সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৫৬১ থেকে ৪৬৭০
৬৫/৩/১০. অধ্যায়ঃ
৪৫৬১
৬৫/৩/১১. অধ্যায়ঃ
৪৫৬২
৬৫/৩/১২. অধ্যায়ঃ
৬৫/৩/১৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৬৩
৪৫৬৪
৬৫/৩/১৪
৪৫৬৫
৬৫/৩/১৫. অধ্যায়ঃ
৪৫৬৬
৬৫/৩/১৬. অধ্যায়ঃ
৪৫৬৭
৪৫৬৮
৬৫/৩/১৭. অধ্যায়ঃ
৪৫৬৯
৬৫/৩/১৮. অধ্যায়ঃ
৪৫৭০
৬৫/৩/১৯. অধ্যায়ঃ
৪৫৭১
৬৫/৩/২০. অধ্যায়ঃ
৪৫৭২
৬৫/৪/১. অধ্যায়ঃ
৪৫৭৩
৪৫৭৪
৬৫/৪/২. অধ্যায়ঃ
৪৫৭৫
৬৫/৪/৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৭৬
৬৫/৪/৫. অধ্যায়ঃ
৪৫৭৮
৬৫/৪/৬. অধ্যায়ঃ
৪৫৭৯
৬৫/৪/৭. অধ্যায়ঃ
৪৫৮০
৬৫/৪/৯. অধ্যায়ঃ
৪৫৮২
৬৫/৪/১০. অধ্যায়ঃ
৪৫৮৩
৬৫/৪/১১. অধ্যায়ঃ
৪৫৮৪
৬৫/৪/১২. অধ্যায়ঃ
৪৫৮৫
৬৫/৪/১৩. অধ্যায়ঃ
৪৫৮৬
৬৫/৪/১৪. অধ্যায়ঃ
৪৫৮৭
৪৫৮৮
৬৫/৪/১৫. অধ্যায়ঃ
৪৫৮৯
৬৫/৪/১৬. অধ্যায়ঃ
৬৫/৪/১৭. অধ্যায়ঃ
৪৫৯০
৬৫/৪/১৮. অধ্যায়ঃ
৪৫৯১
৬৫/৪/১৯. অধ্যায়ঃ
৪৫৯২
৪৫৯৩
৪৫৯৪
৪৫৯৫
৬৫/৪/২০. অধ্যায়ঃ
৪৫৯৬
৬৫/৪/২১. অধ্যায়ঃ
৪৫৯৭
৬৫/৪/২২. অধ্যায়ঃ
৪৫৯৮
৬৫/৪/২৪. অধ্যায়ঃ
৪৬০০
৬৫/৪/২৫.
অধ্যায়ঃ
৪৬০১
৬৫/৪/২৬. অধ্যায়ঃ
৪৬০২
৬৫/৪/২৭. অধ্যায়ঃ
৪৬০৩
৪৬০৪
৬৫/৪/২৮. অধ্যায়ঃ
৪৬০৫
৬৫/৫/১. অধ্যায়ঃ
৪৬০৬
৬৫/৫/৩. অধ্যায়ঃ
৪৬০৭
৪৬০৮
৬৫/৫/৪. অধ্যায়ঃ
৪৬০৯
৬৫/৫/৫. অধ্যায়ঃ
৪৬১০
৬৫/৫/৬. অধ্যায়ঃ
৪৬১১
৬৫/৫/৭. অধ্যায়ঃ
৪৬১২
৬৫/৫/৮.অধ্যায়ঃ
৪৬১৩
৪৬১৪
৬৫/৫/৯.অধ্যায়ঃ
৪৬১৫
৬৫/৫/১০.অধ্যায়ঃ
৪৬১৬
৪৬১৭
৪৬১৮
৪৬১৯
৬৫/৫/১১.অধ্যায়ঃ
৪৬২০
৬৫/৫/১২.অধ্যায়ঃ
৪৬২১
৪৬২২
৬৫/৫/১৩.অধ্যায়ঃ
৪৬২৩
৪৬২৪
৬৫/৫/১৪.অধ্যায়ঃ
৪৬২৫
৬৫/৫/১৫.অধ্যায়ঃ
৪৬২৬
৬৫/৬/১.অধ্যায়ঃ
৪৬২৭
৬৫/৬/২.অধ্যায়ঃ
৪৬২৮
৬৫/৬/৩.অধ্যায়ঃ
৪৬২৯
৬৫/৬/৪.অধ্যায়ঃ
৪৬৩০
৪৬৩১
৬৫/৬/৫.অধ্যায়ঃ
৬৫/৬/৬.অধ্যায়ঃ
৪৬৩৩
৬৫/৬/৭.অধ্যায়ঃ
৪৬৩৪
৬৫/৬/৮.অধ্যায়ঃ
৬৫/৬/৯.অধ্যায়ঃ
৬৫/৬/১০.অধ্যায়ঃ
৪৬৩৫
৪৬৩৬
৬৫/৭/১.অধ্যায়ঃ
৪৬৩৭
৬৫/৭/২.অধ্যায়ঃ
৪৬৩৮
৬৫/৭/৩.অধ্যায়ঃ
৪৬৩৯
৬৫/৭/৪.অধ্যায়ঃ
৪৬৪০
৬৫/৭/৫.অধ্যায়ঃ
৪৬৪১
৬৫/৭/৬
৪৬৪২
৪৬৪৩
৪৬৪৪
৬৫/৮/১.অধ্যায়ঃ
৪৬৪৫
৬৫/৮/২.অধ্যায়ঃ
৪৬৪৬
৬৫/৮/৩.অধ্যায়ঃ
৪৬৪৭
৬৫/৮/৪.অধ্যায়ঃ
৪৬৪৮
৬৫/৮/৫.অধ্যায়ঃ
৪৬৪৯
৬৫/৮/৬.অধ্যায়ঃ
৪৬৫০
৪৬৫১
৬৫/৮/৭.অধ্যায়ঃ
৪৬৫২
৬৫/৮/৮.অধ্যায়ঃ
৪৬৫৩
৬৫/৯/১.অধ্যায়ঃ
৪৬৫৪
৬৫/৯/২.অধ্যায়ঃ
৪৬৫৫
৬৫/৯/৩.অধ্যায়ঃ
৪৬৫৬
৬৫/৯/৪.অধ্যায়ঃ
৪৬৫৭
৬৫/৯/৫
৪৬৫৮
৬৫/৯/৬
৪৬৫৯
৪৬৬০
৬৫/৯/৭
৪৬৬১
৬৫/৯/৮
৪৬৬২
৬৫/৯/৯.অধ্যায়ঃ
৪৬৬৩
৪৬৬৪
৪৬৬৫
৪৬৬৬
৬৫/৯/১০
৪৬৬৭
৬৫/৯/১১
৪৬৬৮
৪৬৬৯
৬৫/৯/১২.অধ্যায়ঃ
৪৬৭০
আল্লাহর বাণীঃ রসূল সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের পেছনের দিক থেকে আহবান করছিলেন। (সূরাহ আলু ইমরান
৩/১৫৩)
وَهْوَ تَأْنِيْثُ آخِرِكُمْ. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ :
{إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ}: فَتْحًا أَوْ شَهَادَةً.
آخِرِكُمْ -এর স্ত্রীলিঙ্গ أُخْرَاكُمْ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, দু’ কল্যাণের একটি, এর অর্থ হল বিজয় অথবা শাহাদাত লাভ।
آخِرِكُمْ -এর স্ত্রীলিঙ্গ أُخْرَاكُمْ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, দু’ কল্যাণের একটি, এর অর্থ হল বিজয় অথবা শাহাদাত লাভ।
৪৫৬১
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا
أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
قَالَ جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الرَّجَّالَةِ يَوْمَ أُحُدٍ
عَبْدَ اللهِ بْنَ جُبَيْرٍ وَأَقْبَلُوْا مُنْهَزِمِيْنَ فَذَاكَ إِذْ
يَدْعُوْهُمْ الرَّسُوْلُ فِيْ أُخْرَاهُمْ وَلَمْ يَبْقَ مَعَ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم غَيْرُ اثْنَيْ عَشَرَ رَجُلًا.
বারাআ
ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উহূদ যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছু পদাতিক
সৈন্যের উপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। এরপর তাদের
কতক পরাজিত হলে পালাতে লাগল, এটাই হল, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন
তোমাদের পেছন দিক থেকে ডাকছিলেন। মাত্র বারোজন লোক ব্যতীত আর কেউ রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন না। [৩০৩৯] (আ.প্র. ৪২০০, ই.ফা.
৪২০২)
৬৫/৩/১১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ‘‘প্রশান্তিময়
তন্দ্রা।’’
৪৫৬২
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
أَبُوْ يَعْقُوْبَ حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ
قَتَادَةَ حَدَّثَنَا أَنَسٌ أَنَّ أَبَا طَلْحَةَ قَالَ غَشِيَنَا النُّعَاسُ
وَنَحْنُ فِيْ مَصَافِّنَا يَوْمَ أُحُدٍ قَالَ فَجَعَلَ سَيْفِيْ يَسْقُطُ مِنْ
يَدِيْ وَآخُذُهُ وَيَسْقُطُ وَآخُذُهُ.
আবূ
ত্বলহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা
উহূদ যুদ্ধের দিন সারিবদ্ধ অবস্থায় ছিলাম যখন তন্দ্রা আমাদের আচ্ছাদিত করে
ফেলেছিল। তিনি বলেন, আমার তরবারি আমার হাত থেকে পড়ে যাচ্ছিল, আমি তা উঠাচ্ছিলাম,
আবার পড়ে যাচ্ছিল, আবার তা উঠাচ্ছিলাম। [৪০৬৮] (আ.প্র. ৪২০১, ই.ফা. ৪২০৩)
৬৫/৩/১২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلهِ وَالرَّسُوْلِ مِنْمبَعْدِ مَآ أَصَابَهُمُ الْقَرْحُ ط لِلَّذِيْنَ أَحْسَنُوْا مِنْهُمْ وَاتَّقَوْا أَجْرٌ عَظِيْمٌ ج} {الْقَرْحُ} الْجِرَاحُ {اسْتَجَابُوْا} أَجَابُوْا : يَسْتَجِيْبُ يُجِيْبُ.
আহত হওয়ার পরও যারা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দেয়, তাদের মধ্যে যারা ভাল কাজ করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য রয়েছে বিরাট পুরস্কার- (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৭২)। الْقَرْحُ -যখম, الْقَرْحُ -ডাকে সাড়া দিন, يَسْتَجِيْبُ -সাড়া দেয়।
আহত হওয়ার পরও যারা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দেয়, তাদের মধ্যে যারা ভাল কাজ করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য রয়েছে বিরাট পুরস্কার- (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৭২)। الْقَرْحُ -যখম, الْقَرْحُ -ডাকে সাড়া দিন, يَسْتَجِيْبُ -সাড়া দেয়।
৬৫/৩/১৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের
বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে। (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৭৩)
৪৫৬৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ ـ أُرَاهُ قَالَ ـ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ، {حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ} قَالَهَا إِبْرَاهِيمُ
عَلَيْهِ السَّلاَمُ حِينَ أُلْقِيَ فِي النَّارِ، وَقَالَهَا مُحَمَّدٌ صلى الله
عليه وسلم حِينَ قَالُوا {إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ
فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ}
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত।
حَسْبُنَااللهُوَنِعْمَالْوَكِيلُ
কথাটি ইবরাহীম (‘আ.) বলেছিলেন, যখন তিনি আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। আর মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন যখন লোকেরা বলল, “নিশ্চয় তোমাদের
বিরুদ্ধে কাফিররা বিরাট সাজ-সরঞ্জামের সমাবেশ করেছে, সুতরাং তোমরা তাদের ভয় কর। এ
কথা তাদের ঈমানের তেজ বাড়িয়ে দিল এবং তারা বলল ঃ আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং
তিনিই উত্তম কার্যনির্বাহক” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৭৩)। [৪৫৬৪] (আ.প্র. ৪২০২, ই.ফা.
৪২০৪)
৪৫৬৪
مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ
أَبِيْ حَصِيْنٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ آخِرَ
قَوْلِ إِبْرَاهِيْمَ حِيْنَ أُلْقِيَ فِي النَّارِ {حَسْبِيَ اللهُ وَنِعْمَ
الْوَكِيْلُ}.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, ইবরাহীম (‘আ.) যখন আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তখন তাঁর শেষ কথা ছিল ঃ حَسْبِيَاللهُوَنِعْمَالْوَكِيلُ
অর্থাৎ “আল্লাহ্ই যথেষ্ট” তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক! [৪৫৬৩] (আ.প্র. ৪২০৩,
ই.ফা. ৪২০৫)
৬৫/৩/১৪
{وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَآ اٰتٰهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهٰ هُوَ خَيْرًا لَّهُمْ ط بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ ط سَيُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهٰ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ط وَلِلهِ مِيْرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ ط وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ} سَيُطَوَّقُوْنَ كَقَوْلِكَ طَوَّقْتُهُ بِطَوْقٍ.
‘‘যারা কৃপণতা করে তাতে যা আল্লাহ্ তাদের দিয়েছেন নিজ অনুগ্রহে, তারা যেন মনে না করে যে এ কৃপণতা তাদের জন্য মঙ্গলজনক; বরং তা তাদের জন্য অমঙ্গলজনক। ঐ মাল যাতে তারা কৃপণতা করেছিল, ক্বিয়ামাতের দিন তা দিয়ে বেড়ি বানিয়ে গলায় পরিয়ে দেয়া হবে। আসমান ও যমীনের মালিকানা স্বত্ব একমাত্র আল্লাহর। তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত’’- (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৮০)। سَيُطَوَّقُوْنَ এটা আরবী বাক্য অর্থ ‘তাকে বেড়ি লাগিয়ে দিয়েছি’-এর মত।
‘‘যারা কৃপণতা করে তাতে যা আল্লাহ্ তাদের দিয়েছেন নিজ অনুগ্রহে, তারা যেন মনে না করে যে এ কৃপণতা তাদের জন্য মঙ্গলজনক; বরং তা তাদের জন্য অমঙ্গলজনক। ঐ মাল যাতে তারা কৃপণতা করেছিল, ক্বিয়ামাতের দিন তা দিয়ে বেড়ি বানিয়ে গলায় পরিয়ে দেয়া হবে। আসমান ও যমীনের মালিকানা স্বত্ব একমাত্র আল্লাহর। তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত’’- (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৮০)। سَيُطَوَّقُوْنَ এটা আরবী বাক্য অর্থ ‘তাকে বেড়ি লাগিয়ে দিয়েছি’-এর মত।
৪৫৬৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيْرٍ سَمِعَ أَبَا النَّضْرِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ هُوَ ابْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ
أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم مَنْ آتَاهُ اللهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ
لَهُ مَالُهُ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيْبَتَانِ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ يَعْنِيْ بِشِدْقَيْهِ يَقُوْلُ أَنَا
مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ ثُمَّ تَلَا هَذِهِ الْآيَةَ {وَلَا يَحْسِبَنَّ
الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَآ اٰتَاهُمْ اللهُ مِنْ فَضْلِهٰ} إِلَى آخِرِ
الْآيَةِ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যাকে আল্লাহ তা‘আলা
ধন-সম্পদ দেন, তারপর সে তার যাকাত আদায় করে না ক্বিয়ামাতের দিন তার ধন-সম্পদকে তার
জন্যে লোমবিহীন কালো-চিহ্ন যুক্ত সর্পে রূপ দেয়া হবে এবং তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে।
মুখের দু’দিক দিয়ে সে তাকে দংশন করতে থাকবে এবং বলবে, ‘আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার
সঞ্চয়’। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই আয়াত তিলাওয়াত
করলেন ঃ وَلاَيَحْسِبَنَّالَّذِينَيَبْخَلُونَبِمَاآتَاهُمْاللهُمِنْفَضْلِهِ
“এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তাদের জন্য তা
মঙ্গলজনক এটা যেন তারা কিছুতেই মনে না করে ......” আয়াতের শেষ অংশ। [১৪০৩] (আ.প্র.
৪২০৪, ই.ফা. ৪২০৬)
৬৫/৩/১৫. অধ্যায়ঃ
{وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِيْنَ أَشْرَكُوْآ أَذًى كَثِيْرًا}.
‘‘আর অবশ্যই তোমরা শুনতে পাবে পূর্ববর্তী আহলে কিতাবের এবং মুশরিকদের নিকট হতে অনেক কষ্টদায়ক কথা। (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৮৬)
‘‘আর অবশ্যই তোমরা শুনতে পাবে পূর্ববর্তী আহলে কিতাবের এবং মুশরিকদের নিকট হতে অনেক কষ্টদায়ক কথা। (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৮৬)
৪৫৬৬
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ
قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَكِبَ عَلَى
حِمَارٍ عَلَى قَطِيْفَةٍ فَدَكِيَّةٍ وَأَرْدَفَ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ وَرَاءَهُ
يَعُوْدُ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ فِيْ بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ قَبْلَ
وَقْعَةِ بَدْرٍ قَالَ حَتَّى مَرَّ بِمَجْلِسٍ فِيْهِ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ
ابْنُ سَلُوْلَ وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ فَإِذَا
فِي الْمَجْلِسِ أَخْلَاطٌ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُشْرِكِيْنَ عَبَدَةِ
الْأَوْثَانِ وَالْيَهُوْدِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَفِي الْمَجْلِسِ عَبْدُ اللهِ
بْنُ رَوَاحَةَ فَلَمَّا غَشِيَتْ الْمَجْلِسَ عَجَاجَةُ الدَّابَّةِ خَمَّرَ
عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ أَنْفَهُ بِرِدَائِهِ ثُمَّ قَالَ لَا تُغَبِّرُوْا
عَلَيْنَا فَسَلَّمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ ثُمَّ وَقَفَ
فَنَزَلَ فَدَعَاهُمْ إِلَى اللهِ وَقَرَأَ عَلَيْهِمْ الْقُرْآنَ فَقَالَ عَبْدُ
اللهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُوْلَ أَيُّهَا الْمَرْءُ إِنَّهُ لَا أَحْسَنَ
مِمَّا تَقُوْلُ إِنْ كَانَ حَقًّا فَلَا تُؤْذِنَا بِهِ فِيْ مَجْلِسِنَا ارْجِعْ
إِلَى رَحْلِكَ فَمَنْ جَاءَكَ فَاقْصُصْ عَلَيْهِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ
رَوَاحَةَ بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ فَاغْشَنَا بِهِ فِيْ مَجَالِسِنَا فَإِنَّا
نُحِبُّ ذَلِكَ فَاسْتَبَّ الْمُسْلِمُوْنَ وَالْمُشْرِكُوْنَ وَالْيَهُوْدُ
حَتَّى كَادُوْا يَتَثَاوَرُوْنَ فَلَمْ يَزَلْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يُخَفِّضُهُمْ حَتَّى سَكَنُوْا ثُمَّ رَكِبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
دَابَّتَهُ فَسَارَ حَتَّى دَخَلَ عَلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فَقَالَ لَهُ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَا سَعْدُ أَلَمْ تَسْمَعْ مَا قَالَ أَبُوْ حُبَابٍ
يُرِيْدُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ قَالَ كَذَا وَكَذَا قَالَ سَعْدُ بْنُ
عُبَادَةَ يَا رَسُوْلَ اللهِ اعْفُ عَنْهُ وَاصْفَحْ عَنْهُ فَوَالَّذِيْ
أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ لَقَدْ جَاءَ اللهُ بِالْحَقِّ الَّذِيْ أَنْزَلَ
عَلَيْكَ لَقَدْ اصْطَلَحَ أَهْلُ هَذِهِ الْبُحَيْرَةِ عَلَى أَنْ يُتَوِّجُوْهُ
فَيُعَصِّبُوْهُ بِالْعِصَابَةِ فَلَمَّا أَبَى اللهُ ذَلِكَ بِالْحَقِّ الَّذِيْ
أَعْطَاكَ اللهُ شَرِقَ بِذَلِكَ فَذَلِكَ فَعَلَ بِهِ مَا رَأَيْتَ فَعَفَا
عَنْهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
وَأَصْحَابُهُ يَعْفُوْنَ عَنِ الْمُشْرِكِيْنَ وَأَهْلِ الْكِتَابِ كَمَا
أَمَرَهُمْ اللهُ وَيَصْبِرُوْنَ عَلَى الْأَذَى قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ :
{وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَمِنَ
الَّذِيْنَ أَشْرَكُوْآ أَذًى كَثِيْرًا} الْآيَةَ. وَقَالَ اللهُ : {وَدَّ
كَثِيْرٌ مِّنْ أَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ يَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْم بَعْدِ
إِيْمَانِكُمْ كُفَّارًا ج حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ أَنْفُسِهِمْ} إِلَى آخِرِ
الْآيَةِ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَأَوَّلُ الْعَفْوَ مَا
أَمَرَهُ اللهُ بِهِ حَتَّى أَذِنَ اللهُ فِيْهِمْ فَلَمَّا غَزَا رَسُوْلُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم بَدْرًا فَقَتَلَ اللهُ بِهِ صَنَادِيْدَ كُفَّارِ قُرَيْشٍ
قَالَ ابْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُوْلَ وَمَنْ مَعَهُ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ وَعَبَدَةِ
الْأَوْثَانِ هَذَا أَمْرٌ قَدْ تَوَجَّهَ فَبَايَعُوا الرَّسُوْلَ صلى الله عليه
وسلم عَلَى الإِسْلَامِ فَأَسْلَمُوْا.
উসামাহ
ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি গাধার পিঠে আরোহণ
করেছিলেন, একটি ফদকী চাদর তাঁর পরনে ছিল। উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)-কে তাঁর পেছনে
বসিয়েছিলেন। তিনি বানী হারিস ইবনু খাযরায গোত্রে অসুস্থ সা‘দ ইবনু ‘উবাদাহ
(রাঃ)-কে দেখতে যাচ্ছিলেন। এটা ছিল বদর যুদ্ধের পূর্বেকার ঘটনা। বর্ণনাকারী বলেন
যে, যেতে যেতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একটি মজলিসের কাছে
পৌঁছলেন, যেখানে ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বিন সালুলও ছিলসে তখনও ইসলাম গ্রহণ করেনি।
সে মজলিসে মুসলিম, মুশরিক, প্রতিমাপূজারী এবং ইয়াহূদী সকল প্রকারের লোক ছিল এবং
তথায় ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-ও ছিলেন। জন্তুর পদধূলি যখন মজলিসকে আচ্ছন্ন
করল, তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই আপন চাদরে নাক ঢেকে ফেলল। তারপর বলল, আমাদের এখানে
ধূলো উড়িয়ো না। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এদেরকে সালাম
করলেন। তারপর বাহন থেকে অবতরণ করলেন এবং তাদেরকে আল্লাহ্র প্রতি দাওয়াত দিলেন এবং
তাদের কাছে কুরআন মাজীদ পাঠ করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বলল, এই লোকটি! তুমি যা
বলছ তা যদি সত্য হয় তাহলে এর চেয়ে উত্তম কিছুই নেই। তবে আমাদের মজলিসে আমাদেরকে
জ্বালাতন করবে না। তুমি তোমার তাঁবুতে যাও। যে তোমার কাছে যাবে যাকে তুমি তোমার
কথা বলবে। অনন্তর ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি
আমাদের মজলিসে এগুলো আমাদের কাছে বলবেন, কারণ আমরা তা পছন্দ করি। এতে মুসলিম,
মুশরিক এবং ইয়াহূদীরা পরস্পর গালাগালি শুরু করল। এমনকি তারা মারামারিতে লিপ্ত
হওয়ার পর্যায়ে উপনীত হল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে
থামাচ্ছিলেন। অবশেষে তারা থামল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) তাঁর পশুটির পিঠে চড়ে রওয়ানা দিলেন এবং সা‘দ ইবনু উবাদাহ (রাঃ)-এর
কাছে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, হে সা‘দ! আবূ
হুবাব অর্থাৎ ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই কী বলেছে, তুমি শুনেছ কি? সে এমন বলেছে। সা‘দ
ইবনু ‘উবাদাহ্ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তাকে ক্ষমা করে দিন। তার দিকে
ভ্রুক্ষেপ করবেন না। যিনি আপনার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, তাঁর শপথ করে বলছি,
আল্লাহ আপনার উপর যা অবতীর্ণ করেছেন তা সত্য। এতদঞ্চলের অধিবাসীগণ চুক্তি সম্পাদন
করেছিল যে, তাকে শাহী টুপী পরাবে এবং নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত করবে। যখন আল্লাহ
তা‘আলা সত্য প্রদানের মাধ্যমে এ পরিকল্পনা অস্বীকার করলেন তখন সে ক্রুদ্ধ ও
ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং আপনার সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে যা আপনি দেখেছেন। এরপর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ক্ষমা করে দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর সহাবীগণ (রাঃ) মুশরিক এবং কিতাবীদেরকে ক্ষমা করে
দিতেন এবং তাদের জ্বালাতনে ধৈর্য ধারণ করতেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, “আর অবশ্যই
তোমরা শুনতে পাবে পূর্ববর্তী আহ্লে কিতাবের এবং মুশরিকদের নিকট হতে অনেক কষ্টদায়ক
কথা” (সূরাহ আল ইমরান ৩/১৮৬)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন, “কিতাবীদের কাছে সত্য
প্রকাশিত হওয়ার পরও তাদের অনেকেই ঈর্ষা বশতঃ তোমাদের ঈমান আনার পর আবার তোমাদের
কাফিররূপে ফিরে পাওয়ার আকাক্সক্ষা করে। যতক্ষণ না আল্লাহ্র কোন নির্দেশ আসে
ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে
সর্বশক্তিমান” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/১০৯)।
আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ মোতাবেক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ক্ষমার দিকেই ফিরে যেতেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অনুমতি দিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বাদ্রের যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন এবং তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা কাফির কুরায়শ নেতাদেরকে হত্যা করলেন তখন ইবনু উবাই ইবনু সালূল তার সঙ্গী মুশরিক এবং প্রতীমা পূজারীরা বলল, এটাতো এমন একটি ব্যাপার যা বিজয় লাভ করেছে। এরপর তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে ইসলামের বাই‘আত করে প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণ করল। [২৯৮৭] (আ.প্র. ৪২০৫, ই.ফা. ৪২০৭)
আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ মোতাবেক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ক্ষমার দিকেই ফিরে যেতেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অনুমতি দিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বাদ্রের যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন এবং তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা কাফির কুরায়শ নেতাদেরকে হত্যা করলেন তখন ইবনু উবাই ইবনু সালূল তার সঙ্গী মুশরিক এবং প্রতীমা পূজারীরা বলল, এটাতো এমন একটি ব্যাপার যা বিজয় লাভ করেছে। এরপর তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে ইসলামের বাই‘আত করে প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণ করল। [২৯৮৭] (আ.প্র. ৪২০৫, ই.ফা. ৪২০৭)
৬৫/৩/১৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তুমি কখনও মনে
কর না যে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আনন্দিত হয় এবং নিজেরা যা করেনি তার জন্য
প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা আযাব থেকে পরিত্রাণ পাবে। তাদের জন্য রয়েছে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৮৮)
৪৫৬৭
سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ
أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رِجَالًا مِنَ
الْمُنَافِقِيْنَ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا
خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْغَزْوِ تَخَلَّفُوْا عَنْهُ
وَفَرِحُوْا بِمَقْعَدِهِمْ خِلَافَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا
قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اعْتَذَرُوْا إِلَيْهِ وَحَلَفُوْا وَأَحَبُّوْا
أَنْ يُحْمَدُوْا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوْا فَنَزَلَتْ : {لَا يَحْسِبَنَّ
الَّذِيْنَ يَفْرَحُوْنَ بِمَآ أَتَوْا وَّيُحِبُّوْنَ أَنْ يُّحْمَدُوْا بِمَا
لَمْ يَفْعَلُوْا}الآيَةَ.
আবূ
সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে তিনি যখন যুদ্ধে বের হতেন তখন কিছু
সংখ্যক মুনাফিক ঘরে বসে থাকত এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বেরিয়ে যাওয়ার পর বসে থাকতে পারায় আনন্দ প্রকাশ করত। এরপর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরে আসলে তাঁর কাছে শপথ করে ওজর পেশ করত এবং
যে কাজ করেনি সে কাজের জন্য প্রশংসিত হতে পছন্দ করত। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল ঃ لاَيَحْسِبَنَّالَّذِينَيَفْرَحُونَ
...... “তুমি কখনও মনে কর না যে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আনন্দিত হয় এবং
নিজেরা যা করেনি তার জন্য প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা আযাব থেকে পরিত্রাণ পাবে।
তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৮৮)। [মুসলিম ৫০/হাঃ
২৭৭৭] (আ.প্র. ৪২০৬, ই.ফা. ৪২০৮)
৪৫৬৮
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَنَّ
ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ عَلْقَمَةَ بْنَ
وَقَّاصٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ مَرْوَانَ قَالَ لِبَوَّابِهِ اذْهَبْ يَا رَافِعُ
إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْ لَئِنْ كَانَ كُلُّ امْرِئٍ فَرِحَ بِمَا أُوْتِيَ
وَأَحَبَّ أَنْ يُحْمَدَ بِمَا لَمْ يَفْعَلْ مُعَذَّبًا لَنُعَذَّبَنَّ
أَجْمَعُوْنَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَمَا لَكُمْ وَلِهَذِهِ إِنَّمَا دَعَا
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَهُوْدَ فَسَأَلَهُمْ عَنْ شَيْءٍ فَكَتَمُوْهُ
إِيَّاهُ وَأَخْبَرُوْهُ بِغَيْرِهِ فَأَرَوْهُ أَنْ قَدْ اسْتَحْمَدُوْا إِلَيْهِ
بِمَا أَخْبَرُوْهُ عَنْهُ فِيْمَا سَأَلَهُمْ وَفَرِحُوْا بِمَا أُوْتُوْا مِنْ
كِتْمَانِهِمْ ثُمَّ قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {وَإِذْ أَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ
الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتَابَ} كَذَلِكَ حَتَّى قَوْلِهِ : {يَفْرَحُوْنَ بِمَآ
أَتَوْا وَّيُحِبُّوْنَ أَنْ يُّحْمَدُوْا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوْا} تَابَعَهُ
عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ ح
حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا الْحَجَّاجُ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ مَرْوَانَ بِهَذَا.
حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا الْحَجَّاجُ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ مَرْوَانَ بِهَذَا.
‘আলক্বামাহ
ইবনু ওয়াক্কাস থেকে বর্ণিতঃ
মারওয়ান
(রহ.) তাঁর দারোয়ানকে বললেন, হে নাফি‘! তুমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বল,
যদি প্রাপ্ত বস্তুতে আনন্দিত এবং করেনি এমন কাজ সম্পর্কে প্রশংসিত হতে আশাবাদী
প্রত্যেক ব্যক্তিরই শাস্তি প্রাপ্য হয় তাহলে সকল মানুষই শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটা তোমাদের মাথা ঘামানোর বিষয় নয়। একদা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইয়াহূদীদেরকে ডেকে একটা বিষয় জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাতে তারা
সত্য গোপন করে বিপরীত তথ্য দিয়েছিল। এতদসত্ত্বেও তারা তাদের দেয়া উত্তরের বিনিময়ে
প্রশংসা অর্জনের আশা করেছিল এবং তাদের সত্য গোপনের জন্যে আনন্দিত হয়েছিল। তারপর
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) পাঠ করলেন- يَفْرَحُونَبِمَاأَتَوْاوَيُحِبُّونَأَنْيُحْمَدُوابِمَالَمْيَفْعَلُوا
....... وَإِذْأَخَذَاللهُمِيثَاقَالَّذِينَأُوتُواالْكِتَابَ
“স্মরণ কর, যখন আল্লাহ্ প্রতিশ্র“তি নিয়েছিলেন আহলে কিতাবের, তোমরা মানুষের কাছে
কিতাব স্পষ্টভাবে প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না। কিন্তু তারা সে প্রতিশ্র“তি
নিজেদের পেছনে ফেলে রাখল এবং তার পরিবর্তে নগণ্য বিনিময় গ্রহণ করল। সুতরাং তারা যা
বিনিময় গ্রহণ করল কত নিকৃষ্ট তা! তুমি কখনও মনে কর না যে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের
জন্য আনন্দিত হয় এবং নিজেরা যা করেনি তার জন্য প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা আযাব
থেকে পরিত্রাণ পাবে। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সূরাহ আলু ইমরান
৩/১৮৭-১৮৮)। বর্ণনাকারী ‘আবদুর রায্যাক (রহ.) ইবনু জুরাইজ (রহ.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা
করেছেন। (আ.প্র. ৪২০৭, ই.ফা. ৪২০৯)
ইবনু মুকাতিল (রহ.) ........... হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) অবহিত করেছেন যে, মারওয়ান এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। [মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৭৮, আহমাদ ২৭১২] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৪২১০)
ইবনু মুকাতিল (রহ.) ........... হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) অবহিত করেছেন যে, মারওয়ান এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। [মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৭৮, আহমাদ ২৭১২] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৪২১০)
৬৫/৩/১৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَاٰيَاتٍ لِأُوْلِي الْأَلْبَابِ}الآيَةَ
নিশ্চয় আসমান ও যমীনের সৃজনে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে নিশ্চিত নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানবানদের জন্য। (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৯০)
নিশ্চয় আসমান ও যমীনের সৃজনে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে নিশ্চিত নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানবানদের জন্য। (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৯০)
৪৫৬৯
سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ شَرِيْكُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ نَمِرٍ عَنْ
كُرَيْبٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ بِتُّ عِنْدَ
خَالَتِيْ مَيْمُوْنَةَ فَتَحَدَّثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَ
أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ فَلَمَّا كَانَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ قَعَدَ
فَنَظَرَ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ : {إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ
وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَاٰيَاتٍ لِأُوْلِي الْأَلْبَابِ} ثُمَّ
قَامَ فَتَوَضَّأَ وَاسْتَنَّ فَصَلَّى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ أَذَّنَ
بِلَالٌ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, আমি আমার খালা মাইমূনাহ (রাঃ)-এর কাছে রাত কাটিয়েছিলাম। রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর পরিবারবর্গের সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপ-আলোচনা
করে শুয়ে পড়লেন। তারপর রাত্রির শেষ তৃতীয়াংশে তিনি উঠলেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে
পাঠ করলেন- إِنَّفِيخَلْقِالسَّمَوَاتِوَالأَرْضِوَاخْتِلاَفِاللَّيْلِوَالنَّهَارِلَآيَاتٍلِأُولِيالأَلْبَابِ।
এরপর দাঁড়ালেন এবং উযূ করে মিসওয়াক করে এগার রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। এরপর বিলাল
(রাঃ) আযান দিলে তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর বের হলেন এবং ফাজ্রের
সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২০৮, ই.ফা. ৪২১১)
৬৫/৩/১৮. অধ্যায়ঃ
{الَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ قِيٰمًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰى جُنُوْبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُوْنَ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ}
‘‘যারা আল্লাহ্কে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে এবং চিন্তা করে আসমান ও যমীনের সৃজনের ব্যাপারে।’’ (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৯১)
‘‘যারা আল্লাহ্কে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে এবং চিন্তা করে আসমান ও যমীনের সৃজনের ব্যাপারে।’’ (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৯১)
৪৫৭০
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ
بْنُ مَهْدِيٍّ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ
كُرَيْبٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ بِتُّ عِنْدَ
خَالَتِيْ مَيْمُوْنَةَ فَقُلْتُ لَأَنْظُرَنَّ إِلَى صَلَاةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم فَطُرِحَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وِسَادَةٌ فَنَامَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ طُوْلِهَا فَجَعَلَ يَمْسَحُ النَّوْمَ
عَنْ وَجْهِهِ ثُمَّ قَرَأَ الْآيَاتِ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ آلِ عِمْرَانَ
حَتَّى خَتَمَ ثُمَّ أَتَى شَنًّا مُعَلَّقًا فَأَخَذَهُ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ قَامَ
يُصَلِّيْ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ ثُمَّ جِئْتُ فَقُمْتُ إِلَى
جَنْبِهِ فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِيْ ثُمَّ أَخَذَ بِأُذُنِيْ فَجَعَلَ
يَفْتِلُهَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى
رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَوْتَرَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আমার খালা মাইমূনাহ (রাঃ)-এর নিকট রাত কাটিয়েছিলাম। আমি স্থির করলাম যে,
অবশ্যই আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সলাত আদায় করা দেখব।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জন্য একটি বিছানা বিছানো হল।
এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেটার লম্বালম্বি দিকে
ঘুমালেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের প্রভাব মুছতে লাগলেন এবং সূরাহ আলু
‘ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করে শেষ করলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পুরাতন মশকের
পানিপাত্রের নিকটে এসে তা ধরলেন এবং উযূ করে সলাতে দাঁড়ালেন, আমি দাঁড়িয়ে তিনি যা
যা করছিলেন তা তা করলাম। তারপর আমি এসে তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথায়
হাত রাখলেন, তারপর আমার কানে ধরে মলতে লাগলেন। তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত,
তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত সলাত আদায়
করলেন এবং তারপর বিতরের সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২০৯, ই.ফা. ৪২১২)
৬৫/৩/১৯. অধ্যায়ঃ
‘‘হে আমাদের পালনকর্তা!
