রিয়াদুস সালেহীন অধ্যায় "বিভিন্ন নেক আমলের ফযীলত প্রসঙ্গে" হাদীস নং ৯৯৮-১২৭৫

বিভিন্ন নেক আমলের ফযীলত প্রসঙ্গে

পরিচ্ছেদ - ১৮০

পবিত্র কুরআন পড়ার ফযীলত

৯৯৮

عَنْ أَبي أُمَامَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: «اقْرَؤُوا القُرْآنَ ؛ فَإِنَّهُ يَأتِي يَوْمَ القِيَامَةِ شَفِيعاً لأَصْحَابِهِ». رواه مسلم

আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “তোমরা কুরআন মাজীদ পাঠ কর । কেননা, কিয়ামতের দিন কুরআন, তার পাঠকের জন্য সুপারিশকারী হিসাবে আগমন করবে ।”(মুসলিম)

(মুসলিম ৮০৪, আহমাদ ২১৬৪২, ২১৬৫৩, ২১৬৮১, ২১৭১০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

৯৯৯

وَعَنِ النَّوَّاسِ بنِ سَمْعَانَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: يُؤْتَى يَوْمَ القِيَامَةِ بِالقُرْآنِ وَأَهْلِهِ الَّذِينَ كَانُوا يَعْمَلُونَ بِهِ فِي الدُّنْيَا تَقْدُمُهُ سُورَةُ البَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ، تُحَاجَّانِ عَنْ صَاحِبِهِمَا. رواه مسلم

নাওয়াস ইবনে সামআন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “কুরআন ও ইহজগতে তার উপর আমলকারীদেরকে (বিচারের দিন মহান আল্লাহর সামনে) পেশ করা হবে । সূরা বাকারাহ ও সূরা আলে ইমরান তার আগে আগে থাকবে এবং তাদের পাঠকারীদের স্বপক্ষে (প্রভুর সঙ্গে) বাদানুবাদে লিপ্ত হবে ।

(মুসলিম ৮০৫, তিরমিযী ২৮৮৩, আহমাদ ১৭১৮৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০০

وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ». رواه البخاري

উসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি সেই, যে নিজে কুরআন শিখে ও অপরকে শিক্ষা দেয় ।”(বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ৫০২৭, ৫০২৮, তিরমিযী ২৯০৭, ২৯০৮, আবূ দাঊদ ১৪৫২, ইবনু মাজাহ ২১১, আহমাদ ৫০৭, ৪১৪, ৫০২, দারেমী ৩৩২৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০১

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «اَلَّذِيْ يَقْرَأُ القُرْآنَ وَهُوَ مَاهِرٌ بِهِ مَعَ السَّفَرَةِ الكِرَامِ البَرَرَةِ، وَالَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَيَتَتَعْتَعُ فِيهِ وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقٌّ لَهُ أجْرَانِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “কুরআনের (শুদ্ধ ভাবে পাঠকারী ও পানির মত হিফয্কারী পাকা) হাফেয মহাসম্মানিত পুণ্যবান লিপিকার (ফেরেশতাবর্গের) সঙ্গী হবে । আর যে ব্যক্তি (পাকা হিফ্য না থাকার কারণে) কুরআন পাঠে ‘ওঁ-ওঁ’ করে এবং পড়তে কষ্টবোধ করে, তার জন্য রয়েছে দু’টি সওয়াব।” (একটি তেলাওয়াত ও দ্বিতীয়টি কষ্টের দরুন।)

(বুখারী, মুসলিম ৭৯৮নং) (সহীহুল বুখারী ৪৯৩৭, মুসলিম ৭৯৮, তিরমিযী ২৯০৪, আবূ দাঊদ ১৪৫৪, ইবনু মাজাহ ৩৭৭৯, আহমাদ ২৩৬৯১, ২৪১১৩, ২৪১৪৬, ২৪২৬৭, দারেমী ৩৩৬৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০২

وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِيِّ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِيْ يَقْرَأُ القُرْآنَ مَثَلُ الأُتْرُجَّةِ: رِيحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا طَيِّبٌ، وَمَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِيْ لاَ يَقْرَأُ القُرْآنَ كَمَثَلِ التَّمْرَةِ: لارِيحَ لَهَا وَطَعْمُهَا حُلْوٌ، وَمَثلُ المُنَافِقِ الَّذِيْ يَقرَأُ القُرآنَ كَمَثلِ الرَّيحَانَةِ: ريحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ، وَمَثَلُ المُنَافِقِ الَّذِيْ لاَ يَقْرَأُ القُرْآنَ كَمَثلِ الحَنْظَلَةِ: لَيْسَ لَهَا رِيحٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “কুরআন পাঠকারী মুমিনের উদাহরণ হচ্ছে ঠিক কমলা লেবুর মত; যার ঘ্রাণ উত্তম এবং স্বাদও উত্তম । আর যে মুমিন কুরআন পড়ে না তার উদাহরণ হচ্ছে ঠিক খেজুরের মত; যার (উত্তম) ঘ্রাণ তো নেই, তবে স্বাদ মিষ্ট। (অন্যদিকে) কুরআন পাঠকারী মুনাফিকের দৃষ্টান্ত হচ্ছে সুগন্ধিময় (তুলসী) গাছের মত; যার ঘ্রাণ উত্তম, কিন্তু স্বাদ তিক্ত। আর যে মুনাফিক কুরআন পড়ে না তার উদাহরণ হচ্ছে ঠিক মাকাল ফলের মত; যার (উত্তম) ঘ্রাণ নেই, স্বাদও তিক্ত।”

(বুখারী, মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ৫০২০, ৫৪২৭, ৫০৫৯, ৭৫৬০, মুসলিম ৭৯৭, তিরমিযী ২৮৬৫, নাসায়ী ৫০৩৮, আবূ দাঊদ ৪৮২৯, ইবনু মাজাহ ২১৪, আহমাদ ১৯০৫৫, ১৯১১৭, ১৯১৬৫, দারেমী ৩৩৬৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০৩

وَعَنْ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهَذَا الكِتَابِ أَقْوَاماً وَيَضَعُ بِهِ آخرِينَ». رواه مسلم

উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মহান আল্লাহ এই গ্রন্থ (কুরআন মাজীদ) দ্বারা (তার উপর আমলকারী) জনগোষ্ঠীর উত্থান ঘটান এবং এরই দ্বারা (এর অবাধ্য) অন্য গোষ্ঠীর পতন সাধন করেন ।”

(মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩৩, দারেমী ৩৩৬৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০৪

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ القُرْآنَ، فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاء اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ، وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً، فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “দু’জনের ক্ষেত্রে ঈর্ষা করা সিদ্ধ । (১) যাকে আল্লাহ কুরআন (মুখস্থ করার শক্তি) দান করেছেন, সুতরাং সে ওর (আলোকে) দিবা-রাত্রি পড়ে ও আমল করে । (২) যাকে আল্লাহ তা‘আলা মালধন দান করেছেন এবং সে (আল্লাহর পথে) দিন-রাত ব্যয় করে ।”

সহীহুল বুখারী ৫০২৫, ৭৫২৯, মুসলিম ৮১৫, তিরমিযী ১৯৩৬, ইবনু মাজাহ ৪২০৯, আহমাদ ৪৫৩৬, ৪৯০৫, ৫৫৮৬, ৬১৩২, ৬৩৬৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০৫

وَعَنِ البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: كَانَ رَجُلٌ يَقْرَأُ سُورَةَ الْكَهْفِ، وَعِنْدَهُ فَرَسٌ مَرْبُوطٌ بِشَطَنَيْنِ، فَتَغَشَّتْهُ سَحَابَةٌ فَجَعَلَتْ تَدْنُوْ، وَجَعَلَ فَرَسُه يَنْفِرُ مِنْهَا، فَلَمَّا أصْبَحَ أتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: «تِلْكَ السَّكِينَةُ تَنَزَّلَتْ لِلقُرْآنِ». متفقٌ عَلَيْهِ

বারা’ ইবনে আযেব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা একটি লোক সূরা কাহাফ পাঠ করছিল । তার পাশেই দুটো রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল । ইতোমধ্যে লোকটিকে একটি মেঘে ঢেকে নিলো । মেঘটি লোকটির নিকটবর্তী হতে থাকলে ঘোড়াটি তা দেখে চমকাতে আরম্ভ করল । অতঃপর যখন সকাল হলো তখন লোকটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে হাজির হয়ে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করল । তা (শুনে) তিনি বললেন, “ওটি প্রশান্তি ছিল, যা তোমার কুরআন পড়ার দরুন অবতীর্ণ হয়েছে ।”

(সহীহুল বুখারী ৫০১১, ৩৬১৪, ৪৮৩৯, মুসলিম ৭৯৫, তিরমিযী ২৮৮৫, আহমাদ ১৮০০৬, ১৮০৩৮, ১৮১১৮, ১৮১৬৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০৬

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ قَرَأ حَرْفاً مِنْ كِتَابِ اللهِ فَلَهُ حَسَنَةٌ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أمْثَالِهَا، لاَ أَقُولُ: الـم حَرفٌ، وَلَكِنْ: ألِفٌ حَرْفٌ، وَلاَمٌ حَرْفٌ، وَمِيمٌ حَرْفٌ». رواه الترمذي، وقال: ( حديث حسن صحيح ))

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব (কুরআন মাজীদ)এর একটি বর্ণ পাঠ করবে, তার একটি নেকী হবে । আর একটি নেকী দশটি নেকীর সমান হয় । আমি বলছি না যে, ‘আলিফ-লাম-মীম’ একটি বর্ণ; বরং আলিফ একটি বর্ণ, লাম একটি বর্ণ এবং মীম একটি বর্ণ ।” (অর্থাৎ তিনটি বর্ণ দ্বারা গঠিত ‘আলিফ-লাম-মীম, যার নেকীর সংখ্যা হবে ত্রিশ ।

(তিরমিযী, হাসান) (তিরমিযী ২৯১০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০০৭

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَّضِيَ الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم :«إنَّ الَّذِيْ لَيْسَ فِيْ جَوْفِهِ شَيْءٌ مِنَ القُرآنِ كَالْبَيْتِِ الْخَرِبِ» رواه الترمذي وقال: حديث حسن صحيح .

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: কুরআনের কোনো অংশই যে ব্যক্তির পেটে নেই সে (সেই পেট বা উদর) বিরান ঘরের সমতুল্য । (তিরমিযি) যইফ । (আমি (আলবানী) বলছিঃ অর্থাৎ যে কুরআনের কিছু অংশ হেফয না করবে । হাদীসটির দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে আমি “আলমিশকাত” গ্রন্থে (নং ২১৩৫) আলোচনা করেছি । হাদীসটির সনদকে “মুসনাদু আহমাদ” এর তাহকীক্ব করতে গিয়ে শু‘য়াইব আলআরনাঊতও দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন । এর সনদে কাবূস ইবনু আবী যিবইয়ান নামক এক বর্ণনাকারী রয়েছেন তিনি দুর্বল ।

(তিরমিযী ২৯১৩, আহমাদ ১৯৪৮, দারেমী ৩৩০৬, ইয়াহইয়া ইবন মুঈন একে দুর্বল বলেছেন ।)

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

১০০৮

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ: اِقْرَأْ وَارْتَقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَتَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا». رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: ( حديث حسن صحيح ))

আব্দুল্লাহ ইবনে আম্র ইবনে আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পবিত্র কুরআনের পাঠক, হাফেয ও তার উপর আমলকারীকে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, ‘তুমি কুরআন করীম পড়তে থাক ও চড়তে থাক । আর ঠিক সেইভাবে স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে পড়তে থাক, যেভাবে দুনিয়াতে পড়তে । কেননা, (জান্নাতের ভিতর) তোমার স্থান ঠিক সেখানে হবে, যেখানে তোমার শেষ আয়াতটি খতম হবে ।

(আবূ দাঊদ, তিরমিযী হাসান)(আবূ দাঊদ ১৪৬৪, তিরমিযী ২৯১৪, আহমাদ ৬৭৬০)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮১

কুরআন মাজীদ সযত্নে নিয়মিত পড়া ও তা ভুলে যাওয়া থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ

১০০৯

عَن أَبِي مُوسَى رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «تَعَاهَدُوا هَذَا القُرْآنَ، فَوَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَهُوَ أَشَدُّ تَفَلُّتاً مِنَ الإِبِلِ فِي عُقُلِهَا». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “এই কুরআনের প্রতি যত্ন নাও (অর্থাৎ, নিয়মিত পড়তে থাক ও তার চর্চা রাখ ।) সেই মহান সত্তার কসম, যাঁর হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে, উট যেমন তার রশি থেকে অতর্কিতে বের হয়ে যায়, তার চেয়ে অধিক অতর্কিতে কুরআন (স্মৃতি থেকে) বের হয়ে (বিস্মৃত হয়ে) যায় ।” (অর্থাৎ অতিশীঘ্র ভুলে যাবার সম্ভাবনা থাকে ।)

(মুসলিম ৭৯১, আহমাদ ১৯০৫২, ১৯১৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১০

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إنَّمَا مَثَلُ صَاحِبِ الْقُرْآنِ كَمَثَلِ الإِبِلِ المُعَقَّلَةِ، إِنْ عَاهَدَ عَلَيْهَا أَمْسَكَهَا، وَإِنْ أَطْلَقَهَا ذَهَبَتْ». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “কুরআন-ওয়ালা হল বাঁধা উট-ওয়ালার মত । সে যদি তা বাঁধার পর তার যথারীতি দেখাশোনা করে, তাহলে বাঁধাই থাকবে । নচেৎ ঢিল দিলেই উট পালিয়ে যাবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৫০৩১, মুসলিম ৭৮৯, নাসায়ী ৯৪২, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৩, আহমাদ ৪৬৫১, ৪৭৪৫, ৪৮৩০, ৪৯০৪, ৫২৯৩, ৫৮৮৭, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮২

সুললিত কণ্ঠে কুরআন পড়া মুস্তাহাব । মধুরকণ্ঠ কারীকে তা পড়ার আবেদন করা ও তা মনোযোগ সহকারে শোনা প্রসঙ্গে

১০১১

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «مَا أَذِنَ اللهُ لِشَيءٍ مَا أَذِنَ لِنَبِيٍّ حَسَنِ الصَّوْتِ يَتَغَنَّى بِالقُرْآنِ يَجْهَرُ بِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “মহান আল্লাহ এভাবে উৎকর্ণ হয়ে কোন কথা শোনেন না, যেভাবে সেই মধুরকণ্ঠী পয়গম্বরের প্রতি উৎকর্ণ হয়ে শোনেন, যিনি মধুর কণ্ঠে উচ্চ স্বরে কুরআন মাজীদ পড়তেন ।” (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৭৫৪৪, ৫০২৩, ৫০২৪, ৭৪৮২, ৭৫২৭, মুসলিম ৭৯২, নাসায়ী ১০১৭, ১০১৮, আবূ দাঊদ ১৪৭৩, আহমাদ ৭৬১৪, ৭৭৭৩, ৯৫১৩, দারেমী ৩৪৯০, ৩৪৯১, ৩৪৯৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১২

وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِي رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ: «لَقدْ أُوتِيتَ مِزْمَاراً مِنْ مَزَامِيرِ آلِ دَاوُدَ». متفقٌ عَلَيْهِ.
وفي رواية لمسلمٍ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ: «لَوْ رَأَيْتَنِي وَأنَا أسْتَمِعُ لِقِراءتِكَ الْبَارِحَةَ» ..

আবূ মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, “তোমাকে দাউদের সুললিত কণ্ঠের মত মধুর কণ্ঠ দান করা হয়েছে ।” (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৫০৪৮, মুসলিম ৭৯৩, তিরমিযী ৩৮৫৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১৩

وَعَنِ البَراءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ فِي الْعِشَاءِ بالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ، فَمَا سَمِعْتُ أَحَداً أَحْسَنَ صَوْتاً مِنْهُ . متفقٌ عَلَيْهِ

বারা’ ইবনে আযেব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এশার নামাযে সূরা ‘অততীন অযযাইতূন’ পড়তে শুনেছি । বস্তুতঃ আমি তাঁর চেয়ে মধুর কণ্ঠ আর কারো শুনিনি ।” (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৭৬৭, ৪৯৫২, ৭৫৪৬, মুসলিম ৪৬৪, তিরমিযী ৩১০, নাসায়ী ১০০০, ১০০১, আবূ দাঊদ ১২২১, ইবনু মাজাহ ৮৩৫, মুওয়াত্তা মালিক ১৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১৪

وَعَنْ أَبي لُبَابَةَ بَشِيرِ بنِ عَبدِ المُنذِرِ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «مَنْ لَمْ يَتَغَنَّ بِالقُرْآنِ فَلَيْسَ مِنَّا» رواه أَبُو داود بإسنادٍ جيدٍ.

আবূ লুবাবাহ বাশীর ইবনে আব্দুল মুনযির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিষ্ট স্বরে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের মধ্যে নয় ।” (অর্থাৎ আমাদের ত্বরীকা ও নীতি-আদর্শ বহির্ভূত ।)

(আবূ দাঊদ ১৪৭১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১৫

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: «اِقْرَأْ عَلَيَّ القُرْآنَ»، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، أَقْرَأُ عَلَيْكَ، وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ ؟! قَالَ: «إنِّي أُحِبُّ أَنْ أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِي». فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ سُورَةَ النِّسَاءِ، حَتَّى جِئْتُ إِلَى هَذِهِ الآيَةِ: فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاَءِ شَهِيداً قَالَ: «حَسْبُكَ الآنَ» فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ، فَإذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ . متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেন, “(হে ইবনে মাসঊদ !) আমাকে কুরআন পড়ে শুনাও ।” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আমি আপনাকে পড়ে শোনাব, অথচ আপনার উপরে তা অবতীর্ণ করা হয়েছে ?’ তিনি বললেন, “অপরের মুখ থেকে (কুরআন পড়া) শুনতে আমি ভালবাসি ।” সুতরাং তাঁর সামনে আমি সূরা নিসা পড়তে লাগলাম, পড়তে পড়তে যখন এই (৪১নং) আয়াতে পৌঁছলাম---যার অর্থ, “তখন তাদের কি অবস্থা হবে, যখন প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকেও তাদের সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব ?” তখন তিনি বললেন, “যথেষ্ট, এখন থাম ।” অতঃপর আমি তাঁর দিকে ফিরে দেখি, তাঁর নয়ন যুগল অশ্রু ঝরাচ্ছে ।

(সহীহুল বুখারী ৪৫৮২, ৫০৪৯, ৫০৫৯, ৫০৫৫, ৫০৫৬, মুসলিম ৮০০, তিরমিযী ৩০২৪, ৩০২৫, আবূ দাঊদ ৩৬৬৮, ইবনু মাজাহ ৪১৯৪, আহমাদ ৩৫৪০, ৩৫৯৫, ৪১০৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮৩

বিশেষ বিশেষ সূরা ও আয়াত পাঠ করার উপর উৎসাহ দান

১০১৬

عَن أَبي سَعِيدٍ رَافِعِ بن الْمُعَلَّى رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «أَلاَ أُعَلِّمُكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي القُرْآن قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ ؟» فَأخَذَ بِيَدِي، فَلَمَّا أَرَدْنَا أَنْ نَخْرُجَ، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، إنَّكَ قُلْتَ: لأُعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي القُرْآنِ ؟ قَالَ: «اَلْحَمْدُ للهِ رَبِّ العَالَمِينَ، هِيَ السَّبْعُ المَثَانِي وَالقُرْآنُ العَظِيمُ الَّذِيْ أُوتِيتُهُ». رواه البخاري

আবূ সাঈদ রাফে’ ইবনে মুআল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেন, “মসজিদ থেকে বের হবার পূর্বেই তোমাকে কি কুরআনের সবচেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব না ?” এই সাথে তিনি আমার হাত ধরলেন । অতঃপর যখন আমরা বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা করলাম, তখন আমি নিবেদন করলাম, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আপনি যে আমাকে বললেন, তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সবচেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব ?’ সুতরাং তিনি বললেন, “(তা হচ্ছে) ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ (সূরা ফাতেহা) । এটি হচ্ছে ‘সাবউ মাসানী’ (অর্থাৎ নামাযে বারংবার পঠিতব্য সপ্ত আয়াত) এবং মহা কুরআন; যা আমাকে দান করা হয়েছে ।”

(সহীহুল বুখারী ৪৪৭৪, ৪৬৪৭, ৪৭০৩, ৫০০৬, নাসায়ী ৯১৩, আবূ দাঊদ ১৪৫৮, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৫, আহমাদ ১৫৩০৩, ১৭৩৯৫, দারেমী ১৪৯২, ৩৭১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১৭

وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِِيِّ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ فِي: - قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ -: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ القُرْآنِ» .
وفي روايةٍ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ ِلأَصْحَابِهِ: «أَيَعْجِزُ أحَدُكُمْ أنْ يَقْرَأَ بِثُلُثِ القُرْآنِ فِي لَيْلَةٍ؟»، فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ، وَقَالُوا: أَيُّنَا يُطِيقُ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ؟ فَقَالَ: «قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ اللهُ الصَّمَد: ثُلُثُ الْقُرْآنِ». رواه البخاري

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (সূরা) ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ সম্পর্কে বলেছেন, “সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ আছে, নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল ।”
অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাহাবাগণকে বললেন, ‘তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে অপারগ ?’ প্রস্তাবটি তাঁদের পক্ষে ভারী মনে হল । তাই তাঁরা বলে উঠলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল ! এ কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে ?’ (অর্থাৎ কেউ পারবে না ।) তিনি বললেন, “ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস স্বামাদ’ (সূরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল ।” (অর্থাৎ, এই সূরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী অর্জিত হয়) (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ৫০১৫, ৫০১৪, ৫৫৪৩, ৭৩৭৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবূ দাঊদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯, ১০৭৩১, ১০৭৯৭, ১০৯১৩, ১০৯৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৭, ৪৮৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১৮

وَعَنْه: أَنَّ رَجُلاً سَمِعَ رَجُلاً يَقْرَأُ: «قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ» يُرَدِّدُهَا، فَلَمَّا أصْبَحَ جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ وَكَانَ الرَّجُلُ يَتَقَالُّهَا، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ القُرْآنِ. رواه البخاري

উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি কোন লোককে সূরাটি বারবার পড়তে শুনল । অতঃপর সে সকালে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে তা ব্যক্ত করল । সে সূরাটিকে নগণ্য মনে করছিল । রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “সেই সত্তার শপথ ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে, নিঃসন্দেহে এই সূরা (ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান ।” (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ৫০১৫, ৫০১৪, ৫৫৪৩, ৭৩৭৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবূ দাঊদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯, ১০৭৩১, ১০৭৯৭, ১০৯১৩, ১০৯৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৭, ৪৮৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০১৯

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ فِي: ﴿ قُلۡ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ ﴾ «إنَّهَا تَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (সূরা) ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ সম্পর্কে বলেছেন, “নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৮১২, তিরমিযী ২৮৯৯, ২৯০০, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৭, আহমাদ ৯২৫১, দারেমী ৩৪৩২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২০

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه : أَنَّ رَجُلاً قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، إِنِّي أُحِبُّ هَذِهِ السُّورَةَ: ﴿ قُلۡ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ ﴾ قَالَ: «إنَّ حُبَّهَا أدْخَلَكَ الجَنَّةَ». رواه الترمذي، وقال: (حديث حسن)) . ورواه البخاري في صَحِيحِهِ تعليقاً.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আমি এই (সূরা) ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ ভালবাসি ।’ তিনি বললেন, “এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে ।”

(তিরমিযী হাসান সুত্রে, বুখারী বিচ্ছিন্ন সনদে) (সহিহুল বুখারি ৭৭৪ নং হাদিসের পরবর্তী বাব। তিরমিযী ২৯০১, আহমাদ ১২০২৪, ১২১০৩, দারেমী ৩৪৩৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২১

وَعَنْ عُقبَةَ بنِ عَامِرٍ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «أَلَمْ تَرَ آيَاتٍ أُنْزِلَتْ هَذِهِ اللَّيْلَةَ لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ قَطُّ ؟ قُلْ أَعْوذُ بِرَبِّ الفَلَقِ وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ». رواه مسلم

উক্ববাহ ইবন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা বললেন, “তুমি কি দেখনি, আজ রাত্রে আমার উপর কতকগুলি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে; যার অনুরূপ আর কিছু দেখা যায়নি ? (আর তা হল,) ‘ক্বুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক্ব’ ও ‘ক্বুল আঊযু বিরাব্বিন নাস।”

(মুসলিম ৮১৪, তিরমিযী) (মুসলিম ৮১৪, তিরমিযী ২৯০২, নাসায়ী ৯৫৩, ৯৫৪, ৫৪৩০, ৫৪৩১, ৫৪৩৩, ৫৪৩৮, ৫৪৩৯, ৫৪৪০, আবূ দাঊদ ১৪৬২, আহমাদ ১৬৮৪৫, ১৬৮৭১, ১৬৮৮৩, ১৬৮৯০, দারেমী ৩৪৩৯, ৩৪৪০, ৩৪৪১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২২

وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَتَعَوَّذُ مِنَ الجَانِّ، وَعَيْنِ الإِنْسَانِ، حَتَّى نَزَلَتْ المُعَوِّذَتَانِ، فَلَمَّا نَزَلَتَا، أَخَذَ بِهِمَا وَتَرَكَ مَا سِوَاهُمَا. رواه الترمذي، وقال: (حديث حسن))

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘রাসূলুল্লাহ (সূরা ফালাক্ব ও নাস অবতীর্ণ হবার পূর্ব পর্যন্ত নিজ ভাষাতে) জিন ও বদ নজর থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন । পরিশেষে যখন উক্ত সূরা দু’টি অবতীর্ণ হল, তখন ঐ সূরা দু’টি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন ।’

(তিরমিযী হাসান) ( তিরমিযী ২০৫৮, নাসায়ী ৫৪৯৪, ইবনু মাজাহ ৩৫১১)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১০২৩

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: مِنَ القُرْآنِ سُورَةٌ ثَلاثُونَ آيَةً شَفَعَتْ لِرَجُلٍ حَتَّى غُفِرَ لَهُ، وَهِيَ: -تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ المُلْكُ-. رواه أَبُو داود والترمذي، وقال:(حديث حسن))

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “কুরআনে ত্রিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সূরা এমন আছে, যা তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং শেষাবধি তাকে ক্ষমা ক’রে দেওয়া হবে, সেটা হচ্ছে ‘তাবা-রাকাল্লাযী বিয়্যাদিহিল মুল্ক’ (সূরা মুল্ক) ।”

(আবূ দাঊদ, তিরমিযী হাসান) (আবূ দাঊদ ১৪০০, ২৮৯১, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৬)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১০২৪

وَعَنْ أَبي مَسعُودٍ البَدْرِيِّ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ قَرَأَ بِالآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ البَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ». متفقٌ عَلَيْهِ.

আবূ মাসঊদ বদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত দু’টি পাঠ করবে, তার জন্য সে দু’টি যথেষ্ট হবে ।” (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪০০৮, ৫০১০, ৫০৪০, ৫০৫১, ৮০৭, তিরমিযী ২৮৮১, আবূ দাঊদ ১৩৯৭, ইবনু মাজাহ ১৩৬৮, ১৩৬৯, আহমাদ ১৬৬২০, ১৬৬৪২, ১৬৬৫১, দারেমী ১৪৮৭. ৩৩৮৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২৫

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ، إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ البَيْتِ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ البَقرَةِ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা নিজেদের ঘর-বাড়িগুলোকে কবরে পরিণত করো না । কেননা, যে বাড়িতে সূরা বাকারাহ পাঠ করা হয়, সে বাড়ি থেকে শয়তান পলায়ন করে ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৭৮০, তিরমিযী ২৮৭৭, আবূ দাঊদ ২০৪২, আহমাদ ৭৭৬২, ৮২৩৮, ৮৫৮৬, ৮৬৯৮, ৮৮০৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২৬

وَعَنْ أُبَيِّ بنِ كَعبٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : يَا أَبَا الْمُنْذِرِ، أَتَدْرِي أَيُّ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ الله مَعَكَ أعْظَمُ ؟ قُلْتُ: اللهُ لاَ إلَهَ إِلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ فَضَرَبَ فِي صَدْرِي، وَقَالَ: «لِيَهْنِكَ العِلْمُ أَبَا الْمُنْذِرِ» . رواه مسلم

উবাই ইবনে কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “হে আবূ মুনযির ! তুমি কি জান, মহান আল্লাহর গ্রন্থ (আল-কুরআন) এর ভিতর তোমার যা মুখস্থ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় (মর্যাদাপূর্ণ) আয়াত কোন্‌টি ?” আমি বললাম, ‘সেটা হচ্ছে আয়াতুল কুরসি ।’ সুতরাং তিনি আমার বুকে চাপড় মেরে বললেন, “আবুল মুনযির ! তোমার জ্ঞান তোমাকে ধন্য করুক ।” (মুসলিম)

( মুসলিম ৮১০, আবূ দাঊদ ১৪৬০, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২৭

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: وَكَّلَنِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ، فَأتَانِي آتٍ فَجَعَلَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَام، فَأَخَذْتُهُ فَقُلْتُ: لأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: إنِّي مُحْتَاجٌ، وَعَليَّ عِيَالٌ، وَبِي حَاجَةٌ شَدِيدَةٌ، فَخَلَّيْتُ عَنْهُ، فَأصْبَحْتُ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «يَا أَبَا هُرَيرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، شَكَا حَاجَةً وَعِيَالاً، فَرحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ . فَقَالَ: «أمَا إنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ» فَعَرَفْتُ أنَّهُ سَيَعُودُ، لِقَولِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَرَصَدْتُهُ، فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ، فَقُلْتُ: لأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: دَعْنِي فَإنِّي مُحْتَاجٌ، وَعَلَيَّ عِيَالٌ لاَ أَعُودُ، فَرحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «يَا أَبَا هُرَيرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، شَكَا حَاجَةً وَعِيَالاً، فَرحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ . فَقَالَ: «إنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ» فَرَصَدْتُهُ الثَّالثَة، فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ، فَقُلتُ: لأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَهَذَا آخِرُ ثَلاَثِ مَرَّاتٍ أَنَّكَ تَزْعُمُ أنَّكَ لاَ تَعُودُ ! فَقَالَ: دَعْنِي فَإنِّي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ يَنْفَعُكَ اللهُ بِهَا، قُلْتُ: مَا هُنَّ ؟ قَالَ: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الكُرْسِيِّ، فَإِنَّهُ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ الله حَافِظٌ، وَلاَ يَقْرَبُكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ، فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، فَأَصْبَحْتُ، فَقَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، زَعَمَ أَنَّهُ يُعَلِّمُنِي كَلِمَاتٍ يَنْفَعُنِي اللهُ بِهَا، فَخَلَّيْتُ سَبيلَهُ، قَالَ: «مَا هِيَ ؟» قُلْتُ: قَالَ لِي: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَة الكُرْسِيِّ مِنْ أَوَّلِهَا حَتَّى تَخْتِمَ الآيَةَ: - اللهُ لاَ إلَهَ إِلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ - وَقَالَ لِي: لاَ يَزَالُ عَلَيْكَ مِنَ اللهِ حَافِظٌ، وَلَنْ يَقْرَبَكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : «أمَا إنَّهُ قَدْ صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوْبٌ، تَعْلَمُ مَنْ تُخَاطِبُ مُنْذُ ثَلاَثٍ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ؟» قُلْتُ: لاَ . قَالَ: «ذَاكَ شَيْطَانٌ». رواه البخاري

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (একবার) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে রমযানের যাকাত (ফিৎরার মাল-ধন) দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেন । বস্তুতঃ (আমি পাহারা দিচ্ছিলাম ইত্যবসরে) একজন আগমনকারী এসে আঁজলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল । আমি তাকে ধরলাম এবং বললাম, ‘তোকে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে পেশ করব ।’ সে আবেদন করল, ‘আমি একজন সত্যিকারের অভাবী । পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব আমার উপর, আমার দারুণ অভাব ।’ কাজেই আমি তাকে ছেড়ে দিলাম । সকালে (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট হাযির হলাম ।) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “হে আবূ হুরাইরা ! গত রাতে তোমার বন্দী কি আচরণ করেছে ?” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল ! সে তার অভাব ও (অসহায়) পরিবার-সন্তানের অভিযোগ জানাল । সুতরাং তার প্রতি আমার দয়া হলে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম ।’ তিনি বললেন, “সতর্ক থেকো, সে আবার আসবে ।”
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অনুরূপ উক্তি শুনে সুনিশ্চিত হলাম যে, সে আবার আসবে । কাজেই আমি তার প্রতীক্ষায় থাকলাম । সে (পূর্ববৎ) এসে আঁজলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল । আমি তাকে বললাম, ‘অবশ্যই তোকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে পেশ করব ।’ সে বলল, ‘আমি অভাবী, পরিবারের দায়িত্ব আমার উপর, (আমাকে ছেড়ে দাও) আমি আর আসব না ।’ সুতরাং আমার মনে দয়া হল । আমি তাকে ছেড়ে দিলাম । সকালে উঠে (যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে গেলাম তখন) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেন, “আবূ হুরাইরা ! গত রাত্রে তোমার বন্দী কিরূপ আচরণ করেছে ?” আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সে তার অভাব ও অসহায় সন্তান-পরিবারের অভিযোগ জানাল । সুতরাং আমার মনে দয়া হলে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম ।’ তিনি বললেন, “সতর্ক থেকো, সে আবার আসবে ।”
সুতরাং তৃতীয়বার তার প্রতীক্ষায় রইলাম । সে (এসে) আঁজলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল । আমি তাকে ধরে বললাম, “এবারে তোকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবারে হাযির করবই । এটা তিনবারের মধ্যে শেষবার । ‘ফিরে আসবো না’ বলে তুই আবার ফিরে এসেছিস ।” সে বলল, ‘তুমি আমাকে ছেড়ে দাও, আমি তোমাকে এমন কতকগুলি শব্দ শিখিয়ে দেব, যার দ্বারা আল্লাহ তোমার উপকার করবেন ।’ আমি বললাম, ‘সেগুলি কি ?’ সে বলল, ‘যখন তুমি (ঘুমাবার জন্য) বিছানায় যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি পাঠ করে (ঘুমাবে) । তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে । আর সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না ।’
সুতরাং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম । আবার সকালে (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে গেলাম ।) তিনি আমাকে বললেন, “তোমার বন্দী কি আচরণ করেছে ?” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল ! সে বলল, “আমি তোমাকে এমন কতিপয় শব্দ শিখিয়ে দেব, যার দ্বারা আল্লাহ আমার কল্যাণ করবেন ।” বিধায় আমি তাকে ছেড়ে দিলাম ।’ তিনি বললেন, “সে শব্দগুলি কি ?” আমি বললাম, ‘সে আমাকে বলল, “যখন তুমি বিছানায় (শোয়ার জন্য) যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম’ পড়ে নেবে ।” সে আমাকে আরও বলল, “তার কারণে আল্লাহর তরফ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবে । আর সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসবে না ।” (এ কথা শুনে) তিনি বললেন, “শোনো ! সে নিজে ভীষণ মিথ্যাবাদী; কিন্তু তোমাকে সত্য কথা বলেছে । হে আবূ হুরাইরা ! তুমি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথা বলছিলে ?” আমি বললাম, ‘জী না।’ তিনি বললেন, “সে শয়তান ছিল ।” (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ২৩১১ নং হাদীসের পরবর্তী বাব ।)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২৮

وَعَنْ أَبي الدَّردَاءِ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الكَهْفِ، عُصِمَ مِنَ الدَّجَّالِ . وفي رواية: مِنْ آخِرِ سُورَةِ الكَهْفِ - رواهما مسلم

আবূ দার্দা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দিক থেকে দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের (ফিতনা) থেকে পরিত্রাণ পাবে ।” অন্য বর্ণনায় ‘কাহাফ সূরার শেষ দিক থেকে’ উল্লেখ হয়েছে । (মুসলিম) (আমি (আলবানী) বলছিঃ দ্বিতীয় বর্ণনাটি শায আর প্রথম বর্ণনাটি নিরাপদ (সহীহ্) যেমনটি আমি “সিলসিলাহ্ সহীহাহ্” গ্রন্থে (নং ৫৮২) তাহকীক্ব করেছি । এর সাক্ষ্য দিচ্ছে নাওয়াস ইবনু সাম‘আনের আগত হাদীসটি । যেটিকে (১৮১৭) নম্বরে লেখক উল্লেখ করেছেন । কারণ এতে বলা হয়েছে যে, তোমাদের মধ্যে থেকে যে ব্যক্তি দাজ্জালকে পেয়ে বসবে সে যেন তার বিপক্ষে সূরা কাহাফের প্রথম অংশ পাঠ করে ।

মুসলিম ৮০৯, তিরমিযী ২৮৮৬, আবূ দাঊদ ৪৩২৩, আহমাদ ২১২০০, ২৬৯৭০, ২৬৯৯২

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০২৯

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: بَيْنَمَا جِبْرِيلُ عليه السلام قَاعِدٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم سَمِعَ نَقِيضاً مِنْ فَوقِهِ، فَرَفَعَ رَأسَهُ، فَقَالَ: هَذَا بَابٌ مِنَ السَّمَاءِ فُتِحَ اليَوْمَ وَلَمْ يُفْتَحْ قَطُّ إِلاَّ اليَوْمَ، فنَزلَ منهُ مَلَكٌ، فَقَالَ: هَذَا مَلَكٌ نَزَلَ إِلَى الأَرْضِ لَمْ يَنْزِلْ قَطّ إِلاَّ اليَومَ فَسَلَّمَ وَقَالَ: أَبْشِرْ بِنُورَيْنِ أُوتِيتَهُمَا لَمْ يُؤتَهُمَا نَبِيٌّ قَبْلَكَ: فَاتِحَةُ الكِتَابِ، وَخَواتِيمُ سُورَةِ البَقَرَةِ، لَنْ تَقْرَأَ بِحَرْفٍ مِنْهَا إِلاَّ أُعْطِيتَه. رواه مسلم

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা জিবরীল عليه السلام নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট বসে ছিলেন । এমন সময় উপর থেকে একটি শব্দ শুনতে পেলেন । তিনি (জিবরীল) মাথা তুলে বললেন, ‘এটি আসমানের একটি দরজা, যা আজ খোলা হল । ইতোপূর্বে এটা কখনও খোলা হয়নি । ওদিক দিয়ে একজন ফিরিশ্‌তা অবতীর্ণ হল । এই ফিরিশ্‌তা যে দুনিয়াতে অবতরণ করেছে, ইতোপূর্বে কখনও অবতরণ করেনি ।’ সুতরাং তিনি এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সালাম জানিয়ে বললেন, “আপনি দু’টি জ্যোতির সুসংবাদ নিন । যা আপনার আগে কোন নবীকে দেওয়া হয়নি । (সে দু’টি হচ্ছে) সূরা ফাতেহা ও সূরা বাক্বারার শেষ আয়াতসমূহ । ওর মধ্য হতে যে বর্ণটিই পাঠ করবেন, তাই আপনাকে দেওয়া হবে ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৮০৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮৪

কুরআন পঠন-পাঠনের জন্য সমবেত হওয়া মুস্তাহাব

১০৩০

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللهِ يَتلُونَ كِتَابَ اللهِ، وَيَتَدَارَسُونَهُ بَينَهُمْ، إِلاَّ نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَغَشِيتْهُمُ الرَّحْمَةُ، وَحَفَّتْهُمُ المَلاَئِكَةُ، وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখনই কোনো সম্প্রদায় আল্লাহর ঘরসমূহের মধ্যে কোন এক ঘরে একত্রিত হয়ে আল্লাহর গ্রন্থ (কুরআন) পাঠ করে, তা নিয়ে পরস্পরের মধ্যে অধ্যয়ন করে, তাহলে তাদের প্রতি (আল্লাহর পক্ষ থেকে) প্রশান্তি অবতীর্ণ হয় এবং তাদেরকে তাঁর রহমত ঢেকে নেয়, আর ফিরশ্‌তাবর্গ তাদেরকে ঘিরে ফেলেন । আল্লাহ স্বয়ং তাঁর নিকটস্থ ফিরিশ্‌তামণ্ডলীর কাছে তাদের কথা আলোচনা করেন ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২৬৯৯, ২৭০০, তিরমিযী ১৪২৫, ১৯৩০, ২৬৪৬, ২৯৪৫, আবূ দাঊদ ১৪৫৫, ৪৯৪৬, নাসায়ী ৯১২, ইবনু মাজাহ ২২৫, আহমাদ ৭৩৭৯, ৭৮৮২, ১০১১৮, ১০২৯৮, দারেমী ৩৪৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮৫

ওযূর ফযীলত

১০৩১

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: إِنَّ أُمَّتِي يُدْعَوْنَ يَوْمَ القِيَامَةِ غُرّاًً مُحَجَّلِينَ مِنْ آثَارِ الوُضُوءِ، فَمَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أنْ يُطِيلَ غُرَّتَهُ فَلْيَفْعَلْ. متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, “নিশ্চয় আমার উম্মতকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় ডাকা হবে, যে সময় তাদের ওযূর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে । সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তার চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে ।” (অর্থাৎ সে যেন তার ওযূর সীমার অতিরিক্ত অংশও ধুয়ে ফেলে ।) (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১৩৬, মুসলিম ২৪৬, ইবনু মাজাহ ৪৩০৬, আহমাদ ৮২০৮, ৮৫২৪, ৮৯৪২, ১০৩৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৬০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩২

وَعَنْه، قَالَ: سَمِعْتُ خَلِيلِي صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «تَبْلُغُ الحِلْيَةُ مِنَ المُؤمِنِ حَيْثُ يَبْلُغُ الوُضُوءُ». رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, “(পরকালে) মু’মিনের অলংকার ততদূর হবে, যতদূর তার ওযূর (পানি) পৌঁছবে।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২৫০, নাসায়ী ১৪৯, আহমাদ ৭১২৬, ৮৬২৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩৩

وَعَنْ عُثمَانَ بنِ عَفَّانَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم ِ «مَن تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الوُضُوءَ، خَرَجَتْ خَطَايَاهُ مِنْ جَسَدِهِ حَتَّى تَخْرُج مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِه». رواه مسلم

উসমান ইবনে ‘আফ্‌ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করবে, তার পাপসমূহ তার দেহ থেকে বেরিয়ে যাবে । এমনকি তার নখগুলোর নিচে থেকেও (পাপ) বেরিয়ে যাবে ।”

(সহীহুল বুখারী ২৪৫, আহমাদ ৪৭৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩৪

