শামায়েলে তিরমিযী সকল অধ্যায় একত্রে হাদিস নং ০১ থেকে ৩২০
এক নজরে যা কিছু আছে শামায়েলে তিরমিযী
১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দৈহিক গঠন |
২ |
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মোহরে নবুওয়াত |
৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চুল |
৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মাথার চুল বিন্যাস করা |
৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বার্ধক্য (চুল সাদা হওয়া) |
৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর খিযাব লাগানো |
৭ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুরমা ব্যবহার |
৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পোশাক-পরিচ্ছদ |
৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবন-যাপন |
১০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মোজা ব্যবহার |
১১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জুতা |
১২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আংটির বিবরণ |
১৩ |
নবী (সাঃ) ডান হাতে আংটি পরিধান করতেন |
১৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর তরবারির বিবরণ |
১৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যুদ্ধের পোশাকের বিবরণ |
১৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হেলমেট (শিরস্ত্রাণ)
এর বিবরণ |
১৭ |
নবী (সাঃ) এর পাগড়ি |
১৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর লুঙ্গির বিবরণ |
১৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাঁটা-চলা |
২০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মস্তকাবরণ ব্যবহার |
২১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উঠা-বসা |
২২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বালিশে হেলান দেয়ার
বিবরণ |
২৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর (বালিশ ছাড়া অন্য কিছুতে)
ঠেস দেয়া |
২৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পানাহারের নিয়ম পদ্ধতি |
২৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রুটির বিবরণ |
২৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর তরকারীর বর্ণনা |
২৭ |
আহার গ্রহণকালে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ওযূ |
২৮ |
খাওয়ার পূর্বে ও পরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
দুআ |
২৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পানপাত্র |
৩০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ফলমূলের বিবরণ |
৩১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পানীয় বস্তুর বিবরণ |
৩২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পান করার পদ্ধতি |
৩৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুগদ্ধি ব্যবহার |
৩৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বাচনভঙ্গি |
৩৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাসি |
৩৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কৌতুক |
৩৭ |
কাব্যিক ছন্দে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কথা |
৩৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রাত্রে গল্প বলা |
৩৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিদ্রা |
৪০ |
রাসূল (সাঃ) এর ইবাদাত |
৪১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দ্বোহার সালাত |
৪২ |
ঘরে নফল সালাত |
৪৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রোযা |
৪৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কিরাআত |
৪৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ক্ৰন্দন |
৪৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বিছানা |
৪৭ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বিনয় |
৪৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চরিত্র (মাধুর্য) |
৪৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর লজ্জাবোধ |
৫০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর শিঙ্গা লাগানো |
৫১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নাম |
৫২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবিকা |
৫৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বয়স সম্পর্কে যা বর্ণিত
হয়েছে |
৫৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ওফাত |
৫৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মীরাস |
৫৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে স্বপ্নযোগে দর্শন |
১রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দৈহিক গঠন
পরিচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশী দীর্ঘ ছিলেন না, আবার বেশী খাটোও ছিলেন না
১
قَالَ الْحَافِظُ أَبُو عِيسَى مُحَمَّدُ
بْنُ عِيسَى بْنِ سَوْرَةٍ التِّرْمِذِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ قُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ بِالطَّوِيلِ الْبَائِنِ، وَلَا
بِالْقَصِيرِ، وَلَا بِالْأَبْيَضِ الْأَمْهَقِ، وَلَا بِالْآدَمِ، وَلَا
بِالْجَعْدِ الْقَطَطِ، وَلَا بِالسَّبْطِ، بَعَثَهُ اللَّهُ تَعَالَى عَلَى
رَأْسِ أَرْبَعِينَ سَنَةً، فَأَقَامَ بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِينَ، وَبِالْمَدِينَةِ
عَشْرَ سِنِينَ، وَتَوَفَّاهُ اللَّهُ تَعَالَى عَلَى رَأْسِ سِتِّينَ سَنَةً،
وَلَيْسَ فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ عِشْرُونَ شَعْرَةً بَيْضَاءَ»
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) খুব দীর্ঘ ছিলেন না আবার খাটোও ছিলেন না। তিনি ধবধবে সাদা
কিংবা বাদামী বর্ণেরও ছিলেন না। তাঁর চুল একেবারে কোঁকড়ানো ছিল না, আবার একদম
সোজাও ছিল না। ৪০ বছর বয়সে আল্লাহ তা'আলা তাকে নবুওয়াত দান করেন। এরপর মক্কায়
১০ বছর এবং মদিনায় ১০ বছর কাটান। আল্লাহ তা'আলা ৬০ বছর বয়সে তাকে ওফাত দান করেন।
ওফাতকালে তাঁর মাথা ও দাড়ির ২০টি চুলও সাদা ছিল না। [১]
ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মাঝে যেমন উত্তম গুণাবলির সর্বাধিক সমাবেশ ঘটেছিল,
তেমনি তার দৈহিক সৌন্দর্যও ছিল অতুলনীয়। এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ
(সঃ) বেমানান দীর্ঘকায় ছিলেন না। আবার অতি খাটোও ছিলেন না। বরং মাঝারি গড়নের
চেয়ে একটু দীর্ঘ ছিলেন। উল্লেখ্য যে, নবী (সঃ)এর ইন্তেকাল হয়েছে ৬৩ বছর বয়সে।
তিনি মক্কায় ১৩ বছর এবং মদিনায় ১০ বছর অতিবাহিত করেছেন। এ সংক্রান্ত হাদীসগুলো এ
গ্রন্থের শেষের দিকে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্ণিত হাদীসটিতে দশকের পরের সংখ্যা ৩ বাদ
দিয়ে মক্কায় অবস্থানকাল ১০ বছর এবং নবী (সঃ) এর মোট বয়স ৬০ উল্লেখ করা হয়েছে।
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫৯০০;
সহীহ মুসলিম, হা/৬২৩৫; মুয়াত্তা মালেক, হা/১৬৩৯ ইবনে মাজাহ, হা/১৩৫৪৩, মুসনাদুল বাযযার,
হা/৬১৮৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৭৩৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৮৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি ছিলেন গৌরবর্ণের
২
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ
الْبَصْرِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ حُمَيْدٍ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ رَبْعَةً، لَيْسَ بِالطَّوِيلِ وَلَا بِالْقَصِيرِ، حَسَنَ الْجِسْمِ،
وَكَانَ شَعْرُهُ لَيْسَ بِجَعْدٍ وَلَا سَبْطٍ أَسْمَرَ اللَّوْنِ، إِذَا مَشَى
يَتَكَفَّأُ»
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) মধ্যমাকৃতির ছিলেন। বেশি লম্বা কিংবা বেশি খাটোও ছিলেন না।
তাঁর দেহ ছিল খুব আকর্ষণীয়। আর তাঁর চুল বেশি কোকড়ানো কিংবা একেবারে সোজাও ছিল
না। তিনি ছিলেন গৌরবর্ণের। পথ চলতে তিনি সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন। [২]
[২] মুসনাদে আবু ই'আলা,
হা/৩৮৩২ শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৪০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি ছিলেন মধ্যমাকৃতির
৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ قَالَ:
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ قَالَ: سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا مَرْبُوعًا بَعِيدَ مَا بَيْنَ
الْمَنْكِبَيْنِ، عَظِيمَ الْجُمَّةِ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ الْيُسْرَى،
عَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ، مَا رَأَيْتُ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ»
বারা
ইবনে আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) মধ্যমাকৃতির ছিলেন। তার দুই কাঁধের মধ্যবর্তী অংশ ছিল
তুলনামূলক প্রশস্ত। তার ঘন চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। তার দেহে লাল
লুঙ্গি ও লাল চাদর শোভা পেত। আমি তার তুলনায় সুদর্শন কাউকে কখনো দেখিনি।” [৩]
ব্যাখ্যা : এ হাদীসে লাল চাদর ও লুঙ্গি পরিধান করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ
রাসূলুল্লাহ (সঃ) পুরুষের জন্যে লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করেছেন। এ
বিরোধ সমাধানে কেউ কেউ বলেন, উজ্জ্বল লাল পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে। এখানে যে
কাপড়দ্বয়ের কথা বলা হয়েছে, সেটা লাল ডোরাকাটা ছিল, উজ্জ্বল লাল বর্ণের ছিল না।
[৩] সহীহ বুখারী, হা/৩৫৫১
সীহ মুসলিম, হা/৬২১০; নাসাঈ, হা/৫২৩২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তাঁর দু’কাঁধের মধ্যবর্তী
স্থান প্রশস্ত ছিল
৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلَانَ
قَالَ: حَدَّثَنَا وَكِيعٌ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ،
عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ [ص: 31] : «مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ فِي
حُلَّةٍ حَمْرَاءَ أَحْسَنَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ، لَهُ شَعْرٌ يَضْرِبُ
مَنْكِبَيْهِ، بَعِيدُ مَا بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ، لَمْ يَكُنْ بِالْقَصِيرِ
وَلَا بِالطَّوِيلِ»
বারা
ইবনে আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুলবিশিষ্ট লাল চাদর ও লাল লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায়
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর চেয়ে সুদর্শন কাউকে দেখিনি। তাঁর কেশগুচ্ছ ছিল কাঁধ বরাবর।
তাঁর দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান অন্যদের তুলনায় কিছুটা প্রশস্ত ছিল তিনি অধিক
খাটো বা অধিক দীর্ঘাকৃতির ছিলেন না।" [৪]
ব্যাখ্যাঃ ৩ নং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মাথার চুল কানের লতি
পর্যন্ত দীর্ঘ ছিল। আর এ হাদীসে বলা হয়েছে, কাঁধ পর্যন্ত দীর্ঘ ছিল। উভয়
বক্তব্যই ঠিক। কেননা, চুল সব সময় এক অবস্থায় থাকে না। কখনো কম হয়, কখনো বেশি
হয়। আবার ইচ্ছাকৃতভাবেও বড় ছোট রাখা হয়। চুলের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার ব্যাখ্যা
এভাবে করা যায় যে, তিনি সর্বোচ্চ কাধ পর্যন্ত লম্বা করেছেন, যাকে জিম্মা’ বলা
হয়। আর সর্বাধিক ছোট করার পরিমান ছিল কানের লতি, যাকে 'ওয়াফরা' বলে। আর এর
মাঝামাঝি অবস্থানকে লিম্মা’ বলা হয়।
[৪] সহীহ মুসলিম, হা/৬২১১;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৫৮১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তাঁর হস্তদ্বয় ও পদদ্বয়ের
তালু এবং আঙ্গুলসমূহ ছিল মাংসল
৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ
قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا الْمَسْعُودِيُّ، عَنْ
عُثْمَانَ بْنِ مُسْلِمِ بْنِ هُرْمُزَ، عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ
مُطْعِمٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ: «لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالطَّوِيلِ وَلَا بِالْقَصِيرِ، شَثْنُ الْكَفَّيْنِ
وَالْقَدَمَيْنِ، ضَخْمُ الرَّأْسِ، ضَخْمُ الْكَرَادِيسِ، طَوِيلُ الْمَسْرُبَةِ،
إِذَا مَشَى تَكَفَّأَ تَكَفُّؤًا كَأَنَّمَا يَنْحَطُّ مِنْ صَبَبٍ، لَمْ أَرَ
قَبْلَهُ وَلَا بَعْدَهُ مِثْلَهُ [ص: 32] ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» .
আলী
ইবনে আবু তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) বেশি দীর্ঘ কিংবা বেশি খাটো ছিলেন না। তার হস্তদ্বয় ও পদদ্বয়ের
তালু এবং আঙ্গুলসমূহ ছিল মাংসল। তাঁর মাথা ছিল কিছুটা বড় এবং হাত-পায়ের
জোড়াগুলো ছিল মোটা। বুক হতে নাভি পর্যন্ত পশমের একটি সরু রেখা প্রলম্বিত ছিল। যখন
পথ চলতেন মনে হতো যেন কোন উঁচু স্থান হতে নিচে অবতরণ করছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তার
পূর্বে কিংবা পরে আমি তার মতো (অনুপম আকর্ষণীয়) আর কাউকে দেখিনি।
[৫] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৭৪৬; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪১৯৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩১১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি ছিলেন প্রশস্ত মুখ,
ডাগর চক্ষু এবং সরু গোড়ালি বিশিষ্ট
৬
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ،
عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ يَقُولُ: «كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَلِيعَ الْفَمِ، أَشْكَلَ
الْعَيْنِ، مَنْهُوسَ الْعَقِبِ» [ص: 39] . قَالَ شُعْبَةُ: قُلْتُ لِسِمَاكٍ: مَا
ضَلِيعُ الْفَمِ؟ قَالَ: عَظِيمُ الْفَمِ، قُلْتُ: مَا أَشْكَلُ الْعَيْنِ؟ قَالَ:
طَوِيلُ شِقِّ الْعَيْنِ، قُلْتُ: مَا مَنْهُوسُ الْعَقِبِ؟ قَالَ: قَلِيلُ لَحْمِ
الْعَقِبِ
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মুখ প্রশস্ত ছিল। চোখের শুভ্রতার মাঝে কিছুটা লালিমা
ছিল। পায়ের গোড়ালি স্বল্প মাংসল ছিল। শু'বা (রহঃ) বলেন, আমি সিমাক (রহঃ)-কে
বললাম, (যলীউল ফাম) কী? তিনি বললেন, বড় মুখগহ্বর বিশিষ্ট। আমি আবার বললাম,
(আশকালুল ‘আইন) কী? তিনি বললেন, ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট। আমি বললাম, এ (মানুহূসুল
‘আক্কিব) কী? তিনি বললেন, সরু গোড়ালি বিশিষ্ট । [৬]
[৬] সহীহ মুসলিম, হা/৬২১৬;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০২৪ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৮৯; জামেউস সগীর, হা/৮৯৫২: মিশকাত,
হা/৫৭৮৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি ছিলেন পূর্ণিমার চাঁদের
চেয়েও চমৎকার
৭
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ
قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْثَرُ بْنُ الْقَاسِمِ، عَنْ أَشْعَثَ، يَعْنِي ابْنَ
سَوَّارٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: «رَأَيْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي لَيْلَةٍ إِضْحِيَانٍ،
وَعَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ، فَجَعَلْتُ أَنْظُرُ إِلَيْهِ وَإِلَى الْقَمَرِ،
فَلَهُوَ عِنْدِي أَحْسَنُ مِنَ الْقَمَرِ»
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একবার পূর্ণিমা রাত্রির স্নিগ্ধ আলোতে রাসূলুল্লাহ (সঃ) -কে লাল চাদর ও
লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় দেখলাম। তখন আমি একবার তার দিকে ও একবার চাঁদের দিকে
তাকাতে থাকলাম। মনে হলো তিনি আমার কাছে পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে অধিকতর চমৎকার। [৭]
[১] মুস্তাদরাকে হাকেম,
হা/৭৩৮৩; মারেফাতুস সাহাবা, হা/১৪৩৫; মিশকাত, হা/৫৭৯৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، قَالَ
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الرُّؤَاسِيُّ، عَنْ زُهَيْرٍ، عَنْ
أَبِي إِسْحَاقَ قَالَ: سَأَلَ رَجُلٌ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ: أَكَانَ وَجْهُ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ السَّيْفِ؟ قَالَ: «لَا،
بَلْ مِثْلَ الْقَمَرِ»
আবু
ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার বারা ইবনে আযিব (রাঃ)-কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর
চেহারা কি তরবারির ন্যায় ছিল? তিনি বললেন, না; বরং তা ছিল চাঁদের মতো। [৮]
ব্যাখ্যাঃ তরবারির সাথে সাদৃশ্য করা এ জন্য ক্রটিযুক্ত ছিল যে, এতে চেহারা অধিক
লম্বা হওয়ার ধারণা সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া তরবারির চমকে শুভ্রতা বেশি থাকে,
কিন্তু উজ্জ্বলতা থাকে না। তাই বারা ইবনে আযিব (রাঃ) তরবারির কথা অস্বীকার করে
চাঁদের সাথে তুলনা করেছেন।
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৫৫২;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৫০১; দারেমী, হা/৬৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৮৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তাঁর শুভ্রতা ছিল রৌপ্যের
ন্যায়
৯
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْمَصَاحِفِيُّ
سُلَيْمَانُ بْنُ سَلْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، عَنْ صَالِحِ
بْنِ أَبِي الْأَخْضَرِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
أَبْيَضَ كَأَنَّمَا صِيغَ مِنْ فِضَّةٍ، رَجِلَ الشَّعْرِ»
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও শুভ্রতায় ছিলেন রৌপ্যের ন্যায় এবং তার চুলগুলো ছিল
কিছুটা কোকড়ানো। [৯]
ব্যাখ্যা : আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত এ অধ্যায়ের সর্বপ্রথম হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে
যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর গায়ের রং নিরেট সাদা ছিল না। তাই এ হাদীসে তাকে রূপার
সাথে তুলনা করা হয়েছে। তিনি লাল মিশ্রিত সাদা ছিলেন এবং উজ্জ্বল সুন্দর ছিলেন।
[১] জামেউস সগীর, হা/৮৭৪৮;
সিলসিলা সহীহাহ, হা/২০৫৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি ছিলেন ইবরাহীম (আঃ) এর
সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ
১০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ:
أَخْبَرَنِي اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:
«عُرِضَ عَلَيَّ الْأَنْبِيَاءُ، فَإِذَا مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَامُ ضَرْبٌ مِنَ
الرِّجَالِ، كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ، وَرَأَيْتُ عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ، فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا عُرْوَةُ بْنُ
مَسْعُودٍ، وَرَأَيْتُ إِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ
رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا صَاحِبُكُمْ، يَعْنِي نَفْسَهُ، وَرَأَيْتُ جِبْرِيلَ
عَلَيْهِ السَّلَامُ فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا دِحْيَةُ»
জাবির
ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, আমার কাছে নবীগণকে পেশ করা হয়। মূসা (আঃ) এর
মধ্যে বিভিন্ন লোকের সাদৃশ্য বিদ্ধমান ছিল। তিনি যেন শানুয়াহ গোত্রের লোক। আমি
ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)-কে উরওয়া ইবনে মাসউদের সাদৃশ্যপূর্ণ দেখতে পাই। তারপর আমি
ইবরাহীম (আঃ)-কে দেখতে পাই এবং তাকে পাই তোমাদের সঙ্গীর সাথে সর্বাধিক
সাদৃশ্যপূর্ণ। তোমাদের সঙ্গী বলে তিনি নিজেকে বুঝিয়েছেন। আর আমি জিবরাঈল (আঃ)-কে
দিহইয়া (কালবী) এর সাথে সদৃশ্যপূর্ণ দেখতে পাই। [১০]
[১০] সহীহ মুসলিম, হা/৪৪১;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪৬২৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৩২; জামেউস সগীর, হা/৭৪৫১ মিশকাত,
হা/৫৭১৪ জামেউস সগীর, হা/৮৭৫১; মিশকাত, হা/৫৭৮৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি ছিলেন শুভ্রকায় ও
লাবণ্যময়
১১
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ ،
وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، الْمَعْنَى وَاحِدٌ ، قَالا : أَخْبَرَنَا يَزِيدُ
بْنُ هَارُونَ ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبَا
الطُّفَيْلِ , يَقُولُ : " رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ وَمَا بَقِيَ عَلَى وَجْهِ الأَرْضِ أَحَدٌ رَآهُ غَيْرِي " ،
قُلْتُ : صِفْهُ لِي ، قَالَ : " كَانَ أَبْيَضَ , مَلِيحًا , مُقَصَّدًا
" .
আবু
তুফায়েল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঐ কে দেখেছি- তবে তাকে যারা দেখেছেন তাদের মধ্যে আমি
ছাড়া কেউ ভূপৃষ্ঠে বেঁচে নেই। (বর্ণনাকারী বললেন) আমি বললাম আপনি আমার কাছে তার
বিবরণ পেশ করুন। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন শুভ্রকায় ও লাবণ্যময় সুসামঞ্জস্যপূর্ণ।
[১১]
[১১] সহীহ মুসলিম, হা/৬২১৮;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৮৪৮; আদাবুল মুফরাদ, হা/৭৯০; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৪৮; জামেউস
সগীর, হা/৮৭৫১; মিশকাত, হা/৫৭৮৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মোহরে
নবুওয়াত |
পরিচ্ছেদঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর দু’কাঁধের মধ্যভাগে মোহরে নবুওয়াত ছিল
خاتم অর্থ- আংটি, মোহর, সীল।
মোহরে নবুওয়াত হলো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দু’কাঁধের
মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত একটি গোশতের টুকরা। এটি ছিল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নবুওয়াতের নিদর্শন; আর এ নিদর্শনের কথা পূর্ববর্তী
আসমানী কিতাবসমূহেও বর্ণিত ছিল।
১২
حَدَّثَنَا أَبُو
رَجَاءٍ قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ
، عَنِ الْجَعْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : سَمِعْتُ السَّائِبَ بْنَ
يَزِيدَ , يَقُولُ : ذَهَبَتْ بِي خَالَتِي إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالَتْ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّ ابْنَ أُخْتِي
وَجِعٌ . فَمَسَحَ رَأْسِي وَدَعَا لِي بِالْبَرَكَةِ ، وَتَوَضَّأَ ، فَشَرِبْتُ
مِنْ وَضُوئِهِ ، " وَقُمْتُ خَلْفَ ظَهْرِهِ ، فَنَظَرْتُ إِلَى الْخَاتَمِ
بَيْنَ كَتِفَيْهِ ، فَإِذَا هُوَ مثل زِرِّ الْحَجَلَةِ " .
সায়িব
ইবনে ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আমার খালা আমাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর কাছে গেলেন। এরপর তিনি আরয
করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার ভাগ্নে অসুস্থ। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমার মাথায়
হাত বুলালেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন। তারপর তিনি ওযু করলেন। আমি তার
ওযুর অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তার পেছনে গিয়ে দাড়ালাম। সহসা তার দু’কাঁধের
মধ্যস্থ মোহরে নবুওয়াতের প্রতি আমার দৃষ্টি পড়ে, যা দেখতে পাখির (কবুতরের) ডিমের
মতো। [১২]
[১২] সহীহ বুখারী, হা/১৯০;
সহীহ মুসলিম, হা/৬২৩৩; মুজামুল কাবীর, হা/৬৫৪০: শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬২২ মিশকাত, হা/৪৭৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তা ছিল ডিমের ন্যায় লাল
গোশতপিণ্ড
১৩
حَدَّثَنَا سَعِيدُ
بْنُ يَعْقُوبَ الطَّالْقَانِيُّ ، قَالَ : حدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ جَابِرٍ ،
عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ ، قَالَ : " رَأَيْتُ
الْخَاتَمَ بَيْنَ كَتِفَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
غُدَّةً حَمْرَاءَ , مثل بَيْضَةِ الْحَمَامَةِ " .
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে মোহরে নবুওয়াত দেখেছি।
আর তা যেন ছিল ডিমের ন্যায় লাল গোশতপিণ্ড। [১৩]
[১৩] সহীহ মুসলিম, হা/৬২৩০;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০৩৬ মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪১৯৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩০১ জামেউস
সগীর, হা/৮৯৩৯ মিশকাত, হা/৫৭৭৯ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪
حَدَّثَنَا أَبُو
مُصْعَبٍ الْمَدَنِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ الْمَاجِشُونِ ، عَنْ
أَبِيهِ ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ ، عَنْ جَدَّتِهِ رُمَيْثَةَ ,
قَالَتْ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَلَوْ
أَشَاءُ أَنْ أُقَبِّلَ الْخَاتَمَ الَّذِي بَيْنَ كَتِفَيْهِ مِنْ قُرْبِهِ
لَفَعَلْتُ ، يَقُولُ لِسَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ يَوْمَ مَاتَ : " اهْتَزَّ لَهُ
عَرْشُ الرَّحْمَنِ " .
রুমায়সা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সা'দ ইবনে মুয়ায (রাঃ) এর ওফাতের দিন আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি
যে, তার মৃত্যুতে রহমান (আল্লাহ তা'আলা) এর আরশ কেঁপে উঠেছিল। রুমায়ছা (রাঃ)
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন এ উক্তি করেন তখন আমি তার এত নিকটে ছিলাম যে, ইচ্ছে
করলে তার মোহরে নবুওয়াত চুম্বন করতে পারতাম। [১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৬৮৩৬; মুজামুল কাবীর, হা/২০১৬৫; মারেফাতুস সাহাবা, হা/৭০০৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
সেটি ছিল এক গুচ্ছ কেশের মত
১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَزْرَةُ
بْنُ ثَابِتٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي عِلْبَاءُ بْنُ أَحْمَرَ الْيَشْكُرِيُّ ،
قَالَ : حَدَّثَنِي أَبُو زَيْدٍ عَمْرُو بْنُ أَخْطَبَ الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : قَالَ
لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " يَا أَبَا زَيْدٍ
، ادْنُ مِنِّي فَامْسَحْ ظَهْرِي " ، فَمَسَحْتُ ظَهْرَهُ ، فَوَقَعَتْ
أَصَابِعِي عَلَى الْخَاتَمِ قُلْتُ : وَمَا الْخَاتَمُ ؟ قَالَ : "
شَعَرَاتٌ مُجْتَمِعَاتٌ "
আবু
যায়েদ আমর বিন আখতাব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাকে বললেন, হে আবু যায়েদ! আমার কাছে এসো এবং আমার
পৃষ্ঠদেশে হাত বুলাও। তখন আমি তার পিঠে হাত বুলাতে থাকলাম। এক পর্যায়ে আমার
আঙ্গুলগুলো মোহরে নবুওয়াতের উপর লেগে গেল। বর্ণনাকারী আমর বিন আখতাব (রাঃ) কে
বললেন, খাতাম’ (মোহরে নবুওয়াত) কী জিনিস? তিনি বললেন, এক গুচ্ছ কেশ। [১৫]
[১৫] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২২৯৪০: মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪১৯৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
সালমান ফারসি (রাঃ) মোহরে
নবুওয়াত দেখে ঈমান এনেছিলেন
১৬
حَدَّثَنَا أَبُو
عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْخُزَاعِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُسَيْنِ بْنِ وَاقِدٍ ، حَدَّثَنِي أَبِي ، قَالَ : حَدَّثَنِي عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبِي بُرَيْدَةَ ، يَقُولُ : جَاءَ
سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, حِينَ قَدِمَ الْمَدِينَةَ بِمَائِدَةٍ عَلَيْهَا رُطَبٌ , فَوَضَعَهَا بَيْنَ
يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : " يَا
سَلْمَانُ مَا هَذَا ؟ " فَقَالَ : صَدَقَةٌ عَلَيْكَ , وَعَلَى أَصْحَابِكَ
، فَقَالَ : " ارْفَعْهَا ، فَإِنَّا لا نَأْكُلُ الصَّدَقَةَ " ، قَالَ
: فَرَفَعَهَا ، فَجَاءَ الْغَدَ بِمِثْلِهِ ، فَوَضَعَهُ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : " مَا هَذَا يَا
سَلْمَانُ ؟ " فَقَالَ : هَدِيَّةٌ لَكَ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لأَصْحَابِهِ : " ابْسُطُوا " ثُمَّ نَظَرَ
إِلَى الْخَاتَمِ عَلَى ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, فَآمَنَ بِهِ ، وَكَانَ لِلْيَهُودِ فَاشْتَرَاهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , بِكَذَا وَكَذَا دِرْهَمًا عَلَى أَنْ يَغْرِسَ
لَهُمْ نَخْلا ، فَيَعْمَلَ سَلْمَانُ فِيهِ ، حَتَّى تُطْعِمَ ، فَغَرَسَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , النَّخلَ إِلا نَخْلَةً وَاحِدَةً ،
غَرَسَهَا عُمَرُ فَحَمَلَتِ النَّخْلُ مِنْ عَامِهَا ، وَلَمْ تَحْمِلْ نَخْلَةٌ
، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَا شَأْنُ
هَذِهِ النَّخْلَةِ ؟ " فَقَالَ عُمَرُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَنَا
غَرَسْتُهَا ، فَنَزَعَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ،
فَغَرَسَهَا فَحَمَلَتْ مِنْ عَامِهَا .
আবু
বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মদিনায় হিজরতের পর একবার সালমান ফারসী (রাঃ) একটি
পাত্রে কিছু কাচা খেজুর নিয়ে এলেন এবং তিনি তা রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সামনে রাখলেন।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন, হে সালমান! এগুলো কিসের খেজুর? (অর্থাৎ হাদিয়া না
সাদাকা?) তিনি বললেন, এগুলো আপনার ও আপনার সাধীদের জন্য সাদাকা। রাসূলুল্লাহ (সঃ)
ঐ বললেন, এগুলো তুলে নাও। আমরা সাদাকা খাই না। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি তা
তুলে নিলেন। পরের দিন তিনি অনুরূপ খেজুর নিয়ে আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর
সামনে পেশ করেন। তখন তিনি বললেন, সালমান! এসব কিসের খেজুর? সালমান (রাঃ) বললেন,
আপনার জন্য হাদিয়া। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার সাহাবীগণকে বললেন, তোমরা হস্ত
প্রসারিত করো (হাদিয়া গ্রহণ করো)। এরপর সালমান (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর
পৃষ্ঠদেশে মোহরে নবুওয়াত দেখতে পেলেন; অতঃপর ঈমান আনলেন। (বর্ণনাকারী বলেন)
সালমান (রাঃ) জনৈক ইয়াহুদির গোলাম ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে এত এত দিরহামের
বিনিময়ে এবং এ শর্তে খরিদ করেন যে, সালমান তার ইয়াহুদি মনিবের জন্য একটি খেজুর
বাগান করে দেবে এবং তাতে ফল আসা পর্যন্ত তত্ত্বাবধান করতে থাকবে। রাসূলুল্লাহ (সঃ)
তার নিজ হাতে একটি চারা ছাড়া সবগুলো রোপণ করলেন এবং একটি চারা গাছ ওমর (রাঃ) রোপণ
করেছিলেন। সে বছরই সকল গাছেই খেজুর আসল কিন্তু একটি গাছে খেজুর আসল না। তখন
রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রত্ন বললেন, এ গাছটির এ অবস্থা কেন? উমর (রাঃ) বললেন, হে
আল্লাহর রাসূল! আমি এটি রোপণ করেছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঐ চারাটি উপড়িয়ে
আবার রোপণ করলেন। ফলে সে বছরই তাতে খেজুর আসল। [১৬]
ব্যাখ্যা : (আরবী) আমরা সাদাকা ভক্ষণ করি না এ বাক্যের মধ্যে আমরা দ্বারা
রাসূলুল্লাহ (সঃ) এবং তার ঐ সমস্ত আত্মীয়-স্বজনকে বুঝানো হয়েছে, যাদের জন্য
সাদাকা খাওয়া হারাম।
[১৬] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৩০৪৭ শারহুল মা'আনী, হা|২৯৮৬; মুসনাদুল বাযযার, হা/৪৪০৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
এটি ছিল এক টুকরো বাড়তি
গোশত
১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْوَضَّاحِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
أَبُو عَقِيلٍ الدَّوْرَقِيُّ ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ الْعَوْقِيِّ ، قَالَ :
سَأَلْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ , عَنْ خَاتَمِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْنِي خَاتَمَ النُّبُوَّةِ ، فَقَالَ : "
كَانَ فِي ظَهْرِهِ بَضْعَةٌ نَاشِزَةٌ " .
আবু
নজর আওয়াকী (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মোহরে নবুওয়াত সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, তা ছিল তার পৃষ্ঠদেশের উপর এক টুকরো বাড়তি গোশত।
[১৭]
[১] জামেউস সগীর, হা/৮৯৩৯;
সিলসিলা সহীহাহ, হা/২০৯৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
এটি ছিল মুষ্টিবদ্ধ আঙ্গুলীর
ন্যায়, আর এর চারপার্শ্বে আচিলের মতো কতগুলো তিলক ছিল
১৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ الْمِقْدَامِ أَبُو الأَشْعَثِ الْعِجْلِيُّ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ :
أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ سَرْجِسَ ، قَالَ : أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي نَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ ، فَدُرْتُ هَكَذَا مِنْ
خَلْفِهِ ، فَعَرَفَ الَّذِي أُرِيدُ ، فَأَلْقَى الرِّدَاءَ عَنْ ظَهْرِهِ ،
فَرَأَيْتُ مَوْضِعَ الْخَاتَمِ عَلَى كَتِفَيْهِ , مثل الْجُمْعِ حَوْلَهَا
خِيلانٌ , كَأَنَّهَا ثَآلِيلُ ، فَرَجَعْتُ حَتَّى اسْتَقْبَلْتُهُ ، فَقُلْتُ :
غَفَرَ اللَّهُ لَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ، فَقَالَ : " وَلَكَ "
فَقَالَ الْقَوْمُ : أَسْتَغْفَرَ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ ؟ فَقَالَ : نَعَمْ ، وَلَكُمْ ، ثُمَّ تَلا هَذِهِ الآيَةَ
وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ
আবদুল্লাহ
ইবনে সারজিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর কাছে আসলাম। তখন তিনি তাঁর সাহাবীগণের মাঝে
ঘুরতেছিলেন। এক পর্যায়ে আমি তার পিছু ধরলাম। তিনি আমার মনোবাঞ্ছনা বুঝতে পেরে পিঠ
থেকে চাদর সরিয়ে ফেলেন। তখন আমি তার দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে মোহরে নবুওয়াত
দেখতে পাই। আর তা ছিল মুষ্টিবদ্ধ আঙ্গুলীর ন্যায় এবং এর চারপার্শ্বে আচিলের মতো
কতগুলো তিলক শোভা পাচ্ছিল। এরপর আমি তার সামনে এসে দাড়ালাম এবং বললাম, হে আল্লাহর
রাসূল! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন। তখন তিনি বললেন, তোমাকেও ক্ষমা করুন। তারপর লোকে
আমাকে বলতে লাগল, তুমি বড়ই সৌভাগ্যবান। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তোমার মাগফিরাত কামনা
করেছেন। তখন তিনি বললেন, হ্যা- তিনি তোমাদের জন্যও দু'আ করেছেন। এরপর তিনি এ আয়াত
তিলাওয়াত করেন - (হে রাসূল) আপনি আপনার জন্য এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য
মাগফিরাত কামনা করুন। (সূরা মুহাম্মাদ- ১৯)[১৮]
[১৮] সুনানুল কুবরা
লিন নাসাঈ, হা/১১৪৩২ মারেফাতুস সাহাবা, হা/৩৭৩১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চুল |
পরিচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথার চুল দু’কানের মধ্যভাগ পর্যন্ত লম্বা ছিল
১৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ
حُمَيْدٍ ، عَنْ أنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " كَانَ شَعْرُ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى نِصْفِ أُذُنَيْهِ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মাথার চুল দু’কানের মধ্যভাগ পর্যন্ত লম্বা ছিল। [১৯]
[১৯] নাসাঈ, হা/৫২৩৪;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৩৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০
حَدَّثَنَا هَنَّادُ
بْنُ السَّرِيِّ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي الزِّنَادِ
، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : "
كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ ، وَكَانَ لَهُ شَعْرٌ فَوْقَ الْجُمَّةِ , وَدُونَ
الْوَفْرَةِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ) একত্রে একই পাত্রের পানি দ্বারা গোসল করতাম। আর
তাঁর চুল কানের লতি এবং মধ্যবর্তী স্থান বরাবর লম্বা ছিল। [২০]
[২০]শারহুস-সুন্নাহ,হা/৩১৩৭,মিশকাত,হা/৪৪৬০৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو قَطَنٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ،
عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ، قَالَ : " كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرْبُوعًا ، بَعِيدَ مَا
بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ ، وَكَانَتْ جُمَّتُهُ تَضْرِبُ شَحْمَةَ أُذُنَيْهِ
" .
বারা
ইবনে আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) মধ্যমাকৃতির দেহবিশিষ্ট ছিলেন। তার দু’কাঁধের মধ্যবর্তী
স্থান প্রশস্ত ছিল। তার মাথার চুল কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। [২১]
[২১] সহীহ বুখারী, হা/৩৫৫১;
সহীহ মুসলিম, হা/৬২১০; আৰু দাউদ, হা/৪০৭৪, নাসাঈ, হা/৫২৩২ মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৪৯৬;
সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৮৪; মিশকাত, হা/৫৭৮৩
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তাঁর চুল সামান্য কোঁকড়ানো
ছিল
২২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنِي أَبِي ، عَنْ قَتَادَةَ ، قَالَ : قُلْتُ لأَنَسٍ : كَيْفَ كَانَ
شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَ : " لَمْ
يَكُنْ بِالْجَعْدِ , وَلا بِالسَّبْطِ ، كَانَ يَبْلُغُ شَعْرُهُ شَحْمَةَ
أُذُنَيْهِ "
কাতাদা
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর কেশ কেমন ছিল সে সম্পর্কে আমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট
জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বললেন, তিনি অত্যাধিক কোকড়ানো কিংবা একেবারে সোজা
কেশবিশিষ্ট ছিলেন না। তার কেশ উভয় কানের লতি পর্যন্ত শোভা পেত। [২২]
[২২] নাসাঈ, হা/৫২৩৪;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৩৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৩৭; মিশকাত, হা/৪৪৬০, সহীহ বুখারী
, হা/৩৫৫১; সহীহ মুসলিম, হা/৬২১০; আবু দাঊদ, হা/৪০৭৪; নাসাঈ, হা/৫২৩২, মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৮৪৯৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৮৪; মিশকাত, হা/৫৭৮৩; সহীহ মুসলিম, হা/৬২১৩; নাসাঈ,
হা/৫০৫৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৪০৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৯১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি চুলের মধ্যে বেণী
বাঁধতেন
২৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ ، عَنْ مُجَاهِدٍ ، عَنْ أُمِّ هَانِئٍ
بِنْتِ أَبِي طَالِبٍ ، قَالَتْ : " قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ مَكَّةَ قَدْمَةً , وَلَهُ أَرْبَعُ غَدَائِرَ " .
উম্মে
হানী বিনতে আবু তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) চারটি চুলের বেণী নিয়ে মক্কায় আগমন করেছিলেন। [২৩]
ব্যাখ্যা : উল্লেখিত হাদীসে বেণী বা ঝুটি বলতে মহিলাদের মতো বেণী বা ঝুটি উদ্দেশ্য
নয়। বরং এর দ্বারা বিশেষ ধরনের চুলের পরিপাটির উদ্দেশ্য। কেননা রাসূলুল্লাহ (সঃ)
পুরুষদেরকে মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
[২৩] আবু দাউদ, হা/৪১৯৩;
ইবনে মাজাহ, হা/৩৬৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৯৩৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৫৫৭৩
মিশকাত, হা/৪৪৪৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ
بْنُ نَصْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ ، عَنْ
مَعْمَرٍ ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ ، عَنْ أَنَسٍ : " أَنَّ شَعْرَ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ إِلَى أَنْصَافِ
أُذُنَيْهِ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মাথার চুল তার দু’কানের মাঝামাঝি পর্যন্ত লম্বা ছিল।
[২৪]
[২৪] সহীহ মুসলিম, হা/৬২১৫
আৰু দাউদ, হা/৪১৮৮; নাসাঈ, হা/৫০৬১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২১৩৯ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুলের মধ্যে সিঁথি করতেন
২৫
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ
بْنُ نَصْرٍ ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ ، عَنْ يُونُسَ بْنِ
يَزِيدَ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ : " أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُسْدِلُ شَعْرَهُ ، وَكَانَ
الْمُشْرِكُونَ يَفْرِقُونَ رُءُوسَهُمْ ، وَكَانَ أَهْلُ الْكِتَابِ يُسْدِلُونَ
رُءُوسَهُمْ ، وَكَانَ يُحِبُّ مُوَافَقَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ فِيمَا لَمْ
يُؤْمَرْ فِيهِ بِشَيْءٍ ، ثُمَّ فَرَقَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ رَأْسَهُ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার কেশ নিম্নদেশে ঝুলিয়ে রাখতেন (অর্থাৎ প্রথমদিকে তিনি
সিথি করতেন না)। আর মুশরিকরা তাদের মাথায় সিথি করত। পক্ষান্তরে আহলে কিতাব তাদের
মাথার চুল ঝুলিয়ে রাখত। প্রথমদিকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) গ্ৰ যে ব্যাপারে প্রত্যাদেশ
না পেতেন, সেসব ব্যাপারে আহলে কিতাবদের অনুসরণ পছন্দ করতেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সঃ)
তার কেশকে সিথি করতেন। [২৫]
[২৫] সহীহ বুখারী, হা/৩৫৫৮,
নাসাঈ, হা/৫২৩৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬০৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، عَنْ
إِبْرَاهِيمَ بْنِ نَافِعٍ الْمَكِّيِّ ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ ، عَنْ
مُجَاهِدٍ ، عَنْ أُمِّ هَانِئٍ ، قَالَتْ : " رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَا ضَفَائِرَ أَرْبَعٍ " .
উম্মে
হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি চুলের চারটি বেণী
বাধা অবস্থায় দেখেছি। [২৬]
[২৬] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৭৪৩০ মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/২০৪৮৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মাথার
চুল বিন্যাস করা |
পরিচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ ও মাথার কেশ
পরিপটি করতেন
২৭
حَدَّثَنَا
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنُ
بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ
عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كُنْتُ أُرَجِّلُ
رَأْسَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَأَنَا حَائِضٌ
" .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি হায়েয (ঋতুবতী) অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও এর মাথার কেশ পরিপাটি
করতাম। [২৭]
[২৭] মুয়াত্তা ইমাম
মালেক, হা/১৩৩; সহীহ বুখারী, হা/২৯৫; নাসাঈ, হা/২৭৭; মুজামুল আওসাত, হা/২০৬৬ দারেমী,
হা/১০৫৮ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/১৩৫৯ মিশকাত, হা/৪৪১৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি ডান দিক থেকে কেশ
বিন্যাস করতেন
২৮
حَدَّثَنَا هَنَّادُ
بْنُ السَّرِيِّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ ، عَنِ الأَشْعَثِ بْنِ
أَبِي الشَّعْثَاءِ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ مَسْرُوقٍ ، عَنْ عَائِشَةَ , قَالَتْ :
" إِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيُحِبُّ
التَّيَمُّنَ فِي طُهُورِهِ إِذَا تَطَهَّرَ ، وَفِي تَرَجُّلِهِ إِذَا تَرَجَّلَ
، وَفِي انْتِعَالِهِ إِذَا انْتَعَلَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন ওযু করতেন তখন ডান দিক থেকে শুরু করতেন, কেশ বিন্যাস ও
জুতা পরিধানের কাজও ডান দিক থেকে আরম্ভ করতেন। [২৮]
ব্যাখ্যা : হাদীসে উল্লেখিত বিষয়গুলোই নয়; বরং যেসব কাজে সৌন্দর্য ও মর্যাদা
বৃদ্ধি পায়, সেসব কাজ ডান দিকে হতে আরম্ভ করা মুস্তাহাব। যেমন- জামা বা মোজা
পরিধান করার সময় ডান দিক থেকে শুরু করা পছন্দনীয়। কারণ এর দ্বারা সৌন্দর্য
বৃদ্ধি পায়। এমনিভাবে মসজিদে প্রবেশ করার সময় ডান পা প্রথমে দেবে। কারণ মসজিদে
প্রবেশ করা মর্যাদার বিষয়। আর যেসব কাজে সৌন্দর্য ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায় না, সেসব
কাজ বাম দিক থেকে আরম্ভ করা মুস্তাহাব। যেমন- পায়খানায় প্রবেশের সময় বাম পা আগে
দেয়া, কাপড় ও জুতা খোলার সময় বাম পার্শ্ব হতে খুলা আরম্ভ করা এবং মসজিদ হতে বের
হওয়ার সময় বাম পা আগে বের করা। আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মূলনীতি
হিসেবে গণ্য হবে।
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৬৩৯;
ইবনে মাজাহ, হা/৪০১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৭০৫; মুসনাদে আবু ই'আলা, হা/৪৮৫১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
তিনি প্রত্যহ কেশ বিন্যাস
করতে নিষেধ করেছেন
২৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ
حَسَّانَ ، عَنِ الْحَسَنِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ ، قَالَ : "
نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عنِ التَّرَجُّلِ , إِلا
غِبًّا " .
আবদুল্লাহ
ইবনে মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যহ (বারবার) কেশ বিন্যাস
করতে নিষেধ করেছেন।[1]
[1] আবু দাউদ, হা/৪১৬১;
নাসাঈ, হা/৫০৫৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৮৩৯; মুজামুল কাবীর, হা/১৬৬৪; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৫৪৮৪; জামেউস সগীর, হা/১২৮২৬; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৫০১; মিশকাত, হা/৪৪৪৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বার্ধক্য
(চুল সাদা হওয়া) |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চোখ ও দুকানের মধ্যবর্তী অংশের কিছু চুল সাদা হয়েছিল:
৩০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا
هَمَّامٌ ، عَنْ قَتَادَةَ ، قَالَ : قُلْتُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ : هَلْ خَضَبَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَ : " لَمْ
يَبْلُغْ ذَلِكَ ، إِنَّمَا كَانَ شَيْبًا فِي صُدْغَيْهِ " وَلَكِنْ أَبُو
بَكْرٍ ، خَضَبَ بِالْحِنَّاءِ وَالْكَتَمِ .
কাতাদা
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আনাস ইবনে মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কি খিযাব
ব্যবহার করতেন? তিনি বললেন, তিনি ঐ পর্যন্ত পৌছেন নি। (তার দাড়ি ও চুল এতদূর সাদা
হয়নি, যাতে খেযাবের প্রয়োজন হয়)। কেবলমাত্র তার চোখ ও দু’কানের মধ্যবর্তী অংশের
কিছু চুল সাদা হয়েছিল। তবে আবু বকর (রাঃ) মেহেদী পাতা ও কাতাম [৩০] দ্বারা খিযাব
লাগাতেন। [৩১]
[৩০] কাতাম এক ধরণের
সবুজ রঙের উদ্ভিদ। এটা দ্বারা খিযাব তৈরি করা হয়।
[৩১] সহীহ মুসলিম, হা/৬২১৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৮৫১; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৭৮৩; শারহুস
সুন্নাহ, হা/৩১৭৬; মুসনাদে আবু ই'আলা, হা/২৮৯৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তাঁর মাথা ও দাড়িতে মাত্র
১৪টি সাদা চুল ছিল
৩১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ ، وَيَحْيَى بْنُ مُوسَى ، قَالا : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ
، عَنْ مَعْمَرٍ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : " مَا عَدَدْتُ فِي
رَأْسِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِحْيَتِهِ , إِلا
أَرْبَعَ عَشْرَةَ شَعْرَةً بَيْضَاءَ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মাথা ও দাড়িতে মাত্র ১৪টি সাদা চুল গণনা করেছি।
[৩২]
ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর অতি স্বল্প পরিমাণ সাদা চুল ছিল। তবে এর পরিমাণ
নিয়ে মতভেদ রয়েছে। এ হাদীসে ১৪টির কথা বলা হয়েছে। আর কোন বর্ণনায় ১৭টি, কোন
বর্ণনায় ১৮টি, আবার কোন বর্ণনায় ২০টির কথা উল্লেখ রয়েছে। আসলে এসব বর্ণনাতে কোন
বৈপরিত্য নেই। কারণ প্রত্যেকটি বর্ণনা আলাদা সময়ের সাথে অথবা বিভিন্ন জনের গণনার
পার্থক্যের কারণে এ বৈপরিত্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রত্যেক রিওয়ায়াতের উদ্দেশ্য
হলো রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ এর সাদা চুল স্বল্প ছিল, এটাই বুঝানো।
[৩২] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১২৭১৩, শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৫৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৯৩ মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক,
হা/২০১৮৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : أَخْبَرَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ ،
وَقَدْ سُئِلَ عَنْ شَيْبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم ،
فَقَالَ : " كَانَ إِذَا دَهَنَ رَأْسَهُ لَمْ يُرَ مِنْهُ شَيْبٌ ، وَإِذَا
لَمْ يَدْهِنْ رُئِيَ مِنْهُ " .
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
তাকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) র এর সাদা চুল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তখন তিনি
বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন তার মাথায় তৈল ব্যবহার করতেন তখন সাদা চুল দেখা যেত
না। পক্ষাস্তরে তৈল ব্যবহার না করলে কয়েক গাছি চুল সাদা হয়েছে বলে মনে হতো। [৩৩]
[৩৩] সহীহ মুসলিম, হা/৬২২৯.
সুনানুল কাবীর লিন নাসাঈ, হা/৯৩৪৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ عَمْرِو بْنِ الْوَلِيدِ الْكِنْدِيُّ الْكُوفِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ آدَمَ ، عَنْ شَرِيكٍ ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ، عَنْ
نَافِعٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ، قَالَ : " إِنَّمَا كَانَ
شَيْبُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوًا مِنْ عِشْرِينَ
شَعْرَةً بَيْضَاءَ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সাদা চুলের সংখ্যা ছিল ২০ এর কাছাকাছি। [৩৪]
[৩৪] ইবনে মাজাহ, হা/৩৬৩০;
সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬২৬৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
কয়েকটি সূরার প্রভাবে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চুল সাদা হয়ে গিয়েছিল
৩৪
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاءِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ
، عَنْ شَيْبَانَ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
، قَالَ : قَالَ أَبُو بَكْرٍ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، قَدْ شِبْتَ ، قَالَ :
" شَيَّبَتْنِي هُودٌ ، وَالْوَاقِعَةُ ، وَالْمُرْسَلاتُ ، وَعَمَّ
يَتَسَاءَلُونَ ، وَإِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবু বকর (রাঃ) আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার চুল তো সাদা হয়ে
গিয়েছে। আপনি বার্ধক্যে পৌছে গেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, সূরা হূদ, ওয়াকিয়া, মুরসালাত, আম্মা ইয়াতাসা-আলূন, ইযাশ-শামসু কুভভিরাত
আমাকে বৃদ্ধ বানিয়ে দিয়েছে।[১]
[৩৫]মুস্তাদরাকে হাকেম,
হা/৩৩১৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪১৭৫; জামেউস সগীর, হা/৬০৩৬; সিলসিলা সহীহাহ,হা/৯৫৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৫
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
بْنُ وَكِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
صَالِحٍ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ ، قَالَ : قَالُوا : يَا
رَسُولَ اللَّهِ ، نَرَاكَ قَدْ شِبْتَ ، قَالَ : " قَدْ شَيَّبَتْنِي هُودٌ
وَأَخَوَاتُهَا " .
আবু
জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনার বয়োবৃদ্ধ হওয়ার স্পষ্ট
নিদর্শন লক্ষ্য করছি। তিনি বললেন, হুদ এবং তদানুরূপ সূরাগুলো আমাকে বার্ধক্যে
উপণীত করেছে। [৩৬]
ব্যাখ্যা : -এর দ্বারা ঐসব সূরা উদ্দেশ্য, যাতে কিয়ামত, জাহান্নাম প্রভৃতি
ভীতিপ্রদর্শন বিষয়ক আলোচনা করা হয়েছে।
[৩৬] মুজামুল কাবীর
লিত তাবরানী, হা/১৭৭৭৪ মুসনাদে আবু ই'আলা, হা/৮৮০: মিশকাত, হা/৫৩৫৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তাঁর চুল সাদা হলেও লাল মনে
হতো
৩৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَنْبَأَنَا شُعَيْبُ بْنُ صَفْوَانَ ، عَنْ
عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ ، عَنِ إِيَادِ بْنِ لَقِيطٍ الْعِجْلِيِّ ، عَنْ
أَبِي رِمْثَةَ التَّيْمِيِّ ، تَيْمِ الرَّبَابِ ، قَالَ : أَتَيْتُ النَّبِيَّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَمَعِي ابْنٌ لِي ، قَالَ : فَأَرَيْتُهُ ،
فَقُلْتُ لَمَّا رَأَيْتُهُ : " هَذَا نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ ثَوْبَانِ أَخْضَرَانِ ، وَلَهُ شَعْرٌ قَدْ عَلاهُ
الشَّيْبُ ، وَشَيْبُهُ أَحْمَرُ " .
তায়মুর
রাবাব গোত্রের আবু রিমছা আত-তায়মী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার আমি আমার ছেলেকে নিয়ে নবী (সঃ) এর কাছে এলাম। তিনি বললেন, আমার
ছেলেকে তাকে দেখালাম। তারপর যখন তাকে দেখলাম তখন বললাম, ইনি আল্লাহর নবী (সঃ)। সে
সময় তার পরনে ২টি সবুজ রঙের কাপড় ছিল। তার চুল সাদা দেখা যাচ্ছিল কিন্তু মনে
হচ্ছিল লাল। [৩৭]
[৩৭] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৭১১১; মুজামুল কাবীর, হা/১৮১৭৬; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪২০৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০৯১
মিশকাত, হা/৪৩৫৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিঁথি কাটার স্থানে কয়েকটি চুল সাদা ছিল
৩৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ النُّعْمَانِ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ، قَالَ : قِيلَ
لِجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ : أَكَانَ فِي رَأْسِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْبٌ ؟ قَالَ : " لَمْ يَكُنْ فِي رَأْسِ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , شَيْبٌ إِلا شَعَرَاتٌ فِي مَفْرِقِ
رَأْسِهِ ، إِذَا ادَّهَنَ وَارَاهُنَّ الدُّهْنُ " .