নিশ্চয় তুমি যাকে দোযখে দাখিল করলে তাকে লাঞ্ছিত করলে; আর যালিমদের জন্য তো কোন
সাহায্যকারী নেই।’’ (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৯২)
৪৫৭১
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَعْنُ بْنُ عِيْسَى
حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ كُرَيْبٍ مَوْلَى
عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ
بَاتَ عِنْدَ مَيْمُوْنَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْيَ خَالَتُهُ
قَالَ فَاضْطَجَعْتُ فِيْ عَرْضِ الْوِسَادَةِ وَاضْطَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِيْ طُوْلِهَا فَنَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم حَتَّى انْتَصَفَ اللَّيْلُ أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيْلٍ أَوْ بَعْدَهُ
بِقَلِيْلٍ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ
يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ بِيَدَيْهِ ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الْآيَاتِ
الْخَوَاتِمَ مِنْ سُوْرَةِ آلِ عِمْرَانَ ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ
فَتَوَضَّأَ مِنْهَا فَأَحْسَنَ وُضُوْءَهُ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّيْ فَصَنَعْتُ
مِثْلَ مَا صَنَعَ ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ رَسُوْلُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِيْ وَأَخَذَ بِأُذُنِيْ
بِيَدِهِ الْيُمْنَى يَفْتِلُهَا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ
رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ
أَوْتَرَ ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ فَقَامَ فَصَلَّى
رَكْعَتَيْنِ خَفِيْفَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, তিনি মাইমূনাহ (রাঃ)-এর নিকট রাত্রি যাপন করেন, তিনি হলেন তাঁর খালা।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি বিছানায় আড়াআড়িভাবে শুয়েছিলাম আর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর পরিবারবর্গ লম্বালম্বির দিকে
শুয়েছিলাম। অর্ধরাত্রি কিংবা এর সামান্য পূর্ব অথবা সামান্য পর পর্যন্ত রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুমালেন। তারপর তিনি জাগ্রত হলেন। এরপর দু’হাত
দিয়ে মুখ থেকে ঘুমের রেশ মুছতে লাগলেন। তারপর সূরাহ আলু ‘ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ
করলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পুরাতন মশকের কাছে গেলেন এবং সুন্দরভাবে ‘উযু করলেন।
এরপর সলাতে দণ্ডায়মান হলেন। তিনি যা যা করেছিলেন আমিও ঠিক তা করলাম। তারপর গিয়ে
তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর ডান
হাত আমার মাথায় রেখে আমার ডান কান ধরে মলতে লাগলেন। এরপর তিনি দু’রাক‘আত, তারপর
দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত, তারপর দু’রাক‘আত তারপর দু’রাক‘আত
সলাত আদায় করলেন এবং তারপর বিতরের সলাত আদায় করলেন। তারপর তিনি একটু শুয়ে পড়লেন।
অবশেষে মুয়াযযিন আসল, তিনি হালকাভাবে দু’রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। অতঃপর বের হলেন
এবং ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২১০, ই.ফা. ৪২১৩)
৬৫/৩/২০. অধ্যায়ঃ
‘‘হে আমাদের পালনকর্তা!
নিশ্চয় আমরা শুনেছি এক আহবানকারীকে ঈমান আনার জন্য আহবান করতেঃ ‘‘তোমরা ঈমান আন
তোমাদের রবের প্রতি।’’ সুতরাং আমরা ঈমান এনেছি। (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৯৩)
৪৫৭২
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ مَالِكٍ عَنْ مَخْرَمَةَ
بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ كُرَيْبٍ مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ مَيْمُوْنَةَ زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْيَ خَالَتُهُ قَالَ فَاضْطَجَعْتُ فِيْ عَرْضِ
الْوِسَادَةِ وَاضْطَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِيْ
طُوْلِهَا فَنَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى إِذَا انْتَصَفَ
اللَّيْلُ أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيْلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيْلٍ اسْتَيْقَظَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَلَسَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ
بِيَدِهِ ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الْآيَاتِ الْخَوَاتِمَ مِنْ سُوْرَةِ آلِ
عِمْرَانَ ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهَا فَأَحْسَنَ
وُضُوْءَهُ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّيْ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ
مِثْلَ مَا صَنَعَ ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ رَسُوْلُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِيْ وَأَخَذَ بِأُذُنِي
الْيُمْنَى يَفْتِلُهَا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ
رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ
أَوْتَرَ ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ فَقَامَ فَصَلَّى
رَكْعَتَيْنِ خَفِيْفَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.
কুরায়ব
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) তাকে অবহিত করেছেন যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
সহধর্মিণী মাইমূনাহ (রাঃ)-এর নিকট রাত্রি যাপন করেছিলেন। মাইমূনাহ (রাঃ) হলেন তাঁর
খালা। তিনি বলেন, আমি বিছানায় আড়াআড়ি শুয়ে পড়লাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর পরিবার লম্বা দিকে শয়ন করলেন। এরপর রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিদ্রামগ্ন হলেন। অর্ধরাত্রি কিংবা এর সামান্য
আগে কিংবা সামান্য পরক্ষণে তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠলেন এবং মুখ থেকে ঘুমের ভাব মুছতে
মুছতে বসলেন। তারপর সূরা আলু ‘ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি
পুরাতন মশকের নিকট গিয়ে তাত্থেকে উত্তমরূপে উযূ করলেন। এরপর সলাতে দণ্ডায়মান হলেন।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমিও দাঁড়ালাম এবং তিনি যা করেছেন আমিও তা করলাম। তারপর
আমি গিয়ে তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
তাঁর ডান হাত আমার মাথায় রেখে আমার ডান কান মলতে শুরু করলেন। তারপর তিনি
দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত,
অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর তিনি বিতরের সলাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি শুয়ে পড়লেন। শেষে
মুয়াযযিন ফাজ্রের আযান দিলে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক‘আত সলাত আদায়
করলেন। তারপর বের হলেন এবং ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। [১১৭] (আ.প্র. ৪২১১, ই.ফা.
৪২১৪)
৬৫/৪/১. অধ্যায়ঃ
‘‘আর যদি তোমরা ভয় কর যে,
ইয়াতীম মেয়েদের ব্যাপারে সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করে নাও অন্য নারীদের
মধ্য থেকে যাকে তোমাদের মনঃপুত হয়।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৩)
সূরাহ (৪) : আন-নিসা
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {يَسْتَنْكِفُ} يَسْتَكْبِرُ. {قِوَامًا} : قِوَامُكُمْ مِنْ مَعَايِشِكُمْ. {لَهُنَّ سَبِيْلًا} يَعْنِي الرَّجْمَ لِلثَّيِّبِ، وَالْجَلْدَ لِلْبِكْرِ. وَقَالَ غَيْرُهُ : {مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع} يَعْنِي اثْنَتَيْنِ وَثَلَاثًا وَأَرْبَعًا وَلَا تُجَاوِزُ الْعَرَبُ رُبَاعَ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, يَسْتَنْكِفُ অহঙ্কার করে, قِوَامًا -তোমাদের জীবিকার্জনের মাধ্যম। لَهُنَّ سَبِيْلًا -সাইয়েবা বা বিবাহিতার জন্য প্রস্তর নিক্ষেপ (রজম) আর কুমারীর জন্য বেত্রাঘাত। তিনি ব্যতীত অন্যান্য তাফসীরকারক বলেন, مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع অর্থাৎ দুই, তিন এবং চার; আরবগণ رُبَاعَ শব্দকে غير منصرف বা অপরিবর্তনশীল শব্দ মনে করে।
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {يَسْتَنْكِفُ} يَسْتَكْبِرُ. {قِوَامًا} : قِوَامُكُمْ مِنْ مَعَايِشِكُمْ. {لَهُنَّ سَبِيْلًا} يَعْنِي الرَّجْمَ لِلثَّيِّبِ، وَالْجَلْدَ لِلْبِكْرِ. وَقَالَ غَيْرُهُ : {مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع} يَعْنِي اثْنَتَيْنِ وَثَلَاثًا وَأَرْبَعًا وَلَا تُجَاوِزُ الْعَرَبُ رُبَاعَ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, يَسْتَنْكِفُ অহঙ্কার করে, قِوَامًا -তোমাদের জীবিকার্জনের মাধ্যম। لَهُنَّ سَبِيْلًا -সাইয়েবা বা বিবাহিতার জন্য প্রস্তর নিক্ষেপ (রজম) আর কুমারীর জন্য বেত্রাঘাত। তিনি ব্যতীত অন্যান্য তাফসীরকারক বলেন, مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع অর্থাৎ দুই, তিন এবং চার; আরবগণ رُبَاعَ শব্দকে غير منصرف বা অপরিবর্তনশীল শব্দ মনে করে।
৪৫৭৩
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ
جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَجُلًا كَانَتْ لَهُ يَتِيْمَةٌ فَنَكَحَهَا وَكَانَ
لَهَا عَذْقٌ وَكَانَ يُمْسِكُهَا عَلَيْهِ وَلَمْ يَكُنْ لَهَا مِنْ نَفْسِهِ
شَيْءٌ فَنَزَلَتْ فِيْهِ : {وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لَّا تُقْسِطُوْا فِي
الْيَتَامٰى} أَحْسِبُهُ قَالَ كَانَتْ شَرِيْكَتَهُ فِيْ ذَلِكَ الْعَذْقِ وَفِيْ
مَالِهِ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে একজন ইয়াতীম বালিকা ছিল। অতঃপর সে তাকে বিয়ে করল। সে
বালিকার একটি বাগান ছিল। তার অন্তরে ঐ বালিকার প্রতি কোন আকর্ষণ না থাকা সত্ত্বেও
বাগানের কারণে সে ঐ বালিকাটিকে বিবাহ করে রেখে দিতে চায়। এ সম্পর্কে আয়াত অবতীর্ণ
হয় আর যদি আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না। আমার ধারণা
যে, ‘উরওয়াহ বলেন, ইয়াতীম বালিকাটি সে বাগান ও মালের অংশীদার ছিল। [২৪৯৪] (আ.প্র.
৪২১২, ই.ফা. ৪২১৫)
৪৫৭৪
عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ
أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ قَوْلِ
اللهِ تَعَالَى : {وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لَّا تُقْسِطُوْا فِي الْيَتَامٰى}
فَقَالَتْ يَا ابْنَ أُخْتِيْ هَذِهِ الْيَتِيْمَةُ تَكُوْنُ فِيْ حَجْرِ
وَلِيِّهَا تَشْرَكُهُ فِيْ مَالِهِ وَيُعْجِبُهُ مَالُهَا وَجَمَالُهَا
فَيُرِيْدُ وَلِيُّهَا أَنْ يَتَزَوَّجَهَا بِغَيْرِ أَنْ يُقْسِطَ فِيْ
صَدَاقِهَا فَيُعْطِيَهَا مِثْلَ مَا يُعْطِيْهَا غَيْرُهُ فَنُهُوْا عَنْ أَنْ
يَنْكِحُوْهُنَّ إِلَّا أَنْ يُقْسِطُوْا لَهُنَّ وَيَبْلُغُوْا لَهُنَّ أَعْلَى
سُنَّتِهِنَّ فِي الصَّدَاقِ فَأُمِرُوْا أَنْ يَنْكِحُوْا مَا طَابَ لَهُمْ مِنْ
النِّسَاءِ سِوَاهُنَّ قَالَ عُرْوَةُ قَالَتْ عَائِشَةُ وَإِنَّ النَّاسَ
اسْتَفْتَوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ هَذِهِ الْآيَةِ
فَأَنْزَلَ اللهُ : {وَيَسْتَفْتُوْنَكَ فِي النِّسَآءِ} قَالَتْ عَائِشَةُ :
وَقَوْلُ اللهِ تَعَالَى فِيْ آيَةٍ أُخْرَى : {وَتَرْغَبُوْنَ أَنْ
تَنْكِحُوْهُنَّ} رَغْبَةُ أَحَدِكُمْ عَنْ يَتِيْمَتِهِ حِيْنَ تَكُوْنُ
قَلِيْلَةَ الْمَالِ وَالْجَمَالِ قَالَتْ فَنُهُوْا أَنْ يَنْكِحُوْا عَنْ مَنْ
رَغِبُوْا فِيْ مَالِهِ وَجَمَالِهِ فِيْ يَتَامَى النِّسَاءِ إِلَّا بِالْقِسْطِ
مِنْ أَجْلِ رَغْبَتِهِمْ عَنْهُنَّ إِذَا كُنَّ قَلِيْلَاتِ الْمَالِ
وَالْجَمَالِ.
‘উরওয়াহ
ইবনু যুবায়র (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত।
তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন মহান আল্লাহ্র বাণী وَإِنْخِفْتُمْأَنْلاَتُقْسِطُوافِيالْيَتَامَى
সম্পর্কে। তিনি উত্তরে বললেন, হে ভাগ্নে! সে হচ্ছে পিতৃহীনা বালিকা, অভিভাবকের
তত্ত্বাবধানে থাকে এবং তার সম্পত্তিতে অংশীদার হয় এবং তার রূপ ও সম্পদ তাকে
(অভিভাবককে) আকৃষ্ট করে। এরপর সেই অভিভাবক উপযুক্ত মোহর না দিয়ে তাকে বিবাহ করতে
চায়। তদুপরি অন্য ব্যক্তি যে পরিমাণ মোহর দেয় তা না দিয়ে এবং তার প্রতি ন্যায়বিচার
না করে তাকে বিয়ে করতে চায়। এরপর তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মোহর
এবং ন্যায় ও সমুচিত মোহর প্রদান ব্যতীত তাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং
তদ্ব্যতীত যে সকল মহিলা পছন্দ হয় তাদেরকে বিয়ে করতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। ‘উরওয়া
(রহ.) বলেন যে, ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর লোকেরা রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে মহিলাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে আল্লাহ
তা‘আলা অবতীর্ণ করেন وَيَسْتَفْتُونَكَفِيالنِّسَاءِ “এবং লোকেরা আপনার কাছে
নারীদের বিষয়ে জানতে চান......”। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র বাণী অন্য এক
আয়াতেতোমরা তাদেরকে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ কর। ইয়াতীম বালিকার ধন-সম্পদ কম হলে
এবং সুন্দরী না হলে তাকে বিবাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করো না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তাই
ইয়াতীম বালিকাদের মাল ও সৌন্দর্যের আকর্ষণে বিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে
ন্যায়বিচার করলে ভিন্ন কথা। কেননা তারা সম্পদের অধিকারী না হলে এবং সুন্দরী না হলে
তাদেরকেও বিবাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২১৩, ই.ফা. ৪২১৬)
৬৫/৪/২. অধ্যায়ঃ
{وَمَنْ كَانَ فَقِيْرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوْفِ فَإِذَا دَفَعْتُمْ إِلَيْهِمْ أَمْوَالَهُمْ فَأَشْهِدُوْا عَلَيْهِمْ وَكَفٰى بِاللهِ حَسِيْبًا} {وَبِدَارًا} مُبَادَرَةً. {أَعْتَدْنَا} :
أَعْدَدْنَا أَفْعَلْنَا مِنَ الْعَتَادِ.
‘‘এবং যে অভাবগ্রস্ত সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে। যখন তোমরা তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যর্পণ করবে, তখন সাক্ষী রাখবে।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৬)
وَبِدَارًا শীঘ্রই أَعْتَدْنَا প্রস্তুত করে রেখেছি। আর أَعْتَدْنَا শব্দটি أَفْعَلْنَا এর ওজনে الْعَتَادِ মাসদার থেকে (নির্গত)।
‘‘এবং যে অভাবগ্রস্ত সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে। যখন তোমরা তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যর্পণ করবে, তখন সাক্ষী রাখবে।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৬)
وَبِدَارًا শীঘ্রই أَعْتَدْنَا প্রস্তুত করে রেখেছি। আর أَعْتَدْنَا শব্দটি أَفْعَلْنَا এর ওজনে الْعَتَادِ মাসদার থেকে (নির্গত)।
৪৫৭৫
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ نُمَيْرٍ
حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فِيْ
قَوْلِهِ تَعَالَى {وَمَنْ كَانَ غَنِيًّا فَلْيَسْتَعْفِفْ وَمَنْ كَانَ
فَقِيْرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوْفِ} أَنَّهَا نَزَلَتْ فِيْ وَالِي
الْيَتِيْمِ إِذَا كَانَ فَقِيْرًا أَنَّهُ يَأْكُلُ مِنْهُ مَكَانَ قِيَامِهِ عَلَيْهِ
بِمَعْرُوْفٍ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র
বাণী وَمَنْكَانَغَنِيًّافَلْيَسْتَعْفِفْوَمَنْكَانَفَقِيرًافَلْيَأْكُلْبِالْمَعْرُوفِ
সম্পদশালী গ্রহণ করবে না অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াতীমের সম্পদ উপলক্ষে, যদি তত্ত্বাবধায়ক
দরিদ্র হয় তাহলে তত্ত্বাবধানের বিনিময়ে ন্যায্য পরিমাণে তা থেকে ভোগ করবে। [২২১২]
(আ.প্র. ৪২১৪, ই.ফা. ৪২১৭)
৬৫/৪/৩. অধ্যায়ঃ
‘‘আর যদি সম্পত্তি বণ্টনকালে
(উত্তরাধিকারী নয় এমন) আত্মীয় ইয়াতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়, তবে তা থেকে তাদের কিছু
দিবে এবং তাদের সঙ্গে সদালাপ করবে।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৮)
৪৫৭৬
أَحْمَدُ بْنُ حُمَيْدٍ أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللهِ
الْأَشْجَعِيُّ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {وَإِذَا حَضَرَ الْقِسْمَةَ أُولُو الْقُرْبٰى
وَالْيَتَامٰى وَالْمَسَاكِيْنُ} قَالَ هِيَ مُحْكَمَةٌ وَلَيْسَتْ بِمَنْسُوْخَةٍ
تَابَعَهُ سَعِيْدٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আয়াতটি সুস্পষ্ট, মানসুখ নয়। সা‘ঈদ (রাঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে ইকরামাহ
(রাঃ)-এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ্র বাণী ঃ وَإِذَاحَضَرَالْقِسْمَةَأُولُوالْقُرْبَىوَالْيَتَامَىوَالْمَسَاكِينُ
“আর যদি সম্পত্তি বণ্টনকালে আত্মীয়, ইয়াতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়”। (সূরাহ আন্-নিসা
৪/১১)। [২৭৫৯] (আ.প্র. ৪২১৫, ই.ফা. ৪২১৮)
৬৫/৪/৫. অধ্যায়ঃ
‘‘আর তোমরা পাবে অর্ধেক
তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/১২)
৪৫৭৮
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ وَرْقَاءَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ
نَجِيْحٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ
الْمَالُ لِلْوَلَدِ وَكَانَتْ الْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ فَنَسَخَ اللهُ مِنْ
ذَلِكَ مَا أَحَبَّ فَجَعَلَ لِلذَّكَرِ مِثْلَ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ وَجَعَلَ
لِلْأَبَوَيْنِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا السُّدُسَ وَالثُّلُثَ وَجَعَلَ
لِلْمَرْأَةِ الثُّمُنَ وَالرُّبُعَ وَللزَّوْجِ الشَّطْرَ وَالرُّبُعَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মৃত ব্যক্তির সম্পদ লাভ করত সন্তানরা, আর ওয়াসীয়াত ছিল পিতামাতার জন্য। অতঃপর
তাত্থেকে আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় পছন্দ অনুযায়ী কিছু রহিত করলেন এবং পুরুষদের জন্য
মহিলার দ্বিগুণ নির্দিষ্ট করলেন। পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য ষষ্ঠাংশ ও তৃতীয়াংশ
নির্ধারণ করলেন, স্ত্রীদের জন্য অষ্টমাংশ ও চতুর্থাংশ নির্ধারণ করলেন এবং স্বামীর
জন্য অর্ধাংশ ও চতুর্থাংশ নির্ধারণ করলেন। [২৭৪৭] (আ.প্র. ৪২১৭, ই.ফা. ৪২২০)
৬৫/৪/৬. অধ্যায়ঃ
{لَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا النِّسَآءَ كَرْهًا ط وَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ لِتَذْهَبُوْا بِبَعْضِ مَآ اٰتَيْتُمُوْهُنَّ} الْآيَةَ
আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের জন্য হালাল নয় নারীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার গণ্য করা। (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৯)
وَيُذْكَرُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: {لَا تَعْضُلُوْهُنَّ} لَا تَقْهَرُوْهُنَّ. {حُوْبًا}: إِثْمًا. {تَعُوْلُوْا}: تَمِيْلُوْا. {نِحْلَةً} النِّحْلَةُ الْمَهْرُ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত لَا تَعْضُلُوْهُنَّ-তাদের উপর শক্তি প্রয়োগ করো না। حُوْبًا -গুনাহ, تَعُوْلُوْا-ঝুঁকে পড়। نِحْلَةً -মাহর।
আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের জন্য হালাল নয় নারীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার গণ্য করা। (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৯)
وَيُذْكَرُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: {لَا تَعْضُلُوْهُنَّ} لَا تَقْهَرُوْهُنَّ. {حُوْبًا}: إِثْمًا. {تَعُوْلُوْا}: تَمِيْلُوْا. {نِحْلَةً} النِّحْلَةُ الْمَهْرُ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত لَا تَعْضُلُوْهُنَّ-তাদের উপর শক্তি প্রয়োগ করো না। حُوْبًا -গুনাহ, تَعُوْلُوْا-ঝুঁকে পড়। نِحْلَةً -মাহর।
৪৫৭৯
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ حَدَّثَنَا أَسْبَاطُ بْنُ
مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ
الشَّيْبَانِيُّ وَذَكَرَهُ أَبُو الْحَسَنِ السُّوَائِيُّ وَلَا أَظُنُّهُ
ذَكَرَهُ إِلَّا عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {لَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا
النِّسَآءَ كَرْهًا ط وَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ لِتَذْهَبُوْا بِبَعْضِ مَآ
اٰتَيْتُمُوْهُنَّ} قَالَ كَانُوْا إِذَا مَاتَ الرَّجُلُ كَانَ أَوْلِيَاؤُهُ
أَحَقَّ بِامْرَأَتِهِ إِنْ شَاءَ بَعْضُهُمْ تَزَوَّجَهَا وَإِنْ شَاءُوْا
زَوَّجُوْهَا وَإِنْ شَاءُوْا لَمْ يُزَوِّجُوْهَا فَهُمْ أَحَقُّ بِهَا مِنْ
أَهْلِهَا فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ فِيْ ذَلِكَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, يَاأَيُّهَاالَّذِينَآمَنُوالاَيَحِلُّلَكُمْأَنْتَرِثُواالنِّسَاءَكَرْهًاوَلاَتَعْضُلُوهُنَّلِتَذْهَبُوابِبَعْضِمَاآتَيْتُمُوهُنَّ
ইসলামের প্রথম যুগে অবস্থা এমন ছিল যে, কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার অভিভাবকগণ তার
স্ত্রীর মালিক হয়ে বসত। তারা ইচ্ছা করলে নিজেরা ঐ মহিলাকে বিয়ে করত। ইচ্ছা করলে
অন্যের কাছে দিত। কিংবা তাকে মৃত্যু পর্যন্ত আটকে রাখত। কারও কাছে বিয়ে দিত না।
মহিলার পরিবারের চেয়ে এরা অধিক হকদার হয়ে বসত। এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হল। [৬৯৪৮]
(আ.প্র. ৪২১৮, ই.ফা. ৪২২১)
৬৫/৪/৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আমি
উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে দিয়েছি সে সম্পত্তির যা ছেড়ে যায় পিতা-মাতা ও নিকট-
আত্মীয়রা। আর যাদের সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছ তাদের দিয়ে দাও তাদের প্রাপ্য
অংশ। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা। (সূরাহ আন-নিসা ৪/৩৩)
وَقَالَ مَعْمَرٌ : و {مَوَالِي} وَأَوْلِيَاءُ وَرَثَةٌ. {وَالَّذِيْنَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ} هُوَ مَوْلَى الْيَمِيْنِ وَهْوَ الْحَلِيْفُ. وَالْمَوْلَى أَيْضًا ابْنُ الْعَمِّ، وَالْمَوْلَى الْمُنْعِمُ الْمُعْتِقُ، وَالْمَوْلَى الْمُعْتَقُ، وَالْمَوْلَى الْمَلِيْكُ، وَالْمَوْلَى مَوْلًى فِي الدِّيْنِ. مَوَالِيْ এক
প্রকার হচ্ছে সে সকল আত্মীয়, যারা রক্ত সম্বন্ধের উত্তরাধিকারী। অপরপক্ষ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ
অর্থাৎ চুক্তিবদ্ধ উত্তরাধিকারী। আবার مَوْلَى-চাচাত ভাই, مَوْلَى الْمُنْعِمُ-যে
দাস মুক্ত করে, مَوْلَى-আযাদকৃত দাস, مَوْلَى-বাদশাহ, مَوْلَى-মহাজন।
৪৫৮০
الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ
إِدْرِيْسَ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ} قَالَ وَرَثَةً
{وَالَّذِيْنَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ} كَانَ الْمُهَاجِرُوْنَ لَمَّا قَدِمُوا
الْمَدِيْنَةَ يَرِثُ الْمُهَاجِرِيُّ الْأَنْصَارِيَّ دُوْنَ ذَوِيْ رَحِمِهِ
لِلْأُخُوَّةِ الَّتِيْ آخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمْ فَلَمَّا
نَزَلَتْ : {وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ} نُسِخَتْ ثُمَّ قَالَ : {وَالَّذِيْنَ
عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ}مِنْ النَّصْرِ وَالرِّفَادَةِ وَالنَّصِيْحَةِ وَقَدْ
ذَهَبَ الْمِيْرَاثُ وَيُوْصَي لَهُ سَمِعَ أَبُوْ أُسَامَةَ إِدْرِيْسَ وَسَمِعَ
إِدْرِيْسُ طَلْحَةَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, وَلِكُلٍّجَعَلْنَامَوَالِيَ
হচ্ছে বংশীয় উত্তরাধিকারী, وَالَّذِينَعَاقَدَتْأَيْمَانُكُمْ
হচ্ছে মুহাজিরগণ যখন মদিনায় এসেছিলেন তখন তারা আনসারদের উত্তরাধিকারী হতেন।
আত্মীয়তার জন্য নয় বরং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক
তাঁদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের কারণে। যখন وَلِكُلٍّجَعَلْنَامَوَالِيَ
অবতীর্ণ হল, তখন এ হুকুম রহিত হয়ে গেল। তারপর বললেন, যাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করে
থাক সাহায্য-সহযোগিতা ও পরস্পরের উপকার করার। আগের উত্তরাধিকার ব্যবস্থা রহিত হল
এবং এদের জন্য ওয়াসীয়াত বৈধ করা হল।
হাদীসটি আবূ উসামাহ ইদরীসের কাছে থেকে এবং ইদরীস ত্বলহার নিকট হতে শুনেছেন। [২২৯২] (আ.প্র. ৪২১৯, ই.ফা. ৪২২২)
হাদীসটি আবূ উসামাহ ইদরীসের কাছে থেকে এবং ইদরীস ত্বলহার নিকট হতে শুনেছেন। [২২৯২] (আ.প্র. ৪২১৯, ই.ফা. ৪২২২)
৬৫/৪/৯. অধ্যায়ঃ
‘‘আর তখন কী অবস্থা হবে যখন
আমি উপস্থিত করব প্রত্যেক উম্মাত থেকে একজন সাক্ষী এবং আপনাকে তাদের উপর উপস্থিত
করব সাক্ষী রূপে?’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৪১)
{الْمُخْتَالُ} وَالْخَتَّالُ وَاحِدٌ :
{نَطْمِسَ وُجُوْهًا} :
نُسَوِّيَهَا حَتَّى تَعُوْدَ كَأَقْفَائِهِمْ طَمَسَ الْكِتَابَ مَحَاهُ. {بجَهَنَّمَ سَعِيْرًا} :
وُقُوْدًا
الْخَتَّالُ الْمُخْتَالُ একই অর্থে ব্যবহৃত, দাম্ভিক। نَطْمِسَ-সমান করে দেব। শেষ পর্যন্ত তাদের গর্দানের পশ্চাৎদিকের মতো হয়ে যাবে। طَمَسَ الْكِتَابَ কিতাবের লেখা মুছে ফেলা। سَعِيْرًا জ্বলন্ত।
الْخَتَّالُ الْمُخْتَالُ একই অর্থে ব্যবহৃত, দাম্ভিক। نَطْمِسَ-সমান করে দেব। শেষ পর্যন্ত তাদের গর্দানের পশ্চাৎদিকের মতো হয়ে যাবে। طَمَسَ الْكِتَابَ কিতাবের লেখা মুছে ফেলা। سَعِيْرًا জ্বলন্ত।
৪৫৮২
صَدَقَةُ أَخْبَرَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ عَنْ
سُلَيْمَانَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ يَحْيَى
بَعْضُ الْحَدِيْثِ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ قَالَ قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم اقْرَأْ عَلَيَّ قُلْتُ آقْرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ
قَالَ فَإِنِّيْ أُحِبُّ أَنْ أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِيْ فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ
سُوْرَةَ النِّسَاءِ حَتَّى بَلَغْتُ {فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍم
بِشَهِيْدٍ وَّجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰٓؤُلَآءِ شَهِيْدًا} قَالَ : أَمْسِكْ فَإِذَا
عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ.
‘আম্র
ইবনু মুররা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেন, আমার কাছে কুরআন পাঠ
কর। আমি বললাম, আমি আপনার কাছে পাঠ করব? অথচ আপনার কাছেই তা অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি
বললেন, অন্যের মুখ থেকে শুনতে আমি পছন্দ করি। এরপর আমি তাঁর নিকট সূরাহ ‘নিসা’ পাঠ
করলাম, যখন আমি فَكَيْفَإِذَاجِئْنَامِنْكُلِّأُمَّةٍبِشَهِيدٍوَجِئْنَابِكَعَلَىهَؤُلَاءِشَهِيدً
পর্যন্ত পাঠ করলাম, তিনি বললেন, থাম, থাম, তখন তাঁর দু’চোখ হতে টপ টপ করে অশ্র“
ঝরছিল। [৫০৪৯, ৫০৫০, ৫০৫৫, ৫০৫৬] (আ.প্র. ৪২২১, ই.ফা. ৪২২৪)
৬৫/৪/১০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ‘‘আর যদি
তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ শৌচ স্থান থেকে আসে ..........।’’
(সূরাহ আন-নিসা ৪/৪৩)
{صَعِيْدًا}: وَجْهَ الْأَرْضِ وَقَالَ جَابِرٌ كَانَتْ الطَّوَاغِيْتُ الَّتِيْ يَتَحَاكَمُوْنَ إِلَيْهَا فِيْ جُهَيْنَةَ وَاحِدٌ وَفِيْ أَسْلَمَ وَاحِدٌ وَفِيْ كُلِّ حَيٍّ وَاحِدٌ كُهَّانٌ يَنْزِلُ عَلَيْهِمْ الشَّيْطَانُ وَقَالَ عُمَرُ :
{الْجِبْتُ} :
السِّحْرُ، {وَالطَّاغُوْتُ} :
الشَّيْطَانُ. وَقَالَ عِكْرِمَةُ :
{الْجِبْتُ} بِلِسَانِ الْحَبَشَةِ شَيْطَانٌ. {وَالطَّاغُوْتُ} :
الْكَاهِنُ.
صَعِيْدًا-মাটির উপরিভাগ। জাবির (রাঃ) বলেন, যে সকল তাগূতের কাছে তারা বিচারের জন্য যেত তাদের একজন ছিল বুহাইনাহ গোত্রের, একজন আসলাম গোত্রের এবং এভাবে প্রত্যেক গোত্রে এক-একজন করে তাগূত ছিল। তারা হচ্ছে গণক। তাদের কাছে শয়তান আসত।
‘উমার (রাঃ) বলেন, الْجِبْتُ-জাদু, وَالطَّاغُوْتُ-শায়তবন। ‘ইকরামাহ (রাঃ) বলেন, হাবশী ভাষায় শায়ত্বনকে الْجِبْتُ বলা হয়। আর গণককে طَّاغُوْتُ বলা হয়।
صَعِيْدًا-মাটির উপরিভাগ। জাবির (রাঃ) বলেন, যে সকল তাগূতের কাছে তারা বিচারের জন্য যেত তাদের একজন ছিল বুহাইনাহ গোত্রের, একজন আসলাম গোত্রের এবং এভাবে প্রত্যেক গোত্রে এক-একজন করে তাগূত ছিল। তারা হচ্ছে গণক। তাদের কাছে শয়তান আসত।
‘উমার (রাঃ) বলেন, الْجِبْتُ-জাদু, وَالطَّاغُوْتُ-শায়তবন। ‘ইকরামাহ (রাঃ) বলেন, হাবশী ভাষায় শায়ত্বনকে الْجِبْتُ বলা হয়। আর গণককে طَّاغُوْتُ বলা হয়।
৪৫৮৩
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ هَلَكَتْ قِلَادَةٌ لِأَسْمَاءَ
فَبَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ طَلَبِهَا رِجَالًا فَحَضَرَتْ
الصَّلَاةُ وَلَيْسُوْا عَلَى وُضُوْءٍ وَلَمْ يَجِدُوْا مَاءً فَصَلَّوْا وَهُمْ
عَلَى غَيْرِ وُضُوْءٍ فَأَنْزَلَ اللهُ يَعْنِيْ آيَةَ التَّيَمُّمِ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমার কাছ থেকে আসমা (রাঃ)-এর একটি হার হারিয়ে গিয়েছিল। সেটা খোঁজার জন্য
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কয়েকজন লোক পাঠিয়েছিলেন। তখন সলাতের
সময় হল, তাদের কাছে পানি ছিল না। তারা উযূর অবস্থায় ছিলেন না আবার পানিও পেলেন না।
এরপর বিনা অযুতে সলাত আদায় করে ফেললেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা তায়াম্মুমের নিয়মবিধি
অবতীর্ণ করলেন। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২২২, ই.ফা. ৪২২৫)
৬৫/৪/১১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ওহে যারা ঈমান
এনেছ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর এবং আনুগত্য কর রাসূলের এবং তাদের যারা তোমাদের
মধ্যে ফায়সালার অধিকারী। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে মতভেদ কর, তবে তা প্রত্যর্পণ
কর আল্লাহ্ ও রাসূলের প্রতি-যদি তোমরা ঈমান এনে থাক আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিনের
প্রতি। আর এটাই উত্তম এবং পরিণামে কল্যাণকর। (সূরাহ আন-নিসা ৪/৫৯)
৪৫৮৪
صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا حَجَّاجُ بْنُ
مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ يَعْلَى بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ
جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {أَطِيْعُوا اللهَ
وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ} قَالَ نَزَلَتْ فِيْ
عَبْدِ اللهِ بْنِ حُذَافَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَدِيٍّ إِذْ بَعَثَهُ النَّبِيُّ
صلى الله عليه وسلم فِيْ سَرِيَّةٍ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, أَطِيعُوااللهَوَأَطِيعُواالرَّسُولَوَأُولِيالأَمْرِمِنْكُمْ
আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে ‘আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফাহ ইবনু ক্বায়স ইবনু আদী সম্পর্কে যখন
তাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি সৈন্য দলের দলনায়ক করে প্রেরণ
করেছিলেন। [মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৪] (আ.প্র. ৪২২৩, ই.ফা. ৪২২৬)
৬৫/৪/১২. অধ্যায়ঃ
‘‘তবে না; আপনার রবের কসম!
