সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৪৭৪ থেকে ৪৫৬০
সূরাতুল ফাতিহা (ফাতিহাতুল
কিতাব) প্রসঙ্গে
৬৫/১/২. অধ্যায়ঃ
৪৪৭৫
৬৫/২/১. অধ্যায়ঃ
৪৪৭৬
৬৫/২/২. অধ্যায়ঃ
৬৫/২/৩. অধ্যায়ঃ
৪৪৭৭
৬৫/২/৪. অধ্যায়ঃ
৪৪৭৮
৬৫/২/৫. অধ্যায়ঃ
৪৪৭৯
৬৫/২/৬. অধ্যায়ঃ
৪৪৮০
৬৫/২/৭. অধ্যায়ঃ
৪৪৮১
৬৫/২/৮. অধ্যায়ঃ
৪৪৮২
৬৫/২/৯. অধ্যায়ঃ
৪৪৮৩
৬৫/২/১০. অধ্যায়ঃ
৪৪৮৪
৬৫/২/১১. অধ্যায়ঃ
৪৪৮৫
৬৫/২/১২. অধ্যায়ঃ
৪৪৮৬
৬৫/২/১৩. অধ্যায়ঃ
৪৪৮৭
৬৫/২/১৪. অধ্যায়ঃ
৪৪৮৮
৬৫/২/১৫. অধ্যায়ঃ
৪৪৮৯
৬৫/২/১৬. অধ্যায়ঃ
৪৪৯০
৬৫/২/১৭. অধ্যায়ঃ
৪৪৯১
৬৫/৪/২৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৯৯
৬৫/২/১৮. অধ্যায়ঃ
৪৪৯২
৬৫/২/১৯. অধ্যায়ঃ
৪৪৯৩
৬৫/২/২০. অধ্যায়ঃ
৪৪৯৪
৬৫/২/২১. অধ্যায়ঃ
৪৪৯৫
৬৫/২/২১. অধ্যায়ঃ
৪৪৯৬
৬৫/২/২২. অধ্যায়ঃ
৪৪৯৭
৬৫/২/২৩. অধ্যায়ঃ
৪৪৯৮
৬৫/২/২৩. অধ্যায়ঃ
৪৪৯৯
৬৫/২/২৩. অধ্যায়ঃ
৪৫০০
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
৪৫০১
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
৪৫০৩
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
৪৫০৪
৬৫/২/২৫. অধ্যায়ঃ
৬৫/২/২৬. অধ্যায়ঃ
৪৫০৬
৪৫০৭
৬৫/২/২৭. অধ্যায়ঃ
৪৫০৮
৬৫/২/২৮. অধ্যায়ঃ
৪৫০৯
৬৫/২/২৮. অধ্যায়ঃ
৪৫১০
৬৫/২/২৯. অধ্যায়ঃ
৪৫১১
৬৫/২/৩০. অধ্যায়ঃ
৪৫১২
৬৫/২/৩১. অধ্যায়ঃ
৪৫১৩
৪৫১৪
৬৫/২/৩২. অধ্যায়ঃ
৪৫১৭
৬৫/২/৩৩. অধ্যায়ঃ
৪৫১৮
৬৫/২/৩৪. অধ্যায়ঃ
৪৫১৯
৬৫/২/৩৫. অধ্যায়ঃ
৪৫২০
৪৫২১
৬৫/২/৩৬. অধ্যায়ঃ
৪৫২২
৬৫/২/৩৭. অধ্যায়ঃ
৪৫২৩
৬৫/২/৩৮. অধ্যায়ঃ
৪৫২৪
৬৫/২/৩৮. অধ্যায়ঃ
৬৫/২/৩৯. অধ্যায়ঃ
৪৫২৬
৬৫/২/৩৯. অধ্যায়ঃ
৪৫২৭
৬৫/২/২৮. অধ্যায়ঃ
৪৫২৮
৬৫/২/৪০. অধ্যায়ঃ
৪৫২৯
৬৫/২/৪১. অধ্যায়ঃ
৪৫৩০
৬৫/২/৪১. অধ্যায়ঃ
৪৫৩১
৪৫৩২
৬৫/২/৪২. অধ্যায়ঃ
৪৫৩৩
৬৫/২/৪৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৩৪
৬৫/২/৪৪. অধ্যায়ঃ
৪৫৩৫
৬৫/২/৪৫. অধ্যায়ঃ
৪৫৩৬
৬৫/২/৪৬. অধ্যায়ঃ
৪৫৩৭
৬৫/২/৪৭. অধ্যায়ঃ
৪৫৩৮
৬৫/২/৪৮. অধ্যায়ঃ
৪৫৩৯
৬৫/২/৪৯. অধ্যায়ঃ
৪৫৪০
৬৫/২/৫০. অধ্যায়ঃ
৪৫৪১
৬৫/২/৫১. অধ্যায়ঃ
৪৫৪২
৬৫/২/৫২. অধ্যায়ঃ
৪৫৪৩
৬৫/২/৫৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৪৪
৬৫/২/৫৪. অধ্যায়ঃ
৪৫৪৫
৬৫/২/৫৫. অধ্যায়ঃ
৪৫৪৬
৬৫/৩/১. অধ্যায়ঃ
৪৫৪৭
৬৫/৩/২. অধ্যায়ঃ
৪৫৪৮
৬৫/৩/৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৫১
৪৫৫২
৬৫/৩/৪. অধ্যায়ঃ
৪৫৫৩
৬৫/৩/৫. অধ্যায়ঃ
৪৫৫৪
৪৫৫৫
৬৫/৩/৬. অধ্যায়ঃ
৪৫৫৬
৬৫/৩/৭. অধ্যায়ঃ
৪৫৫৭
৬৫/৩/৮. অধ্যায়ঃ
৪৫৫৮
৬৫/৩/৯. অধ্যায়ঃ
৪৫৫৯
৪৫৬০
{الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ} اسْمَانِ مِنْ الرَّحْمَةِ الرَّحِيْمُ وَالرَّاحِمُ بِمَعْنًى وَاحِدٍ كَالْعَلِيْمِ وَالْعَالِمِ.
‘‘রহমান ও রহীম’’ শব্দদ্বয় ‘রহমাত’ শব্দ থেকে নিষ্পন্ন এবং রহীম ও র-হিম দু’টো শব্দই একই অর্ধবোধক যেমন ‘আলীম ও আ-লিম।
সূরাহ (১) : ফাতিহা
وَسُمِّيَةْ أُمَّ الْكِةَابِ أَنَّهُ يُبْدَأُ بِكِةَابَةِهَا فِي الْمَصَاحِفِ وَيُبْدَأُ بِقِرَاءَةِهَا فِي الصَّلَاة.
وَ{الدِّيْنُ} الْجَزَاءُ فِي الْخَيْرِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {بِالدِّيْنِ} بِالْحِسَابِ {مَدِيْنِيْنَ} مُحَاسَبِيْنَ.
সূরাহ ফাতিহাকে উম্মুল কিতাব (কিতাবের মূল) হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে এজন্য যে, সূরাহ ফাতিহা লেখা দ্বারাই কুরআন গ্রন্থাকারে লেখা শুরু হয়েছে।
আর সূরাহ ফাতিহা পাঠের মাধ্যমে সালাতও আরম্ভ করা হয়। ‘‘দ্বীন’’ অর্থ -ভাল ও মন্দের প্রতিফল। যেমন বলা হয়ে থাকে وَالشَّرِّ كَمَا تَدِيْنُ تُدَانُ ‘‘যেমন কর্ম তেমন ফল’’। আর মুজাহিদ (রহ.) বলেন, بِالدِّيْنِ হিসাব-নিকাশ। مَدِيْنِيْنَ যার হিসাব নেয়া হবে।
৪৪৭৪‘‘রহমান ও রহীম’’ শব্দদ্বয় ‘রহমাত’ শব্দ থেকে নিষ্পন্ন এবং রহীম ও র-হিম দু’টো শব্দই একই অর্ধবোধক যেমন ‘আলীম ও আ-লিম।
সূরাহ (১) : ফাতিহা
وَسُمِّيَةْ أُمَّ الْكِةَابِ أَنَّهُ يُبْدَأُ بِكِةَابَةِهَا فِي الْمَصَاحِفِ وَيُبْدَأُ بِقِرَاءَةِهَا فِي الصَّلَاة.
وَ{الدِّيْنُ} الْجَزَاءُ فِي الْخَيْرِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {بِالدِّيْنِ} بِالْحِسَابِ {مَدِيْنِيْنَ} مُحَاسَبِيْنَ.
সূরাহ ফাতিহাকে উম্মুল কিতাব (কিতাবের মূল) হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে এজন্য যে, সূরাহ ফাতিহা লেখা দ্বারাই কুরআন গ্রন্থাকারে লেখা শুরু হয়েছে।
আর সূরাহ ফাতিহা পাঠের মাধ্যমে সালাতও আরম্ভ করা হয়। ‘‘দ্বীন’’ অর্থ -ভাল ও মন্দের প্রতিফল। যেমন বলা হয়ে থাকে وَالشَّرِّ كَمَا تَدِيْنُ تُدَانُ ‘‘যেমন কর্ম তেমন ফল’’। আর মুজাহিদ (রহ.) বলেন, بِالدِّيْنِ হিসাব-নিকাশ। مَدِيْنِيْنَ যার হিসাব নেয়া হবে।
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ قَالَ
حَدَّثَنِيْ خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ عَنْ
أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلَّى قَالَ كُنْتُ أُصَلِّيْ فِي الْمَسْجِدِ
فَدَعَانِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أُجِبْهُ فَقُلْتُ يَا
رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ كُنْتُ أُصَلِّيْ فَقَالَ أَلَمْ يَقُلْ اللهُ
{اسْتَجِيْبُوْا لِلهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ} ثُمَّ
قَالَ لِيْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ السُّوَرِ فِي الْقُرْآنِ
قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِيْ فَلَمَّا أَرَادَ
أَنْ يَخْرُجَ قُلْتُ لَهُ أَلَمْ تَقُلْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ
سُوْرَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَالَ {الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ}هِيَ
السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْآنُ الْعَظِيْمُ الَّذِيْ أُوْتِيْتُهُ
আবূ
সা‘ঈদ ইবনু মু‘আল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একদা মাসজিদে নাববীতে সলাত আদায় করছিলাম, এমন সময় রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডাকেন। কিন্তু ডাকে আমি সাড়া দেইনি। পরে
আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি সলাত আদায় করছিলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ কি
বলেননি যে, ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা সাড়া দেবে আল্লাহ্ ও রসূলের ডাকে, যখন তিনি
তোমাদেরকে ডাক দেন (সূরাহ আনফাল ৮/২৪)। তারপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি মাসজিদ থেকে
বের হওয়ার আগেই তোমাকে আমি কুরআনের এক অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিব। তারপর তিনি
আমার হাত ধরেন। এরপর যখন তিনি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করেন তখন আমি তাঁকে বললাম,
আপনি কি বলেননি যে আমাকে কুরআনের অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিবেন? তিনি বললেন, الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক, এটা বারবার পঠিত সাতটি
আয়াত এবং মহান কুরআন যা কেবল আমাকেই দেয়া হয়েছে। [৪৬৪৭, ৪৭০৩, ৫০০৬] (আ.প্র. ৪১১৬,
ই.ফা. ৪১১৯)
[১] সূরাতুল ফাতিহা জ্ঞান লাভের, হিদায়াত
গ্রহণের জন্য প্রতিটি মানুষের নিজের পরিবারের, দেশ, জাতি তথা সারা বিশ্ববাসীর জন্য
অতীব কল্যাণকর এক মহাসাগর। উক্ত কল্যাণের এই অথৈ পারাবার হতে স্বীয় আগ্রহে তাড়িত হয়ে
এক সার্বিক পথ নির্দেশনা গ্রহণ করার অবারিত ও উন্মুক্ত সুযোগ মানব জাতির জন্য উজ্জ্বল
ও ভাস্বর হয়ে আছে। যে কারণে উক্ত সূরাখানি মহাপবিত্র কুরআনের ভূমিকা হিসেবে কুরআনের
শুরুতেই সন্নিবেশ করা হয়েছে। সুতরাং এর গভীর ও তাত্ত্বিক আলোচনা করতে গিয়ে তাফসীরকারগণ
বলেছেনঃ মানবজাতির হিদায়াতের জন্য কেবল এই একটি মাত্র সূরাই যথেষ্ট, যদি সে নিরপেক্ষ
অনাবিল মন মানসিকতা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে। সুতরাং ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) সহ
অন্যান্য সহাবায়ি কিরাম (y) আলোচ্য সূরাটিকে আল্লাহ তা‘আলার শ্রেষ্ঠ দান ও অপূর্ব নি‘মাত
হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সূরা ফাতিহা দু’বার নাযিলকৃত সূরা বটে। প্রথমবার মাক্কাহ্য়
ওয়াহী নাযিলের প্রাথমিক অবস্থায় এবং দ্বিতীয়বার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
মদিনায় হিজরাতের পরবর্তী সময়ে নাযিল হয়। যথা সহীহ হাদীসভিত্তিক তাফসীরের গ্রন্থসমূহে
সনদ সহকারে উপরোক্ত বক্তব্যের সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন তাফসীরে ‘ফাতহুল ক্বাদীর’ ১ম
খন্ড, ১৩-১৪ পৃষ্ঠায় আছেঃ
وكان ذلك قبل الهجرة واخرج ابو بكر بن الانباري في المصاحف عن عبادة قال : فاتحة الكتاب نزلت المكة فهذا جملة ما استدل به من قال انها نزلت بمكة : واستدل من قال انها نزلت بالمدينة بما اخرجه ابن أبي شيبة في المصنف وأبو سعيد ابن الْأعرابي في معجمه والطبراني في الْأوسط من طرق مجاهد عن أبي هريرة رن ابليس حين انزلت فاتحة الكتاب وانزلت بالمدينت واخرج ابن أبي شيبت في المصنف وعبد بن حميد وابن المنذر وأبو نعيم في الحليت وغيرهم من طرق عن مجاهد قال : نزلت فاتحت الكتاب بالمدينت وقيل إنها نزلت مرتين مرت بمكت ومرت بالمدينت جمعًا بين هذه الروايات
প্রকাশ থাকে যে, ইমাম ইবনু কাসীর তাঁর বিখ্যাত তাফসীর ইবনু কাসীর ১ম খন্ড, ৮ম পৃষ্ঠায়ও সূরা ফাতিহা দু’বার নাযিল হওয়ার কথা সমর্থন করে ভিন্ন আসমাউর রিজাল সম্বলিত এক শক্তিশালী তথ্য উপস্থাপন করেছেনঃ
وهي مكية : قال ابن عباس (رض) وقتادة وأبو العالية وقيل مدنية قاله أبو هريرة (رض) ومجاهد وعطاء بن يسار والزهري ويقال نزلت مرتين : مرة بمكة ومرة بالمدينة والأول اشبه لقوله تعالى : وَلَقَدْ آتَيْنَكَ سَبْعًا مِنَ الْمَثَانِيْ والله تعالى اعلم منها
উল্লেখ্য, সূরায়ে ফাতিহা দু’ দু’বার নাযিল হওয়ার কারণে সূরাখানির গুরুত্ব, মহত্ব, আবশ্যকতা ও প্রয়োজনীয়তা অন্যান্য সূরা হতে এক স্বতন্ত্র মর্যাদা লাভ করেছে, যা খুব সহজেই অনুমেয় বটে। এতদ্ব্যতীত উক্ত সূরার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে স্বয়ং নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ سورة ما انزل في التوراة ولا في الانجيل ولا في الفرقان مثلها
অর্থাৎ এটা এমন একটি সূরা যা তাওরাত, ইঞ্জিল ও ফুরকানেও নাযিল করা হয়নি। অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কেই বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন উক্ত সূরাখানি প্রদান করা হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদীর ১ম খন্ড, ১৫ পৃষ্ঠা)
এখানে একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, উক্ত সূরাখানির স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্যের আর একটি দিক এই যে, আলোচ্য সূরাখানির গুরুত্ব মানব জীবনের সব দিকে এতই বেশী পরিব্যপ্ত যে, স্থান বিশেষ ব্যাখ্যায় সম্মানিত তাফসীরকারগণ আলোচ্য সূরাখানির প্রায় ৪২টি নাম দিয়েছেন। যে নামগুলো তাফসীর ইবনু কাসীর, ইবনু জারীর, রুহুল মায়ানী, তাফসীর কবীর, তাফসীর খাযিন, তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর, তাফসীরে কুরতুবী সহ নির্ভরযোগ্য তাফসীরাতের কিতাবসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে এতদ সমূদয় হতে মাত্র কয়েকটি নাম চয়ন করা হলো। যথাক্রমেঃ (১) سورة مفتاح القرآنকুরআনের কুঞ্জিকা, (২) سورة أم القرآن কুরআনের মা বা আসল, (৩) سورة الدعاء দু‘আর সূরা, (৪) سورة الشفاءরোগ মুক্তির সূরা, (৫) سورة الحمد প্রশংসার সূরা, (৬) أساس القرآن কুরআনের ভিত্তি, (৭) سورة الرحمة রাহমাতের সূরা, (৮) سورة البركة বারকাতের সূরা, (৯) سورة النعمة নি‘আমাতের সূরা, (১০) سورة العبادة ‘ইবাদাতের সূরা, (১১) سورة الهداية হিদায়াত প্রাপ্তির সূরা, (১২) سورة الإسةقامة দৃঢ়তার সূরা, (১৩) سورة الإسةعانة সাহায্য প্রার্থনার সূরা, (১৪) سورة الكافية অত্যধিক ও বিপুলতা দানকারী সূরা, (১৫) سورة الوافية পূর্ণত্ব প্রাপ্ত সূরা, (১৬) سورة الكنـز খণির সূরা (জ্ঞানের খনি, রাহমাত, বারাকাত, নি‘আমাত ও যাবতীয় সাফল্যের খণি বলে এ সূরাকে আখ্যায়িত করা হয়েছে), (১৭) سورة الشكر শুকর করার সূরা বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সূরা (১৮) سورة الصبر সবরের উৎসাহ দানকারী সূরা, (১৯) سورة التكرار বার বার পঠিতব্য সূরা, (২০) سورة التعلق مع الله আল্লাহর সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক স্থাপনের সূরা, (২১) سورة الصراط المستقيم সরল সঠিক পথ লাভের সূরা, (২২) سورة الربوبية প্রভুত্ব সনাক্ত করণের সূরা, (২৩) سورة الوحدانية আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদের প্রতি স্বীকৃতি প্রকাশের সূরা, (২৪) سورة الاجةناب الغضب والضلالة আল্লাহর গযব ও গোমরাহী হতে আত্মরক্ষা করার সূরা, (২৫) سورة الصلاة সলাতে একান্তই পঠিতব্য সূরা।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ নামকরণ সলাত আদায়ে একান্তই পঠিতব্য সূরা নামকরণ থেকেও মনে হয়, উক্ত সূরা পাঠ ব্যতীত সলাত পূর্ণ হয় না। ইমাম মুক্তাদী সকলের জন্যই উক্ত সূরা পাঠ করা ওয়াজিব বটে। এ বিষয়ে চার মাযহাবের নিকট গ্রহণযোগ্য তাফসীরের কিতাব ইবনু কাসীর ১ম খন্ড ১১ পৃষ্ঠার যা বিবৃত হয়েছে তা সত্যিই প্রণিধানযোগ্য।
هل ةجب قرأة الفاةحة على المأموم ؟ فيه ثلاثة أقوال للعلماء أحدها أنه ةجب عليه قرأةها كما ةجب على امامه لعموم الْأحاديث المةقدمة-
প্রকাশ থাকে যে, উলামায়ে কিরামদের ৩টি قول এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী (أرجح)সিদ্ধান্ত যা তা-ই প্রথম সিদ্ধান্ত বলে ইবনু কাসীর (রহ.) স্বীয় তাফসীরে উদ্ধৃত করেছেন। অতঃপর দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.)-এর থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। যেমন বলা হয়েছে,
والثاني لا تجب على المأموم قرأة بالكلية للفاتحة ولا غيرها ولا في صلاة الجهرية ولا في صلاة السرية لـما رواه الإمام أحمد بن حنبل (رح) في سنده عن جابر بن عبد الله عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال من كان له إمام فقرأة الإمام له قرأة ولكن في اسناده ضعيف ورواه مالك (رح) عن وهب ابن كسان عن جابر من كلامه وقد رواي هذا الحديث من طرق ولا يصح منها شيء عن النبي صلى الله عليه وسلم
অর্থাৎ দ্বিতীয় এই যে, সূরায়ে ফাতিহার পাঠ মুক্তাদীর উপর ওয়াজিব হবে না বা অন্য কিছু পাঠ করাও ওয়াজিব হবে না, তা জাহরী (প্রকাশ্য) ক্বিরাআতেই হোক, বা গোপন (سري) ক্বিরাআতেই হোক, যা আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.) স্বীয় কিতাব মুসনাদে আহমাদে রিওয়ায়াতে করেছেন জাবির বিন আবদুল্লাহ হতে, আর তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের ইক্তিদায় আছে, ইমামের ক্বিরাআতই তার ক্বিরাআত বলে গণ্য হবে। এখানে ইমাম ইবনু কাসীর (রহ.) বলেছেন, উক্ত রিওয়ায়াতের সনদ যঈফ। ইমাম মালিক (রহ.) উক্ত হাদীস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে উল্লেখ করেন যে, জাবির (রাঃ) উক্ত বাক্য দ্বারা নিজের মত পোষণ করেছেন, এ বাক্যটি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী বা নির্দেশ এ কথা মোটেই সহীহ নয়।
والثالث أنه ةجب القرأة على الـماموم في السرية لـما ةقدم ولايحب ذلك في الجهرية-
তৃতীয় মত এই যে, সিররী (চুপি চুপি) সলাতে ফাতিহা পড়া ওয়াজিব হবে, প্রকাশ্য সলাতে ওয়াজিব হবে না।
সূরায়ে ফাতিহার বিষয়ে নিম্নোক্ত হাদীসটি আমাদের যাবতীয় তর্কের মীগোশতা করে দিয়েছে যা আবূ দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযীর ক্বিরাআত অধ্যায়ে নির্ভরযোগ্য রিওয়ায়াতে দেখা যায় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ফাজ্রের সলাতের ক্বিরাআত আদায় করছেন, পেছনে সহাবায়ে কিরামদের অনেকেই রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহিত সমস্ত ক্বিরাআত পাঠ করছিলেন। অতঃপর সলাত শেষে রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ لا تفعلو إلَّا بأم القرأن فإنه لا صلاة لـمن لـم يقرأبها-
তোমরা সূরায়ে ফাতিহা ব্যতীত আর কোন সূরা পড়বে না। কেননা যে তা পড়ে না তার সলাত হয় না। এখানে ফাজরের ক্বিরাআত উচ্চ আওয়াজে পড়া হয়েছিল, এখানে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত পাওয়া গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহাবায়ে কিরাম, অতঃপর ইমাম হাসান বাসরী, ইমাম জুহরী, ইমাম আওজা‘ঈ, ইমাম ইবরাহীম নাখ‘ঈ, ইমাম মালিক, ইমাম আবদুল্লাহ বিন আল মুবারক, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী, ইমাম নাসায়ী, ইবনু হাজার আসক্বালানী, হাফিয আস সাখাবী, ইমাম শাফি‘ঈ (রহ.), ইমাম নাবাবী, ইমাম শওকানী, হাফিয ইবনু কাসীর, ইমাম গাযযালী, বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহিমাহুমুল্লাহ আজমা‘ঈন) প্রমুখাত মনীষী সহ হিজাজ, নজদ, ‘আসির, ইয়ামান, সিরিয়া, মিশর, মরক্কো, আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মাক্কাহ ও মাদীনাহর লক্ষ লক্ষ উলামায়ে কিরাম শতাব্দীর পর শতাব্দী এমন কি আজ পর্যন্ত ইমামের পিছনে সর্বাবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করে এসেছেন এবং বর্তমানেও পাঠ করে থাকেন, উপরে যেসব মনীষীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের বদৌলতেই রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসশাস্ত্র, পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে অদ্যাবধি টিকে আছে। তাঁদের প্রত্যেকেই ইমাম মুক্তাদী উভয়ের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ অত্যাবশ্যক বলে মনে করেন, তাই আমরাও অবশ্য পঠিতব্য বলে মনে করছি। ইমামের পিছনে ফাতিহা পাঠকারীদেরকে যদি গোমরাহ মনে করা হয়, তবে নাউযুবিল্লাহ, উল্লেখিত ইসলামের মহামনীষীদেরকেও তো এই দৃষ্টিতে তারা প্রকারান্তরে গোমরাহ বলেই মনে করছে। তাঁদের রিওয়ায়াতকে অমান্য করে, উক্ত রিওয়ায়াত পালনকারীদের বিভ্রান্ত ও গোমরাহ বলেই মনে করে কেবল উক্ত মনীষীদের নামের শেষে (রহ.) বলে ভক্তি জাহির করা কি স্ববিরোধিতা নয়? অন্য কারো ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা, ইজতিহাদ মানতে গিয়ে যেন রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এবং তাঁর রেখে যাওয়া সহীহ হাদীসকে অগ্রাহ্য করা না হয়, সে দিকে আমাদের সকলের যত্নবান হওয়া আবশ্যক।
وكان ذلك قبل الهجرة واخرج ابو بكر بن الانباري في المصاحف عن عبادة قال : فاتحة الكتاب نزلت المكة فهذا جملة ما استدل به من قال انها نزلت بمكة : واستدل من قال انها نزلت بالمدينة بما اخرجه ابن أبي شيبة في المصنف وأبو سعيد ابن الْأعرابي في معجمه والطبراني في الْأوسط من طرق مجاهد عن أبي هريرة رن ابليس حين انزلت فاتحة الكتاب وانزلت بالمدينت واخرج ابن أبي شيبت في المصنف وعبد بن حميد وابن المنذر وأبو نعيم في الحليت وغيرهم من طرق عن مجاهد قال : نزلت فاتحت الكتاب بالمدينت وقيل إنها نزلت مرتين مرت بمكت ومرت بالمدينت جمعًا بين هذه الروايات
প্রকাশ থাকে যে, ইমাম ইবনু কাসীর তাঁর বিখ্যাত তাফসীর ইবনু কাসীর ১ম খন্ড, ৮ম পৃষ্ঠায়ও সূরা ফাতিহা দু’বার নাযিল হওয়ার কথা সমর্থন করে ভিন্ন আসমাউর রিজাল সম্বলিত এক শক্তিশালী তথ্য উপস্থাপন করেছেনঃ
وهي مكية : قال ابن عباس (رض) وقتادة وأبو العالية وقيل مدنية قاله أبو هريرة (رض) ومجاهد وعطاء بن يسار والزهري ويقال نزلت مرتين : مرة بمكة ومرة بالمدينة والأول اشبه لقوله تعالى : وَلَقَدْ آتَيْنَكَ سَبْعًا مِنَ الْمَثَانِيْ والله تعالى اعلم منها
উল্লেখ্য, সূরায়ে ফাতিহা দু’ দু’বার নাযিল হওয়ার কারণে সূরাখানির গুরুত্ব, মহত্ব, আবশ্যকতা ও প্রয়োজনীয়তা অন্যান্য সূরা হতে এক স্বতন্ত্র মর্যাদা লাভ করেছে, যা খুব সহজেই অনুমেয় বটে। এতদ্ব্যতীত উক্ত সূরার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে স্বয়ং নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ سورة ما انزل في التوراة ولا في الانجيل ولا في الفرقان مثلها
অর্থাৎ এটা এমন একটি সূরা যা তাওরাত, ইঞ্জিল ও ফুরকানেও নাযিল করা হয়নি। অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কেই বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন উক্ত সূরাখানি প্রদান করা হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদীর ১ম খন্ড, ১৫ পৃষ্ঠা)
এখানে একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, উক্ত সূরাখানির স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্যের আর একটি দিক এই যে, আলোচ্য সূরাখানির গুরুত্ব মানব জীবনের সব দিকে এতই বেশী পরিব্যপ্ত যে, স্থান বিশেষ ব্যাখ্যায় সম্মানিত তাফসীরকারগণ আলোচ্য সূরাখানির প্রায় ৪২টি নাম দিয়েছেন। যে নামগুলো তাফসীর ইবনু কাসীর, ইবনু জারীর, রুহুল মায়ানী, তাফসীর কবীর, তাফসীর খাযিন, তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর, তাফসীরে কুরতুবী সহ নির্ভরযোগ্য তাফসীরাতের কিতাবসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে এতদ সমূদয় হতে মাত্র কয়েকটি নাম চয়ন করা হলো। যথাক্রমেঃ (১) سورة مفتاح القرآنকুরআনের কুঞ্জিকা, (২) سورة أم القرآن কুরআনের মা বা আসল, (৩) سورة الدعاء দু‘আর সূরা, (৪) سورة الشفاءরোগ মুক্তির সূরা, (৫) سورة الحمد প্রশংসার সূরা, (৬) أساس القرآن কুরআনের ভিত্তি, (৭) سورة الرحمة রাহমাতের সূরা, (৮) سورة البركة বারকাতের সূরা, (৯) سورة النعمة নি‘আমাতের সূরা, (১০) سورة العبادة ‘ইবাদাতের সূরা, (১১) سورة الهداية হিদায়াত প্রাপ্তির সূরা, (১২) سورة الإسةقامة দৃঢ়তার সূরা, (১৩) سورة الإسةعانة সাহায্য প্রার্থনার সূরা, (১৪) سورة الكافية অত্যধিক ও বিপুলতা দানকারী সূরা, (১৫) سورة الوافية পূর্ণত্ব প্রাপ্ত সূরা, (১৬) سورة الكنـز খণির সূরা (জ্ঞানের খনি, রাহমাত, বারাকাত, নি‘আমাত ও যাবতীয় সাফল্যের খণি বলে এ সূরাকে আখ্যায়িত করা হয়েছে), (১৭) سورة الشكر শুকর করার সূরা বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সূরা (১৮) سورة الصبر সবরের উৎসাহ দানকারী সূরা, (১৯) سورة التكرار বার বার পঠিতব্য সূরা, (২০) سورة التعلق مع الله আল্লাহর সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক স্থাপনের সূরা, (২১) سورة الصراط المستقيم সরল সঠিক পথ লাভের সূরা, (২২) سورة الربوبية প্রভুত্ব সনাক্ত করণের সূরা, (২৩) سورة الوحدانية আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদের প্রতি স্বীকৃতি প্রকাশের সূরা, (২৪) سورة الاجةناب الغضب والضلالة আল্লাহর গযব ও গোমরাহী হতে আত্মরক্ষা করার সূরা, (২৫) سورة الصلاة সলাতে একান্তই পঠিতব্য সূরা।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ নামকরণ সলাত আদায়ে একান্তই পঠিতব্য সূরা নামকরণ থেকেও মনে হয়, উক্ত সূরা পাঠ ব্যতীত সলাত পূর্ণ হয় না। ইমাম মুক্তাদী সকলের জন্যই উক্ত সূরা পাঠ করা ওয়াজিব বটে। এ বিষয়ে চার মাযহাবের নিকট গ্রহণযোগ্য তাফসীরের কিতাব ইবনু কাসীর ১ম খন্ড ১১ পৃষ্ঠার যা বিবৃত হয়েছে তা সত্যিই প্রণিধানযোগ্য।
هل ةجب قرأة الفاةحة على المأموم ؟ فيه ثلاثة أقوال للعلماء أحدها أنه ةجب عليه قرأةها كما ةجب على امامه لعموم الْأحاديث المةقدمة-
প্রকাশ থাকে যে, উলামায়ে কিরামদের ৩টি قول এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী (أرجح)সিদ্ধান্ত যা তা-ই প্রথম সিদ্ধান্ত বলে ইবনু কাসীর (রহ.) স্বীয় তাফসীরে উদ্ধৃত করেছেন। অতঃপর দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.)-এর থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। যেমন বলা হয়েছে,
والثاني لا تجب على المأموم قرأة بالكلية للفاتحة ولا غيرها ولا في صلاة الجهرية ولا في صلاة السرية لـما رواه الإمام أحمد بن حنبل (رح) في سنده عن جابر بن عبد الله عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال من كان له إمام فقرأة الإمام له قرأة ولكن في اسناده ضعيف ورواه مالك (رح) عن وهب ابن كسان عن جابر من كلامه وقد رواي هذا الحديث من طرق ولا يصح منها شيء عن النبي صلى الله عليه وسلم
অর্থাৎ দ্বিতীয় এই যে, সূরায়ে ফাতিহার পাঠ মুক্তাদীর উপর ওয়াজিব হবে না বা অন্য কিছু পাঠ করাও ওয়াজিব হবে না, তা জাহরী (প্রকাশ্য) ক্বিরাআতেই হোক, বা গোপন (سري) ক্বিরাআতেই হোক, যা আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.) স্বীয় কিতাব মুসনাদে আহমাদে রিওয়ায়াতে করেছেন জাবির বিন আবদুল্লাহ হতে, আর তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের ইক্তিদায় আছে, ইমামের ক্বিরাআতই তার ক্বিরাআত বলে গণ্য হবে। এখানে ইমাম ইবনু কাসীর (রহ.) বলেছেন, উক্ত রিওয়ায়াতের সনদ যঈফ। ইমাম মালিক (রহ.) উক্ত হাদীস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে উল্লেখ করেন যে, জাবির (রাঃ) উক্ত বাক্য দ্বারা নিজের মত পোষণ করেছেন, এ বাক্যটি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী বা নির্দেশ এ কথা মোটেই সহীহ নয়।
والثالث أنه ةجب القرأة على الـماموم في السرية لـما ةقدم ولايحب ذلك في الجهرية-
তৃতীয় মত এই যে, সিররী (চুপি চুপি) সলাতে ফাতিহা পড়া ওয়াজিব হবে, প্রকাশ্য সলাতে ওয়াজিব হবে না।
সূরায়ে ফাতিহার বিষয়ে নিম্নোক্ত হাদীসটি আমাদের যাবতীয় তর্কের মীগোশতা করে দিয়েছে যা আবূ দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযীর ক্বিরাআত অধ্যায়ে নির্ভরযোগ্য রিওয়ায়াতে দেখা যায় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ফাজ্রের সলাতের ক্বিরাআত আদায় করছেন, পেছনে সহাবায়ে কিরামদের অনেকেই রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহিত সমস্ত ক্বিরাআত পাঠ করছিলেন। অতঃপর সলাত শেষে রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ لا تفعلو إلَّا بأم القرأن فإنه لا صلاة لـمن لـم يقرأبها-
তোমরা সূরায়ে ফাতিহা ব্যতীত আর কোন সূরা পড়বে না। কেননা যে তা পড়ে না তার সলাত হয় না। এখানে ফাজরের ক্বিরাআত উচ্চ আওয়াজে পড়া হয়েছিল, এখানে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত পাওয়া গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহাবায়ে কিরাম, অতঃপর ইমাম হাসান বাসরী, ইমাম জুহরী, ইমাম আওজা‘ঈ, ইমাম ইবরাহীম নাখ‘ঈ, ইমাম মালিক, ইমাম আবদুল্লাহ বিন আল মুবারক, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী, ইমাম নাসায়ী, ইবনু হাজার আসক্বালানী, হাফিয আস সাখাবী, ইমাম শাফি‘ঈ (রহ.), ইমাম নাবাবী, ইমাম শওকানী, হাফিয ইবনু কাসীর, ইমাম গাযযালী, বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহিমাহুমুল্লাহ আজমা‘ঈন) প্রমুখাত মনীষী সহ হিজাজ, নজদ, ‘আসির, ইয়ামান, সিরিয়া, মিশর, মরক্কো, আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মাক্কাহ ও মাদীনাহর লক্ষ লক্ষ উলামায়ে কিরাম শতাব্দীর পর শতাব্দী এমন কি আজ পর্যন্ত ইমামের পিছনে সর্বাবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করে এসেছেন এবং বর্তমানেও পাঠ করে থাকেন, উপরে যেসব মনীষীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের বদৌলতেই রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসশাস্ত্র, পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে অদ্যাবধি টিকে আছে। তাঁদের প্রত্যেকেই ইমাম মুক্তাদী উভয়ের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ অত্যাবশ্যক বলে মনে করেন, তাই আমরাও অবশ্য পঠিতব্য বলে মনে করছি। ইমামের পিছনে ফাতিহা পাঠকারীদেরকে যদি গোমরাহ মনে করা হয়, তবে নাউযুবিল্লাহ, উল্লেখিত ইসলামের মহামনীষীদেরকেও তো এই দৃষ্টিতে তারা প্রকারান্তরে গোমরাহ বলেই মনে করছে। তাঁদের রিওয়ায়াতকে অমান্য করে, উক্ত রিওয়ায়াত পালনকারীদের বিভ্রান্ত ও গোমরাহ বলেই মনে করে কেবল উক্ত মনীষীদের নামের শেষে (রহ.) বলে ভক্তি জাহির করা কি স্ববিরোধিতা নয়? অন্য কারো ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা, ইজতিহাদ মানতে গিয়ে যেন রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এবং তাঁর রেখে যাওয়া সহীহ হাদীসকে অগ্রাহ্য করা না হয়, সে দিকে আমাদের সকলের যত্নবান হওয়া আবশ্যক।
৬৫/১/২. অধ্যায়ঃ
যারা ক্রোধে পতিত নয়।
৪৪৭৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ
سُمَيٍّ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ
رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا قَالَ الإِمَامُ {غَيْرِ
الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ} فَقُوْلُوْا آمِيْنَ فَمَنْ
وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন ইমাম বলবে غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ
তখন তোমরা বলবে آمِينَ আল্লাহ আপনি কবূল করুন। যার পড়া মালায়িকাদের
পড়ার সময় হবে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [৭৮২] (আ.প্র. ৪১১৭, ই.ফা.
