهَا وَلَمْ يَقُلِ ابْنُ كَثِيرٍ مَنْ قَدْ عَلِمَ . مِنَ الْخَطَإِ
وَالزَّلَلِ وَالْحُمْقِ وَالتَّعَمُّقِ فَارْضَ لِنَفْسِكَ مَا رَضِيَ بِهِ
الْقَوْمُ لأَنْفُسِهِمْ فَإِنَّهُمْ عَلَى عِلْمٍ وَقَفُوا وَبِبَصَرٍ نَافِذٍ
كَفَوْا وَلَهُمْ عَلَى كَشْفِ الأُمُورِ كَانُوا أَقْوَى وَبِفَضْلِ مَا كَانُوا
فِيهِ أَوْلَى فَإِنْ كَانَ الْهُدَى مَا أَنْتُمْ عَلَيْهِ لَقَدْ
سَبَقْتُمُوهُمْ إِلَيْهِ وَلَئِنْ قُلْتُمْ إِنَّمَا حَدَثَ بَعْدَهُمْ . مَا
أَحْدَثَهُ إِلاَّ مَنِ اتَّبَعَ غَيْرَ سَبِيلِهِمْ وَرَغِبَ بِنَفْسِهِ عَنْهُمْ
فَإِنَّهُمْ هُمُ السَّابِقُونَ فَقَدْ تَكَلَّمُوا فِيهِ بِمَا يَكْفِي
وَوَصَفُوا مِنْهُ مَا يَشْفِي فَمَا دُونَهُمْ مِنْ مَقْصَرٍ وَمَا فَوْقَهُمْ
مِنْ مَحْسَرٍ وَقَدْ قَصَّرَ قَوْمٌ دُونَهُمْ فَجَفَوْا وَطَمَحَ عَنْهُمْ
أَقْوَامٌ فَغَلَوْا وَإِنَّهُمْ بَيْنَ ذَلِكَ لَعَلَى هُدًى مُسْتَقِيمٍ
كَتَبْتَ تَسْأَلُ عَنِ الإِقْرَارِ بِالْقَدَرِ فَعَلَى الْخَبِيرِ بِإِذْنِ
اللَّهِ وَقَعْتَ مَا أَعْلَمُ مَا أَحْدَثَ النَّاسُ مِنْ مُحْدَثَةٍ وَلاَ
ابْتَدَعُوا مِنْ بِدْعَةٍ هِيَ أَبْيَنُ أَثَرًا وَلاَ أَثْبَتُ أَمْرًا مِنَ
الإِقْرَارِ بِالْقَدَرِ لَقَدْ كَانَ ذَكَرَهُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ الْجُهَلاَءُ
يَتَكَلَّمُونَ بِهِ فِي كَلاَمِهِمْ وَفِي شِعْرِهِمْ يُعَزُّونَ بِهِ
أَنْفُسَهُمْ عَلَى مَا فَاتَهُمْ ثُمَّ لَمْ يَزِدْهُ الإِسْلاَمُ بَعْدُ إِلاَّ
شِدَّةً وَلَقَدْ ذَكَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَيْرِ حَدِيثٍ
وَلاَ حَدِيثَيْنِ وَقَدْ سَمِعَهُ مِنْهُ الْمُسْلِمُونَ فَتَكَلَّمُوا بِهِ فِي
حَيَاتِهِ وَبَعْدَ وَفَاتِهِ يَقِينًا وَتَسْلِيمًا لِرَبِّهِمْ وَتَضْعِيفًا
لأَنْفُسِهِمْ أَنْ يَكُونَ شَىْءٌ لَمْ يُحِطْ بِهِ عِلْمُهُ وَلَمْ يُحْصِهِ
كِتَابُهُ وَلَمْ يَمْضِ فِيهِ قَدَرُهُ وَإِنَّهُ مَعَ ذَلِكَ لَفِي مُحْكَمِ
كِتَابِهِ مِنْهُ اقْتَبَسُوهُ وَمِنْهُ تَعَلَّمُوهُ وَلَئِنْ قُلْتُمْ لِمَ
أَنْزَلَ اللَّهُ آيَةَ كَذَا وَلِمَ قَالَ كَذَا . لَقَدْ قَرَءُوْا مِنْهُ مَا
قَرَأْتُمْ وَعَلِمُوا مِنْ تَأْوِيلِهِ مَا جَهِلْتُمْ وَقَالُوا بَعْدَ ذَلِكَ
كُلِّهِ بِكِتَابٍ وَقَدَرٍ وَكُتِبَتِ الشَّقَاوَةُ وَمَا يُقَدَّرْ يَكُنْ وَمَا
شَاءَ اللَّهُ كَانَ وَمَا لَمْ يَشَأْ لَمْ يَكُنْ وَلاَ نَمْلِكُ لأَنْفُسِنَا
ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا ثُمَّ رَغَبُوا بَعْدَ ذَلِكَ وَرَهِبُوا .
আবুস্ সালত (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি ‘উমার ইবনু ‘আবদুল
‘আযীয (রহঃ)-এর নিকট তাক্বদীর সম্পর্কে জানতে চেয়ে চিঠি লিখলো। উত্তরে তিনি লিখেন,
অতঃপর আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, আল্লাহ্কে ভয় করো, ভারসাম্যপূর্ণভাবে তাঁর হুকুম
মেনে চলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতের অনুসরণ করো, তাঁর
আদর্শ প্রতিষ্ঠা লাভের ও সংরক্ষিত হওয়ার পর বিদ’আতীদের বিদ’আত বর্জন করো। সুন্নাতকে
আঁকড়ে ধরা তোমার কর্তব্য। কারণ এ সুন্নাত তোমাদের জন্য আল্লাহ্র অনুমতিক্রমে
রক্ষাকবজ। জেনে রাখো! মানুষ এমন কোন বিদ’আত করেনি যার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কোন
প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়নি বা তার বিরুদ্ধে এমন কোন শিক্ষা নেই যা তার ভ্রান্তি
প্রমাণ করে। কেননা সুন্নাতকে এমন এক ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন, যিনি সুন্নাতের
বিপরীত সম্বন্ধে অবগত। আর ইবনু ফাসির তার বর্ণনায় “তিনি জানতেন ভুলত্রুটি, অজ্ঞতা
ও গোঁড়ামি সম্পর্কে” একথাগুলো উল্লেখ করেননি। কাজেই তুমি নিজের জন্য ঐ পথ বেছে
নিবে যা তোমার পূর্ববর্তী মহাপুরুষগণ তাদের নিজেদের জন্য অবলম্বন করেছেন। কারণ
তারা যা জানতে পেরেছেন তার পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করেছেন এবং তীক্ষ্ণ দূরদর্শিতার
সঙ্গে বিরত থেকেছেন এবং তারা দ্বীন সম্পর্কে পারদর্শী ছিলেন, আর যা করতে তারা
নিষেধ করেছেন, তা জেনে-শুনেই নিষেধ করেছেন। তারা দ্বীনের অর্থ উপলব্ধির ক্ষেত্রে
আমাদের চেয়ে অনেক জ্ঞানী ছিলেন। আর তোমাদের মতাদর্শ যদি সঠিক পথ হয় তাহলে তোমরা
তাদেরকে ডিঙ্গিয়ে গেলে। আর যদি তোমরা বলো যে, তারা দ্বীনের মধ্যে নতুন কথা উদ্ভাবন
করেছেন তবে বলো, পূর্ববর্তী লোকেরাই উত্তম ছিলেন এবং তারা এদের তুলনায় অগ্রগামী
ছিলেন। যতটুকু বর্ণনা করার তা তারা বর্ণনা করেছেন, আর যতটুকু বলার প্রয়োজন তা তারা
বলেছেন। এর অতিরিক্ত বা এর কমও বলার নেই। আর এক গোত্র তাদেরকে উপেক্ষা করে কিছু
কমিয়েছে, তারা সঠিক পথ হতে সরে গেছে, আর যারা বাড়িয়েছে তারা সীমালঙ্ঘন করেছে। আর
পূর্ববর্তী মহাপুরুষগণ ছিলেন এর মাঝামাঝি সঠিক পথের অনুসারী। পত্রে তুমি তাক্বদীরে
বিশ্বাস সম্পর্কে জানতে চেয়ে লিখেছো। আল্লাহ্র অনুগ্রহে তুমি এমন ব্যক্তির নিকট এ
বিষয়ে জানতে চেয়েছো যিনি এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ। আমার জানা মতে, তাক্বদীরে বিশ্বাসের
উপর বিদ’আতীদের নবতর মতবাদ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। এটা কোন নতুন বিষয় নয়,
জাহিলিয়াতের সময়ও এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। অজ্ঞ লোকেরা তখনও তাদের আলোচনা ও
কবিতায় এ বিষয়টি উল্লেখ করতো এবং তাদের ব্যর্থতার জন্য তাক্বদীরকে দায়ী করতো।
ইসলাম এসে এ ধারণাকে আরো বদ্ধমূল করেছে এবং এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক হাদীস উল্লেখ করেছেন। আর মুসলিমগণ তাঁর নিকট শুনেছে এবং তাঁর জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরে পরস্পর
আলোচনা করেছে। তারা অন্তরে বিশ্বাস রেখে, তাদের রবের অনুগত হয়ে, নিজেদেরকে অক্ষম
মনে করে এ বিশ্বাস স্থাপন করেছে যে, এমন কোন বস্তু নেই যা আল্লাহ্র জ্ঞান, কিতাব
ও তাক্বদীর বহির্ভূত। এছাড়া তা আল্লাহ্র আমোঘ কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। আর যদি তোমরা
বলো, কেন আল্লাহ্ এ আয়াত নাযিল করেছেন এবং কেন একথা বলেছেন, তবে জেনে রাখো! তারাও
কিতাবের ঐসব বিষয় পড়েছেন যা তোমরা পড়ছো; উপরন্তু তারা সেসব ব্যাখ্যা অবহিত ছিলেন
যা তোমরা জানো না। এতদসত্ত্বেও তারা বলেছেন, সবকিছু আল্লাহ্র কিতাব ও তাক্বদীর
অনুযায়ী সংঘটিত হয়ে থাকে। আল্লাহ্ যা নির্ধারণ করেছেন তা অবশ্যই ঘটবে, আল্লাহ্
যা চান তাই হয় এবং যা চান না তা হয় না। লাভ বা ক্ষতি কোন কিছুই আমরা নিজেদের জন্য
করতে সক্ষম নই। অতঃপর তারা ভালো কাজের প্রতি উৎসাহী ও খারাপ কাজের ব্যাপারে সাবধান
হয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬১৩
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ
حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، - يَعْنِي ابْنَ أَبِي أَيُّوبَ - قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو
صَخْرٍ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ كَانَ لاِبْنِ عُمَرَ صَدِيقٌ مِنْ أَهْلِ الشَّامِ
يُكَاتِبُهُ فَكَتَبَ إِلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ إِنَّهُ بَلَغَنِي
أَنَّكَ تَكَلَّمْتَ فِي شَىْءٍ مِنَ الْقَدَرِ فَإِيَّاكَ أَنْ تَكْتُبَ إِلَىَّ
فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّهُ
سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي أَقْوَامٌ يُكَذِّبُونَ بِالْقَدَرِ " .
নাফি’ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সিরিয়াতে ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার
(রাঃ)-এর এক বন্ধু ছিলেন। তিনি তার সঙ্গে পত্র আদান প্রদান করতেন। একদা তিনি এই
মর্মে চিঠি লিখে পাঠালেন, বিশ্বস্ত সূত্রে আমি জানতে পেরেছি যে, তুমি তাক্বদীরের
কোন বিষয়ে সমালোচনা করেছো। কাজেই এখন হতে তুমি আমাকে লিখবে না। আমি রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে
এমন এক গোত্রের আবির্ভাব হবে যারা তাক্বদীরকে অস্বীকার করবে।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৬১৪
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْجَرَّاحِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ
خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، قَالَ قُلْتُ لِلْحَسَنِ يَا أَبَا سَعِيدٍ أَخْبِرْنِي عَنْ
آدَمَ، لِلسَّمَاءِ خُلِقَ أَمْ لِلأَرْضِ قَالَ لاَ بَلْ لِلأَرْضِ . قُلْتُ
أَرَأَيْتَ لَوِ اعْتَصَمَ فَلَمْ يَأْكُلْ مِنَ الشَّجَرَةِ قَالَ لَمْ يَكُنْ
لَهُ مِنْهُ بُدٌّ . قُلْتُ أَخْبِرْنِي عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى { مَا
أَنْتُمْ عَلَيْهِ بِفَاتِنِينَ * إِلاَّ مَنْ هُوَ صَالِ الْجَحِيمِ } قَالَ
إِنَّ الشَّيَاطِينَ لاَ يَفْتِنُونَ بِضَلاَلَتِهِمْ إِلاَّ مَنْ أَوْجَبَ
اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَحِيمَ .
খালিদ আল-হায্যা
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হাসান বাসরী (রহঃ)-কে বললাম, হে
আবূ সাঈদ! আদম (আঃ) সম্বন্ধে আমাকে বলুন, তাঁকে কি আকাশের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছিল,
না পৃথিবীর জন্য? তিনি বলেন, বরং পৃথিবীর জন্য। আমি বললাম, আপনার কি মত, তিনি যদি
নিষ্পাপ থাকতেন এবং নিষিদ্ধ গাছের ফল না খেতেন? আরও বলুন! যদি তিনি নিজেকে সংযত
রাখতেন তাহলে কি বৃক্ষের ফল না খেয়ে পারতেন? তিনি বললেন, না খেয়ে তাঁর কোন উপায়
ছিল না। আমি বললাম, আল্লাহ্র বাণী সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন : “তোমরা কেউ কাউকে
আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিভ্রান্ত করতে পারবে না, কেবল জাহান্নামে প্রবেশকারীকে ব্যতীত”
(সূরাহ্ আস-সাফ্ফাত : ১৬২-১৬৩)। তিনি (হাসান বাসরী) বলেন, আল্লাহ্ যাদের জন্য
জাহান্নামে প্রবেশকে অবধারিত করে রেখেছেন, শয়তান কেবল তাদেরকেই জাহান্নামে নিতে
পারবে।
হাদিসের মানঃহাসান মাকতু
৪৬১৫
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ،
عَنِ الْحَسَنِ، فِي قَوْلِهِ تَعَالَى { وَلِذَلِكَ خَلَقَهُمْ } قَالَ
خَلَقَ هَؤُلاَءِ لِهَذِهِ وَهَؤُلاَءِ لِهَذِهِ .
হাসান বাসরী (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মহান আল্লাহ্র বানী “এবং তিনি তাদেরকে
এজন্য সৃষ্টি করেছেন” (সূরাহ্ হূদ : ১১৯)-এর ব্যাখ্যায় বলেন, তিনি (আল্লাহ্)
এদেরকে (মু’মিনদের) এর (জান্নাতের) জন্য এবং এদেরকে (মুনাফিকদের) এজন্য
(জাহান্নামের জন্য) সৃষ্টি করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬১৬
حَدَّثَنَا
أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، قَالَ
قُلْتُ لِلْحَسَنِ { مَا أَنْتُمْ عَلَيْهِ بِفَاتِنِينَ * إِلاَّ مَنْ هُوَ
صَالِ الْجَحِيمِ } قَالَ إِلاَّ مَنْ أَوْجَبَ اللَّهُ تَعَالَى عَلَيْهِ
أَنَّهُ يَصْلَى الْجَحِيمَ .
খালিদ আল-হায্যা
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হাসান বাসরী (রহঃ)-কে “তোমরা
কেউই কাউকে আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিভ্রান্ত করতে পারবে না কেবল জাহান্নামে
প্রবেশকারীকে ব্যতীত” এ আয়াতের অর্থ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শুধু
তাদেরকেই শয়তান পথভ্রষ্ট করতে পারবে যাদের জাহান্নামে প্রবেশ করাকে আল্লাহ্
অবধারিত করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬১৭
حَدَّثَنَا
هِلاَلُ بْنُ بِشْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، قَالَ أَخْبَرَنِي حُمَيْدٌ،
قَالَ كَانَ الْحَسَنُ يَقُولُ لأَنْ يُسْقَطَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ
أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْ أَنْ يَقُولَ الأَمْرُ بِيَدِي .
হুমাইদ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
হাসান বাসরী (রহঃ) বলতেন, তার আকাশ (জান্নাত)
হতে যমীনে পতিত হওয়া এ কথা বলা তার নিকট এটা কথা বলার চেয়ে উত্তম যে, ‘বিষয়টি
আমারই কর্তৃত্বে।’
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬১৮
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، قَالَ
قَدِمَ عَلَيْنَا الْحَسَنُ مَكَّةَ فَكَلَّمَنِي فُقَهَاءُ أَهْلِ مَكَّةَ أَنْ
أُكَلِّمَهُ فِي أَنْ يَجْلِسَ لَهُمْ يَوْمًا يَعِظُهُمْ فِيهِ . فَقَالَ
نَعَمْ . فَاجْتَمَعُوا فَخَطَبَهُمْ فَمَا رَأَيْتُ أَخْطَبَ مِنْهُ فَقَالَ
رَجُلٌ يَا أَبَا سَعِيدٍ مَنْ خَلَقَ الشَّيْطَانَ فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ
هَلْ مِنْ خَالِقٍ غَيْرُ اللَّهِ خَلَقَ اللَّهُ الشَّيْطَانَ وَخَلَقَ الْخَيْرَ
وَخَلَقَ الشَّرَّ . قَالَ الرَّجُلُ قَاتَلَهُمُ اللَّهُ كَيْفَ يَكْذِبُونَ
عَلَى هَذَا الشَّيْخِ .
হুমাইদ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
হাসান বাসরী (রহঃ) বসরাহ থেকে মাক্কায় আমাদের
নিকট আগমন করলে মাক্কাহর ফকীহগণ আমাকে তার সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দিলেন যে, তিনি
তাদের উদ্দেশ্যে এক সমাবেশে যেন ভাষণ দেন। তিনি তাতে সম্মত হলে তারা একত্র হলেন
এবং তিনি তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। আমি তার চেয়ে উত্তম বক্তা আর দেখিনি। এক
ব্যক্তি বললো, হে আবূ সাঈদ! শয়তানকে কে সৃষ্টি করেছেন? তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ!
আল্লাহ ছাড়া কি অন্য কোন সৃষ্টিকর্তা আছে? মহান আল্লাহ শয়তান, ভাল-মন্দ সবই সৃষ্টি
করেছেন। লোকটি বললো, আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন! কি করে তারা এ শাইখের উপর মিথ্যা
অপবাদ দিচ্ছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬১৯
حَدَّثَنَا
ابْنُ كَثِيرٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ، عَنِ
الْحَسَنِ، { كَذَلِكَ نَسْلُكُهُ فِي قُلُوبِ الْمُجْرِمِينَ } قَالَ
الشِّرْكُ .
হাসান বাসরী (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর বাণী, “এভাবে আমি পাপীদের অন্তরে তা
সঞ্চার করি” (সূরাহ আল-হিজরঃ ১২)। এর অর্থ হচ্ছে, শিরক।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬২০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ رَجُلٍ، قَدْ سَمَّاهُ
غَيْرِ ابْنِ كَثِيرٍ عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عُبَيْدٍ الصِّيدِ، عَنِ الْحَسَنِ،
فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ { وَحِيلَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ مَا
يَشْتَهُونَ } قَالَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الإِيمَانِ .
হাসান বাসরী (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
মহান আল্লাহর এ বাণী “তাদের ও এদের বাসনার
মধ্যে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা হয়েছে” (সূরাহ সাবাঃ ৫৪)- সম্পর্কে বলেন, তাদের ও
ঈমানের মধ্যে।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬২১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمٌ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، قَالَ كُنْتُ
أَسِيرُ بِالشَّامِ فَنَادَانِي رَجُلٌ مِنْ خَلْفِي فَالْتَفَتُّ فَإِذَا رَجَاءُ
بْنُ حَيْوَةَ فَقَالَ يَا أَبَا عَوْنٍ مَا هَذَا الَّذِي يَذْكُرُونَ عَنِ
الْحَسَنِ قَالَ قُلْتُ إِنَّهُمْ يَكْذِبُونَ عَلَى الْحَسَنِ كَثِيرًا .
ইবনু ‘আওন (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় সফর করছিলাম। তখন এক
ব্যক্তি আমার পিছন হতে আমাকে ডাকলো। আমি তাকিয়ে দেখি, তিনি রাজা ‘ইবনু হাইওয়াহ।
তিনি আমাকে বললেন, হে আবূ ‘আওন! তারা হাসান বাসরী (রহঃ) সম্পর্কে এসব কি বলছে!
ইবনু ‘আওন বলেন। আমি বললাম, তারা হাসান বাসরীর (রহঃ) উপর অনেক মিথ্যা অপবাদ
দিচ্ছে।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬২২
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَيُّوبَ،
يَقُولُ كَذَبَ عَلَى الْحَسَنِ ضَرْبَانِ مِنَ النَّاسِ قَوْمٌ الْقَدَرُ
رَأْيُهُمْ وَهُمْ يُرِيدُونَ أَنْ يُنَفِّقُوا بِذَلِكَ رَأْيَهُمْ وَقَوْمٌ لَهُ
فِي قُلُوبِهِمْ شَنَآنٌ وَبُغْضٌ يَقُولُونَ أَلَيْسَ مِنْ قَوْلِهِ كَذَا
أَلَيْسَ مِنْ قَوْلِهِ كَذَا
হাম্মাদ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আমি আইয়ূবকে বলতে শুনেছি, দু’ধরণের লোক হাসান
বাসরী (রহঃ) -এর উপর মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। এক. তাক্বদীর অস্বীকারকারীরা, তাদের
এরূপ মিথ্যা বলার কারণ হলো তাদের ধারণা, এরূপ প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে
সন্দেহের মধ্যে ফেলা যাবে। দুই. যারা তার ব্যাপারে অন্তরে শত্রুতা ও হিংসা রাখে।
তারা বলে থাকে, তিনি কি এই এই বলেননি?
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬২৩
حَدَّثَنَا
ابْنُ الْمُثَنَّى، أَنَّ يَحْيَى بْنَ كَثِيرٍ الْعَنْبَرِيَّ، حَدَّثَهُمْ قَالَ
كَانَ قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ يَقُولُ لَنَا يَا فِتْيَانُ لاَ تُغْلَبُوا عَلَى
الْحَسَنِ فَإِنَّهُ كَانَ رَأْيُهُ السُّنَّةَ وَالصَّوَابَ .
ইয়াহ্ইয়া ইবনু
কাসীর আল-আসবারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কুররাহ ইবনু খালিদ (রহঃ) আমাদেরকে বলতেন, হে
যুবক সমাজ! তোমরা হাসান বাসরী (রহঃ) সম্পর্কে এরূপ ধারণা করো না যে, তিনি তাক্বদীর
বিরোধী ছিলেন। কারণ, তার অভিমত ছিল সুন্নাত মোতাবেক ও সঠিক।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬২৪
حَدَّثَنَا
ابْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ
إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، قَالَ لَوْ
عَلِمْنَا أَنَّ كَلِمَةَ، الْحَسَنِ تَبْلُغُ مَا بَلَغَتْ لَكَتَبْنَا
بِرُجُوعِهِ كِتَابًا وَأَشْهَدْنَا عَلَيْهِ شُهُودًا وَلَكِنَّا قُلْنَا
كَلِمَةٌ خَرَجَتْ لاَ تُحْمَلُ .
ইবনু ‘আওন (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যদি আমরা জানতাম, হাসান বাসরীর
(রহঃ) উক্তি এতোটা প্রসিদ্ধি লাভ করবে তাহলে অবশ্যই আমরা তার নিকট গিয়ে একটি কিতাব
লিখতাম এবং লোকদেরকে সাক্ষী বানাতাম। কিন্তু আমরা একটি কথা বলেছি, এখন কে তা
প্রসিদ্ধ করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬২৫
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ،
قَالَ قَالَ لِيَ الْحَسَنُ مَا أَنَا بِعَائِدٍ، إِلَى شَىْءٍ مِنْهُ أَبَدًا .
আইয়ূব (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাসান বাসরী (রহঃ) আমাকে বলেছেন,
আমি আর কখনো এ ধরণের কথা বলবো না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬২৬
حَدَّثَنَا
هِلاَلُ بْنُ بِشْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُثْمَانَ، عَنْ عُثْمَانَ
الْبَتِّيِّ، قَالَ مَا فَسَّرَ الْحَسَنُ آيَةً قَطُّ إِلاَّ عَلَى الإِثْبَاتِ
.
উসমান আল্-বাত্তী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাসান বাসরী (রহঃ) যখন কোন আয়াতের
ব্যাখ্যা করতেন, তখন তাকদীরকে প্রমাণ করতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮
সাহাবিগনের (র) ফযিলত
সম্পর্কে
৪৬২৭
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ، حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنَّا نَقُولُ فِي زَمَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم لاَ نَعْدِلُ بِأَبِي بَكْرٍ أَحَدًا ثُمَّ عُمَرَ ثُمَّ عُثْمَانَ ثُمَّ
نَتْرُكُ أَصْحَابَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لاَ تَفَاضُلَ بَيْنَهُمْ .
ইবনু ‘উমার (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর যুগে বলতাম, আমরা আবূ বাক্র (রহঃ) -এর সমকক্ষ কাউকে গণ্য করবো না।
অতঃপর ‘উমার, এরপর ‘উসমান, এরপর আমরা নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর
সাহাবীগণের মধ্যে কোনরূপ মর্যাদার তারতম্য করবো না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬২৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، قَالَ قَالَ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ إِنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ
كُنَّا نَقُولُ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَىٌّ أَفْضَلُ أُمَّةِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَهُ أَبُو بَكْرٍ ثُمَّ عُمَرُ ثُمَّ
عُثْمَانُ رضى الله عنهم أَجْمَعِينَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর জীবদ্দশায় বলতাম, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর পরে তাঁর উম্মাতের মধ্যে সর্বোত্তম হলেন আবূ বকর (রাঃ) , অতঃপর ‘উমার
(রাঃ) , অতঃপর ‘উসমান (রাঃ)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬২৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا جَامِعُ بْنُ أَبِي
رَاشِدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو يَعْلَى، عَنْ مُحَمَّدِ ابْنِ الْحَنَفِيَّةِ، قَالَ
قُلْتُ لأَبِي أَىُّ النَّاسِ خَيْرٌ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَ أَبُو بَكْرٍ . قَالَ قُلْتُ ثُمَّ مَنْ قَالَ ثُمَّ عُمَرُ . قَالَ
ثُمَّ خَشِيتُ أَنْ أَقُولَ ثُمَّ مَنْ فَيَقُولَ عُثْمَانُ فَقُلْتُ ثُمَّ أَنْتَ
يَا أَبَةِ قَالَ مَا أَنَا إِلاَّ رَجُلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ .
মুহাম্মাদ ইবনুল
হানাফিয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আমার পিতাকে বললাম,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরে কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম?
তিনি বলেন, আবূ বাকর (রাঃ)। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বলেন, তারপর ‘উমার (রাঃ)।
বর্ণনাকারী বলেন, তারপর কে তা প্রশ্ন করতে শঙ্কিত হলাম। তিনি হয়ত বলতেন, ‘উসমান
(রাঃ)। আমি বললাম, হে পিতা! তারপর আপনি? তিনি বলেন, আমি মুসলিমদেরই একজন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৩০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ مِسْكِينٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي الْفِرْيَابِيَّ -
قَالَ سَمِعْتُ سُفْيَانَ، يَقُولُ مَنْ زَعَمَ أَنَّ عَلِيًّا، عَلَيْهِ
السَّلاَمُ كَانَ أَحَقَّ بِالْوِلاَيَةِ مِنْهُمَا فَقَدْ خَطَّأَ أَبَا بَكْرٍ
وَعُمَرَ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارَ وَمَا أُرَاهُ يَرْتَفِعُ لَهُ مَعَ
هَذَا عَمَلٌ إِلَى السَّمَاءِ .
সুফিয়ান সাওরী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি ধারণা করে
যে, ‘আলী (রাঃ) তাদের দু’জনের তুলনায় খিলাফতের অধিক হকদার ছিলেন, সে আবূ বকর (রাঃ)
, ‘উমার (রাঃ) , মুহাজিরগণ ও আনসারগণের ভুল নির্দেশ করলো। আর যে ব্যক্তি এরূপ মত
পোষণ করে, তার কোন আমল আকাশে উঠবে বলে আমি মনে করি না। [৪৬২৯]
সানাদ সহীহ মাক্বতূ’।
[৪৬২৯]
আবূ দাঊদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬৩১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، حَدَّثَنَا عَبَّادٌ السَّمَّاكُ،
قَالَ سَمِعْتُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيَّ، يَقُولُ الْخُلَفَاءُ خَمْسَةٌ أَبُو
بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ وَعَلِيٌّ وَعُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ رضى الله
عنهم .
সুফিয়ান সাওরী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খলীফাহ্গণের সংখ্যা
পাঁচজনঃ আবূ বকর, ‘উমার, ‘উসমান, ‘আলী ও ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রাঃ)। [৪৬৩০]
সানাদ যঈফ মাক্বতূ‘।
[৪৬৩০]
আবূ দাঊদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল মাকতু
অনুচ্ছেদ-৯
খলিফাহ্গণ সম্পর্কে
৪৬৩২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، - قَالَ
مُحَمَّدٌ كَتَبْتُهُ مِنْ كِتَابِهِ - قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنِ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
قَالَ كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَجُلاً أَتَى إِلَى رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّي أَرَى اللَّيْلَةَ ظُلَّةً يَنْطِفُ
مِنْهَا السَّمْنُ وَالْعَسَلُ فَأَرَى النَّاسَ يَتَكَفَّفُونَ بِأَيْدِيهِمْ
فَالْمُسْتَكْثِرُ وَالْمُسْتَقِلُّ وَأَرَى سَبَبًا وَاصِلاً مِنَ السَّمَاءِ
إِلَى الأَرْضِ فَأَرَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخَذْتَ بِهِ فَعَلَوْتَ بِهِ
ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَعَلاَ بِهِ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ
فَعَلاَ بِهِ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَانْقَطَعَ ثُمَّ وُصِلَ فَعَلاَ
بِهِ . قَالَ أَبُو بَكْرٍ بِأَبِي وَأُمِّي لَتَدَعَنِّي فَلأَعْبُرَنَّهَا .
