রাহে বেলায়াত তৃতীয় অধ্যায় - অনুচ্ছেদ-১৩ এবং ১৪, প্রথম পর্বঃ সকালের যিকর-ওযীফা - ৮. সালাতই সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর - (চ) তাশাহহুদ ও সালাত
অনুচ্ছেদ-১৩
প্রথম পর্বঃ সকালের যিকর-ওযীফা - ৮. সালাতই সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর - (চ) তাশাহহুদ ও সালাত
তাশাহহুদ (আত্তাহিয়্যাতু) ও সালাত (দরুদ) আমরা সকলেই জানি। তবে অর্থ উল্লেখ করার জন্য এখানে তা লিখছি। একমাত্র আশা যে, কোনো আগ্রহী পাঠক অর্থ শিখে নিয়ে অর্থের দিকে লক্ষ্য রেখে তাশাহহুদ ও সালাত পাঠ করবেন।
যিকর
নং
৫৯
: তাশাহহুদ (আত-তাহিয়্যাত)
সাহাবীগণ বলেছেন : রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে তাশাহহুদ শিখাতেন ঠিক যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। বিভিন্ন সাহাবী থেকে তাশাহহুদ বর্ণিত হয়েছে। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পিছে সালাত আদায়ের সময় বসলে বলতামঃ আল্লাহর উপর সালাম, ফিরিশতাগণের উপর সালাম, অমুকের উপর সালাম,
...। রাসূলুল্লাহ
(সা.) একদিন
আমাদেরকে
বললেন,
আল্লাহই
সালাম
(কাজেই,
আল্লাহকে
সালাম
প্রদান
করা ঠিক নয়)। অতএব,
তোমরা
যখন সালাতের
মধ্যে
বসবে
তখন বলবেঃ
التَّحِيَّاتُ
لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ
وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ
الصَّالِحِينَ (فإذا قالها أصابت كل عبد لله صالح في السماء والارض) أَشْهَدُ أَنْ
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
অর্থ: “সকল মহান
মর্যাদা
জ্ঞাপন
আল্লাহর
জন্য
এবং উপাসনা-আরাধনা
ও প্রার্থনাসমূহ
এবং পবিত্র
বাক্য,
কর্ম
ও দানসমূহ।
সালাম
আপনার
উপর, হে নবী; এবং আল্লাহর
রহমত
ও তাঁর
বরকতসমূহ।
সালাম
আমাদের
উপর এবং আল্লাহর
নেককার
বান্দাগণের
উপর।
(রাসূলুল্লাহ
(সা.) বলেন:
এ কথা বললে
আসমান
ও জমিনে
আল্লাহর
সকল নেক বান্দাকেই
সালাম
দেওয়া
হয়ে যাবে)
আমি সাক্ষ্য
প্রদান
করছি
যে, আল্লাহ
ছাড়া
কোনো
উপাস্য
নেই।
এবং সাক্ষ্য
দিচিছ
যে, মুহাম্মাদ
তাঁর
দাস ও প্রেরিত
বার্তাবাহক।
(রাসূলুল্লাহ
(সা.) বলেন,
এরপর
মুসললী
নিজের
জন্য
পছন্দমতো
প্রার্থনা
বা দু‘আ করবে।)”[1]
সালাতের
শেষে
নিজের
জন্য
প্রার্থনা
শুরু
করার
পূর্বে
রাসূলুল্লাহ
(সা.)-এর উপর সালাত
পাঠ করা মাসনূন
ইবাদত।
ফুদালাহ
ইবনু
উবাইদ
(রাঃ) বলেন,
রাসূলুল্লাহ
(সা.) এক ব্যক্তিকে
সালাতের
মধ্যে
দু‘আ করতে
শুনতে
পান, অথচ লোকটি
আল্লাহর
মর্যাদা
ঘোষণা
ও রাসূলুল্লাহ
(সা.)-এর উপরে
সালাত পাঠ করেনি। তখন তিনি বলেনঃ
عجل هذا ... إذا
صلى أحدكم فليبدأ بتحميد الله والثناء عليه ثم ليصل على النبي صلى الله عليه وسلم
ثم ليدع بعد بما شاء
“লোকটি
তাড়াহুড়ো
করেছে।
যখন কেউ সালাত
আদায়
করে তখন যেন সে প্রথমে
তার প্রভুর
প্রশংসা
ও মর্যাদা
জ্ঞাপন
করে।
এরপর
সে নবীর
(সা.) উপর সালাত
পাঠ করবে।
এরপর
তার যা ইচ্ছা
হবে তার-জন্য
দু’আ করবে।”
হাদীসটি
সহীহ।[2]এ সময়ে
আমরা
সবাই
দরুদে
ইবরাহীমি
পাঠ করি।
দরুদের
অর্থ
ইতঃপূর্বে
৩১ ও ৩২ নং যিকরে
আলোচনা
করেছি।
অর্থের
দিকে
লক্ষ্য
রেখে
রাসূলুল্লাহ
(সা.)-এর মর্যাদা
ও হক্কের
প্রতি
আবেগ ও ভালবাসা নিয়ে তাশাহহুদের শেষে সালাত পাঠ করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
[1]
সহীহ
মুসলিম
১/৩০১, নং ৪০২, সহীহ
বুখারী
১/২৮৬, ২৮৭, ৪০৩, ৫/২৩০১,
২৩১১,
২৩৩১।
[2] সুনানু
তিরমিযী
৫/৫১৭, নং ৩৪৭৭,
সুনানু
আবী দাউদ
২/৭৭, নং ১৪৮১,
মুসতাদরাক
হাকিম
১/৪০১।
অনুচ্ছেদ-১৪,
প্রথম পর্বঃ সকালের যিকর-ওযীফা - ৮. সালাতই সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর - (ছ). নিজের জন্য প্রার্থনা
উপরের হাদীস ও পূর্ববর্তী অনেক হাদীস থেকে আমরা জেনেছি যে, সালাতের মধ্যে মুমিনের সর্বশেষ করণীয় নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। এই সময়ে পাঠ করার জন্য অনেক মুনাজাত হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে। একটি মাসনূন মুনাজাত ইতঃপূবে ২৬ নং যিকরে উল্লেখ করেছি।
No comments