হাদীসের নামে জালিয়াতি - অধ্যায়-২৬ - ঈমান বিষয়ক
১. স্বদেশ প্রেম ঈমানের অংশ
একটি অতি প্রচলিত বাক্য:
حُبُّ
الْوَطَنِ مِنَ الإِيْمَانِ
‘‘দেশপ্রেম ঈমানের অংশ।’’
হাদীস হিসেবে কথাটি একেবারেই ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট।[1]
এছাড়া কথাটির অর্থও ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ততটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কাজেই একে আলিমগণের কথা বা ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলে চালানোরও যৌক্তিকতা নেই। ঈমান ও ইসলাম ঐ সব কর্মের সমষ্টি যা মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে স্বেচ্ছায় করতে পারে বা অর্জন করতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে বা জন্মগতভাবে সে সকল বিষয় অর্জিত হয় তাকে ঈমানের বা ইসলামের অংশ বলা হয় না। কারণ এগুলো ঐচ্ছিক বা ইচ্ছাধীন কর্ম নয়। জন্মস্থান, আবাসস্থল, বন্ধুবান্ধব, স্ত্রী, সন্তান, পরিজন ও পিতামাতার প্রতি ভালবাসা একটি প্রকৃতিগত বিষয়। মানুষ সৃষ্টিগত ভাবে এদের প্রতি ভালবাসা অনুভব করে। এগুলো কোনটিই ঈমানের অংশ নয়। এজন্য পিতামাতার আনুগত্য ও সেবাকে ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলা হয়েছে, পিতামাতার ভালবাসাকে নয়। অনুরূপভাবে দেশের প্রতি, আবাসস্থলের প্রতি, পাড়া প্রতিবেশীর প্রতি মুসলিমের অনেক দায়িত্ব রয়েছে, যা তিনি ইচ্ছাধীন কর্মের মাধ্যমে পালন করবেন। কিন্তু প্রাকৃতিক ভালবাসাকে ঈমানের অংশ বলা ইসলামী ধারণার সাথে পুরোপুরি মেলে না।
কেউ যদি প্রকৃতির নিয়মকে লঙ্ঘন করে, নিজ সন্তান, স্ত্রী, পিতামাতা, আবাসস্থল বা দেশকে ভাল না বাসে তাহলে আমরা তাকে অপ্রকৃতিস্থ, পাগল ইত্যাদি বলব। আর যদি এ অবস্থা তাকে উপর্যুক্ত দায়িত্বাদি পালন থেকে বিরত রাখে তাহলে আমরা তাকে পাপী ও আল্লাহর অবাধ্য বলব।
[1] সাখাবী, আল-মাকাসিদ, পৃ: ১৯৫, নং ৩৮৬, মোল্লা আরী কারী, আল-আসরার, পৃ: ১০৯, নং ৪১৩, আল-মাসনূ‘য়, পৃ: ৬৯, নং ১০৬, আজলূনী, কাশফুল খাফা ১/৪১৩, যারকানী, মুখতাসারুল মাকাসিদ, পৃ: ৯৫, নং ৩৬১।
২. প্রচলিত পাঁচ কালিমা ও দুই ঈমান
আমাদের দেশে ইসলামী ঈমান-আকীদার বিবরণের ক্ষেত্রে ‘পাঁচটি কালিমা’র কথা প্রচলিত আছে। এছাড়া ঈমানে মুজমাল ও ঈমানে মুফাস্সাল নামে দু’টি ঈমানের কথা আছে। কায়েদা, আমপারা, দীনিয়াত ও বিভিন্ন প্রচলিত বই পুস্তকে এ কালিমাগুলো রয়েছে। এগুলোকে অত্যন্ত জরুরী মনে করা হয় এবং বিশেষভাবে মুখস্থ করা হয়। এ বাক্যগুলোর অর্থ সুন্দর। তবে সবগুলো বাক্য এভাবে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয় নি। এগুলোকে কুরআনের কথা বা হাদীসের কথা মনে করলে ভুল হবে।
(১) কালিমায়ে শাহাদত
কুরআন ও হাদীসে ইসলামী ঈমান বা বিশ্বাসের মূল হিসাবে দু’টি সাক্ষ্য প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যা আমাদের দেশে ‘কালিমা শাহাদত’ হিসাবে পরিচিত। এ কালিমায় আল্লাহর তাওহীদ এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) এর রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করা হয়। প্রকৃতপক্ষে একমাত্র কালিমা শাহাদতই হাদীস শরীফে ঈমানের মূল বাক্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সালাতের (নামাযের) ‘তাশাহ্হুদের’ মধ্যে বাক্যদ্বয় এভাবে একত্রে বলা হয়েছে:
أَشْهَدُ
أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবূদ (উপাস্য) নেই এবং আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।’’