فَقَالَ " اعْبُرْهَا " . قَالَ أَمَّا الظُّلَّةُ فَظُلَّةُ
الإِسْلاَمِ وَأَمَّا مَا يَنْطِفُ مِنَ السَّمْنِ وَالْعَسَلِ فَهُوَ الْقُرْآنُ
لِينُهُ وَحَلاَوَتُهُ وَأَمَّا الْمُسْتَكْثِرُ وَالْمُسْتَقِلُّ فَهُوَ
الْمُسْتَكْثِرُ مِنَ الْقُرْآنِ وَالْمُسْتَقِلُّ مِنْهُ وَأَمَّا السَّبَبُ
الْوَاصِلُ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ فَهُوَ الْحَقُّ الَّذِي أَنْتَ
عَلَيْهِ تَأْخُذُ بِهِ فَيُعْلِيكَ اللَّهُ ثُمَّ يَأْخُذُ بِهِ بَعْدَكَ رَجُلٌ
فَيَعْلُو بِهِ ثُمَّ يَأْخُذُ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَيَعْلُو بِهِ ثُمَّ يَأْخُذُ
بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَيَنْقَطِعُ ثُمَّ يُوصَلُ لَهُ فَيَعْلُو بِهِ أَىْ رَسُولَ
اللَّهِ لَتُحَدِّثَنِّي أَصَبْتُ أَمْ أَخْطَأْتُ . فَقَالَ " أَصَبْتَ
بَعْضًا وَأَخْطَأْتَ بَعْضًا " . فَقَالَ أَقْسَمْتُ يَا رَسُولَ
اللَّهِ لَتُحَدِّثَنِّي مَا الَّذِي أَخْطَأْتُ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " لاَ تُقْسِمْ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) হাদীস বর্ণনা
করতেন, একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট
এসে বললো, আমি রাতে স্বপ্নে দেখেছি, এক টুকরা মেঘ হতে মাখন ও মধু ঝরে পড়ছে এবং আমি
আরো দেখলাম যে, লোকজন হাতের মুঠোয় করে তা তুলে নিচ্ছে; তাতে কেউ বেশি নিচ্ছে আবার
কেউ কম নিচ্ছে। আর দেখতে পেলাম একখানা রশি আকাশ হতে পৃথিবী পর্যন্ত ঝুলন্ত অবস্থায়
রয়েছে। হে আল্লাহর রাসূল! আমি দেখলাম, সেটা ধরে আপনি উপরে উঠে গেলেন। অতঃপর অন্য
এক ব্যক্তি তা ধরে উপরের দিকে উঠে গেলেন। এরপর আরেক ব্যক্তি তা ধরে উঠতে লাগলে তা
ছিঁড়ে যায়, তারপর পুনরায় তা জোড়া দেয়া হলে সেও তা দিয়ে উপরে উঠে যায়। আবূ বাকর
(রাঃ) বললেন, আমার পিতা-মাতার কসম! আমাকে অনুমতি দিন আমিই এর ব্যাখ্যা করি। তিনি
বললেন, ঠিক আছে, করুন। তিনি [আবূ বকর (রাঃ)] বললেন, মেঘ হলো ইসলামের মেঘ, আর মেঘ
হতে যে মধু ও মাখন ঝরে পড়ছে তা হলো কুরআনের মাধুর্যতা ও আস্বাদ, আর কম-বেশি গ্রহণ
হলো কুরআন হতে বেশি হিদায়াত গ্রহণ ও কম গ্রহণ করা। আর আকাশ হতে পৃথিবী পর্যন্ত
ঝুলন্ত রশিটি হলো সেই সত্য যার উপর আপনি রয়েছেন এবং এটা ধরেই আল্লাহ আপনাকে
উর্ধ্বে উঠাবেন। অতঃপর এক ব্যক্তি তা ধরে উপরে উঠবেন [তিনি হলেন, আবূ বকর (রাঃ)]।
তারপর এক ব্যক্তি তা ধরে উপরের দিকে উঠতেই তা ছিঁড়ে যাবে। তারপর পুনরায় জুড়ে দেয়া
হলে তা ধরে তিনিও উপরে উঠবেন [তিনি হলেন ‘উসমান (রাঃ)]। হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভুল
বলেছি না ঠিক বলেছি বলে দিন। তিনি বললেন, কিছুটা ঠিক হয়েছে এবং কিছুটা ভুল হয়েছে।
তিনি বললেন, আমি কসম করে বলছি! আমার যা ভুল হয়েছে তা হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে
অবশ্যই বলে দিন। এতে নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কসম করো
না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৩৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ،
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ
بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِهَذِهِ الْقِصَّةِ قَالَ فَأَبَى أَنْ يُخْبِرَهُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ)
হতে নাবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ ঘটনাটি বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি তাকে
ভুল-ত্রুটি অবহিত করতে অসম্মতি জানান।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৬৩৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ
الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا الأَشْعَثُ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ،
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ذَاتَ يَوْمٍ " مَنْ رَأَى
مِنْكُمْ رُؤْيَا " . فَقَالَ رَجُلٌ أَنَا رَأَيْتُ كَأَنَّ مِيزَانًا
نَزَلَ مِنَ السَّمَاءِ فَوُزِنْتَ أَنْتَ وَأَبُو بَكْرٍ فَرُجِحْتَ أَنْتَ
بِأَبِي بَكْرٍ وَوُزِنَ عُمَرُ وَأَبُو بَكْرٍ فَرُجِحَ أَبُو بَكْرٍ وَوُزِنَ
عُمَرُ وَعُثْمَانُ فَرُجِحَ عُمَرُ ثُمَّ رُفِعَ الْمِيزَانُ فَرَأَيْنَا
الْكَرَاهِيَةَ فِي وَجْهِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আবূ বাক্রাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
একদিন নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কে স্বপ্ন দেখেছে? এক ব্যক্তি বললো, আমি দেখেছি যে, আসমান
হতে যেন একটি দাড়িপাল্লা নেমে এলো। তাতে আপনাকে এবং আবূ বাকর (রাঃ) -কে ওজন করা
হলো। এতে দেখা গেল যে, আপনার ওজনই আবূ বাকর (রাঃ) -এর চেয়ে বেশি। অতঃপর আবূ বাক্র
ও ‘উমার (রাঃ) -কে ওজন করা হলে দেখা গেল, আবূ বকর (রাঃ) -এর ওজন বেশি হয়েছে। তারপর
‘উমার ও ‘উসমান (রাঃ) -কে ওজন করা হলে ‘উমার(রাঃ)-এর ওজন বেশি হলো। অতঃপর
দাড়িপাল্লাটি উপরে তুলে নেয়া হলো। আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর চেহারায় অসন্তুষ্টির ভাব দেখলাম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৩৫
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ ذَاتَ يَوْمٍ " أَيُّكُمْ رَأَى رُؤْيَا " .
فَذَكَرَ مَعْنَاهُ وَلَمْ يَذْكُرِ الْكَرَاهِيَةَ . قَالَ فَاسْتَاءَ لَهَا
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْنِي فَسَاءَهُ ذَلِكَ فَقَالَ "
خِلاَفَةُ نُبُوَّةٍ ثُمَّ يُؤْتِي اللَّهُ الْمُلْكَ مَنْ يَشَاءُ " .
‘আবদুর রহমান ইবনু
আবূ বাক্রাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কে স্বপ্ন দেখেছে? অতঃপর উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ অর্থে
বর্ণিত। তবে অসন্তুষ্টির কথা উল্লেখ নেই। বরং বর্ণনাকারী বলেন, একথা শুনে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন, তুমি যা
দেখেছ তার ব্যাখ্যা হলো, নবুওয়্যাতের প্রতিনিধিত্বের পর হলো রাজতন্ত্র; আল্লাহ
যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান করেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৩৬
حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، عَنِ الزُّبَيْدِيِّ،
عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبَانَ بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " أُرِيَ اللَّيْلَةَ رَجُلٌ صَالِحٌ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ نِيطَ
بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنِيطَ عُمَرُ بِأَبِي بَكْرٍ وَنِيطَ
عُثْمَانُ بِعُمَرَ " . قَالَ جَابِرٌ فَلَمَّا قُمْنَا مِنْ عِنْدِ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْنَا أَمَّا الرَّجُلُ الصَّالِحُ
فَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَّا تَنَوُّطُ بَعْضِهِمْ بِبَعْضٍ
فَهُمْ وُلاَةُ هَذَا الأَمْرِ الَّذِي بَعَثَ اللَّهُ بِهِ نَبِيَّهُ صلى الله
عليه وسلم . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَاهُ يُونُسُ وَشُعَيْبٌ لَمْ يَذْكُرَا عَمْرًا
.
জাবির ইবনু
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমাকে স্বপ্নে এক পুণ্যবান
ব্যক্তিকে দেখানো হয়েছে, আবূ বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাথে সংযুক্ত রয়েছেন, ‘উমার(রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) -এর সঙ্গে এবং
‘উসমান(রাঃ) ‘উমার(রাঃ) -এর সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছেন। জাবির (রাঃ) বলেন, যখন আমরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে উঠে দাঁড়ালাম তখন আমরা
বললাম, সেই পুণ্যবান ব্যক্তি হলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)। আর একে অপরের সাথে যুক্ত হলো, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
যে নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন তাঁরা তারই অভিভাবক। [৪৬৩৫]
দুর্বল।
[৪৬৩৫]
আহমাদ, হাকিম। ইমাম হাকিম এর সানাদকে সহীহ বলেছেন। কিন্তু সানাদে ‘আমর ইবনু আবান বিন
‘উসমান রয়েছে। তার অবস্থা অজ্ঞাত। হাফিয বলেনঃ মাক্ববূল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৬৩৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنِي عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا
حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَشْعَثَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ،
عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي
رَأَيْتُ كَأَنَّ دَلْوًا دُلِّيَ مِنَ السَّمَاءِ فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ فَأَخَذَ
بِعَرَاقِيهَا فَشَرِبَ شُرْبًا ضَعِيفًا ثُمَّ جَاءَ عُمَرُ فَأَخَذَ
بِعَرَاقِيهَا فَشَرِبَ حَتَّى تَضَلَّعَ ثُمَّ جَاءَ عُثْمَانُ فَأَخَذَ
بِعَرَاقِيهَا فَشَرِبَ حَتَّى تَضَلَّعَ ثُمَّ جَاءَ عَلِيٌّ فَأَخَذَ بِعَرَاقِيهَا
فَانْتَشَطَتْ وَانْتَضَحَ عَلَيْهِ مِنْهَا شَىْءٌ .
সামুরাহ ইবনু জুন্দুব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বললো, হে
আল্লাহর রাসূল! আমি স্বপ্নে দেখলাম, একটি বালতি আকাশ হতে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।
অতঃপর আবূ বাকর (রাঃ) এসে এর কাঠের হাতলের দুই প্রান্ত ধরে যৎসামান্য পান করলেন।
অতঃপর ‘উমার (রাঃ) এসে বালতির কাঠের হাতলের দুই প্রান্ত ধরলেন এবং পেটভরে পান
করলেন। তারপর ‘উসমান(রাঃ) আসলেন এবং এর কাঠের হাতলের দুই প্রান্ত ধরে পেটভরে পান
করলেন। অতঃপর ‘আলী (রাঃ) এসে তার কাঠের হাতলের দুই প্রান্ত ধরলে তা দোল খেতে থাকে
এবং কিছু পানি তা হতে ছিটকে তার দেহে পড়ে যায়। [৪৬৩৬]
দুর্বল।
[৪৬৩৬]
আহমাদ, ইবনু আবূ ‘আসিম আস-সুন্নাহ। ইমাম যাহাবী বলেনঃ সানদে আশ’আস এর অবস্থা অজ্ঞাত
এবং তার পিতা ‘আবদুর রহমান আযদী সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ মাক্ববূল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৬৩৮
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ سَهْلٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ
بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ مَكْحُولٍ، قَالَ لَتَمْخُرَنَّ الرُّومُ الشَّامَ
أَرْبَعِينَ صَبَاحًا لاَ يَمْتَنِعُ مِنْهَا إِلاَّ دِمَشْقُ وَعَمَّانُ .
মাকহুল (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রোমীয়রা সিরিয়ায় প্রবেশ করে চল্লিশ
দিন অবস্থান করবে এবং দামিস্ক ও আম্মান ব্যতীত কোন স্থানই তাদের থেকে নিরাপদ থাকবে
না।
হাদিসের মানঃদুর্বল মাকতু
৪৬৩৯
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ عَامِرٍ الْمُرِّيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ الْعَلاَءِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا الأَعْيَسِ عَبْدَ الرَّحْمَنِ
بْنَ سَلْمَانَ، يَقُولُ سَيَأْتِي مَلِكٌ مِنْ مُلُوكِ الْعَجَمِ يَظْهَرُ عَلَى
الْمَدَائِنِ كُلِّهَا إِلاَّ دِمَشْقَ .
আবদুল ‘আযীয ইবনুল
‘আলা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবুল আ’য়াস ‘আবদুর রহমান ইবনু সালমান (রহঃ) -কে
বলতে শুনেছেন, অচিরেই একজন বিদেশী বাদশাহ দামিস্ক ছাড়া অন্যান্য সকল শহরের উপর
বিজয়ী হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬৪০
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا بُرْدٌ أَبُو
الْعَلاَءِ، عَنْ مَكْحُولٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَوْضِعُ فُسْطَاطِ الْمُسْلِمِينَ فِي الْمَلاَحِمِ أَرْضٌ يُقَالُ لَهَا
الْغُوطَةُ " .
মাকহুল (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তুমুল যুদ্ধের সময় মুসলিমদের সমাবেশ স্থলের নাম হলো গূত্বাহ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৪১
حَدَّثَنَا
أَبُو ظَفَرٍ عَبْدُ السَّلاَمِ، حَدَّثَنَا جَعْفَرٌ، عَنْ عَوْفٍ، قَالَ
سَمِعْتُ الْحَجَّاجَ، يَخْطُبُ وَهُوَ يَقُولُ إِنَّ مَثَلَ عُثْمَانَ عِنْدَ
اللَّهِ كَمَثَلِ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ثُمَّ قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ يَقْرَؤُهَا
وَيَفُسِّرُهَا { إِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَى إِنِّي مُتَوَفِّيكَ
وَرَافِعُكَ إِلَىَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا } يُشِيرُ إِلَيْنَا
بِيَدِهِ وَإِلَى أَهْلِ الشَّامِ .
আওফ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজকে ভাষণ দানকালে বলতে
শুনেছিঃ নিশ্চয়ই ‘উসমান(রাঃ) -এর উদাহরণ মহান আল্লাহর নিকট মরিয়মের পুত্র ঈসা
(আঃ)-এর মত। অতঃপর তিনি এ আয়াত পড়ে ব্যাখ্যা করলেনঃ “যখন আল্লাহ বলেছিলেন, হে ঈসা!
আমি তোমাকে ফিরিয়ে আনবো এবং তোমাকে আমার নিকট উঠিয়ে আনবো। তোমাকে যারা মেনে নিতে
অস্বীকার করেছে তাদের সাহচার্য থেকে তোমাকে পবিত্র করবো (সূরাহ আল-‘ইমরানঃ ৫৫) এবং
সে তার হাতের মাধ্যমে আমাদের সিরিয়াবাসীদের দিকে ইঙ্গিত করছিলো।
হাদিসের মানঃদুর্বল মাকতু
৪৬৪২
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الْمُغِيرَةِ، عَنِ
الرَّبِيعِ بْنِ خَالِدٍ الضَّبِّيِّ، قَالَ سَمِعْتُ الْحَجَّاجَ، يَخْطُبُ
فَقَالَ فِي خُطْبَتِهِ رَسُولُ أَحَدِكُمْ فِي حَاجَتِهِ أَكْرَمُ عَلَيْهِ أَمْ
خَلِيفَتُهُ فِي أَهْلِهِ فَقُلْتُ فِي نَفْسِي لِلَّهِ عَلَىَّ أَلاَّ أُصَلِّيَ
خَلْفَكَ صَلاَةً أَبَدًا وَإِنْ وَجَدْتُ قَوْمًا يُجَاهِدُونَكَ لأُجَاهِدَنَّكَ
مَعَهُمْ . زَادَ إِسْحَاقُ فِي حَدِيثِهِ قَالَ فَقَاتَلَ فِي الْجَمَاجِمِ
حَتَّى قُتِلَ .
ইবনু খালিদ
আদ-দাব্বী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজকে তার ভাষণে বলতে
শুনেছিঃ তোমাদের কারো প্রয়োজনে প্রেরিত দূত তার নিকট বেশী সম্মানিত না তার
পরিবারের মধ্যে তার প্রতিনিধি? একথা শুনে আমি মনে মনে বললাম, আল্লাহর কসম! আমার
এখন কর্তব্য হলো, তোমার পিছনে কখনো সালাত না পড়া। আর আমি যদি এমন কোন দল পাই যারা
তোমার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে তবে আমিও তাদের সঙ্গী হয়ে তোমার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
করবো। ইসহাক্ব (রহঃ) তার হাদীসের বৃদ্ধি করেন যে, তিনি বলেন, জামাজিম যুদ্ধক্ষেত্রে
যুদ্ধ করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি নিহত হন।
হাদিসের মানঃদুর্বল মাকতু
৪৬৪৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، عَنْ عَاصِمٍ، قَالَ
سَمِعْتُ الْحَجَّاجَ، وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ اتَّقُوا اللَّهَ مَا
اسْتَطَعْتُمْ لَيْسَ فِيهَا مَثْنَوِيَّةٌ وَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا لَيْسَ فِيهَا
مَثْنَوِيَّةٌ لأَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ عَبْدِ الْمَلِكِ وَاللَّهِ لَوْ أَمَرْتُ
النَّاسَ أَنْ يَخْرُجُوا مِنْ بَابٍ مِنْ أَبْوَابِ الْمَسْجِدِ فَخَرَجُوا مِنْ
بَابٍ آخَرَ لَحَلَّتْ لِي دِمَاؤُهُمْ وَأَمْوَالُهُمْ وَاللَّهِ لَوْ أَخَذْتُ
رَبِيعَةَ بِمُضَرَ لَكَانَ ذَلِكَ لِي مِنَ اللَّهِ حَلاَلاً وَيَا عَذِيرِي مِنْ
عَبْدِ هُذَيْلٍ يَزْعُمُ أَنَّ قِرَاءَتَهُ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَاللَّهِ مَا
هِيَ إِلاَّ رَجَزٌ مِنْ رَجَزِ الأَعْرَابِ مَا أَنْزَلَهَا اللَّهُ عَلَى
نَبِيِّهِ عَلَيْهِ السَّلاَمُ وَعَذِيرِي مِنْ هَذِهِ الْحَمْرَاءِ يَزْعُمُ
أَحَدُهُمْ أَنَّهُ يَرْمِي بِالْحَجَرِ فَيَقُولُ إِلَى أَنْ يَقَعَ الْحَجَرُ
قَدْ حَدَثَ أَمْرٌ فَوَاللَّهِ لأَدَعَنَّهُمْ كَالأَمْسِ الدَّابِرِ . قَالَ
فَذَكَرْتُهُ لِلأَعْمَشِ فَقَالَ أَنَا وَاللَّهِ سَمِعْتُهُ مِنْهُ .
আসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
হাজ্জাজকে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় করো,
এতে কোন ব্যতিক্রম নেই। আর আমিরুল মু’মিনীন ‘আবদুল মালিকের (আদেশ) শুনো এবং অনুসরণ
করো, এতেও কোন ব্যতিক্রম নেই। আল্লাহর কসম! আমি লোকদেরকে যদি মাসজিদের এক দরজা দিয়ে
বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেই এবং তারা অন্য দরজা দিয়ে বের হয়, তাহলে আমার জন্য
তাদের রক্ত ও সম্পদ বৈধ। আল্লাহর কসম! যদি আমি রবী’আহ গোত্রকে মুদার গোত্রের
অপরাধের জন্য শাস্তি দেই এটাও আমার জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে বৈধ। হুজাইল পুত্র মনে
করে যে, সে যেভাবে কুরআন পড়ে তা আল্লাহর পক্ষ হতে। আল্লাহর কসম! তা তো বেদুঈনদের
সঙ্গীতমালার মধ্যকার সঙ্গীতমাত্র। তা আল্লাহ তার নাবীর উপর নাযীল করেননি। অনারব
লোকদের পক্ষ হতে কে আমার নিকট ওজনখানি করবে। তাদের মধ্যকার কেউ পাথর নিক্ষেপ করে,
অতঃপর বলে, দ্যাখো! এই পাথর কতো দূর গিয়ে পৌঁছে। সে একটি নতুন ঘটনার জন্ম দিলো।
আল্লাহর কসম! আমি তাদেরকে গতকালের ন্যায় নিশ্চিহ্ন করবো। বর্ণনাকারী বলেন, আমি
কথাগুলো আল-আ’মাশ (রহঃ) -এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেন, আল্লাহ্র কসম! আমিও তাকে
কথাগুলো বলতে শুনেছি।
সনদ সহিহ - হাজ্জাজ পর্যন্ত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৪৪
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، عَنِ الأَعْمَشِ،
قَالَ سَمِعْتُ الْحَجَّاجَ، يَقُولُ عَلَى الْمِنْبَرِ هَذِهِ الْحَمْرَاءُ
هَبْرٌ هَبْرٌ أَمَا وَاللَّهِ لَقَدْ قَرَعْتُ عَصًا بِعَصًا لأَذَرَنَّهُمْ
كَالأَمْسِ الذَّاهِبِ يَعْنِي الْمَوَالِي .
আ’মাশ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজকে মিম্বারে দাঁড়িয়ে
বলতে শুনেছি, এসব অনারব আযাদকৃত গোলামদের বংশধর হত্যা ও টুকরা টুকরা করে দেয়ার
যোগ্য। আল্লাহর কসম! আমি যদি চরম আঘাত হানি তাহলে তাদেরকে গতকালের মত নিশ্চিহ্ন
করে দিবো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৪৫
حَدَّثَنَا
قَطَنُ بْنُ نُسَيْرٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرٌ يَعْنِي ابْنَ سُلَيْمَانَ، ح
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ الأَعْمَشِ،
قَالَ جَمَّعْتُ مَعَ الْحَجَّاجِ فَخَطَبَ فَذَكَرَ حَدِيثَ أَبِي بَكْرِ بْنِ
عَيَّاشٍ قَالَ فِيهَا فَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا لِخَلِيفَةِ اللَّهِ وَصَفِيِّهِ
عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ قَالَ وَلَوْ أَخَذْتُ
رَبِيعَةَ بِمُضَرَ وَلَمْ يَذْكُرْ قِصَّةَ الْحَمْرَاءِ .
সুলাইমান আল্-আ’মাশ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজের
সঙ্গে জুমু’আহ্র সলাত আদায় করলাম। তিনি ভাষণ দিলেন... অতঃপর বর্ণনাকারী আবূ বাক্র
ইবনু আইয়াশের হাদীস উল্লেখ করেন। তিনি ভাষণে বলেন, তোমরা আল্লাহর প্রতিনিধি ও
বন্ধু ‘আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ানের কথা শুনবে ও মেনে চলবে। অতঃপর হাদীসের বাকি অংশ
উল্লেখ করেন। তিনি বললেন, আমি যদি রবী’আহ গোত্রকে মুদার গোত্রের অপরাধে পাকড়াও
করি। কিন্তু বর্ণনাকারী এখানে অনারবদের ঘটনাটি উল্লেখ করেননি।
সনদ সহিহ - হাজ্জাজ পর্যন্ত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৪৬
حَدَّثَنَا
سَوَّارُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ جُمْهَانَ، عَنْ سَفِينَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " خِلاَفَةُ النُّبُوَّةِ ثَلاَثُونَ سَنَةً ثُمَّ يُؤْتِي
اللَّهُ الْمُلْكَ - أَوْ مُلْكَهُ - مَنْ يَشَاءُ " . قَالَ سَعِيدٌ
قَالَ لِي سَفِينَةُ أَمْسِكْ عَلَيْكَ أَبَا بَكْرٍ سَنَتَيْنِ وَعُمَرَ عَشْرًا
وَعُثْمَانَ اثْنَتَىْ عَشْرَةَ وَعَلِيٌّ كَذَا . قَالَ سَعِيدٌ قُلْتُ
لِسَفِينَةَ إِنَّ هَؤُلاَءِ يَزْعُمُونَ أَنَّ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلاَمُ لَمْ
يَكُنْ بِخَلِيفَةٍ . قَالَ كَذَبَتْ أَسْتَاهُ بَنِي الزَّرْقَاءِ يَعْنِي
بَنِي مَرْوَانَ .
সাফীনাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নবুওয়্যাতের ভিত্তিতে পরিচালিত খিলাফত ত্রিশ বছর অব্যাহত
থাকবে। অতঃপর আল্লাহর যাকে ইচ্ছা রাজত্ব বা তাঁর রাজত্ব দান করবেন। সাঈদ (রহঃ)
বলেন, আমাকে সাফীনাহ (রাঃ) বলেছেন, হিসেব করো, আবূ বকর (রাঃ) দুই বছর, ‘উমার (রাঃ)
দশ বছর, ‘উসমান (রাঃ) বারো বছর ও আলী (রাঃ) এতো বছর খিলাফতের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাঈদ (রহঃ) বলেন, আমি সাফীনাহ (রাঃ) -কে বললাম, এরা ধারণা করে যে, ‘আলী(রাঃ)
খলীফাহ ছিলেন না। তিনি বলেন, বনী যারকা অর্থাৎ মাওয়ানের বংশধরগণ মিথ্যা বলেছে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৪৬৪৭
حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنِ الْعَوَّامِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ جُمْهَانَ، عَنْ سَفِينَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " خِلاَفَةُ النُّبُوَّةِ ثَلاَثُونَ سَنَةً ثُمَّ يُؤْتِي
اللَّهُ الْمُلْكَ مَنْ يَشَاءُ - أَوْ مُلْكَهُ مَنْ يَشَاءُ - " .
সাফীনাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নবুওয়্যাতী পন্থায় খিলাফত ত্রিশ বছর পরিচালিত হবে। অতঃপর
যাকে ইচ্ছা আল্লাহ রাজত্ব বা তাঁর রাজত্ব দান করবেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৪৬৪৮
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، عَنِ ابْنِ إِدْرِيسَ، أَخْبَرَنَا حُصَيْنٌ، عَنْ
هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ظَالِمٍ، وَسُفْيَانَ، عَنْ
مَنْصُورٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ظَالِمٍ
الْمَازِنِيِّ، قَالَ ذَكَرَ سُفْيَانُ رَجُلاً فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ ظَالِمٍ الْمَازِنِيِّ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ زَيْدِ بْنِ
عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ قَالَ لَمَّا قَدِمَ فُلاَنٌ الْكُوفَةَ أَقَامَ فُلاَنٌ
خَطِيبًا فَأَخَذَ بِيَدِي سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ فَقَالَ أَلاَ تَرَى إِلَى هَذَا
الظَّالِمِ فَأَشْهَدُ عَلَى التِّسْعَةِ إِنَّهُمْ فِي الْجَنَّةِ وَلَوْ
شَهِدْتُ عَلَى الْعَاشِرِ لَمْ إِيثَمْ - قَالَ ابْنُ إِدْرِيسَ وَالْعَرَبُ تَقُولُ
آثَمْ - قُلْتُ وَمَنِ التِّسْعَةُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم وَهُوَ عَلَى حِرَاءٍ " اثْبُتْ حِرَاءُ إِنَّهُ لَيْسَ عَلَيْكَ
إِلاَّ نَبِيٌّ أَوْ صِدِّيقٌ أَوْ شَهِيدٌ " . قُلْتُ وَمَنِ
التِّسْعَةُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ
وَعُثْمَانُ وَعَلِيٌّ وَطَلْحَةُ وَالزُّبَيْرُ وَسَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ
وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ . قُلْتُ وَمَنِ الْعَاشِرُ فَتَلَكَّأَ
هُنَيَّةً ثُمَّ قَالَ أَنَا . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَاهُ الأَشْجَعِيُّ عَنْ
سُفْيَانَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ عَنِ ابْنِ حَيَّانَ عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ظَالِمٍ بِإِسْنَادِهِ .
আবদুল্লাহ ইবনু
যালিম আল্-মাযিনী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাঈদ ইবনু যায়িদ ইবনু ‘আমর ইবনু
নুফাইল (রাঃ) বলেছেন এবং আমি শুনেছি, অমুক লোক (মু’আবিয়াহ) যখন কুফায় এলেন তখন
অমুকে (মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ) ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন [ভাষণে ‘আলী (রাঃ) -এর মর্যাদার
পরিপন্থী কথা থাকায়] সাঈদ ইবনু যায়িদ (রাঃ) আমার হাত ধরে বললেন, এ যালিম তার ভাষণে
কি বলছে তুমি কি লক্ষ্য করছো না? তারপর তিনি নয় ব্যক্তির জান্নাতবাসী হওয়া
সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিলেন এবং আরো বললেন, আমি যদি দশম ব্যক্তির নামও উল্লেখ করি তাতে
আমি গুনাহগার হবো না। ‘আবদুল্লাহ ইবনু যালিম (রহঃ) বলেন, আমি বললাম, এই নয়জন কে
কে? তিনি (সাঈদ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেরা পাহাড়ে
দাঁড়িয়ে পাহাড়টিকে কাঁপতে দেখে বললেন, ওহে হেরা! স্থির হও। কেননা তোমার উপর একজন
নাবী, একজন সিদ্দীক এবং একজন শহীদ অবস্থান করছেন। আমি পুনরায় বললাম, সেই নয়জন কে
কে? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আবূ বাক্র,
‘উমার, ‘উসমান, ‘আলী, ত্বালহা, যুবাইর, সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, ও আবদুর রহমান
ইবনু ‘আওফ (রাঃ)। আমি বললাম, দশম ব্যক্তি কে? তখন তিনি খানিক চুপ থেকে বললেন, আমি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৪৯
حَدَّثَنَا
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ النَّمَرِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحُرِّ بْنِ
الصَّيَّاحِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَخْنَسِ، أَنَّهُ كَانَ فِي
الْمَسْجِدِ فَذَكَرَ رَجُلٌ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَقَامَ سَعِيدُ بْنُ
زَيْدٍ فَقَالَ أَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنِّي
سَمِعْتُهُ وَهُوَ يَقُولُ " عَشْرَةٌ فِي الْجَنَّةِ النَّبِيُّ فِي
الْجَنَّةِ وَأَبُو بَكْرٍ فِي الْجَنَّةِ وَعُمَرُ فِي الْجَنَّةِ وَعُثْمَانُ
فِي الْجَنَّةِ وَعَلِيٌّ فِي الْجَنَّةِ وَطَلْحَةُ فِي الْجَنَّةِ وَالزُّبَيْرُ
بْنُ الْعَوَّامِ فِي الْجَنَّةِ وَسَعْدُ بْنُ مَالِكٍ فِي الْجَنَّةِ وَعَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فِي الْجَنَّةِ " . وَلَوْ شِئْتَ لَسَمَّيْتُ
الْعَاشِرَ . قَالَ فَقَالُوا مَنْ هُوَ فَسَكَتَ قَالَ فَقَالُوا مَنْ هُوَ فَقَالَ
هُوَ سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ .
আবদুর রহমান ইবনুল
আখনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মাসজিদে থাকাবস্থায় এক ব্যক্তি ‘আলী (রাঃ)
এর সমালোচনা করলে সাঈদ ইবনু যায়িদ (রাঃ) দাঁড়িয়ে বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দশ ব্যক্তি জান্নাতীঃ নবী
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জান্নাতী, আবূ বকর (রাঃ) জান্নাতী, ‘উমার (রাঃ)
জান্নাতী, ‘উসমান (রাঃ) জান্নাতী, ‘আলী (রাঃ) জান্নাতী, ত্বালহা (রাঃ) জান্নাতী,
যুবাইর ইবনুল ‘আওয়াম জান্নাতী, সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ) জান্নাতী, ‘আবদুর রহমান ইবনু
‘আওফ জান্নাতী। আমি (সাঈদ ইবনু যায়িদ) ইচ্ছা করলে দশম ব্যক্তির নামও বলতে পারি।
বর্ণনাকারী বলেন, তখন তারা বললেন, তিনি কে? তখন তিনি চুপ থাকলেন। বর্ণনাকারী বলেন,
পুনরায় তারা বললেন, তিনি কে? বর্ণনাকারী বলেন, (আমি) সাঈদ ইবনু যায়িদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৫০
حَدَّثَنَا
أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا صَدَقَةُ
بْنُ الْمُثَنَّى النَّخَعِيُّ، حَدَّثَنِي جَدِّي، رِيَاحُ بْنُ الْحَارِثِ قَالَ
كُنْتُ قَاعِدًا عِنْدَ فُلاَنٍ فِي مَسْجِدِ الْكُوفَةِ وَعِنْدَهُ أَهْلُ
الْكُوفَةِ فَجَاءَ سَعِيدُ بْنُ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ فَرَحَّبَ
بِهِ وَحَيَّاهُ وَأَقْعَدَهُ عِنْدَ رِجْلِهِ عَلَى السَّرِيرِ فَجَاءَ رَجُلٌ
مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ يُقَالُ لَهُ قَيْسُ بْنُ عَلْقَمَةَ فَاسْتَقْبَلَهُ
فَسَبَّ وَسَبَّ فَقَالَ سَعِيدٌ مَنْ يَسُبُّ هَذَا الرَّجُلُ قَالَ يَسُبُّ
عَلِيًّا . قَالَ أَلاَ أَرَى أَصْحَابَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يُسَبُّونَ عِنْدَكَ ثُمَّ لاَ تُنْكِرُ وَلاَ تُغَيِّرُ أَنَا سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ وَإِنِّي لَغَنِيٌّ أَنْ أَقُولَ عَلَيْهِ مَا
لَمْ يَقُلْ فَيَسْأَلُنِي عَنْهُ غَدًا إِذَا لَقِيتُهُ " أَبُو بَكْرٍ
فِي الْجَنَّةِ وَعُمَرُ فِي الْجَنَّةِ " . وَسَاقَ مَعْنَاهُ ثُمَّ
قَالَ لَمَشْهَدُ رَجُلٍ مِنْهُمْ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَغْبَرُّ فِيهِ وَجْهُهُ خَيْرٌ مِنْ عَمَلِ أَحَدِكُمْ عُمْرَهُ وَلَوْ عُمِّرَ
عُمْرَ نُوحٍ .
