সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যায় "তাফসীর" হাদিস নং - ৪৮৯১ থেকে ৪৯৭৭

৬৫/৬০/.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ (হে মু’মিনগণ!) যখন তোমাদের কাছে মু’মিন নারীরা দেশত্যাগী হয়ে আসে। (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১০)

৪৮৯১

إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَمِّهِ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَمْتَحِنُ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ بِهَذِهِ الآيَةِ بِقَوْلِ اللهِ {يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَآءَكَ الْمُؤْمِنٰتُ يُبَايِعْنَكَ} إِلَى قَوْلِهِ {غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ}قَالَ عُرْوَةُ قَالَتْ عَائِشَةُ فَمَنْ أَقَرَّ بِهَذَا الشَّرْطِ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ قَالَ لَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ بَايَعْتُكِ كَلَامًا وَلَا وَاللهِ مَا مَسَّتْ يَدُهُ يَدَ امْرَأَةٍ قَطُّ فِي الْمُبَايَعَةِ مَا يُبَايِعُهُنَّ إِلَّا بِقَوْلِهِ قَدْ بَايَعْتُكِ عَلَى ذَلِكِ تَابَعَهُ يُوْنُسُ وَمَعْمَرٌ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِسْحَاقَ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ وَعَمْرَةَ.

‘উরওয়াহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) তাকে বলেছেন, কোন মু’মিন মহিলা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে হিজরাত করে এলে, তিনি তাকে আল্লাহ্‌র এই আয়াতের ভিত্তিতে পরীক্ষা করতেন- অর্থঃ “হে নাবী! মু’মিন নারীগণ যখন তোমার কাছে এ মর্মে বায়‘আত করতে আসে যে, তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না, এবং সৎকার্যে তোমাকে অমান্য করবে না, তখন তাদের বায়‘আত গ্রহণ করবে এবং তাদের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।) আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু” (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১২)। ‘উরওয়াহ (রহ.) বলেন, ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন, যে মু’মিন মহিলা এসব শর্ত মেনে নিত, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বলতেন, আমি কথার মাধ্যমে তোমাকে বায়‘আত করে নিলাম। আল্লাহ্‌র কসম! বায়‘আত কালে কোন নারীর হাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর হাতকে স্পর্শ করেনি। নারীদেরকে তিনি শুধু এ কথার দ্বারাই বায়‘আত করতেনقَدْ بَايَعْتُكِ عَلَى ذَلِكِ অর্থাৎ আমি তোমাকে এ কথার ওপর বায়‘আত করলাম।
ইউনুস, মা‘মার ও ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ইসহাক (রহ.) যুহরীর মাধ্যমে উক্ত বর্ণনার সমর্থন করেছেন।
ইসহাক ইব্‌নু রাশিদ, যুহরী থেকে এবং যুহরী ‘উরওয়াহ ও ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। [২৭১৩] (আ.প্র. ৪৪২৩, ই.ফা. ৪৫২৭)

৬৫/৬০/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ হে নাবী! মু‘মিন নারীরা যখন আপনার কাছে এসে এই মর্মে আনুগত্যের শপথ করে। (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১২)

৪৮৯২

أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيْرِيْنَ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ بَايَعْنَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَ عَلَيْنَا {أَنْ لَّا يُشْرِكْنَ بِاللهِ شَيْئًا} وَنَهَانَا عَنْ النِّيَاحَةِ فَقَبَضَتْ امْرَأَةٌ يَدَهَا فَقَالَتْ أَسْعَدَتْنِيْ فُلَانَةُ أُرِيْدُ أَنْ أَجْزِيَهَا فَمَا قَالَ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا فَانْطَلَقَتْ وَرَجَعَتْ فَبَايَعَهَا.
উম্মি ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বায়‘আত গ্রহণ করেছি। এরপর তিনি আমাদের সামনে পাঠ করলেন, “তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক স্থির করবে না।” এরপর তিনি আমাদেরকে মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করে কাঁদতে নিষেধ করলেন। এ সময় এক মহিলা তার হাত টেনে নিয়ে বলল, অমুক মহিলা আমাকে বিলাপে সহযোগিতা করেছে, আমি তাকে এর বিনিময় দিতে ইচ্ছা করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে কিছুই বলেননি। এরপর মহিলাটি উঠে চলে গেল এবং আবার ফিরে আসলো, তখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বায়‘আত করলেন। [১৩০৬] (আ.প্র. ৪৫২৪, ই.ফা. ৪৫২৮)

৪৮৯৩

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيْرٍ قَالَ حَدَّثَنَا أَبِيْ قَالَ سَمِعْتُ الزُّبَيْرَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ فِيْ قَوْلِهِ تَعَالَى {وَلَا يَعْصِيْنَكَ فِيْ مَعْرُوْفٍ} قَالَ إِنَّمَا هُوَ شَرْطٌ شَرَطَهُ اللهُ لِلنِّسَاءِ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহ্‌র বাণী, وَلاَ يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ -এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, এটা একটা শর্ত, যা আল্লাহ্ তা‘আলা নারীদের প্রতি আরোপ করেছেন। (আ.প্র. ৪৫২৫, ই.ফা. ৪৫২৯)

৪৮৯৪

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ الزُّهْرِيُّ حَدَّثَنَاهُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيْسَ سَمِعَ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَتُبَايِعُوْنِيْ عَلَى أَنْ لَا تُشْرِكُوْا بِاللهِ شَيْئًا وَلَا تَزْنُوْا وَلَا تَسْرِقُوْا وَقَرَأَ آيَةَ النِّسَاءِ وَأَكْثَرُ لَفْظِ سُفْيَانَ قَرَأَ الْآيَةَ فَمَنْ وَفَى مِنْكُمْ فَأَجْرُهُ عَلَى اللهِ وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَعُوْقِبَ فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَهُ وَمَنْ أَصَابَ مِنْهَا شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَسَتَرَهُ اللهُ فَهُوَ إِلَى اللهِ إِنْ شَاءَ عَذَّبَهُ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُ تَابَعَهُ عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ فِي الآيَةِ.
‘উবাদাহ ইব্‌নু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি এসব শর্তে আমার কাছে বায়‘আত গ্রহণ করবে যে, তোমরা আল্লাহ্‌র সঙ্গে অন্য কিছুকে শরীক করবে না, যিনা করবে না এবং চুরি করবে না। এরপর তিনি নারীদের শর্ত সম্পর্কিত আয়াত পাঠ করলেন। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান প্রায়ই বলতেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আয়াতটি পাঠ করেছেন। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমাদের যে ব্যক্তি এসব শর্ত পূরণ করবে, আল্লাহ্ তার প্রতিফল দেবেন। আর যে ব্যক্তি এ সবের কোন একটি করে ফেলবে এবং তাকে শাস্তিও দেয়া হবে। এ শাস্তি তার জন্য কাফ্ফারা হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি এ সবের কোন একটি করে ফেলল এবং আল্লাহ্ তা লুকিয়ে রাখলেন, তাহলে এ বিষয়টি আল্লাহ্‌র কাছে থাকল। তিনি চাইলে তাকে শাস্তি দেবেন, আর তিনি যদি চান তাহলে তাকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন। আবদুর রায্যাক (রহ.) মা‘মার (রহ.)-এর সূত্রে এ রকম বর্ণনা করেছেন। [১৮] (আ.প্র. ৪৫২৬, ই.ফা. ৪৫৩০)

৪৮৯৫

مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا هَارُوْنُ بْنُ مَعْرُوْفٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ وَهْبٍ قَالَ وَأَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ أَنَّ الْحَسَنَ بْنَ مُسْلِمٍ أَخْبَرَهُ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ شَهِدْتُ الصَّلَاةَ يَوْمَ الْفِطْرِ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ فَكُلُّهُمْ يُصَلِّيْهَا قَبْلَ الْخُطْبَةِ ثُمَّ يَخْطُبُ بَعْدُ فَنَزَلَ نَبِيُّ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَكَأَنِّيْ أَنْظُرُ إِلَيْهِ حِيْنَ يُجَلِّسُ الرِّجَالَ بِيَدِهِ ثُمَّ أَقْبَلَ يَشُقُّهُمْ حَتَّى أَتَى النِّسَاءَ مَعَ بِلَالٍ فَقَالَ {يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَآءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلٰٓى أَنْ لَّا يُشْرِكْنَ بِاللهِ شَيْئًا وَّلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِيْنَ وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَادَهُنَّ وَلَا يَأْتِيْنَ بِبُهْتَانٍ يَّفْتَرِيْنَه” بَيْنَ أَيْدِيْهِنَّ وَأَرُجُلِهِنَّ} حَتَّى فَرَغَ مِنَ الآيَةِ كُلِّهَا ثُمَّ قَالَ حِيْنَ فَرَغَ أَنْتُنَّ عَلَى ذَلِكَ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ وَاحِدَةٌ لَمْ يُجِبْهُ غَيْرُهَا نَعَمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَا يَدْرِي الْحَسَنُ مَنْ هِيَ قَالَ فَتَصَدَّقْنَ وَبَسَطَ بِلَالٌ ثَوْبَهُ فَجَعَلْنَ يُلْقِيْنَ الْفَتَخَ وَالْخَوَاتِيْمَ فِيْ ثَوْبِ بِلَالٍ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ঈদুল ফিত্রের দিন ঈদের সলাতে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সঙ্গে সঙ্গে হাজির ছিলাম এবং আবূ বাক্র (রাঃ), ‘উমার (রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ)-ও সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা সকলেই খুত্বার আগে সলাত আদায় করেছেন। সলাত আদায়ের পর তিনি খুতবা দিয়েছেন। এরপর আল্লাহ্‌র নাবী মিম্বর থেকে নেমেছেন। তখন তিনি যে লোকজনকে হাতের ইশারায় বসাচ্ছিলেন, এ দৃশ্য আমি এখনো যেন দেখতে পাচ্ছি। এরপর তিনি লোকদের দু’ভাগ করে সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং মহিলাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁর সঙ্গে বিলাল (রাঃ)-ও ছিলেন। এরপর তিনি পাঠ করলেন, “হে নাবী! মু’মিন নারীগণ যখন তোমার কাছে এসে বায়‘আত করে এ মর্মে যে, তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক স্থির করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানকে হত্যা করবে না এবং তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না।” তিনি পূর্ণ আয়াত তিলাওয়াত করে সমাপ্ত করলেন। এরপর তিনি আয়াত শেষ করে বললেন, এ শর্ত পূরণে তোমরা রাজি আছ কি? একজন মহিলা বলল, হাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! এ ব্যতীত আর কোন মহিলা কোন উত্তর দেয়নি। এ মহিলাটি কে ছিল, হাসান (রাঃ) তা জানতেন না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা দান করো। বিলাল (রাঃ) তাঁর কাপড় বিছিয়ে দিলেন। তখন মহিলারা তাদের রিং ও আংটি বিলাল (রাঃ)-এর কাপড়ে ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলতে লাগলেন। [৯৮] (আ.প্র. ৪৫২৭, ই.ফা. ৪৫৩১)

৬৫/৬১/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম ‘আহমাদ’। (সূরাহ আসসাফ ৬১/৬)
(61) سُوْرَةُ الصَّفِّ
সূরাহ (৬১) : আসসাফ্
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {مَنْ أَنْصَارِيْٓ إِلَى اللهِ} مَنْ يَتَّبِعُنِيْ إِلَى اللهِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {مَرْصُوْصٌ}مُلْصَقٌ بَعْضُهُ بِبَعْضٍ وَقَالَ يَحْيَى بِالرَّصَاصِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
مَنْ أَنْصَارِيْٓإِلَى اللهِ অর্থ, আল্লাহর পথে কে আমার অনুসরণ করবে? ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مَرْصُوْصٌ ঐ বস্তু যার এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সংযুক্ত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) ব্যতীত অপরাপর তাফসীরকারের মধ্যে رَّصَاصِ (মানে শিলা) ধাতু থেকে مَرْصُوْصًا শব্দটির উৎপত্তি।

৪৮৯৬

أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيْهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ إِنَّ لِيْ أَسْمَاءً أَنَا مُحَمَّدٌ وَأَنَا أَحْمَدُ وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِيْ يَمْحُو اللهُ بِيَ الْكُفْرَ وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِيْ يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمِيْ وَأَنَا الْعَاقِبُ.
যুবায়র ইব্‌নু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, আমার অনেকগুলো নাম আছে। আমি মুহাম্মাদ, আমি আহ্মাদ এবং আমি মাহী। আমার দ্বারা আল্লাহ্ তা‘আলা সমস্ত কুফরী দূর করবেন। আমি হাশির, আমার পেছনে সমস্ত মানুষকে একত্রিত করা হবে এবং আমি ‘আকিব, সকলের শেষে আগমনকারী। [৩৫৩২] (আ.প্র. ৪৫২৮, ই.ফা. ৪৫৩২)

৬৫/৬২/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তাকে প্রেরণ করা হয়েছে তাদের অন্যান্য লোকদের জন্যও, যারা এখনও তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি। (সূরাহ আল-জুমু‘আহ ৬২/৩)
(62) سُوْرَةُ الْجُمُعَةِ
সূরাহ (৬২) : আল-জুমু‘আহ
وَقَرَأَ عُمَرُ {فَامْضُوْآ إِلَى ذِكْرِ اللهِ}.
‘উমার (রাঃ)
فَاسْعوا إِلٰى ذِكْرِ اللهِ -এর স্থলে (ধাবিত হও আল্লাহর দিকে) পড়তেন।

৪৮৯৭

عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ عَنْ ثَوْرٍ عَنْ أَبِي الْغَيْثِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا جُلُوْسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأُنْزِلَتْ عَلَيْهِ سُوْرَةُ الْجُمُعَةِ {وَاٰخَرِيْنَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوْا بِهِمْ} قَالَ قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَلَمْ يُرَاجِعْهُ حَتَّى سَأَلَ ثَلَاثًا وَفِيْنَا سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ وَضَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ عَلَى سَلْمَانَ ثُمَّ قَالَ لَوْ كَانَ الإِيْمَانُ عِنْدَ الثُّرَيَّا لَنَالَهُ رِجَالٌ أَوْ رَجُلٌ مِنْ هَؤُلَاءِ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বসেছিলাম। এমন সময় তাঁর উপর অবতীর্ণ হলো সূরাহ জুমু‘আহ, যার একটি আয়াত হলো ঃ “এবং তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনও তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি।” তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারা কারা? তিনবার এ কথা জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও তিনি কোন উত্তর দিলেন না। আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালমান (রাঃ)-এর উপর হাতে রেখে বললেন, ঈমান সুরাইয়া নক্ষত্রের নিকট থাকলেও আমাদের কতক লোক অথবা তাদের এক ব্যক্তি তা অবশ্যই পেয়ে যাবে। [৪৮৯৮; মুসলিম ৪৪/৫৯, হাঃ ২৫৪৬, আহমাদ ৯৪১০] (আ.প্র. ৪৫২৯, ই.ফা. ৪৫৩৩)

৪৮৯৮

عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ أَخْبَرَنِيْ ثَوْرٌ عَنْ أَبِي الْغَيْثِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَنَالَهُ رِجَالٌ مِنْ هَؤُلَاءِ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত যে, আমাদের লোক অথবা তাদের কতক লোক অবশ্যই তা পেয়ে যাবে। [৪৮৯৭] (আ.প্র. ৪৫৩০, ই.ফা. ৪৫৩৪)

৬৫/৬২/.অধ্যায়ঃ

‘‘আর যখন তারা কোন ব্যবসায়ের কিংবা কোন ক্রীড়াকৌতুকের বস্তু দেখে।’’ (সূরাহ আল-জুমু‘আহ ৬২/১১)

৪৮৯৯

حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ وَعَنْ أَبِيْ سُفْيَانَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَقْبَلَتْ عِيْرٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَنَحْنُ مَعَ النَّبِيِّصلى الله عليه وسلم فَثَارَ النَّاسُ إِلَّا اثْنَيْ عَشَرَ رَجُلًا فَأَنْزَلَ اللهُ {وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوْآ إِلَيْهَا}.
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার জুমু‘আর দিন একটি বাণিজ্য দল আসল, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। বারজন লোক ছাড়া সকলেই সেদিকে ছুটে গেল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন ঃ “এবং যখন তারা দেখল ব্যবসা ও কৌতুক, তখন তারা (তোমাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে) তার দিকে ছুটে গেল” (সূরাহ আল-জুমু‘আহ ৬২/১১)। [৯৩৬] (আ.প্র. ৪৫৩১, ই.ফা. ৪৫৩৫)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ মুনাফিকরা যখন আপনার কাছে আসে তখন তারা বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল। আর আল্লাহ্ জানেন যে, নিশ্চয় আপনি তো তাঁর রসূল এবং আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাচারী। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/১)
(63) سُوْرَةُ الْمُنَافِقِيْنَ
সূরাহ (৬৩) : মুনাফিকূন

৪৯০০

عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنْتُ فِيْ غَزَاةٍ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ يَقُوْلُ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِهِ وَلَئِنْ رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِهِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّيْ أَوْ لِعُمَرَ فَذَكَرَهُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِيْ فَحَدَّثْتُهُ فَأَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوْا مَا قَالُوْا فَكَذَّبَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَصَدَّقَهُ فَأَصَابَنِيْ هَمٌّ لَمْ يُصِبْنِيْ مِثْلُهُ قَطُّ فَجَلَسْتُ فِي الْبَيْتِ فَقَالَ لِيْ عَمِّيْ مَا أَرَدْتَ إِلَى أَنْ كَذَّبَكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَقَتَكَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {إِذَا جَآءَكَ الْمُنٰفِقُوْنَ} فَبَعَثَ إِلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَ فَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ يَا زَيْدُ.
যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমি শারীক হয়েছিলাম। তখন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাইকে বলতে শুনলাম, আল্লাহ্‌র রসূলের সঙ্গীদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না, যতক্ষণ না তারা তাঁর থেকে সরে পড়ে এবং সে এও বলল, আমরা মদিনায় ফিরলে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে। এ কথা আমি আমার চাচা কিংবা ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে বলে দিলাম। তিনি তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে জানালেন। ফলে তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁকে বিস্তারিত এ সব কথা বলে দিলাম। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই এবং তার সাথী-সঙ্গীদের কাছে খবর পাঠালেন, তারা সকলেই কসম করে বলল, এমন কথা তারা বলেননি। ফলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কথাকে মিথ্যা ও তার কথাকে সত্য বলে মেনে নিলেন। এতে আমি এমন মনে কষ্ট পেলাম, যেরূপ কষ্ট আর কখনও পাইনি। আমি (মনের দুঃখে) ঘরে বসে গেলাম। আমার চাচা আমাকে বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাকে মিথ্যাচারী মনে করেছেন এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে তুমি কী করে মনে করলে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, “যখন মুনাফিকগণ তোমার কাছে আসে।” নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং এ সূরাহ পাঠ করলেন। এরপর বললেন, হে যায়দ! আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [৪৯০১, ৪৯০২, ৪৯০৩, ৪৯০৪; মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৭২, আহমাদ ১৯৩০৫] (আ.প্র. ৪৫৩২, ই.ফা. ৪৫৩৬)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তারা নিজেদের শপথসমূহকে ঢালরূপে ব্যবহার করে। (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/২)

৪৯০১

آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَمِّيْ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ ابْنَ سَلُوْلَ يَقُوْلُ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا وَقَالَ أَيْضًا لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّيْ فَذَكَرَ عَمِّيْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوْا مَا قَالُوْا فَصَدَّقَهُمْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَذَّبَنِيْ فَأَصَابَنِيْ هَمٌّ لَمْ يُصِبْنِيْ مِثْلُهُ قَطُّ فَجَلَسْتُ فِيْ بَيْتِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {إِذَا جَآءَكَ الْمُنٰفِقُوْنَ} إِلَى قَوْلِهِ {هُمُ الَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ لَا تُنْفِقُوْا عَلٰى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ} إِلَى قَوْلِهِ {لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ} فَأَرْسَلَ إِلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهَا عَلَيَّ ثُمَّ قَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ.
যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার চাচার সঙ্গে ছিলাম। এ সময় আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই ইব্‌নু সালূলকে বলতে শুনেছি যে, তোমরা আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গীদের জন্য ব্যয় করবে না, যতক্ষণ না তারা তার থেকে সরে পড়ে এবং সে এও বলল যে, আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে। এ কথা আমি আমার চাচার কাছে বলে দিলাম। আমার চাচা তা (রসূল) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বললেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই এবং তার সাথী-সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন। তারা সকলেই কসম করে বলল, তারা এ কথা বলেনি। ফলে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের কথাকে সত্য এবং আমার কথাকে মিথ্যা মনে করলেন। এতে আমার এমন দুঃখ হল যেমন দুঃখ আর কখনও হয়নি। এমনকি আমি ঘরে বসে গেলাম। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে।” থেকে “তারা বলে আল্লাহ্‌র রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না, যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে” এবং “তথা থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে বহিষ্কৃত করবেই।” এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডেকে পাঠালেন এবং আমার সামনে তা তিনি পাঠ করলেন। তারপর বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা করেছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৩, ই.ফা. ৪৫৩৭)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এটা এ কারণে যে, তারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে, ফলে তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে, তাই তারা বোঝে না। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/৩)

৪৯০২

آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْحَكَمِ قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ كَعْبٍ الْقُرَظِيَّ قَالَ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ وَقَالَ أَيْضًا لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ أَخْبَرْتُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَلَامَنِي الْأَنْصَارُ وَحَلَفَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ مَا قَالَ ذَلِكَ فَرَجَعْتُ إِلَى الْمَنْزِلِ فَنِمْتُ فَدَعَانِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُهُ فَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ وَنَزَلَ {هُمُ الَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ لَا تُنْفِقُوْا} الْآيَةَ وَقَالَ ابْنُ أَبِيْ زَائِدَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ عَمْرٍو عَنْ ابْنِ أَبِيْ لَيْلَى عَنْ زَيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই যখন বলল, “আল্লাহ্‌র রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না” এবং এ-ও বলল যে, “যদি আমরা মদিনায় প্রত্যাবর্তন করি.....।” তখন এ খবর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জানিয়ে দিলাম। এ কারণে আনসারগণ আমাকে ভর্ৎসনা করলেন এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই কসম করে বলল, এমন কথা সে বলেনি। এরপর আমি আমার অবস্থানে ফিরে আসলাম এবং ঘুমিয়ে পড়লাম। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি তাঁর কাছে গেলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্ তোমাকে সত্য বলে ঘোষণা করেছেন এবং অবতীর্ণ করেছেন- “তারা বলে তোমরা ব্যয় করবে না....শেষ পর্যন্ত। ইব্‌নু আবূ যায়িদাহ (রহ.) উক্ত হাদীস যায়দ ইব্‌নু আরকামের মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৪, ই.ফা. ৪৫৩৮)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আর যখন আপনি তাদেরকে দেখবেন, তখন তাদের দৈহিক গঠন আপনাকে চমৎকৃত করবে। আর যদি তারা কথা বলতে থাকে, আপনি তাদের কথা শুনবেন, যদিও তারা দেয়ালে ঠেস লাগানো কাঠ সদৃশ। তারা প্রত্যেকটি শোরগোলকে নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, আপনি এদের থেকে সতর্ক থাকুন। আল্লাহ্ এদেরকে বিনাশ করুন। এরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন্ দিকে যাচ্ছে? (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৪)

৪৯০৩

عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ أَصَابَ النَّاسَ فِيْهِ شِدَّةٌ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ لِأَصْحَابِهِ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِهِ وَقَالَ لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَأَرْسَلَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ فَسَأَلَهُ فَاجْتَهَدَ يَمِيْنَهُ مَا فَعَلَ قَالُوْا كَذَبَ زَيْدٌ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَوَقَعَ فِيْ نَفْسِيْ مِمَّا قَالُوْا شِدَّةٌ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيْقِيْ فِيْ {إِذَا جَآءَكَ الْمُنٰفِقُوْنَ} فَدَعَاهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيَسْتَغْفِرَ لَهُمْ فَلَوَّوْا رُءُوْسَهُمْ وَقَوْلُهُ {خُشُبٌ مُّسَنَّدَةٌ} قَالَ كَانُوْا رِجَالًا أَجْمَلَ شَيْءٍ.
যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে বের হলাম। সফরে এক কঠিন অবস্থা লোকদেরকে গ্রাস করে নিল। তখন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই তার সাথী-সঙ্গীদেরকে বলল, “আল্লাহ্‌র রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না যতক্ষণ তারা সরে পড়ে যারা তার আশে পাশে আছে।” সে এও বলল, “আমরা মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলে তথা হতে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদের বহিষ্কৃত করবেই।” (এ কথা শুনে) আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এলাম এবং তাঁকে এ সম্পর্কে জানালাম। তখন তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাইকে ডেকে পাঠালেন। সে অতি জোর দিয়ে কসম খেয়ে বলল, এ কথা সে বলেনি। তখন লোকেরা বলল, যায়দ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছে। তাদের এ কথায় আমার খুব দুঃখ হল। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তা‘আলা আমার সত্যতার পক্ষে আয়াত অবতীর্ণ করলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে।” এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে ডাকলেন, যাতে তিনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, “কিন্তু তারা তাদের মাথা ফিরিয়ে নিল।” (আ.প্র. ৪৫৩৫, ই.ফা. ৪৫৩৯)
আল্লাহ্‌র বাণী ঃ “দেয়ালে ঠেস লাগানো কাঠ সদৃশ” (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৪)। রাবী বলেন, লোকগুলো দেখতে খুব সুন্দর ছিল। [৪৯০০] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ
وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا يَسْتَغْفِرْ لَكُمْ رَسُوْلُ اللهِ لَوَّوْا رُؤُوْسَهُمْ وَرَأَيْتَهُمْ يَصُدُّوْنَ وَهُمْ مُّسْتَكْبِرُوْنَ}
আর যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এসো আল্লাহর রসূল তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, তখন তারা নিজেদের মাথা ঘুরিয়ে নেয়। আর আপনি তাদের দেখবেন যে, তারা অহংকারের সঙ্গে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/৫)
حَرَّكُوا اسْتَهْزَءُوْا بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَيُقْرَأُ بِالتَّخْفِيْفِ مِنْ لَوَيْتُ.
لَوَّوْا তারা মাথা নেড়ে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ঠাট্টা করত। কেউ কেউ لَوَّوْا শব্দটিকে لَوَيْتُ (تَخْفِيْفِ সহকারে) পড়ে থাকেন।

৪৯০৪

عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَمِّيْ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ ابْنَ سَلُوْلَ يَقُوْلُ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا وَلَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّيْ فَذَكَرَ عَمِّيْ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِيْ فَحَدَّثْتُهُ فَأَرْسَلَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوْا مَا قَالُوْا وَكَذَّبَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَصَدَّقَهُمْ فَأَصَابَنِيْ غَمٌّ لَمْ يُصِبْنِيْ مِثْلُهُ قَطُّ فَجَلَسْتُ فِيْ بَيْتِيْ وَقَالَ عَمِّيْ مَا أَرَدْتَ إِلَى أَنْ كَذَّبَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَقَتَكَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {إِذَا جَاءَكَ الْمُنَافِقُوْنَ قَالُوْا نَشْهَدُ إِنَّكَ لَرَسُوْلُ اللهِ} وَأَرْسَلَ إِلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهَا وَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ
যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার চাচার সঙ্গে ছিলাম। এ সময় শুনলাম, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই ইব্‌নু সালূল বলছে, “আল্লাহ্‌র রসূলের সঙ্গীদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে” এবং “আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে”। এ কথা আমি আমার চাচার কাছে জানালাম। আমার চাচা তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে জানালেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডাকলেন। আমি বিস্তারিতভাবে এ কথা তাঁর কাছে বললাম। তখন তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই ও তার সাথী-সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন। তারা সকলেই কসম করে বলল, এ কথা তারা বলেনি। ফলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে মিথ্যাচারী ও তাদেরকে সত্যবাদী মনে করলেন। এতে আমি এমন দুঃখ পেলাম যে, এমন দুঃখ আর কখনও পাইনি। এরপর আমি ঘরে বসে গেলাম। তখন আমার চাচা আমাকে বললেন, এমন কাজের কেন ইচ্ছে করলে, যার ফলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাকে মিথ্যাচারী স্থির করলেন এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন? এ সময় আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে তারা বলে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র রসূল” তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং সূরাটি আমার সামনে তিলাওয়াত করলেন ও বললেন, আল্লাহ্ তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা করেছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৬, ই.ফা. ৪৫৪০)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করেন উভয়ই তাদের জন্য সমান। আল্লাহ্ তাদেরকে কখনও ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ্ তো পাপাচারী লোকদেরকে হিদায়াতের তাওফীক দান করেন না। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/৬)

৪৯০৫

عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا فِيْ غَزَاةٍ قَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً فِيْ جَيْشٍ فَكَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا لَلْأَنْصَارِ وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِيْنَ فَسَمِعَ ذَلِكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا بَالُ دَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ كَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ دَعُوْهَا فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ فَسَمِعَ بِذَلِكَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ فَقَالَ فَعَلُوْهَا أَمَا وَاللهِ لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ عُمَرُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ دَعْنِيْ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعْهُ لَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ أَنَّ مُحَمَّدًا يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ وَكَانَتْ الْأَنْصَارُ أَكْثَرَ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ حِيْنَ قَدِمُوا الْمَدِيْنَةَ ثُمَّ إِنَّ الْمُهَاجِرِيْنَ كَثُرُوْا بَعْدُ قَالَ سُفْيَانُ فَحَفِظْتُهُ مِنْ عَمْرٍو قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرًا كُنَّا مَعَ النَّبِيِ صلى الله عليه وسلم
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা উপস্থিত ছিলাম। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান (রহ.) একবার جَيْشٍ এর স্থলে غَزَاةٍ বর্ণনা করেছেন। এ সময় জনৈক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করলেন। তখন আনসারী হে আনসারী ভাইগণ! বলে সাহায্য প্রার্থনা করলেন এবং মুহাজির সহাবী, ওহে মুহাজির ভাইগণ! বলে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা শুনে বললেন, কী খবর, জাহিলী যুগের মত ডাকাডাকি করছ কেন? তখন উপস্থিত লোকেরা বললেন, এক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করেছে। তিনি বললেন, এমন ডাকাডাকি পরিত্যাগ কর। এটা অত্যন্ত গন্ধময় কথা। এরপর ঘটনাটি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবায়র কানে পৌঁছল, সে বলল, আচ্ছা, মুহাজিররা এমন কাজ করেছে? “আল্লাহ্‌র কসম! আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকেদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে।” এ কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছল। তখন ‘উমার (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি আমাকে অনুমতি দিন। আমি এক্ষুণি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দিচ্ছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এ কথা বলতে না পারে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সঙ্গী-সাথীদেরকে হত্যা করেন। জাবির (রাঃ) বলেন, মুহাজিররা যখন মদিনায় হিজরাত করে আসেন, তখন মুহাজিরদের তুলনায় আনসাররা সংখ্যায় বেশি ছিলেন। অবশ্য পরে মুহাজিররা সংখ্যায় বেশি হয়ে যান। সুফ্ইয়ান (রহ.).....বলেন, এ হাদীসটি আমি আমর (রহ.) থেকে মুখস্থ করেছি। ‘আম্‌র (রহ.) বলেন, আমি জাবির (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। [৩৫১৮] (আ.প্র. ৪৫৩৭. ই.ফা. ৪৫৪১)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ ‘‘এরাই তারা যারা বলে, আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা রয়েছে তাদের জন্য ব্যয় করো না, যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে। আসমান ও যমীনের ধনভান্ডার তো আল্লাহরই। কিন্তু মুনাফিকরা তা বুঝে না।’’ (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৭)