এ ‘কালিমা’ বা বাক্যটি দু’টি বাক্যের সমন্বয়ে গঠিত।
প্রথম বাক্য: أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ
‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবূদ (উপাস্য) নেই।’’
এ প্রথম বাক্যটির ক্ষেত্রে কোনো কোনো হাদীসে বলা হয়েছে:
لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ
‘‘আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই।’’
দ্বিতীয় বাক্য: وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
আযানের মধ্যে এ বাক্যদ্বয়কে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয় বাক্যটির ক্ষেত্রে কোনো কোনো হাদীসে (أشهد) অর্থাৎ ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি’ কথাটি পুনরাবৃত্তি না করে শুধুমাত্র (وَأنَّ) ‘এবং নিশ্চয়’ বলা হয়েছে। কোনো কোনো হাদীসে বাক্যদ্বয়ের শুরুতে (أشهد) বলা হয়নি, বরং বলা হয়েছে:
لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُوْلُ اللهِ
দ্বিতীয় বাক্যটির ক্ষেত্রে অনেক হাদীসে (أن محمدا رسول الله) ‘মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল’ কথাটির পরিবর্তে (أن محمدا عبده ورسوله) ‘মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল’- বলা হয়েছে। এছাড়া কোনো কোনো হাদীসে ‘সাক্ষ্য প্রদান’ শব্দের পরিবর্তে ‘বলা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন হাদীসে আমরা এ কালেমাটিকে নিম্নের বিভিন্ন রূপে দেখতে পাই[1]:
(১) প্রথম রূপ: أشهد أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وأشهد أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
(২) দ্বিতীয় রূপ: أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
(৩) তৃতীয় রূপ: أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
(৪) চতুর্থ রূপ: لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
(৫) পঞ্চম রূপ: أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عبده ورَسُولُه
বিভিন্ন হাদীসে আমরা দেখতে পাই যে, সাহাবায়ে কেরাম ইসলাম গ্রহণের সময়ে উপরে উল্লিখিত এ সকল বাক্যের কোনো একটি পাঠ করে ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশ করতেন।[2]
(২) কালিমায়ে তাইয়িবা
আমাদের দেশে কালিমা তাইয়িবা বা ‘পবিত্র বাক্য’ বলতে বুঝানো হয় তাওহীদ ও রিসালাতের একত্রিত ঘোষণা:
لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللهُ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ
কুরআন কারীমে আল্লাহ জাল্লা শানুহু বলেন:
أَلَمْ
تَرَ كَيْفَ ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلا كَلِمَةً طَيِّبَةً كَشَجَرَةٍ طَيِّبَةٍ
أَصْلُهَا ثَابِتٌ وَفَرْعُهَا فِي السَّمَاءِ
‘‘তুমি কি দেখ নি, কিভাবে আল্লাহ একটি উদাহরণ পেশ করেছেন: একটি ‘কালিমায়ে তাইয়িবা’ বা পবিত্র বাক্য একটি পবিত্র বৃক্ষের মত, তার মূল প্রতিষ্ঠিত এবং তার শাখা-প্রশাখা আকাশে প্রসারিত।’’[3]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আব্দুল্লাহ ইবন আববাস (রা) ও অন্যান্য মুফাস্সির থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, এখানে ‘কালিমা তাইয়িবা’ বলতে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ তাওহীদের এ বাক্যটিকে বুঝানো হয়েছে।[4] কিন্তু (লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) দু’টি বাক্য একত্রিতভাবে কোনো হাদীসে কালিমা তাইয়িবা হিসাবে উল্লেখ করা হয় নি।