وَعَنْه، قَالَ: رَأيتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم تَوَضَّأَ مِثْلَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ قَالَ: «مَنْ تَوَضَّأ هكَذَا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، وَكَانَتْ صَلاَتُهُ وَمَشْيُهُ إِلَى المَسْجدِ نَافِلَةً». رواه مسلم

উক্ত রাবী থেকে বর্ণিতঃ

আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমার এই ওযূর মত ওযূ করতে দেখলাম । অতঃপর তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি এরূপ ওযূ করবে, তার পূর্বকৃত পাপরাশি মাফ করা হবে এবং তার নামায ও মসজিদের দিকে চলার সওয়াব অতিরিক্ত হবে ।”

(সহীহুল বুখারী ১৬০, ১৬৪, ১৯৩৪, ৬৪৩৩, মুসলিম ২২৯, ২২৬, ২২৭, ২৩১২, নাসায়ী ৮৪, ৮৫, ১৪৫, ১৪৬, ৮৫৬, আবূ দাঊদ ১০৬, ১০৮, ১১০, ইবনু মাজাহ ২৮৫, আহমাদ ৪০২, ৪১৭, ৪২০, ৪৩১, ৪৩২, ৪৬১, ৪৭৪, ৪৮৫, ৪৯১, ৫০৫, ৫১৮, ৫২৮, ৫৫৪, মুওয়াত্তা মালিক ৬১, দারেমী ৬৯৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩৫

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِذَا تَوَضَّأ العَبْدُ المُسْلِمُ - أَو المُؤْمِنُ - فَغَسَلَ وَجْهَهُ، خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ المَاءِ، أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ المَاءِ، فَإذَا غَسَلَ يَدَيْهِ، خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ المَاءِ، أَو مَعَ آخِرِ قَطْرِ المَاءِ، فَإذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ، خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلاَهُ مَعَ المَاءِ، أَو مَعَ آخِرِ قَطْرِ المَاءِ، حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيَّاً مِنَ الذُّنُوبِ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মুসলিম কিংবা মুমিন বান্দাহ যখন ওযূ করবে এবং যখন সে নিজ মুখমণ্ডল ধৌত করবে, তখন তার মুখমণ্ডল হতে সেই গোনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যাবে, যে সব গোনাহ তার দু’টি চোখ দিয়ে দেখার ফলে সংঘটিত হয়েছিল । (অনুরূপভাবে) যখন সে নিজ হাত দু’টি ধোবে, তখন তা হতে সে সব পাপ পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে নির্গত হয়ে যাবে, যে সব পাপ তার দুই হাত দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল । আর যখন সে নিজ পা দু’টি ধৌত করবে, তখন তার পা দু’টি হতে সে সমস্ত পাপরাশি পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যাবে, যেগুলি তার দু’টি পায়ে চলার ফলে সংঘটিত হয়েছিল । শেষ অবধি সে (ক্ষুদ্র) পাপরাশি হতে পাক-পবিত্র হয়ে বেরিয়ে আসবে ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২৪৪, তিরমিযী ২, আহমাদ ৭৯৬০, মুওয়াত্তা মালিক ৬৩, দারেমী ৭১৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩৬

وَعَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَتَى المَقبَرَةَ، فَقَالَ: «السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَومٍ مُؤْمِنِينَ، وَإنَّا إنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ، وَدِدْتُ أنَّا قَدْ رَأَيْنَا إِخْوانَنَا» قَالُوا: أَوَلَسْنَا إِخْوَانَكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ؟ قَالَ: «أنْتُمْ أَصْحَابِي، وَإِخْوَانُنَا الَّذِينَ لَمْ يَأتُوا بَعْدُ» قَالُوا: كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأتِ بَعْدُ مِنْ أُمَّتِكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ؟ فَقَالَ: «أَرَأيْتَ لَوْ أنَّ رَجُلاً لَهُ خَيلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَيْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ، أَلاَ يَعْرِفُ خَيْلَهُ ؟» قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إِنَّهُمْ يَأتُونَ غُرّاً مُحَجَّلينَ مِنَ الوُضُوءِ، وَأنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الحَوْضِ». رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একবার) কবরস্থানে এসে (কবরবাসীদের সম্বোধন ক’রে) বললেন, “হে (পরকালের) ঘরবাসী মুমিনগণ ! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষণ হোক । যদি আল্লাহ চান তো আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব । আমার বাসনা যে, যদি আমরা আমাদের ভাইদেরকে দেখতে পেতাম ।” সাহাবীগণ নিবেদন করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আমরা কি আপনার ভাই নই ?’ তিনি বললেন, “তোমরা তো আমার সহচরবৃন্দ । আমার ভাই তারা, যারা এখনো পর্যন্ত আগমন করেনি ।” সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আপনার উম্মতের মধ্যে যারা এখনো পর্যন্ত আগমন করেনি, তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনতে পারবেন ?’ তিনি বললেন, “আচ্ছা বল, যদি খাঁটি কাল রঙের ঘোড়ার দলে, কোনো লোকের কপাল ও পা সাদা দাগবিশিষ্ট ঘোড়া থাকে, তাহলে কি সে তার ঘোড়া চিনতে পারবে না ?” তাঁরা বললেন, ‘অবশ্যই পারবে, হে আল্লাহর রসূল !’ তিনি বললেন, “তারা এই অবস্থায় (হাশরের মাঠে) আগমন করবে যে, ওযূ করার দরুন তাদের হাত-পা চমকাতে থাকবে । আর আমি ‘হাওযে’-এ তাদের অগ্রগামী ব্যবস্থাপক হব ।” (অর্থাৎ তাদের আগেই আমি সেখানে পৌঁছে যাব ।)

(সহীহুল বুখারী ২৩৬৭, মুসলিম ২৪৯, নাসায়ী ১৫০, আবূ দাঊদ ৩২৩৭, ইবনু মাজাহ ৪৩০৬, আহমাদ ৭৯৩৩, ৮৬৬১, ৯০৩৭, ৯৫৪৭, ৯৬৯৩, মুওয়াত্তা মালিক ৬০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩৭

وَعَنْه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «أَلاَ أَدُّلُكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الخَطَايَا، وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ ؟» قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إِسْبَاغُ الوُضُوءِ عَلَى المَكَارِهِ، وَكَثْرَةُ الخُطَا إِلَى المَسَاجِدِ، وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ ؛ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ ؛ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ». رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একদা সমবেত সহচরদের উদ্দেশ্যে) বললেন, “তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলব না কি, যার দ্বারা আল্লাহ গোনাহসমূহকে মোচন করে দেবেন এবং (জান্নাতে) তার দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন ?” তাঁরা বললেন, ‘অবশ্যই, হে আল্লাহর রসূল !’ তিনি বললেন, “(তা হচ্ছে) কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে ওযূ করা, অধিক মাত্রায় মসজিদে গমন করা এবং এক অক্তের নামায আদায় ক’রে পরবর্তী অক্তের নামাযের জন্য অপেক্ষা করা । আর এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ । এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২৫১, তিরমিযী ৫১, নাসায়ী ১৪৩, আহমাদ ৭১৬৮, ৭৬৭২, ৭৯৩৫, ৭৯৬১, ৯৩৬১, মুওয়াত্তা মালিক ৩৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩৮

وَعَنْ أَبي مالك الأشعري رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «الطُّهُورُ شَطْرُ الإيمَانِ». رواه مسلم

আবূ মালেক আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “(বাহ্যিক) পবিত্রতা অর্জন করা হল অর্ধেক ঈমান ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২২৩, তিরমিযী ৩৫১৭, ইবনু মাজাহ ২৮০, আহমাদ ২২৩৯৫, ২২৪০১, দারেমী ৬৫৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৩৯

وَعَنْ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِغُ أَوْ فَيُسْبِغُ ألوُضُوءَ، ثُمَّ يَقُوْلُ: أَشهَدُ أَنْ لاَ إلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ؛ إِلاَّ فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ. رواه مسلم، وزاد الترمذي: اَللهم اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ، وَاجْعَلْنِي مِنَ المُتَطَهِّرِينَ

উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “পরিপূর্ণরূপে ওযূ ক’রে যে ব্যক্তি এই দুআ বলবে, ‘আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, অ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ ।’ অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই । তিনি একক, তাঁর কোন অংশী নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দাস ও প্রেরিত দূত (রসূল) । তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা তাতে প্রবেশ করবে ।”(মুসলিম)

মুসলিম ২৩৪, তিরমিযী ৫৫, নাসায়ী ১৪৮, ১৫১, আবূ দাঊদ ১৬৯, ৯০৬, ইবনু মাজাহ ৪৭০, আহমাদ ১৬৯১২, ১৬৯৪২, ১৬৯৯৫)
ইমাম তিরমিযী (উক্ত দুআর শেষে) এ শব্দগুলি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, ‘আল্লা-হুম্মাজ্‌আলনি মিনাত্ তাওয়া-বিনা অজ্‌আলনি মিনাল মুতাত্বাহহিরিন ।’
অর্থাৎ হে আল্লাহ ! আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর । (তিরমিযী, সহীহ, তামামুল মিন্নাহ দ্রঃ)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮৬

আযানের ফযীলত

১০৪০

عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِ الأَوَّلِ، ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلاَّ أنْ يَسْتَهِمُوا عَلَيْهِ لاَسْتَهَمُوا عَلَيْهِ، ولو يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لاَسْتَبَقُوا إِلَيْهِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي العَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْواً». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “লোকেরা যদি জানত যে, আযান দেওয়া ও নামাযের প্রথম সারিতে দাঁড়াবার কি মাহাত্ম্য আছে, অতঃপর (তাতে অংশগ্রহণের জন্য) যদি লটারি ব্যতিরেকে অন্য কোনো উপায় না পেত, তবে তারা অবশ্যই সে ক্ষেত্রে লটারির সাহায্য নিত । (অনুরূপ) তারা যদি জানত যে, আগে আগে মসজিদে আসার কি ফযীলত, তাহলে তারা সে ব্যাপারে প্রতিযোগিতা করত । আর তারা যদি জানত যে, এশা ও ফজরের নামায (জামাতে) পড়ার ফযীলত কত বেশি, তাহলে মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে বা পাছা ছেঁচড়ে আসতে হলেও তারা অবশ্যই আসত ।” (বুখারী-মুসলিম)

(মুসলিম ৩৮৭, ইবনু মাজাহ ৭২৫, আহমাদ ১৬৪১৯, ১৬৪৫৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪১

وَعَنْ مُعَاوِيَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «المُؤَذِّنُونَ أَطْوَلُ النَّاسِ أَعْناقاً يَوْمَ القِيَامَةِ». رواه مسلم

মুআবিয়াহ ইবনে আবূ সুফয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছি, “কিয়ামতের দিনে সমস্ত লোকের চাইতে মুয়ায্‌যিনদের গর্দান লম্বা হবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৬০৯, ৩২৯৬, ৭৫৪৮, নাসায়ী ৬৪৪, ইবনু মাজাহ ৭২৩, আহমাদ ১০৬৪৮, ১০৯১২, ১১০০০, মুওয়াত্তা মালিক ১৫৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪২

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَبدِ الرَّحْمَانِ بنِ أَبي صَعْصَعَة: أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الخُدرِيَّ رضي الله عنه، قَالَ لَهُ :إنِّي أَرَاكَ تُحبُّ الغَنَمَ وَالبَادِيَةَ فَإِذَا كُنْتَ فِي غَنَمِك - أَوْ بَادِيتِكَ - فَأذَّنْتَ لِلصَّلاَةِ، فَارْفَعْ صَوْتَكَ بِالنِّدَاءِ، فَإِنَّهُ لاَ يَسْمَعُ مَدَى صَوْتِ المُؤَذِّنِ جِنٌّ، وَلاَ إِنْسٌ، وَلاَ شَيْءٌ، إِلاَّ شَهِدَ لَهُ يَومَ القِيَامَةِ» قَالَ أَبُو سَعِيدٍ: سَمِعتُهُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم . رواه البخاري

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে স্বা‘স্বাআহ থেকে বর্ণিতঃ

একদা আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে দেখছি যে, তুমি ছাগল ও মরুভূমি ভালোবাসো । সুতরাং তুমি যখন তোমার ছাগলে বা মরুভূমিতে থাকবে আর নামাযের জন্য আযান দেবে, তখন উচ্চ স্বরে আযান দিয়ো । কারণ মুয়ায্‌যিনের আযান ধ্বনি যতদূর পর্যন্ত মানব-দানব ও অন্যান্য বস্তু শুনতে পাবে, কিয়ামতের দিন তারা তার জন্য সাক্ষ্য দেবে ।’ আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, ‘আমি এটি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট শুনেছি ।’ (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ৬০৮, ১২২২, ১২৩১, ১২৩২, ৩২৮৫, মুসলিম ৩৮৯, তিরমিযী ৩৯৭, নাসায়ী ৬৭০, ১২৫৩, আবূ দাঊদ ৫১৬, ইবনু মাজাহ ১২১৬, ১২১৭, আহমাদ ৭৬৩৭, ৭৭৪৪, ৭৭৬৩, ৮৯১৯, ৯৬১৫, ৯৮৯৩, ১০৩৯০, ১০৪৯৫, মুওয়াত্তা মালিক ১৫৪, ২২৪, দারেমী ১২০৪, ১৪৯৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪৩

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «إِذَا نُودِيَ بِالصَّلاَةِ، أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ، وَلَهُ ضُرَاطٌ حَتَّى لاَ يَسْمَعَ التَّأذِينَ، فَإِذَا قُضِيَ النِّدَاءُ أقْبَلَ، حَتَّى إِذَا ثُوِّبَ للصَّلاةِ أَدْبَرَ، حَتَّى إِذَا قُضِيَ التَّثْوِيبُ أَقْبَلَ، حَتَّى يَخْطِرَ بَيْنَ المَرْءِ وَنَفْسِهِ، يَقُوْلُ: اذْكُرْ كَذَا وَاذْكُرْ كَذَا - لِمَا لَمْ يَذْكُرْ مِنْ قَبْلُ - حَتَّى يَظَلَّ الرَّجُلُ مَا يَدْرِيْ كَمْ صَلَّى». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন নামাযের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন শয়তান বাতকর্ম করতে করতে পিঠ ঘুরিয়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযান শুনতে না পায় । তারপর আযান শেষ হলে ফিরে আসে । শেষ পর্যন্ত যখন ‘তাকবীর’ দেওয়া হয়, তখন আবার পিঠ ঘুরিয়ে পালায় । অতঃপর যখন ‘তাকবীর’ শেষ হয়, তখন আবার ফিরে আসে । পরিশেষে (নামাযী) ব্যক্তির মনে এই কুমন্ত্রণা প্রক্ষেপ করে যে, অমুক জিনিসটা স্মরণ কর, অমুক বস্তুটা খেয়াল কর । সে সমস্ত বিষয় (স্মরণ করায়) যা পূর্বে তার স্মরণে ছিল না । শেষ পর্যন্ত এ ব্যক্তি এরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় যে, সে বুঝতে পারে না, কত রাক‘আত নামায সে আদায় করল ।” (বুখারী, মুসলিম)

(মুসলিম ৩৮৪, তিরমিযী ৩৬১৪, নাসায়ী ৬৭৮, আবূ দাঊদ ৫২৩, আহমাদ ৬৫৩২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪৪

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُوْلُ: إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُوْلُ، ثُمَّ صَلُّوا عَلَيَّ ؛ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلاَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْراً، ثُمَّ سَلُوا اللهَ لِيَ الوَسِيلَةَ ؛ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الجَنَّةِ لاَ تَنْبَغِي إِلاَّ لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللهِ، وَأرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ، فَمَنْ سَأَلَ لِيَ الوَسِيلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ». رواه مسلم

আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আম্‌র ইবনে আ’স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুআয্‌যিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলবে । তারপর আযান শেষে আমার উপর দরূদ পাঠ করবে । কেননা, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে, তার বিনিময়ে তার প্রতি আল্লাহ দশটি রহমত নাযেল করবেন । অতঃপর তোমরা আল্লাহর নিকট আমার জন্য ‘অসীলা’ প্রার্থনা করবে । কারণ, ‘অসীলা’ হচ্ছে জান্নাতের এমন একটি স্থান, যা সমস্ত বান্দার মধ্যে কেবল আল্লাহর একটি বান্দা (তার উপযুক্ত) হবে । আর আশা করি, আমিই সেই বান্দা হব । সুতরাং যে ব্যক্তি আমার জন্য অসীলা প্রার্থনা করবে, তার জন্য (আমার) সুপারিশ অনিবার্য হয়ে যাবে ।” (মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৬১১, মুসলিম ৩৮৩, তিরমিযী ২০৮, নাসায়ী ৬৭৩, আবূ দাঊদ ৫২২, ইবনু মাজাহ ৭২০, আহমাদ ১০৬৩৭, ১১১১২, ১১৩৩৩, ১১৪৫০, মুওয়াত্তা মালিক ১৫০, দারেমী ১২০১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪৫

وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم «إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ، فَقُولُوا كَمَا يَقُوْلُ المُؤَذِّنُ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন তোমরা আযান ধ্বনি শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুআয্‌যিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলো” (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৬১৪, ৪৭১৯, তিরমিযী ২১১, নাসায়ী ৬৮০, আবূ দাঊদ ৫২৯, ইবনু মাজাহ ৭২২, আহমাদ ১৪৪০৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪৬

وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم «إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ، فَقُولُوا كَمَا يَقُوْلُ المُؤَذِّنُ». متفقٌ عَلَيْهِ

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আযান শুনে (আযানের শেষে) এই দুআ বলবে,
‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-যিহিদ দা‘অতিত্ তা-ম্মাহ, অস্স্বালা-তিল ক্বা-য়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল অসীলাতা অলফাযীলাহ, অবআষহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী অ‘আত্তাহ ।’
অর্থাৎ হে আল্লাহ এই পূর্ণা-ঙ্গ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠা লাভকারী নামাযের প্রভু ! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তুমি অসীলা (জান্নাতের এক উচ্চ স্থান) ও মর্যাদা দান কর এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ ।
সে ব্যক্তির জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ অনিবার্য হয়ে যাবে ।” (বুখারী)

(মুসলিম ৩৮৬, তিরমিযী ২১০, নাসায়ী ৬৭৯, আবূ দাঊদ ৫২৫, ইবনু মাজাহ ৭২১, আহমাদ ১৫৬৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪৭

وَعَنْ سَعدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، أنَّه قَالَ: «مَنْ قَالَ حِيْنَ يَسْمَعُ المُؤَذِّنَ: أَشْهَدُ أَنْ لاَ إلَه إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبّاً، وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً، وَبِالإِسْلامِ دِيناً، غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ» رواه مسلم

সা‘দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, “আযান শুনে যে ব্যক্তি এই দুআ পড়বে,
‘আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, অ আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ, রাদ্বীতু বিল্লা-হি রাব্বিঁউ অ বিমুহাম্মাদির রাসূলাঁউ অ বিলইসলা-মি দ্বীনা ।’
অর্থাৎ আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দাস ও প্রেরিত রসূল । আল্লাহকে প্রতিপালক বলে মেনে নিতে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবীরূপে স্বীকার করতে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করতে আমি সম্মত ও তুষ্ট হয়েছি ।
সে ব্যক্তির (ছোট ছোট) গুনাহ ক্ষমা ক’রে দেওয়া হবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৫২৮, মুসলিম ৬৬৭, তিরমিযী ২৮৬৮, নাসায়ী ৪৬২, আহমাদ ৮৭০৫, ৯২২১, ৯৩৯৯, দারেমী ১১৮৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৪৮

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «الدُّعَاءُ لاَ يُرَدُّ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإقَامَةِ». رواه أَبُو داود والترمذي، وقال : (حديث حسن)

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আযান ও ইকামতের মধ্য সময়ে কৃত প্রার্থনা রদ করা হয় না ।” (অর্থাৎ এ সময়ের দুআ কবুল হয়) ।

(মুসলিম ৬৬৮, আহমাদ ১৩৮৬৩, ১৩৯৯৯, ১৪৪৩৯, দারেমী ১১৮২)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮৭

নামাযের ফযীলত

১০৪৯

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «أَرَأيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهْرَاً بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ، هَلْ يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ ؟» قَالُوا: لاَ يَبْقَى مِنْ دَرنهِ شَيْءٌ، قَالَ: «فَذَلِكَ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الخَمْسِ يَمْحُو اللهُ بِهِنَّ الخَطَايَا». متفقٌ عَلَيْهِ .

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছেন, “আচ্ছা তোমরা বল তো, যদি কারোর বাড়ির দরজার সামনে একটি নদী থাকে, যাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার ক’রে গোসল করে, তাহলে তার শরীরে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে কি ?” সাহাবীগণ বললেন, ‘(না,) কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না ।’ তিনি বললেন, “পাঁচ অক্তের নামাযের উদাহরণও সেইরূপ । এর দ্বারা আল্লাহ পাপরাশি নিশ্চিহ্ন করে দেন ।” (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ৫২৬, ৪৬৮৭, মুসলিম ২৭৬৩, তিরমিযী ৩১১২, ৩১১৪, আবূ দাঊদ ৪৪৬৮, ইবনু মাজাহ ১৩৯৮, ৪২৫৪, আহমাদ ৩৬৪৫, ২৩৮৪৪, ৪০৮৩, ৪২৩৮, ৪২৭৮, ৪৩১৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫০

وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الخَمْسِ كَمَثَلِ نَهْرٍ جَارٍ غَمْرٍ عَلَى بَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَومٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ». رواه مسلم

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পাঁচ অক্তের নামাযের উদাহরণ ঠিক প্রবাহিত নদীর ন্যায়, যা তোমাদের কোনো ব্যক্তির দরজার পাশে থাকে; যাতে সে প্রত্যহ পাঁচবার ক’রে গোসল ক’রে থাকে ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২৩৩, তিরমিযী ২১৪, ইবনু মাজাহ ১০৮৬, আহমাদ ৭০৮৯, ৮৪৯৮, ৮৯৪৪, ৯০৯২, ১০১৯৮, ২৭২৯০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫১

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَجُلاً أَصَابَ مِنِ امْرَأَةٍ قُبْلَةً، فَأتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى: ﴿ قم الصلاة طرفي النهار وزلفًا من الليل، إن الحسنات يذهبن السيئات﴾ (هود: ١١٤) فَقَالَ الرَّجُلُ أَلِيَ هَذَا ؟ قَالَ: «لِجَمِيعِ أُمَّتِي كُلِّهِمْ». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি এক মহিলাকে চুমা দিয়ে ফেলে । অতঃপর সে (অনুতপ্ত হয়ে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে ঘটনাটি বলে । তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করেন, যার অর্থ: “তুমি নামায প্রতিষ্ঠা কর দিবসের দুই প্রান্তে এবং রাত্রির প্রথম ভাগে, নিশ্চয় পুণ্য কর্মাদি পাপ-রাশিকে বিদূরিত ক’রে থাকে ।” (সূরা হুদ ১১৪ আয়াত) লোকটি বলল, ‘এ বিধান কি কেবল আমার জন্য ?’ তিনি বললেন, “আমার উম্মতের সকলের জন্য ।” (বুখারী মুসলিম)

(মুসলিম ২২৮, নাসায়ী ১৪৬, ১৪৭, ৮৫৬, আহমাদ ৪৮৫, ৫০৫, ৫১৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫২

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «الصَّلَوَاتُ الخَمْسُ، وَالجُمُعَةُ إِلَى الجُمُعَةِ، كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ، مَا لَمْ تُغشَ الكَبَائِرُ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পাঁচ অক্তের নামায, এক জুমআহ থেকে পরবর্তী জুমআহ পর্যন্ত এর মধ্যবর্তী সময়ে যেসব পাপ সংঘটিত হয়, সে সবের মোচন-কারী হয় (এই শর্তে যে,) যদি মহাপাপে লিপ্ত না হয় ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২৩৩, তিরমিযী ২১৪, ইবনু মাজাহ ১০৮৬, আহমাদ ৭০৮৯, ৮৪৯৮, ৯৮৪৪, ৯০৯২, ২৭২৯০, ১০১৯৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫৩

وَعَنْ عُثمَانَ بنِ عَفَّانَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «مَا مِنِ امْرِئٍ مُسْلِمٍ تَحْضُرُهُ صَلاَةٌ مَكْتُوبَةٌ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهَا ؛ وَخُشُوعَهَا، وَرُكُوعَهَا، إِلاَّ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا قَبْلَهَا مِنَ الذُّنُوب مَا لَمْ تُؤتَ كَبِيرةٌ، وَذَلِكَ الدَّهْرَ كُلَّهُ». رواه مسلم

উসমান ইবনে আফ্‌ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, “যে ব্যক্তি ফরয নামাযের জন্য ওযূ করবে এবং উত্তমরূপে ওযূ সম্পাদন করবে । (অতঃপর) তাতে উত্তমরূপে ভক্তি-বিনয়-নম্রতা প্রদর্শন করবে এবং উত্তমরূপে ‘রুকু’ সমাধা করবে । তাহলে তার নামায পূর্বে সংঘটিত পাপরাশির জন্য কাফ্‌ফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হয়ে যাবে; যতক্ষণ মহাপাপে লিপ্ত না হবে । আর এ (রহমতে ইলাহির ধারা) সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ২২৮, নাসায়ী ১৪৬, ১৪৭, ৮৫৬, আহমাদ ৪৮৫, ৫০৫, ৫১৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮৮

ফজর ও আসরের নামাযের ফযীলত

১০৫৪

عَنْ أَبِي مُوسَى رضي الله عنه:أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ صَلَّى البَرْدَيْنِ دَخَلَ الجَنَّةَ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি দুই ঠাণ্ডা নামায পড়ে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৫৭৪, মুসলিম ৬৩৫, আহমাদ ১৬২৮৯, দারেমী ১৪২৫)
দুই ঠাণ্ডা নামায হচ্ছে: ফজর ও আসরের নামায ।

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫৫

وَعَنْ أَبي زُهَيرٍ عُمَارَةَ بنِ رُؤَيْبَةَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُوْلُ: «لَنْ يَلِجَ النَّارَ أَحَدٌ صَلَّى قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا» يعني: الفَجْرَ والعَصْرَ . رواه مسلم

আবূ যুহাইর উমারাহ ইবনে রুআইবাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, “যে ব্যক্তি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে (অর্থাৎ ফজরের ও আসরের নামায) আদায় করবে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৬৩৪, নাসায়ী ৪৭১, ৪৮৭, আবূ দাঊদ ৪২৭, আহমাদ ১৬৭৬৯, ১৭৮৩৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫৬

وَعَنْ جُنْدُبِ بنِ سُفيَانَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللهِ، فَانْظُرْ يَا ابْنَ آدَمَ، لاَ يَطْلُبَنَّكَ اللهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيءٍ». رواه مسلم

জুন্দুব ইবনে সুফয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজরের নামায পড়ল, সে আল্লাহর জামানত লাভ করল। অতএব হে আদম সন্তান! লক্ষ্য রাখ, আল্লাহ যেন অবশ্যই তোমাদের কাছে তার জামানতের কিছু দাবী না করেন ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৬৫৭, তিরমিযী ২২২, আহমাদ ১৮৩২৬, ১৮৩৩৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫৭

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «يَتَعَاقَبُونَ فِيكُمْ مَلاَئِكَةٌ بِاللَّيْلِ، وَمَلاَئِكَةٌ بِالنَّهَارِ، وَيجْتَمِعُونَ فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ وَصَلاَةِ العَصْرِ، ثُمَّ يَعْرُجُ الَّذِينَ بَاتُوا فِيكُمْ، فَيَسْأَلُهُمُ اللهُ ـ وَهُوَ أعْلَمُ بِهِمْ ـ كَيْفَ تَرَكْتُمْ عِبَادي ؟ فَيَقُوْلونَ: تَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ، وَأتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের নিকট দিবারাত্রি ফিরিশতাবর্গ পালাক্রমে যাতায়াত করতে থাকেন । আর ফজর ও আসরের নামাযে তাঁরা একত্রিত হন । অতঃপর যারা তোমাদের কাছে রাত কাটিয়েছেন, তাঁরা ঊর্ধ্বে (আকাশে) চলে যান । অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করেন---অথচ তিনি তাদের সম্পর্কে ভালভাবে পরিজ্ঞাত, ‘তোমরা আমার বান্দাদেরকে কি অবস্থায় ছেড়ে এসেছ ?’ তাঁরা বলেন, ‘আমরা যখন তাদেরকে ছেড়ে এসেছি, তখন তারা নামাযে প্রবৃত্ত ছিল । আর যখন আমরা তাদের নিকট গিয়েছিলাম, তখনও তারা নামাযে প্রবৃত্ত ছিল ।”(বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৫৫৫, ৩২২৩, ৭৪২৯, ৭৪৮৬, মুসলিম ৬৩২, নাসায়ী ৪৮৫, আহমাদ ৭৪৪০, ২৭৩৩৬, ৮৩৩৩, ৮৯০৬, ৯৯৩৬, মুওয়াত্তা মালিক ৪১৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫৮

وَعَنْ جَرِيرِ بنِ عَبدِ الله البَجَليِّ رضي الله عنه، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ النبيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَظَرَ إِلَى القَمَرِ لَيْلَةَ البَدْرِ، فَقَالَ: «إنَّكُمْ سَتَرَونَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا القَمَرَ، لاَ تُضَامُونَ في رُؤْيَتهِ، فَإنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لاَ تُغْلَبُوا عَلَى صَلاَةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا، فَافْعَلُوا» متفقٌ عَلَيْهِ . وفي رواية: فَنَظَرَ إِلَى القَمَرِ لَيْلَةَ أرْبَعَ عَشْرَةَ

জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট পূর্ণিমার রাতে বসে ছিলাম । তিনি চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “নিঃসন্দেহে তোমরা (পরকালে) তোমাদের প্রতিপালককে ঠিক এইভাবে দর্শন করবে, যেভাবে তোমরা এই পূর্ণিমার চাঁদ দর্শন করছ । তাঁকে দেখতে তোমাদের কোনো অসুবিধা হবে না । সুতরাং যদি তোমরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের আগে (নিয়মিত) নামায পড়তে পরাহত না হতে সক্ষম হও (অর্থাৎ এ নামায ছুটে না যায়), তাহলে অবশ্যই তা বাস্তবায়ন কর ।”

(সহীহুল বুখারী ৫৫৪, ৫৭৩, ৪৮৫১, ৭৪৩৪, ৭৪৩৫, ৭৪৩৬, মুসলিম ৬৩৩, তিরমিযী ২৫৫১, আবূ দাঊদ ৪৭৪৭২৯, ইবনু মাজাহ ১৭৭, আহমাদ ১৮৭০৮, ১৮৭২৩, ১৮৭৬৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৫৯

وَعَنْ بُرَيْدَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ تَرَكَ صَلاَةَ العَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ». رواه البخاري

বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আসরের নামায ত্যাগ করল, নিঃসন্দেহে তার আমল নষ্ট হয়ে গেল ।”

(সহীহুল বুখারী ৫৫৩, ৫৯৪, নাসায়ী ৪৭৪, ইবনু মাজাহ ৬৯৪, আহমাদ ২২৪৪৮, ২২৫১৭, ২২৫৩৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৮৯

মসজিদে যাওয়ার ফযীলত

১০৬০

عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «مَنْ غَدَا إِلَى المَسْجِدِ أَوْ رَاحَ، أَعَدَّ اللهُ لَهُ فِي الجَنَّةِ نُزُلاً كُلَّمَا غَدَا أَوْ رَاحَ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সকাল অথবা সন্ধ্যায় মসজিদে গমন করে, আল্লাহ তার জন্য আপ্যায়ন সামগ্রী জান্নাতের মধ্যে প্রস্তুত করেন । সে যতবার সকাল অথবা সন্ধ্যায় গমনাগমন করে, আল্লাহও তার জন্য ততবার আতিথেয়তার সামগ্রী প্রস্তুত করেন ।”

(সহীহুল বুখারী ৬৬২, মুসলিম ৪৬৭, ৬৬৯, আহমাদ ১০২৩০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৬১

وَعَنْه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ تَطَهَّرَ فِي بَيْتِهِ، ثُمَّ مَضَى إِلَى بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللهِ، لِيَقْضِي فَرِيضَةً مِنْ فَرَائِضِ اللهِ، كَانَتْ خُطُواتُهُ، إحْدَاهَا تَحُطُّ خَطِيئَةً، وَالأُخْرَى تَرْفَعُ دَرَجَةً». رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি বাড়ি থেকে ওযূ ক’রে আল্লাহর কোনো ঘরের দিকে এই উদ্দেশ্যে যাত্রা করে যে, আল্লাহর নির্ধারিত কোনো ফরয ইবাদত (নামায) আদায় করবে, তাহলে তার কৃত প্রতিটি দুই পদক্ষেপের মধ্যে একটিতে একটি ক’রে গুনাহ মিটাবে এবং অপরটিতে একটি ক’রে মর্যাদা উন্নত করবে ।”

(মুসলিম ৬৬৬, ইবনু মাজাহ ৭৭৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৬২

وَعَنْ أُبيّ بنِ كَعبٍ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ لاَ أَعْلمُ أَحَداً أبْعَدَ مِنَ المَسْجِدِ مِنْهُ، وَكَانَتْ لاَ تُخْطِئُهُ صَلاَةٌ، فَقِيلَ لَهُ: لَوِ اشْتَرَيْتَ حِمَاراً لِتَرْكَبَهُ فِي الظَّلْمَاءِ وَفِي الرَّمْضَاءِ، قَالَ: مَا يَسُرُّنِي أَنَّ مَنْزِلِي إِلَى جَنْبِ المَسْجِدِ، إنِّي أُرِيدُ أَنْ يُكْتَبَ لِي مَمْشَايَ إِلَى المَسْجِدِ، وَرُجُوعِي إذَا رَجَعْتُ إِلَى أَهْلِي . فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «قَدْ جَمَعَ اللهُ لكَ ذَلِكَ كُلَّه» رواه مُسلِم

উবাই ইবনে কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক আনসারী ছিল । মসজিদ থেকে তার চাইতে দূরে কোনো ব্যক্তি থাকত বলে আমার জানা নেই । তবুও সে কোনো নামায (মসজিদে জামাআতসহ) আদায় করতে ত্রুটি করত না । একদা তাকে বলা হল, ‘যদি একটা গাধা খরিদ করতে এবং রাতের অন্ধকারে ও উত্তপ্ত রাস্তায় তার উপর আরোহণ করতে, (তাহলে ভাল হত) ।’ সে বলল, ‘আমার বাসস্থান মসজিদের পার্শ্বে হলেও তা আমাকে আনন্দ দিতে পারত না । কারণ আমার মনস্কামনা এই যে, মসজিদে যাবার ও নিজ বাড়ি ফিরার সময় কৃত প্রতিটি পদক্ষেপ যেন লিপিবদ্ধ হয় ।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (তার এহেন পুণ্যাগ্রহ দেখে) বললেন, “নিশ্চিতরূপে আল্লাহ তোমার (ভাগ্যে) তা সমস্তই জুটিয়েছেন ।”

(মুসলিম ৬৬৩, আবূ দাঊদ ৫৫৭, ইবনু মাজাহ ৭৮৩, আহমাদ ২০৭০৯, দারেমী ১২৮৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৬৩

وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه، قَالَ: خَلَتِ البِقَاعُ حَولَ المَسْجِدِ، فَأَرَادَ بَنُو سَلِمَةَ أَنْ يَنْتَقِلُوا قُرْبَ المَسْجِدِ، فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ لَهُمْ: «بَلَغَنِي أَنَّكُم تُرِيدُونَ أَنْ تَنْتَقِلُوا قُرْبَ المَسْجِدِ ؟» قَالُوا: نَعَم، يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَدْ أرَدْنَا ذَلِكَ . فَقَالَ: «بَنِي سَلِمَةَ دِيَارَكُم تُكْتَبْ آثارُكُمْ، دِيَارَكُمْ تُكْتَبْ آثارُكُمْ،» فَقَالُوا: مَا يَسُرُّنَا أَنَّا كُنَّا تَحَوَّلْنَا . رواه مسلم، وروى البخاري معناه من رواية أنس .

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মসজিদে নববীর আশে-পাশে কিছু জায়গা খালি হল। (এ দেখে) সালেমা গোত্র মসজিদে (নববী)এর নিকট স্থানান্তরিত হবার ইচ্ছা প্রকাশ করল । এ খবর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানতে পারলে তিনি তাদেরকে বললেন, “আমি জানতে পেরেছি যে, তোমরা মসজিদের কাছে চলে আসতে চাচ্ছ !” তারা বলল, ‘জী হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! আমরা এ ইচ্ছা করেছি ।’ তিনি বললেন, “হে সালেমা গোত্র ! তোমরা নিজেদের (বর্তমান) বাড়িতেই থাক । তোমাদের (মসজিদের পথে) পদক্ষেপসমূহের চিহ্নগুলি লিপিবদ্ধ করা হবে । তোমরা নিজেদের (বর্তমান) বাড়িতেই থাক । তোমাদের (মসজিদের পথে) পদক্ষেপসমূহের চিহ্নগুলি লিপিবদ্ধ করা হবে ।” তারা বলল, ‘(মসজিদের নিকট) স্থানান্তরিত হওয়া আমাদেরকে আনন্দ দেবে না ।’

(মুসলিম, ইমাম বুখারী ও আনাস (রাঃ) হতে এ মর্মে হাদিস বর্ণনা করেছেন) (সহীহুল বুখারী ৬৫৫, ৬৫৬, ১৮৮৭, মুসলিম ৬৬৫, ইবনু মাজাহ ৭৮৪, আহমাদ ১১৬২২, ১২৪৬৫, ১৩৩৫৯)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১০৬৪

وَعَنْ أَبِي مُوسَى رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«إِنَّ أَعْظَمَ النَّاسِ أَجْراً فِي الصَّلاةِ أَبْعَدُهُمْ إلَيْهَا مَمْشىً، فَأَبْعَدُهُمْ، وَالَّذِي يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإمَامِ أَعظَمُ أَجْراً مِنَ الَّذِي يُصَلِّيهَا ثُمَّ يَنَامُ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “(মসজিদে জামাআতসহ) নামায পড়ার ক্ষেত্রে, সেই ব্যক্তি সর্বাধিক বেশী নেকী পায়, যে ব্যক্তি সব চাইতে দূর-দূরান্ত থেকে আসে । আর যে ব্যক্তি (জামাতের সাথে) নামাযের অপেক্ষা না করেই একা নামায পড়ে শুয়ে যায়, তার চাইতে সেই বেশী নেকী পায়, যে নামাযের জন্য প্রতীক্ষা করে ও ইমামের সাথে জামাআত সহকারে নামায আদায় করে ।”

(সহীহুল বুখারী ৬৫১, মুসলিম ৬৬২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৬৫

وَعَنْ بُرَيدَة رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «بَشِّرُوا المَشَّائِينَ فِي الظُّلَمِ إِلَى المَسَاجِدِ بِالنُّورِ التَّامِّ يَوْمَ القِيَامَةِ». رواه أبُو دَاوُدَ وَالتِّرمِذِيُّ

বুরাইদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “রাত্রির অন্ধকারে মসজিদে যাতায়াতকারী লোকাদেরকে কিয়ামতের দিনে পরিপূর্ণ জ্যোতির শুভ সংবাদ জানিয়ে দাও।”

(আবূ দাঊদ ৫৬১, তিরমিযী ২২৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৬৬

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «أَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الخَطَايَا، وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ؟» قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ؟ قَالَ: «إِسْبَاغُ الوُضُوءِ عَلَى المَكَارِهِ، وَكَثْرَةُ الخُطَا إلَى المَسَاجِدِ، وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ، فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ، فذَلِكُمُ الرِّبَاطُ». رواه مسلِم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একদা সমবেত সহচরদের উদ্দেশ্যে) বললেন, “তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলে দেব না কি, যার দ্বারা আল্লাহ গোনাহসমূহকে মোচন ক’রে দেবেন এবং (জান্নাতে) তার দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন?” তাঁরা বললেন, ‘অবশ্যই, হে আল্লাহ রসূল!’ তিনি বললেন, “(তা হচ্ছে) কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে ওযূ করা, অধিক মাত্রায় মসজিদে গমন করা এবং এক অক্তের নামায আদায় ক’রে পরবর্তী অক্তের নামাযের জন্য প্রতীক্ষা করা । আর এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ । এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ ।”

(মুসলিম ২৫১, তিরমিযী ৫১, নাসায়ী ১৪৩, আহমাদ ৭১৬৮, ৭৬৭২, ৭৯৩৫, ৭৯৬১, ৯৩৬১, মুওয়াত্তা মালিক ৩৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৬৭

وَعَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الخُدرِيِّ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِذا رَأَيْتُمُ الرَّجُلَ يَعْتَادُ المَسَاجِدَ فَاشْهِدُوْا لَهُ بِالْإِيْمَانِ» قال اللَّه عزَّ وجلَّ: { إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللهِ مَنْ آمَن بِاللهِ والْيَومِ الآخِرِ } الآية . رواه الترمذي وقال: حديث حسن .