৪৯০৬

. إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عُقْبَةَ عَنْ مُوْسَى بْنِ عُقْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْفَضْلِ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ حَزِنْتُ عَلَى مَنْ أُصِيْبَ بِالْحَرَّةِ فَكَتَبَ إِلَيَّ زَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ وَبَلَغَهُ شِدَّةُ حُزْنِيْ يَذْكُرُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ اللهُمَّ اغْفِرْ لِلْأَنْصَارِ وَلِأَبْنَاءِ الْأَنْصَارِ وَشَكَّ ابْنُ الْفَضْلِ فِيْ أَبْنَاءِ أَبْنَاءِ الْأَنْصَارِ فَسَأَلَ أَنَسًا بَعْضُ مَنْ كَانَ عِنْدَهُ فَقَالَ هُوَ الَّذِيْ يَقُوْلُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذَا الَّذِيْ أَوْفَى اللهُ لَهُ بِأُذُنِهِ.
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, র্হারায় যাদেরকে শহীদ করা হয়েছিল তাদের খবর শুনে শোকে মুহ্যমান হয়েছিলাম। আমার এ শোকের সংবাদ যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি আমার কাছে পত্র লিখেন। পত্রে তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি রসূলকে বলতে শুনেছেন, হে আল্লাহ্! আনসার ও আনসারদের সন্তানদেরকে তুমি ক্ষমা করে দাও। এ দু‘আয় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আনসারদের সন্তানদের সন্তানদের জন্য দু‘আ করেছেন কিনা এ ব্যাপারে ইব্‌নু ফায্ল (রাঃ) সন্দেহ করেছেন। এ ব্যাপারে আনাস (রাঃ) তার কাছে উপস্থিত ব্যক্তিদের কাউকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) ঐ ব্যক্তি যার শ্রবণকে আল্লাহ্ তা‘আলা সত্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [মুসলিম ৪৪/৪৩, হাঃ ২৫০৬, আহমাদ ১৯৬৬২] (আ.প্র. ৪৫৩৮, ই.ফা. ৪৫৪২)

৬৫/৬৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তারা বলে: আমরা যদি মদীনায় ফিরে যাই, তবে প্রতিপত্তিশালীরা সেখান থেকে হীন লোকদের অবশ্যই বের করে দিবে। তাদের জেনে রাখা উচিত যে, ইজ্জত ও প্রতিপত্তি তো একমাত্র আল্লাহরই এবং তাঁর রাসূলের ও মু‘মিনদের। কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না। (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৮)

৪৯০৭

الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ حَفِظْنَاهُ مِنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ كُنَّا فِيْ غَزَاةٍ فَكَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا لَلْأَنْصَارِ وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِيْنَ فَسَمَّعَهَا اللهُ رَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا هَذَا فَقَالُوْا كَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا لَلْأَنْصَارِ وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِيْنَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعُوْهَا فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ قَالَ جَابِرٌ وَكَانَتْ الْأَنْصَارُ حِيْنَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَكْثَرَ ثُمَّ كَثُرَ الْمُهَاجِرُوْنَ بَعْدُ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ أَوَقَدْ فَعَلُوْا وَاللهِ لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ دَعْنِيْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعْهُ لَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ أَنَّ مُحَمَّدًا يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ.
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা যোগদান করেছিলাম। জনৈক মুহাজির আনসারদের এক ব্যক্তির নিতম্বে আঘাত করলেন। তখন আনসারী সহাবী “আনসারী ভাইগণ!” বলে এবং মুহাজির সহাবী “হে মুহাজির ভাইগণ!” বলে ডাক দিলেন। আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের কানে এ কথা পৌঁছিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, এটা কেমন ডাকাডাকি? উপস্থিত লোকেরা বললেন, জনৈক মুহাজির ব্যক্তি এক আনসারী ব্যক্তির নিতম্বে আঘাত করেছে। আনসারী ব্যক্তি “হে আনসারী ভাইগণ!” বলে এবং মুহাজির ব্যক্তি “হে মুহাজির ভাইগণ!” বলে নিজ নিজ গোত্রকে ডাক দিলেন। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ রকম ডাকাডাকি ত্যাগ কর। এগুলো অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত কথা। জাবির (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন মদিনায় হিজরাত করে আসেন তখন আনসার সহাবীগণ ছিলেন সংখ্যায় বেশি। পরে মুহাজিরগণ সংখ্যায় বেশি হয়ে যান। এ সব কথা শুনার পর ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই বলল, সত্যিই তারা কি এমন করেছে? আল্লাহ্‌র কসম! আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান হতে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে বের করে দিবেই। তখন ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি আমাকে অনুমতি দিন। আমি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘উমার! তাকে ছেড়ে দাও, যাতে লোকেরা এমন কথা বলতে না পারে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সাথীদের হত্যা করছেন। [৩৫১৮] (আ.প্র. ৪৫৩৯, ই.ফা. ৪৫৪৩)

৬৫/৬৫/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(64) سُوْرَةُ التَّغَابُنِ
সূরাহ (৬৪) : আত্-তাগাবুন
وَقَالَ عَلْقَمَةُ عَنْ عَبْدِ اللهِ {وَمَنْ يُّؤْمِنْمبِاللهِ يَهْدِ قَلْبَه”} هُوَ الَّذِيْ إِذَا أَصَابَتْهُ مُصِيْبَةٌ رَضِيَ وَعَرَفَ أَنَّهَا مِنْ اللهِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ التَّغَابُنُ غَبْنُ أَهْلِ الْجَنَّةِ أَهْلَ النَّارِ.

‘আলক্বামাহ (রহ.) ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর বাণীঃ
وَمَنْ يُّؤْمِنْمبِاللهِ يَهْدِ قَلْبَهচ ‘‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন।’’ (সূরাহ আত্-তাগাবুন ৬৪/১১)-এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, এর দ্বারা এমন লোককে বোঝানো হয়েছে, যখন বিপদগ্রস্ত হয় তখন আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকে এবং এ কথা বুঝতে পারে যে, এ বিপদ আল্লাহর পক্ষ হতেই এসেছে।
(65)
سُوْرَةُ الطَّلَاقِ
সূরাহ (৬৫) : আত্-তালাক
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِنْ ارْتَبْتُمْ} إِنْ لَمْ تَعْلَمُوْا أَتَحِيْضُ أَمْ لَا تَحِيْضُ فَاللَّائِيْ قَعَدْنَ عَنِ الْمَحِيْضِ وَاللَائِيْ لَمْ يَحِضْنَ بَعْدُ {فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ} وَبَالَ أَمْرِهَا جَزَاءَ أَمْرِهَا.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
إِنْ ارْتَبْتُمْ যদি তোমরা অবগত না থাক যে তারা ঋতুমতী হবে কি না, যারা ঋতু হতে অবসর গ্রহণ করেছে আর যাদের এখনও তা শুরু হয়নি। فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ তাদের কৃতকর্মের শাস্তি স্বরূপ।
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِنْ ارْتَبْتُمْ} إِنْ لَمْ تَعْلَمُوْا أَتَحِيْضُ أَمْ لَا تَحِيْضُ فَاللَّائِيْ قَعَدْنَ عَنِ الْمَحِيْضِ وَاللَائِيْ لَمْ يَحِضْنَ بَعْدُ {فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ} وَبَالَ أَمْرِهَا جَزَاءَ أَمْرِهَا.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
إِنْ ارْتَبْتُمْ যদি তোমরা অবগত না থাক যে তারা ঋতুমতী হবে কি না, যারা ঋতু হতে অবসর গ্রহণ করেছে আর যাদের এখনও তা শুরু হয়নি। فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ তাদের কৃতকর্মের শাস্তি স্বরূপ।

৪৯০৮

يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَالِمٌ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ حَائِضٌ فَذَكَرَ عُمَرُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتَغَيَّظَ فِيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ لِيُرَاجِعْهَا ثُمَّ يُمْسِكْهَا حَتَّى تَطْهُرَ ثُمَّ تَحِيْضَ فَتَطْهُرَ فَإِنْ بَدَا لَهُ أَنْ يُطَلِّقَهَا فَلْيُطَلِّقْهَا طَاهِرًا قَبْلَ أَنْ يَمَسَّهَا فَتِلْكَ الْعِدَّةُ كَمَا أَمَرَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাঁর ঋতুবতী স্ত্রীকে ত্বলাক দেয়ার পর ‘উমার (রাঃ) তা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে উল্লেখ করলেন। এতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অত্যন্ত নাখোশ হলেন। এরপর তিনি বললেন, সে যেন তাকে ফিরিয়ে নেয়। এরপর পবিত্রাবস্থা না আসা পর্যন্ত তাকে নিজের কাছে রেখে দিক। এরপর ঋতু এসে আবার পবিত্র হলে তখন যদি ত্বলাক দিতে চায় তাহলে পবিত্রাবস্থায় স্পর্শ করার পূর্বে সে যেন তাকে ত্বলাক দেয়। এটি সেই ইদ্দত যেটি পালনের নির্দেশ আল্লাহ দিয়েছেন। [৫২৫১, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫২৬৪, ৫৩৩২, ৫৩৩৩, ৭১৬০] (আ.প্র. ৪৫৪০, ই.ফা. ৪৫৪৪)

৬৫/৬৫/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
{وَأُولَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَنْ يَّضَعْنَ حَمْلَهُنَّ ط وَمَنْ يَّتَّقِ اللهَ يَجْعَلْ لَّهمِنْ أَمْرِهٰ يُسْرًا}
‘‘তবে গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের ইদ্দাত তাদের গর্ভের সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত। যে ব্যক্তি আল্লাহ্কে ভয় করে, তিনি তার প্রত্যেক কাজ সহজ করে দেন।’’ (সূরাহ আত্-ত্বলাক্ব ৬৫/৪)
وَأُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ وَاحِدُهَا ذَاتُ حَمْلٍ.
أُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ এর একবচন ذَاتُ حَمْلٍ

৪৯০৯

سَعْدُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبُوْ هُرَيْرَةَ جَالِسٌ عِنْدَهُ فَقَالَ أَفْتِنِيْ فِي امْرَأَةٍ وَلَدَتْ بَعْدَ زَوْجِهَا بِأَرْبَعِيْنَ لَيْلَةً فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ آخِرُ الْأَجَلَيْنِ قُلْتُ أَنَا {وَأُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَنْ يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ} قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ أَنَا مَعَ ابْنِ أَخِيْ يَعْنِيْ أَبَا سَلَمَةَ فَأَرْسَلَ ابْنُ عَبَّاسٍ غُلَامَهُ كُرَيْبًا إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ يَسْأَلُهَا فَقَالَتْ قُتِلَ زَوْجُ سُبَيْعَةَ الْأَسْلَمِيَّةِ وَهِيَ حُبْلَى فَوَضَعَتْ بَعْدَ مَوْتِهِ بِأَرْبَعِيْنَ لَيْلَةً فَخُطِبَتْ فَأَنْكَحَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ أَبُو السَّنَابِلِ فِيْمَنْ خَطَبَهَا.
আবূ সালামাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে ছিলেন, এমন সময় এক ব্যক্তি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে এলেন এবং বললেন, এক মহিলা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর বাচ্চা প্রসব করেছে। সে এখন কীভাবে ইদ্দত পালন করবে, এ বিষয়ে আমাকে ফতোয়া দিন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, ইদ্দত সম্পর্কিত হুকুম্ দু’টির যেটি দীর্ঘ, তাকে সেটি পালন করতে হবে। আবূ সালামাহ (রহ.) বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ্‌র হুকুম তো হল ঃ গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, আমি আমার ভ্রাতুষ্পুত্র অর্থাৎ আবূ সালামার সঙ্গে আছি। তখন ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁর ক্রীতদাস কুরায়বকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করার জন্য উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর কাছে পাঠালেন। তিনি বললেন, সুবায়‘আ আসলামিয়া (রাঃ)-এর স্বামীকে হত্যা করা হল, তিনি তখন গর্ভবতী ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর তিনি সন্তান প্রসব করলেন। এরপরই তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। যারা তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আবুস্ সানাবিল তাদের মধ্যে একজন। [৫৩১৮] (আ.প্র. ৪৫৪১, ই.ফা. ৪৫৪৫)

৬৫/৬৬/.অধ্যায়ঃ

‘‘হে নাবী! আল্লাহ্ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন, আপনি তা হারাম করেছেন কেন? আপনি আপনার স্ত্রীদের খুশী করতে চাইছেন। আল্লাহ্ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়াল।’’ (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/১)
(66) سُوْرَةُ التَّحْرِيْمِ
সূরাহ (৬৬) : আত্-তাহরীম

৪৯১১

مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ ابْنِ حَكِيْمٍ هُوَ يَعْلَى بْنُ حَكِيْمٍ الثَّقَفِيُّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ فِي الْحَرَامِ يُكَفَّرُ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ}.
সা‘ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, এরূপ হারাম করে নেয়া হলে কাফ্ফারা দিতে হবে। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) এ-ও বলেছেন যে, “রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মাঝে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।” [৫২৬৬; মুসলিম ১৮/৩, হাঃ ১৪৭৩, আহমাদ ১৯৭৬] আ.প্র. ৪৫৪২, ই.ফা. ৪৫৪৬)

৪৯১২

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَشْرَبُ عَسَلًا عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ وَيَمْكُثُ عِنْدَهَا فَوَاطَيْتُ أَنَا وَحَفْصَةُ عَلَى أَيَّتُنَا دَخَلَ عَلَيْهَا فَلْتَقُلْ لَهُ أَكَلْتَ مَغَافِيْرَ إِنِّيْ أَجِدُ مِنْكَ رِيْحَ مَغَافِيْرَ قَالَ لَا وَلَكِنِّيْ كُنْتُ أَشْرَبُ عَسَلًا عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَلَنْ أَعُوْدَ لَهُ وَقَدْ حَلَفْتُ لَا تُخْبِرِيْ بِذَلِكَ أَحَدًا.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যয়নব বিন্ত জাহ্শ (রাঃ)-এর কাছে মধু পান করতেন এবং সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করতেন। তাই আমি এবং হাফ্সাহ স্থির করলাম যে, আমাদের যার ঘরেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আসবেন, সে তাঁকে বলবে, আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? আপনার মুখ থেকে মাগাফীরের গন্ধ পাচ্ছি। তিনি বললেন, না, বরং আমি যয়নব বিন্ত জাহ্শ (রাঃ)-এর নিকট মধু পান করেছি। আমি কসম করলাম, আর কখনও মধু পান করব না। তুমি এ ব্যাপারে অন্য কাউকে জানাবে না। [৫২১৬, ৫২৬৭, ৫২৬৮, ৫৪৩১, ৫৫৯৯, ৫৬১৪, ৫৬৮২, ৬৬৯১, ৬৯৭২] (আ.প্র. ৪৫৪৩, ই.ফা. ৪৫৪৭)

৬৫/৬৬/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ
{تَبْتَغِيْ مَرْضَاتَ أَزْوَاجِكَ ط وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ - قَدْ فَرَضَ اللهُ لَكُمْ تَحِلَّةَ أَيْمَانِكُمْ ج وَاللهُ مَوْلٰكُمْ ج وَهُوَ الْعَلِيْمُ الْحَكِيْمُ}.
আপনি আপনার স্ত্রীদের খুশী করতে চাইছেন। আল্লাহ তো তোমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন কসম থেকে মুক্তির ব্যবস্থা। আল্লাহ তোমাদের বন্ধু। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/১-২)

৪৯১৩

عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ عَنْ يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ بْنِ حُنَيْنٍ أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يُحَدِّثُ أَنَّهُ قَالَ مَكَثْتُ سَنَةً أُرِيْدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ عَنْ آيَةٍ فَمَا أَسْتَطِيْعُ أَنْ أَسْأَلَهُ هَيْبَةً لَهُ حَتَّى خَرَجَ حَاجًّا فَخَرَجْتُ مَعَهُ فَلَمَّا رَجَعْنَا وَكُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيْقِ عَدَلَ إِلَى الْأَرَاكِ لِحَاجَةٍ لَهُ قَالَ فَوَقَفْتُ لَهُ حَتَّى فَرَغَ ثُمَّ سِرْتُ مَعَهُ فَقُلْتُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ مَنْ اللَّتَانِ تَظَاهَرَتَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَزْوَاجِهِ فَقَالَ تِلْكَ حَفْصَةُ وَعَائِشَةُ قَالَ فَقُلْتُ وَاللهِ إِنْ كُنْتُ لَأُرِيْدُ أَنْ أَسْأَلَكَ عَنْ هَذَا مُنْذُ سَنَةٍ فَمَا أَسْتَطِيْعُ هَيْبَةً لَكَ قَالَ فَلَا تَفْعَلْ مَا ظَنَنْتَ أَنَّ عِنْدِيْ مِنْ عِلْمٍ فَاسْأَلْنِيْ فَإِنْ كَانَ لِيْ عِلْمٌ خَبَّرْتُكَ بِهِ قَالَ ثُمَّ قَالَ عُمَرُ وَاللهِ إِنْ كُنَّا فِي الْجَاهِلِيَّةِ مَا نَعُدُّ لِلنِّسَاءِ أَمْرًا حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ فِيْهِنَّ مَا أَنْزَلَ وَقَسَمَ لَهُنَّ مَا قَسَمَ قَالَ فَبَيْنَا أَنَا فِيْ أَمْرٍ أَتَأَمَّرُهُ إِذْ قَالَتْ امْرَأَتِيْ لَوْ صَنَعْتَ كَذَا وَكَذَا قَالَ فَقُلْتُ لَهَا مَا لَكَ وَلِمَا هَا هُنَا وَفِيْمَ تَكَلُّفُكِ فِيْ أَمْرٍ أُرِيْدُهُ فَقَالَتْ لِيْ عَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ مَا تُرِيْدُ أَنْ تُرَاجَعَ أَنْتَ وَإِنَّ ابْنَتَكَ لَتُرَاجِعُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يَظَلَّ يَوْمَهُ غَضْبَانَ فَقَامَ عُمَرُ فَأَخَذَ رِدَاءَهُ مَكَانَهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى حَفْصَةَ فَقَالَ لَهَا يَا بُنَيَّةُ إِنَّكِ لَتُرَاجِعِيْنَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يَظَلَّ يَوْمَهُ غَضْبَانَ فَقَالَتْ حَفْصَةُ وَاللهِ إِنَّا لَنُرَاجِعُهُ فَقُلْتُ تَعْلَمِيْنَ أَنِّيْ أُحَذِّرُكِ عُقُوْبَةَ اللهِ وَغَضَبَ رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم يَا بُنَيَّةُ لَا يَغُرَّنَّكِ هَذِهِ الَّتِيْ أَعْجَبَهَا حُسْنُهَا حُبُّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِيَّاهَا يُرِيْدُ عَائِشَةَ قَالَ ثُمَّ خَرَجْتُ حَتَّى دَخَلْتُ عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ لِقَرَابَتِيْ مِنْهَا فَكَلَّمْتُهَا فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ عَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ دَخَلْتَ فِيْ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى تَبْتَغِيَ أَنْ تَدْخُلَ بَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَزْوَاجِهِ فَأَخَذَتْنِيْ وَاللهِ أَخْذًا كَسَرَتْنِيْ عَنْ بَعْضِ مَا كُنْتُ أَجِدُ فَخَرَجْتُ مِنْ عِنْدِهَا وَكَانَ لِيْ صَاحِبٌ مِنَ الْأَنْصَارِ إِذَا غِبْتُ أَتَانِيْ بِالْخَبَرِ وَإِذَا غَابَ كُنْتُ أَنَا آتِيْهِ بِالْخَبَرِ وَنَحْنُ نَتَخَوَّفُ مَلِكًا مِنْ مُلُوْكِ غَسَّانَ ذُكِرَ لَنَا أَنَّهُ يُرِيْدُ أَنْ يَسِيْرَ إِلَيْنَا فَقَدْ امْتَلَأَتْ صُدُوْرُنَا مِنْهُ فَإِذَا صَاحِبِي الْأَنْصَارِيُّ يَدُقُّ الْبَابَ فَقَالَ افْتَحْ افْتَحْ فَقُلْتُ جَاءَ الْغَسَّانِيُّ فَقَالَ بَلْ أَشَدُّ مِنْ ذَلِكَ اعْتَزَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَزْوَاجَهُ فَقُلْتُ رَغَمَ أَنْفُ حَفْصَةَ وَعَائِشَةَ فَأَخَذْتُ ثَوْبِيْ فَأَخْرُجُ حَتَّى جِئْتُ فَإِذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ مَشْرُبَةٍ لَهُ يَرْقَى عَلَيْهَا بِعَجَلَةٍ وَغُلَامٌ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلمأَسْوَدُ عَلَى رَأْسِ الدَّرَجَةِ فَقُلْتُ لَهُ قُلْ هَذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَأَذِنَ لِيْ قَالَ عُمَرُ فَقَصَصْتُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذَا الْحَدِيْثَ فَلَمَّا بَلَغْتُ حَدِيْثَ أُمِّ سَلَمَةَ تَبَسَّمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَإِنَّهُ لَعَلَى حَصِيْرٍ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ شَيْءٌ وَتَحْتَ رَأْسِهِ وِسَادَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيْفٌ وَإِنَّ عِنْدَ رِجْلَيْهِ قَرَظًا مَصْبُوْبًا وَعِنْدَ رَأْسِهِ أَهَبٌ مُعَلَّقَةٌ فَرَأَيْتُ أَثَرَ الْحَصِيْرِ فِيْ جَنْبِهِ فَبَكَيْتُ فَقَالَ مَا يُبْكِيْكَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ كِسْرَى وَقَيْصَرَ فِيْمَا هُمَا فِيْهِ وَأَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ فَقَالَ أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُوْنَ لَهُمْ الدُّنْيَا وَلَنَا الآخِرَةُ.
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)-কে এ আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য আমি এক বছর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তাঁর ব্যক্তি প্রভাবের ভয়ে আমি তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে পারিনি। অবশেষে তিনি হাজ্জের উদ্দেশে রওয়ানা হলে, আমিও তাঁর সঙ্গে গেলাম। ফেরার পথে আমরা যখন কোন একটি রাস্তা অতিক্রম করছিলাম, তখন তিনি প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য একটি পিলু গাছের আড়ালে গেলেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি প্রয়োজন সেরে না আসা পর্যন্ত আমি সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলাম। এরপর তাঁর সঙ্গে পথ চলতে চলতে বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীদের কোন্ দু’জন তার বিপক্ষে একমত হয়ে পরস্পর একে অন্যকে সহযোগিতা করেছিলেন? তিনি বললেন, তাঁরা দু’জন হল হাফসাহ ও ‘আয়িশাহ (রাঃ)। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ্‌র শপথ! আমি আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করার জন্য এক বছর যাবৎ ইচ্ছে করেছিলাম। কিন্তু আপনার ভয়ে আমার পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ রকম করবে না। যে বিষয়ে তুমি মনে করবে যে, আমি তা জানি, তা আমাকে জিজ্ঞেস করবে। এ বিষয়ে আমার জানা থাকলে আমি তোমাকে জানিয়ে দেব। তিনি বলেন, এরপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ! জাহিলী যুগে মহিলাদের কোন অধিকার আছে বলে আমরা মনে করতাম না। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের সম্পর্কে যে বিধান অবতীর্ণ করার ছিল তা অবতীর্ণ করলেন এবং তাদের হক হিসাবে যা নির্দিষ্ট করার ছিল তা নির্দিষ্ট করলেন। তিনি বলেন, একদিন আমি কোন এক ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করছিলাম, এমন সময় আমার স্ত্রী আমাকে বললেন, কাজটি যদি তুমি এভাবে এভাবে করতে। আমি বললাম, তোমার কী প্রয়োজন? এবং আমার কাজে তোমার এ অনধিকার চর্চা কেন। সে আমাকে বলল, হে খাত্তাবের বেটা! কি আশ্চর্য, তুমি চাও না যে, আমি তোমার কথার উত্তর দান করি অথচ তোমার কন্যা হাফ্সাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কথার পৃষ্ঠে কথা বলে থাকে। এমনকি একদিন তো সে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে রাগানি¦ত করে ফেলে। এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) দাঁড়িয়ে গেলেন এবং চাদরখানা নিয়ে তার বাড়িতে চলে গেলেন। তিনি তাকে বললেন, বেটী! তুমি নাকি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কথার প্রতি-উত্তর করে থাক। ফলে তিনি দিনভর দুঃখিত থাকেন। হাফ্সাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমরা তো অবশ্যই তাঁর কথার জবাব দিয়ে থাকি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, জেনে রাখ! আমি তোমাকে আল্লাহ্‌র শাস্তি এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অসন্তুষ্টি সম্পর্কে সতর্ক করছি। রূপ-সৌন্দর্যের কারণে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ভালবাসা যাকে গর্বিতা করে রেখেছে, সে যেন তোমাকে প্রতারিত না করতে পারে। এ কথা বলে ‘উমার (রাঃ) ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে বোঝাচ্ছিলেন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, এরপর আমি সেখান থেকে বেরিয়ে আসলাম এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করলাম ও এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করলাম। কারণ, তাঁর সঙ্গে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। তখন উম্মু সালামাহ (রাঃ) বললেন, হে খাত্তাবের বেটা! কি আশ্চর্য, তুমি প্রত্যেক ব্যাপারেই নাক গলাচ্ছ, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার স্ত্রীদের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছ। আল্লাহ্‌র কসম! তিনি আমাকে এমন শক্তভাবে ধরলেন যে, আমার রাগ খতম হয়ে গেল। এরপর আমি তাঁর নিকট হতে চলে আসলাম। আমার একজন আনসার বন্ধু ছিল। যদি আমি কোন মাজলিসে অনুপস্থিত থাকতাম তাহলে সে এসে মাজলিসের খবর আমাকে জানাত। আর সে যদি অনুপস্থিত থাকত তাহলে আমি এসে তাকে মাজলিসের খবর জানাতাম। সে সময় আমরা গাস্সানী বাদশার আক্রমণের আশংকা করছিলাম। আমাদেরকে বলা হয়েছিল যে, সে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য রওয়ানা হয়েছে। তাই আমাদের হৃদয়-মন এ ভয়ে শংকিত ছিল। এমন সময় আমার আনসার বন্ধু এসে দরজায় আঘাত করে বললেন, দরজা খুলুন, দরজা খুলুন। আমি বললাম, গাস্সানীরা চলে এসেছে নাকি? তিনি বললেন, বরং এর চেয়েও কঠিন ব্যাপার ঘটে গেছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সহধর্মিণীদের থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছেন। তখন আমি বললাম, হাফ্সাহ ও ‘আয়িশাহর নাক ধূলায় ধূসরিত হোক। এরপর আমি কাপড় নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখলাম, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি উঁচু কক্ষে অবস্থান করছেন। সিঁড়ি বেয়ে সেখানে পৌঁছতে হয়। সিঁড়ির মুখে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একজন কালো গোলাম বসা ছিল। আমি বললাম, বলুন, ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব এসেছেন। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে অনুমতি দিলেন, আমি তাঁকে সব কথা বললাম, আমি যখন উম্মু সালামার কপোপকথন পর্যন্ত পৌঁছলাম তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুচকি হাসলেন। এ সময় তিনি একটা চাটাইয়ের উপর শুয়ে ছিলেন। চাটাই এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মাঝে আর কিছুই ছিল না। তাঁর মাথার নিচে ছিল খেজুরের ছালভর্তি চামড়ার একটি বালিশ এবং পায়ের কাছে ছিল সল্ম বৃক্ষের পাতার একটি স্তূপ ও মাথার উপর লটকানো ছিল চামড়ার একটি মশক। আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এক পার্শ্বে চাটাইয়ের দাগ দেখে কেঁদে ফেললে তিনি বললেন, তুমি কেন কাঁদছ? আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! কিসরা ও কায়সার পার্থিব ভোগ-বিলাসের মধ্যে ডুবে আছে, অথচ আপনি আল্লাহ্‌র রসূল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তারা দুনিয়া লাভ করুক, আর আমরা আখিরাত লাভ করি। [৮৯; মুসলিম ১৮/৫, হাঃ ১৪৭৯] (আ.প্র. ৪৫৪৪, ই.ফা. ৪৫৪৮)

৬৫/৬৬/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
{وَإِذْ أَسَرَّ النَّبِيُّ إِلٰى بَعْضِ أَزْوَاجِهٰ حَدِيْثًا ج فَلَمَّا نَبَّأَتْ بِهٰ وَأَظْهَرَهُ اللهُ عَلَيْهِ عَرَّفَ بَعْضَهوَأَعْرَضَ عَنْمبَعْضٍ ج فَلَمَّا نَبَّأَهَا بِهٰ قَالَتْ مَنْ أَنْـ.ـبَأَكَ هٰذَا ط قَالَ نَبَّأَنِيَ الْعَلِيْمُ الْخَبِيْرُ}
‘‘স্মরণ কর, নাবী তাঁর স্ত্রীদের একজনের কাছে গোপনে কিছু কথা বলেছিলেন, তারপর যখন সে তা অন্যকে বলে দিল এবং আল্লাহ নাবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নাবী সে বিষয়ে কিছু ব্যক্ত করলেন এবং কিছু ব্যক্ত করলেন না। অতঃপর যখন তিনি তা তার স্ত্রীকে বললেন তখন সে বললঃ কে আপনাকে এ ব্যাপারে অবহিত করেছেন? নাবী বললেনঃ আমাকে অবহিত করেছেন আল্লাহ্ যিনি সর্বজ্ঞ, সব কিছুর খবর রাখেন।’’ (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৩)
فِيْهِ عَائِشَةُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
এ বিষয়ে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-ও এক হাদীস নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

