সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "মাগাযী" হাদিস নং - ৪৪০১ থেকে ৪৪৭৩
৪৪০১
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ
وَأَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُمَا أَنَّ صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَيٍّ زَوْجَ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم حَاضَتْ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم أَحَابِسَتُنَا هِيَ فَقُلْتُ إِنَّهَا قَدْ أَفَاضَتْ يَا رَسُوْلَ
اللهِ وَطَافَتْ بِالْبَيْتِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلْتَنْفِرْ.
নাবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ' আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী হুয়াই-এর কন্যা সাফিয়া (রাঃ)
বিদায় হাজ্জের সময় ঋতুবতী হয়ে পড়েন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, সে কি আমাদের (মাদীনাহ প্রত্যাবর্তনে) বাধা হয়ে দাঁড়াল? তখন আমি বললাম, হে
আল্লাহ্র রসূল! তিনি তো তওয়াফে যিয়ারাহ্ করে নিয়েছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে সেও রওয়ানা করুক। [২৯৪] (আ.প্র. ৪০৫২, ই.ফা.
৪০৫৬)
৪৪০২
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ
قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَنَّ
أَبَاهُ حَدَّثَهُ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا
نَتَحَدَّثُ بِحَجَّةِ الْوَدَاعِ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ
أَظْهُرِنَا وَلَا نَدْرِيْ مَا حَجَّةُ الْوَدَاعِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى
عَلَيْهِ ثُمَّ ذَكَرَ الْمَسِيْحَ الدَّجَّالَ فَأَطْنَبَ فِيْ ذِكْرِهِ وَقَالَ
مَا بَعَثَ اللهُ مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا أَنْذَرَ أُمَّتَهُ أَنْذَرَهُ نُوْحٌ
وَالنَّبِيُّوْنَ مِنْ بَعْدِهِ وَإِنَّهُ يَخْرُجُ فِيْكُمْ فَمَا خَفِيَ
عَلَيْكُمْ مِنْ شَأْنِهِ فَلَيْسَ يَخْفَى عَلَيْكُمْ أَنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ
عَلَى مَا يَخْفَى عَلَيْكُمْ ثَلَاثًا إِنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ بِأَعْوَرَ
وَإِنَّهُ أَعْوَرُ عَيْنِ الْيُمْنَى كَأَنَّ عَيْنَهُ
ইবনু
'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে উপস্থিত থাকাবস্থায়
আমরা বিদায় হাজ্জ সম্পর্কে আলোচনা করতাম। আর আমরা বিদায় হাজ্জ কাকে বলে তা জানতাম
না। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র প্রশংসা ও
মহিমা বর্ণনা করেন। তারপর তিনি মাসীহ্ দাজ্জাল সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা করেন এবং
বলেন, আল্লাহ এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি যিনি তাঁর উম্মতকে (দাজ্জাল সম্পর্কে)
সতর্ক করেননি। নূহ (আঃ) এবং তাঁর পরবর্তী নাবীগণও তাঁদের উম্মতগণকে এ সম্পর্কে
সতর্ক করেছেন। সে তোমাদের মধ্যে প্রকাশিত হবে। তার অবস্থা তোমাদের নিকট অপ্রকাশিত
থাকবে না। তোমাদের কাছে এও অস্পষ্ট নয় যে, তোমাদের রব কানা নন। আর দাজ্জালের ডান
চোখ কানা হবে। যেন তার চোখ একটি ফোলা আঙ্গুর। [৩০৫৭] (আ.প্র. ৪০৫৩, ই.ফা. ৪০৫৮)
৪৪০৩
أَلَا إِنَّ اللهَ
حَرَّمَ عَلَيْكُمْ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِيْ
بَلَدِكُمْ هَذَا فِيْ شَهْرِكُمْ هَذَا أَلَا هَلْ بَلَّغْتُ قَالُوْا نَعَمْ
قَالَ اللهُمَّ اشْهَدْ ثَلَاثًا وَيْلَكُمْ أَوْ وَيْحَكُمْ انْظُرُوْا لَا
تَرْجِعُوْا بَعْدِيْ كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ.
বর্ণনাকারী
থেকে বর্ণিতঃ
তোমরা
সতর্ক থাক। আজকের এ দিনের মত, এ শহরের মত এবং এ মাসের মতো আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের
রক্তকে ও তোমাদের সম্পদকে তোমাদের উপর হারাম করেছেন। বল তো, আমি কি আল্লাহর পয়গাম
পৌঁছে দিয়েছি। সমবেত সকলে বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী
থাকুন। এ কথা তিনবার বললেন, (তারপর বললেন), তোমাদের জন্য পরিতাপ অথবা তিনি বললেন,
তোমাদের জন্য আফসোস, সতর্ক থেকো, আমার পরে তোমরা কুফরের দিকে ফিরে যেয়ো না যে, একে
অন্যের গর্দান মারবে। [১৭৪২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৫৮)
৪৪০৪
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ
حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ حَدَّثَنِيْ زَيْدُ بْنُ
أَرْقَمَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم غَزَا تِسْعَ عَشْرَةَ غَزْوَةً
وَأَنَّهُ حَجَّ بَعْدَ مَا هَاجَرَ حَجَّةً وَاحِدَةً لَمْ يَحُجَّ بَعْدَهَا
حَجَّةَ الْوَدَاعِ قَالَ أَبُوْ إِسْحَاقَ وَبِمَكَّةَ أُخْرَى.
যায়দ
ইবনু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঊনিশটি যুদ্ধে স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। আর
হিজরাতের পর তিনি হাজ্জ আদায় করেন মাত্র একটি হাজ্জে। এরপর তিনি আর কোন হাজ্জ আদায়
করেননি এবং তা হল বিদায় হাজ্জ। আবূ ইসহাক (রহঃ) বলেন, মক্কায় অবস্থানকালে তিনি
আরেকটি হাজ্জ করেছিলেন। [৩৯৪৯] (আ.প্র. ৪০৫৪, ই.ফা. ৪০৫৮)
৪৪০৫
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ بْنِ
عَمْرِو بْنِ جَرِيْرٍ عَنْ جَرِيْرٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ لِجَرِيْرٍ اسْتَنْصِتْ النَّاسَ فَقَالَ لَا تَرْجِعُوْا
بَعْدِيْ كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ.
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জারীর (রাঃ)- কে বিদায় হাজ্জে বললেন, লোকজনকে
চুপ থাকতে বল। তারপর বললেন, আমার ইন্তিকালের পর তোমরা কুফরীর দিকে ফিরে যেয়ো না
যে, একে অন্যের গর্দান উড়াবে। [১২১] (আ.প্র. ৪০৫৫, ই.ফা. ৪০৫৯)
৪৪০৬
مُحَمَّدُ بْنُ
الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدٍ
عَنْ ابْنِ أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ الزَّمَانُ قَدْ اسْتَدَارَ كَهَيْئَةِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ
وَالأَرْضَ السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ثَلَاثَةٌ
مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ وَرَجَبُ مُضَرَ
الَّذِيْ بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ أَيُّ شَهْرٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ
وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيْهِ بِغَيْرِ
اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ ذُو الْحِجَّةِ قُلْنَا بَلَى قَالَ فَأَيُّ بَلَدٍ هَذَا
قُلْنَا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ
سَيُسَمِّيْهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ الْبَلْدَةَ قُلْنَا بَلَى قَالَ
فَأَيُّ يَوْمٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى
ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيْهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ يَوْمَ النَّحْرِ
قُلْنَا بَلَى قَالَ فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ قَالَ مُحَمَّدٌ
وَأَحْسِبُهُ قَالَ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ
هَذَا فِيْ بَلَدِكُمْ هَذَا فِيْ شَهْرِكُمْ هَذَا وَسَتَلْقَوْنَ رَبَّكُمْ
فَسَيَسْأَلُكُمْ عَنْ أَعْمَالِكُمْ أَلَا فَلَا تَرْجِعُوْا بَعْدِيْ ضُلَّالًا
يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ أَلَا لِيُبَلِّغْ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ
فَلَعَلَّ بَعْضَ مَنْ يُبَلَّغُهُ أَنْ يَكُوْنَ أَوْعَى لَهُ مِنْ بَعْضِ مَنْ
سَمِعَهُ فَكَانَ مُحَمَّدٌ إِذَا ذَكَرَهُ يَقُوْلُ صَدَقَ مُحَمَّدٌ صلى الله
عليه وسلم ثُمَّ قَالَ أَلَا هَلْ بَلَّغْتُ مَرَّتَيْنِ.
আবূ
বাক্রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সময় ও কাল আবর্তিত হয়
নিজ চক্রে। যেদিন থেকে আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এক বছর হয় বার মাসে। এর
মধ্যে চার মাস সন্মানিত। তিনমাস ক্রমান্বয়ে আসে-যেমন যিলকদ, যিলহাজ্জ ও মুহার্রম
এবং রজব মুদার বা জমাদিউল আখির ও শাবান মাসের মাঝে হয়ে থাকে। (এরপর তিনি প্রশ্ন
করলেন) এটি কোন্ মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-ই অধিক জানেন। এরপর তিনি চুপ থাকলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো
তিনি এ মাসের অন্য কোন নাম রাখবেন। (তারপর) তিনি বললেন, এ কি যিলহাজ্জ মাস নয়?
আমরা বললামঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও
তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই অধিক জানেন। তারপর তিনি চুপ
থাকলেন। আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো তিনি এ শহরের অন্য কোন নাম রাখবেন। তারপর তিনি
বললেন,এটি কি (মক্কাহ্) শহর নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এটি
কোন্ দিন? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল-ই ভাল জানেন। তারপর তিনি চুপ থাকলেন।
এতে আমরা মনে করলাম যে, তিনি এ দিনটির অন্য কোন নামকরণ করবেন। তারপর তিনি বললেন,
এটি কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের রক্ত
তোমাদের সম্পদ। রাবী মুহাম্মাদ বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি আরও বলেছিলেন, তোমাদের
মান-ইজ্জত- তোমাদের উপর পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর
ও তোমাদের এই মাস। তোমরা শীঘ্রই তোমাদের রবের সঙ্গে মিলিত হবে। তখন তিনি তোমাদের
কাজ-কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। খবরদার! তোমরা আমার ইন্তিকালের পরে পথভ্রষ্ট
হয়ে পড়ো না যে, একে অন্যের গর্দান উড়াবে। শোন, তোমাদের উপস্থিত ব্যক্তি অনুপস্থিত
ব্যক্তিকে আমার পয়গাম পৌঁছে দেবে। অনেক সময় যে প্রত্যক্ষভাবে শ্রবণ করেছে তার
থেকেও তার মাধ্যমে খবর-পাওয়া ব্যক্তি অধিকতর সংরক্ষণকারী হয়ে থাকে। রাবী মুহাম্মাদ
[ইবনু সীরীন (রহঃ)] যখনই এ হাদীস বর্ণনা করতেন তখন তিনি বলতেন-মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যই বলেছেন। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা শোন, আমি কি (আল্লাহ্র পায়গাম) পৌঁছিয়ে
দিয়েছি? এভাবে দু'বার বললেন। [মুসলিম ২৮/৯, হাঃ ১৬৭৯, আহমাদ ২০৪০৮] (আ.প্র. ৪০৫৬,
ই.ফা. ৪০৬০)
৪৪০৭
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ
شِهَابٍ أَنَّ أُنَاسًا مِنَ الْيَهُوْدِ قَالُوْا لَوْ نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ
فِيْنَا لَاتَّخَذْنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ عِيْدًا فَقَالَ عُمَرُ أَيَّةُ آيَةٍ
{فَقَالُوا الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ
نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمْ الْإِسْلَامَ دِيْنًا} فَقَالَ عُمَرُ إِنِّيْ
لَأَعْلَمُ أَيَّ مَكَانٍ أُنْزِلَتْ أُنْزِلَتْ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم وَاقِفٌ بِعَرَفَةَ.
ত্বরিক
ইবনু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদল
ইয়াহূদী বলল, যদি এ আয়াত আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হত, তাহলে আমরা উক্ত অবতরণের দিনকে
‘ঈদের দিন হিসেবে উদযাপন করতাম। তখন ‘উমার (রাঃ) তাদের জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ আয়াত?
তারা বলল, এই আয়াতঃ فَقَالُوا الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمْ الإِسْلَامَ دِيْنًا
‘‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন (জীবন-বিধান)-কে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম এবং
তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামাত পরিপূর্ণ করলাম’’- (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৩)। তখন ‘উমার
(রাঃ) বললেন, কোন্ স্থানে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছিল তা আমি জানি। এ আয়াত অবতীর্ণ
হওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাহ্য় দন্ডায়মান
অবস্থায় ছিলেন। [৪৫, ৬৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৬১)
৪৪০৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ أَبِي الْأَسْوَدِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ نَوْفَلٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا
قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمِنَّا مَنْ أَهَلَّ
بِعُمْرَةٍ وَمِنَّا مَنْ أَهَلَّ بِحَجَّةٍ وَمِنَّا مَنْ أَهَلَّ بِحَجٍّ
وَعُمْرَةٍ وَأَهَلَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالْحَجِّ فَأَمَّا مَنْ
أَهَلَّ بِالْحَجِّ أَوْ جَمَعَ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَلَمْ يَحِلُّوْا حَتَّى
يَوْمِ النَّحْرِ.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ وَقَالَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا مَالِكٌ مِثْلَهُ.
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ وَقَالَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا مَالِكٌ مِثْلَهُ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন,আমরা (মাদীনাহ মুনাওয়ারা থেকে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ 'উমরাহ্র ইহ্রাম
বেঁধেছিলেন আর কেউ কেউ হাজ্জের ইহ্রাম, আবার কেউ কেউ হজ্জ ও 'উমরাহ্ উভয়ের ইহ্রাম
বেঁধেছিলেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজ্জের ইহ্রাম
বেঁধেছিলেন। যাঁরা শুধু হাজ্জের ইহ্রাম বেঁধেছিলেন অথবা হাজ্জ ও 'উমরাহ্র ইহ্রাম
একসঙ্গে বেঁধেছিলেন, তারা কুরবানীর দিনের পূর্বে হালাল হতে পারেননি। (আ.প্র. ৪০৫৮,
ই.ফা. ৪০৬২)
মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি উপরোক্ত হাদীসটিকে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বিদায় হাজ্জকালীন সময়ে। [২৯৪] (আ.প্র. ৪০৫৯, ই.ফা. ৪০৬৩)
ইসমা'ঈল (রহঃ) সূত্রেও মালিক (রহঃ) থেকে এভাবে বর্ণিত আছে। (আ.প্র. ৪০৬০, ই.ফা. ৪০৬৩)
মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি উপরোক্ত হাদীসটিকে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বিদায় হাজ্জকালীন সময়ে। [২৯৪] (আ.প্র. ৪০৫৯, ই.ফা. ৪০৬৩)
ইসমা'ঈল (রহঃ) সূত্রেও মালিক (রহঃ) থেকে এভাবে বর্ণিত আছে। (আ.প্র. ৪০৬০, ই.ফা. ৪০৬৩)
৪৪০৯
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ هُوَ ابْنُ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ
عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ عَادَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ وَجَعٍ أَشْفَيْتُ مِنْهُ عَلَى الْمَوْتِ فَقُلْتُ
يَا رَسُوْلَ اللهِ بَلَغَ بِيْ مِنَ الْوَجَعِ مَا تَرَى وَأَنَا ذُوْ مَالٍ
وَلَا يَرِثُنِيْ إِلَّا ابْنَةٌ لِيْ وَاحِدَةٌ أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ
مَالِيْ قَالَ لَا قُلْتُ أَفَأَتَصَدَّقُ بِشَطْرِهِ قَالَ لَا قُلْتُ
فَالثُّلُثِ قَالَ وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ
أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُوْنَ النَّاسَ
وَلَسْتَ تُنْفِقُ نَفَقَةً تَبْتَغِيْ بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا أُجِرْتَ بِهَا
حَتَّى اللُّقْمَةَ تَجْعَلُهَا فِيْ فِي امْرَأَتِكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ
آأُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِيْ قَالَ إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلًا
تَبْتَغِيْ بِهِ وَجْهَ اللهِ إِلَّا ازْدَدْتَ بِهِ دَرَجَةً وَرِفْعَةً
وَلَعَلَّكَ تُخَلَّفُ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُوْنَ
اللهُمَّ أَمْضِ لِأَصْحَابِيْ هِجْرَتَهُمْ وَلَا تَرُدَّهُمْ عَلَى
أَعْقَابِهِمْ لَكِنْ الْبَائِسُ سَعْدُ بْنُ خَوْلَةَ رَثَى لَهُ رَسُوْلُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم أَنْ تُوُفِّيَ بِمَكَّةَ.
সা'দ
(ইবনু আবূ ওয়াক্কাস) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, বিদায় হাজ্জের সময় আমি বেদনার কারনে মরণ রোগে আক্রান্ত হলে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে এলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র
রসূল! আমার রোগ যে মারাত্মক হয়ে গেছে তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। আমি একজন সম্পদশালী
লোক কিন্তু আমার একমাত্র কন্যা ব্যতীত অন্য কোন উত্তরাধিকারী নেই। কাজেই আমি কি
আমার সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ সদাকাহ করে দেব? তিনি বললেন, 'না'। আমি জিজ্ঞেস
করলাম, তবে কি আমি সম্পদের অর্ধেক সদাকাহ করে দেব? তিনি বললেন, 'না'। আমি বললাম,
তাহলে এক-তৃতীয়াংশ, তখন তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশই ঢের। তুমি যদি তোমার
উত্তরাধিকারীদের সচ্ছল অবস্থায় ছেড়ে যাও তবে তা তাদেরকে অভাবী অবস্থায় রেখে যাওয়ার
চেয়ে উত্তম-যাতে তারা মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়াবে। আর তুমি যা-ই আল্লাহ্র
সন্তুষ্টির নিমিত্ত খরচ কর, তার বিনিময়ে তোমাকে প্রতিদান দেয়া হবে। এমনকি যে লোকমা
তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে ধর তারও। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি কি আমার
সাথীদের পিছনে পড়ে থাকব? তিনি বললেন, তোমাকে কক্ষণো পেছনে ছেড়ে যাওয়া হবে না, আর
(তুমি পিছনে পড়ে গেলেও) আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে 'আমাল করবে তা দ্বারা
তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে ও সমুন্নত হবে। সম্ভবত তুমি আরো জীবিত থাকবে। ফলে তোমার
দ্বারা এক সম্প্রদায় উপকৃত হবে। অন্য সম্প্রদায় (মুসলিমরা) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে
আল্লাহ! আমার সহাবীদের হিজরাত আপনি জারী রাখুন এবং তাদের পিছনের দিকে ফিরিয়ে দিবেন
না। কিন্তু আফসোস সা'দ ইবনু খাওলা (রাঃ)-এর জন্য, (রাবী বলেন) মক্কায় তার মৃত্যু
হওয়ায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মনে কষ্ট পেয়েছিলেন।
[৫৬](আ.প্র. ৪০৬১, ই.ফা. ৪০৬৪)
৪৪১০
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ
الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَبُوْ ضَمْرَةَ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ
نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُمْ أَنَّ رَسُوْلَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم حَلَقَ رَأْسَهُ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ.
নাফি'
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু
'উমার (রাঃ) তাঁদেরকে অবহিত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বিদায় হাজ্জে তাঁর মাথা মুণ্ডন করেছিলেন। [১৭২৬](আ.প্র. ৪০৬২, ই.ফা.
৪০৬৫)
৪৪১১
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ
سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ
أَخْبَرَنِيْ مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ أَخْبَرَهُ ابْنُ عُمَرَ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حَلَقَ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَأُنَاسٌ مِنْ
أَصْحَابِهِ وَقَصَّرَ بَعْضُهُمْ.
নাফি'
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু
'উমার (রাঃ) তাঁকে অবহিত করেন যে, বিদায় হাজ্জে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এবং তাঁর সহাবীদের অনেকেই মাথা মুণ্ডন করেন আর তাঁদের কেউ কেউ মাথার চুল
ছেটেঁ ফেলেন। [১৭২৬](আ.প্র. ৪০৬৩, ই.ফা. ৪০৬৬)
৪৪১২
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ
حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ
عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ
اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ أَقْبَلَ يَسِيْرُ
عَلَى حِمَارٍ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ بِمِنًى فِيْ حَجَّةِ
الْوَدَاعِ يُصَلِّيْ بِالنَّاسِ فَسَارَ الْحِمَارُ بَيْنَ يَدَيْ بَعْضِ
الصَّفِّ ثُمَّ نَزَلَ عَنْهُ فَصَفَّ مَعَ النَّاسِ.
আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
গাধায় চড়ে রওয়ানা হন এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায়
হাজ্জকালে মিনায় দাঁড়িয়ে লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করছিলেন। তখন গাধাটি সলাতের একটি
কাতারের সামনে এসে পড়ে। এরপর তিনি গাধার পিঠ থেকে নেমে পড়েন এবং তিনি লোকদের সঙ্গে
সলাতের কাতারে সামিল হন। [৭৬] (আ.প্র. ৪০৬৪, ই.ফা. ৪০৬৭)
৪৪১৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا
يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ قَالَ سُئِلَ أُسَامَةُ وَأَنَا
شَاهِدٌ عَنْ سَيْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّتِهِ فَقَالَ
الْعَنَقَ فَإِذَا وَجَدَ فَجْوَةً نَصَّ.
হিশামের
পিতা ['উরওয়াহ (রহঃ)] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার উপস্থিতিতে উসামাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
বিদায় হাজ্জের সওয়ারী চালনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে বললেন, মধ্যম গতিতে চলেছেন
আবার প্রশস্ত পথ পেলে দ্রুতগতিতে চলেছেন। [১৬৬৬] (আ.প্র. ৪০৬৫, ই.ফা. ৪০৬৮)
৪৪১৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَزِيْدَ الْخَطْمِيِّ أَنَّ أَبَا أَيُّوْبَ أَخْبَرَهُ
أَنَّهُ صَلَّى مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
الْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيْعًا.
আবূ
আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বিদায় হাজ্জে
(মুযদালিফায়) মাগরিব ও ঈশার সলাত এক সঙ্গে আদায় করেছেন। [৮৫] [১৬৭৪] (আ.প্র. ৪০৬৬,
ই.ফা. ৪০৬৯)
[৮৫]
সফরের অবস্থায় দু ওয়াক্তের সলাত আদায় করলে কসর সহ করতে হবে। মুকীম অবস্থায় বৃষ্টি বাদল,
যে কোন শংকা, কিংবা অসুবিধা সৃষ্টিকারী কারণে দু ওয়াক্তের সলাতকে জমা করে আদায় করলে
সলাতের রাক'আত সংখ্যা পূর্ণ আদায় করতে হবে।
ইব্নু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আট রাক'আত একত্রে (যুহ্র ও আসরের) এবং সাত রাক'আত একত্রে (মাগরিব-'ইশার) সলাত আদায় করেছি। (বুখারী পর্ব ১৯: /৩০ হাঃ ১১৭৪, মুসলিম হাঃ, লুলু ওয়াল মারজান হাদীস নং ৪১১)
ইব্নু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আট রাক'আত একত্রে (যুহ্র ও আসরের) এবং সাত রাক'আত একত্রে (মাগরিব-'ইশার) সলাত আদায় করেছি। (বুখারী পর্ব ১৯: /৩০ হাঃ ১১৭৪, মুসলিম হাঃ, লুলু ওয়াল মারজান হাদীস নং ৪১১)
৬৪/৭৯.অধ্যায়ঃ
তাবূক [৮৬]-এর যুদ্ধ-আর তা
হল কষ্টকর যুদ্ধ
[৮৬] একটি যাত্রীদল সিরিয়া
হতে এসে জানালো যে, রোমক সম্রাট হিরাক্লিয়াস মাদীনা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরবের নহম, জুযাম, আমিলাহ, গাসসান প্রভৃতি খৃষ্টান গোত্রগুলি তাদের সাথে মিলিত
হয়েছে। মুতা যুদ্ধে হিরাক্লিয়াসের অধীনস্থ শাসনকর্তার পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণই যেন
এই অভিযানে উদ্দেশ্য ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন
যে, এই আক্রমণমুখী শত্রু বাহিনী আরবের নিজস্ব যমীনে প্রবেশ করার পূর্বেই তাদেরকে
প্রতিহত করতে হবে যাতে দেশে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় বাধা সৃষ্টি না হয়। এই মুকাবালা
এমন সম্রাটের বিরুদ্ধে ছিল, যে সে সময় অর্ধ পৃথিবীর শাসনকর্তা ছিল এবং যে বাহিনী
তখনই ইরান সাম্রাজ্যকে পদানত করে ফেলেছিল।
মুসলিমদের অস্ত্রশস্ত্র যানবাহন ও রসদাদির অত্যন্ত অভাব ছিল। তার উপর রৌদ্র ও গ্রীষ্মের ছিল ভীষণ প্রকোপ। মাদীনায় ফল পেকে গিয়েছিল। সুতরাং তখন ছিল ফল খাওয়া ও ছায়ায় বসে থাকার দিন।
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রসদ সংগ্রহের জন্য যে সাধারণ চাঁদার তহবিল খুললেন, তাতে 'উসমান (রাঃ) ৯০০ উট, ১০০ ঘোড়া, এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা দান করলেন, তাকে মুজহেযু জায়শিল উসরাহ অর্থাৎ অভাবগ্রস্ত ও ক্ষুধার্ত সেনাবাহিনীর রসদ প্রস্তুতকারী উপাধী দেয়া হলো। 'আবদুর রহমান বিন 'আওফ দিলেন চল্লিশ হাজার রৌপ্য মুদ্রা। 'উমার ফারুক (রাঃ) দিলেন সমস্ত গৃহের অর্ধেক যা কয়েক হাজার মুদ্রা ছিল। আবূ বাক্র (রাঃ) যা কিছু আনলেন তা মূল্যের দিক দিয়ে নিতান্ত কম হলেও জানা গেল তিনি বাড়িতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের মহব্ব্ত ছাড়া আর কিছুই রেখে আসেননি। আবূ উফায়েল আনসারী (রাঃ) সারা রাত ধরে একটি জমিতে পানি দিয়ে চার সের খেজুর পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলেন তা থেকে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের জন্য দুই সের রেখে বাকী দুই সের দিয়ে দিলেন। রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, খেজুরগুলোকে সমস্ত মাল ও রসদের উপর ছিটিয়ে দাও। প্রায় ৮২ জন লোক যারা টালবাহানা করে বাড়িতে রয়ে গিয়েছিল, প্রসিদ্ধ মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনু 'উবাই ইবনু সালূল ঐ লোকগুলোকে এ কথা বলে শান্ত করেছিল যে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তার সঙ্গী সাথীরা আর মাদীনাহ্তে ফিরে আসতে পারবে না। রোমক সম্রাট হিরাক্লিয়াস তাদেরকে বন্দী করে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দিবে।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ত্রিশ হাজারের একটি বাহিনী নিয়ে তাবূক অভিমুখে যাত্রা করলেন। সেনাবাহিনীতে যানবাহনের স্বল্পতা ছিল, ১৮ জন লোকের জন্য একটি উট নির্ধারিত ছিল। রসদপত্র না থাকার কারণে অধিকাংশ জায়গায় গাছের পাতা খেতে হয়। ফলে ঠোঁটে ক্ষত হয়ে যায়। কোন কোন জায়গায় পানি পাওয়াই যাইনি। এক্ষেত্রে উট যবহ করে তার পকস্থলির পানি পান করা হয়। অসীম সহনশীলতা ও ধৈর্যের সাথে সমস্থ দুঃখ কষ্ট সহ্য করে তাবূক পৌঁছে যান। তথায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাস অবস্থান করেন। সিরিয়াবাসীর উপর এটার এমন প্রভাব পড়ে যে, তারা ঐ সমস্ত আরবের উপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা ত্যাগ করে এবং আক্রমণ করার সুবর্ণ সুযোগ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইনতিকালের পরবর্তী সময়ে ঠিক করে। (রহমাতুল লিল 'আলামীন)
মুসলিমদের অস্ত্রশস্ত্র যানবাহন ও রসদাদির অত্যন্ত অভাব ছিল। তার উপর রৌদ্র ও গ্রীষ্মের ছিল ভীষণ প্রকোপ। মাদীনায় ফল পেকে গিয়েছিল। সুতরাং তখন ছিল ফল খাওয়া ও ছায়ায় বসে থাকার দিন।
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রসদ সংগ্রহের জন্য যে সাধারণ চাঁদার তহবিল খুললেন, তাতে 'উসমান (রাঃ) ৯০০ উট, ১০০ ঘোড়া, এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা দান করলেন, তাকে মুজহেযু জায়শিল উসরাহ অর্থাৎ অভাবগ্রস্ত ও ক্ষুধার্ত সেনাবাহিনীর রসদ প্রস্তুতকারী উপাধী দেয়া হলো। 'আবদুর রহমান বিন 'আওফ দিলেন চল্লিশ হাজার রৌপ্য মুদ্রা। 'উমার ফারুক (রাঃ) দিলেন সমস্ত গৃহের অর্ধেক যা কয়েক হাজার মুদ্রা ছিল। আবূ বাক্র (রাঃ) যা কিছু আনলেন তা মূল্যের দিক দিয়ে নিতান্ত কম হলেও জানা গেল তিনি বাড়িতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের মহব্ব্ত ছাড়া আর কিছুই রেখে আসেননি। আবূ উফায়েল আনসারী (রাঃ) সারা রাত ধরে একটি জমিতে পানি দিয়ে চার সের খেজুর পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলেন তা থেকে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের জন্য দুই সের রেখে বাকী দুই সের দিয়ে দিলেন। রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, খেজুরগুলোকে সমস্ত মাল ও রসদের উপর ছিটিয়ে দাও। প্রায় ৮২ জন লোক যারা টালবাহানা করে বাড়িতে রয়ে গিয়েছিল, প্রসিদ্ধ মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনু 'উবাই ইবনু সালূল ঐ লোকগুলোকে এ কথা বলে শান্ত করেছিল যে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তার সঙ্গী সাথীরা আর মাদীনাহ্তে ফিরে আসতে পারবে না। রোমক সম্রাট হিরাক্লিয়াস তাদেরকে বন্দী করে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দিবে।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ত্রিশ হাজারের একটি বাহিনী নিয়ে তাবূক অভিমুখে যাত্রা করলেন। সেনাবাহিনীতে যানবাহনের স্বল্পতা ছিল, ১৮ জন লোকের জন্য একটি উট নির্ধারিত ছিল। রসদপত্র না থাকার কারণে অধিকাংশ জায়গায় গাছের পাতা খেতে হয়। ফলে ঠোঁটে ক্ষত হয়ে যায়। কোন কোন জায়গায় পানি পাওয়াই যাইনি। এক্ষেত্রে উট যবহ করে তার পকস্থলির পানি পান করা হয়। অসীম সহনশীলতা ও ধৈর্যের সাথে সমস্থ দুঃখ কষ্ট সহ্য করে তাবূক পৌঁছে যান। তথায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাস অবস্থান করেন। সিরিয়াবাসীর উপর এটার এমন প্রভাব পড়ে যে, তারা ঐ সমস্ত আরবের উপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা ত্যাগ করে এবং আক্রমণ করার সুবর্ণ সুযোগ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইনতিকালের পরবর্তী সময়ে ঠিক করে। (রহমাতুল লিল 'আলামীন)
৪৪১৫
مُحَمَّدُ بْنُ
الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ
أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
قَالَ أَرْسَلَنِيْ أَصْحَابِيْ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
أَسْأَلُهُ الْحُمْلَانَ لَهُمْ إِذْ هُمْ مَعَهُ فِيْ جَيْشِ الْعُسْرَةِ وَهِيَ
غَزْوَةُ تَبُوْكَ فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللهِ إِنَّ أَصْحَابِيْ أَرْسَلُوْنِيْ
إِلَيْكَ لِتَحْمِلَهُمْ فَقَالَ وَاللهِ لَا أَحْمِلُكُمْ عَلَى شَيْءٍ
وَوَافَقْتُهُ وَهُوَ غَضْبَانُ وَلَا أَشْعُرُ وَرَجَعْتُ حَزِيْنًا مِنْ مَنْعِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمِنْ مَخَافَةِ أَنْ يَكُوْنَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم وَجَدَ فِيْ نَفْسِهِ عَلَيَّ فَرَجَعْتُ إِلَى أَصْحَابِيْ فَأَخْبَرْتُهُمْ
الَّذِيْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أَلْبَثْ إِلَّا سُوَيْعَةً
إِذْ سَمِعْتُ بِلَالًا يُنَادِيْ أَيْ عَبْدَ اللهِ بْنَ قَيْسٍ فَأَجَبْتُهُ
فَقَالَ أَجِبْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوْكَ فَلَمَّا أَتَيْتُهُ
قَالَ خُذْ هَذَيْنِ الْقَرِيْنَيْنِ وَهَذَيْنِ الْقَرِيْنَيْنِ لِسِتَّةِ
أَبْعِرَةٍ ابْتَاعَهُنَّ حِيْنَئِذٍ مِنْ سَعْدٍ فَانْطَلِقْ بِهِنَّ إِلَى
أَصْحَابِكَ فَقُلْ إِنَّ اللهَ أَوْ قَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم يَحْمِلُكُمْ عَلَى هَؤُلَاءِ فَارْكَبُوْهُنَّ فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهِمْ
بِهِنَّ فَقُلْتُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَحْمِلُكُمْ عَلَى
هَؤُلَاءِ وَلَكِنِّيْ وَاللهِ لَا أَدَعُكُمْ حَتَّى يَنْطَلِقَ مَعِيْ
بَعْضُكُمْ إِلَى مَنْ سَمِعَ مَقَالَةَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا
تَظُنُّوْا أَنِّيْ حَدَّثْتُكُمْ شَيْئًا لَمْ يَقُلْهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم فَقَالُوْا لِيْ وَاللهِ إِنَّكَ عِنْدَنَا لَمُصَدَّقٌ وَلَنَفْعَلَنَّ
مَا أَحْبَبْتَ فَانْطَلَقَ أَبُوْ مُوْسَى بِنَفَرٍ مِنْهُمْ حَتَّى أَتَوْا
الَّذِيْنَ سَمِعُوْا قَوْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْعَهُ
إِيَّاهُمْ ثُمَّ إِعْطَاءَهُمْ بَعْدُ فَحَدَّثُوْهُمْ بِمِثْلِ مَا حَدَّثَهُمْ
بِهِ أَبُوْ مُوْسَى.