৪১২০)
[১] সলাতের ভেতরে, সলাতের বাইরে যে
কোন অবস্থায় সূরা ফাতিহা শেষ করে آمِيْنَ বলতে হবে। নাবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তদীয় সহাবায়ে কিরাম (রাঃ) وَلَا الضَّالِّيْنَ বলার পরে آمِيْنَ বলতেন। ফাতিহা চুপে
চুপে পড়লে আ-মীনও চুপে চুপে বলতেন। আর উক্ত সূরাটি যখন তাঁরা জোরে জোরে ও সশব্দে পাঠ
করতেন, তখন আ-মীনও সশব্দে পাঠ করতেন, তা সলাত আদায়কালীন সময় হোক, কি সলাতের বাইরে।
উক্ত পদ্ধতি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে পরবর্তী কালের তাবিঈনদের যুগ
পর্যন্ত প্রচলিত ছিল। পরবর্তীকালে ইসলামের ফিক্বহ শাস্ত্রবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি
হওয়ার কারণে তাদের একদল সলাত আদায়কালে সশব্দে আ-মীন বলাকে অপছন্দ করতেন এবং অপর জামা‘আত
উচ্চ আওয়াজে আ-মীন বলাকেই সহীহ হাদীসের সঠিক অনুশীলন বলে মনে করে থাকেন। এখন পর্যালোচনা
করে দেখা দরকার যে, উপরোক্ত দু’টি নিয়মের কোনটি সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে বেশী গ্রহণযোগ্য।
যেহেতু ‘কিতাবুত তাফসীর’ অধ্যায় আলোচনা করা যাচ্ছে বিধায় চার মাযহাবের নিকট বেশী গ্রহণযোগ্য
তাফসীরের কিতাব ইবনু কাসীরের উদ্ধৃতি দেয়া যেতে পারে। তাফসীরে ইবনু কাসীর ১ম খন্ড,
২৭ পৃষ্ঠায় আছে-
والدليل على استحباب التأمين ما رواه الإمام أحمد وأبو داود والترمذي عن وائل بن حجر قال: سمعت النبي صلى الله عليه وسلم قرأ "غير المغضوب عليهم ولا الضالين" فقال "آمين" مد بها صوته ولأبي داود رفع بها صوته وقال الترمذي هذا حديث حسن ورُوي عن علي وابن مسعود وغيرهم. وعن أبي هريرة قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا تلا "غير المغضوب عليهم ولا الضالين" قال "آمين" حتى يسمع من يليه من الصف الْأول رواه أبو داود وابن ماجه وزاد فيه: فيرتج بها المسجد. والدارقطني وقال: هذا إسناد حسن.
অর্থাৎ সূরায়ে ফাতিহার শেষে উচ্চ আওয়াজে আ-মীন বলা মুস্তাহাব- এ কথার দলীল এই যে, এ বিষয়ে মহামতি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল, আবূ দাউদ, তিরমিযী (রহ.) ওয়ায়িল বিন হুজর থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট শুনেছি, যখন তিনি غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّيْنَ পর্যন্ত পাঠ করলেন, তখন বললেন, আ-মীন ও স্বীয় আওয়াজকে বাড়িয়ে দিলেন (সশব্দে) এবং ইমাম আবূ দাউদ (রহ.) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় আওয়াজকে উচ্চ করেই আ-মীন বলেছিলেন। ইমাম তিরমিযী (রহ.) বলেন, উক্ত হাদীসটি হাসান বটে। অতঃপর একই বিষয়ে একই রকম বর্ণনা করেছেন ইবনু মাস‘ঊদ ও ‘আলী (রাঃ) এবং আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّيْنَ বলতেন, তখন আ-মীন বলতেন, যা এক কাতার পেছন থেকে শোনা যেত। আবূ দাউদ, ইবনু মাজাহ একটু বাড়িয়ে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তদীয় সহাবায়ে কিরামদের আ-মীন বলার কারণে মাসজিদ কেঁপে উঠত। দারাকুতনী বলেন, এ হাদীসের সনদও হাসান পর্যায়েভুক্ত বটে। উল্লেখ্য, উক্ত সহীহুল বুখারীর ১ম খন্ডে ‘কিতাবুস সলাত’-এর মধ্যে ইমাম বুখারী (রহ.) সহীহ সনদের উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেনঃ إذا أمن الإمام فأمنوا
ইমাম যখন আ-মীন বলবে, তোমরা তখন আ-মীন বল। ইমাম যদি চুপে চুপে আ-মীন বলে তাহলে মুক্তাদীরা কীভাবে আ-মীন বলবে? সুতরাং فأمنوا শব্দটিকে ব্যাখ্যা করলেই দেখা যাচ্ছে যে, আ-মীন সশব্দেই বলতে হবে। অন্যথায় ইমাম যখন বলবে তখন মুক্তাদীদের আ-মীন বলা সম্ভব হবে না। বিস্তারিত জানার জন্য বুখারীর ১ম খন্ডের সলাত অধ্যায়ের টীকাটি পড়ে দেখুন। সহীহ হাদীস অনুযায়ী সলাত আদায় করলে মানুষ যদি গোমরাহ-বিভ্রান্ত হয়, তাহলে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্য লোকদের মনগড়া ব্যাখ্যা মত ‘আমাল করলে হিদায়াত পাওয়া কী করে সম্ভব?
والدليل على استحباب التأمين ما رواه الإمام أحمد وأبو داود والترمذي عن وائل بن حجر قال: سمعت النبي صلى الله عليه وسلم قرأ "غير المغضوب عليهم ولا الضالين" فقال "آمين" مد بها صوته ولأبي داود رفع بها صوته وقال الترمذي هذا حديث حسن ورُوي عن علي وابن مسعود وغيرهم. وعن أبي هريرة قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا تلا "غير المغضوب عليهم ولا الضالين" قال "آمين" حتى يسمع من يليه من الصف الْأول رواه أبو داود وابن ماجه وزاد فيه: فيرتج بها المسجد. والدارقطني وقال: هذا إسناد حسن.
অর্থাৎ সূরায়ে ফাতিহার শেষে উচ্চ আওয়াজে আ-মীন বলা মুস্তাহাব- এ কথার দলীল এই যে, এ বিষয়ে মহামতি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল, আবূ দাউদ, তিরমিযী (রহ.) ওয়ায়িল বিন হুজর থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট শুনেছি, যখন তিনি غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّيْنَ পর্যন্ত পাঠ করলেন, তখন বললেন, আ-মীন ও স্বীয় আওয়াজকে বাড়িয়ে দিলেন (সশব্দে) এবং ইমাম আবূ দাউদ (রহ.) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় আওয়াজকে উচ্চ করেই আ-মীন বলেছিলেন। ইমাম তিরমিযী (রহ.) বলেন, উক্ত হাদীসটি হাসান বটে। অতঃপর একই বিষয়ে একই রকম বর্ণনা করেছেন ইবনু মাস‘ঊদ ও ‘আলী (রাঃ) এবং আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّيْنَ বলতেন, তখন আ-মীন বলতেন, যা এক কাতার পেছন থেকে শোনা যেত। আবূ দাউদ, ইবনু মাজাহ একটু বাড়িয়ে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তদীয় সহাবায়ে কিরামদের আ-মীন বলার কারণে মাসজিদ কেঁপে উঠত। দারাকুতনী বলেন, এ হাদীসের সনদও হাসান পর্যায়েভুক্ত বটে। উল্লেখ্য, উক্ত সহীহুল বুখারীর ১ম খন্ডে ‘কিতাবুস সলাত’-এর মধ্যে ইমাম বুখারী (রহ.) সহীহ সনদের উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেনঃ إذا أمن الإمام فأمنوا
ইমাম যখন আ-মীন বলবে, তোমরা তখন আ-মীন বল। ইমাম যদি চুপে চুপে আ-মীন বলে তাহলে মুক্তাদীরা কীভাবে আ-মীন বলবে? সুতরাং فأمنوا শব্দটিকে ব্যাখ্যা করলেই দেখা যাচ্ছে যে, আ-মীন সশব্দেই বলতে হবে। অন্যথায় ইমাম যখন বলবে তখন মুক্তাদীদের আ-মীন বলা সম্ভব হবে না। বিস্তারিত জানার জন্য বুখারীর ১ম খন্ডের সলাত অধ্যায়ের টীকাটি পড়ে দেখুন। সহীহ হাদীস অনুযায়ী সলাত আদায় করলে মানুষ যদি গোমরাহ-বিভ্রান্ত হয়, তাহলে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্য লোকদের মনগড়া ব্যাখ্যা মত ‘আমাল করলে হিদায়াত পাওয়া কী করে সম্ভব?
৬৫/২/১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘আর
তিনি শিখালেন আদমকে সব কিছুর নাম। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৩১)
৪৪৭৬
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا
قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح
و قَالَ لِيْ خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ
عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ يَجْتَمِعُ الْمُؤْمِنُوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُوْلُوْنَ لَوْ
اسْتَشْفَعْنَا إِلَى رَبِّنَا فَيَأْتُوْنَ آدَمَ فَيَقُوْلُوْنَ أَنْتَ أَبُو
النَّاسِ خَلَقَكَ اللهُ بِيَدِهِ وَأَسْجَدَ لَكَ مَلَائِكَتَهُ وَعَلَّمَكَ
أَسْمَاءَ كُلِّ شَيْءٍ فَاشْفَعْ لَنَا عِنْدَ رَبِّكَ حَتَّى يُرِيْحَنَا مِنْ
مَكَانِنَا هَذَا فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ ذَنْبَهُ فَيَسْتَحِي
ائْتُوْا نُوْحًا فَإِنَّهُ أَوَّلُ رَسُوْلٍ بَعَثَهُ اللهُ إِلَى أَهْلِ
الْأَرْضِ فَيَأْتُوْنَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ سُؤَالَهُ
رَبَّهُ مَا لَيْسَ لَهُ بِهِ عِلْمٌ فَيَسْتَحِيْ فَيَقُوْلُ ائْتُوْا خَلِيْلَ
الرَّحْمَنِ فَيَأْتُوْنَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ ائْتُوْا مُوْسَى عَبْدًا
كَلَّمَهُ اللهُ وَأَعْطَاهُ التَّوْرَاةَ فَيَأْتُوْنَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ
هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ قَتْلَ النَّفْسِ بِغَيْرِ نَفْسٍ فَيَسْتَحِيْ مِنْ رَبِّهِ
فَيَقُوْلُ ائْتُوْا عِيْسَى عَبْدَ اللهِ وَرَسُوْلَهُ وَكَلِمَةَ اللهِ
وَرُوْحَهُ فَيَقُوْلُ لَسْتُ هُنَاكُمْ ائْتُوْا مُحَمَّدًا عَبْدًا غَفَرَ اللهُ
لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ فَيَأْتُوْنِيْ فَأَنْطَلِقُ
حَتَّى أَسْتَأْذِنَ عَلَى رَبِّيْ فَيُؤْذَنَ لِيْ فَإِذَا رَأَيْتُ رَبِّيْ
وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِيْ مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ يُقَالُ ارْفَعْ رَأْسَكَ
وَسَلْ تُعْطَهْ وَقُلْ يُسْمَعْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَرْفَعُ رَأْسِيْ
فَأَحْمَدُهُ بِتَحْمِيْدٍ يُعَلِّمُنِيْهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِيْ حَدًّا
فَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُوْدُ إِلَيْهِ فَإِذَا رَأَيْتُ رَبِّيْ
مِثْلَهُ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِيْ حَدًّا فَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ ثُمَّ
أَعُوْدُ الرَّابِعَةَ فَأَقُوْلُ مَا بَقِيَ فِي النَّارِ إِلَّا مَنْ حَبَسَهُ
الْقُرْآنُ وَوَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُوْدُ
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ إِلَّا مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ يَعْنِيْ قَوْلَ اللهِ تَعَالَى {خَالِدِيْنَ فِيْهَا}
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ إِلَّا مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ يَعْنِيْ قَوْلَ اللهِ تَعَالَى {خَالِدِيْنَ فِيْهَا}
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ক্বিয়ামাতের দিন মু’মিনগণ একত্রিত হবে এবং তারা বলবে, আমরা যদি আমাদের রবের
কাছে আমাদের জন্য একজন সুপারিশকারী পেতাম। এরপর তারা আদম (‘আ.)-এর কাছে আসবে এবং
তাঁকে বলবে, আপনি মানব জাতির পিতা। আপনাকে আল্লাহ তা‘আলা নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন।
তাঁর মালায়িকাহ দ্বারা আপনাকে সাজদাহ্ করিয়েছেন এবং যাবতীয় বস্তুর নাম আপনাকে
শিক্ষা দিয়েছেন। অতএব আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন, যেন আমাদের
কঠিন স্থান থেকে আরাম দিতে পারেন। তিনি বলবেন, আমি এ কাজের যোগ্য নই। তিনি নিজ
ভুলের কথা স্মরণ করে লজ্জাবোধ করবেন। (তিনি বলবেন) তোমরা নূহ (‘আ.)-এর কাছে যাও।
তিনিই প্রথম রসূল (‘আ.) যাকে আল্লাহ জগৎবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন। তখন তারা তাঁর কাছে
আসবে। তিনিও বলবেন, এ কাজ আমার দ্বারা হওয়ার নয়। তিনি তাঁর রবের কাছে প্রশ্ন
করেছিলেন এমন বিষয়ে যা তাঁর জানা ছিল না। সে কথা স্মরণ করে তিনি লজ্জাবোধ করবেন
এবং বলবেন বরং তোমরা আল্লাহ্র খলীল (ইব্রাহীম) (‘আ.)-এর কাছে যাও। তারা তখন তাঁর
কাছে আসবে, তখন তিনি বলবেন, এ কাজ আমার দ্বারা হওয়ার নয়। তোমরা মূসা (‘আ.)-এর কাছে
যাও। তিনি এমন বান্দা যে, তাঁর সঙ্গে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং তাঁকে তাওরাত গ্রন্থ
দান করেছেন। তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনি বলবেন, তোমাদের এ কাজের জন্য আমার সাহস
হচ্ছে না এবং তিনি এক কিবতীকে বিনা দোষে হত্যা করার কথা স্মরণ করে তাঁর রবের নিকট
লজ্জাবোধ করবেন। তিনি বলবেন, তোমরা ঈসা (‘আ.)-এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহ্র বান্দা
ও রসূল এবং আল্লাহ্র বাণী ও রূহ্। (তারা সেখানে যাবে) তিনি বলবেন, এ কাজ আমার
দ্বারা হওয়ার নয়। তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে যাও।
তিনি এমন এক বান্দা যার পূর্ব ও পরের ভুলত্র“টি আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তখন
তারা আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে যাব এবং অনুমতি চাব, আমাকে অনুমতি
প্রদান করা হবে। আর আমি যখন আমার রবকে দেখব, তখন আমি সাজদাহ্য় লুটিয়ে পড়ব। আল্লাহ
যতক্ষণ চান এ অবস্থায় আমাকে রাখবেন। তারপর বলা হবে, আপনার মাথা উঠান এবং চান দেয়া
হবে, বলুন শোনা হবে, সুপারিশ করুন কবূল করা হবে। তখন আমি আমার মাথা উঠাব এবং আমাকে
যে প্রশংসাসূচক বাক্য শিক্ষা দিবেন তা দ্বারা আমি তাঁর প্রশংসা করব। তারপর সুপারিশ
করব। আমাকে একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। (সেই সীমিত সংখ্যায়) আমি তাদের
জান্নাতে প্রবেশ করাব। আমি পুনরায় রবের সমীপে ফিরে আসব। যখন আমি আমার রবকে দেখব
তখন আগের মত সবকিছু করব। তারপর আমি সুপারিশ করব। আর আমাকে একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট
করে দেয়া হবে। তদনুসারে আমি তাদের জান্নাতে দাখিল করাব। (তারপর তৃতীয়বার) আমি আবার
রবের দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরূপ করব। এরপর আমি চতুর্থবার ফিরে আসব এবং আরয করব এখন
তারাই কেবল জাহান্নামে অবশিষ্ট রয়ে গেছে যারা কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী অনেক আছে
যাদের উপর জাহান্নামে চিরবাস অবধারিত হয়ে গেছে।
আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহ.) বলেন, কুরআনের যে ঘোষণায় তারা জাহান্নামে আবদ্ধ রয়েছে তা হল মহান আল্লাহ্র বাণী ঃ “তারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।” [৪৪; মুসলিম ১/৮৪, হাঃ ১৯৩, আহমাদ ১২১৫৩] (আ.প্র. ৪১১৮, ই.ফা. ৪১২১)
আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহ.) বলেন, কুরআনের যে ঘোষণায় তারা জাহান্নামে আবদ্ধ রয়েছে তা হল মহান আল্লাহ্র বাণী ঃ “তারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।” [৪৪; মুসলিম ১/৮৪, হাঃ ১৯৩, আহমাদ ১২১৫৩] (আ.প্র. ৪১১৮, ই.ফা. ৪১২১)
৬৫/২/২. অধ্যায়ঃ
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, إِلَى شَيَاطِيْنِهِمْ-তাদের
সঙ্গী-সাথী মুনাফিক ও মুশরিক। مُحِيْطٌ بِالْكَافِرِيْنَ -আল্লাহ কাফিরদের
পরিবেষ্টন করে আছেন- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯)। অর্থাৎ আল্লাহ তাদের একত্রকারী। صِبْغَةَ
অর্থাৎ দ্বীন। عَلَى الْخَاشِعِيْنَ-প্রকৃত
মু’মিনদের নিকট। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, بِقُوَّةٍ-তাতে যা আছে তা ‘আমাল করে।
আবুল আলিয়া (রহ.) বলেন, مَرَضٌ-সন্দেহ। وَمَا خَلْفَهَا
-পরবর্তীদের জন্য নাসীহাত। لَا شِيَةَ -দাগ বিহীন। অন্যরা বলেন, يَسُوْمُوْنَكُمْ-তারা
তোমাদের কষ্ট দিত- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৪৯)। الْوَلَايَةُ-আল ওয়াও মাফতুহ্ অবস্থায় الْوَلَاء-আল-ওয়ালা
এর ধাতু। অর্থাৎ প্রভুত্ব, আর যখন ‘ওয়াও’-কে যের দেয়া হবে, তখন অর্থ দাঁড়াবে
নেতৃত্ব। কেউ কেউ বলেন, যে সমস্ত বীজ খাওয়া হয় তাকে ফুম فُوْمٌ
বলে। ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, فَبَاءُوْا তারা (আল্লাহর গযবের দিকে) ফিরে গেল। يَسْتَفْتِحُوْنَ
তারা সাহায্য চাইতো। شَرَوْا-তারা বিক্রি করল। رَاعِنَا
নির্গত হয়েছে الرُّعُوْنَةِ
মাসদার থেকে। যখন তারা লোককে বোকা বানাতে চাইত তখন বলত, রায়িনা رَاعِنَا। لَا يَجْزِيْ
-অর্থাৎ কোন কাজে আসবে না। خُطُوَاتِ নির্গত হয়েছে الْخَطْوِ
মাসদার হতে যার অর্থ পদচিহ্ন। ابْتَلَى -পরীক্ষা করলেন।
৬৫/২/৩. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ অতএব,
তোমরা জেনে-বুঝে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করো না। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২২)
৪৪৭৭
عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ
مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُرَحْبِيْلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ
قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الذَّنْبِ أَعْظَمُ عِنْدَ
اللهِ قَالَ أَنْ تَجْعَلَ لِلهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ قُلْتُ إِنَّ ذَلِكَ
لَعَظِيْمٌ قُلْتُ ثُمَّ أَيُّ قَالَ وَأَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ تَخَافُ أَنْ
يَطْعَمَ مَعَكَ قُلْتُ ثُمَّ أَيُّ قَالَ أَنْ تُزَانِيَ حَلِيْلَةَ جَارِكَ.
‘আবদুল্লাহ
(ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, কোন্ গুনাহ
আল্লাহ্র কাছে সবচেয়ে বড়? তিনি বললেন, আল্লাহ্র জন্য অংশীদার দাঁড় করান। অথচ
তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, এতো সত্যিই বড় গুনাহ। আমি বললাম, তারপর
কোন্ গুনাহ? তিনি উত্তর দিলেন, তুমি তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করবে যে, সে
তোমার সঙ্গে আহার করবে। আমি আরয করলাম, এরপর কোনটি? তিনি উত্তর দিলেন, তোমার
প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে তোমার ব্যভিচার করা। [৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০,
৭৫৩২; মুসলিম ১/৩৭, হাঃ ৮৬০] (আ.প্র. ৪১১৯, ই.ফা. ৪১২২)
৬৫/২/৪. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{وَظَلَّلْنَا عَلَيْكُمْ الْغَمَامَ وَأَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ الْمَنَّ وَالسَّلْوٰى كُلُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَمَا ظَلَمُوْنَا وَلٰكِنْ كَانُوْآ أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُوْنَ}
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْمَنُّ}صَمْغَةٌ {وَالسَّلْوَى} الطَّيْرُ.
‘‘আর আমি মেঘমালা দিয়ে তোমাদের উপর ছায়া দান করেছি এবং তোমাদের জন্য খাবার পাঠিয়েছি মান্না ও সালওয়া। তোমরা খাও সেসব পবিত্র বস্তু যা আমি তোমাদের দান করেছি। তারা আমার প্রতি কোন জুলুম করেনি, বরং তারা নিজেদের উপরই জুলুম করেছিল।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৫৭)
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, মান্ন শিশির জাতীয় সুস্বাদু খাদ্য (যা পাথর ও গাছের উপর অবতীর্ণ হত পরে জমে গিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো হত) আর সাল্ওয়া-পাখি।
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْمَنُّ}صَمْغَةٌ {وَالسَّلْوَى} الطَّيْرُ.
‘‘আর আমি মেঘমালা দিয়ে তোমাদের উপর ছায়া দান করেছি এবং তোমাদের জন্য খাবার পাঠিয়েছি মান্না ও সালওয়া। তোমরা খাও সেসব পবিত্র বস্তু যা আমি তোমাদের দান করেছি। তারা আমার প্রতি কোন জুলুম করেনি, বরং তারা নিজেদের উপরই জুলুম করেছিল।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৫৭)
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, মান্ন শিশির জাতীয় সুস্বাদু খাদ্য (যা পাথর ও গাছের উপর অবতীর্ণ হত পরে জমে গিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো হত) আর সাল্ওয়া-পাখি।
৪৪৭৮
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ
الْمَلِكِ عَنْ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ
وَمَاؤُهَا شِفَاءٌ لِلْعَيْنِ
সা‘ঈদ
ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ...... আল কামাআত
(ব্যাঙের ছাতা) মান্ন জাতীয়। আর তার পানি চোখের রোগের প্রতিষেধক। [৪৬৩৯, ৫৭০৮;
মুসলিম ৩৬/২৮, হাঃ ২০৪৯, আহমাদ ১৬২৫] (আ.প্র. ৪১২০, ই.ফা. ৪১২৩)
৬৫/২/৫. অধ্যায়ঃ
{وَإِذْ قُلْنَا ادْخُلُوْا هٰذِهِ الْقَرْيَةَ فَكُلُوْا مِنْهَا حَيْثُ شِئْتُمْ رَغَدًا وَادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَّقُوْلُوْا حِطَّةٌ نَّغْفِرْ لَكُمْ خَطَايَاكُمْ وَسَنَزِيْدُ الْمُحْسِنِيْنَ} رَغَدًا وَاسِعٌ كَثِيْرٌ.
‘‘স্মরণ করুন, যখন আমি বললাম, এই জনপদে প্রবেশ কর, যেখানে ইচ্ছা স্বাচ্ছন্দে খাও, অবনত মস্তকে প্রবেশ কর দ্বার দিয়ে এবং বল حِطَّةٌ-‘ক্ষমা চাই’। আমি তোমাদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করব এবং সৎকর্মশীলদের প্রতি আমার দান বৃদ্ধি করব’’- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৫৮)। رَغَدًا প্রভূত স্বাচ্ছন্দ্য।
‘‘স্মরণ করুন, যখন আমি বললাম, এই জনপদে প্রবেশ কর, যেখানে ইচ্ছা স্বাচ্ছন্দে খাও, অবনত মস্তকে প্রবেশ কর দ্বার দিয়ে এবং বল حِطَّةٌ-‘ক্ষমা চাই’। আমি তোমাদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করব এবং সৎকর্মশীলদের প্রতি আমার দান বৃদ্ধি করব’’- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৫৮)। رَغَدًا প্রভূত স্বাচ্ছন্দ্য।
৪৪৭৯
مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ
عَنْ ابْنِ الْمُبَارَكِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ عَنْ أَبِيْ
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قِيْلَ
لِبَنِيْ إِسْرَائِيْلَ {ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَقُوْلُوْا حِطَّةٌ}
فَدَخَلُوْا يَزْحَفُوْنَ عَلَى أَسْتَاهِهِمْ فَبَدَّلُوْا وَقَالُوْا حِطَّةٌ حَبَّةٌ
فِيْ شَعَرَةٍ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, বানী ইসরাঈলকে বলা হয়েছিল যে, তোমরা
সাজদাহ্ অবস্থায় নগর দ্বারে প্রবেশ কর এবং বল حِطَّةٌ (ক্ষমা চাই) কিন্তু তারা
প্রবেশ করল নিতম্ব হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে এবং শব্দকে পরিবর্তন করে তদস্থলে বলল, গম ও
যবের দানা। [৩৪০৩] (আ.প্র. ৪১২১, ই.ফা. ৪১২৪)
৬৫/২/৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيْلَ} وَقَالَ عِكْرِمَةُ جَبْرَ وَمِيْكَ وَسَرَافِ عَبْدٌ إِيْلْ اللهُ.
‘‘যারা জিবরীলের শত্রুতা করবে।’’ ‘ইকরিমাহ (রহ.) বলেন, জবর, মীক, সরাফ অর্থ ‘আবদ-বান্দা, ঈল-আল্লাহ্। (অর্থ হল ‘আবদুল্লাহ-আল্লাহর বান্দা) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১২১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪১২৪)
‘‘যারা জিবরীলের শত্রুতা করবে।’’ ‘ইকরিমাহ (রহ.) বলেন, জবর, মীক, সরাফ অর্থ ‘আবদ-বান্দা, ঈল-আল্লাহ্। (অর্থ হল ‘আবদুল্লাহ-আল্লাহর বান্দা) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১২১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪১২৪)
৪৪৮০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيْرٍ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ
بْنَ بَكْرٍ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ قَالَ سَمِعَ عَبْدُ اللهِ بْنُ
سَلَامٍ بِقُدُوْمِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ فِيْ أَرْضٍ
يَخْتَرِفُ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّيْ سَائِلُكَ عَنْ
ثَلَاثٍ لَا يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا نَبِيٌّ فَمَا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ
وَمَا أَوَّلُ طَعَامِ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَمَا يَنْزِعُ الْوَلَدُ إِلَى أَبِيْهِ
أَوْ إِلَى أُمِّهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ بِهِنَّ جِبْرِيْلُ آنِفًا قَالَ
جِبْرِيْلُ قَالَ نَعَمْ قَالَ ذَاكَ عَدُوُّ الْيَهُوْدِ مِنَ الْمَلَائِكَةِ
فَقَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ {مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيْلَ فَإِنَّه” نَزَّلَه”
عَلٰى قَلْبِكَ} بِإِذْنِ اللهِ أَمَّا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ فَنَارٌ
تَحْشُرُ النَّاسَ مِنَ الْمَشْرِقِ إِلَى الْمَغْرِبِ وَأَمَّا أَوَّلُ طَعَامٍ
يَأْكُلُهُ أَهْلُ الْجَنَّةِ فَزِيَادَةُ كَبِدِ حُوْتٍ وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ
الرَّجُلِ مَاءَ الْمَرْأَةِ نَزَعَ الْوَلَدَ وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الْمَرْأَةِ
نَزَعَتْ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّكَ
رَسُوْلُ اللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الْيَهُوْدَ قَوْمٌ بُهُتٌ وَإِنَّهُمْ
إِنْ يَعْلَمُوْا بِإِسْلَامِيْ قَبْلَ أَنْ تَسْأَلَهُمْ يَبْهَتُوْنِيْ
فَجَاءَتْ الْيَهُوْدُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ رَجُلٍ عَبْدُ
اللهِ فِيْكُمْ قَالُوْا خَيْرُنَا وَابْنُ خَيْرِنَا وَسَيِّدُنَا وَابْنُ
سَيِّدِنَا قَالَ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَسْلَمَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ
فَقَالُوْا أَعَاذَهُ اللهُ مِنْ ذَلِكَ فَخَرَجَ عَبْدُ اللهِ فَقَالَ أَشْهَدُ
أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ فَقَالُوْا
شَرُّنَا وَابْنُ شَرِّنَا وَانْتَقَصُوْهُ قَالَ فَهَذَا الَّذِيْ كُنْتُ أَخَافُ
يَا رَسُوْلَ اللهِ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ
ইবনু সালাম (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর শুভাগমনের খবর
পেলেন। তখন তিনি (‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম) বাগানে ফল সংগ্রহ করছিলেন। তিনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে বললেন, আমি আপনাকে তিনটি বিষয়ে
জিজ্ঞেস করব যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ব্যতীত অন্য কেউ জানেন না।
তা হল ক্বিয়ামাতের প্রথম আলামাত কী? জান্নাতীদের প্রথম খাদ্য কী হবে? এবং সন্তান
কখন পিতার মত হয় আর কখন মাতার মত হয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, আমাকে জিব্রীল (‘আ.) এখনই এসব ব্যাপারে জানিয়ে গেলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু
সালাম বললেন, জিবরীল? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলল, হ্যাঁ। ইবনু
সালাম বললেন, সে তো মালায়িকাদের মধ্যে ইয়াহূদীদের শত্রু। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই আয়াত পাঠ করলেন, আপনি বলে দিনঃ যে কেউ জিবরাঈলের শত্র“ এ
কারণে যে, সে আল্লাহ্র নির্দেশে আপনার অন্তরে কুরআন অবতীর্ণ করেছে (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/৯৭)। ক্বিয়ামাতের প্রথম আলামাত হল, এক রকম আগুন মানুষদেরকে পূর্ব
থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত একত্রিত করবে। আর জান্নাতীরা প্রথমে যা খাবেন তা হল
মাছের কলিজার টুকরা। আর যখন পুরুষের বীর্য স্ত্রীর উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন
সন্তান পিতার আকৃতি পায় এবং যখন স্ত্রীর বীর্য পুরুষের উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন
সন্তান মাতার আকৃতি পায়। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য
দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি অবশ্যই
আল্লাহ্র রসূল। হে আল্লাহ্র রসূল! ইয়াহূদরা চরম মিথ্যারোপকারী। যদি তারা আপনার
প্রশ্ন করার পূর্বেই আমার ইসলাম গ্রহণের সংবাদ জেনে যায় তবে তারা আমার প্রতি অপবাদ
আরোপ করবে। ইতোমধ্যে ইয়াহূদীরা এসে গেল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ইয়াহূদীদের জিজ্ঞেস করলেন, আবদুল্লাহ তোমাদের মধ্যে কেমন লোক? তারা
উত্তর দিল, তিনি আমাদের মধ্যে উত্তম এবং আমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির পুত্র।
তিনি আমাদের নেতা এবং আমাদের নেতার ছেলে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, যদি ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম ইসলাম গ্রহণ করেন, তাহলে তোমাদের অভিমত কী? তারা
বলল, আল্লাহ তাকে এর থেকে রক্ষা করুন। তখন [‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ)] বের হয়ে
এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অবশ্যই আল্লাহ্র প্রেরিত রসূল। তখন তারা বলল,
সে আমাদের মধ্যে মন্দ ব্যক্তি ও মন্দ ব্যক্তির ছেলে। তারপর তারা ইবনু সালাম
(রাঃ)-কে দোষী সাব্যস্ত করে সমালোচনা করতে লাগল। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ)
বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! এটাই আমি আশঙ্কা
করছিলাম। [৩৩২৯] (আ.প্র. ৪১২২, ই.ফা. ৪১২৫)
৬৫/২/৭. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি কোন
আয়াত রহিত করলে কিংবা ভুলিয়ে দিলে। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১০৬)
৪৪৮১
عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا
سُفْيَانُ عَنْ حَبِيْبٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ
قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَقْرَؤُنَا أُبَيٌّ وَأَقْضَانَا عَلِيٌّ
وَإِنَّا لَنَدَعُ مِنْ قَوْلِ أُبَيٍّ وَذَاكَ أَنَّ أُبَيًّا يَقُوْلُ لَا
أَدَعُ شَيْئًا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ قَالَ
اللهُ تَعَالَى {مَا نَنْسَخْ مِنْ اٰيَةٍ أَوْ نُنْسِهَا}
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেন, উবাই (রাঃ) আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম ক্বারী, আর ‘আলী (রাঃ)
আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বিচারক। কিন্তু আমরা উবাই (রাঃ)-এর কিছু কথা বাদ দেই। কারণ
উবাই (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে যা
শুনেছি তার কিছুই ছাড়ব না। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি যে আয়াত রহিত করি অথবা
ভুলিয়ে দেই ........ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১০৬)। [৫০০৫] (আ.প্র. ৪১২৩, ই.ফা. ৪১২৬)
৬৫/২/৮. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তারা
বলেঃ ‘আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।’ তিনি অতি পবিত্র। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১১৬)
৪৪৮২
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ أَبِيْ حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ اللهُ
كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ وَشَتَمَنِيْ وَلَمْ يَكُنْ
لَهُ ذَلِكَ فَأَمَّا تَكْذِيْبُهُ إِيَّايَ فَزَعَمَ أَنِّيْ لَا أَقْدِرُ أَنْ
أُعِيْدَهُ كَمَا كَانَ وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ فَقَوْلُهُ لِيْ وَلَدٌ
فَسُبْحَانِيْ أَنْ أَتَّخِذَ صَاحِبَةً أَوْ وَلَدًا
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আদম সন্তান আমার
ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলে। অথচ তার এ কাজ ঠিক নয়। আমাকে গালি দিয়েছে অথচ তার জন্য
এটা ঠিক নয়। তার আমার প্রতি মিথ্যারোপ হল, সে বলে যে, আমি তাকে (মৃত্যুর) পূর্বের
মত পুনরায় জীবিত করতে সক্ষম নই। আর আমাকে তার গালি দেয়া হলতার এ কথা যে, আমার
সন্তান আছে অথচ আমি স্ত্রী ও সন্তান গ্রহণ থেকে পবিত্র। (আ.প্র. ৪১২৩, ই.ফা. ৪১১৭)
৬৫/২/৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা
ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সলাতের জায়গারূপে গ্রহণ কর। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১২৫)
{مَثَابَةً} يَثُوْبُوْنَ يَرْجِعُوْنَ.