৪৯১৪

عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ حُنَيْنٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَقُوْلُ أَرَدْتُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقُلْتُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ مَنْ الْمَرْأَتَانِ اللَّتَانِ تَظَاهَرَتَا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمَا أَتْمَمْتُ كَلَامِيْ حَتَّى قَالَ عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا. قُوْا {أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ} قَالَ مُجَاهِدٌ أَوْصُوْا.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করতে চাইলাম। আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণীদের কোন্ দু’জন তাঁর ব্যাপারে একমত হয়ে পরস্পর একে অন্যকে সহযোগিতা করেছিলেন? আমি আমার কথা শেষ করার আগেই তিনি বললেন, ‘আয়িশাহ এবং হাফসাহ (রাঃ)। (আ.প্র. ৪৫৪৫, ই.ফা. ৪৫৪৯)

৬৫/৬৬/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের অন্তর অন্যায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে, তাই তোমরা উভয়ে তাওবা করলে ভাল হয়। (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৪)
صَغَوْتُ وَأَصْغَيْتُ مِلْتُ لِتَصْغَى لِتَمِيْلَ وَإِنْ تَظَاهَرَا عَلَيْهِ فَإِنَّ اللهَ هُوَ مَوْلَاهُ وَجِبْرِيْلُ وَصَالِحُ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمَلَائِكَةُ بَعْدَ ذَلِكَ ظَهِيْرٌ عَوْنٌ تَظَاهَرُوْنَ تَعَاوَنُوْنَ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {قُوْآ أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ} أَوْصُوْا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ بِتَقْوَى اللهِ وَأَدِّبُوْهُمْ.
صَغَوْتُ এবং َأَصْغَيْتُ(ثلاثى مجرد وموزيد فيه) উভয়ের অর্থ আমি ঝুঁকে পড়েছি। لِتَصْغَى অর্থ- لِتَمِيْلَ মানে যেন সে অনুরাগী হয়, ঝুঁকে পড়ে। ‘‘কিন্তু যদি তোমরা নাবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য কর তবে জেনে রাখ, আল্লাহ্ই তাঁর বন্ধু এবং জিব্রীল ও নেককার মু’মিনরাও, তাছাড়া অন্যান্য মালাকগণও তাঁর সাহায্যকারী’’- (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৪)।ظَهِيْرٌ সাহায্যকারী تَظَاهَرُوْنَ পরস্পর তোমরা একে অপরকে সাহায্য করছ। মুজাহিদ (রহ.) বলেন,قُوْآ أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ بِتَقْوَى اللهِ وَأَدِّبُوْهُمْ ‘‘তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর’’- (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৬)। তাকওয়া অবলম্বন করার জন্য ওসীয়াত কর এবং তাদেরকে আদব শিক্ষা দাও।

৪৯১৫

الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ حُنَيْنٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَقُوْلُ كُنْتُ أُرِيْدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ عَنِ الْمَرْأَتَيْنِ اللَّتَيْنِ تَظَاهَرَتَا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمَكَثْتُ سَنَةً فَلَمْ أَجِدْ لَهُ مَوْضِعًا حَتَّى خَرَجْتُ مَعَهُ حَاجًّا فَلَمَّا كُنَّا بِظَهْرَانَ ذَهَبَ عُمَرُ لِحَاجَتِهِ فَقَالَ أَدْرِكْنِيْ بِالْوَضُوْءِ فَأَدْرَكْتُهُ بِالإِدَاوَةِ فَجَعَلْتُ أَسْكُبُ عَلَيْهِ الْمَاءَ وَرَأَيْتُ مَوْضِعًا فَقُلْتُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ مَنْ الْمَرْأَتَانِ اللَّتَانِ تَظَاهَرَتَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَمَا أَتْمَمْتُ كَلَامِيْ حَتَّى قَالَ عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে দু’জন মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে পরস্পর একে অন্যকে সাহায্য করেছিল, তাদের সম্পর্কে ‘উমার (রাঃ)-কে আমি জিজ্ঞেস করার ইচ্ছে করছিলাম। কিন্তু জিজ্ঞেস করার সুযোগ না পেয়ে আমি এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। শেষে একবার হজ্জ করার জন্য তাঁর সঙ্গে আমি যাত্রা করলাম। আমরা ‘যাহ্রান’ নামক স্থানে পৌঁছলে ‘উমার (রাঃ) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে গেলেন। এরপর আমাকে বললেন, আমার জন্য ওযুর পানির ব্যবস্থা কর। আমি পাত্র ভরে পানি নিয়ে আসলাম এবং ঢেলে দিতে লাগলাম। সুযোগ মনে করে আমি তাঁকে বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! ঐ দু’জন মহিলা কে কে, যারা একে অন্যকে সাহায্য করেছিল? ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি আমার কথা শেষ করার আগেই তিনি বললেন, ‘আয়িশাহ ও হাফ্সাহ (রাঃ)। [৮৯] (আ.প্র. ৪৫৪৬, ই.ফা. ৪৫৫০)

৬৫/৬৬/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ
{عَسٰى رَبُّهٓ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُّبْدِلَهٓأَزْوَاجًا خَيْرًا مِّنْكُنَّ مُسْلِمٰتٍ مُّؤْمِنٰتٍ قٰنِتٰتٍ تَآئِبٰتٍ عَابِدٰتٍ سَآئِحٰتٍ ثَيِّبٰتٍ وَّأَبْكَارًا}
‘‘যদি নাবী তোমাদের সবাইকে ত্বলাক দেন, তবে তাঁর রব অচিরেই তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চেয়ে উত্তম স্ত্রী তাঁকে দিবেন, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, অনুগত, তাওবাহ্কারিণী, ‘ইবাদাতকারিণী, সওম পালনকারীণী, অকুমারী ও কুমারী।’’ (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৫)

৪৯১৬

عَمْرُوْ بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ اجْتَمَعَ نِسَاءُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْغَيْرَةِ عَلَيْهِ فَقُلْتُ لَهُنَّ {عَسٰى رَبُّه”ٓ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُّبْدِلَهٓ” أَزْوَاجًا خَيْرًا مِّنْكُنَّ} فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সতর্কতা দানের জন্য তাঁর সহধর্মিণীগণ একত্রিত হয়েছিলেন। আমি তাঁদেরকে বললাম, যদি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন তবে তাঁর প্রতিপালক সম্ভবত তাঁকে দেবেন তোমাদের অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর স্ত্রী। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল। [৪০২] (আ.প্র. ৪৫৪৭, ই.ফা. ৪৫৫১)

৬৫/৬৮/.অধ্যায়ঃ

‘‘যে রুক্ষ স্বভাব, এতদ্ব্যতীত জারজ।’’ (সূরাহ আল-ক্বলাম ৬৮/১৩)
(67) سُوْرَةُ الْمُلْكِ تَبَارَكَ الَّذِيْ بِيَدِهِ الْمُلْكُ
সূরাহ (৬৭) : আল-মুলক
{
التَّفَاوُتُ} الِاخْتِلَافُ وَالتَّفَاوُتُ وَالتَّفَوُّتُ وَاحِدٌ {تَمَيَّزُ} تَقَطَّعُ {مَنَاكِبِهَا} جَوَانِبِهَا {تَدَّعُوْنَ} وَتَدْعُوْنَ وَاحِدٌ مِثْلُ تَذَّكَّرُوْنَ وَتَذْكُرُوْنَ {وَيَقْبِضْنَ} يَضْرِبْنَ بِأَجْنِحَتِهِنَّ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {صَافَّاتٍ} بَسْطُ أَجْنِحَتِهِنَّ {وَنُفُوْرٌ} الْكُفُوْرُ.
التَّفَاوُتُ বিভিন্নতা। التَّفَاوُتُএবং التَّفَوُّتُ শব্দ দু’টো একই অর্থবোধক। تَمَيَّزُ টুকরো হয়ে যাবে বা ফেটে পড়বে। مَنَاكِبِهَا তার দিগদিগন্ত। تَدَّعُوْنَ এবং تَدْعُوْنَবাক্যদ্বয় تَذَّكَّرُوْنَتَذْكُرُوْنَ এর মতই। يَقْبِضْنَ তারা তাদের পাখা মেলে উড়ে বেড়ায়। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, صَافَّاتٍ তারা তাদের পাখা বিস্তার করে। نُفُوْرٌ কুফর ও সত্যবিমুখতা।


(68)
سُوْرَةُ ن وَالْقَلَمِ
সূরাহ (৬৮) : আল-ক্বলাম
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَتَخَافَتُوْنَ يَنْتَجُوْنَ السِّرَارَ وَالْكَلَامَ الْخَفِيَّ وَقَالَ قَتَادَةُ {حَرْدٍ} جِدٍّ فِيْ أَنْفُسِهِمْ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَضَآلُّوْنَ} أَضْلَلْنَا مَكَانَ جَنَّتِنَا وَقَالَ غَيْرُهُ {كَالصَّرِيْمِ} كَالصُّبْحِ انْصَرَمَ مِنْ اللَّيْلِ وَاللَّيْلِ انْصَرَمَ مِنْ النَّهَارِ وَهُوَ أَيْضًا كُلُّ رَمْلَةٍ انْصَرَمَتْ مِنْ مُعْظَمِ الرَّمْلِ وَالصَّرِيْمُ أَيْضًا الْمَصْرُوْمُ مِثْلُ قَتِيْلٍ وَمَقْتُوْلٍ. [{مَكْظُوْمٌ} وَكَظِيْمٌ مَغْمُوْمٌ، تُدْهِنُ فِيُدْهِنُوْن تَرْخُصُ فَيَرْ خُصُوْنَ].
ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন,
حَرْدٍ অর্থ جِدٍّ فِيْٓ أَنْفُسِهِمْ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, اِنَّالَضَآلُّوْنَ অর্থ আমরা আমাদের জান্নাতের স্থানের কথা ভুলে গিয়েছি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) ব্যতীত অন্যান্য ভাষ্যকার বলেছেন, كَالصَّرِيْمِ অর্থ রাত থেকে বিচ্ছিন্ন প্রভাতের মত বা দিন থেকে বিচ্ছিন্ন রাতের মত। صَّرِيْمُ ঐ বালুকণাকেও বলা হয় যা বালুস্তূপ হতে বিচ্ছিন্ন। مَصْرُوْمُ- صَرِيْمُ শব্দ قَتِيْلٍ এবং مَقْتُوْلٍ এর মত।

৪৯১৭

مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ حَصِيْنٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيْمٍ قَالَ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ لَهُ زَنَمَةٌ مِثْلُ زَنَمَةِ الشَّاةِ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ (রূঢ় স্বভাব এবং তদুপরি কুখ্যাত) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এ লোকটি হলো কুরাইশ গোত্রের এমন এক লোক, যার স্কন্ধে ছাগলের চিহ্নের মত একটি বিশেষ চিহ্ন ছিল। (আ.প্র. ৪৫৪৮, ই.ফা. ৪৫৫২)

৪৯১৮

أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَعْبَدِ بْنِ خَالِدٍ قَالَ سَمِعْتُ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ الْخُزَاعِيَّ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ كُلُّ ضَعِيْفٍ مُتَضَعِّفٍ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ كُلُّ عُتُلٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ.
হারিস ইব্‌নু ওয়াহাব খুযাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা দুর্বল এবং অসহায়; কিন্তু তাঁরা যদি কোন ব্যাপারে আল্লাহ্‌র নামে কসম করে বসেন, তাহলে তা পূরণ করে দেন। আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা রূঢ় স্বভাব, অধিক মোটা এবং অহংকারী তারাই জাহান্নামী। [৬০৭১, ৬৬৫৭; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৫৩, আহমাদ ১৮৭৫৩] (আ.প্র. ৪৫৪৯, ই.ফা. ৪৫৫৩)

৬৫/৬৮/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ পায়ের গোছা পর্যন্ত উন্মুক্ত করার দিনের কথা স্মরণ কর। (সূরাহ আল-ক্বলাম ৬৮/৪২)

৪৯১৯

آدَمُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ هِلَالٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ يَكْشِفُ رَبُّنَا عَنْ سَاقِهِ فَيَسْجُدُ لَهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ وَمُؤْمِنَةٍ فَيَبْقَى كُلُّ مَنْ كَانَ يَسْجُدُ فِي الدُّنْيَا رِيَاءً وَسُمْعَةً فَيَذْهَبُ لِيَسْجُدَ فَيَعُوْدُ ظَهْرُهُ طَبَقًا وَاحِدًا.
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমাদের প্রতিপালক যখন তাঁর পায়ের গোড়ালির জ্যোতি বিকীর্ণ করবেন, তখন ঈমানদার নারী ও পুরুষ সবাই তাকে সাজ্দাহ করবে। কিন্তু যারা দুনিয়াতে লোক দেখানো ও প্রচারের জন্য সাজ্দাহ করত, তারা কেবল বাকী থাকবে। তারা সাজদাহ করতে ইচ্ছে করলে তাদের পিঠ একখণ্ড কাঠের ন্যায় শক্ত হয়ে যাবে। [২২] (আ.প্র. ৪৫৫০, ই.ফা. ৪৫৫৪)

৬৫/৭১/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তোমরা ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূওয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নাসারকে। (সূরাহ নূহ ৭১/২৩)
(69) سُوْرَةُ الْحَاقَّةِ
সূরাহ (৬৯) : আল-হাক্কাহ্
{
حُسُوْمًا} مُتَتَابُعَةً وَقَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ {عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ} يُرِيْدُ فِيْهَا الرِّضَا {الْقَاضِيَةَ} الْمَوْتَةَ الْأُوْلَى الَّتِيْ مُتُّهَا لَمْ أُحْيَ بَعْدَهَا {مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِيْنَ} أَحَدٌ يَكُوْنُ لِلْجَمْعِ وَلِلْوَاحِدِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الْوَتِيْنَ} نِيَاطُ الْقَلْبِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {طَغٰى}كَثُرَ وَيُقَالُ بِالطَّاغِيَةِ بِطُغْيَانِهِمْ. وَيُقَالُ طَغَتْ عَلَى الْخَزَّانِ كَمَا طَغَى الْمَاءُ عَلَى قَوْمِ نُوْحٍ e. وَغِسْلِيْنٍ : مَا يَسِيْلُ مِنْ صَدِيْدِ أهْلِ النَّارِ. وَقَالَ غَيْرُهُ : {مِنْ غِسْلِنٍ} : كلُّ شَيْءٍ غَسَلْتَهُ فَخَرَجَ مِنْهُ شَيْءٌ فَهُوَ غَسْلَيْنٌ، فِعْلَيْنٌ مِنَ الغَسْلِ مِنَ الْجَرْحِ وَالدُّبُرِ. {أعْجَارُ نَخْلٍ} : أُصُوْلُهَا. {بَاقِيةٍ} : بِقيّةٍ.
عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ সন্তোষজনক জীবন। الْقَاضِيَةَ প্রথম মৃত্যুটাই যদি এমন হত যে, তারপর আর জীবিত না করা হত। مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِيْنَ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তাকে রক্ষা করতে পারে। احِدِ শব্দটি একবচন ও বহুবচন উভয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْوَتِيْنَ হৃদপিন্ডের সঙ্গে যুক্ত রগ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, طَغٰى অতিরিক্ত হয়েছে বা বেশি হয়েছে। বলা হয় بِالطَّاغِيَةِ তাদের বিদ্রোহ এবং কুফ্রীর কারণে طَغَتْ عَلَى الْخَزَّانِ বায়ু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং সামূদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছে যেমন পানি নূহ্ সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।

(70)
سُوْرَةُ المعارج [سَأَلَ سَآئِلٌ]
সূরাহ (৭০) : আল-মা‘আরিজ
{
الْفَصِيْلَةُ} أَصْغَرُ آبَائِهِ الْقُرْبَى إِلَيْهِ يَنْتَمِيْ مَنْ انْتَمَى {لِلشَّوٰى} الْيَدَانِ وَالرِّجْلَانِ وَالأَطْرَافُ وَجِلْدَةُ الرَّأْسِ يُقَالُ لَهَا شَوَاةٌ وَمَا كَانَ غَيْرَ مَقْتَلٍ فَهُوَ شَوًى عِزِيْنَ {وَالْعِزُوْنَ} وَالْجَمَاعَاتُ وَوَاحِدُهَا عِزَةٌ. [{يُوْفِضُوْنَ} : الإيفاضُ الإسْرَاعِ]
الْفَصِيْلَةُ তাদের পূর্ব-পুরষদের থেকে সর্বাধিক নিকটাত্মীয়, যাদের থেকে তারা পৃথক হয়েছে এবং যাদের দিকে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়। لِلشَّوٰى দু’হাত, দু’পা, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত ভাগ এবং মাথার চামড়া সবগুলোকে شَوَاةٌ বলা হয়। الْعِزُوْنَ দলসমূহ। এর একবচন عِزَةٌ

(71)
سُوْرَةُ نُوْحٍ [إِنَّا أَرْسَلْنَا]
সূরাহ (৭১) : নূহ (ইন্না আরসালনা)
{
أَطْوَارًا} طَوْرًا كَذَا وَطَوْرًا كَذَا يُقَالُ عَدَا طَوْرَهُ أَيْ قَدْرَهُ وَالْكُبَّارُ أَشَدُّ مِنَ الْكِبَارِ وَكَذَلِكَ جُمَّالٌ وَجَمِيْلٌ لِأَنَّهَا أَشَدُّ مُبَالَغَةً وَكُبَّارٌ الْكَبِيْرُ وَكُبَارًا أَيْضًا بِالتَّخْفِيْفِ وَالْعَرَبُ تَقُوْلُ رَجُلٌ حُسَّانٌ وَجُمَّالٌ وَحُسَانٌ مُخَفَّفٌ وَجُمَالٌ مُخَفَّفٌ {دَيَّارًا} مِنْ دَوْرٍ وَلَكِنَّهُ فَيْعَالٌ مِنْ الدَّوَرَانِ كَمَا قَرَأَ عُمَرُ الْحَيُّ الْقَيَّامُ وَهِيَ مِنْ قُمْتُ وَقَالَ غَيْرُهُ {دَيَّارًا} أَحَدًا {تَبَارًا} هَلَاكًا وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {مِدْرَارًا} يَتْبَعُ بَعْضُهَا بَعْضًا {وَقَارًا} عَظَمَةً.
طْوَارًا পর্যায়ক্রমে, বলা হয়। عَدَا طَوْرَهُ সে তার মর্যাদাকে অতিক্রম করে গেছে। بِالتَّخْفِيْفِ الكُبَّارُ এর তুলনায় بالتشديد الكُبَّارُ এর অর্থের মাঝে কিছু আধিক্য ও কঠোরতা বিদ্যমান আছে। এমনিভাবে جُمَّالٌ এর মাঝে جَمِيْلٌ -এর তুলনায় অধিকতর সৌন্দর্যের অর্থ বিদ্যমান আছে। كُبَّارٌ الْكَبِيْرُبِالتَّخْفِيْفِ الكُبَّارُ -এর অবস্থা অনুরূপই। আরবীয় লোকের তাশ্দীদের সঙ্গে رَجُلٌ حُسَّانٌ وَجُمَّالٌ ও বলেন, এমনিভাবে তাখ্ফীফের সঙ্গে رَجُلٌ حُسَّانٌ وَجُمَّالٌ ও বলে থাকেন। دَيَّارًا শব্দটির উৎপত্তি دَوْرٍ ধাতু থেকে। তবে যদি তাকে فَيْعَالٌ এর ওযনে ধরা হয় তাহলে এর উৎপত্তি হবে الدَّوَرَانِ শব্দমূল থেকে। যেমন, ‘উমার (রাঃ)الْحَيُّ الْقَيَّامُ পড়েছেন। قُمْتُথেকে الْقَيَّامُ শব্দটির উৎপত্তি। অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন, دَيَّارًا কাউকে। تَبَارًا ধ্বংস। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مِدْرَارًا একটি অপরটির পেছনে। وَقَارًا শ্রেষ্ঠত্ব।

৪৯২০

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ وَقَالَ عَطَاءٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا صَارَتْ الْأَوْثَانُ الَّتِيْ كَانَتْ فِيْ قَوْمِ نُوْحٍ فِي الْعَرَبِ بَعْدُ أَمَّا وَدٌّ كَانَتْ لِكَلْبٍ بِدَوْمَةِ الْجَنْدَلِ وَأَمَّا سُوَاعٌ كَانَتْ لِهُذَيْلٍ وَأَمَّا يَغُوْثُ فَكَانَتْ لِمُرَادٍ ثُمَّ لِبَنِيْ غُطَيْفٍ بِالْجَوْفِ عِنْدَ سَبَإٍ وَأَمَّا يَعُوْقُ فَكَانَتْ لِهَمْدَانَ وَأَمَّا نَسْرٌ فَكَانَتْ لِحِمْيَرَ لِآلِ ذِي الْكَلَاعِ أَسْمَاءُ رِجَالٍ صَالِحِيْنَ مِنْ قَوْمِ نُوْحٍ فَلَمَّا هَلَكُوْا أَوْحَى الشَّيْطَانُ إِلَى قَوْمِهِمْ أَنْ انْصِبُوْا إِلَى مَجَالِسِهِمْ الَّتِيْ كَانُوْا يَجْلِسُوْنَ أَنْصَابًا وَسَمُّوْهَا بِأَسْمَائِهِمْ فَفَعَلُوْا فَلَمْ تُعْبَدْ حَتَّى إِذَا هَلَكَ أُوْلَئِكَ وَتَنَسَّخَ الْعِلْمُ عُبِدَتْ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে প্রতিমার পূজা নূহ্ (‘আ.)-এর কওমের মাঝে চালু ছিল, পরবর্তী সময়ে আরবদের মাঝেও তার পূজা প্রচলিত হয়েছিল। ওয়াদ “দুমাতুল জান্দাল” নামক জায়গার কাল্ব গোত্রের একটি দেবমূর্তি, সূওয়া‘আ, হল, হুযায়ল গোত্রের একটি দেবমূর্তি এবং ইয়াগুছ ছিল মুরাদ গোত্রের, অবশ্য পরবর্তীতে তা গাতীফ গোত্রের হয়ে যায়। এর আস্তানা ছিল কওমে সাবার নিকটবর্তী ‘জাওফ’ নামক স্থান। ইয়া‘উক ছিল হামাদান গোত্রের দেবমূর্তি, নাস্র ছিল যুলকালা‘ গোত্রের হিময়ার শাখার মূর্তি। নূহ (‘আ.)-এর সম্প্রদায়ের কতিপয় নেক লোকের নাম নাস্র ছিল। তারা মারা গেলে, শয়তান তাদের কওমের লোকদের অন্তরে এ কথা ঢেলে দিল যে, তারা যেখানে বসে মাজলিস করত, সেখানে তোমরা কতিপয় মূর্তি স্থাপন কর এবং ঐ সমস্ত পুণ্যবান লোকের নামেই এগুলোর নামকরণ কর। কাজেই তারা তাই করল, কিন্তু তখনও ঐ সব মূর্তির পূজা করা হত না। তবে মূর্তি স্থাপনকারী লোকগুলো মারা গেলে এবং মূর্তিগুলোর ব্যাপারে সত্যিকারের জ্ঞান বিলুপ্ত হলে লোকজন তাদের পূজা আরম্ভ করে দেয়। (আ.প্র. ৪৫৫১, ই.ফা. ৪৫৫৫)

৬৫/৭২/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(72) سُوْرَةُ الجن [قُلْ أُوْحِيَ إِلَيَّ]
সূরাহ (৭২) : আল-জ্বিন (ক্বুল উহিয়্যা ইলাইয়া)
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِبَدًا أَعْوَانًا. {بَخْسًا} : نَقْصًا.
আর ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন,
لِبَدًا সাহায্যকারী। بَخْسًا স্বল্পতার ভয় করবে না।

৪৯২১

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ انْطَلَقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِيْنَ إِلَى سُوْقِ عُكَاظٍ وَقَدْ حِيْلَ بَيْنَ الشَّيَاطِيْنِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمْ الشُّهُبُ فَرَجَعَتْ الشَّيَاطِيْنُ فَقَالُوْا مَا لَكُمْ فَقَالُوْا حِيْلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ قَالَ مَا حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلَّا مَا حَدَثَ فَاضْرِبُوْا مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا فَانْظُرُوْا مَا هَذَا الْأَمْرُ الَّذِيْ حَدَثَ فَانْطَلَقُوْا فَضَرَبُوْا مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا يَنْظُرُوْنَ مَا هَذَا الْأَمْرُ الَّذِيْ حَالَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ قَالَ فَانْطَلَقَ الَّذِيْنَ تَوَجَّهُوْا نَحْوَ تِهَامَةَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِنَخْلَةَ وَهُوَ عَامِدٌ إِلَى سُوْقِ عُكَاظٍ وَهُوَ يُصَلِّيْ بِأَصْحَابِهِ صَلَاةَ الْفَجْرِ فَلَمَّا سَمِعُوا الْقُرْآنَ تَسَمَّعُوْا لَهُ فَقَالُوْا هَذَا الَّذِيْ حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ فَهُنَالِكَ رَجَعُوْا إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوْا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا يَهْدِيْ إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا وَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم{قُلْ أُوْحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ} وَإِنَّمَا أُوْحِيَ إِلَيْهِ قَوْلُ الْجِنِّ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদল সহাবীকে নিয়ে উকায বাজারের দিকে রওয়ানা হলেন। এ সময়ই জিনদের আসমানী খবরাদি শোনার ব্যাপারে বাধা সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে এবং ছুঁড়ে মারা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে লেলিহান অগ্নিশিখা। ফলে জিন শায়ত্বনরা ফিরে আসলে অন্য জিনরা তাদেরকে বলল, তোমাদের কী হয়েছে? তারা বলল, আসমানী খবরাদি সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে আমাদের উপর বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আমাদের প্রতি লেলিহান অগ্নিশিখা ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তখন শয়তান বলল, আসমানী খবরাদি সংগ্রহের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি যে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে, অবশ্যই তা কোন নতুন ঘটনা ঘটার কারণেই হয়েছে। সুতরাং তোমরা পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্ত পর্যন্ত সফর কর এবং দেখ ব্যাপারটা কী ঘটেছে? তাই আসমানী খবরাদি সংগ্রহের ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে, এর কারণ খুঁজে বের করার জন্য তারা সকলেই পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিমে অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়ল। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, যারা তিহামার উদ্দেশে বেরিয়েছিল, তারা ‘নাখলা’ নামক স্থানে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে উপস্থিত হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এখান থেকে উকায বাজারের দিকে যাওয়ার মনস্থ করেছিলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সহাবীদেরকে নিয়ে ফাজ্রের সলাত আদায় করছিলেন। জিনদের ঐ দলটি কুরআন মাজীদ শুনতে পেয়ে আরো বেশি মনোযোগ দিয়ে তা শুনতে লাগল এবং বলল, আসমানী খবর আর তোমাদের মাঝে এটাই সত্যিকারে বাধা সৃষ্টি করেছে। এরপর তারা তাদের কওমের কাছে ফিরে এসে বলল, হে আমাদের কওম! আমরা এক আশ্চর্যজনক কুরআন শ্রবণ করেছি, যা সঠিক পথ নির্দেশ করে। এতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের প্রতিপালকের কোন শরীক স্থির করব না। এরপর আল্লাহ তাঁর নাবীর প্রতি অবতীর্ণ করলেন ঃ বল, আমার প্রতি ওয়াহী প্রেরিত হয়েছে যে জিনদের একটি দল মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। জিনদের উপরোক্ত কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ওয়াহীর মারফত জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। [৭৭৩] (আ.প্র. ৪৫৫২, ই.ফা. ৪৫৫৬)

৬৫/৭৪/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(73) سُوْرَةُ الْمُزَّمِّلِ
সূরাহ (৭৩) : আল-মুযযাম্মিল
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {وَتَبَتَّلْ} أَخْلِصْ وَقَالَ الْحَسَنُ {أَنْكَالًا} قُيُوْدًا مُنْفَطِرٌ بِهِ {مُثْقَلَةٌبِهٰ} وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {كَثِيْبًامَّهِيْلًا} الرَّمْلُ السَّائِلُ {وَبِيْلًا} شَدِيْدًا.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
وَتَبَتَّلْ একনিষ্ঠভাবে মগ্ন হওয়া। হাসান (রহ.) বলেন, أَنْكَالًا শৃঙ্খল। مُثْقَلَةٌبِهٰ ভারে অবনত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, كَثِيْبًامَّهِيْلًا বহমান বালুকারাশি। وَبِيْلًا কঠিন।
(74)
سُوْرَةُ الْمُدَّثِّرِ
সূরাহ (৭৪) : আল-মুদদাসসির
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {عَسِيْرٌ} شَدِيْدٌ {قَسْوَرَةٌ} رِكْزُ النَّاسِ وَأَصْوَاتُهُمْ وَكُلُّ شَدِيْدٍ قَسْوَرَةٌ وَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ الْقَسْوَرَةُ قَسْوَرٌ الْأَسَدُ الرِّكْزُ الصَّوْتُ {مُسْتَنْفِرَةٌ} نَافِرَةٌ مَذْعُوْرَةٌ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন,
عَسِيْرٌ কঠিন। قَسْوَرَةٌ মানুষের কোলাহল, আওয়াজ। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, قَسْوَرَةٌবাঘ। প্রত্যেক কঠিন বস্তুকে الْقَسْوَرَةُ বলা হয়। مُسْتَنْفِرَةٌ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পলায়নপর।