আবূ
মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার সাথীরা আমাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে
পাঠালেন তাদের জন্য পশুবাহন চাওয়ার জন্য। কারণ তাঁরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কষ্টের যুদ্ধ অর্থাৎ তাবূকের যুদ্ধে যাচ্ছিলেন।
অনন্তর আমি এসে বললাম, হে আল্লাহ্র নাবী! আমার সাথীরা আমাকে আপনার কাছে এজন্য
পাঠিয়েছেন যে, আপনি যেন তাদের জন্য পশুবাহনের ব্যবস্থা করেন। তখন তিনি বললেন,
আল্লাহ্র কসম! আমি তোমাদের জন্য কোন সওয়ারীর ব্যবস্থা করতে পারব না। আমি লক্ষ্য
করলাম, তিনি রাগান্বিত। (কিন্তু কী কারণে তিনি রাগান্বিত) তা বুঝলাম না। আর আমি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পশুবাহন না দেয়ার কারণে দুঃখিত মনে
ফিরে আসি। আবার এ ভয়ও ছিল যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) না আমার
উপরই অসন্তুষ্ট হন। তাই আমি সাথীদের কাছে ফিরে যাই এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন তা আমি তাদের জানাই। অল্পক্ষণ পরেই শুনতে পেলাম যে, বিলাল
(রাঃ) ডাকছেনঃ 'আবদুল্লাহ ইবনু কায়স কোথায়? তখন আমি তাঁর ডাকে সাড়া দিলাম। তখন
তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে ডাকছেন, আপনি
হাজির হোন। আমি যখন তাঁর কাছে হাজির হলাম তখন তিনি বললেন, এই জোড়া এবং ঐ জোড়া এমনি
ছয়টি উটনী যা সা'দ থেকে ক্রয় করা হয়েছে, তা গ্রহণ কর এবং সেগুলো তোমার সাথীদের
কাছে নিয়ে যাও এবং বল যে, আল্লাহ তা'আলা (রাবীর সন্দেহ) অথবা বলেন, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এগুলো তোমাদের যানবাহনের জন্য ব্যবস্থা
করেছেন, তোমরা এগুলোর উপর আরোহণ কর। যাতে তোমরা এমন ধারণা না কর যে, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেননি আমি তা তোমাদের বর্ণনা করেছি। তখন
তারা আমাকে বললেন, আল্লাহ্র কসম! আপনি আমাদের কাছে সত্যবাদী বলে পরিচিত। তবুও
আপনি যা চান, আমরা অবশ্য করব। অনন্তর আবূ মূসা (রাঃ) তাদের মধ্যকার একদল লোককে সঙ্গে
নিয়ে রওয়ানা হন এবং যারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক
অপারগতা প্রকাশ এবং পরে তাদেরকে দেয়ার কথা শুনেছিলেন, তাদের কাছে আসেন। তখন তারা
সেরূপ কথাই বর্ণনা করলেন যেমন আবূ মূসা (রাঃ) বর্ণনা করেছিলেন। [৩১৩৩] (আ.প্র.
৪০৬৭, ই.ফা. ৪০৭০)
৪৪১৬
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا
يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ عَنِ الْحَكَمِ عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى تَبُوْكَ وَاسْتَخْلَفَ
عَلِيًّا فَقَالَ أَتُخَلِّفُنِيْ فِي الصِّبْيَانِ وَالنِّسَاءِ قَالَ أَلَا
تَرْضَى أَنْ تَكُوْنَ مِنِّيْ بِمَنْزِلَةِ هَارُوْنَ مِنْ مُوْسَى إِلَّا
أَنَّهُ لَيْسَ نَبِيٌّ بَعْدِي.
وَقَالَ أَبُوْ دَاوُدَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْحَكَمِ سَمِعْتُ مُصْعَبًا.
وَقَالَ أَبُوْ دَاوُدَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْحَكَمِ سَمِعْتُ مُصْعَبًا.
মুস'আব
ইবনু সা'দ তাঁর পিতা (আবূ ওয়াক্কাস) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবূক যুদ্ধাভিযানে রওয়ানা হন। আর 'আলী
(রাঃ)-কে স্বীয় স্থলাভিষিক্ত করেন। 'আলী (রাঃ) বলেন, আপনি কি আমাকে শিশু ও
মহিলাদের মধ্যে ছেড়ে যাচ্ছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি
কি এ কথায় রাযী নও যে, তুমি আমার কাছে সে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হারূন যে মর্যাদায়
মূসার কাছে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে [হারূন (আঃ) নবী ছিলেন আর]
আমার পরে কোন নবী নেই। [৩৭০৬; মুসলিম ৪৪/৪, হাঃ ২৪০৪]
আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, শু'বাহ (রহঃ) আমাকে হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন; আমি মুসআব (রহঃ) থেকে শুনেছি। (আ.প্র. ৪০৬৮, ই.ফা. ৪০৭১)
আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, শু'বাহ (রহঃ) আমাকে হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন; আমি মুসআব (রহঃ) থেকে শুনেছি। (আ.প্র. ৪০৬৮, ই.ফা. ৪০৭১)
৪৪১৭
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ
سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ
سَمِعْتُ عَطَاءً يُخْبِرُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ صَفْوَانُ بْنُ يَعْلَى بْنِ
أُمَيَّةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
الْعُسْرَةَ قَالَ كَانَ يَعْلَى يَقُوْلُ تِلْكَ الْغَزْوَةُ أَوْثَقُ
أَعْمَالِيْ عِنْدِيْ قَالَ عَطَاءٌ فَقَالَ صَفْوَانُ قَالَ يَعْلَى فَكَانَ لِيْ
أَجِيْرٌ فَقَاتَلَ إِنْسَانًا فَعَضَّ أَحَدُهُمَا يَدَ الْآخَرِ قَالَ عَطَاءٌ
فَلَقَدْ أَخْبَرَنِيْ صَفْوَانُ أَيُّهُمَا عَضَّ الآخَرَ فَنَسِيْتُهُ قَالَ
فَانْتَزَعَ الْمَعْضُوْضُ يَدَهُ مِنْ فِي الْعَاضِّ فَانْتَزَعَ إِحْدَى
ثَنِيَّتَيْهِ فَأَتَيَا النَّبِيَّ فَأَهْدَرَ ثَنِيَّتَهُ قَالَ عَطَاءٌ
وَحَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَفَيَدَعُ يَدَهُ
فِيْ فِيْكَ تَقْضَمُهَا كَأَنَّهَا فِيْ فِيْ فَحْلٍ يَقْضَمُهَا.
সফওয়ান
এর পিতা ইয়ালা ইবনু 'উমাইয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর- সঙ্গে কষ্টের (তাবূকের) যুদ্ধে
অংশগ্রহণ করি। ইয়া'লা বলতেন যে, উক্ত যুদ্ধ আমার কাছে নির্ভরযোগ্য 'আমালের অন্যতম
বলে বিবেচিত হত। 'আত্বা(রহঃ) বলেন যে, সাফওয়ান বলেছেন, ইয়া'লা (রাঃ) বর্ণনা করেন,
আমার একজন দিনমজুর চাকর ছিল, সে একবার এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হল এবং এক
পর্যায়ে একজন অন্যজনের হাত দাঁত দ্বারা কেটে ফেলল। 'আত্বা (রাঃ) বলেন, আমাকে
সাফওয়ান (রহঃ) জানান যে, উভয়ের মধ্যে কে কার হাত দাঁত দ্বারা কেটেছিল তার নাম আমি
ভুলে গেছি। রাবী বলেন, আহত ব্যক্তি আহতকারীর মুখ থেকে নিজ হাত বের করার পর দেখা
গেল, তার সম্মুখের একটি দাঁত উপড়ে গেছে। তারপর দুজন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর- সমীপে আসল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দাঁতের
ক্ষতিপূরণের দাবি নাকচ করে দিলেন। 'আত্বা (রাঃ) বলেন যে,আমার ধারণা যে, বর্ণনাকারী
এ কথাও বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তবে কি সে তার
হাত তোমার মুখে চিবানোর জন্যে ছেড়ে দিবে? যেমন উটের মুখে চিবানোর জন্য ছেড়ে দেয়া
হয়? [১৮৪৭] (আ.প্র. ৪০৬৯, ই.ফা. ৪০৭২)
৬৪/৮০. অধ্যায়ঃ
কা'ব ইবনু মালিকের ঘটনা এবং
মহামহিম আল্লাহ্র বাণীঃ
এবং তিনি ক্ষমা করলেন অপর
তিনজনকেও যাদের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল। (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/১১৮)
৪৪১৮
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ كَعْبِ بْنِ
مَالِكٍ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ مِنْ بَنِيْهِ حِيْنَ عَمِيَ قَالَ سَمِعْتُ
كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ يُحَدِّثُ حِيْنَ تَخَلَّفَ عَنْ قِصَّةِ تَبُوْكَ قَالَ
كَعْبٌ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةٍ
غَزَاهَا إِلَّا فِيْ غَزْوَةِ تَبُوْكَ غَيْرَ أَنِّيْ كُنْتُ تَخَلَّفْتُ فِيْ
غَزْوَةِ بَدْرٍ وَلَمْ يُعَاتِبْ أَحَدًا تَخَلَّفَ عَنْهَا إِنَّمَا خَرَجَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدُ عِيْرَ قُرَيْشٍ حَتَّى جَمَعَ اللهُ
بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ عَدُوِّهِمْ عَلَى غَيْرِ مِيْعَادٍ وَلَقَدْ شَهِدْتُ مَعَ
رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ حِيْنَ تَوَاثَقْنَا
عَلَى الإِسْلَامِ وَمَا أُحِبُّ أَنَّ لِيْ بِهَا مَشْهَدَ بَدْرٍ وَإِنْ كَانَتْ
بَدْرٌ أَذْكَرَ فِي النَّاسِ مِنْهَا كَانَ مِنْ خَبَرِيْ أَنِّيْ لَمْ أَكُنْ
قَطُّ أَقْوَى وَلَا أَيْسَرَ حِيْنَ تَخَلَّفْتُ عَنْهُ فِيْ تِلْكَ الْغَزَاةِ
وَاللهِ مَا اجْتَمَعَتْ عِنْدِيْ قَبْلَهُ رَاحِلَتَانِ قَطُّ حَتَّى
جَمَعْتُهُمَا فِيْ تِلْكَ الْغَزْوَةِ وَلَمْ يَكُنْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم يُرِيْدُ غَزْوَةً إِلَّا وَرَّى بِغَيْرِهَا حَتَّى كَانَتْ تِلْكَ
الْغَزْوَةُ غَزَاهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَرٍّ شَدِيْدٍ
وَاسْتَقْبَلَ سَفَرًا بَعِيْدًا وَمَفَازًا وَعَدُوًّا كَثِيْرًا فَجَلَّى
لِلْمُسْلِمِيْنَ أَمْرَهُمْ لِيَتَأَهَّبُوْا أُهْبَةَ غَزْوِهِمْ فَأَخْبَرَهُمْ
بِوَجْهِهِ الَّذِيْ يُرِيْدُ وَالْمُسْلِمُوْنَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ كَثِيْرٌ
وَلَا يَجْمَعُهُمْ كِتَابٌ حَافِظٌ يُرِيْدُ الدِّيْوَانَ
قَالَ كَعْبٌ فَمَا رَجُلٌ يُرِيْدُ أَنْ يَتَغَيَّبَ إِلَّا ظَنَّ أَنْ سَيَخْفَى لَهُ مَا لَمْ يَنْزِلْ فِيْهِ وَحْيُ اللهِ وَغَزَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تِلْكَ الْغَزْوَةَ حِيْنَ طَابَتْ الثِّمَارُ وَالظِّلَالُ وَتَجَهَّزَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُوْنَ مَعَهُ فَطَفِقْتُ أَغْدُوْ لِكَيْ أَتَجَهَّزَ مَعَهُمْ فَأَرْجِعُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا فَأَقُوْلُ فِيْ نَفْسِيْ أَنَا قَادِرٌ عَلَيْهِ فَلَمْ يَزَلْ يَتَمَادَى بِيْ حَتَّى اشْتَدَّ بِالنَّاسِ الْجِدُّ فَأَصْبَحَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُوْنَ مَعَهُ وَلَمْ أَقْضِ مِنْ جَهَازِيْ شَيْئًا فَقُلْتُ أَتَجَهَّزُ بَعْدَهُ بِيَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ ثُمَّ أَلْحَقُهُمْ فَغَدَوْتُ بَعْدَ أَنْ فَصَلُوْا لِأَتَجَهَّزَ فَرَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا ثُمَّ غَدَوْتُ ثُمَّ رَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا فَلَمْ يَزَلْ بِيْ حَتَّى أَسْرَعُوْا وَتَفَارَطَ الْغَزْوُ وَهَمَمْتُ أَنْ أَرْتَحِلَ فَأُدْرِكَهُمْ وَلَيْتَنِيْ فَعَلْتُ فَلَمْ يُقَدَّرْ لِيْ ذَلِكَ فَكُنْتُ إِذَا خَرَجْتُ فِي النَّاسِ بَعْدَ خُرُوْجِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَطُفْتُ فِيْهِمْ أَحْزَنَنِيْ أَنِّيْ لَا أَرَى إِلَّا رَجُلًا مَغْمُوْصًا عَلَيْهِ النِّفَاقُ أَوْ رَجُلًا مِمَّنْ عَذَرَ اللهُ مِنْ الضُّعَفَاءِ وَلَمْ يَذْكُرْنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَلَغَ تَبُوْكَ فَقَالَ وَهُوَ جَالِسٌ فِي الْقَوْمِ بِتَبُوْكَ مَا فَعَلَ كَعْبٌ
فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ سَلِمَةَ يَا رَسُوْلَ اللهِ حَبَسَهُ بُرْدَاهُ وَنَظَرُهُ فِيْ عِطْفِهِ فَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ بِئْسَ مَا قُلْتَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا عَلِمْنَا عَلَيْهِ إِلَّا خَيْرًا فَسَكَتَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ فَلَمَّا بَلَغَنِيْ أَنَّهُ تَوَجَّهَ قَافِلًا حَضَرَنِيْ هَمِّيْ وَطَفِقْتُ أَتَذَكَّرُ الْكَذِبَ وَأَقُوْلُ بِمَاذَا أَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ غَدًا وَاسْتَعَنْتُ عَلَى ذَلِكَ بِكُلِّ ذِيْ رَأْيٍ مِنْ أَهْلِيْ فَلَمَّا قِيْلَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَظَلَّ قَادِمًا زَاحَ عَنِّيْ الْبَاطِلُ وَعَرَفْتُ أَنِّيْ لَنْ أَخْرُجَ مِنْهُ أَبَدًا بِشَيْءٍ فِيْهِ كَذِبٌ فَأَجْمَعْتُ صِدْقَهُ وَأَصْبَحَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَادِمًا وَكَانَ إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَيَرْكَعُ فِيْهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ لِلنَّاسِ فَلَمَّا فَعَلَ ذَلِكَ جَاءَهُ الْمُخَلَّفُوْنَ فَطَفِقُوْا يَعْتَذِرُوْنَ إِلَيْهِ وَيَحْلِفُوْنَ لَهُ وَكَانُوْا بِضْعَةً وَثَمَانِيْنَ رَجُلًا فَقَبِلَ مِنْهُمْ رَسُوْلُ اللهِ عَلَانِيَتَهُمْ وَبَايَعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ وَوَكَلَ سَرَائِرَهُمْ إِلَى اللهِ فَجِئْتُهُ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ تَبَسَّمَ تَبَسُّمَ الْمُغْضَبِ ثُمَّ قَالَ تَعَالَ فَجِئْتُ أَمْشِيْ حَتَّى جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ لِيْ مَا خَلَّفَكَ أَلَمْ تَكُنْ قَدْ ابْتَعْتَ ظَهْرَكَ فَقُلْتُ بَلَى إِنِّيْ وَاللهِ لَوْ جَلَسْتُ عِنْدَ غَيْرِكَ مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا لَرَأَيْتُ أَنْ سَأَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ بِعُذْرٍ وَلَقَدْ أُعْطِيْتُ جَدَلًا وَلَكِنِّيْ وَاللهِ لَقَدْ عَلِمْتُ لَئِنْ حَدَّثْتُكَ الْيَوْمَ حَدِيْثَ كَذِبٍ تَرْضَى بِهِ عَنِّيْ لَيُوْشِكَنَّ اللهُ أَنْ يُسْخِطَكَ عَلَيَّ وَلَئِنْ حَدَّثْتُكَ حَدِيْثَ صِدْقٍ تَجِدُ عَلَيَّ فِيْهِ إِنِّيْ لَأَرْجُوْ فِيْهِ عَفْوَ اللهِ لَا وَاللهِ مَا كَانَ لِيْ مِنْ عُذْرٍ وَاللهِ مَا كُنْتُ قَطُّ أَقْوَى وَلَا أَيْسَرَ مِنِّيْ حِيْنَ تَخَلَّفْتُ عَنْكَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَّا هَذَا فَقَدْ صَدَقَ فَقُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللهُ فِيْكَ فَقُمْتُ وَثَارَ رِجَالٌ مِنْ بَنِيْ سَلِمَةَ فَاتَّبَعُوْنِيْ فَقَالُوْا لِيْ وَاللهِ مَا عَلِمْنَاكَ كُنْتَ أَذْنَبْتَ ذَنْبًا قَبْلَ هَذَا وَلَقَدْ عَجَزْتَ أَنْ لَا تَكُوْنَ اعْتَذَرْتَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِمَا اعْتَذَرَ إِلَيْهِ الْمُتَخَلِّفُوْنَ قَدْ كَانَ كَافِيَكَ ذَنْبَكَ اسْتِغْفَارُ رَسُوْلِ اللهِ لَكَ فَوَاللهِ مَا زَالُوْا يُؤَنِّبُوْنِيْ حَتَّى أَرَدْتُ أَنْ أَرْجِعَ فَأُكَذِّبَ نَفْسِيْ ثُمَّ قُلْتُ لَهُمْ هَلْ لَقِيَ هَذَا مَعِيْ أَحَدٌ قَالُوْا نَعَمْ رَجُلَانِ قَالَا مِثْلَ مَا قُلْتَ فَقِيْلَ لَهُمَا مِثْلُ مَا قِيْلَ لَكَ فَقُلْتُ مَنْ هُمَا قَالُوْا مُرَارَةُ بْنُ الرَّبِيْعِ الْعَمْرِيُّ وَهِلَالُ بْنُ أُمَيَّةَ الْوَاقِفِيُّ فَذَكَرُوْا لِيْ رَجُلَيْنِ صَالِحَيْنِ قَدْ شَهِدَا بَدْرًا فِيْهِمَا أُسْوَةٌ فَمَضَيْتُ حِيْنَ ذَكَرُوْهُمَا لِيْ وَنَهَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمُسْلِمِيْنَ عَنْ كَلَامِنَا أَيُّهَا الثَلَاثَةُ مِنْ بَيْنِ مَنْ تَخَلَّفَ عَنْهُ فَاجْتَنَبَنَا النَّاسُ وَتَغَيَّرُوْا لَنَا حَتَّى تَنَكَّرَتْ فِيْ نَفْسِي الْأَرْضُ فَمَا هِيَ الَّتِيْ أَعْرِفُ
فَلَبِثْنَا عَلَى ذَلِكَ خَمْسِيْنَ لَيْلَةً فَأَمَّا صَاحِبَايَ فَاسْتَكَانَا وَقَعَدَا فِيْ بُيُوْتِهِمَا يَبْكِيَانِ وَأَمَّا أَنَا فَكُنْتُ أَشَبَّ الْقَوْمِ وَأَجْلَدَهُمْ فَكُنْتُ أَخْرُجُ فَأَشْهَدُ الصَّلَاةَ مَعَ الْمُسْلِمِيْنَ وَأَطُوْفُ فِي الْأَسْوَاقِ وَلَا يُكَلِّمُنِيْ أَحَدٌ وَآتِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأُسَلِّمُ عَلَيْهِ وَهُوَ فِيْ مَجْلِسِهِ بَعْدَ الصَّلَاةِ فَأَقُوْلُ فِيْ نَفْسِيْ هَلْ حَرَّكَ شَفَتَيْهِ بِرَدِّ السَّلَامِ عَلَيَّ أَمْ لَا ثُمَّ أُصَلِّيْ قَرِيْبًا مِنْهُ فَأُسَارِقُهُ النَّظَرَ فَإِذَا أَقْبَلْتُ عَلَى صَلَاتِيْ أَقْبَلَ إِلَيَّ وَإِذَا الْتَفَتُّ نَحْوَهُ أَعْرَضَ عَنِّيْ حَتَّى إِذَا طَالَ عَلَيَّ ذَلِكَ مِنْ جَفْوَةِ النَّاسِ مَشَيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ جِدَارَ حَائِطِ أَبِيْ قَتَادَةَ وَهُوَ ابْنُ عَمِّيْ وَأَحَبُّ النَّاسِ إِلَيَّ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَوَاللهِ مَا رَدَّ عَلَيَّ السَّلَامَ فَقُلْتُ يَا أَبَا قَتَادَةَ أَنْشُدُكَ بِاللهِ هَلْ تَعْلَمُنِيْ أُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَسَكَتَ فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ فَسَكَتَ فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ فَقَالَ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَفَاضَتْ عَيْنَايَ وَتَوَلَّيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ الْجِدَارَ قَالَ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ بِسُوْقِ الْمَدِيْنَةِ إِذَا نَبَطِيٌّ مِنْ أَنْبَاطِ أَهْلِ الشَّأْمِ مِمَّنْ قَدِمَ بِالطَّعَامِ يَبِيْعُهُ بِالْمَدِيْنَةِ يَقُوْلُ مَنْ يَدُلُّ عَلَى كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ فَطَفِقَ النَّاسُ يُشِيْرُوْنَ لَهُ حَتَّى إِذَا جَاءَنِيْ دَفَعَ إِلَيَّ كِتَابًا مِنْ مَلِكِ غَسَّانَ فَإِذَا فِيْهِ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنِيْ أَنَّ صَاحِبَكَ قَدْ جَفَاكَ وَلَمْ يَجْعَلْكَ اللهُ بِدَارِ هَوَانٍ وَلَا مَضْيَعَةٍ فَالْحَقْ بِنَا نُوَاسِكَ
فَقُلْتُ لَمَّا قَرَأْتُهَا وَهَذَا أَيْضًا مِنَ الْبَلَاءِ فَتَيَمَّمْتُ بِهَا التَّنُّوْرَ فَسَجَرْتُهُ بِهَا حَتَّى إِذَا مَضَتْ أَرْبَعُوْنَ لَيْلَةً مِنَ الْخَمْسِيْنَ إِذَا رَسُوْلُ رَسُوْلِ اللهِ يَأْتِيْنِيْ فَقَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُكَ أَنْ تَعْتَزِلَ امْرَأَتَكَ فَقُلْتُ أُطَلِّقُهَا أَمْ مَاذَا أَفْعَلُ قَالَ لَا بَلْ اعْتَزِلْهَا وَلَا تَقْرَبْهَا وَأَرْسَلَ إِلَى صَاحِبَيَّ مِثْلَ ذَلِكَ فَقُلْتُ لِامْرَأَتِي الْحَقِيْ بِأَهْلِكِ فَتَكُوْنِيْ عِنْدَهُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللهُ فِيْ هَذَا الْأَمْرِ قَالَ كَعْبٌ فَجَاءَتْ امْرَأَةُ هِلَالِ بْنِ أُمَيَّةَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ هِلَالَ بْنَ أُمَيَّةَ شَيْخٌ ضَائِعٌ لَيْسَ لَهُ خَادِمٌ فَهَلْ تَكْرَهُ أَنْ أَخْدُمَهُ قَالَ لَا وَلَكِنْ لَا يَقْرَبْكِ قَالَتْ إِنَّهُ وَاللهِ مَا بِهِ حَرَكَةٌ إِلَى شَيْءٍ وَاللهِ مَا زَالَ يَبْكِيْ مُنْذُ كَانَ مِنْ أَمْرِهِ مَا كَانَ إِلَى يَوْمِهِ هَذَا فَقَالَ لِيْ بَعْضُ أَهْلِيْ لَوْ اسْتَأْذَنْتَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي امْرَأَتِكَ كَمَا أَذِنَ لِامْرَأَةِ هِلَالِ بْنِ أُمَيَّةَ أَنْ تَخْدُمَهُ فَقُلْتُ وَاللهِ لَا أَسْتَأْذِنُ فِيْهَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا يُدْرِيْنِيْ مَا يَقُوْلُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَأْذَنْتُهُ فِيْهَا وَأَنَا رَجُلٌ شَابٌّ فَلَبِثْتُ بَعْدَ ذَلِكَ عَشْرَ لَيَالٍ حَتَّى كَمَلَتْ لَنَا خَمْسُوْنَ لَيْلَةً مِنْ حِيْنَ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ كَلَامِنَا فَلَمَّا صَلَّيْتُ صَلَاةَ الْفَجْرِ صُبْحَ خَمْسِيْنَ لَيْلَةً وَأَنَا عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ مِنْ بُيُوْتِنَا فَبَيْنَا أَنَا جَالِسٌ عَلَى الْحَالِ الَّتِيْ ذَكَرَ اللهُ قَدْ ضَاقَتْ عَلَيَّ نَفْسِيْ وَضَاقَتْ عَلَيَّ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ سَمِعْتُ صَوْتَ صَارِخٍ أَوْفَى عَلَى جَبَلِ سَلْعٍ بِأَعْلَى صَوْتِهِ يَا كَعْبُ بْنَ مَالِكٍ أَبْشِرْ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ ـ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ مِنْ بَنِيهِ حِينَ عَمِيَ ـ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ، يُحَدِّثُ حِينَ تَخَلَّفَ عَنْ قِصَّةِ، تَبُوكَ قَالَ كَعْبٌ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا إِلاَّ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ، غَيْرَ أَنِّي كُنْتُ تَخَلَّفْتُ فِي غَزْوَةِ بَدْرٍ، وَلَمْ يُعَاتِبْ أَحَدًا تَخَلَّفَ، عَنْهَا إِنَّمَا خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيدُ عِيرَ قُرَيْشٍ، حَتَّى جَمَعَ اللَّهُ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ عَدُوِّهِمْ عَلَى غَيْرِ مِيعَادٍ وَلَقَدْ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ حِينَ تَوَاثَقْنَا عَلَى الإِسْلاَمِ، وَمَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِهَا مَشْهَدَ بَدْرٍ، وَإِنْ كَانَتْ بَدْرٌ أَذْكَرَ فِي النَّاسِ مِنْهَا، كَانَ مِنْ خَبَرِي أَنِّي لَمْ أَكُنْ قَطُّ أَقْوَى وَلاَ أَيْسَرَ حِينَ تَخَلَّفْتُ عَنْهُ فِي تِلْكَ الْغَزْوَةِ، وَاللَّهِ مَا اجْتَمَعَتْ عِنْدِي قَبْلَهُ رَاحِلَتَانِ قَطُّ حَتَّى جَمَعْتُهُمَا فِي تِلْكَ الْغَزْوَةِ، وَلَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيدُ غَزْوَةً إِلاَّ وَرَّى بِغَيْرِهَا، حَتَّى كَانَتْ تِلْكَ الْغَزْوَةُ، غَزَاهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَرٍّ شَدِيدٍ، وَاسْتَقْبَلَ سَفَرًا بَعِيدًا وَمَفَازًا وَعَدُوًّا كَثِيرًا، فَجَلَّى لِلْمُسْلِمِينَ أَمْرَهُمْ لِيَتَأَهَّبُوا أُهْبَةَ غَزْوِهِمْ، فَأَخْبَرَهُمْ بِوَجْهِهِ الَّذِي يُرِيدُ، وَالْمُسْلِمُونَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَثِيرٌ، وَلاَ يَجْمَعُهُمْ كِتَابٌ حَافِظٌ ـ يُرِيدُ الدِّيوَانَ ـ قَالَ كَعْبٌ فَمَا رَجُلٌ يُرِيدُ أَنْ يَتَغَيَّبَ إِلاَّ ظَنَّ أَنْ سَيَخْفَى لَهُ مَا لَمْ يَنْزِلْ فِيهِ وَحْىُ اللَّهِ، وَغَزَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تِلْكَ الْغَزْوَةَ حِينَ طَابَتِ الثِّمَارُ وَالظِّلاَلُ، وَتَجَهَّزَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُونَ مَعَهُ، فَطَفِقْتُ أَغْدُو لِكَىْ أَتَجَهَّزَ مَعَهُمْ فَأَرْجِعُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا، فَأَقُولُ فِي نَفْسِي أَنَا قَادِرٌ عَلَيْهِ. فَلَمْ يَزَلْ يَتَمَادَى بِي حَتَّى اشْتَدَّ بِالنَّاسِ الْجِدُّ، فَأَصْبَحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُونَ مَعَهُ وَلَمْ أَقْضِ مِنْ جَهَازِي شَيْئًا، فَقُلْتُ أَتَجَهَّزُ بَعْدَهُ بِيَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ ثُمَّ أَلْحَقُهُمْ، فَغَدَوْتُ بَعْدَ أَنْ فَصَلُوا لأَتَجَهَّزَ، فَرَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا، ثُمَّ غَدَوْتُ ثُمَّ رَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا، فَلَمْ يَزَلْ بِي حَتَّى أَسْرَعُوا وَتَفَارَطَ الْغَزْوُ، وَهَمَمْتُ أَنْ أَرْتَحِلَ فَأُدْرِكَهُمْ، وَلَيْتَنِي فَعَلْتُ، فَلَمْ يُقَدَّرْ لِي ذَلِكَ، فَكُنْتُ إِذَا خَرَجْتُ فِي النَّاسِ بَعْدَ خُرُوجِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَطُفْتُ فِيهِمْ، أَحْزَنَنِي أَنِّي لاَ أَرَى إِلاَّ رَجُلاً مَغْمُوصًا عَلَيْهِ النِّفَاقُ أَوْ رَجُلاً مِمَّنْ عَذَرَ اللَّهُ مِنَ الضُّعَفَاءِ، وَلَمْ يَذْكُرْنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَلَغَ تَبُوكَ، فَقَالَ وَهْوَ جَالِسٌ فِي الْقَوْمِ بِتَبُوكَ " مَا