مَثَابَةً-ফিরে আসার স্থান। يَثُوْبُوْنَ লোকজন প্রত্যাবর্তন করে।
مَثَابَةً-ফিরে আসার স্থান। يَثُوْبُوْنَ লোকজন প্রত্যাবর্তন করে।
৪৪৮৩
مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ
أَنَسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ وَافَقْتُ اللهَ فِيْ ثَلَاثٍ أَوْ وَافَقَنِيْ رَبِّيْ
فِيْ ثَلَاثٍ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَوْ اتَّخَذْتَ مَقَامَ إِبْرَاهِيْمَ
مُصَلًّى وَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ يَدْخُلُ عَلَيْكَ الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ
فَلَوْ أَمَرْتَ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ بِالْحِجَابِ فَأَنْزَلَ اللهُ آيَةَ
الْحِجَابِ قَالَ وَبَلَغَنِيْ مُعَاتَبَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْضَ
نِسَائِهِ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِنَّ قُلْتُ إِنْ انْتَهَيْتُنَّ أَوْ لَيُبَدِّلَنَّ
اللهُ رَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم خَيْرًا مِنْكُنَّ حَتَّى أَتَيْتُ إِحْدَى
نِسَائِهِ قَالَتْ يَا عُمَرُ أَمَا فِيْ رَسُوْلِ اللهِ مَا يَعِظُ نِسَاءَهُ
حَتَّى تَعِظَهُنَّ أَنْتَ فَأَنْزَلَ اللهُ : {عَسٰى رَبُّه” إِنْ طَلَّقَكُنَّ
أَنْ يُّبَدِّلَه” أَزْوَاجًا خَيْرًا مِّنْكُنَّ مُسْلِمٰتٍ}
وَقَالَ ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوْبَ حَدَّثَنِيْ حُمَيْدٌ سَمِعْتُ أَنَسًا عَنْ عُمَرَ
وَقَالَ ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوْبَ حَدَّثَنِيْ حُمَيْدٌ سَمِعْتُ أَنَسًا عَنْ عُمَرَ
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, তিনটি বিষয়ে আমার মতামত আল্লাহ্র ওয়াহীর অনুরূপ হয়েছে
অথবা (তিনি বলেছেন) তিনটি বিষয়ে আমার মতামতের অনুকূলে আল্লাহ ওয়াহী অবতীর্ণ
করেছেন। তা হল, আমি বলেছিলাম হে আল্লাহ্র রসূল! যদি আপনি মাকামে ইব্রাহীমকে
সলাতের স্থান হিসাবে গ্রহণ করতেন। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন .......
তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সলাতের জায়গারূপে গ্রহণ কর (সূরাহ আল-বাকারাহ
২/১২৫)। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার কাছে ভাল ও মন্দ উভয় প্রকারের লোক
আসে। কাজেই আপনি যদি উম্মাহাতুল মু’মিনীনদেরকে পর্দা করার আদেশ করবেন। তখন আল্লাহ
তা‘আলা পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করেন। তিনি আরো বলেন, আমি জানতে পেরেছিলাম যে, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কতক স্ত্রীর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তখন
আমি তাদের কাছে উপস্থিত হই এবং বলি যে, আপনারা এর থেকে বিরত থাকুন নচেৎ আল্লাহ
তা‘আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে আপনাদের পরিবর্তে উত্তম
স্ত্রী দান করবেন। এরপর আমি তাঁর কোন স্ত্রীর কাছে আসি, তখন তিনি বললেন, হে ‘উমার!
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারেও নাক
গলাতে শুরু করেছ। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্ত্রীগণকে নাসীহাত করে
থাকেন আর এখন তুমি তাদের নাসীহাত করতে আরম্ভ করেছ? তখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন
ঃ عَسَى رَبُّهُ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُبَدِّلَهُ أَزْوَاجًا خَيْرًا مِنْكُنَّ مُسْلِمَاتٍ
“যদি নাবী তোমাদের সবাইকে তালাক দেন, তবে তাঁর রব অচিরেই তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের
চেয়ে উত্তম স্ত্রী তাঁকে দিবেন, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, অনুগত, তাওবাহকারিণী,
‘ইবাদাতকারিণী, সিয়াম পালনকারী, অকুমারী ও কুমারী” (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৫)।
ইবনু আবী মারইয়াম (রহ.) বলেন, আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ‘উমার (রাঃ) আমার কাছে এরূপ বলেছেন। [৪০২] (আ.প্র. ৪১২৫, ই.ফা. ৪১২৮)
ইবনু আবী মারইয়াম (রহ.) বলেন, আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ‘উমার (রাঃ) আমার কাছে এরূপ বলেছেন। [৪০২] (আ.প্র. ৪১২৫, ই.ফা. ৪১২৮)
৬৫/২/১০. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَاهِيْمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمَاعِيْلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ}
{الْقَوَاعِدُ} : أَسَاسُهُ وَاحِدَتُهَا، قَاعِدَةٌ، وَالْقَوَاعِدُ مِنْ النِّسَاءِ وَاحِدُهَا : قَاعِدٌ.
‘‘স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা‘বাঘরের ভিত নির্মাণ করছিল তখন তারা দু‘আ করেছিলঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের এ প্রয়াস ক্ববূল কর, নিশ্চয় তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১২৭)
الْقَوَاعِدُ ভিত্তি, একবচনে কায়িদাতু قَاعِدَةٌ। আল কাওয়ায়িদ মহিলাদের সম্পর্কে বলা হলে এর অর্থ বৃদ্ধা নারী, তখন এর একবচন قَاعِدٌ হবে।
{الْقَوَاعِدُ} : أَسَاسُهُ وَاحِدَتُهَا، قَاعِدَةٌ، وَالْقَوَاعِدُ مِنْ النِّسَاءِ وَاحِدُهَا : قَاعِدٌ.
‘‘স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা‘বাঘরের ভিত নির্মাণ করছিল তখন তারা দু‘আ করেছিলঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের এ প্রয়াস ক্ববূল কর, নিশ্চয় তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১২৭)
الْقَوَاعِدُ ভিত্তি, একবচনে কায়িদাতু قَاعِدَةٌ। আল কাওয়ায়িদ মহিলাদের সম্পর্কে বলা হলে এর অর্থ বৃদ্ধা নারী, তখন এর একবচন قَاعِدٌ হবে।
৪৪৮৪
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ مُحَمَّدِ بْنِ
أَبِيْ بَكْرٍ أَخْبَرَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ أَلَمْ تَرَيْ أَنْ قَوْمَكِ بَنَوْا الْكَعْبَةَ وَاقْتَصَرُوْا عَنْ
قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا تَرُدُّهَا عَلَى
قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ لَوْلَا حِدْثَانُ قَوْمِكِ بِالْكُفْرِ فَقَالَ
عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ لَئِنْ كَانَتْ عَائِشَةُ سَمِعَتْ هَذَا مِنْ رَسُوْلِ
اللهِ مَا أُرَى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَرَكَ اسْتِلَامَ
الرُّكْنَيْنِ اللَّذَيْنِ يَلِيَانِ الْحِجْرَ إِلَّا أَنَّ الْبَيْتَ لَمْ
يُتَمَّمْ عَلَى قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيْمَ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমার কি জানা নেই যে, তোমার সম্প্রদায়
কুরাইশ কা‘বা তৈরী করেছে এবং ইবরাহীম (‘আ.)-এর ভিত্তির থেকে ছোট নির্মাণ করেছে?
[‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন] আমি তখন বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কি ইবরাহীম (‘আ.)-এর
ভিত্তির উপর কা‘বাকে আবার নির্মাণ করবেন না? তিনি বললেন, যদি তোমার গোত্রের কুফরীর
যুগ নিকট অতীতে না হত। এ কথা শুনে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, যদি ‘আয়িশাহ
(রাঃ) এ কথা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে শুনে থাকেন, তবে
আমার মনে হয় যে এ কারণেই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাজরে
আসওয়াদ সংলগ্ন দু’ রুকনকে চুম্বন করতেন না, বর্জন করেছেন, যেহেতু বাইতুল্লাহ্র
নির্মাণ কাজ ইবরাহীম (‘আ.)-এর ভিতের উপর সম্পূর্ণ করা হয়নি। [১২৬] (আ.প্র. ৪১২৬,
ই.ফা. ৪১২৯)
৬৫/২/১১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা
বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি। (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/১৩৬)
৪৪৮৫
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ عَنْ
أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ أَهْلُ
الْكِتَابِ يَقْرَءُوْنَ التَّوْرَاةَ بِالْعِبْرَانِيَّةِ وَيُفَسِّرُوْنَهَا
بِالْعَرَبِيَّةِ لِأَهْلِ الإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
لَا تُصَدِّقُوْا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوْهُمْ وَقُوْلُوْا {اٰٰمَنَّا
بِاللهِ وَمَآ أُنْزِلَ إِلَيْنَا}
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আহলে কিতাব (ইয়াহূদী) ইবরানী ভাষায় তাওরাত পাঠ করে মুসলিমদের কাছে তা আরবী
ভাষায় ব্যাখ্যা করত। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,
তোমরা আহলে কিতাবকে বিশ্বাসও কর না আর অবিশ্বাসও কর না এবং (আল্লাহ্র বাণী)
“তোমরা বল, আমরা আল্লাহ্তে ঈমান এনেছি এবং যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে . . . .”
(সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৩৬)। [৭৩৬২, ৭৫৪২] (আ.প্র. ৪১২৭, ই.ফা. ৪১৩০)
৬৫/২/১২. অধ্যায়ঃ
{سَيَقُوْلُ السُّفَهَآءُ مِنَ النَّاسِ مَا وَلَّاهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمْ الَّتِيْ كَانُوْا عَلَيْهَا قُلْ لِّـلّٰهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ إِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ}
‘‘অচিরেই নির্বোধ লোকেরা বলবেঃ কিসে ফিরিয়ে দিল তাদের সে কিবলা থেকে, যে কিবলা তারা এ যাবৎ অনুসরণ করে আসছিল? আপনি বলুনঃ পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪২)
‘‘অচিরেই নির্বোধ লোকেরা বলবেঃ কিসে ফিরিয়ে দিল তাদের সে কিবলা থেকে, যে কিবলা তারা এ যাবৎ অনুসরণ করে আসছিল? আপনি বলুনঃ পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪২)
৪৪৮৬
أَبُوْ نُعَيْمٍ سَمِعَ زُهَيْرًا عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ
عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
صَلَّى إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ سِتَّةَ عَشَرَ شَهْرًا أَوْ سَبْعَةَ عَشَرَ
شَهْرًا وَكَانَ يُعْجِبُهُ أَنْ تَكُوْنَ قِبْلَتُهُ قِبَلَ الْبَيْتِ وَأَنَّهُ
صَلَّى أَوْ صَلَّاهَا صَلَاةَ الْعَصْرِ وَصَلَّى مَعَهُ قَوْمٌ فَخَرَجَ رَجُلٌ
مِمَّنْ كَانَ صَلَّى مَعَهُ فَمَرَّ عَلَى أَهْلِ الْمَسْجِدِ وَهُمْ رَاكِعُوْنَ
قَالَ أَشْهَدُ بِاللهِ لَقَدْ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قِبَلَ مَكَّةَ فَدَارُوْا كَمَا هُمْ قِبَلَ الْبَيْتِ وَكَانَ الَّذِيْ مَاتَ
عَلَى الْقِبْلَةِ قَبْلَ أَنْ تُحَوَّلَ قِبَلَ الْبَيْتِ رِجَالٌ قُتِلُوْا لَمْ
نَدْرِ مَا نَقُوْلُ فِيْهِمْ فَأَنْزَلَ اللهُ {وَمَا كَانَ اللهُ لِيُضِيْعَ
إِيْمَانَكُمْ إِنَّ اللهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ}
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাদীনাতে ষোল অথবা সতের মাস যাবৎ বাইতুল
মাকদাসের দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেন। অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বাইতুল্লাহর দিকে তার কিবলা হওয়াকে পছন্দ করতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ‘আসর এর সলাত (কা‘বার দিকে মুখ করে) আদায় করেন এবং লোকেরাও তাঁর সঙ্গে
সলাত আদায় করেন। এরপর তাঁর সঙ্গে সলাত আদায়কারী একজন বের হন এবং তিনি একটি
মাসজিদের লোকেদের পার্শ্ব দিয়ে গেলেন তখন তারা রুকু অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেন,
আমি আল্লাহ্কে সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
সঙ্গে মাক্কাহর দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেছি। এ কথা শোনার পর তাঁরা যে অবস্থায়
ছিলেন, সে অবস্থায় বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে গেলেন। আর যারা কিবলা বাইতুল্লাহর দিকে
পরিবর্তনের পূর্বে বাইতুল মাকদাসের দিকে সলাত আদায় অবস্থায় মারা গিয়েছেন, শহীদ
হয়েছেন, তাদের সম্পর্কে আমরা কী বলব তা আমাদের জানা ছিল না। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ
আয়াত অবতীর্ণ করেন “আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান ব্যর্থ করে দেবেন। নিশ্চয়
আল্লাহ মানুষের প্রতি পরম মমতাময়, পরম দয়ালু” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৩)। [৪০]
(আ.প্র. ৪১২৮, ই.ফা. ৪১৩১)
৬৫/২/১৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا}
‘‘আর এভাবে আমি তোমদেরকে করেছি এক মধ্যপন্থী জাতি যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষ্যদাতা হও এবং রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যদাতা হন।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৪৩)
‘‘আর এভাবে আমি তোমদেরকে করেছি এক মধ্যপন্থী জাতি যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষ্যদাতা হও এবং রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যদাতা হন।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/৪৩)
৪৪৮৭
يُوْسُفُ بْنُ رَاشِدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ وَأَبُوْ
أُسَامَةَ وَاللَّفْظُ لِجَرِيْرٍ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ وَقَالَ
أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ
قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُدْعَى نُوْحٌ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ فَيَقُوْلُ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ يَا رَبِّ فَيَقُوْلُ هَلْ
بَلَّغْتَ فَيَقُوْلُ نَعَمْ فَيُقَالُ لِأُمَّتِهِ هَلْ بَلَّغَكُمْ
فَيَقُوْلُوْنَ مَا أَتَانَا مِنْ نَذِيْرٍ فَيَقُوْلُ مَنْ يَشْهَدُ لَكَ
فَيَقُوْلُ مُحَمَّدٌ وَأُمَّتُهُ فَتَشْهَدُوْنَ أَنَّهُ قَدْ بَلَّغَ وَيَكُوْنَ
الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا فَذَلِكَ قَوْلُهُ جَلَّ ذِكْرُهُ : {وَكَذٰلِكَ
جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ
وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدً} وَالْوَسَطُ الْعَدْلُز.
আবূ
সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ক্বিয়ামাতের দিন নূহ্
(‘আ.)-কে ডাকা হবে। তখন তিনি বলবেনঃ হে আমাদের রব! আমি আপনার পবিত্র দরবারে হাযির
(তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন) তুমি কি (আল্লাহ্র বাণী) পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি
বলবেন, হ্যাঁ। এরপর তার উম্মতকে জিজ্ঞেস করা হবে, [নূহ (‘আ.) কি] তোমাদের নিকট
(আল্লাহ্র বাণী) পৌঁছে দিয়েছে? তারা তখন বলবে, আমাদের কাছে কোন ভয়প্রদর্শনকারী
আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা [নূহ (‘আ.)-কে] বলবেন, তোমার পক্ষে কে সাক্ষ্য দেবে?
তিনি বলবেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর উম্মতগণ। তখন
তারা সাক্ষ্য দেবে যে, নূহ (‘আ.) তাঁর উম্মতের নিকট আল্লাহ্র বাণী পৌঁছে দিয়েছেন
এবং রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদের জন্য সাক্ষী হবেন। এটাই মহান
আল্লাহ্র বাণী “আর এ ভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি মধ্যপন্থী উম্মাত করেছি যাতে তোমরা
মানবজাতির সাক্ষী হতে পার আর রসূল তোমাদের সাক্ষী হন।” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৩)
‘ওয়াসাত’ ন্যায়নিষ্ঠ। [৩৩৩৯] (আ.প্র. ৪১২৯, ই.ফা. ৪১৩২)
৬৫/২/১৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِيْ كُنْتَ عَلَيْهَآ إِلَّا لِنَعْلَمَ مَنْ يَّتَّبِعُ الرَّسُوْلَ مِمَّنْ يَّنْقَلِبُ عَلٰى عَقِبَيْهِ ط وَإِنْ كَانَتْ لَكَبِيْرَةً إِلَّا عَلَى الَّذِيْنَ هَدَى اللهُ ط وَمَا كَانَ اللهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ ط إِنَّ اللهَ بِالنَّاسِ لَرَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ
(143).
আপনি যে কিবলার এ যাবত অনুসরণ করছিলেন তাকে আমি এজন্য প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম যাতে জানতে পারি কে রাসূলের অনুসরণ করে, আর কে পিঠটান দেয়? আল্লাহ যাদের সৎপথ প্রদর্শন করেছেন তাদের ব্যতীত অন্যদের কাছে এটা নিশ্চিত কঠোরতর বিষয়। আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান ব্যর্থ করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি পরম মমতাময়, পরম দয়ালু। (সূরাহ আল-বাকারাহ্ ২/১৪৩)
আপনি যে কিবলার এ যাবত অনুসরণ করছিলেন তাকে আমি এজন্য প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম যাতে জানতে পারি কে রাসূলের অনুসরণ করে, আর কে পিঠটান দেয়? আল্লাহ যাদের সৎপথ প্রদর্শন করেছেন তাদের ব্যতীত অন্যদের কাছে এটা নিশ্চিত কঠোরতর বিষয়। আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান ব্যর্থ করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি পরম মমতাময়, পরম দয়ালু। (সূরাহ আল-বাকারাহ্ ২/১৪৩)
৪৪৮৮
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ عَنْ عَبْدِ
اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا بَيْنَا النَّاسُ
يُصَلُّوْنَ الصُّبْحَ فِيْ مَسْجِدِ قُبَاءٍ إِذْ جَاءَ جَاءٍ فَقَالَ أَنْزَلَ
اللهُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قُرْآنًا أَنْ يَسْتَقْبِلَ
الْكَعْبَةَ فَاسْتَقْبِلُوْهَا فَتَوَجَّهُوْا إِلَى الْكَعْبَةِ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন
লোকেরা কূবা মাসজিদে ফাজ্রের সলাত আদায় করছিলেন। এমন সময় এক আগন্তুক এসে বলল,
আল্লাহ তা‘আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি কুরআনের এ আয়াত
অবতীর্ণ করেছেন যে, তিনি যেন (সলাতে) কা‘বার দিকে মুখ করেন। কাজেই আপনারাও কা‘বার
দিকে মুখ করুন। তখন লোকেরা কা‘বার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩০, ই.ফা.
৪১৩৩)
৬৫/২/১৫. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{قَدْ نَرٰى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَآءِ ج فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضٰهَا ص فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ط} إِلَى قوله :
{عَمَّا تَعْمَلُوْنَ}.
‘‘বার বার আকাশের দিকে আপনার তাকানোকে আমি অবশ্য লক্ষ্য করছি..... আল্লাহ সে সম্বন্ধে বেখবর নন যা তারা করে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৪)
‘‘বার বার আকাশের দিকে আপনার তাকানোকে আমি অবশ্য লক্ষ্য করছি..... আল্লাহ সে সম্বন্ধে বেখবর নন যা তারা করে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৪)
৪৪৮৯
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ
أَبِيْهِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمْ يَبْقَ مِمَّنْ صَلَّى
الْقِبْلَتَيْنِ غَيْرِي
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যারা উভয় কিবলার (বাইতুল মাকদাস কা‘বা-এর) দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেছেন
তাদের মধ্যে আমি ব্যতীত আর কেউ বেঁচে নেই। (আ.প্র. ৪১৩১, ই.ফা. ৪১৩৪)
৬৫/২/১৬. অধ্যায়ঃ
{وَلَئِنْ أَتَيْتَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتٰبَ بِكُلِّ اٰيَةٍ مَّا تَبِعُوْا قِبْلَتَكَ} إِلَى قَوْلِهِ :
{إِنَّكَ إِذًا لَّمِنَ الظَّالِمِيْنَ}.
‘‘যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের কাছে আপনি সমস্ত প্রমাণ পেশ করলেও তারা আপনার কিবলার অনুসরণ করবে না, আর আপনি তাদের কিবলা অনুসরণ করার নন। আর তারা একে অন্যের কিবলা অনুসরণ করে না। আপনি যদি আপনার কাছে জ্ঞান আসার পর তাদের বাসনার অনুসরণ করেন, তবে নিশ্চয়ই আপনি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বেন।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৫)
‘‘যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের কাছে আপনি সমস্ত প্রমাণ পেশ করলেও তারা আপনার কিবলার অনুসরণ করবে না, আর আপনি তাদের কিবলা অনুসরণ করার নন। আর তারা একে অন্যের কিবলা অনুসরণ করে না। আপনি যদি আপনার কাছে জ্ঞান আসার পর তাদের বাসনার অনুসরণ করেন, তবে নিশ্চয়ই আপনি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বেন।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৫)
৪৪৯০
دَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ
حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُمَا بَيْنَمَا النَّاسُ فِي الصُّبْحِ بِقُبَاءٍ جَاءَهُمْ رَجُلٌ فَقَالَ
إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أُنْزِلَ عَلَيْهِ اللَّيْلَةَ
قُرْآنٌ وَأُمِرَ أَنْ يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ أَلَا فَاسْتَقْبِلُوْهَا وَكَانَ
وَجْهُ النَّاسِ إِلَى الشَّأْمِ فَاسْتَدَارُوْا بِوُجُوْهِهِمْ إِلَى
الْكَعْبَةِ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
লোকেরা মাসজিদে কুবায় ফাজ্রের সলাত আদায় করছিলেন। এমন সময় তাদের কাছে একজন লোক এসে
বলল, এ রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর কুরআনের আয়াত
অবতীর্ণ হয়েছে এবং কা‘বার দিকে মুখ করে সলাত আদায় করার জন্য তিনি নির্দেশিত
হয়েছেন। অতএব আপনারা কা‘বার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিন। আর তখন লোকেদের চেহারা শামের
দিকে ছিল। তখন তারা তাদের চেহারা কা‘বার দিকে ঘুরিয়ে নিলেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩২,
ই.ফা. ৪১৩৫)
৬৫/২/১৭. অধ্যায়ঃ
{اَلَّذِيْنَ اٰتَيْنَاهُمُ الْكِتٰبَ يَعْرِفُوْنَه” كَمَا يَعْرِفُوْنَ أَبْنَآءَهُمْ ط وَإِنَّ فَرِيْقًا مِّنْهُمْ لَيَكْتُمُوْنَ الْحَقَّ} إِلَى قَوْلِهِ :
{فَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِيْنَ}.
‘‘যাদের আমি কিতাব দিয়েছি তারা তাকে সেরূপ চেনে, যেরূপ তারা তাদের পুত্রদের চেনে। আর তাদের একদল জেনেশুনে নিশ্চিতভাবে সত্য গোপন করে। প্রকৃত সত্য তো তা, যা তোমার পালনকর্তার তরফ থেকে প্রাপ্ত। কাজেই তুমি সন্দিহানদের দলভুক্ত হয়ো না।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৬-১৪৭)
‘‘যাদের আমি কিতাব দিয়েছি তারা তাকে সেরূপ চেনে, যেরূপ তারা তাদের পুত্রদের চেনে। আর তাদের একদল জেনেশুনে নিশ্চিতভাবে সত্য গোপন করে। প্রকৃত সত্য তো তা, যা তোমার পালনকর্তার তরফ থেকে প্রাপ্ত। কাজেই তুমি সন্দিহানদের দলভুক্ত হয়ো না।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৬-১৪৭)
৪৪৯১
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ
اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ بَيْنَا النَّاسُ بِقُبَاءٍ فِيْ
صَلَاةِ الصُّبْحِ إِذْ جَاءَهُمْ آتٍ فَقَالَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه
وسلم قَدْ أُنْزِلَ عَلَيْهِ اللَّيْلَةَ قُرْآنٌ وَقَدْ أُمِرَ أَنْ يَسْتَقْبِلَ
الْكَعْبَةَ فَاسْتَقْبِلُوْهَا وَكَانَتْ وُجُوْهُهُمْ إِلَى الشَّأْمِ
فَاسْتَدَارُوْا إِلَى الْكَعْبَةِ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা লোকেরা কুবা মাসজিদে ফাজ্রের সলাতে ছিলেন, তখন তাদের কাছে একজন আগন্তুক
এসে বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি এ রাতে কুরআন (এর
আয়াত) অবতীর্ণ করা হয়েছে, আর এতে তিনি কা‘বার দিকে মুখ ফিরানোর জন্য নির্দেশিত
হয়েছেন। কাজেই আপনারা কা’বার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিন। আর তখন তাদের মুখ শামের দিকে
ছিল। তখন তারা কা‘বার দিকে ঘুরে গেলেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩৩, ই.ফা. ৪১৩৬)
৬৫/৪/২৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِنْ كَانَ بِكُمْ أَذًى مِّنْ مَطَرٍ أَوْ كُنْتُمْ مَرْضٰىٓ أَنْ تَضَعُوْآ أَسْلِحَتَكُمْ}.
যদি তোমরা বৃষ্টির কারণে কষ্ট পাও অথবা যদি তোমরা অসুস্থ হও, এ অবস্থায় নিজেদের অস্ত্র পরিত্যাগ করলে তোমাদের কোন গুনাহ নেই। (সূরাহ আন-নিসা ৪/১০২)
যদি তোমরা বৃষ্টির কারণে কষ্ট পাও অথবা যদি তোমরা অসুস্থ হও, এ অবস্থায় নিজেদের অস্ত্র পরিত্যাগ করলে তোমাদের কোন গুনাহ নেই। (সূরাহ আন-নিসা ৪/১০২)
৪৫৯৯
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الْحَسَنِ أَخْبَرَنَا
حَجَّاجٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ يَعْلَى عَنْ سَعِيْدِ بْنِ
جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : {وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ
إِنْ كَانَ بِكُمْ أَذًى مِّنْ مَطَرٍ أَوْ كُنْتُمْ مَرْضٰى} قَالَ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَكَانَ جَرِيْحًا.
ইবনু
‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
إِنْ كَانَ بِكُمْ أَذًى مِنْ مَطَرٍ أَوْ كُنْتُمْ مَرْضَى
আয়াতটি নাযিল হয়েছিল যখন ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) আহত হয়েছিলেন। (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ৪২৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪২৪১)
৬৫/২/১৮. অধ্যায়ঃ
{وَلِكُلٍّ وِّجْهَةٌ هُوَ مُوَلِّيْهَا فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرٰتِ ط صـ أَيْنَ مَا تَكُوْنُوْا يَأْتِ بِكُمُ اللهُ جَمِيْعًا ط إِنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
(148)}.
‘‘আর প্রত্যেকেরই রয়েছে একটি দিক, যেদিকে সে মুখ করে। সুতরাং তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাক না কেন, আল্লাহ তোমাদের সবাইকে একত্র সমবেত করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৮)
‘‘আর প্রত্যেকেরই রয়েছে একটি দিক, যেদিকে সে মুখ করে। সুতরাং তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাক না কেন, আল্লাহ তোমাদের সবাইকে একত্র সমবেত করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৮)
৪৪৯২
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ
سُفْيَانَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُ قَالَ صَلَّيْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ بَيْتِ
الْمَقْدِسِ سِتَّةَ عَشَرَ أَوْ سَبْعَةَ عَشَرَ شَهْرًا ثُمَّ صَرَفَهُ نَحْوَ
الْقِبْلَةِ
বারাআ
(ইবনু ‘আযিব) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ষোল অথবা সতের মাস
ব্যাপী (মাদীনাতে) বাইতুল মাকদাসের দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেছি। তারপর আল্লাহ
তাঁকে কা‘বার পানে ফিরিয়ে দেন। [৪০] (আ.প্র. ৪১৩৪, ই.ফা. ৪১৩৭)
৬৫/২/১৯. অধ্যায়ঃ
{وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ط وَإِنَّه” لَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ ط وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
(149)} شَطْرُهُ تِلْقَاؤُهُ.
‘‘যেখান থেকেই তুমি বের হও না কেন, তোমার মুখ আল-মাসজিদুল হারামের দিকে ফেরাও। নিশ্চয় এটা হল তোমার পালনকর্তার তরফ থেকে অবধারিত সত্য। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ বেখবর নন’’- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৯)। شَطْرُهُ সেই দিকে।
‘‘যেখান থেকেই তুমি বের হও না কেন, তোমার মুখ আল-মাসজিদুল হারামের দিকে ফেরাও। নিশ্চয় এটা হল তোমার পালনকর্তার তরফ থেকে অবধারিত সত্য। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ বেখবর নন’’- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৪৯)। شَطْرُهُ সেই দিকে।
৪৪৯৩
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ
بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ دِيْنَارٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ
عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ بَيْنَا النَّاسُ فِي الصُّبْحِ بِقُبَاءٍ
إِذْ جَاءَهُمْ رَجُلٌ فَقَالَ أُنْزِلَ اللَّيْلَةَ قُرْآنٌ فَأُمِرَ أَنْ
يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ فَاسْتَقْبِلُوْهَا وَاسْتَدَارُوْا كَهَيْئَتِهِمْ
فَتَوَجَّهُوْا إِلَى الْكَعْبَةِ وَكَانَ وَجْهُ النَّاس إِلَى الشَّأْمِ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা কূবা মাসজিদে সহাবীগণ ফাজ্রের সলাত সম্পাদন করছিলেন। এমন সময় এক
ব্যক্তি এসে বলল, আজ রাতে [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি]
কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, তাতে কা‘বার দিকে মুখ ফিরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কাজেই আপনারা সেদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিন। তখন তারা আপন আপন অবস্থায় মুখ ঘুরিয়ে নেন এবং
কা‘বার দিকে মুখ করেন। তখন তাদের মুখ সিরিয়ার দিকে ছিল। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩৫, ই.ফা.
৪১৩৮)
৬৫/২/২০. অধ্যায়ঃ
{وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ط وَحَيْثُ مَا كُنْتُمْ} إِلَى قَوْلِهِ :
{وَلَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ}.
‘‘এবং যেখান থেকেই তুমি বের হও না কেন, তোমার মুখ আল-মাসজিদুল হারামের দিকে ফেরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক না কেন সেদিকেই মুখ ফেরাবে, যাতে..... তোমরা সৎপথে পরিচালিত হতে পার।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৫০)
‘‘এবং যেখান থেকেই তুমি বের হও না কেন, তোমার মুখ আল-মাসজিদুল হারামের দিকে ফেরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক না কেন সেদিকেই মুখ ফেরাবে, যাতে..... তোমরা সৎপথে পরিচালিত হতে পার।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৫০)
৪৪৯৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ بَيْنَمَا النَّاسُ فِي
صَلاَةِ الصُّبْحِ بِقُبَاءٍ إِذْ جَاءَهُمْ آتٍ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَدْ أُنْزِلَ عَلَيْهِ اللَّيْلَةَ، وَقَدْ أُمِرَ أَنْ
يَسْتَقْبِلَ الْكَعْبَةَ، فَاسْتَقْبِلُوهَا. وَكَانَتْ وُجُوهُهُمْ إِلَى
الشَّأْمِ فَاسْتَدَارُوا إِلَى الْقِبْلَةِ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
-এর
প্রতি আজ রাতে কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এবং তিনি কা‘বার দিকে মুখ ফিরানোর
নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েছেন। অতএব আপনারাও সেদিকে মুখ ফিরিয়ে নিন। তাদের মুখ তখন ছিল
সিরিয়ার দিকে। তখন তারা কা‘বার দিকে ফিরে গেলেন। [৪০৩] (আ.প্র. ৪১৩৬, ই.ফা. ৪১৩৯)rতিনি
বলেন, একদা কূবাতে সহাবীগণ ফাজ্রের সলাত সম্পাদন করছিলেন এমন সময় এক আগন্তুক এসে
বলল, রসূলুল্লাহ
৬৫/২/২১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ اللهِ ج فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَّطَّوَّفَ بِهِمَا ط وَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْرًا لا فَإِنَّ اللهَ شَاكِرٌ عَلِيْمٌ
(158)}
{شَعَآئِرٌ} : عَلَامَاتٌ وَاحِدَتُهَا شَعِيْرَةٌ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الصَّفْوَانُ الْحَجَرُ وَيُقَالُ الْحِجَارَةُ الْمُلْسُ الَّتِيْ لَا تُنْبِتُ شَيْئًا وَالْوَاحِدَةُ صَفْوَانَةٌ بِمَعْنَى الصَّفَا وَالصَّفَا لِلْجَمِيْعِ.
নিশ্চয় সাফা ও মারওয়াহ হল আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে কেউ কা‘বা ঘরে হাজ্জ বা ‘উমরাহ পালন করে তার পক্ষে এ দু‘টির মধ্যে প্রদক্ষিণ করাতে কোন পাপ নেই। আর কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন নেক কাজ করলে আল্লাহ তার পুরস্কার দেবেন, তিনি সর্বজ্ঞ। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৫৮)
شَعَائِرٌ হলো شَعِيْرَةٌ এর বহু বচন। নিদর্শন। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, সাফওয়ান অর্থ পাথর; বলা হত এমন পাথর যা কিছু উৎপন্ন করে না। একবচনেصَفْوَانَةٌ হয়ে থাকে। الصَّفَا বহুবচনে ব্যবহৃত হয়।
{شَعَآئِرٌ} : عَلَامَاتٌ وَاحِدَتُهَا شَعِيْرَةٌ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الصَّفْوَانُ الْحَجَرُ وَيُقَالُ الْحِجَارَةُ الْمُلْسُ الَّتِيْ لَا تُنْبِتُ شَيْئًا وَالْوَاحِدَةُ صَفْوَانَةٌ بِمَعْنَى الصَّفَا وَالصَّفَا لِلْجَمِيْعِ.
নিশ্চয় সাফা ও মারওয়াহ হল আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে কেউ কা‘বা ঘরে হাজ্জ বা ‘উমরাহ পালন করে তার পক্ষে এ দু‘টির মধ্যে প্রদক্ষিণ করাতে কোন পাপ নেই। আর কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন নেক কাজ করলে আল্লাহ তার পুরস্কার দেবেন, তিনি সর্বজ্ঞ। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৫৮)
شَعَائِرٌ হলো شَعِيْرَةٌ এর বহু বচন। নিদর্শন। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, সাফওয়ান অর্থ পাথর; বলা হত এমন পাথর যা কিছু উৎপন্ন করে না। একবচনেصَفْوَانَةٌ হয়ে থাকে। الصَّفَا বহুবচনে ব্যবহৃত হয়।
৪৪৯৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ
هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا يَوْمَئِذٍ حَدِيْثُ السِّنِّ أَرَأَيْتِ
قَوْلَ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ
اللهِ ج فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ
يَّطَّوَّفَ بِهِمَا} فَمَا أُرَى عَلَى أَحَدٍ شَيْئًا أَنْ لَا يَطَّوَّفَ
بِهِمَا فَقَالَتْ عَائِشَةُ كَلَّا لَوْ كَانَتْ كَمَا تَقُوْلُ كَانَتْ فَلَا
جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لَا يَطَّوَّفَ بِهِمَا إِنَّمَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ
الْآيَةُ فِي الْأَنْصَارِ كَانُوْا يُهِلُّوْنَ لِمَنَاةَ وَكَانَتْ مَنَاةُ
حَذْوَ قُدَيْدٍ وَكَانُوْا يَتَحَرَّجُوْنَ أَنْ يَطُوْفُوْا بَيْنَ الصَّفَا
وَالْمَرْوَةِ فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلَامُ سَأَلُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم عَنْ ذَلِكَ فَأَنْزَلَ اللهُ {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ
اللهِ ج فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ
يَّطَّوَّفَ بِهِمَا}.
‘উরওয়াহ
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে
জিজ্ঞেস করলাম আর তখন আমি অল্প বয়সের ছিলাম।
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ এ আয়াত সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? “নিশ্চয় সাফা ও মারওয়াহ হল আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে কেউ কা‘বা ঘরে হাজ্জ বা ‘উমরাহ পালন করে তার পক্ষে এ দু‘টির মধ্যে প্রদক্ষিণ করাতে কোন পাপ নেই” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৫৮)। আমি মনে করি উক্ত দুই পর্বত সায়ী না করলে কোন ব্যক্তির উপর গুনাহ বর্তাবে না। তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, কক্ষনো তা নয়। তুমি যা বলছ যদি তাই হত তাহলে বলা হত এভাবে فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ “উভয় পর্বত তাওয়াফ না করাতে কোন গুনাহ বর্তাবে না। বস্তুতঃ এই আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে আনসারদের ব্যাপারে। তারা ‘মানাত’-এর পূজা করত। আর ‘মানাত’ ছিল কুদায়েদের পথে অবস্থিত। আনসারগণ সাফা এবং মারওয়াহর মধ্যে সায়ী করা খারাপ জানত। ইসলামের আগমনের পর তারা এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করল। তখন আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوْ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا। [১৬৪৩] (আ.প্র. ৪১৩৭, ই.ফা. ৪১৪০)
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ এ আয়াত সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? “নিশ্চয় সাফা ও মারওয়াহ হল আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে কেউ কা‘বা ঘরে হাজ্জ বা ‘উমরাহ পালন করে তার পক্ষে এ দু‘টির মধ্যে প্রদক্ষিণ করাতে কোন পাপ নেই” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৫৮)। আমি মনে করি উক্ত দুই পর্বত সায়ী না করলে কোন ব্যক্তির উপর গুনাহ বর্তাবে না। তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, কক্ষনো তা নয়। তুমি যা বলছ যদি তাই হত তাহলে বলা হত এভাবে فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ “উভয় পর্বত তাওয়াফ না করাতে কোন গুনাহ বর্তাবে না। বস্তুতঃ এই আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে আনসারদের ব্যাপারে। তারা ‘মানাত’-এর পূজা করত। আর ‘মানাত’ ছিল কুদায়েদের পথে অবস্থিত। আনসারগণ সাফা এবং মারওয়াহর মধ্যে সায়ী করা খারাপ জানত। ইসলামের আগমনের পর তারা এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করল। তখন আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوْ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا। [১৬৪৩] (আ.প্র. ৪১৩৭, ই.ফা. ৪১৪০)
৬৫/২/২১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
৪৪৯৬
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَاصِمِ
بْنِ سُلَيْمَانَ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ
الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَقَالَ كُنَّا نَرَى أَنَّهُمَا مِنْ أَمْرِ
الْجَاهِلِيَّةِ فَلَمَّا كَانَ الإِسْلَامُ أَمْسَكْنَا عَنْهُمَا فَأَنْزَلَ
اللهُ تَعَالَى {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ اللهِ ج فَمَنْ
حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَّطَّوَّفَ
بِهِمَا}.
