সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "সালাতে কসর করা" হাদিস নং -১০৮০ থেকে ১১০০

কসর সম্পর্কে বর্ণনা এবং কতদিন অবস্থান পর্যন্ত কসর করবে।

১০৮০

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَاصِمٍ، وَحُصَيْنٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ أَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم تِسْعَةَ عَشَرَ يَقْصُرُ، فَنَحْنُ إِذَا سَافَرْنَا تِسْعَةَ عَشَرَ قَصَرْنَا، وَإِنْ زِدْنَا أَتْمَمْنَا‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা সফরে ঊনিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান কালে সালাত কসর করেন। সেহেতু আমরাও ঊনিশ দিনের সফরে থাকলে কসর করি এবং এর চেয়ে অধিক হলে পূর্ণ সালাত আদায় করি।

১০৮১

حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ، فَكَانَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ حَتَّى رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ‏.‏ قُلْتُ أَقَمْتُمْ بِمَكَّةَ شَيْئًا قَالَ أَقَمْنَا بِهَا عَشْرًا‏.‏
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মদীনা ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি দু’রাক’আত, দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। (রাবী বলেন) আমি (আনাস রা.)-কে বললাম, আপনারা (হজ্জকালীন সময়) মক্কায় কয় দিন অবস্থান করেছিলেন? তিনি বললেন, সেখানে আমরা দশ দিন অবস্থান করেছিলাম।

১৮/. অধ্যায়ঃ

মিনায় সালাত

১০৮২

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ، وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ، وَمَعَ عُثْمَانَ صَدْرًا مِنْ إِمَارَتِهِ ثُمَّ أَتَمَّهَا‏.‏
‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বক্‌র এবং ‘উমর (রাঃ)-এর সঙ্গে মিনায় দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছি। উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গেও তাঁর খিলাফতের প্রথম দিকে দু’রাক’আত আদায় করেছি। অতঃপর তিনি পূর্ণ সালাত আদায় করতে লাগলেন।

১০৮৩

حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَنْبَأَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ، قَالَ صَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم آمَنَ مَا كَانَ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ‏.‏
হারিসা ইব্‌নু ওয়াহ্‌ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিরাপদ অবস্থায় আমাদেরকে নিয়ে মিনায় দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন।

১০৮৪

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ، يَقُولُ صَلَّى بِنَا عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ ـ رضى الله عنه ـ بِمِنًى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، فَقِيلَ ذَلِكَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ـ رضى الله عنه ـ فَاسْتَرْجَعَ ثُمَّ قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ، وَصَلَّيْتُ مَعَ أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ، وَصَلَّيْتُ مَعَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ، فَلَيْتَ حَظِّي مِنْ أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ رَكْعَتَانِ مُتَقَبَّلَتَانِ‏.‏
ইব্‌রাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবদুর রহমান ইব্‌নু ইয়াযীদ (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘উসমান ইব্‌নু ‘আফ্‌ফান (রাঃ) আমাদেরকে নিয়ে মিনায় চার রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। অতঃপর এ সম্পর্কে ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’উদ (রাঃ)-কে বলা হলো, তিনি প্রথমে ‘ইন্না লিল্লাহ্‌’ পড়লেন, অতঃপর বললেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মিনায় দু’রাক’আত পড়েছি এবং ‘উমর ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)-এর সঙ্গে মিনায় দু’রাক’আত পড়েছি। কতই না ভাল হতো যদি চার রাক’আতের পরিবর্তে দু’রাক’আত মাকবূল সালাত হতো।

১৮/. অধ্যায়ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হজ্জে কত দিন অবস্থান করেছিলেন?

১০৮৫

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ الْبَرَّاءِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ لِصُبْحِ رَابِعَةٍ يُلَبُّونَ بِالْحَجِّ، فَأَمَرَهُمْ أَنْ يَجْعَلُوهَا عُمْرَةً إِلاَّ مَنْ مَعَهُ الْهَدْىُ‏.‏ تَابَعَهُ عَطَاءٌ عَنْ جَابِرٍ‏.‏
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সাহাবীগণ (যুল হিজ্জার) ৪র্থ তারিখ সকালে (মক্কায়) আগমন করেন এবং তাঁরা হাজ্জের জন্য তালবীয়া পাঠ করতে থাকেন। অতঃপর তিনি তাঁদের হাজ্জকে ‘উমরায় পরিণত করার আদেশ দেন। তবে তারা ব্যতীত যাঁদের নিকট হাদী (কুরবানীর পশু) ছিল। হাদীস বর্ণনায় ‘আতা (রহঃ) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