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: কোনো ব্যক্তিকে তোমরা যখন মসজিদে যাওয়া আসায় অভ্যস্ত দেখতে পাও তখন তার ঈমানদারীর সাক্ষী দাও । কারণ মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করে কেবল তারাই যারা আল্লাহর উপর এবং শেষ দিবসের (পরকালের) উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে... ।” (সূরা আত্-তাওবাহ্ঃ ১৮) (তিরমিযী এটিকে হাসান বলেছেন)

(আমি (আলবানী) বলছিঃ তিনি এরূপই বলেছেন । কিন্তু এর সনদটি দুর্বল যেমনটি আমি “আলমিশকাত” গ্রন্থে (নং ৭২৩) বর্ণনা করেছি। তবে এর ভাবার্থ সহীহ্ । এর সনদে দার্রাজ ইবনু আবিস সাম্হ্‌ নামক এক বর্ণনাকারী রয়েছেন । তার সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার “আত্‌তাক্বরীব” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি তার হাদীসের ব্যাপারে সত্যবাদী, তবে আবুল হাইশাম হতে তার বর্ণনা করার ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে । এ কারণেই হাফিয যাহাবী ইমাম হাকিমের সমালোচনা করে বলেছেনঃ দার্রাজ বহু মুনকারের অধিকারী ।

তিরমিযী ৩০৯৩)

হাদিসের মানঃঅন্যান্য

পরিচ্ছেদ - ১৯০

নামাযের প্রতীক্ষা করার ফযীলত

১০৬৮

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ يَزَالُ أحَدُكُمْ فِي صَلاَةٍ مَا دَامَتِ الصَّلاَةُ تَحْبِسُهُ، لاَ يَمنَعُهُ أَنْ يَنقَلِبَ إِلَى أَهْلِهِ إِلاَّ الصَّلاةُ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “নামাযের প্রতীক্ষা যতক্ষণ (কাউকে) আবদ্ধ রাখে, ততক্ষণ সে আসলে নামাযের মধ্যেই থাকে । যখন নামায ছাড়া (তাকে) তার স্বীয় পরিবারের কাছে ফিরে যেতে অন্য কোন জিনিস বাধা না দেয় ।” (অর্থাৎ নামাযের উদ্দেশ্যে যতক্ষণ বসে থাকে, পুণ্যপ্রাপ্তির দিক দিয়ে সে পরোক্ষভাবে নামাযেই প্রবৃত্ত থাকে ।)

(সহীহুল বুখারী ৬৫৯, ১৭৬, ৪৪৫, ৪৭৭, ৬৪৭, ৬৪৯, ২১১৯, ৩২২৯, ৪৭১৭, মুসলিম ৬৪৯, তিরমিযী ২১৫, ২১৬, নাসায়ী ৭৩৩, ৭৩৮, আবূ দাঊদ ৪৬৯, ৪৭০, ৪৭১, ৫৫৬, ইবনু মাজাহ ৭৮৭, আহমাদ ৭১৪৫, ৭৩৬৭, ৭৩৮২, ৭৪৯৮, ৭৫৩০, ৭৫৫৭, ৭৫৫৯, ৭৮৩২, মুওয়াত্তা মালিক ২৯১, ৩৮২, ৩৮৩, ৩৮৫, দারেমী ১২৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৬৯

وَعَنْه رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «اَلْمَلائِكَةُ تُصَلِّي عَلَى أَحَدِكُمْ مَا دَامَ فِي مُصَلاَّهُ الَّذِيْ صَلَّى فِيهِ، مَا لَمْ يُحْدِثْ، تَقُولُ: اَللهم اغْفِرْ لَهُ، اَللهم ارْحَمْهُ». رواه البُخَارِيُّ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ফিরিশ্‌তাবর্গ তোমাদের প্রত্যেকের জন্য দুআ করে থাকেন, যতক্ষণ সে সেই স্থানে অবস্থান করে, যেখানে সে নামায পড়েছে; যতক্ষণ পর্যন্ত না তার ওযূ নষ্ট হয়েছে; বলেন, ‘হে আল্লাহ! ওকে ক্ষমা ক’রে দাও । হে আল্লাহ , ওর প্রতি সদয় হও ।”

(বুখারী ৪৪৫, ৪৭৭, ৬৪৭, ৬৪৯, ২১১৯, ৩২২৯, ৪৭১৭, মুসলিম ৬৪৯, তিরমিযী ২১৫, ২১৬, নাসায়ী ৭৩৩, ৭৩৮, আবূ দাঊদ ৪৬৯, ৪৭০, ৪৭১, ৫৫৬, ইবনু মাজাহ ৭৮৭, আহমাদ ৭১৪৫, ৭৩৬৭, ৭৩৮২, ৭৪৯৮, ৭৫৩০, ৭৫৫৭, ৭৫৫৯, ৭৮৩২, মুওয়াত্তা মালিক ২৯১, ৩৮২, ৩৮৩, ৩৮৫, দারেমী ১২৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৭০

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَخَّرَ لَيْلَةً صَلاَةَ العِشَاءِ إِلَى شَطْرِ اللَّيْلِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ بَعْدَمَا صَلَّى، فَقَالَ: «صَلَّى النَّاسُ وَرَقَدُوا، وَلَمْ تَزَالُوا فِي صَلاَةٍ مُنْذُ انْتَظَرْتُمُوهَا». رواه البُخَارِيُّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক রাত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এশার নামায অর্ধেক রাত পর্যন্ত পিছিয়ে দিলেন । অতঃপর নামায পড়ার পর আমাদের দিকে মুখ ক’রে বললেন, “লোকেরা নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আর তোমরা নামাযেই ছিলে; যখন থেকে তার অপেক্ষায় ছিলে ।”

(সহীহুল বুখারী ৬০০, ৫৭২, ৬৬১, ৮৪৮, ৫৮৬৯, মুসলিম ৬৪০, নাসায়ী ৫৩৯, ৫২০২, ৫২৮৫, ইবনু মাজাহ ৬৯২, আহমাদ ১২৪৬৯, ১২৫৫০, ১২৬৫৬, ১৩৪০৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯১

জামাত সহকারে নামাযের ফযীলত

১০৭১

عَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ أَفْضَلُ مِنْ صَلاَةِ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً». متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “একাকীর নামায অপেক্ষা জামাআতের নামায সাতাশ গুণ উত্তম ।”

(সহীহুল বুখারী ৬৪৫, মুসলিম ৬৫০, তিরমিযী ২১৫, নাসায়ী ৮৩৭, ইবনু মাজাহ ৭৮৯, আহমাদ ৪৬৫৬, ৫৩১০, ৫৭৪৫, ৫৮৮৫, ৬৪১৯, মুওয়াত্তা মালিক ২৯০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৭২

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم «صَلاةُ الرَّجُلِ فِي جَمَاعَةٍ تُضَعَّفُ عَلَى صَلاتِهِ فِي بَيْتهِ وَفِي سُوقِهِ خَمْساً وَعِشْرِينَ ضِعْفَاً، وَذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا تَوَضَّأ فَأَحْسَنَ الوُضُوءَ، ثُمَّ خَرَجَ إِلَى المَسْجِدِ، لاَ يُخرِجُهُ إِلاَّ الصَّلاةُ، لَمْ يَخْطُ خَطْوَةً إِلاَّ رُفِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ، وَحُطَّتْ عَنهُ بِهَا خَطِيئَةٌ، فَإِذَا صَلَّى لَمْ تَزَلِ المَلائِكَةُ تُصَلِّي عَلَيْهِ مَا دَامَ فِي مُصَلاَّهُ، مَا لَمْ يُحْدِثْ، تَقُولُ: اَللهم صَلِّ عَلَيهِ، اَللهم ارْحَمْهُ، وَلاَ يَزَالُ فِي صَلاَةٍ مَا انْتَظَرَ الصَّلاَةَ». متفقٌ عَلَيهِ، وهذا لفظ البخاري

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “জামাতের সাথে কারো নামায পড়া, তার ঘরে ও বাজারে একা নামায পড়ার চাইতে ২৫ গুণ বেশি শ্রেষ্ ঠ। তা এই জন্য যে, যখন কোনো ব্যক্তি ওযূ করে এবং উত্তমরূপে ওযূ সম্পাদন করে। অতঃপর মসজিদ অভিমুখে যাত্রা করে । আর একমাত্র নামাযই তাকে (ঘর থেকে) বের করে (অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকে না), তখন তার (পথে চলার সময়) প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গোনাহ মাফ করা হয় । তারপর সে নামাযান্তে নামায পড়ার জায়গায় যতক্ষণ ওযূ সহকারে অবস্থান করে, ফিরিশ্‌তাবর্গ তার জন্য দুআ করেন; তাঁরা বলেন, ‘হে আল্লাহ ! ওর প্রতি অনুগ্রহ কর । হে আল্লাহ ! তুমি ওকে রহম কর ।’ আর সে ব্যক্তি ততক্ষণ নামাযের মধ্যেই থাকে, যতক্ষণ সে নামাযের প্রতীক্ষা করে ।”

(বুখারী ও মুসলিম, এ শব্দগুলি বুখারীর)( সহীহুল বুখারী ৬৪৭, ৬৫৯, ১৭৬, ৪৪৫, ৪৭৭, ৬৪৭, ৬৪৯, ২১১৯, ৩২২৯, ৪৭১৭, মুসলিম ৬৪৯, তিরমিযী ২১৫, ২১৬, নাসায়ী ৭৩৩, ৭৩৮, আবূ দাঊদ ৪৬৯, ৪৭০, ৪৭১, ৫৫৬, ইবনু মাজাহ ৭৮৭, আহমাদ ৭১৪৫, ৭৩৬৭, ৭৩৮২, ৭৪৯৮, ৭৫৩০, ৭৫৫৭, ৭৫৫৯, ৭৮৩২, মুওয়াত্তা মালিক ২৯১, ৩৮২, ৩৮৩, ৩৮৫, দারেমী ১২৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৭৩

وَعَنْه، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ أَعْمَى، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، لَيسَ لِي قَائِدٌ يَقُودُنِي إِلَى الْمَسْجِدِ، فَسَأَلَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَنْ يُرَخِّصَ لَهُ فَيُصَلِّي فِي بَيْتِهِ، فَرَخَّصَ لَهُ، فَلَّمَا وَلَّى دَعَاهُ، فَقَالَ لَهُ: «هَلْ تَسْمَعُ النِّدَاءَ بِالصَّلاَةِ ؟» قَالَ: نَعَمْ . قَالَ: «فَأَجِبْ». رواه مُسلِم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একটি অন্ধ লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আমার কোন পরিচালক নেই, যে আমাকে মসজিদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে ।’ সুতরাং সে নিজ বাড়িতে নামায পড়ার জন্য আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চাইল । তিনি তাকে অনুমতি দিলেন । কিন্তু যখন সে পিঠ ঘুরিয়ে রওনা দিল, তখন তিনি তাকে ডেকে বললেন, “তুমি কি আহ্বান (আযান) শুনতে পাও ?” সে বলল, ‘জী হ্যাঁ ।’ তিনি বললেন, “তাহলে তুমি সাড়া দাও ।” (অর্থাৎ মসজিদেই এসে নামায পড় ।)

(মুসলিম ৬৫৩, নাসায়ী ৮৫০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৭৪

وَعَنْ عَبدِ الله- وَقِيلَ: عَمْرِو بنِ قَيسٍ - المَعرُوفِ بِابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ الْمُؤَذِّنِ رضي الله عنه أَنَّه قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، إِنَّ المَدينَةَ كَثِيرةُ الهَوَامِّ وَالسِّبَاعِ . فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«تَسْمَعُ حَيَّ عَلَى الصَّلاةِ حَيَّ عَلَى الفَلاحِ، فَحَيَّهلاً» رَوَاهُ أبُو دَاوُدَ بإسناد حسن

আব্দুল্লাহ (মতান্তরে) আম্‌র ইবনে ক্বায়স ওরফে ইবনে উম্মে মাকতূম মুআযযিন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল ! মদিনায় সরীসৃপ (সাপ, বিচ্ছু ইত্যাদি বিষাক্ত জন্তু) ও হিংস্র পশু অনেক আছে । (তাই আমাকে নিজ বাড়িতেই নামায পড়ার অনুমতি দিন) ।’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ‘হাইয়্যা আলাস স্বালাহ ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ (আযান) শুনতে পাও ? (যদি শুনতে পাও), তাহলে মসজিদে এসো ।”

(আবূ দাঊদ ৫৫৩, ৫৫২, নাসায়ী ৮৫১, ইবনু মাজাহ ৭৯২)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১০৭৫

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ فَيُحْتَطَبَ، ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ فَيُؤذَّنَ لهَاَ، ثُمَّ آمُرَ رَجُلاً فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهمْ». متفقٌ عَلَيهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “সেই মহান সত্তার শপথ ! যার হাতে আমার জীবন আছে । আমার ইচ্ছা হচ্ছে যে, জ্বালানী কাঠ জমা করার আদেশ দিই । তারপর নামাযের জন্য আযান দেওয়ার আদেশ দিই । তারপর কোন লোককে লোকদের ইমামতি করতে আদেশ দিই । তারপর আমি স্বয়ং সেই সব (পুরুষ) লোকদের কাছে যাই (যারা মসজিদে নামায পড়তে আসেনি) এবং তাদেরকেসহ তাদের ঘর-বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিই ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৬৪৪, ৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪, মুসলিম ৬৫১, তিরমিযী ২১৭, নাসায়ী ৮৪৮, আবূ দাঊদ, ৭২৬০, ৭৮৫৬, ২৭৩৬৬, ২৭৪৭৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৯৯, দারেমী ১২১২, ১২৭৪)
(এ দ্বারা প্রমাণ হয় যে, নামায জামাতসহ পড়া ওয়াজেব; যদি কোন শরয়ী ওযর না থাকে ।)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৭৬

وَعَنِ ابنِ مَسعُود رضي الله عنه قَالَ: مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَلْقَى اللهَ تَعَالَى غَداً مُسْلِماً، فَلْيُحَافِظْ عَلَى هَؤُلاَءِ الصَّلَوَاتِ حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ، فَإِنَّ اللهَ شَرَعَ لِنَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم سُنَنَ الهُدَى، وَإنَّهُنَّ مِنْ سُنَنِ الهُدَى، وَلَوْ أنَّكُمْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ كَمَا يُصَلِّي هَذَا المُتَخَلِّفُ فِي بَيْتِهِ لَتَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ، وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّة نَبِيِّكُم لَضَلَلْتُمْ، وَلَقَدْ رَأيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنْهَا إِلاَّ مُنَافِقٌ مَعْلُومُ النِّفَاقِ، وَلَقَدْ كَانَ الرَّجُلُ يُؤتَى بهِ، يُهَادَى بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ حَتَّى يُقَامَ فِي الصَّفِّ . رَوَاهُ مُسلِم
وفي رواية لَهُ قَالَ: إِنّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم عَلَّمَنَا سُنَنَ الهُدَى ؛ وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ الهُدَى الصَّلاَةَ في المَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ .

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, “যাকে এ কথা আনন্দ দেয় যে, সে কাল কিয়ামতের দিন আল্লাহর সঙ্গে মুসলিম হয়ে সাক্ষাৎ করবে, তার উচিত, সে যেন এই নামাযসমূহ আদায়ের প্রতি যত্ন রাখে, যেখানে তার জন্য আযান দেওয়া হয় (অর্থাৎ, মসজিদে) । কেননা, মহান আল্লাহ তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিমিত্তে হিদায়েতের পন্থা নির্ধারণ করেছেন । আর নিশ্চয় এই নামাযসমূহ হিদায়েতের অন্যতম পন্থা ও উপায় । যদি তোমরা (ফরয) নামায নিজেদের ঘরেই পড়, যেমন এই পিছিয়ে থাকা লোক নিজ ঘরে নামায পড়ে, তাহলে তোমরা তোমাদের নবীর তরীকা পরিহার করবে । আর (মনে রেখো,) যদি তোমরা তোমাদের নবীর তরীকা পরিহার কর, তাহলে নিঃসন্দেহে তোমরা পথহারা হয়ে যাবে । আমি আমাদের লোকদের এই পরিস্থিতি দেখেছি যে, নামায (জামাতসহ পড়া) থেকে কেবল সেই মুনাফিক (কপট মুসলিম) পিছিয়ে থাকে, যে প্রকাশ্য মুনাফিক । আর (দেখেছি যে, পীড়িত) ব্যক্তিকে দু’জনের উপর ভর দিয়ে নিয়ে এসে (নামাযের) সারিতে দাঁড় করানো হতো ।’

(মুসলিম ৬৫৪, আবূ দাঊদ ৫৫০, ইবনু মাজাহ ৭৭৭, আহমাদ ৩৫৫৪, ৩৬১৬, ৩৯২৬, ৩৯৬৯, ৪২৩০, ৪৩৪২, দারেমী ১২৭৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৭৭

وَعَنْ أَبِي الدَّردَاءِ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «مَا مِنْ ثَلاثَةٍ فِي قَرْيةٍ، وَلاَ بَدْوٍ، لاَ تُقَامُ فِيهِمُ الصَّلاَةُ إلاَّ قَدِ اسْتَحْوَذَ عَلَيْهِم الشَّيْطَانُ . فَعَلَيْكُمْ بِالجَمَاعَةِ، فَإِنَّمَا يَأْكُلُ الذِّئْبُ مِنَ الغَنَمِ القَاصِيَة». رَوَاهُ أبُو دَاوُدَ بإسناد حسن

আবূ দার্দা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, “যে কোন গ্রাম বা মরু-অঞ্চলে তিনজন লোক বাস করলে এবং সেখানে (জামাআতে) নামায কায়েম না করা হলে শয়তান তাদের উপর প্রভুত্ব বিস্তার ক’রে ফেলে । সুতরাং তোমরা জামাআতবদ্ধ হও । অন্যথা ছাগ পালের মধ্য হতে নেকড়ে সেই ছাগলটিকে ধরে খায়, যে (পাল থেকে) দূরে দূরে থাকে ।”

(আবূ দাঊদ ৫৪৭, নাসায়ী ৮৪৭, আহমাদ ২১২০৩, ২৬৯৬৭, ২৬৯৬৮)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯২

ফজর ও এশার জামাআতে হাযির হতে উৎসাহদান

১০৭৮

عَن عُثمَانَ بنِ عَفَّانَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «مَنْ صَلَّى العِشَاءَ فِي جَمَاعَةٍ، فَكَأنَّمَا قَامَ نِصْفَ اللَّيْلِ، وَمَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فِي جَمَاعَةٍ، فَكَأنَّمَا صَلَّى اللَّيْلَ كُلَّهُ» رواه مُسلِم
وفي رواية الترمذي عَنْ عُثمَانَ بنِ عَفَّانَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ شَهِدَ العِشَاءَ فِي جَمَاعَةٍ كَانَ لَهُ قِيَامُ نِصْفِ لَيلَةٍ، وَمَنْ صَلَّى العِشَاءَ وَالفَجْرَ فِي جَمَاعَةٍ، كَانَ لَهُ كَقِيَامِ لَيْلَةٍ». قَالَ الترمذي: حديث حسن صحيح

উসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি জামাআতের সাথে এশার নামায আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত কিয়াম (ইবাদত) করল । আর যে ফজরের নামায জামাতসহ আদায় করল, সে যেন সারা রাত নামায পড়ল ।”

(মুসলিম ৬৫৬, তিরমিযী ২২১, আবূ দাঊদ ৫৫৫, আহমাদ ৪১০, ৪৯৩, মুওয়াত্তা মালিক ২৯৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৭৯

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي العَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْواً». متفقٌ عَلَيهِ . وقد سبق بِطولِهِ .

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যদি লোকে এশা ও ফজরের নামাযের ফযীলত জানতে পারত, তাহলে তাদেরকে হামাগুড়ি বা পাছা ছেঁচড়ে আসতে হলেও তারা অবশ্যই ঐ নামাযদ্বয়ে আসত ।”

(সহীহুল বুখারী ৬১৫, ৬৫৪, ৭২১, ২৪৭২, ২৬৮৯, ২৮২৯, ৫৭৩৩, মুসলিম ৪৩৭, ৪৩৯, ১৯১৪, তিরমিযী ২২৫, ১০৬৩, ১৯৫৮, নাসায়ী ৫৪০, ৬৭১, আবূ দাঊদ ৫২৪৫, ইবনু মাজাহ ৭৯৭, আহমাদ ৭১৮৫, ৭৬৮০, ৭৭৮২, ৭৯৬২, ৮১০৬, ৮২৯৩, ৮৬৫৫, ৮৯৯৩, ৯২০২, ৯৭৫০, মুওয়াত্তা মালিক ১৫১, ২৯৫) এটি সবিস্তার ১০৪০ নম্বরে গত হয়েছে ।

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৮০

وَعَنْه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«لَيْسَ صَلاَةٌ أَثْقَلَ عَلَى المُنَافِقِينَ مِنْ صَلاَةِ الفَجْرِ وَالعِشَاءِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهِمَا لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْواً». متفقٌ عَلَيهِ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মুনাফিক (কপট)দের উপর ফজর ও এশার নামায অপেক্ষা অধিক ভারী নামায আর নেই । যদি তারা এর ফযীলত ও গুরুত্ব জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে বা পাছার ভরে অবশ্যই (মসজিদে) উপস্থিত হত ।”

(সহীহুল বুখারী ৬৫৭, ৬৪৪, ৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪, মুসলিম ৬৫১, তিরমিযী ২১৭, নাসায়ী ৮৪৮, দাঊদ, ৭২৬০, ৭৮৫৬, ২৭৩৬৬, ২৭৪৭৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৯৯, দারেমী ১২১২, ১২৭৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯৩

ফরয নামাযসমূহের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ এবং তা ত্যাগ করা সম্বন্ধে কঠোর নিষেধ ও চরম হুমকি

১০৮১

وَعَنِ ابنِ مَسعُود رضي الله عنه قَالَ: سَأَلتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: الصَّلاَةُ عَلَى وَقْتِهَا قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: بِرُّ الوَالِدَيْنِ قُلْتُ: ثُمَّ أيٌّ؟ قَالَ: الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ. متفقٌ عَلَيهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘সর্বোত্তম আমল কি ?’ তিনি বললেন, “যথা সময়ে নামায আদায় করা ।” আমি বললাম, ‘তারপর কি ?’ তিনি বললেন, “মা-বাপের সাথে সদ্ব্যবহার করা ।” আমি বললাম, ‘তারপর কি ?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা ।”

(সহীহুল বুখারী ৫২৭, ২৭৮২, ৫৯৭০, ৭৫৩৪, মুসলিম ৮৫, তিরমিযী ১৭৩, ১৮৯৮, নাসায়ী ৬১০, ৬১১, আহমাদ ৩৮৮০, ৩৯৬৩, ৩৯৮৮, ৪১৭৫, ৪২১১, ৪২৩১, ৪২৭৩, ৪৩০১, দারেমী ১২২৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৮২

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلٰهَ إلاَّ اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَحَجِّ البَيْتِ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ». متفقٌ عَلَيهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি জিনিসের উপর প্রতিষ্ঠিত । (১) এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর প্রেরিত মহাপুরুষ । (২) নামায প্রতিষ্ঠা করা । (৩) যাকাত প্রদান করা । (৪) কা‘বা গৃহের হজ্জ করা । (৫) রমযান মাসে রোযা পালন করা ।”

(সহীহুল বুখারী ৮, মুসলিম ১৬, তিরমিযী ২৬০৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৮৩

وَعَنْه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إِلٰهَ إلاَّ اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَيُقِيمُوا الصَّلاَةَ، وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ، فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ، عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ، إلاَّ بِحَقِّ الإِسْلاَمِ، وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللهِ». متفقٌ عَلَيهِ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “লোকদের বিরুদ্ধে আমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত (সশস্ত্র) সংগ্রাম চালাবার আদেশ দেওয়া হয়েছে, যতক্ষণ না তারা এই সাক্ষ্য দেবে যে, ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর প্রেরিত মহাপুরুষ’ এবং নামায প্রতিষ্ঠা করবে ও যাকাত আদায় করবে । সুতরাং যখনই তারা সেসব বাস্তবায়ন করবে, তখনই তারা ইসলামী হক ব্যতিরেকে নিজেদের জান-মাল আমার নিকট হতে বাঁচিয়ে নিবে । আর তাদের (আভ্যন্তরীণ বিষয়ের) হিসাব আল্লাহর দায়িত্বে থাকবে ।”

(সহীহুল বুখারী ২৫, মুসলিম ২২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৮৪

وَعَنْ مُعَاذٍ رضي الله عنه، قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِلَى اليَمَنِ، فَقَالَ: «إنَّكَ تَأْتِي قَوْماً مِنْ أَهْلِ الكِتَابِ، فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ، وَأنِّي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَإنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذلِكَ، فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ تَعَالَى افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَومٍ وَلَيلَةٍ، فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ، فَأَعْلِمْهُمْ أنَّ اللهَ تَعَالَى افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ، فَإِنْ هُمْ أطَاعُوا لِذلِكَ، فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالهِمْ، وَاتَّقِ دَعْوَةَ المَظْلُومِ، فَإِنَّهُ لَيْسَ بَينَهَا وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ». متفقٌ عَلَيهِ

মুআয ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ইয়ামান পাঠালেন ও বললেন, “নিশ্চয় তুমি কিতাব ধারী সম্প্রদায়ের কাছে যাত্রা করছ । সুতরাং তুমি তাদেরকে এই কথার প্রতি আহ্বান জানাবে যে, তারা সাক্ষ্য দেবে, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল । যদি তারা ঐ প্রস্তাব গ্রহণ ক’রে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতি দিবারাত্রে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন । যদি তারা এ কথাটিও মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে অবহিত করবে যে, মহান আল্লাহ তাদের (ধনীদের) উপর যাকাত ফরয করেছেন যা তাদের ধনী ব্যক্তিদের নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের গরীব মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে । যদি তারা এই আদেশটিও পালন করতে সম্মত হয়, তাহলে তুমি (যাকাত আদায়ের সময়) তাদের উৎকৃষ্ট মাল-ধন হতে বিরত থাকবে এবং মজলূম (অত্যাচারিত) ব্যক্তির বদ্দুআ থেকে দূরে থাকবে । কেননা, তার ও আল্লাহর মধ্যে কোনো পর্দা থাকে না ।”

(সহীহুল বুখারী ১৩৯৫, ১৪৫৮, ১৪৯৬, ২৪৪৮, ৪৩৪৭, ৭৩৭১, ৭৩৭২, মুসলিম ১৯, তিরমিযী ৩২৫, ২০১৪, নাসায়ী ২৪৩৫, আবূ দাঊদ ১৫৮৪, ইবনু মাজাহ ১৭৮৩, আহমাদ ২০৭২, দারেমী ১৬১৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৮৫

وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «إِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالكُفرِ، تَرْكَ الصَّلاَةِ». رواه مُسلِم

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, “মানুষ ও কুফরির মধ্যে (পর্দা) হল, নামায ত্যাগ করা ।”

(মুসলিম ৮২, তিরমিযী ২৬১৮, ২৬২০, আবূ দাঊদ ৪৬৭৮, ইবনু মাজাহ ১০৭৮, আহমাদ ১৪৫৬১, ১৪৭৬২, দারেমী ১২৩৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৮৬

وَعَنْ بُرَيْدَةَ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «اَلعَهْدُ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ الصَّلاَةُ، فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ». رواه التِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صحيح

বুরাইদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে চুক্তি আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মধ্যে বিদ্যমান, তা হচ্ছে নামায (পড়া) । অতএব যে নামায ত্যাগ করবে, সে নিশ্চয় কাফের হয়ে যাবে ।”

(তিরমিযী ২৬২১, নাসায়ী ৪৬৩, ইবনু মাজাহ ১০৭৯, আহমাদ ২২৪২৮, ২২৭৯৮)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১০৮৭

وَعَنْ شقِيق بن عبدِ الله التَّابِعيِّ المتَّفَقِ عَلَى جَلاَلَتِهِ رَحِمهُ اللهُ، قَالَ: كَانَ أصْحَابُ محَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم لاَ يَرَوْنَ شَيْئاً مِنَ الأعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلاَةِ . رَوَاهُ التِّرمِذِيُّ في كِتابِ الإيمان بإسنادٍ صحيحٍ

সর্বজন মহামান্য শাক্বীক ইবনে আব্দুল্লাহ তাবেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিতঃ

‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহচরবৃন্দ নামায ছাড়া অন্য কোনো আমল ত্যাগ করাকে কুফরীমূলক কাজ বলে মনে করতেন না ।’

(তিরমিযী, কিতাবুল ঈমান, বিশুদ্ধ সানাদ) (তিরমিযী ২৬২২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৮৮

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ العَبْدُ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنْ عَمَلِهِ صَلاَتُهُ، فَإنْ صَلَحَتْ، فَقَدْ أَفْلَحَ وَأَنْجَحَ، وَإنْ فَسَدَتْ، فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ، فَإِنِ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيضَتِهِ شَيْءٌ، قَالَ الرَّبُّ - عَزَّ وَجَلَّ: اُنْظُرُوا هَلْ لِعَبدِي مِن تَطَوُّعٍ، فَيُكَمَّلُ مِنْهَا مَا انْتَقَصَ مِنَ الفَرِيضَةِ ؟ ثُمَّ تَكُونُ سَائِرُ أَعْمَالِهِ عَلَى هَذَا». رواه التِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “নিশ্চয় কিয়ামতের দিন বান্দার (হক্বুক্বুল্লাহর মধ্যে) যে কাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেওয়া হবে তা হচ্ছে তার নামায । সুতরাং যদি তা সঠিক হয়, তাহলে সে পরিত্রাণ পাবে । আর যদি (নামায) পণ্ড ও খারাপ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে । যদি তার ফরয (ইবাদতের) মধ্যে কিছু কম পড়ে যায়, তাহলে প্রভু বলবেন, ‘দেখ তো ! আমার বান্দার কিছু নফল (ইবাদত) আছে কি না, যা দিয়ে ফরযের ঘাটতি পূরণ করে দেওয়া হবে ?’ অতঃপর তার অবশিষ্ট সমস্ত আমলের হিসাব ঐভাবে গৃহীত হবে ।

(আবূ দাঊদ ৮৬৪, তিরমিযী ৪১৩, ৪৬৫, ৪৬৬, ৪৬৭, ইবনু মাজাহ ১৪২৫, ১৪২৬, আহমাদ ৭৮৪২, ৯২১০, ১৬৫০১, দারেমী ১৩৫৫)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯৪

প্রথম কাতারের ফযীলত, প্রথম কাতারসমূহ পূরণ করা, কাতার সোজা করা এবং ঘন হয়ে কাতার বাঁধার গুরুত্ব

১০৮৯

عَنْ جَابِرِ بنِ سَمُرَة رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ: «أَلاَ تَصُفُّونَ كَمَا تَصُفُّ المَلائِكَةُ عِندَ رَبِّهَا» ؟ فَقُلنَا: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَكَيفَ تَصُفُّ المَلائِكَةُ عِندَ رَبِّهَا ؟ قَالَ:. «يُتِمُّونَ الصُّفُوفَ الأُوَلَ، وَيَتَرَاصُّونَ فِي الصَّفِّ» رواه مُسلِم

জাবের ইবনে সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের নিকট এসে বললেন, “ফিরিশ্‌তামন্ডলী যেরূপ তাদের প্রভুর নিকট সারিবদ্ধ হন, তোমরা কি সেরূপ সারিবদ্ধ হবে না ।” আমরা নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রসূল ! ফিরিশ্‌তামন্ডলী তাদের প্রভুর নিকট কিরূপ সারিবদ্ধ হন ?’ তিনি বললেন, “প্রথম সারিগুলো পূর্ণ করেন এবং সারিতে ঘন হয়ে দাঁড়ান ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৪৩০, নাসায়ী ৮১৬, ১১৮৪, ১১৮৫, আবূ দাঊদ ৬৬১, ৯১২, ১০০০, ইবনু মাজাহ ৯৯২, আহমাদ ২০৩৬১, ২০৪৫০, ২০৪৬৪, ২০৫১৯, ২০৫২২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯০

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ، ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلاَّ أنْ يَسْتَهِمُوا عَلَيْهِ لاَسْتَهَمُوا». متفقٌ عَلَيهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “লোকেরা যদি জানত যে, আযান দেওয়া ও নামাযের প্রথম সারিতে দাঁড়াবার কি মাহাত্ম্য আছে, অতঃপর (তাতে অংশগ্রহণের জন্য) যদি লটারি ছাড়া অন্য কোন উপায় না পেত, তবে তারা অবশ্যই সে ক্ষেত্রে লটারির সাহায্য নিত।”

(সহীহুল বুখারী ৬১৫, ৬৫৪, ৭২১, ২৪৭২, ২৬৮৯, ২৮২৯, ৫৭৩৩, মুসলিম ৪৩৭, ৪৩৯, ১৯১৪, তিরমিযী ২২৫, ১০৬৩, ১৯৫৮, নাসায়ী ৫৪০, ৬৭১, আহমাদ ৫২৪৫, ইবনু মাজাহ ৭৯৭, আহমাদ ৭১৮৫, ৭৬৮০, ৭৭৮২, ৭৯৬২, ৮১০৬, ৮২৯৩, ৮৬৫৫, ৮৯৯৩, ৯২০২, ৯৭৫০, মানে ১৫১, ২৯৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯১

وَعَنْه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «خيْرُ صُفُوفِ الرِّجَالِ أَوَّلُهَا، وَشَرُّهَا آخِرُهَا، وَخَيْرُ صُفُوفِ النِّسَاءِ آخِرُهَا، وَشَرُّهَا أَوَّلُهَا». رواه مُسلِم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পুরুষদের কাতারের মধ্যে সর্বোত্তম কাতার হল প্রথম কাতার, আর নিকৃষ্টতম কাতার হল শেষ কাতার । আর মহিলাদের সর্বোত্তম কাতার হল পিছনের (শেষ) কাতার এবং নিকৃষ্টতম কাতার হল প্রথম কাতার ।”

(মুসলিম ৪৪০, তিরমিযী ২২৪, নাসায়ী ৮২০, আবূ দাঊদ ৬৭৮, ইবনু মাজাহ ১০০০, আহমাদ ৭৩১৫, ৮২২৩, ৮২৮১, ৮৪৩০, ৮৫৮০, ৯৯১৭, দারেমী ১২৬৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯২

وَعَنْ أبي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم رَأَى فِي أصْحَابِهِ تَأَخُّراً، فَقَالَ لَهُمْ: «تَقَدَّمُوا فَأْتَمُّوا بِي، وَلْيَأْتَمَّ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُمْ، لاَ يَزَالُ قَوْمٌ يَتَأَخَّرُونَ حَتَّى يُؤَخِّرَهُمُ الله». رواه مُسلِم

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বীয় সাহাবীদের মাঝে (প্রথম কাতার থেকে) পিছিয়ে যাওয়া লক্ষ্য করে তাঁদেরকে বললেন, “এগিয়ে এসো, অতঃপর আমার অনুসরণ কর । আর যারা তোমাদের পরে আছে, তারা তোমাদের অনুসরণ করুক । (মনে রাখবে) লোকে সর্বদা পিছিয়ে যেতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তাদেরকে (তাঁর করুণাদানে) পিছনে করে দেন ।”

(মুসলিম ৪৩৮, নাসায়ী ৭৯৫, আবূ দাঊদ ৬৮০, ইবনু মাজাহ ৯৭৮, আহমাদ ১০৮৯৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯৩

وَعَنْ أَبِي مَسعُود رضي الله عنه قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَمْسَحُ مَنَاكِبَنَا فِي الصَّلاَةِ، وَيَقُوْلُ: «اِسْتَوُوا وَلاَ تَخْتَلِفُوا فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ، لِيَلِيَنِي مِنْكُمْ أُولُو الأَحْلاَمِ وَالنُّهَى، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ». رَوَاهُ مُسلِم

আবূ মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযে (কাতার বাঁধার সময়) আমাদের কাঁধে হাত বুলিয়ে বলতেন, “তোমরা সোজা হয়ে দাঁড়াও, তোমরা (কাতার বাঁধার সময়ে) পরস্পরের বিরোধিতা করো না; নচেৎ তোমাদের অন্তরের মধ্যে বিরোধিতা সৃষ্টি হবে । তোমাদের মধ্যে যারা বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী তারা যেন আমার নিকটবর্তী থাকে । তারপর যারা (জ্ঞান ও যোগ্যতায়) তাদের কাছাকাছি হবে (তারা দাঁড়াবে) । তারপর যারা (জ্ঞান ও যোগ্যতায়) তাদের কাছাকাছি হবে (তারা দাঁড়াবে) ।”

(মুসলিম ৪৩২, নাসায়ী ৮০৭, ৮১২, আবূ দাঊদ ৬৭৪, ইবনু মাজাহ ৯৭৬ আহমাদ ১৬৬৫৩, দারেমী ১২৬৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯৪

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «سَوُّوْا صُفُوفَكُمْ ؛ فَإِنَّ تَسْوِيَةَ الصَّفِّ مِنْ تَمَامِ الصَّلاَةِ». متفقٌ عَلَيهِ، وفي رواية للبخاري: فَإِنَّ تَسْوِيَةَ الصُّفُوفِ مِنْ إقَامَةِ الصَّلاَةِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (নামাযে দাঁড়িয়ে) বললেন, “তোমরা কাতার সোজা কর । কেননা, কাতার সোজা করা নামাযের পরিপূর্ণতার অংশ বিশেষ ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪১৯, ৭১৮, ৭১৯, ৭২৩, ৭২৪, ৭২৫, ৭৪২, ৭৪৯, ৬৪৬৮, ৬৬৪৪, মুসলিম ৪২৫, নাসায়ী ৮১৩, ৮১৫, ৮১৮, ৮৪৫, ১০৫৪, ১১১৭, আবূ দাঊদ ৬৬৭, ৬৬৮, ৬৬৯, ৬৭১, ইবনু মাজাহ ৯৯৩, আহমাদ ১১৫৮৬, ১১৬৫৫, ১১৬৯৯, ১১৭৩৮, ১১৮৪৬, ১১৯১২, ১২১৫৯, ১২২৩৫, ১২৩২২, ১২৪০১, ১২৪২৯, ১২৪৪৮, দারেমী ১২৬৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯৫

وَعَنْه، قَالَ: أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَأقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم بِوَجْهِهِ، فَقَالَ: «أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ وَتَرَاصُّوا ؛ فَإنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِيْ». رواه البُخَارِيُّ بلفظه، ومسلم بمعناه .
وفي رواية للبخاري: وَكَانَ أَحَدُنَا يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَقَدَمَهُ بِقَدَمِهِ.

পূর্বোক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা নামাযের তাকবীর (ইকামত) দেওয়া হল, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের দিকে মুখ ক’রে বললেন, “তোমরা কাতারসমূহ সোজা কর এবং মিলিতভাবে দাঁড়াও । কারণ, তোমাদেরকে আমার পিছন থেকেও দেখতে পাই ।” (এই শব্দে বুখারী এবং একই অর্থে মুসলিম বর্ণনা করেছেন ।

(এই শব্দে বুখারী এবং একই অর্থে মুসলিম বর্ণনা করেছেন । সহীহুল বুখারী ৪১৯, ৭১৮, ৭১৯, ৭২৩, ৭২৪, ৭২৫, ৭৪২, ৭৪৯, ৬৪৬৮, ৬৬৪৪, মুসলিম ৪২৫, নাসায়ী ৮১৩, ৮১৫, ৮১৮, ৮৪৫, ১০৫৪, ১১১৭, আবূ দাঊদ ৬৬৭, ৬৬৮, ৬৬৯, ৬৭১, ইবনু মাজাহ ৯৯৩, আহমাদ ১১৫৮৬, ১১৬৫৫, ১১৬৯৯, ১১৭৩৮, ১১৮৪৬, ১১৯১২, ১২১৫৯, ১২২৩৫, ১২৩২২, ১২৪০১, ১২৪২৯, ১২৪৪৮, দারেমী ১২৬৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯৬

وَعَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ، أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ». متفقٌ عَلَيهِ
وفي رواية لمسلم: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم كَانَ يُسَوِّي صُفُوفَنَا، حَتَّى كَأنَّمَا يُسَوِّي بِهَا القِدَاحَ حَتَّى رَأى أنَّا قَدْ عَقَلْنَا عَنْهُ، ثُمَّ خَرَجَ يَوماً فَقَامَ حَتَّى كَادَ يُكَبِّرُ، فَرَأى رَجُلاً بَادِياً صَدْرُهُ مِنَ الصَّفِّ، فَقَالَ: عِبَادَ اللهِ ! لتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ، أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ

নু‘মান ইবনে বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, “তোমরা নিজেদের কাতার জরুর সোজা ক’রে নাও; নচেৎ আল্লাহ তোমাদের মুখমণ্ডলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ক’রে দিবেন ।”

(সহীহুল বুখারী ৭১৭, মুসলিম ৪৩৬, তিরমিযী ২২৭, নাসায়ী ৮১০, আবূ দাঊদ ৬৬২, ৬৬৩, ৬৬৫, ইবনু মাজাহ ৯৯৪, আহমাদ ১৭৯০৯, ১৭৯১৮, ১৭৯৫৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯৭

وَعَنِ البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَتَخَلَّلُ الصَّفَّ مِنْ نَاحِيَةٍ إِلَى نَاحِيَةٍ، يَمْسَحُ صُدُورَنَا وَمَنَاكِبَنَا، وَيَقُوْلُ: «لاَ تَخْتَلِفُوا فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ. وَكَانَ يَقُوْل: إنَّ اللهَ وَمَلائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الصُّفُوفِ الأُوَلِ». رواه أبُو دَاوُدَ بإسناد حسن

বারা’ ইবনে আযেব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামাযে কাতারের ভিতরে ঢুকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চলা ফেরা করতেন এবং আমাদের বুকে ও কাঁধে হাত দিতেন (অর্থাৎ হাত দিয়ে কাতার ঠিক করতেন) আর বলতেন, “তোমরা বিভেদ করো না (অর্থাৎ কাতার থেকে আগে পিছে হটো না ।) নচেৎ তোমাদের অন্তর রাজ্যেও বিভেদ সৃষ্টি হবে ।” তিনি আরও বলতেন, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ প্রথম কাতারগুলির উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফিরিশ্‌তাবর্গ তাদের জন্য রহমত প্রার্থনা করেন ।”

(আবূ দাঊদ ৬৬৪, নাসায়ী ৮১১, ইবনু মাজাহ ৯৯৭, আহমাদ ১৮০৪৫, ১৮১৪২, ১৮১৪৭, ১৮১৬৬, ১৮১৭২, ১৮২২৯, দারেমী ১২৬৪)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১০৯৮

عَنْ أَبي أُمَامَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: «اقْرَؤُوا القُرْآنَ ؛ فَإِنَّهُ يَأتِي يَوْمَ القِيَامَةِ شَفِيعاً لأَصْحَابِهِ». رواه مسلم

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা কাতারগুলি সোজা ক’রে নাও । পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নাও । (কাতারের) ফাঁক বন্ধ ক’রে নাও । তোমাদের ভাইদের জন্য হাতের বাজু নরম ক’রে দাও । আর শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ো না । (মনে রাখবে,) যে ব্যক্তি কাতার মিলাবে, আল্লাহ তার সাথে মিল রাখবেন, আর যে ব্যক্তি কাতার ছিন্ন করবে (মানে কাতারে ফাঁক রাখবে), আল্লাহও তার সাথে (সম্পর্ক) ছিন্ন করবেন ।”

(আবূ দাঊদ ৬৬৬, নাসায়ী ৮১৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১০৯৯

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «رُصُّوا صُفُوفَكُمْ، وَقَارِبُوا بَيْنَهَا، وَحَاذُوا بِالأَعْنَاقِ؛ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَرَى الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ مِنْ خَلَلِ الصَّفِّ، كَأَنَّهُ الحَذَفُ». حديث صحيح رَوَاهُ أبُو دَاوُدَ بإسنادٍ عَلَى شرط مسلم

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “ঘন ক’রে কাতার বাঁধ এবং কাতারগুলিকে পরস্পরের কাছাকাছি রাখ । ঘাড়সমূহ একে অপরের বরাবর কর । সেই মহান সত্তার শপথ ! যার হাতে আমার প্রাণ আছে, কাতারের মধ্যেকার ফাঁকে শয়তানকে আমি প্রবেশ করতে দেখতে পাই, যেন তা কালো ছাগলের ছানা ।” (এ হাদীসটি বিশুদ্ধ, আবূ দাঊদ মুসলিমের শর্তানুযায়ী বর্ণনা করেছেন)

(সহীহুল বুখারী ৪১৯, ৭১৮, ৭১৯, ৭২৩, ৭২৪, ৭২৫, ৭৪২, ৭৪৯, ৬৪৬৮, ৬৬৪৪, মুসলিম ৪২৫, নাসায়ী ৮১৩, ৮১৫, ৮১৮, ৮৪৫, ১০৫৪, ১১১৭, আবূ দাঊদ ৬৬৭, ৬৬৮, ৬৬৯, ৬৭১, ইবনু মাজাহ ৯৯৩, আহমাদ ১১৫৮, ৬, ১১৬৫৫, ১১৬৯৯, ১১৭৩৮, ১১৮৪৬, ১১৯১২, ১২১৫৯, ১২২৩৫, ১২৩২২, ১২৪০১, ১২৪২৯, ১২৪৪৮, দারেমী ১২৬৩)
حذف এর অর্থ কালো ছোট জাতের ছাগল, যা ইয়ামানে পাওয়া যায় ।

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১০০

وَعَنْه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ: «أَتِمُّوا الصَّفَّ المُقَدَّمَ، ثُمَّ الَّذِي يَلِيهِ، فَمَا كَانَ مِنْ نَقْصٍ فَلْيَكُنْ في الصَّفِّ المُؤَخَّرِ». رواه أبُو دَاوُدَ بإسناد حسن

পূর্বোক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (নামায প্রাক্কালে) বলেন, “তোমরা আগের কাতারটি পূর্ণ ক’রে নাও । তারপর ওর সংলগ্ন (কাতার পূর্ণ কর) । তারপর যে অসম্পূর্ণতা থাকে, তা শেষ কাতারে থাকুক ।” (আবূ দাঊদ, হাসান সূত্রে)

(সহীহুল বুখারী ৭১৮, ৭২৩, আবূ দাঊদ ৬৭১, ৬৬৭, ৬৬৮, ৬৬৯, মুসলিম ৪৩৩, ৪৩৪, নাসায়ী ৮১৪, ৮১৫, ৮৪৫, ইবনু মাজাহ ৯৯৩, আহমাদ ১১৫৯৬, ১১৬৯৯, ১১৭১৩, ১১৪০১, ১২৪২৯, ১২৪৭৩, ১৩২৫২, ১৩৩৬৬, ১৩৪৮৩, ১৩৫৫৭, ১৩৬৮২, দারেমী ১২৬৩)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১০১

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّه عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُوْلُ اللَّه صلى الله عليه وسلم:إِنَّ اللَّه وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلىٰ مَيَامِنِ الصُّفُوْفِ» رواه أبو داود بإِسناد عَلى شرْطِ مُسْلِمٍ، وفيهِ رجلٌ مُخْتَلَفٌ في توْثِيقِهِ .