‘আসিম
ইবনু সুলাইমান (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে সাফা ও মারওয়াহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি
বলেন, আমরা ঐ দু’টিকে জাহিলী যুগের কাজ বলে মনে করতাম। যখন ইসলাম আসল, তখন আমরা এ
দু’টির মধ্যে সায়ী করা থেকে বিরত থাকি। তখন আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করেন إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ
থেকে أَنْ يَطَّوَّفَ
পর্যন্ত। [১৬৪৮] (আ.প্র. ৪১৩৮, ই.ফা. ৪১৪১)
৬৫/২/২২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّتَّخِذُ مِنْ دُوْنِ اللهِ أَنْدَادًا} أَنْدَادًا : وَاحِدُهَا نِدٌّ.
‘‘মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যে আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৬৫)
এখানেأَنْدَادًا অর্থ সমকক্ষ ও বরাবর। نِدٌّ এর একবচন।
‘‘মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যে আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৬৫)
এখানেأَنْدَادًا অর্থ সমকক্ষ ও বরাবর। نِدٌّ এর একবচন।
৪৪৯৭
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি কথা বললেন, আর আমি একটি বললাম।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে
তাঁর সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে যাবে। আর আমি
বললাম, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সঙ্গে কাউকে সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান না করা অবস্থায়
মারা যায়? (তিনি বললেন) সে জান্নাতে যাবে। [১২৩৮] (আ.প্র. ৪১৩৯, ই.ফা. ৪১৪২)
৬৫/২/২৩. অধ্যায়ঃ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য
নিহতদের ব্যাপারে কিসাসের১ বিধান দেয়া হল, স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি,
ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস এবং নারীর বদলে নারী। তবে তার ভাইয়ের তরফ থেকে কাউকে
কিছু ক্ষমা করে দেয়া হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করতে হবে এবং সততার সঙ্গে তা তাকে
প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে ভার লাঘব ও বিশেষ রাহমাত।
এরপরও যে কেউ বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/১৭৮)
৪৪৯৮
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو
قَالَ سَمِعْتُ مُجَاهِدًا قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
يَقُوْلُ كَانَ فِيْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ الْقِصَاصُ وَلَمْ تَكُنْ فِيْهِمْ
الدِّيَةُ فَقَالَ اللهُ تَعَالَى لِهَذِهِ الْأُمَّةِ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ
اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلٰى ط اَلْحُرُّ بِالْحُرِّ
وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالْأُنْثٰى بِالْأُنْثٰى ط فَمَنْ عُفِيَ لَه”مِنْ
أَخِيْهِ شَيْءٌ} فَالْعَفْوُ أَنْ يَقْبَلَ الدِّيَةَ فِي الْعَمْدِ.
{فَاتِّبَاعٌم بِالْمَعْرُوْفِ وَأَدَآءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ} يَتَّبِعُ
بِالْمَعْرُوْفِ وَيُؤَدِّيْ بِإِحْسَانٍ {ذٰلِكَ تَخْفِيْفٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ
وَرَحْمَة} مِمَّا كُتِبَ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ {فَمَنِ اعْتَدٰى بَعْدَ
ذٰلِكَ فَلَه”عَذَابٌ أَلِيْمٌ} قَتَلَ بَعْدَ قَبُوْلِ الدِّيَةِ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, বানী ইসরাঈল সম্প্রদায়ের কিসাস প্রথা চালু ছিল কিন্তু দিয়াত তাদের মধ্যে
চালু ছিল না। অনন্তর আল্লাহ তা‘আলা এ উম্মতের জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ হত্যার
ক্ষেত্রে কিসাস বা খুনের বদলে খুন তোমাদের জন্য ফরয করা হয়েছে। স্বাধীন মানুষের
বদলে স্বাধীন মানুষ, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস এবং স্ত্রীলোকের বদলে স্ত্রীলোকের
কিসাস নেয়া হবে। হাঁ, কোন হত্যাকারীর সঙ্গে তার কোন (মুসলিম) ভাই নম্রতা দেখাতে
চাইলে। উল্লিখিত আয়াতে আলআফুব فَالْعَفْوُ -এর অর্থ ইচ্ছাকৃত হত্যার ক্ষেত্রে
দিয়াত গ্রহণ করতঃ কিসাস ক্ষমা করে দেয়া। فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ
অর্থাৎ এ ব্যাপারে যথাযথ বিধি মেনে চলবে এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দিয়াত আদায় করে দেবে।
তোমাদের পূর্বের লোকেদের উপরে আরোপিত কিসাস হতে তোমাদের প্রতি দিয়াত ব্যবস্থা
আল্লাহ্র পক্ষ হতে তোমাদের প্রতি শাস্তি হ্রাস ও বিশেষ অনুগ্রহ। দিয়াত কবূল করার
পরও যদি হত্যা করে তাহলে তার জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। [৬৮৮১] (আ.প্র. ৪১৪০, ই.ফা.
৪১৪৩)
৬৫/২/২৩. অধ্যায়ঃ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য
নিহতদের ব্যাপারে কিসাসের১ বিধান দেয়া হল, স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি,
ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস এবং নারীর বদলে নারী। তবে তার ভাইয়ের তরফ থেকে কাউকে
কিছু ক্ষমা করে দেয়া হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করতে হবে এবং সততার সঙ্গে তা তাকে
প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে ভার লাঘব ও বিশেষ রাহমাত।
এরপরও যে কেউ বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/১৭৮)
৪৪৯৯
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا
حُمَيْدٌ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
كِتَابُ اللهِ الْقِصَاصُ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাদের
কাছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন,
আল্লাহ্র কিতাবের নির্দেশ হল কিসাস। [২৭০৩] (আ.প্র. ৪১৪৩, ই.ফা. ৪১৪৪)
৬৫/২/২৩. অধ্যায়ঃ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য
নিহতদের ব্যাপারে কিসাসের১ বিধান দেয়া হল, স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি,
ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস এবং নারীর বদলে নারী। তবে তার ভাইয়ের তরফ থেকে কাউকে
কিছু ক্ষমা করে দেয়া হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করতে হবে এবং সততার সঙ্গে তা তাকে
প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে ভার লাঘব ও বিশেষ রাহমাত।
এরপরও যে কেউ বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/১৭৮)
৪৫০০
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيْرٍ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ
بَكْرٍ السَّهْمِيَّ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ الرُّبَيِّعَ
عَمَّتَهُ كَسَرَتْ ثَنِيَّةَ جَارِيَةٍ فَطَلَبُوْا إِلَيْهَا الْعَفْوَ
فَأَبَوْا فَعَرَضُوا الْأَرْشَ فَأَبَوْا فَأَتَوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم وَأَبَوْا إِلَّا الْقِصَاصَ فَأَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
بِالْقِصَاصِ فَقَالَ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَتُكْسَرُ
ثَنِيَّةُ الرُّبَيِّعِ لَا وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَا تُكْسَرُ
ثَنِيَّتُهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا أَنَسُ كِتَابُ اللهِ
الْقِصَاصُ فَرَضِيَ الْقَوْمُ فَعَفَوْا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ مَنْ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাসের
ফুফু রুবাঈ এক বাঁদির সম্মুখ দাঁত ভেঙ্গে ফেলে। এরপর বাঁদির কাছে রুবাঈয়ের লোকজন
ক্ষমা চাইলে বাঁদির লোকেরা অস্বীকার করে। তখন তাদের কাছে দিয়াত পেশ করা হল, তখন তা
তারা গ্রহণ করল না। অগত্যা তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
সমীপে এসে ঘটনা জানাল। কিন্তু কিসাস ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহণ করতে তারা অস্বীকার
করল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কিসাসের নির্দেশ দিলেন। তখন
আনাস ইবনু নযর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! রুবাঈদের সামনের দাঁত ভাঙ্গা হবে?
না, যে সত্তা আপনাকে সত্য সহ পাঠিয়েছেন তাঁর শপথ, তাঁর দাঁত ভাঙ্গা হবে না। তখন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে আনাস! আল্লাহ্র কিতাব তো
কিসাসের নির্দেশ দেয়। এরপর বাঁদির লোকেরা রাযী হয়ে যায় এবং রুবাঈ‘কে ক্ষমা করে
দেয়। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্র
বান্দাদের মাঝে এমন মানুষও আছে যিনি আল্লাহ্র নামে শপথ করলে আল্লাহ তা পূরণ করেন।
[২৭০৩] (আ.প্র. ৪১৪২, ই.ফা. ৪১৪৫)
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
{يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ}
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সওম ফারয করা হল যেরূপ ফারয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৩)
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সওম ফারয করা হল যেরূপ ফারয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৩)
৪৫০১
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ
أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ
عَاشُوْرَاءُ يَصُوْمُهُ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ قَالَ
مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ لَمْ يَصُمْهُ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, জাহিলী যুগের লোকেরা আশুরার সওম পালন করত। এরপর যখন রমাযানের সওমের বিধান
অবতীর্ণ হল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যার ইচ্ছা সে
আশুরার সওম পালন করবে আর যার ইচ্ছা সে তার সওম পালন করবে না। [১৮৯২; মুসলিম ১৩/১৯,
হাঃ ১১২৬, আহমাদ ৬৩০০] (আ.প্র. ৪১৪৩, ই.ফা. ৪১৪৬)
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
৪৫০২
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ
عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا كَانَ
عَاشُوْرَاءُ يُصَامُ قَبْلَ رَمَضَانَ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ قَالَ مَنْ
شَاءَ صَامَ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রমাযানের সওমের (আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার) পূর্বে আশুরার সওম পালন করা হত। এরপর
যখন রমাযানের (সম্পর্কিত বিধান) অবতীর্ণ হল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে ইচ্ছা করে (আশুরার) সওম পালন করবে, আর যে চায় সে সওম পালন
করবে না। [১৫৯২] (আ.প্র. ৪১৪৪, ই.ফা. ৪১৪৭)
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
৪৫০৩
مَحْمُوْدٌ أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ إِسْرَائِيْلَ
عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ
دَخَلَ عَلَيْهِ الْأَشْعَثُ وَهْوَ يَطْعَمُ فَقَالَ الْيَوْمُ عَاشُوْرَاءُ
فَقَالَ كَانَ يُصَامُ قَبْلَ أَنْ يَنْزِلَ رَمَضَانُ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ
تُرِكَ فَادْنُ فَكُلْ.
‘আবদুল্লাহ
(রহ.) (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, তাঁর নিকট ‘আশ‘আস (রাঃ) আসেন। এ সময় ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) পানাহার করছিলেন। তখন
আশ‘আস (রাঃ) বললেন, আজ তো ‘আশুরা। তিনি বললেন, রমাযানের (এর সওমের বিধান) অবতীর্ণ
হওয়ার পূর্বে ‘আশুরার সওম পালন করা হত। যখন রমাযানের (এর সওমের বিধান) অবতীর্ণ হল
তখন তা পরিত্যাগ করা হয়েছে। এসো, তুমিও খাও। [মুসলিম ১৩/১৯, হাঃ ১১২৭] (আ.প্র.
৪১৪৫, ই.ফা. ৪১৪৮)
৬৫/২/২৪. অধ্যায়ঃ
৪৫০৪
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا
هِشَامٌ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ
كَانَ يَوْمُ عَاشُوْرَاءَ تَصُوْمُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصُوْمُهُ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ صَامَهُ
وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ كَانَ رَمَضَانُ الْفَرِيْضَةَ
وَتُرِكَ عَاشُوْرَاءُ فَكَانَ مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ لَمْ يَصُمْهُ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, জাহিলী যুগে কুরাইশগণ আশুরার দিন সওম পালন করত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-ও সে সওম পালন করতেন। যখন তিনি মদিনায় হিজরাত করলেন তখনও তিনি সে সওম
পালন করতেন এবং অন্যদের পালনের নির্দেশ দিতেন। এরপর যখন রমাযান (সম্পর্কিত আয়াত)
অবতীর্ণ হলে রমাযানের সওম ফরয হল এবং আশুরার সওম বাদ গেল। এরপর যে চাইত সে উক্ত
সওম পালন করত আর যে চাইত তা পালন করত না। [১৫৯২] (আ.প্র. ৪১৪৬, ই.ফা. ৪১৪৯)
৬৫/২/২৫. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{أَيَّامًا مَّعْدُوْدٰتٍ ط فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَّرِيْضًا أَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ط وَعَلَى الَّذِيْنَ يُطِيْقُوْنَه” فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِيْنٍ ط فَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّه”ط وَأَنْ تَصُوْمُوْا خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
(184)}
নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য। তবে তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে সওমের সংখ্যা পূরণ করে নিবে। আর সওম যাদের জন্য অতিশয় কষ্টদায়ক, তারা এর পরিবর্তে ফিদয়া দিবে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করে। কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। যদি তোমরা সওম কর; তবে তা হবে তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৪)
وَقَالَ عَطَاءٌ يُفْطِرُ مِنَ الْمَرَضِ كُلِّهِ كَمَا قَالَ اللهُ تَعَالَى وَقَالَ الْحَسَنُ وَإِبْرَاهِيْمُ فِي الْمُرْضِعِ أَوِ الْحَامِلِ إِذَا خَافَتَا عَلَى أَنْفُسِهِمَا أَوْ وَلَدِهِمَا تُفْطِرَانِ ثُمَّ تَقْضِيَانِ وَأَمَّا الشَّيْخُ الْكَبِيْرُ إِذَا لَمْ يُطِقْ الصِّيَامَ فَقَدْ أَطْعَمَ أَنَسٌ بَعْدَ مَا كَبِرَ عَامًا أَوْ عَامَيْنِ كُلَّ يَوْمٍ مِسْكِيْنًا خُبْزًا وَلَحْمًا وَأَفْطَرَ قِرَاءَةُ الْعَامَّةِ يُطِيْقُوْنَهُ وَهْوَ أَكْثَرُ.
ইমাম ‘আত্বা (রহ.) বলেন, সর্বপ্রকার রোগেই সওম ভাঙ্গা যাবে। যেমন আল্লাহ বলেছেন। পক্ষান্তরে ইমাম হাসান ও ইবরাহীম (রহ.) বলেন, স্তন্যদাত্রী এবং গর্ভবতী স্ত্রীলোক যখন নিজ প্রাণ অথবা তাদের সন্তানের জীবনের প্রতি হুমকির আশঙ্কা করে তখন তারা উভয়ে সওম ভঙ্গ করতে পারবে। পরে তা আদায় করে নিতে হবে। অতিবৃদ্ধ ব্যক্তি সওম পালনে অক্ষম হলে যেমন আনাস (রাঃ) বৃদ্ধ হওয়ার পর এক বছর অথবা দু’বছর প্রতিদিন এক দরিদ্র ব্যক্তিকে রুটি ও গোশ্ত খেতে দিতেন এবং সওম ত্যাগ করতেন। অধিকাংশ লোকের কিরাআত হল يُطِيْقُوْنَهُ অর্থাৎ যারা সওমের সামর্থ্য রাখে এবং এটাই সাধারণ্যে প্রচলিত।
নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য। তবে তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে সওমের সংখ্যা পূরণ করে নিবে। আর সওম যাদের জন্য অতিশয় কষ্টদায়ক, তারা এর পরিবর্তে ফিদয়া দিবে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করে। কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। যদি তোমরা সওম কর; তবে তা হবে তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৪)
وَقَالَ عَطَاءٌ يُفْطِرُ مِنَ الْمَرَضِ كُلِّهِ كَمَا قَالَ اللهُ تَعَالَى وَقَالَ الْحَسَنُ وَإِبْرَاهِيْمُ فِي الْمُرْضِعِ أَوِ الْحَامِلِ إِذَا خَافَتَا عَلَى أَنْفُسِهِمَا أَوْ وَلَدِهِمَا تُفْطِرَانِ ثُمَّ تَقْضِيَانِ وَأَمَّا الشَّيْخُ الْكَبِيْرُ إِذَا لَمْ يُطِقْ الصِّيَامَ فَقَدْ أَطْعَمَ أَنَسٌ بَعْدَ مَا كَبِرَ عَامًا أَوْ عَامَيْنِ كُلَّ يَوْمٍ مِسْكِيْنًا خُبْزًا وَلَحْمًا وَأَفْطَرَ قِرَاءَةُ الْعَامَّةِ يُطِيْقُوْنَهُ وَهْوَ أَكْثَرُ.
ইমাম ‘আত্বা (রহ.) বলেন, সর্বপ্রকার রোগেই সওম ভাঙ্গা যাবে। যেমন আল্লাহ বলেছেন। পক্ষান্তরে ইমাম হাসান ও ইবরাহীম (রহ.) বলেন, স্তন্যদাত্রী এবং গর্ভবতী স্ত্রীলোক যখন নিজ প্রাণ অথবা তাদের সন্তানের জীবনের প্রতি হুমকির আশঙ্কা করে তখন তারা উভয়ে সওম ভঙ্গ করতে পারবে। পরে তা আদায় করে নিতে হবে। অতিবৃদ্ধ ব্যক্তি সওম পালনে অক্ষম হলে যেমন আনাস (রাঃ) বৃদ্ধ হওয়ার পর এক বছর অথবা দু’বছর প্রতিদিন এক দরিদ্র ব্যক্তিকে রুটি ও গোশ্ত খেতে দিতেন এবং সওম ত্যাগ করতেন। অধিকাংশ লোকের কিরাআত হল يُطِيْقُوْنَهُ অর্থাৎ যারা সওমের সামর্থ্য রাখে এবং এটাই সাধারণ্যে প্রচলিত।
৬৫/২/২৬. অধ্যায়ঃ
‘‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ
মাস পাবে সে যেন এ মাসে সওম করে ।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৫)
৪৫০৬
عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
أَنَّهُ قَرَأَ {فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِيْنَ} قَالَ هِيَ مَنْسُوْخَةٌ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
পাঠ করতেন فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِينَ
রাবী বলেন, এ আয়াত (فَمَنْ شَهِدَ الخ
আয়াত দ্বারা) রহিত হয়ে গেছে। [১৯৪৯] (আ.প্র. ৪১৪৮, ই.ফা. ৪১৫১)
৪৫০৭
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ عَنْ عَمْرِو
بْنِ الْحَارِثِ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ يَزِيْدَ مَوْلَى سَلَمَةَ
بْنِ الْأَكْوَعِ عَنْ سَلَمَةَ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَعَلَى الَّذِيْنَ
يُطَوَّقُوْنَه”” فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِيْنٍ} كَانَ مَنْ أَرَادَ أَنْ يُفْطِرَ
وَيَفْتَدِيَ حَتَّى نَزَلَتْ الْآيَةُ الَّتِيْ بَعْدَهَا فَنَسَخَتْهَا.
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ مَاتَ بُكَيْرٌ قَبْلَ يَزِيْدَ.
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ مَاتَ بُكَيْرٌ قَبْلَ يَزِيْدَ.
সালামাহ
ইবনু আকওয়া‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ এ
আয়াত অবতীর্ণ হল এবং যারা সওম পালনের সামর্থ্য রাখে তারা একজন মিসকীনকে ফিদ্য়া
স্বরূপ আহার্য দান করবে। তখন যে ইচ্ছা সওম ভঙ্গ করত এবং তার পরিবর্তে ফিদ্য়া
প্রদান করত। এরপর পরবর্তী আয়াত অবতীর্ণ হয় এবং পূর্বোক্ত আয়াতের হুকুম রহিত করে
দেয়।
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন, ইয়াযীদের পূর্বে বুকায়র মারা যান। [মুসলিম ১৩/২৫, হাঃ ১১৪৫] (আ.প্র. ৪১৪৯, ই.ফা. ৪১৫২)
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন, ইয়াযীদের পূর্বে বুকায়র মারা যান। [মুসলিম ১৩/২৫, হাঃ ১১৪৫] (আ.প্র. ৪১৪৯, ই.ফা. ৪১৫২)
৬৫/২/২৭. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلٰى نِسَآئِكُمْ ط هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ط عَلِمَ اللهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُوْنَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ ج فَالْئٰنَ بَاشِرُوْهُنَّ وَابْتَغُوْا مَا كَتَبَ اللهُ لَكُمْ}
‘‘তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে সিয়ামের রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করা। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা লাভ কর।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৭)
‘‘তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে সিয়ামের রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করা। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা লাভ কর।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৭)
৪৫০৮
عُبَيْدُ اللهِ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ
عَنِ الْبَرَاءِ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا شُرَيْحُ بْنُ
مَسْلَمَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ
أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لَمَّا نَزَلَ
صَوْمُ رَمَضَانَ كَانُوْا لَا يَقْرَبُوْنَ النِّسَاءَ رَمَضَانَ كُلَّهُ وَكَانَ
رِجَالٌ يَخُوْنُوْنَ أَنْفُسَهُمْ فَأَنْزَلَ اللهُ {عَلِمَ اللهُ أَنَّكُمْ
كُنْتُمْ تَخْتَانُوْنَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ}.
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন রমাযানের সওমের হুকুম অবতীর্ণ হল তখন মুসলিমরা গোটা রমাযান মাস
স্ত্রীদের নিকটবর্তী হতেন না আর কিছু সংখ্যক লোক এ ব্যাপারে নিজেদের উপর
(স্ত্রী-সম্ভোগ করে) অবিচার করে বসে। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন عَلِمَ اللهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُونَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ
“আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে
ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস
করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা লাভ কর” (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/১৮৭)। [১৯১৬] (আ.প্র. ৪১৫১, ই.ফা. ৪১৫৩)
৬৫/২/২৮. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتّٰى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِص ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ ج وَلَا تُبَاشِرُوْهُنَّ وَأَنْتُمْ عٰكِفُوْنَ فِي الْمَسَاجِدِ} إِلَى قَوْلِهِ {يَتَّقُوْنَ} الْعَاكِفُ : الْمُقِيْمُ.
‘‘আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। তারপর সওম পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর তোমরা যখন মসজিদে ই‘তিকাফ করবে তখন স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করবে না। এগুলো আল্লাহর বেঁধে দেয়া সীমারেখা। সুতরাং এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর নিদর্শনাবলী মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৭)
আল ‘আকিফু الْعَاكِفُ الْمُقِيْمُ অবস্থানকারী।
‘‘আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। তারপর সওম পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর তোমরা যখন মসজিদে ই‘তিকাফ করবে তখন স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করবে না। এগুলো আল্লাহর বেঁধে দেয়া সীমারেখা। সুতরাং এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর নিদর্শনাবলী মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৭)
আল ‘আকিফু الْعَاكِفُ الْمُقِيْمُ অবস্থানকারী।
৪৫০৯
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ
عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ عَدِيٍّ قَالَ أَخَذَ عَدِيٌّ عِقَالًا
أَبْيَضَ وَعِقَالًا أَسْوَدَ حَتَّى كَانَ بَعْضُ اللَّيْلِ نَظَرَ فَلَمْ
يَسْتَبِيْنَا فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ جَعَلْتُ تَحْتَ
وِسَادِيْ عِقَالَيْنِ قَالَ إِنَّ وِسَادَكَ إِذًا لَعَرِيْضٌ أَنْ كَانَ
الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ وَالأَسْوَدُ تَحْتَ وِسَادَتِكَ.
আদী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
(আদী) একটি সাদা ও একটি কালো সুতা সঙ্গে রাখলেন। কিন্তু রাত অতিবাহিত হলে খুলে
দেখলেন কিন্তু তার কাছে সাদা কালোর কোন পার্থক্য নিরূপিত হল না। যখন সকাল হল তখন
তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আমার বালিশের নিচে (সাদা ও কালো রংয়ের দু’টি
সুতা) রেখেছিলাম (এবং তিনি রাতের ঘটনাটি বললেন)। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার বালিশ তো খুবই বড় দেখছি, যদি কালো ও সাদা সুতা (সুবহি
কাযিব ও সুবহি সাদিক) তোমার বালিশের নিচে থেকে থাকে। (রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ‘আদী (রা.)-এর বর্ণনা শুনে কৌতুক করে বলেছেন যে, গোটা পূর্বাকাশ যদি
তোমার বালিশের নিচে রেখে থাক তাহলে সে বালিশ তো খুব বড়ই দেখছি) [১৯১৬] (আ.প্র.
৪১৫২, ই.ফা. ৪১৫৪)
৬৫/২/২৮. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
৪৫১০
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ
مُطَرِّفٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ
أَهُمَا الْخَيْطَانِ قَالَ إِنَّكَ لَعَرِيْضُ الْقَفَا إِنْ أَبْصَرْتَ
الْخَيْطَيْنِ ثُمَّ قَالَ لَا بَلْ هُوَ سَوَادُ اللَّيْلِ وَبَيَاضُ النَّهَارِ
আদী
ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! (আল্লাহ্র বাণীতে) الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ
সাদা সুতা কালো সুতা থেকে বের হয়ে আসার অর্থ কী? আসলে কি ঐ দু’টি সুতা? তিনি উত্তর
দিলেন, তুমি আজব লোক দেখছি যে, সূতা দু’টি তুমি দেখতে পেয়েছ। তারপর তিনি বললেন, তা
নয় বরং এ হল রাতের কৃষ্ণতা ও দিনের শুভ্রতা। [১৯১৬] (আ.প্র. ৪১৫৩, ই.ফা. ৪১৫৫)
৬৫/২/২৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{وَلَيْسَ الْبِرُّ بِأَنْ تَأْتُوا الْبُيُوْتَ مِنْ ظُهُوْرِهَا وَلٰكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقٰى ج وَأْتُوا الْبُيُوْتَ مِنْ أَبْوٰبِهَا ص وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ}
‘‘আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য নেই, বরং পুণ্য আছে কেউ তাকওয়া অবলম্বন করলে। সুতরাং তোমরা দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ কর এবং আল্লাহ্কে ভয় কর, যাতে তোমরা কৃতকার্য হতে পার।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৯)
‘‘আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য নেই, বরং পুণ্য আছে কেউ তাকওয়া অবলম্বন করলে। সুতরাং তোমরা দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ কর এবং আল্লাহ্কে ভয় কর, যাতে তোমরা কৃতকার্য হতে পার।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৯)
৪৫১১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ حَدَّثَنَا أَبُوْ
غَسَّانَ مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ قَالَ وَأُنْزِلَتْ {وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتّٰى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ
الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ} وَلَمْ يُنْزَلْ {مِنَ
الْفَجْرِ} وَكَانَ رِجَالٌ إِذَا أَرَادُوا الصَّوْمَ رَبَطَ أَحَدُهُمْ فِيْ
رِجْلَيْهِ الْخَيْطَ الْأَبْيَضَ وَالْخَيْطَ الْأَسْوَدَ وَلَا يَزَالُ يَأْكُلُ
حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُ رُؤْيَتُهُمَا فَأَنْزَلَ اللهُ بَعْدَهُ {مِنَ
الْفَجْرِ} فَعَلِمُوْا أَنَّمَا يَعْنِي اللَّيْلَ مِنْ النَّهَارِ
সাহল
ইবনু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ এ
আয়াত যখন অবতীর্ণ হয় তখন مِنَ الْفَجْرِ ‘ফজর হতে’ কথাটি অবতীর্ণ
হয়নি। তাই লোকেরা সওম পালনের ইচ্ছা করলে তখন তাদের কেউ কেউ দুই পায়ে সাদা ও কালো
রঙের সূতা বেঁধে রাখত। এরপর ঐ দু’টি সুতা পরিষ্কারভাবে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত তারা
পানাহার করত। তখন আল্লাহ তা‘আলা পরে مِنَ الْفَجْرِ
শব্দটি অবতীর্ণ করেন। এতে লোকেরা জানতে পারেন যে, এ দ্বারা উদ্দেশ্য হল দিন হতে
রাত্রির স্পষ্টতা। [১৯১৭] (আ.প্র. ৪১৫৪, ই.ফা. ৪১৫৬)
৬৫/২/৩০. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{وَقٰتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ وَّيَكُوْنَ الدِّيْنُ لِلهِ ط فَإِنِ انْتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ إِلَّا عَلَى الظّٰلِمِيْنَ}
‘‘আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দ্বীন শুধু আল্লাহর জন্য হয়। তারপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তবে সীমালংঘনকারীদের ব্যতীত কাউকে জবরদস্তি করা চলবে না।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৩)
‘‘আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দ্বীন শুধু আল্লাহর জন্য হয়। তারপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তবে সীমালংঘনকারীদের ব্যতীত কাউকে জবরদস্তি করা চলবে না।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৩)
৪৫১২
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ
عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ كَانُوْا إِذَا أَحْرَمُوْا فِي
الْجَاهِلِيَّةِ أَتَوْا الْبَيْتَ مِنْ ظَهْرِهِ فَأَنْزَلَ اللهُ {وَلَيْسَ
الْبِرُّ بِأَنْ تَأْتُوا الْبُيُوْتَ مِنْ ظُهُوْرِهَا وَلٰكِنَّ الْبِرَّ مَنِ
اتَّقٰى ج وَأْتُوا الْبُيُوْتَ مِنْ أَبْوٰبِهَا}
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, জাহিলী যুগে যখন লোকেরা ইহরাম বাঁধত, তারা পেছনের দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করত।
তখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন “আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য
নেই, বরং পুণ্য আছে কেউ তাকওয়া অবলম্বন করলে। সুতরাং তোমরা দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ
করো” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৮৯)। [১৮০৩] (আ.প্র. ৪১৫৫, ই.ফা. ৪১৫৭)
৬৫/২/৩১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
{وَأَنْفِقُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَلَا تُلْقُوْا بِأَيْدِيْكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ج وَأَحْسِنُوْا ج إِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِيْنَ
(195)} التَّهْلُكَةُ وَالْهَلَاكُ وَاحِدٌ.
‘‘আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে এবং নিজেদের হাতে নিজেদেরকে তোমরা ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না। আর তোমরা সৎকাজ কর। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন’’- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৫)। আয়াতে উল্লেখিত التَّهْلُكَةُ ও الْهَلَاك একই অর্থে ব্যবহৃত।
‘‘আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে এবং নিজেদের হাতে নিজেদেরকে তোমরা ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না। আর তোমরা সৎকাজ কর। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন’’- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৫)। আয়াতে উল্লেখিত التَّهْلُكَةُ ও الْهَلَاك একই অর্থে ব্যবহৃত।
৪৫১৩
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
أَتَاهُ رَجُلَانِ فِيْ فِتْنَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ فَقَالَا إِنَّ النَّاسَ
صَنَعُوْا وَأَنْتَ ابْنُ عُمَرَ وَصَاحِبُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَمَا
يَمْنَعُكَ أَنْ تَخْرُجَ فَقَالَ يَمْنَعُنِيْ أَنَّ اللهَ حَرَّمَ دَمَ أَخِيْ
فَقَالَا أَلَمْ يَقُلْ اللهُ : {وَقٰتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ} :
فَقَالَ قَاتَلْنَا حَتَّى لَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ وَكَانَ الدِّيْنُ لِلهِ
وَأَنْتُمْ تُرِيْدُوْنَ أَنْ تُقَاتِلُوْا حَتَّى تَكُوْنَ فِتْنَةٌ وَيَكُوْنَ
الدِّيْنُ لِغَيْرِ اللهِ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর
কাছে দুই ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রের যুগে সৃষ্ট ফিতনার সময় আগমন করল এবং
বলল, লোকেরা সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আর আপনি ‘‘উমার (রাঃ)-এর পুত্র এবং নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবী! কী কারণে আপনি বের হন না? তিনি উত্তর
দিলেন আমাকে নিষেধ করেছে এই কথা‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা আমার ভাইয়ের রক্ত হারাম
করেছে। তারা দু’জন বললেন, আল্লাহ কি এ কথা বলেননি যে, তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর
যাবৎ না ফিতনার অবসান ঘটে। তখন ইবনু ‘‘উমার (রাঃ) বললেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করেছি যাবৎ না ফিতনার অবসান ঘটেছে এবং দ্বীনও আল্লাহ্র জন্য হয়ে গেছে। আর
তোমরা ফিতনা প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করার ইচ্ছা করছ আর যেন আল্লাহ ব্যতীত অন্যের
জন্য দ্বীন হয়ে গেছে। [৩১৩০] (আ.প্র. ৪১৫৬, ই.ফা. ৪১৫৮)
৪৫১৪
وَزَادَ عُثْمَانُ بْنُ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ قَالَ
أَخْبَرَنِيْ فُلَانٌ وَحَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ عَنْ بَكْرِ بْنِ عَمْرٍو
الْمَعَافِرِيِّ أَنَّ بُكَيْرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَهُ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ
رَجُلًا أَتَى ابْنَ عُمَرَ فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ مَا حَمَلَكَ
عَلَى أَنْ تَحُجَّ عَامًا وَتَعْتَمِرَ عَامًا وَتَتْرُكَ الْجِهَادَ فِيْ
سَبِيْلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَقَدْ عَلِمْتَ مَا رَغَّبَ اللهُ فِيْهِ قَالَ يَا
ابْنَ أَخِيْ بُنِيَ الإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ إِيْمَانٍ بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ
وَالصَّلَاةِ الْخَمْسِ وَصِيَامِ رَمَضَانَ وَأَدَاءِ الزَّكَاةِ وَحَجِّ
الْبَيْتِ قَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَلَا تَسْمَعُ مَا ذَكَرَ اللهُ
فِيْ كِتَابِهِ {وَإِنْ طَآئِفَتٰنِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْتَتَلُوْا
فَأَصْلِحُوْا بَيْنَهُمَا ج فَإِنْمبَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرٰى
فَقَاتِلُوا الَّتِيْ تَبْغِيْ حَتّٰى تَفِيْٓءَ إِلٰٓى أَمْرِ اللهِ}
وَ{قَاتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ} قَالَ فَعَلْنَا عَلَى عَهْدِ
رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ الإِسْلَامُ قَلِيْلًا فَكَانَ
الرَّجُلُ يُفْتَنُ فِيْ دِيْنِهِ إِمَّا قَتَلُوْهُ وَإِمَّا يُعَذِّبُوْنَهُ
حَتَّى كَثُرَ الإِسْلَامُ فَلَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ
নাফি’
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ব্যক্তি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! কী কারণে আপনি এক
বছর হাজ্জ করেন এবং এক বছর ‘উমরাহ করেন অথচ আল্লাহ্র পথে জিহাদ ত্যাগ করেছেন?
