সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৭৪৬ থেকে ৪৮১৫
‘‘এবং পঞ্চমবারে বলবে, সে
মিথ্যাচারী হলে তার ওপর নেমে আসবে আল্লাহর লা’নাত।’’ (সূরাহ নূর ২৪/৭)
৪৭৪৬
سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ أَبُو الرَّبِيْعِ حَدَّثَنَا
فُلَيْحٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَجُلًا أَتَى رَسُوْلَ
اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَرَأَيْتَ رَجُلًا رَأَى
مَعَ امْرَأَتِهِ رَجُلًا أَيَقْتُلُهُ فَتَقْتُلُوْنَهُ أَمْ كَيْفَ يَفْعَلُ
فَأَنْزَلَ اللهُ فِيْهِمَا مَا ذُكِرَ فِي الْقُرْآنِ مِنْ التَّلَاعُنِ فَقَالَ
لَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ قُضِيَ فِيْكَ وَفِي امْرَأَتِكَ
قَالَ فَتَلَاعَنَا وَأَنَا شَاهِدٌ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَفَارَقَهَا فَكَانَتْ سُنَّةً أَنْ يُفَرَّقَ بَيْنَ الْمُتَلَاعِنَيْنِ
وَكَانَتْ حَامِلًا فَأَنْكَرَ حَمْلَهَا وَكَانَ ابْنُهَا يُدْعَى إِلَيْهَا
ثُمَّ جَرَتْ السُّنَّةُ فِي الْمِيْرَاثِ أَنْ يَرِثَهَا وَتَرِثَ مِنْهُ مَا
فَرَضَ اللهُ لَهَا
এক
ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল,
হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আপনি আমাকে বলুন তো, এক লোক
তার স্ত্রীর সঙ্গে এক লোককে দেখতে পেল। সে কী তাকে হত্যা করবে? যার ফলে আপনারা
তাকে হত্যা করবেন অথবা সে আর কী করতে পারে! তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা এ দু’জন সম্পর্কে
আয়াত অবতীর্ণ করেন, যা কুরআনে পারস্পরিক লা‘নত করা সম্পর্কে বর্ণিত। তখন তাকে
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার ও তোমার স্ত্রী
সম্পর্কে ফয়সালা হয়ে গেছে। বর্ণনাকারী বলেন, তারা উভয়ে পরস্পর ‘লিয়ান’ করল। তখন
আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তারপর
সে তার স্ত্রীকে পৃথক করে দিল। এরপর নিয়ম হয়ে গেল যে,, লিয়ানকারী উভয়কে পৃথক করে
দেয়া হবে। মহিলাটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল, তার স্বামী তার গর্ভ অস্বীকার করল। সুতরাং সন্তানটিকে
তার মায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত করে ডাকা হত। তারপর উত্তরাধিকার স্বত্বে এ নিয়ম চালু হল
যে, সন্তান মায়ের ‘মিরাস’ পাবে। আর মাতাও সন্তানের ‘মিরাস’ পাবে, যা আল্লাহ্
তা‘আলা তার ব্যাপারে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। [৪২৩] (আ.প্র. ৪৩৮৫, ই.ফা. ৪৩৮৭)
৬৫/২৪/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ তবে
স্ত্রীর শাস্তি রহিত হবে যদি সে চারবার আল্লাহর নামে শপথ করে সাক্ষ্য দেয় যে, তার
স্বামীই মিথ্যাচারী। (সূরাহ নূর ২৪/৮)
৪৭৪৭
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ
عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ
هِلَالَ بْنَ أُمَيَّةَ قَذَفَ امْرَأَتَهُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِشَرِيْكِ ابْنِ سَحْمَاءَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْبَيِّنَةَ
أَوْ حَدٌّ فِيْ ظَهْرِكَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِذَا رَأَى أَحَدُنَا عَلَى
امْرَأَتِهِ رَجُلًا يَنْطَلِقُ يَلْتَمِسُ الْبَيِّنَةَ فَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم يَقُوْلُ الْبَيِّنَةَ وَإِلَّا حَدٌّ فِيْ ظَهْرِكَ فَقَالَ هِلَالٌ
وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنِّيْ لَصَادِقٌ فَلَيُنْزِلَنَّ اللهُ مَا
يُبَرِّئُ ظَهْرِيْ مِنَ الْحَدِّ فَنَزَلَ جِبْرِيْلُ وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ
{وَالَّذِيْنَ يَرْمُوْنَ أَزْوَاجَهُمْ} فَقَرَأَ حَتَّى بَلَغَ {إنْ كَانَ مِنْ
الصَّادِقِيْنَ}فَانْصَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا
فَجَاءَ هِلَالٌ فَشَهِدَ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ إِنَّ اللهَ
يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ ثُمَّ قَامَتْ
فَشَهِدَتْ فَلَمَّا كَانَتْ عِنْدَ الْخَامِسَةِ وَقَّفُوْهَا وَقَالُوْا
إِنَّهَا مُوْجِبَةٌ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَتَلَكَّأَتْ وَنَكَصَتْ حَتَّى
ظَنَنَّا أَنَّهَا تَرْجِعُ ثُمَّ قَالَتْ لَا أَفْضَحُ قَوْمِيْ سَائِرَ
الْيَوْمِ فَمَضَتْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَبْصِرُوْهَا فَإِنْ
جَاءَتْ بِهِ أَكْحَلَ الْعَيْنَيْنِ سَابِغَ الْأَلْيَتَيْنِ خَدَلَّجَ
السَّاقَيْنِ فَهُوَ لِشَرِيْكِ ابْنِ سَحْمَاءَ فَجَاءَتْ بِهِ كَذَلِكَ فَقَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْلَا مَا مَضَى مِنْ كِتَابِ اللهِ لَكَانَ لِيْ
وَلَهَا شَأْنٌ
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হিলাল
ইব্নু ‘উমাইয়াহ রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে শারীক ইব্নু
সাহমার সঙ্গে তার স্ত্রীর ব্যভিচারের অভিযোগ করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, সাক্ষী (হাযির কর) নতুবা শাস্তি তোমার পিঠে পড়বে। হিলাল বলল,
হে আল্লাহ্র রসূল! যখন আমাদের কেউ তার স্ত্রীর উপর অন্য কাউকে দেখে তখন সে কি
সাক্ষী তালাশ করতে যাবে? তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতে লাগলেন,
সাক্ষী, নতুবা শাস্তি তোমার পিঠে। হিলাল বললেন, শপথ সে সত্তার, যিনি আপনাকে সত্য
নাবী হিসাবে পাঠিয়েছেন, নিশ্চয়ই আমি সত্যবাদী। অবশ্যই আল্লাহ্ তা‘আলা এমন বিধান
অবতীর্ণ করবেন, যা আমার পিঠকে শাস্তি থেকে মুক্ত করে দিবে। তারপর জিবরীল (‘আ.)
এলেন এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর অবতীর্ণ করা হল ঃ
“যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে” থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) পাঠ করলেন, “যদি সে সত্যবাদী হয়ে থাকে” পর্যন্ত। তারপর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরলেন এবং তার স্ত্রীকে ডেকে আনার জন্য লোক
পাঠালেন। হিলাল এসে সাক্ষ্য দিলেন। আর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বলছিলেন, আল্লাহ্ তা‘আলা তো জানেন যে, তোমাদের দু’জনের মধ্যে অবশ্যই
একজন মিথ্যাচারী। তবে কি তোমাদের মধ্যে কেউ তওবা করবে? স্ত্রীলোকটি দাঁড়িয়ে
সাক্ষ্য দিল। সে যখন পঞ্চমবারের কাছে পৌঁছল, তখন লোকেরা তাকে বাধা দিল এবং বলল,
নিশ্চয়ই এটি তোমার ওপর অবশ্যম্ভাবী। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে সে
দ্বিধাগ্রস্ত হল এবং ইতস্তত করতে লাগল। এমনকি আমরা মনে করতে লাগলাম যে, সে নিশ্চযই
প্রত্যাবর্তন করবে। পরে সে বলে উঠল, আমি চিরকালের জন্য আমার বংশকে কলুষিত করব না।
সে তার সাক্ষ্য পূর্ণ করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এর প্রতি
দৃষ্টি রেখ, যদি সে কাল ডাগর চক্ষু, বড় পাছা ও মোটা নলা বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে
তবে ও সন্তান শারীক ইব্নু সাহমার। পরে সে ঐরূপ সন্তান জন্ম দিল। তখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি এ বিষয়ে আল্লাহ্র কিতাব কার্যকর না
হত, তা হলে অবশ্যই আমার ও তার মধ্যে কী ব্যাপার যে ঘটত। [২৬৭১] (আ.প্র. ৪৩৮৬,
ই.ফা. ৪৩৮৮)
[১] খাওলা (রাঃ)।
[2] আনীত অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে শপথ করলেন।
[3] পঞ্চমবার শপথ করল।
[2] আনীত অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে শপথ করলেন।
[3] পঞ্চমবার শপথ করল।
৬৫/২৪/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ এবং
পঞ্চমবারে বলে, তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব।
(সূরাহ নূর ২৪/৯)
أي : هذا باب في قوله تعالى :
{والخَامِسَةَ} أي : الشهادة الخامسة، والكلام فيه قد مر في قوله :
{وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ اللهِ}
অর্থাৎ এই আয়াতের মধ্যে পঞ্চমবারের সাক্ষ্যকে বোঝানো হয়েছে। এর আলোচনা আল্লাহ তা‘আলার এই বাণীঃ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ الله আয়াতে অতিক্রান্ত হয়েছে।
অর্থাৎ এই আয়াতের মধ্যে পঞ্চমবারের সাক্ষ্যকে বোঝানো হয়েছে। এর আলোচনা আল্লাহ তা‘আলার এই বাণীঃ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ الله আয়াতে অতিক্রান্ত হয়েছে।
৪৭৪৮
مُقَدَّمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَمِّيْ
الْقَاسِمُ بْنُ يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ وَقَدْ سَمِعَ مِنْهُ عَنْ نَافِعٍ
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَجُلًا رَمَى امْرَأَتَهُ
فَانْتَفَى مِنْ وَلَدِهَا فِيْ زَمَانِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
فَأَمَرَ بِهِمَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتَلَاعَنَا كَمَا قَالَ
اللهُ ثُمَّ قَضَى بِالْوَلَدِ لِلْمَرْأَةِ وَفَرَّقَ بَيْنَ الْمُتَلَاعِنَيْنِ.
ইব্নু
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে স্বীয় স্ত্রীর উপর
(যিনার) অভিযোগ আনে এবং সে স্ত্রীর সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করে। রসূল উভয়কে
লি’য়ান করতে আদেশ দেন। আল্লাহ্ তাআলা যেভাবে বলেছেন, সেভাবে তারা লিয়ান করে। তারপর
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ সিদ্ধান্ত দিলেন যে, বাচ্চাটি
স্ত্রীর আর তিনি লি’য়ানকারী দু’জনকে আলাদা করে দিলেন। [৫৩০৬, ৫৩১৩, ৫৩১৪, ৫৩১৫,
৬৭৪৮] (আ.প্র. ৪৩৮৭, ই.ফা. ৪৩৮৯)
৬৫/২৪/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
{ان الَّذِيْنَ جَآءُوْ بِالْإِفْكِ عُصْبَةٌ مِّنْكُمْ ط لَا تَحْسَبُوْهُ شَرًّا لَّكُمْ ط بَلْ هُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ ط لِكُلِّ امْرِئٍ مِّنْهُمْ مَّا اكْتَسَبَ مِنَ الْإِثْمِ ج وَالَّذِيْ تَوَلّٰى كِبْرَه” مِنْهُمْ لَه” عَذَابٌ عَظِيْمٌ}
যারা এ অপবাদ রচনা করেছে, তারা তো তোমাদেরই একটি দল; একে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করো না; বরং এ তো তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তাদের প্রত্যেকের জন্য আছে তাদের কৃত পাপের ফল এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে বড় ভূমিকা নিয়েছে, তার জন্য আছে কঠিন শাস্তি। (সূরাহ নূর ২৪/১১)
أَفَّاكٌ : كَذَّابٌ.
أَفَّاكٌ অতি মিথ্যাচারী।
যারা এ অপবাদ রচনা করেছে, তারা তো তোমাদেরই একটি দল; একে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করো না; বরং এ তো তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তাদের প্রত্যেকের জন্য আছে তাদের কৃত পাপের ফল এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে বড় ভূমিকা নিয়েছে, তার জন্য আছে কঠিন শাস্তি। (সূরাহ নূর ২৪/১১)
أَفَّاكٌ : كَذَّابٌ.
أَفَّاكٌ অতি মিথ্যাচারী।
৪৭৪৯
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا {وَالَّذِيْ
تَوَلّٰى كِبْرَه”}قَالَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُوْلَ
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, وَالَّذِي تَوَلَّى كِبْرَهُ
“যে এ অপবাদের বড় ভূমিকা নিয়েছিল” এর ব্যাখ্যায় বলেন, সে হল ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু
উবাই ইবনু সালূল। [২৫৯৩] (আ.প্র. ৪৩৮৮, ই.ফা. ৪৩৯০)
৬৫/২৪/৬
পরিচ্ছেদ নাই।
{لَوْلَا إِذْ سَمِعْتُمُوْهُ ظَنَّ الْمُؤْمِنُوْنَ وَالْمُؤْمِنٰتُ بِأَنْفُسِهِمْ خَيْرًا} إِلَى قَوْلِهِ :
{الْكَاذِبُوْنَ}.
‘‘যখন তারা এটা শুনল তখন মু’মিন পুরুষ এবং মু’মিন নারীগণ আপন লোকদের সম্পর্কে কেন ভাল ধারণা করল না এবং বলল না, ‘এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ’। তারা কেন এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনি? যেহেতু তারা সাক্ষী উপস্থিত করেনি, সে কারণে তারা আল্লাহর নিকট মিথ্যাচারী।’’ (সূরাহ নূর ২৪/১২-১৩)
‘‘যখন তারা এটা শুনল তখন মু’মিন পুরুষ এবং মু’মিন নারীগণ আপন লোকদের সম্পর্কে কেন ভাল ধারণা করল না এবং বলল না, ‘এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ’। তারা কেন এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনি? যেহেতু তারা সাক্ষী উপস্থিত করেনি, সে কারণে তারা আল্লাহর নিকট মিথ্যাচারী।’’ (সূরাহ নূর ২৪/১২-১৩)
৪৭৫০
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُوْنُسَ
عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ وَسَعِيْدُ بْنُ
الْمُسَيَّبِ وَعَلْقَمَةُ بْنُ وَقَّاصٍ وَعُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ
عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُوْدٍ عَنْ حَدِيْثِ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ قَالَ لَهَا أَهْلُ الإِفْكِ مَا قَالُوْا
فَبَرَّأَهَا اللهُ مِمَّا قَالُوْا وَكُلٌّ حَدَّثَنِيْ طَائِفَةً مِنَ
الْحَدِيْثِ وَبَعْضُ حَدِيْثِهِمْ يُصَدِّقُ بَعْضًا وَإِنْ كَانَ بَعْضُهُمْ
أَوْعَى لَهُ مِنْ بَعْضٍ الَّذِيْ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ
اللهُ عَنْهَا أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ
يَخْرُجَ أَقْرَعَ بَيْنَ أَزْوَاجِهِ فَأَيَّتُهُنَّ خَرَجَ سَهْمُهَا خَرَجَ
بِهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَهُ قَالَتْ عَائِشَةُ فَأَقْرَعَ بَيْنَنَا
فِيْ غَزْوَةٍ غَزَاهَا فَخَرَجَ سَهْمِيْ فَخَرَجْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى
الله عليه وسلم بَعْدَمَا نَزَلَ الْحِجَابُ فَأَنَا أُحْمَلُ فِيْ هَوْدَجِيْ
وَأُنْزَلُ فِيْهِ فَسِرْنَا حَتَّى إِذَا فَرَغَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم مِنْ غَزْوَتِهِ تِلْكَ وَقَفَلَ وَدَنَوْنَا مِنَ الْمَدِيْنَةِ قَافِلِيْنَ
آذَنَ لَيْلَةً بِالرَّحِيْلِ فَقُمْتُ حِيْنَ آذَنُوْا بِالرَّحِيْلِ فَمَشَيْتُ
حَتَّى جَاوَزْتُ الْجَيْشَ فَلَمَّا قَضَيْتُ شَأْنِيْ أَقْبَلْتُ إِلَى رَحْلِيْ
فَإِذَا عِقْدٌ لِيْ مِنْ جَزْعِ ظَفَارِ قَدْ انْقَطَعَ فَالْتَمَسْتُ عِقْدِيْ
وَحَبَسَنِي ابْتِغَاؤُهُ وَأَقْبَلَ الرَّهْطُ الَّذِيْنَ كَانُوْا يَرْحَلُوْنَ
لِيْ فَاحْتَمَلُوْا هَوْدَجِيْ فَرَحَلُوْهُ عَلَى بَعِيْرِي الَّذِيْ كُنْتُ
رَكِبْتُ وَهُمْ يَحْسِبُوْنَ أَنِّيْ فِيْهِ وَكَانَ النِّسَاءُ إِذْ ذَاكَ
خِفَافًا لَمْ يُثْقِلْهُنَّ اللَّحْمُ إِنَّمَا تَأْكُلُ الْعُلْقَةَ مِنْ
الطَّعَامِ فَلَمْ يَسْتَنْكِرْ الْقَوْمُ خِفَّةَ الْهَوْدَجِ حِيْنَ رَفَعُوْهُ
وَكُنْتُ جَارِيَةً حَدِيْثَةَ السِّنِّ فَبَعَثُوا الْجَمَلَ وَسَارُوْا
فَوَجَدْتُ عِقْدِيْ بَعْدَمَا اسْتَمَرَّ الْجَيْشُ فَجِئْتُ مَنَازِلَهُمْ
وَلَيْسَ بِهَا دَاعٍ وَلَا مُجِيْبٌ فَأَمَمْتُ مَنْزِلِي الَّذِيْ كُنْتُ بِهِ
وَظَنَنْتُ أَنَّهُمْ سَيَفْقِدُوْنِيْ فَيَرْجِعُوْنَ إِلَيَّ فَبَيْنَا أَنَا
جَالِسَةٌ فِيْ مَنْزِلِيْ غَلَبَتْنِيْ عَيْنِيْ فَنِمْتُ وَكَانَ صَفْوَانُ بْنُ
الْمُعَطَّلِ السُّلَمِيُّ ثُمَّ الذَّكْوَانِيُّ مِنْ وَرَاءِ الْجَيْشِ
فَأَدْلَجَ فَأَصْبَحَ عِنْدَ مَنْزِلِيْ فَرَأَى سَوَادَ إِنْسَانٍ نَائِمٍ
فَأَتَانِيْ فَعَرَفَنِيْ حِيْنَ رَآنِيْ وَكَانَ رَآنِيْ قَبْلَ الْحِجَابِ فَاسْتَيْقَظْتُ
بِاسْتِرْجَاعِهِ حِيْنَ عَرَفَنِيْ فَخَمَّرْتُ وَجْهِيْ بِجِلْبَابِيْ وَ
وَاللهِ مَا كَلَّمَنِيْ كَلِمَةً وَلَا سَمِعْتُ مِنْهُ كَلِمَةً غَيْرَ
اسْتِرْجَاعِهِ حَتَّى أَنَاخَ رَاحِلَتَهُ فَوَطِئَ عَلَى يَدَيْهَا
فَرَكِبْتُهَا فَانْطَلَقَ يَقُوْدُ بِي الرَّاحِلَةَ حَتَّى أَتَيْنَا الْجَيْشَ
بَعْدَمَا نَزَلُوْا مُوْغِرِيْنَ فِيْ نَحْرِ الظَّهِيْرَةِ فَهَلَكَ مَنْ
هَلَكَ.
وَكَانَ الَّذِيْ تَوَلَّى الإِفْكَ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ ابْنَ سَلُوْلَ فَقَدِمْنَا الْمَدِيْنَةَ فَاشْتَكَيْتُ حِيْنَ قَدِمْتُ شَهْرًا وَالنَّاسُ يُفِيْضُوْنَ فِيْ قَوْلِ أَصْحَابِ الإِفْكِ لَا أَشْعُرُ بِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ وَهُوَ يَرِيْبُنِيْ فِيْ وَجَعِيْ أَنِّيْ لَا أَعْرِفُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم اللَّطَفَ الَّذِيْ كُنْتُ أَرَى مِنْهُ حِيْنَ أَشْتَكِيْ إِنَّمَا يَدْخُلُ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَيُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُوْلُ كَيْفَ تِيْكُمْ ثُمَّ يَنْصَرِفُ فَذَاكَ الَّذِيْ يَرِيْبُنِيْ وَلَا أَشْعُرُ بِالشَّرِّ حَتَّى خَرَجْتُ بَعْدَمَا نَقَهْتُ فَخَرَجَتْ مَعِيْ أُمُّ مِسْطَحٍ قِبَلَ الْمَنَاصِعِ وَهُوَ مُتَبَرَّزُنَا وَكُنَّا لَا نَخْرُجُ إِلَّا لَيْلًا إِلَى لَيْلٍ وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ نَتَّخِذَ الْكُنُفَ قَرِيْبًا مِنْ بُيُوْتِنَا وَأَمْرُنَا أَمْرُ الْعَرَبِ الْأُوَلِ فِي التَّبَرُّزِ قِبَلَ الْغَائِطِ فَكُنَّا نَتَأَذَّى بِالْكُنُفِ أَنْ نَتَّخِذَهَا عِنْدَ بُيُوْتِنَا فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ وَهِيَ ابْنَةُ أَبِيْ رُهْمِ بْنِ عَبْدِ مَنَافٍ وَأُمُّهَا بِنْتُ صَخْرِ بْنِ عَامِرٍ خَالَةُ أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ وَابْنُهَا مِسْطَحُ بْنُ أُثَاثَةَ فَأَقْبَلْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ قِبَلَ بَيْتِيْ وَقَدْ فَرَغْنَا مِنْ شَأْنِنَا فَعَثَرَتْ أُمُّ مِسْطَحٍ فِيْ مِرْطِهَا فَقَالَتْ تَعِسَ مِسْطَحٌ فَقُلْتُ لَهَا بِئْسَ مَا قُلْتِ أَتَسُبِّيْنَ رَجُلًا شَهِدَ بَدْرًا قَالَتْ أَيْ هَنْتَاهْ أَوَلَمْ تَسْمَعِيْ مَا قَالَ قَالَتْ قُلْتُ وَمَا قَالَ فَأَخْبَرَتْنِيْ بِقَوْلِ أَهْلِ الإِفْكِ فَازْدَدْتُ مَرَضًا عَلَى مَرَضِيْ فَلَمَّا رَجَعْتُ إِلَى بَيْتِيْ وَدَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَعْنِيْ سَلَّمَ ثُمَّ قَالَ كَيْفَ تِيْكُمْ فَقُلْتُ أَتَأْذَنُ لِيْ أَنْ آتِيَ أَبَوَيَّ قَالَتْ وَأَنَا حِيْنَئِذٍ أُرِيْدُ أَنْ أَسْتَيْقِنَ الْخَبَرَ مِنْ قِبَلِهِمَا قَالَتْ فَأَذِنَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُ أَبَوَيَّ فَقُلْتُ لِأُمِّيْ يَا أُمَّتَاهْ مَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ قَالَتْ يَا بُنَيَّةُ هَوِّنِيْ عَلَيْكِ فَوَاللهِ لَقَلَّمَا كَانَتْ امْرَأَةٌ قَطُّ وَضِيئَةٌ عِنْدَ رَجُلٍ يُحِبُّهَا وَلَهَا ضَرَائِرُ إِلَّا كَثَّرْنَ عَلَيْهَا قَالَتْ فَقُلْتُ سُبْحَانَ اللهِ أَوَلَقَدْ تَحَدَّثَ النَّاسُ بِهَذَا قَالَتْ فَبَكَيْتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ حَتَّى أَصْبَحْتُ لَا يَرْقَأُ لِيْ دَمْعٌ وَلَا أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ حَتَّى أَصْبَحْتُ أَبْكِيْ فَدَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلِيَّ بْنَ أَبِيْ طَالِبٍ وَأُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا حِيْنَ اسْتَلْبَثَ الْوَحْيُ يَسْتَأْمِرُهُمَا فِيْ فِرَاقِ أَهْلِهِ قَالَتْ فَأَمَّا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فَأَشَارَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالَّذِيْ يَعْلَمُ مِنْ بَرَاءَةِ أَهْلِهِ وَبِالَّذِيْ يَعْلَمُ لَهُمْ فِيْ نَفْسِهِ مِنَ الْوُدِّ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَهْلَكَ وَلَا نَعْلَمُ إِلَّا خَيْرًا وَأَمَّا عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَمْ يُضَيِّقْ اللهُ عَلَيْكَ وَالنِّسَاءُ سِوَاهَا كَثِيْرٌ وَإِنْ تَسْأَلْ الْجَارِيَةَ تَصْدُقْكَ.
قَالَتْ فَدَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَرِيْرَةَ فَقَالَ أَيْ بَرِيْرَةُ هَلْ رَأَيْتِ مِنْ شَيْءٍ يَرِيْبُكِ قَالَتْ بَرِيْرَةُ لَا وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنْ رَأَيْتُ عَلَيْهَا أَمْرًا أَغْمِصُهُ عَلَيْهَا أَكْثَرَ مِنْ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيْثَةُ السِّنِّ تَنَامُ عَنْ عَجِيْنِ أَهْلِهَا فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَعْذَرَ يَوْمَئِذٍ مِنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ ابْنِ سَلُوْلَ قَالَتْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِيْنَ مَنْ يَعْذِرُنِيْ مِنْ رَجُلٍ قَدْ بَلَغَنِيْ أَذَاهُ فِيْ أَهْلِ بَيْتِيْ فَوَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِيْ إِلَّا خَيْرًا وَلَقَدْ ذَكَرُوْا رَجُلًا مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ إِلَّا خَيْرًا وَمَا كَانَ يَدْخُلُ عَلَى أَهْلِيْ إِلَّا مَعِيْ فَقَامَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ الْأَنْصَارِيُّ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَا أَعْذِرُكَ مِنْهُ إِنْ كَانَ مِنَ الْأَوْسِ ضَرَبْتُ عُنُقَهُ وَإِنْ كَانَ مِنْ إِخْوَانِنَا مِنَ الْخَزْرَجِ أَمَرْتَنَا فَفَعَلْنَا أَمْرَكَ قَالَتْ فَقَامَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ وَهُوَ سَيِّدُ الْخَزْرَجِ وَكَانَ قَبْلَ ذَلِكَ رَجُلًا صَالِحًا وَلَكِنْ احْتَمَلَتْهُ الْحَمِيَّةُ فَقَالَ لِسَعْدٍ كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللهِ لَا تَقْتُلُهُ وَلَا تَقْدِرُ عَلَى قَتْلِهِ فَقَامَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ وَهُوَ ابْنُ عَمِّ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فَقَالَ لِسَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللهِ لَنَقْتُلَنَّهُ فَإِنَّكَ مُنَافِقٌ تُجَادِلُ عَنِ الْمُنَافِقِيْنَ فَتَثَاوَرَ الْحَيَّانِ الْأَوْسُ وَالْخَزْرَجُ حَتَّى هَمُّوْا أَنْ يَقْتَتِلُوْا وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ عَلَى الْمِنْبَرِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُخَفِّضُهُمْ حَتَّى سَكَتُوْا وَسَكَتَ قَالَتْ فَبَكَيْتُ يَوْمِيْ ذَلِكَ لَا يَرْقَأُ لِيْ دَمْعٌ وَلَا أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ قَالَتْ فَأَصْبَحَ أَبَوَايَ عِنْدِيْ وَقَدْ بَكَيْتُ لَيْلَتَيْنِ وَيَوْمًا لَا أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ وَلَا يَرْقَأُ لِيْ دَمْعٌ يَظُنَّانِ أَنَّ الْبُكَاءَ فَالِقٌ كَبِدِيْ قَالَتْ فَبَيْنَمَا هُمَا جَالِسَانِ عِنْدِيْ وَأَنَا أَبْكِيْ فَاسْتَأْذَنَتْ عَلَيَّ امْرَأَةٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَأَذِنْتُ لَهَا فَجَلَسَتْ تَبْكِيْ مَعِيْ قَالَتْ فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ ثُمَّ جَلَسَ قَالَتْ وَلَمْ يَجْلِسْ عِنْدِيْ مُنْذُ قِيْلَ مَا قِيْلَ قَبْلَهَا وَقَدْ لَبِثَ شَهْرًا لَا يُوْحَى إِلَيْهِ فِيْ شَأْنِيْ قَالَتْ فَتَشَهَّدَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ جَلَسَ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ يَا عَائِشَةُ فَإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنِيْ عَنْكِ كَذَا وَكَذَا فَإِنْ كُنْتِ بَرِيئَةً فَسَيُبَرِّئُكِ اللهُ وَإِنْ كُنْتِ أَلْمَمْتِ بِذَنْبٍ فَاسْتَغْفِرِي اللهَ وَتُوْبِيْ إِلَيْهِ فَإِنَّ الْعَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ بِذَنْبِهِ ثُمَّ تَابَ إِلَى اللهِ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ قَالَتْ فَلَمَّا قَضَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَقَالَتَهُ قَلَصَ دَمْعِيْ حَتَّى مَا أُحِسُّ مِنْهُ قَطْرَةً فَقُلْتُ لِأَبِيْ أَجِبْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْمَا قَالَ قَالَ وَاللهِ مَا أَدْرِيْ مَا أَقُوْلُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لِأُمِّيْ أَجِيْبِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَتْ مَا أَدْرِيْ مَا أَقُوْلُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ فَقُلْتُ وَأَنَا جَارِيَةٌ حَدِيْثَةُ السِّنِّ لَا أَقْرَأُ كَثِيْرًا مِنَ الْقُرْآنِ إِنِّيْ وَاللهِ لَقَدْ عَلِمْتُ لَقَدْ سَمِعْتُمْ هَذَا الْحَدِيْثَ حَتَّى اسْتَقَرَّ فِيْ أَنْفُسِكُمْ وَصَدَّقْتُمْ بِهِ فَلَئِنْ قُلْتُ لَكُمْ إِنِّيْ بَرِيئَةٌ وَاللهُ يَعْلَمُ أَنِّيْ بَرِيئَةٌ لَا تُصَدِّقُوْنِيْ بِذَلِكَ وَلَئِنْ اعْتَرَفْتُ لَكُمْ بِأَمْرٍ وَاللهُ يَعْلَمُ أَنِّيْ مِنْهُ بَرِيئَةٌ لَتُصَدِّقُنِّيْ وَاللهِ مَا أَجِدُ لَكُمْ مَثَلًا إِلَّا قَوْلَ أَبِيْ يُوْسُفَ قَالَ {فَصَبْرٌ جَمِيْلٌ وَاللهُ الْمُسْتَعَانُ عَلٰى مَا تَصِفُوْنَ} قَالَتْ ثُمَّ تَحَوَّلْتُ فَاضْطَجَعْتُ عَلَى فِرَاشِيْ قَالَتْ وَأَنَا حِيْنَئِذٍ أَعْلَمُ أَنِّيْ بَرِيئَةٌ وَأَنَّ اللهَ مُبَرِّئِيْ بِبَرَاءَتِيْ وَلَكِنْ وَاللهِ مَا كُنْتُ أَظُنُّ أَنَّ اللهَ مُنْزِلٌ فِيْ شَأْنِيْ وَحْيًا يُتْلَى وَلَشَأْنِيْ فِيْ نَفْسِيْ كَانَ أَحْقَرَ مِنْ أَنْ يَتَكَلَّمَ اللهُ فِيَّ بِأَمْرٍ يُتْلَى وَلَكِنْ كُنْتُ أَرْجُوْ أَنْ يَرَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّوْمِ رُؤْيَا يُبَرِّئُنِي اللهُ بِهَا قَالَتْ فَوَاللهِ مَا رَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَا خَرَجَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ حَتَّى أُنْزِلَ عَلَيْهِ فَأَخَذَهُ مَا كَانَ يَأْخُذُهُ مِنَ الْبُرَحَاءِ حَتَّى إِنَّهُ لَيَتَحَدَّرُ مِنْهُ مِثْلُ الْجُمَانِ مِنَ الْعَرَقِ وَهُوَ فِيْ يَوْمٍ شَاتٍ مِنْ ثِقَلِ الْقَوْلِ الَّذِيْ يُنْزَلُ عَلَيْهِ قَالَتْ فَلَمَّا سُرِّيَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم سُرِّيَ عَنْهُ وَهُوَ يَضْحَكُ فَكَانَتْ أَوَّلُ كَلِمَةٍ تَكَلَّمَ بِهَا يَا عَائِشَةُ أَمَّا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فَقَدْ بَرَّأَكِ فَقَالَتْ أُمِّيْ قُوْمِيْ إِلَيْهِ قَالَتْ فَقُلْتُ لَا وَاللهِ لَا أَقُوْمُ إِلَيْهِ وَلَا أَحْمَدُ إِلَّا اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {إِنَّ الَّذِيْنَ جَآءُوْا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ مِّنْكُمْ لَا تَحْسِبُوْهُ} الْعَشْرَ الْآيَاتِ كُلَّهَا فَلَمَّا أَنْزَلَ اللهُ هَذَا فِيْ بَرَاءَتِيْ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحِ بْنِ أُثَاثَةَ لِقَرَابَتِهِ مِنْهُ وَفَقْرِهِ وَاللهِ لَا أُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحٍ شَيْئًا أَبَدًا بَعْدَ الَّذِيْ قَالَ لِعَائِشَةَ مَا قَالَ فَأَنْزَلَ اللهُ {وَلَا يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يَّؤْتُوْآ أُوْلِي الْقُرْبٰى وَالْمَسَاكِيْنَ وَالْمُهَاجِرِيْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَلْيَعْفُوْا وَلْيَصْفَحُوْا أَلَا تُحِبُّوْنَ أَنْ يَّغْفِرَ اللهُ لَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ} قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ بَلَى وَاللهِ إِنِّيْ أُحِبُّ أَنْ يَغْفِرَ اللهُ لِيْ فَرَجَعَ إِلَى مِسْطَحٍ النَّفَقَةَ الَّتِيْ كَانَ يُنْفِقُ عَلَيْهِ وَقَالَ وَاللهِ لَا أَنْزِعُهَا مِنْهُ أَبَدًا قَالَتْ عَائِشَةُ وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُ زَيْنَبَ ابْنَةَ جَحْشٍ عَنْ أَمْرِيْ فَقَالَ يَا زَيْنَبُ مَاذَا عَلِمْتِ أَوْ رَأَيْتِ فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَحْمِيْ سَمْعِيْ وَبَصَرِيْ مَا عَلِمْتُ إِلَّا خَيْرًا قَالَتْ وَهِيَ الَّتِيْ كَانَتْ تُسَامِيْنِيْ مِنْ أَزْوَاجِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَصَمَهَا اللهُ بِالْوَرَعِ وَطَفِقَتْ أُخْتُهَا حَمْنَةُ تُحَارِبُ لَهَا فَهَلَكَتْ فِيْمَنْ هَلَكَ مِنْ أَصْحَابِ الإِفْكِ.
وَكَانَ الَّذِيْ تَوَلَّى الإِفْكَ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ ابْنَ سَلُوْلَ فَقَدِمْنَا الْمَدِيْنَةَ فَاشْتَكَيْتُ حِيْنَ قَدِمْتُ شَهْرًا وَالنَّاسُ يُفِيْضُوْنَ فِيْ قَوْلِ أَصْحَابِ الإِفْكِ لَا أَشْعُرُ بِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ وَهُوَ يَرِيْبُنِيْ فِيْ وَجَعِيْ أَنِّيْ لَا أَعْرِفُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم اللَّطَفَ الَّذِيْ كُنْتُ أَرَى مِنْهُ حِيْنَ أَشْتَكِيْ إِنَّمَا يَدْخُلُ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَيُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُوْلُ كَيْفَ تِيْكُمْ ثُمَّ يَنْصَرِفُ فَذَاكَ الَّذِيْ يَرِيْبُنِيْ وَلَا أَشْعُرُ بِالشَّرِّ حَتَّى خَرَجْتُ بَعْدَمَا نَقَهْتُ فَخَرَجَتْ مَعِيْ أُمُّ مِسْطَحٍ قِبَلَ الْمَنَاصِعِ وَهُوَ مُتَبَرَّزُنَا وَكُنَّا لَا نَخْرُجُ إِلَّا لَيْلًا إِلَى لَيْلٍ وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ نَتَّخِذَ الْكُنُفَ قَرِيْبًا مِنْ بُيُوْتِنَا وَأَمْرُنَا أَمْرُ الْعَرَبِ الْأُوَلِ فِي التَّبَرُّزِ قِبَلَ الْغَائِطِ فَكُنَّا نَتَأَذَّى بِالْكُنُفِ أَنْ نَتَّخِذَهَا عِنْدَ بُيُوْتِنَا فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ وَهِيَ ابْنَةُ أَبِيْ رُهْمِ بْنِ عَبْدِ مَنَافٍ وَأُمُّهَا بِنْتُ صَخْرِ بْنِ عَامِرٍ خَالَةُ أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ وَابْنُهَا مِسْطَحُ بْنُ أُثَاثَةَ فَأَقْبَلْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ قِبَلَ بَيْتِيْ وَقَدْ فَرَغْنَا مِنْ شَأْنِنَا فَعَثَرَتْ أُمُّ مِسْطَحٍ فِيْ مِرْطِهَا فَقَالَتْ تَعِسَ مِسْطَحٌ فَقُلْتُ لَهَا بِئْسَ مَا قُلْتِ أَتَسُبِّيْنَ رَجُلًا شَهِدَ بَدْرًا قَالَتْ أَيْ هَنْتَاهْ أَوَلَمْ تَسْمَعِيْ مَا قَالَ قَالَتْ قُلْتُ وَمَا قَالَ فَأَخْبَرَتْنِيْ بِقَوْلِ أَهْلِ الإِفْكِ فَازْدَدْتُ مَرَضًا عَلَى مَرَضِيْ فَلَمَّا رَجَعْتُ إِلَى بَيْتِيْ وَدَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَعْنِيْ سَلَّمَ ثُمَّ قَالَ كَيْفَ تِيْكُمْ فَقُلْتُ أَتَأْذَنُ لِيْ أَنْ آتِيَ أَبَوَيَّ قَالَتْ وَأَنَا حِيْنَئِذٍ أُرِيْدُ أَنْ أَسْتَيْقِنَ الْخَبَرَ مِنْ قِبَلِهِمَا قَالَتْ فَأَذِنَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُ أَبَوَيَّ فَقُلْتُ لِأُمِّيْ يَا أُمَّتَاهْ مَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ قَالَتْ يَا بُنَيَّةُ هَوِّنِيْ عَلَيْكِ فَوَاللهِ لَقَلَّمَا كَانَتْ امْرَأَةٌ قَطُّ وَضِيئَةٌ عِنْدَ رَجُلٍ يُحِبُّهَا وَلَهَا ضَرَائِرُ إِلَّا كَثَّرْنَ عَلَيْهَا قَالَتْ فَقُلْتُ سُبْحَانَ اللهِ أَوَلَقَدْ تَحَدَّثَ النَّاسُ بِهَذَا قَالَتْ فَبَكَيْتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ حَتَّى أَصْبَحْتُ لَا يَرْقَأُ لِيْ دَمْعٌ وَلَا أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ حَتَّى أَصْبَحْتُ أَبْكِيْ فَدَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلِيَّ بْنَ أَبِيْ طَالِبٍ وَأُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا حِيْنَ اسْتَلْبَثَ الْوَحْيُ يَسْتَأْمِرُهُمَا فِيْ فِرَاقِ أَهْلِهِ قَالَتْ فَأَمَّا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فَأَشَارَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالَّذِيْ يَعْلَمُ مِنْ بَرَاءَةِ أَهْلِهِ وَبِالَّذِيْ يَعْلَمُ لَهُمْ فِيْ نَفْسِهِ مِنَ الْوُدِّ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَهْلَكَ وَلَا نَعْلَمُ إِلَّا خَيْرًا وَأَمَّا عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَمْ يُضَيِّقْ اللهُ عَلَيْكَ وَالنِّسَاءُ سِوَاهَا كَثِيْرٌ وَإِنْ تَسْأَلْ الْجَارِيَةَ تَصْدُقْكَ.