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ অবশ্যই কাতারগুলোর ডানদিকের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং আল্লাহর ফেরেশতারা তাদের জন্য দুআ করতে থাকেন । (আবূ দাঊদ)

(আমি (আলবানী) বলছিঃ তিনি (বর্ণনাকারী উসমা হচ্ছেন উসামা ইবনু যায়েদ লাইসী । সমালোচক মুহাক্কেক আলেমদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে এই যে, তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে ভালো যদি তার বিরোধিতা করা না হয় । এ কারণে তার এ হাদীসকে একদল হাফিয হাসান আখ্যা দিয়েছেন । কিন্তু হাদীসটি এ ভাষায় শায অথবা মুনকার । কারণ তিনি অন্য সব নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীর বিরোধিতা করে এককভাবে এটিকে বর্ণনা করেছেন । আর বর্ণনাকারী মু‘য়াবিয়্যাহ্ ইবনু হিশামের মধ্যে তার হেফযের দিক দিয়ে দুর্বলতা রয়েছে । (তবুও বিরোধিতা না হয়ে থাকলে তার হাদীসও গ্রহণযোগ্য) । হাদীসটি নিরাপদ হচ্ছে (যেমনটি বাইহাক্বী বলেছেন) এ ভাষায়ঃ “আল্লাহ্ রহমাত নাযিল করেন আর ফেরেশতারা তাদের প্রতি রহমাত কামনা করে দু’আ করেন যারা কাতার সমূহকে (ফাঁক না রেখে) পূর্ণ করে দাঁড়ায়” । যেমনটি আমি “মিশকাত” গ্রন্থের (নং ১০৯৬) টীকায় উল্লেখ করেছি আর “য‘ঈফু আবী দাঊদ” (নং ১৫৩) এবং “সহীহ্ আবী দাঊদ” গ্রন্থে (৬৮০) বর্ণনা করেছি । আবূ ৬৭৬, ইবনু মাজাহ ১০০৫ ।)

হাদিসের মানঃঅন্যান্য

১১০২

وَعَنِ البَرَاءِ قَالَ: كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحْبَبْنَا أَنْ نَكُونَ عَنْ يَمِينهِ، يُقْبِلُ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ، فَسَمِعْتُهُ يَقُوْل: «رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ - أَو تَجْمَعُ - عِبَادَكَ»رواه مُسلِمٌ

বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিছনে যখন নামায পড়তাম তখন তাঁর ডান দিকে (দাঁড়ানো) পছন্দ করতাম । যাতে তিনি স্বীয় মুখমণ্ডল আমাদের দিকে ফিরান । বস্তুত: আমি (একদিন) তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘রাব্বি ক্বিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাবআসু (অথবা তাজমাউ) ইবা-দাক ।’ হে আমার প্রভু ! তুমি আমাকে তোমার সেই দিনের আযাব থেকে বাঁচিয়ো, যেদিন তুমি স্বীয় বান্দাদেরকে কবর থেকে উঠাবে কিংবা হিসাবের জন্য জমা করবে ।

(মুসলিম ৭০৯, নাসায়ী ৮২২, আবূ দাঊদ ৬১৫, ইবনু মাজাহ ১০০৬, আহমাদ ১৮০৮২, ১৮২৩৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১০৩

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم «وَسِّطُوا الإِمَامَ، وَسُدُّوا الخَلَلَ». رواه أبُو دَاوُد.

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা ইমামকে কাতারের ঠিক মাঝখানে কর । আর কাতারের ফাঁক বন্ধ করো ।”

(আবূ দাঊদ, হাদিসের প্রথমাংশ সহীহ নয় ।) (আমি (আলবানী) বলছিঃ এর সনদে দু’জন মাজহূল (অপরিচিত) বর্ণনাকারী রয়েছেন । যেমনটি আমি “য‘ঈফু আবী দাঊদ” গ্রন্থে (নং ১০৫) বর্ণনা করেছি । তবে হাদীসটির দ্বিতীয় বাক্যের আব্দুল্লাহ্ ইবনু উমার (রাযি) হতে কতিপয় শাহেদ বর্ণিত হয়েছে । অতএব দ্বিতীয় বাক্যটি সহীহ্ । এ সম্পর্কে (১০৯৮) নম্বরে সহীহ্ আখ্যা দেয়া হয়েছে । এর সনদে বর্ণনাকারী ইয়াহ্ইয়া ইবনু বাশীর ইবনে খাল্লাদ এবং তার মা তারা উভয়েই মাজহূল (অপরিচিত) । ইবনু কাত্তান বলেনঃ তাদের উভয়ের অবস্থা অজ্ঞাত । আব্দুল হক্ব ইশবীলী বলেনঃ এ সনদটি শক্তিশালী নয় । হাফিয যাহাবী বলেনঃ তার সনদটি দুর্বল । হাফিয ইবনু হাজার “আত্‌তাক্বরীব” গ্রন্থে আর শাওকানী তার অনুসরণ করে ((৩/১৫৩) বলেনঃ ইয়াহ্ইয়া ইবনু বাশীরের অবস্থা অপ্রকাশিত আর তার মা অপরিচিতা । বিস্তারিত দেখুন “য‘ঈফু আবী দাঊদ-আলউম্ম-” গ্রন্থে (নং ১০৬) । আবূ দাঊদ ৬৮১)

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯৫

ফরয নামাযের সাথে সুন্নাতে ‘মুআক্কাদাহ’ পড়ার ফযীলত। আর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ ও তার মাঝামাঝি রাকআত-সংখ্যার বিবরণ

১১০৪

وَعَنْ أُمِّ المُؤْمِنِينَ أُمِّ حَبِيبَةَ رَمْلَةَ بِنْتِ أَبِي سُفْيَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَتْ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُوْلُ: «مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يُصَلِّي لِلهِ تَعَالىَ كُلَّ يَوْمٍ ثِنْتَيْ عَشرَةَ رَكْعَةً تَطَوُّعاً غَيرَ الفَرِيضَةِ، إِلاَّ بَنَى اللهُ لَهُ بَيْتاً فِي الجَنَّةِ، أَوْ إِلاَّ بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الجَنَّةِ». رواه مُسلِمٌ

মু’মিন জননী উম্মে হাবীবাহ রামলা বিনতে আবূ সুফিয়ান (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, “যে কোনো মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহর (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য প্রত্যহ ফরয নামায ছাড়া বারো রাকআত সুন্নত নামায পড়ে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি গৃহ নির্মাণ করেন অথবা তার জন্য জান্নাতে একটি গৃহ নির্মাণ করা হয় ।”

(মুসলিম ৭২৮, তিরমিযী ৪১৫, নাসায়ী ১৭৯৬-১৮১০, আবূ দাঊদ ১২৫০, ইবনু মাজাহ ১১৪১, আহমাদ ২৬২৩৫, ২৬৮৪৯, ২৬৮৬৫, দারেমী ১২৫০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১০৫

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتْينِ بَعْدَهَا، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الجُمُعَةِ، وَرَكْعَتَينِ بَعدَ المَغْرِبِ، وَرَكْعَتَينِ بَعدَ العِشَاءِ . متفقٌ عَلَيهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে আমি দু’ রাকআত যোহরের (ফরযের) আগে, দু’ রাকআত তার পরে এবং দু’ রাকআত জুমআর পরে, দু’ রাকআত মাগরেব বাদ, আর দু’ রাকআত নামায এশার (ফরযের) পরে পড়েছি ।’

(সহীহুল বুখারী ৬১৮, ৯৩৭, ১১৬৯, ১১৭৩, ১১৮১, মুসলিম ৭২৩, ৭২৯, ৮৮২, তিরমিযী ৪২৫, ৪৩৩, ৫২২, নাসায়ী ৫৮৩, ১৪২৭, ১৪২৮, ১৭৬৯০, ১৭৬১, ১৭৬৫-১৭৭৯, আবূ দাঊদ ১১২৮, ১১৩০, ১১৩২, ইবনু মাজাহ ১১৪৫, আহমাদ ৪৪৯২, ৪৫৭৭, ৪৬৪৬, ৫৭৪২, ৪৯০২, ৫১০৬, ৫২৭৪, ৫৩৯৪, ৫৪০৯, ৫৪২৫, ৫৪৫৬, ৫৫৭১, ৫৬৫৫, ৫৭০৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৮৫, দারেমী ১৪৩৭, ১৪৪৩, ১৪৪৪, ১৫৭৩, ১৫৭৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১০৬

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ مُغَفَّلٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ، بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ، بَيْنَ كُلِّ أَذَانَينِ صَلاَةٌ». قال في الثَّالِثةِ: «لِمَنْ شَاءَ». متفقٌ عَلَيهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফ্ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “প্রত্যেক দুই আযানের মাঝখানে নামায আছে । প্রত্যেক দুই আযানের মাঝখানে নামায আছে । প্রত্যেক দুই আযানের মাঝখানে নামায আছে ।” তৃতীয়বারে বললেন, “যে চায় তার জন্য ।”

(সহীহুল বুখারী ৬২৪, ৬২৭, মুসলিম ৮৩৮, তিরমিযী ১৮৫, নাসায়ী ৬৮১, আবূ দাঊদ ১২৮৩, ইবনু মাজাহ ১১৬২, আহমাদ ১৬৪৮, ২০০২১, ২০০৩৭, ২০০৫১, দারেমী ১৪৪০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯৬

ফজরের দু’ রাকআত সুন্নতের গুরুত্ব

১১০৭

نْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَدَعُ أَرْبَعاً قَبْلَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الغَدَاةِ . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যোহরের (ফরয নামাযের) পূর্বে চার রাকআত ও ফজরের আগে দু’ রাকআত নামায কখনো ত্যাগ করতেন না । (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ১১৮২, নাসায়ী ১৭৫৭, ১৭৫৮, আবূ দাঊদ ১২৫৩, ইবনু মাজাহ ১১৫৬, আহমাদ ২৩৬৪৭, ২৩৮১৯, মুসলিম ২৪৬২৩, দারেমী ১৪৩৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১০৮

وَعَنْها، قَالَتْ: لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى شَيْءٍ مِنَ النَّوَافِلِ أَشَدَّ تَعَاهُداً مِنهُ عَلَى رَكْعَتَي الفَجْرِ . متفقٌ عَلَيهِ

উক্ত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের দু’ রাকআত সুন্নতের প্রতি যেরূপ যত্নবান ছিলেন, সেরূপ অন্য কোনো নফল নামাযের প্রতি ছিলেন না ।’

(সহীহুল বুখারী ১১৬৩, মুসলিম ৭২৪, আবূ দাঊদ ১২৫৪, আহমাদ ২৩৭৫, ২৪৮৩৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১০৯

وَعَنْها، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «رَكْعَتَا الفَجْرِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا». رواه مُسلِمٌ . وفي رواية: «لَهُمَا أحَبُّ إليَّ مِنَ الدُّنْيَا جَمِيعاً»

উক্ত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ফজরের দু’ রাকআত (সুন্নত) পৃথিবী ও তাতে যা কিছু আছে সবার চেয়ে উত্তম ।”

(মুসলিম ২৫, তিরমিযী ৪১৬, নাসায়ী ১৭৫৯, আহমাদ ২৫৭৫৪) অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, “ঐ দুই রাকআত আমার নিকট দুনিয়ার সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় ।”

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১০

وَعَنْ أَبِي عَبدِ اللهِ بِلاَلِ بنِ رَبَاح رضي الله عنه مُؤَذِّنِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَنَّهُ أَتَى رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم لِيُؤْذِنَهُ بِصَلاَةِ الغَدَاةِ، فَشَغَلَتْ عَائِشَةُ بِلالاً بِأَمْرٍ سَأَلَتْهُ عَنْهُ، حَتَّى أَصْبَحَ جِدّاً، فَقَامَ بِلاَلٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلاَةِ، وَتَابَعَ أَذَانَهُ، فَلَمْ يَخْرُجْ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، فَلَمَّا خَرَجَ صَلَّى بِالنَّاسِ، فَأَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ شَغَلَتْهُ بِأَمْرٍ سَأَلَتْهُ عَنْهُ حَتَّى أَصْبَحَ جِدّاً، وَأنَّهُ أَبْطَأَ عَلَيْهِ بِالخُرُوجِ، فَقَالَ - يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم «إنِّي كُنْتُ رَكَعْتُ رَكْعْتَي الفَجْرِ» فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، إنَّكَ أَصْبَحْتَ جِدّاً ؟ فقَالَ: «لَوْ أَصْبَحْتُ أَكْثَرَ مِمَّا أَصْبَحْتُ، لَرَكَعْتُهُمَا، وَأَحْسَنْتُهُمَا وَأَجْمَلْتُهُمَا». رواه أبُو دَاوُدَ بإسناد حسن

আবূ আব্দুল্লাহ বিলাল ইবনে রাবাহ- থেকে বর্ণিতঃ

(একবার) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ফজরের নামাযের খবর দেবার মানসে তাঁর নিকট হাযির হলেন । তখন আয়েশা (রাঃ) তাঁকে এমন বিষয়ে ব্যস্ত রাখলেন, তিনি যে সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন । শেষ পর্যন্ত ভোর খুব বেশি পরিস্ফুট হয়ে পড়ল, সুতরাং বিলাল দাঁড়িয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে নামাযের খবর দিলেন এবং বারংবার জানাতে থাকলেন । কিন্তু তিনি বাইরে এলেন না । (তার কিছুক্ষণ পর) তিনি এলেন ও লোকদেরকে নিয়ে নামায পড়লেন । তখন বিলাল (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জানালেন যে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁকে এমন বিষয়ে ব্যস্ত রেখেছিলেন, যে সম্পর্কে তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন । শেষ পর্যন্ত খুব ফর্সা হয়ে গেল এবং তিনিও বাইরে আসতে দেরি করলেন । তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আমি ফজরের দু’ রাকআত সুন্নত পড়ছিলাম ।” বিলাল বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আপনি তো একদম সকাল ক’রে দিলেন ।’ তিনি বললেন, “তার চেয়েও বেশি সকাল হয়ে গেলেও, আমি ঐ দু’ রাকআত সুন্নত পড়তাম এবং সুন্দর ও উত্তমরূপে পড়তাম ।”

(আবূ দাঊদ ১২৫৭, আহমাদ ২৩৩৯৩)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯৭

ফজরের দু’ রাকআত সুন্নত হাল্কা পড়া, তাতে কি সূরা পড়া হয় এবং তার সময় কি?

১১১১

عَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ بَيْنَ النِّدَاءِ وَاِلإقَامَةِ مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ . متفقٌ عَلَيهِ .
وفي روايَةٍ لَهُمَا: يُصَلِّي رَكْعَتَي الفَجْرِ، فَيُخَفِّفُهُمَا حَتَّى أَقُولَ: هَلْ قَرَأَ فِيهِمَا بِأُمِّ القُرْآنِ .
وفي رواية لمسلم: كَانَ يُصلِّي رَكْعَتَي الفَجْرِ إِذَا سَمِعَ الأَذَانَ وَيُخَفِّفُهُمَا. وفي رواية: إذَا طَلَعَ الفَجْرُ.

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফজরের সময় আযান ও ইকামতের মাঝখানে সংক্ষিপ্ত দু’ রাকআত নামায পড়তেন । (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৬১৯, ১১৫৯, ১১৬৪, মুসলিম ৪৭১, ৭২৪, ৭৩৬, তিরমিযী ৪৫৯, নাসায়ী ৬৮৫, ৯৪৬, ১৭৫৬, ১৭৫৭, ১৭৫৮, ১৭৬২, ১৭৮০, ১৭৮১, আদ ১২৫৫, ১৩৩৮, ১৩৩৮, ১৩৩৯, ১৩৪০, ইবনু মাজাহ ১৩৫, ১৩৫৮, ১৩৫৯, আহমাদ ২৩৪৯৭, ২৩৫৩৭, ২৩৬৪৭, ২৩৭০৫, ২৩৭১৯, ২৩৭৩৭, ২৩৭৪১, ২৩৮১৯, ২৩৯২৫, দারেমী ১৪৪৭, ১৪৭৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১২

وَعَنْ حَفصَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَذَّنَ المُؤَذِّنُ لِلْصُّبْحِ وَبَدَا الصُّبْحُ، صَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ . متفقٌ عَلَيهِ.
وفي رواية لمسلم: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا طَلَعَ الفَجْرُ لاَ يُصَلِّي إِلاَّ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ .

হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

যখন মুআয্‌যিন আযান দিত ও ফজর উদয় হত তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’ রাকআত সংক্ষিপ্ত নামায পড়তেন । (বুখারী-মুসলিম)

মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, যখন ফজর উদয় হত তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’ রাকআত সংক্ষিপ্ত নামায ছাড়া আর কিছু পড়তেন না । (বুখারী ও মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ৬১৮, ৯৩৭, ১১৬৯, ১১৭৩, ১১৮১, মুসলিম ৭২৩, ৭২৯, ৮৮২, তিরমিযী ৪২৫, ৪৩৩, ৫২২, নাসায়ী ৫৮৩, ১৪২৭, ১৪২৮, ১৭৬৯০, ১৭৬১, ১৭৬৫-১৭৭৯, আবূ দাঊদ ১১২৮, ১১৩০, ১১৩২, ইবনু মাজাহ ১১৪৫, আহমাদ ৪৪৯২, ৪৫৭৭, ৪৬৪৬, ৫৭৪২, ৪৯০২, ৫১০৬, ৫২৭৪, ৫৩৯৪, ৫৪০৯, ৫৪২৫, ৫৪৫৬, ৫৫৭১, ৫৬৫৫, ৫৭০৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৮৫, দারেমী ১৪৩৭, ১৪৪৩, ১৪৪৪, ১৫৭৩, ১৫৭৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১৩

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ، وَيُصَلِّي الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الغَدَاةِ، وَكَأَنَّ الأَذَانَ بِأُذُنَيْهِ . متفقٌ عَلَيهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাতে (তাহাজ্জুদের নামায) দুই দুই রাকআত ক’রে পড়তেন । আর রাতের শেষ ভাগে এক রাকআত বিত্‌র পড়তেন । ফজরের নামাযের পূর্বে দু’ রাকআত (সুন্নত) পড়তেন । আর এত দ্রুত পড়তেন যেন তাকবীর-ধ্বনি তাঁর কানে পড়ছে ।’ (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৭২, ৯৯৫, নাসায়ী , ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, ৭৫১, তিরমিযী ৪৩৭, ৪৬১, নাসায়ী ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবূ দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১৪

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي رَكْعَتَي الفَجْرِ فِي الأُولَى مِنْهُمَا: ﴿ ‏قولوا آمنا بالله وما أنزل إلينا﴾ [البقرة: ١٣٦] الآيَةَ الَّتِي فِي البَقَرَةِ، وَفِي الآخِرَةِ مِنْهُمَا: ﴿آمنا بالله واشهد بأنا مسلمون﴾ [ال عمران: ٥٢] .
وفي رواية: وَفِي الآخِرَةِ الَّتي فِي آلِ عِمْرَانَ: ﴿تعالوا إلى كلمة سواء بيننا وبينكم﴾ [ال عمران: ٦٤]

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের সুন্নত নামাযের প্রথম রাকআতে ‘ক্বূলূ আমান্না বিল্লাহি অমা উনযিলা ইলাইনা’ (১৩৬নং) শেষ আয়াত পর্যন্ত - যেটি সূরা বাক্বারায় আছে - পাঠ করতেন । আর তার দ্বিতীয় রাকআতে ‘আমান্না বিল্লাহি অশহাদ বিআন্না মুসলিমূন’ (আলে ইমরানের ৫২নং আয়াত) পড়তেন ।
অন্য বর্ণনায় আছে, দ্বিতীয় রাকআতে আলে-ইমরানের (৬৪নং আয়াত) ‘তাআলাউ ইলা কালিমাতিন সাওয়াইন বাইনানা অবাইনাকুম’ পাঠ করতেন ।

(মুসলিম ৭২৭, নাসায়ী ৯৪৪, আহমাদ ২০৪৬, ২৩৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১৫

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَرَأَ فِي رَكْعَتَي الفَجْرِ: { قُلْ يَا أَيُّهَا الكَافِرُونَ } وَ { قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ }. رَوَاهُ مُسلِم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফজরের দু’ রাকআত সুন্নতে সূরা ‘ক্বুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরূন’ ও ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পাঠ করতেন ।

(মুসলিম ৭২৬, নাসায়ী ৯৪৫, ইবনু মাজাহ ১১৪৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১৬

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: رَمَقْتُ النَّبيَّ صلى الله عليه وسلم شَهْراً فَكَانَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الفَجْرِ: {قُلْ يَا أيُّهَا الْكَافِرُونَ} وَ {قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ} رَوَاهُ التِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এক মাস ব্যাপী লক্ষ্য করে দেখলাম, তিনি ফজরের আগে দু’রাকআত সুন্নত নামাযে এই দুই সূরা ‘ক্বুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন’ ও ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পাঠ করতেন ।

(তিরমিযী ৪১৭, ইবনু মাজাহ ১১৪৯, নাসায়ী ৯৯২, আহমাদ ৫৬৫৮, ৫৬৬৬, ৫৭০৮)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ১৯৮

তাহাজ্জুদের নামায পড়ুক আর না পড়ুক ফজরের দু’ রাকআত সুন্নত পড়ে ডান পাশে শোয়া মুস্তাহাব ও তার প্রতি উৎসাহ দান ।

১১১৭

عن عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إذَا صَلَّى رَكعَتَي الفَجْرِ، اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَن . رَوَاهُ البُخَارِي

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ফজরের দু’ রাকআত সুন্নত পড়তেন, তখন ডান পাশে শুয়ে (বিশ্রাম) নিতেন ।’

(সহীহুল বুখারী ৬২৬, ৯৯৪, ১১৬০, ১১২৩, ১১৩৯, ১১৪০, ১১৬৫, ৬৩১০, মুসলিম ৭২৪, ৭৩৬-৭৩৮, তিরমিযী ৪৪০, ৪৩৯, নাসায়ী ৬৮৫, ১৫৯৬, ১৭৪৯, ১৭৬২, আবূ দাঊদ ১১৫৪, ১২৫৫, ১২৬২, ১৩৩৪, ১৩৩৮-৯, ১৩৪০, ইবনু মাজাহ ১১৯৮, ১৩৫৮, আহমাদ ২৩৫৩৭, ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৬৬৮, ২৩৬৯৭, ২৩৭০৫, ২৩৯২৪, মুওয়াত্তা মালিক ২৪৩, ২৫৪, দারেমী ১৪৪৭, ১৪৭৩, ১৪৭৪, ১৫৮৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১৮

وَعَنْها، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِيمَا بَيْنَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلاَةِ العِشَاءِ إلَى الفَجْرِ إِحْدَى عَشرَةَ رَكْعَةً، يُسَلِّمُ بَيْنَ كُلِّ رَكْعَتَيْنِ، وَيُوتِرُ بِوَاحِدَةٍ، فَإِذَا سَكَتَ المُؤَذِّنُ مِنْ صَلاَةِ الفَجْرِ، وَتَبَيَّنَ لَهُ الفَجْرُ، وَجَاءهُ المُؤَذِّنُ، قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَينِ، ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ، هكَذَا حَتَّى يأْتِيَهُ المُؤَذِّنُ لِلإِقَامَةِ . رَوَاهُ مُسلِم

উক্ত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এশার নামায শেষ করার পর থেকে নিয়ে ফজরের নামায অবধি এগার রাকআত (তাহাজ্জুদের নামায পড়তেন) । প্রত্যেক দু’ রাকআতে সালাম ফিরতেন এবং এক রাকআত বিত্‌র পড়তেন । অতঃপর যখন মুআযযিন ফজরের নামাযের আযান দিয়ে চুপ হত এবং ফজর তাঁর সামনে উজ্জ্বল হয়ে উঠত, আর মুআযযিন (ফজরের সময় সম্পর্কে অবহিত করার জন্য) তাঁর কাছে আসত, তখন তিনি উঠে সংক্ষিপ্তভাবে দু’ রাকআত নামায পড়ে নিতেন । তারপর ডান পার্শে শুয়ে (জিরিয়ে) নিতেন । এইভাবে মুআযযিন নামাযের তাকবীর দেওয়ার জন্য তাঁর কাছে হাযির হওয়া পর্যন্ত (তিনি শুয়ে থাকতেন) ।’

(সহীহুল বুখারী ৬২৬, ৯৯৪, ১১৫৪, ১১৬৫, ৬৩১০, মুসলিম ৭৩৬, তিরমিযী ৪৪০, ৪৫৯, নাসায়ী ৬৮৫, ৯৪৬, ১৬৯৬, ১৭১৭, ১৭২৩, ১৭৪৯, ১৭৫৬, ১৭৬২, ১৭৮০, ১৭৮১, আবূ দাঊদ ১২৫৪, ১২৫৫, ১২৬২, ১৩৩৪-১৩৩৬, ১৩৩৮-১৩৪০, ১৩৪২, ১৩৫৯, ১৩৬০, ইবনু মাজাহ ১৩৫৭, ১৩৫৯, আহমাদ ২৩৫৩৭, ২৩৫৫০, ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৯৪০, মুওয়াত্তা মালিক ২৬৪, ২৬৬, ২৮৬, দারেমী ১৪৪৭, ১৪৭৩, ১৪৭৪, ১৫৮৫, ১৫৮১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১১৯

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ رَكْعَتَي الفَجْرِ، فَلْيَضْطَجِعْ عَلَى يَمِينِهِ». رواه أبُو دَاوُدَ وَالتِّرمِذِيُّ بأسانيد صحيحة، قال الترمذي: حديث حسن صحيح

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন ফজরের দু’ রাকআত সুন্নত পড়বে, তখন সে যেন তার ডান পাশে শুয়ে যায় ।” (আবূ দাঊদ, তিরমিযী বিশুদ্ধ সূত্রে, তিরমিযীর উক্তি: হাদিসটি হাসান সহীহ)

(আবূ দাঊদ ১২৬১, তিরমিযী ৪২০, ইবনু মাজাহ ১১৯৯)

হাদিসের মানঃহাসান সহিহ

পরিচ্ছেদ - ১৯৯

যোহরের সুন্নত

১১২০

عَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا . متفقٌ عَلَيهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে যোহরের আগে দু’ রাকআত ও তার পরে দু’ রাকআত সুন্নত পড়েছি ।’

(সহীহুল বুখারী ৬১৮, ৯৩৭, ১১৬৯, ১১৭৩, ১১৮১, মুসলিম ৭২৩, ৭২৯, ৮৮২, তিরমিযী ৪২৫, ৪৩৩, ৫২২, নাসায়ী ৫৮৩, ১৪২৭, ১৪২৮, ১৭৬৯০, ১৭৬১, ১৭৬৫-১৭৭৯, আবূ দাঊদ ১১২৮, ১১৩০, ১১৩২, ইবনু মাজাহ ১১৪৫, আহমাদ ৪৪৯২, ৪৫৭৭, ৪৬৪৬, ৫৭৪২, ৪৯০২, ৫১০৬, ৫২৭৪, ৫৩৯৪, ৫৪০৯, ৫৪২৫, ৫৪৫৬, ৫৫৭১, ৫৬৫৫, ৫৭০৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৮৫, দারেমী ১৪৩৭, ১৪৪৩, ১৪৪৪, ১৫৭৩, ১৫৭৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১২১

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَدَعُ أَرْبَعاً قَبْلَ الظُّهْرِ . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যোহরের আগে চার রাকআত সুন্নত ত্যাগ করতেন না । (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ১১৮২, নাসায়ী ১৭৫৭, ১৭৫৮, আবূ দাঊদ ১২৫৩, ইবনু মাজাহ ১১৫৬, আহমাদ ২৩৬৪৭, ২৩৮১৯, ২৪৬২৩, দারেমী ১৪৩৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১২২

وَعَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِي بَيْتِي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعاً، ثُمَّ يَخْرُجُ، فَيُصَلِّي بِالنَّاسِ، ثُمَّ يَدْخُلُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ . وَكَانَ يُصَلِّي بِالنَّاسِ المَغْرِبَ، ثُمَّ يَدْخُلُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، وَيُصَلِّي بِالنَّاسِ العِشَاءِ، وَيَدْخُلُ بَيتِي فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ . رَوَاهُ مُسلِم

উক্ত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার ঘরে যোহরের পূর্বে চার রাকআত সুন্নত পড়তেন, তারপর (মসজিদে) বের হয়ে গিয়ে লোকেদেরকে নিয়ে নামায পড়তেন । অতঃপর ঘরে প্রবেশ করতেন এবং দু’ রাকআত সুন্নত পড়তেন । তিনি লোকেদেরকে নিয়ে মাগরিবের নামায পড়ার পর আমার ঘরে প্রবেশ করতেন এবং দু’ রাক‘আত সুন্নত পড়তেন । (অনুরূপভাবে) তিনি লোকেদেরকে নিয়ে এশার নামায পড়তেন, অতঃপর আমার ঘরে ফিরে এসে দু’ রাক‘আত সুন্নত পড়তেন ।’

(মুসলিম ৭৩০, নাসায়ী ১৬৪৬, ১৬৪৭, আবূ দাঊদ ৯৫৪, আহমাদ ২৫৭৫৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১২৩

وَعَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ، وَأَرْبَعٍ بَعْدَهَا، حَرَّمَهُ اللهُ عَلَى النَّارِ». رواه أبُو دَاوُدَ وَالتِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صحيح

উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি যোহরের ফরয নামাযের পূর্বে চার রাকআত ও পরে চার রাকআত সুন্নত পড়তে যত্নবান হবে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম ক’রে দেবেন ।”

(আবূ দাঊদ ১২৬৯, তিরমিযী ৪২৭, ৪২৮, ইবনু মাজাহ ১১৬০, আহমাদ ২৬২৩২)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১২৪

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ السَّائِبِ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي أَرْبَعاً بَعْدَ أَنْ تَزُولَ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ، وَقَال: «إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ، فَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِي فِيهَا عَمَلٌ صَالِحٌ». رواه التِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ

আব্দুল্লাহ ইবনে সায়েব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সূর্য (পশ্চিম গগনে) ঢলে যাবার পর, যোহরের ফরযের পূর্বে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চার রাকআত সুন্নত নামায পড়তেন । আর বলতেন, “এটা এমন সময়, যখন আসমানের দ্বারসমূহ খুলে দেওয়া হয় । তাই আমার পছন্দ যে, সে সময়েই আমার সৎকর্ম ঊর্ধ্বে উঠুক ।”

(তিরমিযী ৪৭৮, আহমাদ ১৪৯৭০)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১২৫

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا لَمْ يُصَلِّ أَربَعاً قَبلَ الظُّهْرِ، صَلاَّهُنَّ بَعْدَهَا . رَوَاهُ التِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত সুন্নত পড়তে সুযোগ পেতেন না, তখন তার পরে তা পড়ে নিতেন ।

(তিরমিযী ৪২৬, ইবনু মাজাহ ১১৫৮)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০০

আসরের সুন্নতের বিবরণ

১১২৬

عَن عَلِيِّ بنِ أَبِي طَالِبٍ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي قَبْلَ العَصْرِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، يَفْصِلُ بَيْنَهُنَّ بِالتَّسْلِيمِ عَلَى المَلائِكَةِ المُقَرَّبِينَ، وَمَنْ تَبِعَهُمْ مِنَ المُسْلِمِينَ وَالمُؤْمِنِينَ . رَوَاهُ التِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ

আলী ইবনে আবী তালেব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসরের ফরয নামাযের আগে চার রাকআত সুন্নত পড়তেন । তার মাঝখানে নিকটবর্তী ফিরিশ্‌তাবর্গ ও তাঁদের অনুসারী মুসলিম ও মু’মিনদের প্রতি সালাম পেশ করার মাধ্যমে পার্থক্য করতেন ।’

(তিরমিযী ৪২৯, ইবনু মাজাহ ১১৬১)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১২৭

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «رَحِمَ اللهُ امْرَءاً صَلَّى قَبْلَ العَصْرِ أَرْبَعاً». رواه أبُو دَاوُدَ وَالتِّرمِذِيُّ، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ.

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ সেই ব্যক্তির উপর রহম করুন, যে ব্যক্তি আসরের পূর্বে চার রাকআত সুন্নত পড়ে ।”

(আবূ দাঊদ ১২৭১, তিরমিযী ৪৩০)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১২৮

وعنْ عليِّ بن أَبي طالبٍ، رَضِيَ اللَّه عنهُ، أَنَّ النبيَّ صلى الله عليه وسلم كانَ يُصَلِّي قَبْلَ العَصرِ رَكْعَتَيْنِ .

আলী ইবনু আবী ত্বালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (মাঝে মাঝে) আসরের আগে দু রাক‘আত (সুন্নাত) পড়তেন । (আবূ দাঊদ) হাদিসটি যইফ । (আমি (আলবানী) বলছিঃ কিন্তু ‘তিনি আসরের পূর্বে দু’রাক‘আত আদায় করতেন’ এ ভাষায় হাদীসটি শায । নিরাপদ হচ্ছে “তিনি আসরের পূর্বে চার রাক‘আত সলাত আদায় করতেন’ ।

“য‘ঈফ আবী দাঊদ” গ্রন্থে (নং ২৩৫) এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । আবূ দাঊদ ১২৭২, তিরমিযী ৪২৯ ।)

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০১

মাগরেবের ফরয নামাযের পূর্বে ও পরের সুন্নতের বিবরণ

১১২৯

وَعَنْ عبد الله بن مُغَفَّلٍ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «صَلُّوا قَبْلَ المَغْرِبِ». قال في الثَّالِثَةِ: «لِمَنْ شَاءَ». رواه البُخَارِيُّ

আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (দু’বার) বললেন, “তোমরা মাগরেবের পূর্বে (দু’ রাকআত) নামায পড় ।” অতঃপর তৃতীয় বারে তিনি বললেন, “যার ইচ্ছা হবে, (সে পড়বে ।)”

(সহীহুল বুখারী ১১৮৩, ৭৩৬৮, আবূ দাঊদ ১২৮১, আহমাদ ২০০২৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৩০

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه قَالَ: لَقَدْ رَأيْتُ كِبَارَ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَبْتَدِرُونَ السَّوَارِيَ عِندَ المَغْرِبِ. رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বড় বড় সাহাবীদেরকে দেখেছি, তাঁরা মাগরিবের সময় থামগুলোর দিকে দ্রুত বেগে অগ্রসর হতেন ।’ (দু’ রাকআত সুন্নত পড়ার উদ্দেশ্যে ।)

(সহীহুল বুখারী ৫০৩, ৬২৫, মুসলিম ৮৩৬, ৮৩৭, নাসায়ী ৬৮২, আবূ দাঊদ ১২৮২, আহমাদ ১১৯০১, ১২৬৬৫, ১৩৫৭১, ১৩৫৯৬, ইবনু মাজাহ ১১৬৩, দারেমী ১৪৪১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৩১

وَعَنْه، قَالَ: كُنَّا نُصَلِّي عَلَى عَهدِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ غُرُوبِ الشَّمْسِ قَبْلَ المَغْرِبِ، فَقِيلَ: أَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صَلاَّهُمَا ؟ قَالَ: كَانَ يَرَانَا نُصَلِّيهِمَا فَلَمْ يَأمُرْنَا وَلَمْ يَنْهَنَا . رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে সূর্যাস্তের পর মাগরিবের ফরয নামাযের আগে দু’ রাকআত সুন্নত পড়তাম ।’ তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ দু’ রাকআত পড়তেন কি ?’ তিনি বললেন, ‘তিনি আমাদেরকে ওই দু’ রাকআত পড়তে দেখতেন, কিন্তু আমাদেরকে (তার জন্য) আদেশও করতেন না এবং তা থেকে বারণও করতেন না ।’

(মুসলিম ৮৩৬, সহীহুল বুখারী ৫০৩, ৬২৫, ৪৩৭০, নাসায়ী ৬৮২, আবূ দাঊদ ১২৮, ইবনু মাজাহ ১১৬৩, আহমাদ ১১৯০১, ১২৬৪৫, ১৩৫৭১, দারেমী ১৪৪১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৩২

وَعَنْه، قَالَ: كُنَّا بِالمَدِينَةِ فَإِذَا أَذَّنَ المُؤَذِّنُ لِصَلاَةِ المَغْرِبِ، ابْتَدَرُوا السَّوَارِيَ، فَرَكَعُوا رَكْعَتَيْنِ، حَتَّى إِنَّ الرَّجُلَ الغَرِيبَ لَيَدْخُلُ المَسْجِدَ فَيَحْسَبُ أَنَّ الصَّلاَةَ قَدْ صُلِّيَتْ مِنْ كَثْرَةِ مَنْ يُصَلِّيهِمَا . رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমরা মদিনাতে ছিলাম । যখন মুআয্‌যিন মাগরেবের আযান দিত, তখন লোকেরা থামগুলির দিকে দ্রুত অগ্রসর হত এবং দু’ রাকআত নামায পড়ত । এমনকি কোন বিদেশী অচেনা মানুষ মসজিদে এলে, অধিকাংশ লোকের ঐ দু’ রাকআত পড়া দেখে মনে করত যে, (মাগরিবের ফরয) নামায পড়া হয়ে গেছে (এবং তারা পরের সুন্নত পড়ছে) ।’

(সহীহুল বুখারী ৫০৩, ৬২৫, মুসলিম ৮৩৬, ৮৩৭, নাসায়ী ৬৮২, আবূ দাঊদ ১২৮২, আহমাদ ১১৯০১, ১২৬৬৫, ১৩৫৭১, ১৩৫৯৬, ইবনু মাজাহ ১১৬৩, দারেমী ১৪৪১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০২

এশার আগে ও পরের সুন্নতসমূহের বিবরণ


এ বিষয়ে বিগত ইবনে উমরের (১১০৫ নং) হাদিস, ‘আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে এশার পর দু’ রাকআত সুন্নত পড়েছি’ এবং আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফ্ফাল কর্তৃক বর্ণিত (১১০৬নং) হাদিস, ‘প্রত্যেক দুই আযানের মধ্যবর্তী সময়ে নামায আছে ।’ উল্লিখিত হয়েছে ।

পরিচ্ছেদ - ২০৩

জুমুআর সুন্নত


ইবনে উমার (রাঃ)-এর পূর্বোক্ত (১১০৫নং) হাদিস গত হয়েছে । তাতে উল্লিখিত হয়েছে যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে জুমুআর পর দু’ রাকআত সুন্নত পড়েছেন। (বুখারী ও মুসলিম)

১১৩৩

وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِذَا صَلَّى أَحَدُكُم الجُمُعَةَ، فَلْيُصَلِّ بَعْدَهَا أَرْبعاً». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি জুমাআর নামায আদায় করবে, তখন সে যেন তারপর চার রাকআত (সুন্নত) পড়ে ।”

(মুসলিম ৮৮১, তিরমিযী ৫২৩-২৪, নাসায়ী ১৪২৬, আবূ দাঊদ ১১৩১, ইবনু মাজাহ ১১৩২, আহমাদ ৯৪০৬, ১০১০১, দারেমী ১৫৭৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৩৪

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يُصَلِّي بَعْدَ الجُمُعَةِ حَتَّى يَنْصَرِفَ، فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ في بَيْتِهِ . رواه مسلم