আপনি পরিজ্ঞাত আছেন যে, আল্লাহ এ বিষয়ে জিহাদ সম্পর্কে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে ভাতিজা! ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে পাঁচটি বস্তুর
উপর ঃ আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমান আনা, পাঁচ ওয়াক্ত সলাত প্রতিষ্ঠা,
রমাযানের সওম পালন, যাকাত প্রদান এবং বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ পালন। তখন সে ব্যক্তি
বলল, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে কী বর্ণনা করেছেন তা কি আপনি
শুনেননি? وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا فَإِنْ بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَى فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّى تَفِيءَ إِلَى أَمْرِ اللهِ
“আর যদি মু‘মিনদের দু’টি দল পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে
সন্ধি স্থাপন করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অন্য দলের উপর বাড়াবাড়ি করে, তবে
তোমরা যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহ্র
হুকুমের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে, তবে তোমরা উভয় দলের মধ্যে ন্যায়ের
সঙ্গে সন্ধি করে দিবে এবং ইনসাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফ কায়িমকারীদেরকে
ভালবাসেন।” (সূরাহ আল-হুজরাত ৪৯/৯)
قَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ (এ আয়াতগুলো শ্রবণ করার পর) ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমরা এ কাজ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে করেছি এবং তখন ইসলামের অনুসারীর দল স্বল্প সংখ্যক ছিল। যদি কোন লোক দ্বীন সম্পর্কে ফিতনায় নিপতিত হত তখন হয় তাকে হত্যা করা হত অথবা শাস্তি প্রদান করা হত। এভাবে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে গেল। তখন আর কোন ফিতনা রইল না। [৮, ৩১৩০] (আ.প্র. ৪১৫৭, ই.ফা. ৪১৫৮ শেষাংশ)
قَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ (এ আয়াতগুলো শ্রবণ করার পর) ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমরা এ কাজ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে করেছি এবং তখন ইসলামের অনুসারীর দল স্বল্প সংখ্যক ছিল। যদি কোন লোক দ্বীন সম্পর্কে ফিতনায় নিপতিত হত তখন হয় তাকে হত্যা করা হত অথবা শাস্তি প্রদান করা হত। এভাবে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে গেল। তখন আর কোন ফিতনা রইল না। [৮, ৩১৩০] (আ.প্র. ৪১৫৭, ই.ফা. ৪১৫৮ শেষাংশ)
৬৫/২/৩২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের মধ্যে
যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা মাথায় কোন কষ্ট থাকে তবে সওম কিংবা সদাকাহ অথবা
কুরবানী দিয়ে তার ফিদ্ইয়া দিবে। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৬)
৪৫১৭
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
الْأَصْبَهَانِيِّ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَعْقِلٍ قَالَ قَعَدْتُ
إِلَى كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ فِيْ هَذَا الْمَسْجِدِ يَعْنِيْ مَسْجِدَ الْكُوْفَةِ
فَسَأَلْتُهُ عَنْ فِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ فَقَالَ حُمِلْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَالْقَمْلُ يَتَنَاثَرُ عَلَى وَجْهِيْ فَقَالَ مَا كُنْتُ أُرَى
أَنَّ الْجَهْدَ قَدْ بَلَغَ بِكَ هَذَا أَمَا تَجِدُ شَاةً قُلْتُ لَا قَالَ صُمْ
ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ أَوْ أَطْعِمْ سِتَّةَ مَسَاكِيْنَ لِكُلِّ مِسْكِيْنٍ نِصْفُ
صَاعٍ مِنْ طَعَامٍ وَاحْلِقْ رَأْسَكَ فَنَزَلَتْ فِيَّ خَاصَّةً وَهْيَ لَكُمْ
عَامَّةً.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মা‘কিল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি কা‘ব ইবনু উজরা-এর নিকট এই কূফার মাসজিদে বসে থাকাকালে সওমের ফিদ্য়া
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমার চেহারায় উকুন ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় আমাকে
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আনা হয়। তিনি তখন বললেন, আমি মনে
করি যে, এতে তোমার কষ্ট হচ্ছে। তুমি কি একটি বকরী সংগ্রহ করতে পার? আমি বললাম, না।
তিনি বললেন, তুমি তিনদিন সওম পালন কর অথবা ছয়জন দরিদ্রকে খাদ্য দান কর। প্রতিটি
দরিদ্রকে অর্ধ সা‘ খাদ্য দান করতে হবে এবং তোমার মাথার চুল কামিয়ে ফেল। তখন আমার
ব্যাপারে বিশেষভাবে আয়াত অবতীর্ণ হয়। তবে তোমাদের সকলের জন্য এই হুকুম। [১৮১৪]
(আ.প্র. ৪১৫৯, ই.ফা. ৪১৬০)
৬৫/২/৩৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ যখন তোমরা
নিরাপদ হবে, তখন তোমাদের মধ্যে যে কেউ হাজ্জ ও ‘উমরাহ একত্রে পালন করতে চায়, সে যা
কিছু সহজলভ্য তা দিয়ে কুরবানী করবে। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৬)
৪৫১৮
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عِمْرَانَ أَبِيْ بَكْرٍ
حَدَّثَنَا أَبُوْ رَجَاءٍ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
قَالَ أُنْزِلَتْ آيَةُ الْمُتْعَةِ فِيْ كِتَابِ اللهِ فَفَعَلْنَاهَا مَعَ
رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يُنْزَلْ قُرْآنٌ يُحَرِّمُهُ وَلَمْ
يَنْهَ عَنْهَا حَتَّى مَاتَ قَالَ رَجُلٌ بِرَأْيِهِ مَا شَاءَ.
‘ইমরান
ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, তামাত্তুর (‘উমরাহ ও হাজ্জ একসঙ্গে করে লাভবাব হওয়ার) আয়াত আল্লাহ্র কিতাবে
অবতীর্ণ হয়েছে। এরপর আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে তা)
করেছি এবং এর নিষিদ্ধতা ঘোষণা করে কুরআনের কোন আয়াত অবতীর্ণ হয়নি এবং নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইন্তিকাল পর্যন্ত তা থেকে নিষেধও করেনি। এ
ব্যাপারে এক ব্যক্তি নিজের ইচ্ছানুযায়ী মতামত ব্যক্ত করেছেন। [১৫৭১; মুসলিম ১৫/২৩,
হাঃ ১২২৬, আহমাদ ১৯৮৭১] (আ.প্র. ৪১৬০, ই.ফা. ৪১৬১)
৬৫/২/৩৪. অধ্যায়ঃ
‘‘তোমাদের পালনকর্তার
অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় তোমাদের কোন পাপ নেই।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৮)
৪৫১৯
مُحَمَّدٌ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرٍو
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَتْ عُكَاظُ وَمَجَنَّةُ
وَذُو الْمَجَازِ أَسْوَاقًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَتَأَثَّمُوْا أَنْ
يَتَّجِرُوْا فِي الْمَوَاسِمِ فَنَزَلَتْ : {لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ
تَبْتَغُوْا فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكُ} فِيْ مَوَاسِمِ الْحَجِّ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উকায, মাজান্না এবং যুল-মাজায নামক স্থানে জাহিলী যুগে বাজার ছিল। মুসলিমগণ
সেখানে হাজ্জ মওসুমে ব্যবসা করতে যাওয়া দূষণীয় মনে করত। তাই অবতীর্ণ হলঃ “তোমাদের
পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় তোমাদের কোন পাপ নেই” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৮)।
[১৭৭০] (আ.প্র. ৪১৬১, ই.ফা. ৪১৬২)
৬৫/২/৩৫. অধ্যায়ঃ
‘‘তারপর তোমরা দ্রুতগতিতে
সেখান থেকে ফিরে আস যেখান থেকে সবাই ফিরে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১৯৯)
৪৫২০
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
خَازِمٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا
كَانَتْ قُرَيْشٌ وَمَنْ دَانَ دِيْنَهَا يَقِفُوْنَ بِالْمُزْدَلِفَةِ وَكَانُوْا
يُسَمَّوْنَ الْحُمْسَ وَكَانَ سَائِرُ الْعَرَبِ يَقِفُوْنَ بِعَرَفَاتٍ فَلَمَّا
جَاءَ الإِسْلَامُ أَمَرَ اللهُ نَبِيَّهُ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَأْتِيَ
عَرَفَاتٍ ثُمَّ يَقِفَ بِهَا ثُمَّ يُفِيْضَ مِنْهَا فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى
{ثُمَّ أَفِيْضُوْا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ}
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কুরাইশ
এবং যারা তাদের দ্বীনের অনুসারী ছিল তারা (হাজ্জের সময়) মুযদালাফাহতে অবস্থান করত।
আর কুরাইশগণ নিজেদের ‘হুকুম’ ও (ধর্মে অটল) বলে অভিহিত করত এবং অপরাপর আরবগণ
আরাফাতে অবস্থান করত। অতঃপর ইসলামের আগমন ঘটলে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ‘আরাফাতে আসার, সেখানে ওকুফের এবং এরপর
সেখান থেকে ফেরার নির্দেশ দিলেন। ثُمَّ أَفِيضُوا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ
আয়াত আল্লাহ এ সম্পর্কেই ব্যক্ত করেছেন। [১৬৬৫] (আ.প্র. ৪১৬২, ই.ফা. ৪১৬৩)
৪৫২১
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ
سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ أَخْبَرَنِيْ كُرَيْبٌ عَنْ ابْنِ
عَبَّاسٍ قَالَ يَطَّوَّفُ الرَّجُلُ بِالْبَيْتِ مَا كَانَ حَلَالًا حَتَّى
يُهِلَّ بِالْحَجِّ فَإِذَا رَكِبَ إِلَى عَرَفَةَ فَمَنْ تَيَسَّرَ لَهُ
هَدِيَّةٌ مِنَ الإِبِلِ أَوِ الْبَقَرِ أَوِ الْغَنَمِ مَا تَيَسَّرَ لَهُ مِنْ
ذَلِكَ أَيَّ ذَلِكَ شَاءَ غَيْرَ أَنَّهُ إِنْ لَمْ يَتَيَسَّرْ لَهُ فَعَلَيْهِ
ثَلَاثَةُ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ وَذَلِكَ قَبْلَ يَوْمِ عَرَفَةَ فَإِنْ كَانَ
آخِرُ يَوْمٍ مِنَ الْأَيَّامِ الثَلَاثَةِ يَوْمَ عَرَفَةَ فَلَا جُنَاحَ
عَلَيْهِ ثُمَّ لِيَنْطَلِقْ حَتَّى يَقِفَ بِعَرَفَاتٍ مِنْ صَلَاةِ الْعَصْرِ
إِلَى أَنْ يَكُوْنَ الظَّلَامُ ثُمَّ لِيَدْفَعُوْا مِنْ عَرَفَاتٍ إِذَا
أَفَاضُوْا مِنْهَا حَتَّى يَبْلُغُوْا جَمْعًا الَّذِيْ يَبِيْتُوْنَ بِهِ ثُمَّ
لِيَذْكُرُوا اللهَ كَثِيْرًا وَأَكْثِرُوا التَّكْبِيْرَ وَالتَّهْلِيْلَ قَبْلَ
أَنْ تُصْبِحُوْا ثُمَّ أَفِيْضُوْا فَإِنَّ النَّاسَ كَانُوْا يُفِيْضُوْنَ
وَقَالَ اللهُ تَعَالَى {ثُمَّ أَفِيْضُوْا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ
وَاسْتَغْفِرُوا اللهَ إِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ} حَتَّى تَرْمُوا
الْجَمْرَةَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, তামাত্তু আদায়কারী ‘উমরাহ আদায়ের পর যদ্দিন হালাল অবস্থায় থাকবে তদ্দিন
বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করবে। তারপর হাজ্জের জন্য ইহ্রাম বাঁধবে। এরপর যখন ‘আরাফাতে
যাবে তখন উট, গরু, ছাগল ইত্যাদি যা মুহ্রিমের জন্য সহজলভ্য হয় তা মীনাতে কুরবানী
করবে। আর যে কুরবানীর সঙ্গতি রাখে না সে হাজ্জের দিনসমূহের মধ্যে তিনদিন সওম পালন
করবে। আর তা ‘আরাফার দিনের আগে হতে হবে। আর তিনদিনের শেষ দিন যদি ‘আরাফার দিন হয়,
তবে তাতে কোন দোষ নেই। তারপর ‘আরাফাত ময়দানে যাবে এবং সেখানে ‘আসরের সলাত হতে
সূর্যাস্তের অন্ধকার পর্যন্ত ‘ওকুফ (অবস্থান) করবে। এরপর ‘আরাফা হতে প্রত্যাবর্তন
করে মুযদালাফায় পৌঁছে সেখানে পুণ্য অর্জনের কাজ করতে থাকবে আর সেখানে আল্লাহ্কে
অধিক অথবা (রাবীর সন্দেহ) সবচেয়ে অধিক স্মরণ করবে। সেখানে ফাজ্র হওয়ার পূর্ব
পর্যন্ত তাকবীর ও তাহলীল পাঠ করবে। এরপর (মীনার দিকে) প্রত্যাবর্তন করবে যেভাবে
অন্যান্য লোক প্রত্যাবর্তন করে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “এরপর প্রত্যাবর্তন কর
সেখান হতে, যেখান হতে লোকজন প্রত্যাবর্তন করে এবং আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমাশীল, দয়াময়।” তারপর জামরায় প্রস্তর নিক্ষেপ করবে।
(আ.প্র. ৪১৬৩, ই.ফা. ৪১৬৪)
৬৫/২/৩৬. অধ্যায়ঃ
{وَمِنْهُمْ مَّنْ يَّقُوْلُ رَبَّنَآ اٰتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِي الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ
(201) }
‘‘এবং তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যে বলেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! এ দুনিয়াতেও আমাদের কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান কর এবং জাহান্নামের ‘আযাব থেকে আমাদের রক্ষা কর।’’[১] (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২০১)
‘‘এবং তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যে বলেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! এ দুনিয়াতেও আমাদের কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান কর এবং জাহান্নামের ‘আযাব থেকে আমাদের রক্ষা কর।’’[১] (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২০১)
৪৫২২
أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ عَبْدِ
الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ
{اللّٰهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً
وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ}
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই বলে দু‘আ করতেন ঃ اللهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
“হে আমাদের প্রভু! এ দুনিয়াতেও আমাদের কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান কর
এবং দোজখের ‘আযাব থেকে আমাদের রক্ষা কর” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২০১)। (আ.প্র. ৪১৬৪,
ই.ফা. ৪১৬৫)
[১] উপরোক্ত আয়াতটিকে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় পঠিতব্য দু‘আ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। কারণ উক্ত দু‘আ
ও আয়াতের দ্বারা বান্দা আল্লাহর নিকট দুনিয়ার সামগ্রিক কল্যাণ ও আখিরাতের যাবতীয় কল্যাণ
কামনা করে থাকে। আখিরাতের অনন্ত জীবনকে ভুলে গিয়ে যারা কেবল পার্থিব জীবনকে নিয়ে ব্যস্ত,
তাদেরকে এই বস্ত্তজগতের মোহ-মমতার প্রতি এত বিপুল পরিমাণে আকর্ষণ করে যে, শেষ পর্যন্ত
এই শ্রেণীর মানুষ আল্লাহকে ভুলে গিয়ে সীমাহীনভাবে পাপাসক্তিতে লিপ্ত হয়, স্বীয় স্বার্থ
হাসিলের জন্য প্রয়োজনে অন্যায়-অত্যাচার, অবিচার, ব্যভিচার ও লুণ্ঠনসহ যাবতীয় নৃশংসতা,
নিষ্ঠুরতার সীমা ছাড়িয়ে এক হিংস্র পশুতে পরিণত হয়। অবলীলায় সৃষ্টি জগতের প্রতিটি ক্ষেত্রে
স্বার্থপরতা, ভোগবাদিতা, লোলুপতা ও লাম্পট্য তাকে আল্লাহ বিমুখ করে দেয়। ফলে এই শ্রেণীর
মানুষদের মধ্য হতেই নাস্তিক্যবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত নাস্তিক হয়ে তাকে
দুনিয়া ত্যাগ করতে হয়।
পক্ষান্তরে আল্লাহয় বিশ্বাসী আর এক শ্রেণীর মানুষ দুনিয়ার প্রতি এতই ত্যক্ত, বিরক্ত যে তারা বিবাহ-শাদীতে অনাগ্রহী ব্যবসা-বাণিজ্যে অমনোযোগী, ঘর-সংসারের কাজে-কর্মে অনুৎসাহী হয়ে এক ধরনের বৈরাগ্য জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে কালাতিপাত করতে থাকে। বলা বাহুল্য, এই শ্রেণীর মানুষ সমাজ, দেশ, জাতি ও বিশ্ব সভ্যতার উপরে দুর্বহ বোঝার ন্যায় বিচরণ করছে। উল্লেখ্য, উপরোক্ত উভয় শ্রেণীর মানুষই মানবতা, সভ্যতা ও বিশ্ব বিবেকের বিচারে অবাঞ্ছিত, অনাকাঙ্ক্ষিত বটে। অতএব আলোচ্য প্রার্থনামূলক আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা এতদুভয়কেই এক নৈতিক, আধ্যাত্মিক, ব্যবহারিক তথা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনকে পরিমার্জিত ও সুষমামন্ডিত করার জন্য এক অভূতপূর্ব প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। আলোচ্য দু‘আর আয়াতে উভয় শ্রেণীকে এক সুসমন্বয় ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় উন্নীত করার সুচিন্তিত ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। আর এ বিষয়ের সংক্ষিপ্ত কথা এই যে, কেবল দুনিয়া দুনিয়া করে মহামূল্যবান জীবনকে শেষ করলে চলবে না, আখিরাত অবশ্যম্ভাবী। আবার আখিরাতের প্রতি মনোযোগ দিতে গিয়ে কেউ যেন সংসারবিরাগী হয়ে না যায়। কৃচ্ছ্র সাধনায়, বৈরাগ্য সাধনায় ইহ-পরকালের কোন কল্যাণ নেই, আল্লাহ প্রেমিক যেন এ কথাটিকে শিরোধার্য করে নেয়। উক্ত আয়াতের একান্ত ও মৌল লক্ষ্য এটাই। দুনিয়ার প্রতি আসক্তি আসার প্রয়োজন আছে, অতটুকু যতটুকু উপায়-উপকরণ ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবন যাপনে আবশ্যক। যেমন কবির ভাষায় প্রতিভাত হয়েছেঃ آب اندر در هلاك كشتى است - آب اندر زير كشتى ﭘشتى است (رومي رح)
নৌকা চলতে পানির আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। কিন্তু সেই পানি নৌকায় বেশী পরিমাণে প্রবেশ করলে নৌকার ধ্বংস ও নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সুতরাং এ দুনিয়ার সাথে একজন মু’মিনের সম্পর্ক তেমন, যেমন নৌকার সাথে পানির সম্পর্ক। একজন মু’মিনের জন্য দুনিয়ায় সতর্কতা আবশ্যক। যাতে সে এ ভব সাগরে চিরতরেই ডুবে না যায়। আসুন! এখন এ বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অমিয় বাণী থেকে হিদায়াত গ্রহণে মনোনিবেশ করি। সহীহুল বুখারীর বর্ণনায় নিম্নোক্ত সহীহ হাদীস, আহমাদ বিন হাম্বলের বর্ণনায় ও অন্যান্য গ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারীদের রিওয়ায়াতে আছে।
فقال البخاري: حدثنا معمر حدثنا عبد الوارث عن عبد العزيز عن أنس بن مالك قال: كان النبي - صلى الله عليه وسلم - يقول "اللهم ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار" وقال أحمد: حدثنا إسماعيل بن إبراهيم حدثنا عبد العزيز بن صهيب قال: سأل قتادة أنسا أي دعوة كان أكثر ما يدعوها النبي صلى الله عليه وسلم قال: يقول "اللهم ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار" وكان أنس إذا أراد أن يدعو بدعوة دعا بها وإذا أراد أن يدعو بدعاء دعا بها فيه ورواه مسلم وقال ابن أبي حاتم: حدثنا أبي حدثنا أبو نعيم حدثنا عبدالسلام بن شداد يعني أبا طالوت قال: كنت عند أنس بن مالك فقال له ثابت إن إخوانك يحبون أن تدعو لهم فقال: اللهم آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار وتحدثوا ساعة حتى إذا أرادوا القيام قال أبا حمزة: إن إخوانك يريدون القيام فادع الله لهم فقال: أتريدون أن أشقق لكم الْأمور إذا آتاكم الله في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة ووقاكم عذاب النار فقد آتاكم الخير كله. وقال أحمد أيضا: حدثنا محمد بن أبي عدي عن حميد عن ثابت عن أنس أن رسول الله - صلى الله عليه وسلم - عاد رجلا من المسلمين قد صار مثل الفرخ فقال له رسول الله - صلى الله عليه وسلم - "هل تدعو الله بشيء أو تسأله إياه" قال نعم: كنت أقول اللهم ما كنت معاقبي به في الآخرة فعجله لي في الدنيا. فقال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - "سبحان الله لا تطيقه أو لا تستطيعه فهلا قلت "ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار" قال فدعا الله فشفاه
অর্থঃ ইমাম বুখারী (রহ.) পরপর কয়েকজন বর্ণনাকারীর উল্লেখ করে আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলে দু‘আ করতেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাদের দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতের সমস্ত কল্যাণও দান কর এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে বাঁচাও। অতঃপর ইমাম আহমাদ বলেন, ক্বাতাদাহ আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন দু‘আটি বেশী বেশী করতেন? তিনি (উত্তরে) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘রাববানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া . . . . . . . . ওয়াক্বিনা ‘আযাবান নার’ এই দু‘আই বেশী বেশী করতেন। অতঃপর ইমাম মুসলিম বলেন, আনাস (রাঃ) দু‘আ করার ইচ্ছা করলে তিনিও উক্ত দু‘আ করতেন। আনাস বিন মালিক (রাঃ)-এর অন্য বর্ণনায় দেখা যায় তাঁকে ‘সাবিত’ নামক জনৈক তাবিয়ী বলেন যে, আপনার ভাইয়েরা কামনা করছে, আপনি তাদের জন্য একটু দু‘আ করুন, তখন তিনি উপরোক্ত দু‘আই করেন। আনাস হতে আর একটি ঘটনার উল্লেখ দেখা যায়, তা এই যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুসলিম রোগীকে ডাকলেন; যে স্বীয় রোগব্যাধির কারণে অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়েছিল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি কি আল্লাহর কাছে দু‘আর মাধ্যমে কোন কিছু চাও? লোকটি বলল, হ্যাঁ চাই। আর তা এই যে, আমি আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করছি, তিনি যেন আমাকে আখিরাতে শাস্তি না দিয়ে তাড়াতাড়ি এই দুনিয়াতেই শাস্তি দেন। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সুবহানাল্লাহ! ওহে! তোমার তা সহ্য করার ক্ষমতা নেই। কেন তুমি ‘রাববানা আতিনা . . . . . ওয়াক্বিনা ‘আযাবান্ নার’- এই দু‘আটি আল্লাহর নিকট করছ না? রাবী বলেন, অতঃপর এই দু‘আর ওয়াসীলায় আল্লাহ তা‘আলা উক্ত লোকটিকে রোগ-যন্ত্রণা হতে মুক্তি দেন ও সুস্থ করেন। সুবহানাল্লাহ! আলোচ্য আয়াত ও উল্লেখিত হাদীসসমূহ দ্বারা নিশ্চিতভাবেই প্রমাণিত হচ্ছে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আখিরাত উভয়টিকেই মানুষের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিধায় স্বীয় মুবারক দু‘আর মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের জন্য দু‘আ করতেন এবং আল্লাহ তা‘আলার বিধান ও মর্জি এ বিষয়ে এমন বলেই তিনি কুরআন মাজীদের দ্বারা তদীয় নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সমস্ত মু’মিনদেরকে দুনিয়ার কল্যাণ, আখিরাতের কল্যাণ ও জাহান্নাম হতে মুক্তির জন্য প্রার্থনা বাক্য শিক্ষা দিয়েছেন। যাতে একটা করতে গিয়ে আর একটা হালকা হয়ে না যায়। সুতরাং এ বিষয়টির উপসংহার করতে গিয়ে ফারসী ভাষায় রচিত আল্লাহর ওয়ালীর কবিতাখানি এখানে যথার্থই প্রণিধানযোগ্য। কবি বলেনঃ نمردانست كه دينا دوست دارد ু اكر دارد برائ دوست دارد (سعدي رح)
এ দুনিয়া আমার প্রকৃত বন্ধু নয়, তবে আমার পরম বন্ধু আল্লাহর কাজ করতে গিয়ে দুনিয়ার সাহায্য নিতে হয়। এজন্য যতটুকু একান্ত প্রয়োজন, হালাল-হারামের সীমার মধ্যে অবস্থান করে ঠিক ততটুকু দুনিয়াদারী করা দূষণীয় নয়। বরং আবশ্যক বটে।
পক্ষান্তরে আল্লাহয় বিশ্বাসী আর এক শ্রেণীর মানুষ দুনিয়ার প্রতি এতই ত্যক্ত, বিরক্ত যে তারা বিবাহ-শাদীতে অনাগ্রহী ব্যবসা-বাণিজ্যে অমনোযোগী, ঘর-সংসারের কাজে-কর্মে অনুৎসাহী হয়ে এক ধরনের বৈরাগ্য জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে কালাতিপাত করতে থাকে। বলা বাহুল্য, এই শ্রেণীর মানুষ সমাজ, দেশ, জাতি ও বিশ্ব সভ্যতার উপরে দুর্বহ বোঝার ন্যায় বিচরণ করছে। উল্লেখ্য, উপরোক্ত উভয় শ্রেণীর মানুষই মানবতা, সভ্যতা ও বিশ্ব বিবেকের বিচারে অবাঞ্ছিত, অনাকাঙ্ক্ষিত বটে। অতএব আলোচ্য প্রার্থনামূলক আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা এতদুভয়কেই এক নৈতিক, আধ্যাত্মিক, ব্যবহারিক তথা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনকে পরিমার্জিত ও সুষমামন্ডিত করার জন্য এক অভূতপূর্ব প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। আলোচ্য দু‘আর আয়াতে উভয় শ্রেণীকে এক সুসমন্বয় ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় উন্নীত করার সুচিন্তিত ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। আর এ বিষয়ের সংক্ষিপ্ত কথা এই যে, কেবল দুনিয়া দুনিয়া করে মহামূল্যবান জীবনকে শেষ করলে চলবে না, আখিরাত অবশ্যম্ভাবী। আবার আখিরাতের প্রতি মনোযোগ দিতে গিয়ে কেউ যেন সংসারবিরাগী হয়ে না যায়। কৃচ্ছ্র সাধনায়, বৈরাগ্য সাধনায় ইহ-পরকালের কোন কল্যাণ নেই, আল্লাহ প্রেমিক যেন এ কথাটিকে শিরোধার্য করে নেয়। উক্ত আয়াতের একান্ত ও মৌল লক্ষ্য এটাই। দুনিয়ার প্রতি আসক্তি আসার প্রয়োজন আছে, অতটুকু যতটুকু উপায়-উপকরণ ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবন যাপনে আবশ্যক। যেমন কবির ভাষায় প্রতিভাত হয়েছেঃ آب اندر در هلاك كشتى است - آب اندر زير كشتى ﭘشتى است (رومي رح)
নৌকা চলতে পানির আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। কিন্তু সেই পানি নৌকায় বেশী পরিমাণে প্রবেশ করলে নৌকার ধ্বংস ও নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সুতরাং এ দুনিয়ার সাথে একজন মু’মিনের সম্পর্ক তেমন, যেমন নৌকার সাথে পানির সম্পর্ক। একজন মু’মিনের জন্য দুনিয়ায় সতর্কতা আবশ্যক। যাতে সে এ ভব সাগরে চিরতরেই ডুবে না যায়। আসুন! এখন এ বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অমিয় বাণী থেকে হিদায়াত গ্রহণে মনোনিবেশ করি। সহীহুল বুখারীর বর্ণনায় নিম্নোক্ত সহীহ হাদীস, আহমাদ বিন হাম্বলের বর্ণনায় ও অন্যান্য গ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারীদের রিওয়ায়াতে আছে।
فقال البخاري: حدثنا معمر حدثنا عبد الوارث عن عبد العزيز عن أنس بن مالك قال: كان النبي - صلى الله عليه وسلم - يقول "اللهم ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار" وقال أحمد: حدثنا إسماعيل بن إبراهيم حدثنا عبد العزيز بن صهيب قال: سأل قتادة أنسا أي دعوة كان أكثر ما يدعوها النبي صلى الله عليه وسلم قال: يقول "اللهم ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار" وكان أنس إذا أراد أن يدعو بدعوة دعا بها وإذا أراد أن يدعو بدعاء دعا بها فيه ورواه مسلم وقال ابن أبي حاتم: حدثنا أبي حدثنا أبو نعيم حدثنا عبدالسلام بن شداد يعني أبا طالوت قال: كنت عند أنس بن مالك فقال له ثابت إن إخوانك يحبون أن تدعو لهم فقال: اللهم آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار وتحدثوا ساعة حتى إذا أرادوا القيام قال أبا حمزة: إن إخوانك يريدون القيام فادع الله لهم فقال: أتريدون أن أشقق لكم الْأمور إذا آتاكم الله في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة ووقاكم عذاب النار فقد آتاكم الخير كله. وقال أحمد أيضا: حدثنا محمد بن أبي عدي عن حميد عن ثابت عن أنس أن رسول الله - صلى الله عليه وسلم - عاد رجلا من المسلمين قد صار مثل الفرخ فقال له رسول الله - صلى الله عليه وسلم - "هل تدعو الله بشيء أو تسأله إياه" قال نعم: كنت أقول اللهم ما كنت معاقبي به في الآخرة فعجله لي في الدنيا. فقال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - "سبحان الله لا تطيقه أو لا تستطيعه فهلا قلت "ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار" قال فدعا الله فشفاه
অর্থঃ ইমাম বুখারী (রহ.) পরপর কয়েকজন বর্ণনাকারীর উল্লেখ করে আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলে দু‘আ করতেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাদের দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতের সমস্ত কল্যাণও দান কর এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে বাঁচাও। অতঃপর ইমাম আহমাদ বলেন, ক্বাতাদাহ আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন দু‘আটি বেশী বেশী করতেন? তিনি (উত্তরে) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘রাববানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া . . . . . . . . ওয়াক্বিনা ‘আযাবান নার’ এই দু‘আই বেশী বেশী করতেন। অতঃপর ইমাম মুসলিম বলেন, আনাস (রাঃ) দু‘আ করার ইচ্ছা করলে তিনিও উক্ত দু‘আ করতেন। আনাস বিন মালিক (রাঃ)-এর অন্য বর্ণনায় দেখা যায় তাঁকে ‘সাবিত’ নামক জনৈক তাবিয়ী বলেন যে, আপনার ভাইয়েরা কামনা করছে, আপনি তাদের জন্য একটু দু‘আ করুন, তখন তিনি উপরোক্ত দু‘আই করেন। আনাস হতে আর একটি ঘটনার উল্লেখ দেখা যায়, তা এই যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুসলিম রোগীকে ডাকলেন; যে স্বীয় রোগব্যাধির কারণে অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়েছিল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি কি আল্লাহর কাছে দু‘আর মাধ্যমে কোন কিছু চাও? লোকটি বলল, হ্যাঁ চাই। আর তা এই যে, আমি আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করছি, তিনি যেন আমাকে আখিরাতে শাস্তি না দিয়ে তাড়াতাড়ি এই দুনিয়াতেই শাস্তি দেন। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সুবহানাল্লাহ! ওহে! তোমার তা সহ্য করার ক্ষমতা নেই। কেন তুমি ‘রাববানা আতিনা . . . . . ওয়াক্বিনা ‘আযাবান্ নার’- এই দু‘আটি আল্লাহর নিকট করছ না? রাবী বলেন, অতঃপর এই দু‘আর ওয়াসীলায় আল্লাহ তা‘আলা উক্ত লোকটিকে রোগ-যন্ত্রণা হতে মুক্তি দেন ও সুস্থ করেন। সুবহানাল্লাহ! আলোচ্য আয়াত ও উল্লেখিত হাদীসসমূহ দ্বারা নিশ্চিতভাবেই প্রমাণিত হচ্ছে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আখিরাত উভয়টিকেই মানুষের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিধায় স্বীয় মুবারক দু‘আর মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের জন্য দু‘আ করতেন এবং আল্লাহ তা‘আলার বিধান ও মর্জি এ বিষয়ে এমন বলেই তিনি কুরআন মাজীদের দ্বারা তদীয় নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সমস্ত মু’মিনদেরকে দুনিয়ার কল্যাণ, আখিরাতের কল্যাণ ও জাহান্নাম হতে মুক্তির জন্য প্রার্থনা বাক্য শিক্ষা দিয়েছেন। যাতে একটা করতে গিয়ে আর একটা হালকা হয়ে না যায়। সুতরাং এ বিষয়টির উপসংহার করতে গিয়ে ফারসী ভাষায় রচিত আল্লাহর ওয়ালীর কবিতাখানি এখানে যথার্থই প্রণিধানযোগ্য। কবি বলেনঃ نمردانست كه دينا دوست دارد ু اكر دارد برائ دوست دارد (سعدي رح)
এ দুনিয়া আমার প্রকৃত বন্ধু নয়, তবে আমার পরম বন্ধু আল্লাহর কাজ করতে গিয়ে দুনিয়ার সাহায্য নিতে হয়। এজন্য যতটুকু একান্ত প্রয়োজন, হালাল-হারামের সীমার মধ্যে অবস্থান করে ঠিক ততটুকু দুনিয়াদারী করা দূষণীয় নয়। বরং আবশ্যক বটে।
৬৫/২/৩৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ প্রকৃতপক্ষে
সে কিন্তু ঘোর বিরোধী। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২০৪) وَقَالَ عَطَاءٌ النَّسْلُ الْحَيَوَانُ.
‘আতা বলেন, النَّسْلُজানোয়ার।
৪৫২৩
قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ
ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ تَرْفَعُهُ قَالَ أَبْغَضُ الرِّجَالِ
إِلَى اللهِ الْأَلَدُّ الْخَصِمُ.
وَقَالَ عَبْدُ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَقَالَ عَبْدُ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্র নিকট অতিশয় ঘৃণিত মানুষ হচ্ছে
অতিরিক্ত ঝগড়াটে ব্যক্তি। [২৪৫৭]
‘আবদুল্লাহ বলেন, আমার কাছে সুফ্ইয়ান হাদীস বর্ণনা করেন, সুফ্ইয়ান বলেন, আমার কাছে ইবনু জুরায়জ ইবনু আবূ মুলাইকাহ হতে ‘আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এই মর্মে বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪১৬৫, ই.ফা. ৪১৬৬)
‘আবদুল্লাহ বলেন, আমার কাছে সুফ্ইয়ান হাদীস বর্ণনা করেন, সুফ্ইয়ান বলেন, আমার কাছে ইবনু জুরায়জ ইবনু আবূ মুলাইকাহ হতে ‘আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এই মর্মে বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪১৬৫, ই.ফা. ৪১৬৬)
৬৫/২/৩৮. অধ্যায়ঃ
‘তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা
বেহেশতে চলে যাবে, যদিও এখনও তোমরা তাদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে
গত হয়েছে? তাদের উপর পতিত হয়েছিল অর্থ-সংকট ও দুঃখ-ক্লেশ। তারা এমনভাবে ভীত-শিহরিত
হয়েছিল যে, রসূল এবং তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদের বলতে হয়েছিলঃ কখন আসবে
আল্লাহর সাহায্য? হাঁ, আল্লাহর সাহায্য একান্তই কাছে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২১৪)
৪৫২৪
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ
جُرَيْجٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ يَقُوْلُ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {حَتّٰى إِذَا اسْتَيْأَسَ الرُّسُلُ وَظَنُّوْآ
أَنَّهُمْ قَدْ كُذِبُوْا} خَفِيْفَةً ذَهَبَ بِهَا هُنَاكَ وَتَلَا : {حَتّٰى
يَقُوْلَ الرَّسُوْلُ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مَعَه” مَتٰى نَصْرُ اللهِ أَلَآ
إِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِيْبٌ} فَلَقِيْتُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ فَذَكَرْتُ
لَهُ ذَلِكَ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহ্র বাণীঃ এমনকি যখন রসূলগণ নিরাশ হয়ে পড়ল এবং ভাবতে লাগল যে, তাদেরকে
মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে (সূরাহ ইউসুফ ১২/১১০)। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতসহ
সূরাহ আল-বাকারাহর আয়াতের শরণাপন্ন হন ও তিলাওয়াত করেন, যেমনঃ حَتَّى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَى نَصْرُ اللهِ أَلاَ إِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِيبٌ
এমনকি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর সঙ্গে ঈমান আনয়নকারীগণ বলে
উঠেছিলআল্লাহ্র সাহায্য কখন আসবে? হ্যাঁ, হ্যাঁ, আল্লাহ্র সাহায্য নিকটেই (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/২১৪)।
৬৫/২/৩৮. অধ্যায়ঃ
‘তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা
বেহেশতে চলে যাবে, যদিও এখনও তোমরা তাদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে
গত হয়েছে? তাদের উপর পতিত হয়েছিল অর্থ-সংকট ও দুঃখ-ক্লেশ। তারা এমনভাবে ভীত-শিহরিত
হয়েছিল যে, রসূল এবং তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদের বলতে হয়েছিলঃ কখন আসবে
আল্লাহর সাহায্য? হাঁ, আল্লাহর সাহায্য একান্তই কাছে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২১৪)
৬৫/২/৩৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের
স্ত্রীরা হল তোমাদের শস্যক্ষেত্র। যেভাবে ইচ্ছা তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে গমন
করতে পার। তবে তোমরা নিজেদের জন্য কিছু আগামী দিনের ব্যবস্থা করবে এবং আল্লাহ্কে
ভয় করবে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহর সঙ্গে তোমাদের সাক্ষাৎ হবেই এবং মু’মিনদের
সুসংবাদ দাও। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২২৩)
৪৫২৬
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ أَخْبَرَنَا
ابْنُ عَوْنٍ عَنْ نَافِعٍ قَالَ كَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا إِذَا
قَرَأَ الْقُرْآنَ لَمْ يَتَكَلَّمْ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْهُ فَأَخَذْتُ عَلَيْهِ
يَوْمًا فَقَرَأَ سُوْرَةَ الْبَقَرَةِ حَتَّى انْتَهَى إِلَى مَكَانٍ قَالَ
تَدْرِيْ فِيْمَ أُنْزِلَتْ قُلْتُ لَا قَالَ أُنْزِلَتْ فِيْ كَذَا وَكَذَا ثُمَّ
مَضَى
নাফি‘
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) যখন কুরআন তিলাওয়াত করতেন তখন কুরআন তিলাওয়াত হতে অবসর না
হয়ে কোন কথা বলতেন না। একদা আমি সূরাহ আল-বাকারাহ পাঠরত অবস্থায় তাঁকে পেলাম। পড়তে
পড়তে এক স্থানে তিনি পৌঁছলেন। তখন তিনি বললেন, তুমি জান, কী ব্যাপারে এ আয়াত
অবতীর্ণ হয়েছে? আমি বললাম, না। তিনি তখন বললেন, অমুক অমুক ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ
হয়েছে। তারপর আবার পাঠে অগ্রসর হলেন। [৪৫২৭] (আ.প্র. ৪১৬৭, ই.ফা. ৪১৬৮)
৬৫/২/৩৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের
স্ত্রীরা হল তোমাদের শস্যক্ষেত্র। যেভাবে ইচ্ছা তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে গমন
করতে পার। তবে তোমরা নিজেদের জন্য কিছু আগামী দিনের ব্যবস্থা করবে এবং আল্লাহ্কে
ভয় করবে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহর সঙ্গে তোমাদের সাক্ষাৎ হবেই এবং মু’মিনদের
সুসংবাদ দাও। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২২৩)
৪৫২৭
وَعَنْ عَبْدِ الصَّمَدِ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ حَدَّثَنِيْ
أَيُّوْبُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ {فَأْتُوْا حَرْثَكُمْ أَنّٰى شِئْتُم}
قَالَ يَأْتِيْهَا فِيْ رَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ
أَبِيْهِ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ.