সিমাক
ইবনে হারব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মাথায় সাদা (পাকা)
চুল ছিল কি? তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সিথি কাটার স্থানে কেবল কয়েকটি সাদা
চুল শোভা পাচ্ছিল। এ চুলগুলোতে তৈল ব্যবহার করা হলে সাদা ঢেকে যেত। [৩৮]
[৩৮] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২১০৩০ মুজামুল কাৰীর, হা/১৯৩০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর খিযাব
লাগানো |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম খিযাব ব্যবহার করতেন
৩৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ ، عَنِ إِيَادِ بْنِ لَقِيطٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنِي أَبُو
رِمْثَةَ ، قَالَ : أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مَعَ ابْنٍ لِي ، فَقَالَ : " ابْنُكَ هَذَا ؟ " فَقُلْتُ : نَعَمْ ,
أَشْهَدُ بِهِ ، قَالَ : " لا يَجْنِي عَلَيْكَ ، وَلا تَجْنِي عَلَيْهِ
" ، قَالَ : وَرَأَيْتُ الشَّيْبَ أَحْمَرَ
আবু
রিমসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একবার আমার ছেলেকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর কাছে এলাম। তিনি তখন
জিজ্ঞেস করলেন, এ ছেলেটি কি তোমার? আমি বললাম, জি— হ্যা। আপনি যদি এর সাক্ষী
থাকতেন! তিনি বললেন, সে অপরাধ করলে তা তোমার উপর বর্তাবে না এবং তুমি অপরাধ করলে
তার উপর বর্তাবে না। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি তার কেশ লাল দেখলাম। [৩৯]
[৩৯] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৭১১৩ শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৫৭ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
بْنُ وَكِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبِي ، عَنْ شَرِيكٍ ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ
مَوْهَبٍ ، قَالَ : سُئِلَ أَبُو هُرَيْرَةَ : هَلْ خَضَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَ : " نَعَمْ "
উসমান
ইবনে মাওহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আবু হুরায়রা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কি খিযাব
ব্যবহার করতেন? তখন তিনি বললেন, হ্যা। [৪০]
[৪০] তাহযীবুল আছার,
হা/৯১৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪০
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ ،
قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ ، عَنْ
أَنَسٍ ، قَالَ : " رَأَيْتُ شَعْرَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ مَخْضُوبًا " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মাথার চুল খিযাবকৃত দেখেছি।
ব্যাখ্যা : কালো খিযাব ব্যবহার করা জায়েয নয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, শেষ
যামানায় এমন লোক পাওয়া যাবে, যারা কালো খিযাব বা কলপ ব্যবহার করবে। তারা
জান্নাতের সুঘ্ৰানও পাবে না। [৪১]
[৪১] আবু দাউদ, হা/৪২১৪ং
নাসাঈ, হা/৫০৭৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুরমা
ব্যবহার |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রত্যেক
রাতে উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা লাগাতেন
৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ ،
عَنْ عَبَّادِ بْنِ مَنْصُورٍ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " اكْتَحِلُوا
بِالإِثْمِدِ , فَإِنَّهُ يَجْلُو الْبَصَرَ ، وَيُنْبِتُ الشَّعْرَ "
وَزَعَمَ " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَتْ
لَهُ مُكْحُلَةٌ يَكْتَحِلُ مِنْهَا كُلَّ لَيْلَةٍ , ثَلاثَةً فِي هَذِهِ ،
وَثَلاثَةً فِي هَذِهِ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) বলেছেন, তোমরা ইছমিদ সুরমা ব্যবহার করো। কারণ, তা চোখের জ্যোতি
বৃদ্ধি করে ও পরিষ্কার রাখে এবং অধিক ভ্রু উৎপন্ন করে (ভ্র উদগত হয়)। ইবনে আব্বাস
(রাঃ) আরো বলেন, নবী (সঃ) এর একটি সুরমাদানী ছিল। প্রত্যেক রাত্রে (ঘুমানোর
পূর্বে) ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন। [৪২]
ব্যাখ্যা : সুরমা ব্যবহারের হুকুম ও পদ্ধতি :
নারী-পুরুষ সকলের জন্য চোখে সুরমা লাগানো ভালো। তবে সওয়াবের নিয়তে সুরমা লাগানো
উচিত, যাতে চোখের উপকারের সাথে সাথে রাসূলুল্লাহ (সঃ) র এর সুন্নতের অনুসরণের
সওয়াবও লাভ হয়। অত্র হাদীসে সুরমা ব্যবহারের তিনটি উপকারের কথা উল্লেখ করা
হয়েছে, যা বর্তমান বিজ্ঞানে হুবহু প্রমাণিত। এছাড়াও গবেষণায় আরো উপকারিতা
পাওয়া গেছে সেগুলো হলো :
১. সর্বধরনের ছোয়াচে রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে।
২. চোখের প্রবেশকৃত ধূলাবালী নিঃসরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে প্রভৃতি।
৩. অত্যন্ত কার্যকরী জীবাণুনাশক।
৪. চোখে জ্বালাপোড়া খুব কম হয়।
[৪২] সুনানুল কুবর লিল
ইমাম বাইহাকী, হা/৮৫১৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি সাহাবীদেরকে ইছমিদ
সুরমা ব্যবহারের জন্য উপদেশ দিয়েছেন
৪২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ ، عَنْ جَابِرٍ هُوَ ابْنُ عَبْدِ
اللَّهِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :
" عَلَيْكُمْ بِالإِثْمِدِ عِنْدَ النَّوْمِ ، فَإِنَّهُ يَجْلُو الْبَصَرَ ،
وَيُنْبِتُ الشَّعْرَ " .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, তোমরা শোয়ার সময় অবশ্যই ‘ইছমিদ’ সুরমা ব্যবহার
করবে। কারণ, তা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে এবং এর ফলে অধিক ভ্রূ জন্মায়। [৪৩]
[৪৩] ইবনে মাজাহ, হা/৩৪৯৬;
মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/২০৫৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " إِنَّ خَيْرَ أَكْحَالِكُمُ الإِثْمِدُ ، يَجْلُو الْبَصَرَ ،
وَيُنْبِتُ الشَّعْرَ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ)বলেছেন, তোমাদের জন্য ইছমিদ সুরমা সর্বোৎকৃষ্ট। কারণ, তা
দৃষ্টি বাড়ায় এবং এর ফলে অধিক ভ্রূ জন্মায় (উদগত হয়) [৪৪]
[৪৪] ইবনে মাজাহ, হা/৩৪৯৭
ইবনে হিব্বান, হা/ ৬০৭৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮২৪৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পোশাক-পরিচ্ছদ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় পোষাক ছিল কামীস
৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى ، وَأَبُو
تُمَيْلَةَ ، وَزَيْدُ بْنُ حُبَابٍ ، عَنْ عَبْدِ الْمُؤْمِنِ بْنِ خَالِدٍ ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَتْ : "
كَانَ أَحَبَّ الثِّيَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ الْقَمِيصُ " .
উম্মে
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) পোষাক হিসেবে ‘কামীস’ বা জামা সর্বাধিক পছন্দ করতেন। [৪৫]
ব্যাখ্যা : বিভিন্ন হাদীসের ভিত্তিতে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বিভিন্ন ধরনের
জামা পরিধান করতেন। তার কোনটির দৈর্ঘ্য ছিল টাখনু অবধি। কোনটি কিছুটা ছোট, যা
হাটুর নিমভাগ পর্যন্ত ছিল। আবার কোনটির হাতা ছিল হাতের আঙ্গুলের প্রান্ত পর্যন্ত
লম্বা। কোনটির হাতা কিছুটা ছোট, যা কব্জি পর্যন্ত ছিল।
পুরুষের পোশাক পরিধানের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সঃ)একটি বিশেষ দিক অত্যন্ত গুরুত্ব
প্রদান করেছেন। তিনি পুরুষের পোশাকের নিচের অংশ পায়ের গোড়ালী থেকে উপরে রাখার
আদেশ করেছেন এবং গোড়ালীর নিচে পাজামা, লুঙ্গি, জামা বা কোন পোশাক পরিধান করতে
হারাম ঘোষণা করেছেন।
সর্বদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর লুঙ্গি ও জামা টাখনুর' উপরে থাকত। সাধারণত তিনি
পোশাকের নিচের অংশ হাটু ও গোড়ালীর বরাবর বা নিসফে সাক’ পর্যন্ত পরিধান করতেন।
বিভিন্ন হাদীসে তিনি মুসলিম উম্মাহর পুরুষগণকে এভাবে পোশাক পরিধান করতে আদেশ
দিয়েছেন। সুতরাং মুসলিম পুরুষের জন্য স্বেচ্ছায় টাখনুর নিচে পোশাক পরিধান করা
হারাম। আবু হুরায়রা, আবদুল্লাহ ইবনে উমর ও অন্যান্য সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, যে ব্যাক্তি দাম্ভিকতার সাথে নিজের পোশাক ঝুলিয়ে পরিধান করবে
, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। [৪৬]
[৪৫] ইবনে মাজাহ, হা/৪০২৭।
[৪৬] সহীহ বুখারী, হা/৩৬৬৫; সহীহ মুসলিম, হা/৫৫৭৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৫
حَدَّثَنَا أَبُو
عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ ، قَالَ
: حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قُشَيْرٍ ، عَنْ
مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَهْطٍ مِنْ مُزَيْنَةَ لِنُبَايِعَهُ ،
" وَإِنَّ قَمِيصَهُ لَمُطْلَقٌ ، أَوْ قَالَ : زِرُّ قَمِيصِهِ مُطْلَقٌ
قَالَ : فَأَدْخَلْتُ يَدِي فِي جَيْبِ قَمِيصِهِ , فَمَسَسْتُ الْخَاتَمَ "
.
মু’আবিয়া
ইবনে কুররা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি মুযায়না গোত্রের একদল লোকের সাথে বায়’আত গ্রহণ করার জন্য রাসূলুল্লাহ
(সঃ) এর কাছে উপস্থিত হলাম। এ সময় তার জামার বোতাম খোলা ছিল। আমি তখন (বরকত লাভ
করার জন্য) জামার ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে মোহরে নবুওয়াত স্পর্শ করলাম [৪৭]
ব্যাখ্যা : বিভিন্ন হাদীসের আলোকে মনে হয় যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জামার বোতাম
ছিল। তবে তিনি সাধারণত বোতাম লাগাতেন না। ফলে জামার ভেতর হাত প্রবেশ করিয়ে পিঠের
মোহরে নবুওয়াত স্পর্শ করা সহজ ছিল।
[৪৭] আবু দাউদ, হা/৪০৮৪;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৬১৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি ইয়ামেনী নকশী কাপড়ও
পরিধান করতেন
৪৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ
بْنُ حُمَيْدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ الشَّهِيدِ ، عَنِ
الْحَسَنِ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ وَهُوَ يَتَّكِئُ عَلَى أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ عَلَيْهِ
ثَوْبٌ قِطْرِيٌّ " , قَدْ تَوَشَّحَ بِهِ ، فَصَلَّى بِهِمْ .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
নবী (সঃ) উসামা ইবনে যায়েদ (রাঃ)-এর কাধে ভর করে বাইরে বের হলেন। এ সময় তার দেহে
পরা ছিল একটি ইয়ামেনী নকশী কাপড়। তারপর তিনি লোকদের নামাযের ইমামতি করেন। [৪৮]
ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) অসুস্থতার কারণে উসামা (রাঃ) এর কাধে ভর করে
এসেছিলেন।
[৪৮] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৩৭৮৭ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি নতুন কাপড় পরিধানকালে
কাপড়ের নাম উচ্চারণ পূর্বক দু’আ পাঠ করতেন
৪৭
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ
بْنُ نَصْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ إِيَاسٍ الْجُرَيْرِيِّ ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ ، قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, إِذَا اسْتَجَدَّ ثَوْبًا سَمَّاهُ بِاسْمِهِ عِمَامَةً أَوْ قَمِيصًا أَوْ
رِدَاءً ، ثُمَّ يَقُولُ : " اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ كَمَا كَسَوْتَنِيهِ
، أَسْأَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ
وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ " .
আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন নতুন কাপড় পরিধান করতেন তখন কাপড়ের নাম পাগড়ি অথবা
কামীস অথবা চাদর ইত্যাদি উচ্চারণ করতেন। তারপর তিনি এ দুআ পড়তেনঃ
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমারই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। যেহেতু তুমিই আমাকে তা পরিধান
করিয়েছ। আমি তোমার কাছে এর কল্যাণ প্রার্থনা করছি, আরো কল্যাণ চাচ্ছি যে উদ্দেশে
এটা তৈরি করা হয়েছে তার। আর আমি তোমার স্মরণাপন্ন হচ্ছি এর যাবতীয় অনিষ্ট হতে
এবং যে উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে তার অনিষ্ট হতে। [৪৯]
ব্যাখ্যা : যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) কোন নতুন জামা পরিধান করতেন, তখন আনন্দ
প্রকাশার্থে তার নাম নির্ধারণ করতেন। যেমন- বলতেন, আল্লাহ তা'আলা আমাকে এ জামাটি
বা পাগড়িটি দান করেছেন। তারপর দুআ পাঠ করে পরিধান করতেন।
[৪৯] আবু দাউদ, হা/৪০২২:
মুসনাদে আহমাদ, হা/১১২৬৬, ইবনে হিব্বান, হা/৪৫২০; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হা/১০০৬৮:
মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭৪০৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি প্রিয় পোষাক ছিল হিবারা
৪৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي
أَبِي ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " كَانَ
أَحَبَّ الثِّيَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
يَلْبَسُهُ الْحِبَرَةُ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর নিকট সর্বাধিক প্রিয় কাপড় হলো (ইয়ামানে তৈরি চাদর)
হিবারা। [৫০]
ব্যাখ্যা : সে সময়ে পোশাকের বিখ্যাত স্থান ইয়ামানের তৈরি ডোরা ও কারুকার্য
সম্বলিত সূতী বা কাতান প্রকৃতির চাদরকে হিবারা বলা হতো। এগুলো কখনো লাল, কখনো নীল,
আবার কখনো সবুজ ডোরাকাটা হতো।
[৫০] সহীহ বুখারী, হা/৫৮১৩;
সহীহ মুসলিম, হা/৫৫৬২,নাসাঈ, হা/৫৩১৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪১৪০; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ,
হা/৯৫৬৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি লাল রঙ্গের নকশী করা
চাদরও পরিধান করতেন
৪৯
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : "
رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَعَلَيْهِ حُلَّةٌ
حَمْرَاءُ , كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَرِيقِ سَاقَيْهِ " .
আবু
জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সঃ) কে লাল নকশী চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। আজও যেন আমি তার উভয়
গোড়ালীর ঔজ্জ্বল্য প্রত্যক্ষ করছি। [৫১]
[৫১] সহীহ মুসলিম, হা/১১৪৭;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৭৮১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ خَشْرَمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ ، عَنْ إِسْرَائِيلَ ،
عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ، قَالَ : " مَا
رَأَيْتُ أَحَدًا مِنَ النَّاسِ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ , مِنْ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، إِنْ كَانَتْ جُمَّتُهُ لَتَضْرِبُ
قَرِيبًا مِنْ مَنْكِبَيْهِ " .
বারা
ইবনে আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘লাল হুল্লা' পরিহিত কাউকে আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ এর চেয়ে অধিক সুদর্শন
দেখিনি। আর তার কেশ (জুম্মা) উভয় কাঁধ স্পর্শ করছিল। [৫২]
ব্যাখ্যাঃ এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে সেলাই ছাড়া লুঙ্গি ও চাদর। এগুলো তৎকালীন আরব
দেশের সর্বাধিক ব্যবহৃত পোশাক ছিল। এটি রাসূলুল্লাহ (সঃ)sঞ্জ সর্বাধিক ব্যবহার
করতেন। কেউ কেউ বলেছেন, চাদর ও লুঙ্গি একই প্রকারের একই রংয়ের প্রস্তুত হলে তাকে حُلَّةٌ
বলে।
[৫২] সহীহ বুখারী, হা/৫৯০১;
নাসাঈ, হা/৫০৬২; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৬৩৬ সুনানে কুবরা, হা/৯২৭৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি সবুজ চাদরও পরিধান
করতেন
৫১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ إِيَادٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ أَبِي رِمْثَةَ ،
قَالَ : " رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
وَعَلَيْهِ بُرْدَانِ أَخْضَرَانِ " .
আবু
রিমছা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সঃ) ত্রকে দুটি সবুজ চাদর পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। [৫৩]
ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) তৎকালীন সময়ে প্রচলিত বিভিন্ন রংয়ের পোশাক পরিধান
করেছেন। বিভিন্ন হাদীসের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, তার মধ্যে সবুজ, সাদা ও মিশ্রিত
রং তিনি পছন্দ করতেন।
[৫৩] নাসাঈ, হা/১৫৭২;
মুসনাদে আহমাদ, হা/ ৭১১৭ সালানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/১৭৯৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি সাহাবীদেরকে সাদা রঙের
কাপড় পরিধান করতে উপদেশ দিয়েছেন
৫২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " عَلَيْكُمْ بِالْبَيَاضِ مِنَ الثِّيَابِ , لِيَلْبَسْهَا
أَحْيَاؤُكُمْ ، وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ ، فَإِنَّهَا مِنْ خِيَارِ
ثِيَابِكُمْ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, তোমরা সাদা রঙের কাপড় পরিধান করবে। তোমাদের যেন
সাদা কাপড় পরিধান করে এবং মুক্তদেরকে সাদা কাপড় দিয়ে দাফন দেয়। কেননা, সাদা
কাপড় তোমাদের সর্বোত্তম পোশাক। [৫৪]
[৫৪] নাসাঈ, হা/৫৩২৩;
সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৯৫৬৬ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ ، عَنْ مَيْمُونِ بْنِ
أَبِي شَبِيبٍ ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " الْبَسُوا الْبَيَاضَ , فَإِنَّهَا
أَطْهَرُ وَأَطْيَبُ ، وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ " .
সামুরা
ইবনে জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করো। কারণ, তা সর্বাধিক
পবিত্র ও উত্তম। আর তা দিয়েই তোমরা মৃতদের কাফন দাও। [৫৫]
[৫৫] মুজামুল কাবীর,
হা/৯৬৪; সহীহ তাঁরগীব ওয়াত তাঁরহীব, হা/২০২৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি কালো রঙের পশমী চাদরও
পরিধান করতেন
৫৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ ، قَالَ
: حَدَّثَنَا أَبِي ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ شَيْبَةَ ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ
شَيْبَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ , قَالَتْ : " خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاةٍ , وَعَلَيْهِ مِرْطٌ مِنْ شَعَرٍ
أَسْودَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রত্যুষে বাইরে বের হন। তখন তার দেহে কালো পশমের
একটি চাদর শোভা পাচ্ছিল। [৫৬]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৫৫৬৬;
আবু দাউদ, হা/৪০৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৩৩৪; সুনানের কুবরা লিল বাইহাকী, হা/৪৩৫৩;
মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪৭০৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি আঁটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট
রুমী জুব্বা পরিধান করেছিলেন
৫৫
حَدَّثَنَا يُوسُفُ
بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ
أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنِ الشَّعْبِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ
الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , " لَبِسَ جُبَّةً رُومِيَّةً , ضَيِّقَةَ الْكُمَّيْنِ
" .
মুগীরা
ইবনে শু’বা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সঃ) আটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট একটি রুমী জুব্বা পরিধান
করেন। [৫৭]
ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন যে পোশাক পেয়েছেন তাই ব্যবহার করেছেন। তিনি
সুতি, পশমী ও কাতানের তৈরি প্রভৃতি পোশাক ব্যবহার করেছেন। সবুজ, লাল, হলুদ, সাদা,
কালো ও মিশ্রিত যখন যে রংয়ের পোশাক পেয়েছেন পরিধান করেছেন। কারণ আরবে কোন পোশাক
তৈরি হতো না। এগুলো মক্কা-মদিনার বাইরে সিরিয়া, ইয়ামান প্রভৃতি দেশে তৈরি হতো।
তাই ব্যবসায়ীগণ যে পোশাক আনতেন তাই সাধ্যমতো ক্রয় করে বা উপহার হিসেবে যা পেতেন
তাই ব্যবহার করতেন ।
[৫৭] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৮২৬৫
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবন-যাপন |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণ জীবন-যাপন করতেন
৫৬
حَدَّثَنَا
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ ،
عَنْ أَيُّوبَ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ ، قَالَ : كُنَّا عِنْدَ أَبِي
هُرَيْرَةَ ، وَعَلَيْهِ ثَوْبَانِ مُمَشَّقَانِ مِنْ كَتَّانٍ فَتَمَخَّطَ فِي
أَحَدِهِمَا ، فَقَالَ : " بَخٍ بَخٍ يَتَمَخَّطُ أَبُو هُرَيْرَةَ فِي
الْكَتَّانِ ، لَقَدْ رَأَيْتُنِي , وَإِنِّي لأَخِرُّ فِيمَا بَيْنَ مِنْبَرِ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَحُجْرَةِ عَائِشَةَ
مَغْشِيًّا عَلَيَّ فَيَجِيءُ الْجَائِي فَيَضَعُ رِجْلَهُ عَلَى عُنُقِي , يَرَى
أَنَّ بِي جُنُونًا ، وَمَا بِي جُنُونٌ ، وَمَا هُوَ إِلا الْجُوعُ " .
মুহাম্মদ
ইবনে সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা একদিন আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তার দেহে দুটি
কাতানের কাপড় (অর্থাৎ একটি কাতানের চাদর ও একটি লুঙ্গি) শোভা পাচ্ছিল। আবু
হুরায়রা (রাঃ) তার একটি দ্বারা নাক পরিস্কার করছিলেন। তখন তিনি বলে উঠলেন। বাহ,
বাহ আবু হুরায়রা কাতানের কাপড় দ্বারা নাক পরিস্কার করছ! অথচ এক সময় এমন ছিল যখন
আমি নিজে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মিম্বর এবং আয়েশা (রাঃ) এর হুজরার পার্শ্বে পেটের
জ্বালায় কাতর হয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতাম। প্রায় আগন্তুকই আমাকে মৃগী রোগী
মনে করে গর্দানে পা দ্বারা আঘাত করত। প্রকৃতপক্ষে আমার মধ্যে উন্মাদনার লেশমাত্র
ছিল না, বরং প্রচণ্ড ক্ষুধার জ্বালাতেই আমার এ অবস্থা হতো। [৫৮]
ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জীবনী গ্রন্থে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা বর্ণনার
কারণ হলো, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর একনিষ্ঠ খাদেম ছিলেন। আবু হুরায়রা (রাঃ)
ছিলেন আসহাবে সুফফার একজন সদস্য। তারা রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মেহমান ছিলেন। আর
মেহমানের অবস্থা থেকে মেযবানের অবস্থা নির্ণয় করা যায়। অর্থাৎ মেহমান যেহেতু
খাবারের জন্য কষ্ট করছেন এতে সহজেই অনুমান করা যায় যে, মেযবান তথা নবী (সঃ) এর
ঘরে তখন পর্যাপ্ত খাবার ছিল না।
আবু হুরায়রা (রাঃ) উক্ত হাদীসে তার ইসলাম গ্রহণের পর প্রাথমিক সময়ের অবস্থা এবং
পরবর্তী অবস্থার মধ্যে পার্থক্য করেছেন। এটা রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ইন্তেকালের পরের
ঘটনা।
[৫৮] সহীহ বুখারী, হা/৭৩২৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি তৃপ্তি সহকারে রুটি এবং
গোশত ভক্ষণ করেননি
৫৭
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ الضُّبَعِيُّ ، عَنْ
مَالِكِ بْنِ دِينَارٍ ، قَالَ : " مَا شَبِعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ خُبْزٍ قَطُّ , وَلا لَحْمٍ ، إِلا عَلَى ضَفَفٍ " ،
قَالَ مَالِكٌ : سَأَلْتُ رَجُلا مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ : مَا الضَّفَفُ ؟
قَالَ : " أَنْ يَتَنَاوَلَ مَعَ النَّاسِ " .
মালিক
ইবনে দীনার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন রাসূলুল্লাহ (সঃ) কখনো ‘যাফাফ’ ছাড়া তৃপ্তি সহকারে রুটি এবং গোশত ভক্ষণ করেন
নি। মালিক ইবনে দীনার (রাঃ) বলেন, আমি এক বেদুইন কে জিজ্ঞেস করি, ‘যাফাফ’ কী? সে
বলল, মানুষের সাথে একত্রে পানাহার করা। ৫৯
ব্যাখ্যা : যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ঘরে মেহমান আগমন করত তখন মেহমানের সাথে খাওয়ার
সময় পেট পূর্ণ করে খেতেন। যাতে মেহমান ক্ষুধা রেখে তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ না করে।
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৩৮৮৬; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৩১০৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৫৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মোজা
ব্যবহার |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজ্জাশীর হাদিয়াকৃত কালো রঙের মোজা পরিধান করতেন
৫৮
حَدَّثَنَا هَنَّادُ
بْنُ السَّرِيِّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنْ دَلْهَمِ بْنِ صَالِحٍ ،
عَنْ حُجَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ،
" أَنَّ النَّجَاشِيَّ أَهْدَى لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, خُفَّيْنِ , أَسْوَدَيْنِ , سَاذَجَيْنِ , فَلَبِسَهُمَا ثُمَّ تَوَضَّأَ
وَمَسَحَ عَلَيْهِمَا " .
ইবনে
বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
নাজ্জাশী রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে এক জোড়া কালো রঙের মোজা দিয়া পঠন। এরপর তিনি ঐ
মোজা দুটি পরিধান করে ওজু করলেন এবং এর উপর মাসেহ করলেন। [৬০]
ব্যাখ্যা : তৎকালীন হাবশায় (আবিসিনিয়ার) বাদশার উপধি ছিল নাজ্জাশী। মক্কা হতে
মুসলমানদের হাবশায় হিজরত করাটা নাজশীর শাসনামলে হয়েছিল। তিনি ইসলাম কবুল
করেছিলেন। নাজ্জাশী রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বিভিন্ন জিনিস উপহার হিসেবে পাঠিয়ে
ছিলেন। তার মধ্যে একটি কোর্তা, একটি পাজামা এবং একটি রুমাল ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে সাহাবীদেরকে নিয়ে গায়েবানা জানাযা আদায় করেছিলেন। আর
এটাই হলো প্রথম গায়েবানা জানাযার নামায।
[৬০] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৩৮৮৬; আবু দাউদ, হা/১৫৫; ইনবে মাজাহ, হা/৫৪৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৫৯
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জুতা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিটি জুতায় দুটি করে ফিতা ছিল
৫৯
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاءِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنْ سُفْيَانَ
، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ ، قَالَ : " كَانَ لِنَعْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِبَالانِ , مَثْنِيٌّ شِرَاكُهُمَا " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর প্রতিটি জুতায় দুটি করে ফিতা ছিল। [৬১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/৩৬১৪;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৫৪ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তাঁর জুতা ছিল চামড়ার
৬০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ طَهْمَانَ ، قَالَ : أَخْرَجَ إِلَيْنَا أَنَسُ بْنُ
مَالِكٍ " نَعْلَيْنِ جَرْدَاوَيْنِ , لَهُمَا قِبَالانِ " ، قَالَ :
فَحَدَّثَنِي ثَابِتٌ بَعْدُ عَنْ أَنَسُ ، أَنَّهُمَا كَانَتَا نَعْلَيِ
النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ .
ঈসা
ইবনে তাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) আমাদের সম্মুখে দুটি লোমশূণ্য জুতা নিয়ে আসেন। আর ঐ
দুটিতে দুটি করে চামড়ার ফিতা ছিল। তিনি (আহমাদ) বলেন, পরে সাবিত (রহঃ) আমাকে আনাস
(রাঃ) হতে হাদীস শোনান যে, সে জুতা দুটি ছিল রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর। [৬২]
ব্যাখ্যা : সে সময়ে আরবে পশমসহ চামড়া দ্বারা জুতা বানানের রীতি ছিল এবং এ ধরনের
জুতা পরিধানের রীতি ছিল। এজন্য বর্ণনাকারী স্পষ্ট করে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ
(সঃ) এর জুতা পশমবিহীন ছিল।
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩১২৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি এসব জুতা পরে ওযু করতেন
৬১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
مَالِكٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ ، عَنْ
عُبَيْدِ بْنِ جُرَيْجٍ ، أَنَّهُ قَالَ لابْنِ عُمَرَ : رَأَيْتُكَ تَلْبَسُ
النِّعَالَ السِّبْتِيَّةَ ، قَالَ : إِنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يَلْبَسُ النِّعَالَ الَّتِي لَيْسَ فِيهَا
شَعَرٌ ، وَيَتَوَضَّأُ فِيهَا " ، فَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَلْبَسَهَا .
উবাইদ
ইবনে জুরাইজ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
ইবনে উমর (রাঃ)-কে বললেন, আমি আপনাকে লোমশূণ্য জুতা পরিধান করতে দেখেছি। অতঃপর
তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে এমন জুতা পরিধান করতে দেখেছি যাতে কোন লোম
ছিল না। আর তিনি সেই জুতা পরিধান করে অজু ও করেছেন। তাই আমি লোমশূণ্য জুতা অধিক
ভালোবাসি। [৬৩]
[৬৩] ইবনে মাজাহ, হা/৩৬১৪;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৫৪; সহীহ বুখারী, হা/৩১২৭
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তাঁর জুতার ফিতা দুটি ছিল
চামড়ার
৬২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ ، عَنْ مَعْمَرٍ ، عَنِ
ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ ، عَنْ صَالِحٍ مَوْلَى التَّوْءَمَةِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
، قَالَ : " كَانَ لِنَعْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قِبَالانِ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জুতায় দুটি করে চামড়ার ফিতা ছিল। [৬৪]
[৬৪] মুজামুল সগীর,
হা/২৫৪
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তালিযুক্ত জুতাও পরিধান করতেন
৬৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
، عَنِ السُّدِّيِّ ، قَالَ : حَدَّثَنِي مَنْ ، سَمِعَ عَمْرَو بْنَ حُرَيْثٍ ,
يَقُولُ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , "
يُصَلِّي فِي نَعْلَيْنِ مَخْصُوفَتَيْنِ " .
আমর
ইবনে হুরায়ছ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) -কে তালিযুক্ত জুতা পরিধান করে সালাত আদায় করতে
দেখেছি। [৬৫]
[৬৫]সুনানে কুবরা লিন
নাসাঈ, হা/৯৭১৭; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/১৪৬৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি এক পায়ে জুতা পরিধান
করতে নিষেধ করেছেন
৬৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
مَالِكٌ ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ ، عَنِ الأَعْرَجِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " لا
يَمْشِيَنَّ أَحَدُكُمْ فِي نَعْلٍ وَاحِدَةٍ ، لِيُنْعِلْهُمَا جَمِيعًا , أَوْ
لِيُحْفِهِمَا جَمِيعًا " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন এক পায়ে জুতা পরিধান করে না
হাটে। হয়তো দু'পায়ে জুতা পরিধান করবে কিংবা খালি পায়ে হাটবে। [৬৬]
[৬৬] মুয়াত্তা মালেক,
হা/১৬৩৩; সহীহ বুখারী, হা/ ৫৮৫৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৬৫
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مُوسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنْ
أَبِي الزُّبَيْرِ ، عَنْ جَابِرٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ " نَهَى أَنْ يَأْكُلَ ، يَعْنِي الرَّجُلَ ، بِشِمَالِهِ ، أَوْ
يَمْشِيَ فِي نَعْلٍ وَاحِدَةٍ " .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) ৰাম হাতে খেতে এবং এক পায়ে জুতা পরিধান করতে নিষেধ করেছেন। [৬৭]
[৬৭] সহীহ মুসলিম, হা/৫৬২০;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪১৫৩; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৩৩৩২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
জুতা পরিধান করা এবং খোলার
ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিক নিদের্শনা
৬৬
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ ، عَنْ مَالِكٍ . ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى ، قَالَ :
حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ ، عَنِ
الأَعْرَجِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ ، قَالَ : " إِذَا انْتَعَلَ أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِالْيَمِينِ
، وَإِذَا نَزَعَ فَلْيَبْدَأْ بِالشِّمَالِ ، فَلْتَكُنِ الْيَمِينُ أَوَّلَهُمَا
تُنْعَلُ , وَآخِرَهُمَا تُنْزَعُ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সঃ) ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কেউ জুতা পরিধান করে তখন সে যেন ডান দিক থেকে
আরম্ভ করে। কিন্তু খোলার সময় যেন বাম দিক হতে আরম্ভ করে। আর তাই জুতা পরিধানে ডান
পা প্রথমে দেবে এবং খোলার সময় বাম পা হতে প্রথমে জুতা খোলবে। [৬৮]
[৬৮] মুয়াত্তা মালেক,
হা/১৬৩৪; সহীহ বুখারী, হা/৫৮৫৫; সহীহ বুখারী, হা /১০০০৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান দিক থেকে জুতা পরিধান করতেন
৬৭
حَدَّثَنَا أَبُو
مُوسَى مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ
، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَشْعَثُ هُوَ ابْنُ أَبِي
الشَّعْثَاءِ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ مَسْرُوقٍ ، عَنْ عَائِشَةَ , قَالَتْ : كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يُحِبُّ التَّيَمُّنَ
مَا اسْتَطَاعَ فِي تَرَجُّلِهِ , وَتَنَعُّلِهِ وَطُهُورِهِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার কেশ বিন্যাস করা, জুতা পরিধান করা ও পবিত্রতা অর্জনের
ব্যাপারে ডান দিক হতে আরম্ভ করা পছন্দ করতেন। [৬৯]
[৬৯] সহীহ বুখারী, হা/৪২৬;
সুনানে নাসাঈ, হা/৪২১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৬৭১; ইবনে হিব্বান, হা/১০৯১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
আবু বকর ও উমার (রাঃ) ও
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ন্যায় জুতা ব্যবহার করতেন
৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ مَرْزُوقٍ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ
بْنُ قَيْسٍ أَبُو مُعَاوِيَةَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا هِشَامٌ ، عَنْ مُحَمَّدٍ ،
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : " كَانَ لِنَعْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِبَالانِ وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ " ، وَأَوَّلُ
مَنْ عَقَدَ عَقْدًا وَاحِدًا عُثْمَانُ .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর (রাঃ) ও উমার (রাঃ)
প্রমুখের জুতায় দুটি করে ফিতা ছিল। উসমান (রাঃ)-ই সর্বপ্রথম এক ফিতাবিশিষ্ট জুতা
পরিধান করেন।[৭০]
[৭০] মুজামুল কাবীর,
হা/১২৮
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আংটির
বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আংটিতে আবিসিনীয় পাথর বসানো ছিল
৬৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ وَهْبٍ ،
عَنْ يُونُسَ ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : "
كَانَ خَاتَمُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ وَرِقٍ ،
وَكَانَ فَصُّهُ حَبَشِيًّا " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাঃ) রূপার আংটি ব্যবহার করতেন। আর তার আংটিতে আবিসিনীয় পাথর বসানো
ছিল। [৭১]
[৭১] আবু দাউদ, হা/৪২১৮
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি রৌপ্যের আংটি ছিল
৭০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ ، عَنْ
نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ " اتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ فِضَّةٍ ، فَكَانَ يَخْتِمُ بِهِ وَلا
يَلْبَسُهُ " .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ)একটি রৌপ্যের আংটি তৈরি করেছিলেন। তিনি তা দ্বারা (চিঠিপত্রে) সীল
মারতেন, তবে তিনি (সচরাচর) তা পরিধান করতেন না। [৭২]
[৭২] নাসাই, হা/৫২১৮;
মুসনাদে আহমদ, হা/৫৩৬৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সীল মারার জন্য আংটিটি তৈরি করেছিলেন
৭১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي
أَبِي ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : لَمَّا أَرَادَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَكْتُبَ إِلَى الْعَجَمِ
قِيلَ لَهُ : إِنَّ الْعَجَمَ لا يَقْبَلُونَ إِلا كِتَابًا عَلَيْهِ خَاتَمٌ ،
" فَاصْطَنَعَ خَاتَمًا , فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَيَاضِهِ فِي كَفِّهِ
" .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ)যখন অনারব রাজা-বাদশাহদের কাছে দাওয়াতপত্র প্রেরণের সংকল্প
(ইচ্ছা) করেন তখন তাকে জানিয়ে দেয়া হয় যে, তারা সীল ছাড়া চিঠি গ্রহণ করে না।
তাই তিনি একটি আংটি তৈরি করান। তার হাতের নিচে রাখা আংটিটির ঔজ্জ্বল যেন আজও আমার
চোখের সামনে ভাসছে। [৭৩]
ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রথমত কোন আংটি তৈরি করেননি। কিন্তু যখন অবগত হলেন
রাজা বাদশাহগণ সীল-মোহর ছাড়া চিঠিপত্রের মূল্যায়ন করেন না, তাই রাসূলুল্লাহ (সঃ)
দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে চিঠি প্রেরণের জন্য আংটি তৈরি করেন।
হাদীস থেকে প্রতিয়মান হয় যে, চিঠিপত্রের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াত দেয়াও সুন্নত।
সুলায়মান (আঃ) সর্বপ্রথম চিঠির মাধ্যমে সাবার রাণী বিলকীস দাওয়াত দিয়েছিলেন।
[৭৩]সহীহ মুসলিম, হা/৫৬০২;
মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৩০৭৫
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
আংটিটিতে ‘মুহাম্মাদুর
রাসূলুল্লাহ’ অংকিত ছিল
৭২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ يَحْيَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيِّ
، قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي ، عَنْ ثُمَامَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ
: " كَانَ نَقْشُ خَاتَمِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
: مُحَمَّدٌ سَطْرٌ ، وَرَسُولٌ سَطْرٌ ، وَاللَّهُ سَطْرٌ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আংটিতে ‘মুহাম্মাদুর
রাসূলুল্লাহ’ অংকিত ছিল। ‘মুহাম্মাদ’ এক লাইনে, ‘রাসূল’ এক লাইনে এবং ‘আল্লাহ’ এক
লাইনে।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫৮৭৮;
ইবনে হিব্বান, হা/১৪১৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৩
حَدَّثَنَا نَصْرُ
بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ أَبُو عَمْرٍو ، قَالَ : حَدَّثَنَا نُوحُ بْنُ
قَيْسٍ ، عَنْ خَالِدِ بْنِ قَيْسٍ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ،
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " كَتَبَ إِلَى كِسْرَى
وَقَيْصَرَ وَالنَّجَاشِيِّ ، فَقِيلَ لَهُ : إِنَّهُمْ لا يَقْبَلُونَ كِتَابًا ,
إِلا بِخَاتَمٍ , فَصَاغَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
خَاتَمًا حَلْقَتُهُ فِضَّةٌ ، وَنُقِشَ فِيهِ : مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ "
.
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পারস্য সম্রাট কিসরা, রোম সম্রাট
কায়সার এবং আবিসিনীয় বাদশাহ নাজ্জাশীর নিকট (ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়ে) চিঠি
লেখার ইচ্ছে পোষণ করেন। তখন তাঁকে জানানো হলো যে, তারা সীল-মোহর ছাড়া চিঠি গ্রহণ
করেন না। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি আংটি তৈরি করান,
যার বৃত্তটি ছিল রৌপ্যের। আর তিনি ঐ আংটিতে ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ অংকিত
করান।[১]
ব্যাখ্যাঃ রাসূলুল্লাহ যেসব বাদশাহর নামে চিঠি পাঠিয়েছেন :
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যেসব রাজা-বাদশাহ ও শাসকদের নামে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে চিঠি
প্রেরণ করেন তাদের কয়েকজনের তালিকা নিমে দেয়া হলো:
১. রোমের সম্রাট হিরাক্লিয়াস : সাহাবী দিহইয়া কালবী (রাঃ) তাঁর কাছে চিঠি নিয়ে
যান। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নবুওয়াতের প্রতি তাঁর বিশ্বাস থাকার পরও তিনি ঈমান
আনেননি। তবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চিঠির কোন অবমাননাও করেননি।
২. পারস্যের সম্রাট পারভেজ : আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা আস-সাহমী (রাঃ) তাঁর কাছে চিঠি
নিয়ে যান। পাপী পারভেজ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চিঠি ছিঁড়ে টুকরা টুকরা করে ফেলে।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বদ দু’আর ফলে তাঁর রাজ্যও ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে
যায়।
৩. আবিসিনিয়ার অধিপতি নাজ্জাশী : এ চিঠির বাহক সাহাবী আমর ইবনে উমাইয়া (রাঃ)। যে
নাজ্জাশী হাবশায় মুসলমানদেরকে স্থান দিয়েছিলেন তাঁর নাম আমবাসা। ষষ্ঠ হিজরী সনে
তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নবম হিজরী সনে মারা যান। মদিনায় রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
তাঁর গায়েবানা জানাযা আদায় করেন।
৪. মিশরের রাজা মুকাওকিস : তাঁর কাছে চিঠি নিয়ে যান হাতিব ইবনে আবী বালতা’আ। তিনি
ইসলাম কবুল করেননি। তবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট হাদিয়া প্রেরণ করেন।
৫. বাহরাইনের রাজা মুনযির ইবনে সাদী : আলা ইবনে হাযরাম (রাঃ) তাঁর কাছে চিঠি নিয়ে
যান। তিনি ইসলাম কবুল করেন এবং ইসলামী খিলাফাতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান।
৬. আম্মানের রাজা : সে সময় আম্মানে ছিল দু’জন বাদশাহ। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমর ইবনে
আস (রাঃ) এর মাধ্যমে তাদের কাছে চিঠি প্রেরণ করেন। চিঠি পেয়ে তারা উভয়েই ইসলাম
গ্রহণ করেন।
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৫৬০৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
আংটিটি পর্যায়ক্রমে খলীফাগণ
ব্যবহার করেন এবং উসমান (রাঃ) এর হাত থেকে তা একটি কূপে পড়ে যায়
৭৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ ، عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ،
قَالَ : " اتَّخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
خَاتَمًا مِنْ وَرِقٍ ، فَكَانَ فِي يَدِهِ ثُمَّ كَانَ فِي يَدِ أَبِي بَكْرٍ ،
وَيَدِ عُمَرَ ، ثُمَّ كَانَ فِي يَدِ عُثْمَانَ ، حَتَّى وَقَعَ فِي بِئْرِ
أَرِيسٍ , نَقْشُهُ : مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ " .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি রূপার আংটি তৈরি করান।
সর্বদা তা তাঁর হাতে থাকত। তারপর তা পালাক্রমে আবু বকর (রাঃ) উমার (রাঃ) এর হাতে
আসে। এরপর উসমান (রাঃ) এর হাত থেকে (মু’আয়কিবের সাথে লেনদেনের সময়) তা আরীস নামক
কূপে পড়ে যায়। তাতে ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ অংকিত ছিল।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫৮৭৩;
সহীহ মুসলিম, হা/৫৫৯৭; মুসনাদে আহমদ, হা/৪৭৩৪; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৭৮১৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩ |
নবী (সাঃ) ডান হাতে আংটি
পরিধান করতেন |
পরিচ্ছদঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ডান হাতে আংটি পরিধান করতেন
৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ سَهْلِ بْنِ عَسْكَرٍ الْبَغْدَادِيُّ ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ ، قَالا : أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
سُلَيْمَانُ بْنُ بِلالٍ ، عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ ،
عَنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُنَيْنٍ ، عَنِ أَبِيهِ ، عَنْ
عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
كَانَ " يَلْبَسُ خَاتَمَهُ فِي يَمِينِهِ "
আলী
ইবনে আবু তালেব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাতে আংটি পরিধান করতেন।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৪২২৮;
সুনানে নাসাঈ, হা/৫২০৩; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৯৪৫৮ ইবনে হিব্বান, হা/৫৫০১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
সাহাবীগণও তাঁর অনুসরণে ডান
হাতে আংটি পরিধান করতেন
৭৬
حَدَّثَنَا
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ ،
عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ ، قَالَ : رَأَيْتُ ابْنَ أَبِي رَافِعٍ يَتَخَتَّمُ
فِي يَمِينِهِ فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ , فَقَالَ : رَأَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ
جَعْفَرٍ يَتَخَتَّمُ فِي يَمِينِهِ وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ :
" كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَخَتَّمُ فِي
يَمِينِهِ " .
হাম্মাদ
ইবনে সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি আবু রাফি'কে ডান হাতে আংটি পরিধান করতে দেখে কারণ জিজ্ঞেস করলাম।
জবাবে তিনি বললেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে জাফরকে ডান হাতে আংটি পরিধান করতে দেখেছি।
আর আবদুল্লাহ ইবনে জাফর (রাঃ) বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে ডান হাতে আংটি
পরিধান করতে দেখেছেন। [৭৮]
[৭৮] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৭৪৬; শারহুসঃ সুন্নাহ, হা/৩১৪২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৭৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جَرِيرٌ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
إِسْحَاقَ ، عَنِ الصَّلْتِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : كَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ ،
يَتَخَتَّمُ فِي يَمِينِهِ , وَلا إِخَالُهُ إِلا قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يَتَخَتَّمُ فِي يَمِينِهِ " .
সালত
ইবনে আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইবনে আব্বাস (রাঃ) তার ডান হাতে আংটি পরিধান করতেন। আমার যতদূর মনে পড়ে
তিনি শুধু বলেছিলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ডান হাতে আংটি পরিধান করতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আংটির পাথরটি হাতের তালুর দিকে সন্নিহিত করে রাখতেন
৭৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيان ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى ،
عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ فِضَّةٍ ، وَجَعَلَ فَصَّهُ مِمَّا
يَلِي كَفَّهُ ، وَنَقَشَ فِيهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ ، وَنَهَى أَنْ يَنْقُشَ
أَحَدٌ عَلَيْهِ " وَهُوَ الَّذِي سَقَطَ مِنْ مُعَيْقِيبٍ فِي بِئْرِ
أَرِيسٍ .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একটি রৌপ্যের আংটি তৈরি করান, যার পাথর স্থাপিত দিকটি তার
হাতের তালুর দিকে সন্নিহিত করে রাখেন। এ আংটিতে তিনি ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’
অংকিত করান। তবে অন্য কাউকে তা অংকিত করার ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ঐ
আংটিটি মু’আয়কীবের হাত থেকে আরীস কূপে পড়ে যায়। [৭৯]
[৭৯] সহীহ মুসলিম, হা/৫৫৯৮;
মুস্তাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৬৯৮৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৩৩৩; মুসনাদে হুমায়দী, হা/৭০৯
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
হাসান ও হুসাইন (রাঃ) বাম
হাতে আংটি পরিধান করতেন
৭৯
حَدَّثَنَا
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ
إِسْمَاعِيلَ ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : كَانَ
الْحَسَنُ ، وَالْحُسَيْنُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا " يَتَخَتَّمَانِ فِي
يَسَارِهِمَا " .
জাফর
ইবনে মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
তার পিতার হতে বর্ণনা করেন যে, হাসান ও হুসাইন (রাঃ) বাম হাতে আংটি পরিধান করতেন।
[৮০]
[৮০] মুসান্নাফে ইবনে
আবি শায়বা, হা/২৫৬৭৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৪৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করা
যাবে না
৮০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ الْمُحَارِبِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ
بْنُ أَبِي حَازِمٍ ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ ، عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ ، قَالَ : اتَّخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ ، فَكَانَ يَلْبَسُهُ فِي يَمِينِهِ ، فَاتَّخَذَ النَّاسُ
خَوَاتِيمَ مِنْ ذَهَبٍ فَطَرَحَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَقَالَ :
" لا أَلْبَسُهُ أَبدًا " فَطَرَحَ النَّاسُ خَوَاتِيمَهُمْ .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একটি স্বর্ণের আংটি তৈরি করান। তিনি তা ডান হাতে পরিধান
করতেন। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)ও তার দেখাদেখি স্বর্ণের আংটি তৈরি করান। এক পর্যায়ে
তিনি স্বর্ণের আংটিটি খুলে ফেলেন এবং বলেন, আমি কখনো তা পরিধান করব না। অতঃপর
সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)ও তাদের আংটি খুলে ফেলেন। [৮১]
ব্যাখ্যা - ইসলামের প্রাথমিক যুগে স্বর্ণের ব্যবহার বৈধ ছিল। এজন্য রাসূলুল্লাহ
(সঃ) প্রথমে স্বর্ণের আংটি তৈরি করান এবং পরিধান করেন। অতঃপর সাহাবীগণও তার
অনুসরণে স্বর্ণের আংটি তৈরি করান। যখন স্বর্ণের ব্যবহার পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ হয়,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন সে আংটিটি খুলে ফেলেন এবং সাহাৰীগণও খুলে ফেলেন।
[৮১] শারহুস সুন্নাহ,
সহা/৩১২৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর তরবারির
বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
তরবারির বিবরণ
৮১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
أَبِي ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : " كَانَتْ قَبِيعَةُ سَيْفِ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ فِضَّةٍ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর তরবারির বাটের অগ্রভাগ ছিল রৌপ্যের দ্বারা তৈরিকৃত।৮৩
ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত তরবারিটি ছিল যুলফিকার। মক্কা বিজয়ের দিন এটা রাসুলুল্লাহ (সঃ)
এর সাথে ছিল।
[৮২] এটি তিনি পিতার
উত্তরাধিকারসুত্রে লাভ করেন। এ তরবারিটি তাঁর প্রথম তরবারি ছিল।
[৮৩] আবু দাউদ,হা/২৫৮৫; সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৭৮২০
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যুদ্ধের
পোশাকের বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যুগে
যুদ্ধের পোশাক
৮২
حَدَّثَنَا أَبُو
سَعِيدٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ الأَشَجُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ
بُكَيْرٍ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبَّادِ بْنِ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ الزُّبَيْرِ ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ ، قَالَ : " كَانَ
عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ أُحُدٍ دِرْعَانِ ،
فَنَهَضَ إِلَى الصَّخْرَةِ فَلَمْ يَسْتَطِعْ ، فَأَقْعَدَ طَلْحَةَ تَحْتَهُ ،
وَصَعِدَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى اسْتَوَى عَلَى
الصَّخْرَةِ ، قَالَ : سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
يَقُولُ : أَوْجَبَ طَلْحَةُ " .
যুবায়ের
ইবনে আওয়াম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিন নবী (সঃ) দুটি লৌহবর্ম পরিহিত ছিলেন। তিনি পর্বত শৃঙ্গে
উঠতে চাইলেন কিন্তু (মারাত্মক জখম হওয়ায়) তা পারলেন না। তাই তিনি তালহা (রাঃ) এর
উপর ভর করে পর্বত শৃঙ্গে উঠলেন। বর্ণনাকারী বলেন, এ সময় আমি নবী (সঃ) ই-কে বলতে
শুনেছি, তালহা (আমার শাফায়াত অথবা জান্নাত) ওয়াজিব করে নিল। [৮৪]
ব্যাখ্যা : তালহা (রাঃ) এর উহুদ যুদ্ধে অসাধারণ আত্মত্যাগে সন্তুষ্ট হয়ে
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, তালহা এমন কাজ করল, যার দ্বারা তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব
হয়ে গেল। সে কাজটি ছিল এই যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ) ই কে পাথরে উঠতে সহায়তা করে
ছত্রভঙ্গ মুসলমানদেরকে একত্র করার সুযোগ করে দিলেন। তাছাড়া তিনি রাসূলুল্লাহ
(সঃ)-কে শক্ৰদের আঘাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে শক্রর তীরের আঘাতে জর্জরিত হন। তার
শরীরে আশিটিরও বেশি আঘাতের চিহ্ন ছিল তার একটি হাতও অবশ হয়ে যায়।
[৮৪] সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৬৯৭৯; মুসনাদুল বাযযার, হা/৩৭২; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/ ৫৬০২; সিলসিলা সাহীহাহ,
হা/৯৪৫; মিশকাত, হা/৬১১২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ ، عَنْ يَزِيدَ
بْنِ خُصَيْفَةَ ، عَنِ السَّائِب بْنِ يَزِيدَ ، " أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ عَلَيْهِ يَوْمَ أُحُدٍ دِرْعَانِ ،
قَدْ ظَاهَرَ بَيْنَهُمَا " .
সায়িব
ইবনে ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উহুদ যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর দেহে দুটি লৌহবর্ম ছিল। তিনি ঐ দুটির
একটিকে অপরটির উপর পরিধান করেছিলেন। [৮৫]
[৮৫]ইবনে মাজাহ, হা/
২৮০৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৬৫৮; মিশকাত, হা/৩৮৮৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হেলমেট
(শিরস্ত্রাণ) এর বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হেলমেট
(শিরস্ত্রাণ)
৮৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ ، عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ دَخَلَ مَكَّةَ وَعَلَيْهِ مِغْفَرٌ ، فَقِيلَ لَهُ : هَذَا ابْنُ
خَطَلٍ مُتَعَلِّقٌ بِأَسْتَارِ الْكَعْبَةِ ، فَقَالَ : " اقْتُلُوهُ "
.
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায় মক্কায় (বিজয়ী বেশে) প্রবেশ করেন।
তখন তাকে বলা হলো, ঐ যে ইবনে খাতাল কাৰাগৃহের গিলাফ ধরে ঝুলছে। তিনি বললেন, তোমরা
তাকে হত্যা করো। [৮৬]
ব্যাখ্যা : ইবনে খাতালকে যে কারণে হত্যা করা হয় :
জাহেলী যুগে তার নাম ছিল আবদুল উজ্জা। সে মদিনায় এসে ইসলাম কবুল করলে তার নাম
রাখা হয় আবদুল্লাহ। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে এক এলাকায় যাকাত আদায় করার জন্য
নিযুক্ত করেন। তার সহযোগী একজন মুসলিম গোলাম ছিল। খাবার তৈরি করতে একটু দেরী
হওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে গোলামটিকে মেরে ফেলে এবং পালিয়ে মক্কায় গিয়ে
ধর্মত্যাগী বা মুরতাদ হয়ে যায়। তাই মক্কা বিজয়ের দিন এ পাপিষ্ঠের মৃত্যুদণ্ড
কার্যকর করা হয়। কোন অপরাধী কাবা ঘরের চাদর ধরে থাকলে তাকে নিরাপত্তা দেয়া হতো।
নিয়মানুযায়ী নিরাপত্তার আশায় ইবনে খাতাল ঐ সময় কাবার গিলাফ ধরে থাকে।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে হত্যার আদেশ দিলে সাহাবীগণ তাকে যমযম কূপ ও মাকামে
ইবরাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে এনে হত্যা করেন।
[৮৬]সহীহ বুখারী, হা/১৮৪৬;
সহীহ মুসলিম, হা/৩৩৭৪; আবু দাউদ, হা/২৬৮৭;
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৮৫
حَدَّثَنَا عِيسَى
بْنُ أَحْمَدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ
، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , دَخَلَ مَكَّةَ
عَامَ الْفَتْحِ ، وَعَلَى رَأْسِهِ الْمِغْفَرُ ، قَالَ : فَلَمَّا نَزَعَهُ
جَاءَهُ رَجُلٌ ، فَقَالَ لَهُ : ابْنُ خَطَلٍ مُتَعَلِّقٌ بِأَسْتَارِ
الْكَعْبَةِ , فَقَالَ : " اقْتُلُوهُ " ، قَالَ ابْنُ شِهَابٍ :
وَبَلَغَنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمْ
يَكُنْ يَوْمَئِذٍ مُحْرِمًا .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার মাথায় হেলমেট পরিধান করে মক্কায়
প্রবেশ করেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তা খুলে রাখেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে
সংবাদ দিল যে, ইবনে খাতাল কাবা ঘরের গিলাফ ধরে ঝুলছে। তিনি বললেন, তোমরা তাকে
হত্যা করো। [৮৭]
ইবনে শিহাব (রহঃ) বলেন, এ মর্মে আমার নিকট হাদীস পৌছেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) সে
দিন ইহরাম অবস্থায় ছিলেন না।
[৮৭]মুয়াত্তা মালেক,
হা/৯৪৬; সহীহ বুখারী, হা/৪২৪৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১০৯৫৫
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭ |
নবী (সাঃ) এর পাগড়ি |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কালো পাগড়ি পরিধান করতেন
৮৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، عَنْ
حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ . ح حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ ،
عَنْ جَابِرٍ ، قَالَ : " دَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , مَكَّةَ يَوْمَ الْفَتْحِ , وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ " .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কালো পাগড়ি পরিহিত
অবস্থায় মক্কায় প্রবেশ করেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৩৩৭৫;
আবু দাউদ, হা/৪০৭৮; সুনানে নাসাঈ, হা/৫৩৪৪; ইবনে মাজাহ, হা/২৮২২; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪৯৪৭;
ইবনে হিব্বান, হা/৫৪২৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি পাগড়ি পরিধান করে
খুৎবা প্রদান করতেন
৮৭
حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مُسَاوِرٍ الْوَرَّاقِ ، عَنْ
جَعْفَرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : رَأَيْتُ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يَخْطُبُ عَلَى الْمِنْبَرِ
, وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ " .
আমর
ইবনে হুরায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কালো পাগড়ি পরিহিত
অবস্থায় মিম্বারের উপর খুৎবা দিতে দেখেছি।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৩৩৭৭;
আবু দাউদ, হা/৪০৭৯: ইবনে মাজাহ, হা/১১০৪৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি পাগড়ির কিছু অংশ
দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে ঝুলিয়ে দিতেন
৮৮
حَدَّثَنَا هَارُونُ
بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدٍ
الْمَدَنِيُّ ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ
بْنِ عُمَرَ ، عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ : " كَانَ
النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , إِذَا اعْتَمَّ , سَدَلَ
عِمَامَتَهُ بَيْنَ كَتِفَيْهِ " ، قَالَ نَافِعٌ : وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ ،
يَفْعَلُ ذَلِكَ ، قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ : وَرَأَيْتُ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ
، وَسَالِمًا يَفْعَلانِ ذَلِكَ .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) যখন পাগড়ি পরিধান করতেন তখন দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে ঝুলিয়ে
দিতেন। নাফি’ (রহঃ) বলেন, ইবনে উমর (রাঃ)ও অনুরূপ করতেন। উৰায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেন,
আমি কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ ও সালিম (রহঃ)-কেও অনুরূপ করতে দেখেছি। [৯০]
[৯০] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩১০৯; জামেউস সগীর, হা/৮৮০৫; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৭১৭; মিশকাত, হা/৪৩৩৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি তৈলাক্ত পাগড়িও
ব্যবহার করতেন
৮৯
حَدَّثَنَا يُوسُفُ
بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو سُلَيْمَانَ
وَهُوَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيلِ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " خَطَبَ
النَّاسَ , وَعَلَيْهِ عِصَابَةٌ دَسْمَاءُ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৈলাক্ত পাগড়ি পরিধান করে জনতার
উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৮০০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর লুঙ্গির
বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মোটা লুঙ্গি পরিধান করতেন
৯০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا أَيُّوبُ ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلالٍ ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ ، قَالَ :
أَخْرَجَتْ إِلَيْنَا عَائِشَةُ ، كِسَاءً مُلَبَّدًا , وَإِزَارًا غَلِيظًا ،
فَقَالَتْ : " قُبِضَ رُوحُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , فِي هَذَيْنِ " .
আবু
বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার আয়েশা (রাঃ) আমাদের সামনে একটি তালিযুক্ত চাদর ও একটি মোটা লুঙ্গি
বের করে আনেন। তারপর তিনি বললেন, ওফাতের সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ দুটি কাপড়
পরিহিত ছিলেন। [৯২]
ব্যাখ্যা। ‘ইযার ও রিদা’ ছিল রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও এর যুগে আরব দেশের অধিক প্রচলিত
পোশাক। একটি শরীরের নিম্নাংশে জড়ানো ও একটি শরীরের উপরাংশে কাধের উপর দিয়ে
জড়ানো থাকত। নিম্নাংশের চাদর বা সেলাইবিহীন লুঙ্গিকে ইযার বলা হয়। আর উপরাংশের
চাদরকে রিদা বলা হয়।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বিভিন্ন প্রকার পোশাক পরিধান করতেন, তিনি কামীস (জামা) পছন্দ
করতেন। তবে ব্যবহারের আধিক্যের দিক থেকে লুঙ্গি ও চাদরই সবচেয়ে বেশি পরিধান
করতেন।
[৯২] সহীহ বুখারী, হা/১৮৫৮;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০৮৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪২০৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি অর্ধ গোছ পর্যন্ত লুঙ্গি
ঝুলিয়ে পরিধান করতেন
৯১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ، عَنْ شُعْبَةَ ، عَنِ
الأَشْعَثِ بْنِ سُلَيْمٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ عَمَّتِي ، تُحَدِّثُ عَنْ عَمِّهَا
، قَالَ : بَيْنَا أَنَا أَمشِي بِالْمَدِينَةِ ، إِذَا إِنْسَانٌ خَلْفِي يَقُولُ
: ارْفَعْ إِزَارَكَ ، فَإِنَّهُ أَتْقَى وَأَبْقَى فَإِذَا هُوَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا
هِيَ بُرْدَةٌ مَلْحَاءُ ، قَالَ : " أَمَا لَكَ فِيَّ أُسْوَةٌ ؟ "
فَنَظَرْتُ فَإِذَا إِزَارُهُ إِلَى نِصْفِ سَاقَيْهِ .
আশ’আস
ইবনে সুলায়েম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি
আমার ফুফু হতে হাদীস শুনেছি। তিনি তার চাচা (উবাইদ ইবনে খালিদ) হতে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, আমি একবার মদিনা যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে একজন লোক পেছন থেকে আমাকে চিৎকার
করে বলে উঠলেন, তোমার কাপড় উপরে উঠাও; কারণ, তা অধিকতর (ধুলাবালি হতে) হেফাজতকারী
ও স্থায়িত্বদানকারী। আমি পেছনে তাকিয়ে দেখলাম তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং
রাসূলুল্লাহ (সঃ)। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এ তো সাদা ডোরা কালো কাপড় (এতে
আবার অহংকার করার কি আছে?) তিনি বললেন, আমার মধ্যে কি তোমার জন্য অনুকরণীয় আদর্শ
নেই? তখন আমি লক্ষ্য করলাম, তার লুঙ্গি অর্ধ গোছ (হাঁটুর নিচে ও গোড়ালীর উপর)
পর্যন্ত ঝুলন্ত। [৯৩]
[৯৩] সুনানুল কুবরা
লিন নাসাঈ, হা/৯৬০৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০৭৯; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/ ১২৮৬; শু’আবুল
ঈমান, হা/৫৭৩৭
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি টাখনুর নিচে লুঙ্গি
পরিধান করতে নিষেধ করেছেন
৯২
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ نَذِيرٍ ، عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ ،
قَالَ : أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , بِعَضَلَةِ
سَاقِي أَوْ سَاقِهِ , فَقَالَ : " هَذَا مَوْضِعُ الإِزَارِ ، فَإِنْ
أَبَيْتَ فَأَسْفَلَ ، فَإِنْ أَبَيْتَ فَلا حَقَّ لِلإِزَارِ فِي الْكَعْبَيْنِ
" .
হুযায়ফা
ইবনে ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমার পায়ের গোছা অথবা (রাবীর সন্দেহ) পায়ের নলার
গোশত ধরে বললেন, এ-ই হলো লুঙ্গি পরিধানের নিম্নতম স্থান। তুমি যদি এটাতে তৃপ্তিবোধ
না কর তাহলে সামান্য নিচে নামাতে পার। এতেও যদি তুমি তৃপ্তিবোধ না কর, তাহলে জেনে
রেখো, লুঙ্গি টাখনুর নিচে পরিধান করার কোন অধিকার তোমার নেই। [৯৪]
[৯৪]ইবনে মাজাহ, হা/৩৫৭২;
মুসনাদে আহমাদ হা/২৩৪৫০
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাঁটা-চলা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
হাঁটা-চলা
৯৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ ، قَالُوا : حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ ،
عَنْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ مَوْلَى غُفْرَةَ ، قَالَ : أَخْبَرَنِي
إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدٍ مِنْ وَلَدِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ، قَالَ :
كَانَ عَلِيٌّ إِذَا وَصَفَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ
: " كَانَ إِذَا مَشَى تَقَلَّعَ كَأَنَّمَا يَنْحَطُّ مِنْ صَبَبٍ " .
ইবরাহীম
ইবনে মুহাম্মাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আলী (রাঃ) যখন নবী (সঃ) এর চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতেন তখন বলতেন, তিনি
যখন পথ চলতেন তখন পা তুলে এমনভাবে চলতেন যে, মনে হতো তিনি যেন উচু স্থান হতে নিচে
অবতরণ করছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯৪
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
بْنُ وَكِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبِي ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ ، عَنْ عُثْمَانَ
بْنِ مُسْلِمِ بْنِ هُرْمُزَ ، عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ ، عَنْ
عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ، قَالَ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا مَشَى , تَكَفَّأَ تَكَفُّؤًا , كَأَنَّمَا يَنْحَطُّ
مِنْ صَبَبٍ " .
আলী
ইবনে আবু তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন পথ চলতেন তখন সামনের দিকে এমনভাবে ঝুঁকে হাটতেন, মনে
হতো তিনি যেন কোন উঁচু স্থান হতে নিচে অবতরণ করছেন [৯৫]
[৯৫]শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৩৫৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪৬; মিশকাত, হা/৫৭৯০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মস্তকাবরণ
ব্যবহার |
পরিচ্ছদঃ
সূলুল্লাহ (সাঃ) এর
মস্তকাবরণ ব্যবহার
৯৫
حَدَّثَنَا يُوسُفُ
بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ بْنُ
صَبِيحٍ ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبَانَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يُكْثِرُ الْقِنَاعَ ,
كَأَنَّ ثَوْبَهُ ثَوْبُ زَيَّاتٍ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রায় সবসময় মাথা ঢেকে রাখতেন। তার ঢেকে রাখার বস্তুটি
(তৈলাক্ত হয়ে) এমন হয়েছিল যে, মনে হতো তা যেন কোন তৈল বিক্রেতার তৈল মোছার)
একখণ্ড বস্তু। [৯৬]
ব্যাখ্যা •
অধিক তেল ব্যবহারে কাপড় ময়লা হয়, তাই রাসূলুল্লাহ (সঃ) মাথায় অতিরিক্ত কাপড়
ব্যবহার করতেন, যাতে টুপি বা পাগড়ি নষ্ট না হয়। এখানে কাপড় দ্বারা উদ্দেশ্য
পাগড়ির নিচে ব্যবহারের কাপড়।
[৯৬]শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩১৬৪
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উঠা-বসা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
উঠা-বসা
৯৬
حَدَّثَنَا سَعِيدُ
بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ , قَالُوا :
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ ، عَنْ
عَمِّهِ ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "
مُسْتَلْقِيًا فِي الْمَسْجِدِ وَاضِعًا إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الأُخْرَى
" .
আব্বাদ
ইবনে তামীম (রহঃ) তাঁর চাচা হতে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
নবী (সঃ) কে মসজিদে উর্ধ্বমুখী হয়ে এক পায়ের উপর অপর পা রেখে (শোয়া অবস্থায়)
আরাম করতে দেখেছেন। [৯৭]
ব্যাখ্যাঃ এ হাদীসের আলোকে বুঝা যায় যে, পায়ের উপর পা রেখে চিত হয়ে শুয়ে
থাকাতে কোন দোষ নেই।
[৯৭]মুয়াত্তা মালেক,
হা/৪১৬; সহীহ বুখারী, হা/৪৭৫; সহীহ মুসলিম, হা/৫৬২৬; নাসাঈ, হা/৭২১; মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৬৪৯১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৯৭
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ
بْنُ شَبِيبٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْمَدَنِيُّ
، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُحَمَّدٍ الأَنْصَارِيُّ ، عَنْ رُبَيْحِ
بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ، قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ " إِذَا جَلَسَ فِي الْمَسْجِدِ , احْتَبَى بِيَدَيْهِ " .
আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ইহতিবা অর্থাৎ নিতম্বের উপর ভর করে উরুর উপর হাত রেখে
মসজিদে বসতেন। [৯৮]
ব্যাখ্যা : উরুদ্বয়কে পেটের, সাথে লাগিয়ে নিতম্বের উপর ভর দিয়ে বসে দু’হাত
দিয়ে উভয় পায়ের নলা পেঁচিয়ে ধরে বসাকে ইহতিবা বলে। এ ধরনের বসা বিনয়ের
পরিচায়ক।
[৯৮]আবু দাউদ
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বালিশে
হেলান দেয়ার বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাম কাঁধে বালিশের উপর হেলান দিতেন
৯৮
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ
بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ الْبَغْدَادِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ
مَنْصُورٍ ، عَنِ إِسْرَائِيلَ ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ، عَنْ جَابِرِ بْنِ
سَمُرَةَ ، قَالَ : " رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , مُتَّكِئًا عَلَى وِسَادَةٍ عَلَى يَسَارِهِ " .
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বাম কাধে (হেলান দেয়া অবস্থায়) দেখেছি। [৯৯]
[৯৯] আবু দাউদ, হা/৪১৪৫;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০১৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৮৯; মুসনাদে বাযযার, হা/৪২৭২; শারহুস
সুন্নাহ, হা/৩১২৬; মিশকাত, হা/৪৭১২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
হাদীস বর্ণনার সময়ও বালিশে
হেলান দিতেন
৯৯
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ
بْنُ مَسْعَدَةَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا الْجُرَيْرِيُّ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ ، عَنْ
أَبِيهِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :
" أَلا أُحَدِّثُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ ؟ " قَالُوا : بَلَى يَا
رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ : " الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ ، وَعُقُوقُ
الْوَالِدَيْنِ " . قَالَ : وَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَكَانَ مُتَّكِئًا ، قَالَ : " وَشَهَادَةُ الزُّورِ ،
" أَوْ " قَوْلُ الزُّورِ " ، قَالَ : فَمَا زَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَقُولُهَا حَتَّى قُلْنَا : لَيْتَهُ سَكَتَ
.
আবু
বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে কবীরা গুনাহ সম্পর্কে বলব না?
সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হ্যাঁ- হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শরীক
স্থাপন করা ও পিতামাতার অবাধ্য হওয়া। বর্ণনাকারী বলেন, হাদীস বর্ণনার সময় তিনি
বালিশে হেলান দেয়া অবস্থায় ছিলেন। এরপর তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, আর
মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা অথবা মিথ্যা বলা (-ও কবীরা গুনাহ)। রাবী বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ কথা বারবার বলতে থাকেন। এমনকি আমরা মনে মনে বলতে লাগলাম যে,
আহ! যদি তিনি চুপ করতেন। [১০০]
ব্যাখ্যা : আলোচ্য হাদীসে সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহ তিনটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এর তালিকা এ তিনটির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং বিভিন্ন হাদীসে আরো কতিপয় কাজকে
'কবীরা গুনাহ' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- খাবারে শরীক হওয়ার ভয়ে বা ভরণ
পোষণের ভয়ে নিজ সন্তানকে হত্যা করা, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা প্রভৃতি।
কবীরা গুনাহের সংজ্ঞা :
গুনাহ দু'প্রকার। ১. কবীরা, ২. সগীরা। শরীয়তে যে পাপ কাজের জন্য কোন শাস্তির
বিধান রয়েছে, তা করা কবীরা বা বড় গুনাহ। কেউ কেউ বলেন, কুরআন হাদীসে যে গুনাহ
সম্পর্কে কঠোর ধমকি দেয়া হয়েছে যদিও শাস্তির কথা বলা হয়নি, সেটি কবীরা।
[১০০] সহীহ বুখারী,
হা/২৬৫৪; সহীহ মুসলিম, হা/২৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২০৪১০; আদাবুল মুফরাদ, হা/১৫; সহীহ
তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২২৯৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি কখনো ঠেস দেয়া
অবস্থায় খেতেন না
১০০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شَرِيكٌ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ
الأَقْمَرِ ، عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " أَمَّا أَنَا , فَلا آكُلُ مُتَّكِئًا "
.
আবু
জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, আমি হেলান দিয়ে আহার করি না। [১০১]
ব্যাখ্যা : ‘আমি হেলান দিয়ে আহার করি না’ এ উক্তিটি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ জন্য
বলেছেন, মানুষ যেন তার অনুসরণ করে।
[১০১]মুসনাদুল বাযযার,
হা/৪২১৪; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৬৭০৯; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৩৭০৬;
মুজামুল কাবীর, হা/১৭৮০২; ইবনে হিব্বান, হা/৫২৪০
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০১
حَدَّثَنَا يُوسُفُ
بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ ،
عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ ، قَالَ : " رَأَيْتُ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَّكِئًا عَلَى وِسَادَةٍ "
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সঃ)জ-কে বালিশের উপর হেলান দেয়া অবস্থায় দেখেছি. [১০২]
ব্যাখ্যাঃ - এ হাদীস থেকে বুঝা যায়, আহার ছাড়া অন্য সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) হেলান
দিয়ে বসতেন।
[১০২]আবু দাউদ, হা/৪১৪৫;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০১৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১২৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৮৯
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর (বালিশ
ছাড়া অন্য কিছুতে) ঠেস দেয়া |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর (বালিশ
ছাড়া অন্য কিছুতে) ঠেস দেয়া
১০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ ،
قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ حُمَيْدٍ ، عَنْ أَنَسٍ : أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " كَانَ شَاكِيًا , فَخَرَجَ
يَتَوَكَّأُ عَلَى أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ وَعَلَيْهِ ثَوْبٌ قِطْرِيٌّ , قَدْ
تَوَشَّحَ بِهِ فَصَلَّى بِهِمْ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) ও একবার রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। তখন তিনি উসামা (রাঃ) এর কাধে ভর
করে বাইরে আসেন। সে সময় তার দেহে একটা ইয়ামানী কাপড় জড়ানো ছিল। তারপর তিনি
লোকদের ইমামতি করেন [১০৩]
[১০৩]মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৩৭৮৭; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২২৫৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০৯২
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পানাহারের
নিয়ম পদ্ধতি |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহার শেষে তিন আঙ্গুলি চুষে নিতেন
১০৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ عَلِيٍّ الْخَلالُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَفَّانُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " إِذَا أَكَلَ طَعَامًا لَعِقَ أَصَابِعَهُ
الثَّلاثَ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সঃ) যখন আহার করতেন তখন তিনি তাঁর তিনটি আঙ্গুলি চুষে নিতেন। [১০৪]
[১০৪]সহীহ মুসলিম, হা/৫৪১৬;
আবু দাউদ, হা/৩৮৪৭; ইবনে হিব্বান, হা/৫২৫২; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭১২১; বায়হাকী, হা/১৪৩৯৫;
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৪৯৩৭; জামেউস সগীর, হা/৮৮১১
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১০৪
حَدَّثَنَا
الْحُسَيْنُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ الصُّدَائِيُّ الْبَغْدَادِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِسْحَاقَ يَعْنِي الْحَضْرَمِيَّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ الأَقْمَرِ ، عَنْ
أَبِي جُحَيْفَةَ ، قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :
" أَمَّا أَنَا فَلا آكُلُ مُتَّكِئًا " .
আবু
জুহায়ফা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) ইরশাদ করেছেন, আমি ঠেসরত অবস্থায় আহার করি না। [১০৫]
[১০৫]মুসনাদুল বাযযার,
হা/৪২১৪; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৬৭০৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৩৭০৬;
মুজামুল কাবীর, হা/১৭৮০২; ইবনে হিব্বান, হা/৫২৪০
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি তিন আঙ্গুলি দিয়ে আহার
করতেন
১০৫
حَدَّثَنَا هَارُونُ
بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنِ ابْنٍ لِكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ ، عَنْ أَبِيهِ ،
قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يَأْكُلُ
بِأَصَابِعِهِ , الثَّلاثِ وَيَلْعَقُهُنَّ " .
কা’ব
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তিন অঙ্গুলি দিয়ে আহার করতেন এবং তা চুষে নিতেন। [১০৬]
ব্যাখ্যাঃ সাধারণত আহারের সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) তিনটি আঙ্গুল ব্যবহার করতেন এবং
খাওয়ার পর সেগুলো চেটে খেতেন। আঙ্গুল তিনটি হলো বৃদ্ধা, তর্জনী ও মধ্যম।
কাব ইবনে উজরা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বৃদ্ধা, তর্জনী ও মধ্যমা এ
আঙ্গুলত্রয় দ্বারা পানাহার করতে দেখেছি। আরো দেখেছি যে, তিনি হাত ধৌত করার আগে
তিন আঙ্গুল চেটে খেয়েছেন। প্রথমে মধ্যমা অতঃপর তর্জনী অতঃপর বৃদ্ধাঙ্গুল চেটেছেন।
উল্লেখ্য যে, নবী (সঃ) এর সময় খেজুর, রুটি, গোশত অথবা তরকারীই ছিল প্রধান খাদ্য।
এসব খাদ্য গ্রহণের সময় সব আঙ্গুল ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। বিধায় নবী (সঃ)
তিন আঙ্গুল দ্বারা খেতেন। কিন্তু ভাত খাওয়ার সময় পাঁচ আঙ্গুলই ব্যবহার করতে হয়।
বিধায় সৰ আঙ্গুলই চেটে খাওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, যখন তোমাদের মধ্যে
কেউ আহার কর, তখন যেন আহার শেষে আঙ্গুলগুলো চেটে খায়। কারণ সে জানে না খাবারের
কোন অংশে বরকত রয়েছে। [১০৭]
[১০৬]মুসন্নাফে ইবনে
আবু শায়বা, হা/২৪৯৫৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/৩৮২০।
[১০৭]সহীহ ইবনে হিব্বান,হা/৫২৫৩; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৪০৪; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব,
হা/২১৬১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
অতি ক্ষুধার কারণ তিনি একবার
বাঁকা হয়ে ঠেস দিয়ে খেয়েছিলেন
১০৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ دُكَيْنٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
مُصْعَبُ بْنُ سُلَيْمٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ , يَقُولُ :
" أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِتَمْرٍ
فَرَأَيْتُهُ يَأْكُلُ وَهُوَ مُقْعٍ مِنَ الْجُوعِ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর কাছে খুরমা আনা হলো। তখন আমি তাকে তীব্র ক্ষুধার
কারণে বাঁকা হয়ে ঠেস দিয়ে খেতে দেখেছি। [১০৮]
ব্যাখ্যাঃ সাধারণত রাসূলুল্লাহ (সঃ) কোন জিনিসের সাথে ঠেস দিয়ে বসে আহার করতেন
না। এখানে সমস্যার কারণে হেলান দিয়েছিলেন।
·
Share On Twitter
[১০৮]শারহুস সুন্নাহ,
হা/২৮৪২
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রুটির
বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারবর্গ কখনো একাধারে ২দিন পেট ভরে যবের রুটি আহার করেননি
১০৭
دَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالا : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، قَالَ :
سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ ، يُحَدِّثُ عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ
يَزِيدَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، أَنَّهَا قَالَتْ : " مَا شَبِعَ آلُ مُحَمَّدٍ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ خُبْزِ الشَّعِيرِ يَوْمَيْنِ
مُتَتَابِعَيْنِ حَتَّى قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
" .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ওফাত পর্যন্ত মুহাম্মাদ (সঃ) এর পরিবারবর্গ একাধারে
২দিন পেট ভরে যবের রুটি আহার করেননি। [১০৯]
ব্যাখ্যাঃ বদান্যতা ও দানশীলতায় রাসূলুল্লাহ (সঃ) ছিলেন অতুলনীয়। স্বেচ্ছায় এ
অবস্থাকে গ্রহণ করে নেয়ার কারণেই তাকে এরূপ সাদাসিধা জীবন-যাপন করতে হয়েছে।
তিনি চাইলে সীমাহীন স্বাচ্ছন্দের সাথে জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু তা তার
পছন্দনীয় ছিল না।
[১০৯]ইবনে মাজাহ, হা/৩৩৪৬;
তাহযীবুল আসার, হা/৬০৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৭৩
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কখনো যবের রুটি উদ্ধৃত থাকত না
১০৮
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ
بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ ،
قَالَ : حَدَّثَنَا حَرِيزُ بْنُ عُثْمَانَ ، عَنْ سُلَيْمِ بْنِ عَامِرٍ ، قَالَ
: سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ الْبَاهِلِيَّ , يَقُولُ : " مَا كَانَ يَفْضُلُ
عَنِ أَهْلِ بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خُبْزُ
الشَّعِيرِ " .
আবু
উমামা বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর গৃহে কখনো যবের রুটি উদ্ধৃত থাকত না। [১১০]
ব্যাখ্যাঃ অন্যদের দান করার দরুন রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ঘরে অতিরিক্ত পাকানোর মতো
খাদ্য থাকত না। তাছাড়া আহলুস সুফফা এবং অন্যান্য মেহমান তো থাকতই।
[১১০]মুসনাদে আহমাদ,
হা/২২৩৫০; মুজামুল কাবীর, হা/৭৫৭৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৭৫
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
মাঝে মাঝে তিনি আহারের জন্য
কিছুই পেতেন না
১০৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْجُمَحِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ يَزِيدَ
، عَنْ هِلَالِ بْنِ خَبَّابٍ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ :
" كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَبِيتُ
اللَّيَالِيَ الْمُتَتَابِعَةَ طَاوِيًا هُوَ وَأَهْلُهُ , لا يَجِدُونَ عِشَاءً
وَكَانَ أَكْثَرُ خُبْزِهِمْ , خُبْزَ الشَّعِيرِ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ছত্র এবং তার পরিবারবর্গ একাধারে কয়েক রাত অনাহারে
এমনভাবে কাটাতেন যে, তারা আহার্য বস্তুর কোন কিছুই পেতেন না। আর অধিকাংশ সময়
তাদের খাবার হতো যবের রুটি (অর্থাৎ ধারাবাহিক যবের রুটিও পেতেন না)[১১১]
[১১১]ইবনে মাজাহ, হা/৩৩৪৭;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩০৩; মুসনাদুল বাযযার, হা/৪৮০৫; মুজামুল কাবীর, হা/১১৭৩৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১০
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ
عَبْدِ الْمَجِيدِ الْحَنَفِيُّ ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ ، عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ ، أَنَّهُ قِيلَ لَهُ : أَكَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
النَّقِيَّ ؟ يَعْنِي الْحُوَّارَى فَقَالَ سَهْلٌ : " مَا رَأَى رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النَّقِيَّ حَتَّى لَقِيَ اللَّهَ
عَزَّ وَجَلَّ تَعَالَى " ، فَقِيلَ لَهُ : هَلْ كَانَتْ لَكُمْ مَنَاخِلُ
عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَ : "
مَا كَانَتْ لَنَا مَنَاخِلُ " . قِيلَ : كَيْفَ كُنْتُمْ تَصْنَعُونَ
بِالشَّعِيرِ ؟ قَالَ : " كُنَّا نَنْفُخُهُ فَيَطِيرُ مِنْهُ مَا طَارَ ,
ثُمَّ نَعْجِنُهُ " .
সাহল
ইবনে সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে
জিজ্ঞেস করা হলো রাসূলুল্লাহ (সঃ) কি ময়দার রুটি আহার করতেন? তিনি বললেন,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর ওফাত পর্যন্ত ময়দা দেখেননি। তারপর তাঁকে বলা হলো,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সময় আপনাদের কি চালনি ছিল? তিনি বললেন, আমাদের কোন চালনি ছিল
না। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, তবে আপনারা যবের রুটি ভাবে ব্যবহার করতেন? তিনি
বললেন, আমরা তাতে ফু দিতাম, যাতে অখাদ্য কিছু থাকলে তা উড়ে যায়। এরপর আমরা খামির
করে নিতাম। [১১২]
ব্যাখ্যাঃ সাহল (রাঃ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ময়দা দেখেননি এবং চালনি
ব্যবহার করেননি। এ কথা তিনি তার জানা অনুসারে বলেছেন। কেননা তখন মক্কা ও মদিনায়
চালনির প্রচলন ছিল না। অন্যথায় রাসূলুল্লাহ (সঃ) নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে
সিরিয়া সফরের সময় ময়দা দেখে থাকতে পারেন। কেননা সিরিয়ায় চালনি দিয়ে ময়দা চালার
রেওয়াজ আগে থেকেই ছিল।
[১১২]মুসনাদে আহমাদ,
হা/২২৮৬৫; তাহযীবুল আছার, হা/২৫১৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি আহারের জন্য টেবিল এবং
ছোট প্লেট ব্যবহার করতেন
১১১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي
أَبِي ، عَنْ يُونُسَ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ :
" مَا أَكَلَ نَبِيُّ اللَّهِ عَلَى خِوَانٍ , وَلا فِي سُكُرَّجَةٍ ، وَلا
خُبِزَ لَهُ مُرَقَّقٌ " قَالَ : فَقُلْتُ لِقَتَادَةَ : فَعَلامَ كَانُوا
يَأْكُلُونَ ؟ قَالَ : " عَلَى هَذِهِ السُّفَرِ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সঃ) টেবিলে আহার করতেন না, ছোট প্লেটে খাবার নিতেন না এবং তার জন্য
চাপাতিও তৈরি করা হতো না।
(বর্ণনাকারী) ইউনুস বলেন, আমি কাতাদা (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করে বললাম, তাহলে কোন ধরণের
প্লেটে তারা আহার করতেন? তিনি বলেন, দস্তরখানের উপর রেখে আহার করতেন। [১১৩]
ব্যাখ্যাঃ ‘সুকুররুজাহ’ শব্দটি ফারসী শব্দ। ক্ষুধা এবং হজমকারক রুচিবর্ধক বিভিন্ন
উপকরণ রাখার ছোট ছোট পাত্র। রাসূলুল্লাহ (সঃ) যেহেতু নিজে পেটভরে আহার করতেন না,
কাজেই পরিতৃপ্ত ভোজনের উপকরণও ব্যবহার করতেন না। তাছাড়া এভাবে আহার করা যেহেতু
বিলাসী, তাই রাসূলুল্লাহ (সঃ)তে এসব পদ্ধতি পরিহার করতেন। এটা অতিভোজনকারী লোভী
লোকদের অভ্যাস।
[১১৩] সহীহ বুখারী,
হা/৫৬১৫, মুসনাদে আহমদ, হা/১২৩৪৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ
، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، قَالَ : سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ
يُحَدِّثُ ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : "
مَا شَبِعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ خُبْزِ
الشَّعِيرِ يَوْمَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ حَتَّى قُبِضَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ই মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর জীবদ্দশায় একাধারে ২দিন যবের রুটি
আহার করেননি। [১১৪]
[১১৪]তাহযীবুল আছার,
হা/৬০৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৭৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর তরকারীর
বর্ণনা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর তরকারী
১১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ سَهْلِ بْنِ عَسْكَرٍ ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالا :
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلالٍ ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " نِعْمَ الإِدَامُ
الْخَلُّ " ، قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، فِي حَدِيثِهِ
: " نِعْمَ الإِدَامُ أَوِ الأُدْمُ الْخَلُّ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, সিরকা কতই না চমৎকার তরকারী।
আব্দুল্লাহ ইবনে আবদূর রাহমান (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেন, সিরকা কতই না চমৎকার
উদুম অথবা ইদাম তথা তরকারী। [১১৫]
ব্যাখ্যাঃ এ হাদীসে সিরকার প্রশংসা করা উদ্দেশ্য। সিরকা উত্তম তরকারী হওয়ার
কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন সহজে তৈরি করা যায়, এর সাহায্যার্থে অনায়াসে রুটি
ভক্ষণ করা যায় এবং সবসময় পাওয়া যায়।
এছাড়া সিরকার মাঝে কিছু উপকারিতাও রয়েছে। যেমন কফ ও পিত্ত দূর করে। হজম শক্তি
বৃদ্ধি করে।
[১১৫]ইবনে মাজাহ, হা/৩৩১৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৪
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ،
قَالَ : سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ ، يَقُولُ : " أَلَسْتُمْ فِي
طَعَامٍ وَشَرَابٍ مَا شِئْتُمْ ؟ لَقَدْ رَأَيْتُ نَبِيَّكُمْ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَمَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلأُ بَطْنَهُ " .
সিমাক
ইবনে হারব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নু’মান ইবনে বাশীর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, তোমরা কি
পানাহারের ব্যাপারে যা ইচ্ছা তা গ্রহণ কর না? (অর্থাৎ নিশ্চয় গ্রহণ করছ)। অথচ আমি
দেখেছি তোমাদের নবী তৃপ্তি সহকারে পেট ভরে সাধারণ খেজুরও খেতে পাননি। [১১৬]
ব্যাখ্যাঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ওফাতের পর সাহাবী ও তাবিয়ীগণ যখন প্রচুর খাদ্যের
অধিকারী হন, তখন তাদেরকে সম্বোধন করে নু’মান ইবনে বাশীর (রাঃ) একথা বলেন।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর অনুসরণের প্রতি এবং দুনিয়ার উপকরণ সংক্ষিপ্ত রাখার প্রতি
উৎসাহিত করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।
[১১৬] সহীহ মুসলিম,
হা/৭৬৫০ ইবনে হিকান, হা/৬৩৪০
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ
، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنْ سُفْيَانَ ، عَنْ أَيُّوبَ ، عَنْ أَبِي
قِلابَةَ ، عَنْ زَهْدَمٍ الْجَرْمِيِّ ، قَالَ : كُنَّا عِنْدَ أَبِي مُوسَى
الأَشْعَرِيِّ ، فَأُتِيَ بِلَحْمِ دَجَاجٍ فَتَنَحَّى رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ ,
فَقَالَ : مَا لَكَ ؟ فَقَالَ : إِنِّي رَأَيْتُهَا تَأْكُلُ شَيْئًا فَحَلَفْتُ
أَنْ لا آكُلَهَا ، قَالَ : " ادْنُ , فَإِنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَأْكُلُ لَحْمَ دَجَاجٍ " .
যাহদাম
জারমী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা একবার আবু মুসা আশ'আরী (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তখন তার কাছে ভুনা মুরগীর
গোশত আনা হলো। ফলে উপস্থিত লোকদের একজন চলে যেতে উদ্যত হলো। তিনি [আবু মুসা আশ'আরী
(রাঃ)] তাঁকে যাওয়ার কারন জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল, আমি এক (মুরগীকে) নাপাক খেতে
দেখে এ মর্মে কসম করেছি যে, আমি আর কখনো মুরগীর গোশত খাব না। তিনি বলল, কাছে এসো,
( এবং নির্দ্বিধায় খাও)। কারণ আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে আমি
মুরগী খেতে দেখেছি। ১১৭
ব্যাখ্যাঃ উক্ত কথার দ্বারা আবু মুসা আশ'আরী (রাঃ) এটা বুঝাতে চেয়েছেন যে, কোন
হালাল বস্তুকে হারাম করা অনুচিত।
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৪৩৫৪;
মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৫৮৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮০৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ أَيُّوبَ
، عَنِ الْقَاسِمِ التَّمِيمِيِّ ، عَنْ زَهْدَمٍ الْجَرْمِيِّ ، قَالَ : كُنَّا
عِنْدَ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ ، قَالَ : فَقَدَّمَ طَعَامَهُ وَقَدَّمَ فِي
طَعَامِهِ لَحْمَ دَجَاجٍ وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَيْمِ اللَّهِ
أَحْمَرُ كَأَنَّهُ مَوْلًى ، قَالَ : فَلَمْ يَدْنُ فَقَالَ لَهُ أَبُو مُوسَى :
" ادْنُ ، فَإِنِّي قَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ أَكَلَ مِنْهُ " ، فَقَالَ : إِنِّي رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ شَيْئًا ,
فَقَذِرْتُهُ فَحَلَفْتُ أَنْ لا أَطْعَمَهُ أَبَدًا .
যাহদাম
জারমী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা আবু মূসা (রাঃ) এর নিকট ছিলাম। তিনি বলেন, তার নিকট খাবার পরিবেশন করা
হলো এবং সে খাবারে মুরগীর গোশত ছিল । সেখানে তায়ামুল্লাহ গোত্রের লাল বর্ণের এক
ব্যাক্তি ছিল। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল , সে যেন একজন গোলাম। বর্ণনাকারী বলেন, সে
লোকটি খেতে আসলো না। তখন আবু মুসা (রাঃ) তাঁকে বললেন, খেতে এসো – কারণ আমি
রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে আমি মুরগীঢ় গোশত খেতে দেখেছি । সে বলল, একে ময়লা কিছু খেতে
দেখেছি। সে কারণে আমার ঘৃণা জন্মেছে। তাই আমি কসম করেছি যে, আমি এটা কখনো খাব না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৭
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ ، وَأَبُو
نُعَيْمٍ ، قَالا : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عِيسَى ،
عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الشَّامِ , يُقَالُ : لَهُ عَطَاءٌ ، عَنْ أَبِي أَسِيدٍ
، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : "
كُلُوا الزَّيْتَ , وَادَّهِنُوا بِهِ , فَإِنَّهُ مِنْ شَجَرَةٍ مُبَارَكَةٍ
" .
আবু
আসীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, তোমরা যায়তুন [১১৮] তৈল খাও এবং তা মালিশ করো।
কারণ, তা বরকতময় বৃক্ষ হতে উৎপন্ন। [১১৯]
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাউ পছন্দ করতেন
১১৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ ، وَعَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالا : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ قَتَادَةَ ،
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ " يُعْجِبُهُ الدُّبَّاءُ فَأُتِيَ بِطَعَامٍ ، أَوْ دُعِيَ لَهُ
فَجَعَلْتُ أَتَتَبَّعُهُ , فَأَضَعُهُ بَيْنَ يَدَيْهِ لِمَا أَعْلَمُ أَنَّهُ
يُحِبُّهُ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাউ খুবই পছন্দ করতেন। একবার তাঁর
সম্মুখে খানা পরিবেশন করা হলো অথবা তিনি কোন দাওয়াতে গিয়েছিলেন (রাবীর সন্দেহ)।
আমার যেহেতু জানা ছিল যে, তিনি লাউ খুব পছন্দ করেন, তাই (তরকারীর মধ্য হতে) বেছে
বেছে তাঁর সামনে লাউ পেশ করলাম।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/২৮৬১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১১৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ ، عَنْ
إِسْمَاعِيلَ بْنُ أَبِي خَالِدٍ ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ جَابِرٍ ، عَنْ أَبِيهِ ،
قَالَ : دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
فَرَأَيْتُ عِنْدَهُ دُبَّاءً يُقَطَّعُ , فَقُلْتُ : مَا هَذَا ؟ قَالَ : "
نُكَثِّرُ بِهِ طَعَامَنَا " .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার আমি নবী এর কাছে গিয়ে দেখলাম যে, লাউ কেটে টুকরো টুকরো করা হচ্ছে।
আমি বললাম, এর দ্বারা কী হবে? তিনি বললেন, এর দ্বারা আমরা আমাদের খানা বৃদ্ধি
করব।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/২৮৬২৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ ، عَنِ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ , يَقُولُ :
إِنَّ خَيَّاطًا دَعَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
لِطَعَامٍ صَنَعَهُ ، قَالَ أَنَسٌ : فَذَهَبْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , إِلَى ذَلِكَ الطَّعَامِ , فَقَرَّبَ إِلَى رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خُبْزًا مِنْ شَعِيرٍ ، وَمَرَقًا
فِيهِ دُبَّاءٌ وَقَدِيدٌ ، قَالَ أَنَسُ : " فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَتَبَّعُ الدُّبَّاءَ حَوَالَيِ الْقَصْعَةِ "
فَلَمْ أَزَلْ أُحِبُّ الدُّبَّاءَ مِنْ يَوْمِئِذٍ .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার এক দর্জি খানা তৈরি করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে দাওয়াত দেয়। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
সাথে আমিও ঐ দাওয়াতে গিয়েছিলাম। দর্জি লোকটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সামনে যবের রুটি ও ঝোল পরিবেশন করল। সে ঝোলের মধ্যে লাউ ও শুকনা
গোশত ছিল। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে
তরকারীর বাটির বিভিন্ন দিক থেকে লাউয়ের টুকরো খোঁজ করতে দেখেছি। আর সে দিন হতে
আমি লাউ খুব পছন্দ করে আসছি।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/২০৯২
সহীহ মুসলিম, হা/৪৫৫৬ আবু দাউদ, হা/৩৭৮৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মিষ্টি দ্রব্য ও মধু অধিক পছন্দ করতেন
১২১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ ، وَسَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ ، وَمَحْمُودُ بْنُ
غَيْلانَ ، قَالُوا : حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ،
عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ , قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يُحِبُّ الْحَلْوَاءَ وَالْعَسَلَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও মিষ্টি দ্রব্য ও মধু অধিক পছন্দ করতেন। [১২৩]
ব্যাখ্যাঃ হালওয়া মিষ্ট বস্তু, মিষ্টি জাতীয় জিনিস, মিষ্টান্ন। সাধারণ মানুষ
যেসব মিষ্টি খাবার তৈরি করে তাকেই মূলত হালওয়া বলে। আর মূল অর্থের দিকে লক্ষ্য
করলে এর আওতায় মিষ্টি ফলমূলও পড়ে, তথাপিও প্রচলিত পরিভাষা হিসাবে এটা হালওয়ার
অন্তর্ভুক্ত নয়। ‘হালওয়া’ বলতে গুড়, চিনি, মধুকেও বুঝায় এবং এর দ্বারা
প্রস্তুত মিষ্ট খাদ্যসমূহকেও বুঝিয়ে থাকে।
[১২৩] সহীহ বুখারী,
হা/৫৪৩১; ইবনে মাজাহ, হা/৩৩২৩; ইবনে হিব্বান, হা/৫২৫৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বকরীর পাঁজরের ভূনা গোশত পছন্দ করতেন
১২২
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ
بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ
مُحَمَّدٍ ، قَالَ : قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ : أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ ،
أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَسَارٍ أَخْبَرَهُ ، أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ أَخْبَرَتْهُ ،
أَنَّهَا " قَرَّبَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , جَنْبًا مَشْوِيًّا , فَأَكَلَ مِنْهُ ، ثُمَّ قَامَ إِلَى الصَّلاةِ
, وَمَا تَوَضَّأَ " .
উম্মে
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
তিনি বকরীর পাঁজরের ভূনা গোশত রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সামনে পরিবেশন করেন। তিনি তা
হতে খেলেন এবং ওযু না করেই সালাতে দাড়িয়ে যান। [১২৪]
ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, আগুনে তৈরি খাবার খেলেও ওযু ভঙ্গ
হয় না। তবে অন্য হাদীস দ্বারা আগুনে পাক করা খাদ্য খেলে ওযু নষ্ট হয়ে যায় বলেও
প্রমাণিত রয়েছে। কিছু সংখ্যক সাহাবী ও তাবিয়ীর মতামতও এটাই। তবে চার খলীফা এবং
অধিকাংশ মুহাদিসগণের মতে আগুনে তৈরি খাবার খেলেও ওযু ভঙ্গ হয় না। তারা বলেন, যে
সকল হাদীস থেকে ওযু ওয়াজিব হওয়ার কথা উল্লেখও হয়েছে, সেগুলো রহিত হয়ে গেছে।
[১২৪] নাসাঈ, হা/১৮৩
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৮৬৩৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৩
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ زِيَادٍ
، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ ، قَالَ : " أَكَلْنَا مَعَ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شِوَاءً فِي الْمَسْجِدِ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও এর সাথে মসজিদে ভূনা গোশত খেয়েছি।
ব্যাখ্যাঃ এ হাদীসের আলোকে বুঝা যায়, একা বা জামা'আতবদ্ধভাবে মসজিদে পানাহার করা
বৈধ, তবে মসজিদের পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করতে হবে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ ، عَنْ
أَبِي صَخْرَةَ جَامِعِ بْنِ شَدَّادٍ ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ،
عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ ، قَالَ : ضِفْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ , فَأُتِيَ بِجَنْبٍ مَشْوِيٍّ ، ثُمَّ
أَخَذَ الشَّفْرَةَ فَجَعَلَ يَحُزُّ ، فَحَزَّ لِي بِهَا مِنْهُ ، قَالَ :
فَجَاءَ بِلالٌ يُؤْذِنُهُ بِالصَّلاةِ فَأَلْقَى الشَّفْرَةَ , فَقَالَ : "
مَا لَهُ تَرِبَتْ يَدَاهُ ؟ " ، قَالَ : وَكَانَ شَارِبُهُ قَدْ وَفَى ،
فَقَالَ لَهُ : " أَقُصُّهُ لَكَ عَلَى سِوَاكٍ " أَوْ " قُصُّهُ
عَلَى سِوَاكٍ " .
মুগীরা
ইবনে শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একবার রাতে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সাথে মেহমান হলাম। তখন (আমার সামনে)
ছাগলের পাঁজরের ভুনা গোশত পরিবেশন করা হলো।তারপর তিনি ছুরি দ্বারা তা কাটলেন এবং
আমাকে দিলেন। এমন সময় বিলাল (রাঃ) তাঁকে সালাতের আহ্বান জানালেন। তিনি ছুরিটি
ছুঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, তাঁর কী তাঁর উভয় হাত ধূলোয় ধূসরিত হোক। বর্ণনাকারী বলেন,
তাঁর গোঁফ লম্বা হয়ে গিয়েছিল। তাই তিনি তাঁকে বললেন, তোমার গোঁফ আমি মিসওয়াকের
উপরে রেখে কেটে দেব।
ব্যাখ্যাঃ তার দু'হাত ধূলিময় হোক। শাব্দিক বিবেচনার হিসেবে এটা বদদু’আ। অর্থাৎ- সে
দরিদ্র ও নিঃস্ব হয়ে যাক। তবে এখানে বদদু'আ উদ্দেশ্য নয়। ধমক, তিরস্কার ও
আক্ষেপমূলক বাক্য হিসেবে এ শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়; এখানে এটাই উদ্দেশ্য।
[১২৫] শারহুস সুন্নাহ,
হা/২৮৪৮ মিশকাত, হা/৪২৩৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম উরুর গোশত পছন্দ করতেন
১২৫
حَدَّثَنَا وَاصِلُ
بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ ، عَنْ أَبِي
حَيَّانَ التَّيْمِيِّ ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ :
" أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِلَحْمٍ , فَرُفِعَ
إِلَيْهِ الذِّرَاعُ , وَكَانَتْ تُعْجِبُهُ , فَنَهَسَ مِنْهَا " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও এর সামনে বকরীর সামনের উরু পরিবেশন করা হলো। তিনি তা
খুবই পছন্দ করতেন। অতঃপর তিনি তা থেকে দাঁত দিয়ে কেটে খেলেন। [১২৬]
ব্যাখ্যাঃ মানুষের ক্ষেত্রে কুনুই থেকে আঙ্গুলের আগা পর্যন্তকে যিরা বলে। গরু ও
বকরীর ক্ষেত্রে বাহু বলতে রানকে বুঝায়। এখানে বাহু বলতে রান উদ্দেশ্য।
[১] সহীহ বুখারী, হা/৪৭১২;
সহীহ মুসলিম, হা/৫০১; ইবনে মাজাহ, হা/৩৩০৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا أَبَانُ بْنُ يَزِيدَ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ ،
عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ ، قَالَ : طَبَخْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , قِدْرًا , وَقَدْ كَانَ يُعْجِبُهُ الذِّرَاعُ , فَنَاوَلْتُهُ
الذِّرَاعَ , ثُمَّ قَالَ : " نَاوِلْنِي الذِّرَاعَ " ، فَنَاوَلْتُهُ
, ثُمَّ قَالَ : " نَاوِلْنِي الذِّرَاعَ " , فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ
اللَّهِ ، وَكَمْ لِلشَّاةِ مِنْ ذِرَاعٍ , فَقَالَ : " وَالَّذِي نَفْسِي
بِيَدِهِ لَوْ سَكَتَّ لَنَاوَلْتَنِي الذِّرَاعَ مَا دَعَوْتُ " .
আবু
উবায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একবার নবী (সঃ) এর জন্য এক ডেগ গোশত রান্না করলাম। তিনি বকরীর সামনের
উরুর গোশত অধিক পছন্দ করতেন। তাই আমি তাঁকে সামনের একটি পা দিলাম। তারপর তিনি
বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি তাঁকে সামনের আরেকটি পা দিলাম। তারপর
তিনি পুনরায় বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল!
বকরীর সামনের পা কয়টি থাকে? তিনি বললেন, সে মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন!
যদি তুমি চুপ থাকতে তাহলে আমি যতক্ষন সামনের পা চাইতাম, ততক্ষন তুমি দিতে পারতে।
১২৭
[১২৭] মুজামুল কাবীর,
হা/১৮২৮৬; মুসনাদে বাযযার, হা/৮৩৪৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুকনা রুটি এবং সিরকা পছন্দ করতেন
১২৭
حَدَّثَنَا أَبُو
كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاءِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
عَيَّاشٍ ، عَنْ ثَابِتٍ أَبِي حَمْزَةَ الثُّمَالِيِّ ، عَنِ الشَّعْبِيِّ ، عَنْ
أُمِّ هَانِئِ ، قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , فَقَالَ : " أَعِنْدَكِ شَيْءٌ ؟ " فَقُلْتُ : لا , إِلا
خُبْزٌ يَابِسٌ , وَخَلٌّ . فَقَالَ : " هَاتِي ، مَا أَقْفَرَ بَيْتٌ مِنْ
أُدُمٍ فِيهِ خَلٌّ " .
উম্মু
হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি ? আমি বললাম, না। আমার নিকট শুকনো রুটি এবং সিরকা
ছাড়া কোন কিছুই নেই। তিনি বললেন, নিয়ে এসো। তখন তিনি বলেন, যে ঘরে সিরকা আছে সে ঘর
তরকারীশূন্য নয়।[১]
[১] শারহে সুন্নাহ,
হা/২৮৬৯, সিলসিলা সহীহাহ, হা/২২২০; মিশকাত, হা/৪২২২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ ، عَنْ مُرَّةَ الْهَمْدَانِيِّ
، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ ، قَالَ : " فَضْلُ عَائِشَةَ عَلَى النِّسَاءِ كَفَضْلِ
الثَّرِيدِ عَلَى سَائِرِ الطَّعَامِ " .
আবু
মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমণীদের মধ্যে আয়েশা (রাঃ) মর্যাদা সেরূপ, যেরূপ মর্যাদা যাবতীয় খাদ্যের
মধ্যে সারীদের।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৪১১;
সহীহ মুসলিম, হা/৬৪২৫; সুনানে নাসাঈ, হা/৩৯৪৭; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৮০; মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৯৫৪১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৭১১৪; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৩৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা কে ?
১২৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَعْمَرٍ الأَنْصَارِيُّ
أَبُو طُوَالَةَ ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ , يَقُولُ : قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " فَضْلُ عَائِشَةَ عَلَى
النِّسَاءِ كَفَضْلِ الثَّرِيدِ عَلَى سَائِرِ الطَّعَامِ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমণীকুলের মধ্যে আয়েশা
(রাঃ) মধ্যমণী ও মর্যাদার অধিকারিনী, যেমন সারীদ যাবতীয় খাদ্যের মধ্যমণী।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৪৩৩;
সহীহ মুসলিম, হা/৬৪৫২; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৮১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮১১; দারেমী, হা/২১১৩;
জামেউস সগীর, হা/৩৮৮০; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৩৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বকরীর কাঁধের গোশতও খেতেন
১৩০
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ ،
عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ ، عَنِ أَبِيهِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ،
أَنَّهُ " رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
تَوَضَّأَ مِنْ أَكْلِ ثَوْرِ أَقِطٍ ، ثُمَّ رَآهُ أَكَلَ مِنْ كَتِفِ شَاةٍ ،
ثُمَّ صَلَّى , وَلَمْ يَتَوَضَّأْ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পনির খাওয়ার শেষে ওযূ করতে
দেখেছেন। তিনি এও দেখেছেন যে, তিনি একবার বকরীর কাঁধের গোশত আহার করলেন। অথচ ওযূ
না করেই সালাত আদায় করলেন।[১]
[১] সহীহ ইবনে খুযাইমা,
হা/৪২; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/১১৫১; বায়হাকী, হা/৭০১; জামেউল সগীর, হা/১৩১১১; সুনানে
কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৭৫২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর ও ছাতু দ্বারা ওলীমা করেছিলেন
১৩১
حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ ، عَنْ وَائِلِ بْنِ
دَاوُدَ ، عَنِ ابْنِهِ ، وَهُوَ بَكْرُ بْنُ وَائِلٍ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " أَوْلَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى صَفِيَّةَ بِتَمْرٍ وَسَوِيقٍ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফিয়্যা (রাঃ) এর বিয়েতে খেজুর
ও ছাতু দ্বারা ওলীমা সম্পন্ন করেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১২০৯৯; মুসনাদে বাযযার, হা/৬২৯৪; মুসনাদে আবু ই’আলা, হা/৩৫৫৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ ، عَنْ نُبَيْحٍ الْعَنَزِيِّ ، عَنْ
جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : أَتَانَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فِي مَنْزِلِنَا , فَذَبَحْنَا لَهُ شَاةً ، فَقَالَ :
" كَأَنَّهُمْ عَلِمُوا أَنَّا نُحِبُّ اللَّحْمَ " . وَفِي الْحَدِيثِ
قِصَّةٌ .
জাবির
ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বাড়িতে আসলেন। আমরা তাঁকে
(আপ্যায়নের জন্য) একটি বকরী যবেহ করি। তারপর তিনি বললেন, মনে হচ্ছে তারা যেন জানে
যে, আমি গোশত পছন্দ করি। এ হাদীসের সাথে দীর্ঘ ঘটনা সম্পৃক্ত রয়েছে।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩৩
حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ ، أَنَّهُ سمعَ جَابِرًا . ح قَالَ سُفْيَانُ :
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ ، عَنْ جَابِرٍ ، قَالَ : "
خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَأَنَا مَعَهُ
فَدَخَلَ عَلَى امْرَأَةٍ مِنَ الأَنْصَارِ ، فذَبَحَتْ لَهُ شَاةً , فَأَكَلَ
مِنْهَا ، وَأَتَتْهُ بِقِنَاعٍ مِنْ رُطَبٍ ، فَأَكَلَ مِنْهُ ، ثُمَّ تَوَضَّأَ
لِلظُّهْرِ , وَصَلَّى , صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، ثُمَّ انْصَرَفَ ،
فَأَتَتْهُ بِعُلالَةٍ مِنْ عُلالَةِ الشَّاةِ ، فَأَكَلَ ثُمَّ صَلَّى الْعَصْرَ
, وَلَمْ يَتَوَضَّأْ " .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারী মহিলার ঘরে
আসলেন। আমি তখন তাঁর সাথে ছিলাম। তখন ঐ মহিলাটি তাঁর জন্য একটি বকরী যবাই করলেন।
তিনি তা হতে কিছু গোশত আহার করলেন। এরপর ঐ মহিলাটি তাঁর সামনে এক থোকা তাজা খেজুর
পেশ করলেন। তিনি তা হতেও কিছু খেয়ে নিলেন। এরপর তিনি ওযু করে যোহরের সালাত আদায়
করলেন। তারপর তিনি ঐ মহিলাটির নিকটে ফিরে আসলেন। মহিলাটি অবশিষ্ট গোশতের কিছু অংশ
তাঁর সামনে পরিবেশন করলেন এবং তিনি তা খেলেন। এরপর ওযু না করেই আসরের সালাত আদায়
করলেন।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/২৮৫০; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৭৭৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ ও চর্বিযুক্ত
খাবারও আহার করতেন
১৩৪
حَدَّثَنَا
الْعَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ
مُحَمَّدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ أَبِي يَعْقُوبَ ، عَنْ أُمِّ
الْمُنْذِرِ ، قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , وَمَعَهُ عَلِيٌّ ، وَلَنَا دَوَالٍ مُعَلَّقَةٌ ، قَالَتْ : فَجَعَلَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ وَعَلِيٌّ مَعَهُ
يَأْكُلُ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
لِعَلِيٍّ : " مَهْ يَا عَلِيُّ ، فَإِنَّكَ نَاقَةٌ " ، قَالَتْ :
فَجَلَسَ عَلِيٌّ , وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ ،
قَالَتْ : فَجَعَلْتُ لَهُمْ سِلْقًا وَشَعِيرًا ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِعَلِيٍّ : " مِنْ هَذَا فَأَصِبْ فَإِنَّ هَذَا
أَوْفَقُ لَكَ " .