৪৯২২

يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَوَّلِ مَا نَزَلَ مِنَ الْقُرْآنِ قَالَ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} قُلْتُ يَقُوْلُوْنَ {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ} فَقَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ ذَلِكَ وَقُلْتُ لَهُ مِثْلَ الَّذِيْ قُلْتَ فَقَالَ جَابِرٌ لَا أُحَدِّثُكَ إِلَّا مَا حَدَّثَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِيْ هَبَطْتُ فَنُوْدِيْتُ فَنَظَرْتُ عَنْ يَمِيْنِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ عَنْ شِمَالِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ أَمَامِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ خَلْفِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا فَرَفَعْتُ رَأْسِيْ فَرَأَيْتُ شَيْئًا فَأَتَيْتُ خَدِيْجَةَ فَقُلْتُ دَثِّرُوْنِيْ وَصُبُّوْا عَلَيَّ مَاءً بَارِدًا قَالَ فَدَثَّرُوْنِيْ وَصَبُّوْا عَلَيَّ مَاءً بَارِدًا قَالَ فَنَزَلَتْ{يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنْذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ}.
ইয়াহ্ইয়াহ ইব্‌নু কাসীর (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ সালামাহ ইব্‌নু আবদুর রহমান (রহ.)-কে কুরআন মাজীদের কোন্ আয়াতটি সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়েছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। আমি বললাম, লোকেরা তো বলে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। তখন আবূ সালামাহ বললেন, আমি এ বিষয়ে জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম এবং তুমি যা বললে আমিও তাকে হুবহু তাই বলেছিলাম। জবাবে জাবির (রাঃ) বলেছিলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে যা বলেছিলেন, আমিও হুবহু তাই বলব। তিনি বলেছেন, আমি হেরা গুহায় ই’তিকাফ করতে লাগলাম। আমার ই’তিকাফ শেষ হলে আমি সেখান থেকে নামলাম। তখন আমাকে আওয়াজ দেয়া হল। আমি ডানে তাকালাম; কিন্তু কিছু দেখতে পেলাম না, বামে তাকালাম, কিন্তু এদিকেও কিছু দেখলাম না। এরপর সামনে তাকালাম, এদিকেও কিছু দেখলাম না। এরপর পেছনে তাকালাম, কিন্তু এদিওক আমি কিছু দেখলাম না। শেষে আমি উপরের দিকে তাকালাম, এবার একটা বস্তু দেখতে পেলাম। এরপর আমি খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে এলাম এবং তাকে বললাম, আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত কর এবং আমার শরীরে ঠাণ্ডা পানি ঢাল। তিনি বলেন, তারপর তারা আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত করে এবং ঠাণ্ডা পানি ঢালে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এরপর অবতীর্ণ হল ঃ ‘হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠ, সতর্কবাণী প্রচার কর এবং তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৩, ই.ফা. ৪৫৫৭)

৬৫/৭৪/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ উঠুন, সতর্ক করুন। (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/২)

৪৯২৩

مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ وَغَيْرُهُ قَالَا حَدَّثَنَا حَرْبُ بْنُ شَدَّادٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ مِثْلَ حَدِيْثِ عُثْمَانَ بْنِ عُمَرَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ.
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি হেরা গুহায় ইতিকাফ করেছিলাম। ‘উসমান ইব্‌নু ‘উমার ‘আলী ইব্‌নু মুবারক (রহ.) থেকে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন তিনিও একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৪, ই.ফা. ৪৫৫৮)

৬৫/৭৪/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/৩)

৪৯২৪

إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا حَرْبٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى قَالَ سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ أَيُّ الْقُرْآنِ أُنْزِلَ أَوَّلُ فَقَالَ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} فَقُلْتُ أُنْبِئْتُ أَنَّهُ {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ} فَقَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ أَيُّ الْقُرْآنِ أُنْزِلَ أَوَّلُ فَقَالَ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} فَقُلْتُ أُنْبِئْتُ أَنَّهُ {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ} فَقَالَ لَا أُخْبِرُكَ إِلَّا بِمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم جَاوَرْتُ فِيْ حِرَاءٍ فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِيْ هَبَطْتُ فَاسْتَبْطَنْتُ الْوَادِيَ فَنُوْدِيْتُ فَنَظَرْتُ أَمَامِيْ وَخَلْفِيْ وَعَنْ يَمِيْنِيْ وَعَنْ شِمَالِيْ فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَأَتَيْتُ خَدِيْجَةَ فَقُلْتُ دَثِّرُوْنِيْ وَصُبُّوْا عَلَيَّ مَاءً بَارِدًا وَأُنْزِلَ عَلَيَّ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنْذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ}.
ইয়াহ্ইয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ সালামাহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল? তিনি বললেন, يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। এ কথা শুনে আবূ সালামাহ (রহ.) বললেন, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল, এ সম্পর্কে আমি জাবির (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বলেছেন يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে যে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা বলেছেন, আমি তোমাকে তাই বলছি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি হেরা গুহায় ইতিকাফ করেছিলাম। ইতিকাফ শেষ হলে আমি সেখান থেকে নেমে উপত্যকার মাঝে পৌঁছলে আমাকে আওয়াজ দেয়া হল। আমি তখন সামনে, পেছনে, ডানে ও বামে তাকালাম। দেখলাম, সে আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে রক্ষিত একটি আসনে উপবিষ্ট আছে। এরপর আমি খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে এসে বললাম, আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত কর এবং আমার শরীরে ঠাণ্ডা পানি ঢাল। তখন আমার প্রতি অবতীর্ণ করা হল ঃ “হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! সতর্কবাণী প্রচার কর এবং তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।” [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৫, ই.ফা. ৪৫৫৯)

৬৫/৭৪/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এবং স্বীয় পরিধেয় বস্ত্র পবিত্র রাখুন। (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/৪)

৪৯২৫

يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ ح و حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ قَالَ الزُّهْرِيُّ فَأَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْيِ فَقَالَ فِيْ حَدِيْثِهِ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ إِذْ سَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ رَأْسِيْ فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِيْ جَاءَنِيْ بِحِرَاءٍ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَجَئِثْتُ مِنْهُ رُعْبًا فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَدَثَّرُوْنِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} إِلَى {وَالرِّجْزَفَاهْجُرْ} قَبْلَ أَنْ تُفْرَضَ الصَّلَاةُ وَهِيَ الْأَوْثَانُ.
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছি। তিনি ওয়াহী বন্ধ থাকার সময়কাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। তিনি তাঁর আলোচনার মাঝে বললেন, একদা আমি চলছিলাম, এমন সময় আকাশ থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। মাথা উঠাতেই আমি দেখলাম, যে মালাক হেরা গুহায় আমার কাছে এসেছিল সে আসমান-যমীনের মাঝে একটি কুসরীতে বসা আছে। আমি তাঁর ভয়ে ভীত হয়ে পড়লাম। এরপর আমি বাড়িতে ফিরে বললাম, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর; আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। তাঁরা আমাকে বস্ত্রাবৃত করল। তখন আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন, “হে বস্ত্রাবৃত! উঠ.....অপবিত্রতা হতে দূরে থাক।” এ আয়াতগুলো সলাত ফরয হওয়ার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিল। الرِّجْزَ মূর্তিসমূহ। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৬, ই.ফা. ৪৫৬০)

৬৫/৭৪/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ وَالرِّجْزَ فَاهْجُرْ এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন- (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/৫)।

৪৯২৬

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ أَخْبَرَنِيْ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْيِ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ سَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ بَصَرِيْ قِبَلَ السَّمَاءِ فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِيْ جَاءَنِيْ بِحِرَاءٍ قَاعِدٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَجَئِثْتُ مِنْهُ حَتَّى هَوَيْتُ إِلَى الْأَرْضِ فَجِئْتُ أَهْلِيْ فَقُلْتُ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَزَمَّلُوْنِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنْذِرْ} إِلَى قَوْلِهِ {فَاهْجُرْ} قَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ وَالرِّجْزَ الْأَوْثَانَ ثُمَّ حَمِيَ الْوَحْيُ وَتَتَابَعَ
জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ওয়াহী বন্ধ হওয়া সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছেন। তিনি বলেছেন, একদা আমি পথ চলছিলাম, এমন সময় আকাশ থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। এরপর আমি আকাশের দিকে চোখ তুলে দেখলাম, যে ফেরেশতা হেরা গুহায় আমার কাছে আসত, সে আসমান-যমীনের মাঝে একটি কুরসীতে উপবিষ্ট আছে। তাকে দেখে আমি ভীষণ ভয় পেলাম। এমনকি যমীনে পড়ে গেলাম। তারপর আমি আমার স্ত্রীর কাছে গেলাম এবং বললাম, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। তারা আমাকে বস্ত্রাবৃত করল। এরপর আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন ঃ “হে বস্ত্রাবৃত!.....অপবিত্রতা হতে দূরে থাক।” আবূ সালামাহ (রহ.) বলেন, الرِّجْزَ মূর্তিসমূহ। এরপর অধিক হারে ওয়াহী অবতীর্ণ হতে লাগল এবং লাগাতার ওয়াহী আসতে থাকল। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৭, ই.ফা. ৪৫৬১)

৬৫/৭৫/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ ওয়াহী দ্রুত আয়ত্ত করার জন্য আপনি ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় আপনার জিহবা নাড়বে না। (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৬)
(75) سُوْرَةُ الْقِيَامَةِ
সূরাহ (৭৫) : আল-ক্বিয়ামাহ
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لِيَفْجُرَ أَمَامَهُ} سَوْفَ أَتُوْبُ سَوْفَ أَعْمَلُ {لَاوَزَرَ} لَا حِصْنَ سُدًى هَمَلًا.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, ,
لِيَفْجُرَ أَمَامَهُ শীঘ্রই তওবাহ করব, শীঘ্রই ‘আমাল করব। لَاوَزَرَ কোন আশ্রয়স্থল নেই, سُدًى নিরর্থক ও উদ্দেশ্যহীন ।

৪৯২৭

الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ أَبِيْ عَائِشَةَ وَكَانَ ثِقَةً عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا نَزَلَ عَلَيْهِ الْوَحْيُ حَرَّكَ بِهِ لِسَانَهُ وَوَصَفَ سُفْيَانُ يُرِيْدُ أَنْ يَحْفَظَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهٰ}.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি যখন ওয়াহী অবতীর্ণ করা হত, তখন তিনি দ্রুত তাঁর জিহ্বা নাড়তেন। রাবী সুফ্ইয়ান বলেন, এভাবে করার পেছনে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ওয়াহী মুখস্থ করা। তারপর আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন ঃ তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা সঞ্চালন করবে না। [৫] (আ.প্র. ৪৫৫৮, ই.ফা. ৪৫৬২)

৬৫/৭৫/.অধ্যায়ঃ

‘‘নিশ্চয় এর একত্রীকরণ ও পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার।’’ (সূর আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৭)

৪৯২৮

عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ مُوْسَى بْنِ أَبِيْ عَائِشَةَ أَنَّهُ سَأَلَ سَعِيْدَ بْنَ جُبَيْرٍ عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ} قَالَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَانَ يُحَرِّكُ شَفَتَيْهِ إِذَا أُنْزِلَ عَلَيْهِ فَقِيْلَ لَهُ {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ} يَخْشَى أَنْ يَنْفَلِتَ مِنْهُ {إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَه” وَقُرْاٰنَه} أَنْ نَجْمَعَهُ فِيْ صَدْرِكَ وَقُرْآنَهُ أَنْ تَقْرَأَهُ {فَإِذَا قَرَأْنَاهُ} يَقُوْلُ أُنْزِلَ عَلَيْهِ {فَاتَّبِعْ قُرْاٰنَه” ج -ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَه”} أَنْ نُبَيِّنَهُ عَلَى لِسَانِكَ.
মূসা ইব্‌নু আবূ ‘আয়িশাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ আল্লাহ্‌র এই বাণী সম্পর্কে সা‘ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন, ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি যখন ওয়াহী অবতীর্ণ করা হত, তখন তিনি তাঁর ঠোঁট দু’টো দ্রুত নাড়তেন। তখন তাঁকে বলা হল, তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা নাড়বে না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওয়াহী ভুলে যাবার আশংকায় এমন করতেন। নিশ্চয়ই এ কুরআন সংরক্ষণ ও পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমারই। অর্থাৎ আমি নিজেই তাকে তোমার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করব। তাই আমি যখন তা পাঠ করব অর্থাৎ যখন তোমার প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ হতে থাকবে, তখন তুমি তার অনুসরণ করবে। এরপর তা বর্ণনা করার দাযিত্ব আমারই অর্থাৎ এ কুরআনকে তোমার মুখ দিয়ে বর্ণনা করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার। [৫] (আ.প্র. ৪৫৫৯, ই.ফা. ৪৫৬৩)

৬৫/৭৫/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন। (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৮)
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {قَرَأْنَاهُ} بَيَّنَّاهُ {قَرَأْنَاهُ}اعْمَلْ بِهِ.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন,
قَرَأْنَاهُ আমি যখন তা বর্ণনা করি قَرَأْنَاهُ তদনুযায়ী ‘আমাল কর।

৪৯২৯

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مُوْسَى بْنِ أَبِيْ عَائِشَةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ فِيْ قَوْلِهِ {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهٰ} قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا نَزَلَ جِبْرِيْلُ بِالْوَحْيِ وَكَانَ مِمَّا يُحَرِّكُ بِهِ لِسَانَهُ وَشَفَتَيْهِ فَيَشْتَدُّ عَلَيْهِ وَكَانَ يُعْرَفُ مِنْهُ فَأَنْزَلَ اللهُ الْآيَةَ الَّتِيْ فِيْ {لَآ أُقْسِمُ بِيَوْمِ الْقِيٰمَةِ لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهٰط- إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَه” وَقُرْاٰنَه} قَالَ عَلَيْنَا أَنْ نَجْمَعَهُ فِيْ صَدْرِكَ وَقُرْآنَهُ {فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ} فَإِذَا أَنْزَلْنَاهُ فَاسْتَمِعْ {) ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَه”} عَلَيْنَا أَنْ نُبَيِّنَهُ بِلِسَانِكَ قَالَ فَكَانَ إِذَا أَتَاهُ جِبْرِيْلُ أَطْرَقَ فَإِذَا ذَهَبَ قَرَأَهُ كَمَا وَعَدَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {أَوْلٰى لَكَ فَأَوْلٰى} تَوَعُّدٌ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহ্‌র বাণী ঃ لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন যে, জিবরীল (‘আ.) যখন ওয়াহী নিয়ে আসতেন তখন রসূল তাঁর জিহ্বা ও ঠোঁট দু’টো দ্রুত নাড়তেন। এটা তাঁর জন্য কষ্টসাধ্য হত এবং তাঁর চেহারা দেখেই বোঝা যেত। তাই আল্লাহ্ তা‘আলা ঃ “তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তোমার জিহ্বা সঞ্চালন করবে না; এ কুরআন সংরক্ষণ ও পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমারই” অবতীর্ণ করলেন। এতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন ঃ এ কুরআনকে আপনার বক্ষে সংরক্ষিত করা ও পড়িয়ে দেয়ার ভার আমার উপর। সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর, অর্থাৎ আমি যখন ওয়াহী অবতীর্ণ করি তখন তুমি মনোযোগ দিয়ে শুন। তারপর এর বিস্তারিত ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। অর্থাৎ তোমার মুখে তা বর্ণনা করার দায়িত্ব আমারই। রাবী বলেন, এরপর জিব্রীল (‘আ.) চলে গেলে আল্লাহ্‌র ওয়াদা ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ মুতাবিক তিনি তা পাঠ করতেন। أَوْلَى لَكَ فَأَوْلَى দুর্ভোগ তোমার জন্য, দুর্ভোগ! تَوَعُّدٌ এ আয়াতে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। [৫; মুসলিম ৪/৩২, হাঃ ৪৪৮, আহমাদ ৩১৯১] (আ.প্র. ৪৫৬০, ই.ফা. ৪৫৬৪)

৬৫/৭৭/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(76) سُوْرَةُ الإنسان [هَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ]
সূরাহ (৭৬) : ইনসান (আদ্-দাহর) ‘‘কালের প্রবাহে মানুষের উপর এমন এক সময় এসেছিল কি?’’
يُقَالُ مَعْنَاهُ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ وَهَلْ تَكُوْنُ جَحْدًا وَتَكُوْنُ خَبَرًا وَهَذَا مِنَ الْخَبَرِ يَقُوْلُ كَانَ شَيْئًا فَلَمْ يَكُنْ مَذْكُوْرًا وَذَلِكَ مِنْ حِيْنِ خَلَقَهُ مِنْ طِيْنٍ إِلَى أَنْ يُنْفَخَ فِيْهِ الرُّوْحُ {أَمْشَاجٍ} الْأَخْلَاطُ مَاءُ الْمَرْأَةِ وَمَاءُ الرَّجُلِ الدَّمُ وَالْعَلَقَةُ وَيُقَالُ إِذَا خُلِطَ مَشِيْجٌ كَقَوْلِكَ خَلِيْطٌ وَمَمْشُوْجٌ مِثْلُ مَخْلُوْطٍ وَيُقَالُ {سَلَاسِلًا وَأَغْلَالًا} وَلَمْ يُجْرِ بَعْضُهُمْ {مُسْتَطِيْرًا} مُمْتَدًّا الْبَلَاءُ {وَالْقَمْطَرِيْرُ} الشَّدِيْدُ يُقَالُ يَوْمٌ قَمْطَرِيْرٌ وَيَوْمٌ قُمَاطِرٌ وَالْعَبُوْسُ وَالْقَمْطَرِيْرُ وَالْقُمَاطِرُ وَالْعَصِيْبُ أَشَدُّ مَا يَكُوْنُ مِنَ الْأَيَّامِ فِي الْبَلَاءِ وَقَالَ الْحَسَنُ {النُّضْرَةُ} فِي الْوَجْهِ وَالسُّرُوْرُ فِي الْقَلْبِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الأَرَآئِكِ} السُّرُرُ وَقَالَ الْبَرَاءُ {وَذُلِّلَتْ قُطُوْفُهَا} يَقْطِفُوْنَ كَيْفَ شَاءُوْا وَقَالَ مَعْمَرٌ {أَسْرَهُمْ} شِدَّةُ الْخَلْقِ وَكُلُّ شَيْءٍ شَدَدْتَهُ مِنْ قَتَبٍ وَغَبِيْطٍ فَهُوَ مَأْسُوْرٌ.

অর্থাৎ কালের প্রবাহে মানুষের উপর এক সময় এসেছিল।
هَلْ শব্দটি কখনো নেতিবাচক, আবার কখনো ইতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে এখানে অবহিতকরণ তথা ইতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহ্ বলেন, এক সময় মানুষের অস্তিত্ব ছিল কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোন বস্তু ছিল না। আর ঐ সময়টা হল মাটি থেকে সৃষ্টি করা হতে তার মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করা পর্যন্ত। أَمْشَاجٍ সংমিশ্রণ। অর্থাৎ মাতৃগর্ভে পুরুষ ও মহিলার বীর্যের সংমিশ্রণে রক্ত এবং পরে জমাট বাঁধা রক্ত সৃষ্টি হওয়াকে أَمْشَاجٍ বলা হয়েছে। এক বস্তুর অপর বস্তুর সঙ্গে মিশ্রিত হলে তাকে مَشِيْجٌ বলে। তাকে خَلِيْطٌ ও বলা হয়। আর مَمْشُوْجٌمَخْلُوْطٍ এর অর্থ একই। কেউ কেউ سَلَاسِلًا وَأَغْلَالًا পড়ে থাকেন। কিন্তু কেউ কেউ এভাবে পড়াকে জায়িয মনে করেন না। مُسْتَطِيْرًا দীর্ঘস্থায়ী বিপদ। الْقَمْطَرِيْرُ ভয়ংকর ও কঠিন। সুতরাং يَوْمٌ قَمْطَرِيْرٌ এবং يَوْمٌ قُمَاطِرٌ উভয়ই ব্যবহৃত হয়। الْعَبُوْسُ، الْقَمْطَرِيْرُ، الْقُمَاطِرُ، এবং الْعَصِيْبُ বিপদের সবচেয়ে কঠিনতম দিনকে বলা হয়। হাসান (রহ.) বলেন, النُّضْرَةُ চেহারায় সজীবতা ও হৃদয়ে আনন্দ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْأَرَآئِكِ খাট-পালঙ্ক। আর বারা (রাঃ) বলেন, وَذُلِّلَتْ قُطُوْفُهَا তাদের ইচ্ছেমাফিক ফল পাড়বে। মা‘মার (রহ.) বলেন, أَسْرَهُمْ সুদৃঢ় গঠন। উটের গদির সঙ্গে শক্ত করে যে জিনিস বাঁধা থাকে তাকে مَأْسُوْرٌ বলা হয় ।

(77)
سُوْرَةُ وَالْمُرْسَلَاتِ
সূরাহ (৭৭) : আল-মুরসালাত
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {جِمَالَاتٌ} قَالَ مُجَاهِدٌ حِبَالٌ {ارْكَعُوْا} صَلُّوْا لَا يَرْكَعُوْنَ لَا يُصَلُّوْنَ وَسُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ قَوْلِهِ : {لَايَنْطِقُوْنَ}{وَاللهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ}{الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلٰٓىأَفْوَاهِهِمْ} فَقَالَ إِنَّهُ ذُوْ أَلْوَانٍ مَرَّةً يَنْطِقُوْنَ وَمَرَّةً يُخْتَمُ عَلَيْهِمْ

মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
جِمَالَاتٌ উটের সারি। ارْكَعُوْا সালাত আদায় কর। لَا يَرْكَعُوْنَ তারা সালাত আদায় করে না। لَايَنْطِقُوْنَ (তার কথা বলতে সক্ষম হবে না), وَاللهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ (আল্লাহর শপথ! আমরা কখনো মুশরিক ছিলাম না) এবং الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلٓٓى أَفْوَاهِهِمْ (আমি আজ মোহর লাগিয়ে দেব) এ আয়াত সম্বন্ধে ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বললেন, ক্বিয়ামাতের দিন বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষের বিভিন্ন অবস্থা ঘটবে। কখনো সে কথা বলতে পারবে এবং নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, আবার কখনো তার মুখে মোহর লাগিয়ে দেয়া হবে। তখন সে আর কোন কথা বলতে পারবে না।

৪৯৩০

مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأُنْزِلَتْ عَلَيْهِ {وَالْمُرْسَلَاتِ} وَإِنَّا لَنَتَلَقَّاهَا مِنْ فِيْهِ فَخَرَجَتْ حَيَّةٌ فَابْتَدَرْنَاهَا فَسَبَقَتْنَا فَدَخَلَتْ جُحْرَهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وُقِيَتْ شَرَّكُمْ كَمَا وُقِيْتُمْ شَرَّهَا.
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। এমন সময় তাঁর প্রতি অবতীর্ণ হল সূরাহ মুরসলাত। আমরা তাঁর মুখে শুনে সেটি শিখছিলাম। তখন একটি সাপ বেরিয়ে এল। আমরা ওদিকে দৌড়ে গেলাম, কিন্তু সাপটি আমাদের থেকে দ্রুত চলে গিয়ে গর্তে ঢুকে পড়ল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটাও তোমাদের অনিষ্ট হতে বেঁচে গেল, তোমরা যেন ওটার অনিষ্ট হতে রক্ষা পেলে। [১৮৩০; মুসলিম ৩৯/৩৭, হাঃ ২২৩৪, আহমাদ ৪৩৫৭] (আ.প্র. ৪৫৬১, ই.ফা. ৪৫৬৫)

৪৯৩১

عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ مَنْصُوْرٍ بِهَذَا وَعَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ مِثْلَهُ وَتَابَعَهُ أَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ عَنْ إِسْرَائِيْلَ وَقَالَ حَفْصٌ وَأَبُوْ مُعَاوِيَةَ وَسُلَيْمَانُ بْنُ قَرْمٍ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ يَحْيَى بْنُ حَمَّادٍ أَخْبَرَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ مُغِيْرَةَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ وَقَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْأَسْوَدِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ بَيْنَا نَحْنُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَارٍ إِذْ نَزَلَتْ عَلَيْهِ {وَالْمُرْسَلَاتِ} فَتَلَقَّيْنَاهَا مِنْ فِيْهِ وَإِنَّ فَاهُ لَرَطْبٌ بِهَا إِذْ خَرَجَتْ حَيَّةٌ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْكُمْ اقْتُلُوْهَا قَالَ فَابْتَدَرْنَاهَا فَسَبَقَتْنَا قَالَ فَقَالَ وُقِيَتْ شَرَّكُمْ كَمَا وُقِيْتُمْ شَرَّهَا.
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইসরাঈল সূত্রে আসওয়াদ ইব্‌নু ‘আমির পূর্বের হাদীসটির অনুসরণ করেছেন। (অন্য সানাদে) হাফ্স, আবূ মু‘আবীয়াহ এবং সুলাইমান ইব্‌নু কারম (রহ.)....‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (অপর এক সানাদে) ইব্‌নু ইসহাক (রহ.)....‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে ঠিক এমনি বর্ণনা করেছেন। [১৮৩০] (ই.ফা. ৪৫৬৬)
‘আবদুল্লাহ্ (ইব্‌নু মাস‘ঊদ) (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, এক গুহার মধ্যে আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। এমন সময় তাঁর প্রতি অবতীর্ণ হল সূরাহ ওয়াল মুরসলাত। আমরা তাঁর মুখ থেকে সেটা গ্রহণ করছিলাম। এ সুরার তিলাওয়াতে তখনও রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুখ সিক্ত ছিঁঁল, হঠাৎ একটি সাপ বেরিয়ে এল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “তোমরা ওটাকে মেরে ফেল।” ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, আমরা সেদিকে দৌড়ে গেলাম, কিন্তু সাপটি আমাদের আগে চলে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটা তোমাদের অনিষ্ট হতে বেঁচে গেল যেমনি তোমরা এর অনিষ্ট হতে বেঁচে গেলে। (আ.প্র. ৪৫৬২, ই.ফা. ৪৫৬৭)

৬৫/৭৭/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ যা অট্টালিকা সদৃশ বড় বড় স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করবে। (সূরাহ আল-মুরসলাত ৭৭/৩২)

৪৯৩২

مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَابِسٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ {إِنَّهَا تَرْمِيْ بِشَرَرٍ كَالْقَصَرِ} قَالَ كُنَّا نَرْفَعُ الْخَشَبَ بِقَصَرٍ ثَلَاثَةَ أَذْرُعِ أَوْ أَقَلَّ فَنَرْفَعُهُ لِلشِّتَاءِ فَنُسَمِّيْهِ الْقَصَرَ.
‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আবিস (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ঐ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমরা তিন গজ বা এর চেয়ে ছোট কাঠের খণ্ড জোগাড় করে শীতকালের জন্য উঠিয়ে রাখতাম। এটাকেই আমরা বলতাম الْقَصَرَ। [৪৯৩৩] (আ.প্র. ৪৫৬৩, ই.ফা. ৪৫৬৮)

৬৫/৭৭/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ যেন তা পীত বর্ণের বড় বড় উট। (সূরাহ আল-মুরসলাত ৭৭/৩৩)

৪৯৩৩

عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَابِسٍ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {تَرْمِيْ بِشَرَرٍ كَالْقَصَرِ} قَالَ كُنَّا نَعْمِدُ إِلَى الْخَشَبَةِ ثَلَاثَةَ أَذْرُعٍ أَوْ فَوْقَ ذَلِكَ فَنَرْفَعُهُ لِلشِّتَاءِ فَنُسَمِّيْهِ الْقَصَرَ كَأَنَّهُ جِمَالَاتٌ صُفْرٌ حِبَالُ السُّفُنِ تُجْمَعُ حَتَّى تَكُوْنَ كَأَوْسَاطِ الرِّجَالِ.
‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আবিস (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এ আয়াত সম্পর্কে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমরা তিন গজ বা তার চেয়ে অধিক লম্বা কাষ্ঠ জড়ো করে শীতকালের জন্য উঠিয়ে রাখতাম। এটাকেই আমরা বলতাম الْقَصَرَجِمَالاَتٌ صُفْرٌ জাহাজের রশি, যা জমা করে রাখা হত। এমনকি তা মাঝারি গড়নের মানুষের সমান উঁচু হয়ে যেত। [৪৯৩২] (আ.প্র. ৪৫৬৪, ই.ফা. ৪৫৬৯)

৬৫/৭৭/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এটা এমন দিন, যে দিন তারা কথা বলতে পারবে না। (সূরাহ আল-মুরসলাত ৭৭/৩৫)

৪৯৩৪

عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ عَنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَارٍ إِذْ نَزَلَتْ عَلَيْهِ {وَالْمُرْسَلَاتِ} فَإِنَّهُ لَيَتْلُوْهَا وَإِنِّيْ لَأَتَلَقَّاهَا مِنْ فِيْهِ وَإِنَّ فَاهُ لَرَطْبٌ بِهَا إِذْ وَثَبَتْ عَلَيْنَا حَيَّةٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اقْتُلُوْهَا فَابْتَدَرْنَاهَا فَذَهَبَتْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وُقِيَتْ شَرَّكُمْ كَمَا وُقِيْتُمْ شَرَّهَا قَالَ عُمَرُ حَفِظْتُهُ مِنْ أَبِيْ فِيْ غَارٍ بِمِنًى.
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক গুহায় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। এমন সময় তাঁর প্রতি অবতীর্ণ হল ‘সূরাহ ওয়াল মুরসলাত’। তিনি তা তিলাওয়াত করছিলেন, আর আমি তাঁর মুখ থেকে তা শিখছিলাম। তিলাওয়াতে তখনো তাঁর মুখ সিক্ত ছিল। হঠাৎ আমাদের সামনে একটি সাপ বেরিয়ে এলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটাকে মেরে ফেল। আমরা ওদিকে দৌড়িয়ে গেলাম। কিন্তু সাপটি চলে গেল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটা তোমাদের অনিষ্ট থেকে বেঁচে গেল তোমরা যেমন তার অনিষ্ট থেকে রক্ষা পেলে। ‘উমার ইব্‌নু হাফস্ বলেন, এ হাদীসটি আমি আমার পিতার নিকট হতে শুনে মুখস্থ করেছি। গুহাটি মিনায় অবস্থিত বলে উল্লেখ আছে। [১৮৩০] (আ.প্র. ৪৫৬৫, ই.ফা. ৪৫৭০)