قَالَتْ فَدَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَرِيْرَةَ فَقَالَ أَيْ بَرِيْرَةُ هَلْ رَأَيْتِ مِنْ شَيْءٍ يَرِيْبُكِ قَالَتْ بَرِيْرَةُ لَا وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنْ رَأَيْتُ عَلَيْهَا أَمْرًا أَغْمِصُهُ عَلَيْهَا أَكْثَرَ مِنْ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيْثَةُ السِّنِّ تَنَامُ عَنْ عَجِيْنِ أَهْلِهَا فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَعْذَرَ يَوْمَئِذٍ مِنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ ابْنِ سَلُوْلَ قَالَتْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِيْنَ مَنْ يَعْذِرُنِيْ مِنْ رَجُلٍ قَدْ بَلَغَنِيْ أَذَاهُ فِيْ أَهْلِ بَيْتِيْ فَوَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِيْ إِلَّا خَيْرًا وَلَقَدْ ذَكَرُوْا رَجُلًا مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ إِلَّا خَيْرًا وَمَا كَانَ يَدْخُلُ عَلَى أَهْلِيْ إِلَّا مَعِيْ فَقَامَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ الْأَنْصَارِيُّ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَا أَعْذِرُكَ مِنْهُ إِنْ كَانَ مِنَ الْأَوْسِ ضَرَبْتُ عُنُقَهُ وَإِنْ كَانَ مِنْ إِخْوَانِنَا مِنَ الْخَزْرَجِ أَمَرْتَنَا فَفَعَلْنَا أَمْرَكَ قَالَتْ فَقَامَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ وَهُوَ سَيِّدُ الْخَزْرَجِ وَكَانَ قَبْلَ ذَلِكَ رَجُلًا صَالِحًا وَلَكِنْ احْتَمَلَتْهُ الْحَمِيَّةُ فَقَالَ لِسَعْدٍ كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللهِ لَا تَقْتُلُهُ وَلَا تَقْدِرُ عَلَى قَتْلِهِ فَقَامَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ وَهُوَ ابْنُ عَمِّ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فَقَالَ لِسَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللهِ لَنَقْتُلَنَّهُ فَإِنَّكَ مُنَافِقٌ تُجَادِلُ عَنِ الْمُنَافِقِيْنَ فَتَثَاوَرَ الْحَيَّانِ الْأَوْسُ وَالْخَزْرَجُ حَتَّى هَمُّوْا أَنْ يَقْتَتِلُوْا وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ عَلَى الْمِنْبَرِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُخَفِّضُهُمْ حَتَّى سَكَتُوْا وَسَكَتَ قَالَتْ فَبَكَيْتُ يَوْمِيْ ذَلِكَ لَا يَرْقَأُ لِيْ دَمْعٌ وَلَا أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ قَالَتْ فَأَصْبَحَ أَبَوَايَ عِنْدِيْ وَقَدْ بَكَيْتُ لَيْلَتَيْنِ وَيَوْمًا لَا أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ وَلَا يَرْقَأُ لِيْ دَمْعٌ يَظُنَّانِ أَنَّ الْبُكَاءَ فَالِقٌ كَبِدِيْ قَالَتْ فَبَيْنَمَا هُمَا جَالِسَانِ عِنْدِيْ وَأَنَا أَبْكِيْ فَاسْتَأْذَنَتْ عَلَيَّ امْرَأَةٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَأَذِنْتُ لَهَا فَجَلَسَتْ تَبْكِيْ مَعِيْ قَالَتْ فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ ثُمَّ جَلَسَ قَالَتْ وَلَمْ يَجْلِسْ عِنْدِيْ مُنْذُ قِيْلَ مَا قِيْلَ قَبْلَهَا وَقَدْ لَبِثَ شَهْرًا لَا يُوْحَى إِلَيْهِ فِيْ شَأْنِيْ قَالَتْ فَتَشَهَّدَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ جَلَسَ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ يَا عَائِشَةُ فَإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنِيْ عَنْكِ كَذَا وَكَذَا فَإِنْ كُنْتِ بَرِيئَةً فَسَيُبَرِّئُكِ اللهُ وَإِنْ كُنْتِ أَلْمَمْتِ بِذَنْبٍ فَاسْتَغْفِرِي اللهَ وَتُوْبِيْ إِلَيْهِ فَإِنَّ الْعَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ بِذَنْبِهِ ثُمَّ تَابَ إِلَى اللهِ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ قَالَتْ فَلَمَّا قَضَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَقَالَتَهُ قَلَصَ دَمْعِيْ حَتَّى مَا أُحِسُّ مِنْهُ قَطْرَةً فَقُلْتُ لِأَبِيْ أَجِبْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْمَا قَالَ قَالَ وَاللهِ مَا أَدْرِيْ مَا أَقُوْلُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لِأُمِّيْ أَجِيْبِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
قَالَتْ مَا أَدْرِيْ مَا أَقُوْلُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ فَقُلْتُ وَأَنَا جَارِيَةٌ حَدِيْثَةُ السِّنِّ لَا أَقْرَأُ كَثِيْرًا مِنَ الْقُرْآنِ إِنِّيْ وَاللهِ لَقَدْ عَلِمْتُ لَقَدْ سَمِعْتُمْ هَذَا الْحَدِيْثَ حَتَّى اسْتَقَرَّ فِيْ أَنْفُسِكُمْ وَصَدَّقْتُمْ بِهِ فَلَئِنْ قُلْتُ لَكُمْ إِنِّيْ بَرِيئَةٌ وَاللهُ يَعْلَمُ أَنِّيْ بَرِيئَةٌ لَا تُصَدِّقُوْنِيْ بِذَلِكَ وَلَئِنْ اعْتَرَفْتُ لَكُمْ بِأَمْرٍ وَاللهُ يَعْلَمُ أَنِّيْ مِنْهُ بَرِيئَةٌ لَتُصَدِّقُنِّيْ وَاللهِ مَا أَجِدُ لَكُمْ مَثَلًا إِلَّا قَوْلَ أَبِيْ يُوْسُفَ قَالَ {فَصَبْرٌ جَمِيْلٌ وَاللهُ الْمُسْتَعَانُ عَلٰى مَا تَصِفُوْنَ} قَالَتْ ثُمَّ تَحَوَّلْتُ فَاضْطَجَعْتُ عَلَى فِرَاشِيْ قَالَتْ وَأَنَا حِيْنَئِذٍ أَعْلَمُ أَنِّيْ بَرِيئَةٌ وَأَنَّ اللهَ مُبَرِّئِيْ بِبَرَاءَتِيْ وَلَكِنْ وَاللهِ مَا كُنْتُ أَظُنُّ أَنَّ اللهَ مُنْزِلٌ فِيْ شَأْنِيْ وَحْيًا يُتْلَى وَلَشَأْنِيْ فِيْ نَفْسِيْ كَانَ أَحْقَرَ مِنْ أَنْ يَتَكَلَّمَ اللهُ فِيَّ بِأَمْرٍ يُتْلَى وَلَكِنْ كُنْتُ أَرْجُوْ أَنْ يَرَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّوْمِ رُؤْيَا يُبَرِّئُنِي اللهُ بِهَا قَالَتْ فَوَاللهِ مَا رَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَا خَرَجَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ حَتَّى أُنْزِلَ عَلَيْهِ فَأَخَذَهُ مَا كَانَ يَأْخُذُهُ مِنَ الْبُرَحَاءِ حَتَّى إِنَّهُ لَيَتَحَدَّرُ مِنْهُ مِثْلُ الْجُمَانِ مِنَ الْعَرَقِ وَهُوَ فِيْ يَوْمٍ شَاتٍ مِنْ ثِقَلِ الْقَوْلِ الَّذِيْ يُنْزَلُ عَلَيْهِ قَالَتْ فَلَمَّا سُرِّيَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم سُرِّيَ عَنْهُ وَهُوَ يَضْحَكُ فَكَانَتْ أَوَّلُ كَلِمَةٍ تَكَلَّمَ بِهَا يَا عَائِشَةُ أَمَّا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فَقَدْ بَرَّأَكِ فَقَالَتْ أُمِّيْ قُوْمِيْ إِلَيْهِ قَالَتْ فَقُلْتُ لَا وَاللهِ لَا أَقُوْمُ إِلَيْهِ وَلَا أَحْمَدُ إِلَّا اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {إِنَّ الَّذِيْنَ جَآءُوْا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ مِّنْكُمْ لَا تَحْسِبُوْهُ} الْعَشْرَ الْآيَاتِ كُلَّهَا فَلَمَّا أَنْزَلَ اللهُ هَذَا فِيْ بَرَاءَتِيْ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحِ بْنِ أُثَاثَةَ لِقَرَابَتِهِ مِنْهُ وَفَقْرِهِ وَاللهِ لَا أُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحٍ شَيْئًا أَبَدًا بَعْدَ الَّذِيْ قَالَ لِعَائِشَةَ مَا قَالَ فَأَنْزَلَ اللهُ {وَلَا يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يَّؤْتُوْآ أُوْلِي الْقُرْبٰى وَالْمَسَاكِيْنَ وَالْمُهَاجِرِيْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَلْيَعْفُوْا وَلْيَصْفَحُوْا أَلَا تُحِبُّوْنَ أَنْ يَّغْفِرَ اللهُ لَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ} قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ بَلَى وَاللهِ إِنِّيْ أُحِبُّ أَنْ يَغْفِرَ اللهُ لِيْ فَرَجَعَ إِلَى مِسْطَحٍ النَّفَقَةَ الَّتِيْ كَانَ يُنْفِقُ عَلَيْهِ وَقَالَ وَاللهِ لَا أَنْزِعُهَا مِنْهُ أَبَدًا قَالَتْ عَائِشَةُ وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُ زَيْنَبَ ابْنَةَ جَحْشٍ عَنْ أَمْرِيْ فَقَالَ يَا زَيْنَبُ مَاذَا عَلِمْتِ أَوْ رَأَيْتِ فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَحْمِيْ سَمْعِيْ وَبَصَرِيْ مَا عَلِمْتُ إِلَّا خَيْرًا قَالَتْ وَهِيَ الَّتِيْ كَانَتْ تُسَامِيْنِيْ مِنْ أَزْوَاجِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَصَمَهَا اللهُ بِالْوَرَعِ وَطَفِقَتْ أُخْتُهَا حَمْنَةُ تُحَارِبُ لَهَا فَهَلَكَتْ فِيْمَنْ هَلَكَ مِنْ أَصْحَابِ الإِفْكِ.
ইব্নু
শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমাকে ‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র, সা‘ঈদ ইব্নু মুসাইয়্যিব, ‘আলক্বামাহ ইব্নু
ওয়াক্কাস, ‘উবাইদুল্লাহ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উত্বাহ ইব্নু মাস‘উদ (রহ.) নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর ঘটনা সম্পর্কে
বলেন, যখন অপবাদকারীরা তাঁর প্রতি অপবাদ এনেছিল এবং আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে তাদের
অভিযোগ থেকে নির্দোষ হওয়ার বর্ণনা দেন। তাদের প্রত্যেকেই ঘটনার অংশ বিশেষ আমাকে
জানান। অবশ্য তাদের পরস্পর পরস্পরের বর্ণনা সমর্থন করে, যদিও তাদের মধ্যে কেউ
অন্যের তুলনায় এ ঘটনাটি অধিক সংরক্ষণ করেছে। তবে ‘উরওয়াহ ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে আমাকে
এরূপ বলেছিলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোথাও সফরে
বের হতেন, তখন তিনি তাঁর স্ত্রীগণের মধ্যে লটারী দিতেন। এতে যার নাম উঠত, তাঁকে
সঙ্গে নিয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বের হতেন। ‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলেন, অতএব, কোন এক যুদ্ধে যাওয়ার সময় আমাদের মধ্যে লটারী দিলেন, তাতে আমার
নাম উঠল। আমি রসূসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে বের হলাম,
পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরে। আমাকে হাওদায় করে উঠানো হতো এবং তাতে করে নামানো
হতো। এভাবেই আমরা চললাম। যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যুদ্ধ
শেষ করে ফিরলেন এবং ফেরার পথে আমরা মাদীনাহর নিকটবর্তী হলাম। একদা রওয়ানা দেয়ার
জন্য রাত থাকতেই ঘোষণা দিলেন। এ ঘোষণা হলে আমি উটে চড়ে সৈন্যদের অবস্থান থেকে কিছু
দূরে চলে গেলাম। আমার প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে যখন সওয়ারীর কাছে এলাম, তখন দেখতে
পেলাম যে, জাফারের দানা খচিত আমার হারটি ছিঁড়ে কোথাও পড়ে গেছে। আমি তা খোঁজ করতে
লাগলাম। খোঁজ করতে আমার একটু দেরী হয়ে গেল। ইতোমধ্যে এ সকল লোক যারা আমাকে সওয়ার
করাতো তারা, আমি আমার হাওদার ভেতরে আছি মনে করে, আমার হাওদা উটের পিঠে রেখে দিল।
কেননা এ সময় শরীরের গোশত আমাকে ভারী করেনি। আমরা খুব অল্প-খাদ্য খেতাম। আমি ছিলাম
অল্পবয়স্কা এক বালিকা। সুতরাং হাওদা উঠাবার সময় তা যে খুব হালকা, তা তারা টের
পায়নি এবং তারা উট হাঁকিয়ে রওয়ানা দিল। সেনাদল চলে যাওয়ার পর আমি আমার হার পেয়ে
গেলাম এবং যেখানে তারা ছিল সেখানে ফিরে এলাম। তখন সেখানে এমন কেউ ছিল না, যে ডাকবে
বা ডাকে সাড়া দিবে। আমি যেখানে ছিলাম সে স্থানেই থেকে গেলাম। এ ধারণায় বসে থাকলাম
যে, যখন কিছুদূর গিয়ে আমাকে দেখতে পাবে না, তখন এ স্থানে অবশ্যই খুঁজতে আসবে।
সেখানে বসা অবস্থায় আমার চোখে ঘুম এসে গেল, আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। আর সৈন্যবাহিনীর
পিছনে সাফওয়ান ইব্নু মু‘আত্তাল সুলামী যাওকয়ানী ছিলেন। তিনি শেষ রাতে রওয়ানা দিয়ে
ভোর বেলা আমার এ স্থানে এসে পৌঁছলেন। তিনি একজন মানুষের আকৃতি নিদ্রিত দেখতে
পেলেন। তিনি আমার কাছে এসে আমাকে দেখে চিনতে পারলেন। কেননা, পর্দার হুকুম অবতীর্ণ
হবার আগে আমাকে দেখেছিলেন। কাজেই আমাকে চেনার পর উচ্চকন্ঠে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া
ইন্না ইলাইহি রাজিউন” পড়লেন। পড়ার শব্দে আমি উঠে গেলাম এবং আমি আমার চাদর পেচিয়ে
চেহারা ঢেকে নিলাম। আল্লাহ্র কসম, তিনি আমার সঙ্গে কোন কথাই বলেননি এবং তাঁর মুখ
হতে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” ব্যতীত আর কোন কথা আমি শুনিনি। এরপর
তিনি তাঁর উষ্ট্রী বসালেন এবং সামনের দুই পা নিজ পায়ে দাবিয়ে রাখলেন। আর আমি তাতে
উঠে গেলাম। তখন সাফওয়ান উষ্ট্রীর লাগাম ধরে চললেন। শেষ পর্যন্ত আমরা সৈন্যবাহিনীর
নিকট এ সময় গিয়ে পৌঁছলাম, যখন তারা দুপুরের প্রচণ্ড উত্তাপের সময় অবতরণ করে। (এ
ঘটনাকে কেন্দ্র করে) যারা ধ্বংস হওয়ার তারা ধ্বংস হল।
আর যে ব্যক্তি এ অপবাদের নেতৃত্ব দেয়, সে ছিল (মুনাফিক সরদার) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু উবাই ইব্নু সুলূল। তারপর আমি মদিনায় এসে পৌঁছলাম এবং পৌঁছার পর আমি দীর্ঘ একমাস পর্যন্ত অসুস্থ ছিলাম। আর অপবাদকারীদের কথা নিয়ে লোকেরা রটনা করছিল। আমি এসব কিছুই বুঝতে পারিনি। তবে এতে আমাকে সন্দেহে ফেলেছিল যে, আমার অসুস্থ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে রকম স্নেহ-ভালবাসা দেখাতেন, এবারে তেমনি ভালবাসা দেখাচ্ছেন না। শুধু এতটুকুই ছিল যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে আসতেন এবং সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করতেন, তোমার অবস্থা কী? তারপর তিনি ফিরে যেতেন। এই আচরণই আমাকে সন্দেহে ফেলেছিল; অথচ আমি এই অপপ্রচার সম্বন্ধে জানতেই পারিনি। অবশেষে একটু সুস্থ হওয়ার পর মিসতাহের মায়ের সঙ্গে মানাসের (শহরের বাইরে খোলা ময়দানের) দিকে বের হলাম। সে জায়গাটিই ছিল আমাদের প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারার স্থান আর আমরা কেবল রাতের পর রাতেই বাইরে যেতাম। এ ছিল এ সময়ের কথা যখন আমাদের ঘরের পাশে পায়খানা নির্মিত হয়নি। আমাদের অবস্থা ছিল, অনেকটা প্রাচীন আরবদের ন্যায় নিচু ময়দানের দিকে বের হয়ে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারা। কেননা, ঘর-সংলগ্ন পায়খানা নির্মাণ আমরা কষ্টকর মনে করতাম। কাজেই আমি ও মিসতাহের মা বাইরে গেলাম। তিনি ছিলেন আবূ রুহ্ম ইব্নু আব্দ মানাফের কন্যা এবং মিসতাহের মায়ের মা ছিলেন সাখর ইব্নু আমিরের কন্যা, যিনি আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর খালা ছিলেন। আর তার পুত্র ছিলেন ‘মিসতাহ্ ইব্নু উসাসাহ’। আমি ও উম্মু মিসতাহ্ আমাদের প্রয়োজন সেরে ঘরের দিকে ফিরলাম। তখন মিসতাহের মা তার চাদরে হোঁচট খেয়ে বললেন, ‘মিসতাহ্’ ধ্বংস হোক। আমি তাকে বললাম, তুমি খুব খারাপ কথা বলছ, তুমি কি এমন এক ব্যক্তিকে মন্দ বলছ, যে বদরের যুদ্ধে হাজির ছিল? তিনি বললেন, হায়রে বেখেয়াল! তুমি কি শোননি সে কী বলেছে? আমি বললাম, সে কী বলেছে? তিনি বললেন, এমন এমন। এ বলে তিনি অপবাদকারীদের মিথ্যা অপবাদ সম্পর্কে আমাকে বিস্তারিত খবর দিলেন। এতে আমার অসুখের মাত্রা বৃদ্ধি পেল। যখন আমি ঘরে ফিরে আসলাম এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার ঘরে প্রবেশ করে বললেন, তুমি কেমন আছ? তখন আমি বললাম, আপনি কি আমাকে আমার আব্বা-আম্মার নিকট যেতে অনুমতি দিবেন? ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, তখন আমার উদ্দেশ্য ছিল যে, আমি তাঁদের কাছে গিয়ে তাঁদের থেকে আমার এ ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে জেনে নেই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি আব্বা-আম্মার কাছে চলে গেলাম এবং আমার আম্মাকে বললাম, ও গো আম্মা! লোকেরা কী বলাবলি করছে? তিনি বললেন, বৎস! তুমি তোমার মন হালকা রাখ। আল্লাহ্র কসম! এমন কমই দেখা যায় যে, কোন পুরুষের কাছে এমন সুন্দরী রূপবতী স্ত্রী আছে, যাকে সে ভালবাসে এবং তার সতীনও আছে; অথচ তার ত্রুটি বের করা হয় না। রাবী বলেন, আমি বললাম, ‘সুবহান আল্লাহ্’! সত্যি কি লোকেরা এ ব্যাপারে বলাবলি করছে? তিনি বলেন, আমি সে রাত কেঁদে কাটালাম, এমন কি ভোর হয়ে গেল, তথাপি আমার কান্না থামল না এবং আমি ঘুমাতেও পারলাম না। আমি কাঁদতে কাঁদতেই ভোর করলাম। যখন ওয়াহী আসতে দেরী হল, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ) ও উসামাহ ইব্নু যায়দ (রাঃ)-কে তাঁর স্ত্রীর বিচ্ছেদের ব্যাপারে তাঁদের পরামর্শের জন্য ডাকলেন। তিনি বলেন, উসামাহ ইব্নু যায়দ তাঁর সহধর্মিণী (‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর পবিত্রতা এবং তাঁর অন্তরে তাঁদের প্রতি তাঁর ভালবাসা সম্পর্কে যা জানেন তার আলোকে তাঁকে পরামর্শ দিতে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার পরিবার সম্পর্কে আমরা ভাল ধারণাই পোষণ করি। আর ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্ আপনার উপর কোন পথ সংকীর্ণ করে দেননি এবং তিনি ব্যতীত বহু মহিলা রয়েছেন। আর আপনি যদি দাসীকে জিজ্ঞেস করেন, সে আপনার কাছে সত্য ঘটনা বলবে।
তিনি [‘আয়িশাহ (রাঃ)] বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বারীরাহ্কে ডাকলেন এবং বললেন, হে বারীরাহ! তুমি কি তার নিকট হতে সন্দেহজনক কিছু দেখেছ? বারীরাহ বললেন, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম! আমি এমন কোন কিছু তাঁর মধ্যে দেখতে পাইনি, যা আমি গোপন করতে পারি। তবে তাঁর মধ্যে সবচাইতে অধিক যা দেখেছি, তা হল, তিনি একজন অল্পবয়স্কা বালিকা। তিনি কখনও তাঁর পরিবারের আটার খামির রেখে ঘুমিয়ে পড়তেন। অর ছাগলের বাচ্চা এসে তা খেয়ে ফেলত। এরপরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (মিম্বরে) দাঁড়ালেন। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু উবাই ইব্নু সলুলের বিরুদ্ধে তিনি সমর্থন চাইলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বরের উপর থেকে বললেন, হে মুসলিম সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে, ঐ ব্যক্তির মিথ্যা অপবাদ থেকে আমাকে সাহায্য করতে পারে, যে আমার স্ত্রীর ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিয়েছে। আল্লাহ্র কসম! আমি আমার স্ত্রী সম্পর্কে ভালই জানতে পেরেছি এবং তারা এমন এক পুরুষ সম্পর্কে অভিযোগ এনেছে, যার সম্পর্কে আমি ভাল ব্যতীত কিছুই জানি না। সে কখনও আমাকে ব্যতীত আমার ঘরে আসেনি। এ কথা শুনে সা‘দ ইব্নু মু‘আয আনসারী (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তার বিরুদ্ধে আমি আপনাকে সাহায্য করব, যদি সে আউস গোত্রের হয়, তবে আমি তার গর্দান মেরে দিব। আর যদি আমাদের ভাই খাযরাজ গোত্রের লোক হয়, তবে আপনি নির্দেশ দিলে আমি আপনার নির্দেশ কার্যকর করব। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর সা‘দ ইব্নু উবাদা দাঁড়ালেন; তিনি খাযরাজ গোত্রের সর্দার। তিনি পূর্বে একজন নেক্কার লোক ছিলেন। কিন্তু এ সময় স্ব-গোত্রের পক্ষপাতিত্ব তাকে উত্তেজিত করে তোলে। কাজেই তিনি সা‘দকে বললেন, চিরঞ্জীব আল্লাহ্র কসম! তুমি মিথ্যা বলেছ, তুমি তাকে হত্যা করতে পারবে না এবং তাকে হত্যা করার ক্ষমতা তুমি রাখ না। তারপর উসায়দ ইব্নু হুদায়র দাঁড়ালেন, যিনি সা‘দের চাচাতো ভাই। তিনি সা‘দ ইব্নু উবাদাকে বললেন, চিরঞ্জীব আল্লাহ্র কসম! তুমি মিথ্যা বলছ। আমরা অবশ্যই তাকে হত্যা করব। তুমি নিজেও মুনাফিক এবং মুনাফিকের পক্ষে প্রতিবাদ করছ। এতে আউস এবং খাযরাজ উভয় গোত্রের লোকেরা উত্তেজিত হয়ে উঠল, এমনকি তারা পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার উপক্রম হল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বরে দাঁড়ানো ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের থামাতে লাগলেন। অবশেষে তারা থামল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও নীরব হলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি সেদিন এমনভাবে কাটালাম যে, আমার চোখের অশ্র“ও থামেনি এবং চোখেও ঘুমও আসেনি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সকালবেলা আমার আব্বা-আম্মা আমার কাছে আসলেন, আর আমি দু’রাত এবং একদিন (একাধারে) কাঁদছিলাম। এর মধ্যে না আমার ঘুম হয় এবং না আমার চোখের পানি বন্ধ হয়। তাঁরা ধারণা করছিলেন যে, এ ক্রন্দনে আমার কলজে ফেটে যাবে।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এর পূর্বে তারা যখন আমার কাছে বসা ছিলেন এবং আমি কাঁদছিলাম, ইত্যবসরে জনৈকা আনসারী মহিলা আমার কাছে আসার জন্য অনুমতি চাইলেন। আমি তাকে অনুমতি দিলাম। সে বসে আমার সঙ্গে কাঁদতে লাগল। আমাদের এ অবস্থার মধ্যেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে প্রবেশ করলেন এবং সালাম দিয়ে বসলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন এর পূর্বে যখন থেকে এ কথা রটনা চলেছে, তিনি আমার কাছে বসেননি। এ অবস্থায় তিনি একমাস অপেক্ষা করেছেন, আমার সম্পর্কে ওয়াহী আসেনি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাশাহুদ পাঠ করলেন। তারপর বললেন, হে ‘আয়িশাহ! তোমার সম্পর্কে এরূপ এরূপ কথা আমার কাছে পৌঁছেছে, তুমি যদি নির্দোষ হয়ে থাক, তবে অচিরেই আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার পবিত্রতা ব্যক্ত করে দিবেন। আর যদি তুমি কোন পাপে লিপ্ত হয়ে থাক, তবে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর কাছে তাওবাহ কর। কেননা, বান্দা যখন তার পাপ স্বীকার করে নেয় এবং আল্লাহ্র কাছে তাওবাহ করে, তখন আল্লাহ্ তার তাওবাহ কবূল করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কথা শেষ করলেন, তখন আমার চোখের পানি এমনভাবে শুকিয়ে গেল যে, এক ফোঁটা পানিও অনুভব করছিলাম না। আমি আমার পিতাকে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে (তিনি যা কিছু বলেছেন তার) জবাব দিন। তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কী জবাব দিব, তা আমার বুঝে আসছে না। তারপর আমার আম্মাকে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জবাব দিন।
তিনি [‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর আম্মা) বললেন ঃ আমি বুঝতে পারছি না, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কি জবাব দিব। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তখন আমি নিজেই জবাব দিলাম, অথচ আমি একজন অল্প বয়স্কা বালিকা, কুরআন খুব অধিক পড়িনি। আল্লাহ্র কসম! আমি জানি, আপনারা এ ঘটনা শুনেছেন, এমনকি তা আপনাদের অন্তরে বসে গেছে এবং সত্য বলে বিশ্বাস করে নিয়েছেন। এখন যদি আমি বলি যে, আমি নির্দোষ এবং আল্লাহ্ ভালভাবেই জানেন যে, আমি নির্দোষ; তবে আপনারা তা বিশ্বাস করবেন না। আর আমি যদি আপনাদের কাছে এ বিষয় স্বীকার করে নেই, অথচ আল্লাহ্ জানেন, আমি তা থেকে নির্দোষ; তবে আপনারা আমার এই উক্তি বিশ্বাস করে নিবেন। আল্লাহ্র কসম! এ ক্ষেত্রে আমি আপনাদের জন্য ইউসুফ (‘আ.)-এর পিতার উক্তি ব্যতীত আর কোন দৃষ্টান্ত পাচ্ছি না। তিনি বলেছিলেন, فَصَبْرٌ جَمِيلٌ وَاللهُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ “পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ্র কাছেই সাহায্য চাওয়া যায়। তিনি বলেন, এরপর আমি আমার চেহারা ঘুরিয়ে নিলাম এবং কাত হয়ে আমার বিছানায় শুয়ে পড়লাম। তিনি বলেন, এ সময় আমার বিশ্বাস ছিল যে আমি নির্দোষ এবং আল্লাহ্ তা‘আলা আমার নির্দোষিতা প্রকাশ করে দিবেন। কিন্তু আল্লাহ্র কসম! আমি তখন এ ধারণা করতে পারিনি যে, আল্লাহ্ আমার সম্পর্কে এমন ওয়াহী অবতীর্ণ করবেন যা তিলাওয়াত করা হবে। আমার দৃষ্টিতে আমার মর্যাদা এর চাইতে অনেক নিচে ছিল। বরং আমি আশা করেছিলাম যে, হয়ত রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিদ্রায় কোন স্বপ্ন দেখবেন, যাতে আল্লাহ্ তা‘আলা আমার নির্দোষিতা জানিয়ে দেবেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র কসম! রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়াননি এবং ঘরের কেউ বের হননি। এমন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ হতে লাগল এবং তাঁর শরীর ঘামতে লাগল। এমনকি যদিও শীতের দিন ছিল, তবুও তাঁর উপর যে ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছিল এর বোঝার ফলে মুক্তার মত তাঁর ঘাম ঝরছিল। যখন ওয়াহী শেষ হল, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাসছিলেন। তখন তিনি প্রথম যে বাক্যটি বলেছিলেন, তা হলে ঃ হে ‘আয়িশাহ! আল্লাহ্ তোমার নির্দেষিতা প্রকাশ করেছেন। এ সময় আমার মা আমাকে বললেন, তুমি উঠে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আমি বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব না, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কারো প্রশংসা করব না। আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন পূর্ণ দশ আয়াত পর্যন্ত। إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ যারা এ অপবাদ রচনা করেছে, তারা তোমাদেরই একটি দল। যখন আল্লাহ্ তা‘আলা আমার নির্দোষিতার আয়াত অবতীর্ণ করলেন, তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) যিনি মিস্তাহ্ ইব্নু উসাসাকে নিকটবর্তী আত্মীয়তা এবং দারিদ্র্যের কারণে আর্থিক সাহায্য করতেন, তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! মিস্তাহ্ ‘আয়িশাহ সম্পর্কে যা বলেছে, এরপর আমি তাকে কখনই কিছুই দান করব না। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা আয়াত অবতীর্ণ করলেন, “তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তার আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহ্র রাস্তায় যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদের কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষত্র“টি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ্ তোমাদের ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আবূ বকর (রাঃ) এ সময় বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি অবশ্যই পছন্দ করি যে আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করেন। তারপর তিনি মিস্তাহ্কে সাহায্য আগের মত দিতে লাগলেন এবং বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি এ সাহায্য কখনও বন্ধ করব না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জয়নব বিন্ত জাহশকেও আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, হে জয়নব! (‘আয়িশাহ সম্পর্কে) কী জান আর কী দেখেছ? তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আমার কান ও চোখকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই। আমি তাঁর সম্পর্কে ভাল ব্যতীত অন্য কিছু জানি না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণীদের মধ্যে তিনি আমার প্রতিদ্বন্দি¡তা করতেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে পরহেযগারীর কারণে রক্ষা করেন। আর তাঁর বোন হাম্না তাঁর পক্ষ অবলম্বন করে দ্বন্দ্ব করে এবং অপবাদ দানকারী যারা ধ্বংস হয়েছিল তাদের মধ্যে সেও ধ্বংস হল। [২৫৯৩] (আ.প্র. ৪৩৮৯, ই.ফা. ৪৩৯১)
আর যে ব্যক্তি এ অপবাদের নেতৃত্ব দেয়, সে ছিল (মুনাফিক সরদার) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু উবাই ইব্নু সুলূল। তারপর আমি মদিনায় এসে পৌঁছলাম এবং পৌঁছার পর আমি দীর্ঘ একমাস পর্যন্ত অসুস্থ ছিলাম। আর অপবাদকারীদের কথা নিয়ে লোকেরা রটনা করছিল। আমি এসব কিছুই বুঝতে পারিনি। তবে এতে আমাকে সন্দেহে ফেলেছিল যে, আমার অসুস্থ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে রকম স্নেহ-ভালবাসা দেখাতেন, এবারে তেমনি ভালবাসা দেখাচ্ছেন না। শুধু এতটুকুই ছিল যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে আসতেন এবং সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করতেন, তোমার অবস্থা কী? তারপর তিনি ফিরে যেতেন। এই আচরণই আমাকে সন্দেহে ফেলেছিল; অথচ আমি এই অপপ্রচার সম্বন্ধে জানতেই পারিনি। অবশেষে একটু সুস্থ হওয়ার পর মিসতাহের মায়ের সঙ্গে মানাসের (শহরের বাইরে খোলা ময়দানের) দিকে বের হলাম। সে জায়গাটিই ছিল আমাদের প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারার স্থান আর আমরা কেবল রাতের পর রাতেই বাইরে যেতাম। এ ছিল এ সময়ের কথা যখন আমাদের ঘরের পাশে পায়খানা নির্মিত হয়নি। আমাদের অবস্থা ছিল, অনেকটা প্রাচীন আরবদের ন্যায় নিচু ময়দানের দিকে বের হয়ে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারা। কেননা, ঘর-সংলগ্ন পায়খানা নির্মাণ আমরা কষ্টকর মনে করতাম। কাজেই আমি ও মিসতাহের মা বাইরে গেলাম। তিনি ছিলেন আবূ রুহ্ম ইব্নু আব্দ মানাফের কন্যা এবং মিসতাহের মায়ের মা ছিলেন সাখর ইব্নু আমিরের কন্যা, যিনি আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর খালা ছিলেন। আর তার পুত্র ছিলেন ‘মিসতাহ্ ইব্নু উসাসাহ’। আমি ও উম্মু মিসতাহ্ আমাদের প্রয়োজন সেরে ঘরের দিকে ফিরলাম। তখন মিসতাহের মা তার চাদরে হোঁচট খেয়ে বললেন, ‘মিসতাহ্’ ধ্বংস হোক। আমি তাকে বললাম, তুমি খুব খারাপ কথা বলছ, তুমি কি এমন এক ব্যক্তিকে মন্দ বলছ, যে বদরের যুদ্ধে হাজির ছিল? তিনি বললেন, হায়রে বেখেয়াল! তুমি কি শোননি সে কী বলেছে? আমি বললাম, সে কী বলেছে? তিনি বললেন, এমন এমন। এ বলে তিনি অপবাদকারীদের মিথ্যা অপবাদ সম্পর্কে আমাকে বিস্তারিত খবর দিলেন। এতে আমার অসুখের মাত্রা বৃদ্ধি পেল। যখন আমি ঘরে ফিরে আসলাম এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার ঘরে প্রবেশ করে বললেন, তুমি কেমন আছ? তখন আমি বললাম, আপনি কি আমাকে আমার আব্বা-আম্মার নিকট যেতে অনুমতি দিবেন? ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, তখন আমার উদ্দেশ্য ছিল যে, আমি তাঁদের কাছে গিয়ে তাঁদের থেকে আমার এ ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে জেনে নেই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি আব্বা-আম্মার কাছে চলে গেলাম এবং আমার আম্মাকে বললাম, ও গো আম্মা! লোকেরা কী বলাবলি করছে? তিনি বললেন, বৎস! তুমি তোমার মন হালকা রাখ। আল্লাহ্র কসম! এমন কমই দেখা যায় যে, কোন পুরুষের কাছে এমন সুন্দরী রূপবতী স্ত্রী আছে, যাকে সে ভালবাসে এবং তার সতীনও আছে; অথচ তার ত্রুটি বের করা হয় না। রাবী বলেন, আমি বললাম, ‘সুবহান আল্লাহ্’! সত্যি কি লোকেরা এ ব্যাপারে বলাবলি করছে? তিনি বলেন, আমি সে রাত কেঁদে কাটালাম, এমন কি ভোর হয়ে গেল, তথাপি আমার কান্না থামল না এবং আমি ঘুমাতেও পারলাম না। আমি কাঁদতে কাঁদতেই ভোর করলাম। যখন ওয়াহী আসতে দেরী হল, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ) ও উসামাহ ইব্নু যায়দ (রাঃ)-কে তাঁর স্ত্রীর বিচ্ছেদের ব্যাপারে তাঁদের পরামর্শের জন্য ডাকলেন। তিনি বলেন, উসামাহ ইব্নু যায়দ তাঁর সহধর্মিণী (‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর পবিত্রতা এবং তাঁর অন্তরে তাঁদের প্রতি তাঁর ভালবাসা সম্পর্কে যা জানেন তার আলোকে তাঁকে পরামর্শ দিতে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার পরিবার সম্পর্কে আমরা ভাল ধারণাই পোষণ করি। আর ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্ আপনার উপর কোন পথ সংকীর্ণ করে দেননি এবং তিনি ব্যতীত বহু মহিলা রয়েছেন। আর আপনি যদি দাসীকে জিজ্ঞেস করেন, সে আপনার কাছে সত্য ঘটনা বলবে।
তিনি [‘আয়িশাহ (রাঃ)] বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বারীরাহ্কে ডাকলেন এবং বললেন, হে বারীরাহ! তুমি কি তার নিকট হতে সন্দেহজনক কিছু দেখেছ? বারীরাহ বললেন, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম! আমি এমন কোন কিছু তাঁর মধ্যে দেখতে পাইনি, যা আমি গোপন করতে পারি। তবে তাঁর মধ্যে সবচাইতে অধিক যা দেখেছি, তা হল, তিনি একজন অল্পবয়স্কা বালিকা। তিনি কখনও তাঁর পরিবারের আটার খামির রেখে ঘুমিয়ে পড়তেন। অর ছাগলের বাচ্চা এসে তা খেয়ে ফেলত। এরপরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (মিম্বরে) দাঁড়ালেন। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু উবাই ইব্নু সলুলের বিরুদ্ধে তিনি সমর্থন চাইলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বরের উপর থেকে বললেন, হে মুসলিম সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে, ঐ ব্যক্তির মিথ্যা অপবাদ থেকে আমাকে সাহায্য করতে পারে, যে আমার স্ত্রীর ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিয়েছে। আল্লাহ্র কসম! আমি আমার স্ত্রী সম্পর্কে ভালই জানতে পেরেছি এবং তারা এমন এক পুরুষ সম্পর্কে অভিযোগ এনেছে, যার সম্পর্কে আমি ভাল ব্যতীত কিছুই জানি না। সে কখনও আমাকে ব্যতীত আমার ঘরে আসেনি। এ কথা শুনে সা‘দ ইব্নু মু‘আয আনসারী (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তার বিরুদ্ধে আমি আপনাকে সাহায্য করব, যদি সে আউস গোত্রের হয়, তবে আমি তার গর্দান মেরে দিব। আর যদি আমাদের ভাই খাযরাজ গোত্রের লোক হয়, তবে আপনি নির্দেশ দিলে আমি আপনার নির্দেশ কার্যকর করব। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর সা‘দ ইব্নু উবাদা দাঁড়ালেন; তিনি খাযরাজ গোত্রের সর্দার। তিনি পূর্বে একজন নেক্কার লোক ছিলেন। কিন্তু এ সময় স্ব-গোত্রের পক্ষপাতিত্ব তাকে উত্তেজিত করে তোলে। কাজেই তিনি সা‘দকে বললেন, চিরঞ্জীব আল্লাহ্র কসম! তুমি মিথ্যা বলেছ, তুমি তাকে হত্যা করতে পারবে না এবং তাকে হত্যা করার ক্ষমতা তুমি রাখ না। তারপর উসায়দ ইব্নু হুদায়র দাঁড়ালেন, যিনি সা‘দের চাচাতো ভাই। তিনি সা‘দ ইব্নু উবাদাকে বললেন, চিরঞ্জীব আল্লাহ্র কসম! তুমি মিথ্যা বলছ। আমরা অবশ্যই তাকে হত্যা করব। তুমি নিজেও মুনাফিক এবং মুনাফিকের পক্ষে প্রতিবাদ করছ। এতে আউস এবং খাযরাজ উভয় গোত্রের লোকেরা উত্তেজিত হয়ে উঠল, এমনকি তারা পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার উপক্রম হল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বরে দাঁড়ানো ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের থামাতে লাগলেন। অবশেষে তারা থামল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও নীরব হলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি সেদিন এমনভাবে কাটালাম যে, আমার চোখের অশ্র“ও থামেনি এবং চোখেও ঘুমও আসেনি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সকালবেলা আমার আব্বা-আম্মা আমার কাছে আসলেন, আর আমি দু’রাত এবং একদিন (একাধারে) কাঁদছিলাম। এর মধ্যে না আমার ঘুম হয় এবং না আমার চোখের পানি বন্ধ হয়। তাঁরা ধারণা করছিলেন যে, এ ক্রন্দনে আমার কলজে ফেটে যাবে।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এর পূর্বে তারা যখন আমার কাছে বসা ছিলেন এবং আমি কাঁদছিলাম, ইত্যবসরে জনৈকা আনসারী মহিলা আমার কাছে আসার জন্য অনুমতি চাইলেন। আমি তাকে অনুমতি দিলাম। সে বসে আমার সঙ্গে কাঁদতে লাগল। আমাদের এ অবস্থার মধ্যেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে প্রবেশ করলেন এবং সালাম দিয়ে বসলেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন এর পূর্বে যখন থেকে এ কথা রটনা চলেছে, তিনি আমার কাছে বসেননি। এ অবস্থায় তিনি একমাস অপেক্ষা করেছেন, আমার সম্পর্কে ওয়াহী আসেনি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাশাহুদ পাঠ করলেন। তারপর বললেন, হে ‘আয়িশাহ! তোমার সম্পর্কে এরূপ এরূপ কথা আমার কাছে পৌঁছেছে, তুমি যদি নির্দোষ হয়ে থাক, তবে অচিরেই আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার পবিত্রতা ব্যক্ত করে দিবেন। আর যদি তুমি কোন পাপে লিপ্ত হয়ে থাক, তবে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর কাছে তাওবাহ কর। কেননা, বান্দা যখন তার পাপ স্বীকার করে নেয় এবং আল্লাহ্র কাছে তাওবাহ করে, তখন আল্লাহ্ তার তাওবাহ কবূল করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কথা শেষ করলেন, তখন আমার চোখের পানি এমনভাবে শুকিয়ে গেল যে, এক ফোঁটা পানিও অনুভব করছিলাম না। আমি আমার পিতাকে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে (তিনি যা কিছু বলেছেন তার) জবাব দিন। তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কী জবাব দিব, তা আমার বুঝে আসছে না। তারপর আমার আম্মাকে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জবাব দিন।
তিনি [‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর আম্মা) বললেন ঃ আমি বুঝতে পারছি না, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কি জবাব দিব। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তখন আমি নিজেই জবাব দিলাম, অথচ আমি একজন অল্প বয়স্কা বালিকা, কুরআন খুব অধিক পড়িনি। আল্লাহ্র কসম! আমি জানি, আপনারা এ ঘটনা শুনেছেন, এমনকি তা আপনাদের অন্তরে বসে গেছে এবং সত্য বলে বিশ্বাস করে নিয়েছেন। এখন যদি আমি বলি যে, আমি নির্দোষ এবং আল্লাহ্ ভালভাবেই জানেন যে, আমি নির্দোষ; তবে আপনারা তা বিশ্বাস করবেন না। আর আমি যদি আপনাদের কাছে এ বিষয় স্বীকার করে নেই, অথচ আল্লাহ্ জানেন, আমি তা থেকে নির্দোষ; তবে আপনারা আমার এই উক্তি বিশ্বাস করে নিবেন। আল্লাহ্র কসম! এ ক্ষেত্রে আমি আপনাদের জন্য ইউসুফ (‘আ.)-এর পিতার উক্তি ব্যতীত আর কোন দৃষ্টান্ত পাচ্ছি না। তিনি বলেছিলেন, فَصَبْرٌ جَمِيلٌ وَاللهُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ “পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ্র কাছেই সাহায্য চাওয়া যায়। তিনি বলেন, এরপর আমি আমার চেহারা ঘুরিয়ে নিলাম এবং কাত হয়ে আমার বিছানায় শুয়ে পড়লাম। তিনি বলেন, এ সময় আমার বিশ্বাস ছিল যে আমি নির্দোষ এবং আল্লাহ্ তা‘আলা আমার নির্দোষিতা প্রকাশ করে দিবেন। কিন্তু আল্লাহ্র কসম! আমি তখন এ ধারণা করতে পারিনি যে, আল্লাহ্ আমার সম্পর্কে এমন ওয়াহী অবতীর্ণ করবেন যা তিলাওয়াত করা হবে। আমার দৃষ্টিতে আমার মর্যাদা এর চাইতে অনেক নিচে ছিল। বরং আমি আশা করেছিলাম যে, হয়ত রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিদ্রায় কোন স্বপ্ন দেখবেন, যাতে আল্লাহ্ তা‘আলা আমার নির্দোষিতা জানিয়ে দেবেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র কসম! রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়াননি এবং ঘরের কেউ বের হননি। এমন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ হতে লাগল এবং তাঁর শরীর ঘামতে লাগল। এমনকি যদিও শীতের দিন ছিল, তবুও তাঁর উপর যে ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছিল এর বোঝার ফলে মুক্তার মত তাঁর ঘাম ঝরছিল। যখন ওয়াহী শেষ হল, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাসছিলেন। তখন তিনি প্রথম যে বাক্যটি বলেছিলেন, তা হলে ঃ হে ‘আয়িশাহ! আল্লাহ্ তোমার নির্দেষিতা প্রকাশ করেছেন। এ সময় আমার মা আমাকে বললেন, তুমি উঠে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আমি বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব না, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কারো প্রশংসা করব না। আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন পূর্ণ দশ আয়াত পর্যন্ত। إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ যারা এ অপবাদ রচনা করেছে, তারা তোমাদেরই একটি দল। যখন আল্লাহ্ তা‘আলা আমার নির্দোষিতার আয়াত অবতীর্ণ করলেন, তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) যিনি মিস্তাহ্ ইব্নু উসাসাকে নিকটবর্তী আত্মীয়তা এবং দারিদ্র্যের কারণে আর্থিক সাহায্য করতেন, তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! মিস্তাহ্ ‘আয়িশাহ সম্পর্কে যা বলেছে, এরপর আমি তাকে কখনই কিছুই দান করব না। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা আয়াত অবতীর্ণ করলেন, “তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তার আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহ্র রাস্তায় যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদের কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষত্র“টি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ্ তোমাদের ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আবূ বকর (রাঃ) এ সময় বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি অবশ্যই পছন্দ করি যে আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করেন। তারপর তিনি মিস্তাহ্কে সাহায্য আগের মত দিতে লাগলেন এবং বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি এ সাহায্য কখনও বন্ধ করব না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জয়নব বিন্ত জাহশকেও আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, হে জয়নব! (‘আয়িশাহ সম্পর্কে) কী জান আর কী দেখেছ? তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আমার কান ও চোখকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই। আমি তাঁর সম্পর্কে ভাল ব্যতীত অন্য কিছু জানি না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণীদের মধ্যে তিনি আমার প্রতিদ্বন্দি¡তা করতেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে পরহেযগারীর কারণে রক্ষা করেন। আর তাঁর বোন হাম্না তাঁর পক্ষ অবলম্বন করে দ্বন্দ্ব করে এবং অপবাদ দানকারী যারা ধ্বংস হয়েছিল তাদের মধ্যে সেও ধ্বংস হল। [২৫৯৩] (আ.প্র. ৪৩৮৯, ই.ফা. ৪৩৯১)
৬৫/২৪/৭.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{وَلَوْلَا فَضْلُ اللهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُه” فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ لَمَسَّكُمْ فِيْ مَآ أَفَضْتُمْ فِيْهِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ}
তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে, তোমরা যাতে লিপ্ত ছিলে তার কারণে কঠিন শাস্তি তোমাদেরকে স্পর্শ করত। (সূরাহ নূর ২৪/১৪)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {تَلَقَّوْنَه”} يَرْوِيْهِ بَعْضُكُمْ عَنْ بَعْضٍ {تُفِيْضُوْنَ} تَقُوْلُوْنَ
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَلَقَّوْنَه এর অর্থ, একে অপরের থেকে বর্ণনা করতে লাগল। تُفِيْضُوْنَ তোমরা বলাবলি করতে লাগলে।
তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে, তোমরা যাতে লিপ্ত ছিলে তার কারণে কঠিন শাস্তি তোমাদেরকে স্পর্শ করত। (সূরাহ নূর ২৪/১৪)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {تَلَقَّوْنَه”} يَرْوِيْهِ بَعْضُكُمْ عَنْ بَعْضٍ {تُفِيْضُوْنَ} تَقُوْلُوْنَ
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَلَقَّوْنَه এর অর্থ, একে অপরের থেকে বর্ণনা করতে লাগল। تُفِيْضُوْنَ তোমরা বলাবলি করতে লাগলে।
৪৭৫১
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ
حُصَيْنٍ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ أُمِّ رُوْمَانَ أُمِّ
عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ لَمَّا رُمِيَتْ عَائِشَةُ خَرَّتْ مَغْشِيًّا
عَلَيْهَا.