১৮/. অধ্যায়ঃ

কত দিনের সফরে সালাত কসর করবে।
এক দিন ও এক রাতের সফরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফর বলে উল্লেখ করেছেন। ইব্‌ন উমর ও ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) চার ‘বুরদ’ অর্থাৎ ষোল ফারসাখ দূরত্বে কসর করতেন এবং সাওম পালন করতেন না। [১]

[১] এক ফারসাখ হলো- তিন মাইল। - আইনী

১০৮৬

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، قَالَ قُلْتُ لأَبِي أُسَامَةَ حَدَّثَكُمْ عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لاَ تُسَافِرِ الْمَرْأَةُ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ ‏"‏‏.‏
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোন নারীই যেন মাহ্‌রামকে [২] সঙ্গে না নিয়ে তিন দিনের সফর না করে।
 [২] ইসলামের দৃষ্টিতে যাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম এমন পুরুষ ব্যক্তি।

১০৮৭

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لاَ تُسَافِرِ الْمَرْأَةُ ثَلاَثًا إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ ‏"‏‏.‏ تَابَعَهُ أَحْمَدُ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏
‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মহিলার সাথে কোন মাহ্‌রাম পুরুষ না থাকলে, সে যেন তিন দিনের সফর না করে। আহ্‌মাদ (রহঃ)....ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনায় ‘উবাইদুল্লাহ্ (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

১০৮৮

حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ يَحِلُّ لاِمْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ تُسَافِرَ مَسِيرَةَ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ لَيْسَ مَعَهَا حُرْمَةٌ ‏"‏‏.‏ تَابَعَهُ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ وَسُهَيْلٌ وَمَالِكٌ عَنِ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه‏.‏
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে মহিলা আল্লাহ্‌ এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, তার পক্ষে কোন মাহ্‌রাম পুরুষকে সাথে না নিয়ে একদিন ও এক রাত্রির পথ সফর করা জায়িয নয়। ইয়াহ্ইয়া ইব্‌নু আবূ কাসীর সুহায়ল ও মালিক (রহঃ)….হাদীস বর্ণনায় ইব্‌নু আবূ যিব (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

১৮/. অধ্যায়ঃ

যখন নিজ আবাসস্থল হতে বের হবে তখন হতেই কসর করবে।
আলী (রাঃ) বের হওয়ার পরই কসর করলেন । অথচ তাঁকে বলা হল, এ তো কূফা । তিনি বললেন, না, যতক্ষণ পর্যন্ত কূফায় প্রবেশ না করি (ততক্ষন কসর করব)

১০৮৯

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، وَإِبْرَاهِيمَ بْنِ مَيْسَرَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّيْتُ الظُّهْرَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ أَرْبَعًا، وَبِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ‏.‏
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মদীনায় যুহরের সালাত চার রাক’আত আদায় করেছি এবং যুল-হুলাইফায় আসরের সালাত দু’ রাক’আত আদায় করেছি।

১০৯০

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتِ الصَّلاَةُ أَوَّلُ مَا فُرِضَتْ رَكْعَتَيْنِ فَأُقِرَّتْ صَلاَةُ السَّفَرِ، وَأُتِمَّتْ صَلاَةُ الْحَضَرِ‏.‏ قَالَ الزُّهْرِيُّ فَقُلْتُ لِعُرْوَةَ مَا بَالُ عَائِشَةَ تُتِمُّ قَالَ تَأَوَّلَتْ مَا تَأَوَّلَ عُثْمَانُ‏.‏
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় সালাত দু’ রাক’আত করে ফরজ করা হয় অতঃপর সফরে সালাত সেভাবেই স্থায়ী থাকে এবং মুকীম অবস্থায় সালাত পূর্ণ (চার রাক’আত) করা হয়েছে। যুহরী (রহঃ) বলেন, আমি ‘উরওয়াহ (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, (মিনায়) ‘‘আয়িশা (রাঃ) কেন সালাত পূর্ণ আদায় করতেন? তিনি বললেন, ‘উসমান (রাঃ) যে ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন, ‘‘আয়িশা (রাঃ) তা গ্রহণ করেছেন।