‘আবদুস
সামাদ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেন, আমার পিতা, তিনি বলেন, আমার কাছে হাদীস বর্ণনা
করেন আইয়ুব, তিনি নাফি‘ থেকে আর নাফি‘ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে। فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ
“অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার” (সূরাহ আল-বাকারাহ
২/২২৩)। রাবী বলেন, স্ত্রীলোকের পশ্চাৎদিক দিয়ে সহবাস করতে পারে। মুহাম্মাদ ইবনু
ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা‘ঈদ তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘উবাইদুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে এবং
তিনি ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। [৪৫২৬] (আ.প্র. ৪১৬৭, ই.ফা. ৪১৬৮)
৬৫/২/২৮. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
৪৫২৮
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ
الْمُنْكَدِرِ سَمِعْتُ جَابِرًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَتْ الْيَهُوْدُ
تَقُوْلُ إِذَا جَامَعَهَا مِنْ وَرَائِهَا جَاءَ الْوَلَدُ أَحْوَلَ فَنَزَلَتْ
{نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوْا حَرْثَكُمْ أَنّٰى شِئْتُمْ وَقَدِّمُوْا
لِأَنْفُسِكُم}
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইয়াহূদীরা বলত যে, যদি কেউ স্ত্রীর পেছন দিক থেকে সহবাস করে তাহলে সন্তান
টেরা চোখের হয়। তখন (এর প্রতিবাদে) نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ
আয়াত অবতীর্ণ হয়। [মুসলিম ত্বলাক/১৮, হাঃ ১৪৩৫] (আ.প্র. ৪১৬৮, ই.ফা. ৪১৬৯)
৬৫/২/৪০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর যখন তোমরা
তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দিয়ে দাও এবং তারা তাদের ‘ইদ্দাত’কাল পূর্ণ করতে থাকে তখন
যদি তারা পরস্পর সম্মত হয়ে নিজেদের স্বামীদের বিধিমত বিয়ে করতে চায় তাহলে তোমরা
তাদের বাধা দিবে না। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩২)
৪৫২৯
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَامِرٍ
الْعَقَدِيُّ حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ رَاشِدٍ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ قَالَ
حَدَّثَنِيْ مَعْقِلُ بْنُ يَسَارٍ قَالَ كَانَتْ لِيْ أُخْتٌ تُخْطَبُ إِلَيَّ.
وَقَالَ إِبْرَاهِيْمُ عَنْ يُوْنُسَ عَنِ الْحَسَنِ حَدَّثَنِيْ مَعْقِلُ بْنُ يَسَارٍ ح حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنِ الْحَسَنِ أَنَّ أُخْتَ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ طَلَّقَهَا زَوْجُهَا فَتَرَكَهَا حَتَّى انْقَضَتْ عِدَّتُهَا فَخَطَبَهَا فَأَبَى مَعْقِلٌ فَنَزَلَتْ {فَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ}.
وَقَالَ إِبْرَاهِيْمُ عَنْ يُوْنُسَ عَنِ الْحَسَنِ حَدَّثَنِيْ مَعْقِلُ بْنُ يَسَارٍ ح حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنِ الْحَسَنِ أَنَّ أُخْتَ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ طَلَّقَهَا زَوْجُهَا فَتَرَكَهَا حَتَّى انْقَضَتْ عِدَّتُهَا فَخَطَبَهَا فَأَبَى مَعْقِلٌ فَنَزَلَتْ {فَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ}.
মা‘কিল
ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার এক বোনের বিয়ের পয়গাম আমার নিকট পেশ করা হয়। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন
যে, ইবরাহীম (রহ.) ইউনুস (রহ.) থেকে, তিনি হাসান বসরী (রহ.) থেকে এবং তিনি মা‘কির
ইবনু ইয়াসার (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন।
আবূ মা‘মার (রহ.) ....... হাসান (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, মা‘কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ)-এর বোনকে তার স্বামী তালাক দিয়ে আলাদা করে রাখে। যখন ইদ্দত কাল পূর্ণ হয় তখন তার স্বামী তাকে আবার পয়গাম পাঠায়। মা‘কিল (রাঃ) অমত করে পুনর্বিবাহে তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। فَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ “তখন যদি তারা পরস্পর সম্মত হয়ে নিজেদের স্বামীদের বিধিমত বিয়ে করতে চায় তাহলে তোমরা তাদের বাধা দিবে না” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩২)। [৫১৩০, ৫৩৩০, ৫৩৩১] (আ.প্র. ৪১৬৯, ই.ফা. ৪১৭০)
আবূ মা‘মার (রহ.) ....... হাসান (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, মা‘কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ)-এর বোনকে তার স্বামী তালাক দিয়ে আলাদা করে রাখে। যখন ইদ্দত কাল পূর্ণ হয় তখন তার স্বামী তাকে আবার পয়গাম পাঠায়। মা‘কিল (রাঃ) অমত করে পুনর্বিবাহে তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। فَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ “তখন যদি তারা পরস্পর সম্মত হয়ে নিজেদের স্বামীদের বিধিমত বিয়ে করতে চায় তাহলে তোমরা তাদের বাধা দিবে না” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩২)। [৫১৩০, ৫৩৩০, ৫৩৩১] (আ.প্র. ৪১৬৯, ই.ফা. ৪১৭০)
৬৫/২/৪১. অধ্যায়ঃ
{وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا يَّتَرَبَّصْنَ بِأَنْفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَّعَشْرًا ج فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيْمَا فَعَلْنَ فِيْٓ أَنْفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوْفِ ط وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ} يَعْفُوْنَ يَهَبْنَ.
তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুবরণ করে, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশদিন প্রতীক্ষা করবে। তারপর যখন তারা তাদের ‘ইদ্দাতকাল পূর্ণ করে নেবে, তখন বিধিমত তারা নিজেদের ব্যাপারে যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩৪)
তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুবরণ করে, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশদিন প্রতীক্ষা করবে। তারপর যখন তারা তাদের ‘ইদ্দাতকাল পূর্ণ করে নেবে, তখন বিধিমত তারা নিজেদের ব্যাপারে যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩৪)
৪৫৩০
أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ
زُرَيْعٍ عَنْ حَبِيْبٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ
قُلْتُ لِعُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ {وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ
وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا} قَالَ قَدْ نَسَخَتْهَا الآيَةُ الْأُخْرَى فَلِمَ
تَكْتُبُهَا أَوْ تَدَعُهَا قَالَ يَا ابْنَ أَخِيْ لَا أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْهُ
مِنْ مَكَانِهِ.
.
‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘উসমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাঃ)-কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে বললাম যে, এ আয়াত তো
অন্য আয়াত দ্বারা মানসূখ (রহিত) হয়ে গেছে। অতএব উক্ত আয়াত আপনি মুসহাফে কেন
লিখেছেন, (অথবা রাবী বলেন) কেন বর্জন করছেন না, তখন তিনি [‘উসমান (রাঃ)] বললেন, হে
ভাতিজা! আমি মুসহাফের স্থান থেকে কোন জিনিস পরিবর্তন করব না। [৪৫৩৬] (আ.প্র. ৪১৭০,
ই.ফা. ৪১৭১)
৬৫/২/৪১. অধ্যায়ঃ
৪৫৩১
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا شِبْلٌ عَنْ ابْنِ
أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ : {وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ
وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا} قَالَ كَانَتْ هَذِهِ الْعِدَّةُ تَعْتَدُّ عِنْدَ
أَهْلِ زَوْجِهَا وَاجِبٌ فَأَنْزَلَ اللهُ : {وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ
مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا ﺻﻠﮯج وَّصِيَّةً لِّأَزْوَاجِهِمْ مَّتَاعًا
إِلَى الْحَوْلِ غَيْرَ إِخْرَاجٍ ج فَإِنْ خَرَجْنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ
فِيْ مَا فَعَلْنَ فِيْٓ أَنْفُسِهِنَّ مِنْ مَّعْرُوْفٍ ط وَاللهُ عَزِيْزٌ
حَكِيْمٌ}. قَالَ : جَعَلَ اللهُ لَهَا تَمَامَ السَّنَةِ سَبْعَةَ أَشْهُرٍ وَعِشْرِيْنَ
لَيْلَةً وَصِيَّةً إِنْ شَاءَتْ سَكَنَتْ فِيْ وَصِيَّتِهَا وَإِنْ شَاءَتْ
خَرَجَتْ وَهْوَ قَوْلُ اللهِ تَعَالَى : {غَيْرَ إِخْرَاجٍ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلَا
جُنَاحَ عَلَيْكُمْ} فَالْعِدَّةُ كَمَا هِيَ وَاجِبٌ عَلَيْهَا زَعَمَ ذَلِكَ
عَنْ مُجَاهِدٍ وَقَالَ عَطَاءٌ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ نَسَخَتْ هَذِهِ الْآيَةُ
عِدَّتَهَا عِنْدَ أَهْلِهَا فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ وَهْوَ قَوْلُ اللهِ
تَعَالَى : {غَيْرَ إِخْرَاجٍ}.
قَالَ عَطَاءٌ إِنْ شَاءَتْ اعْتَدَّتْ عِنْدَ أَهْلِهِ وَسَكَنَتْ فِيْ وَصِيَّتِهَا وَإِنْ شَاءَتْ خَرَجَتْ لِقَوْلِ اللهِ تَعَالَى {فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيْمَا فَعَلْنَ} قَالَ عَطَاءٌ ثُمَّ جَاءَ الْمِيْرَاثُ فَنَسَخَ السُّكْنَى فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ وَلَا سُكْنَى لَهَا وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ بِهَذَا.
وَعَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ نَسَخَتْ هَذِهِ الْآيَةُ عِدَّتَهَا فِيْ أَهْلِهَا فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ لِقَوْلِ اللهِ {غَيْرَ إِخْرَاجٍ} نَحْوَهُ.
قَالَ عَطَاءٌ إِنْ شَاءَتْ اعْتَدَّتْ عِنْدَ أَهْلِهِ وَسَكَنَتْ فِيْ وَصِيَّتِهَا وَإِنْ شَاءَتْ خَرَجَتْ لِقَوْلِ اللهِ تَعَالَى {فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيْمَا فَعَلْنَ} قَالَ عَطَاءٌ ثُمَّ جَاءَ الْمِيْرَاثُ فَنَسَخَ السُّكْنَى فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ وَلَا سُكْنَى لَهَا وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ بِهَذَا.
وَعَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ نَسَخَتْ هَذِهِ الْآيَةُ عِدَّتَهَا فِيْ أَهْلِهَا فَتَعْتَدُّ حَيْثُ شَاءَتْ لِقَوْلِ اللهِ {غَيْرَ إِخْرَاجٍ} نَحْوَهُ.
মুজাহিদ
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا
আয়াতে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর পরিবারে থেকে ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। আয়াতে উল্লিখিত يَعْفُوْنَ
শব্দের অর্থيَهَبْنَ
দান করে। অনন্তর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেনঃ وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا وَصِيَّةً لِأَزْوَاجِهِمْ مَتَاعًا إِلَى الْحَوْلِ غَيْرَ إِخْرَاجٍ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِي أَنْفُسِهِنَّ مِنْ مَعْرُوفٍ وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ
“আর তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হবে, তারা (মৃত্যুর পূর্বে)
স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে দিয়ে তাদের জন্য এক বছরের ভরণপোষণের অসিয়াত করে
যাবে। কিন্তু যদি তারা নিজেরা বেরিয়ে যায় তবে বিধিমত তারা নিজেদের ব্যাপারে যা
করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ হবে না। আর আল্লাহ হলেন পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ” (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/২৪০)। রাবী বলেন, আল্লাহ তা‘আলা স্ত্রীর জন্য পূর্ণ বছর পূর্ণ করার
জন্য সাত মাস এবং বিশ রজনী নির্ধারিত করেছেন ওসীয়ত হিসেবে। সে ইচ্ছা করলে তার
ওসীয়তে থাকতে পারে, ইচ্ছা করলে বের হয়েও যেতে পারে। এ কথারই ইঙ্গিত করে আল্লাহ্র
বাণী ঃ غَيْرَ إِخْرَاجٍ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ
মোটকথা যেভাবেই হোক স্ত্রীর উপর ‘ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। মুজাহিদ থেকে এরূপই জানা
গেছে। কিন্তু ইমাম ‘আত্বা বলেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এই আয়াত স্ত্রীর
প্রতি তার স্বামীর বাড়িতে ‘ইদ্দত পালন করার হুকুম রহিত করে দিয়েছে। সুতরাং স্ত্রী
যথেচ্ছা ‘ইদ্দত পালন করতে পারে। আল্লাহ্র এই বাণীর দলীল বলে ঃ غَيْرَ إِخْرَاجٍ
ইমাম ‘আত্বা বলেন, স্ত্রী ইচ্ছা করলে স্বামীর পরিবারে থেকে ‘ইদ্দত পালন করতে পারে
এবং তার ওসীয়ত থাকতে পারে অথবা তথা হতে চলেও যেতে পারে। فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيْمَا فَعَلْنَ এর
আয়াতের মর্ম মুতাবিক।
ইমাম ‘আত্বা (রহ.) বলেন, তারপর মিরাস বা উত্তরাধিকারের হুকুম فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হল। সুতরাং ঘর ও বাসস্থানের নির্দেশ রহিত হয়ে যায়। কাজেই যথেচ্ছা স্ত্রী ‘ইদ্দত পালন করত পারে। আর তার জন্য ঘরের বা বাসস্থানের দাবী অগ্রাহ্য।
মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাদীস বর্ণনা করেন আমার নিকট ওরাকা’ ইবনু আবী নাজীহ্ থেকে আর তিনি মুজাহিদ থেকে এ সম্পর্কে এবং আরও আবূ নাজীহ্ ‘আত্বা থেকে এবং তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এই আয়াত স্ত্রীর ‘ইদ্দত স্বামীর বাড়িতে পালন করার হুকুম রহিত করে দেয়। সুতরাং স্ত্রী যথেচ্ছা ‘ইদ্দত পালন করতে পারে। আল্লাহ্র এই বাণী ঃ غَيْرَ إِخْرَاجٍ এবং অনুরূপ আয়াত এর দলীল অনুসারে। [৫৩৪৪] (আ.প্র. ৪১৭১, ই.ফা. ৪১৭২)
ইমাম ‘আত্বা (রহ.) বলেন, তারপর মিরাস বা উত্তরাধিকারের হুকুম فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হল। সুতরাং ঘর ও বাসস্থানের নির্দেশ রহিত হয়ে যায়। কাজেই যথেচ্ছা স্ত্রী ‘ইদ্দত পালন করত পারে। আর তার জন্য ঘরের বা বাসস্থানের দাবী অগ্রাহ্য।
মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাদীস বর্ণনা করেন আমার নিকট ওরাকা’ ইবনু আবী নাজীহ্ থেকে আর তিনি মুজাহিদ থেকে এ সম্পর্কে এবং আরও আবূ নাজীহ্ ‘আত্বা থেকে এবং তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এই আয়াত স্ত্রীর ‘ইদ্দত স্বামীর বাড়িতে পালন করার হুকুম রহিত করে দেয়। সুতরাং স্ত্রী যথেচ্ছা ‘ইদ্দত পালন করতে পারে। আল্লাহ্র এই বাণী ঃ غَيْرَ إِخْرَاجٍ এবং অনুরূপ আয়াত এর দলীল অনুসারে। [৫৩৪৪] (আ.প্র. ৪১৭১, ই.ফা. ৪১৭২)
৪৫৩২
حِبَّانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ
بْنُ عَوْنٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيْرِيْنَ قَالَ جَلَسْتُ إِلَى مَجْلِسٍ فِيْهِ
عُظْمٌ مِنَ الْأَنْصَارِ وَفِيْهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِيْ لَيْلَى
فَذَكَرْتُ حَدِيْثَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ فِيْ شَأْنِ سُبَيْعَةَ بِنْتِ
الْحَارِثِ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَلَكِنَّ عَمَّهُ كَانَ لَا يَقُوْلُ
ذَلِكَ فَقُلْتُ إِنِّيْ لَجَرِيْءٌ إِنْ كَذَبْتُ عَلَى رَجُلٍ فِيْ جَانِبِ
الْكُوْفَةِ وَرَفَعَ صَوْتَهُ قَالَ ثُمَّ خَرَجْتُ فَلَقِيْتُ مَالِكَ بْنَ
عَامِرٍ أَوْ مَالِكَ بْنَ عَوْفٍ قُلْتُ كَيْفَ كَانَ قَوْلُ ابْنِ مَسْعُوْدٍ
فِي الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا وَهْيَ حَامِلٌ فَقَالَ قَالَ ابْنُ
مَسْعُوْدٍ أَتَجْعَلُوْنَ عَلَيْهَا التَّغْلِيْظَ وَلَا تَجْعَلُوْنَ لَهَا
الرُّخْصَةَ لَنَزَلَتْ سُوْرَةُ النِّسَاءِ الْقُصْرَى بَعْدَ الطُّوْلَى.
وَقَالَ أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدٍ لَقِيْتُ أَبَا عَطِيَّةَ مَالِكَ بْنَ عَامِرٍ.
وَقَالَ أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدٍ لَقِيْتُ أَبَا عَطِيَّةَ مَالِكَ بْنَ عَامِرٍ.
মুহাম্মাদ
ইবনু সীরীন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি এমন একটি মজলিসে উপবিষ্ট ছিলাম যেখানে নেতৃস্থানীয় আনসারদের কতক ছিলেন
এবং তাঁদের মাঝে ‘আবদুর রহমান বিন আবূ লাইলা (রহ.)-ও ছিলেন। এরপর সুরাইয়া বিনতে
হারিস (রহ.) প্রসঙ্গে বর্ণিত ‘আবদুল্লাহ বিন উত্বা (রহ.)-এর হাদীসটি নিয়ে আলোচনা
করলাম, এরপর ‘আবদুর রহমান (রহ.) বললেন, “পক্ষান্তরে তাঁর চাচা এ রকম বলতেন না”
অনন্তর আমি বললাম, কূফায় বসবাসরত ব্যক্তিটি সম্পর্কে যদি আমি মিথ্যা বলি তবে আমি
হব চরম ধৃষ্ট এবং তিনি তাঁর স্বর উঁচু করলেন, তিনি বললেন, তারপর আমি বের হলাম এবং
মালিক বিন ‘আমির (রাঃ) মালিক ইবনু ‘আওফ (রহ.)-এর সঙ্গে আমি বললাম, গর্ভাবস্থায়
বিধবা রমণীর ব্যাপারে ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর মন্তব্য কী ছিল, বললেন যে ইবনু মাস‘ঊদ
(রাঃ) বলেছেন, তোমরা কি তার উপর কঠোরতা অবলম্বন করছ আর তার জন্য সহজ বিধানটি
অবলম্বন করছ না, সংক্ষিপ্ত সূরাহ নাসটি (সূরাহ ত্বালাক) দীর্ঘটি পরে অবতীর্ণ
হয়েছে। আইয়ুব (রহ.) মুহাম্মাদ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন, আবূ আতিয়াহ মালিক বিন
‘আমির (রহ.)-এর সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করেছিলাম। [৪৯১০] (আ.প্র. ৪১৭২, ই.ফা. ৪১৭৩)
৬৫/২/৪২. অধ্যায়ঃ
‘‘তোমরা সলাতের প্রতি
যত্নবান হবে বিশেষত মধ্যবর্তী সলাতের।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩৮)
৪৫৩৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ
أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ح و حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ قَالَ حَدَّثَنَا
مُحَمَّدٌ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم قَالَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ حَبَسُوْنَا عَنْ صَلَاةِ الْوُسْطَى
حَتَّى غَابَتْ الشَّمْسُ مَلَا اللهُ قُبُوْرَهُمْ وَبُيُوْتَهُمْ أَوْ
أَجْوَافَهُمْ شَكَّ يَحْيَى نَارًا
‘আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘আবদুর রহমান ....... ‘আলী (রাঃ) হতে
বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, খন্দক যুদ্ধের দিন
কাফিরগণ আমাদেরকে মধ্যবর্তী সলাত থেকে বিরত রাখে এমনকি এ অবস্থায় সূর্য অস্তমিত
হয়ে যায়। আল্লাহ তাদের কবর ও তাদের ঘরকে অথবা (রাবীর সন্দেহ) পেটকে আগুন দ্বারা
পূর্ণ করুক। [২৯৩১] (আ.প্র. ৪১৭৩, ই.ফা. ৪১৭৪)
৬৫/২/৪৩. অধ্যায়ঃ
‘‘এবং আল্লাহর উদ্দেশে তোমরা
বিনীতভাবে দাঁড়াবে।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩৮)
৪৫৩৪
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ
أَبِيْ خَالِدٍ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ عَنْ أَبِيْ عَمْرٍو
الشَّيْبَانِيِّ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنَّا نَتَكَلَّمُ فِي الصَّلَاةِ
يُكَلِّمُ أَحَدُنَا أَخَاهُ فِيْ حَاجَتِهِ حَتَّى نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ
{حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى وَقُوْمُوْا لِلهِ
قَانِتِيْنَ} فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوْتِ
যায়দ
ইবনু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা সলাতের মধ্যে কথাবার্তা বলতাম আর আমাদের কেউ অন্য ভাইয়ের প্রয়োজন নিয়ে
কথা বলতেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় ঃحَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلاَةِ الْوُسْطَى وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ
তখন আমাদেরকে চুপ থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। [১২০০] (আ.প্র. ৪১৭৪, ই.ফা. ৪১৭৫)
৬৫/২/৪৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{فَإِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا أَوْ رُكْبَانًا فَإِذَآ أَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ مَا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ}
وَقَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ : {وَسِعَ كُرْسِيُّهُ} : عِلْمُهُ’ يُقَالُ {بَسْطَةً} زِيَادَةً وَفَضْلًا. {أَفْرِغْ}أَنْزِلْ، {وَلَا يَئُوْدُهُ} : لَا يُثْقِلُهُ، آدَنِيْ : أَثْقَلَنِيْ وَالْآدُ وَالأَيْدُ : الْقُوَّةُ. {السِّنَةُ} : نُعَاسٌ. {لَمْ يَتَسَنَّهْ} : لَمْ يَتَغَيَّرْ. {فَبُهِتَ} :ذَهَبَتْ حُجَّتُهُ. {خَاوِيَةٌ} : لَا أَنِيْسَ فِيْهَا. {عُرُوْشُهَا} أَبْنِيَتُهَا. {السِّنَةُ} : نُعَاسٌ. {نُنْشِرُهَا} : نُخْرِجُهَا. {إِعْصَارٌ} : رِيْحٌ عَاصِفٌ تَهُبُّ مِنَ الْأَرْضِ إِلَى السَّمَاءِ كَعَمُوْدٍ فِيْهِ نَارٌ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ :{صَلْدًا} لَيْسَ عَلَيْهِ شَيْءٌ وَقَالَ عِكْرِمَةُ {وَابِلٌ}مَطَرٌ شَدِيْدٌ {الطَّلُّ}النَّدَى وَهَذَا مَثَلُ عَمَلِ الْمُؤْمِنِ يَتَسَنَّهْ يَتَغَيَّرْ.
‘‘তবে যদি তোমরা আশঙ্কা কর তবে পদচারী অথবা আরোহী অবস্থায়; যখন তোমরা নিরাপদ বোধ কর তখন আল্লাহ্কে স্মরণ করবে, যেভাবে তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যা তোমরা জানতে না।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩৯)
ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন, كُرْسِيُّهُ আল্লাহর কুরসীর অর্থ হলঃ عِلْمُهُ তাঁর জ্ঞান। আর بَسْطَةً অতিরিক্ত ও অধিক। أَفْرِغْ অবতীর্ণ কর। يَئُوْدُهُ ভারী ও বোঝা বোধ হয় না তাঁর। যেমন آدَنِيْ أَثْقَلَنِيْ শক্ত ও ভারী করেছে আমাকে। الآدُ وَالأَيْدُ শক্ত ও শক্তি। فَبُهِتَ তার দলীল-প্রমাণ শেষ হয়ে গেছে। خَاوِيَةٌ বিরান, জনশূন্য, عُرُوْشُهَا বুনিয়াদ ও ভিত্তি, السِّنَةُ তন্দ্রা, ঝিমুনি, نُنْشزُهَا আমি খাড়া করছি বা উঠাচ্ছি। إِعْصَارٌ ঝড়ো বাতাস বা ঘূর্ণি বায়ু যা ভূমি থেকে আকাশের দিকে প্রলম্বিত হয় এবং এর মধ্যে আগুন বা লু থাকে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেনঃ صَلْدًا মসৃণ পরিচ্ছ্ন্ন পাথর যার উপর কিছু্ই থাকে না। ‘ইকরামাহ বলেছেনঃ وَابِلٌ মুষলধারে বৃষ্টি। الطَّلُّ শিশির। এ দ্বারা ঈমানদার ব্যক্তির ‘আমালের উদাহরণ দেয়া হয়েছে। يَتَسَنَّهْ বিকৃত বা পরিবর্তিত হয়ে যায়নি।
وَقَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ : {وَسِعَ كُرْسِيُّهُ} : عِلْمُهُ’ يُقَالُ {بَسْطَةً} زِيَادَةً وَفَضْلًا. {أَفْرِغْ}أَنْزِلْ، {وَلَا يَئُوْدُهُ} : لَا يُثْقِلُهُ، آدَنِيْ : أَثْقَلَنِيْ وَالْآدُ وَالأَيْدُ : الْقُوَّةُ. {السِّنَةُ} : نُعَاسٌ. {لَمْ يَتَسَنَّهْ} : لَمْ يَتَغَيَّرْ. {فَبُهِتَ} :ذَهَبَتْ حُجَّتُهُ. {خَاوِيَةٌ} : لَا أَنِيْسَ فِيْهَا. {عُرُوْشُهَا} أَبْنِيَتُهَا. {السِّنَةُ} : نُعَاسٌ. {نُنْشِرُهَا} : نُخْرِجُهَا. {إِعْصَارٌ} : رِيْحٌ عَاصِفٌ تَهُبُّ مِنَ الْأَرْضِ إِلَى السَّمَاءِ كَعَمُوْدٍ فِيْهِ نَارٌ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ :{صَلْدًا} لَيْسَ عَلَيْهِ شَيْءٌ وَقَالَ عِكْرِمَةُ {وَابِلٌ}مَطَرٌ شَدِيْدٌ {الطَّلُّ}النَّدَى وَهَذَا مَثَلُ عَمَلِ الْمُؤْمِنِ يَتَسَنَّهْ يَتَغَيَّرْ.
‘‘তবে যদি তোমরা আশঙ্কা কর তবে পদচারী অথবা আরোহী অবস্থায়; যখন তোমরা নিরাপদ বোধ কর তখন আল্লাহ্কে স্মরণ করবে, যেভাবে তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যা তোমরা জানতে না।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৩৯)
ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন, كُرْسِيُّهُ আল্লাহর কুরসীর অর্থ হলঃ عِلْمُهُ তাঁর জ্ঞান। আর بَسْطَةً অতিরিক্ত ও অধিক। أَفْرِغْ অবতীর্ণ কর। يَئُوْدُهُ ভারী ও বোঝা বোধ হয় না তাঁর। যেমন آدَنِيْ أَثْقَلَنِيْ শক্ত ও ভারী করেছে আমাকে। الآدُ وَالأَيْدُ শক্ত ও শক্তি। فَبُهِتَ তার দলীল-প্রমাণ শেষ হয়ে গেছে। خَاوِيَةٌ বিরান, জনশূন্য, عُرُوْشُهَا বুনিয়াদ ও ভিত্তি, السِّنَةُ তন্দ্রা, ঝিমুনি, نُنْشزُهَا আমি খাড়া করছি বা উঠাচ্ছি। إِعْصَارٌ ঝড়ো বাতাস বা ঘূর্ণি বায়ু যা ভূমি থেকে আকাশের দিকে প্রলম্বিত হয় এবং এর মধ্যে আগুন বা লু থাকে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেনঃ صَلْدًا মসৃণ পরিচ্ছ্ন্ন পাথর যার উপর কিছু্ই থাকে না। ‘ইকরামাহ বলেছেনঃ وَابِلٌ মুষলধারে বৃষ্টি। الطَّلُّ শিশির। এ দ্বারা ঈমানদার ব্যক্তির ‘আমালের উদাহরণ দেয়া হয়েছে। يَتَسَنَّهْ বিকৃত বা পরিবর্তিত হয়ে যায়নি।
৪৫৩৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ
أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ إِذَا سُئِلَ عَنْ
صَلَاةِ الْخَوْفِ قَالَ يَتَقَدَّمُ الإِمَامُ وَطَائِفَةٌ مِنْ النَّاسِ
فَيُصَلِّيْ بِهِمْ الإِمَامُ رَكْعَةً وَتَكُوْنُ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ بَيْنَهُمْ
وَبَيْنَ الْعَدُوِّ لَمْ يُصَلُّوْا فَإِذَا صَلَّى الَّذِيْنَ مَعَهُ رَكْعَةً
اسْتَأْخَرُوْا مَكَانَ الَّذِيْنَ لَمْ يُصَلُّوْا وَلَا يُسَلِّمُوْنَ
وَيَتَقَدَّمُ الَّذِيْنَ لَمْ يُصَلُّوْا فَيُصَلُّوْنَ مَعَهُ رَكْعَةً ثُمَّ
يَنْصَرِفُ الإِمَامُ وَقَدْ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَيَقُوْمُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْ
الطَّائِفَتَيْنِ فَيُصَلُّوْنَ لِأَنْفُسِهِمْ رَكْعَةً بَعْدَ أَنْ يَنْصَرِفَ
الإِمَامُ فَيَكُوْنُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْ الطَّائِفَتَيْنِ قَدْ صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ فَإِنْ كَانَ خَوْفٌ هُوَ أَشَدَّ مِنْ ذَلِكَ صَلَّوْا رِجَالًا
قِيَامًا عَلَى أَقْدَامِهِمْ أَوْ رُكْبَانًا مُسْتَقْبِلِي الْقِبْلَةِ أَوْ
غَيْرَ مُسْتَقْبِلِيْهَا قَالَ مَالِكٌ قَالَ نَافِعٌ لَا أُرَى عَبْدَ اللهِ
بْنَ عُمَرَ ذَكَرَ ذَلِكَ إِلَّا عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
নাফি‘
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে যখন সলাতুল খাওফ (যুদ্ধক্ষেত্রে শত্র“র ভয় থাকা অবস্থায় সলাত)
প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হত তখন তিনি বলতেন, ইমাম সামনে যাবেন এবং একদল লোকও জামা‘আতে
শামিল হবে। তিনি তাদের সঙ্গে এক রাক‘আত সলাত আদায় করবেন এবং তাদের আর একদল
জামা‘আতে শামিল না হয়ে তাদের ও শত্র“র মাঝখানে থেকে যারা সলাত আদায় করেনি তাদের
পাহারা দিবে। ইমামের সঙ্গে যারা এক রাক‘আত সলাত আদায় করেছে তারা পেছনে গিয়ে যারা
এখনও সলাত আদায় করেনি তাদের স্থানে দাঁড়াবে কিন্তু সালাম ফেরাবে না। যারা সলাত
আদায় করেনি তারা আগে বাড়বে এবং ইমামের সঙ্গে এক রাক‘আত আদায় করবে। তারপর ইমাম সলাত
হতে নিষ্ক্রান্ত হবেন। কেননা তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। এরপর উভয় দল
দাঁড়িয়ে নিজে নিজে বাকি এক রাক‘আত ইমামের সলাত শেষে আদায় করে নেবে। তাহলে প্রত্যেক
জনেরই দু’ রাক‘আত সলাত আদায় হয়ে যাবে। ভয়-ভীতি এর চেয়েও অধিক হলে নিজে নিজে দাঁড়িয়ে
অথবা যানবাহনে আরোহী অবস্থায় কিবলার দিকে মুখ করে বা যেদিকে সম্ভব মুখ করে সলাত
আদায় করবে। ইমাম মালিক (রহ.) বলেন, ইমাম নাফি‘ (রহ.) বলেন, আমি অবশ্য মনে করি ইবনু
‘উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেই এই হাদীস বর্ণনা
করেছেন। [৯৪২] (আ.প্র. ৪১৭৫, ই.ফা. ৪১৭৬)
৬৫/২/৪৫. অধ্যায়ঃ
আর তোমাদের মধ্যে যারা
স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হবে, .....(সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৪০)
৪৫৩৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي الْأَسْوَدِ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ
بْنُ الْأَسْوَدِ وَيَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ قَالَا حَدَّثَنَا حَبِيْبُ بْنُ
الشَّهِيْدِ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ قَالَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ قُلْتُ
لِعُثْمَانَ هَذِهِ الْآيَةُ الَّتِيْ فِي الْبَقَرَةِ {وَالَّذِيْنَ
يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا} إِلَى قَوْلِهِ {غَيْرَ
إِخْرَاجٍ} قَدْ نَسَخَتْهَا الْأُخْرَى فَلِمَ تَكْتُبُهَا قَالَ تَدَعُهَا يَا
ابْنَ أَخِيْ لَا أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْهُ مِنْ مَكَانِهِ قَالَ حُمَيْدٌ أَوْ
نَحْوَ هَذَا
ইবনু
আবূ মুলাইকাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত।
তিনি বলেন, ইবনু যুবায়র (রাঃ) বললেন, আমি ‘উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, সূরাহ
আল-বাকারাহর এ আয়াতটি وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا কে
তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে ‘উসমান
(রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র। আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন
কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমাইদ (রহ.) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে
দিলেন। [৪৫৩০] (আ.প্র. ৪১৭৬, ই.ফা. ৪১৭৭)
৬৫/২/৪৬. অধ্যায়ঃ
আর স্মরণ কর যখন ইবরাহীম
বললঃ হে আমার পালনকর্তা! আমাকে দেখাও কীভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর। (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/২৬০)
৪৫৩৭
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ
أَخْبَرَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ وَسَعِيْدٍ عَنْ
أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم نَحْنُ أَحَقُّ بِالشَّكِّ مِنْ إِبْرَاهِيْمَ إِذْ قَالَ {رَبِّ أَرِنِيْ
كَيْفَ تُحْيِي الْمَوْتٰى قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِنْ قَالَ بَلٰى وَلٰكِنْ
لِيَطْمَئِنَّ قَلْبِيْ}.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, ইবরাহীম (‘আ.) যখন رَبِّ أَرِنِي كَيْفَ تُحْيِي الْمَوْتَى قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِنْ قَالَ بَلَى وَلَكِنْ لِيَطْمَئِنَّ قَلْبِي হে
আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে দেখাও কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত কর? তখন ইবরাহীম
(‘আ.)-এর তুলনায় সন্দেহ করার ব্যাপারে আমিই অগ্রসর ছিলাম । [৩৩৭২] (আ.প্র. ৪১৭৭,
ই.ফা. ৪১৭৮)
৬৫/২/৪৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ {أَيَوَدُّ أَحَدُكُمْ أَنْ تَكُوْنَ لَه” جَنَّةٌ مِّنْ نَخِيْلٍ وَّأَعْنَابٍ} إِلَى قَوْلِهِ {لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُوْنَ}.