৬৫/৭৮/.অধ্যায়ঃ

‘‘সে দিন শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে, তখন তোমরা দলে দলে আসবে।’’ (সূরাহ আন্নাবা ৭৮/১৮)
(78) سُوْرَةُ النبأ {عَمَّ يَتَسَاءَلُوْنَ}
সূরাহ (৭৮) : আননাবা
قَالَ مُجَاهِدٌ {لَا يَرْجُوْنَ حِسَابًا} لَا يَخَافُوْنَهُ {لَا يَمْلِكُوْنَ مِنْهُ خِطَابًا} لَا يُكَلِّمُوْنَهُ إِلَّا أَنْ يَأْذَنَ لَهُمْ {صَوَابًا} حَقًّا فِي الدُّنْيَا وَعَمِلَ بِهِ {لَا يَمْلِكُوْنَ مِنْهُ خِطَابًا} وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {ثَجاجًا} مُنْصَبًّا. {ألْفافًا} : مُلْتَفَّةً. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {وَهَّاجًا} مُضِيئًا وَقَالَ غَيْرُهُ {غَسَّاقًا}غَسَقَتْ عَيْنُهُ وَيَغْسِقُ الْجُرْحُ يَسِيْلُ كَأَنَّ الْغَسَاقَ وَالْغَسِيْقَ وَاحِدٌ {عَطَاءًحِسَابًا} جَزَاءً كَافِيًا أَعْطَانِيْ مَا أَحْسَبَنِيْ أَيْ كَفَانِي.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
لَا يَرْجُوْنَ حِسَابًا তারা কখনও হিসাবের ভয় করত না। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, ثَجاجًا অবিরাম বর্ষণ। ألْفافًا ঘন সন্নিবিষ্ট। لَا يَمْلِكُوْنَ مِنْهُ خِطَابًا যাদেরকে আল্লাহ্ অনুমতি দিবেন, তাদের ছাড়া তাঁর কাছে আবেদন-নিবেদনের ক্ষমতা কারো থাকবে না। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, وَهَّاجًا উজ্জ্বল, ইবনু ‘আববাস ব্যতীত অন্যরা বলেন, غَسَّاقًا যেমন আরবরা বলে, চোখে পিষ্টি হয়েছে এবং ক্ষত হতে পূঁজ চুয়ে চুয়ে পড়ছে। الْغَسَاقَ এবং الْغَسِيْقَ একই অর্থ বহন করে। عَطَاءً حِسَابًا যথোচিত দান। যেমন বলা হয়, أَعْطَانِيْ مَا أَحْسَبَنِيْ অর্থাৎ সে আমাকে যথেষ্ট দিয়েছে।

৪৯৩৫

مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ مُعَاوِيَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا بَيْنَ النَّفْخَتَيْنِ أَرْبَعُوْنَ قَالَ أَرْبَعُوْنَ يَوْمًا قَالَ أَبَيْتُ قَالَ أَرْبَعُوْنَ شَهْرًا قَالَ أَبَيْتُ قَالَ أَرْبَعُوْنَ سَنَةً قَالَ أَبَيْتُ قَالَ ثُمَّ يُنْزِلُ اللهُ مِنْ السَّمَاءِ مَاءً فَيَنْبُتُوْنَ كَمَا يَنْبُتُ الْبَقْلُ لَيْسَ مِنَ الإِنْسَانِ شَيْءٌ إِلَّا يَبْلَى إِلَّا عَظْمًا وَاحِدًا وَهُوَ عَجْبُ الذَّنَبِ وَمِنْهُ يُرَكَّبُ الْخَلْقُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, প্রথম ও দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকারের মধ্যে চল্লিশের ব্যবধান হবে। [আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)]-এর জনৈক ছাত্র বললেন, চল্লিশ বলে-চল্লিশ দিন বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, আমি অস্বীকার করলাম। তারপর পুনরায় তিনি জিজ্ঞেস করলেন, চল্লিশ বলে চল্লিশ মাস বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, এবারও অস্বীকার করলাম। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, চল্লিশ বছর বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, এবারও আমি অস্বীকার করলাম। এরপর আল্লাহ্ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করবেন। এতে মৃতরা জীবিত হয়ে উঠবে, যেমন বৃষ্টির পানিতে উদ্ভিদরাজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। তখন শিরদাঁড়ার হাড় ছাড়া মানুষের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পচে গলে শেষ হয়ে যাবে। ক্বিয়ামাতের দিন ঐ হাড়খণ্ড থেকেই আবার মানুষকে সৃষ্টি করা হবে। [৪৮১৪] (আ.প্র. ৪৫৬৬, ই.ফা. ৪৫৭১)

৬৫/৭৯/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(79) سُوْرَةُ وَالنَّازِعَاتِ
সূরাহ (৭৯) : আন্-নাযি‘আত
{
زَجْرَةٌ} : صَيْحَةٌ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ} : هِيَ الزَّلْزَلَةُ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْاٰيَةَ الْكُبْرٰى} عَصَاهُ وَيَدُهُ. {سَمكَهَا} : بَنَاها بِغَيْرِ عَمَدٍ. {طَغٰى} عَصَى. يُقَالُ النَّاخِرَةُ وَالنَّخِرَةُ سَوَاءٌ مِثْلُ الطَّامِعِ وَالطَّمِعِ وَالْبَاخِلِ وَالْبَخِيْلِ وَقَالَ بَعْضُهُمْ النَّخِرَةُ الْبَالِيَةُ وَالنَّاخِرَةُ الْعَظْمُ الْمُجَوَّفُ الَّذِيْ تَمُرُّ فِيْهِ الرِّيْحُ فَيَنْخَرُ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الْحَافِرَةِ} الَّتِيْ أَمْرُنَا الْأَوَّلُ إِلَى الْحَيَاةِ وَقَالَ غَيْرُهُ {أَيَّانَ مُرْسٰهَا} مَتَى مُنْتَهَاهَا وَمُرْسَى السَّفِيْنَةِ حَيْثُ تَنْتَهِي الطَّامَّةُ تَطِمُّ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ.
زَجْرَةٌ আওয়াজ বা শব্দ। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ দ্বারা ভূমিকম্প বোঝানো হয়েছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْاٰيَةَ الْكُبْرَى তার [মূসা (আঃ)] লাঠি এবং তার হাত। سَمكَها আকাশকে স্তম্ভ ব্যতীত নির্মাণ করেছেন। طَغَى লাঠি। النَّاخِرَةُالنَّخِرَةُ সমার্থবোধক শব্দ। যেমন الطَّامِعِالطَّمِعِ এবং الْبَاخِلِالْبَخِيْلِএক অর্থবোধক শব্দ। কোন কোন মুফাস্সির বলেছেন, النَّخِرَةُ গলিত (হাড্ডি) এবং النَّاخِرَةُ খোল হাড্ডি, যার মধ্যে বাতাস ঢোকার পর আওয়াজ সৃষ্টি হয়। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْحَافِرَةِ পূর্ব জীবন। ইবনু ‘আববাস ছাড়া অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন,أَيَّانَ مُرْسٰهَا ক্বিয়ামাতের শেষ কোথায়? যেমন (আরবী ভাষায়) জাহাজ নোঙ্গর করার স্থানকে مُرْسَى السَّفِيْنَةِ বলে।

৪৯৩৬

أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ حَدَّثَنَا الْفُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا أَبُوْ حَازِمٍ حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بِإِصْبَعَيْهِ هَكَذَا بِالْوُسْطَى وَالَّتِيْ تَلِي الإِبْهَامَ بُعِثْتُ وَالسَّاعَةُ كَهَاتَيْنِ.
সাহল ইব্‌নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি দেখেছি, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর মধ্যমা ও বুড়ো আঙ্গুলের নিকটবর্তী অঙ্গুলিদ্বয় এভাবে একত্র করে বললেন, ক্বিয়ামাত ও আমাকে এমনিভাবে পাঠানো হয়েছে। [৫৩০১, ৬৫০৩; মুসলিম ৫২/২৬, হাঃ ২৯৫০, আহমাদ ২২৮৬০] (আ.প্র. ৪৫৬৭, ই.ফা. ৪৫৭২)

৬৫/৮০/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(80) سُوْرَةُ عَبَسَ
সূরাহ (৮০) : ‘আবাসা
{
عَبَسَ} وَتَوَلَّى كَلَحَ وَأَعْرَضَ وَقَالَ غَيْرُهُ مُطَهَّرَةٍ لَا يَمَسُّهَا إِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ وَهُمْ الْمَلَائِكَةُ وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ {فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا} جَعَلَ الْمَلَائِكَةَ وَالصُّحُفَ مُطَهَّرَةً لِأَنَّ الصُّحُفَ يَقَعُ عَلَيْهَا التَّطْهِيْرُ فَجُعِلَ التَّطْهِيْرُ لِمَنْ حَمَلَهَا أَيْضًا {سَفَرَةٍ} الْمَلَائِكَةُ وَاحِدُهُمْ سَافِرٌ سَفَرْتُ أَصْلَحْتُ بَيْنَهُمْ وَجُعِلَتْ الْمَلَائِكَةُ إِذَا نَزَلَتْ بِوَحْيِ اللهِ وَتَأْدِيَتِهِ كَالسَّفِيْرِ الَّذِيْ يُصْلِحُ بَيْنَ الْقَوْمِ وَقَالَ غَيْرُهُ {تَصَدَّى} تَغَافَلَ عَنْهُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ لَمَّا يَقْضِ {لمَاَّ يَقْضِي} أَحَدٌ مَا أُمِرَ بِهِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {تَرْهَقُهَا} تَغْشَاهَا شِدَّةٌ {مُسْفِرَةٌ} مُشْرِقَةٌ {بِأَيْدِيْ سَفَرَةٍ} وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَتَبَةٍ {أَسْفَارًا} كُتُبًا {تَلَهَّى} تَشَاغَلَ يُقَالُ وَاحِدُ الْأَسْفَارِ سِفْرٌ.
عَبَسَ সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল। مُطَهَّرَة অর্থ যারা পূত-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ তা স্পর্শ করে না। এখানে পূত-পবিত্র বলে মালাইকাকে বোঝানো হয়েছে। উল্লিখিত আয়াতটি আল্লাহর বাণীঃ فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا এর অনুরূপ। পূর্বের আয়াতে মালাক এবং সহীফা উভয়কেই مُطَهَّرَةً বলা হয়েছে। অথচ التَّطْهِيْرُ এর সম্পর্ক মূলতঃ সহীফার সঙ্গে, মালায়িকার সঙ্গে নয়। তবে মালাক যেহেতু উক্ত সহীফার হামিল ও বাহক, এই হিসাবে মালাককেও مُطَهَّرَةً বলা হয়েছে। سَفَرَةٍ অর্থ মালাক (ফেরেশতা)। এর এক বচন হচ্ছে سَافِرٌسَفَرْتُ أَصْلَحْتُ بَيْنَهُمْ আমি তাদের বিবাদ মিটিয়ে দিয়েছি। ওয়াহী অবতীর্ণ করত তা নাবীদের (নবীদের) পর্যন্ত পৌঁছানোর দায়িত্ব অর্পণ করে আল্লাহ্ রাববুল আলামীন মালাকগণকে السَّفِيْرِ (দূত) সদৃশ ঘোষণা করেছেন যিনি কওমের পরস্পর বিবাদ মীগোশতা করেন। অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন, تَصَدَّى সে এর থেকে অমনোযোগিতা প্রকাশ করেছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لمَاَّ يَقْضِيْ তিনি তাকে যা আদেশ করেছেন, সে এখনও তা পুরাপুরি করেনি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, تَرْهَقُهَا মানে সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে এক মহাবিপদ। مُسْفِرَةٌ উজ্জ্বল। بِأَيْدِيْ سَفَرَةٍ লিপিবদ্ধকারী ফেরেশতা। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) আরো বলেন, أَسْفَارًا কিতাবসমূহ। تَلَهَّى তুমি ব্যস্ত হলে। বলা হয়أَسْفَارِ এর একবচন سِفْرٌ

৪৯৩৭

آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ قَالَ سَمِعْتُ زُرَارَةَ بْنَ أَوْفَى يُحَدِّثُ عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَثَلُ الَّذِيْ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهُوَ حَافِظٌ لَهُ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَمَثَلُ الَّذِيْ يَقْرَأُ وَهُوَ يَتَعَاهَدُهُ وَهُوَ عَلَيْهِ شَدِيْدٌ فَلَهُ أَجْرَانِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, কুরআনের হাফিয পাঠক লিপিকর সম্মানিত মালাকের মত। খুব কষ্টদায়ক হওয়া সত্ত্বেও যে বারবার কুরআন মাজীদ পাঠ করে, সে দ্বিগুণ পুরস্কার পাবে। [মুসলিম ৬/৩৮, হাঃ ৭৯৮, আহমাদ ২৪৭২১] (আ.প্র. ৪৫৬৮, ই.ফা. ৪৫৭৩)

৬৫/৮৩/.অধ্যায়ঃ

যেদিন সব মানুষ জগতসমূহের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে। (সূরাহ মুতাফ্ফিফীন ৮৩/৬)
(81) سُوْرَةُ إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ
সূরাহ (৮১) : ইযাশশামসু কূউইরাত (আত্-তাকভীর)
{
انْكَدَرَتْ} انْتَثَرَتْ وَقَالَ الْحَسَنُ {سُجِّرَتْ} ذَهَبَ مَاؤُهَا فَلَا يَبْقَى قَطْرَةٌ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْمَسْجُوْرُ} الْمَمْلُوْءُ وَقَالَ غَيْرُهُ {سُجِرَتْ} أَفْضَى بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ فَصَارَتْ بَحْرًا وَاحِدًا {وَالْخُنَّسُ} تَخْنِسُ فِيْ مُجْرَاهَا تَرْجِعُ وَتَكْنِسُ تَسْتَتِرُ كَمَا تَكْنِسُ الظِّبَاءُ {تَنَفَّسَ} ارْتَفَعَ النَّهَارُ {وَالظَّنِيْنُ} الْمُتَّهَمُ وَالضَّنِيْنُ يَضَنُّ بِهِ وَقَالَ عُمَرُ {وَإِذَا النُّفُوْسُ زُوِّجَتْ} يُزَوَّجُ نَظِيْرَهُ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ قَرَأَ {احْشُرُوا الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا وَأَزْوَاجَهُمْ عَسْعَسَ} أَدْبَرَ.
انْكَدَرَتْ অর্থ বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে। হাসান (রহ.) বলেন, سُجِّرَتْ অর্থ পানি নিঃশেষ হয়ে যাবে, এক বিন্দু পানিও বাকী থাকবে না। মুহাজিদ (রহ.) বলেন, الْمَسْجُوْرُ অর্থ কানায় কানায় ভর্তি। মুজাহিদ ব্যতীত অন্যান্য মুফাসসির বলেছেন, سُجِرَتْ অর্থ একটি সমুদ্র আরেকটির সঙ্গে মিলিত হয়ে এক সমুদ্রে পরিণত হবে। وَالْخُنَّسُ অর্থ নিজের গতিপথে পশ্চাদপসরণকারী।تَكْنِسُ মানে সূর্যের আলোতে অদৃশ্য হয়ে যায়, যেমন হরিণ গা ঢাকা দেয়। تَنَفَّسَ অর্থ যখন দিনের আলো উদ্ভাসিত হয়। الظَّنِيْنُ অপবাদ দানকারী। الضَّنِيْنُ অর্থ বখিল, কৃপণ। ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, وَإِذَا النُّفُوْسُ زُوِّجَتْ অর্থ প্রত্যেককে তার মত চরিত্রের লোকের সঙ্গে জান্নাত ও জাহান্নামে জুড়ে দেয়া হবে। পরে এ কথার সমর্থনে তিনি احْشُرُواالَّذِيْنَ ظَلَمُوْا وَأَزْوَاجَهُمْ عَسْعَسَ (একত্র করে যালিম ও তাদের সহচরগণকে) আয়াতংশটি পাঠ করলেন। عَسْعَسَ অর্থ অবসান হয়েছে, পশ্চাদপসরণ করেছে।

(82)
سُوْرَةُ إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ
সূরাহ (৮২) : ইযাসসামাউ আনফাতারাত (আল-ইনফিতার)
وَقَالَ الرَّبِيْعُ بْنُ خُثَيْمٍ {فُجِّرَتْ} فَاضَتْ وَقَرَأَ الْأَعْمَشُ وَعَاصِمٌ {فَعَدَلَكَ} بِالتَّخْفِيْفِ وَقَرَأَهُ أَهْلُ الْحِجَازِ بِالتَّشْدِيْدِ وَأَرَادَ مُعْتَدِلَ الْخَلْقِ وَمَنْ خَفَّفَ يَعْنِيْ فِيْ أَيِّ صُوْرَةٍ شَاءَ إِمَّا حَسَنٌ وَإِمَّا قَبِيْحٌ أَوْ طَوِيْلٌ أَوْ قَصِيْرٌ.

রাবী ইবনু খুশাইম (রহ.) বলেন,
فُجِّرَتْ অর্থ-প্রবাহিত হবে, আ‘মাশ এবং ওয়াসিম (রহ.) فَعَدَلَكَ তাখফীফ-এর সঙ্গে পড়তেন এবং হিজাযের অধিবাসী فَعَدَّلَكَ তাশদীদ-এর সঙ্গে পড়তেন। অর্থ তিনি তোমাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ সৃষ্টি করেছেন। যারা فَعَدَلَكَ তাখফীফ-এর সঙ্গে পড়তেন, তারা বলেন, এর অর্থ হল, তিনি তোমাকে সুন্দর বা কুৎসিৎ; লম্বা খাটো যে আকারে ইচ্ছে, সৃষ্টি করেছেন।

(83)
سُوْرَةُ وَيْلٌ لِلْمُطَفِّفِيْنَ
সূরাহ (৮৩) : ওয়াইলুললিল মুত্বাফফিফীন (মুতাফফিফীন)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {بَلْ رَانَ} ثَبْتُ الْخَطَايَا {ثُوِّبَ} جُوْزِيَ وَقَالَ غَيْرُهُ {الْمُطَفِّفُ} لَا يُوَفِّيْ غَيْرَهُ. الرَّحِيْقُ : الخَمْرُ،{خِتامُهمِسْكٌ}: طِيْنَهُ. {التَّسْنِيْمُ} : يَعْلو شَرَابَ أَهْلِ الجَنَّةِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
بَلْرَانَ অর্থ গুনাহের জন্য। ثُوِّبَ অর্থ প্রতিদান দেয়া হল। মুজাহিদ ছাড়া অপরাপর মুসাসসির বলেছেন, الْمُطَفِّفُ ঐ লোক যে অন্যকে মাপে পূর্ণ মাত্রায় দেয় না। الرَّحِيْقُমদ বা পানীয়, خِتامُهمِسْكٌ জান্নাতের মেশক এর সুগন্ধযুক্ত মাটি দ্বারা মোহর করা হয়েছে التَّسْنِيْمُ জান্নাতীদের জন্য উন্নতমানের পানীয়।

৪৯৩৮

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا مَعْنٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ {يَوْمَ يَقُوْمُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعٰلَمِيْنَ} حَتَّى يَغِيْبَ أَحَدُهُمْ فِيْ رَشْحِهِ إِلَى أَنْصَافِ أُذُنَيْهِ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) “যেদিন সব মানুষ জগতসমূহের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে” (সূরাহ মুতাফ্ফিফীন ৮৩/৬)-এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তির কানের লতা পর্যন্ত ঘামে ডুবে যাবে। [৬৫৩১; মুসলিম ৫১/১৫, হাঃ ২৮৬২, আহমাদ ৬০৭২] (আ.প্র. ৪৫৬৯, ই.ফা. ৪৫৭৪)

৬৫/৮৪/.অধ্যায়ঃ

তার হিসাব-নিকাশ সহজেই নেয়া হবে। (সূরা আল-ইন্শিকাক ৮৪/৮)
(84) سُوْرَةُ إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ
সূরাহ (৮৪) : ইযাসসামাউন্ শাকক্বাত (আল-ইনশিকাক)

قَالَ مُجَاهِدٌ {كِتَابَهُ بِشِمَالِهٰ} يَأْخُذُ كِتَابَهُ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ {وَسَقَ} جَمَعَ مِنْ دَابَّةٍ {ظَنَّ أَنْ لَّنْ يَّحُوْرَ} أنْ لَا يَرْجِعَ إِلَيْنَا وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {يُوْعُوْنَ} يُسِرُّوْنَ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
كِتَابَهُ بِشِمَالِهٰ অর্থাৎ সে পেছন দিক হতে নিজের ‘আমালনামা গ্রহণ করবে। وَسَقَ অর্থ সে যেসব জীবজন্তুর সমাবেশ ঘটায়। ظَنَّ أَنْ لَّنْ يَّحُوْرَ অর্থ সে মনে করত যে, সে কখনই আমার কাছে ফিরে আসবে না। ইবনু ‘আববাস বলেন, يُوْعُوْنَ যা তারা গোপন রাখে।

৪৯৩৯

عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الْأَسْوَدِ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ح وحَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح وحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِيْ يُوْنُسَ حَاتِمِ بْنِ أَبِيْ صَغِيْرَةَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنِ الْقَاسِمِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ أَحَدٌ يُحَاسَبُ إِلَّا هَلَكَ قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ أَلَيْسَ يَقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {فَأَمَّا مَنْ أُوْتِيَ كِتٰبَه” بِيَمِيْنِهٰلا - فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَّسِيْرًا} قَالَ ذَاكَ الْعَرْضُ يُعْرَضُوْنَ وَمَنْ نُوْقِشَ الْحِسَابَ هَلَكَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাতের দিন যে ব্যক্তিরই হিসাব নেয়া হবে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি বলেন, তখন আমি বললাম, আল্লাহ্ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন। আল্লাহ্ কি বলেননি, فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا “যার ‘আমালনামা তার ডান হস্তে দেয়া হবে, তার হিসাব নিকাশ সহজেই নেয়া হবে। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ আয়াতে ‘আমালনামা কীভাবে দেয়া হবে সে ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুবা যার খুঁটিনাটি হিসাব নেয়া হবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। [১০৩] (আ.প্র. ৪৫৭০, ই.ফা. ৪৫৭৫)

৬৫/৮৪/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ অবশ্যই তোমরা এক অবস্থা থেকে অন্যাবস্থায় উপনীত হবে। (সূরাহ আল-ইন্শিকাক ৮৪/১৯)

৪৯৪০

سَعِيْدُ بْنُ النَّضْرِ أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ بِشْرٍ جَعْفَرُ بْنُ إِيَاسٍ عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍ} حَالًا بَعْدَ حَالٍ قَالَ هَذَا نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍ এর অর্থ হচ্ছে, এক অবস্থার পর আরেক অবস্থা। তোমাদের নাবীই (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটা বলেছেন। (আ.প্র. ৪৫৭১, ই.ফা. ৪৫৭৬)

৬৫/৮৭/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(85) سُوْرَةُ الْبُرُوْجِ
সূরাহ (৮৫) : আল-বুরূজ

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الأُخْدُوْدِ} شَقٌّ فِي الْأَرْضِ {فَتَنُوْا} عَذَّبُوْا. وَقَالَ ابنُ عَبَّاسٍ : {الْوَدُوْدُ}. الحَبِيْبُ المَجِيْدُ الكَرِيْمُ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
الْأُخْدُوْدِ যমীনে ফাটল। فَتَنُوْا তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। আর ইবনু ‘অববাস বলেন, الْوَدُوْدُ সম্মানিত দয়ালু বন্ধু

(86)
سُوْرَةُ الطَّارِقِ
সূরাহ (৮৬) : আত্-তরিক্ব

هٌوَ النَّجْمُ، وَمَا أَتَاكَ لَيْلًا فَهُوَ طَارِقٌ. {النَّجْمُ الثَّاقِبُ} المُضِيْءُ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {الثَّاقِبُ} الَّذِيْ يَتَوَهَّجُ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ {ذَاتِ الرَّجْعِ} سَحَابٌ يَرْجِعُ بِالْمَطَرِ {ذَاتِ الصَّدْعِ} الْأرْضُ تَتَصَدَّعُ بِالنَّبَاتِ. وَقَالَ ابنُ عَبَّاسٍ : {لَقَوْل فَضْلٌ} : لَحقٌّ. {لَّمَّاعَلَيْهَاحَافِظٌ} إلَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ.

সেটি নক্ষত্র, আর যা তোমার নিকট রাতের বেলায় আসে তাই হচ্ছে তরিক।
النَّجْمُ الثَّاقِبُ উজ্জ্বল নক্ষত্র। মুজাহিদ বলেন, الثَّاقِبُ যা চকমক করে। মুজাহিদ বলেন, ذَاتِ الرَّجْعِ অর্থ ঐ মেঘ যা বৃষ্টি নিয়ে আসে। ذَاتِ الصَّدْعِ অর্থ ঐ যমীন যা উদ্ভিদ বের হওয়ার সময় ফেটে যায়। আর ইবনু ‘আববাস বলেন, لَقَوْل فَضْلٌ অবশ্যই তা সত্য কথা। لَمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ প্রত্যেক আত্মার উপর রক্ষণাবেক্ষণকারী আছে।

(87)
سُوْرَةُ سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلٰى

সূরাহ (৮৭) : সাবিবহিস্মা রাবিবকাল আ‘লা (আল-আ‘লা)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {قَدَّرَ فَهَدٰى} قَدَّرَ للإنْسَانِ الشقاءَ والسَّعادَةَ وَهَدَى الْأنْعَامَ لِمَرَاتِعها.وَقَالَ ابنُ عَبَّاسٍ {غُثَآءً أَحْوٰى}هَشِيْمًا مُتَغَيِّرًا
মুজাহিদ বলেন,
قَدَّرَ فَهَدٰى মানুষের জন্য ভাল-মন্দের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পশুপালকে চারণভূমিতে পথ দেখিয়েছেন। এবং ইবনু ‘আববাস বলেন, غُثَآءً أَحْوٰى চূর্ণ বিচূর্ণ তৃণাদি যা পরিবর্তিত হয়ে গেছে।

৪৯৪১

عَبْدَانُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَوَّلُ مَنْ قَدِمَ عَلَيْنَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ فَجَعَلَا يُقْرِئَانِنَا الْقُرْآنَ ثُمَّ جَاءَ عَمَّارٌ وَبِلَالٌ وَسَعْدٌ ثُمَّ جَاءَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فِيْ عِشْرِيْنَ ثُمَّ جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَمَا رَأَيْتُ أَهْلَ الْمَدِيْنَةِ فَرِحُوْا بِشَيْءٍ فَرَحَهُمْ بِهِ حَتَّى رَأَيْتُ الْوَلَائِدَ وَالصِّبْيـَانَ يَقُوْلُوْنَ هَـذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ جَاءَ فَمَا جَاءَ حَتَّى قَرَأْتُ {سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلٰى} فِيْ سُوَرٍ مِثْلِهَا.
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের মধ্যে সর্ব প্রথম হিজরাত করে আমাদের কাছে এসেছিলেন, তাঁরা হলেন মুস‘আব ইব্‌নু ‘উমায়র (রাঃ) ও ইব্‌নু উম্মু মাকতূম (রাঃ)। তাঁরা দু’জন এসেই আমাদেরকে কুরআন পড়াতে শুরু করেন। এরপর এলেন, আম্মার, বিলাল ও সা‘দ (রাঃ)। অতঃপর আসলেন বিশজন সাহাবীসহ ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)। অতঃপর এলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। বারাআ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আগমনে মাদীনাহ্বাসীকে এত অধিক খুশী হতে দেখেছি যে, অন্য কোন বিষয়ে তাদেরকে ততটা খুশী হতে আর কখনো দেখিনি। এমনকি আমি দেখেছি, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পর্যন্ত বলছিল যে, ইনিই তো আল্লাহ্‌র সেই রসূল, যিনি আগমন করেছেন। বারাআ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মদিনায় আসার আগেই আমি سَبِّحْ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى এবং ও রকম আরো কিছু সূরাহ শিখে নিয়েছিলাম। (আ.প্র. ৪৫৭২, ই.ফা. ৪৫৭৭)