উম্মুল
মুনযির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বাড়িতে আসলেন।
তাঁর সঙ্গে আলী (রাঃ)ও ছিলেন। আমাদের ঘরে কয়েক ছড়া (কাঁদি) খেজুর ঝুলন্ত ছিল।
তিনি বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ কাঁদিগুলো হতে খেজুর
খেতে থাকলেন এবং তাঁর সঙ্গে আলী (রাঃ)ও খেতে থাকলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আলী! থাম তুমি খেজুর খেয়ো না। কারণ, তুমি সবে মাত্র
রোগ মুক্ত হয়েছ। তিনি বললেন, এতে আলী (রাঃ) খাওয়া বন্ধ করলেন। আর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেতে থাকলেন। বর্ণনাকারী আরো বলেন, আমি তাঁদের
জন্য চর্বি দিয়ে যব রান্না করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, আলী। তুমি এ থেকে খাও। কারণ, তা তোমার স্বাস্থ্যের জন্য বেশি
উপযোগী।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/৩৪৪২:
মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮২৪৪; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/২০২১১; শারহুস সুন্নাহ,
হা/২৮৬৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৪১৩৩; মিশকাত, হা/৪২১৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘হায়স’ নামক খাবারও খেতেন
১৩৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ
بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ ، عَنْ سُفْيَانَ ،
عَنْ طَلْحَةَ بْنِ يَحْيَى ، عَنْ عَائِشَةَ بِنْتِ طَلْحَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ،
أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ , قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَأْتِينِي فَيَقُولُ : " أَعِنْدَكِ غَدَاءٌ ؟ " فَأَقُولُ :
لا . قَالَتْ : فَيَقُولُ : " إِنِّي صَائِمٌ " . قَالَتْ : فَأَتَانِي
يَوْمًا ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّهُ أُهْدِيَتْ لَنَا هَدِيَّةٌ ،
قَالَ : " وَمَا هِيَ ؟ " قُلْتُ : حَيْسٌ ، قَالَ : " أَمَا
إِنِّي أَصْبَحْتُ صَائِمًا " ، قَالَتْ : ثُمَّ أَكَلَ .
উম্মুল
মু’মিনীন আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভোরে আমার কাছে এসে বলতেন, তোমার নিকট
নাশতা করার কিছু আছে কি? আমি কখনো কখনো বলতাম, না, কোন খাবার নেই। তখন তিনি বলতেন,
আমি রোযার নিয়ত করলাম। একবার তিনি আমাদের নিকট আসলেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, হে
আল্লাহর রাসূল! আমাদের জন্য কিছু হাদিয়া এসেছে। তিনি বললেন, তা কোন ধরণের খাবার?
আমি বললাম, হাইস (খেজুরের তৈরি মিষ্টান্ন বিশেষ)। তিনি বললেন, আমি তো রোযাদার
অবস্থায় সকাল কাটিয়েছি। আয়েশা (রাঃ) বললেন, এরপর তিনি খেয়ে নিলেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/২৭৭০;
আবু দাউদ, হা/২৪৫৭; নাসাঈ, হা/২৩২২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪২৬৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৬২৮;
দারা কুতনী, হা/২২৩৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৭৪৫; মিশকাত, হা/২০৭৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘সুফল’ পছন্দ করতেন
১৩৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ ،
عَنْ عَبَّادِ بْنِ الْعَوَّامِ ، عَنْ حُمَيْدٍ ، عَنْ أَنَسٍ : أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " كَانَ يُعْجِبُهُ الثُّفْلُ
" ، قَالَ عَبْدُ اللَّهِ : " يَعْنِي مَا بَقِيَ مِنَ الطَّعَامِ
" .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘সুফল’ পছন্দ করতেন। আবদুল্লাহ [ইমাম তিরমিয়ী
(রহঃ) এর উস্তাদ] বলেন, ‘সুফল’ হচ্ছে সে জিনিস, যা লোকেরা খাদ্য গ্রহণের পর
হাড়ি-পাতিলের তলায় লেগে থাকে।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৩৩২৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭১১৬; জামেউস সগীর, হা/৯১১০; মিশকাত, হা/৪২১৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৭ |
আহার গ্রহণকালে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর ওযূ |
পরিচ্ছদঃ
আহার গ্রহণকালে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর ওযূ
১৩৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ
أَيُّوبَ ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ مِنَ الْخَلاءِ , فَقُرِّبَ
إِلَيْهِ الطَّعَامُ , فَقَالُوا : أَلا نَأْتِيكَ بِوَضُوءٍ ؟ قَالَ : إِنَّمَا
أُمِرْتُ بِالْوُضُوءِ , إِذَا قُمْتُ إِلَى الصَّلاةِ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল খালা অর্থাৎ শৌচাগার থেকে
বাইরে আসলেন। এরপর তাঁর সামনে খানা পরিবেশন করা হলো। সাহাবাগণ বললেন, আমরা আপনাকে
ওযুর পানি দেব কি? তিনি বললেন, আমি তো কেবল সালাত আদায় করার সময় ওযু করার জন্য
নির্দেশ পেয়েছি।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৩৭৬২;
সুনানে নাসাঈ, হা/১৩২: মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৩৮১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৩৮
حَدَّثَنَا سَعِيدُ
بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ ،
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ مِنَ الْغَائِطِ فَأُتِيَ بِطَعَامٍ ، فَقِيلَ لَهُ : أَلا تَتَوَضَّأُ
؟ فَقَالَ : " أَأُصَلِّي , فَأَتَوَضَّأُ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইস্তিঞ্জা তথা শৌচকার্য
সেরে বাইরে আসলেন। এরপর খাবার পরিবেশন করা হলো। তখন তাকে বলা হলো, আপনি কি ওযু
করবেন না? তিনি বললেন, আমি কি সালাত আদায় করব যে, ওযু করব ?[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৮৫৪:
ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬১; দারেমী, হা/৭৬৭, বায়হাকী, হা/১৮৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৭২; মুসান্নাফে
ইবনে আবি শায়বা, হা/২৪৯৪৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮ |
খাওয়ার পূর্বে ও পরে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর দুআ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবারের শুরুতে আল্লাহর নাম নিতেন
১৩৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ مُوسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا هِشَامٌ
الدَّسْتُوَائِيُّ ، عَنْ بُدَيْلٍ الْعُقَيْلِيُّ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ ، عَنْ أُمِّ كُلْثُومٍ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ :
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِذَا أَكَلَ
أَحَدُكُمْ , فَنَسِيَ أَنْ يَذْكُرَ اللَّهَ تَعَالَى عَلَى طَعَامِهِ ,
فَلْيَقُلْ : بِسْمِ اللَّهِ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি
খাবারের সময় আল্লাহর নাম (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম) উচ্চারণ করতে ভুলে যায়,
তাহলে সে যেন (স্মরণ হলে) বলেন,
بِسْمِ اللَّهِ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
“বিসমিল্লা-হি আওওয়ালাহু ওয়া আ-খিরাহু”
অর্থাৎ খাওয়ার শুরুতে ও শেষে আল্লাহর নাম স্মরণ করছি।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৩৭৬৯;
ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৭৭৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫২১৪; মুস্তাদরাকে
হাকেম, হা/৭০৮৭; দারেমী, হা/২০২০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২১০৭ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি ডান দিকে হতে খাবার
খেতে শুরু করার জন্য আদেশ দিয়েছেন
১৪০
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ الصَّبَّاحِ الْهَاشِمِيُّ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الأَعْلَى ، عَنْ مَعْمَرٍ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ
عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَعِنْدَهُ طَعَامٌ , فَقَالَ : " ادْنُ يَا
بُنَيَّ , فَسَمِّ اللَّهَ تَعَالَى , وَكُلْ بِيَمِينِكَ , وَكُلْ مِمَّا يَلِيكَ
" .
উমার
ইবনে আবু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশ করেন। তখন তাঁর সামনে
খাবার পরিবেশিত ছিল। তিনি বললেন, বৎস! কাছে এসো, আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো এবং
তোমার সামনের দিক থেকে ডান হাত দিয়ে খাবার খেতে শুরু করো।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫৩৭৮;
সহীহ মুসলিম, হা/৫৩৮৮; আবু দাউদ, হা/৩৭৭৯; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৩৭৭
সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫২১১; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৬৭২২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
খাওয়া শেষ হয়ে গেলে তিনি
যে দু’আ পাঠ করতেন
১৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ ، عَنْ خَالِدُ بْنُ مَعْدَانَ ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ ،
قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا رُفِعَتِ
الْمَائِدَةُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ , يَقُولُ : " الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا
كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ , غَيْرَ مُودَعٍ , وَلا مُسْتَغْنًى عَنْهُ
رَبَّنَا " .
আবু
উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে দস্তরখানা তুলে
নেয়ার সময় এ দু’আ পাঠ করতেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ , غَيْرَ مُودَعٍ , وَلا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا
“আলহাম্দু লিল্লা-হি হামদান কাসীরান ত্বইয়্যিবাম মুবা-রাকান্ ফীহি গায়রা
মুওয়াদ্দা’ইন ওয়ালা- মুসতাগনান ‘আনহু রব্বানা-”।
অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এমন প্রশংসা যা অফুরান্ত, পবিত্র ও কল্যাণময়;
এমন প্রশংসা যা বর্জন করা যায় না কিংবা তা হতে মুখাপেক্ষীহীন থাকা যায় না। হে
আমাদের রব। (আমাদের দু’আ কবুল করে নাও)।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৩৮৫১;
মুসনাদে আহমদ, হা/২২২৫৪; ইবনে হিব্বান, হা/৫২১৮; মুস্তাদরকে হাকেম, হা/১৯৩৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
বিসমিল্লাহ বলে খাবার খেলে
বরকত হয়
১৪২
حَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرٍ مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنْ هِشَامٍ
الدَّسْتُوَائِيِّ ، عَنْ بُدَيْلِ بْنِ مَيْسَرَةَ الْعُقَيْلِيِّ ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ ، عَنْ أُمِّ كُلْثُومٍ ، عَنْ عَائِشَةَ ،
قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ
الطَّعَامَ فِي سِتَّةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ , فَجَاءَ أَعْرَابِيٌّ , فَأَكَلَهُ بِلُقْمَتَيْنِ
، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لَوْ
سَمَّى لَكَفَاكُمْ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ৬ জন সাহাবী নিয়ে খাবার
খেতে বসলেন। এমন সময় একজন বেদুঈন এসে দু’গ্ৰাসে সব খাবার খেয়ে ফেলল। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে যদি ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাবার শুরু করত
তাহলে তোমাদের সবার জন্য তা যথেষ্ট হতো।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬৪;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫১৪৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৫১৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮২৫। শু’আবুল
ঈমান, হা/৫৪৪৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
খাবার খেয়ে আল্লাহর প্রশংসা
করলে আল্লাহ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান
১৪৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ
، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالا : حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ ، عَنْ
زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " إِنَّ اللَّهَ لَيَرْضَى عَنِ الْعَبْدِ أَنْ يَأْكُلَ
الأَكْلَةَ ، أَوْ يَشْرَبَ الشَّرْبَةَ فَيَحْمَدَهُ عَلَيْهَا " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ ঐ
বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান, যে এক লোকমা খানা খেয়ে অথবা এক ঢোক পানি পান
করে তাঁর বিনিময়ে আল্লাহর প্রশংসা করে।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৭১০৮
সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৬৮৭২ শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮৩১ সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৬৫১;
সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২১৬৫৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পানপাত্র |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
পানপাত্র
১৪৪
حَدَّثَنَا
الْحُسَيْنُ بْنُ الأَسْوَدِ الْبَغْدَادِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ
مُحَمَّدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ طَهْمَانَ ، عَنْ ثَابِتٍ ، قَالَ :
أَخْرَجَ إِلَيْنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ ، قَدَحَ خَشَبٍ , غَلِيظًا , مُضَبَّبًا
بِحَدِيدٍ , فَقَالَ : " يَا ثَابِتُ ، هَذَا قَدَحُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " .
সাবিত
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একবার আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) লোহার পাত লাগানো কাঠের মোটা একটি পেয়ালা
আমাদের নিকট বের করলেন। তারপর বললেন, সাবিত! এ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেয়ালা।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩০৩৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৪৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ ،
قَالَ : أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا حُمَيْدٌ ،
وَثَابِتٌ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : " لَقَدْ سَقَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , بِهَذَا الْقَدَحِ الشَّرَابَ كُلَّهُ ، الْمَاءَ ,
وَالنَّبِيذَ , وَالْعَسَلَ , وَاللَّبَنَ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) -কে এ পেয়ালা দ্বারা যাবতীয় পানীয় তথা নাবীয,
কিসমিস, মধু ও দুধ ইত্যাদি পান করিয়েছি। [১৪৫]
ব্যাখ্যাঃ নাবীয হলো, কোন পাত্রে কয়েকটি খেজুর বা কিছু পরিমাণ কিসমিস সন্ধ্যায়
ভিজালে সকালে এবং সকালে ভিজালে সন্ধ্যায় যে শরবত তৈরি হয়। আনাস (রাঃ) এর উক্তির
মর্ম হলো, তিনি ঐ পাত্রটিতে খুরমা অথবা কিসমিস ভিজিয়ে রাখতেন এবং ঐ পেয়ালাতে
প্রস্তুত নাবীয রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ কে পান করাতেন। সাধারণত তিনি সন্ধ্যায় ভিজানো
নাবীয সকালে এবং সকালে ভিজানো নাবীয সন্ধ্যায় পান করতেন। উল্লেখ্য যে, নেশা তৈরি
হলে নাবীয ব্যবহার করা যাবে না।
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫৬৩৮;
সহীহ মুসলিম, হা/৫৩৫৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৬০৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৩৯৪; বায়হাকী,
হা/১৭১৯২; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০২০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ফলমূলের
বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কাঁচা খেজুরের সাথে শসা খেতেন
১৪৬
حَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُوسَى الْفَزَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ
سَعْدٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : " كَانَ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَأْكُلُ الْقِثَّاءَ بِالرُّطَبِ " .
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁচা খেজুরের সাথে শসা খেতেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৫৪৫১;
আবু দাউদ, হা/৩৮৩৭; ইবনে মাজাহ, হা/৩৩২৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪১; দারেমী, হা/২০৫৮,
শরহুস সুন্নাহ, হা/২৮৯৩; জামেউস সগীর, হা/৯০১১; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৫৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি তাজা খেজুরের সাথে
তরমুজ খেতেন
১৪৭
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ
بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْخُزَاعِيُّ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ
بْنُ هِشَامٍ ، عَنْ سُفْيَانَ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ،
عَنْ عَائِشَةَ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
كَانَ يَأْكُلُ الْبِطِّيخَ بِالرُّطَبِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাজা খেজুরের সাথে তরমুজ খেতেন।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৩৮৩৮;
ইবনে হিব্বান, হা/২৫৪৬; বায়হাকী, হা/১৪৪১৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৫০৪৪;
জামেউস সগীর, হা/৯০০৯; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৫৭৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি তাজা তরমুজ ও তাজা
খেজুর একত্রে মিলিয়ে খেতেন
১৪৮
حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيمُ بْنُ يَعْقُوبَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا أَبِي ، قَالَ : سَمِعْتُ حُمَيْدًا ، أَوْ قَالَ : حَدَّثَنِي
حُمَيْدٌ ، قَالَ وَهْبٌ : وَكَانَ صَدِيقًا لَهُ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ،
قَالَ : " رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
يَجْمَعُ بَيْنَ الْخِرْبِزِ وَالرُّطَبِ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে খিরবিয ও তাজা খেজুর একত্রে
মিলিয়ে খেতে দেখেছি।[১]
[১] সুনানে কুবরা লিন
নাসাঈ, হা/৬৬৯২ জামেউস সগীর, হা/৯০৪৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
নতুন ফল উদ্বোধনকালে তিনি যে
দু’আ পাঠ করতেন
১৪৯
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ . ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ
بْنُ مُوسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنْ
سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ :
كَانَ النَّاسُ إِذَا رَأَوْا أَوَّلَ الثَّمَرِ جَاءُوا بِهِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَإِذَا أَخَذَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي
ثِمَارِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي مَدِينَتِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي صَاعِنَا
وَفِي مُدِّنَا ، اللَّهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ عَبْدُكَ وَخَلِيلُكَ وَنَبِيُّكَ
، وَإِنِّي عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ ، وَإِنَّهُ دَعَاكَ لِمَكَّةَ ، وَإِنِّي
أَدْعُوكَ لِلْمَدِينَةِ , بِمِثْلِ مَا دَعَاكَ بِهِ لِمَكَّةَ وَمِثْلِهِ مَعَهُ
" ، قَالَ : ثُمَّ يَدْعُو أَصْغَرَ وَلِيدٍ يَرَاهُ , فَيُعْطِيهِ ذَلِكَ
الثَّمَرَ .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সাহাবায়ে কেরাম যখন কোন নতুন ফল দেখতেন তখন তাঁরা তা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে পেশ করতেন। আর তিনি তা গ্রহণ করে এ
মর্মে দু’আ করতেনঃ
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي ثِمَارِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي مَدِينَتِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي صَاعِنَا وَفِي مُدِّنَا ، اللَّهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ عَبْدُكَ وَخَلِيلُكَ وَنَبِيُّكَ ، وَإِنِّي عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ ، وَإِنَّهُ دَعَاكَ لِمَكَّةَ ، وَإِنِّي أَدْعُوكَ لِلْمَدِينَةِ , بِمِثْلِ مَا دَعَاكَ بِهِ لِمَكَّةَ وَمِثْلِهِ مَعَهُ
“আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা-ফী সিমা-রিনা-, ওয়াবা-রিক্ব লানা- ফী মাদীনীতিনা-
ওয়াবা-রিক লানা-ফী স-ইনা- ওয়াফী মুদ্দিনা-, আল্লা-হুম্মা ইন্না ইবরাহীমা আবদুকা
ওয়া খালীলুকা ওয়া নাবীয়্যুকা, ওয়া ইন্নী ‘আবদুকা ওয়া নাবীয়্যুকা, ওয়া ইন্নাহু
দা’আ-কা লিমাক্কাহ, ওয়া ইন্নী আদ’উকা লিলমাদিনাতি বিমিছলি মা- দা’আ-কা বিহী
লিমাক্কাতা ওয়া মিছলিহী মা'আহু”।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাদের ফলসমূহে আমাদের জন্য বরকত দাও, আমাদের শহরে আমাদের জন্য
বরকত দাও, আমাদের জন্য আমাদের ‘সা’ এবং আমাদের ‘মুদ্দে’ (পরিমাপ যন্ত্রে) বরকত
দাও। হে আল্লাহ! নিশ্চয় ইবরাহীম (আঃ) তোমার বান্দা, তোমার বন্ধু এবং তোমার নবী।
আর আমিও তোমার বান্দা ও তোমার নবী। তিনি (ইবরাহীম তো) তোমার কাছে মক্কার জন্য দু’আ
করেছিলেন আর আমি তাঁর ন্যায় মদিনার জন্য তোমার কাছে দু’আ করছি এবং এর সঙ্গে আরো
সমপরিমাণ দু’আ করছি।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি যাকে সর্বকনিষ্ঠ দেখতেন এরূপ ছোট কাউকে ডেকে তাকে সে
ফল দিয়ে দিতেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৩৪০০
মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৫৬৮; সুনালুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/১০০৬১; সহীহ তারগীব ওয়াত
তারহীব, হা/১১৯৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পানীয়
বস্তুর বিবরণ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঠান্ডা মিষ্টি পানীয় অধিকতর পছন্দ করতেন
১৫০
حَدَّثَنَا ابْنُ
أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مَعْمَرٍ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ
، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ أَحَبَّ الشَّرَابِ
إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , الْحُلْوُ الْبَارِدُ
" .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঠাণ্ডা মিষ্টি পানীয় অধিকতর
পছন্দ করতেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৪১৪৬; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭২০০; সুনানুল কুবরা হা/৬৮১৫: শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০২৬;
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৪৬৭৬; জামেউস সগীর, হা/৮৭৫৬; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩০০৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি নিজে পান করে প্রথমে
ডান পার্শ্বের ব্যক্তিকে দিতেন
১৫১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ
بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ ، عَنْ عُمَرَ هُوَ ابْنُ أَبِي حَرْمَلَةَ ، عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : دَخَلْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , أَنَا , وَخَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ عَلَى مَيْمُونَةَ , فَجَاءَتْنَا
بِإِنَاءٍ مِنْ لَبَنٍ ، فَشَرِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , وَأَنَا عَلَى يَمِينِهِ , وَخَالِدٌ عَلَى شِمَالِهِ ، فَقَالَ لِي :
" الشَّرْبَةُ لَكَ ، فَإِنْ شِئْتَ آثَرْتَ بِهَا خَالِدًا " ،
فَقُلْتُ : مَا كُنْتُ لأُوثِرَ عَلَى سُؤْرِكَ أَحدًا ، ثُمَّ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ أَطْعَمَهُ اللَّهُ
طَعَامًا ، فَلْيَقُلِ : اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ , وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا
مِنْهُ ، وَمَنْ سَقَاهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَبَنًا ، فَلْيَقُلِ : اللَّهُمَّ
بَارِكْ لَنَا فِيهِ , وَزِدْنَا مِنْهُ " . ثُمَّ قَالَ : قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لَيْسَ شَيْءٌ يُجْزِئُ
مَكَانَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ , غَيْرُ اللَّبَنِ "
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে আমি এবং খালিদ ইবনে
ওয়ালীদ (রাঃ) একবার মায়মূনা (রাঃ) এর নিকট গেলাম। তিনি আমাদের জন্য একটি পাত্রে
দুধ আনলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা হতে কিছু পান
করলেন। সে সময় আমি ছিলাম তাঁর ডানে এবং খালিদ তাঁর বামে। তারপর তিনি আমাকে বললেন,
এখন পান করার হক তোমার। তবে ইচ্ছে করলে তুমি খালিদকে তোমার উপর অগ্রাধিকার দিতে
পার। এরপর ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমি আপনার উচ্ছিষ্টের ব্যাপারে কাউকে
অগ্রাধিকার দিতে সম্মত নই। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
আল্লাহ যদি কাউকে কোন খাবার খাওয়ান তাহলে তাঁর বলা উচিত-
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ , وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا مِنْهُ
“আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়া আত্ব’ইমনা- খয়রাম্ মিনহু”।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি এতে বরকত দাও এবং আমাদেরকে এর চেয়েও বেশি সুস্বাদু খাবার
দান করো।
আর যদি আল্লাহ কাউকে দুধ পান করান, তাহলে তাঁর বলা উচিত-
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ , وَزِدْنَا مِنْ
“আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়াযিদনা- মিনহু”।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি এতে আমাদের জন্য বরকত দাও এবং আমাদেরকে এর চেয়েও বেশি দাও।
এরপর বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দুধ
ছাড়া এমন কোন বস্তু নেই, যা খাদ্য ও পানীয় উভয়ের কাজ দেয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পান
করার পদ্ধতি |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ানো অবস্থায় যমযমের পানি পান করতেন
১৫২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ ، قَالَ
: حَدَّثَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ ، وَمُغِيرَةُ ، عَنِ الشَّعْبِيِّ ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , " شَرِبَ
مِنْ زَمْزَمَ , وَهُوَ قَائِمٌ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম দাঁড়ানো অবস্থায় যমযমের পানি পান করতেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৫৪০০;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৩৮; শু’আবুল ঈমান, হা/৫৫৮২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ ، عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ ، عَنْ
أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ ، قَالَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , " يَشْرَبُ قَائِمًا , وَقَاعِدًا " .
আমর
ইবনে শু’আইব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার পিতামহ হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাঁড়িয়ে ও বসে (উভয়
অবস্থায়) পান করতে দেখেছি।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/১৩৬১;
মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৯২৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০৪৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارِكِ
، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ ، عَنِ الشَّعْبِيِّ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ :
" سَقَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مِنْ زَمْزَمَ ,
فَشَرِبَ , وَهُوَ قَائِمٌ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে যমযমের পানি পান করিয়েছি। আর তিনি তা দাঁড়িয়ে পান করেছেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১৬৩৭;
সহীহ মুসলিম, হা/৫৩৯৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬০৮; ইবনে মাজাহ, হা/৩৪২২ সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৫৩২০; মুজামুস সাগীর, হা/৩৮৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০৪৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযুর অবশিষ্ট পানি দাঁড়িয়ে পান করতেন
১৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاءِ ، وَمُحَمَّدُ بْنُ
طَرِيفٍ الْكُوفِيُّ ، قَالا : حَدَّثَنَا ابْنُ الْفُضَيْلِ ، عَنِ الأَعْمَشِ ،
عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَيْسَرَةَ ، عَنِ النَّزَّالِ بْنِ سَبْرَةَ ، قَالَ
: " أَتَى عَلِيٌّ ، بِكُوزٍ مِنْ مَاءٍ , وَهُوَ فِي الرَّحْبَةِ , فَأَخَذَ
مِنْهُ كَفًّا , فَغَسَلَ يَدَيْهِ , وَمَضْمَضَ , وَاسْتَنْشَقَ , وَمَسَحَ
وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ وَرَأْسَهُ ، ثُمَّ شَرِبَ وَهُوَ قَائِمٌ " ، ثُمَّ
قَالَ : " هَذَا وُضُوءُ مَنْ لَمْ يُحْدِثْ ، هَكَذَا رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَعَلَ " .
নাযযাল
ইবনে সাবরা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী (রাঃ) রাহবা তথা কুফার মসজিদের
বারান্দায় অবস্থানকালে তাঁর জন্য এক মগ পানি আনা হলো। তিনি তা হতে এক অঞ্জলি পানি
নিয়ে উভয় হাত ধৌত করলেন। তারপর কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিলেন। এরপর মুখমণ্ডল
মাসাহ করলেন। তারপর দাঁড়িয়ে অবশিষ্ট পানি পান করলেন। এরপর বললেন, যার ওযু ভঙ্গ
হয়নি, তাঁর ওযু হচ্ছে এই। (তিনি বলেন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে আমি এরূপ করতে দেখেছি।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৫৮৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার সময় তিনবার শ্বাস নিতেন
১৫৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، وَيُوسُفُ بْنُ حَمَّادٍ ، قَالا :
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ ، عَنْ أَبِي عصَامَ ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : كَانَ
يَتَنَفَّسُ فِي الإِنَاءِ ثَلاثًا إِذَا شَرِبَ ، وَيَقُولُ : " هُوَ
أَمْرَأُ , وَأَرْوَى " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন পান করতেন তখন তিনবার শ্বাস নিতেন এবং বলতেন, তা অধিক স্বাস্থ্যকর
ও তৃপ্তিদানে অধিকতর সহায়ক।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৫৪০৫;
সহীহ বুখারী, হা/২৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৯৪৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৩২৯; মুস্তাদরাকে
হাকেম, হা/৭২০৫; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২১১৯৷
হাদিসের মানঃহাসান হাদিস
পরিচ্ছদঃ
একদা
তিনি দাঁড়ানো অবস্থায় মশক হতে পানি পান করেন
১৫৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ
يَزِيدَ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ
، عَنْ جَدَّتِهِ كَبْشَةِ ، قَالَتْ : " دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَشَرِبَ مِنْ قِرْبَةٍ مُعَلَّقَةٍ قَائِمًا ،
فَقُمْتُ إِلَى فِيهَا فَقَطَعْتُهُ " .
কাবশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসলেন। তখন তিনি লটকানো মশক হতে দাড়ানো অবস্থায়
পানি পান করলেন। এরপর আমি দাঁড়ালাম এবং মশকের মুখটি কেটে নিলাম।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩০৪২ শু’আবুল ঈমান, হা/৫৬২৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عُزْرَةُ بْنُ ثَابِتٍ
الأَنْصَارِيُّ ، عَنْ ثُمَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : كَانَ أَنَسُ بْنُ
مَالِكٍ ، يَتَنَفَّسُ فِي الإِنَاءِ ثَلاثًا ، وَزَعَمَ أَنَسٌ ، " أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ يَتَنَفَّسُ فِي الإِنَاءِ
ثَلاثًا " .
সুমামা
ইবনে আবদুল্লাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) তিন শ্বাসে
পানি পান করতেন এবং বলতেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন শ্বাসে পানি
পান করতেন।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/৩৪১৬;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৯৪৭; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩০৩৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
أَبُو عَاصِمٍ ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ ، عَنِ الْبَرَاءِ
بْنِ زَيْدٍ ابْنِ ابْنَةِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ،
" أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , دَخَلَ عَلَى أُمِّ
سُلَيْمٍ , وَقِرْبَةٌ مُعَلَّقَةٌ , فَشَرِبَ مِنْ فَمِ الْقِرْبَةِ وَهُوَ
قَائِمٌ ، فَقَامَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ إِلَى رَأْسِ الْقِرْبَةِ فَقَطَعَتْهَا
" .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আনাস (রাঃ) এর মাতা উম্মে সুলায়ম (রাঃ) এর বাড়ি যান। সেখানে একটি মশক ঝুলন্ত
ছিল। এরপর তিনি দাঁড়ানো অবস্থায় মশকটির মুখ হতে পানি পান করলেন। এরপর উম্মে
সুলায়ম (রাঃ) মশকের নিকট পৌছান এবং তাঁর মুখ কেটে নেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৭৪৬৮; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/২০৮১৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ نَصْرٍ النَّيْسَابُورِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْفَرْوِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَتْنَا
عَبِيدَةُ بِنْتُ نَائِلٍ ، عَنْ عَائِشَةَ بِنْتِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ ،
عَنِ أَبِيهَا ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , "
كَانَ يَشْرَبُ قَائِمًا "
সা’দ
ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ানো
অবস্থায় পানি পান করতেন।[১]
[১] মুয়াত্তা ইমাম
মালেক, হা/১৬৫৪; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৩৩৭; শারহুল মা'আনী, হা/৬৮৪৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুগদ্ধি
ব্যবহার |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি আতরদানি ছিল
১৬১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ ، وَاحِدٍ ، قَالُوا : حَدَّثَنَا
أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شَيْبَانُ ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ الْمُخْتَارِ ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، عَنْ أَبِيهِ
، قَالَ : كَانَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "
سُكَّةٌ يَتَطَيَّبُ مِنْهَا " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর আতরদানি ছিল। তিনি তা হতে আতর লাগাতেন।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৪১৪৬;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৬৭; জামেউস সগীর, হা/৮৯৬২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি
কখনো সুগন্ধি ফেরত দিতেন না
১৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَزْرَةُ بْنُ ثَابِتٍ ، عَنْ
ثُمَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : كَانَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ ، لا يَرُدُّ
الطِّيبَ ، وَقَالَ أَنَسٌ : إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
" كَانَ لا يَرُدُّ الطِّيبَ " .
সুমামা
ইবনে আবদুল্লাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) সুগদ্ধি ফেরত দিতেন না।
আর আনাস (রাঃ) বলতেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো সুগন্ধি ফেরত দিতেন
না।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/২৫৮২;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৩৭৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৭০; জামেউস সগীর, হা/৮৯৮৩; শু’আবুল
ঈমান, হা/৬০০৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
فُدَيْكٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُسْلِمِ بْنِ جُنْدُبٍ ، عَنْ أَبِيهِ ،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " ثَلاثٌ لا تُرَدُّ : الْوَسَائِدُ ، وَالدُّهْنُ ، وَاللَّبَنُ
" .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনটি বস্তু কখনো ফেরত দেবে না- বালিশ, তৈল এবং দুধ।[১]
[১] মুজামুল কাবীর লিত
তাবারানী, হা/১৩১০০; জামেউস সগীর, হা/৫৩৫৭; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৭৩; সিলসিলা সহীহাহ,
হা/৬১৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি
পুরুষ ও মহিলাদের সুগন্ধি ব্যবহারের পার্থক্য বলে দিয়েছেন
১৬৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الْحَفَرِيُّ ، عَنْ سُفْيَانَ ، عَنِ الْجُرَيْرِيِّ ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ ،
عَنْ رَجُلٍ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " طِيبُ الرِّجَالِ مَا ظَهَرَ رِيحُهُ ,
وَخَفِيَ لَوْنُهُ ، وَطِيبُ النِّسَاءِ مَا ظَهَرَ لَوْنُهُ وَخَفِيَ رِيحُهُ
"
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পুরুষের সুগদ্ধি ছড়ায় কিন্তু রং থাকে অদৃশ্য। আর মহিলাদের
সুগন্ধির রং দৃশ্যমান কিন্তু তাতে গন্ধ নেই।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/২১৭৬;
সুনানে নাসাঈ, হা/৫১১৭; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৬৩৯ শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১৬২;
জামেউস সগীর, হা/৩৮২৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বাচনভঙ্গি |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা ছিল সুস্পষ্ট
১৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
قُتَيْبَةَ سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُثَنَّى ، عَنْ
ثُمَامَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يُعِيدُ الْكَلِمَةَ ثَلاثًا لِتُعْقَلَ
عَنْهُ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কোন কথা তিনবার বলতেন, যাতে (শ্রোতারা) ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে
পারে।[১]
[১] মুজামুল ইসমাঈলী,
হা/১০৫; মুজামুস সগীর, হা/৯১২১৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কোন কথা তিনবার বলতেন
১৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
قُتَيْبَةَ سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُثَنَّى ، عَنْ
ثُمَامَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يُعِيدُ الْكَلِمَةَ ثَلاثًا لِتُعْقَلَ
عَنْهُ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কোন কথা তিনবার বলতেন, যাতে (শ্রোতারা) ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে
পারে।[১]
[১] মুজামুল ইসমাঈলী,
হা/১০৫; মুজামুস সগীর, হা/৯১২১৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাচনভঙ্গি সম্পর্কে হিন্দ ইবনে আবু হালা (রাঃ)
এর বর্ণনা
১৬৭
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جُمَيْعُ بْنُ
عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعِجْلِيُّ ، قَالَ : حدَّثنِي رَجُلٌ مِنْ
بَنِي تَمِيمٍ مِنْ وَلَدِ أَبِي هَالَةَ زَوْجِ خَدِيجَةَ يُكْنَى أَبَا عَبْدِ
اللَّهِ ، عَنِ ابْنٍ لأَبِي هَالَةَ ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ ، قَالَ :
سَأَلْتُ خَالِي هِنْدُ بْنُ أَبِي هَالَةَ ، وَكَانَ وَصَّافًا ، فَقُلْتُ : صِفْ
لِي مَنْطِقَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : "
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَوَاصِلَ الأَحْزَانِ
, دَائِمَ الْفِكْرَةِ , لَيْسَتْ لَهُ رَاحَةٌ ، طَوِيلُ السَّكْتِ ، لا
يَتَكَلَّمُ فِي غَيْرِ حَاجَةٍ ، يَفْتَتِحُ الْكَلامَ , وَيَخْتِمُهُ بِاسْمِ
اللَّهِ تَعَالَى ، وَيَتَكَلَّمُ بِجَوَامِعِ الْكَلِمِ ، كَلامُهُ فَصْلٌ ، لا
فُضُولَ , وَلا تَقْصِيرَ ، لَيْسَ بِالْجَافِي , وَلا الْمُهِينِ ، يُعَظِّمُ
النِّعْمَةَ وَإِنْ دَقَّتْ لا يَذُمُّ مِنْهَا شَيْئًا ، غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ
يَكُنْ يَذُمُّ ذَوَّاقًا وَلا يَمْدَحُهُ ، وَلا تُغْضِبُهُ الدُّنْيَا ، وَلا
مَا كَانَ لَهَا ، فَإِذَا تُعُدِّيَ الْحَقُّ , لَمْ يَقُمْ لِغَضَبِهِ شَيْءٌ ,
حَتَّى يَنْتَصِرَ لَهُ ، وَلا يَغْضَبُ لِنَفْسِهِ ، وَلا يَنْتَصِرُ لَهَا ،
إِذَا أَشَارَ بِكَفِّهِ كُلِّهَا ، وَإِذَا تَعَجَّبَ قَلَبَهَا ، وَإِذَا
تَحَدَّثَ اتَّصَلَ بِهَا ، وَضَرَبَ بِرَاحَتِهِ الْيُمْنَى بَطْنَ إِبْهَامِهِ
الْيُسْرَى ، وَإِذَا غَضِبَ أَعْرَضَ وَأَشَاحَ ، وَإِذَا فَرِحَ غَضَّ طَرْفَهُ
، جُلُّ ضَحِكِهِ التَّبَسُّمُ ، يَفْتَرُّ عَنْ مثل حَبِّ الْغَمَامِ " .
হাসান
ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি (আমার) মামা হিন্দ ইবনে আবু
হালা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
অবয়ব ও আখলাক সম্পর্কে সুন্দররুপে বর্ণনা করতেন। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাচনভঙ্গি সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি
বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা আখিরাতে উম্মতের
মুক্তির চিন্তায় বিভোর থাকতেন। এ কারণে তাঁর কোন স্বস্তি ছিল না। তিনি অধিকাংশ
সময় নীরব থাকতেন। বিনা প্রয়োজনে কথা বলতেন না। তিনি স্পষ্টভাবে কথা বলতেন। তিনি
ব্যাপক অর্থবোধক বাক্যালাপ করতেন। তাঁর কথা ছিল একটি থেকে অপরটি পৃথক। তাঁর
কথাবার্তা অধিক বিস্তারিত ছিল না কিংবা অতি সংক্ষিপ্তও ছিল না। অর্থাৎ তাঁর কথার
মর্মার্থ অনুধাবনে কোন প্রকার অসুবিধা হতো না। তাঁর কথায় কঠোরতার ছাপ ছিল না,
থাকত না তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের ভাব।
আল্লাহর নিয়ামত যত সামান্যই হতো তাকে তিনি অনেক বড় মনে করতেন। এতে তিনি কোন
দোষত্রুটি খুঁজতেন না। তিনি অপরিহার্য খাদ্য সামগ্রীর ত্রুটি খতিয়ে দেখতেন না এবং
উচ্ছসিত প্রশংসাও করতেন না। পার্থিব কোন বিষয় বা কাজের উপর ক্রোধ প্রকাশ করতেন না
এবং তাঁর জন্য আক্ষেপও করতেন না। অবশ্য যখন কেউ দীনি কোন বিষয়ে সীমালঙ্ঘন করত তখন
তাঁর রাগের সীমা থাকত না। এমনকি তখন কেউ তাঁকে বশে রাখতে পারত না। তিনি তাঁর
ব্যক্তিগত কারণে ক্রোধাম্বিত হতেন না এবং এজন্য কারো সাহায্য গ্রহণ করতেন না। কোন
বিষয়ের প্রতি ইশারা করলে সম্পূর্ণ হাত দ্বারা ইশারা করতেন। তিনি কোন বিস্ময়
প্রকাশ করলে হাত উল্টাতেন। যখন কথাবার্তা বলতেন তখন ডান হাতের তালুতে বাম হাতের
আঙ্গুলের আভ্যন্তরীণ ভাগ দ্বারা আঘাত করতেন। কারো প্রতি অসন্তুষ্ট হলে তাঁর দিক
হতে মুখ ফিরিয়ে নিতেন এবং অমনোযোগী হতেন। যখন তিনি আনন্দ-উৎফুল্ল হতেন তখন তাঁর
চোখের কিনারা নিম্নমুখী করতেন। অধিকাংশ সময় তিনি মুচকি হাসতেন। তখন তাঁর দাঁতগুলো
বরফের ন্যায় উজ্জ্বল সাদারূপে শোভা পেত।[১]
[১] শু’আবুল ঈমান, হা/১৩৬২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাসি |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসি হাসতেন
১৬৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا ابْنُ
لَهِيعَةَ ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُغِيرَةِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
الْحَارِثِ بْنِ جَزْءٍ ، أَنَّهُ قَالَ : " مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَكْثَرَ
تَبَسُّمًا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেয়ে অধিক মুচকি হাস্যকারী ব্যক্তি কাউকে দেখিনি।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৭৭৫০; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৩৫০; শু’আবুল ঈমান, হা/৭৬৮৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৬৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ خَالِدٍ الْخَلالُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ إِسْحَاقَ السَّالِحِينِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ
، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ ، قَالَ
: " مَا كَانَ ضَحِكُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
إِلا تَبَسُّمًا "
আবদুল্লাহ
ইবনে হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সবসময় মুচকী হাসতেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসার সময় দাঁত দেখা যেত
১৭০
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ ، عَنِ الْمَعْرُورِ بْنِ
سُوَيْدٍ ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنِّي لأَعْلَمُ أَوَّلَ رَجُلٍ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ
, وَآخَرَ رَجُلٍ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ ، يُؤْتَى بِالرَّجُلِ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ , فَيُقَالُ : اعْرِضُوا عَلَيْهِ صِغَارَ ذُنُوبِهِ وَيُخَبَّأُ
عَنْهُ كِبَارُهَا ، فَيُقَالُ لَهُ : عَمِلْتَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا , كَذَا ، وَهُوَ
مُقِرٌّ , لا يُنْكِرُ ، وَهُوَ مُشْفِقٌ مِنْ كِبَارِهَا , فَيُقَالُ : أَعْطُوهُ
مَكَانَ كُلِّ سَيِّئَةٍ عَمِلَهَا حَسَنَةً ، فَيَقُولُ : إِنَّ لِي ذُنُوبًا مَا
أَرَاهَا هَهُنَا " ، قَالَ أَبُو ذَرٍّ : فَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ .
আবু
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আমি সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিকে ভালোভাবে
জানি। আর যে ব্যক্তি সর্বশেষ জাহান্নাম হতে নাজাত পাবে, তাকেও জানি। কিয়ামতের দিন
এক ব্যক্তিকে (আল্লাহর নিকট উপস্থিত করে) বলা হবে, এর সগীরা গুনাহগুলো উপস্থাপন
করো এবং কবীরা গুনাহগুলো গোপন করে রাখো। এরপর তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি অমুক
অমুক দিনে এই এই গুনাহ করেছ। তখন সে ব্যক্তি সবগুলো স্বীকার করবে এবং একটিও
অস্বীকার করবে না। এরপর সে তাঁর কবীরা গুনাহসমূহ সম্পর্কে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে
পড়বে। তখন ঘোষণা দেয়া হবে যে, তাঁর প্রতিটি মন্দ কাজের বিনিময়ে একটি করে নেকী
লিপিবদ্ধ করো। এরপর সে বলবে, নিশ্চয় এখনও আমার অনেক গুনাহ বাকী আছে, যা দেখতে
পাচ্ছি না। আবু যর (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসছেন; এমনকি তাঁর সাদা দাতগুলো দেখা যাচ্ছিল।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২১৪৩০; মুসনাদুল বাযযার, হা/৩৯৮৭; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪৩৬০, সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩০৫২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ
عَمْرٍو ، قَالَ : حَدَّثَنَا زَائِدَةُ ، عَنْ بَيَانٍ ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي
حَازِمٍ ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : " مَا حَجَبَنِي
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنْذُ أَسْلَمْتُ , وَلا
رَآنِي إِلا ضَحِكَ " .
জারীর
ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার ইসলাম গ্রহণের পর হতে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে (তাঁর কাছে আসতে) বাধা দেননি।
আর আমাকে দেখা মাত্রই তিনি হাসতেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩০৩৫;
সহীহ মুসলিম, হা/৬৫১৮ ইবনে মাজাহ, হা/১৫৯; মুসমাদে আহমাদ, হা/১৯১৯৬; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৭২০০ শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৩৪৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭২
حَدَّثَنَا حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
أَبُو مُعَاوِيَةَ ، عَنِ الأَعْمَشِ ، عَنِ إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ عَبِيدَةَ
السَّلْمَانِيِّ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنِّي لأَعْرفُ آخِرَ أَهْلِ
النَّارِ خُرُوجًا ، رَجُلٌ يَخْرُجُ مِنْهَا زَحْفًا ، فَيُقَالُ لَهُ :
انْطَلِقْ فَادْخُلِ الْجَنَّةَ " ، قَالَ : " فَيَذْهَبُ لِيَدْخُلَ
الْجَنَّةَ ، فَيَجِدُ النَّاسَ قَدْ أَخَذُوا الْمَنَازِلَ ، فَيَرْجِعُ
فَيَقُولُ : يَا رَبِّ ، قَدْ أَخَذَ النَّاسُ الْمَنَازِلَ ، فَيُقَالُ لَهُ :
أَتَذْكُرُ الزَّمَانَ الَّذِي كُنْتَ فِيهِ ، فَيَقُولُ : نَعَمْ " ، قَالَ
: " فَيُقَالُ لَهُ : تَمَنَّ " ، قَالَ : " فَيَتَمَنَّى ،
فَيُقَالُ لَهُ : فَإِنَّ لَكَ الَّذِي تَمَنَّيْتَ وَعَشَرَةَ أَضْعَافِ
الدُّنْيَا " ، قَالَ : " فَيَقُولُ : تَسْخَرُ بِي وَأَنْتَ الْمَلِكُ
! " قَالَ : فَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , ضَحِكَ , حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ .
আবদুল্লাহ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সর্বশেষে জাহান্নাম হতে নাজাত পেয়ে বের হয়ে আসবে,
আমি তাঁকে চিনি। সে হামাগুড়ি দিয়ে জাহান্নাম হতে বের হয়ে আসবে। এরপর তাকে বলা
হবে, এসো। জান্নাতে প্রবেশ করো। ঘোষণা মুতাবিক সে (জান্নাতের দিকে) যাবে এবং
সেখানে প্রবেশ করে দেখতে পাবে কোথাও ঠাঁই নাই। লোকেরা সকল স্থান অধিকার করে আছে।
অতঃপর সে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসবে এবং বলবে, হে আমার প্রতিপালক! লোকেরা তো সব স্থানই
দখল করে আছে। তখন তাকে বলা হবে, তোমার সে কালের (দুনিয়ার) কথা স্মরণ আছে কি,
যেখানে তুমি অবস্থান করেছিলে? সে বলবে, জি-হ্যাঁ। সবই আমার মনে পড়ে।
বর্ণনাকারী বলেন, তখন তাকে বলা হবে, তোমার মনে যা চায়, তা আকাঙ্ক্ষা করো। তিনি
বলেন, তখন সে আকাঙ্ক্ষা করবে। এরপর তাকে বলা হবে, তুমি যে ইচ্ছা পোষণ করলে তাই
তোমার জন্য মঞ্জুর করা হলো এবং তোমাকে দশ দুনিয়ার সমান দেয়া হবে। তিনি বলেন, তখন
সে বলবে, আপনি কি আমার সঙ্গে ঠাট্টা করছেন অথচ আপনি আমার মালিক সারা জাহানের
সম্রাট! তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, এমতাবস্থায় আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে মুচকি হাসি দিতে দেখলাম, এমনকি তাঁর দাত দেখা যাচ্ছিল।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৪৮০:
ইবনে হিব্বান, হা/৭৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৫৯৫; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪৩৫৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
الأَحْوَصِ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ ، قَالَ :
شَهِدْتُ عَلِيًّا ، أُتِيَ بِدَابَّةٍ لِيَرْكَبَهَا فَلَمَّا وَضَعَ رِجْلَهُ
فِي الرِّكَابِ ، قَالَ : بِسْمِ اللَّهِ ، فَلَمَّا اسْتَوَى عَلَى ظَهْرِهَا ،
قَالَ : الْحَمْدُ لِلَّهِ ، ثُمَّ قَالَ : سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا
وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ { 13 } وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ
سورة الزخرف آية 13-14 ، ثُمَّ قَالَ : الْحَمْدُ لِلَّهِ ثَلاثًا ، وَاللَّهُ
أَكْبَرُ ثَلاثًا ، سُبْحَانَكَ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ، فَاغْفِرْ لِي
فَإِنَّهُ لا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلا أَنْتَ ، ثُمَّ ضَحِكَ . فَقُلْتُ لَهُ :
مِنْ أَيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ ؟ قَالَ : رَأَيْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَنَعَ كَمَا صَنَعْتُ ثُمَّ
ضَحِكَ ، فَقُلْتُ : مِنْ أَيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ؟ قَالَ :
" إِنَّ رَبَّكَ لَيَعْجَبُ مِنْ عَبْدِهِ , إِذَا قَالَ : رَبِّ اغْفِرْ لِي
ذُنُوبِي ، إِنَّهُ لا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ غَيْرُكَ " .
আলী
ইবনে রবী’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আলী (রাঃ) এর সামনে
উপস্থিত হলাম। তখন তাঁর কাছে একটি জানোয়ারকে আরোহণের জন্য আনা হলো। যখন তিনি সে
পশুটির পাদানীতে পা রাখলেন এবং বললেন, “বিসমিল্লা-হ”। অতঃপর জানোয়ারের পিঠে যখন
সোজা হয়ে বসলেন তখন বললেন, “আলহামদু লিল্লা-হ” (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর) অতঃপর
বললেনঃ
سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ
“সুবহা-নাল্লাযী সাখখারা লানা- হা-যা- ওয়ামা- কুন্না- লাহু মুক্বরিনীন, ওয়া
ইন্না-ইলা- রব্বিনা-লামুনক্বালিবূন”
অর্থাৎ হে আল্লাহ! মহান সত্তার পবিত্রতা জ্ঞাপন করছি, যিনি আমাদের জন্য একে বশীভূত
করেছেন। আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম নই। বস্তুত আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন
করছি।[১]
এরপর তিনি ৩ বার “আলহামদু লিল্লাহ” এবং ৩ বার “বিসমিল্লাহ” পাঠ করলেন। এরপর এ দু’আ
পড়লেনঃ
سُبْحَانَكَ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ، فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلا أَنْتَ
“সুবহা-নাকা ইন্নী যলামতু নাফসী ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা- ইয়াগফিরুয যুনুবা ইল্লা
আনতা”।
অর্থাৎ আল্লাহ পবিত্র! নিশ্চয় আমি আমার নিজের উপর সীমালঙ্ঘন করেছি। অতএব আপনি
আমাকে ক্ষমা করে দিন। কারণ, আপনি ছাড়া গুনাহ ক্ষমাকারী আর কেউ নেই।
এরপর তিনি হাসলেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, আমীরুল মু’মিনীন! আপনার হাসি পেল? তিনি
বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমনভাবে দেখেছি যেভাবে
আমি এইমাত্র কথা ও কাজ সম্পন্ন করলাম। এরপর তিনি মুচকি হাসি দিলেন। তখন আমি বললাম,
হে আল্লাহর রাসূল! কোন জিনিস আপনাকে হাসাল? তিনি বললেন, তোমার প্রতিপালক তাঁর
বান্দার এ কথা খুবই পছন্দ করেন যখন সে বলে, হে আমার প্রতিপালক! আমার গুনাহগুলো
ক্ষমা করে দাও, এ বিশ্বাস রেখে যে, তিনি ছাড়া অন্য কেউ গুনাহ মাফ করতে পারে
না।[2]
[১] সূরা যুখরুফ- ১৪।
[2] মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫৩; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৩৪; সুনানুল কাবীর লিন নাসাঈ,
হা/৮৭৪৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৩৪৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৬৯৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কৌতুক |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনাস (রাঃ) এর সাথে কৌতুক করতেন
১৭৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
أُسَامَةَ ، عَنْ شَرِيكٍ ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ،
قَالَ : إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ لَهُ :
" يَا ذَا الأُذُنَيْنِ " ، قَالَ مَحْمُودٌ : قَالَ أَبُو أُسَامَةَ :
يَعْنِي يُمَازِحُهُ .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে সম্বোধন করে (কৌতুকচ্ছলে) বলেছিলেন, ‘হে দু’কানবিশিষ্ট!’ মাহমুদ (রহঃ) বলেন,
আবু উসামা (রহঃ) এর অর্থ করেছেন- “তিনি তাঁর সাথে কৌতুক করেছেন”।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৫০০৪;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১২১৮৫; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৬৬১; জমেউস সগীর, হা/১৩৮৬৮;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬০৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
আনাস
(রাঃ) এর ছোট ভাইয়ের সাথে কৌতুক করতেন
১৭৫
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ،
عَنْ شُعْبَةَ ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ :
إِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَيُخَالِطُنَا
حَتَّى يَقُولَ لأَخٍ لِي صَغِيرٍ : " يَا أَبَا عُمَيْرٍ ، مَا فَعَلَ
النُّغَيْرُ ؟ " . قَالَ أَبُو عِيسَى : وَفِقْهُ هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ يُمَازِحُ وَفِيهِ أَنَّهُ
كَنَّى غُلامًا صَغِيرًا , فَقَالَ لَهُ : يَا أَبَا عُمَيْرٍ . وَفِيهِ أَنَّهُ
لا بَأْسَ أَنْ يُعْطَى الصَّبِيُّ الطَّيْرَ , لِيَلْعَبَ بِهِ . وَإِنَّمَا ،
قَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " يَا أَبَا
عُمَيْرٍ ، مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ ؟ " لأَنَّهُ كَانَ لَهُ نُغَيْرٌ
يَلْعَبُ بِهِ فَمَاتَ ، فَحَزِنَ الْغُلامُ عَلَيْهِ فَمَازَحَهُ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " يَا أَبَا عُمَيْرٍ ، مَا فَعَلَ
النُّغَيْرُ ؟ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে কৌতুক করতেন। এমনকি একবার তিনি আমার ছোট ভাইকে (কৌতুক করে)
বললেন, হে আবু উমায়ের! কী হলো নুগায়ের?[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬১২৯;
সহীহ মুসলিম, হা/৫৭৪৭; আবু দাউদ, হা/৪৯৭১; ইবনে মাজাহ, হা/৩৭২০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২১৫৮;
সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/১০৯; আদাবুল মুফরাদ, হা/৮৪৭; জামেউস সগীর, হা/১৩৭৮৮৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাস্তবসম্মত কৌতুক করতেন
১৭৬
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عَلِيُّ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ شَقِيقٍ ، قَالَ : أَنبأَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ
الْمُبَارِكِ ، عَنِ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّكَ تُدَاعِبُنَا
، قَالَ : " إِنِّي لا أَقُولُ إِلا حَقًّا " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তারা (সাহাবায়ে কেরাম) বললেন, হে
আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাদের সাথে কৌতুক করছেন? তিনি বললেন, আমি কৌতুকচ্ছলে কখনো
সত্য ছাড়া কিছু বলি না।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৮৭০৮; মুসানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/২১৭০৫; আদাবুল মুফরাদ, হা/২৬৫; শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৬০২: মুজামুল আওসাত, হা/৮৭০৬; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৭২৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ
عَبْدِ اللَّهِ ، عَنْ حُمَيْدٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّ رَجُلا
اسْتَحْمَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالَ :
" إِنِّي حَامِلُكَ عَلَى وَلَدِ نَاقَةٍ " ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ
اللَّهِ ، مَا أَصْنَعُ بِوَلَدِ النَّاقَةِ ؟ فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " وَهَلْ تَلِدُ الإِبِلَ إِلا النُّوقُ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি বাহন চেয়েছিল, তিনি বললেন, আমি
তোমাকে একটি উটনীর বাচ্চা দিচ্ছি। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি উটনীর বাচ্চা
দিয়ে কী করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, উটমাত্রই তো কোন
না কোন উটনীর বাচ্চা।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৫০০০;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৪৪; আদাবুল মুফরাদ, হা/২৬৮; বায়হাকী, হা/২০৯৫৭; শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৬০৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৮
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ ، أَنَّ رَجُلا مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ كَانَ اسْمُهُ زَاهِرًا ,
وَكَانَ يُهْدِي إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , هَدِيَّةً
مِنَ الْبَادِيَةِ ، فَيُجَهِّزُهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, إِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " إِنَّ زَاهِرًا بَادِيَتُنَا وَنَحْنُ حَاضِرُوهُ " وَكَانَ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّهُ وَكَانَ رَجُلا دَمِيمًا , فَأَتَاهُ
النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَوْمًا وَهُوَ يَبِيعُ مَتَاعَهُ
وَاحْتَضَنَهُ مِنْ خَلْفِهِ وَهُوَ لا يُبْصِرُهُ ، فَقَالَ : مَنْ هَذَا ؟
أَرْسِلْنِي . فَالْتَفَتَ فَعَرَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فَجَعَلَ لا يَأْلُو مَا أَلْصَقَ ظَهْرَهُ بِصَدْرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ عَرَفَهُ ، فَجَعَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , يَقُولُ : " مَنْ يَشْتَرِي هَذَا الْعَبْدَ " ، فَقَالَ :
يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِذًا وَاللَّهِ تَجِدُنِي كَاسِدًا ، فَقَالَ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لَكِنْ عِنْدَ اللَّهِ لَسْتَ
بِكَاسِدٍ " أَوْ قَالَ : " أَنتَ عِنْدَ اللَّهِ غَالٍ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যাহির (ইবনে হিযাম আশজায়ী বদরী) নামে এক
বেদুঈন প্রায়ই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাদিয়া দিত। যখন সে চলে
যেতে উদ্যত হতো তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, যাহির আমাদের
পল্লিবন্ধু, আমরা তার শহুরে বন্ধু। সে কদাকার হলেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাকে ভালোবাসতেন। একবার সে বেচাকেনা করছিল আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁর অলক্ষ্যে পেছন দিক থেকে ধরে ফেললেন। তারপর সে বলল, কে? আমাকে
ছেড়ে দাও! দৃষ্টিপাত করতেই সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখে তাঁর পিঠ
আরো নৰী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বুকের সাথে মিলালো। এরপর নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ গোলামটিকে কে ক্রয় করবে?