তারা মু’মিন হবে না যে পর্যন্ত না তারা আপনার উপর বিচারের ভার অর্পণ করে সেসব
বিবাদ-বিসম্বাদের যা তাদের মধ্যে সংঘটিত হয়, তারপর তারা নিজেদের মনে কোনরূপ
দ্বিধা-সংকোচ বোধ না করে আপনার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে
নেয়।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৬৫)
৪৫৮৫
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
جَعْفَرٍ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ قَالَ خَاصَمَ
الزُّبَيْرُ رَجُلًا مِنْ الْأَنْصَارِ فِيْ شَرِيْجٍ مِنْ الْحَرَّةِ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اسْقِ يَا زُبَيْرُ ثُمَّ أَرْسِلْ الْمَاءَ إِلَى
جَارِكَ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنْ كَانَ ابْنَ عَمَّتِكَ
فَتَلَوَّنَ وَجْهُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ اسْقِ يَا
زُبَيْرُ ثُمَّ احْبِسْ الْمَاءَ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَى الْجَدْرِ ثُمَّ أَرْسِلْ
الْمَاءَ إِلَى جَارِكَ وَاسْتَوْعَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلزُّبَيْرِ
حَقَّهُ فِيْ صَرِيْحِ الْحُكْمِ حِيْنَ أَحْفَظَهُ الْأَنْصَارِيُّ كَانَ أَشَارَ
عَلَيْهِمَا بِأَمْرٍ لَهُمَا فِيْهِ سَعَةٌ قَالَ الزُّبَيْرُ فَمَا أَحْسِبُ
هَذِهِ الْآيَاتِ إِلَّا نَزَلَتْ فِيْ ذَلِكَ {فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ
حَتّٰى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ}.
‘উরওয়াহ
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, হাররা বা মাদীনাহর কঙ্করময় ভূমিতে একটি পানির নালাকে কেন্দ্র করে একজন
আনসার যুবায়র (রাঃ)-এর সাথে ঝগড়া করেছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, হে যুবায়র! প্রথমত তুমি তোমার জমিতে পানি দাও, তারপর তুমি প্রতিবেশীর জমিতে
পানি ছেড়ে দেবে। আনসারী বললেন, হে আল্লাহ্ররসূল! সে আপনার ফুফাত ভাই, তাই এই
ফয়সালা। এতে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর চেহারা রক্তিম হয়ে গেল।
তারপর তিনি বললেন, হে যুবায়র! তুমি তোমার জমিতে পানি দাও। তারপর সেচ নালা ভর্তি
করে পানি রাখো, অতঃপর তোমার প্রতিবেশিকে পানি দাও।
আনসারী যখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে রাগানি¦ত করলেন তখন তিনি তার হক পুরোপুরি যুবায়র (রাঃ)-কে প্রদানের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে প্রথমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে প্রশস্ততা ছিল।
যুবায়র (রাঃ) বলেন, فَلاَوَرَبِّكَلاَيُؤْمِنُونَحَتَّىيُحَكِّمُوكَفِيمَاشَجَرَبَيْنَهُمْ আয়াতটি এ উপলক্ষে অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। [২৩৬০] (আ.প্র. ৪২২৪, ই.ফা. ৪২২৭)
আনসারী যখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে রাগানি¦ত করলেন তখন তিনি তার হক পুরোপুরি যুবায়র (রাঃ)-কে প্রদানের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে প্রথমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে প্রশস্ততা ছিল।
যুবায়র (রাঃ) বলেন, فَلاَوَرَبِّكَلاَيُؤْمِنُونَحَتَّىيُحَكِّمُوكَفِيمَاشَجَرَبَيْنَهُمْ আয়াতটি এ উপলক্ষে অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। [২৩৬০] (আ.প্র. ৪২২৪, ই.ফা. ৪২২৭)
৬৫/৪/১৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ কেউ আল্লাহ
এবং রসূলের আনুগত্য করে ........ যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। (সূরাহ
আন-নিসা ৪/৬৯)
৪৫৮৬
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ حَوْشَبٍ حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ
اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ مَا
مِنْ نَبِيٍّ يَمْرَضُ إِلَّا خُيِّرَ بَيْنَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَكَانَ
فِيْ شَكْوَاهُ الَّذِيْ قُبِضَ فِيْهِ أَخَذَتْهُ بُحَّةٌ شَدِيْدَةٌ
فَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ : {مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنَ
النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصَّالِحِيْنَ} فَعَلِمْتُ
أَنَّهُ خُيِّرَ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে,
প্রত্যেক নাবী অন্তিম সময়ে পীড়িত হলে তাঁকে দুনিয়া ও আখিরাতের যে কোন একটি গ্রহণ
করতে বলা হয়। যে অসুখে তাঁকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে সে অসুখে তাঁর ভীষণ শ্বাসকষ্ট আরম্ভ
হয়েছিল। সে সময় আমি তাঁকে مَعَالَّذِينَأَنْعَمَاللهُعَلَيْهِمْمِنْالنَّبِيِّينَوَالصِّدِّيقِينَوَالشُّهَدَاءِوَالصَّالِحِينَ
তাঁরা নাবীগণ, সত্যপরায়ণ, শহীদ ও সৎকর্মশীল যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ বর্ষণ
করেছেন, তাঁদের সঙ্গী হবেন (সূরাহ আন-নিসা ৪/৬৯) বলতে শুনেছি। এরপর আমি বুঝে
নিয়েছি যে, তাঁকে (দুনিয়া বা আখিরাতে) যে কোন একটি বেছে নেয়ার অবকাশ দেয়া হয়েছে।
[৪৪৩৫] (আ.প্র. ৪২২৫, ই.ফা. ৪২২৮)
৬৫/৪/১৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তোমাদের কী
হল যে, তোমরা যুদ্ধ করবে না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুগণের জন্য
........ যার অধিবাসী যালিম।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৭৫)
৪৫৮৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ
عُبَيْدِ اللهِ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأُمِّيْ مِنْ
الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنْ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ.
‘উবাইদুল্লাহ
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন যে, আমি এবং আমার
আম্মা (আয়াতে বর্ণিত) অসহায়দের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২২৬, ই.ফা.
৪২২৯)
৪৫৮৮
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ
عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ تَلَا :
{إِلَّا الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَآءِ وَالْوِلْدَانِ} قَالَ
: كُنْتُ أَنَا وَأُمِّيْ مِمَّنْ عَذَرَ اللهُ. وَيُذْكَرُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ
{حَصِرَتْ} ضَاقَتْ. {تَلْوُوْا} أَلْسِنَتَكُمْ بِالشَّهَادَةِ وَقَالَ غَيْرُهُ
{الْمُرَاغَمُ} الْمُهَاجَرُ رَاغَمْتُ هَاجَرْتُ قَوْمِي. {مَوْقُوْتًا}:
مُوَقَّتًا وَقْتَهُ عَلَيْهِمْ.
ইবনু
আবূ মুলাইকাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) إِلاَّالْمُسْتَضْعَفِينَمِنْالرِّجَالِوَالنِّسَاءِوَالْوِلْدَانِ
“তবে যেসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু .......” (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৮) আয়াতটি
তিলাওয়াত করলেন এবং বললেন, আল্লাহ যাদের অক্ষমতাকে অনুমোদন করেছেন আমি এবং আমার আম্মা
তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত حَصِرَتْসংকুচিত
হয়েছে। تَلْوُواأَلْسِنَتَكُمْبِالشَّهَادَةِসাক্ষ্য
দিতে তাদের জিহ্বা বক্র হয়। الْمُهَاجَرُالْمُرَاغَمُ হিজরাতের স্থান, رَاغَمْتُقَوْمِيআমার
গোত্রকে ত্যাগ করেছি, مَوْقُوتًا এবং مُوَقَّتًاতাদের উপর সময় নির্দিষ্ট করে
দেয়া হয়েছে। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২২৭, ই.ফা. ৪২৩০)
৬৫/৪/১৫. অধ্যায়ঃ
‘‘তোমাদের কী হল যে, তোমরা
মুনাফিকদের সম্বন্ধে দু’দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ্ তাদের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে
দিয়েছেন তাদের কৃতকর্মের দরুন।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৮৮)
قَالَ : ابْنُ عَبَّاسٍ : بَدَّدَهُمْ. {فِئَةٌ} :
جَمَاعَةٌ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, بَدَّدَهُمْ-তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করেছেন, فِئَةٌ-দল।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, بَدَّدَهُمْ-তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করেছেন, فِئَةٌ-দল।
৪৫৮৯
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ وَعَبْدُ
الرَّحْمَنِ قَالَا حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَدِيٍّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
يَزِيْدَ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ {فَمَا لَكُمْ فِي
الْمُنَافِقِيْنَ فِئَتَيْنِ} رَجَعَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم مِنْ أُحُدٍ وَكَانَ النَّاسُ فِيْهِمْ فِرْقَتَيْنِ فَرِيْقٌ يَقُوْلُ
اقْتُلْهُمْ وَفَرِيْقٌ يَقُوْلُ : لَا فَنَزَلَتْ : {فَمَا لَكُمْ فِي
الْمُنَافِقِيْنَ فِئَتَيْنِ} وَقَالَ : إِنَّهَا طَيْبَةُ، تَنْفِي الْخَبَثَ
كَمَا تَنْفِي النَّارُ خَبَثَ الْفِضَّةِ.
যায়দ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
فَمَالَكُمْفِيالْمُنَافِقِينَفِئَتَيْنِ
উহূদের যুদ্ধ থেকে একদল লোক দলত্যাগ করে ফিরে এসেছিল, এরপর তাদের ব্যাপারে লোকেরা
দু’দল হয়ে গেল, একদল বলছে তাদেরকে হত্যা করে ফেল; অপরদল বলছে তাদেরকে হত্যা করো
না, তখন অবতীর্ণ হল ঃ فَمَالَكُمْفِيالْمُنَافِقِينَفِئَتَيْنِ
অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, এই মাদীনাহ হল পবিত্র
স্থান, আগুন যেভাবে রৌপ্যের কালিমা দূর করে এটাও অপবিত্রতা দূর করে দেয়। [১৮৮৪;
মুসলিম ১৫/৮৮, হাঃ ১৩৮৪, আহমাদ ২১৬৫৫] (আ.প্র. ৪২২৮, ই.ফা. ৪২৩১)
৬৫/৪/১৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর যখন তাদের
কাছে পৌঁছে কোন সংবাদ নিরাপত্তা কিংবা ভয় সংক্রান্ত, তখন তারা তা প্রচার করে দেয়।
(সূরাহ আন-নিসা ৪/৮৩)
{يَسْتَنْبِطُوْنَهُ} :
يَسْتَخْرِجُوْنَهُ. {حَسِيْبًا} كَافِيًا. {إِلَّا إِنَاثًا} :
يَعْنِي الْمَوَاتَ حَجَرًا أَوْ مَدَرًا وَمَا أَشْبَهَهُ. {مَرِيْدًا} مُتَمَرِّدًا. {فَلَيُبَتِّكُنَّ} بَتَّكَهُ قَطَّعَهُ. {قِيْلًا} وَقَوْلًا وَاحِدٌ. {طَبَعَ} خَتَمَ.
يَسْتَنْبِطُوْنَهُ তারা সেটির ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। حَسِيْبًا যথেষ্ট। إِلَّا إِنَاثًا বলা হয় প্রাণহীন ও অচেতন পদার্থকে যেমন- পাথর বা অনুরূপ পদার্থ। مَرِيْدًا বিদ্রোহী। فَلَيُبَتِّكُنَّ কান ছিদ্র করা। وَقَوْلًا ও قِيْلًا এর একই অর্থাৎ ‘বলা’। طَبَعَ সীলমোহরকৃত।
يَسْتَنْبِطُوْنَهُ তারা সেটির ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। حَسِيْبًا যথেষ্ট। إِلَّا إِنَاثًا বলা হয় প্রাণহীন ও অচেতন পদার্থকে যেমন- পাথর বা অনুরূপ পদার্থ। مَرِيْدًا বিদ্রোহী। فَلَيُبَتِّكُنَّ কান ছিদ্র করা। وَقَوْلًا ও قِيْلًا এর একই অর্থাৎ ‘বলা’। طَبَعَ সীলমোহরকৃত।
৬৫/৪/১৭. অধ্যায়ঃ
‘‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন
মু’মিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৩)
৪৫৯০
آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا
مُغِيْرَةُ بْنُ النُّعْمَانِ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ جُبَيْرٍ قَالَ آيَةٌ
اخْتَلَفَ فِيْهَا أَهْلُ الْكُوْفَةِ فَرَحَلْتُ فِيْهَا إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ
فَسَأَلْتُهُ عَنْهَا فَقَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضٰى
أَوْ عَلٰى سَفَرٍ أَوْ جَآءَ أَحَدٌ مِّنْكُمْ مِّنَ الْغَآئِطِ} هِيَ آخِرُ
مَا نَزَلَ وَمَا نَسَخَهَا شَيْءٌ.
সা‘ঈদ
ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, এই আয়াত সম্পর্কে কূফাবাসীগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করল। (কেউ বলেন
মানসূখ, কেউ বলেন মানসূখ নয়। এ ব্যাপারে আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গেলাম এবং
তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বললেন, وَمَنْيَقْتُلْمُؤْمِنًامُتَعَمِّدًافَجَزَاؤُهُجَهَنَّمُ
আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে এবং এটি শেষের দিকে অবতীর্ণ আয়াত; এটাকে কোন কিছু রহিত
করেনি। [৩৮৫৫; মুসলিম ৫৪/হাঃ ৩০২৩] (আ.প্র. ৪২২৯, ই.ফা. ৪২৩২)
৬৫/৪/১৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ কেউ তোমাদের
সালাম করলে তাকে বল নাঃ ‘‘তুমি তো মু’মিন নও’’। (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৪)
السِّلْمُ وَالسَّلَمُ وَالسَّلَامُ وَاحِدٌ.
السِّلْمُ এবং السَّلَمُ একরূপ, শান্তি।
السِّلْمُ এবং السَّلَمُ একরূপ, শান্তি।
৪৫৯১
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ
عَمْرٍو عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {وَلَا
تَقُوْلُوْا لِمَنْ أَلْقَى إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا} قَالَ قَالَ
ابْنُ عَبَّاسٍ : كَانَ رَجُلٌ فِيْ غُنَيْمَةٍ لَهُ فَلَحِقَهُ الْمُسْلِمُوْنَ
فَقَالَ : السَّلَامُ عَلَيْكُمْ فَقَتَلُوْهُ، وَأَخَذُوْا غُنَيْمَتَهُ
فَأَنْزَلَ اللهُ فِيْ ذَلِكَ إِلَى قَوْلِهِ : {عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا} تِلْكَ
الْغُنَيْمَةُ. قَالَ : قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ السَّلَامَ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, وَلاَتَقُولُوالِمَنْأَلْقَىإِلَيْكُمْالسَّلاَمَلَسْتَمُؤْمِنًا
আয়াতের ঘটনা হচ্ছে এই যে, এক ব্যক্তির কিছু ছাগল ছিল, মুসলিমদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ
হলে সে তাঁদেরকে বলল “আস্সালামু আলাইকুম”, মুসলিমরা তাকে হত্যা করল এবং তার
ছাগলগুলো নিয়ে নিল, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন عَرَضَالْحَيَاةِالدُّنْيَا
পার্থিব সম্পদের লালসায়আর সে সম্পদ হচ্ছে এ ছাগল পাল।
‘আত্বা (রহ.) বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) السَّلاَمَ পড়েছেন। (আ.প্র. ৪২৩০, ই.ফা. ৪২৩৩)
‘আত্বা (রহ.) বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) السَّلاَمَ পড়েছেন। (আ.প্র. ৪২৩০, ই.ফা. ৪২৩৩)
৬৫/৪/১৯. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ সমান নয় সেসব
মু’মিন যারা বিনা ওজরে ঘরে বসে থাকে এবং ঐসব মু’মিন যারা আল্লাহর পথে নিজেদের
জানমাল দিয়ে জিহাদ করে।(সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৫)
৪৫৯২
إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ
حَدَّثَنِيْ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ السَّاعِدِيُّ أَنَّهُ رَأَى مَرْوَانَ بْنَ
الْحَكَمِ فِي الْمَسْجِدِ فَأَقْبَلْتُ حَتَّى جَلَسْتُ إِلَى جَنْبِهِ
فَأَخْبَرَنَا أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى
الله عليه وسلم أَمْلَى عَلَيْهِ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ
الْمُؤْمِنِيْنَ} و {وَالْمُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ} فَجَاءَهُ ابْنُ
أُمِّ مَكْتُوْمٍ وَهْوَ يُمِلُّهَا عَلَيَّ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَاللهِ
لَوْ أَسْتَطِيْعُ الْجِهَادَ لَجَاهَدْتُ وَكَانَ أَعْمَى فَأَنْزَلَ اللهُ عَلَى
رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم وَفَخِذُهُ عَلَى فَخِذِيْ فَثَقُلَتْ عَلَيَّ
حَتَّى خِفْتُ أَنْ تَرُضَّ فَخِذِيْ ثُمَّ سُرِّيَ عَنْهُ فَأَنْزَلَ اللهُ
{غَيْرَ أُولِي الضَّرَرِ}.
যায়দ
ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ
আয়াতটি লেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলছিলেন এমন সময় ইবনু উম্মু মাকতুম
(রাঃ) তাঁর কাছে আসলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)! আল্লাহ্র শপথ, যদি আমার জিহাদ করার ক্ষমতা থাকত তা হলে অবশ্যই জিহাদ
করতাম। তিনি অন্ধ ছিলেন। এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর উপর ওয়াহী নাযিল করলেন, এমন অবস্থায় যে তাঁর উরু আমার উরুর উপর ছিল
তা আমার কাছে এতই ভারী লাগছিল যে, আমি আমার উরু ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলাম।
তারপর তাঁর থেকে এই অবস্থা কেটে গেল, আর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ غَيْرَأُولِيالضَّرَرِঅক্ষম
ব্যক্তিরা ব্যতীত (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৫)। [২৮৩২] (আ.প্র. ৪২৩১, ই.ফা. ৪২৩৪)
৪৫৯৩
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ
إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ لَا
يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ دَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم زَيْدًا فَكَتَبَهَا فَجَاءَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ فَشَكَا
ضَرَارَتَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ غَيْرَ أُوْلِي الضَّرَرِ.
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বললেন, যখন لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَ.....
আয়াতটি অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যায়দ
(রাঃ)-কে ডাকলেন। তিনি তা লিখে নিলেন। ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ) তাঁর অক্ষমতার ওযর
পেশ করলেন, আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ غَيْرَأُولِيالضَّرَرِ
অক্ষম ব্যক্তিরা ব্যতীত (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৫)। [২৮৩১] (আ.প্র. ৪২৩২, ই.ফা. ৪২৩৫)
৪৫৯৪
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ
إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ
مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ} قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ادْعُوْا فُلَانًا
فَجَاءَهُ وَمَعَهُ الدَّوَاةُ وَاللَّوْحُ أَوِ الْكَتِفُ فَقَالَ اكْتُبْ {لَا
يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ
اللهِ} وَخَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ فَقَالَ :
يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَا ضَرِيْرٌ فَنَزَلَتْ مَكَانَهَا {لَا يَسْتَوِي
الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ غَيْرَ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُوْنَ
فِيْ سَبِيْلِ اللهِ}.
বারাআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ
আয়াতটি যখন অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন
অমুককে ডেকে আন। এরপর দোয়াত, কাঠ অথবা হাড় খণ্ড নিয়ে তিনি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আসলেন। তিনি বললেন, লিখে নাও ঃ لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَ
..... فِيسَبِيلِاللهِরসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পেছনে ছিলেন ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ)। তিনি
বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমি অক্ষম ব্যক্তি।
এরপর তখনই অবতীর্ণ হল ঃ لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَغَيْرَأُولِيالضَّرَرِوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ
অর্থাৎ “যারা কোন প্রকার ওযর ব্যতীত বাড়িতে বসে থাকে তারা এবং আল্লাহ্র পথে
জিহাদকারীগণ সমান হতে পারে না।” [২৮৩১] (আ.প্র. ৪২৩৩, ই.ফা. ৪২৩৬)
৪৫৯৫
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَنَّ
ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ ح و حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ
الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الْكَرِيْمِ أَنَّ
مِقْسَمًا مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِثِ أَخْبَرَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ
الْمُؤْمِنِيْنَ} عَنْ بَدْرٍ وَالْخَارِجُوْنَ إِلَى بَدْرٍ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বদরের
যুদ্ধে যোগদানকারী আর বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত মু’মিনগণ সমান নয়। [৩৯৫৪] (আ.প্র.
৪২৩৪, ই.ফা. ৪২৩৭)
৬৫/৪/২০. অধ্যায়ঃ
‘‘নিশ্চয় যারা নিজেদের উপর
যুল্ম করে, মালায়িকাহ তাদের জান কবজের সময় বলবেঃ তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা
বলবেঃ আমরা দুনিয়ায় অসহায় অবস্থায় ছিলাম। মালায়িকাহ বলবেঃ আল্লাহর দুনিয়া কি এমন
প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা সেখানে হিজরাত করে চলে যেতে?’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৭)
৪৫৯৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيْدَ الْمُقْرِئُ حَدَّثَنَا
حَيْوَةُ وَغَيْرُهُ قَالَا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَبُو
الْأَسْوَدِ قَالَ قُطِعَ عَلَى أَهْلِ الْمَدِيْنَةِ بَعْثٌ فَاكْتُتِبْتُ فِيْهِ
فَلَقِيْتُ عِكْرِمَةَ مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَأَخْبَرْتُهُ فَنَهَانِيْ عَنْ
ذَلِكَ أَشَدَّ النَّهْيِ ثُمَّ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ أَنَّ نَاسًا
مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ كَانُوْا مَعَ الْمُشْرِكِيْنَ يُكَثِّرُوْنَ سَوَادَ
الْمُشْرِكِيْنَ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَأْتِي
السَّهْمُ فَيُرْمَى بِهِ فَيُصِيْبُ أَحَدَهُمْ فَيَقْتُلُهُ أَوْ يُضْرَبُ
فَيُقْتَلُ فَأَنْزَلَ اللهُ : {إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَفّٰهُمُ الْمَلٰٓئِكَةُ
ظَالِمِيْٓ أَنْفُسِهِمْ}الآيَةَ رَوَاهُ اللَّيْثُ عَنْ أَبِي الْأَسْوَدِ.
আবুল
আসওয়াদ মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, একদল সৈন্য পাঠানোর জন্যে মাদীনাহ বাসীদের উপর নির্দেশ দেয়া হলে আমাকেও
তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হল। আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর মুক্ত গোলাম ইকরামাহর সঙ্গে
দেখা করলাম এবং তাঁকে এ ব্যাপারে জানালাম। তিনি আমাকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ
করলেন, তারপর বললেন কিছু সংখ্যক মুসলিম মুশরিকদের সঙ্গে থেকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে মুশরিকদের দল ভারী করেছিল, তীর এসে তাদের কারো
উপর পড়ত এবং তাকে মেরে ফেলত অথবা তাদের কেউ মার খেত এবং নিহত হত তখন আল্লাহ তা‘আলা
অবতীর্ণ করলেন ঃ إِنَّ الَّذِينَ تَوَفَّاهُمْ الْمَلاَئِكَةُ ظَالِمِي أَنْفُسِهِمْ
আবুল আসওয়াদ থেকে লাইস এটা বর্ণনা করেছেন। [৭০৮৫] (আ.প্র. ৪২৩৫, ই.ফা. ৪২৩৮)
৬৫/৪/২১. অধ্যায়ঃ
‘‘তবে সেসব অসহায় পুরুষ,
নারী ও শিশু যারা কোন উপায় অবলম্বন করতে পারে না এবং কোন পথেরও সন্ধান জানে না।’’
(সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৮)
৪৫৯৭
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ أَيُّوْبَ
عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {إِلَّا
الْمُسْتَضْعَفِيْنَ} قَالَ : كَانَتْ أُمِّيْ مِمَّنْ عَذَرَ اللهُ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
إِلاَّ الْمُسْتَضْعَفِينَ
সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা যাদের অক্ষমতা কবূল করেছেন আমার মাতা
তাঁদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২৩৬, ই.ফা. ৪২৩৯)
৬৫/৪/২২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ্ এদের
ক্ষমা করবেন। কারণ আল্লাহ্ অতিশয় মার্জনাকারী, পরম ক্ষমাশীল। (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৯)
৪৫৯৮
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى عَنْ
أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَيْنَا
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّيْ الْعِشَاءَ إِذْ قَالَ سَمِعَ اللهُ
لِمَنْ حَمِدَهُ ثُمَّ قَالَ قَبْلَ أَنْ يَسْجُدَ اللهُمَّ نَجِّ عَيَّاشَ بْنَ
أَبِيْ رَبِيْعَةَ اللهُمَّ نَجِّ سَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ اللهُمَّ نَجِّ
الْوَلِيْدَ بْنَ الْوَلِيْدِ اللهُمَّ نَجِّ الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ
الْمُؤْمِنِيْنَ اللهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ اللهُمَّ اجْعَلْهَا
سِنِيْنَ كَسِنِيْ يُوْسُفَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘ইশার সলাত আদায় করছিলেন, তিনি সামিআল্লাহু
লিমান হামিদাহ বললেন, তারপর সাজদাহ্ করার পূর্বে বললেন, হে আল্লাহ! আয়্যাশ ইবনু
আবূ রাবিয়াকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! সালামাহ ইবনু হিশামকে মুক্ত করুন। হে
‘আল্লাহ! ওয়ালিদ ইবনু ওয়ালিদকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! অক্ষম মু’মিনদেরকে মুক্ত
করুন। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর কঠিন শাস্তি অবতীর্ণ করুন। হে আল্লাহ! তাদের
উপর ইউসুফ (‘আ.)-এর যুগের দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন। [৭৯৭] (আ.প্র.
৪২৩৭, ই.ফা. ৪২৪০)
৬৫/৪/২৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর লোকেরা
আপনার কাছে নারীদের সম্বন্ধে বিধান জানতে চায়। বলুনঃ আল্লাহ্ তাদের সম্বন্ধে
তোমাদের ব্যবস্থা দিচ্ছেন এবং যা তোমাদের তিলাওয়াত করে শুনান হয় কুরআনে তা ঐসব
ইয়াতিম নারীদের সম্পর্কে যাদের তোমরা তাদের নির্ধারিত প্রাপ্য প্রদান কর না অথচ
তোমরা তাদের বিবাহ করতে চাও এবং অসহায় শিশুদের সম্বন্ধে, আর ইয়াতিমদের ব্যাপারে
ইনসাফের সঙ্গে কার্য নির্বাহ করবে। (সূরাহ আন-নিসা ৪/১২৭)
৪৬০০
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ
قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهَا : {يَسْتَفْتُوْنَكَ فِي النِّسَآءِ قُلْ اللهُ
يُفْتِيْكُمْ فِيْهِنَّ} إِلَى قَوْلِهِ : {وَتَرْغَبُوْنَ أَنْ تَنْكِحُوْهُنَّ}
قَالَتْ عَائِشَةُ : هُوَ الرَّجُلُ تَكُوْنُ عِنْدَهُ الْيَتِيْمَةُ هُوَ
وَلِيُّهَا وَوَارِثُهَا فَأَشْرَكَتْهُ فِيْ مَالِهِ حَتَّى فِي الْعَذْقِ
فَيَرْغَبُ أَنْ يَنْكِحَهَا وَيَكْرَهُ أَنْ يُزَوِّجَهَا رَجُلًا فَيَشْرَكُهُ
فِيْ مَالِهِ بِمَا شَرِكَتْهُ فَيَعْضُلُهَا فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত।
وَتَرْغَبُونَ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ يَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِيهِنَّ
আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যার নিকট ইয়াতীম বালিকা থাকে সে
তার অভিভাবক এবং তার মুরুব্বী, এরপর সেই বালিকা সেই অভিভাবকের সম্পদের অংশীদার হয়ে
যায়, এমনকি খেজুর বাগানেও। সে ব্যক্তি তাকে বিয়েও করে না এবং অন্য কারো নিকট বিয়ে
দিতেও অপছন্দ করে এ আশঙ্কায় যে, তার যেই সম্পদে বালিকা অংশীদার সেই সম্পদে অন্য
ব্যক্তি অংশীদার হয়ে যাবে। এভাবে সেই ব্যক্তি ঐ বালিকাকে আটকে রাখে। তখন এ আয়াত
অবতীর্ণ হয়। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২৩৯, ই.ফা. ৪২৪২)
৬৫/৪/২৫.
অধ্যায়ঃ
‘‘আর যদি কোন স্ত্রী তার
স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/১২৮)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ :
{شِقَاقٌ} تَفَاسُدٌ. {وَأُحْضِرَتْ الْأَنْفُسُ الشُّحَّ} هَوَاهُ فِي الشَّيْءِ يَحْرِصُ عَلَيْهِ. {كَالْمُعَلَّقَةِ} لَا هِيَ أَيِّمٌ، وَلَا ذَاتُ زَوْجٍ. {نُشُوْزًا} :
بُغْضًا.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, شِقَاقٌ পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, وَأُحْضِرَتْ الْأَنْفُسُ الشُّحَّ কোন বস্তুর প্রতি অত্যধিক আশঙ্কা বা লোভ করা, كَالْمُعَلَّقَةِ সধবাও নয়, বিধবাও নয়। نُشُوْزًا হিংসা।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, شِقَاقٌ পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, وَأُحْضِرَتْ الْأَنْفُسُ الشُّحَّ কোন বস্তুর প্রতি অত্যধিক আশঙ্কা বা লোভ করা, كَالْمُعَلَّقَةِ সধবাও নয়, বিধবাও নয়। نُشُوْزًا হিংসা।
৪৬০১
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ
أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهَا : {وَإِنِ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْمبَعْلِهَا نُشُوْزًا أَوْ إِعْرَاضًا}
قَالَتْ الرَّجُلُ تَكُوْنُ عِنْدَهُ الْمَرْأَةُ لَيْسَ بِمُسْتَكْثِرٍ مِنْهَا
يُرِيْدُ أَنْ يُفَارِقَهَا فَتَقُوْلُ أَجْعَلُكَ مِنْ شَأْنِيْ فِيْ حِلٍّ
فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِيْ ذَلِكَ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
وَإِنْ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا
আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, কোন ব্যক্তির বিবাহ বন্ধনে কোন মহিলা থাকে কিন্তু
স্বামী তার প্রতি আকৃষ্ট নয় বরং তাকে আলাদা করে দিতে চায়, তখন স্ত্রী বলে আমার এই
দাবী থেকে আমি তোমাকে অব্যাহতি দিচ্ছি, এ সম্পর্কে এ আয়াত অবতীর্ণ হল। [২৪৫০]
(আ.প্র. ৪২৪০, ই.ফা. ৪২৪৩)
৬৫/৪/২৬. অধ্যায়ঃ
‘‘ নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা
থাকবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে।’’ (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৪৫)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : أَسْفَلَ النَّارِ. {نَفَقًا} :
سَرَبًا.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) أَسْفَلَ النَّارِ সম্বন্ধে পদের সঙ্গে পড়েছেন। نَفَقًا-মাটির নীচের সুড়ঙ্গ পথ।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) أَسْفَلَ النَّارِ সম্বন্ধে পদের সঙ্গে পড়েছেন। نَفَقًا-মাটির নীচের সুড়ঙ্গ পথ।
৪৬০২
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا
الْأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ كُنَّا فِيْ
حَلْقَةِ عَبْدِ اللهِ فَجَاءَ حُذَيْفَةُ حَتَّى قَامَ عَلَيْنَا فَسَلَّمَ ثُمَّ
قَالَ لَقَدْ أُنْزِلَ النِّفَاقُ عَلَى قَوْمٍ خَيْرٍ مِنْكُمْ قَالَ الْأَسْوَدُ
سُبْحَانَ اللهِ إِنَّ اللهَ يَقُوْلُ : {إِنَّ الْمُنَافِقِيْنَ فِي اَلدَّرْكِ
الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ} فَتَبَسَّمَ عَبْدُ اللهِ وَجَلَسَ حُذَيْفَةُ فِيْ
نَاحِيَةِ الْمَسْجِدِ فَقَامَ عَبْدُ اللهِ فَتَفَرَّقَ أَصْحَابُهُ فَرَمَانِيْ
بِالْحَصَا فَأَتَيْتُهُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ عَجِبْتُ مِنْ ضَحِكِهِ وَقَدْ عَرَفَ
مَا قُلْتُ لَقَدْ أُنْزِلَ النِّفَاقُ عَلَى قَوْمٍ كَانُوْا خَيْرًا مِنْكُمْ
ثُمَّ تَابُوْا فَتَابَ اللهُ عَلَيْهِمْ.
আসওয়াদ
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ)-এর মজলিসে ছিলাম, সেখানে হুযাইফাহ আসলেন এবং আমাদের
সম্মুখে দণ্ডায়মান হয়ে সালাম দিলেন। এরপর বললেন, তোমাদের চেয়ে উত্তম গোত্রের উপরও
মুনাফিকী এসেছিল। আসওয়াদ বললেন, সুবহানাল্লাহ! অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “মুনাফিকগণ
জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে”। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) হেসে উঠলেন।
হুযাইফাহ (রাঃ) মসজিদের এক কোণে গিয়ে বসলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) উঠে গেলে তাঁর
শিষ্যবর্গও চলে গেলেন। এরপর হুযাইফাহ (রাঃ) আমার দিকে একটি পাথর টুকরো নিক্ষেপ করে
আমাকে ডাকলেন। আমি তার নিকট গেলে তিনি বললেন, আমি তার হাসিতে বিস্মিত হলাম অথচ আমি
যা বলেছি তা তিনি বুঝেছেন। এমন এক গোত্র যারা তোমাদের চেয়ে উত্তম তাদের মধ্যেও
মুনাফিকী সৃষ্টি করা হয়েছিল। তারপর তারা তাওবাহ করেছে এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদের
তাওবাহ গ্রহণ করেছেন। (আ.প্র. ৪২৪১, ই.ফা. ৪২৪৪)
৬৫/৪/২৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তোমার নিকট
ওয়াহী প্রেরণ করেছি যেমন ইউনুস, হারূন এবং সুলাইমান (আঃ)-এর নিকট ওয়াহী প্রেরণ
করেছিলাম। (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৬৩)
৪৬০৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ قَالَ
حَدَّثَنِي الْأَعْمَشُ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا يَنْبَغِيْ لِأَحَدٍ أَنْ يَقُوْلَ أَنَا خَيْرٌ
مِنْ يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা (‘আ.) থেকে
উত্তম” এটা বলা কারো জন্য শোভনীয় নয়। [৩৪১২] (আ.প্র. ৪২৪২, ই.ফা. ৪২৪৫)
৪৬০৪
مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ حَدَّثَنَا
هِلَالٌ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُوْنُسَ
بْنِ مَتَّى فَقَدْ كَذَبَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলে “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা
থেকে উত্তম” সে মিথ্যা বলে। [৩৪১৫] (আ.প্র. ৪২৪৩, ই.ফা. ৪২৪৬)
৬৫/৪/২৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ লোকেরা আপনার
কাছে বিধান জানতে চায়। আপনি বলুনঃ আল্লাহ্ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন ‘‘কালালা’’-
(পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে। যদি কোন ব্যক্তি নিঃসন্তান অবস্থায়
মারা যায়। (পিতা-মাতা না থাকে) এবং তার এক বোন থাকে তবে সে পরিত্যক্ত সম্পত্তির
অর্ধাংশ পাবে; সে যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার ওয়ারিস হবে। (সূরাহ আন-নিসা
৪/১৭৬)
وَ {الْكَلَالَةُ} :
مَنْ لَمْ يَرِثْهُ أَبٌ أَوْ ابْنٌ وَهُوَ مَصْدَرٌ مِنْ تَكَلَّلَهُ النَّسَبُ.