فَعَلَ كَعْبٌ ". فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، حَبَسَهُ بُرْدَاهُ وَنَظَرُهُ فِي عِطْفِهِ. فَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ بِئْسَ مَا قُلْتَ، وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا عَلِمْنَا عَلَيْهِ إِلاَّ خَيْرًا. فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قَالَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ فَلَمَّا بَلَغَنِي أَنَّهُ تَوَجَّهَ قَافِلاً حَضَرَنِي هَمِّي، وَطَفِقْتُ أَتَذَكَّرُ الْكَذِبَ وَأَقُولُ بِمَاذَا أَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ غَدًا وَاسْتَعَنْتُ عَلَى ذَلِكَ بِكُلِّ ذِي رَأْىٍ مِنْ أَهْلِي، فَلَمَّا قِيلَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَظَلَّ قَادِمًا زَاحَ عَنِّي الْبَاطِلُ، وَعَرَفْتُ أَنِّي لَنْ أَخْرُجَ مِنْهُ أَبَدًا بِشَىْءٍ فِيهِ كَذِبٌ، فَأَجْمَعْتُ صِدْقَهُ، وَأَصْبَحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَادِمًا، وَكَانَ إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَيَرْكَعُ فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ لِلنَّاسِ، فَلَمَّا فَعَلَ ذَلِكَ جَاءَهُ الْمُخَلَّفُونَ، فَطَفِقُوا يَعْتَذِرُونَ إِلَيْهِ، وَيَحْلِفُونَ لَهُ، وَكَانُوا بِضْعَةً وَثَمَانِينَ رَجُلاً فَقَبِلَ مِنْهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلاَنِيَتَهُمْ، وَبَايَعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ، وَوَكَلَ سَرَائِرَهُمْ إِلَى اللَّهِ، فَجِئْتُهُ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ تَبَسَّمَ تَبَسُّمَ الْمُغْضَبِ، ثُمَّ قَالَ " تَعَالَ ". فَجِئْتُ أَمْشِي حَتَّى جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ، فَقَالَ لِي " مَا خَلَّفَكَ أَلَمْ تَكُنْ قَدِ ابْتَعْتَ ظَهْرَكَ ". فَقُلْتُ بَلَى، إِنِّي وَاللَّهِ لَوْ جَلَسْتُ عِنْدَ غَيْرِكَ مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا، لَرَأَيْتُ أَنْ سَأَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ بِعُذْرٍ، وَلَقَدْ أُعْطِيتُ جَدَلاً، وَلَكِنِّي وَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمْتُ لَئِنْ حَدَّثْتُكَ الْيَوْمَ حَدِيثَ كَذِبٍ تَرْضَى بِهِ عَنِّي لَيُوشِكَنَّ اللَّهُ أَنْ يُسْخِطَكَ عَلَىَّ، وَلَئِنْ حَدَّثْتُكَ حَدِيثَ صِدْقٍ تَجِدُ عَلَىَّ فِيهِ إِنِّي لأَرْجُو فِيهِ عَفْوَ اللَّهِ، لاَ وَاللَّهِ مَا كَانَ لِي مِنْ عُذْرٍ، وَاللَّهِ مَا كُنْتُ قَطُّ أَقْوَى وَلاَ أَيْسَرَ مِنِّي حِينَ تَخَلَّفْتُ عَنْكَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَّا هَذَا فَقَدْ صَدَقَ، فَقُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللَّهُ فِيكَ ". فَقُمْتُ وَثَارَ رِجَالٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ فَاتَّبَعُونِي، فَقَالُوا لِي وَاللَّهِ مَا عَلِمْنَاكَ كُنْتَ أَذْنَبْتَ ذَنْبًا قَبْلَ هَذَا، وَلَقَدْ عَجَزْتَ أَنْ لاَ تَكُونَ اعْتَذَرْتَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمَا اعْتَذَرَ إِلَيْهِ الْمُتَخَلِّفُونَ، قَدْ كَانَ كَافِيَكَ ذَنْبَكَ اسْتِغْفَارُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَكَ، فَوَاللَّهِ مَا زَالُوا يُؤَنِّبُونِي حَتَّى أَرَدْتُ أَنْ أَرْجِعَ فَأُكَذِّبُ نَفْسِي، ثُمَّ قُلْتُ لَهُمْ هَلْ لَقِيَ هَذَا مَعِي أَحَدٌ قَالُوا نَعَمْ، رَجُلاَنِ قَالاَ مِثْلَ مَا قُلْتَ، فَقِيلَ لَهُمَا مِثْلُ مَا قِيلَ لَكَ. فَقُلْتُ مَنْ هُمَا قَالُوا مُرَارَةُ بْنُ الرَّبِيعِ الْعَمْرِيُّ وَهِلاَلُ بْنُ أُمَيَّةَ الْوَاقِفِيُّ. فَذَكَرُوا لِي رَجُلَيْنِ صَالِحَيْنِ قَدْ شَهِدَا بَدْرًا فِيهِمَا إِسْوَةٌ، فَمَضَيْتُ حِينَ ذَكَرُوهُمَا لِي، وَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمُسْلِمِينَ عَنْ كَلاَمِنَا أَيُّهَا الثَّلاَثَةُ مِنْ بَيْنِ مَنْ تَخَلَّفَ عَنْهُ، فَاجْتَنَبَنَا النَّاسُ وَتَغَيَّرُوا لَنَا حَتَّى تَنَكَّرَتْ فِي نَفْسِي الأَرْضُ، فَمَا هِيَ الَّتِي أَعْرِفُ، فَلَبِثْنَا عَلَى ذَلِكَ خَمْسِينَ لَيْلَةً، فَأَمَّا صَاحِبَاىَ فَاسْتَكَانَا وَقَعَدَا فِي بُيُوتِهِمَا يَبْكِيَانِ، وَأَمَّا أَنَا فَكُنْتُ أَشَبَّ الْقَوْمِ وَأَجْلَدَهُمْ، فَكُنْتُ أَخْرُجُ فَأَشْهَدُ الصَّلاَةَ مَعَ الْمُسْلِمِينَ وَأَطُوفُ فِي الأَسْوَاقِ، وَلاَ يُكَلِّمُنِي أَحَدٌ، وَآتِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأُسَلِّمُ عَلَيْهِ وَهْوَ فِي مَجْلِسِهِ بَعْدَ الصَّلاَةِ، فَأَقُولُ فِي نَفْسِي هَلْ حَرَّكَ شَفَتَيْهِ بِرَدِّ السَّلاَمِ عَلَىَّ أَمْ لاَ ثُمَّ أُصَلِّي قَرِيبًا مِنْهُ فَأُسَارِقُهُ النَّظَرَ، فَإِذَا أَقْبَلْتُ عَلَى صَلاَتِي أَقْبَلَ إِلَىَّ، وَإِذَا الْتَفَتُّ نَحْوَهُ أَعْرَضَ عَنِّي، حَتَّى إِذَا طَالَ عَلَىَّ ذَلِكَ مِنْ جَفْوَةِ النَّاسِ مَشَيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ جِدَارَ حَائِطِ أَبِي قَتَادَةَ وَهْوَ ابْنُ عَمِّي وَأَحَبُّ النَّاسِ إِلَىَّ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَوَاللَّهِ مَا رَدَّ عَلَىَّ السَّلاَمَ، فَقُلْتُ يَا أَبَا قَتَادَةَ، أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ هَلْ تَعْلَمُنِي أُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَسَكَتَ، فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ فَسَكَتَ، فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ. فَقَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. فَفَاضَتْ عَيْنَاىَ وَتَوَلَّيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ الْجِدَارَ، قَالَ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِي بِسُوقِ الْمَدِينَةِ إِذَا نَبَطِيٌّ مِنْ أَنْبَاطِ أَهْلِ الشَّأْمِ مِمَّنْ قَدِمَ بِالطَّعَامِ يَبِيعُهُ بِالْمَدِينَةِ يَقُولُ مَنْ يَدُلُّ عَلَى كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ فَطَفِقَ النَّاسُ يُشِيرُونَ لَهُ، حَتَّى إِذَا جَاءَنِي دَفَعَ إِلَىَّ كِتَابًا مِنْ مَلِكِ غَسَّانَ، فَإِذَا فِيهِ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنِي أَنَّ صَاحِبَكَ قَدْ جَفَاكَ، وَلَمْ يَجْعَلْكَ اللَّهُ بِدَارِ هَوَانٍ وَلاَ مَضْيَعَةٍ، فَالْحَقْ بِنَا نُوَاسِكَ. فَقُلْتُ لَمَّا قَرَأْتُهَا وَهَذَا أَيْضًا مِنَ الْبَلاَءِ. فَتَيَمَّمْتُ بِهَا التَّنُّورَ فَسَجَرْتُهُ بِهَا، حَتَّى إِذَا مَضَتْ أَرْبَعُونَ لَيْلَةً مِنَ الْخَمْسِينَ إِذَا رَسُولُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْتِينِي فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُكَ أَنْ تَعْتَزِلَ امْرَأَتَكَ فَقُلْتُ أُطَلِّقُهَا أَمْ مَاذَا أَفْعَلُ قَالَ لاَ بَلِ اعْتَزِلْهَا وَلاَ تَقْرَبْهَا. وَأَرْسَلَ إِلَى صَاحِبَىَّ مِثْلَ ذَلِكَ، فَقُلْتُ لاِمْرَأَتِي الْحَقِي بِأَهْلِكِ فَتَكُونِي عِنْدَهُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللَّهُ فِي هَذَا الأَمْرِ. قَالَ كَعْبٌ فَجَاءَتِ امْرَأَةُ هِلاَلِ بْنِ أُمَيَّةَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ هِلاَلَ بْنَ أُمَيَّةَ شَيْخٌ ضَائِعٌ لَيْسَ لَهُ خَادِمٌ فَهَلْ تَكْرَهُ أَنْ أَخْدُمَهُ قَالَ " لاَ وَلَكِنْ لاَ يَقْرَبْكِ ". قَالَتْ إِنَّهُ وَاللَّهِ مَا بِهِ حَرَكَةٌ إِلَى شَىْءٍ، وَاللَّهِ مَا زَالَ يَبْكِي مُنْذُ كَانَ مِنْ أَمْرِهِ مَا كَانَ إِلَى يَوْمِهِ هَذَا. فَقَالَ لِي بَعْضُ أَهْلِي لَوِ اسْتَأْذَنْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي امْرَأَتِكَ كَمَا أَذِنَ لاِمْرَأَةِ هِلاَلِ بْنِ أُمَيَّةَ أَنْ تَخْدُمَهُ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لاَ أَسْتَأْذِنُ فِيهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا يُدْرِينِي مَا يَقُولُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَأْذَنْتُهُ فِيهَا وَأَنَا رَجُلٌ شَابٌّ فَلَبِثْتُ بَعْدَ ذَلِكَ عَشْرَ لَيَالٍ حَتَّى كَمَلَتْ لَنَا خَمْسُونَ لَيْلَةً مِنْ حِينِ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ كَلاَمِنَا، فَلَمَّا صَلَّيْتُ صَلاَةَ الْفَجْرِ صُبْحَ خَمْسِينَ لَيْلَةً، وَأَنَا عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِنَا، فَبَيْنَا أَنَا جَالِسٌ عَلَى الْحَالِ الَّتِي ذَكَرَ اللَّهُ، قَدْ ضَاقَتْ عَلَىَّ نَفْسِي، وَضَاقَتْ عَلَىَّ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ، سَمِعْتُ صَوْتَ صَارِخٍ أَوْفَى عَلَى جَبَلِ سَلْعٍ بِأَعْلَى صَوْتِهِ يَا كَعْبُ بْنَ مَالِكٍ، أَبْشِرْ. قَالَ فَخَرَرْتُ سَاجِدًا، وَعَرَفْتُ أَنْ قَدْ جَاءَ فَرَجٌ، وَآذَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِتَوْبَةِ اللَّهِ عَلَيْنَا حِينَ صَلَّى صَلاَةَ الْفَجْرِ، فَذَهَبَ النَّاسُ يُبَشِّرُونَنَا، وَذَهَبَ قِبَلَ صَاحِبَىَّ مُبَشِّرُونَ، وَرَكَضَ إِلَىَّ رَجُلٌ فَرَسًا، وَسَعَى سَاعٍ مِنْ أَسْلَمَ فَأَوْفَى عَلَى الْجَبَلِ وَكَانَ الصَّوْتُ أَسْرَعَ مِنَ الْفَرَسِ، فَلَمَّا جَاءَنِي الَّذِي سَمِعْتُ صَوْتَهُ يُبَشِّرُنِي نَزَعْتُ لَهُ ثَوْبَىَّ، فَكَسَوْتُهُ إِيَّاهُمَا بِبُشْرَاهُ، وَاللَّهِ مَا أَمْلِكُ غَيْرَهُمَا يَوْمَئِذٍ، وَاسْتَعَرْتُ ثَوْبَيْنِ فَلَبِسْتُهُمَا، وَانْطَلَقْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَيَتَلَقَّانِي النَّاسُ فَوْجًا فَوْجًا يُهَنُّونِي بِالتَّوْبَةِ، يَقُولُونَ لِتَهْنِكَ تَوْبَةُ اللَّهِ عَلَيْكَ. قَالَ كَعْبٌ حَتَّى دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ، فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ حَوْلَهُ النَّاسُ فَقَامَ إِلَىَّ طَلْحَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ يُهَرْوِلُ حَتَّى صَافَحَنِي وَهَنَّانِي، وَاللَّهِ مَا قَامَ إِلَىَّ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ غَيْرُهُ، وَلاَ أَنْسَاهَا لِطَلْحَةَ، قَالَ كَعْبٌ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ يَبْرُقُ وَجْهُهُ مِنَ السُّرُورِ " أَبْشِرْ بِخَيْرِ يَوْمٍ مَرَّ عَلَيْكَ مُنْذُ وَلَدَتْكَ أُمُّكَ ". قَالَ قُلْتُ أَمِنْ عِنْدِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمْ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ قَالَ " لاَ، بَلْ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ ". وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ حَتَّى كَأَنَّهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ، وَكُنَّا نَعْرِفُ ذَلِكَ مِنْهُ، فَلَمَّا جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ أَنْخَلِعَ مِنْ مَالِي صَدَقَةً إِلَى اللَّهِ وَإِلَى رَسُولِ اللَّهِ. قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمْسِكْ عَلَيْكَ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ". قُلْتُ فَإِنِّي أُمْسِكُ سَهْمِي الَّذِي بِخَيْبَرَ، فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ اللَّهَ إِنَّمَا نَجَّانِي بِالصِّدْقِ، وَإِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ لاَ أُحَدِّثَ إِلاَّ صِدْقًا مَا بَقِيتُ، فَوَاللَّهِ مَا أَعْلَمُ أَحَدًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ أَبْلاَهُ اللَّهُ فِي صِدْقِ الْحَدِيثِ مُنْذُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحْسَنَ مِمَّا أَبْلاَنِي، مَا تَعَمَّدْتُ مُنْذُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى يَوْمِي هَذَا كَذِبًا، وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَحْفَظَنِي اللَّهُ فِيمَا بَقِيتُ وَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم {لَقَدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ} إِلَى قَوْلِهِ {وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ} فَوَاللَّهِ مَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَىَّ مِنْ نِعْمَةٍ قَطُّ بَعْدَ أَنْ هَدَانِي لِلإِسْلاَمِ أَعْظَمَ فِي نَفْسِي مِنْ صِدْقِي لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ لاَ أَكُونَ كَذَبْتُهُ، فَأَهْلِكَ كَمَا هَلَكَ الَّذِينَ كَذَبُوا، فَإِنَّ اللَّهَ قَالَ لِلَّذِينَ كَذَبُوا حِينَ أَنْزَلَ الْوَحْىَ شَرَّ مَا قَالَ لأَحَدٍ، فَقَالَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى {سَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَرْضَى عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَ}. قَالَ كَعْبٌ وَكُنَّا تَخَلَّفْنَا أَيُّهَا الثَّلاَثَةُ عَنْ أَمْرِ أُولَئِكَ الَّذِينَ قَبِلَ مِنْهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ حَلَفُوا لَهُ، فَبَايَعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ وَأَرْجَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمْرَنَا حَتَّى قَضَى اللَّهُ فِيهِ، فَبِذَلِكَ قَالَ اللَّهُ {وَعَلَى الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا} وَلَيْسَ الَّذِي ذَكَرَ اللَّهُ مِمَّا خُلِّفْنَا عَنِ الْغَزْوِ إِنَّمَا هُوَ تَخْلِيفُهُ إِيَّانَا وَإِرْجَاؤُهُ أَمْرَنَا عَمَّنْ حَلَفَ لَهُ وَاعْتَذَرَ إِلَيْهِ، فَقَبِلَ مِنْهُ.
قَالَ كَعْبٌ فَمَا رَجُلٌ يُرِيْدُ أَنْ يَتَغَيَّبَ إِلَّا ظَنَّ أَنْ سَيَخْفَى لَهُ مَا لَمْ يَنْزِلْ فِيْهِ وَحْيُ اللهِ وَغَزَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تِلْكَ الْغَزْوَةَ حِيْنَ طَابَتْ الثِّمَارُ وَالظِّلَالُ وَتَجَهَّزَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُوْنَ مَعَهُ فَطَفِقْتُ أَغْدُوْ لِكَيْ أَتَجَهَّزَ مَعَهُمْ فَأَرْجِعُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا فَأَقُوْلُ فِيْ نَفْسِيْ أَنَا قَادِرٌ عَلَيْهِ فَلَمْ يَزَلْ يَتَمَادَى بِيْ حَتَّى اشْتَدَّ بِالنَّاسِ الْجِدُّ فَأَصْبَحَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُوْنَ مَعَهُ وَلَمْ أَقْضِ مِنْ جَهَازِيْ شَيْئًا فَقُلْتُ أَتَجَهَّزُ بَعْدَهُ بِيَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ ثُمَّ أَلْحَقُهُمْ فَغَدَوْتُ بَعْدَ أَنْ فَصَلُوْا لِأَتَجَهَّزَ فَرَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا ثُمَّ غَدَوْتُ ثُمَّ رَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا فَلَمْ يَزَلْ بِيْ حَتَّى أَسْرَعُوْا وَتَفَارَطَ الْغَزْوُ وَهَمَمْتُ أَنْ أَرْتَحِلَ فَأُدْرِكَهُمْ وَلَيْتَنِيْ فَعَلْتُ فَلَمْ يُقَدَّرْ لِيْ ذَلِكَ فَكُنْتُ إِذَا خَرَجْتُ فِي النَّاسِ بَعْدَ خُرُوْجِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَطُفْتُ فِيْهِمْ أَحْزَنَنِيْ أَنِّيْ لَا أَرَى إِلَّا رَجُلًا مَغْمُوْصًا عَلَيْهِ النِّفَاقُ أَوْ رَجُلًا مِمَّنْ عَذَرَ اللهُ مِنْ الضُّعَفَاءِ وَلَمْ يَذْكُرْنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَلَغَ تَبُوْكَ فَقَالَ وَهُوَ جَالِسٌ فِي الْقَوْمِ بِتَبُوْكَ مَا فَعَلَ كَعْبٌ
فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ سَلِمَةَ يَا رَسُوْلَ اللهِ حَبَسَهُ بُرْدَاهُ وَنَظَرُهُ فِيْ عِطْفِهِ فَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ بِئْسَ مَا قُلْتَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا عَلِمْنَا عَلَيْهِ إِلَّا خَيْرًا فَسَكَتَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ فَلَمَّا بَلَغَنِيْ أَنَّهُ تَوَجَّهَ قَافِلًا حَضَرَنِيْ هَمِّيْ وَطَفِقْتُ أَتَذَكَّرُ الْكَذِبَ وَأَقُوْلُ بِمَاذَا أَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ غَدًا وَاسْتَعَنْتُ عَلَى ذَلِكَ بِكُلِّ ذِيْ رَأْيٍ مِنْ أَهْلِيْ فَلَمَّا قِيْلَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَظَلَّ قَادِمًا زَاحَ عَنِّيْ الْبَاطِلُ وَعَرَفْتُ أَنِّيْ لَنْ أَخْرُجَ مِنْهُ أَبَدًا بِشَيْءٍ فِيْهِ كَذِبٌ فَأَجْمَعْتُ صِدْقَهُ وَأَصْبَحَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَادِمًا وَكَانَ إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَيَرْكَعُ فِيْهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ لِلنَّاسِ فَلَمَّا فَعَلَ ذَلِكَ جَاءَهُ الْمُخَلَّفُوْنَ فَطَفِقُوْا يَعْتَذِرُوْنَ إِلَيْهِ وَيَحْلِفُوْنَ لَهُ وَكَانُوْا بِضْعَةً وَثَمَانِيْنَ رَجُلًا فَقَبِلَ مِنْهُمْ رَسُوْلُ اللهِ عَلَانِيَتَهُمْ وَبَايَعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ وَوَكَلَ سَرَائِرَهُمْ إِلَى اللهِ فَجِئْتُهُ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ تَبَسَّمَ تَبَسُّمَ الْمُغْضَبِ ثُمَّ قَالَ تَعَالَ فَجِئْتُ أَمْشِيْ حَتَّى جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ لِيْ مَا خَلَّفَكَ أَلَمْ تَكُنْ قَدْ ابْتَعْتَ ظَهْرَكَ فَقُلْتُ بَلَى إِنِّيْ وَاللهِ لَوْ جَلَسْتُ عِنْدَ غَيْرِكَ مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا لَرَأَيْتُ أَنْ سَأَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ بِعُذْرٍ وَلَقَدْ أُعْطِيْتُ جَدَلًا وَلَكِنِّيْ وَاللهِ لَقَدْ عَلِمْتُ لَئِنْ حَدَّثْتُكَ الْيَوْمَ حَدِيْثَ كَذِبٍ تَرْضَى بِهِ عَنِّيْ لَيُوْشِكَنَّ اللهُ أَنْ يُسْخِطَكَ عَلَيَّ وَلَئِنْ حَدَّثْتُكَ حَدِيْثَ صِدْقٍ تَجِدُ عَلَيَّ فِيْهِ إِنِّيْ لَأَرْجُوْ فِيْهِ عَفْوَ اللهِ لَا وَاللهِ مَا كَانَ لِيْ مِنْ عُذْرٍ وَاللهِ مَا كُنْتُ قَطُّ أَقْوَى وَلَا أَيْسَرَ مِنِّيْ حِيْنَ تَخَلَّفْتُ عَنْكَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَّا هَذَا فَقَدْ صَدَقَ فَقُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللهُ فِيْكَ فَقُمْتُ وَثَارَ رِجَالٌ مِنْ بَنِيْ سَلِمَةَ فَاتَّبَعُوْنِيْ فَقَالُوْا لِيْ وَاللهِ مَا عَلِمْنَاكَ كُنْتَ أَذْنَبْتَ ذَنْبًا قَبْلَ هَذَا وَلَقَدْ عَجَزْتَ أَنْ لَا تَكُوْنَ اعْتَذَرْتَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِمَا اعْتَذَرَ إِلَيْهِ الْمُتَخَلِّفُوْنَ قَدْ كَانَ كَافِيَكَ ذَنْبَكَ اسْتِغْفَارُ رَسُوْلِ اللهِ لَكَ فَوَاللهِ مَا زَالُوْا يُؤَنِّبُوْنِيْ حَتَّى أَرَدْتُ أَنْ أَرْجِعَ فَأُكَذِّبَ نَفْسِيْ ثُمَّ قُلْتُ لَهُمْ هَلْ لَقِيَ هَذَا مَعِيْ أَحَدٌ قَالُوْا نَعَمْ رَجُلَانِ قَالَا مِثْلَ مَا قُلْتَ فَقِيْلَ لَهُمَا مِثْلُ مَا قِيْلَ لَكَ فَقُلْتُ مَنْ هُمَا قَالُوْا مُرَارَةُ بْنُ الرَّبِيْعِ الْعَمْرِيُّ وَهِلَالُ بْنُ أُمَيَّةَ الْوَاقِفِيُّ فَذَكَرُوْا لِيْ رَجُلَيْنِ صَالِحَيْنِ قَدْ شَهِدَا بَدْرًا فِيْهِمَا أُسْوَةٌ فَمَضَيْتُ حِيْنَ ذَكَرُوْهُمَا لِيْ وَنَهَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمُسْلِمِيْنَ عَنْ كَلَامِنَا أَيُّهَا الثَلَاثَةُ مِنْ بَيْنِ مَنْ تَخَلَّفَ عَنْهُ فَاجْتَنَبَنَا النَّاسُ وَتَغَيَّرُوْا لَنَا حَتَّى تَنَكَّرَتْ فِيْ نَفْسِي الْأَرْضُ فَمَا هِيَ الَّتِيْ أَعْرِفُ
فَلَبِثْنَا عَلَى ذَلِكَ خَمْسِيْنَ لَيْلَةً فَأَمَّا صَاحِبَايَ فَاسْتَكَانَا وَقَعَدَا فِيْ بُيُوْتِهِمَا يَبْكِيَانِ وَأَمَّا أَنَا فَكُنْتُ أَشَبَّ الْقَوْمِ وَأَجْلَدَهُمْ فَكُنْتُ أَخْرُجُ فَأَشْهَدُ الصَّلَاةَ مَعَ الْمُسْلِمِيْنَ وَأَطُوْفُ فِي الْأَسْوَاقِ وَلَا يُكَلِّمُنِيْ أَحَدٌ وَآتِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأُسَلِّمُ عَلَيْهِ وَهُوَ فِيْ مَجْلِسِهِ بَعْدَ الصَّلَاةِ فَأَقُوْلُ فِيْ نَفْسِيْ هَلْ حَرَّكَ شَفَتَيْهِ بِرَدِّ السَّلَامِ عَلَيَّ أَمْ لَا ثُمَّ أُصَلِّيْ قَرِيْبًا مِنْهُ فَأُسَارِقُهُ النَّظَرَ فَإِذَا أَقْبَلْتُ عَلَى صَلَاتِيْ أَقْبَلَ إِلَيَّ وَإِذَا الْتَفَتُّ نَحْوَهُ أَعْرَضَ عَنِّيْ حَتَّى إِذَا طَالَ عَلَيَّ ذَلِكَ مِنْ جَفْوَةِ النَّاسِ مَشَيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ جِدَارَ حَائِطِ أَبِيْ قَتَادَةَ وَهُوَ ابْنُ عَمِّيْ وَأَحَبُّ النَّاسِ إِلَيَّ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَوَاللهِ مَا رَدَّ عَلَيَّ السَّلَامَ فَقُلْتُ يَا أَبَا قَتَادَةَ أَنْشُدُكَ بِاللهِ هَلْ تَعْلَمُنِيْ أُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَسَكَتَ فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ فَسَكَتَ فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ فَقَالَ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَفَاضَتْ عَيْنَايَ وَتَوَلَّيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ الْجِدَارَ قَالَ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ بِسُوْقِ الْمَدِيْنَةِ إِذَا نَبَطِيٌّ مِنْ أَنْبَاطِ أَهْلِ الشَّأْمِ مِمَّنْ قَدِمَ بِالطَّعَامِ يَبِيْعُهُ بِالْمَدِيْنَةِ يَقُوْلُ مَنْ يَدُلُّ عَلَى كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ فَطَفِقَ النَّاسُ يُشِيْرُوْنَ لَهُ حَتَّى إِذَا جَاءَنِيْ دَفَعَ إِلَيَّ كِتَابًا مِنْ مَلِكِ غَسَّانَ فَإِذَا فِيْهِ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنِيْ أَنَّ صَاحِبَكَ قَدْ جَفَاكَ وَلَمْ يَجْعَلْكَ اللهُ بِدَارِ هَوَانٍ وَلَا مَضْيَعَةٍ فَالْحَقْ بِنَا نُوَاسِكَ