‘আয়িশাহ
(রাঃ)-এর মা উম্মু রূমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া হল তখন তিনি বেহুঁশ হয়ে পড়লেন।
[৩৩৮৮] (আ.প্র. ৪৩৯০, ই.ফা. ৪৩৯২)
৬৫/২৪/৮.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
{إِذْ تَلَقَّوْنَه” بِأَلْسِنَتِكُمْ وَتَقُوْلُوْنَ بِأَفْوَاهِكُمْ مَّا لَيْسَ لَكُمْ بِهٰ عِلْمٌ وَّتَحْسَبُوْنَه” هَيِّنًا - وَّهُوَ عِنْدَ اللهِ عَظِيْمٌ}.
‘‘যখন তোমরা মুখে মুখে এ ঘটনা ছড়াচ্ছিলে এবং এমন বিষয় মুখে উচ্চারণ করছিলে যার কোন জ্ঞান তোমাদের ছিল না এবং তোমরা একে তুচ্ছ মনে করেছিলে, যদিও আল্লাহর নিকট এটা ছিল মারাত্মক বিষয়।’’ (সূরাহ নূর ২৪/১৫)
‘‘যখন তোমরা মুখে মুখে এ ঘটনা ছড়াচ্ছিলে এবং এমন বিষয় মুখে উচ্চারণ করছিলে যার কোন জ্ঞান তোমাদের ছিল না এবং তোমরা একে তুচ্ছ মনে করেছিলে, যদিও আল্লাহর নিকট এটা ছিল মারাত্মক বিষয়।’’ (সূরাহ নূর ২৪/১৫)
৪৭৫২
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا هِشَامُ
بْنُ يُوْسُفَ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ
سَمِعْتُ عَائِشَةَ تَقْرَأُ {إِذْ تَلِقُوْنَه” بِأَلْسِنَتِكُمْ}.
ইব্নু
আবূ মুলাইকাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ) إِذْ تَلِقُونَهُ بِأَلْسِنَتِكُمْ
পড়েছেন। অর্থাৎ (تَلِقُونَهُ এর ل এর মধ্যে কাসরা বা যের এবং ق এর
উপর যুম্মা বা পেশ দিয়ে পড়েছেন) । [৪১৪৪] (আ.প্র. ৪৩৯১, ই.ফা. ৪৩৯৩)
৬৫/২৪/৯.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
৪৭৫৩
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُمَرَ
بْنِ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ حُسَيْنٍ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ
قَالَ اسْتَأْذَنَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَبْلَ مَوْتِهَا عَلَى عَائِشَةَ وَهِيَ
مَغْلُوْبَةٌ قَالَتْ أَخْشَى أَنْ يُثْنِيَ عَلَيَّ فَقِيْلَ ابْنُ عَمِّ
رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمِنْ وُجُوْهِ الْمُسْلِمِيْنَ قَالَتْ
ائْذَنُوْا لَهُ فَقَالَ كَيْفَ تَجِدِيْنَكِ قَالَتْ بِخَيْرٍ إِنْ اتَّقَيْتُ
قَالَ فَأَنْتِ بِخَيْرٍ إِنْ شَاءَ اللهُ زَوْجَةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه
وسلم وَلَمْ يَنْكِحْ بِكْرًا غَيْرَكِ وَنَزَلَ عُذْرُكِ مِنْ السَّمَاءِ
وَدَخَلَ ابْنُ الزُّبَيْرِ خِلَافَهُ فَقَالَتْ دَخَلَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَأَثْنَى
عَلَيَّ وَوَدِدْتُ أَنِّي{كُنْتُ نِسْيًا مَّنْسِيًّا}.
ইব্নু
আবূ মুলাইকাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর ওফাতের পূর্বে তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য
অনুমতি চাইলেন। এ সময় তিনি [‘আয়িশাহ (রাঃ)] মৃত্যুশয্যায় শায়িত ছিলেন। তিনি বললেন,
আমি ভয় করছি, তিনি আমার কাছে এসে আমার সুখ্যাতি করবেন। তখন তাঁর [‘আয়িশাহ
(রাঃ)]-এর কাছে বলা হল, তিনি হলেন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর চাচাতো ভাই এবং সম্মানিত মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। তিনি বললেন, তবে
তাঁকে অনুমতি দাও। তিনি (এসে) জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কাছে আপনার অবস্থা কেমন লাগছে?
তিনি বললেন, আমি যদি নেক হই তবে ভালই আছি। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্
চাহেত আপনি নেকই আছেন। আপনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
সহধর্মিণী এবং তিনি আপনাকে ব্যতীত আর কোন কুমারীকে বিবাহ করেননি এবং আপনার
নির্দোষিতা আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। এরপর তাঁর পেছনে ইব্নু যুবায়র (রাঃ)
প্রবেশ করলেন। তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) আমার কাছে এসেছিলেন
এবং আমার সুখ্যাতি করেছেন। কিন্তু আমি এ-ই পছন্দ করি যে, আমি যেন লোকের স্মৃতির
পাতা থেকে পুরোপুরি মুছে যায়। [৩৭৭১] (আ.প্র. ৪৩৯২, ই.ফা. ৪৩৯৪)
৪৭৫৪
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ
بْنُ عَبْدِ الْمَجِيْدِ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنِ الْقَاسِمِ أَنَّ ابْنَ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ اسْتَأْذَنَ عَلَى عَائِشَةَ نَحْوَهُ وَلَمْ
يَذْكُرْ {نِسْيًا مَّنْسِيًّا}.
কাসিম
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর নিকট যাওয়ার জন্য অনুমতি চাইলেন। পরবর্তী অংশ উক্ত
হাদীসের অনুরূপ। এতে نِسْيًا مَنْسِيًّا (স্মৃতি থেকে বিস্মৃত হয়ে
যেতাম) অংশটি নেই। [৩৭৭১] (আ.প্র. ৪৩৯৩, ই.ফা. ৪৩৯৫)
৬৫/২৪/১০.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
আল্লাহ্ তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন (তোমরা যদি মু’মিন হও তবে) কখনও অনুরূপ আচরণের
পুনরাবৃত্তি করো না। (সূরাহ নূর ২৪/১৭)
৪৭৫৫
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنِ
الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهَا قَالَتْ جَاءَ حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ يَسْتَأْذِنُ عَلَيْهَا قُلْتُ
أَتَأْذَنِيْنَ لِهَذَا قَالَتْ أَوَلَيْسَ قَدْ أَصَابَهُ عَذَابٌ عَظِيْمٌ قَالَ
سُفْيَانُ تَعْنِيْ ذَهَابَ بَصَرِهِ فَقَالَ :
حَصَانٌ رَزَانٌ مَا تُزَنُّ بِرِيْبَةٍ وَتُصْبِحُ غَرْثَى مِنْ لُحُوْمِ الْغَوَافِلِ
قَالَتْ : لَكِنْ أَنْتَ.
حَصَانٌ رَزَانٌ مَا تُزَنُّ بِرِيْبَةٍ وَتُصْبِحُ غَرْثَى مِنْ لُحُوْمِ الْغَوَافِلِ
قَالَتْ : لَكِنْ أَنْتَ.
মাসরূক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, হাসান ইব্নু সাবিত এসে (তাঁর ঘরে প্রবেশের) অনুমতি চাইলেন। আমি বললাম, এ
লোককে কি আপনি অনুমতি প্রদান করবেন? তিনি (‘আয়িশাহ) (রাঃ) বললেন, তার উপর কি কঠোর
শাস্তি নেমে আসেনি? সুফ্ইয়ান (রাঃ) বলেন, এর দ্বারা ‘আয়িশাহ (রাঃ) তাঁর
দৃষ্টিশক্তি লোপ পাওয়ার কথা বুঝিয়েছেন। হাসান ইব্নু সাবিত ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর
প্রশংসা করে নিুের ছন্দ দু’টি পাঠ করলেন,
একজন পবিত্র মহিলা যার চরিত্রে কোন সন্দেহ করা হয় না।
তিনি সতীসাধ্বী মহিলাদের গোশ্ত ভক্ষণ থেকে মুক্ত অবস্থায় ভোরে ওঠে। [৪১৪৬] (আ.প্র. ৪৩৯৪, ই.ফা. ৪৩৯৬)
একজন পবিত্র মহিলা যার চরিত্রে কোন সন্দেহ করা হয় না।
তিনি সতীসাধ্বী মহিলাদের গোশ্ত ভক্ষণ থেকে মুক্ত অবস্থায় ভোরে ওঠে। [৪১৪৬] (আ.প্র. ৪৩৯৪, ই.ফা. ৪৩৯৬)
৬৫/২৪/১১.অধ্যায়ঃ
‘‘আল্লাহ্ তোমাদের জন্য
আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’’ (সূরাহ নূর
২৪/১৮)
৪৭৫৬
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ
أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ قَالَ
دَخَلَ حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ عَلَى عَائِشَةَ فَشَبَّبَ وَقَالَ :
حَصَانٌ رَزَانٌ مَا تُزَنُّ بِرِيْبَةٍ وَتُصْبِحُ غَرْثَى مِنْ لُحُوْمِ الْغَوَافِلِ
قَالَتْ : لَسْتَ كَذَاكَ قُلْتُ تَدَعِيْنَ مِثْلَ هَذَا يَدْخُلُ عَلَيْكِ وَقَدْ أَنْزَلَ اللهُ وَالَّذِيْ تَوَلَّى كِبْرَهُ مِنْهُمْ فَقَالَتْ وَأَيُّ عَذَابٍ أَشَدُّ مِنَ الْعَمَى وَقَالَتْ وَقَدْ كَانَ يَرُدُّ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
حَصَانٌ رَزَانٌ مَا تُزَنُّ بِرِيْبَةٍ وَتُصْبِحُ غَرْثَى مِنْ لُحُوْمِ الْغَوَافِلِ
قَالَتْ : لَسْتَ كَذَاكَ قُلْتُ تَدَعِيْنَ مِثْلَ هَذَا يَدْخُلُ عَلَيْكِ وَقَدْ أَنْزَلَ اللهُ وَالَّذِيْ تَوَلَّى كِبْرَهُ مِنْهُمْ فَقَالَتْ وَأَيُّ عَذَابٍ أَشَدُّ مِنَ الْعَمَى وَقَالَتْ وَقَدْ كَانَ يَرُدُّ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
মাসরূক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, হাস্সান ইব্নু সাবিত ‘আয়িশাহ (রাঃ) কাছে এসে নিচের শ্লোকটি আবৃত্তি করলেন।
তিনি একজন পবিত্র মহিলা যার চরিত্রে কোন সন্দেহ করা হয় না। তিনি সতীসাধ্বী
মহিলাদের গোশ্ত ভক্ষণ থেকে মুক্ত অবস্থায় ভোরে ওঠে। ‘আয়িশাহ (রহ.) বললেন, ‘তুমি তো
এরূপ নও।’ (মাসরূক বললেন) আমি বললাম, আপনি এমন এক ব্যক্তিকে কেন আপনার কাছে আসতে
দিলেন, যার সম্পর্কে আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন। আর যে ব্যক্তি এর বড় অংশ নিজের উপর
নিয়েছে, তার জন্য তো রয়েছে কঠিন শাস্তি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, ‘দৃষ্টিহীনতার চেয়ে
কঠিন শাস্তি আর কী হতে পারে? তিনি আরও বললেন, তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পক্ষ হতে জবাব দিতেন। [৪১৪৬] (আ.প্র. ৪৩৯৫, ই.ফা. ৪৩৯৭)
৬৫/২৪/১২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
{إِنَّ الَّذِيْنَ يُحِبُّوْنَ أَنْ تَشِيْعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ لا فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ - وَاللهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ ) وَلَوْلَا فَضْلُ اللهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُه” وَأَنَّ اللهَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ} تَشِيْعُ تَظْهَرُ وَقَوْلُهُ {وَلَا يَأْتَلِ أُولُوا الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يُّؤْتُوْآ أُولِي الْقُرْبٰى وَالْمَسٰكِيْنَ وَالْمُهٰجِرِيْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ - وَلْيَعْفُوْا وَلْيَصْفَحُوْا ط أَلَا تُحِبُّوْنَ أَنْ يَّغْفِرَ اللهُ لَكُمْ ط وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ}
‘যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ্ জানেন তোমরা জান না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেউ অব্যাহতি পেত না। আর আল্লাহ্ দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহ ত্যাগ করেছে, তাদের কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ্ তোমাদের ক্ষমা করেন? আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরাহ নূর ২৪/২২)
‘যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ্ জানেন তোমরা জান না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেউ অব্যাহতি পেত না। আর আল্লাহ্ দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহ ত্যাগ করেছে, তাদের কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ্ তোমাদের ক্ষমা করেন? আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরাহ নূর ২৪/২২)
৪৭৫৭
وَقَالَ أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ قَالَ
أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا ذُكِرَ مِنْ شَأْنِي الَّذِيْ
ذُكِرَ وَمَا عَلِمْتُ بِهِ قَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيَّ
خَطِيْبًا فَتَشَهَّدَ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ
ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ أَشِيْرُوْا عَلَيَّ فِيْ أُنَاسٍ أَبَنُوْا أَهْلِيْ
وَايْمُ اللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِيْ مِنْ سُوْءٍ وَأَبَنُوْهُمْ بِمَنْ
وَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ مِنْ سُوْءٍ قَطُّ وَلَا يَدْخُلُ بَيْتِيْ قَطُّ
إِلَّا وَأَنَا حَاضِرٌ وَلَا غِبْتُ فِيْ سَفَرٍ إِلَّا غَابَ مَعِيْ فَقَامَ
سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ فَقَالَ ائْذَنْ لِيْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنْ نَضْرِبَ
أَعْنَاقَهُمْ وَقَامَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي الْخَزْرَجِ وَكَانَتْ أُمُّ حَسَّانَ
بْنِ ثَابِتٍ مِنْ رَهْطِ ذَلِكَ الرَّجُلِ فَقَالَ كَذَبْتَ أَمَا وَاللهِ أَنْ
لَوْ كَانُوْا مِنَ الْأَوْسِ مَا أَحْبَبْتَ أَنْ تُضْرَبَ أَعْنَاقُهُمْ حَتَّى
كَادَ أَنْ يَكُوْنَ بَيْنَ الْأَوْسِ وَالْخَزْرَجِ شَرٌّ فِي الْمَسْجِدِ وَمَا
عَلِمْتُ فَلَمَّا كَانَ مَسَاءُ ذَلِكَ الْيَوْمِ خَرَجْتُ لِبَعْضِ حَاجَتِيْ
وَمَعِيْ أُمُّ مِسْطَحٍ فَعَثَرَتْ وَقَالَتْ تَعِسَ مِسْطَحٌ فَقُلْتُ أَيْ
أُمِّ تَسُبِّيْنَ ابْنَكِ وَسَكَتَتْ ثُمَّ عَثَرَتْ الثَّانِيَةَ فَقَالَتْ
تَعَسَ مِسْطَحٌ فَقُلْتُ لَهَا أَيْ أُمِّ أَتَسُبِّيْنَ ابْنَكِ فَسَكَتَتْ
ثُمَّ عَثَرَتْ الثَّالِثَةَ فَقَالَتْ تَعَسَ مِسْطَحٌ فَانْتَهَرْتُهَا
فَقَالَتْ وَاللهِ مَا أَسُبُّهُ إِلَّا فِيْكِ فَقُلْتُ فِيْ أَيِّ شَأْنِيْ
قَالَتْ فَبَقَرَتْ لِي الْحَدِيْثَ.
فَقُلْتُ وَقَدْ كَانَ هَذَا قَالَتْ نَعَمْ وَاللهِ فَرَجَعْتُ إِلَى بَيْتِيْ كَأَنَّ الَّذِيْ خَرَجْتُ لَهُ لَا أَجِدُ مِنْهُ قَلِيْلًا وَلَا كَثِيْرًا وَوُعِكْتُ فَقُلْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرْسِلْنِيْ إِلَى بَيْتِ أَبِيْ فَأَرْسَلَ مَعِي الْغُلَامَ فَدَخَلْتُ الدَّارَ فَوَجَدْتُ أُمَّ رُوْمَانَ فِي السُّفْلِ وَأَبَا بَكْرٍ فَوْقَ الْبَيْتِ يَقْرَأُ فَقَالَتْ أُمِّيْ مَا جَاءَ بِكِ يَا بُنَيَّةُ فَأَخْبَرْتُهَا وَذَكَرْتُ لَهَا الْحَدِيْثَ وَإِذَا هُوَ لَمْ يَبْلُغْ مِنْهَا مِثْلَ مَا بَلَغَ مِنِّيْ فَقَالَتْ يَا بُنَيَّةُ خَفِّفِيْ عَلَيْكِ الشَّأْنَ فَإِنَّهُ وَاللهِ لَقَلَّمَا كَانَتْ امْرَأَةٌ حَسْنَاءُ عِنْدَ رَجُلٍ يُحِبُّهَا لَهَا ضَرَائِرُ إِلَّا حَسَدْنَهَا وَقِيْلَ فِيْهَا وَإِذَا هُوَ لَمْ يَبْلُغْ مِنْهَا مَا بَلَغَ مِنِّيْ قُلْتُ وَقَدْ عَلِمَ بِهِ أَبِيْ قَالَتْ نَعَمْ قُلْتُ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ نَعَمْ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاسْتَعْبَرْتُ وَبَكَيْتُ فَسَمِعَ أَبُوْ بَكْرٍ صَوْتِيْ وَهُوَ فَوْقَ الْبَيْتِ يَقْرَأُ فَنَزَلَ فَقَالَ لِأُمِّيْ مَا شَأْنُهَا قَالَتْ بَلَغَهَا الَّذِيْ ذُكِرَ مِنْ شَأْنِهَا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ قَالَ أَقْسَمْتُ عَلَيْكِ أَيْ بُنَيَّةُ إِلَّا رَجَعْتِ إِلَى بَيْتِكِ فَرَجَعْتُ وَلَقَدْ جَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْتِيْ فَسَأَلَ عَنِّيْ خَادِمَتِيْ فَقَالَتْ لَا وَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهَا عَيْبًا إِلَّا أَنَّهَا كَانَتْ تَرْقُدُ حَتَّى تَدْخُلَ الشَّاةُ فَتَأْكُلَ خَمِيْرَهَا أَوْ عَجِيْنَهَا وَانْتَهَرَهَا بَعْضُ أَصْحَابِهِ فَقَالَ اصْدُقِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَسْقَطُوْا لَهَا بِهِ فَقَالَتْ سُبْحَانَ اللهِ وَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهَا إِلَّا مَا يَعْلَمُ الصَّائِغُ عَلَى تِبْرِ الذَّهَبِ الْأَحْمَرِ وَبَلَغَ الْأَمْرُ إِلَى ذَلِكَ الرَّجُلِ الَّذِيْ قِيْلَ لَهُ فَقَالَ سُبْحَانَ اللهِ وَاللهِ مَا كَشَفْتُ كَنَفَ أُنْثَى قَطُّ.
قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُتِلَ شَهِيْدًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ قَالَتْ وَأَصْبَحَ أَبَوَايَ عِنْدِيْ فَلَمْ يَزَالَا حَتَّى دَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ صَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ دَخَلَ وَقَدْ اكْتَنَفَنِيْ أَبَوَايَ عَنْ يَمِيْنِيْ وَعَنْ شِمَالِيْ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ يَا عَائِشَةُ إِنْ كُنْتِ قَارَفْتِ سُوْءًا أَوْ ظَلَمْتِ فَتُوْبِيْ إِلَى اللهِ فَإِنَّ اللهَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ مِنْ عِبَادِهِ قَالَتْ وَقَدْ جَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَهِيَ جَالِسَةٌ بِالْبَابِ فَقُلْتُ أَلَا تَسْتَحْيِ مِنْ هَذِهِ الْمَرْأَةِ أَنْ تَذْكُرَ شَيْئًا فَوَعَظَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَالْتَفَتُّ إِلَى أَبِيْ فَقُلْتُ لَهُ أَجِبْهُ قَالَ فَمَاذَا أَقُوْلُ فَالْتَفَتُّ إِلَى أُمِّيْ فَقُلْتُ أَجِيْبِيْهِ فَقَالَتْ أَقُوْلُ مَاذَا فَلَمَّا لَمْ يُجِيْبَاهُ تَشَهَّدْتُ فَحَمِدْتُ اللهَ وَأَثْنَيْتُ عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قُلْتُ أَمَّا بَعْدُ فَوَاللهِ لَئِنْ قُلْتُ لَكُمْ إِنِّيْ لَمْ أَفْعَلْ وَاللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَشْهَدُ إِنِّيْ لَصَادِقَةٌ مَا ذَاكَ بِنَافِعِيْ عِنْدَكُمْ لَقَدْ تَكَلَّمْتُمْ بِهِ وَأُشْرِبَتْهُ قُلُوْبُكُمْ وَإِنْ قُلْتُ إِنِّيْ قَدْ فَعَلْتُ وَاللهُ يَعْلَمُ أَنِّيْ لَمْ أَفْعَلْ لَتَقُوْلُنَّ قَدْ بَاءَتْ بِهِ عَلَى نَفْسِهَا وَإِنِّيْ وَاللهِ مَا أَجِدُ لِيْ وَلَكُمْ مَثَلًا وَالْتَمَسْتُ اسْمَ يَعْقُوْبَ فَلَمْ أَقْدِرْ عَلَيْهِ إِلَّا أَبَا يُوْسُفَ حِيْنَ قَالَ {فَصَبْرٌ جَمِيْلٌ وَّاللهُ الْمُسْتَعَانُ عَلٰى مَا تَصِفُوْنَ} وَأُنْزِلَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ سَاعَتِهِ فَسَكَتْنَا فَرُفِعَ عَنْهُ وَإِنِّيْ لَأَتَبَيَّنُ السُّرُوْرَ فِيْ وَجْهِهِ وَهُوَ يَمْسَحُ جَبِيْنَهُ وَيَقُوْلُ أَبْشِرِيْ يَا عَائِشَةُ فَقَدْ أَنْزَلَ اللهُ بَرَاءَتَكِ قَالَتْ وَكُنْتُ أَشَدَّ مَا كُنْتُ غَضَبًا فَقَالَ لِيْ أَبَوَايَ قُوْمِيْ إِلَيْهِ فَقُلْتُ لَا وَاللهِ لَا أَقُوْمُ إِلَيْهِ وَلَا أَحْمَدُهُ وَلَا أَحْمَدُكُمَا وَلَكِنْ أَحْمَدُ اللهَ الَّذِيْ أَنْزَلَ بَرَاءَتِيْ لَقَدْ سَمِعْتُمُوْهُ فَمَا أَنْكَرْتُمُوْهُ وَلَا غَيَّرْتُمُوْهُ وَكَانَتْ عَائِشَةُ تَقُوْلُ أَمَّا زَيْنَبُ ابْنَةُ جَحْشٍ فَعَصَمَهَا اللهُ بِدِيْنِهَا فَلَمْ تَقُلْ إِلَّا خَيْرًا وَأَمَّا أُخْتُهَا حَمْنَةُ فَهَلَكَتْ فِيْمَنْ هَلَكَ وَكَانَ الَّذِيْ يَتَكَلَّمُ فِيْهِ مِسْطَحٌ وَحَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ وَالْمُنَافِقُ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ وَهُوَ الَّذِيْ كَانَ يَسْتَوْشِيْهِ وَيَجْمَعُهُ وَهُوَ الَّذِيْ تَوَلَّى كِبْرَهُ مِنْهُمْ هُوَ وَحَمْنَةُ قَالَتْ فَحَلَفَ أَبُوْ بَكْرٍ أَنْ لَا يَنْفَعَ مِسْطَحًا بِنَافِعَةٍ أَبَدًا فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَلَا يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ} إِلَى آخِرِ الْآيَةِ يَعْنِيْ أَبَا بَكْرٍ {وَالسَّعَةِ أَنْ يُّؤْتُوْآ أُوْلِي الْقُرْبٰى وَالْمَسَاكِيْنَ} يَعْنِيْ مِسْطَحًا إِلَى قَوْلِهِ {أَلَا تُحِبُّوْنَ أَنْ يَّغْفِرَ اللهُ لَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ} حَتَّى قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ بَلَى وَاللهِ يَا رَبَّنَا إِنَّا لَنُحِبُّ أَنْ تَغْفِرَ لَنَا وَعَادَ لَهُ بِمَا كَانَ يَصْنَعُ.
فَقُلْتُ وَقَدْ كَانَ هَذَا قَالَتْ نَعَمْ وَاللهِ فَرَجَعْتُ إِلَى بَيْتِيْ كَأَنَّ الَّذِيْ خَرَجْتُ لَهُ لَا أَجِدُ مِنْهُ قَلِيْلًا وَلَا كَثِيْرًا وَوُعِكْتُ فَقُلْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرْسِلْنِيْ إِلَى بَيْتِ أَبِيْ فَأَرْسَلَ مَعِي الْغُلَامَ فَدَخَلْتُ الدَّارَ فَوَجَدْتُ أُمَّ رُوْمَانَ فِي السُّفْلِ وَأَبَا بَكْرٍ فَوْقَ الْبَيْتِ يَقْرَأُ فَقَالَتْ أُمِّيْ مَا جَاءَ بِكِ يَا بُنَيَّةُ فَأَخْبَرْتُهَا وَذَكَرْتُ لَهَا الْحَدِيْثَ وَإِذَا هُوَ لَمْ يَبْلُغْ مِنْهَا مِثْلَ مَا بَلَغَ مِنِّيْ فَقَالَتْ يَا بُنَيَّةُ خَفِّفِيْ عَلَيْكِ الشَّأْنَ فَإِنَّهُ وَاللهِ لَقَلَّمَا كَانَتْ امْرَأَةٌ حَسْنَاءُ عِنْدَ رَجُلٍ يُحِبُّهَا لَهَا ضَرَائِرُ إِلَّا حَسَدْنَهَا وَقِيْلَ فِيْهَا وَإِذَا هُوَ لَمْ يَبْلُغْ مِنْهَا مَا بَلَغَ مِنِّيْ قُلْتُ وَقَدْ عَلِمَ بِهِ أَبِيْ قَالَتْ نَعَمْ قُلْتُ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ نَعَمْ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاسْتَعْبَرْتُ وَبَكَيْتُ فَسَمِعَ أَبُوْ بَكْرٍ صَوْتِيْ وَهُوَ فَوْقَ الْبَيْتِ يَقْرَأُ فَنَزَلَ فَقَالَ لِأُمِّيْ مَا شَأْنُهَا قَالَتْ بَلَغَهَا الَّذِيْ ذُكِرَ مِنْ شَأْنِهَا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ قَالَ أَقْسَمْتُ عَلَيْكِ أَيْ بُنَيَّةُ إِلَّا رَجَعْتِ إِلَى بَيْتِكِ فَرَجَعْتُ وَلَقَدْ جَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْتِيْ فَسَأَلَ عَنِّيْ خَادِمَتِيْ فَقَالَتْ لَا وَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهَا عَيْبًا إِلَّا أَنَّهَا كَانَتْ تَرْقُدُ حَتَّى تَدْخُلَ الشَّاةُ فَتَأْكُلَ خَمِيْرَهَا أَوْ عَجِيْنَهَا وَانْتَهَرَهَا بَعْضُ أَصْحَابِهِ فَقَالَ اصْدُقِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَسْقَطُوْا لَهَا بِهِ فَقَالَتْ سُبْحَانَ اللهِ وَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهَا إِلَّا مَا يَعْلَمُ الصَّائِغُ عَلَى تِبْرِ الذَّهَبِ الْأَحْمَرِ وَبَلَغَ الْأَمْرُ إِلَى ذَلِكَ الرَّجُلِ الَّذِيْ قِيْلَ لَهُ فَقَالَ سُبْحَانَ اللهِ وَاللهِ مَا كَشَفْتُ كَنَفَ أُنْثَى قَطُّ.
قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُتِلَ شَهِيْدًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ قَالَتْ وَأَصْبَحَ أَبَوَايَ عِنْدِيْ فَلَمْ يَزَالَا حَتَّى دَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ صَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ دَخَلَ وَقَدْ اكْتَنَفَنِيْ أَبَوَايَ عَنْ يَمِيْنِيْ وَعَنْ شِمَالِيْ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ يَا عَائِشَةُ إِنْ كُنْتِ قَارَفْتِ سُوْءًا أَوْ ظَلَمْتِ فَتُوْبِيْ إِلَى اللهِ فَإِنَّ اللهَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ مِنْ عِبَادِهِ قَالَتْ وَقَدْ جَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَهِيَ جَالِسَةٌ بِالْبَابِ فَقُلْتُ أَلَا تَسْتَحْيِ مِنْ هَذِهِ الْمَرْأَةِ أَنْ تَذْكُرَ شَيْئًا فَوَعَظَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَالْتَفَتُّ إِلَى أَبِيْ فَقُلْتُ لَهُ أَجِبْهُ قَالَ فَمَاذَا أَقُوْلُ فَالْتَفَتُّ إِلَى أُمِّيْ فَقُلْتُ أَجِيْبِيْهِ فَقَالَتْ أَقُوْلُ مَاذَا فَلَمَّا لَمْ يُجِيْبَاهُ تَشَهَّدْتُ فَحَمِدْتُ اللهَ وَأَثْنَيْتُ عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قُلْتُ أَمَّا بَعْدُ فَوَاللهِ لَئِنْ قُلْتُ لَكُمْ إِنِّيْ لَمْ أَفْعَلْ وَاللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَشْهَدُ إِنِّيْ لَصَادِقَةٌ مَا ذَاكَ بِنَافِعِيْ عِنْدَكُمْ لَقَدْ تَكَلَّمْتُمْ بِهِ وَأُشْرِبَتْهُ قُلُوْبُكُمْ وَإِنْ قُلْتُ إِنِّيْ قَدْ فَعَلْتُ وَاللهُ يَعْلَمُ أَنِّيْ لَمْ أَفْعَلْ لَتَقُوْلُنَّ قَدْ بَاءَتْ بِهِ عَلَى نَفْسِهَا وَإِنِّيْ وَاللهِ مَا أَجِدُ لِيْ وَلَكُمْ مَثَلًا وَالْتَمَسْتُ اسْمَ يَعْقُوْبَ فَلَمْ أَقْدِرْ عَلَيْهِ إِلَّا أَبَا يُوْسُفَ حِيْنَ قَالَ {فَصَبْرٌ جَمِيْلٌ وَّاللهُ الْمُسْتَعَانُ عَلٰى مَا تَصِفُوْنَ} وَأُنْزِلَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ سَاعَتِهِ فَسَكَتْنَا فَرُفِعَ عَنْهُ وَإِنِّيْ لَأَتَبَيَّنُ السُّرُوْرَ فِيْ وَجْهِهِ وَهُوَ يَمْسَحُ جَبِيْنَهُ وَيَقُوْلُ أَبْشِرِيْ يَا عَائِشَةُ فَقَدْ أَنْزَلَ اللهُ بَرَاءَتَكِ قَالَتْ وَكُنْتُ أَشَدَّ مَا كُنْتُ غَضَبًا فَقَالَ لِيْ أَبَوَايَ قُوْمِيْ إِلَيْهِ فَقُلْتُ لَا وَاللهِ لَا أَقُوْمُ إِلَيْهِ وَلَا أَحْمَدُهُ وَلَا أَحْمَدُكُمَا وَلَكِنْ أَحْمَدُ اللهَ الَّذِيْ أَنْزَلَ بَرَاءَتِيْ لَقَدْ سَمِعْتُمُوْهُ فَمَا أَنْكَرْتُمُوْهُ وَلَا غَيَّرْتُمُوْهُ وَكَانَتْ عَائِشَةُ تَقُوْلُ أَمَّا زَيْنَبُ ابْنَةُ جَحْشٍ فَعَصَمَهَا اللهُ بِدِيْنِهَا فَلَمْ تَقُلْ إِلَّا خَيْرًا وَأَمَّا أُخْتُهَا حَمْنَةُ فَهَلَكَتْ فِيْمَنْ هَلَكَ وَكَانَ الَّذِيْ يَتَكَلَّمُ فِيْهِ مِسْطَحٌ وَحَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ وَالْمُنَافِقُ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ وَهُوَ الَّذِيْ كَانَ يَسْتَوْشِيْهِ وَيَجْمَعُهُ وَهُوَ الَّذِيْ تَوَلَّى كِبْرَهُ مِنْهُمْ هُوَ وَحَمْنَةُ قَالَتْ فَحَلَفَ أَبُوْ بَكْرٍ أَنْ لَا يَنْفَعَ مِسْطَحًا بِنَافِعَةٍ أَبَدًا فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَلَا يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ} إِلَى آخِرِ الْآيَةِ يَعْنِيْ أَبَا بَكْرٍ {وَالسَّعَةِ أَنْ يُّؤْتُوْآ أُوْلِي الْقُرْبٰى وَالْمَسَاكِيْنَ} يَعْنِيْ مِسْطَحًا إِلَى قَوْلِهِ {أَلَا تُحِبُّوْنَ أَنْ يَّغْفِرَ اللهُ لَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ} حَتَّى قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ بَلَى وَاللهِ يَا رَبَّنَا إِنَّا لَنُحِبُّ أَنْ تَغْفِرَ لَنَا وَعَادَ لَهُ بِمَا كَانَ يَصْنَعُ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন আমার সম্পর্কে আলোচনা চলছিল যা রটনা হয়েছে এবং আমি এ সম্পর্কে কিছুই
জানতাম না। তখন আমার ব্যাপারে ভাষণ দিতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) দাঁড়ালেন। তিনি প্রথমে কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করলেন। তারপর আল্লাহ্র
প্রতি যথাযোগ্য হাম্দ ও সানা পাঠ করলেন। এরপরে বললেন, হে মুসলিমগণ! যে সকল লোক
আমার স্ত্রী সম্পর্কে অপবাদ দিয়েছে, তাদের ব্যাপারে আমাকে পরামর্শ দাও। আল্লাহ্র
কসম! আমি আমার পরিবারের ব্যাপারে মন্দ কিছুই জানি না। তাঁরা এমন এক ব্যক্তির নাম
উল্লেখ করেছে, আল্লাহ্র কসম, তার ব্যাপারেও আমি কখনও খারাপ কিছু জানি না এবং সে
কখনও আমার অনুপস্থিতিতে আমার ঘরে প্রবেশ করে না এবং আমি যখন কোন সফরে গিয়েছি সেও
আমার সঙ্গে সফরে গিয়েছে। সা‘দ ইব্নু উবাদা দাঁড়িয়ে বললেন, আমাকে তাদের শিরোচ্ছেদ
করার অনুমতি দিন। এর মধ্যে বানী খাযরাজ গোত্রের এক ব্যক্তি, যে হাস্সান ইব্নু
সাবিতের মাতার আত্মীয় ছিল, সে দাঁড়িয়ে বলল, তুমি মিথ্যা বলেছ, জেনে রাখ, আল্লাহ্র
কসম! যদি সে (অপবাদকারী) ব্যক্তিরা আউস্ গোত্রের হত, তাহলে তুমি শিরোচ্ছেদ করতে
পছন্দ করতে না। আউস ও খাযরাজের মধ্যে মসজিদেই একটা দুর্ঘটনা ঘটার অবস্থা দেখা দিল।
আর আমি এ বিষয় কিছুই জানি না। সেদিন সন্ধ্যায় যখন আমি আমার প্রাকৃতিক প্রয়োজনে
বাইরে গেলাম, তখন উম্মু মিসতাহ্ আমার সঙ্গে ছিলেন এবং তিনি হোঁচট খেয়ে বললেন,
‘মিস্তাহ্ ধ্বংস হোক’! আমি বললাম, হে উম্মু মিসতাহ! তুমি তোমার সন্তানকে গালি
দিচ্ছ? তিনি নীরব থাকলেন। তারপর দ্বিতীয় হোঁচট খেয়ে বললেন, ‘মিসতাহ্ ধ্বংস হোক’।
আমি তাকে বললাম, ‘তুমি তোমার সন্তানকে গালি দিচ্ছ?’ তিনি (উম্মু মিসতাহ্) তৃতীয়বার
পড়ে গিয়ে বললেন, ‘মিসতাহ্ ধ্বংস হোক’। আমি এবারে তাঁকে ধমক দিলাম। তিনি বললেন,
আল্লাহ্র কসম! আমি তাকে তোমার কারণেই গালি দিচ্ছি। আমি বললাম আমার ব্যাপারে?