৬৫/৯১/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(88) سُوْرَةُ هَلْ أَتَاكَ حَدِيْثُ الْغَاشِيَةِ
সূরাহ (৮৮) : হাল ‘আত্বা-কা হাদীসুল গাশিয়াহ (আল-গাশিয়াহ)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ} النَّصَارَى وَقَالَ مُجَاهِدٌ {عَيْنٍ اٰنِيَةٍ}بَلَغَ إِنَاهَا وَحَانَ شُرْبُهَا {حَمِيْمٍ اٰنٍ} بَلَغَ إِنَاهُ {لَا تَسْمَعُ فِيْهَا لَاغِيَةً} شَتْمًا وَيُقَالُ {الضَّرِيْعُ} نَبْتٌ يُقَالُ لَهُ الشِّبْرِقُ يُسَمِّيْهِ أَهْلُ الْحِجَازِ الضَّرِيْعَ إِذَا يَبِسَ وَهُوَ سُمٌّ {بِمُسَيْطِرٍ} بِمُسَلَّطٍ وَيُقْرَأُ بِالصَّادِ وَالسِّيْنِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {إِيَابَهُمْ} مَرْجِعَهُمْ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন,
عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ (ক্লিষ্ট-ক্লান্ত) বলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে বোঝানো হয়েছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, عَيْنٍاٰنِيَةٍটগবগে গরম পানিতে কানায় কানায় ভর্তি ঝরণাধারা। حَمِيْمٍاٰنٍ চরম ফুটন্ত পানি। لَا تَسْمَعُ فِيْهَا لَاغِيَةً সেখানে তারা গালি-গালাজ শুনবে না। الشِّبْرِقُএক প্রকার কাঁটাওয়ালা গুল্ম। (তা যখন সবুজ থাকে তখন) তাকে الضَّرِيْعَবলা হয়, আর যখন শুকিয়ে যায়, তখন হিজাযবাসীরা একেই الضَّرِيْعُ বলে। এ এক প্রকার বিষাক্ত আগাছা। بِمُسَيْطِرٍ কর্মবিধায়ক। শব্দটি سص উভয় বর্ণ দিয়েই পড়া হয়। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, إِيَابَهُمْ তাদের ফিরে আসার জায়গা।
(89)
سُوْرَةُ وَالْفَجْرِ
সূরাহ (৮৯) আল-ফাজর
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْوَتْرُ} اللهُ {إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ} يَعْنِي الْقَدِيْمَةَ وَالْعِمَادُ أَهْلُ عَمُوْدٍ لَا يُقِيْمُوْنَ {سَوْطَعَذَابٍ} الَّذِيْ عُذِّبُوْا بِهِ {أَكْلًا لَّمًّا} السَّفُّ وَ{جَمًّا} الْكَثِيْرُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ كُلُّ شَيْءٍ خَلَقَهُ فَهُوَ شَفْعٌ السَّمَاءُ شَفْعٌ {وَالْوَتْرُ} اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى وَقَالَ غَيْرُهُ {سَوْطَ عَذَابٍ} كَلِمَةٌ تَقُوْلُهَا الْعَرَبُ لِكُلِّ نَوْعٍ مِنَ الْعَذَابِ يَدْخُلُ فِيْهِ السَّوْطُ {لَبِالْمِرْصَادِ} إِلَيْهِ الْمَصِيْرُ {تَحَآضُّوْنَ} تُحَافِظُوْنَ وَتَحُضُّوْنَ تَأْمُرُوْنَ بِإِطْعَامِهِ {الْمُطْمَئِنَّةُ} الْمُصَدِّقَةُ بِالثَّوَابِ وَقَالَ الْحَسَنُ {يٰٓأَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ} إِذَا أَرَادَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ قَبْضَهَا اطْمَأَنَّتْ إِلَى اللهِ وَاطْمَأَنَّ اللهُ إِلَيْهَا وَرَضِيَتْ عَنْ اللهِ وَرَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَأَمَرَ بِقَبْضِ رُوْحِهَا وَأَدْخَلَهَا اللهُ الْجَنَّةَ وَجَعَلَهُ مِنْ عِبَادِهِ الصَّالِحِيْنَ وَقَالَ غَيْرُهُ {جَابُوْا} نَقَبُوْا مِنْ جِيْبَ الْقَمِيْصُ قُطِعَ لَهُ جَيْبٌ يَجُوْبُ الْفَلَاةَ يَقْطَعُهَا {لَمًّا} لَمَمْتُهُ أَجْمَعَ أَتَيْتُ عَلَى آخِرِهِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
الْوَتْرُ মানে বেজোড়। এর দ্বারা আল্লাহ্ তা‘আলাকে বোঝানো হয়েছে। إِرَمَذَاتِ الْعِمَادِ দ্বারা প্রাচীন এক জাতিকে বোঝানো হয়েছে। وَالْعِمَادُ খুঁটি ও স্তম্ভের মালিক, যারা স্থায়ীভাবে কোথাও বসবাস করে না; তারা তাঁবু পেতে জীবন যাপন করে (যাযাবর)। سَوْطَعَذَابٍ যাদেরকে তা দিয়ে শাস্তি প্রদান করা হবে।أَكْلًا لَّمًّاসম্পূর্ণরূপে ভক্ষণ করা। جَمًّا অতিশয়। মুহাজিদ (রহ.) বলেন, আল্লাহর সকল সৃষ্টিই হল জোড়ায় জোড়ায়। সুতরাং আসমানও জোড়া বাঁধা; وَالْوَتْرُ তবে একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাই হলেন বেজোড়। মুজাহিদ (রহ.) ব্যতীত অন্য সকলেই বলেছেন, আরবরা যাবতীয় শাস্তির ব্যাপারে سَوْطَعَذَابٍ শব্দটি ব্যবাহর করে থাকে। যে কোন শাস্তি سَوْطَ عَذَابٍ এর অন্তর্ভুক্ত। لَبِالْمِرْصَادِ তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে। تَحَاضُّوْنَ তোমরা হেফাজত করে থাক। تَحَآضُّوْنَ তোমরা খাদ্য দান করতে আদেশ করে থাক। الْمُطْمَئِنَّةُ সওয়াবকে সত্য বলে বিশ্বাসকারী। হাসান (রাঃ) বলেন, يٓٓأَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ দ্বারা এমন আত্মাকে বোঝানো হয়েছে, যে আত্মাকে আল্লাহ্ মৃত্যুদানের ইচ্ছে করলে সে আল্লাহর প্রতি এবং আল্লাহ্ও তার প্রতি পুরোপুরি প্রশান্ত থাকেন। এরপর আল্লাহ্ তার রূহ কবয করার নির্দেশ দেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে তাকে তাঁর সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। হাসান (রহ.) ব্যতীত অন্যরা বলেছেন جَابُوْا তারা ছিদ্র করেছে; যে শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে جِيْبَالْقَمِيْص থেকে । যার অর্থ হচ্ছে, জামার পকেট কাটা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা হয়ে থাকে يَجُوْبُالْفَلَاةَ সে মাঠ অতিক্রম করছে। لَمَّالَمَمْتُهُأَجْمَعَ বলা হলে এর অর্থ হবে- আমি এর শেষ প্রান্তে চলে এসেছি।
(90)
سُوْرَةُ لَا أُقْسِمُ
সূরাহ (৯০) : লা- উক্বসিমু (আল-বালাদ)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ وَأَنْتَ حِلٌّ {بِهٰذَا الْبَلَدِ} بِمَكَّةَ لَيْسَ عَلَيْكَ مَا عَلَى النَّاسِ فِيْهِ مِنْ الإِثْمِ {وَوَالِدٍ} آدَمَ {وَمَا وَلَدَ}{لِبَدًا} كَثِيْرًا {وَالنَّجْدَيْنِ} الْخَيْرُ وَالشَّرُّ {مَسْغَبَةٍ} مَجَاعَةٍ {مَتْرَبَةٍ} السَّاقِطُ فِي التُّرَابِ يُقَالُ {فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ} فَلَمْ يَقْتَحِمْ الْعَقَبَةَ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ فَسَّرَ الْعَقَبَةَ فَقَالَ {وَمَآ أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ فَكُّ رَقَبَةٍ أَوْ إِطْعَامٌ فِيْ يَوْمٍ ذِيْ مَسْغَبَةٍ}{فيكَبَدٍ} : شِدَّة.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
بِهٰذَا الْبَلَدِ দ্বারা মক্কা্কে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ একানে যুদ্ধ কররে অন্য মানুষের উপর যে গুনাহ হবে, তোমার তা হবে না। وَوَالِدٍ আদম (আঃ)। وَمَا وَلَدَ যাসে জন্ম দেয়, لِبَدًا প্রচুর। وَ النَّجْدَيْنِ ভাল-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণ। مَسْغَبَةٍ ক্ষুধা। مَتْرَبَةٍ ধূলি লুন্ঠিত। বলা হয় فَلَااقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ সে দুনিয়ায় দুর্গম গিরিপথে চলাচল করেনি। এরপর আল্লাহর তা‘আলা এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইরশাদ করেছেন, তুমি কি জান দুর্গম গিরিপথ কী? তা হচ্ছে দাস মুক্ত করা, অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে আহার্য দান।
(91)
سُوْرَةُ وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا
সূরাহ (৯১) : ওয়াশশামসি ওয়াযুহা-হা (আশ্-শাম্স)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {ضُحَاهَا} ضَوْءَها {إذَاتَلَاهَا} تَبِعَها. وَ{طَحَاهَا} دَحَاها {دَسَّاهَا} أغْوَاها. {فَألْهَمَهَا} : عَرَّفَها الشقَّاءَ وَالسَّعادَةَ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {بِطَغْوَاهَا}بِمعاصيها{وَلَايَخَافُعُقْبَاهَا} عُقْبَى أحَدٍ
মুহাজিদ (রহ.) বলেন,
ضُحَاهَا তার (সূর্যের) রশ্নি। إذَا تَلاَهَا যখন (চন্দ্র) তার অনুসরণ করে। طَحَاهَا যিনি তাকে (যমীনকে) বিস্তৃত করেছেন। دَسَّاهَا যে তাকে (আত্মাকে) ভ্রষ্টতায় নিক্ষেপ করেছে। فَألْهَمَهَا অতঃপর তার (আত্মার) সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের পরিচয় দান করেছেন। بِطَغْوَاهَا অবাধ্যতা বা নাফরমানীর কারণে। وَلَايَخَافُعُقْبَاهَا কারো পরিণামের জন্য আল্লাহ্ আশংকা করেন না।

৪৯৪২

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ زَمْعَةَ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ وَذَكَرَ النَّاقَةَ وَالَّذِيْ عَقَرَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم{إِذْمانْبَعَثَ أَشْقَاهَا} انْبَعَثَ لَهَا رَجُلٌ عَزِيْزٌ عَارِمٌ مَنِيْعٌ فِيْ رَهْطِهِ مِثْلُ أَبِيْ زَمْعَةَ وَذَكَرَ النِّسَاءَ فَقَالَ يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ فَيَجْلِدُ امْرَأَتَهُ جَلْدَ الْعَبْدِ فَلَعَلَّهُ يُضَاجِعُهَا مِنْ آخِرِ يَوْمِهِ ثُمَّ وَعَظَهُمْ فِيْ ضَحِكِهِمْ مِنْ الضَّرْطَةِ وَقَالَ لِمَ يَضْحَكُ أَحَدُكُمْ مِمَّا يَفْعَلُ وَقَالَ أَبُوْ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَمْعَةَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِثْلُ أَبِيْ زَمْعَةَ عَمِّ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু যাম‘আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে খুতবাহ দিতে শুনেছেন, খুতবায় তিনি কওমে সামূদের প্রতি প্রেরিত উষ্ট্রী ও তার পা কাটার কথা উল্লেখ করলেন। তারপর রসূল إِذْ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا-এর ব্যাখ্যায় বললেন, ঐ উষ্ট্রীটিকে হত্যা করার জন্য এক হতভাগ্য শক্তিশালী ব্যক্তি তৎপর হয়ে উঠ যে সে সমাজের মধ্যে আবূ যাম‘আর মত প্রভাবশালী ও অত্যন্ত শক্তিধর ছিল। এ খুতবায় তিনি মেয়েদের সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যে তার স্ত্রীকে ক্রীতদাসের মত মারপিট করে; কিন্তু ঐ দিনের শেষেই সে আবার তার সঙ্গে এক বিছানায় মিলিত হয়। তারপর তিনি বায়ু নিঃসরণের পর হাসি দেয়া সম্পর্কে বললেন, তোমাদের কেউ কেউ হাসে সে কাজটির জন্য যে কাজটি সে নিজেও করে। (অন্য সনদে) আবূ মু‘আবীয়াহ (রহ.)....‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু আবূ যাম‘আ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যুবায়র ইব্‌নু আওআমের চাচা আবূ যাম‘আর মত। [৩৩৭৭; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৫৫, আহমাদ ১৬২২২] (আ.প্র. ৪৫৭৩, ই.ফা. ৪৫৭৮)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

‘‘শপথ দিবাভাগের, যখন তা উদ্ভাসিত হয়।’’ (সূরাহ আল-লাইল ৯২/২)
(92) سُوْرَةُ وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى
সূরাহ (৯২) : ওয়াল লাইলি ইযা ইয়াগশা- (আল-লায়ল)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {وَكَذَّبَ بِالْحُسْنٰى} بِالْخَلَفِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {تَرَدّٰى} مَاتَ وَ {تَلَظّٰى} تَوَهَّجُ وَقَرَأَ عُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ تَتَلَظَّى.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন,
وَكَذَّبَ بِالْحُسْنٰى অর্থ প্রতিদানে অস্বীকার করল। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَرَدّٰى যখন যে মরে যাবে। تَلَظّٰى মানে লেলিহান অগ্নি্। ‘উবায়দ ইবনু উমায়র (রাঃ) শব্দটিকে تَتَلَظّٰى পড়তেন।

৪৯৪৩

قَبِيْصَةُ بْنُ عُقْبَةَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ دَخَلْتُ فِيْ نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ عَبْدِ اللهِ الشَّأْمَ فَسَمِعَ بِنَا أَبُو الدَّرْدَاءِ فَأَتَانَا فَقَالَ أَفِيْكُمْ مَنْ يَقْرَأُ فَقُلْنَا نَعَمْ قَالَ فَأَيُّكُمْ أَقْرَأُ فَأَشَارُوْا إِلَيَّ فَقَالَ اقْرَأْ فَقَرَأْتُ {وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى لا - وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلّٰى لا - وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثٰٓى لا} قَالَ أَنْتَ سَمِعْتَهَا مِنْ فِيْ صَاحِبِكَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ وَأَنَا سَمِعْتُهَا مِنْ فِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهَؤُلَاءِ يَأْبَوْنَ عَلَيْنَا.
‘আলক্বামাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর একদল সাথীর সঙ্গে সিরিয়া গেলাম। আবূদ্ দারদা আমাদের কাছে এসে বললেন, কুরআন পাঠ করতে পারেন, এমন কেউ আছেন কি? আমরা বললাম, হাঁ, আছে। এরপর তিনি বললেন, তাহলে আপনাদের মাঝে উত্তম কারী কে? লোকেরা ইশারা করে আমাকে দেখিয়ে দিলে তিনি আমাকে বললেন, পড়ুন, আমি পড়লাম وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلَّى وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى তিলাওয়াত শুনে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি এ সূরাহ আপনার উস্তাদ ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘উদের মুখে শুনেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুখে শুনেছি। কিন্তু তারা (সিরিয়াবাসী) তা অস্বীকার করছে। [৩২৮৭] (আ.প্র. ৪৫৭৪, ই.ফা. ৪৫৭৯)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

‘‘এবং শপথ তাঁর, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন।’’ (সূরাহ আল-লায়ল ৯৩/৩)

৪৯৪৪

عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قَدِمَ أَصْحَابُ عَبْدِ اللهِ عَلَى أَبِي الدَّرْدَاءِ فَطَلَبَهُمْ فَوَجَدَهُمْ فَقَالَ أَيُّكُمْ يَقْرَأُ عَلَى قِرَاءَةِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُلُّنَا قَالَ فَأَيُّكُمْ أَحْفَظُ فَأَشَارُوْا إِلَى عَلْقَمَةَ قَالَ كَيْفَ سَمِعْتَهُ يَقْرَأُ {وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى} قَالَ عَلْقَمَةُ {وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثٰى} قَالَ أَشْهَدُ أَنِّيْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ هَكَذَا وَهَؤُلَاءِ يُرِيْدُوْنِيْ عَلَى أَنْ أَقْرَأَ {وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثٰى} وَاللهِ لَا أُتَابِعُهُمْ.
ইব্রাহীম (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর কতক সঙ্গী আবুদ্ দারদা (রাঃ)-এর কাছে আসলেন। তিনিও তাদেরকে তালাশ করে পেয়ে গেলেন। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর কিরাআত অনুযায়ী কে কুরআন পাঠ করতে পারে। ‘আলক্বামাহ (রহ.) বললেন, আমরা সকলেই। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস কররেন, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল হাফিয কে? সকলেই ‘আলক্বামার প্রতি ইশারা করলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘ঊদকে وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى কীভাবে পড়তে শুনেছেন? ‘আলক্বামাহ (রহ.) বললেন, আমি তাকে وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثَى পড়তে শুনেছি। এ কথা শুনে আবুদ্ দারদা (রাঃ) বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক, আমিও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এভাবেই পড়তে শুনেছি। অথচ এসব (সিরিয়াবাসী) লোকেরা চাচ্ছে, আমি যেন আয়াতটি وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثَى পড়ি। আল্লাহ্‌র কসম! আমি তাদের কথা মানবো না। [৩২৮৭] (আ.প্র. ৪৫৭৫, ই.ফা. ৪৫৮০)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ সুতরাং কেউ দান করলে মুত্তাকী হলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৫)

৪৯৪৫

أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَقِيْعِ الْغَرْقَدِ فِيْ جَنَازَةٍ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَمَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ فَقَالَ اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى لا (6) فَسَنُيَسِّرُه” لِلْيُسْرٰى}. إلى قَوْلِهِ : {لِلْعُسْرٰى}.
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাকীউল গারকাদ নামক স্থানে এক জানাযায় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। সে সময় তিনি বলেছিলেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই, যার স্থান জান্নাত বা জাহান্নামে নির্ধারিত হয়নি। এ কথা শুনে সকলেই বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাহলে কি আমরা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে বসে থাকব? উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে ‘আমাল সহজ করে দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি পাঠ কররেন, সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ এবং কেউ কার্পণ্য করলেও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, যার যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সহজ করে দেব কঠোর পরিণামের পথ। [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৪৭৬, ই.ফা. ৪৫৮১)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এবং যা উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৬)
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا قُعُوْدًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيْثَ نَحْوَهُ.
‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। তারপর তিনি উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করলেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৫৪৭৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৫৮২)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

‘‘আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ।’’ (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৭)

৪৯৪৬

بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ فِيْ جَنَازَةٍ فَأَخَذَ عُوْدًا يَنْكُتُ فِي الْأَرْضِ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ أَوْ مِنَ الْجَنَّةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ قَالَ اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى} الْآيَةَ قَالَ شُعْبَةُ وَحَدَّثَنِيْ بِهِ مَنْصُوْرٌ فَلَمْ أُنْكِرْهُ مِنْ حَدِيْثِ سُلَيْمَانَ.
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি কোন একটি জানাযায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর তিনি একটি কাঠি হাতে নিয়ে এর দ্বারা মাটি খোঁচাতে খোঁচাতে বললেন, তোমাদের মাঝে এমন কেউ নেই, যার স্থান জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট হয়নি। এ কথা শুনে সকলেই বললেন, তাহলে কি আমরা ভাগ্যের উপর ভরসা করে বসে থাকব? উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, সুতরাং কেউ দান করলে, মুতআকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজপথ। আর কেউ কার্পণ্য কররে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে ও যার যা উত্তম তা ত্যাগ করলে তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ। শু‘বাহ (রহ.) বলেন, উপরোক্ত হাদীসটি আমার কাছে মানসূর বর্ণনা করেছেন। তাকে আমি সুলায়মানের হাদীসের উল্টো মনে করেনি। [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৭৮, ই.ফা. ৪৫৮৩)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এবং কেউ কার্পণ্য করলে ও নিজকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৮)

৪৯৪৭

يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَام قَالَ كُنَّا جُلُوْسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَمَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ قَالَ لَا اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى لا (6) فَسَنُيَسِّرُه” لِلْيُسْرٰى} إِلَى قَوْلِهِ {فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرٰى}.
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার স্থান জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট হয়নি। এ কথা শুনে আমরা বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাহলে কি আমরা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে বসে থাকব? তিনি বললেন, না তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, কাজেই কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ এবং কেউ কার্পণ্য করলে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ। [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৭৯, ই.ফা. ৪৫৮৪)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আর যা উত্তম তা অস্বীকার করলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৯)

৪৯৪৮

عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا فِيْ جَنَازَةٍ فِيْ بَقِيْعِ الْغَرْقَدِ فَأَتَانَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَعَدَ وَقَعَدْنَا حَوْلَهُ وَمَعَهُ مِخْصَرَةٌ فَنَكَّسَ فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِمِخْصَرَتِهِ ثُمَّ قَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ وَمَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوْسَةٍ إِلَّا كُتِبَ مَكَانُهَا مِنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ وَإِلَّا قَدْ كُتِبَتْ شَقِيَّةً أَوْ سَعِيْدَةً قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ فَمَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَسَيَصِيْرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَمَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَسَيَصِيْرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ قَالَ أَمَّا أَهْلُ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُوْنَ لِعَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا أَهْلُ الشَّقَاوَةِ فَيُيَسَّرُوْنَ لِعَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاءِ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى}الْآيَةَ.
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বাকীউল গারকাদ নামক স্থানে একটি জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে এসে বসলেন। আমরাও তাঁর চারপাশে গিয়ে বসলাম। এ সয় তাঁর হাতে একটি ছড়ি ছিল। তিনি তার মাতাখানা নামিয়ে, এর দ্বারা মাটি খুঁড়তে শুরু করলেন। এরপর বললেন, তোমাদের কেউ এমন নেই অথবা বললেন, কোন সৃষ্টি এমন নেই) জান্নাতে বা জাহান্নামে যার স্থান নির্দিষ্ট হয়নি। কিংবা তাকে ভাগ্যবান বা হতভাগা লেখা হয়নি। এ কথা শুনে এক সহাবী বললেন, আমরা তাহলে ‘আমাল ত্যাগ করে আমাদের লিখিত ভাগ্যের উপর কি নির্ভয় করে বসব? আমাদের মধ্যে যে সৌভাগ্যবান, সে তো সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের মাঝেই শামিল হয়ে যাবে, আর আমাদের মাঝে যে হতভাগ্য, সে তো হতভাগা লোকদের আমলের দিকেই এগিয়ে যাবে। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সৌভাগ্যের অধিকারী লোকদের জন্য সৌভাগ্য লাভ করার মত ‘আমাল সহজ করে দেয়া হবে। আর দুর্ভাগ্যের অধিকারী লোকদের জন্য দুর্ভাগ্য লাভ করার মত ‘আমাল সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, “সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে।” [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৮০, ই.ফা. ৪৫৮৫)

৬৫/৯২/.অধ্যায়ঃ

‘‘আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ।’’ (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৭)

৪৯৪৯

آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْأَعْمَشِ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ جَنَازَةٍ فَأَخَذَ شَيْئًا فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِهِ الْأَرْضَ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ وَمَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ قَالَ اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ أَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى} الْآيَةَ.
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক জানাযায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি কিছু একটা হাতে নিয়ে তা দিয়ে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই, যার স্থান হয় জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট করে রাখা হয়নি। এ কথা শুনে সবাই বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা তাহলে ‘আমাল বাদ দিয়ে আমাদের লিখিত ভাগ্যের উপর কি ভরসা করব? উত্তরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাক, কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। যে ব্যক্তি সৌভাগ্যের অধিকারী হবে, তার জন্য সৌভাগ্যের অধিকারী লোকদের ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। আর যে দুর্ভাগ্যের অধিকারী হবে, তার জন্য দুর্ভাগা লোকদের ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ। এবং কেউ কার্পণ্য করলে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ)। (আ.প্র. ৪৫৮১, ই.ফা. ৪৫৮৬)

৬৫/৯৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আপনার রব আপনাকে ত্যাগও করেননি এবং আপনার সঙ্গে দুশমনীও করেননি। (সূরাহ ওয়াদ্ দুহা ৯৩/৩)
(93) سُوْرَةُ وَالضُّحَى
সূরাহ (৯৩) : ওয়াদ্-দুহা
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِذَا سَجٰى} اسْتَوَى وَقَالَ غَيْرُهُ سَجَى أَظْلَمَ وَسَكَنَ عَائِلًا ذُوْ عِيَالٍ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
إِذَا سَجٰى ‘‘যখন তা সমান সমান হয়’’, মুজাহিদ (রহ.) ব্যতীত অন্যরা বলেন, سَجٰى মানে যখন তা নিঝুম ও অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। عَآئِلًا নিঃস্ব।

৪৯৫০

أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا الْأَسْوَدُ بْنُ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ جُنْدُبَ بْنَ سُفْيَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ اشْتَكَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَقُمْ لَيْلَتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا فَجَاءَتْ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ يَا مُحَمَّدُ إِنِّيْ لَأَرْجُوْ أَنْ يَكُوْنَ شَيْطَانُكَ قَدْ تَرَكَكَ لَمْ أَرَهُ قَرِبَكَ مُنْذُ لَيْلَتَيْنِ أَوْ ثَلَاثَةٍ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَالضُّحٰى لا (1) وَاللَّيْلِ إِذَا سَجٰى لا (2) مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلٰى}.
জুনদুব ইব্‌নু সুফ্ইয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, অসুস্থতার কারণে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুই বা তিন রাত তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে পারেননি। এ সময় এক মহিলা এসে বলল, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমার মনে হয়, তোমার শয়তান তোমাকে ত্যাগ করেছে। দুই কিংবা তিনদিন যাবৎ তাকে আমি তোমার কাছে আসতে দেখতে পাচ্ছি না। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, শপথ পূর্বাহ্নের, “শপথ রজনীর যখন তা হয় নিঝুম, তোমার প্রতিপালক তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি বিরূপও হননি” (সূরাহ ওয়াদ্ দুহা ৯৩/৩)। [১১২৪; মুসলিম ৩২/৩৯, হাঃ ১৭৯৭, আহমাদ ১৮৮২৪] (আ.প্র. ৪৫৮২, ই.ফা. ৪৫৮৭)

৬৫/৯৩/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আপনার রব আপনাকে ত্যাগও করেননি এবং আপনার সঙ্গে দুশমনীও করেননি। (সূরাহ ওয়াদ্ দুহা ৯৩/৩)
تُقْرَأُ بِالتَّشْدِيْدِ وَالتَّخْفِيْفِ بِمَعْنًى وَاحِدٍ مَا تَرَكَكَ رَبُّكَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ مَا تَرَكَكَ وَمَا أَبْغَضَكَ.
وَدَّعَكَ শব্দটির দাল অক্ষরটিতে তাশদীদ ও তাশদীদ ছাড়া উভয়ই পড়া যায়। উভয়টির একইঃ ‘‘তোমাকে রব পরিত্যাগ করেননি।’’ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, তোমাকে তোমার রব ত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি মনোক্ষুণ্ণও হননি।

৪৯৫১

مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ جُنْدُبًا الْبَجَلِيَّ قَالَتْ امْرَأَةٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا أُرَى صَاحِبَكَ إِلَّا أَبْطَأَكَ فَنَزَلَتْ {مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلٰى}.
জুনদুব বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা এসে বলল, আমি দেখছি, আপনার সঙ্গী আপনার কাছে ওয়াহী নিয়ে আসতে দেরী করে ফেলছে। তখনই অবতীর্ণ হলঃ তোমার প্রতিপালক তোমাকে ত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি মনোক্ষুন্ন হননি। [১১২৪] (আ.প্র. ৪৫৮৩, ই.ফা. ৪৫৮৮)

৬৫/৯৫/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(94) سُوْرَةُ أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ
সূরাহ (৯৪) : আলাম নাশরাহ্ লাকা (আল-ইনশিরাহ্)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {وِزْرَكَ}فِي الْجَاهِلِيَّةِ {أَنْقَضَ}أَثْقَلَ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ أَيْ {مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا} آخَرَ كَقَوْلِهِ {هَلْ تَرَبَّصُوْنَ بِنَآ إِلَّآ إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ} وَلَنْ يَغْلِبَ عُسْرٌ يُسْرَيْنِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {فَانْصَبْ} فِيْ حَاجَتِكَ إِلَى رَبِّكَ وَيُذْكَرُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ} شَرَحَ اللهُ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
وِزْرَكَ জাহিলী যুগের বোঝা। أَنْقَضَ মানে অতিশয় কষ্টদায়ক। مَعَالْعُسْرِيُسْرًا এর ব্যাখ্যায় ইবনু উয়াইয়াহ (রহ.) বলেন, এ কঠিন অবস্থার পরই আরেকটি সহজঅবস্থা আছে। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, هَلْ تَرَبَّصُوْنَ بِنَآ إِلَّآ إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ তোমরা আমাদের দু’টি কল্যাণের একটির অপেক্ষা করছ। একটি কঠিন অবস্থা দু’টি সহজ অবস্থাকে কখনো পরাভূত করতে পারবে না। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, فَانْصَبْ অর্থ-প্রয়োজন পূরণের জন্য তুমি তোমার রবের কাছে কাকুতি-মিনতি করে প্রার্থনা কর। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আববাস (রাঃ)أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ এর ব্যাখ্যায় বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ্ রাববুল আলামীন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্ষকে ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছেন।
(95)
سُوْرَةُ وَالتِّيْنِ
সূরাহ (৯৫) : ওয়াত্-তীন
وَقَالَ مُجَاهِدٌ هُوَ {التِّيْنُ وَالزَّيْتُوْنُ} الَّذِيْ يَأْكُلُ النَّاسُ يُقَالُ {فَمَا يُكَذِّبُكَ} فَمَا الَّذِيْ يُكَذِّبُكَ بِأَنَّ النَّاسَ يُدَانُوْنَ بِأَعْمَالِهِمْ كَأَنَّهُ قَالَ وَمَنْ يَقْدِرُ عَلَى تَكْذِيْبِكَ بِالثَّوَابِ وَالْعِقَابِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, আয়াতের মধ্যে
التِّيْنُ وَالزَّيْتُوْنُ বলে ঐ তীন ও যায়তূনকে বোঝানো হয়েছে, যা মানুষ খেয়ে থাকে। فَمَا يُكَذِّبُكَ মানুষকে তাদের ‘আমালের প্রতিদান দেয়া হবে এ ব্যাপারে কোন জিনিস তোমাকে অবিশ্বাসী করে। অর্থাৎ শাস্তি কিংবা পুরস্কার দানের ব্যাপারে তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করার ক্ষমতা রাখে কে?