فَقُلْتُ لَمَّا قَرَأْتُهَا وَهَذَا أَيْضًا مِنَ الْبَلَاءِ فَتَيَمَّمْتُ بِهَا التَّنُّوْرَ فَسَجَرْتُهُ بِهَا حَتَّى إِذَا مَضَتْ أَرْبَعُوْنَ لَيْلَةً مِنَ الْخَمْسِيْنَ إِذَا رَسُوْلُ رَسُوْلِ اللهِ يَأْتِيْنِيْ فَقَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُكَ أَنْ تَعْتَزِلَ امْرَأَتَكَ فَقُلْتُ أُطَلِّقُهَا أَمْ مَاذَا أَفْعَلُ قَالَ لَا بَلْ اعْتَزِلْهَا وَلَا تَقْرَبْهَا وَأَرْسَلَ إِلَى صَاحِبَيَّ مِثْلَ ذَلِكَ فَقُلْتُ لِامْرَأَتِي الْحَقِيْ بِأَهْلِكِ فَتَكُوْنِيْ عِنْدَهُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللهُ فِيْ هَذَا الْأَمْرِ قَالَ كَعْبٌ فَجَاءَتْ امْرَأَةُ هِلَالِ بْنِ أُمَيَّةَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ هِلَالَ بْنَ أُمَيَّةَ شَيْخٌ ضَائِعٌ لَيْسَ لَهُ خَادِمٌ فَهَلْ تَكْرَهُ أَنْ أَخْدُمَهُ قَالَ لَا وَلَكِنْ لَا يَقْرَبْكِ قَالَتْ إِنَّهُ وَاللهِ مَا بِهِ حَرَكَةٌ إِلَى شَيْءٍ وَاللهِ مَا زَالَ يَبْكِيْ مُنْذُ كَانَ مِنْ أَمْرِهِ مَا كَانَ إِلَى يَوْمِهِ هَذَا فَقَالَ لِيْ بَعْضُ أَهْلِيْ لَوْ اسْتَأْذَنْتَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي امْرَأَتِكَ كَمَا أَذِنَ لِامْرَأَةِ هِلَالِ بْنِ أُمَيَّةَ أَنْ تَخْدُمَهُ فَقُلْتُ وَاللهِ لَا أَسْتَأْذِنُ فِيْهَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا يُدْرِيْنِيْ مَا يَقُوْلُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَأْذَنْتُهُ فِيْهَا وَأَنَا رَجُلٌ شَابٌّ فَلَبِثْتُ بَعْدَ ذَلِكَ عَشْرَ لَيَالٍ حَتَّى كَمَلَتْ لَنَا خَمْسُوْنَ لَيْلَةً مِنْ حِيْنَ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ كَلَامِنَا فَلَمَّا صَلَّيْتُ صَلَاةَ الْفَجْرِ صُبْحَ خَمْسِيْنَ لَيْلَةً وَأَنَا عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ مِنْ بُيُوْتِنَا فَبَيْنَا أَنَا جَالِسٌ عَلَى الْحَالِ الَّتِيْ ذَكَرَ اللهُ قَدْ ضَاقَتْ عَلَيَّ نَفْسِيْ وَضَاقَتْ عَلَيَّ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ سَمِعْتُ صَوْتَ صَارِخٍ أَوْفَى عَلَى جَبَلِ سَلْعٍ بِأَعْلَى صَوْتِهِ يَا كَعْبُ بْنَ مَالِكٍ أَبْشِرْ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ ـ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ مِنْ بَنِيهِ حِينَ عَمِيَ ـ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ، يُحَدِّثُ حِينَ تَخَلَّفَ عَنْ قِصَّةِ، تَبُوكَ قَالَ كَعْبٌ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا إِلاَّ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ، غَيْرَ أَنِّي كُنْتُ تَخَلَّفْتُ فِي غَزْوَةِ بَدْرٍ، وَلَمْ يُعَاتِبْ أَحَدًا تَخَلَّفَ، عَنْهَا إِنَّمَا خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيدُ عِيرَ قُرَيْشٍ، حَتَّى جَمَعَ اللَّهُ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ عَدُوِّهِمْ عَلَى غَيْرِ مِيعَادٍ وَلَقَدْ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ حِينَ تَوَاثَقْنَا عَلَى الإِسْلاَمِ، وَمَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِهَا مَشْهَدَ بَدْرٍ، وَإِنْ كَانَتْ بَدْرٌ أَذْكَرَ فِي النَّاسِ مِنْهَا، كَانَ مِنْ خَبَرِي أَنِّي لَمْ أَكُنْ قَطُّ أَقْوَى وَلاَ أَيْسَرَ حِينَ تَخَلَّفْتُ عَنْهُ فِي تِلْكَ الْغَزْوَةِ، وَاللَّهِ مَا اجْتَمَعَتْ عِنْدِي قَبْلَهُ رَاحِلَتَانِ قَطُّ حَتَّى جَمَعْتُهُمَا فِي تِلْكَ الْغَزْوَةِ، وَلَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيدُ غَزْوَةً إِلاَّ وَرَّى بِغَيْرِهَا، حَتَّى كَانَتْ تِلْكَ الْغَزْوَةُ، غَزَاهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَرٍّ شَدِيدٍ، وَاسْتَقْبَلَ سَفَرًا بَعِيدًا وَمَفَازًا وَعَدُوًّا كَثِيرًا، فَجَلَّى لِلْمُسْلِمِينَ أَمْرَهُمْ لِيَتَأَهَّبُوا أُهْبَةَ غَزْوِهِمْ، فَأَخْبَرَهُمْ بِوَجْهِهِ الَّذِي يُرِيدُ، وَالْمُسْلِمُونَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَثِيرٌ، وَلاَ يَجْمَعُهُمْ كِتَابٌ حَافِظٌ ـ يُرِيدُ الدِّيوَانَ ـ قَالَ كَعْبٌ فَمَا رَجُلٌ يُرِيدُ أَنْ يَتَغَيَّبَ إِلاَّ ظَنَّ أَنْ سَيَخْفَى لَهُ مَا لَمْ يَنْزِلْ فِيهِ وَحْىُ اللَّهِ، وَغَزَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تِلْكَ الْغَزْوَةَ حِينَ طَابَتِ الثِّمَارُ وَالظِّلاَلُ، وَتَجَهَّزَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُونَ مَعَهُ، فَطَفِقْتُ أَغْدُو لِكَىْ أَتَجَهَّزَ مَعَهُمْ فَأَرْجِعُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا، فَأَقُولُ فِي نَفْسِي أَنَا قَادِرٌ عَلَيْهِ. فَلَمْ يَزَلْ يَتَمَادَى بِي حَتَّى اشْتَدَّ بِالنَّاسِ الْجِدُّ، فَأَصْبَحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالْمُسْلِمُونَ مَعَهُ وَلَمْ أَقْضِ مِنْ جَهَازِي شَيْئًا، فَقُلْتُ أَتَجَهَّزُ بَعْدَهُ بِيَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ ثُمَّ أَلْحَقُهُمْ، فَغَدَوْتُ بَعْدَ أَنْ فَصَلُوا لأَتَجَهَّزَ، فَرَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا، ثُمَّ غَدَوْتُ ثُمَّ رَجَعْتُ وَلَمْ أَقْضِ شَيْئًا، فَلَمْ يَزَلْ بِي حَتَّى أَسْرَعُوا وَتَفَارَطَ الْغَزْوُ، وَهَمَمْتُ أَنْ أَرْتَحِلَ فَأُدْرِكَهُمْ، وَلَيْتَنِي فَعَلْتُ، فَلَمْ يُقَدَّرْ لِي ذَلِكَ، فَكُنْتُ إِذَا خَرَجْتُ فِي النَّاسِ بَعْدَ خُرُوجِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَطُفْتُ فِيهِمْ، أَحْزَنَنِي أَنِّي لاَ أَرَى إِلاَّ رَجُلاً مَغْمُوصًا عَلَيْهِ النِّفَاقُ أَوْ رَجُلاً مِمَّنْ عَذَرَ اللَّهُ مِنَ الضُّعَفَاءِ، وَلَمْ يَذْكُرْنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَلَغَ تَبُوكَ، فَقَالَ وَهْوَ جَالِسٌ فِي الْقَوْمِ بِتَبُوكَ " مَا فَعَلَ كَعْبٌ ". فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، حَبَسَهُ بُرْدَاهُ وَنَظَرُهُ فِي عِطْفِهِ. فَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ بِئْسَ مَا قُلْتَ، وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا عَلِمْنَا عَلَيْهِ إِلاَّ خَيْرًا. فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قَالَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ فَلَمَّا بَلَغَنِي أَنَّهُ تَوَجَّهَ قَافِلاً حَضَرَنِي هَمِّي، وَطَفِقْتُ أَتَذَكَّرُ الْكَذِبَ وَأَقُولُ بِمَاذَا أَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ غَدًا وَاسْتَعَنْتُ عَلَى ذَلِكَ بِكُلِّ ذِي رَأْىٍ مِنْ أَهْلِي، فَلَمَّا قِيلَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَظَلَّ قَادِمًا زَاحَ عَنِّي الْبَاطِلُ، وَعَرَفْتُ أَنِّي لَنْ أَخْرُجَ مِنْهُ أَبَدًا بِشَىْءٍ فِيهِ كَذِبٌ، فَأَجْمَعْتُ صِدْقَهُ، وَأَصْبَحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَادِمًا، وَكَانَ إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَيَرْكَعُ فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ لِلنَّاسِ، فَلَمَّا فَعَلَ ذَلِكَ جَاءَهُ الْمُخَلَّفُونَ، فَطَفِقُوا يَعْتَذِرُونَ إِلَيْهِ، وَيَحْلِفُونَ لَهُ، وَكَانُوا بِضْعَةً وَثَمَانِينَ رَجُلاً فَقَبِلَ مِنْهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلاَنِيَتَهُمْ، وَبَايَعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ، وَوَكَلَ سَرَائِرَهُمْ إِلَى اللَّهِ، فَجِئْتُهُ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ تَبَسَّمَ تَبَسُّمَ الْمُغْضَبِ، ثُمَّ قَالَ " تَعَالَ ". فَجِئْتُ أَمْشِي حَتَّى جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ، فَقَالَ لِي " مَا خَلَّفَكَ أَلَمْ تَكُنْ قَدِ ابْتَعْتَ ظَهْرَكَ ". فَقُلْتُ بَلَى، إِنِّي وَاللَّهِ لَوْ جَلَسْتُ عِنْدَ غَيْرِكَ مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا، لَرَأَيْتُ أَنْ سَأَخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ بِعُذْرٍ، وَلَقَدْ أُعْطِيتُ جَدَلاً، وَلَكِنِّي وَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمْتُ لَئِنْ حَدَّثْتُكَ الْيَوْمَ حَدِيثَ كَذِبٍ تَرْضَى بِهِ عَنِّي لَيُوشِكَنَّ اللَّهُ أَنْ يُسْخِطَكَ عَلَىَّ، وَلَئِنْ حَدَّثْتُكَ حَدِيثَ صِدْقٍ تَجِدُ عَلَىَّ فِيهِ إِنِّي لأَرْجُو فِيهِ عَفْوَ اللَّهِ، لاَ وَاللَّهِ مَا كَانَ لِي مِنْ عُذْرٍ، وَاللَّهِ مَا كُنْتُ قَطُّ أَقْوَى وَلاَ أَيْسَرَ مِنِّي حِينَ تَخَلَّفْتُ عَنْكَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَّا هَذَا فَقَدْ صَدَقَ، فَقُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللَّهُ فِيكَ ". فَقُمْتُ وَثَارَ رِجَالٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ فَاتَّبَعُونِي، فَقَالُوا لِي وَاللَّهِ مَا عَلِمْنَاكَ كُنْتَ أَذْنَبْتَ ذَنْبًا قَبْلَ هَذَا، وَلَقَدْ عَجَزْتَ أَنْ لاَ تَكُونَ اعْتَذَرْتَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمَا اعْتَذَرَ إِلَيْهِ الْمُتَخَلِّفُونَ، قَدْ كَانَ كَافِيَكَ ذَنْبَكَ اسْتِغْفَارُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَكَ، فَوَاللَّهِ مَا زَالُوا يُؤَنِّبُونِي حَتَّى أَرَدْتُ أَنْ أَرْجِعَ فَأُكَذِّبُ نَفْسِي، ثُمَّ قُلْتُ لَهُمْ هَلْ لَقِيَ هَذَا مَعِي أَحَدٌ قَالُوا نَعَمْ، رَجُلاَنِ قَالاَ مِثْلَ مَا قُلْتَ، فَقِيلَ لَهُمَا مِثْلُ مَا قِيلَ لَكَ. فَقُلْتُ مَنْ هُمَا قَالُوا مُرَارَةُ بْنُ الرَّبِيعِ الْعَمْرِيُّ وَهِلاَلُ بْنُ أُمَيَّةَ الْوَاقِفِيُّ. فَذَكَرُوا لِي رَجُلَيْنِ صَالِحَيْنِ قَدْ شَهِدَا بَدْرًا فِيهِمَا إِسْوَةٌ، فَمَضَيْتُ حِينَ ذَكَرُوهُمَا لِي، وَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمُسْلِمِينَ عَنْ كَلاَمِنَا أَيُّهَا الثَّلاَثَةُ مِنْ بَيْنِ مَنْ تَخَلَّفَ عَنْهُ، فَاجْتَنَبَنَا النَّاسُ وَتَغَيَّرُوا لَنَا حَتَّى تَنَكَّرَتْ فِي نَفْسِي الأَرْضُ، فَمَا هِيَ الَّتِي أَعْرِفُ، فَلَبِثْنَا عَلَى ذَلِكَ خَمْسِينَ لَيْلَةً، فَأَمَّا صَاحِبَاىَ فَاسْتَكَانَا وَقَعَدَا فِي بُيُوتِهِمَا يَبْكِيَانِ، وَأَمَّا أَنَا فَكُنْتُ أَشَبَّ الْقَوْمِ وَأَجْلَدَهُمْ، فَكُنْتُ أَخْرُجُ فَأَشْهَدُ الصَّلاَةَ مَعَ الْمُسْلِمِينَ وَأَطُوفُ فِي الأَسْوَاقِ، وَلاَ يُكَلِّمُنِي أَحَدٌ، وَآتِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأُسَلِّمُ عَلَيْهِ وَهْوَ فِي مَجْلِسِهِ بَعْدَ الصَّلاَةِ، فَأَقُولُ فِي نَفْسِي هَلْ حَرَّكَ شَفَتَيْهِ بِرَدِّ السَّلاَمِ عَلَىَّ أَمْ لاَ ثُمَّ أُصَلِّي قَرِيبًا مِنْهُ فَأُسَارِقُهُ النَّظَرَ، فَإِذَا أَقْبَلْتُ عَلَى صَلاَتِي أَقْبَلَ إِلَىَّ، وَإِذَا الْتَفَتُّ نَحْوَهُ أَعْرَضَ عَنِّي، حَتَّى إِذَا طَالَ عَلَىَّ ذَلِكَ مِنْ جَفْوَةِ النَّاسِ مَشَيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ جِدَارَ حَائِطِ أَبِي قَتَادَةَ وَهْوَ ابْنُ عَمِّي وَأَحَبُّ النَّاسِ إِلَىَّ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَوَاللَّهِ مَا رَدَّ عَلَىَّ السَّلاَمَ، فَقُلْتُ يَا أَبَا قَتَادَةَ، أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ هَلْ تَعْلَمُنِي أُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَسَكَتَ، فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ فَسَكَتَ، فَعُدْتُ لَهُ فَنَشَدْتُهُ. فَقَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. فَفَاضَتْ عَيْنَاىَ وَتَوَلَّيْتُ حَتَّى تَسَوَّرْتُ الْجِدَارَ، قَالَ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِي بِسُوقِ الْمَدِينَةِ إِذَا نَبَطِيٌّ مِنْ أَنْبَاطِ أَهْلِ الشَّأْمِ مِمَّنْ قَدِمَ بِالطَّعَامِ يَبِيعُهُ بِالْمَدِينَةِ يَقُولُ مَنْ يَدُلُّ عَلَى كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ فَطَفِقَ النَّاسُ يُشِيرُونَ لَهُ، حَتَّى إِذَا جَاءَنِي دَفَعَ إِلَىَّ كِتَابًا مِنْ مَلِكِ غَسَّانَ، فَإِذَا فِيهِ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنِي أَنَّ صَاحِبَكَ قَدْ جَفَاكَ، وَلَمْ يَجْعَلْكَ اللَّهُ بِدَارِ هَوَانٍ وَلاَ مَضْيَعَةٍ، فَالْحَقْ بِنَا نُوَاسِكَ. فَقُلْتُ لَمَّا قَرَأْتُهَا وَهَذَا أَيْضًا مِنَ الْبَلاَءِ. فَتَيَمَّمْتُ بِهَا التَّنُّورَ فَسَجَرْتُهُ بِهَا، حَتَّى إِذَا مَضَتْ أَرْبَعُونَ لَيْلَةً مِنَ الْخَمْسِينَ إِذَا رَسُولُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْتِينِي فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُكَ أَنْ تَعْتَزِلَ امْرَأَتَكَ فَقُلْتُ أُطَلِّقُهَا أَمْ مَاذَا أَفْعَلُ قَالَ لاَ بَلِ اعْتَزِلْهَا وَلاَ تَقْرَبْهَا. وَأَرْسَلَ إِلَى صَاحِبَىَّ مِثْلَ ذَلِكَ، فَقُلْتُ لاِمْرَأَتِي الْحَقِي بِأَهْلِكِ فَتَكُونِي عِنْدَهُمْ حَتَّى يَقْضِيَ اللَّهُ فِي هَذَا الأَمْرِ. قَالَ كَعْبٌ فَجَاءَتِ امْرَأَةُ هِلاَلِ بْنِ أُمَيَّةَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ هِلاَلَ بْنَ أُمَيَّةَ شَيْخٌ ضَائِعٌ لَيْسَ لَهُ خَادِمٌ فَهَلْ تَكْرَهُ أَنْ أَخْدُمَهُ قَالَ " لاَ وَلَكِنْ لاَ يَقْرَبْكِ ". قَالَتْ إِنَّهُ وَاللَّهِ مَا بِهِ حَرَكَةٌ إِلَى شَىْءٍ، وَاللَّهِ مَا زَالَ يَبْكِي مُنْذُ كَانَ مِنْ أَمْرِهِ مَا كَانَ إِلَى يَوْمِهِ هَذَا. فَقَالَ لِي بَعْضُ أَهْلِي لَوِ اسْتَأْذَنْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي امْرَأَتِكَ كَمَا أَذِنَ لاِمْرَأَةِ هِلاَلِ بْنِ أُمَيَّةَ أَنْ تَخْدُمَهُ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لاَ أَسْتَأْذِنُ فِيهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا يُدْرِينِي مَا يَقُولُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَأْذَنْتُهُ فِيهَا وَأَنَا رَجُلٌ شَابٌّ فَلَبِثْتُ بَعْدَ ذَلِكَ عَشْرَ لَيَالٍ حَتَّى كَمَلَتْ لَنَا خَمْسُونَ لَيْلَةً مِنْ حِينِ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ كَلاَمِنَا، فَلَمَّا صَلَّيْتُ صَلاَةَ الْفَجْرِ صُبْحَ خَمْسِينَ لَيْلَةً، وَأَنَا عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِنَا، فَبَيْنَا أَنَا جَالِسٌ عَلَى الْحَالِ الَّتِي ذَكَرَ اللَّهُ، قَدْ ضَاقَتْ عَلَىَّ نَفْسِي، وَضَاقَتْ عَلَىَّ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ، سَمِعْتُ صَوْتَ صَارِخٍ أَوْفَى عَلَى جَبَلِ سَلْعٍ بِأَعْلَى صَوْتِهِ يَا كَعْبُ بْنَ مَالِكٍ، أَبْشِرْ. قَالَ فَخَرَرْتُ سَاجِدًا، وَعَرَفْتُ أَنْ قَدْ جَاءَ فَرَجٌ، وَآذَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِتَوْبَةِ اللَّهِ عَلَيْنَا حِينَ صَلَّى صَلاَةَ الْفَجْرِ، فَذَهَبَ النَّاسُ يُبَشِّرُونَنَا، وَذَهَبَ قِبَلَ صَاحِبَىَّ مُبَشِّرُونَ، وَرَكَضَ إِلَىَّ رَجُلٌ فَرَسًا، وَسَعَى سَاعٍ مِنْ أَسْلَمَ فَأَوْفَى عَلَى الْجَبَلِ وَكَانَ الصَّوْتُ أَسْرَعَ مِنَ الْفَرَسِ، فَلَمَّا جَاءَنِي الَّذِي سَمِعْتُ صَوْتَهُ يُبَشِّرُنِي نَزَعْتُ لَهُ ثَوْبَىَّ، فَكَسَوْتُهُ إِيَّاهُمَا بِبُشْرَاهُ، وَاللَّهِ مَا أَمْلِكُ غَيْرَهُمَا يَوْمَئِذٍ، وَاسْتَعَرْتُ ثَوْبَيْنِ فَلَبِسْتُهُمَا، وَانْطَلَقْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَيَتَلَقَّانِي النَّاسُ فَوْجًا فَوْجًا يُهَنُّونِي بِالتَّوْبَةِ، يَقُولُونَ لِتَهْنِكَ تَوْبَةُ اللَّهِ عَلَيْكَ. قَالَ كَعْبٌ حَتَّى دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ، فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ حَوْلَهُ النَّاسُ فَقَامَ إِلَىَّ طَلْحَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ يُهَرْوِلُ حَتَّى صَافَحَنِي وَهَنَّانِي، وَاللَّهِ مَا قَامَ إِلَىَّ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ غَيْرُهُ، وَلاَ أَنْسَاهَا لِطَلْحَةَ، قَالَ كَعْبٌ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ يَبْرُقُ وَجْهُهُ مِنَ السُّرُورِ " أَبْشِرْ بِخَيْرِ يَوْمٍ مَرَّ عَلَيْكَ مُنْذُ وَلَدَتْكَ أُمُّكَ ". قَالَ قُلْتُ أَمِنْ عِنْدِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمْ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ قَالَ " لاَ، بَلْ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ ". وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ حَتَّى كَأَنَّهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ، وَكُنَّا نَعْرِفُ ذَلِكَ مِنْهُ، فَلَمَّا جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ أَنْخَلِعَ مِنْ مَالِي صَدَقَةً إِلَى اللَّهِ وَإِلَى رَسُولِ اللَّهِ. قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمْسِكْ عَلَيْكَ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ". قُلْتُ فَإِنِّي أُمْسِكُ سَهْمِي الَّذِي بِخَيْبَرَ، فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ اللَّهَ إِنَّمَا نَجَّانِي بِالصِّدْقِ، وَإِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ لاَ أُحَدِّثَ إِلاَّ صِدْقًا مَا بَقِيتُ، فَوَاللَّهِ مَا أَعْلَمُ أَحَدًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ أَبْلاَهُ اللَّهُ فِي صِدْقِ الْحَدِيثِ مُنْذُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحْسَنَ مِمَّا أَبْلاَنِي، مَا تَعَمَّدْتُ مُنْذُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى يَوْمِي هَذَا كَذِبًا، وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَحْفَظَنِي اللَّهُ فِيمَا بَقِيتُ وَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم {لَقَدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ} إِلَى قَوْلِهِ {وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ} فَوَاللَّهِ مَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَىَّ مِنْ نِعْمَةٍ قَطُّ بَعْدَ أَنْ هَدَانِي لِلإِسْلاَمِ أَعْظَمَ فِي نَفْسِي مِنْ صِدْقِي لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ لاَ أَكُونَ كَذَبْتُهُ، فَأَهْلِكَ كَمَا هَلَكَ الَّذِينَ كَذَبُوا، فَإِنَّ اللَّهَ قَالَ لِلَّذِينَ كَذَبُوا حِينَ أَنْزَلَ الْوَحْىَ شَرَّ مَا قَالَ لأَحَدٍ، فَقَالَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى {سَيَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَرْضَى عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَ}. قَالَ كَعْبٌ وَكُنَّا تَخَلَّفْنَا أَيُّهَا الثَّلاَثَةُ عَنْ أَمْرِ أُولَئِكَ الَّذِينَ قَبِلَ مِنْهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ حَلَفُوا لَهُ، فَبَايَعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ وَأَرْجَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمْرَنَا حَتَّى قَضَى اللَّهُ فِيهِ، فَبِذَلِكَ قَالَ اللَّهُ {وَعَلَى الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا} وَلَيْسَ الَّذِي ذَكَرَ اللَّهُ مِمَّا خُلِّفْنَا عَنِ الْغَزْوِ إِنَّمَا هُوَ تَخْلِيفُهُ إِيَّانَا وَإِرْجَاؤُهُ أَمْرَنَا عَمَّنْ حَلَفَ لَهُ وَاعْتَذَرَ إِلَيْهِ، فَقَبِلَ مِنْهُ.
আবদুল্লাহ
ইবনু কা'ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অন্ধ
হয়ে গেলে তাঁর সন্তানের মধ্য থেকে যিনি তাঁর সাহায্যকারী ও পথপ্রদর্শনকারী ছিলেন,
তিনি (‘আবদুল্লাহ্) বলেন, আমি কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যখন তাবূক
যুদ্ধ থেকে তিনি পশ্চাতে থেকে যান তখনকার অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যতগুলো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তার মধ্যে তাবূক
যুদ্ধ ব্যতীত আমি আর কোন যুদ্ধ থেকে পেছনে থাকিনি। তবে আমি বদর যুদ্ধেও অংশগ্রহণ
করিনি। কিন্তু উক্ত যুদ্ধ থেকে যাঁরা পেছনে পড়ে গেছেন, তাদের কাউকে ভৎর্সনা করা
হয়নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল কুরাইশ দলের সন্ধানে বের
হয়েছিলেন। অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের এবং তাঁদের শত্রু বাহিনীর মধ্যে অঘোষিত
যুদ্ধ সংঘটিত করেন। আর আকাবার রাতে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাদের থেকে ইসলামের উপর অঙ্গীকার গ্রহণ করেন, আমি তখন তাঁর সঙ্গে ছিলাম। ফলে বাদর
প্রান্তরে উপস্থিত হওয়াকে আমি প্রিয়তর ও শ্রেষ্ঠতর বলে বিবেচনা করিনি। যদিও আকাবার
ঘটনা অপেক্ষা লোকেদের মধ্যে বাদরের ঘটনা বেশী মাশহুর ছিল। আর আমার অবস্থার বিবরণ
এই-তাবূক যুদ্ধ থেকে আমি যখন পেছনে থাকি তখন আমি এত অধিক সুস্থ, শক্তিশালী ও সচ্ছল
ছিলাম যে আল্লাহর কসম! আমার কাছে কখনো ইতোপূর্বে কোন যুদ্ধে একই সঙ্গে দু’টো
যানবাহন জোগাড় করা সম্ভব হয়নি, যা আমি এ যুদ্ধের সময় জোগাড় করেছিলাম। আর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে অভিযান পরিচালনার সংকল্প গ্রহণ
করতেন, বাহ্যত তার বিপরীত দেখাতেন। এ যুদ্ধ ছিল ভীষণ উত্তাপের সময়, অতি দূরের
যাত্রা, বিশাল মরুভূমি এবং বহু শত্রুসেনার মোকাবালা করার। কাজেই রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অভিযানের অবস্থা এবং কোন এলাকায় যুদ্ধ পরিচালনা
করতে যাবেন তাও মুসলিমদের কাছে প্রকাশ করে দেন যাতে তারা যুদ্ধের প্রয়োজনীয় সামান
জোগাড় করতে পারে। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে
মুসলিমের সংখ্যা অনেক ছিল এবং তাদের সংখ্যা কোন নথিপত্রেও হিসেব করে রাখা হতো না।
কা‘ব (রাঃ) বলেন, যার ফলে যে কোন লোক যুদ্ধাভিযান থেকে বিরত থাকতে ইচ্ছা করলে তা সহজেই করতে পারত এবং ওয়াহী মারফত এ খবর না জানানো পর্যন্ত তা সংগোপন থাকবে বলে সে ধারণা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অভিযান পরিচালনা করেছিলেন এমন সময় যখন ফল-মূল পাকার ও গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়ার সময় ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং এবং তাঁর সঙ্গী মুসলিম বাহিনী অভিযানে যাত্রার প্রস্তুতি গ্রহণ করে ফেলেন। আমিও প্রতি সকালে তাঁদের সঙ্গে রওয়ানা হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকি। কিন্তু কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি। মনে মনে ধারণা করতে থাকি, আমি তো যখন ইচ্ছা পারব। এই দোটানায় আমার সময় কেটে যেতে লাগল। এদিকে অন্য লোকেরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলল। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাথী মুসলিমগণ রওয়ানা করলেন অথচ আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না। আমি মনে মনে ভাবলাম, আচ্ছা ঠিক আছে, এক দু’দিনের মধ্যে আমি প্রস্তুত হয়ে পরে তাঁদের সঙ্গে গিয়ে মিলব। এভাবে আমি প্রতিদিন বাড়ি হতে প্রস্তুতি নেয়ার উদ্দেশে বের হই, কিন্তু কিছু না করেই ফিরে আসি। আবার বের হই, আবার কিছু না করে ঘরে ফিরে আসি। ইত্যবসরে বাহিনী অগ্রসর হয়ে অনেক দূর চলে গেল। আর আমি রওয়ানা করে তাদের সঙ্গে রাস্তায় মিলিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতে লাগলাম। আফসোস যদি আমি তাই করতাম! কিন্তু তা আমার ভাগ্যে জোটেনি। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা হওয়ার পর আমি লোকেদের মধ্যে বের হয়ে তাদের মাঝে বিচরণ করতাম। এ কথা আমার মনকে পীড়া দিত যে, আমি তখন (মদিনা্য়) মুনাফিক এবং দুর্বল ও অক্ষম লোক ব্যতীত অন্য কাউকে দেখতে পেতাম না। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক পৌঁছার আগে পর্যন্ত আমার ব্যাপারে আলোচনা করেননি। অনন্তর তাবূকে এ কথা তিনি লোকেদের মাঝে বসে জিজ্ঞেস করে বসলেন, কা‘ব কী করল?