রিয়াহ ইবনুল হারিস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি অমুক লোকের (মুগীরাহ ইবনু
শু’বার) নিকট কুফার মাসজিদে বসা ছিলাম এবং তার নিকট কুফার লোকজনও উপস্থিত ছিল। এ
সময় সাঈদ ইবনু যায়িদ ‘আমর ইবনু নুফাইল (রাঃ) এলে তিনি তাকে সাদর সম্ভাষণ ও সালাম
জানিয়ে খাটের উপর নিজের পায়ের কাছে বসালেন। অতঃপর ক্বাইস ইবনু ‘আলক্বামাহ নামক
জনৈক কুফাবাসী এলে তাকেও অভ্যর্থনা জানালেন। তারপর সে গালাগালি করতে লাগলো। সাঈদ
(রাঃ) বললেন, এ ব্যক্তি কাকে গালি দিচ্ছে? তিনি বললেন, সে ‘আলী (রাঃ) -কে গালি
দিচ্ছে। তিনি বললেন, আমি দেখতে পাচ্ছি, সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাহাবীকে আপনার সম্মুখে গালি দিচ্ছে অথচ আপনি তাকে নিষেধ করছেন না আর
থামাচ্ছেনও না! আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ
আমি তাঁর সম্পর্কে এমন উক্তি করা হতে মুক্ত যা তিনি বলেননি। অতঃপর ক্বিয়ামাতের দিন
যখন তার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হবে তখন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। আবূ বকর (রাঃ)
জান্নাতী, ‘উমার (রাঃ) জান্নাতী। বর্ণনাকারী অতঃপর অনুরূপ অর্থের বর্ণনা করলেন এবং
তিনি বললেন, তাদের কোন একজনের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সাহচর্য লাভ, যে সাহচর্যে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না তাও তোমাদের কোন ব্যক্তির সারা
জীবনের আমলের চেয়ে উত্তম, যদিও সে নূহ (আঃ)-এর মতো দীর্ঘ আয়ু পায়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৫১
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ،
حَدَّثَنَا يَحْيَى، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي
عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ نَبِيَّ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَعِدَ أُحُدًا فَتَبِعَهُ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ
وَعُثْمَانُ فَرَجَفَ بِهِمْ فَضَرَبَهُ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
بِرِجْلِهِ وَقَالَ " اثْبُتْ أُحُدُ نَبِيٌّ وَصِدِّيقٌ وَشَهِيدَانِ "
.
ক্বাতাদাহ (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তাদের নিকট বর্ণনা করেন,
একদা নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহুদ পাহাড়ে উঠলেন। অতঃপর আবূ বাক্র,
‘উমার ও ‘উসমান (রাঃ) তাঁর অনুসরণ করলেন। পাহাড় কাঁপতে থাকলে আল্লাহর নবী
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে পদাঘাত করে বললেন, “উহুদ স্থির হও! তোমার
উপর একজন নাবী, একজন সিদ্দীক ও দু’জন শহীদ (‘উমার ও ‘উসমান) রয়েছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৫২
حَدَّثَنَا
هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مُحَمَّدٍ
الْمُحَارِبِيِّ، عَنْ عَبْدِ السَّلاَمِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ
الدَّالاَنِيِّ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ، مَوْلَى آلِ جَعْدَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَتَانِي جِبْرِيلُ
فَأَخَذَ بِيَدِي فَأَرَانِي بَابَ الْجَنَّةِ الَّذِي تَدْخُلُ مِنْهُ أُمَّتِي
" . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ
مَعَكَ حَتَّى أَنْظُرَ إِلَيْهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَمَا إِنَّكَ يَا أَبَا بَكْرٍ أَوَّلُ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ
أُمَّتِي " .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, যারা গাছের নিচে বাই’আত করেছে তাদের কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৫৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَيَزِيدُ بْنُ خَالِدٍ الرَّمْلِيُّ، أَنَّ اللَّيْثَ،
حَدَّثَهُمْ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " لاَ يَدْخُلُ النَّارَ أَحَدٌ مِمَّنْ بَايَعَ
تَحْتَ الشَّجَرَةِ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বর্ণনাকারী মূসার বর্ণনায় রয়েছেঃ “আশা করা যায়, মহান আল্লাহ”
এবং বর্ণনাকারী ইবনু সিনান (রহঃ)-এর বর্ণনা রয়েছেঃ “আল্লাহ্ বদরের যুদ্ধে
অংশগ্রহণ কারীদেরকে অবহিত করে বলেন, তোমরা যা ইচ্ছা আমল করো, অবশ্যই আমি তোমাদেরকে
ক্ষমা করে দিয়েছি।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৪৬৫৪
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، ح وَحَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ
بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مُوسَى " فَلَعَلَّ
اللَّهَ " . وَقَالَ ابْنُ سِنَانٍ " اطَّلَعَ اللَّهُ عَلَى
أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ "
.
আল-মিসওয়ার ইবনু
মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হুদায়বিয়ার সময় রওয়ানা হলেন। অতঃপর বর্ণনাকারী হাদীসটি উল্লেখ করেন। তিনি
বলেন, তখন ‘উরওয়াহ ইবনু মাস’ঊদ এসে নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সঙ্গে আলাপ করতে লাগলো এবং সে বরাবর তাঁর দাড়ি মুবারকে হাত লাগালো। তখন মুগারাহ ইবনু
শু’বাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তার
হাতে তরবারি ও মাথায় শিরস্ত্রাণ ছিল। তিনি তার হাতে তরবারির হাতল দিয়ে আঘাত করে
বললেন, তোমার হাত তাঁর দাড়ি থেকে সরাও। ‘উরওয়াহ মাথা তুলে বললো, ইনি কে? তারা
বললেন, ইনি হলেন মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ (রাঃ)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৫৫
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ ثَوْرٍ، حَدَّثَهُمْ عَنْ
مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنِ الْمِسْوَرِ
بْنِ مَخْرَمَةَ، قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم زَمَنَ
الْحُدَيْبِيَةِ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ . قَالَ فَأَتَاهُ - يَعْنِي عُرْوَةَ بْنَ
مَسْعُودٍ - فَجَعَلَ يُكَلِّمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَكُلَّمَا
كَلَّمَهُ أَخَذَ بِلِحْيَتِهِ وَالْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ قَائِمٌ عَلَى رَأْسِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ السَّيْفُ وَعَلَيْهِ الْمِغْفَرُ
فَضَرَبَ يَدَهُ بِنَعْلِ السَّيْفِ وَقَالَ أَخِّرْ يَدَكَ عَنْ لِحْيَتِهِ .
فَرَفَعَ عُرْوَةُ رَأْسَهُ فَقَالَ مَنْ هَذَا قَالُوا الْمُغِيرَةُ بْنُ
شُعْبَةَ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জিবরাঈল (আঃ) এসে আমার হাত
ধরে আমার উম্মাত জান্নাতের যে দরজা দিয়ে তাতে প্রবেশ করবে তা দেখালেন। আবূ বকর
(রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার একান্ত বাসনা যে, আমি তা দেখা পর্যন্ত আপনার
সঙ্গে থাকি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ বাক্র!
আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করতে সে তুমিই। [৪৬৫৪]
দুর্বলঃ মিশকাত হা/৬০২৪।
[৪৬৫৪]
এটি জিহাদ অধ্যায়ে গত হয়েছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৬৫৬
حَدَّثَنَا
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ أَبُو عُمَرَ الضَّرِيرُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ،
أَنَّ سَعِيدَ بْنَ إِيَاسٍ الْجُرَيْرِيَّ، أَخْبَرَهُمْ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ شَقِيقٍ الْعُقَيْلِيِّ، عَنِ الأَقْرَعِ، مُؤَذِّنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ
قَالَ بَعَثَنِي عُمَرُ إِلَى الأُسْقُفِّ فَدَعَوْتُهُ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ
وَهَلْ تَجِدُنِي فِي الْكِتَابِ قَالَ نَعَمْ . قَالَ كَيْفَ تَجِدُنِي قَالَ
أَجِدُكَ قَرْنًا . فَرَفَعَ عَلَيْهِ الدِّرَّةَ فَقَالَ قَرْنُ مَهْ فَقَالَ
قَرْنٌ حَدِيدٌ أَمِينٌ شَدِيدٌ . قَالَ كَيْفَ تَجِدُ الَّذِي يَجِيءُ مِنْ
بَعْدِي فَقَالَ أَجِدُهُ خَلِيفَةً صَالِحًا غَيْرَ أَنَّهُ يُؤْثِرُ قَرَابَتَهُ
. قَالَ عُمَرُ يَرْحَمُ اللَّهُ عُثْمَانَ ثَلاَثًا فَقَالَ كَيْفَ تَجِدُ
الَّذِي بَعْدَهُ قَالَ أَجِدُهُ صَدَأَ حَدِيدٍ فَوَضَعَ عُمَرُ يَدَهُ عَلَى
رَأْسِهِ فَقَالَ يَا دَفْرَاهُ يَا دَفْرَاهُ . فَقَالَ يَا أَمِيرَ
الْمُؤْمِنِينَ إِنَّهُ خَلِيفَةٌ صَالِحٌ وَلَكِنَّهُ يُسْتَخْلَفُ حِينَ
يُسْتَخْلَفُ وَالسَّيْفُ مَسْلُولٌ وَالدَّمُ مُهْرَاقٌ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ
الدَّفْرُ النَّتْنُ .
উমর ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) এর মুয়াজ্জিন আকরা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার
(রাঃ) আমাকে উশকুফ (খৃস্টানদের ধর্মগুরু)-এর নিকট প্রেরণ করলেন। আমি তাকে ডেকে
আনলে ‘উমার (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি আমার সম্পর্কে কোন কিছু কিতাবে দেখতে পাও কি?
তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আমাকে কিভাবে পাও। তিনি বললেন, আমি আপনাকে দুর্গ
হিসেবে পাই। বর্ণনাকারী বলেন, ‘উমার (রাঃ) তার উপর চাবুক তুলে বললেন, দুর্গ মানে?
সে বললো, একটি লৌহ দুর্গ ও কঠোর আস্থাভাজন ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমার পরে যিনি
আসবেন তাকে তুমি কেমন পাচ্ছো? তিনি বললেন, আমি তাকে পুন্যবান খলীফাহ হিসেবে
পাচ্ছি, তবে তিনি আত্মীয়দের দ্বারা প্রভাবিত হবেন। ‘উমার (রাঃ) তিনবার বললেন,
আল্লাহ্ ‘উসমানের উপর দয়া করুন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তারপর যিনি আসবেন তাকে কেমন
পাচ্ছো? উশকুফ বলেন, তাঁকে লোহার মরিচা হিসেবে পাচ্ছি। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর
‘উমার (রাঃ) তার হাত তার মাথায় রেখে বলেন, হে দুর্গন্ধ, হে দুর্গন্ধ! ধর্মগুরু
বললো, হে আমীরুল মু’মিনীন! তিনি একজন সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ খলীফাহ, কিন্তু যখন তাকে
নির্বাচন করা হবে তখন তরবারি কোষমুক্ত অবস্থায় থাকবে এবং হানাহানি চলবে। [৪৬৫৫]
সানাদ দুর্বল।
[৪৬৫৫]
আবূ দাঊদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেন।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণের ফাযীলাত
৪৬৫৭
حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ أَنْبَأَنَا ح، وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ
حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ
عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" خَيْرُ أُمَّتِي الْقَرْنُ الَّذِينَ بُعِثْتُ فِيهِمْ ثُمَّ الَّذِينَ
يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ " . وَاللَّهُ أَعْلَمُ
أَذَكَرَ الثَّالِثَ أَمْ لاَ " ثُمَّ يَظْهَرُ قَوْمٌ يَشْهَدُونَ وَلاَ
يُسْتَشْهَدُونَ وَيَنْذِرُونَ وَلاَ يُوفُونَ وَيَخُونُونَ وَلاَ يُؤْتَمَنُونَ
وَيَفْشُو فِيهِمُ السِّمَنُ " .
ইমরান ইবনু হুসাইন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে সর্বোত্তম হলো তারা যাদের মধ্যে আমি প্রেরিত হয়েছি।
অতঃপর যারা তাদের সঙ্গে সংলগ্ন, আল্লাহই ভালো জানেন যে, তিনি তৃতীয় স্তরটি উল্লেখ
করেছেন কিনা। তারপর এমন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা সাক্ষী হিসেবে তাদেরকে না
ডাকা হলেও সাক্ষ্য দিবে। তার মান্নাত করে তা পূর্ণ করবে না, তারা আত্মসাৎ করবে এবং
আমানতদার হবে না। আর তাদের মধ্যে মেদ-ভূঁড়ি প্রকাশ পাবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাহাবীদের গালি দেয়া নিষেধ
৪৬৫৮
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ،
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
لاَ تَسُبُّوا أَصْحَابِي فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنْفَقَ أَحَدُكُمْ
مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلاَ نَصِيفَهُ " .
আবূ সাঈদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আমার সাহাবীদেরকে গালি দিও না। যে মহান সত্ত্বার হাতে
আমার জীবন তাঁর কসম! তোমাদের মধ্যে কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ (দান) ব্যয়
করে তবে তা তাদের কোন একজনের এক মুদ্দ বা অর্ধ মুদ্দ ব্যয়ের সমানও হবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৫৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ بْنُ قُدَامَةَ الثَّقَفِيُّ،
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ قَيْسٍ الْمَاصِرُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي قُرَّةَ،
قَالَ كَانَ حُذَيْفَةُ بِالْمَدَائِنِ فَكَانَ يَذْكُرُ أَشْيَاءَ قَالَهَا
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فِي الْغَضَبِ
فَيَنْطَلِقُ نَاسٌ مِمَّنْ سَمِعَ ذَلِكَ مِنْ حُذَيْفَةَ فَيَأْتُونَ سَلْمَانَ
فَيَذْكُرُونَ لَهُ قَوْلَ حُذَيْفَةَ فَيَقُولُ سَلْمَانُ حُذَيْفَةُ أَعْلَمُ
بِمَا يَقُولُ فَيَرْجِعُونَ إِلَى حُذَيْفَةَ فَيَقُولُونَ لَهُ قَدْ ذَكَرْنَا
قَوْلَكَ لِسَلْمَانَ فَمَا صَدَّقَكَ وَلاَ كَذَّبَكَ . فَأَتَى حُذَيْفَةُ
سَلْمَانَ وَهُوَ فِي مَبْقَلَةٍ فَقَالَ يَا سَلْمَانُ مَا يَمْنَعُكَ أَنْ
تُصَدِّقَنِي بِمَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ
سَلْمَانُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَغْضَبُ فَيَقُولُ فِي
الْغَضَبِ لِنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ وَيَرْضَى فَيَقُولُ فِي الرِّضَا لِنَاسٍ
مِنْ أَصْحَابِهِ أَمَا تَنْتَهِي حَتَّى تُوَرِّثَ رِجَالاً حُبَّ رِجَالٍ
وَرِجَالاً بُغْضَ رِجَالٍ وَحَتَّى تُوقِعَ اخْتِلاَفًا وَفُرْقَةً وَلَقَدْ
عَلِمْتَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ فَقَالَ "
أَيُّمَا رَجُلٍ مِنْ أُمَّتِي سَبَبْتُهُ سَبَّةً أَوْ لَعَنْتُهُ لَعْنَةً فِي
غَضَبِي - فَإِنَّمَا أَنَا مِنْ وَلَدِ آدَمَ أَغْضَبُ كَمَا يَغْضَبُونَ
وَإِنَّمَا بَعَثَنِي رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ - فَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ صَلاَةً
يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . وَاللَّهِ لَتَنْتَهِيَنَّ أَوْ لأَكْتُبَنَّ
إِلَى عُمَرَ .
আমর ইবনু আবূ কুর্রা
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফাহ (রাঃ) মাদায়েনে
অবস্থানকালে এমন কিছু কথা উল্লেখ করেন, যে কথাগুলো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসন্তুষ্ট অবস্থায় কতিপয় সাহাবীকে বলেছিলেন। হুযাইফাহ (রাঃ)
-এর কথাগুলো যারা শুনেছিলেন, তাদের কতক এসে সালমান (রাঃ) -এর নিকট হুযাইফাহর (রাঃ)
বক্তব্যের বর্ণনা দিলে সালমান (রাঃ) বলেন, হুযাইফাহ (রাঃ) যা বলেছেন, তা তিনিই
ভালো জানেন। অতঃপর তারা হুযাইফাহ্র (রাঃ) নিকট ফিরে এসে বললেন, আমরা সালমান (রাঃ)
-এর নিকট আপনার কথাগুলো বলেছি কিন্তু তিনি আপনার কথার সমর্থন বা অসমর্থন কোনটাই
দেননি। অতঃপর হুযাইফাহ (রাঃ) সালমান (রাঃ) -এর সঙ্গে সবজি বাগানে সাক্ষাত করে
বলেন, হে সালমান! যে কথা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
নিকট শুনেছি তার সমর্থন দিতে তোমাকে কিসে বিরত রেখেছে? সালমান (রাঃ) বললেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসন্তুষ্ট হলে তাঁর কিছু সাহাবীকে
কিছু কথা বলতেন এবং তাঁর সাহাবীদের মধ্যে কারো উপর সন্তুষ্ট হয়ে সন্তোষসূচক কিছু
কথা বলতেন। যদি তুমি এ বিষয়গুলোর উল্লেখ হতে বিরত না থাকো, তাহলে তুমি অনেক লোককে
পরস্পর ভালোবাসা ও বন্ধুত্বে আবদ্ধ করবে আর এক দলকে পরস্পর মনমালিন্য ও অসন্তোষে
ফেলবে, এতে দলাদলির সৃষ্টি হবে। তুমি জানো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর ভাষণে বলেছেন, আমার উম্মাতের কাউকে আমি অসন্তুষ্ট অবস্থায় মন্দ বলি
বা অভিশাপ দেই কেননা আদম সন্তান হিসাবে আমিও তাদের মতো অসন্তুষ্ট হয়ে থাকি। তিনি
আমাকে সৃষ্টিকুলের জন্য করুণার আঁধার করে পাঠিয়েছেন। হে আল্লাহ! আমার গালি ও
অভিশাপকে ক্বিয়ামাতের দিন তাদের জন্য রহমতে পরিণত করো। এরপর সালমান (রাঃ) বলেনঃ
আল্লাহর কসম! যদি তুমি বিরত না থাকো তাহলে আমি অবশ্যই ‘উমার (রাঃ) -কে লিখে
পাঠাবো। অতঃপর কিছু সংখ্যক লোকের দ্বারা তার উপর চাপ সৃষ্টি করা হলে তিনি তার কসম
ভঙ্গের কাফ্ফারাহ দিলেন, ‘উমার (রাঃ) -কে চিঠি লিখেননি এবং কসম ভঙ্গের আগেই কাফ্ফারাহ
দিলেন। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, কসম ভঙ্গের (কাফ্ফারাহ) আগে বা পরে দেয়া উভয়ই
জায়িয।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২
আবূ বাক্র (রাঃ) -এর
খিলাফাত সম্পর্কে
৪৬৬০
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ،
حَدَّثَنِي عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَمْعَةَ، قَالَ
لَمَّا اسْتُعِزَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا عِنْدَهُ فِي
نَفَرٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ دَعَاهُ بِلاَلٌ إِلَى الصَّلاَةِ فَقَالَ مُرُوا مَنْ
يُصَلِّي لِلنَّاسِ . فَخَرَجَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَمَعَةَ فَإِذَا عُمَرُ فِي
النَّاسِ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ غَائِبًا فَقُلْتُ يَا عُمَرُ قُمْ فَصَلِّ
بِالنَّاسِ فَتَقَدَّمَ فَكَبَّرَ فَلَمَّا سَمِعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم صَوْتَهُ وَكَانَ عُمَرُ رَجُلاً مُجْهِرًا قَالَ " فَأَيْنَ أَبُو
بَكْرٍ يَأْبَى اللَّهُ ذَلِكَ وَالْمُسْلِمُونَ يَأْبَى اللَّهُ ذَلِكَ
وَالْمُسْلِمُونَ " . فَبَعَثَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَجَاءَ بَعْدَ أَنْ
صَلَّى عُمَرُ تِلْكَ الصَّلاَةَ فَصَلَّى بِالنَّاسِ .
আবদুল্লাহ ইবনু
যাম’আহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর রোগ যখন মারাত্মক রূপ ধারণ করলো তখন আমি মুসলিমদের একটি দলের
সঙ্গে তাঁর নিকট উপস্থিত ছিলাম। বিলাল (রাঃ) তাঁকে সলাতের জন্য ডাকলে তিনি বললেন,
“লোকদের সলাত পড়াতে তোমরা কাউকে নির্দেশ দাও।” অতঃপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু যাম‘আহ্
(রাঃ) বেরিয়ে এসে দেখলেন লোকদের মধ্যে ‘উমার (রাঃ) উপস্থিত আছেন, কিন্তু আবূ বকর
(রাঃ) অনুপস্থিত। আমি বললাম, হে ‘উমার! আপনি দাঁড়িয়ে সলাত পড়ান। অতএব তিনি সামনে
এসে তাকবীর তাহরীমা বললেন। ‘উমার (রাঃ) উচ্চস্বরসম্পন্ন হওয়ায় যখন রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার শব্দ শুনতে পেলেন তখন বললেন, আবূ বাকর
কোথায়? আল্লাহ এবং মুসলিমগণ এটা (আবূ বাকর ছাড়া অন্য কারোর ইমামতি) অপছন্দ করেন।
তিনি পুনরায় বললেন, আল্লাহ ও মুসলিমগণ এটা অপছন্দ করেন। অতএব আবূ বকর (রাঃ)-এর
নিকট লোক পাঠানো হলো, কিন্তু তিনি ‘উমার (রাঃ)-এর ঐ ওয়াক্তের সলাত পড়ানোর পরে
উপস্থিত হলেন এবং এরপর হতে তিনি লোকদের সলাতে ইমামতি করেন।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৪৬৬১
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مُوسَى
بْنُ يَعْقُوبَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ
بْنَ زَمْعَةَ، أَخْبَرَهُ بِهَذَا الْخَبَرِ، قَالَ لَمَّا سَمِعَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم صَوْتَ عُمَرَ قَالَ ابْنُ زَمَعَةَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم حَتَّى أَطْلَعَ رَأْسَهُ مِنْ حُجْرَتِهِ ثُمَّ قَالَ " لاَ
لاَ لاَ لِيُصَلِّ لِلنَّاسِ ابْنُ أَبِي قُحَافَةَ " . يَقُولُ ذَلِكَ
مُغْضَبًا .
আবদুল্লাহ ইবনু
‘উতবাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ হাদীস সম্পর্কে তাকে ‘আবদুল্লাহ ইবনু যাম‘আহ্
(রাঃ) জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমার
(রাঃ)-এর কন্ঠস্বর শোনার সঙ্গে উঠে এসে তাঁর ঘর থেকে মাথা বের করে ক্রোধের সঙ্গে
বললেন, না, না, না; আবূ কুহাফার পুত্র যেন লোকদের সলাতে ইমামতি করে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৩
ফিত্বনাহ্ চলাকালে
বাকসংযমী হওয়া
৪৬৬২
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، وَمُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ
عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، ح وَحَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيِّ،
قَالَ حَدَّثَنِي الأَشْعَثُ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ " إِنَّ
ابْنِي هَذَا سَيِّدٌ وَإِنِّي أَرْجُو أَنْ يُصْلِحَ اللَّهُ بِهِ بَيْنَ
فِئَتَيْنِ مِنْ أُمَّتِي " . وَقَالَ فِي حَدِيثِ حَمَّادٍ "
وَلَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يُصْلِحَ بِهِ بَيْنَ فِئَتَيْنِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ
عَظِيمَتَيْنِ " .
আবূ বাক্রাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ) সম্পর্কে বললেন, আমার এ ছেলে (নাতি) নেতা হবে।
আর আমি কামনা করি, আল্লাহ তার মাধ্যমে আমার উম্মাতের দু’টি দলের মধ্যে সমঝোতা
করাবেন। হাম্মাদ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ তিনি বলেন, আশা করি আল্লাহ তার
মাধ্যমে মুসলিমদের বৃহৎ দু’টি দলের মধ্য সমঝোতা করাবেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৬৩
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، عَنْ
مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَ حُذَيْفَةُ مَا أَحَدٌ مِنَ النَّاسِ تُدْرِكُهُ
الْفِتْنَةُ إِلاَّ أَنَا أَخَافُهَا عَلَيْهِ إِلاَّ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ
فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ
تَضُرُّكَ الْفِتْنَةُ " .
মুহাম্মাদ (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফাহ (রাঃ) বলেছেন, মুহাম্মাদ
ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) ছাড়া অন্য সবার ব্যাপারেই হাঙ্গামার শিকার হওয়ার আশঙ্কা
করেছি। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি,
হাঙ্গামা তোমার (মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ্র) কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৬৪
حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ مَرْزُوقٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَشْعَثِ بْنِ سُلَيْمٍ،
عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ ثَعْلَبَةَ بْنِ ضُبَيْعَةَ، قَالَ دَخَلْنَا عَلَى
حُذَيْفَةَ فَقَالَ إِنِّي لأَعْرِفُ رَجُلاً لاَ تَضُرُّهُ الْفِتَنُ شَيْئًا .
قَالَ فَخَرَجْنَا فَإِذَا فُسْطَاطٌ مَضْرُوبٌ فَدَخَلْنَا فَإِذَا فِيهِ
مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَسَأَلْنَاهُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ مَا أُرِيدُ أَنْ
يَشْتَمِلَ عَلَىَّ شَىْءٌ مِنْ أَمْصَارِكُمْ حَتَّى تَنْجَلِيَ عَمَّا انْجَلَتْ
.
সা‘লাবাহ ইবনু
দুবাই‘আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা হুযাইফাহ্র (রাঃ) নিকট
গেলে তিনি বললেন, আমি এমন একজনকে চিনি, সংঘাত যার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আমরা রওয়ানা হয়ে একটি তাঁবু খাটানো দেখতে পেয়ে তাতে ঢুকে
মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ্র সাক্ষাত পেলাম। আমরা তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে
তিনি বলেন, আমি চাই না যে, দাঙ্গা-হাঙ্গামার আবসান না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের কোন এক
শহর আমাকে ঘিরে ধরুক (আমি বসবাস করি)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৬৫
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَشْعَثَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِي
بُرْدَةَ، عَنْ ضُبَيْعَةَ بْنِ حُصَيْنٍ الثَّعْلَبِيِّ، بِمَعْنَاهُ .
দুবাই‘আহ ইবনু
হুসাইন আস-সা‘লাবী (রহঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
পূর্বোক্ত হাদীসের
অর্থানুরূপ বর্ণিত। [৪৬৬৪]
আমি এটি সহীহ এবং যঈফে পাইনি।
[৪৬৬৪]
এর পূর্বের হাদীস দেখুন।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৪৬৬৬
حَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْهُذَلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ
يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَلِيٍّ رضى
الله عنه أَخْبِرْنَا عَنْ مَسِيرِكَ هَذَا أَعَهْدٌ عَهِدَهُ إِلَيْكَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمْ رَأْىٌ رَأَيْتَهُ فَقَالَ مَا عَهِدَ إِلَىَّ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِشَىْءٍ وَلَكِنَّهُ رَأْىٌ رَأَيْتُهُ .
ক্বাইস ইবনু ‘উবাদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ) -কে বললাম, আপনার এ
সফলতা কি আপনার প্রতি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ
মোতাবেক, নাকি আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার প্রতি এরকম কোন নির্দেশ দেননি, বরং এটা আমার ব্যক্তিগত
সিদ্ধান্ত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৬৭
حَدَّثَنَا
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ الْفَضْلِ، عَنْ أَبِي
نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" تَمْرُقُ مَارِقَةٌ عِنْدَ فُرْقَةٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَقْتُلُهَا
أَوْلَى الطَّائِفَتَيْنِ بِالْحَقِّ " .
আবূ সাঈদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিমদের মধ্যে গোলযোগ চলাকালে একটি দল আত্মপ্রকাশ করবে।
যারা সত্যের নিকটবর্তী তারা ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৪
নাবীগণের (আঃ) মধ্যে
মর্যাদার পার্থক্য করা সম্পর্কে
৪৬৬৮
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو، - يَعْنِي
ابْنَ يَحْيَى - عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُخَيِّرُوا بَيْنَ الأَنْبِيَاءِ
" .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা নবীগণের মধ্যে মর্যাদার পার্থক্য করো না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৬৯
حَدَّثَنَا
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي
الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَا يَنْبَغِي لِعَبْدٍ أَنْ يَقُولَ إِنِّي خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ
مَتَّى " .
আবূ হুরাইরাহ (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা এক ইয়াহুদী বললো, সেই মহান
সত্ত্বার কসম! যিনি মূসা (আঃ)-কে মনোনীত করেছেন। তখন এক মুসলিম ইয়াহুদী লোকটির
চেহারায় থাপ্পড় মারলো। ইয়াহুদী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর
নিকট গিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা আমাকে মূসা (আঃ)-এর উপর অধিক মর্যাদা দিও না। কেননা
(ক্বিয়ামাতের দিন) সব মানুষ মূর্ছা যাবে। সর্বপ্রথম আমিই হুঁশ ফিরে পাবো। আর তখন
মূসা (আঃ) আরশের একপাশ ধরে থাকবেন। আমি অবহিত নই যে, মূসা (আঃ) মূর্ছা গিয়ে আমার
আগে হুশ ফিরে পাবে, না তিনি মূর্ছা যাবেন না অর্থাৎ যাদেরকে আল্লাহ ব্যতিক্রম
করবেন তিনি তাদের একজন কিনা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭০
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ يَحْيَى الْحَرَّانِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ
سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي حَكِيمٍ،
عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا يَنْبَغِي لِنَبِيٍّ
أَنْ يَقُولَ إِنِّي خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি আদম সন্তানের নেতা এবং আমাকেই সর্বপ্রথম কবর হতে উঠানো
হবে এবং আমিই সর্বপ্রথম সুপারিশকারী হবো এবং সর্বপ্রথম আমার সুপারিশ গ্রহণ করা
হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭১
حَدَّثَنَا
حَجَّاجُ بْنُ أَبِي يَعْقُوبَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، قَالاَ
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوسَى .
فَرَفَعَ الْمُسْلِمُ يَدَهُ فَلَطَمَ وَجْهَ الْيَهُودِيِّ فَذَهَبَ
الْيَهُودِيُّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُخَيِّرُونِي عَلَى مُوسَى فَإِنَّ
النَّاسَ يُصْعَقُونَ فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيقُ فَإِذَا مُوسَى بَاطِشٌ فِي
جَانِبِ الْعَرْشِ فَلاَ أَدْرِي أَكَانَ مِمَّنْ صَعِقَ فَأَفَاقَ قَبْلِي أَوْ
كَانَ مِمَّنِ اسْتَثْنَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ
وَحَدِيثُ ابْنِ يَحْيَى أَتَمُّ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ কারো একথা বলা উচিৎ নয় যে, আমি ইউনুস ইবনু মাত্তার (আঃ) চেয়ে উত্তম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭২
حَدَّثَنَا
زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ مُخْتَارِ
بْنِ فُلْفُلٍ، يَذْكُرُ عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَا خَيْرَ الْبَرِيَّةِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " ذَاكَ إِبْرَاهِيمُ " .
আবদুল্লাহ ইবনু
জা‘ফার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ কোন নাবীর একথা বলা উচিৎ নয় যে, আমি ইউনুস ইবনু মাত্তার (আঃ)
চেয়ে উত্তম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭৩
حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ أَبِي
عَمَّارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ فَرُّوخَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ
وَأَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الأَرْضُ وَأَوَّلُ شَافِعٍ وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ
" .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে বললো, ওহে সৃষ্টিকূলের সর্বোত্তম ব্যক্তি।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তিনি তো ইবরাহীম (আঃ)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُتَوَكِّلِ الْعَسْقَلاَنِيُّ، وَمَخْلَدُ بْنُ خَالِدٍ
الشَّعِيرِيُّ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا
أَدْرِي أَتُبَّعٌ لَعِينٌ هُوَ أَمْ لاَ وَمَا أَدْرِي أَعُزَيْرٌ نَبِيٌّ هُوَ
أَمْ لاَ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি অবহিত নই যে, তুব্বা’ অভিশপ্ত কিনা এবং আমার জানা নেই
যে, উযাইর নবী কি না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ
أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" أَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِابْنِ مَرْيَمَ الأَنْبِيَاءُ أَوْلاَدُ
عَلاَّتٍ وَلَيْسَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ نَبِيٌّ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমি আত্মীয়তায় মারইয়াম (আঃ)-এর পুত্র ঈসা
(আঃ)-এর নিকটতর। নাবীগণ পরস্পর বৈমাত্রেয় ভাই। আমার ও তাঁর মাঝখানে কোন নবী নেই।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৫
মুরজিয়া সম্প্রদায়
প্রত্যাখ্যাত
৪৬৭৬
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، أَخْبَرَنَا سُهَيْلُ بْنُ أَبِي
صَالِحٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الإِيمَانُ
بِضْعٌ وَسَبْعُونَ أَفْضَلُهَا قَوْلُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَدْنَاهَا
إِمَاطَةُ الْعَظْمِ عَنِ الطَّرِيقِ وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ
" .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ ঈমানের সত্তরটিরও বেশী শাখা রয়েছে। তার মধ্যে সর্বত্তোম হলো এ সাক্ষ্য
দেয়া যে, “আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই”। আর সর্বনিম্ন হলো রাস্তা থেকে হাড়
অপসারণ করা এবং লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি শাখা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ شُعْبَةَ،
حَدَّثَنِي أَبُو جَمْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قَالَ إِنَّ وَفْدَ
عَبْدِ الْقَيْسِ لَمَّا قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
أَمَرَهُمْ بِالإِيمَانِ بِاللَّهِ قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا الإِيمَانُ
بِاللَّهِ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ "
شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
وَإِقَامُ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ وَصَوْمُ رَمَضَانَ وَأَنْ تُعْطُوا
الْخُمُسَ مِنَ الْمَغْنَمِ " .
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা 'আবদুল ক্বাইস গোত্রের
প্রতিনিধি দল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলে তিনি
তাদেরকে আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেন। তিনি বললেন, তোমরা কি জানো এক
আল্লাহ্র উপর ঈমান আনা কী? তারা বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই বেশী জানেন। তিনি
বললেন, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্র রাসূল-এর সাক্ষ্য দেয়া,
সলাত ক্বায়িম করা, যাকাত দেয়া এবং রমযান মাসের সিয়াম পালন করা। এছাড়া তোমরা
গণীমাতের এক-পঞ্চমাংশ জমা দিবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৭৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي
الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلاَةِ " .
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দা ও কুফর এর মধ্যে পার্থক্য হলো সলাত ছেড়ে দেয়া।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৬
ঈমান বৃদ্ধি ও
হ্রাসের দলীল
৪৬৭৯
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ السَّرْحِ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ بَكْرِ بْنِ
مُضَرَ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَلاَ دِينٍ أَغْلَبَ لِذِي لُبٍّ مِنْكُنَّ
" . قَالَتْ وَمَا نُقْصَانُ الْعَقْلِ وَالدِّينِ قَالَ " أَمَّا
نُقْصَانُ الْعَقْلِ فَشَهَادَةُ امْرَأَتَيْنِ شَهَادَةُ رَجُلٍ وَأَمَّا
نُقْصَانُ الدِّينِ فَإِنَّ إِحْدَاكُنَّ تُفْطِرُ رَمَضَانَ وَتُقِيمُ أَيَّامًا
لاَ تُصَلِّي " .
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কা'বার দিকে নিবিষ্ট হলে সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! যারা
বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সলাত পড়া অবস্থায় মারা গেছে তাদের কি হবে? তখন মহান
আল্লাহ্ অবতীর্ন করলেন, "আল্লাহ্ তোমাদের ঈমান (সলাত) বিনষ্ট করবেন না"
(সূরাহ বাকারা : ১৪৩)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮০
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، -
الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ
عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا تَوَجَّهَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم إِلَى الْكَعْبَةِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَكَيْفَ الَّذِينَ
مَاتُوا وَهُمْ يُصَلُّونَ إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى
{ وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ } .
আবূ উমামাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তির ভালোবাসা ও শত্রুতা, দান করা ও না করা একমাত্র আল্লাহ্র
সন্তুষ্টি লাভের জন্য হয়ে থাকে সে ব্যক্তিই পূর্ণ ঈমানদার।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮১
حَدَّثَنَا
مُؤَمَّلُ بْنُ الْفَضْلِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ شَابُورٍ،
عَنْ يَحْيَى بْنِ الْحَارِثِ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنْ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَنْ أَحَبَّ لِلَّهِ
وَأَبْغَضَ لِلَّهِ وَأَعْطَى لِلَّهِ وَمَنَعَ لِلَّهِ فَقَدِ اسْتَكْمَلَ
الإِيمَانَ " .
'আবদুল্লাহ ইবনু
'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ বুদ্ধি ও দ্বীনদারীতে অপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বুদ্ধিমান পুরুষকে
হতভম্ব করে দেয়ার ক্ষেত্রে তোমাদের (মহিলাদের) কোন একজনের চেয়ে অধিক পারদর্শী আর
কাউকে আমি দেখিনি। এক মহিলা বললেন, বুদ্ধি ও দ্বীনের ক্ষেত্রে অপূর্ণতা কি? তিনি
বললেন, বুদ্ধির অপূর্ণতা হলো, দু'জন মহিলার সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান।
আর দ্বীনের অপূর্ণতা হলো, তোমাদের কেউ কেউ রমযানের সওম ভঙ্গ করে থাকে আর একাধারে
কিছুদিন সলাত পড়া হতে বিরত থাকে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮২
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا
أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঐ মু’মিন ঈমানে পরিপূর্ণ যার চরিত্র সর্বোকৃষ্ট।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
৪৬৮৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ ثَوْرٍ، عَنْ مَعْمَرٍ، قَالَ
وَأَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ
أَبِيهِ، قَالَ أَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رِجَالاً وَلَمْ
يُعْطِ رَجُلاً مِنْهُمْ شَيْئًا فَقَالَ سَعْدٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعْطَيْتَ
فُلاَنًا وَفُلاَنًا وَلَمْ تُعْطِ فُلاَنًا شَيْئًا وَهُوَ مُؤْمِنٌ . فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَوْ مُسْلِمٌ " . حَتَّى
أَعَادَهَا سَعْدٌ ثَلاَثًا وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
أَوْ مُسْلِمٌ " . ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم "
إِنِّي أُعْطِي رِجَالاً وَأَدَعُ مَنْ هُوَ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْهُمْ لاَ
أُعْطِيهِ شَيْئًا مَخَافَةَ أَنْ يُكَبُّوا فِي النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ "
.
'আমির ইবনু সা'দ
(রাঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছু
মালামাল বণ্টন করছিলেন। আমি তাঁর নিকট অনুরোধ করলাম যে, অমুক ব্যক্তিকে দিন, কেননা
সে মু'মিন। তিনি বললেন, অথবা মুসলিম। আমি ঐ ব্যক্তিকে কোন অনুদান দেয়ার চেয়ে সেই
সব লোকদেরকে দেয়া পছন্দ করি যাদেরকে না দিলে (মুরতাদ হয়ে যাবে) পরিণামে তাদের
মুখের উপর হেঁচড়িয়ে টেনে নেয়া হবে (জাহান্নামে যাবে)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ ثَوْرٍ، عَنْ مَعْمَرٍ، قَالَ وَقَالَ
الزُّهْرِيُّ { قُلْ لَمْ تُؤْمِنُوا وَلَكِنْ قُولُوا أَسْلَمْنَا } قَالَ
نَرَى أَنَّ الإِسْلاَمَ الْكَلِمَةُ وَالإِيمَانَ الْعَمَلُ .
'আমির ইবনু সা'দ
ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কিছু সংখ্যক লোককে দিলেন এবং কিছু সংখ্যক লোককে কিছুই দিলেন না। সা'দ
(রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি অমুক অমুককে দিলেন অথচ অমুক অমুককে মু'মীন
হওয়া সত্ত্বেও দিলেন না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
অথবা মুসলিম। এভাবে সা'দ (রাঃ) তিনবার বললেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-ও বলতে থাকলেন : অথবা মুসলিম। অতঃপর তিনি বলেনঃ আমি এমন সব লোককে দিয়ে
থাকি এবং তাদের চেয়ে আমার নিকট অধিক প্রিয় লোকদেরকে বঞ্চিত করে থাকি এ ভয়ে যে, যদি
না দেয়া হয় তাহলে তাদেরকে (দ্বীন ত্যাগের কারণে) অধঃমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা
হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، ح وَحَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - الْمَعْنَى - قَالاَ
حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ،
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَسَّمَ بَيْنَ النَّاسِ قَسْمًا فَقُلْتُ
أَعْطِ فُلاَنًا فَإِنَّهُ مُؤْمِنٌ . قَالَ " أَوْ مُسْلِمٌ إِنِّي
لأُعْطِي الرَّجُلَ الْعَطَاءَ وَغَيْرُهُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْهُ مَخَافَةَ أَنْ
يُكَبَّ عَلَى وَجْهِهِ " .
মা'মার (রঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যুহরী (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্র বাণী
: "(হে নাবী!) আপনি বলুন, তোমরা ঈমান আনোনি, বরং তোমরা বলো, আমরা ইসলাম গ্রহণ
করেছি" (সূরাহ হুজুরাত : ১৪)। এর তাৎপর্য আমরা বুঝেছি ইসলাম হলো কালেমা
শাহাদাত আর ঈমান হলো 'আমল করা।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৬৮৬
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ وَاقِدُ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ أَخْبَرَنِي عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عُمَرَ، يُحَدِّثُ
عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " لاَ تَرْجِعُوا
بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ " .
ওয়াক্বিদ ইবনু
'আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ইবনু 'উমার (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করতে শুনেছেন, তিনি বলেছেনঃ আমার পরে তোমরা
মারামারিতে লিপ্ত হয়ে পুনরায় কাফির হয়ে যেও না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮৭
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ
غَزْوَانَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم " أَيُّمَا رَجُلٍ مُسْلِمٍ أَكْفَرَ رَجُلاً مُسْلِمًا
فَإِنْ كَانَ كَافِرًا وَإِلاَّ كَانَ هُوَ الْكَافِرَ " .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে মুসলিম ব্যক্তি অন্য মুসলিমকে কাফির বলে, সে যদি কাফির না
হয় তাহলে সে-ই কাফির।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮৮
حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ فَهُوَ مُنَافِقٌ خَالِصٌ وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ
خَلَّةٌ مِنْهُنَّ كَانَ فِيهِ خَلَّةٌ مِنْ نِفَاقٍ حَتَّى يَدَعَهَا إِذَا
حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ وَإِذَا خَاصَمَ
فَجَرَ " .
আবদুল্লাহ ইবনু
‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ চারটি স্বভাব যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে খাঁটি মুনাফিক। আর যার
মধ্যে এ চারটি স্বভাবের কোনটি পাওয়া যায়, বর্জন করা পর্যন্ত তার ভেতরে মুনাফিকের
একটি স্বভাব রয়েছে। তা হলো, যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে,
প্রতিজ্ঞা করলে প্রতারণা করে এবং ঝগড়ার সময় অশ্লীল কথা বলে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৮৯
حَدَّثَنَا
أَبُو صَالِحٍ الأَنْطَاكِيُّ، أَخْبَرَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الْفَزَارِيُّ، عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ
مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ
حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَالتَّوْبَةُ مَعْرُوضَةٌ بَعْدُ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ব্যভিচারী ব্যভিচারে লিপ্ত অবস্থায় ঈমানদার থাকে না। চোর
চুরি করা কালে ঈমানদার থাকে না। মদ্যপায়ী তা পানরত অবস্থায় ঈমানদার থাকতে পারে না।
এরপরও তাওবাহ্র ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৯০
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ سُوَيْدٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ،
أَخْبَرَنَا نَافِعٌ، - يَعْنِي ابْنَ يَزِيدَ - قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ،
أَنَّ سَعِيدَ بْنَ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيَّ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ
أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
إِذَا زَنَى الرَّجُلُ خَرَجَ مِنْهُ الإِيمَانُ كَانَ عَلَيْهِ كَالظُّلَّةِ
فَإِذَا انْقَطَعَ رَجَعَ إِلَيْهِ الإِيمَانُ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কেউ ব্যভিচার করতে থাকে তখন তার থেকে ঈমান বের হয়ে তার
(মাথার) উপর ছায়ার ন্যায় অবস্থান করতে থাকে। অতঃপর যখন সে অবসর হয় তখন ঈমান তার
নিকট ফিরে আসে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৭
তাক্বদীর সম্পর্কে
৪৬৯১
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ،
قَالَ حَدَّثَنِي بِمِنًى، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ " الْقَدَرِيَّةُ مَجُوسُ هَذِهِ الأُمَّةِ إِنْ
مَرِضُوا فَلاَ تَعُودُوهُمْ وَإِنْ مَاتُوا فَلاَ تَشْهَدُوهُمْ " .
ইবনু 'উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ কাদরিয়াগণ হচ্ছে এ উম্মাতের অগ্নিপূজক। সুতরাং তারা রোগাক্রান্ত হলে তোমরা
তাদেরকে দেখতে যাবে না এবং তারা মারা গেলে তাদের জানাযায় উপস্থিত হবে না।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৬৯২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ
عُمَرَ، مَوْلَى غُفْرَةَ عَنْ رَجُلٍ، مِنَ الأَنْصَارِ عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لِكُلِّ أُمَّةٍ مَجُوسٌ
وَمَجُوسُ هَذِهِ الأُمَّةِ الَّذِينَ يَقُولُونَ لاَ قَدَرَ مَنْ مَاتَ مِنْهُمْ
فَلاَ تَشْهَدُوا جَنَازَتَهُ وَمَنْ مَرِضَ مِنْهُمْ فَلاَ تَعُودُوهُمْ وَهُمْ
شِيعَةُ الدَّجَّالِ وَحَقٌّ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُلْحِقَهُمْ بِالدَّجَّالِ
" .
হুযাইফাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক উম্মাতে
অগ্নিপূজক রয়েছে। এ উম্মাতের অগ্নিপূজক হলো যারা বলে, তাক্বদীর বলতে কিছু নেই।
তাদের মধ্যকার কেউ মারা গেলে তোমরা তার জানাযায় উপস্থিত হবে না এবং তাদের কেউ
অসুস্থ হলে তোমরা তাদেরকে দেখতে যাবে না। তারা হচ্ছে দাজ্জালের অনুসারী এবং আল্লাহ
অবশ্যই তাদেরকে দাজ্জালের সঙ্গে মিলিত করবেন। [৪৬৯১]
দুর্বলঃ যঈফাহ হা/৫৭১৪।
[৪৬৯১]
আহমাদ, ত্বাবরানী। সানাদে নাম উল্লেখহীন জনৈক ব্যক্তি রয়েছে। এছাড়া সানাদে 'আমর মাওলা
গুফরা দুর্বল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৬৯৩
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، أَنَّ يَزِيدَ بْنَ زُرَيْعٍ، وَيَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ، حَدَّثَاهُمْ
قَالاَ، حَدَّثَنَا عَوْفٌ، قَالَ حَدَّثَنَا قَسَامَةُ بْنُ زُهَيْرٍ، قَالَ
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ مِنْ قَبْضَةٍ قَبَضَهَا مِنْ
جَمِيعِ الأَرْضِ فَجَاءَ بَنُو آدَمَ عَلَى قَدْرِ الأَرْضِ جَاءَ مِنْهُمُ
الأَحْمَرُ وَالأَبْيَضُ وَالأَسْوَدُ وَبَيْنَ ذَلِكَ وَالسَّهْلُ وَالْحَزْنُ
وَالْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ " . زَادَ فِي حَدِيثِ يَحْيَى "
وَبَيْنَ ذَلِكَ " . وَالإِخْبَارُ فِي حَدِيثِ يَزِيدَ .
আবূ মূসা আল-আশ'আরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আদম (আঃ)-কে একমুঠো মাটি দিয়ে সৃষ্টি
করেছেন, যা তিনি সমগ্র পৃথিবী থেকে নিয়েছিলেন। তাই আদম সন্তান মাটির বিভিন্ন বর্ণ
ও প্রকৃতি অনুসারে হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ লোহিত, কেউবা সাদা, কেউ কালো এবং কেউবা
এসবের মধ্যবর্তী বর্ণের হয়েছে। এরূপে কেউ কোমল, কেউ কঠোর এবং কেউ অসৎ এবং কেউ সৎ
হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৯৪
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدُ بْنُ مُسَرْهَدٍ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، قَالَ سَمِعْتُ مَنْصُورَ
بْنَ الْمُعْتَمِرِ، يُحَدِّثُ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ حَبِيبٍ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ، عَلَيْهِ
السَّلاَمُ قَالَ كُنَّا فِي جَنَازَةٍ فِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
بِبَقِيعِ الْغَرْقَدِ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَلَسَ
وَمَعَهُ مِخْصَرَةٌ فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِالْمِخْصَرَةِ فِي الأَرْضِ ثُمَّ رَفَعَ
رَأْسَهُ فَقَالَ " مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ مَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوسَةٍ
إِلاَّ قَدْ كَتَبَ اللَّهُ مَكَانَهَا مِنَ النَّارِ أَوْ مِنَ الْجَنَّةِ إِلاَّ
قَدْ كُتِبَتْ شَقِيَّةً أَوْ سَعِيدَةً " . قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ
الْقَوْمِ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَفَلاَ نَمْكُثُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ
الْعَمَلَ فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ لَيَكُونَنَّ إِلَى السَّعَادَةِ
وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشِّقْوَةِ لَيَكُونَنَّ إِلَى الشِّقْوَةِ قَالَ
" اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ أَمَّا أَهْلُ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُونَ
لِلسَّعَادَةِ وَأَمَّا أَهْلُ الشِّقْوَةِ فَيُيَسَّرُونَ لِلشِّقْوَةِ "
. ثُمَّ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ " { فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى *
وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى * فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى * وَأَمَّا مَنْ بَخِلَ
وَاسْتَغْنَى * وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَى * . فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَى }
" .
আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বাকী’ আল-গারকাদে এক জানাযায়
ছিলাম। সেখানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও উপস্থিত ছিলেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে বসলেন এবং তাঁর সঙ্গের লাঠি
দিয়ে মাটির উপর আঁচড় দিতে লাগলেন। অতঃপর তিনি মাথা তুলে বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন
কেউ নেই, এমন কোন নিঃশ্বাসধারী নেই যার জাহান্নামে বা জান্নাতে নেককার ও বদকার
হিসেবে ঠিকানা লিখে রাখা হয়নি। ‘আলী (রাঃ) বলেন, উপস্থিত জনতার মধ্য হতে একজন উঠে
বললো, হে আল্লাহর নাবী! তাহলে আমরা কি আমাদের ঐ লেখার উপর নির্ভর করে আমল ছেড়ে
দিবো না? তারপর যার নাম সৌভাগ্যবান হিসেবে লেখা আছে সে ভালো কাজেই অগ্রসর হবে, আর
আমাদের মধ্যে যার নাম হতভাগা ও পাপিষ্ঠ হিসেবে লেখা আছে সে পাপ কাজেই অগ্রসর হবে।
নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা আমল করতে থাকো। কেননা
প্রত্যেকের জন্য সেটাই সহজ করা হয়েছে যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যে ভাগ্যবান
সৎকর্ম তার জন্য সহজ হয়, আর যে পাপিষ্ঠ তার জন্য পাপ কাজ সহজ হয়। অতঃপর আল্লাহর
নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ "সুতরাং
দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দিবো
সহজ পথ। আর কেউ কৃপণতা করলে এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা বর্জন
করলে আমি তার জন্য সুগম করে দিবো কঠোর পরিণতির পথ" (সূরাহ আল-লাইলঃ ৫-১০)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৯৫
حَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا كَهْمَسٌ، عَنِ
ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، قَالَ كَانَ أَوَّلَ مَنْ
تَكَلَّمَ فِي الْقَدَرِ بِالْبَصْرَةِ مَعْبَدٌ الْجُهَنِيُّ فَانْطَلَقْتُ أَنَا
وَحُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ حَاجَّيْنِ أَوْ
مُعْتَمِرَيْنِ فَقُلْنَا لَوْ لَقِينَا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَاهُ عَمَّا يَقُولُ هَؤُلاَءِ فِي الْقَدَرِ .
فَوَفَّقَ اللَّهُ لَنَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ دَاخِلاً فِي الْمَسْجِدِ
فَاكْتَنَفْتُهُ أَنَا وَصَاحِبِي فَظَنَنْتُ أَنَّ صَاحِبِي سَيَكِلُ الْكَلاَمَ
إِلَىَّ فَقُلْتُ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّهُ قَدْ ظَهَرَ قِبَلَنَا نَاسٌ
يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ وَيَتَفَقَّرُونَ الْعِلْمَ يَزْعُمُونَ أَنْ لاَ قَدَرَ وَالأَمْرُ
أُنُفٌ . فَقَالَ إِذَا لَقِيتَ أُولَئِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنِّي بَرِيءٌ
مِنْهُمْ وَهُمْ بُرَآءُ مِنِّي وَالَّذِي يَحْلِفُ بِهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
عُمَرَ لَوْ أَنَّ لأَحَدِهِمْ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فَأَنْفَقَهُ مَا قَبِلَهُ
اللَّهُ مِنْهُ حَتَّى يُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ ثُمَّ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ
الْخَطَّابِ قَالَ بَيْنَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ
طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعْرِ
لاَ يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ وَلاَ نَعْرِفُهُ حَتَّى جَلَسَ إِلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ
وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخِذَيْهِ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنِ
الإِسْلاَمِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الإِسْلاَمُ
أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ
الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلاً " . قَالَ صَدَقْتَ .
قَالَ فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُ . قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ
الإِيمَانِ . قَالَ " أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ
وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ
وَشَرِّهِ " . قَالَ صَدَقْتَ . قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الإِحْسَانِ
قَالَ " أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ
تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ " . قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ .
قَالَ " مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ " .
قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَاتِهَا . قَالَ " أَنْ تَلِدَ الأَمَةُ
رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ
يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ " . قَالَ ثُمَّ انْطَلَقَ فَلَبِثْتُ
ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ " يَا عُمَرُ هَلْ تَدْرِي مَنِ السَّائِلُ "
. قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّهُ جِبْرِيلُ
أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُمْ " .
ইয়াহ্ইয়া ইবনু
ইয়া'মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাসরাহ্তে
সর্বপ্রথম তাক্বদীর সম্বন্ধে বিতর্ক সৃষ্টি করে মা'বাদ আল্-জুহানী। আমি ও হুমাইদ
ইবনু 'আবদুর রহমান আল্-হিমাইয়ারী হাজ্জ অথবা 'উমরাহ করতে গেলাম। আমরা বললাম, যদি
আমারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন সাহাবীর সাক্ষাৎ পাই
তাহলে আমরা এসব লোক ত্বাকদীর সম্পর্কে যা বলে সে সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করবো। অতঃপর
আল্লাহ্ আমাদেরকে 'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) -এর সাক্ষাৎ লাভে সাহায্য করলেন,
যিনি মাসজিদে প্রবেশ করেছিলেন। আমি ও আমার সাথী তাকে ঘিরে বসলাম। আমি চিন্তা করলাম
যে, আমার সাথী কথা বলার দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত করবেন। আমি বললাম, হে 'আবদুর
রহমানের পিতা! আমাদের এখানে কিছু সংখ্যক লোকের আত্নপ্রকাশ ঘটেছে যারা কুরআন পড়ে,
জ্ঞানচর্চা ও বিতর্কও করে এবং মত পোষণ করে যে, তাক্বদীর বলতে কিছু নেই এবং প্রতিটি
বিষয় পূর্ব সিদ্ধান্ত ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটছে। তিনি বললেন, তুমি ঐসব লোকের
সাক্ষাত পেলে তাদেরকে সংবাদ দিবে যে, আমি তাদের সাথে সম্পর্কহীন আর তারাও আমার হতে
বিচ্ছিন্ন। বিশেষ করে 'আবদুল্লাহ কসম করে বলেন, “তাদের কারো যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ
স্বর্ণ থাকে এবং তা দান করে দেয়, তবুও তাক্বদীরের উপর ঈমান আনার পূর্ব পর্যন্ত
আল্লাহ তাদের এ দান কবুল করবেন না।”
অতঃপর তিনি বলেন, 'উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, একদা আমরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, তখন ধবধবে
সাদা কাপড় পরিহিত ও মিশমিশে কালো চুলধারী এক ব্যক্তি আমাদের নিকট আসলেন। তার মধ্যে
ভ্রমণের কোন চিহ্ন দেখা যাচ্ছিলো না, আবার আমাদের মধ্যকার কেউ তাকে চিনতেও পারছে
না। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বসলেন। অতঃপর
তাঁর (নাবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) দুই হাঁটুর সঙ্গে নিজের দুই হাঁটু
মিশিয়ে এবং নিজের দু’হাত তাঁর উরুর উপর রেখে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম
সম্বন্ধে বলুন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইসলাম হলো এ
সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁর রাসূল, সলাত ক্বায়িম করবে, যাকাত দিবে, রমযানের সিয়াম পালন করবে
এবং বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ করবে যদি সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য থাকে। তিনি বললেন, ঠিক
বলেছেন। তিনি ('উমার) বলেন, তার আচরণ আমরা বিস্মিত হলাম কারণ, তিনি প্রশ্ন করছেন
আবার নিজেই তার সমর্থন করছেন। পুনরায় তিনি বলেন, আমাকে বলুন ঈমান কি? তিনি বললেন,
আপনি আল্লাহর উপর, ফেরেশতাগণ, কিতাবসমূহে, তাঁর রাসূলগণ, পরকাল ও তাক্বদীরের
ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস করবেন। তিনি বললেন, হাঁ, ঠিক বলেছেন। এবার আমাকে বলুন
ইহসান কি? তিনি বললেন, "আল্লাহর ‘ইবাদত এরূপ নিষ্ঠার সঙ্গে করবেন যেন আপনি
তাঁকে দেখছেন। আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে নাও পান তবুও মনে করবেন যে, তিনি আপনাকে
দেখছেন। অতঃপর তিনি বললেন, ক্বিয়ামাত কবে হবে তা আমাকে বলুন। তিনি বললেনঃ এ বিষয়ে
যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি প্রশ্নকারীর চেয়ে অধিক জানেন না। তিনি এবার বললেন,
তাহলে ক্বিয়ামাতের নিদর্শনসমূহ বলুন। তিনি বললেন, দাসী আপন মনিবকে জন্ম দিবে এবং
নাঙ্গা পা ওয়ালা বস্ত্রহীন দেহ গরীব মেষ চালকদেরকে দালানকোঠা নিয়ে গর্ব করতে
দেখবে। তিনি ('উমার) বলেন, অতঃপর লোকটি চলে গেলেন এবং এরপর আমি তিন দিন কাটালাম।
অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, হে 'উমার! তুমি কি
জানো, প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বলেন,
তিনি হচ্ছেন জিবরীল (আঃ), তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিখানোর জন্য তোমাদের নিকট
এসেছিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৯৬
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ غِيَاثٍ، قَالَ حَدَّثَنِي
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، وَحُمَيْدِ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ لَقِينَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ فَذَكَرْنَا لَهُ
الْقَدَرَ وَمَا يَقُولُونَ فِيهِ فَذَكَرَ نَحْوَهُ زَادَ قَالَ وَسَأَلَهُ
رَجُلٌ مِنْ مُزَيْنَةَ أَوْ جُهَيْنَةَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِيمَا
نَعْمَلُ أَفِي شَىْءٍ قَدْ خَلاَ أَوْ مَضَى أَوْ شَىْءٍ يُسْتَأْنَفُ الآنَ
قَالَ " فِي شَىْءٍ قَدْ خَلاَ وَمَضَى " . فَقَالَ الرَّجُلُ
أَوْ بَعْضُ الْقَوْمِ فَفِيمَ الْعَمَلُ قَالَ " إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ
يُيَسَّرُونَ لِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنَّ أَهْلَ النَّارِ يُيَسَّرُونَ
لِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ " .
ইয়াহ্ইয়া ইবনু
ইয়া'মুর ও হুমাইদ ইবনু 'আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা উভয়ে বলেন, একদা আমরা 'আবদুল্লাহ ইবনু
'উমার (রাঃ) -এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে তাক্বদীর ও এ বিষয়ে সমালোচনাকারীদের
বক্তব্যও তুলে ধরি। অতঃপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। এতে আরো রয়েছেঃ তিনি বলেন,
মুযাইনাহ বা জুহাইনাহ গোত্রের এক ব্যক্তি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা যা করি তা
কি পূর্ব নির্ধারিত অনুযায়ী করি, না স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটে থাকে? তিনি (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমাদের আমল পূর্ব-নির্ধারিত। তখন লোকটি বা উপস্থিত
লোকদের কেউ বললো, তাহলে আমাদের আমলের মূল্য কি? তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ জান্নাতীদের জন্য জান্নাতের উপযোগী আমল করা সহজ করে দেয়া হয় এবং
জাহান্নামীদের জন্য জাহান্নামের উপযোগী আমল করা সহজ করে দেয়া হয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৯৭
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا الْفِرْيَابِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ
حَدَّثَنَا عَلْقَمَةُ بْنُ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنِ
ابْنِ يَعْمَرَ، بِهَذَا الْحَدِيثِ يَزِيدُ وَيَنْقُصُ قَالَ فَمَا الإِسْلاَمُ
قَالَ " إِقَامُ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ وَحَجُّ الْبَيْتِ
وَصَوْمُ شَهْرِ رَمَضَانَ وَالاِغْتِسَالُ مِنَ الْجَنَابَةِ " . قَالَ
أَبُو دَاوُدَ عَلْقَمَةُ مُرْجِئٌ .