৪৯৫২

حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَدِيٌّ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِيْ سَفَرٍ فَقَرَأَ فِي الْعِشَاءِ فِيْ إِحْدَى الرَّكْعَتَيْنِ بِالتِّيْنِ وَالزَّيْتُوْنِ تَقْوِيْمٍ الْخَلْقِ.
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সফরে থাকাকালীন ‘ইশার সলাতের দুই রাকআতের কোন এক রাকআতে ‘সূরাহ তীন’ পাঠ করেছেন। [৭৬৭] (আ.প্র. ৪৫৮৪, ই.ফা. ৪৫৮৯)

৬৫/৯৬/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(96) سُوْرَةُ اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ
সূরাহ (৯৬) : ইক্বরা বিসমি রবিবকাল লাযী খলাক্ব (আলাক্)
وقال قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ يَحْيَى بْنِ عَتِيْقٍ عَنِ الْحَسَنِ قَالَ اكْتُبْ فِي الْمُصْحَفِ فِيْ أَوَّلِ الإِمَامِ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ وَاجْعَلْ بَيْنَ السُّوْرَتَيْنِ خَطًّا
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {نَادِيَهُ} عَشِيْرَتَهُ {الزَّبَانِيَةَ} الْمَلَائِكَةَ وَقَالَ مَعْمَرٌ {الرُّجْعٰى} الْمَرْجِعُ {لَنَسْفَعَنْ} قَالَ لَنَأْخُذَنْ وَلَنَسْفَعَنْ بِالنُّوْنِ وَهِيَ الْخَفِيْفَةُ سَفَعْتُ بِيَدِهِ أَخَذْتُ.
কুতাইবাহ (রহ.).....হাসান বসরী (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, কুরআন মাজীদের শুরুতে ‘বিস্মিল্লা-হির রহমা-নির রহীম’ লিখ এবং দু’ সূরার মধ্যে একটি রেখা টেনে দাও।
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
نَادِيَهُ গোত্র। الزَّبَانِيَةَ ফেরেশতা। মা‘মার (রা বলেন, الرُّجْعٰى ফিরে আসার জায়গা। لَنَسْفَعَنْ আমি অবশ্যই পাকড়াও করব। لَنَسْفَعَنْ শব্দটি نون خفيفة এর সঙ্গে। سَفَعْتُبِيَدِهِ আমি তাকে হাত দ্বারা ধরলাম।

৪৯৫৩

يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ ح و حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ مَرْوَانَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيْزِ بْنِ أَبِيْ رِزْمَةَ أَخْبَرَنَا أَبُوْ صَالِحٍ سَلْمَوَيْهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ عَنْ يُوْنُسَ بْنِ يَزِيْدَ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ أَوَّلَ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ فِي النَّوْمِ فَكَانَ لَا يَرَى رُؤْيَا إِلَّا جَاءَتْ مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ ثُمَّ حُبِّبَ إِلَيْهِ الْخَلَاءُ فَكَانَ يَلْحَقُ بِغَارِ حِرَاءٍ فَيَتَحَنَّثُ فِيْهِ قَالَ وَالتَّحَنُّثُ التَّعَبُّدُ اللَّيَالِيَ ذَوَاتِ الْعَدَدِ قَبْلَ أَنْ يَرْجِعَ إِلَى أَهْلِهِ وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيْجَةَ فَيَتَزَوَّدُ بِمِثْلِهَا حَتَّى فَجِئَهُ الْحَقُّ وَهُوَ فِيْ غَارِ حِرَاءٍ فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فَقَالَ اقْرَأْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَنَا بِقَارِئٍ قَالَ فَأَخَذَنِيْ فَغَطَّنِيْ حَتَّى بَلَغَ مِنِّيْ الْجُهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِيْ فَقَالَ اقْرَأْ قُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِيْ فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّيْ الْجُهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِيْ فَقَالَ اقْرَأْ قُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِيْ فَغَطَّنِي الثَّالِثَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّيْ الْجُهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِيْ فَقَالَ {اِقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ ج - خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ ج - اِقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ لا - الَّذِيْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِ} الْآيَاتِ إِلَى قَوْلِهِ {عَلَّمَ الْإِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ} فَرَجَعَ بِهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَرْجُفُ بَوَادِرُهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى خَدِيْجَةَ فَقَالَ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَزَمَّلُوْهُ حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ قَالَ لِخَدِيْجَةَ أَيْ خَدِيْجَةُ مَا لِيْ لَقَدْ خَشِيْتُ عَلَى نَفْسِيْ فَأَخْبَرَهَا الْخَبَرَ قَالَتْ خَدِيْجَةُ كَلَّا أَبْشِرْ فَوَاللهِ لَا يُخْزِيْكَ اللهُ أَبَدًا فَوَاللهِ إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ وَتَصْدُقُ الْحَدِيْثَ وَتَحْمِلُ الْكَلَّ وَتَكْسِبُ الْمَعْدُوْمَ وَتَقْرِي الضَّيْفَ وَتُعِيْنُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ فَانْطَلَقَتْ بِهِ خَدِيْجَةُ حَتَّى أَتَتْ بِهِ وَرَقَةَ بْنَ نَوْفَلٍ وَهُوَ ابْنُ عَمِّ خَدِيْجَةَ أَخِيْ أَبِيْهَا وَكَانَ امْرًَا تَنَصَّرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ يَكْتُبُ الْكِتَابَ الْعَرَبِيَّ وَيَكْتُبُ مِنَ الإِنْجِيْلِ بِالْعَرَبِيَّةِ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَكْتُبَ وَكَانَ شَيْخًا كَبِيْرًا قَدْ عَمِيَ فَقَالَتْ خَدِيْجَةُ يَا ابْنَ عَمِّ اسْمَعْ مِنْ ابْنِ أَخِيْكَ قَالَ وَرَقَةُ يَا ابْنَ أَخِيْ مَاذَا تَرَى فَأَخْبَرَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَبَرَ مَا رَأَى فَقَالَ وَرَقَةُ هَذَا النَّامُوْسُ الَّذِيْ أُنْزِلَ عَلَى مُوْسَى لَيْتَنِيْ فِيْهَا جَذَعًا لَيْتَنِيْ أَكُوْنُ حَيًّا ذَكَرَ حَرْفًا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَوَمُخْرِجِيَّ هُمْ قَالَ وَرَقَةُ نَعَمْ لَمْ يَأْتِ رَجُلٌ بِمَا جِئْتَ بِهِ إِلَّا أُوْذِيَ وَإِنْ يُدْرِكْنِيْ يَوْمُكَ حَيًّا أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ وَفَتَرَ الْوَحْيُ فَتْرَةً حَتَّى حَزِنَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঘুমের অবস্থায় সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ওয়াহী শুরু করা হয়েছিল। ঐ সময় তিনি যে স্বপ্ন দেখতেন, তা সকালের আলোর মতই সুস্পষ্ট হত। এরপর নির্জনতা তার কাছে প্রিয় হয়ে উঠল। তিনি হেরা গুহায় চলে যেতেন এবং পরিবার-পরিজনের কাছে আসার পূর্বে সেখানে লাগাতার কয়েকদিন পর্যন্ত তাহান্নুছ করতেন। তাহান্নুছ মানে বিশেষ পদ্ধতিতে ‘ইবাদাত করা। এ জন্য তিনি কিছু খাবার নিয়ে যেতেন। এরপর তিনি খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে ফিরে এসে আবার ওরকম কিছু কিছু খাবার নিয়ে যেতেন। শেষে হেরা গুহায় থাকা অবস্থায় হঠাৎ তার কাছে সত্যবাণী এসে পৌঁছল। ফেরেশতা তাঁর কাছে এসে বললেন, পড়ুন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি পড়তে পারি না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এরপর তিনি আমাকে ধরে খুব জোরে আলিঙ্গণ করলেন। এতে আমি প্রাণান্তকর কষ্ট অনুভব করলাম। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পড়তে পারি না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এরপর তিনি আমাকে ধরে দ্বিতীয়বার খুব জোরে আলিঙ্গণ করলেন। এতেও আমি ভীষণ কষ্ট অনুভব করলাম। এরপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়ুন। আমি বললাম, আমি পড়তে পারি না। এরপর তিনি আমাকে দরে তৃতীয়বার খুব জোরে আলিঙ্গণ করলেন। এবারও আমি খুব কষ্ট অনুভব করলাম। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ কর তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক হতে। পাঠ কর, আর তোমার প্রতিপালক মহিমান্বিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন, মানুষকে যা সে জানত না। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ আয়াতগুলো নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। এ সময় তাঁর কাঁধের গোশ্ত ভয়ে থরথর করে কাঁপছিল। খাদীজার কাছে পৌঁছেই তিনি বললেন, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। তখন সকলেই তাঁকে বস্ত্রাবৃত করে দিল। অবশেষে তার ভীতিভাব দূর হলে তিনি খাদীজাকে বললেন, খাদীজা আমার কী হল? আমি আমার নিজের সম্পর্কে আশংকাবোধ করছি। এরপর তিনি তাঁকে সব কথা খুলে বললেন। এ কথা শুনে খাদীজাহ (রাঃ) বললেন, কখনো নয়। আপনি সুসংবাদ নিন। আল্লাহ্‌র শপথ, আল্লাহ্ কখনো আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি আত্মীয়দের খোঁজ-খবর নেন, সত্য কথা বলেন, সহায়হীন লোকদের বোঝা লাঘব করে দেন, নিঃস্ব লোকদেরকে উপার্জন করে দেন, মেহমানদের আপ্যায়ন করেন এবং হকের পথে আসা বিপদাপদে পতিত লোকদেরকে সাহায্য করে থাকে। তারপর খাদীজাহ তাঁকে নিয়ে তাঁর চাচাত ভাই আরাকা ইব্‌নু নাওফালের কাছে গেলেন। তিনি জাহিলী যুগে খৃস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী ভাষায় কিতাব লিখতেন। আর তিনি আল্লাহ্‌র ইচ্ছা মাফিক আরবী ভাষায় ইনজীল কিতাব অনুবাদ করে লিখতেন। তিনি খুব বৃদ্ধ ও অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আমার চাচাত ভাই। আপনার ভাতিজা কী বলেন একটু শুনুন। তখন ওয়ারাকা বললেন, ভাতিজা, কী হয়েছে তোমার? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা দেখেছিলেন, সব কিছুর ব্যাপারে তাকে জানালেন। সব কথা শুনে ওয়ারাকা বললেন, ইনিই সেই ফেরেশতা, যাকে মূসার কাছে পাঠানো হয়েছিল। আহ! সে সময় আমি যদি যুবক হতাম। আহ্! সে সময় আমিযদি জীবিত থাকতাম। তারপর তিনি একটি গুরুতর বিষয় উল্লেখ করলে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সত্যিই তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওয়ারাকা বললেন, হ্যাঁ, তারা তোমাকে বের করে দেবে। তুমি যে দাওয়াত নিয়ে এসেছ, এ দাওয়াত যে-ই নিয়ে এসেছে তাকেই কষ্ট দেয়া হয়েছে। তোমার নবুয়তকালে আমি জীবিত থাকলে অবশ্যই আমি তোমাকে প্রবল ও সর্বতোভাবে সাহায্য করতাম। এরপর ওয়ারাকা অধিক দিন বাঁচেননি; বরং অল্পদিনের মধ্যেই তিনি মারা গেলেন। দীর্ঘ সময়ের জন্য ওয়াহী বন্ধ হয়ে গেল। এতে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খুবই চিন্তাযুক্ত হয়ে পড়লেন। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৫, ই.ফা. ৪৫৯০)

৪৯৫৪

قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ شِهَابٍ فَأَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيَّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْيِ قَالَ فِيْ حَدِيْثِهِ بَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ سَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ بَصَرِيْ فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِيْ جَاءَنِيْ بِحِرَاءٍ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَفَرِقْتُ مِنْهُ فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَدَثَّرُوْهُ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ لا - قُمْ فَأَنْذِرْ لا - وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ لا - وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ لا - وَالرُّجْزَ فَاهْجُرْ} قَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ وَهِيَ الْأَوْثَانُ الَّتِيْ كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَعْبُدُوْنَ قَالَ ثُمَّ تَتَابَعَ الْوَحْيُ.
মুহাম্মাদ ইব্‌নু শিহাব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সালামাহ ইব্‌নু ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-এর মাধ্যমে জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওয়াহী বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন, এক সময় আমি পথ চলছিলাম। হঠাৎ আকাশ থেকে একটি শব্দ শুনতে পেলাম। আমি মাথা তুলে তাকালাম। দেখলাম, যে ফেরেশতা আমার কাছে হেরা গুহায় আসতেন, তিনিই আসমান ও যমীনের মাঝে বিদ্যমান কুরসীতে বসে আছেন। এতে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তাই বাড়িতে ফিরে বললাম, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। সুতরাং সকলেই আমাকে বস্ত্রাবৃত করল। তখন আল্লাহ্ তা’আলা অবতীর্ণ করলেন, “হে বস্ত্রাবৃত রসূল! উঠুন, সতর্ক করুন, আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন, এবং স্বীয় পরিধেয় বস্ত্র পবিত্র রাখুন এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন” (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/১-৫)। আবূ সালামাহ (রাঃ) বলেন, আরবরা জাহিলী যুগে যে সব মূর্তির পূজা করত الرِّجْزَ বলে ঐ সব মূর্তিকেই বোঝানো হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর থেকে ওয়াহীর ধারা চলতে থাকে। [৪] (আ.প্র. ৪৫৮৫, ই.ফা. ৪৫৯০)

৬৫/৯৬/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিন্ড থেকে। (সূরাহ ‘আলাক ৯৬/২)

৪৯৫৫

ابْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ أَوَّلُ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فَقَالَ {اِقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ ج (1) خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ ج (2) اِقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ}.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রথমত রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ওয়াহী আরম্ভ হয়েছিল সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে। এরপর তাঁর কাছে ফেরেশতা এসে বললেন, পাঠ করুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিণ্ড থেকে। পাঠ করুন, আর আপনার রব অতিশয় দয়ালু” (সূরাহ আলাক ৯৬/১-৫)। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৬, ই.ফা. ৪৫৯১)

৬৫/৯৬/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ পাঠ করুন, আর আপনার রব অতিশয় দয়ালু। (সূরাহ আলাক ৯৬/৫)

৪৯৫৬

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ ح وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ قَالَ مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَوَّلُ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ جَاءَهُ الْمَلَكُ فَقَالَ {اِقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ ج (1) خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ ج (2) اِقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ لا (3) الَّذِيْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِ}.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে ওয়াহীর শুরু হয়। এরপর তাঁর কাছে ফেরেশতা এসে বললেন, “পাঠ কর, তোমার প্রতিপালকের নামে , যিনি সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক হতে। পাঠ কর, আর তোমার প্রতিপালক মহা মহিমান্বিত” (সূরাহ আলাক ৯৬/১-৫)। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৭, ই.ফা. ৪৫৯২)

৬৫/৯৫/.অধ্যায়ঃ

‘‘যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে।’’ (সূরাহ আলাক ৯৬/৪)

৪৯৫৭

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ سَمِعْتُ عُرْوَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَرَجَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَدِيْجَةَ فَقَالَ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَذَكَرَ الْحَدِيْثَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে ফিরে এসে বললেন, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। এরপর রাবী সম্পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করলেন। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৮, ই.ফা. ৪৫৯৩)

৬৫/৯৬/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তার এরূপ করা কখনই উচিত নয়, যদি সে এরূপ করা থেকে ফিরিয়ে না আসে, তবে আমি অবশ্যই তাকে কপালের কেশগুচ্ছ ধরে হিঁচড়ে নিয়ে যাবো। যে কেশগুচ্ছ মিথ্যাচারী, পাপাচারীর। (সূরাহ আলাক ৯৬/১৫-১৬)

৪৯৫৮

يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ الْكَرِيْمِ الْجَزَرِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ أَبُوْ جَهْلٍ لَئِنْ رَأَيْتُ مُحَمَّدًا يُصَلِّيْ عِنْدَ الْكَعْبَةِ لَأَطَأَنَّ عَلَى عُنُقِهِ فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَوْ فَعَلَهُ لَأَخَذَتْهُ الْمَلَائِكَةُ تَابَعَهُ عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ الْكَرِيْمِ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ জাহ্ল বলেছিল, আমি যদি মুহাম্মাদকে কা‘বার পাশে সলাত আদায় করতে দেখি তাহলে অবশ্যই আমি তার ঘাড় পদদলিত করব। এ খবর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছার পর তিনি বললেন, সে যদি তা করে তাহলে অবশ্যই ফেরেশতা তাকে পাকড়াও করবে। ‘উবাইদুল্লাহর মাধ্যমে ‘আবদুল থেকে আমর ইব্‌নু খালিদ এ হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪৫৮৯, ই.ফা. ৪৫৯৪)

৬৫/৯৮/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(97) سُوْرَةُ القدر
সূরাহ (৯৭) : ক্বদর
يُقَالُ الْمَطْلَعُ هُوَ الطُّلُوْعُ وَالْمَطْلِعُ الْمَوْضِعُ الَّذِيْ يُطْلَعُ مِنْهُ {أَنْزَلْنَاهُ} الْهَاءُ كِنَايَةٌ عَنِ الْقُرْآنِ إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ خَرَجَ مَخْرَجَ الْجَمِيْعِ وَالْمُنْزِلُ هُوَ اللهُ وَالْعَرَبُ تُوَكِّدُ فِعْلَ الْوَاحِدِ فَتَجْعَلُهُ بِلَفْظِ الْجَمِيْعِ لِيَكُوْنَ أَثْبَتَ وَأَوْكَدَ.
الْمَطْلَعُ বলা হয় উদয় হওয়াকে, পক্ষান্তরে, الْمَطْلِعُ মানে উদয়স্থল। أَنْزَلْنَاهُ এর ه দ্বারা আল-কুরআনের প্রতি ইশারা করা হয়েছে। এখানে বহুবচনের শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও একবচনের গ্রহণ করা হয়েছে। কেননা, কুরআন অবতীর্ণকারী হলেন আল্লাহ্ তা‘আলা। বস্তুত কোন বস্তুর গুরুত্ব প্রকাশ বা জোরালো ভাব প্রকামের জন্য আরবরা একবচনের স্থলে বহুবচনে ব্যবহার করে থাকে।
(98)
سُوْرَةُ البينة [لَمْ يَكُنْ]
সূরাহ (৯৮) : বাইয়্যিনাহ
مُنْفَكِّيْنَ زَائِلِيْنَ قَيِّمَةٌ الْقَائِمَةُ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ أَضَافَ الدِّيْنَ إِلَى الْمُؤَنَّثِ
مُنْفَكِّيْنَবিচলিত ও পদস্খলিত। قَيِّمَةٌ সঠিক। دِيْنُالْقَيِّمَةِ এর মাঝে دِيْنُ শব্দটিকে স্ত্রী লিঙ্গের দিকে اضافت করা হয়েছে।

৪৯৫৯

مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِأُبَيٍّ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِيْ أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ {لَمْ يَكُنِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا} قَالَ وَسَمَّانِيْ قَالَ نَعَمْ فَبَكَى.
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বলেছিলেন, তোমাকে لَمْ يَكُنْ الَّذِينَ كَفَرُوا (সূরা) পড়ে শোনানোর জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে আদেশ করেছেন। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা কি আমার নাম উল্লেখ করে বলেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ; এ কথা শুনে উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) কাঁদতে লাগলেন। [৩৮০৯] (আ.প্র. ৪৫৯০, ই.ফা. ৪৫৯৫)

৬৫/৯৮/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬০

حَسَّانُ بْنُ حَسَّانَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِأُبَيٍّ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِيْ أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ الْقُرْآنَ قَالَ أُبَيٌّ أَاللهُ سَمَّانِيْ لَكَ قَالَ اللهُ سَمَّاكَ لِيْ فَجَعَلَ أُبَيٌّ يَبْكِيْ قَالَ قَتَادَةُ فَأُنْبِئْتُ أَنَّهُ قَرَأَ عَلَيْهِ {لَمْ يَكُنِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ}.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তোমাকে কুরআন পড়ে শোনানোর জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে আদেশ করেছেন। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা কি আপনার কাছে আমার নাম উল্লেখ করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার নাম উল্লেখ করেছেন। এ কথা শুনে উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) কাঁদতে বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার নাম উল্লেখ করেছেন। এ কথা শুনে উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) কাঁদতে শুরু করলেন। ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, আমাকে জানানো হয়েছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে لَمْ يَكُنْ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ পাঠ করে শুনিয়েছিলেন। [৩৮০৯] (আ.প্র. ৪৫৯১, ই.ফা. ৪৫৯৬)

৬৫/৯৮/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬১

إحمد بن أبي داؤد، أَبُوْ جَعْفَرٍ الْمُنَادِيْ حَدَّثَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ عَرُوْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِأُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِيْ أَنْ أُقْرِئَكَ الْقُرْآنَ قَالَ أَاللهُ سَمَّانِيْ لَكَ قَالَ نَعَمْ قَالَ وَقَدْ ذُكِرْتُ عِنْدَ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ قَالَ نَعَمْ فَذَرَفَتْ عَيْنَاهُ.
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তোমাকে কুরআন পাঠ করে শোনানোর জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে আদেশ করেছেন। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আল্লাহ তা‘আলা কি আপনার কাছে আমার নাম উল্লেখ করেছেন? তিনি বললেন,হ্যাঁ। তখন উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বিস্মিত হয়ে আবার জিজ্ঞেস করলেন, বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের কাছে কি আমার ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে? উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। এ কথা শুনে তা দু’চোখ অশ্রুতে ভরে উঠল। [৩৮০৯] (আ.প্র. ৪৫৯২, ই.ফা. ৪৫৯৭)

৬৫/৯৯/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ অতএব, কেউ অণূ পরিমাণ নেক কাজ করে থাকলে, সে তা দেখতে পাবে। (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৭)
(99) سُوْرَةُ إِذَا زُلْزِلَتْ الْأَرْضُ {زِلْزَالَهَا}
সূরাহ (৯৯) : ইযা যুলযিলাতিল আরযু (যিল্যাল)
يُقَالُ {أَوْحٰى لَهَا} أَوْحَى إِلَيْهَا وَوَحَى لَهَا وَوَحَى إِلَيْهَا وَاحِدٌ.
বলা হয়,
وَوَحَى لَهَاوَوَحَى إِلَيْهَا শব্দ দু’টির অর্থ একই।

৪৯৬২

إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْخَيْلُ لِثَلَاثَةٍ لِرَجُلٍ أَجْرٌ وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ وَعَلَى رَجُلٍ وِزْرٌ فَأَمَّا الَّذِيْ لَهُ أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَأَطَالَ لَهَا فِيْ مَرْجٍ أَوْ رَوْضَةٍ فَمَا أَصَابَتْ فِيْ طِيَلِهَا ذَلِكَ فِي الْمَرْجِ وَالرَّوْضَةِ كَانَ لَهُ حَسَنَاتٍ وَلَوْ أَنَّهَا قَطَعَتْ طِيَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ كَانَتْ آثَارُهَا وَأَرْوَاثُهَا حَسَنَاتٍ لَهُ وَلَوْ أَنَّهَا مَرَّتْ بِنَهَرٍ فَشَرِبَتْ مِنْهُ وَلَمْ يُرِدْ أَنْ يَسْقِيَ بِهِ كَانَ ذَلِكَ حَسَنَاتٍ لَهُ فَهِيَ لِذَلِكَ الرَّجُلِ أَجْرٌ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا تَغَنِّيًا وَتَعَفُّفًا وَلَمْ يَنْسَ حَقَّ اللهِ فِيْ رِقَابِهَا وَلَا ظُهُوْرِهَا فَهِيَ لَهُ سِتْرٌ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا فَخْرًا وَرِئَاءً وَنِوَاءً فَهِيَ عَلَى ذَلِكَ وِزْرٌ فَسُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْحُمُرِ قَالَ مَا أَنْزَلَ اللهُ عَلَيَّ فِيْهَا إِلَّا هَذِهِ الْآيَةَ الْفَاذَّةَ الْجَامِعَةَ {فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَه” وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَه”}.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তিন শ্রেণীর মানুষের ঘোড়া থাকে। এক শ্রেণীর মানুষের জন্য তা সওয়াব ও পুরস্কারের কারণ হয়, এক শ্রেণীর মানুষের জন্য তা (গুনাহ্ থেকে) আবরণস্বরূপ এবং এক শ্রেণীর মানুষের প্রতি তা হয় গুনাহর কারণ। যার জন্য তা সওয়াবের কারণ হয়, তারা সেসব লোক, যারা আল্লাহ্‌র পথে জিহাদের জন্য তা প্রস্তুত করে রাখে এবং কোন চারণ ক্ষেত্রে বা বাগানে লম্বা দড়ি দিয়ে তাকে বেঁধে রাখে। দড়ির আওতায় চারণ ক্ষেত্রে বা বাগানে সে যা কিছু খায় তা ঐ ব্যক্তির জন্য নেকী হিসাবে গণ্য হয়। যদি ঘোড়াটি দড়ি ছিঁড়ে ফেলে এবং নিজ স্থান পার হয়ে এক/দু’ উঁচু স্থানে চলে যায়, তাহলে তার পদচিহ্ন ও গোবরের বিনিময়েও ঐ ব্যক্তি সওয়াব লাভ করবে। আর ঘোড়াটি যদি কোন নহরের কিনারায় গিয়ে নিজে নিজেই পানি পান করে নেয়-মালিকের সেখান থেকে পানি পান করানোর ইচ্ছা না থাকলেও সে ব্যক্তি এর বিনিময়ে সওয়াবের অধিকারী হবে। এ ঘোড়া এ ব্যক্তির জন্য হল সওয়াবের কারণ; আরেক শ্রেণীর লোক যাদের জন্য এ ঘোড়া (গুনাহ্ হতে) আড়াল, তারা ঐ ব্যক্তি যারা মানুষের থেকে মুখাপেক্ষী না থাকার জন্য এবং মানুষের কাছে হাত পাতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য তা পালন করে থাকে। কিন্তু তাতে আল্লাহ্‌র যে হক রয়েছেতা দিয়ে ভুলে যায় না। এ শ্রেণীর মানুষের জন্য এ ঘোড়া হচ্ছে পর্দা। আরেক শ্রেণীর ঘোড়ার মালিক যারা গর্ব দেখানোর মনোভাব ও দুশমনির উদ্দেশে ঘোড়া রাখে। এ ঘোড়া হচ্ছে গুনাহর কারণ। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, একক ও ব্যাপক অর্থবোধক এ একটি মাত্র আয়াত ব্যতীত এ বিষয়ে আল্লাহ্ তা‘আলা আমার প্রতি আর কোন আয়াত অবতীর্ণ করেননি। আয়াতটি এই ঃ “কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে এবং অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে সে তাও দেখবে” (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৭-৮)। [২৩৭১] (আ.প্র. ৪৫৯৩, ই.ফা. ৪৫৯৮)

৬৫/৯৯/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আর কেউ অণু পরিমাণ বদ কাজ করে থাকলে, সে তাও দেখতে পাবে। (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৮)

৪৯৬৩

يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ مَالِكٌ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْحُمُرِ فَقَالَ لَمْ يُنْزَلْ عَلَيَّ فِيْهَا شَيْءٌ إِلَّا هَذِهِ الْآيَةُ الْجَامِعَةُ الْفَاذَّةُ {فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَه” وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَه”}.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, এ বিষয়ে একক ও ব্যাপক অর্থবোধক এই আয়াতটি ছাড়া আমার প্রতি আর কোন আয়াতই অবতীর্ণ করা হয়নি। আয়াতটি হচ্ছে এই ঃ “কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে সে তাও দেখবে” (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৭-৮)। [২৩৭১] (আ.প্র. ৪৫৯৪, ই.ফা. ৪৫৯৯)

৬৫/১০৮/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(100) سُوْرَةُ وَالْعَادِيَاتِ
সূরাহ (১০০) : ওয়াল‘আদিয়াত
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْكَنُوْدُ} الْكَفُوْرُ يُقَالُ {فَأَثَرْنَ بِهٰ نَقْعًا} رَفَعْنَا بِهِ غُبَارًا {لِحُبِّ الْخَيْرِ} مِنْ أَجْلِ حُبِّ الْخَيْرِ لَشَدِيْدٌ لَبَخِيْلٌ وَيُقَالُ لِلْبَخِيْلِ شَدِيْدٌ {حُصِّلَ} مُيِّزَ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
الْكَنُوْدُ অকৃতজ্ঞ। فَأَثَرْنَ بِهٰ نَقْعًا -সে সময় ধূলি উৎক্ষিপ্ত করে। لِحُبِّ الْخَيْرِধন-সম্পদের প্রতি ভালবাসার কারণে। لَشَدِيْدٌ মানে অবশ্যই কৃপণ। কৃপণকে আরবী ভাষায় شَدِيْدٌ বলা হয়। حُصِّلَ আলাদা করা হবে।
(101)
سُوْرَةُ الْقَارِعَةِ
সূরাহ (১০১) : আল-ক্বারি‘আহ
{
كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوْثِ} كَغَوْغَاءِ الْجَرَادِ يَرْكَبُ بَعْضُهُ بَعْضًا كَذَلِكَ النَّاسُ يَجُوْلُ بَعْضُهُمْ فِيْ بَعْضٍ كَالْعِهْنِ كَأَلْوَانِ الْعِهْنِ وَقَرَأَ عَبْدُ اللهِ كَالصُّوْفِ.
كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوْثِ মানে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত। পতঙ্গ যেমন একটি আরেকটির ওপর পড়ে, ঠিক তেমনিভাবে একজন মানুষ আরেকজনের ওপর পড়বে। كَالْعِهْنِ নানা রঙের তুলার ন্যায়। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)كَالصُّوْفِ পড়েছেন।
(102)
سُوْرَةُ أَلْهَاكُمْ
সূরাহ (১০২) : আততাকাসুর
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {التَّكَاثُرُ} مِنَ الْأَمْوَالِ وَالأَوْلَادِ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন,
التَّكَاثُرُ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির আধিক্য।
(103)
سُوْرَةُ وَالْعَصْرِ
সূরাহ (১০৩) : আল-‘আসর
وَقَالَ يَحْيَى الْعَصْرُ الدَّهْرُ أَقْسَمَ بِهِ.
বলা হয়
الْعَصْرُ কাল বা সময়। আল্লাহ্ তা‘আলা এখানে কালের শপথ করেছেন।
(104)
سُوْرَةُ هُمَزَةٍ
সূরাহ (১০৪) : আল-হুমাযাহ
{
الْحُطَمَةُ} اسْمُ النَّارِ مِثْلُ سَقَرَ وَ لَظَى.
الْحُطَمَةُ ‘লাযা’ ও ‘সাকার’ যেমন জাহান্নামের নাম, তেমনি ‘হুতামা’ও একটি জাহান্নামের নাম।
(105)
سُوْرَةُ أَلَمْ تَرَ
সূরাহ (১০৫) : আলামতারা (ফীল)
قَالَ مُجَاهِدٌ {أَلَمْ تَرَ} أَلَمْ تَعْلَمْ قَالَ مُجَاهِدٌ {أَبَابِيْلَ} مُتَتَابِعَةً مُجْتَمِعَةً وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {مِنْ سِجِّيْلٍ} هِيَ سَنْكِ وَكِلْ.
মুজাহিদ বলেন,
أَلَمْ تَرَ অর্থাৎ তোমরা কি জাননা?, মুজাহিদ বলেন, أَبَابِيْلَ ঝাঁকে ঝাঁকে ও একত্রিত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مِنْ سِجِّيْلٍ শব্দটি سَنْكِكِلْ থেকে আরবীকৃত আরবী শব্দ (এর অর্থ হল পাথর ও মাটির ঢিল)।
(106)
سُوْرَةُ لِإِيْلَافِ قُرَيْشٍ
সূরাহ (১০৬) : লি ই-লাফি (কুরাইশ)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {لِإِيْلَافِ} أَلِفُوْا ذَلِكَ فَلَا يَشُقُّ عَلَيْهِمْ فِي الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ وَآمَنَهُمْ مِنْ كُلِّ عَدُوِّهِمْ فِيْ حَرَمِهِمْ قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ {لِإِيْلَافِ} لِنِعْمَتِيْ عَلَى قُرَيْشٍ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
لِإِيْلَافِ মানে তারা এ বিষয়ে অভ্যস্ত ছিল। ফলে, শীত ও গ্রীষ্মে তা তাদের জন্য কষ্টকর হয় না। وَاٰمَنَهُمْ আল্লাহ্ তা‘আলা হারামের মাধ্যমে তাদের যাবতীয় শত্রু থেকে নিরাপত্তা দিয়েছেন। ইবনু উআয়না (রহ.) বলেন, لِإِيْلَافِ কুরাইশদের প্রতি আমার নি‘মাতের কারণে।
(107)
سُوْرَةُ الماعون
সূরাহ (১০৭) : আল-মা‘উন
وقال مُجَاهِدٌ {يَدُعٌ} يَدْفَعُ عنْ حقٍّه، ويُقالُ : هُوَ مِنْ دَعَعْتُ، يُدَعُّوْنَ يُدْفَعُوْنَ. {ساهُوْنَ} لاهُوْنَ. والماعُوْنُ : المَعْرُوْف كلهُ. وقال بَعْضُ العَرَابِ : الماعُوْنُ الماءُ، وقال عِكْرِمَةُ : أعْلَاها الزّّكاةُ المَفْرُوْضَةُ وأدْناها عارِيَّةُ المَتاعِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
يَدُعٌ সে তাকে হাক না দিয়ে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। বলা হয় এ শব্দটি শব্দ থেকে উদ্ভূত। يُدَعُّوْنَ তাদেরকে বাধা দেয়া হয়। ساهُوْنَ উদাসীন। الماعُوْن সর্বপ্রকার কল্যাণকর কাজ। কোন কোন আরবী ভাষা বিশেষজ্ঞ বলেন, الماعُوْنُ পানি। ‘ইকরামাহ (রাঃ) বলেন, মাউনের অন্তর্ভুক্ত সর্বোচ্চ স্তরের বিষয় হচ্ছে যাকাত প্রদান করা এবং সর্বনিম্ন পর্যায়ের বিষয় হচ্ছে গৃহস্তালির প্রয়োজনীয় ছোট খাট জিনিস ধার দেয়া।
(108)
سورَةُ الكوثر
সূরাহ (১০৮) : আল-কাউসার
وقال ابنُ عَبَّاسٍ {شانِئَكَ} : عَدّوَّكَ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন,
شانِئَكَ তোমার শত্রু।