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমাআর পর (মসজিদ থেকে) ফিরে না আসা পর্যন্ত কোন সুন্নত নামায পড়তেন না । সুতরাং নিজ বাড়িতে (এসে) দু’ রাকআত নামায পড়তেন । (মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৬১৮, ৯৩৭, ১১৬৯, ১১৭৩, ১১৮১, মুসলিম ৭২৩, ৭২৯, ৮৮২, তিরমিযী ৪২৫, ৪৩৩, ৫২২, নাসায়ী ৫৮৩, ১৪২৭, ১৪২৮, ১৭৬৯০, ১৭৬১, ১৭৬৫-১৭৭৯, আবূ দাঊদ ১১২৮, ১১৩০, ১১৩২, ইবনু মাজাহ ১১৪৫, আহমাদ ৪৪৯২, ৪৫৭৭, ৪৬৪৬, ৫৭৪২, ৪৯০২, ৫১০৬, ৫২৭৪, ৫৩৯৪, ৫৪০৯, ৫৪২৫, ৫৪৫৬, ৫৫৭১, ৫৬৫৫, ৫৭০৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৮৫, দারেমী ১৪৩৭, ১৪৪৩, ১৪৪৪, ১৫৭৩, ১৫৭৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০৪

নফল (ও সুন্নত নামায) ঘরে পড়া উত্তম । তা সুন্নতে মুআক্কাদাহ হোক কিংবা অন্য কিছু । সুন্নত বা নফলের জন্য, যে স্থানে ফরয নামায পড়া হয়েছে সে স্থান পরিবর্তন করা বা ফরয ও তার মধ্যে কোনো কথা দ্বারা ব্যবধান সৃষ্টি করার নির্দেশ

১১৩৫

عَن زَيدِ بنِ ثَابِتٍ رضي الله عنه : أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «صَلُّوا أَيُّهَا النَّاسُ فِي بُيُوتِكُمْ، فَإنَّ أفْضَلَ الصَّلاَةِ صَلاَةُ المَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ المَكْتُوبَةَ». متفقٌ عَلَيْهِ

যায়েদ ইবনে সাবেত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “হে লোক সকল ! তোমরা নিজ নিজ বাড়িতে নামায পড় । কারণ, ফরয নামায ব্যতীত পুরুষের উত্তম নামায হল, যা সে নিজ বাড়িতে পড়ে থাকে ।”

(সহীহুল বুখারী ৭৩১, ৬১১৩, ৭২৯০, মুসলিম ৭৮১, তিরমিযী ৪৫০, নাসায়ী ১৫৯৯, আবূ দাঊদ ১০৪৪, ১৪৫৭, আহমাদ ২১০৭২, ২১০৮, ২১১১৪, মুওয়াত্তা মালিক ২৯৩, দারেমী ১৩৫৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৩৬

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «اجْعَلُوا مِنْ صَلاَتِكُمْ فِي بُيُوتِكُمْ، وَلاَ تَتَّخِذُوهَا قُبُوراً». متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা নিজেদের কিছু নামায তোমাদের বাড়িতে পড় এবং সে (ঘর-বাড়ি)গুলিকে কবরে পরিণত করো না ।”

(সহীহুল বুখারী ৪৩২, ১১৮৭, মুসলিম ৭৭৭, তিরমিযী ৪৫১, নাসায়ী ১৫৯৮, আবূ দাঊদ ১৪৫৮, ইবনু মাজাহ ১৩৭৭, আহমাদ ৪৪৯৭, ৪৬৩৯, ৬০০৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৩৭

وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِذَا قَضَى أَحَدُكُمْ صَلاَتَهُ فِي مَسْجِدِهِ فَلْيَجْعَلْ لِبَيْتِهِ نَصِيباً مِنْ صَلاَتِهِ ؛ فَإِنَّ اللهَ جَاعِلٌ فِي بَيْتِهِ مِنْ صَلاَتِهِ خَيْراً». رواه مسلم

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি স্বীয় (ফরয) নামায মসজিদে আদায় ক’রে নেবে, সে যেন তার কিছু নামায নিজ বাড়ির জন্যও নির্ধারিত করে । কেননা, তার নিজ ঘরে আদায়কৃত (সুন্নত) নামাযে আল্লাহ তার জন্য কল্যাণ ও বরকত প্রদান করেন ।”

(মুসলিম ৭৭৮, ইবনু মাজাহ ১৩৭৬, আহমাদ ১৩৯৮২, ১৩৯৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৩৮

وَعَنْ عُمَرَ بنِ عَطَاءٍ: أَنَّ نَافِعَ بْنَ جُبَيْرٍ أَرْسَلَهُ إِلَى السَّائِبِ ابنِ أُخْتِ نَمِرٍ يَسأَلُهُ عَنْ شَيْءٍ رَآهُ مِنْهُ مُعَاوِيَةُ فِي الصَّلاَةِ، فَقَالَ: نَعَمْ، صَلَّيْتُ مَعَهُ الجُمُعَةَ في المَقْصُورَةِ، فَلَمَّا سَلَّمَ الإمَامُ، قُمْتُ فِي مَقَامِي، فَصَلَّيْتُ، فَلَمَّا دَخَلَ أَرْسَلَ إلَيَّ، فَقَالَ: لاَ تَعُدْ لِمَا فَعَلْتَ. إِذَا صَلَّيْتَ الجُمُعَةَ فَلاَ تَصِلْهَا بِصَلاةٍ حَتَّى تَتَكَلَّمَ أَوْ تَخْرُجَ ؛ فَإِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَمَرَنَا بِذَلِكَ، أَن لاَ نُوصِلَ صَلاَةً بِصَلاَةٍ حَتَّى نَتَكَلَّمَ أَوْ نَخْرُجَ . رواه مسلم

উমার ইবনে আত্বা থেকে বর্ণিতঃ

নাফে‘ ইবনে জুবাইর তাঁকে নামেরের ভাগ্নে সায়েবের নিকট এমন একটি বিষয়ে প্রশ্ন করার উদ্দেশ্যে পাঠালেন, যা মুয়াবিয়া (রাঃ) তাঁকে নামাযের ব্যাপারে করতে দেখেছিলেন । তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি তাঁর (মুয়াবিয়া)র সাথে মাকসূরায় (মসজিদের মধ্যে বাদশাদের জন্য তৈরি বিশেষ নিরাপদ স্থান) জুমআর নামায পড়েছি । সুতরাং যখন ইমাম সালাম ফিরালেন, তখন আমি যেখানে ফরয নামায পড়ছিলাম, সেখানেই উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম এবং (সুন্নত) নামায পড়লাম । তারপর যখন মুয়াবিয়া (রাঃ) বাড়ি প্রবেশ করলেন, তখন আমাকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, “তুমি যা করলে তা আগামীতে আর কখনো করো না । যখন তুমি জুমআর (ফরয) নামায পড়বে, তখন তার সাথে মিলিয়ে অন্য নামায পড়ো না; যতক্ষণ না তুমি কারো সাথে কথা বল অথবা সেখান থেকে অন্যত্র সরে যাও । কেননা, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই আদেশ আমাদেরকে করেছেন যে, আমরা যেন এক নামাযকে অন্য নামাযের সাথে না মিলাই, যতক্ষণ না কোনো লোকের সাথে কথা বলে নেই, কিংবা সেখান হতে অন্যত্র সরে যাই ।”

(মুসলিম ৮৮৩, আবূ দাঊদ ১১২৯, আহমাদ ১৬৪২৪, ১৬৪৬৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০৫

বিত্‌রের প্রতি উৎসাহ দান, তা সুন্নতে মুআক্কাদাহ এবং তা পড়ার সময়

১১৩৯

عَن عَليٍّ رضي الله عنه، قَالَ: الوِتْرُ لَيْسَ بِحَتْمٍ كَصَلاَةِ المَكْتُوبَةِ، وَلَكِنْ سَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إنَّ اللهَ وِتْرٌ يُحِبُّ الوِتْرَ، فَأَوْتِرُوا يَا أهْلَ القُرْآنِ». رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: حديث حسن

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘বিত্‌রের নামায, ফরয নামাযের ন্যায় অপরিহার্য নয়। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটিকে প্রচলিত করেছেন (অর্থাৎ এটি সুন্নত) । তিনি বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ বিত্‌র (বিজোড়) সেহেতু তিনি বিত্‌র (বিজোড়কে) ভালবাসেন । অতএব হে কুরআনের ধারকবাহকগণ ! তোমরা বিত্‌র পড় ।”

(আবূ দাঊদ ১৪১৬, তিরমিযী ৪৫৩, নাসায়ী ১৬৭৫, ইবনু মাজাহ ১১৬৯)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১৪০

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: مِنْ كُلِّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، مِنْ أَوَّلِ اللَّيْلِ، وَمِنْ أوْسَطِهِ، وَمِنْ آخِرِهِ، وَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى السَّحَرِ . متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাতের প্রতিটি ভাগেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিত্র পড়েছেন; রাতের প্রথম ভাগে, এর মধ্য ভাগে ও শেষ ভাগে । তাঁর বিত্রের শেষ সময় ছিল ভোরবেলা পর্যন্ত ।’

(মুসলিম ৭৪৫, তিরমিযী ৪৫৬, নাসায়ী ১৬৮১, আবূ দাঊদ ১৪৩৫, ইবনু মাজাহ ১১৮৫, আহমাদ ২৪৪৫৩, দারেমী ১৫৮৭)
(অর্থাৎ এর প্রথম সময় এশার পর পরই শুরু হয় আর শেষ সময় ফজর উদয়কাল অবধি অবশিষ্ট থাকে । এর মধ্যে যে কোন সময় ১,৩,৫,৭, প্রভৃতি বিজোড় সংখ্যায় বিত্র পড়া বিধেয় ।)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৪১

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «اجْعَلُوا آخِرَ صَلاَتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْراً». متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা তোমাদের রাতের শেষ নামায বিত্র কর ।”

(সহীহুল বুখারী ৪৭২, ৯৯৫, নাসায়ী , ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, ৭৫১, তিরমিযী ৪৩৭, ৪৬১, নাসায়ী ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবূ দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৪২

وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «أَوْتِرُوا قَبْلَ أَنْ تُصْبِحُوا». رواه مسلم

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ফজর হওয়ার পূর্বেই তোমরা বিত্র পড়ে ফেল ।”

(মুসলিম ৭৫৪, তিরমিযী ৪৬৮, নাসায়ী ১৬৮৩, ১৬৮৪, ইবনু মাজাহ ১১৮৯, আহমাদ ১০৭১, ১০৯০৯, ১০৯৩১, ১১২০৮, দারেমী ১৫৮৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৪৩

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي صَلاَتَهُ بِاللَّيْلِ، وَهِيَ مُعْتَرِضَةٌ بَيْنَ يَدَيْهِ، فَإذَا بَقِيَ الوِتْرُ، أَيْقَظَهَا فَأَوْتَرتْ . رواه مسلم
وفي روايةٍ لَهُ: فَإذَا بَقِيَ الوِتْرُ، قَالَ: قُومِي فَأَوتِرِي يَا عَائِشَة

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে তাঁর (তাহাজ্জুদ) নামায পড়তেন । আর তিনি (আয়েশা) তাঁর সামনে আড়াআড়ি শুয়ে থাকতে ন। অতঃপর যখন (সব নামায পড়ে) বিত্‌র বাকি থাকত, তখন তাঁকে তিনি জাগাতেন এবং তিনি (আয়েশা) বিত্‌র পড়তেন । (মুসলিম)

(মুসলিম ৭৪৪, সহীহুল বুখারী ৫১২-১৫, ৫১৯, নাসায়ী ১৬৬-৬৮, ৭৫৯, আবূ দাঊদ ৭১০-১৪, আহমাদ ২৪৬৫৮, ২৫১৬৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৪৪

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «بَادِرُوا الصُّبْحَ بِالوِتْرِ».رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ফজর হওয়ার আগে ভাগেই বিত্‌র পড়ে নাও ।” (আবূ দাঊদ, তিরমিযী হাসান সহীহ)

(সহীহুল বুখারী ৯৯৫, ৪৭২, নাসায়ী , ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, ৭৫১, তিরমিযী ৪৩৭, ৪৬১, নাসায়ী ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবূ দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১৪৫

وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ خَافَ أَنْ لاَ يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ، فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ، وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيلِ، فَإِنَّ صَلاَةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ، وَذَلِكَ أَفْضَلُ». رواه مسلم

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি শেষ রাতে উঠতে না পারার আশংকা করবে, সে যেন শুরু রাতেই বিত্‌র পড়ে নেয় । আর যে ব্যক্তি রাতের শেষ ভাগে উঠে (ইবাদত) করার লালসা রাখে, সে যেন রাতের শেষ ভাগেই বিত্‌র সমাধা করে । কারণ, রাতের শেষ ভাগের নামাযে ফিরিশ্‌তারা হাজির হন এবং এটিই উত্তম আমল ।

(মুসলিম ৭৫৫, তিরমিযী ৪৫৫, ইবনু মাজাহ ১১৮৭, আহমাদ ১৩৯৭২, ১৪২১৫, ১৪৩৩৫, ২৭০২১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০৬

চাশ্‌তের নামাযের ফযীলত

১১৪৬

عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: أَوْصَانِي خَلِيلِي بِصِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ، وَرَكْعَتَي الضُّحَى، وَأَنْ أُوتِرَ قَبْلَ أَنْ أَرْقُدَ . متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু আমাকে এই তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন; (১) প্রতি মাসে তিনটি (১৩, ১৪, ১৫ তারিখে) রোযা রাখার । (২) চাশ্‌তের দু’ রাকআত (সুন্নত) পড়ার । (৩) এবং ঘুমাবার আগে বিত্‌র পড়ে নেওয়ার ।’ (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৭৮, ১৯৮১, মুসলিম ৭২১, তিরমিযী ৭৬০, নাসায়ী ১৬৭৭-৭৮, ২৪০৬, আবূ দাঊদ ১৪৩২, আহমাদ ৭০৯৮, ৭১৪০, ৭৪০৯, ৭৪৬০, ৭৫৩৮, ৭৫৪১, ৭৬১৫, ৮০৪৪, ৮১৮৪, ৮৮৪৫, ৯৬০০, ১০১০৫, দারেমী ১৪৫৪, ১৭৪৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৪৭

وَعَنْ أَبي ذَرٍّ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «يُصْبحُ عَلَى كُلِّ سُلاَمَى مِنْ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ: فَكُلُّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةٌ، وَكُلُّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ، وَكُلُّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ، وَكُلُّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ، وَأَمْرٌ بِالمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ، وَنَهْيٌ عَنِ المُنْكَرِ صَدَقَةٌ، وَيُجْزِئُ مِنْ ذَلِكَ رَكْعَتَانِ يَرْكَعُهُمَا مِن الضُّحَى». رواه مسلم

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ এমন অবস্থায় সকালে উঠে যে, তার (দেহের) প্রতিটি জোড়ের সদকা দেওয়ার জন্য সে দায়বদ্ধ হয় । সুতরাং প্রত্যেক ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা সদকাস্বরূপ, প্রত্যেক ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা সদকাস্বরূপ, প্রত্যেক ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা সদকাস্বরূপ, প্রতিটি ‘আল্লাহু আকবার’ বলা সদকাস্বরূপ, সৎকাজের আদেশ দেওয়া সদকাস্বরূপ এবং মন্দকাজে বাধা দেওয়া সদকাস্বরূপ । আর এ সমস্ত কিছুর পরিবর্তে দু’ রাকআত (চাশ্‌তের) নামায পড়লে তা যথেষ্ট হবে ।”

(মুসলিম ৭২০, আবূ দাঊদ ১২৮৫-৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৪৮

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى أَرْبَعاً، وَيَزِيدُ مَا شَاءَ الله . رواه مسلم

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চাশ্‌তের চার রাকআত নামায পড়তেন এবং আল্লাহ যতটা চাইতেন সেই মত তিনি আরও বেশী পড়তেন ।’ (মুসলিম)

(মুসলিম ৭১৯, ইবনু মাজাহ ১৩৮১, আহমাদ ২৩৯৩৫, ২৪১১৭, ২৪৩৬৮, ২৪৫৯৯, ২৪৭০৪, ১১৭৬, ৩১৭১, ৪২৯২, ৬১৫৮, মুসলিম ৩৩৬, তিরমিযী ৪৭৪, ২৭৩৪, নাসায়ী ২২৫, ৪১৫, আবূ দাঊদ ১২৯০-৯১, ইবনু মাজাহ ৪৬৫, ৬১৪, ১৩২৩, ১৩৭৯, আহমাদ ২৬৩৪৭, ২৬৩৫৬, ২৬৮৩৩, মুওয়াত্তা মালিক ৩৫৯, দারেমী ১৪৫২-৫৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৪৯

وَعَنْ أُمِّ هَانِىءٍ فَاخِتَةَ بِنتِ أَبي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: ذَهَبْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، عَامَ الفَتْحِ فَوَجَدْتُهُ يَغْتَسِلُ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ، صَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ، وَذَلِكَ ضُحىً. متفقٌ عَلَيْهِ . وهذا مختصرُ لفظِ إحدى روايات مسلم

উম্মে হানী ফাখেতাহ বিন্তে আবু তালেব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘মক্কা বিজয়ের বছরে আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে দেখি যে, তিনি গোসল করছেন । যখন তিনি গোসল সম্পন্ন করলেন, তখন আট রাকআত নামায পড়লেন । আর তখন ছিল চাশ্‌তের সময় ।’ (বুখারী ও মুসলিম, এ শব্দগুলি মুসলিমের একটি বর্ণনার সংক্ষিপ্তসার)

(মুসলিম ৭১৯, ইবনু মাজাহ ১৩৮১, আহমাদ ২৩৯৩৫, ২৪১১৭, ২৪৩৬৮, ২৪৫৯৯, ২৪৭০৪, ১১৭৬, ৩১৭১, ৪২৯২, ৬১৫৮, মুসলিম ৩৩৬, তিরমিযী ৪৭৪, ২৭৩৪, নাসায়ী ২২৫, ৪১৫, আবূ দাঊদ ১২৯০-৯১, ইবনু মাজাহ ৪৬৫, ৬১৪, ১৩২৩, ১৩৭৯, আহমাদ ২৬৩৪৭, ২৬৩৫৬, ২৬৮৩৩, মুওয়াত্তা মালিক ৩৫৯, দারেমী ১৪৫২-৫৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০৭

সূর্য উঁচুতে ওঠার পর থেকে ঢলা পর্যন্ত চাশতের নামায পড়া বিধেয় । উত্তম হল দিন উত্তপ্ত হলে এবং সূর্য আরও উঁচুতে উঠলে এ নামায পড়া

১১৫০

عَن زَيدِ بنِ أَرْقَم رضي الله عنه: أنَّهُ رَأَى قَوْماً يُصَلُّونَ مِنَ الضُّحَى، فَقَالَ: أَمَا لَقَدْ عَلِمُوا أَنَّ الصَّلاَةَ فِي غَيْرِ هَذِهِ السَّاعَةِ أَفْضَلُ، إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «صَلاَةُ الأَوَّابِينَ حِيْنَ تَرْمَضُ الفِصَالُ». رواه مسلم

যায়দ ইবন আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা তিনি দেখলেন, একদল লোক চাশ্‌তের নামায পড়ছে । তিনি বললেন, ‘যদি ওরা জানত যে, নামায এ সময় ছাড়া অন্য সময়ে পড়া উত্তম । আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আওয়াবীন (আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী)দের নামায যখন উঁটের বাচ্চার পা বালিতে গরম অনুভব করে ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৭৪৮, আহমাদ ১৮৭৭, ১৮৭৮৪, ১৮৮৩২, ১৮৮৬০, দারেমী ১৪৫৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০৮

তাহিয়্যাতুল মাসজিদ

১১৫১

عَن أَبي قَتَادَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ المَسْجِدَ، فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ মসজিদ প্রবেশ করবে, তখন সে যেন দু’ রাকআত নামায না পড়া অবধি না বসে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৪৪, ১১৬৭, মুসলিম ৭১৪, তিরমিযী ৩১৬, নাসায়ী ৭৩০, আবূ দাঊদ ৪৬৭, ইবনু মাজাহ ১০২৩, আহমাদ ২২০১৭, ২২০৭২, ২২০৮৮, ২২১৪৬, দারেমী ১৩৯৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৫২

وَعَنْ جابرٍ رضي الله عنهقَالَ: أَتَيْتُ النَّبيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ في المَسْجِدِ، فَقَالَ: «صَلِّ رَكْعَتَيْنِ» متفقٌ عَلَيْهِ

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এলাম, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন । তিনি বললেন, “দু’ রাকআত নামায পড় ।” (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৪৩, ১৮০১, ২০৯৭, ২৩০৯, ২৩৯৪, ২৪৭০, ২৬০৩, ২৬০৪, ২৭১৮, ২৮৬১, ২৯৬৭, ৩০৮৭, ৩০৯০, ৫০৭৯, ৫২৪৫-৫২৪৭, মুসলিম ৭১৫, তিরমিযী ১১০০, ১১৭২, ২৭১২, নাসায়ী ৩২১৯, ৩২২০, ৩২২৬, ৪৫৯০, ৪৫৯১, ৪৬৩৭-৪৬৪১, আবূ দাঊদ ২০৪৮, ২৭৭৬-২৭৭৮, ৩৩৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৬০, আহমাদ ১৩৭১৮, ১৩৭৬৪, ১৩৭৭২, ১৩৭৮০, ১৩৮১৪, ১৩৮২০, ১৩৮২২, দারেমী ২২১৬, ২৬৩১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২০৯

ওযূর পর তাহিয়্যাতুল ওযূর দু’ রাকআত নামায পড়া উত্তম

১১৫৩

عَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ لِبِلاَلٍ: «يَا بِلاَلُ! حَدِّثْنِي بِأَرْجَى عَمَلٍ عَمِلْتَهُ فِي الإِسْلاَمِ، فَإِنِّي سَمِعْتُ دَفَّ نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَيَّ فِي الجَنَّةِ» قَالَ: مَا عَمِلْتُ عَمَلاً أَرْجَى عِنْدي مِنْ أَنِّي لَمْ أَتَطَهَّرْ طُهُوراً فِي سَاعَةٍ مِنْ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ إِلاَّ صَلَّيْتُ بِذَلِكَ الطُّهُورِ مَا كُتِبَ لِي أَنْ أُصَلِّي. متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ البخاري

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিলাল (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য ক’রে বললেন, “হে বিলাল ! আমাকে সর্বাধিক আশাপ্রদ আমল বল, যা তুমি ইসলাম গ্রহণের পর বাস্তবায়িত করেছ । কেননা, আমি (মি’রাজের রাতে) জান্নাতের মধ্যে আমার সম্মুখে তোমার জুতার শব্দ শুনেছি ।” বিলাল (রাঃ) বললেন, ‘আমার দৃষ্টিতে এর চাইতে বেশী আশাপ্রদ এমন কোন আমল করিনি যে, আমি যখনই রাত-দিনের মধ্যে যে কোন সময় পবিত্রতা অর্জন (ওযূ, গোসল বা তায়াম্মুম) করেছি, তখনই ততটুকু নামায পড়েছি, যতটুকু নামায পড়া আমার ভাগ্যে লিপিবদ্ধ ছিল ।’

(সহীহুল বুখারী ১১৪৯, মুসলিম ২৪৫০৮, আহমাদ ৮১৯৮, ৯৩৮০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১০

জুমআর দিনের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব


জুমআর জন্য গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া, এ দিনে দুআ করা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরূদ পড়া ও এ দিনের কোন এক সময়ে দুআ কবুল হওয়ার বিবরণ এবং জুমআর পর বেশী বেশী মহান আল্লাহর যিক্‌র করা মুস্তাহাব

মহান আল্লাহ বলেছেন,

অর্থাৎ অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও । (সূরা জুমআহ ১০ আয়াত)

১১৫৪

بَابُ فَضْلِ يَوْمِ الْجُمُعَةِ وَوُجُوْبِهَا وَالْاِغْتِسَالِ لَهَا
وَالتَّطُيُّبِ وَالتَّبْكِيْرِ إِلَيْهَا وَالدُّعَاءِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالصَّلَاةِ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْهِ وَبَيَانِ سَاعَةِ الْإِجَابَةِ وَاسْتِحْبَابِ إِكْثَارِ ذِكْرِ اللهِ بَعْدَ الْجُمُعَةِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যার উপর সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমআর দিন । এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাঁকে বেহেশ্‌তে স্থান দেওয়া হয়েছে এবং এই দিনেই তাঁকে বেহেশ্‌ত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে ।”

(মুসলিম ৮৫৪, তিরমিযী ৪৮৮, ৪৯১, নাসায়ী ১৩৭৩, ১৪৩০, আহমাদ ৭৬৩০, ৮১৪১, ৯৯৩০, ১০১৬৭, ১০২৬৭, ১০৫৮৭, ২৭৬০৮, ২৭২৩৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৫৫

وَعَنْه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الوُضُوءَ ثُمَّ أَتَى الجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الجُمُعَةِ وَزِيادَةُ ثَلاَثَةِ أيَّامٍ، وَمَنْ مَسَّ الحَصَى، فَقَدْ لَغَا». رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ সম্পাদন ক’রে জুমআর নামায পড়তে আসবে এবং নীরবে মনোযোগসহকারে (খুতবা) শুনবে, তার সেই জুমআহ হতে পরবর্তী জুমআর মধ্যবর্তী সময় তথা আরও তিন দিনের (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র) পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে । আর যে ব্যক্তি কাঁকর স্পর্শ করবে, সে বাজে কাজ করবে ।”

(মুসলিম ৮৫৭, তিরমিযী ৪৯৮, আবূ দাঊদ ১০৫০, ইবনু মাজাহ ১০৯০, আহমাদ ৯২০০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৫৬

وَعَنْه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الصَّلَوَاتُ الخَمْسُ، وَالجُمُعَةُ إِلَى الجُمُعَةِ، وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ، مُكَفِّرَاتٌ مَا بَيْنَهُنَّ إِذَا اجْتُنِبَتِ الكَبَائِرُ». رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “পাঁচ অক্ত নামায, এক জুমআহ হতে পরের জুমআহ পর্যন্ত, এক রমযান হতে অন্য রমযান পর্যন্ত (কৃত নামায-রোযা) সেগুলির মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র) পাপরাশির প্রায়শ্চিত্ত (মোচনকারী) হয় (এই শর্তে যে,) যখন মহাপাপ থেকে বিরত থাকা যাবে ।”

(মুসলিম ২৩৩, তিরমিযী ২৪১, ইবনু মাজাহ ১০৭৬, আহমাদ ৭০৮৯, ৮৪৯৮, ৮৯৪৪, ৯০৯২, ১০১৯৮, ২৭২৯০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৫৭

وَعَنْه، وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّهُمَا سَمِعَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، يَقُوْلُ عَلَى أَعْوَادِ مِنْبَرِهِ: «لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ وَدْعِهِمُ الجُمُعَاتِ أَوْ لَيَخْتِمَنَّ اللهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ ثُمَّ لَيَكُونُنَّ مِنَ الغَافِلِينَ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর কাঠের মিম্বারের উপর দাঁড়ানো অবস্থায় এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “লোকেরা যেন জুমআহ ত্যাগ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকে; নচেৎ আল্লাহ অবশ্যই তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেবেন, তারপর তারা অবশ্যই উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে ।”

(মুসলিম ৮৬৫, নাসায়ী ১৩৭০, ইবনু মাজাহ ৭৯৪, ১১২৭, আহমাদ ২১৩৩, ২২৯০, ৩০৮৯, ৫৫৩৫, দারেমী ১৫৭০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৫৮

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمُ الجُمُعَةَ فَلْيَغْتَسِلْ». متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন জুমআতে আসার ইচ্ছা করবে, তখন সে যেন গোসল করে ।”

(সহীহুল বুখারী ৯১৯, ৮৭৭, ৮৯৪, তিরমিযী ৪৯৩, নাসায়ী ১৩৭৬, ১৪০৫, ১৪০৭, ইবনু মাজাহ ১০৮৮, আহমাদ ৩০৫০, ৪৪৫২, ৪৫৩৯, ৪৯০১, ৪৯২৩, ৪৯৮৫, ৪৯৮৮, মুওয়াত্তা মালিক ২৩১, দারেমী ১৫৩৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৫৯

وَعَنْ أَبي سعيدٍ الخُدْرِي رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «غُسْلُ يَوْمِ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “প্রত্যেক সাবালকের উপর জুমআর দিনের গোসল ওয়াজেব ।”

(সহীহুল বুখারী ৯১৯, ৮৭৭, ৮৯৪, তিরমিযী ৪৯৩, নাসায়ী ১৩৭৬, ১৪০৫, ১৪০৭, ইবনু মাজাহ ১০৮৮, আহমাদ ৩০৫০, ৪৪৫২, ৪৫৩৯, ৪৯০১, ৪৯২৩, ৪৯৮৫, ৪৯৮৮, মুওয়াত্তা মালিক ২৩১, দারেমী ১৫৩৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৬০

وَعَنْ سَمُرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ تَوَضَّأَ يَوْمَ الجُمُعَةِ فَبِهَا وَنِعْمَتْ وَمَنِ اغْتَسَلَ فَالغُسْلُ أَفْضَلُ» رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: حديث حسن

সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিনে ওযূ করল তাহলে তা যথেষ্ট ও উত্তম । আর যে গোসল করল, (তার) গোসল হল সর্বোত্তম ।”

(তিরমিযী ৪৯৭, আবূ দাঊদ ৩৫৪, নাসায়ী ১৩৮০, আহমাদ ১৯৫৮৫, ১৯৬১২, ১৯৬৬১, ১৯৬৬৪, ১৯৭৪৬)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১৬১

وَعَنْ سَلمَانَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «لاَ يَغْتَسِلُ رَجُلٌ يَومَ الجُمُعَةِ، وَيَتَطَهَّرُ مَا اسْتَطَاعَ مِن طُهْرٍ، وَيَدَّهِنُ مِنْ دُهْنِهِ، أَوْ يَمَسُّ مِنْ طِيبِ بَيْتِهِ، ثُمَّ يَخْرُجُ فَلاَ يُفَرِّقُ بَيْنَ اثنَيْنِ، ثُمَّ يُصَلِّي مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الإمَامُ، إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الجُمُعَةِ الأُخْرَى». رواه البخاري

সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে কোন ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল ও সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করে, নিজস্ব তেল গায়ে লাগায় অথবা নিজ ঘরের সুগন্ধি (আতর) ব্যবহার করে, অতঃপর (মসজিদে) গিয়ে দু’জনের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করেই (যেখানে স্থান পায়, বসে যায়) এবং তার ভাগ্যে যত রাকআত নামায জোটে, আদায় করে । তারপর ইমাম খুতবা আরম্ভ করলে নীরব থাকে, সে ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট জুমআহ থেকে পরবর্তী জুমআহ পর্যন্ত কৃত সমুদয় (সাগীরা) গুনাহরাশিকে মাফ ক’রে দেওয়া হয় ।”

(সহীহুল বুখারী ৮৮৩, ৯১০, নাসায়ী ১৪০৩, আহমাদ ২৩১৯৮, ২৩২০৬, ২৩২১৩, দারেমী ১৫৪১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৬২

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنِ اغْتَسَلَ يَومَ الجُمُعَةِ غُسْلَ الجَنَابَةِ، ثُمَّ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الأُولَى فَكَأنَّمَا قَرَّبَ بَدَنَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّانِيَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَقَرَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّالِثَةِ، فَكَأنَّمَا قَرَّبَ كَبْشاً أَقْرَنَ، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الرَّابِعَةِ، فَكَأنَّمَا قَرَّبَ دَجَاجَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الخَامِسَةِ، فَكَأنَّمَا قَرَّبَ بَيْضَةً، فَإِذَا خَرَجَ الإمَامُ، حَضَرَتِ المَلاَئِكَةُ يَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ». متفقٌ عَلَيْهِ .

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন নাপাকির গোসলের ন্যায় গোসল করল এবং (সূর্য ঢলার সঙ্গে সঙ্গে) প্রথম অক্তে মসজিদে এল, সে যেন একটি উঁট দান করল । যে ব্যক্তি দ্বিতীয় সময়ে এলো, সে যেন একটি গাভী দান করল । যে ব্যক্তি তৃতীয় সময়ে এল, সে যেন একটি শিংবিশিষ্ট দুম্বা দান করল । যে ব্যক্তি চতুর্থ সময়ে এল, সে যেন একটি মুরগী দান করল । আর যে ব্যক্তি পঞ্চম সময়ে এল, সে যেন একটি ডিম দান করল । তারপর ইমাম যখন খুত্‌বাহ প্রদানের জন্য বের হন, তখন (লেখক) ফিরিশ্‌তাগণ যিক্‌র শোনার জন্য হাজির হয়ে যান ।”

(সহীহুল বুখারী ৮৮১, ৯২৯, ৩২১১, মুসলিম ৮৫০, ১৮৬০, তিরমিযী ৪৯৯, নাসায়ী ৮৬৪, ১৩৭৫-১৩৮৮, আবূ দাঊদ ৩৫১, ইবনু মাজাহ ১০৯২, আহমাদ ৭২১৭, ৭৪৬৭, ৭৫২৮, ৭৬৩০, ৭৭০৮, ৯৫৮২, ৯৬১০, ১০১৯০, মুওয়াত্তা মালিক ২২৭, দারেমী ১৫৪৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৬৩

وَعَنْه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَ: «فِيهَا سَاعَةٌ لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ، وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي يَسْألُ اللهَ شَيْئاً، إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ» وَأشَارَ بيَدِهِ يُقَلِّلُهَا. متفقٌ عَلَيْهِ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা জুমআর দিন সম্বন্ধে আলোচনা ক’রে বললেন, “ওতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নামায অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে তা দান ক’রে থাকেন ।” এ কথা বলে তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত ।

(সহীহুল বুখারী ৯৩৫, ৫২৯৫, ৬৪০০, মুসলিম ৮৫২, তিরমিযী ৪৯১, নাসায়ী ১৪৩০-১৪৩২, আবূ দাঊদ ১০৪৬, ইবনু মাজাহ ১১৩৭, আহমাদ ৭১১১, ৭৪২৩, ৭৬৩১, ৭৭১১, ৭৭৬৪, ৮৯৫৩, ৮৯৮৬, ৯৮৭৪, ৯৯২৯, ৯৯৭০, ১১২৩০, মুওয়াত্তা মালিক ২২২, ২৪২, দারেমী ১৫৬৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৬৪

وَعَنْ أَبِي بُرْدَةَ بنِ أَبِي مُوسَى الأَشعَرِيِّ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ عَبدُ اللهِ بنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَسَمِعْتَ أَبَاكَ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فِي شَأْنِ سَاعَةِ الجُمُعَةِ ؟ قَالَ: قُلْتُ: نَعَمْ، سَمِعْتُهُ يَقُوْل: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُوْلُ: «هِيَ مَا بَيْنَ أَنْ يَجْلِسَ الإِمَامُ إِلَى أَنْ تُقْضَى الصَّلاَةُ». رواه مسلم

আবূ বুর্দাহ ইবনে আবূ মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বললেন, ‘আপনি কি জুমআর দিনের বিশেষ মুহূর্ত সম্পর্কে আপনার পিতাকে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণনা করতে শুনেছেন ?’ তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হ্যাঁ । আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “সেই মুহূর্তটুকু ইমামের মেম্বারে বসা থেকে নিয়ে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ের ভিতরে ।”

(মুসলিম ৮৫৩, আবূ দাঊদ ১০৪৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৬৫

وَعَنْ أَوسِ بنِ أَوسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَأَكْثِرُوا عَلَيَّ مِنَ الصَّلاَةِ فِيهِ ؛ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَيَّ». رواه أَبُو داود بإسناد صحيح

আওস ইবনে আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের দিনগুলির মধ্যে সর্বোত্তম একটি দিন হচ্ছে জুমআর দিন । সুতরাং ঐ দিনে তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরূদ পাঠ কর । কেননা, তোমাদের পাঠ করা দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয় ।”

(আবূ দাঊদ ১০৪৭, ১৫৩১, নাসায়ী ১৩৭৪, ইবনু মাজাহ ১৬৩৬, আহমাদ ১৫৭২৯, দারেমী ১৫৭২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১১

শুক্‌রের সিজদার বিবরণ

১১৬৬

عَنْ سَعْدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ رضي الله عنه، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِن مَكَّةَ نُرِيدُ المَدِينَةَ، فَلَمَّا كُنَّا قَرِيْبًا مِن عَزْوَرَاءَ نَزَلَ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ، فَدَعَا اللَّه سَاعَةً، ثُمَّ خَرَّ سَاجِدًا، فَمَكَثَ طَوِيْلاً، ثُمَّ قَامَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ، سَاعَةً، ثُمَّ خَرَّ سَاجِدًا ¬ فَعَلَهُ ثَلَاثاً ¬ وَقَالَ:«إِنِّيْ سَأَلْتُ رَبِّي، وَشَفَعْتُ لِأُمَّتِي، فَأَعْطَانِيْ ثُلُثَ أُمَّتِيْ، فَخَرَرْتُ سَاجِدًا لِرَبِّي شُكْرًا، ثُمَّ رَفَعْتُ رَأْسِيْ، فَسَأَلْتُ رَبِّيْ لِأُمَّتِيْ، فَأَعْطَانِيْ ثُلُثَ أُمَّتِيْ، فَخَرَرْتُ سَاجِداً لِرَبِّيْ شُكْراً، ثُمَّ رَفَعْتُ رَأسِيْ فَسَألْتُ رَبِّيْ لِأُمَّتِيْ، فَأَعْطَانِيْ الثُّلُثَ الآخَرَ، فَخَرَرْتُ سَاجِدًا لِرَبِّي» رواه أبو داود .

সাদ ইবনু আবী ওয়ক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে আমরা মক্কা থেকে মদিনার পানে রওয়ানা দিলাম । আমরা যখন ‘আযওয়ারা নামক স্থানের নিকটবর্তী হলাম, তিনি সওয়ারী থেকে নেমে পড়লেন এবং তাঁর দুই হাত তুলে কিছুক্ষণ দুআ করলেন, তারপর সাজদাহ করলেন, দীর্ঘ সময় সাজদায় থাকলেন, তারপর উঠলেন এবং আবার দুই হাত তুলে কিছু সময় দুআ করলেন, তারপর আবার সাজদায় নত হলেন । তিনি তিনবার এমন করলেন এবং বললেন: আমি আমার প্রভুর নিকট আবেদন করেছিলাম এবং আমার উম্মতের জন্য সুপারিশ করেছিলাম । আল্লাহ আমাকে আমার এক-তৃতীয়াংশ উম্মত (জান্নাতে) দিয়েছেন । আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য আমি সাজদাহ করলাম । তারপর আমি মাথা উঠিয়ে আমার উম্মতের জন্য আমার প্রভুর কাছে আবেদন করলাম । তিনি আমাকে আমার আরও এক-তৃতীয়াংশ উম্মত (জান্নাতে) দিলেন । এজন্যও আমি কৃতজ্ঞতার সাজদাহ করলাম । তারপর মাথা তুলে আমার উম্মতের জন্য আবেদন করলাম । তিনি আমাকে আরও এক-তৃতীয়াংশ উম্মত (জান্নাতে) দিলেন । এজন্যও আমি কৃতজ্ঞতার সাজদাহ করলাম ।

(আমি (আলবানী) বলছিঃ হাদীসটির সনদ দুর্বল যেমনটি আমি “ইরওয়াউল গালীল” গ্রন্থে (নং ৪৬৭) এবং “য‘ঈফা” গ্রন্থে নং (৩২২৯/৩২৩০) আলোচনা করেছি । এর এক বর্ণনাকারী ইয়াহ্ইয়া ইবনুল হাসান সম্পর্কে হাফিয যাহাবী বলেনঃ তিনি মাদানী তার অবস্থা সম্পর্কে জানা যায় না । তার থেকে মূসা ইবনু ইয়াকূব বর্ণনা করেছেন । এর সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ তিনি মাজহূলুল হাল । প্রকৃতপক্ষে আস‘আস ইবনু ইসহাক মাজহূলুল হাল আর মূসা ইবনু ইয়াকূব হচ্ছেন মাজহূলুল আইন । (বিস্তারিত দেখুন “য‘ঈফা” গ্রন্থের উক্ত নম্বরে) । আবূ দাঊদ ২৭৭৫ ।)

(অবশ্য শুক্‌রের সিজদাহ অন্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত । মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে কোন সুসংবাদ দেওয়া হলে তিনি সিজদাহ করতেন ।)

(ইবনে মাজাহ ১১৪১নং)

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১২

রাতে উঠে (তাহাজ্জুদ) নামায পড়ার ফযীলত

১১৬৭

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُومُ مِنَ اللَّيْلِ حَتَّى تَتَفَطَّرَ قَدَمَاهُ، فَقُلْتُ لَهُ: لِمَ تَصْنَعُ هَذَا، يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَقَدْ غُفِرَ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأخَّرَ ؟ قَالَ: «أَفَلاَ أَكُونُ عَبْداً شَكُوراً؟» متفقٌ عَلَيْهِ .

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাত্রির একাংশে (নামাযে) এত দীর্ঘক্ষণ কিয়াম করতেন যে, তাঁর পা ফুলে ফাটার উপক্রম হয়ে পড়ত । একদা আমি তাঁকে বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আপনি এত কষ্ট সহ্য করছেন কেন ? অথচ আপনার তো পূর্ব ও পরের গুনাহসমূহকে ক্ষমা ক’রে দেওয়া হয়েছে ।’ তিনি বললেন, “আমি কি শুকরগুযার বান্দা হব না ?”

(সহীহুল বুখারী ৪৮৩৭, ১১১৮, ১১১৯, ১১৪৮, ১১৬১, ১১৬২, ১১৬৮, মুসলিম ৭৩১, ২৮২০, তিরমিযী ৪১৮, নাসায়ী ১৬৪৮-১৬৫০, আবূ দাঊদ ১২৬২, ১২৬৩, ইবনু মাজাহ ১২২৬, ১২২৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৬৮

وَعَن المُغِيرَةِ بن شُعبة رضي الله عنه نَحْوهُ متفقٌ عَلَيْهِ

মুগীরা ইবনে শু‘বা থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে

(বুখারী ও মুসলিম)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৬৯

وَعَنْ عَليٍّ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم طَرَقَهُ وَفَاطِمَةَ لَيْلاً، فَقَالَ: «أَلاَ تُصَلِّيَانِ ؟» متفقٌ عَلَيْهِ

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ও ফাতেমার নিকট রাত্রি বেলায় আগমন করলেন এবং বললেন, “তোমরা (স্বামী-স্ত্রী) কি (তাহাজ্জুদের) নামায পড় না ?”