১৮/. অধ্যায়ঃ

সফরে মাগরিবের সালাত তিন রাক’আত আদায় করা।

১০৯১

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ فِي السَّفَرِ يُؤَخِّرُ الْمَغْرِبَ حَتَّى يَجْمَعَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ الْعِشَاءِ‏.‏ قَالَ سَالِمٌ وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ يَفْعَلُهُ إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ‏.‏ وَزَادَ اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ سَالِمٌ كَانَ ابْنُ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ يَجْمَعُ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ بِالْمُزْدَلِفَةِ‏.‏ قَالَ سَالِمٌ وَأَخَّرَ ابْنُ عُمَرَ الْمَغْرِبَ، وَكَانَ اسْتُصْرِخَ عَلَى امْرَأَتِهِ صَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ فَقُلْتُ لَهُ الصَّلاَةُ‏.‏ فَقَالَ سِرْ‏.‏ فَقُلْتُ الصَّلاَةُ‏.‏ فَقَالَ سِرْ‏.‏ حَتَّى سَارَ مِيلَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةً ثُمَّ نَزَلَ فَصَلَّى ثُمَّ قَالَ هَكَذَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ‏.‏ وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ يُؤَخِّرُ الْمَغْرِبَ، فَيُصَلِّيهَا ثَلاَثًا ثُمَّ يُسَلِّمُ، ثُمَّ قَلَّمَا يَلْبَثُ حَتَّى يُقِيمَ الْعِشَاءَ فَيُصَلِّيَهَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ يُسَلِّمُ، وَلاَ يُسَبِّحُ بَعْدَ الْعِشَاءِ حَتَّى يَقُومَ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ‏.‏
‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি সফরে ব্যস্ততার কারণে তিনি মাগরিবের সালাত বিলম্বিত করেছেন, এমনকি মাগরিব ও ‘ইশার সালাত একত্রে আদায় করেছেন। সালিম (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সফরের ব্যস্ততার সময় এ রকমই করতেন।

১০৯২

See previous Hadith
অপর এক সূত্রে সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) মুযদালিফায় মাগরিব ও ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন। সালিম (রহঃ) আরও বলেন, ইবনু ‘উমর (রাঃ) তাঁর স্ত্রী সাফিয়্যাহ বিন্‌ত আবূ উবাইদ-এর দুঃসংবাদ পেয়ে মদীনা ফেরার সময় মাগরিবের সালাত বিলম্বিত করেন। আমি তাঁকে বললাম, সালাতের সময় হয়ে গেছে। তিনি বললেন, চলতে থাক। আমি আবার বললাম, সালাত? তিনি বললেন, চলতে থাক। এমনকি দুই বা তিন মাইল অগ্রসর হলেন। অতঃপর নেমে সালাত আদায় করলেন। পরে বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সফরের ব্যস্ততার সময় এমনভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি। ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) আরো বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, সফরে যখনই তাঁর ব্যস্ততা ঘটেছে, তখন তিনি মাগরিবের সালাত (দেরী করে) আদায় করেছেন এবং তা তিন রাক’আতই আদায় করেছেন। মাগরিবের সালাম ফিরিয়ে অল্প দেরি করেই ‘ইশার ইকামত দেয়া হত এবং দু’রাক’আত আদায় করে সালাম ফিরাতেন। কিন্তু ‘ইশার পরে গভীর রাত না হওয়া পর্যন্ত (নফল) সালাত আদায় করতেন না।

১৮/. অধ্যায়ঃ

সাওয়ারীর উপরে সাওয়ারী যে দিকে মুখ করে থাকবে সেদিকে ফিরে নফল সালাত আদায় করা।

১০৯৩

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، قَالَ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُ تَوَجَّهَتْ بِهِ
‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, তাঁর সাওয়ারী যে দিকেই ফিরেছে, তিনি সে দিকেই সালাত আদায় করেছেন।

১০৯৪

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي التَّطَوُّعَ وَهْوَ رَاكِبٌ فِي غَيْرِ الْقِبْلَةِ‏.‏
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ার অবস্থায় ক্বিব্‌লা ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে নফল সালাত আদায় করেছেন।

১০৯৫

حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ وَيُوتِرُ عَلَيْهَا، وَيُخْبِرُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَفْعَلُهُ‏.‏
নাফি‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তাঁর সওয়ারীর উপর (নফল) সালাত আদায় করতেন এবং এর উপর বিত্‌রও আদায় করতেন। তিনি বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন করতেন।

১৮/. অধ্যায়ঃ

জন্তুর উপর ইঙ্গিতে সালাত আদায় করা।

১০৯৬

حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دِينَارٍ، قَالَ كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ يُصَلِّي فِي السَّفَرِ عَلَى رَاحِلَتِهِ، أَيْنَمَا تَوَجَّهَتْ يُومِئُ‏.‏ وَذَكَرَ عَبْدُ اللَّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَفْعَلُهُ‏.‏
‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু দীনার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সফরে সওয়ারী যে দিকেই ফিরেছে সে দিকেই মুখ ফিরে ইঙ্গিতে সালাত আদায় করতেন এবং ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন করতেন।