৪৯৬৪

آدَمُ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا عُرِجَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى السَّمَاءِ قَالَ أَتَيْتُ عَلَى نَهَرٍ حَافَتَاهُ قِبَابُ اللُّؤْلُؤِ مُجَوَّفًا فَقُلْتُ مَا هَذَا يَا جِبْرِيْلُ قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আকাশের দিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মি‘রাজ হলে তিনি বলেন, আমি একটি নহরের ধারে পৌঁছলাম, যার উভয় তীরে ফাঁপা মোতির তৈরি গম্বুজসমূহ রয়েছে। আমি বললাম, হে জিব্রীল! এটা কী? তিনি বললেন, এটাই (হাওযে) কাউছার। [৩৫৭০] (আ.প্র. ৪৫৯৫, ই.ফা. ৪৬০০)

৬৫/১০৮/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬৫

خَالِدُ بْنُ يَزِيْدَ الْكَاهِلِيُّ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ أَبِيْ عُبَيْدَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَ سَأَلْتُهَا عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {إِنَّآ أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ} قَالَتْ نَهَرٌ أُعْطِيَهُ نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم شَاطِئَاهُ عَلَيْهِ دُرٌّ مُجَوَّفٌ آنِيَتُهُ كَعَدَدِ النُّجُوْمِ رَوَاهُ زَكَرِيَّاءُ وَأَبُو الْأَحْوَصِ وَمُطَرِّفٌ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ.
আবূ ‘উবাইদাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ-এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বললেন, কাউছার একটি নহর যা তোমার নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে প্রদান করা হয়েছে। এর দু’টো পাড় রয়েছে। উভয় পাড়ে বিছানো আছে ফাঁপা মোতি। এর পাত্রের সংখ্যা তারকারাজির মত। (অন্য সানাদে) যাকারিয়া (রহ.).....আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪৫৯৬, ই.ফা. ৪৬০১)

৬৫/১০৮/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬৬

يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ فِي الْكَوْثَرِ هُوَ الْخَيْرُ الَّذِيْ أَعْطَاهُ اللهُ إِيَّاهُ قَالَ أَبُوْ بِشْرٍ قُلْتُ لِسَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ فَإِنَّ النَّاسَ يَزْعُمُوْنَ أَنَّهُ نَهَرٌ فِي الْجَنَّةِ فَقَالَ سَعِيْدٌ النَّهَرُ الَّذِيْ فِي الْجَنَّةِ مِنَ الْخَيْرِ الَّذِيْ أَعْطَاهُ اللهُ إِيَّاهُ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি কাউসার সম্পর্কে বলেছেন যে, এটা এমন একটি কল্যাণ যা আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছেন। বর্ণনাকারী আবূ বিশর (রহ.) বলেন, আমি সা‘ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রহ.)-কে বললাম, লোকেরা ধারণা করে যে, কাউসার হল জান্নাতের একটি নহর। এ কথা শুনে সা‘ঈদ (রহ.) বললেন, জান্নাতের নহরটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে দেয়া কল্যাণের একটি। [৬৫৭৮] (আ.প্র. ৪৫৯৭, ই.ফা. ৪৬০২)

৬৫/১১০/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(109) سُوْرَةُ الْكَافِرُوْنَ
সূরাহ (১০৯) : কাফিরূন
يُقَالُ {لَكُمْ دِيْنُكُمْ} الْكُفْرُ {وَلِيَ دِيْنِ} الإِسْلَامُ وَلَمْ يَقُلْ دِيْنِيْ لِأَنَّ الْآيَاتِ بِالنُّوْنِ فَحُذِفَتْ الْيَاءُ كَمَا قَالَ يَهْدِيْنِ وَ يَشْفِيْنِ وَقَالَ غَيْرُهُ {لَآ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُوْنَ} الآنَ وَلَا أُجِيْبُكُمْ فِيْمَا بَقِيَ مِنْ عُمُرِيْ {وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ} وَهُمْ الَّذِيْنَ قَالَ {وَلَيَزِيْدَنَّ كَثِيْرًا مِّنْهُمْ مَآ أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ طُغْيَانًا وَّكُفْرًا}.
বলা হয়
لَكُمْ دِيْنُكُمْ তোমাদের দ্বীন তোমাদের, অর্থাৎ কুফর। আর وَلِيَ دِيْنِ আমাদের দ্বীন ইসলাম। এখানে دِيْنِيْ বলা হয়নি। পূর্বের আয়াতগুলো نঅক্ষরের উপর যেহেতু শেষ করা হয়েছে, তাই পূর্বের আয়াতগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করার জন্য ياঅক্ষরটিকে মুছে ফেলে এ আয়াতটিকেও ن অক্ষরের ওপর সমাপ্ত করা হয়েছে। যেমন অন্য স্থানে আল্লাহ্ তা‘আলা يَهْدِيْنِ এবং يَشْفِيْنِ ব্যবহার করেছেন। (মুজাহিদ ব্যতীত) অপরাপর মুফাসসির বলেছেন, لَآ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُوْنَ -এর মর্মার্থ হচ্ছেঃ তোমরা বর্তমানে যার ‘ইবাদাত কর, আমি তার ‘ইবাদাত করি না এবং অবশিষ্ট জীবনেও আমি তোমাদের এ আহবানে সাড়া দেব না। وَلَآ أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَآ أَعْبُدُ এবং তোমরাও তাঁর ‘ইবাদাতকারী নও- ‘যাঁর ‘ইবাদাত আমি করি।’ তারা ঐ সমস্ত লোক, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যত্র ইরশাদ করেছেনঃ وَلَيَزِيْدَنَّ كَثِيْرًا مِّنْهُمْ مَّآ أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ طُغْيَانًا وَّكُفْرًا ‘‘তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা তাদের অনেকের ধর্মদ্রোহিতা ও অবিশ্বাসই বাড়িয়ে দিয়েছে।’’
(সূরাহ (৫) : আল-মায়িদাহঃ ৬৪)
(110)
سُوْرَةُ الفتح
সূরাহ (১১০) : নাসর

৪৯৬৭

الْحَسَنُ بْنُ الرَّبِيْعِ حَدَّثَنَا أَبُو الْأَحْوَصِ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَلَاةً بَعْدَ أَنْ نَزَلَتْ عَلَيْهِ {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} إِلَّا يَقُوْلُ فِيْهَا سُبْحَانَكَ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِي .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ সূরাহ অবতীর্ণ হবার পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (রুকু‘ ও সাজদাহতে) নিম্নোক্ত দু‘আটি পাঠ ব্যতীত (রুকু‘ ও সাজদাহতে অন্য কোন দু‘আ দ্বারা) সলাত আদায় করেন নি। (আর তা হচ্ছেঃ) سُبْحَانَكَ اللهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِي “হে আল্লাহ্! তুমি পবিত্র, তুমিই আমার রব। সকল প্রশংসা তোমারই জন্য নির্ধারিত। হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে ক্ষমা কর।” [৭৯৪] (আ.প্র. ৪৫৯৮, ই.ফা. ৪৬০৩)
১. আধুনিক প্রকাশনীর ৭৫০ নম্বর হাদীসের টীকায় লিখা হয়েছে “রুকূ‘ ও সাজদাহ্য় এ দু‘আ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইসলামের প্রথম দিকে পড়তেন। তখন রুকু‘তে সুবহানা রব্বিয়াল ‘আযীম ও সাজদাহ্য় সুবহানা রব্বিয়াল আ‘লা পড়ার নির্দেশ হয়নি। পরে এ দু’টি দু‘আ নাযিল হলে এবং তা পড়বার আদেশ হলে পূর্বে উল্লেখিত দু‘আ মানসূখ বা বাতিল হয়ে যায়।”
এটি একেবারেই মনগড়া ও হাদীস বিরোধী কথা যার কোন দলীল নেই। ইমাম ইবনু কাইয়্যিম যাদুল মা‘আদে এবং নাসিরউদ্দিন আলবানী স্বীয় সিফাত গ্রন্থে রুকু‘ ও সাজদাহর দু‘আর অর্থের পর লিখেছেনঃ “তিনি কুরআনের উপর ‘আমাল করতঃ রুকু‘ ও সাজদাহ্তে এ দু‘আটি বেশী বেশী করে পড়তেন।” (বুখারী হাদীস নং ৮১৭) আর এ সূরাহ্টি নাযিল হয়েছে আল্লাহর রসূলের ইন্তিকালের অল্প কিছুদিন পূর্বে। সূরা নাসর হচ্ছে সর্বশেষ নাযিলকৃত সূরাহ্। তাই উক্ত টীকার দাবী সম্পূর্ণ অসত্য ও অজ্ঞতাপূর্ণ। অত্র হাদীস হতেও বোঝা যায় যে, অত্র আয়াতটি অবতীর্ণ হবার পর তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত উপরোক্ত দু‘আটিই পাঠ, করেছেন অন্য কোন দু‘আ নয়।

৬৫/১১০/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬৮

عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ أَنْ يَقُوْلَ فِيْ رُكُوْعِهِ وَسُجُوْدِهِ سُبْحَانَكَ اللهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِيْ يَتَأَوَّلُ الْقُرْآنَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূরাহ নাসর অবতীর্ণ হবার পর রসূল سُبْحَانَكَ اللهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِي (হে আল্লাহ্! তুমি পবিত্র, তুমিই আমার রব, সমস্ত প্রশংসা তোমারই জন্য নির্দিষ্ট। তুমি আমাকে করে দাও।) দু‘আটি রুকূ-সাজদাহর মধ্যে অধিক অধিক পাঠ করতেন। [৭৯৪] (আ.প্র. ৪৫৯৯, ই.ফা. ৪৬০৪)

৬৫/১১০/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এবং আপনি লোকদেরকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন। (সূরাহ নাসর ১১০/২)

৪৯৬৯

عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ حَبِيْبِ بْنِ أَبِيْ ثَابِتٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ سَأَلَهُمْ عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} قَالُوْا فَتْحُ الْمَدَائِنِ وَالْقُصُوْرِ قَالَ مَا تَقُوْلُ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ أَجَلٌ أَوْ مَثَلٌ ضُرِبَ لِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم نُعِيَتْ لَهُ نَفْسُهُ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) লোকদেরকে আল্লাহ্‌র বাণী إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ -এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা বললেন, এ আয়াতে শহর এবং প্রাসাদসমূহের বিজয় গাঁথা বর্ণিত হয়েছে। এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে ইব্‌নু ‘আব্বাস! তুমি কী বল? তিনি বললেন, এ আয়াতে ওফাত অথবা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দৃষ্টান্ত এবং তাঁর শান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। [৩৬২৭] (আ.প্র. ৪৬০০, ই.ফা. ৪৬০৫)

৬৫/১১০/.অধ্যায়ঃ

তখন আপনি আপনার রবের প্রশংসার সহিত পবিত্রতা-মহিমা বর্ণনা করতে থাকুন এবং তাঁর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকুন। বস্তুতঃ তিনি তো অতিশয় তাওবা ক্বুবূলকারী।’’ (সূরাহ নাসর ১১০/৩)
تَوَّابٌ عَلَى الْعِبَادِ وَالتَّوَّابُ مِنَ النَّاسِ التَّائِبُ مِنْ الذَّنْبِ.
تَوَّابٌ বান্দাদের তওবা কবূলকারী। التَّوَّابُ ঐ ব্যক্তিকে বলা হয় যে গুনাহ থেকে তওবা করে।

৪৯৭০

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ عُمَرُ يُدْخِلُنِيْ مَعَ أَشْيَاخِ بَدْرٍ فَكَأَنَّ بَعْضَهُمْ وَجَدَ فِيْ نَفْسِهِ فَقَالَ لِمَ تُدْخِلُ هَذَا مَعَنَا وَلَنَا أَبْنَاءٌ مِثْلُهُ فَقَالَ عُمَرُ إِنَّهُ مَنْ قَدْ عَلِمْتُمْ فَدَعَاهُ ذَاتَ يَوْمٍ فَأَدْخَلَهُ مَعَهُمْ فَمَا رُئِيْتُ أَنَّهُ دَعَانِيْ يَوْمَئِذٍ إِلَّا لِيُرِيَهُمْ قَالَ مَا تَقُوْلُوْنَ فِيْ قَوْلِ اللهِ تَعَالَى {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} فَقَالَ بَعْضُهُمْ أُمِرْنَا أَنْ نَحْمَدَ اللهَ وَنَسْتَغْفِرَهُ إِذَا نُصِرْنَا وَفُتِحَ عَلَيْنَا وَسَكَتَ بَعْضُهُمْ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا فَقَالَ لِيْ أَكَذَاكَ تَقُوْلُ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ لَا قَالَ فَمَا تَقُوْلُ قُلْتُ هُوَ أَجَلُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْلَمَهُ لَهُ قَالَ {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} وَذَلِكَ عَلَامَةُ أَجَلِكَ {فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ ط ل إِنَّه” كَانَ تَوَّابًا} فَقَالَ عُمَرُ مَا أَعْلَمُ مِنْهَا إِلَّا مَا تَقُوْلُ.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বদর যুদ্ধে যোগদানকারী প্রবীণ সহাবীদের সঙ্গে আমাকেও শামিল করতেন। এ কারণে কারো কারো মনে প্রশ্ন দেখা দিল। একজন বললেন, আপনি তাকে আমাদের সঙ্গে কেন শামিল করছেন। আমাদের তো তার মত সন্তানই রয়েছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এর কারণ তো আপনারাও অবগত আছেন। সুতরাং একদিন তিনি তাঁকে ডাকলেন এবং তাঁদের সঙ্গে বসালেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি বুঝতে পারলাম, আজকে তিনি আমাকে ডেকেছেন এজন্য যে, তিনি আমার প্রজ্ঞা তাঁদেরকে দেখাবেন। তিনি তাদেরকে বললেন ঃ-
আল্লাহ্‌র বাণী ঃ
إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে আপনারা কী বলেন, তখন তাঁদের কেউ বললেন, আমরা সাহায্য প্রাপ্ত হলে এবং আমরা বিজয় লাভ করলে এ আয়াতে আমাদেরকে আল্লাহ্‌র প্রশংসা এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য আদেশ করা হয়েছে। আবার কেউ কিছু না বলে চুপ করে থাকলেন। এরপর তিনি আমাকে বললেন, হে ইব্‌নু ‘আব্বাস! তুমিও কি তাই বল? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাহলে তুমি কী চলতে চাও? উত্তরে আমি বললাম, এ আয়াতে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর ইন্তিকালের সংবাদ জানিয়েছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, ‘আল্লাহ্‌র সাহায্য ও বিজয় আসলে’ এটিই হবে তোমার মৃত্যুর নিদর্শন। فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا “তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি তো তাওবাহ কবূলকারী।” এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, তুমি যা বলছ, এ আয়াতের ব্যাখ্যা আমিও তা-ই জানি। [৩৬২৭] (আ.প্র. ৪৬০১, ই.ফা. ৪৬০৬)

৬৫/১১১/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
(111) سُوْرَةُ المسد
সূরাহ (১১১) : আল-মাসাদ (লাহাব)
{
وَتَبَّ}َّ خَسِرَ تَبَاتٌ خُسْرَانٌ تَتْبِيْبٌ تَدْمِيْرٌ.
وَتَبَّ ক্ষতি, تَبَاتٌ ধ্বংস। تَتْبِيْبٌ বিধ্বস্ত করা।

৪৯৭১

يُوْسُفُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَأَنْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْأَقْرَبِيْنَ} وَرَهْطَكَ مِنْهُمْ الْمُخْلَصِيْنَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى صَعِدَ الصَّفَا فَهَتَفَ يَا صَبَاحَاهْ فَقَالُوْا مَنْ هَذَا فَاجْتَمَعُوْا إِلَيْهِ فَقَالَ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ خَيْلًا تَخْرُجُ مِنْ سَفْحِ هَذَا الْجَبَلِ أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِيَّ قَالُوْا مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ كَذِبًا قَالَ فَإِنِّيْ {نَذِيْرٌ لَّكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ} قَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ مَا جَمَعْتَنَا إِلَّا لِهَذَا ثُمَّ قَامَ فَنَزَلَت{تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} وَقَدْ تَبَّ هَكَذَا قَرَأَهَا الْأَعْمَشُ يَوْمَئِذٍ
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ “তুমি তোমার কাছে আত্মীয়-স্বজনকে সতর্ক করে দাও” আয়াতটি অবতীর্ণ হলে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বের হয়ে সাফা পর্বতে গিয়ে উঠলেন এবং يَا صَبَاحَاهْ (সকাল বেলার বিপদ সাবধান) বলে উচ্চৈঃস্বরে ডাক দিলেন। আওয়াজ শুনে তারা বলল, এ কে? তারপর সবাই তাঁর কাছে গিয়ে সমবেত হল। তিনি বললেন, আমি যদি তোমাদেরকে বলি, একটি অশ্বারোহী সেনাবাহিনী এ পর্বতের পেছনে তোমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, তাহলে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে? সকলেই বলল, আপনার মিথ্যা বলার ব্যাপারে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই। তখন তিনি বললেন, نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيدٍ “আমি তোমাদের আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সাবধান করছি।” (সূরাহ (৩৪) ঃ সাবা ৪৬) এ কথা শুনে আবূ লাহাব বলল, তোমার ধ্বংস হোক। তুমি কি এ জন্যই আমাদেরকে একত্র করেছ? অতঃপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়ালেন। তারপর অবতীর্ণ হল ঃ تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ ‘ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের দু’ হাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও।” আমাশ (রহ.) আয়াতটি تَبَّ শব্দের পূর্বে وَقَدْ সংযোগ করে وَقَدْ تَبَّ পড়েছেন। [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৬০২, ই.ফা. ৪৬০৭)

৬৫/১১১/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের হাত দু’টি এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার মাল-দৌলাত এবং সে যা উপার্জন করেছে তার কোন কাজে আসেনি। (সূরাহ লাহাব ১১১/১-২)

৪৯৭২

مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ أَخْبَرَنَا أَبُوْ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى الْبَطْحَاءِ فَصَعِدَ إِلَى الْجَبَلِ فَنَادَى يَا صَبَاحَاهْ فَاجْتَمَعَتْ إِلَيْهِ قُرَيْشٌ فَقَالَ أَرَأَيْتُمْ إِنْ حَدَّثْتُكُمْ أَنَّ الْعَدُوَّ مُصَبِّحُكُمْ أَوْ مُمَسِّيْكُمْ أَكُنْتُمْ تُصَدِّقُوْنِيْ قَالُوْا نَعَمْ قَالَ فَإِنِّيْ {نَذِيْرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ} فَقَالَ أَبُوْ لَهَبٍ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا تَبًّا لَكَ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} إِلَى آخِرِهَا.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাত্হা প্রান্তরের দিকে চলে গেলেন এবং পর্বতে উঠে يَا صَبَاحَاهْ বলে উচ্চৈঃস্বরে ডাকলেন। কুরাইশরা তাঁর কাছে জমায়েত হল। তিনি বললেন, আমি যদি তোমাদেরকে বলি, শত্রু সৈন্যরা সকালে বা সন্ধ্যায় তোমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, তাহলে কি তোমরা আমাকে সত্য বলে বিশ্বাস করেবে? তারা সকলেই বলল, হাঁ, আমরা বিশ্বাস করব। তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সাবধান করছি। এ কথা শুনে আবূ লাহাব বলল, তুমি কি এজন্যই আমাদেরকে একত্রিত করেছ? তোমার ধ্বংস হোক। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সূরাহ লাহাব অবতীর্ণ করলেন, ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের দুই হস্ত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ এবং উপার্জন তার কোন কাজে আসেনি। অচিরে সে দগ্ধ হবে লেলিহান অগ্নিতে এবং তার স্ত্রীও, যে ইন্ধন বহন করে, তার গলায় পাকান দড়ি। [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৬০৩, ই.ফা. ৪৬০৮)

৬৫/১১১/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ শীঘ্রই সে দগ্ধ হবে লেলিহান আগুনে। (সূরাহ লাহাব ১১১/৩)

৪৯৭৩

عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا فَنَزَلَتْ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} إِلَى آخِرِهَا.عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا فَنَزَلَتْ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} إِلَى آخِرِهَا.
ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ লাহাব নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বললো, তোমার ধ্বংস হোক, তুমি কি এ জন্যই আমাদেরকে একত্রিত করেছ? তখন تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ সূরাটি অবতীর্ণ হলো। [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৬০৪, ই.ফা. ৪৬০৯)

৬৫/১১১/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এবং তার স্ত্রীও যে কাঠের বোঝা বহন করে। (সূরাহ লাহাব ১১/৪)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ حَمَّالَةُ الْحَطَبِ تَمْشِيْ بِالنَّمِيْمَةِ{فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ} يُقَالُ مِنْ مَسَدٍ لِيْفِ الْمُقْلِ وَهِيَ السِّلْسِلَةُ الَّتِيْ فِي النَّارِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
حَمَّالَةَ الْحَطَبِ এমন মহিলা যে পরের নিন্দা করে বেড়ায়। فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ তার গলদেশে থাকবে পাকানো রশি। বলা হয় مَسَدٍপাকানো মোটা শক্ত দড়ি। (কারো কারো মতে) এর দ্বারা জাহান্নামের ঐ শৃঙ্খলকে বোঝানো হয়েছে, যা তার গলদেশে লাগানো হবে।

৬৫/১১২/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
সূরাহ (১১২) : ইখলাস
يُقَالُ لَا يُنَوَّنُ أَحَدٌ أَيْ وَاحِدٌ
বলা হয়,
أَحَدٌ শব্দটি (যখন তৎপরবর্তী শব্দের সঙ্গে মিলিয়ে পড়া হবে তখন) تنوين পড়া হয় না। أَحَدٌوَاحِدٌ এর অর্থ একই।

৪৯৭৪

أَبُو الْيَمَانِ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ اللهُ كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ وَشَتَمَنِيْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ فَأَمَّا تَكْذِيْبُهُ إِيَّايَ فَقَوْلُهُ لَنْ يُعِيْدَنِيْ كَمَا بَدَأَنِيْ وَلَيْسَ أَوَّلُ الْخَلْقِ بِأَهْوَنَ عَلَيَّ مِنْ إِعَادَتِهِ وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ فَقَوْلُهُ{اتَّخَذَ اللهُ وَلَدًا} وَأَنَا الْأَحَدُ الصَّمَدُ لَمْ أَلِدْ وَلَمْ أُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لِيْ كُفْئًا أَحَدٌ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন, “বানী আদম আমার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে; অথচ এরূপ করা তার জন্য সঠিক হয়নি। বানী আদম আমাকে গালি দিয়েছে; অথচ এমন করা তার জন্য উচিত হয়নি। আমার প্রতি মিথ্যারোপ করার অর্থ হচ্ছে এই যে, সে বলে, আল্লাহ্ আমাকে যে রকম প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন, তেমনি তিনি আমাকে দ্বিতীয়বার জীবিত করবেন না। অথচ তাকে আবার জীবিত করা অপেক্ষা প্রথমবার সৃষ্টি করা আমার জন্য সহজ ছিল না। আমাকে তার গালি দেয়ার অর্থ হল, সে বলে, আল্লাহ্ তা‘আলা সন্তান গ্রহণ করেছেন; অথচ আমি একক, কারো মুখাপেক্ষী নই। আমি কাউকে জন্ম দেইনি, আমাকেও জন্ম দেয়া হয়নি এবং কেউ আমার সমকক্ষ নয়।” [৩১৯৩] (আ.প্র. ৪৬০৫, ই.ফা. ৪৬১০)

৬৫/১১২/.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ্ কারো মুখাপেক্ষী নন। (সূরাহ ইখলাস ১১২/২)
وَالْعَرَبُ تُسَمِّيْ أَشْرَافَهَا الصَّمَدَ قَالَ أَبُوْ وَائِلٍ هُوَ السَّيِّدُ الَّذِي انْتَهَى سُوْدَدُهُ.
আরবীয় লোকেরা তাদের নেতাদেরকে
الصَّمَدَ বলে থাকেন। আবূ ওয়াইল (রহ.) বলেন, এমন নেতাকে বলা হয় যার নেতৃত্ব চূড়ান্ত বা যার উপর নেতৃত্বের সমাপ্তি ঘটে।

৬৫/১১২/.অধ্যায়ঃ

তিনি কাউকেও জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। এবং তাঁর সমতুল্য কেউই নাই। (সূরাহ ইখলাস ১১২/৩-৪)

৪৯৭৫

إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ قَالَ وَحَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اللهُ كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ وَشَتَمَنِيْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ أَمَّا تَكْذِيْبُهُ إِيَّايَ أَنْ يَقُوْلَ إِنِّيْ لَنْ أُعِيْدَهُ كَمَا بَدَأْتُهُ وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ أَنْ يَقُوْلَ اتَّخَذَ اللهُ وَلَدًا وَأَنَا الصَّمَدُ الَّذِيْ لَمْ أَلِدْ وَلَمْ أُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لِيْ كُفُؤًا أَحَدٌ{لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ لا (3) وَلَمْ يَكُنْ لَّه” كُفُوًا} وَكَفِيئًا وَكِفَاءً وَاحِدٌ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেছেন, আদাম সন্তান আমার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে; অথচ এরূপ করা তার জন্য সঠিক হয়নি। সে আমাকে গালি দিয়েছে; অথচ এমন করা তার পক্ষে উচিত হয়নি। আমার প্রতি তার মিথ্যারোপ করার অর্থ হচ্ছে, সে বলে, আমি আবার জীবিত করতে সক্ষম নই যেমনিভাবে আমি তাকে প্রথমে সৃষ্টি করেছি। আমাকে তার গালি দেয়া হচ্ছে এই যে, সে বলে, আল্লাহ্ তা‘আলা সন্তান গ্রহণ করেছেন; অথচ আমি কারো মুখাপেক্ষী নই। আমি এমন এক সত্তা যে, আমি কাউকে জন্ম দেইনি, আমাকেও কেউ জন্ম দেয়নি এবং আমার সমতুল্য কেউ নেই। ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, كَفِيئًاএবং كِفَاءًএকই অর্থবোধক শব্দ। [৩১৯৩] (আ.প্র. ৪৬০৬, ই.ফা. ৪৬১১)

৬৫/১১৩/.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।
সুরাহ (১১৩) : ক্বুল আ‘উযু বিরাবিবকাল ফালাক্ব (ফালাক্ব)
وَقَالَ مُجَاهِدٌ{الْفَلَقُ} الصُّبْحُ وَ{غَاسِقٍ} اللَّيْلُ إِذَا وَقَبَ غُرُوْبُ الشَّمْسِ يُقَالُ أَبْيَنُ مِنْ فَرَقِ وَفَلَقِ الصُّبْحِ وَقَبَ إِذَا دَخَلَ فِيْ كُلِّ شَيْءٍ وَأَظْلَمَ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
الْفَلَقُ রাত। غَاسِقٍ সূর্য অস্তমিত হওয়া। আরবীতে فَلَقِفَرَقِ একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। তাই বলা হয়, أَبْيَنُ مِنْ فَرَقِ وَفَلَقِ الصُّبْحِ ভোরের আলো প্রকাশিত হওয়ার চেয়েও তা স্পষ্ট। وَقَبَ অন্ধকার সব জায়গায় প্রবেশ করে এবং আচ্ছন্ন করে ফেলে।

৪৯৭৬

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَاصِمٍ وَعَبْدَةَ عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ قَالَ سَأَلْتُ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ عَنِ الْمُعَوِّذَتَيْنِ فَقَالَ سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ قِيْلَ لِيْ فَقُلْتُ فَنَحْنُ نَقُوْلُ كَمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم.
যির ইব্‌নু হুবাইশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উবাই ইব্‌নু কা‘বকে الْمُعَوِّذَتَيْنِ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন, এ বিষয়ে আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেন, আমাকে বলা হয়েছে, তাই আমি বলছি। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে রকম বলেছেন, আমরাও ঠিক সে রকম বলছি। [৪৯৭৭] (আ.প্র. ৪৬০৭, ই.ফা. ৪৬১২)

৪৯৭৭

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ أَبِيْ لُبَابَةَ عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ ح وَحَدَّثَنَا عَاصِمٌ عَنْ زِرٍّ قَالَ سَأَلْتُ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ قُلْتُ يَا أَبَا الْمُنْذِرِ إِنَّ أَخَاكَ ابْنَ مَسْعُوْدٍ يَقُوْلُ كَذَا وَكَذَا فَقَالَ أُبَيٌّ سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِيْ قِيْلَ لِيْ فَقُلْتُ قَالَ فَنَحْنُ نَقُوْلُ كَمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم.
যির ইব্‌নু হুবাইশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আবুল মুনযির! আপনার ভাই ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) তো এ রকম কথা বলে থাকেন। তখন উবাই (রাঃ) বললেন, আমি এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে বললেন, আমাকে বলা হয়েছে তাই আমি বলেছি। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বলেন, কাজেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা বলেছেন আমরাও তাই বলি। [৪৯৭৬] (আ.প্র. ৪৬০৮, ই.ফা. ৪৬১৩)

No comments

Powered by Blogger.