كَلَالَةِ-যার পিতা কিংবা পুত্র উত্তরাধিকারী না থাকে مُكَلَّةُ النَّسَبِ বাক্য থেকে এটা ক্রিয়াপদ।
كَلَالَةِ-যার পিতা কিংবা পুত্র উত্তরাধিকারী না থাকে مُكَلَّةُ النَّسَبِ বাক্য থেকে এটা ক্রিয়াপদ।
৪৬০৫
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِيْ
إِسْحَاقَ، سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : آخِرُ سُوْرَةٍ
نَزَلَتْ بَرَاءَةَ وَآخِرُ آيَةٍ نَزَلَتْ : {يَسْتَفْتُوْنَكَ}.
আবূ
ইসহাক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আমি
বারাআ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, সর্বশেষ নাযিলকৃত সূরাহ হচ্ছে “বারাআত” এবং
সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াত হচ্ছে يَسْتَفْتُونَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ।
[৪৩৬৪; মুসলিম ২৩/৩, হাঃ ১৬১৮] (আ.প্র. ৪২৪৪, ই.ফা. ৪২৪৭)
৬৫/৫/১. অধ্যায়ঃ
তাফসীর
{حُرُمٌ} :
وَاحِدُهَا حَرَامٌ {فَبِمَا نَقْضِهِمْ مِّيْثَقَهُمْ بِنَقْضِهِمُ الَّتِيْ كَتَبَ اللهُ}: جَعَلَ اللهُ {تَبُوْٓءُ}: تَحْمِلُ. {دَآئِرَةٌ} :
دَوْلَةٌ. وَقَالَ غَيْرُهُ : الإِغْرَاءُ التَّسْلِيْطُ {أُجُوْرَهُنَّ} :
مُهُوْرَهُنَّ. {الْمُهَيْمِنُ} :
الْأمِيْنُ، القُرْآنُ أمِيْنُ عَلَى كُلِّ كِتابٍ قَبْلَهُ. قَالَ سُفْيَانُ : مَا فِي الْقُرْآنِ آيَةٌ أَشَدُّ عَلَيَّ مِنْ {لَسْتُمْ عَلٰى شَيْءٍ حَتّٰى تُقِيْمُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنْجِيْلَ وَمَآ أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ مَّخْمَصَةٍ} مَجَاعَةٍ، {مَنْ أَحْيَاهَا} :
يَعْنِيْ مَنْ حَرَّمَ قَتْلَهَا إِلَّا بِحَقٍّ حَيِيَ النَّاسُ مِنْهُ جَمِيْعًا. {شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا} سَبِيْلًا وَسُنَّةً. فَإنْ {عَشُرَ} :
ظَهَرَ. ا{لأوْلَيانِ} وَاحِدُها : أوْلَى.
حُرُمٌ একবচনে حَرَامٌ নিষিদ্ধ অবস্থায় (আল-মায়িদাহ ৫/১), فَبِمَا نَقْضِهِمْ তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণ (আল-মায়িদাহ ৫/১৩), الَّتِيْ كَتَبَ اللهُ যা আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন, تَبُوْءُ বহন করবে, অন্য একজন বলেছেন الإِغْرَاءُ শক্তিশালী করে দেয়া, دَائِرَةٌ ওলট-পালট, أُجُوْرَهُنَّ তাদের মাহর, مَخْمَصَةٍ ক্ষুধার তাড়নায় (আল-মায়িদাহ ৫/৩)।
আপনি বলে দিনঃ হে আহলে কিতাব! তোমরা কোন কিছুর উপরই প্রতিষ্ঠিত নও, যতক্ষণ পর্যন্ত না পুরোপুরি পালন করবে তাওরাত, ইন্জীল ও তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের তরফ থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬৮)
সুফ্ইয়ান সাওরী (রাঃ) বলেন, আমার দৃষ্টিতে কুরআন মাজীদে لَسْتُمْ عَلٰى شَيْءٍ حَتّٰى تُقِيْمُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنْجِيْلَ وَمَآ أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ مَّخْمَصَةٍ আয়াতটির চেয়ে কঠোর অন্য কোন আয়াত নেই। مَنْ أَحْيَاهَا -আর যে কেউ কারো জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমস্ত মানুষের জীবন রক্ষা করল- (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৩২)। شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا -আইন ও স্পষ্ট পথ, নিয়ম- (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৪৮) مُهَيْمِنُ- আমানতদার, কুরআন তার পূর্বের কিতাবসমূহের আমানতদার। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৪৮)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {مَخْمَصَةٍ} مَجَاعَةٍ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مَخْمَصَةٍ ক্ষুধা/অভাব অনটন।
حُرُمٌ একবচনে حَرَامٌ নিষিদ্ধ অবস্থায় (আল-মায়িদাহ ৫/১), فَبِمَا نَقْضِهِمْ তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণ (আল-মায়িদাহ ৫/১৩), الَّتِيْ كَتَبَ اللهُ যা আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন, تَبُوْءُ বহন করবে, অন্য একজন বলেছেন الإِغْرَاءُ শক্তিশালী করে দেয়া, دَائِرَةٌ ওলট-পালট, أُجُوْرَهُنَّ তাদের মাহর, مَخْمَصَةٍ ক্ষুধার তাড়নায় (আল-মায়িদাহ ৫/৩)।
আপনি বলে দিনঃ হে আহলে কিতাব! তোমরা কোন কিছুর উপরই প্রতিষ্ঠিত নও, যতক্ষণ পর্যন্ত না পুরোপুরি পালন করবে তাওরাত, ইন্জীল ও তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের তরফ থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬৮)
সুফ্ইয়ান সাওরী (রাঃ) বলেন, আমার দৃষ্টিতে কুরআন মাজীদে لَسْتُمْ عَلٰى شَيْءٍ حَتّٰى تُقِيْمُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنْجِيْلَ وَمَآ أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ مَّخْمَصَةٍ আয়াতটির চেয়ে কঠোর অন্য কোন আয়াত নেই। مَنْ أَحْيَاهَا -আর যে কেউ কারো জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমস্ত মানুষের জীবন রক্ষা করল- (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৩২)। شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا -আইন ও স্পষ্ট পথ, নিয়ম- (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৪৮) مُهَيْمِنُ- আমানতদার, কুরআন তার পূর্বের কিতাবসমূহের আমানতদার। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৪৮)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {مَخْمَصَةٍ} مَجَاعَةٍ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مَخْمَصَةٍ ক্ষুধা/অভাব অনটন।
৪৬০৬
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ قَيْسٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَتْ الْيَهُوْدُ
لِعُمَرَ إِنَّكُمْ تَقْرَءُوْنَ آيَةً لَوْ نَزَلَتْ فِيْنَا لَاتَّخَذْنَاهَا
عِيْدًا فَقَالَ عُمَرُ إِنِّيْ لَأَعْلَمُ حَيْثُ أُنْزِلَتْ وَأَيْنَ أُنْزِلَتْ
وَأَيْنَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ أُنْزِلَتْ يَوْمَ عَرَفَةَ
وَإِنَّا وَاللهِ بِعَرَفَةَ قَالَ سُفْيَانُ وَأَشُكُّ كَانَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ
أَمْ لَا {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ}.
ত্বরিক
ইবনু শিহাব থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহূদীগণ
‘উমার ফারূক (রাঃ)-কে বলল যে, আপনারা এমন একটি আয়াত পড়ে থাকেন তা যদি আমাদের মধ্যে
নাযিল হত, তবে আমরা সেটাকে “ঈদ” হিসেবে গ্রহণ করতাম। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমি জানি
এটা কখন নাযিল হয়েছে, কোথায় নাযিল হয়েছে এবং নাযিলের সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোথায় ছিলেন, আয়াতটি আরাফাতের দিন নাযিল হয়েছিল। আল্লাহ্র
শপথ আমরা সবাই ‘আরাফাতে ছিলাম, সেই আয়াতটি হল الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ আজ
আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম। সুফ্ইয়ান সাওরী বলেন, এ
ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে । [৪৫] (আ.প্র. ৪২৪৫, ই.ফা. ৪২৪৮)
৬৫/৫/৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ পানি না পাও,
তবে তোমরা পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬)
{تَيَمَّمُوْا} :
تَعَمَّدُوْا. آمِّيْنَ : عَامِدِيْنَ أَمَّمْتُ وَتَيَمَّمْتُ وَاحِدٌ. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : لَمَسْتُمْ وَ تَمَسُّوْهُنَّ وَ اللَّاتِيْ دَخَلْتُمْ بِهِنَّ، وَالإِفْضَاءُ : النِّكَاحُ.
تَيَمَّمُوْا তোমরা ইচ্ছে করবে, آمِّيْنَ উদ্দেশ্য করে, أَمَّمْتُ আর تَيَمَّمْتُ একই, আমি ইচ্ছে করেছি, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন- وَ اللَّاتِيْ دَخَلْتُمْ بِهِنَّ، تَمَسُّوْهُنَّ، لَمَسْتُمْ এবং وَالإِفْضَاءُএই চারটিরই অর্থ সহবাস করা।
تَيَمَّمُوْا তোমরা ইচ্ছে করবে, آمِّيْنَ উদ্দেশ্য করে, أَمَّمْتُ আর تَيَمَّمْتُ একই, আমি ইচ্ছে করেছি, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন- وَ اللَّاتِيْ دَخَلْتُمْ بِهِنَّ، تَمَسُّوْهُنَّ، لَمَسْتُمْ এবং وَالإِفْضَاءُএই চারটিরই অর্থ সহবাস করা।
৪৬০৭
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا
زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ أَسْفَارِهِ حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالْبَيْدَاءِ أَوْ
بِذَاتِ الْجَيْشِ انْقَطَعَ عِقْدٌ لِيْ فَأَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم عَلَى الْتِمَاسِهِ وَأَقَامَ النَّاسُ مَعَهُ وَلَيْسُوْا عَلَى مَاءٍ
وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ فَأَتَى النَّاسُ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ
فَقَالُوْا أَلَا تَرَى مَا صَنَعَتْ عَائِشَةُ أَقَامَتْ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم وَبِالنَّاسِ وَلَيْسُوْا عَلَى مَاءٍ وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ
فَجَاءَ أَبُوْ بَكْرٍ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاضِعٌ رَأْسَهُ
عَلَى فَخِذِيْ قَدْ نَامَ فَقَالَ حَبَسْتِ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
وَالنَّاسَ وَلَيْسُوْا عَلَى مَاءٍ وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ قَالَتْ عَائِشَةُ
فَعَاتَبَنِيْ أَبُوْ بَكْرٍ وَقَالَ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُوْلَ وَجَعَلَ
يَطْعُنُنِيْ بِيَدِهِ فِيْ خَاصِرَتِيْ وَلَا يَمْنَعُنِيْ مِنْ التَّحَرُّكِ
إِلَّا مَكَانُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى فَخِذِيْ فَقَامَ رَسُوْلُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَصْبَحَ عَلَى غَيْرِ مَاءٍ فَأَنْزَلَ اللهُ
آيَةَ التَّيَمُّمِ فَتَيَمَّمُوْا فَقَالَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ مَا هِيَ
بِأَوَّلِ بَرَكَتِكُمْ يَا آلَ أَبِيْ بَكْرٍ قَالَتْ فَبَعَثْنَا الْبَعِيْرَ
الَّذِيْ كُنْتُ عَلَيْهِ فَإِذَا الْعِقْدُ تَحْتَهُ.
নাবী-পত্নী
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে এক সফরে বের হলাম, বাইদা
কিংবা যাতুল জাইশ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার গলার হার হারিয়ে গেল। তা খোঁজার
জন্যে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেখানে অবস্থান করলেন এবং লোকেরাও
তাঁর সঙ্গে অবস্থান করল। সেখানেও কোন পানি ছিল না এবং তাদের সঙ্গেও পানি ছিল না।
এরপর লোকেরা আবূ বাক্র (রাঃ)-এর কাছে আসল এবং বলল, ‘আয়িশাহ (রাঃ) যা করেছেন আপনি
তা দেখেছেন কি? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং সকল লোকটি আটকিয়ে
রেখেছেন, অথচ সেখানেও পানি নেই আবার তাদের সঙ্গেও পানি নেই। রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার উরুতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় আবূ বাক্র
(রাঃ) এলেন এবং বললেন, তুমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং সকল লোককে
আটকে রেখেছো অথচ সেখানেও পানি নেই আবার তাদের সঙ্গেও পানি নেই। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন
যে, আবূ বাক্র (রাঃ) আমাকে দোষারোপ করলেন এবং আল্লাহ যা চেয়েছেন তা বলেছেন এবং
তাঁর অঙ্গুলি দিয়ে আমার কোমরে ধাক্কা দিতে লাগলেন, আমার কোলে রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া করতে বাধা দিল। পানিবিহীন অবস্থায়
ভোরে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুম থেকে উঠলেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা
তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করলেন, তখন সবাই তায়াম্মুম করল। তখন উসাইদ ইবনু হুযাইর
বললেন, হে আবূ বাক্র-এর বংশধর! এটাই আপনাদের কারণে পাওয়া প্রথম বারাকাত নয়।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, যে উটের উপর আমি ছিলাম, তাকে আমরা উঠালাম তখন দেখি হারটি তার নিচে। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২৪৬, ই.ফা. ৪২৪৯)
‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, যে উটের উপর আমি ছিলাম, তাকে আমরা উঠালাম তখন দেখি হারটি তার নিচে। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২৪৬, ই.ফা. ৪২৪৯)
৪৬০৮
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ
قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرٌو أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ حَدَّثَهُ
عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا سَقَطَتْ قِلَادَةٌ لِيْ
بِالْبَيْدَاءِ وَنَحْنُ دَاخِلُوْنَ الْمَدِيْنَةَ فَأَنَاخَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم وَنَزَلَ فَثَنَى رَأْسَهُ فِيْ حَجْرِيْ رَاقِدًا أَقْبَلَ أَبُوْ
بَكْرٍ فَلَكَزَنِيْ لَكْزَةً شَدِيْدَةً وَقَالَ حَبَسْتِ النَّاسَ فِيْ
قِلَادَةٍ فَبِي الْمَوْتُ لِمَكَانِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ
أَوْجَعَنِيْ ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اسْتَيْقَظَ وَحَضَرَتْ
الصُّبْحُ فَالْتَمِسَ الْمَاءُ فَلَمْ يُوْجَدْ فَنَزَلَتْ {يٰٓأَيُّهَا
الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ} الآيَةَ فَقَالَ أُسَيْدُ
بْنُ حُضَيْرٍ لَقَدْ بَارَكَ اللهُ لِلنَّاسِ فِيْكُمْ يَا آلَ أَبِيْ بَكْرٍ مَا
أَنْتُمْ إِلَّا بَرَكَةٌ لَهُمْ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মদিনায়
প্রবেশের পথে বাইদা নামক স্থানে আমার গলার হারটি পড়ে গেল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেখানে উট বসিয়ে অবস্থান করলেন। তিনি আমার কোলে মাথা রেখে
শুয়েছিলেন। আবূ বাক্র (রাঃ) এসে আমাকে জোরে থাপ্পড় লাগালেন এবং বললেন একটি হার
হারিয়ে তুমি সকল লোককে আটকে রেখেছো। এদিকে তিনি আমাকে ব্যথা দিয়েছেন, অপরদিকে রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ অবস্থায় আছেন, এতে আমি মৃত্যু যাতনা ভোগ
করছিলাম। তারপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জাগ্রত হলেন, ফাজ্র সলাতের
সময় হল এবং পানি খোঁজ করে পাওয়া গেল না, তখন অবতীর্ণ হল ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَاغسْلُوْا وَجُوْهكُم
..... ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন সলাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে
নিজেদের মুখমণ্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬)
এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বাক্রের বংশধর! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্যে বারাকাত অবতীর্ণ করেছেন। মানুষের জন্য তোমরা হলে কল্যাণ আর কল্যাণ। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২৪৭, ই.ফা. ৪২৫০)
এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বাক্রের বংশধর! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্যে বারাকাত অবতীর্ণ করেছেন। মানুষের জন্য তোমরা হলে কল্যাণ আর কল্যাণ। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২৪৭, ই.ফা. ৪২৫০)
৬৫/৫/৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ অতএব আপনি ও
আপনার রব যান এবং উভয়ে যুদ্ধ করুন, আমরা তো এখানেই বসলাম। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/২৪)
৪৬০৯
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ مُخَارِقٍ
عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ سَمِعْتُ ابْنَ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
شَهِدْتُ مِنَ الْمِقْدَادِ ح و حَدَّثَنِيْ حَمْدَانُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا
أَبُو النَّضْرِ حَدَّثَنَا الْأَشْجَعِيُّ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مُخَارِقٍ عَنْ
طَارِقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ الْمِقْدَادُ يَوْمَ بَدْرٍ يَا رَسُوْلَ
اللهِ إِنَّا لَا نَقُوْلُ لَكَ كَمَا قَالَتْ بَنُوْ إِسْرَائِيْلَ لِمُوْسَى
{فَاذْهَبْ أَنْتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِلَآ إِنَّا هَا هُنَا قَاعِدُوْنَ} وَلَكِنْ
امْضِ وَنَحْنُ مَعَكَ فَكَأَنَّهُ سُرِّيَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ وَرَوَاهُ
وَكِيْعٌ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ مُخَارِقٍ عَنْ طَارِقٍ أَنَّ الْمِقْدَادَ قَالَ
ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস‘ঊদ থেকে বর্ণিতঃ
বদর
যুদ্ধের দিন মিক্দাদ (রাঃ) বলেছিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! ইসরাঈলীরা মূসা (‘আ.)-কে
যেমন বলেছিল, “যাও তুমি ও তোমার প্রতিপালক যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে থাকব” আমরা
আপনাকে সে রকম বলব না বরং আপনি এগিয়ে যান, আমরা আপনার সঙ্গেই আছি, তখন যেন রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে গেল। এই হাদীসটি
ওয়াকা-সুফ্ইয়ান থেকে, তিনি মুখারিক থেকে এবং তিনি (মুখারিক) তারিক থেকে বর্ণনা
করেছেন যে, মিক্দাদ এটা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে
বলেছিলেন। [৩৯৫২] (আ.প্র. ৪২৪৮, ই.ফা. ৪২৫১)
৬৫/৫/৫. অধ্যায়ঃ
‘‘যারা আল্লাহ্ ও তাঁর
রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে হাঙ্গামা সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি
হল-তাদের হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে
কেটে ফেলা হবে অথবা দেশ থেকে তাদের নির্বাসিত করা হবে। এ হল তাদের জন্য দুনিয়ায়
লাঞ্ছনা আর আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।’’ (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৩৩)
الْمُحَارَبَةُ لِلهِ الْكُفْرُ بِهِ.
-আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করা।
৪৬১০
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ
سَلْمَانُ أَبُوْ رَجَاءٍ مَوْلَى أَبِيْ قِلَابَةَ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ أَنَّهُ
كَانَ جَالِسًا خَلْفَ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيْزِ فَذَكَرُوْا وَذَكَرُوْا
فَقَالُوْا وَقَالُوْا قَدْ أَقَادَتْ بِهَا الْخُلَفَاءُ فَالْتَفَتَ إِلَى
أَبِيْ قِلَابَةَ وَهْوَ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَقَالَ مَا تَقُوْلُ يَا عَبْدَ اللهِ
بْنَ زَيْدٍ أَوْ قَالَ مَا تَقُوْلُ يَا أَبَا قِلَابَةَ قُلْتُ مَا عَلِمْتُ
نَفْسًا حَلَّ قَتْلُهَا فِي الإِسْلَامِ إِلَّا رَجُلٌ زَنَى بَعْدَ إِحْصَانٍ
أَوْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ حَارَبَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا أَنَسٌ بِكَذَا وَكَذَا قُلْتُ إِيَّايَ
حَدَّثَ أَنَسٌ قَالَ قَدِمَ قَوْمٌ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
فَكَلَّمُوْهُ فَقَالُوْا قَدْ اسْتَوْخَمْنَا هَذِهِ الْأَرْضَ فَقَالَ هَذِهِ
نَعَمٌ لَنَا تَخْرُجُ فَاخْرُجُوْا فِيْهَا فَاشْرَبُوْا مِنَ الْبَانِهَا
وَأَبْوَالِهَا فَخَرَجُوْا فِيْهَا فَشَرِبُوْا مِنْ أَبْوَالِهَا وَأَلْبَانِهَا
وَاسْتَصَحُّوْا وَمَالُوْا عَلَى الرَّاعِيْ فَقَتَلُوْهُ وَاطَّرَدُوا النَّعَمَ
فَمَا يُسْتَبْطَأُ مِنْ هَؤُلَاءِ قَتَلُوا النَّفْسَ وَحَارَبُوا اللهَ
وَرَسُوْلَهُ وَخَوَّفُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ سُبْحَانَ
اللهِ فَقُلْتُ تَتَّهِمُنِيْ قَالَ حَدَّثَنَا بِهَذَا أَنَسٌ قَالَ وَقَالَ يَا
أَهْلَ كَذَا إِنَّكُمْ لَنْ تَزَالُوْا بِخَيْرٍ مَا أُبْقِيَ هَذَا فِيْكُمْ
أَوْ مِثْلُ هَذَا.
আবূ
ক্বিলাবাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত।
তিনি ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহ.)-এর পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। তাঁরা কাসামাত দণ্ড
সম্পর্কিত হাদীসটি আলোচনা করলেন এবং এর অবস্থা সম্পর্কে আলাপ করলেন, তাঁরা
মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে বললেন এবং এও বললেন যে, খুলাফায়ে রাশিদীন এই পদ্ধতিতে
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। এরপর তিনি আবূ কিলাবার প্রতি তাকালেন, আবূ কিলাবাহ
তাঁর পেছনে ছিলেন। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ নামে কিংবা আবূ কিলাবাহ নামে ডেকে
বললেন, এই ব্যাপারে তোমার মতামত কী? আমি বললাম, বিয়ের পর ব্যভিচার, কিসাস ব্যতীত
খুন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ
ঘোষণার কোন একটি ব্যতীত অন্য কোন কারণে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া ইসলামে বৈধ বলে আমার
জানা নেই।
আনবাসা বললেন, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে হাদীস এভাবে বর্ণনা করেছেন (অর্থাৎ হাদীসে আরনিন)। আমি (আবূ ক্বিলাবাহ) বললাম, আমাকেও আনাস (রাঃ) এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একদল লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে এসে তাঁর সঙ্গে আলাপ করল, তারা বলল, আমরা এ দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদেরকে খাপ খাওয়াতে পারছি না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এগুলো আমার উট, ঘাস খাওয়ার জন্যে বের হচ্ছে, তোমরা এগুলোর সঙ্গে যাও এবং এদের দুধ ও পেশাব পান কর। তারা ওগুলোর সঙ্গে বেরিয়ে গেল এবং দুধ ও প্রস্রাব পান করে সুস্থ হয়ে উঠল, এরপর রাখালের উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে পশুগুলো লুট করে নিয়ে গেল। এখন তাদেরকে হত্যা না করার পক্ষে আর কোন যুক্তিই থাকল না। তারা নরহত্যা করেছে, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ভয় দেখিয়েছে। ‘আনবাসা আশ্চর্য হয়ে বলল, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, আমার এই হাদীস সম্পর্কে তুমি কি আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেবে? ‘আনবাসা বলল, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন, আবূ কিলাবাহ বললেন, তখন ‘আনবাসা বলল, হে এই দেশবাসী (অর্থাৎ সিরিয়াবাসী) এ রকম ব্যক্তিবর্গ যতদিন তোমাদের মধ্যে থাকবে ততদিন তোমরা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। [২৩৩] (আ.প্র. ৪২৪৯, ই.ফা. ৪২৫২)
আনবাসা বললেন, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে হাদীস এভাবে বর্ণনা করেছেন (অর্থাৎ হাদীসে আরনিন)। আমি (আবূ ক্বিলাবাহ) বললাম, আমাকেও আনাস (রাঃ) এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একদল লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে এসে তাঁর সঙ্গে আলাপ করল, তারা বলল, আমরা এ দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদেরকে খাপ খাওয়াতে পারছি না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এগুলো আমার উট, ঘাস খাওয়ার জন্যে বের হচ্ছে, তোমরা এগুলোর সঙ্গে যাও এবং এদের দুধ ও পেশাব পান কর। তারা ওগুলোর সঙ্গে বেরিয়ে গেল এবং দুধ ও প্রস্রাব পান করে সুস্থ হয়ে উঠল, এরপর রাখালের উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে পশুগুলো লুট করে নিয়ে গেল। এখন তাদেরকে হত্যা না করার পক্ষে আর কোন যুক্তিই থাকল না। তারা নরহত্যা করেছে, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ভয় দেখিয়েছে। ‘আনবাসা আশ্চর্য হয়ে বলল, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, আমার এই হাদীস সম্পর্কে তুমি কি আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেবে? ‘আনবাসা বলল, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন, আবূ কিলাবাহ বললেন, তখন ‘আনবাসা বলল, হে এই দেশবাসী (অর্থাৎ সিরিয়াবাসী) এ রকম ব্যক্তিবর্গ যতদিন তোমাদের মধ্যে থাকবে ততদিন তোমরা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। [২৩৩] (আ.প্র. ৪২৪৯, ই.ফা. ৪২৫২)
৬৫/৫/৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এবং যখমের বদল
অনুরূপ যখম। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৪৫)
৪৬১১
مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ أَخْبَرَنَا الْفَزَارِيُّ عَنْ
حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَسَرَتْ الرُّبَيِّعُ وَهْيَ
عَمَّةُ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ثَنِيَّةَ جَارِيَةٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَطَلَبَ الْقَوْمُ
الْقِصَاصَ فَأَتَوْا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم بِالْقِصَاصِ فَقَالَ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ عَمُّ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ
لَا وَاللهِ لَا تُكْسَرُ سِنُّهَا يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم يَا أَنَسُ كِتَابُ اللهِ الْقِصَاصُ فَرَضِيَ الْقَوْمُ
وَقَبِلُوا الْأَرْشَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مِنْ
عِبَادِ اللهِ مَنْ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, রুবাঈ যিনি আনাস (রাঃ)-এ ফুফু, এক আনসার মহিলার সামনের একটি বড় দাঁত
ভেঙ্গে ফেলেছিল। এরপর আহত মহিলার গোত্র এর কিসাস দাবী করে। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিসাসের
নির্দেশ দিলেন, আনাস ইবনু মালিকের চাচা আনাস ইবনু নযর বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল!
আল্লাহ্র শপথ রুবাঈ-এর দাঁত ভাঙ্গা হবে না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে আনাস! আল্লাহ্র কিতাব তো “বদলা”র বিধান দেয়। পরবর্তীতে
বিরোধীপক্ষ রাযী হয়ে মুক্তিপণ বা দিয়ত গ্রহণ করল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্র কতক বান্দা আছে যারা আল্লাহ্র নামে কসম
করলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের কসম সত্যে পরিণত করেন। [২৭০৩] (আ.প্র. ৪২৫০, ই.ফা. ৪২৫৩)
৬৫/৫/৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ হে রসূল! আপনি
তা পৌঁছে দিন যা আপনার প্রতি আপনার রবের তরফ থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছে। (সূরাহ
আল-মায়িদাহ ৫/৬৭)
৪৬১২
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ
إِسْمَاعِيْلَ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهَا قَالَتْ مَنْ حَدَّثَكَ أَنَّ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم كَتَمَ
شَيْئًا مِمَّا أَنْزَلَ اللهُ عَلَيْهِ فَقَدْ كَذَبَ وَاللهُ يَقُوْلُ :
{يٰٓأَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَآ أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ}الْآيَةَ
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, যদি কেউ তোমাকে বলে যে, তাঁর অবতীর্ণ বিষয়ের সামান্য কিছুও মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গোপন করেছেন তা হলে অবশ্যই, সে মিথ্যা বলেছে।
আল্লাহ বলেছেন, “হে রসূল! আপনি তা পৌঁছে দিন যা আপনার প্রতি আপনার রবের তরফ থেকে
অবতীর্ণ করা হয়েছে।” [৩২৩৪] (আ.প্র. ৪২৫১, ই.ফা. ৪২৫৪)
৬৫/৫/৮.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ
তোমাদের পাকড়াও করবেন না তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৮৯)
৪৬১৩
عَلِيُّ بْنُ سَلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ سُعَيْرٍ
حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أُنْزِلَتْ
هَذِهِ الْآيَةُ {لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللهُ بِاللَّغْوِ فِيْٓ أَيْمَانِكُمْ} فِيْ
قَوْلِ الرَّجُلِ لَا وَاللهِ وَبَلَى وَاللهِ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
لاَ يُؤَاخِذُكُمْ اللهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ
আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে মানুষের উদ্দেশ্যবিহীন উক্তিلاَ وَاللهِ না
আল্লাহ্র শপথ, بَلَى وَاللهِ হ্যাঁ আল্লাহ্র শপথ
ইত্যাদি উপলক্ষে। [৬৬৬৩] (আ.প্র. ৪২৫২, ই.ফা. ৪২৫৫)
৪৬১৪
أَحْمَدُ ابْنُ أَبِيْ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا النَّضْرُ عَنْ
هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ
أَبَاهَا كَانَ لَا يَحْنَثُ فِيْ يَمِيْنٍ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ كَفَّارَةَ
الْيَمِيْنِ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ لَا أَرَى يَمِيْنًا أُرَى غَيْرَهَا خَيْرًا
مِنْهَا إِلَّا قَبِلْتُ رُخْصَةَ اللهِ وَفَعَلْتُ الَّذِيْ هُوَ خَيْرٌ
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর
পিতা শপথই ভঙ্গ করতেন না। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা শপথ ভঙ্গের কাফ্ফারার বিধান
অবতীর্ণ করলেন। আবূ বাক্র (রাঃ) বলেছেন, শপথকৃত কাজের উল্টোটি যদি আমি উত্তম ধারণা
করি তবে আমি আল্লাহ প্রদত্ত সুযোগটি গ্রহণ করি এবং উত্তম কাজটি সম্পাদন করি।
[৬৬২১] (আ.প্র. ৪২৫৩, ই.ফা. ৪২৫৬)
৬৫/৫/৯.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ওহে যারা ঈমান
এনেছ! তোমরা হারাম করো না সেসব উৎকৃষ্ট বস্তু যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করেছেন
এবং সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসেন না। (সূরাহ
আল-মায়িদাহ ৫/৮৭)
৪৬১৫
عَمْرُوْ بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ
إِسْمَاعِيْلَ عَنْ قَيْسٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا
نَغْزُوْ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَيْسَ مَعَنَا نِسَاءٌ فَقُلْنَا
أَلَا نَخْتَصِيْ فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ فَرَخَّصَ لَنَا بَعْدَ ذَلِكَ أَنْ
نَتَزَوَّجَ الْمَرْأَةَ بِالثَّوْبِ ثُمَّ قَرَأَ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ
اٰمَنُوْا لَا تُحَرِّمُوْا طَيِّبٰتِ مَآ أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ}.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে যুদ্ধে বের হতাম,
তখন আমাদের সঙ্গে স্ত্রীগণ থাকত না, তখন আমরা বলতাম আমরা কি খাসি হয়ে যাব না? তিনি
আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করলেন এবং কাপড়ের বিনিময়ে হলেও মহিলাদেরকে বিয়ে করার অর্থাৎ
নিকাহে মুত‘আর অনুমতি দিলেন এবং পাঠ করলেন ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ।
[৫০৭১, ৫০৭৫; মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৪, আহমাদ ৪১১৩] (আ.প্র. ৪২৫৪, ই.ফা. ৪২৫৭)
[১] প্রকাশ থাকে যে, মুতআ বিবাহ খায়বারের যুদ্ধে
চিরতরে হারাম করা হয়েছে।
৬৫/৫/১০.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ওহে যারা ঈমান
এনেছ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ণায়ক শর-এসব নোংরা-অপবিত্র, শয়তানের কাজ
ব্যতীত আর কিছু নয়। সুতরাং তোমরা এসব থেকে বেঁচে থাক যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
(সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৯০)
৪৬১৬
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
بِشْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيْزِ قَالَ
حَدَّثَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ نَزَلَ
تَحْرِيْمُ الْخَمْرِ وَإِنَّ فِي الْمَدِيْنَةِ يَوْمَئِذٍ لَخَمْسَةَ أَشْرِبَةٍ
مَا فِيْهَا شَرَابُ الْعِنَبِ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, মদ নিষিদ্ধ হওয়ার বিধান যখন নাযিল হল, তখন মাদীনাতে পাঁচ প্রকারের মদের
রেওয়াজ ছিল, আঙ্গুরের পানিগুলো এর মধ্যে গণ্য ছিল না। [৫৫৭৯] (আ.প্র. ৪২৫৫, ই.ফা.
৪২৫৮)
৪৬১৭
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ صُهَيْبٍ قَالَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ مَا كَانَ لَنَا خَمْرٌ غَيْرُ فَضِيخِكُمْ هَذَا الَّذِيْ
تُسَمُّوْنَهُ الْفَضِيخَ فَإِنِّيْ لَقَائِمٌ أَسْقِيْ أَبَا طَلْحَةَ وَفُلَانًا
وَفُلَانًا إِذْ جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ وَهَلْ بَلَغَكُمْ الْخَبَرُ فَقَالُوْا
وَمَا ذَاكَ قَالَ حُرِّمَتْ الْخَمْرُ قَالُوْا أَهْرِقْ هَذِهِ الْقِلَالَ يَا
أَنَسُ قَالَ فَمَا سَأَلُوْا عَنْهَا وَلَا رَاجَعُوْهَا بَعْدَ خَبَرِ
الرَّجُلِ.
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, তোমরা যেটাকে ফাযীখ অর্থাৎ কাঁচা খুরমা ভিজানো পানি নাম রেখেছ সেই ফাযীখ
ব্যতীত আমাদের অন্য কোন মদ ছিল না। একদিন আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আবূ ত্বলহা, অমুক
এবং অমুককে তা পান করাচ্ছিলাম। তখনই এক ব্যক্তি এসে বলল, আপনাদের কাছে এ সংবাদ
এসেছে কি? তাঁরা বললেন, ঐ সংবাদ কী? সে বলল, মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে, তাঁরা
বললেন, হে আনাস! এই বড় বড় মটকাগুলো থেকে মদ ঢেলে ফেলে দাও। আনাস (রাঃ) বললেন যে,
এই ব্যক্তির সংবাদের পর তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেসও করেননি এবং দ্বিতীয়বার
পানও করেননি। [২৪৬৪] (আ.প্র. ৪২৫৬, ই.ফা. ৪২৫৯)
৪৬১৮
صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ
عَمْرٍو عَنْ جَابِرٍ قَالَ صَبَّحَ أُنَاسٌ غَدَاةَ أُحُدٍ الْخَمْرَ فَقُتِلُوْا
مِنْ يَوْمِهِمْ جَمِيْعًا شُهَدَاءَ وَذَلِكَ قَبْلَ تَحْرِيْمِهَا.
জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উহূদের
যুদ্ধের দিন ভোরে কিছু লোক মদ পান করেছিলেন এবং সেদিন তাঁরা সবাই শহীদ হয়েছেন। এই
মদ্যপানের ঘটনা ছিল তা হারাম হওয়ার আগের ঘটনা। [২৮১৫] (আ.প্র. ৪২৫৭, ই.ফা. ৪২৬০)
৪৬১৯
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ الْحَنْظَلِيُّ أَخْبَرَنَا
عِيْسَى وَابْنُ إِدْرِيْسَ عَنْ أَبِيْ حَيَّانَ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ ابْنِ
عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَلَى مِنْبَرِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم يَقُوْلُ أَمَّا بَعْدُ أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ نَزَلَ
تَحْرِيْمُ الْخَمْرِ وَهْيَ مِنْ خَمْسَةٍ مِنْ الْعِنَبِ وَالتَّمْرِ
وَالْعَسَلِ وَالْحِنْطَةِ وَالشَّعِيْرِ وَالْخَمْرُ مَا خَامَرَ الْعَقْلَ
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন যে, আমি ‘‘উমার (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মিম্বরে
বসে বলতে শুনেছি যে, এরপর হে লোক সকল! মদপানের নিষেধাজ্ঞা অবতীর্ণ হয়েছে আর তা
হচ্ছে পাঁচ প্রকার, খুরমা থেকে, আঙ্গুর থেকে, মধু থেকে, গম থেকে এবং যব থেকে আর মদ
হচ্ছে যা সুস্থ বিবেককে আচ্ছন্ন করে ফেলে। [৫৫৮১, ৫৫৮৮, ৫৫৮৯, ৭৩৩৭] (আ.প্র. ৪২৫৮,
ই.ফা. ৪২৬১)
৬৫/৫/১১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ যারা ঈমান
এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের কোন গুনাহ নেই পূর্বে তারা যা খেয়েছে সেজন্য, যখন
তারা সাবধান হয়েছে, ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে। তারপর সাবধান হয় ও ঈমান দৃঢ়
থাকে। তারপর সাবধান হয় ও নেক কাজ করে। আর আল্লাহ নেককারদের ভালবাসেন। (সূরাহ
আল-মায়িদাহ ৫/৯৩)
৪৬২০
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ
حَدَّثَنَا ثَابِتٌ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ الْخَمْرَ الَّتِيْ
أُهْرِيْقَتْ الْفَضِيخُ وَزَادَنِيْ مُحَمَّدٌ الْبِيْكَنْدِيُّ عَنْ أَبِي
النُّعْمَانِ قَالَ كُنْتُ سَاقِيَ الْقَوْمِ فِيْ مَنْزِلِ أَبِيْ طَلْحَةَ
فَنَزَلَ تَحْرِيْمُ الْخَمْرِ فَأَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى فَقَالَ أَبُوْ
طَلْحَةَ اخْرُجْ فَانْظُرْ مَا هَذَا الصَّوْتُ قَالَ فَخَرَجْتُ فَقُلْتُ هَذَا
مُنَادٍ يُنَادِيْ أَلَا إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ فَقَالَ لِي اذْهَبْ
فَأَهْرِقْهَا قَالَ فَجَرَتْ فِيْ سِكَكِ الْمَدِيْنَةِ قَالَ وَكَانَتْ
خَمْرُهُمْ يَوْمَئِذٍ الْفَضِيخَ فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ قُتِلَ قَوْمٌ وَهْيَ
فِيْ بُطُوْنِهِمْ قَالَ فَأَنْزَلَا للهُ: {لَيْسَ عَلَى الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا
وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جُنَاحٌ فِيْمَا طَعِمُوْآ}.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ঢেলে
দেয়া মদগুলো ছিল ফাযীখ। আবূ নু‘মান থেকে মুহাম্মাদ ইবনু সাল্লাম আরও অতিরিক্ত
বর্ণনা করেছেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমি আবূ ত্বলহা (রাঃ)-এর ঘরে লোকেদেরকে মদ পান
করাচ্ছিলাম, তখনই মদের নিষেধাজ্ঞা অবতীর্ণ হল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) একজন ঘোষককে তা প্রচারের নির্র্দেশ দিলেন। এরপর সে ঘোষণা দিল। আবূ
ত্বল্হা বললেন, বেরিয়ে দেখ তো শব্দ কিসের? আনাস (রাঃ) বলেন, আমি বেরুলাম এবং বললাম
যে, একজন ঘোষক ঘোষণা দিচ্ছে যে, জেনে রাখ মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি
আমাকে বললেন যাও, এগুলো সব ঢেলে দাও। আনাস (রাঃ) বলেন, সেদিন মাদীনাহ মনোওয়ারার
রাস্তায় রাস্তায় মদের স্রোত প্রবাহিত হয়েছিল। তিনি বলেন, সে যুগে তাদের মদ ছিল
ফাযীখ, তখন একজন বললেন, যাঁরা পেটে মদ নিয়ে শহীদ হয়েছেন তাঁদের কী অবস্থা হবে?
তিনি বলেন, এরপর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا।
[২৪৬৪] (আ.প্র. ৪২৫৯, ই.ফা. ৪২৬২)
৬৫/৫/১২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ওহে যারা ঈমান
এনেছ! তোমরা এমন বিষয়ে প্রশ্ন করো না যা তোমাদের কাছে প্রকাশ করা হলে তোমাদের
খারাপ লাগবে। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/১০১)
৪৬২১
مُنْذِرُ بْنُ الْوَلِيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ
الْجَارُوْدِيُّ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُوْسَى بْنِ أَنَسٍ
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ خَطَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
خُطْبَةً مَا سَمِعْتُ مِثْلَهَا قَطُّ قَالَ لَوْ تَعْلَمُوْنَ مَا أَعْلَمُ
لَضَحِكْتُمْ قَلِيْلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيْرًا قَالَ فَغَطَّى أَصْحَابُ
رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وُجُوْهَهُمْ لَهُمْ خَنِيْنٌ فَقَالَ رَجُلٌ
مَنْ أَبِيْ قَالَ فُلَانٌ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ : {لَا تَسْأَلُوْا عَنْ
أَشْيَآءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ} رَوَاهُ النَّضْرُ وَرَوْحُ بْنُ
عُبَادَةَ عَنْ شُعْبَةَ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একটি খুতবা দিলেন
যেমনটি আমি আর কখনো শুনিনি। তিনি বলেছেন, “আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তবে
তোমরা হাসতে খুব কমই এবং অধিক অধিক করে কাঁদতে”। তিনি বলেন, সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ)
নিজ নিজ চেহারা আবৃত করে গুনগুন করে কাঁদতে শুরু করলেন, এরপর এক ব্যক্তি
(‘আবদুল্লাহ ইবনু হুযাইফাহ বা অন্য কেউ) বলল, আমার পিতা কে? রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “অমুক”। তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হল لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ এই
হাদীসটি শু’বাহ থেকে নযর এবং রাওহ ইবনু ‘উবাদাহ বর্ণনা করেছেন। [৯৩; মুসলিম ৪৩/৩৭,
হাঃ ২৩৫৯] (আ.প্র. ৪২৬০, ই.ফা. ৪২৬৩)
৪৬২২
الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ
حَدَّثَنَا أَبُوْ خَيْثَمَةَ حَدَّثَنَا أَبُو الْجُوَيْرِيَةِ عَنْ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ قَوْمٌ يَسْأَلُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ
صلى الله عليه وسلم اسْتِهْزَاءً فَيَقُوْلُ الرَّجُلُ مَنْ أَبِيْ وَيَقُوْلُ
الرَّجُلُ تَضِلُّ نَاقَتُهُ أَيْنَ نَاقَتِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ فِيْهِمْ هَذِهِ
الْآيَةَ : {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْالَا تَسْأَلُوْا عَنْ أَشْيَآءَ
إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ} حَتَّى فَرَغَ مِنَ الآيَةِ كُلِّهَا.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কিছু
লোক ছিল তারা ঠাট্টা করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে প্রশ্ন
করত, কেউ বলত আমার পিতা কে? আবার কেউ বলত আমার উষ্ট্রী হারিয়ে গেছে তা কোথায়?
তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেছেন ..... يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ।
(আ.প্র. ৪২৬১, ই.ফা. ৪২৬৪)
৬৫/৫/১৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ
বাহীরা, সাইবা, ওয়াসীলা এবং হামী-এর প্রচলন করেননি। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/১০৩)
৪৬২৩
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ
سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ
الْمُسَيَّبِ قَالَ الْبَحِيْرَةُ الَّتِيْ يُمْنَعُ دَرُّهَا لِلطَّوَاغِيْتِ
فَلَا يَحْلُبُهَا أَحَدٌ مِنْ النَّاسِ وَالسَّائِبَةُ كَانُوْا يُسَيِّبُوْنَهَا
لِآلِهَتِهِمْ لَا يُحْمَلُ عَلَيْهَا شَيْءٌ قَالَ وَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرٍ
الْخُزَاعِيَّ يَجُرُّ قُصْبَهُ فِي النَّارِ كَانَ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ
السَّوَائِبَ وَالْوَصِيْلَةُ النَّاقَةُ الْبِكْرُ تُبَكِّرُ فِيْ أَوَّلِ
نِتَاجِ الإِبِلِ ثُمَّ تُثَنِّيْ بَعْدُ بِأُنْثَى وَكَانُوْا يُسَيِّبُوْنَهَا
لِطَوَاغِيْتِهِمْ إِنْ وَصَلَتْ إِحْدَاهُمَا بِالْأُخْرَى لَيْسَ بَيْنَهُمَا
ذَكَرٌ وَالْحَامِ فَحْلُ الإِبِلِ يَضْرِبُ الضِّرَابَ الْمَعْدُوْدَ فَإِذَا
قَضَى ضِرَابَهُ وَدَعُوْهُ لِلطَّوَاغِيْتِ وَأَعْفَوْهُ مِنَ الْحَمْلِ فَلَمْ
يُحْمَلْ عَلَيْهِ شَيْءٌ وَسَمَّوْهُ الْحَامِيَ و قَالَ لِيْ أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ سَمِعْتُ سَعِيْدًا قَالَ يُخْبِرُهُ
بِهَذَا قَالَ وَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
نَحْوَهُ وَرَوَاهُ ابْنُ الْهَادِ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْ
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
সা‘ঈদ
ইবনু মুসায়্যাব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
الْبَحِيرَةُবাহীরা
জন্তুর স্তন প্রতিমার উদ্দেশে সংরক্ষিত থাকে কেউ তা দোহন করে না। السَّائِبَةُসাইবা,
যে জন্তু তারা তাদের উপাস্যের নামে ছেড়ে দিত এবং তা দিয়ে বোঝা বহন করা হত না। তিনি
বলেন, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেন যে, আমি ‘আমর ইবনু আমির খুযায়ীকে জাহান্নামের মধ্যে দেখেছি সে তার
নাড়িভুঁড়ি টানছে, সে-ই প্রথম ব্যক্তি যে সায়িবা প্রথা প্রথম চালু করে। وَالْوَصِيلَةُওয়াসীলাহ্,
যে উষ্ট্রী প্রথমবারে মাদী বাচ্চা প্রসব করে এবং দ্বিতীয়বারেও মাদী বাচ্চা প্রসব
করে, ঐ উষ্ট্রীকে তারা তাদের তাগূতের উদ্দেশে ছেড়ে দিত। وَالْحَامِহাম,
নর উট যা দ্বারা কয়েকবার প্রজনন কার্য নেয়া হয়, প্রজনন কার্য সমাপ্ত হলে সেটাকে
তারা তাদের প্রতিমার জন্যে ছেড়ে দেয় এবং বোঝা বহন থেকে ওটাকে মুক্তি দেয়। সেটির
উপর কিছু বহন করা হয় না। এটাকে তারা ‘হাম’ নামে অভিহিত করত।
আমাকে আবুল ইয়ামান বলেছেন যে, শু‘আয়ব, ইমাম যুহরী (রহ.) থেকে আমাদেরকে অবহিত করেছেন, যুহরী বলেন, আমি সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব (রহ.) থেকে শুনেছি, তিনি তাকে এ ব্যাপারে অবহিত করেছেন। সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব বলেছেন, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এই রকম শুনেছি। ইবনু হাদ এটা বর্ণনা করেছেন ইবনু শিহাব থেকে। আর তিনি সা‘ঈদ থেকে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে যে, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছি। [৩৫২১] (আ.প্র. ৪২৬২, ই.ফা. ৪২৬৫)
আমাকে আবুল ইয়ামান বলেছেন যে, শু‘আয়ব, ইমাম যুহরী (রহ.) থেকে আমাদেরকে অবহিত করেছেন, যুহরী বলেন, আমি সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব (রহ.) থেকে শুনেছি, তিনি তাকে এ ব্যাপারে অবহিত করেছেন। সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব বলেছেন, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এই রকম শুনেছি। ইবনু হাদ এটা বর্ণনা করেছেন ইবনু শিহাব থেকে। আর তিনি সা‘ঈদ থেকে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে যে, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছি। [৩৫২১] (আ.প্র. ৪২৬২, ই.ফা. ৪২৬৫)
৪৬২৪
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ يَعْقُوْبَ أَبُوْ عَبْدِ اللهِ
الْكَرْمَانِيُّ حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنْ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُ جَهَنَّمَ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا
وَرَأَيْتُ عَمْرًا يَجُرُّ قُصْبَهُ وَهْوَ أَوَّلُ مَنْ سَيَّبَ السَّوَائِبَ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি জাহান্নামকে দেখেছি যে, তার একাংশ
অন্য অংশকে ভেঙ্গে ফেলছে বা আক্রমণ করছে, ‘আমরকে দেখেছি সে তার নাড়িভুঁড়ি টেনে
নিয়ে হাঁটছে, সে-ই প্রথম ব্যক্তি যে ‘সায়ীবা’র রেওয়াজ চালু করেছিল। [১০৪৪] (আ.প্র.
৪২৬৩, ই.ফা. ৪২৬৬)
৬৫/৫/১৪.অধ্যায়ঃ
৪৬২৫
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَخْبَرَنَا
الْمُغِيْرَةُ بْنُ النُّعْمَانِ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ جُبَيْرٍ عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خَطَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ مَحْشُوْرُوْنَ إِلَى اللهِ حُفَاةً
عُرَاةً غُرْلًا ثُمَّ قَالَ : {كَمَا بَدَأْنَآ أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيْدُه” ط
وَعْدًا عَلَيْنَا ط إِنَّا كُنَّا فٰعِلِيْنَ} إِلَى آخِرِ الْآيَةِ ثُمَّ قَالَ
: أَلَا وَإِنَّ أَوَّلَ الْخَلَائِقِ يُكْسَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِبْرَاهِيْمُ
أَلَا وَإِنَّهُ يُجَاءُ بِرِجَالٍ مِنْ أُمَّتِيْ فَيُؤْخَذُ بِهِمْ ذَاتَ
الشِّمَالِ فَأَقُوْلُ يَا رَبِّ أُصَيْحَابِيْ فَيُقَالُ إِنَّكَ لَا تَدْرِيْ
مَا أَحْدَثُوْا بَعْدَكَ فَأَقُوْلُ كَمَا قَالَ الْعَبْدُ الصَّالِحُ :
{وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيْدًا مَّا دُمْتُ فِيْهِمْ جفَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِيْ
كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيْبَ عَلَيْهِمْ} فَيُقَالُ : إِنَّ هَؤُلَاءِ لَمْ
يَزَالُوْا مُرْتَدِّيْنَ عَلَى أَعْقَابِهِمْ مُنْذُ فَارَقْتَهُمْ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক দিন খুতবা দিলেন, বললেন,
হে লোক সকল! তোমরা নগ্ন পদ, উলঙ্গ এবং খতনাবিহীন অবস্থায় আল্লাহ্র নিকট একত্রিত
হবে, তারপর তিনি পড়লেন, كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব, প্রতিশ্রুতি
পালন আমার কর্তব্য, আমি তা পালন করবই। আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (সূরাহ আম্বিয়া ২১/১০৪)
তারপর তিনি বললেন, ক্বিয়ামাতের দিন সর্বপ্রথম যাকে বস্ত্র পরিধান করানো হবে তিনি হচ্ছেন ইবরাহীম (‘আ.)। তোমরা জেনে রাখ, আমার উম্মতের কতগুলো লোককে হাজির করা হবে এবং তাদেরকে বামদিকে অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে দেয়া হবে। আমি তখন বলব, প্রভু হে! এগুলো তো আমার কতক সহাবী, তখন বলা হবে যে, আপনার পর তারা কী নবোদ্ভাবিত কাজ করেছে তা আপনি জানেন না।
এরপর পুণ্যবান বান্দা যেমন বলেছিলেন আমি তেমন বলব ঃ كُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ “আমি যতদিন তাদের ছিলাম ততদিন তাদের খোঁজখবর নিয়েছি, অতঃপর আপনি যখন আমাকে উঠিয়ে নিয়েছেন তখন থেকে আপনিই তাদের রক্ষক”।
এরপর বলা হবে আপনি তাদেরকে ছেড়ে আসার পর থেকে তারা পেছনে ফিরে গিয়ে ধর্মত্যাগী হয়েছে। [৩৩৪৯] (আ.প্র. ৪২৬৪, ই.ফা. ৪২৬৭)
তারপর তিনি বললেন, ক্বিয়ামাতের দিন সর্বপ্রথম যাকে বস্ত্র পরিধান করানো হবে তিনি হচ্ছেন ইবরাহীম (‘আ.)। তোমরা জেনে রাখ, আমার উম্মতের কতগুলো লোককে হাজির করা হবে এবং তাদেরকে বামদিকে অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে দেয়া হবে। আমি তখন বলব, প্রভু হে! এগুলো তো আমার কতক সহাবী, তখন বলা হবে যে, আপনার পর তারা কী নবোদ্ভাবিত কাজ করেছে তা আপনি জানেন না।
এরপর পুণ্যবান বান্দা যেমন বলেছিলেন আমি তেমন বলব ঃ كُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ “আমি যতদিন তাদের ছিলাম ততদিন তাদের খোঁজখবর নিয়েছি, অতঃপর আপনি যখন আমাকে উঠিয়ে নিয়েছেন তখন থেকে আপনিই তাদের রক্ষক”।
এরপর বলা হবে আপনি তাদেরকে ছেড়ে আসার পর থেকে তারা পেছনে ফিরে গিয়ে ধর্মত্যাগী হয়েছে। [৩৩৪৯] (আ.প্র. ৪২৬৪, ই.ফা. ৪২৬৭)
৬৫/৫/১৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আপনি যদি
তাদের শাস্তি দেন তবে তারা তো আপনারই বান্দা, আর যদি তাদের ক্ষমা করে দেন তবে আপনি
তো পরাক্রমশালী, হিকমাতওয়ালা। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/১১৮)
৪৬২৬
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا
الْمُغِيْرَةُ بْنُ النُّعْمَانِ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّكُمْ
مَحْشُوْرُوْنَ وَإِنَّ نَاسًا يُؤْخَذُ بِهِمْ ذَاتَ الشِّمَالِ فَأَقُوْلُ كَمَا
قَالَ الْعَبْدُ الصَّالِحُ. {وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيْدًا مَّا دُمْتُ
فِيْهِمْ} إِلَى قَوْلِهِ {الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ}
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, তোমাদের
উঠিয়ে একত্রিত করা হবে এবং কিছু সংখ্যক লোককে বাম দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন আমি
নেককার বান্দার অর্থাৎ মূসা (‘আ.)-এর মতো বলব, وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيداً مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ - إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
“আমি যতদিন তাদের মাঝে ছিলাম, ততদিন তাদের খোঁজখবর নিয়েছি, তারপর যখন আপনি আমাকে
উঠিয়ে নিয়েছেন তখন থেকে আপনিই তাদের তত্ত্বাবধায়ক। আপনি সব কিছুর ওপরে ক্ষমতাবান।
আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি দেন তাহলে তারা তো আপনার বান্দা। আর যদি তাদেরকে ক্ষমা
করেন তাহলে আপনি পরাক্রমশালী ও সুবিজ্ঞ।” [৩৩৪৯] (আ.প্র. ৪২৬৫, ই.ফা. ৪২৬৮)
৬৫/৬/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তাঁরই কাছে
আছে অদৃশ্যের চাবি; তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তা জানে না। (সূরাহ আল-আন‘আম ৬/৫৯)
৪৬২৭
عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ
عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ
خَمْسٌ {إِنَّ اللهَ عِنْدَه” عِلْمُ السَّاعَةِ ج وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ ج
وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ ط وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا
ط وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌمبِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوْتُ إِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ
}.
সালিম
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর
পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেন, অদৃশ্যের চাবি পাঁচটি “নিশ্চয় আল্লাহ্রই কাছে রয়েছে ক্বিয়ামাত সম্বন্ধীয়
জ্ঞান এবং তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, আর তিনিই জানেন যা কিছু আছে গর্ভাধারে। কেউ
জানে না আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোথায় তার মৃত্যু ঘটবে।
নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু জানেন, সব খবর রাখেন” (সূরাহ লুকমান ৩১/৩৪)। [১০৩৯] (আ.প্র.
৪২৬৬, ই.ফা. ৪২৬৯)
৬৫/৬/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ বলুনঃ তিনিই
সক্ষম তোমাদের উপর শাস্তি প্রেরণ করতে তোমাদের উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পদতল
থেকে কিংবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করতে এবং এক দলকে অন্য দলের যুদ্ধের
স্বাদ গ্রহণ করাতে। দেখ, আমি কীরূপে বিভিন্নভাবে আয়াতসমূহ বর্ণনা করি, যাতে তারা
বুঝে নেয়। (সূরাহ আল-আন‘আম ৬/৬৫)
৪৬২৮
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ
عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ
هَذِهِ الْآيَةُ {قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلٰى أَنْ يَّبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا
مِّنْ فَوْقِكُمْ} قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعُوْذُ بِوَجْهِكَ
قَالَ {أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ} قَالَ أَعُوْذُ بِوَجْهِكَ {أَوْ مِنْ
تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَّيُذِيْقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ
بَعْضٍ} قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذَا أَهْوَنُ أَوْ هَذَا
أَيْسَرُ.
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন
এই আয়াত قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ
অবতীর্ণ হল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “আপনার কাছে
আশ্রয় চাচ্ছি, আবার যখন أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ
অবতীর্ণ হল, তখনও বললেন, আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি এবং যখন أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ
অবতীর্ণ হল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা
অপেক্ষাকৃত হালকা, তিনি هَذَا أَهْوَنُ কিংবা هَذَا أَيْسَرُ
বলেছেন। [৭৩১৩, ৭৪০৬] (আ.প্র. ৪২৬৭, ই.ফা. ৪২৭০)
৬৫/৬/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এবং নিজেদের
ঈমানকে শিরকের সঙ্গে মিশ্রিত করেনি। (সূরাহ আল-আন‘আম ৬/৮২)
৪৬২৯
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ
عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ
اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَلَمْ يَلْبِسُوْآ
إِيْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ} قَالَ أَصْحَابُهُ وَأَيُّنَا لَمْ يَظْلِمْ فَنَزَلَتْ
{إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ}.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন
وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ
আয়াত অবতীর্ণ হল, তখন তাঁর সহাবাগণ বললেন, “যুল্ম করেনি আমাদের মধ্যে এমন কোন্
ব্যক্তি আছে?” এরপর অবতীর্ণ হল إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
“নিশ্চয় র্শিক মহা যুল্ম” (সূরাহ লুক্বমান ৩১/১৩)। [৩২] (আ.প্র. ৪২৬৮, ই.ফা. ৪২৭১)
৬৫/৬/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ইউনুস ও
লূতকেও হিদায়াত দান করেছিলাম। আমি প্রত্যেককেই সারা জাহানের উপর ফাযীলাত দান করেছিলাম।
(সূরাহ আল-আন‘আম ৬/৮৬)
৪৬৩০
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ
حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ قَالَ حَدَّثَنِي
ابْنُ عَمِّ نَبِيِّكُمْ يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا يَنْبَغِيْ لِعَبْدٍ أَنْ يَقُوْلَ أَنَا
خَيْرٌ مِنْ يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, “আমি ইউনুস
ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম” এমন কথা বলা কারও জন্যে শোভনীয় নয়। [৩৩৯৫] (আ.প্র. ৪২৬৯,
ই.ফা. ৪২৭২)
৪৬৩১
آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَخْبَرَنَا
سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ سَمِعْتُ حُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ
عَوْفٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ مَا يَنْبَغِيْ لِعَبْدٍ أَنْ يَقُوْلَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُوْنُسَ
بْنِ مَتَّى.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, “আমি ইউনুস
ইবনু মাত্তা (‘আ.) থেকে উত্তম”, এমন কথা বলা কারো জন্য শোভনীয় নয়। [৩৪১৫] (আ.প্র.
৪২৭০, ই.ফা. ৪২৭৩)
৬৫/৬/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তারা ছিলেন
এমন যাদেরকে আল্লাহ্ হিদায়াত দান করেছিলেন। অতএব, আপনিও তাদেরই পথে চলুন। (সূরাহ
আল-আন‘আম ৬/৯০)
৬৫/৬/৬.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ{كُلَّ ذِيْ ظُفُرٍ} الْبَعِيْرُ وَالنَّعَامَةُ {الْحَوَايَا} الْمَبْعَرُ وَقَالَ غَيْرُهُ {هَادُوْا} صَارُوْا يَهُوْدًا وَأَمَّا قَوْلُهُ هُدْنَا تُبْنَا هَائِدٌ تَائِبٌ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, كُلَّ ذِيْ ظُفُرٍ উট, উটপাখী, الْحَوَايَا অন্ত্রসমূহ। অন্যজন বলেছেন هَادُوْا ইয়াহূদী হয়ে গেছে, তবে আল্লাহর বাণী هُدْنَا মানে تُبْنَا অর্থাৎ আমরা তাওবাহ করেছি, هَائِدٌ تَائِبٌ তাওবাহ্কারী।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, كُلَّ ذِيْ ظُفُرٍ উট, উটপাখী, الْحَوَايَا অন্ত্রসমূহ। অন্যজন বলেছেন هَادُوْا ইয়াহূদী হয়ে গেছে, তবে আল্লাহর বাণী هُدْنَا মানে تُبْنَا অর্থাৎ আমরা তাওবাহ করেছি, هَائِدٌ تَائِبٌ তাওবাহ্কারী।
৪৬৩৩
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يَزِيْدَ
بْنِ أَبِيْ حَبِيْبٍ قَالَ عَطَاءٌ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَاتَلَ اللهُ
الْيَهُوْدَ لَمَّا حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِمْ شُحُوْمَهَا جَمَلُوْهُ ثُمَّ
بَاعُوْهُ فَأَكَلُوْهَا وَقَالَ أَبُوْ عَاصِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيْدِ
حَدَّثَنَا يَزِيْدُ كَتَبَ إِلَيَّ عَطَاءٌ سَمِعْتُ جَابِرًا عَنْ النَّبِيِّ
صلى الله عليه وسلم
জাবির
ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা
ইয়াহূদীদেরকে অভিসম্পাত করেছেন, যখন তিনি তাদের উপর চর্বি নিষিদ্ধ করেছেন তখন তারা
ওটাকে তরল করে জমা করেছে, তারপর বিক্রি করে তার মূল্য ভক্ষণ করেছে। আবূ আসিম (রহ.)