(সহীহুল বুখারী ১১২৭, ৪৭২৪, ৭৩৪৭, ৭৪৬৫, মুসলিম ৭৭৫, নাসায়ী ১৬১১, ১৬১২, আহমাদ ৫৭২, ৭০৭, ৯০২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭০

وَعَنْ سَالِمِ بنِ عَبدِ الله بنِ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رضي الله عنهما، عَن أَبيِهِ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللهِ، لَوْ كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيلِ». قَالَ سالِم: فَكَانَ عَبدُ اللهِ بَعْدَ ذَلِكَ لاَ يَنامُ مِنَ اللَّيلِ إِلاَّ قَلِيلاً . متفقٌ عَلَيْهِ

সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একবার) বললেন, “আব্দুল্লাহ ইবনে উমার কতই না ভাল মানুষ হত, যদি সে রাতে (তাহাজ্জুদের) নামায পড়ত ।” সালেম বলেন, ‘তারপর থেকে (আমার আব্বা) আব্দুল্লাহ রাতে অল্পক্ষণই ঘুমাতেন ।’

(সহীহুল বুখারী ৪৪০, ১১২২, ১১৫৮, ৩৭৩৯, ৩৭৪১, ৭০১৬, ৭০২৯, ৭০৩১, মুসলিম ২৪৭৮, ২৪৭৯, তিরমিযী ৩২১, নাসায়ী ৭২২, ইবনু মাজাহ ৭৫১, ৩৯১৯ আহমাদ ৪৪৮০, ৪৫৯৩, ৪৫৮৫, ৬২৯৪, দারেমী ১৪০০, ২১৫২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭১

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«يَا عَبدَ اللهِ، لاَ تَكُنْ مِثْلَ فُلاَنٍ ؛ كَانَ يَقُومُ اللَّيلَ فَتَرَكَ قِيَامَ اللَّيلِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে আম্‌র ইবনে আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “হে আব্দুল্লাহ ! তুমি অমুক ব্যক্তির মত হয়ো না । সে রাতে উঠে নামায পড়ত, তারপর রাতে উঠা ছেড়ে দিল ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৩১, ১১৫২, ১১৫৩, ১৯৭৪-১৯৮০, ২৪১৮-২৪২৩, ৫০৫২-৫০৫৪, ৫১৯৯, ৬২৭৭, মুসলিম ১১৫৯, তিরমিযী ৭৭০, নাসায়ী ১৬৩০, ২৩৪৪, ২৩৮৮-২৩৯৪, ২৩৯৬, ২৩৯৭, ২৩৯৯-২৪০৩, আবূ দাঊদ ১৩৮৮-১৩৯১, ২৪২৭, ২৪৪৮, ইবনু মাজাহ ১৩৪৬, ১৭১২, আহমাদ ৬৪৪১, ৬৪৫৫, ৬৪৮০, ৬৪৯১, ৬৭২১, ৬৭২৫, ৬৭৫০, দারেমী ১৭৫২, ৩৪৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭২

وَعَنِ ابنِ مَسعُود رضي الله عنه، قَالَ: ذُكِرَ عِنْدَ النَّبيِّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ نَامَ لَيْلَةً حَتَّى أَصْبَحَ، قَالَ: «ذَاكَ رَجُلٌ بَالَ الشَّيطَانُ في أُذُنَيْهِ - أَوْ قَالَ: فِي أُذُنِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এমন একটি লোকের কথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট উল্লেখ করা হল, যে সকাল পর্যন্ত ঘুমিয়ে রাত্রি যাপন করে । তিনি বললেন, “এ এমন এক মানুষ, যার দু’কানে শয়তান প্রস্রাব ক’রে দিয়েছে ।” অথবা বললেন, “যার কানে প্রস্রাব করে দিয়েছে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৪৪, ৩২৭০, মুসলিম ৭৭৪, নাসায়ী ১৬০৮, ১৬০৯, ইবনু মাজাহ ১৩৩০, আহমাদ ৩৫৪৭, ৪০৪৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭৩

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «يَعْقِدُ الشَّيطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأسِ أَحَدِكُمْ، إِذَا هُوَ نَامَ، ثَلاَثَ عُقَدٍ، يَضْرِبُ عَلَى كُلِّ عُقْدَةٍ: عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ، فَإِنِ اسْتَيقَظَ، فَذَكَرَ اللهَ تَعَالَى انحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ تَوَضَّأَ، انْحَلّتْ عُقدَةٌ، فَإِنْ صَلَّى، انْحَلَّتْ عُقَدُهُ كُلُّهَا، فَأَصْبَحَ نَشِيطاً طَيِّبَ النَّفْسِ، وَإِلاَّ أَصْبحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ নিদ্রা যায় তখন তার গ্রীবাদেশে শয়তান তিনটি করে গাঁট বেঁধে দেয়; প্রত্যেক গাঁটে সে এই বলে মন্ত্র পড়ে যে, ‘তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি ঘুমাও ।’ অতঃপর যদি সে জেগে উঠে আল্লাহর যিক্‌র করে, তাহলে একটি গাঁট খুলে যায় । তারপর যদি ওযূ করে, তবে তার আর একটি গাঁট খুলে যায় । তারপর যদি নামায পড়ে, তাহলে সমস্ত গাঁট খুলে যায় । আর তার প্রভাত হয় স্ফূর্তিভরা ভালো মনে । নচেৎ সে সকালে ওঠে কলুষিত মনে ও অলসতা নিয়ে ।”

(বুখারী ও মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ১১৪২, ৩২৬৯, মুসলিম ৭৭৬, নাসায়ী ১৬০৭, আবূ দাঊদ ১৩০৬, ইবনু মাজাহ ১৩২৯, আহমাদ ৭২৬৬, ৭৩৯২, ১০০৭৫, মুওয়াত্তা মালিক ৪২৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭৪

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ سَلاَمٍ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ: أَفْشُوا السَّلاَمَ، وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ، وَصَلُّوا بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ، تَدْخُلُوا الجَنَّةَ بِسَلاَمٍ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “হে লোক সকল ! তোমরা ব্যাপকভাবে সালাম প্রচার কর, (ক্ষুধার্তকে) অন্ন দাও এবং লোকে যখন রাতে ঘুমিয়ে থাকবে তখন নামায পড় । তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে ।”

(তিরমিযী ২৪৮৫, ইবনু মাজাহ ১৩৩৪, ৩২৫১, দারেমী ১৪৬০)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১১৭৫

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ: شَهْرُ اللهِ المُحَرَّمُ، وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الفَرِيضَةِ: صَلاَةُ اللَّيْلِ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “রমযান মাসের রোযার পর সর্বোত্তম রোযা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররামের রোযা । আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের (তাহাজ্জুদের) নামায ।”

(মুসলিম ১১৬৩, তিরমিযী ৪৩৮, ৭৪০, আবূ দাঊদ ২৪২৯, ইবনু মাজাহ ১৭৪২, আহমাদ ৭৯৬৬, ৮১৮৫, ৮৩০২, ৮৩২৯, ১০৫৩২, দারেমী ১৭৫৭, ১৭৫৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭৬

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، فَإِذَا خِفْتَ الصُّبْحَ فَأَوْتِرْ بِوَاحِدَةٍ». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “রাতের নামায দু’ দু’ রাকআত করে । অতঃপর যখন ফজর হওয়ার আশংকা করবে, তখন এক রাকআত বিত্‌র পড়ে নেবে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৭২, ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৫, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, তিরমিযী ৪৩৭, ৬৪১, ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবূ দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, ৫০৬৬, ৫১০১, ৫১৯৫, ৫৩৭৬, ৪৫৩১, ৪৫৪৭, ৪৫৬৬, ৫৫১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭৭

وَعَنْه، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ .متفقٌ عَلَيْهِ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাতের বেলায় দু’ দু’ রাকআত করে নামায পড়তেন এবং এক রাকআত বিত্‌র পড়তেন ।’ (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৭২, ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৫, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, তিরমিযী ৪৩৭, ৬৪১, ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবূ দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, ৫০৬৬, ৫১০১, ৫১৯৫, ৫৩৭৬, ৪৫৩১, ৪৫৪৭, ৪৫৬৬, ৫৫১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭৮

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُفْطِرُ مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لاَ يَصُومَ مِنْهُ، وَيَصُومُ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لاَ يُفْطِرَ مِنْهُ شَيْئاً، وَكَانَ لاَ تَشَاءُ أَنْ تَرَاهُ مِنَ اللَّيلِ مُصَلِّياً إِلاَّ رَأيْتَهُ، وَلاَ نَائِماً إِلاَّ رَأيْتَهُ . رواه البخاري

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘কোন কোন মাসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমনভাবে রোযা ত্যাগ করতেন যে, মনে হত তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উক্ত মাসে আর রোযাই রাখবেন না । অনুরূপভাবে কোন মাসে এমনভাবে (একাদিক্রমে) রোযা রাখতেন যে, মনে হত তিনি ঐ মাসে আর রোযা ত্যাগই করবেন না । (তাঁর অবস্থা এরূপ ছিল যে,) যদি তুমি তাঁকে রাত্রিতে নামায পড়া অবস্থায় দেখতে না চাইতে, তবু বাস্তবে তাঁকে নামায পড়া অবস্থায় দেখতে পেতে । আর তুমি যদি চাইতে যে, তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখবে না, কিন্তু বাস্তবে তুমি তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পেতে ।’

(সহীহুল বুখারী ১১৪১, ১৯৭২, ১৯৭৩, মুসলিম ১১৫৮, তিরমিযী ৭৬৯, ২০১৫, নাসায়ী ১৬২৭, আগ ১১৬০১, ১১৭১৯, ১২২১৩, ১২৪২১, ১২৪৭১, ১২৬৫৪, ১২৭৬২, ১২৯৬০, ১২৯৯০, ১৩০৬১, ১৩২৩৮, ১৩৩০৪, ১৩৩৭০, ১৩৮৬, ১৩৪০৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৭৯

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً ـ تَعْنِي فِي اللَّيلِ ـ يَسْجُدُ السَّجْدَةَ مِنْ ذَلِكَ قَدْرَ مَا يَقْرَأُ أَحَدُكُمْ خَمْسِينَ آيَةً قَبْلَ أَنْ يَرْفَعَ رَأسَهُ، وَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الفَجْرِ، ثُمَّ يَضْطَجِعُ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأتِيَهُ المُنَادِي للصَلاَةِ. رواه البخاري

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এগার রাকআত নামায পড়তেন, অর্থাৎ রাতে । তিনি মাথা তোলার পূর্বে এত দীর্ঘ সাজদাহ করতেন যে, ততক্ষণে তোমাদের কেউ পঞ্চাশ আয়াত পড়তে পারবে । আর ফরয নামাযের পূর্বে দু’ রাকআত সুন্নত নামায পড়ে ডান পাশে শুয়ে আরাম করতেন । শেষ পর্যন্ত তাঁর নিকট নামাযের ঘোষণাকারী এসে হাযির হত ।’ (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ৬২৬, ৯৯৪, ১১২৩, ১১৩৯, ১১৪০, ১১৬০, ১১৬৫, ৬৩১০, মুসলিম ৭২৪, ৭৩৬, ৭৩৭, ৭৩৮, তিরমিযী ৪৩৯, ৪৪০, নাসায়ী ৬৮৫, ১৬৯৬, ১৭৪৯, ১৭৬২, আবূ দাঊদ ১২৫৪, ১২৫৫, ১২৬২, ১৩৩৪, ১৩৩৮, ১৩৩৯, ১৩৪০, ইবনু মাজাহ ১১৯৮, ১৩৫৮, আহমাদ ২৩৫৩৭, ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৬৬৮, ২৩৬৯৭, ২৩৭০৫, ২৩৯২৫, ২৩৯৪০, ২৪০১৬, ২৪০২৪, ২৪০৫৬, ২৪২১১, ২৪৩৩৯, ২৪৩৭৯, ২৪৪৮৬, ২৪৫৮১, ২৪৭৪৫, ২৪৮১৬, ২৪৯০৭, ২৪৯৫৮, ২৫৫২০, মুওয়াত্তা মালিক ২৪৩, ২৬৪, দারেমী ১৪৪৭, ১৪৭৩, ১৪৭৫, ১৪৮৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮০

وَعَنْها، قَالَتْ: مَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَزيدُ - فِي رَمَضَانَ وَلاَ فِي غَيْرِهِ - عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً: يُصَلِّي أَرْبَعاً فَلاَ تَسْألْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعاً فَلاَ تَسْألْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاثاً. فَقُلتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ؟ فَقَالَ: «يَا عَائِشَة، إِنَّ عَيْنَيَّ تَنَامَانِ وَلاَ يَنَامُ قَلْبِي». متفقٌ عَلَيْهِ

উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমযান ও অন্যান্য মাসে (তাহাজ্জুদ তথা তারাবীহ) ১১ রাকআতের বেশী পড়তেন না । প্রথমে চার রাকআত পড়তেন । সুতরাং তার সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্পর্কে প্রশ্নই করো না । তারপর (আবার) চার রাকআত পড়তেন । সুতরাং তার সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্বন্ধে প্রশ্নই করো না । অতঃপর তিন রাকআত (বিত্‌র) পড়তেন । (একদা তিনি বিত্‌র পড়ার আগেই শুয়ে গেলেন ।) আমি বললাম, “হে আল্লাহর রসূল ! আপনি কি বিত্‌র পড়ার পূর্বেই ঘুমাবেন ?” তিনি বললেন, “আয়েশা ! আমার চক্ষুদ্বয় ঘুমায়; কিন্তু অন্তর জেগে থাকে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৪৭, ২০১৩, ৩৫৬৯, মুসলিম ৭৩৮, তিরমিযী ৪৩৯, নাসায়ী ১৬৯৭, আবূ দাঊদ ১৩৪১, আহমাদ ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৭৪৮, ২৩৯২৫, ২৩৯৪০, ২৪০১৬, ২৪০৫৬, ২৪১৯৪, ২৪২১১, ২৫২৭৭, ২৫৭৫৬, ২৫৮২৬, মুওয়াত্তা মালিক ২৬৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮১

وَعَنْها: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَنَامُ أَوَّلَ اللَّيلِ، وَيَقُومُ آخِرَهُ فَيُصَلِّي . متفقٌ عَلَيْهِ

উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের প্রথম দিকে ঘুমাতেন ও শেষের দিকে উঠে নামায পড়তেন ।

(সহীহুল বুখারী ১১৪৬, মুসলিম ৭৩৯, নাসায়ী ১৬৪০, ১৬৮০, ইবনু মাজাহ ১৩৬৫, আহমাদ ২৩৮১৯, ২৪১৮৫, ২৪৫৪, ২৫৬২৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮২

وَعَنِ ابنِ مَسعُود رضي الله عنه، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً، فَلَمْ يَزَلْ قَائِماً حَتَّى هَمَمْتُ بِأَمْرِ سُوءٍ ! قِيلَ: مَا هَمَمْتَ ؟ قَالَ: هَمَمْتُ أَنْ أَجِلْسَ وَأَدَعَهُ . متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে এক রাতে নামায পড়েছি । তিনি এত দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে রইলেন যে, শেষ পর্যন্ত আমি একটা মন্দ কাজের ইচ্ছা করে ফেলেছিলাম ।’ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘সে ইচ্ছাটা কি করেছিলেন ?’ তিনি বললেন, ‘আমার ইচ্ছা হয়েছিল যে, তাঁকে ছেড়ে দিয়ে বসে পড়ি ।’

(সহীহুল বুখারী ১১৩৫, মুসলিম ৭৭৩, ইবনু মাজাহ ১৪১৮, আহমাদ ৩৬৩৮, ৩৭৫৭, ৩৯২৭, ৪১৮৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮৩

وَعَنْ حُذَيفَةَ رضي الله عنه، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ فَافْتَتَحَ البَقَرَةَ، فَقُلْتُ: يَرْكَعُ عِنْدَ المئَةِ، ثُمَّ مَضَى، فَقُلتُ: يُصَلِّي بِهَا فِي رَكْعَةٍ فَمَضَى، فَقُلتُ: يَرْكَعُ بِهَا، ثُمَّ افْتَتَحَ النِّسَاءَ فَقَرَأَهَا، ثُمَّ افْتَتَحَ آلَ عِمْرَانَ فَقَرَأَهَا، يَقرَأُ مُتَرَسِّلاً: إِذَا مَرَّ بِآيَةٍ فِيهَا تَسبِيحٌ سَبَّحَ، وَإِذَا مَرَّ بِسُؤَالٍ سَأَلَ، وَإِذَا مَرَّ بِتَعَوُّذٍ تَعَوَّذَ، ثُمَّ رَكَعَ، فَجَعَلَ يَقُوْلُ: «سُبْحَانَ رَبِّيَ العَظِيمِ» فَكَانَ رُكُوعُهُ نَحْواً مِنْ قِيَامِهِ، ثُمَّ قَالَ: «سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا لَكَ الحَمْدُ» ثُمَّ قَامَ طَوِيلاً قَرِيباً مِمَّا رَكَعَ، ثُمَّ سَجَدَ، فَقَالَ: «سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى» فَكَانَ سجُودُهُ قَريباً مِنْ قِيَامِهِ. رواه مسلم.

হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে এক রাতে নামায পড়লাম । তিনি সূরা বাকারাহ আরম্ভ করলেন । আমি (মনে মনে) বললাম, ‘একশত আয়াতের মাথায় তিনি রুকু করবেন ।’ (কিন্তু) তিনি তারপরও কিরাআত চালু রাখলেন । আমি (মনে মনে) বললাম, ‘তিনি এরই দ্বারা (সূরা শেষ করে) রুকু করবেন ।’ কিন্তু তিনি সূরা নিসা পড়তে আরম্ভ করলেন এবং সম্পূর্ণ পড়লেন । তিনি স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে তেলাওয়াত করতেন । যখন এমন আয়াত আসত, যাতে তাসবীহ পাঠ করার উল্লেখ আছে, তখন (আল্লাহর) তাসবীহ পাঠ করতেন । যখন কোন প্রার্থনা সম্বলিত আয়াত অতিক্রম করতেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন । যখন কোন আশ্রয় প্রার্থনার আয়াত অতিক্রম করতেন, তখন তিনি আশ্রয় প্রার্থনা করতেন । (অতঃপর) তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকু করলেন । সুতরাং তিনি রুকুতে ‘সুবহানা রাবিবয়াল আযীম’ পড়তে আরম্ভ করলেন । আর তাঁর রুকু ও কিয়াম (দাঁড়িয়ে কিরাআত পড়া অবস্থা) এক সমান ছিল । তারপর তিনি রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ, রাববানা অলাকাল হাম্‌দ’ (অর্থাৎ আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রশংসা শুনলেন, যে তা তাঁর জন্য করল । হে আমাদের পালনকর্তা তোমার সমস্ত প্রশংসা) পড়লেন । অতঃপর বেশ কিছুক্ষণ (কওমায়) দাঁড়িয়ে থাকলেন রুকুর কাছাকাছি সময় জুড়ে । তারপর সাজদাহ করলেন এবং তাতে তিনি পড়লেন, ‘সুবহানাল্লা রাবিবয়াল আ‘লা’ (অর্থাৎ আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি) । আর তাঁর সাজদা দীর্ঘ ছিল তার কিয়াম (দাঁড়িয়ে কিরাআত পড়া অবস্থা)র কাছাকাছি ।

(মুসলিম ৭৭২, তিরমিযী ২৬২, নাসায়ী ১০০৮, ১০০৯, ১০৪৬, ১০৬৯, ১১৩৩, ১১৪৫, ১৬৬৪, ১৬৬৫, আবূ দাঊদ ৮৭১, ৮৭৪, ইবনু মাজাহ ৮৮৮, ৮৯৭, ১৩৫১, আহমাদ ২২৯৭৯, ২২৭৫০, ২২৭৮৯, ২২৮০০, ২২৮৩৩, ২২৮৫৪, ২২৮৫৮, ২২৫৬৬, ২২৮৯০, ২২৯০২, দারেমী ১৩০৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮৪

وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَيُّ الصَّلاَةِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «طُوْلُ القُنُوْتِ». رواه مسلم

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সর্বোত্তম নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, তিনি বললেন, “দীর্ঘ কিয়ামযুক্ত নামায ।”

(মুসলিম ৭৫৬, তিরমিযী ৩৮৭, ইবনু মাজাহ ১৪২১, আহমাদ ১৩৮২১, ১৪৭৮৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮৫

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «أَحَبُّ الصَّلاةِ إِلَى اللهِ صَلاةُ دَاوُدَ، وَأَحَبُّ الصِّيَامِ إِلَى اللهِ صِيَامُ دَاوُدَ، كَانَ يَنَامُ نِصْفَ اللَّيلِ وَيَقُومُ ثُلُثَهُ وَيَنَامُ سُدُسَهُ وَيَصُومُ يَوماً وَيُفْطِرُ يَوْماً». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনে আ-স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম নামায, দাঊদ عليه السلام -এর নামায এবং আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম রোযা, দাঊদ عليه السلام -এর রোযা; তিনি অর্ধরাত নিদ্রা যেতেন এবং রাতের তৃতীয় ভাগে ইবাদত করার জন্য উঠতেন । অতঃপর রাতের ষষ্ঠাংশে আবার নিদ্রা যেতেন ।

(সহীহুল বুখারী ১১৩১, ১১৫২, ১১৫৩, ১৯৭৪ থেকে ১৯৮০, ৩৪১৮, ৩৪১৯, ৩৪২০, ৫০৫২, ৫০৫৩, ৫০৫৪, ৫১৯৯, ৬১৩৪, ৬২৭৭, মুসলিম ১১৫০৯, তিরমিযী ৭৭০, নাসায়ী ১৬৩০, ২৩৪৪, ২৩৮৮ থেকে ২৩৯৪, ২৩৯৬, ২৩৯৭, ২৩৯৯ থেকে ২৪০৩, আবূ দাঊদ ১৩৮৮ থেকে ১৩৯১, ২৪২৭, ২৪৪৮, ইবনু মাজাহ ১৩৪৬, ১৭১২, আহমাদ ৬৪৪১, ৬৪৫৫, ৬৪৮০, ৬৪৯১, ৬৭২১, ৬৭২৫, ৬৭৫০, ৬৭৯৩, ৬৮০২, ৬০৮২৩, ৬৮২৪, ৬৮৩৪, ৬৮৩৭, ৬৮৭৫, ৬৮৮২, ৬৯৮৪, ৭০৫৮, দারেমী ১৭৫২, ৩৪৮৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮৬

وَعَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُوْلُ: «إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً، لاَ يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْألُ اللهَ تَعَالَى خَيْراً مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ، إِلاَّ أعْطَاهُ إيَّاهُ، وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ». رواه مسلم

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “রাত্রিকালে এমন একটি সময় আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি তা পেয়েই দুনিয়া ও আখিরাত বিষয়ক যে কোন উত্তম জিনিস প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দিয়ে থাকেন । ঐ সময়টি প্রত্যেক রাতে থাকে ।”

(মুসলিম ৭৫৭, আহমাদ ১৩৯৪৫, ১৪৩৩৬, ২৭৫৬৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮৭

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ فَلْيَفْتَتِحِ الصَّلاَةَ بِرَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ রাতে নামায পড়ার জন্য উঠবে, সে যেন হাল্কাভাবে দু’ রাকআত পড়ার মাধ্যমে নামায শুরু করে ।”

(মুসলিম ৭৬৮, আবূ দাঊদ ১৩২৩, আহমাদ ৭১৩৬, ৭৬৯০, ৮৯৩১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮৮

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ افْتَتَحَ صَلاَتَهُ بِرَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ . رواه مسلم

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রাতে (তাহাজ্জুদের) জন্য উঠতেন, তখন দু’ রাকআত সংক্ষিপ্ত নামায পড়ার মাধ্যমে আরম্ভ করতেন ।’

(মুসলিম ৭৬৭, আহমাদ ২৩৪৯৭, ২৫১৪৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৮৯

وَعَنْها رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا فَاتَتْهُ الصَّلاةُ مِن اللَّيْلِ مِنْ وَجَعٍ أَوْ غَيْرِهِ، صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَيْ عَشرَةَ ركْعَةً . رواه مسلم

উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘দৈহিক ব্যথা-বেদনা বা অন্য কোন অসুবিধার কারণে যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর রাতের নামায ছুটে যেত, তাহলে তিনি দিনের বেলায় ১২ রাকআত নামায পড়তেন ।”

(মুসলিম ৭৪৬, তিরমিযী ৪৪৫, নাসায়ী ১৭২২, ১৭২৩, ১৭২৪, ১৭২৫, ১৭৮৯, আবূ দাঊদ ১৩৪২, ১৩৪৬, ১৩৫০, ২৪৩৪, ইবনু মাজাহ ১১৯১, আহমাদ ২৩৭৪৮, ২৫৬৮৭, দারেমী ১৪৭৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯০

وَعَنْ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَنْ نَامَ عَنْ حِزْبِهِ، أَوْ عَنْ شَيْءٍ مِنْهُ، فَقَرَأَهُ فِيمَا بَيْنَ صَلاَةِ الفَجْرِ وَصَلاَةِ الظُّهْرِ، كُتِبَ لَهُ كَأنَّمَا قَرَأَهُ مِنَ اللَّيْلِ». رواه مسلم

উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি স্বীয় অযীফা (দৈনিক যথা নিয়মে তাহাজ্জুদের নামায) অথবা তার কিছু অংশ না পড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, অতঃপর যদি সে ফজর ও যোহরের মধ্যবর্তী সময়ে তা পড়ে নেয়, তাহলে তার জন্য তা এমনভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়, যেন সে তা রাতেই পড়েছে ।”

(মুসলিম ৭৪৭, তিরমিযী ৪০৮, নাসায়ী ১৭৯০ থেকে ১৭৯২, আবূ দাঊদ ১৩১৩, ১৩৪৩, ২২০, ৩৭৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭০, দারেমী ১৪৭৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯১

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «رَحِمَ اللهُ رَجُلاً قَامَ مِنَ اللَّيْلِ، فَصَلَّى وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ، فَإِنْ أَبَتْ نَضَحَ فِي وَجْهِهَا المَاءَ، رَحِمَ اللهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنَ اللَّيْلِ، فَصَلَّتْ وَأَيْقَظَتْ زَوْجَهَا، فَإِنْ أَبَى نَضَحَتْ فِي وَجْهِهِ المَاءَ». رواه أَبُو داود بإسناد صحيح

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রতি দয়া করুন, যে রাতে উঠে নামায পড়ে এবং নিজ স্ত্রীকেও জাগায় । অতঃপর যদি সে (জাগতে) অস্বীকার করে, তাহলে তার মুখে পানির ছিটা মারে । অনুরূপ আল্লাহ সেই মহিলার প্রতি দয়া করুন, যে রাতে উঠে নামায পড়ে এবং নিজ স্বামীকেও জাগায় । অতঃপর যদি সে (জাগতে) অস্বীকার করে, তাহলে সে তার মুখে পানির ছিটা মারে ।”

( আবূ দাঊদ ১৩০৮, নাসায়ী ১৬১০, ইবনু মাজাহ ১৩৩৬, আহমাদ ৭৩৬২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯২

وَعَنْه وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالاَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِذَا أَيْقَظَ الرَّجُلُ أهْلَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّيَا - أَوْ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ جَمِيعاً، كُتِبَا فِي الذَّاكِرِينَ وَالذَّاكِرَاتِ». رواه أَبُو داود بإسناد صحيح

উক্ত রাবী (রাঃ) ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে রাতে জাগিয়ে উভয়ে নামায পড়ে অথবা তারা উভয়ে দু’ রাকআত করে নামায আদায় করে, তবে তাদেরকে (অতীব) যিক্‌রকারী ও যিক্‌রকারিনীদের দলে লিপিবদ্ধ করা হয় ।

(আবূ দাঊদ ১৩০৯, ইবনু মাজাহ ১৩৩৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯৩

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إِذَا نَعَسَ أحَدُكُمْ في الصَّلاَةِ، فَلْيَرْقُدْ حَتَّى يَذْهَبَ عَنْهُ النَّوْمُ، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى وَهُوَ نَاعِسٌ، لَعَلَّهُ يَذْهَبُ يَسْتَغْفِرُ فَيَسُبَّ نَفْسَهُ». متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ নামাযের মধ্যে তন্দ্রাভিভূত হবে, তখন সে যেন নিদ্রা যায়, যতক্ষণ না তার নিদ্রার চাপ দূর হয়ে যায় । কারণ, যখন কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে নামায পড়বে, তখন সে খুব সম্ভবত: ক্ষমা প্রার্থনা করতে গিয়ে নিজেকে গালি দিতে লাগবে ।”

(বুখারী ও মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ২১২, মুসলিম ৭৮৬, তিরমিযী ৩৫৫, নাসায়ী ১৬২, আবূ দাঊদ ১৩১০, ইবনু মাজাহ ১৩৭০, আহমাদ ২৩৭৬৬, ২৫১৩৩, ২৫১৭১, ২৫৬৯৯, ২৫৭৭৭, মুওয়াত্তা মালিক ২৫৯, দারেমী ১৩৮৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯৪

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ، فَاسْتَعْجَمَ القُرْآنَ عَلَى لِسَانِهِ، فَلَمْ يَدْرِ مَا يَقُوْلُ، فَلْيَضْطَجِع». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ রাতে উঠবে ও (ঘুমের চাপের কারণে) জিহ্বায় কুরআন পড়তে এমন অসুবিধা বোধ করবে যে, সে কি বলছে তা বুঝতে পারবে না, তখন সে যেন শুয়ে পড়ে।”

(মুসলিম ৭৮৭, আবূ দাঊদ ১৩১১, ইবনু মাজাহ ১৩৭২, আহমাদ ২৭৪৫০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১৩

কিয়ামে রমযান বা তারাবীহর নামায মুস্তাহাব

১১৯৫

عن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَاناً وَاحْتِسَاباً غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও নেকীর আশায় রমযান মাসে কিয়াম করবে (তারাবীহ পড়বে), তার পূর্বেকার পাপসমূহ মাফ ক’রে দেওয়া হবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিযী ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮ থেকে ২২০৭, ৫০২৭, আবূ দাঊদ ৩১৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমী ১৭৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯৬

وَعَنْه، قَالَ: كَانَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم يُرَغِّبُ في قِيَامِ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ أنْ يَأمُرَهُمْ فِيهِ بِعَزِيمَةٍ، فيَقُوْل: «مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إيمَاناً وَاحْتِسَاباً غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ». رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিয়ামে রমযান (তারাবীহ) সম্পর্কে দৃঢ় আদেশ (ওয়াজিব) না করেই, তার প্রতি উৎসাহ দান করতেন এবং বলতেন, “যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে নেকীর আশায় রমযানে কিয়াম (তারাবীহর নামায আদায়) করবে, তার অতীতের পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিযী ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮ থেকে ২২০৭, ৫০২৭, আবূ দাঊদ ৩১৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমী ১৭৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১৪

শবেক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে

১১৯৭

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النبيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ قَامَ لَيْلَةَ القَدْرِ إِيمَاناً وَاحْتِسَاباً غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি শবেক্বদরে (ভাগ্যরজনী অথবা মহীয়সী রজনীতে) ঈমানসহ নেকীর আশায় কিয়াম করে (নামায পড়ে), তার অতীতের গুনাহ মাফ ক’রে দেওয়া হয় ।”

(সহীহুল বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিযী ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮ থেকে ২২০৭, ৫০২৭, আবূ দাঊদ ৩১৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমী ১৭৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯৮

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কিছু সাহাবাকে স্বপ্নযোগে (রমযান মাসের) শেষ সাত রাতের মধ্যে শবেক্বদর দেখানো হল । আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আমি দেখছি যে, শেষ সাত রাতের ব্যাপারে তোমাদের স্বপ্নগুলি পরস্পরের মুতাবিক । সুতরাং যে ব্যক্তি শবেক্বদর অনুসন্ধানী হবে, সে যেন শেষ সাত রাতে তা অনুসন্ধান করে ।”

(সহীহুল বুখারী ২০১৫, ৪৯৯১, মুসলিম ১১৬৫, আহমাদ ৪৪৮৫, ৪৫৩৩, ৪৬৫৭, ৪৭৯৩, ৪৯১৯, ৫০১১, ৫২৬১, ৫৪০৭, ৫৪২০, ৫৪৬১, ৫৬১৯, ৫৮৯৬, ৬৪৩৮, মুওয়াত্তা মালিক ৭০৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১১৯৯

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ :كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُجَاوِرُ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، ويَقُوْل: «تَحرَّوا لَيْلَةَ القَدْرِ في العَشْرِ الأَوَاخرِ مِنْ رَمَضَانَ». متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযানের শেষ দশ দিনে এতেকাফ করতেন এবং বলতেন, “তোমরা রমযানের শেষ দশকে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর ।”

(সহীহুল বুখারী ২০২০, ২০১৭, মুসলিম ১১৬৯, তিরমিযী ৭৯২, আহমাদ ২৩৭১৩, ২৩৭৭১, ২৩৯২৪, ২৫১৬২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০০

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “রমযান মাসের শেষ দশকের বিজোড় (রাত) গুলিতে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর।”

(সহীহুল বুখারী ২০২০, ২০১৭, মুসলিম ১১৬৯, তিরমিযী ৭৯২, আহমাদ ২৩৭১৩, ২৩৭৭১, ২৩৯২৪, ২৫১৬২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০১

وَعَنْهَا، رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ العَشْرُ الأَوَاخِرُ مِنْ رَمَضَانَ، أَحْيَا اللَّيْلَ، وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ، وَجَدَّ وَشَدَّ المِئزَرَ. متفقٌ عَلَيْهِ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘যখন রমযানের শেষ দশক প্রবেশ করত, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে নিজে জাগতেন, নিজ পরিজনদেরকেও জাগাতেন, কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং কোমরে লুঙ্গি বেঁধে নিতেন।’

(মুসলিম ১১৭৪, তিরমিযী ৭৯৬, নাসায়ী ১৬৩৯, আবূ দাউদ ১৩৭৬, ২৩৮৬৯, ইবনু মাজাহ ১৭৬৭, ১৭৬৮, ২৩৬১১, ২৩৮৫৬, ২৪৩৯২, ২৫৬৫৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০২

وَعَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَجْتَهِدُ فِي رَمَضَانَ مَا لاَ يَجْتَهِدُ فِي غَيْرِهِ، وَفِي العَشْرِ الأوَاخِرِ مِنْهُ مَا لاَ يَجْتَهِدُ في غَيْرِهِ . رواه مسلم

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আল্লাহর ইবাদতের জন্য) যত পরিশ্রম করতেন, অন্য কোন মাসে তেমন পরিশ্রম করতেন না। (অনুরূপভাবে) রমযানের শেষ দশকে যত মেহনত করতেন অন্য দিনগুলিতে তত মেহনত করতেন না।’ (মুসলিম, প্রথমাংশ মুসলিম শরীফে নেই। হয়তো বা অন্য কপিতে আছে।)

(সহীহুল বুখারী ২০২৪, মুসলিম ১১৭৫, তিরমিযী ৭৯৬, নাসায়ী ১৬৩৯ )

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০৩

وَعَنْهَا، قَالَتْ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، أَرَأيْتَ إِنْ عَلِمْتُ أَيُّ لَيلَةٍ لَيْلَةُ القَدْرِ مَا أَقُوْلُ فِيهَا ؟ قَالَ: «قُولِي: اَللهم إنَّكَ عَفُوٌ تُحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنّي». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন, যদি আমি (ভাগ্যক্রমে) শবেক্বদর জেনে নিই, তাহলে তাতে কোন্‌ (দুআ) পড়ব?’ তিনি বললেন, এই দুআ, “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা 'আফুউউন তুহিব্বুল ‘আফওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী।” অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা ভালবাসো। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

(তিরমিযী ৩৫১৩, ইবনু মাজাহ ৩৮৫০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১৫

দাঁতন করার মাহাত্ম্য ও প্রকৃতিগত আচরণসমূহ

১২০৪

عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ «لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي - أَوْ عَلَى النَّاسِ - لأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ مَعَ كُلِّ صَلاَةٍ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যদি আমি আমার উম্মতের উপর বা লোকদের উপর কঠিন মনে না করতাম, তাহলে প্রতিটি নামাযের সাথে দাঁতন করার আদেশ দিতাম।”

(সহীহুল বুখারী ৮৮৭, মুসলিম ২৫২, তিরমিযী ২২, নাসায়ী ৭, ৫৩৪, আবূ দাউদ ৪৬, ইবনু মাজাহ ২৮৭, আহমাদ ৯৭০, ৭২৯৪, ৭৩৬৪, ৭৪৫৭, ৭৪৯৪, ৮৯২৮, ৮৯৪১, মুওয়াত্তা মালিক ১৪৭, ১৪৮, দারেমী ৬৮৩, ১৪৮৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০৫

وَعَنْ حُذَيْفَةَ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ مِن النَّومِ يَشُوصُ فَاهُ بِالسِّوَاكِ . متفقٌ عَلَيْهِ

হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ঘুম থেকে উঠতেন, তখন তিনি দাঁতন দিয়ে দাঁত মেজে নিতেন।’

(সহীহুল বুখারী ২৪৬, ৮৮৯, ১১২৬, মুসলিম ২৫৫, নাসায়ী ২, ১৬২১-১৬২৪, আবূ দাউদ ১৬৫৫, ইবনু মাজাহ ২২৯৪৮, দারেমী ৬৮৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০৬

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَت: كُنَّا نُعِدُّ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ، فَيَبْعَثُهُ اللهُ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ، فَيَتَسَوَّكُ، وَيَتَوضَّأُ وَيُصَلِّي . رواه مسلم

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য দাঁতন ও ওযূর পানি প্রস্তুত করে রাখতাম। অতঃপর আল্লাহর যখন রাতে তাঁকে জাগাবার ইচ্ছা হত, তখন তিনি জেগে উঠতেন। সুতরাং দাঁতন করতেন এবং ওযূ করে নামায পড়তেন।’

(সহীহুল বুখারী ১৯৬৯, তিরমিযী ৪৪৫, মুসলিম ৭৪৬, নাসায়ী ১৩১৪, ১৬০১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০৭

وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«أَكْثَرْتُ عَلَيْكُمْ فِي السِّوَاكِ». رواه البخاري

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদেরকে দাঁতন করার জন্য বেশি তাকীদ করেছি।’

(সহীহুল বুখারী ৮৮৮, নাসায়ী ৬, আহমাদ ১২০৫০, ১৩১৮৬, ৬৮১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০৮

وَعَن شُرَيحِ بنِ هَانِىءٍ رَضِيَ اللهُ عَنهَ قَالَ: قُلتُ لِعَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا: بِأَيِّ شَيْءٍ كَانَ يَبْدَأُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ بَيْتَهُ ؟ قَالَتْ: بِالسِّوَاكِ . رواه مسلم

শুরাইহ ইবনে হানি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ বাড়িতে প্রবেশ করে সর্বপ্রথম কী কাজ করতেন?’ তিনি বললেন, ‘দাঁতন করতেন।’

(মুসলিম ২৫৩, নাসায়ী ৮, আবূ দাউদ ৫১, ইবনু মাজাহ ২৯৩, আহমাদ ২৪২৭৪, ২৪৯৫৮, ২৫০২০, ২৫০৫৪, ২৫৪৬৬, ২৭৬০১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২০৯

وَعَن أَبِي مُوسَى الأَشعَرِي رضي الله عنه، قَالَ: دَخَلتُ عَلَى النَّبيِّ صلى الله عليه وسلم وَطَرَفُ السِّوَاكِ عَلَى لِسَانِهِ . متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ مسلمٍ

আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘একদা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রবেশ করলাম, তখন দাঁতনের একটি দিক তাঁর জিভের উপর রাখা ছিল।’

(বুখারী ও মুসলিম, এ শব্দগুলি মুসলিমের) (সহীহুল বুখারী ২৪৪, মুসলিম ২৫৪, নাসায়ী ৩ আবূ দাউদ ৪৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১০

وَعَن عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «السِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ للرَّبِّ». رواه النسائي وابنُ خُزَيْمَةَ في صحيحهِ بأسانيدَ صحيحةٍ.