১৮/. অধ্যায়ঃ

ফরজ সালাতের সওয়ারী হতে অবতরণ করা।

১০৯৭

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، أَنَّ عَامِرَ بْنَ رَبِيعَةَ، أَخْبَرَهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ عَلَى الرَّاحِلَةِ يُسَبِّحُ، يُومِئُ بِرَأْسِهِ قِبَلَ أَىِّ وَجْهٍ تَوَجَّهَ، وَلَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ ذَلِكَ فِي الصَّلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ‏.‏
‘আমির ইব্‌নু রাবী’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, তিনি সওয়ারীতে উপবিষ্ট অবস্থায় মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করে সে দিকেই সালাত আদায় করতেন যে দিকে সওয়ারী ফিরত। কিন্তু আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরজ সালাতে এমন করতেন না।

১০৯৮

وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ قَالَ سَالِمٌ كَانَ عَبْدُ اللَّهِ يُصَلِّي عَلَى دَابَّتِهِ مِنَ اللَّيْلِ وَهْوَ مُسَافِرٌ، مَا يُبَالِي حَيْثُ مَا كَانَ وَجْهُهُ‏.‏ قَالَ ابْنُ عُمَرَ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُسَبِّحُ عَلَى الرَّاحِلَةِ قِبَلَ أَىِّ وَجْهٍ تَوَجَّهَ، وَيُوتِرُ عَلَيْهَا، غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يُصَلِّي عَلَيْهَا الْمَكْتُوبَةَ‏.‏
সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) সফরকালে রাতের বেলায় সওয়ারীর উপর থাকা অবস্থায় সালাত আদায় করতেন, কোন্ দিকে তাঁর মুখ রয়েছে সে দিকে লক্ষ্য করতেন না এবং ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীর উপর নফল সালাত আদায় করেছেন, সওয়ারী যে দিকে মুখ ফিরিয়েছে সে দিকেই এবং তার উপর বিত্‌রও আদায় করেছেন। কিন্তু সওয়ারীর উপর ফরজ সালাত আদায় করতেন না।

১০৯৯

حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ ثَوْبَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يُصَلِّيَ الْمَكْتُوبَةَ نَزَلَ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ‏.‏
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীর উপর পূর্ব দিক ফিরেও সালাত আদায় করেছেন। কিন্তু যখন তিনি ফরজ সালাত আদায় করার ইচ্ছা করতেন, তখন তিনি সওয়ারী হতে অবতরণ করতেন এবং ক্বিব্‌লামুখী হতেন।

১৮/১০. অধ্যায়ঃ

গাধার উপর (সওয়ার হয়ে) নফল সালাত আদায় করা। [১]
[১] প্রাণীর উপর সাওয়ার অবস্থায় ক্বিব্‌লার দিক থেকে অন্য দিকে মুখ ঘুরে গেলে সে অবস্থায় সালাত আদায় করা যাবে কিন্তু ফরজ সালাত নয়।

১১০০

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَبَّانُ، قَالَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ اسْتَقْبَلْنَا أَنَسًا حِينَ قَدِمَ مِنَ الشَّأْمِ، فَلَقِينَاهُ بِعَيْنِ التَّمْرِ، فَرَأَيْتُهُ يُصَلِّي عَلَى حِمَارٍ وَوَجْهُهُ مِنْ ذَا الْجَانِبِ، يَعْنِي عَنْ يَسَارِ الْقِبْلَةِ‏.‏ فَقُلْتُ رَأَيْتُكَ تُصَلِّي لِغَيْرِ الْقِبْلَةِ‏.‏ فَقَالَ لَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَلَهُ لَمْ أَفْعَلْهُ‏.‏ رَوَاهُ ابْنُ طَهْمَانَ عَنْ حَجَّاجٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ سِيرِينَ عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏
আনাস ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) যখন সিরিয়া হতে ফিরে আসছিলেন, তখন আমার তাঁকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য এগিয়ে এসেছিলাম। আইনুত্ তাম্‌র (নামক) স্থানে আমরা তাঁর সাক্ষাৎ পেলাম। তখন আমি তাঁকে গাধার পিঠে (আরোহী অবস্থায়) সামনের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করছেন। অর্থাৎ ক্বিব্‌লার বাম দিকে মুখ করে। তখন তাঁকে আমি প্রশ্ন করলাম, আপনাকে তো দেখলাম ক্বিব্‌লা ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেছেন? তিনি বললেন, যদি আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এমন করতে না দেখতাম, তবে আমিও তা করতাম না।

No comments

Powered by Blogger.