ইবনু ইয়া’মুর (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু ইয়া’মুর (রাঃ) সূত্রে এ হাদিস কম-বেশি
বক্তব্যসহ বর্ণিত হয়েছে। তিনি বললেন, ইসলাম কি? তিনি (রাঃ) বললেন, সলাত কায়িম করা,
যাকাত দেয়া, বায়তুল্লাহর হাজ্জ করা, রমযান মাসের সওম রাখা এবং জানাবাতের গোসল করা।
ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘আলক্বামাহ ইবনু মারসাদ হলেন মুরজিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৯৮
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَبِي فَرْوَةَ
الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي
ذَرٍّ، وَأَبِي، هُرَيْرَةَ قَالاَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَجْلِسُ بَيْنَ ظَهْرَىْ أَصْحَابِهِ فَيَجِيءُ الْغَرِيبُ فَلاَ يَدْرِي
أَيُّهُمْ هُوَ حَتَّى يَسْأَلَ فَطَلَبْنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم أَنْ نَجْعَلَ لَهُ مَجْلِسًا يَعْرِفُهُ الْغَرِيبُ إِذَا أَتَاهُ - قَالَ -
فَبَنَيْنَا لَهُ دُكَّانًا مِنْ طِينٍ فَجَلَسَ عَلَيْهِ وَكُنَّا نَجْلِسُ
بِجَنْبَتَيْهِ وَذَكَرَ نَحْوَ هَذَا الْخَبَرِ فَأَقْبَلَ رَجُلٌ فَذَكَرَ
هَيْئَتَهُ حَتَّى سَلَّمَ مِنْ طَرْفِ السِّمَاطِ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكَ
يَا مُحَمَّدُ . قَالَ فَرَدَّ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ যার ও আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা উভয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে সাধারণত সাহাবীদের মধ্যেই বসতেন। ফলে কোন অপরিচিত
ব্যক্তি আসলে প্রশ্ন না করা পর্যন্ত বলতে পারতেন না যে, কোন ব্যক্তিটি নবী
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। অতএব আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আবেদন করলাম যে, আমরা তাঁর জন্য একটা বিশেষ স্থান নির্দিষ্ট
করবো যেন আগন্তুকরা দেখেই তাঁকে চিনতে পারে। বর্ণনাকারী বলেন, সুতরাং আমরা তাঁর
জন্য মাটি দিয়ে একটি বসার স্থান বানালাম এবং তিনি তার উপর বসলেন আর আমরা তাঁর
নিকটে বসলাম। অতঃপর বর্ণনাকারী অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এমন সময় এক
ব্যক্তি এসে উপস্থিত হলো। বর্ণনাকারী তার দৈহিক গঠনেরও বর্ণনা দিলেন। সে উপস্থিত
জনতার এক প্রান্ত হতে সালাম দিলো। সে বললো, হে মুহাম্মাদ! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত
হোক। বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সালামের জবাব
দিলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬৯৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي سِنَانٍ، عَنْ وَهْبِ
بْنِ خَالِدٍ الْحِمْصِيِّ، عَنِ ابْنِ الدَّيْلَمِيِّ، قَالَ أَتَيْتُ أُبَىَّ
بْنَ كَعْبٍ فَقُلْتُ لَهُ وَقَعَ فِي نَفْسِي شَىْءٌ مِنَ الْقَدَرِ فَحَدِّثْنِي
بِشَىْءٍ لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يُذْهِبَهُ مِنْ قَلْبِي . فَقَالَ لَوْ أَنَّ
اللَّهَ عَذَّبَ أَهْلَ سَمَوَاتِهِ وَأَهْلَ أَرْضِهِ عَذَّبَهُمْ وَهُوَ غَيْرُ
ظَالِمٍ لَهُمْ وَلَوْ رَحِمَهُمْ كَانَتْ رَحْمَتُهُ خَيْرًا لَهُمْ مِنْ
أَعْمَالِهِمْ وَلَوْ أَنْفَقْتَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا
قَبِلَهُ اللَّهُ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ وَتَعْلَمَ أَنَّ مَا
أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَأَنَّ مَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ
لِيُصِيبَكَ وَلَوْ مُتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا لَدَخَلْتَ النَّارَ . قَالَ ثُمَّ
أَتَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ فَقَالَ مِثْلَ ذَلِكَ - قَالَ - ثُمَّ
أَتَيْتُ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ فَقَالَ مِثْلَ ذَلِكَ - قَالَ - ثُمَّ
أَتَيْتُ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ فَحَدَّثَنِي عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
مِثْلَ ذَلِكَ .
আবূ 'আবদুল্লাহ
ইবনুল দায়লামী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) -এর নিকট
এসে তাকে বললাম, তাক্বদীর সম্পর্কে আমার মনে একটা দ্বিধার উদ্রেক হয়েছে। তাই আপনি
আমাকে এমন কিছু বলুন যার বিনিময়ে আশা করি মহান আল্লাহ আমার মনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব
দূর করবেন। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ তাঁর আসমান ও পৃথিবীবাসী সকলকে শাস্তি দিতে
পারেন। তারপরও তিনি তাদের প্রতি অন্যায়কারী সাব্যস্ত হবেন না। পক্ষান্তরে, তিনি
যদি তাদের সকলকে দয়া করেন তাহলে তাঁর এ দয়া তাদের জন্য তাদের নেক আমল হতে উত্তম
হবে। সুতরাং যদি তুমি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর পথে দান করো আর তাক্বদীরে
বিশ্বাস না রাখো, তবে তা গ্রহণ করা হবে না যতক্ষণ না তুমি পুনরায় তাক্বদীরে
বিশ্বাস করবে এবং উপলব্ধি করবে যে, যা তোমার ঘটেছে তা ভুলেও তোমাকে এড়িয়ে যাওয়ার
ছিল না। পক্ষান্তরে, যা এগিয়ে গেছে তা কখনো ভুলেও তোমার বেলায় ঘটবার ছিল না। আর এ
বিশ্বাস ছাড়া তুমি মারা গেলে জাহান্নামে যাবে। ইবনুদ দায়লামী বলেন, অতঃপর আমি
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) -এর নিকট গিয়ে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উদ্বৃতি দিয়ে একই কথা বলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০০
حَدَّثَنَا
جَعْفَرُ بْنُ مُسَافِرٍ الْهُذَلِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ،
حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ رَبَاحٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ أَبِي عَبْلَةَ، عَنْ
أَبِي حَفْصَةَ، قَالَ قَالَ عُبَادَةُ بْنُ الصَّامِتِ لاِبْنِهِ يَا بُنَىَّ
إِنَّكَ لَنْ تَجِدَ طَعْمَ حَقِيقَةِ الإِيمَانِ حَتَّى تَعْلَمَ أَنَّ مَا
أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَمَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ أَوَّلَ مَا
خَلَقَ اللَّهُ الْقَلَمَ فَقَالَ لَهُ اكْتُبْ . قَالَ رَبِّ وَمَاذَا أَكْتُبُ
قَالَ اكْتُبْ مَقَادِيرَ كُلِّ شَىْءٍ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ " .
يَا بُنَىَّ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ "
مَنْ مَاتَ عَلَى غَيْرِ هَذَا فَلَيْسَ مِنِّي " .
আবূ হাফসাহ (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা ‘উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ) তার
ছেলেকে বললেন, হে আমার প্রিয় পুত্র! তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত ঈমানের স্বাদ পাবে
না যতক্ষণ না তুমি জানতে পারবে “যা তোমার উপর ঘটেছে তা ভুলেও এড়িয়ে যাওয়ার ছিল না।
পক্ষান্তরে, যা এড়িয়ে গেছে তা তোমার উপর ভুলেও ঘটবার ছিল না। আমি রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম যে
বস্তু সৃষ্টি করেছেন তা হচ্ছে কলম। অতঃপর তিনি তাকে বললেন, লিখো! কলম বললো, হে
রব! কি লিখবো? তিনি বললেন, ক্বিয়ামাত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক বস্তুর
তাক্বদীর লিখো। হে আমার প্রিয় পুত্র! আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি এরূপ বিশ্বাস ছাড়া মারা যায় সে আমার
(উম্মাতের) নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০১
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، -
الْمَعْنَى - قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
دِينَارٍ، سَمِعَ طَاوُسًا، يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يُخْبِرُ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " احْتَجَّ آدَمُ وَمُوسَى فَقَالَ
مُوسَى يَا آدَمُ أَنْتَ أَبُونَا خَيَّبْتَنَا وَأَخْرَجْتَنَا مِنَ الْجَنَّةِ
. فَقَالَ آدَمُ أَنْتَ مُوسَى اصْطَفَاكَ اللَّهُ بِكَلاَمِهِ وَخَطَّ لَكَ
التَّوْرَاةَ بِيَدِهِ تَلُومُنِي عَلَى أَمْرٍ قَدَّرَهُ عَلَىَّ قَبْلَ أَنْ
يَخْلُقَنِي بِأَرْبَعِينَ سَنَةً فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى " . قَالَ
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ طَاوُسٍ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
আদম (আঃ) ও মূসা (আঃ) পরস্পর বিতর্কে প্রবৃত্ত হলেন। মূসা (আঃ) বললেন, হে আদম!
আপনি আমাদের পিতা, আপনি আমাদেরকে জান্নাত হতে বঞ্চিত ও বিতাড়িত করেছেন। আদম (আঃ)
বললেন, তুমি তো সেই মূসা, আল্লাহ তোমাকে তাঁর কালামের জন্য মনোনীত করেছেন এবং নিজ
হাতে তোমার জন্য তাওরাত লিখে দিয়েছেন। তুমি আমাকে এমন একটি কাজের জন্য তিরস্কার
করছো যা আমি করবো বলে আমার সৃষ্টির চল্লিশ বছর পূর্বে তিনি সিদ্ধান্ত করে রেখেছেন।
অতএব, এ বিতর্কে আদম (আঃ) মূসা (আঃ)-এর উপর বিজয়ী হলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০২
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي هِشَامُ
بْنُ سَعْدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ
الْخَطَّابِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ
مُوسَى قَالَ يَا رَبِّ أَرِنَا آدَمَ الَّذِي أَخْرَجَنَا وَنَفْسَهُ مِنَ
الْجَنَّةِ فَأَرَاهُ اللَّهُ آدَمَ فَقَالَ أَنْتَ أَبُونَا آدَمُ فَقَالَ لَهُ
آدَمُ نَعَمْ . قَالَ أَنْتَ الَّذِي نَفَخَ اللَّهُ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ
وَعَلَّمَكَ الأَسْمَاءَ كُلَّهَا وَأَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ فَسَجَدُوا لَكَ قَالَ
نَعَمْ . قَالَ فَمَا حَمَلَكَ عَلَى أَنْ أَخْرَجْتَنَا وَنَفْسَكَ مِنَ
الْجَنَّةِ فَقَالَ لَهُ آدَمُ وَمَنْ أَنْتَ قَالَ أَنَا مُوسَى . قَالَ أَنْتَ
نَبِيُّ بَنِي إِسْرَائِيلَ الَّذِي كَلَّمَكَ اللَّهُ مِنْ وَرَاءِ الْحِجَابِ
لَمْ يَجْعَلْ بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ رَسُولاً مِنْ خَلْقِهِ قَالَ نَعَمْ . قَالَ
أَفَمَا وَجَدْتَ أَنَّ ذَلِكَ كَانَ فِي كِتَابِ اللَّهِ قَبْلَ أَنْ أُخْلَقَ
قَالَ نَعَمْ . قَالَ فَفِيمَ تَلُومُنِي فِي شَىْءٍ سَبَقَ مِنَ اللَّهِ
تَعَالَى فِيهِ الْقَضَاءُ قَبْلِي " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ " فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى
" .
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ মূসা (আঃ) বললেন, হে রব! যে আদম (আঃ) আমাদেরকে ও তাঁর নিজেকে জান্নাত হতে
বিতাড়িত করেছেন, তাঁকে আমি দেখতে চাই। অতঃপর মহান আল্লাহ তাঁকে আদম (আঃ)-কে
দেখালেন। তিনি বললেন, আপনিই আমাদের পিতা আদম (আঃ)? আদম (আঃ) তাঁকে বললেন, হ্যাঁ।
অতঃপর তিনি বললেন, আপনি সেই মহান ব্যক্তি যাঁর মধ্যে মহান আল্লাহ তাঁর পক্ষ হতে
রূহ সঞ্চার করেছেন এবং আপনাকে সকল কিছুর নাম শিখিয়েছেন, আর ফেরেশতাদেরকে হুকুম
দিলে তারা আপনাকে সাজদাহ্ করেছেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি পুনরায় বললেন, আমাদেরকে
ও আপনার নিজেকে জান্নাত হতে বহিষ্কার করার জন্য আপনাকে কোন বস্তু উদ্বুদ্ধ করেছিল?
এবার আদম (আঃ) বললেন, তুমি কে? তিনি বললেন, আমি মূসা (আঃ)। তিনি বললেন, তুমি বনী
ইসরাঈলের এমন একজন নবী যাঁর সাথে আল্লাহ পর্দার অন্তরাল হতে কথা বলেছেন এবং তোমার ও তাঁর মাঝে সৃষ্টি জগতের
কাউকে বার্তাবাহক হিসেবে গ্রহণ করেননি। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তুমি কি
আল্লাহর কিতাবে দেখতে পাওনি যে, সেটি নির্ধারিত ছিল আমাকে সৃষ্টি করার পূর্বেই?
তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, যে বিষয়ে মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত আমার পূর্ব হতেই
লিপিবদ্ধ সে ব্যাপারে আমাকে কেন অভিযুক্ত করছো? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সুতরাং এ বিতর্কে আদম (আঃ) মূসা (আঃ)-এর উপর জয়ী হলেন।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৭০৩
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ،
أَنَّ عَبْدَ الْحَمِيدِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْخَطَّابِ،
أَخْبَرَهُ عَنْ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ
الْخَطَّابِ، سُئِلَ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ، { وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي
آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ } قَالَ قَرَأَ الْقَعْنَبِيُّ الآيَةَ . فَقَالَ
عُمَرُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْهَا فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ خَلَقَ
آدَمَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ بِيَمِينِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ
خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ لِلْجَنَّةِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ يَعْمَلُونَ ثُمَّ
مَسَحَ ظَهْرَهُ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقْتُ هَؤُلاَءِ
لِلنَّارِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ يَعْمَلُونَ " . فَقَالَ رَجُلٌ
يَا رَسُولَ اللَّهِ فَفِيمَ الْعَمَلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلْجَنَّةِ
اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ
أَعْمَالِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيُدْخِلَهُ بِهِ الْجَنَّةَ وَإِذَا خَلَقَ
الْعَبْدَ لِلنَّارِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى
عَمَلٍ مِنْ أَعْمَالِ أَهْلِ النَّارِ فَيُدْخِلَهُ بِهِ النَّارَ " .
মুসলিম ইবনু ইয়াসার
আল্-জুহানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা ‘উমার ইবনুল
খাত্তাব (রাঃ) -কে এ আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলোঃ “যখন তোমার রব আদম সন্তানের
পিঠ হতে তাদের সমস্ত সন্তানদেরকে বের করলেন...” (সূরাহ আল-আ’রাফঃ ১৭২)। বর্ণনাকারী
বলেন, আল্-কা’নাবী এ আয়াত পড়েছিলেন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি এ সম্পর্কে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ আদম (আঃ)-কে
সৃষ্টি করার পর স্বীয় ডান হাতে তাঁর পিঠ বুলিয়ে তা থেকে তাঁর একদল সন্তান বের করে
বললেন, আমি এদেরকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেছি এবং এরা জান্নাতবাসীর উপযোগী কাজই
করবে। অতঃপর আবার তাঁর পিঠে হাত বুলিয়ে একদল সন্তান বের করিয়ে বললেন, এদেরকে আমি
জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি এবং এরা জাহান্নামীদের উপযোগী কাজই করবে। একথা শুনে
এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! তাহলে আমলের কি মূল্য রইলো? রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, মহান আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে জান্নাতের
জন্য সৃষ্টি করেন তখন তার দ্বারা জান্নাতীদের কাজই করিয়ে নেন। শেষে সে জান্নাতীদের
কাজ করেই মারা যায়। আর আল্লাহ এর বিনিময়ে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর যখন তিনি
কোন বান্দাকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেন, তখন তার দ্বারা জাহান্নামীদের কাজ
করিয়ে নেন। অবশেষে সে জাহান্নামীদের কাজ করে মারা যায়। অতঃপর এজন্য তিনি তাকে
জাহান্নামে প্রবেশ করান।
সহীহ, পিঠ বুলানো কথাটি বাদে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُصَفَّى، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ
جُعْثُمَ الْقُرَشِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ
عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ
نُعَيْمِ بْنِ رَبِيعَةَ، قَالَ كُنْتُ عِنْدَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ بِهَذَا
الْحَدِيثِ وَحَدِيثُ مَالِكٍ أَتَمُّ .
নু’আইম ইবনু রবী’আহ
(রহঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি
‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। অতঃপর অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। তবে
ইমাম মালিক (রহঃ) বর্ণিত হাদীস অধিক পূর্ণাঙ্গ। [৪৭০৩]
আমি এটি সহীহ এবং যঈফে পাইনি।
[৪৭০৩]
তিরমিযী।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৪৭০৫
حَدَّثَنَا
الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رَقَبَةَ بْنِ
مَصْقَلَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم " الْغُلاَمُ الَّذِي قَتَلَهُ الْخَضِرُ طُبِعَ كَافِرًا وَلَوْ
عَاشَ لأَرْهَقَ أَبَوَيْهِ طُغْيَانًا وَكُفْرًا " .
উবাই ইবনু কা’ব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ছেলেটিকে খাদির (খিযির) হত্যা করেছিলেন, তাকে কাফির
হিসেবেই সীলমোহর করা হয়েছিল। সে বেঁচে থাকলে তার পিতা-মাতাকে সীমালঙ্ঘন ও কুফরীর
দ্বারা বিব্রত করতো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০৬
حَدَّثَنَا
مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا الْفِرْيَابِيُّ، عَنْ إِسْرَائِيلَ،
حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ حَدَّثَنَا أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ فِي قَوْلِهِ { وَأَمَّا الْغُلاَمُ فَكَانَ أَبَوَاهُ
مُؤْمِنَيْنِ } " وَكَانَ طُبِعَ يَوْمَ طُبِعَ كَافِرًا " .
উবাই ইবনু কা’ব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে বলতে শুনেছিঃ “আর কিশোরটি, যার মাতা-পিতা ছিল
মু’মিন” (সূরাহ কাহ্ফঃ ৮০), যেদিন মোহর মারা হয়েছিল সেদিন তাকে কাফির হিসেবেই
সীলমোহর মারা হয়েছিল।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ،
عَنْ عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنِي
أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ "
أَبْصَرَ الْخَضِرُ غُلاَمًا يَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ فَتَنَاوَلَ رَأْسَهُ
فَقَلَعَهُ فَقَالَ مُوسَى { أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً } " .
الآيَةَ .
উবাই ইবনু কা’ব
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ খালিদ (খিযির) একটি কিশোরকে বালকদের সঙ্গে খেলাধূলারত দেখতে পেলেন। অতঃপর
তিনি তার মাথা ধরে কাবু করে তাকে হত্যা করলেন। তখন মূসা (আঃ) বললেনঃ আপনি এক
নিষ্পাপ জীবন হত্যা করলেন...” (সূরা কাহ্ফঃ ৭৪)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০৮
حَدَّثَنَا
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ النَّمَرِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، - الْمَعْنَى وَاحِدٌ وَالإِخْبَارُ فِي
حَدِيثِ سُفْيَانَ - عَنِ الأَعْمَشِ قَالَ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ قَالَ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم وَهُوَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ " إِنَّ خَلْقَ أَحَدِكُمْ
يُجْمَعُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ
ذَلِكَ ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ يُبْعَثُ إِلَيْهِ مَلَكٌ
فَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ فَيُكْتَبُ رِزْقُهُ وَأَجَلُهُ وَعَمَلُهُ ثُمَّ
يُكْتَبُ شَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ الرُّوحُ فَإِنَّ أَحَدَكُمْ
لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا
إِلاَّ ذِرَاعٌ أَوْ قِيدُ ذِرَاعٍ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ
بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فَيَدْخُلُهَا وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ
أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ ذِرَاعٌ أَوْ
قِيدُ ذِرَاعٍ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ
الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا " .
আবদুল্লাহ ইবনু
মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদের নিকট বর্ণনা করেনঃ তিনি তো ছিলেন সত্যবাদী ও সত্যবাদী বলে স্বীকৃত। তোমাদের
প্রত্যেকের সৃষ্টি চল্লিশ দিন তার মায়ের গর্ভে শুক্ররূপে থাকে, অতঃপর চল্লিশ দিন
রক্তপিন্ডরূপে বিরাজ করে; তারপর চল্লিশ দিনে মাংসপিন্ডরূপ ধারণ করে। অতঃপর মহান
আল্লাহ তার নিকট একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন এবং তাকে চারটি বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়।
তখন সে তার রিযিক, মৃত্যু, আমল এবং সে নেককার নাকি বদকার তাও লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর
তার মধ্যে রূহ প্রবেশ করানো হয়। বস্তুত, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ জান্নাতের উপযোগী
কাজ করতে থাকে। এমনকি তার ও জান্নাতের মধ্যে মাত্র এক হাত বা এক হাত পরিমাণ দূরত্ব
থাকে, এমন সময় তার সামনে তার তাক্বদীরের লেখা অগ্রবর্তী হয়, তখন সে জাহান্নামীদের
কাজ করে, ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আবার তোমাদের কেউ জাহান্নামীদের কাজ করতে
থাকে, এমনকি তার ও জাহান্নামের মধ্যে মাত্র এক হাত বা এক হাত পরিমাণ দূরত্ব থাকে।
এমন সময় তার সামনে সে লেখা অগ্রবর্তী হয় এবং সে জান্নাতীদের আমল করে, ফলে সে
জান্নাতে প্রবেশ করে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭০৯
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ يَزِيدَ الرِّشْكِ، قَالَ
حَدَّثَنَا مُطَرِّفٌ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعُلِمَ أَهْلُ الْجَنَّةِ مِنْ
أَهْلِ النَّارِ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَ فَفِيمَ يَعْمَلُ
الْعَامِلُونَ قَالَ " كُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ " .
ইমরান ইবনু হুসাইন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলো, হে আল্লাহর রাসূল! কে জান্নাতবাসী আর কে
জাহান্নামবাসী তা কি জানা গেছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। প্রশ্নকারী বললো, তাহলে কিসের
জন্য আমলকারীরা আমল করবে? তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
প্রত্যেকের জন্য তাই সহজতর যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭১০
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ
أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ
حَدَّثَنِي عَطَاءُ بْنُ دِينَارٍ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ شَرِيكٍ الْهُذَلِيِّ، عَنْ
يَحْيَى بْنِ مَيْمُونٍ الْحَضْرَمِيِّ، عَنْ رَبِيعَةَ الْجُرَشِيِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " لاَ تُجَالِسُوا أَهْلَ الْقَدَرِ وَلاَ تُفَاتِحُوهُمْ "
.
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যারা তাক্বদীরে বিশ্বাস করে না তোমরা তাদের সঙ্গে
ওঠা-বসা করো না এবং তোমাদেরকে সম্বোধন করার আগে তাদেরকে সম্বোধন করো না। [৪৭০৯]
দুর্বলঃ মিশকাত হা/১০৮।
[৪৭০৯]
আহমাদ, হাকিম।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৮
মুশরিকদের শিশু
সন্তান সম্পর্কে
৪৭১১
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ
جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْ
أَوْلاَدِ الْمُشْرِكِينَ فَقَالَ " اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا
عَامِلِينَ " .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
মুশরিকদের (নাবালেগ) শিশু সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহই অধিক জ্ঞাত,
তারা (বেঁচে থাকলে) কিরূপ আমল করতো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭১২
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ نَجْدَةَ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، ح وَحَدَّثَنَا مُوسَى
بْنُ مَرْوَانَ الرَّقِّيُّ، وَكَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمَذْحِجِيُّ، قَالاَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، - الْمَعْنَى - عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَيْسٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ ذَرَارِيُّ الْمُؤْمِنِينَ فَقَالَ " هُمْ مِنْ آبَائِهِمْ
" . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ بِلاَ عَمَلٍ قَالَ " اللَّهُ
أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
فَذَرَارِيُّ الْمُشْرِكِينَ قَالَ " مِنْ آبَائِهِمْ " . قُلْتُ
بِلاَ عَمَلٍ قَالَ " اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ "
.
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল!
মু’মিনদের শিশু সন্তানদের কি হবে? তিনি বললেন, তারা তাদের পিতাদের অন্তর্ভূক্ত
হবে। অতঃপর বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কোন নেক আমল ছাড়াই? তিনি বললেন, আল্লাহই অধিক
জ্ঞাত, তারা কি আমল করতো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মুশরিকদের সন্তানদের কি
হবে? তিনি বললেন, তারাও তাদের পিতাদের অন্তর্গত হবে। আমি বললাম, কোন আমল ছাড়াই?
তিনি বললেন, আল্লাহই অধিক জ্ঞাত, তারা (বেঁচে থাকলে) কিরূপ আমল করতো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭১৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنْ
عَائِشَةَ بِنْتِ طَلْحَةَ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، قَالَتْ أُتِيَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِصَبِيٍّ مِنَ الأَنْصَارِ يُصَلِّي عَلَيْهِ
قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ طُوبَى لِهَذَا لَمْ يَعْمَلْ شَرًّا وَلَمْ
يَدْرِ بِهِ . فَقَالَ " أَوَغَيْرَ ذَلِكَ يَا عَائِشَةُ إِنَّ اللَّهَ
خَلَقَ الْجَنَّةَ وَخَلَقَ لَهَا أَهْلاً وَخَلَقَهَا لَهُمْ وَهُمْ فِي
أَصْلاَبِ آبَائِهِمْ وَخَلَقَ النَّارَ وَخَلَقَ لَهَا أَهْلاً وَخَلَقَهَا
لَهُمْ وَهُمْ فِي أَصْلاَبِ آبَائِهِمْ " .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর নিকট জানাযার সালাতের জন্য এক আনসারী বালকের লাশ আনা হলো। ‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এর কি সৌভাগ্য সে কোন গুনাহ করেনি
এবং তার বয়সও পায়নি। তিনি বললেন, হে ‘আয়িশাহ! এর বিপরীত কি হতে পারে না? মহান
আল্লাহ জান্নাত ও তার অধিবাসীদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তা যখন তাদের জন্য সৃষ্টি
করেছেন, তখন তারা তাদের পিতাদের মেরুদন্ডে ছিল। আবার তিনি জাহান্নাম ও তার জন্য
একদল ভুক্তভোগী সৃষ্টি করেছেন এবং তা তাদের জন্য যখন তিনি সৃষ্টি করেছেন তখন তারা
তাদের পিতাদের মেরুদন্ডে ছিল।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭১৪
حَدَّثَنَا
الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كُلُّ
مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ
كَمَا تَنَاتَجُ الإِبِلُ مِنْ بَهِيمَةٍ جَمْعَاءَ هَلْ تُحِسُّ مِنْ جَدْعَاءَ
" . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَرَأَيْتَ مَنْ يَمُوتُ وَهُوَ
صَغِيرٌ قَالَ " اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি সন্তানই ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার
পিতামাতা তাদেরকে ইয়াহুদী বা খৃস্টান বানায়। যেভাবে উট পূর্ণাঙ্গ পশুই জন্ম দেয়,
তাতে তোমরা কোন কান কাটা দেখো কি? সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! অপ্রাপ্ত
বয়সে মারা যায় এমন শিশু সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি বলেন, আল্লাহই ভালো জানেন,
তারা কিরূপ আমল করতো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭১৫
قَالَ
أَبُو دَاوُدَ قُرِئَ عَلَى الْحَارِثِ بْنِ مِسْكِينٍ وَأَنَا أَسْمَعُ،
أَخْبَرَكَ يُوسُفُ بْنُ عَمْرٍو، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ
مَالِكًا، قِيلَ لَهُ إِنَّ أَهْلَ الأَهْوَاءِ يَحْتَجُّونَ عَلَيْنَا بِهَذَا
الْحَدِيثِ . قَالَ مَالِكٌ احْتَجَّ عَلَيْهِمْ بِآخِرِهِ . قَالُوا
أَرَأَيْتَ مَنْ يَمُوتُ وَهُوَ صَغِيرٌ قَالَ " اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا
كَانُوا عَامِلِينَ " .
ইবনু ওয়াহ্ব (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আমি ইমাম মালিক (রহঃ) -এর নিকট বলতে শুনেছি
প্রবৃত্তির পূজারীরা আমাদের বিরুদ্ধে উপরোক্ত হাদীস দলীল হিসেবে পেশ করে থাকে।
তারা বলে যে, নাবালেগ অবস্থায় মারা গেছে এমন সন্তান সম্পর্কে আপনার মতামত কি? তিনি
বলেনঃ তারা কিরূপ আমল করতো তা আল্লাহ্ই ভালো জানেন।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৭১৬
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ الْمِنْهَالِ، قَالَ سَمِعْتُ
حَمَّادَ بْنَ سَلَمَةَ، يُفَسِّرُ حَدِيثَ " كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ
عَلَى الْفِطْرَةِ " . قَالَ هَذَا عِنْدَنَا حَيْثُ أَخَذَ اللَّهُ
عَلَيْهِمُ الْعَهْدَ فِي أَصْلاَبِ آبَائِهِمْ حَيْثُ قَالَ { أَلَسْتُ
بِرَبِّكُمْ قَالُوا بَلَى } .
হাজ্জাজ ইবনুল
মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি হাম্মাদ ইবনু সালাম (রাঃ) -কে “প্রত্যেক
সন্তান ফিতরাতের (সত্য ধর্মের) উপর জন্মগ্রহণ করে”-এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলতে
শুনেছিঃ এটা আমাদের নিকট সেই ওয়াদা যা পিতার মেরুদন্ডে অবস্থানকালে আল্লাহ তাদের
কাছ থেকে ওয়াদা গ্রহণকালে বলেছিলেনঃ আমি কি তোমাদের রব নই? তারা বলেছিল, হ্যাঁ।
হাদিসের মানঃসহিহ মাকতু
৪৭১৭
حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، قَالَ
حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَامِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" الْوَائِدَةُ وَالْمَوْءُودَةُ فِي النَّارِ " . قَالَ يَحْيَى
بْنُ زَكَرِيَّا قَالَ أَبِي فَحَدَّثَنِي أَبُو إِسْحَاقَ أَنَّ عَامِرًا
حَدَّثَهُ بِذَلِكَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم .
আমির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ) বলেছেনঃ যে মহিলা তার কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবরস্হ করেছে এবং যে
কন্যা সন্তানকে জীবন্ত প্রোথিত করা হয়েছে তারা উভয়ে জাহান্নামী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭১৮
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ
رَجُلاً، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيْنَ أَبِي قَالَ " أَبُوكَ فِي
النَّارِ " . فَلَمَّا قَفَّى قَالَ " إِنَّ أَبِي وَأَبَاكَ فِي
النَّارِ " .