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “দাঁতন মুখ পবিত্র রাখার ও প্রভুর সন্তুষ্টি লাভের উপকরণ।”

(নাসায়ী ৫ আহমাদ ২৩৬৮৩, ২৩৮১১, ২৪৪০৪, ২৪৬০৯, ২৫৪৮৩, দারেমী ৬৮৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১১

وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الفِطْرَةُ خَمْسٌ، أَوْ خَمْسٌ مِنَ الفِطْرَةِ: الخِتَانُ، وَالاسْتِحْدَادُ، وَتَقْلِيمُ الأَظْفَارِ، وَنَتْفُ الإِبِطِ، وَقَصُّ الشَّارِبِ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রকৃতিগত আচরণ (নবীগণের তরীকা) পাঁচটি অথবা পাঁচটি কাজ প্রকৃতিগত আচরণ, (১) খাত্‌না (লিঙ্গত্বক ছেদন) করা। (২) লজ্জাস্থানের লোম কেটে পরিষ্কার করা। (৩) নখ কাটা। (৪) বগলের লোম ছিঁড়া। (৫) গোঁফ ছেঁটে ফেলা।”

(বুখারী ও মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ৫৮৮৯, ৫৮৯১, ৬২৯৭, মুসলিম ২৫৭, তিরমিযী ২৭৫৬, নাসায়ী ১০, ১১, ৫২২৫, আবূ দাউদ ৪১৯৮, ইবনু মাজাহ ২৯২, আহমাদ ৭০৯২, ৭২২০, ৭৭৫৪, ৯০৬৬, ৯৯৬৫, মুওয়াজ মালিক ১৭০৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১২

وَعَن عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «عَشْرٌ مِنَ الفِطْرَةِ: قَصُّ الشَّارِبِ، وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ، وَالسِّوَاكُ، وَاسْتِنْشَاقُ المَاءِ، وَقَصُّ الأَظْفَارِ، وَغَسْلُ البَرَاجِمِ، وَنَتفُ الإِبْطِ، وَحَلْقُ العَانَةِ، وَانْتِقَاصُ المَاءِ». قَالَ الرَّاوِي: وَنَسِيْتُ العَاشِرَةَ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ المَضمَضَةُ . قَالَ وَكِيعٌ - وَهُوَ أحَدُ رُواتِهِ - انْتِقَاصُ المَاءِ: يَعْنِي الاسْتِنْجَاءِ . رواه مسلم

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “দশটি কাজ প্রকৃতিগত আচরণ; (১) গোঁফ ছেঁটে ফেলা। (২) দাড়ি বাড়ানো। (৩) দাঁতন করা। (৪) নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করা। (৫) নখ কাটা। (৬) আঙ্গুলের জোড়সমূহ ধোয়া। (৭) বগলের লোম তুলে ফেলা। (৮) গুপ্তাঙ্গের লোম পরিষ্কার করা। (৯) পানি দ্বারা ইস্তেঞ্জা (শৌচকর্ম) করা।” বর্ণনাকারী বলেন, ১০নং আচরণটি ভুলে গেছি, তবে মনে হয়, তা কুল্লি করা হবে। বর্ণনাকারী অকী' বলেন, ‘ইন্তিকাসুল মা’ মানে পানি দিয়ে ইস্তেঞ্জা করা।

(মুসলিম ২৬১, তিরমিযী ২৭৫৭, নাসায়ী ৫০৪০-৫০৪২, আবূ দাউদ ৫৩, ইবনু মাজাহ ২৯৬, আহমাদ ২৪৫৩৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১৩

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «أَحْفُوا الشَّوَارِبَ وَأَعْفُوا اللِّحَى». متفقٌ عَلَيْهِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা গোঁফ কেটে ফেল এবং দাড়ি লম্বা কর।”

(সহীহুল বুখারী ৫৮৯৩, তিরমিযী ২৭৬৩, ২৭৬৪, মুসলিম ২৫৯, নাসায়ী ১২, ১৫, ৫০৪৫, ৫০৪৬, ৫২২৬, আবূ দাউদ ৪১৯৯, আহমাদ ৪৬৪০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১৬

যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত

১২১৪

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، وَإقَامِ الصَّلاَةِ، وَإيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَحَجِّ البَيْتِ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ». متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “পাঁচটি ভিত্তির উপর দ্বীনে ইসলাম স্থাপিত। (১) এই সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রসূল। (২) নামায প্রতিষ্ঠা করা। (৩) যাকাত আদায় করা। (৪) বায়তুল্লাহর (কা‘বা গৃহে)র হজ্জ করা। এবং (৫) রমযানের রোযা পালন করা।”

(সহীহুল বুখারী ৮, মুসলিম ১৬, তিরমিযী ২৬০৯, ৫০০১, আবূ দাউদ ৪৭৮৩, ৫৬৩৯, ৫৯৭৯, ৬২৬৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১৫

وَعَن طَلْحَةَ بنِ عُبَيدِ اللهِ رضي الله عنه، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرُ الرَّأسِ نَسْمَعُ دَوِيَّ صَوْتِهِ، وَلاَ نَفْقَهُ مَا يَقُولُ، حَتَّى دَنَا مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَإِذَا هُوَ يَسأَلُ عَنِ الإِسْلاَمِ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «خَمْسُ صَلَواتٍ في اليَوْمِ وَاللَّيْلَةِ» قَالَ: هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُنَّ ؟ قَالَ: «لاَ، إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ» فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «وَصِيامُ شَهْرِ رَمَضَانَ» قَالَ: هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُ ؟ قَالَ: «لاَ، إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ» قَالَ: وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم الزَّكَاةَ، فَقَالَ: هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهَا ؟ قَالَ: «لاَ، إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ» فَأدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ: وَاللهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلاَ أَنْقُصُ مِنْهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ». متفقٌ عَلَيْهِ

ত্বালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন নাজ্‌দ (রিয়ায এলাকার) অধিবাসীদের একজন আলুলায়িত কেশী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হল। আমরা তার ভন্‌ভন্‌ শব্দ শুনছিলাম, আর তার কথাও বুঝতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসল এবং (তখন বুঝলাম,) সে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করছে। (উত্তরে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “(ইসলাম হল,) দিবা-রাত্রিতে পাঁচ ওয়াক্তের নামায (প্রতিষ্ঠা করা)।” সে বলল, ‘তা ছাড়া আমার উপর অন্য নামায আছে কি?’ তিনি বললেন, “না, কিন্তু যা কিছু তুমি নফল হিসাবে পড়বে।” রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, “এবং রমযান মাসের রোযা।” লোকটি বলল, ‘তা ছাড়া আমার উপর অন্য রোযা আছে কি?’ তিনি বললেন, “না, তবে তুমি যা নফল হিসাবে করবে।” বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে যাকাতের কথা বললেন। সে বলল, ‘তাছাড়া আমার উপর অন্য দান আছে কি?’ তিনি বললেন, “না, তবে তুমি যা নফল হিসাবে করবে।” তারপর লোকটি পিঠ ফিরিয়ে এ কথা বলতে বলতে যেতে লাগল, ‘আল্লাহর কসম! আমি এর চাইতে বেশী কিছু করব না এবং এর চেয়ে কমও করব না।’ তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “লোকটি সত্য বলে থাকলে পরিত্রাণ পেয়ে গেল।”

(বুখারী ও মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ৪৬, ১৮৯১, ২৬৭৮, ৬৯৫৬, মুসলিম ১১, নাসায়ী ৪৫৮, ২০৯০, ৫০২৮, আবূ দাউদ ৩৯১, ৩২৫২, আহমাদ ১৩৯৩, মুওয়াত্তা মালিক ৪২০, দারেমী ১৫৭৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১৬

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ مُعاذاً رضي الله عنه إِلَى اليَمَنِ، فَقَالَ: «ادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأنِّي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذلِكَ، فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ تَعَالَى، افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَواتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ، فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذلِكَ، فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ، وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ». متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু‘আয (রাঃ)-কে ইয়ামান পাঠাবার সময়ে (তাঁর উদ্দেশ্যে) বললেন, “তাদের (ইয়ামানবাসীদেরকে সর্বপ্রথম) এই সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, আর আমি আল্লাহর রসূল। যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাদের উপর রাতদিনে পাঁচ ওয়াক্তের নামায ফরয করেছেন। অতঃপর যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন; যা তাদের মধ্যে যারা (নিসাব পরিমাণ) মালের অধিকারী তাদের নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের দরিদ্র ও অভাবী মানুষদের মাঝে তা বণ্টন করে দেওয়া হবে।”

(সহীহুল বুখারী ১৩৯৫, ১৪৫৮, ১৪৯৬, ২৪৪৮, ৪৩৪৭, ৭৩৭১, ৭৩৭২, মুসলিম ১৯, তিরমিযী ৬২৫, ২০১৪, নাসায়ী ২৪৩৫, আবূ দাউদ ১৫৮৪, ইবনু মাজাহ ১৭৮৩, আহমাদ ২০৭২, দারেমী ১৬১৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১৭

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَيُقِيمُوا الصَّلاةَ، وَيُؤتُوا الزَّكَاةَ، فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ، إِلاَّ بِحَقِّ الإِسْلاَمِ، وَحِسَابُهُم عَلَى الله». متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “মানুষের বিরুদ্ধে ততক্ষণ সংগ্রাম করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এই সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল। আর নামায কায়েম করবে ও (ধনের) যাকাত আদায় করবে। যখন তারা এগুলি বাস্তবায়ন করবে, তখন ইসলামী হক (অর্থদণ্ড ইত্যাদি) ছাড়া তারা নিজেদের জান-মাল আমার নিকট হতে সুরক্ষিত করে নেবে। আর (অন্তরের গভীরে কুফরি বা পাপ লুকানো থাকলে) তাদের হিসাব আল্লাহর জিম্মায়।”

(সহীহুল বুখারী ২৫, মুসলিম ২২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১৮

وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: لَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم - وَكَانَ أَبُو بَكْر - وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ العَرَبِ، فَقَالَ عُمَرُ رضي الله عنه: كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولوُا لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ، فَمَنْ قَالَهَا فَقَدْ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلاَّ بِحَقِّهِ، وَحِسَابُهُ عَلَى الله». فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: وَاللهِ لأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ، فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ المَالِ . وَاللهِ لَوْ مَنَعُونِي عِقَالاً كَانُوا يُؤدُّونَهُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهِ . قَالَ عُمَرُ: فَوَاللهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَأيْتُ اللهَ قَدْ شَرَحَ صَدْرَ أَبي بَكْرٍ لِلقِتَالِ، فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الحَقُّ . متفقٌ عَلَيْهِ .

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারা গেলেন এবং আবূ বাকার (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হলেন। আর আরববাসীদের মধ্যে যার কাফের (মুরতাদ) হবার ছিল সে কাফের (মুরতাদ) হয়ে গেল, (এবং যারা সম্পূর্ণ ধর্মত্যাগ করেনি; বরং যাকাত দিতে অস্বীকার করছে মাত্র, তাদের বিরুদ্ধে আবূ বাক্‌র (রাঃ) সশস্ত্র সংগ্রামের সংকল্প প্রকাশ করলেন) তখন উমার (রাঃ) বললেন, ‘ঐ (যাকাত দিতে নারাজ) লোকদের বিরুদ্ধে কেমন করে যুদ্ধ করবেন অথচ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, “লোকেরা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই) না বলা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। অতএব যে ব্যক্তি তা বলবে, সে ইসলামী অধিকার (অর্থদণ্ড ইত্যাদি) ছাড়া তার জান-মাল আমার নিকট থেকে নিরাপদ করে নেবে। আর তার (অন্তরের গভীরে কুফ্‌রি বা পাপ লুকানো থাকলে) হিসাব আল্লাহর যিম্মায়”? আবূ বাক্‌র (রাঃ) বললেন, ‘আল্লাহর শপথ! যে ব্যক্তি নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে, তার বিরুদ্ধে আমি লড়াই করব। কারণ, যাকাত মালের উপর আরোপিত হক। আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যে রশি আদায় করত, তা যদি আমাকে না দেয়, তাহলে তা না দেওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আমি জিহাদ করবই।’ উমার (রাঃ) বললেন, ‘আল্লাহর শপথ! অচিরেই আমি দেখলাম যে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ আবূ বাক্‌র (রাঃ)-এর হৃদয়কে যুদ্ধের জন্য প্রশস্ত করেছেন। সুতরাং আমি বুঝতে পারলাম যে, তাঁর সিদ্ধান্তই যথার্থ।’

(সহীহুল বুখারী ১৪০০, ১৪৫৭, ৬৯২৪, ৭২৮৫, মুসলিম ২০, তিরমিযী ২৬০৭, নাসায়ী ২৪৪৩, ৩০৯১-৩০৯৪, ৩৯৬৯-৩৯৭১, ৩৯৭৩, ৩৮৭৫, আবূ দাউদ ১৫৫৬, আহমাদ ৬৮, ১১৮, ২৪১, ৩৩৭, ৯১৯০, ১০৪৫৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২১৯

وَعَن أَبي أيُّوبَ: أَنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم: أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ يُدْخِلُنِي الجَنَّةَ، قَالَ: «تَعْبُدُ اللهَ، وَلاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً، وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ، وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَتَصِلُ الرَّحِمَ» . متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ আইয়ুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একটি লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, ‘আমাকে এমন একটি আমল বলুন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।’ তিনি বললেন, “আল্লাহর বন্দেগী করবে, আর তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখবে।”

(সহীহুল বুখারী ১৩৯৬, ৫৯৮৩, মুসলিম ১৩, নাসায়ী ৪৬৮, আহমাদ ২৩০২৭, ২৩০৩৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২০

وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ أَعْرَابِياً أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ، دَخَلْتُ الجَنَّةَ . قَالَ: «تَعْبُدُ اللهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً، وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ، وَتُؤتِي الزَّكَاةَ المَفْرُوضَةَ، وَتَصُومُ رَمَضَانَ». قَالَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا، فَلَمَّا وَلَّى، قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم «مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا» . متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক বেদুঈন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন এক আমলের কথা বলে দিন, যার উপর আমল করলে, আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব।’ তিনি বললেন, “আল্লাহর ইবাদত করবে ও তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করবে না। নামায কায়েম করবে, ফরয যাকাত আদায় করবে ও রমযানের রোযা পালন করবে।” সে বলল, ‘সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে আমার জীবন আছে, আমি এর চেয়ে বেশী করব না।’ তারপর যখন সে লোকটা পিঠ ফিরে চলতে লাগল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “যে ব্যক্তি জান্নাতবাসীদের কোন লোক দেখতে আগ্রহী, সে যেন এই লোকটিকে দেখে।”

(সহীহুল বুখারী ১৩৯৭, মুসলিম ১৪, আহমাদ ৮৩১০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২১

وَعَن جَرِيرِ بْنِ عَبدِ اللهِ رضي الله عنه، قَالَ: بَايَعْتُ النَّبِيَ صلى الله عليه وسلم عَلَى إقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ . متفقٌ عَلَيْهِ

জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে নামায কায়েম করার, যাকাত আদায় করার ও প্রতিটি মুসলমানের মঙ্গল কামনা করার বায়আত করেছি।’

(সহীহুল বুখারী ৫৭, ৫৮, ৫২৪, ১৪০১, ২১৫৭, ২৭১৪, ২৭১৫, ৭২০৪, ৫৬, তিরমিযী ১৯২৫, নাসায়ী ৪১৫৬, ৪১৫৭, ৪১৭৪, ৪১৭৫, ৪১৭৭, ৪১৮৯, আহমাদ ১৮৬৭১, ১৮৭০০, ১৮৭৩৪ম ১৮৭৪৩, ১৮৭৬০, দারেমী ২৫৪০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২২

وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم «مَا مِنْ صَاحِبِ ذَهَبٍ، وَلاَ فِضَّةٍ، لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا إِلاَّ إِذَا كَانَ يَومُ القِيَامَةِ صُفِّحَتْ لَهُ صَفَائِحُ مِنْ نَارٍ، فَأُحْمِيَ عَلَيْهَا في نَارِ جَهَنَّمَ، فَيُكْوَى بِهَا جَنْبُهُ، وَجَبِينُهُ، وَظَهْرُهُ، كُلَّمَا بَرَدَتْ أُعِيدَتْ لَهُ في يَومٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ ألْفَ سَنَةٍ، حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ العِبَادِ فَيَرَى سَبيلَهُ، إِمَّا إِلَى الجَنَّةِ، وَإِمَّا إِلَى النَّارِ» قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَالإِبِلُ ؟ قَالَ: «وَلاَ صَاحِبِ إِبِلٍ لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا، وَمِنْ حَقِّهَا حَلْبُهَا يَومَ وِرْدِهَا، إِلاَّ إِذَا كَانَ يَومُ القِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ أَوْفَرَ مَا كَانَتْ، لاَ يَفْقِدُ مِنْهَا فَصِيلاً وَاحِداً، تَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا، وَتَعَضُّهُ بِأفْوَاهِهَا، كُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ أُولاَهَا، رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ ألْفَ سَنَةٍ، حَتَّى يُقْضى بَيْنَ العِبَادِ، فَيَرَى سَبِيلَهُ، إمَّا إِلَى الجَنَّةِ، وَإِمَّا إِلَى النَّارِ». قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَالبَقَرُ وَالغَنَمُ ؟ قَالَ: «وَلاَ صَاحِبِ بَقَرٍ وَلاَ غَنَمٍ لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا، إِلاَّ إِذَا كَانَ يَوْمُ القِيَامَةِ، بُطِحَ لَهَا بقَاعٍ قَرْقَرٍ، لاَ يَفْقِدُ مِنْهَا شَيْئاً، لَيْسَ فِيهَا عَقْصَاءُ، وَلاَ جَلْحَاءُ، وَلاَ عَضْبَاءُ، تَنْطَحُهُ بقُرُونِهَا، وَتَطَؤُهُ بِأَظْلاَفِهَا، كُلَّمَا مرَّ عَلَيْهِ أُولاَهَا، رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا، فِي يَومٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ ألْفَ سَنَة حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ العِبَادِ، فَيَرَى سَبيِلَهُ، إِمَّا إِلَى الجَنَّةِ، وَإِمَّا إِلَى النَّارِ». قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَالخَيْلُ ؟ قَالَ: «الخَيلُ ثَلاَثَةٌ: هِيَ لِرَجُلٍ وِزْرٌ، وَهِيَ لِرَجُلٍ سِتْرٌ، وَهِيَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ . فَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ وِزْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا رِيَاءً وَفَخْراً وَنِوَاءً عَلَى أَهْلِ الإِسْلاَمِ، فَهِيَ لَهُ وِزْرٌ، وَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ سِتْرٌ، فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبيلِ اللهِ، ثُمَّ لَمْ يَنْسَ حَقَّ اللهِ فِي ظُهُورِهَا، وَلاَ رِقَابِهَا، فَهِيَ لَهُ سِتْرٌ، وَأمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ، فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبيلِ اللهِ لأَهْلِ الإِسْلاَمِ فِي مَرْجٍ، أَوْ رَوْضَةٍ فَمَا أكَلَتْ مِنْ ذَلِكَ المَرْجِ أَوْ الرَّوْضَةِ مِنْ شَيْءٍ إِلاَّ كُتِبَ لَهُ عَدَدَ مَا أَكَلَتْ حَسَنَات وكُتِبَ لَهُ عَدَدَ أَرْوَاثِهَا وَأَبْوَالِهَا حَسَنَات، وَلاَ تَقْطَعُ طِوَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفاً أَوْ شَرَفَيْنِ إِلاَّ كَتَبَ اللهُ لَهُ عَدَدَ آثَارِهَا، وَأَرْوَاثِهَا حَسَنَاتٍ، وَلاَ مَرَّ بِهَا صَاحِبُهَا عَلَى نَهْرٍ، فَشَرِبَتْ مِنْهُ، وَلاَ يُرِيدُ أَنْ يَسْقِيهَا إِلاَّ كَتَبَ اللهُ لَهُ عَدَدَ مَا شَرِبَتْ حَسَنَاتٍ». قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَالْحُمُرُ ؟ قَالَ: «مَا أُنْزِلَ عَلَيَّ في الحُمُرِ شَيْءٌ إِلاَّ هَذِهِ الآيَةُ الفَاذَّةُ الجَامِعَةُ: { فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْراً يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرّاً يَرَهُ }». متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রত্যেক সোনা ও চাঁদির অধিকারী ব্যক্তি যে তার হক (যাকাত) আদায় করে না, যখন কিয়ামতের দিন আসবে, তখন তার জন্য ঐ সমুদয় সোনা-চাঁদিকে আগুনে দিয়ে বহু পাত তৈরি করা হবে। অতঃপর সেগুলোকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তার পাঁজর, কপাল ও পিঠে দাগা হবে। যখনই সে পাত ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, তখনই তা পুনরায় গরম করে অনুরূপ দাগার শাস্তি সেই দিনে চলতেই থাকবে, যার পরিমাণ হবে ৫০ হাজার বছরের সমান; যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দাদের মাঝে বিচার-নিষ্পত্তি শেষ করা হয়েছে। অতঃপর সে তার পথ দেখতে পাবে; হয় জান্নাতের দিকে, না হয় জাহান্নামের দিকে।”
জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আর উটের ব্যাপারে কি হবে?’ তিনি বললেন, “প্রত্যেক উটের মালিকও; যে তার হক (যাকাত) আদায় করবে না---আর তার অন্যতম হক এই যে, পানি পান করাবার দিন তাকে দোহন করা (এবং সে দুধ লোকদের দান করা)- যখন কিয়ামতের দিন আসবে, তখন তাকে এক সমতল প্রশস্ত প্রান্তরে উপুড় করে ফেলা হবে। আর তার উট সকল পূর্ণ সংখ্যায় উপস্থিত হবে; ওদের মধ্যে একটি বাচ্চাকেও অনুপস্থিত দেখবে না। অতঃপর সেই উটদল তাদের খুর দ্বারা তাকে দলবে এবং মুখ দ্বারা তাকে কামড়াতে থাকবে। এইভাবে যখনই তাদের শেষ দল তাকে দলে অতিক্রম করে যাবে, তখনই পুনরায় প্রথম দলটি উপস্থিত হবে। তার এই শাস্তি সেদিন হবে, যার পরিমাণ হবে ৫০ হাজার বছরের সমান; যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দাদের মাঝে বিচার-নিষ্পত্তি শেষ করা হয়েছে। অতঃপর সে তার শেষ পরিণাম দর্শন করবে; জান্নাতের অথবা জাহান্নামের।”
জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের ব্যাপারে কি হবে?’ তিনি বললেন, “আর প্রত্যেক গরু-ছাগলের মালিককেও; যে তার হক আদায় করবে না, যখন কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে, তখন তাদের সামনে তাকে এক সমতল প্রশস্ত ময়দানে উপুড় করে ফেলা হবে; যাদের একটিকেও সে অনুপস্থিত দেখবে না এবং তাদের কেউই শিং-বাঁকা, শিং-বিহীন ও শিং-ভাঙ্গা থাকবে না। প্রত্যেকেই তার শিং দ্বারা তাকে আঘাত করতে থাকবে এবং খুর দ্বারা দলতে থাকবে। তাদের শেষ দলটি যখনই (ঢুস মেরে ও দলে) পার হয়ে যাবে তখনই প্রথম দলটি পুনরায় এসে উপস্থিত হবে। এই শাস্তি সেদিন হবে যার পরিমাণ ৫০ হাজার বছরের সমান; যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দাদের মাঝে বিচার-নিষ্পত্তি শেষ করা হয়েছে। অতঃপর সে তার রাস্তা ধরবে; জান্নাতের দিকে, নতুবা জাহান্নামের দিকে।”
জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আর ঘোড়া সম্পর্কে কি হবে?’ তিনি বললেন, “ঘোড়া হল তিন প্রকারের; ঘোড়া কারো পক্ষে পাপের বোঝা, কারো পক্ষে পর্দাস্বরূপ এবং কারো জন্য সওয়াবের বিষয়। যে ঘোড়া তার মালিকের পক্ষে পাপের বোঝা তা হল সেই ব্যক্তির ঘোড়া, যে লোক প্রদর্শন, গর্বপ্রকাশ এবং মুসলিমদের প্রতি শত্রুতার উদ্দেশ্যে পালন করেছে। এ ঘোড়া হল তার মালিকের জন্য পাপের বোঝা।
যে ঘোড়া তার মালিকের পক্ষে পর্দাস্বরূপ, তা হল সেই ব্যক্তির ঘোড়া, যাকে সে আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদের জন্য) প্রস্তুত রেখেছে। অতঃপর সে তার পিঠ ও গর্দানে আল্লাহর হক ভুলে যায়নি। তার যথার্থ প্রতিপালন করে জিহাদ করেছে। এ ঘোড়া হল তার মালিকের পক্ষে (দোযখ হতে অথবা ইজ্জত-সম্মানের জন্য) পর্দাস্বরূপ।
আর যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য সওয়াবের বিষয়, তা হল সেই ঘোড়া যাকে তার মালিক মুসলিমদের (প্রতিরক্ষার) উদ্দেশ্যে কোন চারণভূমি বা বাগানে প্রস্তুত রেখেছে। তখন সে ঘোড়া ঐ চারণভূমি বা বাগানের যা কিছু খাবে, তার খাওয়া ঐ (ঘাস-পাতা) পরিমাণ সওয়াব মালিকের জন্য লিপিবদ্ধ হবে। অনুরূপ লেখা হবে তার লাদ ও পেশাব পরিমাণ সওয়াব। সে ঘোড়া যখনই তার রশি ছিড়ে একটি অথবা দু’টি ময়দান অতিক্রম করবে, তখনই তার পদক্ষেপ ও লাদ পরিমাণ সওয়াব তার মালিকের জন্য লিখিত হবে। অনুরূপ তার মালিক যদি তাকে কোন নদীর কিনারায় নিয়ে যায়, অতঃপর সে সেই নদী হতে পানি পান করে অথচ মালিকের পান করানোর ইচ্ছা থাকে না, তবুও আল্লাহ তা‘আলা তার পান করা পানির সমপরিমাণ সওয়াব মালিকের জন্য লিপিবদ্ধ করে দেবেন।”
জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আর গাধা সম্পর্কে কি হবে?’ তিনি বললেন, “গাধার ব্যাপারে এই ব্যাপকার্থক একক আয়াতটি ছাড়া আমার উপর অন্য কিছু অবতীর্ণ হয়নি,
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি অণুপরিমাণ সৎকর্ম করবে সে তাও (কিয়ামতে) প্রত্যক্ষ করবে এবং যে ব্যক্তি অণু-পরিমাণ অসৎকার্য করবে সে তাও (সেদিন) প্রত্যক্ষ করবে।” (সূরা যিলযাল ৭-৮ আয়াত)

(সহীহুল বুখারী ১৪০২, ১৪০৩, ২৩৭১, ২৮৫৩, ৪৫৬৫, ৪৬৫৯, ৬৯৫৮, তিরমিযী ১৫৩৬, নাসায়ী ২৪৪৮, ২৪৮২, ৩৫৬২, ৩৫৬৩, ৩৫৮২, আবূ দাউদ ১৬৫৮, ইবনু মাজাহ ১৭৮৬, ২৭৮৮, আহমাদ ৭৫০৯, ৭৬৬৩, ৭৬৯৮, ৮৪৪৭, ৮৭৫৪, ৯১৯১, ৯৯৭১, ১০৪৭৪, ২৭৪০১, ২৭৪৩৩, মুওয়াত্তা মালিক ৫৯৬, ৯৭৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১৭

রমযানের রোযা ফরয, তার ফযীলত ও আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়াবলী

১২২৩

وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «قَالَ اللهُ - عَزَّ وَجَلَّ -: كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَام، فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ، وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ، فَإِذَا كَانَ يَومُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ: إنِّي صَائِمٌ . وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوْفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ المِسْكِ . لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا: إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ بِفِطرِهِ، وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ روايةِ البُخَارِي.
وفي روايةٍ لَهُ: «يَتْرُكُ طَعَامَهُ، وَشَرَابَهُ، وَشَهْوَتَهُ مِنْ أَجْلِي، الصِّيَامُ لِي وَأنَا أَجْزِي بِهِ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا».
وفي رواية لمسلم: «كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ، اَلْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِئَةِ ضِعْفٍ . قَالَ الله تَعَالَى: إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِي وَأنَا أَجْزِي بِهِ؛ يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِي. لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ: فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ، وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ . وَلَخُلُوفُ فِيهِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ المِسْكِ».

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “মহান আল্লাহ বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই; কিন্তু রোযা স্বতন্ত্র, তা আমারই জন্য, আর আমিই তার প্রতিদান দেব।’ রোযা ঢাল স্বরূপ অতএব তোমাদের কেউ যেন রোযার দিনে অশ্লীল না বলে এবং হৈ-হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ তাকে গালি-গালাজ করে অথবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, ‘আমি রোযা রেখেছি।’ সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন আছে, নিঃসন্দেহে রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা বেশী উৎকৃষ্ট। রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে, তখন সে আনন্দিত হয়; (১) যখন সে ইফতার করে (ইফতারের জন্য সে আনন্দিত হয়)। আর (২) যখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, স্বীয় রোযার জন্য সে আনন্দিত হবে।”

(সহীহুল বুখারী ১৯০৪, ১৮৯৪, ৫৯২৭, ৭৪৯২, ৭৫৩৮, মুসলিম ১১৫১, তিরমিযী ৭৬৪, ৭৬৬, নাসায়ী ২২১৫-২২১৯, আবূ দাউদ ২৩৬৩, ইবনু মাজাহ ১৬৩৮, ১৬৯১, ৩৮২৩, আহমাদ ৭২৯৫, ৭৪৪১, ৭৬৩৬, ৭৭৮১, ৭৯৯৬, ৮১৩৮, ৮৯৭২, ৯৬২৭, ৯৬৩১, মুওয়াত্তা মালিক ৬৮৯)
বুখারীর অন্য বর্ণনায় আছে, ‘সে (রোজাদার) পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করে একমাত্র আমারই জন্য। রোযা আমার জন্যই। আর আমি নিজে তার পুরস্কার দেব। আর প্রত্যেক নেকী দশগুণ বর্ধিত হয়।’
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, “আদম সন্তানের প্রত্যেক সৎকর্ম কয়েকগুণ বর্ধিত করা হয়। একটি নেকী দশগুণ থেকে নিয়ে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু রোযা ছাড়া। কেননা, তা আমার উদ্দেশ্যে (পালিত) হয়। আর আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। সে পানাহার ও কাম প্রবৃত্তি আমার (সন্তুষ্টি অর্জনের) উদ্দেশ্যেই বর্জন করে।’ রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে। একটি আনন্দ হল ইফতারের সময়, আর অপরটি তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎকালে। আর নিশ্চয় তার মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা অধিক উৎকৃষ্ট।”

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২৪

وَعَنْه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللهِ نُودِيَ مِنْ أَبْوَابِ الجَنَّةِ، يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا خَيرٌ، فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلاَةِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الجِهَادِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الجِهَادِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ». قَالَ أَبُو بَكْرٍ: بِأَبي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ! مَا عَلَى مَنْ دُعِيَ مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ مِنْ ضَرورةٍ، فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ مِنْ تِلْكَ الأَبوَابِ كُلِّهَا ؟ فَقَالَ: «نَعَمْ، وَأَرْجُو أنْ تَكُونَ مِنْهُمْ».متفقٌ عَلَيْهِ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জোড়া বস্তু ব্যয় করে, তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ থেকে ডাকা হবে, ‘হে আল্লাহর বান্দাহ! এ দরজাটি উত্তম (এদিকে এস)।’ সুতরাং যে নামাযীদের দলভুক্ত হবে, তাকে নামাযের দরজা থেকে ডাক দেওয়া হবে। আর যে মুজাহিদদের দলভুক্ত হবে। তাকে জিহাদের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে রোযাদারদের দলভুক্ত হবে, তাকে ‘রাইয়ান’ নামক দরজা থেকে আহ্বান করা হবে। আর দাতাকে দানের দরজা থেকে ডাকা হবে।” এ সব শুনে আবূ বাক্‌র (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক, যাকে ডাকা হবে, তার ঐ সকল দরজার তো কোন প্রয়োজন নেই। (কেননা মুখ্য উদ্দেশ্য হল, কোনভাবে জান্নাতে প্রবেশ করা।) কিন্তু এমন কেউ হবে কি, যাকে উক্ত সকল দরজাসমূহ থেকে ডাকা হবে?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ। আর আশা করি, তুমি তাদের দলভুক্ত হবে।”

(সহীহুল বুখারী ১৮৯৭, ২৮৪১, ৩২১৬, ৩৬৬৬, মুসলিম ১০২৭, তিরমিযী ৩৬৭৪, নাসায়ী ২৪৩৯, ৩১৩৫, ৩১৮৩, ৩১৮৪, আহমাদ ৭৩৯৩, ৭৫৭৭, ৮৫৭২, মুওয়াত্তা মালিক ১০২১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২৫

وَعَنْ سَهلِ بنِ سَعدٍ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إنَّ في الجَنَّةِ بَاباً يُقَالُ لَهُ: الرَّيَّانُ، يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَومَ القِيَامَةِ، لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أحدٌ غَيْرُهُمْ، يقال: أيْنَ الصَّائِمُونَ ؟ فَيَقُومُونَ لاَ يَدخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ، فَإذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ». متفقٌ عَلَيْهِ

সাহল ইবনে সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “জান্নাতের মধ্যে এমন একটি দরজা আছে, যার নাম হল ‘রাইয়ান’; সেখান দিয়ে কেবল রোযাদারগণই কিয়ামতের দিনে প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া আর কেউ সেদিক দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে, ‘রোযাদাররা কোথায়?’ তখন তারা দণ্ডায়মান হবে। (এবং ঐ দরজা দিয়ে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে) তারপর যখন তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে, তখন দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর সেখান দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১৮৯৬, ৩২৫৭, মুসলিম ১১৫২, তিরমিযী ৭৬৫, নাসায়ী ২২৩৬, ২২৩৭, ইবনু মাজাহ ১৬৪০, আহমাদ ২২৩১১, ২২৩৩৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২৬

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدرِي رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَا مِنْ عَبْدٍ يَصُومُ يَوْماً فِي سَبِيلِ اللهِ إِلاَّ بَاعَدَ اللهُ بِذَلِكَ اليَوْمِ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِينَ خَرِيفَاً». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে (অর্থাৎ, জিহাদকালীন বা প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জনকল্পে) একদিন রোযা রাখবে, আল্লাহ ঐ একদিন রোযার বিনিময়ে তার চেহারাকে জাহান্নাম হতে সত্তর বছর (পরিমাণ পথ) দূরে রাখবেন।”

(সহীহুল বুখারী ২৮৪০, মুসলিম ১১৫৩, তিরমিযী ১৬২৩, নাসায়ী ২২৫১-২২৫৩, ইবনু মাজাহ ১৭১৭, আহমাদ ১০৮২৬, ১১০৪, ১১১৬৬, ১১৩৮১, দারেমী ২৩৯১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২৭

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَاناً وَاحْتِسَاباً، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ» متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে নেকীর আশায় রমযানের রোযা পালন করে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।”

(সহীহুল বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিযী ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮, ২১৯৯, ২২০০, ২২০১-২২০৭, ৫০২৭, আবূ দাউদ ১৩৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৭৮৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৬৭৫, ২৭৫৮৩, দারেমী ১৭৭৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২৮

وَعَنْه رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إِذَا جَاءَ رَمَضَانُ، فُتِحَتْ أَبْوَاب الجَنَّةِ، وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ، وَصُفِّدَتِ الشَّيَاطِينُ». متفقٌ عَلَيْهِ

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “মাহে রমযানের আগমন ঘটলে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদেরকে শৃঙ্খলিত করা হয়।”

(সহীহুল বুখারী ১৮৯৮, ১৮৯৯, ৩২৭৭, মুসলিম ১০৭৯, তিরমিযী ৬৮২, নাসায়ী ২০৯৭, ২১০৬, ইবনু মাজাহ ১৬৪২, আহমাদ ৭১০৮, ৭৭২৩, ৭৮৫৭, ৮৪৬৯, ৮৬৯২, ৮৭৬৫, ৮৯৫১, ৯২১৩, মুওয়াত্তা মালিক ৬৯১, দারেমী ১৭৭৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২২৯

وَعَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ، وَأَفْطِرُوا لِرُؤيَتِهِ، فَإِنْ غَبِيَ عَلَيْكُمْ، فَأَكْمِلُوا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلاَثِينَ». متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ البخاري .
وفي رواية لمسلم: «فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَصُومُوا ثَلاَثِينَ يَوْماً»

উক্ত রাবী থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোযা ছাড়। যদি (কালক্রমে) তোমাদের উপর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয় (এবং চাঁদ দেখতে না পাওয়া যায়), তাহলে শা’বান (মাসের) গুণতি ত্রিশ পূর্ণ করে নাও।”

(সহীহুল বুখারী ১৯০৯, মুসলিম ১০৮১, তিরমিযী ৬৮৪, নাসায়ী ২১১৭-২১১৯, ২১২৩, ইবনু মাজাহ ১৬৫৬, আহমাদ ৭৪৬৪, ৭৫২৭, ৭৭২১, ৭৮০৪, ৯১১২, ৯১৭৬, ৯২৭১, ৯৫৪৩, ৯৫৭৫, ২৭২১১, ২৭২৬৫, ২৭৩১৭, দারেমী ১৬৮৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১৮

মাহে রমযানে অধিকাধিক সৎকর্ম ও দান খয়রাত করা তথা এর শেষ দশকে আরো বেশী সৎকর্ম করা প্রসঙ্গে

১২৩০

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ، وَكَانَ أَجْوَدَ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِيْنَ يَلْقَاهُ جِبْريلُ، وَكَانَ جِبْرِيلُ يَلْقَاهُ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ فَيُدَارِسُهُ القُرْآنَ، فَلَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، حِيْنَ يَلْقَاهُ جِبرِيلُ أَجْوَدُ بِالخَيْرِ مِن الرِّيحِ المُرْسَلَةِ. متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমস্ত লোকের চেয়ে অধিক দানশীল ছিলেন। আর মাহে রমযানে যখন জিব্রাঈল তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন, তখন তিনি আরো বেশী বদান্যতা প্রদর্শন করতেন। জিব্রাঈল মাহে রমযানের প্রত্যেক রজনীতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁর কাছে কুরআন পুনরাবৃত্তি করতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিব্রাঈলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অবশ্যই কল্যাণবহ মুক্ত বায়ু অপেক্ষা অধিক দানশীল ছিলেন।’

(সহীহুল বুখারী ৬, ১৯০২, ৩২২০, ৩৪৫৪, ৪৯৯৭, মুসলিম ২৩০৮, নাসায়ী ২০৯৫, আহমাদ ২৬১১, ৩৪১৫, ৩৪৫৯, ৩৫২৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৩১

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ العَشْرُ أَحْيَا اللَّيْلَ، وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ، وَشَدَّ المِئْزَرَ . متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘(রমযানের) শেষ দশক প্রবেশ করলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বয়ং রাতে জাগতেন এবং পরিবার-পরিজনদেরকেও জাগাতেন। আর (ইবাদতের জন্য) কোমর বেঁধে নিতেন।’

(সহীহুল বুখারী ২০২৪, মুসলিম ১০৭৪, তিরমিযী ৭৯৬, নাসায়ী ১৬৩৯, আবূ দাউদ ১৩৭৬, ইবনু মাজাহ ১৭৫৭, ১৭৬৮, আহমাদ ২৩৬১১, ২৩৮৫৬, ২৩৮৬৯, ২৪৩৯২, ২৫৬৫৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২১৯

অর্ধ শা’বানের পর রমযানের এক-দু’দিন আগে থেকে রোযা রাখা নিষেধ। তবে সেই ব্যক্তির জন্য অনুমতি রয়েছে যার রোযা পূর্বের রোযার সাথে মিলিত হয়ে অথবা সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতে অভ্যস্ত হয়ে ঐ দিনে পড়ে

১২৩২

عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ يَتَقَدَّمَنَّ أَحَدُكُم رَمَضَانَ بِصَوْمِ يَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ، إِلاَّ أَنْ يَكُونَ رَجُلٌ كَانَ يَصُومُ صَومَهُ، فَليَصُمْ ذَلِكَ اليَوْمَ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন রমযান মাসের এক বা দু’দিন আগে (শা’বানের শেষে) রোযা পালন শুরু না করে। অবশ্য সেই ব্যক্তি রোযা রাখতে পারে, যে ঐ দিনে রোযা রাখতে অভ্যস্ত।”

(সহীহুল বুখারী ১৯১৪, মুসলিম ১০৮২, তিরমিযী ৬৮৪, ৬৮৫, নাসায়ী ২১৭২, ২১৭৩, আবূ দাউদ ২৩৩৫, ইবনু মাজাহ ১৬৫০, আহমাদ ৭১৫৯, ৭৭২২, ৮৩৭০, ৯০৩৪, ৯৮২৮, ১০২৮৪, ১০৩৭৬, ২৭২১১, ২৭৩১৭, দারেমী ১৬৮৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৩৩

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«لاَ تَصُومُوا قَبْلَ رَمضَانَ، صُومُوا لِرُؤيَتِهِ، وَأَفْطِرُوا لِرُؤيَتِهِ، فَإِنْ حَالَتْ دُونَهُ غَيَايَةٌ فَأَكْمِلُوا ثَلاثِينَ يَوْماً». رواه الترمذي، وقال: حديث حسنٌ صحيح

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা রমযানের পূর্বে রোযা রেখো না। তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোযা ছাড়। আর যদি তার সামনে কোন মেঘ আড়াল করে, তবে (মাসের) ত্রিশ দিন পূর্ণ কর।”

(তিরমিযী, হাসান সহীহ) (তিরমিযী ২৮৮, নাসায়ী ২১২৪, ২১২৫, ২১২৯, ২১৩০, আবূ দাউদ ২৩২৭, আহমাদ ১৯৩২, ১৯৮৬, ২৩৩১, ২৭৮৫, ৩৪৬৪, ইবনু মাজাহ ৬৩৫, দারেমী ১৫৬৩, ১৬৮৬)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১২৩৪

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِذَا بَقِيَ نِصْفٌ مِنْ شَعْبَانَ فَلاَ تَصُومُوا». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন শা’বান মাসের অর্ধেক বাকী থাকবে, তখন তোমরা রোযা রাখবে না।”

(তিরমিযী, হাসান সহীহ) (তিরমিযী ৭৩৮, ৬৮৪, ৬৮৫, সহীহুল বুখারী ১৯১৪, মুসলিম ১০৮২, নাসায়ী ২১৭২, ২১৭৩, আবূ দাউদ ২৩৩৫, ২৩৩৭, ইবনু মাজাহ ১৬৫০, ১৬৫১, ১৬৫৫, আহমাদ ৯৪১৪, ২৭২১১, ২৭৩১৭, দারেমী ১৬৮৯, ১৭৪০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৩৫

وَعَنْ أَبي اليَقَظَانِ عَمَّارِ بن يَاسِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: مَنْ صَامَ اليَوْمَ الَّذِي يُشَكُّ فِيهِ، فَقَدْ عَصَى أَبَا القَاسِمِ صلى الله عليه وسلم . رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

আবূ ইয়াক্বাযান আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি সন্দেহের দিনে রোযা রাখল, সে অবশ্যই আবুল কাসেম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাফরমানী করল।’

(আবূ দাউদ, তিরমিযী, হাসান সহীহ) (তিরমিযী ৬৮৬, নাসায়ী ২১৮৮, আবূ দাউদ ২৩৩৪, ইবনু মাজাহ ১৬৪৫, দারেমী ১৬৮২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২০

নতুন চাঁদ দেখলে যা বলতে হয়

১২৩৬

عَن طَلحَةَ بنِ عُبَيدِ اللهِ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا رَأَى الهلاَلَ، قَالَ: «اَللهم أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالأَمْنِ وَالإيمانِ، وَالسَّلاَمَةِ وَالإسْلاَمِ، رَبِّي وَرَبُّكَ اللهُ، هِلالُ رُشْدٍ وخَيْرٍ» . رواه الترمذي، وقال :حديث حسن

ত্বালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নতুন চাঁদ দেখতেন তখন এই দু‘আ পড়তেন,
“আল্লা-হুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি অলঈমা-নি অসসালা-মাতি অলইসলা-ম, রাববী অরাববুকাল্লা-হ, (হিলালু রুশ্‌দিন অখায়র) ।”
অর্থ- হে আল্লাহ! তুমি ঐ চাঁদকে আমাদের উপর উদিত কর নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে। (হে চাঁদ) আমার ও তোমার প্রতিপালক আল্লাহ। (হেদায়াত ও কল্যাণময় চাঁদ!)