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তখন তিনি আমার কাছে সব ঘটনা বিস্তারিত বললেন। আমি বললাম, তাই
হচ্ছে নাকি? তিনি বললেন, হাঁ আল্লাহ্র কসম! এরপর আমি আমার ঘরে ফিরে এলাম এবং যে
প্রয়োজনে বাইরে গিয়েছিলাম তা একেবারেই ভুলে গেলাম। এরপর আমি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লাম
এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বললাম যে, আমাকে আমার পিতার
বাড়িতে পাঠিয়ে দিন। তিনি একটি ছেলেকে আমার সঙ্গে দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। আমি যখন ঘরে
প্রবেশ করলাম, তখন উম্মু রূমানকে নিচে দেখতে পেলাম এবং আবূ বাকর (রাঃ) ঘরের ওপরে
পড়ছিলেন। আমার আম্মা জিজ্ঞেস করলেন, হে বৎস! কিসে তোমাকে নিয়ে এসেছে? আমি তাকে
সংবাদ দিলাম এবং তাঁর কাছে ঘটনা বললাম। এ ঘটনা তার ওপর তেমন প্রভাব বিস্তার করেনি,
যেমন আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে। তিনি বললেন, হে বৎস! এটাকে তুমি হাল্কাভাবে
গ্রহণ কর, কেননা, এমন সুন্দরী নারী কমই আছে, যার স্বামী তাঁকে ভালবাসে আর তার সতীনরা
তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয় না এবং তার বিরুদ্ধে কিছু বলে না। বস্তুত তার ওপর ঘটনাটি
অতখানি প্রভাব বিস্তার করেনি যতখানি আমার উপর করেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমার
আব্বা [আবূ বাকর (রাঃ)] কি এ ঘটনা জেনেছেন? তিনি জবাব দিলেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস
করলাম, আর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও কি? তিনি জবাব দিলেন
হ্যাঁ। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)ও এ ঘটনা জানেন। তখন আমি
অশ্র“ ঝরিয়ে কাঁদতে লাগলাম। আবূ বকর (রাঃ) আমার কান্না শুনতে পেলেন। তখন তিনি ঘরের
ওপরে পড়ছিলেন। তিনি নিচে নেমে আসলেন এবং আমার আম্মাকে জিজ্ঞেস করলেন, তার কী
হয়েছে? তিনি বললেন, তার সম্পর্কে যা রটেছে তা তার গোচরীভূত হয়েছে। এতে আবূ বাকরের
চোখের পানি ঝরতে লাগল। তিনি বললেন, হে বৎস! আমি তোমাকে কসম দিয়ে বলছি, তুমি তোমার
ঘরে ফিরে যাও। আমি আমার ঘরে ফিরে এলাম। তারপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) আমার ঘরে আসলেন। তিনি আমার খাদিমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সে
বলল, আল্লাহ্র কসম, আমি এ ব্যতীত তাঁর কোন দোষ জানি না যে, তিনি ঘুমিয়ে পড়তেন এবং
ছাগল এসে তাঁর খামির অথবা বললেন, গোলা আটা খেয়ে যেত। তখন কয়েকজন সহাবী তাকে ধমক
দিয়ে বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে সত্য কথা বল।
এমনকি তাঁরা তার নিকট ঘটনা খুলে বললেন। তখন সে বলল, সুবহান আল্লাহ্, আল্লাহ্র
কসম! আমি তাঁর ব্যাপারে এর চেয়ে অধিক কিছু জানি না, যা একজন স্বর্ণকার তার এক
টুকরা লাল খাঁটি স্বর্ণ সম্পর্কে জানে। এ ঘটনা সে ব্যক্তির কাছেও পৌঁছল যার
সম্পর্কে এ অভিযোগ উঠেছে। তখন তিনি বললেন, সুবহান আল্লাহ্! আল্লাহ্র কসম, আমি
কখনও কোন মহিলার পর্দা খুলিনি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, পরবর্তী সময়ে এ (অভিযুক্ত)
লোকটি আল্লাহ্র রাস্তায় শহীদ রূপে নিহত হন। তিনি বলেন, ভোর বেলায় আমার আব্বা ও
আম্মা আমার কাছে এলেন। তাঁরা এতক্ষণ থাকলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) আসরের সলাত আদায় করে আমার কাছে এলেন। এ সময় আমার ডানে ও বামে আমার
আব্বা আমাকে ঘিরে বসা ছিলেন। তিনি [রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)] আল্লাহ্ তা‘আলার হাম্দ ও সানা পাঠ করে বললেন, হে ‘আয়িশাহ! তুমি যদি
কোন গুনাহ্র কাজ বা অন্যায় করে থাক তবে আল্লাহ্র কাছে তাওবা কর, কেননা, আল্লাহ্
তাঁর বান্দার তাওবা কবূল করে থাকেন। তখন জনৈকা আনসারী মহিলা দরজার কাছে বসা ছিল।
আমি বললাম, আপনি কি এ মহিলাকেও লজ্জা করছেন না, এসব কিছু বলতে? তবুও রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে নাসীহাত করলেন। তখন আমি আমার আব্বার দিকে
লক্ষ্য করে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জবাব
দিন। তিনি বললেন, আমি কী বলব? এরপরে আমি আম্মার দিকে লক্ষ্য করে বললাম, আপনি
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জবাব দিন। তিনিও বললেন, আমি কী
বলব? যখন তাঁরা কেউই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কোন জবাব
দিলেন না, তখন আমি কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করে আল্লাহ্র যথোপযুক্ত হাম্দ ও সানা পাঠ
করলাম। এরপর বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি যদি বলি যে, আমি এ কাজ করিনি এবং আমি যে
সত্যবাদী এ সম্পর্কে আল্লাহ্ই সাক্ষী, তবে তা আপনাদের নিকট আমার কোন উপকারে আসবে
না। কেননা, এ ব্যাপারটি আপনারা পরস্পরে বলাবলি করেছেন এবং তা আপনাদের অন্তরে
বদ্ধমূল হয়ে গেছে। আর আমি যদি আপনাদের বলি, আমি তা করেছি অথচ আল্লাহ্ জানেন যে আমি
এ কাজ করিনি, তবে আপনারা অবশ্যই বলবেন যে, সে তার নিজের দোষ নিজেই স্বীকার করেছে।
আল্লাহ্র কসম! আমি আমার এবং আপনাদের জন্য আর কোন দৃষ্টান্ত পাচ্ছি না। তখন আমি
ইয়াকূব (আ.)-এর নাম স্মরণ করার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারিনি-তাই বললাম, যখন ইউসুফ
(‘আ.)-এর পিতার অবস্থা ব্যতীত, যখন তিনি বলেছিলেন, (তোমরা ইউসুফ সম্পর্কে যা বলছ
তার প্রেক্ষিতে) পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ্ই আমার
সাহায্যকারী। ঠিক এ সময়ই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট
ওয়াহী অবতীর্ণ হল। আমরা সবাই নীরব রইলাম। ওয়াহী শেষ হলে আমি রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর চেহারায় খুশীর নমুনা দেখতে পেলাম। তিনি তাঁর
কপাল থেকে ঘাম মুছতে মুছতে বলছিলেন, হে ‘আয়িশাহ! তোমার জন্য খোশখবর! আল্লাহ্ তোমার
পবিত্রতা ঘোষণা করেছেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ সময় আমি অত্যন্ত রাগান্বিত ছিলাম।
আমার আব্বা ও আম্মা বললেন, ‘তুমি উঠে তাঁর কাছে যাও’, (এবং তার শুকরিয়া আদায় কর)।
আমি বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমি তাঁর দিকে যাব না এবং তাঁর শুক্রিয়া আদায় করব না।
আর আপনাদেরও শুকরিয়া আদায় করব না। কিন্তু আমি একমাত্র আল্লাহ্র প্রশংসা করব, যিনি
আমার পবিত্রতা ঘোষণা করেছেন। আপনারা (অপবাদ রটনা) শুনছেন কিন্তু তা অস্বীকার
করেননি এবং তার পাল্টা ব্যবস্থাও গ্রহণ করেননি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) আরও বলেন, জয়নাব
বিন্তে জাহাশকে আল্লাহ্ তাঁর দীনদারীর কারণে তাঁকে রক্ষা করেছেন। তিনি (আমার
ব্যাপারে) ভাল ব্যতীত কিছুই বলেননি। কিন্তু তার বোন হামনা ধ্বংসপ্রাপ্তদের সঙ্গে
নিজেও ধ্বংস হল। যারা এই ব্যাপারে কটুক্তি করত তাদের মধ্যে ছিল মিস্তাহ্, হাস্সান
ইব্নু সাবিত এবং মুনাফিক ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু উবাই। সে-ই এ সংবাদ সংগ্রহ করে ছড়াত।
আর পুরুষদের মধ্যে সে এবং হামনাই এ ব্যাপারে বিরাট ভূমিকা পালন করত। রাবী বলেন,
তখন আবূ বাকর (রাঃ) কখনও মিসতাহ্কে কোন প্রকার উপকার করবেন না বলে কসম খেলেন। এ
প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা আয়াত অবতীর্ণ করলেন, “তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও
প্রাচুর্যের অধিকারী অর্থাৎ (আবূ বাকর) তারা যেন কসম না করে যে তারা আত্মীয়-স্বজন
ও অভাবগ্রস্তকে অর্থাৎ মিসতাহ্কে কিছুই দেবে না। তোমরা কি চাও না আল্লাহ্
তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” আবূ বাকর (রাঃ) বললেন,
হাঁ আল্লাহ্র কসম! হে আমাদের রব! আমরা অবশ্যই এ চাই যে, আপনি আমাদের ক্ষমা করে
দিবেন। তারপর আবূ বাকর (রাঃ) আবার মিস্তাহকে আগের মত আচরণ করতে লাগলেন। [২৫৯৩]
৬৫/২৪/১৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ এবং
তারা যেন নিজেদের বক্ষদেশের ওপর ওড়নার আবরণ ফেলে রাখে। (সূরাহ নূর ২৪/৩১)
৪৭৫৮
وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ شَبِيْبٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ
يُوْنُسَ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا
قَالَتْ يَرْحَمُ اللهُ نِسَاءَ الْمُهَاجِرَاتِ الْأُوَلَ لَمَّا أَنْزَلَ اللهُ
{وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوْبِهِنَّ} شَقَّقْنَ مُرُوْطَهُنَّ
فَاخْتَمَرْنَ بِهَا
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্
তা‘আলা প্রাথমিক যুগের মুহাজির মহিলাদের উপর রহম করুন, যখন আল্লাহ্ তা‘আলা এ আয়াত
“তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন ওড়না দ্বারা আবৃত করে” অবতীর্ণ করলেন, তখন তারা নিজ
চাদর ছিঁড়ে তা দিয়ে মুখমণ্ডল ঢাকল। [৪৭৫৯] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)
৪৭৫৯
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ نَافِعٍ
عَنِ الْحَسَنِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ أَنَّ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهَا كَانَتْ تَقُوْلُ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ
{وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوْبِهِنَّ} أَخَذْنَ أُزْرَهُنَّ
فَشَقَّقْنَهَا مِنْ قِبَلِ الْحَوَاشِيْ فَاخْتَمَرْنَ بِهَا.
সফীয়্যাহ
বিন্তে শাইবাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলতেন, যখন এ আয়াত “তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন ওড়না দ্বারা আবৃত করে”
অবতীর্ণ হল তখন মুহাজির মহিলারা তাদের তহবন্দের পার্শ্ব ছিঁড়ে তা দিয়ে মুখমণ্ডল
ঢাকতে লাগল। [৪৭৫৮] (আ.প্র. ৪৩৯৬, ই.ফা. ৪৩৯৮)
৬৫/২৫/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
সূরাহ (২৫) : আল-ফুরক্বান
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, هَبَاءً مَنْثُوْرًا যা কিছু বাতাস উড়িয়ে নেয়। مَدَّ الظِّلَّ ফজরের উদয় থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়। سَاكِنًا উপরস্থিত। عَلَيْهِ دَلِيْلًا সূর্যোদয়। خِلْفَةً যার রাতের ‘আমাল ছুটে যায়, সে তা দিনে আদায় করে আর যার দিনের কাজ ছুটে যায়, সে তা রাতে আদায় করে। হাসান বলেন, هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَاআল্লাহর আনুগত্যে; মু’মিনের চোখে এ ব্যতীত আর কিছু আনন্দদায়ক নয় যে, সে তার প্রিয়জনকে পায় আল্লাহর অনুগত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, ثُبُوْرًاধ্বংস। কেউ বলেন, السَّعِيْرُ পুংলিঙ্গ, এবং التَّسَعُّرُ ও الاضْطِرَامُতীব্রভাবে, অগ্নি প্রজ্বলিত হওয়া। تُمْلٰى عَلَيْهِ তার প্রতি পড়া হয়। এ শব্দ أَمْلَيْتُ অথবা وَأَمْلَلْتُ থেকে নির্গত। الرَّسُّ খণি, এর বহুবচনرِسَاسٌ। مَا يَعْبَأُ যা গ্রাহ্য করা না হয়। غَرَامًا ধ্বংস। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, وَعَتَوْا তারা অবাধ্য হয়েছে। ইবনু ‘উয়াইনাহ বলেন, عَاتِيَةٍ নিয়ন্ত্রণকারীর নিয়ন্ত্রণ লঙ্ঘন করেছে।
{الَّذِيْنَ يُحْشَرُوْنَ عَلٰى وُجُوْهِهِمْ إِلٰى جَهَنَّمَ أُولٰٓئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا وَّأَضَلُّ سَبِيْلًا}
যাদেরকে নিজেদের মুখের উপর ভর করিয়ে জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে, তাদেরই স্থান হবে নিকৃষ্ট এবং পথের দিক দিয়ে তারা হবে ভ্রষ্টতম। (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৩৪)
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, هَبَاءً مَنْثُوْرًا যা কিছু বাতাস উড়িয়ে নেয়। مَدَّ الظِّلَّ ফজরের উদয় থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়। سَاكِنًا উপরস্থিত। عَلَيْهِ دَلِيْلًا সূর্যোদয়। خِلْفَةً যার রাতের ‘আমাল ছুটে যায়, সে তা দিনে আদায় করে আর যার দিনের কাজ ছুটে যায়, সে তা রাতে আদায় করে। হাসান বলেন, هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَاআল্লাহর আনুগত্যে; মু’মিনের চোখে এ ব্যতীত আর কিছু আনন্দদায়ক নয় যে, সে তার প্রিয়জনকে পায় আল্লাহর অনুগত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, ثُبُوْرًاধ্বংস। কেউ বলেন, السَّعِيْرُ পুংলিঙ্গ, এবং التَّسَعُّرُ ও الاضْطِرَامُতীব্রভাবে, অগ্নি প্রজ্বলিত হওয়া। تُمْلٰى عَلَيْهِ তার প্রতি পড়া হয়। এ শব্দ أَمْلَيْتُ অথবা وَأَمْلَلْتُ থেকে নির্গত। الرَّسُّ খণি, এর বহুবচনرِسَاسٌ। مَا يَعْبَأُ যা গ্রাহ্য করা না হয়। غَرَامًا ধ্বংস। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, وَعَتَوْا তারা অবাধ্য হয়েছে। ইবনু ‘উয়াইনাহ বলেন, عَاتِيَةٍ নিয়ন্ত্রণকারীর নিয়ন্ত্রণ লঙ্ঘন করেছে।
{الَّذِيْنَ يُحْشَرُوْنَ عَلٰى وُجُوْهِهِمْ إِلٰى جَهَنَّمَ أُولٰٓئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا وَّأَضَلُّ سَبِيْلًا}
যাদেরকে নিজেদের মুখের উপর ভর করিয়ে জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে, তাদেরই স্থান হবে নিকৃষ্ট এবং পথের দিক দিয়ে তারা হবে ভ্রষ্টতম। (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৩৪)
৪৭৬০
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ بْنُ
مُحَمَّدٍ الْبَغْدَادِيُّ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ قَتَادَةَ حَدَّثَنَا أَنَسُ
بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَجُلًا قَالَ يَا نَبِيَّ اللهِ يُحْشَرُ
الْكَافِرُ عَلَى وَجْهِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ أَلَيْسَ الَّذِيْ أَمْشَاهُ
عَلَى الرِّجْلَيْنِ فِي الدُّنْيَا قَادِرًا عَلَى أَنْ يُمْشِيَهُ عَلَى
وَجْهِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ قَتَادَةُ بَلَى وَعِزَّةِ رَبِّنَا.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! ক্বিয়ামাতের
দিন কাফেরদের মুখে ভর করে চলা অবস্থায় একত্রিত করা হবে? তিনি বললেন, যিনি এ
দুনিয়ায় তাকে দু’পায়ের উপর চালাতে পারছেন, তিনি কি ক্বিয়ামাতের দিন মুখে ভর করে
তাকে চালাতে পারবেন না? ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, নিশ্চয়ই, আমার রবের ইজ্জতের কসম!
[৬৫২৩; মুসলিম ৫০/১১, হাঃ ২৮০৬] (আ.প্র. ৪৩৯৭, ই.ফা. ৪৩৯৯)
৬৫/২৫/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
والذين لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ إلٰهًا اٰخَرَ وَلَا يَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُوْنَ - وَمَنْ يَّفْعَلْ ذٰلِكَ يَلْقَ أَثَامًا لا} (الفرقان:68)
আর তারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন উপাস্যের ‘ইবাদাত করে না; আল্লাহ যার হত্যা হারাম করেছেন সঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যে এরূপ করবে সে তো কঠিন আযাবের সম্মুখীন হবেই। (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৬৮)
আর তারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন উপাস্যের ‘ইবাদাত করে না; আল্লাহ যার হত্যা হারাম করেছেন সঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যে এরূপ করবে সে তো কঠিন আযাবের সম্মুখীন হবেই। (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৬৮)
৪৭৬১
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ
مَنْصُوْرٌ وَسُلَيْمَانُ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ أَبِيْ مَيْسَرَةَ عَنْ عَبْدِ
اللهِ ح قَالَ وَحَدَّثَنِيْ وَاصِلٌ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَأَلْتُ أَوْ سُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم أَيُّ الذَّنْبِ عِنْدَ اللهِ أَكْبَرُ قَالَ أَنْ تَجْعَلَ للهِ نِدًّا
وَهُوَ خَلَقَكَ قُلْتُ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ خَشْيَةَ
أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ قُلْتُ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ أَنْ تُزَانِيَ بِحَلِيْلَةِ
جَارِكَ قَالَ وَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ تَصْدِيْقًا لِقَوْلِ رَسُوْلِ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ {وَسَلَّمَ وَالَّذِيْنَ لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ إِلَهًا
اٰخَرَ وَلَا يَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ
وَلَا يَزْنُوْنَ}
‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম,
অথবা অন্য কেউ জিজ্ঞেস করলো, আল্লাহ্র নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ্ কোনটি? তিনি বললেন,
কাউকে আল্লাহ্র সমকক্ষ স্থির করা, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি জিজ্ঞেস
করলাম, এরপর কোনটি? তিনি জবাব দিলেন, তোমার সন্তানকে এ আশংকায় হত্যা করা যে, তারা
তোমার খাদ্যে ভাগ বসাবে। আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন,এরপর হচ্ছে তোমার
প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করা। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এ কথার সমর্থনে এ আয়াত অবতীর্ণ হয় “এবং তারা
আল্লাহ্র সঙ্গে কোন ইলাহ্কে আহ্বান করে না। আল্লাহ্ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন,
যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না।” [৪৪৭৭] (আ.প্র. ৪৩৯৮, ই.ফা. ৪৪০০)
৪৭৬২
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ
يُوْسُفَ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِي الْقَاسِمُ بْنُ
أَبِيْ بَزَّةَ أَنَّهُ سَأَلَ سَعِيْدَ بْنَ جُبَيْرٍ هَلْ لِمَنْ قَتَلَ
مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا مِنْ تَوْبَةٍ فَقَرَأْتُ {عَلَيْهِ وَلَا يَقْتُلُوْنَ
النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ} فَقَالَ سَعِيْدٌ
قَرَأْتُهَا عَلَى ابْنِ عَبَّاسٍ كَمَا قَرَأْتَهَا عَلَيَّ فَقَالَ هَذِهِ
مَكِّيَّةٌ نَسَخَتْهَا آيَةٌ مَدَنِيَّةٌ الَّتِيْ فِيْ سُوْرَةِ النِّسَاءِ.
কাসিম
ইব্নু আবূ বাযযা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
সা‘ঈদ ইব্নু যুবায়র (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, যদি কেউ কোন মু’মিন ব্যক্তিকে
ইচ্ছাবশতঃ হত্যা করে, তবে কি তার জন্য তাওবা আছে? আমি তাঁকে এ আয়াত পাঠ করে
শোনালাম عَلَيْهِ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ “আল্লাহ্
যার হত্যা নিষেধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না।” সা‘ঈদ (রাঃ) বললেন,
তুমি যে আয়াত আমার সামনে পড়লে, আমিও এমনিভাবে ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সামনে এ
আয়াত পড়েছিলাম। তখন তিনি বললেন, এ আয়াতটি মাক্কী। সূরাহ নিসার মধ্যে মাদানী আয়াতটি
একে রহিত করে দিয়েছে। [৩৮৫৫] (আ.প্র. ৪৩৯৯, ই.ফা. ৪৪০১)
৪৭৬৩
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ عَنِ الْمُغِيْرَةِ بْنِ النُّعْمَانِ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ
اخْتَلَفَ أَهْلُ الْكُوْفَةِ فِيْ قَتْلِ الْمُؤْمِنِ فَرَحَلْتُ فِيْهِ إِلَى
ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ نَزَلَتْ فِيْ آخِرِ مَا نَزَلَ وَلَمْ يَنْسَخْهَا
شَيْءٌ.
সা‘ঈদ
ইব্নু যুবায়র (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মু’মিনের হত্যার ব্যাপারে কূফাবাসী মতভেদে লিপ্ত হল। আমি (এ ব্যাপারে) ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তখন তিনি বললেন, (মু’মিনের হত্যা সম্পর্কিত) এ আয়াত
সর্বশেষে অবতীর্ণ হয়েছে। একে অন্য কিছু রহিত করেনি। [৩৮৫৫] (আ.প্র. ৪৪০০, ই.ফা.
৪৪০২)
[১] শির্কের চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের যে কোন গুনাহ আল্লাহ
তা‘আলা ইচ্ছে করলে ক্ষমা করে থাকেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদাহ হচ্ছে-শিরকের
চেয়ে নিম্নমানের গুনাহর কারণে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে না। উল্লেখ্য যে, শিরকের চেয়েও
উপরের স্তরের গুনাহ রয়েছে যেগুলো চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবার আরও শক্ত কারণ। আর সেগুলো
হচ্ছে, কুফর তথা আল্লাহকে অস্বীকার করা, তাকযীব তথা মিথ্যা প্রতিপন্ন করা, আল্লাহকে
মিথ্যাবাদী বলা, তাঁর অস্তিত্ব অস্বীকার করা ইত্যাদি কাজগুলো শিরকের চেয়েও বড় গুনাহ।
(তাফসীর ইবনু উসাইমিন ও তাঁর ফাতাওয়া গ্রন্থ ১২নং খন্ড ১৩৫-১৩৬ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য)
৪৭৬৪
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مَنْصُوْرٌ عَنْ
سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {فَجَزَآؤُهُ جَهَنَّمُ} قَالَ لَا تَوْبَةَ لَهُ وَعَنْ
قَوْلِهِ جَلَّ ذِكْرُهُ {لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ إِلَهًا اٰخَرَ} قَالَ
كَانَتْ هَذِهِ فِي الْجَاهِلِيَّةِ.
সা‘ঈদ
ইব্নু যুবায়র (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী ঃ فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ
(তাদের পরিণতি জাহান্নাম) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তার জন্য তাওবাহর
সুযোগ নেই। এরপরে আমি আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী ঃ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ
সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এ আয়াত মুশরিকদের ব্যাপারে (নাযিল
হয়েছে)। [৩৮৫৫] (আ.প্র. ৪৪০১, ই.ফা. ৪৪০৩)
৬৫/২৫/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
ক্বিয়ামাতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং তথায় সে চিরকাল আপমানিত অবস্থায়
থাকবে। (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৬৯)
৪৭৬৫
سَعْدُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ مَنْصُوْرٍ
عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قَالَ ابْنُ أَبْزَى سَلْ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ
قَوْلِهِ تَعَالَى {وَمَنْ يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُ
جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيْهَا} وَقَوْلِهِ {وَلَا يَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِيْ
حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ} حَتَّى بَلَغَ {إِلَّا مَنْ تَابَ وَاٰمَنَ}
فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ لَمَّا نَزَلَتْ قَالَ أَهْلُ مَكَّةَ فَقَدْ عَدَلْنَا
بِاللهِ وَقَدْ قَتَلْنَا النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ
وَأَتَيْنَا الْفَوَاحِشَ فَأَنْزَلَ اللهُ {إِلَّا مَنْ تَابَ وَاٰمَنَ وَعَمِلَ
عَمَلًا صَالِحًا}إِلَى قَوْلِهِ {غَفُوْرًا رَّحِيْمًا}.
সা‘ঈদ
ইব্নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইব্নু আবযা (রাঃ) বলেন, ইব্নু ‘আব্বাসকে জিজ্ঞেস করা হল, আল্লাহ্ তা‘আলার
বাণীঃ “কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম” এবং
আল্লাহ্র এ বাণীঃ “এবং আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতীত, তারা তাকে
হত্যা করে না” এবং “কিন্তু যারা তাওবাহ করে” পর্যন্ত সম্পর্কে। আমিও তাঁকে জিজ্ঞেস
করলাম। তখন তিনি উত্তরে বললেন, যখন এ আয়াত নাযিল হল তখন মাক্কাহবাসী বলল, আমরা
আল্লাহ্র সাথে শারীক করেছি, আল্লাহ্ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতীত
তাকে হত্যা করেছি এবং আমরা অশ্লীল কার্যে লিপ্ত হয়েছি। তারপর আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত
অবতীর্ণ করলেন, “যারা তওবাহ করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে।” إِلاَّ مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلاً صَالِحًا
থেকে غَفُورًا رَحِيمًا
পর্যন্ত। [৩৮৫৫; মুসলিম ৫৪/হাঃ ৩০২৩] (আ.প্র. ৪৪০২, ই.ফা. ৪৪০৪)
৬৫/২৫/৪.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
إِلَّا مَنْ تَابَ وَاٰمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولٰٓئِكَ يُبَدِّلُ اللهُ سَيِّئٰتِهِمْ حَسَنٰتٍ ط وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا}.
‘‘তবে তারা নয় যারা তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে; আল্লাহ এরূপ লোকের পাপসমূহকে পুণ্যে পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’’ (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৭০)
‘‘তবে তারা নয় যারা তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে; আল্লাহ এরূপ লোকের পাপসমূহকে পুণ্যে পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’’ (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৭০)
৪৭৬৬
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا أَبِيْ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ
مَنْصُوْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ أَمَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ
أَبْزَى أَنْ أَسْأَلَ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ هَاتَيْنِ الآيَتَيْنِ {وَمَنْ
يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا} فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ لَمْ يَنْسَخْهَا شَيْءٌ
وَعَنْ {وَالَّذِيْنَ لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ إِلَهًا اٰخَرَ} قَالَ نَزَلَتْ
فِيْ أَهْلِ الشِّرْكِ.
সা‘ঈদ
ইব্নু যুবায়র (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘আবদুর রহমান ইব্নু আব্যা (রাঃ) আমাকে নির্দেশ দিলেন যে, আমি যেন ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে এ দু’টি আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا
আমি তাকে (এ আয়াত সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেন, এ আয়াতকে অন্য কিছু মানসূখ
করেনি এবং وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ
সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করলাম, তিনি [‘আব্বাস (রাঃ)] বললেন, এ আয়াত মুশরিকদের সম্পর্কে
নাযিল হয়েছে। [৩৮৫৫] (আ.প্র. ৪৪০৩, ই.ফা. ৪৪০৫)
৬৫/২৫/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ অতএব,
অচিরেই নেমে আসবে অনিবার্য শাস্তি। (সূরাহ ফুরক্বান ২৫/৭৭)
৪৭৬৭
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ
حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ عَنْ مَسْرُوْقٍ قَالَ قَالَ عَبْدُ
اللهِ خَمْسٌ قَدْ مَضَيْنَ الدُّخَانُ وَالْقَمَرُ وَالرُّوْمُ وَالْبَطْشَةُ
وَاللِّزَامُ {فَسَوْفَ يَكُوْنُ لِزَامًا}.
‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, পাঁচটি ঘটনা ঘটে গেছে ধূম্রাচ্ছন্ন, চন্দ্র খণ্ডিত হওয়া, রোমানদের পরাজিত
হওয়া, প্রবলভাবে পাকড়াও এবং ধ্বংস হওয়া। لِزَامًا ধ্বংস। [১০০৭] (আ.প্র.
৪৪০৪, ই.ফা. ৪৪০৬)
৬৫/২৬/১.অধ্যায়ঃ
‘‘আমাকে লাঞ্ছিত করো না
পুনরুত্থান দিবসে।’’ (সূরাহ শু‘আরা ২৬/৮৭)
সূরাহ (২৬) : শু‘আরা
মুজাহিদ (রহ.) বলেন-تَعْبَثُوْنَতোমরা নির্মাণ করে থাক। هَضِيْمٌ স্পর্শ করা মাত্রই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। مُسَحَّرِيْنَ জাদুগ্রস্ত। اللَّيْكَةُ ওالأَيْكَةُأَيْكَةٍএর বহুবচন যার অর্থ বৃক্ষে পরিপূর্ণ। يَوْمِالظُّلَّةِ যেদিনে শাস্তি তাদের ছেয়ে ফেলবে। مَوْزُوْنٍ জ্ঞাত। كَالطَّوْدِ পর্বতের ন্যায়। অন্যরা বলেন, الَشِرْذِمَةٌ ছোট দল। فِيالسَّاجِدِيْنَ সালাত আদায়কারী। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন لَعَلَّكُمْتَخْلُدُوْنَ যেন তোমরা স্থায়ী থাকবে। الرِّيعُযমীনের উঁচু অংশ। এর বহুবচন رِيَعَةٌএবং أَرْيَاعٌতার একবচনرِيْعَةٌ।مَصَانِعَপ্রত্যেক ইমারতকে مَصْنَعَةٌবলা হয়। فَرِهِيْنَঅহংকারীরা। مَرِحِيْنَفَارِهِيْنَএকই অর্থের। فَارِهِيْنَবলা হয় দক্ষদের। تَعْثَوْا ভয়ঙ্কর ফ্যাসাদ। এটি يَا দ্বারাও ব্যবহৃত হয়। যথা-عَاثَيَعِيْثُعَيْثًا।الْجِبِلَّةَ সৃষ্টি جُبِلَ এর অর্থ-সৃষ্টি করা হয়েছে। جُبُلًا وَجِبِلًا وَجُبْلًا সবগুলোর অর্থ সৃষ্টি।
মুজাহিদ (রহ.) বলেন-تَعْبَثُوْنَতোমরা নির্মাণ করে থাক। هَضِيْمٌ স্পর্শ করা মাত্রই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। مُسَحَّرِيْنَ জাদুগ্রস্ত। اللَّيْكَةُ ওالأَيْكَةُأَيْكَةٍএর বহুবচন যার অর্থ বৃক্ষে পরিপূর্ণ। يَوْمِالظُّلَّةِ যেদিনে শাস্তি তাদের ছেয়ে ফেলবে। مَوْزُوْنٍ জ্ঞাত। كَالطَّوْدِ পর্বতের ন্যায়। অন্যরা বলেন, الَشِرْذِمَةٌ ছোট দল। فِيالسَّاجِدِيْنَ সালাত আদায়কারী। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন لَعَلَّكُمْتَخْلُدُوْنَ যেন তোমরা স্থায়ী থাকবে। الرِّيعُযমীনের উঁচু অংশ। এর বহুবচন رِيَعَةٌএবং أَرْيَاعٌতার একবচনرِيْعَةٌ।مَصَانِعَপ্রত্যেক ইমারতকে مَصْنَعَةٌবলা হয়। فَرِهِيْنَঅহংকারীরা। مَرِحِيْنَفَارِهِيْنَএকই অর্থের। فَارِهِيْنَবলা হয় দক্ষদের। تَعْثَوْا ভয়ঙ্কর ফ্যাসাদ। এটি يَا দ্বারাও ব্যবহৃত হয়। যথা-عَاثَيَعِيْثُعَيْثًا।الْجِبِلَّةَ সৃষ্টি جُبِلَ এর অর্থ-সৃষ্টি করা হয়েছে। جُبُلًا وَجِبِلًا وَجُبْلًا সবগুলোর অর্থ সৃষ্টি।
৪৭৬৮
وَقَالَ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ
ذِئْبٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ
أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
إِنَّ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ يَرَى أَبَاهُ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ الْغَبَرَةُ وَالْقَتَرَةُ الْغَبَرَةُ هِيَ الْقَتَرَةُ
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ক্বিয়ামাত দিবসে ইব্রাহীম (‘আ.) তাঁর
পিতাকে ধূলি-মলিন অবস্থায় দেখতে পাবেন।الْغَبَرَةُ ধূলি-ময়লা। [৩৩৫০] (আ.প্র.
অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)
৪৭৬৯
إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا أَخِيْ عَنْ ابْنِ أَبِيْ ذِئْبٍ
عَنْ سَعِيْدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَلْقَى إِبْرَاهِيْمُ أَبَاهُ فَيَقُوْلُ
يَا رَبِّ إِنَّكَ وَعَدْتَنِيْ أَنْ لَا تُخْزِيَنِيْ يَوْمَ يُبْعَثُوْنَ
فَيَقُوْلُ اللهُ إِنِّيْ حَرَّمْتُ الْجَنَّةَ عَلَى الْكَافِرِيْنَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, (হাশরের ময়দানে ইব্রাহীম (‘আ.) তাঁর
পিতার সাক্ষাৎ পেয়ে বলবেন, ইয়া রব! আপনি আমার সঙ্গে ওয়া‘দা করেছেন যে, ক্বিয়ামাতের
দিন আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, আমি কাফিরদের উপর জান্নাত
হারাম করে দিয়েছি। [৩৩৫০] (আ.প্র. ৪৪০৫, ই.ফা. ৪৪০৭)
৬৫/২৬/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ তোমার
নিকট আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও এবং (মু’মিনদের প্রতি) বিনয়ী হও। (সূরাহ শু‘আরা
২৬/২১৪-২১৫)
اخْفِضْ جَنَاحَكَ
‘‘তোমার পার্শ্ব নম্র রাখ।
৪৭৭০
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ
حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ
بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ
{وَأَنْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْأَقْرَبِيْنَ} صَعِدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
عَلَى الصَّفَا فَجَعَلَ يُنَادِيْ يَا بَنِيْ فِهْرٍ يَا بَنِيْ عَدِيٍّ
لِبُطُوْنِ قُرَيْشٍ حَتَّى اجْتَمَعُوْا فَجَعَلَ الرَّجُلُ إِذَا لَمْ
يَسْتَطِعْ أَنْ يَخْرُجَ أَرْسَلَ رَسُوْلًا لِيَنْظُرَ مَا هُوَ فَجَاءَ أَبُوْ
لَهَبٍ وَقُرَيْشٌ فَقَالَ أَرَأَيْتَكُمْ لَوْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ خَيْلًا
بِالْوَادِيْ تُرِيْدُ أَنْ تُغِيْرَ عَلَيْكُمْ أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِيَّ قَالُوْا
نَعَمْ مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ إِلَّا صِدْقًا قَالَ فَإِنِّيْ نَذِيْرٌ لَكُمْ
بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ فَقَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ سَائِرَ
الْيَوْمِ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا فَنَزَلَتْ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ
وَّتَبَّ ط (1) مَآ أَغْنٰى عَنْهُ مَالُه” وَمَا كَسَبَ ط}.
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ এ
আয়াত অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাফা (পর্বতে)
আরোহণ করলেন এবং আহ্বান জানালেন, হে বানী ফিহর! হে বানী আদী! কুরাইশদের বিভিন্ন
গোত্রকে। অবশেষে তারা জমায়েত হল। যে নিজে আসতে পারল না, সে তার প্রতিনিধি পাঠাল,
যাতে দেখতে পায়, ব্যাপার কী? সেখানে আবূ লাহাব ও কুরাইশগণও আসল। তখন রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বল তো, আমি যদি তোমাদের বলি যে,
শত্রুসৈন্য উপত্যকায় চলে এসেছে, তারা তোমাদের উপর হঠাৎ আক্রমণ করতে প্রস্তুত,
তোমরা কি আমাকে বিশ্বাস করবে? তারা বলল, হাঁ আমরা আপনাকে সর্বদা সত্য পেয়েছি। তখন
তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে কঠিন শাস্তির ভয় প্রদর্শন করছি।” আবূ লাহাব
[রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে] বলল, সারাদিন তোমার উপর ধ্বংস
নামুক! এজন্যই কি তুমি আমাদের জমায়েত করেছ? তখন অবতীর্ণ হল, “ধ্বংস হোক আবূ
লাহাবের হস্ত দু’টি এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ ও তার অর্জন তার কোন
উপকারে লাগেনি।” [১৩৯৪] (আ.প্র. , ই.ফা. ৪৪০৮)
৪৭৭১
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ
الْمُسَيَّبِ وَأَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ
قَالَ قَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ أَنْزَلَ اللهُ {وَأَنْذِرْ
عَشِيْرَتَكَ الْأَقْرَبِيْنَ} قَالَ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ أَوْ كَلِمَةً
نَحْوَهَا اشْتَرُوْا أَنْفُسَكُمْ لَا أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنْ اللهِ شَيْئًا يَا
بَنِيْ عَبْدِ مَنَافٍ لَا أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنْ اللهِ شَيْئًا يَا عَبَّاسُ
بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لَا أُغْنِيْ عَنْكَ مِنْ اللهِ شَيْئًا وَيَا صَفِيَّةُ
عَمَّةَ رَسُوْلِ اللهِ لَا أُغْنِيْ عَنْكِ مِنْ اللهِ شَيْئًا وَيَا فَاطِمَةُ
بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَلِيْنِيْ مَا شِئْتِ مِنْ مَالِيْ لَا أُغْنِيْ عَنْكِ مِنْ
اللهِ شَيْئًا تَابَعَهُ أَصْبَغُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ
شِهَابٍ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ
(তোমার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক কর) এ আয়াত অবতীর্ণ হল, তখন রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়! অথবা অনুরূপ বাক্য,
নিজেদের কিনে নাও। আমি আল্লাহ্র নিকট তোমাদের কোন উপকারে আসব না। হে বানী আব্দে
মানাফ! আল্লাহ্র নিকট আমি তোমাদের কোন উপকারে আসব না। হে ‘আব্বাস ইব্নু আবদুল
মুত্তালিব! আমি আল্লাহ্র নিকট তোমার কোনই উপকারে আসব না। হে আল্লাহ্র রসূলের
ফুফু সফীয়্যাহ! আমি তোমার কোনই উপকার করতে পারব না। হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমা! আমার ধন-সম্পদ থেকে যা ইচ্ছে চাও, কিন্তু
আল্লাহ্র নিকট আমি তোমার কোনই উপকারে আসব না।
আস্বাগ (রহ.).....ইব্নু শিহাব (রহ.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। [২৭৫৩] (আ.প্র. ৪৪০৬, ই.ফা. ৪৪০৯)
আস্বাগ (রহ.).....ইব্নু শিহাব (রহ.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। [২৭৫৩] (আ.প্র. ৪৪০৬, ই.ফা. ৪৪০৯)
৬৫/২৮/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ আপনি
যাকে ভালোবাসেন, ইচ্ছা করলেই তাকে হিদায়াত করতে পারবেন না; তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা
হিদায়াত করে থাকেন। (সূরাহ ক্বাসাস ২৮/৫৬)
সূরাহ (২৭) : নামল
وَالْخَبْءُযা তুমি গোপন কর। لَا قِبَلَ لَهُمْতাদের কোন শক্তি নেই।[১]الصَّرْحُকাঁচ মিশ্রিত গারা এবং الصَّرْحُ প্রাসাদকেও বলা হয়। এর বহুবচন صُرُوْحٌ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, وَلَهَا عَرْشٌতার সিংহাসন অতি সম্মানিত, শিল্প কর্মে উত্তম এবং বহু মূল্যবান। يَأْتُوْنِيْ مُسْلِمِيْنَঅনুগত হয়ে আমার নিকট আসবে। رَدِفَনিকটবর্তী হয়েছে। جَامِدَةًস্থির। أَوْزِعْنِيْআমাকে বানিয়ে দাও। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, نَكِّرُوْاপরিবর্তন করে দাও। وَأُوْتِيْنَا (আমাদের জ্ঞান দেয়া হয়েছে) এ কথা সুলাইমান (আঃ) বলেন, الصَّرْحُপানির একটি হাউয। সুলাইমান (আঃ) সেটি কাঁচ দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন।
সূরাহ (২৮) : ক্বাসাস
يُقَالَ {كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَه”} إِلَّا مُلْكَهُ وَيُقَالُ إِلَّا مَا أُرِيْدَ بِهِ وَجْهُ اللهِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ فَعَمِيَتْ عَلَيْهِمْ {الأَنْبَآءُ} الْحُجَجُ.
আল্লাহর চেহারা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হবে। ইমাম বুখারী বলেছেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, তাঁর রাজত্ব [2] ব্যতীত এবং এও বলা হয়েছে যে, যে ‘আমাল দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য তা ব্যতীত সবই ধ্বংস হবে। অতঃপর তাদের কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যাবে। মুজাহিদ (রহ.) الْأَنْبَاءُ শব্দের অর্থ বলেছেন প্রমাণাদি।
وَالْخَبْءُযা তুমি গোপন কর। لَا قِبَلَ لَهُمْতাদের কোন শক্তি নেই।[১]الصَّرْحُকাঁচ মিশ্রিত গারা এবং الصَّرْحُ প্রাসাদকেও বলা হয়। এর বহুবচন صُرُوْحٌ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, وَلَهَا عَرْشٌতার সিংহাসন অতি সম্মানিত, শিল্প কর্মে উত্তম এবং বহু মূল্যবান। يَأْتُوْنِيْ مُسْلِمِيْنَঅনুগত হয়ে আমার নিকট আসবে। رَدِفَনিকটবর্তী হয়েছে। جَامِدَةًস্থির। أَوْزِعْنِيْআমাকে বানিয়ে দাও। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, نَكِّرُوْاপরিবর্তন করে দাও। وَأُوْتِيْنَا (আমাদের জ্ঞান দেয়া হয়েছে) এ কথা সুলাইমান (আঃ) বলেন, الصَّرْحُপানির একটি হাউয। সুলাইমান (আঃ) সেটি কাঁচ দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন।
সূরাহ (২৮) : ক্বাসাস
يُقَالَ {كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَه”} إِلَّا مُلْكَهُ وَيُقَالُ إِلَّا مَا أُرِيْدَ بِهِ وَجْهُ اللهِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ فَعَمِيَتْ عَلَيْهِمْ {الأَنْبَآءُ} الْحُجَجُ.
আল্লাহর চেহারা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হবে। ইমাম বুখারী বলেছেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, তাঁর রাজত্ব [2] ব্যতীত এবং এও বলা হয়েছে যে, যে ‘আমাল দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য তা ব্যতীত সবই ধ্বংস হবে। অতঃপর তাদের কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যাবে। মুজাহিদ (রহ.) الْأَنْبَاءُ শব্দের অর্থ বলেছেন প্রমাণাদি।
৪৭৭২
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ
الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ
جَاءَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلٍ
وَعَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ أُمَيَّةَ بْنِ الْمُغِيْرَةِ فَقَالَ أَيْ عَمِّ قُلْ
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ كَلِمَةً أُحَاجُّ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللهِ فَقَالَ
أَبُوْ جَهْلٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ أُمَيَّةَ أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ
عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَعْرِضُهَا
عَلَيْهِ وَيُعِيْدَانِهِ بِتِلْكَ الْمَقَالَةِ حَتَّى قَالَ أَبُوْ طَالِبٍ
آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَأَبَى أَنْ يَقُوْلَ
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاللهِ
لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ فَأَنْزَلَ {اللهُ مَا كَانَ
لِلنَّبِيِّ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا أَنْ يَّسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِيْنَ}
وَأَنْزَلَ اللهُ فِيْ أَبِيْ طَالِبٍ فَقَالَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ {وَسَلَّمَ إِنَّكَ لَا تَهْدِيْ مَنْ أَحْبَبْتَ وَلٰكِنَّ اللهَ
يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ}
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أُولِي الْقُوَّة}لَا يَرْفَعُهَا الْعُصْبَةُ مِنْ الرِّجَالِ {لَتَنُوْءُ}لَتُثْقِلُ {فَارِغًا} إِلَّا مِنْ ذِكْرِ مُوْسَى {الْفَرِحِيْنَ} الْمَرِحِيْنَ {قُصِّيْهِ} اتَّبِعِيْ أَثَرَهُ وَقَدْ يَكُوْنُ أَنْ يَقُصَّ الْكَلَامَ {نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ عَنْ جُنُبٍ} عَنْ بُعْدٍ عَنْ جَنَابَةٍ وَاحِدٌ وَعَنْ اجْتِنَابٍ أَيْضًا {يَبْطِشُ} وَيَبْطُشُ {يَأْتَمِرُوْنَ}يَتَشَاوَرُوْنَ {الْعُدْوَانُ} وَالْعَدَاءُ وَالتَّعَدِّيْ وَاحِدٌ {آنَسَ} أَبْصَرَ {الْجِذْوَةُ} قِطْعَةٌ غَلِيْظَةٌ مِنَ الْخَشَبِ لَيْسَ فِيْهَا لَهَبٌ وَالشِّهَابُ فِيْهِ لَهَبٌ ....... وَالْحَيَّاتُ أَجْنَاسٌ الْجَانُّ وَالأَفَاعِيْ وَالأَسَاوِدُ {رِدْءًا} مُعِيْنًا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ يُصَدِّقُنِيْ وَقَالَ غَيْرُهُ {سَنَشُدُّ} سَنُعِيْنُكَ كُلَّمَا عَزَّزْتَ شَيْئًا فَقَدْ جَعَلْتَ لَهُ عَضُدًا {مَقْبُوْحِيْنَ} مُهْلَكِيْنَ {وَصَّلْنَا} بَيَّنَّاهُ وَأَتْمَمْنَاهُ {يُجْبَى} يُجْلَبُ {بَطِرَتْ} أَشِرَتْ {فِيْ أُمِّهَا رَسُوْلًا} أُمُّ الْقُرَى مَكَّةُ وَمَا حَوْلَهَا {تُكِنُّ}تُخْفِيْ أَكْنَنْتُ الشَّيْءَ أَخْفَيْتُهُ وَكَنَنْتُهُ أَخْفَيْتُهُ وَأَظْهَرْتُهُ {وَيْكَأَنَّ اللهَ} مِثْلُ {أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللهَ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِر} يُوَسِّعُ عَلَيْهِ وَيُضَيِّقُ عَلَيْهِ.