......... হাদীস বর্ণনা করেছেন জাবির (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
থেকে। [২২৩৬] (আ.প্র. ৪২৭২, ই.ফা. ৪২৭৫)
৬৫/৬/৭.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ অশ্লীল আচরণের
কাছেও যেয়োনা তা প্রকাশ্য হোক কিংবা গোপন হোক। (সূরাহ আল-আন‘আম ৬/১৫১)
৪৬৩৪
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ
أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَا أَحَدَ أَغْيَرُ
مِنْ اللهِ وَلِذَلِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ
وَلَا شَيْءَ أَحَبُّ إِلَيْهِ الْمَدْحُ مِنْ اللهِ وَلِذَلِكَ مَدَحَ نَفْسَهُ
قُلْتُ سَمِعْتَهُ مِنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَرَفَعَهُ قَالَ نَعَمْ
‘আবদুল্লাহ
ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নিষিদ্ধ
কার্যে মু’মিনদেরকে বাধা দানকারী আল্লাহ্র চেয়ে অধিক কেউ নেই, এজন্যই
প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যাবতীয় অশ্লীলতা নিষিদ্ধ করেছেন, আল্লাহ্র প্রশংসা প্রকাশ
করার চেয়ে প্রিয় তাঁর কাছে অন্য কিছু নেই, সেজন্যেই আল্লাহ আপন প্রশংসা নিজেই
করেছেন।
‘আম্র ইবনু মুররাহ্ (রহ.) বলেন, আমি আবূ ওয়ায়িলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, এটাকে কি তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বাণী হিসেবে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। [৪৬৩৭, ৫২২০, ৭৪০৩; মুসলিম ৪৯/৬, হাঃ ২৭৬০, আহমাদ ৩৬১৬] (আ.প্র. ৪২৭৩, ই.ফা. ৪২৭৬)
‘আম্র ইবনু মুররাহ্ (রহ.) বলেন, আমি আবূ ওয়ায়িলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, এটাকে কি তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বাণী হিসেবে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। [৪৬৩৭, ৫২২০, ৭৪০৩; মুসলিম ৪৯/৬, হাঃ ২৭৬০, আহমাদ ৩৬১৬] (আ.প্র. ৪২৭৩, ই.ফা. ৪২৭৬)
৬৫/৬/৮.অধ্যায়ঃ
অধ্যায়:
৬৫/৬/৯.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ সাক্ষীদেরকে
হাযির কর। (সূরাহ আল-আম‘আম ৬/১৫০)
৬৫/৬/১০.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ যেদিন আপনার
রবের কোন নিদর্শন আসবে, সেদিন এমন কোন ব্যক্তির ঈমান কাজে আসবে না যে ব্যক্তি নেক
কাজ করেনি। (সূরাহ আল-আন‘আম ৬/১৫৮)
৪৬৩৫
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ
حَدَّثَنَا عُمَارَةُ حَدَّثَنَا أَبُوْ زُرْعَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ هُرَيْرَةَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُوْمُ
السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا رَآهَا النَّاسُ
آمَنَ مَنْ عَلَيْهَا فَذَاكَ حِيْنَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيْمَانُهَا لَمْ
تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পশ্চিম দিক থেকে
সূর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত ক্বিয়ামাত অনুষ্ঠিত হবে না। লোকেরা যখন তা দেখবে, তখন
পৃথিবীর সকলে ঈমান আনবে এবং সেটি হচ্ছে এমন সময় “পূর্বে ঈমান আনেনি এমন ব্যক্তির
ঈমান তার কাজে আসবে না”। [৮৫; মুসলিম ৪/৭২, হাঃ ১৫৭, আহমাদ ৭১৬৪] (আ.প্র. ৪২৭৪,
ই.ফা. ৪২৭৭)
৪৬৩৬
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ
الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا طَلَعَتْ وَرَآهَا النَّاسُ آمَنُوْا
أَجْمَعُوْنَ وَذَلِكَ حِيْنَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيْمَانُهَا ثُمَّ قَرَأَ
الآيَةَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যতক্ষণ না পশ্চিম
দিক থেকে সূর্যোদয় ঘটবে ততক্ষণ ক্বিয়ামাত হবে না, যখন সেদিক থেকে সূর্য উদিত হবে
এবং লোকেরা তা দেখবে তখন সবাই ঈমান গ্রহণ করবে, এটাই সময় যখন কোন ব্যক্তিকে তার
ঈমান কল্যাণ সাধন করবে না। তারপর তিনি আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন। [৮৫] (আ.প্র. ৪২৭৫,
ই.ফা. ৪২৭৮)
৬৫/৭/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ বলুনঃ আমার রব
হারাম করেছেন যাবতীয় প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা। (সূরাহ আল-‘আরাফ ৭/৩৩)
সূরাহ (৭) : আল-আ‘রাফ
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {وَرِيَاشًا} الْمَالُ {إِنَّه” لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ} فِي الدُّعَاءِ وَفِيْ غَيْرِهِ {عَفَوْا} كَثُرُوْا وَكَثُرَتْ أَمْوَالُهُمْ {الْفَتَّاحُ} الْقَاضِيْ {افْتَحْ بَيْنَنَا} اقْضِ بَيْنَنَا {نَتَقْنَاالْجَبَلَ} رَفَعْنَا {انْبَجَسَتْ} انْفَجَرَتْ {مُتَبَّرٌ} خُسْرَانٌ {آسَى} أَحْزَنُ تَأْسَ تَحْزَنْ وَقَالَ غَيْرُهُ {مَا مَنَعَكَ أَنْ لَّا تَسْجُدَ} يَقُوْلُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ {يَخْصِفَانِ} أَخَذَا الْخِصَافَ مِنْ وَرَقِ الْجَنَّةِ يُؤَلِّفَانِ الْوَرَقَ يَخْصِفَانِ الْوَرَقَ بَعْضَهُ إِلَى بَعْضٍ {سَوْاٰتِهِمَا} كِنَايَةٌ عَنْ فَرْجَيْهِمَا {وَمَتَاعٌ إِلٰى حِيْنٍ} هُوَ هَا هُنَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَالْحِيْنُ عِنْدَ الْعَرَبِ مِنْ سَاعَةٍ إِلَى مَالَا يُحْصَى عَدَدُهُ الرِّيَاشُ وَالرِّيْشُ وَاحِدٌ وَهْوَ مَا ظَهَرَ مِنْ اللِّبَاسِ {قَبِيْلُهُ} جِيْلُهُ الَّذِيْ هُوَ مِنْهُمْ {ادَّارَكُوْا} اجْتَمَعُوْا وَمَشَاقُّ الإِنْسَانِ وَالدَّابَّةِ كُلُّهَا يُسَمَّى سُمُوْمًا وَاحِدُهَا سَمٌّ وَهِيَ عَيْنَاهُ وَمَنْخِرَاهُ وَفَمُهُ وَأُذُنَاهُ وَدُبُرُهُ وَإِحْلِيْلُهُ {غَوَاشٍ} مَا غُشُّوْا بِهِ {نُشُرًا}مُتَفَرِّقَةً {نَكِدًا} قَلِيْلًا {يَغْنَوْا} يَعِيْشُوْا {حَقِيْقٌ} حَقٌّ {اسْتَرْهَبُوْهُمْ}مِنْ الرَّهْبَةِ {تَلَقَّفُ} تَلْقَمُ {طَآئِرُهُمْ} حَظُّهُمْ {طُوْفَانٌ} مِنْ السَّيْلِ وَيُقَالُ لِلْمَوْتِ الْكَثِيْرِ الطُّوْفَانُ {الْقُمَّلُ} الْحُمْنَانُ يُشْبِهُ صِغَارَ الْحَلَمِ {عُرُوْشٌ} وَعَرِيْشٌ بِنَاءٌ سُقِطَ كُلُّ مَنْ نَدِمَ فَقَدْ {سُقِطَ} فِيْ يَدِهِ الْأَسْبَاطُ قَبَائِلُ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ {يَعْدُوْنَ} فِي السَّبْتِ يَتَعَدَّوْنَ لَهُ يُجَاوِزُوْنَ تَجَاوُزٌ بَعْدَ تَجَاوُزٍ تَعْدُ تُجَاوِزْ {شُرَّعًا} شَوَارِعَ {بَئِيْسٍ} شَدِيْدٍ {أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ} قَعَدَ وَتَقَاعَسَ {سَنَسْتَدْرِجُهُمْ}أَيْ نَأْتِيْهِمْ مِنْ مَأْمَنِهِمْ كَقَوْلِهِ تَعَالَى {فَأَتَاهُمُ اللهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوْا}
{مِنْ جِنَّةٍ} مِنْ جُنُوْنٍ {أَيَّانَ مُرْسَاهَا} مَتَى خُرُوْجُهَا {فَمَرَّتْ} بِهِ اسْتَمَرَّ بِهَا الْحَمْلُ فَأَتَمَّتْهُ {يَنْزَغَنَّكَ} يَسْتَخِفَّنَّكَ طَيْفٌ مُلِمٌّ بِهِ لَمَمٌ وَيُقَالُ {طَائِفٌ} وَهُوَ وَاحِدٌ {يَمُدُّوْنَهُمْ} يُزَيِّنُوْنَ {وَخِيْفَةً} خَوْفًا وَخُفْيَةً مِنَ الإِخْفَاءِ {وَالْآصَالُ} وَاحِدُهَا أَصِيْلٌ وَهُوَ مَا بَيْنَ الْعَصْرِ إِلَى الْمَغْرِبِ كَقَوْلِهِ بُكْرَةً وَأَصِيْلًا.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন; وَرِيَاشًا- সম্পদ, إِنَّهচ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ- তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসতেন না, দু‘আ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে, عَفَوْا- তারা সংখ্যাধিক্য হয় এবং তাদের সম্পত্তি প্রাচুর্য লাভ করে, الْفَتَّاحُ-বিচারক, افْتَحْ بَيْنَنَا-আমাদের মাঝে ফয়সালা করে দিন। نَتَقْنَا الْجَبَلَ-উপরে তুলেছি পর্বত, انْبَجَسَتْ- প্রবাহিত হয়েছে,مُتَبَّرٌ-ক্ষতিগ্রস্ত, آسَى-আমি আক্ষেপ করি, تَأْسَ- আক্ষেপ করবে, অন্যজন বলেছেন أَنْ لَّا تَسْجُدَ- সাজদাহ করতে, يَخْصِفَانِ-তাঁরা উভয়ে সেলাই করে জোড়া লাগাচ্ছিলেন, مِنْ وَرَقِ الْجَنَّةِ-বেহেশতের পাতা, উভয়ে সংগ্রহ করেছিলেন এবং পাতা একটা অন্যটার সঙ্গে সেলাই করে জোড়া লাগাচ্ছিলেন, سَوْآتِهِمْ-তাঁদের যৌনাঙ্গ, وَمَتَاعٌ إِلٰى حِيْنٍ-এখন থেকে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত, আরবদের ভাষায় حِيْنُবলা হয় একটি নির্দিষ্ট সময় থেকে অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত, الرِّيَاشُوَالرِّيْشُ-একই অর্থাৎ পোশাকের বহিরাংশ, قَبِيْلُهُ- তার দল সে যে দলের অন্তর্ভুক্ত। ادَّارَكُوْاএকত্রিত হল। মানুষ এবং অন্যান্য জন্তুর ছিদ্রসমূহকে سُمُوْمٌবলা হয়, এর একবচন سُمُمٌّসেগুলো চক্ষুদ্বয়, নাসারন্ধ্র, মুখ, দু’টি কান, বাহ্য পথ স্রাবনালী, غَوَاشٌ-আচ্ছাদন, نُشُرًا-বিক্ষিপ্ত, نَكِدًا-স্বল্প পরিমাণ, يَغْنَوْا-জীবন যাপন করেন, حَقِيْقٌহক ও উপযুক্ত, যোগ্য, اسْتَرْهَبُوْهُمْ-তাদেরকে আতংকিত করল, رَهْبَةٌ-থেকে উৎপন্ন, تَلَقَّفُ-গো গ্রাসে গিলে ফেলা, طَآئِرُهُمْ-তাদের ভাগ্য, বন্যা, طُوْفَانٌ-বন্যা অধিক হারে মৃত্যুকে ও طُوْفَانٌবলা হয়, الْقُمَّلُউকুন, عُرُوْشٌ-عَرِيْشٌ- অট্টালিকা, سُقِطَযারা অপমানিত হয় তাদেরকে বলা হয় سُقِطَ فِيْيَدِهِ। أَلَاسْبَاطُ-নাবী ইসরাঈলের গোত্রসমূহ, يَعْدُوْنَও يَتَعَدَّوْنَ-সীমালঙ্ঘন করে; تَعَدَّوْ-সীমালঙ্ঘন করেছে, شُرَّعًا- প্রকাশ্যভাবে, بَئِيْسٍ- কঠোর, أَخْلَدَ-বসে থাকল এবং পেছনে পড়ল, سَنَسْتَدْرِجُهُمْ- তাদের নিরাপদ স্থান থেকে তাদেরকে এসে ক্রমে বের করে আনবে, যেমন فَأَتَاهُمُاللهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوْا-তাদেরকে আল্লাহ এমন শাস্তি দিলেন যা তারা ধারণা করেনি। مِنْجِنَّةٍ-উন্মাদনা, কখন তাদেরকে পুনরায় বের করা হবে? فَمَرَّتْ بِهِ- তাঁর গর্ভ অটুটু থাকল এরপর সেটাকে পূর্ণতা দান করলে, يَنْزَغَنَّكَ يَسْتَخِفَّنَّكَ-তোমাকে কু-মন্ত্রণা দেয়া, طَيْفٌ-আগত সংযোগযোগ্য, طَيْفٌ এবং طَائِفٌ এক রকম, يَمُدُّوْنَهُمْ-অলংকৃত করে, خِيْفَةٌ- ভয়, خُفْيَةٌ শব্দটি إِخْفَاءٌ থেকে নির্গত অর্থ গোপন করা, وَالْآصَالُ একবচনে أَصِيْلٌ-আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়, যেমন আল্লাহর বাণী بُكْرَةً وَّأَصِيْلًا সকাল-সন্ধ্যা।
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {وَرِيَاشًا} الْمَالُ {إِنَّه” لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ} فِي الدُّعَاءِ وَفِيْ غَيْرِهِ {عَفَوْا} كَثُرُوْا وَكَثُرَتْ أَمْوَالُهُمْ {الْفَتَّاحُ} الْقَاضِيْ {افْتَحْ بَيْنَنَا} اقْضِ بَيْنَنَا {نَتَقْنَاالْجَبَلَ} رَفَعْنَا {انْبَجَسَتْ} انْفَجَرَتْ {مُتَبَّرٌ} خُسْرَانٌ {آسَى} أَحْزَنُ تَأْسَ تَحْزَنْ وَقَالَ غَيْرُهُ {مَا مَنَعَكَ أَنْ لَّا تَسْجُدَ} يَقُوْلُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ {يَخْصِفَانِ} أَخَذَا الْخِصَافَ مِنْ وَرَقِ الْجَنَّةِ يُؤَلِّفَانِ الْوَرَقَ يَخْصِفَانِ الْوَرَقَ بَعْضَهُ إِلَى بَعْضٍ {سَوْاٰتِهِمَا} كِنَايَةٌ عَنْ فَرْجَيْهِمَا {وَمَتَاعٌ إِلٰى حِيْنٍ} هُوَ هَا هُنَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَالْحِيْنُ عِنْدَ الْعَرَبِ مِنْ سَاعَةٍ إِلَى مَالَا يُحْصَى عَدَدُهُ الرِّيَاشُ وَالرِّيْشُ وَاحِدٌ وَهْوَ مَا ظَهَرَ مِنْ اللِّبَاسِ {قَبِيْلُهُ} جِيْلُهُ الَّذِيْ هُوَ مِنْهُمْ {ادَّارَكُوْا} اجْتَمَعُوْا وَمَشَاقُّ الإِنْسَانِ وَالدَّابَّةِ كُلُّهَا يُسَمَّى سُمُوْمًا وَاحِدُهَا سَمٌّ وَهِيَ عَيْنَاهُ وَمَنْخِرَاهُ وَفَمُهُ وَأُذُنَاهُ وَدُبُرُهُ وَإِحْلِيْلُهُ {غَوَاشٍ} مَا غُشُّوْا بِهِ {نُشُرًا}مُتَفَرِّقَةً {نَكِدًا} قَلِيْلًا {يَغْنَوْا} يَعِيْشُوْا {حَقِيْقٌ} حَقٌّ {اسْتَرْهَبُوْهُمْ}مِنْ الرَّهْبَةِ {تَلَقَّفُ} تَلْقَمُ {طَآئِرُهُمْ} حَظُّهُمْ {طُوْفَانٌ} مِنْ السَّيْلِ وَيُقَالُ لِلْمَوْتِ الْكَثِيْرِ الطُّوْفَانُ {الْقُمَّلُ} الْحُمْنَانُ يُشْبِهُ صِغَارَ الْحَلَمِ {عُرُوْشٌ} وَعَرِيْشٌ بِنَاءٌ سُقِطَ كُلُّ مَنْ نَدِمَ فَقَدْ {سُقِطَ} فِيْ يَدِهِ الْأَسْبَاطُ قَبَائِلُ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ {يَعْدُوْنَ} فِي السَّبْتِ يَتَعَدَّوْنَ لَهُ يُجَاوِزُوْنَ تَجَاوُزٌ بَعْدَ تَجَاوُزٍ تَعْدُ تُجَاوِزْ {شُرَّعًا} شَوَارِعَ {بَئِيْسٍ} شَدِيْدٍ {أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ} قَعَدَ وَتَقَاعَسَ {سَنَسْتَدْرِجُهُمْ}أَيْ نَأْتِيْهِمْ مِنْ مَأْمَنِهِمْ كَقَوْلِهِ تَعَالَى {فَأَتَاهُمُ اللهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوْا}
{مِنْ جِنَّةٍ} مِنْ جُنُوْنٍ {أَيَّانَ مُرْسَاهَا} مَتَى خُرُوْجُهَا {فَمَرَّتْ} بِهِ اسْتَمَرَّ بِهَا الْحَمْلُ فَأَتَمَّتْهُ {يَنْزَغَنَّكَ} يَسْتَخِفَّنَّكَ طَيْفٌ مُلِمٌّ بِهِ لَمَمٌ وَيُقَالُ {طَائِفٌ} وَهُوَ وَاحِدٌ {يَمُدُّوْنَهُمْ} يُزَيِّنُوْنَ {وَخِيْفَةً} خَوْفًا وَخُفْيَةً مِنَ الإِخْفَاءِ {وَالْآصَالُ} وَاحِدُهَا أَصِيْلٌ وَهُوَ مَا بَيْنَ الْعَصْرِ إِلَى الْمَغْرِبِ كَقَوْلِهِ بُكْرَةً وَأَصِيْلًا.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন; وَرِيَاشًا- সম্পদ, إِنَّهচ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ- তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসতেন না, দু‘আ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে, عَفَوْا- তারা সংখ্যাধিক্য হয় এবং তাদের সম্পত্তি প্রাচুর্য লাভ করে, الْفَتَّاحُ-বিচারক, افْتَحْ بَيْنَنَا-আমাদের মাঝে ফয়সালা করে দিন। نَتَقْنَا الْجَبَلَ-উপরে তুলেছি পর্বত, انْبَجَسَتْ- প্রবাহিত হয়েছে,مُتَبَّرٌ-ক্ষতিগ্রস্ত, آسَى-আমি আক্ষেপ করি, تَأْسَ- আক্ষেপ করবে, অন্যজন বলেছেন أَنْ لَّا تَسْجُدَ- সাজদাহ করতে, يَخْصِفَانِ-তাঁরা উভয়ে সেলাই করে জোড়া লাগাচ্ছিলেন, مِنْ وَرَقِ الْجَنَّةِ-বেহেশতের পাতা, উভয়ে সংগ্রহ করেছিলেন এবং পাতা একটা অন্যটার সঙ্গে সেলাই করে জোড়া লাগাচ্ছিলেন, سَوْآتِهِمْ-তাঁদের যৌনাঙ্গ, وَمَتَاعٌ إِلٰى حِيْنٍ-এখন থেকে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত, আরবদের ভাষায় حِيْنُবলা হয় একটি নির্দিষ্ট সময় থেকে অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত, الرِّيَاشُوَالرِّيْشُ-একই অর্থাৎ পোশাকের বহিরাংশ, قَبِيْلُهُ- তার দল সে যে দলের অন্তর্ভুক্ত। ادَّارَكُوْاএকত্রিত হল। মানুষ এবং অন্যান্য জন্তুর ছিদ্রসমূহকে سُمُوْمٌবলা হয়, এর একবচন سُمُمٌّসেগুলো চক্ষুদ্বয়, নাসারন্ধ্র, মুখ, দু’টি কান, বাহ্য পথ স্রাবনালী, غَوَاشٌ-আচ্ছাদন, نُشُرًا-বিক্ষিপ্ত, نَكِدًا-স্বল্প পরিমাণ, يَغْنَوْا-জীবন যাপন করেন, حَقِيْقٌহক ও উপযুক্ত, যোগ্য, اسْتَرْهَبُوْهُمْ-তাদেরকে আতংকিত করল, رَهْبَةٌ-থেকে উৎপন্ন, تَلَقَّفُ-গো গ্রাসে গিলে ফেলা, طَآئِرُهُمْ-তাদের ভাগ্য, বন্যা, طُوْفَانٌ-বন্যা অধিক হারে মৃত্যুকে ও طُوْفَانٌবলা হয়, الْقُمَّلُউকুন, عُرُوْشٌ-عَرِيْشٌ- অট্টালিকা, سُقِطَযারা অপমানিত হয় তাদেরকে বলা হয় سُقِطَ فِيْيَدِهِ। أَلَاسْبَاطُ-নাবী ইসরাঈলের গোত্রসমূহ, يَعْدُوْنَও يَتَعَدَّوْنَ-সীমালঙ্ঘন করে; تَعَدَّوْ-সীমালঙ্ঘন করেছে, شُرَّعًا- প্রকাশ্যভাবে, بَئِيْسٍ- কঠোর, أَخْلَدَ-বসে থাকল এবং পেছনে পড়ল, سَنَسْتَدْرِجُهُمْ- তাদের নিরাপদ স্থান থেকে তাদেরকে এসে ক্রমে বের করে আনবে, যেমন فَأَتَاهُمُاللهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوْا-তাদেরকে আল্লাহ এমন শাস্তি দিলেন যা তারা ধারণা করেনি। مِنْجِنَّةٍ-উন্মাদনা, কখন তাদেরকে পুনরায় বের করা হবে? فَمَرَّتْ بِهِ- তাঁর গর্ভ অটুটু থাকল এরপর সেটাকে পূর্ণতা দান করলে, يَنْزَغَنَّكَ يَسْتَخِفَّنَّكَ-তোমাকে কু-মন্ত্রণা দেয়া, طَيْفٌ-আগত সংযোগযোগ্য, طَيْفٌ এবং طَائِفٌ এক রকম, يَمُدُّوْنَهُمْ-অলংকৃত করে, خِيْفَةٌ- ভয়, خُفْيَةٌ শব্দটি إِخْفَاءٌ থেকে নির্গত অর্থ গোপন করা, وَالْآصَالُ একবচনে أَصِيْلٌ-আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়, যেমন আল্লাহর বাণী بُكْرَةً وَّأَصِيْلًا সকাল-সন্ধ্যা।
৪৬৩৭
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرِو
بْنِ مُرَّةَ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
قُلْتُ أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ نَعَمْ وَرَفَعَهُ قَالَ
لَا أَحَدَ أَغْيَرُ مِنْ اللهِ فَلِذَلِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ
مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلَا أَحَدَ أَحَبُّ إِلَيْهِ الْمِدْحَةُ مِنْ اللهِ
فَلِذَلِكَ مَدَحَ نَفْسَهُ.
‘আম্র
ইবনু মুররাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আবূ ওয়ায়িলকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি এটা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)
থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং তিনি এটাকে মারফু‘ হাদীস হিসেবে বর্ণনা
করেছেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, অন্যায়কে ঘৃণাকারী
আল্লাহ্র তুলনায় অন্য কেউ নেই, এজন্যেই তিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যাবতীয় অশ্লীলতা
নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন, আবার আল্লাহ্র চেয়ে প্রশংসা-প্রীতি অন্য কারো নেই, তাই তিনি
নিজে নিজের প্রশংসা করেছেন। [৪৬৩৪] (আ.প্র. ৪২৭৬, ই.ফা. ৪২৭৯)
৬৫/৭/২.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
{وَلَمَّا جَآءَ مُوْسٰى لِمِيْقَاتِنَا وَكَلَّمَه” رَبُّه” لا قَالَ رَبِّ أَرِنِيْٓ أَنْظُرْ إِلَيْكَ ط قَالَ لَنْ تَرٰﯨـنِىْ وَلٰكِنِ انْظُرْ إِلَى الْجَبَلِ فَإِنِ اسْتَقَرَّ مَكَانَه” فَسَوْفَ تَرٰﯨـنِىْ ج فَلَمَّا تَجَلّٰى رَبُّه” لِلْجَبَلِ جَعَلَه” دَكًّا وَّخَرَّ مُوْسٰى صَعِقًا ج فَلَمَّآ أَفَاقَ قَالَ سُبْحٰنَكَ تُبْتُ إِلَيْكَ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُؤْمِنِيْنَ}
‘‘তারপর মূসা যখন আমার নির্ধারিত সময়ে এসে হাজির হল এবং তার সঙ্গে তার রব কথা বললেন, তখন সে বলল-হে আমার রব! আমাকে আপনার দর্শন দিন, যেন আমি আপনাকে দেখতে পাই। তিনি বললেন-তুমি আমাকে কিছুতেই দেখতে পাবে না। তবে তুমি এ পর্বতের দিকে দৃষ্টিপাত কর, যদি তা স্বস্থানে স্থির থাকে তাহলে তুমি আমাকে দেখতে পাবে। তারপর যখন তার রব পর্বতের উপর জ্যোতির বিকাশ ঘটালেন তখন তা পর্বতটিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলল এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। যখন সে জ্ঞান ফিরে পেল তখন বললঃ আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার কাছে তাওবাহ করছি এবং মু’মিনদের মধ্যে আমিই প্রথম।’’ (সূরাহ আল-‘আরাফ ৭/১৪৩)
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أَرِنِيْ} أَعْطِنِي.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, أَرِنِيْ-আমাকে দেখা দাও।
‘‘তারপর মূসা যখন আমার নির্ধারিত সময়ে এসে হাজির হল এবং তার সঙ্গে তার রব কথা বললেন, তখন সে বলল-হে আমার রব! আমাকে আপনার দর্শন দিন, যেন আমি আপনাকে দেখতে পাই। তিনি বললেন-তুমি আমাকে কিছুতেই দেখতে পাবে না। তবে তুমি এ পর্বতের দিকে দৃষ্টিপাত কর, যদি তা স্বস্থানে স্থির থাকে তাহলে তুমি আমাকে দেখতে পাবে। তারপর যখন তার রব পর্বতের উপর জ্যোতির বিকাশ ঘটালেন তখন তা পর্বতটিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলল এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। যখন সে জ্ঞান ফিরে পেল তখন বললঃ আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার কাছে তাওবাহ করছি এবং মু’মিনদের মধ্যে আমিই প্রথম।’’ (সূরাহ আল-‘আরাফ ৭/১৪৩)
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أَرِنِيْ} أَعْطِنِي.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, أَرِنِيْ-আমাকে দেখা দাও।
৪৬৩৮
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرِو
بْنِ يَحْيَى الْمَازِنِيِّ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الْيَهُوْدِ إِلَى النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم قَدْ لُطِمَ وَجْهُهُ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ رَجُلًا مِنْ
أَصْحَابِكَ مِنَ الْأَنْصَارِ لَطَمَ فِيْ وَجْهِيْ قَالَ ادْعُوْهُ فَدَعَوْهُ
قَالَ لِمَ لَطَمْتَ وَجْهَهُ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ مَرَرْتُ
بِالْيَهُوْدِ فَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوْسَى عَلَى الْبَشَرِ
فَقُلْتُ وَعَلَى مُحَمَّدٍ وَأَخَذَتْنِيْ غَضْبَةٌ فَلَطَمْتُهُ قَالَ لَا
تُخَيِّرُوْنِيْ مِنْ بَيْنِ الْأَنْبِيَاءِ فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُوْنَ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ فَأَكُوْنُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيْقُ فَإِذَا أَنَا بِمُوْسَى آخِذٌ
بِقَائِمَةٍ مِنْ قَوَائِمِ الْعَرْشِ فَلَا أَدْرِيْ أَفَاقَ قَبْلِيْ أَمْ
جُزِيَ بِصَعْقَةِ الطُّوْرِ
আবূ
সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ইয়াহূদী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হল। তার
মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত খেয়ে সে বলল, হে মুহাম্মাদ! আপনার এক আনসারী সহাবী আমার
মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত করেছে। তিনি বললেন, তাকে ডেকে আন। তারা ওকে ডেকে আনল,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “একে চপেটাঘাত করেছ কেন?” সে
বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি এই ইয়াহূদীর পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করছিলাম। তখন
শুনলাম সে বলছে তাঁরই শপথ যিনি মূসা (‘আ.)-কে মানবজাতির উপর মনোনীত করেছেন, আমি
বললাম মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপরও মনোনীত করেছেন কি?
এরপর আমার রাগ চেপে গিয়েছিল, তাই তাকে চপেটাঘাত করেছি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা আমাকে অন্যান্য নাবীর থেকে উত্তম বলো না। কারণ
ক্বিয়ামাত দিবসে সব মানুষই জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়বে, সর্বপ্রথম আমিই জ্ঞান ফিরে পাব।
তিনি বলেন, তখন আমি দেখব যে, মূসা (‘আ.) আকাশের খুঁটি ধরে আছেন, আমি বুঝতে পারব না
যে, তিনি কি আমার পূর্বে জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন নাকি তূর পর্বতের জ্ঞানশূন্যতার
পুরস্কার হিসেবে তাঁকে পুনরায় জ্ঞানশূন্য করা হয়নি। [২৪১২] (আ.প্র. ৪২৭৭, ই.ফা.
৪২৮০)
৬৫/৭/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ মান্না এবং
সালওয়া। (সূরাহ আল-‘আরাফ ৪/১৬০)
৪৬৩৯
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ
عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ الْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ وَمَاؤُهَا شِفَاءُ الِلْعَيْنِ.
সা‘ঈদ
ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, الْكَمْأَةُ জাতীয় উদ্ভিদ মান্না-এর মতো
এবং এর পানি চক্ষুরোগ আরোগ্যকারী। [৪৪৭৮] (আ.প্র. ৪২৭৮, ই.ফা. ৪২৮১)
৬৫/৭/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ বলুন, হে
মানুষ! আমি তোমাদের সবার প্রতি সেই আল্লাহর রসূল, যিনি সমগ্র আসমান ও যমীনের
মালিক, যিনি ব্যতীত অন্য কোন মা‘বুদ নেই, যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান।
সুতরাং তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর নিরক্ষর নাবীর প্রতি এবং তাঁর বাণীতে।
তোমরা তাঁর অনুসরণ কর যাতে হিদায়াত প্রাপ্ত হও। (সূরাহ আল-‘আরাফ ৭/১৫৮)
৪৬৪০
عَبْدُ اللهِ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ وَمُوْسَى بْنُ هَارُوْنَ قَالَا حَدَّثَنَا الْوَلِيْدُ بْنُ
مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْعَلَاءِ بْنِ زَبْرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ
بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيْسَ الْخَوْلَانِيُّ
قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ يَقُوْلُ كَانَتْ بَيْنَ أَبِيْ بَكْرٍ
وَعُمَرَ مُحَاوَرَةٌ فَأَغْضَبَ أَبُوْ بَكْرٍ عُمَرَ فَانْصَرَفَ عَنْهُ عُمَرُ
مُغْضَبًا فَاتَّبَعَهُ أَبُوْ بَكْرٍ يَسْأَلُهُ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَهُ فَلَمْ
يَفْعَلْ حَتَّى أَغْلَقَ بَابَهُ فِيْ وَجْهِهِ فَأَقْبَلَ أَبُوْ بَكْرٍ إِلَى
رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ وَنَحْنُ عِنْدَهُ
فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَّا صَاحِبُكُمْ هَذَا فَقَدْ
غَامَرَ قَالَ وَنَدِمَ عُمَرُ عَلَى مَا كَانَ مِنْهُ فَأَقْبَلَ حَتَّى سَلَّمَ
وَجَلَسَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَصَّ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم الْخَبَرَ قَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ وَغَضِبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم وَجَعَلَ أَبُوْ بَكْرٍ يَقُوْلُ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ
لَأَنَا كُنْتُ أَظْلَمَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ أَنْتُمْ
تَارِكُوْنَ لِيْ صَاحِبِيْ هَلْ أَنْتُمْ تَارِكُوْنَ لِيْ صَاحِبِيْ إِنِّيْ قُلْتُ
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَيْكُمْ
جَمِيْعًا فَقُلْتُمْ كَذَبْتَ وَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ صَدَقْتَ
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ غَامَرَ سَبَقَ بِالْخَيْرِ
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ غَامَرَ سَبَقَ بِالْخَيْرِ
আবূ
দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আবূ বাক্র (রাঃ) ও ‘উমার (রাঃ)-এর মধ্যে বিতর্ক হল, আবূ বাক্র (রাঃ)
‘উমার (রাঃ)-কে রাগিয়ে দিয়েছিলেন, এরপর রাগানি¦ত অবস্থায় ‘উমার (রাঃ) সেখান থেকে চলে
গেলেন, আবূ বাক্র (রাঃ) তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে তাঁর পিছু নিলেন
কিন্তু ‘উমার (রাঃ) ক্ষমা করলেন না, বরং তাঁর সম্মুখের দরজা বন্ধ করে দিলেন। এরপর
আবূ বাক্র (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে আসলেন।
আবূ দারদা (রাঃ) বলেন, আমরা তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
কাছে ছিলাম, ঘটনা শোনার পর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
তোমাদের এই সঙ্গী আবূ বাক্র আগে কল্যাণ লাভ করেছে। তিনি বলেন, এতে ‘উমার লজ্জিত
হলেন এবং সালাম করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পাশে বসে পড়লেন ও
সবকথা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বর্ণনা করলেন। আবূ দারদা
(রাঃ) বলেন, এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অসন্তুষ্ট হলেন।
আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) বারবার বলছিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)! আমি অধিক দোষী ছিলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা আমার খাতিরে আমার সাথীর ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? তোমরা
আমার খাতিরে আমার সঙ্গীর ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? এমন একদিন ছিল যখন আমি বলেছিলাম,
“হে মানুষেরা! আমি তোমাদের সকলের জন্য রসূল, তখন তোমরা বলেছিলে, “তুমি মিথ্যা
বলেছ” আর আবূ বাক্র (রাঃ) বলেছিল, “আপনি সত্য বলেছেন”।
ইমাম আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহ.) বলেন, غَامَرَআগে কল্যাণ লাভ করেছে। [৩৬৬১] (আ.প্র. ৪২৭৯, ই.ফা. ৪২৮২)
ইমাম আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহ.) বলেন, غَامَرَআগে কল্যাণ লাভ করেছে। [৩৬৬১] (আ.প্র. ৪২৭৯, ই.ফা. ৪২৮২)
৬৫/৭/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তোমরা বল
ক্ষমা চাই। (সূরাহ আল-‘আরাফ ৭/১৬১)
৪৬৪১
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا
مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قِيْلَ لِبَنِيْ
إِسْرَائِيْلَ {وَّادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَّقُوْلُوْا حِطَّةٌ نَّغْفِرْ
لَكُمْ خَطٰيٰكُمْ} فَبَدَّلُوْا فَدَخَلُوْا يَزْحَفُوْنَ عَلَى أَسْتَاهِهِمْ
وَقَالُوْا حَبَّةٌ فِيْ شَعَرَةٍ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ইসরাঈলীদেরকে আদেশ করা হয়েছিল যে,
“নতশিরে প্রবেশ কর এবং বল, ক্ষমা চাই, আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব” (সূরাহ
আল-‘আরাফ ১৫৮)। এরপর তারা তার উল্টো করল, তারা নিজেদের নিতম্বে ভর দিয়ে মাটিতে বসে
বসে প্রবেশ করল এবং বলল, حَبَّةٌ فِي شَعَرَةٍ
যবের ভিতর বিচি চাই। [৩৪০৩) (আ.প্র. ৪২৮০, ই.ফা. ৪২৮৩)
৬৫/৭/৬
আল্লাহর বাণীঃ তুমি ক্ষমা
করার অভ্যাস কর, ভাল কাজের নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞ-মূর্খদের থেকে দূরে সরে থাক।
(সূরাহ আল-‘আরাফ ৭/১৯৯)
৪৬৪২
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ
قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ ابْنَ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَدِمَ عُيَيْنَةُ بْنُ حِصْنِ بْنِ
حُذَيْفَةَ فَنَزَلَ عَلَى ابْنِ أَخِيْهِ الْحُرِّ بْنِ قَيْسٍ وَكَانَ مِنْ
النَّفَرِ الَّذِيْنَ يُدْنِيْهِمْ عُمَرُ وَكَانَ الْقُرَّاءُ أَصْحَابَ
مَجَالِسِ عُمَرَ وَمُشَاوَرَتِهِ كُهُوْلًا كَانُوْا أَوْ شُبَّانًا فَقَالَ
عُيَيْنَةُ لِابْنِ أَخِيْهِ يَا ابْنَ أَخِيْ هَلْ لَكَ وَجْهٌ عِنْدَ هَذَا
الْأَمِيْرِ فَاسْتَأْذِنْ لِيْ عَلَيْهِ قَالَ سَأَسْتَأْذِنُ لَكَ عَلَيْهِ
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَاسْتَأْذَنَ الْحُرُّ لِعُيَيْنَةَ فَأَذِنَ لَهُ عُمَرُ
فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ قَالَ هِيْ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ فَوَاللهِ مَا
تُعْطِيْنَا الْجَزْلَ وَلَا تَحْكُمُ بَيْنَنَا بِالْعَدْلِ فَغَضِبَ عُمَرُ
حَتَّى هَمَّ أَنْ يُوْقِعَ بِهِ فَقَالَ لَهُ الْحُرُّ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ
إِنَّ اللهَ تَعَالَى قَالَ لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم {خُذِ الْعَفْوَ
وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِيْنَ}وَإِنَّ هَذَا مِنَ
الْجَاهِلِيْنَ وَاللهِ مَا جَاوَزَهَا عُمَرُ حِيْنَ تَلَاهَا عَلَيْهِ وَكَانَ
وَقَّافًا عِنْدَ كِتَابِ اللهِ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেছেন, “উয়াইনাহ ইবনু হিস্ন ইবনু হুযাইফাহ এসে তাঁর ভাতিজা হুর ইবনু কাইসের কাছে
অবস্থান করলেন। ‘উমার (রাঃ) যাদেরকে পার্শ্বে রাখতেন হুর ছিলেন তাদের একজন।
কারীগণ, যুবক-বৃদ্ধ সকলেই ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মজলিসের সদস্য এবং উপদেষ্টা ছিলেন।
এরপর ‘উয়াইনাহ তাঁর ভাতিজাকে ডেকে বললেন, এই আমীরের কাছে তো তোমার একটা মর্যাদা
আছে, সুতরাং তুমি আমার জন্য তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি নিয়ে দাও। তিনি বললেন,
হ্যাঁ, আমি তাঁর কাছে আপনার প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করব।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এরপর হুর অনুমতি প্রার্থনা করলেন উয়াইনাহর জন্যে এবং ‘উমার (রাঃ) অনুমতি দিলেন। উয়াইনাহ ‘উমারের কাছে গিয়ে বললেন, হ্যাঁ আপনি তো আমাদেরকে অধিক অধিক দানও করেন না এবং আমাদের মাঝে সুবিচারও করেন না। ‘উমার (রাঃ) রাগানি¦ত হলেন এবং তাঁকে কিছু একটা করতে উদ্যত হলেন। তখন হুর বললেন, হে আমিরুল মু’মিনীন! আল্লাহ তা‘আলা তো তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলেছেন, “ক্ষমা অবলম্বন কর, সৎকাজের আদেশ দাও এবং মূর্খদেরকে উপেক্ষা কর” আর এই ব্যক্তি তো অবশ্যই মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্র কসম ‘উমার (রাঃ) আয়াতের নির্দেশ অমান্য করেননি। ‘উমার আল্লাহ্র কিতাবের বিধানের সামনে চুপ হয়ে যেতেন। [৭২৮৬] (আ.প্র. ৪২৮১, ই.ফা. ৪২৮৪)
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এরপর হুর অনুমতি প্রার্থনা করলেন উয়াইনাহর জন্যে এবং ‘উমার (রাঃ) অনুমতি দিলেন। উয়াইনাহ ‘উমারের কাছে গিয়ে বললেন, হ্যাঁ আপনি তো আমাদেরকে অধিক অধিক দানও করেন না এবং আমাদের মাঝে সুবিচারও করেন না। ‘উমার (রাঃ) রাগানি¦ত হলেন এবং তাঁকে কিছু একটা করতে উদ্যত হলেন। তখন হুর বললেন, হে আমিরুল মু’মিনীন! আল্লাহ তা‘আলা তো তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলেছেন, “ক্ষমা অবলম্বন কর, সৎকাজের আদেশ দাও এবং মূর্খদেরকে উপেক্ষা কর” আর এই ব্যক্তি তো অবশ্যই মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্র কসম ‘উমার (রাঃ) আয়াতের নির্দেশ অমান্য করেননি। ‘উমার আল্লাহ্র কিতাবের বিধানের সামনে চুপ হয়ে যেতেন। [৭২৮৬] (আ.প্র. ৪২৮১, ই.ফা. ৪২৮৪)
৪৬৪৩
يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ {خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ} قَالَ
مَا أَنْزَلَ اللهُ إِلَّا فِيْ أَخْلَاقِ النَّاسِ
‘আবদুল্লাহ
ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
خُذْ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ
আয়াতটি আল্লাহ তা‘আলা মানুষের চরিত্র সম্পর্কেই অবতীর্ণ করেছেন। [৪৬৪৪] (আ.প্র. ৪২৮২,
ই.ফা. ৪২৮৫)
৪৬৪৪
وَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ بَرَّادٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ
أُسَامَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ
قَالَ أَمَرَ اللهُ نَبِيَّهُ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَأْخُذَ الْعَفْوَ مِنْ
أَخْلَاقِ النَّاسِ أَوْ كَمَا قَالَ.
‘আবদুল্লাহ
ইবনু যুবায়র থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ
তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে মানুষের আচরণের ব্যাপারে
ক্ষমা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছেন। [৪৬৪৩] (আ.প্র. ৪২৮৩, ই.ফা. ৪২৮৫ শেষাংশ)
৬৫/৮/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তারা আপনাকে
জিজ্ঞেস করে যুদ্ধলব্ধ মাল সম্বন্ধে আপনি বলে দিনঃ যুদ্ধলব্ধ মাল আল্লাহর এবং
রাসূলের। অতএব, তোমরা ভয় কর আল্লাহ্কে এবং নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ক ঠিক করে নাও।
(সূরাহ আনফাল ৮/১)
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الْأَنْفَالُ} الْمَغَانِمُ قَالَ قَتَادَةُ {رِيْحُكُمْ} الْحَرْبُ يُقَالُ {نَافِلَةٌ} عَطِيَّةٌ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْأَنْفَالُ-যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, কাতাদাহ বলেন, رِيْحُكُمْ - যুদ্ধ, نَافِلَةٌ - দান।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْأَنْفَالُ-যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, কাতাদাহ বলেন, رِيْحُكُمْ - যুদ্ধ, نَافِلَةٌ - দান।
৪৬৪৫
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ
بْنُ سُلَيْمَانَ أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ
بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا سُوْرَةُ
الْأَنْفَالِ قَالَ نَزَلَتْ فِيْ بَدْرٍ {الشَّوْكَةُ} الْحَدُّ {مُرْدَفِيْنَ}
فَوْجًا بَعْدَ فَوْجٍ رَدِفَنِيْ وَأَرْدَفَنِيْ جَاءَ بَعْدِيْ {ذُوْقُوْا}
بَاشِرُوْا وَجَرِّبُوْا وَلَيْسَ هَذَا مِنْ ذَوْقِ الْفَمِ {فَيَرْكُمَهُ}
يَجْمَعَهُ {شَرِّدْ} فَرِّقْ {وَإِنْ جَنَحُوْا} طَلَبُوا السِّلْمُ وَالسَّلْمُ
وَالسَّلَامُ وَاحِدٌ {يُثْخِنَ} يَغْلِبَ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {مُكَاءً} إِدْخَالُ
أَصَابِعِهِمْ فِيْ أَفْوَاهِهِمْ {وَتَصْدِيَةً} الصَّفِيْرُ {لِيُثْبِتُوْكَ}
لِيَحْبِسُوْكَ.