যাহির বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে বিক্রি করে কেবল অচল মুদ্ৰাই পাবেন। এরপর তিনি
বললেন, কিন্তু তুমি আল্লাহর নিকট অচল নও। অথবা তিনি বলেছেন, আল্লাহর নিকট তোমার
উচ্চমর্যাদা রয়েছে।[১]
[১] মুসনাদে আহমদ, হা/১২৬৬৯
সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৭৯০ বায়হাকী, হা/২০৯৬১; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬০৪; মুসনাদুল
বাযযার, হা/৬৯২২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৭৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُصْعَبُ بْنُ
الْمِقْدَامِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الْمُبَارَكُ بْنُ فَضَالَةَ ، عَنِ الْحَسَنِ
، قَالَ : أَتَتْ عَجُوزٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ،
فَقَالَتْ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، ادْعُ اللَّهَ أَنْ يُدْخِلَنِي الْجَنَّةَ ،
فَقَالَ : " يَا أُمَّ فُلانٍ ، إِنَّ الْجَنَّةَ لا تَدْخُلُهَا عَجُوزٌ
" ، قَالَ : فَوَلَّتْ تَبْكِي , فَقَالَ : " أَخْبِرُوهَا أَنَّهَا لا
تَدْخُلُهَا وَهِيَ عَجُوزٌ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى , يَقُولُ : إِنَّا
أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً { 35 } فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا { 36 } عُرُبًا
أَتْرَابًا سورة الواقعة آية 35-37 " .
হাসান
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার এক বৃদ্ধা মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন
আমি-জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। তিনি বললেন, ওহে! কোন বৃদ্ধা জান্নাতে প্রবেশ করবে
না। বর্ণনাকারী বলেন, (তা শুনে) সে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে এ মর্মে খবর দাও যে, তুমি বৃদ্ধাবস্থায় জান্নাতে
প্রবেশ করবে না। কারণ, আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “আমি তাদেরকে বিশেষভাবে সৃষ্টি
করেছি। আর তাদেরকে করেছি কুমারী— (সূরা ওয়াক্বিয়া- ৩৬)।[১]
[১] সিলসিলা সহীহাহ,
হা/২৯৮৭; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬০৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৭ |
কাব্যিক ছন্দে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর কথা |
পরিচ্ছদঃ
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনে রাওয়াহার কবিতা আবৃত্তি করতেন
১৮০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شَرِيكٌ ، عَنِ
الْمِقْدَامِ بْنِ شُرَيْحٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : قِيلَ
لَهَا : هَلْ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَتَمَثَّلُ
بِشَيْءٍ مِنَ الشِّعْرِ ؟ قَالَتْ : كَانَ يَتَمَثَّلُ بِشِعْرِ ابْنِ رَوَاحَةَ
، وَيَتَمَثَّلُ بِقَوْلِهِ : " يَأْتِيكَ بِالأَخْبَارِ مَنْ لَمْ تُزَوَّدِ
" .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাব্যের
ছন্দে কথাবার্তা বলেন কিনা সে ব্যাপারে তাকে একবার জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনে রাওয়াহার কবিতা আবৃত্তি করতেন। আবার
কখনো বলতেন- يَأْتِيكَ بِالأَخْبَارِ مَنْ لَمْ تُزَوَّدِ
অর্থাৎ তোমার কাছে এমন ব্যক্তি সুসংবাদ নিয়ে আসেন, যাকে তুমি মজুরী দাও না।[১]
[১] সুনানুল কুবরা লিন
নাসাঈ, হা/১০৭৬৯; আদাবুল মুফরাদ, হা/৮৬৭; বায়হাকী, হা/২০৯০৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
একবার
আঙ্গুল রক্তাক্ত হয়ে গেলে এ কবিতা পাঠ করেছিলেন
১৮১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ ،
عَنْ جُنْدُبِ بْنِ سُفْيَانَ الْبَجَلِيِّ ، قَالَ : أَصَابَ حَجَرٌ أُصْبُعَ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَمِيَتْ ، فَقَالَ : "
هَلْ أَنْتِ إِلا أُصْبُعٌ دَمِيتِ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا لَقِيتِ " .
জুনদুব
ইবনে সুফিয়ান আল বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একদা) প্রস্তারাঘাতে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি আঙ্গুল রক্তাক্ত হয়ে যায়। তখন তিনি
বলেন, هَلْ أَنْتِ إِلا أُصْبُعٌ دَمِيتِ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا لَقِيتِ
অর্থাৎ তুমি একটি আঙ্গুল যার রক্ত প্রবাহিত হয়েছে, তাও আল্লাহর রাস্তায়, যার
প্রতিদান পাবে।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হ/৬১৪৬;
সহীহ মুসলিম, হা/৪৭৫০; মুসনাদে আহমদ, হ১৮৮১৯ জমেউস সগীর, হা/১২৯৭৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাওয়াযিন গোত্রের সাথে যুদ্ধের সময় কবিতা আবৃত্তি
করেছিলেন
১৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا أَبُو
إِسْحَاقَ ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ، قَالَ : قَالَ لَهُ رَجُلٌ :
أَفَرَرْتُمْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا أَبَا
عُمَارَةَ ؟ فَقَالَ : لا وَاللَّهِ مَا وَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَلَكِنْ وَلَّى سَرَعَانُ النَّاسِ , تَلَقَّتْهُمْ
هَوَازِنُ بِالنَّبْلِ , وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
عَلَى بَغْلَتِهِ ، وَأَبُو سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ
آخِذٌ بِلِجَامِهَا ، وَرَسُولُ اللَّهِ يَقُولُ : " أَنَا النَّبِيُّ لا
كَذِبْ أَنَا ابْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبْ "
বারা
ইবনে আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করল, আপনারা কি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রণক্ষেত্রে রেখে পালিয়ে গিয়েছিলেন? উত্তরে
তিনি বললেন, না- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো পালিয়ে যাননি। বরং দলের
কিছুসংখ্যক তাড়াহুড়াপ্রবণ লোক হাওয়াযিনের তীরের আঘাতে টিকতে না পেরে পিছু হটে
এসেছিল। (বেশিরভাগ ছিল বনু সুলায়ম-এর লোক এবং মক্কার নও মুসলিম) তখন নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় খচ্চরের উপর আরোহী ছিলেন। আর লাগাম ছিল আবু
সুফইয়ানের হাতে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবৃত্তি করছিলেন-
أَنَا النَّبِيُّ لا كَذِبْ أَنَا ابْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبْ
অর্থাৎ আমি মিথ্যা নবী নই, আমি আবদুল মুত্ত্বালিবের (বীর) সন্তান।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/২৮৭৪;
সহীহ মুসলিম, হা/৪৭১৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৪৭৭০; জামেউস সগীর, হা/২৩৩১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
ইবনে
রাওয়াহা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে কবিতা আবৃত্তি করতেন
১৮৩
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
ثَابِتٌ ، عَنْ أَنَسٍ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
دَخَلَ مَكَّةَ فِي عُمْرَةِ الْقَضَاءِ ، وَابْنُ رَوَاحَةَ يَمْشِي بَيْنَ
يَدَيْهِ ، وَهُوَ يَقُولُ : خَلُّوا بَنِي الْكُفَّارِ عَنْ سَبِيلِهِ الْيَوْمَ
نَضْرِبُكُمْ عَلَى تَنْزِيلِهِ ضَرْبًا يُزِيلُ الْهَامَ عَنْ مَقِيلِهِ
وَيُذْهِلُ الْخَلِيلَ عَنْ خَلِيلِهِ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ : يَا ابْنَ رَوَاحَةَ
، بَيْنَ يَدِي رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَفِي حَرَمِ
اللَّهِ تَقُولُ الشِّعْرَ ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : "
خَلِّ عَنْهُ يَا عُمَرُ ، فَلَهِيَ أَسْرَعُ فِيهِمْ , مِنْ نَضْحِ النَّبْلِ
" .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
উমরাতুল কাযা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় প্রবেশ করেন তখন ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) তাঁর
সামনে চলছেন এবং বলছেনঃ
خَلُّوا بَنِي الْكُفَّارِ عَنْ سَبِيلِهِ الْيَوْمَ نَضْرِبُكُمْ عَلَى تَنْزِيلِهِ
ضَرْبًا يُزِيلُ الْهَامَ عَنْ مَقِيلِهِ وَيُذْهِلُ الْخَلِيلَ عَنْ خَلِيلِهِ
অর্থাৎ হে কাফির সন্তানরা! তাঁর চলার পথ ছেড়ে দাও। আজ তাঁকে বাধা দিলে তোমাদেরকে
এমন শায়েস্তা করব যে, কাঁধ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং বন্ধুর কথা ভুলে
যাবে।
উমার (রাঃ) তাকে বললেন, ইবনে রওয়াহা! আল্লাহর হারামে এবং রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখে কবিতা আবৃত্তি করছ? নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, উমার! তাকে বলতে দাও। কারণ, তার কবিতা ওদের জন্য তীরের
আঘাতের চেয়েও অধিক কার্যকর।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/২৮৭৩;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৪০৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৮৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شَرِيكٌ ، عَنْ
سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ ، قَالَ : " جَالَسْتُ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , أَكْثَرَ مِنْ مِائَةِ مَرَّةٍ ,
وَكَانَ أَصْحَابُهُ يَتَنَاشَدُونَ الشِّعْرَ , وَيَتَذَاكَرُونَ أَشْيَاءَ مِنْ
أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ , وَهُوَ سَاكِتٌ وَرُبَّمَا تَبَسَّمَ مَعَهُمْ " .
জাবির
ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মজলিসে শতাধিক বার বসেছি। আর তাতে তাঁর সাহাবীগণ কবিতা
আবৃত্তি করতেন এবং জাহেলি যুগের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করতেন। আর তিনি
কখনো চুপ থাকতেন। আবার কখনো তাদের সাথে মুচকি হাসতেন।[১]
[১] ইবনে হিব্বান, হা/৫৭৮১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে শ্রেষ্ঠতম উদ্ধৃতি
১৮৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شَرِيكٌ ، عَنْ
عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ،
عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " أَشْعَرُ
كَلِمَةٍ تَكَلَّمَتْ بِهَا الْعَرَبُ كَلِمَةُ لَبِيدٍ : " أَلا كُلُّ
شَيْءٍ مَا خَلا اللَّهَ بَاطِلٌ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আরব কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বাণী
হচ্ছে লাবীদের এই চরণঃ أَلا كُلُّ شَيْءٍ مَا خَلا اللَّهَ بَاطِلٌ
অর্থাৎ সাবধান আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই ধ্বংসশীল।[১]
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুসলিম কবির কবিতাও শ্রবণ করতেন
১৮৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ
مُعَاوِيَةَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الطَّائِفِيِّ ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ الشَّرِيدِ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : كُنْتُ رِدْفَ النَّبِيِّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَأَنْشَدْتُهُ مِائَةَ قَافِيَةٍ مِنْ
قَوْلِ أُمَيَّةَ بْنِ أَبِي الصَّلْتِ الثَّقَفِيِّ ، كُلَّمَا أَنْشَدْتُهُ
بَيْتًا ، قَالَ لِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : "
هِيهْ " حَتَّى أَنْشَدْتُهُ مِائَةً يَعْنِي بَيْتًا ، فَقَالَ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنْ كَادَ لَيُسْلِمُ " .
আমর
ইবনে শারদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি বাহনে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে বসা ছিলাম। তারপর আমি তাঁকে উমাইয়্যা
ইবনে আবূ-সালত বিরচিত একশ’ চরণ বিশিষ্ট একটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনালাম। কবিতা শেষ
হলে তিনি আমাকে বললেন, আরো শোনাও। এরপর তিনি বললেন, সে ইসলাম গ্রহণের কাছাকাছি এসে
গেছে।[১]
[১] সুনানে কুবরা লিল
বায়হাকী, হা/২১৫৬০; সহীহ মুসলিম, হা/৬০২২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবিতা আবৃত্তি করার উদ্দেশ্যে হাসসান (রাঃ)[১] এর
জন্য মসজিদে একটি মিম্বার তৈরি করেছিলেন
১৮৭
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُوسَى الْفَزَارِيُّ ، وَعَلِيُّ بْنُ
حُجْرٍ ، وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ ، قَالا : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
أَبِي الزِّنَادِ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ،
قَالَتْ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضَعُ
لِحَسَّانَ بْنِ ثَابِتٍ مِنْبَرًا فِي الْمَسْجِدِ يَقُومُ عَلَيْهِ قَائِمًا
يُفَاخِرُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْ قَالَ :
يُنَافِحُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَقُولُ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنَّ اللَّهَ يُؤَيِّدُ حَسَّانَ
بِرُوحِ الْقُدُسِ , مَا يُنَافِحُ أَوْ يُفَاخِرُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম হাসসান ইবেন সাবিত (রাঃ) এর জন্য মসজিদে একটি মিম্বার স্থাপন করেছিলেন
যেন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রশংসার কবিতা পাঠ করেন
অথবা তিনি বলেছেন, যেন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ
হতে কাফিরদের নিন্দাবাদের উত্তর দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ! রূহুল কুদস [জিবরীল (আঃ)] দ্বারা হাসসানকে সাহায্য করেন
যতক্ষণ সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রশংসা করবে কিংবা
কাফিরদের নিন্দার উত্তর দেবে।[2]
[১] হাসসান ইবনে সাবিত
(রাঃ) ছিলেন বিখ্যাত একজিন সাহাবী কবি। তাঁর উপাধি ছিল شاعر النبي তথা
নবী (সাঃ) এর কবি।
[2] আবু দাউদ, হা/৫০১৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৬০৫৮; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৩৫০১;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৪০৮; সিলসিলাহ সহীহাহ, হা/১৬৫৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রাত্রে
গল্প বলা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর রাত্রে গল্প বলা
১৮৮
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ
يُونُسَ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنِ أَخِيهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
عُرْوَةَ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : جَلَسَتْ إِحْدَى عَشْرَةَ
امْرَأَةً فَتَعَاهَدْنَ وَتَعَاقَدْنَ أَنْ لا يَكْتُمْنَ مِنْ أَخْبَارِ
أَزْوَاجِهِنَّ شَيْئًا : فَقَالَتِ الأُولَى : زَوْجِي لَحْمُ جَمَلٍ غَثٍّ عَلَى
رَأْسِ جَبَلٍ وَعْرٍ ، لا سَهْلٌ فَيُرْتَقَى ، وَلا سَمِينٌ فَيُنْتَقَلُ .
قَالَتِ الثَّانِيَةُ : زَوْجِي لا أَبُثُّ خَبَرَهُ ، إِنِّي أَخَافُ أَنْ لا
أَذَرَهُ ، إِنْ أَذْكُرْهُ أَذْكُرْ عُجَرَهُ , وَبُجَرَهُ . قَالَتِ
الثَّالِثَةُ : زَوْجِي الْعَشَنَّقُ ، إِنْ أَنْطِقْ أُطَلَّقْ ، وَإِنْ أَسْكُتْ
أُعَلَّقْ . قَالَتِ الرَّابِعَةُ : زَوْجِي كَلَيْلِ تِهَامَةَ ، لا حَرٌّ , وَلا
قُرٌّ ، وَلا مَخَافَةَ , وَلا سَآمَةَ . قَالَتِ الْخَامِسَةُ : زَوْجِي إِنْ
دَخَلَ فَهِدَ ، وَإِنْ خَرَجَ أَسِدَ ، وَلا يَسْأَلُ عَمَّا عَهِدَ . قَالَتِ
السَّادِسَةُ : زَوْجِي إِنْ أَكَلَ لَفَّ ، وَإِنْ شَرِبَ اشْتَفَّ ، وَإِنِ
اضْطَجَعَ الْتَفَّ ، وَلا يُولِجُ الْكَفَّ , لِيَعْلَمَ الْبَثَّ . قَالَتِ
السَّابِعَةُ : زَوْجِي عَيَايَاءُ , أَوْ غَيَايَاءُ طَبَاقَاءُ , كُلُّ دَاءٍ
لَهُ دَاءٌ ، شَجَّكِ , أَوْ فَلَّكِ , أَوْ جَمَعَ كُلا لَكِ . قَالَتِ
الثَّامِنَةُ : زَوْجِي الْمَسُّ , مَسُّ أَرْنَبٍ وَالرِّيحُ , رِيحُ زَرْنَبٍ .
قَالَتِ التَّاسِعَةُ : زَوْجِي رَفِيعُ الْعِمَادِ , طَوِيلُ النِّجَادِ عَظِيمُ
الرَّمَادِ , قَرِيبُ الْبَيْتِ مِنَ النَّادِ . قَالَتِ الْعَاشِرَةُ : زَوْجِي
مَالِكٌ , وَمَا مَالِكٌ خَيْرٌ مِنْ ذَلِكَ ، لَهُ إِبِلٌ كَثِيرَاتُ
الْمَبَارِكِ ، قَلِيلاتُ الْمَسَارِحِ ، إِذَا سَمِعْنَ صَوْتَ الْمِزْهَرِ ,
أَيْقَنَّ أَنَّهُنَّ هَوَالِكُ . قَالَتِ الْحَادِيَةَ عَشْرَةَ : زَوْجِي أَبُو
زَرْعٍ وَمَا أَبُو زَرْعٍ ؟ أَنَاسَ مِنْ حُلِيٍّ أُذُنَيَّ ، وَمَلأَ مِنْ
شَحْمٍ عَضُدَيَّ ، وَبَجَّحَنِي , فَبَجَحَتْ إِلَيَّ نَفْسِي ، وَجَدَنِي فِي
أَهْلِ غُنَيْمَةٍ بِشَقٍّ فَجَعَلَنِي فِي أَهْلِ صَهِيلٍ , وَأَطِيطٍ وَدَائِسٍ
وَمُنَقٍّ ، فَعِنْدَهُ أَقُولُ , فَلا أُقَبَّحُ ، وَأَرْقُدُ , فَأَتَصَبَّحُ ,
وَأَشْرَبُ , فَأَتَقَمَّحُ ، أُمُّ أَبِي زَرْعٍ فَمَا أُمُّ أَبِي زَرْعٍ ،
عُكُومُهَا رَدَاحٌ ، وَبَيْتُهَا فَسَاحٌ ، ابْنُ أَبِي زَرْعٍ ، فَمَا ابْنُ
أَبِي زَرْعٍ ، مَضْجَعُهُ كَمَسَلِّ شَطْبَةٍ ، وَتُشْبِعُهُ ذِرَاعُ الْجَفْرَةِ
، بِنْتُ أَبِي زَرْعٍ ، فَمَا بِنْتُ أَبِي زَرْعٍ ، طَوْعُ أَبِيهَا وَطَوْعُ
أُمِّهَا ، مِلْءُ كِسَائِهَا ، وَغَيْظُ جَارَتِهَا ، جَارِيَةُ أَبِي زَرْعٍ ،
فَمَا جَارِيَةُ أَبِي زَرْعٍ ، لا تَبُثُّ حَدِيثَنَا تَبْثِيثًا ، وَلا
تُنَقِّثُ مِيرَتَنَا تَنْقِيثًا ، وَلا تَمْلأُ بَيْتَنَا تَعْشِيشًا ، قَالَتْ :
خَرَجَ أَبُو زَرْعٍ , وَالأَوْطَابُ تُمْخَضُ ، فَلَقِيَ امْرَأَةً مَعَهَا
وَلَدَانِ لَهَا , كَالْفَهْدَيْنِ ، يَلْعَبَانِ مِنْ تَحْتِ خَصْرِهَا
بِرُمَّانَتَيْنِ ، فَطَلَّقَنِي وَنَكَحَهَا ، فَنَكَحْتُ بَعْدَهُ رَجُلا
سَرِيًّا ، رَكِبَ شَرِيًّا ، وَأَخَذَ خَطِّيًّا ، وَأَرَاحَ عَلَيَّ نَعَمًا
ثَرِيًّا ، وَأَعْطَانِي مِنْ كُلِّ رَائِحَةٍ زَوْجًا ، وَقَالَ : كُلِي أُمَّ
زَرْعٍ ، وَمِيرِي أَهْلَكِ ، فَلَوْ جَمَعْتُ كُلَّ شَيْءٍ أَعْطَانِيهِ ، مَا
بَلَغَ أَصْغَرَ آنِيَةِ أَبِي زَرْعٍ . قَالَتْ عَائِشَةُ : فَقَالَ لِي رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " كُنْتُ لَكِ كَأَبِي زَرْعٍ
لأُمِّ زَرْعٍ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার ১১ জন মহিলা এ মর্মে
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলো যে, তারা তাদের নিজ নিজ স্বামী সম্পর্কে সব খুলে বলবে এবং কোন
কিছুই গোপন করবে না।
প্রথম মহিলা বলল, আমার স্বামী অলস, অকৰ্মণ্য, দুর্বল উটের গোশততুল্য, তা আবার
পর্বত চূড়ায় সংরক্ষিত; যা ধরাছোঁয়া দুঃসাধ্য। তাঁর আচরণ রুক্ষ। ফলে তাঁর কাছে
যাওয়া যায় না। সে স্বাস্থ্যবানও নয়, আর তাকে ত্যাগও করতে পারছি না।
দ্বিতীয় মহিলা বলল, আমার স্বামী এমন যে, আমি আশংকা করছি, তাঁর দোষক্ৰটি বর্ণনা
করে শেষ করতে পারব না। আর আমি যদি বর্ণনা করে দেই, তাহলে কেবল দোষত্রুটিই বর্ণনা
করব।
তৃতীয় মহিলা বলল, আমার স্বামী দীর্ঘদেহ বিশিষ্ট, দেখতে কদাকার। আমি কথা বললে
(উত্তরে আসে) তালাক। আর নীরব থাকলে সে তো ঝুলন্ত রশি (অর্থাৎ কিছু চাইলে বদ
মেজাজের সম্মুখীন হতে হয় এবং নীরব থাকলে হতে হয় বঞ্চিত)।
চতুর্থ মহিলা বলল, আমার স্বামী তিহামার রাত্রির ন্যায়- না (প্রচণ্ড) গরম, আর না
(প্রচণ্ড) ঠাণ্ডা। তাঁর থেকে কোন ভয়-ভীতি কিংবা অস্বস্তির কারণ নেই।
পঞ্চম মহিলা বলল, আমার স্বামী ঘরে এলে মনে হয় চিতাবাঘ আর বাইরে বের হলে সে হয়
সাহসী সিংহ। বাড়িতে কি ঘটল সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে না।
ষষ্ঠ মহিলা বলল, আমার স্বামী যখন খায়, তৃপ্তি ভরে খায়। আর পান করলে সব সাবাড়
করে দেয় এবং কোন কিছু অবশিষ্ট রাখে না। আর যখন ঘুমাতে চায়, চাদর দেহে জড়িয়ে দেয়।
আমার কোন বিপদাপদ আছে কি না তা হাত বাড়িয়েও দেখে না।
সপ্তম মহিলা বলল, আমার স্বামী অক্ষম, কথা বলতে পারে না, সব ধরনের রোগে আক্রান্ত।
সে আমার মস্তক চূর্ণ করতে পারে অথবা মারধোর করে হাড়গোড় সব ভেঙ্গে দিতে পারে বা
উভয়টিও করতে পারে।
অষ্টম মহিলা বলল, আমার স্বামীর পরশ খরগোশের ন্যায় কোমল। (তাঁর ব্যবহৃত সুগন্ধি)
জাফরানের সুগন্ধির ন্যায়।
নবম মহিলা বলল, আমার স্বামী উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ত্ব। অত্যন্ত
অতিথিপরায়ণ, দীর্ঘ দেহবিশিষ্ট, তাঁর বৈঠকখানা ঘরের নিকটবর্তী।
দশম মহিলা বলল, আমার স্বামী হলো আমার মালিক। মালিকের প্রশংসা কী আর করব (উপরে
বর্ণিত সকলের প্রশংসা একত্র করলেও তাঁর গুণ গেয়ে শেষ করা যাবে না)। তার রয়েছে
অসংখ্য উট, অধিকাংশ সময় সেগুলো বাধাই থাকে। খুব কমই মাঠে চরানো হয়। এসব উট যখন
বাদ্যের ঝংকার শোনে, তখন তারা নিশ্চিত হয়ে যায় যে, তাদেরকে যবেহ করা হবে।
একাদশ মহিলা উম্মে যার’আ বলল, আমার স্বামী আবু যার’আ। আবু যার’আর কী আর প্রশংসা
করব, সে তো অলংকার দিয়ে আমার দু’কান ভর্তি করে দিয়েছে, উপাদেয় খাবার খাইয়ে
দু’বাহু চর্বিযুক্ত করে দিয়েছে। আমাকে খুবই স্বাচ্ছন্দ্যে রেখেছে। ফলে আমি আনন্দে
আত্মহারা হয়ে পড়েছি। আমি ছিলাম বকরী রাখালের কন্যা, খুব দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিন
অতিবাহিত করতে হতো। আমি এখন অসংখ্য ঘোড়া, উট ও বকরী পালের মধ্যে তথা পর্যাপ্ত
ধন-সম্পদের মধ্যে আছি। আমি তাকে কিছু বললেও আমাকে মন্দ বলত না। সারাক্ষণ নিদ্রায়
কাটালেও কিছুই বলত না। পর্যাপ্ত খাওয়ার পরও খাবার অবশিষ্ট থাকত।
উম্মে আবু যার’আর (একাদশ মহিলার শাশুড়ির) প্রশংসাই বা কি করব! তাঁর বড় বড়
পাত্রগুলো সর্বদা খানায় পরিপূর্ণ থাকতো। আর তার বাড়ির সীমানা সুবিশাল। ইবনে আবু
যার’আ তরবারির ন্যায় সূক্ষ্ম, বকরীর একটি উরুর গোশত তাঁর জন্য যথেষ্ট। আবু যার’আর
কন্যা সম্পর্কেই কী বলব! পিতামাতার অনুগত, সুস্বাস্থ্যের অধিকারিণী, স্বাস্থ্যবান
সতীনদের অন্তর্জ্বালার কারণ। আবু যার’আর পরিচারিকার কথাই বা কি বলব! সে ঘরের গোপন
তথ্য ফাঁস করে না। আমাদের খাবার বিনা অনুমতিতে হাত দেয় না। বাড়িতে কখনো আবর্জনা
জমা করে রাখে না।
সে (একাদশ মহিলা) বলল, আমি এমনই সুখ শান্তি, আদর সোহাগ সমৃদ্ধির মধ্যে দিনকাল
কাটাচ্ছিলাম। এমন সময় একবার আবু যার’আ বাইরে যান এবং দেখতে পান যে, স্বাস্থ্যবান
দুটি শিশু তাদের মায়ের স্তন নিয়ে খেলা করছে। এরপর আবু যার’আ আমাকে তালাক দিয়ে
তাকে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ করে ফেলেন।
এরপর আমি একজন বিত্তশালী উষ্ট্রারোহী ব্যক্তিকে বিয়ে করি। সেও আমাকে পর্যাপ্ত
সামগ্রী জোড়ায় জোড়ায় দিয়েছিল। সে স্বামী বলল, উম্মে যার’আ! তৃপ্তি সহকারে খাও
এবং ইচ্ছেমতো তোমার বাপের বাড়িতে পাঠাও। সে মহিলা বলল, তার দান-দক্ষিণার যাবতীয়
বস্তু একত্র করলে আবু যার’আর সামান্যও হবে না। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আবু যার’আ যেমন উম্মে যার’আর জন্য,
আমিও ঠিক তদ্রুপ তোমার জন্য। (কিন্তু কখনো আবু যার'আর মতো তোমাকে তালাক দেব না)[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫১৮৯;
সহীহ মুসলিম, হা/৬৪৫৮; ইবনে হিব্বান, হা/৭১০৪; জামেউস সগীর, হা/১৪১ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিদ্রা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাত গালের নিচে রেখে শয্যা যেতেন এবং এ দু’আ
পাঠ করতেন
১৮৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ،
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ إِذَا أَخَذَ
مَضْجَعَهُ وَضَعَ كَفَّهُ الْيُمْنَى تَحْتَ خَدِّهِ الأَيْمَنِ ، وَقَالَ :
" رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ " .
বারা
ইবনে আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যখন শয্যা গ্রহণ করতেন তখন ডান হাত ডান গালের নিচে রাখতেন এবং বলতেনঃ
رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ
“রাব্বি কিনী আযাবাকা ইয়াওমা তাব’আসু ইবা-দাক”
অর্থাৎ হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে বাঁচিয়ে দিন সে দিনের আযাব থেকে যেদিন
আপনার বান্দাদের পুনরুথিত করা হবে।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৫০৪৭;
ইবনে মাজাহ, হা/৩৮৭৭; মুসনাদে আহমদ, হা/১৮৬৫৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৩১০; শু’আবুল ঈমান,
হা/৪৩৮৪ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৫২২: সিলসিলা সহীহাহ, হা/২৭৫৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
নিদ্রায়
যাওয়া এবং নিদ্রা থেকে উঠার সময় এ দু’আ পাঠ করতেন
১৯০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ
عُمَيْرٍ ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ ، عَنْ حُذَيْفَةَ ، قَالَ : كَانَ
النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ ،
قَالَ : " اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا " ، وَإِذَا
اسْتَيْقَظَ ، قَالَ : " الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانًا بَعْدَمَا
أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ " .
হুযায়ফা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন শোয়ার জন্য বিছানায় আসতেন তখন বলতেনঃ
اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا
“আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া”
অর্থ্যাৎ হে আল্লাহ! তোমার নামেই মৃত্যুলাভ (নিদ্রা) করছি এবং তোমার নামেই জীবিত
(জাগ্রত) হব।
অতঃপর আবার যখন নিদ্রা ভঙ্গ করতেন তখন বলতেন,
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانًا بَعْدَمَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
“আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আহইয়ানা-বা’দা মা-আমা-তানা-ওয়া ইলায়হিন নুশূর”
অর্থ্যাৎ সকল প্রশংসা আল্লাহর! যিনি মৃত্যুর পর জীবন দিয়েছেন আর তাঁরই দিকে
প্রত্যাবর্তন করতে হবে।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬৩১২;
আবু দাউদ, হা/৫০৫১; আদাবুল মুফরাদ, হা/১২০৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৩১৯; শু’আবুল ঈমান,
হা/৪৩৮৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৫৩৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
নিদ্রা
যাওয়ার পূর্বে সূরা ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস পাঠ করতেন
১৯১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ بْنُ
فَضَالَةَ ، عَنْ عُقَيْلٍ ، أُرَاهُ عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ
عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ
فَنَفَثَ فِيهِمَا ، وَقَرَأَ فِيهِمَا : قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَ قُلْ
أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ , ثُمَّ مَسَحَ
بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ ، يَبْدَأُ بِهِمَا رَأْسَهُ وَوَجْهَهُ
وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ , يَصْنَعُ ذَلِكَ ثَلاثَ مَرَّاتٍ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন শোয়ার জন্য বিছানায় যেতেন তখন দু’হাত মিলিয়ে সূরা ইখলাস, ফালাক্ব ও
নাস পাঠ করতেন। তারপর ফুঁ দিয়ে যথাসম্ভব মাথা থেকে পা পর্যন্ত সারা শরীরে তিনবার
হাত বুলিয়ে দিতেন। তারপর মুখমন্ডল ও শরীরের সামনের অংশেও অনুরূপ বুলাতেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫০১৭;
আবু দাউদ, হা/৫০৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৮৯৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ
كُهَيْلٍ ، عَنْ كُرَيْبٍ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ : " أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , نَامَ حَتَّى نَفَخَ ، وَكَانَ إِذَا نَامَ
نَفَخَ , فَأَتَاهُ بِلالٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلاةِ ، فَقَامَ وَصَلَّى وَلَمْ
يَتَوَضَّأْ " وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম নিদ্রায় গেলেন এমনকি তাঁর নাক ডাকতে আরম্ভ করে। আর যখন তিনি নিদ্রা
যেতেন তখন নাক ডাকতেন। অতঃপর বিলাল (রাঃ) এসে তাকে সালাতের প্রস্তুতি গ্রহণের
অনুরোধ জানান। তারপর তিনি দাঁড়ালেন এবং সালাত আদায় করলেন; কিন্তু ওযু করলেন না।
হাদীসে আরো ঘটনা রয়েছে।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/১৮২৪;
মুসনাদে আহমাদ, হা/৩১৯৪; আদাবুল মুফরাদ, হা/৬৯৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৬৩৬; বায়হাকী,
হা/১৩১৬৩৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শয্যা গ্রহণকালে এ দু’আটিও পাঠ করতেন
১৯৩
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَفَّانُ ،
قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ إِذَا
أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ ، قَالَ : " الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا
وَسَقَانَا وَكَفَانَا وَآوَانَا ، فَكَمْ مِمَّنْ لا كَافِيَ لَهُ وَلا مُؤْوِي
" .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যখন শয্যা গ্রহণ করতেন তখন (নিম্নোক্ত দু’আ) পাঠ করতেনঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَكَفَانَا وَآوَانَا ، فَكَمْ مِمَّنْ لا كَافِيَ لَهُ وَلا مُؤْوِي
“আলহামদু লিল্লা-হিল্লায়ী আত্ব’আমানা- ওয়াসাক্বা-না- ওয়াকাফা-না- ওয়া
আ-ওয়া-না- ফাকাম মিম্মান লা- কা-ফিয়া লাহু ওয়ালা- মু’বী”
অর্থাৎ সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের আহার করান ও পান করান। তিনিই আমাদের জন্য
যথেষ্ট, তিনিই নিদ্রা যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের
কোন যথেষ্টকারী নেই এবং কোন আশ্রয়দাতাও নেই।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৭০৬৯;
আবু দাউদ, হা/৫০৫৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৫৭৪; আদাবুল মুফরাদ, হা/১২০৬; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৫৫৪০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি
ডান কাতে বিশ্রাম নিতেন
১৯৪
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُرَيْرِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ
، عَنْ حُمَيْدٍ ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمُزَنِيِّ ، عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ إِذَا عَرَّسَ بِلَيْلٍ اضْطَجَعَ عَلَى
شِقِّهِ الأَيْمَنِ ، وَإِذَا عَرَّسَ قُبَيْلَ الصُّبْحِ نَصَبَ ذِرَاعَهُ ،
وَوَضَعَ رَأْسَهُ عَلَى كَفِّهِ " .
আবু
কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সফরে)
যখন রাতে বিশ্রাম নিতেন তখন ডান কাতে বিশ্রাম নিতেন। আর যদি ভোর হওয়ার উপক্রম হতো
তাহলে ডান হাত দাঁড় করে হাতের তালুর উপর মাথা রাখতেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৭;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৬৮৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/১৬৩১; বায়হাকী, হা/১০১২৪; শারহুস
সুন্নাহ, হা/৩৩৫৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/২৫৫৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪০ |
রাসূল (সাঃ) এর ইবাদাত |
পরিচ্ছদঃ
সালাতে
দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পা ফুলে
যেত
১৯৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، وَبِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ ، قَالا :
حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاقَةَ ، عَنِ الْمُغِيرَةِ
بْنِ شُعْبَةَ ، قَالَ : صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , حَتَّى انْتَفَخَتْ قَدَمَاهُ , فَقِيلَ لَهُ : أَتَتَكَلَّفُ هَذَا ,
وَقَدْ غَفَرَ اللَّهُ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ ؟ قَالَ
: " أَفَلا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا " .
মুগীরা
ইবনে শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন যে, তাঁর পা ফুলে যেত। তাকে
বলা হলো, আপনি এত কষ্ট করছেন অথচ আল্লাহ তা’আলা আপনার পূর্বাপর সকল গুনাহ ক্ষমা
করে দিয়েছেন। তিনি বললেন, আমি কি শোকরিয়া আদায়কারী বান্দা হব না ?[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৭৩০২;
সুনানে নাসাঈ, হা/১৬৪৪; ইবনে মাজাহ, হা/১৪১৯; ইবনে খুযাইমা, হা/১১৮২; মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৮২২৩; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১১৮৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩১১; সহীহ তারগীব ওয়াত
তারহীব, হা/৬১৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের প্রথমাংশে ঘুমাতেন এবং সাহরীর পূর্ব পর্যন্ত
সালাত আদায় করতেন
১৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنِ الأَسْوَدِ
بْنِ يَزِيدَ ، قَالَ : سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، عَنْ صَلاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاللَّيْلِ ؟ فَقَالَتْ : " كَانَ يَنَامُ
أَوَّلَ اللَّيْلِ ثُمَّ يَقُومُ ، فَإِذَا كَانَ مِنَ السَّحَرِ أَوْتَرَ ، ثُمَّ
أَتَى فِرَاشَهُ ، فَإِذَا كَانَ لَهُ حَاجَةٌ أَلَمَّ بِأَهْلِهِ ، فَإِذَا
سَمِعَ الأَذَانَ وَثَبَ ، فَإِنْ كَانَ جُنُبًا أَفَاضَ عَلَيْهِ مِنَ الْمَاءِ ،
وَإِلا تَوَضَّأَ وَخَرَجَ إِلَى الصَّلاةِ " .
আসওয়াদ
ইবনে ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) এর কাছে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তাহাজ্জুদ সালাত (রাতের সালাত)
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তিনি রাতের প্রথমাংশে ঘুমাতেন। তারপর সালাতে
দাঁড়াতেন এবং সাহরীর পূর্বক্ষণে বিতর আদায় করতেন। এরপর প্রয়োজন মনে করলে
বিছানায় আসতেন। তারপর আযানের শব্দ শুনে জেগে উঠতেন এবং অপবিত্র হলে সর্বাগ্রে
পানি বইয়ে গোসল করে নিতেন নতুবা ওযু করতেন। তারপর সালাত আদায় করতেন।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/১৬৮০;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৪৭৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৫৯৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি
রাতের শেষ অর্ধাংশেও সালাত আদায় করতেন
১৯৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ . ح
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ،
عَنْ مَالِكٍ ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ ، عَنْ كُرَيْبٍ ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ , أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ مَيْمُونَةَ وَهِيَ
خَالَتُهُ ، قَالَ : " فَاضْطَجَعْتُ فِي عَرْضِ الْوِسَادَةِ ، وَاضْطَجَعَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي طُولِهَا ، فَنَامَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , حَتَّى إِذَا انْتَصَفَ
اللَّيْلُ أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيلٍ ، فَاسْتَيْقَظَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَجَعَلَ يَمْسَحُ النَّوْمَ
عَنْ وَجْهِهِ ، ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الآيَاتِ الْخَوَاتِيمَ مِنْ سُورَةِ آلِ
عِمْرَانَ ، ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهَا ، فَأَحْسَنَ
الْوُضُوءَ ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي " ، قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ :
" فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِي ثُمَّ أَخَذَ بِأُذُنِي الْيُمْنَى ,
فَفَتَلَهَا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ،
ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ، قَالَ مَعْنٌ :
سِتَّ مَرَّاتٍ ثُمَّ أَوْتَرَ ، ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ ,
فَقَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ، ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ
" .
ইবনে
আব্বাস (আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার তিনি তাঁর খালা মায়মূনা (রাঃ)-এর গৃহে
রাত্রিযাপন করেন। তিনি বলেন, তিনি মায়মূনা (রাঃ) এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বালিশের লম্বা দিকে ঘুমান আর আমি প্রস্থের দিকে ঘুমাই।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অর্ধ রাত কিংবা তাঁর কিছুক্ষণ পূর্ব
পর্যন্ত ঘুমালেন। তারপর তিনি জাগ্রত হন এবং মুখমণ্ডল মুছে ঘুমের জড়তা দূর করেন।
তারপর তিনি সূরা আলে ইমরানের শেষ ১০ আয়াত তিলাওয়াত করেন। এরপর তিনি ঝুলন্ত পানির
মশকের কাছে যান এবং উত্তমরূপে ওযু করেন। এরপর সালাতে দাঁড়ান।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি তাঁর পার্শ্বে দাড়ালাম। তিনি আমার মাথার
উপর ডান হাত রাখলেন, এরপর তিনি আমার ডান কান ধরে একটু মললেন (এতে আমি তাঁর ডান
পাশে এসে দাড়ালাম)। অতঃপর ২ রাক’আত সালাত আদায় করলেন, তারপর ২ রাক’আত সালাত
আদায় করলেন, তারপর ২ রাক’আত সালাত আদায় করলেন, তারপর ২ রাক’আত সালাত আদায়
করলেন, তারপর ২ রাক’আত সালাত আদায় করলেন, তারপর ২ রাক’আত সালাত আদায় করলেন।
মানের বর্ণনা মতে তিনি ২ রাক’আত করে ৬ বার (১২ রাক’আত) সালাত আদায় করেন। এরপর
বিতর সালাত আদায় করেন। এরপর আরাম করেন।
এরপর তাঁর কাছে মুয়াযযিন এল। তখন তিনি সংক্ষেপে ২ রাক’আত সালাত আদায় করেন। এরপর
মসজিদের উদ্দেশে বের হন এবং ফজরের সালাত আদায় করেন।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/২৬৫; সহীহ বুখারী, হা/১৮৩; সহীহ মুসলিম, হা/১৮২৫; আবু দাউদ, হা/১৩৬৯; মুসনাদে আহমাদ,
হা/২১৬৪; ইবনে খুযাইমা, হা/১৬৭৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
১৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاءِ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنْ شُعْبَةَ ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ
، قَالَ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي
مِنَ اللَّيْلِ ثَلاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম (তাহাজ্জুদ ও বিতরসহ কখনো কখনো) রাত্রে ১৩ রাক’আত সালাত আদায়
করতেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১১৩৮;
সহীহ মুসলিম, হা/১৮৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২০১৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাত্রে
তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করতে না পারলে দিনে তা আদায় করে নিতেন
১৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
عَوَانَةَ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى ، عَنْ سَعْدِ بْنِ
هِشَامٍ ، عَنْ عَائِشَةَ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا لَمْ يُصَلِّ بِاللَّيْلِ , مَنَعَهُ مِنْ ذَلِكَ النَّوْمُ
، أَوْ غَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ , صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً
" .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যদি কখনো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
নিদ্রা বা প্রবল ঘুমের চাপের কারণে তাহাজ্জুদ আদায় করতে না পারতেন, তাহলে তিনি
দিনে (চাশতের সময়) ১২ রাক’আত সালাত আদায় করে নিতেন।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৯৮৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৬৪৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের সালাত দু’রাক’আত করে আদায় করতেন
২০০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ . ح
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ ، عَنْ أَبِيهِ ،
أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ أَخْبَرَهُ ، عَنْ زَيْدِ بْنِ
خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ ، أَنَّهُ قَالَ : لأَرْمُقَنَّ صَلاةَ النَّبِيِّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَتَوَسَّدْتُ عَتَبَتَهُ ، أَوْ فُسْطَاطَهُ "
فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , رَكْعَتَيْنِ
خَفِيفَتَيْنِ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ ، طَوِيلَتَيْنِ ،
طَوِيلَتَيْنِ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا
، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ، ثُمَّ
صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ، ثُمَّ صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ، ثُمَّ أَوْتَرَ فَذَلِكَ
ثَلاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً " .
যায়েদ
ইবনে খালিদ আল জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত গভীর মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য করার ইচ্ছা
করলাম। তাই আমি তাঁর বাড়ি অথবা তাঁবুর চৌকাঠের উপর মাথা ঠেস দিয়ে ঘুমিয়ে
পড়লাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে সংক্ষেপে ২ রাক’আত
সালাত আদায় করলেন। এরপর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে ২ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। এরপর
তদপেক্ষা সংক্ষেপে ২ রাক’আত, এরপর তাঁর চেয়ে সংক্ষেপে আরো ২ রাক’আত এবং তাঁর
চেয়ে সংক্ষেপে আরো ২ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। এরপর সংক্ষেপে আরো ২ রাক’আত সালাত
আদায় করলেন। তারপর বিতর আদায় করেন। এভাবে ১৩ রাক’আত সালাত আদায় করেন।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/২৬৬; আবু দাউদ, হা/১৩৬৮; ইবনে মাজাহ, হা/১৩৬২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান মাসে ১১ রাক’আত তাহাজ্জুদের সালাত আদায়
করতেন
২০১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ ، عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَأَلَ
عَائِشَةَ ، كَيْفَ كَانَتْ صَلاةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فِي رَمَضَانَ ؟ فَقَالَتْ : مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيَزِيدَ فِي رَمَضَانَ وَلا فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى
عَشْرَةَ رَكْعَةً ، يُصَلِّي أَرْبَعًا , لا تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ ,
وَطُولِهِنَّ ، ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا لا تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ
وَطُولِهِنَّ ، ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاثًا ، قَالَتْ عَائِشَةُ : قُلْتُ : يَا
رَسُولَ اللَّهِ ، أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ ؟ فَقَالَ : " يَا
عَائِشَةُ ، إِنَّ عَيْنَيَّ تَنَامَانِ , وَلا يَنَامُ قَلْبِي " .
আবু
সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আয়েশা (রাঃ) এর নিকট জিজ্ঞেস করলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে কত রাক’আত তাহাজ্জুদের
সালাত আদায় করতেন ? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমাযান অথবা অন্য সময় ১১ রাক’আতের বেশি আদায় করতেন না। প্রথমে ৪ রাক’আত আদায়
করতেন। কী রকম একাগ্রতা নিয়ে ও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন সে বিষয়ে
তুমি জিজ্ঞেস করো না। তারপর আবার ৪ রাক’আত আদায় করেন। তবে এর একাগ্রতা ও দীর্ঘতা
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। এরপর ৩ রাক’আত আদায় করতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি
বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি বিতর আদায়ের পূর্বে কি নিদ্রা যান? তিনি বললেন,
আমার চোখ নিদ্রা যায় কিন্তু অন্তর নিদ্রা যায় না।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/২৬৩; সহীহ বুখারী, হা/১১৪৭; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৫৭; আবু দাউদ, হা/১৩৪৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি
১ রাক’আত বিতর আদায় করতেন
২০২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْنٌ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ :
" أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ يُصَلِّي
مِنَ اللَّيْلِ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً , يُوتِرُ مِنْهَا بِوَاحِدَةٍ ،
فَإِذَا فَرَغَ مِنْهَا , اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রাত্রে ১১ রাক’আত সালাত আদায় করতেন, যার মধ্যে ১ রাক’আত হতো বিতর। যখন সালাত শেষে
করতেন তখন তিনি ডান কাতে আরাম করতেন।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/২৬২; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৫১; আবু দাউদ, হা/১৩৩৭; সুনানে নাসাঈ, হা/১৬৯৬; মুসনাদে
আহমাদ, হা/২৪১১৬; বায়হাকী, হা/৪৫৫১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
কখনো
কখনো তিনি রাতে ৯ রাক’আত সালাত আদায় করতেন
২০৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ ، عَنِ
الأَعْمَشِ ، عَنِ إِبْرَاهِيمَ ، عَنِ الأَسْوَدِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ :
" كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يُصَلِّي مِنَ
اللَّيْلِ تِسْعَ رَكَعَاتٍ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম রাত্রে ৯ রাক’আত সালাত আদায় করতেন।[1]
[1] সহীহ মুসলিম, হা/১৭৩৩;
আবু দাউদ, হা/১২৫৩; সুনানে নাসাঈ, হা/১৭২৫; ইবনে মাজাহ, হা/১৩৬০; মুসনাদে আহমদ, হ২৪০৬৫
সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১১৬৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৬১৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক রাতের সালাতের বিবরণ
২০৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ ، عَنْ
أَبِي حَمْزَةَ ، رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ ، عَنْ رَجُلٍ مِنْ بَنِي عَبْسٍ ، عَنْ
حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ ، أَنَّهُ صَلَّى مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ اللَّيْلِ ، قَالَ : فَلَمَّا دَخَلَ فِي الصَّلاةِ ،
قَالَ : " اللَّهُ أَكْبَرُ ذُو الْمَلَكُوتِ وَالْجَبَرُوتِ ,
وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ " ، قَالَ : ثُمَّ قَرَأَ الْبَقَرَةَ ،
ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعَهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ , وَكَانَ يَقُولُ : " سُبْحَانَ
رَبِّيَ الْعَظِيمِ ، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ " ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ
, فَكَانَ قِيَامُهُ نَحْوًا مِنْ رُكُوعِهِ ، وَكَانَ يَقُولُ : " لِرَبِّيَ
الْحَمْدُ ، لِرَبِّيَ الْحَمْدُ " ثُمَّ سَجَدَ , فَكَانَ سُجُودُهُ نَحْوًا
مِنْ قِيَامِهِ ، وَكَانَ يَقُولُ : " سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى ،
سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى " ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ، فَكَانَ مَا بَيْنَ
السَّجْدَتَيْنِ نَحْوًا مِنَ السُّجُودِ ، وَكَانَ يَقُولُ : " رَبِّ
اغْفِرْ لِي ، رَبِّ اغْفِرْ لِي " حَتَّى قَرَأَ الْبَقَرَةَ , وَآلَ
عِمْرَانَ , وَالنِّسَاءَ , وَالْمَائِدَةَ , أَوِ الأَنْعَامَ " ، شُعْبَةُ
الَّذِي شَكَّ فِي الْمَائِدَةِ ، وَالأَنْعَامِ
হুযায়ফা
ইবনে ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে রাত্রে সালাত আদায় করেন। তিনি বলেন, যখন তিনি সালাত আরম্ভ
করলেন, তখন বললেন,
اللَّهُ أَكْبَرُ ذُو الْمَلَكُوتِ وَالْجَبَرُوتِ , وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ
“আল্ল-হু আকবার যুল মালাকূতি ওয়াল জাবারুতি ওয়াল কিবরিয়া-য়ি ওয়াল ‘আযামাহ”
অর্থাৎ আল্লাহ মহান, রাজাধিরাজ, অসীম শক্তির অধিকারী, বড়ত্ব ও মাহাত্ম্য তাঁরই
জন্য।
তারপর তিনি (সূরা ফাতিহার পর) সূরা বাকারা তিলাওয়াত করেন। এরপর কিয়ামের ন্যায়
দীর্ঘ রুকূ করেন। তিনি তাতে বলেন,
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ ، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ
এরপর “সুবহা-না রব্বিয়াল আযীম”, “সুবহা-না রবিবয়াল আযীম”
অর্থাৎ আমার প্রভু পুত-পবিত্র ও মহান; আমার প্রভু পুত-পবিত্র ও মহান।
তারপর মাথা উঠালেন এবং তাঁর কিয়াম রুকূর ন্যায় দীর্ঘ হলো। এরপর বললেন,
لِرَبِّيَ الْحَمْدُ ، لِرَبِّيَ الْحَمْدُ
অর্থাৎ সকল প্রশংসা আমার প্রভুর জন্য; সকল প্রশংসা আমার প্রভুর জন্য।
তারপর তিনি সিজদা করলেন, আর তাঁর সিজদা কিয়ামের মতো দীর্ঘ হলো। তিনি বললেন,
سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى ، سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى
“সুবহা-না রব্বিয়াল আ'লা, সুবহা-না রব্বিয়াল আ'লা”
অর্থাৎ আমার প্রভু পবিত্র ও মহান, আমার প্রভূ পবিত্র ও মহান।
তারপর মাথা উঠালেন (অর্থাৎ সিজদা হতে উঠে বসেন)। আর ২ সিজদার মধ্যকার সময় ছিল
সিজদায় থাকা সময়ের ব্যবধানের মতো। এ সময় তিনি বলতেন,
رَبِّ اغْفِرْ لِي ، رَبِّ اغْفِرْ لِي
“রব্বিগ ফিরলী”, “রব্বিগ ফিরলী”
অর্থাৎ হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করো; হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করো।
এমনকি তিনি সূরা বাকারা, আলে ইমরান, নিসা, মায়েদা অথবা আন’আম তিলাওয়াত করেন।
বর্ণনাকারী সূরা মায়েদা না আনআম পর্যন্ত তিলাওয়াত করেছেন সে সম্পর্কে সন্দেহ
পোষণ করেন।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৮৭৪;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৪২৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের মধ্যে একটি আয়াত বারবার তিলাওয়াত করতেন
২০৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ مُحَمَّدُ بْنُ نَافِعٍ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ ، عَنِ إِسْمَاعِيلَ بْنِ
مُسْلِمٍ الْعَبْدِيِّ ، عَنْ أَبِي الْمُتَوَكِّلِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ :
" قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِآيَةٍ مِنَ
الْقُرْآنِ لَيْلَةً " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রাতে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি আয়াত (পূনরাবৃত্তি করে) তিলাওয়াত করতে
থাকেন।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৯১৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ
بْنُ حَرْبٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنِ الأَعْمَشِ ، عَنْ أَبِي
وَائِلٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ، قَالَ : " صَلَّيْتُ
لَيْلَةً مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يَزَلْ
قَائِمًا حَتَّى هَمَمْتُ بِأَمْرِ سُوءٍ " قِيلَ لَهُ : وَمَا هَمَمْتَ بِهِ
؟ قَالَ : " هَمَمْتُ أَنْ أَقْعُدَ وَأَدَعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত আদায় করি। তিনি এত দীর্ঘ (সময়)
কিয়াম করেন যে, আমি একটি খারাপ কাজ করার সংকল্প করে বসি। তাকে বলা হলো আপনি কি
করতে চেয়েছিলেন? তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ছেড়ে বসে
পড়ার ইচ্ছা করেছিলাম।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১১৩৫;
সহীহ মুসলিম, হা/১৮৫১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৯৩৭; বায়হাকী, হা/৪৪৬০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
বসে
সালাত আদায় করলে তিলাওয়াতও বসে করতেন
২০৭
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
مَعْنٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ ، عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي جَالِسًا , فَيَقْرَأُ وَهُوَ جَالِسٌ ، فَإِذَا بَقِيَ
مِنْ قِرَاءَتِهِ قَدْرُ مَا يَكُونُ ثَلاثِينَ أَوْ أَرْبَعِينَ آيَةً ، قَامَ
فَقَرَأَ وَهُوَ قَائِمٌ ، ثُمَّ رَكَعَ وَسَجَدَ ، ثُمَّ صَنَعَ فِي الرَّكْعَةِ
الثَّانِيَةِ مثل ذَلِكَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে সালাত
আদায় করলে তিলাওয়াতও বসে করতেন। যখন মাত্র ৩০ অথবা ৪০ আয়াত বাকী থাকত তখন
দাঁড়িয়ে তিলাওয়াত করতেন তারপর রুকু ও সিজদা করতেন। এরপর তিনি দ্বিতীয় রাক’আতও
অনুরূপভাবে আদায় করতেন।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/৩১১; সহীহ বুখারী, হা/১১১৯; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৩৯; আবু দাউদ, হা/৯৫৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
দাঁড়িয়ে
কিরাআত পাঠ করলে রুকূ-সিজদাও দাঁড়ানো অবস্থাতেই করতেন
২০৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ ، قَالَ
: حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ ، قَالَ :
سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، عَنْ صَلاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , عَنْ تَطَوُّعِهِ ، فَقَالَتْ : " كَانَ يُصَلِّي لَيْلا طَوِيلا
قَائِمًا ، وَلَيْلا طَوِيلا قَاعِدًا ، فَإِذَا قَرَأَ وَهُوَ قَائِمٌ رَكَعَ
وَسَجَدَ وَهُوَ قَائِمٌ ، وَإِذَا قَرَأَ وَهُوَ جَالِسٌ رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ
جَالِسٌ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আয়েশা (রাঃ) এর কাছে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নফল সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম।
তিনি বললেন, তিনি দীর্ঘ রাত্রি দাঁড়িয়ে কিংবা দীর্ঘ রাত্রি বসে সালাত আদায় করতেন।
তিনি দাঁড়িয়ে কিরাআত পড়লে রুকূ-সিজদাও দাঁড়ানো অবস্থাতেই করতেন। আবার যখন কিরাআত
বসে পড়তেন, তখন বসা অবস্থাতেই রুকূ-সিজদা করতেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/১৭৩৬;
আবু দাউদ, হা/৯৫৬; ইবনে মাজাহ, হা/১২২৮; ইবনে খুযাইমা, হা/১২৪৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬০৮১;
সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৬৩১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২০৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
مَعْنٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَالِكٌ ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ
يَزِيدَ ، عَنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ ، عَنْ حَفْصَةَ ، زَوْجِ
النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَالَتْ : " كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ يُصَلِّي فِي سُبْحَتِهِ قَاعِدًا , وَيَقْرَأُ بِالسُّورَةِ
وَيُرَتِّلُهَا , حَتَّى تَكُونَ أَطْوَلَ مِنْ أَطْوَلَ مِنْهَا " .