বানু সালামাহ গোত্রের এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তার ধন-সম্পদ ও অহঙ্কার তাকে আসতে দেয়নি। এ কথা শুনে মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বললেন, তুমি যা বললে তা ঠিক নয়। হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহর কসম, আমরা তাঁকে উত্তম ব্যক্তি বলে জানি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব রইলেন। কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, আমি যখন জানতে পারলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা মুনাওয়ারায় ফিরে আসছেন, তখন আমি চিন্তিত হয়ে গেলাম এবং মিথ্যা ওজুহাত খুঁজতে থাকলাম। মনে স্থির করলাম, আগামীকাল এমন কথা বলব যাতে করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্রোধকে ঠান্ডা করতে পারি। আর এ সম্পর্কে আমার পরিবারস্থ জ্ঞানীগুণীদের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে থাকি। এরপর যখন প্রচারিত হল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা্য় এসে পৌঁছে যাচ্ছেন, তখন আমার অন্তর থেকে মিথ্যা দূর হয়ে গেল। আর মনে দৃঢ় প্রত্যয় হল যে, এমন কোন উপায়ে আমি তাঁকে কখনো ক্রোধমুক্ত করতে সক্ষম হব না, যাতে মিথ্যার লেশ থাকে। অতএব আমি মনে মনে স্থির করলাম যে, আমি সত্য কথাই বলব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল বেলায় মদিনা্য় প্রবেশ করলেন। তিনি সফর থেকে প্রত্যাবর্তন করে প্রথমে মসজিদে গিয়ে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন, তারপর লোকদের সামনে বসতেন। যখন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করলেন, তখন যারা পশ্চাদপদ ছিলেন তাঁরা তাঁর কাছে এসে শপথ করে করে অপারগতা ও আপত্তি পেশ করতে লাগল। এরা সংখ্যায় আশির অধিক ছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহ্যত তাদের ওযর-আপত্তি গ্রহণ করলেন, তাদের বাই‘আত করলেন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। কিন্তু তাদের অন্তরের অবস্থা আল্লাহর হাওয়ালা করে দিলেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আমিও এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে হাজির হলাম। আমি যখন তাঁকে সালাম দিলাম তখন তিনি রাগান্বিত চেহারায় মুচকি হাসি হাসলেন। তারপর বললেন, এসো। আমি সে মতে এগিয়ে গিয়ে একেবারে তাঁর সম্মুখে বসে গেলাম। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী কারণে তুমি অংশগ্রহণ করলে না? তুমি কি যানবাহন ক্রয় করনি? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ, করেছি। আল্লাহর কসম! এ কথা সুনিশ্চিত যে, আমি যদি আপনি ব্যতীত দুনিয়ার অন্য কোন ব্যক্তির সামনে বসতাম তাহলে আমি তার অসন্তুষ্টিকে ওযর-আপত্তি পেশের মাধ্যমে ঠান্ডা করার চেষ্টা করতাম। আর আমি তর্কে পটু। কিন্তু আল্লাহর কসম আমি পরিজ্ঞাত যে, আজ যদি আমি আপনার কাছে মিথ্যা কথা বলে আমার প্রতি আপনাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করি তাহলে শীঘ্রই আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে আমার প্রতি অসন্তুষ্ট করে দিতে পারেন। আর যদি আপনার কাছে সত্য প্রকাশ করি যাতে আপনি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হন, তবুও আমি এতে আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার অবশ্যই আশা করি। না, আল্লাহর কসম, আমার কোন ওযর ছিল না। আল্লাহর কসম! সেই যুদ্ধে আপনার সঙ্গে না যাওয়ার সময় আমি সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও সামর্থ্যবান ছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে সত্য কথাই বলেছে। তুমি এখন চলে যাও, যতদিনে না তোমার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ফায়সালা করে দেন। তাই আমি উঠে চলে গেলাম। তখন বানী সালিমার কতিপয় লোক আমার অনুসরণ করল। তারা আমাকে বলল, আল্লাহর কসম! তুমি ইতোপূর্বে কোন পাপ করেছ বলে আমাদের জানা নেই; তুমি (তাবূক যুদ্ধে) অংশগ্রহণ হতে বিরত অন্যান্যদের মতো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একটি ওযর পেশ করে দিতে পারতে না? আর তোমার এ অপরাধের কারণে তোমার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষমা প্রার্থনাই তো যথেষ্ট ছিল। আল্লাহর কসম! তারা আমাকে বারবার কঠিনভাবে ভৎর্সনা করতে থাকে। ফলে আমি পূর্ব স্বীকারোক্তি থেকে ফিরে গিয়ে মিথ্যা বলার বিষয়ে মনে মনে চিন্তা করতে থাকি। এরপর আমি তাদের বললাম, আমার মতো এ কাজ আর কেউ করেছে কি? তারা জওয়াব দিল, হ্যাঁ, আরও দু’জন তোমার মতো বলেছে এবং তাদের ব্যাপারেও তোমার মতো একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, তারা কে কে? তারা বলল, একজন মুরারা ইবনু রবী আমরী এবং অপরজন হলেন, হিলাল ইবনু ‘উমাইয়াহ ওয়াকিফী। এরপর তারা আমাকে জানালো যে, তারা উভয়ে উত্তম মানুষ এবং তারা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য দু’জনেই আদর্শস্থানীয়। যখন তারা তাদের নাম উল্লেখ করল, তখন আমি পূর্ব মতের উপর অটল রইলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যকার যে তিনজন তাবূকে অংশগ্রহণ হতে বিরত ছিল তাদের সঙ্গে কথা বলতে মুসলিমদের নিষেধ করে দিলেন। তদনুসারে মুসলিমরা আমাদের এড়িয়ে চলল। আমাদের প্রতি তাদের আচরণ বদলে ফেলল। এমনকি এ দেশ যেন আমাদের কাছে অপরিচিত হয়ে গেল।
এ অবস্থায় আমরা পঞ্চাশ রাত অতিবাহিত করলাম। আমার অপর দু’জন সাথী তো সংকটে ও শোচনীয় অবস্থায় নিপতিত হলেন। তারা নিজেদের ঘরে বসে বসে কাঁদতে থাকেন। আর আমি যেহেতু অধিকতর যুবক ও শক্তিশালী ছিলাম তাই বাইরে বের হতাম, মুসলিমদের জামা‘আতে সালাত আদায় করতাম, বাজারে চলাফেরা করতাম কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে কথা বলত না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে হাযির হয়ে তাঁকে সালাম দিতাম। যখন তিনি সালাত শেষে মজলিসে বসতেন তখন আমি মনে মনে বলতাম ও লক্ষ্য করতাম, তিনি আমার সালামের জবাবে তার ঠোঁটদ্বয় নেড়েছেন কি না। তারপর আমি তাঁর কাছাকাছি জায়গায় সালাত আদায় করতাম এবং গোপন দৃষ্টিতে তাঁর দিকে দেখতাম যে, আমি যখন সালাতে মগ্ন হতাম তখন তিনি আমার প্রতি দৃষ্টি দিতেন, আর যখন আমি তাঁর দিকে তাকাতাম তখন তিনি দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতেন। এভাবে আমার প্রতি মানুষদের কঠোরতা ও এড়িয়ে চলা দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকে। একদা আমি আমার চাচাত ভাই ও প্রিয় বন্ধু আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ)-এর বাগানের প্রাচীর টপকে ঢুকে পড়ে তাঁকে সালাম দেই। কিন্তু আল্লাহর কসম তিনি আমার সালামের জওয়াব দিলেন না। আমি তখন বললাম, হে আবূ ক্বাতাদাহ! আপনাকে আমি আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, আপনি কি জানেন যে, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালবাসি? তখন তিনি নীরবতা পালন করলেন। আমি পুনরায় তাঁকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি এবারও কোন জবাব দিলেন না। আমি আবারো তাঁকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই ভাল জানেন। তখন আমার চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু ঝরতে লাগল। আমি আবার প্রাচীর টপকে ফিরে এলাম। কা‘ব (রাঃ) বলেন, একদা আমি মদিনার বাজারে হাঁটছিলাম। তখন সিরিয়ার এক বণিক যে মদিনার বাজারে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করার উদ্দেশে এসেছিল, সে বলছে, আমাকে কা‘ব ইবনু মালিককে কেউ পরিচয় করে দিতে পারে কি? তখন লোকেরা তাকে আমার প্রতি ইশারা করে দেখিয়ে দিল। তখন সে এসে গাস্সানি বাদশার একটি পত্র আমার কাছে হস্তান্তর করল। তাতে লেখা ছিল, পর সমাচার এই, আমি জানতে পারলাম যে, আপনার সাথী আপনার প্রতি জুলুম করেছে। আর আল্লাহ আপনাকে মর্যাদাহীন ও নিরাশ্রয় সৃষ্টি করেননি। আপনি আমাদের দেশে চলে আসুন, আমরা আপনার সাহায্য-সহানুভূতি করব।
আমি যখন এ পত্র পড়লাম তখন আমি বললাম, এটাও আর একটি পরীক্ষা। তখন আমি চুলা খুঁজে তার মধ্যে পত্রটি নিক্ষেপ করে জ্বালিয়ে দিলাম। এ সময় পঞ্চাশ দিনের চল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে এক সংবাদবাহক[১] আমার কাছে এসে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন যে, আপনি আপনার স্ত্রী হতে পৃথক থাকবেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি তাকে তালাক দিয়ে দিব, না অন্য কিছু করব? তিনি উত্তর দিলেন, তালাক দিতে হবে না বরং তার থেকে পৃথক থাকুন এবং তার নিকটবর্তী হবেন না। আমার অপর দু’জন সঙ্গীর প্রতি একই আদেশ পৌঁছালেন। তখন আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, তুমি তোমার পিত্রালয়ে চলে যাও। আমার সম্পর্কে আল্লাহর ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত তুমি সেখানে থাক। কা‘ব (রাঃ) বলেন, আমার সঙ্গী হিলাল ইবনু উমাইয়্যার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! হিলাল ইবনু উমাইয়্যা অতি বৃদ্ধ, এমন বৃদ্ধ যে, তাঁর কোন খাদিম নেই। আমি তাঁর খেদমত করি, এটা কি আপনি অপছন্দ করেন? নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, তবে সে তোমার বিছানায় আসতে পারবে না। সে বলল, আল্লাহর কসম! এ সম্পর্কে তার কোন অনুভূতিই নেই। আল্লাহর কসম! তিনি এ নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে সর্বদা কান্নাকাটি করছেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আমার পরিবারের কেউ আমাকে পরামর্শ দিল যে, আপনিও যদি আপনার স্ত্রীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুমতি চাইতেন যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিলাল ইবনু উমায়্যার স্ত্রীকে তার (স্বামীর) খিদমাত করার অনুমতি দিয়েছেন। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি কখনো তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুমতি চাইব না। আমি যদি তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুমতি চাই তবে তিনি কী বলেন, তা আমার জানা নেই। আমি তো নিজেই আমার খিদমতে সক্ষম। এরপর আরও দশরাত কাটালাম। এভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন তখন থেকে পঞ্চাশ রাত পূর্ণ হল। এরপর আমি পঞ্চাশতম রাত শেষে ফাজ্রের সালাত আদায় করলাম এবং আমাদের এক ঘরের ছাদে এমন অবস্থায় বসে ছিলাম যে অবস্থার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা (কুরআনে) বর্ণনা করেছেন। আমার জান-প্রাণ দুর্বিষহ এবং গোটা জগৎটা যেন আমার জন্য প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বে সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় শুনতে পেলাম এক চীৎকারকারীর[2] চীৎকার। সে সালা পর্বতের উপর চড়ে উচ্চৈঃস্বরে ঘোষণা করছে, হে কা‘ব ইবনু মালিক! সুসংবাদ গ্রহণ করুন।
কা‘ব (রাঃ) বলেন, এ শব্দ আমার কানে পৌঁছামাত্র আমি সাজদাহ্য় পড়ে গেলাম। আর আমি বুঝলাম যে, আমার সুদিন ও খুশীর খবর এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজ্রের সালাত আদায়ের পর আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে আমাদের তওবা কবূল হওয়ার সুসংবাদ প্রকাশ করেন। তখন লোকেরা আমার এবং আমার সঙ্গীদ্বয়ের কাছে সুসংবাদ দিতে থাকে এবং তড়িঘড়ি একজন অশ্বারোহী[3] আমার কাছে আসে এবং আসলাম গোত্রের অপর এক ব্যক্তি[4] দ্রুত আগমন করে পর্বতের উপর আরোহণ করতঃ চীৎকার দিতে থাকে। তার চীৎকারের শব্দ ঘোড়া অপেক্ষাও দ্রুত পৌঁছল। যার শব্দ আমি শুনেছিলাম সে যখন আমার কাছে সুসংবাদ প্রদান করতে আসল, তখন আমাকে সুসংবাদ প্রদান করার শুকরিয়া স্বরূপ আমার নিজের পরনের কাপড় দু'টো খুলে তাকে পরিয়ে দিলাম। আল্লাহর শপথ সে সময় ঐ দু’টো কাপড় ব্যতীত আমার কাছে আর কোন কাপড় ছিল না। ফলে আমি দু’টো কাপড় ধার করে পরিধান করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে রওয়ানা হলাম। লোকেরা দলে দলে আমাকে ধন্যবাদ জানাতে আসলে লাগল। তারা তওবা কবূলের মুবারকবাদ জানাচ্ছিল। তারা বলছিল, তোমাকে মুবারাকবাদ যে আল্লাহ তা‘আলা তোমার তওবা কবূল করেছেন। কা‘ব (রাঃ) বলেন, অবশেষে আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে বসা ছিলেন এবং তাঁর চতষ্পার্শ্বে জনতার সমাবেশ ছিল। ত্বলহা ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) দ্রুত উঠে এসে আমার সঙ্গে মুসাফাহা করলেন ও মুবারকবাদ জানালেন। আল্লাহর কসম! তিনি ব্যতীত আর কোন মুহাজির আমার জন্য দাঁড়াননি। আমি ত্বলহার ব্যবহার ভুলতে পারব না। কা‘ব (রাঃ) বলেন, এরপর আমি যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম জানালাম, তখন তাঁর চেহারা আনন্দের আতিশয্যে ঝকঝক করছিল। তিনি আমাকে বললেন, তোমার মাতা তোমাকে জন্মদানের দিন হতে যতদিন তোমার উপর অতিবাহিত হয়েছে তার মধ্যে উৎকৃষ্ট ও উত্তম দিনের সুসংবাদ গ্রহণ কর। কা‘ব বলেন, আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এটা কি আপনার পক্ষ থেকে না আল্লাহর পক্ষ থেকে? তিনি বললেন, আমার পক্ষ থেকে নয় বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুশী হতেন তখন তাঁর চেহারা এত উজ্জ্বল ও ঝলমলে হত যেন পূর্ণিমার চাঁদের ফালি। এতে আমরা তাঁর সন্তুষ্টি বুঝতে পারতাম। আমি যখন তাঁর সম্মুখে বসলাম তখন আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার তওবা কবূলের শুকরিয়া স্বরূপ আমার ধন-সম্পদ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথে দান করতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার কিছু মাল তোমার কাছে রেখে দাও। তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, খাইবারে অবস্থিত আমার অংশটি আমার জন্য রাখলাম। আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ তা‘আলা সত্য বলার কারণে আমাকে রক্ষা করেছেন, তাই আমার তওবা কবূলের নিদর্শন ঠিক রাখতে আমার বাকী জীবনে সত্যই বলব। আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি এ সত্য বলার কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জানিয়েছি, তখন থেকে আজ পর্যন্ত আমার জানা মতে কোন মুসলিমকে সত্য কথার বিনিময়ে এরূপ নিয়ামত আল্লাহ দান করেননি যে নিয়ামত আমাকে দান করেছেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে সত্য কথা বলেছি সেদিন হতে আজ পর্যন্ত অন্তরে মিথ্যা বলার ইচ্ছাও করিনি। আমি আশা পোষণ করি যে, বাকী জীবনও আল্লাহ তা‘আলা আমাকে মিথ্যা থেকে রক্ষা করবেন। এরপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এই আয়াত অবতীর্ণ করেন لَقَدْ تَابَ اللهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِيْنَ ....... وَكُوْنُوْا مَعَ الصَّادِقِيْنَ অর্থাৎ আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি এবং মুহাজিরদের প্রতি ..... এবং তোমরা সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/১১৭-১১৭)। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আল্লাহর শপথ! ইসলাম গ্রহণের পর থেকে কখনো আমার উপর এত উৎকৃষ্ট নিয়ামত আল্লাহ প্রদান করেননি যা আমার কাছে শ্রেষ্ঠতর, তা হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আমার সত্য বলা ও তাঁর সঙ্গে মিথ্যা না বলা, যদি মিথ্যা বলতাম তবে মিথ্যাচারীদের মতো আমিও ধ্বংস হয়ে যেতাম। সেই মিথ্যাচারীদের সম্পর্কে যখন ওয়াহী অবতীর্ণ হয়েছে তখন জঘন্য অন্তরের সেই লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
سَيَحْلِفُوْنَ بِاللهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ اِلَيْهِمْ ....... فَإِنَّ اللهَ لَا يَرْضَى عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِيْنَ
অর্থাৎ তোমরা তাদের নিকট ফিরে আসলে তারা আল্লাহর শপথ করবে ....... আল্লাহ সত্যবাদি সম্প্রদায়ের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/৯৫-৯৬)। কা‘ব (রাঃ) বলেন, আমাদের তিনজনের তওবা কবূল করতে বিলম্ব করা হয়েছে-যাদের তওবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবূল করেছেন যখন তাঁরা তার কাছে শপথ করেছে, তিনি তাদের বাই‘আত গ্রহণ করেছেন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আমাদের বিষয়টি আল্লাহর ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থগিত রেখেছেন। এর প্রেক্ষাপটে আল্লাহ বলেন- সেই তিনজনের প্রতিও যাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/১১৮)। কুরআনের এই আয়াতে তাদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়নি যারা তাবূক যুদ্ধ থেকে পিছনে ছিল ও মিথ্যা কসম করে ওযর-আপত্তি জানিয়েছিল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তা গ্রহণ করেছিলেন। বরং এই আয়াতে তাদের প্রতি ইশারা করা হয়েছে আমরা যারা পেছনে ছিলাম এবং যাদের প্রতি সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল। [২৭৫৭; মুসলিম ৪৯/৯, হাঃ ২৭৬৯, আহমাদ ১৫৭৭০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৭৩)
কা‘ব (রাঃ) বলেন, যার ফলে যে কোন লোক যুদ্ধাভিযান থেকে বিরত থাকতে ইচ্ছা করলে তা সহজেই করতে পারত এবং ওয়াহী মারফত এ খবর না জানানো পর্যন্ত তা সংগোপন থাকবে বলে সে ধারণা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অভিযান পরিচালনা করেছিলেন এমন সময় যখন ফল-মূল পাকার ও গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়ার সময় ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং এবং তাঁর সঙ্গী মুসলিম বাহিনী অভিযানে যাত্রার প্রস্তুতি গ্রহণ করে ফেলেন। আমিও প্রতি সকালে তাঁদের সঙ্গে রওয়ানা হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকি। কিন্তু কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি। মনে মনে ধারণা করতে থাকি, আমি তো যখন ইচ্ছা পারব। এই দোটানায় আমার সময় কেটে যেতে লাগল। এদিকে অন্য লোকেরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলল। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাথী মুসলিমগণ রওয়ানা করলেন অথচ আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না। আমি মনে মনে ভাবলাম, আচ্ছা ঠিক আছে, এক দু’দিনের মধ্যে আমি প্রস্তুত হয়ে পরে তাঁদের সঙ্গে গিয়ে মিলব। এভাবে আমি প্রতিদিন বাড়ি হতে প্রস্তুতি নেয়ার উদ্দেশে বের হই, কিন্তু কিছু না করেই ফিরে আসি। আবার বের হই, আবার কিছু না করে ঘরে ফিরে আসি। ইত্যবসরে বাহিনী অগ্রসর হয়ে অনেক দূর চলে গেল। আর আমি রওয়ানা করে তাদের সঙ্গে রাস্তায় মিলিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতে লাগলাম। আফসোস যদি আমি তাই করতাম! কিন্তু তা আমার ভাগ্যে জোটেনি। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা হওয়ার পর আমি লোকেদের মধ্যে বের হয়ে তাদের মাঝে বিচরণ করতাম। এ কথা আমার মনকে পীড়া দিত যে, আমি তখন (মদিনা্য়) মুনাফিক এবং দুর্বল ও অক্ষম লোক ব্যতীত অন্য কাউকে দেখতে পেতাম না। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক পৌঁছার আগে পর্যন্ত আমার ব্যাপারে আলোচনা করেননি। অনন্তর তাবূকে এ কথা তিনি লোকেদের মাঝে বসে জিজ্ঞেস করে বসলেন, কা‘ব কী করল?
বানু সালামাহ গোত্রের এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তার ধন-সম্পদ ও অহঙ্কার তাকে আসতে দেয়নি। এ কথা শুনে মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বললেন, তুমি যা বললে তা ঠিক নয়। হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহর কসম, আমরা তাঁকে উত্তম ব্যক্তি বলে জানি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব রইলেন। কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, আমি যখন জানতে পারলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা মুনাওয়ারায় ফিরে আসছেন, তখন আমি চিন্তিত হয়ে গেলাম এবং মিথ্যা ওজুহাত খুঁজতে থাকলাম। মনে স্থির করলাম, আগামীকাল এমন কথা বলব যাতে করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্রোধকে ঠান্ডা করতে পারি। আর এ সম্পর্কে আমার পরিবারস্থ জ্ঞানীগুণীদের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে থাকি। এরপর যখন প্রচারিত হল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা্য় এসে পৌঁছে যাচ্ছেন, তখন আমার অন্তর থেকে মিথ্যা দূর হয়ে গেল। আর মনে দৃঢ় প্রত্যয় হল যে, এমন কোন উপায়ে আমি তাঁকে কখনো ক্রোধমুক্ত করতে সক্ষম হব না, যাতে মিথ্যার লেশ থাকে। অতএব আমি মনে মনে স্থির করলাম যে, আমি সত্য কথাই বলব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল বেলায় মদিনা্য় প্রবেশ করলেন। তিনি সফর থেকে প্রত্যাবর্তন করে প্রথমে মসজিদে গিয়ে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন, তারপর লোকদের সামনে বসতেন। যখন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করলেন, তখন যারা পশ্চাদপদ ছিলেন তাঁরা তাঁর কাছে এসে শপথ করে করে অপারগতা ও আপত্তি পেশ করতে লাগল। এরা সংখ্যায় আশির অধিক ছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহ্যত তাদের ওযর-আপত্তি গ্রহণ করলেন, তাদের বাই‘আত করলেন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। কিন্তু তাদের অন্তরের অবস্থা আল্লাহর হাওয়ালা করে দিলেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আমিও এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে হাজির হলাম। আমি যখন তাঁকে সালাম দিলাম তখন তিনি রাগান্বিত চেহারায় মুচকি হাসি হাসলেন। তারপর বললেন, এসো। আমি সে মতে এগিয়ে গিয়ে একেবারে তাঁর সম্মুখে বসে গেলাম। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী কারণে তুমি অংশগ্রহণ করলে না? তুমি কি যানবাহন ক্রয় করনি? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ, করেছি। আল্লাহর কসম! এ কথা সুনিশ্চিত যে, আমি যদি আপনি ব্যতীত দুনিয়ার অন্য কোন ব্যক্তির সামনে বসতাম তাহলে আমি তার অসন্তুষ্টিকে ওযর-আপত্তি পেশের মাধ্যমে ঠান্ডা করার চেষ্টা করতাম। আর আমি তর্কে পটু। কিন্তু আল্লাহর কসম আমি পরিজ্ঞাত যে, আজ যদি আমি আপনার কাছে মিথ্যা কথা বলে আমার প্রতি আপনাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করি তাহলে শীঘ্রই আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে আমার প্রতি অসন্তুষ্ট করে দিতে পারেন। আর যদি আপনার কাছে সত্য প্রকাশ করি যাতে আপনি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হন, তবুও আমি এতে আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার অবশ্যই আশা করি। না, আল্লাহর কসম, আমার কোন ওযর ছিল না। আল্লাহর কসম! সেই যুদ্ধে আপনার সঙ্গে না যাওয়ার সময় আমি সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও সামর্থ্যবান ছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে সত্য কথাই বলেছে। তুমি এখন চলে যাও, যতদিনে না তোমার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ফায়সালা করে দেন। তাই আমি উঠে চলে গেলাম। তখন বানী সালিমার কতিপয় লোক আমার অনুসরণ করল। তারা আমাকে বলল, আল্লাহর কসম! তুমি ইতোপূর্বে কোন পাপ করেছ বলে আমাদের জানা নেই; তুমি (তাবূক যুদ্ধে) অংশগ্রহণ হতে বিরত অন্যান্যদের মতো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একটি ওযর পেশ করে দিতে পারতে না? আর তোমার এ অপরাধের কারণে তোমার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষমা প্রার্থনাই তো যথেষ্ট ছিল। আল্লাহর কসম! তারা আমাকে বারবার কঠিনভাবে ভৎর্সনা করতে থাকে। ফলে আমি পূর্ব স্বীকারোক্তি থেকে ফিরে গিয়ে মিথ্যা বলার বিষয়ে মনে মনে চিন্তা করতে থাকি। এরপর আমি তাদের বললাম, আমার মতো এ কাজ আর কেউ করেছে কি? তারা জওয়াব দিল, হ্যাঁ, আরও দু’জন তোমার মতো বলেছে এবং তাদের ব্যাপারেও তোমার মতো একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, তারা কে কে? তারা বলল, একজন মুরারা ইবনু রবী আমরী এবং অপরজন হলেন, হিলাল ইবনু ‘উমাইয়াহ ওয়াকিফী। এরপর তারা আমাকে জানালো যে, তারা উভয়ে উত্তম মানুষ এবং তারা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য দু’জনেই আদর্শস্থানীয়। যখন তারা তাদের নাম উল্লেখ করল, তখন আমি পূর্ব মতের উপর অটল রইলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যকার যে তিনজন তাবূকে অংশগ্রহণ হতে বিরত ছিল তাদের সঙ্গে কথা বলতে মুসলিমদের নিষেধ করে দিলেন। তদনুসারে মুসলিমরা আমাদের এড়িয়ে চলল। আমাদের প্রতি তাদের আচরণ বদলে ফেলল। এমনকি এ দেশ যেন আমাদের কাছে অপরিচিত হয়ে গেল।
এ অবস্থায় আমরা পঞ্চাশ রাত অতিবাহিত করলাম। আমার অপর দু’জন সাথী তো সংকটে ও শোচনীয় অবস্থায় নিপতিত হলেন। তারা নিজেদের ঘরে বসে বসে কাঁদতে থাকেন। আর আমি যেহেতু অধিকতর যুবক ও শক্তিশালী ছিলাম তাই বাইরে বের হতাম, মুসলিমদের জামা‘আতে সালাত আদায় করতাম, বাজারে চলাফেরা করতাম কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে কথা বলত না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে হাযির হয়ে তাঁকে সালাম দিতাম। যখন তিনি সালাত শেষে মজলিসে বসতেন তখন আমি মনে মনে বলতাম ও লক্ষ্য করতাম, তিনি আমার সালামের জবাবে তার ঠোঁটদ্বয় নেড়েছেন কি না। তারপর আমি তাঁর কাছাকাছি জায়গায় সালাত আদায় করতাম এবং গোপন দৃষ্টিতে তাঁর দিকে দেখতাম যে, আমি যখন সালাতে মগ্ন হতাম তখন তিনি আমার প্রতি দৃষ্টি দিতেন, আর যখন আমি তাঁর দিকে তাকাতাম তখন তিনি দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতেন। এভাবে আমার প্রতি মানুষদের কঠোরতা ও এড়িয়ে চলা দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকে। একদা আমি আমার চাচাত ভাই ও প্রিয় বন্ধু আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ)-এর বাগানের প্রাচীর টপকে ঢুকে পড়ে তাঁকে সালাম দেই। কিন্তু আল্লাহর কসম তিনি আমার সালামের জওয়াব দিলেন না। আমি তখন বললাম, হে আবূ ক্বাতাদাহ! আপনাকে আমি আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, আপনি কি জানেন যে, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালবাসি? তখন তিনি নীরবতা পালন করলেন। আমি পুনরায় তাঁকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি এবারও কোন জবাব দিলেন না। আমি আবারো তাঁকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই ভাল জানেন। তখন আমার চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু ঝরতে লাগল। আমি আবার প্রাচীর টপকে ফিরে এলাম। কা‘ব (রাঃ) বলেন, একদা আমি মদিনার বাজারে হাঁটছিলাম। তখন সিরিয়ার এক বণিক যে মদিনার বাজারে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করার উদ্দেশে এসেছিল, সে বলছে, আমাকে কা‘ব ইবনু মালিককে কেউ পরিচয় করে দিতে পারে কি? তখন লোকেরা তাকে আমার প্রতি ইশারা করে দেখিয়ে দিল। তখন সে এসে গাস্সানি বাদশার একটি পত্র আমার কাছে হস্তান্তর করল। তাতে লেখা ছিল, পর সমাচার এই, আমি জানতে পারলাম যে, আপনার সাথী আপনার প্রতি জুলুম করেছে। আর আল্লাহ আপনাকে মর্যাদাহীন ও নিরাশ্রয় সৃষ্টি করেননি। আপনি আমাদের দেশে চলে আসুন, আমরা আপনার সাহায্য-সহানুভূতি করব।
আমি যখন এ পত্র পড়লাম তখন আমি বললাম, এটাও আর একটি পরীক্ষা। তখন আমি চুলা খুঁজে তার মধ্যে পত্রটি নিক্ষেপ করে জ্বালিয়ে দিলাম। এ সময় পঞ্চাশ দিনের চল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে এক সংবাদবাহক[১] আমার কাছে এসে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন যে, আপনি আপনার স্ত্রী হতে পৃথক থাকবেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি তাকে তালাক দিয়ে দিব, না অন্য কিছু করব? তিনি উত্তর দিলেন, তালাক দিতে হবে না বরং তার থেকে পৃথক থাকুন এবং তার নিকটবর্তী হবেন না। আমার অপর দু’জন সঙ্গীর প্রতি একই আদেশ পৌঁছালেন। তখন আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, তুমি তোমার পিত্রালয়ে চলে যাও। আমার সম্পর্কে আল্লাহর ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত তুমি সেখানে থাক। কা‘ব (রাঃ) বলেন, আমার সঙ্গী হিলাল ইবনু উমাইয়্যার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! হিলাল ইবনু উমাইয়্যা অতি বৃদ্ধ, এমন বৃদ্ধ যে, তাঁর কোন খাদিম নেই। আমি তাঁর খেদমত করি, এটা কি আপনি অপছন্দ করেন? নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, তবে সে তোমার বিছানায় আসতে পারবে না। সে বলল, আল্লাহর কসম! এ সম্পর্কে তার কোন অনুভূতিই নেই। আল্লাহর কসম! তিনি এ নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে সর্বদা কান্নাকাটি করছেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আমার পরিবারের কেউ আমাকে পরামর্শ দিল যে, আপনিও যদি আপনার স্ত্রীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুমতি চাইতেন যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিলাল ইবনু উমায়্যার স্ত্রীকে তার (স্বামীর) খিদমাত করার অনুমতি দিয়েছেন। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি কখনো তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুমতি চাইব না। আমি যদি তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুমতি চাই তবে তিনি কী বলেন, তা আমার জানা নেই। আমি তো নিজেই আমার খিদমতে সক্ষম। এরপর আরও দশরাত কাটালাম। এভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন তখন থেকে পঞ্চাশ রাত পূর্ণ হল। এরপর আমি পঞ্চাশতম রাত শেষে ফাজ্রের সালাত আদায় করলাম এবং আমাদের এক ঘরের ছাদে এমন অবস্থায় বসে ছিলাম যে অবস্থার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা (কুরআনে) বর্ণনা করেছেন। আমার জান-প্রাণ দুর্বিষহ এবং গোটা জগৎটা যেন আমার জন্য প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বে সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় শুনতে পেলাম এক চীৎকারকারীর[2] চীৎকার। সে সালা পর্বতের উপর চড়ে উচ্চৈঃস্বরে ঘোষণা করছে, হে কা‘ব ইবনু মালিক! সুসংবাদ গ্রহণ করুন।
কা‘ব (রাঃ) বলেন, এ শব্দ আমার কানে পৌঁছামাত্র আমি সাজদাহ্য় পড়ে গেলাম। আর আমি বুঝলাম যে, আমার সুদিন ও খুশীর খবর এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজ্রের সালাত আদায়ের পর আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে আমাদের তওবা কবূল হওয়ার সুসংবাদ প্রকাশ করেন। তখন লোকেরা আমার এবং আমার সঙ্গীদ্বয়ের কাছে সুসংবাদ দিতে থাকে এবং তড়িঘড়ি একজন অশ্বারোহী[3] আমার কাছে আসে এবং আসলাম গোত্রের অপর এক ব্যক্তি[4] দ্রুত আগমন করে পর্বতের উপর আরোহণ করতঃ চীৎকার দিতে থাকে। তার চীৎকারের শব্দ ঘোড়া অপেক্ষাও দ্রুত পৌঁছল। যার শব্দ আমি শুনেছিলাম সে যখন আমার কাছে সুসংবাদ প্রদান করতে আসল, তখন আমাকে সুসংবাদ প্রদান করার শুকরিয়া স্বরূপ আমার নিজের পরনের কাপড় দু'টো খুলে তাকে পরিয়ে দিলাম। আল্লাহর শপথ সে সময় ঐ দু’টো কাপড় ব্যতীত আমার কাছে আর কোন কাপড় ছিল না। ফলে আমি দু’টো কাপড় ধার করে পরিধান করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে রওয়ানা হলাম। লোকেরা দলে দলে আমাকে ধন্যবাদ জানাতে আসলে লাগল। তারা তওবা কবূলের মুবারকবাদ জানাচ্ছিল। তারা বলছিল, তোমাকে মুবারাকবাদ যে আল্লাহ তা‘আলা তোমার তওবা কবূল করেছেন। কা‘ব (রাঃ) বলেন, অবশেষে আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে বসা ছিলেন এবং তাঁর চতষ্পার্শ্বে জনতার সমাবেশ ছিল। ত্বলহা ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) দ্রুত উঠে এসে আমার সঙ্গে মুসাফাহা করলেন ও মুবারকবাদ জানালেন। আল্লাহর কসম! তিনি ব্যতীত আর কোন মুহাজির আমার জন্য দাঁড়াননি। আমি ত্বলহার ব্যবহার ভুলতে পারব না। কা‘ব (রাঃ) বলেন, এরপর আমি যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম জানালাম, তখন তাঁর চেহারা আনন্দের আতিশয্যে ঝকঝক করছিল। তিনি আমাকে বললেন, তোমার মাতা তোমাকে জন্মদানের দিন হতে যতদিন তোমার উপর অতিবাহিত হয়েছে তার মধ্যে উৎকৃষ্ট ও উত্তম দিনের সুসংবাদ গ্রহণ কর। কা‘ব বলেন, আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এটা কি আপনার পক্ষ থেকে না আল্লাহর পক্ষ থেকে? তিনি বললেন, আমার পক্ষ থেকে নয় বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুশী হতেন তখন তাঁর চেহারা এত উজ্জ্বল ও ঝলমলে হত যেন পূর্ণিমার চাঁদের ফালি। এতে আমরা তাঁর সন্তুষ্টি বুঝতে পারতাম। আমি যখন তাঁর সম্মুখে বসলাম তখন আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার তওবা কবূলের শুকরিয়া স্বরূপ আমার ধন-সম্পদ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথে দান করতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার কিছু মাল তোমার কাছে রেখে দাও। তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, খাইবারে অবস্থিত আমার অংশটি আমার জন্য রাখলাম। আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ তা‘আলা সত্য বলার কারণে আমাকে রক্ষা করেছেন, তাই আমার তওবা কবূলের নিদর্শন ঠিক রাখতে আমার বাকী জীবনে সত্যই বলব। আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি এ সত্য বলার কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জানিয়েছি, তখন থেকে আজ পর্যন্ত আমার জানা মতে কোন মুসলিমকে সত্য কথার বিনিময়ে এরূপ নিয়ামত আল্লাহ দান করেননি যে নিয়ামত আমাকে দান করেছেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে সত্য কথা বলেছি সেদিন হতে আজ পর্যন্ত অন্তরে মিথ্যা বলার ইচ্ছাও করিনি। আমি আশা পোষণ করি যে, বাকী জীবনও আল্লাহ তা‘আলা আমাকে মিথ্যা থেকে রক্ষা করবেন। এরপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এই আয়াত অবতীর্ণ করেন لَقَدْ تَابَ اللهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِيْنَ ....... وَكُوْنُوْا مَعَ الصَّادِقِيْنَ অর্থাৎ আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি এবং মুহাজিরদের প্রতি ..... এবং তোমরা সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/১১৭-১১৭)। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আল্লাহর শপথ! ইসলাম গ্রহণের পর থেকে কখনো আমার উপর এত উৎকৃষ্ট নিয়ামত আল্লাহ প্রদান করেননি যা আমার কাছে শ্রেষ্ঠতর, তা হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আমার সত্য বলা ও তাঁর সঙ্গে মিথ্যা না বলা, যদি মিথ্যা বলতাম তবে মিথ্যাচারীদের মতো আমিও ধ্বংস হয়ে যেতাম। সেই মিথ্যাচারীদের সম্পর্কে যখন ওয়াহী অবতীর্ণ হয়েছে তখন জঘন্য অন্তরের সেই লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
سَيَحْلِفُوْنَ بِاللهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ اِلَيْهِمْ ....... فَإِنَّ اللهَ لَا يَرْضَى عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِيْنَ
অর্থাৎ তোমরা তাদের নিকট ফিরে আসলে তারা আল্লাহর শপথ করবে ....... আল্লাহ সত্যবাদি সম্প্রদায়ের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/৯৫-৯৬)। কা‘ব (রাঃ) বলেন, আমাদের তিনজনের তওবা কবূল করতে বিলম্ব করা হয়েছে-যাদের তওবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবূল করেছেন যখন তাঁরা তার কাছে শপথ করেছে, তিনি তাদের বাই‘আত গ্রহণ করেছেন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আমাদের বিষয়টি আল্লাহর ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থগিত রেখেছেন। এর প্রেক্ষাপটে আল্লাহ বলেন- সেই তিনজনের প্রতিও যাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/১১৮)। কুরআনের এই আয়াতে তাদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়নি যারা তাবূক যুদ্ধ থেকে পিছনে ছিল ও মিথ্যা কসম করে ওযর-আপত্তি জানিয়েছিল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তা গ্রহণ করেছিলেন। বরং এই আয়াতে তাদের প্রতি ইশারা করা হয়েছে আমরা যারা পেছনে ছিলাম এবং যাদের প্রতি সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল। [২৭৫৭; মুসলিম ৪৯/৯, হাঃ ২৭৬৯, আহমাদ ১৫৭৭০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৭৩)
[৮৭]
খুযাইমাহ ইবনু সাবিত (রাঃ)।
[৮৮] ওয়াকিদীর মতে তিনি ছিলেন আবূ বাক্র (রাঃ)।
[৮৯] এ অশ্বারোহী ছিলেন যুবায়র ইবনুল আওয়াস (রাঃ)।
[৯০] হামযাহ ইবনু 'আমর আল আসলামী (রাঃ)।
[৮৮] ওয়াকিদীর মতে তিনি ছিলেন আবূ বাক্র (রাঃ)।
[৮৯] এ অশ্বারোহী ছিলেন যুবায়র ইবনুল আওয়াস (রাঃ)।
[৯০] হামযাহ ইবনু 'আমর আল আসলামী (রাঃ)।
৬৪/৮১. অধ্যায়ঃ
হিজর [৯১] বস্তিতে নাবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর অবতরণ
[৯১] সামূদ ও সালিহ (আঃ)-এর
জাতির আবাসস্থল। মাদীনাহ ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী ওয়াদিউল কুরার নিকতবর্তী একটি স্থান।
সহীহুল বুখারী ৪৩৩, ৩৩৭৯, ৩৩৮০, ৩৩৮১, ৪৪২০ ও ৪৭০২ নং হাদীসে এতদসংক্রান্ত
বর্ণনাগুলো পাওয়া যায়।
৪৪১৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ
الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا
مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْحِجْرِ قَالَ لَا تَدْخُلُوْا مَسَاكِنَ
الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا أَنْفُسَهُمْ أَنْ يُصِيْبَكُمْ مَا أَصَابَهُمْ إِلَّا أَنْ
تَكُوْنُوْا بَاكِيْنَ ثُمَّ قَنَّعَ رَأْسَهُ وَأَسْرَعَ السَّيْرَ حَتَّى
أَجَازَ الْوَادِيَ.