সা‘ঈদ
ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম সূরাহ আল-আনফাল সম্পর্কে, তিনি বললেন, বাদরের
যুদ্ধ সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।
الشَّوْكَةُ-الْحَدُّশক্তি, مُرْدَفِينَএকদল সৈন্যের পর আরেক দল, رَدِفَنِي এবং أَرْدَفَنِي আমার পেছন পেছন এসেছে, ذُوقُواসরাসরি জড়িয়ে পড় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন কর, মুখে আস্বাদন করা হয়, فَيَرْكُمَهُএরপর তাকে একত্রিত করবেন, شَرِّدْবিচ্ছিন্ন করে দাও, وَإِنْ جَنَحُواযদি তারা চায়, السِّلْمُ، السِّلْمُ এবং السَّلاَمُএকই অর্থ সন্ধি, يُثْخِنَজয়ী হওয়া, মুফাস্সির মুজাহিদ বলেন, مُكَاءًতাদের অঙ্গুলিসমূহ মুখে ঢুকিয়ে দেয়া, শিস দেয়া, تَصْدِيَةًকরতালি, لِيُثْبِتُوكَতোমাকে আটকে রাখার জন্যে। [৪০২৯] (আ.প্র. ৪২৮৪, ই.ফা. ৪২৮৬)
الشَّوْكَةُ-الْحَدُّশক্তি, مُرْدَفِينَএকদল সৈন্যের পর আরেক দল, رَدِفَنِي এবং أَرْدَفَنِي আমার পেছন পেছন এসেছে, ذُوقُواসরাসরি জড়িয়ে পড় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন কর, মুখে আস্বাদন করা হয়, فَيَرْكُمَهُএরপর তাকে একত্রিত করবেন, شَرِّدْবিচ্ছিন্ন করে দাও, وَإِنْ جَنَحُواযদি তারা চায়, السِّلْمُ، السِّلْمُ এবং السَّلاَمُএকই অর্থ সন্ধি, يُثْخِنَজয়ী হওয়া, মুফাস্সির মুজাহিদ বলেন, مُكَاءًতাদের অঙ্গুলিসমূহ মুখে ঢুকিয়ে দেয়া, শিস দেয়া, تَصْدِيَةًকরতালি, لِيُثْبِتُوكَতোমাকে আটকে রাখার জন্যে। [৪০২৯] (আ.প্র. ৪২৮৪, ই.ফা. ৪২৮৬)
৬৫/৮/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়
নিকৃষ্টতম জীব আল্লাহর কাছে ঐসব বধির ও মূক যারা অনুধাবন করে না। (সূরাহ আনফাল
৮/২২)
৪৬৪৬
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ عَنْ ابْنِ
أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {إِنَّ شَرَّ الدَّوَآبِّ
عِنْدَ اللهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ} قَالَ هُمْ نَفَرٌ
مِنْ بَنِيْ عَبْدِ الدَّارِ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ عِنْدَ اللهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِينَ لاَ يَعْقِلُونَ
সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, তারা হচ্ছে বানী আবদুদ্দার গোষ্ঠীর একটি দল। (আ.প্র.
৪২৮৫, ই.ফা. ৪২৮৭)
৬৫/৮/৩.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
{اسْتَجِيْبُوْا} أَجِيْبُوْا لِمَا يُحْيِيْكُمْ يُصْلِحُكُمْ.
اسْتَجِيْبُوْا-তোমরা সাড়া দাও, لِمَا يُحْيِيْكُمْ-তোমাদেরকে সংশোধন করার জন্যে।
اسْتَجِيْبُوْا-তোমরা সাড়া দাও, لِمَا يُحْيِيْكُمْ-তোমাদেরকে সংশোধন করার জন্যে।
৪৬৪৭
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ
خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ سَمِعْتُ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ يُحَدِّثُ عَنْ
أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلَّى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ أُصَلِّيْ
فَمَرَّ بِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِيْ فَلَمْ آتِهِ حَتَّى
صَلَّيْتُ ثُمَّ أَتَيْتُهُ فَقَالَ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَأْتِيَ أَلَمْ يَقُلْ
اللهُ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْبُوْا لِلهِ وَلِلرَّسُوْلِ
إِذَا دَعَاكُمْ} ثُمَّ قَالَ لَأُعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمَ سُوْرَةٍ فِي الْقُرْآنِ
قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ فَذَهَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِيَخْرُجَ
فَذَكَرْتُ لَهُ.
وَقَالَ مُعَاذٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ سَمِعَ حَفْصًا سَمِعَ أَبَا سَعِيْدٍ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا وَقَالَ هِيَ الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ السَّبْعُ الْمَثَانِي.
وَقَالَ مُعَاذٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ سَمِعَ حَفْصًا سَمِعَ أَبَا سَعِيْدٍ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا وَقَالَ هِيَ الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ السَّبْعُ الْمَثَانِي.
আবূ
সা‘ঈদ ইবনু মুয়াল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একদা সলাতে রত ছিলাম, এমন সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
আমার পাশ দিয়ে গেলেন এবং আমাকে ডাকলেন। সলাত শেষ না করা পর্যন্ত আমি তাঁর কাছে
যাইনি, তারপর গেলাম। তিনি বললেন, তোমাকে আসতে বাধা দিল কিসে? আল্লাহ কি বলেননি
“রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদেরকে ডাকলে। আল্লাহ ও রসূলের ডাকে
সাড়া দেবে?” তারপর তিনি বললেন, আমি মাসজিদ থেকে বের হবার পূর্বে তোমাকে একটি অতি
সওয়াবযুক্ত সূরাহ শিক্ষা দেব। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আমি তাঁর নিকট প্রতিশ্র“তির কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম।
মু‘আয বললেন, ...... হাফ্স শুনেছেন একজন সহাবী আবূ সা‘ঈদ ইবনুল মু‘আল্লাকে এই হাদীস বর্ণনা করতে, রসূল বললেনসেই সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সাত আয়াতবিশিষ্ট ও পুনঃ পুনঃ পঠিত। [৪৪৭৪] (আ.প্র. ৪২৮৬, ই.ফা. ৪২৮৮)
মু‘আয বললেন, ...... হাফ্স শুনেছেন একজন সহাবী আবূ সা‘ঈদ ইবনুল মু‘আল্লাকে এই হাদীস বর্ণনা করতে, রসূল বললেনসেই সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সাত আয়াতবিশিষ্ট ও পুনঃ পুনঃ পঠিত। [৪৪৭৪] (আ.প্র. ৪২৮৬, ই.ফা. ৪২৮৮)
৬৫/৮/৪.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
{وَإِذْ قَالُوا اللّٰهُمَّ إِنْ كَانَ هٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِّنَ السَّمَآءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ}
‘‘স্মরণ কর, তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! যদি এ কুরআন তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয় তাহলে আমাদের উপর আসমান থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর অথবা দাও আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরাহ আনফাল ৮/৩২)
قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ مَا سَمَّى اللهُ تَعَالَى مَطَرًا فِي الْقُرْآنِ إِلَّا عَذَابًا وَتُسَمِّيْهِ الْعَرَبُ الْغَيْثَ وَهُوَ قَوْلُهُ تَعَالَى {يُنْزِلُ الْغَيْثَ مِنْمبَعْدِ مَا قَنَطُوْا}.
ইবনু ‘উয়াইনাহ বলেছেন, কুরআনে করীমে শুধুমাত্র ‘আযাব বা শাস্তিকেই আল্লাহ তা‘আলা مَطْرٌ নামে আখ্যায়িত করেছেন, বৃষ্টিকে ‘আরবগণ غَيْثَ নামে আখ্যায়িত করে। যেমন আল্লাহর বাণীঃ وَيُنْزِلُ الْغَيْثَ مِنْمبَعْدِ مَا قَنَطُو-তারা নিরাশ হবার পর তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
‘‘স্মরণ কর, তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! যদি এ কুরআন তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয় তাহলে আমাদের উপর আসমান থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর অথবা দাও আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরাহ আনফাল ৮/৩২)
قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ مَا سَمَّى اللهُ تَعَالَى مَطَرًا فِي الْقُرْآنِ إِلَّا عَذَابًا وَتُسَمِّيْهِ الْعَرَبُ الْغَيْثَ وَهُوَ قَوْلُهُ تَعَالَى {يُنْزِلُ الْغَيْثَ مِنْمبَعْدِ مَا قَنَطُوْا}.
ইবনু ‘উয়াইনাহ বলেছেন, কুরআনে করীমে শুধুমাত্র ‘আযাব বা শাস্তিকেই আল্লাহ তা‘আলা مَطْرٌ নামে আখ্যায়িত করেছেন, বৃষ্টিকে ‘আরবগণ غَيْثَ নামে আখ্যায়িত করে। যেমন আল্লাহর বাণীঃ وَيُنْزِلُ الْغَيْثَ مِنْمبَعْدِ مَا قَنَطُو-তারা নিরাশ হবার পর তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
৪৬৪৮
أَحْمَدُ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُعَاذٍ
حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيْدِ هُوَ ابْنُ
كُرْدِيْدٍ صَاحِبُ الزِّيَادِيِّ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
قَالَ أَبُوْ جَهْلٍ {اللّٰهُمَّ إِنْ كَانَ هٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ
فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِّنَ السَّمَآءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ
أَلِيْمٍ} فَنَزَلَتْ {وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيْهِمْ ط
وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ (33) وَمَا لَهُمْ
أَلَّا يُعَذِّبَهُمُ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّوْنَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ}
الْآيَةَ.
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
জাহল বলেছিল, “হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয়, তবে আমাদের উপর আকাশ
হতে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দাও।” তখনই অবতীর্ণ হল وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الْآيَةَ
“আর আল্লাহ্ তো এরূপ নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন
এবং আল্লাহ্ এমনও নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
আর তাদের এমন কী আছে যে জন্য আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা মাসজিদে
হারামে যেতে বাধা প্রদান করে? আর তারা সে মাসজিদের তত্ত্বাবধায়কও নয়। তার
তত্ত্বাবধায়ক তো মুত্তাকীরা ব্যতীত আর কেউ নয়। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না”
(সূরাহ আনফাল ৮/৩৩-৩৪)। [৪৬৪৯; মুসলিম ৫০/৫, হাঃ ২৭৯৬] (আ.প্র. ৪২৮৭, ই.ফা. ৪২৮৯)
৬৫/৮/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
৪৬৪৯
مُحَمَّدُ بْنُ النَّضْرِ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ
مُعَاذٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْحَمِيْدِ صَاحِبِ
الزِّيَادِيِّ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ قَالَ أَبُوْ جَهْلٍ {اللّٰهُمَّ
إِنْ كَانَ هٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً
مِّنَ السَّمَآءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ} فَنَزَلَتْ {وَمَا كَانَ
اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيْهِمْ ط وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ
وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ (33) وَمَا لَهُمْ أَلَّا يُعَذِّبَهُمُ اللهُ وَهُمْ
يَصُدُّوْنَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ} الْآيَةَ.
আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
জাহল বলেছিল। এরপর অবতীর্ণ হল وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الْآيَةَ
“হে আল্লাহ! যদি এ কুরআন তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয় তাহলে আমাদের উপর আসমান থেকে
প্রস্তর বর্ষণ কর অথবা দাও আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ্ তো এরূপ নন
যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন এবং আল্লাহ্ এমনও নন যে,
তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর তাদের এমন কী আছে যে
জন্য আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা মাসজিদে হারামে যেতে বাধা প্রদান
করে?” (সূরা আনফাল ৮/৩২-৩৪) [৪৬৪৮] (আ.প্র. ৪২৮৮, ই.ফা. ৪২৯০)
৬৫/৮/৬.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর তোমরা
তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ফিতনা শেষ হয়ে যায় এবং দ্বীন সামগ্রিকভাবে
আল্লাহর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তবে যদি তারা বিরত হয়, তাহলে তারা যা করে
আল্লাহ্ তা উত্তমরূপে দেখেন। (সূরাহ আনফাল ৮/৩৯)
৪৬৫০
الْحَسَنُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيْزِ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ
بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا حَيْوَةُ عَنْ بَكْرِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ بُكَيْرٍ عَنْ
نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَجُلًا جَاءَهُ فَقَالَ
يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَلَا تَسْمَعُ مَا ذَكَرَ اللهُ فِيْ كِتَابِهِ
{وَإِنْ طَآئِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْتَتَلُوْا} إِلَى آخِرِ الآيَةِ
فَمَا يَمْنَعُكَ أَنْ لَا تُقَاتِلَ كَمَا ذَكَرَ اللهُ فِيْ كِتَابِهِ فَقَالَ
يَا ابْنَ أَخِيْ أَغْتَرُّ بِهَذِهِ الْآيَةِ وَلَا أُقَاتِلُ أَحَبُّ إِلَيَّ
مِنْ أَنْ أَغْتَرَّ بِهَذِهِ الْآيَةِ الَّتِيْ يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى {وَمَنْ
يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا} إِلَى آخِرِهَا قَالَ فَإِنَّ اللهَ
يَقُوْلُ{وَقَاتِلُوْهُمْ حَتّٰى لَا تَكُوْنَ فِتْنَةٌ} قَالَ ابْنُ عُمَرَ قَدْ
فَعَلْنَا عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ كَانَ الإِسْلَامُ
قَلِيْلًا فَكَانَ الرَّجُلُ يُفْتَنُ فِيْ دِيْنِهِ إِمَّا يَقْتُلُوْنَهُ
وَإِمَّا يُوْثِقُوْنَهُ حَتَّى كَثُرَ الإِسْلَامُ فَلَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ
فَلَمَّا رَأَى أَنَّهُ لَا يُوَافِقُهُ فِيْمَا يُرِيْدُ قَالَ فَمَا قَوْلُكَ
فِيْ عَلِيٍّ وَعُثْمَانَ قَالَ ابْنُ عُمَرَ مَا قَوْلِيْ فِيْ عَلِيٍّ وَعُثْمَانَ
أَمَّا عُثْمَانُ فَكَانَ اللهُ قَدْ عَفَا عَنْهُ فَكَرِهْتُمْ أَنْ يَعْفُوَ
عَنْهُ وَأَمَّا عَلِيٌّ فَابْنُ عَمِّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
وَخَتَنُهُ وَأَشَارَ بِيَدِهِ وَهَذِهِ ابْنَتُهُ أَوْ بِنْتُهُ حَيْثُ تَرَوْنَ.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলল, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আল্লাহ তাঁর কিতাবে যা উল্লেখ
করেছেন আপনি কি তা শোনেন না? وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا.....মু’মিনদের
দু’দল দ্বন্দে¡
লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে ......... সুতরাং আল্লাহ্র কিতাবের
নির্দেশ মুতাবিক যুদ্ধ করতে কোন্ বস্তু আপনাকে নিষেধ করছে? এরপর তিনি বললেন, হে
ভাতিজা! এই আয়াতের তাবীল বা ব্যাখ্যা করে যুদ্ধ না করা আমার কাছে অধিক প্রিয়
........ وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا
“যে স্বেচ্ছায় মু’মিন খুন করে” আয়াত তাবীল করার তুলনায়। সে ব্যক্তি বলল, আল্লাহ
বলেছেন, وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ
“তোমরা ফিতনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করবে”, ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে আমরা তা করেছি যখন ইসলাম
দুর্বল ছিল। ফলে লোক তার দ্বীন নিয়ে ফিতনায় পড়ত, হয়ত কাফিররা তাকে হত্যা করত নতুবা
বেঁধে রাখত, ক্রমে ক্রমে ইসলামের প্রসার ঘটল এবং ফিতনা থাকল না। সে লোকটি যখন দেখল
যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) তার উদ্দেশ্যের অনুকূল নন তখন সে বলল যে, ‘আলী
(রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ) সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন যে, ‘আলী
(রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ) সম্পর্কে আমার কোন কথা নেই, তবে ‘উসমান (রাঃ)-কে আল্লাহ
তা‘আলা নিজেই ক্ষমা করে দিয়েছেন কিন্তু তোমরা তাঁকে ক্ষমা করতে রাযী নও। আর ‘আলী
(রাঃ), তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর চাচাত ভাই এবং
জামাতা, তিনি অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন, ঐ উনি হচ্ছেন রসূলের কন্যা, যেথায় তোমরা
তাঁর ঘর দেখছ, هذِهِ ابْنَتُهُ
বলেছেন কিংবা هذِهِ بْنَتُهُ
বলেছেন। [৩১৩০] (আ.প্র. ৪২৮৯, ই.ফা. ৪২৯১)
৪৬৫১
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا
بَيَانٌ أَنَّ وَبَرَةَ حَدَّثَهُ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ قَالَ
خَرَجَ عَلَيْنَا أَوْ إِلَيْنَا ابْنُ عُمَرَ فَقَالَ رَجُلٌ كَيْفَ تَرَى فِيْ
قِتَالِ الْفِتْنَةِ فَقَالَ وَهَلْ تَدْرِيْ مَا الْفِتْنَةُ كَانَ مُحَمَّدٌ صلى
الله عليه وسلم يُقَاتِلُ الْمُشْرِكِيْنَ وَكَانَ الدُّخُوْلُ عَلَيْهِمْ
فِتْنَةً وَلَيْسَ كَقِتَالِكُمْ عَلَى الْمُلْكِ.
সা‘ঈদ
ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) আমাদের কাছে এলেন। বর্ণনাকারী إِلَيْنَا
অথবা عَلَيْنَا
শব্দ বলেছেন। এরপর এক ব্যক্তি বলল, ফিতনা সম্পর্কিত যুদ্ধের ব্যাপারে আপনার অভিমত
কী? ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, ফিতনা কী তা তুমি জান? মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন। সুতরাং তাদের
বিরুদ্ধে অভিযান ছিল ফিতনা। আর তা তোমাদের রাজত্বের জন্য যুদ্ধ করার মতো নয়।
[৩১৩০] (আ.প্র. ৪২৯০, ই.ফা. ৪২৯২)
৬৫/৮/৭.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
{يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَى الْقِتَالِ ط إِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صٰبِرُوْنَ يَغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ ج وَإِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ مِّائَةٌ يَّغْلِبُوْآ أَلْفًا مِّنَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُوْنَ}.
‘‘হে নাবী! আপনি মু’মিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করুন। যদি তোমাদের মধ্যে বিশজন দৃঢ়পদ লোক থাকে, তবে তারা দু’শর উপর জয়লাভ করবে। আর যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ জন থাকে, তবে তারা এক হাজার কাফিরের উপর জয়লাভ করবে, কেননা তারা এমন লোক যারা বোঝে না।’’ (সূরাহ আনফাল ৮/৬৫)
‘‘হে নাবী! আপনি মু’মিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করুন। যদি তোমাদের মধ্যে বিশজন দৃঢ়পদ লোক থাকে, তবে তারা দু’শর উপর জয়লাভ করবে। আর যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ জন থাকে, তবে তারা এক হাজার কাফিরের উপর জয়লাভ করবে, কেননা তারা এমন লোক যারা বোঝে না।’’ (সূরাহ আনফাল ৮/৬৫)
৪৬৫২
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ
عَمْرٍو عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا لَمَّا نَزَلَتْ {إِنْ
يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صٰبِرُوْنَ يَغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ} وَإِنْ يَكُنْ
مِنْكُمْ مِائَةٌ فَكُتِبَ عَلَيْهِمْ أَنْ لَا يَفِرَّ وَاحِدٌ مِنْ عَشَرَةٍ
فَقَالَ سُفْيَانُ غَيْرَ مَرَّةٍ أَنْ لَا يَفِرَّ عِشْرُوْنَ مِنْ مِائَتَيْنِ
ثُمَّ نَزَلَتْ {الْاٰنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ} الْآيَةَ فَكَتَبَ أَنْ لَا
يَفِرَّ مِائَةٌ مِنْ مِائَتَيْنِ وَزَادَ سُفْيَانُ مَرَّةً نَزَلَتْ {حَرِّضْ
الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَى الْقِتَالِ إِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صَابِرُوْنَ}
قَالَ سُفْيَانُ وَقَالَ ابْنُ شُبْرُمَةَ وَأُرَى الْأَمْرَ بِالْمَعْرُوْفِ
وَالنَّهْيَ عَنِ الْمُنْكَرِ مِثْلَ هَذَا.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আল্লাহ্র
বাণী ঃ) إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ
যখন অবতীর্ণ হল। এরপর দশজন কাফিরের বিপরীত একজন মুসলিম থাকলেও পলায়ন না করা ফরয
করে দেয়া হল। সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ (রাঃ) আবার বর্ণনা করেন, দু’শ জন কাফিরের
বিপক্ষে ২০ জন মুসলিম থাকলেও পলায়ন করা যাবে না। তারপর অবতীর্ণ হল الْآنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفاً فَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ وَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ أَلْفٌ يَغْلِبُوا أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ اللهِ وَاللهُ مَعَ الصَّابِرِينَল্ল
আল্লাহ এখন তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন এবং তিনি জানেন যে, তোমাদের মধ্যে
দুর্বলতা আছে। সুতরাং যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ জন দৃঢ়পদ লোক থাকে তবে তারা দু’শ
জনের উপর জয়লাভ করবে, আর তোমাদের মধ্যে এক হাজার থাকলে আল্লাহ্র হুকুমে তারা
দু’হাজারের উপর জয়লাভ করবে। আর আল্লাহ আছেন দৃঢ়পদ লোকদের সঙ্গে। (সূরাহ আল-আনফাল
৮/৬৬)
এরপর দু’শ কাফিরের বিপক্ষে একশ’জন মুসলিম থাকলে পালিয়ে না যাওয়া (আল্লাহ) ফরয করে দিলেন। সুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ (রহ.) একবার বর্ণনা করেছেন যে, (তাতে কিছু অতিরিক্ত আছে যেমন,) حَرِّضْ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ অবতীর্ণ হল, সুফ্ইয়ান বলেন, ইবনু শুবরুমাহ বলেছেন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধএর ব্যাপারটাও আমি এমনই মনে করি। [৪৬৫৩] (আ.প্র. ৪২৯১, ই.ফা. ৪২৯৩)
এরপর দু’শ কাফিরের বিপক্ষে একশ’জন মুসলিম থাকলে পালিয়ে না যাওয়া (আল্লাহ) ফরয করে দিলেন। সুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ (রহ.) একবার বর্ণনা করেছেন যে, (তাতে কিছু অতিরিক্ত আছে যেমন,) حَرِّضْ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ অবতীর্ণ হল, সুফ্ইয়ান বলেন, ইবনু শুবরুমাহ বলেছেন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধএর ব্যাপারটাও আমি এমনই মনে করি। [৪৬৫৩] (আ.প্র. ৪২৯১, ই.ফা. ৪২৯৩)
৬৫/৮/৮.অধ্যায়ঃ
‘‘আল্লাহ এখন তোমাদের ভার
লাঘব করলেন। তিনি অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। ....... আল্লাহ
ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’’ (সূরাহ আনফাল ৮/৬৬)
৪৬৫৩
يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ السُّلَمِيُّ أَخْبَرَنَا عَبْدُ
اللهِ بْنُ الْمُبَارَكِ أَخْبَرَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ قَالَ أَخْبَرَنِي
الزُّبَيْرُ بْنُ خِرِّيْتٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {إِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صٰبِرُوْنَ
يَغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ} شَقَّ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِيْنَ حِيْنَ فُرِضَ
عَلَيْهِمْ أَنْ لَا يَفِرَّ وَاحِدٌ مِنْ عَشَرَةٍ فَجَاءَ التَّخْفِيْفُ فَقَالَ
{اَلْئٰنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيْكُمْ ضَعْفًا ط فَإِنْ
يَّكُنْ مِّنْكُمْ مِّائَةٌ صَابِرَةٌ يَّغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ} قَالَ فَلَمَّا
خَفَّفَ اللهُ عَنْهُمْ مِنَ الْعِدَّةِ نَقَصَ مِنْ الصَّبْرِ بِقَدْرِ مَا خُفِّفَ
عَنْهُمْ.
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন
إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ
আয়াতটি অবতীর্ণ হল তখন দশ জনের বিপরীতে একজনের পলায়নও নিষিদ্ধ করা হল, তখন এটা
মুসলিমদের উপর দুঃসাধ্য মনে হল তারপর তা লাঘবের বিধান এলো الْآنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضُعْفًا فَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাদেরকে সংখ্যার দিক থেকে যখন হালকা করে দিলেন,
সেই সংখ্যা হ্রাসের সমপরিমাণ তাদের ধৈর্র্যও হ্রাস পেল। [৪৬৫২] (আ.প্র. ৪২৯২,
ই.ফা. ৪২৯৪)
৬৫/৯/১.অধ্যায়ঃ
অধ্যায়: আল্লাহ্ তা‘আলার
বাণীঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে দায়মুক্তির ঘোষণা সেসব
মুশরিকের সম্পর্কে যাদের সঙ্গে তোমরা সন্ধিচুক্তি করেছিলে। (সূরাহ বারাআত ৯/১)
{وَلِيْجَةً} كُلُّ شَيْءٍ أَدْخَلْتَهُ فِيْ شَيْءٍ {مُرْصَدٌ} طَرِيْقٌ {الشُّقَّةُ}السَّفَرُ {الْخَبَالُ} الْفَسَادُ وَالْخَبَالُ الْمَوْتُ {وَلَاتَفْتِنِّيْ} لَا تُوَبِّخْنِيْ كَرْهًا وَ {كُرْهًا} وَاحِدٌ {مُدَّخَلًا} يُدْخَلُوْنَ فِيْهِ {يَجْمَحُوْنَ}يُسْرِعُوْنَ {وَالْمُؤْتَفِكَاتِ} ائْتَفَكَتْ انْقَلَبَتْ بِهَا الْأَرْضُ {أَهْوَى} أَلْقَاهُ فِيْ هُوَّةٍ {عَدْنٍ}خُلْدٍ عَدَنْتُ بِأَرْضٍ أَيْ أَقَمْتُ وَمِنْهُ مَعْدِنٌ وَيُقَالُ فِيْ مَعْدِنِ صِدْقٍ فِيْ مَنْبَتِ صِدْقٍ {الْخَوَالِفُ} الْخَالِفُ الَّذِيْ خَلَفَنِيْ فَقَعَدَ بَعْدِيْ وَمِنْهُ يَخْلُفُهُ فِي الْغَابِرِيْنَ وَيَجُوْزُ أَنْ يَكُوْنَ النِّسَاءُ مِنَ الْخَالِفَةِ وَإِنْ كَانَ جَمْعَ الذُّكُوْرِ فَإِنَّهُ لَمْ يُوْجَدْ عَلَى تَقْدِيْرِ جَمْعِهِ إِلَّا حَرْفَانِ فَارِسٌ وَفَوَارِسُ وَهَالِكٌ وَهَوَالِكُ {الْخَيْرَاتُ} وَاحِدُهَا خَيْرَةٌ وَهِيَ الْفَوَاضِلُ {مُرْجَئُوْنَ} مُؤَخَّرُوْنَ {الشَّفَا} شَفِيْرٌ وَهُوَ حَدُّهُ وَالْجُرُفُ مَا تَجَرَّفَ مِنْ السُّيُوْلِ وَالأَوْدِيَةِ {هَارٍ} هَائِرٍ لَأَوَّاهٌ شَفَقًا وَفَرَقًا وَقَالَ الشَّاعِرُ.
إِذَا قُمْتُ أَرْحَلُهَا بِلَيْلٍ تَأَوَّهُ آهَةَ الرَّجُلِ الْحَزِيْنِ.
يُقَالُ : تَهَوَّرَتْ الْبِئْرُ إِذَا انْهَدَمَتْ وَانْهَارَ مِثْلُهُ.
وَلِيْجَةً- এমন বস্তু যাকে তুমি আরেকটা বস্তুর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলে। الشُّقَّةُ- সফর, ভ্রমণ, الْخَبَالُ- বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয়, الْخَبَالُ- মৃত্যু। وَلَاتَفْتِنِّيْ- আমাকে হুমকি দিও না। كَرْهًا-وَ- كُرْهًا- বাধ্যবাধকতা, উভয়টা একই অর্থবোধক, مُدَّخَلًا- প্রবেশস্থল, যেথায় তারা প্রবেশ করবে। يَجْمَحُوْنَ- তারা ত্বরান্বিত করবে। وَالْمُؤْتَفِكَاتِ-যাদের নিয়ে ভূমি উল্টে গেছে। أَهْوَى- তাকে গর্তে নিক্ষেপ করল। عَدْنٍ- স্থায়িত্ব অবস্থান, যেমন, عَدَنْتُبِأَرْضٍ- আমি অবস্থান করলাম, এগুলো থেকে مَعْدِنٍ শব্দ আসছে এবং বলা হয় فِيْ مَعْدِنِ صِدْقٍ -অর্থাৎ সত্যের উৎপত্তিস্থল। الْخَوَالِفُ-الْخَالِفُ- শব্দের বহুবচন অর্থ, যে আমার পিছনে থাকল। এবং আমার পরে বসে থাকল এবং এর অর্থ থেকে يُخْلِفُهُفِيالْغَابِرِيْنَ- অর্থ, অবশিষ্টদের মধ্যে পিছনে রাখা হয় এবং الْخَالِفَةُ - শব্দের বহুবচন হিসাবে الْخَوَالِفُ স্ত্রীলিঙ্গে ব্যবহার করা বৈধ আছে যদিও তা পুরুষ শব্দের বহুবচন, তা হলে তার এভাবে বহুবচন আরবী ভাষায় দু’টি শব্দ ব্যতীত পাওয়া যায় না, যথা فَارِسٌ- এর বহুবচন فَوَارِسُ এবং هَالِكٌ-এর বহুবচন هَوَالِكُالْخَيْرَاتُ শব্দের এক বচন خَيْرَةٌ অর্থ, কল্যাণ ও মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু। مُرْجَئُوْنَ-বিলম্বিত ব্যক্তিবর্গ। الشَّفَا কিনারা বা পার্শ্ব। الْجُرُفُ- যা উঁচু স্থান বা উপত্যকা থেকে প্রবাহিত হয়। هَائِرٍ-هَارٍ পতিত হওয়া। যেমন বলা হয়, কুয়া ভেঙ্গে পড়েছে যখন তা ধ্বংস হয়ে যায়, আর এরূপভাবে انْهَدَمَتْ শব্দের অর্থ হয়ে থাকে। لَأَوَّاهٌ-অধিক কোমল হৃদয়, ভয়-ভীতির কারণে। কবি বলেন, ‘‘যখন আমি রাতের বেলায় উষ্ট্রীর পিঠে আরোহণ করলাম, তখন সেটি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তির মত দীর্ঘশ্বাস ফেলে আহ! করতে থাকে।’’
{أَذَانٌ} إِعْلَامٌ. [أشار به إلى قوله تعالى : {وَأَذَنٌ مِّنَ اللهِ وَرَسُوْلِهٰ} وفسره بقوله : إعلام، وهذا ظاهر]. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أُذُنٌ} يُصَدِّقُ {تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهِمْ بِهَا} وَنَحْوُهَا كَثِيْرٌ وَالزَّكَاةُ الطَّاعَةُ وَالإِخْلَاصُ {لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ} لَا يَشْهَدُوْنَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ {يُضَاهُوْنَ} يُشَبِّهُوْنَ
ইব্ন ‘আববাস (রাঃ) বলেন, أَذَنٌ-কারো কথা শুনে তা সত্য বলে ধারণা করা। تُطَهِّرُهُمْ এবং تُزَكِّيْهِمْ এর একই অর্থ, এ ব্যবহার পদ্ধতি অধিক। সে পবিত্র করে। زَكْوَةٌ ‘ইবাদাত ও নিষ্ঠা لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ (তারা যাকাত প্রদান করে না) (এবং) তারা এ সাক্ষ্যও প্রদান করে না যে, আর কোন উপাস্য নেই এক আল্লাহ ব্যতীত। يُضَاهُوْنَ- তারা তুলনা দিচ্ছে।
إِذَا قُمْتُ أَرْحَلُهَا بِلَيْلٍ تَأَوَّهُ آهَةَ الرَّجُلِ الْحَزِيْنِ.
يُقَالُ : تَهَوَّرَتْ الْبِئْرُ إِذَا انْهَدَمَتْ وَانْهَارَ مِثْلُهُ.
وَلِيْجَةً- এমন বস্তু যাকে তুমি আরেকটা বস্তুর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলে। الشُّقَّةُ- সফর, ভ্রমণ, الْخَبَالُ- বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয়, الْخَبَالُ- মৃত্যু। وَلَاتَفْتِنِّيْ- আমাকে হুমকি দিও না। كَرْهًا-وَ- كُرْهًا- বাধ্যবাধকতা, উভয়টা একই অর্থবোধক, مُدَّخَلًا- প্রবেশস্থল, যেথায় তারা প্রবেশ করবে। يَجْمَحُوْنَ- তারা ত্বরান্বিত করবে। وَالْمُؤْتَفِكَاتِ-যাদের নিয়ে ভূমি উল্টে গেছে। أَهْوَى- তাকে গর্তে নিক্ষেপ করল। عَدْنٍ- স্থায়িত্ব অবস্থান, যেমন, عَدَنْتُبِأَرْضٍ- আমি অবস্থান করলাম, এগুলো থেকে مَعْدِنٍ শব্দ আসছে এবং বলা হয় فِيْ مَعْدِنِ صِدْقٍ -অর্থাৎ সত্যের উৎপত্তিস্থল। الْخَوَالِفُ-الْخَالِفُ- শব্দের বহুবচন অর্থ, যে আমার পিছনে থাকল। এবং আমার পরে বসে থাকল এবং এর অর্থ থেকে يُخْلِفُهُفِيالْغَابِرِيْنَ- অর্থ, অবশিষ্টদের মধ্যে পিছনে রাখা হয় এবং الْخَالِفَةُ - শব্দের বহুবচন হিসাবে الْخَوَالِفُ স্ত্রীলিঙ্গে ব্যবহার করা বৈধ আছে যদিও তা পুরুষ শব্দের বহুবচন, তা হলে তার এভাবে বহুবচন আরবী ভাষায় দু’টি শব্দ ব্যতীত পাওয়া যায় না, যথা فَارِسٌ- এর বহুবচন فَوَارِسُ এবং هَالِكٌ-এর বহুবচন هَوَالِكُالْخَيْرَاتُ শব্দের এক বচন خَيْرَةٌ অর্থ, কল্যাণ ও মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু। مُرْجَئُوْنَ-বিলম্বিত ব্যক্তিবর্গ। الشَّفَا কিনারা বা পার্শ্ব। الْجُرُفُ- যা উঁচু স্থান বা উপত্যকা থেকে প্রবাহিত হয়। هَائِرٍ-هَارٍ পতিত হওয়া। যেমন বলা হয়, কুয়া ভেঙ্গে পড়েছে যখন তা ধ্বংস হয়ে যায়, আর এরূপভাবে انْهَدَمَتْ শব্দের অর্থ হয়ে থাকে। لَأَوَّاهٌ-অধিক কোমল হৃদয়, ভয়-ভীতির কারণে। কবি বলেন, ‘‘যখন আমি রাতের বেলায় উষ্ট্রীর পিঠে আরোহণ করলাম, তখন সেটি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তির মত দীর্ঘশ্বাস ফেলে আহ! করতে থাকে।’’
{أَذَانٌ} إِعْلَامٌ. [أشار به إلى قوله تعالى : {وَأَذَنٌ مِّنَ اللهِ وَرَسُوْلِهٰ} وفسره بقوله : إعلام، وهذا ظاهر]. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أُذُنٌ} يُصَدِّقُ {تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهِمْ بِهَا} وَنَحْوُهَا كَثِيْرٌ وَالزَّكَاةُ الطَّاعَةُ وَالإِخْلَاصُ {لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ} لَا يَشْهَدُوْنَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ {يُضَاهُوْنَ} يُشَبِّهُوْنَ
ইব্ন ‘আববাস (রাঃ) বলেন, أَذَنٌ-কারো কথা শুনে তা সত্য বলে ধারণা করা। تُطَهِّرُهُمْ এবং تُزَكِّيْهِمْ এর একই অর্থ, এ ব্যবহার পদ্ধতি অধিক। সে পবিত্র করে। زَكْوَةٌ ‘ইবাদাত ও নিষ্ঠা لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ (তারা যাকাত প্রদান করে না) (এবং) তারা এ সাক্ষ্যও প্রদান করে না যে, আর কোন উপাস্য নেই এক আল্লাহ ব্যতীত। يُضَاهُوْنَ- তারা তুলনা দিচ্ছে।
৪৬৫৪
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ
إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ آخِرُ آيَةٍ
نَزَلَتْ {يَسْتَفْتُوْنَكَ قُلِ اللهُ يُفْتِيْكُمْ فِي الْكَلَالَةِ} وَآخِرُ
سُوْرَةٍ نَزَلَتْ بَرَاءَةٌ
বারাআ
ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সর্বশেষে
যে আয়াত অবতীর্ণ হয়, তা হল يَسْتَفْتُونَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِলোকেরা
আপনার কাছে বিধান জানতে চায়। আপনি বলুন ঃ আল্লাহ্ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন “কালালা”
(পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৭৬)। এবং সর্বশেষে
যে সূরাটি অবতীর্ণ হয়, তা হল সূরায়ে বারাআত। [৪৩৬৪] (আ.প্র. ৪২৯৩, ই.ফা. ৪২৯৫)
৬৫/৯/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর তা‘আলার বাণীঃ {فَسِيْحُوْا فِي الْأَرْضِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَّاعْلَمُوْآ أَنَّكُمْ غَيْرُ مُعْجِزِي اللهِ لاوَأَنَّ اللهَ مُخْزِي الْكٰفِرِيْنَ}
তারপর তোমরা এদেশে চার
মাসকাল ঘুরে বেড়াও। আর জেনে রেখো, তোমরা আল্লাহ্কে অক্ষম করতে পারবে না এবং আল্লাহ
অবশ্যই কাফিরদের অপদস্থ করে থাকেন। (সূরাহ বারাআত ৯/২)
سِيْحُوْا -سِيْرُوْا-পরিভ্রমণ করা
سِيْحُوْا -سِيْرُوْا-পরিভ্রমণ করা
৪৬৫৫
سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ
حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِيْ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَنِيْ أَبُوْ
بَكْرٍ فِيْ تِلْكَ الْحَجَّةِ فِيْ مُؤَذِّنِيْنَ بَعَثَهُمْ يَوْمَ النَّحْرِ
يُؤَذِّنُوْنَ بِمِنًى أَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ
بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ قَالَ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ثُمَّ أَرْدَفَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِعَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ وَأَمَرَهُ أَنْ
يُؤَذِّنَ بِبَرَاءَةَ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ فَأَذَّنَ مَعَنَا عَلِيٌّ يَوْمَ
النَّحْرِ فِيْ أَهْلِ مِنًى بِبَرَاءَةَ وَأَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ
مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবূ বাক্র (রাঃ) নবম হিজরীর হাজ্জে আমাকে এ আদেশ দিয়ে পাঠিয়ে দেন যে, আমি
কুরবানীর দিন ঘোষণাকারীদের সঙ্গে মিনায় (সমবেত লোকদের) এ ঘোষণা করে দেই যে, এ
বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। আল্লাহ্র ঘর নগ্নদেহে তাওয়াফ করবে না।
হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন ঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)-কে পুনরায় এ নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করলেন যে, তুমি সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করে দাও। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, মীনায় অবস্থানকারীদের মাঝে (কুরবানীর পর) ‘আলী (রাঃ) আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করলেন, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। কেউ নগ্ন অবস্থায় ঘর তওয়াফ করবে না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন ঃ اَذَنَهُمْ অর্থ, তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। [৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৪, ই.ফা. ৪২৯৬)
হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন ঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)-কে পুনরায় এ নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করলেন যে, তুমি সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করে দাও। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, মীনায় অবস্থানকারীদের মাঝে (কুরবানীর পর) ‘আলী (রাঃ) আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করলেন, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। কেউ নগ্ন অবস্থায় ঘর তওয়াফ করবে না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন ঃ اَذَنَهُمْ অর্থ, তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। [৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৪, ই.ফা. ৪২৯৬)
৬৫/৯/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ
৪৬৫৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ
حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَأَخْبَرَنِيْ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ بَعَثَنِيْ أَبُوْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُ فِيْ تِلْكَ الْحَجَّةِ فِي الْمُؤَذِّنِيْنَ بَعَثَهُمْ يَوْمَ النَّحْرِ
يُؤَذِّنُوْنَ بِمِنًى أَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ
بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ قَالَ حُمَيْدٌ ثُمَّ أَرْدَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه
وسلم بِعَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ فَأَمَرَهُ أَنْ يُؤَذِّنَ بِبَرَاءَةَ قَالَ
أَبُوْ هُرَيْرَةَ فَأَذَّنَ مَعَنَا عَلِيٌّ فِيْ أَهْلِ مِنًى يَوْمَ النَّحْرِ بِبَرَاءَةَ
وَأَنْ لَا يَحُجَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ
عُرْيَانٌ
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
বাক্র (রাঃ) আমাকে সে কুরবানীর দিন ঘোষণাকারীদের সঙ্গে মিনায় এ (কথা) ঘোষণা করার
জন্য পাঠালেন যে, এ বছরের পরে আর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। আল্লাহ্র ঘর
নগ্ন অবস্থায় কাউকে তওয়াফ করতে দেয়া হবে না। হুমাইদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পরে পুনরায় ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিবকে পাঠালেন এবং বললেন ঃ
সূরায়ে বারাআতের নির্দেশাবলী ঘোষণা করে দাও। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, ‘আলী (রাঃ)
আমাদের সঙ্গেই মীনাবাসীদের মধ্যে সূরায়ে বারাআত কুরবানীর দিন ঘোষণা করলেন এ বছরের
পরে কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না এবং নগ্নদেহে আল্লাহ্র ঘরের তাওয়াফ করবে না।
[৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৫, ই.ফা. ৪২৯৭)
৬৫/৯/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ অতএব,
তোমরা পূর্ণ করবে তাদের সঙ্গে কৃত চুক্তিকে তাদের মেয়াদ পর্যন্ত। (সূরাহ বারাআত
৯/৪)
৪৬৫৭
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ
حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ حُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعَثَهُ فِي الْحَجَّةِ الَّتِيْ أَمَّرَهُ رَسُوْلُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم عَلَيْهَا قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فِيْ رَهْطٍ
يُؤَذِّنُوْنَ فِي النَّاسِ أَنْ لَا يَحُجَّنَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا
يَطُوْفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ فَكَانَ حُمَيْدٌ يَقُوْلُ يَوْمُ النَّحْرِ
يَوْمُ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ مِنْ أَجْلِ حَدِيْثِ أَبِيْ هُرَيْرَةَ.