হাফসা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম নফল সালাত বসে আদায় করতেন। তাতে তারতীল (তাজবীদ) সহকারে কিরাআত পাঠ
করতেন। ফলে তা দীর্ঘ সূরার চেয়ে দীর্ঘতর মনে হতো।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/৩০৯; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৪৬; সুনানে নাসাঈ, হা/১৬৫৮; ইবনে খুযাইমা, হা/১২৪২; মুসনাদে
আহমাদ, হা/২৬৪৮৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৫০৮; দারেমী, হা/১৩৮৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর পূর্বে অধিকাংশ নফল সালাত বসে আদায় করতেন
২১০
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ ، قَالَ :
أَخْبَرَنِي عُثْمَانُ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ ، أَنَّ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ أَخْبَرَهُ ، أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ ، " أَنَّ النَّبِيَّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمْ يَمُتْ , حَتَّى كَانَ أَكْثَرُ
صَلاتِهِ وَهُوَ جَالِسٌ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর
পূর্বে অধিকাংশ নফল সালাত বসে আদায় করেছেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/১৭৪৫;
সুনানে নাসাঈ, হা/১৬৫২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৭৭৩; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৩৯; মুস্তাদরাকে
হাকেম, হা/১১৮৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ৮ রাক’আত সুন্নাতের বর্ণনা
২১১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَيُّوبَ ، عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ ، قَالَ : " صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا ، وَرَكْعَتَيْنِ
بَعْدَ الْمَغْرِبِ فِي بَيْتِهِ ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ فِي بَيْتِهِ
" .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে যোহরের পূর্বে ২ রাক’আত ও পরে ২ রাক’আত, মাগরিবের পর
ঘরে ২ রাক’আত এবং এশার পরে তাঁর ঘরে ২ রাক’আত সালাত আদায় করেছি।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৪৫০৬; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১১৯৭; মুসনাদুল বাযযার, হা/৫৮২৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ
بْنُ إِبْرَاهِيمَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَيُّوبُ ، عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ
عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَتْنِي حَفْصَةُ : " أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ حِينَ يَطْلُعُ
الْفَجْرُ وَيُنَادِي الْمُنَادِي ، قَالَ أَيُّوبُ : وَأُرَاهُ ، قَالَ :
خَفِيفَتَيْنِ "
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাফসা (রাঃ) আমাকে (এ মর্মে) হাদীস
শোনান যে, সুবহে সাদিকের সময় যখন মুয়াযযিন আযান দিত, তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২ রাক’আত সালাত আদায় করে নিতেন। আইয়ুব বলেন, আমি
মনে করি তিনি خَفِيفَتَيْنِ
(সংক্ষিপ্ত ২ রাক’আত) বলেছেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৪৫০৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/৮৬৭; মুসনাদে মুস্তাখরাজ আলাস সহীহাইন, হা/১৬৩৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ১০ রাক’আত সুন্নাতের বিবরণ
২১৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ
مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ بُرْقَانَ ، عَنْ مَيْمُونِ بْنِ
مِهْرَانَ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ : " حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ : رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ
الظُّهْرِ ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ ،
وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ " ، قَالَ ابْنُ عُمَرَ : " وَحَدَّثَتْنِي
حَفْصَةُ بِرَكْعَتَيِ الْغَدَاةِ ، وَلَمْ أَكُنْ أَرَاهُمَا مِنَ النَّبِيِّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে ৮ রাক’আত স্মরণ রেখেছি যোহরের পূর্বে ২ রাক’আত ও পরে ২
রাক’আত, ২ রাক’আত মাগরিবের পরে এবং ২ রাক’আত এশার পরে। ইবনে উমার (রাঃ) বলেন,
হাফসা (রাঃ) আমার কাছে ফজরের ২ রাক’আতের খবর দিয়েছেন। অথচ আমি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তা আদায় করতে দেখিনি।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১১৮০;
মুসনাদে ইসহাক ইবনে রাহওয়াই, হা/১৯৯৭; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/৪৮২৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২১৪
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
شَقِيقٍ ، قَالَ : سَأَلتُ عَائِشَةَ ، عَنْ صَلاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَالَتْ : " كَانَ يُصَلِّي قَبْلَ الظُّهْرِ
رَكْعَتَيْنِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ ، وَبَعْدَ الْمَغْرِبِ رَكْعَتَيْنِ ،
وَبَعْدَ الْعِشَاءِ رَكْعَتَيْنِ ، وَقَبْلَ الْفَجْرِ ثِنْتَيْنِ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) এর কাছে নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর (নফল) সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তিনি ঐ
যোহরের পূর্বে ২ রাক’আত এবং পরে ২ রাক’আত, মাগরিবের পরে ২ রাক’আত, এশার পরে ২
রাক’আত এবং ফজরের পূর্বে ২ রাক’আত সালাত আদায় করতেন।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৮৭০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিনের ১৬ রাক’আত নফল সালাতের বিবরণ
২১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، قَالَ :
سَمِعْتُ عَاصِمَ بْنَ ضَمْرَةَ , يَقُولُ : سَأَلْنَا عَلِيًّا ، عَنْ صَلاةِ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ النَّهَارِ ، فَقَالَ :
إِنَّكُمْ لا تُطِيقُونَ ذَلِكَ ، قَالَ : فَقُلْنَا : مِنْ أَطَاقَ ذَلِكَ مِنَّا
صَلَّى ، فَقَالَ : " كَانَ إِذَا كَانَتِ الشَّمْسُ مِنْ هَهُنَا
كَهَيْئَتِهَا مِنْ هَهُنَا عِنْدَ الْعَصْرِ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ، وَإِذَا
كَانَتِ الشَّمْسُ مِنْ هَهُنَا , كَهَيْئَتِهَا مِنْ هَهُنَا عِنْدَ الظُّهْرِ
صَلَّى أَرْبَعًا ، وَيُصَلِّي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا ، وَبَعْدَهَا
رَكْعَتَيْنِ ، وَقَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعًا ، يَفْصِلُ بَيْنَ كُلِّ
رَكْعَتَيْنِ بِالتَّسْلِيمِ عَلَى الْمَلائِكَةِ الْمُقَرَّبِينَ وَالنَّبِيِّينَ
، وَمَنْ تَبِعَهُمْ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ " .
আসিম
ইবনে যামরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আলী (রাঃ) এর কাছে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিনের (নফল) সালাত সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বল লন, তোমরা আসেভাবে আদায় করার ক্ষমতা রাখো না। বর্ণনাকারী
বলেন, আমরা বললাম, আমাদের মধ্যে যে সামর্থ্য রাখে সে আদায় করবে। এরপর তিনি বললেন,
আসরের সময় সূর্য যতটা উপরে থাকে তেমন হলে তিনি ২ রাক’আত (ইশরাক সালাত) আদায়
করতেন। আবার যোহরের সময় সূর্য যতটা উপরে থাকে (পূর্ব দিকে সূর্য ততটা উপর হলে)
তিনি ৪ রাক’আত (চাশতের সালাত) আদায় করতেন। যোহরের পূর্বে ৪ রাক’আত ও পরে ২ রাক’আত
এবং আসরের পূর্বে ৪ রাক’আত আদায় করতেন। প্রতি ২ রাক’আতে নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা,
নবীগণ এবং যেসকল মুমিন-মুসলিম তাদের অনুসরণ করেছেন তাদের প্রতি সালাম প্রেরণের
মাধ্যমে ব্যবধান করতেন।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/৮৭৪;
ইবনে মাজাহ, হা/১১৬১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৭৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৭৭; বায়হাকী,
হা/৪৬৯৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৮৯২; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২৩৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দ্বোহার
সালাত |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৪ রাক’আত চাশতের সালাত আদায় করতেন
২১৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ يَزِيدَ الرِّشْكِ ، قَالَ
: سَمِعْتُ مُعَاذَةَ ، قَالَتْ : قُلْتُ لِعَائِشَةَ : أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى ؟ قَالَتْ : " نَعَمْ ،
أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ , وَيَزِيدُ مَا شَاءَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ " .
মু’আযা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম
যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি চাশতের সালাত আদায় করতেন? উত্তরে তিনি
বললেন, হ্যাঁ- ৪ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। আল্লাহ চাইলে কখনো কখনো বেশিও
পড়তেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/১৬৯৬;
ইবনে মাজাহ, হা/১৩৮১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৬৮২; বায়হাকী, হা/৪৬৭৯; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/২৫২৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/১০০৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬ রাক’আতও চাশতের সালাত আদায় করতেন
২১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنِي حَكِيمُ
بْنُ مُعَاوِيَةَ الزِّيَادِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ عُبَيْدِ
اللَّهِ بْنِ الرَّبِيعِ الزِّيَادِيُّ ، عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ ، عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
كَانَ يُصَلِّي الضُّحَى سِتَّ رَكَعَاتٍ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬
রাক’আত চাশতের সালাত আদায় করতেন।[১]
[১] মুজামুল আওসাত,
হা/১২৭৬; জামেউস সগীর, হা/৯০৯১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন ৮ রাক’আত চাশতের সালাত আদায়
করেছিলেন
২১৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى ، قَالَ : مَا أَخْبَرَنِي أَحَدٌ ،
أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى
إِلا أُمُّ هَانِئٍ ، فَإِنَّهَا حَدَّثَتْ " أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , دَخَلَ بَيْتَهَا يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ فَاغْتَسَلَ
فَسَبَّحَ ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ مَا رَأَيْتُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, صَلَّى صَلاةً قَطُّ أَخَفَّ مِنْهَا ، غَيْرَ أَنَّهُ كَانَ يُتِمُّ الرُّكُوعَ
وَالسُّجُودَ " .
আবদুর
রহমান ইবনে আবু লায়লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একমাত্র উম্মে হানী (রাঃ) ছাড়া
কেউই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চাশতের সালাত আদায় করতে
দেখেছেন বলে আমাকে বলেননি। উম্মে হানী (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন আমার ঘরে আসেন এবং গোসল করে ৮
রাক’আত সালাত আদায় করেন। এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে সালাত আদায় করতে আমি আর কখনো
দেখিনি। অবশ্য তা সত্ত্বেও তিনি যথারীতি রুকূ-সিজদা আদায় করেছেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১১০৩;
সহীহ মুসলিম, হা/১৭০০; ইবনে খুযাইমা, হা/১২৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৯৪৫; শারহুস সুন্নাহ,
হা/১০০০; দারেমী, হা/১৪৫২; বায়হাকী, হা/৪৬৮১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফিরে আসলে আগে সালাত আদায় করতেন
২১৯
حَدَّثَنَا حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ
، قَالَ : حَدَّثَنَا كَهْمَسُ بْنُ الْحَسَنِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ
، قَالَ : قُلْتُ لِعَائِشَةَ : أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى ؟ قَالَتْ : " لا , إِلا أَنْ يَجِيءَ مِنْ مَغِيبِهِ
" .
আবদুল্লাহ
ইবনে শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস
করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি চাশতের সালাত আদায় করতেন?
তিনি বললেন, কোন সফর হতে ফিরে আসলে সালাত আদায় করতেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/১৬৯৪;
আবু দাউদ, হা/১২৯৪; সুনানে নাসাঈ, হা/২১৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৪২৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা,
হা/২১৩২; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৫২৭; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৭৮৭০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলে পড়ার পর ৪ রাক’আত সালাত আদায় করতেন
২২০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، عَنْ هُشَيْمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عُبَيْدَةُ ، عَنِ إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ سَهْمِ بْنِ مِنْجَابٍ ، عَنْ قَرْثَعٍ
الضَّبِّيِّ ، أَوْ عَنْ قَزَعَةَ ، عَنْ قَرْثَعٍ ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ
الأَنْصَارِيِّ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , كَانَ
يُدْمِنُ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ , فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ
اللَّهِ ، إِنَّكَ تُدْمِنُ هَذِهِ الأَرْبَعَ رَكَعَاتٍ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ
, فَقَالَ : " إِنَّ أَبْوَابَ السَّمَاءِ تُفْتَحُ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ
فَلا تُرْتَجُ حَتَّى تُصَلَّى الظُّهْرُ ، فَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِي فِي
تِلْكَ السَّاعَةِ خَيْرٌ " ، قُلْتُ : أَفِي كُلِّهِنَّ قِرَاءَةٌ ؟ قَالَ :
" نَعَمْ " . قُلْتُ : هَلْ فِيهِنَّ تَسْلِيمٌ فَاصِلٌ ؟ قَالَ :
" لا " .
আবু
আইয়ুব আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সূর্য হেলে গেলে ৪ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর
রাসূল! আপনি সূর্য হেলে গেলে (গুরুত্বের সঙ্গে) ৪ রাক’আত সালাত আদায় করেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সূর্য হেলার পর আকাশের দরজা
খুলে দেয়া হয় এবং যোহরের সময় পর্যন্ত তা খোলা থাকে। আমি চাই এ সময় আমার কোন
ভালো কাজ আকাশে পৌঁছুক। আমি বললাম, এর প্রতি রাক’আতেই কি কিরাআত পড়তে হয়? তিনি
বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, ২ রাক’আতের পর সালাম ফিরাতে হয় কি? তিনি বললেন, না।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৩৫৭৯; ইবনে মাজাহ, হা/১১৫৭; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৩৯৩০; বায়হাকী, হা/৪৩৫৫;
জামেউস সগীর, হা/২৪১২ মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/৪৮১৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي الْوَضَّاحِ ،
عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ الْجَزَرِيِّ ، عَنْ مُجَاهِدٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ
السَّائِبِ ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ
يُصَلِّي أَرْبَعًا بَعْدَ أَنْ تَزُولَ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ وَقَالَ :
" إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ ، فَأُحِبُّ أَنْ
يَصْعَدَ لِي فِيهَا عَمَلٌ صَالِحٌ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে সায়িব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সূর্য হেলার পর হতে যোহরের পূর্ব পর্যন্ত ৪ রাক’আত সালাত আদায় করতেন এবং বলতেন, এ
সময় আকাশের দরজা খুলে দেয়া হয়। আমার একান্ত ইচ্ছা, এ সময় আমার কোন সৎকাজ
আল্লাহর দরবারে পৌছুক।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৭৯০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২২
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ الْمُقَدَّمِيُّ ، عَنْ مِسْعَرِ بْنِ كِدَامٍ ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ ، عَنْ عَلِيٍّ ، أَنَّهُ " كَانَ
يُصَلِّي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا ، وَذَكَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّيهَا عِنْدَ الزَّوَالِ وَيَمُدُّ فِيهَا
" .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি যোহরের পূর্বে ৪ রাক’আত আদায় করতেন এবং
বলতেন যে, সূর্য হেলার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সালাত আদায়
করতেন এবং তাতে দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করতেন।[১]
[১] সুনানুল কুবরা লিন
নাসাঈ, হা/৩৩৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪২ |
ঘরে নফল সালাত |
পরিচ্ছদঃ
ঘরে
নফল সালাত
২২৩
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الْعَنْبَرِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ صَالِحٍ ، عَنِ الْعَلاءِ
بْنِ الْحَارِثِ ، عَنْ حَرَامِ بْنِ مُعَاوِيَةَ ، عَنْ عَمِّهِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ سَعْدٍ ، قَالَ : سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ عَنِ الصَّلاةِ فِي بَيْتِي وَالصَّلاةِ فِي الْمَسْجِدِ ، قَالَ :
" قَدْ تَرَى مَا أَقْرَبَ بَيْتِي مِنَ الْمَسْجِدِ ، فَلأَنْ أُصَلِّيَ فِي
بَيْتِي أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أُصَلِّيَ فِي الْمَسْجِدِ , إِلا أَنْ تَكُونَ
صَلاةً مَكْتُوبَةً " .
আবদুল্লাহ
ইবনে সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, নফল সালাত আমার ঘরে পড়া ভালো, না মসজিদে
পড়া ভালো? তিনি বললেন, তুমি দেখছ না আমার ঘর কত নিকটে, তা সত্ত্বেও ফরয সালাত
মসজিদে পড়া ছাড়া অন্যান্য সালাত আমি ঘরে পড়াই উত্তম মনে করি।[১]
[১] ইবনে খুযাইমা, হা/১২০২:
মুজামুস সাহাবা, হা/১৫৫৮; আল আহাদ ওয়াল মাছানী, হা/৮৬৫; শারহুল মা'আনী, হা/১৯৯৪।
হাদিসের মানঃনির্ণীত নয়
৪৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রোযা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর রোযা
২২৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ
زَيْدٍ ، عَنْ أَيُّوبَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ ، قَالَ : سَأَلْتُ
عَائِشَةَ ، عَنْ صِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ،
قَالَتْ : " كَانَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ قَدْ صَامَ ، وَيُفْطِرُ حَتَّى
نَقُولَ قَدْ أَفْطَرَ " . قَالَتْ : " وَمَا صَامَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , شَهْرًا كَامِلا مُنْذُ قَدِمَ الْمَدِينَةَ
إِلا رَمَضَانَ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তাতে তিনি বললেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ক্রমাগত) রোযা রাখতেন, এমনকি আমরা
বলতাম, তিনি বুঝি অনবরত রোযা রেখেই যাবেন। আর যখন ইফতার করতেন, তখন আমরা বলতাম,
তিনি হয়তো আর রোযা রাখবেন না। আয়েশা (রাঃ) বলেন, মদিনায় হিজরতের পর রমযান মাস
ছাড়া আর কোন সময় তিনি পূর্ণ মাস রোযা রাখতেন না।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/২৭৭৫;
সুনানে নাসাঈ, হা/২৩৪৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫২৭৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০৯; মুসনাদে
আবু আওয়ানা, হা/২৯৩৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
جَعْفَرٍ ، عَنْ حُمَيْدٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ
صَوْمِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : " كَانَ
يَصُومُ مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى نَرَى أَنْ لا يُرِيدَ أَنْ يُفْطِرَ مِنْهُ ،
وَيُفْطِرُ مِنْهُ حَتَّى نَرَى أَنْ لا يُرِيدَ أَنْ يَصُومَ مِنْهُ شَيْئًا .
وَكُنْتَ لا تَشَاءُ أَنْ تَرَاهُ مِنَ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا إِلا رَأَيْتَهُ
مُصَلِّيًا ، وَلا نَائِمًا إِلا رَأَيْتَهُ نَائِمًا " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস (রাঃ) কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কোন মাসে এমনভাবে রোযা রাখতেন যে, আমরা মনে করতাম- তিনি হয়তো এ মাসে
আর রোযা ছাড়বেন না। আবার অনেক সময় এমনভাবে রোযা ছেড়ে দিতেন যে, আমরা মনে করতাম—
তিনি আর রোযা রাখবেন না। অবস্থা এমন ছিল যে, তুমি যদি তাঁকে সালাতরত অবস্থায়
দেখতে চাইতে, তবে তাঁকে সালাতরত অবস্থায়-ই দেখতে পেতে। আর যদি নিদ্রিত অবস্থায়
দেখতে চাইতে, তবে তাঁকে নিদ্রিত অবস্থায়-ই দেখতে পেতে।[১]
[১] ইবনে খুযাইমা, হা/২১৩৪;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৪৯৮; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৫৯২: বায়হাকী, হা/৪৫১১ শারহুস সুন্নাহ,
হা/৯৩২; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৬১৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৯৮৪০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ سَعِيدَ
بْنَ جُبَيْرٍ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ مَا يُرِيدُ أَنْ يُفْطِرَ
مِنْهُ ، وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ مَا يُرِيدُ أَنْ يَصُومَ مِنْهُ ، وَمَا
صَامَ شَهْرًا كَامِلا مُنْذُ قَدِمَ الْمَدِينَةَ إِلا رَمَضَانَ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কখনো এমনভাবে রোযা রাখতেন যে, আমরা বলতাম, এ মাসে হয়তো তিনি আর রোযা
ভাঙ্গবেন না। যখন রোযা ছেড়ে দিতেন, তখন (তাঁর অবস্থা দেখে) আমরা বলতাম, তিনি বুঝি
আর রোযা রাখবেন না। মদিনায় হিজরতের পর রমযান মাস ছাড়া তিনি আর কখনো পূর্ণ মাস
রোযা রাখেননি।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১৯৯৮; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২৭৪৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، عَنْ سُفْيَانَ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنْ سَالِمِ
بْنِ أَبِي الْجَعْدِ ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَتْ :
" مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ
شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ إِلا شَعْبَانَ وَرَمَضَانَ " .
উম্মু
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রমযান ও শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে একাধিক্রমে রোযা
রাখতে দেখিনি।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/২১৭৫;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৬০৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৭২০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০২৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২২৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ عَمْرٍو ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ :
" لَمْ أَرَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَصُومُ
فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْ صِيَامِهِ لِلَّهِ فِي شَعْبَانَ ، كَانَ يَصُومُ
شَعْبَانَ إِلا قَلِيلا , بَلْ كَانَ يَصُومُهُ كُلَّهُ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে শাবান মাস ছাড়া আর কোন মাসে এত অধিক রোযা রাখতে দেখিনি।
তিনি শাবান মাসের অধিকাংশ দিনই রোযা রাখতেন। বরং প্রায় সারা মাসই তাঁর রোযা
অবস্থায় কাটত।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/২১৭৮;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৩৫৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৫১৬; বায়হাকী, হা/৮২১২; সহীহ তারগীব
ওয়াত তারহীব, হা/১০২৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি মাসে ৩টি করে রোযা রাখতেন
২২৯
حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ دِينَارٍ الْكُوفِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى ، وَطَلْقُ بْنُ غَنَّامٍ ، عَنْ شَيْبَانَ ، عَنْ
عَاصِمٍ ، عَنْ زِرِّ بْنُ حُبَيْشٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : " كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَصُومُ مِنْ غُرَّةِ كُلِّ
شَهْرٍ ثَلاثَةَ أَيَّامٍ , وَقَلَّمَا كَانَ يُفْطِرُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ "
.
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
প্রতি মাসের প্রথমদিকে তিনটি করে রোযা রাখতেন। জুমু’আর দিন খুব কমই ইফতার
করতেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৩৮৬০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৬৪৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৮১৮ শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০৩:
জামেউস সগীর, হা/৯১০৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন
২৩০
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ ، عَنْ خَالِدِ بْنِ
مَعْدَانَ ، عَنْ رَبِيعَةَ الْجُرَشِيِّ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : "
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَحَرَّى صَوْمَ
الاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সোম ও বৃহস্পতিবারের রোযার প্রতি খুবই খেয়াল রাখতেন।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/২৩৬১;
ইবনে মাজাহ, হা/১৭৩৯; বায়হাকী, হা/৮২৩০; মুসনাদে হা/২৪৭৯২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব,
হা/১০৪৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ رِفَاعَةَ ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ ، عَنْ أَبِيهِ
، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ،
قَالَ : " تُعْرَضُ الأَعْمَالُ يَوْمَ الاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ , فَأُحِبُّ
أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
সোম বা বৃহস্পতিবার দিন মানুষের আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আর রোযা অবস্থায়
আমার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হোক- এটা আমি পছন্দ করি।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/১৭৯৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ
، وَمُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ ، قَالا : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مَنْصُورٍ ،
عَنْ خَيْثَمَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ مِنَ الشَّهْرِ السَّبْتَ وَالأَحَدَ
وَالاثْنَيْنَ ، وَمِنَ الشَّهْرِ الآخَرِ الثُّلاثَاءَ وَالأَرْبِعَاءَ
وَالْخَمِيسَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কোন মাসে শনি, রবি ও সোম এবং কোন মাসে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দিন
রোযা রাখতেন।[১]
[১] তাহযীবুল আছার,
হা/৯৮৪; মুসনাদে উমার ইবনে খাত্তাব, হা/১২২০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩৩
حَدَّثَنَا أَبُو مُصْعَبٍ الْمَدِينِيُّ ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ ،
عَنْ أَبِي النَّضْرِ ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، عَنْ
عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَصُومُ فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْ صِيَامِهِ فِي شَعْبَانَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে এর চেয়ে বেশি রোযা রাখতেন না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ يَزِيدَ الرِّشْكِ ، قَالَ : سَمِعْتُ
مُعَاذَةَ ، قَالَتْ : قُلْتُ لِعَائِشَةَ : أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَصُومُ ثَلاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ؟
قَالَتْ : " نَعَمْ " . قُلْتُ : مِنْ أَيِّهِ كَانَ يَصُومُ ؟ قَالَتْ
: " كَانَ لا يُبَالِي مِنْ أَيِّهِ صَامَ "
ইয়াযীদ
আর রিশক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মুআয (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে,
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কি প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম,
কোন কোন তারিখে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, কোন নির্দিষ্ট তারিখ ছিল না। সুযোগ পেলেই
তিনি রোযা রাখতেন।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/১৮০২; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৬৭৭; মুস্তাখরাকে ইবনে আওয়ানা, হা/২৩৭৩; মুসনাদে
ইসহাক ইবনে রাহওয়াই, হা/১৩৯৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোযা রাখতেন
২৩৫
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ
أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ عَاشُورَاءُ يَوْمًا تَصُومُهُ
قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَصُومُهُ ، فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ
، فَلَمَّا افْتُرِضَ رَمَضَانُ كَانَ رَمَضَانُ هُوَ الْفَرِيضَةُ وَتُرِكَ
عَاشُورَاءُ ، فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহেলী যুগে কুরাইশরা আশুরার দিন
রোযা রাখত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও হিজরতের পূর্বে আশুরার
রোযা রাখতেন। মদিনায় হিজরতের পরও তিনি আশুরার রোযা রাখতেন এবং এ রোযা রাখার
নির্দেশ দিতেন। অতঃপর রমযানের রোযা ফরয করা হলে তা ফরযে পরিণত হয় এবং আশুরা ছেড়ে
দেয়া হয়। সুতরাং যার ইচ্ছা সে তা রাখতে পারে, আবার যার ইচ্ছা ছেড়ে দিতে
পারে।[১]
[১] মুয়াত্তা ইমাম
মালেক, হা/৬৬২; সহীহ বুখারী, হা/২০০২ সহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৮; আবু দাউদ, হা/২৪৪৪; সহীহ
ইবনে হিববান, হা/৩৬২১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬২৯২; বায়হাকী, হা/৮১৯৫; মুসান্নাফে ইবনে
আবি শাইবা, হা/৯৪৪৭; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৩১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমল ছিল নিয়মিত
২৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مَنْصُورٍ ،
عَنِ إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ عَلْقَمَةَ ، قَالَ : سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، أَكَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَخُصُّ مِنَ الأَيَّامِ
شَيْئًا ؟ قَالَتْ : " كَانَ عَمَلُهُ دِيمَةً ، وَأَيُّكُمْ يُطِيقُ مَا
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يُطِيقُ " .
আলক্বামা
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস
করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ইবাদাতের জন্য কোন দিনক্ষণ
নির্দিষ্ট করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমল
ছিল সর্বকালীন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন সামর্থ্যবান
ছিলেন, তোমাদের মধ্যে এমন সামর্থ্যবান কেউ আছে কি?[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১৯৮৭
সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬৫: আবু দাউদ, হা/১৩৭২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮১; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৩৬৪৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৬০৩; বায়হাকী, হা/৮২৫৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩৭
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : دَخَلَ
عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعِنْدِي امْرَأَةٌ ,
فَقَالَ : " مَنْ هَذِهِ ؟ " قُلْتُ : فُلانَةُ لا تَنَامُ اللَّيْلَ ،
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " عَلَيْكُمْ
مِنَ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ ، فَوَاللَّهِ لا يَمَلُّ اللَّهُ حَتَّى
تَمَلُّوا " ، وَكَانَ أَحَبَّ ذَلِكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِي يَدُومُ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন। সে সময় জনৈক মহিলা আমার কাছে বসা ছিল। তিনি
জিজ্ঞেস করলেন, এ মহিলাটি কে? আমি বললাম, সে অমুক। সে সারা রাত বিনিদ্র অবস্থায়
কাটায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের সামর্থ্য
অনুযায়ী আমল করা উচিত। আল্লাহর কসম! তিনি নেকী দান করতে কখনো কুণ্ঠিত হন না,
যতক্ষণ না তোমরা আমলে কুণ্ঠিত হও। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন কাজ করতেই পছন্দ করেন, যা লোকেরা সর্বদা করতে সামর্থ্য
রাখে।[১]
1] ইবনে মাজাহ, হা/৪২৩৮;
সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮২; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৪৬৫১; বায়হাকী, হা/৪৫১৪; শারহুস
সুন্নাহ, হা/৯৩৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو هِشَامٍ مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ الرِّفَاعِيُّ ، قَالَ
: حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ ، عَنِ الأَعْمَشِ ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ ، قَالَ :
سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، وَأُمَّ سَلَمَةَ ، أَيُّ الْعَمَلِ كَانَ أَحَبَّ إِلَى
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَتَا : " مَا دِيمَ
عَلَيْهِ , وَإِنْ قَلَّ " .
আবু
সালিহ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) ও উম্মে সালামার
কাছে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রিয়
কাজ কোনটি ছিল? তাঁরা উভয়েই বললেন, যে আমল সব সময় করা হয়, তা যত কমই হোক না
কেন।[১]
[১] মুয়াত্তা ইমাম
মালেক, হা/৪১৯; সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৫; সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬৪ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩২৩;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০৮৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮৩; বায়হাকী, হা/৪৩৪২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাতের আমল
২৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ ، أَنَّهُ سَمِعَ عَاصِمَ بْنَ حُمَيْدٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ
عَوْفَ بْنَ مَالِكٍ , يَقُولُ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَيْلَةً فَاسْتَاكَ , ثُمَّ تَوَضَّأَ , ثُمَّ قَامَ
يُصَلِّي ، فَقُمْتُ مَعَهُ فَبَدَأَ فَاسْتَفْتَحَ الْبَقَرَةَ , فَلا يَمُرُّ
بِآيَةِ رَحْمَةٍ إِلا وَقَفَ فَسَأَلَ ، وَلا يَمُرُّ بِآيَةِ عَذَابٍ إِلا
وَقَفَ فَتَعَوَّذَ ، ثُمَّ رَكَعَ فَمَكَثَ رَاكِعًا بِقَدْرِ قِيَامِهِ ،
وَيَقُولُ فِي رُكُوعِهِ : " سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ ,
وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ " ، ثُمَّ سَجَدَ بِقَدْرِ رُكُوعِهِ ،
وَيَقُولُ فِي سُجُودِهِ : " سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ ,
وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ " ثُمَّ قَرَأَ آلَ عِمْرَانَ ثُمَّ سُورَةً
, يَفْعَلُ مثل ذَلِكَ .
আসিম
ইবনে হুমায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আওফ ইবনে মালিক (রাঃ)-কে বলতে
শুনেছি, আমি এক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম।
তিনি মিসওয়াক করলেন। পরে ওযু করলেন এবং সালাতে দাঁড়ালেন। আমিও তাঁর সঙ্গে
দাঁড়ালাম। তিনি সূরা বাকারা আরম্ভ করলেন। এরপর রহমতের আয়াত পাঠ করে চুপ থাকলেন
এবং রহমত প্রার্থনা করলেন। এরপর আযাবের আয়াত পাঠ করে চুপ থাকলেন এবং মুক্তি কামনা
করেন। তারপর রুকূ করলেন এবং এ দু’আ পাঠ করলেন,
سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ , وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ
“সুবহা-নাযিল জাবারুতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিবরিয়া-ই ওয়াল আযামতি”।
অর্থাৎ আমি পবিত্রতা ঘোষণা করছি ঐ সত্তার, যিনি মাহাত্ম্য, রাজত্ব, বড়ত্ব ও
সম্মানের অধিকারী।
অতঃপর রুকূর সমপরিমাণ সময় সিজদা করেন এবং উপরোক্ত দু’আটি আবারও পাঠ করেন। অতঃপর
দ্বিতীয় রাক’আতে সূরা আলে ইমরান পাঠ করেন। তারপর একেক রাক’আতে একেক সূরা পাঠ
করেন।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৮৭৩;
সুনানে নাসাঈ, হা/১১৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০২৬; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৪৫৪০;
বায়হাকী, হা/৩৫০৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯১২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কিরাআত |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টেনে টেনে কিরাআত পাঠ করতেন
২৪০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ
جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبِي ، عَنْ قَتَادَةَ ، قَالَ :
قُلْتُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ : كَيْفَ كَانَتْ قِرَاءَةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ فَقَالَ : " مَدًّا " .
কাতাদা
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) কে
জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিরাআত কিরূপ ছিল?
তিনি বললেন, টেনে পড়তেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫০৪৬;
সুনানে নাসাঈ, হা/১০১৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩০২৫; দার কুতনী, হা/১১৭৭ বায়হাকী, হা/২২২২
শারহুস সুন্নাহ, হা/১২১৪; মুজামুল আওসাত, হা/৪৮৬৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি আয়াত আলাদা আলাদা করে পাঠ করতেন
২৪১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ
سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ ، عَنْ
أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , يَقْطَعُ قِرَاءَتَهُ , يَقُولُ : الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ
الْعَالَمِينَ ثُمَّ يَقِفُ ، ثُمَّ يَقُولُ : الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ثُمَّ
يَقِفُ ، وَكَانَ يَقْرَأُ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
উম্মে
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মে সালামা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি আয়াত আলাদা আলাদা করে পড়তেন। যেমন, “আলহামদু
লিল্লা-হি রব্বিল আ-লামীন” পাঠ করে একটু থামতেন। তারপর “আর রহমা-নির রহীম” পাঠ করে
একটু থামতেন। তারপর “মা-লিকি ইয়াওমিদ্দীন” পাঠ করতেন।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৪০০৩;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৬২৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/২৯১০; দার কুতনী, হা/১১৯১; জামেউস
সগীর, হা/৯১৩১: শু’আবুল ঈমান, হা/৩২২৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো আস্তে এবং কখনো উচ্চৈঃস্বরে কিরাআত পাঠ করতেন
২৪২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا اللَّيْثُ ، عَنْ
مُعَاوِيَةَ بْنِ صَالِحٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَيْسٍ ، قَالَ :
سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، عَنْ قِرَاءَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ أَكَانَ يُسِرُّ بِالْقِرَاءَةِ أَمْ يَجْهَرُ ؟ قَالَتْ : " كُلُّ
ذَلِكَ قَدْ كَانَ يَفْعَلُ قَدْ كَانَ رُبَّمَا أَسَرَّ وَرُبَّمَا جَهَرَ "
. فَقُلْتُ : الْحَمْدُ لِلَّهِ , الَّذِي جَعَلَ فِي الأَمْرِ سَعَةً " .
আবদুল্লাহ
ইবনে আবু কায়স থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস
করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আস্তে কিরাআত পড়তেন, না
উচ্চৈঃস্বরে? তিনি বললেন, উভয়টিই করতেন। কখনো আস্তে পড়তেন, আবার কখনো
উচ্চৈঃস্বরে পড়তেন। আমি বললাম, আল্লাহর প্রশংসা যে, তিনি এ ব্যাপারে দু’ধরনেরই
সুযোগ রেখেছেন।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তিলাওয়াত প্রতিবেশীর ঘরের ছাদ থেকেও শুনা যেত
২৪৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ،
قَالَ : حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ ، عَنْ أَبِي الْعَلاءِ الْعَبْدِيِّ ، عَنْ يَحْيَى
بْنِ جَعْدَةَ ، عَنْ أُمِّ هَانِئٍ ، قَالَتْ : " كُنْتُ أَسْمَعُ قِرَاءَةَ
النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , بِاللَّيْلِ وَأَنَا عَلَى
عَرِيشِي " .
উম্মু
হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার গৃহে ছাদে অবস্থান করে
রাত্রিবেলায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিরাআত শুনতে পেতাম।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/১০১৩;
ইবনে মাজাহ, হা/১৩৪৯; মুসনাদে আহমদ, হা/২৯৬৫০; শু’আবুল ঈমান, হা/১৯৪৫; শারহুল মা’আনী,
হা/২০২৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৩৬৯২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উষ্ট্রের উপর বসেও তিলাওয়াত করতেন
২৪৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ ، قَالَ :
سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مُغَفَّلٍ , يَقُولُ : " رَأَيْتُ النَّبِيَّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , عَلَى نَاقَتِهِ يَوْمَ الْفَتْحِ , وَهُوَ
يَقْرَأُ : إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا - لِيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا
تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ ، قَالَ : " فَقَرَأَ وَرَجَّعَ
" ، قَالَ : وَقَالَ مُعَاوِيَةُ بْنُ قُرَّةَ : لَوْلا أَنْ يَجْتَمِعَ
النَّاسُ عَلَيَّ لأَخَذْتُ لَكُمْ فِي ذَلِكَ الصَّوْتِ " أَوْ قَالَ :
اللَّحْنِ .
আবদুল্লাহ
ইবনে মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উষ্ট্রের উপর বসা অবস্থায় পড়তে শুনেছিঃ
إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا - لِيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ
অর্থাৎ নিশ্চয় আমি আপনার জন্য এমন একটা ফায়সালা করে দিয়েছি, যা সুস্পষ্ট। যাতে
আল্লাহ আপনার অতীত ও ভবিষ্যৎ ত্রুটিসমূহ মার্জনা করে দেন এবং আপনার প্রতি তাঁর
নিয়ামত পূর্ণ করেন।[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা তারজী করে
পড়ছিলেন।
মুআবিয়া ইবনে কুররা বলেন, আমি যদি আমার কাছে লোক জড়ো হওয়ার আশংকা না করতাম,
তাহলে আমি সেরূপ স্বরে তোমাদেরকে শুনাতাম। বর্ণনাকারী الصَّوْتِ
কিংবা اللَّحْنِ
শব্দ ব্যবহার করেছেন।[2]
[১] সূরা ফাতহ- ১, ২।
[2] সহীহ বুখারী, হা/৪২৮১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২০৫৭৭; মুস্তাখরাজে ইবনে আবি আওয়ানা,
হা/৩১৩৭; মুসনাদে ইবনে জা’দ, হা/১১১১; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/৮৮৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গানের সূরে তিলাওয়াত করতেন না
২৪৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا نُوحُ بْنُ
قَيْسٍ الْحُدَّانِيُّ ، عَنْ حُسَامِ بْنِ مِصَكٍّ ، عَنْ قَتَادَةَ ، قَالَ :
" مَا بَعَثَ اللَّهُ نَبِيًّا إِلا حَسَنَ الْوَجْهِ ، حَسَنَ الصَّوْتِ ،
وَكَانَ نَبِيُّكُمْ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَسَنَ الْوَجْهِ ، حَسَنَ
الصَّوْتِ ، وَكَانَ لا يُرَجِّعُ " .
কাতাদা
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক নবীকেই
সুন্দর চেহারা ও সুন্দর কণ্ঠস্বর দিয়ে প্রেরণ করেছেন। তোমাদের নবী মুহাম্মাদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও সুন্দর চেহারা ও সুন্দর স্বরের অধিকারী ছিলেন।
তবে তিনি গানের সুরে তিলাওয়াত করতেন না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তিলা
২৪৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي
الزِّنَادِ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي عَمْرٍو ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ ، قَالَ : " كَانَتْ قِرَاءَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , رُبَّمَا يَسْمَعُهَا مَنْ فِي الْحُجْرَةِ وَهُوَ فِي الْبَيْتِ
" .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কিরাআত এমন হতো যে, তিনি যখন তাঁর ঘরে বসে পড়তেন, তখন বারান্দা
থেকে তা শুনা যেত।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/১৩২৯;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৪৬; বায়হাকী, হা/৪৪৭৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯১৭: শু’আবুল ঈমান,
হা/২৩৬৯; শারহুল মা’আনী, হা/২০২৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ক্ৰন্দন |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায়কালে ক্ৰন্দন করতেন
২৪৭
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ الْمُبَارِكِ ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ مُطَرِّفٍ
وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الشِّخِّيرِ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : "
أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُصَلِّي ,
وَلِجَوْفِهِ أَزِيزٌ كَأَزِيزِ الْمِرْجَلِ مِنَ الْبُكَاءِ " .
আবদুল্লাহ
ইবনে শিখখীর থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,
একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়ে দেখতে
পেলাম যে, তিনি সালাত আদায় করছেন। এমতাবস্থায় তাঁর বক্ষদেশ হতে কান্নার এমন শব্দ
বের হচ্ছে, যেমন চুলার উপর রাখা পাত্র হতে টগবগ শব্দ শোনা যায়।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/১২১৪;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৩৫৫; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/৯০০; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৯৭১; শু’আবুল
ঈমান, হা/১৮৮৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩৩২৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন শ্রবণ করেও ক্ৰন্দন করতেন
২৪৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ
بْنُ هِشَامٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنِ الأَعْمَشِ ، عَنِ
إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ عُبَيْدَةَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ، قَالَ :
قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " اقْرَأْ
عَلَيَّ " فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَقْرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ
أنزل ، قَالَ : " إِنِّي أُحِبُّ أَنْ أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِي " ،
فَقَرَأْتُ سُورَةَ النِّسَاءِ ، حَتَّى بَلَغْتُ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاءِ
شَهِيدًا سورة النساء آية 41 ، قَالَ : فَرَأَيْتُ عَيْنَيْ رَسُولِ اللَّهِ
تَهْمِلانِ .
আবদুল্লাহ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আমাকে কুরআন পাঠ করে শুনাও। আমি বললাম, আমি আপনাকে পাঠ
করে শুনাব, যা আপনার উপর নাযিল হয়েছে! তিনি বললেন, আমি তা অপরের কাছ থেকে শুনতে
পছন্দ করি। ফলে আমি সূরা নিসা পাঠ করতে শুরু করলাম। অতঃপর যখন আমি এ আয়াত পর্যন্ত
পৌছলাম-
وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاءِ شَهِيدًا
অর্থাৎ আপনাকে ডাকব তাদের উপর সাক্ষীরূপে।[১]
তখন আমি দেখতে পেলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
চক্ষুদ্বয় হতে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে।[2]
[১] সূরা নিসা- ৪১।
[2] সহীহ বুখারী, হা/৪৬৮২ সহীহ মুসলিম, হা/১৯০৩; আবু দাউদ, হা/৩৬৭০; মুসনাদে আহমাদ,
হা/৩৬০৬; বায়হাকী, হা/২০৪৮৬; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৩৫৫৬০; শু’আবুল ঈমান,
হা/১৮৯০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদাতে গেলেও ক্ৰন্দন করতেন
২৪৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جَرِيرٌ ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ
السَّائِبِ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو ، قَالَ :
انْكسفَتِ الشَّمْسُ يَوْمًا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
يُصَلِّي ، حَتَّى لَمْ يَكَدْ يَرْكَعُ ثُمَّ رَكَعَ ، فَلَمْ يَكَدْ يَرْفَعُ
رَأْسَهُ ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ، فَلَمْ يَكَدْ أَنْ يَسْجُدَ ، ثُمَّ سَجَدَ
فَلَمْ يَكَدْ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ، فَلَمْ يَكَدْ
أَنْ يَسْجُدَ ، ثُمَّ سَجَدَ فَلَمْ يَكَدْ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ ، فَجَعَلَ
يَنْفُخُ وَيَبْكِي ، وَيَقُولُ : " رَبِّ أَلَمْ تَعِدْنِي أَنْ لا
تُعَذِّبَهُمْ وَأَنَا فِيهِمْ ؟ رَبِّ أَلَمْ تَعِدْنِي أَنْ لا تُعَذِّبَهُمْ
وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ ؟ وَنَحْنُ نَسْتَغْفِرُكَ " . فَلَمَّا صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ انْجَلَتِ الشَّمْسُ ، فَقَامَ فَحَمِدَ اللَّهَ تَعَالَى ,
وَأَثْنَى عَلَيْهِ ، ثُمَّ قَالَ : " إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ
مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلا لِحَيَاتِهِ ، فَإِذَا
انْكَسَفَا , فَافْزَعُوا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ تَعَالَى " .
আবদুল্লাহ
ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর যুগে একবার সূর্য গ্রহণ হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তখন সালাতে দণ্ডায়মান হন। এতে তিনি এত বিলম্ব করলেন যে, মনে হচ্ছিল
তিনি যেন আর রুকূতে যাবেন না। যখন রুকূতে গেলেন, তখন মনে হচ্ছিল, তিনি যেন আর মাথা
তুলবেন না। তারপর যখন মাথা উঠালেন, তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর সিজদায় যাবেন না।
তারপর তিনি যখন সিজদায় গেলেন, তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর মাথা উঠাবেন না। তারপর
যখন মাথা উঠালেন, তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর সিজদায় যাবেন না। তারপর যখন সিজদায়
গেলেন। তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর মাথা উঠবেন না। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলেন আর
ক্ৰন্দন করছিলেন এবং দুআ পাঠ করছিলেন যে, হে আমার রব! তুমি কি এ মর্মে প্রতিশ্রুতি
দাওনি যে, আমার উপস্থিতিতে আমার উম্মতকে শাস্তি দেবে না? আমরা তোমার কাছে
ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। রাসূলুল্লাহ যখন ২ রাক’আত সালাত শেষ করলেন, তখন সূর্যও বের
হয়ে আসল। অতঃপর তিনি কিছু বলার জন্য দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর হামদ ও ছানার পর বললেন,
চন্দ্র ও সূর্য আল্লাহর দুটি নিদর্শন। কারো জন্ম বা মৃত্যুর সঙ্গে চন্দ্র ও সূর্য
গ্রহণের কোন সম্পর্ক নেই। যখন চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ হয়, তখন তোমরা আল্লাহর
যিকর-এ লিপ্ত হও।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/২১৪০;
আবু দাউদ, হা/১১৯৬; সুনানে নাসাঈ, হা/১৪৮২ সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১৩৯২ মুস্তাদরাকে
হাকেম, হা/১২২৯; বায়হাকী, হা/১৩৭৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কন্যার মৃত্যুশোকে অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন
২৫০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ
، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ ، عَنْ عِكْرِمَةَ
، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ ابْنَةً لَهُ تَقْضِي فَاحْتَضَنَهَا فَوَضَعَهَا بَيْنَ يَدَيْهِ ,
فَمَاتَتْ وَهِيَ بَيْنَ يَدَيْهِ وَصَاحَتْ أُمُّ أَيْمَنَ , فَقَالَ يَعْنِي
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " أَتَبْكِينَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ ؟
" فَقَالَتْ : أَلَسْتُ أَرَاكَ تَبْكِي ؟ قَالَ : " إِنِّي لَسْتُ
أَبْكِي ، إِنَّمَا هِيَ رَحْمَةٌ ، إِنَّ الْمُؤْمِنَ بِكُلِّ خَيْرٍ عَلَى كُلِّ
حَالٍ ، إِنَّ نَفْسَهُ تُنْزَعُ مِنْ بَيْنِ جَنْبَيْهِ ، وَهُوَ يَحْمَدُ
اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর। এক কন্যা মূমুর্ষ অবস্থায় ছিলেন। তিনি তাকে কোলে তুলে সামনে
রাখলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই সে মৃত্যুর
কোলে ঢলে পড়ল। তখন উম্মে আয়মান (রাঃ) চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, আল্লাহর রাসূলের সামনেই তুমি ক্ৰন্দন
করছ? উম্মে আয়মান বললেন, আমি আপনাকেও কি অশ্রুসিক্ত দেখতে পাচ্ছি না? রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি যে কান্না করছি তা নিষেধ নয়, তা
আল্লাহর রহমত। অতঃপর তিনি বললেন, একজন মুমিন সর্বাবস্থায় মঙ্গলজনক অবস্থায় থাকে।
এমনকি তাঁর জীবন নিয়ে যাওয়ার সময়ও আল্লাহর প্রশংসা করে।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৪৭৫; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৬৩২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
উসমান
ইবনে মাযউন (রাঃ) এর মৃত্যুতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কেঁদেছিলেন
২৫১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ
عُبَيْدِ اللَّهِ ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، عَنْ عَائِشَةَ ، "
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَبَّلَ عُثْمَانَ
بْنَ مَظْعُونٍ وَهُوَ مَيِّتٌ وَهُوَ يَبْكِي " أَوْ قَالَ : "
عَيْنَاهُ تُهْرَاقَانِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উসমান ইবনে মাযউন (রাঃ) মারা গেলে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কপালে চুম্বন দিলেন। তিনি কাদছিলেন অথবা
(রাবী) বলেন, তখন তাঁর চোখ হতে অশ্রু পড়ছিল।[১]
[১] মুস্তাদরাকে হাকেম,
হা/১৩৩৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৪৭০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যাকে কবরের শোয়োনোর সময়ও কেঁদেছিলেন
২৫২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا أَبُو
عَامِرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ وَهُوَ ابْنُ سُلَيْمَانَ ، عَنْ هِلالِ
بْنِ عَلِيٍّ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : شَهِدْنَا ابْنَةً لِرَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَرَسُولُ اللَّهِ جَالِسٌ عَلَى
الْقَبْرِ , فَرَأَيْتُ عَيْنَيْهِ تَدمَعَانِ ، فَقَالَ : " أَفِيكُمْ
رَجُلٌ لَمْ يُقَارِفِ اللَّيْلَةَ ؟ " ، قَالَ أَبُو طَلْحَةَ : أَنَا ،
قَالَ : " أنزل " فَنَزَلَ فِي قَبْرِهَا .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যার কবরের পার্শ্বে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে বসেন। আমি দেখতে
পেলাম, তাঁর চোখ হতে অশ্রু বেরোচ্ছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে, যে গত রাতে স্ত্রীর নিকটবর্তী
হওনি? আবু তালহা (রাঃ) বললেন, আমি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে বললেন, তুমি কবরে অবতরণ করো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে আবু তালহা (রাঃ) কবরে অবতরণ করলেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১২৮৫;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১২২৯৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৬৮৫৩; বায়হাকী, হা/৬৮৩৮; শারহুস সুন্নাহ,
হা/১৫১৩; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬২২৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বিছানা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আঁশভর্তি চামড়ার বিছানায় নিদ্রা যেতেন
২৫৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ
مُسْهِرٍ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَ :
" إِنَّمَا كَانَ فِرَاشُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, الَّذِي يَنَامُ عَلَيْهِ مِنْ أَدَمٍ , حَشْوُهُ لِيفٌ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যে বিছানায় নিদ্রা যেতেন, তা ছিল চামড়ার। এর ভেতরে খেজুর গাছের আঁশ
ভরা থাকত।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬৪৫৬;
সহীহ মুসলিম, হা/৫৫৬৮; ইবনে মাজাহ, হা/৪১৫১ বায়হাকী, হা/১৩০৯৫; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩১২২;
শু’আবুল ঈমান, হা/৫৮৭৮; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩২৮৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৭ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বিনয় |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন
২৫৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْمَخْزُومِيُّ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ ، قَالُوا : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ،
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لا تُطْرُونِي كَمَا أَطْرَتِ النَّصَارَى ابْنَ
مَرْيَمَ , إِنَّمَا أَنَا عَبْدٌ , فَقُولُوا : عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ
" .
উমার
ইবনে খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, তোমরা আমার সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করো না। যেমন খ্রিষ্টানরা ঈসা ইবনে মারইয়াম
সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করে থাকে। আমি আল্লাহর বান্দা। তাই আমাকে আল্লাহর বান্দা ও
তাঁর রাসূলই বলো।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৪৪৫;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৪; দারেমী, হা/২৭৮৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৮১; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৬২৩৯; জামেউস সগীর, হা/১৩৩১৯; মুসনাদে হুমাইদী, হা/৩০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামান্য খাবারে দাওয়াত দিলেও অংশগ্রহণ করতেন
২৫৫
حَدَّثَنَا وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ ، عَنِ الأَعْمَشِ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ
، قَالَ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يُدْعَى
إِلَى خُبْزِ الشَّعِيرِ , وَالإِهَالَةِ السَّنِخَةِ , فَيُجِيبُ . وَلَقَدْ
كَانَ لَهُ دِرْعٌ عِنْدَ يَهُودِيٍّ , فَمَا وَجَدَ مَا يَفُكُّهَا حَتَّى مَاتَ
" .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে যবের রুটি এবং কয়েক দিনের পুরনো চর্বির তরকারী খাওয়ার দাওয়াত
করলেও তা গ্রহণ করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি বর্ম
এক ইয়াহুদির নিকট বন্ধক ছিল। শেষ জীবন পর্যন্ত তা ছাড়ানোর মতো পয়সা তাঁর হাতে
ছিল না।[১]
[১] মুসনাদে আবু ইয়ালা,
হা/৪০১৫; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২১২৯; জামেউস সগীর, হা/৯০৭০; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী,
হা/১১৬৩২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি পুরনো আসনে বসে হজ্জ পালন করেন
২৫৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الْحَفَرِيُّ ، عَنْ سُفْيَانَ ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ صَبِيحٍ ، عَنْ يَزِيدَ
بْنِ أَبَانَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : حَجَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , عَلَى رَحْلٍ رَثٍّ , وَعَلَيْهِ قَطِيفَةٌ , لا تُسَاوِي
أَرْبَعَةَ دَرَاهِمَ , فَقَالَ : " اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ حَجًّا , لا
رِيَاءَ فِيهِ , وَلا سُمْعَةَ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম একটি পুরনো আসনে বসে হজ্জ পালন করেন। তাঁর আসনের উপর একটি কাপড় ছিল,
যার মূল্য চার দিরহামও ছিল না। অতঃপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তুমি এ হজ্জকে
লৌকিকতা ও প্রচার বিলাস হতে মুক্ত করো।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/২৮৯০:
সিলসিলা সহীহাহ, হা/২৬১৭; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১১২২ মুসনাদুল বাযযার, হা/৭৩৪৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য কারো দাঁড়ানোকে পছন্দ করতেন না
২৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عَفَّانُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ حُمَيْدٍ ، عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " لَمْ يَكُنْ شَخْصٌ أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنْ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " ، قَالَ : "
وَكَانُوا إِذَا رَأَوْهُ لَمْ يَقُومُوا ، لِمَا يَعْلَمُونَ مِنْ كَرَاهَتِهِ
لِذَلِكَ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাহাবীগণের কাছে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেয়ে প্রিয় কোন ব্যক্তিত্ব এ পৃথিবীতে ছিল
না। তা সত্ত্বেও তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখে
দাঁড়াতেন না। কারণ, তারা জানতেন যে, তাকে দেখে দাঁড়ানোটা তিনি পছন্দ করতেন না।[১]
[১] আদাবুল মুফরাদ,
হা/৯৪৬; তাহযীবুল আছার, হা/২৭৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৩২৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৩৬৭;
মুসন্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/২৬০৯৬; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনধারার আরো কিছু বিবরণ
২৫৮
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جُمَيْعُ بْنُ
عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعِجْلِيُّ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا رَجُلٌ مِنْ
بَنِي تَمِيمٍ مِنْ وَلَدِ أَبِي هَالَةَ زَوْجِ خَدِيجَةَ , يُكْنَى أَبَا عَبْدِ
اللَّهِ ، عَنِ ابْنٍ لأَبِي هَالَةَ ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ ، قَالَ :
سَأَلْتُ خَالِي هِنْدَ بْنَ أَبِي هَالَةَ ، وَكَانَ وَصَّافًا عَنْ حِلْيَةِ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَأَنَا أَشْتَهِي أَنْ
يَصِفَ لِي مِنْهَا شَيْئًا ، فَقَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَخْمًا مُفَخَّمًا ، يَتَلأْلأُ وَجْهُهُ تَلأْلُؤَ
الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ " . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ ، قَالَ
الْحَسَنُ : فَكَتَّمْتُهَا الْحُسَيْنَ زَمَانًا ، ثُمَّ حَدَّثْتُهُ
فَوَجَدْتُهُ قَدْ سَبَقَنِي إِلَيْهِ . فَسَأَلَهُ عَمَّا سَأَلْتُهُ عَنْهُ ,
وَوَجَدْتُهُ قَدْ سَأَلَ أَبَاهُ عَنْ مَدْخَلِهِ وَمَخْرَجِهِ وَشَكْلِهِ ,
فَلَمْ يَدَعْ مِنْهُ شَيْئًا .