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أُولِي الْقُوَّة}لَا يَرْفَعُهَا الْعُصْبَةُ مِنْ الرِّجَالِ {لَتَنُوْءُ}لَتُثْقِلُ {فَارِغًا} إِلَّا مِنْ ذِكْرِ مُوْسَى {الْفَرِحِيْنَ} الْمَرِحِيْنَ {قُصِّيْهِ} اتَّبِعِيْ أَثَرَهُ وَقَدْ يَكُوْنُ أَنْ يَقُصَّ الْكَلَامَ {نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ عَنْ جُنُبٍ} عَنْ بُعْدٍ عَنْ جَنَابَةٍ وَاحِدٌ وَعَنْ اجْتِنَابٍ أَيْضًا {يَبْطِشُ} وَيَبْطُشُ {يَأْتَمِرُوْنَ}يَتَشَاوَرُوْنَ {الْعُدْوَانُ} وَالْعَدَاءُ وَالتَّعَدِّيْ وَاحِدٌ {آنَسَ} أَبْصَرَ {الْجِذْوَةُ} قِطْعَةٌ غَلِيْظَةٌ مِنَ الْخَشَبِ لَيْسَ فِيْهَا لَهَبٌ وَالشِّهَابُ فِيْهِ لَهَبٌ ....... وَالْحَيَّاتُ أَجْنَاسٌ الْجَانُّ وَالأَفَاعِيْ وَالأَسَاوِدُ {رِدْءًا} مُعِيْنًا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ يُصَدِّقُنِيْ وَقَالَ غَيْرُهُ {سَنَشُدُّ} سَنُعِيْنُكَ كُلَّمَا عَزَّزْتَ شَيْئًا فَقَدْ جَعَلْتَ لَهُ عَضُدًا {مَقْبُوْحِيْنَ} مُهْلَكِيْنَ {وَصَّلْنَا} بَيَّنَّاهُ وَأَتْمَمْنَاهُ {يُجْبَى} يُجْلَبُ {بَطِرَتْ} أَشِرَتْ {فِيْ أُمِّهَا رَسُوْلًا} أُمُّ الْقُرَى مَكَّةُ وَمَا حَوْلَهَا {تُكِنُّ}تُخْفِيْ أَكْنَنْتُ الشَّيْءَ أَخْفَيْتُهُ وَكَنَنْتُهُ أَخْفَيْتُهُ وَأَظْهَرْتُهُ {وَيْكَأَنَّ اللهَ} مِثْلُ {أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللهَ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِر} يُوَسِّعُ عَلَيْهِ وَيُضَيِّقُ عَلَيْهِ.
মুসাইয়্যাব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন আবূ ত্বলিবের মৃত্যু নিকটবর্তী হল, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) তাঁর কাছে আসলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহ্ল এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ
‘উমাইয়াহ ইব্নু মুগীরাকে পেলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, হে চাচা! আপনি বলুন “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ।” এ ‘কালেমা’ দ্বারা আমি আপনার
জন্য (ক্বিয়ামাতে) আল্লাহ্র কাছে ওযর পেশ করতে পারব। আবূ জাহ্ল এবং ‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু আবূ ‘উমাইয়াহ বলল, তুমি কি ‘আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করবে?
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বারবার তার কাছে এ ‘কালিমা’ পেশ
করতেই থাকলেন। আর তারা তাদের কথা বারবার বলেই চলল। অবশেষে আবূ ত্বলিব তাঁদের সঙ্গে
সর্বশেষ এ কথা বললেন, আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাতের উপর আছি, এবং কালিমা “লা-
ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ” পাঠ করতে অস্বীকৃতি জানালেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমাকে নিষেধ না করা অবধি আপনার জন্য
ক্ষমা চাইতেই থাকব। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, নাবী ও মু’মিনদের জন্য
এটা শোভনীয় নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর আল্লাহ্ তা‘আলা
আবূ ত্বলিব সম্পর্কে অবতীর্ণ করেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-কে সম্বোধন করে আল্লাহ্ তা‘আলা বললেন, “তুমি যাকে ভালবাস তাকেই সৎপথে
আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দান করেন।”
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন أُولِي الْقُوَّة লোকের একটি দল সে চাবিগুলো বহন করতে সক্ষম ছিল না। لَتَنُوءُ বহন করা কষ্টসাধ্য ছিল। فَارِغًا মূসা (‘আ.)-এর স্মরণ ব্যতীত সব কিছু থেকে খালি ছিল। الْفَرِحِينَ দম্ভকারীরা! قُصِّيهِ তার চিহ্ন অনুসরণ কর। কথার বর্ণনা অর্থেও প্রয়োগ হয়। نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ عَنْ جُنُبٍ এখানে جُنُبٍ অর্থ দূর থেকে। عَنْ جَنَابَةٍ، عَنْ اجْتِنَابٍ এর একই অর্থবোধক।يَبْطِشُ ـ يَبْطُشُ উভয়ই পড়া হয়। يَأْتَمِرُونَ পরস্পর পরামর্শ করছে। الْعُدْوَانُ ـ وَالْعَدَاءُ وَالتَّعَدِّي (শব্দ তিনটির) অর্থ একই ; সীমা অতিক্রম করা। آنَسَ দেখা الْجِذْوَةُ কাঠের মোটা টুকরা যাতে শিখা নেই। الشِّهَابُ যাতে শিখা আছে। الْحَيَّاتُ বহু প্রকার সাপ; যেমন, চিকন জাতি, অজগর, কালনাগ (ইত্যাদি) رِدْءًا সাহায্যকারী। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, يُصَدِّقُنِي (তিনি قاف-কে পেশ দিয়ে পড়েন। অন্য হতে বর্ণিত سَنَشُدُّ আমরা শীঘ্র তোমাকে সাহায্য করব। যখন তুমি কোন জিনিসকে শক্তিশালী করলে, তখন তুমি যেন তার জন্য বাহুবল প্রদান করলে। যখন আরবগণ কাউকে সাহায্য করেন তখন বলে থাকেন جَعَلْتَ لَهُ عَضُدًا (বাহুবল প্রদান করলে) مَقْبُوحِينَ ধ্বংসপ্রাপ্ত। وَصَّلْنَا আমি বর্ণনা করেছি; আমি তা পূর্ণ করেছি। يُجْبَى আমদানি করা হয়। بَطِرَتْ দম্ভ করল। فِي أُمِّهَا رَسُولاً মক্কা এবং তার চতুষ্পার্শকে বলা হয়। تُكِنُّ গোপন করছ। আরবগণ বলে থাকেন أَكْنَنْتُ الشَّيْءَ আমি তা গোপন করেছি। كَنَنْتُهُআমি তা লুকিয়েছি; আমি প্রকাশ করেছি। وَيْكَأَنَّ اللهَ আর أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللهَ সমার্থক (তারা কি দেখেনি?) يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَقْدِر আল্লাহ্ যার জন্য চান খাদ্য প্রসারিত করে দেন, আর যার থেকে চান সংকুচিত করে দেন। [১৩৬০] (আ.প্র. ৪৪০৮, ই.ফা. ৪৪১০)
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন أُولِي الْقُوَّة লোকের একটি দল সে চাবিগুলো বহন করতে সক্ষম ছিল না। لَتَنُوءُ বহন করা কষ্টসাধ্য ছিল। فَارِغًا মূসা (‘আ.)-এর স্মরণ ব্যতীত সব কিছু থেকে খালি ছিল। الْفَرِحِينَ দম্ভকারীরা! قُصِّيهِ তার চিহ্ন অনুসরণ কর। কথার বর্ণনা অর্থেও প্রয়োগ হয়। نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ عَنْ جُنُبٍ এখানে جُنُبٍ অর্থ দূর থেকে। عَنْ جَنَابَةٍ، عَنْ اجْتِنَابٍ এর একই অর্থবোধক।يَبْطِشُ ـ يَبْطُشُ উভয়ই পড়া হয়। يَأْتَمِرُونَ পরস্পর পরামর্শ করছে। الْعُدْوَانُ ـ وَالْعَدَاءُ وَالتَّعَدِّي (শব্দ তিনটির) অর্থ একই ; সীমা অতিক্রম করা। آنَسَ দেখা الْجِذْوَةُ কাঠের মোটা টুকরা যাতে শিখা নেই। الشِّهَابُ যাতে শিখা আছে। الْحَيَّاتُ বহু প্রকার সাপ; যেমন, চিকন জাতি, অজগর, কালনাগ (ইত্যাদি) رِدْءًا সাহায্যকারী। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, يُصَدِّقُنِي (তিনি قاف-কে পেশ দিয়ে পড়েন। অন্য হতে বর্ণিত سَنَشُدُّ আমরা শীঘ্র তোমাকে সাহায্য করব। যখন তুমি কোন জিনিসকে শক্তিশালী করলে, তখন তুমি যেন তার জন্য বাহুবল প্রদান করলে। যখন আরবগণ কাউকে সাহায্য করেন তখন বলে থাকেন جَعَلْتَ لَهُ عَضُدًا (বাহুবল প্রদান করলে) مَقْبُوحِينَ ধ্বংসপ্রাপ্ত। وَصَّلْنَا আমি বর্ণনা করেছি; আমি তা পূর্ণ করেছি। يُجْبَى আমদানি করা হয়। بَطِرَتْ দম্ভ করল। فِي أُمِّهَا رَسُولاً মক্কা এবং তার চতুষ্পার্শকে বলা হয়। تُكِنُّ গোপন করছ। আরবগণ বলে থাকেন أَكْنَنْتُ الشَّيْءَ আমি তা গোপন করেছি। كَنَنْتُهُআমি তা লুকিয়েছি; আমি প্রকাশ করেছি। وَيْكَأَنَّ اللهَ আর أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللهَ সমার্থক (তারা কি দেখেনি?) يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَقْدِر আল্লাহ্ যার জন্য চান খাদ্য প্রসারিত করে দেন, আর যার থেকে চান সংকুচিত করে দেন। [১৩৬০] (আ.প্র. ৪৪০৮, ই.ফা. ৪৪১০)
[১] অট্টালিকার
ইট-পাথরের গাঁথুনি ও প্রয়োজনীয় উপাদান।
[১] ইমাম বুখারী যে তাফসীর করেছেন সেটি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আকীদাহ অনুপাতে হয়নি। প্রকৃতপক্ষে এখানে وجهه থেকে আহলুসসুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত وجهه শব্দের ব্যাখায় ‘‘তার সত্ত্বা’’ কথাটিই গ্রহণ করেছেন। যেমন সূরা আর রহমানে বলা হয়েছে। كُلُّمَنْعَلَيْهَافَانٍ - وَيَبْقَىوَجْهُرَبِّكَذُوالْجَلَالِوَالْإِكْرَامِ (২৭-২৬) سورةالرحمن ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবই ধ্বংস হবে। শুধুমাত্র মহিমাময় মহানুভব প্রতিপালকের চেহারা (সত্ত্বা) অবশিষ্ট থাকবে। (সূরাহ আর-রহমানঃ ২৬-২৭)
[১] ইমাম বুখারী যে তাফসীর করেছেন সেটি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আকীদাহ অনুপাতে হয়নি। প্রকৃতপক্ষে এখানে وجهه থেকে আহলুসসুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত وجهه শব্দের ব্যাখায় ‘‘তার সত্ত্বা’’ কথাটিই গ্রহণ করেছেন। যেমন সূরা আর রহমানে বলা হয়েছে। كُلُّمَنْعَلَيْهَافَانٍ - وَيَبْقَىوَجْهُرَبِّكَذُوالْجَلَالِوَالْإِكْرَامِ (২৭-২৬) سورةالرحمن ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবই ধ্বংস হবে। শুধুমাত্র মহিমাময় মহানুভব প্রতিপালকের চেহারা (সত্ত্বা) অবশিষ্ট থাকবে। (সূরাহ আর-রহমানঃ ২৬-২৭)
৬৫/২৮/২.অধ্যায়ঃ
যে আল্লাহ্ আপনার প্রতি
কুরআনকে ফরয করেছেন।’’ (সূরাহ ক্বাসাস ২৮/৮৫)
৪৭৭৩
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ
أَخْبَرَنَا يَعْلَى حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الْعُصْفُرِيُّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ {لَرَآدُّكَ إِلٰى مَعَادٍ} قَالَ إِلَى مَكَّةَ.
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, لَرَادُّكَ إِلَى مَعَادٍ এর
অর্থ মাক্কাহর পানে। (আ.প্র. ৪৪০৯, ই.ফা. ৪৪১১)
৬৫/২৯.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
সূরাহ (২৯) : আনকাবূত
মুজাহিদ বলেছেন, وَكَانُوْا مُسْتَبْصِرِيْنَ অর্থাৎ পথহারা। অন্যরা বলেছেন, الْحَيَوَانُ এবং الْحَيُّ শব্দ দু’টি একই। فَلَيَعْلَمَنَّ اللهُ আল্লাহ্ আগে থেকেই তা জানতেন। এখানে ব্যবহৃত হয়েছে فَلِيَمِيْزَاللهُ (যেন আল্লাহ্ তা‘আলা চিহ্নিত করেন)-এর অর্থে। যেমন, আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ لِيَمِيْزَ اللهُ الْخَبِيْثَ مِنَالطَّيِّبِ أَثْقَالًا مَّعَ أَثْقَالِهِمْ (যেন আল্লাহ্ তা‘আলা খবীছকে ভাল থেকে পৃথক করেন) অর্থাৎ তাদের অপরাধের সঙ্গে।
সূরাহ (৩০) : রূম (আলিফ-লাম-মীম গুলিবাতির)
فَلَا يَرْبُوْ অর্থাৎ যে এ আশায় দান করে যে, এর চেয়ে উত্তম বিনিময় পাবে, এতে কোন সওয়াব নেই। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُحْبَرُوْنَ তারা নিয়ামত প্রাপ্ত হবে। يَمْهَدُوْنَ তাদের আরাম আয়েশের জায়গা প্রস্ত্তত করবে। الْوَدْقُ বৃষ্টি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, هَلْ لَّكُمْ مِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ এ আয়াত ইলাহ সম্পর্কে। تَخَافُوْنَهُمْ তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদের অংশীদার হোক, যেমন তোমরা পরস্পরের উত্তরাধিকার হও। يَصَّدَّعُوْنَ পৃথক পৃথক হয়ে যাবে। فَاصْدَعْস্পষ্ট বর্ণনা কর। ইবনু ‘আববাস ব্যতীত অন্যে বলেন, ضُعْفٌ এবং ضَعْفٌউভয়ের অর্থ একই। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, السُّوأَى অপরাধীকে যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া।
মুজাহিদ বলেছেন, وَكَانُوْا مُسْتَبْصِرِيْنَ অর্থাৎ পথহারা। অন্যরা বলেছেন, الْحَيَوَانُ এবং الْحَيُّ শব্দ দু’টি একই। فَلَيَعْلَمَنَّ اللهُ আল্লাহ্ আগে থেকেই তা জানতেন। এখানে ব্যবহৃত হয়েছে فَلِيَمِيْزَاللهُ (যেন আল্লাহ্ তা‘আলা চিহ্নিত করেন)-এর অর্থে। যেমন, আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ لِيَمِيْزَ اللهُ الْخَبِيْثَ مِنَالطَّيِّبِ أَثْقَالًا مَّعَ أَثْقَالِهِمْ (যেন আল্লাহ্ তা‘আলা খবীছকে ভাল থেকে পৃথক করেন) অর্থাৎ তাদের অপরাধের সঙ্গে।
সূরাহ (৩০) : রূম (আলিফ-লাম-মীম গুলিবাতির)
فَلَا يَرْبُوْ অর্থাৎ যে এ আশায় দান করে যে, এর চেয়ে উত্তম বিনিময় পাবে, এতে কোন সওয়াব নেই। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُحْبَرُوْنَ তারা নিয়ামত প্রাপ্ত হবে। يَمْهَدُوْنَ তাদের আরাম আয়েশের জায়গা প্রস্ত্তত করবে। الْوَدْقُ বৃষ্টি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, هَلْ لَّكُمْ مِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ এ আয়াত ইলাহ সম্পর্কে। تَخَافُوْنَهُمْ তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদের অংশীদার হোক, যেমন তোমরা পরস্পরের উত্তরাধিকার হও। يَصَّدَّعُوْنَ পৃথক পৃথক হয়ে যাবে। فَاصْدَعْস্পষ্ট বর্ণনা কর। ইবনু ‘আববাস ব্যতীত অন্যে বলেন, ضُعْفٌ এবং ضَعْفٌউভয়ের অর্থ একই। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, السُّوأَى অপরাধীকে যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া।
৪৭৭৪
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا مَنْصُوْرٌ وَالأَعْمَشُ عَنْ أَبِي الضُّحَى
عَنْ مَسْرُوْقٍ قَالَ بَيْنَمَا رَجُلٌ يُحَدِّثُ فِيْ كِنْدَةَ فَقَالَ يَجِيْءُ
دُخَانٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَأْخُذُ بِأَسْمَاعِ الْمُنَافِقِيْنَ
وَأَبْصَارِهِمْ و يَأْخُذُ الْمُؤْمِنَ كَهَيْئَةِ الزُّكَامِ فَفَزِعْنَا
فَأَتَيْتُ ابْنَ مَسْعُوْدٍ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَغَضِبَ فَجَلَسَ فَقَالَ مَنْ
عَلِمَ فَلْيَقُلْ وَمَنْ لَمْ يَعْلَمْ فَلْيَقُلْ اللهُ أَعْلَمُ فَإِنَّ مِنَ
الْعِلْمِ أَنْ يَقُوْلَ لِمَا لَا يَعْلَمُ لَا أَعْلَمُ فَإِنَّ اللهَ قَالَ
لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْ مَآ أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ
وَّمَآ أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِيْنَ} وَإِنَّ قُرَيْشًا أَبْطَئُوْا عَنِ
الإِسْلَامِ فَدَعَا عَلَيْهِمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اللهُمَّ
أَعِنِّيْ عَلَيْهِمْ بِسَبْعٍ كَسَبْعِ يُوْسُفَ فَأَخَذَتْهُمْ سَنَةٌ حَتَّى
هَلَكُوْا فِيْهَا وَأَكَلُوا الْمَيْتَةَ وَالْعِظَامَ وَيَرَى الرَّجُلُ مَا
بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ كَهَيْئَةِ الدُّخَانِ فَجَاءَهُ أَبُوْ سُفْيَانَ
فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ جِئْتَ تَأْمُرُنَا بِصِلَةِ الرَّحِمِ وَإِنَّ قَوْمَكَ
قَدْ هَلَكُوْا فَادْعُ اللهَ فَقَرَأَ {فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَآءُ
بِدُخَانٍ مُّبِيْنٍ} إِلَى قَوْلِهِ {عَائِدُوْنَ} أَفَيُكْشَفُ عَنْهُمْ عَذَابُ
الْآخِرَةِ إِذَا جَاءَ ثُمَّ عَادُوْا إِلَى كُفْرِهِمْ فَذَلِكَ قَوْلُهُ
تَعَالَى {يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرٰى} يَوْمَ بَدْرٍ وَ {لِزَامًا}
يَوْمَ بَدْرٍ {الم غُلِبَتْ الرُّوْمُ} إِلَى {سَيَغْلِبُوْنَ} وَالرُّوْمُ قَدْ
مَضَى.
মাসরূক
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক ব্যক্তি কিন্দাবাসীদের সামনে বলছিল, ক্বিয়ামাতের দিন ধোঁয়া আসবে এবং
মুনাফিকদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেবে। আর মু’মিনের কাছে মনে হবে
সর্দি লেগে থাকা অবস্থার ন্যায়। এ কথা শুনে আমরা ভীত হয়ে গেলাম। এরপর আমি ইব্নু
মাস‘উদ (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তখন তিনি তাকিয়ায় হেলান দিয়ে বসেছিলেন। এ সব কথা শুনে
তিনি রাগানি¦ত
হয়ে উঠে বসলেন এবং বললেন, যার জানা আছে সেও যেন তা বলে, আর যে না জানে সে যেন বলে,
আল্লাহ্ তা‘আলাই ভাল জানেন। জ্ঞানের মধ্যে এটাও একটা জ্ঞান যে, যার যে বিষয় জানা
নেই সে বলবে “আমি এ বিষয়ে জানি না।” আল্লাহ্ তা‘আলা নাবীকে বলেছেন, হে নাবী! আপনি
বলুন, “আমি আল্লাহ্র দ্বীনের দিকে ডাকার জন্য তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না
এবং যারা মিথ্যা দাবী করে আমি তাদের মধ্যে নই। কুরায়শগণ ইসলাম গ্রহণে দেরী করতে
লাগল, সুতরাং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের জন্য এই বলে
বদদু‘আ করলেন। “হে আল্লাহ্! আপনি তাদের উপর ইউসুফ (‘আ.)-এর মত সাত বছর (দুর্ভিক্ষ)
দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন।” তারপর তারা এমন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে পতিত হলো যে, তারা
তাতে ধ্বংস হয়ে গেল এবং মরা জন্তু ও তার হাড় খেতে বাধ্য হলো। তারা (দুর্ভিক্ষের
কারণে) আকাশও পৃথিবীর মধ্যস্থলে ধোঁয়ার মত দেখতে পেল। তারপর আবূ সুফ্ইয়ান তাঁর
কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার আদেশ দিচ্ছ, অথচ
তোমার গোত্রের লোকেরা এখন ধ্বংস হয়ে গেল। সুতরাং আমাদের (এ দুর্ভিক্ষ থেকে) বাঁচার
জন্য দু‘আ কর। তখন তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ إِلَى قَوْلِهِ عَائِدُونَ
“অতএব, তুমি অপেক্ষা কর সেদিনের, যেদিন স্পষ্ট ধূম্রাচ্ছন্ন হবে আকাশ..... তোমরা
তো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে।” অবশেষে দুর্ভিক্ষের অবসান ঘটল কিন্তু তারা
কুফরীর দিকে ফিরে গেল। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা এদের ব্যাপারেই অবতীর্ণ করলেন, যেদিন
আমি তোমাদের শক্তভাবে পাকড়াও করব। الْبَطْشَةَ এবং لِزَامًا
দ্বারা বাদ্রের যুদ্ধ বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী ঃ আলিফ, লাম, মীম।
রোমানরা পরাজিত হয়েছে। .....এবং পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে। রোমানদের ঘটনা
অতিক্রান্ত হয়েছে। [১০০৭] (আ.প্র. ৪৪১০, ই.ফা. ৪৪১২)
৬৫/৩০/২.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
{لَا تَبْدِيْلَ لِخَلْقِ اللهِ} لِدِيْنِ اللهِ {خُلُقُ الْأَوَّلِيْنَ} دِيْنُ الْأَوَّلِيْنَ وَالْفِطْرَةُ الإِسْلَامُ.
আল্লাহর সৃষ্টির কোনই পরিবর্তন নেই। (সূরাহ রূম ৩০/৩০)
خَلْقِ اللهِ (আল্লাহর সৃষ্টি) এর অর্থ-আল্লাহর দ্বীন। যেমন خُلُقُ الْأَوَّلِيْنَ অর্থাৎ دِيْنُ الْأَوَّلِيْنَ পূর্ববর্তীদের দ্বীন। فِطْرَةُ ইসলাম।
আল্লাহর সৃষ্টির কোনই পরিবর্তন নেই। (সূরাহ রূম ৩০/৩০)
خَلْقِ اللهِ (আল্লাহর সৃষ্টি) এর অর্থ-আল্লাহর দ্বীন। যেমন خُلُقُ الْأَوَّلِيْنَ অর্থাৎ دِيْنُ الْأَوَّلِيْنَ পূর্ববর্তীদের দ্বীন। فِطْرَةُ ইসলাম।
৬৫/৩১/১.অধ্যায়ঃ
‘‘আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শারীক
কর না। নিশ্চয়ই শিরক তো মহাপাপ।’’ (সূরাহ লুক্বমান ৩১/১৩)
৪৭৭৬
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنِ الْأَعْمَشِ
عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ {الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَلَمْ يَلْبِسُوْآ
إِيْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ} شَقَّ ذَلِكَ عَلَى أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله
عليه وسلم وَقَالُوْا أَيُّنَا لَمْ يَلْبِسْ إِيْمَانَهُ بِظُلْمٍ فَقَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُ لَيْسَ بِذَاكَ أَلَا تَسْمَعُ إِلَى
قَوْلِ لُقْمَانَ لِابْنِهِ {إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ}.
‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হল (আল্লাহ্র বাণী) ঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের
ঈমানকে যুল্ম দ্বারা কলুষিত করেনি। এটি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের উপর খুবই কঠিন মনে হল। তখন তাঁরা বললেন, আমাদের মধ্যে এমন
কে আছে যে, তারা তাদের ঈমানকে যুল্ম দ্বারা কলুষিত করেনি? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ আয়াত দ্বারা এ অর্থ বুঝানো হয়নি। তোমরা কি লুকমানের
কথা শুননি যা তিনি তাঁর পুত্রকে বলেছিলেন? إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
নিশ্চয় র্শিক হচ্ছে বড় যুল্ম। [৩২] (আ.প্র. ৪৪১২, ই.ফা. ৪৪১৪)
৬৫/৩১/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
নিশ্চয় আল্লাহরই কাছে রয়েছে ক্বিয়ামাত সম্বন্ধীয় জ্ঞান (অর্থাৎ কখন ঘটবে)। (সূরাহ
লুক্বমান ৩১/৩৪)
৪৭৭৭
إِسْحَاقُ عَنْ جَرِيْرٍ
عَنْ أَبِيْ حَيَّانَ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَوْمًا بَارِزًا لِلنَّاسِ
إِذْ أَتَاهُ رَجُلٌ يَمْشِيْ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الإِيْمَانُ قَالَ
الإِيْمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ
وَلِقَائِهِ وَتُؤْمِنَ بِالْبَعْثِ الآخِرِ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا
الإِسْلَامُ قَالَ الإِسْلَامُ أَنْ تَعْبُدَ اللهَ وَلَا تُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا
وَتُقِيْمَ الصَّلَاةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ الْمَفْرُوْضَةَ وَتَصُوْمَ رَمَضَانَ
قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الإِحْسَانُ قَالَ الإِحْسَانُ أَنْ تَعْبُدiَ اللهَ
كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ قَالَ يَا
رَسُوْلَ اللهِ مَتَى السَّاعَةُ قَالَ مَا الْمَسْئُوْلُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنْ
السَّائِلِ وَلَكِنْ سَأُحَدِّثُكَ عَنْ أَشْرَاطِهَا إِذَا وَلَدَتْ الْمَرْأَةُ
رَبَّتَهَا فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا وَإِذَا كَانَ الْحُفَاةُ الْعُرَاةُ
رُءُوْسَ النَّاسِ فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا فِيْ خَمْسٍ لَا يَعْلَمُهُنَّ
إِلَّا اللهُ {إِنَّ اللهَ عِنْدَه” عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنْزِلُ الْغَيْثَ
وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ} ثُمَّ انْصَرَفَ الرَّجُلُ فَقَالَ رُدُّوْا
عَلَيَّ فَأَخَذُوْا لِيَرُدُّوْا فَلَمْ يَرَوْا شَيْئًا فَقَالَ هَذَا
جِبْرِيْلُ جَاءَ لِيُعَلِّمَ النَّاسَ دِيْنَهُمْ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন
রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকদের সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলেন। এক
ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, ঈমান কী? তিনি বললেন, “আল্লাহতে ঈমান আনবে এবং
তাঁর মালায়িকাহ, তাঁর নাবী-রসূলগণের প্রতি ঈমান আনবে এবং আল্লাহ্র দর্শন ও
পুনরুত্থানের ওপর ঈমান আনবে।” লোকটি জিজ্ঞেস করল, ইসলাম কী? তিনি বললেন, ইসলাম
(হল) আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করবে ও তাঁর সঙ্গে অন্য কাউকে শরীক করবে না এবং সলাত কায়িম
করবে, ফারয্ যাকাত দিবে ও রমাযানের সিয়াম পালন করবে। লোকটি জিজ্ঞেস করল, ইহ্সান
কী? তিনি বললেন, ইহ্সান হচ্ছে আল্লাহ্র ‘ইবাদাত এমন নিষ্ঠার সঙ্গে করবে, যেন তুমি
তাঁকে দেখছ। আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তবে (জানবে) আল্লাহ্ তোমাকে দেখছেন।
লোকটি আরও জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! কখন ক্বিয়ামাত ঘটবে? রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ ব্যাপারে প্রশ্নকারীর চেয়ে যাকে প্রশ্ন
করা হয়েছে, সে অধিক জানে না। তবে আমি তোমার কাছে এর কতগুলো নিদর্শন বলছি। তা হল,
যখন দাসী তার মনিবকে জন্ম দিবে, এটা তার একটি নিদর্শন। আর যখন দেখবে, নগ্নপদ ও
নগ্নদেহ বিশিষ্ট লোকেরা মানুষের নেতা হবে, এও তার একটি নিদর্শন। এটি ঐ পাঁচটি
বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ্ ব্যতীত আর কেউ জানেন না ঃ (১) ক্বিয়ামাত সম্পর্কিত
জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকটই রয়েছে। (২) তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, (৩) তিনিই জানেন,
মাতৃগর্ভে কী আছে। এরপরে সে লোকটি চলে গেল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাঁকে আমার নিকট ফিরিয়ে আন। সহাবীগণ তাঁকে ফিরিয়ে আনতে গেলেন,
কিন্তু কিছুই দেখতে পেলেন না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, তিনি হলেন জিব্রাঈল, লোকেদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্য এসেছিলেন। [৫০] (আ.প্র.
৪৪১৩, ই.ফা. ৪৪১৫)র
৪৭৭৮
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ
قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ
زَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ
بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
مَفَاتِيْحُ الْغَيْبِ خَمْسٌ ثُمَّ قَرَأَ {إِنَّ اللهَ عِنْدَه” عِلْمُ
السَّاعَةِ}.
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, গায়বের চাবি পাঁচটি।
এরপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন ঃ ক্বিয়ামাত সম্পর্কিত জ্ঞান কেবল আল্লাহ্ তা‘আলারই
আছে। [১০৩৯] (আ.প্র. ৪৪১৪, ই.ফা. ৪৪১৬)
৬৫/৩২/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ কেউই
জানে না তাদের জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী সামগ্রী লুকিয়ে রাখা হয়েছে .....? (সূরাহ
আস্-সাজদাহ ৩২/১৭)
সূরাহ (৩২) : আস্-সাজদাহ
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مَهِيْنٍ দুর্বল অর্থাৎ পুরুষের বীর্য। ضَلَلْنَا আমরা ধ্বংস হয়েছি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْجُرُزُ ঐ মাটি যেখানে এত অল্প বৃষ্টি হয়, যাতে তা কোন উপকারে আসে না। نَهْدِ তাকে সঠিক পথ বলে দিয়েছি।
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مَهِيْنٍ দুর্বল অর্থাৎ পুরুষের বীর্য। ضَلَلْنَا আমরা ধ্বংস হয়েছি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْجُرُزُ ঐ মাটি যেখানে এত অল্প বৃষ্টি হয়, যাতে তা কোন উপকারে আসে না। نَهْدِ তাকে সঠিক পথ বলে দিয়েছি।
৪৭৭৯
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ
اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
قَالَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِيْنَ مَا لَا
عَيْنٌ رَأَتْ وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ قَالَ
أَبُوْ هُرَيْرَةَ اقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ {فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّآ
أُخْفِيَ لَهُمْ مِّنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ}
و حَدَّثَنَا عَلِيٌّ قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ اللهُ مِثْلَهُ قِيْلَ لِسُفْيَانَ رِوَايَةً قَالَ فَأَيُّ شَيْءٍ؟ قَالَ أَبُوْ مُعَاوِيَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ قَرَأَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قُرَّاتِ
و حَدَّثَنَا عَلِيٌّ قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ اللهُ مِثْلَهُ قِيْلَ لِسُفْيَانَ رِوَايَةً قَالَ فَأَيُّ شَيْءٍ؟ قَالَ أَبُوْ مُعَاوِيَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ قَرَأَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قُرَّاتِ
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, আমি আমার নেক
বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তু বানিয়ে রেখেছি, যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি
এবং কোন অন্তঃকরণ চিন্তা করেনি। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেছেন, তোমরা চাইলে এ আয়াত
তিলাওয়াত কর ঃ “কেউ জানে না তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কোন্ বিষয় লুকিয়ে রাখা হয়েছে”
(আস্-সাজদাহ ৩২/১৭)। (আ.প্র. ৪৪১৫)
সুফ্ইয়ান (রহ.).....আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, পরের অংশ আগের হাদীসের মত। আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কি এ হাদীস রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, তা ছাড়া আর কী?
আবূ মু‘আবীয়াহ (রহ.).....আবূ সালিহ্ (রহ.) হতে বর্ণিত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) قُرَاتِ “আলিফ” এবং লম্বা ‘তা’ সহ) পড়েছিলেন। [৩২৪৪] (ই.ফা. ৪৪১৭)
সুফ্ইয়ান (রহ.).....আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, পরের অংশ আগের হাদীসের মত। আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কি এ হাদীস রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, তা ছাড়া আর কী?
আবূ মু‘আবীয়াহ (রহ.).....আবূ সালিহ্ (রহ.) হতে বর্ণিত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) قُرَاتِ “আলিফ” এবং লম্বা ‘তা’ সহ) পড়েছিলেন। [৩২৪৪] (ই.ফা. ৪৪১৭)
৪৭৮০
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ
حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ حَدَّثَنَا أَبُوْ صَالِحٍ عَنْ
أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِيْنَ مَا لَا عَيْنٌ
رَأَتْ وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ ذُخْرًا بَلْهَ
مَا أُطْلِعْتُمْ عَلَيْهِ ثُمَّ قَرَأَ {فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّآ أُخْفِيَ
لَهُمْ مِّنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍجَزَآءًمبِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ}.قَالَ أَبُو
مُعَاوِيَةَ عَنْ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ قَرَأَ أَبُو هُرَيْرَةَ
قُرَّاتِ أَعْيُنٍ
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, আমি আমার নেক
বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তুরাজি তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান
শোনেনি এবং কোন ব্যক্তির মন কল্পনা করেনি। এসব ছাড়া যা কিছুই তোমরা দেখছ, তার কোন
মূল্যই নেই। তারপর এ আয়াত পাঠ করলেন, কেউ জানে না তাদের জন্য নয়ন তৃপ্তিকর কী
লুক্কায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পারিতোষিক হিসেবে। [৩২৪৪] (আ.প্র. ৪৪১৬,
ই.ফা. ৪৪১৮)
৬৫/৩৩/১.অধ্যায়ঃ
নাবী মু’মিনদের নিকট তাদের
নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর এবং তার পত্নীগণ তাদের মাতা। (সূরা আহযাব ৩৩/৬)
সূরাহ (৩৩) : আহযাব
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {صَيَاصِيْهِمْ} قُصُوْرِهِمْ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, صَيَاصِيْهِمْ তাদের মহল।
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {صَيَاصِيْهِمْ} قُصُوْرِهِمْ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, صَيَاصِيْهِمْ তাদের মহল।
৪৭৮১
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ
الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ هِلَالِ
بْنِ عَلِيٍّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيْ عَمْرَةَ عَنْ أَبِيْ
هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا
مِنْ مُؤْمِنٍ إِلَّا وَأَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ
اقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ {النَّبِيُّ أَوْلٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ
أَنْفُسِهِمْ} فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ تَرَكَ مَالًا فَلْيَرِثْهُ عَصَبَتُهُ مَنْ
كَانُوْا فَإِنْ تَرَكَ دَيْنًا أَوْ ضَيَاعًا فَلْيَأْتِنِيْ فَأَنَا مَوْلَاهُ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, দুনিয়া ও আখিরাতে সকল মানুষের চেয়ে
মু’মিনের জন্য আমিই ঘনিষ্ঠতম। তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াত পাঠ করতে পার “নাবী মু’মিনদের
নিকট তাদের নিজেদের চেয়ে অধিক ঘনিষ্ঠ।” সুতরাং কোন মু’মিন কোন ধন-সম্পদ রেখে গেলে
তার নিকটআত্মীয় সে যে-ই হোক, তার উত্তরাধিকারী হবে, আর যদি ঋণ অথবা অসহায়
সন্তানাদি রেখে যায় সে যেন আমার কাছে আসে, আমি তার অভিভাবক। [২২৯৮] (আ.প্র. ৪৪১৭,
ই.ফা. ৪৪১৯)
৬৫/৩৩/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ তোমরা
তাদেরকে ডাক তাদের প্রকৃত পিতৃ পরিচয়ে। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৫)
৪৭৮২
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ الْمُخْتَارِ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ
عُقْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَالِمٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُمَا أَنَّ زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ مَوْلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
مَا كُنَّا نَدْعُوْهُ إِلَّا زَيْدَ بْنَ مُحَمَّدٍ حَتَّى نَزَلَ الْقُرْآنُ
{اُدْعُوْهُمْ لِاٰبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللهِ}.
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আযাদকৃত গোলাম যায়দ ইব্নু
হারিসাহ্কে আমরা “যায়দ ইব্নু মুহাম্মদ-ই” ডাকতাম, যে পর্যন্ত না এ আয়াত নাযিল হয়।
তোমরা তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক, আল্লাহ্র দৃষ্টিতে এটিই অধিক ন্যায়সঙ্গত। [মুসলিম
৪৪/১০, হাঃ ২৪২৫, আহমাদ ৫৪৮০] (আ.প্র. ৪৪১৮, ই.ফা. ৪৪২০)
৬৫/৩৩/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
মু’মিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সঙ্গে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ
মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন
করেনি। (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৩)
{نَحْبَه”} عَهْدَهُ {أَقْطَارِهَا} جَوَانِبُهَا الْفِتْنَةَ لآَتَوْهَا لَأَعْطَوْهَا.
نَحْبَه তার অঙ্গীকার। أَقْطَارِهَا তার পার্শ্বসমূহ। الْفِتْنَةَ لَاٰتَوْهَا তারা তা গ্রহণ করত।
نَحْبَه তার অঙ্গীকার। أَقْطَارِهَا তার পার্শ্বসমূহ। الْفِتْنَةَ لَاٰتَوْهَا তারা তা গ্রহণ করত।
৪৭৮৩
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ
عَنْ ثُمَامَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ نُرَى هَذِهِ
الْآيَةَ نَزَلَتْ فِيْ أَنَسِ بْنِ النَّضْرِ {مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَالٌ
صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ}.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা মনে করি, এ আয়াত আনাস ইব্নু নায্র সম্পর্কে নাযিল হয়েছে ঃ “মু’মিনদের
মধ্যে কতক আল্লাহ্র সঙ্গে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে।” [২৮০৫] (আ.প্র. ৪৪১৯,
ই.ফা. ৪৪২১)
৪৭৮৪
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ
بْنِ ثَابِتٍ أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ قَالَ لَمَّا نَسَخْنَا الصُّحُفَ فِي
الْمَصَاحِفِ فَقَدْتُ آيَةً مِنْ سُوْرَةِ الْأَحْزَابِ كُنْتُ كَثِيْرًا
أَسْمَعُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَؤُهَا لَمْ أَجِدْهَا مَعَ
أَحَدٍ إِلَّا مَعَ خُزَيْمَةَ الْأَنْصَارِيِّ الَّذِيْ جَعَلَ رَسُوْلُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم شَهَادَتَهُ شَهَادَةَ رَجُلَيْنِ {مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ
رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ}.
যায়দ
ইব্নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা যখন সহীফা থেকে কুরআন লিপিবদ্ধ করছিলাম তখন সূরাহ আহযাবের একটি আয়াত
পেলাম না, যা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তিলাওয়াত করতে
শুনেছি। শেষে সেটি খুযায়মা আনসারী ছাড়া অন্য কারও কাছে পেলাম না; যার সাক্ষ্য
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’জন পুরুষ সাক্ষীর সমান গণ্য
করেছেন। (আয়াতটি হল) مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ
[২৮০৭] (আ.প্র. ৪৪২০, ই.ফা. ৪৪২২)
৬৫/৩৩/৪.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
{يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِّأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيٰوةَ الدُّنْيَا وَزِيْنَتَهَا فَتَعَالَيْنَ أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِيْلًا}
‘‘হে নাবী! আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে এসো, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদেরকে বিদায় দেই।’’ (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৮)
وَقَالَ مَعْمَرٌ {التَّبَرُّجُ} أَنْ تُخْرِجَ مَحَاسِنَهَا {سُنَّةَاللهِ} اسْتَنَّهَا جَعَلَهَا.
التَّبَرُّجُ আপন সৌন্দর্য প্রকাশ করা। سُنَّةَ اللهِ যে নীতি আল্লাহ্ নির্ধারণ করেছেন।
‘‘হে নাবী! আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে এসো, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদেরকে বিদায় দেই।’’ (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৮)
وَقَالَ مَعْمَرٌ {التَّبَرُّجُ} أَنْ تُخْرِجَ مَحَاسِنَهَا {سُنَّةَاللهِ} اسْتَنَّهَا جَعَلَهَا.
التَّبَرُّجُ আপন সৌন্দর্য প্রকাশ করা। سُنَّةَ اللهِ যে নীতি আল্লাহ্ নির্ধারণ করেছেন।
৪৭৮৫
দুঃখিত! আরবী অংশ এখনো সংযুক্ত করা হয়নি।
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কাছে এলেন, যখন আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর
সহধর্মিণীগণকে দু’টি পন্থার মধ্যে একটি পন্থা বেছে নেয়ার নির্দেশ দিলেন, তখন
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বপ্রথম আমা হতে শুরু করলেন এবং
বললেন, আমি তোমার কাছে একটি কথা উল্লেখ করছি। তাড়াহুড়ো না করে তোমার পিতা-মাতার
সঙ্গে পরামর্শ করে উত্তর দেবে। তিনি এ কথা ভালভাবেই জানতেন যে, আমার আব্বা-আম্মা
তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরামর্শ কখনও
দিবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি [রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)] বললেন, আল্লাহ্ বলছেন, “হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের বলুন, তোমরা
যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ কামনা কর.....। তখন আমি তাঁকে বললাম, এ ব্যাপারে আমার
আব্বা-আম্মা থেকে পরামর্শ নেবার কী আছে? আমি তো আল্লাহ্ তাঁর রসূল এবং আখিরাতের
জীবনই কামনা করি। [৪৭৮৬; মুসলিম ১৮/৪, হাঃ ১৪৭৫] (আ.প্র. ৪৪২১, ই.ফা. ৪৪২৩)
[১] খায়বারের যুদ্ধের পর রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ তাদের ভরণ-পোষণে অর্থ বৃদ্ধির অনুরোধ জানান। এ বিষয়ের
প্রতি এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
৬৫/৩৩/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
{وَإِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللهَ وَرَسُوْلَه” وَالدَّارَ الْاٰخِرَةَ فَإِنَّ اللهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنٰتِ مِنْكُنَّ أَجْرًا عَظِيْمًا}
পক্ষান্তরে যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও পরকাল কামনা কর, তবে তোমাদের সৎকর্মপরায়ণদের জন্য আল্লাহ মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন। (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৯)
وَقَالَ قَتَادَةُ {وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلٰى فِيْ بُيُوْتِكُنَّ مِنْ اٰيٰتِ اللهِ وَالْحِكْمَةِ} الْقُرْآنِ وَالْحِكْمَةُ السُّنَّةُ.
ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلٰى فِيْ بُيُوْتِكُنَّ مِنْاٰيٰتِ اللهِ وَالْحِكْمَةِ এর মধ্যে اٰيٰتِ দ্বারা কুরআন, সুন্নাত এবং হিকমত বোঝানো হয়েছে।
পক্ষান্তরে যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও পরকাল কামনা কর, তবে তোমাদের সৎকর্মপরায়ণদের জন্য আল্লাহ মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন। (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৯)
وَقَالَ قَتَادَةُ {وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلٰى فِيْ بُيُوْتِكُنَّ مِنْ اٰيٰتِ اللهِ وَالْحِكْمَةِ} الْقُرْآنِ وَالْحِكْمَةُ السُّنَّةُ.
ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلٰى فِيْ بُيُوْتِكُنَّ مِنْاٰيٰتِ اللهِ وَالْحِكْمَةِ এর মধ্যে اٰيٰتِ দ্বারা কুরআন, সুন্নাত এবং হিকমত বোঝানো হয়েছে।
৪৭৮৬
وَقَالَ اللَّيْثُ
حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ
لَمَّا أُمِرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِتَخْيِيْرِ أَزْوَاجِهِ بَدَأَ
بِيْ فَقَالَ إِنِّيْ ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا فَلَا عَلَيْكِ أَنْ لَا تَعْجَلِيْ
حَتَّى تَسْتَأْمِرِيْ أَبَوَيْكِ قَالَتْ وَقَدْ عَلِمَ أَنَّ أَبَوَيَّ لَمْ
يَكُوْنَا يَأْمُرَانِيْ بِفِرَاقِهِ قَالَتْ ثُمَّ قَالَ إِنَّ اللهَ جَلَّ
ثَنَاؤُهُ قَالَ {وَإِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللهَ وَرَسُوْلَه” وَالدَّارَ
الْاٰخِرَةَ فَإِنَّ اللهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنٰتِ مِنْكُنَّ أَجْرًا عَظِيْمًا}
قَالَتْ فَقُلْتُ فَفِيْ أَيِّ هَذَا أَسْتَأْمِرُ أَبَوَيَّ فَإِنِّيْ أُرِيْدُ
اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَالدَّارَ الآخِرَةَ قَالَتْ ثُمَّ فَعَلَ أَزْوَاجُ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ مَا فَعَلْتُ تَابَعَهُ مُوْسَى بْنُ
أَعْيَنَ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ
وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ وَأَبُوْ سُفْيَانَ الْمَعْمَرِيُّ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ
الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ
লায়স
(রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যখন
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর সহধর্মিণীদের ব্যাপারে
দু’টি পন্থার একটি পন্থা বেছে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হল, তখন তিনি প্রথমে আমাকে
বললেন, তোমাকে একটি বিষয় সম্পর্কে বলব। তাড়াহুড়ো না করে তুমি তোমার আব্বা ও আম্মার
সঙ্গে পরামর্শ করে নিবে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি অবশ্যই জানতেন, আমার আব্বা-আম্মা
তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা বলবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি বললেন,
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا إِلَى أَجْرًا عَظِيمًا
“হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ কামনা
কর.....মহা প্রতিদান পর্যন্ত। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ ব্যাপারে আমার আব্বা-আম্মার
সঙ্গে পরামর্শের কী আছে? আমি তো আল্লাহ্, তাঁর রসূল এবং আখিরাতের জীবন কামনা করি।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন ঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অন্যান্য
সহধর্মিণী আমার মতই জবাব দিলেন। [৪৭৮৫] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ. ই.ফা. অনুচ্ছেদ)
৬৫/৩৩/৬.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
{وَتُخْفِيْ فِيْ نَفْسِكَ مَا اللهُ مُبْدِيْهِ وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللهُ أَحَقُّ أَنْ تَخْشَاهُ}
আপনি আপনার অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ তা‘আলা প্রকাশ করে দিবেন। আর আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন, অথচ আল্লাহ্কেই ভয় করা আপনার পক্ষে অধিকতর উচিত ছিল.....। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৩৭)
আপনি আপনার অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ তা‘আলা প্রকাশ করে দিবেন। আর আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন, অথচ আল্লাহ্কেই ভয় করা আপনার পক্ষে অধিকতর উচিত ছিল.....। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৩৭)
৪৭৮৭
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ مَنْصُوْرٍ عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ
حَدَّثَنَا ثَابِتٌ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ هَذِهِ
الْآيَةَ {وَتُخْفِيْ فِيْ نَفْسِكَ مَا اللهُ مُبْدِيْهِ} نَزَلَتْ فِيْ شَأْنِ
زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ وَزَيْدِ بْنِ حَارِثَةَ.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এ আয়াতটি, “(তুমি তোমার অন্তরে যা গোপন করছ, আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে
দিচ্ছেন।)” যায়নাব বিনতে জাহ্শ এবং যায়দ ইব্নু হারিসাহ্ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।
[৭৪২০] (আ.প্র. ৪৪২২, ই.ফা. ৪৪২৪)
৬৫/৩৩/৭.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
৪৭৮৯
حِبَّانُ بْنُ مُوْسَى
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا عَاصِمٌ الْأَحْوَلُ عَنْ مُعَاذَةَ عَنْ
عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يَسْتَأْذِنُ فِيْ يَوْمِ الْمَرْأَةِ مِنَّا بَعْدَ أَنْ أُنْزِلَتْ هَذِهِ
الْآيَةُ {تُرْجِئُ مَنْ تَشَآءُ مِنْهُنَّ وَتُؤْوِيْٓ إِلَيْكَ مَنْ تَشَآءُ
وَمَنِ ابْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكَ} فَقُلْتُ لَهَا مَا
كُنْتِ تَقُوْلِيْنَ قَالَتْ كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُ إِنْ كَانَ ذَاكَ إِلَيَّ
فَإِنِّيْ لَا أُرِيْدُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنْ أُوْثِرَ عَلَيْكَ أَحَدًا
تَابَعَهُ عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ سَمِعَ عَاصِمًا.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্ত্রীদের সঙ্গে অবস্থানের পালার ব্যাপারে
আমাদের থেকে অনুমতি চাইতেন এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরও, আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা
আপনার নিকট হতে দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা আপনার নিকট স্থান দিতে পারেন এবং
আপনি যাকে দূরে রেখেছেন তাকে কামনা করলে আপনার কোন অপরাধ নেই। এ আয়াতটি নাযিল
হওয়ার পর মু‘আয বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি এর উত্তরে কী
বলতেন? তিনি বললেন, আমি তাঁকে বলতাম, এ বিষয়ের অধিকার যদি আমার থেকে থাকে তাহলে হে
আল্লাহ্র রসূল! আমি আপনার ব্যাপারে অন্য কাউকে অগ্রাধিকার দিতে চাই না। ‘আব্বাদ
বিন আব্বাদ ‘আসেম থেকে এরূপ শুনেছেন। [মুসলিম ১৮/৪, হাঃ ১৪৭৬] (আ.প্র. ৪৪২৪, ই.ফা.
৪৪২৬)
৬৫/৩৩/৮.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
হে মু’মিনগণ! তোমরা খাওয়ার
জন্য খাবার প্রস্তুতির অপেক্ষা না করে নাবীর ঘরে তোমাদেরকে অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত
প্রবেশ করবে না; তবে তোমাদেরকে ডাকা হলে তোমরা প্রবেশ করবে এবং খাওয়া শেষ হলে
নিজেরাই চলে যাবে, কথাবার্তায় মাশগুল হয়ে পড়বে না। তোমাদের এ আচরণ অবশ্যই নাবীকে
পীড়া দেয়। তিনি তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করেন। কিন্তু আল্লাহ সত্য বলতে
সংকোচবোধ করেন না। তোমরা যখন তাঁর পত্নীদের নিকট হতে কোন কিছু চাইবে, তখন পর্দার
অন্তরাল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর
পবিত্র উপায়। আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পত্নীদেরকে বিবাহ
করা তোমাদের কারও পক্ষে কখনও বৈধ নয়। এটা আল্লাহর কাছে সাংঘাতিক অপরাধ। (সূরাহ
আহযাব ৩৩/৫৩)
يُقَالُ {إِنَاهُ} إِدْرَاكُهُ أَنَى يَأْنِيْ أَنَاةً فَهُوَ آنٍ {لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا} إِذَا وَصَفْتَ صِفَةَ الْمُؤَنَّثِ قُلْتَ قَرِيْبَةً وَإِذَا جَعَلْتَهُ ظَرْفًا وَبَدَلًا وَلَمْ تُرِدْ الصِّفَةَ نَزَعْتَ الْهَاءَ مِنَ الْمُؤَنَّثِ وَكَذَلِكَ لَفْظُهَا فِي الْوَاحِدِ وَالِاثْنَيْنِ وَالْجَمِيْعِ لِلذَّكَرِ وَالْأُنْثَى.
বলা হয় إِنَاهُ খাদ্য পরিপাক হওয়া। এটা أَنَى يَأْنِيْ أَنَاةًথেকে গঠিত। لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا সম্ভবত ক্বিয়ামাত অতি নিকটবর্তী। যদি তুমি স্ত্রী লিঙ্গ হিসেবে ব্যবহার কর, তবে قَرِيْبَةً বলবে। আর যদি الصِّفَةَ না ধর ظَرْفًا বা بَدَلًا হিসেবে ব্যবহার কর তবে ‘তা’ নিয়ে যুক্ত করবে না। তেমনি এ শব্দটি একবচন, দ্বি-বচন, বহুবচন এবং নারী-পুরুষ সকল ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
يُقَالُ {إِنَاهُ} إِدْرَاكُهُ أَنَى يَأْنِيْ أَنَاةً فَهُوَ آنٍ {لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا} إِذَا وَصَفْتَ صِفَةَ الْمُؤَنَّثِ قُلْتَ قَرِيْبَةً وَإِذَا جَعَلْتَهُ ظَرْفًا وَبَدَلًا وَلَمْ تُرِدْ الصِّفَةَ نَزَعْتَ الْهَاءَ مِنَ الْمُؤَنَّثِ وَكَذَلِكَ لَفْظُهَا فِي الْوَاحِدِ وَالِاثْنَيْنِ وَالْجَمِيْعِ لِلذَّكَرِ وَالْأُنْثَى.
বলা হয় إِنَاهُ খাদ্য পরিপাক হওয়া। এটা أَنَى يَأْنِيْ أَنَاةًথেকে গঠিত। لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا সম্ভবত ক্বিয়ামাত অতি নিকটবর্তী। যদি তুমি স্ত্রী লিঙ্গ হিসেবে ব্যবহার কর, তবে قَرِيْبَةً বলবে। আর যদি الصِّفَةَ না ধর ظَرْفًا বা بَدَلًا হিসেবে ব্যবহার কর তবে ‘তা’ নিয়ে যুক্ত করবে না। তেমনি এ শব্দটি একবচন, দ্বি-বচন, বহুবচন এবং নারী-পুরুষ সকল ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
৪৭৯০
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا
يَحْيَى عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قُلْتُ
يَا رَسُوْلَ اللهِ يَدْخُلُ عَلَيْكَ الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ فَلَوْ أَمَرْتَ
أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ بِالْحِجَابِ فَأَنْزَلَ اللهُ آيَةَ الْحِجَابِ.
‘উমার
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি বললাম, আপনার কাছে ভাল ও মন্দ লোক আসে। আপনি যদি উম্মাহাতুল মু’মিনীদের
ব্যাপারে পর্দার নির্দেশ দিতেন। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করলেন।
[৪০২] (আ.প্র. ৪৪২৫, ই.ফা. ৪৪২৭)
৪৭৯১
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ
اللهِ الرَّقَاشِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ
أَبِيْ يَقُوْلُ حَدَّثَنَا أَبُوْ مِجْلَزٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا تَزَوَّجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَيْنَبَ
بِنْتَ جَحْشٍ دَعَا الْقَوْمَ فَطَعِمُوْا ثُمَّ جَلَسُوْا يَتَحَدَّثُوْنَ
وَإِذَا هُوَ كَأَنَّهُ يَتَهَيَّأُ لِلْقِيَامِ فَلَمْ يَقُوْمُوْا فَلَمَّا
رَأَى ذَلِكَ قَامَ فَلَمَّا قَامَ قَامَ مَنْ قَامَ وَقَعَدَ ثَلَاثَةُ نَفَرٍ
فَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيَدْخُلَ فَإِذَا الْقَوْمُ جُلُوْسٌ
ثُمَّ إِنَّهُمْ قَامُوْا فَانْطَلَقْتُ فَجِئْتُ فَأَخْبَرْتُ النَّبِيَّ صلى
الله عليه وسلم أَنَّهُمْ قَدْ انْطَلَقُوْا فَجَاءَ حَتَّى دَخَلَ فَذَهَبْتُ
أَدْخُلُ فَأَلْقَى الْحِجَابَ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ {يٰٓأَيُّهَا
الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتَ النَّبِيِّ}الْآيَةَ
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত।
তিনি বলেন, যয়নাব বিন্ত জাহশ্কে যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বিয়ে করেন, তখন তিনি লোকদের দাওয়াত করলেন। লোকেরা আহারের পর বসে
কথাবার্তা বলতে লাগল। তিনি উঠে যেতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু লোকেরা উঠছিল না। এ অবস্থা
দেখে তিনি উঠে দাঁড়ালেন। তিনি উঠে যাওয়ার পর যারা উঠবার তারা উঠল। কিন্তু তিন
ব্যক্তি বসেই থাকল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘরে প্রবেশের জন্য ফিরে
এসে দেখেন, তারা তখনও বসে রয়েছে। অতঃপর তারাও উঠে গেল। আমি গিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাদের চলে যাওয়ার সংবাদ দিলাম। তারপর তিনি এসে প্রবেশ করলেন।
এরপরও আমি প্রবেশ করতে চাইলে তিনি আমার ও তার মাঝে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। তখন
আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ
“হে মু’মিনগণ! তোমরা নাবীর গৃহে প্রবেশ করো না.....শেষ পর্যন্ত। [৪৭৯২, ৪৭৯৩,
৪৭৯৪, ৫১৫৪, ৫১৬৩, ৫১৬৬, ৫১৬৮, ৫১৭০, ৫১৭১, ৫৪৬৬, ৬২৩৮, ৬২৩৯, ৬২৭১, ৭৪২১; মুসলিম
১৬/১৪, হাঃ ১৪২৮, আহমাদ ১৩৪৭৮] (আ.প্র. ৪৪২৬, ই.ফা. ৪৪২৮)
৪৭৯২
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ
حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ قَالَ
أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَا أَعْلَمُ النَّاسِ بِهَذِهِ الْآيَةِ آيَةِ الْحِجَابِ
لَمَّا أُهْدِيَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ جَحْشٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا إِلَى رَسُوْلِ
اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَتْ مَعَهُ فِي الْبَيْتِ صَنَعَ طَعَامًا وَدَعَا
الْقَوْمَ فَقَعَدُوْا يَتَحَدَّثُوْنَ فَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
يَخْرُجُ ثُمَّ يَرْجِعُ وَهُمْ قُعُوْدٌ يَتَحَدَّثُوْنَ فَأَنْزَلَ اللهُ
تَعَالَىيٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتَ النَّبِيِّ
إِلَّآ أَنْ يُّؤْذَنَ لَكُمْ إِلٰى طَعَامٍ غَيْرَ نٰظِرِيْنَ إِنٰهُ} إِلَى قَوْلِهِ
{مِنْ وَّرَآءِ حِجَابٍ} فَضُرِبَ الْحِجَابُ وَقَامَ الْقَوْمُ.
আনাস
ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি পর্দার আয়াত সম্বন্ধে লোকদের চেয়ে অধিক জানি। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট যাইনাবকে বাসর যাপনের জন্য পাঠানো হয় এবং তিনি তাঁর
ঘরে তাঁর সঙ্গে অবস্থান করেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
খাবার তৈরি করে লোকদের দাওয়াত করলেন। তারা (খাওযার পর) বসে কথাবার্তা বলতে লাগল।
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাইরে গিয়ে আবার ঘরে ফিরে এলেন,
তখনও তারা বসে কথাবার্তা বলছিল। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন, “হে মু’মিনগণ!
তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা আহার্য প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা না করে আহারের
জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গৃহে প্রবেশ করবে না।”.....পর্দার
আড়াল থেকে’ পর্যন্ত। এরপর পর্দার বিধান কার্যকর হল এবং লোকেরা নিস্ক্রান্ত হল।
[৪৭৯১] (আ.প্র. ৪৪২৭, ই.ফা. ৪৪২৯)
৪৭৯৩
أَبُوْ مَعْمَرٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ صُهَيْبٍ عَنْ
أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بُنِيَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
بِزَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ بِخُبْزٍ وَلَحْمٍ فَأُرْسِلْتُ عَلَى الطَّعَامِ
دَاعِيًا فَيَجِيْءُ قَوْمٌ فَيَأْكُلُوْنَ وَيَخْرُجُوْنَ ثُمَّ يَجِيْءُ قَوْمٌ
فَيَأْكُلُوْنَ وَيَخْرُجُوْنَ فَدَعَوْتُ حَتَّى مَا أَجِدُ أَحَدًا أَدْعُوْ
فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللهِ مَا أَجِدُ أَحَدًا أَدْعُوْهُ قَالَ ارْفَعُوْا
طَعَامَكُمْ وَبَقِيَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ يَتَحَدَّثُوْنَ فِي الْبَيْتِ فَخَرَجَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَانْطَلَقَ إِلَى حُجْرَةِ عَائِشَةَ فَقَالَ
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ وَرَحْمَةُ اللهِ فَقَالَتْ وَعَلَيْكَ
السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ كَيْفَ وَجَدْتَ أَهْلَكَ بَارَكَ اللهُ لَكَ
فَتَقَرَّى حُجَرَ نِسَائِهِ كُلِّهِنَّ يَقُوْلُ لَهُنَّ كَمَا يَقُوْلُ
لِعَائِشَةَ وَيَقُلْنَ لَهُ كَمَا قَالَتْ عَائِشَةُ ثُمَّ رَجَعَ النَّبِيُّ صلى
الله عليه وسلم فَإِذَا ثَلَاثَةٌ مِنْ رَهْطٍ فِي الْبَيْتِ يَتَحَدَّثُوْنَ
وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَدِيْدَ الْحَيَاءِ فَخَرَجَ مُنْطَلِقًا
نَحْوَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ فَمَا أَدْرِيْ آخْبَرْتُهُ أَوْ أُخْبِرَ أَنَّ
الْقَوْمَ خَرَجُوْا فَرَجَعَ حَتَّى إِذَا وَضَعَ رِجْلَهُ فِيْ أُسْكُفَّةِ
الْبَابِ دَاخِلَةً وَأُخْرَى خَارِجَةً أَرْخَى السِّتْرَ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُ
وَأُنْزِلَتْ آيَةُ الْحِجَابِ.
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যায়নাব
বিনতে জাহশের সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বাসর যাপন
উপলক্ষে কিছু গোশত ও রুটির ব্যবস্থা করা হল। তারপর খানা খাওয়ানোর জন্য আমাকে
লোকদের ডেকে আনতে পাঠালেন। একদল লোক এসে খেয়ে চলে গেল। তারপর আর একদল এসে খেয়ে চলে
গেল। এরপর আবার আমি ডাকতে গেলাম, কিন্তু কাউকে আর ডেকে পেলাম না। আমি বললাম, হে
আল্লাহ্র রসূল! আর কাউকে ডেকে পাচ্ছি না। তিনি বললেন, খানা উঠিয়ে নাও। তখন তিন
ব্যক্তি ঘরে রয়ে গেল, তারা কথাবার্তা বলছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বের হয়ে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর ঘরের দিকে গেলেন এবং বললেন, আস্সালামু
‘আলায়কুম ইয়া আহলাল বায়ত ওয়া রহমাতুল্লাহ্! ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, ওয়া আলায়কাস
সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্। আল্লাহ্ আপনাকে বারাকাত দিন, আপনার স্ত্রীকে কেমন পেলেন?
এভাবে তিনি পর্যায়ক্রমে সব স্ত্রীর ঘরে গেলেন এবং ‘আয়িশাহ্কে যেমন বলেছিলেন তাদেরও
তেমনি বললেন। আর তাঁরা তাঁকে সে জবাবই দিয়েছিলেন, যেমন ‘আয়িশাহ (রাঃ) দিয়েছিলেন।
তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরে এসে সে তিন ব্যক্তিকেই ঘরে
কথাবার্তা বলতে দেখতে পেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খুব লাজুক
ছিলেন। (লজ্জা পেয়ে) আবার ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর ঘরের দিকে গেলেন। তখন, আমি স্মরণ করতে
পারছি না, অন্য কেউ না আমি তঁ াকে লোকদের বের হয়ে যাওয়ার খবর দিলাম। তিনি ফিরে এসে
দরজার চৌকাঠের ভিতরে এক পা ও বাইরে এক পা রেখে আমার ও তাঁর মধ্যে পর্দা ঝুলিয়ে
দিলেন এবং আল্লাহ্ তা‘আলা পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করলেন। [৪৭৯১] (আ.প্র. ৪৪২৮, ই.ফা.
৪৪৩০)
৪৭৯৪
إِسْحَاقُ بْنُ
مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ بَكْرٍ السَّهْمِيُّ حَدَّثَنَا
حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَوْلَمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله
عليه وسلم حِيْنَ بَنَى بِزَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَأَشْبَعَ النَّاسَ خُبْزًا
وَلَحْمًا ثُمَّ خَرَجَ إِلَى حُجَرِ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ كَمَا كَانَ
يَصْنَعُ صَبِيْحَةَ بِنَائِهِ فَيُسَلِّمُ عَلَيْهِنَّ وَيُسَلِّمْنَ عَلَيْهِ
وَيَدْعُوْ لَهُنَّ وَيَدْعُوْنَ لَهُ فَلَمَّا رَجَعَ إِلَى بَيْتِهِ رَأَى
رَجُلَيْنِ جَرَى بِهِمَا الْحَدِيْثُ فَلَمَّا رَآهُمَا رَجَعَ عَنْ بَيْتِهِ
فَلَمَّا رَأَى الرَّجُلَانِ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَجَعَ عَنْ
بَيْتِهِ وَثَبَا مُسْرِعَيْنِ فَمَا أَدْرِيْ أَنَا أَخْبَرْتُهُ بِخُرُوْجِهِمَا
أَمْ أُخْبِرَ فَرَجَعَ حَتَّى دَخَلَ الْبَيْتَ وَأَرْخَى السِّتْرَ بَيْنِيْ
وَبَيْنَهُ وَأُنْزِلَتْ آيَةُ الْحِجَابِ وَقَالَ ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ
أَخْبَرَنَا يَحْيَى حَدَّثَنِيْ حُمَيْدٌ سَمِعَ أَنَسًا عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আনাস্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যয়নাব
বিন্ত জাহশের সঙ্গে বাসর উদ্যাপনের সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ওয়ালীমা করলেন। লোকদের তিনি গোশ্ত-রুটি তৃপ্তি সহকারে খাওয়ালেন। তারপর
তিনি উম্মুল মু’মিনীনদের কক্ষে যাওয়ার জন্য বের হলেন। যেমন বাসর রাত্রির ভোরে তার
অভ্যাস ছিল যে, তিনি তাঁদের সালাম দিতেন ও তাঁদের জন্য দু‘আ করতেন এবং তাঁরাও
তাঁকে সালাম করতেন, তাঁর জন্য দু‘আ করতেন। তারপর ঘরে ফিরে এসে দু’ব্যক্তিকে
কথাবার্তায় রত দেখতে পেলেন। তাদের দেখে তিনি ঘর থেকে ফিরে চলে গেলেন। সে দু’জন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ঘর থেকে ফিরে যেতে দেখে জলদি বের হয়ে গেল।
এরপরে, আমার মনে নেই যে আমি তাঁকে তাদের বের হয়ে যাওয়ার খবর দিলাম, না অন্য কেউ
দিল। তখন তিনি ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ করলেন এবং আমার ও তাঁর মধ্যে পর্দা লটকিয়ে
দিলেন এবং পর্দার আয়াত নাযিল হল। [৪৭৯১] (আ.প্র. ৪৪২৯, ই.ফা. ৪৪৩১)
৪৭৯৫
زَكَرِيَّاءُ بْنُ
يَحْيَى حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ خَرَجَتْ سَوْدَةُ بَعْدَمَا ضُرِبَ الْحِجَابُ
لِحَاجَتِهَا وَكَانَتْ امْرَأَةً جَسِيْمَةً لَا تَخْفَى عَلَى مَنْ يَعْرِفُهَا
فَرَآهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ يَا سَوْدَةُ أَمَا وَاللهِ مَا
تَخْفَيْنَ عَلَيْنَا فَانْظُرِيْ كَيْفَ تَخْرُجِيْنَ قَالَتْ فَانْكَفَأَتْ
رَاجِعَةً وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَيْتِيْ وَإِنَّهُ
لَيَتَعَشَّى وَفِيْ يَدِهِ عَرْقٌ فَدَخَلَتْ فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ
إِنِّيْ خَرَجْتُ لِبَعْضِ حَاجَتِيْ فَقَالَ لِيْ عُمَرُ كَذَا وَكَذَا قَالَتْ
فَأَوْحَى اللهُ إِلَيْهِ ثُمَّ رُفِعَ عَنْهُ وَإِنَّ الْعَرْقَ فِيْ يَدِهِ مَا
وَضَعَهُ فَقَالَ إِنَّهُ قَدْ أُذِنَ لَكُنَّ أَنْ تَخْرُجْنَ لِحَاجَتِكُنَّ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর সাওদাহ প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গেলেন। সাওদাহ
এমন স্থূল শরীরের অধিকারিণী ছিলেন যে, পরিচিত লোকদের থেকে তিনি নিজেকে গোপন রাখতে
পারতেন না। ‘উমার ইব্নু খাত্তাব (রাঃ) তাঁকে দেখে বললেন, হে সাওদাহ! জেনে রাখ,
আল্লাহ্র কসম! আমাদের নযর থেকে গোপন থাকতে পারবে না। এখন দেখ তো, কীভাবে বাইরে
যাবে? ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সাওদাহ (রাঃ) ফিরে আসলেন। আর এ সময় রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার ঘরে রাতের খানা খাচ্ছিলেন। তাঁর হাতে ছিল
টুকরা হাড়। সাওদাহ (রাঃ) ঘরে প্রবেশ করে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি প্রাকৃতিক
প্রয়োজনে বাইরে গিয়েছিলাম। তখন ‘উমার (রাঃ) আমাকে এমন এমন কথা বলেছে। ‘আয়িশাহ
(রাঃ) বলেন, এ সময় আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নিকট ওয়াহী অবতীর্ণ করেন। ওয়াহী অবতীর্ণ
হওয়া শেষ হল, হাড় টুকরা তখনও তাঁর হাতেই ছিল, তিনি তা রেখে দেননি। রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, অবশ্য দরকার হলে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার
অনুমতি দেয়া হয়েছে। [১৪৬; মুসলিম ৩৯/৭, হাঃ ২১৭০, আহমাদ ২৪৩৪৪] (আ.প্র. ৪৪৩০,
ই.ফা. ৪৪৩২)
৬৫/৩৩/৯.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
যদি তোমরা কোন বিষয় প্রকাশ
কর কিংবা তা গোপন রাখ, তবে তো আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ে সবিশেষ অবগত আছেন।
নাবী-পত্নীদের জন্য কোন গুনাহ নেই তাদের নিজ নিজ পিতা, পুত্র, ভ্রাতা,
ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগিনীপুত্র, স্বধর্মাবলম্বিনী নারী এবং স্বীয় অধিকারভুক্ত
দাসদাসীদের সামনে পর্দা পালন না করায়। হে নাবী-পত্নীগণ! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর।
নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয় প্রত্যক্ষ করেন।
৪৭৯৬
أَبُو الْيَمَانِ
أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ
أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَ عَلَيَّ أَفْلَحُ
أَخُوْ أَبِي الْقُعَيْسِ بَعْدَمَا أُنْزِلَ الْحِجَابُ فَقُلْتُ لَا آذَنُ لَهُ
حَتَّى أَسْتَأْذِنَ فِيْهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّ أَخَاهُ أَبَا
الْقُعَيْسِ لَيْسَ هُوَ أَرْضَعَنِيْ وَلَكِنْ أَرْضَعَتْنِي امْرَأَةُ أَبِي
الْقُعَيْسِ فَدَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لَهُ يَا
رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ أَفْلَحَ أَخَا أَبِي الْقُعَيْسِ اسْتَأْذَنَ فَأَبَيْتُ
أَنْ آذَنَ لَهُ حَتَّى أَسْتَأْذِنَكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
وَمَا مَنَعَكِ أَنْ تَأْذَنِيْ عَمُّكِ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ
الرَّجُلَ لَيْسَ هُوَ أَرْضَعَنِيْ وَلَكِنْ أَرْضَعَتْنِي امْرَأَةُ أَبِي
الْقُعَيْسِ فَقَالَ ائْذَنِيْ لَهُ فَإِنَّهُ عَمُّكِ تَرِبَتْ يَمِيْنُكِ قَالَ
عُرْوَةُ فَلِذَلِكَ كَانَتْ عَائِشَةُ تَقُوْلُ حَرِّمُوْا مِنْ الرَّضَاعَةِ مَا
تُحَرِّمُوْنَ مِنْ النَّسَبِ.
‘আয়িশাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর, আবুল কু’আয়স এর ভাই-আফ্লাহ আমার কাছে প্রবেশ
করার অনুমতি চায়। আমি বললাম, এ ব্যাপারে যতক্ষণ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) অনুমতি না দিবেন, ততক্ষণ আমি অনুমতি দিতে পারি না। কেননা তার ভাই আবূ
কু‘আয়স নিজে আমাকে দুধ পান করাননি। কিন্তু আবুল কু’আয়সের স্ত্রী আমাকে দুধ পান
করিয়েছেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে আসলেন। আমি
তাঁকে বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আবুল কু’আয়সের ভাই-আফরাহ্ আমার সঙ্গে দেখা করার
অনুমতি চাইছিল। আমি এ বলে অস্বীকার করেছি যে, যতক্ষণ আপনি এ ব্যাপারে অনুমতি না
দিবেন, ততক্ষণ আমি অনুমতি দিব না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, তোমার চাচাকে (দেখা করার) অনুমতি দিতে কিসে বাধা দিয়েছে? আমি বললাম, সে ব্যক্তি
তো আমাকে দুধ পান করাননি; কিন্তু আবুল কু’আয়াসের স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছে।
এরপর তিনি [রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] বললেন, তোমার হাত ধুলায়
ধূসরিত হোক, তাকে অনুমতি দাও, কেননা, সে তোমার চাচা। ‘উরওয়াহ বলেন, এ কারণে
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলতেন বংশ সম্বন্ধের কারণে যাকে তোমরা হারাম জান, দুগ্ধ-পানের
কারণেও তাকে হারাম জানবে। [২৬৪৪; মুসলিম ১৭/২, হাঃ ১৪৪৫, আহমাদ ২৪১০৯] (আ.প্র.
৪৪৩১, ই.ফা. ৪৪৩৩)
৬৫/৩৩/১০.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ
{إِنَّ اللهَ وَمَلٰٓئِكَتَه” يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ ط يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا}
নিশ্চয় আল্লাহ এবং তাঁর মালাইকা নাবীর জন্য রহমাত প্রার্থনা করে। হে মু’মিনগণ! তোমরাও নাবীর জন্য রাহমাত প্রার্থনা কর এবং তার প্রতি প্রচুর পরিমাণে সালাম পাঠাতে থাক। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৫৬)
قَالَ أَبُو الْعَالِيَةِ صَلَاةُ اللهِ ثَنَاؤُهُ عَلَيْهِ عِنْدَ الْمَلَائِكَةِ وَصَلَاةُ الْمَلَائِكَةِ الدُّعَاءُ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {يُصَلُّوْنَ} يُبَرِّكُوْنَ {لَنُغْرِيَنَّكَ} لَنُسَلِّطَنَّكَ.
আবুল ‘আলীয়া (রহ.) বলেন, আল্লাহর সালাতের অর্থ মালায়িকার সম্মুখে নাবীর প্রতি আল্লাহর প্রশংসা। মালাইকা সালাতের অর্থ- দু‘আ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, يُصَلُّوْنَ -এর অর্থ-বারকাতের দু‘আ করছেন। لَنُغْرِيَنَّكَ আমি তোমাকে বিজয়ী করব।
নিশ্চয় আল্লাহ এবং তাঁর মালাইকা নাবীর জন্য রহমাত প্রার্থনা করে। হে মু’মিনগণ! তোমরাও নাবীর জন্য রাহমাত প্রার্থনা কর এবং তার প্রতি প্রচুর পরিমাণে সালাম পাঠাতে থাক। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৫৬)
قَالَ أَبُو الْعَالِيَةِ صَلَاةُ اللهِ ثَنَاؤُهُ عَلَيْهِ عِنْدَ الْمَلَائِكَةِ وَصَلَاةُ الْمَلَائِكَةِ الدُّعَاءُ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {يُصَلُّوْنَ} يُبَرِّكُوْنَ {لَنُغْرِيَنَّكَ} لَنُسَلِّطَنَّكَ.
আবুল ‘আলীয়া (রহ.) বলেন, আল্লাহর সালাতের অর্থ মালায়িকার সম্মুখে নাবীর প্রতি আল্লাহর প্রশংসা। মালাইকা সালাতের অর্থ- দু‘আ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, يُصَلُّوْنَ -এর অর্থ-বারকাতের দু‘আ করছেন। لَنُغْرِيَنَّكَ আমি তোমাকে বিজয়ী করব।
৪৭৯৭
سَعِيْدُ بْنُ يَحْيَى
بْنِ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ عَنِ الْحَكَمِ عَنْ ابْنِ
أَبِيْ لَيْلَى عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قِيْلَ يَا
رَسُوْلَ اللهِ أَمَّا السَّلَامُ عَلَيْكَ فَقَدْ عَرَفْنَاهُ فَكَيْفَ الصَّلَاةُ
عَلَيْكَ قَالَ قُوْلُوا اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ
كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ اللهُمَّ
بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ
إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ.
কা‘ব
ইব্নু উজরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বলা
হল, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার উপর সালাম (সম্পর্কে) আমরা অবগত হয়েছি; কিন্তু সলাত
কীভাবে? তিনি বললেন, তোমরা বলবে, “হে আল্লাহ্! তুমি মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদের
পরিবারবর্গের উপর রহমাত নাযিল কর, যেমনিভাবে ইব্রাহীম-এর পরিবারবর্গের উপর তুমি
রহমাত নাযিল করেছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত, মর্যাদাবান। হে আল্লাহ্! তুমি
মুহাম্মদ-এর উপর এবং মুহাম্মাদ-এর পরিবারবর্গের প্রতি বারাকাত নাযিল কর। যেমনিভাবে
তুমি বারাকাত নাযিল করেছ ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত,
মর্যাদাবান। [৩৩৭০] (আ.প্র. ৪৪৩২, ই.ফা. ৪৪৩৪)
৪৭৯৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ
يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ خَبَّابٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُوْلَ
اللهِ هَذَا التَّسْلِيْمُ فَكَيْفَ نُصَلِّيْ عَلَيْكَ قَالَ قُوْلُوا اللهُمَّ
صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ
إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ
عَلَى إِبْرَاهِيْمَ قَالَ أَبُوْ صَالِحٍ عَنْ اللَّيْثِ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى
آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ
بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ حَازِمٍ وَالدَّرَاوَرْدِيُّ عَنْ يَزِيْدَ
وَقَالَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ
كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ
আবূ
সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা বললাম, এ তো হল সালাম পাঠ; কিন্তু কেমন করে আমরা আপনার প্রতি দরূদ পড়ব?
তিনি বললেন, তোমরা বলবে, “হে আল্লাহ্! আপনার বান্দা ও আপনার রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি রাহমাত নাযিল করুন, যেভাবে রহমাত নাযিল করেছেন
ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের প্রতি এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর
প্রতি ও মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের প্রতি বারকাত নাযিল করুন, যেভাবে বারকাত অবতীর্ণ
করেছেন ইব্রাহীম (‘আ.)-এর প্রতি। তবে বর্ণনাকারী আবূ সালিহ লায়স থেকে বর্ণনা
করেছেন মুহাম্মাদ ও তার পরিবারবর্গের প্রতি বারাকাত নাযিল করুন যেমন আপনি বারকাত
নাযিল করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের প্রতি। (আ.প্র. ৪৪৩৩, ই.ফা. ৪৪৩৫)
ইয়াযীদ হতে বর্ণিত। তিনি (এমনিভাবে) বলেন, যেমনভাবে ইব্রাহীম (‘আ.)-এর উপর রহমাত অবতীর্ণ করেছেন। আর বারাকাত অবতীর্ণ করুন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি এবং মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের প্রতি, যেভাবে বারাকাত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম (‘আ.)-এর প্রতি এবং ইব্রাহীমের পরিবারের প্রতি। [৬৩৫৮] (আ.প্র. ৪৪৩৪)
ইয়াযীদ হতে বর্ণিত। তিনি (এমনিভাবে) বলেন, যেমনভাবে ইব্রাহীম (‘আ.)-এর উপর রহমাত অবতীর্ণ করেছেন। আর বারাকাত অবতীর্ণ করুন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি এবং মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের প্রতি, যেভাবে বারাকাত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম (‘আ.)-এর প্রতি এবং ইব্রাহীমের পরিবারের প্রতি। [৬৩৫৮] (আ.প্র. ৪৪৩৪)
৬৫/৩৩/১১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ তোমরা
তাদের মত হয়ো না, যারা মূসা (আঃ)-কে কষ্ট দিয়েছে। (সুরাহ আহযাব ৩৩/৬৯)
৪৭৯৯
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ
أَخْبَرَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا عَوْفٌ عَنِ الْحَسَنِ وَمُحَمَّدٍ
وَخِلَاسٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ
صلى الله عليه وسلم إِنَّ مُوْسَى كَانَ رَجُلًا حَيِيًّا وَذَلِكَ قَوْلُهُ
تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ اٰذَوْا
مُوْسٰى} فَبَرَّأَهُ اللهُ مِمَّا قَالُوْا {وَكَانَ عِنْدَ اللهِ وَجِيْهًا}.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মূসা (‘আ.) ছিলেন
খুব লজ্জাশীল”। আর এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ্র এ বাণী, হে মু’মিনগণ! তোমরা তাদের মত
হয়ো না, যারা মূসা (‘আ.)-কে কষ্ট দিয়েছে। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে ওদের অভিযোগ
থেকে পবিত্র করেছেন। আর তিনি ছিলেন আল্লাহ্র কাছে অতি সম্মানিত। [২৭৮[ (আ.প্র.
৪৪৩৫, ই.ফা. ৪৪৩৬)
৬৫/৩৪/১.অধ্যায়ঃ
অধ্যায়: আল্লাহ্ তা‘আলার
বাণীঃ এমনকি, যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় দূর হবে তখন তারা একে অন্যকে বলবে- তোমাদের
রব কী বললেন? তারা বলবে, সত্য বলেছেন। তিনিই সমুন্নত, সুমহান। (সূরাহ সাবা ৩৪/২৩)
সূরাহ (৩৪) : সাবা
يُقَالُ {مُعَاجِزِيْنَ} مُسَابِقِيْنَ {بِمُعْجِزِيْنَ} بِفَائِتِيْنَ {مُعَاجِزِيْنَ} مُغَالِبِيْنَ {سَبَقُوْا} فَاتُوْا {لَايُعْجِزُوْنَ} لَا يَفُوْتُوْنَ {يَسْبِقُوْنَا} يُعْجِزُوْنَا وَقَوْلُهُ {بِمُعْجِزِيْنَ} بِفَائِتِيْنَ وَمَعْنَى {مُعَاجِزِيْنَ} مُغَالِبِيْنَ يُرِيْدُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا أَنْ يُظْهِرَ عَجْزَ صَاحِبِهِ {مِعْشَارٌ} عُشْرٌ يُقَالُ {الْأُكُلُ} الثَّمَرُ {بَاعِدْ} وَبَعِّدْ وَاحِدٌ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {لَايَعْزُبُ}لَا يَغِيْبُ سَيْلَ {الْعَرِمِ} السُّدُّ مَاءٌ أَحْمَرُ أَرْسَلَهُ اللهُ فِي السُّدِّ فَشَقَّهُ وَهَدَمَهُ وَحَفَرَ الْوَادِيَ فَارْتَفَعَتَا عَنِ الْجَنْبَيْنِ وَغَابَ عَنْهُمَا الْمَاءُ فَيَبِسَتَا وَلَمْ يَكُنْ الْمَاءُ الْأَحْمَرُ مِنْ السُّدِّ وَلَكِنْ كَانَ عَذَابًا أَرْسَلَهُ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنْ حَيْثُ شَاءَ
وَقَالَ عَمْرُوْ بْنُ شُرَحْبِيْلَ الْعَرِمُ الْمُسَنَّاةُ بِلَحْنِ أَهْلِ الْيَمَنِ وَقَالَ غَيْرُهُ الْعَرِمُ الْوَادِيْ {السَّابِغَاتُ} الدُّرُوْعُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {يُجَازَى} يُعَاقَبُ {أَعِظُكُمْ بِوَاحِدَةٍ} بِطَاعَةِ اللهِ {مَثْنٰى وَفُرَادٰى} وَاحِدٌ وَاثْنَيْنِ {التَّنَاوُشُ} الرَّدُّ مِنَ الْآخِرَةِ إِلَى الدُّنْيَا {وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُوْنَ} مِنْ مَالٍ أَوْ وَلَدٍ أَوْ زَهْرَةٍ {بِأَشْيَاعِهِمْ} بِأَمْثَالِهِمْ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَالْجَوَابِ {كَالْجَوْبَةِ} مِنَ الْأَرْضِ {الْخَمْطُ} الْأَرَاكُ {وَالأَثَلُ} الطَّرْفَاءُ {الْعَرِمُ} الشَّدِيْدُ.