আমরা দেখেছি যে, কালিমা শাহাদাতকে অনেক সময় ‘‘শাহাদাত’’ শব্দ উহ্য রেখে নিম্নরূপে বলা হয়েছে:
لا
إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
কিন্তু মাঝখানে (وَأَنَّ) বাদ দিয়ে উভয় অংশ একত্রে
لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللهُ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ
এভাবে ‘কালিমা’ হিসাবে সহীহ হাদীসে কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা যায় না। কোনো কোনো হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, এভাবে এ বাক্যদ্বয় একত্রে আরশের গায়ে লিখা ছিল। আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি যে, এ হাদীসগুলো সহীহ নয়। কোনো কোনো হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর ঝান্ডা বা পতাকার গায়ে লিখা ছিল:
لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللهُ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ
এ অর্থের হাদীসগুলোর সনদে দুর্বলতা আছে।[5]
ইবন হাজার আসকালানী ইমাম হাকিম নাইসাপুরীর সূত্রে উদ্ধৃত করেছেন যে, আবূ যার গিফারী (রা) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে প্রশ্ন করেন: আমরা আপনার বক্তব্য শুনতে এসেছি। তখন তিনি বলেন:
أقول
لا اله الا الله محمد رسول الله
‘‘আমি বলি: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’’: আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল।’’
হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম হাকিমের মুসতাদরাক গ্রন্থে হাদীসটি প্রায় হুবহু বিদ্যমান। তবে সেখানে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বক্তব্য নিম্নরূপ:
أقول
لا إله إلا الله و أني رسول الله
‘‘আমি বলি: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আন্নী রাসূলুল্লাহ’’: আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল।’’[6]
এখানে উল্লেখ্য যে, কালিমা তাইয়িবার দুটি অংশ পৃথকভাবে কুরআন কারীমে ও হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। উভয় বাক্যই কুরআনের অংশ এবং ঈমানের মূল সাক্ষ্যের প্রকাশ। উভয় বাক্যকে একত্রে বলার মধ্যে কোনো প্রকারের অসুবিধা নেই। এজন্য আমরা ইসলামের প্রাচীন গ্রন্থগুলো দেখি যে, তাবিয়ীগণের যুগ থেকে ইমাম, ফকীহ, মুহাদ্দীসগণ কালিমা শাহাদতের মূল ঘোষণা হিসাবে এ বাক্যটির ব্যবহার করেছেন। এ বাক্যটি ব্যবহারের বিষয়ে কেউ কোনো আপত্তি করেন নি। কুরআনে ‘কালিমাতুত্ তাকওয়া’ ‘তাকওয়ার বাক্য’ বলা হয়েছে[7]। এর ব্যাখ্যায় তাবিয়ী আতা আল-খুরাসানী (১৩৫ হি) বলেন: কালিমায়ে তাকওয়া হলো (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ)[8]।
(৩) কালিমায়ে তাওহীদ
কালিমায়ে তাওহীদ নামে আমাদের দেশে নিম্নের বাক্যটি প্রচলিত:
لاَ
إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَاحِداً لاَ ثَانِيَ لَكَ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ إِمَامُ
الْمُتَّقِيْنَ وَرَسُوْلُ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ.
এ বাক্যটির অর্থ সুন্দর। তবে এ বাক্যটির কোনোরূপ গুরুত্ব এমনকি এর কোনো প্রকারের উল্লেখ বা অস্তিত্ব কুরআন বা হাদীসে পাওয়া যায় না।
(৪) কালিমায়ে তামজীদ
কালেমায়ে তামজীদ হিসাবে নিম্নের বাক্যটি প্রচলিত:
لاَ
إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ نُوْراً يَهْدِيْ اللهُ لِنُوْرِهِ مَنْ يَشَاءُ مُحَمَّدٌ
رَسُوْلُ اللهِ إِمَامُ الْمُرْسَلِيْنَ خَاتَمُ النَّبِيِّيْنَ.