ইবনু
'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সামূদ গোত্রের) হিজ্র বস্তি
অতিক্রম করেন, তখন তিনি বলেন, যারা নিজ আত্মার উপর অত্যাচার করেছিল তাদের
আবাসস্থলে কান্নাকাটি ব্যতীত প্রবেশ কর না যাতে তোমাদের প্রতি শাস্তি নিপতিত না হয়
যা তাদের প্রতি নিপতিত হয়েছিল। তারপর তিনি তাঁর মস্তক আবৃত করলেন এবং অতি
দ্রুতবেগে চলে উক্ত উপত্যকা অতিক্রম করলেন। [৪৩৩] (আ.প্র. ৪০৭১, ই.ফা. ৪০৭৪)
৪৪২০
يَحْيَى بْن بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ لِأَصْحَابِ الْحِجْرِ لَا
تَدْخُلُوْا عَلَى هَؤُلَاءِ الْمُعَذَّبِيْنَ إِلَّا أَنْ تَكُوْنُوْا بَاكِيْنَ
أَنْ يُصِيْبَكُمْ مِثْلُ مَا أَصَابَهُمْ.
ইবনু
'উমার(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজ্র নামক স্থান দিয়ে
অতিক্রমকালে তাঁর সঙ্গীদের বললেন, তোমরা ঐ শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে কান্নাকাটি ছাড়া
প্রবেশ কর না- যাতে তোমাদের উপরও সেরূপ বিপদ আপতিত না হয় যা তাদের উপর আপতিত
হয়েছিল। [৪৩৩] (আ.প্র. ৪০৭২, ই.ফা. ৪০৭৫)
৬৪/৮২. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৪৪২১
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ
عَنْ اللَّيْثِ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيْزِ بْنِ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ سَعْدِ بْنِ
إِبْرَاهِيْمَ عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الْمُغِيْرَةِ عَنْ
أَبِيْهِ الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ ذَهَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
لِبَعْضِ حَاجَتِهِ فَقُمْتُ أَسْكُبُ عَلَيْهِ الْمَاءَ لَا أَعْلَمُهُ إِلَّا
قَالَ فِيْ غَزْوَةِ تَبُوْكَ فَغَسَلَ وَجْهَهُ وَذَهَبَ يَغْسِلُ ذِرَاعَيْهِ
فَضَاقَ عَلَيْهِ كُمُّ الْجُبَّةِ فَأَخْرَجَهُمَا مِنْ تَحْتِ جُبَّتِهِ
فَغَسَلَهُمَا ثُمَّ مَسَحَ عَلَى خُفَّيْهِ.
মুগীরাহ
ইবনু শু'বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন প্রয়োজনে বাহিরে গেলেন।
(ফিরে এলে) আমি দাঁড়িয়ে তাঁর পানি ঢেলে দিচ্ছিলাম। স্থানটি আমার স্মরণ নেই। তবে তা
ছিল তাবূক যুদ্ধের সময়কার। এরপর তিনি তাঁর চেহারা ধৌত করলেন এবং তাঁর বাহুদ্বয় ধৌত
করতে গেলে দেখা গেল যে, তাঁর জামার আস্তিন আঁটসাঁট। তখন তিনি দুই বাহুকে জামার
ভিতর থেকে বের করে আনলেন এবং তা ধৌত করলেন। তারপর তিনি তাঁর দুই মোজার উপর মাসাহ
করলেন। [১৮২] (আ.প্র. ৪০৭৩, ই.ফা. ৪০৭৬)
৪৪২২
خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ يَحْيَى عَنْ عَبَّاسِ
بْنِ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْ حُمَيْدٍ قَالَ أَقْبَلْنَا مَعَ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم مِنْ غَزْوَةِ تَبُوْكَ حَتَّى إِذَا أَشْرَفْنَا عَلَى
الْمَدِيْنَةِ قَالَ هَذِهِ طَابَةُ وَهَذَا أُحُدٌ جَبَلٌ يُحِبُّنَا
وَنُحِبُّهُ.
আবূ
হুমায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে তাবূক যুদ্ধ থেকে
প্রত্যাবর্তন করে মাদীনাহ্র নিকটবর্তী হলে তিনি বললেন, এই ত্বাবা [৯২] (পবিত্র)
এবং এই উহূদ পর্বত আমাদের ভালবাসে আর আমরাও তাকে ভালবাসি। [১৪৮১] (আ.প্র. ৪০৭৪,
ই.ফা. ৪০৭৭)
[৯২]
মাদীনাহ্র অপর নাম
৪৪২৩
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيْلُ عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَجَعَ مِنْ
غَزْوَةِ تَبُوْكَ فَدَنَا مِنَ الْمَدِيْنَةِ فَقَالَ إِنَّ بِالْمَدِيْنَةِ
أَقْوَامًا مَا سِرْتُمْ مَسِيْرًا وَلَا قَطَعْتُمْ وَادِيًا إِلَّا كَانُوْا
مَعَكُمْ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَهُمْ بِالْمَدِيْنَةِ قَالَ وَهُمْ
بِالْمَدِيْنَةِ حَبَسَهُمْ الْعُذْرُ.
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবূক যুদ্ধ থেকে ফিরে মাদীনাহ্র নিকতবর্তী
হলেন, তখন তিনি বললেন, মাদীনাহ্তে এমন সম্প্রদায় রয়েছে যে তোমরা এমন কোন দূরপথ
ভ্রমণ করনি এবং এমন কোন উপত্যকা অতিক্রম করনি যেখানে তারা তোমাদের সঙ্গে ছিল না।
সাহাবায়ে কিরাম (রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহুম) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তারা তো
মাদীনাহ্তে ছিল। তখন তিনি বললেন, তাঁরা মাদীনাহ্তেই ছিল তবে যথার্থ ওযর তাদের
আটকে রেখেছিল। [২৮৩৮] (আ.প্র. ৪০৭৫, ই.ফা. ৪০৭৮)
৬৪/৮৩. অধ্যায়ঃ
পারস্যের কিস্রা ও রোমের
অধিপতি কায়সারের কাছে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর পত্র প্রেরণ
৪৪২৪
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ
قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ
أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ بِكِتَابِهِ إِلَى
كِسْرَى مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ حُذَافَةَ السَّهْمِيِّ فَأَمَرَهُ أَنْ
يَدْفَعَهُ إِلَى عَظِيْمِ الْبَحْرَيْنِ فَدَفَعَهُ عَظِيْمُ الْبَحْرَيْنِ إِلَى
كِسْرَى فَلَمَّا قَرَأَهُ مَزَّقَهُ فَحَسِبْتُ أَنَّ ابْنَ الْمُسَيَّبِ قَالَ
فَدَعَا عَلَيْهِمْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُمَزَّقُوْا كُلَّ
مُمَزَّقٍ.
ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফাহ
সাহমী (রাঃ)- কে তাঁর পত্রসহ কিসরার নিকট পাঠান। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাকে এ নির্দেশ দেন যে, সে যেন পত্রখানা প্রথমে বাহরাইনের শাসকের কাছে
দেয় এবং পরে বাহরাইনের শাসক যেন কিসরার হাতে পত্রটি পৌঁছিয়ে দেয়। কিসরা যখন
পত্রখানা পড়ল, তখন তা ছিঁড়ে টুকরা করে ফেলল। (রাবী বলেন) আমার যতদূর মনে পড়ে ইবনুল
মুসাইয়াব (রহঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের
প্রতি এ বলে বদদু'আ করেন, আল্লাহ তাদেরকেও সম্পূর্ণরূপে টুকরো টুকরো করে দিন। [৬৪]
(আ.প্র. ৪০৭৬, ই.ফা. ৪০৭৯)
৪৪২৫
عُثْمَانُ بْنُ
الْهَيْثَمِ حَدَّثَنَا عَوْفٌ عَنِ الْحَسَنِ عَنْ أَبِيْ بَكْرَةَ قَالَ لَقَدْ
نَفَعَنِي اللهُ بِكَلِمَةٍ سَمِعْتُهَا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
أَيَّامَ الْجَمَلِ بَعْدَ مَا كِدْتُ أَنْ أَلْحَقَ بِأَصْحَابِ الْجَمَلِ
فَأُقَاتِلَ مَعَهُمْ قَالَ لَمَّا بَلَغَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
أَنَّ أَهْلَ فَارِسَ قَدْ مَلَّكُوْا عَلَيْهِمْ بِنْتَ كِسْرَى قَالَ لَنْ
يُفْلِحَ قَوْمٌ وَلَّوْا أَمْرَهُمْ امْرَأَةً.
আবূ
বাক্রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শ্রুত একটি বাণীর
দ্বারা আল্লাহ জঙ্গে জামালের (উষ্ট্রের যুদ্ধ) দিন আমার মহা উপকার করেছেন, যে সময়
আমি সাহাবায়ে কিরামের সঙ্গে মিলিত হয়ে জামাল যুদ্ধে শারীক হতে প্রায় প্রস্তুত
হয়েছিলাম। আবূ বাক্রাহ (রাঃ) বলেন, সে বাণীটি হল, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এ খবর পৌঁছল যে, পারস্যবাসী কিসরা কন্যাকে তাদের বাদশাহ
মনোনীত করেছেন, তখন তিনি বললেন, সে জাতি কক্ষণো সফল হবেনা স্ত্রীলোক যাদের প্রশাসক
হয়। [৭০৯৯] (আ.প্র. ৪০৭৭, ই.ফা. ৪০৮০)
৪৪২৬
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ
اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ عَنْ السَّائِبِ بْنِ
يَزِيْدَ يَقُوْلُ أَذْكُرُ أَنِّيْ خَرَجْتُ مَعَ الْغِلْمَانِ إِلَى ثَنِيَّةِ
الْوَدَاعِ نَتَلَقَّى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ سُفْيَانُ
مَرَّةً مَعَ الصِّبْيَانِ.
সায়েব
ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার এখনও মনে পড়ছে আমি মদিনার ছেলেদের সঙ্গে সানিয়্যাতুল বিদায়ে নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে স্বাগত জানাতে গিয়েছিলাম। সুফ্ইয়ান (রাঃ)-এর
রিওয়ায়াতে غِلْمَانِ
স্থলে صِبيَانِ
শব্দের উল্লেখ রয়েছে। [৩০৮৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৭৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৮১)
৪৪২৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ السَّائِبِ أَذْكُرُ
أَنِّيْ خَرَجْتُ مَعَ الصِّبْيَانِ نَتَلَقَّى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
إِلَى ثَنِيَّةِ الْوَدَاعِ مَقْدَمَهُ مِنْ غَزْوَةِ تَبُوْكَ.
সায়েব
(ইবনু ইয়াযীদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমার
মনে পড়ে যে, সানিয়্যাতুল বিদায়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে
স্বাগত জানাতে মাদীনার ছেলেদের সঙ্গে গিয়েছিলাম, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাবূক যুদ্ধ থেকে ফিরছিলেন। [৩০৮৩] (আ.প্র. ৪০৭৯, ই.ফা. ৪০৮২)
৬৪/৮৪.অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)- এর রোগ ও তাঁর ওফাত
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ
নিশ্চয়ই আপনিও মরণশীল আর তারাও মরণশীল। অতঃপর ক্বিয়ামাতের দিনে তোমরা উভয় দলই নিজ
নিজ মোকাদ্দমা স্বীয় রবের সামনে পেশ করবে। (সূরাহ আয্-যুমার ৩৯/৩০ - ৩১)
৪৪২৯
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ
عَبْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ أُمِّ
الْفَضْلِ بِنْتِ الْحَارِثِ قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
يَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِالْمُرْسَلَاتِ عُرْفًا ثُمَّ مَا صَلَّى لَنَا
بَعْدَهَا حَتَّى قَبَضَهُ اللهُ.
উম্মুল
ফযল বিনতে হারিস [৯৩] (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মাগরিবের সালাতে সূরাহ وَالْمُرْسَلَاتِ عُرْفًا
পাঠ করতে শুনেছি। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রূহ কবজ করা পর্যন্ত তিনি আমাদের নিয়ে
আর কোন সালাত আদায় করেননি। [৭৬৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৮০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৮৩)
[৯৩]
'আব্বাস (রাঃ)- এর স্ত্রী।
৪৪৩০
مُحَمَّدُ بْنُ
عَرْعَرَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
يُدْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ إِنَّ لَنَا
أَبْنَاءً مِثْلَهُ فَقَالَ إِنَّهُ مِنْ حَيْثُ تَعْلَمُ فَسَأَلَ عُمَرُ ابْنَ
عَبَّاسٍ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} فَقَالَ
أَجَلُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْلَمَهُ إِيَّاهُ فَقَالَ مَا
أَعْلَمُ مِنْهَا إِلَّا مَا تَعْلَمُ.
ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-কে তাঁর কাছে বসাতেন।[১] এতে
‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) তাঁকে বললেন, আমাদেরও তো ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-এর বয়সী
ছেলেপুলে আছে! তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, সে কেমন মর্যাদার লোক তা তো আপনারাও জানেন।
এরপর ‘উমার (রাঃ) ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-কে إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ এই
আয়াতের মর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন তিনি বললেন, এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের খবর। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ ত্থেকে তুমি যা
(অর্থ) বুঝেছ আমিও তাই বুঝেছি। [৩৬২৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪০৮৪)
[৯৪] অল্প বয়স্ক হওয়া
সত্ত্বেও 'আব্দুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ। তাই 'উমার (রাঃ) তাকে
তার পাশে বসাতেন।
৪৪৩১
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ عَنْ سُلَيْمَانَ الْأَحْوَلِ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قَالَ
ابْنُ عَبَّاسٍ يَوْمُ الْخَمِيْسِ وَمَا يَوْمُ الْخَمِيْسِ اشْتَدَّ بِرَسُوْلِ
اللهِ صلى الله عليه وسلم وَجَعُهُ فَقَالَ ائْتُوْنِيْ أَكْتُبْ لَكُمْ كِتَابًا
لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُ أَبَدًا فَتَنَازَعُوْا وَلَا يَنْبَغِيْ عِنْدَ نَبِيٍّ
تَنَازُعٌ فَقَالُوْا مَا شَأْنُهُ أَهَجَرَ اسْتَفْهِمُوْهُ فَذَهَبُوْا
يَرُدُّوْنَ عَلَيْهِ فَقَالَ دَعُوْنِيْ فَالَّذِيْ أَنَا فِيْهِ خَيْرٌ مِمَّا
تَدْعُوْنِيْ إِلَيْهِ وَأَوْصَاهُمْ بِثَلَاثٍ قَالَ أَخْرِجُوا الْمُشْرِكِيْنَ
مِنْ جَزِيْرَةِ الْعَرَبِ وَأَجِيْزُوا الْوَفْدَ بِنَحْوِ مَا كُنْتُ
أُجِيْزُهُمْ وَسَكَتَ عَنْ الثَّالِثَةِ أَوْ قَالَ فَنَسِيْتُهَا.
সা'ঈদ
ইবনু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) বললেন, বৃহস্পতিবার! বৃহস্পতিবারের ঘটনা কী? নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর রোগ-জ্বালা প্রবল হয়ে গেল। তখন তিনি
বললেন, তোমরা আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখে দিয়ে যাই যাতে তোমরা এরপর
কখনো বিভ্রান্ত না হও। তখন তারা পরস্পর মতভেদ করতে থাকে। অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সান্নিধ্যে মতভেদ করা শোভনীয় নয়। এরপর কিছু সংখ্যক লোক
বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর অবস্থা কেমন? তিনি কি বোধশক্তি
হারিয়ে ফেলেছেন? তোমরা তাঁর কাছ থেকে বিষয়টি জেনে নাও। এতে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে ব্যাপারটি আবার উত্থাপন করল। তখন তিনি বললেন, তোমরা
আমাকে আমার অবস্থায় থাকতে দাও, তোমরা যে কাজের দিকে আমাকে ডাকছ তার চেয়ে আমি ভাল
অবস্থায় অবস্থান আছি। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের তিনটি
ওয়াসীয়াত করলেন- (১) আরব উপদ্বীপ [৯৫] থেকে মুশরিকদের বহিষ্কার করে দিবে, (২)
দূতদের সেরূপ সমাদর করবে যেমন আমি করতাম এবং তৃতীয়টি বলা থেকে তিনি চুপ থাকলেন
অথবা বর্ণনাকারী বলেন, তৃতীয়টি আমি ভুলে গেছি। [১১৪] (আ.প্র. ৪০৮২, ই.ফা. ৪০৮৫)
[৯৫]
একদিকে এডেন হতে ইরাক পর্যন্ত অন্যদিকে জেদ্দা হতে সিরিয়া পর্যন্ত আরব উপদ্বীপ বিস্তৃত
ছিল।
৪৪৩২
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ
اللهِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ
عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا حُضِرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَفِي الْبَيْتِ
رِجَالٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم هَلُمُّوْا أَكْتُبْ لَكُمْ
كِتَابًا لَا تَضِلُّوْا بَعْدَهُ فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى
الله عليه وسلم قَدْ غَلَبَهُ الْوَجَعُ وَعِنْدَكُمْ الْقُرْآنُ حَسْبُنَا
كِتَابُ اللهِ فَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْبَيْتِ وَاخْتَصَمُوْا فَمِنْهُمْ مَنْ
يَقُوْلُ قَرِّبُوْا يَكْتُبُ لَكُمْ كِتَابًا لَا تَضِلُّوْا بَعْدَهُ وَمِنْهُمْ
مَنْ يَقُوْلُ غَيْرَ ذَلِكَ فَلَمَّا أَكْثَرُوا اللَّغْوَ وَالِاخْتِلَافَ قَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قُوْمُوْا قَالَ عُبَيْدُ اللهِ فَكَانَ
يَقُوْلُ ابْنُ عَبَّاسٍ إِنَّ الرَّزِيَّةَ كُلَّ الرَّزِيَّةِ مَا حَالَ بَيْنَ
رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَبَيْنَ أَنْ يَكْتُبَ لَهُمْ ذَلِكَ
الْكِتَابَ لِاخْتِلَافِهِمْ وَلَغَطِهِمْ.
ইবনু
'আব্বাস(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ওফাতের সময় যখন ঘনিয়ে
এলো এবং ঘরে ছিল লোকের সমাবেশ, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
তোমরা এসো, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখে দেই, যেন তোমরা পরবর্তীতে পথভ্রষ্ট না হয়ে
যাও। তখন তাদের মধ্যকার কিছুলোক বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর রোগ-যন্ত্রণা কঠিন হয়ে গেছে, আর তোমাদের কাছে তো কুরআন মওজুদ আছে।
আল্লাহ্র কিতাবই আমাদের জন্য যথেষ্ট। এ ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)- এর পরিবারের লোকজনের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয় এবং তারা পরস্পর
বাক-বিতণ্ডা করতে থাকেন। তাদের কেউ বললেন, তোমার তাঁর নিকট যাও, তিনি তোমাদের জন্য
কিছু লিখে দিবেন। যাতে তোমরা তাঁর পরে কোন বিভ্রান্তিতে না পড়। আবার কেউ বললেন
অন্য কথা। বাক-বিতণ্ডা ও মতভেদ যখন চরমে পৌঁছল, তোমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা উঠে চলে যাও। 'উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইবনু
'আব্বাস (রাঃ) বলতেন, এ ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহাবীগনের (রাঃ) জন্য কিছু লিখে দেয়ার ব্যাপারে তাদের
মতবিরোধ ও চেঁচামেচিই মূলত প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। [১১৪; মুসলিম ২৫/৫, হাঃ
১৬৩৭, আহমাদ ৪৪৩২] (আ.প্র. ৪০৮৩ ই.ফা. ৪০৮৬)
৪৪৩৩
حَدَّثَنَا يَسَرَةُ بْنُ
صَفْوَانَ بْنِ جَمِيْلٍ اللَّخْمِيُّ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ
أَبِيْهِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ دَعَا
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام فِيْ شَكْوَاهُ
الَّذِيْ قُبِضَ فِيْهِ فَسَارَّهَا بِشَيْءٍ فَبَكَتْ ثُمَّ دَعَاهَا فَسَارَّهَا
بِشَيْءٍ فَضَحِكَتْ فَسَأَلْنَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَتْ سَارَّنِي النَّبِيُّ
أَنَّهُ يُقْبَضُ فِيْ وَجَعِهِ الَّذِيْ تُوُفِّيَ فِيْهِ فَبَكَيْتُ ثُمَّ
سَارَّنِيْ فَأَخْبَرَنِيْ أَنِّيْ أَوَّلُ أَهْلِهِ يَتْبَعُهُ فَضَحِكْتُ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু-রোগকালে ফাতিমাহ (রাঃ)-কে ডেকে
আনলেন এবং চুপে চুপে কিছু বললেন, তখন ফাতেমাহ (রাঃ) কেঁদে ফেললেন; এরপর নবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় তাঁকে ডেকে চুপে চুপে কিছু বললেন, তখন
হাসলেন। আমরা এ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি বলেছিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে আক্রান্ত আছেন এ রোগেই তাঁর ইন্তিকাল হবে এ কথাই তিনি
গোপনে আমাকে বলেছেন। তখন আমি কাঁদলাম। আবার তিনি আমাকে চুপে চুপে বললেন, তাঁর
পরিজনের মধ্যে সর্বপ্রথম আমিই তাঁর সঙ্গে মিলিত হব, তখন আমি হাসলাম। [৩৬২৩, ৩৬২৪]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৮৭)
৪৪৩৪
يَسَرَةُ بْنُ صَفْوَانَ
بْنِ جَمِيْلٍ اللَّخْمِيُّ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ
عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ دَعَا النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام فِيْ شَكْوَاهُ الَّذِيْ قُبِضَ
فِيْهِ فَسَارَّهَا بِشَيْءٍ فَبَكَتْ ثُمَّ دَعَاهَا فَسَارَّهَا بِشَيْءٍ
فَضَحِكَتْ فَسَأَلْنَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَتْ سَارَّنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم أَنَّهُ يُقْبَضُ فِيْ وَجَعِهِ الَّذِيْ تُوُفِّيَ فِيْهِ فَبَكَيْتُ ثُمَّ
سَارَّنِيْ فَأَخْبَرَنِيْ أَنِّيْ أَوَّلُ أَهْلِهِ يَتْبَعُهُ فَضَحِكْتُ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু-রোগকালে ফাতিমাহ (রাঃ)-কে ডেকে
আনলেন এবং চুপে চুপে কিছু বললেন, তখন ফাতেমাহ (রাঃ) কেঁদে ফেললেন; এরপর নবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় তাঁকে ডেকে চুপে চুপে কিছু বললেন, তখন
হাসলেন। আমরা এ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি বলেছিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে আক্রান্ত আছেন এ রোগেই তাঁর ইন্তিকাল হবে এ কথাই তিনি
গোপনে আমাকে বলেছেন। তখন আমি কাঁদলাম। আবার তিনি আমাকে চুপে চুপে বললেন, তাঁর
পরিজনের মধ্যে সর্বপ্রথম আমিই তাঁর সঙ্গে মিলিত হব, তখন আমি হাসলাম। [৩৬২৩, ৩৬২৪]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৮৭)
৪৪৩৫
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ
بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعْدٍ عَنْ عُرْوَةَ
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كُنْتُ أَسْمَعُ أَنَّهُ لَا يَمُوْتُ نَبِيٌّ حَتَّى
يُخَيَّرَ بَيْنَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ فَسَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم يَقُوْلُ فِيْ مَرَضِهِ الَّذِيْ مَاتَ فِيْهِ وَأَخَذَتْهُ بُحَّةٌ يَقُوْلُ
{مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ} الْآيَةَ فَظَنَنْتُ أَنَّهُ
خُيِّرَ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এ কথা শুনেছিলাম যে, কোন নবী মারা যান না যতক্ষণ না তাঁকে বলা হয় দুনিয়া
বা আখিরাতের একটি বেছে নিতে। যে রোগে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইন্তিকাল করেন সে রোগে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে যন্ত্রণায়
কাতর অবস্থায় বলতে শুনেছি, তাঁদের সঙ্গে যাঁদের প্রতি আল্লাহ তা'আলা নিয়ামত প্রদান
করেছেন- [তাঁরা হলেন- নবী (আঃ)-গণ, সিদ্দীকগণ এবং শাহীদগণ] (সূরাহ আন-নিসা ৪/৬৯)।
তখন আমি ধারণা করলাম যে, তাঁকেও একটি বেছে নিতে বলা হয়েছে। [৪৪৩৬, ৪৪৩৭, ৪৪৬৩,
৪৫৮৬, ৬৩৪৮, ৬৫০৯; মুসলিম ৪৪/১৩, হাঃ ২৪৪৪, আহমাদ ২৬৪৭৯] (আ.প্র. ৪০৮৫, ই.ফা.
৪০৮৮)
৪৪৩৬
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ عَنْ سَعْدٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا مَرِضَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَرَضَ الَّذِيْ مَاتَ فِيْهِ جَعَلَ يَقُوْلُ
فِي الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যু-রোগে আক্রান্ত হন, তখন
তিনি বলেছিলেন, فِي الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى
অর্থাৎ উচ্চে সমাসীন বন্ধুর সঙ্গে (মিলিত হতে চাই)। [৪৪৩৫] (আ.প্র. ৪০৮৬, ই.ফা.