مُعَاجِزِيْنَ প্রতিযোগিতাকারী بِمُعْجِزِيْنَ ব্যর্থকারী। مُعَاجِزِيْنَ বিজয়ী হওয়ার প্রয়াসী। سَبَقُوْا ছুটে গিয়েছে, পরিত্রাণ পেয়েছে। لَايُعْجِزُوْنَ তারা ছুটে যেতে পারবে না, ছাড়া পাবে না। يَسْبِقُوْنَا আমাদের অক্ষম করবে। بِمُعْجِزِيْنَ ব্যর্থকারী। مُعَاجِزِيْنَ পরস্পর বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশী। প্রত্যেকেই তার প্রতিপক্ষের অক্ষমতা প্রকাশ করতে চায়। مِعْشَارٌ এক-দশমাংশ। الْأُكُلُ ফল, بَاعِدْ - بَعِّدْ একই অর্থ, দূরত্ব করে দাও। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لَايَعْزُبُ অদৃশ্য হয় না। الْعَرِمِ বাঁধ, আল্লাহ্ তা‘আলা সে বাঁধের মধ্য দিয়ে লাল পানি প্রবাহিত করে তা ফাটিয়ে ধ্বংস করে দেন এবং একটি উপত্যকা খুদে ফেলেন। ফলে তার দু’পার্শ্ব উঁচু হয়ে তা থেকে পানি সরে পড়ে এবং উভয় পার্শ্ব শুকিয়ে যায়। এ লাল পানি বাঁধ থেকে আসেনি, বরং তা ছিল তাদের প্রতি আল্লাহর প্রেরিত আযাব, যা তিনি যেখান থেকে ইচ্ছে পাঠিয়েছিলেন।
‘আমর ইবনু শুরাহ্বীল (রহ.) বলেন, الْعَرِمُ ইয়ামানবাসীদের ভাষায় কুঁজের মত উঁচু। অন্য হতে বর্ণিত। الْعَرِمُউপত্যকা, السَّابِغَاتُ বর্মসমূহ। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُجَازَى শাস্তি দেয়া হবে। أَعِظُكُمْ بِوَاحِدَةٍআল্লাহর আনুগত্য। مَثْنَىوَفُرَادَى একা একা এবং দু’ দু’জন। التَّنَاوُشُ পরজগত থেকে দুনিয়ার দিকে ফিরে আসা। وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُوْنَ অর্থাৎ সম্পদ, সন্ততি বা জাঁক-জমক। بِأَشْيَاعِهِمْ তাদের মত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, كَالْجَوْبَةِ যমীনে হাউজ সদৃশ। الْخَمْطُ বিস্বাদ বৃক্ষ। الْأَثَلُ ঝাউ গাছ। الْعَرِمُ কঠিন।
يُقَالُ {مُعَاجِزِيْنَ} مُسَابِقِيْنَ {بِمُعْجِزِيْنَ} بِفَائِتِيْنَ {مُعَاجِزِيْنَ} مُغَالِبِيْنَ {سَبَقُوْا} فَاتُوْا {لَايُعْجِزُوْنَ} لَا يَفُوْتُوْنَ {يَسْبِقُوْنَا} يُعْجِزُوْنَا وَقَوْلُهُ {بِمُعْجِزِيْنَ} بِفَائِتِيْنَ وَمَعْنَى {مُعَاجِزِيْنَ} مُغَالِبِيْنَ يُرِيْدُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا أَنْ يُظْهِرَ عَجْزَ صَاحِبِهِ {مِعْشَارٌ} عُشْرٌ يُقَالُ {الْأُكُلُ} الثَّمَرُ {بَاعِدْ} وَبَعِّدْ وَاحِدٌ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {لَايَعْزُبُ}لَا يَغِيْبُ سَيْلَ {الْعَرِمِ} السُّدُّ مَاءٌ أَحْمَرُ أَرْسَلَهُ اللهُ فِي السُّدِّ فَشَقَّهُ وَهَدَمَهُ وَحَفَرَ الْوَادِيَ فَارْتَفَعَتَا عَنِ الْجَنْبَيْنِ وَغَابَ عَنْهُمَا الْمَاءُ فَيَبِسَتَا وَلَمْ يَكُنْ الْمَاءُ الْأَحْمَرُ مِنْ السُّدِّ وَلَكِنْ كَانَ عَذَابًا أَرْسَلَهُ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنْ حَيْثُ شَاءَ
وَقَالَ عَمْرُوْ بْنُ شُرَحْبِيْلَ الْعَرِمُ الْمُسَنَّاةُ بِلَحْنِ أَهْلِ الْيَمَنِ وَقَالَ غَيْرُهُ الْعَرِمُ الْوَادِيْ {السَّابِغَاتُ} الدُّرُوْعُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {يُجَازَى} يُعَاقَبُ {أَعِظُكُمْ بِوَاحِدَةٍ} بِطَاعَةِ اللهِ {مَثْنٰى وَفُرَادٰى} وَاحِدٌ وَاثْنَيْنِ {التَّنَاوُشُ} الرَّدُّ مِنَ الْآخِرَةِ إِلَى الدُّنْيَا {وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُوْنَ} مِنْ مَالٍ أَوْ وَلَدٍ أَوْ زَهْرَةٍ {بِأَشْيَاعِهِمْ} بِأَمْثَالِهِمْ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَالْجَوَابِ {كَالْجَوْبَةِ} مِنَ الْأَرْضِ {الْخَمْطُ} الْأَرَاكُ {وَالأَثَلُ} الطَّرْفَاءُ {الْعَرِمُ} الشَّدِيْدُ.
مُعَاجِزِيْنَ প্রতিযোগিতাকারী بِمُعْجِزِيْنَ ব্যর্থকারী। مُعَاجِزِيْنَ বিজয়ী হওয়ার প্রয়াসী। سَبَقُوْا ছুটে গিয়েছে, পরিত্রাণ পেয়েছে। لَايُعْجِزُوْنَ তারা ছুটে যেতে পারবে না, ছাড়া পাবে না। يَسْبِقُوْنَا আমাদের অক্ষম করবে। بِمُعْجِزِيْنَ ব্যর্থকারী। مُعَاجِزِيْنَ পরস্পর বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশী। প্রত্যেকেই তার প্রতিপক্ষের অক্ষমতা প্রকাশ করতে চায়। مِعْشَارٌ এক-দশমাংশ। الْأُكُلُ ফল, بَاعِدْ - بَعِّدْ একই অর্থ, দূরত্ব করে দাও। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لَايَعْزُبُ অদৃশ্য হয় না। الْعَرِمِ বাঁধ, আল্লাহ্ তা‘আলা সে বাঁধের মধ্য দিয়ে লাল পানি প্রবাহিত করে তা ফাটিয়ে ধ্বংস করে দেন এবং একটি উপত্যকা খুদে ফেলেন। ফলে তার দু’পার্শ্ব উঁচু হয়ে তা থেকে পানি সরে পড়ে এবং উভয় পার্শ্ব শুকিয়ে যায়। এ লাল পানি বাঁধ থেকে আসেনি, বরং তা ছিল তাদের প্রতি আল্লাহর প্রেরিত আযাব, যা তিনি যেখান থেকে ইচ্ছে পাঠিয়েছিলেন।
‘আমর ইবনু শুরাহ্বীল (রহ.) বলেন, الْعَرِمُ ইয়ামানবাসীদের ভাষায় কুঁজের মত উঁচু। অন্য হতে বর্ণিত। الْعَرِمُউপত্যকা, السَّابِغَاتُ বর্মসমূহ। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُجَازَى শাস্তি দেয়া হবে। أَعِظُكُمْ بِوَاحِدَةٍআল্লাহর আনুগত্য। مَثْنَىوَفُرَادَى একা একা এবং দু’ দু’জন। التَّنَاوُشُ পরজগত থেকে দুনিয়ার দিকে ফিরে আসা। وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُوْنَ অর্থাৎ সম্পদ, সন্ততি বা জাঁক-জমক। بِأَشْيَاعِهِمْ তাদের মত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, كَالْجَوْبَةِ যমীনে হাউজ সদৃশ। الْخَمْطُ বিস্বাদ বৃক্ষ। الْأَثَلُ ঝাউ গাছ। الْعَرِمُ কঠিন।
৪৮০০
الْحُمَيْدِيُّ
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو قَالَ سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ يَقُوْلُ
سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُوْلُ إِنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
إِذَا قَضَى اللهُ الْأَمْرَ فِي السَّمَاءِ ضَرَبَتْ الْمَلَائِكَةُ
بِأَجْنِحَتِهَا خُضْعَانًا لِقَوْلِهِ كَأَنَّهُ سِلْسِلَةٌ عَلَى صَفْوَانٍ
{إِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوْبِهِمْ قَالُوْا مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ} قَالُوْا لِلَّذِيْ
قَالَ الْحَقَّ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيْرُ فَيَسْمَعُهَا مُسْتَرِقُ السَّمْعِ
وَمُسْتَرِقُ السَّمْعِ هَكَذَا بَعْضُهُ فَوْقَ بَعْضٍ وَوَصَفَ سُفْيَانُ
بِكَفِّهِ فَحَرَفَهَا وَبَدَّدَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ فَيَسْمَعُ الْكَلِمَةَ
فَيُلْقِيْهَا إِلَى مَنْ تَحْتَهُ ثُمَّ يُلْقِيْهَا الآخَرُ إِلَى مَنْ تَحْتَهُ
حَتَّى يُلْقِيَهَا عَلَى لِسَانِ السَّاحِرِ أَوِ الْكَاهِنِ فَرُبَّمَا أَدْرَكَ
الشِّهَابُ قَبْلَ أَنْ يُلْقِيَهَا وَرُبَّمَا أَلْقَاهَا قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَهُ
فَيَكْذِبُ مَعَهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ فَيُقَالُ أَلَيْسَ قَدْ قَالَ لَنَا يَوْمَ
كَذَا وَكَذَا كَذَا وَكَذَا فَيُصَدَّقُ بِتِلْكَ الْكَلِمَةِ الَّتِيْ سَمِعَ
مِنْ السَّمَاءِ.
‘ইকরিমাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা যখন আকাশে কোন ফায়সালা করেন তখন মালায়িকাহ
আল্লাহ্র নির্দেশের প্রতি অতি নম্রভাবে তাদের ডানা ঝাড়তে থাকে; যেন মসৃণ পাথরের
উপর শিকলের আওয়াজ। যখন তাদের মনের ভয়-ভীতি দূর হয় তারা (একে অপরকে) জিজ্ঞেস করে,
তোমাদের প্রতিপালক কী বলেছেন? তারা বলেন, তিনি যা বলেছেন, সত্যই বলেছেন। তিনি মহান
উচ্চ। যে সময়ে লুকোচুরিকারী (শায়ত্বন) তা শোনে, আর লুকোচুরিকারী এরূপ একের ওপর এক।
সুফ্ইয়ান তাঁর হাত উপরে উঠিয়ে আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে দেখান। তারপর শয়তান কথাগুলো
শুনে নেয় এবং প্রথমজন তার নিচের জনকে এবং সে তার নিচের জনকে জানিয়ে দেয়। এমনিভাবে
এ খবর দুনিয়ার জাদুকর ও জ্যোতিষের কাছে পৌঁছে দেয়। কোন কোন সময় কথা পৌঁছানোর আগে
তার উপর অগ্নিশিখা নিক্ষিপ্ত হয় আবার অগ্নিশিখা নিক্ষিপ্ত হওয়ার আগে সে কথা
পৌঁছিয়ে দেয় এবং এর সাথে শত মিথ্যা মিশিয়ে বলে। এরপর লোকেরা বলাবলি করে সে কি অমুক
দিন অমুক অমুক কথা আমাদের বলেনি? এবং সেই কথা যা আসমান থেকে শুনে এসেছে তার জন্য
সব কথা সত্য বলে মনে করে। [৪৭০১] (আ.প্র. ৪৪৩৬, ই.ফা. ৪৪৩৭)
৬৫/৩৪/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ সে তো
পরবর্তী কঠিন আযাব সম্পর্কে তোমাদের একজন সতর্ককারী মাত্র। (সূরাহ সাবা ৩৪/৪৬)
৪৮০১
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ
اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَازِمٍ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ عَمْرِو
بْنِ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُمَا قَالَ صَعِدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الصَّفَا ذَاتَ يَوْمٍ
فَقَالَ يَا صَبَاحَاهْ فَاجْتَمَعَتْ إِلَيْهِ قُرَيْشٌ قَالُوْا مَا لَكَ قَالَ
أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ الْعَدُوَّ يُصَبِّحُكُمْ أَوْ
يُمَسِّيْكُمْ أَمَا كُنْتُمْ تُصَدِّقُوْنِيْ قَالُوْا بَلَى قَالَ فَإِنِّيْ
{نَذِيْرٌ لَّكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ} فَقَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا
لَكَ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا فَأَنْزَلَ اللهُ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ}.
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন সাফা পাহাড়ে আরোহণ করে
‘ইয়া সাবাহাহ’ বলে সবাইকে ডাক দিলেন। কুরাইশগণ তাঁর কাছে জমায়েত হয়ে বলল, তোমার
ব্যাপার কী? তিনি বললেন, তোমরা বল তো, আমি যদি তোমাদের বলি যে, শত্রুবাহিনী সকাল
বা সন্ধ্যায় তোমাদের উপর আক্রমণ করতে প্রস্তুত, তবে কি তোমরা আমার এ কথা বিশ্বাস
করবে? তারা বলল, নিশ্চয়ই। তিনি বললেন, আমি তোমাদের জন্য এক আসন্ন কঠিন শাস্তি
সম্পর্কে ভয় প্রদর্শন করছি। এ কথা শুনে আবূ লাহাব বলল, তোমার ধ্বংস হোক। এই জন্যই
কি আমাদেরকে জমায়েত করেছিলে? তখন আল্লাহ্ নাযিল করেন ঃ تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ
“আবূ লাহাবের হাত দু’টো ধ্বংস হোক।” [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৪৩৭, ই.ফা. ৪৪৩৮)
৬৫/৩৬/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর সূর্য নিজ
গন্তব্য স্থানের দিকে চলতে থাকে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। (সূরাহ
ইয়াসীন ৩৬/৩৮)
সূরাহ (৩৫) : মালায়িকাহ
(ফাতির)
قَالَ مُجَاهِدٌ {الْقِطْمِيْرُ} لِفَافَةُ النَّوَاةِ {مُثْقَلَةٌ} مُثَقَّلَةٌ وَقَالَ غَيْرُهُ {الْحَرُوْرُ} بِالنَّهَارِ مَعَ الشَّمْسِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الْحَرُوْرُ بِاللَّيْلِ وَالسَّمُوْمُ بِالنَّهَارِ {وَغَرَابِيْبُ أَشَدُّ} سَوَادٍ الْغِرْبِيْبُ الشَّدِيْدُ السَّوَادِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْقِطْمِيْرُ অর্থ-খেজুরের অাঁটির পর্দা। مُثْقَلَةٌ ভারাক্রান্ত ব্যক্তি। অন্যরা বলেছেন, (আল-হারূর- অর্থ-দিবাভাগে সূর্যের উত্তাপ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, রাতের উত্তাপকে الْحَرُوْرُ এবং দিনের উত্তাপকে السَّمُوْمُ বলা হয়। وَغَرَابِيْبُ أَشَدُّ অধিক কালো।
সূরাহ (৩৬) : ইয়াসীন
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {فَعَزَّزْنَا} شَدَّدْنَا {يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ} كَانَ حَسْرَةً عَلَيْهِمْ اسْتِهْزَاؤُهُمْ بِالرُّسُلِ {أَنْتُدْرِكَالْقَمَرَ} لَا يَسْتُرُ ضَوْءُ أَحَدِهِمَا ضَوْءَ الآخَرِ وَلَا يَنْبَغِيْ لَهُمَا ذَلِكَ {سَابِقُ النَّهَارِ} يَتَطَالَبَانِ حَثِيْثَيْنِ {نَسْلَخُ} نُخْرِجُ أَحَدَهُمَا مِنَ الْآخَرِ وَيَجْرِيْ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا {مِنْ مِثْلِهِ} مِنَ الْأَنْعَامِ {فَكِهُوْنَ} مُعْجَبُوْنَ {جُنْدٌ مُحْضَرُوْنَ} عِنْدَ الْحِسَابِ وَيُذْكَرُ عَنْ عِكْرِمَةَ الْمَشْحُوْنِ الْمُوْقَرُ
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {طَائِرُكُمْ}مَصَائِبُكُمْ {يَنْسِلُوْنَ} يَخْرُجُوْنَ {مَرْقَدِنَا} مَخْرَجِنَا {أَحْصَيْنَاهُ} حَفِظْنَاهُ {مَكَانَتُهُمْ} وَمَكَانُهُمْ وَاحِدٌ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, فَعَزَّزْنَا আমি অধিক শক্তি দিলাম। يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ দুনিয়াতে রাসূলদের সঙ্গে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করার ফলে আখিরাতে তাদের অবস্থা দুঃখময় হবে। أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ একটির আলো অন্যটির আলোর উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে না এবং চন্দ্র ও সূর্যের জন্য তা সম্ভব নয়। سَابِقُ النَّهَارِ রাত্র এবং দিন উভয়ই একে অপরের পেছনে অবিরাম গতিতে চলছে। نَسْلَخُ (রাত-দিন) উভয়ের মধ্যে একটিকে আমি অপরটি থেকে সরিয়ে দিই এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সাঁতার কাটে। مِنْ مِثْلِهِ অনুরূপ চতুষ্পদ জন্তু। فَكِهُوْنَ আনন্দিত। جُنْدٌ مُحْضَرُوْنَ হিসাবের সময় তাদের উপস্থিত করা হবে তাদের বাহিনীরূপে। ইকরামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, الْمَشْحُوْنِবোঝাইকৃত।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, طَائِرُكُمْ তোমাদের বিপদাপদ। يَنْسِلُوْنَ তারা বেরিয়ে আসবে। مَرْقَدِنَا আমাদের বের হবার স্থান। أَحْصَيْنَاهُ হিফাযাত করেছি আমি প্রতিটি বস্তুকে। مَكَانَتُهُمْ এবং مَكَانُهُمْএকই ; তাদের স্থানে।
قَالَ مُجَاهِدٌ {الْقِطْمِيْرُ} لِفَافَةُ النَّوَاةِ {مُثْقَلَةٌ} مُثَقَّلَةٌ وَقَالَ غَيْرُهُ {الْحَرُوْرُ} بِالنَّهَارِ مَعَ الشَّمْسِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الْحَرُوْرُ بِاللَّيْلِ وَالسَّمُوْمُ بِالنَّهَارِ {وَغَرَابِيْبُ أَشَدُّ} سَوَادٍ الْغِرْبِيْبُ الشَّدِيْدُ السَّوَادِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْقِطْمِيْرُ অর্থ-খেজুরের অাঁটির পর্দা। مُثْقَلَةٌ ভারাক্রান্ত ব্যক্তি। অন্যরা বলেছেন, (আল-হারূর- অর্থ-দিবাভাগে সূর্যের উত্তাপ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, রাতের উত্তাপকে الْحَرُوْرُ এবং দিনের উত্তাপকে السَّمُوْمُ বলা হয়। وَغَرَابِيْبُ أَشَدُّ অধিক কালো।
সূরাহ (৩৬) : ইয়াসীন
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {فَعَزَّزْنَا} شَدَّدْنَا {يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ} كَانَ حَسْرَةً عَلَيْهِمْ اسْتِهْزَاؤُهُمْ بِالرُّسُلِ {أَنْتُدْرِكَالْقَمَرَ} لَا يَسْتُرُ ضَوْءُ أَحَدِهِمَا ضَوْءَ الآخَرِ وَلَا يَنْبَغِيْ لَهُمَا ذَلِكَ {سَابِقُ النَّهَارِ} يَتَطَالَبَانِ حَثِيْثَيْنِ {نَسْلَخُ} نُخْرِجُ أَحَدَهُمَا مِنَ الْآخَرِ وَيَجْرِيْ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا {مِنْ مِثْلِهِ} مِنَ الْأَنْعَامِ {فَكِهُوْنَ} مُعْجَبُوْنَ {جُنْدٌ مُحْضَرُوْنَ} عِنْدَ الْحِسَابِ وَيُذْكَرُ عَنْ عِكْرِمَةَ الْمَشْحُوْنِ الْمُوْقَرُ
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {طَائِرُكُمْ}مَصَائِبُكُمْ {يَنْسِلُوْنَ} يَخْرُجُوْنَ {مَرْقَدِنَا} مَخْرَجِنَا {أَحْصَيْنَاهُ} حَفِظْنَاهُ {مَكَانَتُهُمْ} وَمَكَانُهُمْ وَاحِدٌ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, فَعَزَّزْنَا আমি অধিক শক্তি দিলাম। يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ দুনিয়াতে রাসূলদের সঙ্গে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করার ফলে আখিরাতে তাদের অবস্থা দুঃখময় হবে। أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ একটির আলো অন্যটির আলোর উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে না এবং চন্দ্র ও সূর্যের জন্য তা সম্ভব নয়। سَابِقُ النَّهَارِ রাত্র এবং দিন উভয়ই একে অপরের পেছনে অবিরাম গতিতে চলছে। نَسْلَخُ (রাত-দিন) উভয়ের মধ্যে একটিকে আমি অপরটি থেকে সরিয়ে দিই এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সাঁতার কাটে। مِنْ مِثْلِهِ অনুরূপ চতুষ্পদ জন্তু। فَكِهُوْنَ আনন্দিত। جُنْدٌ مُحْضَرُوْنَ হিসাবের সময় তাদের উপস্থিত করা হবে তাদের বাহিনীরূপে। ইকরামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, الْمَشْحُوْنِবোঝাইকৃত।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, طَائِرُكُمْ তোমাদের বিপদাপদ। يَنْسِلُوْنَ তারা বেরিয়ে আসবে। مَرْقَدِنَا আমাদের বের হবার স্থান। أَحْصَيْنَاهُ হিফাযাত করেছি আমি প্রতিটি বস্তুকে। مَكَانَتُهُمْ এবং مَكَانُهُمْএকই ; তাদের স্থানে।
৪৮০২
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا
الْأَعْمَشُ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ التَّيْمِيِّ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي
الْمَسْجِدِ عِنْدَ غُرُوْبِ الشَّمْسِ فَقَالَ يَا أَبَا ذَرٍّ أَتَدْرِيْ أَيْنَ
تَغْرُبُ الشَّمْسُ قُلْتُ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ قَالَ فَإِنَّهَا تَذْهَبُ
حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى{وَالشَّمْسُ
تَجْرِيْ لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذٰلِكَ تَقْدِيْرُ الْعَزِيْزِ الْعَلِيْمِ}.
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
সঙ্গে মাসজিদে ছিলাম। তিনি বললেন, হে আবূ যার! তুমি কি জান সূর্য কোথায় ডুবে? আমি
বললাম, আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূল সবচেয়ে ভাল জানেন। তিনি বললেন, সূর্য চলে, অবশেষে
আরশের নিচে গিয়ে সাজদাহ করে। নিুবর্ণিত وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ এ
আয়াতের কথাই বর্ণনা করা হয়েছে, অর্থাৎ সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের
পানে, এ হল পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। [৩১৯৯] (আ.প্র. ৪৪৩৮, ই.ফা. ৪৪৩৯)
৪৮০৩
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا
وَكِيْعٌ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ التَّيْمِيِّ عَنْ أَبِيْهِ
عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ قَوْلِهِ
تَعَالَى {وَالشَّمْسُ تَجْرِيْ لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا} قَالَ مُسْتَقَرُّهَا
تَحْتَ الْعَرْشِ.
আবূ
যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে আল্লাহ্র বাণী ঃ وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেছেন, সূর্যের গন্তব্যস্থল আরশের নিচে। [৩১৯৯]
(আ.প্র. ৪৪৩৯, ই.ফা. ৪৪৪০)
৬৫/৩৭/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ইউনুস ছিল
রসূলদের অন্তর্গত। (সূরাহ সাফ্ফাত ৩৭/১৩৯)
(37) سُوْرَةُ الصَّافَّاتِ
সূরাহ (৩৭) : ওয়াস্সাফফাত
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {وَيَقْذِفُوْنَ بِالْغَيْبِ مِنْ مَّكَانٍمبَعِيْدٍ} مِنْ كُلِّ {مَكَانٍ وَّيُقْذَفُوْنَ مِنْ كُلِّ جَانِبٍ} يُرْمَوْنَ {وَاصِبٌ} دَائِمٌ {لَازِبٌ} لَازِمٌ {تَأْتُوْنَنَا عَنِ الْيَمِيْنِ} يَعْنِي الْحَقَّ الْكُفَّارُ تَقُوْلُهُ لِلشَّيْطَانِ {غَوْلٌ} وَجَعُ بَطْنٍ {يُنْزَفُوْنَ} لَا تَذْهَبُ عُقُوْلُهُمْ {قَرِيْنٌ} شَيْطَانٌ {يُهْرَعُوْنَ} كَهَيْئَةِ الْهَرْوَلَةِ {يَزِفُّوْنَ} النَّسَلَانُ فِي الْمَشْيِ {وَبَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًا} قَالَ كُفَّارُ قُرَيْشٍ الْمَلَائِكَةُ بَنَاتُ اللهِ وَأُمَّهَاتُهُمْ بَنَاتُ سَرَوَاتِ الْجِنِّ وَقَالَ اللهُ تَعَالَى {وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُوْنَ} سَتُحْضَرُ لِلْحِسَابِ
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَنَحْنُ الصَّافُّوْنَ} الْمَلَائِكَةُ{صِرَاطِ الْجَحِيْمِ} سَوَاءِ الْجَحِيْمِ وَوَسَطِ الْجَحِيْمِ {لَشَوْبًا} يُخْلَطُ طَعَامُهُمْ وَيُسَاطُ بِالْحَمِيْمِ {مَدْحُوْرًا} مَطْرُوْدًا {بَيْضٌ مَّكْنُوْنٌ} اللُّؤْلُؤُ الْمَكْنُوْنُ {وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِيْنَ} يُذْكَرُ بِخَيْرٍ وَيُقَالُ {يَسْتَسْخِرُوْنَ} يَسْخَرُوْنَ{بَعْلًا} رَبًّا.
মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন, আল্লাহর বাণীঃ مِنْ مَكَانٍمبَعِيْدٍমানে সকল স্থান থেকে। يُقْذَفُوْنَনিক্ষিপ্ত হবে তাদের প্রতি। وَاصِبٌঅবিরাম বা অব্যাহত। لَازِبٌআঠালো। تَأْتُوْنَنَا عَنِ الْيَمِيْنِতোমরা তো হাক, কল্যাণ এবং সুখ-শান্তির বাণী নিয়ে আমাদের কাছে আসতে, এ কথাগুলো কাফিররা শায়ত্বনকে বলবে। غَوْلٌপেটের ব্যথা। يُنْزَفُوْنَতাদের বুদ্ধি নষ্ট হবে না। قَرِيْنٌশায়ত্বন। يُهْرَعُوْنَদ্রুত পদক্ষেপে চলা। يَزِفُّوْنَদ্রুতগতিতে পথ চলা। بَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًاকুরাইশ কাফেররা বলত, মালাক আল্লাহর কন্যা এবং তাদের মা জিন নেতাদের কন্যারা। আল্লাহ্ বলেন, وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُوْنَজিনেরা জানে, তাদেরও উপস্থিত করা হবে- তাদের হাজির করা হবে শাস্তির জন্য।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, لَنَحْنُ الصَّافُّوْنَ‘আমরা তো সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান’ দ্বারা মালাইকা বোঝানো হয়েছে। صِرَاطِ الْجَحِيْمِজাহান্নামের পথে বা জাহান্নামের মধ্যে। لَشَوْبًاতাদের খাদ্য ফুটন্ত পানি মিশ্রিত। مَدْحُوْرًاবিতাড়িত। بَيْضٌ مَكْنُوْنٌসুরক্ষিত মুক্তা। وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الاٰخِرِيْنَতাদেরকে সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করা হবে। يَسْتَسْخِرُوْنَতারা উপহাস করত। بَعْلًا দেবমূর্তি।
সূরাহ (৩৭) : ওয়াস্সাফফাত
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {وَيَقْذِفُوْنَ بِالْغَيْبِ مِنْ مَّكَانٍمبَعِيْدٍ} مِنْ كُلِّ {مَكَانٍ وَّيُقْذَفُوْنَ مِنْ كُلِّ جَانِبٍ} يُرْمَوْنَ {وَاصِبٌ} دَائِمٌ {لَازِبٌ} لَازِمٌ {تَأْتُوْنَنَا عَنِ الْيَمِيْنِ} يَعْنِي الْحَقَّ الْكُفَّارُ تَقُوْلُهُ لِلشَّيْطَانِ {غَوْلٌ} وَجَعُ بَطْنٍ {يُنْزَفُوْنَ} لَا تَذْهَبُ عُقُوْلُهُمْ {قَرِيْنٌ} شَيْطَانٌ {يُهْرَعُوْنَ} كَهَيْئَةِ الْهَرْوَلَةِ {يَزِفُّوْنَ} النَّسَلَانُ فِي الْمَشْيِ {وَبَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًا} قَالَ كُفَّارُ قُرَيْشٍ الْمَلَائِكَةُ بَنَاتُ اللهِ وَأُمَّهَاتُهُمْ بَنَاتُ سَرَوَاتِ الْجِنِّ وَقَالَ اللهُ تَعَالَى {وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُوْنَ} سَتُحْضَرُ لِلْحِسَابِ
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَنَحْنُ الصَّافُّوْنَ} الْمَلَائِكَةُ{صِرَاطِ الْجَحِيْمِ} سَوَاءِ الْجَحِيْمِ وَوَسَطِ الْجَحِيْمِ {لَشَوْبًا} يُخْلَطُ طَعَامُهُمْ وَيُسَاطُ بِالْحَمِيْمِ {مَدْحُوْرًا} مَطْرُوْدًا {بَيْضٌ مَّكْنُوْنٌ} اللُّؤْلُؤُ الْمَكْنُوْنُ {وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِيْنَ} يُذْكَرُ بِخَيْرٍ وَيُقَالُ {يَسْتَسْخِرُوْنَ} يَسْخَرُوْنَ{بَعْلًا} رَبًّا.
মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন, আল্লাহর বাণীঃ مِنْ مَكَانٍمبَعِيْدٍমানে সকল স্থান থেকে। يُقْذَفُوْنَনিক্ষিপ্ত হবে তাদের প্রতি। وَاصِبٌঅবিরাম বা অব্যাহত। لَازِبٌআঠালো। تَأْتُوْنَنَا عَنِ الْيَمِيْنِতোমরা তো হাক, কল্যাণ এবং সুখ-শান্তির বাণী নিয়ে আমাদের কাছে আসতে, এ কথাগুলো কাফিররা শায়ত্বনকে বলবে। غَوْلٌপেটের ব্যথা। يُنْزَفُوْنَতাদের বুদ্ধি নষ্ট হবে না। قَرِيْنٌশায়ত্বন। يُهْرَعُوْنَদ্রুত পদক্ষেপে চলা। يَزِفُّوْنَদ্রুতগতিতে পথ চলা। بَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًاকুরাইশ কাফেররা বলত, মালাক আল্লাহর কন্যা এবং তাদের মা জিন নেতাদের কন্যারা। আল্লাহ্ বলেন, وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُوْنَজিনেরা জানে, তাদেরও উপস্থিত করা হবে- তাদের হাজির করা হবে শাস্তির জন্য।
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, لَنَحْنُ الصَّافُّوْنَ‘আমরা তো সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান’ দ্বারা মালাইকা বোঝানো হয়েছে। صِرَاطِ الْجَحِيْمِজাহান্নামের পথে বা জাহান্নামের মধ্যে। لَشَوْبًاতাদের খাদ্য ফুটন্ত পানি মিশ্রিত। مَدْحُوْرًاবিতাড়িত। بَيْضٌ مَكْنُوْنٌসুরক্ষিত মুক্তা। وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الاٰخِرِيْنَতাদেরকে সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করা হবে। يَسْتَسْخِرُوْنَতারা উপহাস করত। بَعْلًا দেবমূর্তি।
৪৮০৪
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنِ
الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا يَنْبَغِيْ لِأَحَدٍ أَنْ يَكُوْنَ
خَيْرًا مِنْ يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى
‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ (ইউনুস) ইব্নু
মাত্তার চেয়ে উত্তম বলে মনে করা কারো জন্য শোভনীয় নয়। [৩৪১২] (আ.প্র. ৪৪৪০, ই.ফা.
৪৪৪১)
৪৮০৫
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
فُلَيْحٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ هِلَالِ بْنِ عَلِيٍّ مِنْ بَنِيْ عَامِرِ
بْنِ لُؤَيٍّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ
يُوْنُسَ بْنِ مَتَّى فَقَدْ كَذَبَ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে বলল, আমি ইউনুস ইব্নু মাত্তার চেয়ে
উত্তম, সে মিথ্যা বলল। [৩৪১৫] (আ.প্র. ৪৪৪১, ই.ফা. ৪৪৪২)
৬৫/৩৮/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
৪৮০৬
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا
شُعْبَةُ عَنِ الْعَوَّامِ قَالَ سَأَلْتُ مُجَاهِدًا عَنْ السَّجْدَةِ فِيْ ص
قَالَ سُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقَالَ {أُوْلَئِكَ الَّذِيْنَ هَدَى اللهُ
فَبِهُدَاهُمْ اقْتَدِهْ} وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَسْجُدُ فِيْهَا.
‘আও্ওয়াম
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি মুজাহিদকে সূরাহ সাদ-এর সাজদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, (এ
বিষয়ে) ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি পাঠ করলেন, أُولَئِكَ الَّذِينَ هَدَى اللهُ فَبِهُدَاهُمْ اقْتَدِهْ
‘তাদেরকেই আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেছেন, সুতরাং তাঁদের পথের অনুসরণ কর। ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) এতে সাজদাহ্ করতেন।” [৩৪২১] (আ.প্র. ৪৪৪২, ই.ফা. ৪৪৪৩)
৪৮০৭
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ
عُبَيْدٍ الطَّنَافِسِيُّ عَنِ الْعَوَّامِ قَالَ سَأَلْتُ مُجَاهِدًا عَنْ
سَجْدَةٍ فِيْ ص فَقَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ مِنْ أَيْنَ سَجَدْتَ فَقَالَ
أَوَ مَا تَقْرَأُ {وَمِنْ ذُرِّيَّتِهٰ دَاو”دَ وَسُلَيْمَانَ أُولٰٓئِكَ
الَّذِيْنَ هَدَى اللهُ فَبِهُدَاهُمْ اقْتَدِهْ} فَكَانَ دَاوُدُ مِمَّنْ أُمِرَ
نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَقْتَدِيَ بِهِ فَسَجَدَهَا دَاوُدُ
عَلَيْهِ السَّلَام فَسَجَدَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
{عُجَابٌ} عَجِيْبٌ {الْقِطُّ}الصَّحِيْفَةُ هُوَ هَا هُنَا صَحِيْفَةُ الْحِسَابِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {فِيْ عِزَّةٍ} مُعَازِّيْنَ {الْمِلَّةِالْاٰخِرَةِ} مِلَّةُ قُرَيْشٍ الاخْتِلَاقُ : الْكَذِبُ {الْأَسْبَابُ} طُرُقُ السَّمَاءِ فِيْ أَبْوَابِهَا قَوْلُهُ {جُنْدٌمَاهُنَالِكَمَهْزُوْمٌ} يَعْنِيْ قُرَيْشًا {أُولٰٓ ئِكَ الْأَحْزَابُ} الْقُرُوْنُ الْمَاضِيَةُ {فَوَاقٍ} رُجُوْعٍ {قِطَّنَا}عَذَابَنَا {اتَّخَذْنَاهُمْ سُخْرِيًّا} أَحَطْنَا بِهِمْ {أَتْرَابٌ} أَمْثَالٌ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الْأَيْدُ الْقُوَّةُ فِي الْعِبَادَةِ {الْأَبْصَارُ} الْبَصَرُ فِيْ أَمْرِ اللهِ {حُبَّ الْخَيْرِ عَنْ ذِكْرِ رَبِّي} مِنْ ذِكْرِ {طَفِقَ مَسْحًا} يَمْسَحُ أَعْرَافَ الْخَيْلِ وَعَرَاقِيْبَهَا {الأَصْفَادِ} الْوَثَاقِ.
{عُجَابٌ} عَجِيْبٌ {الْقِطُّ}الصَّحِيْفَةُ هُوَ هَا هُنَا صَحِيْفَةُ الْحِسَابِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {فِيْ عِزَّةٍ} مُعَازِّيْنَ {الْمِلَّةِالْاٰخِرَةِ} مِلَّةُ قُرَيْشٍ الاخْتِلَاقُ : الْكَذِبُ {الْأَسْبَابُ} طُرُقُ السَّمَاءِ فِيْ أَبْوَابِهَا قَوْلُهُ {جُنْدٌمَاهُنَالِكَمَهْزُوْمٌ} يَعْنِيْ قُرَيْشًا {أُولٰٓ ئِكَ الْأَحْزَابُ} الْقُرُوْنُ الْمَاضِيَةُ {فَوَاقٍ} رُجُوْعٍ {قِطَّنَا}عَذَابَنَا {اتَّخَذْنَاهُمْ سُخْرِيًّا} أَحَطْنَا بِهِمْ {أَتْرَابٌ} أَمْثَالٌ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الْأَيْدُ الْقُوَّةُ فِي الْعِبَادَةِ {الْأَبْصَارُ} الْبَصَرُ فِيْ أَمْرِ اللهِ {حُبَّ الْخَيْرِ عَنْ ذِكْرِ رَبِّي} مِنْ ذِكْرِ {طَفِقَ مَسْحًا} يَمْسَحُ أَعْرَافَ الْخَيْلِ وَعَرَاقِيْبَهَا {الأَصْفَادِ} الْوَثَاقِ.
‘আও্ওয়াম
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি মুজাহিদকে সূরাহ সাদ-এর সাজদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমি
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, (এ সূরায়) সাজদা কোত্থেকে? তিনি বললেন,
তুমি কি কুরআনের এ আয়াত পড়নি। وَمِنْ ذُرِّيَّتِهِ دَاوُدَ وَسُلَيْمَانَ أُولَئِكَ الَّذِينَ هَدَى اللهُ فَبِهُدَاهُمْ اقْتَدِهْ
“আর তার বংশধর দাউদ ও সুলায়মান- তাদেরই আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেছেন, সুতরাং
তাঁদের পথের অনুসরণ কর। দাঊদ তাঁদের একজন, তোমাদের নাবীকে যাদের অনুসরণের নির্দেশ
দেয়া হয়েছে। তাই নাবী এ সূরায় সাজ্দাহ করেছেন।
عُجَابٌ অত্যাশ্চর্য। الْقِطُّ লিপি। এখানে صَحِيفَةُ দ্বারা নেক লিপি বোঝানো হয়েছে। মুজাহিদ বলেছেন, فِي عِزَّةٍ ঔদ্ধত্য। الْمِلَّةِ الْآخِرَةِ কুরাইশদের ধর্ম। الاخْتِلاَقُ মিথ্যা। الأَسْبَابُ আকাশের পথসমূহ جُنْدٌ مَا هُنَالِكَ مَهْزُومٌ এ বাহিনীও সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হবে অর্থাৎ কুরাইশ সম্প্রদায়। أُولَئِكَ الأَحْزَابُ অতীতকাল। فَوَاقٍ প্রত্যাবর্তন। قِطَّنَا আমাদের শাস্তি। اتَّخَذْنَاهُمْ سُخْرِيًّا আমি তাদের বেষ্টন করে রেখেছি। أَتْرَابٌ সমবয়স্কা। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘ইবাদাতে শক্তিশালী ব্যক্তি। الأَبْصَارُ আল্লাহ্র কাছে সূক্ষ্মদর্শী ব্যক্তি। حُبَّ الْخَيْرِ عَنْ ذِكْرِ رَبِّي আল্লাহ্র স্মরণ থেকে। طَفِقَ مَسْحًا তিনি ঘোড়াগুলোর পা ও গলায় হাত বুলাতে লাগলেন। الأَصْفَادِ শৃংখল (বাঁধন)। [৩৪২১] (আ.প্র. ৪৪৪৩, ই.ফা. ৪৪৪৪)
عُجَابٌ অত্যাশ্চর্য। الْقِطُّ লিপি। এখানে صَحِيفَةُ দ্বারা নেক লিপি বোঝানো হয়েছে। মুজাহিদ বলেছেন, فِي عِزَّةٍ ঔদ্ধত্য। الْمِلَّةِ الْآخِرَةِ কুরাইশদের ধর্ম। الاخْتِلاَقُ মিথ্যা। الأَسْبَابُ আকাশের পথসমূহ جُنْدٌ مَا هُنَالِكَ مَهْزُومٌ এ বাহিনীও সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হবে অর্থাৎ কুরাইশ সম্প্রদায়। أُولَئِكَ الأَحْزَابُ অতীতকাল। فَوَاقٍ প্রত্যাবর্তন। قِطَّنَا আমাদের শাস্তি। اتَّخَذْنَاهُمْ سُخْرِيًّا আমি তাদের বেষ্টন করে রেখেছি। أَتْرَابٌ সমবয়স্কা। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘ইবাদাতে শক্তিশালী ব্যক্তি। الأَبْصَارُ আল্লাহ্র কাছে সূক্ষ্মদর্শী ব্যক্তি। حُبَّ الْخَيْرِ عَنْ ذِكْرِ رَبِّي আল্লাহ্র স্মরণ থেকে। طَفِقَ مَسْحًا তিনি ঘোড়াগুলোর পা ও গলায় হাত বুলাতে লাগলেন। الأَصْفَادِ শৃংখল (বাঁধন)। [৩৪২১] (আ.প্র. ৪৪৪৩, ই.ফা. ৪৪৪৪)
৬৫/৩৮/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ হে আমার রব!
আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করুন, যা আমি ব্যতীত আর কারও ভাগ্যে যেন
না জোটে। নিশ্চয়ই আপনি পরম দাতা। (সূরাহ স-দ ৩৮/৩৫)
৪৮০৮
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا رَوْحٌ
وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ عَنْ أَبِيْ
هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ عِفْرِيْتًا مِنَ
الْجِنِّ تَفَلَّتَ عَلَيَّ الْبَارِحَةَ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا لِيَقْطَعَ
عَلَيَّ الصَّلَاةَ فَأَمْكَنَنِي اللهُ مِنْهُ وَأَرَدْتُ أَنْ أَرْبِطَهُ إِلَى
سَارِيَةٍ مِنْ سَوَارِي الْمَسْجِدِ حَتَّى تُصْبِحُوْا وَتَنْظُرُوْا إِلَيْهِ
كُلُّكُمْ فَذَكَرْتُ قَوْلَ أَخِيْ سُلَيْمَانَ {رَبِّ هَبْ لِيْ مُلْكًا لَّا
يَنْبَغِيْ لِأَحَدٍ مِّنْمبَعْدِي} قَالَ رَوْحٌ فَرَدَّهُ خَاسِئًا.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, গতরাতে অবাধ্য জিনের একটি দৈত্য আমার
কাছে এসেছিল অথবা এ ধরনের কিছু কথা তিনি বললেন, আমার সলাত নষ্ট করার উদ্দেশে। তখন
আল্লাহ্ আমাকে তার উপর আধিপত্য দিলেন। আমি ইচ্ছা করলাম, মসজিদের খুঁটিগুলোর একটির
সঙ্গে ওকে বেঁধে রাখতে, যাতে ভোরে তোমরা সকলে ওটা দেখতে পাও। তখন আমার ভাই
সুলায়মান (‘আ.)-এর দু‘আ স্মরণ হল, رَبِّ هَبْ لِي مُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي
“হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দান কর এমন এক রাজ্য যার অধিকারী আমি ব্যতীত আর কেউ না
হয়।” রাবী রাওহ্ বলেন, এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে অপমান করে
তাড়িয়ে দেন। [৪৬১] (আ.প্র. ৪৪৪৪, ই.ফা. ৪৪৪৫)
৬৫/৩৮/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আমি নকল
লৌকিকতাকারীও নই। (সূরাহ সোয়াদ ৩৮/৮৬)
৪৮০৯
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنِ
الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ قَالَ دَخَلْنَا عَلَى عَبْدِ
اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَنْ عَلِمَ شَيْئًا
فَلْيَقُلْ بِهِ وَمَنْ لَمْ يَعْلَمْ فَلْيَقُلْ اللهُ أَعْلَمُ فَإِنَّ مِنَ
الْعِلْمِ أَنْ يَقُوْلَ لِمَا لَا يَعْلَمُ اللهُ أَعْلَمُ قَالَ اللهُ عَزَّ
وَجَلَّ لِنَبِيِّهِ {قُلْ مَآ أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَّمَآ أَنَا
مِنَ الْمُتَكَلِّفِيْنَ} وَسَأُحَدِّثُكُمْ عَنْ الدُّخَانِ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ
صلى الله عليه وسلم دَعَا قُرَيْشًا إِلَى الإِسْلَامِ فَأَبْطَئُوْا عَلَيْهِ
فَقَالَ اللهُمَّ أَعِنِّيْ عَلَيْهِمْ بِسَبْعٍ كَسَبْعِ يُوْسُفَ فَأَخَذَتْهُمْ
سَنَةٌ فَحَصَّتْ كُلَّ شَيْءٍ حَتَّى أَكَلُوا الْمَيْتَةَ وَالْجُلُوْدَ حَتَّى
جَعَلَ الرَّجُلُ يَرَى بَيْنَهُ وَبَيْنَ السَّمَاءِ دُخَانًا مِنَ الْجُوْعِ
قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَآءُ بِدُخَانٍ
مُّبِيْنٍ لا - يَّغْشَى النَّاسَ ط هٰذَا عَذَابٌ أَلِيْمٌ (11)} قَالَ فَدَعَوْا
{رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُوْنَ - أَنّٰى لَهُمُ
الذِّكْرٰى وَقَدْ جَآءَهُمْ رَسُوْلٌ مُّبِيْنٌ لا - ثُمَّ تَوَلَّوْا عَنْهُ
وَقَالُوْا مُعَلَّمٌ مَّجْنُوْنٌ ﻣ- إِنَّا كَاشِفُوا الْعَذَابِ قَلِيْلًا
إِنَّكُمْ عَآئِدُوْنَ ﻣ} أَفَيُكْشَفُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ
فَكُشِفَ ثُمَّ عَادُوْا فِيْ كُفْرِهِمْ فَأَخَذَهُمْ اللهُ يَوْمَ بَدْرٍ قَالَ
اللهُ تَعَالَى {يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرٰى ج إِنَّا
مُنْتَقِمُوْنَ}.