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
একদা এক ব্যাক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসুল! আমার
পিতা কোথায়? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা জাহান্নামে। অতঃপর যখন সে পিঠ ফিরিয়ে চলে যেতে
লাগলো তখন তিনি বললেন, তোমার পিতা ও আমার পিতা জাহান্নামে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭১৯
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ
الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنِ ابْنِ آدَمَ مَجْرَى الدَّمِ " .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শয়তান আদম সন্তানের শিরা-উপশিরায় রক্তের ন্যায় প্রবাহিত হয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭২০
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الْهَمْدَانِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ
أَخْبَرَنِي ابْنُ لَهِيعَةَ، وَعَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، وَسَعِيدُ بْنُ أَبِي
أَيُّوبَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ شَرِيكٍ الْهُذَلِيِّ،
عَنْ يَحْيَى بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ رَبِيعَةَ الْجُرَشِيِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " لاَ تُجَالِسُوا أَهْلَ الْقَدَرِ وَلاَ تُفَاتِحُوهُمُ
الْحَدِيثَ " .
উমার ইবনুল খাত্তাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যারা তাক্বদীরে বিশ্বাস করে না তোমরা তাদের সঙ্গে
ওঠা-বসা করবে না এবং তোমাদেরকে সন্মোধন করার আগে তাদেরকে সম্বোধন করবে না। [৪৭১৯]
দুর্বল।
[৪৭১৯]
এটি গত হয়েছে হা/৪৭১০।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯
জাহমিয়্যাহ সম্প্রদায়
সম্পর্কে
৪৭২১
حَدَّثَنَا
هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ
يَزَالُ النَّاسُ يَتَسَاءَلُونَ حَتَّى يُقَالَ هَذَا خَلَقَ اللَّهُ الْخَلْقَ
فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ فَمَنْ وَجَدَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَلْيَقُلْ آمَنْتُ
بِاللَّهِ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ পরস্পর প্রশ্ন করতে থাকে, এমনকি শেষ পর্যন্ত বলে ফেলে
যে, আল্লাহ তো সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? যখনই কেউ
এরূপ কিছু অনুভব করবে তখন সে যেন বলে, আমি আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭২২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا سَلَمَةُ، - يَعْنِي ابْنَ الْفَضْلِ - قَالَ
حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ - قَالَ حَدَّثَنِي عُتْبَةُ
بْنُ مُسْلِمٍ، مَوْلَى بَنِي تَيْمٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم يَقُولُ فَذَكَرَ نَحْوَهُ قَالَ " فَإِذَا قَالُوا ذَلِكَ
فَقُولُوا { اللَّهُ أَحَدٌ * اللَّهُ الصَّمَدُ * لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ *
وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ } ثُمَّ لْيَتْفُلْ عَنْ يَسَارِهِ ثَلاَثًا
وَلْيَسْتَعِذْ مِنَ الشَّيْطَانِ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। অতঃপর উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ। তিনি বলেন, যখন তারা
এরূপ কথা বলবে তখন তোমরা বলো, আল্লাহ একক, আল্লাহ অভাবমুক্ত, তিনি কাউকে জন্ম
দেননি এবং তিনি কারো সন্তান নন। আর কেউই তাঁর সঙ্গে তুলনাযোগ্য নয়। অতঃপর যেন
বামদিকে তিনবার থুথু ফেলে এবং শয়তানের (কুমন্ত্রণা) থেকে আশ্রয় চায়।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৭২৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّازُ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ أَبِي
ثَوْرٍ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمِيرَةَ، عَنِ الأَحْنَفِ بْنِ
قَيْسٍ، عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، قَالَ كُنْتُ فِي
الْبَطْحَاءِ فِي عِصَابَةٍ فِيهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَرَّتْ
بِهِمْ سَحَابَةٌ فَنَظَرَ إِلَيْهَا فَقَالَ " مَا تُسَمُّونَ هَذِهِ
" . قَالُوا السَّحَابَ . قَالَ " وَالْمُزْنَ " .
قَالُوا وَالْمُزْنَ . قَالَ " وَالْعَنَانَ " . قَالُوا
وَالْعَنَانَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ لَمْ أُتْقِنِ الْعَنَانَ جَيِّدًا قَالَ
" هَلْ تَدْرُونَ مَا بُعْدُ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ "
. قَالُوا لاَ نَدْرِي . قَالَ " إِنَّ بُعْدَ مَا بَيْنَهُمَا إِمَّا
وَاحِدَةٌ أَوِ اثْنَتَانِ أَوْ ثَلاَثٌ وَسَبْعُونَ سَنَةً ثُمَّ السَّمَاءُ
فَوْقَهَا كَذَلِكَ " . حَتَّى عَدَّ سَبْعَ سَمَوَاتٍ " ثُمَّ
فَوْقَ السَّابِعَةِ بَحْرٌ بَيْنَ أَسْفَلِهِ وَأَعْلاَهُ مِثْلُ مَا بَيْنَ
سَمَاءٍ إِلَى سَمَاءٍ ثُمَّ فَوْقَ ذَلِكَ ثَمَانِيَةُ أَوْعَالٍ بَيْنَ أَظْلاَفِهِمْ
وَرُكَبِهِمْ مِثْلُ مَا بَيْنَ سَمَاءٍ إِلَى سَمَاءٍ ثُمَّ عَلَى ظُهُورِهِمُ
الْعَرْشُ بَيْنَ أَسْفَلِهِ وَأَعْلاَهُ مِثْلُ مَا بَيْنَ سَمَاءٍ إِلَى سَمَاءٍ
ثُمَّ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى فَوْقَ ذَلِكَ " .
আবদুল মুত্তালিবে
পুত্র ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদল
লোকের সঙ্গে আল্-বাতহা উপত্যকায় ছিলাম, সেখানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ও ছিলেন। তাদের মাথার উপর দিয়ে একখন্ড মেঘ উড়ে গেলো। তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটির দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমরা একে কি বলো?
সাহাবীগণ বললেন, মেঘ (সাহাব)। তিনি বললেন, ‘আল্-মুয্ন’? তারা বললেন, এবং মুয্নও
(সাদা মেঘ)। তিনি বললেন, আল ‘আল্-আনান’? তারা বললেন, আল্-আনানও। ইমাম আবূ দাঊদ
(রহঃ) বলেন, ‘আনান’ শব্দটি আমি ভালোভাবে মুখস্ত করতে পারিনি। তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা কি জানো, আসমান ও যমীনের মাঝে কতটুকু দূরত্ব?
তারা বললেন, না। তিনি বললেন, উভয়ের মধ্যকার দূরত্বের পরিমাণ হলো একাত্তর বা
বায়াত্তর বা তিয়াত্তর বছরের সমান। তারপর এর মতই দুরত্বে প্রথম আসমান, এভাবে পরপর
সাতটি আসমানের দূরত্ব নির্দেশ করলেন। অতঃপর সপ্তম আসমানের উপরে একটি সমুদ্র রয়েছে
যার উপর ও নীচের মধ্যকার গভীরতা আসমান ও যমীনের মধ্যকার দূরত্বের সমান। এর উপরে
আটটি পাহাড়িঁ ছাগল রয়েছে যার ক্ষুর ও হাঁটুর মধ্যকার দূরত্ব আসমান ও যমীনের
মধ্যকার দুরত্বের সমান। তারপর এদের পিঠের উপরে রয়েছে মহান আরশ যার উপর ও নীচের
মধ্যকার দূরত্বও আসমান ও যমীনের মধ্যকার দুরত্বের সমান। অতঃপর আর উপর রয়েছেন
বরকতময় মহান আল্লাহ। [৪৭২২]
দুর্বল।
[৪৭২২]
ইবনু মাজাহ, আহমাদ। আহমাদ শাকির বলেনঃ এর সানাদ খুবই দুর্বল। সানাদে রয়েছে ইয়াহইয়া
ইবনুল ’আলা। হাফিয বলেনঃ তার ওপর হাদীস জাল করার আরোপ আছে।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৭২৪
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ أَبِي سُرَيْجٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ
أَبِي قَيْسٍ، عَنْ سِمَاكٍ، بِإِسْنَادِهِ وَمَعْنَاهُ .
সিমাক (রহঃ) সূত্র
থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে পূর্বোক্ত হাদীসের অর্থানুরূপ বর্ণিত।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৪৭২৫
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ
طَهْمَانَ، عَنْ سِمَاكٍ، بِإِسْنَادِهِ وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ الطَّوِيلِ .
সিমাক (রহঃ) সূত্র
থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে উপর্রোক্ত দীর্ঘ হাদীসের অর্থানুরূপ
বর্ণিত।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৪৭২৬
حَدَّثَنَا
عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ
بَشَّارٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الرِّبَاطِيُّ، قَالُوا حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ
جَرِيرٍ، - قَالَ أَحْمَدُ كَتَبْنَاهُ مِنْ نُسْخَتِهِ وَهَذَا لَفْظُهُ - قَالَ
حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْحَاقَ يُحَدِّثُ عَنْ
يَعْقُوبَ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ
مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ جُهِدَتِ الأَنْفُسُ وَضَاعَتِ
الْعِيَالُ وَنُهِكَتِ الأَمْوَالُ وَهَلَكَتِ الأَنْعَامُ فَاسْتَسْقِ اللَّهَ
لَنَا فَإِنَّا نَسْتَشْفِعُ بِكَ عَلَى اللَّهِ وَنَسْتَشْفِعُ بِاللَّهِ
عَلَيْكَ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَيْحَكَ أَتَدْرِي
مَا تَقُولُ " وَسَبَّحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَا زَالَ
يُسَبِّحُ حَتَّى عُرِفَ ذَلِكَ فِي وُجُوهِ أَصْحَابِهِ ثُمَّ قَالَ "
وَيْحَكَ إِنَّهُ لاَ يُسْتَشْفَعُ بِاللَّهِ عَلَى أَحَدٍ مِنْ خَلْقِهِ شَأْنُ
اللَّهِ أَعْظَمُ مِنْ ذَلِكَ وَيْحَكَ أَتَدْرِي مَا اللَّهُ إِنَّ عَرْشَهُ
عَلَى سَمَوَاتِهِ لَهَكَذَا " . وَقَالَ بِأَصَابِعِهِ مِثْلَ
الْقُبَّةِ عَلَيْهِ " وَإِنَّهُ لَيَئِطُّ بِهِ أَطِيطَ الرَّحْلِ
بِالرَّاكِبِ " . قَالَ ابْنُ بَشَّارٍ فِي حَدِيثِهِ " إِنَّ
اللَّهَ فَوْقَ عَرْشِهِ وَعَرْشُهُ فَوْقَ سَمَوَاتِهِ " . وَسَاقَ
الْحَدِيثَ وَقَالَ عَبْدُ الأَعْلَى وَابْنُ الْمُثَنَّى وَابْنُ بَشَّارٍ عَنْ
يَعْقُوبَ بْنِ عُتْبَةَ وَجُبَيْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ
عَنْ جَدِّهِ قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَالْحَدِيثُ بِإِسْنَادِ أَحْمَدَ بْنِ سَعِيدٍ
هُوَ الصَّحِيحُ وَافَقَهُ عَلَيْهِ جَمَاعَةٌ مِنْهُمْ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ
وَعَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ وَرَوَاهُ جَمَاعَةٌ عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ كَمَا
قَالَ أَحْمَدُ أَيْضًا وَكَانَ سَمَاعُ عَبْدِ الأَعْلَى وَابْنِ الْمُثَنَّى
وَابْنِ بَشَّارٍ مِنْ نُسْخَةٍ وَاحِدَةٍ فِيمَا بَلَغَنِي .
জুবাইর ইবনু
মুহাম্মাদ ইবনু জুবাইর ইবনু মুত্বঈম তার পিতা হতে তার দাদা সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক বেদুঈন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল!
লোকজন খুবই কষ্ট করছে, পরিবার-পরিজন, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, ধন-সম্পদ হ্রাস
পাচ্ছে এবং জীবজন্তু মরে যাচ্ছে। সুতরাং, আপনি আমাদের জন্য মহান আল্লাহ্র নিকট
বৃষ্টি প্রার্থনা করুন। কেননা, আমরা আপনার সুপারিশ নিয়ে আল্লাহ্র নিকট যাই এবং
আল্লাহ্র সুপারিশ নিয়ে আপনার নিকট আসি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়! তুমি কি জানো! তুমি কি বলছো? অতঃপর তিনি
তাসবীহ পড়তে থাকলেন, এমনকি তাঁর সাহাবীদের মধ্যেও এর (অসন্তুষ্টির) চিহ্ন
পরিলক্ষিত হলো। তিনি আবার বললেন, তোমার জন্য দুঃখ হয়! আল্লাহ্র সুপারিশ নিয়ে তাঁর
কোনো সৃষ্টির নিকট যাওয়া যায় না। আল্লাহ্র মর্যাদা এর চেয়ে অনেক ঊর্ধে, অনেক
মহান। তোমার জন্য দুঃখ হয়! তুমি কি জানো আল্লাহ কে? তাঁর আরশ আসমানের উপর এভাবে
আছে। তিনি আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বললেন, তাঁর উপর রয়েছে গম্বুজ সদৃশ ছাদ। তা সত্ত্বেও
তা (আরশ) তাঁকে নিয়ে গোঙ্গানীর মত শব্দ করে, যেমনটি করে আরোহীর কারণে জিনপোষ। ইবনু
বাশ্শার তার হাদীসে বলেন, মহান আল্লাহ তাঁর আরশের উপরে এবং তার আরশ আসমানসমূহের
উপরে। অতঃপর হাদীসটি এভাবেই বর্ণিত হয়েছে। [৪৭২৫]
দূর্বলঃ মিশকাত হা/৫৭২৭।
[৪৭২৫]
ইবনু আবূ ‘আসিম ‘আস-সুন্নাহ’ এবং ইবনু খুযাইমাহ আত-তাওহীদ।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৭২৭
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ حَفْصِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ،
حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " أُذِنَ لِي أَنْ أُحَدِّثَ عَنْ مَلَكٍ مِنْ
مَلاَئِكَةِ اللَّهِ مِنْ حَمَلَةِ الْعَرْشِ إِنَّ مَا بَيْنَ شَحْمَةِ أُذُنِهِ
إِلَى عَاتِقِهِ مَسِيرَةُ سَبْعِمِائَةِ عَامٍ " .
জাবির ইবনু
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ আল্লাহ্র যে সকল ফেরেশতা আরশ বহন করেন তাদের একজনের সঙ্গে আলাপ করার জন্য
আমাকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তার কানের লতি হতে কাঁধ পর্যন্ত স্থানের দূরত্ব হলো
সাতশো বছরের দূরত্বের সমান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭২৮
حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ نَصْرٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يُونُسَ النَّسَائِيُّ، - الْمَعْنَى -
قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا
حَرْمَلَةُ، - يَعْنِي ابْنَ عِمْرَانَ - حَدَّثَنِي أَبُو يُونُسَ، سُلَيْمُ بْنُ
جُبَيْرٍ مَوْلَى أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقْرَأُ
هَذِهِ الآيَةَ { إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الأَمَانَاتِ إِلَى
أَهْلِهَا } إِلَى قَوْلِهِ تَعَالَى { سَمِيعًا بَصِيرًا } قَالَ رَأَيْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَضَعُ إِبْهَامَهُ عَلَى أُذُنِهِ وَالَّتِي
تَلِيهَا عَلَى عَيْنِهِ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ . رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقْرَؤُهَا وَيَضَعُ إِصْبَعَيْهِ قَالَ ابْنُ يُونُسَ قَالَ
الْمُقْرِئُ يَعْنِي { إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ } يَعْنِي أَنَّ لِلَّهِ
سَمْعًا وَبَصَرًا . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا رَدٌّ عَلَى الْجَهْمِيَّةِ
.
আবূ হুরায়রা
(রাঃ)-এর মুক্তদাস আবূ ইউনুস সুলাইম ইবনু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) -কে এ আয়াতটি
পড়তে শুনেছিঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আমানতসমূহ তার প্রাপকের নিকট পৌঁছিয়ে দিতে
আদেশ করছেন,... আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা” (সূরাহ আন-নিসাঃ ৫৮) পর্যন্ত।
আবূ হুরায়রা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর
বৃদ্ধা আঙ্গুলকে কানে এবং তর্জনীকে দুই চোখের উপর রাখতে দেখেছি। আবূ হুরায়রা (রাঃ)
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আয়াতটি) পড়তে দেখেছি
এবং তাঁর আঙ্গুল দুটি রাখতে দেখেছি। ইবনু ইউনুস বলেন, আল-মুকরী বলেছেন, অর্থাৎ
“আল্লাহ নিশ্চয়ই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা” -এর অর্থ হলো আল্লাহ্র শ্রবণশক্তি ও দর্শনশক্তি
আছে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এতে জাহমিয়াদের মতবাদ বাতিল হয়ে যায়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২০
আল্লাহ্র দর্শন লাভ
৪৭২৯
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، وَوَكِيعٌ، وَأَبُو أُسَامَةَ
عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ
جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم جُلُوسًا فَنَظَرَ إِلَى الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْلَةَ أَرْبَعَ
عَشْرَةَ فَقَالَ " إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا
لاَ تُضَامُّونَ فِي رُؤْيَتِهِ فَإِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لاَ تُغْلَبُوا عَلَى
صَلاَةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا فَافْعَلُوا " .
ثُمَّ قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ { فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ
الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا }
জারীর ইবনু
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি চৌদ্দ তারিখের রাতে পূর্ণিমার
চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, অচিরেই তোমরা তোমাদের রবকে দেখতে পাবে যেমন তোমরা এ
চাঁদকে দেখছো, আর একে দেখতে তোমাদের কোন অসুবিধা হচ্ছে না। যদি তোমরা সূর্যোদয়ের ও
সূর্যাস্তের পূর্বে সলাত আদায়ে পরাভূত না হও তাহলে তা আদায় করে নাও। অতঃপর তিনি এ
আয়াত পাঠ করলেনঃ “সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার রবের প্রশংসাসহ তাসবীহ পাঠ
করো”।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৩০
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي
صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يُحَدِّثُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ
قَالَ نَاسٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ
" هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ فِي الظَّهِيرَةِ لَيْسَتْ فِي
سَحَابَةٍ " . قَالُوا لاَ . قَالَ " هَلْ تُضَارُّونَ فِي
رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ فِي سَحَابَةٍ " . قَالُوا
لاَ . قَالَ " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تُضَارُّونَ فِي
رُؤْيَتِهِ إِلاَّ كَمَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল!
আমরা কি ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহকে দেখতে পাবো? তিনি বললেন, মেঘহীন দুপুরে তোমাদের
কি সূর্য দেখতে কষ্ট হয়? সাহাবীগন বললেন, না। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, মেঘহীন
নির্মল আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তারা বললেন, না।
তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সেই, মহান সত্ত্বার কসম যাঁর হাতে
আমার জীবন! তোমরা এর একটি (চাঁদ বা সূর্য) যেভাবে নির্বিঘ্নে দেখতে পাও সেভাবে
তাঁকেও তোমরা দেখবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৩১
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ
بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، - الْمَعْنَى - عَنْ
يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ وَكِيعٍ، - قَالَ مُوسَى - ابْنُ عُدُسٍ عَنْ أَبِي
رَزِينٍ، - قَالَ مُوسَى الْعُقَيْلِيُّ - قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَكُلُّنَا يَرَى رَبَّهُ قَالَ ابْنُ مُعَاذٍ مُخْلِيًا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
وَمَا آيَةُ ذَلِكَ فِي خَلْقِهِ قَالَ " يَا أَبَا رَزِينٍ أَلَيْسَ
كُلُّكُمْ يَرَى الْقَمَرَ " . قَالَ ابْنُ مُعَاذٍ " لَيْلَةَ
الْبَدْرِ مُخْلِيًا بِهِ " . ثُمَّ اتَّفَقَا قُلْتُ بَلَى . قَالَ
" فَاللَّهُ أَعْظَمُ " . قَالَ ابْنُ مُعَاذٍ قَالَ "
فَإِنَّمَا هُوَ خَلْقٌ مِنْ خَلْقِ اللَّهِ فَاللَّهُ أَجَلُّ وَأَعْظَمُ "
.
আবূ রাযীন (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি বললাম, হে আল্লাহ্র
রাসূল! আমাদের প্রত্যেকেই কি ক্বিয়ামাতের দিন তার রবকে দেখতে পাবে? তাঁর সৃষ্টির
মাঝে এর কোন নিদর্শন আছে কি? তিনি বললেন, হে আবূ রাযীন! তোমাদের প্রত্যেকে কি
পূর্ণিমা রাতের চাঁদ দেখে না (অর্থাৎ চৌদ্দ তারিখে নির্মল আকাশে)? তিনি বলেন,
হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে আল্লাহ তো মহান। ইবনু মু‘আস বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তা (চাঁদ) তো আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যকার একটি
সৃষ্টি। আর আল্লাহ তো মহিমান্বিত ও সুমহান।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২১
জাহ্মিয়্যাহ মতবাদ
প্রত্যাখ্যাত
৪৭৩২
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، أَنَّ أَبَا
أُسَامَةَ، أَخْبَرَهُمْ عَنْ عُمَرَ بْنِ حَمْزَةَ، قَالَ قَالَ سَالِمٌ
أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " يَطْوِي اللَّهُ السَّمَوَاتِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثُمَّ
يَأْخُذُهُنَّ بِيَدِهِ الْيُمْنَى ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ
الْجَبَّارُونَ أَيْنَ الْمُتَكَبِّرُونَ ثُمَّ يَطْوِي الأَرَضِينَ ثُمَّ
يَأْخُذُهُنَّ " . قَالَ ابْنُ الْعَلاَءِ " بِيَدِهِ الأُخْرَى ثُمَّ
يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ الْجَبَّارُونَ أَيْنَ الْمُتَكَبِّرُونَ "
.
আবদুল্লাহ ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন আসমানসমূহকে গুটিয়ে তাঁর ডান হাতে
নিয়ে বলবেন, আমিই সর্বময়কর্তা ও মালিক, স্বৈরাচারীরা ও অহংকারীরা কোথায়? অতঃপর
পৃথিবীসমূহকে গুটিয়ে অপর হাতে নিয়ে বলবেন, আমিই মালিক স্বৈরাচারীরা ও অহংকারীরা
কোথায়?
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৩৩
حَدَّثَنَا
الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَعَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ
رَبُّنَا كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ
الآخِرِ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي
فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ রাতের এক-তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে আমাদের মহান রব দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে
এসে বলতে থাকেনঃ ওহে কে আছো আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিবো, কে আছো আমার
নিকট কিছু চাইবে, আমি তাকে তা দিবো, কে আছো আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি
তাকে ক্ষমা করে দিবো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২২
আল-কুরআন সম্পর্কে
৪৭৩৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ
الْمُغِيرَةِ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْرِضُ نَفْسَهُ عَلَى النَّاسِ فِي
الْمَوْقِفِ فَقَالَ " أَلاَ رَجُلٌ يَحْمِلُنِي إِلَى قَوْمِهِ فَإِنَّ
قُرَيْشًا قَدْ مَنَعُونِي أَنْ أُبَلِّغَ كَلاَمَ رَبِّي " .
জাবির ইবনু
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মানুষ একত্রিত হওয়ার স্থানে (আরাফাহ
ময়দানে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের সামনে নিজেকে পেশ
করে বলতেনঃ এমন কোন ব্যক্তি আছে কি যে আমাকে তার গোত্রের কাছে নিয়ে যাবে? কেননা
কুরাইশ গোত্রের লোকেরা আমাকে আমার রবের বাণী পৌঁছিয়ে দিতে বাধার সৃষ্টি করছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৩৫
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْمَهْرِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ،
قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي
عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، وَسَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَعَلْقَمَةُ بْنُ
وَقَّاصٍ، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ حَدِيثِ، عَائِشَةَ
وَكُلٌّ حَدَّثَنِي طَائِفَةً، مِنَ الْحَدِيثِ قَالَتْ وَلَشَأْنِي فِي نَفْسِي
كَانَ أَحْقَرَ مِنْ أَنْ يَتَكَلَّمَ اللَّهُ فِيَّ بِأَمْرٍ يُتْلَى .
আমির ইবনু শাহর
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাজ্জাশীর নিকট উপস্থিত ছিলাম।
তখন তার এক ছেলে ইনজীলের একটি আয়াত পড়লে আমি হাসলাম। তিনি বললেন, তুমি কি মহান
আল্লাহর বাণী শুনে হাসছো!
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৩৬
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْمَهْرِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ،
قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي
عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، وَسَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَعَلْقَمَةُ بْنُ
وَقَّاصٍ، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ حَدِيثِ، عَائِشَةَ
وَكُلٌّ حَدَّثَنِي طَائِفَةً، مِنَ الْحَدِيثِ قَالَتْ وَلَشَأْنِي فِي نَفْسِي
كَانَ أَحْقَرَ مِنْ أَنْ يَتَكَلَّمَ اللَّهُ فِيَّ بِأَمْرٍ يُتْلَى .
ইবনু শিহাব (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
আমাকে ‘উরওয়াহ ইবনুয যুবাইর, সাঈদ ইবনুল
মুসাইয়াব, ‘আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস ও ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ‘আয়িশাহ
(রাঃ)-এর হাদীস সম্পর্কে জানিয়েছে যে, তিনি বলেছেন, আমি নিজেকে এই পর্যায়ের মনে
করতাম না যে, মহান আল্লাহ আমার সম্পর্কে এমন কথা বলবেন যা তিলাওয়াত করা হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৩৭
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ
الْمِنْهَالِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعَوِّذُ الْحَسَنَ وَالْحُسَيْنَ
: " أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ
وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ " . ثُمَّ يَقُولُ : "
كَانَ أَبُوكُمْ يُعَوِّذُ بِهِمَا إِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ " . قَالَ
أَبُو دَاوُدَ : هَذَا دَلِيلٌ عَلَى أَنَّ الْقُرْآنَ لَيْسَ بِمَخْلُوقٍ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হাসান ও হুসাইন (রাঃ)-এর জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করতেন এভাবে : “আমি তোমাদের
দু’জনের জন্য আল্লাহ্র পূর্ণাঙ্গ কালেমাসমূহের মাধ্যমে প্রত্যেক শয়তান ও বিষাক্ত
প্রাণী হতে এবং সকল প্রকার বদনজর হতে মুক্তি চাইছি”। অতঃপর তিনি বলতেন, তোমাদের
পিতা (ইবরাহীম আঃ)-ও ইসমাঈল এবং ইসহাক্ব (আঃ) উভয়ের জন্য এ দু’আ পড়ে আশ্রয় চাইতেন।
ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এতে প্রমাণিত হয় যে, আল-কুরআন মাখলুক নয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৩৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ أَبِي سُرَيْجٍ الرَّازِيُّ، وَعَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ
إِبْرَاهِيمَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ،
حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ مُسْلِمٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : " إِذَا تَكَلَّمَ
اللَّهُ بِالْوَحْىِ سَمِعَ أَهْلُ السَّمَاءِ لِلسَّمَاءِ صَلْصَلَةً كَجَرِّ
السِّلْسِلَةِ عَلَى الصَّفَا فَيُصْعَقُونَ، فَلاَ يَزَالُونَ كَذَلِكَ حَتَّى
يَأْتِيَهُمْ جِبْرِيلُ حَتَّى إِذَا جَاءَهُمْ جِبْرِيلُ فُزِّعَ عَنْ
قُلُوبِهِمْ " . قَالَ : " فَيَقُولُونَ : يَا جِبْرِيلُ
مَاذَا قَالَ رَبُّكَ فَيَقُولُ : الْحَقَّ فَيَقُولُونَ : الْحَقَّ الْحَقَّ
" .
আবদুল্লাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন মহান আল্লাহ্ ওয়াহী প্রেরণের কথা বলেন, তখন এক আকাশের
অধিবাসীগণ অন্য আকাশ হতে সাফা পর্বতের উপর দিয়ে শিকল টানার শব্দের মতই শব্দ শুনতে
পায়। আর আওয়াজ শুনে তারা বেহুঁশ হয়ে যায় এবং জিবরীল (আঃ) তাদের নিকট উপস্থিত হলে
তাদের অন্তর হতে ভয় বিদূরিত হয়ে তারা হুঁশ ফিরে পায়। অতঃপর তারা বলে, হে জিবরীল!
আপনার রব কী বলেছেন? তিনি বলেন, যা সত্য তাই বলেছেন। তখন তারা বলে, সত্যই বলেছেন,
সত্যই বলেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৩
শাফা‘আত সম্পর্কে
৪৭৩৯
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا بِسْطَامُ بْنُ حُرَيْثٍ، عَنْ أَشْعَثَ
الْحُدَّانِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ : " شَفَاعَتِي لأَهْلِ الْكَبَائِرِ مِنْ أُمَّتِي " .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
আমার উম্মাতের কবীরাহ গুনাহগারদের জন্য আমার শাফা‘আত।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৪০
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ ذَكْوَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو
رَجَاءٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ : " يَخْرُجُ قَوْمٌ مِنَ النَّارِ بِشَفَاعَةِ
مُحَمَّدٍ فَيَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَيُسَمَّوْنَ الْجَهَنَّمِيِّينَ "
.
ইমরান ইবনু হুসাইন
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
আমার উম্মাতের একটি গোত্র আমার শাফা‘আত পেয়ে জাহান্নাম হতে মুক্তি লাভ করে বেরিয়ে
আসবে, অতঃপর তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর তাদেরকে জাহান্নামের অধিবাসী নামেই
আখ্যায়িত করা হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৪১
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي
سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
: " إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ يَأْكُلُونَ فِيهَا وَيَشْرَبُونَ "
.
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : জান্নাতের অধিবাসীরা সেখানে পানাহার করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৪
পুনরুত্থান ও শিঙ্গায়
ফুৎকারের বর্ণনা
৪৭৪২
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي قَالَ، حَدَّثَنَا
أَسْلَمُ، عَنْ بِشْرِ بْنِ شَغَافٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : " الصُّورُ قَرْنٌ يُنْفَخُ
فِيهِ " .
আবদুল্লাহ ইবনু
‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
সূর একটি শিং-এর ন্যায়, তাতে ফুঁ দেয়া হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৪৩
حَدَّثَنَا
الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ : "
كُلَّ ابْنِ آدَمَ تَأْكُلُ الأَرْضُ إِلاَّ عَجْبَ الذَّنَبِ، مِنْهُ خُلِقَ
وَفِيهِ يُرَكَّبُ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি আদম সন্তানকে মাটি খেয়ে ফেলবে, শুধু মেরুদন্ডের নীচের
হাড়টুকু বাকী থাকবে। এ হতেই তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ হতেই তাকে পুনর্গঠন করা
হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৫
জান্নাত ও জাহান্নাম
সৃষ্টি সম্পর্কে
৪৭৪৪
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو،
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ : " لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الْجَنَّةَ قَالَ لِجِبْرِيلَ :
اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا . فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ
: أَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لاَ يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ إِلاَّ دَخَلَهَا ثُمَّ
حَفَّهَا بِالْمَكَارِهِ ثُمَّ قَالَ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ
إِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ : أَىْ رَبِّ
وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لاَ يَدْخُلَهَا أَحَدٌ " . قَالَ :
" فَلَمَّا خَلَقَ اللَّهُ النَّارَ قَالَ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ
فَانْظُرْ إِلَيْهَا . فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ :
أَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لاَ يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ فَيَدْخُلُهَا فَحَفَّهَا
بِالشَّهَوَاتِ ثُمَّ قَالَ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا .
فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ : أَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ
لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لاَ يَبْقَى أَحَدٌ إِلاَّ دَخَلَهَا " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ্ জান্নাত তৈরি করে জিবরীল (আঃ)-কে আদেশ দিলেন, তুমি
গিয়ে তা দেখে এসো। অতএব তিনি সেখানে গিয়ে তা দেখে এসে বললেন, হে রব! আপনার ইজ্জতের
কসম! এটি সম্পর্কে যে-ই শুনবে সে তাতে প্রবেশ না করে ছাড়বে না। তারপর তিনি
(আল্লাহ্) তাকে কষ্টসাধ্য বিষয়সমূহ দ্বারা বেষ্টিত করে পুনরায় বললেন, হে জিবরীল!