ইসহাক
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বিদায় হাজ্জের পূর্বের বছর আবূ বাক্র (রাঃ)-কে যে হাজ্জের আমীর বানিয়ে
পাঠিয়েছিলেন, সেই হাজ্জে তিনি যেন লোকেদের মধ্যে ঘোষণা দেন, এ বছরের পর কোন মুশরিক
হাজ্জ করতে পারবে না এবং নগ্নদেহে কেউ আল্লাহ্র ঘর তাওয়াফ করতে পারবে না।
হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান বলেন, [আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)]’র হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হাজ্জুল আকবারের দিন হল কুরবানীর দিন। [৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৬, ই.ফা. ৪২৯৮)
হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান বলেন, [আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)]’র হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হাজ্জুল আকবারের দিন হল কুরবানীর দিন। [৩৬৯] (আ.প্র. ৪২৯৬, ই.ফা. ৪২৯৮)
৬৫/৯/৫
আল্লাহর তা‘আলার বাণীঃ তবে
তোমরা যুদ্ধ করবে কাফিরদের প্রধানদের বিরুদ্ধে। কেননা তাদের কোন অঙ্গীকারই বহাল
নেই।(সূরাহ বারাআত ৯/১২)
৪৬৫৮
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا
إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ قَالَ كُنَّا عِنْدَ حُذَيْفَةَ
فَقَالَ مَا بَقِيَ مِنْ أَصْحَابِ هَذِهِ الْآيَةِ إِلَّا ثَلَاثَةٌ وَلَا مِنَ
الْمُنَافِقِيْنَ إِلَّا أَرْبَعَةٌ فَقَالَ أَعْرَابِيٌّ إِنَّكُمْ أَصْحَابَ
مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم تُخْبِرُوْنَا فَلَا نَدْرِيْ فَمَا بَالُ هَؤُلَاءِ
الَّذِيْنَ يَبْقُرُوْنَ بُيُوْتَنَا وَيَسْرِقُوْنَ أَعْلَاقَنَا قَالَ
أُوْلَئِكَ الْفُسَّاقُ أَجَلْ لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلَّا أَرْبَعَةٌ أَحَدُهُمْ
شَيْخٌ كَبِيْرٌ لَوْ شَرِبَ الْمَاءَ الْبَارِدَ لَمَا وَجَدَ بَرْدَهُ
যায়দ
ইবনু ওয়াহ্ব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আমরা হুযাইফাহ (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি বলেন, এ আয়াতের সঙ্গে
সম্পর্কিত ব্যক্তিদের মধ্যে শুধু তিনজন মুসলিম এবং চারজন মুনাফিক বেঁচে আছে। এমন
সময় একজন বেদুঈন বলেন, আপনারা সকলে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবী। আমাদের এমন লোকদের অবস্থা সম্পর্কে খবর দিন যারা আমাদের ঘরে
সিঁদ কেটে ঘরের অতি মূল্যবান জিনিসগুলো চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে, কেননা তাদের অবস্থা
সম্পর্কে আমরা জানি না। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, তারা সবাই ফাসিক। হ্যাঁ, তাদের মধ্য
হতে চার ব্যক্তি এখনও জীবিততাদের মধ্যে একজন এতই বৃদ্ধ যে, শীতল পানি পান করার পর
তার শীতলতা অনুভব করতে পারে না। (আ.প্র. ৪২৯৭, ই.ফা. ৪২৯৯)
৬৫/৯/৬
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ {وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُوْنَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ}.
আর যারা জমা করে রাখে স্বর্ণ
ও রৌপ্য এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে আপনি শুনিয়ে দিন যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তির সুসংবাদ। (সূরাহ বারাআত ৯/৩৪)
৪৬৫৯
الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا
أَبُو الزِّنَادِ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ الْأَعْرَجَ حَدَّثَهُ أَنَّهُ قَالَ
حَدَّثَنِيْ أَبُوْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ
صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ يَكُوْنُ كَنْزُ أَحَدِكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
شُجَاعًا أَقْرَعَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, তোমাদের মধ্যে
কারো জমাকৃত সম্পদ (যার যাকাত আদায় করা হয় না) ক্বিয়ামাতের দিন বিষাক্ত সর্পের রূপ
ধারণ করবে। [১৪০৩] (আ.প্র. ৪২৯৮, ই.ফা. ৪৩০০)
৪৬৬০
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ
حُصَيْنٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ قَالَ مَرَرْتُ عَلَى أَبِيْ ذَرٍّ
بِالرَّبَذَةِ فَقُلْتُ مَا أَنْزَلَكَ بِهَذِهِ الْأَرْضِ قَالَ كُنَّا
بِالشَّأْمِ فَقَرَأْتُ {وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا
يُنْفِقُوْنَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ} قَالَ
مُعَاوِيَةُ مَا هَذِهِ فِيْنَا مَا هَذِهِ إِلَّا فِيْ أَهْلِ الْكِتَابِ قَالَ
قُلْتُ إِنَّهَا لَفِيْنَا وَفِيْهِمْ.
যায়দ
ইবনু ওয়াহ্ব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একদা রাবাযা নামক স্থানে আবূ যার (রাঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি
(তাকে) জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কেন এ ভূমিতে এসেছেন? তিনি বললেন, আমি সিরিয়ায় ছিলাম,
তখন আমি [মু‘আবিয়াহ (রাঃ)-এর সামনে] এ আয়াত পাঠ করে শোনালাম। وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلاَ يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
“আর যারা জমা করে রাখে স্বর্ণ ও রৌপ্য এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে
আপনি শুনিয়ে দিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ।” (সূরাহ বারাআত ৯/৩৪)
মু‘আবিয়াহ (রাঃ) এ আয়াত শুনে বললেন, এ আয়াত আমাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়নি। বরং আহলে কিতাবদের (ইয়াহূদী ও নাসারাদের) ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। আমি বললাম, এ আয়াত আমাদের ও তাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। (এ তর্কবিতর্কের কারণে চলে এসেছি।) [১৪০৬] (আ.প্র. ৪২৯৯, ই.ফা. ৪৩০১)
মু‘আবিয়াহ (রাঃ) এ আয়াত শুনে বললেন, এ আয়াত আমাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়নি। বরং আহলে কিতাবদের (ইয়াহূদী ও নাসারাদের) ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। আমি বললাম, এ আয়াত আমাদের ও তাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। (এ তর্কবিতর্কের কারণে চলে এসেছি।) [১৪০৬] (আ.প্র. ৪২৯৯, ই.ফা. ৪৩০১)
৬৫/৯/৭
আল্লাহর বাণীঃ {يَّوْمَ يُحْمٰى عَلَيْهَا فِيْ نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوٰى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوْبُهُمْ وَظُهُوْرُهُمْ طهٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِاَنْفُسِكُمْ فَذُوْقُوْا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُوْنَ}.
সে দিন যখন জাহান্নামের
আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে দাগিয়ে দেয়া হবে তাদের কপাল, তাদের পাঁজর
এবং তাদের পৃষ্ঠদেশ, বলা হবেঃ এগুলো হল তা, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে
রেখেছিলে। সুতরাং যা তোমরা জমা করে রাখতে তার স্বাদ গ্রহণ কর। (সূরাহ বারাআত ৯/৩৫)
৪৬৬১
وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ شَبِيْبِ بْنِ سَعِيْدٍ أَبِيْ عَنْ
يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ أَسْلَمَ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ
عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَقَالَ هَذَا قَبْلَ أَنْ تُنْزَلَ الزَّكَاةُ فَلَمَّا
أُنْزِلَتْ جَعَلَهَا اللهُ طُهْرًا لِلْأَمْوَالِ.
খালিদ
ইবনু আসলাম (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমার (রাঃ)-এর সঙ্গে বের হলাম। তখন তিনি বললেন, এ
আয়াতটি যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বের। এরপর যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হলে
আল্লাহ তা সম্পদের পরিশুদ্ধকারী করেন। [১৪০৪] (আ.প্র. ৪৩০০, ই.ফা. ৪৩০২)
৬৫/৯/৮
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ নিশ্চয়
মাসসমূহের সংখ্যা আল্লাহর কাছে বার মাস, সুনির্দিষ্ট রয়েছে আল্লাহর কিতাবে সেদিন
থেকে যেদিন তিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন, এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটিই
সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্মপথ। (সূরাহ বারাআত ৯/৩৬)
{ذٰلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ هُوَ الْقَائِمُ} القَيِّمُ : هُوَ القائمُ. [فَلَا تَظْلِمُوْا فِيْهِنَّ أَنْفُسَكُمْ].
القَيِّمُ শব্দটি القائمُ (প্রতিষ্ঠিত) অর্থে ব্যবহৃত হয়।
القَيِّمُ শব্দটি القائمُ (প্রতিষ্ঠিত) অর্থে ব্যবহৃত হয়।
৪৬৬২
عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ
بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ
أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ الزَّمَانَ قَدْ
اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللهُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ السَّنَةُ
اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ثَلَاثٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو
الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِيْ بَيْنَ
جُمَادَى وَشَعْبَانَ.
আবূ
বাক্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বললেন, আল্লাহ যেদিন আসমান
যমীন সৃষ্টি করেন সেদিন যেভাবে যামানা ছিল তা আজও তেমনি আছে। বারমাসে এক বছর, তার
মধ্যে চার মাস পবিত্র। যার তিন মাস ধারাবাহিক যথা যিলকাদ, যিলহাজ্জ ও মুর্হারম আর
মুযার গোত্রের রাজব যা জামাদিউস্সানী ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী। [৬৭] (আ.প্র. ৪৩০১,
ই.ফা. ৪৩০২)
৬৫/৯/৯.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ {ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُوْلُ لِصَاحِبِهٰ لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللهَ مَعَنَا}
তিনি ছিলেন দু’জনের মধ্যে
দ্বিতীয় জন, যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন যখন তিনি তার সাথীকে বললেন, চিন্তা
কর না, নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। (সূরাহ বারাআত ৯/৪০)
أَيْ نَاصِرُنَا السَّكِيْنَةُ فَعِيْلَةٌ مِنْ السُّكُوْنِ.
مَعَنَا আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী فَعِيْلَةٌ السَّكِيْنَةُ-এর সম ওযনে سَكُوْن থেকে, অর্থ প্রশান্তি।
أَيْ نَاصِرُنَا السَّكِيْنَةُ فَعِيْلَةٌ مِنْ السُّكُوْنِ.
مَعَنَا আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী فَعِيْلَةٌ السَّكِيْنَةُ-এর সম ওযনে سَكُوْن থেকে, অর্থ প্রশান্তি।
৪৬৬৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا حَبَّانُ
حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا ثَابِتٌ حَدَّثَنَا أَنَسٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ
أَبُوْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فِي الْغَارِ فَرَأَيْتُ آثَارَ الْمُشْرِكِيْنَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ
لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ رَفَعَ قَدَمَهُ رَآنَا قَالَ مَا ظَنُّكَ بِاثْنَيْنِ
اللهُ ثَالِثُهُمَا.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আবূ বাক্র (রাঃ) আমার কাছে বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে (সওর) গুহায় ছিলাম। তখন আমি মুশরিকদের পদচিহ্ন দেখতে পেয়ে
[নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে] বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! যদি তাদের
কেউ পা উঠায় তাহলে আমাদের দেখে ফেলবে। তখন তিনি বললেন, এমন দু’জন সম্পর্কে তোমার
কী ধারণা, যাদের তৃতীয় জন হলেন আল্লাহ। [৩৬৫৩] (আ. প্র. ৪৩০২, ই.ফা. ৪৩০৩)
৪৬৬৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ
عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ حِيْنَ وَقَعَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ ابْنِ الزُّبَيْرِ
قُلْتُ أَبُوْهُ الزُّبَيْرُ وَأُمُّهُ أَسْمَاءُ وَخَالَتُهُ عَائِشَةُ وَجَدُّهُ
أَبُوْ بَكْرٍ وَجَدَّتُهُ صَفِيَّةُ فَقُلْتُ لِسُفْيَانَ إِسْنَادُهُ فَقَالَ
حَدَّثَنَا فَشَغَلَهُ إِنْسَانٌ وَلَمْ يَقُلْ ابْنُ جُرَيْجٍ
ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন তার ও ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর মধ্যে (বাইআত নিয়ে) মতভেদ ঘটল, তখন আমি
বললাম, তার পিতা যুবায়র, তার মাতা আসমা (রাঃ) ও তার খালা ‘আয়িশাহ (রাঃ), তার নানা
আবূ বাক্র (রাঃ) ও তার নানী সুফিয়া (রাঃ)। আমি সুফ্ইয়ানকে বললাম, এর সানাদ বর্ণনা
করুন। তিনি বললেন, حَدَّثَنَا এবং ইবনু জুরাইজ (রহ.) বলার আগেই অন্য এক
ব্যক্তি তাকে ব্যস্ত করে ফেললেন। [৪৬৬৫, ৪৬৬৬] (আ.প্র. ৪৩০৩, ই.ফা. ৪৩০৪)
৪৬৬৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى
بْنُ مَعِيْنٍ حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ ابْنُ أَبِيْ
مُلَيْكَةَ وَكَانَ بَيْنَهُمَا شَيْءٌ فَغَدَوْتُ عَلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ
أَتُرِيْدُ أَنْ تُقَاتِلَ ابْنَ الزُّبَيْرِ فَتُحِلَّ حَرَمَ اللهِ فَقَالَ
مَعَاذَ اللهِ إِنَّ اللهَ كَتَبَ ابْنَ الزُّبَيْرِ وَبَنِيْ أُمَيَّةَ
مُحِلِّيْنَ وَإِنِّيْ وَاللهِ لَا أُحِلُّهُ أَبَدًا قَالَ قَالَ النَّاسُ
بَايِعْ لِابْنِ الزُّبَيْرِ فَقُلْتُ وَأَيْنَ بِهَذَا الْأَمْرِ عَنْهُ أَمَّا
أَبُوْهُ فَحَوَارِيُّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدُ الزُّبَيْرَ
وَأَمَّا جَدُّهُ فَصَاحِبُ الْغَارِ يُرِيْدُ أَبَا بَكْرٍ وَأُمُّهُ فَذَاتُ
النِّطَاقِ يُرِيْدُ أَسْمَاءَ وَأَمَّا خَالَتُهُ فَأُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ
يُرِيْدُ عَائِشَةَ وَأَمَّا عَمَّتُهُ فَزَوْجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
يُرِيْدُ خَدِيْجَةَ وَأَمَّا عَمَّةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَدَّتُهُ
يُرِيْدُ صَفِيَّةَ ثُمَّ عَفِيْفٌ فِي الإِسْلَامِ قَارِئٌ لِلْقُرْآنِ وَاللهِ
إِنْ وَصَلُوْنِيْ وَصَلُوْنِيْ مِنْ قَرِيْبٍ وَإِنْ رَبُّوْنِيْ رَبُّوْنِيْ
أَكْفَاءٌ كِرَامٌ فَآثَرَ التُّوَيْتَاتِ وَالْأُسَامَاتِ وَالْحُمَيْدَاتِ
يُرِيْدُ أَبْطُنًا مِنْ بَنِيْ أَسَدٍ بَنِيْ تُوَيْتٍ وَبَنِيْ أُسَامَةَ
وَبَنِيْ أَسَدٍ إِنَّ ابْنَ أَبِي الْعَاصِ بَرَزَ يَمْشِي الْقُدَمِيَّةَ
يَعْنِيْ عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ مَرْوَانَ وَإِنَّهُ لَوَّى ذَنَبَهُ يَعْنِي ابْنَ
الزُّبَيْرِ.
ইবনু
আবূ মুলাইকাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ও ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর মধ্যে বাই‘আত নিয়ে মতভেদ
সৃষ্টি হল, তখন আমি ইবনু ‘আব্বাসের কাছে গিয়ে বললাম, আপনি কি আল্লাহ যা হারাম
করেছেন, তা হালাল করে ইবনু যুবায়রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান? তখন তিনি বললেন,
আল্লাহ্র কাছে পানাহ্ চাচ্ছি, এ কাজ তো ইবনু যুবায়র ও বানী ‘উমাইয়াহর জন্যই
আল্লাহ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। আল্লাহ্র কসম! কখনও তা আমি হালাল মনে করব না, (আবূ
মুলাইকাহ বলেন) তখন লোকজন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলল, আপনি ইবনু যুবায়রের পক্ষে
বাই‘আত গ্রহণ করুন। তখন ইবনু ‘আব্বাস বললেন, তাতে ক্ষতির কী আছে? তিনি এটার জন্য
যোগ্যতম ব্যক্তি। তাঁর পিতা যুবায়র তো নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
সাহায্যকারী ছিলেন, তার নানা আবূ বাক্র (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর সওর গুহার সঙ্গী ছিলেন। তার মা আসমা, যার উপাধি ছিল যাতুন নেতাক।
তার খালা ‘আয়িশাহ (রাঃ) উম্মুল মু’মিনীন ছিলেন, তার ফুফু খাদীজাহ (রাঃ) রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রী ছিলেন, আর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ফুফু সফীয়্যাহ ছিলেন তাঁর দাদী। এ ব্যতীত তিনি (ইবনু
যুবায়র) তো ইসলামী জগতে নিষ্কলুষ ব্যক্তি ও কুরআনের ক্বারী। আল্লাহ্র কসম! যদি
তারা (বানী ‘উমাইয়াহ) আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখে তবে তারা আমার নিকটাত্মীয়-স্বজনের
সঙ্গে সম্পর্ক রাখল। আর যদি তারা আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করে তবে তারা সমকক্ষ
মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরই রক্ষণাবেক্ষণ করল। ইবনু যুবায়র, বানী আসাদ, বানী তুয়াইত,
বানী উসামাএসব গোত্রকে আমার চেয়ে নিকটতম করে নিয়েছেন। নিশ্চয়ই আবিল আস্-এর পুত্র
অর্থাৎ ‘আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান অহঙ্কারী চালচলন আরম্ভ করেছে। নিশ্চয়ই তিনি
অর্থাৎ ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) তার লেজ গুটিয়ে নিয়েছেন। [৪৬৬৪] (আ.প্র.
৪৩০৪, ই.ফা. ৪৩০৫)
৪৬৬৬
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ بْنِ مَيْمُوْنٍ حَدَّثَنَا
عِيْسَى بْنُ يُوْنُسَ عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِيْ
مُلَيْكَةَ دَخَلْنَا عَلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ أَلَا تَعْجَبُوْنَ لِابْنِ
الزُّبَيْرِ قَامَ فِيْ أَمْرِهِ هَذَا فَقُلْتُ لَأُحَاسِبَنَّ نَفْسِيْ لَهُ مَا
حَاسَبْتُهَا لِأَبِيْ بَكْرٍ وَلَا لِعُمَرَ وَلَهُمَا كَانَا أَوْلَى بِكُلِّ
خَيْرٍ مِنْهُ وَقُلْتُ ابْنُ عَمَّةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَابْنُ
الزُّبَيْرِ وَابْنُ أَبِيْ بَكْرٍ وَابْنُ أَخِيْ خَدِيْجَةَ وَابْنُ أُخْتِ
عَائِشَةَ فَإِذَا هُوَ يَتَعَلَّى عَنِّيْ وَلَا يُرِيْدُ ذَلِكَ فَقُلْتُ مَا
كُنْتُ أَظُنُّ أَنِّيْ أَعْرِضُ هَذَا مِنْ نَفْسِيْ فَيَدَعُهُ وَمَا أُرَاهُ
يُرِيْدُ خَيْرًا وَإِنْ كَانَ لَا بُدَّ لَأَنْ يَرُبَّنِيْ بَنُوْ عَمِّيْ
أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ يَرُبَّنِيْ غَيْرُهُمْ.
ইবনু
আবূ মুলাইকাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করলাম। তিনি বললেন, তোমরা কি ইবনু যুবায়রের
বিষয়ে বিস্মিত হবে না? তিনি তো তার এ কাজে (খিলাফতের কাজে) দাঁড়িয়েছেন। [ইবনু
‘আব্বাস (রাঃ) বলেন] আমি বললাম, আমি অবশ্য মনে মনে তার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করি,
কিন্তু আবূ বাক্র (রাঃ) কিংবা ‘উমার (রাঃ)-এর ব্যাপারে এতটুকু চিন্তা-ভাবনা করিনি।
সব দিক থেকে তাঁর চেয়ে তারা উভয়ে উত্তম ছিলেন। আমি বললাম, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ফুফু সফীয়্যাহ (রাঃ)-এর সন্তান, যুবায়রের ছেলে, আবূ বাক্র
(রাঃ)-এর নাতি। খাদীজাহ (রাঃ)-এর ভাতিজা, ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর বোন আসমার ছেলে। কিন্তু
তিনি (নিজেকে বড় মনে করে) আমার থেকে দূরে সরে থাকেন এবং তিনি আমার সহযোগিতা কামনা
করেন না। আমি বললাম, আমি নিজে থেকে এজন্য তা প্রকাশ করি না যে, হয়ত তিনি তা
প্রত্যাখ্যান করবেন এবং আমি মনে করি না যে, তিনি এটা ভাল করছেন। কারণ অন্য কোন
ব্যক্তি দেশের শাসক হওয়ার চেয়ে আমার চাচার ছেলে অর্থাৎ আমার আপনজন শাসক হওয়া আমার
নিকট উত্তম। [৪৬৬৪] (আ.প্র. ৪৩০৪, ই.ফা. ৪৩০৬)
৬৫/৯/১০
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ এবং
যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য। (সূরাহ বারাআত ৯/৬০)
قَالَ مُجَاهِدٌ يَتَأَلَّفُهُمْ بِالْعَطِيَّةِ.
মুজাহিদ বলেছেন, তাদেরকে দানের মাধ্যমে আকৃষ্ট করতেন।
মুজাহিদ বলেছেন, তাদেরকে দানের মাধ্যমে আকৃষ্ট করতেন।
৪৬৬৭
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْهِ
عَنْ ابْنِ أَبِيْ نُعْمٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بُعِثَ
إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِشَيْءٍ فَقَسَمَهُ بَيْنَ أَرْبَعَةٍ
وَقَالَ أَتَأَلَّفُهُمْ فَقَالَ رَجُلٌ مَا عَدَلْتَ فَقَالَ يَخْرُجُ مِنْ
ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمٌ يَمْرُقُوْنَ مِنْ الدِّيْنِ.
আবূ
সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে কিছু জিনিস প্রেরণ করা হল।
এরপর তিনি সেগুলো চারজনের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। আর বললেন, তাদেরকে (এর দ্বারা)
আকৃষ্ট করছি। তখন এক ব্যক্তি বলল, আপনি সুবিচার করেননি। (এটা শুনে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)) বললেন, এ ব্যক্তির বংশ থেকে এমন সব লোক জন্ম
নেবে যারা দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে। [৩৩৪৪] (আ.প্র. ৪৩০৫, ই.ফা. ৪৩০৭)
৬৫/৯/১১
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ {الَّذِيْنَ يَلْمِزُوْنَ الْمُطَّوِّعِيْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ فِي الصَّدَقَاتِ}
মু‘মিনদের মধ্যে যারা
স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদাকাহ দেয় এবং যারা নিজেদের পরিশ্রমলব্ধ বস্তু ব্যতীত ব্যয় করার
কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারোপ করে ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে, আল্লাহ তাদের
বিদ্রূপ করেন। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরাহ বারাআত ৯/৭৯)
يَلْمِزُوْنَ يَعِيْبُوْنَ {وَجُهْدَهُمْ} وَجَهْدَهُمْ طَاقَتَهُمْ.
يَلْمِزُوْنَ-তাদের পরিশ্রমে ত্রুটি ধরে, وَجُهْدَهُمْ -তাদের সাধ্যমত, وَجَهْدَهُمْ তাদের ক্ষমতা।
يَلْمِزُوْنَ يَعِيْبُوْنَ {وَجُهْدَهُمْ} وَجَهْدَهُمْ طَاقَتَهُمْ.
يَلْمِزُوْنَ-তাদের পরিশ্রমে ত্রুটি ধরে, وَجُهْدَهُمْ -তাদের সাধ্যমত, وَجَهْدَهُمْ তাদের ক্ষমতা।
৪৬৬৮
بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ أَبُوْ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ
أَبِيْ مَسْعُوْدٍ قَالَ لَمَّا أُمِرْنَا بِالصَّدَقَةِ كُنَّا نَتَحَامَلُ
فَجَاءَ أَبُوْ عَقِيْلٍ بِنِصْفِ صَاعٍ وَجَاءَ إِنْسَانٌ بِأَكْثَرَ مِنْهُ
فَقَالَ الْمُنَافِقُوْنَ إِنَّ اللهَ لَغَنِيٌّ عَنْ صَدَقَةِ هَذَا وَمَا فَعَلَ
هَذَا الآخَرُ إِلَّا رِئَاءً فَنَزَلَتْ {الَّذِيْنَ يَلْمِزُوْنَ
الْمُطَّوِّعِيْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِيْنَ لَا
يَجِدُوْنَ إِلَّا جُهْدَهُمْ} الآيَةَ.
আবূ
মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন আমাদের সদাকাহ দানের আদেশ দেয়া হল, তখন আমরা মজুরীর বিনিময়ে বোঝা বহন
করতাম। একদিন আবূ ‘আকীল (রাঃ) অর্ধ সা’ খেজুর (দান করার উদ্দেশে) নিয়ে আসলেন এবং
অন্য এক ব্যক্তি (‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ) তার চেয়ে অধিক মালামাল নিয়ে উপস্থিত
হলেন। মুনাফিকরা বলতে লাগল, আল্লাহ এ ব্যক্তির সদাকাহর মুখাপেক্ষী নন। আর দ্বিতীয়
ব্যক্তি [‘আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ (রাঃ)] শুধু মানুষ দেখানোর জন্য অধিক মালামাল দান
করেছে। এ সময় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় “মু‘মিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদাকাহ
দেয় এবং যারা নিজেদের পরিশ্রমলব্ধ বস্তু ব্যতীত ব্যয় করার কিছুই পায় না, তাদেরকে
যারা দোষারোপ করে ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, আল্লাহ তাদের বিদ্রুপ করেন। তাদের জন্য
রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সূরাহ বারাআত ৯/৭৯)। [১৪১৫] (আ.প্র. ৪৩০৭, ই.ফা.
৪৩০৮)
৪৬৬৯
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قُلْتُ لِأَبِيْ
أُسَامَةَ أَحَدَّثَكُمْ زَائِدَةُ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ شَقِيْقٍ عَنْ أَبِيْ
مَسْعُوْدٍ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
يَأْمُرُ بِالصَّدَقَةِ فَيَحْتَالُ أَحَدُنَا حَتَّى يَجِيْءَ بِالْمُدِّ وَإِنَّ
لِأَحَدِهِمْ الْيَوْمَ مِائَةَ أَلْفٍ كَأَنَّهُ يُعَرِّضُ بِنَفْسِهِ.
আবূ
মাস‘ঊদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সদাকাহ করার নির্দেশ দিলে
আমাদের মধ্য হতে কেউ কেউ অত্যন্ত পরিশ্রম করে, (গম অথবা খেজুর ইত্যাদি) এক মুদ্দ
আনতে পারত কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে কারো কারো এক লাখ পরিমাণ (দিরহাম) রয়েছে। আবূ
মাস‘ঊদ (রাঃ) যেন (এ কথা বলে) নিজের দিকে ইশারা করলেন। [১৪১৫] (আ.প্র. ৪৩০৮, ই.ফা.
৪৩০৯)
৬৫/৯/১২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ {اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِيْنَ مَرَّةً فَلَنْ يَغْفِرَ اللهُ لَهُمْ}.
আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন অথবা নাই করেন (উভয়ই সমান)। যদি আপনি তাদের
জন্য সত্তর বারও ক্ষমা প্রার্থনা করেন তবুও আল্লাহ তাদেরকে কখনই ক্ষমা করবেন না।
কারণ তারা তো কুফরী করেছে আল্লাহর সঙ্গে এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গেও। আল্লাহ ফাসিক
লোকদেরকে হিদায়াত দান করেন না। (সূরাহ বারাআত ৯/৮০)
৪৬৭০
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ أَبِيْ أُسَامَةَ عَنْ
عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ
لَمَّا تُوُفِّيَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ جَاءَ ابْنُهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ
عَبْدِ اللهِ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ أَنْ يُعْطِيَهُ
قَمِيْصَهُ يُكَفِّنُ فِيْهِ أَبَاهُ فَأَعْطَاهُ ثُمَّ سَأَلَهُ أَنْ يُصَلِّيَ
عَلَيْهِ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِيُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَقَامَ
عُمَرُ فَأَخَذَ بِثَوْبِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ
اللهِ تُصَلِّيْ عَلَيْهِ وَقَدْ نَهَاكَ رَبُّكَ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَقَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا خَيَّرَنِي اللهُ فَقَالَ
{اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ
سَبْعِيْنَ مَرَّةً} وَسَأَزِيْدُهُ عَلَى السَّبْعِيْنَ قَالَ إِنَّهُ مُنَافِقٌ
قَالَ فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللهُ
{وَلَا تُصَلِّ عَلٰٓى أَحَدٍ مِّنْهُمْ مَّاتَ أَبَدًا وَّلَا تَقُمْ عَلٰى
قَبْرِهٰ}.
ইবনু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেল, তখন তার ছেলে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে আসলেন এবং তার
পিতাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জামাটি দিয়ে কাফন দেবার
আবেদন করলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জামা প্রদান করলেন,
এরপর তিনি জানাযার সলাত আদায়ের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
কাছে আবেদন জানালেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জানাযার সলাত
পড়ানোর জন্য (বসা থেকে) উঠে দাঁড়ালেন, ইত্যবসরে ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাপড় টেনে ধরে আবেদন করলেন, হে আল্লাহ্র
রসূল! আপনি কি তার জানাযার সলাত আদায় করতে যাচ্ছেন? অথচ আপনার রব আপনাকে তার জন্য
দু‘আ করতে নিষেধ করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,
আল্লাহ তা‘আলা এ ব্যাপারে আমাকে (দু‘আ) করা বা না করার সুযোগ দিয়েছেন। আর আল্লাহ
তো ইরশাদ করেছেন, “তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর; যদি সত্তরবারও
তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর তবু আমি তাদের ক্ষমা করব না”। সুতরাং আমি তার জন্য
সত্তরবারের চেয়েও বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করব। ‘উমার (রাঃ) বললেন, সে তো মুনাফিক,
শেষ পর্যন্ত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযার সলাত আদায়
করলেন, এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। “তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে আপনি কক্ষণো
তাদের জানাযাহ্র সলাত আদায় করবেন না এবং তাদের কবরের কাছেও দাঁড়াবেন না। [১২৬৯;
মুসলিম ৪৪/২, হাঃ ২৪০০, আহমাদ ৯৫] (আ.প্র. ৪৩০৯, ই.ফা. ৪৩১০)
অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৮৯১ থেকে ৪৯৭৭
অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৮৯১ থেকে ৪৯৭৭
No comments