এ বাক্যটির অর্থও সুন্দর। কিন্তু এভাবে এ বাক্যটি বলার কোনো নির্দেশনা, এর কোনো গুরুত্ব বা অস্তিত্ব কুরআন বা হাদীসে পাওয়া যায় না।
(৫) কালিমায়ে রাদ্দে কুফর
কালেমায়ে রাদ্দে কুফর নামে কয়েকটি বাক্য প্রচলিত আছে, যেমন:
اَللَّهُمَّ
إِنِّىْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ شَيْئاً وَنُؤْمِنَ بِهِ
وَأَسْتَغْفِرُكَ مِمَّا أَعْلَمُ بِهِ وَمَا لاَ أَعْلَمُ بِهِ وَأَتُوْبُ
وَآمَنْتُ وَأَقُوْلُ أَنْ لاَ إِلهَ اِلاَّ اللهُ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ
শিরক থেকে আত্মরক্ষার একটি দুআ হাদীসে বর্ণিত।[9] এ কালিমার মধ্যে উক্ত মাসনূন দুআর সাথে কিছু কথা সংযুক্ত করা হয়েছে। বাক্যগুলোর অর্থ ভাল। কিন্তু বাক্যগুলো এভাবে কোনো হাদীসে পাওয়া যায় না।
(৬) ঈমানে মুজমাল
ইমানে মুজমাল নামে প্রচলিত বাক্যটির অর্থ সুন্দর ও সঠিক। তবে এরূপ কোনো বাক্য কোনোভাবে কোনো হাদীসে উল্লেখ করা হয় নি।
(৭) ঈমানে মুফাস্সাল
ঈমানের পরিচয় দিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
أن
تُؤْمِنَ بِاللهِ وَمَلائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَِالْيَوْم الآخِر
وَتُؤْمِنَ بالْقَدْرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ.
‘‘তুমি ঈমান আনবে আল্লাহর উপরে, তাঁর ফিরিশতাগণের উপরে, তাঁর কেতাবগুলোর উপরে, তাঁর রাসূলগণের উপরে, শেষ দিবসের (আখেরাতের) উপরে, এবং তুমি ঈমান আনবে তাকদীরের উপরে: তার ভাল এবং তার মন্দের উপরে।’’[10]
ঈমানের এ ছয়টি রুকন বা স্তম্ভের কথা কুরআন ও হাদীসে বারংবার উল্লেখ করা হয়েছে। লক্ষ্যণীয় যে, ‘ঈমানে মুফাস্সালের মধ্যে আখিরাতের বিশ্বাসকে পৃথক দুটি বাক্যাংশে প্রকাশ করা হয়েছে (ইয়াওমিল আখির) ও (বা’সি বা’দাল মাউত): শেষ দিবস ও মৃত্যুর পরে উত্থান। উভয় বিষয় একই।
[1] বুখারী, আস-সহীহ, ১/১২, ২৯, ৩/১২৬৭; মুসলিম, আস-সহীহ ১/৪৫, ৪৭, ৫৭, ৬১।
[2] বুখারী, আস-সহীহ ১/১৭৬, ৩/১২১১; মুসলিম, আস-সহীহ ১/৩০২, ৩/১৩৮৬; নাসাঈ, আস-সুনান ১/১০৯।
[3] সূরা (১৪) ইবরাহীম: আয়াত ২৪।
[4] ইবনু কাসীর, আত-তাফসীর ২/৫৩১।
[5] হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/৩২১।
[6] হাকিম, আল-মুসতাদরাক ৩/১২১; ইবন হাজার আসকালানী, আল-ইসাবাহ ৬/৪৬৩।
[7] সূরা (৪৮) ফাত্হ: ২৬ আয়াত।
[8] তাবারী, আত-তাফসীর ২৬/১০৫।
[9] দুআটি দেখুন: রাহে বেলায়াত, পৃষ্ঠা ৫৪২।
[10] মুসলিম, আস-সহীহ ১/৩৭; বুখারী, আস-সহীহ ১/২৭, ৪/১৭৯৩।
No comments