(তিরমিযী-হাসান, কিন্তু বন্ধনী-ঘেরা শব্দগুলি তিরমিযীতে নেই।) (তিরমিযী ৩৪৫১, আহমাদ ১৪০০, দারেমী ১৬৮৮)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২১

সেহরী খাওয়ার ফযীলত। যদি ফজর উদয়ের আশংকা না থাকে, তাহলে তা বিলম্ব করে খাওয়া উত্তম

১২৩৭

عَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«تَسَحَّرُوا ؛ فَإِنَّ فِي السُّحُورِ بَرَكَةً». متفقٌ عَلَيْهِ

আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা সেহরী খাও। কেননা, সেহরীতে বরকত নিহিত আছে।”

(সহীহুল বুখারী ১৯২৩, মুসলিম ১০৯৫, তিরমিযী ৭০৮, নাসায়ী ২১৪৬, ইবনু মাজাহ ১৬৯২, আহমাদ ১১৫৩৯, ১২৮৩৩, ১২৯৭৭, ১৩১৩৯, ১৩২১৩, ১৩৫৮১, দারেমী ১৬৯৬)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৩৮

وَعَنْ زَيدِ بنِ ثَابِتٍ رضي الله عنه، قَالَ: تَسَحَّرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ قُمْنَا إِلَى الصَّلاَةِ . قِيلَ: كَمْ كَانَ بَينَهُمَا ؟ قَالَ: قَدْرُ خَمْسِينَ آيةً . متفقٌ عَلَيْهِ

যায়েদ ইবনে সাবেত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সেহরী খেয়েছি, অতঃপর নামাযে দাঁড়িয়েছি।’ তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘ওই দুয়ের (নামায ও সেহরীর) মাঝখানে ব্যবধান কতক্ষণ ছিল?’ তিনি বললেন, ‘(প্রায়) পঞ্চাশ আয়াত পড়ার মত সময়।’

(সহীহুল বুখারী ৫৭৫, ১৯২১, মুসলিম ১০৯৭, তিরমিযী ৭০৩, নাসায়ী ২১৫৫, ২১৫৬, ইবনু মাজাহ ১৬৯৪, আহমাদ ২১০৭৫, ২১১০৬, ২১১২৮, ২১১৬৩, দারেমী ১৬৯৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৩৯

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: كَانَ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُؤَذِّنَانِ: بِلاَلٌ وَابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ بِلاَلاً يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ». قَالَ: وَلَمْ يَكُنْ بَيْنَهُمَا إِلاَّ أَنْ يَنْزِلَ هَذَا وَيَرْقَى هَذَا. متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দু’জন মুআয্‌যিন ছিলেন; বিলাল ও ইবনে উম্মে মাকতূম। একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “বিলাল যখন রাতে আযান দেবে, তখন তোমরা পানাহার (সেহরী ভক্ষণ) কর; যতক্ষণ পর্যন্ত না ইবনে উম্মে মাকতূম আযান দেবে।” (ইবনে উমার) বলেন, ‘আর তাঁদের উভয়ের আযানের মাঝে এতটুকু ব্যবধান ছিল যে, উনি নামতেন, আর ইনি চড়তেন।’

(সহীহুল বুখারী ৬১৭, ৬২৩, ১৯১৯, ২৬৫৬, ৭২৪৮, মুসলিম ১০৯২, তিরমিযী ২০৩, নাসায়ী ৬৩৭, ৬৩৮, আহমাদ ৪৫৩৭, ৫১৭৩, ৫২৬৩, ৬২৯৪, ৫৪০১, ৫৪৭৪, ৫৬৫৩, ৫৮১৮, ৬০১৪, ইবনু মাজাহ ১৬৩, ১৬৪, দারেমী ১১৯০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৪০

وَعَنْ عَمرِو بنِ العَاص رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «فَصْلُ مَا بَيْنَ صِيَامِنَا وصِيَامِ أَهْلِ الكِتَابِ، أَكْلَةُ السَّحَرِ». رواه مسلم

আম্‌র বিন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আমাদের রোযা ও কিতাবধারীদের (ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের) রোযার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, সেহরী খাওয়া।”

(মুসলিম ১০৯৬, তিরমিযী ৭০৯, নাসায়ী ২১৬৬, আবূ দাউদ ২৩৪৩, আহমাদ ১৭৩০৮, ১৭৩৪৫, দারেমী ১৬৯৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২২

সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন্‌ খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু'আ

১২৪১

عَن سَهلِ بنِ سَعدٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الفِطْرَ». متفقٌ عَلَيْهِ

সাহ্‌ল ইবনে সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যতদিন পর্যন্ত মুসলমানেরা শীঘ্র ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে।”

(সহীহুল বুখারী ১৯৫৭, ১০৯৮, তিরমিযী ৬৯৯, ইবনু মাজাহ ১৬৯৭, আহমাদ ২২২৯৮, ২২৩২১, ২২৩৩৯, ২২৩৫২, ২২৩৬৩, মুওয়াত্তা মালিক ৬৩৮, দারেমী ১৬৯৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৪২

وَعَنْ أَبي عطِيَّةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَ قَالَ: دَخَلْتُ أَنَا وَمَسْرُوقٌ عَلَى عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، فَقَالَ لَهَا مَسْرُوق: رَجُلاَنِ مِنْ أَصْحَابِ مُحَمَّدٍ، كِلاَهُمَا لاَ يَألُو عَنِ الخَيْرِ ؛ أَحَدُهُمَا يُعَجِّلُ المَغْرِبَ وَالإِفْطَارَ، وَالآخَرُ يُؤَخِّرُ المَغْرِبَ وَالإِفْطَارَ ؟ فَقَالَتْ: مَنْ يُعَجِّلُ المَغْرِبَ وَالإِفْطَارَ ؟ قَالَ: عَبْدُ اللهِ - يعني: ابن مسعود - فَقَالَتْ: هَكَذَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ . رواه مسلم

আবূ আত্বিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ও মাসরূক আয়েশা (রাঃ) নিকট উপস্থিত হলাম। মাসরুক তাঁকে বললেন, ‘মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহচরদের মধ্যে দু’জন সহচর কল্যাণের ব্যাপারে আদৌ ত্রুটি করেন না। তাঁদের একজন মাগরিব ও ইফতার সত্বর সম্পাদন করেন এবং অপরজন মাগরিব ও ইফতার দেরীতে সম্পাদন করেন।’ এ কথা শুনে আয়েশা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কে মাগরিব ও ইফতার সত্বর করেন?’ তিনি বললেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)।' তিনি বললেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপই করতেন।’

(মুসলিম ১০৯৯, তিরমিযী ৭০২, নাসায়ী ২১৫৮, ২১৫৯-২১৬১, আবূ দাউদ ২৩৫৪, আহমাদ ২৩৬৯২, ২৪৮৭১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৪৩

وَعَنْ أَبي هُريرَةَ رضي الله عنهقالَ: قالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قال اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: { أَحَبُّ عِبَادِي إِليَّ أَعْجَلُهُمْ فِطْراً } رواه الترمذي وقالَ: حَديثٌ حسنٌ .

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে যারা দ্রুত ইফতার করে তারাই আমার নিকট বেশি পছন্দনীয়।

হাদিসটি যঈফ (তিরমিযী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন) (আমি (আলবানী) বলছিঃ এ হাসান আখ্যা দেয়ার ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য রয়েছে। কারণ এ সনদটির কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কুর্‌রা ইবনু আব্দির রহমান। আর তিনি হচ্ছেন দুর্বল তার মন্দ হেফযের কারণে। তার সম্পর্কে আমি “ইরওয়াউল গালীল” গ্রন্থে দ্বিতীয় নম্বর হাদীসে আলেমদের উক্তিগুলো উল্লেখপূর্বক বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ইবনু মা‘ঈন বলেনঃ তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল। আবূ যুর‘য়াহ্ বলেনঃ তিনি যেসব হাদীস বর্ণনা করেছেন সেগুলো মুনকার। আবূ হাতিম ও নাসাঈ বলেনঃ তিনি শক্তিশালী নন।)

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

১২৪৪

وَعَنْ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِذَا أَقْبَلَ اللَّيْلُ مِنْ هَاهُنَا، وَأَدْبَرَ النَّهَارُ مِنْ هَاهُنَا، وَغَرَبَتِ الشَّمْسُ، فَقَدْ أَفْطَر الصَّائِمُ». متفقٌ عَلَيْهِ

উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন রাত্রি এ (পূর্ব) দিক থেকে আগমন করবে এবং দিন এ (পশ্চিম) দিক থেকে প্রস্থান করবে এবং সূর্য ডুবে যাবে, তখন অবশ্যই রোযাদার ইফতার করবে।”

(সহীহুল বুখারী ১৯৫৪, মুসলিম ১১০০, তিরমিযী ৬৯৮, আবূ দাউদ ২৩৫১, আহমাদ ১৯৩, ২২২, ৩৪০, ৩৮৫, দারেমী ১৭০০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৪৫

وَعَنْ أَبي إِبرَاهِيمَ عَبدِ اللهِ بنِ أَبي أَوفَى رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: سِرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَهُوَ صَائِمٌ، فَلَمَّا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، قَالَ لِبَعْضِ القَوْمِ: «يَا فُلاَنُ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا»، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، لَوْ أَمْسَيْتَ ؟ قَالَ: «انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا» قَالَ: إِنَّ عَلَيْكَ نَهَاراً، قَالَ: «انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا» قَالَ: فَنَزَلَ فَجَدَحَ لَهُمْ فَشَرِبَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ قَالَ:«إِذَا رَأَيْتُمُ اللَّيْلَ قَدْ أَقْبَلَ مِنْ هَاهُنَا، فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ» وَأشَارَ بِيَدِهِ قِبَلَ المَشْرِقِ . متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (একবার) আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহচর্যে পথ চলছিলাম, তখন তিনি রোযাদার ছিলেন। অতঃপর যখন সূর্য অস্ত গেল, তখন তিনি সফররত সঙ্গীদের একজনকে বললেন, “হে অমুক! বাহন থেকে নেমে আমাদের জন্য ছাতু ঘুলে দাও।” সে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি আর একটু সন্ধ্যা করতেন (তাহলে ভাল হত।)’ তিনি বললেন, “তুমি বাহন থেকে নামো এবং আমাদের জন্য ছাতু ঘুলে দাও।” সে বলল, ‘এখনো দিন হয়ে আছে।’ তিনি আবার বললেন, “তুমি নামো এবং আমাদের জন্য ছাতু ঘুলে দাও।” বর্ণনাকারী বলেন, সুতরাং সে নেমে তাঁদের জন্য ছাতু ঘুলে দিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পান করলেন এবং বললেন, “যখন তোমরা প্রত্যক্ষ করবে যে, রাত্রি এ (পূর্ব) দিক থেকে এসে পড়েছে, তখন অবশ্যই রোযাদার ইফতার করবে।” আর সেই সাথে তিনি পূর্বদিকে ইঙ্গিত করলেন।

(সহীহুল বুখারী ১৯৪১, ১৯৫৫, ১৯৫৬, ১৯৫৮, ৫২৯৮, মুসলিম ১১০১, আবূ দাউদ ২৩৫২, আহমাদ ১৮৯০৫, ১৮৯২১)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৪৬

وَعَنْ سَلْمَانَ بنِ عَامِرِ الضَّبِّيِّ الصَّحَابيِّرضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِذَا أَفْطَرَ أَحَدُكُمْ، فَلْيُفْطِرْ عَلىٰ تَمْرٍ، فَإِنْ لَمْ يَجِدْ، فَلْيُفْطِرْ عَلىٰ مَاءٍ فَإِنَّهُ طَهُوْرٌ» .

সালমান ইবনু আমির আয-যাব্বী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যখন ইফতার করে তখন তার উচিত খুরমা-খেজুর দিয়ে ইফতার করা। তবে সে যদি খুরমা-খেজুর না পায় তাহলে পানি দিয়ে যেন ইফতার করে, কেননা পানি হচ্ছে পাক-পবিত্র।

(তিরমিযি) হাদীসটি যয়ীফ। দেখুনঃ যয়ীফ আবূ দাউদ, তিরমিযী)

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

১২৪৭

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُفْطِرُ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّي عَلَى رُطَبَاتٍ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ رُطَبَاتٌ فَتُمَيْرَاتٌ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تُمَيْرَاتٌ حَسَا حَسَوَاتٍ مِنْ مَاءٍ . رواه أَبُو داود والترمذي، وقال:حديث حسن

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায পড়ার আগে কতিপয় টাটকা পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি টাটকা পাকা খেজুর না পেতেন, তাহলে শুকনো কয়েকটি খেজুর যোগে ইফতার করতেন। যদি শুকনো খেজুরও না হত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করতেন।’

(আবূ দাউদ, তিরমিযী হাসান) (আবূ দাউদ ২৩৫৬, তিরমিযী ৬৯৪, আহমাদ ১২২৬৫)
ইমাম নাওয়াবী শিরোনামায় দু'আর কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তার হাদীসটি উল্লেখ করেননি। হাদীসটি নিম্নরূপ:-
ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ইফতার করতেন, তখন এই দু‘আ বলতেন,
“যাহাবায যামা-উ অবতাল্লাতিল উরুক্বু অষাবাতাল আজরু ইন শা-আল্লাহ।”
অর্থাৎ, পিপাসা দূরীভূত হল, শিরা-উপশিরা সতেজ হল এবং ইন শা আল্লাহ সওয়াব সাব্যস্ত হল। (আবূ দাউদ)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২৩

রোযাদার নিজ জিভ ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিকে রোযার পরিপন্থী ক্রিয়াকলাপ তথা গালি-গালাজ ও অনুরূপ অন্য অপকর্ম থেকে বাঁচিয়ে রাখবে।

১২৪৮

عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ، فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ، فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ، فَلْيَقُلْ: إنِّي صَائِمٌ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন তোমাদের কারো রোযার দিন হবে, সে যেন অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ না করে ও হৈ-হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ গালাগালি করে অথবা তার সাথে লড়াই ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে যে, ‘আমি রোযাদার।”

(সহীহুল বুখারী ১৮৯৪, ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১, তিরমিযী ৭৬৪, ৭৬৬, নাসায়ী ২২১৩-২২১৯, আবূ দাউদ ২৩৬৩, ইবনু মাজাহ ১৬৩৮, ১৬৯১, আহমাদ ৭১৫৪, ৭৪৪১, ৭৫৫২, ৭৬৩৬, ৭৭৩০, ৭৭৮১, ৮৩৪৫, ৮৩৬৬, ৮৮৬৮, ৮৮৯৩, ৮৯৩৮, ৮৯৭২, ৯০২২, ৯০৬৭, মুওয়াত্তা মালিক ৬৮৯, ৬৯০, দারেমী ১৭৬৯, ১৭৭০)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৪৯

وَعَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ: صلى الله عليه وسلم«مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ». رواه البخاري

উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা ও তার উপর আমল করা পরিহার না করল, তখন আল্লাহর কোন দরকার নেই যে, সে তার পানাহার ত্যাগ করুক।”

(সহীহুল বুখারী ১৯০৩, ৬০৫৭, তিরমিযী ৭০৭, আবূ দাউদ ২৩৬২, ইবনু মাজাহ ১৬৮৯, আহমাদ ১৫২৯, ১০১৮৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২৪

রোযা সম্পর্কিত কিছু জ্ঞাতব্য বিষয়

১২৫০

عَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «إِذَا نَسِيَ أَحَدُكُمْ، فَأَكَلَ، أَوْ شَرِبَ، فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ، فَإنَّمَا أطْعَمَهُ اللهُ وَسَقَاهُ». متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি ভুলবশত: কিছু খেয়ে বা পান করে ফেলবে, তখন সে যেন তার রোযা (না ভেঙ্গে) পূর্ণ করে নেয়। কেননা, আল্লাহই তাকে খাইয়েছেন এবং পান করিয়েছেন।”

(সহীহুল বুখারী ১৯৩৩, ৬৬৬৯, মুসলিম ১১৫৫, তিরমিযী ৭২১, আবূ দাউদ ২৩৯৮, ইবনু মাজাহ ১৬৭৩, আহমাদ ৮৮৯১, ৯২০৪, ৯২০৫, ৯৯৭৫, ৯৯৯৬, ১০০২০, ১০২৮৭, দারেমী ১৭২৬, ১৭২৭)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৫১

وَعَنْ لَقِيطِ بنِ صَبِرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، أَخْبِرْنِي عَنِ الوُضُوءِ ؟ قَالَ: «أَسْبِغِ الوُضُوءَ، وَخَلِّلْ بَيْنَ الأَصَابِعِ، وَبَالِغْ فِي الاسْتِنْشَاقِ، إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِماً». رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

লাক্বীত্ব ইবনে সাবেরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! ওযূ সম্পর্কে আমাকে বলুন।’ তিনি বললেন, “পূর্ণাঙ্গরূপে ওযূ কর। আঙ্গুলগুলোর মধ্যবর্তী জায়গাগুলো খিলাল কর। সজোরে নাকে পানি টেনে (নাক ঝাড়ো); তবে রোযার অবস্থায় নয়।” (অর্থাৎ, রোযার অবস্থায় বেশি জোরে নাকে পানি টানা চলবে না।)

(আবূ দাউদ ১৪২, তিরমিযী ৩৮, ৭৮৮, নাসায়ী ৮৭, ১১৪, ইবনু মাজাহ ৪০৭, ৪৪৮৮, আহমাদ ১৫৯৪৫, ১৫৯৪৬, ১৭৩৯০, দারেমী ৭৯৪)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১২৫২

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُدْرِكُهُ الفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ، ثُمَّ يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ . متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘(কখনো কখনো) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভোর এভাবে হত যে, তিনি স্ত্রী-মিলন হেতু অপবিত্র অবস্থায় থাকতেন। অতঃপর তিনি গোসল করতেন এবং রোযা করতেন।’

(সহীহুল বুখারী ১৯২৬, ১৯৩০, ১৯৩২, মুসলিম ১১০৯, তিরমিযী ৭৭৯, আবূ দাউদ ১৯৮৪, ১৯৮৫, ২৩৮৮, ২৩৮৯, আহমাদ ২৩৫৪২, ২৩৫৫৪, ২৩৫৮৪, ২৩৫৮৪, ২৩৮৬৪, ২৩৯০৮, ২৪১৮৪, ২৪২৮৫, ২৪২৯৫, ২৪৭০০, মুওয়াত্তা মালিক ৬৪১, ৬৪২, ৬৪৩, ৬৪৪, দারেমী ১৭২৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৫৩

وَعَنْ عَائِشَة وَأُمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَتَا: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُصْبِحُ جُنُباً مِنْ غَيْرِ حُلُمٍ، ثُمَّ يَصُومُ . متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা (রাঃ) ও উম্মে সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিনা স্বপ্নদোষে (স্ত্রী সহবাসজনিত) অপবিত্র অবস্থায় ভোর করতেন, তারপর রোযা পালন করতেন।

(সহীহুল বুখারী ১৯২৬, ১৯৩০, ১৯৩২, মুসলিম ১১০৯, তিরমিযী ৭৭৯, আবূ দাউদ ১৯৮৪, ১৯৮৫, ২৩৮৮, ২৩৮৯, আহমাদ ২৩৫৪২, ২৩৫৫৪, ২৩৫৮৪, ২৩৫৮৪, ২৩৮৬৪, ২৩৯০৮, ২৪১৮৪, ২৪২৮৫, ২৪২৯৫, ২৪৭০০, মুওয়াত্তা মালিক ৬৪১, ৬৪২, ৬৪৩, ৬৪৪, দারেমী ১৭২৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২৫

মুহাররম, শা'বান তথা অন্যান্য হারাম (পবিত্র) মাসে রোযা রাখার ফযীলত

১২৫৪

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَال رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم«أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ: شَهْرُ اللهِ المُحَرَّمُ، وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعدَ الفَرِيضَةِ: صَلاَةُ اللَّيْلِ» . رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “মাহে রমযানের পর সর্বোত্তম রোযা, আল্লাহর মাস মুহাররম। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায রাতের (তাহাজ্জুদ) নামায।”

(মুসলিম ১১৬৩, তিরমিযী ৪৩৮, ৭৪০, আবূ দাউদ ২৪২৯, ইবনু মাজাহ ১৭৪২, আহমাদ ৭৯৬৬, ৮১৫৮, ৮৩০২, ৮৩২৯, ১০৫৩২, দারেমী ১৭৫৭, ১৭৫৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৫৫

عَن عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ مِنْ شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْ شَعْبَانَ، فَإِنَّهُ كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ كُلَّهُ . وفي رواية: كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ إِلاَّ قَلِيلاً . متفقٌ عَلَيْهِ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শাবান মাস চাইতে বেশি নফল রোযা অন্য কোন মাসে রাখতেন না। নিঃসন্দেহে তিনি পূর্ণ শাবান মাস রোযা রাখতেন।’
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘অল্প কিছুদিন ছাড়া তিনি পূর্ণ শা‘বান মাস রোযা রাখতেন।’

(সহীহুল বুখারী ৪৩, ১১৩২, ১১৫১, ১৯৬৯, ১৯৭০, ১৯৮৭, ৬৪৬১, ৬৪৬২, ৬৪৬৪-৬৪৬৭, মুসলিম ৭৪১, ৭৮২, ৭৮৩, ৭৮৫, ১২৫৬, ৭৮২, ১৮১৮, নাসায়ী ৭৬২, ১৬১৬, ১৬৪২, ১৬৫২, ২১৭৭, ২৩৪৭, ২৩৪৯, ২৩৫১, ৫০৩৫, আবূ দাউদ ১৩১৭, ১৩৬৮, ১৩৭০, ২৪৩৪, ইবনু মাজাহ ১৭১০, ৪২৩৮, আহমাদ ২৩৫২৩, ২৩৬০৪, ২৩৬৪২, ২৩৬০৪, ২৩৬৬৯, ২৪০১৯, ২৪১০৭, মুওয়াত্তা মালিক ৪২২, ৬৮৮)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৫৬

وعن مجِيبَةَ البَاهِلِيَّةِ عَنْ أَبِيهَا أَوْ عمِّها، أَنَّهُ أَتى رَسولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ انطَلَقَ فَأَتَاهُ بعدَ سَنَة، وَقَد تَغَيَّرتْ حَالهُ وَهَيْئَتُه، فَقَالَ: يا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا تعْرِفُنِي ؟ قَالَ: «وَمَنْ أَنتَ ؟» قَالَ: أَنَا البَاهِلِيُّ الذي جِئتك عامَ الأَوَّلِ . قَالَ: «فَمَا غَيَّرَكَ، وقَدْ كُنتَ حَسَنَ الهَيئةِ ؟ » قَالَ: ما أَكلتُ طعاماً منذ فَارقْتُكَ إِلاَّ بلَيْلٍ . فَقَال رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«عَذّبْتَ نَفسَكَ»، ثُمَّ قَالَ: «صُمْ شَهرَ الصَّبرِ، ويوماً مِنْ كلِّ شَهر» قال: زِدْنـي، فإِنَّ بي قوَّةً، قَالَ: «صُمْ يَوميْنِ» قال: زِدْني، قال: «صُمْ ثلاثَةَ أَيَّامٍ» قالَ: زِدْني . قال: «صُمْ مِنَ الحُرُمِ وَاتْرُكْ، صُمْ مِنَ الحرُم وَاترُكْ، صُمْ مِنَ الحرُمِ وَاتْرُكُ» وقالَ بِأَصَابِعِهِ الثَّلاثِ فَضَمَّهَا، ثُمَّ أَرْسَلَهَا . رواه أبو داود . «و شهرُ الصَّبرِ»: رَمضانُ

মুজীবাহ আল-বাহিলিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তার বাবা বা চাচা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হন। অতঃপর তিনি চলে যান এবং একবছর পর পুনরায় উপস্থিত হন। তার অবস্থা ও চেহারা-সুরাত সে সময় (অনেক) পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমাকে কি আপনি চিনতে পারছেন না? জবাবে তিনি বললেন, কে তুমি? তিনি বলেন, আমি হলাম সেই বাহিলী, আপনার নিকট প্রথম বছরে এসেছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার এ পরিবর্তন কিভাবে হল, তোমার চেহারা-সুরত না বেশ সুন্দর ছিল? বাহিলী উত্তর দেন, আপনার নিকট হতে বিদায় নেয়ার পর থেকে আমি প্রতি রাতে ব্যতীত আর কখনো খাদ্য গ্রহণ করিনি (প্রতিদিন রোযা রেখেছি)। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নিজের জীবনকে তুমি কষ্ট দিয়েছ। অতঃপর বললেন, রমজানে রোযা রাখো, এরপর প্রতি মাসে একদিন করে (রোযা রাখো)। বাহিলী বলল, আরো বেশি করে দিন, কারণ আমার ভিতর এর শক্তি আছে। জবাবে বললেন, ঠিক আছে, প্রতি মাসে দু‘দিন করে। বাহিলী বলেন, আমি অধিক সামর্থ্য রাখি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তবে প্রতি মাসে তিনদিন করে। বাহিলী বলেন, আরো বেশী করুন। জবাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হারাম মাসগুলোয় (যিলক্বদ, যিলহাজ্জ, মুহাররাম ও রজব) রোযা রাখো ও ছেড়ে দাও, হারাম মাসগুলোয় রোযা রাখো ও ছেড়ে দাও, হারাম মাসগুলোয় রোযা রাখো ও ছেড়ে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নিজের তিন আঙ্গুল দিয়ে তিনি ইশারা করেন, প্রথমে সেগুলোকে মিলিত করেন, তারপর ছেড়ে দেন (অর্থাৎ, তিনদিন রোযা রাখো এবং তিনদিন খাও। (আমি (আলবানী) বলছিঃ এর সনদটি দুর্বল। যেমনটি আমি “আত্‌তা‘লীকুর রাগীব আলাত্ তারগীব অত্‌তারহীব” গ্রন্থে (২/৮২) বর্ণনা করেছি। এর সনদের বর্ণনাকারী মুজীবাহ্ বাহেলিয়্যাহ্ সম্পর্কে হাফিয যাহাবী বলেনঃ তিনি গারীব তাকে চেনা যায় না। উল্লেখ্য বর্ণনাকারী আবুস সালীল তার থেকে এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এ সনদের মধ্যে মুজীবাহ্ কার থেকে বর্ণনা করেছেন সে ব্যাপারে ইযতিরাবও সংঘটিত হয়েছে। বিস্তারিত দেখুন “য‘ঈফু আবী দাঊদ-আলউম্ম-” গ্রন্থে (নং ৪১৯)।

উল্লেখ্য কাহমাস হিলালী কর্তৃক বর্ণিত হাদীস হতে মারফূ' হিসেবে অনুরূপ ঘটনা সম্বলিত হাদীসটির একটি ভালো শাহেদ রয়েছে (কিন্তু ঘটনা এক নয়)। তবে "যিদনী..." এ অংশ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত ছাড়া। কাহমাস হিলালী কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি সহীহ্‌ বিধায় সেটিকে "সিলসিল্যাহ্‌ সহীহাহ্‌" গ্রন্থে (২৬২৩) উল্লেখ করা হয়েছে।)

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২৬

যুলহজ্জের প্রথম দশকে রোযা পালন তথা অন্যান্য পুণ্যকর্ম করার ফযীলত

১২৫৭

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنه رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم :«مَا مِنْ أَيَّامٍ، العَمَلُ الصَّالِحُ فِيهَا أَحَبُّ إِلَى اللهِ مِنْ هَذِهِ الأَيَّام» يعني أَيَّامَ العَشرِ . قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَلاَ الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ ؟ قَالَ: «وَلاَ الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ، إِلاَّ رَجُلٌ خَرَجَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ، فَلَمْ يَرْجِعْ مِنْ ذَلِكَ بِشَيءٍ». رواه البخاري

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “এই দিনগুলির (অর্থাৎ, যুল হিজ্জার প্রথম দশ দিনের) তুলনায় এমন কোন দিন নেই, যাতে কোন সৎকাজ আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়।” লোকেরা বলল, ‘আল্লাহর পথে জিহাদও নয় কি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে কোন (মুজাহিদ) ব্যক্তি যদি তার জান মালসহ বের হয়ে যায় এবং তার কোন কিছুই নিয়ে আর ফিরে না আসে।” (অর্থাৎ, শাহাদত বরণ করে, তাহলে হয়তো তার সমান হতে পারে।)

(সহীহুল বুখারী ৯৬৯, তিরমিযী ৭৫৭, আবূ দাউদ ২৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১৭২৭, আহমাদ ১৯৬৯, ৩১২৯, ৩২১৮, দারেমী ১৭৭৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২৭

আরাফা ও মুহার্‌রাম মাসের নবম ও দশম তারিখে রোযা রাখার ফযীলত

১২৫৮

وَعَنْ أَبي قَتَادَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم عَنْ صَومِ يَوْمِ عَرَفَةَ، قَالَ: «يُكَفِّرُ السَّنَةَ المَاضِيَةَ وَالبَاقِيَةَ» رواه مسلم

আবূ কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আরাফার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, “তার পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গোনাহ মোচন করে দেয়।”

(মুসলিম ১১৬২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৫৯

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنه رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صَامَ يَومَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيامِهِ. متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশূরার (মুহার্‌রাম মাসের দশম) দিনে স্বয়ং রোযা রেখেছেন এবং ঐ দিনে রোযা রাখতে আদেশ করেছেন।

(সহীহুল বুখারী ২০০৪, ৩৩৯৭, ৩৯৪৩, ৪৬৮০, ৪৭৩৭, মুসলিম ১১৩০, আবূ দাউদ ২৪৪৪, ইবনু মাজাহ ১৭৩৪, আহমাদ ১৯৭২, ২১০৭, ২১৫৫, ২৬৩৯, ২৮২৭, ৩১০২, ৩১৫৪, ৩২০৩, দারেমী ১৭৫৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৬০

وَعَنْ أَبي قَتَادَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْ صِيامِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ، فَقَالَ: «يُكَفِّرُ السَّنَةَ المَاضِيَةَ». رواه مسلم

আবূ কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আশূরার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, “তা বিগত এক বছরের গুনাহ মোচন করে দেয়।”

(মুসলিম ১১৬২, আহমাদ ২২০২৪, ২২১১৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৬১

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنه رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم «لَئِنْ بَقِيتُ إِلَى قَابِلٍ لأَصُومَنَّ التَّاسِعَ». رواه مسلم

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আগামী বছর যদি আমি বেঁচে থাকি, তাহলে মুহাররম মাসের নবম তারিখে অবশ্যই রোযা রাখব।” (অর্থাৎ, নবম ও দশম দু’দিন ব্যাপী রোযা রাখব।)

(মুসলিম ১১৩৪, আবূ দাউদ ২৪৪৫, আহমাদ ২১০৭, ২৬৩৯, ২৮২৭, ২১০২, ৩১৫৪, দারেমী ১৭৫৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২৮

শাওয়াল মাসের ছ’দিন রোযা পালনের ফযীলত

১২৬২

عَن أَبي أَيُّوبَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتّاً مِنْ شَوَّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ». رواه مسلم

আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমযানের রোযা পালনের পর শওয়াল মাসের ছয়দিন রোযা রাখল, সে যেন সারা বছর রোযা রাখল।”

(মুসলিম ১১৬৪, তিরমিযী ৭৫৯, আবূ দাউদ ২৪৩৩, ইবনু মাজাহ ১৭১৬, আহমাদ ২৩০২২, ২৩০৪৪, দারেমী ১৭৫৪)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২২৯

সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখার ফযীলত

১২৬৩

عَنْ أَبي قَتَادَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْ صَومِ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ، فَقَالَ: «ذَلِكَ يَومٌ وُلِدْتُ فِيهِ، وَيَومٌ بُعِثْتُ، أَوْ أُنْزِلَ عَلَيَّ فِيهِ». رواه مسلم

আবূ কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সোমবার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, “ওটি এমন একটি দিন, যেদিন আমার জন্ম হয়েছে, যেদিন আমি (নবীরূপে) প্রেরিত হয়েছি অথবা ঐ দিনে আমার প্রতি (সর্বপ্রথম) ‘অহী’ অবতীর্ণ করা হয়েছে।”

(মুসলিম ১১৬২)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৬৪

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «تُعْرَضُ الأَعْمَالُ يَومَ الاِثْنَيْنِ وَالخَمِيسِ، فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأنَا صَائِمٌ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن، ورواه مسلم بغير ذِكر الصوم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “(মানুষের) আমলসমূহ সোম ও বৃহস্পতিবারে (আল্লাহর দরবারে) পেশ করা হয়। তাই আমি ভালবাসি যে, আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক, যখন আমি রোযার অবস্থায় থাকি।”

(তিরমিযী হাসান) (মুসলিম ২৫৬৫, তিরমিযী ৭৪৭, ২০২৩, আবূ দাউদ ৪৯২৬, ইবনু মাজাহ ১৭৪০, আহমাদ ৭৫৮৩, ৮১১৬, ৮৯৪৬, ৯৯০২, ২৭৪৯০, ২৭২৫০, মুওয়াত্তা মালিক ১৬৮৬, ১৬৮৭, দারেমী ১৭৫১ ) ইমাম মুসলিমও এটি বর্ণনা করেছেন, তবে তাতে রোযার উল্লেখ নেই।

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১২৬৫

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَت: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَتَحَرَّى صَومَ الاِثْنَيْنِ وَالخَمِيس . رواه الترمذي، وقال: حديث حسن

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সোম ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার জন্য সমধিক সচেষ্ট থাকতেন।’

(তিরমিযী হাসান) (তিরমিযী ৭৪৫, নাসায়ী ২৩৬১-২৩৬৪, ইবনু মাজাহ ১৭৩৯)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২৩০

প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা রাখা মুস্তাহাব

১২৬৬

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: أَوْصَانِي خَلِيلِي صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ: صِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ، وَرَكْعَتَي الضُّحَى، وَأَنْ أُوتِرَ قَبْلَ أَنْ أنَامَ . متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন; প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা পালন করা। চাশ্‌তের দু’ রাকআত নামায আদায় করা এবং নিদ্রা যাবার পূর্বে বিত্‌র নামায পড়া।’

(সহীহুল বুখারী ১১৭৮, ১৯৮১, মুসলিম ৭২১, তিরমিযী ৭৬০, নাসায়ী ১৬৭৭, ১৬৭৮, ২৪০৬, আবূ দাউদ ১৪৩২, আহমাদ ৭০৫৮, ৭১৪০, ৭৪০৯, ৭৪৬০, ৭৪৮৩, ৭৫৪১, ৭৬১৫, ৮০৪৪, ৯৬০০, ৯৯০৩, ১০১০৫, দারেমী ১৪৫৪, ১৭৪৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৬৭

وَعَنْ أَبي الدَّردَاءِ رضي الله عنه، قَالَ: أَوصَانِي حَبِيبِي صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ لَنْ أَدَعَهُنَّ مَا عِشْتُ: بِصِيَامِ ثَلاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ، وَصَلاَةِ الضُّحَى، وَبِأَنْ لاَ أَنَامَ حَتَّى أُوْتِرَ . رواه مسلم

আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এমন তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন, যা আমি যতদিন বেঁচে থাকব, কখনোই ত্যাগ করব না; প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা পালন করা, চাশ্‌তের নামায পড়া এবং বিত্‌র না পড়ে নিদ্রা না যাওয়া।’

(মুসলিম ৭২২, আবূ দাউদ ১৪৩৩, আহমাদ ২৬৯৩৫, ২৭০০৩)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৬৮

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمْرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «صَوْمُ ثَلاَثَةِ أيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صَوْمُ الدَّهْرِ كُلِّهِ». متفقٌ عَلَيْهِ

‘আব্দুল্লাহ ইবনে আম্‌র ইবনে আ'স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখা, সারা বছর ধরে রোযা রাখার সমান।”

(সহীহুল বুখারী ১১৫৯, ১৯৭৫)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৬৯

وَعَنْ مُعَاذَةَ العَدَوِيَّةِ: أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا: أَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَصُومُ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلاَثة أيَّامٍ ؟ قَالَت: نَعَمْ . فقلتُ: مِنْ أيِّ الشَّهْرِ كَانَ يَصُومُ ؟ قَالَت: لَمْ يَكُنْ يُبَالِي مِنْ أيِّ الشَّهْرِ يَصُومُ . رواه مسلم

মুআযাহ আদাভিয়্যাহ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আল্লাহর রসূল কি প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখতেন?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ আমি বললাম, ‘মাসের কোন্‌ কোন্‌ দিনে রোযা রাখতেন?’ তিনি বললেন, ‘মাসের যে কোন দিনে রোযা রাখতে তিনি পরোয়া করতেন না।’

(মুসলিম ১১৬০, তিরমিযী ৭৬৩, আবূ দাউদ ৩৪৫৩, ইবনু মাজাহ ১৭০৯)

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৭০

وَعَنْ أَبي ذَرٍّ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «إِذَا صُمْتَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلاَثاً، فَصُمْ ثَلاَثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن

আবূ জর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “প্রত্যেক মাসে (নফল) রোযা পালন করলে (শুক্লপক্ষের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো।”

(তিরমিযী ৭৬১, নাসায়ী ২৪২৪)

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১২৭১

وَعَنْ قَتَادَةَ بنِ مِلْحَانَ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَأمُرُنَا بِصِيَامِ أيَّامِ البِيضِ: ثَلاَثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ . رواه أَبُو داود

ক্বাতাদাহ ইবনে মিলহান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে শুক্লপক্ষের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখার জন্য আদেশ করতেন।’

(আবূ দাউদ ২৪৪৯, নাসায়ী ২৪৩২ [আব্দুল মালেকবিন কাতাদা ইবন মালহান])

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

১২৭২

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنه رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم لاَ يُفْطِرُ أَيَّامَ البِيضِ فِي حَضَرٍ وَلاَ سَفَرٍ . رواه النسائي بإسنادٍ حسن

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে ও সফরে কোথাও শুক্লপক্ষের (তিন) দিনের রোযা ছাড়তেন না।’

(নাসাঈ হাসান সূত্রে) (নাসায়ী ২৩৪৫ [জা‘ফর বিন আবুল মুগিরা])

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ - ২৩১

রোযাদারকে ইফতার করানোর ফযীলত এবং যে রোযাদারের নিকট কিছু ভক্ষণ করা হয় তার ফযীলত এবং যার নিকট ভক্ষণ করা হয় তার জন্য ভক্ষণকারীর দু‘আ।

১২৭৩

عَن زَيدِ بنِ خَالِدٍ الجُهَنِيِّ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ فَطَّرَ صَائِماً، كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ، غَيْرَ أنَّهُ لاَ يُنْقَصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْءٌ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

যায়েদ ইবনে খালেদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে (রোজাদারের) সমান নেকীর অধিকারী হবে। আর তাতে রোজাদারের নেকীর কিছুই কমবে না।”

তিরমিযী ৮০৭, ইবনু মাজাহ ১৪৪৬, আহমাদ ২১১৬৮, দারেমী ১৭০২

হাদিসের মানঃহাসান হাদিস

১২৭৪

وَعَنْ أُمِّ عُمَارَةَ الأَنْصَارِيَّةِ رَضِيَ اللَّه عَنْهَا، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا، فَقَدَّمَتْ إِلَيْهِ طَعَاماً، فَقَالَ: كُلِيْ» فَقَالَتْ: إِنِّيْ صَائِمَةٌ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «إِنَّ الصَّائِمَ تُصَلِّيْ عَلَيْهِ الْمَلَائِكَةُ إِذا أُكِلَ عِنْدَهُ حَتّىٰ يَفْرَغُوْا» وَرُبَّمَا قَالَ: حَتّىٰ يَشْبَعُوْا» رواهُ الترمذيُّ وقال: حديثٌ حسنٌ .

ম্মু ‘উমারা আল-আনসারিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন একদিন তার নিকট গেলেন। তার সামনে তিনি খাবার রাখলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমিও খাও। তিনি বললেন, আমি তো রোজাদার। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রোজাদারের সামনে যখন খাবার আহার-কারীদের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বা পেট ভরে না খাওয়া পর্যন্ত তার (রোজাদারের) জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন।

দীসটি দুর্বল। আমি (আলবানী) বলছি : তিরমিযীর কোন কোন কপিতে হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলা হয়েছে। আর এ সবগুলোর ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য রয়েছে। আমি এ সম্পর্কে “য‘ঈফাহ্” গ্রন্থে (নং ১৩৩২) আলোচানা করেছি। শু‘য়াইব আলআরনাউতও “মুসনাদু আহমাদ” গ্রন্থে (২৬৫২০, ২৬৫২১) হাদীসটির সনদকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। এর সনদের বর্ণনাকারী লাইলাকে চেনা যায় না। হাফিয যাহাবী তাকে “আননিসওয়াতুল মাজহূলাত” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন : তার থেকে শুধুমাত্র হাবীব ইবনু যায়েদ বর্ণনা করেছেন। উল্লেখ্য সওম পালনকারীদের ইফতার করার সময় ফেরেশতারা রহমাত কামনা করে দু‘আ করতে থাকেন। এ মর্মে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম হতে সহীহ্ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (“সহীহ্ আবী দাঊদ” (৩৮৫৪) ও “সহীহ্ ইবনু মাজাহ্” (১৭৪৭))। তবে আলোচ্য হাদীসটি মওকূফ হিসেবে সহীহ্ সূত্রে সংক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ভাষায় আবূ আইঊব (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছেঃ الصائم إذا أكل عنده صلت عليه الملائكة অর্থাৎ ‘সওম পালনকারী ব্যক্তির নিকট খাওয়া হলে ফেরেশতারা রহমাত কামনা করে তার জন্য দু‘আ করে।’ যা মারফূ‘র হুকুম বহন করে। তবে অতিরিক্ত অংশ সহকারে হাদীসটি দুর্বল যেমনটি তিরমিযীতে বর্ণিত হয়েছে। (বিস্তারিত দেখুন “য‘ঈফাহ্” (১৩৩২))। আল্লাহই বেশী জানেন।

হাদিসের মানঃদুর্বল হাদিস

১২৭৫

وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه:أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم جَاءَ إِلَى سَعْدِ بنِ عُبَادَةَ رضي الله عنه فَجَاءَ بِخُبْزٍ وَزَيْتٍ، فَأَكَلَ، ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: «أَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُونَ ؛ وَأَكَلَ طَعَامَكُمُ الأَبرَارُ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ المَلاَئِكَةُ». رواه أَبُو داود بإسناد صحيح

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সায়াদ ইবনে উবাদাহ (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলেন। তিনি রুটি ও (জয়তুনের) তেল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে পেশ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ভক্ষণ করে এই দো‘আ পড়লেন,

‘আফত্বারা ইন্দাকুমুস স্বা-য়িমূন, অআকালা ত্বাআমাকুমুল আবরার, অস্বাল্লাত আলাইকুমুল মালাইকাহ।’

অর্থাৎ রোজাদারগণ তোমাদের নিকট ইফতার করল। সৎ ব্যক্তিগণ তোমাদের খাবার ভক্ষণ করল এবং ফেরেশতাগণ তোমাদের (ক্ষমার) জন্য দো‘আ করলেন।

আবূ দাউদ ৩৮৫৪, আহমাদ ১১৭৬৭, ১২৬৭৩, দারেমী ১৭৭২

হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস

No comments

Powered by Blogger.