قَالَ الْحُسَيْنُ : فَسَأَلْتُ أَبِي ، عَنْ دُخُولِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالَ : " كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى مَنْزلِهِ
, جَزَّأَ دُخُولَهُ ثَلاثَةَ أَجْزَاءٍ ، جُزْءًا لِلَّهِ ، وَجُزْءًا لأَهْلِهِ
، وَجُزْءًا لِنَفْسِهِ ، ثُمَّ جَزَّأَ جُزْأَهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّاسِ ،
فَيَرُدُّ ذَلِكَ بِالْخَاصَّةِ عَلَى الْعَامَّةِ ، وَلا يَدَّخِرُ عَنْهُمْ
شَيْئًا ، وَكَانَ مِنْ سِيرَتِهِ فِي جُزْءِ الأُمَّةِ إِيثَارُ أَهْلِ الْفَضْلِ
بِإِذْنِهِ , وَقَسْمِهِ عَلَى قَدْرِ فَضْلِهِمْ فِي الدِّينِ ، فَمِنْهُمْ ذُو
الْحَاجَةِ ، وَمِنْهُمْ ذُو الْحَاجَتَيْنِ ، وَمِنْهُمْ ذُو الْحَوَائِجِ ،
فَيَتَشَاغَلُ بِهِمْ وَيَشْغَلُهُمْ فِيمَا يُصْلِحُهُمْ , وَالأُمَّةَ مِنْ
مُسَاءَلَتِهِمْ عَنْهُ , وَإِخْبَارِهِمْ بِالَّذِي يَنْبَغِي لَهُمْ " ,
وَيَقُولُ : " لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ مِنْكُمُ الْغَائِبَ ، وَأَبْلِغُونِي
حَاجَةَ مَنْ لا يَسْتَطِيعُ إِبْلاغَهَا ، فَإِنَّهُ مَنْ أَبْلَغَ سُلْطَانًا
حَاجَةَ مَنْ لا يَسْتَطِيعُ إِبْلاغَهَا , ثَبَّتَ اللَّهُ قَدمَيْهِ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ " ، لا يُذْكَرُ عِنْدَهُ إِلا ذَلِكَ ، وَلا يُقْبَلُ مِنْ
أَحَدٍ غَيْرِهِ ، يَدْخُلُونَ رُوَّادًا وَلا يَفْتَرِقُونَ إِلا عَنْ ذَوَاقٍ ،
وَيَخْرُجُونَ أَدِلَّةً , يَعْنِي عَلَى الْخَيْرِ .
قَالَ : فَسَأَلْتُهُ عَنْ مَخْرَجِهِ كَيْفَ يَصْنَعُ فِيهِ ؟ قَالَ : قَالَ :
فَسَأَلْتُهُ عَنْ مَخْرَجِهِ كَيْفَ يَصْنَعُ فِيهِ ؟ قَالَ : " كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْرِنُ لِسَانُهُ إِلا
فِيمَا يَعْنِيهِ ، وَيُؤَلِّفُهُمْ وَلا يُنَفِّرُهُمْ ، وَيُكْرِمُ كَرِيمَ
كُلِّ قَوْمٍ وَيُوَلِّيهِ عَلَيْهِمْ ، وَيُحَذِّرُ النَّاسَ وَيَحْتَرِسُ
مِنْهُمْ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَطْوِيَ عَنْ أَحَدٍ مِنْهُمْ بِشْرَهُ وَخُلُقَهُ ،
وَيَتَفَقَّدُ أَصْحَابَهُ ، وَيَسْأَلُ النَّاسَ عَمَّا فِي النَّاسِ ،
وَيُحَسِّنُ الْحَسَنَ وَيُقَوِّيهِ ، وَيُقَبِّحُ الْقَبِيحَ وَيُوَهِّيهِ ،
مُعْتَدِلُ الأَمْرِ غَيْرُ مُخْتَلِفٍ ، لا يَغْفُلُ مَخَافَةَ أَنْ يَغْفُلُوا
أَوْ يَمِيلُوا ، لِكُلِّ حَالٍ عِنْدَهُ عَتَادٌ ، لا يُقَصِّرُ عَنِ الْحَقِّ
وَلا يُجَاوِزُهُ . الَّذِينَ يَلُونَهُ مِنَ النَّاسِ خِيَارُهُمْ ، أَفْضَلُهُمْ
عِنْدَهُ أَعَمُّهُمْ نَصِيحَةً ، وَأَعْظَمُهُمْ عِنْدَهُ مَنْزِلَةً
أَحْسَنُهُمْ مُوَاسَاةً وَمُؤَازَرَةً " .
قَالَ : فَسَأَلْتُهُ عَنْ مَجْلِسِهِ ، فَقَالَ : قَالَ : فَسَأَلْتُهُ عَنْ
مَجْلِسِهِ ، فَقَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ لا يَقُومُ وَلا يَجْلِسُ , إِلا عَلَى ذِكْرٍ ، وَإِذَا انْتَهَى إِلَى
قَوْمٍ , جَلَسَ حَيْثُ يَنْتَهِي بِهِ الْمَجْلِسُ , وَيَأْمُرُ بِذَلِكَ ،
يُعْطِي كُلَّ جُلَسَائِهِ بِنَصِيبِهِ ، لا يَحْسَبُ جَلِيسُهُ أَنَّ أَحَدًا
أَكْرَمُ عَلَيْهِ مِنْهُ ، مَنْ جَالَسَهُ أَوْ فَاوَضَهُ فِي حَاجَةٍ ,
صَابَرَهُ حَتَّى يَكُونَ هُوَ الْمُنْصَرِفُ عَنْهُ ، وَمَنْ سَأَلَهُ حَاجَةً
لَمْ يَرُدَّهُ إِلا بِهَا , أَوْ بِمَيْسُورٍ مِنَ الْقَوْلِ ، قَدْ وَسِعَ
النَّاسَ بَسْطُهُ وَخُلُقُهُ ، فَصَارَ لَهُمْ أَبًا وَصَارُوا عِنْدَهُ فِي
الْحَقِّ سَوَاءً ، مَجْلِسُهُ مَجْلِسُ عِلْمٍ وَحِلْمٍ وَحَيَاءٍ وَأَمَانَةٍ
وَصَبْرٍ ، لا تُرْفَعُ فِيهِ الأَصْوَاتُ , وَلا تُؤْبَنُ فِيهِ الْحُرَمُ ، وَلا
تُثَنَّى فَلَتَاتُهُ , مُتَعَادِلِينَ ، بَلْ كَانُوا يَتَفَاضَلُونَ فِيهِ
بِالتَّقْوَى ، مُتَوَاضِعِينَ يُوَقِّرُونَ فِيهِ الْكَبِيرَ , وَيَرْحَمُونَ
فِيهِ الصَّغِيرَ ، وَيُؤْثِرُونَ ذَا الْحَاجَةِ , وَيَحْفَظُونَ الْغَرِيبَ
" .
হাসান
ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার মামা হিন্দ ইবনে আবু হালা
(রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থা জানার জন্য
জিজ্ঞেস করলাম, যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থা
অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে বর্ণনা করতেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর দেহাকৃতি ছিল উচ্চ ও মর্যাদাসম্পন্ন। তাঁর চেহারা ছিল পূর্ণিমা
রাতের চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল। অতঃপর পূর্ণ বিবরণ পেশ করেন। হাসান (রাঃ) বলেন, এ
হাদীস হুসাইন (রাঃ) এর কাছে বেশ কিছু কাল বর্ণনা করিনি। পরে বলা হলে জানা গেল যে,
তিনি আমার আগেই এ হাদীসটি শুনেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি এ হাদীসটি কেবল মামার কাছ
থেকে শুনেননি; উপরন্তু পিতা আলী (রাঃ) এর কাছ হতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরে প্রবেশ করা, বাইরে যাওয়া ও অন্যান্য রীতিনীতি সম্পর্কে
জানতে পেরেছেন। এ সম্পর্কে কোন কিছুই তিনি ছাড়েননি।
হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমি আমার পিতা আলী (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর গৃহে প্রবেশ করার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন গৃহে প্রবেশ করতেন, তখন তাঁর গৃহের অবস্থানকে
তিনটি ভাগে ভাগ করতেন। এক ভাগ আল্লাহর ইবাদাতের জন্য, এক ভাগ পরিবার-পরিজনের জন্য
এবং এক ভাগ নিজের কাজকর্মের জন্য। এ কাজকর্মের সময়কেও তিনি ২ ভাগে বিভক্ত করেন।
এক ভাগে নেহায়তই নিজের জন্য এবং এক ভাগ অন্যান্য লোকের জন্য। এ সময়ে বিশেষ বিশেষ
সাহাবীগণ তাঁর নিকট আসতেন। তাদের কাছে কোন কিছুর অব্যক্ত থাকত না। এ সকল লোকের
মধ্যে আলেমগণ প্রথমে আসার অনুমতি পেতেন। তাদের ধর্মীয় মর্যাদার বিচারে তাদেরকে
সময় দিতেন। কেউ এক, কেউ দুই, আবার কেউ ততোধিক প্রয়োজন নিয়ে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সকলের প্রয়োজন মিটিয়ে দিতেন এবং তাদেরকে এমন কাজের নির্দেশ দিতেন, যা
তাদের নিজেদের এবং পুরো উম্মতের উপকারে আসে।
এ সময় তিনি সমবেতদের লক্ষ্য করে বলতেন, তোমরা যারা এখানে উপস্থিত আছ, তারা আমার
বাণী অনুপস্থিতদের কাছে পৌছে দেবে। যারা কোন কারণে আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারনি,
তোমরা তাদের জিজ্ঞাসা আমার কাছ থেকে জেনে নিয়ে তাদেরকে জানিয়ে দেবে। কারণ, যে
ব্যক্তি এমন কোন নিবেদন বাদশাহের কাছে পৌছায় যে বাদশা পর্যন্ত পৌছতে পারে না,
আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তাঁর কদমকে অটল রাখবেন। তোমরা এ ব্যাপারে সতর্ক হও।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মজলিসে কেবল এসব আলোচনাই চলত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের থেকে এসব আলাপ-আলোচনাই
শুনতেন। সেখানে কোন প্রকার বাহুল্য কথাবার্তা হতো না। সাহাবীরা ধমীয় জ্ঞান আহরণের
আগ্রহ নিয়ে আসতেন এবং দ্বীনের স্বাদ গ্রহণ করতেন এবং তারা কল্যাণের দিশারী হয়ে
ফিরে যেতেন।
হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে যাওয়ার সময় কীরূপ করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অহেতুক কথাবার্তা হতে স্বীয় জবানকে সংযত রাখতেন।
মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতেন। তাদেরকে কোনভাবেই নিরুৎসাহিত করতেন না। সকল
গোত্রের সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মান করতেন এবং তাদের মধ্য হতে তাদের নেতা মনোনীত করতেন।
লোকদের আল্লাহর শাস্তির ভয় দেখাতেন। স্বীয় সঙ্গীদের খোজ-খবর রাখতেন এবং লোকদের
পারস্পরিক সম্পর্ক অনুসন্ধান করে (কোন প্রকার জটিলতা থাকলে) তা সংশোধন করে দিতেন।
ভালোকে সমর্থন করে তাকে শক্তিশালী করতেন এবং খারাপকে খারাপ বলে প্রতিহত করতেন। কোন
প্রকার মতবিরোধ সৃষ্টি না করে সবকিছুতেই মধ্যমপস্থা অনুসরণ করতেন। লোকদের সংশোধন
করতে কোন প্রকার অলসতা করতেন না। নসীহত ও উপদেশ দানের সময় লোকেরা যেন উদাসীন ও
বিরক্ত হয়ে না পড়ে, তিনি সে দিকেও খেয়াল রাখতেন। প্রত্যেক কাজের জন্য তাঁর কাছে
বিশেষ ব্যবস্থা থাকত। সত্যের ব্যাপারে কোন প্রকার সংকীর্ণতা ছিল না, সীমা অতিক্রম
হতো না। যেসব লোক তাঁর কাছে আসত, তারা উৎকৃষ্ট লোকে পরিণত হতো। যেই ব্যক্তি অপরের
মঙ্গল কামনা করত, সে-ই তাঁর নিকট উত্তম ব্যক্তিরূপে সম্মানিত হতো। আর সে ব্যক্তিই
তাঁর কাছে মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরূপে মনে হতো, যে অন্যদের প্রতি সহমর্মিতা ও
সহযোগিতায় অতি উৎসাহী ছিল।
হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমি আমার মামার কাছে রাসূলুল্লাহ এর মজলিস সম্পর্কে জানতে
চাইলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠা-বসায়
সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকতেন। যখন কোথাও যেতেন, যেখানেই তাঁকে বসতে
দিত, তিনি সেখানেই বসতেন। অন্যদেরকেও অনুরূপ করার নির্দেশ দিতেন। তিনি লোকের মাথা
ডিঙ্গিয়ে যেতে নিষেধ করেন। এ কথা সত্য যে, তিনি যে আসনেই বসতেন, তাই মধ্যমনির
আসনে পরিণত হতো। তিনি উপস্থিত সকলেরই কথা শুনতেন। উপস্থিত সকলেই মনে করত যে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অধিক মর্যাদা দিচ্ছেন। তাঁর
কাছে কেউ আসলে সে নিজে উঠে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি উঠতেন না। কেউ তাঁর কাছে কিছু
চাইলে তা না দিয়ে তিনি তাকে ফিরিয়ে দিতেন না। না থাকলে নম্রভাবে বুঝিয়ে বলতেন।
তাঁর দান সবার জন্যই অবধারিত ছিল। মায়া-মমতায় তিনি সকলের পিতা স্বরূপ ছিলেন।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর নিকট সবাই সমান ছিল। তাঁর মজলিস ছিল জ্ঞান,
লজ্জা, ধৈর্য ও আমানতের। সেখানে কোন প্রকার হট্টগোল হতো না এবং কারো মান-সম্মানেরও
ক্ষতি হতো না। সকলেই সমান মর্যাদা পেতেন। তবে তাকওয়ার বিচারে একে অন্যের উপর
মর্যাদাসম্পন্ন হতেন। একে অন্যের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করতেন। বড়কে শ্রদ্ধা ও
ছোটকে স্নেহ করতেন। প্রয়োজনধারীকে অগ্রাধিকার দেয়া হতো এবং ভিনদেশীকে হেফাযত করা
হতো।[১]
[১] মুজামুল কাবীর লিত
তাবারানী, হা/১৭৮৬৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৭০৫; জামেউস সগীর, হা/৯৯৪৭; শু’আবুল ঈমান,
হা/১৩৬২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৫৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَزِيعٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سَعِيدٌ ، عَنْ
قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لوْ أُهْدِيَ إِلَيَّ كُرَاعٌ لَقَبِلْتُ ،
وَلوْ دُعِيتُ عَلَيْهِ لأَجَبْتُ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে যদি ছাগলের একটি পা-ও দান করা হয়, তাহলে আমি অবশ্যই তা
গ্রহণ করব। এ জন্য যদি আমাকে এতে দাওয়াত করা হয়, তবে আমি দাওয়াত গ্রহণ করব।[১]
1] মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩২০০;
ইবনে হিব্বান, হা/৫২৯১; মুসনাদুল বাযযার, হা/৭৫২৯; সুনানুল কাবীর লিল বায়হাকী, হা/১২২৯১;
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/২২৪১৯ জামেউস সগীর, হা/৯৩৮৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ
، عَنْ جَابِرٍ ، قَالَ : " جَاءَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ برَاكِبِ بَغْلٍ وَلا بِرْذَوْنٍ " .
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন; কিন্তু তখন তিনি খচ্চর বা তুর্কি ঘোড়ার উপর আরোহী
ছিলেন না।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৫৬৬৪;
আবু দাউদ, হা/৩০৯৮; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/১২৬৩; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/২১৪০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি
নবজাতক বাচ্চাকেও কোলে তুলে নিতেন
২৬১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
أَبُو نُعَيْمٍ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي الْهَيْثَمِ الْعَطَّارُ
، قَالَ : سَمِعْتُ يُوسُفَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلامٍ ، قَالَ : "
سَمَّانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُوسُفَ ,
وَأَقْعَدَنِي فِي حِجْرِهِ , وَمَسَحَ عَلَى رَأْسِي " .
ইউসুফ
ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমার নাম রাখেন ইউসুফ। অতঃপর তিনি আমাকে কোলে তুলে নেন এবং মাথার উপর
হাত রাখেন।[১]
[১] আদাবুল মুফরাদ,
হা/৩৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৪৫১; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৮১৮৩; শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৩৬৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৬৯০; মুসনাদে হুমাইদী, হা/৯০৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাত্র ৪ দিরহাম মূল্যের হাওদার উপর বসে হজ্জ পালন
করেন
২৬১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
الطَّيَالِسِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ وَهُوَ ابْنُ صَبِيحٍ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا يَزِيدُ الرَّقَاشِيُّ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , " حَجَّ عَلَى رَحْلٍ رَثٍّ
وَقَطِيفَةٍ ، كُنَّا نَرَى ثَمَنَهَا أَرْبَعَةَ دَرَاهِمَ ، فَلَمَّا اسْتَوَتْ
بِهِ رَاحِلَتُهُ ، قَالَ : " لَبَّيْكَ بِحَجَّةٍ لا سُمْعَةَ فِيهَا وَلا
رِيَاءَ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
উটের পুরনো একটি হাওদায় বসে হজ্জ পালন করেন। এর উপর এক টুকরো কাপড় ছিল। আমাদের
মতে এর মূল্য ৪ দিরহাম হবে। হাওদায় উপবিষ্ট অবস্থায় তিনি এ দু’আ করছিলেন যে, হে
প্ৰভু! আমি হজ্জে তোমার দরবারে হাজির হয়েছি। তুমি একে লৌকিকতা ও প্রচারণার হতে
মুক্ত রাখ।[1]
[1] ইবনে মাজাহ, হা/২৮৯০:
সিলসিলা সহীহাহ, হা/২৬১৭ সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১১২২ মুসনাদুল বাযযার, হা/৭৩৪৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাউ খুব পছন্দ করতেন
২৬২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ ،
وَعَاصِمٍ الأَحْوَلِ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّ رَجُلا خَيَّاطًا دَعَا
رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَرَّبَ مِنْهُ ثَرِيدًا
عَلَيْهِ دُبَّاءٌ ، قَالَ : " فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَأْخُذُ الدُّبَّاءَ , وَكَانَ يُحِبُّ الدُّبَّاءَ "
، قَالَ ثَابِتٌ : فَسَمِعْتُ أَنَسًا ، يَقُولُ : " فَمَا صُنِعَ لِي
طَعَامٌ , أَقْدَرُ عَلَى أَنْ يُصْنَعَ فِيهِ دُبَّاءٌ , إِلا صُنِعَ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক দর্জি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করে। তাঁর খাবারের জন্য লাউ মিশ্রিত সারীদ উপস্থিত করা হয়।
লাউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খুব প্রিয় খাদ্য ছিল। এজন্য
তিনি লাউ খেতে শুরু করেন।
সাবিত বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, এরপর হতে আমার জন্য যে তরকারী রান্না
করা হতো, তাতে লাউ দেয়া হতো, যদি তা সম্ভব হতো হতো।[১]
[১] শু’আবুল ঈমান, হা/৫৫৪৬;
মুস্তাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৬৭২০; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/১৯৬৬৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কাজ নিজেই সম্পন্ন করতেন
২৬৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ ، عَنْ
يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ ، عَنْ عَمْرَةَ ، قَالَتْ : قِيلَ لِعَائِشَةَ : مَاذَا
كَانَ يَعْمَلُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِهِ ؟
قَالَتْ : " كَانَ بَشَرًا مِنَ الْبَشَرِ ، يَفْلِي ثَوْبَهُ ، وَيَحْلُبُ
شَاتَهُ ، وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ " .
আমরাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলো,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে অবস্থানকালে কি করতেন? জবাবে তিনি
বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন একজন মানুষ। পোশাকের
মধ্যে তিনি উকুন তালাশ করতেন, ছাগল দোহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই সম্পন্ন
করতেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৬২৩৭; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৪৮৭৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৭৬; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৫৬৭৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৮ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চরিত্র
(মাধুর্য) |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলের সাথেই পূর্ণ মনোযোগের দিয়ে কথা বলতেন
২৬৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ
بُكَيْرٍ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ ، عَنْ زِيَادِ بْنِ أَبِي زِيَادٍ ،
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ الْقُرَظِيِّ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ ، قَالَ :
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , " يُقْبِلُ
بِوَجْهِهِ وَحَدِيثِهِ عَلَى أَشَرِّ الْقَوْمِ , يَتَأَلَّفُهُمْ بِذَلِكَ
فَكَانَ يُقْبِلُ بِوَجْهِهِ وَحَدِيثِهِ عَلَيَّ ، حَتَّى ظَنَنْتُ أَنِّي خَيْرُ
الْقَوْمِ " ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَنَا خَيْرٌ أَوْ أَبُو
بَكْرٍ ؟ فَقَالَ : " أَبُو بَكْرٍ " ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ
، أَنَا خَيْرٌ أَوْ عُمَرُ ؟ فَقَالَ : " عُمَرُ " ، فَقُلْتُ : يَا
رَسُولَ اللَّهِ ، أَنَا خَيْرٌ أَوْ عُثْمَانُ ؟ فَقَالَ : " عُثْمَانُ
" ، فَلَمَّا سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
فَصَدَقَنِي فَلَوَدِدْتُ أَنِّي لَمْ أَكُنْ سَأَلْتُهُ .
আমর
ইবনে আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সমাজের নিকৃষ্ট ব্যক্তির সাথেও পূর্ণ মনোযোগ ফিরিয়ে মনোরঞ্জনের
উদ্দেশ্যে কথা বলতেন। এমনকি আমার সঙ্গেও তিনি কথা বলতেন অনুরূপভাবে। তাতে আমার মনে
হলো, আমি সমাজের উত্তম মানুষ। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালো, না আবু বকর
ভালো? তিনি বললেন, আবু বকর! আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালো, না
উমার ভালো? তিনি বললেন, উমার! আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, আমি ভালো না উসমান? তিনি
বললেন, উসমান! আমি যখন বিস্তারিতভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে জিজ্ঞেস করলাম, তখন আমাকে সঠিক কথা বলে দিলেন। পরে আমি মনে মনে কামনা করলাম,
যদি আমি তাকে এরূপ প্রশ্ন না করতাম।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চরিত্র সম্পর্কে আনাস (রাঃ) এর বর্ণনা
২৬৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ
سُلَيْمَانَ الضُّبَعِيُّ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ :
" خَدَمْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشْرَ
سِنِينَ , فَمَا قَالَ لِي أُفٍّ قَطُّ ، وَمَا قَالَ لِشَيْءٍ صَنَعْتُهُ , لِمَ
صَنَعْتَهُ , وَلا لِشَيْءٍ تَرَكْتُهُ , لِمَ تَرَكْتَهُ ؟ وَكَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مِنْ أَحْسَنِ النَّاسِ خُلُقًا ،
وَلا مَسَسْتُ خَزًّا وَلا حَرِيرًا , وَلا شَيْئًا كَانَ أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَلا شَمَمْتُ مِسْكًا قَطُّ
, وَلا عِطْرًا كَانَ أَطْيَبَ مِنْ عَرَقِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ১০ বছর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করেছি; কিন্তু এ সময়ের মধ্যে তিনি কখনো
আমার কোন কাজে ‘উহ’ শব্দটি পর্যন্ত করেননি। আমি করেছি এমন কোন কাজের ব্যাপারে তিনি
কখনো জিজ্ঞেস করেননি যে, কেন করেছি? আর না করার ব্যাপারেও তিনি কখনো জিজ্ঞেস
করেননি যে, কেন করোনি? চরিত্র মাধুর্যে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। কোন রেশমী কাপড়
বা কোন বিশুদ্ধ রেশম বা অন্য কোন এমন নরম জিনিস স্পর্শ করিনি, যা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতের তালুর চেয়ে নরম। আমি এমন কোন মিশক বা
আতরের সুবাস পাইনি, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘামের ঘ্রাণ
হতে অধিক সুগন্ধিময়।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৬৬৪; দারেমী, হা/৬২; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩০৫৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৮৯৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো অশোভনীয় আচরণ করতেন না
২৬৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ هُوَ
الضَّبِّيُّ , وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ ، قَالا : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ ،
عَنْ سَلْمٍ الْعَلَوِيِّ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , أَنَّهُ كَانَ عِنْدَهُ رَجُلٌ بِهِ أَثَرُ
صُفْرَةٍ ، قَالَ : " وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , لا يَكَادُ يُوَاجِهُ أَحَدًا بِشَيْءٍ يَكْرَهُهُ " ، فَلَمَّا
قَامَ ، قَالَ لِلْقَوْمِ : " لَوْ قُلْتُمْ لَهُ يَدَعُ هَذِهِ الصُّفْرَةَ
" .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কোন প্রকার অশোভনীয় কথা বলতেন না। বাজারেও
তিনি উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতেন না। মন্দের প্রতিকার মন্দ দ্বারা করতেন না; বরং ক্ষমা
করে দিতেন। অতঃপর কখনো তা আলোচনাও করতেন না।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৫৪৫৬; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৩৮৬২: মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৬২৩, শু’আবুল
ঈমান, হা/৭৯৪৪ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৪৪৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কাউকে প্রহার করতেন না
২৬৬
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ
عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " مَا ضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , بِيَدِهِ شَيْئًا قَطُّ , إِلا أَنْ يُجَاهِدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ،
وَلا ضَرَبَ خَادِمًا أَوِ امْرَأَةً " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একমাত্র আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া
কখনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত দ্বারা
(ইচ্ছাকৃতভাবে) কাউকে প্রহার করেননি এবং কোন দাস-দাসী বা স্ত্রীলোককেও প্রহার
করেননি।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হ/৬১৯৫;
আবু দাউদ, হা/৪৭৮৮; ইবনে মাজাহ, হা/১৯৮৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৯৬৫; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৪৮৮; বায়হাকী, হা/২০৫৭৭; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৬৭; শু’আবুল ঈমান, হা/১৩৫৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো নিজের জন্য প্রতিশোধ নিতেন না
২৬৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
فُضَيْلُ بْنُ عِيَاضٍ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ ،
عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنْتَصِرًا مِنْ مَظْلَمَةٍ ظُلِمَهَا قَطُّ , مَا لَمْ
يُنْتَهَكْ مِنْ مَحَارِمِ اللَّهِ تَعَالَى شَيْءٌ ، فَإِذَا انْتُهِكَ مِنْ
مَحَارِمِ اللَّهِ شَيْءٌ كَانَ مِنْ أَشَدِّهِمْ فِي ذَلِكَ غَضَبًا ، وَمَا
خُيِّرَ بَيْنَ أَمْرَيْنِ , إِلا اخْتَارَ أَيْسَرَهُمَا , مَا لَمْ يَكُنْ
مَأْثَمًا " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কখনো নিজের জন্য প্রতিশোধ নিতে দেখিনি, যতক্ষণ না কেউ
আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করত। অবশ্য যখন কেউ আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করত, তখন তাঁর
ন্যায় অধিক ক্রোধান্বিত আর কেউ হতো না। তাঁকে যদি দুটি কাজের মধ্যে যেকোন একটির
অনুমতি দেয়া হতো, তবে তিনি সহজ কাজটি বেছে নিতেন, যতক্ষণ না এটাতে কোন গুনাহ
হতো।[১]
[১] মুসনাদে হুমাইদী,
হা/২৭৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫০২৯; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪২২৩; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৫০৭;
সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৯১১৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খারাপ লোকের সাথেও উত্তম আচরণ করতেন
২৬৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ
مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتِ :
اسْتَأْذَنَ رَجُلٌ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
وَأَنَا عِنْدَهُ ، فَقَالَ : " بِئْسَ ابْنُ الْعَشِيرَةِ " أَوْ
" أَخُو الْعَشِيرَةِ " ، ثُمَّ أَذِنَ لَهُ ، فَأَلانَ لَهُ الْقَوْلَ
، فَلَمَّا خَرَجَ , قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، قُلْتَ مَا قُلْتَ ثُمَّ
أَلَنْتَ لَهُ الْقَوْلَ ؟ فَقَالَ : " يَا عَائِشَةُ ، إِنَّ مِنْ شَرِّ
النَّاسِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ أَوْ وَدَعَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ
" .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসার অনুমতি চাইল। আমি সে সময় তাঁর কাছে
বসা ছিলাম। তিনি বললেন, এ ব্যক্তি গোত্রের কতই না খারাপ লোক! অতঃপর তাকে আসার
অনুমতি দেয়া হলো এবং তিনি তাঁর সঙ্গে অতিশয় নরমভাবে কথা বললেন। অতঃপর লোকটি বের
হয়ে গেলে আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! ব্যক্তিটি সম্পর্কে এরূপ কথা
বললেন, আবার তাঁর সাথে বিনম্র ব্যবহার করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, হে আয়েশা! যে লোকের খারাপ ব্যবহারের জন্য লোকজন তাকে পরিহার করে এবং তাঁর
থেকে দূরে থাকে, সে সবচেয়ে খারাপ লোক।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৪৭৯৩;
আদাবুল মুফরাদ, হা/৩৩৮; শু’আবুল ঈমান, হা/৭৭৪৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৬৯৬; সিলসিলা
সহীহাহ, হা/১০৪৯; মুসনাদে আবু ই'আলা, হা/৪৮২৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
আলী
(রাঃ) এর ভাষায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চরিত্রের বর্ণনা
২৬৯
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جُمَيْعُ بْنُ
عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعِجْلِيُّ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا رَجُلٌ مِنْ
بَنِي تَمِيمٍ مِنْ وَلَدِ أَبِي هَالَةَ زَوْجِ خَدِيجَةَ , وَيُكْنَى أَبَا
عَبْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنٍ لأَبِي هَالَةَ ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ ،
قَالَ : قَالَ الْحُسَيْنُ : سَأَلْتُ أَبي عَنْ سِيرَةِ النَّبِيِّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فِي جُلَسَائِهِ ، فَقَالَ : " كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , دَائِمَ الْبِشْرِ ، سَهْلَ
الْخُلُقِ ، لَيِّنَ الْجَانِبِ ، لَيْسَ بِفَظٍّ وَلا غَلِيظٍ ، وَلا صَخَّابٍ
وَلا فَحَّاشٍ ، وَلا عَيَّابٍ وَلا مُشَاحٍ ، يَتَغَافَلُ عَمَّا لا يَشْتَهِي ،
وَلا يُؤْيِسُ مِنْهُ رَاجِيهِ وَلا يُخَيَّبُ فِيهِ ، قَدْ تَرَكَ نَفْسَهُ مِنْ
ثَلاثٍ : الْمِرَاءِ , وَالإِكْثَارِ , وَمَا لا يَعْنِيهِ ، وَتَرَكَ النَّاسَ
مِنْ ثَلاثٍ : كَانَ لا يَذُمُّ أَحَدًا , وَلا يَعِيبُهُ ، وَلا يَطْلُبُ
عَوْرتَهُ ، وَلا يَتَكَلَّمُ إِلا فِيمَا رَجَا ثَوَابَهُ ، وَإِذَا تَكَلَّمَ
أَطْرَقَ جُلَسَاؤُهُ ، كَأَنَّمَا عَلَى رُءُوسِهِمُ الطَّيْرُ ، فَإِذَا سَكَتَ
تَكَلَّمُوا لا يَتَنَازَعُونَ عِنْدَهُ الْحَدِيثَ ، وَمَنْ تَكَلَّمَ عِنْدَهُ
أَنْصَتُوا لَهُ حَتَّى يَفْرُغَ ، حَدِيثُهُمْ عِنْدَهُ حَدِيثُ أَوَّلِهِمْ ،
يَضْحَكُ مِمَّا يَضْحَكُونَ مِنْهُ ، وَيَتَعَجَّبُ مِمَّا يَتَعَجَّبُونَ مِنْهُ
، وَيَصْبِرُ لِلْغَرِيبِ عَلَى الْجَفْوَةِ فِي مَنْطِقِهِ وَمَسْأَلَتِهِ ,
حَتَّى إِنْ كَانَ أَصْحَابُهُ , وَيَقُولُ : إِذَا رَأَيْتُمْ طَالِبَ حَاجَةٍ
يطْلُبُهَا فَأَرْفِدُوهُ ، وَلا يَقْبَلُ الثَّنَاءَ إِلا مِنْ مُكَافِئٍ وَلا
يَقْطَعُ عَلَى أَحَدٍ حَدِيثَهُ حَتَّى يَجُوزَ فَيَقْطَعُهُ بِنَهْيٍ أَوْ
قِيَامٍ " .
হাসান
ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুসাইন ইবনে আলী (রাঃ) বলেছেন, আমি
আমার পিতাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথীদের ব্যাপারে তাঁর
আচরণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ছিলেন সদা হাস্যোজ্জোল ও বিনম্র স্বভবের অধিকারী। তিনি রূঢ়ভাষী বা
কঠিন হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন না। তিনি উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতেন না, অশ্লীল ভাষা
ব্যবহার করতেন না, অপরের দোষ খোঁজে বেড়াতেন না এবং কৃপণ ছিলেন না। তিনি
অপছন্দনীয় কথা হতে বিরত থাকতেন। তিনি কাউকে নিরাশ করতেন না, আবার মিথ্যা
প্রতিশ্রুতিও দিতেন না। তিনটি বিষয় থেকে তিনি দূরে থাকতেন— ঝগড়া-বিবাদ ও অহংকার
করা এবং অযথা কথাবর্তা বলা। তিনটি কাজ হতে লোকদেরকে বিরত রাখতেন- কারো নিন্দা
করতেন না, কাউকে অপবাদ দিতেন না এবং কারো দোষ-ত্রুটি তালাশ করতেন না। যে কথায়
সওয়াব হয়, শুধু তাই বলতেন। তিনি যখন কথা বলতেন তখন উপস্থিত শ্রোতাদের মনোযোগ
এমনভাবে আকর্ষণ করতেন, যেন তাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে।
তিনি কথা বলা শেষ করলে অন্যরা তাকে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা জিজ্ঞেস করতে পারত। তাঁর
কথায় কেউ বাদানুবাদ করতেন না। কেউ কোন কথা বলা শুরু করলে তাঁর কথা শেষ না হওয়া
পর্যন্ত তিনি চুপ থাকতেন। কেউ কোন কথায় হাসলে বা বিস্ময় প্রকাশ করলে তিনিও হাসতেন
কিংবা বিস্ময় প্রকাশ করতেন। অপরিচিত ব্যক্তির দৃঢ় আচরণ কিংবা কঠোর উক্তি
ধৈৰ্য্যের সঙ্গে সহ্য করতেন। কখনো কখনো সাহাবীগণ অপরিচিত লোক নিয়ে আসতেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, কারো কোন প্রয়োজন দেখলে তা
সামাধা করতে তোমরা সাহায্য করবে। কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে তিনি চুপ করে থাকতেন।
কেউ কথা বলতে থাকলে তাকে থামিয়ে দিয়ে নিজে কথা আরম্ভ করতেন না। অবশ্য কেউ অযথা
কথা বলতে থাকলে তাকে নিষেধ করে দিতেন, অথবা মজলিস হতে উঠে যেতেন, যাতে বক্তার কথা
বন্ধ হয়ে যায়।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৭০৫৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কোন কিছু চাইলে তিনি কখনো না বলতেন না
২৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
الْمُنْكَدِرِ ، قَالَ : سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ , يَقُولُ : "
مَا سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , شَيْئًا قَطُّ
فَقَالَ : لا " .
জাবির
ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর নিকট কোন কিছু চাইলে তিনি কখনো না বলতেন না।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৬১৫৮;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪৩৩৩; মুসনাদে আৰু ইয়ালা, হা/২০০১; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৮২৬;
মু’জামুল আওসানত, হা/১৩৩৯; মুসনাদে হুমাইদী, হা/১২৮২; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৮৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল
২৭১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عِمْرَانَ أَبُو الْقَاسِمِ الْقُرَشِيُّ
الْمَكِّيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ
، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : " كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , أَجْوَدَ النَّاسِ بِالْخَيْرِ ,
وَكَانَ أَجْوَدَ مَا يَكُونُ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ ، حَتَّى يَنْسَلِخَ ,
فَيَأْتِيهِ جِبْرِيلُ , فَيَعْرِضُ عَلَيْهِ الْقُرْآنَ ، فَإِذَا لَقِيَهُ
جِبْرِيلُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , أَجْوَدَ
بِالْخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ছিলেন লোকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দানশীল। বিশেষ করে রমযান মাসে তিনি
উদারভাবে দান করতেন। এ মাসে জিবরাঈল (আঃ) তাঁর কাছে আগমন করতেন এবং তাকে পবিত্র
কুরআন শুনতেন। যখন তাঁর কাছে জিবরাঈল (আঃ) আগমন করতেন, তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত বেশি দান খয়রাত করতেন, যেন প্রচণ্ড বায়ু
প্রবাহ কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষিত হতো।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১৯০২
সহীহ মুসলিম, হা/৬১৪৯; সুনানে নাসাঈ, হা/২০৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৪২৫; ইবনে খুযাইমা,
হা/১৮৮৯; ইবনে হিব্বান, হা/৩৪৪০; আদাবুল মুফরাদ, হা/২৯২; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৮৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তিনি
আগামীকালের জন্য কোন কিছু জমা করে রাখতেন না
২৭২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا جَعْفَرُ بْنُ
سُلَيْمَانَ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " كَانَ
النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لا يَدَّخِرُ شَيْئًا لِغَدٍ
" .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর অভ্যাস ছিল, তিনি আগামীকালের জন্য কিছু জমা রেখে দিতেন না।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৬৯০; তাহযীবুল আছার, হা/২৪৯০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হ/৬৩৫৬ সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব,
হা/৯৩০; জামেউস সগীর, হা/৮৯৭৭; শু’আবুল ঈমান, হা/১৩৯১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিয়া গ্রহণ করতেন এবং প্রতিদান দিতেন
২৭৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ ، عَنِ الرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذِ
بْنِ عَفْرَاءَ ، قَالَتْ : " أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , بِقِنَاعٍ مِنْ رُطَبٍ وَأَجْرٍ زُغْبٍ , فَأَعْطَانِي مِلْءَ كَفِّهِ
حُلِيًّا وَذَهَبًا " .
রুবাইয়্যি
বিনতে মু’আওভভিয ইবনে আফরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি এক পাত্র খেজুর এবং কিছু হালকা পাতলা শসা
নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে উপস্থিত হলাম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এক মুষ্ঠ অলংকার ও স্বর্ণ দান
করলেন।[১]
[১] মুজামুল কাবীর লিত
তাবারানী, হা/২০১৫৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৭০৬৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৭৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ ، قَالُوا :
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ،
عَنْ عَائِشَةَ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
كَانَ يَقْبَلُ الْهَدِيَّةَ , وَيُثِيبُ عَلَيْهَا " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দান গ্রহণ করতেন এবং প্রতিদানও দিতেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/২৫৮৫;
আবু দাউদ, হা/৩৫৩৮; মুজামুল আওসাত, হা/৮০৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৬৩৫; বায়হাকী, হা/১১৮০০;
শারহুস সুন্নাহ, হা/১৬১০; জামেউস সগীর, হা/৯১৩০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৪৯ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর লজ্জাবোধ |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর লজ্জাবোধ
২৭৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ
، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ قَتَادَةَ ، قَالَ : سَمِعْتُ عَبْدَ
اللَّهِ بْنَ أَبِي عُتْبَةَ ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ، قَالَ
: " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشدَّ حَيَاءً مِنَ
الْعَذرَاءِ فِي خِدْرِهَا ، وَكَانَ إِذَا كَرِهَ شَيْئًا عَرَفْنَاهُ فِي
وَجْهِهِ " .
আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম পর্দানশীল কুমারী মেয়ের চেয়েও অধিক লজ্জাশীল ছিলেন। কোন কিছু তাঁর
অপছন্দ হলে তাঁর চেহারা দেখেই আমরা তা বুঝতে পারতাম।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬১০২;
সহীহ মুসলিম, হা/৬১৭৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৭০১ আদাবুল মুফরাদ, হা/৪৬৭; বায়হাকী, হা/২০৫৭৫;
সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩০৬; জামেউস সগীর, হা/৮৯৩০
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫০ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর শিঙ্গা
লাগানো |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগাতেন এবং এর পারিশ্রমিকও দিতেন
২৭৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ
جَعْفَرٍ ، عَنْ حُمَيْدٍ ، قَالَ : سُئِلَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ عَنْ كَسْبِ
الْحَجَّامِ ، فَقَالَ : احْتَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , حَجَمَهُ أَبُو طَيْبَةَ ، فَأَمَرَ لَهُ بِصَاعَيْنِ مِنْ طَعَامٍ ،
وَكَلَّمَ أَهْلَهُ فَوَضَعُوا عَنْهُ مِنْ خَرَاجِهِ , وَقَالَ : " إِنَّ
أَفْضَلَ مَا تَدَاوَيْتُمْ بِهِ الْحِجَامَةُ " ، أَوْ " إِنَّ مِنْ
أَمْثَلِ دَوَائِكُمُ الْحِجَامَةَ " .
হুমায়দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) কে শিঙ্গা
লাগানোর পারিশ্রমিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আবু তায়বা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে শিঙ্গা লাগিয়েছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ২ সা' খাদ্যশস্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তাঁর
মালিকের সঙ্গে আলাপ করে তাঁর নিকট হতে আদায়যোগ্য অর্থ খারাজও কমিয়ে দিয়েছিলেন
এবং তিনি বলেছিলেন, তোমরা যে ঔষধ ব্যবহার কর, এর মধ্যে শিঙ্গা উত্তম। অথবা বলেছেন,
শিঙ্গা উত্তম প্রতিষেধকের অন্তর্ভুক্ত।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৪১২১;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৯০৬; মুসনাদে আবু ই'আলা, হা/৩৭৫৮; মুস্তাখরাজে ইবনে আবি আওয়ানা,
হা/৪২৯৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৭৭
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ،
قَالَ : حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ بْنُ عُمَرَ ، عَنْ عَبْدِ الأَعْلَى ، عَنْ أَبِي
جَمِيلَةَ ، عَنْ عَلِيٍّ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , احْتَجَمَ وَأَمَرَنِي فَأَعْطَيْتُ الْحَجَّامَ أَجْرَهُ " .
আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
নিজে শিঙ্গা লাগালেন এবং আমাকে এর পারিশ্রমিক দেয়ার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর আমি
তাকে পারিশ্রমিক দিয়ে দিলাম।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/২১৬৩;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৩০; বায়হাকী, হা/১৯৩০৪; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৪৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গর্দানের দু’পার্শ্বে ও কাঁধের দু’পার্শ্বে শিঙ্গা
লাগাতেন
২৭৮
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ ، عَنْ جَابِرٍ ، عَنِ
الشَّعْبِيِّ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : " إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ احْتَجَمَ فِي الأَخْدَعَيْنِ , وَبَيْنَ
الْكَتِفَيْنِ ، وَأَعْطَى الْحَجَّامَ أَجْرَهُ , وَلَوْ كَانَ حَرَامًا لَمْ
يُعْطِهِ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁর গর্দানের দু’পার্শ্বে এবং কাঁধের দু’ পার্শ্বে শিঙ্গা লাগালেন এবং
শিঙ্গা লাগানেওয়ালাকে এর পারিশ্রমিক দিলেন। শিঙ্গা লাগানো যদি হারাম হতো, তবে
তিনি এর পারিশ্রমিক দিতেন না।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/২১০৩;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৯০৬; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/২২০৫: মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী,
হা/১২৪২০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/২১৩৮২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৭৯
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ،
عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى ، عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، أَنَّ النَّبِيَّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , دَعَا حَجَّامًا فَحَجَمَهُ وَسَأَلَهُ :
" كَمْ خَرَاجُكَ ؟ " فَقَالَ : ثَلاثَةُ آصُعٍ ، فَوَضَعَ عَنْهُ
صَاعًا وَأَعْطَاهُ أَجْرَهُ .
ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এক শিঙ্গালাগানেওয়ালাকে ডাকলেন। সে তাকে শিঙ্গা লাগাল। তিনি জিজ্ঞেস
করলেন, তোমাকে দৈনিক কত দিতে হয়? সে বলল, প্রতিদিন তিন সা’। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আদায়যোগ্য অর্থ এক সা’ কমিয়ে দিলেন এবং
তাঁর পারিশ্রমিক দিয়ে দিলেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/১১৩৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৫৩৬; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৮২৯; মুসান্নাফে ইবনে
আবি শাইবা, হা/২১৩৮৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৭, ১৯ ও ২১ তারিখে শিঙ্গা লাগাতেন
২৮০
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْقُدُّوسِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَطَّارُ الْبَصْرِيُّ
، قَالَ : حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا هَمَّامٌ ،
وَجَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا قَتَادَةُ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ ، قَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَحْتَجِمُ فِي الأَخْدَعَيْنِ وَالْكَاهِلِ ، وَكَانَ يَحْتَجِمُ
لِسَبْعَ عَشْرَةَ , وَتِسْعَ عَشْرَةَ , وَإِحْدَى وَعِشْرِينَ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কাঁধের দু’ পার্শ্বে এবং কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে শিঙ্গা লাগাতেন এবং
তিনি ১৭, ১৯ ও ২১ তারিখে শিঙ্গা লাগাতেন।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩২৩৪; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩৪৬৪; মিশকাত, হা/৪৫৪৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ ، عَنْ مَعْمَرٍ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ :
" أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ احْتَجَمَ وَهُوَ
مُحْرِمٌ بِمَلَلٍ عَلَى ظَهْرِ الْقَدَمِ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইহরাম বাধা অবস্থায় পায়ের পাতার উপরিভাগে মালাল নামক স্থানে শিঙ্গা লাগালেন।[১]
·
Share On Twitter
[১] আবু দাউদ, হা/১৮৩৯;
সুনানে নাসাঈ, হা/২৮৪৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৭০৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৯৫২ শারহুস
সুন্নাহ, হা/১৯৮৬।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫১ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নাম |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর নাম
২৮২
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ ، وَغَيْرُ
وَاحِدٍ , قَالُوا : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ مُحَمَّدِ
بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنَّ لِي أَسْمَاءً ، أَنَا
مُحَمَّدٌ ، وَأَنَا أَحْمَدُ ، وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِي يَمْحُو اللَّهُ بِيَ
الْكُفْرَ ، وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِي يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمِي ،
وَأَنَا الْعَاقِبُ الَّذِي لَيْسَ بَعْدَهُ نَبِيٌّ " .
যুবায়ের
ইবনে মুতয়িম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার একাধিক নাম রয়েছে। আমার নাম মুহাম্মদ, আহমাদ, মাহী
(ধ্বংসকারী), আল্লাহ তা’আলা আমার দ্বারা কুফরী ধ্বংস করবেন। আমার নাম হা-শির
(একত্রকারী); লোকদেরকে একত্রিত করার আগে আল্লাহ তা’আলা আমাকে উঠাবেন। আমার নাম
আ-কিব (সর্বশেষ আগমনকারী নবী): অর্থাৎ তাঁর পরে আর কোন নবীর আগমন হবে না।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৪৮৯৬;
সহীহ মুসলিম, হা/৬২৫২: মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৫৮০; মুসনাদে বাযযার, হা/৩৪১৩; মুজামুল
কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৫০৪; ইবনে হিব্বান, হা/৬৩১৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৮৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَرِيفٍ الْكُوفِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ ، عَنْ عَاصِمٍ ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ ، عَنْ
حُذَيْفَةَ ، قَالَ : لَقِيتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فِي
بَعْضِ طُرُقِ الْمَدِينَةِ , فَقَالَ : " أَنَا مُحَمَّدٌ ، وَأَنَا
أَحْمَدُ ، وَأَنَا نَبِيُّ الرَّحْمَةِ ، وَنَبِيُّ التَّوْبَةِ ، وَأَنَا
الْمُقَفَّى ، وَأَنَا الْحَاشِرُ ، وَنَبِيُّ الْمَلاحِمِ " .
হুযায়ফা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার মদিনার কোন এক রাস্তায় নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। তিনি বললেন, আমি
মুহাম্মদ, আমি আহমাদ, আমি নবীউর রহমত (রহমতের নবী) আমি নবীউত তাওবা (তাওবার নবী),
আমি মুকাফফী (পরে আগমনকারী), আমি হাশির (একত্রকারী), আমি মালাহিমের নবী
(জিহাদকারী)।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৩৪৯২: শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৩১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪১৮৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি
শাইবা, হা/৩২৩৫১; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/৪৯৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫২ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবিকা |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কখনো পেটভরে খাওয়ার মতো খেজুর থাকত না
২৮৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
الأَحْوَصِ ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ
بَشِيرٍ , يَقُولُ : أَلَسْتُمْ فِي طَعَامٍ وَشَرَابٍ مَا شِئْتُمْ ؟ "
لَقَدْ رَأَيْتُ نَبِيَّكُمْ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَمَا يَجِدُ مِنَ
الدَّقَلِ , مَا يَمْلأُ بَطْنَهُ " .
সিমাক
ইবনে হারব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নুমান ইবনে বশীর (রাঃ) কে বলতে
শুনেছি যে, তোমরা কি তোমাদের চাহিদামতো খাওয়া-দাওয়ায় তৃপ্ত নও? অথচ নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি যে, পেটভরে খাওয়ার মতো খারাপ খেজুরও
তাঁর ঘরে থাকত না।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৭৬৫০;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৭১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৪০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা,
হা/৩৫৪৬৩; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩২৭৫; মিশকাত, হা/৪১৯৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
কখনো
কখনো তাঁর পরিবারের চুলায় ১ মাসের অধিক সময় পর্যন্তও আগুন জ্বালানো হতো না
২৮৫
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ،
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : "
إِنْ كُنَّا آلَ مُحَمَّدٍ نَمكُثُ شَهْرًا مَا نَسْتَوْقِدُ بِنَارٍ ، إِنْ هُوَ
إِلا التَّمْرُ وَالْمَاءُ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমাদের নবীর পরিবারে কখনো এমন হতো যে, এক
মাসের অধিক সময় পর্যন্ত আগুন জ্বালানো হতো না; শুধু পানি ও খেজুর খেয়ে
কাটাতাম।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬৪৫৮;
সহীহ মুসলিম, হা/৭৬৩৯; ইবনে মাজাহ, হা/৪১৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪২৭৮; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৬৩৬১
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও কয়েকজন সাহাবীর ক্ষুধাকালীন এক সময়ের ঘটনা
২৮৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ
أَبِي إِيَاسٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شَيْبَانُ أَبُو مُعَاوِيَةَ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فِي سَاعَةٍ لا يَخْرُجُ فِيهَا , وَلا يَلْقَاهُ
فِيهَا أَحَدٌ ، فَأَتَاهُ أَبُو بَكْرٍ ، فَقَالَ : " مَا جَاءَ بِكَ يَا
أَبَا بَكْرٍ ؟ " ، قَالَ : خَرَجْتُ أَلْقَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنْظُرُ فِي وَجْهِهِ ، وَالتَّسْلِيمَ عَلَيْهِ ، فَلَمْ
يَلْبَثْ أَنْ جَاءَ عُمَرُ , فَقَالَ : " مَا جَاءَ بِكَ يَا عُمَرُ ؟
" ، قَالَ : الْجُوعُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ، قَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " وَأَنَا قَدْ وَجَدْتُ بَعْضَ ذَلِكَ " ، فَانْطَلَقُوا
إِلَى مَنْزِلِ أَبِي الْهَيْثَمِ بْنِ التَّيْهَانِ الأَنْصَارِيِّ , وَكَانَ
رَجُلا كَثِيرَ النَّخْلِ وَالشَّاءِ ، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ خَدَمٌ ، فَلَمْ
يَجِدُوهُ ، فَقَالُوا لامْرَأَتِهِ : أَيْنَ صَاحِبُكِ ؟ فَقَالَتِ : انْطَلَقَ
يَسْتَعْذِبُ لَنَا الْمَاءَ ، فَلَمْ يَلْبَثُوا أَنْ جَاءَ أَبُو الْهَيْثَمِ
بِقِرْبَةٍ يَزْعَبُهَا ، فَوَضَعَهَا ثُمَّ جَاءَ يَلْتَزِمُ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُفَدِّيهِ بِأَبِيهِ وَأُمِّهِ ، ثُمَّ انْطَلَقَ
بِهِمْ إِلَى حَدِيقَتِهِ فَبَسَطَ لَهُمْ بِسَاطًا ، ثُمَّ انْطَلَقَ إِلَى
نَخْلَةٍ فَجَاءَ بِقِنْوٍ فَوَضَعَهُ ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " أَفَلا تَنَقَّيْتَ لَنَا مِنْ رُطَبِهِ ؟ "
فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنِّي أَرَدْتُ أَنْ تَخْتَارُوا ، أَوْ
تَخَيَّرُوا مِنْ رُطَبِهِ وَبُسْرِهِ ، فَأَكَلُوا وَشَرِبُوا مِنْ ذَلِكَ
الْمَاءِ . فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " هَذَا وَالَّذِي
نَفْسِي بِيَدِهِ مِنِ النَّعِيمِ الَّذِي تُسْأَلُونَ عَنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
! ظِلٌّ بَارِدٌ ، وَرُطَبٌ طَيِّبٌ ، وَمَاءٌ بَارِدٌ " . فَانْطَلَقَ أَبُو
الْهَيْثَمِ لِيَصْنَعَ لَهُمْ طَعَامًا . فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لا تَذْبَحَنَّ ذَاتَ دَرٍّ " ، فَذَبَحَ لَهُمْ
عَنَاقًا أَوْ جَدْيًا ، فَأَتَاهُمْ بِهَا فَأَكَلُوا ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " هَلْ لَكَ خَادِمٌ ؟ " ، قَالَ : لا ، قَالَ :
" فَإِذَا أَتَانَا , سَبْيٌ , فَأْتِنَا " . فَأُتِيَ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَأْسَيْنِ لَيْسَ مَعَهُمَا ثَالِثٌ ،
فَأَتَاهُ أَبُو الْهَيْثَمِ ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " اخْتَرْ مِنْهُمَا " فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ،
اخْتَرْ لِي . فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : "
إِنَّ الْمُسْتَشَارَ مُؤْتَمَنٌ ، خُذْ هَذَا , فَإِنِّي رَأَيْتُهُ يُصَلِّي ،
وَاسْتَوْصِ بِهِ مَعْرُوفًا " . فَانْطَلَقَ أَبُو الْهَيْثَمِ إِلَى
امْرَأَتِهِ ، فَأَخْبَرَهَا بِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ ، فَقَالَتِ امْرَأَتُهُ : مَا أَنْتَ بِبَالِغٍ حَقَّ مَا ، قَالَ
فِيهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلا بِأَنْ تَعْتِقَهُ ،
قَالَ : فَهُوَ عَتِيقٌ ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : "
إِنَّ اللَّهَ لَمْ يَبْعَثْ نَبِيًّا وَلا خَلِيفَةً إِلا وَلَهُ بِطَانَتَانِ :
بِطَانَةٌ تَأْمُرُهُ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَاهُ عَنِ الْمُنْكَرِ ، وَبِطَانَةٌ
لا تَأْلُوهُ خَبَالا ، وَمَنْ يُوقَ بِطَانَةَ السُّوءِ فَقَدْ وُقِيَ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এমন সময় ঘর থেকে বের হলেন, যখন সচরাচর তিনি বের হন না। কেউ সাক্ষাৎ
করতেও আসে না। এমন সময় আবু বকর (রাঃ) তাঁর কাছে আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, কি জন্য এসেছ হে আবু বকর! বললেন, আল্লাহর
রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে, তাঁর চেহারা দেখতে ও সালাম জানাতে এসেছি। কিছুক্ষণ পর
উমার (রাঃ) আসলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কি জন্য এসেছ উমার? বললেন, ক্ষুধার তাড়নায় হে
আল্লাহর রাসূল! রাসূলুল্লাহ বললেন, আমিও তা-ই অনুভব করছি।
অতঃপর তারা তিনজনই আবুল হায়সাম ইবনে তায়্যিহান আল আনসারীর বাড়ি গেলেন। তাঁর
অনেক খেজুর বাগান, ফল বাগান ও ছাগলের পাল। কিন্তু কোন খাদেম ছিল না। তারা তাঁর দেখা
পেলেন না। ফলে তারা তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার স্বামী কোথায় গিয়েছেন?