৪০৮৯)
৪৪৩৭
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ
الزُّبَيْرِ إِنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
وَهُوَ صَحِيْحٌ يَقُوْلُ إِنَّهُ لَمْ يُقْبَضْ نَبِيٌّ قَطُّ حَتَّى يَرَى
مَقْعَدَهُ مِنَ الْجَنَّةِ ثُمَّ يُحَيَّا أَوْ يُخَيَّرَ فَلَمَّا اشْتَكَى
وَحَضَرَهُ الْقَبْضُ وَرَأْسُهُ عَلَى فَخِذِ عَائِشَةَ غُشِيَ عَلَيْهِ فَلَمَّا
أَفَاقَ شَخَصَ بَصَرُهُ نَحْوَ سَقْفِ الْبَيْتِ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ فِي
الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى فَقُلْتُ إِذًا لَا يُجَاوِرُنَا فَعَرَفْتُ أَنَّهُ
حَدِيْثُهُ الَّذِيْ كَانَ يُحَدِّثُنَا وَهُوَ صَحِيْحٌ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুস্থাবস্থায় বলতেন,
জান্নাতে তাঁর স্থান দেখানো ব্যতীত কোন নবী (আঃ)-এর প্রাণ কখনো কবজ করা হয়নি।
তারপর তাঁকে জীবন বা মৃত্যু একটি গ্রহণ করতে বলা হয়। এরপর যখন নবী করীম
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং তাঁর মাথা 'আয়িশাহ
(রাঃ)-এর উরুতে রাখাবস্থায় তাঁর জান কবজের সময় উপস্থিত হল তখন তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে
গেলেন। এরপর যখন তিনি সংজ্ঞা ফিরে পেলেন তখন তিনি ঘরের ছাদের দিকে তাকিয়ে বললেন,হে
আল্লাহ!উচ্চে সমাসীন বন্ধুর সঙ্গে (মিলিত হতে চাই)। অনন্তর আমি বললাম,তিনি আর
আমাদের মাঝে থাকতে চাচ্ছেন না। এরপর আমি উপলব্ধি করলাম যে,এটা হচ্ছে ঐ কথা যা তিনি
আমাদের কাছে সুস্থাবস্থায় বর্ণনা করতেন। [৪৪৩৫] (আ.প্র.৪০৮৭, ই.ফা. ৪০৯০)
৪৪৩৮
مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا
عَفَّانُ عَنْ صَخْرِ بْنِ جُوَيْرِيَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ
عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ دَخَلَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ عَلَى
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مُسْنِدَتُهُ إِلَى صَدْرِيْ وَمَعَ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ سِوَاكٌ رَطْبٌ يَسْتَنُّ بِهِ فَأَبَدَّهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم بَصَرَهُ فَأَخَذْتُ السِّوَاكَ فَقَصَمْتُهُ وَنَفَضْتُهُ
وَطَيَّبْتُهُ ثُمَّ دَفَعْتُهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَنَّ
بِهِ فَمَا رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَنَّ اسْتِنَانًا
قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ فَمَا عَدَا أَنْ فَرَغَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
رَفَعَ يَدَهُ أَوْ إِصْبَعَهُ ثُمَّ قَالَ فِي الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى ثَلَاثًا
ثُمَّ قَضَى وَكَانَتْ تَقُوْلُ مَاتَ بَيْنَ حَاقِنَتِيْ وَذَاقِنَتِي.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
'আবদুর
রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ)নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এলেন।
তখন আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমার বুকে হেলান দেয়া অবস্থায়
রেখেছিলাম এবং 'আবদুর রহমানের হাতে তাজা মিসওয়াকের ডাল ছিল যা দিয়ে সে দাঁত
পরিষ্কার করছিল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)তার দিকে
দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন। আমি মিসওয়াকটি নিলাম এবং তা চিবিয়ে নরম করলাম। তারপর তা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তা দিয়ে দাঁত মর্দন করলেন। আমি তাঁকে এর পূর্বে এত সুন্দরভাবে মিসওয়াক করতে
আর কখনও দেখিনি। এ থেকে অবসর হয়েই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর উভয় হাত অথবা আঙ্গুল উপরে উঠিয়ে তিনবার বললেন, উচ্চে সমাসীন বন্ধুর সঙ্গে
(মিলিত হতে চাই) তারপর তিনি ইন্তিকাল করলেন। 'আয়িশাহ (রাঃ) বলতেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বুকে ও থুতনির মাঝে ইন্তিকাল করেন। [৮৯০]
(আ.প্র. ৪০৮০, ই.ফা. ৪০৯১)
৪৪৩৯
حِبَّانُ أَخْبَرَنَا
عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ
عُرْوَةُ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ
صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا اشْتَكَى نَفَثَ عَلَى نَفْسِهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ
وَمَسَحَ عَنْهُ بِيَدِهِ فَلَمَّا اشْتَكَى وَجَعَهُ الَّذِيْ تُوُفِّيَ فِيْهِ
طَفِقْتُ أَنْفِثُ عَلَى نَفْسِهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ الَّتِيْ كَانَ يَنْفِثُ
وَأَمْسَحُ بِيَدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْهُ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসুস্থ হয়ে পড়তেন তখন
তিনি আশ্রয় প্রার্থনার দুই সূরাহ (ফালক ও নাস) পাঠ করে নিজ দেহে ফুঁক দিতেন এবং
স্বীয় হাত দ্বারা শরীর মাসাহ করতেন। এরপর যখন মৃত্যু-রোগে আক্রান্ত হলেন, তখন আমি
আশ্রয় প্রার্থনার সূরাহ দু'টি দিয়ে তাঁর শরীরে ফুঁ দিতাম, যা দিয়ে তিনি ফুঁ দিতেন।
আর আমি তাঁর হাত দ্বারা তাঁর শরীর মাসাহ করিয়ে দিতাম। [৫০১৬,৫৭৩৫,৫৭৫১:মুসলিম
৩৯/২,হাঃ ২১৯২,আহমাদ ২৬২৪৯] (আ.প্র. ৪০৮৯, ই.ফা.৪০৯২)
৪৪৪০
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ مُخْتَارٍ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ
عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ
أَنَّهَا سَمِعَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْغَتْ إِلَيْهِ قَبْلَ أَنْ
يَمُوْتَ وَهُوَ مُسْنِدٌ إِلَيَّ ظَهْرَهُ يَقُوْلُ اللهُمَّ اغْفِرْ لِيْ
وَارْحَمْنِيْ وَأَلْحِقْنِيْ بِالرَّفِيْقِ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পূর্বে যখন তাঁর
পিঠ আমার উপর হেলান দেয়া অবস্থায় ছিল, তখন আমি কান ঝুঁকিয়ে দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার উপর রহম
করুন এবং মহান বন্ধুর সঙ্গে আমাকে মিলিত করুন। [৫৬৭৪] (আ.প্র.৪০৯০, ই.ফা.৪০৯৩)
৪৪৪১
الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ
حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ هِلَالٍ الْوَزَّانِ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ
الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم فِيْ مَرَضِهِ الَّذِيْ لَمْ يَقُمْ مِنْهُ لَعَنَ اللهُ
الْيَهُوْدَ اتَّخَذُوْا قُبُوْرَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ قَالَتْ عَائِشَةُ
لَوْلَا ذَلِكَ لَأُبْرِزَ قَبْرُهُ خَشِيَ أَنْ يُتَّخَذَ مَسْجِدًا.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সেই রোগাবস্থায় যাথেকে তিনি আর
সেরে উঠেননি- বলেন, ইয়াহুদীদের প্রতি আল্লাহ লা'নত করেছেন। তারা তাদের নাবীদের
কবরগুলোকে সাজদাহ্র জায়গা করে নিয়েছে। 'আয়িশাহ (রাঃ)মন্তব্য করেন,তা না হলে তবে
তাঁর কবরকেও সাজদাহ্র জায়গা বানানোর আশঙ্কা ছিল। [৪৩৫] (আ.প্র. ৪০৯১, ই.ফা. ৪০৯৪)
৪৪৪২
سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ
قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ
أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُوْدٍ
أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ لَمَّا ثَقُلَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاشْتَدَّ بِهِ وَجَعُهُ اسْتَأْذَنَ
أَزْوَاجَهُ أَنْ يُمَرَّضَ فِيْ بَيْتِيْ فَأَذِنَّ لَهُ فَخَرَجَ وَهُوَ بَيْنَ
الرَّجُلَيْنِ تَخُطُّ رِجْلَاهُ فِي الْأَرْضِ بَيْنَ عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ
الْمُطَّلِبِ وَبَيْنَ رَجُلٍ آخَرَ قَالَ عُبَيْدُ اللهِ فَأَخْبَرْتُ عَبْدَ
اللهِ بِالَّذِيْ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقَالَ لِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبَّاسٍ هَلْ
تَدْرِيْ مَنْ الرَّجُلُ الآخَرُ الَّذِيْ لَمْ تُسَمِّ عَائِشَةُ قَالَ قُلْتُ
لَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ هُوَ عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ وَكَانَتْ عَائِشَةُ
زَوْجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تُحَدِّثُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله
عليه وسلم لَمَّا دَخَلَ بَيْتِيْ وَاشْتَدَّ بِهِ وَجَعُهُ قَالَ هَرِيْقُوْا
عَلَيَّ مِنْ سَبْعِ قِرَبٍ لَمْ تُحْلَلْ أَوْكِيَتُهُنَّ لَعَلِّيْ أَعْهَدُ
إِلَى النَّاسِ فَأَجْلَسْنَاهُ فِيْ مِخْضَبٍ لِحَفْصَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم ثُمَّ طَفِقْنَا نَصُبُّ عَلَيْهِ مِنْ تِلْكَ الْقِرَبِ حَتَّى
طَفِقَ يُشِيْرُ إِلَيْنَا بِيَدِهِ أَنْ قَدْ فَعَلْتُنَّ قَالَتْ ثُمَّ خَرَجَ
إِلَى النَّاسِ فَصَلَّى بِهِمْ وَخَطَبَهُمْ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এর রোগ প্রবল হল ও
ব্যথা বেড়ে গেল,তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রুষা পাওয়ার ব্যাপারে তাঁর স্ত্রীগণের
নিকট অনুমতি চাইলেন। তাঁরা অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ঘর থেকে বের হয়ে ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) ও অপর একজন সহাবীর মাঝে যমীনের উপর
পা হিঁচড়ে চলতে লাগলেন। 'উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আমি 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস
(রাঃ)-কে 'আয়িশাহ কথিত ব্যক্তি সর্ম্পকে জানালাম, তখন 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস
(রাঃ) আমাকে বললেন, তুমি কি সেই অন্য ব্যক্তিকে জান যার নাম 'আয়িশাহ (রাঃ) উল্লেখ
করেননি? আমি বললাম, না। ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি হলেন, আলী (রাঃ)। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিনী ' আয়িশাহ (রাঃ) বর্ণনা করতেন যে,
যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ঘরে প্রবেশ করলেন এবং
তাঁর ব্যথা বেড়ে গেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা এমন সাত মশক যার মুখ এখনও খোলা হয়নি,
তা থেকে আমার শরীরে পানি ঢেলে দাও। যেন আমি (সুস্থ হয়ে) লোকদের নাসীহাত দিতে পারি।
এরপর আমরা তাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধমির্নী হাফসাহ
(রাঃ)-এর একটি বড় গামলায় বসালাম। তারপর আমরা উক্ত মশক হতে তাঁর উপর ততক্ষণ পযর্ন্ত
পানি ঢালতে লাগলাম যতক্ষণ না তিনি তাঁর হাত দ্বারা আমাদের ইশারা করে জানালেন যে,
তোমরা তোমাদের কাজ পুরা করেছ। 'আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে জামা'আতে সলাত আদায় করলেন এবং
তাদের উদ্দেশে খুতবা দিলেন। [১৯৮] (আ.প্র. ৪০৯২, ই.ফা. ৪০৯৫)
৪৪৪৩
و أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ
اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ عَائِشَةَ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ قَالَا لَمَّا نَزَلَ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله
عليه وسلم طَفِقَ يَطْرَحُ خَمِيْصَةً لَهُ عَلَى وَجْهِهِ فَإِذَا اغْتَمَّ
كَشَفَهَا عَنْ وَجْهِهِ وَهُوَ كَذَلِكَ يَقُوْلُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَى
الْيَهُوْدِ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوْا قُبُوْرَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ
يُحَذِّرُ مَا صَنَعُوْا.
‘আয়িশাহ
ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উবাইদুল্লাহ
ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উতবাহ (রহ.) আমাকে জানালেন যে, ‘আয়িশাহ ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু
‘আববাস (রাঃ) উভয়ে বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রোগ-যাতনায় অস্থির হতেন তখন তিনি তাঁর কালো চাদর দিয়ে নিজ মুখমন্ডল ঢেকে রাখতেন।
আবার যখন জ্বরের উষ্ণতা কমত তখন মুখমন্ডল থেকে চাদর সরিয়ে ফেলতেন। রাবী বলেন, এরূপ
অবস্থায়ও তিনি বলতেন, ইয়াহূদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর লা‘নত, তারা তাদের
নাবীদের (নবীদের) কবরকে মাসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। তাদের কৃতকর্ম থেকে সতর্ক করা
হয়েছে। [৪৩৫, ৪৩৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৯২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৯৫)
৪৪৪৪
و أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ
اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ عَائِشَةَ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ قَالَا لَمَّا نَزَلَ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله
عليه وسلم طَفِقَ يَطْرَحُ خَمِيْصَةً لَهُ عَلَى وَجْهِهِ فَإِذَا اغْتَمَّ
كَشَفَهَا عَنْ وَجْهِهِ وَهُوَ كَذَلِكَ يَقُوْلُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَى
الْيَهُوْدِ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوْا قُبُوْرَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ
يُحَذِّرُ مَا صَنَعُوْا.
‘আয়িশাহ
ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উবাইদুল্লাহ
ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উতবাহ (রহ.) আমাকে জানালেন যে, ‘আয়িশাহ ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু
‘আববাস (রাঃ) উভয়ে বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রোগ-যাতনায় অস্থির হতেন তখন তিনি তাঁর কালো চাদর দিয়ে নিজ মুখমন্ডল ঢেকে রাখতেন।
আবার যখন জ্বরের উষ্ণতা কমত তখন মুখমন্ডল থেকে চাদর সরিয়ে ফেলতেন। রাবী বলেন, এরূপ
অবস্থায়ও তিনি বলতেন, ইয়াহূদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর লা‘নত, তারা তাদের
নাবীদের (নবীদের) কবরকে মাসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। তাদের কৃতকর্ম থেকে সতর্ক করা
হয়েছে। [৪৩৫, ৪৩৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৯২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৯৫)
৪৪৪৫
أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ
اللهِ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ لَقَدْ رَاجَعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم فِيْ ذَلِكَ وَمَا حَمَلَنِيْ عَلَى كَثْرَةِ مُرَاجَعَتِهِ إِلَّا أَنَّهُ
لَمْ يَقَعْ فِيْ قَلْبِيْ أَنْ يُحِبَّ النَّاسُ بَعْدَهُ رَجُلًا قَامَ
مَقَامَهُ أَبَدًا وَلَا كُنْتُ أُرَى أَنَّهُ لَنْ يَقُوْمَ أَحَدٌ مَقَامَهُ
إِلَّا تَشَاءَمَ النَّاسُ بِهِ فَأَرَدْتُ أَنْ يَعْدِلَ ذَلِكَ رَسُوْلُ اللهِ
عَنْ أَبِيْ بَكْرٍ رَوَاهُ ابْنُ عُمَرَ وَأَبُوْ مُوْسَى وَابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمْ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
উবাইদুল্লাহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আয়িশাহ
(রাঃ) বলেন, আমি আবূ বাক্র (রাঃ)-এর ইমামতের ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বারবার আপত্তি করেছি। আর আমার তাঁর কাছে বারবার আপত্তি করার
কারণ ছিল এই, আমার অন্তরে এ কথা আসেনি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর পরে তাঁর স্থলে কেউ দাঁড়ালে লোকেরা তাকে পছন্দ করবে। বরং আমি মনে
করতাম যে, কেউ তাঁর স্থলে দাঁড়ালে লোকেরা তাঁর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করবে, তাই
আমি ইচ্ছা করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দায়িত্ব আবূ বকর
(রাঃ)-এর পরিবর্তে অন্য কাউকে প্রদান করুন। আবূ 'আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, এ
হাদীস ইবনু 'উমার,আবূ মূসা ও ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। [১৯৮] (আ.প্র. ৪০৯২, ই.ফা. ৪০৯৫)
৪৪৪৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ
يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَاتَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَإِنَّهُ لَبَيْنَ حَاقِنَتِيْ وَذَاقِنَتِيْ
فَلَا أَكْرَهُ شِدَّةَ الْمَوْتِ لِأَحَدٍ أَبَدًا بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ইন্তিকাল করার সময় আমার বুক ও থুতনির
মাঝে ছিলেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (মৃত্যু-যন্ত্রণার) পর
আমি আর কারো জন্য মৃত্যু- যন্ত্রণাকে খারাপ মনে করি না। [৮৯০] (আ.প্র. ৪০৯৩, ই.ফা.
৪০৯৬)
৪৪৪৭
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا
بِشْرُ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ أَبِيْ حَمْزَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ
الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ
الْأَنْصَارِيُّ وَكَانَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ أَحَدَ الثَلَاثَةِ الَّذِيْنَ
تِيْبَ عَلَيْهِمْ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيَّ
بْنَ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ خَرَجَ مِنْ عِنْدِ رَسُوْلِ اللهِ فِيْ
وَجَعِهِ الَّذِيْ تُوُفِّيَ فِيْهِ فَقَالَ النَّاسُ يَا أَبَا حَسَنٍ كَيْفَ
أَصْبَحَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَصْبَحَ بِحَمْدِ اللهِ
بَارِئًا فَأَخَذَ بِيَدِهِ عَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ لَهُ
أَنْتَ وَاللهِ بَعْدَ ثَلَاثٍ عَبْدُ الْعَصَا وَإِنِّيْ وَاللهِ لَأَرَى
رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَوْفَ يُتَوَفَّى مِنْ وَجَعِهِ هَذَا إِنِّيْ
لَأَعْرِفُ وُجُوْهَ بَنِيْ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عِنْدَ الْمَوْتِ اذْهَبْ بِنَا
إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلْنَسْأَلْهُ فِيْمَنْ هَذَا الْأَمْرُ
إِنْ كَانَ فِيْنَا عَلِمْنَا ذَلِكَ وَإِنْ كَانَ فِيْ غَيْرِنَا عَلِمْنَاهُ
فَأَوْصَى بِنَا فَقَالَ عَلِيٌّ إِنَّا وَاللهِ لَئِنْ سَأَلْنَاهَا رَسُوْلَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمَنَعَنَاهَا لَا يُعْطِيْنَاهَا النَّاسُ بَعْدَهُ
وَإِنِّيْ وَاللهِ لَا أَسْأَلُهَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
আবদুল্লাহ
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
'আলী
ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছ হতে
বের হয়ে আসেন যখন তিনি মৃত্যু রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তখন সাহাবীগণ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন,
হে আবুল হাসান! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আজ কেমন আছেন? তিনি
বললেন, আল্হাম্দুলিল্লাহ্, তিনি কিছুটা সুস্থ। তখন 'আব্বাস ইবনু 'আবদুল
মুত্তালিব (রাঃ) তাঁর হাত ধরে তাঁকে বললেন, আল্লাহ্র কসম! তুমি তিন দিন পরে হবে
লাঠির দাস। [৯৬] আল্লাহ্র শপথ! আমি মনে করি যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এই রোগে অচিরেই ইন্তিকাল করবেন। কারণ , আমি আবদুল মুত্তালিবের বংশের
অনেকের মৃত্যুকালীন অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছি। চল যাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করি যে,তিনি (নেতৃত্বের) দায়িত্ব
কার উপর ন্যস্ত করে যাচ্ছেন। যদি আমাদের মধ্যে থাকে তো তা আমরা জানব। আর যদি
আমাদের ব্যতীত অন্যদের উপর ন্যস্ত করে যান, তাহলে তাও আমরা জানতে পারব এবং তিনি
অসীয়াত করে যাবেন। তখন 'আলী (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! যদি এ সর্ম্পকে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– কে আমরা জিজ্ঞেস করি আর তিনি
আমাদের নিষেধ করে দেন, তবে তারপরে লোকেরা আর আমাদের তা প্রদান করবে না। আল্লাহ্র
কসম! আমি এ সর্ম্পকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস
করব না। [৬২৬৬] (আ.প্র. ৪০৯৪,ই.ফা ৪০৯৭)
[৯৬]
অর্থাৎ তুমি অন্যের (আল্লাহর) অধীনস্থ হবে। অর্থাৎ তিনি তিনদিন পর মৃত্যুবরণ করলে তার
কোন কতৃর্ত্ব চলবে না বরং তারই উপর কতৃর্ত্ব করা হবে। এ উদ্দেশ্যেই উপরোক্ত কথাটি বলা
হয়েছে। ইবনু হাজার আসকালানী তার ফাতহুল বারীতে উল্লেখ করেন যে, এই উক্তি থেকে 'আব্বাস
ইবনু 'আবদুল মুত্তালিব (রাঃ)-এর তীক্ষ্ণ বিচক্ষণতার পরিচয় পাওয়া যায়।
৪৪৪৮
سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ
قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ
حَدَّثَنِيْ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ الْمُسْلِمِيْنَ
بَيْنَا هُمْ فِيْ صَلَاةِ الْفَجْرِ مِنْ يَوْمِ الِاثْنَيْنِ وَأَبُوْ بَكْرٍ
يُصَلِّيْ لَهُمْ لَمْ يَفْجَأْهُمْ إِلَّا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
قَدْ كَشَفَ سِتْرَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ فَنَظَرَ إِلَيْهِمْ وَهُمْ فِيْ صُفُوْفِ
الصَّلَاةِ ثُمَّ تَبَسَّمَ يَضْحَكُ فَنَكَصَ أَبُوْ بَكْرٍ عَلَى عَقِبَيْهِ
لِيَصِلَ الصَّفَّ وَظَنَّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدُ أَنْ
يَخْرُجَ إِلَى الصَّلَاةِ فَقَالَ أَنَسٌ وَهَمَّ الْمُسْلِمُوْنَ أَنْ
يَفْتَتِنُوْا فِيْ صَلَاتِهِمْ فَرَحًا بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ بِيَدِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَتِمُّوْا
صَلَاتَكُمْ ثُمَّ دَخَلَ الْحُجْرَةَ وَأَرْخَى السِّتْرَ.
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সোমবারে
সাহাবীগণ ফাজ্রের সলাতে ছিলেন। আর আবূ বকর (রাঃ) তাদের সলাতের ইমামত করছিলেন।
হঠাৎ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'আয়িশাহ (রাঃ) –এর হুজরার
পর্দা উঠিয়ে তাদের দিকে দেখলেন। সাহাবীগণ কাতারবন্দী অবস্থায় সলাতে ছিলেন। তখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসি দিলেন। আবূ বাক্র (রাঃ) মুক্তাদীর
সারিতে পিছিয়ে আসতে মনস্থ করলেন। তিনি ধারণা করেছিলেন যে, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে সলাত আদায়ের জন্য বের হওয়ার ইচ্ছা করছেন।
আনাস (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (আগমনের)
আনন্দে সাহাবীগণের সলাত ভঙ্গের উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের ইশারায় তাদের সলাত পূর্ণ করতে বললেন। তারপর তিনি
হুজরায় প্রবেশ করলেন ও পর্দা টেনে দিলেন। [৬৮০] (আ.প্র. ৪০৯৫, ই.ফা. ৪০৯৮)
৪৪৪৯
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ
حَدَّثَنَا عِيْسَى بْنُ يُوْنُسَ عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ أَخْبَرَنِي
ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ أَبَا عَمْرٍو ذَكْوَانَ مَوْلَى عَائِشَةَ
أَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ كَانَتْ تَقُوْلُ إِنَّ مِنْ نِعَمِ اللهِ عَلَيَّ
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم تُوُفِّيَ فِيْ بَيْتِيْ وَفِيْ يَوْمِيْ
وَبَيْنَ سَحْرِيْ وَنَحْرِيْ وَأَنَّ اللهَ جَمَعَ بَيْنَ رِيْقِيْ وَرِيْقِهِ
عِنْدَ مَوْتِهِ دَخَلَ عَلَيَّ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَبِيَدِهِ السِّوَاكُ وَأَنَا
مُسْنِدَةٌ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَرَأَيْتُهُ يَنْظُرُ إِلَيْهِ
وَعَرَفْتُ أَنَّهُ يُحِبُّ السِّوَاكَ فَقُلْتُ آخُذُهُ لَكَ فَأَشَارَ
بِرَأْسِهِ أَنْ نَعَمْ فَتَنَاوَلْتُهُ فَاشْتَدَّ عَلَيْهِ وَقُلْتُ أُلَيِّنُهُ
لَكَ فَأَشَارَ بِرَأْسِهِ أَنْ نَعَمْ فَلَيَّنْتُهُ فَأَمَرَّهُ وَبَيْنَ
يَدَيْهِ رَكْوَةٌ أَوْ عُلْبَةٌ يَشُكُّ عُمَرُ فِيْهَا مَاءٌ فَجَعَلَ يُدْخِلُ
يَدَيْهِ فِي الْمَاءِ فَيَمْسَحُ بِهِمَا وَجْهَهُ يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا
اللهُ إِنَّ لِلْمَوْتِ سَكَرَاتٍ ثُمَّ نَصَبَ يَدَهُ فَجَعَلَ يَقُوْلُ فِي
الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى حَتَّى قُبِضَ وَمَالَتْ يَدُهُ
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
প্রায়ই বলতেন, আমার প্রতি আল্লাহর এটা নি'য়ামাত যে, আমার ঘরে, আমার পালার দিনে এবং
আমার গণ্ড ও সিনার মাঝে রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
ইন্তিকাল হয় এবং আল্লাহ তা'আলা তাঁর ইন্তিকালের সময় আমার থুথু তাঁর থুথুর সঙ্গে
মিশ্রিত করে দেন। এ সময় 'আবদুর রহমান [৯৭] (রাঃ) আমার নিকট প্রবেশ করে এবং তার
হাতে মিসওয়াক ছিল। আর আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (আমার
বুকে) হেলান অবস্থায় রেখেছিলাম। আমি লক্ষ্য করলাম যে, তিনি 'আবদুর রহমানের দিকে
তাকাচ্ছেন। আমি বুঝলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিসওয়াক
চাচ্ছেন। আমি তখন জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি আপনার জন্য মিসওয়াক নিব? তিনি মাথা নাড়িয়ে
জানালেন যে, হ্যাঁ। তখন আমি মিসওয়াকটি নিলাম। কিন্তু মিসওয়াক ছিল তার জন্য শক্ত,
তাই আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি এটি আপনার জন্য নরম করে দিব? তখন তিনি মাথা নাড়িয়ে
হ্যাঁ বললেন। তখন আমি তা চিবিয়ে নরম করে দিলাম। এরপর তিনি ভালভাবে মিসওয়াক করলেন।
তাঁর সম্মুখে পাত্র অথবা পেয়ালা ছিল (রাবী 'উমারের সন্দেহ) তাতে পানি ছিল। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় হস্তদ্বয় পানির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে তার
দ্বারা তাঁর চেহারা মুছতে লাগলেন। তিনি বলছিলেন…….-আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই,
সত্যিই মৃত্যু-যন্ত্রণা কঠিন। তারপর দু'হাত উপরের দিকে উঠিয়ে বলছিলেন, আমি উচ্চে
সমাসীন বন্ধুর সঙ্গে (মিলিত হতে চাই)। এ অবস্থায় তাঁর ইন্তিকাল হল আর হাত শিথিল
হয়ে গেল। [৮৯০] (আ.প্র. ৪০৯৬, ই.ফা. ৪০৯৯)
[৯৭]
'আয়িশাহ (রাঃ)-এর ভাই।
৪৪৫০
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ
حَدَّثَنِيْ سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ
أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ
صلى الله عليه وسلم كَانَ يَسْأَلُ فِيْ مَرَضِهِ الَّذِيْ مَاتَ فِيْهِ يَقُوْلُ
أَيْنَ أَنَا غَدًا أَيْنَ أَنَا غَدًا يُرِيْدُ يَوْمَ عَائِشَةَ فَأَذِنَ لَهُ
أَزْوَاجُهُ يَكُوْنُ حَيْثُ شَاءَ فَكَانَ فِيْ بَيْتِ عَائِشَةَ حَتَّى مَاتَ
عِنْدَهَا قَالَتْ عَائِشَةُ فَمَاتَ فِي الْيَوْمِ الَّذِيْ كَانَ يَدُوْرُ
عَلَيَّ فِيْهِ فِيْ بَيْتِيْ فَقَبَضَهُ اللهُ وَإِنَّ رَأْسَهُ لَبَيْنَ
نَحْرِيْ وَسَحْرِيْ وَخَالَطَ رِيْقُهُ رِيْقِيْ ثُمَّ قَالَتْ دَخَلَ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ وَمَعَهُ سِوَاكٌ يَسْتَنُّ بِهِ فَنَظَرَ
إِلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لَهُ أَعْطِنِيْ هَذَا
السِّوَاكَ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ فَأَعْطَانِيْهِ فَقَضِمْتُهُ ثُمَّ مَضَغْتُهُ
فَأَعْطَيْتُهُ رَسُوْلَ اللهِ فَاسْتَنَّ بِهِ وَهُوَ مُسْتَنِدٌ إِلَى صَدْرِي.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মৃত্যু
রোগকালীন অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করতেন,
আমি আগামীকাল কার ঘরে থাকব। আগামীকাল কার ঘরে? এর দ্বারা তিনি 'আয়িশাহ (রাঃ)-এর
ঘরের পালার ইচ্ছা পোষণ করতেন। সহধর্মিণীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে যার ঘরে ইচ্ছা অবস্থান করার অনুমতি দিলেন। তখন নবী করীম (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'আয়িশাহ (রাঃ)-এর ঘরে ছিলেন। এমনকি তাঁর ঘরেই তিনি ইন্তিকাল
করেন। 'আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)আমার জন্য
নির্ধারিত পালার দিন আমার ঘরে ইন্তিকাল করেন এবং আল্লাহ তাঁর রূহ কবজ করেন এ
অবস্থায় যে, তাঁর মাথা আমার গণ্ড ও সীনার মধ্যে ছিল এবং আমার থুথু (তাঁর থুথুর
সঙ্গে) মিশ্রিত হয়ে যায়। তারপর তিনি বলেন, 'আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) তাঁর
ঘরে প্রবেশ করল আর তার হাতে একটি মিসওয়াক ছিল যা দিয়ে সে তার দাঁত মাজছিল।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে তাকালেন। আমি তখন তাকে
বললাম, হে 'আবদুর রহমান! এই মিসওয়াকটি আমাকে দাও; তখন সে আমাকে তা দিয়ে দিল। আমি
সেটি চিবিয়ে নরম করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দিলাম।
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলেন, তিনি তখন
আমার বুকে হেলান দেয়া অবস্থায় ছিলেন। [৮৯০;মুসলিম ৪৪/১৩, হাঃ ২৪৪৩] (আ.প্র. ৪০৯৭,
ই.ফা. ৪১০০)
৪৪৫১
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم فِيْ بَيْتِيْ وَفِيْ يَوْمِيْ وَبَيْنَ سَحْرِيْ وَنَحْرِيْ وَكَانَتْ
إِحْدَانَا تُعَوِّذُهُ بِدُعَاءٍ إِذَا مَرِضَ فَذَهَبْتُ أُعَوِّذُهُ فَرَفَعَ رَأْسَهُ
إِلَى السَّمَاءِ وَقَالَ فِي الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى فِي الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى
وَمَرَّ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ وَفِيْ يَدِهِ جَرِيْدَةٌ رَطْبَةٌ
فَنَظَرَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَظَنَنْتُ أَنَّ لَهُ بِهَا
حَاجَةً فَأَخَذْتُهَا فَمَضَغْتُ رَأْسَهَا وَنَفَضْتُهَا فَدَفَعْتُهَا إِلَيْهِ
فَاسْتَنَّ بِهَا كَأَحْسَنِ مَا كَانَ مُسْتَنًّا ثُمَّ نَاوَلَنِيْهَا
فَسَقَطَتْ يَدُهُ أَوْ سَقَطَتْ مِنْ يَدِهِ فَجَمَعَ اللهُ بَيْنَ رِيْقِيْ
وَرِيْقِهِ فِيْ آخِرِ يَوْمٍ مِنْ الدُّنْيَا وَأَوَّلِ يَوْمٍ مِنَ الْآخِرَةِ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ঘরে আমার পালার দিনে এবং আমার
গণ্ড ও সীনার মধ্যস্থলে থাকা অবস্থায় ইন্তিকাল করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) অসুস্থ হলে আমাদের মধ্যকার কেউ দু'আ পড়ে তাঁকে ঝাড়ফুঁক করতেন। আমি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ঝাড়ফুঁক করার জন্য তাঁর কাছে গেলাম।
তখন তিনি তাঁর মাথা আকাশের দিকে উঠিয়ে বললেন, উচ্চে সমাসীন বন্ধুর সঙ্গে (মিলিত
হতে চাই), উচ্চে সমাসীন মহান বন্ধুর সঙ্গে (মিলিত হতে চাই)। এ সময় আবদুর রহমান
ইবনু আবূ বকর (রাঃ) আগমন করলেন। তাঁর হাতে মিসওয়াকের একটি তাজা ডাল ছিল। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন সেদিকে তাকালেন। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে,
তাঁর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-এর মিসওয়াকের প্রয়োজন। তখন আমি
সেটি নিয়ে চিবালাম, ঝেড়ে মুছে পরিস্কার করলাম এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে তা দিলাম। তখন তিনি এর দ্বারা এত সুন্দরভাবে দাঁত পরিস্কার করলেন যে,
এর আগে কখনও এরূপ করেননি। তারপর তা আমাকে দিলেন। এরপর তাঁর হাত ঢলে পড়ল অথবা রাবী
বলেন, তাঁর হাত থেকে ঢলে পড়ল। আল্লাহ তা'আলা আমার থুথুকে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর থুথুর সঙ্গে মিলিয়ে দিলেন। তার এ দুনিয়ার শেষ দিনে এবং
আখিরাতের প্রথম দিনে। [৮৯০] (আ.প্র. ৪০৯৮, ই.ফা. ৪১০১)
৪৪৫২
يَحْيَى بْن بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ
سَلَمَةَ أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
أَقْبَلَ عَلَى فَرَسٍ مِنْ مَسْكَنِهِ بِالسُّنْحِ حَتَّى نَزَلَ فَدَخَلَ الْمَسْجِدَ
فَلَمْ يُكَلِّمْ النَّاسَ حَتَّى دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ فَتَيَمَّمَ رَسُوْلَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُغَشًّى بِثَوْبِ حِبَرَةٍ فَكَشَفَ عَنْ
وَجْهِهِ ثُمَّ أَكَبَّ عَلَيْهِ فَقَبَّلَهُ وَبَكَى ثُمَّ قَالَ بِأَبِيْ أَنْتَ
وَأُمِّيْ وَاللهِ لَا يَجْمَعُ اللهُ عَلَيْكَ مَوْتَتَيْنِ أَمَّا الْمَوْتَةُ
الَّتِيْ كُتِبَتْ عَلَيْكَ فَقَدْ مُتَّهَا.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবূ বকর (রাঃ) ঘোড়ার উপর সওয়ার হয়ে তার সুনহের বাড়ি থেকে আগমন করেন। ঘোড়া
থেকে অবতরণ করে তিনি মসজিদে নাববীতে প্রবেশ করেন কিন্তু কারো সঙ্গে কোন কথা না বলে
‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত হন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইয়ামানী চাদর দ্বারা আবৃত ছিলেন। তখন তিনি চেহারা হতে কাপড় হটিয়ে তাঁর
উপর ঝুঁকে পড়লেন এবং তাঁকে চুমু দিলেন ও কেঁদে ফেললেন। তারপর বললেন, আমার মাতাপিতা
আপনার প্রতি কুরবান হোক! আল্লাহর কসম! আল্লাহ তো আপনাকে দু’বার মৃত্যু দিবেন না,
যে মৃত্যু ছিল আপনার জন্য নির্ধারিত সে মৃত্যু আপনি গ্রহণ করে নিলেন। [১২৪১, ১২৪২]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪১০২)
৪৪৫৩
يَحْيَى بْن بُكَيْرٍ
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ
سَلَمَةَ أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
أَقْبَلَ عَلَى فَرَسٍ مِنْ مَسْكَنِهِ بِالسُّنْحِ حَتَّى نَزَلَ فَدَخَلَ
الْمَسْجِدَ فَلَمْ يُكَلِّمْ النَّاسَ حَتَّى دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ فَتَيَمَّمَ
رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُغَشًّى بِثَوْبِ حِبَرَةٍ فَكَشَفَ
عَنْ وَجْهِهِ ثُمَّ أَكَبَّ عَلَيْهِ فَقَبَّلَهُ وَبَكَى ثُمَّ قَالَ بِأَبِيْ
أَنْتَ وَأُمِّيْ وَاللهِ لَا يَجْمَعُ اللهُ عَلَيْكَ مَوْتَتَيْنِ أَمَّا
الْمَوْتَةُ الَّتِيْ كُتِبَتْ عَلَيْكَ فَقَدْ مُتَّهَا.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবূ বকর (রাঃ) ঘোড়ার উপর সওয়ার হয়ে তার সুনহের বাড়ি থেকে আগমন করেন। ঘোড়া
থেকে অবতরণ করে তিনি মসজিদে নাববীতে প্রবেশ করেন কিন্তু কারো সঙ্গে কোন কথা না বলে
‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত হন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইয়ামানী চাদর দ্বারা আবৃত ছিলেন। তখন তিনি চেহারা হতে কাপড় হটিয়ে তাঁর
উপর ঝুঁকে পড়লেন এবং তাঁকে চুমু দিলেন ও কেঁদে ফেললেন। তারপর বললেন, আমার মাতাপিতা
আপনার প্রতি কুরবান হোক! আল্লাহর কসম! আল্লাহ তো আপনাকে দু’বার মৃত্যু দিবেন না,
যে মৃত্যু ছিল আপনার জন্য নির্ধারিত সে মৃত্যু আপনি গ্রহণ করে নিলেন। [১২৪১, ১২৪২]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪১০২)
৪৪৫৪
قَالَ الزُّهْرِيُّ
وَحَدَّثَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ أَبَا
بَكْرٍ خَرَجَ وَعُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يُكَلِّمُ النَّاسَ فَقَالَ اجْلِسْ يَا
عُمَرُ فَأَبَى عُمَرُ أَنْ يَجْلِسَ فَأَقْبَلَ النَّاسُ إِلَيْهِ وَتَرَكُوْا
عُمَرَ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ أَمَّا بَعْدُ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ يَعْبُدُ
مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَإِنَّ مُحَمَّدًا قَدْ مَاتَ وَمَنْ كَانَ
مِنْكُمْ يَعْبُدُ اللهَ فَإِنَّ اللهَ حَيٌّ لَا يَمُوْتُ قَالَ اللهُ وَمَا
مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُوْلٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ إِلَى قَوْلِهِ
الشَّاكِرِيْنَ وَقَالَ وَاللهِ لَكَأَنَّ النَّاسَ لَمْ يَعْلَمُوْا أَنَّ اللهَ
أَنْزَلَ هَذِهِ الْآيَةَ حَتَّى تَلَاهَا أَبُوْ بَكْرٍ فَتَلَقَّاهَا مِنْهُ
النَّاسُ كُلُّهُمْ فَمَا أَسْمَعُ بَشَرًا مِنْ النَّاسِ إِلَّا يَتْلُوْهَا
فَأَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ عُمَرَ قَالَ وَاللهِ مَا هُوَ
إِلَّا أَنْ سَمِعْتُ أَبَا بَكْرٍ تَلَاهَا فَعَقِرْتُ حَتَّى مَا تُقِلُّنِيْ
رِجْلَايَ وَحَتَّى أَهْوَيْتُ إِلَى الْأَرْضِ حِيْنَ سَمِعْتُهُ تَلَاهَا
عَلِمْتُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَدْ مَاتَ.