এবার আবার গিয়ে তা দেখে আসো। অতএব তিনি আবার গিয়ে দেখে এসে বললেন, হে রব, আপনার
মর্যাদার কসম! আমার অত্যন্ত ভয় হচ্ছে যে, কেউই তাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তিনি
(রাঃ) বললেন, অতঃপর মহান আল্লাহ্ জাহান্নাম তৈরি করে বললেন, হে জিবরীল! তুমি গিয়ে
তা দেখে এসো। অতএব তিনি তা দেখে এসে বললেন, হে আমার রব! আপনার ইজ্জতের কসম! কেউই
তাতে প্রবেশ করতে চাইবে না। তারপর আল্লাহ্ একে লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা ইত্যাদি
আকর্ষণে আচ্ছাদিত করে পুনরায় জিবরীল (আঃ)-কে বললেন, যাও তা দেখে এসো! তিনি সেখানে
গিয়ে তা দেখে এসে বললেন, হে রব! আপনার মর্যাদার কসম! আমার ভয় হচ্ছে যে, কেউই
অবশিষ্ট থাকবে না, সকলেই তাতে প্রবেশ করবে।
হাদিসের মানঃহাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-২৬
হাওযে কাওসার
সম্পর্কে
৪৭৪৫
حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُسَدَّدٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ،
عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم : " إِنَّ أَمَامَكُمْ حَوْضًا مَا بَيْنَ نَاحِيَتَيْهِ
كَمَا بَيْنَ جَرْبَاءَ وَأَذْرُحَ " .
ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই তোমাদের সামনে যে হাওয্ রয়েছে তার বিস্তৃতি জারবাহ
ও আয্রুহ-এর মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্বের সমান।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৪৬
حَدَّثَنَا
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ النَّمَرِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ
مُرَّةَ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ : كُنَّا مَعَ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلْنَا مَنْزِلاً فَقَالَ : "
مَا أَنْتُمْ جُزْءٌ مِنْ مِائَةِ أَلْفِ جُزْءٍ مِمَّنْ يَرِدُ عَلَىَّ الْحَوْضَ
" . قَالَ قُلْتُ : كَمْ كُنْتُمْ يَوْمَئِذٍ قَالَ : سَبْعَمِائَةٍ
أَوْ ثَمَانَمِائَةٍ .
যায়িদ ইবনু আরক্বাম
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সফরকালে এক জায়গায় যাত্রাবিরতি করলে
তিনি বলেনঃ হাওযে কাওসারে যেসব লোক আমার নিকট উপস্থিত হবে, তাদের তুলনায় তোমরা
তাদের এক লাখ ভাগের এক ভাগ মাত্র। তিনি (বর্ণনাকারী আবূ হামযাহ) বললেন, আমি (যায়িদ
ইবনু আরক্বামকে) বললাম, আপনারা সেখানে তখন কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, সাতশো অথবা
আটশো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৪৭
حَدَّثَنَا
هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنِ الْمُخْتَارِ
بْنِ فُلْفُلٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ : أَغْفَى رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِغْفَاءَةً فَرَفَعَ رَأْسَهُ مُتَبَسِّمًا، فَإِمَّا
قَالَ لَهُمْ وَإِمَّا قَالُوا لَهُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ ضَحِكْتَ
فَقَالَ : " إِنَّهُ أُنْزِلَتْ عَلَىَّ آنِفًا سُورَةٌ " .
فَقَرَأَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ {إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ
الْكَوْثَرَ} حَتَّى خَتَمَهَا فَلَمَّا قَرَأَهَا قَالَ : " هَلْ
تَدْرُونَ مَا الْكَوْثَرُ " . قَالُوا : اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ
. قَالَ : " فَإِنَّهُ نَهْرٌ وَعَدَنِيهِ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ فِي
الْجَنَّةِ، وَعَلَيْهِ خَيْرٌ كَثِيرٌ عَلَيْهِ حَوْضٌ تَرِدُ عَلَيْهِ أُمَّتِي
يَوْمَ الْقِيَامَةِ آنِيَتُهُ عَدَدُ الْكَوَاكِبِ " .
আল-মুখতার ইবনু
ফুলফুল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) -কে বলতে
শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তন্দ্রাচ্ছন্ন হলেন। অতঃপর
মুচকি হেসে মাথা তুলে তিনি তাদেরকে অথবা তাঁকে তারা বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল!
আপনি কেন হাসলেন? তিনি বললেন, এইমাত্র আমার উপর একটি সূরাহ্ নাযিল হয়েছে। অতঃপর
তিনি পড়লেন, পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লাহ্র নামে। “নিশ্চয়ই আমি আপনাকে আল-কাওসার
দান করেছি”। এভাবে তিনি সূরাটি পাঠ শেষ করে বললেন, তোমরা কি জানো কাওসার কী? তারা
বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তা এমন একটি পানির ঝর্ণা যা
আমার রব জান্নাতে সৃষ্টি করে রেখেছেন। তাতে অসংখ্য কল্যাণ বিদ্যমান। তাতে হাওযে
কাওসারও রয়েছে। আমার উম্মাতগণ ক্বিয়ামাতের দিন সেখানে উপস্থিত হবে। এর পানপাত্রের
সংখ্যা হবে (আকাশের) তারকার সমপরিমাণ।
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
৪৭৪৮
حَدَّثَنَا
عَاصِمُ بْنُ النَّضْرِ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي قَالَ،
حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ : لَمَّا عُرِجَ
بِنَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْجَنَّةِ - أَوْ كَمَا قَالَ - عُرِضَ
لَهُ نَهْرٌ حَافَتَاهُ الْيَاقُوتُ الْمُجَيَّبُ أَوْ قَالَ الْمُجَوَّفُ،
فَضَرَبَ الْمَلَكُ الَّذِي مَعَهُ يَدَهُ فَاسْتَخْرَجَ مِسْكًا فَقَالَ
مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم لِلْمَلَكِ الَّذِي مَعَهُ : " مَا هَذَا
" . قَالَ : هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي أَعْطَاكَ اللَّهُ عَزَّ
وَجَلَّ .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মি’রাজের রাতে নবী (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জান্নাতে পরিভ্রমণ করানো হয়। এ সময় তাঁর সামনে একটি নহর
উপস্থিত করা হয় যার উভয় তীর খাঁটি নীলকান্ত মণি দ্বারা সুশোভিত ছিল। যে ফেরেশতা
তাঁর সাথে ছিলেন, তার হাতে আঘাত করলে কস্তুরী বেরিয়ে আসে। অতঃপর মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সফরসঙ্গী ফেরেশতাকে প্রশ্ন করলেন, এটা কি?
তিনি বললেন, এ হলো সেই কাওসার যা মহামহিমান্বিত আল্লাহ আপনাকে দান করেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৪৯
حَدَّثَنَا
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ السَّلاَمِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ
أَبُو طَالُوتَ، قَالَ شَهِدْتُ أَبَا بَرْزَةَ دَخَلَ عَلَى عُبَيْدِ اللَّهِ
بْنِ زِيَادٍ فَحَدَّثَنِي فُلاَنٌ، سَمَّاهُ مُسْلِمٌ وَكَانَ فِي السِّمَاطِ
فَلَمَّا رَآهُ عُبَيْدُ اللَّهِ قَالَ : إِنَّ مُحَمَّدِيَّكُمْ هَذَا
الدَّحْدَاحُ، فَفَهِمَهَا الشَّيْخُ فَقَالَ مَا كُنْتُ أَحْسِبُ أَنِّي أَبْقَى
فِي قَوْمٍ يُعَيِّرُونِي بِصُحْبَةِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُ
عُبَيْدُ اللَّهِ إِنَّ صُحْبَةَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم لَكَ زَيْنٌ غَيْرُ
شَيْنٍ ثُمَّ قَالَ : إِنَّمَا بُعِثْتُ إِلَيْكَ لأَسْأَلَكَ عَنِ الْحَوْضِ
سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ فِيهِ شَيْئًا فَقَالَ
أَبُو بَرْزَةَ : نَعَمْ لاَ مَرَّةً وَلاَ ثِنْتَيْنِ وَلاَ ثَلاَثًا وَلاَ
أَرْبَعًا وَلاَ خَمْسًا، فَمَنْ كَذَّبَ بِهِ فَلاَ سَقَاهُ اللَّهُ مِنْهُ ثُمَّ
خَرَجَ مُغْضَبًا .
‘আবদুস সালাম ইবনু
আবূ হাযিম আবূ তালূত (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবূ বারযাহ (রাঃ) -কে দেখেছি, তিনি
‘উবাইদুল্লাহ ইবনু যিয়াদের সঙ্গে সাক্ষাত করলেন। সেখানে লোকজনের সাথে উপস্থিত
মুসলিম নামীয় এক ব্যক্তি আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করে বলেন, ‘উবাইদুল্লাহ তাঁকে
দেখে বললো, তোমাদের এই বেঁটে ও মাংসল মুহাম্মাদী। শায়খ (আবূ বারযাহ) কথাটি বুঝতে
পারলেন। তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহচর্য লাভকারী
আমার মতো ব্যক্তি এসব লোকের মাঝে অবস্থান করা উচিৎ নয় যারা আমাকে (তাঁর সাহাবী
হওয়ায়) দোষারোপ করে। ‘উবাইদুল্লাহ তাকে বললো, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাহচর্য লাভ তো আপনার জন্য গৌরবের বিষয়, দোষের বিষয় নয়। পুনরায় সে
বললো, আমি আপনার নিকট হাওযে কাওসার সম্পর্কে প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে ডেকে
পাঠিয়েছি। আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ বিষয়ে কিছু
বলতে শুনেছেন? আবূ বারযাহ (রাঃ) বলেন, হ্যাঁ, একবার নয়, দু’বার নয়, তিনবার নয়,
চারবার নয়, পাঁচবার নয় (অনেকবার শুনেছি)। যে ব্যক্তি তা মিথ্যা জানবে তাকে আল্লাহ
তা হতে পান করাবেন না। অতঃপর তিনি রাগান্বিত অবস্থায় চলে গেলেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৭
কবরের জিজ্ঞাসাবাদ
এবং শাস্তি প্রসঙ্গে
৪৭৫০
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ
مَرْثَدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ : " إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا
سُئِلَ فِي الْقَبْرِ فَشَهِدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَلِكَ قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ {
يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ } .
আল-বারাআ ইবনু
‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ নিশ্চয়ই মুসলিম ব্যক্তিকে যখন কবরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তখন সে এ সাক্ষ্য
দেয়, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আল্লাহর রাসূল। এ হচ্ছে আল্লাহ্র এ কালামের অর্থঃ “যারা শাশ্বত বাণীর উপর ঈমান
এনেছে আল্লাহ তাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন......” (সূরাহ ইবরাহীমঃ ২৭)।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৫১
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ
عَطَاءٍ الْخَفَّافُ أَبُو نَصْرٍ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، قَالَ : إِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ نَخْلاً
لِبَنِي النَّجَّارِ فَسَمِعَ صَوْتًا فَفَزِعَ فَقَالَ : " مَنْ
أَصْحَابُ هَذِهِ الْقُبُورِ " . قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ نَاسٌ
مَاتُوا فِي الْجَاهِلِيَّةِ . فَقَالَ : " تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ
عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ " . قَالُوا : وَمِمَّ
ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ : " إِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا وُضِعَ فِي
قَبْرِهِ أَتَاهُ مَلَكٌ فَيَقُولُ لَهُ : مَا كُنْتَ تَعْبُدُ فَإِنِ اللَّهُ
هَدَاهُ قَالَ : كُنْتُ أَعْبُدُ اللَّهَ . فَيُقَالُ لَهُ : مَا كُنْتَ
تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ : هُوَ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ فَمَا
يُسْأَلُ عَنْ شَىْءٍ غَيْرَهَا فَيُنْطَلَقُ بِهِ إِلَى بَيْتٍ كَانَ لَهُ فِي
النَّارِ، فَيُقَالُ لَهُ : هَذَا بَيْتُكَ كَانَ لَكَ فِي النَّارِ وَلَكِنَّ
اللَّهَ عَصَمَكَ وَرَحِمَكَ فَأَبْدَلَكَ بِهِ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ فَيَقُولُ
: دَعُونِي حَتَّى أَذْهَبَ فَأُبَشِّرَ أَهْلِي . فَيُقَالُ لَهُ : اسْكُنْ
. وَإِنَّ الْكَافِرَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ أَتَاهُ مَلَكٌ فَيَنْتَهِرُهُ
فَيَقُولُ لَهُ : مَا كُنْتَ تَعْبُدُ فَيَقُولُ : لاَ أَدْرِي . فَيُقَالُ
لَهُ : لاَ دَرَيْتَ وَلاَ تَلَيْتَ . فَيُقَالُ لَهُ : فَمَا كُنْتَ
تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ : كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ
. فَيَضْرِبُهُ بِمِطْرَاقٍ مِنْ حَدِيدٍ بَيْنَ أُذُنَيْهِ فَيَصِيحُ صَيْحَةً
يَسْمَعُهَا الْخَلْقُ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ " .
আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বনী নাজ্জার গোত্রের একটি খেজুর বাগানে প্রবেশ করে একটা শব্দ শুনে শঙ্কিত
হয়ে প্রশ্ন করলেন, এ কবরগুলো কাদের? তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এরা সেসব লোক
যারা জাহিলী যুগে মারা গেছে। তিনি বললেন, তোমরা আল্লাহর নিকট জাহান্নামের আযাব হতে
ও দাজ্জাল সৃষ্ট বিপর্যয় হতে আশ্রয় চাও। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা কেন?
তিনি বললেন, যখন কোন মু’মিন ব্যক্তিকে তার কবরে রাখা হয় তখন তার নিকট একজন ফেরেশতা
এসে তাকে বলে, তুমি কার ‘ইবাদত করতে? যদি আল্লাহ তাকে পথ দেখান তাহলে সে বলে, আমি
আল্লাহর ‘ইবাদত করতাম। অতঃপর তাকে প্রশ্ন করা হয়, তুমি এ ব্যক্তি ((মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) সম্বন্ধে কি বলতে? সে বলে, তিনি আল্লাহর
বান্দা ও তাঁর রাসূল! এরপর তাকে অন্য প্রশ্ন না করে তাকে নিয়ে এমন একটি ঘরে যাওয়া
হয় যা তার জন্য জাহান্নামে (তৈরি করা) ছিল। অতঃপর তাকে বলা হয়, এটা তোমার ঘর যা
জাহান্নামে তোমার জন্য ছিল। কিন্তু আল্লাহ তোমাকে এ হতে রক্ষা করেছেন এবং দয়া করে
এর পরিবর্তে তোমার জন্য জান্নাতে একটি ঘরের ব্যবস্থা করেছেন। তখন সে বলে, আমাকে
একটু ছেড়ে দিন, আমি আমার পরিবার-পরিজনকে এ সুসংবাদটি দিয়ে আসি। তাকে বলা হবে, তুমি
এখানেই বসবাস করো। পক্ষান্তরে, যখন কোন কাফির ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয় তখন তার নিকট
একজন ফেরেশতা এসে তাকে ধাক্কা দিয়ে বলে, তুমি কার ‘ইবাদত করতে? সে বলে, আমি জানি
না। অতঃপর তাকে বলা হয়, তুমি জানতে চাওনি এবং অনুসরণও করোনি। অতঃপর প্রশ্ন করা হয়,
এ ব্যক্তি ((মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) সম্বন্ধে তুমি কি বলতে?
সে বলবে, অন্যান্য লোক যা বলতো আমিও তাই বলতাম। তখন তার দুই কানের মধ্যস্থলে লোহার
হাতুড়ী দিয়ে সজোরে আঘাত করা হয়। এতে সে এমন জোরে চিৎকার করে যে, মানুষ ও জিন জাতি
ছাড়া অন্য সকল সৃষ্টিজীব তা শুনতে পায়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৫২
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، بِمِثْلِ هَذَا
الإِسْنَادِ نَحْوَهُ قَالَ : " إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي
قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ،
فَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ فَيَقُولاَنِ لَهُ " . فَذَكَرَ قَرِيبًا مِنْ
حَدِيثِ الأَوَّلِ قَالَ فِيهِ : " وَأَمَّا الْكَافِرُ وَالْمُنَافِقُ
فَيَقُولاَنِ لَهُ " . زَادَ : " الْمُنَافِقُ " .
وَقَالَ : " يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ " .
আবদুল ওয়াহ্হাব
(রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। তিনি (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন কোন লোককে কবরে রেখে তার সঙ্গীরা এতটুকু দূরে চলে
যায় যেখান হতে সে তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায় তখন তার নিকট দু’জন ফেরেশতা এসে
বলে... অতঃপর প্রথমোক্ত হাদীসের অনুরূপ। তবে এতে কাফিরের সঙ্গে মুনাফিকের কথাও
রয়েছে এবং বলা হয়েছেঃ আর কাফির ও মুনাফিককে প্রশ্ন করা হবে। তিনি বলেন, মানুষ ও
জিন ছাড়া যারা কবরের নিকট থাকে সকলেই চিৎকার শুনতে পায়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৫৩
حَدَّثَنَا
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ
السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، - وَهَذَا لَفْظُ هَنَّادٍ - عَنِ
الأَعْمَشِ، عَنِ الْمِنْهَالِ، عَنْ زَاذَانَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ
: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي جَنَازَةِ رَجُلٍ مِنَ
الأَنْصَارِ، فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَبْرِ وَلَمَّا يُلْحَدْ، فَجَلَسَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَلَسْنَا حَوْلَهُ كَأَنَّمَا عَلَى رُءُوسِنَا
الطَّيْرُ، وَفِي يَدِهِ عُودٌ يَنْكُتُ بِهِ فِي الأَرْضِ، فَرَفَعَ رَأْسَهُ
فَقَالَ : " اسْتَعِيذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ " .
مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا - زَادَ فِي حَدِيثِ جَرِيرٍ هَا هُنَا - وَقَالَ :
" وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ خَفْقَ نِعَالِهِمْ إِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِينَ
حِينَ يُقَالُ لَهُ : يَا هَذَا مَنْ رَبُّكَ وَمَا دِينُكَ وَمَنْ نَبِيُّكَ
" . قَالَ هَنَّادٌ قَالَ : " وَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ
فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُولاَنِ لَهُ : مَنْ رَبُّكَ فَيَقُولُ : رَبِّيَ
اللَّهُ . فَيَقُولاَنِ لَهُ : مَا دِينُكَ فَيَقُولُ : دِينِي الإِسْلاَمُ
. فَيَقُولاَنِ لَهُ : مَا هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ قَالَ
فَيَقُولُ : هُوَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَيَقُولاَنِ :
وَمَا يُدْرِيكَ فَيَقُولُ : قَرَأْتُ كِتَابَ اللَّهِ فَآمَنْتُ بِهِ
وَصَدَّقْتُ " . زَادَ فِي حَدِيثِ جَرِيرٍ : " فَذَلِكَ قَوْلُ
اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ { يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا } " .
الآيَةَ . ثُمَّ اتَّفَقَا قَالَ : " فَيُنَادِي مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ
: أَنْ قَدْ صَدَقَ عَبْدِي فَأَفْرِشُوهُ مِنَ الْجَنَّةِ، وَافْتَحُوا لَهُ
بَابًا إِلَى الْجَنَّةِ وَأَلْبِسُوهُ مِنَ الْجَنَّةِ " . قَالَ :
" فَيَأْتِيهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيبِهَا " . قَالَ : "
وَيُفْتَحُ لَهُ فِيهَا مَدَّ بَصَرِهِ " . قَالَ : " وَإِنَّ
الْكَافِرَ " . فَذَكَرَ مَوْتَهُ قَالَ : " وَتُعَادُ رُوحُهُ
فِي جَسَدِهِ وَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُولاَنِ : مَنْ
رَبُّكَ فَيَقُولُ : هَاهْ هَاهْ هَاهْ لاَ أَدْرِي . فَيَقُولاَنِ لَهُ :
مَا دِينُكَ فَيَقُولُ : هَاهْ هَاهْ لاَ أَدْرِي . فَيَقُولاَنِ : مَا
هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ فَيَقُولُ : هَاهْ هَاهْ لاَ أَدْرِي
. فَيُنَادِي مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ : أَنْ كَذَبَ فَأَفْرِشُوهُ مِنَ
النَّارِ وَأَلْبِسُوهُ مِنَ النَّارِ، وَافْتَحُوا لَهُ بَابًا إِلَى النَّارِ
" . قَالَ : " فَيَأْتِيهِ مِنْ حَرِّهَا وَسَمُومِهَا "
. قَالَ : " وَيُضَيَّقُ عَلَيْهِ قَبْرُهُ حَتَّى تَخْتَلِفَ فِيهِ
أَضْلاَعُهُ " . زَادَ فِي حَدِيثِ جَرِيرٍ قَالَ : " ثُمَّ يُقَيَّضُ
لَهُ أَعْمَى أَبْكَمُ مَعَهُ مِرْزَبَّةٌ مِنْ حَدِيدٍ، لَوْ ضُرِبَ بِهَا جَبَلٌ
لَصَارَ تُرَابًا " . قَالَ : " فَيَضْرِبُهُ بِهَا ضَرْبَةً
يَسْمَعُهَا مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ إِلاَّ الثَّقَلَيْنِ فَيَصِيرُ
تُرَابًا " . قَالَ : " ثُمَّ تُعَادُ فِيهِ الرُّوحُ "
.
আল-বারাআ ইবনু
‘আবিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আনসার গোত্রের এক
ব্যক্তির জানাজায় শরীক হওয়ার জন্য রওয়ানা হয়ে কবরের নিকট গেলাম। কিন্তু তখনও কবর
খনন শেষ হয়নি। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসলেন এবং আমরাও
তাঁর চারিদিকে নীরবে তাঁকে ঘিরে বসে পড়লাম, যেন আমাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে।
তখন তাঁর হাতে ছিল একখানা লাঠি, তা দিয়ে তিনি মাটিতে আঁচড় কাটছিলেন। অতঃপর তিনি
মাথা তুলে দুই বা তিনবার বললেন, তোমরা আল্লাহর নিকট কবরের আযাব হতে আশ্রয় চাও।
বর্ণনাকারী জারীর তার আরো উল্লেখ করেন, তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, মৃত ব্যক্তি তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায় যখন তারা ফিরে যেতে থাকে, আর তখনই
তাকে বলা হয়, হে অমুক! তোমার রব কে? তোমার দ্বীন কি এবং তোমার নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কে? হান্নাদ (রহঃ) বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, অতঃপর তার নিকট দু’জন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে উভয়ে প্রশ্ন করে, তোমার রব
কে? তখন সে বলে, আমার রব আল্লাহ। তাঁরা উভয়ে তাকে প্রশ্ন করে, তোমার দ্বীন কি? সে
বলে, আমার দ্বীন হলো ইসলাম। তারা প্রশ্ন করে, এ লোকটি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত
হয়েছিলেন, তিনি কে? তিনি বলেন, সে বলে, তিনি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)। তারপর তারা উভয়ে আবার বলে, তুমি কি করে জানতে পারলে? সে বলে, আমি
আল্লাহর কিতাব পড়েছি এবং তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং সত্য বলে স্বীকার করেছি। জারীর
বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ এটাই হলো আল্লাহর এ বাণীর অর্থঃ “যারা এ শাশ্বত বাণীতে ঈমান
এনেছে তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন” (সূরাহ ইবরাহীমঃ ২৭)।
এরপর বর্ণনাকারী জারীর ও হান্নাদ উভয়ে একইরূপ বর্ণনা করেন। নবী (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অতঃপর আকাশ হতে একজন ঘোষক ঘোষণা করেন, আমার বান্দা
যথাযথ বলেছে। সুতরাং, তার জন্য জান্নাতের একটি বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে
জান্নাতের পোষাক পরিয়ে দাও। এছাড়া তার জন্য জান্নাতের দিকে একটা দরজা খুলে দাও।
তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সুতরাং, তার দিকে জান্নাতের
স্নিগ্ধকর হাওয়া ও তার সুগন্ধি বইতে থাকে। তিনি আরো বলেন, ঐ দরজা তার দৃষ্টিসীমা
পর্যন্ত প্রশস্ত করা হয়।
অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফিরদের মৃত্যু প্রসঙ্গে বলেন, তার
রূহকে তার শরীরে ফিরিয়ে আনা হয় এবং দু’জন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে প্রশ্ন করে,
তোমার রব কে? সে উত্তর দেয়, হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর তারা প্রশ্ন করেন,
তোমার দ্বীন কি? সে বলে, হায়! আমি কিছুই জানি না। তারা প্রশ্ন করে, এ লোকটি
তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? সে বলে, হায়! আমি তো জানি না। তখন আকাশের
দিক হতে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন, সে মিথ্যা বলেছে। সুতরাং, তার জন্য
জাহান্নামের একটি বিছানা এনে বিছিয়ে দাও এবং তাকে জাহান্নামের পোষাক পরিয়ে দাও, আর
তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটা দরজা খুলে দাও। তিনি বলেন, অতঃপর তার দিকে
জাহান্নামের উত্তপ্ত বাতাস আসতে থাকে। এছাড়া তার জন্য তার কবরকে সংকীর্ণ করে দেয়া
হয়, ফলে তার এক দিকের পাঁজর অপর দিকের পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যায়। বর্ণনাকারী জারীর
বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, অতঃপর তার
জন্য এক অন্ধ ও বধির ফেরেশতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার সঙ্গে একটি লোহার হাতুড়ী
থাকবে, যদি এ দ্বারা পাহাড়কে আঘাত করা হয় তাহলে তা ধূলায় পরিণত হয়ে যাবে। নবী
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর সে তাকে হাতুড়ী দিয়ে সজোরে আঘাত
করতে থাকে, এতে সে বিকট শব্দে চিৎকার করতে থাকে যা মানুষ ও জিন ছাড়া পূর্ব হতে
পশ্চিম পর্যন্ত সকল সৃষ্টি জীবই শুনতে পায়। আঘাতের ফলে সে মাটিতে মিশে যায়। তিনি
বলেন, অতঃপর (শাস্তি অব্যাহত রাখার জন্য) পুনরায় তাতে রুহ ফেরত দেয়া হয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৫৪
حَدَّثَنَا
هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا
الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا الْمِنْهَالُ، عَنْ أَبِي عُمَرَ، : زَاذَانَ قَالَ
سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَذَكَرَ نَحْوَهُ
.
আল-বারাআ (রাঃ) হতে
নাবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
পূর্বোক্ত হাদীসের
অনুরপ বর্ণিত। [৪৭৫৩]
আমি এটি সহীহ এবং যঈফে পাইনি।
[৪৭৫৩]
এর পূর্বেরটি দেখুন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮
মীযান প্রসঙ্গ
৪৭৫৫
حَدَّثَنَا
يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَحُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، أَنَّ إِسْمَاعِيلَ
بْنَ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ
عَائِشَةَ، : أَنَّهَا ذَكَرَتِ النَّارَ فَبَكَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم : " مَا يُبْكِيكِ " . قَالَتْ : ذَكَرْتُ
النَّارَ فَبَكَيْتُ، فَهَلْ تَذْكُرُونَ أَهْلِيكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : " أَمَّا فِي ثَلاَثَةِ مَوَاطِنَ
فَلاَ يَذْكُرُ أَحَدٌ أَحَدًا : عِنْدَ الْمِيزَانِ حَتَّى يَعْلَمَ أَيَخِفُّ
مِيزَانُهُ أَوْ يَثْقُلُ، وَعِنْدَ الْكِتَابِ حِينَ يُقَالُ { هَاؤُمُ
اقْرَءُوا كِتَابِيَهْ } حَتَّى يَعْلَمَ أَيْنَ يَقَعُ كِتَابُهُ أَفِي
يَمِينِهِ أَمْ فِي شِمَالِهِ أَمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ، وَعِنْدَ الصِّرَاطِ
إِذَا وُضِعَ بَيْنَ ظَهْرَىْ جَهَنَّمَ " . قَالَ يَعْقُوبُ : عَنْ
يُونُسَ وَهَذَا لَفْظُ حَدِيثِهِ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
একদা তিনি
জাহান্নামের কথা স্মরণ করে কাঁদলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কাঁদছো কেন? তিনি বললেন, জাহান্নামের কথা স্মরণ হওয়ায়
কাঁদছি। আপনি কি ক্বিয়ামাতের দিন আপনার পরিবারের কথা মনে রাখবেন? রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ অবশ্য তিনটি স্থান যেখানে কেউ কারো কথা
স্মরণ রাখবে না। মীযানের নিকট, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে জানতে পারবে তার আমলের পরিমাণ
কম হবে নাকি বেশী; আমলনামা প্রাপ্তির স্থান, যখন বলা হবে, “তোমার আমলনামা পাঠ করো”
(সূরাহ আল-হাক্কাহঃ ১৯); কেননা তখন সবাই পেরেশান থাকবে যে, তার আমলনামা ডান হাতে
পাচ্ছে নাকি বাম হাতে পাচ্ছে নাকি পিছন দিক হতে পাচ্ছে; আর পুলসিরাতের নিকট, যখন
তা জাহান্নামের উপর প্রতিষ্ঠিত করা হবে। [৪৭৫৪]
দুর্বলঃ মিশকাত হা/৫৫৬০।
[৪৭৫৪]
আহমাদ। বর্ণনাকারী হাসান হাদীসটি ‘আয়িশাহ হতে শুনেননি। কাজেই তা মুরসাল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯
দাজ্জালের বর্ণনা
৪৭৫৬
حَدَّثَنَا
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سُرَاقَةَ، عَنْ أَبِي
عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ : " إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ نَبِيٌّ بَعْدَ نُوحٍ إِلاَّ وَقَدْ
أَنْذَرَ الدَّجَّالَ قَوْمَهُ، وَإِنِّي أُنْذِرُكُمُوهُ " . فَوَصَفَهُ
لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ : " لَعَلَّهُ
سَيُدْرِكُهُ مَنْ قَدْ رَآنِي وَسَمِعَ كَلاَمِي " . قَالُوا : يَا
رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ قُلُوبُنَا يَوْمَئِذٍ أَمِثْلُهَا الْيَوْمَ قَالَ :
" أَوْ خَيْرٌ " .
আবূ ‘উবাইদাহ ইবনুল
জাররাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, নূহ (আঃ)-এর পর যারাই নবী হিসেবে
এসেছেন তাদের প্রত্যেকেই তাঁর কওমকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। আর আমিও
তোমাদেরকে তার ব্যাপারে সাবধান করছি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তার বর্ণনা দিয়ে বললেন, যে ব্যক্তি আমাকে দেখেছে এবং আমার কথা শুনেছে
হয়তো সেও তার সাক্ষাত পেতে পারে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! বর্তমানে
আমাদের যেরকম মানসিকতা আছে তখনও কি এরকম থাকবে? তিনি বললেন, হয়ত আরো ভাল থাকবে।
[৪৭৫৫]
দুর্বল।
[৪৭৫৫]
তিরমিযী, আহমাদ। সানাদ মুনকাতি। ‘আবদুল্লাহ বিন সুরাকবাহ হাদীসটি ‘উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ
হতে শুনেননি।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৭৫৭
حَدَّثَنَا
مَخْلَدُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ : قَامَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم فِي النَّاسِ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ،
فَذَكَرَ الدَّجَّالَ فَقَالَ : " إِنِّي لأُنْذِرُكُمُوهُ، وَمَا مِنْ
نَبِيٍّ إِلاَّ قَدْ أَنْذَرَهُ قَوْمَهُ، لَقَدْ أَنْذَرَهُ نُوحٌ قَوْمَهُ،
وَلَكِنِّي سَأَقُولُ لَكُمْ فِيهِ قَوْلاً لَمْ يَقُلْهُ نَبِيٌّ لِقَوْمِهِ :
إِنَّهُ أَعْوَرُ وَإِنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِأَعْوَرَ " .
সালিম (রাঃ) হতে
তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) জনসম্মুখে মহান আল্লাহর যথাযথ প্রশংসার পরে দাজ্জালের বর্নণা
প্রসঙ্গে বলেনঃ প্রত্যেক নাবীই স্বীয় সম্প্রদায়কে দাজ্জাল সম্বন্ধে সতর্ক করেছেন।
নূহ (আঃ)-ও তাঁর কওমকে এ সম্পর্কে সাবধান করেছেন। কিন্তু আমি দাজ্জাল সম্পর্কে
তোমাদেরকে এমন কথা বলবো যা অন্য কোন নবী তাঁর কওমকে বলেননি। তা হলো, সে হবে কানা;
আর নিশ্চয়ই আল্লাহ কানা নন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩০
খারিজীদের সম্পর্কে
৪৭৫৮
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ
وَمَنْدَلٌ عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ أَبِي جَهْمٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ وَهْبَانَ، عَنْ
أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : " مَنْ
فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الإِسْلاَمِ مِنْ عُنُقِهِ
" .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (মুসলিম) জামা‘আত থেকে বিচ্ছিস্ন হয়ে এক বিঘত
পরিমাণ দূরে সরে গেলো, সে ইসলামের রজ্জু তাঁর গর্দান হতে খুলে ফেললো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৫৯
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا
مُطَرِّفُ بْنُ طَرِيفٍ، عَنْ أَبِي الْجَهْمِ، عَنْ خَالِدِ بْنِ وَهْبَانَ، عَنْ
أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : " كَيْفَ
أَنْتُمْ وَأَئِمَّةٌ مِنْ بَعْدِي يَسْتَأْثِرُونَ بِهَذَا الْفَىْءِ "
. قُلْتُ : إِذًا وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ أَضَعُ سَيْفِي عَلَى
عَاتِقِي، ثُمَّ أَضْرِبُ بِهِ حَتَّى أَلْقَاكَ أَوْ أَلْحَقَكَ . قَالَ :
" أَوَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى خَيْرٍ مِنْ ذَلِكَ تَصْبِرُ حَتَّى تَلْقَانِي
" .
আবূ যার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরে শাসকগণ এসব ফাই
নিজেদের জন্য আত্মসাৎ করলে তাদের ব্যাপারে তোমাদের করণীয় কি হবে? আমি বললাম, সেই
মহান আল্লাহর কসম, যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন! আমি আমার তরবারি আমার
কাঁধে রাখবো এবং তা দিয়ে আপনার সঙ্গে সাক্ষাত করার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে
যাবো। তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি কি তোমাকে এর চেয়ে ভাল পথ
বলে দিবো না? তা হচ্ছে, আমার সঙ্গে সাক্ষাতের পূর্ব পর্যন্ত তুমি ধৈর্য ধরবে।
[৪৭৫৮]
দুর্বলঃ মিশকাত হা/৩৭১০।
[৪৭৫৮]
আহমাদ। সানাদে খালিদ ইবনু ওহার সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ মাজহুল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
৪৭৬০
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا
حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنِ الْمُعَلَّى بْنِ زِيَادٍ، وَهِشَامِ بْنِ حَسَّانَ،
عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ ضَبَّةَ بْنِ مِحْصَنٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
: " سَتَكُونُ عَلَيْكُمْ أَئِمَّةٌ تَعْرِفُونَ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُونَ
فَمَنْ أَنْكَرَ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ هِشَامٌ : "
بِلِسَانِهِ فَقَدْ بَرِئَ، وَمَنْ كَرِهَ بِقَلْبِهِ فَقَدْ سَلِمَ وَلَكِنْ مَنْ
رَضِيَ وَتَابَعَ " . فَقِيلَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ
نَقْتُلُهُمْ قَالَ ابْنُ دَاوُدَ : " أَفَلاَ نُقَاتِلُهُمْ "
. قَالَ : " لاَ مَا صَلَّوْا " .
নাবী (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অচিরেই তোমাদের জন্য এমন নতুন নেতা নিযুক্ত হবে যাদের কিছু
কার্যকলাপ তোমাদের পছন্দ হবে এবং কিছু কার্যকলাপ অপছন্দ হবে। তখন যে ব্যক্তি তার
মুখ দিয়ে অস্বীকার করবে সে দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি তার অন্তর দিয়ে
ঘৃণা করবে সে মুক্ত থাকবে। কিন্তু যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট মনে তা অনুকরণ করবে সে তার
দ্বীনকে ধবংস করবে। অতঃপর বলা হলো, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা কি তাদের হত্যা করবো
না? ইবনু দাঊদ বলেন, আমরা কি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবো না? তিনি (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না, যতক্ষণ তারা সলাত আদায় করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬১
حَدَّثَنَا
ابْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ
قَتَادَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ، عَنْ ضَبَّةَ بْنِ مِحْصَنٍ الْعَنَزِيِّ،
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمَعْنَاهُ قَالَ :
" فَمَنْ كَرِهَ فَقَدْ بَرِئَ، وَمَنْ أَنْكَرَ فَقَدْ سَلِمَ " .
قَالَ قَتَادَةُ : يَعْنِي مَنْ أَنْكَرَ بِقَلْبِهِ، وَمَنْ كَرِهَ بِقَلْبِهِ
.
উম্মু সালামাহ
(রাঃ) হতে নাবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
পূর্বোক্ত হাদীসের অর্থানুরূপ বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ যে ব্যক্তি তা ঘৃণা করলো সে দায়িত্বমুক্ত হলো। যে ব্যক্তি তা অপছন্দ করলো সে
মুক্ত হলো। ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে ঘৃণা করলো এবং যে
ব্যক্তি তার অন্তর দিয়ে অপছন্দ করলো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬২
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عَلاَقَةَ، عَنْ
عَرْفَجَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ :
" سَتَكُونُ فِي أُمَّتِي هَنَاتٌ وَهَنَاتٌ وَهَنَاتٌ، فَمَنْ أَرَادَ أَنْ
يُفَرِّقَ أَمْرَ الْمُسْلِمِينَ وَهُمْ جَمِيعٌ فَاضْرِبُوهُ بِالسَّيْفِ
كَائِنًا مَنْ كَانَ " .
আরফাজাহ্ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে বিচিত্রমুখী
দুর্নীতি ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হবে। মুসলিমগণ ঐক্যবদ্ধ থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি
তাদের কাজে বাধা দিবে সে যে-ই হোক, তোমরা তাকে তরবারি দিয়ে হত্যা করো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩১
খারিজীদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করা
৪৭৬৩
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، - الْمَعْنَى - قَالاَ
حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبِيدَةَ، : أَنَّ
عَلِيًّا، ذَكَرَ أَهْلَ النَّهْرَوَانِ فَقَالَ : فِيهِمْ رَجُلٌ مُودَنُ
الْيَدِ أَوْ مُخْدَجُ الْيَدِ، أَوْ مَثْدُونُ الْيَدِ لَوْلاَ أَنْ تَبْطَرُوا
لَنَبَّأْتُكُمْ مَا وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ يَقْتُلُونَهُمْ عَلَى لِسَانِ
مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم . قَالَ قُلْتُ : أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْهُ
قَالَ : إِي وَرَبِّ الْكَعْبَةِ .
উবাইদাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
একদা ‘আলী (রাঃ) নাহরাওয়ানের অধিবাসীদের
সম্পর্কে বলেন, তাদের মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ বা খাটো হাতবিশিষ্ট এক ব্যক্তি রয়েছে, যদি
তোমরা আনন্দে আত্মহারা না হও তাহলে আমি তোমাদেরকে মহান আল্লাহর সেই অঙ্গীকার
সম্বন্ধে জানাবো যা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখ নিঃসৃত
ভাষায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকারীদের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ‘উবাইদাহ (রাঃ)
বলেন, আমি বললাম, আপনি কি একথা তাঁর কাছে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, কা‘বার রবের
কসম!
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬৪
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ أَبِي
نُعْمٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ : بَعَثَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ
السَّلاَمُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِذُهَيْبَةٍ فِي تُرْبَتِهَا،
فَقَسَّمَهَا بَيْنَ أَرْبَعَةٍ بَيْنَ : الأَقْرَعِ بْنِ حَابِسٍ
الْحَنْظَلِيِّ ثُمَّ الْمُجَاشِعِيِّ، وَبَيْنَ عُيَيْنَةَ بْنِ بَدْرٍ
الْفَزَارِيِّ وَبَيْنَ زَيْدِ الْخَيْلِ الطَّائِيِّ ثُمَّ أَحَدِ بَنِي نَبْهَانَ
وَبَيْنَ عَلْقَمَةَ بْنِ عُلاَثَةَ الْعَامِرِيِّ ثُمَّ أَحَدِ بَنِي كِلاَبٍ
قَالَ فَغَضِبَتْ قُرَيْشٌ وَالأَنْصَارُ وَقَالَتْ : يُعْطِي صَنَادِيدَ أَهْلِ
نَجْدٍ وَيَدَعُنَا . فَقَالَ : " إِنَّمَا أَتَأَلَّفُهُمْ "
. قَالَ : فَأَقْبَلَ رَجُلٌ غَائِرُ الْعَيْنَيْنِ مُشْرِفُ الْوَجْنَتَيْنِ
نَاتِئُ الْجَبِينِ كَثُّ اللِّحْيَةِ مَحْلُوقٌ قَالَ : اتَّقِ اللَّهَ يَا
مُحَمَّدُ . فَقَالَ : " مَنْ يُطِعِ اللَّهَ إِذَا عَصَيْتُهُ
أَيَأْمَنُنِي اللَّهُ عَلَى أَهْلِ الأَرْضِ وَلاَ تَأْمَنُونِي " .
قَالَ : فَسَأَلَ رَجُلٌ قَتْلَهُ أَحْسِبُهُ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ - قَالَ -
فَمَنَعَهُ . قَالَ : فَلَمَّا وَلَّى قَالَ : " إِنَّ مِنْ ضِئْضِئِ
هَذَا أَوْ فِي عَقِبِ هَذَا قَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ
حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ مُرُوقَ السَّهْمِ مِنَ الرَّمِيَّةِ،
يَقْتُلُونَ أَهْلَ الإِسْلاَمِ وَيَدَعُونَ أَهْلَ الأَوْثَانِ لَئِنْ أَنَا
أَدْرَكْتُهُمْ قَتَلْتُهُمْ قَتْلَ عَادٍ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহ
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু অপরিশোধিত স্বর্ণ পাঠালে তিনি তার চারজন
ব্যক্তি, যথা আকরা ‘ইবনু হাবিস আল-হানযলী আল-মুজাশিঈ, ‘উয়াইনাহ ইবনু বাদর
আল-ফাযারী, যায়িদ আল-খাইল আত-তাঈ, অতঃপর নাবহান গোত্রের এক ব্যক্তি, এছাড়া
‘আলক্বামাহ ইবনু উলাসাহ আল-‘আমিরী এবং বনী কিলাবের এক ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করে
দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, এতে কুরাইশ ও আনসারগণ অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন, নাজদের
অধিবাসীদের নেতৃস্থানীয় লোকদেরকে দেয়া হয়েছে এবং আমাদেরকে দেয়া হলো না। তিনি
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তাদেরকে (ইসলামের) অনুরাগী করার
জন্য দিয়েছি। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর কোটরাগত চোখ, উদ্যত চিবুক, ঘন দাড়ি ও নেড়া
মাথাবিশিষ্ট এক ব্যক্তি এসে বললো, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ্কে ভয় করো। তিনি
(সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমিই যদি অবাধ্য হই তাহলে কে আর আল্লাহর
আনুগত্য করবে? আল্লাহ আমাকে পৃথিবীবাসীর জন্য বিশ্বস্ত লোক হিসেবে নিয়োগ করেছেন;
আর তোমরা আমাকে বিশ্বাস করছো না! আবূ সাঈস আল-খুদরী (রাঃ) বলেন, অতঃপর এক ব্যক্তি
তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইলেন, আমার মতে, তিনি খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ)। তিনি
বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বারণ করলেন। বর্ণনাকারী বলেন,
লোকটি চলে গেলে তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তার বংশধর হতে এমন
এক গোত্রের আবির্ভাব হবে, যারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে
না। তীর যে গতিতে শিকারের দিকে ছুটে যায় তারাও ঠিক সেইভাবে ইসলাম হতে বেরিয়ে যাবে,
তারা ইসলামের অনুসারীদেরকে হত্যা করবে এবং পৌত্তলিকদেরকে নিরাপদ রাখবে। যদি আমি
তাদের সময় পর্যন্ত জীবিত থাকি তাহলে তাদেরকে হত্যা করবো যেভাবে হত্যা করা হয়েছে
‘আদ জাতিকে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬৫
حَدَّثَنَا
نَصْرُ بْنُ عَاصِمٍ الأَنْطَاكِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، وَمُبَشِّرٌ، -
يَعْنِي ابْنَ إِسْمَاعِيلَ الْحَلَبِيَّ عَنْ أَبِي عَمْرٍو، قَالَ - يَعْنِي
الْوَلِيدَ - حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرٍو، قَالَ حَدَّثَنِي قَتَادَةُ، عَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ : " سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي اخْتِلاَفٌ وَفُرْقَةٌ، قَوْمٌ
يُحْسِنُونَ الْقِيلَ وَيُسِيئُونَ الْفِعْلَ وَيَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ
يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ، يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ مُرُوقَ السَّهْمِ مِنَ
الرَّمِيَّةِ لاَ يَرْجِعُونَ حَتَّى يَرْتَدَّ عَلَى فُوقِهِ هُمْ شَرُّ
الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ طُوبَى لِمَنْ قَتَلَهُمْ وَقَتَلُوهُ، يَدْعُونَ إِلَى
كِتَابِ اللَّهِ وَلَيْسُوا مِنْهُ فِي شَىْءٍ، مَنْ قَاتَلَهُمْ كَانَ أَوْلَى
بِاللَّهِ مِنْهُمْ " . قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا سِيمَاهُمْ
قَالَ : " التَّحْلِيقُ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী
ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হবে। তারা উত্তম কথা বলবে, আর
নিকৃষ্ট কাজ করবে। তারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের গলার হাড় অতিক্রম করবে না।
তারা দ্বীন হতে এমনভাবে খারিজ হবে যেমন তীর ধনুক হতে ছুটে যায়, তারা আর ফিরে আসবে
না। তারা সৃষ্টি জগতে নিকৃষ্টতম। ঐ ব্যক্তি ভাগ্যবান যে তাদেরকে হত্যা করলো এবং
তারা তাকে হত্যা করলো। তারা আল্লাহর কিতাবের দিকে ডাকে কিন্তু নিজেরা তার অনুসরণ
করে না। যে ব্যক্তি তাদেরকে হত্যা করবে সে-ই হবে আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম। সাহাবীগণ
বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের আলামত কি? তিনি বললেন, ন্যাড়া মাথাওয়ালা গোষ্ঠী।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬৬
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ
قَالَ : " سِيمَاهُمُ التَّحْلِيقُ وَالتَّسْبِيدُ، فَإِذَا
رَأَيْتُمُوهُمْ فَأَنِيمُوهُمْ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ :
التَّسْبِيدُ اسْتِئْصَالُ الشَّعْرِ .
আনাস (রাঃ) সূত্র
থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। তিনি বলেন, তাদের আলামত
হচ্ছে, তারা মাথা মুড়ানো ও টাকপড়া হবে। অতঃপর তোমরা তাদেরকে দেখলে হত্যা করবে।
ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, আত-তাসবীদ অর্থ হলো চুল উপড়ে ফেলা।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬৭
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ
خَيْثَمَةَ، عَنْ سُوَيْدِ بْنِ غَفَلَةَ، قَالَ قَالَ عَلِيٌّ : إِذَا
حَدَّثْتُكُمْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثًا فَلأَنْ أَخِرَّ
مِنَ السَّمَاءِ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أَكْذِبَ عَلَيْهِ وَإِذَا
حَدَّثْتُكُمْ فِيمَا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ فَإِنَّمَا الْحَرْبُ خُدْعَةٌ
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : " يَأْتِي فِي
آخِرِ الزَّمَانِ قَوْمٌ حُدَثَاءُ الأَسْنَانِ سُفَهَاءُ الأَحْلاَمِ، يَقُولُونَ
مِنْ قَوْلِ خَيْرِ الْبَرِيَّةِ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا يَمْرُقُ
السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ، لاَ يُجَاوِزُ إِيمَانُهُمْ حَنَاجِرَهُمْ،
فَأَيْنَمَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاقْتُلُوهُمْ، فَإِنَّ قَتْلَهُمْ أَجْرٌ لِمَنْ
قَتَلَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
সুওয়াইদ ইবনু
গাফালা্হ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, 'আলী (রাঃ) বলেন, যখন আমি তোমাদের
নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সূত্রে হাদীস বর্ণনা করি,
তখন তাঁর উপর মিথ্যা আরোপ করার চেয়ে আমার আকাশ থেকে পড়ে যাওয়া অধিক পছন্দনীয়। আর
যখন আমি আমার ও তোমাদের মধ্যকার বিষয়ে আলাপ করি তখন “যুদ্ধ হলো কৌশল”। আমি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ শেষ যুগে এমন
লোকদের আত্নপ্রকাশ ঘটবে যারা হবে বয়সে নবীন এবং প্রতিজ্ঞাহীন বোকা। তারা সমগ্র
সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বোত্তম কথা বলবে, তীর যেভাবে ধনুক হতে বেরিয়ে যায় তারাও
সেভাবে দ্বীন হতে বেরিয়ে যাবে। তাদের ঈমান কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তোমরা
যেখানেই এই ধরনের লোকের দেখা পাবে সেখানেই তাদেরকে হত্যা করবে। কারণ, যারা এদেরকে
হত্যা করবে ক্বিয়ামতের দিন তারা সওয়াব লাভ করবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬৮
حَدَّثَنَا
الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ
بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي زَيْدُ
بْنُ وَهْبٍ الْجُهَنِيُّ، : أَنَّهُ كَانَ فِي الْجَيْشِ الَّذِينَ كَانُوا
مَعَ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ الَّذِينَ سَارُوا إِلَى الْخَوَارِجِ فَقَالَ
عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ : أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : " يَخْرُجُ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِي
يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَيْسَتْ قِرَاءَتُكُمْ إِلَى قِرَاءَتِهِمْ شَيْئًا وَلاَ
صَلاَتُكُمْ إِلَى صَلاَتِهِمْ شَيْئًا وَلاَ صِيَامُكُمْ إِلَى صِيَامِهِمْ
شَيْئًا، يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ يَحْسَبُونَ أَنَّهُ لَهُمْ وَهُوَ عَلَيْهِمْ،
لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا
يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ، لَوْ يَعْلَمُ الْجَيْشُ الَّذِينَ
يُصِيبُونَهُمْ مَا قُضِيَ لَهُمْ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِمْ صلى الله عليه وسلم
لَنَكَلُوا عَلَى الْعَمَلِ، وَآيَةُ ذَلِكَ أَنَّ فِيهِمْ رَجُلاً لَهُ عَضُدٌ
وَلَيْسَتْ لَهُ ذِرَاعٌ، عَلَى عَضُدِهِ مِثْلُ حَلَمَةِ الثَّدْىِ عَلَيْهِ
شَعَرَاتٌ بِيضٌ " . أَفَتَذْهَبُونَ إِلَى مُعَاوِيَةَ وَأَهْلِ
الشَّامِ وَتَتْرُكُونَ هَؤُلاَءِ يَخْلُفُونَكُمْ فِي ذَرَارِيِّكُمْ
وَأَمْوَالِكُمْ وَاللَّهِ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَكُونُوا هَؤُلاَءِ الْقَوْمَ،
فَإِنَّهُمْ قَدْ سَفَكُوا الدَّمَ الْحَرَامَ، وَأَغَارُوا فِي سَرْحِ النَّاسِ
فَسِيرُوا عَلَى اسْمِ اللَّهِ . قَالَ : سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ :
فَنَزَّلَنِي زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ مَنْزِلاً مَنْزِلاً حَتَّى مَرَّ بِنَا عَلَى
قَنْطَرَةٍ قَالَ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا وَعَلَى الْخَوَارِجِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
وَهْبٍ الرَّاسِبِيُّ فَقَالَ لَهُمْ : أَلْقُوا الرِّمَاحَ وَسُلُّوا
السُّيُوفَ مِنْ جُفُونِهَا، فَإِنِّي أَخَافُ أَنْ يُنَاشِدُوكُمْ كَمَا
نَاشَدُوكُمْ يَوْمَ حَرُورَاءَ قَالَ : فَوَحَّشُوا بِرِمَاحِهِمْ وَاسْتَلُّوا
السُّيُوفَ وَشَجَرَهُمُ النَّاسُ بِرِمَاحِهِمْ - قَالَ - وَقَتَلُوا بَعْضَهُمْ
عَلَى بَعْضِهِمْ . قَالَ : وَمَا أُصِيبَ مِنَ النَّاسِ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ
رَجُلاَنِ فَقَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ : الْتَمِسُوا فِيهِمُ
الْمُخْدَجَ فَلَمْ يَجِدُوا قَالَ : فَقَامَ عَلِيٌّ رضى الله عنه بِنَفْسِهِ
حَتَّى أَتَى نَاسًا قَدْ قُتِلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ فَقَالَ :
أَخْرِجُوهُمْ فَوَجَدُوهُ مِمَّا يَلِي الأَرْضَ فَكَبَّرَ وَقَالَ : صَدَقَ
اللَّهُ وَبَلَّغَ رَسُولُهُ . فَقَامَ إِلَيْهِ عَبِيدَةُ السَّلْمَانِيُّ
فَقَالَ : يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ
لَقَدْ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ : إِي
وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ حَتَّى اسْتَحْلَفَهُ ثَلاَثًا وَهُوَ
يَحْلِفُ .
সালামাহ ইবনু
কুহাইল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যায়িদ
ইবনু ওয়াহ্ব আল্-জুহানী (রহঃ) জানিয়েছেন যে, তিনি ‘আলী (রাঃ) -এর সঙ্গে সেই
সৈন্যদলের সঙ্গে ছিলেন যারা খারিজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। 'আলী (রাঃ)
বলেন, হে জনতা! আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছিঃ আমার উম্মাতের মধ্য হতে এমন একটি গোত্রের আত্নপ্রকাশ ঘটবে যাদের কুরআন
পাঠের সামনে তোমাদের তিলওয়াত কিছুই নয়, তোমাদের সলাত তাদের সলাতের তুলনায় কিছুই নয়
এবং তোমাদের সিয়াম তাদের সিয়ামের তুলনায় কিছুই নয়। তারা কুরআন পড়বে নেকী লাভের
আশায়, কিন্তু পরিণতি হবে তার বিপরীত। তাদের সলাত তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না।
তীর যেভাবে ধনুক হতে বেরিয়ে যায়, তারাও ঠিক সেভাবে ইসলাম হতে দূরে সরে যাবে। যেসব
সৈন্য তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তারা যদি সেই সওয়াবের কথা জানতে পারে যা তাদের
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ মুখে তাদের জন্য বলেছেন, তাহলে তারা
অন্যান্য আমল করা ছেড়ে দিবে এবং এরই উপর নির্ভর করে বসে থাকবে। এই দলের নিদর্শন
হলো, তাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি থাকবে যার বাহু থাকবে কিন্তু হাত থাকবে না এবং
তার বাহুর উপর স্তনের বোঁটার ন্যায় একটি বোঁটা থাকবে এবং তার উপর সাদা লোম থাকবে।
তোমরা কি তোমাদের ছেলেমেয়ে ও ধন-সম্পদ এদের আয়ত্তে রেখে মু’আরিযাহ ও সিরিয়াবাসীর
বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেতে চাও? আল্লাহর কসম! আমার ধারণা যে, এরাই সেই গোত্রের।
কেননা, এরা হারামভাবে রক্ত প্রবাহিত করছে এবং চারণভূমি হতে মানুষের পশু লুট করছে।
অতএব, তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে বের হও।
সালামাহ ইবনু কুহাইল (রহঃ) বলেন, আমার কাছে যায়িদ ইবনু ওয়াহ্ব খারিজীদের নিকট
গমনের ঘটনা পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করে বলেন, অবশেষে আমরা একটি পুল অতিক্রম করে যখন
দুই দল মুখোমুখি হলাম, আর খারিজীদের সেনাপ্রধান ছিলো ‘আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহ্ব
আর-রাসিবী। সে তাদেরকে বললো, তোমরা বল্লম ছুঁড়ো এবং খাপ থেকে তরবারি বের করো। এমন
যেনো না হয় যে, তারা তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়ে বলবে যেমন হারুরার দিবসে তারা ওয়াদা
দিয়েছিলো। তিনি বলেন, অতঃপর তারা বল্লম নিক্ষেপ করতে লাগলো ও খাপ থেকে তরবারি বের
করলো এবং মুসলিমরা বল্লম ছুঁড়ে তাদেরকে প্রতিরোধ করলো এবং একের পর এক তারা নিহত
হতে থাকলো। তিনি বলেন, ঐদিন ‘আলী (রাঃ)-এর পক্ষের দুই ব্যক্তি শহীদ হলো। ‘আলী
(রাঃ) বলেন, তোমরা নিহতদের মধ্যে ছোট হাতবিশিষ্ট ব্যক্তিকে খোজঁ করো ; কিন্তু তারা
তাকে পেলো না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর 'আলী (রাঃ) নিজে উঠে পরস্পরের উপর পরে থাকা
লাশের নিকট এসে বললেন, এদেরকে বের করো। তারা তাকে ভুলুন্ঠিত অবস্হায় পেয়ে গেলে
তিনি আল্লাহু আকবার উচ্চারণ করে বললেন, আল্লাহ সত্য বলেছেন এবং তাঁর রাসূলও। এরপর
‘উবাইদাহ আস্-সালমানী তার নিকট দাঁড়িয়ে বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! সেই আল্লাহর
কসম যিনি ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই! আপনি কি একথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শুনেছেন? তিনি বললেন, হাঁ, সেই আল্লাহর কসম! যিনি
ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই। ‘উবাইদাহ তিনবার কসম করে তার নিকট প্রশ্ন করলে তিনিও
তিনবার কসম করে একই জবাব দেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৬৯
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ جَمِيلِ بْنِ
مُرَّةَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الْوَضِيءِ، قَالَ قَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ
السَّلاَمُ : اطْلُبُوا الْمُخْدَجَ . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ فَاسْتَخْرَجُوهُ
مِنْ تَحْتِ الْقَتْلَى فِي طِينٍ، قَالَ أَبُو الْوَضِيءِ : فَكَأَنِّي
أَنْظُرُ إِلَيْهِ حَبَشِيٌّ عَلَيْهِ قُرَيْطَقٌ لَهُ إِحْدَى يَدَيْنِ مِثْلُ
ثَدْىِ الْمَرْأَةِ عَلَيْهَا شُعَيْرَاتٌ مِثْلُ شُعَيْرَاتِ الَّتِي تَكُونُ
عَلَى ذَنَبِ الْيَرْبُوعِ .
আবুল ওয়াদী’ (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা ‘আলী (রাঃ) বললেন, তোমরা
মুখদাজকে (ছোট হাতবিশিষ্ট ব্যক্তিকে) খুঁজে বের করো। অতঃপর পূর্বের হাদীসের
অনুরূপ। এরপর তারা তাকে ভূলুন্ঠিত লাশগুলোর নীচ হতে খুজে বের করলো। আবুল ওয়াদী’
আরো বলেন, তাকে দেখে আমার মনে হলো সে যেন হাবসী লোক, তার পরিধানে জুব্বা ছিলো। আর
এক হাতের উপর মেয়েলোকের স্তনের বোঁটার মত একটি বোঁটা ছিলো এবং তাতে ইয়ারবু’র লেজের
লোমের ন্যায় লোম ছিলো।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৭০
حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ بْنُ سَوَّارٍ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ
حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ : إِنْ كَانَ ذَلِكَ الْمُخْدَجَ لَمَعَنَا
يَوْمَئِذٍ فِي الْمَسْجِدِ نُجَالِسُهُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَكَانَ
فَقِيرًا وَرَأَيْتُهُ مَعَ الْمَسَاكِينِ يَشْهَدُ طَعَامَ عَلِيٍّ عَلَيْهِ
السَّلاَمُ مَعَ النَّاسِ وَقَدْ كَسَوْتُهُ بُرْنُسًا لِي . قَالَ أَبُو
مَرْيَمَ : وَكَانَ الْمُخْدَجُ يُسَمَّى نَافِعًا ذَا الثُّدَيَّةِ، وَكَانَ
فِي يَدِهِ مِثْلُ ثَدْىِ الْمَرْأَةِ عَلَى رَأْسِهِ حَلَمَةٌ مِثْلُ حَلَمَةِ
الثَّدْىِ عَلَيْهِ شُعَيْرَاتٌ مِثْلُ سِبَالَةِ السِّنَّوْرِ . قَالَ أَبُو
دَاوُدَ : وَهُوَ عِنْدَ النَّاسِ اسْمُهُ حَرْقُوسُ .
আবু মারইয়াম (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঐ
(মুখদাজ) খোঁড়া হাতবিশিষ্ট সে সময় আমাদের সঙ্গে মাসজিদে দিনরাত উঠা-বসা করতো। এবং
সে ছিলো ফকির। আমি তাকে লোকদের সঙ্গে 'আলী (রাঃ) -এর আহারে অংশগ্রহণ করতে দেখেছি।
আমি তাকে আমার একটি আলখাল্লা দান করেছিলাম। আবূ মারইয়াম (রহঃ) বলেন, মুখদাজকে
নাফি’ বোঁটাধারী নামে ডাকা হতো। আর তার হাতে নারীর স্তনের বোঁটার মত একটি বোঁটা
ছিলো এবং বিড়ালের লোমের ন্যায় লোম ছিলো। [৪৭৬৯]
সানাদ দূর্বল।
[৪৭৬৯]
আবু দাঊদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সানাদে আবূ মারইয়াম হাফিয বলেনঃ মাজহুল।
হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩২
চোরের মোকাবিলা করা
৪৭৭১
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ حَسَنٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَمِّي، إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ طَلْحَةَ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ :
" مَنْ أُرِيدَ مَالُهُ بِغَيْرِ حَقٍّ فَقَاتَلَ فَقُتِلَ فَهُوَ شَهِيدٌ
" .
আবদুল্লাহ ইবনু
‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
কারো সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উপক্রম হলে এবং সে তা প্রতিরোধ করতে গিয়ে হত্যা
হলে সে শহীদ বলে গণ্য হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭৭২
حَدَّثَنَا
هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ،
وَسُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، - يَعْنِي أَبَا أَيُّوبَ الْهَاشِمِيَّ - عَنْ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ مُحَمَّدِ
بْنِ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَوْفٍ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : "
مَنْ قُتِلَ دُونَ مَالِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ، وَمَنْ قُتِلَ دُونَ أَهْلِهِ أَوْ
دُونَ دَمِهِ أَوْ دُونَ دِينِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ " .
সাঈদ ইবনু যায়িদ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হলে সে শহীদ। একইভাবে কেউ তার
পরিবার-পরিজন ও জীবন অথবা ধর্ম রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হলে সেও শহীদ।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
No comments