বলল, আমাদের জন্য মিঠা পানি আনতে গিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরই আবুল হায়ছাম পানির পাত্র
নিয়ে ফিরে আসলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখে
আনন্দে জড়িয়ে ধরেন এবং তাঁর পিতামাতাকে উৎসর্গ করতে থাকেন।
তারপর তাদেরকে নিয়ে বাগানে গেলেন এবং তাঁদের জন্য বিছানা বিছিয়ে দিলেন। খেজুর
বাগান হতে এক ছড়া খেজুর এনে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, আমাদের জন্য তাজা খেজুর বেছে আনলে না কেন? (পূর্ণ একটি ছড়া আনার কি
প্রয়োজন ছিল)। আবুল হায়ছাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি চাই আপনি তা হতে কাঁচা
ও পাকা খেজুর বেছে নিন। অতঃপর তারা সকলেই খেজুর খেলেন এবং পানি পান করলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর
কসম, এসবও সেসব নিয়ামতের মধ্যে গণ্য, কিয়ামতের দিন যেগুলোর হিসাব নেয়া হবে। তা
হলো, শীতল ছায়া, তরতাজা খেজুর ও ঠাণ্ডা পানি।
অতঃপর আবুল হায়সাম তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য চলে গেলেন। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাদের জন্য যেন দুগ্ধবতী ছাগী যবেহ করা না
হয়। অতঃপর তাদের জন্য একটি বাচ্চা ছাগল যবেহ করা হলো এবং যথাশ্ৰীঘ্র খাবার হাযির
করা হলো এবং তাঁরা আহার করলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তোমার কোন খাদেম আছে কি?
তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাদের যখন
কোন গোলাম আসবে, তখন আমাকে মনে করিয়ে দিও। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কাছে ২ জন গোলাম আসল। তাদের সঙ্গে তৃতীয় কেউ ছিল না। এমন সময় আবুল
হায়সাম সেখানে উপস্থিত হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
বললেন, এ ২ জনের মধ্য হতে একজনকে বেছে নাও। বললেন, হে আল্লাহর নবী! আপনিই বেছে
দিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পরামর্শদাতা বিশ্বস্ত হয়। অতএব
তুমি একে নাও। কারণ, আমি তাকে সালাত আদায় করতে দেখেছি। আর আমি তোমাকে তাঁর সঙ্গে
সদ্ব্যবহার করার জন্য অসিয়ত করছি।
অতঃপর আবুল হায়সাম স্ত্রীর কাছে ফিরে গেলেন এবং তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসিয়তের কথা শুনালেন। তাঁর স্ত্রী বললেন, আপনার জন্য
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা
সম্ভব নাও হতে পারে। অতএব আপনি গোলামকে আযাদ করে দিন। তাতে আবুল হায়ছম গোলামটিকে
আযাদ করে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলা
তাঁর প্রত্যেক নবী ও খলীফার জন্য ২ জন গোপন পরামর্শদাতা সৃষ্টি করে দেন। একজন
সৎপরামর্শ দেয় এবং অসৎ কাজ হতে বিরত রাখে। অপরজন ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে ইতস্তত
করে না। যে ব্যক্তিকে তাঁর মন্দ স্বভাব থেকে নিরাপদ রাখা হয়েছে, তাকে সকল অন্যায়
হতে নিরাপদ রাখা হয়েছে।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৫৪৩৪;
মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭১৭৮ সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩২৯৬ সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ,
হা/৬৫৮৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬১২। শু’আবুল ঈমান, হা/৪২৮২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
শিয়াবে
তালিবের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গাছের চামড়া ও পাতা
খেয়ে জীবনপাত করতে হয়েছিল
২৮৭
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُجَالِدِ بْنِ سَعِيدٍ ،
قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي ، عَنْ بَيَانِ بْنِ بِشْرٍ ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي
حَازِمٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ , يَقُولُ : " إِنِّي
لأَوَّلُ رَجُلٍ هَرَاقَ دَمًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ، وَإِنِّي
لأَوَّلُ رَجُلٍ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ، لَقَدْ رَأَيْتُنِي أَغْزُو
فِي الْعِصَابَةِ مِنْ أَصْحَابِ مُحَمَّدٍ عَلَيْهِ الصَّلاةُ وَالسَّلامِ , مَا
نَأْكُلُ إِلا وَرَقَ الشَّجَرِ وَالْحُبْلَةِ , حَتَّى تَقَرَّحَتْ أَشْدَاقُنَا
، وَإِنَّ أَحَدَنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ وَالْبَعِيرُ ، وَأَصْبَحَتْ
بَنُو أَسَدٍ يَعْزُرُونِّي فِي الدِّينِ , لَقَدْ خِبْتُ وَخَسِرْتُ إِذًا
وَضَلَّ عَمَلِي " .
সা’দ
ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইসলামের প্রথম ব্যক্তি, যে
কাফিরদের রক্ত প্রবাহিত করেছে। আমি প্রথম ব্যক্তি, যে আল্লাহর রাস্তায় তীর
নিক্ষেপ করেছে। আমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীরা এমন
অবস্থায় যুদ্ধ করেছি যে, গাছের বাকল ও পাতা ছাড়া কিছুই খেতে পেতাম না। এসব
খাওয়ার ফলে আমাদের মুখে ঘা হয়ে যেত। এমনকি উট ও বকরীর মলের ন্যায় চর্বিযুক্ত মল
পড়ত। তা সত্ত্বেও আসাদের লোকেরা দ্বীন সম্পর্কে আমাকে অভিযুক্ত করেছে। দ্বীন
সম্পর্কে যদি আমি অজ্ঞই হই, তবে তো আমার সকল আমলই বরবাদ হয়ে গেল।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৭২৮;
শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৯২৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৩০ রাত পর্যন্তও সামান্য আহারেই কাটিয়ে ছিলেন
২৮৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
رَوْحُ بْنُ أَسْلَمَ أَبُو حَاتِمٍ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ سَلَمَةَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ثَابِتٌ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لَقَدْ أُخِفْتُ فِي
اللَّهِ وَمَا يَخَافُ أَحَدٌ ، وَلَقَدْ أُوذِيتُ فِي اللَّهِ وَمَا يُؤْذَى
أَحَدٌ ، وَلَقَدْ أَتَتْ عَلَيَّ ثَلاثُونَ مِنْ بَيْنِ لَيْلَةٍ وَيَوْمٍ ,
وَمَا لِي وَلِبِلالٍ طَعَامٌ يَأْكُلُهُ ذُو كَبِدٍ , إِلا شَيْءٌ يُوَارِيهِ
إِبِطُ بِلالٍ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে আল্লাহর পথে এমন ভয় প্রদর্শন করা হয়েছে, যখন আর কাউকে
ভয় প্রদর্শন করা হয়নি। আমাকে আল্লাহর পথে এমনভাবে কষ্ট দেয়া হয়েছে, যা অন্য
কাউকে দেয়া হয়নি। আমাদের ৩০টি রাত এমনভাবে অতিবাহিত হয়েছে, যখন বিলালের বগলের
নিচে লুকিয়ে রাখা সামান্য খাদ্য ছাড়া আমার ও বিলালের আহারের মতো কিছুই ছিল না।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/১৫১;
মুসনাদে আহমদ, হা/১৪০৮৭; শারহুস সুন্নাহ, হা/৪০৮০; মুসনাদুল বাযযার, হা/৩২০৫; সহীহ
ইবনে হিব্বান, হ/৬৫৬০ মুসান্নাফে ইবনে আবিশাইবা, হা/৩৭৭২১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কখনো রুটি ও গোশত একত্রিত হতো না
২৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبَانُ بْنُ يَزِيدَ الْعَطَّارُ ،
قَالَ : حَدَّثَنَا قَتَادَةُ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ : " أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمْ يَجْتَمِعْ عِنْدَهُ غَدَاءٌ
وَلا عَشَاءٌ مِنْ خُبْزٍ وَلَحْمٍ , إِلا عَلَى ضَفَفٍ " ، قَالَ عَبْدُ
اللَّهِ : ، قَالَ بَعْضُهُمْ : هُوَ كَثْرَةُ الأَيْدِي .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দিনের খাবারই হোক কিংবা রাতের খাবার, কোন
সময়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে রুটি-গোশত একত্রিত হতো
না। তবে মেহমানদারীর জন্য দস্তরখানায় তা থাকত।[১] আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, কোন কোন
বর্ণনাকারী বলেছেন, ضَفَفٍ এর অর্থ হলো অনেক হাত একত্রিত হওয়া।
[১] মুসনাদে আহমদ, হা/১৩৮৮৬;
মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৩১০৮ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৫৯ শারহুস সুন্নাহ, হা/১৩৮৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৩ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বয়স
সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর বয়স সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে
২৯০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ
عُبَادَةَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا بْنُ إِسْحَاقَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : " مَكَثَ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَكَّةَ ثَلاثَ عَشْرَةَ سَنَةً يُوحَى
إِلَيْهِ ، وَ بِالْمَدِينَةِ عَشْرًا ، وَتُوُفِّيَ وَهُوَ ابْنُ ثَلاثٍ
وَسِتِّينَ " .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মক্কায় ১৩ বছর অবস্থান করেন। এ সময় তাঁর উপর ওহী অবতীর্ণ হতে থাকে।
আর মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেন এবং ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৯০৩;
সহীহ মুসলিম, হা/৬২৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৪২৯; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১২৭৭০;
মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২৭৫১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ ، عَنْ شُعْبَةَ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ ،
عَنْ جَرِيرٍ ، عَنْ مُعَاوِيَةَ ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يَخْطُبُ ، قَالَ : "
مَاتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ ابْنُ ثَلاثٍ
وَسِتِّينَ " وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ ، وَأَنَا ابْنُ ثَلاثٍ وَسِتِّينَ .
জারীর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মুআবিয়া (রাঃ) কে একবার ভাষণ দিতে
শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল
করেছেন। আবু বকর (রাঃ) ও উমার (রাঃ) ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। এখন আমার বয়স ৬৩
বছর।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৬২৪৫;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪৯৬৯; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৩৪৫৫০; মুজামুল কবীর লিত তাবারানী,
হা/১৬০৩৭ শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৮৪১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯২
حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مَهْدِيٍّ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عَبْدُ الرَّزَّاقِ ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ ،
عَنْ عَائِشَةَ : " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
مَاتَ وَهُوَ ابْنُ ثَلاثٍ وَسِتِّينَ سَنَةً " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৩৫৩৬;
সহীহ মুসলিম, হা/৬২৩৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৬৬২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، وَيَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ
الدَّوْرَقِيُّ ، قَالا : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عُلَيَّةَ ، عَنْ خَالِدٍ
الْحَذَّاءِ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا عَمَّارٌ مَوْلَى بَنِي هَاشِمٍ ، قَالَ :
سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ , يَقُولُ : " تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَهُوَ ابْنُ خَمْسٍ وَسِتِّينَ .
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ৬৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছিলেন।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৬২৪৮;
মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/২৪৫২: মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৩৪; মুসান্নাফে ইবনে
আবি শাইবা, হা/৩৭৭০২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
২৯৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
مَعْنٌ ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ
الرَّحْمَنِ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّهُ سَمِعَهُ , يَقُولُ : "
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَيْسَ بِالطَّوِيلِ
الْبَائِنِ ، وَلا بِالْقَصِيرِ ، وَلا بِالأَبْيَضِ الأَمْهَقِ ، وَلا بِالآدَمِ
، وَلا بِالْجَعْدِ الْقَطَطِ ، وَلا بِالسَّبْطِ ، بَعَثَهُ اللَّهُ تَعَالَى
عَلَى رَأْسِ أَرْبَعِينَ سَنَةً ، فَأَقَامَ بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِينَ ،
وَبِالْمَدِينَةِ عَشْرَ سِنِينَ ، وَتَوَفَّاهُ اللَّهُ عَلَى رَأْسِ سِتِّينَ
سَنَةً , وَلَيْسَ فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ عِشْرُونَ شَعْرَةً بَيْضَاءَ "
.
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম না দীর্ঘ অবয়ব বিশিষ্ট ছিলেন, না খর্বাকৃতির ছিলেন। না সাদা বর্ণের
ছিলেন, না ছিলেন ধূসর বর্ণের। তাঁর চুল না খুব বক্র ছিল, না ছিল সোজা: বরং ঈষৎ
কোঁকড়ানো ছিল। ৪০ বছরের মাথায় তাকে নবুওয়াত দান করা হয়। এরপর তিনি মক্কায় ১০
বছর, মদিনায় ১০ বছর কাটান এবং ৬০ বছরের মাথায় ইন্তেকাল করেন। তখন তাঁর দাড়ি বা
মাথার ২০টি চুলও সাদা হয়নি।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/১৬৩৯; সহীহ বুখারী, হা/৫৯০০; সহীহ মুসলিম, হা/৬২৩৫; ইবনে মাজাহ, হা/১৩৫৪৩; মুসনাদুল
বাযযার, হা/৬১৮৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৭৩৫ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৮৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৪ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ওফাত |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের দিন আবু বকর (রাঃ) লোকদের ইমামতি করেন
২৯৫
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ ، وَقُتَيْبَةُ
بْنُ سَعِيدٍ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ ، قَالُوا : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ
عُيَيْنَةَ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : "
آخِرُ نَظْرَةٍ نَظَرْتُهَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ , كَشْفُ السِّتَارَةِ يَوْمَ الاثْنَيْنِ ، فَنَظَرْتُ إِلَى وَجْهِهِ
كَأَنَّهُ وَرَقَةُ مُصْحَفٍ , وَالنَّاسُ خَلْفَ أَبِي بَكْرٍ ، فَكَادَ النَّاسُ
أَنْ يَضْطَربُوا ، فَأَشَارَ إِلَى النَّاسِ أَنِ اثْبُتُوا ، وَأَبُو بَكْرٍ
يَؤُمُّهُمْ وَأَلْقَى السِّجْفَ ، وَتُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ آخِرِ ذَلِكَ الْيَوْمِ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে শেষবারের মতো দর্শন করলাম, যখন মৃত্যু রোগে আক্রান্ত অবস্থায় সোমবার
ফজরের নামাজের সময়; তখন তিনি পর্দা তুলে উম্মতের সালাতে অবস্থা দেখছিলেন। আমি তাঁর
চেহারায় যেন আল-কুরআনের পৃষ্ঠা জ্বলজ্বল করতে দেখেছিলাম। লোকেরা আবু বকর (রাঃ) এর
পেছনে সালাত আদায় করছিল। (লোকেরা সরে দাঁড়াতে চাইল) কিন্তু তিনি ইঙ্গিতে সকলকে
স্থির থাকার নির্দেশ দিলেন এবং আবু বকর (রাঃ) ইমামতি করলেন। সেদিন শেষ বেলায়
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬৮০;
সহীহ মুসলিম, হা/৯৭১ ইবনে মাজাহ, হা/১৬২৪; মুসনাদে আহমদ, হা/১২০৯৩; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৬৮৭৫; বায়হাকী, হা/৪৮২৫; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৮২৪; মুসনাদে হুমাইদী, হা/১২৪১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওফাতের
২৯৬
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
سُلَيْمُ بْنُ أَخْضَرَ ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ ، عَنِ إِبْرَاهِيمَ ، عَنِ
الأَسْوَدِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كُنْتُ مُسْنِدَةً النَّبِيَّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , إِلَى صَدْرِي أَوْ قَالَتْ : إِلَى حِجْرِي
فَدَعَا بِطَسْتٍ لِيَبُولَ فِيهِ ، ثُمَّ بَالَ ، فَمَاتَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের সময় তিনি আমার সিনায় বা আমার কোলে ঠেস লাগিয়ে ছিলেন।
অতঃপর তিনি প্রস্রাব করার জন্য একটি পাত্র আনতে বললেন এবং তাতে প্রস্রাব করলেন।
এরপর তিনি ইন্তেকাল করেন।[১]
[১] ইবনে খুযাইমা, হা/৬৫;
ইবনে মাজাহ, হা/১৬২৬; মুসনাদে আবু ‘আওয়ানা, হা/৫৭৫০।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও মৃত্যুর যন্ত্রণা ভোগ করেছিলেন
২৯৭
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّازُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْعَلاءِ ، عَنْ
أَبِيهِ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " لا أَغْبِطُ
أَحَدًا بَهَوْنِ مَوْتٍ بَعْدَ الَّذِي رَأَيْتُ مِنْ شِدَّةِ مَوْتِ رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যুর কষ্ট দেখার পর অন্য কারো মৃত্যুর সময় কষ্ট হলে আমার হিংসা
হয় না।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর মৃত্যুর স্থানেই দাফন করা হয়
২৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاءِ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ وَهُوَ
ابْنُ الْمُلَيْكِيِّ ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ :
لَمَّا قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , اخْتَلَفُوا
فِي دَفْنِهِ ، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ : سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , شَيْئًا مَا نَسِيتُهُ ، قَالَ : " مَا قَبَضَ
اللَّهُ نَبِيًّا إِلا فِي الْمَوْضِعِ الَّذِي يُحِبُّ أَنْ يُدْفَنَ فِيهِ
" , ادْفِنُوهُ فِي مَوْضِعِ فِرَاشِهِ .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তিকাল হলো তখন তাঁর দাফন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিল। আবু বকর
(রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এ সম্পর্কে এমন
কিছু শুনেছি, যা আমি আজও ভুলিনি। অতঃপর বলেন, আল্লাহ তা’আলা নবীদেরকে এমন স্থানেই
মৃত্যু দেন, যেখানে দাফন করা তিনি পছন্দ করেন। অতএব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর মৃত্যুশয্যার স্থানেই দাফন করা হোক।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ,
হা/৩৮৩২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর আবু বকর (রাঃ) তাঁর কপালে চুম্বন
করেন
২৯৯
حَدَّثَنَا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، وَعَبَّاسٌ
الْعَنْبَرِيُّ ، وَسَوَّارُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ , قَالُوا :
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ ، عَنْ مُوسَى
بْنِ أَبِي عَائِشَةَ ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ ، وَعَائِشَةَ ، أَنَّ أَبَا بَكْرٍ ، " قَبَّلَ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , بَعْدَ مَا مَاتَ " .
ইবনে
আব্বাস ও আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর ওফাতের পর আবু বকর (রাঃ) তাঁর কপালে চুম্বন করেন।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৪৪৫৫;
ইবনে মাজাহ, হা/১৪৫৭; সুনানে নাসাঈ, হা/১৮৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২০২৬; সহীহ ইবনে হিব্বান,
হা/৩০২৯; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/১২১৯৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০০
حَدَّثَنَا حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا مَرْحُومُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ الْعَطَّارُ ، عَنِ أَبِي عِمْرَانَ
الْجَوْنِيِّ ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ بَابَنُوسَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، أَنَّ أَبَا
بَكْرٍ " دَخَلَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
بَعْدَ وَفَاتِهِ فَوَضَعَ فَمَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى
سَاعِدَيْهِ ، وَقَالَ : وَانَبِيَّاهُ ، وَاصَفِيَّاهُ ، وَاخَلِيلاهُ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর ওফাতের পর আবু বকর (রাঃ) তাঁর নিকট এসে তাঁর দুই চোখের মাঝখানে মুখ লাগিয়ে
চুম্বন করেন এবং তাঁর বাহুতে দু’হাত রেখে বলেন, হায় নবী! হায় অন্তরঙ্গ বন্ধু!
হায় বন্ধু![১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৪০৭৫; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৪৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যুতে সাহাবীদের কাছে সবকিছু অন্ধকার মনে
হচ্ছিল
৩০১
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلالٍ الصَّوَّافُ الْبَصْرِيُّ ، قَالَ :
حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ :
" لَمَّا كَانَ الْيَوْمُ الَّذِي دَخَلَ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ أَضَاءَ مِنْهَا كُلُّ شَيْءٍ ، فَلَمَّا
كَانَ الْيَوْمُ الَّذِي مَاتَ فِيهِ أَظْلَمَ مِنْهَا كُلُّ شَيْءٍ ، وَمَا
نَفَضْنَا أَيْدِيَنَا مِنَ التُّرَابِ ، وَإِنَّا لَفِي دَفْنِهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , حَتَّى أَنْكَرْنَا قُلُوبَنَا " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যেদিন মদিনায় প্রবেশ করছিলেন, সেদিন সেখানকার প্রতিটি জিনিস আলোকোজ্জল হয়ে
পড়েছিল। অতঃপর যেদিন তিনি ইন্তেকাল করেন, সেদিন আবার তথাকার প্রতিটি
অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল। আমরা তাঁর দাফনকার্য শেষ করে কবরের মাটি থেকে হাত ঝাড়া
না দেইত আমাদের অন্তরে পরিবর্তন অনুভব করলাম।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/১৬৩১;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৫৭; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৮৭১; মুসনানে আবু ইয়ালা, হা/৩২৯৬; শারহুস
সুন্নাহ, হা/৩৮৩৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৬৩৪; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৪০৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবারের দিন ইন্তেকাল করেন
৩০২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَامِرُ بْنُ
صَالِحٍ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ
: " تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ
الاثْنَيْنِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সোমবারের দিন ইন্তেকাল করেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/২৪৮৩৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
মঙ্গলবারের
দিন রাতে তাঁকে দাফন করা হয়
৩০৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ
بْنُ عُيَيْنَةَ ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : "
قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الاثْنَيْنِ
فَمَكَثَ ذَلِكَ الْيَوْمَ وَلَيْلَةَ الثُّلاثَاءِ ، وَدُفِنَ مِنَ اللَّيْلِ
"
জা’ফর
ইবনে মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সোমবারে ইন্তেকাল করেন। সোমবার ও মঙ্গলবার দাফন-কাফনের প্রস্তুতিতেই
চলে যায়। অতঃপর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাঁকে দাফন করা হয়।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু ও আবুবকর (রাঃ) এর বাইয়াত গ্রহণ
৩০৪
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ نُبَيْطٍ ، عَنْ
نُعَيْمِ بْنِ أَبِي هِنْدَ ، عَنْ نُبَيْطِ بْنِ شَرِيطٍ ، عَنْ سَالِمِ بْنِ
عُبَيْدٍ ، وَكَانَتْ لَهُ صُحْبَةٌ ، قَالَ : أُغْمِيَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فِي مَرَضِهِ فَأَفَاقَ ، فَقَالَ : "
حَضَرَتِ الصَّلاةُ " ؟ فَقَالُوا : نَعَمْ . فَقَالَ : " مُرُوا بِلالا
فَلْيُؤَذِّنْ ، وَمُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ لِلنَّاسِ " أَوْ قَالَ
: بِالنَّاسِ ، قَالَ : ثُمَّ أُغْمِيَ عَلَيْهِ ، فَأَفَاقَ ، فَقَالَ : "
حَضَرَتِ الصَّلاةُ ؟ " فَقَالُوا : نَعَمْ . فَقَالَ : " مُرُوا بِلالا
فَلْيُؤَذِّنْ ، وَمُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ " ، فَقَالَتْ
عَائِشَةُ : إِنَّ أَبِي رَجُلٌ أَسِيفٌ ، إِذَا قَامَ ذَلِكَ الْمَقَامَ بَكَى
فَلا يَسْتَطِيعُ ، فَلَوْ أَمَرْتَ غَيْرَهُ ، قَالَ : ثُمَّ أُغْمِيَ عَلَيْهِ
فَأَفَاقَ فَقَالَ : " مُرُوا بِلالا فَلْيُؤَذِّنْ ، وَمُرُوا أَبَا بَكْرٍ
فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ، فَإِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ أَوْ صَوَاحِبَاتُ يُوسُفَ
" ، قَالَ : فَأُمِرَ بِلالٌ فَأَذَّنَ ، وَأُمِرَ أَبُو بَكْرٍ فَصَلَّى
بِالنَّاسِ ، ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ,
وَجَدَ خِفَّةً ، فَقَالَ : " انْظُرُوا لِي مَنْ أَتَّكِئُ عَلَيْهِ "
، فَجَاءَتْ بَرِيرَةُ , وَرَجُلٌ آخَرُ ، فَاتَّكَأَ عَلَيْهِمَا فَلَمَّا رَآهُ
أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ لِينْكُصَ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ أَنْ يَثْبُتَ مَكَانَهُ ،
حَتَّى قَضَى أَبُو بَكْرٍ صَلاتَهُ ، ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُبِضَ ، فَقَالَ عُمَرُ : وَاللَّهِ لا أَسْمَعُ أَحَدًا
يَذْكُرُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قُبِضَ إِلا
ضَرَبْتُهُ بِسَيْفِي هَذَا ، قَالَ : وَكَانَ النَّاسُ أُمِّيِّينَ لَمْ يَكُنْ
فِيهِمْ نَبِيٌّ قَبْلَهُ ، فَأَمْسَكَ النَّاسُ ، فَقَالُوا : يَا سَالِمُ ،
انْطَلِقْ إِلَى صَاحِبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فَادْعُهُ ، فَأَتَيْتُ أَبَا بَكْرٍ وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ فَأَتَيْتُهُ أَبْكِي
دَهِشًا ، فَلَمَّا رَآنِي ، قَالَ : أَقُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قُلْتُ : إِنَّ عُمَرَ , يَقُولُ : لا أَسْمَعُ أَحَدًا
يَذْكُرُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُبِضَ إِلا
ضَرَبْتُهُ بِسَيْفِي هَذَا ، فَقَالَ لِي : انْطَلِقْ ، فَانْطَلَقْتُ مَعَهُ ،
فَجَاءَ هُوَ وَالنَّاسُ قَدْ دَخَلُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالَ : يَا أَيُّهَا النَّاسُ ، أَفْرِجُوا لِي ،
فَأَفْرَجُوا لَهُ فَجَاءَ حَتَّى أَكَبَّ عَلَيْهِ وَمَسَّهُ ، فَقَالَ : إِنَّكَ
مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ سورة الزمر آية 30 , ثُمَّ قَالُوا : يَا صَاحِبَ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، أَقُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، فَعَلِمُوا أَنْ قَدْ
صَدَقَ ، قَالُوا : يَا صَاحِبَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ ، أَيُصَلَّى عَلَى رَسُولِ اللَّهِ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، قَالُوا :
وَكَيْفَ ؟ قَالَ : يَدْخُلُ قَوْمٌ فَيُكَبِّرُونَ وَيُصَلُّونَ , وَيَدْعُونَ ،
ثُمَّ يَخْرُجُونَ ، ثُمَّ يَدْخُلُ قَوْمٌ فَيُكَبِّرُونَ وَيُصَلُّونَ
وَيَدْعُونَ ، ثُمَّ يَخْرُجُونَ ، حَتَّى يَدْخُلَ النَّاسُ ، قَالُوا : يَا
صَاحِبَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، أَيُدْفَنُ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، قَالُوا : أَيْنَ ؟
قَالَ : فِي الْمكَانِ الَّذِي قَبَضَ اللَّهُ فِيهِ رُوحَهُ ، فَإِنَّ اللَّهَ
لَمْ يَقْبِضْ رُوحَهُ إِلا فِي مَكَانٍ طَيِّبٍ . فَعَلِمُوا أَنْ قَدْ صَدَقَ ،
ثُمَّ أَمَرَهُمْ أَنْ يَغْسِلَهُ بَنُو أَبِيهِ , وَاجْتَمَعَ الْمُهَاجِرُونَ
يَتَشَاوَرُونَ ، فَقَالُوا : انْطَلِقْ بِنَا إِلَى إِخْوَانِنَا مِنَ
الأَنْصَارِ نُدْخِلُهُمْ مَعَنَا فِي هَذَا الأَمْرِ ، فَقَالَتِ الأَنْصَارُ :
مِنَّا أَمِيرٌ وَمِنْكُمْ أَمِيرٌ ، فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ : مَنْ لَهُ
مثل هَذِهِ الثَّلاثِ ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ
لِصَاحِبِهِ لا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا سورة التوبة آية 40 مَنْ هُمَا ؟
قَالَ : ثُمَّ بَسَطَ يَدَهُ فَبَايَعَهُ وَبَايَعَهُ النَّاسُ بَيْعَةً حَسَنَةً
جَمِيلَةً .
সাহাবী
সালিম ইবনে উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অসুস্থ অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। জ্ঞান ফিরে এলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
সালাতের সময় হয়েছে কি? সাহাবীগণ বলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমরা বেলালকে আযান
দিতে নির্দেশ দাও এবং আবু বকরকে ইমামতি করতে বলো। অতঃপর তিনি আবার অজ্ঞান হয়ে
পড়েন। জ্ঞান ফিরে এলে তিনি বলেন, সালাতের সময় হয়েছে কি? সাহাবীগণ বলেন, হ্যাঁ।
তিনি বললেন, তোমরা বেলালকে আযান দিতে বলো এবং আবু বকরকে ইমামতি করতে বলো। আয়েশা
(রাঃ) বলেন, আমার পিতা কোমল হৃদয়ের লোক। যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন কেঁদে
ফেলবেন এবং ইমামতি করতে সক্ষম হবেন না। আপনি যদি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে
নির্দেশ দিতেন।
বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার জ্ঞান হারান।
জ্ঞান ফিরে এ তিনি বললেন, তোমরা বেলালকে আযান দিতে বলো এবং আবু বকরকে লোকদের সালাত
পড়াতে বলো। পুনরায় আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমার পিতা কোমল হৃদয়ের লোক। তিনি ঐ
ইমামতের জায়গায় দাঁড়ালে কেদে ফেলবেন এবং ইমামতি করতে সক্ষম হবেন না। আপনি যদি
তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নির্দেশ দিতেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তো ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনার সাথে জড়িত মহিলাদের মতো।
বর্ণনাকারী বলেন, বেলাল (রাঃ)-কে আযান দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলে তিনি আযান দেন এবং
আবু বকর (রাঃ)-কে নির্দেশ দেয়া হলে তিনি লোকদের সালাত পড়ান। অতঃপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুটা সুস্থতাবোধ করে বলেন, দেখতো! আমার ভর
নেয়ার মতো কোন লোক পাওয়া যায় কি না? তখন বর্ণনাকারী ও অপর এক লোক এলে তিনি
তাদের উপর ভর করেন (এবং মসজিদে যান)। তাঁকে দেখে আবু বকর (রাঃ) পেছনে সরে আসতে
উদ্যোগী হলে তিনি তাকে স্বস্থানে স্থির থাকতে ইশারা করেন। এ অবস্থায় আবু বকর
(রাঃ) সালাত আদায় করান। অতঃপর সোমবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইন্তেকাল করলে উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! যে ব্যক্তিকে এ কথা বলতে শুনব যে,
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেছেন” আমি আমার তরবারি
দিয়ে তাকে আঘাত করব। আর লোকদের এ ব্যাপারে কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। কারণ, তারা
ইতোপূর্বে কোন নবীর মৃত্যু দেখেনি। তাই তারা নীরব থাকেন।
কতিপয় সাহাবী বলেন, হে সালেম, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর সাথীকে ডেকে আন। অতএব আমি আবু বকর (রাঃ) এর নিকট এলাম। তখন তিনি মসজিদে ছিলেন।
আমি দিশেহারা হয়ে কান্নারত অবস্থায় আবু বকর (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলাম। তিনি
আমাকে দেখেই বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ইন্তেকাল
করেছেন? আমি বললাম উমার (রাঃ) বলেছেন, যাকে এ কথা বলতে শুনবো যে, “রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেছেন” আমি আমার এ তরবারী দ্বারা তাকে
আঘাত করব। আবু বকর (রাঃ) আমাকে বললেন, চলো। অতএব আমি তাঁর সাথে চললাম এবং তিনিও
আসলেন। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখার জন্য লোকজন
এসে সমবেত হয়েছে। তিনি বলেন, হে লোক সকল, আমার জন্য রাস্তা করে দাও। তিনি এসে
তাঁর প্রতি ঝুঁকে পড়েন এবং কপালে চুম্বন করে এ আয়াত পড়েন,
إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ
অর্থাৎ নিশ্চয় আপনি মরণশীল এবং তারাও (আপনার শক্ররা) মরণশীল।[১]
অতঃপর লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে রাসূলের সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কি ইন্তেকাল করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন সবাই বিশ্বাস করলেন, তিনি
সত্য কথাই বলেছেন। তারা আবার জিজ্ঞেস করেন, হে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সাথী! আমরা কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
জানাযা পড়ব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারা জিজ্ঞেস করেন, তা কী নিয়মে? তিনি বললেন,
একদল লোক প্রবেশ করবে, তারা তাকবীর বলবে, দুআ করবে এবং দরূদ পাঠ করবে। তারা বের
হয়ে এলে আরেক দল প্রবেশ করে একই নিয়েম তাকবীর, দু’আ ও দরূদ পড়ে বের হয়ে আসবে।
এ নিয়মে জামা'আত ছাড়া সকলে আলাদা আলাদা জানাযার সালাত আদায় করবে। তারা আবার
জিজ্ঞেস করেন, হে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গী! রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি দাফন করা হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারা
জিজ্ঞেস করেন, কোথায়? তিনি বললেন, যে স্থানে তাঁর ইন্তেকাল হয়েছে সেখানেই।
আল্লাহ তাঁর পছন্দের স্থানেই তাঁর জান কবয করেছেন। তখন সকলের বিশ্বাস হলো, তিনি
সত্য কথাই বলেছেন। তারপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গোসল
দেয়ার জন্য তাঁর পরিবারবর্গ ও আত্মীয়-স্বজনকে আদেশ করেন।
অতঃপর মুহাজিররা (খেলাফত প্রশ্নে) পরামর্শের জন্য মিলিত হন। মুহাজিররা আবু বকর
(রাঃ)-কে বললেন, আমাদেরকে নিয়ে আনসার ভাইদের কাছে চলুন এবং এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে
আমাদের সাথে তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করব। আনসারগণ বললেন, আমাদের মধ্য হতে একজন আমীর
এবং আপনাদের (মুহাজিরদের) মধ্য থেকে একজন আমীর হোক। তখন উমার (রাঃ) বললেন, এমন কে
আছে, যে এই ঘটনার তৃতীয়জন (যে ঘটনাটির ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা বলেন)-
ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا
“দু’জনের একজন যখন তারা ছিল গুহার মধ্যে, যখন সে তাঁর সাথীকে বলল, বিচলিত হয়ো না;
নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।[2]
কারা ছিলেন সে দু’জন? বর্ণনাকারী বলেন, তারপর উমার (রাঃ) তাঁর হাত প্রসারিত করে
দিয়ে আবু বকর (রাঃ)-এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন। তারপর লোকেরাও তাঁর হাতে বাইয়াত
গ্রহণ করেন।[3]
[১] সূরা যুমার- ৩০।
[2] সূরা তাওবা- ৪০৷
[3] সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৭০৮১; সুনানুল কুবরা লিত তাবারানী, হা/৬২৪৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যুতে ফাতিমা (রাঃ) এর ক্ৰন্দন
৩০৫
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ
بْنُ الزُّبَيْرِ ، شَيْخٌ بَاهِلِيٌّ قَدِيمٌ بَصْرِيٌّ قَالَ : حَدَّثَنَا
ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : لَمَّا وَجَدَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مِنْ كُرَبِ الْمَوْتِ مَا
وَجَدَ ، قَالَتْ فَاطِمَةُ : وَاكَرْبَاهُ ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لا كَرْبَ عَلَى أَبِيكِ بَعْدَ الْيَوْمِ ، إِنَّهُ
قَدْ حَضَرَ مِنْ أَبِيكِ مَا لَيْسَ بِتَارِكٍ مِنْهُ أَحَدًا الْمُوافَاةُ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আনাস
ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন মৃত্যুর কষ্ট ভোগ করছিলেন, তখন ফাতেমা (রাঃ) বললেন, হায়! আমার
আব্বার কতই না কষ্ট হচ্ছে! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
আজকের পর তোমার পিতার আর কোন কষ্ট থাকবে না। তোমার পিতার নিকট মৃত্যু নামক এমন এক
বিষয় উপস্থিত হয়েছে, যা থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত কেউ রেহাই পাবে না।[১]
[১] ইবনে মাজাহ, হা/১৬২৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৫ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মীরাস |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর সময় সবকিছু সাদাকা করে যান
৩০৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ
مُحَمَّدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ ، أَخِي جُوَيْرِيَةَ لَهُ صُحْبَةٌ ، قَالَ : " مَا
تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلا سِلاحَهُ ,
وَبَغْلَتَهُ , وَأَرْضًا جَعَلَهَا صَدَقَةً " .
আমর
ইবনে হারিস, যিনি উম্মুল মু’মিনীন জুয়াইরিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের সময় হাতিয়ার, একটি খচ্চর এবং কিছু জমি ছাড়া আর কিছু রেখে
যাননি। সেগুলোও সাদাকা করে যান।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/২৯১২;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৪৮১; সুনানে দার কুতনী, হা/৪৩৯৮; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী,
হা/১২২৪১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন ওয়ারিস রেখে যাননি
৩০৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو
الْوَلِيدِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ
عَمْرٍو ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : جَاءَتْ
فَاطِمَةُ إِلَى أَبِي بَكْرٍ ، فَقَالَتْ : مَنْ يَرِثُكَ ؟ فَقَالَ : أَهْلِي
وَوَلَدِي ، فَقَالَتْ : مَا لِي لا أَرِثُ أَبِي ؟ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ :
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَقُولُ : "
لا نُورَثُ " ، وَلَكِنِّي أَعُولُ مَنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَعُولُهُ ، وَأُنْفِقُ عَلَى مَنْ كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُنْفِقُ عَلَيْهِ .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা ফাতিমা (রাঃ) আবু বকর (রাঃ)
এর নিকট এসে বললেন, আপনার (ত্যাজ্য সম্পত্তির) ওয়ারিস কে হবে? তিনি বললেন, আমার
পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি। ফাতিমা (রাঃ) বললেন, তবে আমি কেন আমার পিতার
ওয়ারিস হব না? আবু বকর (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমরা কাউকে ওয়ারিস করি না। তবে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের ভরণ-পোষণ করতেন, আমি তা বহাল রাখব এবং যাদের
জন্য খরচ করে গিয়েছেন, আমিও তাদের জন্য খরচ করব।[১]
[১] সুনানুল কুবরা লিল
বায়হাকী, হা/১৩১১৯; মুসনাদে আহমদ, হা/৬০; শারহুল মা’আনী, হা/৫৪৩৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ كَثِيرٍ الْعَنْبَرِيُّ أَبُو غَسَّانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ
عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ ، عَنْ أَبِي الْبَخْتَرِيِّ ، أَنَّ الْعَبَّاسَ ،
وَعَلِيًّا ، جَاءَا إِلَى عُمَرَ يَخْتَصِمَانِ , يَقُولُ كُلُّ وَاحِدٍ
مِنْهُمَا لِصَاحِبِهِ : أَنْتَ كَذَا ، أَنْتَ كَذَا ، فَقَالَ عُمَرُ ،
لِطَلْحَةَ ، وَالزُّبَيْرِ ، وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ ، وَسَعْدٍ :
أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ أَسَمِعْتُمْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
, يَقُولُ : " كُلُّ مَالِ نَبِيٍّ صَدَقَةٌ ، إِلا مَا أَطْعَمَهُ ، إِنَّا
لا نُورَثُ ؟ " وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ .
আবুল
বুখতারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উমার (রাঃ)-এর খিলাফতকালে আব্বাস ও আলী (রাঃ)
একে অপরের বিরূদ্ধে তাঁর কাছে অভিযোগ করেন। একে অপরকে বলতে থাকেন, (তুমি এরূপ,
তুমি এরূপ) তুমি এ করেছ, তুমি এ করেছ। উমার (রাঃ) তালহা, যুবায়ের, আবদুর রহমান
ইবনে আওফ ও সা’দ (রাঃ)-কে বললেন, আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করছি, তোমরা
কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনোনি যে, নবীদের সকল সম্পদ
সাদাকা হয়? অবশ্য যা পরিবারের আহার বাবদ খরচ হবে, তা এর অন্তর্ভুক্ত নয়। যেমন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ উক্তি, “আমরা কাউকে উত্তরাধিকারী
করি না”। এ হাদীসে একটি দীর্ঘ ঘটনা আছে।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/২৯৭৭;
মুসনাদুল তায়ালুসী, হা/৬১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩০৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ، قَالَ : حَدَّثَنَا صَفْوَانُ
بْنُ عِيسَى ، عَنِ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ ،
عَنْ عَائِشَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ،
قَالَ : " لا نُورَثُ مَا تَرَكْنَا فَهُوَ صَدَقَةٌ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, আমরা নবীরা কাউকে ওয়ারিস করি না। আমাদের পরিত্যক্ত সকল সম্পদ সাদাকারূপে
গণ্য।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৪৬৭৮:
আবু দাউদ, হা/২৯৭৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৩৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫১৬৮ সহীহ ইবনে খুযাইমা,
হা/২৩৫৩; জামেউস সগীর, হা/১৩৫১৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ أَبِي
الزِّنَادِ ، عَنِ الأَعْرَجِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " لا يَقْسِمُ وَرَثَتِي دِينَارًا
وَلا دِرْهَمًا ، مَا تَرَكْتُ بَعْدَ نَفَقَةِ نِسَائِي وَمُؤْنَةِ عَامِلِي
فَهُوَ صَدَقَةٌ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, আমার উত্তরাধিকারী যেন আমার পরিত্যক্ত দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) দিরহাম
(রৌপ্যমুদ্রা) বণ্টন না করে। আমার পরিবার-পরিজন ও আমার কর্মচারীর খরচ দেয়ার পর যা
কিছু থাকবে, তা সাদাকা।[১]
[১] মুয়াত্তা মালেক,
হা/১৮০৩; সহীহ বুখারী, হা/২৭৭৬; সহীহ মুসলিম, হা/৪৬৮২; আবু দাউদ, হা/২৯৭৬; মুসনাদে
আহমাদ, হা/৭৩০১; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৩১১৭।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلالُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
بِشْرُ بْنُ عُمَرَ ، قَالَ : سَمِعْتُ مَالِكَ بْنَ أَنَسٍ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ،
عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ ، قَالَ : دَخَلْتُ عَلَى عُمَرَ
فَدَخَلَ عَلَيْهِ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ ، وَطَلْحَةُ ، وَسَعْدٌ ،
وَجَاءَ عَلِيٌّ ، وَالْعَبَّاسُ ، يَخْتَصِمَانِ ، فَقَالَ لَهُمْ عُمَرُ :
أَنْشُدُكُمْ بِالَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ ، أَتَعْلَمُونَ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " لا
نُورَثُ ، مَا تَرَكْنَاهُ صَدَقَةٌ " ، فَقَالُوا : اللَّهُمَّ نَعَمْ .
وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ طَوِيلَةٌ .
মালিক
ইবনে আওস ইবনে হাদাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমার (রাঃ) এর নিকট গেলাম। তখন
আবদুর রহমান ইবনে আউফ, তালহা এবং সা’দ (রাঃ) তাঁর নিকট উপস্থিত হন। কিছুক্ষণ পর
আলী ও আব্বাস (রাঃ) বাদানুবাদ করতে করতে উপস্থিত হন। উমার (রাঃ) তাদের বলেন, আমি
আপনাদেরকে সে সত্বার কসম দিয়ে জিজ্ঞেষ করছি, যাঁর ইচ্ছায় আসমান-জমিন কায়েম আছে,
আপনারা কি জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমরা
নবীদের কোন ওয়ারিস নেই। আমরা যা কিছু রেখে যাই, তা সাদাকা। তারা সকলে বললেন,
হ্যাঁ- নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছেন। এ
হাদীসে একটি দীর্ঘ ঘটনা রয়েছে।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/৪৬৭৬;
মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭২; বায়হাকী, হা/১৩১৪৭ ৷
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ عَاصِمِ ابْنِ
بَهْدَلَةَ ، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " مَا
تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دِينَارًا وَلا
دِرْهَمًا وَلا شَاةً وَلا بَعِيرًا " ، قَالَ : " وَأَشُكُّ فِي
الْعَبْدِ وَالأَمَةِ " .
আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম দিনার, দিরহাম, বকরী ও উট কিছুই রেখে যাননি। বর্ণনাকারী বলেন, আয়েশা
(রাঃ) দাস-দাসীর কথা উল্লেখ করেছেন কি না তা আমার মনে পড়ছে না।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৪৪৬১;
সহীহ মুসলিম, হা/৪৩১৬; আবু দাউদ, হা/২৮৬৫; সুনানে নাসাঈ, হা/৩৬২১; ইবনে মাজাহ, হা/২৬৯৫;
মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৫৭৯; বায়হাকী, হা/১২৩৩৩।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৫৬ |
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে স্বপ্নযোগে
দর্শন |
পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) কে স্বপ্নযোগে দর্শন
৩১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ أَبِي
إِسْحَاقَ ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ، عَنِ
النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " مَنْ رَآنِي فِي
الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لا يَتَمَثَّلُ بِي " .
আবদুল্লাহ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে
দেখল, সে যেন আমাকেই দেখল। কারণ, শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬৯৯৪;
সহীহ মুসলিম, হা/৬০৫৬; ইবনে মাজাহ, হা/৩৯০১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৪১৯৩; দারেমী, হা/২১৮৫;
জামেউস সগীর, হা/১১২০২।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
শয়তান
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রূপ ধারণ করতে পারে না
৩১৪
دَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى ،
قَالا : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ
أَبِي حُصَينٍ ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ رَآنِي فِي
الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي , فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لا يَتَصَوَّرُ " أَوْ
قَالَ : " لا يَتَشَبَّهُ بِي " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখল, সে যেন আমাকেই দেখল। কারণ,
শয়তান আমার স্বরূপ ধারণ করতে পারে না।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৯৩০৫।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ
الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي
، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ , يَقُولُ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي ,
فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لا يَتَمَثَّلُنِي " ، قَالَ أَبِي : فَحَدَّثْتُ بِهِ
ابْنَ عَبَّاسٍ ، فَقُلْتُ : قَدْ رَأَيْتُهُ ، فَذَكَرْتُ الْحَسَنَ بْنَ عَلِيٍّ
, فَقُلْتُ : شَبَّهْتُهُ بِهِ ، فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : " إِنَّهُ كَانَ
يُشْبِهُهُ " .
আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখল, সে যেন আমাকেই দেখল। কারণ
শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।
(আসিম বর্ণনা করেন) আমার পিতা কুলায়ব বলেন, আমি এ হাদীস ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর
নিকট বর্ণনা করলাম এবং বললাম, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে
স্বপ্নে দেখেছি। তখন হাসান ইবনে আলী (রাঃ) এর কথা আমার স্মরণ হলে আমি বললাম,
স্বপ্নের আকৃতিকে হাসানের আকৃতির সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ পেলাম। ইবনে আব্বাস (রাঃ)
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাদৃশই ছিলেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৮৪৮৯; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮১৮৬; মুসনাদে ইসহাক ইবনে রাহওয়াই, হা/২৬১।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي
عَدِيٍّ ، وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالا : حَدَّثَنَا عَوْفُ بْنُ أَبِي
جَمِيلَةَ ، عَنْ يَزِيدَ الْفَارِسِيِّ وَكَانَ يَكْتُبُ الْمَصَاحِفَ ، قَالَ :
رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَنَامِ زَمَنَ
ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : فَقُلْتُ لابْنِ عَبَّاسٍ : إِنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّوْمِ ، فَقَالَ ابْنُ
عَبَّاسٍ : إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ كَانَ , يَقُولُ : " إِنَّ الشَّيْطَانَ لا
يَسْتَطِيعُ أَنْ يَتَشَبَّهَ بِي ، فَمَنْ رَآنِي فِي النَّوْمِ فَقَدْ رَآنِي
" ، هَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَنْعَتَ هَذَا الرَّجُلَ الَّذِي رَأَيْتَهُ فِي
النَّوْمِ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، أَنْعَتُ لَكَ رَجُلا بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ ،
جِسْمُهُ وَلَحْمُهُ أَسْمَرُ إِلَى الْبَيَاضِ ، أَكْحَلُ الْعَيْنَيْنِ ، حَسَنُ
الضَّحِكِ ، جَمِيلُ دَوَائِرِ الْوَجْهِ ، مَلأَتْ لِحْيَتُهُ مَا بَيْنَ هَذِهِ
إِلَى هَذِهِ ، قَدْ مَلأَتْ نَحْرَهُ ، قَالَ عَوْفٌ : وَلا أَدْرِي مَا كَانَ
مَعَ هَذَا النَّعْتِ , فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : لَوْ رَأَيْتَهُ فِي الْيَقَظَةِ
مَا اسْتَطَعْتَ أَنْ تَنْعَتَهُ فَوْقَ هَذَا
ইয়াযীদ
আল ফারিসী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে স্বপ্নে দেখলাম। ইবনে আব্বাস (রাঃ) তখনও জীবিত
ছিলেন। আমি ইবনে আব্বাস (রাঃ)-কে বললাম, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে স্বপ্নে দেখেছি। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে সক্ষম নয়। যে আমাকে স্বপ্নে
দেখে, সে প্রকৃতপক্ষেই আমাকেই দেখে। [ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন], তুমি যাকে স্বপ্নে
দেখছ তাঁর কিছু বিবরণ দিতে পার ? আমি বললা, হ্যাঁ। তাঁর দেহাকৃতি মধ্যম আকারের,
গায়ের রং গৌর, তাতে সাদা অংশ বেশী। সুরমা মাখা চোখ, প্রফুল্ল মুখ, হাস্যোজ্জল
চেহারা, মুখভর্তি দাড়ি যা বুক পর্যন্ত পরিপূর্ণ ছিল। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, তুমি
যদি জাগ্রত অবস্থায় তাঁকে দেখতে, তাহলেও এর চেয়ে বেশী বলতে সক্ষম হতে না।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ,
হা/৩৪১০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৩২৪৬৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا
يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ
شِهَابٍ الزُّهْرِيُّ ، عَنْ عَمِّهِ ، قَالَ : قَالَ أَبُو سَلَمَةَ : قَالَ
أَبُو قَتَادَةَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :
" مَنْ رَآنِي , يَعْنِي فِي النَّوْمِ , فَقَدْ رَأَى الْحَقَّ " .
আবু
কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, যে ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে আমাকে দেখল, সে সত্যকেই দেখল। অর্থ্যাৎ সে আমাকেই
দেখল।[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/৬৯৯৬;
সহীহ মুসলিম, হা/৬০৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫৪৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬০৫১; দারেমী,
হা/২১৪০; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩২৮৭; জামেউস সগীর, হা/১১১৯৮।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
মুমিনের
সত্য স্বপ্ন নবুওয়াতের ৪৬ ভাগের ১ ভাগ
৩১৮
عَنْ أَنَسٍ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
، قَالَ : " مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي ، فَإِنَّ
الشَّيْطَانَ لا يَتَخَيَّلُ بِي " .
وَقَالَ : " وَرُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ
جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ " .
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, যে ব্যক্তি ঘুমের অবস্থায় আমাকে দেখল, সে আমাকেই দেখল। কারণ শয়তান আমার
আকৃতি ধারণ করতে পারে না। তিনি আরো বলেন, মুমিনের সত্য স্বপ্ন নবুওয়াতে ৪৬ ভাগের
এক ভাগ।[১]
[১] মুয়াত্তা ইমাম
মালেক, হা/১৭১৩; সহীহ বুখারী, হা/৬৯৯৪; সহীহ মুসলিম, হা/৬০৪৬; আবু দাউদ, হা/৫০২০; ইবনে
মাজাহ, হা/৩৮৯৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৭৭৪; জামেউস সগীর হা/৫৮৩৯।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩১৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيٍّ ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبِي ، يَقُولُ :
قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ : " إِذَا ابْتُلِيتَ بِالْقَضَاءِ
فَعَلَيْكَ بِالأَثَرِ " .
মুহাম্মদ
ইবনে আলী থেকে বর্ণিতঃ
আমার আব্বাকে বলতে শুনেছি, তোমাকে যখন
বিচারকের পদে অভিষিক্ত করা হয়, তখন রিওয়ায়াতের অনুসরণ করার চেষ্টা করো।[১]
[১] আল মাজালিসাতু ওয়া
জাওয়াহিরুল ইলম, হা/৩২৬
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
৩২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ
شُمَيْلٍ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا ابْنُ عَوْنٍ ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ ، قَالَ :
" هَذَا الْحَدِيثُ دِينٌ ، فَانْظُرُوا عَمَّنْ تَأَخُذُونَ دِينَكُمْ
" .
ইবনে
সীরীন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাদীস শিক্ষা করা দ্বীনের
অন্তর্ভুক্ত। অতএব তা শিক্ষার আগে একটি বিচার্য বিষয় হলো, তুমি দেখে নাও যে, কার
কাছ থেকে এ দ্বীন শিক্ষা করছ।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/২৬;
দারেমী, হা/৪২৪।
হাদিসের মানঃসহিহ হাদিস
No comments