মাসরূক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাসঊদ (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তিনি বললেন, হে লোকসকল!
যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে অবগত সে তা বর্ণনা করবে। আর যে না জানে, তার বলা উচিত,
আল্লাহ্ই ভাল জানেন। কেননা অজানা বিষয় সম্বন্ধে আল্লাহ্ই ভাল জানেন, এ কথা বলাও
জ্ঞানের নিদর্শন। আল্লাহ্ তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলেছেন,
‘বল, এর (কুরআন বা তাওহীদ প্রচারের) জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না
এবং আমি বানোয়াটকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই।” (কুরআনে উল্লেখিত) ধূম্র সম্পর্কে শীঘ্র
আমি তোমাদের বলব। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কুরাইশদেরকে
ইসলামের প্রতি দাওয়াত দিলে তারা (সাড়া দিতে) বিলম্ব করল। তখন তিনি বললেন, হে
আল্লাহ্! ইউসুফ (‘আ.)-এর জীনবকালের দুর্ভিক্ষের সাত বছরের মত দুর্ভিক্ষ দ্বারা
তুমি আমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য কর। এরপর দুর্ভিক্ষ তাদেরকে ঘিরে ফেলল। শেষ হয়ে
গেল সমস্ত কিছু। অবশেষে তারা মৃত জন্তু ও চামড়া খেতে লাগল। তখন তাদের কেউ আকাশের
দিকে তাকালে ক্ষুধার জ্বালায় চোখে আকাশ ও তার মধ্যে ধূম্র দেখত। আল্লাহ্ বললেন,
“অতএব তুমি সেদিনের অপেক্ষা কর, যেদিন ধূম্র হবে আকাশে, এবং তা ঘিরে ফেলবে সকল
মানুষ। এ তো মর্মন্তুদ শাস্তি।” রাবী বলেন, তারপর তারা দু‘আ করল, হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদের এ আযাব থেকে নাজাত দাও, আমরা ঈমান আনব। তারা কীভাবে নাসীহাত
মানবে? তাদের কাছে তো এসেছে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাদাতা এক রসূল। তারপর তারা মুখ ঘুরিয়ে
নিল তাঁর থেকে এবং বলল, সে তো শিখানো কথা বলে, সে তো এক উন্মাদ। আমি তোমাদের
শাস্তি কিছুকালের জন্য রহিত করছি। তোমরা তো অবশ্য তোমাদের আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।
(ইব্নু মাসউদ বলেন), ক্বিয়ামাতের দিনও কি তাদের থেকে ‘আযাব রহিত করা হবে? তিনি
(ইব্নু মাসউদ) বলেন, ‘আযাব সরানো হলে তারা পুনরায় কুফ্রীর দিকে ফিরে গেল। তারপর
আল্লাহ্ তা‘আলা বদর যুদ্ধের দিন তাদের পাকড়াও করলেন। আল্লাহ্ বলেন, যেদিন আমি
তোমাদের কঠিনভাবে ধরব, সেদিন আমি তোমাদের শাস্তি দেবই। [১০০৭] (আ.প্র. ৪৪৪৫, ই.ফা.
৪৪৪৬)
৬৫/৩৯/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
(39) سُوْرَةُ الزُّمَرِ
সূরাহ (৩৯) : যুমার
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {أَفَمَنْ يَتَّقِيْ بِوَجْهِهٰ} يُجَرُّ عَلَى وَجْهِهِ فِي النَّارِ وَهُوَ قَوْلُهُ تَعَالَى {أَفَمَنْ يُّلْقٰى فِي النَّارِ خَيْرٌ أَمْ مَّنْ يَّأْتِيْ اٰمِنًا يَّوْمَ الْقِيَامَةِ غَيْرَ ذِيْ عِوَجٍ} لَبْسٍ وَرَجُلًا سَلَمًا لِرَجُلٍ مَثَلٌ لِآلِهَتِهِمْ الْبَاطِلِ وَالإِلَهِ الْحَقِّ{وَيُخَوِّفُوْنَكَ بِالَّذِيْنَ مِنْ دُوْنِهٰ} بِالأَوْثَانِ {خَوَّلْنَا} أَعْطَيْنَا {وَالَّذِيْ جَآءَ بِالصِّدْقِ} الْقُرْآنُ {وَصَدَّقَ بِهٰ}الْمُؤْمِنُ يَجِيْءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُوْلُ هَذَا الَّذِيْ أَعْطَيْتَنِيْ عَمِلْتُ بِمَا فِيْهِ وَقَالَ غَيْرُهُ {مُتَشَاكِسُوْنَ} الرَّجُلُ الشَّكِسُ الْعَسِرُ لَا يَرْضَى بِالْإِنْصَافِ {وَرَجُلًا سِلْمًا} وَيُقَالُ سَالِمًا صَالِحًا {اشْمَأَزَّتْ} نَفَرَتْ {بِمَفَازَتِهِمْ} مِنَ الْفَوْزِ {حَآفِّيْنَ} أَطَافُوْا بِهِ مُطِيْفِيْنَ {بِحِفَافَيْهِ}بِجَوَانِبِهِ {مُتَشَابِهًا} لَيْسَ مِنَ الْاشْتِبَاهِ وَلَكِنْ يُشْبِهُ بَعْضُهُ بَعْضًا فِي التَّصْدِيْقِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন, أَفَمَنْ يَتَّقِيْ بِوَجْهِهٰঅধোমুখী করে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে হেঁচড়িয়ে নেয়া হবে। এ আয়াতটি নিম্নোক্ত আয়াতের মতই, أَفَمَنْ يُّلْقٰى فِي النَّارِ خَيْرٌ أَمْ مَّنْ يَّأْتِيْاٰمِنًا يَّوْمَ الْقِيَامَةِ غَيْرَ ذِيْ عِوَجٍ ‘‘যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে শ্রেষ্ঠ, না যে ক্বিয়ামাতের দিন নিরাপদে থাকবে সে?’’ ذِيْعِوَجٍ সন্দেহপূর্ণ। وَرَجُلًا سَلَمًا لِرَجُلٍ মুশরিকদের বাতিল মাবূদ এবং হক মাবূদের উদাহরণ দেয়া হয়েছে। وَيُخَوِّفُوْنَكَ بِالَّذِيْنَ مِنْ دُوْنِهٰ তারা তোমাকে আল্লাহর পরিবর্তে অপরের ভয় দেখায়। এখানে دُوْنِهٰ মানে প্রতিমা। خَوَّلْنَا আমি দিলাম। وَالَّذِيْ جَآءَ بِالصِّدْقِ এর الصِّدْقِ মানে কুরআন। وَصَدَّقَ بِهِ মু’মিনগণ ক্বিয়ামাতের দিন বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! এই সে কুরআন যা আপনি আমাকে দিয়েছেন এবং আমি তার বিধানসমূহের ওপর ‘আমাল করেছি। مُتَشَاكِسُوْنَ ঐ উদ্ধত পশু প্রকৃতির ব্যক্তি, যে ইনসাফে সন্তুষ্ট নয়। وَرَجُلًا سِلْمًا যোগ্য বা নেককার ; যেমন বলা হয় سَالِمًاصَالِحًا। اشْمَأَزَّتْ পলায়ন করে। بِمَفَازَتِهِمْ নির্গত হয়েছে الْفَوْزِ হতে যার অর্থ; সাফল্যসহ। بِحِفَافَيْهِ তারা ঘুরবে; তাওয়াফ করবে। حَافِّيْنَ চতুষ্পার্শ্বে। مُتَشَابِهًا শব্দটি الاشْتِبَاهِ মাসদার হতে নির্গত নয় : কুরআন সত্যায়নের ব্যাপারে পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ।
{قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ أَسْرَفُوْا عَلٰٓى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ ط إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا ط إِنَّه” هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ}.
হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের উপর যুল্ম করেছ, তোমরা আল্লাহর রাহমাত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করবেন সকল গুনাহ। বস্তুতঃ তিনি পরম ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।
(সূর আয্-যুমার ৩৯/৫৩)
সূরাহ (৩৯) : যুমার
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {أَفَمَنْ يَتَّقِيْ بِوَجْهِهٰ} يُجَرُّ عَلَى وَجْهِهِ فِي النَّارِ وَهُوَ قَوْلُهُ تَعَالَى {أَفَمَنْ يُّلْقٰى فِي النَّارِ خَيْرٌ أَمْ مَّنْ يَّأْتِيْ اٰمِنًا يَّوْمَ الْقِيَامَةِ غَيْرَ ذِيْ عِوَجٍ} لَبْسٍ وَرَجُلًا سَلَمًا لِرَجُلٍ مَثَلٌ لِآلِهَتِهِمْ الْبَاطِلِ وَالإِلَهِ الْحَقِّ{وَيُخَوِّفُوْنَكَ بِالَّذِيْنَ مِنْ دُوْنِهٰ} بِالأَوْثَانِ {خَوَّلْنَا} أَعْطَيْنَا {وَالَّذِيْ جَآءَ بِالصِّدْقِ} الْقُرْآنُ {وَصَدَّقَ بِهٰ}الْمُؤْمِنُ يَجِيْءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُوْلُ هَذَا الَّذِيْ أَعْطَيْتَنِيْ عَمِلْتُ بِمَا فِيْهِ وَقَالَ غَيْرُهُ {مُتَشَاكِسُوْنَ} الرَّجُلُ الشَّكِسُ الْعَسِرُ لَا يَرْضَى بِالْإِنْصَافِ {وَرَجُلًا سِلْمًا} وَيُقَالُ سَالِمًا صَالِحًا {اشْمَأَزَّتْ} نَفَرَتْ {بِمَفَازَتِهِمْ} مِنَ الْفَوْزِ {حَآفِّيْنَ} أَطَافُوْا بِهِ مُطِيْفِيْنَ {بِحِفَافَيْهِ}بِجَوَانِبِهِ {مُتَشَابِهًا} لَيْسَ مِنَ الْاشْتِبَاهِ وَلَكِنْ يُشْبِهُ بَعْضُهُ بَعْضًا فِي التَّصْدِيْقِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন, أَفَمَنْ يَتَّقِيْ بِوَجْهِهٰঅধোমুখী করে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে হেঁচড়িয়ে নেয়া হবে। এ আয়াতটি নিম্নোক্ত আয়াতের মতই, أَفَمَنْ يُّلْقٰى فِي النَّارِ خَيْرٌ أَمْ مَّنْ يَّأْتِيْاٰمِنًا يَّوْمَ الْقِيَامَةِ غَيْرَ ذِيْ عِوَجٍ ‘‘যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে শ্রেষ্ঠ, না যে ক্বিয়ামাতের দিন নিরাপদে থাকবে সে?’’ ذِيْعِوَجٍ সন্দেহপূর্ণ। وَرَجُلًا سَلَمًا لِرَجُلٍ মুশরিকদের বাতিল মাবূদ এবং হক মাবূদের উদাহরণ দেয়া হয়েছে। وَيُخَوِّفُوْنَكَ بِالَّذِيْنَ مِنْ دُوْنِهٰ তারা তোমাকে আল্লাহর পরিবর্তে অপরের ভয় দেখায়। এখানে دُوْنِهٰ মানে প্রতিমা। خَوَّلْنَا আমি দিলাম। وَالَّذِيْ جَآءَ بِالصِّدْقِ এর الصِّدْقِ মানে কুরআন। وَصَدَّقَ بِهِ মু’মিনগণ ক্বিয়ামাতের দিন বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! এই সে কুরআন যা আপনি আমাকে দিয়েছেন এবং আমি তার বিধানসমূহের ওপর ‘আমাল করেছি। مُتَشَاكِسُوْنَ ঐ উদ্ধত পশু প্রকৃতির ব্যক্তি, যে ইনসাফে সন্তুষ্ট নয়। وَرَجُلًا سِلْمًا যোগ্য বা নেককার ; যেমন বলা হয় سَالِمًاصَالِحًا। اشْمَأَزَّتْ পলায়ন করে। بِمَفَازَتِهِمْ নির্গত হয়েছে الْفَوْزِ হতে যার অর্থ; সাফল্যসহ। بِحِفَافَيْهِ তারা ঘুরবে; তাওয়াফ করবে। حَافِّيْنَ চতুষ্পার্শ্বে। مُتَشَابِهًا শব্দটি الاشْتِبَاهِ মাসদার হতে নির্গত নয় : কুরআন সত্যায়নের ব্যাপারে পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ।
{قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ أَسْرَفُوْا عَلٰٓى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ ط إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا ط إِنَّه” هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ}.
হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের উপর যুল্ম করেছ, তোমরা আল্লাহর রাহমাত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করবেন সকল গুনাহ। বস্তুতঃ তিনি পরম ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।
(সূর আয্-যুমার ৩৯/৫৩)
৪৮১০
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ
يُوْسُفَ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ يَعْلَى إِنَّ سَعِيْدَ بْنَ
جُبَيْرٍ أَخْبَرَهُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ نَاسًا
مِنْ أَهْلِ الشِّرْكِ كَانُوْا قَدْ قَتَلُوْا وَأَكْثَرُوْا وَزَنَوْا
وَأَكْثَرُوْا فَأَتَوْا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَالُوْا إِنَّ الَّذِيْ
تَقُوْلُ وَتَدْعُوْ إِلَيْهِ لَحَسَنٌ لَوْ تُخْبِرُنَا أَنَّ لِمَا عَمِلْنَا
كَفَّارَةً {وَالَّذِيْنَ لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ إلٰهًا اٰخَرَ وَلَا
يَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا
يَزْنُوْنَ} وَنَزَلَتْ {قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ أَسْرَفُوْا عَلٰٓى
أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ ط إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ
الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا ط إِنَّه” هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ}.
ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, মুশরিকদের কিছু লোক বহু হত্যা করে এবং বেশি বেশি ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। তারপর
তারা মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এল এবং বলল, আপনি যা
বলেন এবং আপনি যেদিকে আহ্বান করেন, তা অতি উত্তম। আমাদের যদি অবগত করতেন, আমরা যা
করেছি, তার কাফ্ফারা কী? এর প্রেক্ষাপটে অবতীর্ণ হয় ‘এবং যারা আল্লাহ্র সঙ্গে
অন্য কোন ইলাহ্কে ডাকে না, আল্লাহ্ যাকে হত্যা করা নিষেধ করেছেন, তাকে না-হক হত্যা
করে না এবং ব্যভিচার করে না। আরো অবতীর্ণ হলঃ “হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা
নিজেদের প্রতি অন্যায় করে ফেলেছ, আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না।” [মুসলিম
১/৫৪, হাঃ ১২২] (আ.প্র. ৪৪৪৬, ই.ফা. ৪৪৪৭)
৬৫/৩৯/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহর প্রতি
যতটুকু মর্যাদা দেয়া উচিত ছিল, তারা তা দেয়নি। (সূরাহ যুমার ৩৯/৬৭)
৪৮১১
آدَمُ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ
إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَاءَ
حَبْرٌ مِنَ الْأَحْبَارِ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا
مُحَمَّدُ إِنَّا نَجِدُ أَنَّ اللهَ يَجْعَلُ السَّمَوَاتِ عَلَى إِصْبَعٍ
وَالأَرَضِيْنَ عَلَى إِصْبَعٍ وَالشَّجَرَ عَلَى إِصْبَعٍ وَالْمَاءَ وَالثَّرَى
عَلَى إِصْبَعٍ وَسَائِرَ الْخَلَائِقِ عَلَى إِصْبَعٍ فَيَقُوْلُ أَنَا الْمَلِكُ
فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ تَصْدِيْقًا
لِقَوْلِ الْحَبْرِ ثُمَّ قَرَأَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم {وَمَا
قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهٰ}.
‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইয়াহূদী আলিমদের থেকে এক আলিম রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমরা (তাওরাতে দেখতে) পাই যে, আল্লাহ্ তা‘আলা
আকাশসমূহকে এক আঙ্গুলের উপর স্থাপন করবেন। যমীনকে এক আঙ্গুলের উপর, বৃক্ষসমূহকে এক
আঙ্গুলের উপর, পানি এক আঙ্গুলের উপর, মাটি এক আঙ্গুলের উপর এবং অন্যান্য সৃষ্টি
জগত এক আঙ্গুলের উপর স্থাপন করবেন। তারপর বলবেন, আমিই বাদশাহ। রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা সমর্থনে হেসে ফেললেন; এমনকি তাঁর সামনের
দাঁত প্রকাশ হয়ে পড়ে। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাঠ
করলেন, তারা আল্লাহকে যথোচিত মর্যাদা দান করে না। [৭৪১৪, ৭৪১৫, ৭৪৫১, ৭৫১৩; মুসলিম
৫০/হাঃ ২৭৮৬, আহমাদ ৪৩৬৮] (আ.প্র. ৪৪৪৭, ই.ফা. ৪৪৪৮)
[১] আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদাহ
হলো, আল্লাহর সিফাতকে তাঁর কোন মাখ্লুকের সাথে সাদৃশ্য না করে তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন
করতে হবে। অতএব আল্লাহ তা‘আলাকে নিরাকার বলা বা বিশ্বাস করা ঠিক নয়। যেমন উক্ত হাদীসে
আল্লাহর আঙ্গুলের কথা এসেছে এবং পরের অধ্যায়ের আয়াতে তাঁর ডান হাত ও মুঠের কথাও বলা
হয়েছে। সর্বপরি আল্লাহ নিরাকার কথাটি কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। বরং হিন্দু
সংস্কৃতি থেকে আমদানীকৃত বটে। যারা আল্লাহকে নিরাকার বলেন, তারা কুরআন ও হাদীসে অনেক
প্রমাণের দাবী করলেও তা কখনই পেশ করেন না।
যেহেতু বিষয়টি আকীদাহর সাথে সম্পৃক্ত সেহেতু এ বিষয়টি আরো পরিষ্কার করার জন্য কিছু দলীল উপস্থাপন করা হলোঃ
কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত ও হাদীসে আল্লাহ তা‘আলার চেহারা, হাত, পা, চক্ষু, যাত বা সত্ত্বা, সূরাত বা আকারের কথা উল্লেখ হয়েছে যার অর্থ স্পষ্ট। এর মাধ্যমে আল্লাহর নির্দিষ্ট আকার-আকৃতি আছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। কারণ যিনি নিরাকার তার এ সব কিছু থাকার কথা নয়। তবে হ্যাঁ, আকার আকৃতি কেমন তা তিনি ছাড়া কেউ জানেন না। মু’মিনগণ কিয়ামাতের দিন তাঁকে দেখতে পাবে। জান্নাতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নি‘মাত হবে আল্লাহর দীদার। আর দীদারযোগ্য কোন কিছু নিরাকার হতে পারে না। তেমনি ভাবে নিরাকার কখনও দীদারযোগ্য হতে পারে না। আর এমন নয় যে, তিনি এখন নিরাকার তবে কিয়ামতের দিন অবয়ব বিশিষ্ট হয়ে যাবেন। কারণ আল্লাহকে পরিবর্তনশীল মনে করাটাও আকীদাহ বিরোধী। সুতরাং আল্লাহকে নিরাকার বলা শুধু ভ্রান্তই নয় বরং বোকামী ও অজ্ঞতাও বটে। এ ভ্রান্ত ধারণা সালাফদের যুগে ছিলনা। এটা ভারতবর্ষের অধিকাংশ মুসলিমদের আকীদাহ যা হিন্দু ধর্ম থেকে আমদানীকৃত। শিখরাও এ ধারণা পোষণ করে থাকে।
কুরআন মাজীদের যে সকল আয়াতে আল্লাহর অবয়বের প্রমাণ পাওয়া যায় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ
সূরা স-দের ৭৫ নং আয়াতে আল্লাহর দু’হাতের কথা বলা হয়েছে। সূরা আল-মায়িদাহ ৬৪ নং আয়াতেও হাতের কথা বলা হয়েছে। সূরা আর-রহমান এর ২৭ নং আয়াত, বাকারাহ ১১৫, ২৭২, সূরা রূম এর ৩৮ নং আয়াত, সূরা দাহর ৯ আয়াত ও সূরা লাইল ২০ নং আয়াতে আল্লাহর চেহারার প্রমাণ পাওয়া যায়। সূরা ক্বলম এর ১৬৪ নং আয়াতে আল্লাহর পায়ের গোছার প্রমাণ পাওয়া যায়। সূরা যুমার এর ৬৭ নং আয়াতে আল্লাহর মুষ্ঠির প্রমাণ পাওয়া যায়। মুসনাদ আহমাদ এর বরাতে মিশকাতের হাদীসে আল্লাহর হাতের তালুর প্রমাণ পাওয়া যায়।
যদি আল্লাহ নিরাকার হতেন তাহলে সূরা আ‘রাফের ১৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত তূর পাহাড়ে মূসা (আঃ) আল্লাহকে দেখতে চাইতেন না। জবাবে আল্লাহ তা‘আলা বললেন لن تراني অর্থাৎ তুমি আমাকে দেখতে পাবে না। এখানে তিনি বলেননি যে, তুমি আমাকে কখনই দেখতে পাবে না। বরং বললেন, যদি পাহাড় স্থির থাকতে পারে তাহলে তুমি আমাকে দেখতে পাবে।
এমনি ভাবে সূরা আশ-শূরার ৫১ নং আয়াতে বর্ণিত, আল্লাহ যদি নিরাকারই হবেন তাহলে পর্দার আড়ালের কথাই বা কেন বলবেন। এরকম আরো অসংখ্য প্রমাণ থাকার পরেও যারা আল্লাহ তা‘আলাকে নিরাকার সাব্যস্ত করার চেষ্টা করবেন নিঃসন্দেহে তারা উক্ত আয়াতকে অস্বীকারকারীদের দলভুক্ত হবেন।
হাফিয ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) আল্লাহর হাত ও চেহারার বিষয়ে নিরাকার ও নির্গুণবাদীদের বিভিন্ন গৌণ ও রূপক অর্থের প্রতিবাদে যথাক্রমে ২০টি ও ২৬টি যুক্তি পেশ করেছেন।
যেহেতু বিষয়টি আকীদাহর সাথে সম্পৃক্ত সেহেতু এ বিষয়টি আরো পরিষ্কার করার জন্য কিছু দলীল উপস্থাপন করা হলোঃ
কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত ও হাদীসে আল্লাহ তা‘আলার চেহারা, হাত, পা, চক্ষু, যাত বা সত্ত্বা, সূরাত বা আকারের কথা উল্লেখ হয়েছে যার অর্থ স্পষ্ট। এর মাধ্যমে আল্লাহর নির্দিষ্ট আকার-আকৃতি আছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। কারণ যিনি নিরাকার তার এ সব কিছু থাকার কথা নয়। তবে হ্যাঁ, আকার আকৃতি কেমন তা তিনি ছাড়া কেউ জানেন না। মু’মিনগণ কিয়ামাতের দিন তাঁকে দেখতে পাবে। জান্নাতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নি‘মাত হবে আল্লাহর দীদার। আর দীদারযোগ্য কোন কিছু নিরাকার হতে পারে না। তেমনি ভাবে নিরাকার কখনও দীদারযোগ্য হতে পারে না। আর এমন নয় যে, তিনি এখন নিরাকার তবে কিয়ামতের দিন অবয়ব বিশিষ্ট হয়ে যাবেন। কারণ আল্লাহকে পরিবর্তনশীল মনে করাটাও আকীদাহ বিরোধী। সুতরাং আল্লাহকে নিরাকার বলা শুধু ভ্রান্তই নয় বরং বোকামী ও অজ্ঞতাও বটে। এ ভ্রান্ত ধারণা সালাফদের যুগে ছিলনা। এটা ভারতবর্ষের অধিকাংশ মুসলিমদের আকীদাহ যা হিন্দু ধর্ম থেকে আমদানীকৃত। শিখরাও এ ধারণা পোষণ করে থাকে।
কুরআন মাজীদের যে সকল আয়াতে আল্লাহর অবয়বের প্রমাণ পাওয়া যায় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ
সূরা স-দের ৭৫ নং আয়াতে আল্লাহর দু’হাতের কথা বলা হয়েছে। সূরা আল-মায়িদাহ ৬৪ নং আয়াতেও হাতের কথা বলা হয়েছে। সূরা আর-রহমান এর ২৭ নং আয়াত, বাকারাহ ১১৫, ২৭২, সূরা রূম এর ৩৮ নং আয়াত, সূরা দাহর ৯ আয়াত ও সূরা লাইল ২০ নং আয়াতে আল্লাহর চেহারার প্রমাণ পাওয়া যায়। সূরা ক্বলম এর ১৬৪ নং আয়াতে আল্লাহর পায়ের গোছার প্রমাণ পাওয়া যায়। সূরা যুমার এর ৬৭ নং আয়াতে আল্লাহর মুষ্ঠির প্রমাণ পাওয়া যায়। মুসনাদ আহমাদ এর বরাতে মিশকাতের হাদীসে আল্লাহর হাতের তালুর প্রমাণ পাওয়া যায়।
যদি আল্লাহ নিরাকার হতেন তাহলে সূরা আ‘রাফের ১৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত তূর পাহাড়ে মূসা (আঃ) আল্লাহকে দেখতে চাইতেন না। জবাবে আল্লাহ তা‘আলা বললেন لن تراني অর্থাৎ তুমি আমাকে দেখতে পাবে না। এখানে তিনি বলেননি যে, তুমি আমাকে কখনই দেখতে পাবে না। বরং বললেন, যদি পাহাড় স্থির থাকতে পারে তাহলে তুমি আমাকে দেখতে পাবে।
এমনি ভাবে সূরা আশ-শূরার ৫১ নং আয়াতে বর্ণিত, আল্লাহ যদি নিরাকারই হবেন তাহলে পর্দার আড়ালের কথাই বা কেন বলবেন। এরকম আরো অসংখ্য প্রমাণ থাকার পরেও যারা আল্লাহ তা‘আলাকে নিরাকার সাব্যস্ত করার চেষ্টা করবেন নিঃসন্দেহে তারা উক্ত আয়াতকে অস্বীকারকারীদের দলভুক্ত হবেন।
হাফিয ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) আল্লাহর হাত ও চেহারার বিষয়ে নিরাকার ও নির্গুণবাদীদের বিভিন্ন গৌণ ও রূপক অর্থের প্রতিবাদে যথাক্রমে ২০টি ও ২৬টি যুক্তি পেশ করেছেন।
৬৫/৩৯/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
{وَالْأَرْضُ جَمِيْعًا قَبْضَتُه” يَوْمَ الْقِيٰمَةِ وَالسَّمٰوٰتُ مَطْوِيّٰتٌمبِيَمِيْنِهٰط سُبْحٰنَه” وَتَعَالٰى عَمَّا يُشْرِكُوْنَ}.
ক্বিয়ামাতের দিন সমগ্র পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং গোটা আসমান থাকবে গুটানো অবস্থায় তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র-মহান, আর তারা যা শারীক করে তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে। (সূরাহ যুমার ৩৯/৬৭)
ক্বিয়ামাতের দিন সমগ্র পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং গোটা আসমান থাকবে গুটানো অবস্থায় তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র-মহান, আর তারা যা শারীক করে তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে। (সূরাহ যুমার ৩৯/৬৭)
৪৮১২
سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ
حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدِ بْنِ مُسَافِرٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ
عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُوْلُ يَقْبِضُ اللهُ الْأَرْضَ وَيَطْوِي السَّمَوَاتِ
بِيَمِيْنِهِ ثُمَّ يَقُوْلُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ مُلُوْكُ الْأَرْضِ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে,
ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা যমীনকে নিজ মুষ্ঠিতে নিবেন এবং আকাশমণ্ডলীকে ভাঁজ
করে তাঁর ডান হাতে নিবেন, তারপর বলবেন, আমিই মালিক, দুনিয়ার বাদশারা কোথায়? [৬৫১৯,
৭৩৮২, ৭৪১৩; মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৮৭, আহমাদ ৮৮৭২] (আ.প্র. ৪৪৪৮, ই.ফা. ৪৪৪৯)
৬৫/৩৯/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ
ونفخ فِي الصُّوْرِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ إِلَّا مَنْ شَآءَ اللهُ ط ثُمَّ نُفِخَ فِيْهِ أُخْرٰى فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَّنْظُرُوْنَ}.
আর শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে তখন আল্লাহ যাদের ইচ্ছা করবেন তাদের বাদে আসমান ও যমীনে যারা আছে তারা সবাই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়বে। অতঃপর শিঙ্গায় আবার ফুঁ দেয়া হবে, তখন হঠাৎ তারা সবাই উঠে দাঁড়াবে এবং তাকাতে থাকবে। (সূরাহ আয্-যুমার ৩৯/৬৮)
আর শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে তখন আল্লাহ যাদের ইচ্ছা করবেন তাদের বাদে আসমান ও যমীনে যারা আছে তারা সবাই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়বে। অতঃপর শিঙ্গায় আবার ফুঁ দেয়া হবে, তখন হঠাৎ তারা সবাই উঠে দাঁড়াবে এবং তাকাতে থাকবে। (সূরাহ আয্-যুমার ৩৯/৬৮)
৪৮১৩
الْحَسَنُ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحِيْمِ عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ أَبِيْ زَائِدَةَ عَنْ
عَامِرٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم قَالَ إِنِّيْ أَوَّلُ مَنْ يَرْفَعُ رَأْسَهُ بَعْدَ النَّفْخَةِ
الآخِرَةِ فَإِذَا أَنَا بِمُوْسَى مُتَعَلِّقٌ بِالْعَرْشِ فَلَا أَدْرِيْ
أَكَذَلِكَ كَانَ أَمْ بَعْدَ النَّفْخَةِ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, শেষবার শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার
পর যে সবার আগে মাথা উঠাবে, সে আমি। তখন আমি মূসা (‘আ.)-কে দেখব আরশের সঙ্গে
ঝুলন্ত অবস্থায়। আমি জানি না, তিনি আগে থেকেই এভাবে ছিলেন, না শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার
পর। [২৪১১] (আ.প্র. ৪৪৪৯, ই.ফা. ৪৪৫০)
৪৮১৪
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ قَالَ حَدَّثَنَا
الْأَعْمَشُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا صَالِحٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَ النَّفْخَتَيْنِ أَرْبَعُوْنَ
قَالُوْا يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أَرْبَعُوْنَ يَوْمًا قَالَ أَبَيْتُ قَالَ
أَرْبَعُوْنَ سَنَةً قَالَ أَبَيْتُ قَالَ أَرْبَعُوْنَ شَهْرًا قَالَ أَبَيْتُ
وَيَبْلَى كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الإِنْسَانِ إِلَّا عَجْبَ ذَنَبِهِ فِيْهِ يُرَكَّبُ
الْخَلْقُ.
আবূ
হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, দু’বার ফুঁৎকারের মাঝে
ব্যবধান চল্লিশ। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আবূ হুরাইরাহ! চল্লিশ দিন? তিনি বললেন,
আমার জানা নেই। তারপর তারা জিজ্ঞেস করল, চল্লিশ বছর? তিনি বললেন, আমার জানা নেই।
এরপর তাঁরা আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে কি চল্লিশ মাস। তিনি বললেন, আমার জানা নেই
এবং বললেন, শিরদাঁড়ার হাড় বাদে মানুষের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে। এ দ্বারাই সৃষ্টি
জগত আবার সৃষ্টি করা হবে। [৪৯৩৫; মুসলিম ৫২/২৭, হাঃ ৯৫৫, আহমাদ ৯৫৩৩] (আ.প্র.
৪৪৫০, ই.ফা. ৪৪৫১)
৬৫/৪০/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
(40) سُوْرَةُ الْمُؤْمِنِ
সূরাহ (৪০) : আল-মু’মিন (গাফির)
قَالَ مُجَاهِدٌ {حم}مَجَازُهَا مَجَازُ أَوَائِلِ السُّوَرِ وَيُقَالُ بَلْ هُوَ اسْمٌ لِقَوْلِ شُرَيْحِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى الْعَبْسِيِّ
يُذَكِّرُنِيْ حَامِيْمَ وَالرُّمْحُ شَاجِرٌ فَهَلَّا تَلَا حاميم قَبْلَ التَّقَدُّمِ
{الطَّوْلِ} التَّفَضُّلُ {دَاخِرِيْنَ} خَاضِعِيْنَ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِلَىالنَّجَاةِ} الإِيْمَانُ {لَيْسَلَهُدَعْوَةٌ} يَعْنِي الْوَثَنَ {يُسْجَرُوْنَ} تُوْقَدُ بِهِمْ النَّارُ {تَمْرَحُوْنَ} تَبْطَرُوْنَ وَكَانَ الْعَلَاءُ بْنُ زِيَادٍ يُذَكِّرُ النَّارَ فَقَالَ رَجُلٌ لِمَ تُقَنِّطْ النَّاسَ قَالَ وَأَنَا أَقْدِرُ أَنْ أُقَنِّطَ النَّاسَ وَاللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ {قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ أَسْرَفُوْا عَلٰٓى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ}وَيَقُوْلُ {وَأَنَّ الْمُسْرِفِيْنَ هُمْ أَصْحَابُ النَّارِ} وَلَكِنَّكُمْ تُحِبُّوْنَ أَنْ تُبَشَّرُوْا بِالْجَنَّةِ عَلَى مَسَاوِئِ أَعْمَالِكُمْ وَإِنَّمَا بَعَثَ اللهُ مُحَمَّدًا e مُبَشِّرًا بِالْجَنَّةِ لِمَنْ أَطَاعَهُ وَمُنْذِرًا بِالنَّارِ مَنْ عَصَاهُ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন, অন্যান্য সূরাতে حم শব্দটি যেভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, এখানেও তা একইভাবেই ব্যবহৃত হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন حم এই সূরার নাম। এর প্রমাণস্বরূপ তাঁরা শুরায়হ্ ইবনু আবূ আওফা আবসীর কবিতাটি পেশ করছেন। তিনি বলেছেনيُذَكِّرُنِيْ حاميم وَالرُّمْحُ شَاجِرٌ فَهَلَّا تَلَا حاميم قَبْلَ التَّقَدُّمِ (জঙ্গে জামালের মধ্যে) বর্শা যখন উভয় দিক থেকে বর্ষিত হচ্ছিল, তখন আমার حَامِيْمَ স্মরণ এল। হায়! যুদ্ধে আসার পুর্বে কেন حم পাঠ করা হল না। الطَّوْلِ সম্মানিত হওয়া। دَاخِرِيْنَ অর্থ خَاضِعِيْنَ লাঞ্ছিত বা বিনয়ী। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, إِلَى النَّجَاةِ এর النَّجَاةঅর্থ الإِيْمَانُঈমান। لَيْسَ لَهُ دَعْوَةٌ -এর لَهُ মানে প্রতিমা। يُسْجَرُوْنَ তাদের জন্য আগুন জ্বালানো হবে تَمْرَحُوْنَ তোমরা দম্ভ করতে।
আলা ইবনু যিয়াদ (রহ.) লোকদেরকে জাহান্নামের ভয় দেখাতেন। ফলে এক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করলেন, আপনি লোকদের নিরাশ করে দিচ্ছেন কেন? তিনি বললেন, আমি কি (আল্লাহর রহমাত থেকে) লোকদের নিরাশ করে দিতে পারি! কেননা, আল্লাহ্ বলেছেন, ‘‘হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর রহমাত থেকে নিরাশ হয়ো না।’’ আরও বলেছেন, ‘‘সীমাতিক্রমকারীরাই জাহান্নামের অধিবাসী।’’ বস্তুত তোমরা চাও, পাপাচারে লিপ্ত থাকা সত্ত্বেও তোমাদের জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হোক। কিন্তু তোমরা জেনে রেখ, আল্লাহ্ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ঐ সমস্ত লোকদের সুসংবাদদাতারূপে পাঠিয়েছেন, যারা তাঁর আনুগত্য করে এবং যারা তাঁর নাফরমানী করবে তাদের জন্য তিনি ভয় প্রদর্শনকারী।
সূরাহ (৪০) : আল-মু’মিন (গাফির)
قَالَ مُجَاهِدٌ {حم}مَجَازُهَا مَجَازُ أَوَائِلِ السُّوَرِ وَيُقَالُ بَلْ هُوَ اسْمٌ لِقَوْلِ شُرَيْحِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى الْعَبْسِيِّ
يُذَكِّرُنِيْ حَامِيْمَ وَالرُّمْحُ شَاجِرٌ فَهَلَّا تَلَا حاميم قَبْلَ التَّقَدُّمِ
{الطَّوْلِ} التَّفَضُّلُ {دَاخِرِيْنَ} خَاضِعِيْنَ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِلَىالنَّجَاةِ} الإِيْمَانُ {لَيْسَلَهُدَعْوَةٌ} يَعْنِي الْوَثَنَ {يُسْجَرُوْنَ} تُوْقَدُ بِهِمْ النَّارُ {تَمْرَحُوْنَ} تَبْطَرُوْنَ وَكَانَ الْعَلَاءُ بْنُ زِيَادٍ يُذَكِّرُ النَّارَ فَقَالَ رَجُلٌ لِمَ تُقَنِّطْ النَّاسَ قَالَ وَأَنَا أَقْدِرُ أَنْ أُقَنِّطَ النَّاسَ وَاللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ {قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ أَسْرَفُوْا عَلٰٓى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ}وَيَقُوْلُ {وَأَنَّ الْمُسْرِفِيْنَ هُمْ أَصْحَابُ النَّارِ} وَلَكِنَّكُمْ تُحِبُّوْنَ أَنْ تُبَشَّرُوْا بِالْجَنَّةِ عَلَى مَسَاوِئِ أَعْمَالِكُمْ وَإِنَّمَا بَعَثَ اللهُ مُحَمَّدًا e مُبَشِّرًا بِالْجَنَّةِ لِمَنْ أَطَاعَهُ وَمُنْذِرًا بِالنَّارِ مَنْ عَصَاهُ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন, অন্যান্য সূরাতে حم শব্দটি যেভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, এখানেও তা একইভাবেই ব্যবহৃত হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন حم এই সূরার নাম। এর প্রমাণস্বরূপ তাঁরা শুরায়হ্ ইবনু আবূ আওফা আবসীর কবিতাটি পেশ করছেন। তিনি বলেছেনيُذَكِّرُنِيْ حاميم وَالرُّمْحُ شَاجِرٌ فَهَلَّا تَلَا حاميم قَبْلَ التَّقَدُّمِ (জঙ্গে জামালের মধ্যে) বর্শা যখন উভয় দিক থেকে বর্ষিত হচ্ছিল, তখন আমার حَامِيْمَ স্মরণ এল। হায়! যুদ্ধে আসার পুর্বে কেন حم পাঠ করা হল না। الطَّوْلِ সম্মানিত হওয়া। دَاخِرِيْنَ অর্থ خَاضِعِيْنَ লাঞ্ছিত বা বিনয়ী। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, إِلَى النَّجَاةِ এর النَّجَاةঅর্থ الإِيْمَانُঈমান। لَيْسَ لَهُ دَعْوَةٌ -এর لَهُ মানে প্রতিমা। يُسْجَرُوْنَ তাদের জন্য আগুন জ্বালানো হবে تَمْرَحُوْنَ তোমরা দম্ভ করতে।
আলা ইবনু যিয়াদ (রহ.) লোকদেরকে জাহান্নামের ভয় দেখাতেন। ফলে এক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করলেন, আপনি লোকদের নিরাশ করে দিচ্ছেন কেন? তিনি বললেন, আমি কি (আল্লাহর রহমাত থেকে) লোকদের নিরাশ করে দিতে পারি! কেননা, আল্লাহ্ বলেছেন, ‘‘হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর রহমাত থেকে নিরাশ হয়ো না।’’ আরও বলেছেন, ‘‘সীমাতিক্রমকারীরাই জাহান্নামের অধিবাসী।’’ বস্তুত তোমরা চাও, পাপাচারে লিপ্ত থাকা সত্ত্বেও তোমাদের জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হোক। কিন্তু তোমরা জেনে রেখ, আল্লাহ্ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ঐ সমস্ত লোকদের সুসংবাদদাতারূপে পাঠিয়েছেন, যারা তাঁর আনুগত্য করে এবং যারা তাঁর নাফরমানী করবে তাদের জন্য তিনি ভয় প্রদর্শনকারী।
৪৮১৫
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا الْوَلِيْدُ بْنُ
مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ أَبِيْ
كَثِيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ التَّيْمِيُّ قَالَ
حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ قَالَ قُلْتُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو
بْنِ الْعَاصِ أَخْبِرْنِيْ بِأَشَدِّ مَا صَنَعَ الْمُشْرِكُوْنَ بِرَسُوْلِ
اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
يُصَلِّيْ بِفِنَاءِ الْكَعْبَةِ إِذْ أَقْبَلَ عُقْبَةُ بْنُ أَبِيْ مُعَيْطٍ
فَأَخَذَ بِمَنْكِبِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَوَى ثَوْبَهُ فِيْ
عُنُقِهِ فَخَنَقَهُ بِهِ خَنْقًا شَدِيْدًا فَأَقْبَلَ أَبُوْ بَكْرٍ فَأَخَذَ
بِمَنْكِبِهِ وَدَفَعَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ {أَتَقْتُلُوْنَ
رَجُلًا أَنْ يَّقُوْلَ رَبِّـِيَ اللهُ وَقَدْ جَآءَكُمْ بِالْبَيِّنٰتِ مِنْ
رَّبِّكُمْ}.
‘উরওয়াহ
ইব্নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আম্র ইবনুল আ‘স (রাঃ)-কে বললাম, মুশরিকরা রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে কঠোরতম কী আচরণ করেছে, সে সম্পর্কে
আপনি আমাকে বলুন। তিনি বললেন, একদা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কা‘বার
আঙ্গিণায় সলাত আদায় করছিলেন। এমন সময় ‘উকবাহ ইব্নু আবূ মু’আইত আসল এবং সে রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ঘাড় ধরল এবং তার কাপড় দিয়ে তাঁর গলায় পেচিয়ে
খুব শক্ত করে চিপা দিল। এ সময় আবূ বকর (রাঃ) হাজির হয়ে তার ঘাড় ধরে রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে তাকে সরিয়ে দিলেন এবং বললেন, তোমরা কি এ
ব্যক্তিকে এ জন্য হত্যা করবে যে সে বলে ‘আমার রব আল্লাহ্’; অথচ তিনি তোমাদের রবের
নিকট থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ সহকারে তোমাদের কাছে এসেছেন। [৩৬৭৮] (আ.প্র. ৪৪৫১,
ই.ফা. ৪৪৫২)
অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৮৯১ থেকে ৪৯৭৭
অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৮৯১ থেকে ৪৯৭৭
No comments