ইমাম
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমাকে
আবূ সালামাহ (রাঃ) 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, আবূ বকর
(রাঃ) বের হয়ে আসেন তখন 'উমার (রাঃ) লোকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আবূ বকর (রাঃ)
তাঁকে বললেন, হে 'উমার (রাঃ) বসে পড়। 'উমার (রাঃ) বসতে অস্বীকার করলেন। তখন
সাহাবীগণ 'উমার (রাঃ)-কে ছেড়ে আবূ বকর (রাঃ)-এর দিকে গেলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ)
বললেন- “অতঃপর আপনাদের মধ্যে যারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর ইবাদত করতেন, তিনি তো ইন্তিকাল করেছেন। আর যারা আপনাদের মধ্যে আল্লাহর
'ইবাদাত করতেন (জেনে রাখুন) আল্লাহ্ চিরঞ্জীব, কখনো মরবেন না। আল্লাহ বলেন,.....
-মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন রসূল মাত্র, তাঁর পূর্বে বহু
রসূল গত হয়েছেন। ….. কৃতজ্ঞদের পুরস্কৃত করবেন- (সূরাহ আলু 'ইমরান ৩/১৪৪)।
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র কসম! আবূ বকর (রাঃ)- এর পাঠ করার পূর্বে লোকেরা যেন জানত না যে, আল্লাহ তা'আলা এরূপ আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। এরপর সমস্ত সহাবী তাঁর থেকে উক্ত আয়াত শিখে নিলেন। তখন সবাইকে উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করতে শুনলাম। আমাকে সা'ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) জানিয়েছেন, 'উমার (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্র কসম! আমি যখন আবূ বকর (রাঃ)- কে উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করতে শুনলাম, তখন ভীত হয়ে পড়লাম এবং আমার পা দু'টি যেন আমার ভার নিতে পারছিল না, এমনকি আমি মাটিতে পড়ে গেলাম যখন শুনতে পেলাম যে, তিনি তিলাওয়াত করছেন যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তিকাল করেছেন। [১২৪২] (আ.প্র. ৪০৯৯ ই.ফা. ৪১০২)
ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র কসম! আবূ বকর (রাঃ)- এর পাঠ করার পূর্বে লোকেরা যেন জানত না যে, আল্লাহ তা'আলা এরূপ আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। এরপর সমস্ত সহাবী তাঁর থেকে উক্ত আয়াত শিখে নিলেন। তখন সবাইকে উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করতে শুনলাম। আমাকে সা'ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) জানিয়েছেন, 'উমার (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্র কসম! আমি যখন আবূ বকর (রাঃ)- কে উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করতে শুনলাম, তখন ভীত হয়ে পড়লাম এবং আমার পা দু'টি যেন আমার ভার নিতে পারছিল না, এমনকি আমি মাটিতে পড়ে গেলাম যখন শুনতে পেলাম যে, তিনি তিলাওয়াত করছেন যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তিকাল করেছেন। [১২৪২] (আ.প্র. ৪০৯৯ ই.ফা. ৪১০২)
৪৪৫৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ
شَيْبَةَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مُوْسَى بْنِ
أَبِيْ عَائِشَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ
عَائِشَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَبَّلَ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ مَوْتِهِ.
‘আয়িশাহ
ও ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
বকর (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর তাঁকে চুমু দেন।
[১২৪১, ১২৪২, ৫৭০৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪১০৩)
৪৪৫৬
حَدَّثَنِي عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ،
عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، وَابْنِ، عَبَّاسٍ أَنَّ أَبَا بَكْر ٍ ـ رضى الله
عنه ـ قَبَّلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ مَوْتِهِ.
‘আয়িশাহ
ও ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
বকর (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর তাঁকে চুমু দেন।
[১২৪১, ১২৪২, ৫৭০৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪১০৩)
৪৪৫৭
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ
بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ
مُوْسَى بْنِ أَبِيْ عَائِشَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ
عُتْبَةَ عَنْ عَائِشَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
قَبَّلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ مَوْتِهِ.
‘আয়িশাহ
ও ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
বকর (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর তাঁকে চুমু দেন।
[১২৪১, ১২৪২, ৫৭০৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪১০৩)
৪৪৫৮
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا
يَحْيَى وَزَادَ قَالَتْ عَائِشَةُ لَدَدْنَاهُ فِيْ مَرَضِهِ فَجَعَلَ يُشِيْرُ
إِلَيْنَا أَنْ لَا تَلُدُّوْنِيْ فَقُلْنَا كَرَاهِيَةُ الْمَرِيْضِ لِلدَّوَاءِ
فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ أَلَمْ أَنْهَكُمْ أَنْ تَلُدُّوْنِيْ قُلْنَا كَرَاهِيَةَ
الْمَرِيْضِ لِلدَّوَاءِ فَقَالَ لَا يَبْقَى أَحَدٌ فِي الْبَيْتِ إِلَّا لُدَّ
وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَّا الْعَبَّاسَ فَإِنَّهُ لَمْ يَشْهَدْكُمْ رَوَاهُ ابْنُ
أَبِي الزِّنَادِ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم .
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর রোগাক্রান্ত অবস্থায় তাঁর মুখে ঔষধ
ঢেলে দিলাম। তিনি ইশারায় আমাদেরকে তাঁর মুখে ঔষধ ঢালতে নিষেধ করলেন। আমরা বললাম,
এটা ঔষধের প্রতি রোগীদের স্বাভাবিক বিরক্তিবোধ। যখন তিনি সুস্থবোধ করলেন তখন তিনি
বললেন, আমি কি তোমাদের ওষুধ সেবন করাতে নিষেধ করিনি? আমরা বললাম, আমরা মনে
করেছিলাম এটা ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারণ বিরক্তিভাব। তখন তিনি বললেন, 'আব্বাস
ব্যতীত বাড়ির প্রত্যেকের মুখে ঔষধ ঢাল তা আমি দেখি। [৯৮] কেননা সে তোমাদের মাঝে
উপস্থিত নেই। এ হাদীস ইবনু আবূ যিনাদ …... 'আয়িশাহ (রাঃ) থেকে এবং তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। [৫৭১২, ৬৮৮৬, ৬৮৯৭; মুসলিম
৩৯/২৭, হাঃ ২২১৩, আহমাদ ২৪৩১৭] (আ.প্র. ৪১০১, ই.ফা. ৪১০৪)
[৯৮]
প্রথমতঃ এখানে অতি সামান্য ব্যাপারেও কিসাসের বৈধতা প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয়তঃ নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুস্থ ও অসুস্থ সর্বাবস্থাতেই তার নির্দেশ পালনের অপরিহার্যতা
সমভাবে প্রযোজ্য।
৪৪৫৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ
مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا أَزْهَرُ أَخْبَرَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنِ
الْأَسْوَدِ قَالَ ذُكِرَ عِنْدَ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
أَوْصَى إِلَى عَلِيٍّ فَقَالَتْ مَنْ قَالَهُ لَقَدْ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم وَإِنِّيْ لَمُسْنِدَتُهُ إِلَى صَدْرِيْ فَدَعَا بِالطَّسْتِ
فَانْخَنَثَ فَمَاتَ فَمَا شَعَرْتُ فَكَيْفَ أَوْصَى إِلَى عَلِيٍّ.
আসওয়াদ
(ইবনু ইয়াযীদ) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, 'আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে উল্লেখ করা হল যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) 'আলী (রাঃ)- কে ওসীয়াত করে গেছেন। তখন তিনি বললেন, এ কথা কে বলেছে? আমার
বুকের সঙ্গে হেলান দেয়া অবস্থায় আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
দেখেছি। তিনি একটি চিলিমচি চাইলেন, তাতে থুথু ফেললেন এবং ইন্তিকাল করলেন। অতএব
আমার বোধগম্য নয় তিনি কীভাবে 'আলী (রাঃ)- কে ওসীয়াত করলেন। [২৭৪১] (আ.প্র. ৪১০২,
ই.ফা. ৪১০৫)
৪৪৬০
أَبُوْ نُعَيْمٍ
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ عَنْ طَلْحَةَ قَالَ سَأَلْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ
أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَوْصَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ لَا فَقُلْتُ كَيْفَ كُتِبَ عَلَى النَّاسِ الْوَصِيَّةُ أَوْ أُمِرُوْا
بِهَا قَالَ أَوْصَى بِكِتَابِ اللهِ.
ত্বলহা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি 'আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)- কে জিজ্ঞেস করলাম নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি ওসীয়াত করে গেছেন? তিনি বললেন, না। তখন আমি বললাম, তাহলে
কেমন করে মানুষের জন্য ওসীয়াত লিপিবদ্ধ করা হল অথবা কীভাবে এর নির্দেশ দেয়া হল?
তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআন সম্পর্কে ওসীয়াত করে
গেছেন। [২৭৪০] (আ.প্র. ৪১০৩, ই.ফা. ৪১০৬)
৪৪৬১
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا
أَبُو الْأَحْوَصِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ قَالَ مَا
تَرَكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم دِيْنَارًا وَلَا دِرْهَمًا وَلَا
عَبْدًا وَلَا أَمَةً إِلَّا بَغْلَتَهُ الْبَيْضَاءَ الَّتِيْ كَانَ يَرْكَبُهَا
وَسِلَاحَهُ وَأَرْضًا جَعَلَهَا لِابْنِ السَّبِيْلِ صَدَقَةً
আম্র
ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন দীনার, দিরহাম, গোলাম ও
বাঁদি রেখে যাননি। কেবলমাত্র একটি সাদা খচ্চর যার উপর তিনি আরোহণ করতেন এবং তাঁর
যুদ্ধাস্ত্র আর একখণ্ড যমীন যা মুসাফিরদের জন্য ওয়াক্ফ করে গেছেন। [২৭৩৯] (আ.প্র.
৪১০৪, ই.ফা. ৪১০৭)
৪৪৬২
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ
حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ لَمَّا ثَقُلَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم جَعَلَ يَتَغَشَّاهُ فَقَالَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَام وَا
كَرْبَ أَبَاهُ فَقَالَ لَهَا لَيْسَ عَلَى أَبِيْكِ كَرْبٌ بَعْدَ الْيَوْمِ
فَلَمَّا مَاتَ قَالَتْ يَا أَبَتَاهُ أَجَابَ رَبًّا دَعَاهُ يَا أَبَتَاهْ مَنْ
جَنَّةُ الْفِرْدَوْسِ مَأْوَاهْ يَا أَبَتَاهْ إِلَى جِبْرِيْلَ نَنْعَاهْ
فَلَمَّا دُفِنَ قَالَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَام يَا أَنَسُ أَطَابَتْ
أَنْفُسُكُمْ أَنْ تَحْثُوْا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم التُّرَابَ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর রোগ প্রকটরূপ ধারণ করে তখন
তিনি বেঁহুশ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় ফাতেমাহ (রাঃ) বললেন, উহ্! আমার পিতার উপর কত
কষ্ট! তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, আজকের পরে তোমার
পিতার উপর আর কোন কষ্ট নেই। যখন তিনি ইন্তিকাল করলেন তখন ফাতেমাহ (রাঃ) বললেন,
হায়! আমার পিতা! রবের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। হায় আমার পিতা! জান্নাতুল ফিরদাউসে তাঁর
বাসস্থান। হায় পিতা! জিবরীল (আঃ)- কে তাঁর ইন্তিকালের খবর শুনাই। যখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সমাহিত করা হল, তখন ফাতিমাহ (রাঃ) বললেন,
হে আনাস! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাটি চাপা দিয়ে আসা
তোমরা কীভাবে বরদাশত করলে! (আ.প্র. ৪১০৫, ই.ফা. ৪১০৮)
৬৪/৮৫. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বশেষ কথা
৪৪৬৩
بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ قَالَ يُوْنُسُ قَالَ الزُّهْرِيُّ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ
بْنُ الْمُسَيَّبِ فِيْ رِجَالٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ
كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ وَهُوَ صَحِيْحٌ إِنَّهُ لَمْ
يُقْبَضْ نَبِيٌّ حَتَّى يَرَى مَقْعَدَهُ مِنَ الْجَنَّةِ ثُمَّ يُخَيَّرَ
فَلَمَّا نَزَلَ بِهِ وَرَأْسُهُ عَلَى فَخِذِيْ غُشِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ
فَأَشْخَصَ بَصَرَهُ إِلَى سَقْفِ الْبَيْتِ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ الرَّفِيْقَ
الْأَعْلَى فَقُلْتُ إِذًا لَا يَخْتَارُنَا وَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَدِيْثُ
الَّذِيْ كَانَ يُحَدِّثُنَا وَهُوَ صَحِيْحٌ قَالَتْ فَكَانَتْ آخِرَ كَلِمَةٍ
تَكَلَّمَ بِهَا اللهُمَّ الرَّفِيْقَ الْأَعْلَى.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুস্থ থাকাকালীন বলতেন, কোন নাবীর
ওফাত হয়নি যতক্ষণ না তাকে জান্নাতে তাঁর ঠিকানা দেখানো হয়। তারপর তাঁকে দুনিয়া বা
আখিরাত একটি বেছে নিতে বলা হয়। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোগ
বৃদ্ধি পেল তখন তাঁর মাথা আমার উরুর উপর ছিল এ সময় তিনি মূর্ছা যান। তারপর তাঁর
হুশ ফিরে এলে, ছাদের দিকে তিনি দৃষ্টি তোলেন। তারপর বলেন, হে আল্লাহ! আমাকে উচ্চে
সমাসীন বন্ধুর (সঙ্গে মিলিত করুন)। তখন আমি বললাম, তিনি আর আমাদের মাঝে থাকতে
চাচ্ছেন না। আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা হল ঐ কথা যা তিনি সুস্থাবস্থায় আমাদের কাছে
বর্ণনা করতেন। 'আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শেষ
কথা যা তিনি বলেছিলেন তা হল......- হে আল্লাহ! উচ্চে সমাসীন বন্ধুর (সঙ্গে মিলিত
করুন)। [৪৪৩৫] (আ.প্র. ৪১০৬, ই.ফা. ৪১০৯)
৬৪/৮৬.অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু
৪৪৬৪
أَبُوْ نُعَيْمٍ
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ وَابْنِ
عَبَّاسِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَبِثَ
بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِيْنَ يُنْزَلُ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ وَبِالْمَدِيْنَةِ
عَشْرًا
‘আয়িশাহ
ও ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নুযুলে কুরআনের দশ বছর [১] মক্কা্য় কাটান আর
মদিনা্তেও দশ বছর কাটান। [৩৮৫১, ৪৯৭৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১০৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪১১০)
[১] বলা হয়েছে নুবুওয়াতের
পর হতে মাক্কাহ্য় নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৩ বছর অবস্থান করলেও যে তিন
বছর ওয়াহী অবতরণ বন্ধ থাকে সে তিন বছরকে নুযূলে কুরআনের বছর হিসেবে ধরা হয়নি। তাই দশ
বছর বলা হয়েছে। (ফতহুল বারী)
৪৪৬৫
أَبُوْ نُعَيْمٍ
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ وَابْنِ
عَبَّاسِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَبِثَ
بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِيْنَ يُنْزَلُ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ وَبِالْمَدِيْنَةِ
عَشْرًا
‘আয়িশাহ
ও ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নুযুলে কুরআনের দশ বছর [১] মক্কা্য় কাটান আর
মদিনা্তেও দশ বছর কাটান। [৩৮৫১, ৪৯৭৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১০৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪১১০)
[১]
বলা হয়েছে নুবুওয়াতের পর হতে মাক্কাহ্য় নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৩ বছর
অবস্থান করলেও যে তিন বছর ওয়াহী অবতরণ বন্ধ থাকে সে তিন বছরকে নুযূলে কুরআনের বছর হিসেবে
ধরা হয়নি। তাই দশ বছর বলা হয়েছে। (ফতহুল বারী)
৪৪৬৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ
يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ
بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى
الله عليه وسلم تُوُفِّيَ وَهُوَ ابْنُ ثَلَاثٍ وَسِتِّيْنَ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ
وَأَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ مِثْلَهُ
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ওফাতকালে
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বয়স ছিল তেষট্টি বছর। ইবনু
শিহাব যুহরী (রহঃ) বলেন, আমাকে সা'ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব এ রকমই জানিয়েছেন। [৩৫৩৬]
(আ.প্র. ৪১০৮, ই.ফা. ৪১১১)
৬৪/৮৭. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৪৪৬৭
قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَدِرْعُهُ
مَرْهُوْنَةٌ عِنْدَ يَهُوْدِيٍّ بِثَلَاثِيْنَ.
আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তিকাল করেন এমন অবস্থায় যে, তাঁর
বর্ম ত্রিশ সা' যবের বিনিময়ে ইয়াহূদীর কাছে বন্ধক রাখা ছিল। [২০৬৮] (আ.প্র. ৪১০৯,
ই.ফা. ৪১১২)
৬৪/৮৮. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)- এর মৃত্যু- রোগের অবস্থায় উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)-কে যুদ্ধাভিযানে
প্রেরণ
৪৪৬৮
أَبُوْ عَاصِمٍ
الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ عَنِ الْفُضَيْلِ بْنِ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُوْسَى
بْنُ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيْهِ اسْتَعْمَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم أُسَامَةَ فَقَالُوْا فِيْهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَدْ
بَلَغَنِيْ أَنَّكُمْ قُلْتُمْ فِيْ أُسَامَةَ وَإِنَّهُ أَحَبُّ النَّاسِ إِلَيَّ
আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)- কে (একটি অভিযানে
'আমীর) নিযুক্ত করেন। [১০০] এটা নিয়ে সাহাবীগণ বলাবলি করেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি খবর পেয়েছি, তোমরা উসামাহ্র আমীর নিযুক্তি নিয়ে
বলাবলি করছ, অথচ সে হচ্ছে আমার নিকট সবার চেয়ে প্রিয়। [৩৭৩০] (আ.প্র. ৪১১০, ই.ফা.
৪১১৩)
[১০০]
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর পালক পুত্র যায়দ-এর পুত্র উসামাহকে
তিনি সিরিয়ার দিকে এক জিহাদে আমীর নিযুক্ত করেন। যে সেনাদলে আবূ বাক্র ও 'উমার (রাঃ)-এর
মত বড় বড় উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন সহাবীও ছিলেন ।
৪৪৬৯
إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا
مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ بَعْثًا
وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ فَطَعَنَ النَّاسُ فِيْ إِمَارَتِهِ
فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنْ تَطْعَنُوْا فِيْ
إِمَارَتِهِ فَقَدْ كُنْتُمْ تَطْعَنُوْنَ فِيْ إِمَارَةِ أَبِيْهِ مِنْ قَبْلُ
وَايْمُ اللهِ إِنْ كَانَ لَخَلِيْقًا لِلْإِمَارَةِ وَإِنْ كَانَ لَمِنْ أَحَبِّ
النَّاسِ إِلَيَّ وَإِنَّ هَذَا لَمِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ بَعْدَهُ.
আবদুল্লাহ
ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সেনাদল প্রেরণ করেন এবং উসামাহ ইবনু যায়দ
(রাঃ)-কে তাদের আমীর নিয়োগ করেন। তখন সাহাবীগণ তাঁর নেতৃত্বের সমালোচনা করতে
থাকেন। এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং বললেন,
তোমরা আজ তার নেতৃত্বের সমালোচনা করছ, এভাবে তোমরা তাঁর পিতা (যায়দ)- এর নেতৃত্বের
সমালোচনা করতে। আল্লাহ্র কসম! সে (যায়দ) ছিল নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ব্যক্তি এবং আর
সে আমার কাছে লোকদের মধ্যে প্রিয়তম ব্যক্তি। তার এ (উসামাহ) লোকদের মধ্যে আমার
কাছে প্রিয়তম ব্যক্তি। [৩৭৩০] (আ.প্র. ৪১১১, ই.ফা. ৪১১৪)
৬৪/৮৯. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৪৪৭০
أَصْبَغُ قَالَ
أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ الْحَارِثِ عَنْ ابْنِ
أَبِيْ حَبِيْبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ الصُّنَابِحِيِّ أَنَّهُ قَالَ لَهُ
مَتَى هَاجَرْتَ قَالَ خَرَجْنَا مِنَ الْيَمَنِ مُهَاجِرِيْنَ فَقَدِمْنَا
الْجُحْفَةَ فَأَقْبَلَ رَاكِبٌ فَقُلْتُ لَهُ الْخَبَرَ فَقَالَ دَفَنَّا
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مُنْذُ خَمْسٍ قُلْتُ هَلْ سَمِعْتَ فِيْ لَيْلَةِ
الْقَدْرِ شَيْئًا قَالَ نَعَمْ أَخْبَرَنِيْ بِلَالٌ مُؤَذِّنُ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم أَنَّهُ فِي السَّبْعِ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ
সুনাবিহী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, তাকে কেউ জিজ্ঞেস করেন, আপনি কখন হিজরাত করেছিলেন? তিনি বলেন, আমরা ইয়ামান
থেকে হিজরাতের নিয়্যাতে বের হয়ে জুহফাতে পৌছি। তখন একজন অশ্বারোহী পেয়ে জিজ্ঞেস
করলাম, খবর কী খবর কী? তিনি বললেন, পাঁচদিন পূর্বে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)- কে সমাহিত করেছি। তখন আমি তাঁকে বললাম, তুমি কি কাদারের রাত
সম্পর্কে কিছু শুনেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর মুয়ায্যিন বিলাল (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, তা হল রমাযানের শেষ দশকের
সপ্তম দিনে। (আ.প্র. ৪১১২, ই.ফা. ৪১১৫)
৬৪/৯০. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কতটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন?
৪৪৭১
عَبْدُ اللهِ بْنُ
رَجَاءٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَأَلْتُ زَيْدَ
بْنَ أَرْقَمَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ كَمْ غَزَوْتَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ سَبْعَ عَشْرَةَ قُلْتُ كَمْ غَزَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ تِسْعَ عَشْرَةَ
আবূ
ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কয়টি যুদ্ধে করেছেন? তিনি বলেন, সতেরটি। আমি বললাম,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়টি যুদ্ধ করেছেন? তিনি বললেন, ঊনিশটি।
[৩৯৪৯] (আ.প্র. ৪১১৩, ই.ফা. ৪১১৬)
৪৪৭২
عَبْدُ اللهِ بْنُ
رَجَاءٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ حَدَّثَنَا الْبَرَاءُ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَمْسَ
عَشْرَةَ.
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে পনেরটি যুদ্ধে অংশ
নিয়েছি। (আ.প্র. ৪১১৪, ই.ফা. ৪১১৭)
৪৪৭৩
أَحْمَدُ بْنُ الحَسَنِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَنْبَلِ بْنِ هِلَالٍ حَدَّثَنَا
مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ كَهْمَسٍ عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ
قَالَ غَزَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم سِتَّ عَشْرَةَ غَزْوَةً.
বুরাইদাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে ষোলটি
যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। [মুসলিম ৩২/৪৯, হাঃ ১৮১৪] (আ.প্র. ৪১১৫, ই.ফা. ৪১১৮)
No comments