‘‘তোমাদের কেউ কি চায় যে,
তার একটি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান থাকবে, যার পাদদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত হবে এবং
যাতে সব ধরনের ফলমূল থাকবে, যখন সে বার্ধক্যে উপনীত হবে আর তার থাকবে দুর্বল
সন্তান-সন্তুতি, তারপর বয়ে যাবে ঐ বাগানের উপর দিয়ে এক অগ্নিগর্ভ প্রবল ঘূর্ণিঝড়,
ফলে বাগানটি ভস্মীভূত হয়ে যাবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনাবলী
স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা করতে পার।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ
২/২৬৬)
৪৫৩৮
إِبْرَاهِيْمُ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ
سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ يُحَدِّثُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ
قَالَ وَسَمِعْتُ أَخَاهُ أَبَا بَكْرِ بْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ يُحَدِّثُ عَنْ
عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَوْمًا
لِأَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْمَ تَرَوْنَ هَذِهِ الْآيَةَ
نَزَلَتْ {أَيَوَدُّ أَحَدُكُمْ أَنْ تَكُوْنَ لَه” جَنَّةٌ} قَالُوا اللهُ
أَعْلَمُ فَغَضِبَ عُمَرُ فَقَالَ قُوْلُوْا نَعْلَمُ أَوْ لَا نَعْلَمُ فَقَالَ
ابْنُ عَبَّاسٍ فِيْ نَفْسِيْ مِنْهَا شَيْءٌ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ قَالَ
عُمَرُ يَا ابْنَ أَخِيْ قُلْ وَلَا تَحْقِرْ نَفْسَكَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
ضُرِبَتْ مَثَلًا لِعَمَلٍ قَالَ عُمَرُ أَيُّ عَمَلٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ
لِعَمَلٍ قَالَ عُمَرُ لِرَجُلٍ غَنِيٍّ يَعْمَلُ بِطَاعَةِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ
ثُمَّ بَعَثَ اللهُ لَهُ الشَّيْطَانَ فَعَمِلَ بِالْمَعَاصِيْ حَتَّى أَغْرَقَ
أَعْمَالَهُ
‘উবায়দ
ইবনু ‘উমায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
‘উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের জিজ্ঞেস করলেন যে,
أَيَوَدُّ أَحَدُكُمْ أَنْ تَكُونَ لَهُ جَنَّةٌ এ
আয়াতটি যে উপলক্ষে অবতীর্ণ হয়েছে, সে ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী? তখন তারা বললেন,
আল্লাহই জানেন। ‘উমার (রাঃ) এতে রেগে গিয়ে বললেন, বল আমরা জানি অথবা আমরা জানি না।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! এ ব্যাপারে আমার অন্তরে কিছুটা
ধারণা আছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, বৎস! বলে ফেল এবং নিজেকে তুচ্ছ ভেবো না। তখন ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটা কর্মের দৃষ্টান্ত হিসেবে পেশ করা হয়েছে। ‘উমার (রাঃ)
বললেন, কোন্ কর্মের? ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, একটি কর্মের। ‘উমার (রাঃ) বললেন,
এটি উদাহরণ হচ্ছে সেই ধনবান ব্যক্তির, যে মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ্র ‘ইবাদাত
করতে থাকে, এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রতি শায়ত্বকে প্রেরণ করেন। অতঃপর সে কাজ করে
শেষ পর্যন্ত তাঁর সকল সৎকর্ম বরবাদ করে ফেলে। (আ.প্র. ৪১৭৮, ই.ফা. ৪১৭৯)
৬৫/২/৪৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ কাকুতি-মিনতি
করে তারা মানুষের কাছে ভিক্ষা চায় না। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৭৩)
يُقَالُ : أَلْحَفَ عَلَيَّ، وَأَلَحَّ عَلَيَّ، وَأَحْفَانِيْ بِالْمَسْأَلَةِ فَيُحْفِكُمْ يُجْهِدْكُمْز.
أَلْحَفَ عَلَيَّ، وَأَلَحَّ عَلَيَّ এবং وَأَحْفَانِيْ بِالْمَسْأَلَةِ সবই একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। فَيُحْفِكُمْ জোর প্রচেষ্টা চালায়।
أَلْحَفَ عَلَيَّ، وَأَلَحَّ عَلَيَّ এবং وَأَحْفَانِيْ بِالْمَسْأَلَةِ সবই একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। فَيُحْفِكُمْ জোর প্রচেষ্টা চালায়।
৪৫৩৯
ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ
قَالَ حَدَّثَنِيْ شَرِيْكُ بْنُ أَبِيْ نَمِرٍ أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَسَارٍ
وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِيْ عَمْرَةَ الْأَنْصَارِيَّ قَالَا سَمِعْنَا
أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم لَيْسَ الْمِسْكِيْنُ الَّذِيْ تَرُدُّهُ التَّمْرَةُ وَالتَّمْرَتَانِ وَلَا
اللُّقْمَةُ وَلَا اللُّقْمَتَانِ إِنَّمَا الْمِسْكِيْنُ الَّذِيْ يَتَعَفَّفُ
وَاقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ يَعْنِيْ قَوْلَهُ {لَا يَسْأَلُوْنَ النَّاسَ
إِلْحَافًا}
‘আত্বা
ইবনু ইয়াসার এবং আবূ ‘আম্র আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা
উভয়ে বলেন যে, আমরা আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, একটি খেজুর কি দু’টি খেজুর আর এক গ্রাস কি দু’ গ্রাস
খাদ্য যাকে দ্বারে দ্বারে ঘোরাতে থাকে সে প্রকৃত মিসকীন নয়। মিসকীন তো সে, যে
ভিক্ষা করা থেকে বেঁচে থাকে। তোমরা (মিসকীন অর্থ) জানতে চাইলে আল্লাহ্র বাণী পাঠ
করতে পার لاَ يَسْأَلُونَ النَّاسَ إِلْحَافًا ।
[১৪৭৬] (আ.প্র. ৪১৭৯, ই.ফা. ৪১৮০)
৬৫/২/৪৯. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ অথচ আল্লাহ
ক্রয়-বিক্রয়কে বৈধ এবং সুদকে অবৈধ করেছেন- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৭৫)।
৪৫৪০
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ
حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا نَزَلَتْ الآيَاتُ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ
الْبَقَرَةِ فِي الرِّبَا قَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى
النَّاسِ ثُمَّ حَرَّمَ التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সুদ সম্পর্কে সূরাহ আল-বাকারাহর শেষ আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল তখন রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকেদের নিকট তা পাঠ করে শোনালেন। তারপর মদের
ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। [৪৫৯] (আ.প্র. ৪১৮০, ই.ফা. ৪১৮১)
৬৫/২/৫০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ সুদকে
নিশ্চিহ্ন করেন। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৭৬)
৪৫৪১
بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ
عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ الْأَعْمَشِ سَمِعْتُ أَبَا الضُّحَى يُحَدِّثُ
عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ لَمَّا أُنْزِلَتْ الْآيَاتُ
الْأَوَاخِرُ مِنْ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَتَلَاهُنَّ فِي الْمَسْجِدِ فَحَرَّمَ التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সূরাহ আল-বাকারাহর শেষ আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘর থেকে বের হলেন এবং মাসজিদে লোকেদেরকে তা পড়ে
শোনালেন। এরপর মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। [৪৫৯] (আ.প্র. ৪১৮১, ই.ফা. ৪১৮২)
৬৫/২/৫১. অধ্যায়ঃ
‘‘তারপর যদি তোমরা পরিত্যাগ
না কর, তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে তৈরি হয়ে যাও’’- (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/২৭৯)।
৪৫৪২
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ
قَالَتْ لَمَّا أُنْزِلَتْ الآيَاتُ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ قَرَأَهُنَّ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ فِي الْمَسْجِدِ وَحَرَّمَ التِّجَارَةَ
فِي الْخَمْرِ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সূরাহ আল-বাকারাহর শেষ আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাসজিদে তা পাঠ করে শুনান এবং মদের ব্যবসা
নিষিদ্ধ করে দেন। (আ.প্র. ৪১৮২, ই.ফা. ৪১৮৩)
৬৫/২/৫২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ খাতক (ঋণী)
যদি অভাবগ্রস্ত হয় তবে তার সচ্ছলতা আসা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেয়া উচিত। আর যদি
তোমরা ক্ষমা করে দাও, তা হবে তোমাদের জন্য অতি উত্তম কাজ, যদি তোমরা জানতে। (সূরাহ
আল-বাকারাহ ২/২৮০)
৪৫৪৩
وَ قَالَ لَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ سُفْيَانَ
عَنْ مَنْصُوْرٍ وَالأَعْمَشِ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ
قَالَتْ لَمَّا أُنْزِلَتْ الآيَاتُ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ قَامَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُنَّ عَلَيْنَا ثُمَّ حَرَّمَ
التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, সূরাহ আল-বাকারার শেষ দিকের আয়াতগুলো যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং আমাদের সামনে তা পাঠ করলেন। তারপর
মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। [৪৫৯] (আ.প্র. ৪১৮৩, ই.ফা. ৪১৮৪)
৬৫/২/৫৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর সেদিনকে ভয়
কর, যেদিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৮১)
৪৫৪৪
قَبِيْصَةُ بْنُ عُقْبَةَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ
عَاصِمٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ
آخِرُ آيَةٍ نَزَلَتْ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم آيَةُ الرِّبَا
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর অবতীর্ণ কৃত শেষ
আয়াতটি হল সুদ সম্পর্কিত। (আ.প্র. ৪১৮৪, ই.ফা. ৪১৮৫)
৬৫/২/৫৪. অধ্যায়ঃ
"তোমাদের মনে যা আছে তা
তোমরা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ আল্লাহ তোমাদের নিকট হতে তার হিসাব নেবেন। তারপর
যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে
সর্বশক্তিমান।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৮৪)
৪৫৪৫
مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ حَدَّثَنَا مِسْكِيْنٌ
عَنْ شُعْبَةَ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ مَرْوَانَ الْأَصْفَرِ عَنْ رَجُلٍ
مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ ابْنُ عُمَرَ أَنَّهَا قَدْ
نُسِخَتْ {وَإِنْ تُبْدُوْا مَا فِىْٓ أَنْفُسِكُمْ أَو تُخْفُوْهُ} الآيَةَ.
মারওয়ান
আল আসফার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের কোন একজন থেকে বর্ণনা করেন, আর
তিনি হচ্ছেন ইবনু ‘উমার (রাঃ) যে, وَإِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ
(তোমাদের অন্তরের কথা প্রকাশ কর আর গোপন কর তার হিসাব আল্লাহ তোমাদের থেকে নেবেন)
আয়াতটি রহিত হয়ে গেছে। [৪৫৪৬] (আ.প্র. ৪১৮৫, ই.ফা. ৪১৮৬)
৬৫/২/৫৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ রসূল ঈমান
এনেছেন ঐ সব বিষয়ের উপর যা তাঁর প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে তাঁর পালনকর্তার পক্ষ
থেকে এবং মু’মিনরাও ঈমান এনেছে। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৮৫)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ :
{إِصْرًا} عَهْدًا. وَيُقَالُ : غُفْرَانَكَ مَغْفِرَتَكَ فَاغْفِرْ لَنَا.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, إِصْرًا অঙ্গীকার বা প্রতিশ্রুতি, غُفْرَانَكَ অর্থ مَغْفِرَتَكَ, আর مَغْفِرَتَكَ অর্থ فَاغْفِرْ لَنَا -তোমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, অর্থাৎ আমাদের ক্ষমা করুন। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৮৫)
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, إِصْرًا অঙ্গীকার বা প্রতিশ্রুতি, غُفْرَانَكَ অর্থ مَغْفِرَتَكَ, আর مَغْفِرَتَكَ অর্থ فَاغْفِرْ لَنَا -তোমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, অর্থাৎ আমাদের ক্ষমা করুন। (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২৮৫)
৪৫৪৬
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا رَوْحٌ أَخْبَرَنَا
شُعْبَةُ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ مَرْوَانَ الْأَصْفَرِ عَنْ رَجُلٍ مِنْ
أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَحْسِبُهُ ابْنَ عُمَرَ
{وَإِنْ تُبْدُوْا مَا فِىْٓ أَنْفُسِكُمْ أَو تُخْفُوْهُ}قَالَ : نَسَخَتْهَا
الْآيَةُ الَّتِيْ بَعْدَهَا.
মারওয়ানুল
আসফার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন
সহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন আর তিনি ধারণা করেন যে, তিনি ইবনু ‘উমার (রাঃ) হবেন।
وَإِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ
আয়াতটি মানসুখ হয়ে গেছে। [৪৫৪৫] (আ.প্র. ৪১৮৬, ই.ফা. ৪১৮৭)
৬৫/৩/১. অধ্যায়ঃ
...... যার কতক আয়াত
সুস্পষ্ট দ্ব্যর্থহীন।
সূরাহ (৩) : আলে ‘ইমরান
تُقَاةٌ وَتَقِيَّةٌ وَاحِدَةٌ {صِرٌّ} : بَرْدٌ. {شَفَا حُفْرَةٍ} مِثْلُ شَفَا الرَّكِيَّةِ وَهْوَ حَرْفُهَا {تُبَوِّئُ} تَتَّخِذُ مُعَسْكَرًا. الْمُسَوَّمُ الَّذِيْ لَهُ سِيْمَاءٌ بِعَلَامَةٍ أَوْ بِصُوْفَةٍ، أَوْ بِمَا كَانَ. {رِبِّيُّوْنَ} الْجَمِيْعُ وَالْوَاحِدُ رِبِّيٌّ. {تَحُسُّوْنَهُمْ} : تَسْتَأْصِلُوْنَهُمْ قَتْلًا. {غُزًّا} وَاحِدُهَا غَازٍ. {سَنَكْتُبُ} : سَنَحْفَظُ. {نُزُلًا} ثَوَابًا، وَيَجُوْزُ : وَمُنْزَلٌ مِنْ عِنْدِ اللهِ كَقَوْلِكَ أَنْزَلْتُهُ.
وَقَالَ : مُجَاهِدٌ {وَالْخَيْلُ الْمُسَوَّمَةُ} الْمُطَهَّمَةُ الْحِسَانُ. قَالَ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ : {وَحَصُوْرًا} لَا يَأْتِي النِّسَاءَ. وَقَالَ عِكْرِمَةُ : مِنْ {فَوْرِهِمْ} مِنْ غَضَبِهِمْ يَوْمَ بَدْرٍ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ} النُّطْفَةِ تَخْرُجُ مَيِّتَةً وَيُخْرِجُ مِنْهَا الْحَيَّ. {الْإِبْكَارُ} أَوَّلُ الْفَجْرِ، وَالْعَشِيُّ مَيْلُ الشَّمْسِ- أُرَاهُ- إِلَى أَنْ تَغْرُبَ.
تُقَاةٌ وَتَقِيَّةٌ একই অর্থে ব্যবহৃত অর্থাৎ ভীতি ও সংযম, صِرٌّ ঠান্ডা। شَفَا حُفْرَةٍ কথাটি شَفَا الرَّكِيَّةِ এর মত অর্থাৎ গর্তের কিনারা। تُبَوِّئُ অস্ত্রে সজ্জিত সৈনিককে সারিবদ্ধ করছিল। الْمُسَوَّم কোন প্রতীক কিংবা অন্য কিছু দ্বারা চিহ্নিত করা। رِبِّيُّوْنَ বহুবচন। একবচনে رِبِّيٌّ আল্লাহ তা‘আলা ও আল্লাহ্পন্থী। تَحُسُّوْنَهُمْ তোমরা তাদের হত্যার দ্বারা সমূলে উৎপাটিত করছিলে। غُزًّا বহুবচন। একবচনে غَازٍ যোদ্ধা। سَنَكْتُبُ অচিরে আমি সংরক্ষণ করব। نُزُلًا প্রতিদান ও আতিথেয়তা হিসাবে। مُنْزَلٌ مِنْ عِنْدِ اللهِ পড়াও বৈধ। মুফাস্সির ইমাম মুজাহিদ (রহ.)-এর মতে الْخَيْلُ الْمُسَوَّمَةُ পরিপূর্ণ সুন্দর অশ্বপাল, ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন, حَصُوْرًا কামভাব নিয়ে কোন মহিলার কাছে যায় না। ‘ইকরামাহ (রাঃ) বলেন, فَوْرِهِمْ বাদরের দিনে তাদের ক্রোধ নিয়ে, মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ নিষ্প্রাণ বীর্য নির্গত হয় এরপর তা থেকে জীবিত বের হয়। الإِبْكَارُ ঊষাকাল। وَالْعَشِيُّ সূর্য ঢলে যাওয়া থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
وَقَالَ مُجَاهِدٌ : الْحَلَالُ وَالْحَرَامُ. {وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ} يُصَدِّقُ بَعْضُهُ بَعْضًا، كَقَوْلِهِ تَعَالَى :{وَمَا يُضِلُّ بِهٰٓ إِلَّا الْفَاسِقِيْنَ} وَكَقَوْلِهِ جَلَّ ذِكْرُهُ {وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ} وَكَقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَالَّذِيْنَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَّاٰتَاهُمْ تَقْوٰهُمْ} {زَيْغٌ} : شَكٌّ. {ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ}الْمُشْتَبِهَاتِ. {وَالرَّاسِخُوْنَ}يَعْلَمُوْنَ. {يَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِهِ}.
ইমাম মুজাহিদ (রহ.) বলেন যে, সেটি হচ্ছে হালাল আর হারাম সম্পর্কিত। وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ আর অন্যগুলো রূপক, একটি অন্যটির সত্যতা প্রমাণ করে। যেমনঃ আল্লাহর বাণীঃ وَمَا يُضِلُّ بِهٰٓ إِلَّا الْفَاسِقِيْنَ -‘‘তিনি পথ পরিত্যাগকারী ব্যতীত বস্তুত কাউকে বিভ্রান্ত করেন না।’’ আবার- وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ যারা অনুধাবন করে না আল্লাহ তাদের কলুষলিপ্ত করেন। (সূরাহ ইউনুস ১০/১০০)
তদুপরি আল্লাহর বাণীঃ وَالَّذِيْنَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَّاٰتَاهُمْ تَقْوٰهُمْ ‘‘যারা সৎপথ অবলম্বন করেছে, আল্লাহ্ তাদেরকে আরও অধিক হিদায়াত দান করেন এবং তাদেরকে তাকওয়ার তাওফীক দেন’’- (সূরাহ মুহাম্মাদ ৪৭/১৭)। زَيْغٌ -সন্দেহ, ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ -ফিতনা শব্দের অর্থ রূপক। وَالرَّاسِخُوْنَ যাঁরা জ্ঞানে সু-গভীর তারা জানে এবং বলে আমরা তা বিশ্বাস করি।
تُقَاةٌ وَتَقِيَّةٌ وَاحِدَةٌ {صِرٌّ} : بَرْدٌ. {شَفَا حُفْرَةٍ} مِثْلُ شَفَا الرَّكِيَّةِ وَهْوَ حَرْفُهَا {تُبَوِّئُ} تَتَّخِذُ مُعَسْكَرًا. الْمُسَوَّمُ الَّذِيْ لَهُ سِيْمَاءٌ بِعَلَامَةٍ أَوْ بِصُوْفَةٍ، أَوْ بِمَا كَانَ. {رِبِّيُّوْنَ} الْجَمِيْعُ وَالْوَاحِدُ رِبِّيٌّ. {تَحُسُّوْنَهُمْ} : تَسْتَأْصِلُوْنَهُمْ قَتْلًا. {غُزًّا} وَاحِدُهَا غَازٍ. {سَنَكْتُبُ} : سَنَحْفَظُ. {نُزُلًا} ثَوَابًا، وَيَجُوْزُ : وَمُنْزَلٌ مِنْ عِنْدِ اللهِ كَقَوْلِكَ أَنْزَلْتُهُ.
وَقَالَ : مُجَاهِدٌ {وَالْخَيْلُ الْمُسَوَّمَةُ} الْمُطَهَّمَةُ الْحِسَانُ. قَالَ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ : {وَحَصُوْرًا} لَا يَأْتِي النِّسَاءَ. وَقَالَ عِكْرِمَةُ : مِنْ {فَوْرِهِمْ} مِنْ غَضَبِهِمْ يَوْمَ بَدْرٍ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ} النُّطْفَةِ تَخْرُجُ مَيِّتَةً وَيُخْرِجُ مِنْهَا الْحَيَّ. {الْإِبْكَارُ} أَوَّلُ الْفَجْرِ، وَالْعَشِيُّ مَيْلُ الشَّمْسِ- أُرَاهُ- إِلَى أَنْ تَغْرُبَ.
تُقَاةٌ وَتَقِيَّةٌ একই অর্থে ব্যবহৃত অর্থাৎ ভীতি ও সংযম, صِرٌّ ঠান্ডা। شَفَا حُفْرَةٍ কথাটি شَفَا الرَّكِيَّةِ এর মত অর্থাৎ গর্তের কিনারা। تُبَوِّئُ অস্ত্রে সজ্জিত সৈনিককে সারিবদ্ধ করছিল। الْمُسَوَّم কোন প্রতীক কিংবা অন্য কিছু দ্বারা চিহ্নিত করা। رِبِّيُّوْنَ বহুবচন। একবচনে رِبِّيٌّ আল্লাহ তা‘আলা ও আল্লাহ্পন্থী। تَحُسُّوْنَهُمْ তোমরা তাদের হত্যার দ্বারা সমূলে উৎপাটিত করছিলে। غُزًّا বহুবচন। একবচনে غَازٍ যোদ্ধা। سَنَكْتُبُ অচিরে আমি সংরক্ষণ করব। نُزُلًا প্রতিদান ও আতিথেয়তা হিসাবে। مُنْزَلٌ مِنْ عِنْدِ اللهِ পড়াও বৈধ। মুফাস্সির ইমাম মুজাহিদ (রহ.)-এর মতে الْخَيْلُ الْمُسَوَّمَةُ পরিপূর্ণ সুন্দর অশ্বপাল, ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন, حَصُوْرًا কামভাব নিয়ে কোন মহিলার কাছে যায় না। ‘ইকরামাহ (রাঃ) বলেন, فَوْرِهِمْ বাদরের দিনে তাদের ক্রোধ নিয়ে, মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ নিষ্প্রাণ বীর্য নির্গত হয় এরপর তা থেকে জীবিত বের হয়। الإِبْكَارُ ঊষাকাল। وَالْعَشِيُّ সূর্য ঢলে যাওয়া থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
وَقَالَ مُجَاهِدٌ : الْحَلَالُ وَالْحَرَامُ. {وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ} يُصَدِّقُ بَعْضُهُ بَعْضًا، كَقَوْلِهِ تَعَالَى :{وَمَا يُضِلُّ بِهٰٓ إِلَّا الْفَاسِقِيْنَ} وَكَقَوْلِهِ جَلَّ ذِكْرُهُ {وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ} وَكَقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَالَّذِيْنَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَّاٰتَاهُمْ تَقْوٰهُمْ} {زَيْغٌ} : شَكٌّ. {ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ}الْمُشْتَبِهَاتِ. {وَالرَّاسِخُوْنَ}يَعْلَمُوْنَ. {يَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِهِ}.
ইমাম মুজাহিদ (রহ.) বলেন যে, সেটি হচ্ছে হালাল আর হারাম সম্পর্কিত। وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ আর অন্যগুলো রূপক, একটি অন্যটির সত্যতা প্রমাণ করে। যেমনঃ আল্লাহর বাণীঃ وَمَا يُضِلُّ بِهٰٓ إِلَّا الْفَاسِقِيْنَ -‘‘তিনি পথ পরিত্যাগকারী ব্যতীত বস্তুত কাউকে বিভ্রান্ত করেন না।’’ আবার- وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ যারা অনুধাবন করে না আল্লাহ তাদের কলুষলিপ্ত করেন। (সূরাহ ইউনুস ১০/১০০)
তদুপরি আল্লাহর বাণীঃ وَالَّذِيْنَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَّاٰتَاهُمْ تَقْوٰهُمْ ‘‘যারা সৎপথ অবলম্বন করেছে, আল্লাহ্ তাদেরকে আরও অধিক হিদায়াত দান করেন এবং তাদেরকে তাকওয়ার তাওফীক দেন’’- (সূরাহ মুহাম্মাদ ৪৭/১৭)। زَيْغٌ -সন্দেহ, ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ -ফিতনা শব্দের অর্থ রূপক। وَالرَّاسِخُوْنَ যাঁরা জ্ঞানে সু-গভীর তারা জানে এবং বলে আমরা তা বিশ্বাস করি।
৪৫৪৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ
إِبْرَاهِيْمَ التُّسْتَرِيُّ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ
مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ تَلَا رَسُوْلُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم هَذِهِ الْآيَةَ {هُوَ الَّذِيْٓ أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتٰبَ
مِنْهُ اٰيٰتٌ مُّحْكَمٰتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتٰبِ وَأُخَرُ مُتَشٰبِهٰتٌ ط
فَأَمَّا الَّذِيْنَ فِىْ قُلُوْبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ
مِنْهُ ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَآءَ تَأْوِيْلِهٰ ﺻ ج وَمَا يَعْلَمُ
تَأْوِيْلَه”ٓ إِلَّا اللهُ ﺻ ﻣ وَالرَّاسِخُوْنَ فِى الْعِلْمِ يَقُوْلُوْنَ
اٰمَنَّا بِهٰ لا كُلٌّ مِّنْ عِنْدِ رَبِّنَا ج وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُولُوا
الْأَلْبَابِ (7)} قَالَتْ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : فَإِذَا
رَأَيْتِ الَّذِيْنَ يَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ فَأُوْلَئِكِ الَّذِيْنَ
سَمَّى اللهُ فَاحْذَرُوْهُمْ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আয়াতটি هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ
............ إِلاَّ أُولُو الأَلْبَابِ
“তিনিই তোমার প্রতি এ কিতাব অবতীর্ণ করেছেন যার কতক আয়াত সুস্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন।
এগুলো কিতাবের মূল অংশ; আর অন্যগুলো রূপক; যাদের অন্তরে সত্য-লঙ্ঘন প্রবণতা রয়েছে
শুধু তারাই ফিতনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশে যা রূপক তার অনুসরণ করে। আল্লাহ
ব্যতীত অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তাঁরা বলেন, আর যারা
জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে ঃ আমরা এতে ঈমান এনেছি, এসবই আমাদের প্রভুর তরফ থেকে
এসেছে। জ্ঞানবানরা ব্যতীত কেউ নাসীহাত গ্রহণ করে না” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/৭) নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাঠ করলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোষণা করেছেন যে, যারা মুতাশাবাহাত আয়াতের
পেছনে ছুটে তাদের যখন তুমি দেখবে তখন মনে করবে যে, তাদের কথাই আল্লাহ তা‘আলা
কুরআনে বলেছেন। সুতরাং তাদের ব্যাপারে সাবধান থাকবে। [মুসলিম ৪৭/১, হাঃ ২৬৬৫,
আহমাদ ২৬২৫৭] (আ.প্র. ৪১৮৭, ই.ফা. ৪১৮৮)
৬৫/৩/২. অধ্যায়ঃ
‘‘তাঁকে ও তার সন্তানদের
তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করছি বিতাড়িত শয়তানের কবল থেকে বাঁচার জন্য।’’ (সূরাহ আলু
‘ইমরান ৩/৩৬)(আ.প্র. ৪১৮৭, ই.ফা. ৪১৮৮)
৪৫৪৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ
أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
مَا مِنْ مَوْلُوْدٍ يُوْلَدُ إِلَّا وَالشَّيْطَانُ يَمَسُّهُ حِيْنَ يُوْلَدُ
فَيَسْتَهِلُّ صَارِخًا مِنْ مَسِّ الشَّيْطَانِ إِيَّاهُ إِلَّا مَرْيَمَ
وَابْنَهَا ثُمَّ يَقُوْلُ أَبُوْ هُرَيْرَةَ وَاقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ.
{وَإِنِّيْ أُعِيْذُهَا بِكَ وَذُرِّيَّتَهَا مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ}.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, প্রত্যেক নবপ্রসূত বাচ্চার জন্মের সময়
শয়তান অবশ্যই তাকে স্পর্শ করে। ফলে শয়তানের স্পর্শমাত্র সে চীৎকার করে উঠে। কিন্তু
মারইয়াম (‘আ.) ও তাঁর পুত্র ঈসা (‘আ.)-কে পারেনি। তারপর আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলতেন,
যদি তোমরা (এটা জানতে) ইচ্ছা কর তাহলে পড় ঃ وَإِنِّي أُعِيذ ُهَا بِكَ وَذ ُرِّيَّتَهَا مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ।
[৩২৮৬] (আ.প্র. ৪১৮৮, ই.ফা. ৪১৮৯)
৬৫/৩/৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৫১
عَلِيٌّ هُوَ ابْنُ أَبِيْ هَاشِمٍ سَمِعَ هُشَيْمًا
أَخْبَرَنَا الْعَوَّامُ بْنُ حَوْشَبٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ
رَجُلًا أَقَامَ سِلْعَةً فِي السُّوْقِ فَحَلَفَ فِيْهَا لَقَدْ أَعْطَى بِهَا
مَا لَمْ يُعْطِهِ لِيُوْقِعَ فِيْهَا رَجُلًا مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ فَنَزَلَتْ
{إِنَّ الَّذِيْنَ يَشْتَرُوْنَ بِعَهْدِ اللهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا
قَلِيْلًا} إِلَى آخِرِ الآيَةِ.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু আবূ আউফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ব্যক্তি বিক্রি করার জন্য বাজারে কিছু জিনিস আনলো এবং কসম করে বলতে শুরু করলো যে,
লোকে এ জিনিসের এতো এতো মূল্য দিচ্ছে। অথচ কেউ তা দেয়নি। এ মিথ্যা বলার উদ্দেশ্য
হলো, মুসলিমরা যাতে তার এ কথা বিশ্বাস করে তার নিকট থেকে জিনিসটা ক্রয় করে। এর
পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত অবতীর্ণ হল ঃ “যারা আল্লাহ্র প্রতিকৃত প্রতিশ্র“তি ও কসম
নগণ্য মূল্যে বিক্রি করে, আখিরাতে তাদের অংশে কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না। ক্বিয়ামাতের
দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র
করবেন না। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে কঠিন কষ্টদায়ক শাস্তি” (সূরাহ আলু ইমরান
৩/৭৭)। [২০৮৮] (আ.প্র. ৪১৯০, ই.ফা. ৪১৯১)
৪৫৫২
نَصْرُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ نَصْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ
بْنُ دَاوُدَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ
امْرَأَتَيْنِ كَانَتَا تَخْرِزَانِ فِيْ بَيْتٍ أَوْ فِي الْحُجْرَةِ فَخَرَجَتْ
إِحْدَاهُمَا وَقَدْ أُنْفِذَ بِإِشْفَى فِيْ كَفِّهَا فَادَّعَتْ عَلَى
الْأُخْرَى فَرُفِعَ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ رَسُوْلُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم : لَوْ يُعْطَى النَّاسُ بِدَعْوَاهُمْ لذَهَبَ دِمَاءُ
قَوْمٍ وَأَمْوَالُهُمْ ذَكِّرُوْهَا بِاللهِ وَاقْرَءُوْا عَلَيْهَا : {إِنَّ
الَّذِيْنَ يَشْتَرُوْنَ بِعَهْدِ اللهِ} فَذَكَّرُوْهَا فَاعْتَرَفَتْ فَقَالَ
ابْنُ عَبَّاسٍ : قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : الْيَمِيْنُ عَلَى الْمُدَّعَى
عَلَيْهِز.
ইবনু
আবূ মুলাইকাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দু’জন
মহিলা একটি ঘর কিংবা একটি কক্ষে সেলাই করছিল। হাতের তালুতে সুই বিদ্ধ হয়ে তাদের
একজন বেরিয়ে পড়ল এবং অপরজনের বিরুদ্ধে সুই ফুটিয়ে দেয়ার অভিযোগ করল। এই ব্যাপারটি
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট পেশ করা হলে তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যদি শুধুমাত্র দাবীর উপর ভিত্তি করে মানুষের দাবী
পূরণ করা হয়, তাহলে তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা থাকবে না। সুতরাং তোমরা বিবাদীদের
আল্লাহ্র নামে শপথ করাও এবং এ আয়াত তার সম্মুখে পাঠ কর। এরপর তারা তাকে শপথ করাল
এবং সে নিজ দোষ স্বীকার করল। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন যে, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, শপথ বিবাদীকে করতে হবে। [২৫১৪; মুসলিম
৩০/১, হাঃ ১৭১১] (আ.প্র. ৪১৯১, ই.ফা. ৪১৯২)
৬৫/৩/৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আপনি বলে দিনঃ
হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল, আমরা
যেন আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদাত না করি- (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/৬৪)।
৪৫৫৩
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى عَنْ هِشَامٍ عَنْ مَعْمَرٍ ح
وحَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ
عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ
أَبُوْ سُفْيَانَ مِنْ فِيْهِ إِلَى فِيَّ قَالَ انْطَلَقْتُ فِي الْمُدَّةِ
الَّتِيْ كَانَتْ بَيْنِيْ وَبَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
فَبَيْنَا أَنَا بِالشَّأْمِ إِذْ جِيْءَ بِكِتَابٍ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم إِلَى هِرَقْلَ قَالَ وَكَانَ دَحْيَةُ الْكَلْبِيُّ جَاءَ بِهِ فَدَفَعَهُ
إِلَى عَظِيْمِ بُصْرَى فَدَفَعَهُ عَظِيْمُ بُصْرَى إِلَى هِرَقْلَ قَالَ فَقَالَ
هِرَقْلُ هَلْ هَا هُنَا أَحَدٌ مِنْ قَوْمِ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِيْ يَزْعُمُ
أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالُوْا نَعَمْ قَالَ فَدُعِيْتُ فِيْ نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ
فَدَخَلْنَا عَلَى هِرَقْلَ فَأُجْلِسْنَا بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ
أَقْرَبُ نَسَبًا مِنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِيْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ
أَبُوْ سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا فَأَجْلَسُوْنِيْ بَيْنَ يَدَيْهِ وَأَجْلَسُوْا
أَصْحَابِيْ خَلْفِيْ ثُمَّ دَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ قُلْ لَهُمْ إِنِّيْ
سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِيْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَإِنْ كَذَبَنِيْ
فَكَذِّبُوْهُ قَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ وَايْمُ اللهِ لَوْلَا أَنْ يُؤْثِرُوْا
عَلَيَّ الْكَذِبَ لَكَذَبْتُ ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ سَلْهُ كَيْفَ حَسَبُهُ
فِيْكُمْ قَالَ قُلْتُ هُوَ فِيْنَا ذُوْ حَسَبٍ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ
مَلِكٌ قَالَ قُلْتُ لَا قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُوْنَهُ بِالْكَذِبِ
قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَ مَا قَالَ قُلْتُ لَا قَالَ أَيَتَّبِعُهُ أَشْرَافُ
النَّاسِ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ قُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ يَزِيْدُوْنَ
أَوْ يَنْقُصُوْنَ قَالَ قُلْتُ لَا بَلْ يَزِيْدُوْنَ قَالَ هَلْ يَرْتَدُّ
أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِيْنِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيْهِ سَخْطَةً لَهُ قَالَ
قُلْتُ لَا قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوْهُ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَكَيْفَ
كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قَالَ قُلْتُ تَكُوْنُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ
سِجَالًا يُصِيْبُ مِنَّا وَنُصِيْبُ مِنْهُ قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قَالَ قُلْتُ
لَا وَنَحْنُ مِنْهُ فِيْ هَذِهِ الْمُدَّةِ لَا نَدْرِيْ مَا هُوَ صَانِعٌ
فِيْهَا قَالَ وَاللهِ مَا أَمْكَنَنِيْ مِنْ كَلِمَةٍ أُدْخِلُ فِيْهَا شَيْئًا
غَيْرَ هَذِهِ قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ لَا.
ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُ إِنِّيْ سَأَلْتُكَ عَنْ حَسَبِهِ فِيْكُمْ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ فِيْكُمْ ذُوْ حَسَبٍ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِيْ أَحْسَابِ قَوْمِهَا وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ فِيْ آبَائِهِ مَلِكٌ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ آبَائِهِ وَسَأَلْتُكَ عَنْ أَتْبَاعِهِ أَضُعَفَاؤُهُمْ أَمْ أَشْرَافُهُمْ فَقُلْتَ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُوْنَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَعَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ يَذْهَبَ فَيَكْذِبَ عَلَى اللهِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِيْنِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيْهِ سَخْطَةً لَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا وَكَذَلِكَ الإِيْمَانُ إِذَا خَالَطَ بَشَاشَةَ الْقُلُوْبِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيْدُوْنَ أَمْ يَنْقُصُوْنَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يُزِيْدُوْنَ وَكَذَلِكَ الإِيْمَانُ حَتَّى يَتِمَّ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوْهُ فَزَعَمْتَ أَنَّكُمْ قَاتَلْتُمُوْهُ فَتَكُوْنُ الْحَرْبُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ سِجَالًا يَنَالُ مِنْكُمْ وَتَنَالُوْنَ مِنْهُ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى ثُمَّ تَكُوْنُ لَهُمْ الْعَاقِبَةُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ لَا يَغْدِرُ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لَا تَغْدِرُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَقُلْتُ لَوْ كَانَ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ ائْتَمَّ بِقَوْلٍ قِيْلَ قَبْلَهُ قَالَ ثُمَّ قَالَ بِمَ يَأْمُرُكُمْ قَالَ قُلْتُ يَأْمُرُنَا بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ وَالصِّلَةِ وَالْعَفَافِ قَالَ إِنْ يَكُ مَا تَقُوْلُ فِيْهِ حَقًّا فَإِنَّهُ نَبِيٌّ وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ وَلَمْ أَكُ أَظُنُّهُ مِنْكُمْ وَلَوْ أَنِّيْ أَعْلَمُ أَنِّيْ أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَأَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمَيْهِ وَلَيَبْلُغَنَّ مُلْكُهُ مَا تَحْتَ قَدَمَيَّ.
قَالَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيْهِ.
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُوْلِ اللهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيْمِ الرُّوْمِ سَلَامٌ عَلَى مَنْ اتَّبَعَ الْهُدَى أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّيْ أَدْعُوْكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلَامِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الْأَرِيْسِيِّيْنَ وَ {قُلْ يٰٓأَهْلَ الْكِتٰبِ تَعَالَوْا إِلٰى كَلِمَةٍ سَوَآءٍم بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا اللهَ} إِلَى قَوْلِهِ {اشْهَدُوْا بِأَنَّا مُسْلِمُوْنَ} فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ ارْتَفَعَتْ الْأَصْوَاتُ عِنْدَهُ وَكَثُرَ اللَّغَطُ وَأُمِرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا قَالَ فَقُلْتُ لِأَصْحَابِيْ حِيْنَ خَرَجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِيْ كَبْشَةَ إِنَّهُ لَيَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الْأَصْفَرِ فَمَا زِلْتُ مُوْقِنًا بِأَمْرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللهُ عَلَيَّ الإِسْلَامَ قَالَ الزُّهْرِيُّ فَدَعَا هِرَقْلُ عُظَمَاءَ الرُّوْمِ فَجَمَعَهُمْ فِيْ دَارٍ لَهُ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّوْمِ هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلَاحِ وَالرَّشَدِ آخِرَ الْأَبَدِ وَأَنْ يَثْبُتَ لَكُمْ مُلْكُكُمْ قَالَ فَحَاصُوْا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الْأَبْوَابِ فَوَجَدُوْهَا قَدْ غُلِّقَتْ فَقَالَ عَلَيَّ بِهِمْ فَدَعَا بِهِمْ فَقَالَ إِنِّيْ إِنَّمَا اخْتَبَرْتُ شِدَّتَكُمْ عَلَى دِيْنِكُمْ فَقَدْ رَأَيْتُ مِنْكُمْ الَّذِيْ أَحْبَبْتُ فَسَجَدُوْا لَهُ وَرَضُوْا عَنْهُ.
ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُ إِنِّيْ سَأَلْتُكَ عَنْ حَسَبِهِ فِيْكُمْ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ فِيْكُمْ ذُوْ حَسَبٍ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِيْ أَحْسَابِ قَوْمِهَا وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ فِيْ آبَائِهِ مَلِكٌ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ آبَائِهِ وَسَأَلْتُكَ عَنْ أَتْبَاعِهِ أَضُعَفَاؤُهُمْ أَمْ أَشْرَافُهُمْ فَقُلْتَ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُوْنَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَعَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ يَذْهَبَ فَيَكْذِبَ عَلَى اللهِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِيْنِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيْهِ سَخْطَةً لَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا وَكَذَلِكَ الإِيْمَانُ إِذَا خَالَطَ بَشَاشَةَ الْقُلُوْبِ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيْدُوْنَ أَمْ يَنْقُصُوْنَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يُزِيْدُوْنَ وَكَذَلِكَ الإِيْمَانُ حَتَّى يَتِمَّ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوْهُ فَزَعَمْتَ أَنَّكُمْ قَاتَلْتُمُوْهُ فَتَكُوْنُ الْحَرْبُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ سِجَالًا يَنَالُ مِنْكُمْ وَتَنَالُوْنَ مِنْهُ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى ثُمَّ تَكُوْنُ لَهُمْ الْعَاقِبَةُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ لَا يَغْدِرُ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لَا تَغْدِرُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لَا فَقُلْتُ لَوْ كَانَ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ ائْتَمَّ بِقَوْلٍ قِيْلَ قَبْلَهُ قَالَ ثُمَّ قَالَ بِمَ يَأْمُرُكُمْ قَالَ قُلْتُ يَأْمُرُنَا بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ وَالصِّلَةِ وَالْعَفَافِ قَالَ إِنْ يَكُ مَا تَقُوْلُ فِيْهِ حَقًّا فَإِنَّهُ نَبِيٌّ وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ وَلَمْ أَكُ أَظُنُّهُ مِنْكُمْ وَلَوْ أَنِّيْ أَعْلَمُ أَنِّيْ أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَأَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمَيْهِ وَلَيَبْلُغَنَّ مُلْكُهُ مَا تَحْتَ قَدَمَيَّ.
قَالَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيْهِ.
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُوْلِ اللهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيْمِ الرُّوْمِ سَلَامٌ عَلَى مَنْ اتَّبَعَ الْهُدَى أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّيْ أَدْعُوْكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلَامِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الْأَرِيْسِيِّيْنَ وَ {قُلْ يٰٓأَهْلَ الْكِتٰبِ تَعَالَوْا إِلٰى كَلِمَةٍ سَوَآءٍم بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا اللهَ} إِلَى قَوْلِهِ {اشْهَدُوْا بِأَنَّا مُسْلِمُوْنَ} فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ ارْتَفَعَتْ الْأَصْوَاتُ عِنْدَهُ وَكَثُرَ اللَّغَطُ وَأُمِرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا قَالَ فَقُلْتُ لِأَصْحَابِيْ حِيْنَ خَرَجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِيْ كَبْشَةَ إِنَّهُ لَيَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الْأَصْفَرِ فَمَا زِلْتُ مُوْقِنًا بِأَمْرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللهُ عَلَيَّ الإِسْلَامَ قَالَ الزُّهْرِيُّ فَدَعَا هِرَقْلُ عُظَمَاءَ الرُّوْمِ فَجَمَعَهُمْ فِيْ دَارٍ لَهُ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّوْمِ هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلَاحِ وَالرَّشَدِ آخِرَ الْأَبَدِ وَأَنْ يَثْبُتَ لَكُمْ مُلْكُكُمْ قَالَ فَحَاصُوْا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الْأَبْوَابِ فَوَجَدُوْهَا قَدْ غُلِّقَتْ فَقَالَ عَلَيَّ بِهِمْ فَدَعَا بِهِمْ فَقَالَ إِنِّيْ إِنَّمَا اخْتَبَرْتُ شِدَّتَكُمْ عَلَى دِيْنِكُمْ فَقَدْ رَأَيْتُ مِنْكُمْ الَّذِيْ أَحْبَبْتُ فَسَجَدُوْا لَهُ وَرَضُوْا عَنْهُ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) আমাকে সামনাসামনি হাদীস শুনিয়েছেন। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন,
আমাদের আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মধ্যে সম্পাদিত
চুক্তির মেয়াদকালে আমি ভ্রমণে বের হয়েছিলাম। আমি তখন সিরিয়ায় অবস্থান করছিলাম। তখন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের নিকট একখানা
পত্র পৌঁছান হল। দাহ্্ইয়াতুল কালবী এ চিঠিটা বসরার শাসককে দিয়েছিলেন। এরপর তিনি
হিরাক্লিয়াসের নিকট পৌঁছিয়ে দিলেন। পত্র পেয়ে হিরাক্লিয়াস বললেন, নাবীর দাবীদার
ব্যক্তির গোত্রের কেউ এখানে আছে কি? তারা বলল, হ্যাঁ আছে। কয়েকজন কুরাইশীসহ আমাকে
ডাকা হলে আমরা হিরাক্লিয়াসের নিকট গেলাম এবং আমাদেরকে তাঁর সম্মুখে বসানো হল। এরপর
তিনি বললেন, নাবীর দাবীদার ব্যক্তির তোমাদের মধ্যে নিকটতম আত্মীয় কে? আবূ সুফ্ইয়ান
বলেন, উত্তরে বললাম, আমিই। তারা আমাকে তার সম্মুখে এবং আমার সাথীদেরকে আমার পেছনে
বসালেন। তারপর দোভাষীকে ডাকলেন এবং বললেন, এদেরকে জানিয়ে দাও যে, আমি নাবীর
দাবীদার ব্যক্তিটি সম্পর্কে (আবূ সুফ্ইয়ানকে) কিছু জিজ্ঞেস করলে সে যদি আমার নিকট
মিথ্যা বলে তোমরা তার মিথ্যা বলা সম্পর্কে ধরবে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, যদি তাদের
পক্ষ থেকে আমাকে মিথ্যুক প্রমাণের আশঙ্কা না থাকত তাহলে আমি অবশ্যই মিথ্যা বলতাম।
এরপর দোভাষীকে বললেন, একে জিজ্ঞেস কর যে, তোমাদের মধ্যে এ ব্যক্তির বংশ মর্যাদা
কেমন? আবূ সুফ্ইয়ান বললেন, তিনি আমাদের মধ্যে অভিজাত বংশের অধিকারী। তিনি জিজ্ঞেস
করলেন যে, তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ কি রাজা-বাদশাহ ছিলেন? আমি বললাম, না। তিনি
জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর বর্তমানের কথাবার্তার পূর্বে তোমরা তাঁকে কখনো মিথ্যাচারের
অপবাদ দিয়েছ কি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা তাঁর অনুসরণ
করছে, না দুর্বলগণ? আমি বললাম, বরং দুর্বলগণ। তিনি বললেন, তাদের সংখ্যা বাড়ছে না
কমছে। আমি বললাম, বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বললেন, তাঁর ধর্মে প্রবিষ্ট হওয়ার পর
তাঁর প্রতি বিতৃষ্ণাবশতঃ কেউ কি ধর্ম ত্যাগ করে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তোমরা
তাঁর বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ করেছ কি? বললাম, জ্বী হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাঁর বিরুদ্ধে
যুদ্ধের ফলাফল কী হয়েছে? আমি বললাম, আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল হল ঃ
একবার তিনি জয়ী হন, আর একবার আমরা জয়ী হই। তিনি বললেন, তিনি প্রতিশ্রতি ভঙ্গ
করেননি? বললাম, না। তবে বর্তমানে আমরা একটি সন্ধির মেয়াদে আছি। দেখি এতে তিনি কী
করেন। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, আল্লাহ্র শপথ! এটি ব্যতীত অন্য কোন কথা ঢুকিয়ে দেয়া
আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। বললেন, তাঁর পূর্বে এমন কথা কেউ বলেছে কি? বললাম, না।
তারপর তিনি তাঁর দোভাষীকে বললেন যে, একে জানিয়ে দাও যে, আমি তোমাকে তোমাদের মধ্যে
সে ব্যক্তির বংশমর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তারপর তুমি বলেছ যে, সে আমাদের
মধ্যে সম্ভ্রান্ত। তদ্রুপ রসূলগণ শ্রেষ্ঠ বংশেই জন্মলাভ করে থাকেন। আমি জিজ্ঞেস
করেছিলাম যে, তাঁর পূর্বপুরুষের কেউ রাজা-বাদশাহ ছিলেন কিনা? তুমি বলেছ ‘না’। তাই
আমি বলছি যে, যদি তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ রাজা-বাদশাহ থাকতেন তাহলে বলতাম, তিনি
তাঁর পূর্বপুরুষদের রাজত্ব ফিরে পেতে চাচ্ছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে,
দুর্বলগণ তাঁর অনুসারী, না সম্ভ্রান্তগণ? তুমি বলেছ, দুর্বলগণই। আমি বলেছি যে,
যুগে যুগে দুর্বলগণই রসূলদের অনুসারী হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, এ দাবীর
পূর্বে তোমরা কখনও তাঁকে মিথ্যাবাদিতার অপবাদ দিয়েছিলে কি? তুমি উত্তরে বলেছ যে,
না। তাতে আমি বুঝেছি যে, যে ব্যক্তি প্রথমে মানুষদের সঙ্গে মিথ্যাচার ত্যাগ করেন,
তারপর আল্লাহ্র সঙ্গে মিথ্যাচারিতা করবেন, তা হতে পারে না। আমি তোমাদের জিজ্ঞেস
করেছিলাম যে, তাঁর ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর প্রতি বিরক্ত হয়ে কেউ ধর্ম ত্যাগ
করে কিনা? তুমি বলেছ, ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি বলছি, ঈমান এভাবেই পূর্ণতা লাভ
করে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছ কি? তুমি বলেছ যে,
যুদ্ধ করেছ এবং তাঁর ফলাফল হচ্ছে পানি তোলার বালতির মত। কখনো তোমাদের বিরুদ্ধে
তারা জয়লাভ করে আবার কখনো তাদের বিরুদ্ধে তোমরা জয়লাভ কর। এমনিভাবেই রসূলদের
পরীক্ষা করা হয়, তারপর চূড়ান্ত বিজয় তাদেরই হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি
প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ, না। তদ্রুপ রসূলগণ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন না।
আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁর পূর্বে কেউ এ দাবী উত্থাপন করেছিল কিনা? তুমি বলেছ,
না। আমি বলি যদি কেউ তাঁর পূর্বে এ ধরনের দাবী করে থাকত তাহলে আমি মনে করতাম এ
ব্যক্তি পূর্ববর্তী দাবীর অনুসরণ করছে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, তারপর তিনি জিজ্ঞেস
করলেন, তিনি তোমাদের কী কাজের হুকুম দেন? আমি বললাম, সলাত কায়িম করতে, যাকাত
প্রদান করতে, আত্মীয়তা রক্ষা করতে এবং পাপকাজ থেকে পবিত্র থাকার হুকুম দেন।
হিরাক্লিয়াস বললেন, তাঁর সম্পর্কে তোমার বক্তব্য যদি সঠিক হয়, তাহলে তিনি ঠিকই নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম), তিনি আবির্ভূত হবেন তা আমি জানতাম বটে তবে
তোমাদের মধ্যে আবির্ভূত হবেন তা মনে করিনি। যদি আমি তাঁর সান্নিধ্যে পৌঁছার সুযোগ
পেতাম তাহলে আমি তাঁর সাক্ষাৎকে অগ্রাধিকার দিতাম। যদি আমি তাঁর নিকট অবস্থান
করতাম তাহলে আমি তাঁর পদযুগল ধুয়ে দিতাম। আমার পায়ের নিচের জমিন পর্যন্ত তাঁর
রাজত্ব সীমা পৌঁছে যাবে।
আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পত্রখানি আনতে বললেন। এরপর পাঠ করতে বললেন। তাতে লেখা ছিল ঃ
দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে, আল্লাহ্র রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে রোমের অধিপতি হিরাক্লিয়াসের প্রতি। হিদায়াতের অনুসারীর প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। এরপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি, ইসলাম গ্রহণ করুন, মুক্তি পাবেন। ইসলাম গ্রহণ করুন, আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে থাকেন তাহলে সকল প্রজার পাপরাশিও আপনার উপর নিপতিত হবে। “হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই যে, আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ‘ইবাদাত করব না, কোন কিছুতেই তাঁর সঙ্গে শরীক করব না। আর আমাদের একে অন্যকে আল্লাহ ব্যতীত প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করব না। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বল, তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম।”
যখন তিনি পত্র পাঠ সমাপ্ত করলেন চতুর্দিকে উচ্চ রব উঠল এবং গুঞ্জন বৃদ্ধি পেল। তারপর তাঁর নির্দেশে আমাদের বাইরে নিয়ে আসা হল। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, আমরা বেরিয়ে আসার পর আমি আমার সাথীদের বললাম যে, আবূ কাবশার সন্তানের তো বিস্তার ঘটেছে। রোমের রাষ্ট্রনায়ক পর্যন্ত তাঁকে ভয় পায়। তখন থেকে আমার মনে এ দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছিল যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দ্বীন অতি সত্বর বিজয় লাভ করবে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা আমাকে ইসলামে দীক্ষিত করলেন। ইমাম যুহরী (রহ.) বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রোমের নেতৃবৃন্দকে ডেকে একটি কক্ষে একত্রিত করলেন এবং বললেন, হে রোমবাসী! তোমরা কি আজীবন সৎপথ ও সফলতার প্রত্যাশী এবং তোমরা কি চাও তোমাদের রাজত্ব অটুট থাকুক? এতে তারা বন্য-গর্দভের মত প্রাণপণে পলায়নরত হল। কিন্তু দরজাগুলো সবই বন্ধ পেল। এরপর বাদশাহ নির্দেশ দিলেন যে, তাদের সবাইকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তিনি তাদের সবাইকে ডাকলেন এবং বললেন, তোমাদের ধর্মের উপর তোমাদের দৃঢ়তা আমি পরীক্ষা করলাম। আমি যা আশা করেছিলাম তা তোমাদের থেকে পেয়েছি। তখন সবাই তাঁকে সাজদাহ্ করল এবং তাঁর উপর সন্তুষ্ট রইল। [৭] (আ.প্র. ৪১৯২, ই.ফা. ৪১৯৩)
আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পত্রখানি আনতে বললেন। এরপর পাঠ করতে বললেন। তাতে লেখা ছিল ঃ
দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে, আল্লাহ্র রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে রোমের অধিপতি হিরাক্লিয়াসের প্রতি। হিদায়াতের অনুসারীর প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। এরপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি, ইসলাম গ্রহণ করুন, মুক্তি পাবেন। ইসলাম গ্রহণ করুন, আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে থাকেন তাহলে সকল প্রজার পাপরাশিও আপনার উপর নিপতিত হবে। “হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই যে, আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ‘ইবাদাত করব না, কোন কিছুতেই তাঁর সঙ্গে শরীক করব না। আর আমাদের একে অন্যকে আল্লাহ ব্যতীত প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করব না। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বল, তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম।”
যখন তিনি পত্র পাঠ সমাপ্ত করলেন চতুর্দিকে উচ্চ রব উঠল এবং গুঞ্জন বৃদ্ধি পেল। তারপর তাঁর নির্দেশে আমাদের বাইরে নিয়ে আসা হল। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, আমরা বেরিয়ে আসার পর আমি আমার সাথীদের বললাম যে, আবূ কাবশার সন্তানের তো বিস্তার ঘটেছে। রোমের রাষ্ট্রনায়ক পর্যন্ত তাঁকে ভয় পায়। তখন থেকে আমার মনে এ দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছিল যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দ্বীন অতি সত্বর বিজয় লাভ করবে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা আমাকে ইসলামে দীক্ষিত করলেন। ইমাম যুহরী (রহ.) বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রোমের নেতৃবৃন্দকে ডেকে একটি কক্ষে একত্রিত করলেন এবং বললেন, হে রোমবাসী! তোমরা কি আজীবন সৎপথ ও সফলতার প্রত্যাশী এবং তোমরা কি চাও তোমাদের রাজত্ব অটুট থাকুক? এতে তারা বন্য-গর্দভের মত প্রাণপণে পলায়নরত হল। কিন্তু দরজাগুলো সবই বন্ধ পেল। এরপর বাদশাহ নির্দেশ দিলেন যে, তাদের সবাইকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তিনি তাদের সবাইকে ডাকলেন এবং বললেন, তোমাদের ধর্মের উপর তোমাদের দৃঢ়তা আমি পরীক্ষা করলাম। আমি যা আশা করেছিলাম তা তোমাদের থেকে পেয়েছি। তখন সবাই তাঁকে সাজদাহ্ করল এবং তাঁর উপর সন্তুষ্ট রইল। [৭] (আ.প্র. ৪১৯২, ই.ফা. ৪১৯৩)
৬৫/৩/৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তোমরা কখনও
পুণ্য লাভ করবে না যে পর্যন্ত না নিজেদের প্রিয়বস্তু থেকে ব্যয় করবে, আর যা কিছু
তোমরা ব্যয় কর, আল্লাহ্ তো তা খুব জানেন।’’ (সূরাহ আলু ইমরান ৩/৯২)
৪৫৫৪
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ إِسْحَاقَ
بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ كَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ أَكْثَرَ أَنْصَارِيٍّ
بِالْمَدِيْنَةِ نَخْلًا وَكَانَ أَحَبَّ أَمْوَالِهِ إِلَيْهِ بَيْرُحَاءَ
وَكَانَتْ مُسْتَقْبِلَةَ الْمَسْجِدِ وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
يَدْخُلُهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَاءٍ فِيْهَا طَيِّبٍ فَلَمَّا أُنْزِلَتْ {لَنْ
تَنَالُوا الْبِرَّ حَتّٰى تُنْفِقُوْا مِمَّا تُحِبُّوْنَ} قَامَ أَبُوْ طَلْحَةَ
فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ اللهَ يَقُوْلُ : {لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ
حَتّٰى تُنْفِقُوْا مِمَّا تُحِبُّوْنَ} وَإِنَّ أَحَبَّ أَمْوَالِيْ إِلَيَّ
بَيْرُحَاءَ وَإِنَّهَا صَدَقَةٌ لِلهِ أَرْجُوْ بِرَّهَا وَذُخْرَهَا عِنْدَ
اللهِ فَضَعْهَا يَا رَسُوْلَ اللهِ حَيْثُ أَرَاكَ اللهُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم بَخْ ذَلِكَ مَالٌ رَايِحٌ ذَلِكَ مَالٌ رَايِحٌ وَقَدْ
سَمِعْتُ مَا قُلْتَ وَإِنِّيْ أَرَى أَنْ تَجْعَلَهَا فِي الْأَقْرَبِيْنَ قَالَ
أَبُوْ طَلْحَةَ أَفْعَلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَسَمَهَا أَبُوْ طَلْحَةَ فِيْ
أَقَارِبِهِ وَفِيْ بَنِيْ عَمِّهِ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ وَرَوْحُ
بْنُ عُبَادَةَ ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মদিনায়
আবূ ত্বলহা (রাঃ)-ই অধিক সংখ্যক খেজুর গাছের মালিক ছিলেন। তাঁর নিকট সর্বাধিক
প্রিয় সম্পদ ছিল “বাইরুহা” নামক বাগানটি। এটা ছিল মাসজিদের সম্মুখে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেখানে আসতেন এবং সেখানকার (কূপের) সুমিষ্ট পানি পান করতেন।
যখন لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ
আয়াতটি অবতীর্ণ হল, তখন আবূ ত্বলহা (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র
রসূল! আল্লাহ বলছেন, “তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করবে না যে পর্যন্ত না নিজেদের
প্রিয়বস্তু থেকে ব্যয় করবে” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/৯২)। আমার সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ
বাইরুহা। এটা আল্লাহ্র রাস্তায় আমি দান করে দিলাম। আমি আল্লাহ্র নিকট পুণ্য ও
তার ভাণ্ডার চাই। আল্লাহ আপনাকে যেভাবে নির্দেশ দেন সেভাবে তা ব্যয় করুন।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বাহ! ওটি তো অস্থায়ী সম্পদ,
ওটা তো অস্থায়ী সম্পদ, তুমি যা বলেছ আমি শুনেছি। তুমি তা তোমার নিকটাত্মীয়কে দিয়ে
দাও, আমি এ সিদ্ধান্ত দিচ্ছি। আবূ ত্বলহা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি তা
করব। তারপর আবূ ত্বলহা (রাঃ) সেটা তাঁর চাচাত ভাই-বোন ও আত্মীয়দের মধ্যে বণ্টন করে
দিলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইবনু ‘উবাদাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনায় “ওটা তো লাভজনক
সম্পত্তি” বলে উল্লেখিত হয়েছে। [১৪৬১] (আ.প্র. ৪১৯৩, ই.ফা. ৪১৯৪)
ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহ.) বলেন, আমি মালিক (রহ.)-এর নিকট مَالٌ رَابِحٌ এর অর্থ পড়েছি ‘অস্থায়ী সম্পদ’। [১৪৬১] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৪১৯৫)
ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহ.) বলেন, আমি মালিক (রহ.)-এর নিকট مَالٌ رَابِحٌ এর অর্থ পড়েছি ‘অস্থায়ী সম্পদ’। [১৪৬১] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৪১৯৫)
৪৫৫৫
يَحْيَى بْنُ يَحْيَى قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ مَالٌ
رَايِحٌ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ قَالَ
حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ ثُمَامَةَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
فَجَعَلَهَا لِحَسَّانَ وَأُبَيٍّ وَأَنَا أَقْرَبُ إِلَيْهِ وَلَمْ يَجْعَلْ لِيْ
مِنْهَا شَيْئًا.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এরপর আবূ ত্বলহা (রাঃ) হাস্সান ইবনু সাবিত এবং উবাই ইবনু কা‘বের মধ্যে বণ্টন
করে দিলেন। আমি তাঁর নিকটাত্মীয় ছিলাম। কিন্তু আমাকে তা হতে কিছুই দেননি। [১৪৬১]
(আ.প্র. ৪১৯৪, ই.ফা. ৪১৯৬)
৬৫/৩/৬. অধ্যায়ঃ
‘‘বলুন, তাওরাত নিয়ে এস এবং
তা পাঠ কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’ (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/৯৩)
৪৫৫৬
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَبُوْ ضَمْرَةَ
حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ الْيَهُوْدَ جَاءُوْا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم بِرَجُلٍ مِنْهُمْ وَامْرَأَةٍ قَدْ زَنَيَا فَقَالَ لَهُمْ كَيْفَ
تَفْعَلُوْنَ بِمَنْ زَنَى مِنْكُمْ قَالُوْا نُحَمِّمُهُمَا وَنَضْرِبُهُمَا
فَقَالَ لَا تَجِدُوْنَ فِي التَّوْرَاةِ الرَّجْمَ فَقَالُوْا لَا نَجِدُ فِيْهَا
شَيْئًا فَقَالَ لَهُمْ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ: كَذَبْتُمْ {فَأْتُوْا
بِالتَّوْرَاةِ فَاتْلُوْهَآ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ} فَوَضَعَ مِدْرَاسُهَا
الَّذِيْ يُدَرِّسُهَا مِنْهُمْ كَفَّهُ عَلَى آيَةِ الرَّجْمِ فَطَفِقَ يَقْرَأُ
مَا دُوْنَ يَدِهِ وَمَا وَرَاءَهَا وَلَا يَقْرَأُ آيَةَ الرَّجْمِ فَنَزَعَ
يَدَهُ عَنْ آيَةِ الرَّجْمِ فَقَالَ مَا هَذِهِ فَلَمَّا رَأَوْا ذَلِكَ قَالُوْا
هِيَ آيَةُ الرَّجْمِ فَأَمَرَ بِهِمَا فَرُجِمَا قَرِيْبًا مِنْ حَيْثُ مَوْضِعُ
الْجَنَائِزِ عِنْدَ الْمَسْجِدِ فَرَأَيْتُ صَاحِبَهَا يَحْنِيْ عَلَيْهَا
يَقِيْهَا الْحِجَارَةَ.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ব্যভিচার
করেছে এমন এক পুরুষ ও এক মহিলা নিয়ে ইয়াহূদীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের
বললেন, তোমাদের ব্যভিচারীদেরকে তোমরা কীভাবে শাস্তি দাও? তারা বলল, আমরা তাদের
দু’জনের চেহারা কালিমালিপ্ত করি এবং তাদের প্রহার করি। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা তাওরাতে কি প্রস্তর নিক্ষেপের বিধান পাও না? তারা বলল,
আমরা তাতে এ ব্যাপারে কিছুই পাই না। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) তাদের বললেন,
তোমরা মিথ্যা বলছ, তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে তাওরাত আন এবং তা পাঠ কর। এরপর তাওরাত
পাঠের সময় তাদের তাওরাত-শিক্ষক প্রস্তর নিক্ষেপ সম্পর্কিত আয়াতের উপর স্বীয় হস্ত
রেখে তার উপর নীচের অংশ পড়তে লাগল। রজমের কথা লিখা আয়াতটি পড়ছিল না। ‘আবদুল্লাহ
ইবনু সালাম (রাঃ) তার হাতটি রজমের আয়াতের উপর থেকে সরিয়ে দিয়ে বললেন, এটা কী? যখন
তারা এ অবস্থা দেখল তখন বলল, এটি রজমের আয়াত। অনন্তর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে রজম করার নির্দেশ দিলেন এবং মাসজিদের পার্শ্বে
জানাযার স্থানের নিকটে উভয়কে ‘রজম’ করা হল।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি সেই পুরুষটিকে দেখলাম তার সঙ্গীনীর উপরে ঝুঁকে পড়ে তাকে প্রস্তরাঘাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। [১৩২৯] (আ.প্র. ৪১৯৫, ই.ফা. ৪১৯৭)
ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি সেই পুরুষটিকে দেখলাম তার সঙ্গীনীর উপরে ঝুঁকে পড়ে তাকে প্রস্তরাঘাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। [১৩২৯] (আ.প্র. ৪১৯৫, ই.ফা. ৪১৯৭)
৬৫/৩/৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তোমরা হলে
শ্রেষ্ঠ উম্মাত, মানুষের হিতের জন্য তোমাদের উদ্ভব ঘটান হয়েছে। (সূরাহ আলু ‘ইমরান
৩/১১০)
৪৫৫৭
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مَيْسَرَةَ
عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ {كُنْتُمْ خَيْرَ
أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ} قَالَ خَيْرَ النَّاسِ لِلنَّاسِ تَأْتُوْنَ بِهِمْ
فِي السَّلَاسِلِ فِيْ أَعْنَاقِهِمْ حَتَّى يَدْخُلُوْا فِي الإِسْلَامِ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ
আয়াত সম্পর্কে বলেন, মানুষের জন্য মানুষ কল্যাণকর তখনই হয় যখন তাদের গ্রীবাদেশে
(আল্লাহ্র আনুগত্যের) শিকল লাগিয়ে নিয়ে আসে। অতঃপর তারা ইসলামে প্রবেশ করে।
[৩০১০] (আ.প্র. ৪১৯৬, ই.ফা. ৪১৯৮)
৬৫/৩/৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ যখন তোমাদের
মধ্যের দু’টি দল সাহস হারাতে বসল, অথচ আল্লাহ তাদের সহায়ক ছিলেন। (সূরাহ আলু ইমরান
৩/১২২)
৪৫৫৮
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ
قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
يَقُوْلُ فِيْنَا نَزَلَتْ {إِذْ هَمَّتْ طَّآئِفَتَانِ مِنْكُمْ أَنْ تَفْشَلَا
وَاللهُ وَلِيُّهُمَا} : قَالَ : نَحْنُ الطَّائِفَتَانِ بَنُوْ حَارِثَةَ
وَبَنُوْ سَلِمَةَ وَمَا نُحِبُّ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً وَمَا يَسُرُّنِيْ
أَنَّهَا لَمْ تُنْزَلْ لِقَوْلِ اللهِ : {وَاللهُ وَلِيُّهُمَا}.
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, إِذْ هَمَّتْ طَائِفَتَانِ مِنْكُمْ أَنْ تَفْشَلاَ وَاللهُ وَلِيُّهُمَا
আয়াতটি আমাদের ব্যাপারেই অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দু’দল বানী হারিসা আর
বানী সালিমা। যেহেতু এ আয়াতে وَاللهُ وَلِيُّهُمَا “আল্লাহ উভয়ের অভিভাবক”
উল্লেখ আছে, সেহেতু এটা অবতীর্ণ না হওয়া আমরা পছন্দ করতাম না। সুফ্ইয়ান (রহ.)-এর
এক বর্ণনায় আছে وَمَا يَسُرُّنِي ‘আমাকে ভাল লাগেনি’। [৪০৫১]
(আ.প্র. ৪১৯৭, ই.ফা. ৪১৯৯)
৬৫/৩/৯. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এই বিষয়ে
আপনার করণীয় কিছুই নেই। (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১২৮)
৪৫৫৯
حِبَّانُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ
أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَالِمٌ عَنْ أَبِيْهِ
أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ
الرُّكُوْعِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ مِنَ الْفَجْرِ يَقُوْلُ : اللهُمَّ
الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا بَعْدَ مَا يَقُوْلُ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ
حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ
شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ} رَوَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ
عَنْ الزُّهْرِيِّ.
সালিম
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তার
পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
থেকে শুনেছেন যে, তিনি ফাজরের সলাতের শেষ রাকআতে রুকূ‘ থেকে মাথা তুলে ‘সামি‘আল্লাহু
লিমান হামিদাহ্ (আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিালক!
তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা)’, ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হাম্দ’ বলার পর এটা বলতেনঃ হে
আল্লাহ! অমুক, অমুক এবং অমুককে লানত করুন। তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ
..... فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ
“তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন, এ বিষয়ে তোমার করণীয়
কিছুই নেই। কারণ তারা যালিম।” ইসহাক ইবনু রাশিদ (রহ.) ইমাম যুহরী (রহ.) থেকে এটা
বর্ণনা করেছেন। [৪০৬৯] (আ.প্র. ৪১৯৮, ই.ফা. ৪২০০)
৪৫৬০
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ
سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ وَأَبِيْ
سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ عَلَى
أَحَدٍ أَوْ يَدْعُوَ لِأَحَدٍ قَنَتَ بَعْدَ الرُّكُوْعِ فَرُبَّمَا قَالَ إِذَا
قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ اللهُمَّ أَنْجِ
الْوَلِيْدَ بْنَ الْوَلِيْدِ وَسَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ وَعَيَّاشَ بْنَ أَبِيْ
رَبِيْعَةَ اللهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ وَاجْعَلْهَا سِنِيْنَ
كَسِنِيْ يُوْسُفَ يَجْهَرُ بِذَلِكَ وَكَانَ يَقُوْلُ فِيْ بَعْضِ صَلَاتِهِ فِيْ
صَلَاةِ الْفَجْرِ اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا لِأَحْيَاءٍ مِنَ
الْعَرَبِ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} الآيَةَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কারো জন্যে বদদু‘আ অথবা দু‘আ করার
মনস্থ করতেন, তখন সলাতের রুকূর পরেই কুনূতে নাযিলা (বদ্দু‘আ ও হিফাযাতের জন্য
অবতারিত দু‘আ) পড়তেন। কখনো কখনো سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ, اللهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ ’
বলার পর বলতেন, হে আল্লাহ! ওয়ালিদ ইবনু ওয়ালিদ, সালামাহ ইবনু হিশাম এবং আইয়াশ ইবনু
আবূ রাবিয়াহ্কে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! মুদার গোত্রের উপর শাস্তি কঠোর করুন। এ
শাস্তিকে ইউসুফ (‘আ.)-এর যুগের দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষে পরিণত করুন। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথাগুলোকে উচ্চৈঃস্বরে বলতেন। কখনো কখনো তিনি
কয়েকটি গোত্রের ব্যাপারে ফাজরের সলাতে বলতেন, হে আল্লাহ! অমুক এবং অমুককে লা‘নাত
দিন। অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ ।
[৭৯৭] (আ.প্র. ৪১৯৯, ই.ফা. ৪২০১)
অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৮৯১ থেকে ৪৯৭৭
অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৮৯১ থেকে ৪৯৭৭
No comments